Author name: Masud Rana

নবম-দশম শ্রেণির বাংলা ২য় প্রবন্ধ রচনা

প্রবন্ধ রচনা য় প্রবন্ধ কী : ‘প্রবন্ধ’ শব্দের অর্থ প্রকৃষ্ট বন্ধন। প্রকৃতপক্ষে ভাব ও ভাষার বন্ধন। কোনো একটি বিষয়কে ভাব ও চিন্তার মধ্য দিয়ে ভাষায় প্রাণবন্ত করে প্রকাশ করাই হচ্ছে প্রবন্ধ। য় প্রবন্ধের প্রকারভেদ : বিষয়ভেদে প্রবন্ধকে প্রধানত তিন ভাগে বিভক্ত করা যায়। যথাÑ ১. বর্ণনামূলক; ২. ঘটনামূলক; ও ৩. চিন্তামূলক। য় প্রবন্ধের বিভিন্ন অংশ : প্রবন্ধের সাধারণত তিনটি অংশ। যথাÑ ১। ভ‚মিকা, ২। মূল অংশ ও ৩। উপসংহার। ১। ভ‚মিকা : প্রবন্ধের প্রারম্ভিক প্রস্তাবনা বা ভ‚মিকা অংশ প্রবন্ধের আলোচ্য বিষয়ে প্রবেশের দরজা। সূচনা-পর্বটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সেজন্য ভ‚মিকা অংশের ওপর মূল বিষয়গত ভাবের প্রতিফলন এমনভাবে হওয়া দরকার যাতে প্রবন্ধের মূল বিষয়ে উত্তরণের দ্বার তো খুলে যাবেই, সেই সঙ্গে বিষয়টি হৃদয়গ্রাহী হয়ে পাঠকের কাছে আকর্ষণীয় হবে। ভ‚মিকা যাতে অপ্রাসঙ্গিক ও অনাবশ্যক বাগ্বাহুল্য-দোষে দুষ্ট না হয় সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। ২। মূল অংশ : ভ‚মিকার পরে প্রবন্ধের মূল বিষয়ের আলোচনা শুরু হয়। মূল বক্তব্য পরিবেশনের আগে বিষয়টিকে প্রয়োজনীয় সংকেত (ঢ়ড়রহঃং)-এ ভাগ করে নিতে হয়। সংকেত-সূত্রের পরম্পরা রক্ষা করে প্রবন্ধের অবয়বকে সুসংহতভাবে গড়ে তুলতে হয়। প্রতিটি সংকেতের কতখানি বিস্তার হবে তা তার প্রকাশের পূর্ণতার ওপর নির্ভরশীল। কাজেই আয়তনগত পরিমাপ নির্দিষ্ট নেই। প্রতিটি সংকেতের ওপর প্রয়োজনীয় গুরুত্ব দিয়ে আলোচনা করতে হয়। ৩। উপসংহার : প্রবন্ধের সর্বশেষ অংশ উপসংহার। সূচনার মতো সমাপ্তিরও আছে সমান গুরুত্ব। প্রবন্ধের ভাববস্তু ভ‚মিকার উৎস থেকে ক্রমাগ্রগতি ও ক্রমবিকাশের ধারা বহন করে উপসংহারে এসে একটি ভাবব্যঞ্জনা সৃষ্টি করে সমাপ্তির ছেদ-রেখা টানে। এখানে লেখকের ব্যক্তিগত অভিমত প্রকাশের যথেষ্ট অবকাশ থাকে। উপসংহারে লেখক একদিকে যেমন আলোচনার সিদ্ধান্তে উপনীত হয়, অন্যদিকে তেমনি লেখকের নিজস্ব অভিমতের কিংবা আশা-আকাক্সক্ষার সার্থক প্রতিফলনও ঘটে। য় প্রবন্ধ রচনার ক্ষেত্রে যা যা মনে রাখা প্রয়োজন : প্রবন্ধ রচনার সময় কিছু নিয়মকানুন অনুসরণ করা প্রয়োজন। তাহলে প্রবন্ধের মান বৃদ্ধি পায় এবং পরীক্ষায় অধিক নম্বর পাওয়া যায়। এক্ষেত্রেÑ ১. প্রবন্ধের বিষয় সম্পর্কে গভীরভাবে চিন্তা করতে হবে। ২. চিন্তাপ্রসূত ভাবগুলো অবশ্যই ধারাবাহিকভাবে সাজাতে হবে। ৩. প্রতিটি ভাব উপস্থাপন করতে হবে পৃথক অনুচ্ছেদে। ৪. একই ভাব, তথ্য বা বক্তব্য বারবার উল্লেখ করা যাবে না। ৫. রচনার ভাষা হতে হবে সহজ, সরল ও প্রাঞ্জল। ৬. উপস্থাপিত তথ্যাবলি অবশ্যই নির্ভুল হতে হবে। ৭. বড় ও জটিল বাক্য যতটা সম্ভব পরিহার করতে হবে। ৮. নির্ভুল বানানে লিখতে হবে। ৯. সাধু ও চলিত ভাষার মিশ্রণ ঘটানো যাবে না। ১০. উপসংহারে সুচিন্তিত নিজস্ব মতামত উপস্থাপন করতে হবে। বাংলাদেশের ষড়ঋতু [চ. বো. ১৫, ব. বো. ১১, সি. বো. ১১] সূচনা : সুজলা-সুফলা, শস্য-শ্যামলা অপরূপ নিসর্গের লীলাভ‚মি আমাদের এই বাংলাদেশ। ঋতুচক্রের আবর্তে এখানে চলে প্রকৃতির রং বদলের খেলা। নতুন নতুন রং-রেখায় প্রকৃতি আলপনা আঁকে মাটির বুকে, আকাশের গায়ে, মানুষের মনে। তাই ঋতু বদলের সাথে সাথে এখানে জীবনেরও রং বদল হয়। ষড়ঋতুর পরিচয় : বাংলাদেশ ষড়ঋতুর দেশ। ঋতুগুলো হচ্ছেÑ গ্রীষ্ম, বর্ষা, শরৎ, হেমন্ত, শীত ও বসন্ত। এই ঋতুগুলো প্রতি দুই-মাস অন্তর চμাকারে আবর্তিত হয়। ঋতুর এই পালাবদলের সাথে সাথে বাংলাদেশের প্রকৃতির রূপ ও সৌন্দর্য বৈচিত্র্যময় হয়ে ওঠে। গ্রীষ্মকাল : ঋতুচμের শুরুতেই আগুনের মশাল হাতে মাঠ-ঘাট পোড়াতে পোড়াতে গ্রীষ্মরাজের আগমন। বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ এই দুই মাস গ্রীষ্মের রুক্ষতায় প্রকৃতির শ্যামল-স্নিগ্ধ রূপ হারিয়ে যায়। খাল-বিল, নদী-নালা শুকিয়ে যায়। অসহ্য গরমে সমস্ত প্রাণিকুল একটু শীতল পানি ও ছায়ার জন্য কাতর হয়ে পড়ে। এরই মধ্যে কখনো হঠাৎ শুরু হয় কালবোশেখির দুরন্ত তাণ্ডব। সেই তাণ্ডবে গাছপালা ঘরবাড়ি ভেঙেচুরে তছনছ হয়ে যায়। তবে গ্রীষ্ম শুধু পোড়ায় না, অকৃপণ হাতে দান করে আম, জাম, জামরুল, লিচু, তরমুজ ও নারকেলের মতো অমৃত ফল। বর্ষাকাল : গ্রীষ্মের রুক্ষতাকে বৃষ্টির জলে ধুয়ে দিতে মহাসমারোহে বর্ষা আসে। আষাঢ়-শ্রাবণ দুই মাস বর্ষাকাল। মেঘের গুরুগম্ভীর গর্জনে প্রকৃতি থেমে থেমে শিউরে ওঠে। শুরু হয় মুষলধারায় বৃষ্টি। মাঠ-ঘাট পানিতে পরিপূর্ণ হয়ে যায়। প্রকৃতিতে দেখা দেয় মনোরম সজীবতা। জনজীবনে ফিরে আসে প্রশান্তি। গাছে গাছে ফোটে কদম, কেয়া, জুঁই। প্রকৃতি এক মনোরম স্নিগ্ধ সৌন্দর্যে ভরে ওঠে। তাই তো কবি বর্ষার সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে বলেছেনÑ “বাদলের ধারা ঝরে ঝর ঝর আউশের ক্ষেত জলে ভর ভর কালিমাখা মেঘ ওপারে আঁধার ঘনিয়াছে দেখ চাহি রে।” শরৎকাল : বাতাসে শিউলি ফুলের সুবাস ছড়িয়ে আসে ঋতুর রানি শরৎ। ভাদ্র-আশ্বিন দুই মাস শরৎকাল। এ সময় শুভ্র জ্যোৎস্না আর সুরভিত ফুলের সুষমা মনকে উচাটন করে তোলে। নদীর তীরে তীরে বসে সাদা কাশফুলের মেলা। বিকেলবেলা মালা গেঁথে উড়ে চলে সাদা বকের সারি। সবুজ ঢেউয়ের দোলায় দুলে ওঠে ধানের খেত। শাপলার হাসিতে বিলের জল ঝলমল ঝলমল করে। তাই শরতের শোভাময় প্রকৃতিতে মুগ্ধ হয়ে কবি বলেছেনÑ আজিকে তোমার মধুর মুরতি হেরিনু শারদ প্রভাতে। হে মাতঃ বঙ্গ, শ্যামল অঙ্গ ঝলিছে অমল শোভাতে। হেমন্তকাল : ঘরে ঘরে নবান্নের উৎসবের আনন্দ নিয়ে আগমন ঘটে হেমন্তের। কার্তিক-অগ্রহায়ণ দুই মাস হেমন্তকাল। প্রকৃতিতে হেমন্তের রূপ হলুদ। সর্ষে ফুলে ছেয়ে যায় মাঠের বুক। মাঠে মাঠে পাকা ধান। কৃষক ব্যস্ত হয়ে পড়ে ফসল কাটার কাজে। সোনালি ধানে কৃষকের গোলা ভরে ওঠে, মুখে ফোটে আনন্দের হাসি। শুরু হয় নবান্নের উৎসব। হেমন্ত আসে নীরবে; আবার শীতের কুয়াশার আড়ালে গোপনে হারিয়ে যায়। শীতকাল : কুয়াশার মলিন চাদর গায়ে উত্তুরে হাওয়া সাথে নিয়ে আসে শীত। পৌষ-মাঘ দুই মাস শীতকাল। শীত রিক্ততার ঋতু। কনকনে শীতের দাপটে মানুষ ও প্রকৃতি অসহায় হয়ে পড়ে। তবে রকমারি শাকসবজি, ফল ও ফুলের সমারোহে বিষণœ প্রকৃতি ভরে ওঠে। বাতাসে ভাসে খেজুর রসের ঘ্রাণ। ক্ষীর, পায়েস আর পিঠাপুলির উৎসবে মাতোয়ারা হয় গ্রামবাংলা। তাই তো কবি বলেছেনÑ “পৌষ পার্বণে পিঠা খেতে বসে খুশিতে বিষম খেয়ে, আরও উল্লাস বেড়েছে মনে মায়ের বকুনি খেয়ে।” বসন্তকাল : বাংলাদেশে ঋতুচক্রের সবশেষে আসে ঋতুরাজ বসন্ত। ফাল্গুন-চৈত্র দুই মাস বসন্তকাল। বসন্ত নিয়ে আসে সবুজের সমারোহ। বাতাসে মৌ মৌ ফুলের সুবাস। গাছে গাছে কোকিল-পাপিয়ার সুমধুর গান। দখিনা বাতাস বুলিয়ে দেয় শীতল পরশ। মানুষের প্রাণে বেজে ওঠে মিলনের সুর। আনন্দে আত্মহারা কবি গেয়ে ওঠেনÑ আহা আজি এ বসন্তে এত ফুল ফোটে, এত বাঁশি বাজে এত পাখি গায়। উপসংহার : বাংলাদেশে ষড়ঋতুর এই লীলা অবিরাম চলছে। প্রতিটি ঋতু প্রকৃতিতে রূপ-রসের বিভিন্ন সম্ভার নিয়ে আপন বৈশিষ্ট্যে সমুজ্জ্বল। তার প্রভাব পড়ে বাংলার মানুষের মনে। বিচিত্র ষড়ঋতুর প্রভাবেই বাংলাদেশের মানুষের মন উদার ও ভালোবাসায় পরিপূর্ণ। আমাদের দেশ সূচনা : সুজলা-সুফলা, শস্য-শ্যামলা আমাদের এই বাংলাদেশ। সবুজে ঘেরা, পাখি ডাকা দেশটির রূপের কোনো শেষ নেই। কবির দেশ, বীরের দেশ, গানের দেশ, মায়ের দেশ- এ রকম অনেক নামে এ দেশকে ডাকা হয়। দেশের অবারিত ফসলের ক্ষেত, মাঠ-ঘাট, প্রকৃতি প্রভৃতির সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে তাই কবি গেয়ে উঠেছেনÑ “এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি, সকল দেশের রানি সে যে আমার জন্মভ‚মি।” অবস্থান ও আয়তন : বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার একটি স্বাধীন দেশ। এর সীমান্তের অধিকাংশ জুড়ে রয়েছে ভারত। আর দক্ষিণ-পূর্বের সামান্য অংশে মিয়ানমার এবং দক্ষিণে রয়েছে বঙ্গোপসাগর। এ দেশের আয়তন ১,৪৭,৫৭০ বর্গকিলোমিটার। স্বাধীনতা লাভ : ১৯৭১ সালে

নবম-দশম শ্রেণির বাংলা ২য় প্রবন্ধ রচনা Read More »

নবম-দশম শ্রেণির বাংলা ২য় ভাব-সম্প্রসারণ

ভাব-সম্প্রসারণ কবি-সাহিত্যিকদের লেখায় কখনো কোনো একটি বাক্যে বা কবিতার এক বা একাধিক চরণে গভীর কোনো ভাব নিহিত থাকে। সেই ভাবকে বিস্তারিতভাবে লেখা, বিশ্লেষণ করাকে ভাবস¤প্রসারণ বলে। যে ভাবটি কবিতার চরণে বা বাক্যে প্রচ্ছন্নভাবে থাকে, তাকে নানাভাবে ব্যাখ্যা করতে হয়। সাধারণত সমাজ বা মানবজীবনের মহৎ কোনো আদর্শ বা বৈশিষ্ট্য, নীতি-নৈতিকতা, প্রেরণামূলক কোনো বিষয় যে পাঠে বা বাক্যে বা চরণে থাকে, তার ভাবস¤প্রসারণ করা হয়। ভাবস¤প্রসারণের ক্ষেত্রে রূপকের আড়ালে বা প্রতীকের ভেতর দিয়ে যে বক্তব্য উপস্থাপন করা হয়, তাকে যুক্তি, উপমা, উদাহরণ ইত্যাদির সাহায্যে বিশ্লেষণ করতে হয়। ভাবস¤প্রসারণ করার ক্ষেত্রে যেসব দিক বিশেষভাবে খেয়াল রাখা প্রয়োজন : ১. উদ্ধৃত অংশটুকু মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে। ২. অন্তর্নিহিত ভাবটি বোঝার চেষ্টা করতে হবে। ৩. অন্তর্নিহিত ভাবটি কোনো উপমা-রূপকের আড়ালে নিহিত আছে কি না, তা চিন্তা করতে হবে। ৪. সহজ-সরলভাবে মূল ভাবটিকে ফুটিয়ে তুলতে হবে। ৫. মূল বক্তব্যকে প্রকাশরূপ দেওয়ার জন্য প্রয়োজনে যুক্তি উপস্থাপন করতে হবে। ৬. বক্তব্যের পুনরাবৃত্তি যেন না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। ৭. বক্তব্য সাধারণত বিশ থেকে পঁচিশ লাইনের মধ্যে প্রকাশ করতে হবে। পাপকে ঘৃণা কর পাপীকে নয়। [ব. বো. ১৪] মূলভাব : প্রতিটি মানুষই নিষ্পাপ হয়ে পৃথিবীতে আসে। জন্মের সময় কোনো মানব শিশুর গায়ে পাপ-পঙ্কিলতার চিহ্ন থাকে না। অর্থাৎ, মানুষ জন্মসূত্রে পাপী হয় না; বরং পরিবেশ তাকে ক্রমে ক্রমে পাপীতে রূপান্তরিত করে। স¤প্রসারিত ভাব : বিংশ শতাব্দীর এ সভ্যতার যুগে ক্রমেই বাড়ছে খুন, রাহাজানি, ছিনতাই, ধর্ষণের মতো অনৈতিক এবং অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা। কেউ লোভে পড়ে, কেউ জীবিকার তাগিদে আর কেউ বা সঙ্গদোষে এসব কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ে। সমাজের কুচক্রীমহল বিভিন্ন স্তরের সাধারণ মানুষকে নানা প্রলোভন দেখিয়ে অন্যায় কর্মকাণ্ডে নিযুক্ত করছে প্রতিনিয়ত। এভাবেই ধীরে ধীরে একজন মানুষ হয়ে উঠছে দাগী আসামি কিংবা অপরাধী। কিন্তু তার জন্মের সময় সে আর দশজনের মতোই নিষ্পাপ ছিল। পৃথিবীর বুকে বেড়ে উঠতে গিয়ে নানা প্রতিক‚ল পরিবেশের সংস্পর্শেই মানুষ পাপাচারে প্রবৃত্ত হয়। স্বেচ্ছায় কেউ পাপী হয় না। বৈরী পরিবেশে, অসৎ সঙ্গ, জীবিকার তাগিদ কিংবা অন্য কোনো কারণেই মানুষ পাপপথ বেছে নিতে বাধ্য হয়। মানুষের ইন্দ্রিয় সংযত না থাকলেই মানুষ পাপ-পুণ্যের ব্যবধান করতে ব্যর্থ হয়ে পড়ে। মানুষ হিসেবে প্রত্যেককেই অন্যের প্রতি সহানুভ‚তিশীল থাকতে হবে। পাপ কর্মকে ঘৃণা করা প্রতিটি মানুষের পরম কর্তব্য ও পবিত্র দায়িত্ব। কিন্তু যে পাপী তাকে সমাজের এককোণে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দেওয়া মহৎপ্রাণ মানুষের কাজ নয়। তারাও মানুষ এবং আমাদের বৃহত্তর সমাজেরই অংশ। তাই তাদের প্রতি ঘৃণা পোষণ করা অবিবেচকের কাজ। তাদেরকে ভালোবাসা দিয়ে তাদের স্বভাবের পরিবর্তন ঘটাতে হবে। তবেই সমাজে হবে চির কল্যাণ ও মঙ্গলের জয়যাত্রা। মন্তব্য : সমাজে নানা ধরনের মানুষ বাস করে। সবাইকে নিয়েই গঠিত হয় সমাজ। এদের মধ্যে যারা পাপকর্মে প্রবৃত্ত হয় তাদের কর্মকে দৃঢ়ভাবে প্রতিরোধ করতে হবে। তবে মমতা ও ভালোবাসা দিয়ে চেষ্টা করতে হবে পাপীকে সংশোধন করার। পাপকে ঘৃণা করলেও পাপীকে ঘৃণা করা উচিত নয়। অর্থই অনর্থের মূল। [য. বো. ০৯] মূলভাব : পার্থিব জীবনে মানুষের শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি অর্থ। তাই অর্থ মানুষের নিয়ন্ত্রণাধীন, তথা অর্থকে সে পরিচালিত করে, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু মানুষ যখন অর্থের কাছে জিম্মি হয়ে অর্থের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়, তখনই জগৎসংসারে অর্থ অনর্থের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। স¤প্রসারিত ভাব : জীবনধারণের জন্য অর্থ অপরিহার্য। পার্থিব জীবনে অর্থ বা বিত্তই মানুষের একান্ত কামনা। মানুষ তার কাক্সিক্ষত অর্থ উপার্জনের জন্য কঠোর পরিশ্রম করে এবং নানা প্রতিকূল অবস্থার মোকাবেলা করে। অর্থ মানুষের আজীবন প্রয়োজন মেটায় বলে অর্থ ছাড়া জীবন অর্থহীন বা মূল্যহীন বলে বিবেচিত হয়। তাই সারা জীবন মানুষ অর্থের পেছনে ছোটে। বর্তমান পৃথিবীতে একমাত্র অর্থের মাপকাঠিতেই প্রতিপত্তি ও সম্মান নির্ধারিত হয়। কী করে তাই অধিক অর্থ উপার্জন করা যায় তার জন্য মানুষের চেষ্টার অন্ত নেই। বিপদে-আপদে, উৎসবে-আনন্দে, জন্ম-মৃত্যুতে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই অর্থের প্রয়োজন। কিন্তু অর্থের অযাচিত ব্যবহার সুখ ও কল্যাণের বদলে অকল্যাণ বয়ে আনে। অর্থের লোভে নীতিবর্জিত হয়ে মানুষ অহরহ নানা দুষ্কর্মে লিপ্ত হয়। অন্যায় পথে অর্জিত অর্থ মানুষকে বিবেকহীন ও দাম্ভিক করে তোলে। অর্থের লালসা মানুষের নৈতিক অধঃপতন ঘটায়। অর্থের লোভেই চরিত্রহীন হয়ে মানুষ সমাজবিরোধী কাজে লিপ্ত হয়। পৃথিবীর সকল দ্ব›দ্ব-সংঘাত ও অশান্তির মূলে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত থাকে অর্থ। অর্থ-সম্পদের স্বার্থেই রাষ্ট্রে রাষ্ট্রে যুদ্ধের উন্মাদনা জাগে, শ্রমিকে-মালিকে হয় মতবিরোধ, ভাইয়ে-ভাইয়ে শুরু হয় চরম শত্রæতা। অর্থের লোভেই মানুষ মানুষকে খুন করে। তাই বলা যায়, জগতের সব অশান্তি ও অনর্থের মূলে রয়েছে অর্থ। মন্তব্য : সুষ্ঠু সমাজজীবন ও স্বাভাবিক জীবন অতিবাহিত করার জন্য অর্থের প্রয়োজন অনস্বীকার্য। কিন্তু অর্থ যেন অনর্থের মূল না হয় সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। তাই অর্থ-সম্পদের ব্যবহার সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে। অর্থের সুষ্ঠু ব্যবহারই এর মর্যাদা বৃদ্ধি করে। অর্থসম্পত্তির বিনাশ আছে কিন্তু জ্ঞানসম্পদ কখনো বিনষ্ট হয় না। [কু. বো. ১৪] মূলভাব : পৃথিবীতে প্রতিটি বস্তুর ক্ষয় বা বিনাশ অনিবার্য। কিন্তু যে-সম্পদটির বিনাশ নেই বরং বিকাশ আছে তা হলো জ্ঞানসম্পদ। জ্ঞান অবিনাশী বলে একবার তা অর্জন করলে সারা জীবনের সম্পদ হিসেবে সঞ্চিত হয়। তাই জ্ঞানই মানুষের একান্ত নিজস্ব মহামূল্যবান সম্পদ। স¤প্রসারিত ভাব : মানুষের বেঁচে থাকার জন্য অর্থের বিকল্প নেই। অর্থের জন্য মানুষ উদয়-অস্ত কঠোর পরিশ্রম করে। অর্থ দ্বারাই আমরা ব্যক্তি ও সমাজজীবনে মানুষের অবস্থানকে নির্ণয় করে থাকি। কিন্তু এ অর্থসম্পদ কেবল মানুষের বাইরের দিকটিকেই প্রকাশ করে। অর্থ-সম্পদ যতই শক্তির অধিকারী হোক না কেন, জ্ঞানসম্পদের কাছে তা তুচ্ছ। সত্যিকারের জ্ঞানী ব্যক্তি বিত্তশালী লোকের চেয়ে অনেক বেশি ধনবান। বস্তুত অর্থ-সম্পদের কোনো স্থায়িত্ব নেই। আজকে রাজা, কালকে ফকির এ রকম দৃষ্টান্ত অনেক রয়েছে। বিত্তবানের ধনভাণ্ডার একসময়ে নিঃশেষ হয়ে আসে। কিন্তু বিদ্বানের জ্ঞানভাণ্ডার ক্রমশ সমৃদ্ধ হতে থাকে। সময়ের ব্যবধানে সে অধিকতর জ্ঞানী হতে থাকে। যিনি জ্ঞানী তিনি আমৃত্যু জ্ঞানরূপ সম্পদে সম্পদশালী। তাঁর জ্ঞানের ক্ষয় নেই। এমনকি মৃত্যুর পরেও তাঁর এই জ্ঞানের প্রাচুর্য পৃথিবীতে বিরাজ করে এবং জ্ঞানপিপাসুদের জ্ঞানতৃষ্ণা নিবারণ করে। এভাবেই জ্ঞানীরা মানুষের মনে অমরত্বের আসন লাভ করেন। তাই অর্থ-সম্পদে নয়, জ্ঞানসম্পদে সমৃদ্ধ ব্যক্তিগণই দেশ ও জাতির প্রকৃত সম্পদ, আর এ জন্যে অর্থসম্পদের মাপকাঠিতে নয়, বরং জ্ঞানসম্পদের মাপকাঠিতেই মানুষের মূল্যায়ন হওয়া উচিত। মন্তব্য : জ্ঞান অতুলনীয় সম্পদ। জীবনের মতোই এটি মহামূল্যবান। জ্ঞানার্জন ধনার্জনের চেয়েও মহত্তর। মানুষ তার স্বরূপকে ঐশ্বর্যমণ্ডিত করতে পারে শুধু জ্ঞান আহরণের মধ্য দিয়েই। জাগ্রত করতে পারে নিজের ক্ষমতাকে, সহায় হতে পারে বিশ্বমানবতার। “স্বদেশের উপকারে নাই যার মন, কে বলে মানুষ তারে পশু সেই জন।” অথবা, স্বদেশের প্রতি যার ভক্তি, শ্রদ্ধা, ভালোবাসা নেই সে পশুতুল্য। [কু. বো. ১৫, য. বো. ১৪, রা. বো. ১৪, চ. বো. ১৪, ব. বো. ১৪] মূলভাব : দেশপ্রেম ইমানের অঙ্গ। দেশের সেবায়, জাতির সেবায় আত্মনিয়োগ করা প্রতিটি নাগরিকের অবশ্য কর্তব্য। স¤প্রসারিত ভাব : প্রিয় স্বদেশ ঘিরেই মানুষের অন্তরে রচিত হয় নানা স্বপ্ন। দেশের গৌরবে মানুষ আনন্দে উদ্বেলিত হয়। আবার দেশের পরাজয়ে মানুষের অন্তরে নেমে আসে বেদনার ছায়া। একজন সচেতন মানুষ তার জন্মভ‚মিকে ভালো না বেসে

নবম-দশম শ্রেণির বাংলা ২য় ভাব-সম্প্রসারণ Read More »

নবম-দশম শ্রেণির বাংলা ২য় সারাংশ ও সারমর্ম

সারাংশ ও সারমর্ম কোনো পদ্য বা গদ্যের মূলভাব বা বক্তব্যকে সংক্ষিপ্ত আকারে প্রকাশ করার নামই সারমর্ম বা সারাংশ। সাধারণত পদ্যের ভাব সংক্ষেপে প্রকাশকে সারমর্ম এবং গদ্যের বক্তব্য সংক্ষেপে প্রকাশ করাকে সারাংশ বলে। সারমর্ম বা সারাংশ লেখার সময় : ১. যে পাঠটুকুর সারমর্ম বা সারাংশ রচনা করতে হবে, সেটুকু মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে। ২. বাড়তি বিষয় বর্জন করতে হবে। কখনো কোনো পাঠের মূল ভাব উপমা রূপকের আড়ালে থাকতে পারে, তা বুঝে মূল ভাব লিখতে হবে। ৩. সারাংশ বা সারমর্মে উপমা, রূপক-এসব বাদ দিয়ে লিখতে হবে। ৪. প্রত্যক্ষ উক্তি বর্জন করে পরোক্ষ উক্তিতে লিখতে হবে। ৫. মূল অংশে উদ্ধৃতি থাকলে প্রয়োজনে সেই উদ্ধৃতির ভাবটুকু উদ্ধৃতি ছাড়া লিখতে হবে। ৬. বাহুল্য বর্জনপূর্বক মূলভাব সংক্ষেপে লিখতে হবে। ৭. মূল বক্তব্যটি নিজের ভাষায় সাজিয়ে সহজ ও সাবলীল করে লিখতে হয়।  সারাংশ ভবিষ্যতের ভাবনা ভাবাই হলো জ্ঞানীর কাজ। পিঁপড়ে-মৌমাছি পর্যন্ত যখন ভবিষ্যতের জন্য ব্যতিব্যস্ত তখন মানুষের কথা বলাই বাহুল্য। ফকির-সন্ন্যাসী যে ঘর-বাড়ি ছেড়ে আহার-নিদ্রা ভুলে পাহাড়-জঙ্গলে চোখ বুঁজে বসে থাকে, সেটা যদি নিতান্ত গঞ্জিকার কৃপায় না হয়, তবে বলতে হবে ভবিষ্যতের ভাবনা ভেবে। সমস্ত জীব-জন্তুর দুটো চোখ সামনে থাকবার মানে হল ভবিষ্যতের দিকে যেন নজর থাকে। অতীতের ভাবনা ভেবে লাভ নেই। পণ্ডিতেরা ত বলে গেছেন, ‘গতস্য শোচনা নাস্তি’। আর বর্তমান সে-ত নেই বললেই চলে। এই যেটা বর্তমান সেই-এই কথা বলতে বলতে অতীত হয়ে গেল। কাজেই তরঙ্গ গোনা আর বর্তমানের চিন্তা করা, সমানই অনর্থক। ভবিষ্যৎটা হল আসল জিনিস। সেটা কখনও শেষ হয় না। তাই ভবিষ্যতের মানব কেমন হবে, সেটা একবার ভেবে দেখা উচিত। সারাংশ : বিচক্ষণ মানুষ কেবল ভবিষ্যৎ নিয়েই ভাবিত হন। অতীত গত হয়েছে বলে গুরুত্বহীন, আর বর্তমানও এত ক্ষণস্থায়ী যে তাও গুরুত্ব পেতে পারে না। বস্তুত ভবিষ্যৎকে উজ্জ্বল করার জন্য ভবিষ্যতের কর্মপন্থা নিয়ে ভাবনা-চিন্তাই দূরদর্শিতার লক্ষণ। শিক্ষা কেউ কাউকে দিতে পারে না। সুশিক্ষিত লোকমাত্রই স্বশিক্ষিত। আজকের বাজারে বিদ্যাদাতার অভাব নেই, এমনকি এক্ষেত্রে দাতাকর্ণেরও অভাব নেই এবং আমরা আমাদের ছেলেদের তাদের দ্বারস্থ করেই নিশ্চিত থাকি এই বিশ্বাসে যে, সেখানে থেকে তারা এতটা বিদ্যার ধন লাভ করে ফিরে আসবে যার সুদে তারা বাকি জীবন আরামে কাটিয়ে দিতে পারে, কিন্তু এ বিশ্বাস নিতান্ত অমূলক। মনোরাজ্যেও দান গ্রহণসাপেক্ষ, অথচ আমরা দাতার মুখ চেয়ে গ্রহীতার কথাটা একেবারে ভুলে যাই। এ সত্য ভুলে না গেলে আমরা বুঝতুম যে, শিক্ষকের সার্থকতা শিক্ষাদান করায় নয়, ছাত্রকে তা অর্জন করতে সক্ষম করায়। শিক্ষক ছাত্রকে শিক্ষার পথ দেখিয়ে দিতে পারেন, তার কৌতূহল উদ্রেক করতে পারেন, তার বুদ্ধি-বৃত্তিকে জাগ্রত করতে পারেন, মনোরাজ্যের ঐশ্বর্যের সন্ধান দিতে পারেন, তার জ্ঞানপিপাসাকে জ্বলন্ত করতে পারেন, এর বেশি আর কিছু পারেন না। সারাংশ : সুশিক্ষিত ব্যক্তিমাত্রই স্বয়ংশিক্ষিত। অপরের নিকট থেকে শিক্ষা গ্রহণের ভাবনা মস্ত বড় ভুল। আমরা শিক্ষকের কাজ ছাত্রকে লেখাপড়ার কাজে সাহায্য করা, তার হৃদয়ে জ্ঞানের পিপাসা বৃদ্ধি করা এবং কৌত‚হল সৃষ্টি করা। মানুষমাত্রই নিজে নিজের শিক্ষক। জ্ঞানের ব্যাপারে শিক্ষক সহায়ক মাত্র। অতীতকে ভুলে যাও। অতীতের দুশ্চিন্তার ভার অতীতকেই নিতে হবে। অতীতের কথা ভেবে ভেবে অনেক বোকাই মরেছে। আগামীকালের বোঝা অতীতের বোঝার সঙ্গে মিলে আজকের বোঝা সবচেয়ে বড় হয়ে দাঁড়ায়। ভবিষ্যৎকেও অতীতের মত দৃঢ়ভাবে দূরে সরিয়ে দাও। আজই তো ভবিষ্যৎ। ভবিষ্যৎ কাল বলে কিছু নেই। মানুষের মুক্তির দিন তো আজই। আজই ভবিষ্যতের কথা যে ভাবতে বসে সে ভোগে শক্তিহীনতায়, মানসিক দুশ্চিন্তায় ও স্নায়বিক দুর্বলতায়। অতএব, অতীতের এবং ভবিষ্যতের দরজায় আগল লাগাওÑ আর শুরু কর দৈনিক জীবন নিয়ে বাঁচতে। [ঢা. বো. ১১, ব. বো. ১৩] সারাংশ : অতীতের ব্যর্থতার জন্য আফসোস করে বর্তমানকে নষ্ট করা উচিত নয়। বরং বর্তমানকেই গুরুত্ব দেওয়া উচিত সবচেয়ে বেশি। কারণ, আজকের সাধনাই সম্ভাবনাময় ভবিষ্যৎকে বিনির্মাণ করবে। কারণ হতাশা জীবন শক্তিকে নিঃশেষিত করে। এটা স্মরণ রাখা কর্তব্য যে, পৃথিবীতে যেখানে এসে তুমি থামবে, সেখান হতেই তোমার ধ্বংস আরম্ভ হবে। কারণ তুমিই কেবল একলা থামবে, আর কেউ থামবে না। জগৎ প্রবাহের সঙ্গে সমগতিতে যদি না চলতে পার তো প্রবাহের সমস্ত সচল বেগ তোমার উপর এসে আঘাত করবে, একেবারে বিদীর্ণ বিপর্যস্ত হবে কিংবা অল্পে অল্পে ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে কালস্রোতের তলদেশে অন্তর্হিত হয়ে যাবে। হয় অবিরাম চল এবং জীবনচর্চা কর, নয় বিশ্রাম কর এবং বিলুপ্ত হও, Ñ পৃথিবীর এই রকম নিয়ম। [কু. বো. ০৮] সারাংশ : গতিময়তাই জীবন। গতির নিরন্তর ছন্দে প্রতিনিয়ত চলেছে জীবনপ্রবাহ। এই অবিরাম চলার মধ্যে যে গতি হারায় সেই হয়ে পড়ে নিশ্চল এবং মৃত। তাই জীবনের জন্য প্রয়োজন নিরন্তর চলমানতা। তা না হলে স্থবিরতা ও হতাশা গ্রাস করবে। রূপার চামচ মুখে নিয়ে জন্মায় আর ক’টি লোক। শতকরা নিরানব্বইটি মানুষকেই চেষ্টা করতে হয়, জয় করে জিততে হয় তার ভাগ্যকে। বাঁচে সেই যে লড়াই করে প্রতিক‚লতার সঙ্গে। পলাতকের স্থান জগতে নেই। সমস্ত কিছুর জন্যই চেষ্টা দরকার। চেষ্টা ছাড়া বাঁচা অসম্ভব। সুখ চেষ্টারই ফল-দেবতার দান নয়। তা জয় করে নিতে হয়, আপনা আপনি পাওয়া যায় না। সুখের জন্য দু’রকম চেষ্টা দরকার, বাইরের আর ভিতরের। ভিতরের চেষ্টার মধ্যে বৈরাগ্য একটি। বৈরাগ্যও চেষ্টার ফল, তা অমনি পাওয়া যায় না। কিন্তু বাইরের চেষ্টার মধ্যে বৈরাগ্যের স্থান নেই। সারাংশ : প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে প্রতিক‚লতার সঙ্গে সংগ্রাম করেই সৌভাগ্যকে ছিনিয়ে আনতে হয়। সৌভাগ্যবান সেই যে চেষ্টা করে, সংগ্রাম করে। যে চেষ্টা করে, সংগ্রাম করে সেই টিকে থাকে। বাঁচার অধিকার অর্জন করতে পারলেই সুখপাখি তার হাতে এসে ধরা দেয়। দুই ধরনের চেষ্টার মধ্যে বৈরাগ্য অন্যতম। বৈরাগ্যের জন্যও চেষ্টা দরকার। আজকের দুনিয়াটা আশ্চর্যভাবে অর্থের বা বিত্তের উপর নির্ভরশীল। লাভ ও লোভের দুর্নিবার গতি কেবল আগে যাবার নেশায় লক্ষ্যহীন প্রচণ্ডভাবে শুধু আত্মবিনাশের পথে এগিয়ে চলেছে। মানুষ যদি এই মূঢ়তাকে জয় না করতে পারে, তবে মনুষ্যত্ব কথাটাই হয়তো লোপ পেয়ে যাবে। মানুষের জীবন আজ এমন এক পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে সেখান থেকে আর হয়তো নামবার উপায় নেই, এবার সিঁড়িটা না খুঁজলেই নয়। উঠবার সিঁড়িটা না খুঁজে পেলে আমাদের আত্মবিনাশ যে অনিবার্য তাতে আর কোনো সন্দেহ থাকে না। [চ. বো. ১৫, সি. বো. ১৫, কু. বো. ১২] সারাংশ : আজকের দুনিয়ায় লক্ষ্যহীন নেশার মতো মানুষ কেবল ধন-সম্পদ বাড়ানোর প্রতিযোগিতা করছে। এই যে অর্থ ও সম্পদের দিকে মানুষের নেশা, সে-নেশা তার আত্মবিকাশের পথ সংকীর্ণ করবে। কাজেই আত্মবিনাশের হাত থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য ওপরে ওঠার সিঁড়ির সন্ধান পাওয়া প্রয়োজন। মনুষ্যত্ব ব্যাপক হারে লোপ পেতে থাকলে আমাদের ধ্বংস সময়ের ব্যাপার হয়ে দাঁড়াবে। মানুষ সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ প্রাণী। জগতের অন্যান্য প্রাণীর সহিত মানুষের পার্থক্যের কারণÑ মানুষ বিবেক ও বুদ্ধির অধিকারী। এই বিবেক, বুদ্ধি ও জ্ঞান নাই বলিয়া আর সকল প্রাণী মানুষ অপেক্ষা নিকৃষ্ট। জ্ঞান ও মনুষ্যত্বের উৎকর্ষ সাধন করিয়া মানুষ জগতের বুকে অক্ষয় কীর্তি স্থাপন করিয়াছে, জগতের কল্যাণ সাধন করিতেছে; পশুবল ও অর্থবল মানুষকে বড় বা মহৎ করিতে পারে না। মানুষ বড় হয় জ্ঞান ও মনুষ্যত্বের বিকাশে। জ্ঞান ও মনুষ্যত্বের প্রকৃত বিকাশে জাতির জীবন উন্নত হয়।

নবম-দশম শ্রেণির বাংলা ২য় সারাংশ ও সারমর্ম Read More »

নবম-দশম শ্রেণির বাংলা ২য় প্রতিবেদন

প্রতিবেদন প্রতিবেদন : প্রতিবেদন বলতে কোনো নির্দিষ্ট বিষয় সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্যানুসন্ধানভিত্তিক বিবরণী বোঝায়। কোনো ঘটনা, তথ্য বা বক্তব্য সম্পর্কে সুচিন্তিত বক্তব্য প্রদানই প্রতিবেদন। প্রতিবেদন কথাটি ইংরেজি রিপোর্ট কথাটির বাংলা পারিভাষিক শব্দ। সাধারণত কোনো বিষয়ের তথ্য-উপাত্ত, সিদ্ধান্ত, ফলাফল ইত্যাদি খুঁটিনাটি অনুসন্ধানের পর বিবরণী তৈরি করে কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা কোনো কর্তৃপক্ষের বিবেচনার জন্য প্রতিবেদন পেশ করা হয়। প্রতিবেদনের উদ্দেশ্য : প্র্রতিবেদনের উদ্দেশ্য হলো নির্দিষ্ট কোনো বিষয়বস্তু সম্পর্কে কর্তৃপক্ষকে সুস্পষ্টভাবে অবহিত করা। এর বক্তব্য হবে নিরপেক্ষতার বৈশিষ্ট্য অনুসারী। এতে জটিল বিষয়ের ব্যাখ্যা থাকবে। প্র্রতিবেদনে কোনো বিষয় সম্পর্কে মতামত প্র্রকাশ করা হয়। প্র্রতিবেদন কাজের সমন্বয় সাধন ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়তা করে। প্রতিবেদনের শ্রেণিবিভাগ : প্রতিবেদনকে নির্দিষ্টভাবে শ্রেণিবিভাগ করা সম্ভব নয়, কেননা বিষয়ের বৈচিত্র্য অনুযায়ী প্রতিবেদনও নানা প্রকার হয়ে থাকে। বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে প্রতিবেদনকে নানা নামে ও বিশেষণে অভিহিত করা হয়। তবে মোটাদাগে প্রতিবেদনকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়। যথা : ১. সংবাদ প্রতিবেদন : সংবাদপত্রে প্রকাশিত কোনো ঘটনাসম্পর্কিত প্রতিবেদনকে সংবাদ প্রতিবেদন বলে। নিজস্ব সংবাদদাতা বা প্রতিবেদক এবং বিভিন্ন দেশি-বিদেশি সংবাদ সংস্থার মাধ্যমে এসব সংবাদ সংগ্রহ করা হয়। ২. দাপ্তরিক বা প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন : দাপ্তরিক বা প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন এমন এক ধরনের বিবরণ যাতে প্রাতিষ্ঠানিক কোনো ঘটনা, স্থান, অবস্থা প্রভৃতি বিষয় যাচাই করে সে-সম্পর্কিত তথ্য, তত্ত¡, উপাত্ত তুলে ধরা হয়। দাপ্তরিক প্রতিবেদন দুই ধরনের হয়। যেমন : (ক) তদন্ত প্রতিবেদন : এটি কোনো ঘটনা, দুর্ঘটনা, গোলযোগ, হত্যাকাণ্ড ইত্যাদি সম্পর্কে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নির্দেশ তদন্ত সাপেক্ষে প্রকাশ করা হয়। (খ) কারিগরি প্রতিবেদন : এটি সাধারণত উন্নয়ন প্রকল্পের ব্যয়, প্রযুক্তিগত সম্ভাব্যতা, জনস্বার্থে অবদান, অর্থনৈতিক লাভালাভ ইত্যাদি বিষয়ে তথ্যভিত্তিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। প্রতিবেদনের উপযোগিতা : বর্তমান সমাজব্যবস্থায় প্রতিবেদনের সীমা-পরিসীমা যেমন তেমনি এর উপযোগিতা ও গুরুত্ব অপরিসীম। বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ বা বিবরণের জন্য প্রতিবেদনের কোনো বিকল্প নেই। প্রতিবেদনে কোনো বিশেষ ঘটনা বা বিষয়কে সরেজমিনে তদন্ত করে পরীক্ষা ও পর্যবেক্ষলব্ধ ফলাফল প্রকাশ করা হয় বলে, তা থেকে আলোচ্য বিষয় সম্পর্কে প্রয়োজনীয় খুঁটিনাটি তথ্য অবগত হওয়া যায়। কর্তৃপক্ষও সহজে সেই প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে সঠিক সিদ্ধান্ত নিরূপণ, সমন্বয়সাধন ইত্যাদি কাজে সহায়তা পাওয়া যায়। প্রতিষ্ঠানের সুষ্ঠু পরিচালনা, নীতি নির্ধারণে প্রতিবেদন সহায়ক হয়। একটি সাধারণ প্রতিবেদনের কাঠামো বা অংশবিভাজন একটি প্রতিবেদনকে প্রধানত চারটি ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন : ১. শিরোনাম ২. সূচনা অংশ ৩. বিষয়বস্তু ৪. প্রতিবেদকের নাম-ঠিকানা, স্বাক্ষর ও অন্যান্য বিষয়। ১. শিরোনাম : প্রতিবেদনের শিরোনাম আকর্ষণীয় হতে হবে। প্রতিবেদনের যেটা সারাংশ, কিংবা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ বা প্রতিবেদনের যেটা জরুরি অংশ সেটাই শিরোনাম হবে। শিরোনাম যথাসম্ভব ছোট রাখা আবশ্যক। ২. সূচনা অংশ : প্রতিবেদনের যেটা একেবারে সূচনাংশ তা প্রতিবেদনের বাকি অংশের তুলনায় গুরুত্ব বেশি। তার কারণ, এটির দ্বারা আকৃষ্ট হলে তবেই একজন পাঠক গোটা খবরটি পড়তে উৎসাহী হবেন। সূচনা অংশ এমনভাবে লেখা উচিত যেন প্রতিবেদনের বাদ বাকি অংশ সম্পর্কে পাঠকের কৌত‚হল জাগ্রত হয়। ৩. বিষয়বস্তু : এ অংশে প্রতিবেদনের শিরোনাম অনুযায়ী বিষয়বস্তুর তথ্যনির্ভর বস্তুনিষ্ঠ আলোচনা থাকবে। অর্থাৎ ‘কে, কী, কেন, কবে ও কোথায়, এসব প্রশ্নের মাধমে প্রতিবেদনের মূল বিষয়গুলো খুঁজে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো রেখে অপ্রয়োজনীয় কথাবার্তা ছাঁটাই করতে হবে এবং তথ্যনির্ভর সংবাদ উপস্থাপন করতে হবে। ৪. প্রতিবেদকের নাম-ঠিকানা, স্বাক্ষর ও অন্যান্য বিষয় : এ অংশে প্রতিবেদকের নাম-ঠিকানা, স্বাক্ষর, প্রতিবেদন তৈরির সময়, সংযুক্তি (কোনো প্রকার ছবি বা ডকুমেন্ট ইত্যাদি), তারিখ ইত্যাদি উল্লেখ করা যেতে পারে। প্রতিবেদন রচনায় অনুসরণীয় বৈশিষ্ট্য ১। সুনির্দিষ্ট কাঠামো : কোনো প্রতিবেদন প্রণয়নকালে একটি নির্দিষ্ট কাঠামো অনুসারে করতে হয়। এতে থাকবে একটি শিরোনাম, প্রাপকের নাম-ঠিকানা, আলোচ্য বিষয়ের সূচিপত্র, বিষয়বস্তু, তথ্যপঞ্জি, স্বাক্ষর, তারিখ ইত্যাদি। ২। সঠিক তথ্য : প্রতিবেদন রচিত হবে সঠিক তথ্যের ওপর ভিত্তি করে। তথ্যানুসন্ধানই হলো প্রতিবেদকের প্রধান কাজ। সেজন্য তথ্যের যথার্থতার ওপর বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করতে হবে। ৩। সম্পূর্ণতা : প্রতিবেদনে যেসব তথ্য পরিবেশিত হবে তা হতে হবে নির্ভুল ও সম্পূর্ণ নির্ভরযোগ্য। ৪। স্পষ্টতা : প্রতিবেদনের বক্তব্যের মধ্যে স্পষ্টতা থাকবে যাতে বক্তব্য বিষয় সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা লাভ সহজ হয়। ৫। সংক্ষিপ্ততা : প্রতিবেদন হতে হবে বাহুল্যবর্জিত। বক্তব্য হবে সুনির্বাচিত এবং কোনো অনাবশ্যক বক্তব্য সংযোজিত হতে পারবে না। ৬। সুন্দর উপস্থাপনা : প্রতিবেদনের উপস্থাপন হতে হবে আকর্ষণীয়। এর বক্তব্য যেন সহজ-সরল ভাষায় প্রকাশ পায় সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। ৭। সুপারিশ : প্রতিবেদনের উপসংহারে সুপারিশ সংযোজন করতে হবে, যাতে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ সমস্যা সম্পর্কে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারে। ১. তোমার এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পর্কে পত্রিকায় প্রকাশের জন্য একটি প্রতিবেদন রচনা করো। উত্তর : জুরাইন এলাকার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির করুণ চিত্র বিশেষ প্রতিবেদক : জুরাইন ঢাকার একটি স্বনামধন্য এলাকা। এখানে প্রায় ৩০ হাজার লোক বাস করে। অভিজাত এলাকা হওয়ায় এখানে বসতি গড়ার প্রতি অনেকেরই আগ্রহ রয়েছে। মানুষের চাহিদার দিকে খেয়াল রেখে এখানে নতুন নতুন আবাসন প্রকল্পও গড়ে উঠছে। তবে দুঃখজনক হলেও সত্য, বর্তমানে এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটেছে। গত দুই মাসে জরিপ করে দেখা যায়, এখানে ইতোমধ্যে প্রায় ৪টি ধর্ষণ, ২টি শিশু নির্যাতন এবং ১৫টি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। ছিনতাইয়ের কবলে পড়ে মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ, টাকা ইত্যাদি মূল্যবান সম্পদ হারানো এখানকার নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে। এলাকায় ক্ষমতাবান রাজনৈতিক ব্যক্তিদের দৌরাত্ম্য চোখে পড়ার মতো। অবৈধভাবে জমি দখল, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি ইত্যাদি ঘটনারও তথ্য পাওয়া যায়। এসব ব্যাপারে জনগণ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নিষ্ক্রিয় দর্শকের ভ‚মিকা পালন করে থাকে। পুলিশের কাছে সহায়তা চাইলেও কার্যকরী সহায়তা পাওয়া বেশ সময়সাপেক্ষ ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। ধর্ষণের ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে অনেক পিতা-মাতাই মেয়েকে স্কুলে পাঠানোর ব্যাপারে সংশয় প্রকাশ করেছেন। সন্তানের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করতে তারা অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন। এর পাশাপাশি যে কয়েকটি শিশু নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে তাও অত্যন্ত দুঃখজনক। বাসার গৃহপরিচারিকার ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেও নির্যাতনকারীরা অর্থের জোরে ছাড়া পেয়ে যাচ্ছে। এতে করে এলাকায় অনৈতিক কর্মকাণ্ড আরও বাড়তে পারে বলে মত দিয়েছেন সুশীল সমাজ। অনতিবিলম্বে যদি জুরাইন এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আনা যায় তবে এলাকাবাসীকে চরম পরিস্থিতির মুখে পড়তে হবে। এক্ষেত্রে সরকার এবং সাধারণ জনগণের একত্রিত অংশগ্রহণ আবশ্যক। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টাই উক্ত এলাকার সকল অনিয়ম ও অনৈতিক কর্মকাণ্ডকে প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে বলে আশা করা যায়। প্রতিবেদক শরিফুন নাহার জুরাইন, ঢাকা। ১৩/৫/২০১৬ [পত্রিকার ঠিকানাসংবলিত খাম আঁকতে হবে] ২. কামরুন্নেসা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আয়োজিত মহান একুশে ফেব্রæয়ারিÑ২০১৫-এর উদ্যাপন উপলক্ষে একটি প্রতিবেদন রচনা করো। উত্তর : মাননীয় প্রধান শিক্ষক, কামরুন্নেসা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় টিকাটুলি, ঢাকা। বিষয় : বিদ্যালয় আয়োজিত মহান একুশে ফেব্রæুয়ারির অনুষ্ঠানমালা বিষয়ে প্রতিবেদন। জনাবা, কামরুন্নেসা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে আয়োজিত একুশে ফেব্রæয়ারি উদ্যাপন সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন আপনার সদয় অবগতির জন্য উপস্থাপন করলাম। মহান একুশে ফেব্রæয়ারি উদ্যাপিত মহান একুশে ফেব্রæয়ারি-২০১৫ উদ্যাপন উপলক্ষে কামরুন্নেসা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করে। প্রভাতফেরি, পুষ্পস্তবক অর্পণ, কবিতা আবৃত্তি, দেশাত্মবোধক গান, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, নৃত্য, আলোচনাসভা ইত্যাদি আয়োজনের মধ্য দিয়ে দিবসটি পালিত হয়। প্রধান শিক্ষিকা জোবায়দা আকতারের নেতৃত্বে ভোর ৬টায় ব্যানার-ফেস্টুনসংবলিত

নবম-দশম শ্রেণির বাংলা ২য় প্রতিবেদন Read More »

নবম-দশম শ্রেণির বাংলা ২য় আবেদনপত্র

আবেদনপত্র ১. মনে করো তোমার নাম শাকিল। হঠাৎ করে তোমার বাবা গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ায় তোমার লেখাপড়া বন্ধ হতে বসেছে। এ অবস্থায় বিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ তহবিল থেকে সাহায্য চেয়ে প্রধান শিক্ষকের নিকট একখানি আবেদনপত্র লেখো। [সি. বো. ১৩, রা. বো ১৪, চ. বো. ১৪] বরাবর, প্রধান শিক্ষক, রাধানগর মাধ্যমিক বিদ্যালয়, গাজীপুর। বিষয় : বিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ তহবিল থেকে আর্থিক সাহায্য পাওয়ার জন্য আবেদন। মহোদয়, বিনীত নিবেদন এই, আমি আপনার বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির একজন ছাত্র। গত তিন বছর যাবৎ আমি এ স্কুলে পড়ালেখা করছি। পরীক্ষায় সব সময়ই আমি প্রথম হয়ে এক শ্রেণি থেকে অন্য শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হয়েছি। নবম শ্রেণিতেও আমার রোল নম্বর ০১। আমার বাবা একজন দরিদ্র কৃষক। পরিবারের ভরণপোষণ ছাড়াও আমাদের তিন ভাইবোনের লেখাপড়ার খরচ চালাতে তিনি হিমশিম খান। তবুও তিনি এ যাবৎ বিদ্যালয়ের যাবতীয় পাওনা পরিশোধ করে আমাদের পড়ালেখার খরচ চালিয়ে আসছিলেন। স¤প্রতি তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ায় আমাদের লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপμম হয়েছে। এমতাবস্থায় বিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ তহবিল থেকে আর্থিক সাহায্য বরাদ্দ করে আমার লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়ার জন্য আকুল আবেদন জানাচ্ছি। অতএব মহোদয়, আমার আবেদন মানবিকভাবে বিবেচনা করে আমাকে ছাত্রকল্যাণ তহবিল থেকে আর্থিক সাহায্যদানে বাধিত করবেন। বিনীত নিবেদক শাকিল চৌধুরী রোল নংÑ ০১, নবম শ্রেণি, মানবিক বিভাগ। ২. শিক্ষাসফরের গুরুত্ব উল্লেখ করে তোমার স্কুলের প্রধান শিক্ষকের নিকট শিক্ষাসফরে যাওয়ার অনুমতি চেয়ে একটি আবেদনপত্র লেখো। [ঢা. বো. ১৫, দি. বো. ১৫, সি. বো. ১২] বরাবর, প্রধান শিক্ষক, সরারচর শিবনাথ উচ্চ বিদ্যালয় বাজিতপুর, কিশোরগঞ্জ। বিষয় : শিক্ষাসফরে প্রেরণের জন্য আবেদন। মহোদয়, সবিনয় নিবেদন এই যে, আমরা আপনার বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী। প্রতিবছর এই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শিক্ষাসফরে গিয়ে থাকে। কিন্তু এ বছর এখনো এ বিষয়ে কোনো উদ্যোগ গৃহীত হয়নি। আমরা শিক্ষাসফরে যেতে চাই। ছাত্রজীবনে শিক্ষাসফরের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। যেকোনো ভ্রমণেই দেশ ও দেশের মানুষকে ভালোভাবে জানার সুযোগ হয়। শিক্ষাসফরের ফলে ব্যবহারিক শিক্ষার সঙ্গে বাস্তব জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা আরো সমৃদ্ধ হয়। আমরা এবার শিক্ষাসফরে ময়মনসিংহে যাওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করছি। ময়মনসিংহ একটি প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী শহর। এর মুক্তাগাছা থানা শিক্ষা-সংস্কৃতিতে খুব অগ্রগামী ছিল। সেখানে প্রাচীন জমিদারবাড়ি আছে। ময়মনসিংহ শহরে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এসেছিলেন। সে স্মৃতিচিহ্নও দেখা যাবে। তাছাড়া কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, আনন্দমোহন কলেজ, জয়নুল আবেদিন সংগ্রহশালা ইত্যাদিও আমাদের আগ্রহের কেন্দ্রে রয়েছে। এসব স্থান ও স্থাপনা দর্শন করে আমরা বিশেষ জ্ঞান অর্জন করতে সক্ষম হব। একদিনের এই সফরের সম্পূর্ণ ব্যয়ভার আমরা বহন করব। আমাদের সঙ্গে দুজন সিনিয়র শিক্ষক যেতে রাজি হয়েছেন। আপনার সম্মতি পেলে শিক্ষাসফরে যাওয়ার দিন ধার্য করে আমরা আমাদের অভিভাবকদের অনুমতি গ্রহণ করব। অতএব, মহোদয়ের কাছে বিনীত আবেদন, আমাদের শিক্ষাসফরে যাওয়ার সদয় অনুমতি দিয়ে এবং ময়মনসিংহে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা লাভের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করে বাধিত করবেন। বিনীতÑ নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পক্ষে দ্বীন ইসলাম তারিখ : ১১. ০৮. ২০১৬ ৩. মনে করো, তোমার বাবা একটি সরকারি ব্যাংকে চাকরি করেন। স¤প্রতি তোমার বাবার বদলি হয়েছে। তাই তোমাকেও তাঁর সাথে চলে যেতে হবে। এজন্য তোমার স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কাছে ছাড়পত্র চেয়ে আবেদন করো। [ঢা. বো. ১৪] বরাবর, প্রধান শিক্ষক, রাঙামাটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় রাঙামাটি। বিষয় : বিদ্যালয় থেকে ছাড়পত্র পাওয়ার জন্য আবেদন। মহোদয়, বিনীত নিবেদন এই যে, আমি আপনার বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির একজন ছাত্র। আমার বাবা একজন সরকারি ব্যাংক কর্মকর্তা। স¤প্রতি তাঁকে কক্সবাজার জেলা শহরে বদলি করা হয়েছে। তাই পরিবারের সবার সঙ্গে আমাকেও কক্সবাজার যেতে হচ্ছে। সেখানে নতুন করে ভর্তির জন্য এই বিদ্যালয়ের ছাড়পত্র প্রয়োজন। অতএব, অনুগ্রহপূর্বক আমাকে বিদ্যালয় ত্যাগের ছাড়পত্র দিয়ে বাধিত করবেন। নিবেদক, তাহসিন আহমেদ রোল নং Ñ ১২, ৯ম শ্রেণি, বিজ্ঞান বিভাগ রাঙামাটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, রাঙামাটি। তারিখ : ১৪. ০৬. ২০১৬ ৪. ধরো, তুমি এ.কে. উচ্চ বিদ্যালয়, দনিয়া, ঢাকার নবম শ্রেণির ছাত্র। তোমাদের স্কুলে একটি ‘বিজ্ঞান ক্লাব’ গঠনের অনুমতি চেয়ে প্রধান শিক্ষকের নিকট একখানা আবেদনপত্র লেখো। ১৮/০৭/২০১৬ বরাবর, প্রধান শিক্ষক, এ.কে. উচ্চ বিদ্যালয়, দনিয়া, ঢাকা। বিষয় : ‘বিজ্ঞান ক্লাব’ গঠনের অনুমতির জন্য আবেদন। মহোদয়, সবিনয় নিবেদন এই যে, আমরা আপনার বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রী। বেশ কিছুদিন থেকে আমরা স্কুলে বিজ্ঞানচর্চার জন্য একটি বিজ্ঞান ক্লাবের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছি। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির এই চরম উৎকর্ষের যুগে বিজ্ঞানচর্চা ছাড়া প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা সম্পূর্ণ হয় না। বিজ্ঞান ক্লাব গঠন করা হলে বিজ্ঞান বিষয়ে আলোচনা, তথ্য আদান-প্রদান, পত্রপত্রিকা প্রকাশ করা সম্ভব হবে। বিজ্ঞান বিষয়ে পড়াশোনা ও গবেষণা করে আমরা নতুন নতুন বিজ্ঞান প্রজেক্ট তৈরিতেও সফলতা অর্জন করব। এসব কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীরা আধুনিক ও বিজ্ঞানমনস্ক হয়ে উঠবে। অতএব, মহোদয়ের নিকট বিনীত প্রার্থনা, আমাদের বিদ্যালয়ে একটি ‘বিজ্ঞান ক্লাব’ গঠনের অনুমতি ও প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা প্রদান করে বাধিত করবেন। নিবেদকÑ নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পক্ষে আবদুস সালাম এ. কে. উচ্চ বিদ্যালয়, দনিয়া, ঢাকা। ৫. মনে করো, তোমার নাম সেলিম চৌধুরী। তোমার বিদ্যালয়ের নাম জয়পুর সরোজিনী উচ্চ বিদ্যালয়। অসুস্থতার জন্য তুমি তিন দিন বিদ্যালয়ে যেতে পারনি। অনুপস্থিতির ছুটি মঞ্জুরের জন্য প্রধান শিক্ষকের নিকট একটি আবেদনপত্র লেখো। ২৪/০৪/২০১৬ বরাবর প্রধান শিক্ষক জয়পুর সরোজিনী উচ্চ বিদ্যালয় ছাগলনাইয়া, ফেনী। বিষয় : অনুপস্থিতির ছুটি মঞ্জুরের জন্য আবেদন। জনাব, বিনীত নিবেদন এই যে, হঠাৎ জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার কারণে আমি গত ২১/০৪/২০১৫ থেকে ২৩/০৪/২০১৫ এ তিন দিন বিদ্যালয়ে উপস্থিত হতে পারিনি। অতএব, অনুগ্রহপূর্বক আমাকে উক্ত তিন দিনের ছুটি মঞ্জুর করে বাধিত করবেন। বিনীত নিবেদক আপনার একান্ত অনুগত ছাত্র সেলিম চৌধুরী শ্রেণিÑ ৯ম, শাখা- মানবিক রোলÑ ৭ ৬. মনে করো, তুমি রোকাইয়া শশী। আগামী ২৫শে জুন তোমার বড় বোনের বিয়ে। এ উপলক্ষে চার দিনের অগ্রিম ছুটি চেয়ে তোমার বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের নিকট একটি আবেদনপত্র লেখো। ২১/০৬/২০১৬ বরাবর প্রধান শিক্ষক ছয়সূতী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কুলিয়ারচর, কিশোরগঞ্জ। বিষয় : অগ্রিম ছুটির জন্য আবেদন। মহোদয়, সবিনয় নিবেদন এই যে, আগামী ২৫শে জুন আমার বড় বোনের শুভবিবাহ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এ বিষয়ে আমাকে বাড়িতে বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত থাকতে হবে। তাই আমার ২২শে জুন থেকে ২৫শে জুন পর্যন্ত মোট ৪ দিনের ছুটি অত্যন্ত প্রয়োজন। অতএব, অনুগ্রহপূর্বক আমাকে উক্ত ৪ দিনের ছুটি মঞ্জুর করে বাধিত করবেন। নিবেদক আপনার অনুগত ছাত্রী রোকাইয়া শশী ৯ম শ্রেণি, শাখাÑ বিজ্ঞান রোলÑ০১ ৭. মনে করো, তোমার নাম সিরাজ আহমেদ। তোমার বিদ্যালয়ের নাম গাজীরখামার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়। বিনা বেতনে অধ্যয়নের সুযোগ চেয়ে প্রধান শিক্ষকের নিকট একটি আবেদনপত্র লেখো। [য. বো. ১৫, ঢা. বো. ১৩, ব. বো. ১১, দি. বো. ১০] ০২/ ০৩/২০১৬ বরাবর প্রধান শিক্ষক গাজীরখামার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় গাজীরখামার, শেরপুর। বিষয় : বিনা বেতনে অধ্যয়নের জন্য আবেদন। জনাব, বিনীত নিবেদন এই যে, আমি আপনার বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণির বিজ্ঞান শাখার একজন নিয়মিত ছাত্র। প্রথম শ্রেণি হতেই আমি আপনার বিদ্যালয়ে পড়ছি এবং বরাবরই প্রথম হয়ে আসছি। আমার ছোট বোনও এই বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ছে। আমার মা দীর্ঘদিন থেকে শারীরিকভাবে অসুস্থ। তাঁর চিকিৎসার জন্য প্রতি মাসেই বেশ কিছু অর্থের প্রয়োজন হয়। আমার বাবা একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। বাবার সামান্য

নবম-দশম শ্রেণির বাংলা ২য় আবেদনপত্র Read More »

নবম-দশম শ্রেণির বাংলা ২য় পত্র রচনা

পত্র রচনা য় চিঠি বা পত্র : চিঠির আভিধানিক অর্থ হলো স্মারক বা চি‎‎‎হ্ন। তবে ব্যবহারিক অর্থে চিঠি বা পত্র লিখন বলতে বোঝায়, একের মনের ভাব বা বক্তব্যকে লিখিতভাবে অন্যের কাছে পৌঁছানোর বিশেষ পদ্ধতিকে। আরও সহজ করে বলা যায়, দূরের কিংবা কাছের কোনো আত্মীয়-স্বজন বা বন্ধু-বান্ধবের কাছে নিজের প্রয়োজনীয় কথাগুলো লিখে জানানোর পদ্ধতিকে চিঠি বা পত্র লিখন বলে। য় চিঠি বা পত্রের বিভিন্ন অংশ : একটি চিঠি বা পত্রে সাধারণত ছয়টি অংশ থাকে। এগুলো হলোÑ ১. যেখান থেকে চিঠি লেখা হচ্ছে সে জায়গার নাম ও তারিখ; ২. সম্বোধন বা সম্ভাষণ; ৩. মূল বক্তব্য; ৪. বিদায় সম্ভাষণ; ৫. প্রেরকের (যে চিঠি পাঠাচ্ছে তার) স্বাক্ষর ও ৬. প্রাপকের (যে চিঠি পাবে তার) নাম ও ঠিকানা। য় চিঠি বা পত্রের প্রকারভেদ : বিষয়বস্তু বিবেচনায় চিঠিকে তিনটি পর্যায়ে ভাগ করা যায়। যথাÑ ১. ব্যক্তিগত চিঠি। যেমনÑ মা-বাবা বা বন্ধু-বান্ধবকে ব্যক্তিগত বিষয় উল্লেখ করে লেখা চিঠি। ২. সামাজিক চিঠি। যেমনÑ সামাজিক কোনো সমস্যা জানিয়ে সংবাদপত্রে প্রকাশের জন্য কিংবা প্রশাসনকে জানানোর জন্য লেখা চিঠি। ৩. ব্যবহারিক চিঠি। যেমনÑ ব্যবহারিক প্রয়োজনে লেখা আবেদনপত্র, ব্যবসাপত্র, নিমন্ত্রণপত্র ইত্যাদি। য় চিঠি বা পত্র লেখার নিয়ম : চিঠি বা পত্র লেখার সময় সাধারণ কয়েকটি নিয়ম পালন করতে হয়। যেমনÑ ১. সুন্দর ও স্পষ্ট হস্তাক্ষরে লেখা; ২. সহজ, সরল ভাষায় লেখা; ৩. নির্ভুল বানানে লেখা; ৪. চলিত ভাষায় লেখা; ৫. বিরামচি‎েহ্নর যথাযথ ব্যবহার করা; ৬. একই কথার পুনরাবৃত্তি না করা; ৭. পাত্রভেদে সম্মান ও স্নেহসূচক বাক্য ব্যবহার ইত্যাদি।  ব্যক্তিগত পত্র ১. মনে করো, তুমি স¤প্রতি একটি নতুন উপন্যাস পড়েছো। নতুন এই বইটি পড়ার অভিজ্ঞতা জানিয়ে এবার তোমার বন্ধুকে একটি পত্র লেখো। [ব. বো. ১৫] উত্তর : আগ্রাবাদ, চট্টগ্রাম ০৮.০৮.২০১৬ ইং প্রিয় সুমন, পত্রের শুরুতেই আমার আন্তরিক প্রীতি ও শুভেচ্ছা নিয়ো। আশা করি পরম করুণাময়ের কৃপায় পরিবারের সবাইকে নিয়ে ভালো আছো। তোমার গত চিঠিতে তুমি আমার পড়া নতুন একটি বই সম্পর্কে জানতে চেয়েছিলে। চিঠির উত্তর দিতে দেরি হলো বলে আমি দুঃখিত। আজ তোমাকে এ সম্পর্কে জানাতেই আমি চিঠি লিখছি। স¤প্রতি আমি অপরাজেয় কথাশিল্পী শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘শ্রীকান্ত’ উপন্যাসের প্রথম পর্বটি পড়েছি। উপন্যাসটির কাহিনি মূল চরিত্র শ্রীকান্তের আত্মকথনের ওপর রচিত। গ্রন্থটির প্রায় অর্ধেক অংশজুড়েই রয়েছে শ্রীকান্ত ও ইন্দ্রনাথ নামের দুজন কিশোরের বিচিত্র কাহিনি। তবে ইন্দ্রনাথ চরিত্রটি আকস্মিকভাবে হারিয়ে যায় সপ্তম পরিচ্ছেদে। উপন্যাসের বাকি পাঁচটি পরিচ্ছেদে রয়েছে শ্রীকান্ত ও রাজল²ীর প্রণয়ের কাহিনি। উপন্যাসটিতে আরও কয়েকটি অপ্রধান চরিত্রের সমাবেশ লক্ষ করা যায়। এসব চরিত্রের মধ্যে রয়েছেÑ অন্নদাদি, নতুনদা, নিরুদি, রতন প্রমুখ। সব মিলিয়ে উপন্যাসটিতে যথেষ্ট বৈচিত্র্য রয়েছে। প্রতিটি চরিত্র যেন বিশেষ কোনো বার্তা দিচ্ছে। তাই আমার কাছে বইটি পাঠের অভিজ্ঞতা চির অমলিন হয়ে থাকবে। সুযোগ করে তুমিও পড়ে নিয়ো। আশা করি তোমার ভালো লাগবে। তোমার পরিবারের বড়দেরকে আমার সালাম এবং ছোটদের আদর দিয়ো। আমাদের জন্য দোয়া করো। ইতিÑ তোমার বন্ধু শোভন। ডাকটিকিট প্রেরক শোভন আগ্রাবাদ, চট্টগ্রাম প্রাপক মো. সুমন সোনারতরী ৩৩, স্যার ইকবাল রোড, খুলনা। ২. একুশের বইমেলা সম্পর্কে তোমার প্রবাসী বন্ধুকে চিঠি লেখো। অথবা, তোমার দেখা কোনো বইমেলার বর্ণনা দিয়ে বন্ধুকে পত্র লেখো। [কু. বো. ০৯, ০৭] সাভার, ঢাকা ২৫শে ফেব্রæয়ারি, ২০১৬ সুপ্রিয় কথা, অনেক দিন হয় তুমি কোনো চিঠি লেখোনি। অথচ তোমাকে আমার প্রায়ই মনে পড়ে। এই তো সেদিন বাংলা একাডেমি আয়োজিত একুশের বইমেলায় গিয়েছিলাম। তুমি এই শহর ছেড়ে গিয়েছ প্রায় তিন বছর, অথচ এরই মধ্যে একুশের বইমেলার যে কতটা পরিবর্তন হয়েছে নিজের চোখে না দেখলে তুমি বিশ্বাসই করতে পারবে না। বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে রাস্তার ওপর আগে যে স্টলগুলোর বরাদ্দ দেওয়া হতো, সেগুলো এখন আর নেই। দোকান বসে শুধু একাডেমির ভেতরে আর একটি অংশ বসে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। মেলার ভেতর কোনো রকম গান-বাজনা চালানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আইন-শৃঙ্খলার ব্যাপারটিও প্রশংসার দাবিদার। সর্বোপরি বইমেলাকে এখন আদর্শ বইমেলাই মনে হয়। এসব নিয়মনীতির জন্য ক্রেতা ও দর্শক সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। বইও বিক্রি হচ্ছে আগের তুলনায় বেশি। বাংলা একাডেমি আয়োজিত মাসব্যাপী এই বইমেলার প্রথম দিন থেকেই নেমেছিল জনতার ঢল। অগণিত মানুষের পদচারণে মুখর হয়ে ওঠে মেলার সুবিশাল অঙ্গন। পরিণত হয় লেখক-প্রকাশক-পাঠকের মিলনমেলায়। এবারের বইমেলার সবচেয়ে আলোচ্য বিষয় হচ্ছে নতুন লেখকদের প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা এবং বিক্রি ছিল বেশ আশাব্যঞ্জক। বাংলা একাডেমি ফেব্রæয়ারির পহেলা থেকে একটানা একুশ দিন আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকে। যে কয়দিন মেলায় গিয়েছি উপভোগ করেছি বৈচিত্র্যময় অনুষ্ঠানমালা। বইও কিনেছি বেশ কিছু। শীঘ্রই তোমার জন্য কয়েকটি বই পাঠিয়ে দেবো। আজ বিদায় নিচ্ছি। তোমার খবরাখবর জানিয়ে চিঠি দিয়ো। ইতি তোমার বান্ধবী সাথী [ঠিকানাসহ খাম হবে] ৩. স্কুলের শেষ দিনে তোমার মনের অবস্থা বর্ণনা করে বন্ধুর কাছে চিঠি লেখো। [রা. বো. ১৪, চ. বো. ০৯, সি. বো. ১৩] মোহাম্মদপুর, ঢাকা ২১শে ডিসেম্বর, ২০১৬ প্রিয় কবির, একটু আগে স্কুল থেকে ফিরেছি। মনটা দারুণ যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে। ভাবলাম তোমার কাছে দু-কলম লিখতে পারলে আমার বেদনাহত হৃদয় কিছুটা হয়তো শান্ত হবে। আজ আমার স্কুলজীবনের শেষ দিন। স্কুলের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক বিদায় সংবর্ধনার মাধ্যমে আমাদের বিদায় জানানো হয়। আমরা যারা পরীক্ষার্থী ছিলাম সবাই অন্য দিনের চেয়ে দু-ঘণ্টা আগেই স্কুলে এসে হাজির হয়েছি। কিন্ত আজ আর কারো মনে কোনো আনন্দ নেই, নেই কোনো চঞ্চলতা। সবার চোখেমুখে একটা বিষণœতার ছাপ। চারদিকে যেন বিদায়ের সকরুণ সুর বাজছে, সে ধ্বনি আকাশে-বাতাসে প্রতিধ্বনি হয়ে আমার হৃদয়কে ক্ষত-বিক্ষত করতে লাগল। মনে হলো সবচেয়ে বেশি কষ্ট বোধ হয় আমিই পাচ্ছি। আসলে এ-কষ্ট এবং দুঃখ কাউকে বোঝানো কিংবা বলা যায় না বলেই এর তীব্রতা এত বেশি। যথাসময়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়ে গেল। অনুষ্ঠানের শুরুতেই স্কুলের নবম শ্রেণির কৃতী ছাত্রী দোলা আমাদের সবাইকে ফুলের-মালা পরিয়ে দিল। সূচনা হলো বিদায়ের! ওবায়দুল স্যার সূচনা-ভাষণ দিলেন। একে একে সিনিয়র শিক্ষকগণ বক্তব্য রেখে আমাদের প্রতি তাদের প্রত্যাশা ব্যক্ত করলেন। স্কুলের শ্রেষ্ঠ ছাত্র হিসেবে আমাকে যখন বক্তব্য দেওয়ার জন্য বলা হলো, তখন আমি ভেবেই পাচ্ছিলাম না কীভাবে কথা বলব। দু-একটি কথা বলার পর আমি বাকরুদ্ধ হয়ে গেলাম। দু-চোখের জল বাধা মানল না। পনেরো সেকেন্ড পর অতি কষ্টে উচ্চারণ করলাম আমাদের জন্য দোয়া করবেন। এটুকু বলেই আমার বক্তব্য শেষ করতে হলো। সভাপতির ভাষণে বক্তব্য রাখলেন আমাদের পরম শ্রদ্ধাভাজন প্রধান শিক্ষক। তিনি আমাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করে চলার পথের পাথেয় সম্পর্কে নানা উপদেশ দিলেন। সবশেষে আমাদের সবাইকে উপহার হিসেবে একটি করে বই দেওয়া হলো। এরপর সংগীতানুষ্ঠান। বিদায়ের গানে বেদনার সুর বেজে উঠতেই আমাদের স্কুলজীবনের শেষ দিনের মুহূর্তগুলো হৃদয়পটে ছবির মতো আটকে গেল। এ-স্মৃতি কখনোই ভোলার নয়। সত্যিই, আজকের দিনে তোমাকে পাশে পেলে ভালো হতো। আজ এখানেই শেষ করছি। তাড়াতাড়ি চিঠি দিও। চাচা-চাচিকে সালাম জানিও। ইতি তোমার বন্ধু টুটুল [ঠিকানাসহ খাম হবে] ৪. এসএসসি পরীক্ষা পাসের পর তুমি বৃত্তিমূলক শিক্ষা গ্রহণ করতে চাও। এ ব্যাপারে যুক্তি দেখিয়ে তোমার বন্ধুর কাছে একটি চিঠি লেখো। ১৮ই জুন ২০১৬ প্রিয় পবন কেমন

নবম-দশম শ্রেণির বাংলা ২য় পত্র রচনা Read More »

নবম-দশম শ্রেণির বাংলা ২য় অনুচ্ছেদ

অনুচ্ছেদ বাক্য মনের ভাব প্রকাশের মাধ্যম। কিন্তু সব সময় একটি বাক্যের মাধ্যমে মনের সম্পূর্ণ ভাব প্রকাশ করা সম্ভব হয় না। এজন্য প্রয়োজন একাধিক বাক্যের। মনের ভাব সম্পূর্ণরূপে প্রকাশ করার জন্য পরস্পর সম্বন্ধযুক্ত বাক্যের সমষ্টিই অনুচ্ছেদ। অনুচ্ছেদে কোনো বিষয়ের একটি দিকের আলোচনা করা হয় এবং একটি মাত্র ভাব প্রকাশ পায়। অনুচ্ছেদ রচনার ক্ষেত্রে কয়েকটি দিকে লক্ষ রাখা প্রয়োজন। যেমন- ক) একটি অনুচ্ছেদের মধ্যে একটি মাত্র ভাব প্রকাশ করতে হবে। অতিরিক্ত কোনো কথা লেখা যাবে না। খ) সুশৃঙ্খলভাবে সাজানো বাক্যের মাধ্যমে বিষয় ও ভাব প্রকাশ করতে হবে। গ) অনুচ্ছেদটি খুব বেশি বড় করা যাবে না। লিখতে হবে একটি মাত্র প্যারায়। কোনোভাবেই একাধিক প্যারা করা যাবে না। ঘ) একই কথার পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। ঙ) যে বিষয়ে অনুচ্ছেদটি রচনা করা হবে তার গুরুত্বপূর্ণ দিকটি সহজ-সরল ভাষায় সুন্দরভাবে তুলে ধরতে হবে। অনুচ্ছেদের বক্তব্যে যেন স্বয়ংসম্পূর্ণতা প্রকাশ পায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। জাতীয় পতাকা জাতীয় পতাকা একটি জাতির স্বাধীনতার প্রতীক। বিশ্বের প্রতিটি জাতির তাদের নিজস্ব জাতীয় পতাকা আছে। আমাদের দেশেরও একটি জাতীয় পতাকা আছে। এই একটি পতাকার জন্য আমাদের অনেক রক্ত বিসর্জন দিতে হয়েছে। দীর্ঘ ৯ মাস যুদ্ধের পর আমরা এই পতাকাটি অর্জন করি। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের জাতীয় পতাকায় ঘন সবুজ রঙের ওপর একটি লাল বৃত্ত থাকে। দৈর্ঘ্য এবং প্রস্থে এর অনুপাত ১০:৬। লাল বৃত্তটির ব্যাসার্ধ পাতাকার দৈর্ঘ্যরে এক-পঞ্চমাংশ। সবুজ রং তারুণ্যদীপ্ত প্রাণশক্তির জয়গান এবং বাংলাদেশের সবুজ মাঠ ও চিরহরিৎ উপক্রান্তীয় বনভূমিকে তুলে ধরে। লাল বৃত্তটি একটি নবগঠিত জাতির নতুন আশা ও আকাক্সক্ষা সমন্বিত একটি উদীয়মান সূর্যকে চিহ্নিত করে। জাতীয় পতাকা আমাদের গর্বের প্রতিদিন গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ভবন এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর চূড়ায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। বিভিন্ন জাতীয় দিবসে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। বিশেষ কিছু দিবসে এটি অর্ধনমিত রাখা হয়। আমাদের জাতীয় পতাকা রাষ্ট্রের বৃহত্তর স্বার্থে সর্বদা আমাদের জীবন উৎসর্গ করতে প্রেরণা দেয়। এটি প্রতিনিয়ত স্বাধীন রাষ্ট্রের কথা মনে করিয়ে দেয়। এর মর্যাদা রক্ষায় আমাদের সদা সচেষ্ট থাকা উচিত। বাংলা নববর্ষ [ঢা. বো. ১৫] নববর্ষ সকল দেশের সকল জাতিরই আনন্দ উচ্ছ¡াস ও মঙ্গল কামনার দিন। পুরাতন বছরের জীর্ণতাকে ঝেড়ে ফেলে বছরের এই দিনটিতে নতুনকে আহŸান জানানো হয়। বাংলাদেশেও পয়লা বৈশাখে সকলের কল্যাণ প্রত্যাশা করে মহা ধুমধামের সাথে নববর্ষ উদ্যাপিত হয়। এটি বাংলাদেশের সর্বজনীন ও শ্রেষ্ঠ লোকউৎসব। প্রবল উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে ধর্ম-বর্ণ-গোত্র নির্বিশেষে সকল বাঙালি এই উৎসব পালন করে থাকে। বাঙালির জাতিসত্তা বিনির্মাণে এবং স্বাধীনতা অর্জনে নববর্ষের তাৎপর্যপূর্ণ ভ‚মিকা রয়েছে। সম্রাট আকবরের সময় বাংলা সনের গণনা শুরু হয় বলে ধারণা করা হয়। জমিদার ও নবাবেরা নববর্ষে পুণ্যাহ আয়োজন করতেন। পরবর্তীকালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পরিবার বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে নববর্ষ পালন করায় সে আয়োজন দেশময় ছড়িয়ে পড়ে। সবার মুখে লেগে থাকে হাসি, গায়ে থাকে রঙিন জামা। নববর্ষে হালখাতা, বৈশাখী মেলা, ঘোড়দৌড় এবং বিভিন্ন লোকমেলার আয়োজন করে সাধারণ মানুষ। সংস্কৃতি সংগঠন ছায়ানট নববর্ষে রমনার বটমূলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউট আয়োজন করে মঙ্গল শোভাযাত্রা। এতে আবহমান বাঙালির ঐতিহ্য উপস্থাপনের পাশাপাশি থাকে সমকালীন সমাজ-রাজনীতির সমালোচনাও। এছাড়াও নানা বর্ণিল আয়োজনে দিনটিকে বরণ করা হয়। এই দিনে প্রত্যেক বাঙালি নিজের, বন্ধুর, পরিবার ও দেশের সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে। কোনো ধর্ম-গোত্র-শ্রেণির বন্ধনে বাঁধা পড়ে না বাংলা নববর্ষের উদ্যাপন। ফলে আমাদের জাতিগত সংহতি ও ঐক্য সুদৃঢ় হয়। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ [ব. বো. ১৫] মুক্তিযুদ্ধ বাঙালি জাতির ইতিহাসের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য অধ্যায়। ১৯৭১ সালে এক রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতি অর্জন করে প্রাণপ্রিয় স্বাধীনতা। ত্রিশ লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে যে স্বাধীনতা তাকে চিরসমুন্নত রাখতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আমাদের প্রেরণা জোগাবে চিরদিন। ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ শাসন থেকে মুক্তি লাভ করলেও প্রকৃত মুক্তি আসেনি বাঙালি জাতির। ১৯৫২ সালে বাংলা ভাষার ওপর আঘাত, ৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট, ৫৮ সালে সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলন, ৬৬ সালের ৬ দফা, ৬৯ সালের গণ অভ্যুত্থানসহ বিভিন্ন গণ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বিকাশ লাভ করে আমাদের স্বাধীনতা আন্দোলন। ১৯৭০ সালের জাতীয় পরিষদের নির্বাচনে তৎকালীন আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করলেও পাকিস্তানিরা ক্ষমতা হস্তান্তর করতে গড়িমসি শুরু করে। তখনই চূড়ান্ত স্বাধীনতা আন্দোলন শুরু হয়। বঙ্গবন্ধু চূড়ান্ত ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণে স্বাধীনতার সংগ্রামের প্রস্তুতি গ্রহণের আহŸান জানান। পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী ২৫ই মার্চ মধ্যরাতে নিরীহ নিরস্ত্র বাঙালির ওপর আক্রমণ চালায়। হত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট, অগ্নিসংযোগসহ নানা ধরনের বর্বরতা চালায় দেশজুড়ে। বাংলারজনতা সম্মিলিতভাবে পাকিস্তানিদের অত্যাচার রুখে দেয়। দীর্ঘ নয় মাস ধরে রক্তক্ষয়ী সশস্ত্র যুদ্ধ চলে। অবশেষে ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর পাকিস্তানি বাহিনী আত্মসমর্পণ করলে বাংলাদেশ বিজয় লাভ করে। ৩০ লক্ষ শহিদের প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত হয় স্বাধীনতা। ১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চ থেকে ১৬ই ডিসেম্বর পর্যন্ত রক্তক্ষয়ী যুদ্ধই আমাদের মুক্তিযুদ্ধ। আমাদের মুক্তিযুদ্ধ আমাদের গৌরব, আমাদের চেতনা। এই চেতনাকে মনেপ্রাণে ধারণ করেই আমাদের জাতি গঠনে কাজ করতে হবে। একুশে বইমেলা একুশে ফেব্রæয়ারির সংগ্রামী চেতনাকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য ফেব্রæয়ারি মাসজুড়ে বিভিন্ন ধরনের আয়োজন করা হয়। এর মধ্যে অন্যতম আয়োজন হলো মহান একুশে বইমেলা। বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে ফেব্রæয়ারি মাসজুড়ে এ মেলা চলে। বইমেলা উপলক্ষে বই বিক্রেতা ও প্রকাশকরা নানা সাজে বইয়ের স্টল বা দোকান সাজিয়ে বসেন। এখানে বিভিন্ন ধরনের বইয়ের সমাহার ঘটে। বইমেলা উপলক্ষে প্রচুর নতুন বইমেলায় আসে। প্রতিষ্ঠিত লেখকদের পাশাপাশি নতুন লেখকদের বইও পাওয়া যায় এখানে। প্রতিদিন বইয়ের আকর্ষণে বই প্রেমিক মানুষেরা মেলা প্রাঙ্গণে ছুটে আসে। সাধারণ মানুষের পাশাপাশি লেখক, ভাষাবিদ ও বরেণ্য ব্যক্তিত্বরা বইমেলায় আসেন। লেখক ও পাঠকদের মিলনমেলায় রূপ নেয় এই মেলা। এটি বাংলা একাডেমির একটি মহৎ উদ্যোগ। এ বইমেলার ফলে পাঠকরা এক জায়গা থেকে তাদের পছন্দের বই কিনতে পারে। এছাড়া বই কেনার প্রতি সাধারণ মানুষের আগ্রহও তৈরি হয়। একুশের বইমেলা আমাদের সাহিত্য-সংস্কৃতিবোধ জাগ্রত করে। এ বইমেলা এখন আমাদের জাতীয় চেতনার সাথে সম্পৃক্ত। প্রিয় শিক্ষক সুন্দর এই পৃথিবীতে পিতা-মাতার বদৌলতে সন্তান জন্মলাভ করে ঠিকই কিন্তু সেই সন্তানের জীবনকে সার্থক এবং সফল করে তোলার পেছনে যাঁর অবদান সবচেয়ে বেশি, তিনি হলেন শিক্ষক। শিক্ষকের কাছে আমরা গ্রহণ করি জীবনের মূল্যবান পাঠ। জ্ঞানের পৃথিবীতে তিনি আমাদের দ্বিতীয়বার জন্মদান করেন। সুশিক্ষকের প্রভাব মানুষের জীবন চলার পথে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। যে শিক্ষক আমার হৃদয় মানসে ধ্রæবতারার মতো জেগে আছেন তিনি হলেন ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক জনাব বাবু হরিমন বিশ্বাস। তিনি আমাকে তাঁর সন্তানের মতো ভালোবাসতেন। সবসময় আমার যতœ নিতেন। তাঁর পাঠদান পদ্ধতি ছিল অনেক চমৎকার। আমাদের পারিবারিক জীবনে তিনি ছিলেন সবচেয়ে আকাক্সিক্ষত অতিথি। তাছাড়া পাঠ্য বইয়ের বাইরেও আমি যাতে জ্ঞান-বিজ্ঞানের বিষয় জানতে পারি সেজন্য তাঁর আগ্রহের অন্ত ছিল না। স্যার ছিলেন অনুভূতিপ্রবণ এক সুবিশাল ব্যক্তিত্ব। তিনি হৃদয় দিয়ে যা অনুভব করতেন তা সবার সামনে সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরতেন। তাই তিনি আজও আমার প্রিয় শিক্ষক এবং চিরদিন আমার জীবনাকাশে আদর্শের মূর্ত তারকা হয়েই প্রজ্জ্বলিত থাকবেন। পিতাÑমাতা সন্তানের নিকট পিতা-মাতার স্থান সবার ওপরে। পিতা-মাতার মতো প্রিয় ও শ্রদ্ধাভাজন সন্তানের কাছে আর কেউ

নবম-দশম শ্রেণির বাংলা ২য় অনুচ্ছেদ Read More »

Scroll to Top