অধ্যায় ১৪ আমাদের ইতিহাস
অধ্যায়টি পড়ে জানতে পারব
প্রাচীন যুগের উল্লেখযোগ্য রাজাদের সম্পর্কে
বাংলায় মুসলিম শাসন প্রতিষ্ঠার ইতিহাস
মধ্যযুগের উল্লেখযোগ্য শাসকদের ইতিহাস
প্রাচীন যুগ ও মধ্যযুগের সামাজিক ও অর্থনৈতিক জীবন সম্পর্কে
অধ্যায়টির মূলভাব জেনে নিই
প্রাচীন যুগে এই বাংলায় বেশ কিছু বড় রাজা ও তাঁদের রাজত্ব ছিল। এসব রাজার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকজন হলেন শশাংক, গোপাল, ল²ণ সেন প্রমুখ। প্রাচীন যুগের রাজাগণের আমলে সমাজজীবনের মূল ভিত্তি ছিল গ্রাম। হিন্দু ও বৌদ্ধ এ দুটিই ছিল প্রধান ধর্ম। অর্থনীতি ছিল মূলত কৃষিনির্ভর। তবে এর পাশাপাশি কুটিরশিল্পের প্রচলনও হয়। ১২০৪ খ্রিষ্টাব্দে তুর্কি সৈনিক বখতিয়ার খিলজীর বাংলা দখলের মাধ্যমে এ অঞ্চলে মুসলিম শাসনের সূত্রপাত ঘটে। এ পর্বটি মধ্যযুগের সূচনাকাল হিসেবে পরিচিত। এ সময়কার শাসকগণের মধ্যে শামসুদ্দিন ইলিয়াস শাহ, বার ভূঁইয়া, শায়েস্তা খান প্রমুখ উল্লেখযোগ্য। মধ্যযুগে হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধসহ অন্যান্য স¤প্রদায়ের মানুষজনের ভেতর স¤প্রীতি বিরাজমান ছিল। এ যুগেও অর্থনীতি ছিল কৃষিভিত্তিক। তবে নানা রকম শিল্পপণ্যের জন্যও এ সময় বাংলার কদর ছিল।
অনুশীলনীর প্রশ্ন ও উত্তর
অল্প কথায় উত্তর দাও :
১. বাংলার প্রাচীন যুগের একজন রাজার নাম লেখ।
উত্তর : শশাংক হলেন বাংলার প্রাচীন যুগের রাজা।
২. কোন শতাব্দীতে বাংলায় মুসলিম শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়?
উত্তর : তেরশ শতাব্দীতে বাংলায় মুসলিম শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়।
৩. বাংলার মধ্যযুগের একজন শাসকের নাম লেখ।
উত্তর : বাংলার মধ্যযুগের একজন শাসক হলেন ঈসা খাঁ।
৪. কোন শতাব্দী থেকে বাংলার সাহিত্যচর্চা বিকশিত হয়?
উত্তর : পনেরো শতাব্দী থেকে বাংলার সাহিত্যচর্চা বিকশিত হয়।
প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
১. মধ্যযুগে বাংলার ধর্মীয় আচার-আচরণের বিবরণ দাও।
উত্তর : ১২০৪ খ্রিষ্টাব্দে বখতিয়ার খিলজীর বাংলায় মুসলিম শাসনের মাধ্যমে মধ্যযুগের সূচনা হয়। এ যুগে হিন্দু ও বৌদ্ধ ধর্মের পাশাপাশি ইসলাম ধর্মের ব্যাপক বিস্তার ঘটে। সমাজে সকল ধর্মের মানুষ মিলেমিশে বাস করত। ফলে বাংলার একটা মিলিত সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্য গড়ে ওঠে।
২. মধ্যযুগে বাংলার ব্যবসা-বাণিজ্যের বিবরণ দাও।
উত্তর : মধ্যযুগে অর্থনীতি কৃষিভিত্তিক হলেও এ যুগে ব্যবসায়-বাণিজ্যের বিশেষ উন্নতি ঘটে। রপ্তানি বাণিজ্য এ সময় বেশি ছিল। বাংলার বণিকেরা রেশম, বিলাস সামগ্রী, তুলা ও নানাবিধ মূল্যবান পাথর আমদানি করতেন। আর বাংলা থেকে রপ্তানি হতো চাল, চিনি, আদা, হলুদ, মসলিন ও অন্যান্য ধরনের কাপড়। বাণিজ্যের কেন্দ্র হিসেবে চট্টগ্রাম এ সময় সুপরিচিত ছিল।
অতিরিক্ত প্রশ্ন ও উত্তর
বাম অংশের সাথে ডান অংশ মিলকরণ :
ক) অষ্টম শতকে বাংলার সিংহাসনে বসেন
খ) সেন রাজবংশের চতুর্থ রাজা ছিলেন
গ) সপ্তম শতকে বাংলার প্রভাবশালী রাজা ছিলেন
ঘ) বারো ভূঁইয়াদের নেতা ছিলেন
ঙ) ১৭০০ খ্রিষ্টাব্দে বাংলার সুবেদার ছিলেন রাজা ল²ণ সেন।
শায়েস্তা খান।
রাজা গোপাল।
শশাংক।
ঈসা খাঁ ।
উত্তর :
ক) অষ্টম শতকে বাংলার সিংহাসনে বসেন রাজা গোপাল।
খ) সেন রাজবংশের চতুর্থ রাজা ছিলেন রাজা ল²ণ সেন।
গ) সপ্তম শতকে বাংলার প্রভাবশালী রাজা ছিলেন শশাংক।
ঘ) বারো ভ‚ঁইয়াদের নেতা ছিলেন ঈসা খাঁ।
ঙ) ১৭০০ খ্রিষ্টাব্দে বাংলার সুবেদার ছিলেন শায়েস্তা খান।
শুদ্ধ/অশুদ্ধ নির্ণয় কর :
ক) মধ্যযুগে বাংলার অর্থনীতি ছিল শিল্পনির্ভর।
খ) বাংলার তুলা খুবই বিখ্যাত ছিল।
গ) প্রাচীনকালে বাংলার বণিকরা সড়কপথে বিদেশিদের সাথে বাণিজ্য করত।
ঘ) মল্লযুদ্ধ ও কুস্তি খেলা এক প্রকার বিনোদনের নাম।
ঙ) ল²ণ সেন ছিলেন একজন সুপণ্ডিত ও কবি।
উত্তর : ক) ‘অশুদ্ধ’ খ) ‘শুদ্ধ’ গ) ‘অশুদ্ধ’ ঘ) ‘শুদ্ধ’ ঙ) ‘শুদ্ধ’।
শূন্যস্থান পূরণ কর :
ক) রাজা গোপাল প্রতিষ্ঠাতা।
খ) রাজা ল²ণ সেন বাংলার রাজত্ব করেন।
গ) কৃষিকাজই ছিল প্রাচীন মানুষের প্রধান পেশা।
ঘ) শায়েস্তা খান এ অঞ্চল থেকে বিতাড়িত করেন।
ঙ) মধ্যযুগে বাংলায় গড়ে উঠেছিল ঐতিহ্যবাহী ।
উত্তর : ক) পাল রাজবংশের; খ) দ্বাদশ শতকে; গ) বাংলার; ঘ) জলদস্যুদের; ঙ) কুটিরশিল্প।
বহুনির্বাচনি প্রশ্ন ও উত্তর
প্রাচীন যুগ
সাধারণ
১. সেন বংশের শেষ উল্লেখযোগ্য রাজা কে? ছ
ক. গোপাল খ. ল²ণ সেন
গ. শশাংক ঘ. কেদার রায় ]
২. প্রাচীন যুগের শাসক কে? ঝ
ক. বখতিয়ার খিলজী খ. ঈসা খাঁ
গ. ইলিয়াস শাহ্ ঘ. গোপাল
৩. পাল রাজবংশের শ্রেষ্ঠ রাজা কে ছিলেন? ছ
ক মহীপাল খ ধর্মপাল
গ দেবপাল ঘ রাজপাল
৪. বখতিয়ার খিলজী কত সালে বাংলার সিংহাসন দখল করেন? ঝ
ক ১২০১ খ ১২০২
গ ১২০৩ ঘ ১২০৪
৫. শশাংকের রাজধানী কোথায় ছিল? ঝ
ক উত্তর ভারতে খ হরিয়ানায়
গ দিল্লিতে ঘ কর্ণসুবর্ণে
৬. পাল রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা কে? চ
ক গোপাল খ ধর্মপাল
গ দেবপাল ঘ ভ‚পাল
৭. পাল বংশ প্রায় কত বছর বাংলায় রাজত্ব করেছিল? জ
ক ২০০ খ ৩০০
গ ৪০০ ঘ ৫০০
৮. প্রাচীন বাংলার শেষ রাজা কে ছিলেন? জ
ক শশাংক খ গোপাল
গ ল²ণ সেন ঘ বিজয় সেন
৯. কোন রাজবংশের শাসনামলে সর্বপ্রথম পুরো বাংলা জুড়ে একক স্বাধীন রাজ্য প্রতিষ্ঠিত হয়? ছ
ক পাল রাজবংশ
খ সেন রাজবংশ
গ বারো ভ‚ঁইয়ার শাসনামল
ঘ মুসলিম শাসনামল
১০. প্রাচীনকালে বাঙালির প্রধান খাদ্য ছিল কোনটি? চ
ক ভাত খ মাছ
গ রুটি ঘ সবজি
১১. প্রাচীনকাল থেকেই কোন বন্দর বিখ্যাত ছিল? জ
ক মংলা খ নারায়ণগঞ্জ
গ চট্টগ্রাম ঘ ভৈরব
যোগ্যতাভিত্তিক
শিখনফল : প্রাচীন যুগের বিভিন্ন্ ঐতিহ্য সম্পর্কে জানতে পারব।
১২. তুমি কেন পাল বংশকে প্রাচীন যুগের শ্রেষ্ঠ রাজবংশ বলে মনে কর? জ
ক বৌদ্ধ ধর্মের প্রসারতার কারণে
খ বাংলার স্থিতিশীল অবস্থা বজায় রাখার কারণে
গ বাংলার প্রায় ৪০০ বছর রাজত্ব করার কারণে
ঘ সকল ধর্মাবলম্বী প্রজার প্রতি সমান পৃষ্ঠপোষকতার কারণে
মধ্যযুগ
সাধারণ
১৩. বারো ভ‚ঁইয়ারা কোন যুগের? চ
ক. মধ্যযুগ খ. প্রাচীন যুগ
গ. আধুনিক যুগ ঘ. সমসাময়িক যুগের
১৪. মধ্যযুগে কোন ধর্মের বিস্তার ঘটে? ছ
ক. হিন্দু খ. ইসলাম
গ. বৌদ্ধ ঘ. খ্রিষ্টান
১৫. বখতিয়ার খিলজী প্রথমে কী ছিলেন? ঝ
ক রাজা খ সেনাপতি
গ উজির ঘ সৈনিক
১৬. কোন সম্রাটের শাসনামলে বাংলায় মোগল শাসনের সূচনা হয়? জ
ক বাবর খ শাহজাহান
গ আকবর ঘ জাহাঙ্গীর
১৭. সোনারগাঁয়ের জমিদার কে ছিলেন? ছ
ক মুসা খান খ ঈসা খাঁ
গ ফতেহ খান ঘ কেদার রায়
১৮. শায়েস্তা খানের আমল কিসের জন্য বিখ্যাত ছিল? ঝ
ক যুদ্ধ জয়ের জন্য
খ শিল্প-সাহিত্যের জন্য
গ জ্ঞানচর্চার জন্য
ঘ সুশাসনের জন্য
১৯. মসলিন কাপড় বানানো হতো কী দিয়ে? ঝ
ক রেশম খ পশম
গ পাট ঘ তুলার সুতা
২০. মধ্যযুগে কোন পণ্য বিদেশ থেকে আমদানি হতো? জ
ক চাল খ হলুদ
গ রেশম ঘ মসলিন
যোগ্যতাভিত্তিক
শিখনফল : ভাষা ও সাহিত্যের বিকাশ সম্পর্কে জানব।
২১. বিভিন্ন যুগে শাসকের আনুকূল্যে বিভিন্ন রকমের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক পরিবর্তন দেখা যায়। এক্ষেত্রে মধ্যযুগে কোন বৈশিষ্ট্য লক্ষণীয়? জ
ক ইসলাম ধর্মের প্রসার
খ নৃত্যশিল্পের প্রসার
গ বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের প্রসার
ঘ ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্যের প্রসার
শিখনফল : ভিন্ন ধর্মমত হলেও সংস্কৃতিতে এক হওয়ার উপায় জানতে পারব।
২২. মধ্যযুগে বাংলার একটি মিলিত সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্য গড়ে ওঠে। এর মূল কারণ হলোÑ চ
ক ধর্মীয় স¤প্রীতি খ শিক্ষার প্রসার
গ অর্থনৈতিক উন্নতি ঘ বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রা
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর
১. বখতিয়ার খিলজী কখন ও কীভাবে বাংলার সিংহাসন দখল করেন?
উত্তর : তুর্কি সৈনিক বখতিয়ার খিলজী ১২০৪ খ্রিষ্টাব্দে রাজা ল²ণ সেনকে পরাজিত করে বাংলার সিংহাসন দখল করেন।
২. প্রাচীন বাংলায় প্রচুর ফসল উৎপাদনের কারণ কী?
উত্তর : উর্বর মাটি ও জলবায়ু দুটিই কৃষি উপযোগী হওয়ার কারণে প্রাচীন বাংলায় প্রচুর ফসল উৎপন্ন হতো।
৩. প্রাচীন যুগে বাংলার মানুষের প্রধান পেশা কী ছিল?
উত্তর : প্রাচীন যুগে বাংলার মানুষের প্রধান পেশা ছিল কৃষিকাজ।
৪. প্রাচীনকালে বাংলার মানুষ কীভাবে বিদেশের সাথে বাণিজ্য করতেন?
উত্তর : প্রচীনকালে বাংলার মানুষ সমুদ্রপথে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে বিদেশের সাথে বাণিজ্য করতেন।
৫. শামসুদ্দিন ইলিয়াস শাহ কত সালে বাংলার সিংহাসন দখল করেন?
উত্তর : শামসুদ্দিন ইলিয়াস শাহ ১৪০০ খ্রিষ্টাব্দে বাংলার সিংহাসন দখল করেন।
কাঠামোবদ্ধ প্রশ্ন ও উত্তর
ন্ধ সাধারণ
১. গোপাল কোন রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা? তার সময়ে বাংলার সামাজিক জীবনের চারটি দিক উল্লেখ কর।
উত্তর : গোপাল পাল রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা। তার সময়ে বাংলার সামাজিক জীবনের চারটি দিক নিচে উল্লেখ করা হলো :
১। রাজা গোপালের সময় হিন্দু ও বৌদ্ধ ছিল প্রধান ধর্ম।
২। এ সময় বাঙালির প্রধান খাদ্য ছিল ভাত।
৩। মেয়েরা শাড়ি পরত আর ছেলেরা পরত ধুতি।
৪। এ সময় নৌকা, পালকি ও গরুর গাড়ি ছিল প্রধান যানবাহন।
২. বারো ভ‚ঁইয়াদের পরিচয় দাও।
উত্তর : মধ্যযুগে বাংলায় বেশ কিছু অঞ্চলে বড় বড় জমিদার ছিল। তাঁরা নিজ নিজ এলাকায় স্বাধীনভাবে জমিদারি চালাতেন। দিল্লির সম্রাট আকবরের সময় বাংলায় মোগল শাসনের সূচনা হলে এই জমিদাররা দিল্লির শাসন মেনে নিতে চাননি। এঁরাই বারো ভ‚ঁইয়া নামে পরিচিত। এঁদের নেতা ছিলেন সোনারগাঁয়ের এর জমিদার ঈসা খাঁ। এছাড়া উল্লেখযোগ্য ভ‚ঁইয়ারা হলেন- মুসা খান, ফতেহ খান, কেদার রায়, চাঁদ রায় প্রমুখ।
বারো ভ‚ঁইয়াদের নিজস্ব সৈন্যবাহিনী ছিল। শক্তিশালী মোগল সম্রাটদের আক্রমণকে বারবার পরাস্ত করে তাঁরা নিজেদের বীরত্ব অটল রেখেছিলেন। যা তাদেরকে বাংলার ইতিহাসে স্মরণীয় করে রেখেছে।
৩. প্রাচীন বাংলার অর্থনৈতিক অবস্থা বর্ণনা কর।
উত্তর : প্রাচীন বাংলার অর্থনৈতিক অবস্থা ছিল সাদামাটা কিন্তু অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। নিচে প্রাচীন বাংলার অর্থনৈতিক অবস্থার বিভিন্ন দিক তুলো ধরা হলো :
১) পেশা : কৃষিকাজ ছিল মানুষের প্রধান পেশা।
২) ফসল : উর্বর মাটি ও জলবায়ু দুটিই কৃষি উপযোগী হওয়ায় প্রচুর ফসল উৎপন্ন হতো। ধান ছিল প্রধান ফসল। পাশাপাশি আখ, ডাল, যব, তুলা, সরিষা, পান ইত্যাদি চাষ করা হতো।
৩) কুটির শিল্প : তখন নানা রকম কুটির শিল্পের প্রচলন ছিল। তুলা ও রেশম দিয়ে বাংলার কারিগররা নানা রকম কাপড় বুনত। এসব কাপড় বিদেশেও রপ্তানি হতো।
৪) ব্যবসায়-বাণিজ্য : বিভিন্ন দেশ থেকে বণিকরা এদেশে বাণিজ্য করতে আসত। ফলে বাংলার নানা স্থানে বন্দর গড়ে ওঠে। চট্টগ্রাম বন্দর তখন থেকেই বিখ্যাত ছিল।
৪. মধ্যযুগের বাংলার সামাজিক জীবন সম্পর্কে লেখ।
উত্তর : মধ্যযুগের বাংলার সামাজিক জীবন ছিল বৈচিত্র্যপূর্ণ। নিচে মধ্যযুগের সামাজিক জীবনের চিত্র তুলে ধরা হলো :
১) স¤প্রীতি : মধ্যযুগে হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধসহ অন্যান্য স¤প্রদায়ের মানুষকে মিলেমিশে স¤প্রীতির সাথে বসবাস করতে দেখা যায়।
২) পোশাক : হিন্দু পুরুষরা ধুতি, চাদর এবং পায়ে খড়ম পরতেন। নারীরা পরতেন শাড়ি। অন্যদিকে ধনী মুসলমান পুরুষরা পায়জামা, পাগড়ি, জুতা এবং সাধারণ মুসলমান পুরুষরা ধুতি, লুঙ্গি পরতেন।
৩) খাদ্য : ভাত, মাছ, সবজি, ডাল ইত্যাদি ছিল তখনকার বাঙালিদের প্রধান খাদ্য।
৪) ভাষা ও সাহিত্য : মধ্যযুগে শাসকদের কল্যাণে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের ব্যাপক বিকাশ ঘটে।
৫) ধর্মের বিস্তার : এ যুগে হিন্দু ও বৌদ্ধধর্মের পাশাপাশি ইসলাম ধর্মের ব্যাপক বিস্তার ঘটে। সকল ধর্মের মানুষের মিলেমিশে চলার ফলে এ যুগে বাংলায় একটা মিলিত সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্য গড়ে ওঠে।
৫. শায়েস্তা খানের শাসন কেন বিখ্যাত ছিল?
উত্তর : শায়েস্তা খানের শাসনামল সুশাসনের জন্য বিখ্যাত ছিল। তাঁর আমলে জিনিসপত্রের দাম খুব সস্তা ছিল। টাকায় আট মণ চাল পাওয়া যেত। এ ছাড়া তিনি জলদস্যুদের বিতাড়িত করেন।
৬. শশাংক কে? তিনি কী করেছিলেন?
উত্তর : শশাংক বাংলার প্রথম গুরুত্বপূর্ণ রাজা ছিলেন। কর্ণসুবর্ণ ছিল তাঁর রাজধানী। তাঁর প্রধান কৃতিত্ব, তিনি বাংলার বাইরে উত্তর ভারতে রাজ্যসীমানা বাড়ানোর চেষ্টা করেন এবং কিছুটা সফলও হয়েছিলেন। তাছাড়া বাইরের শত্রæর আক্রমণের মুখেও তিনি বাংলার স্বাধীন অস্তিত্ব বজায় রেখেছিলেন।
ন্ধ যোগ্যতাভিত্তিক
৭. তুর্কি সৈনিক বখতিয়ার খিলজীর বাংলায় মুসলিম শাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে মধ্যযুগের সূচনা হয়। এ সময় বাংলার অর্থনৈতিক অবস্থার পাঁচটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ কর।
উত্তর : মধ্যযুগের অর্থনৈতিক ব্যবস্থার পাঁচটি বৈশিষ্ট্য নিচে উল্লেখ করা হলো :
১। মধ্যযুগে বাংলার অর্থনীতি ছিল কৃষিভিত্তিক।
২। এ সময় তুলা দিয়ে রকমারি মসলিন কাপড় বানানো হতো।
৩। মধ্যযুগে কুটির শিল্প ছাড়াও নৌকা, জাহাজ, গালিচা, কাগজ ইত্যাদি শিল্প গড়ে উঠেছিল।
৪। এ সময় বাংলার বণিকেরা রেশম, বিলাস সামগ্রী, তুলা ও মূল্যবান পাথর আমদানি করতেন।
৫। বাংলা থেকে রপ্তানি হতো চাল, চিনি, আদা, হলুদ, মসলিন ও অন্যান্য কাপড়।