স্বাস্থ্য টিপস

ওজন কমাতে টক দই খাওয়ার নিয়ম

ওজন কমাতে টক দই খাওয়ার নিয়ম

ওজন কমানোর কথা ভাবছেন? টক দই হতে পারে আপনার অন্যতম সেরা সমাধান। এটি শুধু সুস্বাদুই নয়, এর স্বাস্থ্যগত উপকারিতাও অনেক, বিশেষ করে ওজন নিয়ন্ত্রণে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে, টক দই শরীরের ফ্যাট কমাতে, মেটাবলিজম বাড়াতে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এতে থাকা প্রোটিন ও প্রোবায়োটিক আপনাকে দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখতে সাহায্য করে, যার ফলে আপনি সারাদিন কম ক্যালোরি গ্রহণ করেন। আপনি কি জানেন যে এটি খাওয়ারও কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম আছে? টক দই কেন ওজন কমাতে সহায়ক এবং এটিকে আপনার খাদ্যতালিকায় কিভাবে যুক্ত করবেন তার কিছু কার্যকরী উপায় সম্পর্কে আজকের এই লেখায় তুলে ধরবো! টক দই যেভাবে ওজন কমাতে সাহায্য করে পুষ্টিবিদদের মতে, টক দই আপনার পেট ভরা রাখার পাশাপাশি শরীরের মেটাবলিজমকে চাঙ্গা করে ও হজমতন্ত্রকে সুস্থ রাখে। এই সব কিছু মিলেই আপনার ওজন কমাতে দারুণ সাহায্য করে: দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখে: টক দইয়ে থাকা প্রোটিন সহজে হজম হতে চায় না, তাই এটি খাওয়ার পর আপনার পেট অনেকক্ষণ ভরা থাকে। ফলে ঘন ঘন ক্ষুধা লাগে না ও টুকটাক স্ন্যাকস খাওয়ার ইচ্ছাও কমে যায়, যা কম ক্যালোরি গ্রহণে সাহায্য করে। হজম শক্তি বাড়ায়: টক দইয়ের প্রোটিন আপনার শরীরের মেটাবলিজম বা হজম শক্তিকে বাড়িয়ে দিতে পারে। এর মানে হলো, আপনার শরীর সারাদিন আরও বেশি ক্যালোরি বার্ন করবে, এমনকি যখন আপনি বিশ্রাম নিচ্ছেন তখনও। সুস্থ অন্ত্র, সুস্থ শরীর: টক দইয়ে আছে উপকারী প্রোবায়োটিক, যা আপনার অন্ত্রের পরিবেশকে স্বাস্থ্যকর রাখে। একটি সুস্থ হজমতন্ত্র আপনার ওজন কমানোর প্রক্রিয়াকে দারুণভাবে প্রভাবিত করতে পারে। চর্বি শোষণে বাধা: কিছু গবেষণায় ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে যে টক দইয়ের ক্যালসিয়াম খাদ্যের চর্বি অন্ত্রে শোষণে কিছুটা বাধা দিতে পারে। পেশী ধরে রাখে: ওজন কমানোর সময় পেশী কমে যাওয়া একটি সাধারণ সমস্যা। কিন্তু টক দইয়ের প্রোটিন আপনার পেশী ভর বজায় রাখতে সাহায্য করে। পেশী যত বেশি থাকবে, আপনার মেটাবলিজম তত সক্রিয় থাকবে। দই কেনার আগে যা খেয়াল রাখবেন ওজন কমানোর জন্য ভালো দই গুরুত্বপূর্ণ তাইকেনার সময় কিছু বিষয় খেয়াল রাখা জরুরি: মিষ্টি দই নয়, টক দই: সবসময় সাদা, চিনিবিহীন টক দই বেছে নিন। ফ্লেভারযুক্ত বা মিষ্টি দইয়ে প্রচুর পরিমাণে চিনি থাকে, যা ওজন বাড়াতে পারে। পরিমাণের দিকে নজর দিন: টক দই স্বাস্থ্যকর হলেও, অতিরিক্ত খেলে ক্যালোরি বেড়ে যেতে পারে। আপনার ওজন কমানোর পরিকল্পনা অনুযায়ী সঠিক পরিমাণে টক দই খান। সুষম খাবারের অংশ: টক দই ওজন কমানোর জন্য দারুণ হলেও, এটি কোনো ম্যাজিক বা শর্টকাট নয়। সেরা ফল পেতে হলে টক দইকে আপনার সুষম খাদ্য ও স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রার (নিয়মিত ব্যায়াম, পর্যাপ্ত ঘুম) অংশ করে তুলুন। ওজন কমাতে টক দই খাওয়ার সঠিক নিয়ম ও ব্যবহার আপনার দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় টক দইকে কীভাবে অন্তর্ভুক্ত করলে সবচেয়ে ভালো ফল পাওয়া যাবে, তার কিছু কার্যকরী উপায় নিচে দেওয়া হলো: সঠিক দই  সর্বদা সাদা, চিনিবিহীন টক দই বেছে নিন। এতে কোনো অতিরিক্ত চিনি বা কৃত্রিম উপাদান নেই তা নিশ্চিত করুন। ঘরে পাতা টক দই এক্ষেত্রে সেরা বিকল্প। খাওয়ার সেরা সময় সকালের নাস্তায়: সারাদিনের জন্য পেট ভরা রাখতে এবং মেটাবলিজমকে চাঙ্গা করতে সকালে টক দই দিয়ে দিন শুরু করতে পারেন। দুপুরের খাবারে: ভাত বা রুটির সাথে সালাদের ড্রেসিং হিসেবে বা শুধু এক বাটি টক দই যোগ করুন। এটি খাবারকে সুষম ও হালকা করবে। বিকেলের স্ন্যাকস: যখন হালকা ক্ষুধা লাগে, তখন অস্বাস্থ্যকর স্ন্যাকসের বদলে এক বাটি টক দই খান। ব্যায়ামের পর: পেশী রিকভারি এবং প্রোটিনের চাহিদা মেটাতে ব্যায়ামের ৩০-৬০ মিনিট পর টক দই একটি আদর্শ খাবার। টক দইকে মজাদার করুন, কিন্তু স্বাস্থ্যকর উপায়ে শুধুই টক দই খেতে একঘেয়ে লাগতে পারে। এটিকে সুস্বাদু করতে কিছু স্বাস্থ্যকর জিনিস যোগ করুন: ফল: তাজা বেরি (স্ট্রবেরি, ব্লুবেরি), আপেল, কলা, পেঁপে বা যেকোনো মৌসুমী ফল যোগ করুন। বাদাম ও বীজ: কাঠবাদাম, আখরোট, চিয়া সিড, ফ্ল্যাক্স সিড বা সূর্যমুখী বীজ মেশাতে পারেন। এগুলো ফাইবার, প্রোটিন ও স্বাস্থ্যকর চর্বি যোগ করবে। ওটস বা গ্রানোলা: সামান্য ওটস বা চিনিবিহীন গ্রানোলা মিশিয়ে একটি পরিপূর্ণ নাস্তা তৈরি করতে পারেন। মশলা: সামান্য গোলমরিচ গুঁড়ো, জিরে গুঁড়ো বা চাট মশলা যোগ করে সালাদের মতো খেতে পারেন। আপনি চাইলে এখনই অনলাইনে মানসম্পন্ন টক দই কিনে খাদ্যতালিকায় যুক্ত করতে পারেন খুব সহজে। রান্নার কাজে ব্যবহার টক দই শুধু আলাদা করে খাওয়ার জন্য নয়, রান্নাতেও এর দারুণ ব্যবহার রয়েছে যা আপনার খাবারকে স্বাস্থ্যকর করে তোলে: ড্রেসিং ও ডিপ: মেয়োনেজ বা ক্রিমি সসের বদলে টক দই ব্যবহার করে সালাদ ড্রেসিং বা ভেজিটেবল ডিপ তৈরি করুন। ম্যারিনেড: মুরগি বা মাছের ম্যারিনেডে টক দই ব্যবহার করলে মাংস নরম হবে এবং পুষ্টিগুণ বাড়বে। স্যুপ ও তরকারিতে: দুধ বা ক্রিমের বদলে টক দই ব্যবহার করে স্যুপ বা তরকারিতে ক্রিমি ভাব আনতে পারেন। আপনার ডায়েট চার্টে টক দই কোথায় রাখবেন? টক দইয়ের বহুমুখী ব্যবহার ও পুষ্টিগুণ এটিকে আপনার ডায়েট চার্টের যেকোনো অংশে ফিট করার সুযোগ দেয়: ১. সকালের নাস্তায় সকালের নাস্তায় টক দই রাখা ওজন কমানোর জন্য সবচেয়ে কার্যকর উপায়গুলোর মধ্যে অন্যতম। কীভাবে খাবেন: স্মুদি: ১ কাপ টক দইয়ের সাথে আপনার পছন্দের ফল, সামান্য ওটস, চিয়া সিড বা ফ্ল্যাক্স সিড মিশিয়ে স্মুদি তৈরি করুন। দই-ওটস বোল: রাতে ভিজিয়ে রাখা ওটসের সাথে সকালে টক দই মিশিয়ে নিন। উপরে কিছু তাজা ফল, বাদাম কুচি ও সামান্য মধু (ঐচ্ছিক, খুব কম পরিমাণে) ছিটিয়ে দিন। সিম্পল দই-ফল: শুধু ১ বাটি টক দইয়ের সাথে আপনার পছন্দের তাজা ফল কুচি মিশিয়ে নিন। ২. দুপুরের খাবারে দুপুরের খাবারে টক দই যোগ করা হজম প্রক্রিয়াকে সহজ করে এবং খাবারের পর অতিরিক্ত ক্যালোরি গ্রহণ থেকে বিরত রাখে। কীভাবে খাবেন: সালাদের সাথে: আপনার দুপুরের খাবারের সালাদে মেয়োনেজ বা ক্রিমি ড্রেসিংয়ের বদলে টক দই ব্যবহার করুন। ভাতের সাথে: দুপুরের খাবারের পর এক বাটি টক দই খেতে পারেন, যা হজমে সাহায্য করবে। হালকা জিরে গুঁড়ো বা লবণ মিশিয়ে রায়তা হিসেবেও উপভোগ করা যায়। সবজির তরকারিতে: সবজির তরকারিতে সামান্য টক দই যোগ করলে তা আরও সুস্বাদু ও ক্রিমি হয়, পাশাপাশি পুষ্টিগুণও বাড়ে। ৩. বিকালের নাস্তায় সন্ধ্যাবেলায় যখন হালকা ক্ষুধা লাগে, তখন অস্বাস্থ্যকর স্ন্যাকসের বদলে টক দই হতে পারে আপনার সেরা বন্ধু। কীভাবে খাবেন: ফ্রুট অ্যান্ড ইয়োগার্ট: ছোট এক বাটি টক দইয়ের সাথে কিছু তাজা ফল কুচি মিশিয়ে নিন। দই ও বাদাম: এক বাটি টক দইয়ের সাথে অল্প কিছু আমন্ড বা আখরোট মিশিয়ে খেতে পারেন। ভেজিটেবল ডিপ: গাজর, শসা বা সেলারি স্টিকের সাথে টক দইয়ের তৈরি স্বাস্থ্যকর ডিপ ব্যবহার করতে পারেন। তাহলে আর দেরি কেন? আজই আপনার ডায়েট প্ল্যানে টক দইকে যুক্ত করুন, এবং এর সঠিক নিয়মগুলো মেনে চলুন। দেখবেন, ওজন কমানোর আপনার স্বপ্ন আর অধরা থাকবে না!

ওজন কমাতে টক দই খাওয়ার নিয়ম Read More »

শিশুদের জন্য শীতকালীন ত্বকের যত্নের টিপস

শিশুদের জন্য শীতকালীন ত্বকের যত্নের টিপস

শীতকাল মানেই শুষ্ক বাতাস, কম আর্দ্রতা, আর ঠান্ডা আবহাওয়া। এগুলো শিশুদের নরম ও সংবেদনশীল ত্বকের জন্য বেশ চ্যালেঞ্জ তৈরি করে। শীতকালে সঠিক যত্নের অভাবে শিশুর ত্বক শুষ্ক হয়ে যেতে পারে, এমনকি ত্বক ফাটতেও পারে। এছাড়াও চুলকানি বা লালচে দাগ দেখা দেয়ারও সম্ভাবনা থাকে। তাই শীতকালে শিশুর ত্বককে মসৃণ, নরম এবং সুরক্ষিত রাখতে বিশেষ যত্ন নেওয়া খুবই জরুরি। এই ব্লগ পোস্টে আমরা শীতে বাচ্চাদের ত্বকের যত্ন নেওয়ার কিছু সহজ এবং কার্যকর টিপস শেয়ার করবো, যা তাদের ত্বকের সুস্থতা বজায় রাখতে সহায়ক হবে। শিশুদের ত্বক যেহেতু বিশেষভাবে সংবেদনশীল, তাই তাদের ত্বকের সুরক্ষায় বিশেষ যত্ন নেয়া অতি আবশ্যক। শিশু স্বাস্থ্য ও শিশু কিডনি রোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. শিরীন আফরোজ বলেন, ‘শীতকালে ফ্লুয়ের প্রবণতা বেড়ে যায়। বাইরে তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় শরীর তাপ হারাতে থাকে।  এর ফলে শিশু দুর্বল হয়ে পড়ে এবং সংক্রমণের ঝুঁকিও বেড়ে যায়।’ এছাড়াও টেক্সাসের একদল শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ, শীতে শিশুর ত্বকের যত্ন নিয়ে বেশ কিছু সময় ধরে গবেষণাকার্য চালিয়েছে।  বর্তমানে বাংলাদেশে হাড় কাপানো শীত চলে এসেছে। তাই আর দেরি না করে, এই শীতে আপনার ঘরের ছোট্ট সোনামণির যথাযথ খেয়াল রাখতে চলুন জেনে নেই কিছু কার্যকর টিপস।  শীতে বাচ্চাদের যত্ন নিতে করণীয় শীতকালে শিশুর ত্বকে বিশেষ যত্নের প্রয়োজন হয়। ঠান্ডা আবহাওয়া, শুষ্ক বাতাস, এবং কম আর্দ্রতার কারণে শিশুর ত্বক শুষ্ক হয়ে ফাটতে পারে। তাই এই সময়ে শিশুর ত্বক সুস্থ ও কোমল রাখতে ময়েশ্চারাইজার, তেল, লোশন ইত্যাদি বেবি কেয়ার সামগ্রী ব্যবহার করতে হয়।  এখানে নানান গবেষণা ও বিশেষজ্ঞদের পরামর্শের ভিত্তিতে শীতে শিশুর যত্ন নেওয়ার প্রধান কিছু বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো। ত্বক ময়েশ্চারাইজ করা শীতকালে শিশুর ত্বক শুষ্ক হয়ে যাওয়া রোধে ময়েশ্চারাইজ করা অত্যন্ত জরুরী। প্রতিবার গোসলের পর শিশুর ত্বকে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। এতে ত্বক তার আর্দ্রতা ধরে রাখতে পারবে। শীতের শুষ্ক বাতাসে বাইরে যাওয়ার আগে শিশুর মুখ, হাত ও পায়ে ভালোভাবে ময়েশ্চারাইজার লাগান। বাজারে অনেক রাসায়নিকযুক্ত ময়েশ্চারাইজার পণ্য পাওয়া যায়। তবে শিশুর জন্য রাসায়নিকমুক্ত এবং প্রাকৃতিক উপাদানসমৃদ্ধ পণ্যই বেছে নেওয়াই উচিত।  কোন ধরনের ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করবেন? হাইপোঅ্যালার্জেনিক: এ ধরনের ময়েশ্চারাইজারে কোন ধরনের রাসায়নিক উপাদান থাকে না যা শিশুর ত্বকে অ্যালার্জি সৃষ্টি করতে পারে। ফ্র্যাগ্রেন্স ফ্রি: সুগন্ধিযুক্ত ময়েশ্চারাইজার ত্বকের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। ময়েশ্চারাইজিং ওয়েল: অলিভ অয়েল, কোকোয়া বাটার ইত্যাদি ত্বককে নরম রাখতে সাহায্য করে। ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারবিধি গোসলের পর অবশ্যই ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। শিশুদের জন্য বিশেষভাবে তৈরিকৃত বাচ্চাদের শীতের ক্রিম ব্যবহার করুন। ময়েশ্চারাইজার লাগানোর আগে ত্বক ভালো করে মুছে নিন। ত্বক পরিষ্কার রাখা শীতকালে শিশুর ত্বক পরিষ্কার রাখা উচিত। তবে অতিরিক্ত গোসল করানো থেকে বিরত থাকুন, কারণ এটি ত্বক আরও শুষ্ক করে দিতে পারে। এক্ষেত্রে আপনার শিশুকে কুসুম গরম পানিতে গোসল করান এবং এই সময়ে এমন বেবি সোপ বা বডি ওয়াশ ব্যবহার করুন যা প্রাকৃতিক উপাদান সমৃদ্ধ এবং মৃদু ক্ষারযুক্ত । গোসলের পর একটি নরম তোয়ালে দিয়ে আলতোভাবে শিশুর ত্বক মুছে ফেলুন। অতিরিক্ত ঘষাঘষি করলে বাচ্চাদের ত্বকে জ্বালা বা শুষ্কতা বাড়তে পারে। উপযুক্ত পোশাক পরানো শীতকালে শিশুকে উষ্ণ রাখতে উপযুক্ত পোশাক পরানো অপরিহার্য। তুলার তৈরি পোশাক বা কটন পোশাক শিশুর জন্য সবচেয়ে আরামদায়ক এবং নিরাপদ। এটি ত্বকের জন্য কোমল অনুভুতিযুক্ত পাশাপাশি অ্যালার্জি মুক্ত। ভারী উল বা সিনথেটিক কাপড় সরাসরি শিশুর ত্বকের সংস্পর্শে না আনাই ভালো।  শীককালে বাইরে যাওয়ার সময় শিশুর শরীর পুরোপুরি ঢেকে রাখুন। এক্ষেত্রে শিশুকে একবারে ভারী পোশাক না পরিয়ে, হালকা কাপড়ের একাধিক স্তর পরানো ভালো। এতে করে শিশুর গরম লাগলে সে সহজেই একটি স্তর খুলে ফেলতে পারবে। উদাহরণ: একটি পাতলা সুতির গেঞ্জি, তার ওপর একটি সোয়েটার এবং সবশেষে একটি জ্যাকেট।  মাথা ও বুক ঢেকে রাখলে তা শিশুকে উষ্ণ থাকতে সহায়তা করে। এছাড়াও  টুপি, মোজা, এবং মাফলার শিশুকে ঠান্ডা বাতাস থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। সর্বদা নিশ্চিত করতে হবে যেন শিশুর গায়ের তাপমাত্রা খুব বেশি না কমে যায়। শীতের পোশাক পরানোর সময় কিছু সতর্কতা অতিরিক্ত কাপড়: শিশুকে অতিরিক্ত কাপড় পরিয়ে গরম করে ফেলবেন না। এতে শিশু ঘামতে পারে এবং ঠান্ডা লাগতে পারে। ত্বকের প্রতিক্রিয়া: যদি শিশুর ত্বকে কোনো র‍্যাশ বা লালচে দাগ দেখা দেয়, তাহলে সেই পোশাক পরানো বন্ধ করে দিন এবং ডাক্তারের পরামর্শ নিন। আরামদায়ক পোশাক: শিশু যেন আরাম বোধ করে, সেদিকে খেয়াল রাখুন। খুব টাইট বা খুব লুজ পোশাক পরানো উচিত নয়। শীতকালে ত্বক রক্ষার জন্য বিশেষ টিপস শীতকাল শিশুদের কোমল ত্বকের জন্য বেশ চ্যালেঞ্জিং। ঠান্ডা বাতাস এবং শুষ্ক আবহাওয়া শিশুর ত্বকের আর্দ্রতা কেড়ে নিয়ে একে শুষ্ক ও সংবেদনশীল করে তুলে। তাই শীতকালে বাচ্চাদের ত্বকের যত্ন নিতে বাড়তি কিছু বিষয় মেনে চলা উচিত। ঠোঁটের যত্ন শীতকালে শিশুর ঠোঁট শুষ্ক হয়ে ফেটে যেতে পারে, যা তাদের জন্য খুবই অস্বস্তিকর অবস্থার সৃষ্টি করে। শিশুর ঠোঁট আর্দ্র রাখতে শীতকালে মুখের ক্রিম ব্যবহার করুন। এক্ষেত্রে প্রতিদিন সকালে এবং রাতে শিশুর ঠোঁটে বেবি লিপ বাম লাগানোর অভ্যাস গড়ে তুলুন। বাইরে যাওয়ার আগে ঠোঁটে লিপ বাম লাগালে ঠান্ডা বাতাস থেকে বাচ্চাদের ঠোঁটকে সুরক্ষিত করা যায়। সান প্রোটেকশন অনেকের ধারণা, শীতকালে সান প্রোটেকশন দরকার হয় না, কিন্তু এটি একটি ভুল ধারণা। শীতের হালকা রোদেও অতিবেগুনি রশ্মি শিশুর ত্বকের ক্ষতি করতে পারে। বাইরে যাওয়ার আগে শিশুর ত্বকে সামান্য সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন। এক্ষেত্রে সানস্ক্রিন এমন একটি বেছে নিন যা ইউভি প্রটেকশন নিশ্চিত করে এবং পাশাপাশি ত্বকের জন্যও নিরাপদ। ঘরের আর্দ্রতা বজায় রাখা শীতকালে ঘরের বাতাস শুষ্ক হয়ে যায়, যা শিশুর ত্বকের শুষ্কতা বাড়িয়ে দিতে পারে। ঘরের আর্দ্রতা বজায় রাখতে একটি হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করা যেতে পারে। এটি ঘরের বাতাসে আর্দ্রতা বৃদ্ধি করে, যা শিশুর ত্বক সুস্থ রাখতে সহায়ক। উপযুক্ত খাবার শিশুদের এই সময়ে ঠাণ্ডা খাবার খেতে না দেওয়াই ভালো। যদি ফ্রিজের খাবার দিতে হয়, তবে গরম করে দেয়াই ভালো হবে। শীতে আবহাওয়া শুষ্ক থাকায় তরল জাতীয় খাবার বাচ্চাদের বেশি করে দেওয়া উচিত। আপনি দিনে অন্তত একবার কুসুম গরম দুধ, পানি, স্যুপ জাতীয় খাবার আপনার শিশুকে দিতে পারেন। এতে শিশুর ঠাণ্ডাজনিত সমস্যার উপশম হবে। এছাড়াও শিশুকে দিতে পারেন মৌসুমি ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল, ভিটামিন ও মিনারেল সমৃদ্ধ খাবার। পর্যাপ্ত পানি পান নিশ্চিত করা শীতকালে ঠান্ডার কারণে অনেক সময় শিশুরা পর্যাপ্ত পানি পান করে না। তবে ত্বককে আর্দ্র ও সুস্থ রাখতে শরীরের ভেতর থেকে হাইড্রেট থাকা জরুরি। এইজন্য  শিশুকে নিয়মিত পর্যাপ্ত পানি পান করানোর অভ্যাস গড়ে তুলুন। এর পাশাপাশি, তাজা ফলের রস এবং পানিশূন্যতা রোধকারী খাবারও দিতে পারেন। গোসলের সময় সংক্ষিপ্ত রাখা শীতকালে অনেক বাবা-মা শিশুকে নিয়মিত গোসল করাতে চান না।  তাদের মতে প্রতিদিন গোসল করালে শিশুর ঠাণ্ডা লেগে যাবে। তবে এটি একটি ভুল ধারণা। শীতে শিশুদের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। তবে  শীতকালে শিশুর গোসলের সময় বেশি দীর্ঘ করা যাবে না। এটি ত্বকের প্রাকৃতিক তেলকে নষ্ট করে। শীতকালে বাচ্চাদের গোসলের ক্ষত্রে গরম পানি ব্যবহার করতে পারেন। তবে কুসুম গরম পানিতেও ৫-১০ মিনিটের বেশি

শিশুদের জন্য শীতকালীন ত্বকের যত্নের টিপস Read More »

Scroll to Top