অষ্টম অধ্যায়
বাংলায় ইংরেজ শাসনের সূচনাপর্ব
সাত শতক থেকে ভারতীয় উপমহাদেশের সঙ্গে আরব বণিকদের ব্যবসা-বাণিজ্য ছিল একচেটিয়া। তারা বাণিজ্য করত মূলত সমুদ্রপথে। ১৪৫৩ খ্রিষ্টাব্দে কন্সষ্টান্টিনপোল অটোমান তুর্কীরা দখল করে নেয়। ফলে উপমহাদেশের সাথে জলপথে ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ হয়ে যায়। সুতরাং প্রাচ্যের সাথে পাশ্চাত্যের ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য ভিন্ন জলপথ আবিষ্কারের প্রয়োজন হয়ে পড়ে। শিখনফল
বাংলায় ইংরেজ শাসনের পটভ‚মি ব্যাখ্যা করতে পারবে।
পলাশী ও বক্সারের যুদ্ধের কারণ ও ফলাফল মূল্যায়ন করতে পারবে।
ইংরেজি শাসন প্রতিষ্ঠায় দিওয়ানী লাভের গুরুত্ব ব্যাখ্যা করতে পারবে।
চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের পটভ‚মি ও ফলাফল ব্যাখ্যা করতে পারবে।
ইংরেজ শাসনের ফলে বাংলায় রাজনৈতিক পরিবর্তনসমূহ অনুধাবনে সক্ষম হবে।
অধ্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো সংক্ষেপে জেনে রাখি
বাংলায় ইংরেজ শক্তি : পণ্যের আকর্ষণে অনেকেই এদেশের সঙ্গে বাণিজ্য করতে এসেছে। ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিও উপমহাদেশে এসেছিল ব্যবসা-বাণিজ্য করতে। পরবর্তী সময়ে তারা এদেশের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করতে সক্ষম হয়। এদেশে আগত অন্যান্য ইউরোপীয় কোম্পানিগুলোকে পরাজিত করে এবং স্থানীয় শাসকদের বিরুদ্ধে নানামুখী ষড়যন্ত্র করে ইংরেজ ব্যবসায়ী কোম্পানি এ অঞ্চলে ইংরেজ শাসনের সূচনা করে।
পলাশী যুদ্ধ : ইতিহাসের যেসব ঘটনা একটি দেশের জনগণের ভাগ্যে ভয়াবহ বিপর্যয় ঘটাতে পারে, পলাশীর যুদ্ধ এ অঞ্চলের জনগণের জন্য তেমনি এক ঘটনা ছিল। এ যুদ্ধে ইংরেজ বাহিনীর কাছে বাংলার নবাব সিরাজউদ্দৌলার পরাজয় ও মৃত্যু বাংলায় প্রত্যক্ষ ঔপনিবেশিক শাসনের পথ সুগম করে। এ যুদ্ধের সুদূরপ্রসারী পরিণতি ছিল সমগ্র উপমহাদেশে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসন প্রতিষ্ঠা। এভাবেই এ যুদ্ধের ফলে বাংলা তথা ভারতের স্বাধীনতা সূর্য ভুলুণ্ঠিত হয়।
বক্সারের যুদ্ধ : ১৭৬৪ খ্রিষ্টাব্দে সংঘটিত বক্সারের যুদ্ধে মীরকাশিমের পরাজয় শুরু নবাবী আমলেরই পরিসমাপ্তি ঘটায়নি, মুঘল সম্রাটের দুর্বলতাও ইংরেজদের কাছে পরিষ্কার করে দেয়। ফলে ঔপনিবেশিক শক্তি হিসেবে দ্রæতগতিতে ইংরেজদের আত্মপ্রকাশ ঘটতে থাকে।
কোম্পানির দেওয়ানি লাভ : বক্সারের যুদ্ধের পর বাংলায় ইংরেজ শাসনের পথ সুগম হয়। এ সময়ে ইংরেজ কোম্পানি মুঘল সম্রাটের কাছ থেকে বাংলার রাজস্ব আদায়ের সম্পূর্ণ দায়িত্ব অর্থাৎ দেওয়ানি লাভ করে। ১৭৬৫ খ্রিষ্টাব্দে দেওয়ানি লাভের পর প্রকৃতপক্ষে ইংরেজরাই বাংলার সত্যিকার শাসকরূপে আত্মপ্রকাশ করে।
দ্বৈত শাসন : রবার্ট ক্লাইভ দেওয়ানি সনদের নামে বাংলার সম্পদ লুণ্ঠনের একচেটিয়া ক্ষমতা লাভ করে। দিল্লি কর্তৃক বিদেশি বণিক কোম্পানিকে এই অভাবিত ক্ষমতা প্রদানে সৃষ্টি হয় দ্বৈত শাসনের। অর্থাৎ যাতে করে কোম্পানি লাভ করে দায়িত্বহীন ক্ষমতা, নবাব পরিণত হন ক্ষমতাহীন শাসকে। অথচ নবাবের দায়িত্ব থেকে যায় ষোলআনা। ফলে বাংলায় এক অভ‚তপূর্ব প্রশাসনিক জটিলতার সৃষ্টি হয়, যার চরম মাসুল দিতে হয় এদেশের সাধারণ জনগোষ্ঠীকে।
চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত : লর্ড কর্নওয়ালিসকে কোম্পানির শাসন দুর্নীতিমুক্ত ও সুসংগঠিত করতে ১৭৮৬ খ্রিষ্টাব্দে ভারতের গভর্নর জেনারেল ও সেনা প্রধানের দায়িত্ব দিয়ে পাঠানো হয়। তিনি ১৭৯৩ খ্রিষ্টাব্দে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত বা স্থায়ী ভ‚মি ব্যবস্থা প্রবর্তন করেন। ঐ বছর ২২ মার্চ নির্দিষ্ট রাজস্ব পরিশোধের বিনিময়ে বাংলা, বিহার, উড়িষ্যার জমিদারগণকে নিজ নিজ জমির ওপর স্থায়ী মালিকানা দান করে যে বন্দোবস্ত চালু করা হয় তাকেই ‘চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত’ বলা হয়।
বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
১. কোন পর্তুগিজ নাবিক প্রথম সমুদ্রপথে ভারতীয় উপমহাদেশে আসেন?
ভাস্কো-ডা-গামা খ ক্যাপ্টেন হকিন্স
গ স্যার টমাস রো ঘ জব চার্নক
২. নবাব সিরাজউদ্দৌলা পলাশীর প্রান্তরে ইংরেজদের বিরুদ্ধে অস্ত্রধারণ করতে বাধ্য হয়েছিলেন; কারণÑ
র. নবাবের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইংরেজরা কলকাতায় দুর্গ নির্মাণ অব্যাহত রাখে
রর. চুক্তি ভঙ্গ করে ইংরেজরা নবাবকে কর দিতে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করে
ররর. নবাব ইংরেজদের সম্পদ দখল করতে আগ্রহ প্রকাশ করেন
নিচের কোনটি সঠিক?
র ও রর খ রর ও ররর গ র ও ররর ঘ র, রর ও ররর
নিচের অনুচ্ছেদটি পড় এবং ৩ ও ৪নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
অনেক বছর আগের কথা। সিলেটের রহমান সাহেব ও তাঁর তিন বন্ধু স্থানীয় জমিদারের নিকট থেকে সুপারিশপত্র নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকায় গমন করে বাণিজ্যিক সুবিধা লাভের আশায় সেখানকার কর্তৃপক্ষের সাথে সাক্ষাৎ করেন। তারা একটি নদীর তীরে অর্থের বিনিময়ে কয়েকটি গ্রাম ইজারা নিয়ে কুটি স্থাপন করেন। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ রহমান সাহেব ও তার গোষ্ঠীকে বিনাশুল্কে বাণিজ্য করারও অধিকার প্রদান করেন।
৩. তোমার পাঠ্যবই এ বর্ণিত কোন ইউরোপীয় জাতির বাণিজ্য কার্যক্রমের সাথে রহমান সাহেব ও তার বন্ধুদের গৃহীত ব্যবস্থার মিল রয়েছে?
ক পর্তুগিজ খ ওলন্দাজ
গ দিনেমার ইংরেজ
৪. উক্ত জাতির কর্মকাণ্ডের মধ্যে ছিলÑ
র. সম্রাট আকবরের দরবারে হাজির হওয়া
রর. ফোর্ট উইলিয়াম দুর্গ নির্মাণ করা
ররর. বিনাশুল্কে বাণিজ্যিক অধিকার লাভ করা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর
গ রর ও ররর র, রর ও ররর
সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন- ১
দ্বৈত শাসন
মামুন ও কামাল দুই ভাই। পিতার মৃত্যুর পর তাদের স্টার গার্মেন্টস এর মালিকানা নিয়ে দুই ভাইয়ের মধ্যে দ্ব›দ্ব বাধলে বড় ভাই মামুন গার্মেন্টস পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং ছোট ভাই কামাল সংসার দেখাশোনার দায়িত্ব নেয়। গার্মেন্টস এর আয় থেকে কামালকে সংসার পরিচালনার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় অর্থ প্রদান না করায় সংসারে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়।
ক. ভাস্কো-ডা-গামা কোন দেশের নাবিক ছিলেন?
খ. প্রাচীনকালে অনেকেই বাংলা অঞ্চলে বাণিজ্য করতে এসেছিল কেন?
গ. উদ্দীপকের ক্ষমতা ভাগাভাগির সাথে তোমার পাঠ্যবইয়ের কোন ঘটনার মিল খুঁজে পাওয়া যায়? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. তুমি কি মনে কর উক্ত ঘটনা বাংলার অর্থনৈতিক মেরুদণ্ড ভেঙে দিয়েছিল? উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দাও।
ক ভাস্কো-ডা-গামা পর্তুগালের নাবিক ছিলেন।
খ প্রাচীনকালে ভারতীয় উপমহাদেশ বিশেষ করে বাংলা অঞ্চল ছিল ধনসম্পদে পূর্ণ রূপকথার মতো একটি দেশ। এখানে ছিল স্বয়ংসম্পূর্ণ গ্রাম। এসব গ্রামে কৃষকদের খেতভরা ফসল, গোলা ভরা ধান, পুকুরভরা মাছ থাকত। কুটির শিল্পেও এই গ্রামগুলো সমৃদ্ধ ছিল। বিভিন্ন বাণিজ্যিক পণ্য, মসলার জন্য বিখ্যাত ছিল এই অঞ্চল। এই এলাকার তাঁতিদের হাতেবোনা কাপড় বিশেষত জগদ্বিখ্যাত মসলিন কাপড় ইউরোপের কাপড়ের চেয়েও অনেক উন্নতমানের ছিল। এসব পণ্যের আকর্ষণেই প্রাচীনকালে অনেকেই এদেশে বাণিজ্য করতে এসেছিল।
গ উদ্দীপকের ক্ষমতা ভাগাভাগির সাথে আমার পাঠ্যবইয়ের কোম্পানির দেওয়ানি লাভের ফলে দ্বৈতশাসনের ঘটনার মিল খুঁজে পাওয়া যায়। রবার্ট ক্লাইভ দেওয়ানি সনদের নামে বাংলার সম্পদ লুণ্ঠনের একচেটিয়া ক্ষমতা লাভ করে। দিল্লি কর্তৃক বিদেশি বণিক কোম্পানিকে এই অভাবিত ক্ষমতা প্রদানে সৃষ্টি হয় দ্বৈত শাসনের। অর্থাৎ যাতে করে কোম্পানি লাভ করে দায়িত্বহীন ক্ষমতা, নবাব পরিণত হন ক্ষমতাহীন শাসকে। যেমন, উদ্দীপকে বড় ভাই মামুন গার্মেন্টস-এর দায়িত্ব নেয় এবং সংসারের দায়িত্ব নেয় না। আবার ছোট ভাই কামাল সংসারের দায়িত্ব নিলেও প্রয়োজনীয় অর্থ মামুনের কাছ থেকে পায় না। অথচ সংসার পরিচালনার ষোল আনা দায়িত্ব তার। অনুরূপভাবে কোম্পানির দেওয়ানি লাভের পর নবাবের দায়িত্ব থেকে যায় ষোলআনা। ফলে বাংলায় এক অভ‚তপূর্ব প্রশাসনিক জটিলতার সৃষ্টি হয়, যার চরম মাসুল দিতে হয় এদেশের সাধারণ জনগোষ্ঠীকে। দ্বৈতশাসন ব্যবস্থায় নবাবের হাতে পর্যাপ্ত অর্থ না থাকায় প্রশাসন পরিচালনায় তিনি সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হন। সারাদেশে শুরু হয় বিশৃঙ্খলা। উদ্দীপকে কামাল ও মামুনের সংসারেও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির উল্লেখ পাওয়া যায়।
সুতরাং উদ্দীপকের ক্ষমতা ভাগাভাগির সাথে ইংরেজ কোম্পানির দেওয়ানি লাভের ফলে দ্বৈতশাসনের ঘটনার মিল খুঁজে পাওয়া যায়।
ঘ আমি মনে করি, উক্ত ঘটনা বাংলার অর্থনৈতিক মেরুদণ্ড ভেঙে দিয়েছিল। ১৭৬৫ খ্রিষ্টাব্দে বক্সারের যুদ্ধের পরে ইংরেজরা বাংলার সত্যিকারের শাসকরূপে আত্মপ্রকাশ করে। রবার্ট ক্লাইভ দেওয়ানি শর্ত সংবলিত দুটি চুক্তি করেন। একটি দিলির সম্রাট শাহ আলমের সাথে। ২৬ লাখ টাকার বিনিময়ে সম্রাট কোম্পানিকে বাংলা, বিহার, উড়িষ্যার দেওয়ানি দান করে। অপর চুক্তি হয় মীরজাফরের নাবালক পুত্র নাজিমউদ্দৌলার সঙ্গে। বার্ষিক ৫৩ লাখ টাকার বিনিময়ে নবাব কোম্পানির দেওয়ানি লাভের শর্ত মেনে নেন।
দেওয়ানি লাভ কোম্পানির শুধু রাজনৈতিক নয় অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেও বিশাল বিজয় ছিল। এতে করে সম্রাট ও নবাব উভয়েই ক্ষমতাহীন শাসকে পরিণত হন। প্রকৃতপক্ষে তারা হয়ে যান কোম্পানির পেনশনভোগী কর্মচারী। দ্বৈতশাসনের এ ব্যবস্থায় দেওয়ানি লাভের ফলে এবং নবাব কর্তৃক প্রদত্ত শর্ত অনুযায়ী শুল্কহীন বাণিজ্যের কারণে কোম্পানির কর্মচারীরা বেপরোয়া হয়ে ওঠে। তাদের অর্থলোভ দিন দিন বেড়ে যেতে থাকে। ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকে দেশীয় বণিকশ্রেণি, সাধারণ মানুষ। তাদের অর্থনৈতিক মেরুদণ্ড সম্পূর্ণভাবে ভেঙে পড়ে। এভাবে দায়িত্বহীনভাবে দেওয়ানি লাভের ফলে বাংলা থেকে প্রচুর অর্থসম্পদ ইংল্যান্ডে পাচার হতে থাকে। এর পরিমাণ এতটাই ছিল যে এই অর্থের বলে ইংল্যান্ডের শিল্প বিপ্লবের ক্ষেত্র প্রস্তুত হয়েছিল। আর ভেঙে পড়েছিল বাংলার অর্থনৈতিক মেরুদণ্ড। অতএব, উক্ত ঘটনা বাংলার অর্থনৈতিক মেরুদণ্ডকে ভেঙে দিয়েছিল বলেই, আমি মনে করি।
প্রশ্ন- ২ চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত
বেশ কিছুদিন ধরে পলাশপুর চা বাগানের বার্ষিক আয় উঠা-নামা করছিল। এজন্য বাগান কর্তৃপক্ষ বাগানের আয় নির্দিষ্ট করার লক্ষ্যে উৎপাদন ব্যবস্থা কয়েক বছরের জন্য কতিপয় ব্যক্তির নিকট বরাদ্দ দেন। এ ব্যবস্থায় নতুন ইজারাদাররা বেশি মুনাফা লাভের আশায় চা শ্রমিকদেরকে অতিরিক্ত সময়ে কাজ করাতে বাধ্য করে অতিরিক্ত পারিশ্রমিক ছাড়াই। এ ব্যবস্থার ফলে চা বাগান ও চা শ্রমিকদের অবস্থার উন্নয়নের প্রতি কোনো দৃষ্টি ছিল না ইজারাদারদের। বাগান কর্তৃপক্ষ এ দুরবস্থার হাত থেকে মুক্তি পাবার লক্ষ্যে এবং বাগানের আয় সুনির্দিষ্ট করতে ইজারাদারদের সাথে স্থায়ীভাবে বরাদ্দ সম্পাদন করে।
ক. কোন নদীর তীরে পলাশীর যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল?
খ. ‘অন্ধক‚প হত্যা’ বলতে কী বোঝায়?
গ. উদ্দীপকের নতুন ব্যবস্থার সাথে তোমার পাঠ্যবইয়ের কোন ঘটনার মিল খুঁজে পাওয়া যায়? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. তুমি কি মনে কর উক্ত বন্দোবস্ত অর্থনৈতিক শৃঙ্খলা রক্ষার ক্ষেত্রে সহায়ক ভ‚মিকা পালন করেছিল? যুক্তি দাও।
ক ভাগীরথী নদীর তীরে পলাশীর যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল।
খ নবাব সিরাজউদ্দৌলা ১৭৫৬ খ্রিষ্টাব্দে জুন মাসের শুরুতে যখন কলকাতা দখল করেন তখন হলওয়েল নামক একজন ইংরেজ আত্মসমর্পণ করে। নবাব হলওয়েলকে বন্দি করেন। বন্দিদশা থেকে মুক্তি পেয়ে নবাবকে হেয় করার জন্য সে এক মিথ্যা কাহিনীর প্রচারণা চালায়, যা ইতিহাসে অন্ধক‚প হত্যা নামে পরিচিত। এতে বলা হয়, ১৮ ফুট দৈর্ঘ্য ১৪.১০ ফুট প্রস্থ ছোট একটি ঘরে ১৪৬ ইংরেজকে বন্দি করে রাখা হয়। এতে প্রচণ্ড গরমে শাসরুদ্ধ হয়ে ১২৩ জনের মৃত্যু হয়।
গ উদ্দীপকের নতুন ব্যবস্থার সাথে আমার পাঠ্যবইয়ের চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত ঘটনার মিল খুঁজে পাওয়া যায়। ১৭৭২ খ্রিষ্টাব্দে ওয়ারেন হেস্টিংস রাজস্ব আদায়ের জন্য পাঁচসালা বন্দোবস্ত চালু করেন। এই ব্যবস্থায় উচ্চহারে ডাক নিয়ে জমির বন্দোবস্ত নিলেও সে অনুপাতে রাজস্ব আদায় হতো না। নির্দিষ্ট সময়সীমা থাকায় জমিদাররা কৃষকদের কাছ থেকে প্রয়োজনে নির্যাতন করে অর্থ আদায় করত। অথচ কৃষকদের উন্নয়ন বা জমির উন্নয়নের প্রতি তাদের কোনো লক্ষ্য ছিল না। ফলে নির্যাতনের ভয়ে কৃষকরা জমি ছেড়ে পালিয়ে যেত। বছরের পর বছর জমি অনাবাদি থাকায় জমির দাম কমে যেত। এ অবস্থায় ওয়ারেন হেস্টিংস জমিদারদের সঙ্গে একসালা বন্দোবস্ত চালু করেন। কিন্তু এ ব্যবস্থায়ও সরকার, জমিদার, প্রজা কারো কোনো ধরনের উপকার হয়নি। উদ্দীপকেও বাগানের বার্ষিক আয় ওঠানামা করছিল। পরবর্তীকালে বাংলা, বিহার, উড়িষ্যার রাজস্ব সমস্যা সমাধানের জন্য ইংল্যান্ডের পার্লামেন্ট নতুন ব্যবস্থা উদ্ভাবনের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে। উদ্দীপকে চা বাগান কর্তৃপক্ষ আয় নির্দিষ্টকরণ ও দুরবস্থা নিরসনে ইজারাদারদের সাথে স্থায়ী বন্দোবস্ত করে। অনুরূপ ১৭৮৪ খ্রিষ্টাব্দে পিটের ইন্ডিয়া অ্যাক্ট পার্লামেন্টে গৃহীত হয়। বাংলা, বিহার, উড়িষ্যায় স্থায়ী নিয়মকানুন প্রবর্তনের মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদি রাজস্ব ব্যবস্থা চালুর জন্য কোম্পানিকে নির্দেশ দেয়া হয়। ১৭৮৯ খ্রিষ্টাব্দে কর্নওয়ালিস জমিদারদের দশসালা বন্দোবস্ত দিতে প্রস্তুতি নেন। ইংল্যান্ডের কর্তৃপক্ষ জমিদারদের সঙ্গে বন্দোবস্তের অনুমতি প্রদান করলে কর্নওয়ালিস এই অনুমোদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১৭৮৯ খ্রিষ্টাব্দে দশসালা বন্দোবস্ত চালু করেন। তবে এর সঙ্গে এই প্রতিশ্রæতিও তিনি দেন যে, কোম্পানির ডাইরেক্টর সভার অনুমোদন পেলে দশসালা বন্দোবস্তই চিরস্থায়ী বন্দোবস্তে পরিণত হবে। ১৭৯২ খ্রিষ্টাব্দের সেপ্টেম্বর মাসে বোর্ড অব ডাইরেক্টরস কর্তৃক অনুমোদন লাভ করে। ১৭৯৩ খ্রিষ্টাব্দে কর্নওয়ালিস ২২ মার্চ দশসালা বন্দোবস্তকে চিরস্থায়ী বলে ঘোষণা করেন। সুতরাং উদ্দীপকের নতুন ব্যবস্থার সাথে চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের ঘটনাপ্রবাহের মিল রয়েছে।
ঘ আমি মনে করি উক্ত ব্যবস্থা অর্থাৎ চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সহায়ক ভ‚মিকা পালন করেনি। লর্ড কর্নওয়ালিস ১৭৯৩ খ্রিষ্টাব্দে ২২ মার্চ নির্দিষ্ট রাজস্ব পরিশোধের বিনিময়ে বাংলা, বিহার, উড়িষ্যার জমিদারগণকে নিজ নিজ জমির ওপর স্থায়ী মালিকানা দান করে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত চালু করেন।
চিরস্থায়ী বন্দোবস্তে জমির সঠিক জরিপের ব্যবস্থা না থাকায় অনেক সময় নিষ্কর জমির ওপর বেশি রাজস্ব ধার্য করা হতো। জমির সীমা নির্ধারিত না থাকায় পরবর্তীকালে মামলা বিবাদ দেখা দিত। সূর্যাস্ত আইনে নির্দিষ্ট তারিখে সূর্যাস্তের মধ্যে খাজনা পরিশোধ বিধানের কঠোরতার কারণে অনেক বড় বড় জমিদারি নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। একমাত্র বর্ধমানের জমিদারি ছাড়া চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের সাত বছরের মধ্যে অন্য সব জমিদারি ধ্বংস হয়ে যায়। জমিদারি আয় ও স্বত্ব সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে জমিদাররা নায়েব-গোমস্তার ওপর দায়িত্ব দিয়ে শহরে বসবাস শুরু করেন। এসব অনুপস্থিত জমিদারের নায়েব-গোমস্তাদের অত্যাচারে প্রজারা অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে। ফলে জমির উৎপাদন কমে যেতে থাকে, গ্রামের অর্থনৈতিক অবস্থাও খারাপ হতে থাকে।
উপমহাদেশে জমি ছিল আভিজাত্যের প্রতীক। ফলে নিম্নবর্ণের অনেক ব্যক্তি, সাধারণ মানুষ যারা কোম্পানির সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য করে প্রচুর অর্থের মালিক হন, তারা জমিদারি কিনে আভিজাত্যের মর্যাদা লাভে ব্যস্ত হয়ে ওঠেন। ফলে দেশীয় পুঁজি, দেশীয় শিল্প গড়ে ওঠার সম্ভাবনা ধ্বংস হয়ে যায়। অপরদিকে কোম্পানিও সম্ভাব্য এদেশীয় প্রতিদ্ব›দ্বীর হাত থেকে বেঁচে যায়। সুতরাং উক্ত কারণে আমি মনে করি, চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত অর্থনৈতিক শৃঙ্খলা রক্ষার ক্ষেত্রে সহায়ক ভ‚মিকা পালন করেনি।
বোর্ড ও সেরা স্কুলের বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
সাধারণ বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
১. পলাশীর যুদ্ধে নবাবের পক্ষে কোন ফরাসি সেনাপতি যুদ্ধ করেন? [স. বো. ’১৬]
ক হলওয়েল সিনফ্রে গ রবার্ট ক্লাইভ ঘ ওয়াটসন
২. পিটের ইন্ডিয়া এ্যাক্ট পার্লামেন্ট কত খ্রিষ্টাব্দে গৃহীত হয়? [স. বো. ’১৬]
ক ১৭৮২ ১৭৮৪ গ ১৭৮৫ ঘ ১৭৮৬
৩. চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত কত সালে প্রবর্তিত হয়? [স. বো. ’১৫]
ক ১৭৭০ খ ১৭৭২ গ ১৭৮৬ ১৭৯৩
৪. আলীনগর সন্ধিতে নবাব সিরাজদ্দৌলার সম্মতির অন্যতম কারণ কোনটি? [স. বো. ’১৫]
রাজ্যের অভ্যন্তরীণ ষড়যন্ত্র খ আলীবর্দী খানের সম্মানে
গ সামরিক কৌশল ঘ ফরাসিদের প্ররোচনা
৫. ভাস্কো-দা-গামা কে ছিলেন?
[কুষ্টিয়া সরকারি বালিকা বিদ্যালয়; মেহেরপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
পর্তুগিজ নাবিক খ ইংরেজ নাবিক
গ ফরাসি নাবিক ঘ চীনা নাবিক
৬. কোন পর্তুগিজ নাবিক সর্বপ্রথম ভারতবর্ষ আগমন করেন?
[ল²ীপুর আদর্শ সামাদ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়]
ক আল-বুকার্ক খ আল-মুডা
গ আল-ফান্দো ভাস্কো-দা-গামা
৭. হল্যান্ডের অধিবাসীদের কী নামে ডাকা হয়?
[কুষ্টিয়া সরকারি বালিকা বিদ্যালয়; খাগড়াছড়ি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়]
ওলন্দাজ বা ডাচ খ দিনেমার
গ পর্তুগিজ ঘ ফরাসি
৮. কত খ্রিষ্টাব্দে ওলন্দাজরা ভারতবর্ষে আসেন?
[ফেনী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
ক ১৬০০ ১৬০২ গ ১৬০৪ ঘ ১৬০৬
৯. ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ছিল একটিÑ
[দি বাডস্ রেসিডেনসিয়াল মডেল স্কুল এন্ড কলেজ, মৌলভীবাজার]
ক রাজনৈতিক সংগঠন বণিক সমিতি
গ সাংস্কৃতিক সংগঠন ঘ পর্যটক দল
১০. কলকাতা নগরী কোন নদীর তীরে অবস্থিত? [কুষ্টিয়া সরকারি বালিকা বিদ্যালয়]
ক করতোয়া খ নাফ গ গঙ্গা ভাগীরথী
১১. বাংলায় ফরাসিদের একটি শক্তিশালী সুরক্ষিত বাণিজ্যিক কুঠি কোথায় ছিল? [মেহেরপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
ক সুতানটিতে খ কোলকাতায় চন্দননগরে ঘ হুগলিতে
১২. ইংরেজ ও ফরাসিদের মাঝে সংঘর্ষ হয়েছিল কেন?
[মেহেরপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
বাণিজ্য সংক্রান্ত কারণে খ ধর্মীয় কারণে
গ সাংস্কৃতিক বিরোধের ফলে ঘ ভাষাগত সমস্যার কারণে
১৩. নবাব সিরাজউদ্দৌলা কত বছর বয়সে ক্ষমতারোহণ করেন?
[ফেনী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
ক ২০ খ ২১ ২২ ঘ ২৩
১৪. পলাশীর যুদ্ধের প্রধান কারণ কী? [মেহেরপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
ক নবাবের অদূরদর্শিতা খ নবাবের অযোগ্যতা
গ নবাবের হটকারিতা পারিবারিক ও বাহ্যিক ষড়যন্ত্র
১৫. অন্ধক‚প হত্যা নামে মিথ্যা কাহিনী কে প্রচার করে?
[ল²ীপুর আদর্শ সামাদ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়]
হলওয়েল খ রবার্ট ক্লাইভ গ ওয়াটসন ঘ হান্টার
১৬. কোন নদীর তীরে পলাশী যুদ্ধ হয়?
[ল²ীপুর আদর্শ সামাদ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়]
ভাগীরথী খ দামোদর গ গঙ্গা ঘ অজয়
১৭. পলাশীর যুদ্ধ সংঘটিত হয় কত তারিখে?
[ফেনী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়; খাগড়াছড়ি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়]
১৭৫৭ সালের ২৩ জুন খ ১৭৫৭ সালের ২৪ জুন
গ ১৭৫৭ সালের ২৫ জুন ঘ ১৭৫৭ সালের ২৬ জুন
১৮. পলাশীর যুদ্ধে নবাবের পক্ষে কোন ফরাসি সেনাপতি যুদ্ধ করেন?
[মেহেরপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
ক গড ফ্রে সিন ফ্রে গ উইল ফ্রে ঘ এ্যান্ডারসন
১৯. মীরকাশিম কত খ্রিষ্টাব্দে বাংলার নবাব হন?
[ফেনী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
ক ১৭৫৮ খ ১৭৫৯ ১৭৬০ ঘ ১৭৬১
২০. ক্লাইভ কত টাকার বিনিময়ে অযোধ্যা ফিরিয়ে দেন?
[বিএএফ শাহীন কলেজ, ঢাকা]
ক ২০ লক্ষ খ ৩০ লক্ষ গ ৪০ লক্ষ ৫০ লক্ষ
২১. কে দ্বৈতশাসন ব্যবস্থা প্রবর্তন করেন? [কুষ্টিয়া সরকারি বালিকা বিদ্যালয়]
রবার্ট ক্লাইভ খ লর্ড কর্নওয়ালিস
গ লর্ড রিপন ঘ ওয়ারেন হেস্টিংস
২২. কত বঙ্গাব্দে লর্ড ক্লাইভের সময় বাংলায় ছিয়াত্তরের মনন্তর হয়?
[কুষ্টিয়া সরকারি বালিকা বিদ্যালয়]
ক ১১৭৪ খ ১১৭৫ ১১৭৬ ঘ ১১৭৭
২৩. দ্বৈতশাসন ব্যবস্থার অবসান হয় কত খ্রিষ্টাব্দে?
[ফেনী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
ক ১৭৭১ ১৭৭২ গ ১৭৭৩ ঘ ১৭৭৪
২৪. চিরস্থায়ী ব্যবস্থার প্রবর্তন করেন কে?
[ল²ীপুর আদর্শ সামাদ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়]
ক রবার্ট ক্লাইভ খ লর্ড মিল্টন
গ লর্ড কার্জন লর্ড কর্নওয়ালিস
বহুপদী সমাপ্তিসূচক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
২৫. ১৭৮৬ খ্রিষ্টাব্দে ভারতকে কোম্পানির শাসন দুর্নীতিমুক্ত করতে দায়িত্ব দেওয়া হয় [স. বো. ’১৬]
র. রবার্ট ক্লাইভ
রর. লর্ড কর্নওয়ালিস
ররর. ওয়ারেন হেস্টিংস
নিচের কোনটি সঠিক?
র খ রর গ ররর ঘ র, রর ও ররর
২৬. পলাশীর যুদ্ধে নবাবের পরাজয়ের পিছনে কারণ হলোÑ
[কুষ্টিয়া সরকারি বালিকা বিদ্যালয়]
র. নানামুখী ষড়যন্ত্র
রর. নবাবের অদূরদর্শিতা
ররর. মীরমদনের মৃত্যু
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর র, রর ও ররর
২৭. ১৭৬০ খ্রিষ্টাব্দে ইংরেজরা মীরজাফরকে ক্ষমতাচ্যুত করার কারণÑ
[মেহেরপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
র. অতিরিক্ত অর্থ প্রদানে অক্ষম ছিল
রর. স্বাধীনচেতা শাসক ছিল
ররর. ওলন্দাজদের সাথে আঁতাত করেছিল
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
২৮. চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের ফলেÑ [ভোলা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
র. জমিদারদের স্বার্থ সুরক্ষিত হয়
রর. প্রজাদের স্বার্থ সুরক্ষিত হয়
ররর. জমিতে প্রজাদের বহু স্বত্ববিলোপ হয়
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
অভিন্ন তথ্যভিত্তিক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
অনুচ্ছেদটি পড়ে ২৯ ও ৩০ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
মি. জনসন, ফুলপুর অঞ্চলে ব্যবসা করতে এসে জমিদারের দুর্বলতার কারণে তাকে উৎখাত করেন। জমিদারের লাঠিয়াল বাহিনীর প্রধানকে ক্ষমতায় বসিয়ে জনসন আড়ালে থেকে শাসন কার্যপরিচালনা করেন। জনসন ও তার ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান সমস্ত অর্থনৈতিক সুবিধা ভোগ করে এবং এক বিশেষ শাসন ব্যবস্থার প্রবর্তন করেন। [স. বো. ’১৫]
২৯. মি. জনসনের কর্মকাণ্ডে ইতিহাসের কোন ব্যক্তির কর্মকাণ্ডের প্রতিফলন ঘটেছে?
ক লর্ড কর্নওয়ালিস খ ওয়ারেন হেস্টিংস
গ লর্ড কার্জন রবার্ট ক্লাইভ
৩০. উক্ত ব্যক্তির বিশেষ শাসন পদ্ধতির ফলেÑ
র. কৃষি অর্থনীতি ভেঙে পড়ে
রর. ভয়াবহ খাদ্যসংকট দেখা দেয়
ররর. অনেক লোকের মৃত্যু ঘটে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর
রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
বিষয়ক্রম অনুযায়ী বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
ভ‚মিকা বোর্ড বই, পৃষ্ঠা- ৯৬
সাধারণ বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
৩১. ইংরেজ আমলের সূচনাপর্বে বাংলার কোন কাপড় জগৎ বিখ্যাত ছিল? (জ্ঞান)
ক জামদানি মসলিন
গ রেশমি ঘ গদাই
৩২. ইংরেজ শাসনের সূচনায় উপমহাদেশের অন্যান্য অঞ্চল কোন পণ্যের জন্য বিখ্যাত ছিল? (জ্ঞান)
ক বস্ত্র মসলা
গ তাঁত ঘ চাল
৩৩. ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি এই উপমহাদেশে এসেছিল- (জ্ঞান)
ব্যবসা-বাণিজ্য করতে খ ভ্রমণ করতে
গ সাহায্য করতে ঘ শিক্ষা দিতে
বহুপদী সমাপ্তিসূচক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
৩৪. বাংলার পণ্যের আকর্ষণেই বিদেশি বণিকদের আগমন ঘটে। এর প্রকৃত কারণে বলা যায়Ñ (উচ্চতর দক্ষতা)
র. বাংলা মসলার জন্য বিখ্যাত ছিল
রর. বাংলা মসলিন কাপড়ের জন্য বিখ্যাত ছিল
ররর. এখানে ভালোমানের কাঁচামাল উৎপাদিত হতো
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর র, রর ও ররর
ইউরোপীয়দের আগমন বোর্ড বই, পৃষ্ঠা- ৯৬
ইউরোপীয়দের মধ্যে এদেশে প্রথম বাণিজ্য ঘাটি স্থাপন করে পর্তুগীজরা।
যে দুঃসাহসী নাবিক প্রথম সমুদ্র পথে এদেশে আসেন তার নাম ভাস্কোদা গামা।
ওলন্দাজরা ‘ডাচ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি’ গঠন করে ১৬০২ খ্রিষ্টাব্দে।
ডাচরা ইংরেজদের হাতে শোচনীয়ভাবে পরাজিত হয় ১৭৫৯ খ্রিষ্টাব্দে।
ইংরেজরা ভারতবর্ষে প্রথম বাণিজ্য কুঠি নির্মাণ করে সুরাটে।
ভাগীরথী নদীর তীরের তিনটি গ্রামকে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠে কলকাতা।
ইংরেজদের বিনাশুল্কে বাণিজ্য করার অধিকার দেন সম্রাট ফারুখশিয়ার।
‘ডেনিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি’ গঠন করে দিনেমারগণ।
ইংরেজরা সুরাটে বাণিজ্য কুঠি স্থাপন করে ১৬১২ খ্রিষ্টাব্দে।
উপমহাদেশের সর্বশেষ ইউরোপীয় কোম্পানি হলো ফরাসি ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি।
সাধারণ বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
৩৫. বাংলা অঞ্চলের সাথে আরব বণিকদের ব্যবসা-বাণিজ্য কেমন ছিল? (অনুধাবন)
ক দুর্বল প্রকৃতির খ ব্যবসা ব্যর্থ ছিল
একচেটিয়া ঘ মধ্যম প্রকৃতির
৩৬. কত খ্রিষ্টাব্দে অটোমান তুর্কিরা কন্সটান্টিনপোল দখল করে নেয়? (জ্ঞান)
ক ১৪৫০ খ ১৪৫১ গ ১৪৫২ ১৪৫৩
৩৭. উপমহাদেশের সাথে আরব বণিকদের জলপথে ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ হয়ে যায় কেন? (অনুধাবন)
ক চীনারা এ অঞ্চলে একচেটিয়া বাণিজ্য করত
কন্সটান্টিনোপল অটোমানরা দখল করে নিয়েছিল বলে
গ উভয় অংশের জনপথ অকেজো হয়েছিল
ঘ উভয় অংশে বাণিজ্যিক বিরোধ ছিল
৩৮. কলম্বাস আমেরিকা আবিষ্কার করে বিখ্যাত হয়ে আছেন। তেমনি ভারতবর্ষের আগমনের জলপথ আবিষ্কার করে বিখ্যাত হয়ে আছেন কোন ব্যক্তি? (প্রয়োগ)
ক ক্যাপ্টেন হকিন্স খ জর্জ চার্নাক
ভাস্কো-ডা-গামা ঘ রিজেনেরিও
৩৯. কত খ্রিষ্টাব্দে পর্তুগিজ নাবিক ভাস্কো-ডা-গামা ভারতের পশ্চিম উপক‚লের কালিকট বন্দরে এসে উপস্থিত হন? (জ্ঞান)
ক ১৪৯৫ খ ১৪৯৬ গ ১৪৯৭ ১৪৯৮
৪০. কালিকট কোন দেশের বন্দর? (জ্ঞান)
ক বাংলাদেশ খ ইরান ভারত ঘ তাইওয়ান
৪১. উপমহাদেশে বাণিজ্য এবং যোগাযোগ ক্ষেত্রে নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয় কীভাবে? (অনুধাবন)
ভাস্কো-ডা-গামা আসার পর খ ইংরেজরা আসার পর
গ ডাচরা আসার কারণে ঘ আরবরা আসার কারণে
৪২. পর্তুগিজরা এদেশে সাম্রাজ্য বিস্তার করে কীভাবে? (অনুধাবন)
ক রাজনীতিতে অংশ নিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্যকে মূলধন করে
গ যুদ্ধ করে ঘ সমুদ্রপথ আবিষ্কার করে
৪৩. পর্তুগিজরা কত খ্রিষ্টাব্দে হুগলিতে উপনিবেশ গড়ে তোলে? (জ্ঞান)
ক ১৫৮০ ১৫৭৯ গ ১৭৫০ ঘ ১৫৯২
৪৪. পর্তুগিজরা কত খ্রিষ্টাব্দে চট্টগ্রামে বাণিজ্যঘাটি নির্মাণের অনুমতি পায়? (জ্ঞান)
ক ১৫৩৫ খ ১৫৩৬ গ ১৫৩৭ ১৫৩৮
৪৫. শায়েস্তা খান পর্তুগিজদের বাংলা থেকে বিতাড়ন করেন কেন? (অনুধাবন)
অপকর্ম ও দস্যুতার জন্য খ রাজনৈতিক কারণে
গ কুঠি স্থাপন করার কারণে ঘ খাজনা দিত না বলে
৪৬. রাঙামাটিতে একদল রোহিঙ্গা এসেছিল এদেশে ব্যবসা করার জন্য। কিন্তু তাদের অপকর্মের কারণে রাঙামাটি জেলা প্রশাসন তাদের তাড়িয়ে দেয়। এখানে রোহিঙ্গার সাথে মিল দেখা যায় কোন জাতিটির? (প্রয়োগ)
ক দিনেমার খ আরব পর্তুগিজ ঘ ফরাসি
৪৭. কোন দেশের নাগরিকরা ওলন্দাজ বা ডাচ নামে পরিচিত? (জ্ঞান)
হল্যান্ড খ তুরস্ক গ থাইল্যান্ড ঘ ডেনমার্ক
৪৮. ডাচরা কত খ্রিষ্টাব্দে ইংরেজদের কাছে পরাজিত হন? (জ্ঞান)
ক ১৭৫৫ খ ১৭৫৬ গ ১৭৫৭ ১৭৫৯
৪৯. ওলন্দাজরা ভারতবর্ষ ত্যাগ করতে বাধ্য হয় কেন? (অনুধাবন)
বিদারার যুদ্ধে পরাজিত হয়েছিল বলে
খ অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের জন্য
গ রাজনৈতিক কারণে
ঘ দস্যুতার জন্য
৫০. কত খ্রিষ্টাব্দে ডাচরা ভারতবর্ষ ত্যাগ করে? (জ্ঞান)
ক ১৮০০ খ ১৮০১ গ ১৮০৪ ১৮০৫
৫১. দিনেমাররা কোন দেশের অধিবাসী? (জ্ঞান)
ক নরওয়ের খ আফ্রিকার
গ মিশরের ডেনমার্কের
৫২. ‘ডেনিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি’ গঠন করে কোন দেশীয় বণিক? (জ্ঞান)
ক পতুর্গিজ খ ডাচ গ ইংরেজ দিনেমার
৫৩. কত খ্রিষ্টাব্দে দিনেমাররা ভারতীয় উপমহাদেশে আগমন করেন? (জ্ঞান)
ক ১৬৭৬ খ ১৬১৫ ১৬১২ ঘ ১৬৩০
৫৪. দিনেমাররা কত খ্রিষ্টাব্দে বাংলার শ্রীরামপুরে বাণিজ্য কুঠি স্থাপন করে? (জ্ঞান)
ক ১৬০০ খ ১৬১০ গ ১৬২২ ১৬৭৬
৫৫. মি. ঢ বাংলার শ্রীরামপুরে বাণিজ্য কুঠি স্থাপন করে। মি. ঢ কোন জাতির লোক? (প্রয়োগ)
দিনেমার খ ডাচ গ ইংরেজ ঘ ফরাসি
৫৬. দিনেমাররা ইংরেজদের কাছে বাণিজ্য কুঠি বিক্রি করে কেন? (অনুধাবন)
ব্যবসায় ব্যর্থ হয়েছিল খ চুক্তির শর্ত পূরণের জন্য
গ রাজনৈতিক ব্যর্থতায় ঘ সম্রাটের নির্দেশ পালনে
৫৭. দিনেমাররা কত খ্রিষ্টাব্দে ইংরেজদের কাছে বাণিজ্যকুঠি বিক্রি করে? (জ্ঞান)
ক ১৮৪০ খ ১৮৪১ ১৮৪৫ ঘ ১৮৪৬
৫৮. কারা কোনো সফলতা ছাড়াই উপমহাদেশ ছেড়ে চলে যায়? (জ্ঞান)
ক ডাচরা দিনেমাররা গ ইংরেজরা ঘ পর্তুগিজরা
৫৯. ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি গঠন করে কোন দেশের বণিকরা? (জ্ঞান)
ক ফ্রান্স ইংল্যান্ড গ মরক্কো ঘ লিবিয়া
৬০. ইংরেজরা কত খ্রিষ্টাব্দে ভারতবর্ষে আগমন করেন? (জ্ঞান)
১৬০০ খ ১৬০১ গ ১৬০২ ঘ ১৬০৩
৬১. ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি গঠনের জন্য ইংল্যান্ডের বণিক সংঘটি কার কাছ থেকে সনদপত্র লাভ করেন? (জ্ঞান)
রাণী এলিজাবেথ খ প্রথম জর্জ
গ রানি ভিক্টোরিয়া ঘ দ্বিতীয় জর্জ
৬২. বণিক সংঘটি কত বছরের জন্য বাণিজ্য করার সনদপত্র পায়? (জ্ঞান)
ক ১০ ১৫ গ ২০ ঘ ২০
৬৩. ইংল্যান্ডের বণিক সংঘটি ভারতবর্ষে কার দরবারে হাজির হন? (জ্ঞান)
সম্রাট আকবর খ সম্রাট শাহজাহান
গ সম্রাট ইলিয়াস ঘ সম্রাট জাহাঙ্গীর
৬৪. বাণিজ্য স¤প্রসারণের জন্য ১৬০৮ খ্রিষ্টাব্দে কে সম্রাট জাহাঙ্গীরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন? (জ্ঞান)
ক লর্ড ক্লাইভ খ প্রথম জেমস
গ দ্বিতীয় জেমস ক্যাপ্টেন হকিন্স
৬৫. ক্যাপ্টেন হকিন্স কার সুপারিশে সম্রাট জাহাঙ্গীরের নিকট সাক্ষাৎ করেন? (জ্ঞান)
জেমস খ ক্লাইভ গ টমাস রো ঘ দ্বিতীয় চার্লস
৬৬. ক্যাপ্টেন হকিন্স জাহাঙ্গীরের সঙ্গে দেখা করেন কেন? (অনুধাবন)
ক বাণিজ্যিক সুবিধা নেওয়ার লক্ষ্যে
খ বাণিজ্যিক ভিত্তি মজবুত করার লক্ষ্যে
গ বাণিজ্যিক প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য
বাণিজ্যিক স¤প্রসারণের লক্ষ্যে
৬৭. ইংরেজরা কার অনুমতি পেয়ে সুরাটে কুঠি স্থাপন করেন? (জ্ঞান)
ক সম্রাট আকবর খ সম্রাট শাহ আলম
সম্রাট জাহাঙ্গীর ঘ সম্রাট শাহজাহান
৬৮. ইংরেজরা কত খ্রিষ্টাব্দে সুরাটে বাণিজ্য কুঠি স্থাপন করেন? (জ্ঞান)
ক ১৬০০ খ ১৬০১ ১৬১২ ঘ ১৬১৬
৬৯. ইংরেজরা প্রথম কুঠি স্থাপন করেন কোথায়? (জ্ঞান)
ক কর্নাটে সুরাটে গ আগ্রায় ঘ কলকাতায়
৭০. কত খ্রিষ্টাব্দে প্রথম জেমসের দূত হয়ে জাহাঙ্গীরের দরবারে আসেন টমাস রো? (জ্ঞান)
ক ১৬১০ ১৬১৫ গ ১৬২০ ঘ ১৬২৫
৭১. টমাস রো কত খ্রিষ্টাব্দে ভারতবর্ষ ত্যাগ করেন? (জ্ঞান)
ক ১৬১৮ ১৬১৯ গ ১৬২০ ঘ ১৬২৫
৭২. ইংরেজরা দ্বিতীয় বাণিজ্য কুঠি স্থাপন করেন কোথায়? (জ্ঞান)
মসলিপট্টমে খ কর্নাটে গ সুরাটে ঘ আগ্রায়
৭৩. ইংরেজরা ১৬৫৮ খ্রিষ্টাব্দে কার অনুমোদন নিয়ে হুগলিতে বাণিজ্যকুঠি স্থাপন করেন? (জ্ঞান)
ক শাহ আলম খ সম্রাট জাহাঙ্গীর
শাহ সুজা ঘ সম্রাট আকবর
৭৪. ইংরেজরা কত খ্রিষ্টাব্দে হুগলিতে বাণিজ্যকুঠি স্থাপন করেন? (জ্ঞান)
ক ১৬৬৭ ১৬৫৮ গ ১৬৬৯ ঘ ১৬৭০
৭৫. ইংল্যান্ডের রাজা দ্বিতীয় চার্লসের কত খ্রিষ্টাব্দে পর্তুগিজ কন্যা ক্যাথরিনের সঙ্গে বিয়ে হয়? (জ্ঞান)
ক ১৬৬৭ ১৬৬৮ গ ১৬৬৯ ঘ ১৬৭০
৭৬. ক্যাথরিন কোথাকার রাজকন্যা ছিল? (জ্ঞান)
ক স্পেন খ ফ্রান্স পর্তুগিজ ঘ ইংল্যান্ড
৭৭. ইংল্যান্ডের রাজা দ্বিতীয় চার্লসের পর্তুগিজ রাজকন্যা ক্যাথরিনের সঙ্গে বিয়ের যৌতুক হিসেবে কোন শহরটি লাভ করেন? (জ্ঞান)
ক হরিয়ানা বোম্বাই গ নাগপুর ঘ করাচি
৭৮. ইংল্যান্ডের রাজা কী কারণে পর্তুগিজ রাজকন্যা ক্যাথরিনকে বিয়ে করেন? (উচ্চতর দক্ষতা)
ক সৌন্দর্যের কারণে খ রাজনৈতিক কারণে
বাণিজ্যিক কারণে ঘ ধর্মীয় কারণে
৭৯. নাসিমার বয়স ২০ বছর। তার একটি ২০ তলা ফ্লাট আছে। গ নামক একজন যুবক ঐ ফ্লাটটির লোভে তাকে বিয়ে করলেন। এখানে গ এর সাথে কার মিল দেখা যায়? (প্রয়োগ)
ক জেমসের দ্বিতীয় চার্লসের
গ হকিন্সের ঘ সিরাজউদ্দৌলার
৮০. দ্বিতীয় চালর্স বোম্বাই শহরটি কত হাজার পাউন্ডে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কাছে বিক্রি করে দেন? (জ্ঞান)
ক ৩০ খ ৪০ ৫০ ঘ ৬০
৮১. ফোর্ট উইলিয়াম দুর্গ নির্মাণ করা হয় কত খ্রিষ্টাব্দে? (জ্ঞান)
১৭০০ খ ১৭০১ গ ১৭০২ ঘ ১৭০৩
৮২. সম্রাট ফারুখশিয়ার কোন স্থানের সম্রাট ছিলেন? (জ্ঞান)
ক বোম্বে দিলি গ আহমেদাবাদ ঘ পশ্চিমবঙ্গ
৮৩. দিলির সম্রাট ফারুখশিয়ারের ফরমান ছিল ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির ম্যাগনা কার্টা। কথাটির তাৎপর্য কী? (উচ্চতর দক্ষতা)
ক এর মাধ্যমে ধর্মীয় ও রাজনৈতিক সুবিধা পাওয়া
খ এর মাধ্যমে সামাজিক ভিত্তিকে সুদৃঢ় করতে পারা
এর মাধ্যমে বাণিজ্যিক ও রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিল করা
ঘ এর মাধ্যমে অনৈতিক কর্মকাণ্ডের স্বীকৃতি পাওয়া
৮৪. পর্তুগিজ ওলন্দাজ দিনেমার ইংরেজ (?)। চিহ্নিত স্থানে কোনটি বসবে? (প্রয়োগ)
ফরাসি খ আরবির গ চীনা ঘ জাপানি
৮৫. ভারতীয় উপমহাদেশে সর্বশেষে কারা আগমন করেন? (জ্ঞান)
ক দিনেমাররা ফরাসিরা গ ডাচরা ঘ ইংরেজরা
৮৬. ফরাসি ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি কত খ্রিষ্টাব্দে গঠিত হয়? (জ্ঞান)
ক ১৬০০ খ ১৬৫০ ১৬৬৪ ঘ ১৬৬৮
৮৭. ফরাসিরা সুরাটে কত খ্রিষ্টাব্দে বাণিজ্য কুঠি নির্মাণ করেন? (জ্ঞান)
ক ১৬৬৪ ১৬৬৮ গ ১৬৭০ ঘ ১৬৮০
৮৮. ফরাসিরা পন্ডিচেরীতে উপনিবেশ গড়ে তোলেন কখন? (জ্ঞান)
ক ১৬৭০ খ্রিষ্টাব্দে খ ১৬৭১ খ্রিষ্টাব্দে
গ ১৬৭২ খ্রিষ্টাব্দে ১৬৭৩ খ্রিষ্টাব্দে
৮৯. ১৬৭৩ খ্রিষ্টাব্দে ফরাসিরা কোথায় উপনিবেশ গড়ে তোলেন? (জ্ঞান)
ক সুরাটে খ বোম্বে পন্ডিচেরীতে ঘ কর্নাটে
৯০. কত খ্রিষ্টাব্দের পর থেকে ফরাসিরা তাদের বাণিজ্যিক কার্যক্রম বাংলায় স¤প্রসারিত করেন? (জ্ঞান)
ক ১৬৭০ খ ১৬৭২ গ ১৬৭৩ ১৬৭৪
৯১. চন্দননগর নামক স্থানটি কিনে নেয় কারা? (জ্ঞান)
ক ডাচরা খ দিনেমাররা গ ইংরেজরা ফরাসিরা
৯২. ফরাসিরা চন্দননগর নামক স্থানটি কিনে নেয় কেন? (অনুধাবন)
ক স্থানটি সুন্দর বলে
খ সাম্রাজ্য বিস্তারের জন্য
বাণিজ্যিক কার্যক্রম স¤প্রসারিত করাতে
ঘ ধর্মীয় কারণে উদ্বুদ্ধ হয়ে
৯৩. কাশিমবাজার বালাসোরে কুঠি স্থাপন করে কারা? (জ্ঞান)
ফরাসিরা খ ডাচরা গ ইংরেজরা ঘ দিনেমাররা
৯৪. ইংরেজ ও ফরাসিদের মধ্যে সংঘর্ষ অনিবার্য হয়ে ওঠে। এর প্রকৃত কারণ কোনটি? (অনুধাবন)
ক ফরাসিরা রাজনৈতিক শক্তি বাড়াতে চেয়েছিল
খ দুই জাতির মধ্যে পূর্ব দ্ব›দ্ব মাথাচাড়া দিয়েছিল
ফরাসিরা এদেশে সাম্রাজ্য স্থাপন করতে চেয়েছিল
ঘ এদেশীয় সরকারের সহযোগিতা একপেশে ছিল
৯৫. ফরাসিরা এদেশ ত্যাগ করতে বাধ্য হয় কেন? (অনুধাবন)
ইংরেজদের কাছে পরাজিত হওয়ায়
খ আরবদের অসহযোগিতার কারণে
গ ধর্মীয় স্বার্থ বিঘিœত হওয়ায়
ঘ রাজনৈতিক স্বার্থ জড়িত থাকায়
বহুপদী সমাপ্তিসূচক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
৯৬. পর্তুগিজ নাবিক ভাস্কো-ডা-গামার সমুদ্র পথ আবিষ্কারের ফলে যা হয়Ñ (উচ্চতর দক্ষতা)
র. পর্তুগিজদের ব্যবসা-বাণিজ্যের পথ প্রসার হয়
রর. যোগাযোগ ক্ষেত্রে এক নতুন যুগের সূচনা হয়
ররর. প্রাচ্য ও আমেরিকার মধ্যে যোগাযোগ সম্পর্ক চালু হয়
নিচের কোনটি সঠিক?
র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৯৭. বাংলাদেশের উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণবঙ্গের মধ্যে বাণিজ্য যোগাযোগ ত্বরান্বিত করার জন্য যমুনা সেতু করা হলো। এরূপ ঘটনার সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ (প্রয়োগ)
র. পর্তুগাল রর. কালিকট
ররর. তুরস্ক
নিচের কোনটি সঠিক?
র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৯৮. পর্তুগিজরা উপমহাদেশে কুঠি স্থাপন করে (অনুধাবন)
র. কালিকটে রর. বাঁকুড়ায়
ররর. কাশিমবাজারে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর র, রর ও ররর
৯৯. পর্তুগিজরা কুঠি স্থাপন করে (অনুধাবন)
র. কালিকট রর. চোল
ররর. বেসিন
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর র, রর ও ররর
১০০. ১৫৩৮ খ্রিষ্টাব্দে পর্তুগিজরা বাণিজ্য ঘাটি নির্মাণ করেন (অনুধাবন)
র. চট্টগ্রামে
রর. সাতগাঁওয়ে
ররর. আহমেদাবাদে
নিচের কোনটি সঠিক?
র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
১০১. পর্তুগিজদের শায়েস্তা খান বিতাড়িত করেন (অনুধাবন)
র. বিভিন্ন অপকর্মের কারণে
রর. দস্যুতার কারণে
ররর. উপমহাদেশে ব্যবসায়িক অগ্রগতি করতে না পারায়
নিচের কোনটি সঠিক?
র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
১০২. ওলন্দাজদের পতনের জন্য দায়ী যে কারণÑ (অনুধাবন)
র. দিনেমারদের সাথে বিরোধ
রর. বাংলার শাসকদের সাথে বিরোধ
ররর. ইংরেজদের সাথে ব্যবসায়িক বিরোধ
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
১০৩. উপমহাদেশে ইংরেজ শক্তির উত্থান ঘটে যেভাবেÑ (অনুধাবন)
র. পর্তুগিজদের পতনের মাধ্যমে
রর. ওলন্দাজদের পতনের মাধ্যমে
ররর. দিনেমারদের পতনের মাধ্যমে
নিচের কোনটি সঠিক?
র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
১০৪. ইংরেজরা বাণিজ্য কুঠি স্থাপন করেÑ (অনুধাবন)
র. কাশিমবাজারে রর. ঢাকায়
ররর. মালদহে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর র, রর ও ররর
১০৫. জব চার্নক যেসব গ্রামে জমিদারি স্বত্ব লাভ করেনÑ (অনুধাবন)
র. কলকাতা রর. সুতানটি
ররর. গোবিন্দপুর
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর র, রর ও ররর
১০৬. ইংরেজরা দিলির সম্রাট ফারুখশিয়ারের অনুমতিতে বিনাশুষ্কে বাণিজ্যের অধিকার লাভ করে (অনুধাবন)
র. বাংলায় রর. বোম্বাইতে
ররর. মাদ্রাজে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর র, রর ও ররর
১০৭. ১৬৫৮ খ্রিষ্টাব্দে বাংলার সুবাদার শাহ সুজার অনুমোদন লাভ করে ইংরেজরা বাণিজ্য কুঠি স্থাপন করে- (উচ্চতর দক্ষতা)
র. কাসিমবাজারে
রর. ঢাকায়
ররর. মালদহে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর র, রর ও ররর
১০৮. ইংরেজ বণিকদেরকে উপমহাদেশে ব্যবসা-বাণিজ্যে উৎসাহিত করে যে কাজটি Ñ (অনুধাবন)
র. প্রাচ্যের ধন-সম্পদের প্রাচুর্য
রর. সমুদ্র পথে ইউরোপীয় বণিকদের সাফল্য
ররর. আরবদের অভাবনীয় উন্নতি
নিচের কোনটি সঠিক?
র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
১০৯. ফরাসিরা কুঠি স্থাপন করে ভারতবষের্র (অনুধাবন)
র. সুরাটে
রর. মসলিপট্টমে
ররর. গোবিন্দপুরে
নিচের কোনটি সঠিক?
র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
১১০. ইংরেজদের কাছে ফরাসিদের পরাজিত হওয়ার কারণÑ (উচ্চতর দক্ষতা)
র. ইংরেজদের ষড়যন্ত্র
রর. ফরাসিদের বাংলার নবাবের পক্ষ অবলম্বন
ররর. উন্নত রণকৌশলের অভাব
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর র, রর ও ররর
অভিন্ন তথ্যভিত্তিক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ে ১১১ ও ১১২ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
মিজান, সুজন, বিশ্বজিৎ ও সোহেল চার বন্ধু ভালো কিছু করতে চায়। কিন্তু এদের মধ্যে সোহেলের মেধার কাছে অবশেষে কেউ টিকে থাকতে পারে না।
১১১. অনুচ্ছেদে সোহেল চরিত্রটি নিচের কোন চরিত্রকে সমর্থন করেছে? (প্রয়োগ)
ক ডাচ খ পর্তুগিজ ইংরেজ ঘ ফরাসি
১১২. অনুচ্ছেদে যে বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে- (প্রয়োগ)
র. রাজনৈতিক
রর. বাণিজ্যিক মেধার প্রখরতা
ররর. পরস্পরের শক্তি ও ক্ষমতা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ে ১১৩ ও ১১৪ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
রুবেল ২৫,০০০ টাকার বিনিময়ে জয়দেবপুর, ভবানীপুর ও কচুয়াবাজার নামক তিনটি গ্রামের জমিদারি লাভ করেন। পরবর্তীতে এই তিনটি গ্রামকে কেন্দ্র করে জয়দেবপুর নগরীর গোড়াপত্তন হয়।
১১৩. অনুচ্ছেদের জয়দেবপুর নগরী গড়ে ওঠার সাথে তোমার পঠিত কোন নগরীর সঙ্গতি পাওয়া যায়? (প্রয়োগ)
ক ঢাকা খ দিল্লি কলকাতা ঘ দিনাজপুর
১১৪. উক্ত নগরী গড়ে ওঠার ফলে এটি ইংরেজদের (উচ্চতর দক্ষতা)
র. বাণিজ্যিক স্বার্থরক্ষার কেন্দ্রে পরিণত হয়
রর. রাজনৈতিক স্বার্থরক্ষার কেন্দ্রে পরিণত হয়
ররর. শাসনের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর র, রর ও ররর
নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ে ১১৫, ১১৬ ও ১১৭ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
সিয়ংপিং একজন চীনা নাগরিক, আবেই একজন জাপানি নাগরিক ও পেসাং একজন দক্ষিণ কোরিয়ার নাগরিক। তারা তিনজনেই বাংলাদেশে ব্যবসা করার জন্য চলে আসে। প্রথমে আসে সিয়ংপিং সবার শেষে আসে পেসাং। কিন্তু আবেই শেষ পর্যন্ত টিকে থেকে এদেশ শাসন করে।
১১৫. অনুচ্ছেদে পেসাং এর সাথে মিল দেখা যায় কোন জাতির? (প্রয়োগ)
ফরাসি খ ইংরেজ গ ডাচ ঘ পর্তুগিজ
১১৬. অনুচ্ছেদে আবেই এর সাথে কোন জাতির সাদৃশ্য লক্ষ করা যায়? (প্রয়োগ)
ক ফরাসি ইংরেজ গ পর্তুগিজ ঘ ডাচ
১১৭. অনুচ্ছেদে বর্ণিত আবেই উপমহাদেশে কুঠি নির্মাণ করেনÑ (উচ্চতর দক্ষতা)
র. হুগলিতে রর. ঢাকায়
ররর. মালদহে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র খ রর গ ররর র, রর ও ররর
পলাশী যুদ্ধ বোর্ড বই, পৃষ্ঠা- ৯৯
নবাব আলীবর্দী খানের মৃত্যুর পর বাংলার সিংহাসনে বসেন তার দৌহিত্র সিরাজউদ্দৌলা।
সিরাজউদ্দৌলা বাংলার সিংহাসনে বসেন মাত্র ২২ বছর বয়সে।
নবাব সিরাজউদ্দৌলা কলকাতা দখল করেন ১৭৫৬ খ্রিষ্টাব্দে।
‘অন্ধক‚প হত্যার’ অপপ্রচার চালায় হলওয়েল।
নবাব ইংরেজদের সাথে যে নতজানু ও অপমানজনক স্বন্ধি করেন তা ইতিহাসে আলীনগর সন্ধ নামে খ্যাত।
ভাগীরথী নদীর তীরে পলাশীর আমবাগানে পলাশী যুদ্ধ সংগঠিত হয় ২৩ জুন ১৭৫৭ সাল।
সম্পূর্ণ অসহযোগিতা ও নীরব দর্শকের ভ‚মিকা পালন করে নবাবের সেনাপতি মীর জাফর।
সিরাজউদ্দৌলার পরাজয় ও মৃত্যু বাংলা ঔপনিবেশিক শাসনের পথ সুগম করে।
নবাব সিরাজদ্দৌলার ক্ষমতাচ্যুত করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয় লর্ডক্লাইড।
বাংলার তথা স্বাধীন ভারতের স্বাধীনতা ভুলুণ্ঠিত হয় পলাশী যুদ্ধে পরাজয়ে।
সাধারণ বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
১১৮. বাংলা, বিহার, উড়িষ্যার নবাব ছিলেন কে? (জ্ঞান)
ক সিরাজউদ্দৌলা খ আকবর
আলীবর্দী খান ঘ লর্ড বেন্টিংক
১১৯. আলীবর্দী খানের কনিষ্ঠ কন্যার নাম কী? (জ্ঞান)
ক মমেনা আমেনা গ ঘসেটি বেগম ঘ মরিয়ম
১২০. আলীবর্দী খানের সাথে সিরাজউদ্দৌলার কী ধরনের সম্পর্ক ছিল? (অনুধাবন)
ক পুত্র খ ভ্রাতা
গ জামাতা দৌহিত্র
বোর্ড ও সেরা স্কুলের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন- ১ চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত
কাইউম তালুকদার ঢাকায় বসবাস করেন। গলাচিপায় তার প্রায় ৫০০ বিঘা জমি আছে। জমিজমা দেখাশোনার জন্য তিনি ম্যানেজার ও কিছু কর্মচারী নিয়োগ দেন। তারা প্রতি বছরের ইজারার টাকা আদায় করতে গিয়ে কৃষকদের ওপর নির্যাতন করে। ফলে কৃষকরা জমি চাষ করতে চায় না। অন্যদিকে কাইউম তালুকদারও নিয়মিত টাকাপয়সা পান না। তাই তিনি জমিজমা ১৫ বছরের জন্য ইজারা দেন। পরবর্তীতে তারাই জমির স্থায়ী মালিক হন। [স. বো. ’১৫]
ক. “ডাচ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি” কোন দেশের? ১
খ. “ডেনিস ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি” কেন ভারতবর্ষ ত্যাগ করেন? ২
গ. উদ্দীপকের ঘটনা ব্রিটিশ ভারতের কোন ঘটনার প্রতিচ্ছবি? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. তুমি কি মনে কর উক্ত ইজারা ব্যবস্থা বাংলার কৃষকদের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সহায়ক ছিল?Ñ তোমার মতামত দাও। ৪
ক “ডাচ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি” হল্যান্ডের।
খ দিনেমার বা ডেনমার্কের অধিবাসী একদল বণিক বাণিজ্য করার উদ্দেশ্যে ‘ডেনিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি’ গঠন করেন। ১৬২০ খ্রিষ্টাব্দে তারা দক্ষিণ ভারতের তাঞ্জোর জেলায় ত্রিবাঙ্কু এবং ১৬৭৬ খ্রিষ্টাব্দে বাংলার শ্রীরামপুরে বাণিজ্য কুঠি স্থাপন করেন। কিন্তু, এদেশে তারা লাভজনক ব্যবসা করতে ব্যর্থ হয়। ১৮৪৫ খ্রিষ্টাব্দে ইংরেজদের কাছে বাণিজ্য কুঠি বিক্রি করে কোনো রকম বাণিজ্যিক সফলতা ছাড়াই দিনেমাররা এদেশ ত্যাগ করে।
গ উদ্দীপকের ঘটনা ব্রিটিশ ভারতের চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের পটভ‚মি নির্দেশ করে। ১৭৭২ খ্রিষ্টাব্দে ওয়ারেন হেস্টিংস প্রবর্তিত পাঁচসালা বন্দোবস্ত ব্যবস্থায় উচ্চহারে ডাক নিয়ে জমির বন্দোবস্ত নিলেও সে অনুপাতে রাজস্ব আদায় হতো না। নির্দিষ্ট সময়সীমা থাকায় জমিদাররা কৃষকদের কাছ থেকে প্রয়োজনে নির্যাতন করে অর্থ আদায় করত। নির্যাতনের ভয়ে কৃষকরা জমি ছেড়ে পালিয়ে যেত। এ অবস্থায় হেস্টিংস জমিদারদের সঙ্গে একসালা বন্দোবস্ত চালু করেন কিন্তু, এ ব্যবস্থায়ও সরকার, জমিদার, প্রজা- কারও কোনো ধরনের উপকার হয়নি। উদ্দীপকেও দেখা যায় কাইউম তালুকদারের ম্যানেজার ও কর্মচারীরা কৃষকদের ওপর প্রতি বছর ইজারার টাকা আদায়ে নির্যাতন করে। ফলে কৃষকরা জমি চাষ করতে চায় না এবং কাইউম তালুকদারও নিয়মিত টাকা-পয়সা পান না। এ অবস্থায় তিনি ১৫ বছরের জন্য জমি ইজারা দেন যা পরবর্তীতে ইজারা গ্রহণকারীদের জমির স্থায়ী মালিকে পরিণত করে। তদ্রæপ ১৭৮৯ খ্রিষ্টাব্দে কর্নওয়ালিস জমিদারদের দশসালা বন্দোবস্ত দিতে প্রস্তুতি নেন। ইংল্যান্ডের কর্তৃপক্ষ জমিদারদের সঙ্গে বন্দোবস্তের অনুমতি প্রদান করলে কর্নওয়ালিস এই অনুমোদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১৭৮৯ খ্রিষ্টাব্দে দশসালা বন্দোবস্তু চালু করেন। তবে এর সঙ্গে এই প্রতিশ্রæতিও তিনি দেন যে, কোম্পানির ডাইরেক্টর সভার অনুমোদন পেলে দশসালা বন্দোবস্তই চিরস্থায়ী বন্দোবস্তে পরিণত হবে।
সুতরাং, উদ্দীপকের ঘটনা ব্রিটিশ ভারতের চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের সূচনার প্রতিচ্ছবি।
ঘ আমি মনে করি উক্ত ইজারা ব্যবস্থা তথা চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত ব্যবস্থা বাংলার কৃষকদের উন্নয়নে সহায়ক ছিল না। চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের ফলে জমিদারের স্বার্থ সুরক্ষিত হয়। তারা ধীরে ধীরে ধনিক শ্রেণিতে পরিণত হয়। কিন্তু অপর দিকে জমিতে প্রজাদের পুরোনো স্বত্ব সম্পূর্ণ বিলুপ্ত হয়। ফলে জমিদার ইচ্ছে করলেই যেকোনো সময় তাদের জমি থেকে উচ্ছেদ করতে পারত। প্রথম দিকে প্রজাস্বত্ব আইন না থাকায় তাদের ভাগ্যের জন্য তারা সম্পূর্ণভাবেই জমিদারের দয়ার ওপর নির্ভর করত। আবার জমিদারি আয় ও স্বত্ব সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে জমিদাররা নায়েব-গোমস্তার ওপর দায়িত্ব দিয়ে শহরে বসবাস শুরু করেন। এইসব অনুপস্থিত জমিদারদের নায়েব-গোমস্তাদের অত্যাচারে প্রজারা অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে। ফলে জমির উৎপাদন কমে যেতে থাকে, গ্রামের অর্থনৈতিক অবস্থাও খারাপ হতে থাকে। এভাবে চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের ফলে কৃষকরা সরাসরি জমিদার কর্তৃক শোষিত হতে থাকে। তাদের অর্থনৈতিক উন্নয়ন হয়ে ওঠে সদূরপরাহত।
প্রশ্ন- ২ ইংরেজ শাসনামলের ঘটনা
জমিদার সুকান্ত সেন তার পুত্র অজয়কে অন্য এক জমিদার কন্যার সাথে বিয়ে দেন। বিয়ের যৌতুকস্বরূপ জমিদার গাড়ি, বাড়ি ছাড়াও জমিদারির একটি অংশ লাভ করেন। কিন্তু টাকার অভাবে অজয় উক্ত জমিদারি একটি বিদেশি কোম্পানির নিকট পঞ্চাশ লক্ষ টাকায় বিক্রি করে দেন। পরবর্তীতে বিদেশি কোম্পানি তাদের ক্রয়কৃত জায়গায় প্রধান বাণিজ্য কেন্দ্র গড়ে তোলে। [সরকারি হরচন্দ্র বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, ঝালকাঠি]
ক. চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের ফলে কারা শোষিত হতে থাকে? ১
খ. চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত সম্পর্কে যা জান ব্যাখ্যা কর। ২
গ. উদ্দীপকটি তোমার পাঠ্যবই এর কোন ঘটনার সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. ‘উক্ত ঘটনাটি অদূরদর্শিতার পরিচয় বহন করে’- বিশ্লেষণ কর। ৪
ক চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের ফলে কৃষকরা সরাসরি জমিদার কর্তৃক শোষিত হতে থাকে।
খ ১৭৯৩ খ্রিস্টাব্দে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত বা স্থায়ী ভ‚মি ব্যবস্থা প্রবর্তিত হয়। ঐ বছর ২২ মার্চ নির্দিষ্ট রাজস্ব পরিশোধের বিনিময়ে বাংলা, বিহার, উড়িষ্যার জমিদারগণকে নিজ নিজ জমির ওপর স্থায়ী মালিকানা দান করে ইংরেজ সরকার কর্তৃক যে বন্দোবস্ত চালু করা হয় তাকেই ‘চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত’ বলা হয়। চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত জমিদারদেরকে জমির স্থায়ী মালিকে পরিণত করে এবং জমিদারগণ জমির মালিকানা স্বত্ব লাভ করে। এ প্রথা চালু হওয়ার ফলে জমিদারদের প্রশাসনিক ক্ষমতা বিলুপ্ত হয়। সরকার স্বয়ং শান্তি রক্ষা ও নিরাপত্তার দায়িত্ব গ্রহণ করে।
গ উদ্দীপকটি আমার পাঠ্যবইয়ের ইংল্যান্ডের রাজা দ্বিতীয় চার্লস ও পর্তুগিজ রাজকন্যা ক্যাথরিনের বিয়ের ঘটনার সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ।
উদ্দীপকের সুকান্ত সেনের পুত্র অজয় সেন বিয়েতে কন্যার পিতার নিকট থেকে জমিদারির এক অংশ লাভ করেন। অনুরূপ ১৬৬৮ খ্রিস্টাব্দে ইংল্যান্ডের রাজা দ্বিতীয় চার্লস পর্তুগিজ রাজকন্যা ক্যাথরিনের সঙ্গে বিয়ের যৌতুক হিসেবে লাভ করেন বোম্বাই শহর। অর্থাভাবে চার্লস ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কাছে পঞ্চাশ হাজার পাউন্ডের বিনিময়ে শহরটি বিক্রি করে দেন। উদ্দীপকেও দেখা যায় জমিদার পুত্র অজয় তার প্রাপ্ত জমিদারি টাকার অভাবে একটি বিদেশি কোম্পানির নিকট পঞ্চাশ লক্ষ টাকায় বিক্রি করেন। উদ্দীপকের বিদেশি কোম্পানির মতোই পরবর্তীকালে এই বোম্বাই শহরই ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির প্রধান বাণিজ্য কেন্দ্রে পরিণত হয়। সুতরাং, উদ্দীপকটি আমার পাঠ্যবইয়ের ইংল্যান্ডের রাজা দ্বিতীয় চার্লস ও পর্তুগিজ রাজকন্যা ক্যাথরিনের বিয়ের ঘটনার সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ।
ঘ উক্ত ঘটনাটি তথা ইংল্যান্ডের রাজার বোম্বাই শহর যৌতুক লাভ এবং পরবর্তীতে তা বিক্রি করা অদূরদর্শিতার পরিচয় বহন করে।
প্রথমত পর্তুগিজদের যৌতুক হিসেবে বোম্বাই শহর ইংরেজ রাজাকে প্রদান তাদের শক্তিকে খর্ব করে। পরবর্তীতে রাজা দ্বিতীয় চার্লস তার দেশের এক কোম্পানির কাছে শহরটি বিক্রি করলে তাও ছিল অদূরদর্শিতার পরিচায়ক। কেননা আমরা দেখি ইতিহাসের ধারা প্রবাহে ইংরেজ কোম্পানির ক্ষমতা আরো বৃদ্ধি পায় যখন দিল্লির সম্রাট ফারুখশিয়ার তাদের বাংলা, বোম্বাই ও মাদ্রাজে বিনাশুল্কে বাণিজ্যের অধিকার প্রদান করেন। একই সঙ্গে নিজস্ব মুদ্রা প্রচলের অধিকারও কোম্পানি লাভ করে। সম্রাটের এই ফরমানকে ইংরেজ ঐতিহাসিক ওরমে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির মহাসনদ বা ম্যাগনা কার্টা বলে উল্লেখ করেন। এই অধিকার লাভ করে ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি অপ্রতিরোধ্য গতিতে অগ্রসর হতে থাকে। অথচ বোম্বাই শহর হাতে থাকলে ব্রিটিশ রাজশক্তিকে এড়িয়ে কোম্পানি এত দুর্বিনীত হতে পারত না। সুতরাং উদ্দীপকের ঘটনাটি ছিল নিতান্তই অদূরদর্শিতার পরিচয়ক।
প্রশ্ন- ৩ ইংরেজ ও ফরাসি বণিকদের বর্ণনা
তপু বাংলাদেশের নাগরিক। সে গত দু বছর আগে একটি দেশে লেখাপড়ার জন্য গমন করেছে। অতীতে এদেশের একটি বণিক সংঘ রাণীর কাছ থেকে ১৫ বছর মেয়াদি বাণিজ্য করার সনদপত্র নিয়ে ভারতীয় উপমহাদেশে আগমন করে। তৎকালীন সম্রাটের কাছ থেকে তারা বাণিজ্য করার অনুমতি লাভ করে। আর এ বণিক সংঘ অপ্রতিরোধ্য গতিতে অগ্রসর হয়ে ভারতবর্ষের ব্যাপক ক্ষতি সাধন করে।
[মিউনিসিপ্যাল মডেল স্কুল এন্ড কলেজ, চট্টগ্রাম]
ক. ভাস্কো-ডা-গামা কত খ্রিষ্টাব্দে ভারতের কালিকট বন্দরে এসে উপস্থিত হয়েছিলেন? ১
খ. ‘ওলন্দাজ বা ডাচ’ বলতে কী বোঝ? ২
গ. উদ্দীপকে ভারতীয় উপমহাদেশের যে প্রতিষ্ঠিত শাসনের প্রতিচ্ছবি প্রকাশিত হয়েছে তার ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. এক সময় উক্ত বণিক দলের সাথে ভারতীয় উপমহাদেশে ফরাসি বণিকদের সংঘর্ষ অনিবার্য হয়ে দাঁড়ায়- বিশ্লেষণ কর। ৪
ক ভাস্কো-ডা-গামা ১৪৯৮ খ্রিষ্টাব্দে ভারতের কালিকট বন্দরে এসে উপস্থিত হয়েছিলেন।
খ হল্যান্ডের অধিবাসীদের গুলন্দাজ বা ডাচ বলা হয়। ঔপনিবেশিক শাসনপূর্ব যুগে হল্যান্ডের বণিক গোষ্ঠী ভারত উপমহাদেশে বাণিজ্য করতে এসেছিল। ইতিহাসে এই বণিকেরাই বিশেষ করে ওলন্দাজ বা ডাচ নামে পরিচিত।
গ উদ্দীপকে ভারতীয় উপমহাদেশের মুঘল শাসনের প্রতিষ্ঠিত প্রতিচ্ছবি প্রকাশিত হয়েছে। সমুদ্রপথে ইউরোপীয় বণিকদের সাফল্য, প্রাচ্যের ধন-সম্পদের প্রাচুর্য, ইংরেজ বণিকদেরকেও এ অঞ্চলে ব্যবসা-বাণিজ্যে উৎসাহিত করে। এই উদ্দেশ্যে ইংল্যান্ডের একদল বণিক ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি নামে একটি বণিক সংঘ গড়ে তোলে। বণিক সংঘটি ১৬০০ খ্রিষ্টাব্দে রাণী এলিজাবেথের কাছ থেকে ১৫ বছর মেয়াদি প্রাচ্যে একচেটিয়া বাণিজ্য করার সনদপত্র লাভ করে। উদ্দীপকে এ তথ্যটি সন্নিবেশিত হয়েছে। এই সনদপত্র নিয়ে কোম্পানির প্রতিনিধি বাণিজ্যিক সুবিধা লাভের আশায় আকবরের দরবারে হাজির হন। এরপর ক্যাপ্টেন হকিন্স ১৬০৮ খ্রিষ্টাব্দে জেমসের সুপারিশপত্র নিয়ে বাণিজ্য স¤প্রসারণের লক্ষ্যে সম্রাট জাহাঙ্গীরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তার অনুমতি নিয়ে ১৬১২ খ্রিষ্টাব্দে সুরাটে বাণিজ্য কুঠি স্থাপিত হয়। পরবর্তীকালে ১৬১৫ খ্রিষ্টাব্দে প্রথম জেমসের দূত হয়ে জাহাঙ্গীদের দরবারে আসেন স্যার টমাস রো। সম্রাটের কাছ থেকে তিনি ইংরেজদের জন্য বাণিজ্যিক সুবিধা আদায় করে নেন। উদ্দীপকেও দেখা যায় বিদেশি কোম্পানি সম্রাটের কাছে বাণিজ্য করার অনুমতি লাভ করে। ১৬১৯ খ্রিষ্টাব্দে টমাস রো ভারতবর্ষ ত্যাগ করেন। ইতোমধ্যে কোম্পানি সুরাট, আগ্রা, আহমদাবাদ প্রভৃতি স্থানে বাণিজ্য কুঠি স্থাপন করে তাদের ভিত্তি মজবুত করে ফেলে। সুতরাং উদ্দীপকে ভারতবর্ষের প্রতিষ্ঠিত মুঘল শাসন ব্যবস্থার প্রতিচ্ছবি দেখা যায়, বা পরবর্তীতে ইংরেজ বণিকরা ধ্বংস করতে সক্ষম হয়েছিল।
ঘ এক সময় উক্ত বণিক দল তথা উদ্দীপকে নির্দেশিত ইংরেজ বণিক দলের সাথে ফরাসি বণিকদের সংঘর্ষ অনিবার্য হয়ে পড়েছিল। উপমহাদেশে সর্বশেষে আগত ইউরোপীয় বণিক কোম্পানি হচ্ছে ফরাসি ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি। ১৬৬৪ খ্রিস্টাব্দে এই বাণিজ্যিক কোম্পানি গঠিত হয়। ১৬৬৮ খ্রিষ্টাব্দে কোম্পানি সর্বপ্রথম সুরাট এবং পরের বছর মসলিপট্টমে বাণিজ্যকুঠি স্থাপন করেন। ১৯৭৩ খ্রিষ্টাব্দে পন্ডিচেরীতে ফরাসি উপনিবেশ গড়ে ওঠে। ১৬৭৪ খ্রিষ্টাব্দের পর তারা তাদের বাণিজ্যিক কার্যক্রম বাংলায় স¤প্রসারিত করে। কোম্পানি বাংলার সুবাদার শায়েস্তা খানের কাছ থেকে গঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত চন্দননগর নামক স্থানটি কিনে নেয়। ১৬৯০ থেকে ১৬৯২ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে চন্দননগর একটি শক্তিশালী সুরক্ষিত ফরাসি বাণিজ্য কুঠিতে পরিণত হয়। ১৬৯৬ খ্রিষ্টাব্দে কোম্পানি এখানে একটি শক্তিশালী দুর্গ স্থাপন করতে সক্ষম হয়। নির্দিষ্ট হারে শুল্ক প্রদানের শর্তে ১৬৯৩ খ্রিষ্টাব্দে ফরাসিরা বাংলা, বিহার, উড়িষ্যায় বাণিজ্য করার অধিকার লাভ করে। পরবর্তীকালে তারা কাশিমবাজার বলাসোরে কুঠি স্থাপন করতে সক্ষম হয়। ইংরেজ বণিকরা যখন ব্যবসা-বাণিজ্যে দৃঢ় অবস্থানে, তখন ফরাসিরা এদেশে আসে। এ অবস্থায় ইংরেজদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা তাদের জন্য কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। কারণ অন্যান্য ইউরোপীয় শক্তির মতো ফরাসিরাও এদেশে সাম্রাজ্য স্থাপনের স্বপ্ন দেখতে থাকে। ফলে দুই ইউরোপীয় শক্তি-ইংরেজ ও ফরাসিদের মধ্যে সংঘর্ষ অনিবার্য হয়ে দাঁড়ায়।
প্রশ্ন- ৪ পলাশী যুদ্ধের কারণ
নিজের বেআইনি কর্মকাণ্ডের শাস্তিস্বরূপ পরিমলকে জেল খাটতে হয়। মুক্তিলাভের পর সে সরকারের বিরুদ্ধে একটি মিথ্যা কাহিনীর প্রচারণা চালায়। এতে বলা হয় জেলখানার অতি ছোট্ট একটি প্রকোষ্ঠে ১৫০ জন বিদেশিকে বন্দি করে রাখা হয়। এতে প্রচণ্ড গরমে ১৪০ জন বন্দির মৃত্যু হয়। পরিমলের এই মিথ্যাচারের কারণে সরকারকে দেশে বিদেশে বেশ বেকায়দায় পড়তে হয়। [মেহেরপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়]
ক. চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত প্রবর্তিত হয় কোন সালে। ১
খ. কলকাতা নগরীর জš§ হয় কীভাবে? ২
গ. পরিমলের ঘটনাটি বাংলার ইতিহাসের কোন ঘটনার ইঙ্গিত বহন করে? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. উক্ত ঘটনা তদানীন্তন বাংলার শাসক নবাবকে বিব্রতকর অবস্থার মধ্যে ফেলে দেয়-উক্তিটি মূল্যায়ন কর। ৪
ক চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত প্রবর্তিত হয় ১৭৯৩ সালে।
খ জব চার্নক নামে একজন ইংরেজ ১৬৯০ খ্রিষ্টাব্দে ১২০০ টাকার বিনিময়ে কলকাতা, সুতানটি ও গোবিন্দপুর নামে তিনটি গ্রামের জমিদারী স্বত্ত¡ লাভ করেন। ভাগীরথী নদীর তীরের এই তিনটি গ্রামকে কেন্দ্র করেই পরবর্তীকালে কলকাতা নগরীর জš§ হয়। ধীরে ধীরে ইংরেজদের বাণিজ্যিক স্বার্থ রক্ষা এবং রাজনৈতিক স্বার্থ বিস্তারের শক্তিশালী কেন্দ্রে পরিণত হয়।
গ পরিমলের ঘটনাটি বাংলার ইতিহাসের ‘অন্ধক‚প হত্যা’ ঘটনার ইঙ্গিত বহন করে।
সিংহাসনে আরোহনের পর থেকেই সিরাজউদ্দৌলার সাথে ইংরেজদের একের পর এক ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ ও অবাধ্যতা নবাবকে ক্ষুব্ধ করে তোলে। তাদের উপযুক্ত শিক্ষা দেওয়ার জন্য ১৭৫৬ খ্রিষ্টাব্দে জুন মাসের শুরুতে নবাব কলকাতা দখল করে নেন। যাত্রাপথে তিনি কাশিমবাজার কুঠিও দখল করেন। নবাবের অতর্কিত আক্রমণে ইংরেজরা ফোর্টউইলিয়াম দুর্গ ত্যাগ করে পালিয়ে যায়। হলওয়েলসহ বেশকিছু ইংরেজ আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হন। বন্দিদশা থেকে মুক্তি পেয়ে নবাবকে হেয় করার জন্য হলওয়েল এক মিথ্যা কাহিনীর প্রচারণা চালায় যা ইতিহাসে ‘অন্ধক‚প হত্যা’ নামে পরিচিত। উদ্দীপকের পরিমলও জেল থেকে বের হয়ে সরকারের বিরুদ্ধে এরূপ মিথ্যাচার করে। তাতে বলা হয়, ছোট একটি প্রকোষ্ঠে ১৫০ জন বিদেশিকে বন্দি করে রাখলে প্রচণ্ড গরমে ১৪০ জন বন্দির মৃত্যু হয় ‘অন্ধক‚প হত্যা’ ঘটনায়ও তদ্রƒপ বলা হয় যে, ১৮ ফুট দৈর্ঘ্য ১৪.১০ ফুট প্রস্থ ছোট একটি ঘরে ১৪৬ জন ইংরেজকে বন্দি করে রাখা হয়। এতে প্রচণ্ড গরমে শাসরুদ্ধ হয়ে ১২৩ জনের মৃত্যু হয়। সুতরাং পরিমলের ঘটনাটি বাংলার ইতিহাসের ‘অন্ধক‚প হত্যা’ ঘটনার ইঙ্গিত বহন করে।
ঘ উক্ত ঘটনা তথা ‘অন্ধক‚প হত্যা’ ঘটনাটি তদানীন্তন বাংলার শাসক নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে বিব্রতকর অবস্থার মধ্যে ফেলে দেয়।
উদ্দীপকে যেমন দেখা যায়, পরিমলের মিথ্যা কাহিনী সরকারকে দেশে বিদেশে বেকায়দায় ফেলে, তেমনি ‘অন্ধক‚প হত্যা’ সংক্রান্ত মিথ্যা প্রচার মাদ্রাজ পর্যন্ত পৌঁছে যায়। ফলে উত্তেজিত হয়ে কলকাতা দখল করার জন্য ওয়াটসন ও রবার্ট ক্লাইভ মাদ্রাজ থেকে কলকাতায় চলে আসে। তারা নবাবের সেনাপতি মানিকচাঁদকে পরাজিত করে কলকাতা দখল করে নেয়। নবাব তার চারদিকে ষড়যন্ত্র ও শত্রæ পরিবেষ্টিত টের পেয়ে ইংরেজদের সঙ্গে নতজানু ও অপমানজনক সন্ধি করতে বাধ্য হন। ইহা ইতিহাসে আলীনগর সন্ধি নামে খ্যাত। এভাবে নবাব শাসনকার্যে বেশ বেকায়দায় পড়ে যান। আলোচনা থেকে তাই বলা যায় যে, ‘অন্ধক‚প হত্যা’ ঘটনাটি তদান্তীন বাংলার শাসক নবাবকে বিব্রতকর অবস্থার মধ্যে ফেলে দেয়।
মাস্টার ট্রেইনার প্রণীত সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন- ৫ ইংরেজ শাসনের সূচনা পর্ব
ইতিহাসের শিক্ষক নাসির হোসেন ক্লাসে উপমহাদেশে ইউরোপীয় বণিকদের আগমনের কথা বলছিলেন। তিনি বললেন এই উপমহাদেশে ইংরেজরা ক‚টকৌশলে সবশেষে টিকেছিল এবং দীর্ঘকাল এদেশ শাসন করেছিল এবং এদেশের বিভিন্ন জায়গায় বাণিজ্য করতে সক্ষম হয়েছিল। তিনি আরও বলেনÑ ওলন্দাজরা ভারতবর্ষ ত্যাগ করলে ইংরেজ শক্তির উত্থানের পথ সুগম হয়।
ক. কত খ্রিষ্টাব্দে অটোমান তুর্কিরা কনস্টান্টিনোপল দখল করে নেয়? ১
খ. মীরকাশিম ইংরেজদের বিরুদ্ধে কী ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছিলেন? ২
গ. ওলন্দাজদের ভারতবর্ষ ত্যাগের প্রভাব সম্পর্কিত নাসির হোসেনের মন্তব্যটি দ্বারা কী বোঝা যায় Ñ ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. উদ্দীপকে ইংরেজদের উপমহাদেশে টিকে থাকার ব্যাপারে নাসির হোসেনের বক্তব্য বিশ্লেষণ কর। ৪
ক ১৪৫৩ খ্রিষ্টাব্দে অটোমান তুর্কিরা কনস্টান্টিনোপল দখল করে নেয়।
খ মীরকাশিম ইংরেজদের বিরুদ্ধে নিম্নলিখিত ব্যবস্থাগুলো নিয়েছিলেন : মীরকাশিম প্রথমে ইংরেজদের রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বন্ধ এবং প্রশাসনকে প্রভাবমুক্ত করার পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। এ উদ্দেশে তিনি রাজধানী মুর্শিদাবাদ থেকে মুঙ্গের স্থানান্তরিত করেন। নিরাপত্তার জন্য দুর্গ নির্মাণ ও রাজধানীর চারদিকে পরিখা খনন করেন। অস্ত্র-গোলাবারুদের জন্য যাতে কারো মুখাপেক্ষী হতে না হয় সেজন্য রাজধানীতে কামান, বন্দুক ইত্যাদি তৈরির ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।
গ উদ্দীপকে নাসির হোসেন মন্তব্য করেন ওলন্দাজরা ভারতবর্ষ ত্যাগ করলে ইংরেজ শক্তির উত্থানের পথ সুগম হয়।
হল্যান্ডের অধিবাসী ওলন্দাজ বা ডাচরা ‘ডাচ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি’ গঠন করে বাণিজ্যিক উদ্দেশে ১৬০২ খ্রিষ্টাব্দে এই উপমহাদেশে আসেন। ভারতবর্ষে তারা কোম্পানির সনদ অনুযায়ী কালিকট, নাগাপট্টম, বাংলার চুঁচুড়া ও বাকুড়ায় বাণিজ্যকুঠি স্থাপন করেন। তাছাড়া বলাসোর কাশিমবাজার এবং বরানগরেও তারা কুঠি স্থাপন করেন। ওলন্দাজ ও অপর ইউরোপীয় শক্তি ইংরেজদের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ে বিরোধ শুরু হয় এবং একই সঙ্গে বাংলার শাসকদের সঙ্গে তারা বিরোধে জড়িয়ে পড়ে। ১৭৫৯ খ্রিষ্টাব্দে সংঘটিত বিদারার যুদ্ধে তারা ইংরেজদের কাছে শোচনীয়ভাবে পরাজিত হয়। ফলে ১৮০৫ খ্রিষ্টাব্দে তারা সকল বাণিজ্য কেন্দ্র গুটিয়ে ভারতবর্ষ ত্যাগ করতে বাধ্য হয়। এর পূর্বে পর্তুগিজরাও ইংরেজদের সাথে টিকতে পারেনি যার ফলে ওলন্দাজদের পতনে ভারতে ইংরেজদের শক্তির উত্থানের পথ সুগম হয়। সুতরাং নাসির হোসেনের মন্তব্যটি যথার্থ।
ঘ উদ্দীপকে নাসির হোসেনের বক্তব্যে বুঝা যায়, ইংরেজরা এই উপমহাদেশে তাদের ক‚টকৌশলের ফলে দীর্ঘদিন বাণিজ্য করতে সক্ষম হয়েছিল এবং পরবর্তীতে এ দেশ শাসন করে।
ইংরেজদের বণিক গোষ্ঠী ১৬০০ খ্রিষ্টাব্দে রানি এলিজাবেথের কাছ থেকে ১৫ বছর মেয়াদি প্রাচ্যে একচেটিয়া বাণিজ্য করার সনদপত্র লাভ করে। ১৬১২ খ্রিষ্টাব্দে সুরাটে বাণিজ্যকুঠি স্থাপন করেন। পরবর্তীকালে ১৬১৫ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে কোম্পানি সুরাট, আগ্রা, আহমদাবাদ প্রভৃতি স্থানে বাণিজ্যকুঠি স্থাপন করে তাদের ভিত্তি মজবুত করে ফেলে। কোম্পানি তার দ্বিতীয় বাণিজ্যকুঠি স্থাপন করে মসলিপট্টমে। এরপর বাংলার বলাসোরে আরেকটি বাণিজ্য কুঠি স্থাপন করে। এদের শক্তি ক্রমশ বৃদ্ধি পেতে থাকলে এরা করমণ্ডল (মাদ্রাজ শহর) উপক‚লে একটি দুর্গ নির্মাণ করতে সক্ষম হয়। বাংলার সুবেদার শাহ সুজার অনুমোদন লাভ করে তারা ১৬৫৮ খ্রিষ্টাব্দে হুগলিতে বাণিজ্যকুঠি স্থাপন করে। এভাবে কোম্পানি কাশিমবাজার, ঢাকা, মালদহেও বাণিজ্যকুঠি নির্মাণ করে। ইংরেজ কোম্পানির ক্ষমতা আরও বৃদ্ধি পায় যখন দিল্লির সম্রাট ফারুখশিয়ার তাদের বাংলা, বোম্বাই ও মাদ্রাজে বিনাশুল্কে বাণিজ্যের অধিকার প্রদান করেন। একই সঙ্গে নিজস্ব মুদ্রা প্রচলনের অধিকারও কোম্পানি লাভ করে। সম্রাটের এই ফরমানকে ইংরেজ ঐতিহাসিক ওরমে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির মহাসনদ বা ম্যাগনাকার্টা বলে উল্লেখ করেন। এই অধিকার লাভ করে ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি অপ্রতিরোধ্য গতিতে অগ্রসর হতে থাকে। পরবর্তীতের ইংরেজরা বাংলার নবাবকে পরাজিত করতে সক্ষম হয়। সুতরাং নাসির হোসেনের বক্তব্যকে সমর্থন করে বলা যায়, নিজেদের মেধা ও ক‚টকৌশলের ভিত্তিতে ইংরেজরা দীর্ঘদিন এ উপমহাদেশে বাণিজ্য করে এবং সর্বশেষ শাসন করে।
প্রশ্ন- ৬ ফরাসীদের আগমন
শহীদুল তার বাবার সাথে ভারতে বেড়াতে যায়। বেড়াতে বেড়াতে তারা ভারতের কালিকট বন্দরে আসেন। শহীদুল এ বন্দর সম্পর্কে তার বাবাকে জিজ্ঞাসা করলে তার বাবা বলেন, একজন ইউরোপীয় বণিক একটি নতুন জলপথ আবিষ্কার করে ইউরোপ থেকে এই বন্দরে এসে পৌঁছে। তিনি আরও বলেন সর্বশেষে ফরাসিরা এখানে এসেছিল।
ক. বক্সারের যুদ্ধ কত সালে হয়েছিল? ১
খ. প্রাচীনকালে বাংলার অবস্থা কী রকম ছিল? ২
গ. উদ্দীপকে শহীদুলের বাবা কোন ঘটনার প্রতি ইঙ্গিত করেছেন? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. উদ্দীপকে বর্ণিত “সর্বশেষ ফরাসিরা এখানে এসেছিল”Ñ এ কথাটির দ্বারা তাদের কার্যক্রম বিশ্লেষণ কর। ৪
ক বক্সারের যুদ্ধ ১৭৬৪ সালে হয়েছিল।
খ প্রাচীনকালে বাংলার অবস্থা ছিল ধন-সম্পদে পূর্ণ রূপকথার মতো একটি দেশ। এ অঞ্চলে ছিল স্বয়ংসম্পূর্ণ গ্রাম অর্থাৎ মানুষের জীবনযাপনের জন্য যা কিছু প্রয়োজন সবই এখানে পাওয়া যেত। এই স্বয়ংসম্পূর্ণ গ্রামের কৃষকদের খেতভরা ফসল, গোলাভরা ধান, পুকুরভরা মাছ থাকত। কুটির শিল্পেরও এই গ্রামগুলো সমৃদ্ধ ছিল। তাঁতিদের হাতে বোনা কাপড় ইউরোপের কাপড়ের চেয়েও উন্নতমানের ছিল। এর মধ্যে জগদ্বিখ্যাত ছিল মসলিন কাপড়।
গ উদ্দীপকে বর্ণিত শহীদুলের বাবা পর্তুগিজ নাবিক ভাস্কো-ডা-গামার সমুদ্র পথে এদেশে আসার ঘটনার প্রতি ইঙ্গিত করেছেন।
পর্তুগিজ নাবিক ভাস্কো-ডা-গামা ১৪৯৮ খ্রিষ্টাব্দের ২৭মে ভারতের পশ্চিম উপক‚লের কালিকট বন্দরে এসে উপস্থিত হন। শহীদুলকে তার বাবা এই বন্দরেই বেড়াতে নিয়ে যান। ভাস্কো-ডা-গামার এ উপমহাদেশে আগমন ব্যবসা-বাণিজ্য এবং যোগাযোগ ক্ষেত্রে এক নতুন যুগের সূচনা করে। পর্তুগিজরা ব্যবসা-বাণিজ্যকে মূলধন করে এদেশে আসলে ক্রমে ক্রমে তারা সাম্রাজ্য বিস্তারের দিকে ঝুঁকে পড়ে। স্বল্প সময়ের মধ্যে এই ইউরোপীয় বণিকরা উপমহাদেশের পশ্চিম উপক‚লের কালিকট, চৌল, বোম্বাই, সালসেটি, বেসিন, কোচিন, গোয়া, দমন, দিউ প্রভৃতি বন্দরে কুঠির স্থাপন করতে সক্ষম হয়। ১৫৩৮ খ্রিষ্টাব্দে তারা চট্টগ্রাম ও সাতগাঁওয়ে শুল্কঘাঁটি নির্মাণের অনুমতি লাভ করে। ১৫৭৯ খ্রিষ্টাব্দে হুগলি নামক স্থানে তারা উপনিবেশ গড়ে তোলে। এরপর তারা উড়িষ্যা এবং বাংলার কিছু অঞ্চলে বসতি স¤প্রসারিত করতে সক্ষম হয়। বাংলাসহ উপমহাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বাণিজ্য কুঠি নির্মাণের ব্যাপারে অগ্রণী ভ‚মিকা থাকলেও পর্তুগিজদের বিভিন্ন অপকর্ম ও দস্যুতার কারণে বাংলার সুবেদার শায়েস্তা খান তাদের চট্টগ্রাম ও স›দ্বীপের ঘাঁটি দখল করে বাংলা থেকে বিতাড়ন করেন। তাছাড়া পর্তুগিজরা এদেশে আগত অন্যান্য ইউরোপীয় শক্তির সঙ্গেও প্রতিদ্ব›িদ্বতায় পরাজিত হয়। ফলে এরা এদেশ ত্যাগ করতে বাধ্য হয়।
ঘ উদ্দীপকে বর্ণিত সর্বশেষে এদেশে ফরাসিরা এসেছিলÑ এ বক্তব্যের দ্বারা ভারত উপমহাদেশে ঔপনিবেশিক পূর্ব যুগে ফরাসিদের কার্যক্রম নির্দেশিত হয়েছে। উপমহাদেশে সর্বশেষে আগত ইউরোপীয় বণিক কোম্পানি হচ্ছে ফরাসি ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি। ১৬৬৪ খ্রিষ্টাব্দে এই বাণিজ্যিক কোম্পানি গঠিত হয়। ১৬৬৮ খ্রিষ্টাব্দে কোম্পানি সর্বপ্রথম সুরাট এবং পরের বছর মসলিপট্টমে বাণিজ্য কুঠি স্থাপন করেন। ১৬৭৩ খ্রিষ্টাব্দে পন্ডিচেরীতে ফরাসি উপনিবেশ গড়ে ওঠে। ১৬৭৪ খ্রিষ্টাব্দের পর কোম্পানি বাংলার সুবাদার শায়েস্তা খানের কাছ থেকে গঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত চন্দননগর নামক স্থানটি কিনে নেয়। ১৬৯০ থেকে ১৬৯২ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে চন্দননগর একটি শক্তিশালী সুরক্ষিত ফরাসি বাণিজ্য কুঠিতে পরিণত হয়। ১৬৯৬ খ্রিষ্টাব্দে কোম্পানি এখানে একটি শক্তিশালী দুর্গ স্থাপন করতে সক্ষম হয়। নির্দিষ্ট হারে শুল্ক প্রদানের শর্তে ১৬৯৩ খ্রিষ্টাব্দে ফরাসিরা বাংলা, বিহার, উড়িষ্যায় বাণিজ্য করার অধিকার লাভ করে। পরবর্তীকালে তারা কাশিমবাজার বলাসোরে কুঠি স্থাপন করতে সক্ষম হন। ইংরেজ বণিকরা যখন ব্যবসা বাণিজ্যে দৃঢ় অবস্থানে তখন ফরাসিরা এদেশে আসেন। এ অবস্থায় ইংরেজদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা তাদের জন্য কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। ফলে দুই ইউরোপীয় শক্তি-ইংরেজ ও ফরাসিদের মধ্যে সংঘর্ষ অনিবার্য হয়ে দাঁড়ায়। ইংরেজদের ষড়যন্ত্র, ক‚টকৌশল, উন্নত রণকৌশলের কাছে ফরাসিরা পরাজিত হন। বাংলার নবাবের পক্ষ অবলম্বন করায় পলাশীর যুদ্ধে ইংরেজদের সাফল্য তাদেরকে আরও পর্যুদস্ত করে ফেলে। ফলে বাংলার ফরাসি কুঠিগুলো ইংরেজদের দখলে চলে যায়। দাক্ষিণাত্যের কর্ণাটকের যুদ্ধসমূহে ফরাসি কোম্পানি পরাজিত হলে তারা এদেশ ত্যাগ করেন। আর সেই সাথে ভারত উপমহাদেশে ফরাসিদের কার্যক্রম শেষ হয়।
প্রশ্ন- ৭ পলাশী যুদ্ধ
হাবিবুলাহ সোনাপুরের একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি। তার তিন কন্যা। তার ছোট কন্যার পুত্র শিহাবকে সবার থেকে আলাদা ও মেধাবী বলে মনে হতো। তাই তার বাড়ির ও এলাকার ওপর যে প্রভাব ছিল তা তিনি শিহাবের ওপর ন্যস্ত করেন। কিন্তু এতে তার বড় কন্যা শিহাবের ওপর নাখোশ হয় এবং ষড়যন্ত্র করে। এ সুযোগে বিশৃৃঙ্খল অবস্থায় ভিন্ন শ্রেণি এলাকার ক্ষমতা গ্রহণ করে। সোনাপুরের মতো সমৃদ্ধ এলাকা এখন অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত ও দুর্ভিক্ষে অভিশপ্ত।
ক. কত সালে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত চালু হয়? ১
খ. সূর্যাস্ত আইন কী? ব্যাখ্যা কর। ২
গ. উদ্দীপকে বাংলার শেষ স্বাধীন নবাবের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারীদের মধ্যে কার পরিচয় ফুটে উঠেছে? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. সোনাপুরের ন্যায় সাদৃশ্যপূর্ণ ঘটনা বাংলার রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক যুগান্তকারী ঘটনা-বক্তব্যটি সমর্থন করে যুক্তি দাও। ৪
ক ১৭৯৩ সালে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত চালু হয়।
খ ১৭৯৩ খ্রিষ্টাব্দের ২২ মার্চ কর্নওয়ালিস ভ‚মির ওপর যে রাজস্ব ধার্য করেছিলেন তা চিরস্থায়ী বলে ঘোষণা করা হলো। তবে রাজস্ব কিস্তি নির্দিষ্ট দিনে পরিশোধ করতে হতো। কোনো জমিদার নির্দিষ্ট দিনে রাজস্ব দিতে ব্যর্থ হলে তার জমি নিলামে বিক্রয় করে রাজস্ব আদায় করা হতো। নির্দিষ্ট দিনে সূর্যাস্তের পূর্বে রাজস্ব পরিশোধের বিধান ছিল বলে এ আইন ‘সূর্যাস্ত আইন’ নামে পরিচিত।
গ উদ্দীপকে বাংলার শেষ স্বাধীন নবাবের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারীদের মধ্যে ঘসেটি বেগমের চরিত্র ফুটে উঠেছে। ঘসেটি বেগম ছিলেন বাংলা-বিহার, উড়িষ্যার স্বাধীন নবাব আলীবর্দী খানের তিন কন্যার মধ্যে প্রথমা কন্যা। নবাব আলীবর্দী খানের কোনো পুত্র সন্তান ছিল না। তাই তিনি তার কনিষ্ঠা কন্যা আমেনা বেগমের পুত্র সিরাজউদ্দৌলাকে উত্তরাধিকারী মনোনীত করেন। আলীবর্দী খানের প্রথমা কন্যা ঘসেটি বেগমের ইচ্ছে ছিল তার দ্বিতীয় ভগ্নির পুত্র শওকত জঙ্গ নবাব হবেন। কিন্তু তার ইচ্ছের বাস্তবায়ন না ঘটলে তিনি সিরাজউদ্দৌলার বিপক্ষে অবস্থান করে ষড়যন্ত্র শুরু করেন। তদ্রƒপ উদ্দীপকের হাবিবুল্লাহর প্রথমা কন্যা তার ছোট বোনের পুত্র শিহাবের ওপর নাখোশ হয় ও ষড়যন্ত্র করে। শিহাবের ক্ষমতা তিনি মেনে নেননি। সুতরাং হাবিবুল্লাহর প্রথমা কন্যা বাংলার নবাব সিরাজউদ্দৌলার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারী ঘসেটি বেগমের অনুরূপ চরিত্র।
ঘ উদ্দীপকের আলোকে বলা যায়, সোনাপুরে বহিঃলোকদের প্রভুত্ব প্রতিষ্ঠা যেমন সোনাপুরের যুগান্তকারী ঘটনা ছিল তেমনি বাংলার রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক ইতিহাসে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির ক্ষমতা দখল ইতিহাসে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ছিল। কেননা ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির ক্ষমতা দখলের মধ্য দিয়ে বাংলা ও ভারত ব্রিটিশদের একটি উপনিবেশে পরিণত হয় এবং দুশ বছরের জন্য বাংলার মানুষ পরাধীন হয়ে পড়ে। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি এদেশে এসেছিল নিছক বাণিজ্য করার উদ্দেশ্যে। কিন্তু ধীরে ধীরে এরা বাংলার নবাব সিরাজউদ্দৌলার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারীদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে সিরাজউদ্দৌলার পতন নিশ্চিত করে। উদ্দীপকে সোনাপুরের হাবিবুল্লাহর নাতি শিহাবের পরিণতিও তদ্রƒপ। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির ব্যবসার নাম করে এদেশে আসে। অতঃপর তারা নিষ্কণ্টক প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক ক্ষমতা দখল করে। এতে একদিকে তারা যেমন বাণিজ্যিকভাবে লাভবান হয়; অন্যদিকে বাংলা সরাসরি ব্রিটিশ সরকারের শাসনাধীনে একটি উপনিবেশে পরিণত হয়। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলার রাজস্ব আদায়ের সম্পূর্ণ দায়িত্ব অর্থাৎ দেওয়ানি লাভ করে এবং শাসনকার্যের ভার নামেমাত্র নবাবের হাতে রাখা হয়। এক্ষেত্রে নবাবরা কোম্পানির পুতুলে পরিণত হয়। অধিক অর্থ আদায়ের জন্য বাংলার মানুষের ওপর অত্যাচার নেমে আসে। ব্যবসায় ইংরেজ বণিকদের একচেটিয়া অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়। ফলে দেশি-বিদেশি বণিকরা লোকসানের সম্মুখীন হয়। এভাবে বাংলায় কৃষি ও বাণিজ্য ক্ষেত্রে দুর্যোগ নেমে আসে। প্রকারান্তরে বাংলার শাসন ক্ষমতা চলে যায় ইংরেজদের হাতে। অবসান ঘটে বাংলার সমৃদ্ধ যুগের।
প্রশ্ন- ৮ পলাশী যুদ্ধের ফলাফল
নিশী নবম শ্রেণির ছাত্রী। এক রাতে সে ইতিহাসের বিভিন্ন বিষয় পড়ছিল। সে তার মাকে সেই সময়ে একটি যুদ্ধের পরাজয়ের ঘটনা পড়ে শুনালে তার মা তাকে বলল এই যুদ্ধের ফলে বাংলার স্বাধীন শাসনের পতন হয়। ফলশ্র“তিতে বিদেশি বণিক গোষ্ঠীর কোম্পানি এদেশের ক্ষমতায় আসে। এই যুদ্ধের ফলে নবাবের পতন হয় যার ফল ছিল সুদূরপ্রসারী।
ক. মীর জাফরের পুত্রের নাম কী? ১
খ. ‘অন্ধক‚প হত্যা’ বলতে কী বোঝায়? ২
গ. উদ্দীপকে নিশী তার মাকে কোন যুদ্ধের পরাজয়ের ঘটনা পড়ে শুনিয়েছিলÑ বর্ণনা কর। ৩
ঘ. উক্ত যুদ্ধের ফলাফল ছিল সুদূরপ্রসারীÑ তোমার পাঠ্যপুস্তকের আলোকে বিশ্লেষণ কর। ৪
ক মীর জাফরের পুত্রের নাম নাজিমউদ্দৌলা।
খ নবাব সিরাজউদ্দৌলার অতর্কিত আক্রমণে ইংরেজরা ফোর্ট উইলিয়াম দুর্গ ত্যাগ করে পালিয়ে যায়। হলওয়েলসহ অনেকে আত্মসমর্পণ করে। বন্দিদশা থেকে মুক্তি পেয়ে নবাবকে হেয় করার জন্য হলওয়েল এক মিথ্যা কাহিনীর প্রচারণা চালায়, যা ইতিহাসে অন্ধক‚প হত্যা নামে পরিচিত। এতে বলা হয় যে, ১৮ ফুট দৈর্ঘ্য ১৪.১০ ফুট প্রস্থ ছোট একটি ঘরে ১৪৬ জন ইংরেজকে বন্দি করে রাখা হয়। এতে প্রচণ্ড গরমে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে ১২৩ জনের মৃত্যু হয়।
গ উদ্দীপকে নিশী তার মাকে পলাশীর যুদ্ধের ঘটনা পড়ে শুনিয়েছিল। পলাশীর যুদ্ধ বাংলা তথা এ উপমহাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক ঘটনা। ১৭৫৭ খ্রিষ্টাব্দের ২৩ জুন ভাগীরথী নদীর তীরে পলাশীর আমবাগানে এ যুদ্ধ সংঘটিত হয়। রবার্ট ক্লাইভ তার অবস্থান সুদৃঢ় করে সন্ধিভঙ্গের অজুহাতে সিরাজউদ্দৌলার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। নবাবের পক্ষে দেশপ্রেমিক মীরমদন, মোহনলাল এবং ফরাসি সেনাপতি সিন ফ্রে প্রাণপণ যুদ্ধ করেন। যুদ্ধে মীরমদন নিহত হন। নবাবের বিজয় আসন্ন জেনে মীরজাফর ষড়যন্ত্রমূলকভাবে যুদ্ধ থমিয়ে দেয়। মীরমদনের মৃত্যু ও মীর জাফরের অসহযোগিতা নবাবকে বিচলিত করে। নবাবের সেনাপতি মীরজাফর যুদ্ধক্ষেত্রে সম্পূর্ণ অসহযোগিতা করে নীরব দর্শকের ভ‚মিকায় ছিল। নবাব কুরআন স্পর্শ করিয়ে শপথ করালেও মীরজাফরের ষড়যন্ত্র থামেনি। নবাবের সৈন্যরা যখন বিশ্রাম নিচ্ছে সেই সময় মীরজাফরের ইঙ্গিতে ইংরেজ সৈন্যরা তাদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। এর ফলে নবাবের পরাজয় হয়।
ঘ উক্ত যুদ্ধ তথা পলাশী যুদ্ধের ফলে নবাব সিরাজউদ্দৌলার পতন ঘটে ও ইংরেজরা বাংলার ক্ষমতায় আসে। পাঠ্যপুস্তকের আলোকে এর ফলাফল সুদূরপ্রসারী ছিল বলে সুস্পষ্ট হয়। সিরাজউদ্দৌলার পরাজয় ও মৃত্যু বাংলায় প্রত্যক্ষ ঔপনিবেশিক শাসনের পথ সুগম করে। যুদ্ধের ফলে মীরজাফরকে বাংলার সিংহাসনে বসালেও তিনি ছিলেন নামেমাত্র নবাব, প্রকৃত ক্ষমতা ছিল রবার্ট ক্লাইভের হাতে। পলাশী যুদ্ধের ফলে ইংরেজরা বাংলায় একচেটিয়া ব্যবসা বাণিজ্যের অধিকার লাভ করে। ফরাসিরা এদেশ থেকে বিদায় নিতে বাধ্য হয়। এ যুদ্ধের পর ইংরেজ শক্তির স্বার্থে এদেশের আর্থসামাজিক, রাজনৈতিক পরিবর্তন ঘটতে থাকে। পলাশী যুদ্ধের সুদূরপ্রসারী পরিণতি ছিল সমগ্র উপমহাদেশে কোম্পানির শাসন প্রতিষ্ঠা। এভাবেই এ যুদ্ধের ফলে বাংলার তথা ভারতের স্বাধীনতা ভ‚লুণ্ঠিত হয়।
সুতরাং দেখা যাচ্ছে যে, পলাশীর যুদ্ধ একটি খণ্ডযুদ্ধ হলেও বাংলা তথা উপমহাদেশের রাজনীতিতে এর গুরুত্ব অপরিসীম। এবং ফলাফল ছিল সুদূরপ্রসারী।
প্রশ্ন- ৯ পলাশীর যুদ্ধের ঘটনা
জনপ্রিয় চলচ্চিত্র অভিনেতা আনোয়ার হোসেন অভিনীত ছবি নবাব সিরাজউদ্দৌলা। বাংলার শেষ নবাবের চরিত্রে অনবদ্য অভিনয় করে তিনি চির অম্লান হয়ে আছেন। ইংরেজদের সাথে যুদ্ধে বাংলার শেষ নবাবের ভূমিকা, তখনকার বাংলার অবস্থা, মীরজাফরসহ বাংলার কিছু লোকের বিশ্বাসঘাতকতা ও বাংলার স্বাধীনতার অস্তগামী সূর্য এই ছবিতে সুন্দরভাবে ফুটে উঠেছে।
ক. পলাশীর যুদ্ধ কত খ্রিষ্টাব্দে সংঘটিত হয়েছিল? ১
খ. পলাশীর যুদ্ধে ফরাসিরা সিরাজের পক্ষে লড়েছিল কেন? ২
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত চলচ্চিত্রের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. ইংরেজ ঔপনিবেশিক শাসনের প্রতিষ্ঠায় উক্ত ঘটনার প্রভাব কীরূপ ছিল বলে তুমি মনে কর? যুক্তি দাও। ৪
ক পলাশীর যুদ্ধ ১৭৫৭ খ্রিষ্টাব্দের ২৩ জুন সংঘটিত হয়েছিল।
খ ইংরেজদের মতো ফরাসিরাও ভারতবর্ষে এসেছিল ব্যবসার উদ্দেশ্যে। ভারতবর্ষে চন্দননগরে বাণিজ্যকুঠি স্থাপনের পর থেকেই তারা ইংল্যান্ড ও ফ্রান্সের মধ্যকার দীর্ঘদিনের শত্র“তা বাংলায়ও মাথাচাড়া দেয়। বাংলা তথা ভারতবর্ষে একক বাণিজ্য প্রতিষ্ঠায় ব্যর্থ হয়ে এবং পূর্বশত্র“তার কারণে শুধু ইংরেজদের শায়েস্তা করার জন্যই ফরাসিরা নবাব সিরাজের পক্ষে পলাশীর যুদ্ধে লড়েছিল।
গ উদ্দীপকে অভিনেতা আনোয়ার হোসেন নবাব সিরাজউদ্দৌলা চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। উক্ত চলচ্চিত্র মূলত পলাশীর যুদ্ধের প্রেক্ষাপট এবং বাংলার স্বাধীনতা সূর্যের অস্তমিত হওয়ার প্রেক্ষাপটে নির্মিত। উদ্দীপকে এমনটিই উল্লিখিত হয়েছে। ১৭৫৭ খ্রিষ্টাব্দের সংঘটিত ইংরেজদের সাথে নবাবের পলাশীর প্রান্তরে যুদ্ধের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট তাই তাৎপর্যপূর্ণ। প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী সিংহাসনে বসার পর নতুন নবাবকে উপঢৌকন পাঠানো হয় কিন্তু ইংরেজরা তা পাঠায়নি এবং কোনো সৌজন্যমূলক সাক্ষাৎও করেনি। এছাড়া নবাবের নিষেধাজ্ঞা সত্তে¡ও তারা কলকাতায় দুর্গ নির্মাণ অব্যাহত রাখে। ইংরেজ কোম্পানি দস্তকের অপব্যবহার করলে দেশীয় বণিকরা ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকে। নবাব দস্তকের অপব্যবহার করতে নিষেধ করেন এবং বাণিজ্যিক শর্ত মেনে চলার আদেশ দেন। কোম্পানি নবাবের সে আদেশও অগ্রাহ্য করে। এমনকি আলীবর্দী খানের সাথে চুক্তির শর্তভঙ্গ করে ইংরেজরা নবাবকে কর দিতে অস্বীকৃতি জানায়। তাছাড়া জনগণকে নির্যাতন করার মতো ধৃষ্টতাও দেখাতে থাকে। রাজা রাজবল্লভের পুত্র কৃষ্ণদাস তার পরিবারের সদস্যদেরসহ প্রচুর ধনসম্পদ নিয়ে কলকাতায় ইংরেজদের কাছে আশ্রয় নেয়। তাকে ফেরত দেওয়ার জন্য নবাব ইংরেজদের নিকট দূত পাঠালে গভর্নর নবাবের দূতকে অপমান করে তাড়িয়ে দেয়। এর আগে শওকত জঙ্গের বিদ্রোহের সময়ও ইংরেজরা নবাবের বিরুদ্ধে বিদ্রোহীদের সমর্থন দেয়। এরূপ প্রেক্ষাপটেই উক্ত যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল।
ঘ উক্ত ঘটনা তথা পলাশীর যুদ্ধের সাথে ভারতীয় উপমহাদেশে ইংরেজ শাসন প্রতিষ্ঠার সম্পর্ক ব্যাপক ও নিবিড়। এ যুদ্ধের ফলে নবাবী শাসনের অবসান হয়। তবে ১৭৫৭ খ্রিষ্টাব্দে পলাশী যুদ্ধ সংঘটিত হওয়ার পর ইংরেজরা সরাসরি বাংলার ক্ষমতা দখল করেনি। ইংরেজরা সুচতুর হিসেবে প্রথমে মীরজাফরকে বাংলার ক্ষমতায় বসায়। ইংরেজদের উদ্দেশ্য ছিল বাংলার এ নবাবের কাছ থেকে যত বেশি পারা যায় সুবিধা আদায় করা। কিন্তু মীরজাফর ইংরেজদের চাহিদামতো অর্থের জোগান দিতে ব্যর্থ হলে তারা মীরজাফরকে সরিয়ে মীরকাশিমকে সিংহাসনে বসায়। প্রথম দিকে মীরকাশিম ইংরেজদের সাথে চুক্তি অনুযায়ী অর্থ প্রদান করলেও পরে তিনি ইংরেজদের বিরুদ্ধে অস্ত্রধারণ করেন। অতঃপর ১৭৬৪ খ্রিষ্টাব্দে বক্সারের যুদ্ধে পরাজিত হয়ে সিংহাসন হারান। এরপর ইংরেজরা মীরজাফরের পুত্র নাজিমউদ্দৌলাকে সিংহাসনে বসায়। তার সাথে চুক্তি হয় বাংলার সম্পূর্ণ শাসন ক্ষমতা থাকবে একজন নায়েবে নাজিমের হাতে এবং তার নিয়োগ ও অপসারণের সম্পূর্ণ ক্ষমতা থাকবে ইংরেজদের হাতে। উপরের আলোচনা থেকে বোঝা যায় যে, পলাশীর যুদ্ধের পর নবাব মীরজাফর ও নবাব নাজিমউদ্দৌলা ছিলেন পুতুল শাসক এবং ইংরেজদের ক্রীড়নক। ইংরেজরা যা চেয়েছে এ দুজন নবাব তাই করেছে। অন্যদিকে মীরকাশিম বিরুদ্ধাচরণ করলে তাকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়েছে। আর ১৭৬৫ খ্রিষ্টাব্দে দেওয়ানি লাভের মধ্য দিয়ে ইংরেজদের শাসনের ভিত্তি শক্ত হয়েছে। তাই নিঃসন্দেহে বলা যায় যে, পলাশীর যুদ্ধের তাৎক্ষণিক ফল ছিল বাংলায় নবাবি শাসনের সমাপ্তি ও ইংরেজ ঔপনিবেসিক শাসনের সূচনা।
প্রশ্ন- ১০ বক্সারের যুদ্ধের ঘটনা
হরিনারায়ণপুর স্কুলের হরিশচন্দ্র বাবু ইতিহাস বিষয়ে ছাত্রদের বোঝাতে গিয়ে বললেন, বাংলার স্বাধীনতা সূর্য শেষ নবারের সাথে সাথে অস্তগামী হয়েছিল। এরপরও যেটুকু মীরজাফরের জামাতা টিকিয়ে রাখতে চেষ্টা করেছিলেন তাও ইউরোপীয় ক্ষমতালোভী বণিকগোষ্ঠীর কাছে হারাতে হলো। এই বণিকগোষ্ঠী একটি যুদ্ধের পরে বাংলার রাজস্ব ব্যবস্থা নিজেদের করায়ত্তে নিয়ে নেয়।
ক. মীরকাশিম কে ছিলেন? ১
খ. বক্সারের যুদ্ধ সংঘটনের কারণগুলো কী? ২
গ. উদ্দীপকে ইঙ্গিতকৃত যুদ্ধ ও বাংলার দেওয়ানির সম্পর্ক ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. উদ্দীপকের সর্বশেষ ঘটনার সাথে বাংলার ১৭৭০ সালের মন্বন্তরের সম্পর্ক ঐতিহাসিক দৃষ্টিভঙ্গিতে নিরূপণ কর। ৪
ক মীরকাশিম ছিলেন মীরজাফরের জামাতা এবং বাংলার শেষ স্বাধীন ও দেশপ্রেমিক নবাব।
খ মীরকাশিম একজন স্বাধীন শাসক ছিলেন, এজন্য তিনি নবাবের শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন। নবাবের শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য তিনি জগৎশেঠ, রাজবলভের মতো হিন্দু ইংরেজভক্তদের মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেন। তিনি রাজধানী মুর্শিদাবাদ থেকে মুঙ্গেরে নিয়ে গেলে ইংরেজদের বিরাগভাজন হন। এরপর ইংরেজদেরকে দত্তকপ্রথা ব্যবহার করে শুধু কোম্পানিকে ব্যবসা করার সুযোগ না দিতে মনস্থ করেন। অতঃপর মীরকাশিম একটি শক্তিশালী সৈন্যবাহিনী গঠন করলে সাম্রাজ্যবাদী ইংরেজরা নিজেদের স্বার্থে যুদ্ধ ঘোষণা করে।
গ উদ্দীপকে ১৭৬৪ খ্রিষ্টাব্দে বক্সারের যুদ্ধের ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। উদ্দীপকে শিক্ষক বাংলার শেষ স্বাধীন নবাবের পতনের পর মীরজাফরের জামাতা মীরকাশিমের উল্লেখ করে বক্সার যুদ্ধেরই ইঙ্গিত করেন। বক্সারের যুদ্ধে জয়ের ফলে বাংলায় ইংরেজদের রাজনৈতিক সার্বভৌমত্ব সুদৃঢ় ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত হয়। এই যুদ্ধে মীরকাশিমের পরাজয়ে শুধু নবাবি আমলেরই পরিসমাপ্তি ঘটেনি মুঘল সম্রাটের দুর্বলতাও ইংরেজদের কাছে পরিষ্কার হয়ে যায়। ফলে ঔপনিবেশিক শক্তি হিসেবে ইংরেজদের আত্মপ্রকাশ ঘটতে থাকে। এরপর ১৭৬৫ খ্রিষ্টাব্দে রবার্ট ক্লাইভ দ্বিতীয় মেয়াদে কোম্পানির গভর্নর হয়ে কলকাতায় এসে মুঘল সম্রাট দ্বিতীয় শাহ আলম ও অযোধ্যার নবাব সুজাউদ্দিনের সাথে এলাহাবাদের সন্ধি চুক্তি সম্পাদন করেন। এই সন্ধির শর্তানুযায়ী সুজাউদ্দিন বক্সারের যুদ্ধের ক্ষতিপূরণ বাবদ ইংরেজদের ৫০ লাখ টাকা এবং এলাহাবাদ ও কারা জেলা ছেড়ে দিতে বাধ্য হন। অন্যদিকে ইংরেজরা সম্রাটকে বার্ষিক ২৬ লাখ টাকা প্রদানের অঙ্গীকার করে বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার দেওয়ানি লাভ করে।
ঘ উদ্দীপকের সর্বশেষ ঘটনা হলো বক্সারের যুদ্ধের ঘটনা। এ ঘটনার মাধ্যমে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি দেওয়ানি লাভ করলে এর নির্মম ফলস্বরূপ একসময় বাংলার মানুষকে ছিয়াত্তরের মন্বন্তর ভোগ করতে হয়। ১৭৬৫ খ্রিষ্টাব্দে রবার্ট ক্লাইভ সম্রাট দ্বিতীয় শাহ আলমের কাছ থেকে বাংলার দেওয়ানি লাভ করে বাংলায় কোম্পানির হাতে দেওয়ানি এবং নবাবের হাতে অন্যান্য শাসনকার্যের দায়িত্ব অর্পণ করেন। এটি ইতিহাসে ক্লাইভের দ্বৈতশাসন ব্যবস্থা নামে পরিচিত। দ্বৈতশাসন ব্যবস্থায় শাসন পরিচালনার ভার নবাবের হাতে থাকলেও তার কোনো অর্থনৈতিক অধিকার ছিল না। এ সময় কোম্পানি অধিক অর্থ লাভের জন্য প্রজাদের ওপর রাজস্ব কর বাড়ানোসহ বিভিন্ন কর আরোপ করতে থাকে এবং কর আদায়ে কঠোর পদ্ধতি অবলম্বন করতে থাকে। ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ইংরেজরা একচেটিয়া অধিকার প্রতিষ্ঠা করলে দেশীয় বণিকরা পথে বসে যায়। এর ফলে বাংলার কৃষি ও বাণিজ্যক্ষেত্রে দুর্যোগ নেমে আসে। এরই সাথে ১৭৭০ সালে বাংলায় অনাবৃষ্টি ও খরা দেখা দিলে বাংলার জনগণের অর্থনৈতিক মেরুদণ্ড ভেঙে পড়ে এবং ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়। উপরের আলোচনার আলোকে দেখা যায় যে, ১৭৭০ সালের ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের পেছনে ক্লাইভের অর্থলিপ্সা অর্থাৎ তার দ্বৈতশাসন ব্যবস্থাই দায়ী ছিল। এভাবেই উদ্দীপকের সর্বশেষ ঘটনা ও ছিয়াত্তরের মন্বন্তর সম্পর্কিত ছিল।
জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন \ ১ \ ভাস্কো-ডা-গামা কোন দেশের নাগরিক?
উত্তর : ভাস্কো-ডা-গামা পর্তুগালের নাগরিক।
প্রশ্ন \ ২ \ ভাস্কো-ডা-গামা কত খ্রিষ্টাব্দে এ উপমহাদেশে আগমন করেন?
উত্তর : ভাস্কো-ডা-গামা ১৪৯৮ খ্রিষ্টাব্দে এ উপমহাদেশে আগমন করেন।
প্রশ্ন \ ৩ \ ভাস্কো-ডা-গামা ভারতের কোন বন্দরে এসে হাজির হন?
উত্তর : ভাস্কো-ডা-গামা ভারতের কালিকট বন্দরে এসে হাজির হন।
প্রশ্ন \ ৪ \ পর্তুগিজরা কত খ্রিষ্টাব্দে হুগলি নামক স্থানে উপনিবেশ গড়ে তোলেন?
উত্তর : পর্তুগিজরা ১৫৭৯ খ্রিষ্টাব্দে হুগলি নামক স্থানে উপনিবেশ গড়ে তোলেন।
প্রশ্ন \ ৫ \ ১৫৩৮ খ্রিষ্টাব্দে কারা চট্টগ্রাম ও সাতগাঁওয়ে শুল্কঘাঁটি নির্মাণের অনুমতি লাভ করে?
উত্তর : ১৫৩৮ খ্রিষ্টাব্দে পর্তুগিজরা চট্টগ্রাম ও সাতগাঁওয়ে শুল্কঘাঁটি নির্মাণের অনুমতি লাভ করে।
প্রশ্ন \ ৬ \ ওলন্দাজরা কত খ্রিষ্টাব্দে ভারতবর্ষে আসেন?
উত্তর : ওলন্দাজরা ১৬০২ খ্রিষ্টাব্দে ভারতবর্ষে আসেন।
প্রশ্ন \ ৭ \ কত খ্রিষ্টাব্দে সংঘটিত বিদারার যুদ্ধে ডাচরা ইংরেজদের কাছে শোচনীয়ভাবে পরাজিত হয়?
উত্তর : ১৭৫৯ খ্রিষ্টাব্দে সংগঠিত বিদারার যুদ্ধে ডাচরা ইংরেজদের কাছে শোচনীয়ভাবে পরাজিত হয়।
প্রশ্ন \ ৮ \ কত খ্রিষ্টাব্দে ডাচরা বাণিজ্য কেন্দ্র গুটিয়ে ভারতবর্ষ ত্যাগ করতে বাধ্য হয়।
উত্তর : ১৮০৫ খ্রিষ্টাব্দে ডাচরা বাণিজ্য কেন্দ্র গুটিয়ে ভারতবর্ষ ত্যাগ করতে বাধ্য হয়।
প্রশ্ন \ ৯ \ ডেনমার্কের অধিবাসীদেরকে কী বলা হয়?
উত্তর : ডেনমার্কের অধিবাসীদেরকে দিনেমার বলা হয়।
প্রশ্ন \ ১০ \ কত খ্রিষ্টাব্দে দিনেমাররা বাণিজ্যকুঠি ইংরেজদের কাছে বিক্রি করে ভারতবর্ষ ত্যাগ করে?
উত্তর : ১৮৪৫ খ্রিষ্টাব্দে দিনেমাররা বাণিজ্যকুঠি ইংরেজদের কাছে বিক্রি করে ভারতবর্ষ ত্যাগ করে।
প্রশ্ন \ ১১ \ কত খ্রিষ্টাব্দে ইংল্যান্ডের রাজা দ্বিতীয় চার্লস পর্তুগিজ কন্যা ক্যাথরিনের সাথে বিয়ের যৌতুক হিসেবে বোম্বাই শহর লাভ করেন?
উত্তর : ১৬৬৮ খ্রিষ্টাব্দে ইংল্যান্ডের রাজা দ্বিতীয় চার্লস পর্তুগিজ কন্যা ক্যাথরিনের সাথে বিয়ের যৌতুক হিসেবে লাভ করেন বোম্বাই শহর।
প্রশ্ন \ ১২ \ কত খ্রিষ্টাব্দে ইংরেজরা ফোর্ট উইলিয়াম দুর্গ নির্মাণ করেন?
উত্তর : ১৭০০ খ্রিষ্টাব্দে ইংরেজরা ফোর্ট উইলিয়াম দুর্গ নির্মাণ করেন।
প্রশ্ন \ ১৩ \ এ উপমহাদেশে সর্বশেষে আসে কারা?
উত্তর : এ উপমহাদেশে সর্বশেষে আসে ফরাসিরা।
প্রশ্ন \ ১৪ \ চন্দননগর নামক স্থানটি কোন নদীর তীরে অবস্থিত?
উত্তর : চন্দননগর নামক স্থানটি গঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত।
প্রশ্ন \ ১৫ \ কে সিরাজউদ্দৌলাকে বাংলার সিংহাসনের উত্তরাধিকার মনোনীত করে যান?
উত্তর : নবাব আলীবর্দী খান সিরাজউদ্দৌলাকে বাংলার সিংহাসনের উত্তরাধিকার মনোনীত করে যান।
প্রশ্ন \ ১৬ \ আলীবর্দী খানের কনিষ্ঠ কন্যার নাম কী?
উত্তর : আলীবর্দী খানের কনিষ্ঠ কন্যার নাম আমেনা বেগম।
প্রশ্ন \ ১৭ \ সিরাজউদ্দৌলা কত বছর বয়সে সিংহাসনে আরোহণ করেন?
উত্তর : সিরাজউদ্দৌলা ২২ বছর বয়সে সিংহাসনে আরোহণ করেন।
প্রশ্ন \ ১৮ \ নবাব আলীবর্দী খানের জ্যেষ্ঠ কন্যার নাম কী ছিল?
উত্তর : নবাব আলীবর্দী খানের জ্যেষ্ঠ কন্যার নাম ছিল ঘষেটি বেগম।
প্রশ্ন \ ১৯ \ ‘অন্ধক‚প হত্যা’ মিথ্যা কাহিনী প্রচার করে কে?
উত্তর : ‘অন্ধক‚প হত্যা’ মিথ্যা কাহিনী প্রচার করে হলওয়েল।
প্রশ্ন \ ২০ \ পূর্ণিয়ার শাসনকর্তা কে ছিলেন?
উত্তর : পূর্ণিয়ার শাসনকর্তা ছিলেন শওকত জঙ্গ।
প্রশ্ন \ ২১ \ কত খ্রিষ্টাব্দে পলাশীর যুদ্ধ হয়?
উত্তর : ১৭৫৭ খ্রিষ্টাব্দে পলাশীর যুদ্ধ হয়েছিল।
প্রশ্ন \ ২২ \ কত খ্রিষ্টাব্দে বক্সারের যুদ্ধ হয়েছিল?
উত্তর : ১৭৬৪ খ্রিষ্টাব্দে বক্সারের যুদ্ধ হয়েছিল।
প্রশ্ন \ ২৩ \ মীরকাশিম কেমন নবাব ছিলেন?
উত্তর : মীর কাশিম স্বাধীনচেতা নবাব ছিলেন।
প্রশ্ন \ ২৪ \ কত খ্রিষ্টাব্দে মীরকাশিমের মৃত্যু হয়?
উত্তর : ১৭৭৭ খ্রিষ্টাব্দে মীর কাশিমের মৃত্যু হয়।
প্রশ্ন \ ২৫ \ ছিয়াত্তরের মন্বন্তর কত খ্রিষ্টাব্দে হয়েছিল?
উত্তর : ছিয়াত্তরের মন্বন্তর ১৭৭০ খ্রিষ্টাব্দে হয়েছিল।
প্রশ্ন \ ২৬ \ পলাশীর যুদ্ধ কোথায় সংঘটিত হয়েছিল?
উত্তর : ভাগীরথী নদীর তীরে পলাশীর যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল।
অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন \ ১ \ প্রাচীনকালে এদেশের গ্রামগুলো কেমন ছিল?
উত্তর : প্রাচীনকালে এই অঞ্চল ছিল ধনসম্পদে পরিপূর্ণ রূপকথার মতো একটি দেশ। এই গ্রামের কৃষকদের খেত ভরা ফসল, গোলাভরা ধান, পুকুরভরা মাছ থাকত। কুটির শিল্পে এই গ্রামগুলো ছিল সমৃদ্ধ। এর মধ্যে জগদ্বিখ্যাত ছিল মসলিন কাপড়।
প্রশ্ন \ ২ \ ইউরোপীয় শক্তিগুলো সমুদ্রপথে উপমহাদেশে আসার অভিযান শুরু করে কেন?
উত্তর : সাত শতক থেকে এ অঞ্চলের সঙ্গে আরব বণিকদের ব্যবসা-বাণিজ্য ছিল একচেটিয়া। তারা বাণিজ্য করত মূলত সমুদ্রপথে। ১৪৫৩ খ্রিষ্টাব্দে কনস্টান্টিনোপল অটোমান তুর্কিরা দখল করে নেয়। ফলে উপমহাদেশের সাথে জলপথে ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ হয়ে যায়। সুতরাং প্রাচ্যের সাথে পাশ্চাত্যের ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য ভিন্ন জলপথ আবিষ্কারের প্রয়োজন হয়ে পড়ে। মূলত এ কারণেই ইউরোপীয় শক্তিগুলো সমুদ্রপথে উপমহাদেশে আসার অভিযান শুরু করে।
প্রশ্ন \ ৩ \ পর্তুগিজ নাবিক ভাস্কো-ডা-গামা সমুদ্র পথে উপমহাদেশে আসলে কী প্রভাব পড়ে?
উত্তর : পর্তুগিজদের মধ্যে প্রথম সমুদ্রপথে এদেশে আসেন দুঃসাহসী নাবিক ভাস্কো-ডা-গামা। তিনি ১৪৯৮ খ্রিষ্টাব্দে ২৭ মে ভারতের পশ্চিম-উপক‚লের কালিকট বন্দরে এসে উপস্থিত হন। তার এ উপমহাদেশে আগমন ব্যবসা-বাণিজ্য এবং যোগাযোগ ক্ষেত্রে এক নতুন যুগের সূচনা করে।
প্রশ্ন \ ৪ \ ডাচরা সকল বাণিজ্যকেন্দ্র গুটিয়ে ভারতবর্ষ ত্যাগ করতে বাধ্য হন কেন?
উত্তর : হল্যান্ডের অধিবাসী ওলন্দাজ বা ডাচরা ‘ডাচ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি’ গঠন করে বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে ১৬০২ খ্রিষ্টাব্দে এই উপমহাদেশে আসেন। ওলন্দাজ ও অপর ইউরোপীয় শক্তি ইংরেজদের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ে বিরোধ শুরু হয় এবং একই সঙ্গে বাংলার শাসকদের সঙ্গে তারা বিরোধে জড়িয়ে পড়ে। ১৭৫৯ খ্রিষ্টাব্দে সংঘটিত বিদারার যুদ্ধে তারা ইংরেজদের কাছে শোচনীয়ভাবে পরাজিত হন। ফলে ১৮০৫ খ্রিষ্টাব্দে তারা সকল বাণিজ্যকেন্দ্র গুটিয়ে ভারতবর্ষ ত্যাগ করতে বাধ্য হন।
প্রশ্ন \ ৫ \ দিনেমাররা ভারতবর্ষ ত্যাগ করে কেন?
উত্তর : দিনেমার বা ডেনমার্কের অধিবাসী একদল বণিক বাণিজ্য করার উদ্দেশ্যে ‘ডেনিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি’ গঠন করেন। ১৬২০ খ্রিষ্টাব্দে তারা দক্ষিণ ভারতের তাঞ্জোর জেলায় ত্রিবাঙ্কুর এবং ১৬৭৬ খ্রিষ্টাব্দে বাংলার শ্রীরামপুরে বাণিজ্যকুঠি স্থাপন করেন। কিন্তু এদেশে তারা লাভজনক ব্যবসা করতে ব্যর্থ হয়। ১৮৪৫ খ্রিষ্টাব্দে ইংরেজদের কাছে বাণিজ্যকুঠি বিক্রি করে কোনো রকম বাণিজ্যিক সফলতা ছাড়াই দিনেমাররা এদেশ ত্যাগ করে।
প্রশ্ন \ ৬ \ ইতিহাসে ‘অন্ধক‚প হত্যা’ বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : নবাব সিরাজউদ্দৌলার অতর্কিত আক্রমণে ইংরেজরা ফোর্ট উইলিয়াম দুর্গ ত্যাগ করে পালিয়ে যায়। হলওয়েলসহ বেশকিছু ইংরেজ আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হন। বন্দিদশা থেকে মুক্তি পেয়ে নবাবকে হেয় করার জন্য হলওয়েল এক মিথ্যা কাহিনীর প্রচারণা চালায়, যা ইতিহাসে ‘অন্ধক‚প হত্যা’ নামে পরিচিত। এতে বলা হয় যে, ১৮ ফুট দৈর্ঘ্য ১৪.১০ ফুট প্রস্থ ছোট একটি ঘরে ১৪৬ জন ইংরেজকে বন্দি করে রাখা হয়। এতে প্রচণ্ড গরমে শাসরুদ্ধ হয়ে ১২৩ জনের মৃত্যু হয়।
প্রশ্ন \ ৭ \ ইতিহাসে ছিয়াত্তরের মন্বন্তর বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
উত্তর : দিলি কর্তৃক বিদেশি ইংরেজ বণিক কোম্পানিকে দেওয়ানিসহ অভাবিত ক্ষমতা প্রদানে সৃষ্টি হয় দ্বৈত শাসনের। এতে করে কোম্পানি লাভ করে দায়িত্বহীন ক্ষমতা, নবাব পরিণত হন ক্ষমতাহীন শাসকে। অথচ নবাবের দায়িত্ব থেকে যায় ষোলআনা। ফলে বাংলায় এক অভূতপূর্ব প্রশাসনিক জটিলতার সৃষ্টি হয়। যার চরম মাশুল দিতে হয় এদেশের সাধারণ জনগোষ্ঠীকে। ১৭৭০ খ্রিষ্টাব্দে (১১৭৬ বঙ্গাব্দ) গ্রীষ্মকালে দেখা দেয় ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ, যা স্মরণকালের ইতিহাসে সবচেয়ে মর্মান্তিক ছিয়াত্তরের মন্বন্তর নামে পরিচিত।
প্রশ্ন \ ৮ \ চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত কী? বর্ণনা কর।
উত্তর : লর্ড কর্নওয়ালিসকে কোম্পানির শাসন দুর্নীতিমুক্ত ও সুসংগঠিত করতে ১৭৮৬ খ্রিষ্টাব্দে ভারতের গভর্নর জেনারেল ও সেনা প্রধানের দায়িত্ব দিয়ে পাঠানো হয়। তিনি ১৭৯৩ খ্রিষ্টাব্দে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত বা স্থায়ী ভ‚মি ব্যবস্থা প্রবর্তন করেন। ওই বছর ২২ মার্চ নির্দিষ্ট রাজস্ব পরিশোধের বিনিময়ে বাংলা, বিহার, উড়িষ্যার জমিদারগণকে নিজ নিজ জমির ওপর স্থায়ী মালিকানা দান করে যে বন্দোবস্ত চালু করা হয় তাকেই ‘চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত’ বলা হয়।
প্রশ্ন \ ৯ \ চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের বৈশিষ্ট্যগুলো উলেখ কর।
উত্তর : লর্ড কর্নওয়ালিস কর্তৃক ভ‚মির ওপর যে স্থায়ী মালিকানা দান করা হয় তাকে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত বলে। নিচে এর বৈশিষ্ট্যগুলো দেওয়া হলো :
১. চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত জমিদারদেরকে জমির স্থায়ী মালিকে পরিণত করে এবং জমিদারগণ জমির মালিকানা স্বত্ব লাভ করে।
২. রাজস্বের পরিমাণ নির্দিষ্ট করে দেওয়ার ফলে নিয়মিত রাজস্ব প্রদানের বিনিময়ে জমিদার জমিদারি ভোগের চিরস্থায়ী অধিকার লাভ করে।
৩. এ প্রথা চালু হওয়ার ফলে জমিদারদের প্রশাসনিক ক্ষমতা বিলুপ্ত হয়। সরকার স্বয়ং শান্তি রক্ষা ও নিরাপত্তার দায়িত্ব গ্রহণ করে।
৪. নজরানা ও বিক্রয় ফিসমূহ বাতিল করা হয়।
৫. খাজনা বাকি পড়লে জমিদারদের ভ‚মির কিছু অংশ বিক্রি করে রাজস্ব আদায় করার ব্যবস্থা ছিল।