৪র্থ শ্রেণির অধ্যায় ৩ বাংলাদেশের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী
অনুশীলনীর প্রশ্ন ও উত্তর
👉 অল্প কথায় উত্তর দাও :
১. চাকমা জনগোষ্ঠী কোন ধরনের বাড়ি নির্মাণ করেন?
উত্তর : চাকমা জনগোষ্ঠী কাঠ ও বাঁশ দিয়ে তাদের বাড়িগুলো নির্মাণ করে এবং বাড়িগুলো থাকে পাহাড়ের ঢালে ঢালে।
২. মারমা জনগোষ্ঠী কোন ধর্মের অনুসারী?
উত্তর : মারমা জনগোষ্ঠীর লোকেরা বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারী।
৩. সাঁওতালদের একটি উৎসবের নাম লেখ।
উত্তর : সাঁওতালদের একটি উৎসবের নাম হলো ‘সোহরায় উৎসব’।
৪. মণিপুরিরা যে বিশেষ এক ধরনের সবজি খান তার নাম কী?
উত্তর : মণিপুরিরা যে বিশেষ এক ধরনের সবজি খান তার নাম হলো ‘সিঞ্জেদা’।
👉 প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
১. কীভাবে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জীবনযাত্রা অন্যদের চেয়ে আলাদা?
উত্তর : প্রধান ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীরা সাধারণত পাহাড়ি অঞ্চলে বাস করে। এদের প্রায় প্রত্যেকের স্বতন্ত্র ভাষা রয়েছে। খাবার ও পোশাকের বেলায়ও তাদের মাঝে বৈচিত্র্য দেখা যায়। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীরা সাধারণত বাঁশ, কাঠ, ছন দিয়ে তাদের বাড়িঘর তৈরি করে। নাচ, গান, বাদ্যযন্ত্র এবং বিভিন্নভাবে তারা তাদের উৎসবগুলো পালন করে। আর এসকল কারণেই ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জীবনযাত্রা অন্যদের চেয়ে আলাদা।
২. কীভাবে বর্তমান সময়ে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জীবনযাত্রা বদলে যাচ্ছে?
উত্তর : নানা দিক থেকে বর্তমান সময়ে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জীবনযাত্রা বদলে যাচ্ছে। যেমন-
তারা বর্তমানে আধুনিক শিক্ষার প্রতি আগ্রহী হচ্ছেন;
বর্তমানে তারা আধুনিক চিকিৎসা ও ওষুধ ব্যবহার করেন;
নৃ-গোষ্ঠীদের অনেকেই এখন আধুনিক পোশাক পরেন;
তারা কুটিরশিল্পসহ আরও নিত্য নতুন পেশার প্রতি আগ্রহী হচ্ছেন।
অতিরিক্ত প্রশ্ন ও উত্তর
👉 বাম অংশের সাথে ডান অংশ মিলকরণ
ক) চাকমাদের নিজেদের
খ) চাকমা নারীদের পোশাক
গ) ভাত আর সিদ্ধ সবজি
ঘ) ‘নালিতা’ বা পাটশাক
ঙ) মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জে মারমাদের প্রধান খাবার।
সাঁওতালদের বিশেষ খাবার।
বর্ণমালা ও ভাষা আছে।
অধিকাংশ মণিপুরিদের বসবাস।
মণিপুরিদের প্রধান খাবার।
পিনোন-হাদি।
উত্তর :
ক) চাকমাদের নিজেদের বর্ণমালা ও ভাষা আছে।
খ) চাকমা নারীদের পোশাক পিনোন-হাদি।
গ) ভাত আর সিদ্ধ সবজি সাঁওতালদের বিশেষ খাবার।
ঘ) ‘নালিতা’ বা পাটশাক মারমাদের প্রধান খাবার।
ঙ) মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জে অধিকাংশ মণিপুরিদের বসবাস।
👉 শুদ্ধ/অশুদ্ধ নির্ণয়
ক) মণিপুরিরা দুটি গোত্রে বিভক্ত।
খ) বাংলাদেশে প্রায় ৪৫টিরও অধিক ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর রয়েছে।
গ) সাঁওতাল বাংলাদেশের বৃহত্তম ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী।
ঘ) চাকমাদের প্রধান খাবার নাপ্পি।
ঙ) মণিপুরিরা অতীতে ঔষধি গাছ থেকে চিকিৎসা নিত।
উত্তর : ক) ‘শুদ্ধ’ খ) ‘শুদ্ধ’ গ) ‘অশুদ্ধ’ ঘ) ‘অশুদ্ধ’ ঙ) ‘অশুদ্ধ’।
👉 শূন্যস্থান পূরণ
ক. চাকমাদের গ্রামপ্রধানকে বলে ।
খ. সাঁওতালদের একটি বিশেষ খাবার ।
গ. সাংগ্রাই একটি উৎসব।
ঘ. মারমারা প্রতি মাসে পালন করেন।
ঙ. বাংলাদেশে অধিকাংশ মণিপুরি জেলায় বাস করেন।
উত্তর : ক. কারবারি খ. নালিতা বা পাটশাক গ. মারমাদের ঘ. লাবরে ঙ. মৌলভীবাজার।
বহুনির্বাচনি প্রশ্ন ও উত্তর
চাকমা
সাধারণ
১. বাংলাদেশে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সংখ্যা কত? ঝ
ক ৪০টি খ ৪৪টি
গ ৪৫টি ঘ ৪৫টিরও অধিক
২. বাংলাদেশের বৃহত্তম ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী কোনটি? ছ
ক মণিপুরি খ চাকমা
গ সাঁওতাল ঘ গারো
৩. চাকমা সমাজের প্রধান কে? ঝ
ক রানি খ প্রজা
গ মন্ত্রী ঘ রাজা
৪. চাকমাদের গ্রাম প্রধানকে কী বলা হয়? জ
ক মোড়ল খ মাতাব্বর
গ কারবারি ঘ নেতা
৫. চাকমাদের ধর্মের নাম কী? ঝ
ক সনাতন খ খ্রিষ্টান
গ ইহুদি ঘ বৌদ্ধ
৬. চাকমাদের প্রধান খাবার কোনটি? ছ
ক মাছ খ ভাত
গ মাংস ঘ সবজি
৭. চাকমা নারীদের পোশাক কোনটি? চ
ক পিনোন-হাদি খ থামি
গ আঙ্গি ঘ পাঞ্চি
৮. চাকমাদের শ্রেষ্ঠ উৎসবের নাম কী? ঝ
ক বৌদ্ধ পূর্ণিমা খ মাঘী পূর্ণিমা
গ কঠিন চীবরদান ঘ বিজু
যোগ্যতাভিত্তিক
শিখনফল : চাকমাদের চাষাবাদ পদ্ধতি সম্পর্কে জানব।
৯. সুসান চাকমার বাবা পাহাড়ের ঢালু জমিতে গাছ পুড়িয়ে এবং পরিষ্কার করে দা দিয়ে গর্ত করে চাষাবাদ করেন। এই চাষ পদ্ধতির নাম কী? ছ
ক পাহাড়ি চাষ খ জুম চাষ
গ টিলা চাষ ঘ আদি চাষ
শিখনফল : চাকমাদের বাড়ি সম্পর্কে জানতে পারব।
১০. বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর বাড়িগুলো তৈরি করা হয় ছ
ক ইট ও সিমেন্ট দিয়ে খ কাঠ ও বাঁশ দিয়ে
গ গাছ ও মাটি দিয়ে ঘ বাঁশ ও পাতা দিয়ে
শিখনফল : চাকমাদের পোশাক সম্পর্কে জানতে পারব।
১১. অবন্তী ‘পিনোন’ নামের একটি পোশাক পরে আছে। তার এ পোশাকটি জ
ক মাথা থেকে বুক পর্যন্ত
খ গলা থেকে কোমর পর্যন্ত
গ কোমর থেকে নিচ পর্যন্ত
ঘ গলা থেকে পা পর্যন্ত
মারমা
সাধারণ
১২. মারমাদের ধর্মের নাম কী? চ
ক বৌদ্ধ খ হিন্দু
গ ইসলাম ঘ খ্রিষ্টান
১৩. বাংলাদেশে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মধ্যে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে কারা? জ
ক সাঁওতাল খ চাকমা
গ মারমা ঘ মণিপুরি
১৪. মারমাদের প্রিয় খাবার কোনটি? ছ
ক ভাত খ নাপ্পি
গ সিদ্ধ সবজি ঘ মাছ
১৫. জলের উৎসব কাদের অনুষ্ঠান? চ
ক মারমাদের খ চাকমাদের
গ সাঁওতালদের ঘ মণিপুরিদের
১৬. নাপ্পি কী দিয়ে তৈরি করা হয়? ছ
ক লতা, পাতা দিয়ে খ শুঁটকি মাছ দিয়ে
গ গোশত দিয়ে ঘ ডিম দিয়ে
১৭. মারমাদের ঐতিহ্যাবাহী পোশাকের নাম কী? চ
ক থামি ও আঙ্গি খ পিনোন ও হাদি
গ পানচি ও পা-হাট ঘ লাহিড় ও অংহিং
১৮. মারমারা পূর্ণিমার সময় কোন উৎসবটি পালন করে? ছ
ক সাংগ্রাই খ লাবরে
গ বিজু ঘ সোহরায়
১৯. মারমারা লাবরে উৎসব বছরে কয়বার পালন করে? ঝ
ক ৬ বার খ ৮ বার
গ ১০ বার ঘ ১২ বার
২০. সাংগ্রাই কাদের উৎসব? ছ
ক চাকমাদের খ মারমাদের
গ মণিপুরিদের ঘ সাঁওতালদের
২১. মারমারা সাংগ্রাই উৎসব কোন মাসে পালন করে? চ
ক বৈশাখ মাসে খ ভাদ্র মাসে
গ ফাল্গুন মাসে ঘ কার্তিক মাসে
যোগ্যতাভিত্তিক
শিখনফল : মারমা ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর পরিচয় পাব।
২২. ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর দিক থেকে তাঁরা বাংলাদেশের দ্বিতীয় স্থানের জনগোষ্ঠী। তাঁদের অধিকাংশের বসবাস পার্বত্য চট্টগ্রামে। এখানে কোন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীকে বোঝানো হয়েছে? ছ
ক চাকমাদের খ মারমাদের
গ সাঁওতালদের ঘ মণিপুরিদের
শিখনফল : মারমাদের খাবার সম্পর্কে জানতে পারব।
২৩. বাংলাদেশে দ্বিতীয় বৃহত্তম ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর লোকেরা সবজি খেতে পছন্দ করেন। তারা এ সবজি খান ছ
ক রোদে শুকিয়ে খ সিদ্ধ করে
গ তেলে ভেজে ঘ বড়ি তৈরি করে
শিখনফল : মারমাদের উৎসব সম্পর্কে জানতে পারব।
২৪. এক শ্রেণির ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী বৈশাখ মাসের দ্বিতীয় দিনে উৎসব উদ্যাপন করেন। তারা এই বিশেষ দিনে জ
ক আকাশে ঘুড়ি ওড়ান
খ আগুন নিয়ে খেলা করেন
গ পানি দিয়ে খেলা করেন
ঘ লাঠি দিয়ে খেলা করেন
সাঁওতাল
সাধারণ
২৫. সাঁওতালদের বিশেষ খাবার কোনটি? ঝ
ক মাছ খ মাংস
গ সবজি ঘ পাটশাক
২৬. সাঁওতালদের প্রধান পেশা কোনটি? জ
ক মাছধরা খ চা বাগানের কাজ
গ কৃষি ঘ কুটিরশিল্পের কাজ
২৭. সাঁওতাল নারীদের কাপড়ের উপরের অংশের নাম কী? চ
ক পানচি খ পারহাট
গ থামি ঘ আঙ্গি
২৮. সাঁওতালরা বছরে বিশেষভাবে কতটি উৎসব পালন করেন? ছ
ক ৪টি খ ৫টি
গ ৬টি ঘ ৭টি
২৯. ‘হাড়িয়ার সিম’ কোন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর উৎসব? ছ
ক চাকমা খ সাঁওতাল
গ মারমা ঘ গারো
৩০. সাঁওতালদের বছরের প্রধান ফসল তোলার উৎসবের নাম কী? চ
ক সোহরায় উৎসব খ মাঘ সিম
গ বসন্তোৎসব ঘ হাড়িয়ার সিম
যোগ্যতাভিত্তিক
শিখনফল : সাঁওতালদের জীবনধারা সম্পর্কে জানতে পারব।
৩১. মণিদের নিজস্ব ভাষা আছে কিন্তু বর্ণমালা নেই। ‘নালিতা’ বা পাটশাক তাদের বিশেষ খাবার। মণি যে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর জ
ক চাকমা খ মারমা
গ সাঁওতাল ঘ মণিপুরি
শিখনফল: সাঁতালদের উৎসব সম্পর্কে জানতে পারব।
৩২. উৎসবপ্রিয় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী পৌষ মাসে যে কারণে উৎসবের আয়োজন করে চ
ক প্রধান ফসল ঘরে তোলার কারণে
খ খড় কুড়ানোর উপলক্ষে
গ নতুন ব্যবসা শুরুর কারণে
ঘ মাছ ধরতে যাওয়া উপলক্ষে
৩৩. ‘হাড়িয়ার সিম’ উৎসবে সাঁওতালরা বারোয়ারি ভোগ দেয় কেন? চ
ক রোগমুক্তির জন্য খ ফসলের জন্য
গ বিয়ের জন্য ঘ ফাল্গুন শুরুর জন্য
মণিপুরি
সাধারণ
৩৪. মণিপুরি সংস্কৃতির অন্যতম অংশ কী? ঝ
ক গান খ পূজা-পার্বণ
গ নাটক ঘ নাচ
৩৫. মণিপুরিরা কতটি গোত্রে বিভক্ত? চ
ক ২টি খ ৩টি
গ ৪টি ঘ ৫টি
৩৬. ‘লাহিং’ ও ‘আহিং’ কাদের পোশাক? ঝ
ক চাকমা নারীদের খ মারমা পুরুষদের
গ সাঁওতাল পুরুষদের ঘ মণিপুরি নারীদের
৩৭. কোন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সামাজিকভাবে মাংস খাওয়া নিষিদ্ধ? জ
ক সাঁওতালদের খ মারমাদের
গ মণিপুরিদের ঘ চাকমাদের
যোগ্যতাভিত্তিক
শিখনফল : মণিপুরিদের জীবনধারা সম্পর্কে জানতে পারব।
৩৮. মণিপুরিরা মাংস খান না কেন? চ
ক ধর্মীয় নিষেধ থাকার
খ সামাজিকভাবে নিষিদ্ধ বলে
গ স্বাদ কম বলে
ঘ রোগ হওয়ার আশঙ্কা থাকে বলে
৩৯. তোমার সহপাঠী অর্চনা মণিপুরির বাড়িতে গিয়ে দেখলে তার মা তাদের প্রিয় খাবার তৈরি করছেন। প্রিয় খাবার তৈরিতে অর্চনার মা ব্যবহার করেছেন- জ
ক মাছ খ ডাল
গ শাকসবজি ঘ শুঁটকি মাছ
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর
১. জুম চাষ কাকে বলে?
উত্তর : পাহাড়ের ঢালু জায়গায় গাছ পুড়িয়ে এবং পরিষ্কার করে ছোট দা দিয়ে গর্ত করে বীজ লাগানোর পদ্ধতিকে জুম চাষ বলে।
২. চাকমাদের ঘর কেমন?
উত্তর : চাকমারা বাঁশ ও কাঠ দিয়ে মাচার মতো ঘর তৈরি করেন। ঘরগুলো শক্ত গাছের উপর তৈরি। ঘরগুলোতে ওঠার জন্য রয়েছে কাঠের বা বাঁশের সিঁড়ি।
৩. চাকমারা উৎসব পালন করেন কীভাবে?
উত্তর : চাকমারা বিভিন্ন উৎসবে ফুল দিয়ে ঘরবাড়ি সাজান। শিশুরা বড়দের সম্মান জানায় ও আশীর্বাদ লাভ করে।
৪. অধিকাংশ মারমা বাংলাদেশের কোন কোন জেলায় বসবাস করেন?
উত্তর : অধিকাংশ মারমা বাংলাদেশের বান্দরবান, খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটি জেলায় বসবাস করেন।
৫. মারমাদের প্রধান খাবার কী?
উত্তর : ভাত আর সিদ্ধ সবজি মারমাদের প্রধান খাবার।
৬. মারমাদের অতীত চিকিৎসা পদ্ধতি কেমন ছিল?
উত্তর : মারমারা অতীতে বনজ ঔষধি গাছের মাধ্যমে চিকিৎসা নিতেন।
৭. সাঁওতালরা বাংলাদেশের কোন কোন জেলায় বসবাস করেন?
উত্তর : সাঁওতালরা দিনাজপুর, রাজশাহী, নওগাঁ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নাটোর জেলায় বাস করেন। এছাড়া রংপুর, বগুড়াসহ আরও কয়েকটি জেলায় সাঁওতালদের বসবাস রয়েছে।
৮. ‘হাড়িয়ার সিম’ কী?
উত্তর : ‘হাড়িয়ার সিম’ সাঁওতালদের একটি উৎসব। এ উৎসবে তারা ফসলের জন্য বারোয়ারি ভোগ দেয়।
৯. মণিপুরিদের আদিবাস কোথায়?
উত্তর : মণিপুরিদের আদিবাস ভারতের আসাম ও মণিপুর রাজ্যে।
১০. কয়েকটি মণিপুরি উৎসবের নাম লেখ।
উত্তর : মণিপুরিদের কয়েকটি উৎসব হলোÑ রথযাত্রা, দোলযাত্রা, হোলি উৎসব, চৈত্র সংক্রান্তি, রাস পূর্ণিমা ইত্যাদি।
কাঠামোবদ্ধ প্রশ্ন ও উত্তর
ন্ধ সাধারণ
১. ৫টি বিষয়ে সাঁওতালদের জীবনধারা সম্পর্কে লেখ।
উত্তর : সাঁওতালদের জীবনধারা অত্যন্ত বৈচিত্র্যময়। নিচে তাদের জীবনধারার পরিচয় তুলে ধরা হলো :
র) ভাষা : সাঁওতালদের নিজস্ব ভাষা থাকলেও কোনো বর্ণমালা নেই।
রর) খাদ্য : সাঁওতালদের প্রধান খাদ্য ভাত। এছাড়াও তাঁরা মাছ, মাংস, সবজি ইত্যাদি খাবারও খান। নভলিতা বা পাটশাক তাদের একটি বিশেষ খাবার।
ররর) পেশা : সাঁওতালরা মূলত কৃষিজীবী। এছাড়া মাছ ধরা, চা বাগানের কাজ, কুটিরশিল্পসহ তাঁরা আরও নানা কাজ করে থাকেন।
রা) শিক্ষা : বর্তমানে সাঁওতালরা শিক্ষিত হচ্ছেন এবং সব কাজেই আগ্রহী হয়ে উঠছেন।
া) উৎসব : এক বছরের ৫ মাসে ৫টি প্রধান উৎসব পালন করেন।
২. মণিপুরি সংস্কৃতির বর্ণনা দাও।
উত্তর : বাংলাদেশের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে মণিপুরি অন্যতম। তাদের সংস্কৃতি অত্যন্ত সমৃদ্ধ। নিচে মণিপুরি সংস্কৃতির উল্লেখযোগ্য দিকগুলো তুলে ধরা হলো :
১) নাচ : নাচ হচ্ছে মণিপুরি সংস্কৃতির গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এদের নাচ অত্যন্ত বিখ্যাত।
২) ধর্ম : মণিপুরিরা সনাতন ধর্মের অনুসারী। তবে ‘মৈ তৈ পাঙন’ নামে মুসলিম একটি মণিপুরি জনগোষ্ঠীও আছে।
৩) খাদ্য : মণিপুরিদের প্রধান খাদ্য ভাত, মাছ, শুঁটকি, সবজি। সামাজিকভাবে মাংস নিষিদ্ধ বলে তারা তা খান না। সবজির পাতা দিয়ে তারা ‘সিঞ্জেদা’ নামক এক ধরনের সালাদ খেতে পছন্দ করেন।
৪) পোশাক : মণিপুরি নারীরা ‘লাহিং’ (ঘাগড়ার মতো) আর ‘আহিং’ (বøাউজ) ও ওড়না পরেন। পুরুষরা ধুতি ও পাঞ্জাবি পরেন।
৫) উৎসব : মণিপুরিরা প্রায় সারা বছরই উৎসবে মেতে থাকেন। তারা রথযাত্রা, দোলযাত্রা, হোলি উৎসব, চৈত্র সংক্রান্তি, রাস পূর্ণিমা ইত্যাদি উৎসব পালন করেন। নাচ, গান, বাদ্যযন্ত্রের মাধ্যমে তারা আনন্দ করেন।
৩. বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর প্রধান প্রধান পেশা কী?
উত্তর : বিভিন্ন ক্ষুদ্র প্রধান প্রধান পেশা নিচে উল্লেখ করা হলো :
১) চাকমা : গ্রামে বসবাসকারী চাকমারা সাধারণত জুম চাষ ও অন্যান্য কৃষিকাজ করেন। একই সাথে তাঁরা বিভিন্ন ফসল ও সবজি চাষ করে থাকেন। তাছাড়া চাকমারা বাঁশ ও বেত দিয়ে নানা ধরনের ঝুড়ি, পাখা, বাঁশি, বাদ্যযন্ত্র ইত্যাদি তৈরি করেন। তাঁরা নিজেদের তাঁতে নানা ধরনের নকশার কাপড় বোনেন।
২) মারমা : মারমা জনগোষ্ঠী জুম চাষ, মাছ ধরা, কাপড় ও চুরুট তৈরি করে এবং তা বিক্রি করে আয় করেন।
৩) সাঁওতাল : বর্তমানে সাঁওতালদের প্রধান পেশা হলো কৃষিকাজ। এছাড়া মাছ ধরা, চা বাগানের কাজ, কুটিরশিল্পসহ তাঁরা আরও নানা ধরনের কাজ করে থাকেন।
৪) মণিপুরি : মণিপুরি জনগোষ্ঠীর বেশির ভাগেরই প্রধান পেশা কৃষিকাজ। তাঁরা বিভিন্ন ধরনের ফসল ও সবজি চাষ করেন। তাঁদের ঘরে ঘরে তাঁতশিল্প রয়েছে।
৪. মণিপুরিদের পোশাক সম্পর্কে লেখ। তাঁরা কখন উৎসব পালন করে? তাঁদের কয়েকটি উৎসবের নাম লেখ।
উত্তর : মণিপুরিরা আগে নিজেদের পোশাক নিজেরাই তৈরি করতেন। এ সমাজের নারীরা ‘লাহিং’ (ঘাগড়ার মতো) আর ‘আহিং’ (বøাউজ) ও ওড়না পরেন ও পুরুষরা ধুতি ও পাঞ্জাবি পরেন।
মণিপুরিরা প্রায় সারা বছরই উৎসবে মেতে থাকেন। নাচ, গান, বাদ্যযন্ত্রের মাধ্যমে তাঁরা আনন্দ করেন। এছাড়া রথযাত্রা, দোলযাত্রা, হোলি উৎসব, চৈত্র সংক্রান্তি, রাস পূর্ণিমা ইত্যাদি উৎসব পালন করেন।
৫. সাঁওতালরা বছরে পাঁচটি উৎসব বিশেষভাবে পালন করেন। তাঁদের এ পাঁচটি উৎসব সম্পর্কে লেখ।
উত্তর : সাঁওতালরা যে পাঁচটি উৎসব বিশেষভাবে পালন করেন তা নিচের ছকে দেখানো হলো :
মাস উৎসব
পৌষ ‘সোহরায় উৎসব’- বছরে প্রধান ফসল তোলার পর পালন করা হয়।
মাঘ ঘর বানানোর জন্য বন থেকে খড় কুড়ানোর উৎসব ‘মাঘ সিম’।
ফাল্গুন অমাবস্যায় বসন্তের উৎসব ‘বসন্তোৎসব’।
আষাঢ় ‘এর কংশিম’ উৎসবে প্রত্যেক পরিবার থেকে একটি মুরগি এনে পূজা দেওয়া হয়।
ভাদ্র ‘হাড়িয়ার সিম’- ফসলের জন্য বোঙাদের বারোয়ারি ভোগ দেওয়ার উৎসব।
ন্ধ যোগ্যতাভিত্তিক
৬. বীথি রাঙামাটি বেড়াতে গিয়ে এক শ্রেণির নৃ-গোষ্ঠী দেখতে পেয়ে জানত পারল, এরা বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ নৃ-গোষ্ঠী। বিথীর দেখা নৃ-গোষ্ঠীর পরিচয় দাও। এদের জীবনধারা ৪টি বাক্যে লেখ।
উত্তর : বীথির দেখা নৃ-গোষ্ঠীটি হলো চাকমা। চাকমাদের জীবনধারা নিয়ে ৪টি বাক্য লেখা হলো :
র. চাকমাদের নিজস্ব ভাষা ও বর্ণমালা আছে।
রর. চাকমাদের নিজেদের রাজা আছেন এবং প্রতিটি গ্রামে একজন করে গ্রামপ্রধান থাকেন।
ররর. চাকমাদের বাড়িগুলো তৈরি করা হয় কাঠ ও বাঁশ দিয়ে।
রা. চাকমারা ‘জুম’ পদ্ধতিতে চাষাবাদ করে থাকেন।
৭. দুলু আর নীলুকে জল নিয়ে খেলা করতে দেখে, চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী শিউলী বলল, এক শ্রেণির নৃ-গোষ্ঠী রয়েছে যারা তাদের উৎসবে জল নিয়ে খেলা করে। শিউলীর কথায় কোন নৃ-গোষ্ঠীর ইঙ্গিত পাওয়া যায়? উক্ত নৃ-গোষ্ঠীর উৎসব সম্পর্কে ৪টি বাক্য লেখ।
উত্তর : শিউলীর কথায় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী মারমা সম্পর্কে ইঙ্গিত পাওয়া যায়।মারমাদের উৎসব সম্পর্কে নিচে ৪টি বাক্য লেখা হলো :
র. মারমা জনগোষ্ঠীর লোকেরা বৌদ্ধ ধর্মের সকল উৎসব পালন করেন।
রর. বৈশাখে তারা পূর্ণিমার সময় ‘লাবরে’ পালন করেন।
ররর. প্রতিবছর বৈশাখ মাসের দ্বিতীয় দিনে তারা সাংগ্রাই উৎসব পালন করেন।
রা. সাংগ্রাই উৎসবে তারা পানি দিয়ে খেলা করে।
৮. ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর বিভিন্ন দিক সম্পর্কে তোমার অনুভ‚তি ৫টি বাক্যে লেখ।
উত্তর : ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর বিভিন্ন দিক সম্পর্কে আমার অনুভ‚তি নিচে ৫টি বাক্যে লেখা হলো :
র. ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীরা বাংলাদেশের নাগরিক, তাই এদের সম্পর্কে জানা আমাদের কর্তব্য।
রর. বাংলাদেশের উন্নয়নের মূলধারার সাথে এদেরকেও অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সম্পৃক্ত করা প্রয়োজন।
ররর. তাদের বৈচিত্র্যময় ভাষা ও সংস্কৃতিকে লালনে আমাদেরকে আরও সচেতন হতে হবে।
রা. ঐতিহ্য ধরে রাখার পাশাপাশি আধুনিকতার সাথেও তাদেরকে পরিচয় করিয়ে দিতে হবে।
া. শিক্ষা লাভের ক্ষেত্রে তাদের জন্য বিশেষ সুযোগ- সুবিধার ব্যবস্থা রাখতে হবে।