তৃতীয় শ্রেণির বিজ্ঞান অধ্যায় ২ জীব ও জড় পোস্টে এই অধ্যায়ের অনুশীলনীর প্রশ্নউত্তর সহ অতিরিক্ত সংক্ষিপ্ত ও কাঠামোবদ্ধ প্রশ্নউত্তর ও ৩য় শ্রেণির বিজ্ঞান বইয়ের শেষে দেওয়া প্রশ্নের উত্তর দেখতে নিচে চোখ রাখুন।
৩য় শ্রেণির বিজ্ঞান অধ্যায় ২ জীব ও জড়
>> অধ্যায়টির মূলভাব জেনে নিই
আমাদের চারপাশে আমরা যা দেখি সেগুলো জীব ও জড় এই দুই ভাগে বিভক্ত। জীব নিজের মতো নতুন জীবের জন্ম দেয়, বেঁচে থাকার জন্য খাদ্য, পানি এবং বায়ু গ্রহণ করে। জীব দুই ধরনের, যেমন- উদ্ভিদ ও প্রাণী। অন্যদিকে জড় কোনো খাদ্য গ্রহণ করে না। এরা নিজেদের মতো অন্য কোনো বস্তু তৈরিও করতে পারে না।
৩য় শ্রেণির বিজ্ঞান অধ্যায় ২ অনুশীলনীর প্রশ্ন ও উত্তর
১। শূন্যস্থান পূরণ কর।
১) জীব এবং — মিলেই আমাদের পরিবেশ।
২) জীবের বৈশিষ্ট্যগুলো হলো —, — এবং —।
৩) চিংড়ি এবং কেঁচো — প্রাণী।
৪) মানুষ — এবং প্রাণীর উপর নির্ভরশীল।
উত্তর : ১) জড়, ২) বৃদ্ধি, পরিবর্তন, প্রজনন ৩) অমেরুদÐী, ৪) উদ্ভিদ।
২। সঠিক উত্তরটিতে (√) টিক চিহ্ন দাও।
১) নিচের কোনটি জীব?
√ ক. মরিচ গাছ খ. বাড়ি
গ. রিকশা ঘ. এরোপ্লেন
২) কোনটি বৃদ্ধি পায়?
ক. মোটরগাড়ি √খ. কবুতর
গ. চেয়ার ঘ. পাথর
৩) নিচের কোনটি অপুষ্পক উদ্ভিদ?
ক. আম √খ. ঢেঁকি শাক
গ. শাপলা ঘ. ধান
৩। নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
১) জীব ও জড়ের পাঁচটি করে উদাহরণ দাও।
উত্তর : জীবের পাঁচটি উদাহরণ হলো- মানুষ, গরু, মাছ, প্রজাপতি ও ফুলগাছ।
জড়ের পাঁচটি উদাহরণ হলো- গাড়ি, চেয়ার, মাটি, বই ও বায়ু।
২) মেরুদÐী প্রাণীদের কী কী শ্রেণিতে ভাগ করা যায়?
উত্তর : মেরুদÐী প্রাণীদের ৫টি শ্রেণিতে ভাগ করা যায়। যথা-
মাছ — ইলিশ
উভচর — ব্যাঙ
সরীসৃপ — সাপ
পাখি — মুরগি
স্তন্যপায়ী — গরু
৩) আকার ও কাÐ অনুযায়ী উদ্ভিদকে কীভাবে শ্রেণিবিন্যাস করা যায় লেখ।
উত্তর : আকার ও কাÐ অনুযায়ী উদ্ভিদকে বৃক্ষ, গুল্ম ও বিরুৎ- এই তিনটি শ্রেণিতে বিভক্ত করা যায়।
যে উদ্ভিদ আকারে বড়, কাÐ মোটা, দীর্ঘ ও শক্ত, কাÐ থেকে শাখা-প্রশাখা এবং পাতা হয়, এগুলোকে বৃক্ষ বলা হয়। এদের শেকড় মাটির বেশ গভীরে যায়। যেমন- আমগাছ, কাঁঠালগাছ, বেলগাছ ইত্যাদি।
যে সকল উদ্ভিদের কাÐ শক্ত কিন্তু বৃক্ষের মতো দীর্ঘ ও মোটা নয়, কাÐের গোড়ার কাছ থেকে শাখা-প্রশাখা বের হয় সেগুলো গুল্ম শ্রেণির। এদের শেকড় মাটির বেশি গভীরে যায় না। যেমন- গোলাপ, রঙ্গন, জবা।
বিরুৎ উদ্ভিদ গুল্ম উদ্ভিদের চেয়ে আকারে ছোট, কাÐ নরম। এদের শেকড় মাটির গভীরে যায় না। ধান, সরিষা, মরিচ, লাউ, কুমড়া, পুঁই শাক এ শ্রেণির উদ্ভিদ।
৪) মানুষ কীভাবে উদ্ভিদের উপর নির্ভরশীল?
উত্তর : বেঁচে থাকার জন্য মানুষের খাবার খেতে হয়। এই খাবারের অধিকাংশ আসে উদ্ভিদ থেকে। মানুষের পোশাকের কাপড় তৈরি হয় উদ্ভিদের বিভিন্ন অংশ থেকে। আবার ঘরবাড়ি নির্মাণে এবং আসবাবপত্র তৈরিতে যে কাঠ ব্যবহার করা হয় তাও আসে এই উদ্ভিদ থেকে। এভাবেই মানুষ উদ্ভিদের উপর নির্ভরশীল।
৫) উদ্ভিদ এবং প্রাণীর তিনটি পার্থক্য লেখ।
উত্তর : উদ্ভিদ ও প্রাণীর তিনটি পার্থক্য হলো-
উদ্ভিদ প্রাণী
১. উদ্ভিদ নিজের খাদ্য নিজে তৈরি করতে পারে। ১. প্রাণীরা নিজেদের খাদ্য তৈরি করতে পারে না।
২. প্রাণীর মতো উদ্ভিদ খাবার খায় না। ২. প্রাণী খাদ্য হিসেবে উদ্ভিদ অথবা অন্য প্রাণী খেয়ে থাকে।
৩. এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় চলাচল করতে পারে না। ৩. অধিকাংশ প্রাণী নিজের ইচ্ছেমতো চলাচল করতে পারে।
৪। নিচের ছকে উল্লেখ করা প্রাণীদের বৈশিষ্ট্যগুলো ছকে লেখ।
নাম কোথায় বাস করে দেহ কী দিয়ে ঢাকা থাকে কীভাবে চলাচল করে
গরু
দোয়েল
রুই
টিকটিকি
কচ্ছপ
উত্তর : ছকে উল্লেখ করা প্রাণীদের বৈশিষ্ট্যগুলো দেওয়া হলো :
নাম কোথায় বাস করে দেহ কী দিয়ে ঢাকা থাকে কীভাবে চলাচল করে
গরু স্থলে চামড়া পায়ের সাহায্যে
দোয়েল স্থলে পালক পায়ের সাহায্যে
রুই জলে আঁইশ পাখনার সাহায্যে
টিকটিকি স্থলে আঁইশ পায়ের সাহায্যে
কচ্ছপ জলে, স্থলে শক্ত খোলস পায়ের সাহায্যে
৩য় শ্রেণির বিজ্ঞান অধ্যায় ২ অতিরিক্ত প্রশ্ন ও উত্তর
>> সত্য হলে ‘স’ এবং মিথ্যা হলে ‘মি’ লেখ :
১) বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে আমরা পড়াশোনা করি।
২) পানি, মাটি হলো উদ্ভিদ।
৩) জীবের শরীরের বৃদ্ধি ও পরিবর্তন ঘটে।
৪) প্রাণী শুনতে পায় না, গন্ধ নিতে পারে না।
৫) মানুষ উদ্ভিদ থেকে খাদ্য সংগ্রহ করে।
৬) গুল্ম শ্রেণির উদ্ভিদের শেকড় মাটির গভীরে যায় না।
৭) ব্যাঙ পানিতে ডিম পাড়ে।
৮) স্তন্যপায়ী প্রাণীদের দেহ শুষ্ক ও আঁইশযুক্ত।
৯) বাঘের খাদ্য হরিণ, খরগোশ।
১০) ঘরবাড়ি নির্মাণে পশুর চামড়া ব্যবহৃত হয়।
উত্তর : ১) স, ২) মি, ৩) স, ৪) মি, ৫) স, ৬) স, ৭) স, ৮) মি, ৯) স, ১০) মি।
>> বামপাশের অংশের সাথে ডানপাশের অংশের মিল কর :
ক) জীব চেয়ার, টেবিল, বেঞ্চ
খ) জড় দেখতে পায় না।
গ) উদ্ভিদ গাছপালা, পশুপাখি।
ঘ) অমেরুদÐী প্রাণী দেহ পশম ও লোম দিয়ে ঢাকা।
ঙ) স্তন্যপায়ী প্রাণী কেঁচো, চিংড়ি, প্রজাপতি।
চ) ব্যাঙ ফুল হয় না।
ছ) অপুষ্পক উদ্ভিদ উভচর প্রাণী।
উত্তর :
ক) জীব – গাছপালা, পশুপাখি।
খ) জড় – চেয়ার, টেবিল, বেঞ্চ।
গ) উদ্ভিদ – দেখতে পায় না।
ঘ) অমরুদÐী প্রাণী – কেঁচো, চিংড়ি, প্রজাপতি।
ঙ) স্তন্যপায়ী প্রাণী – দেহ পশম ও লোম দিয়ে ঢাকা।
চ) ব্যাঙ – উভচর প্রাণী।
ছ) অপুষ্পক উদ্ভিদ – ফুল হয় না।
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর
১. জড় কাকে বলে?
উত্তর : যাদের জীবন নেই সেসব বস্তুকে জড় বলা হয়।
২. জীব কাকে বলে?
উত্তর : যাদের জীবন আছে তাদের জীব বলা হয়।
৩. বেঁচে থাকার জন্য জীবের কী কী প্রয়োজন?
উত্তর : বেঁচে থাকার জন্য জীবের খাদ্য, পানি, বায়ু ও সূর্যের আলো প্রয়োজন।
৪. বিরুৎ কাকে বলে?
উত্তর : যে সকল গাছের কাÐ বেশ নরম, আকারে ছোট এবং শেকড় মাটির গভীরে যায় না, সেগুলোকে বিরুৎ বলা হয়। যেমন- মরিচ গাছ।
৫. ফুলের উপর ভিত্তি করে উদ্ভিদকে কয় ভাগে ভাগ করা হয়েছে ও কী কী?
উত্তর : ফুলের ওপর ভিত্তি করে উদ্ভিদকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে। যেমন- সপুষ্পক উদ্ভিদ ও অপুষ্পক উদ্ভিদ।
৬. জীব কয় ধরনের ও কী কী?
উত্তর : জীব দুই ধরনের। যথা- উদ্ভিদ ও প্রাণী।
৭. প্রাণী খাদ্য হিসেবে কী খেয়ে থাকে?
উত্তর : প্রাণী খাদ্য হিসেবে উদ্ভিদ এবং অন্য প্রাণী খেয়ে থাকে।
৮. মানুষ উদ্ভিদ থেকে কী সংগ্রহ করে?
উত্তর : মানুষ উদ্ভিদ থেকে খাদ্য সংগ্রহ করে।
৯. সপুষ্পক উদ্ভিদ কাকে বলে?
উত্তর : যে সকল উদ্ভিদে ফুল হয় সেগুলোকে সপুষ্পক উদ্ভিদ বলে। যেমন- গোলাপ, জবা, শাপলা ইত্যাদি।
১০. অপুষ্পক উদ্ভিদ কাকে বলে?
উত্তর : যে সকল উদ্ভিদে ফুল হয় না সেগুলোকে অপুষ্পক উদ্ভিদ বলে। যেমন- মস, ঢেঁকি শাক ইত্যাদি।
১১. অমেরুদÐী প্রাণী কাকে বলে?
উত্তর : যে প্রাণীর মেরুদÐ নেই তাকে অমেরুদÐী প্রাণী বলে। যেমন- কেঁচো, চিংড়ি ইত্যাদি।
১২. মেরুদÐী প্রাণী কাকে বলে?
উত্তর : যে প্রাণীর মেরুদÐ আছে তাকে মেরুদÐী প্রাণী বলে। যেমন- মানুষ, গরু, ছাগল ইত্যাদি।
১৩. সরিসৃপ প্রাণীর ত্বক কীরূপ?
উত্তর : সরিসৃপ প্রাণীর ত্বক শুষ্ক ও আঁইশযুক্ত।
কাঠামোবদ্ধ প্রশ্ন ও উত্তর
ন্ধ সাধারণ
১. জীব কয় প্রকার? জীবের বৈশিষ্ট্যসমূহ লেখ।
উত্তর : জীব দুই প্রকার। যথা- উদ্ভিদ ও প্রাণী।
জীবের বৈশিষ্ট্যসমূহ হলো-
১) দেহের বৃদ্ধি ও পরিবর্তন ঘটে।
২) নিজের মতো নতুন জীবের জন্ম দেয়।
৩) বেঁচে থাকার জন্য খাদ্য, পানি ও বায়ু প্রয়োজন।
২. উদ্ভিদ কীভাবে মাটিতে আটকে থাকে? উদ্ভিদের বৈশিষ্ট্যগুলো উল্লেখ কর।
উত্তর : উদ্ভিদ মূলের সাহায্যে মাটিতে আটকে থাকে। উদ্ভিদের বৈশিষ্ট্যগুলো হলো-
১) উদ্ভিদের মূল, কাÐ, শাখা-প্রশাখা, পাতা আছে।
২) এরা এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় চলাচল করতে পারে না।
৩) এরা নিজের খাদ্য নিজে তৈরি করতে পারে।
৪) এরা দেখতে পায় না, শুনতে পায় না এবং গন্ধ নিতে পারে না।
৩. প্রাণীদের কয়টি দলে ভাগ করা যায় ও কী কী? এদের মধ্যে পার্থক্য লেখ।
উত্তর : প্রাণীদের দুইটি দলে ভাগ করা যায়। যথা- মেরুদÐী প্রাণী ও অমেরুদÐী প্রাণী।
এদের মধ্যে পার্থক্য হলো-
মেরুদÐী প্রাণী অমেরুদÐী প্রাণী
১) যে প্রাণীর মেরুদÐ আছে তাকে মেরুদÐী প্রাণী বলে। ১) যে প্রাণীর মেরুদÐ নেই তাকে অমেরুদÐী প্রাণী বলে।
২) কুকুর, পাখি মেরুদÐী প্রাণী। ২) চিংড়ি, প্রজাপতি অমেরুদÐী প্রাণী।
৩) এদের দেহ দৃঢ় হয়। ৩) দেহ দুর্বল হয়।
ন্ধ যোগ্যতাভিত্তিক
৪. তোমাদের বাগানের আমগাছে একটি পাখি বাসা বেঁধেছে এবং বাসায় চারটি ফুটফুটে বাচ্চা হয়েছে। তোমাদের বাগানের জীব কোনগুলো? এদেরকে জীব বলার কারণ কী? আমগাছ ও পাখির মধ্যে তোমার পাওয়া ৩টি পার্থক্য সৃষ্টিকারী বৈশিষ্ট্য লেখ।
উত্তর : আমাদের বাগানের জীব হলো- আমগাছ, পাখি ও পাখির বাচ্চা। এদেরকে জীব বলার কারণ-
১. এদের জীবন আছে।
২. এদের শরীরের বৃদ্ধি ও পরিবর্তন ঘটে।
৩. এরা নিজের মতো নতুন আমগাছ ও পাখির বাচ্চার জন্ম দেয়।
আমগাছ ও পাখির মধ্যে আমার পাওয়া তিনটি পার্থক্য সৃষ্টিকারী বৈশিষ্ট্য হলো-
১. আমগাছ নিজের খাদ্য নিজে তৈরি করে। কিন্তু পাখি নিজের খাদ্য নিজে তৈরি করতে পারে না।
২. আমগাছের মূল, কাÐ ও পাতা আছে। পাখির আছে ডানা, ঠোট, দুটি পা, চোখ ও অন্যান্য অঙ্গ।
৩. আমগাছ নড়াচড়া করতে পারে না কিন্তু পাখি নড়াচড়া করতে পারে।
——————