সপ্তম শ্রেণির ইসলাম পঞ্চম অধ্যায় আদর্শ জীবনচরিত
পঞ্চম অধ্যায় আদর্শ জীবনচরিত সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ প্রশ্ন- ১ পলাশপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পরিচালনা পরিষদের নির্বাচনে পাশাপাশি অবস্থিত দুই গ্রামের অধিবাসীদের মধ্যে একটি তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিবাদের সৃষ্টি হয়। বিবাদের চরম পর্যায়ে পার্শ্ববর্তী গ্রামের সেলিম মিয়ার মধ্যস্থতায় উভয় গ্রামের কয়েকজন প্রতিনিধিকে নিয়ে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে কয়েকটি শর্ত সাপেক্ষে একটি সমঝোতা চুক্তি করা হয়। এতে উভয় গ্রামের মানুষ নিশ্চিত সংঘর্ষ থেকে মুক্তি পায়। শেষে সেলিম মিয়া সবার উদ্দেশ্যে বলেন, শান্তি-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় সবার মহানবি (স.) প্রবর্তিত সনদের অনুসরণ আবশ্যক। ক. হিজরত শব্দের অর্থ কী? খ. মহানবি (স.) মদিনায় হিজরত করলেন কেন? গ. উদ্দীপকে সমঝোতা চুক্তিটি মহানবি (স.)-এর কোন চুক্তির সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ? ব্যাখ্যা কর। ঘ.স্থানীয় সেলিম মিয়ার শেষ উক্তিটি দ্বারা রাসুল (স.) প্রবর্তিত যে সনদের প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে তার বিশ্লেষণ কর। ক হিজরত শব্দের অর্থ ত্যাগ করা, ছিন্ন করা। খ মক্কার পরিবেশ দাওয়াতের অনুক‚ল না থাকায় মহানবি (স.) আলাহর নির্দেশে মক্কা হতে মদিনায় হিজরত করেন। তাঁর দাওয়াতে অনেক লোক ইসলাম গ্রহণ করেন এবং অনেকে তাঁর বিরোধিতায় লিপ্ত হয়। অনেকে তাঁর জীবননাশের চেষ্টায় লিপ্ত থাকে। শেষে তাঁর ঘর রাতে অবরোধ করলে তিনি রাতের আঁধারে মদিনায় হিজরত করেন। গ উদ্দীপকে সমঝোতা চুক্তিটি মহানবি (স.)-এর হুদায়বিয়ার সন্ধিচুক্তির সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। জš§ভ‚মিকে দেখার তীব্র আকাঙ্খা ও আল্লাহর ঘর যিয়ারতের উদ্দেশ্যে ৬ষ্ঠ হিজরিতে মহানবি (স.) চৌদ্দশত সাহাবি নিয়ে মক্কা অভিমুখে রওনা হন। হযরত মুহাম্মদ (স.) তাঁর সাথীদের নিয়ে মক্কার ৯ মাইল দূরে হুদায়বিয়া নামক স্থানে পৌঁছেন। কাফিররা মুসলমানদের প্রতিরোধ করার জন্য সদলবলে অস্ত্রসহ অগ্রসর হয়। অতঃপর অনেক বাগবিতণ্ডার পর মুসলমান ও কাফিরদের মাঝে একটি সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। যা ইতিহাসে ‘হুদায়বিয়ার সন্ধি’ নামে পরিচিত। উদ্দীপকে পলাশপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পরিচালনা পরিষদের বিবাদের চরম পর্যায়ে সেলিম মিয়ার মধ্যস্থতায় যে সমঝোতা চুক্তিটি হয় তা মহানবি (স.)-এর হুদায়বিয়ার সন্ধি চুক্তির সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। ঘ উদ্দীপকের স্থানীয় সেলিম মিয়ার শেষ উক্তিটি দ্বারা রাসুল (স.) প্রবর্তিত মদিনা সনদের প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে। হিজরতের পর হযরত মুহাম্মদ (স.) মদিনায় সুষ্ঠুভাবে রাষ্ট্রীয় কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কতিপয় নীতিমালা তৈরি করেন, যা মদিনা সনদ নামে খ্যাত। সনদের ফলে মদিনায় লোকজনের মাঝে সকল হিংসা-বিদ্বেষ ও কলহের অবসান হয়। তারা ঐক্যবদ্ধ হয়। ধর্ম-বর্ণ ও গোত্র নির্বিশেষে সকলের প্রাপ্য অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়। মুসলিম ও অমুসলিমদের মাঝে এক উদার স¤প্রীতি স্থাপিত হয়। মদিনা সনদের এ গুরুত্ব উপলব্ধি করে। সেলিম মিয়া শেষোক্ত উক্তি দ্বারা মদিনা সনদের প্রতি ইঙ্গিত করেছেন যা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। প্রশ্ন- ২ প্রাচুর্য আর ধন-সম্পদ ধনাঢ্য জাহিদ সাহেবকে অহংকারী করে নি, বরং তিনি খাঁটি মুমিন। মুমিন হওয়ার কারণে গ্রামের অন্যান্য লোকজন তাকে বিভিন্নভাবে কষ্ট দিত। তারপরও গ্রামে দুর্ভিক্ষ দেখা দিলে তিনি খাদ্য বিতরণ করে সবাইকে সাহায্য করেন। গ্রামে কুরআন তিলাওয়াতকে কেন্দ্র করে অনৈক্য দেখা দিলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ রাখার প্রয়াস চালান। ক. ইসলামের তৃতীয় খলিফার নাম কী? খ. ইসলামের তৃতীয় খলিফাকে কেন গণি বলা হতো? গ. জাহিদ সাহেবের আচরণে তৃতীয় খলিফার যে চারিত্রিক গুণের বৈশিষ্ট্য ফুটে উঠেছে তা ব্যাখ্যা কর। ঘ.গ্রামবাসীকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে জাহিদ সাহেবের প্রচেষ্টা তৃতীয় খলিফার কোন ঘটনার সাথে সম্পর্কিত বিশ্লেষণ কর। ক ইসলামের তৃতীয় খলিফার নাম হযরত উসমান (রা.)। খ অগাধ সম্পদের মালিক হওয়ার কারণে ইসলামের তৃতীয় খলিফাকে গণি বলা হতো। ইসলামের তৃতীয় খলিফা হযরত উসমান (রা.) ছিলেন একজন ধনাঢ্য ব্যবসায়ী। তার অনেক সম্পদ ছিল। তিনি তার সম্পদ ইসলামের সেবায় উদার হস্তে দান করেছেন। ইসলাম স¤প্রসারণ কিংবা দুঃস্থদের সাহায্য-সহযোগিতা এ ধরনের কাজে তিনি তার সম্পদ ব্যয় করেছেন। গ জাহিদ সাহেবের আচরণে তৃতীয় খলিফার যে চারিত্রিক গুণের বৈশিষ্ট্য ফুটে উঠেছে তা হলো উদারতা। হযরত উসমান (রা.) ইসলাম গ্রহণের পর সর্বদা ইসলাম প্রচারের কাজে আত্মনিয়োগ করেন। এ কাজে তিনি তাঁর সম্পদ উদার হস্তে ব্যয় করেন। তিনি নিজ খরচে মসজিদে নববি স¤প্রসারণ করেন। মদিনায় দুর্ভিক্ষ দেখা দিলে দুঃস্থদের মাঝে খাদ্য বিতরণ করেন। তাবুক যুদ্ধে তিনি দশ হাজার দিনার (মুদ্রা) ও এক হাজার উষ্ট্র মুসলিম সেনাবাহিনীকে দান করেন। উদ্দীপকের ধনাঢ্য জাহিদ সাহেবের আচরণে তৃতীয় খলিফার সেই উদারতাই প্রকাশ পেয়েছে। ঘ গ্রামবাসীকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে জাহিদ সাহেবের প্রচেষ্টা তৃতীয় খলিফার কুরআন সংকলনের ঘটনার সাথে সম্পর্কিত। হযরত উসমান (রা.)-এর সময়ে বিভিন্ন অঞ্চলে কুরআনের পাঠরীতি নিয়ে মারাত্মক বিপর্যয় দেখা দেয়। মুসলমানদের মধ্যে নানা অনৈক্যের সৃষ্টি হয়। এমতাবস্থায় হযরত উসমান (রা.) বিশিষ্ট সাহাবিগণের সাথে পরামর্শ করে আল-কুরআনের একক ও প্রামাণ্য পাঠরীতি প্রচারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। হযরত যায়দ (রা.)-এর নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করেন। এ কমিটি হযরত হাফসা (রা.)-এর নিকট সংরক্ষিত মূল পাণ্ডুলিপি থেকে নকল করে আরও সাতটি পাণ্ডুলিপি প্রস্তুত করেন। তারপর প্রত্যেক প্রদেশে আল-কুরআনের এক এক কপি পাঠিয়ে দেয়া হয়। ফলে পবিত্র কুরআনের পাঠরীতি নিয়ে মুসলমানদের অনৈক্য দূর হয়। উদ্দীপকে উল্লিখিত গ্রামে কুরআন তিলাওয়াতকে কেন্দ্র করে অনৈক্য দেখা দিলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ রাখার চেষ্টা হযরত উসমান (রা.)-এর চেষ্টার প্রতিচ্ছবি। প্রশ্ন- ১ মানিকনগর গ্রামের হাতেম আলি অত্যন্ত ধৈর্যশীল ব্যক্তি। সমাজের উন্নয়নকল্পে তিনি অনেক সেবামূলক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। এতে এলাকার কিছু লোক তার প্রতি হিংসাবশত অত্যাচার শুরু করে। এমনকি ভাইয়েরাও তার ওপর অনেক জুলুম করে। তা সত্তে¡ও স্বীয় প্রতিভা বলে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন এবং পরবর্তীতে ভাইদের ক্ষমা করে দিয়ে বলেন-‘আজ তোমাদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই, আল্লাহ তোমাদের ক্ষমা করুন এবং তিনিই শ্রেষ্ঠ দয়ালু’। ক. আহসানুল কাসাস অর্থ কী? ১ খ. হযরত ইউসুফ (আ.) কেন মন্ত্রী পদে নিয়োগ পান? ২ গ. উদ্দীপকের হাতেম আলির জীবন কোন মনীষীর জীবনের প্রতিচ্ছবি? ব্যাখ্যা কর। ৩ ঘ.উদ্দীপকের হাতেম আলির উক্তিটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ কর। ৪ ক আহসানুল কাসাস অর্থ সর্বোত্তম কাহিণী। খ ইউসুফ (আ.) বাদশাহর স্বপ্নের ব্যাখ্যা বলায় মন্ত্রী পদে নিয়োগ পান। ইউসুফ (আ.)-এর ব্যাখ্যা শুনে বাদশাহ খুবই মুগ্ধ হলেন। তাঁর বিরুদ্ধে সব অভিযোগ প্রত্যাহার করে তাঁকে অর্থমন্ত্রী নিয়োগ করেন। গ উদ্দীপকের হাতেম আলির জীবন হযরত ইউসুফ (আ.)-এর জীবনের প্রতিচ্ছবি। হযরত ইউসুফ (আ.)-এর ভাইয়েরা ষড়যন্ত্র করে তাঁকে অন্ধক‚পে ফেলে দেয়। একদল সওদাগর তাঁকে ক‚প থেকে তুলে মিসরের বাদশাহর কাছে বিক্রি করে দেয়। অতঃপর তিনি তাঁর প্রতিভাগুণে বাদশাহকে মুগ্ধ করে মিসরের অর্থমন্ত্রী হন। পরে বাদশাহী লাভ করেন। উদ্দীপকের হাতেম আলিও ঠিক তাই যে, তার জীবন হযরত ইউসুফ (আ.)-এর জীবনের প্রতিচ্ছবি। ঘ উদ্দীপকের হাতেম আলির উক্তিটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ইউসুফ (আ.)- তাঁর ভাইদের একথাই বলেছিলেন যে আল্লাহ তোমাদের ক্ষমা করুন। হযরত ইউসুফ (আ.)-এর ভাইয়েরা তাঁকে ক‚পে ফেলে দেয়। একদল বণিক তাঁকে তুলে নিয়ে মিসরে বিক্রি করে। পরবর্তীতে তিনি মিসরের বাদশাহ হন। তখন তিনি ভাইদের ওপর প্রতিশোধ নেয়ার সুযোগ ও ক্ষমতা পাওয়া সত্তে¡ও ভাইদের তিনি ক্ষমা করে জগতে ক্ষমার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। উদ্দীপকের চেয়ারম্যান হাতেম আলি ভাইদের ক্ষমা করে দিয়ে ঠিক একথাই বলেছেন-‘আজ তোমাদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই, আল্লাহ তোমাদের ক্ষমা করুন এবং তিনিই শ্রেষ্ঠ দয়ালু’। প্রশ্ন- ২ নিজাম ঘুমে অচেতন। হঠাৎ তিনি স্বপ্নে দেখেন মহান আল্লাহ তাকে ডেকে বলছেন- ‘নিজাম তোমার প্রিয় বস্তু আমার নামে উৎসর্গ
সপ্তম শ্রেণির ইসলাম পঞ্চম অধ্যায় আদর্শ জীবনচরিত Read More »