নবম-দশম শ্রেণির বাংলা মমতাদি
মমতাদি মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় লেখক পরিচিতি : প্রকৃত নাম প্রবোধ কুমার বন্দ্যোপাধ্যায়। জন্ম পরিচয় জন্ম সাল : ১৯০৮। জন্মস্থান : বিহারের সাঁওতাল পরগনা। পৈতৃক নিবাস মুন্সীগঞ্জের বিক্রমপুর অঞ্চলের মালবদিয়ায় এবং মায়ের বাড়ি একই অঞ্চলের গাঁওদিয়ায়। পিতৃ-মাতৃ পরিচয় পিতার নাম : হরিহর বন্দ্যোপাধ্যায়। মাতার নাম : নীরদাসুন্দরী দেবী। শিক্ষা মেদিনীপুর জেলা স্কুল থেকে প্রথম বিভাগে ম্যাট্রিক ও বাঁকুড়া ওয়েসলিয় মিশন কলেজ থেকে প্রথম বিভাগে আইএসসি পাস করেন। এরপর গণিতে অনার্স নিয়ে কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজে বিএসসি ক্লাসে ভর্তি হন। সাহিত্যিক পরিচয় বন্ধুদের সঙ্গে বাজি ধরে ‘অতসীমামী’ গল্প রচনার মাধ্যমে সাহিত্যচর্চার সূচনা। মাত্র একুশ বছর বয়সে বিখ্যাত উপন্যাস ‘দিবারাত্রির কাব্য’ রচনা। তিনি পঞ্চাশটিরও বেশি উপন্যাস রচনা করেন। উল্লেখযোগ্য রচনা উপন্যাস : দিবারাত্রির কাব্য, পদ্মানদীর মাঝি, পুতুল নাচের ইতিকথা, জননী, চিহ্ন, শহরতলী, অহিংস, চতুষ্কোণ। গল্পগ্রন্থ : অতসীমামী ও অন্যান্য গল্প, প্রাগৈতিহাসিক, সরীসৃপ। মৃত্যু ১৯৫৬ সালের ৩রা ডিসেম্বর । বহুনির্বাচনি প্রশ্নের উত্তর ১. মমতাদির বেতন কত টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল? জ ক. ১০ টাকা খ. ১২ টাকা গ. ১৫ টাকা ঘ. ১৮ টাকা ২. চড় খাওয়ার বিষয়টি দিদি কেন গোপন রেখেছিলেন? ছ ক. লজ্জা পেয়ে খ. আত্মসম্মানের জন্য গ. বিপদের আশঙ্কায় ঘ. চাকরি যাওয়ার ভয়ে নিচের উদ্দীপকটি পড়ে ৩ ও ৪ সংখ্যক প্রশ্নের উত্তর দাও : মা মারা গেলে নিরাশ্রয় কেষ্টা বৈমাত্রেয় বোন কাদম্বিনীর বাড়িতে আশ্রয় নেয়। তার এই অনাকাক্সিক্ষত আগমন কাদম্বিনী ভালোভাবে নেয়নি বরং মনে মনে সে ভীষণ অখুশি। তাকে দিয়ে প্রতিনিয়ত সংসারের নানা কাজ করিয়ে নিচ্ছে। কারণে অকারণে তুচ্ছ বিষয় নিয়ে প্রায়ই দুর্ব্যবহার করে। নিরুপায় কেষ্টা সবকিছু নীরবে সহ্য করে। ৩. যে বিচারে কেষ্টা ও মমতাদি একসূত্রে গাঁথা তা হলোÑ চ র. দারিদ্র্য রর. অসহায়ত্ব ররর. নিরাশ্রয় নিচের কোনটি সঠিক? ক. র ও রর খ. রর ও ররর গ. র ও ররর ঘ. র, রর ও ররর ৪. একসূত্রে গাঁথা সত্তে¡ও মমতাদি ব্যতিμম হওয়ার কারণ। তিনিÑ ঝ ক. পরিশ্রমী খ. স্বল্পভাষী গ. সময়নিষ্ঠ ঘ. সাদরে গৃহীত সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর রাসেল ড্রাইভার হিসেবে যেমন দক্ষ তেমনি সৎ। প্রকৌশলী এমারত সাহেব তাকে ব্যক্তিগত ড্রাইভার হিসেবে নিয়োগ দেন। ইফতি, সনাম ও শিলাকে স্কুলে নিয়ে যাওয়া-আসাই তার প্রধান কাজ। ঘরের সবাই ওকে ভীষণ ভালোবাসে। ইফতিরা ওকে ভাইয়া বলে ডাকে, একসাথে খায়, গল্প করে, বেড়াতে যায়। রাসেলের প্রতি সন্তানদের এই আচরণে এমারত সাহেব ভীষণ খুশি। ক. মমতাদির বয়স কত ছিল? ১ খ. মমতাদির চোখ সজল হয়ে উঠেছিল কেন? ২ গ. উদ্দীপকে রাসেলের মাঝে বিদ্যমান মমতাদির বিশেষ গুণটি ব্যাখ্যা করো। ৩ ঘ. রাসেল ও মমতাদির প্রতি দুই পরিবারের আচরণের ফুটে ওঠা দিকটি সামাজিক সংহতি সৃষ্টিতে কতটুকু প্রভাব ফেলে? যুক্তিসহ বিশে−ষণ করো। ৪ ১ এর ক নং প্র. উ. ক্ষ মমতাদির বয়স ছিল ২৩ বছর। ১ এর খ নং প্র. উ. ক্ষ আশাতিরিক্ত মাইনে নির্ধারণ করায় মাইনের কথা জেনে মমতার দুচোখ কৃতজ্ঞতায় সজল হয়ে উঠল। মমতা অভাবের তাড়নায় পর্দা ঠেলে উপার্জনের জন্য বাইরে এসেছে। তার স্বামীর চার মাস ধরে চাকরি নেই। তাই সে গৃহকর্মীর কাজ নেয়। সে এই কাজ করতে গিয়ে সর্বোচ্চ বারো টাকার মতো বেতন আশা করেছিল। কিন্তু গৃহকর্ত্রী পনেরো টাকা বেতন নির্ধারণ করেন। এ কারণে কৃতজ্ঞাতায় মমতার দুচোখ সজল হয়ে উঠল। ১ এর গ নং প্র. উ. ক্ষ উদ্দীকের রাসেলের মধ্যে বিদ্যমান মমতাদির বিশেষ গুণটি হচ্ছে দক্ষতা ও সততা। ‘মমতাদি’ গল্পের মমতাদি দরিদ্র হলেও সে ছিল অত্যন্ত সৎ। গৃহকর্ত্রীর বাড়িকে নিজের বাড়ি মনে করে সুনিপুণভাবে সব কাজ সম্পন্ন করেছে। কখনও ফাঁকি দেওয়ার কথা ভাবেনি। সে ছিল অত্যন্ত সৎ এবং নিজ কাজে ছিল অত্যন্ত দক্ষ। নিখুঁতভাবে সকল কাজ সম্পন্ন করত সে। উদ্দীপকের রাসেল একজন দরিদ্র ড্রাইভার হলেও সে ছিল অত্যন্ত সৎ এবং দক্ষ। সে তার কর্তব্যনিষ্ঠা ও সততা দিয়ে মালিক এমারত সাহেব ও তার পরিবারের আস্থাভাজন হয়ে উঠেছে। এমারত সাহেবের সন্তানেরা তাকে পরিবারের একজন হিসেবে মনে করেছে। ফলে সকলের সাথে তার গড়ে উঠেছে গভীর সম্পর্ক। সুতরাং গল্পের মমতাদি চরিত্রের দক্ষতা এবং সততার গুণটিই উদ্দীপকে রাসেলের মধ্যে বিদ্যমান। ১ এর ঘ নং প্র. উ. ক্ষ রাসেল ও মমতাদির প্রতি দুই পরিবারের সৌহার্দ্যপূর্ণ আচরণ সামাজিক সংহতি সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। ‘মমতাদি’ গল্পের মমতাদি চরিত্রটি মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের এক অসাধারণ সৃষ্টি। মর্যাদাসম্পন্ন ঘরের নারীর হয়েও সে অভাবের তাড়নায় অন্যের বাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ নেয়। তার সততা, চরিত্র মাধুর্য ও কর্মদক্ষতায় সে সহজেই গৃহকর্ত্রীসহ সকলের মন জয় করে নেয়। গৃহকর্ত্রীও ছিলেন অত্যন্ত উদার মনের মানুষ। মমতাদিকে কখনও গৃহকর্মী ভেবে তুচ্ছ জ্ঞান করেননি। বরং যথাযথ মর্যাদাপূর্ণ ও সম্মানজনক আচরণ করেছেন। উদ্দীপকের ড্রাইভার রাসেল যেমন সৎ তেমনি দক্ষ। এমরাত সাহেবের সন্তানদের স্কুলে আনা-নেওয়াই তার কাজ। সে তার সব কাজ নিষ্ঠা ও দক্ষতার সাথে করেছে। শিশুরা তাকে ভাইয়া বলে ডকে। একসাথে খেলে, ঘোরে, গল্প করে। সন্তানদের আচরণে এমারত সাহেবও খুশি। মোটকথা একজন ড্রাইভারের সাথে তার পরিবার অত্যন্ত মানবিক আচরণ করেছে। তার নিজের পরিবারের সদস্যের মতো ব্যবহার করেছে। ‘মমতাদি’ গল্পে স্কুল-পড়–য়া ছেলেটির পরিবার যেমন মমতাদির সাথে মানবিক ও মর্যাদাপূর্ণ আচরণ করেছে উদ্দীপকের ড্রাইভার রাসেলের সাথেও এমারত সাহেবের পরিবার ও সন্তানেরা অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ আচরণ করেছে। দুটি পরিবারের এই আচরণ সামাজিক সংহতি সৃষ্টিতে যথেষ্ট ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। উঁচু-নীচু প্রভেদ ভুলে প্রতিটি মানুষের সাথে এমনি করে মানবিক আচরণ করলে সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে। আভিজাত্য ও প্রতিপত্তির মিথ্যা অহংকারেই সমাজে সব অনাচার ও অশান্তি সৃষ্টি হয়। মমতাদি ও ড্রাইভার রাসেলের সাথে যে আচরণ করা হয়েছে তাতে মনুষ্যত্বেরই জয় ঘোষিত হয়েছে। তাই সবাইকে এ ধরনের আচরণেই অভ্যস্ত হওয়া প্রয়োজন। গুরুত্বপূর্ণ সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর দারিদ্র্যের কারণে নিলুফা বেশি পড়াশোনা করতে পারেনি। এসএসসি পাস করে সে একটি হাসপাতালে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী হিসেবে কাজ করছে। কাজের প্রতি তার দায়িত্বশীলতা দেখে প্রতিষ্ঠানের প্রায় সবাই তার প্রশংসা করে। তবে মাঝেমধ্যে কারও কটু কথা শুনলে তার মনে খুব দুঃখ লাগে। সে মর্মাহত হয়। ক. মমতাদির বয়স কত? ১ খ. মমতাদি লেখকের বাড়িতে কাজ নিয়েছিল কেন বুঝিয়ে লেখো। ২ গ. উদ্দীপকের নিলুফা ও ‘মমতাদি’ গল্পের মমতাদি চরিত্রের সাদৃশ্যপূর্ণ দিকটি ব্যাখ্যা করো। ৩ ঘ. “উদ্দীপকের বিষয়বস্তু ‘মমতাদি’ গল্পের সামগ্রিক ভাব ধারণ করে না।”Ñ যুক্তিসহকারে উক্তিটি ব্যাখ্যা করো। ৪ ২ নং প্র. উ. ক. মমতাদির বয়স তেইশ বছর। খ. সংসারে দারিদ্র্যের কারণে মমতাদি লেখকের বাড়িতে কাজ নিয়েছিলো। ক্ষ মমতাদি একজন মর্যাদাসম্পন্ন ঘরের নারী। কিন্তু সংসারে প্রচণ্ড অভাবের কারণে তাকে পর্দা ঠেলে বাইরে আসতে হয়েছে। তার স্বামীর চার মাস ধরে চাকরি নেই। ঘরে খাবার নেই। তীব্র অভাবে বাধ্য হয়ে মমতাদি বাইরে এসেছে এবং কাজ খুঁজতে বেরিয়েছে। আর এই প্রেক্ষাপটেই তিনি লেখকের বাড়িতে কাজ নিয়েছেন। গ. কাজের প্রতি আন্তরিকতা ও দায়িত্বশীলতার দিক থেকে উদ্দীপকের নিলুফা ও ‘মমতাদি’ গল্পের মমতাদি চরিত্রটি সাদৃশ্যপূর্ণ।
নবম-দশম শ্রেণির বাংলা মমতাদি Read More »