You are currently viewing চতুর্থ শ্রেণির বাংলা পাঠান মুলুকে অনুশীলনী, অতিরিক্ত ও মডেল টেস্ট প্রশ্ন উত্তর

চতুর্থ শ্রেণির বাংলা পাঠান মুলুকে অনুশীলনী, অতিরিক্ত ও মডেল টেস্ট প্রশ্ন উত্তর

পাঠান মুলুকে

সৈয়দ মুজতবা আলী

অনুশীলনীর প্রশ্ন ও উত্তর

১. শব্দগুলো পাঠ থেকে খুঁজে বের করি। অর্থ বলি।
স্নানাভাবে একরত্তি হোল্ডল ঠা-ঠা আলো আলিঙ্গন করা পশ্তু অভ্যার্থনা নির্জলা বৃথা খাস ঘোড়ার নালের চাট অবজ্ঞা অফুরন্তটাঙ্গা কসুর প্ল্যাটফরম
উত্তর :
শব্দ অর্থ
স্নানাভাবে – স্নানের অভাবে, গোসল না করতে পারায়।
একরত্তি – একটুকুও।
হোল্ডল – যে বোঁচকার ভিতরে বালিশ বিছানা ভরে বেঁধে রাখা হয়।
ঠা-ঠা আলো – এত তেজি আলো যে চোখ মেলে তাকানো যায় না।
আলিঙ্গন করা – কোলাকুলি করা।
পশ্তু – বাংলা হিন্দি উর্দুর মতো পাঠান এলাকার একটি ভাষার নাম।
অভ্যর্থনা – আদর করে ডেকে আনা।
নির্জলা – নির্ভেজাল, খাঁটি।
বৃথা – যাতে কাজ দেয় না, কাজ হয় না।
খাস – আসল, প্রকৃত।
ঘোড়ার নালের চাট – ঘোড়ার পায়ের লাথি।
অবজ্ঞা – তাচ্ছিল্য, তুচ্ছতা।
অফুরন্ত – যা ফুরিয়ে যায় না, যা শেষ হয়ে যায় না।
টাঙ্গা – এক ধরনের গাড়ি।
কসুর – দোষ।
প্ল্যাটফরম – রেলগাড়ি থামার স্থান। উন্নত সমতলভ‚মি।

২. ঘরের ভিতরের শব্দগুলো খালি জায়গায় বসিয়ে বাক্য তৈরি করি।
বৃথা আলিঙ্গন অভ্যর্থনা একরত্তি ঠা-ঠা আলো।
ক. আমার চোখে …………. ঘুম নেই।
খ. এত …………. চোখ মেলে তাকানো যায় না।
গ. ঈদের সময় আমরা সবাই …………. করে থাকি।
ঘ. তাদের …………. অনেক ভালো ছিল।
ঙ. …………. সময় নষ্ট করা ঠিক নয়।
উত্তর :
ক. আমার চোখে একরত্তি ঘুম নেই।
খ. এত ঠা-ঠা আলো চোখ মেলে তাকানো যায় না।
গ. ঈদের সময় আমরা সবাই আলিঙ্গন করে থাকি।
ঘ. তাদের অভ্যর্থনা অনেক ভালো ছিল।
ঙ. বৃথা সময় নষ্ট করা ঠিক নয়।

৩. প্রশ্নগুলোর উত্তর বলি ও লিখি।
ক) সর্দারজি চেনা যায় কী দেখে?
উত্তর : মাথায় চুল বাঁধা, পাকানো পাগড়ি, সাজানো দাড়ি ইত্যাদি দেখে সর্দারজি চেনা যায়।
খ) দিনের বেলায় ও রাত্রে পেশাওয়ার শহরে কী হয়?
উত্তর : দিনের বেলায় পেশাওয়ার শহর থাকে ইংরেজদের আর রাতে তা থাকে পাঠানদের দখলে।
গ) পাঠানদের অভ্যর্থনা কেমন হয়ে থাকে এবং কেন?
উত্তর : পাঠানদের অভ্যর্থনা সম্পূর্ণ নির্জলা আন্তরিক হয়ে থাকে। কারণ অতিথিকে বাড়িতে ডেকে নেওয়ার মতো আনন্দ পাঠানরা অন্য কোনো জিনিসে পায় না।
ঘ) পাঠানেরা কীভাবে টাঙ্গা চালায়?
উত্তর : পাঠানেরা রাস্তায় যে যার মতো চলে। টাঙ্গা চালানোর সময় এঁকে বেঁকে রাস্তা করে নিতে হয়।

৪. ক্রিয়াপদের বিভিন্ন রূপ রয়েছে। যেমন- মূল ক্রিয়াপদ- যাওয়া। এই ক্রিয়াপদটি থেকে অনেকগুলো শব্দ হতে পারে। যেমন-
যাই – আমি বাড়ি যাই।
যাব – আমি বিকেলে খেলা দেখতে যাব।
গিয়েছি – আমি ওখানে গতকালও গিয়েছি।
যেতাম – ছোটবেলায় আমি প্রায়ই মামাবাড়ি যেতাম।
এখন নিচের ক্রিয়াপদগুলো দিয়ে একইরকম ভাবে শব্দ ও বাক্য লিখি।
আসা, খাওয়া, করা
উত্তর :
আসা – তার এখানে আসা হবে না।
খাওয়া – তোমার খাওয়া হয়েছে কি?
করা – কাজটি আমার করা দরকার।

৫. বাক্য রচনা করি।
ভ্রমণ, পেশাওয়ার, ঠা-ঠা আলো, সংবর্ধনা, ডাকাডাকি, অবজ্ঞা।
উত্তর :
ভ্রমণ – মোস্তফা ভ্রমণ করতে ভালোবাসে।
পেশাওয়ার – সে পেশাওয়ার বেড়াতে গিয়েছিল।
ঠা-ঠা আলো – ঠা-ঠা আলোতে চোখ বুজে আসছে।
সংবর্ধনা – স্কুল থেকে বিদায়ী সংবর্ধনা দেওয়া হলো।
ডাকাডাকি – এত ডাকাডাকির পরেও সে এলো না।
অবজ্ঞা – কাউকে অবজ্ঞা করো না।

৬. বিপরীত শব্দ লিখি এবং তা দিয়ে একটি করে বাক্য লিখি।
আরম্ভ শেষ আজ আমার পরীক্ষা শেষ হলো।
গরম ঠাণ্ডা শীতকালে প্রচুর ঠাণ্ডা লাগে।
কঠিন ………. ………………………….।
ভেতর ………. ………………………….।
দিন ………. ………………………….।
দাঁড়ানো ………. ………………………….।
আলো ………. ………………………….।
উঁচু ………. ………………………….।
উত্তর :
মূলশব্দ বিপরীত শব্দ বাক্য
আরম্ভ শেষ আজ আমার পরীক্ষা শেষ হলো।
গরম ঠাণ্ডা শীতকালে প্রচুর ঠাণ্ডা লাগে।
কঠিন সহজ কাজটা তোমার জন্য সহজ হবে।
ভেতর বাহির লোকটি আমাকে স্টেশনের বাহিরে এনে বসালেন।
দিন রাত এখন অনেক রাত।
দাঁড়ানো বসা এত লোকের মাঝে বসার জায়গাও নেই।
আলো অন্ধকার বাতি নিভে যাওয়ায় সব অন্ধকার হয়ে গেল।
উঁচু নিচু জায়গাটা খুব নিচু।

৭. কর্ম-অনুশীলন।
নিজে বেড়িয়ে এসেছি এরকম একটা জায়গা সম্পর্কে বলি।
উত্তর : এবারের শীতে বাব-মায়ের সাথে ঘুরে এলাম সেন্টমার্টিন দ্বীপ থেকে। দ্বীপের চারপাশে ঘন নীল সমুদ্র। সৈকতজুড়ে ছড়ানো-ছিটানো প্রবাল প্রাচীর। সেন্টমার্টিনের অদূরেই ছেঁড়া দ্বীপ। ট্রলারে চড়ে সেখানে গেলাম আমরা। এখানকার সৈকতটি ছোট হলেও সুন্দর। প্রবালের মাঝে মাঝে শামুক আর বর্ণিল কাঁকড়া দেখা যায়। রাতের বেলা সেন্টমার্টিনের আকাশজুড়ে দেখা যায় অসংখ্য তারা। সব মিলিয়ে দ্বীপটি সত্যিই অসাধারণ।

পাঠান মুলুকে অতিরিক্ত প্রশ্ন ও উত্তর

🟥 সঠিক উত্তরটি লেখ।
১) সর্দারজি কোনটি পাকাচ্ছিলেন? জ
ক চোখ খ দড়ি
গ পাগড়ি ঘ ফল
২) লেখক পেশাওয়ার যাওয়ার পথে খেয়েছিলেন- ঝ
ক ডাল-ভাত খ ভাত-মাছ
গ কাবাব-লুচি ঘ কাবাব-রুটি
৩) রাতের বেলা পাঠান মুলুক কাদের হয়? চ
ক পাঠানদের খ ইংরেজদের
গ বাঙালিদের ঘ সকলের
৪) লেখক পেশাওয়ার পৌঁছে দেখেন- জ
ক গাঢ় অন্ধকার খ প্রচণ্ড ভিড়
গ ঠা-ঠা আলো ঘ খা-খা প্ল্যাটফরম
৫) শেখ আহমদ আলী নিজের পরিচয় দিলেন- ছ
ক ভাঙা ভাঙা উর্দুতে খ উত্তম উর্দুতে
গ উর্দু ও পশ্তু মিলিয়ে ঘ উর্দু ও বাংলা মিলিয়ে
৬) শেখ আহমদ আলী লেখককে নিয়ে কোথায়
বসলেন? ছ
ক ট্রেনে খ টাঙ্গায়
গ ঘরে ঘ হোটেলে
৭) টাঙ্গা চালানোর সময় ঘণ্টা বাজালে বা চিৎকার
করলে কী হয়? চ
ক কোনো লাভ হয় না
খ লোকজন রাস্তা ছেড়ে দেয়
গ লোকজন টাঙ্গা আটকে রাখে
ঘ দুর্ঘটনা ঘটে
৮) খাস পাঠান কখনো কারও জন্য রাস্তা ছেড়ে দেয় না কেন? ছ
ক স্বার্থপর বলে
খ স্বাধীনতা ক্ষুণœ হয় বলে
গ আর্থিক ক্ষতি হয় বলে
ঘ দুর্ঘটনার ভয় আছে বলে
🟥 নিচের শব্দগুলোর অর্থ লেখ।
প্রবাদ, উত্তম, উৎসাহ, সাফ, খাবলা, কসুর।
উত্তর : শব্দ অর্থ
প্রবাদ – জনশ্রুতি।
উত্তম – খুব ভালো।
উৎসাহ – আগ্রহের সাথে।
সাফ – পরিষ্কার।
খাবলা – এক মুষ্ঠি পরিমাণ।
কসুর – ত্রæটি, অপরাধ।
🟥 শূন্যস্থান পূরণ কর।
ক) দিনের বেলা পেশাওয়ার জ্জজ্জ।
খ) পাঠানদের অভ্যর্থনা সম্পূর্ণ জ্জজ্জ আন্তরিক।
গ) টাঙ্গা তো চলছে জ্জজ্জ কায়দায়।
ঘ) জ্জজ্জ পাঠান কখনো কারো জন্য রাস্তা ছেড়ে দেয় না।
ঙ) রাস্তা ছেড়ে দিতে হলে তার জ্জজ্জ রইল কোথায়?
উত্তর : ক) ইংরেজদের; খ) নির্জলা; গ) পাঠানি; ঘ) খাস; ঙ) স্বাধীনতা।
🟥 নিচের যুক্তবর্ণগুলো কোন কোন বর্ণ দিয়ে গঠিত ভেঙে দেখাও এবং প্রতিটি যুক্তবর্ণ দিয়ে একটি করে শব্দ গঠন করে বাক্যে প্রয়োগ দেখাও।
স্ন, ত্ত, ভ্র, প্ল, ম্প।
উত্তর :
স্ন = স + ন – স্নেহ
– মায়ের স্নেহের তুলনা নেই।
ত্ত = ত + ত – সত্তা
– নিজের সত্তা কেউ অস্বীকার করে না।
ভ্র = ভ + র-ফলা ( ্র ) – ভ্রমণ
– আগামী মাসে আমরা ভ্রমণে যাব।
প্ল = প + ল – প্লাবন
– প্লাবনে সব ভেসে গেছে।
ম্প = ম + প – সম্পদ
– লোকটি অনেক সম্পদের মালিক।
🟥 নিচের বানানগুলো শুদ্ধ করে লেখ।
ভ্রমন, পষ্তু, অভ্যথনা, নীর্জলা, প্লাটফরম।
উত্তর : ভুল বানান শুদ্ধ বানান
ভ্রমন – ভ্রমণ
পষ্তু – পশ্তু
অভ্যথনা – অভ্যর্থনা
নীর্জলা – নির্জলা
প্লাটফরম – প্ল্যাটফরম
🟥 নিচের শব্দগুলোর কোনটি কোন পদ লেখ।
ভ্রমণ, আন্তরিক, ডেকে, পৌঁছাবে, গরম, অতিথি।
উত্তর :
মূল শব্দ পদ মূল শব্দ পদ
ভ্রমণ – বিশেষ্য পৌঁছাবে – ক্রিয়া
আন্তরিক – বিশেষণ গরম – বিশেষণ
ডেকে – ক্রিয়া অতিথি – বিশেষ্য
🟥 নিচের ক্রিয়াপদগুলোর চলিত রূপ লেখ।
সাজাইতে, পৌঁছাইলাম, আগাইয়া, চলিল, ভাবিতেছি।
উত্তর : ক্রিয়াপদ চলিত রূপ
সাজাইতে – সাজাতে
পৌঁছাইলাম – পৌঁছুলাম
আগাইয়া – এগিয়ে
চলিল – চলল
ভাবিতেছি – ভাবছি
🟥 নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর লেখ।
ক) লেখক বিছানা গুটিয়ে হোল্ডল বন্ধ করতে পারছিলেন না কেন?
উত্তর : যাত্রাপথের নানা বিড়ম্বনা, মনের মতো খাবার আর গোসলের অভাবে লেখক খুবই ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলেন। তাই তিনি বিছানা গুটিয়ে হোল্ডল বন্ধ করতে পারছিলেন না।
খ) পাঠানের সাথে ভ্রমণে সুখ কিসে?
উত্তর : সাধারণ মানুষের পক্ষে যে কাজটি করা খুব কষ্টসাধ্য বলে মনে হয় তা পাঠানরা আপনা থেকেই করে দেয়। পাঠানরা এ রকম সাহায্যপরায়ণ বলে তাদের সাথে ভ্রমণে গেলে সুখ পাওয়া যায়।
গ) শেখ আহমদ আলী লেখককে উর্দু ও পশ্তু মিলিয়ে কী কী জিজ্ঞেস করলেন?
উত্তর : শেখ আহমদ আলী লেখককে উর্দু ও পশ্তু মিলিয়ে যা যা জিজ্ঞেস করলেন তার বাংলা অনুবাদ- ‘ভালো আছেন তো, মঙ্গল তো, সব ঠিক তো, বেজায় ক্লান্ত হয়ে পড়েন নি তো?’
ঘ) শেখ আহমদ আলী লেখককে কীভাবে স্টেশনের বাইরে নিয়ে এলেন?
উত্তর : শেখ আহমদ আলী পরম সমাদরে লেখককে খানিকটা কোলে-পিঠে, খানিকটা টেনে-হিঁচড়ে স্টেশনের বাইরে নিয়ে এলেন।
ঙ) আহমদ আলীর আচরণ দেখে লেখক মনে মনে কী ভাবছিলেন?
উত্তর : আহমদ আলীর কাছ থেকে উষ্ণ সংবর্ধনা পেয়ে লেখক মনে মনে ভাবছিলেন যে, পাঠান ভদ্রলোক কেন অচেনা এক বাঙালিকে এভাবে স্বাগত জানাচ্ছেন। আহমদ আলীর আচরণ কি কেবলই লোকদেখানো সামাজিকতা নাকি সত্যিই আন্তরিক- এই প্রশ্ন ছিল তাঁর মনে।
চ) পাঠান মুলুকে রাস্তায় কীভাবে গাড়ি চলে?
উত্তর : পাঠান মুলুকে কেউ কাউকে রাস্তা ছেড়ে দেয় না। এতে তাদের স্বাধীনতা থাকে না বলে তারা মনে করে। গাড়িগুলোও স্বাধীনভাবে এঁকে বেঁকে চলে।
ছ) আমাদের দেশের সাথে পাঠান মুলুকের গাড়ি চলার পার্থক্য কোথায়?
উত্তর : আমাদের দেশে মানুষজন সাধারণত গাড়ি চলার রাস্তা সাফ রাখে। তাই গাড়ি সোজা চলতে পারে। কিন্তু পাঠান মুলুকের মানুষ রাস্তায় যেরকম খুশি চলে। গাড়ির জন্য কেউ রাস্তা ছাড়ে না। সেখানকার গাড়িগুলোও স্বাধীনভাবে এঁকে বেঁকে চলে।

পাঠান মুলুকে মডেল টেস্ট

নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ে ১, ২, ৩ ও ৪ নম্বর প্রশ্নের উত্তর লেখ।
সর্দারজি যখন চুল বাঁধতে, দাড়ি সাজাতে আর পাগড়ি পাকাতে আরম্ভ করলেন তখনই বুঝতে পারলুম যে পেশাওয়ার পৌঁছতে আর মাত্র ঘণ্টাখানেক বাকি। গরমে, ধুলো, কয়লার গুঁড়োয়, কাবাব-রুটিতে আর স্নানাভাবে আমার গায়ে একরত্তি শক্তি নেই। বিছানা গুটিয়ে হোল্ডল বন্ধ করতেও পারছিলাম না। কিন্তু পাঠানের সঙ্গে ভ্রমণ করাতে সুখ আছে। আমাদের কাছে যেটা কঠিন বলে বোধ হয় পাঠান সেটা গায়ে পড়ে করে দেয়। ইতোমধ্যে গল্পে গল্পে জেনে গেছি পাঠান-মুলুকের প্রবাদ। দিনের বেলা পেশাওয়ার ইংরেজের, রাত্রে পাঠানের। এমন সময় দেখি গাড়ি এসে পেশাওয়ারেই দাঁড়াল। বাইরে ঠা-ঠা আলো, নয়টা বাজল কী করে, আর পেশাওয়ারে পৌঁছুলাম বা কী করে? এখন চেয়ে দেখি সত্যি নয়টা বেজেছে। প্ল্যাটফরমে জিনিসপত্র নামাবার ফাঁকে লক্ষ করলুম । ছয় ফুটি পাঠানের চেয়েও একমাথা উঁচু এক ভদ্রলোক আমার দিকে এগিয়ে আসছেন। তিনি এসে উত্তম উর্দুতে আমাকে বললেন, তাঁর নাম শেখ আহমদ আলী। আমি নিজের নাম বলে এক হাত এগিয়ে দিলাম তিনি তাঁর দুহাতে সেটি লুফে নিয়ে দিলেন এক চাপ- পরম উৎসাহে, গরম সংবর্ধনায়! হঠাৎ আমাকে দুহাত দিয়ে জড়িয়ে খাস পাঠানি কায়দায় আলিঙ্গন করতে আরম্ভ করেছেন। পাঠানের অভ্যর্থনা সম্পূর্ণ নির্জলা আন্তরিক। অতিথিকে বাড়িতে ডেকে নেওয়ার মতো আনন্দ পাঠান অন্য কোনো জিনিসে পায় না- আর সে অতিথি যদি বিদেশি হয় তাহলে তো আর কথাই নেই।
১. সঠিক উত্তরটি উত্তরপত্রে লেখ।
১) সর্দারজির সাজগোজ দেখে লেখক কী বুঝতে পারলেন?
(ক) পেশাওয়ার তখনও অনেক দূরে
(খ) পেশাওয়ারের কাছাকাছি চলে এসেছেন
(গ) পেশাওয়ারে চলে এসেছেন
(ঘ) পেশাওয়ার পার হয়ে গেছে
২) লেখক পাঠান মুলুকের প্রবাদটি সম্পর্কে কীভাবে জানতে পারলেন?
(ক) পত্রিকা পড়ে (খ) টিভি দেখে
(গ) বই পড়ে (ঘ) গল্প করতে করতে
৩) শেখ আহমদ আলী উচ্চতায় ছিল-
(ক) পাঁচ ফুট
(খ) ছয় ফুট
(গ) ছয় ফুটের চেয়ে সামান্য কম
(ঘ) ছয় ফুটের চেয়েও বেশি
৪) লেখকের প্রতি আহমদ আলীর আচরণ ছিল-
(ক) আন্তরিক (খ) লৌকিক
(গ) হৃদয়হীন (ঘ) অভদ্র
৫) শেখ আহমদ আলী লেখককে কোন কায়দায় আলিঙ্গন করলেন?
(ক) খাস বাঙালি কায়দায়
(খ) খাস জাপানি কায়দায়
(গ) খাস পাঠানি কায়দায়
(ঘ) খাস ফরাসি কায়দায়
উত্তর : ১) (খ) পেশাওয়ারের কাছাকাছি চলে এসেছেন; ২) (ঘ) গল্প করতে করতে; ৩) (ঘ) ছয় ফুটের চেয়েও বেশি; ৪) (ক) আন্তরিক; ৫) (গ) খাস পাঠানি কায়দায়।
২. নিচের শব্দগুলোর অর্থ লেখ।
ভ্রমণ, একরত্তি, নির্জলা, সংবর্ধনা, অভ্যর্থনা।
উত্তর : শব্দ অর্থ
ভ্রমণ – বেড়ানো।
একরত্তি – একটুকুও।
নির্জলা – নির্ভেজাল।
সংবর্ধনা – সম্মানের সাথে অভ্যর্থনা।
অভ্যর্থনা – আদর করে ডেকে আনা।
৩. নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর লেখ।
ক) লেখক কয়টায় পেশাওয়ার পৌঁছান?
উত্তর : লেখক রাত নয়টায় পেশাওয়ার পৌঁছান।
খ) লেখক পেশাওয়ার পৌঁছে অবাক হয়ে গিয়েছিলেন কেন?
উত্তর : লেখক রাত নয়টার দিকে পেশাওয়ার এসে পৌঁছালেও বাইরে চেয়ে দেখেন ঠা-ঠা আলো। এ কারণেই তিনি অবাক হয়ে গিয়েছিলেন।
গ) পাঠানরা কিসে সবচেয়ে বেশি আনন্দ পায়?
উত্তর : পাঠানরা অতিথিদের বাড়িতে আমন্ত্রণ করে নিয়ে যেতে সবচেয়ে বেশি আনন্দ পায়। আর সে অতিথি যদি কোনো বিদেশি হয় তাহলে তাদের আনন্দ আরও কয়েক গুণ বেড়ে যায়।
৪. অনুচ্ছেদটির মূলভাব লেখ।
উত্তর : পেশাওয়ার যাওয়ার পথে নানান ঝক্কি ঝামেলায় লেখক ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলেন। তবে সাহায্যপরায়ণ পাঠানরা ভ্রমণের সঙ্গী হিসেবে থাকায় তাঁকে সমস্যায় পড়তে হয়নি। পেশাওয়ারে পৌঁছলে শেখ আহমদ আলী নামক এক ভদ্রলোক লেখককে আন্তরিকভাবে অভ্যর্থনা জানালেন। পাঠান মুলুকে ভ্রমণে গিয়ে লেখক বুঝতে পেরেছিলেন যে পাঠানরা অত্যন্ত দিলখোলা ও অতিথিপরায়ণ জাতি।

এ অংশে পাঠ্য বই বহির্ভূত অনুচ্ছেদ/কবিতাংশ দেওয়া থাকবে। প্রদত্ত অনুচ্ছেদ/কবিতাংশটি পড়ে ৩ ধরনের প্রশ্নের উত্তর করতে হবে। এখানে থাকবে- (৫) বহুনির্বাচনি প্রশ্ন, (৬) শূন্যস্থান পূরণ ও (৭) প্রশ্নের উত্তর লিখন। প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর করতে হবে।
পাঠ্য বই বহির্ভূত অনুচ্ছেদ/কবিতাংশ পরীক্ষায় কমন পড়বে না। তাই এটি এখানে দেওয়া হলো না। তবে পরীক্ষার প্রশ্নের পূর্ণাঙ্গ নমুনা (ঋড়ৎসধঃ) বোঝার সুবিধার্থে বইয়ের প্রথম দুটি অধ্যায়ে পাঠ্য বই বহির্ভূত অংশটি সংযোজন করা হয়েছে।
……………………………………………………………..
৮. নিচের যুক্তবর্ণগুলো কোন কোন বর্ণ দিয়ে গঠিত ভেঙে দেখাও এবং প্রতিটি যুক্তবর্ণ দিয়ে একটি করে শব্দ গঠন করে বাক্যে প্রয়োগ দেখাও।
ম্ভ, ণ্ট, ক্ত, ক্ষ, ন্ত।
উত্তর :
ম্ভ = ম + ভ – সম্ভব
– আমার যাওয়া সম্ভব নয়।
ণ্ট = ণ + ট – ঘণ্টা
– স্কুলে ছুটির ঘণ্টা বেজে গেছে।
ক্ত = ক + ত – রক্ত
– মানুষের রক্তের রং লাল।
ক্ষ = ক + ষ – অক্ষর
– তার অক্ষর জ্ঞান ভালো নয়।
ন্ত = ন + ত – অন্ত
– আমার কাজের অন্ত নেই।
৯. সঠিক স্থানে বিরামচিহ্ন বসিয়ে অনুচ্ছেদটি আবার লেখ।
আমি তখন শুধু ভাবছি ভদ্রলোক আমাকে চেনেন না জানেন না আমি বাঙালি তিনি পাঠান তবে যে এত সংবর্ধনা করছেন তার মানে কী এর কতটা আন্তরিক আর কতটা লৌকিকতা
উত্তর : আমি তখন শুধু ভাবছি ভদ্রলোক আমাকে চেনেন না জানেন না। আমি বাঙালি তিনি পাঠান। তবে যে এত সংবর্ধনা করছেন তার মানে কী? এর কতটা আন্তরিক, আর কতটা লৌকিকতা?
১০. এককথায় প্রকাশ কর।
ক) স্নানের অভাব।
খ) যা ফুরিয়ে যায় না।
গ) সম্মানের সাথে অভ্যর্থনা।
ঘ) যে ব্যক্তি বিপদে পড়েছে।
ঙ) আদর করে ডেকে আনা।
উত্তর : ক) স্নানাভাব; খ) অফুরন্ত; গ) সংবর্ধনা; ঘ) আর্ত, বিপদগ্রস্ত; ঙ) অভ্যর্থনা।
১১. নিচের শব্দগুলোর বিপরীত শব্দ লেখ।
সুখ, দিন, উত্তম, সম্পূর্ণ, স্বাধীন।
উত্তর :
মূল শব্দ বিপরীত শব্দ মূল শব্দ বিপরীত শব্দ
সুখ – দুঃখ সম্পূর্ণ – অসম্পূর্ণ
দিন – রাত স্বাধীন – পরাধীন
উত্তম – অধম
১২. নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
(গদ্যের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়)

Leave a Reply