Uncategorized

সপ্তম শ্রেণির বাংলা ছবির রং

ছবির রং হাশেম খান লেখক ও রচনা সম্পর্কিত তথ্য  লেখক পরিচিতি নাম হাশেম খান। জন্ম পরিচয় জন্ম : ১৯৪১ খ্রিষ্টাব্দ। জন্মস্থান : চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ থানার শেকদি গ্রাম। পিতৃ-মাতৃপরিচয় পিতার নাম : মো. ইউসুফ খান। মাতার নাম : নুরেননেছা বেগম। শিক্ষাজীবন চাঁদপুর হাসান আলী হাইস্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন করেন এবং ১৯৬১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা থেকে প্রথম শ্রেণিতে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। পেশা/কর্মজীবন ১৯৬২ থেকে ২০০৭ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত চারুকলা ইনস্টিটিউটে অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। শিশু-কিশোর আন্দোলন ‘কচিকাঁচার মেলা’র অন্যতম সংগঠক তিনি। সাহিত্য সাধনা ছবি আঁকা ছবি লেখা, জয়নুল গল্প, চারুকলা পাঠ, গুলিবিদ্ধ ৭১ ইত্যাদি তাঁর প্রকাশিত বই। পুরস্কার ও সম্মাননা একুশে পদক (১৯৯২), স্বাধীনতা পদক (২০১১) লাভসহ অনেক পুরস্কারে ভ‚ষিত হয়েছেন। সৃজনশীলপ্রশ্নওউত্তর প্রশ্ন- ১ ল্ফল্ফ গত ডিসেম্বর রিংকু তার মামার বাড়ি আলোকদিয়ায় বেড়াতে যায়। তার মা তাকে সেখানকার স্কুলে নিয়ে যান। স্কুল প্রাঙ্গণে নানা রঙের অনেক ফুল আর প্রজাপতি দেখে সে মুগ্ধ হয়। সেখানে সে শিক্ষার্থীদের তৈরি উজ্জ্বল রঙের নানা ধরনের পুতুল, বিভিন্ন রং দিয়ে আঁকা ছবি দেখে অভিভ‚ত হয়ে পড়ে। ক. চাষিরা কোন মাসে দল বেঁধে ফসল কাটে? খ. ‘এ দেশের প্রকৃতি নানারূপে প্রতিফলন ঘটেছে।’- বুঝিয়ে লেখ। গ. স্কুলের দৃশ্যে কোন ঋতুর পরিচয় পাওয়া যায়? ঘ.‘বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের তৈরি পুতুল ও আঁকা ছবিগুলো যেন আমাদেরই প্রকৃতি।’- ‘ছবির রং’ প্রবন্ধের আলোকে এ উক্তির তাৎপর্য বিশ্লেষণ কর। ক অগ্রহায়ণ মাসে চাষিরা দল বেঁধে ফসল কাটে। খ আমাদের দেশের চিত্রশিল্পীরা বাংলাদেশের প্রকৃতিকে তাদের ছবিতে রঙে ও রেখায় ফুটিয়ে তোলেন। আমাদের চারপাশে প্রকৃতির নানা অনুষঙ্গ ছড়িয়ে রয়েছে। গাছপালা, লতাপাতা, ফুল, মাঠ, পাহাড় প্রভৃতি নিজস্ব বৈশিষ্ট্যে উজ্জ্বল হয়ে আছে। এছাড়া ষড়ঋতুর এই দেশে প্রতিটি ঋতুতে ভিন্ন ভিন্ন রঙের আবির্ভাব ঘটে। চিত্রশিল্পীরা তাদের মনের মাধুরী মিশিয়ে প্রকৃতির এসব রূপের প্রতিফলন ঘটান তাদের রং ও তুলির আঁচড়ে। তাই বাংলার প্রকৃতির নানারূপ ছবিতে পাওয়া যায়। গ স্কুলের দৃশ্যে ফুটে ওঠা রঙের বাহারে অগ্রহায়ণ ও পৌষ ঋতুর পরিচয় পাওয়া যায়। ‘ছবির রং’ প্রবন্ধে আমরা দেখি ঋতুর বদল হওয়াতে প্রকৃতিতে নিরন্তর রং-বদলের খেলা চলতে থাকে। যে রঙের খেলা আমাদের চোখে আনন্দের মায়া কাজল পরিয়ে দেয়। এখন অগ্রহায়ণ মাসে সবুজ ধানখেতে সোনা বরণ হলুদ রং ধারণ করে তখন সে দৃশ্য দেখে মানুষ মুগ্ধ হয়। উদ্দীপকের রিংকু যখন ডিসেম্বর মাসে মামার বাড়ি যায় তখন অগ্রহায়ণ আর পৌষ মাস। এ সময় ধান হলুদ বর্ণ ধারণ করে। প্রকৃতি তখন ব্যস্ত হয়ে পড়ে নানা রঙের ফুল ফোটানোর কাজে। রিংকু তাই মামার বাড়ি স্কুল প্রাঙ্গণে গিয়ে নানা রঙের রঙিন ফুল ও বর্ণিল প্রজাপতি দেখে মুগ্ধ হয়। এছাড়া স্থানীয় শিক্ষার্থীদের তৈরি নানা রঙের পুতুল ও বিভিন্ন রং দিয়ে আঁকা ছবি দেখে অভিভ‚ত হয়ে পড়ে। কারণ শিক্ষার্থীরা প্রকৃতির উজ্জ্বল রঙের সাথে পরিচিত হওয়ার সুবাদে ছবিতেও উজ্জ্বল রং ব্যবহার করে। ঘ ‘বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আঁকা ছবিগুলো যেন আমাদেরই প্রকৃতি’- ছবির রং প্রবন্ধের আলোকে উক্তিটি যথার্থ। বাংলাদেশের শিশুরা জন্মগতভাবেই সুজলা-সুফলা, শস্য-শ্যামলা প্রকৃতির সান্নিধ্যে বেড়ে ওঠে। তাই তাদের মধ্যে ছোটবেলা থেকেই মৌলিক রঙের বোধ তৈরি হয় এবং তাদের সৃষ্টিশীলতায় মূলত প্রকৃতিই কথা বলে। প্রবন্ধে উল্লিখিত শিশুদের যে বৈশিষ্ট্যের কথা বলা হয়েছে, তা উদ্দীপকের শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। তাদের আঁকা চিত্রকর্মেও প্রকৃতিকে উপস্থাপন করবে। শিক্ষার্থীদের আঁকা ছবির মধ্যে ফুটে উঠেছে প্রকৃতির সহজাত সৌন্দর্যবোধ। এর ফলে তাদের আঁকা ছবিতে গ্রামবাংলার প্রকৃতিই স্বমহিমায় উদ্ভাসিত হবে। ‘ছবির রং’ প্রবন্ধে বাংলার শিশুদের চিত্র অঙ্কনের প্রসঙ্গে যে বৈশিষ্ট্যগুলো আলোচিত হয়েছে, তার অনুসরণ করলে উক্ত বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আঁকা ছবিগুলোও বাংলার তথা আমাদের প্রকৃতিকেই উপস্থাপন করবে। আলোচনা শেষে বলা যায়, বাংলাদেশের প্রতি ঋতুতে নানা রঙের সমাবেশ দেখে বাঙালিরা অভিত‚ত হয়। তাই আমাদের নবীন শিক্ষার্থীদের আঁকা ছবিতেও সেই রঙের সমাবেশ বিশেষভাবে ফুটে ওঠে। প্রশ্ন- ১ ল্ফল্ফ ছবি আঁকা প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে নির্ঝর ও নিলয় কলকাতা থেকে ঢাকায় এসেছে। উদ্দেশ্য এ দেশের বিভিন্ন জেলার ছেলেমেয়েদের সাথে ছবি আঁকায় অংশ নেওয়া। চারুকলার বকুলতলায় ছবির মেলার আয়োজন। দেশি-বিদেশি ছেলেমেয়েরা এর অংশগ্রহণকারী। নির্ঝরের চোখ একটি ছবির কাছে এসে থমকে যায়। ছবিটি যশোর থেকে আসা ঐতিহ্যের আঁকা। এটি যেন একটি ভিন্ন প্রকৃতির ছবি। ক. বাংলাদেশের ঋতু কয়টি? ১ খ. বাংলাদেশের শিশুদের আঁকা ছবির অন্যতম বৈশিষ্ট্যসমূহ ব্যাখ্যা কর। ২ গ. নির্ঝর ঐতিহ্যের ছবিতে কী বৈশিষ্ট্য দেখতে পায়- ব্যাখ্যা কর। ৩ ঘ. চিত্রশিল্পকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরতে উদ্দীপকে উলি­খিত ছবি আঁকার আয়োজনের প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা কর। ৪ ক বাংলাদেশে ছয়টি ঋতু। খ বাংলাদেশের শিশুদের আঁকা ছবির অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো এগুলো মৌলিক রং ঘেঁষা। জন্মের পর থেকেই আমাদের দেশের শিশুরা তাদের চারপাশে গাছ, লাতাপাতা, ফুল, মাঠ, নদী, পাহাড়-পর্বত ইত্যাদি দেখে বড় হয়। এসব জিনিসের রয়েছে নিজস্ব রূপ, রং। রঙের এমন সমারোহ অন্যান্য দেশে তেমন নেই। অন্যান্য দেশের শিশুদের ছবির রঙের তুলনায় বাংলাদেশের শিশুদের ছবির রং অনেক উজ্জ্বল এবং মৌলিক রং ঘেঁষা। এই রং বাংলাদেশের শিশুদের ছবি আঁকার অন্যতম বৈশিষ্ট্য। গ নির্ঝর ঐতিহ্যের ছবিতে মৌলিক রং দিয়ে আঁকা বাংলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের বৈশিষ্ট্য দেখতে পায়। ছবির অনেক রং রয়েছে। তবে তিনটি রং মৌলিক। বাংলার শিল্পীরা এই মৌলিক রং দিয়ে প্রকৃতির চিত্র ফুটিয়ে তোলেন যা পৃথিবীর সকলের মন কাড়ে। বাংলার চিত্রশিল্পীরা সহজাতভাবেই মৌলিক রঙের ব্যবহার করে প্রকৃতিকেই তুলির আঁচড়ে প্রাণবন্ত করে তোলেন। প্রকৃতির মেলায় বেড়ে ওঠা এ শিল্পীরা নিজের সৃজনশীলতা ও প্রকৃতির সৌন্দর্যবোধের জ্ঞানকে কাজে লাগিয়েই চিত্রকর্মের রূপায়ণ করে। এ কারণে নির্ঝরের দেখা ছবিটিতেও এর বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। নির্ঝর কলকাতা থেকে ঢাকা এসেছে। তার উদ্দেশ হলো বাংলাদেশের ছেলেমেয়েদের সাথে ছবি আঁকায় অংশ নেওয়া। নির্ঝর হঠাৎ একটি ছবি দেখে থমকে যায়। কারণ ছবিটি ছিল অনেক উজ্জ্বল, সাহসী ও মৌলিক রং ঘেঁষা এবং বাংলার প্রকৃতির একটি সুন্দর দৃশ্য আঁকা ঐতিহ্যবাহী ছবি যা প্রকারান্তরে বাংলার প্রকৃতিকেই উপস্থাপন করবে। ঘ চিত্রশিল্পকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরতে উদ্দীপকে উল্লিখিত ছবি আঁকার আয়োজনের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। চিত্রশিল্প বাংলাদেশের একটি বিশেষ দিক। বিভিন্ন দেশের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের দেশের শিশুরাও এখন ছবি আঁকছে। এ শিল্পীরা মৌলিক রং ঘেষা প্রকৃতির ছবি এঁকে পৃথিবীর সকলের মন কাড়ে। উদ্দীপকে দেখি চারুকলা ইনস্টিটিউট কর্তৃক ছবির মেলার আয়োজন করা হয় চারুকলার বকুলতলায়। উক্ত আয়োজনের আমন্ত্রণে নির্ঝর ও নিলয় ঢাকায় আসে। দেশ-বিদেশের ছেলেমেয়েরা এ আয়োজনে অংশগ্রহণ করে। আমাদের দেশের চিত্রশিল্পকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরতে ছবি আঁকার আয়োজন একটি ইতিবাচক দিক। ছবি আঁকার আয়োজনে বিভিন্ন দেশ থেকে চিত্রশিল্পীরা অংশ নিলে আমাদের চিত্রশিল্প বিশ্বের দরবারে স্থান পাবে। চিত্রশিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। আয়োজন করতে হবে এরকম অনেক ছবি আঁকা-প্রতিযোগিতার। সুতরাং, একথা বলা যায়, চিত্রশিল্পকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরতে ছবি আঁকার আয়োজনের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য যার উৎকর্ষতা দেখিয়ে আমরা বিশ্বদরবারে পরিচিত হতে পারব। প্রশ্ন- ২ ল্ফল্ফ রুমকি ঢাকা শহর থেকে গ্রামে দাদার বাড়িতে বেড়াতে যায়। তখন ছিল শীতকাল। দাদার সঙ্গে রোদেলা সকালে রুমকি গ্রামে ঘুরতে বের হয়। রুমকি দেখতে পেল গ্রামের প্রতিটি বাড়ির আঙিনায় ফুটে আছে নানা প্রজাতির ফুল। গ্রামের

সপ্তম শ্রেণির বাংলা ছবির রং Read More »

সপ্তম শ্রেণির বাংলা পিতৃপুরুষের গল্প

পিতৃপুরুষের গল্প হারুন হাবীব লেখক ও রচনা সম্পর্কিত তথ্য নাম হারুন হাবীব। জন্ম পরিচয় জন্ম : ১৯৪৮ খ্রিষ্টাব্দে ১ জানুয়ারি। জন্মস্থান : দেওয়ানগঞ্জ, জামালপুর। শিক্ষাজীবন ১৯৭৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতক ও দিল্লির ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব ম্যাস কমিউনিকেশন থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন । কর্মজীবন/পেশা লেখক, সাংবাদিক এবং কলামিস্ট হিসেবে সমধিক পরিচিত। বাংলাদেশ প্রেস ইন্টারন্যাশনাল, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা, ন্যাশনাল নিউজ এজেন্সি ইত্যাদিতে সাংবাদিক হিসেবে কর্মরত। পরবর্তী সময় ন্যাশনাল নিউজ এজেন্সির ব্যবস্থাপনা পরিচালক। কলকাতায় ‘হিন্দু’ ও ‘ফন্টলাইন’ পত্রিকায় ঢাকার প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেছেন। বর্তমান সময়ে সেক্টর কমান্ডার ফোরামের নেতৃতে । সাহিত্য সাধনা গ্রন্থ : সোনালী ইগল ও উদ্বাস্তু সময়, ছোটগল্প সমগ্র ১৯৭১, বিদ্রোহী ও আপন পদাবলী, লাল শার্ট ও পিতৃপুরুষ। মুক্তিযুদ্ধ: নির্বাচিত প্রবন্ধ, স্বর্ণপক্ষ ইগল, প্রিয়যোদ্ধা, পাঁচ পুরুষ, গল্পসপ্তক, অন্ধ লাঠিয়াল, অন্তশীল, নির্বাসিতা নীহার বানু, জনযুদ্ধের উপাখ্যান, প্রত্যক্ষদর্শীর চোখে মুক্তিযুদ্ধ, যুদ্ধাপরাধীর বিচার ও প্রাসঙ্গিক প্রবন্ধ, মুক্তিযুদ্ধ পালাবদলের ইতিহাস, ইষড়ড়ফ ধহফ ইৎঁঃধষরঃু ইত্যাদি। নাটক : অগ্রাহ্য দন্ডোৎসব, পোস্টার একাত্তর। পুরস্কার ও সম্মাননা বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ২০১৩, কথা সাহিত্য কেন্দ্র পুরস্কার।    সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর প্রশ্ন- ১ ল্ফল্ফ সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী প্রিয়তি বাবা-মায়ের সঙ্গে প্রথমবারের মতো ঢাকায় বেড়াতে এসেছে। একুশে ফেব্রæয়ারিতে বাবা-মা ওকে নিয়ে যায় কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে। বাবা-মায়ের সাথে সেও ফুল দিয়ে শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানায়। বাবার কাছে ভাষা শহিদদের আত্মত্যাগের কথা শুনে গর্বে মনটা ভরে ওঠে প্রিয়তির। ক. ১৯৭১ সালে কাজল মামা কোথায় পড়ত? খ. ‘যুদ্ধ আর মুক্তিযুদ্ধের মধ্যে অনেক তফাৎ’-উক্তিটি বুঝিয়ে লেখ। গ. অন্তু ও প্রিয়তির মনোভাব কোন দিক থেকে সাদৃশ্যপূর্ণ-ব্যাখ্যা কর। ঘ.“উদ্দীপকে প্রতিফলিত দিকটি ‘পিতৃপুরুষের গল্প’ গল্পের সম্পূর্ণ ভাবকে ধারণ করে না”-উক্তিটির যথার্থতা মূল্যায়ন কর। ক ১৯৭১ সালে কাজল মামা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ত। খ ‘যুদ্ধ আর মুক্তিযুদ্ধের মধ্যে অনেক তফাৎ’ -কথাটি সর্বাঙ্গে সত্য। যুদ্ধ হয় রাজায় রাজায় এক দেশে আরেক দেশে যুদ্ধে শক্তি দেখায় গুটিকয়েক মানুষ; কষ্ট হয় সাধারণ মানুষের। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধ হয় স্বাধীনতার জন্য, একটি জাতি হিসেবে বেঁচে থাকার জন্য, সব অন্যায় অত্যাচার আর শৃঙ্খল থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য। একাত্তরের যুদ্ধ সাধারণ যুদ্ধ ছিল না, এটি ছিল মুক্তিযুদ্ধ। গ মুক্তিযুদ্ধ ও ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস জানার ক্ষেত্রে অন্তু ও প্রিয়তির গভীর কৌত‚হল ও ভালো লাগা মনোভাবের দিক দিয়ে সাদৃশ্যপূর্ণ। ‘পিতৃপুরুষের গল্প’ গল্পটিতে মুক্তিযোদ্ধা কাজল মামার মুখ থেকে মুক্তিযুদ্ধের গল্প শোনার আগ্রহ জাগে অন্তুর। একুশে ফেব্রæয়ারির দুদিন আগে কাজল মামা ঢাকায় চলে আসে। অন্তু মামার কাছে জানতে পারে ঢাকা শহরের নামকরনের ইতিহাস, সাতমসজিদ রাস্তার নামের ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধ ও ভাষা আন্দোলন সম্পর্কে। জানতে পারে, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আক্রমণ ও ছাত্রদের প্রতিবাদী ভ‚মিকার কথা। মামার সাথে ঘুরতে ঘুরতে কিশোর অন্তু স্মৃতিসৌধ শহিদ মিনার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভিন্ন হল সম্পর্কে জানতে পারে। উদ্দীপকের প্রিয়তিও বাবা-মায়ের সাথে প্রথমবারের মতো ঢাকায় আসে। একুশে ফেব্রæয়ারিতে বাবা-মায়ের সাথে যায় কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে। বাবা-মায়ের সাথে সেও ফুল দিয়ে শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানায়। ভাষা শহিদদের আত্মত্যাগের কথা শুনে গর্বে তার মনটা ভরে যায়। ‘পিতৃপুরুষের গল্প’ গল্পেও অন্তু মুক্তিযুদ্ধ ও ভাষা আন্দোলন সম্পর্কে কৌত‚হলী হয়ে অনেক কিছু তার মামার কাছ থেকে জেনেছে। এক্ষেত্রে অন্তু ও উদ্দীপকের প্রিয়তির সাথে তার সাদৃশ্য রয়েছে। ঘ উদ্দীপকে প্রতিফলিত দিকটি ‘পিতৃপুরুষের গল্প’ গল্পের সম্পূর্ণ ভাবকে ধারণ করে না। কারণ পিতৃপুরুষের গল্প রচনায় ভাষা আন্দোলন ছাড়াও নানা বিষয়ের অবতারণা করা হয়েছে। ‘পিতৃপুরুষের গল্প’ রচনায় অন্তু তার মায়ের কাছে মুক্তিযোদ্ধা মামার গল্প শুনে শুনে কৌত‚হলী হয়ে ওঠে। কাজল মামা ঢাকায় আসার পর রিকশায় মামার সাথে ঘুরে বেড়ায় অন্তু। মামার কাছ থেকে সে মুক্তিযুদ্ধ ও ভাষা আন্দোলনের গল্প শোনে। মামার সাথে ঘুরে স্মৃতিসৌধ, শহিদ মিনার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ হল, হাজী মুহম্মদ মহসীন হল পরিদর্শন করে। সে জানতে পারে ঢাকা শহরের নামের ইতিহাস, সাতমসজিদ রাস্তার নামের ইতিহাস ইত্যাদি। উদ্দীপকে প্রিয়তিও গ্রাম থেকে মা-বাবার সাথে ঢাকায় আসে। মা-বাবার সাথেই সে শহিদ মিনার যায়। বাবা-মায়ের কাছে ভাষা শহিদদের আত্মত্যাগের ইতিহাস জানতে পারে। ‘পিতৃপুরুষের গল্প’ ও উদ্দীপক পর্যালোচনা করলে আমরা পাই, গল্পে মুক্তিযুদ্ধ, ভাষা আন্দোলন, স্মৃতিসৌধ, শহিদ মিনার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ ও মহসীন হল ইত্যাদি নানা বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। তাছাড়া পাকিস্তানিদের বর্বরতা, মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মত্যাগ, ভাষা শহিদদের আত্মত্যাগের কথাও বলা হয়েছে। অন্যদিকে উদ্দীপকে কেবল ভাষা আন্দোলনের কথা বলা হয়েছে। তাই উদ্দীপকে প্রতিফলিত দিকটি ‘পিতৃপুরুষের গল্প’ লেখকের সম্পূর্ণ ভাবকে ধারণা করে না। প্রশ্ন- ১ ল্ফল্ফ “আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা, মৃত্যু পিছনে আগে, ভয়াল বিশাল নখর মেলিয়া দিবস রজনী জাগে। কখনো সে ধরে রেজাকার বেশ, কখনো সে খান-সেনা, কখনো সে ধরে ধর্ম-লেবাস পশ্চিম হতে কেনা। কখনো সে পশি ঢাকা-বেতারের সংরক্ষিত ঘরে, ক্ষেপা কুকুরের মরণ কামড় হানিছে ক্ষিপ্ত স্বরে।” ক. ঢাকা শহরের আগের নাম কী? ১ খ. অন্তু মামার কাছে চিঠি লিখল কেন? ২ গ. উদ্দীপকের মুক্তিযোদ্ধা চরিত্রটি পিতৃপুরুষের গল্প-এর কোন চরিত্রের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ -ব্যাখ্যা কর। ৩ ঘ.“আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা, মৃত্যু পিছনে আগে”- কথাটির তাৎপর্য ‘পিতৃপুরুষের গল্প’ রচনার আলোকে বিশ্লেষণ কর। ৪ ক ঢাকা শহরের আগের নাম জাহাঙ্গীরনগর। খ মুক্তিযুদ্ধের গল্প শোনার জন্য অন্তু মামাকে ঢাকায় আসার জন্য চিঠি লিখল। অন্তুর মামা গ্রামে থাকে। তাকে ঢাকা আসবার জন্য অন্তু চিঠি লিখেছিল, কারণ মামা কাজল ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা। তাই মুক্তিযুদ্ধের গল্প মামার মুখে শোনার জন্য সে মামাকে চিঠি লিখেছিল। গ উদ্দীপকের মুক্তিযোদ্ধা চরিত্রটি ‘পিতৃপুরুষের গল্প’ রচনায় কাজল মামা চরিত্রের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। ‘পিতৃপুরুষের গল্প’ রচনার কাজল মামা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র অবস্থায় মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। ঢাকা শহর ছেড়ে হঠাৎ তিনি গ্রামে হাজির। তারপর রাত দিন এ গ্রাম সে গ্রাম ঘুরে ছেলেদের জোগাড় করে মিছিল মিটিং করেন। রাইফেল জোগাড় করে ট্রেনিং নেন। বাবার নিষেধ সত্তে¡ও তিনি মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। উদ্দীপকে একজন মুক্তিযোদ্ধার উল্লেখ রয়েছে। যিনি জীবনকে হাতের মুঠোয় নিয়ে যুদ্ধ করেন। তার আগে পিছে মৃত্যুর বিভীষিকা। আক্রমণের প্রস্তুতি নিতে তিনি রাত জাগেন। রাজাকার, খান-সেনা ধর্মের লেবাস পরেন তিনি যুদ্ধের কৌশল হিসেবে। শত্রæর মোকাবিলায় ক্ষেপা কুকুরের মতো মরণকামড় হানেন তিনি। ‘পিতৃপুরুষের গল্প’ রচনায় কাজল মামার যুদ্ধের বিস্তারিত বিবরণ না থাকলেও তিনি যে অস্ত্র হাতে ট্রেনিং নিয়ে যুদ্ধে অকুতোভয় সৈনিকের মতো যুদ্ধ করেছেন তা স্পষ্ট। তাই এ কথা নিদ্বিধায় বলতে পারি উদ্দীপকের মুক্তিযোদ্ধা চরিত্রটি ‘পিতৃপুরুষের গল্প’ রচনায় কাজল মামা চরিত্রের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। ঘ ‘আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা, মৃত্যু পিছনে আগে’ কবিতায় এই পঙ্ক্তিটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ‘পিতৃপুরুষের গল্প’ রচনায় কাজল মামা একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থাকাকালীন দেশে যুদ্ধ লেগে যায়। তিনি গ্রামে গিয়ে লোকজনকে সংগঠিত করে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যে হলটিতে তিনি থাকতেন সেটি হাজী মোহাম্মদ মহসীন হল। এই হলের কয়েক শত ছাত্রকে মাঠে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যা করেছিল পাক সেনারা। উদ্দীপকে মুক্তিযুদ্ধের ভয়াবহতা তুলে ধরা হয়েছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে একজন মুক্তিযোদ্ধা প্রাণপণ যুদ্ধ করেন। সামনে পিছে সকল দিক থেকে মৃত্যু তাকে ধাওয়া করে। যুদ্ধের কৌশল হিসেবে রাজাকার, খান-সেনা কিংবা ধর্মের লেবাস ধারণ করেন কাজল। আবার

সপ্তম শ্রেণির বাংলা পিতৃপুরুষের গল্প Read More »

সপ্তম শ্রেণির বাংলা পাখি

পাখি লীলা মজুমদার লেখক ও রচনা সম্পর্কিত তথ্য  লেখক পরিচিতি  নাম লীলা মজুমদার। জন্ম পরিচয় জন্ম : ১৯০৮ খ্রিষ্টাব্দ। জন্মস্থান : কলকাতার বিখ্যাত রায় পরিবারে, গড়পার রোডের বাড়িতে। পিতৃ ও মাতৃ পরিচয় পিতা : প্রমদারঞ্জন রায়। মাতা : সুরমা দেবী। শিক্ষাজীবন লারটো কনভেন্ট থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পাস এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে সর্বোচ্চ নম্বর নিয়ে পাস করেন। সাহিত্য সাধনা তার প্রথম গল্প ল²ীছাড়া ১৯১২ সালে ‘সন্দেশ’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। এছাড়া তার অনন্য সাহিত্যকর্মগুলো হচ্ছে- হলদে পাখির পালক, দিন দুপুরে, বদ্যিনাথের বড়ি, গুপির গুপ্তখাতা, টং লিং, পদিপিসীর বমি বাক্স, সব ভুতুড়ে, পাকদÐী (আত্মজীবনী)। পুরস্কার ও সম্মাননা আনন্দ পুরস্কার ও শিশু সাহিত্য পুরস্কার। জীবনাবসান ২০০৭ খ্রিষ্টাব্দে তিনি কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন।  সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর প্রশ্ন- ১ ল্ফল্ফ সহপাঠীদের সাথে স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে একটি বিড়াল ছানার করুণ ডাক শুনে থমকে দাঁড়ায় শ্রেয়সী। হঠাৎ দেখে রাস্তার পাশের একটি গর্তে একটি বিড়াল ছানা আটকে আছে। বন্ধুদের সাহায্য নিয়ে শ্রেয়সী সেটিকে পরিষ্কার করে কোলে তুলে নেয়। বাড়িতে ফেরার পর শ্রেয়সীর সেবা-যতেœ বিড়াল ছানাটি যেন প্রাণ ফিরে পেল। খুব অল্প সময়ে সে তাদের পরিবারেরই একজন হয়ে উঠল। কিন্তু ওর ভাই সুজা তাকে সহ্য করতে পারত না; প্রায়ই মারধর করতো। একদিন শ্রেয়সী স্কুল থেকে ফিরে বিড়াল ছানাটিকে আর খুঁজে পেল না। ক. হাঁসরা গিয়ে কোথায় নামল? ১ খ. কুমু-লাটুর মনে কোনো সন্দেহ রইল না কেন? ২ গ. শ্রেয়সীর মাধ্যমে ‘পাখি’ গল্পের কোন বিশেষ দিকটি ফুটিয়ে তোলা হয়েছে? ব্যাখ্যা কর। ৩ ঘ.‘সুজার মানসিকতা কুমু বা লাটুর মতো হলে বিড়াল ছানাটিকে হারাতে হতো না শ্রেয়সীর’ -বিশ্লেষণ কর। ৪ ক হাঁসরা ঝুপঝাপ করে বিলের জলে নামল। খ আহত পাখিটার উড়তে পারার ব্যাপারে কুমু লাটুর মনে কোনো সন্দেহ রইল না। সারারাত বুনোহাঁসরা বিশ্রাম করে পরদিন সকালে দল বেঁধে আকাশে উড়ল। কুমুদের পরিচর্যা করা আহত পাখিটিও তাদের সঙ্গ নিল। দল থেকে একটু পিছিয়ে থাকলেও এটি ক্রমাগত উড়তে থাকল। তাই উড়তে পারায় ব্যাপারে কুমু-লাটুর মনে আর কোনো সন্দেহ রইল না। গ শ্রেয়সীর মাধ্যমে ‘পাখি’ গল্পের প্রাণীর প্রতি মমত্ববোধের দিকটি ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। ‘পাখি’ গল্পে শিকারির গুলিতে আহত একটি বুনোহাঁসের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় দুটি কিশোর-কিশোরী। পাখিটিকে সুস্থ করে তোলার জন্য তারা ব্যাকুল হয়ে ওঠে। তারা পাখিটিকে রক্ষা করার চেষ্টা না করলে হয়তো এটি কোনো মানুষের আহার হতো অথবা অন্য প্রাণী খেয়ে ফেলত। কিন্তু একটি আহত পাখিকে দেখে তাদের মাঝে গভীর মমত্ববোধ জেগে উঠেছে। দিদিমাসহ সকলের চোখ এড়িয়ে তারা বুনো হাঁসটিকে শুশ্রƒষা করে সারিয়ে তুলেছে। কুমু জানালা দিয়ে সার্বক্ষণিক নজর রেখেছে পাখিটির দিকে। একসময় পাখিটা সুস্থ হয়ে উড়ে চলে গেল। উদ্দীপকে শ্রেয়সী একটি বিড়াল ছানার করুণ ডাক শুনে থমকে দাঁড়ায়। গর্তে আটকে পড়া বিড়াল ছানাটিকে দেখে তার মায়া হয়। সে বিড়াল ছানাটিকে উদ্ধার করে। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে এটিকে কোলে তুলে নেয়। শ্রেয়সীর সেবা যতেœ বিড়াল ছানাটি প্রাণ ফিরে পায়। ‘পাখি’ গল্পেও আমরা দেখি একটি আহত পাখিকে বাঁচাবার প্রাণপণ চেষ্টা করে কমু-লাটু। পাখিটিকে বাঁচিয়ে তুলে তারা পরম আত্মতৃপ্তি লাভ করেছে। প্রাণীর প্রতি এমন মমত্ববোধ নজিরবিহীন।মূলত উদ্দীপকের শ্রেয়সীর মাধ্যমে ‘পাখি’ গল্পের সেই বিশেষ মমত্ববোধের দিকটি ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। ঘ উদ্দীপকের সুজার মানসিকতা ‘পাখি’ গল্পের কুমু বা লাটুর মতো হলে বিড়ালটিকে হারাতে হতো না শ্রেয়সীর। ‘পাখি’ গল্পে কুমু ও লাটু মানবিকবোধে বিশ্বাসী দুই কিশোর-কিশোরী। ছোট বয়সেই তাদের মধ্যে প্রাণীদের প্রতি সংবেদনশীলতার মানসিকতা তৈরি হয়েছে। একটি পাখির ব্যথায় তারা ব্যথিত হয়েছে। পাখি শিকার করাকে তারা সমর্থন করে না। হাতের কাছে একটি আহত পাখিকে পড়ে থাকতে দেখে তারা সেটিকে সারিয়ে তোলার জন্য প্রয়োজনীয় সবকিছু করেছে। অবশেষে পাখিটি সুস্থ হয়ে বুনো হাঁসদের ঝাঁকের সাথে উড়ে চলে গেছে। উদ্দীপকে একটি বিপদগ্রস্ত বিড়াল ছানাকে শ্রেয়সী উদ্ধার করে বাঁচিয়ে তুলেছিল। সেবাযতেœ বিড়ালটি পরিবারের অংশ হয়ে উঠেছিল। কিন্তু শ্রেয়সীর ভাই সুজা বিড়ালটিকে একদমই সহ্য করতে পারেনি। প্রায়ই সে এটিকে মারধর করত। একদিন দেখা গেল বিড়ালটি আর নেই। অর্থাৎ সে চলে গেছে। ‘পাখি’ গল্পে আমরা দেখি কুমু ও লাটুর একটি আহত পাখির প্রতি গভীর মমত্ববোধ। পাখিটির সেরে উঠার জন্য তারা সম্ভাব্য সবকিছুই তারা করেছে। কিন্তু সুজা তার বিপরীত আচরণ করেছে। অকারণে বিড়ালটিকে মারধর করেছে। মানুষ ছাড়া অন্য প্রাণীর প্রতিও মানবিক আচরণ করতে হয় সেই বোধ তার মধ্যে জাগ্রত হয়নি। তাই বলা যায়, সুজার মানসিকতা কুমু বা লাটুর মতো হলে শ্রেয়সীকে বিড়াল ছানাটিকে হারাতে হতো না। প্রশ্ন- ২ল্ফল্ফ ক. বুনো পাখিটার জন্য কোথায় বাসা বাঁধা হয়েছিল? ১ খ. কুমু ভালো করে হাঁটতে পারে না কেন? ২ গ. উদ্দীপকের সাথে ‘পাখি’ গল্পের কোন দিকটির সাদৃশ্য রয়েছে বর্ণনা কর। ৩ ঘ.উদ্দীপকে পাখি শিকারের প্রতি ‘পাখি’ গল্পের দিদিমার ঘৃণাই প্রকাশিত হয়েছে- বিশ্লেষণ কর। ৪ ক বুনো পাখিটার জন্য লেবু গাছের ডালে বাসা বাঁধা হয়েছিল। খ কুমু তার অসুস্থতার জন্য ভালো করে হাঁটতে পারে না। ডান পাটা মাটি থেকে এক বিঘতের বেশি উপরে উঠে না কুমু। লোহার ফ্রেমে পা বেঁধে তাই একটু একটু করে হাঁটতে শিখছে। সোনাঝুরিতে দিদিমার বাড়িতে হাওয়া-বদলের সুবাদে কুমু দ্রæত সুস্থ হয়ে ওঠে। সে একটু একটু করে হাঁটতে সক্ষম হয়। গ উদ্দীপকের নির্বিচার পাখি শিকারের সাথে ‘পাখি’ গল্পের পাখি শিকারের সাদৃশ্য রয়েছে। ‘পাখি’ গল্পে উল্লেখ করা হয়েছে, সাদা জলের চকচকে বিলে ছাই রঙের বুনোহাঁস ঝুপঝাপ নামছে। শীতের সময় ঠান্ডা দেশ থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে ওরা উড়ে আসে। এ সময় কিছু অসৎ মানুষ প্রকৃতির সৌন্দর্য বর্ধনকারী ও ভারসাম্য রক্ষাকারী এসব পাখিদের নিধন করতে তৎপর হয়ে ওঠে। তারা নির্বিচারে বন্দুকের গুলিতে এসব পাখিদের হত্যা করে। উদ্দীপকে একজন পাখি শিকারি বন্দুক ও শিকার করা পাখি হাতে দাঁড়িয়ে আছে। এসব শিকারিরা বন্দুক নিয়ে পাখি অনুসন্ধানে ঘুরে বেড়ায়। হাতের নাগালে পাখি পেলেই তারা অত্যন্ত নিষ্ঠুরভাবে পাখিদের নিধন করে। পাখিদের এভাবে নিধন করা বা শিকার করা আইনত দÐনীয় হলেও, তারা আইনের তোয়াক্কা করে না। ‘পাখি’ গল্পেও এভাবেই শিকারিরা পাখির ঝাঁকে দুম দুম করে গুলি করে দেয়। এত সুন্দর সুন্দর পাখিদের ওরা গুলি করে নিধন করতে পিছপা হয় না। তাই উদ্দীপকের নির্বিচার পাখি শিকারের সাথে পাখি গল্পের ‘পাখি’ শিকারের সাদৃশ্য রয়েছে। ঘ ‘পাখি’ গল্পে দিদিমার যে মনোভাব প্রকাশিত হয়েছে তাতে উদ্দীপকের পাখি শিকারকে তিনি নিশ্চিতভাবেই ঘৃণা করেন। ‘পাখি’ গল্পটি লেখক লীলা মজুমদার লিখেছেন মূলত প্রাণীর প্রতি মমত্ববোধ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে। কুমু ও লাটুর মধ্যে সে মমত্ববোধ সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত। কিন্তু পাখিদের প্রতি দিদিমার ভালোবাসার প্রকাশও আমরা লক্ষ করি। শিকারিদের পাখি শিকারের বিষয়ে যখন কথা হচ্ছিল তখন দিদিমা বলেছিলেন, হ্যাঁ ওদের ওই একই চিন্তা। “দিদিমার চক্ষু এড়িয়ে অথবা দিদিমা রাগ করবেন মনে করে তারা লুকিয়ে আহত পাখির পরিচর্যা করছিল। কিন্তু পরে ঘটনা শুনে দিদিমা বলেছিলেন, ওমা, বলিসনি কেন, আমিও যে পাখি ভালোবাসি।” উদ্দীপকে চিত্রটিতে নির্বিচার পাখি শিকারের দিকটি তুলে ধরা হয়েছে। প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষাকারী এসব পাখিদের নিধন করা অন্যায়

সপ্তম শ্রেণির বাংলা পাখি Read More »

সপ্তম শ্রেণির বাংলা শব্দ থেকে কবিতা

শব্দ থেকে কবিতা হুমায়ুন আজাদ লেখক ও রচনা সম্পর্কিত তথ্য নাম হুমায়ুন আজাদ। জন্ম পরিচয় জন্ম : ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দ। জন্মস্থান : মুন্সীগঞ্জ জেলার শ্রীনগর থানার রাড়িখাল গ্রাম। পিতৃ ও মাতৃপরিচয় পিতা : আবদুর রাশেদ। মাতা : জোবেদা খাতুন। শিক্ষাজীবন তিনি রাড়িখাল স্যার জগদীশচন্দ্র বসু ইনস্টিটিউশন থেকে মাধ্যমিক, ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ অনার্স এবং এমএ (বাংলা) পাস করেন। পরে এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। কর্মজীবন কর্মজীবনে তিনি প্রথমে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাষক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে সহযোগী অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। সাহিত্য সাধনা গবেষণা গ্রন্থ : বাঙলা ভাষা (২ খণ্ড), নারী, বাক্যতত্ত¡, তুলনামূলক ও ঐতিহাসিক ভাষাবিজ্ঞান, ভাষা আন্দোলন; সাহিত্যিক পটভ‚মি। প্রবন্ধ গ্রন্থ : কতো নদী সরোবর, লাল নীল দীপাবলিবা বাঙলা ভাষার জীবনী, বাংলা ভাষার শত্র“মিত্র, কাফনে মোড়া অশ্রæবিন্দু প্রভৃতি। কাব্যগ্রন্থ : অলৌকিক ইস্টিমার, জ্বলো চিতাবাঘ, সবকিছু নষ্টদের অধিকারে যাবে, ‘আমি বেঁচে ছিলাম অন্যদের সময়ে’। গল্প : যাদুকরের মৃত্যু। উপন্যাস : ‘ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইল, জাদুকরের মৃত্যু, সবকিছু ভেঙে পড়ে, রাজনীতিবিদগণ প্রভৃতি উলে­খযোগ্য।’ পুরস্কার ও সম্মাননা তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কারসহ অনেক পুরস্কার লাভ করেছেন। জীবনাবসান ২০০৪ খ্রিষ্টাব্দ, ১২ আগস্ট। সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর প্রশ্ন- ১ ল্ফল্ফ কবিতার শিল্পরূপ ও তার বৈশিষ্ট্য মাহফুজা চমৎকার কবিতা লেখেন। জীবনে বিভিন্ন অংশের স্মৃতিকে শব্দের ভেতর সাজাতে পছন্দ তার। মাহফুজার ভাইপো নির্ঝর তাঁকে খুব পছন্দ করে। কারণ তিনি তাঁর ভাইপো নির্ঝরকে প্রায়ই নানা রকম কবিতা শোনান। নির্ঝর ফুফুকে পেলেই ছড়া শোনার বায়না ধরে। একদিন নির্ঝর তাকে বলে “ফুফু তুমি এতো সুন্দর কবিতা কীভাবে লেখ?” মাহফুজা উত্তর দেন, “তুমি তোমার চারপাশের সুন্দর স্বপ্নময় শব্দগুলোকে বুঝে ধারণ করে রাখবে, দেখবে তুমিও একদিন চমৎকার কবিতা লিখতে পারবে।” ক. কবিতা লেখার জন্য প্রথমেই কোনটি প্রয়োজন? খ. ‘কবিতার জন্য দরকার শব্দ – রংবেরঙের শব্দ’ – বুঝিয়ে লেখ। গ. কবিতার বিষয়ে নির্ঝরের প্রশ্নের উত্তর ‘শব্দ থেকে কবিতা’ প্রবন্ধে কীভাবে প্রতিফলিত হয়েছে- লেখ। ঘ. মাহফুজার উত্তর ‘শব্দ থেকে কবিতা’ প্রবন্ধের মূলভাবকে ধারণ করে কি? যুক্তিসহ বিচার কর। ক কবিতা লেখার জন্য প্রথমেই শব্দের প্রয়োজন। খ ‘কবিতার জন্য দরকার শব্দ রংবেরঙের শব্দ’ -উদ্ধৃত উক্তিটির সাহায্যে লেখক কবিতার বিভিন্ন রকমের শব্দ প্রয়োগের কথা বুঝিয়েছেন। কবিতা লেখার জন্য প্রয়োজন হাজারো রং-বেরঙের শব্দ। শব্দের সাথে শব্দ মিলিয়ে সঠিক প্রয়োগ করে সার্থক কবিতা লেখা সম্ভব। শব্দকে সঠিকভাবে ব্যবহার করতে না পারলে কখনোই কবিতা লেখা সম্ভব নয় ।তাই ভালো কবিতা লেখার জন্য প্রয়োজন হাজারো রং-বেরঙের শব্দ। গ কবিতার বিষয়ে নির্ঝরের প্রশ্নের উত্তর ‘শব্দ থেকে কবিতা’ প্রবন্ধের কবিতা লেখার জন্য শব্দ বুঝে ধারণ করে প্রয়োগের দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে। ‘শব্দ থেকে কবিতা’ প্রবন্ধে বলা হয়েছে- সাহিত্যের নানা রূপের মধ্যে একটি হচ্ছে কবিতা। আলোচ্য রচনায় কবিতার শিল্পরূপ ও তার বৈশিষ্ট্য অত্যন্ত চমৎকারভাবে বর্ণিত হয়েছে। কবিতা কাকে বলে? যে লেখাগুলো খুব সুন্দরভাবে ছাপানো হয়, যে লেখাগুলোর পঙ্ক্তিগুলো খুব বেশি বড় হয় না, যেগুলোতে একটি পঙ্ক্তি আরেকটি পঙ্ক্তির সমান হয়, সে লেখাগুলোই কবিতা। লেখকের মতে, যা পড়লে মনের ভিতর স্বপ্ন জেগে ওঠে, ছবি ভেসে ওঠে; তাই কবিতা। যা পড়লে দু-তিনবার পড়লে ভোলা যায় না, মনের ভেতর নাচতে থাকে, তাই কবিতা। শব্দের সঙ্গে শব্দ মিলিয়ে লেখা হয় কবিতা। উদ্দীপকের মাহফুজা চমৎকার কবিতা লেখেন। স্কুল জীবন থেকেই তিনি নানা শব্দ নিয়ে চিন্তা করতেন। কীভাবে কবিতা লেখা যায়? নির্ঝরের এই প্রশ্নের জবাবে মাহফুজা জানান- তোমার চারপাশের সুন্দর সুন্দর স্বপ্নময় শব্দগুলোকে বুঝে ধারণ করবে, দেখবে তুমিও একদিন ভালো কবিতা লিখতে পারবে। এই দিকটিই ‘শব্দ থেকে কবিতা’ আলোচ্য বিষয়। অর্থাৎ নির্ঝারের প্রশ্নের উত্তরই ‘শব্দ থেকে কবিতা প্রবন্ধের মূল ‘প্রবেন্ধর’ প্রতিফলিত বিষয়। ঘ মাহফুজার উত্তর শব্দ থেকে কবিতা প্রবন্ধে মূলভাবেক ধারণ করে । প্রদত্ত উক্তিটির আলোকে ‘শব্দ থেকে কবিতা’ প্রবন্ধের মূল বক্তব্য হলো কবিতা লিখতে হলে শব্দের রূপ-রং-গন্ধ চিনে সুন্দর সুন্দর শব্দ চয়ন এবং তা বুঝে মনের ভিতরে ধারণের ক্ষেত্রে জোর দিতে হবে। কবিতা’ পড়লে মন নেচে ওঠে, গান গেয়ে উঠতে ইচ্ছে করে, চোখে বুকে রং-বেরঙের স্বপ্ন এসে জমা হয় তাই কবিতা। কবিতা লিখতে শব্দের প্রয়োজন হয়। একটি শব্দের পাশে আরেকটি শব্দ বসিয়ে, একটি শব্দের সাথে আরেকটি শব্দ মিলিয়ে কবিতা লিখতে হয়। উদ্দীপকের মাহফুজার উক্তিটি কবিতা লেখার মূল প্রেরণাকে ধারণ করেছে। তাই জীবনে বিভিন্ন অংশের স্মৃতিকে শব্দের ভেতর সাজাতে পছন্দ তার। কারণ শব্দ ছাড়া কবিতা লেখা সম্ভব নয়। তাই তো মাহফুজা নির্ঝরকে স্বপ্নময় শব্দগুলোকে বুকে ধারণ করতে বলেছেন। ‘শব্দ থেকে কবিতা’ প্রবন্ধেও প্রাবন্ধিক কবিতা লেখার জন্য শব্দের গুরুত্বের কথা বলেছেন। কারণ শব্দই কবিতার গাঁথুনিকে চমৎকার করে। উল্লিখিত আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায়, মাহফুজার উত্তর শব্দ থেকে কবিতা প্রবন্ধের মূলভাব। প্রশ্ন- ১ ল্ফল্ফ জীবন ও মনন দুই ভাই ছড়া কেটে কেটে খেলতে লাগল। আজকে দাদা যাবার আগে বলব যা মোর চিত্তে লাগে, নাইবা তাহার অর্থ হোক নাইবা বুঝুক বেবাক লোক, আজকে আমার মনের মাঝে ধাই ধপাধপ তবলা বাজে। হঠাৎ জীবন মননকে বলল, আমরাও তো ইচ্ছে করলে ছড়া লিখতে পারি। এই যে বলা হলো, ‘মনের মাঝে ধাই ধপাধপ তবলা বাজে, নাইবা তাহার অর্থ হোক নাই বা বুঝুক বেবাক লোক’Ñ আমরা আমাদের জন্যই শুধু রচনা করব। [ফেনী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়] ক. চাঁদের মতো স্বপ্ন দেখেন কারা? ১ খ. লেখকের মতে, কবিতা পড়লে কেমন লাগে? ২ গ. উদ্দীপকে ‘শব্দ থেকে কবিতা’ প্রবন্ধের কোন দিকটির সাদৃশ্য নির্দেশ করে-? ব্যাখ্যা কর। ৩ ঘ. ‘মনের মাঝে ধাই ধপাধপ তবলা বাজে’Ñ এই উক্তিটি শব্দ থেকে কবিতা’ প্রবন্ধের আলোকে বিশ্লেষণ কর। ৪ ক চাঁদের মতো স্বপ্ন দেখেন কবিরা। খ লেখকের মতে, কবিতা পড়লে মন নেচে ওঠে, গান গেয়ে উঠতে ইচ্ছা করে, চোখে বুকে রংবেরঙের স্বপ্ন এসে জমা হয়। কবিতা কখনো আমাদের মন প্রফুল্ল করে, আবার কখনো মনকে বিষাদময় করে। কবিতা পড়লে আমাদের বিষাদময় দিন আনন্দে ভরে যায়। কবিতা মাঝে মাঝে আমাদের আবেগঘনও করে তোলে। তাই কবিতার মাধ্যমে আমাদের মনে রং ছড়িয়ে পড়ে এবং আমাদের চোখে স্বপ্ন এসে ধরা দেয়। গ উদ্দীপকের সাথে ‘শব্দ থেকে কবিতা’ প্রবন্ধের যেকোনো বিষয় নিয়েই যে কবিতা লেখা যায় এবং কবিতা লেখার জন্য যে স্বপ্নের প্রয়োজন এই দিকটির সাদৃশ্য রয়েছে। ‘শব্দ থেকে কবিতা’ প্রবন্ধে লেখক বলেছেন, যেকোনো বিষয় নিয়েই কবিতা লেখা যায়। বাড়ির পাশের গলি, দূরের ধানখেত, পোষা বিড়াল, পুতুলকে নিয়ে কবিতা লেখা যায়, যদি স্বপ্ন থাকে। আর যা নেই তা নিয়েও কবিতা লেখা যায়, যদি স্বপ্ন থাকে। কবিতা লেখার জন্য প্রথমেই প্রয়োজন স্বপ্ন। উদ্দীপকেও ছড়া কেটে খেলার সময় জীবন ও মনন অনুভব করে, মনে যা আসে তাই কিংবা যা দেখতে পাওয়া যায় তাই নিয়ে ছড়া লেখা উচিত। যদি তার নির্দিষ্ট কোনো অর্থ না থাকে বা মানুষ যদি তার অর্থ নাও বোঝে তাতে কোনো ক্ষতি নেই। মনে যা আসে তাই নিয়ে ছড়া ও কবিতা লেখা উচিত। তা কেউ বুঝুক বা না বুঝুক। নিজের মনের আনন্দের জন্য

সপ্তম শ্রেণির বাংলা শব্দ থেকে কবিতা Read More »

সপ্তম শ্রেণির বাংলা মরু-ভাস্কর

মরু-ভাস্কর হবীবুল্লাহ্ বাহার লেখক ও রচনা সম্পর্কিত তথ্য  লেখক পরিচিতি  নাম হবীবুল্লাহ্ বাহার জন্ম পরিচয় জন্ম : ১৯০৬ খ্রিষ্টাব্দ। জন্মস্থান : ফেনী। পিতৃ পরিচয় পিতার নাম : মোহাম্মদ নুরুল্লাহ চৌধুরী। শিক্ষাজীবন এসএসসি চট্টগ্রাম মিউনিসিপ্যাল স্কুল (১৯২২); আইএসসি চট্টগ্রাম কলেজ (১৯২৪); বিএ কলকাতা ইসলামিয়া কলেজ (১৯২৮)। কর্মজীবন/পেশা সাংবাদিকতা, সম্পাদক সাহিত্য পত্র : বুলবুল। ১৯৩৭ খ্রিষ্টাব্দে বঙ্গীয় মুসলিম লীগের নির্বাহী পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৪৬ খ্রিষ্টাব্দে ফেনীর পরশুরাম নির্বাচনি এলাকা থেকে বঙ্গীয় আইনসভার সদস্য নির্বাচিত হন এবং মন্ত্রিত্বের দায়িত্ব পালন করেন। সাহিত্য সাধনা গদ্য : পাকিস্তান, ওমর ফারুক, আমীর আলী, মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ। রচনার বৈশিষ্ট্য গদ্য রচনা। জীবনাবসান ১৫ এপ্রিল ১৯৬৬ খ্রিষ্টাব্দ। সৃজনশীলপ্রশ্নওউত্তর প্রশ্ন- ১ ল্ফল্ফ হযরত মুহাম্মদ (স.) সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ। কিন্তু শ্রেষ্ঠত্বের কোনো অহমিকা তাঁর ছিল না। মানুষের প্রতি তাঁর ভালোবাসা ছিল অফুরন্ত। সকলের প্রতি তাঁর আচরণ ছিল হাসিমাখা। ছোট ছোট শিশুদের তিনি খুব বেশি স্নেহ করতেন। তাঁর বালক-বন্ধুর সাথে দেখা হলে তিনি বন্ধুর বুলবুলি পাখির খবর নিতেও ভুলে যেতেন না। ক. হযরত মুহাম্মদ (স.) কোন ধর্মের প্রবর্তক ছিলেন? খ. মানুষের প্রতি হযরত মুহাম্মদ (স.) এর আচরণ কীরূপ ছিল উদ্দীপকের আলোকে ব্যাখ্যা কর। গ. সমাজে শান্তি-শৃঙ্খলা উন্নয়নে রাসুল (স.) এর আদর্শ কতটুকু ফলদায়ক যুক্তিসহ উপস্থাপন কর। ঘ.বালক-বন্ধুর কাছে তিনি বুলবুলির খবর জানতে চাইলেন, এ ঘটনার মধ্য দিয়ে তাঁর চরিত্রের কোন বৈশিষ্ট্যের পরিচয় পাওয়া যায় বিশ্লেষণ কর। ক হযরত মুহাম্মদ (স.) ইসলাম ধর্মের প্রবর্তক ছিলেন। খ মানুষের প্রতি হযরত মুহাম্মদ (স.) এর আচরণ ছিল কুসুমের মতো কোমল। মানুষের প্রতি তাঁর ভালোবাসা ছিল অফুরন্ত। ছোট শিশুদের তিনি খুব বেশি স্নেহ করতেন। শ্রেষ্ঠত্বের অহংকার তাঁর ছিল না। কাউকে তিনি কড়া কথা বলেননি। কাউকে অভিসম্পাত দেননি। নিজে নির্যাতিত হয়েও প্রতিদানে তিনি ক্ষমা করেছেন। গ সমাজে শান্তি-শৃঙ্খলা উন্নয়নে রাসুল (স.) এর আদর্শ এক বিস্ময়কর অবদান রাখে। ‘মরু-ভাস্কর’ প্রবন্ধে আমরা পাই- রাসুল (স.) ছিলেন পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব। অত্যন্ত সহজ সরল জীবনযাপন করেছেন তিনি। তাঁর ঘরে ছিল একখানা খেজুর পাতার বিছানা আর একটি পানির সুরাই। অনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটিয়েছেন তিনি। জীবনে কাউকে কড়া কথা বলেননি। মক্কা ও তায়েফে যারা তাঁকে অত্যাচারে জর্জরিত করেছে তাদের অভিসম্পতি দেননি- বলেছেন, এদের জ্ঞান দাও প্রভু এদের ক্ষমা কর। দাসত্বপ্রথা দূর করা, নারীর মর্যাদা প্রতিষ্ঠা তার চরিত্রের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। জ্ঞান অর্জনের প্রতি গুরুত্ব প্রদান করেছেন, কুসংস্কার দূর করেছেন। হযরত মুহাম্মদ (স.) শ্রেষ্ঠ মহামানব ছিলেন কিন্তু তাঁর সে শ্রেষ্ঠত্বের অহমিকা ছিল না। মানুষের প্রতি তাঁর ভালোবাসা ছিল অফুরন্ত। ছোট শিশুদের তিনি অত্যন্ত স্নেহ করতেন। তাঁর বালক বন্ধুদের পোষা পাখির খবর নিতেও তিনি ভুলতেন না। তাঁর এই বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত আদর্শ সমাজে শান্তি ও শৃঙ্খলা আনয়নে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখে। অন্য ধর্মের প্রতি তিনি ছিলেন উদার ও সহিষ্ণু। তাঁর চরিত্র মাধুর্য মানুষে মানুষে বন্ধুত্বের বন্ধনে আবদ্ধ করেছিল। ফলে সমাজ থেকে মারামারি হানাহানি হিংসা-বিদ্বেষ দূরীভ‚ত হয়ে শান্তি স্থাপিত হয়েছিল। ঘ বালক বন্ধুর কাছে তিনি বুলবুলির খবর জানতে চাইতেন। এ ঘটনার মধ্য দিয়ে ছোট শিশুদের অধিক স্নেহ করার গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য ফুটে উঠেছে। হযরত মুহাম্মদ (স.) ছিলেন কুসুমের মতো কোমল হৃদয়ের অধিকারী। শিশুর মন নিয়ে তিনি মিশতেন শিশুদের সাথে। পথে দেখা হলে বালক-বন্ধুকে তার বুলবুলির খবর নিতে তিনি ভুলতেন না। শিশুদের কান্না তিনি সহ্য করতে পারতেন না। শিশুদের মাথায় প্রায়ই হাত বুলিয়ে দিতেন, আদর করতেন। মহানবি (স.) এভাবেই শিশুদের হাসিখুশি রাখতে চেষ্টা করতেন। তিনি মনে করতেন এ শিশুই একদিন বড় হবে। সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে তার মানসিক বিকাশ অত্যন্ত জরুরি। তিনি বড়দের নির্দেশ দিয়েছেন ছোটদের স্নেহ করতে। সামাজিক ভারসাম্যের জন্য এটি জরুরি । মহানবির চরিত্রে সকল সগুণাবলির সমাবেশ ঘটেছিল। শিশুর প্রতি স্নেহশীলতার আচরণ তাঁর চরিত্রের অন্যতম বৈশিষ্ট্য ছিল। প্রশ্ন- ১ ল্ফল্ফ শিক্ষক হাসানুজ্জামান শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বললেন, তোমরা যদি আদর্শ মানুষ হতে চাও তাহলে একজন আদর্শ মানুষ খুঁজে নাও। যিনি বিপুল ঐশ্বর্য ও ক্ষমতার অধিকারী হয়েও ছিলেন সাধারণ মানুষের মতো। মানুষের অগাধ ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা যাঁর চলার একমাত্র পাথেয়। যাঁর মনে রয়েছে প্রেম ও অসীম দয়া। যাঁর সাধনা ও ত্যাগ কেবল মানুষের কল্যাণকে ঘিরেই। ক. হযরত মোস্তফা (স.) মানবতার কী ছিলেন? ১ খ. মক্কা বিজয়ের পর ভয়ে কাঁপতে থাকা এক ব্যক্তিকে মহানবি কীভাবে আশ্বস্ত করলেন? ২ গ. উদ্দীপকের আদর্শ মানুষ-এর চরিত্র মরু-ভাস্কর প্রবন্ধের কোন চরিত্রের অনুরূপ-ব্যাখ্যা কর। ৩ ঘ.“যিনি বিপুল ঐশ্বর্যের অধিকারী হয়েও ছিলেন সাধারণ মানুষের মতো”-উক্তিটি ‘মরু-ভাস্কর’ প্রবন্ধের আলোকে বিশ্লেষণ কর। ৪ ক হযরত মোস্তফা (স.) মানবতার গৌরব ছিলেন। খ মক্কা বিজয়ের পর সাফা পর্বতের পাদদেশে বসে হযরত মুহাম্মদ (স.) বক্তৃতা করছিলেন। একজন লোক তাঁর সামনে এসে ভয়ে কাঁপতে লাগল। হযরত অভয় দিয়ে বললেন, ভয় করছ কেন? আমি রাজা নই, কারও মুনিবও নই- এমন মায়ের সন্তান আমি শুষ্ক খাদ্যই যার আহার্য। গ উদ্দীপকের আদর্শ মানুষ এর চরিত্র ‘মরু-ভাস্কর’ প্রবন্ধের হযরত মুহাম্মদ (স.) এর চরিত্রের অনুরূপ। ‘মরু-ভাস্কর’ প্রবন্ধে মহানবি হযরত মুহাম্মদ (স.) এর অতুলনীয় চরিত্র মাধুর্যের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। তিনি ছিলেন মানবপ্রেমে, জীবপ্রেমে মহীয়ান। সবসময় তিনি সহজ-সরল অনাড়ম্বর জীবন-যাপন করেছেন। আত্মীয়স্বজন সবার সঙ্গে ব্যক্তিগত আচরণে তিনি ছিলেন কুসুমের মতো কোমল। জীবনে কাউকে তিনি কড়া কথা বলেননি। কাউকে অভিসম্পাত দেননি। নিজে নির্যাতিত হয়েও প্রতিদানে তিনি ক্ষমা করেছেন। ক্রীতদাস প্রথার বিলোপ, নারীর মর্যাদা প্রতিষ্ঠা, অমুসলিমদের অধিকারসহ মানবতার কল্যাণে যুগান্তকারী অবদান রাখেন। উদ্দীপকে শিক্ষক হাসানুজ্জামান শিক্ষার্থীদের এমন একজন আদর্শ মানুষকে অনুসরণ করতে বলেন, যিনি বিপুল ঐশ্বর্য ও ক্ষমতার অধিকারী হয়েও ছিলেন সাধারণ মানুষের মতো। যিনি লাভ করেছিলেন মানুষের অগাধ ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা। তাঁর প্রেম, অসীম দয়া, সাধনা, ত্যাগ কেবল মানুষের কল্যাণকেই ঘিরে। উদ্দীপকের আদর্শ মানুষের বৈশিষ্ট্য কেবলমাত্র মহানবি হযরত মুহাম্মদ (স.) এর মাঝেই পাওয়া যায়। উদ্দীপকে উল্লিখিত চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য ‘মরু-ভাস্কর’ প্রবন্ধে মহানবি (স.) এর সাথেই কেবল মিল পাওয়া যায়। ঘ যিনি বিপুল ঐশ্বর্যের অধিকারী হয়েও ছিলেন সাধারণ মানুষের মতো- মহানবি (স.) এর ক্ষেত্রে উক্তিটি যথার্থ। ‘মরু-ভাস্কর’ প্রবন্ধে উল্লিখিত মহানবি (স.) সত্যিই ‘মরু-ভাস্কর’ বা মরুর সূর্য ছিলেন। কারণ তিনি তাঁর আলোকে পৃথিবী আলোকিত করেছিলেন। আল্লাহর নবি হওয়া সত্তে¡ও তিনি নিজেকে সাধারণ মানুষই মনে করতেন। সাধারণ জীবনযাপন করতেন। এক এতিম শিশু হলেন আরবের অবিসংবাদিত নেতা। হযরত মুহাম্মদ (স.) যখন মদিনার অধিনায়ক, তখন তাঁর ঘরের আসবাব ছিল একখানা খেজুর পাতার বিছানা আর একটি পানির সুরাই। অনাহারে থাকতে হতো তাঁকে এবং অনেক সময় উননে আগুন জ্বলত না। উদ্দীপকে শিক্ষক শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, তোমরা এমন একজন আদর্শ মানুষ খুঁজে নাও যিনি বিপুল ঐশ্বর্য ও ক্ষমতার অধিকারী হয়েও ছিলেন সাধারণ মানুষের মতো। বংশ গৌরব কিংবা মিথ্যা অহংকার তাঁর ছিল না। তিনি কাজ করে গেছেন শুধু মানুষের কল্যাণে। তাঁর সাধনা ও ত্যাগ ছিল শুধু মানুষের কল্যাণে। উদ্দীপক ও ‘মরু-ভাস্কর’ প্রবন্ধে পর্যালোচনা করলে আমরা একই সত্যের প্রতিধ্বনি লক্ষ করি। মহানবি ছিলেন মানব দরদি, ব্যক্তিগত সুখ-স্বাচ্ছন্দের কথা তিনি কখনই ভাবেননি। রাষ্ট্রক্ষমতা, প্রভাব প্রতিপত্তি সবই তাঁর ছিল কিন্তু ক্ষমতার

সপ্তম শ্রেণির বাংলা মরু-ভাস্কর Read More »

সপ্তম শ্রেণির বাংলা লখার একুশে

লখার একুশে আবুবকর সিদ্দিক লেখক ও রচনা সম্পর্কিত তথ্য  লেখক পরিচিতি নাম আবুবকর সিদ্দিক। জন্ম পরিচয় জন্ম : ১৯৩৪ খ্রিষ্টাব্দ। জন্মস্থান : বাগেরহাট। পিতৃ-মাতৃ পরিচয় পিতা : মতিউর রহমান পাটোয়ারী। মাতা : মতিবিবি। শিক্ষাজীবন আবুবকর সিদ্দিক ১৯৫২ সালে বাগেরহাট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে প্রবেশিকা, ১৯৫৪ সালে বাগেরহাট পিসি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক এবং ১৯৫৬ সালে একই কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৫৮ সালে স্নাতকোত্তর পাস করেন। পেশা/কর্মজীবন আবুবকর সিদ্দিক কর্মজীবনে দীর্ঘদিন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে অধ্যাপনা করেছেন। এছাড়াও তিনি কুইন্স ইউনিভার্সিটি (১৯৯৬Ñ১৯৯৭) এবং নটর ডেম কলেজে (১৯৯৭Ñ২০০০) অধ্যাপনা করেন। সাহিত্য সাধনা উপন্যাস : জলরাক্ষস, খরাদাহ, বারুদ পোড়া প্রহর, একাত্তরের হৃদয়ভস্ম প্রভৃতি। পুরস্কার ও সম্মাননা বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার (১৯৮৮), বাংলাদেশ লেখিকাসংঘ পুরস্কার, বাংলাদেশ কথাশিল্পী সংসদ পুরস্কার, খুলনা সাহিত্য পরিষদ পুরস্কার, কলকাতার ‘অতন্দ্র সাহিত্যপ্রসার সমিতি’ পুরস্কার লাভ করেন প্রভৃতি। সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ প্রশ্ন- ১ ল্ফল্ফ আজ মহান একুশে ফেব্র“য়ারি। তোমরা নিশ্চয়ই আজ শহিদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাতে শহিদ মিনারে উপস্থিত হয়েছ। আজ তোমাদের সাথে শামিল হওয়ার জন্য দূর দেশে বসে মন কাঁদছে আমারও। ইতি তোমার বন্ধু হাসান ক. কী দেখলে বুক কাঁপে লখার? ১ খ. লখার দিন কাটে কীভাবে? ২ গ. হাসানের আবেগের মধ্যে লখার আবেগের প্রতিফলন কীভাবে ঘটেছে ব্যাখ্যা কর। ৩ ঘ.“লখা ও হাসানের মতো মানুষের আবেগই শহিদদের যুগ যুগ ধরে বাঁচিয়ে রাখবে।” মন্তব্যটি মূল্যায়ন কর। ৪ ক ছায়া দেখলে বুক কাঁপে লখার। খ লখার দিন কাটে নানারকম খেলে, বন্ধুদের সাথে মারামারি করে আর দুষ্টুমি করে। লখার মা সকাল হলেই ভিক্ষা করতে বেরিয়ে যায়। লখার দিন কাটে গুলি খেলে, ছেঁড়া কাগজ কুড়িয়ে, বন্ধুদের সঙ্গে মারামারি করে আর খাবারের দোকানের এঁটোপাতা চেটে। এরপর খিদে পেটে নিয়ে যখন ফুটপাতের কঠিন শানে মায়ের পাশে ঘুমাতে যায় তখন সে খিদের কষ্ট ভুলে যায়। এভাবে অনাহারে-অর্ধাহারে লখার দিন কাটে। গ হাসানের শহিদের স্মরণে শহিদ বেদিতে ফুল দেবার আবেগের মধ্য দিয়ে লখার আবেগের প্রতিফলন ঘটেছে। ‘লখার একুশে’ গল্পে লখা একটি বাক্প্রতিবন্ধী টোকাই ছেলে। ফুল কেনার সামর্থ্য না থাকলেও সে অতি কষ্ট করে ফুল সংগ্রহ করে। শীতের কষ্ট, সাপের ভয়, কাঁটার আঘাত সব সহ্য করে সে ফুল সংগ্রহ করে। তারপর সে ফুল নিয়ে প্রভাতফেরিতে সবার সাথে অংশগ্রহণ করে। সবার সাথে গেয়ে ওঠে আঁ আঁ আঁ আঁ (আমার ভায়ের রক্তে রাঙানো) এতে সে আত্মতৃপ্তি পায় শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করতে পারার আনন্দে। উদ্দীপকের হাসান দূর দেশে থাকায় সে লখার মতো সরাসরি শহিদ মিনারে ফুল দিতে পারে না। সে কারণে অতীত স্মৃতির কথা মনে করে তার মন কেঁদে ওঠে। তাই সে বন্ধুর কাছে পত্র লিখেছে। আর এভাবেই একুশে ফেব্র“য়ারি উদ্যাপনের চেতনার প্রতিফলন ঘটেছে লখা ও হাসানের আবেগের মধ্যে। হাসানের শহিদ দিবস উদ্যাপনের আবেগের মধ্য দিয়ে লখার শহিদ দিবস উদ্যাপনের আবেগই প্রকাশ পায়। ঘ ‘লখা ও হাসানের মতো মানুষের আবেগই শহিদদের যুগ যুগ ধরে বাঁচিয়ে রাখবে’এ উক্তিটি যথার্থ। ‘লখার একুশে’ গল্পে লখার মাঝে আমরা অমর শহিদদের প্রতি হৃদয় নিংড়ানো একুশের আবেগ দেখতে পাই। সে শহিদ মিনারে ফুল দিয়ে ভাষা শহিদদের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য ব্যাকুল হয়ে ওঠে, একুশে ফেব্র“য়ারির আগের রাতে ফুল সংগ্রহের জন্য অসহ্য কষ্ট সহ্য করে এবং শহিদ মিনারে গিয়ে ফুল দেয়। লখা ‘আঁ আঁ আঁ আঁ’ করে সবার সঙ্গে গলা মিলিয়ে ভাষা শহিদদের স্মরণ করে। অর্থাৎ লখা নিজে শহিদ মিনারে ফুল দিয়ে শহিদ দিবস উদ্যাপন করছে। অন্যদিকে দূর দেশ থেকে হাসান তার বন্ধুকে ভাষা শহিদের প্রতি আবেগ প্রকাশ করেছে। বন্ধুদের সাথে মারামারি করে হাসান দূর দেশে থাকার কারণে বন্ধুদের সাথে শহিদ মিনারে গিয়ে ফুল দিয়ে একুশে ফেব্র“য়ারি পালন করতে পারবে না। কিন্তু একুশে ফেব্র“য়ারি দিনটি উদ্যাপনের জন্য মন ব্যাকুল হয়ে উঠেছিল। উল্লিখিত আলোচনায় বলা যায় যে, ‘লখা ও হাসানের মতো মানুষের আবেগ শহিদদের যুগ যুগ ধরে বাঁচিয়ে রাখবে’। প্রশ্ন- ২ ল্ফল্ফ জমির মিয়া একজন প্রতিবন্ধী, সে বৃদ্ধ। মুক্তিযুদ্ধে তিনি তার দুটি পা ও একটি হাত হারিয়ে এ পঙ্গুত্ব বরণ করেন। কিন্তু তিনি আজও পুরোদস্তুর একজন মুক্তিযোদ্ধা। এখন তিনি যুদ্ধ করেন কলম দিয়ে, দেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস উন্মোচন করেন। আর বিজয় দিবস এলে তিনি আজও প্রাণের আবেগে সহযোদ্ধাদের স্মরণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। ক. ‘মেঙে’ শব্দের অর্থ কী? ১ খ. লখাকে কেন ভারি মজার দুষ্টু ছেলে বলা হয়েছে? ২ গ. উদ্দীপকের জমির মিয়ার সাথে লখার সাদৃশ্য নির্ণয় কর। ৩ ঘ. ‘লখা ও জমির মিয়া লাখো বাঙালির প্রতিচ্ছবি’Ñ উক্তিটি বিশ্লেষণ কর। ৪ ক ‘মেঙে’ শব্দের অর্থ চেয়ে। খ লখার দুষ্টুমির ধরন দেখে লেখক তাকে ভারি মজার দুষ্ট ছেলে বলেছেন। লখা পিতৃহীন টোকাই। সারাদিন বন্ধুদের সাথে কাগজ কুড়িয়ে আর মারামারি করে সময় কাটায়। মাঝে-মধ্যে রেললাইনের ইটের টুকরা দিয়ে ইস্পাত লাইনে টুকটুক আঘাত করে তার ওপর কান পাতে, গুন গুন আওয়াজ শোনে অনেকক্ষণ ধরে। এমনভাবে শোনে যেন গানের সুরলহরি বয়ে যাচ্ছে তার কানের ভেতর দিয়ে। লখার এমন খেয়ালিপনা দেখে তাকে লেখক বলেছেন, ‘ভারি মজার দুষ্টু ছেলে।’ গ শহিদদের প্রতি গভীর ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা নিবেদনের দিক থেকে উদ্দীপকের জমির মিয়ার সাথে লখার সাদৃশ্য রয়েছে। ‘লখার একুশে’ গল্পে লখা চরিত্রে ফুটে উঠেছে এক দেশপ্রেমিক বাঙালির প্রতিচ্ছবি। লখা একজন বাক প্রতিবন্ধী টোকাই হলেও শহিদদের অবদান সম্পর্কে অবগত। যার ওপর ভিত্তি করে তার মনে ভাষা শহিদদের প্রতি জন্ম নিয়েছে অকৃত্রিম শ্রদ্ধাবোধ। ভোর না হতেই যোগ দিয়েছে প্রভাতফেরির মিছিলে। শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে শান্ত করেছে অতৃপ্ত মনকে। ভাষা শহিদদের আমরা মনে প্রাণে শ্রদ্ধা ও স্মরণ করি। দেশের আপামর জনসাধারণ তাদের কৃতকর্মের জন্য কৃতজ্ঞ। যা আমরা উদ্দীপকের জমির মিয়া ও লখার শ্রদ্ধা নিবেদনের মধ্য দিয়ে দেখতে পাই। জমির মিয়া ছিলেন মুক্তিযোদ্ধাদের একজন। তিনি শাহাদাত বরণ না করলেও হাত-পা হারিয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন। কিন্তু তিনি আজও তার সহযোদ্ধাদের মৃত্যুযন্ত্রণা অনুভব করে ব্যথিত হন। তাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এক্ষেত্রে আমরা শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনে লখা ও জমির মিয়ার ভাবাবেগের সাদৃশ্য লক্ষ করি। ঘ ‘লখা ও জমির মিয়া লাখো বাঙালির প্রতিচ্ছবি।’ Ñউক্তিটি যথার্থ। ‘লখার একুশে’ একটি দেশপ্রেমের চেতনা সৃষ্টিমূলক গল্প। লখা বাক্ প্রতিবন্ধী কিশোর বালক কিন্তু শহিদদের প্রতি তার হৃদয়ে ছিল এক অনন্য শ্রদ্ধাবোধ। তাই শীতের কুয়াশা আর সব ভয়ভীতি উপেক্ষা করে সে মায়ের চোখ ফাঁকি দিয়ে গাছে উঠে ফুল সংগ্রহ করার জন্য। শ্রদ্ধা জানানোর তীব্র বাসনা থেকে মনের জোরে অতি কষ্টে সে পেড়ে আনে রক্ত রাঙা লাল ফুল। শ্রদ্ধা নিবেদনে লখা ও জমির মিয়ার দেশপ্রেম লাখো বাঙালির মানসিক অনুভ‚তির প্রতিনিধিত্ব করে। উদ্দীপকের জমির মিয়াও একজন দেশপ্রেমি বাঙালি । যিনি যুদ্ধে নিজের হাত-পা হারালেও আজও বিজয় দিবসে সহযোদ্ধাদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধায় শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। শহিদ দিবস এলে শহিদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ বিষয়টি ‘লখার একুশে’ গল্পের লখা ও উদ্দীপকের জমির মিয়ার মধ্যে পরিলক্ষিত হয়। উপর্যুক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায় যে,

সপ্তম শ্রেণির বাংলা লখার একুশে Read More »

সপ্তম শ্রেণির বাংলা কাবুলিওয়ালা

 গদ্য  কাবুলিওয়ালা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লেখক ও রচনা সম্পর্কিত তথ্য নাম প্রকৃত নাম : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। ছদ্মনাম : ভানুসিংহ ঠাকুর। জন্ম পরিচয় জন্ম : ৭ই মে, ১৮৬১ খ্রিষ্টাব্দ (২৫শে বৈশাখ, ১২৬৮ বঙ্গাব্দ)। জন্মস্থান : জোড়াসাঁকো, কলকাতা। পিতৃ ও মাতৃপরিচয় পিতার নাম : মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর। মাতার নাম : সারদা দেবী। শিক্ষাজীবন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ছোটবেলায় ওরিয়েন্টাল সেমিনারি, বিদ্যাসাগর প্রতিষ্ঠিত নর্মাল স্কুল, বেঙ্গল একাডেমি, সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুল প্রভৃতি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যয়ন করলেও স্কুলের পাঠ শেষ করতে পারেননি। ১৭ বছর বয়সে ব্যারিস্টারি পড়তে ইংল্যান্ডে যান। সে পড়াও শেষ না হতেই দেশে ফিরে আসেন তিনি। কিন্তু স্বশিক্ষা ও স্বীয় সাধনায় বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে এনে দিয়েছেন অতুলনীয় সমৃদ্ধি। পেশা/কর্মজীবন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর পিতৃ আদেশে ১৮৮৪ খ্রিষ্টাব্দ থেকে বিষয়কর্ম পরিদর্শনে নিযুক্ত হন। তিনি ১৮৯০ খ্রিষ্টাব্দ থেকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে জমিদারি দেখাশোনা করেন। সাহিত্য সাধনা কাব্যগ্রন্থ : বনফুল, মানসী, কড়ি ও কোমল, সোনার তরী, চিত্রা, ক্ষণিকা, বলাকা, পূরবী, পুনশ্চ, গীতাঞ্জলি, শেষ লেখা বিশেষ উল্লেখযোগ্য। উপন্যাস : গোরা, ঘরে-বাইরে, চতুরঙ্গ, চোখের বালি, যোগাযোগ, নৌকাডুবি, শেষের কবিতা, দুইবোন, মালঞ্চ ইত্যাদি। কাব্যনাট্য : কাহিনী, চিত্রাঙ্গদা, বসন্ত, বিদায় অভিশাপ, মালিনী, রাজা ও রানি ইত্যাদি। নাটক : অচলায়তন, চিরকুমার সভা, মুক্তধারা, ডাকঘর, রক্তকরবী, রাজা, বিসর্জন ইত্যাদি। গল্পগ্রন্থ : গল্পগুচ্ছ, গল্পস্বল্প, তিনসঙ্গী, লিপিকা ইত্যাদি। ভ্রমণকাহিনি : জাপান যাত্রী, পথের সঞ্চয়, পারস্য, রাশিয়ার চিঠি, য়ুরোপ যাত্রীর ডায়েরি, য়ুরোপ প্রবাসীর পত্র ইত্যাদি। শিশুসাহিত্য : শিশু ভোলানাথ, খাপছাড়া ইত্যাদি। পুরস্কার ও সম্মাননা নোবেল পুরস্কার (১৯১৩), কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক সম্মানসূচক ডিলিট (১৯১৩), অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক সম্মানসূচক ডিলিট (১৯৪০), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক সম্মানসূচক ডিলিট (১৯৩৬) অর্জন। জীবনাবসান ৭ই আগস্ট, ১৯৪১ খ্রিষ্টাব্দ (২২শে শ্রাবণ, ১৩৪৮ বঙ্গাব্দ)। সৃজনশীলপ্রশ্নওউত্তর   প্রশ্ন- ১ ল্ফল্ফ উদ্দীপক-১ : নতুন দারোয়ান সামাদ মিয়ার সাথে ছেলের বেশি ভাব-বন্ধুত্ব কিছুতেই মেনে নিতে পারেন না আবীরের মা। তিনি স্বামীকে বোঝান- বিভিন্ন ফন্দি করে মানুষ এখন অন্যের বাচ্চা চুরি করে। সামাদ মিয়াও তো একদিন তেমন কিছু করে বসতে পারে। উদ্দীপক-২ : বারো বছর আগের ছোট্ট আবীর আজ কলেজ থেকে ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় হাসপাতালে। রক্তের জন্য বাবা-মা বিভিন্ন জায়গায় যোগাযোগ করছেন। খবর পেয়ে সামাদ মিয়া ছুটে এসে হাউমাউ করে কাঁদতে কাঁদতে বলে- ‘সাহেব, আবীর বাবার জন্য আমার সব রক্ত নেন, আমার নিজের ছেলেরে হারাইছি, ওরে হারাইলে আমি বাঁচুম না।’ ক. কাবুলিওয়ালার মলিন কাগজটিতে কী ছিল? খ. রহমতকে কারাবরণ করতে হয়েছিল কেন? গ. উদ্দীপক-১ অংশে ‘কাবুলিওয়ালা’ গল্পের কোন দিকটি প্রকাশ পেয়েছে ব্যাখ্যা কর। ঘ. ‘উদ্দীপকের সামাদ মিয়া যেন কাবুলিওয়ালা গল্পের মূল ভাবকেই ধারণ করে আছে’- বিশ্লেষণ কর। ক কাবুলিওয়ালার মলিন কাগজটিতে ছিল একটি ছোট হাতের ছাপ। খ ধারের টাকা নিয়ে বচসা হওয়াকালীন সময়ে জেদের বশে কাবুলিওয়ালা লেখকের প্রতিবেশী রামপুরিকে ছুরি বসিয়ে দেয়। আর এ কারণেই তার কারাদণ্ড হয়েছিল। কাবুলিওয়ালা কলিকাতার রাস্তায় বিভিন্ন জিনিসের সওদা করত। লেখকের এক প্রতিবেশী রামপুরী চাদরের জন্য কাবুলিওয়ালার কাছ থেকে কিছু টাকা ধার নিয়েছিল। কিন্তু পরবর্তী সময় সে মিথ্যা কথা বলে ধারের কথা অস্বীকার করে। এ বিষয়ে প্রতিবেশীর সাথে ঝগড়ারত অবস্থায় কাবুলিওয়ালা তাকে ক্রোধের বশবর্তী হয়ে ছুরি বসিয়ে দেয়। এ কারণে হাকিমের আদালতে কাবুলিওয়ালার কারাদণ্ড হয়েছিল। গ সন্তানের যেকোনো প্রকারের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা উদ্দীপক-১ ও ‘কাবুলিওয়ালা’ গল্পে সমানভাবে প্রকাশিত হয়েছে। ‘কাবুলিওয়ালা’ গল্পে কাবুলিওয়ালার ভেতরে পিতৃস্নেহ জেগে ওঠায় শিশু মিনির প্রতি এক ধরনের সখ্যতা গড়ে ওঠে। মিনি ও কাবুলিওয়ালার প্রতি কৌত‚হলী হয়ে ওঠে। তাদের কথাবার্তা যোগাযোগ ও বন্ধুত্বকে লেখক প্রশ্রয় দিলেও মিনির মা বিষয়টি স্বাভাবিকভাবে দেখেননি। তিনি ছিলেন অত্যন্ত শঙ্কিত স্বভাবের লোক। কাবুলিওয়ালা সম্পর্কে তিনি নিঃসংশয় ছিলেন না। তার প্রতি দৃষ্টি রাখতে লেখককে বার বার অনুরোধ করেছেন। উদ্দীপক-১ এ দারোয়ান সামাদ মিয়ার সাথে ছেলের বেশি ভাব-বন্ধুত্ব মেনে নিতে পারেন না আবীরের মা। তিনি মনে করেন এভাবেই বিভিন্ন ফন্দি করে মানুষ অপরের বাচ্চা চুরি করে। সামাদ মিয়াও এমন কিছু করে বসতে পারে। সন্তান চিন্তায় ব্যাকুল নারী স্বামীকে একথা বোঝানোর চেষ্টা করেন। উদ্দীপকের সন্তানের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কার দিকটি ‘কাবুলিওয়ালা’ গল্পের মিনির মায়ের মধ্যে সমানভাবে প্রতিফলিত হয়েছে। মিনিকে নিয়ে মিনির মায়ের মনে একই দুর্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছিল। উদ্দীপক ও ‘কাবুলিওয়ালা’ গল্প উভয় স্থানে সন্তান চিন্তায় উদ্বিগ্ন মা শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। ঘ উদ্দীপকের সামাদ মিয়ার কাছে সন্তানবাৎসল্য মুখ্য হয়ে ওঠায় তা ‘কাবুলিওয়ালা’ গল্পের মূল ভাবকেই ধারণ করে আছে। ‘কাবুলিওয়ালা’ গল্পে কাবুলিওয়ালা ও মিনির সম্পর্ককে কেন্দ্র করেই গল্পের কাহিনি আবর্তিত হয়েছে। কাবুলিওয়ালার মিনির বয়সি এক মেয়ে আছে। জীবন জীবিকার সন্ধানে কাবুলিওয়ালাকে তার নিজ দেশ থেকে বিদেশ বিভঁ‚ইয়ে ঘুরে বেড়াতে হচ্ছে। কিন্তু মেয়ের স্মৃতি সে ভুলতে পারে না। চঞ্চল মিনিকে দেখে তার মধ্যে পিতৃত্ব আরো বেশি জেগে ওঠে। নিজের সন্তান ভেবে মিনির সাথে দেখা করে। গল্প করে, বাদাম, কিসমিস মেওয়া ইত্যাদি তাকে দেয়। তাদের এই সম্পর্ক অকৃত্রিম। তাই মিনির বিয়ের দিন মিনির সাথে দেখা হবে না জেনে কাবুলিওয়ালা খুব ব্যথিত হয়। অন্যদিকে উদ্দীপকে আমরা লক্ষ করি সামাদ মিয়ার ছিল আবীরের বয়সি ছেলে। সন্তান হারানোর দুঃখ ভুলতে সে আবীরের প্রতি আগ্রহ দেখায়। সড়ক দুর্ঘটনায় আবীর আহত হলে হাসপাতালে রক্তের প্রয়োজন হয়। আবীরের এই দুর্ঘটনার খবর শুনে সামাদ মিয়া হাউমাউ করে কাঁদতে থাকে। আর বলে সাহেব, আবীর বাবার জন্য আমার সব রক্ত নেন। আমার ছেলেরে হারাইছি, ওরে হারাইলে আমি বাঁচুম না। ‘কাবুলিওয়ালা’ গল্পে মিনির প্রতি কাবুলিওলার ছিল অপরিসীম স্নেহ ও ভালোবাসা। মিনিকে দেখে সে নিজের মেয়েকে না দেখার কষ্ট ভুলে থাকত। মিনির বিয়ের দিন সে প্রথম বারের মতো অনুভব করেছে মিনির মতো তার মেয়েটিও বিবাহযোগ্য হয়ে উঠেছে। তাছাড়া নিজের মেয়ের হাতের ছাপ সে একটি কাগজে তুলে নিয়ে তা বুকে আগলে রেখেছে। সন্তানের প্রতি এই ভালোবাসার কোনো তুলনা হয় না। উদ্দীপকেও সামাদ মিয়া আবীরের জন্য রক্ত দিতে এগিয়ে এসেছে। মৃত সন্তানের স্মৃতি ভুলে থাকার জন্য সে আবীরের মাঝেই সন্তানকে খুঁজেছে। আবীরের যতœ নিয়েই সে নিজের পিতৃত্বকে শান্ত করতে পেরেছে। তাই বলা যায় উদ্দীপকের সামাদ মিয়া যেন ‘কাবুলিওয়ালা’ গল্পের মূল ভাবকেই ধারণ করে আছে। প্রশ্ন- ১ ল্ফল্ফ একমাত্র ছেলে রায়হানকে উচ্চ শিক্ষার্থে বিদেশ পাঠিয়েছেন জালাল মাস্টার। ছেলের দেয়া চিঠিটি যতœ করে পকেটে রাখেন তিনি। ছেলের অবর্তমানে তার বুকটা যেন ফাঁকা হয়ে গেছে। বন্ধু-বান্ধবদের সাথে তিনি সন্তানের বিষয়ে কথা বলেন। মাঝে মাঝে চিঠিটি বের করে দেখেন। কখনো কখনো কেমন যেন আনমনা হয়ে যান তিনি। ক. মিনির বয়স কত? ১ খ. কাবুলিওয়ালাকে দেখে মিনি অন্তঃপুরে দৌড় দিল কেন? ২ গ. উদ্দীপকের সাথে ‘কাবুলিওয়ালা’ গল্পের কোন অংশটুকুর মিল রয়েছে ব্যাখ্যা কর। ৩ ঘ. প্রিয় সন্তানকে কাছে না পাওয়ার গভীর আকুতি উদ্দীপক ও ‘কাবুলিওয়ালা’ গল্পের আলোকে বিশ্লেষণ কর। ৪ ক মিনির বয়স পাঁচ বছর। খ একটা ভয়মিশ্রিত আশঙ্কা থেকে মিনি কাবুলিওয়ালাকে দেখে অন্তঃপুরে দৌড় দিল। মিনি মনে করত কাবুলিওয়ালার ঝুলিটার মধ্যে তার মতো দুটো-চারটে জীবিত মানব সন্তান পাওয়া যেতে পারে। কাবুলিওয়ালাছিল মিনির কাছে সম্পূর্ণ অপরিচিত একজন ব্যক্তি। তাই অন্ধ বিশ্বাসজনিত

সপ্তম শ্রেণির বাংলা কাবুলিওয়ালা Read More »

Scroll to Top