নবম-দশম শ্রেণির বাংলা বাঙলা শব্দ
বাঙলা শব্দ হুমায়ুন আজাদ লেখক পরিচিতি : নাম হুমায়ুন আজাদ। জন্ম পরিচয় জন্ম তারিখ : ১৯৪৭ সালের ২৮শে এপ্রিল। জন্মস্থান : মুন্সীগঞ্জ জেলার বিক্রমপুরের অন্তর্গত রাড়িখাল গ্রাম। কর্মজীবন/ পেশা দীর্ঘদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেন। সাহিত্যসাধনা একাধারে কবি, ঔপন্যাসিক, প্রবন্ধকার, ভাষাবিজ্ঞানী ইত্যাদি নানা পরিচয়ে পরিচিত ছিলেন। উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ কাব্য : অলৌকিক ইস্টিমার, জ্বলো চিতাবাঘ, সব কিছু নষ্টদের অধিকারে যাবে, কাফনে মোড়া অশ্রæবিন্দু। উপন্যাস : ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইল, সব কিছু ভেঙে পড়ে। গল্পগ্রন্থ : যাদুকরের মৃত্যু। প্রবন্ধগ্রন্থ : নিবিড় নীলিমা, বাঙলা ভাষার শত্রæমিত্র, বাক্যতত্ত¡, লাল নীল দীপাবলি, কতো নদী সরোবর বা বাঙলা ভাষার জীবনী। পুরস্কার ও সম্মাননা সাহিত্যক্ষেত্রে তাৎপর্যপূর্ণ অবদানের জন্য তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কারসহ অনেক পুরস্কারে ভ‚ষিত হন। মৃত্যু ২০০৪ খ্রিষ্টাব্দের ১২ই আগস্ট। বহুনির্বাচনি প্রশ্নের উত্তর ১. বাঙলা ভাষার শতকরা কতটি শব্দ মৌলিক বা বাঙলা শব্দ? জ ক. ৫২টি খ. ৪৪টি গ. ৯৬টি ঘ. ৯৮টি ২. ‘কেষ্ট’ ও ‘রঙিন’ এ শব্দ দুটোকে বিকলাঙ্গ বলা হয় কেন? ক. এ দুটো সংস্কৃত শব্দ খ. এ দুটো প্রাকৃতের অবিকশিত রূপ গ. এ দুটো তদ্ভব শব্দ বলে ঘ. এ দুটোর উৎস অজ্ঞাত বলে [বিশেষ দ্রষ্টব্য – প্রশ্নটি ত্রæটিপূর্র্ণ। প্রাকৃতের অবিকশিত রূপ বলে লেখক কেষ্ট শব্দটিকে বিকলাঙ্গ বলেছেন। কিন্তু রঙিন শব্দটিকে বিকলাঙ্গ বলা যায় না। মূলত রঙিন শব্দটির পরিবর্তে রাত্তির হবে। সেক্ষেত্রে সঠিক উত্তর হবে খ।] ৩. ‘চন্দ’ শব্দটির সাথে নিচের সাদৃশ্যপূর্ণ শব্দ হলো Ñ ক. খল্প খ. দুগ্ধ গ. দ্রম্য ঘ. ঘড়া [বিশেষ দ্রষ্টব্য – প্রশ্নটি ত্রæটিপূর্র্ণ। চন্দ শব্দের পরিবর্তে চাঁদ বসালে সঠিক উত্তর হবে হবে ঘ। কারণ চাঁদ ও ঘড়া উভয়ই তদ্ভব শব্দ।] ৪. এরূপ সাদৃশ্যের কারণ কী? ক. এটি বাংলা শব্দ খ. এটি তৎসম শব্দ গ. এটি তদ্ভব শব্দ ঘ. এটি অর্ধতৎসম শব্দ [বিশেষ দ্রষ্টব্য – ৩ প্রশ্নের সাথে সংশ্লিষ্টতার কারণে এ প্রশ্নটিও ভুল।] সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর পণ্ডিত স্যার ক্লাসে প্রায়ই সংস্কৃত শব্দ ব্যবহার করেন। তাঁর মতে, বাংলা হলো সংস্কৃতের মেয়ে। অর্থাৎ সংস্কৃত ভাষা থেকেই বাংলা ভাষার জন্ম। এ বিষয়ে কৌত‚হলী বেশ কিছু শিক্ষার্থী শেকড়ের সন্ধানে গিয়ে দেখে যে, শুধু সংস্কৃত নয় বরং বিভিন্ন ভাষার শব্দ পরিবর্তিত, আংশিক পরিবর্তিত বা অপরিবর্তিত রূপের সমন্বয়ে গড়ে উঠেছে বাংলা ভাষার ভিত। তাই তারা মনে করে সংস্কৃতের সাথে বাংলা ভাষার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকলেও বাংলা ভাষাকে সংস্কৃতের মেয়ে বলা যায় না। ক. বাংলা ভাষার শতকরা কতটি তৎসম শব্দ? খ. ‘পরিবর্তনের স্রোতে ভাসা শব্দেই উজ্জ্বল বাংলা ভাষা’ লেখকের এরূপ মন্তব্যের কারণ কী? গ. উদ্দীপকে শিক্ষার্থীর অনুসন্ধানে ফুটে ওঠা বাংলা ভাষার শব্দের গতিপথের উন্মোচিত দিকটি ‘বাঙলা শব্দ’ প্রবন্ধের আলোকে ব্যাখ্যা করো। ঘ. বাংলা ভাষার শব্দভাণ্ডার সম্পর্কে পণ্ডিত মশাইয়ের বক্তব্যের যৌক্তকতা ‘বাঙলা শব্দ’ প্রবন্ধের আলোকে বিশ্লেষণ করো। ১ এর ক নং প্র. উ. ক্ষ বাংলা ভাষার শতকরা চুয়াল্লিশটি তৎসম শব্দ। ১ এর খ নং প্র. উ. ক্ষ পরিবর্তিত হতে হতে বাংলা ভাষার শব্দ বর্তমান পর্যায়ে পৌঁছেছে বলে লেখক প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি করেছেন। প্রাচীন ভারতীয় আর্যভাষার বিপুল পরিমাণ শব্দ নিয়মকানুন মেনে রূপ বদলিয়ে মধ্যভারতীয় আর্যভাষায় অর্থাৎ প্রাকৃত শব্দে পরিণত হয়। এই শব্দগুলো গা ভাসিয়ে দিয়েছিল পরিবর্তনের স্রোতে। প্রাকৃতে আসার পর আবার বেশ কিছু নিয়মকানুন মেনে তারা বদলে যায়। পরিণত হয় বাংলা শব্দে। এ পরিবর্তনের স্রেতে ভাসা শব্দেই উজ্জ্বল বাংলা ভাষা। ১ এর গ নং প্র. উ. ক্ষ উদ্দীপকের শিক্ষার্থীদের অনুসন্ধানে ফুটে ওঠা বাংলা ভাষার শব্দের গতিপথের উন্মোচিত দিকটি ‘বাঙলা শব্দ’ প্রবন্ধে উল্লিখিত বিভিন্ন ভাষা থেকে আসা শব্দের আলোচনার সাথে সংগতিপূর্ণ। বিভিন্ন ভাষার শব্দ বাংলা ভাষায় প্রবেশ করে ভাষাকে সমৃদ্ধ করেছে। দিন দিন মানুষ কঠিন শব্দ পরিহার করে সহজ শব্দ ব্যবহারে অভ্যস্ত হয়ে ওঠে। সেই ধারাবাহিকতায় চন্দ্র শব্দটি (চন্দ্রচন্দচাঁদ) চাঁদ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এভাবে প্রাচীন ভারতীয় আর্য ভাষার বিপুল পরিমাণ শব্দ পরিবর্তিত হয়ে প্রাকৃত ভাষায় রূপ নেয়। প্রাকৃত থেকে আরো একটু পরিবর্তিত হয়ে তা বাংলা শব্দে পরিণত হয়। বাংলা ভাষার শব্দভাণ্ডারের সমৃদ্ধিতে বিভিন্ন ভাষা থেকে আসা শব্দ গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করেছে। উদ্দীপকে সংস্কৃত ভাষানুরাগী পণ্ডিত স্যারের বক্তব্যের সত্যতা অনুসন্ধান করতে গিয়ে শিক্ষার্থীরা যে বাংলা ভাষায় উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশ সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করেছে সেই বিষয়টি আলোচিত হয়েছে। পণ্ডিত স্যার শিক্ষার্থীদের বলেছিলেন বাংলা হলো সংস্কৃতের মেয়ে। কিন্তু তারা তা মেনে নেয়নি। তারা শেকড়ের সন্ধান করতে গিয়ে জেনেছে সংস্কৃত নয় বরং বিভিন্ন ভাষার শব্দ পরিবর্তিত হয়ে বাংলার ভিত্তি গড়ে তুলেছে। একক কোনো ভাষার মাধ্যমে বাংলা ভাষা সমৃদ্ধ হয়নি। তাই উদ্দীপকের এই বিষয়টি ‘বাঙলা শব্দ’ প্রবন্ধে বাংলা ভাষার বিভিন্ন শব্দের উৎসমূল বিশ্লেষণের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। আর সেভাবেই তৎসম, অর্ধতৎসম, তদ্ভব, দেশি, বিদেশি শব্দের সমন্বয়ে বাংলা ভাষায় শব্দ ভাণ্ডার গড়ে উঠেছে। ১ এর ঘ নং প্র. উ. ক্ষ ‘বাঙলা শব্দ’ প্রবন্ধের আলোকে বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, বাংলা ভাষার সব শব্দ সংস্কৃত থেকে আসেনি। ফলে উদ্দীপকের পণ্ডিত স্যারের বক্তব্যের অসারতা প্রমাণিত হয়। ‘বাঙলা শব্দ’ প্রবন্ধে আমরা পাই, বাংলা ভাষার শরীর গড়ে উঠেছে তিন রকম শব্দ মিলে। সেগুলো হলো তৎসম, অর্ধতৎসম ও তদ্ভব। এই তিন ধরনের শব্দের সাথে দেশি ও বিদেশি শব্দ মিলে গড়ে উঠেছে বাংলা ভাষার শব্দভাণ্ডার। বাংলা ভাষার শব্দের শতকরা বায়ান্নটি শব্দ তদ্ভব ও অর্ধতৎসম। শতকরা চুয়াল্লিশটি তৎসম শব্দ। উদ্দীপকের পণ্ডিত স্যার মনে করেন বাংলা সংস্কৃতের মেয়ে। প্রকৃত প্রস্তাবে এ কথাটি আদৌ সত্য নয়। কারণ বাংলা ভাষার উৎপত্তি ও বিকাশে এককভাবে কোনো ভাষা অবদান রাখেনি। বরং নানা ভাষার বিভিন্ন শব্দ এসে এই ভাষাকে সমৃদ্ধ করেছে। ‘বাঙলা শব্দ’ প্রবন্ধে কোন ভাষার শব্দ কী হারে বাংলা ভাষায় প্রবেশ করেছে তাও তুলে ধরা হয়েছে। ভাষাবিজ্ঞানী হুমায়ুন আজাদ তাঁর ‘বাঙলা শব্দ’ প্রবন্ধে বাংলা ভাষার শব্দভাণ্ডারের সমৃদ্ধি এবং প্রচলিত ভাষাগুলো নিয়ে আলোচনা করেছেন। লেখক অত্যন্ত প্রাসঙ্গিকভাবে বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত শব্দগুলোর উৎপত্তি, বিকাশ ও ব্যবহার সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ মতামত তুলে ধরেছেন। প্রাচীন ভারতীয় আর্যভাষা থেকে রূপ বদল করে বাংলা ভাষায় স্থান করে নিয়েছে বহু শব্দ। আবার আদিবাসী ভাষা থেকে এসেছে দেশি শব্দ। অন্যদিকে বিদেশিদের আগমনের ফলে বেশ কিছু বিদেশি শব্দ বাংলা ভাষায় প্রবেশ করেছে। এসব বিষয় বিবেচনা করলে দেখা যায়, পণ্ডিত স্যারের বক্তব্য সঠিক নয়। কারণ বাংলা ভাষায় সব শব্দ সংস্কৃত ভাষা থেকে আসেনি। গুরুত্বপূর্ণ সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর গত কয়েকশত বছরে বিভিন্ন জাতি এই জনপদে এসেছে। তাদের মুখের ভাষা ছিল ভিন্ন ভিন্ন রকমের। ভিন্ন ভিন্ন এই ভাষাকে ধারণ করেছে আমাদের বাংলা ভাষা। কোল মুণ্ডা থেকে আর্য স¤প্রদায়, প্রাকৃতজনের ভাষার পথ ধরে আসা বিভিন্ন শব্দকে বাংলা ভাষা নিজের সন্তানের মতো কোলে তুলে নিয়েছে। এভাবেই পরিভ্রমণের পথ ধরে সমৃদ্ধ হয়েছে বাংলা ভাষা। ক. হুমায়ুন আজাদ কত সালে জন্মগ্রহণ করেন? ১ খ. ‘আমাদের সবচেয়ে প্রিয়রা’Ñ কথাটি বুঝিয়ে লেখো। ২ গ. উদ্দীপকের সাথে ‘বাঙলা শব্দ’ প্রবন্ধের সাদৃশ্য ব্যাখ্যা করো। ৩ ঘ. ‘বিভিন্ন পথ পরিভ্রমণের জন্য ভাষা টিকে
নবম-দশম শ্রেণির বাংলা বাঙলা শব্দ Read More »