এসএসসি সাধারণ বিজ্ঞান দ্বাদশ অধ্যায় প্রাত্যহিক জীবনে তড়িৎ
পাঠ সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াদি
তড়িৎ যন্ত্রাংশ : তড়িৎ বর্তনী সম্পূর্ণ করতে এতে বিভিন্ন যন্ত্রাংশ ব্যবহৃত হয়। এ যন্ত্রাংশগুলো হলো- কোষ, ব্যাটারি, পরিবাহী তার, সংযুক্ত তার, সংযোগবিহীন তার, চাবি বা সুইচ, রোধ বা রোধক বা রোধ বাক্স, পরিবর্তনশীল রোধ বা রিওস্টেট, গ্যালভানোমিটার, অ্যামিটার, ভোল্টমিটার ইত্যাদি।
ব্যাটারির কার্যক্রম : ব্যাটারি হলো একাধিক তড়িৎ কোষের সমন্বয়। একটি ব্যাটারিতে সাধারণত তিনটি অংশ থাকে। একটি অ্যানোড, একটি ক্যাথোড ও তড়িৎ বিশ্লেষ্য (ইলেকট্রোলাইট)। এই অ্যানোড ও ক্যাথোডকে একটি পরিবাহী তার দ্বারা সংযুক্ত করলে তড়িৎ বিভব পার্থক্য তৈরি হয়। এতে বিদ্যুৎ প্রবাহ শুরু হয়।
বাড়িতে তড়িৎ বর্তনীর নকশা বা হাউজ ওয়ারিং : বাড়িতে তড়িৎ সংযোগ দেওয়ার পূর্বে একটি নকশা আঁকতে হয়। ছোট ধরনের সংযোগের ক্ষেত্রে নকশা আঁকা না হলেও একটি পরিকল্পনা অনুযায়ী অবশ্যই এর সংযোগ দেওয়া হয়। সাধারণত বাড়িতে তড়িৎ সংযোগের জন্য সিরিজ বর্তনী উপযোগী নয়। কারণ, এতে মূল সমস্যা হলো সুইচ অন করলে একই সাথে সংযুক্ত সব বাল্ব জ্বলে উঠবে, ফ্যান চলতে থাকবে। আবার অফ করলে সবগুলো একই সাথে অফ হয়ে যাবে। মূলত বাড়িতে তড়িৎ সংযোগ সমান্তরাল সংযোগ ব্যবস্থা মেনে করা হয়। বর্তনীর সাথে ফিউজ, মেইন সুইচ, প্লাগ-সকেট, ডিস্ট্রিবিউশন বক্স এবং প্রয়োজনীয় বাতি বা পাখার সংযোগ দেওয়া হয়।
তড়িৎ বিশ্লেষণ প্রক্রিয়া : কোনো দ্রবণের মধ্যে তড়িৎ প্রবাহিত করে এর অণুগুলোকে ধনাত্মক ও ঋণাত্মক অংশে বিভক্ত করার পদ্ধতিকে তড়িৎ বিশ্লেষণ বলে। তড়িৎ প্রবাহের দ্বারা দ্রবণের যে দ্রবটিকে দুই ভাগে বিভক্ত বা বিশ্লেষণ করা হয় তাকে তড়িৎ দ্রব বা তড়িৎ বিশ্লেষ্য বলে। তড়িৎ দ্রবণের মধ্যে ধনাত্মক ও ঋণাত্মক আয়নের মাধ্যমে তড়িৎ প্রবাহ চলে। সকল এসিড, ক্ষার, কয়েকটি নিরপেক্ষ লবণ, এসিড মেশানো পানি ইত্যাদি তড়িৎ দ্রব বা তড়িৎ বিশ্লেষ্য পদার্থ। যেমনÑ ঐ২ঝঙ৪, ঐঘঙ৩, ঈঁঝঙ৪, অমঘঙ৩, ঘধঙঐ ইত্যাদি।
আয়ন : কোনো অণু, পরমাণু বা যৌগমূলকে যদি স্বাভাবিক সংখ্যার ইলেকট্রনের চেয়ে কম বা বেশি ইলেকট্রন থাকে তাকে আয়ন বলে। ইলেকট্রনের সংখ্যা স্বাভাবিকের চেয়ে কম হলে তাকে ধনাত্মক আয়ন বলে। আর যদি ইলেকট্রনের সংখ্যা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হয় তাহলে তাকে ঋণাত্মক আয়ন বলে।
তড়িৎ বিশ্লেষণ কোষ : কোনো তড়িৎ বিশ্লেষ্যের মধ্য দিয়ে বিদ্যুৎ প্রবাহ চালনা করতে হলে পদার্থটিকে গলিত বা পানিতে দ্রবীভ‚ত অবস্থায় একটি পাত্রের মধ্যে নেয়া হয়। সাধারণভাবে এ ধরনের পাত্রকে তড়িৎ বিশ্লেষণ কোষ বা ভোল্টমিটার বলা হয়। তড়িৎ বিশ্লেষণ কোষ বিভিন্ন আকৃতির হতে পারে।
প্রাত্যহিক জীবনে তড়িৎ বিশ্লেষণের গুরুত্ব :
১. তড়িৎ প্রলেপন (ঊষবপঃৎড়ঢ়ষধঃরহম) : তড়িৎ বিশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় কোনো ধাতুর ওপর সুবিধামতো অন্য কোনো ধাতুর প্রলেপ দেওয়াকে তড়িৎ প্রলেপন বলে। সাধারণত কোনো নিকৃষ্ট ধাতু যেমন- তামা, লোহা, ব্রোঞ্জ ইত্যাদি দিয়ে তৈরি জিনিসকে জলবায়ু থেকে রক্ষা করার এবং সুন্দর দেখানোর জন্য এদের ওপর সোনা, রুপা, নিকেল ইত্যাদি মূল্যবান ধাতুর প্রলেপ দেওয়া হয়।
২. তড়িৎ মুদ্রণ (ঊষবপঃৎড়ঃুঢ়রহম) : তড়িৎ প্রলেপনের একটি বিশেষ পদ্ধতিকে ইলেকট্রোটাইপিং বা তড়িৎ মুদ্রণ বলে। তড়িৎ বিশ্লেষণ প্রণালিতে হরফ, বøক, মডেল ইত্যাদি তৈরি করাকে তড়িৎ মুদ্রণ বলে।
৩. ধাতু নিষ্কাশন ও শোধন : খনি থেকে সাধারণত কোনো ধাতু বিশুদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায় না। এদের মধ্যে নানা ধাতুর মিশ্রণ থাকে যাকে আকরিক বলে। তড়িৎ বিশ্লেষণের সাহায্যে আকরিক থেকে সহজে ধাতু নিষ্কাশন ও তা শোধন করা যায়।
৪. কোনো বর্তনীর মেরু নির্ণয় : কোনো ডিসি মেইন লাইনের দুটি তারের কোনটি ধনাত্মক তা তড়িৎ বিশ্লেষণের সাহায্যে নির্ণয় করা যায়।
৫. তড়িৎ রিপেয়ারিং বা মেরামত : তড়িৎ রিপেয়ারিং বা মেরামত কৌশল অবলম্বন করে কোনো যন্ত্রাংশ মেরামত করা হয়। এই ক্ষেত্রে ভঙ্গুর বা নষ্ট যন্ত্রাংশের ওপর সমস্ত অংশকে ওয়েব দ্বারা আবৃত করা হয়। এর জন্য একে তড়িৎ বিশ্লেষ্যে ডুবানো হয় এবং একে ক্যাথোড হিসেবে ব্যবহার করা হয়। প্রয়োজনে একে অন্য আকৃতিতেও পরিণত করা হয়।
তড়িৎ ক্ষমতা : কাজ করার হার অর্থাৎ একক সময়ে সম্পন্নকৃত কাজকে ক্ষমতা বলে। কোনো তড়িৎ যন্ত্র প্রতি সেকেন্ডে যে পরিমাণ তড়িৎ শক্তি ব্যয় করে বা অন্য শক্তিতে (তাপ, আলো, যান্ত্রিক ইত্যাদি) রূপান্তরিত করে তাকে তড়িৎ ক্ষমতা বলে।
ওয়াট : কোনো পরিবাহক বা তড়িৎ যন্ত্রের দুই প্রান্তের বিভব পার্থক্য এক ভোল্ট হলে যদি এর মধ্য দিয়ে এক অ্যাম্পিয়ার তড়িৎ প্রবাহিত হয় তবে ঐ যন্ত্রের ক্ষমতা এক ওয়াট।
এক ওয়াট = ১ ভোল্ট ১ অ্যাম্পিয়ার
কিলোওয়াট : তড়িৎ ক্ষমতাকে কিলোওয়াট বা মেগাওয়াটে প্রকাশ করা যায়।
১ কিলোওয়াট = ১০০০ ওয়াট বা ১০৩ ওয়াট এবং ১ মেগা ওয়াট = ১০৬ ওয়াট
ওয়াট-ঘণ্টা : এক ওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন কোনো তড়িৎ যন্ত্রের মধ্য দিয়ে এক ঘণ্টা ধরে তড়িৎ প্রবাহিত হলে যে পরিমাণ তড়িৎ শক্তি অন্য শক্তিতে রূপান্তরিত হয় তাকে এক ওয়াট-ঘণ্টা বলে।
১ ওয়াট-ঘণ্টা = ১ ওয়াট ১ ঘণ্টা
বা, ১ কিলোওয়াট-ঘণ্টা = ১,০০০ ওয়াট ৩৬০০ সেকেন্ড
= ৩৬০০০০০ ওয়াট-সেকেন্ড = ৩৬০০০০০ জুল।
আন্তর্জাতিকভাবে তড়িৎ সরবরাহকে কিলোওয়াট-ঘণ্টা এককে পরিমাপ করা হয়। এই একককে বোর্ড অব ট্রেড ইউনিট (ইঙঞ) বা সংক্ষেপে ইউনিট বলে। আমরা যে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করি তা এই এককেই হিসাব করা হয়।
২২০ঠ – ৬০ড এর অর্থ : কোনো বাল্বের গায়ে ২২০ঠ – ৬০ড লেখা থাকার অর্থ এটি ২২০ঠ বিভব পার্থক্যে সবচেয়ে বেশি উজ্জ্বলভাবে জ্বলবে এবং প্রতি সেকেন্ডে ৬০ জুল বৈদ্যুতিক শক্তি আলো ও তাপশক্তিতে রূপান্তরিত করবে।
এনার্জি সেভিং বাল্বের সুবিধা :
১. এই বাল্বে সাধারণ বাল্বের তুলনায় তড়িৎ বিল কম আসে। ফলে খরচ সাশ্রয় হয়।
২. এই বাল্বে কম শক্তি লাগে। এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে প্রতি পরিবারে যদি ১টি করে সাধারণ বাল্বের পরিবর্তে এনার্জি সেভিং বাল্ব ব্যবহার করে তবে যে পরিমাণ শক্তি বাঁচে তা দিয়ে প্রতি বছরে ৩০ লাখ পরিবারে তড়িৎ সংযোগ দেয়া সম্ভব।
৩. জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতা কমে যায়। এতে পরিবেশের ওপর কম বিরূপ প্রভাব পড়ে।
৪. এই বাল্ব বেশি দিন টেকে বলে কম পরিত্যক্ত হয়। এতে ময়লা আবর্জনা ব্যবস্থাপনায়ও সুবিধা হয়।
আইপিএস : এর পূর্ণনাম ইনস্ট্যান্ট পাওয়ার সাপ্লাই যা তড়িৎপ্রবাহে বিঘœ ঘটার পরও তাৎক্ষণিকভাবে তড়িৎপ্রবাহ পাওয়ার আদর্শ সমাধান। এটি মূলত ডিসি প্রবাহ। আইপিএসকে গৃহে ব্যবহৃত তড়িতের ইনপুটের সাথে সংযুক্ত করা হয়।
ইউপিএস : এর পূর্ণনাম আনইন্টারাপটিবল পাওয়ার সাপ্লাই, যা তড়িৎ উৎস ও কম্পিউটারের মাঝে লাগানো থাকে। তড়িৎ প্রবাহে বিঘœ ঘটার পরেও এর মাধ্যমে কম্পিউটার চলতে থাকে এবং কম্পিউটারের তথ্যের কোনো ক্ষতি হয় না।
সিস্টেম লস : তড়িৎ উৎপাদন ও সরবরাহের মধ্যপথে বিদ্যুতের অপচয়কেই সিস্টেম লস বলা হয়। ত্রæটিপূর্ণ সরবরাহ পদ্ধতি, অবৈধ সংযোগ, দুর্বল মনিটরিং ব্যবস্থা ইত্যাদি কারণে সিস্টেম লসের সৃষ্টি হয়।
লোডশেডিং : চাহিদার তুলনায় তড়িতের উৎপাদন কম হলে সব জায়গায় একই সাথে তড়িৎ সরবরাহ করা সম্ভব হয় না। তখন কোনো এলাকার তড়িৎ সরবরাহ বন্ধ করে উৎপাদিত তড়িৎ অন্যান্য এলাকায় চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ করা হয়। তড়িতের উৎপাদন যদি বেশ কম হয় তবে সব এলাকাতেই ক্রমাগত তড়িতের সরবরাহ বন্ধ করতে হয়। তড়িৎ বণ্টনের জন্য তড়িৎপ্রবাহ বন্ধ করার এই পদ্ধতিকেই লোডশেডিং বলা হয়।
লোডশেডিংয়ের কারণ :
১. চাহিদার তুলনায় বিদ্যুতের স্বল্প উৎপাদন
২. বিদ্যুতের সিস্টেম লস
৩. বিদ্যুতের অপচয়
৪. বিদ্যুতের যান্ত্রিক ত্রæটি।
অনুশীলনীর বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
১. কোনটি অ্যামিটারের প্রতীক?
ক গ ঘ
২. তড়িৎ বিশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় প্রলেপ দেওয়া হয়Ñ
র. লোহার ওপর নিকেলের
রর. দস্তার ওপর লোহার
ররর. তামার ওপর সোনার
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ে ৩ ও ৪ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
রিপন বকশিগঞ্জে বাস করে। এখানে প্রায়ই বিদ্যুতের লোডশেডিং হয়। এ কারণে বিভিন্ন কাজে অসুবিধা হওয়ায় রিপন বাড়িতে আইপিএস লাগিয়েছে।
৩. বিদ্যুতের বিকল্প হিসেবে লাগানো যন্ত্রটির ক্ষেত্রে প্রযোজ্যÑ
র. এটি অপর্যাবৃত্ত প্রবাহে চলে
রর. নিম্ন ভোল্টেজেও চার্জিত হয়
ররর. তড়িতের আউটপুটের সাথে সংযুক্ত থাকে
নিচের কোনটি সঠিক?
র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৪. বকশিগঞ্জের সমস্যার কারণÑ
র. বিদ্যুতের সিস্টেম লস
রর. সরবরাহ পদ্ধতির ত্রæটি
ররর. চাহিদার তুলনায় তড়িতের স্বল্প উৎপাদন
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও রর গ রর ও ররর র, রর ও ররর
গুরুত্বপূর্ণ বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
৫. ১২০ ওয়াটের একটি বাল্ব প্রতিদিন ২ ঘণ্টা করে জ্বললে ২০১২ সনের ফেব্রæয়ারি মাসে ব্যায়িত তড়িৎ শক্তি নিচের কোনটি?
৬.৯৬ কিলোওয়াট ঘণ্টা খ ৬.৭২ কিলোওয়াট ঘণ্টা
গ ৬৯.৬ কিলোওয়াট ঘণ্টা ঘ ১৭৬ কিলোওয়াট ঘণ্টা
৬. কোন বিজ্ঞানী সর্বপ্রথম তড়িৎ বিশ্লেষণের ব্যাখ্যা দেন?
ক আলেসান্দ্রো ভোল্টা খ মাইকেল ফ্যারাডে
আরহেনিয়াস ঘ আইজ্যাক নিউটন
৭. তড়িৎ বিশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় কোনো ধাতুর উপর সুবিধামতো অন্য কোনো ধাতুর প্রলেপ দেয়াকে কী বলে?
তড়িৎ প্রলেপন খ তড়িৎ মুদ্রণ
গ তড়িৎ রিপেয়ারিং ঘ তড়িৎ বিশ্লেষণ
৮. ৪০ ওয়াটের একটি বাল্ব প্রতিদিন ৪ ঘণ্টা করে ৩০ দিন জ্বলে। প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের মূল্য ৭ টাকা হলে বিদ্যুতের জন্য মোট কত ব্যয় হবে?
৩৩.৬০ টাকা খ ৮৪.০০ টাকা
গ ৩৩৬.০০ টাকা ঘ ১১২০ টাকা
৯. কোনটি মেইন সুইসের চিহ্ন?
ক খ ( )
গ
১০. প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের মূল্য ৪.৬০ টাকা। ৬০ ওয়াটের একটি বাল্ব প্রতিদিন ৫ ঘণ্টা করে চললে ২০১৫ সালে ফেব্রæয়ারি মাসে বাল্ব বাবদ কত টাকা বিদ্যুৎ বিল দিতে হবে?
ক ৩৮৬.৪০ টাকা খ ৮৪০০ টাকা
৩৮.৬৪ টাকা ঘ ৪০.০২ টাকা
১১. কোনটি বিদ্যুৎ কোষের প্রতীক?
ক খ ( ) গ
১২. এক ওয়াট-ঘণ্টা = কত জুল?
৩৬০০ জুল খ ৩৬০০০ জুল
গ ৩৬০০০০ জুল ঘ ৩৬০০০০০ জুল
১৩. আয়নগুলো তরলের মধ্যে কীভাবে অবস্থান করে?
ক সারিবদ্ধভাবে বিক্ষিপ্তভাবে
গ জোড়ায় জোড়ায় ঘ সমান্তরালভাবে
১৪. ১০০ ওয়াট এর একটি বাতি দৈনিক ৮ ঘণ্টা করে জ্বালাতে মাসে কত ইউনিট বিদ্যুৎ শক্তি ব্যয় হবে?
২৪ খ ৩০ গ ৩৬ ঘ ৪০
১৫. লোড শোডিং-এর কারণ-
র. চাহিদার তুলনায় বিদ্যুতের স্বল্প উৎপাদন
রর. সরবরাহ পদ্ধতির ত্রæটি
ররর. দুর্বল মনিটরিং
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর র, রর ও ররর
১৬. বিদ্যুতের সিস্টেম লসের কারণ হচ্ছে-
র. সরবরাহ পদ্ধতিতে ত্রæটি
রর. দুর্বল মনিটরিং ব্যবস্থা
ররর. উন্নত সংরক্ষণ ব্যবস্থা
নিচের কোনটি সঠিক?
র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
১৭. লোডশোডিং এর কারণ-
র. বিদ্যুতের যান্ত্রিক ত্রæটি
রর. বিদ্যুতের সাশ্রয়
ররর. বিদ্যুতের অপচয়
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর র, রর ও ররর
নিচের অনুচ্ছেদটি পড় এবং ১৮ ও ১৯নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
রহমান সাহেব তার বাড়িতে ৬০ ওয়াটের ২টি বাল্ব এবং ১৫ ওয়াটের ৩টি এনার্জি সেভিং বাল্ব ব্যবহার করেন। তিনি প্রতিদিন গড়ে ৫ ঘণ্টা করে বাল্বগুলো জ্বালান। প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ শক্তির মূল্য ৫ টাকা।
১৮. তার ব্যবহৃত যন্ত্রের ব্যয়িত বিদ্যুৎ শক্তি পরিমাপের একক হচ্ছে-
র. কিলোওয়াট-ঘণ্টা
রর. অ্যাম্পিয়ার
ররর. ইঙঞ
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
১৯. জুন মাসে রহমান সাহেবের বিদ্যুৎ বিল কত?
ক ১২০.৭৫ খ ১২৩.৫০ ১২৩.৭৫ ঘ ১২৪.৭৫
নিচের অনুচ্ছেদটি পড় এবং ২০ ও ২১নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
নাফিমের পড়ার ঘরে ১০০ ওয়াটের একটি বাল্ব প্রতিদিন ৫ ঘণ্টা করে জ্বলে। মা ছেলেকে ডেকে বললেন আগামীকাল থেকে এনার্জি সেভিং বাল্ব ব্যবহার করতে হবে।
২০. প্রথম বাল্বটি ১ মাস জ্বললে কত তড়িৎ শক্তি ব্যয় হবে?
ক ৫ কিলোওয়াট ঘণ্টা খ ১০ কিলোওয়াট ঘণ্টা
১৫ কিলোওয়াট ঘণ্টা ঘ ৩০ কিলোওয়াট ঘণ্টা
২১. দ্বিতীয় বাল্বটি ব্যবহারে-
র. খরচের সাশ্রয় হবে
রর. সহজে নষ্ট হবে না
ররর. বেশি শক্তি দরকার হবে
নিচের কোনটি সঠিক?
র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন \ ১ \ অ্যানোড কী?
উত্তর : তড়িৎ বিশ্লেষণ কোষের ধনাত্মক তড়িৎদ্বারকে অ্যানোড বলে।
প্রশ্ন \ ২ \ দুটি তড়িৎ বিশ্লেষ্য পদার্থের নাম লিখ।
উত্তর : দুটি তড়িৎ বিশ্লেষ্য পদার্থের নাম ঘধঈষ ও ঈঁঝঙ৪।
প্রশ্ন \ ৩ \ বাড়ির মেইন লাইনে কয়টি তার থাকে?
উত্তর : বাড়ির মেইন লাইনে দুটি তার থাকে।
প্রশ্ন \ ৪ \ মেইন সুইচের সাথে সংযুক্ত ফিউজ কী কাজে ব্যবহৃত হয়?
উত্তর : মেইন সুইচের সাথে সংযুক্ত ফিউজ মেইন লাইনের অতিরিক্ত চাপ প্রতিহত করতে ব্যবহৃত হয়।
প্রশ্ন \ ৫ \ তড়িৎ বিশ্লেষণের ফলে তড়িৎ দ্রবকে কিসে বিভক্ত করা হয়?
উত্তর : তড়িৎ বিশ্লেষণের ফলে তড়িৎ দ্রবকে ধনাত্মক ও ঋণাত্মক আয়নে বিভক্ত করা হয়।
প্রশ্ন \ ৬ \ ক্যাথোড কী?
উত্তর : তড়িৎ বিশ্লেষণ কোষের ঋণাত্মক তড়িৎদ্বারকে ক্যাথোড বলে।
প্রশ্ন \ ৭ \ তড়িৎ ক্ষমতাকে কী কী এককে প্রকাশ করা হয়?
উত্তর : তড়িৎ ক্ষমতাকে কিলোওয়াট বা মেগাওয়াট এককে প্রকাশ করা যায়।
প্রশ্ন \ ৮ \ ইউপিএস এর পূর্ণরূপ কী?
উত্তর : ইউপিএস এর পূর্ণরূপ আনইন্টারাপটিবল পাওয়ার সাপ্লাই।
প্রশ্ন \ ৯ \ বাংলাদেশে কী কী উৎস থেকে তড়িৎ উৎপাদন হয়?
উত্তর : বাংলাদেশে তড়িৎ উৎপন্ন হয়ে থাকে সাধারণত পানিপ্রবাহ, গ্যাস প্রভৃতি থেকে।
প্রশ্ন \ ১০ \ ওয়াট, অ্যাম্পিয়ার ও ভোল্টের মধ্যে সম্পর্ক কী?
উত্তর : ওয়াট, অ্যাম্পিয়ার ও ভোল্টের মধ্যে সম্পর্ক হলো,
ওয়াট = অ্যাম্পিয়ার ভোল্ট।
প্রশ্ন \ ১১ \ আরহেনিয়াস কিসের ব্যাখ্যা দেন?
উত্তর : আরহেনিয়াস তড়িৎ বিশ্লেষণের ব্যাখ্যা দেন ।
প্রশ্ন \ ১২ \ ধনাত্মক আয়ন কাকে বলে?
উত্তর : কোনো অণু, পরমাণু বা যৌগমূলকে ইলেকট্রনের সংখ্যা স্বাভাবিকের চেয়ে কম হলে তাকে ধনাত্মক আয়ন বলে।
প্রশ্ন \ ১৩ \ ঋণাত্মক আয়ন কাকে বলে?
উত্তর : কোনো অণু, পরমাণু বা যৌগমূলকে ইলেকট্রনের সংখ্যা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হলে তাকে ঋণাত্মক আয়ন বলে।
প্রশ্ন \ ১৪ \ ব্যাটারিতে সাধারণত কয়টি অংশ থাকে?
উত্তর : ব্যাটারিতে সাধারণত তিনটি অংশ থাকে।
প্রশ্ন \ ১৫ \ বিদ্যুৎ বিল হিসাবের সূত্রটি কী?
উত্তর : বিদ্যুৎ বিল হিসাবের সূত্রটি হলোÑ
ব্যয়িত তড়িৎ শক্তির খরচ = ব্যয়িত তড়িৎ শক্তির একক প্রতি এককে খরচ।
প্রশ্ন \ ১৬ \ হাউজ ওয়ারিংয়ের মেইন তার দুটি কী কী?
উত্তর : হাউজ ওয়ারিংয়ের মেইন তার দুটি হলো জীবন্ত তার (লাল রঙের) এবং নিরপেক্ষ তার (কালো রঙের)।
প্রশ্ন \ ১৭ \ বৈদ্যুতিক তারে অন্তরক হিসেবে কী ব্যবহার করা হয়?
উত্তর : বৈদ্যুতিক তারে অন্তরক হিসেবে সাধারণত পিভিসি (পলিভিলাইন ক্লোরাইড) ও রাবার ব্যবহার করা হয়।
অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন \ ১ \ বাসাবাড়িতে তড়িৎ সংযোগের জন্য সিরিজ বর্তনী উপযোগী নয় কেন?
উত্তর : বাসাবাড়িতে তড়িৎ সংযোগের জন্য সিরিজ বর্তনী উপযোগী নয়। কারণ, এতে মূল সমস্যা হলো সুইচ অন করলে একই সাথে সংযুক্ত সব বাল্ব জ্বলে ওঠে, ফ্যান চলতে থাকে। আবার, অফ করলে সবগুলো একই সাথে অফ হয়ে যাবে। মূলত বাড়িতে তড়িৎ সংযোগ সমান্তরাল সংযোগ ব্যবস্থা মেনে করা হয়।
প্রশ্ন \ ২ \ জীবন্ত তার সংস্পর্শে কেন শক লাগে?
উত্তর : জীবন্ত তারে তড়িৎ ভোল্টেজ থাকে বলে শক লাগে।
কেউ যদি খালি পায়ে অর্থাৎ মাটিতে সংস্পর্শে রেখে জীবন্ত তার স্পর্শ করে তবে তার শরীরের ভিতর দিয়ে তড়িৎ প্রবাহ চলে এবং ওই ব্যক্তির ওপর বৈদ্যুতিক শক লাগে। এতে তার মৃত্যুও হতে পারে।
প্রশ্ন \ ৩ \ ঈঁঝঙ৪ দ্রবণে তড়িৎ বিশ্লেষণে মোট ভর অপরিবর্তিত থাকে কীভাবে?
উত্তর : ঈঁঝঙ৪ দ্রবণে তড়িৎ বিশ্লেষণে দ্রবণ থেকে যে পরিমাণ ঈঁ ক্যাথোডে জমা হয় ঠিক সেই পরিমাণ ঈঁ অ্যানোড থেকে দ্রবণে চলে আসে বলে মোট ভর অপরিবর্তিত থাকে। মোট ভর হচ্ছে অ্যানোড থেকে তামা ক্যাথোডে জমা হয়, ফলে অ্যানোডের ভর যতটুকু হ্রাস পায় ক্যাথোডের ভর ঠিক ততটুকুই বৃদ্ধি পায়।
প্রশ্ন \ ৪ \ ঈঁঝঙ৪ দ্রবণের তড়িৎ বিশ্লেষণে তড়িৎদ্বার হিসেবে তামার বদলে অন্য নিষ্ক্রিয় ধাতু ব্যবহৃত হলে কী ঘটবে?
উত্তর : ঈঁঝঙ৪ দ্রবণের তড়িৎ বিশ্লেষণে তড়িৎদ্বার দুটি তামার বদলে অন্য কোনো নিষ্ক্রিয় ধাতুর তৈরি হলে ক্যাথোডে তামার অণু জমা হবে কিন্তু ঝঙ৪– পানির সাথে বিক্রিয়া করে ঐ২ঝঙ৪ উৎপন্ন করে এবং ঙ২ গ্যাস বুদবুদ আকারে বেরিয়ে যাবে। ফলে দ্রবণের ঘনত্ব ক্রমশ হ্রাস পাবে।
প্রশ্ন \ ৫ \ তড়িৎ বিশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় কীভাবে কোনো বস্তুতে প্রলেপ দেয়া হয়?
উত্তর : তড়িৎ বিশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় যে বস্তুতে প্রলেপ দিতে হবে সেটি খুব ভালোভাবে পরিষ্কার করে ধুয়ে একটি ভোল্টামিটারের ক্যাথোড এবং যে ধাতুর প্রলেপ দিতে হবে তাকে অ্যানোড করা হয়। যে ধাতুর প্রলেপ দিতে হবে তার কোনো লবণের দ্রবণ তড়িৎ দ্রব হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এখন ভোল্টামিটারের মধ্যে তড়িৎপ্রবাহ চালনা করলে ধাতুর তড়িৎ বিশ্লেষণের ফলে ক্যাথোডে রাখা বস্তুর ওপর ধাতুর প্রলেপ পড়ে।
প্রশ্ন \ ৬ \ আকরিক থেকে কীভাবে ধাতু নিষ্কাশিত হয়?
উত্তর : আকরিক থেকে তড়িৎ বিশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় ধাতু নিষ্কাশিত হয়। যে আকরিক থেকে ধাতু নিষ্কাশন করতে হবে সেটি ভোল্টামিটারের অ্যানোড হিসেবে ব্যবহার করা হয়। যে ধাতু নিষ্কাশন করতে হবে তার কোনো লবণের দ্রবণকে তড়িৎ দ্রব এবং তার একটি বিশুদ্ধ পাতকে অ্যানোড হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এভাবে দ্রবণের মধ্য দিয়ে তড়িৎ প্রবাহ চালনা করলে আকরিক থেকে বিশুদ্ধ ধাতু নিষ্কাশিত হয়।
প্রশ্ন \ ৭ \ বর্তমানে এনার্জি সেভিং বাল্বের ব্যবহার কেন বাড়ছে?
উত্তর : সাধারণ বাল্ব ব্যবহারে অনেক তড়িৎ শক্তি খরচ হয় বলে বর্তমানে এনার্জি সেভিং বাল্বের ব্যবহার বাড়ছে।
এনার্জি সেভিং বাল্ব ব্যবহারের ফলে নিজস্ব অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির পাশাপাশি পরিবেশেরও বিভিন্ন দিক থেকে সুবিধা হয়। এ কারণে এনার্জি সেভিং বাল্বের ব্যবহার বাড়ছে।
প্রশ্ন \ ৮ \ লোডশেডিং বলতে কী বুঝ?
উত্তর : তড়িৎ বণ্টনের জন্য তড়িৎ প্রবাহ বন্ধ করার পদ্ধতিকেই লোডশেডিং বলা হয়।
চাহিদার তুলনায় তড়িতের উৎপাদন কম হলে সব জায়গায় একই সাথে তড়িৎ সরবরাহ করা সম্ভব হয় না। তখন কোনো কোনো এলাকার তড়িৎ সরবরাহ বন্ধ করে উৎপাদিত অন্যান্য এলাকায় চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ করা হয়। তড়িতের উৎপাদন যদি বেশ কম হয় তবে সব এলাকাতেই ক্রমাগত তড়িতের সরবরাহ বন্ধ করতে হয়।
প্রশ্ন \ ৯ \ কী কী কারণে লোডশেডিং হয়?
উত্তর : নিম্নলিখিত কারণে লোডশেডিং হয়Ñ
১. চাহিদার তুলনায় বিদ্যুতের স্বল্প উৎপাদন;
২. বিদ্যুতের সিস্টেম লস;
৩. বিদ্যুতের অপচয় ও
৪. বিদ্যুতের যান্ত্রিক ত্রæটি।
প্রশ্ন \ ১০ \ বিজ্ঞানী আরহেনিয়াস তড়িৎ বিশ্লেষণ সম্পর্কে কী ব্যাখ্যা দেন?
উত্তর : বিজ্ঞানী আরহেনিয়াসের মতে, সকল এসিড, ক্ষার বা লবণ জাতীয় যৌগকে তরলে দ্রবীভ‚ত করলে তা আয়নায়িত হয়ে সমপরিমাণ ধনাত্মক ও ঋণাত্মক আধানযুক্ত আয়নে বিভক্ত হয়। আধানযুক্ত অবস্থায় আয়নগুলোর রাসায়নিক ধর্ম প্রকাশ পায় না। তবে নিস্তড়িত হলে এরা আবার রাসায়নিক বিক্রিয়ায় অংশ নিতে পারে।
প্রশ্ন \ ১১ \ কীভাবে তড়িৎ মুদ্রণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়?
উত্তর : তড়িৎ মুদ্রণের জন্য প্রথমে লেখাটি সাধারণ টাইপে কম্পোজ করে মোমের ওপর ছাপ নেওয়া হয়। এর উপরে কিছু গ্রাফাইট গুঁড়ো ছড়িয়ে একে তড়িৎ পরিবাহী করা হয়। এরপর কপার সালফেট দ্রবণে এটি ক্যাথোড পাত হিসেবে ডুবানো হয় এবং একটি তামার পাতকে অ্যানোড হিসেবে ব্যবহার করা হয়। তারপর দ্রবণের মধ্যে তড়িৎ প্রবাহ চালালে মোমের ছাঁচের ওপর তামার প্রলেপ পড়বে। প্রলেপ খানিকটা পুরু হলে ছাঁচ হতে ছাড়িয়ে নিয়ে ছাপার কাজে ব্যবহার করা হয়। এভাবে তড়িৎ মুদ্রণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।
প্রশ্ন \ ১২ \ আইপিএস কীভাবে কাজ করে?
উত্তর : আইপিএস মূলত ডিসি প্রবাহ। এটি নিম্ন ভোল্টেজেও চার্জিত হয়। ফলে স্বাভাবিক বিদ্যুৎ প্রবাহে বিঘœ ঘটলে আমরা সহজেই এর ব্যাকআপ পেয়ে থাকি। আইপিএসকে সাধারণত আমাদের গৃহে ব্যবহৃত তড়িতের ইনপুটের সাথে সংযুক্ত করা হয়। এই ইনস্ট্যান্ট পাওয়ার সাপ্লাই সম্পূর্ণ অটোমেটিক অর্থাৎ তড়িৎপ্রবাহ চলে যাওয়ার সাথে সাথেই এর কার্যক্রম চলে এবং চলতে থাকে যতক্ষণ এর ব্যাটারির চার্জ থাকে।
প্রশ্ন \ ১৩ \ ১০০ড এবং ৬০ড বাল্বের মধ্যে কোনটি বেশি আলোকিত হবে?
উত্তর : ১০০ড বাল্ব বলতে বুঝায় বাল্বটি প্রতি সেকেন্ডে ১০০ জুল হারে বৈদ্যুতিক শক্তি আলো ও তাপশক্তিতে রূপান্তরিত করে।
আবার, ৬০ড বাল্ব বলতে বুঝায় বাল্বটি প্রতি সেকেন্ডে ৬০ জুল হারে বৈদ্যুতিক শক্তি আলো ও তাপশক্তিতে রূপান্তরিত করে।
সুতরাং, ১০০ড এবং ৬০ড বাল্বের মধ্যে ১০০ড বাল্বটি বেশি আলোকিত হবে।
প্রশ্ন \ ১৪ \ টচঝ ও ওচঝ এর মধ্যে মূল পার্থক্য কী?
উত্তর : মূল লাইনে বিদ্যুৎ সরবরাহ বিচ্ছিন্ন হলে ওচঝ থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু হয় তবে এক্ষেত্রে মূল লাইন অফ হওয়ার পর ওচঝ এর লাইন চালু হয়। টচঝ এর ক্ষেত্রে মূল লাইন অফ হলেও বিদ্যুৎ সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন থাকে। অর্থাৎ ৪ মিলি সেকেন্ড সময়ের সাথে টচঝ এর লাইন চালু হয় যা ওচঝ এর ক্ষেত্রে সম্ভব নয়।
অনুশীলনীর সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন -১ ল্ফ নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
মিসেস মনছুরা খানম একজন সচেতন গৃহিনী। বাড়ির বিদ্যুৎ ব্যবহারের ক্ষেত্রে তিনি হিসাব করে চলেন। প্রতিদিন গড়ে ৬ ঘণ্টা করে ১০০ ওয়াটের ৫টি বাল্ব জ্বালান। ইদানীং তিনি লক্ষ করছেন বিদ্যুৎ বিল বেশি আসছে। এজন্য তিনি বাল্বগুলো পরিবর্তন করে ৫টি ২০ ওয়াটের এনার্জি সেভিং বাল্ব লাগান।
ক. বৈদ্যুতিক ক্ষমতা কী?
খ. একটি বাল্বের গায়ে ২২০ ভোল্ট-৬০ ওয়াট লেখা আছে এর অর্থ কী?
গ. প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের মূল্য ৫ টাকা হলে পূর্বে মনছুরা খানমের কত বিল আসতো?
ঘ. পরবর্তীতে বাল্বগুলোর পরিবর্তনে মনছুরা খানমের কী লাভ হলো? যুক্তিসহ তোমার মতামত দাও।
১নং প্রশ্নের উত্তর
ক. কোনো তড়িৎ যন্ত্র প্রতি সেকেন্ডে যে পরিমাণ তড়িৎ শক্তি ব্যয় করে বা অন্য শক্তিতে (তাপ, আলো, যান্ত্রিক ইত্যাদি) রূপান্তরিত করে তাকে বৈদ্যুতিক ক্ষমতা বা তড়িৎ ক্ষমতা বলে।
খ. বাল্বের গায়ে ২২০ ভোল্ট – ৬০ ওয়াট লেখা থেকে বোঝা যায়, ২২০ ভোল্ট বিভব পার্থক্যবিশিষ্ট লাইনে বাল্বটিকে সংযুক্ত করলে, বাল্বটি সবচেয়ে বেশি উজ্জ্বলভাবে জ্বলবে এবং প্রতি সেকেন্ডে ৬০ জুল বৈদ্যুতিক শক্তি আলো ও তাপশক্তিতে রূপান্তরিত হবে।
গ. মিসেস মনছুরা খানম পূর্বে প্রতিদিন গড়ে ৬ ঘণ্টা করে ১০০ ওয়াটের ৫টি বাল্ব জ্বালাতেন।
একটি বাতি কর্তৃক ব্যয়িত প্রতিদিনের বিদ্যুৎ শক্তির পরিমাণ,
= ১০০ ৬১০০০ কিলোওয়াট-ঘণ্টা
= ০.৬ কিলোওয়াট-ঘণ্টা
৫টি বাতি কর্তৃক এক মাসে ব্যয়িত বিদ্যুৎ খরচের পরিমাণ
= (০.৬ ৩০ ৫) কিলোওয়াট- ঘণ্টা
= ৯০ ইউনিট।
প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের মূল্য ৫ টাকা হলে মোট বিল = (৯০ ৫) টাকা বা ৪৫০ টাকা।
সুতরাং পূর্বে মনছুরা খানমের বিল আসতো ৪৫০ টাকা।
ঘ. পরবর্তীতে বিদ্যুৎ বিল বেশি আসায় মনছুরা খানমের আর্থিক লাভ হলো।
পূর্বে বিদ্যুৎ বিল বেশি আসায় মনছুরা খানম ১০০ ওয়াটের ৫টি বাল্ব পরিবর্তন করে ২০ ওয়াটের ৫টি এনার্জি সেভিং বাল্ব লাগান এবং ৬ ঘণ্টা করে জ্বালান।
একটি এনার্জি সেভিং বাল্ব কর্তৃক ব্যয়িত প্রতিদিনের বিদ্যুৎ শক্তির পরিমাণ
= ২০ ৬১০০০ কিলোওয়াট-ঘণ্টা
= ০.১২ কিলোওয়াট-ঘণ্টা
৫টি এনার্জি সেভিং বাল্ব কর্তৃক ব্যয়িত এক মাসের বিদ্যুৎ শক্তির পরিমাণ
= (০.১২ ৫ ৩০) কিলোওয়াট-ঘণ্টা
= ১৮ কিলোওয়াট-ঘণ্টা = ১৮ ইউনিট।
এখন মনছুরা খানমের মাসিক বিদ্যুৎ বিলের পরিমাণ
= (১৮ ৫) টাকা = ৯০ টাকা।
অর্থাৎ মনছুরা খানম বাল্ব পরিবর্তনের মাধ্যমে (৪৫০ – ৯০) = ৩৬০ টাকা বিদ্যুৎ বিল কমিয়েছেন।
অতএব, পরবর্তীতে বাল্বগুলোর পরিবর্তনে মিসেস মনছুরা খানমের ৩৬০ টাকা সাশ্রয় হলো। সুতরাং তার আর্থিক লাভ হলো।
প্রশ্ন -২ ল্ফ নিচের চিত্রটি দেখ এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
চিত্র-চ চিত্র-ছ
ক. তড়িৎ বিশ্লেষণ কাকে বলে?
খ. অ্যানোড বলতে কী বুঝায়?
গ. ‘ই’ চিহ্নিত অংশে কীভাবে ইলেকট্রন প্রবাহিত হয়? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. চ ও ছ এর মধ্যে বাড়িতে সংযোগের ক্ষেত্রে কোনটি বেশি সুবিধাজনক? তোমার যৌক্তিক মতামত দাও।
২নং প্রশ্নের উত্তর
ক. কোনো দ্রবণের মধ্যে তড়িৎ প্রবাহিত করে এর অণুগুলোকে ধনাত্মক ও ঋণাত্মক অংশে বিভক্ত করার পদ্ধতিকে তড়িৎ বিশ্লেষণ বলে।
খ. যে তড়িৎদ্বার ব্যাটারির ধনাত্মক প্রান্তের সাথে যুক্ত থাকে এবং যার মধ্য দিয়ে বিদ্যুৎ প্রবাহ ব্যাটারি থেকে তড়িৎ বিশ্লেষ্যের মধ্যে প্রবেশ করে তাকে অ্যানোড বলে।
এটি ধনাত্মক আধানবিশিষ্ট হয় এবং সাধারণত দ্রবণের ঋণাত্মক আধানসমৃদ্ধ আয়ন অর্থাৎ অ্যানায়নসমূহ এর প্রতি আকৃষ্ট হয়।
গ. চিত্র-ছ এর ই চিহ্নিত অংশ হলো ব্যাটারি।
ব্যাটারি হলো একাধিক তড়িৎ কোষের সমন্বয়। চিত্রে একটি ব্যাটারির গঠন দেখানো হলো। একটি ব্যাটারিতে ভবিষ্যতে ব্যবহারের জন্য তড়িৎ শক্তি জমা থাকে। ব্যাটারিতে সাধারণত তিনটি অংশ থাকে। একটি অ্যানোড, একটি ক্যাথোড ও তড়িৎ বিশ্লেষ্য (ইলেক্ট্রোলাইট)। এই অ্যানোড ও ক্যাথোডকেই তড়িৎ বর্তনীতে সংযুক্ত করা হয়। অ্যানোড হলো ধনাত্মক এবং ক্যাথোড হলো ঋণাত্মক তড়িৎদ্বার। ব্যাটারিতে রাসায়নিক বিক্রিয়ার ফলে ক্যাথোডে ইলেকট্রন জমা হয়, অ্যানোডে ইলেকট্রন কম হয়। এর ফলে অ্যানোড ও ক্যাথোডের মধ্যে তড়িৎ বিভব পার্থক্য তৈরি হয়। এ অবস্থায় অ্যানোড এবং ক্যাথোডকে একটি পরিবাহী তার দ্বারা সংযুক্ত করলে বিদ্যুৎ প্রবাহ শুরু হয়।
সুতরাং দেখা যাচ্ছে অ্যানোড, ক্যাথোড ও তড়িৎ বিশ্লেষ্য এই তিন অংশ নিয়েই একটি ব্যাটারি। যার সাহায্যে ইলেকট্রন প্রবাহিত হয়।
ঘ. চ সংযোগটি হলো সিরিজ সংযোগ এবং ছ সংযোগ হলো সমান্তরাল সংযোগ। চ ও ছ এর মধ্যে বাড়িতে সংযোগের ক্ষেত্রে ছ সংযোগটি বেশি সুবিধাজনক। অর্থাৎ গৃহ বিদ্যুতায়নের ক্ষেত্রে সিরিজ বর্তনীর চেয়ে সমান্তরাল বর্তনীই সুবিধাজনক।
সমান্তরাল সংযোগে প্রতিটি বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি যেমন বাল্ব, পাখা, টেলিভিশন, ফ্রিজ ইত্যাদির মধ্য দিয়ে ভিন্ন ভিন্ন পথে বিদ্যুৎ প্রবাহিত হয়। তাই সংযোগকৃত যন্ত্রপাতি বা সামগ্রীর কোনো একটি নষ্ট হয়ে গেলে বর্তনী ভেঙে যায় না এবং যন্ত্রপাতি চলতে থাকে। এ ছাড়া প্রত্যেকটি বাল্ব, ফ্যান, টেলিভিশন ইত্যাদিকে আলাদা আলাদাভাবে চালানো যায় এবং প্রয়োজনে বন্ধ করা যায়। বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি পৃথকভাবে ব্যবহার করা যায় বলে বিদ্যুৎ শক্তিও কম খরচ হয়। ওভারলোড হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়। অন্যদিকে, বাড়িতে তড়িৎ সংযোগের জন্য সিরিজ বর্তনী উপযোগী নয়। কারণ, এতে মূল সমস্যা হলো সুইচ অন করলে একই সাথে সংযুক্ত সব বাল্ব বা ফ্যান জ্বলে উঠে, ফ্যান চলতে থাকে। আবার অফ করলে সবগুলো একই সাথে অফ হয়ে যায়।
তাই উদ্দীপকে বাড়িতে সংযোগের ক্ষেত্রে যে দুটি সংযোগের কথা বলা হয়েছে, তার একটি হলো সিরিজ সংযোগ অন্যটি সমান্তরাল সংযোগ। এদের মধ্যে যেকোনো একটির ব্যবহার সুবিধাজনক।
উপর্যুক্ত আলোচনা থেকে দেখা যায়, সমান্তরাল সংযোগে বাল্ব, ফ্যান, টেলিভিশন, ফ্রিজ ইত্যাদি আলাদা আলাদা সুইচে চালানো যায়। কিন্তু সিরিজ বর্তনীর ক্ষেত্রে সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে কোনো একটি যন্ত্র চালনা করলে সবকিছু চলতে থাকে। এতে ওভারলোড হওয়ারও সম্ভাবনা থাকে। তাই বলা যায়, গৃহে বিদ্যুতায়নের ক্ষেত্রে সিরিজ বর্তনীর চেয়ে সমান্তরাল বর্তনীই সুবিধাজনক।