এসএসসি পদার্থবিজ্ঞান ৪র্থ অধ্যায় কাজ ক্ষমতা ও শক্তি জ্ঞানমূলক ও অনুধাবনমূলক প্রশ্ন উত্তর

নবম দশম শ্রেণির বা এসএসসি পদার্থবিজ্ঞান ৪র্থ অধ্যায় কাজ ক্ষমতা ও শক্তি জ্ঞানমূলক ও অনুধাবনমূলক প্রশ্ন উত্তর নিচে দেওয়া হলো। এখানে পদার্থবিজ্ঞান ৪র্থ অধ্যায় কাজ ক্ষমতা ও শক্তি জ্ঞানমূলক ও অনুধাবনমূলক কিছু প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হলো খুব ভালো প্রস্তুতির জন্য অন্য গাইড বই অনুসরণ করতে হবে।

পদার্থবিজ্ঞান ৪র্থ অধ্যায় কাজ ক্ষমতা ও শক্তি

৪র্থ অধ্যায় কাজ ক্ষমতা ও শক্তি জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর

প্রশ্ন \ ১ \ কাজের সমীকরণটি লেখ।
উত্তর : কাজ = প্রযুক্ত বল × বলের অভিমুখে সরণ
প্রশ্ন \ ২ \ কাজের একক কী?
উত্তর : কাজের একক জুল।
প্রশ্ন \ ৩ \ কাজ কোন ধরনের রাশি?
উত্তর : কাজ স্কেলার রাশি।
প্রশ্ন \ ৪ \ ক্ষমতার একক কী?
উত্তর : ক্ষমতার একক ওয়াট।
প্রশ্ন \ ৫ \ ক্ষমতার মাত্রা কী?
উত্তর : ক্ষমতার মাত্রা [ML2T-3]।
প্রশ্ন \ ৬ \ এক অশ্বক্ষমতা সমান কত ওয়াট?
উত্তর : এক অশ্বক্ষমতা সমান ৭৪৬ ওয়াট।
প্রশ্ন \ ৭ \ ১eV কত জুলের সমান?
উত্তর : ১eV সমান ১.৬ × ১০১৯ J জুল।
প্রশ্ন \ ৮ \ ১kWh সমান কত জুল?
উত্তর : ১kWh = ৩.৬ × ১০৬J।
প্রশ্ন \ ৯ \ সৌরশক্তি কী?
উত্তর : সূর্য থেকে যে শক্তি পাওয়া যায় তাকে বলে সৌরশক্তি।
প্রশ্ন \ ১০ \ নিউক্লীয় ফিশন কী?
উত্তর : যে নিউক্লীয় বিক্রিয়ায় প্রাপ্ত শক্তিকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহার করা হয় সেই বিক্রিয়াকে বলা হয় নিউক্লীয় ফিশন।
প্রশ্ন \ ১১ \ বিভব শক্তি কিসের ওপর নির্ভর করে?
উত্তর : বিভব শক্তি বস্তুর ভর ও উচ্চতার ওপর নির্ভর করে।
প্রশ্ন \ ১২ \ গতিশক্তি কিসের ওপর নির্ভর করে?
উত্তর : গতিশক্তি বস্তুর ভর ও বেগের ওপর নির্ভর করে।
প্রশ্ন \ ১৩ \ জুল কাকে বলে?
উত্তর : কোনো বস্তুর ওপর এক নিউটন বল প্রয়োগের ফলে যদি বস্তুটির বলের দিকে এক মিটার সরণ হয় তবে সম্পন্ন কাজের পরিমাণকে এক জুল বলে।
প্রশ্ন \ ১৪ \ অনবায়নযোগ্য শক্তি কাকে বলে?
উত্তর : যে সমস্ত শক্তি নতুনভাবে সৃষ্টি করা যায় না তাকে অনবায়নযোগ্য শক্তি বলা হয়।
প্রশ্ন \ ১৫ \ তিনটি অনবায়নযোগ্য শক্তির উৎসের নাম লেখ।
উত্তর : তিনটি অনবায়নযোগ্য শক্তির উৎস হলো কয়লা, খনিজ তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস।
প্রশ্ন \ ১৬ \ দুইটি নবায়নযোগ্য শক্তির উৎসের নাম লেখ।
উত্তর : দুইটি নবায়নযোগ্য শক্তির উৎস হলো সৌরশক্তি এবং বায়োগ্যাস।
প্রশ্ন \ ১৭ \ নবায়নযোগ্য শক্তি কী?
উত্তর : যে শক্তিকে নতুন করে সৃষ্টি করা যায় বা পাওয়া যায় তাকে নবায়নযোগ্য শক্তি বলে।
প্রশ্ন \ ১৮ \ সৌরশক্তির দুটি উদাহরণ দাও।
উত্তর : সৌরশক্তির দুটি উদাহরণ হলোÑ সোলার ওয়াটার হিটার ও সোলার কুকার।
প্রশ্ন \ ১৯ \ নিউক্লীয় শক্তি কী?
উত্তর : একটি ভারী পরমাণুকে (ইউরেনিয়াম) নিউট্রন দ্বারা আঘাত করে যে বিপুল শক্তি পাওয়া যায় তাকে নিউক্লীয় শক্তি বলে।

৪র্থ অধ্যায় কাজ ক্ষমতা ও শক্তি অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর

প্রশ্ন \ ১ \ কাজ ও ক্ষমতার মধ্যে পার্থক্য দেখাও।
উত্তর : কাজ ও ক্ষমতার মধ্যে পার্থক্য নিচে দেয়া হলো :
কাজ ও ক্ষমতার মধ্যে পার্থক্য


প্রশ্ন \ ২ \ বল প্রয়োগ করা সত্তে¡ও কাজ শূন্য হতে পারে ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : আমরা জানি, কাজ = বল × বলের দিকে সরণের উপাংশ। সুতরাং বল প্রয়োগ করা সত্তে¡ও যদি সরণ না ঘটে, বা ঘটলেও বলের দিকে সরণের উপাংশ শূন্য হয়, তাহলে কৃতকাজ শূন্য হবে। যেমন : মহাশূন্য যানের ওপর অভিকর্ষ বল ক্রিয়া করা সত্তে¡ও সর্বদা এর সরণ ঘটে বলের লম্ব দিকে, তাই এক্ষেত্রেও বলের দিকে সরণের উপাংশ শূন্য হওয়ায় কোনো কাজ সম্পন্ন হয় না।
প্রশ্ন \ ৩ \ এক অশ্ব ক্ষমতা বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : অশ্ব ক্ষমতা হলো এফপিএস পদ্ধতিতে ক্ষমতার ব্যবহারিক এককের নাম। কোনো যন্ত্র বা ব্যক্তি ৫৫০ পাউন্ড ভরসম্পন্ন কোনো বস্তুকে অভিকর্ষের বিরুদ্ধে উল্লম্বভাবে ১ সেকেন্ডে ১ ফুট তুলতে পারলে তার ক্ষমতাকে ১ অশ্ব ক্ষমতা বলে। অশ্ব ক্ষমতাকে সাধারণত HP (Horse Power) দ্বারা প্রকাশ করা হয়।
প্রশ্ন \ ৪ \ কোনো বৈদ্যুতিক পাওয়ার স্টেশনের ক্ষমতা ২০০ MW বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : কোনো বৈদ্যুতিক পাওয়ার স্টেশনের ক্ষমতা ২০০ MW বলতে বোঝায় ঐ পাওয়ার স্টেশনটি প্রতি সেকেন্ডে ২০০০০০০০০ J তড়িৎ শক্তি সরবরাহ করছে।
প্রশ্ন \ ৫ \ ১eV বলতে কী বোঝ?
উত্তর : eV হলো শক্তির একটি অতিক্ষুদ্র একক, যেখানে,
১eV = ১.৬ × ১০-১৯J। একে মূলত নিম্নরূপে সংজ্ঞায়িত করা হয়। তড়িৎক্ষেত্রের দুটি বিন্দুর বিভব পার্থক্য ১ ভোল্ট (ঠ) হলে এদের একটি হতে অপরটিতে ১.৬ × ১০১৯ঈ আধান সরাতে যে কাজ সম্পন্ন হয় তাই হলো ১eV।
প্রশ্ন \ ৬ \ বিভব শক্তি বস্তুর উচ্চতার ওপর নির্ভর করেÑ ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : স ভরের কোনো বস্তুকে ভ‚পৃষ্ঠ থেকে য উচ্চতায় ওঠাতে কৃতকাজই হচ্ছে বস্তুতে সঞ্চিত বিভব শক্তির পরিমাপ।
আমরা জানি,
বিভব শক্তি = বস্তুর ওজন × উচ্চতা
∴ Ep = mg ×  h ……………. (i)
অর্থাৎ বিভব শক্তি = বস্তুর ভর × অভিকর্ষজ ত্বরণ × উচ্চতা।
সমীকরণ থেকে দেখা যায়, উচ্চতা যত বেশি হবে বস্তুর বিভব শক্তিও তত বেশি হবে। অতএব, আমরা বলতে পারি, বিভব শক্তি বস্তুর উচ্চতার ওপর নির্ভর করে।
প্রশ্ন \ ৭ \ স্প্রিংকে সংকুচিত করলে এটি কী ধরনের শক্তি অর্জন করে? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : স্প্রিংকে সংকুচিত করলে এটি স্বাভাবিক অবস্থা হতে পরিবর্তিত অবস্থায় আসে এবং এ পরিবর্তনের ফলে এটি বিভব শক্তি অর্জন করে। এক্ষেত্রে স্প্রিংটিতে সঞ্চিত বিভব শক্তি দৃশ্যমান বা অনুমানযোগ্য না হলেও এ শক্তি পরবর্তীতে গতিশক্তিতে রূপান্তরিত হতে পারে বা এ শক্তির দ্বারা স্প্রিংটি সমপরিমাণ কাজও করতে সক্ষম।
প্রশ্ন \ ৮ \ সূর্যকে সকল শক্তির উৎস কেন বলা হয়Ñ ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : পৃথিবীতে আমরা যেকোনো প্রকার শক্তিই ব্যবহার করি না কেন তা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সূর্য হতে এসেছে। জীবাশ্ম জ্বালানিগুলো তৈরি হয়েছিল গলিত লাভার প্রভাবে, যা সূর্যের তাপের একাংশ। এছাড়া উদ্ভিদ দেহে সাধারণভাবে যে শক্তি সঞ্চিত থাকে তা মূলত সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় সূর্য হতে গৃহীত শক্তি। সূর্যরশ্মির কারণেই বায়ুপ্রবাহ সৃষ্টি হয়।
অতএব বলা যায়, সূর্য-ই হলো সকল শক্তির উৎস।
প্রশ্ন \ ৯ \ জলবিদ্যুৎ উৎপাদনে যান্ত্রিক শক্তির রূপান্তর কীভাবে ঘটেÑ ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের উদ্দেশে প্রাকৃতিক হ্রদ বা কৃত্রিমভাবে প্রস্তুত হ্রদের পানিতে সঞ্চিত বিভব শক্তি কাজে লাগানো হয়। সাধারণত এ হ্রদসমূহ ভ‚সমতল হতে অনেক উচ্চে অবস্থান করে। হ্রদের পানি যখন পাহাড়ের গা বেয়ে নিচে নেমে আসে তখন ঐ বিভবশক্তি গতিশক্তিতে রূপান্তরিত হয়। প্রবাহিত পানির গতিশক্তি টারবাইনকে

ঘুরিয়ে দেয়। ফলে টারবাইনের সাথে সংযুক্ত জেনারেটরে বিদ্যুৎশক্তি উৎপন্ন হয়। ফলে সামগ্রিক শক্তি রূপান্তর নিম্নরূপ :
বিভব শক্তি  গতিশক্তি  বিদ্যুৎশক্তি
প্রশ্ন \ ১০ \ বায়োমাস শক্তি বলতে কী বোঝÑ ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : বায়োমাস বলতে সেসব জৈব পদার্থকে বোঝায় যাদেরকে শক্তিতে রূপান্তরিত করা যায়। সৌরশক্তির একটি ক্ষুদ্র ভগ্নাংশ সবুজ গাছপালা দ্বারা সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় রাসায়নিক শক্তিতে রূপান্তরিত হয়ে বায়োমাসরূপে গাছপালার বিভিন্ন অংশে মজুদ থাকে। মানুষসহ অনেক প্রাণী খাদ্য হিসেবে এগুলো গ্রহণ করে তাকে শক্তিতে রূপান্তরিত করে জীবনের কর্মকাণ্ড সচল রাখে। জৈব পদার্থসমূহ যাদেরকে বায়োমাস শক্তির উৎস হিসেবে ব্যবহার করা যায় সেগুলো হচ্ছে গাছপালা, জ্বালানি কাঠ, কাঠের বর্জ্য, শস্য, ধানের তুষ ও কুঁড়া, লতাপাতা, পশুপাখির মল, পৌর বর্জ্য ইত্যাদি।
প্রশ্ন \ ১১ \ ভর হতে নিউক্লীয় শক্তির উৎপাদন উপযুক্ত সমীকরণসহ ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : নিউক্লীয় বিক্রিয়ায় সাধারণত পদার্থ তথা ভর শক্তিতে রূপান্তরিত হয়। অবশ্য নিউক্লীয় বিক্রিয়ায় মোট ভরের কেবল একটি ক্ষুদ্র ভগ্নাংশ শক্তিতে রূপান্তরিত হয়। পদার্থ শক্তিতে রূপান্তরিত হলে যদি ঊ পরিমাণ শক্তি পাওয়া যায়,
তাহলে E = mc2। এখানে, m হলো শক্তিতে রূপান্তরিত ভর এবং c হচ্ছে আলোর বেগ যা ৩ × ১০ ms-1  এর সমান।
প্রশ্ন \ ১২ \ আলোক হতে তড়িৎ শক্তিতে রূপান্তর প্রক্রিয়াÑ ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : ফটো-ভোল্টাইক কোষের ওপর আলোক আপতিত হলে সংশ্লিষ্ট শক্তি শোষণ করে অনেক মুক্ত ইলেকট্রন নির্গত হয় যা ইলেকট্রনের প্রবাহ তথা তড়িৎ প্রবাহের উদ্ভব ঘটায়। এই তড়িৎ প্রবাহকে সরাসরি ব্যবহার করা যেতে পারে। অথবা এর দ্বারা ব্যাটারিকে চার্জ করে পরবর্তীতে ব্যবহার করা যেতে পারে।
এভাবে আলোক হতে তড়িৎশক্তি পাওয়া যায়।

Leave a Reply