এসএসসি সাধারণ বিজ্ঞান অষ্টম অধ্যায় আমাদের সম্পদ
পাঠ সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াদি
মাটি : মাটি হলো নানারকম জৈব ও অজৈব রাসায়নিক পদার্থের মিশ্রণ। সাধারণত মাটিতে বিদ্যমান পদার্থসমূহকে চার ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে। এরা হলো খনিজ পদার্থ, জৈব পদার্থ, বায়বীয় পদার্থ ও পানি। মাটিতে বিদ্যমান খনিজ পদার্থসমূহ মিলে অজৈব যৌগ গঠিত হয়।
হিউমাস : মাটিতে বিদ্যমান জৈব পদার্থ হিউমাস (ঐঁসঁং) নামে পরিচিত। হিউমাস আসলে অ্যামিনো এসিড, প্রোটিন, চিনি, অ্যালকোহল, চর্বি, তেল, লিগনিন, ট্যানিন ও অন্যান্য অ্যারোমেটিক যৌগের সমন্বয়ে গঠিত একটি বিশেষ জটিল পদার্থ। এটি দেখতে অনেকটা কালচে রঙের হয়। হিউমাস তৈরি হয় মৃত গাছপালা ও প্রাণীর দেহাবশেষ থেকে।
বায়বায়ন : মাটিতে থাকা গ্যাসের সাথে বায়ুমণ্ডলে থাকা বাতাসের গ্যাসের বিনিময় হয় অর্থাৎ বায়ুমণ্ডলের গ্যাস মাটিতে যায় এবং মাটিতে থাকা গ্যাস বায়ুমণ্ডলে চলে আসে। এই প্রক্রিয়াকে মাটির বায়বায়ন (ঝড়রষ অবৎধঃরড়হ) বলে।
অণুজীব : মাটি, পানি, বায়ু সর্বত্র এমন অনেক সূ² জীব আছে যাদেরকে খালি চোখে দেখা যায় না। এ সূ² জীবদেরকে অণুজীব (গরপৎড়-ঙৎমধহরংস) বলা হয়। অণুজীবের মধ্যে ব্যাকটেরিয়া, প্রোটোজোয়া, ভাইরাস, রিকেটসিয়া, ছত্রাক ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত।
মাটির গঠন : মাটির গঠন পরীক্ষা করে দেখা যায় যে মাটি ৪টি সমান্তরাল স্তরে বিভক্ত। প্রতিটি স্তরকে দিগবলয় বা হরাইজোন (ঐড়ৎরুড়হ) বলে। সবার উপরে যে স্তরটি থাকে তাকে বলে হরাইজোন অ (ঐড়ৎরুড়হ অ) বা টপ সয়েল (ঞড়ঢ় ংড়রষ)। মাটির দ্বিতীয় স্তরটিকে সাবসয়েল (ঝঁন ঝড়রষ) বা হরাইজোন ই (ঐড়ৎরুড়হ ই) বলে। মাটির তৃতীয় স্তরটিকে হরাইজোন ঈ (ঐড়ৎরুড়হ ঈ) বলে। এই স্তরের নিচে থাকে মূল শিলা যা খুবই শক্ত।
মাটির প্রকারভেদ : মাটির গঠন, বর্ণ, পানি ধারণক্ষমতা ইত্যাদি বৈশিষ্ট্যের উপর ভিত্তি করে মাটিকে মূলত চার ভাগে ভাগ করা হয়েছে। এরা হলো বালু মাটি, পলি মাটি, কাদামাটি এবং দোআঁশ মাটি।
বালু মাটি : বালু মাটির প্রধান বৈশিষ্ট্য পানি ধারণক্ষমতা খুবই কম। এতে বিদ্যমান মাটির কণার আকার সবচেয়ে বড় থাকে, কণাগুলোর মাঝে ফাঁকা জায়গা বেশি থাকে, ফলে বায়বায়ন অনেক বেশি হয়। এ মাটিতে অতি ক্ষুদ্র শিলা ও খনিজ পদার্থ থাকে। হিউমাস থাকলে এটি চাষাবাদের জন্য সহজসাধ্য, তবে যেহেতু এই মাটির পানি ধারণক্ষমতা কম, তাই পানি দিলে তা দ্রæত নিষ্কাশিত হয় এবং গ্রীষ্মকালে বিশেষ করে উদ্ভিদে পানির স্বল্পতা দেখা যায়। তাই যে সকল ফসলাদিতে অনেক বেশি পানি লাগে সেগুলো বালু মাটিতে ভালো হয় না।
পলি মাটি : পলি মাটির পানি ধারণক্ষমতা বালু মাটির চেয়ে বেশি। পলি মাটি খুবই উর্বর হয় আর মাটির কণাগুলো বালু মাটির কণার তুলনায় আকারেও ছোট হয়। পলি মাটির কণাগুলো ছোট হওয়ায় এরা পানিতে ভাসমান আকারে থাকে এবং একপর্যায়ে পানির নিচে থাকা জমিতে পলির আকারে জমা পড়ে। পলি মাটিতে জৈব পদার্থ ও খনিজ পদার্থ (যেমনÑ কোয়ার্টজ) থাকে। বালু মাটির মতো পলি মাটির কণাগুলোও দানাদার হয় এবং এতে উদ্ভিদের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টিকর উপাদান বেশি থাকে।
কাদা মাটি : এই মাটির প্রধান বৈশিষ্ট্য এটি প্রচুর পানি ধারণ করতে পারে। এটি অনেকটা আঠালো এবং হাত দিয়ে ধরলে হাতে লেগে থাকে। এই মাটির কণাগুলো খুব সূ² হয়, ফলে কণাগুলোর মধ্যকার রন্ধ্র খুব ছোট ও সরু। এই মাটিতে খনিজ পদার্থের পরিমাণ অনেক বেশি।
দোআঁশ মাটি : এই মাটি বালু, পলি ও কাদা মাটির সমন্বয়েই তৈরি হয়। দোআঁশ মাটির একদিকে যেমন পানি ধারণক্ষমতা ভালো আবার প্রয়োজনের সময় পানি দ্রæত নিষ্কাশনও ঘটে। তাই চাষাবাদের জন্য দোআঁশ মাটি খুবই উপযোগী।
মাটির ঢ়ঐ : মাটির গুরুত্বপূর্ণ মানদণ্ড ঢ়ঐ। ঢ়ঐ মান জানা থাকলে মাটি এসিডিক, ক্ষারীয় না নিরপেক্ষ তা বোঝা যায়। বেশির ভাগ ফসলের ক্ষেত্রেই সর্বোচ্চ উৎপাদন পাওয়া যায় মাটির ঢ়ঐ নিরপেক্ষ হলে অর্থাৎ এর মান ৭ বা তার খুব কাছাকাছি হলে। তবে কিছু কিছু ফসল আছে, যেমনÑ আলু এবং গম মাটির ঢ়ঐ ৫-৬ হলে সর্বোচ্চ উৎপাদন দেয়। অন্যদিকে কিছু ফসল যেমনÑ যব ভালো উৎপাদন হয় মাটির ঢ়ঐ ৮ হলে ।
মাটি দূষণের কারণ ও ফলাফল :
১. শিল্প-কারখানা ও শহরাঞ্চলের গৃহস্থালির বর্জ্যে থাকা প্রোটিন বা অ্যামিনো এসিড ব্যাকটেরিয়ার দ্বারা ভেঙে হাইড্রোজেন সালফাইড গ্যাস, সালফার ডাইঅক্সাইড গ্যাস ও ফসফরাসের অক্সাইড উৎপন্ন করে, যার কারণে মাটি দূষিত হয়ে পড়ে। এ ধরনের দূষণের ফলে ক্ষতিকর পদার্থ মাটি থেকে খাদ্য শৃঙ্খলের মাধ্যমে মানুষসহ অন্যান্য প্রাণীদেহে প্রবেশ করে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণ হতে পারে।
২. পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র বা অস্ত্র তৈরির কারখানা থেকে দুর্ঘটনা বা পরীক্ষা-নিরীক্ষার ফলে নিঃসৃত রেডন (জহ), রেডিয়াম (জধ), থোরিয়াম (ঞয), সিজিয়াম (ঈং), ইউরেনিয়াম (ট) ইত্যাদি তেজস্ক্রিয় পদার্থ শুধু যে মাটির উর্বরতাই নষ্ট করে তা নয়, এরা প্রাণিদেহেও ত্বক ও ফুসফুসের ক্যান্সার সৃষ্টি করে। এরাও খাদ্য শৃঙ্খলের মাধ্যমে প্রাণীদেহে প্রবেশ করে রোগ সৃষ্টি করে।
৩. নদীভাঙনের ফলে নদীর পাড় ভাঙা, মাটি বা অন্য যেকোনোভাবে সৃষ্ট মাটি বা পানিতে অদ্রবণীয় পদার্থ পানির দ্বারা প্রবাহিত হয়ে এক পর্যায়ে গিয়ে কোথাও না কোথাও তলানি আকারে পড়ে। এই জাতীয় তলানি ফসলি জমির ওপর পড়লে তা জমির উপরিভাগ যা ফসল উৎপাদনে মূল ভ‚মিকা পালন করে, তার ওপর আস্তরণ সৃষ্টি করে।
৪. খনি থেকে জ্বালানি খনিজ পদার্থ বা তেল, গ্যাস ও কয়লার মতো প্রয়োজনীয় সম্পদ আহরণের সময় প্রচুর মাটি খনন করে সরিয়ে ফেলতে হয়। এতে বিস্তীর্ণ অঞ্চলের ফসলহানি যেমন ঘটে তেমনি মাটি দূষণের ফলে মাটির উর্বরতাও নষ্ট হয়ে যায়।
মাটি সংরক্ষণের কৌশল : মাটি সংরক্ষণের অন্যতম কৌশল হলো মাটিতে বেশি করে গাছ লাগানো। মাটিতে তৃণগুল্ম ও দূর্বা বা অন্য যেকোনো ঘাস জাতীয় উদ্ভিদ ও অন্যান্য গাছপালা থাকলে ভারী বৃষ্টিপাতও মাটির ক্ষয়সাধন করতে পারে না। ঘাস মাটি থেকে তুললে তা মাটির ক্ষয়সাধন করে। তাই ঘাস কাটার সময় একেবারে মাটি ঘেঁষে কাটা উচিত নয়। বনের গাছ কাটার ফলে অনেক সময় বিস্তীর্ণ এলাকা গাছশূন্য ও অনাচ্ছাদিত হয়ে পড়ে। কাজেই নতুন গাছ লাগানোর ব্যবস্থা না করে কোনোমতোই বনের গাছ কাটা যাবে না। রাসায়নিক সারের বদলে জৈব সার উত্তম, কারণ জৈব সারে থাকা উপাদান ও হিউমাস পানি শোষণ করতে পারে। রাসায়নিক সার মাটিতে বসবাসকারী উপকারী পোকামাকড় অণুজীব ধ্বংস করে, ফলে উর্বরতাও নষ্ট হয়ে যায়। একই জমিতে বারবার একই ফসল চাষ করলে উর্বরতা নষ্ট হয়। তাই একই জমিতে বিভিন্ন ধরনের ফসল চাষ করা উচিত।
মাটিতে অবস্থিত সাধারণ খনিজ : খনিজ লবণ, পেন্সিলের সিস, ট্যালকম পাউডার, চীনা মাটির থালা-বাসন ইত্যাদি হাজারো রকম জিনিস মাটি ও শিলা থেকে প্রাপ্ত খনিজ পদার্থ। বেশির ভাগ খনিজ পদার্থই কঠিন অবস্থায় পাওয়া যায়। এদের নির্দিষ্ট রাসায়নিক সংযুক্তি থাকে। ধাতব খনিজ পদার্থের মধ্যে অন্যতম হলো লৌহ (ঋব), তামা (ঈঁ) বা কপার, সোনা (অঁ) ও রুপা (অম)। অধাতব খনিজ পদার্থের মধ্যে কোয়ার্টজ (ছঁধৎঃু), মাইকা (গরপধ), খনিজ লবণ প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। কয়লা, গ্যাস, পেট্রোল ইত্যাদি এগুলো জৈব খনিজ পদার্থ।
খনিজ পদার্থের ভৌত ধর্ম : খনিজ পদার্থসমূহ সাধারণত দানাদার বা কেলাসাকার হয়। এক একটি খনিজের কঠিনতা একেক রকম। কঠিনতা অনুযায়ী সবচেয়ে নরম খনিজ হলো ট্যালক (ঞধষপ), আর সবচেয়ে বেশি কঠিন খনিজ হলো হীরা বা ডায়মন্ড। কিছু কিছু খনিজ পদার্থ খুব স্বচ্ছ এবং এর মধ্যে আলো প্রবেশ করতে পারে। যেমনÑ কোয়ার্টজ বা সিলিকা, আবার কিছু খনিজের মধ্য দিয়ে আলো প্রবেশ করলেও এর মধ্য দিয়ে কোনো বস্তু দেখা যায় না। অন্যদিকে এমন খনিজও আছে যার মধ্য দিয়ে মোটেই আলো প্রবেশ করতে পারে না। যেমন : ক্যালসাইট (ঈধঈঙ৩) বা চুনাপাথর। সাধারণত প্রতিটি খনিজ পদার্থেরই নির্দিষ্ট বর্ণ আছে।
প্রাকৃতিক গ্যাস : প্রাকৃতিক গ্যাস মূলত মিথেন (ঈঐ৪) গ্যাস। তবে সামান্য পরিমাণে অন্যান্য পদার্থ যেমনÑ ইথেন, প্রোপেন, বিউটেন থাকে। এছাড়া এতে অতি সামান্য পরিমাণ কার্বন ডাইঅক্সাইড, নাইট্রোজেন, হাইড্রোজেন সালফাইড, হাইড্রোজেন ও আর্গন ও হিলিয়াম থাকে।
পেট্রোলিয়াম : পেট্রোলিয়াম হলো খনিজ তেল অর্থাৎ খনিতে পাওয়া যায় যেসব তরল জ্বালানি পদার্থ। সাধারণত প্রাকৃতিক গ্যাসের সাথে খনিজ পেট্রোলিয়ামও থাকে। গ্যাসোলিন, কেরোসিন, ডিজেল এসবই পেট্রোলিয়াম। প্রাকৃতিক গ্যাস তৈরি হয় মৃত গাছপালা ও প্রাণিদেহ থেকে। হাজার হাজার বছর আগে মরে যাওয়া গাছপালা ও প্রাণীর পচা দেহাবশেষ কাদা ও পানির সাথে ভ‚গর্ভে জমা হয়। সময়ের সাথে সাথে এরা বিভিন্ন রকম শিলা স্তরে ঢাকা পড়ে। শিলা স্তরের চাপে পচা দেহাবশেষ ঘনীভ‚ত হয় এবং প্রচণ্ড চাপে ও তাপে দেহাবশেষে বিদ্যমান জৈব পদার্থ প্রাকৃতিক গ্যাসে ও পেট্রোলিয়ামে পরিণত হয়।
প্রাকৃতিক গ্যাস ও পেট্রোলিয়ামের প্রক্রিয়াকরণ : সাধারণত গ্যাসক‚পে গ্যাস ও তেল একসাথে থাকে। তাই প্রথমেই তেলকে গ্যাস থেকে আলাদা করা হয়। এরপর প্রাকৃতিক গ্যাসে থাকা বিশুদ্ধ মিথেন গ্যাস পাইপলাইনের মাধ্যমে সঞ্চালন করা হয়।
কয়লা : কয়লা হলো কালো বা বাদামি কালো রঙের একধরনের পাললিক শিলা। এতে বিদ্যমান মূল উপাদান হলো কার্বন। কয়লা একটি দাহ্য পদার্থ, তাই জ্বালানি হিসেবে এর বহুল ব্যবহার রয়েছে। কয়লা তিন রকমের হয়। যথাÑ অ্যানথ্রাসাইট, বিটুমিনাস ও লিগনাইট।
অনুশীলনীর বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
১. সবচেয়ে নরম খনিজ কোনটি?
ক হীরা ট্যালক গ সিলিকা ঘ চুনাপাথর
২. সাবসয়েল স্তরের মাটিÑ
র. শিলাচ‚র্ণে ভরপুর রর. খনিজ পদার্থ সমৃদ্ধ
ররর. জৈব পদার্থ সমৃদ্ধ
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
নিচের অনুচ্ছেদটি পড় এবং ৩ ও ৪নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
টোকিও শহরে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাছাকাছি মাটিতে কোনো উদ্ভিদ জন্মে না কেবল মাশরুম ভালো জন্মে।
৩. ঐ মাটিতে কোনটির আধিক্য রয়েছে?
ক শিলা খ খনিজ পদার্থ গ জৈব পদার্থ তেজস্ক্রিয় পদার্থ
৪. কোন মাটিতে ভালো ফসল ফলে?
ক বালু ও খনিজ মিশ্রিত মাটিতে
খ খনিজ ও খনিজ পদার্থ মিশ্রিত মাটিতে
গ বালি ও পলি মিশ্রিত মাটিতে
বালি, পলি ও কাদা মিশ্রিত মাটিতে
নিচের চিত্রটি থেকে ৫ ও ৬নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
৫. কোন স্তরে শিলাচ‚র্ণ থাকে?
ক ঢ স্তরে খ ণ স্তরে
ত স্তরে ঘ ত স্তরের নিচে
৬. সবচেয়ে উপরের স্তরের মাটিতে ভালো ফসল হওয়ার কারণ হলো, এ মাটিতেÑ
জৈব পদার্থ থাকে খ খনিজ উপাদান থাকে
গ শিলাচ‚র্ণ বিদ্যমান ঘ অণুজীব থাকে
গুরুত্বপূর্ণ বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
৭. নিচের কোনটি জিপসামের সংকেত?
ক ঋব৩ঙ৪ ঈধঝঙ৪.২ঐ২ঙ
গ ঈঁঝঙ৪.৫ঐ২ঙ ঘ তহঝঙ৪.২ঐ২ঙ
৮. মাটির কণা তৈরি হয় কোন স্তরে?
ক হরাইজোন অ তে খ হরাইজোন ই তে
হরাইজোন ঈ তে ঘ হরাইজোন উ তে
৯. মাটির প্রধান খনিজ উপাদান কোনটি?
ক নাইট্রোজেন খ ফসফরাস গ রেডিয়াম ক্যালসিয়াম
১০. ঝরঙ২ ব্যবহার হয় কোনটিতে?
ক সিমেন্ট তৈরিতে রেডিও তৈরিতে
গ ধাতব মুদ্রা তৈরিতে ঘ ভবন তৈরিতে
১১. শতকরা কতভাগ প্রাকৃতিক গ্যাস ইউরিয়া সারের কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত হয়?
ক ১১ ২১ গ ২২ ঘ ৫১
১২. সিমেন্ট ও প্লাস্টার অব প্যারিস তৈরির কাঁচামাল কোনটি?
ক ঈঁঝঙ৪.২ঐ২ঙ ঈধঝঙ৪.২ঐ২ঙ
গ ঈধঈঙ৩.২ঐ২ঙ ঘ ঈঁঝঙ৪.৫ঐ২ঙ
১৩. প্রকৃতিতে কত রকমের খনিজ পদার্থ পাওয়া যায়?
ক ৩০০০ ২৫০০ গ ২০০০ ঘ ১৫০০
১৪. মাটির কোন স্তরে রাসায়নিক পরিবর্তন ঘটে?
ক ঐড়ৎরুড়হ-অ খ ঐড়ৎরুড়হ-ই
ঐড়ৎরুড়হ-ঈ ঘ ঐড়ৎরুড়হ-ঈ এর নিচে
১৫. শিল্প কারখানায় কত ভাগ প্রাকৃতিক গ্যাস ব্যবহৃত হয়?
ক ১ খ ১১ গ ২১ ২২
১৬. শতকরা প্রায় কতভাগ প্রাকৃতিক গ্যাস বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহৃত হয়?
ক ১১ খ ২১ গ ২২ ৫১
১৭. কোন মাটির পানির ধারণ ক্ষমতা সবচেয়ে বেশি?
ক বালি মাটি খ পলি মাটি
গ দো-আঁশ মাটি কাদা মাটি
১৮. মাটিতে বিদ্যমান জৈব পদার্থের উপাদান কোনটি?
ক পটাশিয়াম খ কোবাল্ট গ কপার ট্যানিন
১৯. নিচের কোনটি তেজস্ক্রিয় পদার্থ?
ক জিঙ্ক খ কোবাল্ট গ আর্সেনিক ইউরেনিয়াম
২০. কয়লার মূল উপাদান কোনটি?
ক ঈধ ঈ গ ঈষ ঘ অষ
২১. মাটির বৈশিষ্ট্যের উপর ভিত্তি করে মাটিকে কয়ভাগে ভাগ করা হয়েছে?
ক তিন চার গ পাঁচ ঘ ছয়
২২. মাটির গঠন উপাদানে জৈব পদার্থের শতকরা পরিমাণ কত ভাগ?
ক ২০ ভাগ খ ১৫ ভাগ গ ১০ ভাগ ৫ ভাগ
নিচের ছকটি লক্ষ করে ২৩ ও ২৪ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
তেল গ্যাস পৃথককরণ
ঘনীভ‚ত করে পৃথককরণ
পানি নিরুদন
বিশোধন
ঢ
২৩. উদ্দীপকে কোন পদার্থ প্রক্রিয়াজাতকরণের ছক দেখানো হয়েছে?
ক তেল গ্যাস গ কয়লা ঘ পানি
২৪. ঢ ধাপটি হলো-
র. নাইট্রোজেন পৃথককরণ
রর. বিশুদ্ধকরণ
ররর. ঘনীভবন
নিচের কোনটি সঠিক?
র খ র ও রর গ রর ঘ রর ও ররর
নিচের অনুচ্ছেদটি পড় এবং ২৫ ও ২৬নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
আবুল হোসেন প্রতি বছর তাঁর জমিতে বেশি বেশি রাসায়নিক সার প্রয়োগ করেন। একই জমিতে প্রতি বছরই তিনি পাট ও পিঁয়াজ আবাদ করেন। এ অবস্থায় তাঁর ভালো ফলন না হওয়ার কারণে তিনি অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলেন।
২৫. ভালো ফলন পেতে তাকে-
ক বেশি পানি দিতে হবে
খ বেশি রাসায়নিক সার দিতে হবে
জমিতে জৈব সার প্রয়োগ করতে হবে
ঘ প্রতি বছর একই ফসল আবাদ করতে হবে
২৬. আবুল হোসেনের জমিতে গৃহীত চাষ ব্যবস্থার জন্য নিচের কোনটি ঘটেছে?
ক জমির উর্বরতা বেড়েছে
খ জমির পোকামাকড় বেড়েছে
জমির উর্বরতা ও পানি ধারণ ক্ষমতা কমেছে
ঘ জমির পানি ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে
নিচের টেবিলটি লক্ষ কর এবং ২৭ ও ২৮নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
মাটির কণা বৈশিষ্ট্য
ঙ পানি ধারণক্ষমতা কম
চ আঙুলের ঘষা দিলে মসৃণ অনুভ‚ত হয়
ছ পানি ধারণক্ষমতা বেশি
জ চাষাবাদের উপযোগী
২৭. কোনটিতে উদ্ভিদের প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান বেশি থাকে?
ক ঙ চ গ ছ ঘ জ
২৮. জ কণাগুলোর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য-
র. এতে পানি দ্রæত নিষ্কাষিত হতে পারে না
রর. এটি ঙ, চ, ছ দ্বারা তৈরি
ররর. এটি ঙ, চ, ছ এর অনুপাতের উপর নির্ভরশীল
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন \ ১ \ মাটি কী নিয়ে গঠিত?
উত্তর : মাটি খনিজ পদার্থ, জৈব পদার্থ, বায়বীয় পদার্থ ও পানি নিয়ে গঠিত।
প্রশ্ন \ ২ \ মাটি সংরক্ষণের অন্যতম কৌশল কী?
উত্তর : মাটি সংরক্ষণের অন্যতম কৌশল হলো মাটিতে বেশি করে গাছ লাগানো।
প্রশ্ন \ ৩ \ কয়লা কোন ধরনের শিলা?
উত্তর : কয়লা কালো বা বাদামি রঙের এক ধরনের পাললিক শিলা।
প্রশ্ন \ ৪ \ মাইকার একটি ব্যবহার লেখ।
উত্তর : বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতিতে বিদ্যুৎ নিরোধক হিসেবে মাইকা ব্যবহৃত হয়।
প্রশ্ন \ ৫ \ হিউমাস কী?
উত্তর : হিউমাস হলো মাটিতে বিদ্যমান জৈব পদার্থ।
প্রশ্ন \ ৬ \ হিউমাস কী দিয়ে গঠিত হয়?
উত্তর : হিউমাস অ্যামিনো এসিড, প্রোটিন, চিনি, অ্যালকোহল, চর্বি, তেল, লিগনিন, ট্যানিন ও অন্যান্য আরোমেটিক যৌগের সমন্বয়ে গঠিত হয়।
প্রশ্ন \ ৭ \ হিউমাস তৈরি হয় কী থেকে?
উত্তর : হিউমাস তৈরি হয় মৃত গাছপালা ও প্রাণীর দেহাবশেষ থেকে।
প্রশ্ন \ ৮ \ মাটিতে পানি কোথায় থাকে?
উত্তর : মাটিতে পানি থাকে মাটির কণার মাঝে থাকা ফাঁকাস্থান বা রন্ধ্রে।
প্রশ্ন \ ৯ \ গাছপালা মাটির পুষ্টি উপাদান কিসের সাহায্যে গ্রহণ করে?
উত্তর : গাছপালা মাটির পুষ্টি উপাদান মূলের সাহায্যে গ্রহণ করে।
প্রশ্ন \ ১০ \ বাতাসের কী কী উপাদান মাটিতে থাকে?
উত্তর : মাটিতে থাকে বাতাসের নাইট্রোজেন, অক্সিজেন ও কার্বন ডাইঅক্সাইড গ্যাস।
প্রশ্ন \ ১১ \ মাটিতে থাকা অণুজীবের জন্ম ও বেড় ওঠার জন্য কী অত্যাবশ্যক?
উত্তর : মাটিতে থাকা অণুজীবের জন্ম ও বেড়ে ওঠার জন্য অক্সিজেন অত্যাবশ্যক।
প্রশ্ন \ ১২ \ উদ্ভিদ ও প্রাণীর মরদেহের পচন কোন স্তরে শুরু হয়?
উত্তর : মাটির হরাইজোন অ বা টপ সয়েল স্তরে উদ্ভিদ ও প্রাণীর মরদেহের পচন শুরু হয়।
প্রশ্ন \ ১৩ \ গঠন অনুসারে মাটি কতটি স্তরে বিভক্ত?
উত্তর : গঠন অনুসারে মাটি চারটি স্তরে বিভক্ত।
প্রশ্ন \ ১৪ \ মাটির দ্বিতীয় স্তরকে কী বলে?
উত্তর : মাটির দ্বিতীয় স্তরকে সাবসয়েল বা হরাইজোন ই বলে।
প্রশ্ন \ ১৫ \ মাটি থেকে কী কী অধাতব পদার্থ পাওয়া যায়?
উত্তর : অধাতব খনিজ পদার্থের মধ্যে কোয়ার্টজ, মাইকা, খনিজ লবণ প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।
প্রশ্ন \ ১৬ \ কোন স্তরের মাটি সাধারণত বালুময় হয়?
উত্তর : হরাইজোন অ বা টপ সয়েল স্তরের মাটি সাধারণত বালুময় হয়।
প্রশ্ন \ ১৭ \ কোন বৈশিষ্ট্যের ওপর ভিত্তি করে মাটিকে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করা হয়েছে?
উত্তর : মাটির গঠন, বর্ণ, পানি ধারণক্ষমতা ইত্যাদি বৈশিষ্ট্যের উপর ভিত্তি করে মাটিকে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
প্রশ্ন \ ১৮ \ বালু মাটির প্রধান বৈশিষ্ট্য কী?
উত্তর : বালু মাটির প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো এদের পানি ধারণক্ষমতা খুবই কম।
প্রশ্ন \ ১৯ \ কাদা মাটির প্রধান বৈশিষ্ট্য কী?
উত্তর : কাদা মাটির প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো এরা প্রচুর পানি ধারণ করতে পারে।
প্রশ্ন \ ২০ \ কোন মাটিতে সহজেই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়?
উত্তর : কাদা মাটিতে সামান্য বৃষ্টিপাত হলেই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়।
প্রশ্ন \ ২১ \ মাটি ক্ষয়প্রাপ্ত হয় কোন কারণে?
উত্তর : ঝড়ো বাতাস, ভারী বৃষ্টিপাত, নদীর পানির স্রোত বা নদীর ভাঙন ইত্যাদি কারণে মাটি ক্ষয়প্রাপ্ত হয়।
প্রশ্ন \ ২২ \ মাটি থেকে কী কী ধাতব পদার্থ পাওয়া যায়?
উত্তর : মাটি থেকে যেসব ধাতব খনিজ পদার্থ পাওয়া যায় তা হলো লোহা (ঋব), তামা (ঈঁ) বা কপার, সোনা (অঁ) ও রুপা (অম)।
প্রশ্ন \ ২৩ \ আমরা বাসায় গ্যাসের চুলায় বা সিএনজি (ঈঘএ) পাম্প স্টেশন থেকে গাড়িতে যে গ্যাস নিই তাতে মূলত কোন গ্যাস থাকে?
উত্তর : প্রাকৃতিক গ্যাস যা মূলত মিথেন (ঈঐ৪) গ্যাস।
প্রশ্ন \ ২৪ \ কয়লার মূল উপাদান কোনটি?
উত্তর : কয়লার মূল উপাদান হলো কার্বন।
অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন \ ১ \ মাটিতে বিদ্যমান প্রধান প্রধান খনিজ পদার্থ কী কী?
উত্তর : মাটিতে বিদ্যমান প্রধান প্রধান খনিজ পদার্থ বা অজৈব পদার্থসমূহ হলো : ক্যালসিয়াম (ঈধ), অ্যালুমিনিয়াম (অষ), ম্যাগনেসিয়াম (গম), লোহা (ঋব), সিলিকন (ঝর), পটাসিয়াম (ক) ও সোডিয়াম (ঘধ)।
প্রশ্ন \ ২ \ মাটিতে কোন খনিজ পদার্থসমূহ অল্প পরিমাণে থাকে?
উত্তর : মাটিতে অল্প পরিমাণে থাকে ম্যাংগানিজ (গহ), কপার (ঈঁ), জিংক (তহ), কোবাল্ট (ঈড়), বোরন (ই), আয়োডিন (ও) এবং ফ্লোরিন (ঋ)।
প্রশ্ন \ ৩ \ মাটিতে কোন কোন ধাতুর জৈব লবণ পাওয়া যায়?
উত্তর : মাটিতে কার্বনেট, সালফেট, ক্লোরাইড, নাইট্রেট এবং ক্যালসিয়াম (ঈধ), ম্যাগনেসিয়াম (গম), পটাসিয়াম (ক), সোডিয়াম (ঘধ) ইত্যাদি ধাতুর জৈব লবণ পাওয়া যায়।
প্রশ্ন \ ৪ \ বালি ও কাদামাটির কোনটির পানি ধরে রাখার ক্ষমতা বেশি?
উত্তর : কাদা মাটির পানি ধরে রাখার ক্ষমতা বেশি। এর কারণ হলো কাদামাটির ক্ষেত্রে মাটির কণাগুলোর ফাঁকে বিদ্যমান রন্ধ্র খুব সূ², যা পানি ধরে রাখে। অন্যদিকে বালি মাটির বেলায় রন্ধ্রগুলো বড় বড়, যে কারণে পানি আটকে থাকে না বা ধরে রাখতে পারে না।
প্রশ্ন \ ৫ \ মাটি আমাদের কী কী কাজে লাগে?
উত্তর : মাটি আমাদের নিম্নলিখিত কাজে লাগে :
১. মাটিতে গাছপালা জন্মায়। যা থেকেই আমরা খাদ্যশস্য পাই।
২. মাটিতেই আমরা ঘরবাড়ি, অফিস, রাস্তাঘাট তৈরি করি।
৩. জীবনধারণের দরকারি পানির বড় একটি অংশ আসে মাটির নিচ থেকে।
৪. আমাদের বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় জ্বালানি (যেমনÑ তেল, গ্যাস, কয়লা) সিংহভাগ আসে মাটির নিচ থেকে।
৫. সোনা, রুপা, লোহাসহ নানারকম খনিজ পদার্থ মাটিতে পাওয়া যায়।
প্রশ্ন \ ৬ \ মাটিতে পানি না থাকলে কী সমস্যা হয়?
উত্তর : মাটিতে পানি না থাকলে গাছপালা জন্মাতে পারে না এবং বেড়ে উঠতে পারে না। মাটি থেকে পাওয়া পানির সাহায্যেই গাছপালা সালোকসংশ্লেষণের মাধ্যমে নিজেদের খাবার তৈরি করে ও আমাদের অক্সিজেন দেয়। গাছপালার জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি (যেমনÑ খনিজ পদার্থ, নাইট্রোজেন, ফসফরাস ইত্যাদি) মাটি থেকে সরাসরি গ্রহণ করতে পারে না। এগুলো গ্রহণ করে মূলের সাহায্যে এবং এক্ষেত্রে পানি মাধ্যম হিসেবে কাজ করে। কাজেই পানি না থাকলে উদ্ভিদ মাটি থেকে এসব পুষ্টি গ্রহণ করতে পারে না। ফলে এদের বেড়ে ওঠা বাধাগ্রস্ত হয়।
প্রশ্ন \ ৭ \ বালু মাটিতে বায়বায়ন বেশি হয় কেন?
উত্তর : বালু মাটিতে বিদ্যমান মাটির কণার আকার সবচেয়ে বড় থাকে। ফলে কণাগুলোর মাঝে ফাঁকা জায়গা বেশি থাকে, যার ফলে বায়বায়ন অনেক বেশি হয়।
প্রশ্ন \ ৮ \ যেসব ফসলে অনেক পানি লাগে সেগুলো বালু মাটিতে ভালো হয় না কেন?
উত্তর : বালু মাটির পানি ধারণক্ষমতা কম, তাই পানি দিলে তা দ্রুত নিষ্কাষিত হয় এবং গ্রীষ্মকালে উদ্ভিদে পানির স্বল্পতা দেখা যায়। তাই যেসব ফসলে অনেক বেশি পানি লাগে সেগুলো বালু মাটিতে ভালো হয় না।
প্রশ্ন \ ৯ \ পলি মাটি চেনার উপায় কী?
উত্তর : পলি মাটি হাতের সাথে লেগে থাকে। সামান্য পানিযুক্ত মাটি নিয়ে আঙুল দিয়ে ঘষলে যদি মসৃণ অনুভ‚ত হয়, তাহলে এটি পলি মাটি। তাই এটাই পলি মাটি চেনার উপায়।
প্রশ্ন \ ১০ \ জমিতে পলি পড়ে কীভাবে?
উত্তর : পলি মাটির কণাগুলো ছোট হওয়ায় এরা পানিতে ভাসমান আকারে থাকে এবং একপর্যায়ে পানির নিচে থাকা জমিতে পলির আকারে জমা পড়ে।
প্রশ্ন \ ১১ \ ফসল চাষাবাদের জন্য দোআঁশ মাটি খুবই উপযোগী হয় কেন?
উত্তর : দোআঁশ মাটির একদিকে যেমন পানি ধারণ ক্ষমতা ভালো আবার প্রয়োজনের সময় পানি দ্রুত নিষ্কাশনও হতে পারে। তাই ফসল চাষাবাদের জন্য দোআঁশ মাটি খুবই উপযোগী।
প্রশ্ন \ ১২ \ পিটি মাটিতে জৈব পদার্থ বেশি থাকে কেন?
উত্তর : পিটি মাটি তৈরি হয় মূলত জৈব পদার্থ থেকে; আর সে কারণে এতে অন্য সব মাটি থেকে জৈব পদার্থের পরিমাণ অনেক বেশি থাকে।
প্রশ্ন \ ১৩ \ ফসল উৎপাদনের জন্য খড়িমাটি উপযুক্ত নয় কেন?
উত্তর : খড়িমাটি ক্ষারীয় হয় এবং এতে অনেক পাথর থাকে। এই মাটি সাধারণত দ্রুত শুকিয়ে যায়। সে কারণে খড়িমাটি ফসল উৎপাদনের জন্য খুব একটা উপযুক্ত নয়।
প্রশ্ন \ ১৪ \ মাটির ঢ়ঐ এর মান ৭ রাখা গুরুত্বপূর্ণ কেন?
উত্তর : বেশির ভাগ ফসলের ক্ষেত্রেই সর্বোচ্চ উৎপাদন পাওয়া যায় মাটির ঢ়ঐ নিরপেক্ষ হলে অর্থাৎ এর মান ৭ বা তার খুব কাছাকাছি হলে। তাই কোনো একটি জমির মাটি পরীক্ষা করে যদি দেখা যায় এর ঢ়ঐ ৭-এর চেয়ে বেশ কম বা বেশি তাহলে এর ঢ়ঐ ৭ করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হয়।
প্রশ্ন \ ১৫ \ শিল্পকারখানার বর্জ্য মাটি দূষণে কীরূপ প্রভাব বিস্তার করে?
উত্তর : শিল্প-কারখানার বর্জ্যে বিদ্যমান মারকারি ও অন্যান্য ধাতব পদার্থ মাটিতে বিদ্যমান উপকারী অণুজীবসমূহকে মেরে ফেলে মাটির উর্বরতা নষ্ট করে। আবার মাত্রাতিরিক্ত লবণ, এসিড বা ক্ষার গাছপালা ও ফসলের ক্ষতিসাধন করে। এই জাতীয় বর্জ্যে থাকা প্রোটিন বা অ্যামিনো এসিড ব্যাকটেরিয়ার দ্বারা ভেঙে হাইড্রোজেন সালফাইড গ্যাস, সালফার ডাইঅক্সাইড গ্যাস ও ফসফরাসের অক্সাইড উৎপন্ন করে, যার কারণে মাটি দূষিত হয়ে পড়ে। এই জাতীয় দূষণের ফলে মাটির জৈব রাসায়নিক ধর্মের পরিবর্তন ঘটতে পারে, যা মাটি দূষণে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে।
প্রশ্ন \ ১৬ \ মানুষের মলমূত্র, পাখির বিষ্ঠা বা অন্যান্য প্রাণীর মলমূত্র কীভাবে মাটি দূষণ ঘটায়?
উত্তর : মানুষের মলমূত্র, পাখির বিষ্ঠা বা অন্যান্য প্রাণীর মলমূত্রে রোগ সৃষ্টিকারী নানারকম জীবাণু থাকে, যারা মাটিতে বেড়ে ওঠে এবং পরবর্তীতে মানুষের শরীরে ছড়িয়ে পড়ে রোগ সৃষ্টি করে।
প্রশ্ন \ ১৭ \ আমরা কীভাবে মাটির ক্ষয়সাধন করে চলেছি?
উত্তর : আমরা গাছপালা ও বন জঙ্গল কেটে, পাহাড় ধ্বংস করে, শিল্পকারখানা স্থাপন করে (যেমনÑ ইটভাটা) প্রতিনিয়ত মাটির ক্ষয়সাধন করে চলেছি।
প্রশ্ন \ ১৮ \ মাটি সংরক্ষণের অন্যতম কৌশল ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : মাটি সংরক্ষণের অন্যতম কৌশল হলো মাটিতে বেশি করে গাছ লাগানো।
মাটিতে তৃণগুল্ম ও দূর্বা বা অন্য যে কোনো ঘাস জাতীয় উদ্ভিদ ও অন্যান্য গাছপালা থাকলে ভারী বৃষ্টিপাতও মাটির ক্ষয়সাধন হতে পারে না। গাছের শিকড় মাটির ভিতরে থাকায় তা মাটিকে দৃঢ়ভাবে আটকে রাখে। এটাই মাটি সংরক্ষণের অন্যতম কৌশল।
প্রশ্ন \ ১৯ \ রাসায়নিক সারের বদলে জৈবসার উত্তম হয় কেন?
উত্তর : জৈব সারে থাকা উপাদান ও হিউমাস পানি শোষণ করতে পারে বলে রাসায়নিক সারের বদলে জৈব সার উত্তম। ফলে অল্প বৃষ্টিপাতে মাটির ক্ষয় হয় না। এছাড়া রাসায়নিক সার মাটিতে বসবাসকারী উপকারী পোকামাকড় অণুজীব ধ্বংস করে ফলে উর্বরতাও নষ্ট হয়ে যায়।
প্রশ্ন \ ২০ \ নদীভাঙনের মাধ্যমে মাটির যে ক্ষয় হয় তা কীভাবে বন্ধ করা যায়?
উত্তর : নদীর পাড়ে কলমি, ধনচে ইত্যাদি গাছ লাগানো যায়। নদী অত্যধিক খরস্রোতা হলে নদীর পাড়ে বালুর বস্তা ফেলে বা কংক্রিটের তৈরি ব্লক দিয়ে ভাঙন ঠেকানো হয়।
প্রশ্ন \ ২১ \ কীভাবে প্রাকৃতিক গ্যাস ও পেট্রোলিয়াম তৈরি হয়?
উত্তর : প্রাকৃতিক গ্যাস তৈরি হয় মৃত গাছপালা ও প্রাণিদেহ থেকে। হাজার হাজার বছর আগে মরে যাওয়া গাছপালা ও প্রাণীর পচা দেহাবশেষ কাদা ও পানির সাথে ভ‚গর্ভে জমা হয়। সময়ের সাথে এরা বিভিন্ন রকম শিলাস্তরে ঢাকা পড়ে। শিলাস্তরের চাপে পচা দেহাবশেষ ঘনীভ‚ত হয় এবং প্রচণ্ড চাপে ও তাপে দেহাবশেষে বিদ্যমান জৈব পদার্থ প্রাকৃতিক গ্যাস ও পেট্রোলিয়ামে পরিণত হয়। প্রকৃতিতে এভাবে উৎপন্ন গ্যাসের খনিকে আমরা গ্যাসক‚প বলি।
প্রশ্ন \ ২২ \ আমাদের ব্যবহৃত প্রাকৃতিক জ্বালানি কোনগুলো?
উত্তর : আমাদের ব্যবহৃত প্রাকৃতিক জ্বালানির অন্যতম হলো প্রাকৃতিক গ্যাস, কয়লা ও পেট্রোলিয়াম। এছাড়া রান্নার কাজে ব্যবহৃত কাঠের খড়ি, গাছের পাতা, পাটকাঠি, ধানের গোড়া ও খড় বা গোবর দিয়ে তৈরি লাকড়ি- এগুলোকেও প্রাকৃতিক জ্বালানি হিসেবে গণ্য করা যায়।
প্রশ্ন \ ২৩ \ কী কী কাজে আমরা প্রাকৃতিক গ্যাস ব্যবহার করি?
উত্তর : আমরা নানা কাজে প্রাকৃতিক গ্যাস ব্যবহার করি। এর মধ্যে অন্যতম হলো ইউরিয়া সার উৎপাদন। শতকরা প্রায় ২১ ভাগ প্রাকৃতিক
গ্যাস ইউরিয়া সারের কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত হয়। আমাদের দেশে বেশির ভাগ বিদ্যুৎ উৎপন্ন করা হয় প্রাকৃতিক গ্যাস দ্বারা। প্রায় শতকরা ২২ ভাগ প্রাকৃতিক গ্যাস ব্যবহৃত হয় শিল্পকারখানায়, ১১ ভাগ বাসাবাড়িতে ও ১১ ভাগ জ্বালানি হিসেবে। এছাড়া প্রায় শতকরা ১ ভাগ প্রাকৃতিক গ্যাস বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে জ্বালানির কাজে ব্যবহৃত হয়। বাকি শতকরা ৫ ভাগ অপচয় হয়।
প্রশ্ন্ \ ২৪ \ আমাদের প্রাকৃতিক গ্যাস ব্যবহারে সচেতনতা প্রয়োজন- ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : আমাদের দেশে প্রাকৃতিক গ্যাসের মজুদ নির্দিষ্ট ও সীমিত। ক্রমাগত ব্যবহারের ফলে একসময় তা শেষ হয়ে যাবে। তাই এই মূল্যবান প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবহারে আমাদের অত্যন্ত সচেতন হতে হবে, কোনোমতেই অপচয় করা যাবে না। অনেকে বাসাবাড়িতে বিনা প্রয়োজনে গ্যাসের চুলা জ্বালিয়ে রাখে এবং এতে অতি মূল্যবান এই সম্পদের অপচয় করে যা কোনোমতেই সমীচীন নয়। এক্ষেত্রে অবশ্যই যার যার নিজের বাসায় ও মহলায় সবাইকে সচেতন করতে হবে।
প্রশ্ন \ ২৫ \ কয়লা কীভাবে উত্তোলন করা হয়?
উত্তর : কয়লার খনি থেকে মেশিনের সাহায্যে ভ‚গর্ভ থেকে কয়লা উত্তোলন করা হয়। কয়লা উত্তোলনের জন্য দুটি পদ্ধতি আছে। একটি হলো ওপেন পিট মাইনিং আর অপরটি হলো ভ‚গর্ভস্থ মাইনিং। সাধারণত কয়লার স্তর ভ‚পৃষ্ঠের কাছাকাছি থাকে বলে ওপেন পিট মাইনিং পদ্ধতি বেশি ব্যবহৃত হয়। মেশিন দিয়ে কয়লা ভ‚গর্ভ থেকে তোলার পর কনভেয়ার বেল্ট দিয়ে প্রক্রিয়াকরণ প্লান্টে নেওয়া হয়। যেখানে কয়লায় থাকা অন্যান্য পদার্থ যেমনÑ ময়লা, শিলা কণা, ছাই, সালফার ইত্যাদি পৃথক করে ফেলা হয়।
প্রশ্ন \ ২৬ \ পানি না থাকলে উদ্ভিদের পুষ্টিগ্রহণ বাধাগ্রস্ত হয় কেন?
উত্তর : মাটি থেকে পাওয়া পানির সাহায্যেই গাছপালা সালোকসংশ্লেষণের মাধ্যমে নিজেদের খাবার তৈরি করে এবং অক্সিজেনের সরবরাহ করে। গাছপালার জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি যেমন- খনিজ পদার্থ, নাইট্রোজেন, ফসফরাস ইত্যাদি মাটি থেকে সরাসরি গ্রহণ করতে পারে না। এগুলো গ্রহণ করে মূলের সাহায্যে এবং এক্ষেত্রে পানি মাধ্যম হিসেবে কাজ করে। কাজেই পানি না থাকলে উদ্ভিদের পুষ্টি গ্রহণ বাধাগ্রস্ত হয়।
অনুশীলনীর সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন -১ ল্ফ নিচের চিত্র তিনটি দেখ এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও:
ক. পেট্রোলিয়াম কী?
খ. জীবাশ্ম জ্বালানি বলতে কী বুঝায়?
গ. অ চিত্রের জ্বালানিটি খনি থেকে তুলে কীভাবে ব্যবহার উপযোগী করা হয়? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. চিত্র ই এর শক্তি উৎপাদনের জন্য অ ও ঈ জ্বালানিটির মধ্যে কোনটি বেশি সাশ্রয়ী? যুক্তিসহ মতামত দাও।
১নং প্রশ্নের উত্তর
ক. পেট্রোলিয়াম হলো খনিজ তেল অর্থাৎ খনিতে পাওয়া যায় যেসব তরল পদার্থ, তাই পেট্রোলিয়াম।
খ. অতীত যুগে প্রাকৃতিক নানাবিধ দুর্যোগের কারণে গাছ ও উদ্ভিজ্জ পদার্থ মাটির নিচে চাপা পড়ে। সেখানে ভ‚গর্ভস্থ তাপে ও মাটির তীব্র চাপে এই উদ্ভিজ্জ পদার্থ নানাভাবে রূপান্তরিত হতে হতে অবশেষে জীবাশ্মে পরিণত হয়। সৃষ্ট জীবাশ্ম কঠিন বা তরল আকারে খনি থেকে তুলে জ্বালানিরূপে ব্যবহার করা হয়। এই জ্বালানিকে জীবাশ্ম জ্বালানি বলে। কয়লা, পেট্রোল, কেরোসিন, ডিজেল, প্রাকৃতিক গ্যাস ইত্যাদি কয়েকটি জীবাশ্ম জ্বালানির নাম।
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত অ চিত্রের জ্বালানিটিকে ঈঘএ বা ঈড়সঢ়ৎবংংবফ ঘধঃঁৎধষ এধং বলে। এর প্রধান উপাদান মিথেন গ্যাস, যা শতকরা ৯৫ ভাগ পর্যন্ত থাকতে পারে। খনি থেকে নিম্নলিখিত উপায়ে ঈঘএ গ্যাসকে তুলে ব্যবহার উপযোগী করা হয়Ñ
প্রাকৃতিক গ্যাসের প্রক্রিয়াকরণ একটি জটিল শিল্পপ্রক্রিয়া, যেটি কয়েকটি ধাপে সম্পন্ন হয়। সাধারণভাবে যেখানে গ্যাসক‚প পাওয়া যায়, সেখানেই প্রক্রিয়াকরণ সম্পন্ন করা হয়। প্রক্রিয়াকরণ অনেকাংশে নির্ভর করে গ্যাসের গঠন অর্থাৎ এতে বিদ্যমান অন্যান্য পদার্থের উপর। সাধারণত গ্যাসক‚পে গ্যাস ও তেল একসাথে থাকে। তাই প্রথমেই তেলকে গ্যাস থেকে আলাদা করা হয়। এরপর প্রাকৃতিক গ্যাসে থাকা বেনজিন ও বিউটেন ঘনীভ‚ত করে আলাদা করা হয়। প্রাকৃতিক গ্যাসে থাকা পানি দূর করার জন্য নিরুদকের মধ্য দিয়ে চালনা করা হয়। অতঃপর গ্যাসে থাকা দূষক (ঐ২ঝ, ঈঙ২) পৃথক করা হয়। প্রাপ্ত গ্যাসের মিশ্রণ থেকে নাইট্রোজেন আলাদা করা হয়। এই অবস্থায় প্রাপ্ত প্রাকৃতিক গ্যাস বিশুদ্ধ মিথেন গ্যাস। যাকে পরে তাপ ও চাপের সাহায্যে ঈঘএ-তে রূপান্তরিত করে ব্যবহার উপযোগী করে তোলা হয়।
চিত্র : প্রাকৃতিক গ্যাস প্রক্রিয়াজাতকরণ
ঘ. চিত্র ই হলো বিদ্যুৎ শক্তি উৎপাদন প্রক্রিয়া যার জন্য অ (ঈঘএ) ও ঈ (কয়লা) এর মধ্যে ঈ অর্থাৎ কয়লা সাশ্রয়ী।
ঈঘএ মূলত সংকুচিত প্রাকৃতিক গ্যাস। এর প্রধান উপাদান মিথেন গ্যাস। প্রাকৃতিক গ্যাসকে অনেক ধাপের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে বিশুদ্ধ মিথেন গ্যাস প্রস্তুত করা হয়। এই মিথেন গ্যাস জ্বালানি হিসেবে তখনই কার্যকর হয় যখন এটিকে সংকুচিত করা হয়। জটিল প্রক্রিয়ার মাধ্যমে একে আসতে হয়। অনেক সময় নিরাপত্তা বিঘিœত হয়। এটিকে সিলিন্ডারে ভরে আনা কষ্টসাধ্য। পরিবহনে বেশ অসুবিধা হয়। তাছাড়া মিথেন গ্যাস বিশুদ্ধকরণ ও সংকোচন করা বেশ খরচ সাপেক্ষ।
অপরপক্ষে কয়লা উত্তোলন করা অনেক কম খরচ সাপেক্ষ। যদি কয়লার স্তর মাটির খুব বেশি নিচে না থাকে তবে তা উন্মুক্ত পদ্ধতিতে উত্তোলন করা যায়। এটি অনেক সহজে পরিবহন করা যায়। নিরাপত্তা বিঘিœত হওয়ার আশঙ্কা থাকে না। কয়লার সাথে থাকা ময়লা, শিলা কণা, ছাই, সালফার প্রভৃতি অপসারণের জন্য প্রয়োজনীয় জনশক্তিও রয়েছে বাংলাদেশে।
তাই বিদ্যুৎ উৎপাদনে জ্বালানি হিসেবে কয়লা অনেক বেশি সাশ্রয়ী।
প্রশ্ন -২ ল্ফ নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
বকুলদের এলাকার মাটি শিলা ও খনিজ পদার্থ মিশ্রিত। এ মাটির কণাগুলো আকারে বড়। পানি খুব তাড়াতাড়ি সরে যায়। অপরদিকে শাহীনদের এলাকার মাটির কণাগুলো আকারে ছোট এবং জৈব ও খনিজ পদার্থ সমৃদ্ধ।
ক. বায়বায়ন কাকে বলে?
খ. হরাইজোন কীভাবে তৈরি হয়?
গ. বকুলদের এলাকার মাটি কোন ধরনের? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. বকুল ও শাহীনদের এলাকার মধ্যে কোনটিতে বেশি ফসল ফলবে? যুক্তিসহ তোমার মতামত দাও।
২নং প্রশ্নের উত্তর
ক. মাটিতে থাকা গ্যাসের সাথে বায়ুমণ্ডলে থাকা বাতাসের গ্যাসের বিনিময় প্রক্রিয়াকে বলা হয় বায়বায়ন।
খ. মাটির নিচে বিভিন্ন স্তরে স্তরে হরাইজোন তৈরি হয়।
ভ‚প্রকৃতির নিচের মাটির গঠন পরীক্ষা করে দেখা যায়, মাটি ৪টি সমান্তরাল স্তরে বিভক্ত। এ স্তরগুলোকে হরাইজোন বা দিগ্বলয় বলে। উপর থেকে নিচের দিকে ক্রমাগত স্তরগুলোকে অ, ই, ঈ ও উ হরাইজোনে ভাগ করা হয়েছে। হরাইজোন অ বা টপ সয়েল স্তরে উদ্ভিদ ও প্রাণীর মরদেহে পচন শুরু হয় এবং হিউমাসসহ অন্যান্য জৈব পদার্থ এ স্তরেই থাকে। হরাইজোন ই স্তর খনিজ পদার্থে ভরা থাকে। হরাইজোন ঈ-তে মূল শিলা পরিবর্তিত হয়ে নরম শিলা তৈরি হয়। হরাইজোন উ তে থাকে মূল শিলা, যা খুবই শক্ত।
গ. বকুলদের এলাকার মাটি হলো বালু মাটি।
বালু মাটির বৈশিষ্ট্য হলো, এতে বিদ্যমান মাটির কণার আকার বড় থাকে, ফলে কণাগুলোর মাঝে ফাঁকা জায়গা বেশি থাকে, যার ফলে বায়বায়ন অনেক বেশি হয়। এ মাটির পানিধারণ ক্ষমতা খুবই কম। বালু মাটিতে অতি ক্ষুদ্র শিলা ও খনিজ পদার্থ থাকে। বালু মাটিতে এগুলো থাকলে এটি চাষাবাদের জন্য সহজসাধ্য। যেহেতু এই মাটির পানি ধারণক্ষমতা কম, তাই পানি দিলে তা দ্রুত নিষ্কাশিত হয় এবং গ্রীষ্মকালে বিশেষ করে উদ্ভিদে পানির স্বল্পতা দেখা যায়। তাই যেসব ফসলে অনেক বেশি পানি লাগে সেগুলো বালু মাটিতে ভালো হয় না। যখন প্রচুর পরিমাণে বৃষ্টিপাত হয় যা জমিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি করে, সেসব ক্ষেত্রে বালু মাটি চাষাবাদের জন্য উপযোগী হয়ে উঠতে পারে। কারণ, বালু মাটিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয় না, যার ফলে গাছের শিকড় পচে না।
উপরে উলিখিত বালু মাটির সকল বৈশিষ্ট্যই বকুলদের এলাকার মাটিতে উপস্থিত। তাই বলা যায় বকুলদের এলাকার মাটি হচ্ছে বালু মাটি।
ঘ. বকুল ও শাহীনদের এলাকার মধ্যে শাহীনদের এলাকার মাটিতে বেশি ফসল ফলবে।
উদ্দীপকে শাহীনদের এলাকার মাটির বৈশিষ্ট্য হলো মাটির কণাগুলো আকারে ছোট এবং জৈব ও খনিজ পদার্থ সমৃদ্ধ। উলিখিত বৈশিষ্ট্য পলিমাটির বৈশিষ্ট্যের সাথে মিলে যায়। পলি মাটির পানি ধারণক্ষমতা বালু মাটির চেয়ে বেশি। পলি মাটি খুবই উর্বর হয় আর মাটির কণাগুলো বালু মাটির কণার তুলনায় আকারেও ছোট হয়। পলি মাটির কণাগুলো ছোট হওয়ায় এরা পানিতে ভাসমান আকারে থাকে এবং একপর্যায়ে পানির নিচে থাকা জমিতে পলির আকারে জমা পড়ে। পলি মাটিতে জৈব পদার্থ ও খনিজ পদার্থ থাকে। বালু মাটির মতো পলি মাটির কণাগুলোও দানাদার হয় এবং এতে উদ্ভিদের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টিকর উপাদান বেশি থাকে।
সুতরাং সকল দিক বিবেচনায় বালু মাটি অপেক্ষা পলি মাটি ফসলের জন্য বেশি উপযুক্ত।
অতএব, বকুল ও শাহীনদের এলাকার মধ্যে শাহীনদের এলাকাতে ফসল ভালো ফলবে।