নবম-দশম শ্রেণির বাংলা নিমগাছ
নিমগাছ বনফুল লেখক পরিচিতি : প্রকৃত নাম বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায়। জন্ম পরিচয় জন্ম তারিখ : ১৮৯৯ সালের ১৯শে জুলাই। জন্মস্থান : বিহারের পূর্ণিয়ার অন্তর্গত মণিহার গ্রাম। পিতৃপরিচয় ডা. সত্যনারায়ণ মুখোপাধ্যায়। শিক্ষা পূর্ণিয়ার সাহেবগঞ্জ ইংরেজি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিক, হাজারীবাগের সেন্ট কলম্বাস কলেজ থেকে আইএসসি এবং পাটনা মেডিক্যাল কলেজ থেকে এম.বি. পাস করেন। পেশা কর্মজীবন শুরু হয় মেডিক্যাল অফিসার হিসেবে। সাহিত্যিক পরিচয় ১৯১৮ সালে ‘শনিবারের চিঠি’তে ব্যঙ্গ-কবিতা ও প্যারডি লিখে সাহিত্য অঙ্গনে প্রবেশ ঘটে তাঁর। ‘প্রবাসী’ পত্রিকায় অভিনব এক-আধপাতার গল্প লেখেন, যেগুলো আঙ্গিকে ক্ষুদ্র অথচ বক্তব্যে তাৎপর্যপূর্ণ। উল্লেখযোগ্য রচনা গল্পগ্রন্থ : বনফুলের গল্প, বনফুলের আরো গল্প, বাহুল্য, বিন্দুবিসর্গ, অনুগামিনী, তন্বী, ঊর্মিমালা, দূরবীন। উপন্যাস : তৃণখণ্ড, কিছুক্ষণ, দ্বৈরথ, নির্মোক, সে ও আমি, জঙ্গম, অগ্নি। কাব্যগ্রন্থ : বনফুলের কবিতা, ব্যঙ্গ কবিতা, চতুর্দশপদী। জীবনী নাটক : শ্রীমধুসূদন, বিদ্যাসাগর। পুরস্কার ও সম্মাননা বিভিন্ন পুরস্কারসহ ‘পদ্মভ‚ষণ’ উপাধি লাভ করেন। মৃত্যু ১৯৭৯ সালের ৯ই ফেব্রæয়ারি কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন। অনুশীলনীর প্রশ্ন ও উত্তর বহুনির্বাচনি প্রশ্নের উত্তর ১. নিমগাছের ছাল নিয়ে লোকজন কী কাজে লাগায়? চ ক. সিদ্ধ করে খায় খ. ভিজিয়ে খায় গ. শুকিয়ে খায় ঘ. রান্না করে খায় ২. বাড়ির পাশে গজালে বিজ্ঞরা খুশি হয় কেন? জ ক. এটা দেখতে সুন্দর খ. এটা উপকারী গ. এটা পরিবেশবান্ধব ঘ. এটা আকারে ছোট নিচের উদ্দীপকটি পড়ে ৩ ও ৪ সংখ্যক প্রশ্নের উত্তর দাও : গফুরের প্রিয় ষাঁড় মহেশ। প্রায় আট বছর প্রতিপালন করে সে এখন বুড়ো হয়েছে। গফুর সাধ্যমত তার যতœ নেয়। পরিবারের কেউ তাকে চায় না। কিন্তু গফুর সন্তানস্নেহে তাকে লালন করে। নিজের খাবার না খেয়ে ঘরের চাল পেড়ে মহেশকে খেতে দেয়। ৩. উদ্দীপকের মহেশ-এর সাথে যে দিক দিয়ে ‘নিমগাছ’ গল্পটি সাদৃশ্যপূর্ণ তা হলোÑ ছ র. অবদান রর. প্রয়োজনীয়তা ররর. পরোপকার নিচের কোনটি সঠিক? ক. র ও রর খ. র ও ররর গ. রর ও ররর ঘ. র, রর ও ররর ৪. সাদৃশ্য থাকলেও নিমগাছটা কোন বিচারে ব্যতিμম? চ ক. উপেক্ষিত খ. উপকারী গ. আত্মত্যাগী ঘ. নিরহংকারী সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর রহিমদের বাড়িতে দীর্ঘ চলি−শ বছর যাবৎ কাজ করছেন আকলিমা খাতুন। এক কথায় তাদের সংসারটা শুধু বাঁচিয়ে রেখেছেন তা নয় বরং তাদের সমৃদ্ধির মূলে তার অবদান সীমাহীন। বয়সের ভারে আজ সে অক্ষম হয়ে বিদায় নিতে চায়। কেননা তার পক্ষে এখন আর গতর খাটানো অসম্ভব। তার এ প্রস্তাবে রহিম বলে, ‘আপনাকে কোথাও যেতে হবে না। জীবনের বাকি সময়টুকু আমাদের পরিবারের সদস্য হয়ে কাটাবেন।’ ক. চর্মরোগের অব্যর্থ মহৌষধ কোনটি? ১ খ. নিমগাছটি না কাটলেও কেউ তার যতœ করে না কেন? ২ গ. উদ্দীপকের আকলিমার সাথে ‘নিমগাছ’ গল্পের সাদৃশ্যপূর্ণ দিকটি তুলে ধরো। ৩ ঘ. উদ্দীপকটি ‘নিমগাছ’ গল্পের সমগ্রভাবকে নয় বরং বিশেষ একটা দিককে তুলে ধরেÑ যুক্তিসহ প্রমাণ করো। ৪ ১ এর ক নং প্র. উ. চর্মরোগের অব্যর্থ মহৌষধ নিমগাছের পাতা। ১ এর খ নং প্র. উ. ঔষধি গুণসম্পন্ন বলে নিমগাছ যতœ না করলেও বেড়ে ওঠে। আর ঔষধি গুণ আছে বলেই বাড়ির আশপাশে জন্মালে কেউ কাটে না। বনফুলের প্রতীকী ও তাৎপর্যপূর্ণ গল্প ‘নিমগাছ’। লেখক এখানে নিমগাছ ও নিমপাতার গুণাগুণ বর্ণনা করেছেন। নিমগাছ চর্মরোগ, কৃমিনাশক, পেটের পীড়া প্রভৃতি নিরাময়ে অব্যর্থ ওষুধ হিসেবে কাজ করে। নিমগাছের ছাল পাতা এবং নিমফল থেকে উৎপন্ন নিমতেল ওষুধ প্রসাধনী তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। নানাবিধ উপকারিতার জন্য এ গাছ কেউ সহজে কাটে না। ১ এর গ নং প্র. উ. স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও পরিবেশবান্ধব হিসেবে নিমগাছ যেমন উপকারী, আকলিমাও রহিমদের পরিবারে তেমনি উপকারী ও প্রয়োজনীয়। ‘নিমগাছ’ গল্পে লেখক নিমগাছের উপকারিতা তুলে ধরেছেন। নিম গাছের ছাল, পাতা, ফল খুবই উপকারী। গাছটি পরিবেশবান্ধব। এর ছাল, পাতা, ফল, চর্মরোগ, পেটের পীড়া, বমি প্রভৃতি নিরাময়ে খুব ভালো কাজ করে। কচি ডাল ভেঙে চিবালে দাঁত ভালো থাকে। কচি পাতা ভেজে বেগুনসহকারে খেলে যকৃতের খুব উপকার হয়। নিমের হাওয়া ভালো বলে এটিকে কেউ কাটতে দেয় না। উদ্দীপকের আকলিমা রহিমদের বাসায় কাজ করেন চল্লিশ বছর ধরে। ওই সংসারে তার অবদান অসামান্য ও সীমাহীন। বয়সের ভারে অক্ষম হয়ে পড়ায় তিনি বিদায় নিতে চান। তিনি মনে করেন তার প্রয়োজন ফুরিয়েছে। কিন্তু রহিম তাকে কোথাও যেতে দেয়নি। বরং পরিবারের সদস্য হয়ে বাকি জীবন কাটানোর পরামর্শ দিয়েছে। আকলিমার সাথে ‘নিমগাছ’ গল্পের নিমগাছের সাদৃশ্য রয়েছে। কারণ আকলিমা নিমগাছের মতো একই স্থানে থেকে পরের উপকার করেছেন। ওই পরিবারে সমৃদ্ধি এনে দিয়েছেন। উভয়ের কাজ পরের কল্যাণ। কিন্তু কেউ নিজের অবস্থান ছেড়ে যেতে পারেনি। আকলিমা শারীরিকভাবে অক্ষম হলেও তিনি একটা মায়ার জালে আটকা পড়েছেন। ১ এর ঘ নং প্র. উ. উদ্দীপকে আকলিমা খাতুনের শুধু পরার্থে বিশেষ অবদানের কথা বলা হয়েছে, ‘নিমগাছ’ গল্পের সমগ্রভাবকে পূর্ণাঙ্গভাবে তুলে ধরেনি। ‘নিমগাছ’ গল্পে লেখক নিমগাছের গুণাগুণের পাশাপাশি একটি গভীর সত্যকে তুলে ধরেছেন। নিমগাছের পাতা, বাকল, ফল প্রভৃতি ঔষধি গুণসম্পন্ন। নিমগাছের ছায়া ও বাতাস বিশেষ উপকারী। নিমগাছের নানা উপকারিতা আছে বলে মুরব্বিরা এই গাছ কাটতে নিষেধ করেন। কিন্তু এটি খুব অনাদরে অবহেলায় বিনা পরিচর্চায় বড় হয়ে থাকে। লেখকের শুধু নিমগাছের গুণাগুণ বর্ণনাই উদ্দেশ্য নয়। তিনি মানবজীবনের গভীর তাৎপর্যের দিকটিও তুলে ধরেছেন। এত গুণাগুণ সত্তে¡ও নিমগাছটি যেমন ময়লা-আবর্জনায় মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকে তেমনি বাড়ির গৃহকর্ম নিপুণা লক্ষী বউটা শুধু কাজ করে যায়, কোথাও যেতে পারে না। মনের কোনো ইচ্ছা আকাক্সক্ষা পূরণের সাধ্য তার নেই। উদ্দীপকে বর্ণিত হয়েছে গৃহকর্মী আকলিমা খাতুনের কথা। তিনি রহিমদের সংসারে চল্লিশ বছর ধরে কাজ করছেন। তিনি আজ বয়সের ভারে ভারাক্রান্ত। কাজ করার শক্তি হারিয়ে ফেলেছেন। তাই তিনি ভাবছেন তার প্রয়োজন ফুরিয়ে গেছে। তিনি এই সংসার ছেড়ে চলে যেতে চান যদিও সংসারে তার ছিল অসামান্য অবদান। কিন্তু রহিম তাকে চলে যেতে নিষেধ করে তাকে বলেছে পরিবারের সদস্য হয়ে থাকতে। রহিমদের পরিবারে উদ্দীপকের আকলিমা খাতুনের অবদান অপরিসীম। তার অবদানে ওই পরিবার সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে গেছে। অন্যদিকে ‘নিমগাছ’ গল্পে নিমগাছের উপকারিতার শেষ নেই। কিন্তু এটির কোনো চলৎশক্তি নেই, কোথাও যেতে পারে না। উদ্দীপকের আকলিমা হয়তো যেতে পারতেন তিনি কিন্তু এই বয়সে কোথায় যাবেন তাই রয়ে গেছেন। এছাড়া গল্পে একজন গৃহকর্মে নিপুণা ল²ী বউয়ের কথা চমৎকারভাবে শেষ লাইনে নিয়ে আসা হয়েছে। একটি লাইনে এই গৃহবধূর অব্যক্ত সব কথাই যেন প্রকাশিত হয়েছে। ষাট বছরের বৃদ্ধ মকবুলের সাথে বিয়ে হয় তেরো বছরের টুনির। ধানভানা থেকে শুরু করে জমির কাজ সবই মকবুল টুনির দ্বারা করায়। টুনির কর্মদক্ষতার জন্য মকবুলের চাচাতো ভাই মন্তু টুনির রূপে ও গুণে মুগ্ধ। টুনি মাঝে মাঝে স্বপ্ন দেখে মন্তুর সাথে চলে যাওয়ার। কিন্তু সে যেতে পারে না। ক. বাড়ির পাশে নিমগাছ গজালে কারা খুশি হয়? ১ খ. নিমগাছটার লোকটার সাথে চলে যেতে ইচ্ছে করে কেন? ২ গ. উদ্দীপকের মকবুল ‘নিমগাছ’ গল্পের কার প্রতিনিধি? ব্যাখ্যা করো। ৩ ঘ. “টুনি যেন ‘নিমগাছ’ গল্পের ল²ীবউ”Ñ তুমি কি একমত?
নবম-দশম শ্রেণির বাংলা নিমগাছ Read More »