অধ্যায় ১৫ আমাদের মুক্তিযুদ্ধ
অধ্যায়টি পড়ে জানতে পারব
১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের কথা
১৯৬৯ সালের গণ-অভ্যুত্থানের ঘটনা
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে
অধ্যায়টির মূলভাব জেনে নিই
১৯৪৭ থেকে ১৯৭১ পর্যন্ত আজকের এই বাংলাদেশ নামের ভ‚খণ্ডটি ছিল পাকিস্তানের অধীন। দেশটির রাজধানী ছিল পশ্চিম পাকিস্তানে। শুরু থেকেই পশ্চিম পাকিস্তানিরা বাঙালিদের নানাভাবে শোষণ ও নির্যাতন করত। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলনের যাত্রা সূচিত হয়। এরপর ১৯৫৪-এর নির্বাচনে যুক্তফ্রন্টের জয়লাভ, ১৯৬৬-তে ৬-দফা দাবি পেশ, ৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থান এবং ১৯৭০-এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জয়লাভের মধ্য দিয়ে বারবার বাঙালিরা পশ্চিম পাকিস্তানিদের বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছে। কিন্তু সব চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ডাক দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে দীর্ঘ নয় মাস ধরে মুক্তিযুদ্ধ করে ত্রিশ লক্ষ মানুষের রক্তের বিনিময়ে বাঙালি দেশের স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনে।
অনুশীলনীর প্রশ্ন ও উত্তর
অল্প কথায় উত্তর দাও :
১. ভাষা আন্দোলন কখন হয়েছিল?
উত্তর : ভাষা আন্দোলন ১৯৫২ সালের ২১-এ ফেব্রæয়ারিতে হয়েছিল।
২. ছয়-দফা দাবি কখন উত্থাপন করা হয়েছিল?
উত্তর : ছয়-দফা দাবি ১৯৬৬ সালে উত্থাপন করা হয়েছিল।
৩. বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়া হয় কবে?
উত্তর : বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়া হয় ১৯৭১ সালের ২৬-এ মার্চের প্রথম প্রহরে।
৪. বাংলার স্বাধীনতা যুদ্ধ কয় মাস স্থায়ী হয়েছিল?
উত্তর : বাংলার স্বাধীনতা যুদ্ধ নয় মাস স্থায়ী হয়েছিল।
প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
১. ১৯৭০ সালের নির্বাচন আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কেন?
উত্তর : বাঙালি জাতীয়তাবাদ ও স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের পেছনে ১৯৭০ সালের নির্বাচনের গুরুত্ব অনেক। ১৯৫৪ সালের নির্বাচনের পর এটিই ছিল সবচেয়ে বেশি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন। ১৯৪৭ সালের পর থেকে বাঙালি জাতি ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি সর্বক্ষেত্রে যে স্বাতন্ত্র্য দাবি করে আসছিল, ১৯৭০ সালের নির্বাচনে বাঙালির সে স্বাতন্ত্র্যবাদের বিজয় ঘটে। এছাড়া পূর্বাঞ্চলের জনগণ স্বায়ত্তশাসনের যে দাবি করে আসছিল তা পশ্চিমাঞ্চলের সরকার অবৈধ বলে ঘোষণা করে। এ নির্বাচনের ফলাফলে ছয় দফাভিত্তিক স্বায়ত্তশাসনের দাবির বৈধতা প্রমাণিত হয়। সর্বোপরি ইয়াহিয়া খানের ঘোষণা অনুযায়ী নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের সময় আসলে তিনি তা না করে নিরীহ বাঙালির উপর সেনাবাহিনীকে লেলিয়ে দেন। শুরু হয় বাংলার মানুষের মুক্তির সশস্ত্র সংগ্রাম, যার পরিণতিতে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পৃথিবীর বুকে বাংলাদেশ নামে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র জন্ম নেয়।
২. বঙ্গবন্ধুকে কেন কারাগারে বন্দী করা হয়েছিল?
উত্তর : ১৯৬৬ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালির মুক্তির দাবি ছয় দফা উত্থাপন করেন। এর মাধ্যমে পূর্ব পাকিস্তানে স্বায়ত্তশাসনের দাবি তোলেন বঙ্গবন্ধু। এ কারণে বঙ্গবন্ধুসহ আরও অনেকের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়। যা আগরতলা মামলা নামে পরিচিত। এই মামলার অন্যতম আসামি হওয়ার কারণে বঙ্গবন্ধুকে কারগারে বন্দী করা হয়েছিল।
অতিরিক্ত প্রশ্ন ও উত্তর
বাম অংশের সাথে ডান অংশ মিলকরণ :
ক) পাকিস্তানের রাজধানী ছিল
খ) ভাষা শহিদদের স্মরণে ঢাকায়
গ) ২১-এ ফেব্রæয়ারি হলো
ঘ) ১৯৬৬ সালে পূর্ব পাকিস্তানের স্বায়ত্তশাসনের দাবি তোলেন।
ঙ) ২৬-এ মার্চ শুরু হয় আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রাম।
বঙ্গবন্ধু।
পশ্চিম পাকিস্তানে।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। শহিদমিনার গড়ে তোলা হয়।
উত্তর :
ক) পাকিস্তানের রাজধানী ছিল পশ্চিম পাকিস্তানে।
খ) ভাষা শহিদদের স্মরণে ঢাকায় শহিদমিনার গড়ে তোলা হয়।
গ) ২১-এ ফেব্রæয়ারি হলো আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস।
ঘ) ১৯৬৬ সালে পূর্ব পাকিস্তানের স্বায়ত্তশাসনের দাবি তোলেন বঙ্গবন্ধু।
ঙ) ২৬-এ মার্চ শুরু হয় আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রাম।
শুদ্ধ/অশুদ্ধ নির্ণয় কর :
ক) রফিক, সালাম, বরকত গণ-অভ্যুত্থানে শহিদ হন।
খ) ২১-এ ফেব্রæয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে সারা বিশ্বে পালিত হয়।
গ) বন্দী সার্জেন্ট জহুরুল হক কুমিল্লা সেনানিবাসে শহিদ হন।
ঘ) ব্রিটিশ শাসকগোষ্ঠী যুক্তফ্রন্ট ভেঙে দেয়।
ঙ) ২৬ই মার্চ শুরু হয় আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রাম।
উত্তর : ক) ‘অশুদ্ধ’ খ) ‘শুদ্ধ’ গ) ‘অশুদ্ধ’ ঘ) ‘শুদ্ধ’ ঙ) ‘শুদ্ধ’।
শূন্যস্থান পূরণ কর :
ক) ১৯৫৪ সালে প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে বিজয়ী হয়।
খ) পূর্ব পাকিস্তানের দাবি তোলেন বঙ্গবন্ধু।
গ) পাকিস্তান ছিল অধ্যুষিত।
ঘ) ১৯৭১ সালের ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে এক বিশাল জনসভা অনুষ্ঠিত হয়।
ঙ) ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট মাস মুক্তিযুদ্ধ ছিল।
উত্তর : ক) যুক্তফ্রন্ট; খ) স্বায়ত্তশাসনের; গ) মুসলিম; ঘ) ৭ই মার্চ; ঙ) নয়।
বহুনির্বাচনি প্রশ্ন ও উত্তর
ভাষা আন্দোলন : ১৯৫২
সাধারণ
১. ১৯৪৭ থেকে ১৯৭১ পর্যন্ত আজকের এই বাংলাদেশ কোন রাষ্ট্রের অধীনে ছিল? ছ
ক ভারতের খ পাকিস্তানের
গ আফগানিস্তানের ঘ মিয়ানমারের
২. ১৯৭১-এর ১৬ই ডিসেম্বরের পূর্বে পাকিস্তান রাষ্ট্রটি কয়টি অংশে বিভক্ত ছিল? চ
ক ২টি খ ৩টি
গ ৪টি ঘ ৫টি
৩. কোন আন্দোলনকে কেন্দ্র করে বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলন শুরু হয়? ঝ
ক ৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান খ ৬ দফা আন্দোলন
গ ১১ দফা আন্দোলন ঘ ভাষা আন্দোলন
৪. ২১-এ ফেব্রæয়ারিকে কী দিবস হিসেবে আমরা পালন করি? জ
ক বিজয় দিবস খ স্বাধীনতা দিবস
গ শহিদ দিবস ঘ আন্দোলনের দিবস
৫. কত সালে ভাষা আন্দোলন হয়েছিল? জ
ক ১৯৪৭ সাল খ ১৯৫০ সাল
গ ১৯৫২ সাল ঘ ১৯৫৪ সাল
যোগ্যতাভিত্তিক
শিখনফল : আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের তাৎপর্য বুঝতে পারব।
৬. বাঙালি হিসেবে আমরা কেন ২১-এ ফেব্রæয়ারিকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করি? জ
ক ভাষা শহিদদের উদ্দেশে প্রার্থনার জন্য
খ বাংলা ভাষার গুরুত্ব উপলব্ধির জন্য
গ মাতৃভাষার মর্যাদা ধরে রাখার জন্য
ঘ বাংলা ভাষার তাৎপর্য বিশ্বব্যাপী প্রচারের জন্য
৭. শহিদ দিবসে তুমি কীভাবে শহিদদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে থাক? ঝ
ক সমাবেশ করে খ মিছিল করে
গ গান গেয়ে ঘ ফুল দিয়ে
গণ অভ্যুত্থান : ১৯৬৯
সাধারণ
৮. সার্জেন্ট ছিলেন কে? চ
ক জহুরুল হক খ ড. শামসুজ্জোহা
গ আসাদ ঘ মতিউর
৯. ১৯৫৪ সালের পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে বিজয়ী হয় কোন দল? জ
ক মুসলিম লীগ খ আওয়ামী মুসলিম লীগ
গ যুক্তফ্রন্ট ঘ কৃষক শ্রমিক পার্টি
১০. ১৯৬৬ সালে কে ৬ দফা দাবি পেশ করেন? চ
ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান
খ এ কে ফজলুল হক
গ হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী
ঘ ড. শামসুজ্জোহা
১১. আগরতলা মামলাটি ছিলÑ চ
ক ষড়যন্ত্রমূলক খ উদ্দেশ্যহীন
গ যথার্থ ঘ সম্মানজনক
১২. কে ১৯৬৯ সালের গণ অভ্যুত্থানে শহিদ হন? ঝ
ক রফিক খ জব্বার
গ সালাম ঘ আসাদ
১৩. ১৯৭০ সালের নির্বাচনে জয়লাভ করেছিল কোন দল? চ
ক আওয়ামী লীগ খ মুসলিম লীগ
গ ন্যাপ ঘ পাকিস্তান পিপলস পার্টি
যোগ্যতাভিত্তিক
শিখনফল : গণ অভ্যুত্থানের শহিদের সম্পর্কে জানতে পারব।
১৪. তুমি উপর্যুক্ত ব্যক্তির আত্মদানের কারণ কী বলে মনে কর? ছ
ক বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা লাভের উদ্দেশ্যে
খ বঙ্গবন্ধুসহ সকল কারবন্দীকে মুক্ত করার উদ্দেশ্যে
গ বাংলাকে শত্রæমুক্ত করার উদ্দেশ্যে
ঘ ৬ দফা দাবি বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে
শিখনফল : আগরতলা মামলার প্রেক্ষাপট জানতে পারব
১৫. বঙ্গবন্ধুসহ আরও অনেকের বিরুদ্ধে কেন আগরতলা মামলা দেওয়া হয়? ছ
ক ভাষা আন্দোলনের জন্য খ ৬ দফা দাবির জন্য
গ ১১ দফা দাবির জন্য ঘ গণ অভ্যুত্থানের জন্য
শিখনফল : ৬ দফা দাবি পেশের কারণ জানতে পারব
১৬. ৬-দফা দাবি পেশ করা হয় কেন? ঝ
কবাংলা ভাষা প্রতিষ্ঠার জন্য
খ লুটপাট বন্ধ করার জন্য
গ পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তান এক করার জন্য
ঘ বাঙালির মুক্তির জন্য
১৯৭১ সালের মুক্তিয্দ্ধু
সাধারণ
১৭. বঙ্গবন্ধু ৭ই মার্চের ভাষণ কোথায় দিয়েছিলেন? ছ
ক. রমনা পার্কে খ. রেসকোর্স ময়দানে
গ. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘ. লাহোরে
১৮. কার ডাকে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ একযোগে সাড়া দেয়? জ
ক জিয়ার খ ভাসানীর
গ বঙ্গবন্ধুর ঘ ওসমানীর
১৯. বাঙালিদের পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধে কারা অংশগ্রহণ করেছিল? ছ
ক পশ্চিম পাকিস্তানি জনতা খ ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী
গ রাজাকার ঘ আলবদর
যোগ্যতাভিত্তিক
শিখনফল : পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর গণহত্যা সম্পর্কে জানতে পারব।
২০. ২৫ মার্চের রাতকে কালো রাত বলা হয় কেন? ছ
ক ভীষণ অন্ধকার থাকার কারণে
খ পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর গণহত্যার কারণে
গ ঐ রাতে বিদ্যুৎ না থাকার কারণে
ঘ বাঙালি বুদ্ধিজীবী হত্যার কারণে
শিখনফল : বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণের গুরুত্ব বুঝতে পারব।
২১. বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ বাঙালির নিকট অতি গুরুত্বপূর্ণ হওয়ার কারণ- জ
ক অর্থনৈতিক মুক্তির ঘোষণা থাকায়
খ বিজয়ের ঘোষণা থাকায়
গ মুক্তি সংগ্রামের ঘোষণা থাকায়
ঘ বেকারত্ব দূর করার ঘোষণা থাকায়
সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের উত্তরঃ
১. কোন আন্দোলনকে কেন্দ্র করে বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলনের সূচনা হয়?
উত্তর : ভাষা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলনের সূচনা হয়।
২. ড. শামসুজ্জোহা কোন আন্দোলনে শহিদ হন?
উত্তর : ড. শামসুজ্জোহা ৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থানের সময় শহিদ হন।
৩. ১৯৫৪ সালের পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে কোন দল বিজয়ী হয়?
উত্তর : ১৯৫৪ সালের পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট বিজয়ী হয়।
৪. বঙ্গবন্ধু কত সালে ৬ দফা দাবি পেশ করেন?
উত্তর : বঙ্গবন্ধু ১৯৬৬ সালে ৬ দফা দাবি পেশ করেন।
৫. কোন আন্দোলনের ফলে আইয়ুব খান পদত্যাগে বাধ্য হন?
উত্তর : ১৯৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থানের ফলে আইয়ুব খান পদত্যাগে বাধ্য হন।
৬. বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী সরকার কবে গঠিত হয়?
উত্তর : ১৯৭১ সালের ১০ই এপ্রিল বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী সরকার গঠিত হয়।
৭. ১৯৭০-এর নির্বাচনের ফলাফল কী ছিল?
উত্তর : ১৯৭০ সালের নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ বিপুল ভোটে জয়লাভ করে।
৮. ১৯৫২ সালের ২১-এ ফেব্রæয়ারি কী হয়েছিল?
উত্তর : ১৯৫২ সালের ২১-এ ফেব্রæয়ারি বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে ঢাকায় এক মিছিল বের হয়। সেই মিছিলে পুলিশের গুলিতে রফিক, সালাম, জব্বার, বরকতসহ আরও অনেকে শহিদ হন।
৯. ১৯৭১-এর ৭ই মার্চ কী কারণে বিখ্যাত?
উত্তর : ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ ঢাকায় রেসকোর্স ময়দানে এক বিশাল জনসভায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ডাক দেন। এ কারণেই ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ বিখ্যাত।
১০. ১৬ই ডিসেম্বর বাংলাদেশের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ কেন?
উত্তর : ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ নামে একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের অভ্যুদয় ঘটে। এ কারণে দিনটি বাংলাদেশের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ।
কাঠামোবদ্ধ প্রশ্ন ও উত্তর
ন্ধ সাধারণ
১. ২৫শে মার্চকে কালো রাত বলা হয় কেন? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ ইয়াহিয়ার নির্দেশে নিরীহ বাঙালিদের উপর আতর্কিত হামলার মধ্য দিয়ে পাকিস্তানি বাহিনীর হত্যাযজ্ঞ শুরু হয়। এই অভিযানের নাম দেওয়া হয়েছিল ‘অপারেশন সার্চলাইট’। সেদিন এক রাতেই ঢাকাসহ সারা দেশে অসংখ্য ছাত্র, শিক্ষক, পুলিশ, ইপিআর ও সাধারণ নারী-পুরুষকে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী হত্যা করে। এ কারণেই ২৫শে মার্চ বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি কালো রাত হিসেবে পরিচিত।
২. ১৯৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থান সম্পর্কে লেখ।
উত্তর : ১৯৬৬ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালির মুক্তির দাবি ৬-দফা পেশ করেন। ৬-দফার ভিত্তিতে শাসনব্যবস্থা দাবি করায় বঙ্গবন্ধুসহ আরও অনেকের বিরুদ্ধে আগরতলা মামলা দিয়ে তাঁদের কারাবন্দী করা হয়। বঙ্গবন্ধুসহ সকল কারাবন্দীকে মুক্ত করার জন্য ছাত্র-জনতা আন্দোলন শুরু করে এবং তা একসময় গণ-অভ্যুত্থানে রূপ নেয়। এই আন্দোলনই ৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থান নামে খ্যাত। এই আন্দোলন চলাকালীন ঢাকা সেনানিবাসে আগরতলা মামলায় বন্দী সার্জেন্ট জহুরুল হক এবং পুলিশের গুলিতে শহিদ হন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. শামসুজ্জোহা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আসাদ এবং নবকুমার ইনস্টিটিউটের ছাত্র মতিউর। এই আন্দোলনের চাপেই পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট স্বৈরশাসক আইয়ুব খান পদত্যাগে বাধ্য হন।
৩. পশ্চিম পাকিস্তানিরা কীভাবে বাঙালিদের শোষণ করত?
উত্তর : পশ্চিম পাকিস্তানিরা বিভিন্নভাবে বাঙালিদের শোষণ করত। সে সময় সমগ্র পাকিস্তানের রাজধানী ছিল পশ্চিম পাকিস্তানে। শাসনক্ষমতাও ছিল পশ্চিম পাকিস্তানের নেতাদের হাতে। কাজেই পশ্চিম পাকিস্তানিরাই শিক্ষা, চাকরি, ব্যবসায়-বাণিজ্য সব ক্ষেত্রেই বেশি সুযোগ-সুবিধা পেত। শুরু থেকেই পশ্চিম পাকিস্তানিরা পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালিদের নানাভাবে নির্যাতন করত। তারা পূর্ব বাংলার সম্পদ লুটপাট করত। বাঙালি জাতিকে যথার্থ সম্মান করত না। এমনকি আমাদের মাতৃভাষা বাংলায় কথা বলার অধিকার পর্যন্ত দিতে চায়নি।
ন্ধ যোগ্যতাভিত্তিক
৪.
ছবি : বঙ্গবন্ধুর ভাষণ
ইতিহাসে উপর্যুক্ত ভাষণটি কী নামে পরিচিত? ভাষণে বঙ্গবন্ধু কী বলেন? বাঙালি জীবনে উক্ত ভাষণের তাৎপর্য তিনটি বাক্যে উল্লেখ কর।
উত্তর : ইতিহাসে উপর্যুক্ত ভাষণটি ৭ই মার্চের ভাষণ নামে পরিচিত।
ভাষণে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন- “এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম”
বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণের তাৎপর্য হলো –
১। এই ভাষণের মাধ্যমে বাঙালি জাতি একটি স্বাধীন দেশের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করতে পারে।
২। বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণে বাঙালি জাতি স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রেরণা খুঁজে পায়।
৩। ৭ই মার্চের ভাষণ ছিল বাঙালি জাতির জন্য সুষ্ঠু দিকনির্দেশনা।