অষ্টম অধ্যায়
বাংলাদেশের অর্থনীতি
বাংলাদেশের অর্থনীতিতে প্রধান প্রধান যেসব বৈশিষ্ট্য সহজেই লক্ষ করা যায় যেমন : কৃষিখাতের প্রাধান্য; শিল্পায়নের জন্য কর্মসূচি গ্রহণ; মাথাপিছু আয়ের ক্রমবৃদ্ধি; জীবনযাত্রার ক্রমোন্নতি; বিনিয়োগযোগ্য পুঁজির ব্যবহার বৃদ্ধি; খাদ্য ঘাটতিও পুষ্টিহীনতা; জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার হ্রাস; ব্যাপক বেকারত্ব; শিখনফল
বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রধান বৈশিষ্ট্যসমূহ
অর্থনীতির প্রধান খাতসমূহ (কৃষি, শিল্প এবং সেবা)
দেশের অর্থনীতিতে বিভিন্ন খাতের (কৃষি, শিল্প, সেবা) তুলনামূলক গুরুত্ব
কৃষি ও শিল্পের পারস্পরিক নির্ভরশীলতার ক্ষেত্রসমূহ
খাতভিত্তিক অর্থনীতির তথ্য-উপাত্ত এবং গাণিতিকভাবে বিন্যস্ত
অর্থনীতির বিভিন্ন খাতের অবদান চিত্র অঙ্কন
প্রাকৃতিক ও মানবসম্পদের ব্যবহার বৃদ্ধি; বৈদেশিক বাণিজ্যের ঘাটতি; বৈদেশিক সাহায্যের ওপর নির্ভরশীলতা; অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবকাঠামোর ক্রমোন্নতি; বেসরকারিকরণ কর্মসূচি; পরিকল্পনা গ্রহণ ইত্যাদি।
অধ্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো সংক্ষেপে জেনে রাখি
বাংলাদেশের অর্থনীতির বৈশিষ্ট্য : বাংলাদেশের অর্থনীতিতে প্রধান যেসব বৈশিষ্ট্য সহজেই লক্ষ করা যায়, তা হচ্ছে : ১. কৃষিখাতের প্রাধান্য; ২. শিল্পায়নের জন্য কর্মসূচি গ্রহণ; ৩. মাথাপিছু আয়ের ক্রমবৃদ্ধি; ৪. জীবনযাত্রার ক্রমোন্নতি; ৫. বিনিয়োগযোগ্য পুঁজির ব্যবহার বৃদ্ধি; ৬. খাদ্য ঘাটতিও পুষ্টিহীনতা; ৭. জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার হ্রাস; ৮. ব্যাপক বেকারত্ব; ৯. প্রাকৃতিক ও মানবসম্পদের ব্যবহার বৃদ্ধি; ১০. বৈদেশিক বাণিজ্যের ঘাটতি; ১১. বৈদেশিক সাহায্যের ওপর নির্ভরশীলতা; ১২. অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবকাঠামোর ক্রমোন্নতি; ১৩. বেসরকারিকরণ কর্মসূচি; ১৪. পরিকল্পনা গ্রহণ ইত্যাদি।
বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রধান খাতসমূহ : বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রধান তিনটি খাত হচ্ছে : ১. কৃষি; ২. শিল্প; ৩. সেবা।
কৃষিখাত : মূলত উৎপাদন ভিত্তিতে নিরূপিত আমাদের দেশের মোট দেশজ উৎপাদ (এউচ) ১৫টি খাত নিয়ে গঠিত। আর এ খাতগুলো প্রধান তিনটি খাতের অন্তর্ভুক্ত।
কৃষি হচ্ছে এরূপ সম্বন্ধীয় কাজ যা ভ‚মিকর্ষণ, বীজপবন, শস্য-উদ্ভিদ পরিচর্যা, ফসল কর্তন ইত্যাদি থেকে শুরু করে উৎপাদিত পণ্য গুদামজাতকরণ, সংরক্ষণ ও বাজারজাতকরণ পর্যন্ত বিস্তৃত। ফসল উৎপাদন ছাড়াও মাছ ও মৌমাছি চাষ, পশুপালন ও বনায়ন কৃষিখাতের অন্তর্ভুক্ত।
শিল্পখাত : প্রকৃতিপ্রদত্ত সম্পদ বা কাঁচামাল বা প্রাথমিক দ্রব্যকে কারখানাভিত্তিক প্রস্তুত প্রণালির মাধ্যমে মাধ্যমিক দ্রব্য বা চ‚ড়ান্ত দ্রব্যে রূপান্তরিত করাকে শিল্প বলে।
বাংলাদেশের জাতীয় আয় নির্ণয়ে ১৫টি খাতের মধ্যে খনিজ ও খনন; ম্যানুফ্যাকচারিং; বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানি সরবরাহ এবং নির্মাণ ও খাতগুলোর সমন্বয়ে শিল্পখাত গড়ে উঠেছে।
সেবাখাত : অর্থনৈতিক যেসব কাজের মাধ্যমে অবস্তুগত দ্রব্য উৎপাদিত হয় অর্থাৎ দৃশ্যমান নয় যা মানুষের বিভিন্ন অভাব পূরণ করে এবং যার বিনিময় মূল্য রয়েছে তাকে সেবা বলে।
বাংলাদেশে পাইকারি ও খুচরা বিপণন, হোটেল ও রেস্তোরাঁ, পরিবহন, সংরক্ষণ ও যোগাযোগ, ব্যাংক, বিমা ও অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান, গৃহায়ন, লোক প্রশাসন ও প্রতিরক্ষা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক সেবা, কমিউনিটি, সামাজিক ও ব্যক্তিগত সেবা প্রভৃতি ক্ষেত্রে সেবাকর্ম উৎপন্ন হয়।
প্রধান তিনটি খাতের আপেক্ষিক গুরুত্ব : বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে কৃষি হলো অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির চালিকাশক্তি এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের মূল চাবিকাঠি, কেননা এ দেশের অর্থনৈতিক কাঠামো গড়ে উঠেছে কৃষি কার্যক্রমকে কেন্দ্র করে। কিন্তু কৃষি প্রকৃতির ওপর নির্ভরশীল বলে তা স্থিতিশীল অর্থনীতি নির্দেশ করে না। তাই বর্তমান মুক্তবাজার অর্থনীতি এবং বিশ্বায়নের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে আমাদের দেশের সার্বিক উন্নয়নের স্বার্থে শিল্পায়িত অর্থনীতি গড়ে তোলা প্রয়োজন। কেননা শিল্পায়নের মাধ্যমে কৃষির আধুনিকীকরণ, প্রাকৃতিক সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার, বিদেশের ওপর নির্ভরশীলতা হ্রাসের পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন এবং শক্তিশালী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব। কৃষি ও শিল্পখাতের উন্নয়নের পাশাপাশি সার্বিক সেবাখাতের বিভিন্নমুখী কার্যক্রম, যেমন শিক্ষিত ও প্রশিক্ষিত মানবসম্পদ গড়ে তোলা, নারী ও শিশু উন্নয়ন, যুব উন্নয়ন, ক্রীড়া উন্নয়ন, অবকাঠামো উন্নয়ন এবং তথ্যপ্রযুক্তির উন্নয়ন সাধন করে রূপকল্প ২০২১ বাস্তবায়নের মাধ্যমে একটি সমৃদ্ধিশালী সোনার বাংলা গড়ে তোলা সম্ভব।
বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
১. দেশের শ্রম শক্তির কত শতাংশ কৃষিখাতে নিয়োজিত?
ক ১৯.৯২% খ ৩০.৩০% গ ৪৩.৬০% ৪৭.৫০%
২. বাংলাদেশ সরকারের শিল্পনীতি ২০১০ ঘোষণা করার উদ্দেশ্য হলোÑ
র. মাথাপিছু আয়ের হার বৃদ্ধি
রর. শিল্পক্ষেত্রে নারীদের অগ্রগামী করা
ররর. করের পরিমাণ বাড়িয়ে বিনিয়োগ বৃদ্ধি
নিচের কোনটি সঠিক?
র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
নিচের অনুচ্ছেদটি পড় এবং ৩ ও ৪নম্বর প্রশ্নের উত্তর দাও :
মতি তার পরিবার নিয়ে অজপাড়াগাঁয়ে বসবাস করে। সেখানে বিদ্যুৎ, গ্যাস কিছুই নেই। পরিবারের সকলে মিলে ঠোঙা তৈরি করে কোনোরকম জীবনযাপন করে।
৩. মতিদের কর্মকাণ্ড কোন শিল্পের অন্তর্গত?
ক বৃহৎ খ মাঝারি গ ক্ষুদ্র কুটির
৪. মতিদের মতো উদ্যোক্তাদের উন্নয়নেÑ
র. সহজশর্তে ঋণ প্রদানের ব্যবস্থা করতে হবে
রর. বিদেশি দ্রব্যের ব্যবহার কমাতে হবে
ররর. প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র খ রর গ ররর র, রর ও ররর
সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন- ১ বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রধান খাতসমূহ
অর্থনীতির দুটি খাত
অ (কৃষক মাঠে পাট কাটছে)
ই (পাটের তৈরি ব্যাগ)
ক. শিল্প কী?
খ. আমাদের দেশে পুঁজি গঠনের হার কম কেন?
গ. ‘অ’ খাতের উন্নয়নের উপর কীভাবে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নির্ভরশীল ব্যাখ্যা কর।
ঘ. ‘অ’ ও ‘ই’ খাত পরস্পর পরিপূরকÑ মূল্যায়ন কর।
ক প্রকৃতি প্রদত্ত সম্পদ বা কাঁচামাল বা প্রাথমিক দ্রব্যকে কারখানা-ভিত্তিক প্রস্তুত প্রণালির মাধ্যমে মাধ্যমিক দ্রব্য বা চ‚ড়ান্ত দ্রব্যে রূপান্তরিত করাই হলো শিল্প।
খ বাংলাদেশের জনগণের মাথাপিছু আয় কম বলে আমাদের দেশে পুঁজি গঠনের হার কম। বাংলাদেশের জনগণের মাথাপিছু আয় কম হওয়ার কারণে সঞ্চয়ও কম। তারা যে আয় করে তার প্রায় সবটুকু দিয়ে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ক্রয় করতে হয়। তাই সঞ্চয় করতে পারে না। ফলে পুঁজিও গঠিত হয় না। অর্থাৎ পুঁজি গঠনের হার কম হওয়ার প্রধান কারণ হলো এদেশের জনগণের দরিদ্রতা।
গ ‘অ’ খাতটি হলো কৃষিখাত। কৃষি খাতের উন্নয়নের ওপর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নির্ভরশীল। আমাদের দেশে গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নয়ন, খাদ্য নিরাপত্তা তথা খাদ্যশস্য উৎপাদনে স্বনির্ভরতা অর্জন, দারিদ্র্য বিমোচন, জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন, কর্মসংস্থান বৃদ্ধি ইত্যাদি কৃষির অগ্রগতির সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত। ফলে কৃষি খাতের উন্নয়নে সরকার সবরকম প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। আমাদের দেশের শতকরা প্রায় ৭৫ জন লোক প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কৃষির ওপর নির্ভরশীল। এদেশের জনগণের খাদ্যের যোগানদাতা হিসেবে কৃষি খাতে ২০১২-১৩ অর্থবছরের মোট খাদ্যশস্য উৎপাদিত হয়েছিল ৩৭২.৬৬ লক্ষ মেট্রিকটন। দেশের শ্রমশক্তির মোট ৪৭.৫ শতাংশ কৃষিখাতে নিয়োজিত। কৃষি থেকে প্রাপ্ত শন, গোলপাতা, খড়, বাঁশ, বেত ও কাঠ ইত্যাদি এদেশের জনগণ কর্মসংস্থান, আসবাবপত্র এবং জ্বালানি উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করছে। এছাড়াও জনগণের প্রাণিজ আমিষের চাহিদা পূরণ, শিল্পের কাঁচামাল সরবরাহ এবং শিল্পজাত দ্রব্যাদির বাজার সৃষ্টি করে সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে কৃষি গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করছে। সুতরাং বলা যায়, কৃষির উন্নয়নের ওপরই কোনো দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নির্ভর করে।
ঘ উদ্দীপকে ইঙ্গিতকৃত ‘অ’ খাতটি হলো কৃষিখাত এবং ‘ই’ খাতটি হলো শিল্পখাত তথা ‘কুটিরশিল্প’। এ দুটি খাত একে অপরের ওপর নির্ভরশীল। বাংলাদেশের অধিকাংশ শিল্প কৃষিভিত্তিক। এগুলোর কাঁচামাল মূলত কৃষি থেকে আসে। এদেশের পাট, চা, চামড়া, চিনি, কাগজ ইত্যাদি শিল্প তাদের কাঁচামালের জন্য সরাসরি কৃষির ওপর নির্ভরশীল। অপরদিকে শিল্পপ্রতিষ্ঠানে উৎপাদিত বিভিন্ন কৃষিযন্ত্র, সার, কীটনাশক, ওষুধ প্রভৃতি কৃষিকাজে ব্যবহৃত হয়। এ সকল উপকরণ ছাড়া পূর্ণাঙ্গভাবে কৃষিকাজ করা সম্ভব নয়। কৃষিতে উৎপাদনশীলতা বাড়লে কৃষিনির্ভর শিল্পের কাঁচামালের যোগান বাড়বে, ফলে দাম কমবে। এতে কৃষিভিত্তিক শিল্পসমূহ সস্তায় কাঁচামাল ক্রয় করে কম খরচে দ্রব্যাদি উৎপাদন করতে পারবে। কৃষি উন্নয়নের ফলে গ্রামীণ জনগণের আয় বাড়লে সঞ্চয় বাড়বে। এ সঞ্চয় দ্বারা গ্রামাঞ্চলে অধিক সংখ্যক ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প স্থাপন করা সম্ভব হবে। তাছাড়া কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে এ শিল্পের কাঁচামালের চাহিদা কৃষিখাত থেকেই পূরণ করা সম্ভব হবে। তখন দেশে ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্পের দ্রæত প্রসার ঘটলে প্রকারান্তরে শিল্পোন্নয়ন দ্রæততর হবে। আলোচনা থেকে তাই বলা যায়, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন এবং আত্মনির্ভরশীলতা অর্জনের জন্য এ দেশের কৃষি ও শিল্পখাত একে অপরের পরিপূরক হিসেবে কাজ করে।
প্রশ্ন- ২ বাংলাদেশের ঊচত অঞ্চল
ক. সেবা কাকে বলে?
খ. ক্ষুদ্র শিল্পের ভিত্তি কৃষিÑ ব্যাখ্যা কর।
গ. ঊচত কর্তৃপক্ষের ‘অ’ চিহ্নিত স্থানকে গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করার কারণ ব্যাখ্যা কর।
ঘ. বাংলাদেশের এউচ তে ‘অ’ স্থানে প্রতিষ্ঠিত শিল্পের অবদান মূল্যায়ন কর।
ক অর্থনৈতিক যেসব কাজের মাধ্যমে অবস্তুগত দ্রব্য উৎপাদিত হয় যা দৃশ্যমান নয় কিন্তু মানুষের বিভিন্ন অভাব পূরণ করে এবং যার বিনিময় মূল্য রয়েছে তাকে সেবা বলে।
খ ক্ষুদ্র শিল্পের মূল কাঁচামাল কৃষিখাত থেকে আসে বলে কৃষিকে ক্ষুদ্র শিল্পের ভিত্তি বলা হয়। আমাদের দেশে ক্ষুদ্র শিল্পের আলাদা কদর রয়েছে। তাঁতশিল্প, মৃৎশিল্প, লৌহশিল্প, মাদুর, শীতলপাটি, পাখা, বেতের তৈরি জিনিসপত্র এগুলো ক্ষুদ্র শিল্পের অন্তর্ভুক্ত। এসব শিল্পে ব্যবহৃত কাঁচামাল বা উপকরণ কৃষিখাত থেকেই আসে। কৃষির মাধ্যমেই এসব পণ্যের উপকরণ তৈরি করা হয়। তাই কৃষিকে ক্ষুদ্র শিল্পের ভিত্তি বলা হয়।
গ মানচিত্রে প্রদর্শিত অ চিিহ্নত অঞ্চলটি হলো চট্টগ্রাম শিল্পাঞ্চল। পোশাক শিল্পের অনুক‚ল পরিবেশ এবং রপ্তানিজাত পোশাক শিল্প-কারখানা গড়ে ওঠায় ঊচত কর্তৃপক্ষ এ অঞ্চলটিকে গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করেছে। ঊচত কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশের প্রধান প্রধান রপ্তানি দ্রব্যের উৎপাদনের পরিমাণ এবং পণ্য রপ্তানির অনুক‚ল পরিবেশ বিবেচনা করে ঊচত কর্তৃপক্ষ দেশের সমগ্র শিল্পাঞ্চলকে ৮টি রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে ভাগ করেছে। উদ্দীপকের মানচিত্রে প্রদর্শিত চট্টগ্রাম, সীতাকুন্ড ঊচত এর মধ্যে অন্যতম একটি, যা পোশাক শিল্পের জন্য বিখ্যাত। দেশের অধিকাংশ শিল্পপ্রতিষ্ঠান চট্টগ্রামে অবস্থিত। চট্টগ্রাম বন্দর থেকেই দেশের বেশিরভাগ আমদানি-রপ্তানি প্রক্রিয়া পরিচালিত হচ্ছে। আর চট্টগ্রাম অঞ্চলে গড়ে উঠেছে তৈরি পোশাক শিল্পের অপার সম্ভাবনা, যেখানে কাজ করছে বাংলাদেশের হাজার হাজার বেকার জনগোষ্ঠী। বাংলাদেশে উৎপাদিত পোশাকের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে বিশ্ববাজারে। আর বেশিরভাগ পোশাক শিল্পের কারখানা চট্টগ্রাম অঞ্চলেই গড়ে উঠেছে। এছাড়া সীতাকুন্ডে তেল ও সার শিল্প গড়ে উঠেছে। তাই বলা যায়, দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়ন, দারিদ্র্যবিমোচন, শিল্পখাতের বিকাশের অবদান রাখায় অ চিিহ্নত চট্টগ্রাম, সীতাকুন্ডকে ঊচত কর্তৃপক্ষ গুরুত্বপূর্ণ মনে করছে।
ঘ ‘অ’ স্থানে প্রতিষ্ঠিত শিল্পগুলোর মধ্যে সার, তেল, পোশাক শিল্প ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের এউচ তে এসব শিল্পের গুরুত্ব অপরিসীম। রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলগুলোতে প্রতিষ্ঠিত শিল্পসমূহ দেশের এউচতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। এসব অঞ্চলে প্রতিষ্ঠিত শিল্পকারখানায় উৎপাদিত শিল্পসমূহ বেশিরভাগই দেশের বাইরে রপ্তানি করা হয়। এজন্য তা এদেশের রপ্তানি বৃদ্ধিতে সহায়তা কলে। ফলে বাংলাদেশের এউচ বৃদ্ধি পায়। চট্টগ্রাম অঞ্চলে প্রতিষ্ঠিত রপ্তানির প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলটিও বিদেশে পণ্য রপ্তানি, দারিদ্র্য ও বেকারত্ব দূরীকরণে ব্যাপক ভ‚মিকা রাখছে। ‘অ’ অঞ্চলটিতে প্রধানত পোশাক শিল্প কারখানা গড়ে উঠেছে, যা দেশের প্রধান রপ্তানি দ্রব্য। বাংলাদেশের পোশাক শিল্প বিশ্ব বাজারে সমাদৃত। এ দ্রব্যটি রপ্তানি করে বাংলাদেশ প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা আয় করছে, যা জাতীয় আয় বৃদ্ধিতে ভ‚মিকা রাখছে। তাছাড়া দেশের দারিদ্র্য ও বেকারত্ব দূরীকরণ, নারীর কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে এ শিল্পের ভ‚মিকা ব্যাপক। তাছাড়া ‘অ’ স্থানে সার ও তেলশিল্প কারখানাও গড়ে উঠেছে এসব দেশীয় শ্রমিকেরা বিদেশি দক্ষ কারিগর ও কলাকৌশলের সংস্পর্শে এসে তাদের কর্মকুশলতা বৃদ্ধি করতে পারছে। ফলে তারা অধিক উৎপাদনে ভ‚মিকা রাখতে সক্ষম হচ্ছে, যা দেশের এউচ বৃদ্ধি করছে। ঊচত বা রপ্তানি প্রক্রিয়াজাত অঞ্চলে শিল্পের প্রসারের ফলে দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখা সম্ভব হচ্ছে। আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায়, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে দেশের অ চিিহ্নত চট্টগ্রাম অঞ্চলে প্রতিষ্ঠিত ঊচত অঞ্চলটির পোশাক শিল্পকারখানাগুলোর ভ‚মিকা অপরিসীম। বাংলাদেশের এউচ-র হার বৃদ্ধিতে এ শিল্পের তাৎপর্যপূর্ণ ভ‚মিকা রয়েছে।
বোর্ড ও সেরা স্কুলের বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
সাধারণ বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
১. কর্মসংস্থানের দিক দিয়ে কোন খাতটি বাংলাদেশের সবচাইতে বড় খাত? [স. বো. ’১৬]
ক শিল্পখাত কৃষিখাত গ বাণিজ্যখাত ঘ সেবাখাত
২. বাংলাদেশে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কত? [স. বো. ’১৬]
১.৩৭% খ ১.৩৪% গ ১.৮৩% ঘ ১.৮৯%
৩. কোনটি মাঝারি শিল্প? [স. বো. ’১৬]
ক বস্ত্র খ চিনি চামড়া ঘ সার
৪. রেশম শিল্প কোন ধরনের শিল্প? [স. বো. ’১৫]
ক বৃহদায়তন খ মাঝারি শিল্প গ ক্ষুদ্রায়তন কুটির শিল্প
৫. বাংলাদেশের মোট শ্রম শক্তির কতভাগ শিল্পখাতে নিয়োজিত? [স. বো. ’১৫]
ক ১৭.৬৪ শতাংশ ২৪.৩ শতাংশ
গ ৩৪.৩ শতাংশ ঘ ৪৪.৩ শতাংশ
৬. মৎস্য সম্পদকে প্রধানত কয়ভাগে ভাগ করা যায়?
[সরকারি ইকবালনগর মাধ্যমিক বিদ্যালয়, খুলনা]
২ খ ৩ গ ৪ ঘ ৫
৭. বাংলাদেশে বর্তমানে কতটি ঊচত আছে? [ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজ]
ক ৭ ৮ গ ৯ ঘ ১০
৮. বাংলাদেশে কয়টি সমুদ্রবন্দর রয়েছে?
[সরকারি ইকবালনগর মাধ্যমিক বিদ্যালয়, খুলনা]
২ খ ৩ গ ৫ ঘ ৭
৯. নিচের কোনটি ক্ষুদ্রশিল্প? [সরকারি ইকবালনগর মাধ্যমিক বিদ্যালয়, খুলনা]
ক রেশম খ কাঠ গ কাগজ সাবান
১০. বাংলাদেশের শিল্পখাত কয়টি শিল্পখাত নিয়ে গঠিত?
[খুলনা কলেজিয়েট গার্লস স্কুল এন্ড কলেজ]
চার খ পাঁচ গ ছয় ঘ সাত
১১. হনুফা তার ছেলেমেয়ে নিয়ে ঘরে বসে বাঁশ ও বেতের ঝুড়ি তৈরি করে বাজারে বিক্রি করে। হনুফার এ কাজটি কোন শিল্পের অন্তর্গত?
[স. বো. ’১৫]
ক বৃহৎ শিল্প কুটির শিল্প
গ ক্ষুদ্রায়তন শিল্প ঘ মাঝারি শিল্প
১২. জনসংখ্যার দিক দিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান পৃথিবীতে কত?
[ভিকারুননিসা নূন স্কুল এন্ড কলেজ, ঢাকা; যশোর জিলা স্কুল]
নবম খ দশম গ একাদশ ঘ চতুর্থ
১৩. এদেশের মোট শ্রমশক্তির কত লক্ষ লোক বেকার?
[খুলনা কলেজিয়েট গার্লস স্কুল এন্ড কলেজ]
২৫ খ ৩৫ গ ৪০ ঘ ৪৫
১৪. ২০১২-১৩ অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদনে সার্বিক কৃষিখাতের অবদান কত শতাংশ ছিল? [পুলিশ লাইন্স মাধ্যমিক বিদ্যালয়, যশোর]
১৩ খ ১৯ গ ২০ ঘ ২১
বহুপদী সমাপ্তিসূচক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
১৫. চুনাপাথর ব্যবহৃত হয়- [স. বো. ’১৬]
র. স্যানিটারি দ্রব্য তৈরিতে
রর. বিøচিং পাউডার উৎপাদনে
ররর. কাগজ উৎপাদনে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর রর ও ররর গ র ও ররর ঘ র, রর ও রর
১৬. কৃষিখাতের অন্তর্ভুক্ত কোনটি? [স. বো. ’১৬]
র. মৎস্য চাষ
রর. মৌমাছি চাষ
ররর. বনায়ন
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ রর ও ররর গ র ও ররর র, রর ও ররর
১৭. বাংলাদেশের অর্থনীতির বৈশিষ্ট্য [স. বো. ’১৫]
র. কৃষিখাতের প্রাধান্য
রর. ব্যাপক বেকারত্ব
ররর. বৈদেশিক বাণিজ্যের ঘাটতি
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর র, রর ও ররর
১৮. বাংলাদেশের অর্থনীতির বৈশিষ্ট্য [ভিকারুননিসা নূন স্কুল এন্ড কলেজ, ঢাকা]
র. বৈদেশিক সাহায্যনির্ভর
রর. কৃষিপ্রধান
ররর. শিল্পপ্রধান
নিচের কোনটি সঠিক?
র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
১৯. কৃষি ও বনজ খাতের উপখাত হলো
[সরকারি ইকবালনগর মাধ্যমিক বিদ্যালয়, খুলনা]
র. শাকসবজি
রর. প্রাণি সম্পদ
ররর. মৎস্য সম্পদ
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর র, রর ও ররর
২০. শিল্পনীতি ২০১০ ঘোষণা করার উদ্দেশ্য [যশোর জিলা স্কুল]
র. নারীকে শিল্পায়ন প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্ত করা
রর. দারিদ্র্য দূরীকরণ
ররর. কৃষির আধুনিকীকরণ
নিচের কোনটি সঠিক?
র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
অভিন্ন তথ্যভিত্তিক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ে ২১ ও ২২ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
দরিদ্র কৃষক নুরুল করিম স্বল্প জমিতে চাষাবাদ করে পরিবারের প্রয়োজন মেটাতে সক্ষম হচ্ছেন না। তাই তিনি মৎস্য চাষের সিদ্ধান্ত নেন। তিনি ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে মৎস্য চাষ শুরু করেন। [যশোর জিলা স্কুল]
২১. জনাব করিমের দ্বিতীয় কাজটি কোন খাতের অন্তর্ভুক্ত?
কৃষি খ সেবা গ শিল্প ঘ নির্মাণ
২২. জিডিপিতে এ খাতটি অবদান বৃদ্ধি পাচ্ছে-
র. আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে
রর. শিল্পায়নের বিকাশের ফলে
ররর. নগরায়ণের ফলে
নিচের কোনটি সঠিক?
র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
বিষয়ক্রম অনুযায়ী বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
৮.১ : বাংলাদেশের অর্থনীতির বৈশিষ্ট্য
বোর্ড বই, পৃষ্ঠা- ৮৬
২০১২-১৩ অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদনে কৃষিখাতের অবদান১৩ শতাংশ।
দেশের মোট শ্রমশক্তিকে ৪৭.৫ শতাংশ কৃষিতে নিয়োজিত।
মাথাপিছু জাতীয় আয় ১১৯০ ডলারে।
জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতিবর্গকিলোমিটারে ১০১৫ জন।
স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীকে সামনে রেখে প্রণীত হয় রূপকল্প ২০২১।
এদেশের প্রধান খনিজ সম্পদ হলো প্রাকৃতিক গ্যাস।
প্রাকৃতিক গ্যাস দেশের মোট জ্বালানির ৭৫ ভাগ পূরণ করে।
সাধারণ বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
২৩. কাদের বৈষম্যমূলক শাসননীতির ফলে ব্রিটিশরা চলে যাওয়ার পরও এদের অর্থনীতির কাক্সিক্ষত উন্নয়ন ঘটেনি? (অনুধাবন)
ক ভারতীয়দের খ ফরাসিদের
গ চীনাদের পশ্চিম-পাকিস্তানিদের
২৪. স্বাধীনতার লাভের পর কত দশক উন্নয়নের ফলে কিছুটা অর্থনৈতিক অগ্রগতি হয়েছে? (অনুধাবন)
ক দুই খ তিন চার ঘ পাঁচ
২৫. দেশের শ্রমশক্তির কত শতাংশ কৃষিতে নিয়োজিত? (জ্ঞান)
৪৭.৫ খ ৪৭.৮ গ ৪৮.৫ ঘ ৪৯.৫
২৬. বাংলাদেশে শিল্পায়নের গতি কেমন? (জ্ঞান)
ধীর খ দ্রæত গ মোটামুটি ঘ খুবই দ্রæত
২৭. বাংলাদেশে শিল্পায়নের গতি বাড়াতে কোনটি ঘোষণা করা প্রয়োজন? (জ্ঞান)
ক আধুনিক শিল্পনীতি খ মুক্ত কর অবকাশ
গ বেসরকারি বিনিয়োগ ঘ সরকারি বিনিয়োগ
২৮. শিল্পায়নের গতিকে বাড়াতে কত সালে শিল্পনীতি ঘোষণা করা হয়েছে? (জ্ঞান)
ক ২০০১ ২০১০ গ ২০১ ঘ ২০১২
২৯. ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ম্যানুফ্যাকচারিং শিল্পখাতের অবদান কত? (জ্ঞান)
২০ খ ৩০ গ ৩২ ঘ ৩৪
৩০. মোট শ্রমশক্তির কত শতাংশ শিল্পখাতে নিয়োজিত? (জ্ঞান)
১৭.৬৪ খ ২০.৩ গ ২৪.৩ ঘ ৩৪.৩
৩১. আমাদের দেশের মানুষের সঞ্চয় কম কেন? (অনুধাবন)
মাথাপিছু আয় কম, তাই খ জনসংখ্যা অধিক, তাই
গ অধিকাংশ মানুষ অলস, তাই ঘ দ্রব্যমূল্য অধিক, তাই
৩২. বর্তমানে বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু জাতীয় আয় কত মার্কিন ডলার? (জ্ঞান)
১৩১৪ খ ১২০০ গ ১২৫০ ঘ ১৩০০
৩৩. আমাদের মাথাপিছু জিডিপি কত মার্কিন ডলার? (জ্ঞান)
১২৩৫ খ ১১৫০ গ ১১৯০ ঘ ১২১৫
৩৪. সময়ের সাপেক্ষে আমাদের মাথাপিছু আয় কেমন হচ্ছে? (অনুধাবন)
ক কমছে বাড়ছে
গ অপরিবর্তিত থাকছে ঘ দ্রæত বাড়ছে
৩৫. আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করে কেন? (অনুধাবন)
আয় স্বল্প হওয়ার কারণে খ দারিদ্র্য প্রধান সমস্যা হওয়ার কারণে
গ জনসংখ্যা অধিক হওয়ার কারণে ঘ নিরক্ষরতার কারণে
৩৬. আমাদের দেশের কত ভাগ লোক দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করে? (জ্ঞান)
৩১.৫০ খ ৩০.৫০ গ ৩২.৫০ ঘ ৩১.৯০
৩৭. বাংলাদেশের কত ভাগ লোক সুপেয় পানি পায়? (জ্ঞান)
ক ৪৩ খ ৫২ ৮৭.৫৫ ঘ ৯০.৮
৩৮. বাংলাদেশের মানুষের প্রত্যাশিত গড় আয়ুষ্কাল কত বছর? (জ্ঞান)
ক ৬৭.২ ৬৯ গ ৬৭.৫ ঘ ৭০.২
৩৯. বাংলাদেশে সাক্ষরতার হার কত শতাংশ? (জ্ঞান)
৫৭.৯ খ ৬০.৯ গ ৬১.৯ ঘ ৬৭.৯
৪০. বাংলাদেশ একটি কৃষিপ্রধান দেশ। এদেশের জনগণের আয় ও সঞ্চয় তুলনামূলকভাবে অত্যন্ত কম। এর কারণ কী? (্অনুধাবন)
দরিদ্র দেশ খ কৃষিভিত্তিক শিল্প
গ জনবহুল দেশ ঘ কৃষির ওপর নির্ভরশীলতা
৪১. ২০১৩-১৪ অর্থবছরে দেশে মোট বিনিয়োগ ছিল জিডিপির কত শতাংশ? (জ্ঞান)
ক ২৮.২১ খ ২৯.২১ ২৮.৯৭ ঘ ২৯.৯৯
৪২. রতন একজন ধনী কৃষক। গত কয়েক বছর ধরে তার জমিতে আধুনিক চাষাবাদ পদ্ধতি ব্যবহার করায় অধিক ফসল উৎপাদিত হয়, এটি কী প্রমাণ করে? (উচ্চতর দক্ষতা)
বাংলাদেশে প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে
খ বাংলাদেশে কৃষিক্ষেত্রে অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করে
গ বাংলাদেশের কৃষকদের ভাগ্য পরিবর্তন হচ্ছে
ঘ বাংলাদেশে দ্রæত শিল্পায়ন ঘটছে
৪৩. যদিও কৃষিজমির পরিমাণ কমছে তবুও বর্তমানে কৃষির উৎপাদিত পরিমাণ বেশি। এটি কী প্রমাণ করছে? (অনুধাবন)
ক বেশি মানুষ কৃষিতে নিয়োজিত হচ্ছে
খ অধিক সার ব্যবহার করা হচ্ছে
আধুনিক বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির প্রয়োগ বৃদ্ধি পাচ্ছে
৪৪. ২০১১ সালের হিসাব অনুযায়ী বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যা কত জন? (জ্ঞান)
১৪ কোটি ৯৭ লাখ ৭২ হাজার খ ১৫ কোটি ১৩ লক্ষ
গ ১৪ কোটি ৫০ লক্ষ ঘ ১৬ কোটি
৪৫. ২০১১-১২ সালের হিসাব অনুযায়ী বাংলাদেশে জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গকিলোমিটারে কত জন? (জ্ঞান)
ক ৯৫৪ ১০১৫ গ ৯৭৪ ঘ ৮৬৪
৪৬. ২০১১-১২ সালের হিসাব অনুযায়ী বাংলাদেশে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কত? (জ্ঞান)
১.৩৭% খ ১.৪৮% গ ২.১১% ঘ ৩.৯৯%
৪৭. ২০০১ সালে বাংলাদেশে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কত ছিল? (জ্ঞান)
ক ১.৩৭% ১.৪৮% গ ১.৩৪% ঘ ২.৩৪%
৪৮. শিবলি ঢাকায় একটি রেস্টুরেন্ট খুলতে চায়। কিন্তু তার কাছে পুঁজি নেই। সে ঋণের জন্য ব্যাংকের দ্বারস্থ হলেও পায় না কেন? (উচ্চতর দক্ষতা)
ক কৃষিনির্ভর শিল্প তাই খ উদ্যোক্তাদের অনভিজ্ঞতার কারণে
জনগণের আয় ও সঞ্চয় কম বলে ঘ জনগণের ব্যয় বেশি বলে
৪৯. বর্তমান বাংলাদেশে প্রয়োজনীয় মূলধনের অভাবে কৃষি ও শিল্পখাতে কর্মসংস্থানের সুযোগ কম। এর ফলাফল কী হতে পারে? (উচ্চতর দক্ষতা)
ক বাণিজ্য ঘাটতি দেখা দিতে পারে
ব্যাপক বেকারত্ব সৃষ্টি হতে
গ দেশে অস্থিতিশীলতা দেখা দিতে পারে
ঘ বৈদেশিক সাহায্যের পরিমাণ কমে যেতে পারে
৫০. বাংলাদেশের রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকাকে সংক্ষেপে ইংরেজিতে কী বলা হয়? (জ্ঞান)
ঊচত খ ঊচগ গ ঊচজ ঘ ঊউজ
৫১. ঊচত-এর পূর্ণরূপ কী? (জ্ঞান)
ঊীঢ়ড়ৎঃ চৎড়পবংংরহম তড়হব
খ ঊীঢ়ড়ৎঃ চৎড়ভরঃ তড়হব
গ ঊীঢ়ড়ৎঃ চৎড়ফঁপরহম ুড়হব
ঘ ঊীঢ়ড়ৎঃ চৎড়ফঁপঃরাব ুড়হব
৫২. ২০১৩-১৪ অর্থবছরে খনিজ সম্পদের সমন্বিত খাতের অবদান কত শতাংশ হয়েছে? (জ্ঞান)
ক ১.২০ খ ১.৫০ ১.৬৩ ঘ ১.৮০
৫৩. প্রাকৃতিক গ্যাস দেশের মোট জ্বালানি ব্যবহারের শতকরা কতভাগ পূরণ করে? (জ্ঞান)
ক ৯০ খ ৮৫ গ ৮০ ৭৫
৫৪. বাংলাদেশে বর্তমানে কতটি গ্যাসক্ষেত্র থেকে গ্যাস উত্তোলিত হচ্ছে? (জ্ঞান)
ক ১৭ ১৯ গ ২৩ ঘ ২৫
৫৫. বাংলাদেশের কতটি গ্যাসক‚প থেকে গ্যাস উত্তোলিত হচ্ছে? (জ্ঞান)
৮৩ খ ৮৯ গ ৭৬ ঘ ৭২
৫৬. উৎপাদিত গ্যাস কোন ক্ষেত্রে সর্বাধিক ব্যবহৃত হয়? (জ্ঞান)
ক তাপ উৎপাদনে বিদ্যুৎ
গ পরিবহন ঘ কাগজ শিল্পে
৫৭. ঝচগ-এর পূর্ণরূপ কী? (জ্ঞান)
ক ঝরষবহঃ চড়রহঃ গড়ড়ফ ঝরহমষব চড়রহঃ গড়ড়ৎরহম
গ ঝরসঢ়ষব চড়বিৎ গড়ৎরহম ঘ ঝরষবহঃ চড়রহঃ গড়ড়ফ
৫৮. বাংলাদেশে মোট কতটি কয়লা ক্ষেত্র আছে? (জ্ঞান)
ক ৪ ৫ গ ৬ ঘ ৭
৫৯. বাংলাদেশে মজুদকৃত কয়লার পরিমাণ কত? (জ্ঞান)
২৭০০ মিলিয়ন টন খ ২৮০০ মিলিয়ন টন
গ ৩০০০ মিলিয়ন টন ঘ ৩৭০০ মিলিয়ন টন
৬০. উত্তোলিত কয়লার কতভাগ বড় পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ব্যবহৃত হয়? (জ্ঞান)
ক ৭৫ খ ৮৫ ৬৫ ঘ ৫৫
৬১. বাংলাদেশের প্রতি বছর কী ধরনের দ্রব্য আমদানি বাবদ প্রচুর অর্থ ব্যয় করে থাকে? (অনুধাবন)
ভোগ্যপণ্য ও মূলধনী খ কৃষিকাজ
গ নিত্যপ্রয়োজনীয় ঘ রাসায়নিক
৬২. অর্থনৈতিক অবকাঠামো কোনটি? (জ্ঞান)
ক স্কুল খ হাসপাতাল
গ ক্লাব রেল ও নৌপথে
৬৩. সরকার কত কিলোমিটার দীর্ঘ এলিভেটেড এক্সপ্রেস নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে? (জ্ঞান)
২৬ খ ৩০ গ ৩৫ ঘ ৪৬
৬৪. ১৯৯৩ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত কতটি প্রতিষ্ঠানকে বেসরকারিকরণ করা হয়েছে? (জ্ঞান)
ক ৭০ খ ৭১ গ ৭৫ ৭৭
৬৫. কতটি প্রতিষ্ঠান সরাসরি বিক্রির মাধ্যমে বেসরকারিকরণ করা হয়েছে? (জ্ঞান)
ক ৫৫ ৫৬ গ ৭৫ ঘ ৭৬
৬৬. কতটি প্রতিষ্ঠান শেয়ার বিক্রির মাধ্যমে বেসরকারিকরণ করা হয়েছে? (জ্ঞান)
ক ২০ ২১ গ ৫৫ ঘ ৭৭
৬৭. সরকারের কত সালের রূপকল্পের আলোকে ‘বাংলাদেশ প্রেক্ষিত পরিকল্পনা’ রূপরেখার দলিল প্রণয়ন করেছে? (জ্ঞান)
ক ২০১৫ খ২০১৮ ২০২১ ঘ ২০২৩
বহুপদী সমাপ্তিসূচক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
৬৮. বাংলাদেশে উন্নত দেশের তুলনায় মাথাপিছু আয় কম হওয়ার কারণ (অনুধাবন)
র. কর্মসংস্থানের সুযোগ না থাকা
রর. শ্রমিকদের কাজে অনীহা বা অলসতা
ররর. অধিক জনসংখ্যা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৬৯. এদেশে বেকার সমস্যা অদূর ভবিষ্যতে দূরীভ‚ত হবে বলে আশা করা যায়, কারণ (উচ্চতর দক্ষতা)
র. মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাচ্ছে
রর. জনসংখ্যা বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়েছে
ররর. সরকার সহযোগিতাগুলো নীতি গ্রহণ করেছে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৭০. মানবসম্পদ উন্নয়নে সরকার বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। এসব কার্যক্রমের মাধ্যমে সরকার (উচ্চতর দক্ষতা)
র. নারীকে আত্মনির্ভরশীল করছে
রর. শিশু শ্রম বন্ধ করছে
ররর. মানুষের দক্ষতার উন্নয়ন ঘটাচ্ছে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৭১. মানব সম্পদ উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করে (অনুধাবন)
র. শিক্ষা
রর. প্রশিক্ষণ
ররর. নৈতিকতা
নিচের কোনটি সঠিক?
র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৭২. জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০ প্রণয়নের ফলে (উচ্চতর দক্ষতা)
র. শিক্ষার গুণগতমান বৃদ্ধি পেয়েছে
রর. মানবসম্পদ সৃষ্টির সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে
ররর. শিক্ষা শেষে চাকরির নিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে
নিচের কোনটি সঠিক?
র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৭৩. দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য প্রয়োজন (উচ্চতর দক্ষতা)
র. সম্পদের সুষম বণ্টন নিশ্চিত করা
রর. সরকারি ও বেসরকারি কাজের সমন্বয় সাধন
ররর. শিক্ষার মান উন্নত করা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর র, রর ও ররর
৭৪. রূপকল্প ২০২১-এর উদ্দেশ্য হলো (অনুধাবন)
র. দারিদ্র্য বিমোচন
রর. আঞ্চলিক বৈষম্য দূরীকরণ
ররর. রাষ্ট্রীয় সংহতি বিধান
নিচের কোনটি সঠিক?
র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৭৫. বর্তমানে বিনিয়োগ বৃদ্ধির জন্য সরকার ঘোষণা করেছে? (উচ্চতর দক্ষতা)
র. লোভনীয় পুরস্কার
রর. সহযোগিতামূলক নীতি
ররর. উদ্দীপনামূলক আশ্বাস
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৭৬. এদেশের সঞ্চয় কম বলে (অনুধাবন)
র. বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাচ্ছে না
রর. পুঁজি গঠন সম্ভব হচ্ছে না
ররর. কৃষি উন্নয়ন সম্ভব হচ্ছে না
নিচের কোনটি সঠিক?
র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৭৭. একটি দেশের পরনির্ভরতা কমাতে সহায়ক হলো (উচ্চতর দক্ষতা)
র. কৃষির আধুনিকীকরণ
রর. শিল্পের বিকাশ
ররর. জনসংখ্যা বৃদ্ধি
নিচের কোনটি সঠিক?
র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৭৮. বাংলাদেশে দ্রæত অর্থনৈতিক উন্নয়নের পূর্বশর্ত হলো (উচ্চতর দক্ষতা)
র. আমদানি
রর. শিল্পের উন্নয়ন
ররর. প্রাকৃতিক সম্পদের সঠিক ব্যবহার
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র খ রর গ ররর রর ও ররর
৭৯. আধুনিক পদ্ধতির কৃষির বিকাশ সম্ভব (অনুধাবন)
র. কৃষি সম্পর্কিত তথ্যের প্রচার করে
রর. খাল বা নদী খনন করে
ররর. শিল্পের উন্নয়ন করে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৮০. কৃষির অগ্রগতির সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত (অনুধাবন)
র. জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন
রর. দারিদ্র্যবিমোচন
ররর. দক্ষ সংগঠন সৃষ্টি
নিচের কোনটি সঠিক?
র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৮১. ঔপনিবেশিক আমলে বাংলাদেশে উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক উন্নয়ন না হওয়ার কারণÑ (উচ্চতর দক্ষতা)
র. বাজার ব্যবস্থায় অনিয়ম
রর. শাসকদের বৈষম্যমূলক শাসননীতি
ররর. পর্যাপ্ত কাঁচামালের অভাব
নিচের কোনটি সঠিক?
র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৮২. বর্তমান বাংলাদেশে শিল্পের প্রসার লক্ষ করা যাচ্ছে। এক্ষেত্রে ভ‚মিকা রাখছে (প্রয়োগ)
র. আধুনিক প্রযুক্তি
রর. বেসরকারি বিনিয়োগ
ররর. সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর র, রর ও ররর
৮৩. বাংলাদেশের অর্থনীতির বৈশিষ্ট্য (অনুধাবন)
র. বৈদেশিক সাহায্যনির্ভর
রর. কৃষিপ্রধান
ররর. শিল্প প্রধান
নিচের কোনটি সঠিক?
র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৮৪. ঔপনিবেশিক শাসন শোষণের ফলে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক কাঠামো দুর্বল রয়ে গেছে। এখানে যাদের শাসনের কথা বলা হয়েছে (উচ্চতর দক্ষতা)
র. ব্রিটিশ শাসকগোষ্ঠী
রর. মোগল শাসকগোষ্ঠী
ররর. পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৮৫. সার্বিক শিল্প খাতের দ্রæত বিকাশের ফলে (অনুধাবন)
র. জাতীয় আয় ও মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি পাবে
রর. জীবনযাত্রার মান উন্নত হবে
ররর. বাণিজ্য ঘাটতি দূর হবে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর র, রর ও ররর
৮৬. বাংলাদেশে কৃষি উৎপাদন অনেক কম হওয়ার কারণ (অনুধাবন)
র. অনুন্নত চাষ পদ্ধতি
রর. উন্নত কৃষি উপকরণের অভাব
ররর. প্রাকৃতিক দুর্যোগ
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর র, রর ও ররর
৮৭. বাংলাদেশে আধুনিক শিল্পনীতি গ্রহণ করা প্রয়োজন (অনুধাবন)
র. শিল্পায়নের গতি বাড়ানোর জন্য
রর. নারীর কর্মসংস্থান বৃদ্ধির জন্য
ররর. শ্রমজীবী মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য
নিচের কোনটি সঠিক?
র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৮৮. ২০১০ সালে বাংলাদেশ সরকার জাতীয় শিল্পনীতি ঘোষণা করেছে ফলে (উচ্চতর দক্ষতা)
র. বেসরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধি পায়
রর. নারীর কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পায়
ররর. আমদানি ব্যয় কমে যাচ্ছে
নিচের কোনটি সঠিক?
র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
অভিন্ন তথ্যভিত্তিক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ে ৮৯ ও ৯০ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
প্রায় ২০০ বছরের ব্রিটিশ শাসনের অবহেলায় এদেশে তেমন কোনো উল্লেখযোগ্য শিল্প গড়ে ওঠেনি। ব্রিটিশরা এ অঞ্চলকে কাঁচামাল উৎপাদনকারী এবং শিল্পপণ্যের বাজাররূপে ব্যবহার করত। প্রায় চব্বিশ বছরের পাকিস্তানি আমলেও শাসকদের বৈষম্যমূলক শাসননীতির ফলে এখানে শিল্পের কাক্সিক্ষত উন্নয়ন ঘটেনি।
৮৯. অনুচ্ছেদে কী প্রকাশ পেয়েছে? (প্রয়োগ)
ক বাংলাদেশের পরাধীনতার কথা
খ বাংলাদেশের শিল্প বিকাশের বর্ণনা
বাংলাদেশে শিল্প বিকাশ না হওয়ার কারণ
ঘ বাংলাদেশে শিল্প বিকাশের প্রয়োজনীয়তা
৯০. অনুচ্ছেদের তথ্য অনুযায়ী ব্রিটিশরা এদেশকে ব্যবহার করতÑ (উচ্চতর দক্ষতা)
র. উন্নয়নের হাতিয়ার হিসেবে
রর. উপনিবেশ হিসেবে
ররর. কাঁচামাল উৎপাদন ক্ষেত্র ও শিল্পপণ্যের বাজার হিসেবে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ররর গ র ও রর ঘ র, রর ও ররর
৮.২ : বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রধান খাতসমূহ
বোর্ড বই, পৃষ্ঠা- ৯০
বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রধান খাত ৩টি।
কৃষি খাতের উপখাত ৩টি।
শিল্পখাতের উপখাত ৩টি।
ডিসেম্বর ২০১২ পর্যন্ত এদেশে ঊচত-এর সংখ্যা ৮টি।
বাংলাদেশে সমুদ্র বন্দর ২টি।
সার্বিক সেবা খাতের সর্বোচ্চ অবদানপরিবহন, সংরক্ষণ ও সেবা খাত হতে আসে।
সাধারণ বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
৯১. বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রধান খাত কয়টি? (জ্ঞান)
ক দু তিন গ চার ঘ পাঁচ
৯২. বাংলাদেশের কৃষকেরা নানা ধরনের শস্য উৎপাদন করে থাকে। এসব কিসের অন্তর্ভুক্ত? (প্রয়োগ)
কৃষি খ শিল্প
গ সেবা ঘ প্রাকৃতিক সম্পদ
৯৩. মৎস্য সম্পদ কোন খাতের অন্তর্গত? (জ্ঞান)
কৃষি খ শিল্প গ প্রাণিসম্পদ ঘ ব্যবসা
৯৪. পশুসম্পদ অর্থনীতির কোন খাতের অন্তর্ভুক্ত? (অনুধাবন)
কৃষি খ শিল্প গ সেবা ঘ সামাজিক সেবা
৯৫. মাংস, দুধ, ডিম, চামড়া কোন খাতের অন্তর্ভুক্ত? (অনুধাবন)
ক খাদ্য শিল্প প্রাণিসম্পদ
গ পুষ্টি ঘ সেবা
৯৬. আমাদের মোট ভ‚খণ্ডের কতভাগ বনাঞ্চল? (জ্ঞান)
ক ১৫ ১৭ গ ২৮ ঘ ৩০
৯৭. বাংলাদেশের প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় কোন সম্পদের পরিমাণ যথাযথ হওয়া উচিত? (উচ্চতর দক্ষতা)
ক প্রাণিজ বনজ গ কৃষিজ ঘ শিল্প
৯৮. একটা দেশের মোট ভ‚খণ্ডের কতভাগ বনাঞ্চল থাকা দরকার? (জ্ঞান)
ক ১৭ খ ২০ ২৫ ঘ ৩০
৯৯. ২০১৩-১৪ অর্থবছরে মৎস্য সম্পদের অবদান কত ছিল? (জ্ঞান)
৩.৬৮ ভাগ খ ৩.৭২ ভাগ গ ৩.৮০ ভাগ ঘ ৩.৯০ ভাগ
১০০. ২০১৩ সালের মধ্যে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের জন্য সরকার কোন খাতে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে? (উচ্চতর দক্ষতা)
ক শিল্প খ সেবা কৃষি ঘ মৎস্য
১০১. ২০১২-১৩ সালে মৎস্য সম্পদে জিডিপি কত ছিল? (জ্ঞান)
ক ৪৪.৯ ৬.১৮ গ ৪৫.৯ ঘ ৪.৪১
১০২. ২০১৩-১৪ অর্থবছরে জিডিপিতে মৎস্য সম্পদের প্রবৃদ্ধির হার কত শতাংশ? (জ্ঞান)
ক ৫.৩২ খ ৫.৯৬ ৬.৩৬ ঘ ৭.১২
১০৩. বাংলাদেশের মোট জাতীয় আয়ে কোনটির অবদান সর্বাধিক? (উচ্চতর দক্ষতা)
কৃষি খ শিল্প
গ বনজসম্পদ ঘ খনিজসম্পদ
১০৪. বাংলাদেশের শতকরা কত ভাগ লোক প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাগে কৃষির সাথে যুক্ত? (জ্ঞান)
ক ৭৬ ৭৫ গ ৮০ ঘ ৯০
১০৫. বাংলাদেশের শতকরা ৭৫ ভাগ লোক কোনো একটি খাতের ওপর নির্ভর করে জীবিকা নির্বাহ করে। এ খাতটি কী? (উচ্চরত দক্ষতা)
ক সেবা খ নির্মাণ গ শিল্প কৃষি
১০৬. ২০১৩-১৪ বছরে কত লক্ষ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য উৎপাদিত হয়েছিল? (জ্ঞান)
৩৮১.৭৪ খ ৩৮০.১৩
গ ৩৯০.১৩ ঘ ৩৯৫.১৩
১০৭. প্রকৃতিপ্রদত্ত সম্পদ বা কাঁচামালকে কারখানাভিত্তিক প্রস্তুত প্রণালির মাধ্যমে মাধ্যমিক বা চ‚ড়ান্ত দ্রব্যে পরিণত করাকে কী বলে? (জ্ঞান)
শিল্প খ উৎপাদন
গ সংগঠন ঘ প্রক্রিয়াকরণ
১০৮. বাংলাদেশের জাতীয় আয় নির্ণয়ে কতটি খাত আছে? (জ্ঞান)
১৫ খ ১৬ গ ১১ ঘ ১০
১০৯. অপরিশোধিত তেল কোন খাতের উপখাত? (অনুধাবন)
খনিজ ও খনন খ জ্বলানি
গ ক্ষুদ্রায়তন শিল্প ঘ বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানি
১১০. বাংলাদেশের সার শিল্প কোনটির অন্তর্ভুক্ত? (্জ্ঞান)
বৃহৎ খ ক্ষুদ্র গ কুটির ঘ মাঝারি
১১১. বাংলাদেশের সিমেন্ট শিল্প কোনটির অন্তর্ভুক্ত? জ্ঞান)
বৃহৎ খ কুটির গ মাঝারি ঘ ক্ষুদ্র
১১২. নিচের কোনটি ক্ষুদ্রশিল্প? (উচ্চতর দক্ষতা)
বস্ত্র খ সাবান গ চিনি ঘ সার
১১৩. বাংলাদেশে এখনও কোনটি বৃহৎ শিল্প হিসেবে পরিগণিত হচ্ছে? (উচ্চতর দক্ষতা)
ক চামড়া খ পোশাক পাট ঘ চা
১১৪. চামড়া শিল্প বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে গুরুত্বপূর্ণ শিল্প। এটি কোন শিল্পের অন্তর্ভুক্ত? (অনুধাবন)
ক ক্ষুদ্র মাঝারি গ বৃহৎ ঘ কুটির
১১৫. পোশাক শিল্প কোন ধরনের শিল্প? (জ্ঞান)
বৃহৎ খ ক্ষুদ্র গ মাঝারি ঘ কুটির
১১৬. সম্প্রতি বাংলাদেশে তৈরি কোন শিল্পের প্রসার ও উন্নতির সাথে দেশের রপ্তানি অনেক বেড়েছে? (অনুধাবন)
ক চামড়া খ চিনি পোশাক ঘ পাট
১১৭. একটি গার্মেন্টস কারখানায় কাজ করে জয়ন্তী তার ভাগ্যপরিবর্তনে সক্ষম হয়েছে। এখানে কোন শিল্পের ভ‚মিকা তুলে ধরা হয়েছে? (প্রয়োগ)
পোশাক খ পাট
গ চিনি ঘ বস্ত্র
১১৮. বাংলাদেশের নারীদের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে বর্তমানে কোন শিল্পের ভ‚মিকা সর্বাধিক? (উচ্চতর দক্ষতা)
পোশাক খ চিনি গ পাট ঘ বস্ত্র
১১৯. জনাব মিনহাজ চট্টগ্রামে ইউরিয়া সারকারখানায় কর্মরত। তিনি কোন শিল্পে অবদান রাখছেন? (প্রয়োগ)
সার খ চিনি গ সিমেন্ট ঘ প্রসাধনী
১২০. অজিত রায় তার গ্রামে একটি গার্মেন্টস কারখানা তৈরি করার চিন্তা করছেন। এটি কোন শিল্পের অন্তর্ভুক্ত? (প্রয়োগ)
মাঝারি খ বৃহৎ গ কুটির ঘ ক্ষুদ্র
১২১. সোহেল গ্রামের ছাত্র। সে তার লেখাপড়ার পাশাপাশি কিছু একটা করতে চায়। এক্ষেত্রে কোন শিল্প তার জন্য উপযোগী হবে? (উচ্চতর দক্ষতা)
ক কুটির ক্ষুদ্র গ বৃহৎ ঘ মাঝারি
১২২. রেশমের চাষ করে রাজশাহীর জয়া ও শাহীন দম্পতি আজ স্বাবলম্বী। তাদের কাজ কোন শিল্পের অন্তর্ভুক্ত? (প্রয়োগ)
ক ক্ষুদ্র খ বৃহৎ গ মাঝারি কুটির
১২৩. মনিরা চৌধুরী ব্যক্তিগত উদ্যোগে বাঁশ ও বেত দিয়ে নানা ধরনের জিনিস তৈরি করে বাজারে বিক্রি করে স্বাবলম্বী হয়েছে। মনিরার কাজটি কোন শিল্পের অন্তর্ভুক্ত? (প্রয়োগ)
কুটির খ ক্ষুদ্র গ মাঝারি ঘ বৃহৎ
১২৪. তাঁত ও মৃৎশিল্প কোন শিল্পের অন্তর্ভুক্ত? (অনুধাবন)
ক ক্ষুদ্র কুটির গ মাঝারি ঘ বৃহৎ
১২৫. গ্রামাঞ্চলে আর্থসামাজিক উন্নয়নের জন্য যে শিল্প বেশি স্থাপন করা দরকার? (উচ্চতর দক্ষতা)
ক বৃহৎ ক্ষুদ্র ও কুটির
গ মাঝারি ঘ বেত ও সুতা
১২৬. নাসিমার স্বামী একজন রিকশাচালক। নাসিমা হাতে প্রচুর সময় পায়। তাই সে স্বামীকে আর্থিকভাবে সাহায্য করতে চায়। এক্ষেত্রে নাসিমার জন্য কোন শিল্প উপযোগী? (উচ্চতর দক্ষতা)
কুটির খ মাঝারি গ ক্ষুদ্র ঘ বৃহৎ
১২৭. গ্যাসখাত গুরুত্বপূর্ণ একটি খাতের উপখাত। এ খাতটি কী? (উচ্চতর দক্ষতা)
ক ক্ষুদ্রায়তন শিল্প বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানি শিল্প
গ গ্যাস খাত ঘ জ্বালানি খাত
১২৮. ২০১৩-১৪ অর্থবছরে জিডিপিতে ম্যানুফাকচারিং উপখাতের অবদান কত শতাংশ? (জ্ঞান)
ক ৯.৯৬ ৮.৭৭ গ ১৮.৯৯ ঘ ২১.২২
১২৯. ২০১৩-১৪ অর্থবছরে জিডিপিতে নির্মাণ খাতের অবদান কত শতাংশ? (জ্ঞান)
৮.০৮% খ ৭.০৪% গ ৫.৬৬% ঘ ৪.৭৬%
১৩০. বাংলাদেশে বাণিজ্য খাতটির পরিমাণ হ্রাস পাচ্ছে কেন? (অনুধাবন)
পণ্যসামগ্রীর রপ্তানি বৃদ্ধি পাওয়ায়
খ জনশক্তি রপ্তানি হওয়ায়
গ আমদানি বৃদ্ধি পাওয়ায়
ঘ আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টি হওয়ায়
১৩১. বাজার অর্থনীতি প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য কী? (অনুধাবন)
ক মুদ্রা বাজারে স্থিতিশীলতা রক্ষা সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন
গ দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়ন ঘ অর্থবাজারে গতিশীলতা সৃষ্টি
১৩২. ঊচত অঞ্চলে কত জন বাংলাদেশি শ্রমিক কর্মরত? (জ্ঞান)
ক প্রায় ২.৫০ লক্ষ প্রায় ৩.৫০ লক্ষ
গ ৪.৫০ লক্ষ ঘ ৫.৫০ লক্ষ
১৩৩. ঊচত অঞ্চল থেকে এ পর্যন্ত কত মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের উৎপাদিত পণ্য বিদেশে রপ্তানি করা হয়েছে? (জ্ঞান)
৪,২১০ খ ৫,২১০ গ ৬,২১০ ঘ ৭,২১০
১৩৪. বাংলাদেশের বেকার সমস্যা দূরীকরণে নিচের কোনটি সবচেয়ে বেশি উপযোগী? (উচ্চতর দক্ষতা)
শিল্পক্ষেত্র খ কৃষিক্ষেত্র
গ ব্যবসাক্ষেত্র ঘ চাকরিক্ষেত্র
১৩৫. বাংলাদেশের শিল্পোন্নয়নের জন্য কী করা প্রয়োজন? (উচ্চতর দক্ষতা)
ক কুটিরশিল্পের উন্নয়ন খ মূলধনভিত্তিক শিল্প স্থাপন
গ উচ্চ ফলনশীল বীজের ব্যবহার সুষ্ঠু শিল্পনীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন
১৩৬. বাংলাদেশের আধুনিক শিল্পনীতির উদ্দেশ্য কী? (অনুধাবন)
কর্মসংস্থান বৃদ্ধি করা খ বিনিয়োগ বৃদ্ধি করা
গ রপ্তানি বৃদ্ধি করা ঘ এউচ-র হার বৃদ্ধি করা
১৩৭. বেকার সমস্যা সমাধানে কোন উদ্যোগটি গ্রহণ করা গুরুত্বপূর্ণ বলে তুমি মনে কর? (উচ্চতর দক্ষতা)
স্বকর্মসংস্থান সৃষ্টি খ দ্রæত শিল্পায়ন
গ উন্নত কৃষি উদ্ভাবন ঘ বিদেশে শ্রমশক্তি রপ্তানি
১৩৮. বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে কোন ধরনের শিল্প স্থাপনে গুরুত্ব দিতে হবে? (অনুধাবন)
ক কুটির ক্ষুদ্র
গ রপ্তানিমুখী ঘ বৃহৎ
১৩৯. বস্ত্রশিল্পে প্রথমে তুলা ব্যবহার করে সুতা তৈরি করা হয়। আর সেই সুতা দিয়ে কাপড় এবং সবশেষে পোশাক তৈরি করা হয়। এখানে সুতা কেমন পণ্য? (উচ্চতর দক্ষতা)
মাধ্যমিক খ প্রাথমিক গ চ‚ড়ান্ত ঘ স্বাভাবিক
১৪০. কত সালকে সামনে রেখে ‘উন্নয়ন রূপকল্প’ প্রণয়ন করা হয়েছে? (জ্ঞান)
ক ২০১৫ খ ২০১৭ গ ২০২০ ২০২১
১৪১. ‘উন্নয়ন রূপকল্পে’ শিল্পখাতের অবদান কত শতাংশ হবে বলে প্রত্যাশা করা হয়েছে? (জ্ঞান)
ক ৩৫% ৪০% গ ৪৫% ঘ ৫০%
১৪২. ‘উন্নয়ন রূপকল্প’ অনুযায়ী কর্মসংস্থানে শিল্পের অবদান কত শতাংশ হবে বলে নির্ধারণ করা হয়েছে? (জ্ঞান)
২৫% খ ২৭% গ ৩০% ঘ ৪০%
১৪৩. কোন শিল্পে প্রাকৃতিক গ্যাস কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত হয়? (জ্ঞান)
রাসায়নিক সার খ সিমেন্ট
গ প্লাস্টিক ঘ ফার্নেস তেল
১৪৪. বিøচিং পাউডার তৈরিতে কোনটি ব্যবহৃত হয়? (জ্ঞান)
ক চীনামাটি চুনাপাথর
গ গন্ধক ঘ সিলিকা বালু
১৪৫. তেল পরিশোধনে নিচের কোনটি ব্যবহৃত হয়? (জ্ঞান)
ক চুনাপাথর খ সিলিকা বালু
গন্ধক ঘ চিনামাটি
১৪৬. বাংলাদেশে দ্রæত শিল্পায়নের ক্ষেত্রে বড় বাধা হলো (উচ্চতর দক্ষতা)
মূলধনের স্বল্পতা খ দক্ষতার অভাব
গ বেকার সমস্যা ঘ কম উৎপাদন
১৪৭. যে খাতের মাধ্যমে অবস্তুগত দ্রব্য উৎপাদিত হয় তাকে কী বলে? (জ্ঞান)
ক শিল্পখাত সেবাখাত গ স্বপ্নখাত ঘ বিদ্যুৎখাত
১৪৮. বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিভিন্ন ধরনের ব্যাংক গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করছে। বাংলাদেশের অর্থনীতির কোন খাত হিসেবে এদের অবদান অন্তর্ভুক্ত হবে? (প্রয়োগ)
সেবা খ শিল্প গ কৃষি ঘ নির্মাণ
১৪৯. বাংলাদেশের অর্থনীতির কোন খাতটি একক বৃহত্তম খাত হিসেবে পরিগণিত? (অনুধাবন)
সেবাখাত খ কৃষি গ শিল্প ঘ নির্মাণ
১৫০. ২০১২-১৩ অর্থবছরে জিডিপিতে সার্বিক সেবাখাতের অবদান কত? (জ্ঞান)
৫৪% খ ৫৬% গ ৭৫% ঘ ৮০%
১৫১. সেবাখাতের অন্তর্ভুক্ত কোনটি জিডিপিতে সবচেয়ে বেশি অবদান রাখছে? (উচ্চতর দক্ষতা)
ক সামাজিক সেবা পাইকারি ও খুচরা বিপণন
গ আর্থিক প্রতিষ্ঠান ঘ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান
১৫২. বর্তমানে বাংলাদেশে জাতীয় মহাসড়ক রয়েছে কত কিলোমিটার? (জ্ঞান)
ক ৩৫৫০ ৩৫৭০ গ ৩৪৯৩ ঘ ৩৪৯৮
১৫৩. বাংলাদেশের মোট রেলপথের দৈর্ঘ্য কত? (জ্ঞান)
২৮৭০ কিলোমিটার খ ২৪৩৫ কিলোমিটার
গ ২২৩৫ কিলোমিটার ঘ ২৮৫৩ কিলোমিটার
১৫৪. বাংলাদেশে ব্রডগেজ রেলপথের দৈর্ঘ্য কত? (জ্ঞান)
৬৫৯ কিলোমিটার খ ৫৮০ কিলোমিটার
গ ৪৮০ কিলোমিটার ঘ ৩০০ কিলোমিটার
১৫৫. বাংলাদেশে ডুয়েল গেজ রেলপথের দৈর্ঘ্য কত? (জ্ঞান)
ক ২০০ কিলোমিটার খ ৩০০ কিলোমিটার
৩৭৫ কিলোমিটার ঘ ৪০০ কিলোমিটার
১৫৬. বাংলাদেশে মিটারগেজ রেলপথের দৈর্ঘ্য কত? (জ্ঞান)
ক ১,০০০ কিলোমিটার খ ১,২০০ কিলোমিটার
গ ১,৫৮০ কিলোমিটার ১,৮৪৩ কিলোমিটার
১৫৭. বাংলাদেশের প্রধান সামুদ্রিক বন্দর কোনটি? (জ্ঞান)
চট্টগ্রাম খ চাঁদপুর গ ঢাকা ঘ মংলা
১৫৮. চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে আমাদের দেশের আমদানি রপ্তানি বাণিজ্যের কতভাগ পরিচালিত হয়? (জ্ঞান)
ক ৯৩ খ ৯৪ ৯৭ ঘ ৯৮
১৫৯. অভ্যন্তরীন নৌপরিবহন করপোরেশন কতটি জলযান দ্বারা ফেরী সার্ভিস অব্যাহত রেখেছে? (জ্ঞান)
ক ১৫০ ১৮৮ গ ১৯০ ঘ ২০০
১৬০. বর্তমানে বাংলাদেশে কতটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর চালু আছে? (জ্ঞান)
৩ খ ৪ গ ৫ ঘ ৬
১৬১. বর্তমানে বাংলাদেশে কতটি অভ্যন্তরীণ বিমান বন্দর আছে? (জ্ঞান)
৭ খ ৩ গ ৮ ঘ ৪
১৬২. বাংলাদেশে কয়টি ব্যবহার উপযোগী স্টল পোস্ট রয়েছে? (জ্ঞান)
২ খ ৪ গ ৫ ঘ ৬
১৬৩. ঝঞঙখ-এর পূর্ণরূপ কী? (জ্ঞান)
ক ঝঃড়পশ ঞধশব ঙভভ-খধহফরহম
ঝযড়ৎঃ ঞধশব ঙভভ-খধহফরহম
গ ঝরসঢ়ষব ঞধশব ঙভভ-খধহফরহম
ঘ ঝযড়ৎঃ ঞবষষবৎ ঙভভ-খধহফরহম
১৬৪. বিটিসিএল কোম্পানি লিমিটেড কোন ক্ষেত্রে কাজ করছে? (অনুধাবন)
যোগাযোগের মান উন্নয়নে
খ জনগণের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে
গ যাতায়াত ও পরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়নে
ঘ শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য
১৬৫. বিটিআরসি কত সালে প্রতিষ্ঠিত হয়? (জ্ঞান)
ক ২০০০ ২০০২ গ ২০০৩ ঘ ২০০৪
১৬৬. মার্চ ২০১১ পর্যন্ত বিটিআরসির গ্রাহক সংখ্যা কত কোটি অতিক্রম করেছে? (জ্ঞান)
৫.৪৭ খ ৫.৬০ গ ৬.৪৭ ঘ ৬.৮০
বোর্ড ও সেরা স্কুলের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন- ১ বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রধান খাতসমূহ
নিচের ছকটি লক্ষ কর :
[স. বো. ’১৬]
ক. অর্থনৈতিক খাত কী? ১
খ. সেবা খাত বলতে কী বোঝায়? ২
গ. ‘অ’ খাতের উপর বাংলাদেশের অর্থনীতি অনেকটাই নির্ভরশীল- ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. ‘অ’ ও ‘ই’ খাতে একে অপরের উপর নির্ভরশীল বিশ্লেষণ কর। ৪
ক যেকোনো দেশের অর্থনীতিতে বিদ্যমান শাখা বা বিভাগসমূহ যেগুলোর অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের সমষ্টিগত অবদানের দ্বারা দেশের অর্থনীতির ভিত্তি গড়ে ওঠে; অর্থনীতির অন্তর্ভুক্ত সেসব শাখা বা বিভাগকে অর্থনৈতিক খাত বলে।
খ অর্থনৈতিক যেসব কাজের মাধ্যমে অবস্তুগত দ্রব্য উৎপাদিত হয় অর্থাৎ দৃশ্যমান নয় যা মানুষের বিভিন্ন অভাব পূরণ করে এবং যার বিনিময় মূল্য রয়েছে তাকে সেবা বলে। আর এসব অর্থনৈতিক কাজ নিয়েই একটি দেশের সেবাখাত গঠিত। এসব সেবা অর্থের বিনিময়ে বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠান ও জনগণের নিকট সরবরাহ করা হয় এবং জনগণ এসব সেবা ক্রয় করে তাদের অভাব পূরণ করে।
গ ‘অ’ খাতটি হচ্ছে কৃষিখাত। বাংলাদেশের অর্থনীতি কৃষিখাতের উপর অনেকটাই নির্ভরশীল। মূলত আমাদের অর্থনীতির মূল বৈশিষ্ট্যই হচ্ছে কৃষিখাতের প্রাধান্য। কৃষি বাংলাদেশের অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ খাত। যদিও অনুন্নত চাষ পদ্ধতি, উন্নত বীজ, সার, সেচ এবং কৃষিঋণের অভাব, প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে উন্নত দেশের তুলনায় আমাদের কৃষি উৎপাদন অনেক কম। তথাপি কৃষিতে আমাদের নির্ভরতা অনেক বেশি। অনুন্নত কৃষিব্যবস্থা এ নির্ভরতাকে আরও প্রকট করে তোলে। তবে আশার কথা ক্রমান্বয়ে এই অবস্থার উন্নতি হচ্ছে। উন্নত বীজ, সার, কীটনাশক, সেচ সুবিধা বাড়ছে। সংগে সংগে উৎপাদনও বাড়ছে। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদনে সার্বিক কৃষিখাতের (ফসল, মৎস্য সম্পদ, পশুসম্পদ ও বনজ সম্পদ) অবদান ১৩ শতাংশ হয়েছে। দেশের শ্রমশক্তির মোট ৪৭.৫ শতাংশ কৃষিখাতে নিয়োজিত (এম ই এস, ২০১০, বিবিএস)। মূলত এই বিপুল কর্মসংস্থানের প্রেক্ষিতেও একথা বলা অত্যুক্তি নয় যে, বাংলাদেশের অর্থনীতি অনেকটাই কৃষিখাতের উপর নির্ভরশীল।
ঘ ‘অ’ খাত হচ্ছে কৃষিখাত এবং ‘ই’ খাত হচ্ছে শিল্পখাত।
এ খাত দুটি অর্থাৎ কৃষি ও শিল্প খাত পরস্পর নির্ভরশীল। আমাদের দেশের অধিকাংশ শিল্প কৃষিভিত্তিক। এ দেশের উল্লেখযোগ্য শিল্প যেমন : পাট, চা, চামড়া, চিনি ও কাগজ প্রভৃতি শিল্প, প্রধান কাঁচামালের জন্য কৃষির ওপর নির্ভরশীল। তাই আমাদের দেশে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে পাটশিল্প; চট্টগ্রাম ও সিলেট অঞ্চলে চাশিল্প; উত্তরবঙ্গে চিনিশিল্প গড়ে উঠেছে। এসব শিল্পের প্রসারের ফলে কাঁচামালের বর্ধিত চাহিদার কারণে কৃষি উৎপাদন বাড়বে, কৃষক উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য দাম পাবে। ফলে কৃষকদের আয় বাড়বে এবং জীবনযাত্রার মান উন্নত হবে। বিপরীতক্রমে জনগণের আয় বৃদ্ধির ফলে সঞ্চয় ও মূলধন গঠন বৃদ্ধ পাবে এবং শিল্পক্ষেত্রে বেশি করে বিনিয়োগ করা সম্ভব হবে। আমাদের ক্ষুদ্রশিল্পের ভিত্তি হলো কৃষি। কৃষিতে উৎপাদিত বাঁশ-বেত ক্ষুদ্রশিল্পের কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত হয়। অন্যদিকে শিল্পে উৎপাদিত চাষাবাদের যন্ত্রপাতি, সার, কীটনাশক, ওষুধ ইত্যাদি কৃষিকাজে ব্যবহার করা হয়। তাই শিল্পজাত দ্রব্যের বাজার সৃষ্টিতে কৃষি ভ‚মিকা পালন করে। আবার কৃষকদের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে শিল্পজাত অন্যান্য দ্রব্যের চাহিদাও বৃদ্ধি পায় যা শিল্পের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করে। উপরন্তু কৃষির আধুনিকায়নের মাধ্যমে খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করতে পারলে আমদানি ব্যয় বাঁচবে যা শিল্পোন্নয়নে ব্যয় করা যাবে। উপরিউক্ত আলোচনা থেকে বলা যায় যে, আমাদের কৃষি ও শিল্পের উন্নয়ন পরস্পর নির্ভরশীল এবং একে অপরের পরিপূরক।
প্রশ্ন- ২ কৃষি ও শিল্পখাতের আলোচনা
কৃষক রহিম পাট চাষাবাদের জন্য ট্রাক্টর, সার কীটনাশক ব্যবহার বৃদ্ধি করার কারণে পাটের উৎপাদন বহুগুণ বেড়েছে। অপরদিকে, করিম তার উৎপাদিত সার বাজারজাতকরণে প্লাস্টিক ব্যাগের পরিবর্তে পাটের ব্যাগ ব্যবহার করছে। [স. বো. ’১৫]
ক. শিল্প কাকে বলে? ১
খ. সেবাখাত বলতে কী বোঝায়? ব্যাখ্যা কর। ২
গ. রহিমের কাজের খাতটিকে অর্থনীতির ভাষায় কী বলা যায়? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. দৃশ্যকল্পে বর্ণিত রহিম ও করিমের খাত দুইটি পারস্পরিক নির্ভরশীলÑ উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দাও। ৪
ক প্রকৃতিপ্রদত্ত সম্পদ বা কাঁচামাল বা প্রাথমিক দ্রব্যকে কারখানাভিত্তিক প্রস্তুত প্রণালির মাধ্যমে মাধ্যমিক দ্রব্য বা চূড়ান্ত দ্রব্যে রূপান্তরিত করাই হলো শিল্প।
খ অর্থনৈতিক যেসব কাজের মাধ্যমে অবস্তুগত দ্রব্য উৎপাদিত হয় অর্থাৎ দৃশ্যমান নয় যা মানুষের বিভিন্ন অভাব পূরণ করে এবং যার বিনিময় মূল্য রয়েছে তাকে সেবা বলে। আর এসব অর্থনৈতিক কাজ নিয়েই একটি দেশের সেবাখাত গঠিত। যেমন : বাংলাদেশের পাইকারি ও খুচরা বিপণন, হোটেল ও রেস্তোরাঁ, পরিবহন, সংরক্ষণ ও যোগাযোগ, ব্যাংক, বিমা ও অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান, গৃহায়ণ, লোক প্রশাসন ও প্রতিরক্ষা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক সেবা, কমিউনিটি, সামাজিক ও ব্যক্তিগত সেবা প্রভৃতি ক্ষেত্রে সেবাকর্ম উৎপন্ন হয়।
গ রহিমের কাজের খাতটিকে অর্থনীতির ভাষায় কৃষিখাত বলা হয়।কৃষিখাত যেকোনো দেশের অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ খাত। অর্থনীতির ভাষায় কৃষি হচ্ছে এরূপ সৃষ্টি সম্বন্ধীয় কাজ যা ভ‚মিকর্ষণ, বীজ বপন, শস্য-উদ্ভিদ পরিচর্যা, ফসল কর্তন ইত্যাদি থেকে শুরু করে উৎপাদিত পণ্য গুদামজাতকরণ, সংরক্ষণ ও বাজারজাতকরণ পর্যন্ত বিস্তৃত। ফসল উৎপাদন ছাড়াও মাছ ও মৌমাছি, পশুপালন ও বনায়ন কৃষি খাতের অন্তর্ভুক্ত। উদ্দীপকে দেখা যায় কৃষক রহিম পাট চাষাবাদের জন্য ট্রাক্টর, সার কীটনাশক ব্যবহার বৃদ্ধি করার কারণে পাটের উৎপাদন বহুগুণ বেড়েছে। অর্থাৎ সে ভ‚মিকর্ষণ, বীজ বপণ, শস্য উৎপাদনের সাথে জড়িত। সুতরাং রহিমের কাজের খাতটি হচ্ছে কৃষিখাত।
ঘ দৃশ্যকল্পে বর্ণিত রহিমের খাত হচ্ছে কৃষিখাত। অন্যদিকে করিম সার উৎপাদন করে। সুতরাং করিমের খাতটি হচ্ছে শিল্পখাত। দৃশ্যকল্পে বর্ণিত এ খাত দুটি অর্থাৎ কৃষি ও শিল্প খাত পরস্পর নির্ভরশীল। আমাদের দেশের অধিকাংশ শিল্প কৃষিভিত্তিক। এ দেশের উল্লেখযোগ্য শিল্প যেমন : পাট, চা, চামড়া, চিনি ও কাগজ প্রভৃতি শিল্পের প্রধান কাঁচামালের জন্য কৃষির ওপর নির্ভরশীল। তাই আমাদের দেশে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে পাটশিল্প; চট্টগ্রাম ও সিলেট অঞ্চলে চাশিল্প; উত্তরবঙ্গে চিনিশিল্প গড়ে উঠেছে। উপরন্তু উদ্দীপকের করিমের মতো প্লাস্টিকের ব্যাগের পরিবর্তে পাটের ব্যাগের ব্যবহার কৃষির ওপর শিল্পের নির্ভরতা বাড়ায়। এসব শিল্পের প্রসারের ফলে কাঁচামালের বর্ধিত চাহিদার কারণে কৃষি উৎপাদন বাড়বে, কৃষক উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য দাম পাবে। ফলে কৃষকদের আয় বাড়বে এবং জীবনযাত্রার মান উন্নত হবে। জনগণের আয় বৃদ্ধির ফলে সঞ্চয় ও মূলধন গঠন বৃদ্ধি পাবে এবং শিল্পক্ষেত্রে বেশি করে বিনিয়োগ করা সম্ভব হবে। আমাদের ক্ষুদ্রশিল্পের ভিত্তি হলো কৃষি। কৃষিতে উৎপাদিত বাঁশ-বেত ক্ষুদ্রশিল্পের কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত হয়। অন্যদিকে শিল্পে উৎপাদিত চাষাবাদের যন্ত্রপাতি, সার, কীটনাশক, ওষুধ ইত্যাদি কৃষিকাজে ব্যবহার করা হয়। তাই শিল্পজাত দ্রব্যের বাজার সৃষ্টিতে কৃষি ভ‚মিকা পালন করে। কৃষকদের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে শিল্পজাত অন্যান্য দ্রব্যের চাহিদাও বৃদ্ধি পায় যা শিল্পের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করে। কৃষির আধুনিকায়নের মাধ্যমে খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করতে পারলে আমদানি ব্যয় বাঁচবে যা শিল্পোন্নয়নে ব্যয় করা যাবে। উপরিউক্ত আলোচনা থেকে বলা যায় যে, আমাদের কৃষি ও শিল্পের উন্নয়ন পরস্পর নির্ভরশীল এবং একে অপরের পরিপূরক।
প্রশ্ন- ৩ বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কুটির শিল্পের ভ‚মিকা
সিলেটের আনিস সাহেব বাঁশ ও বেত দিয়ে ঝুড়ি, মোড়া, মাদুরসহ হস্তশিল্পজাত দ্রব্য তৈরি করেন। এ কাজে তাকে তার দুই ভাই ও তিন বোন সহযোগিতা করে। তার তৈরি দ্রব্যের চাহিদা দেশে-বিদেশে দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। [যশোর জিলা স্কুল]
ক. এসপিএম কার্যক্রম কী? ১
খ. বাংলাদেশের বেশিরভাগ শিল্প কৃষির ওপর নির্ভরশীল কেন? ২
গ. উদ্দীপকের উল্লিখিত আনিসের কাজটি কোন ধরনের শিল্প? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. ‘আত্মকর্মসংস্থানের পাশাপাশি জাতীয় অর্থনীতিতে আনিস সাহেবেরা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন’- তোমার মতামতের পক্ষে যুক্তি দাও। ৪
ক গভীর সমুদ্রে শোধিত ও অপরিশোধিত জ্বালানি তেল খালাসের জন্য যে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়, তা-ই এসপিএম (ঝরহমষব চড়রহঃ গড়ড়ৎরহম)।
খ বাংলাদেশের বেশিরভাগ শিল্পের কাঁচামাল কৃষিখাত থেকে সংগৃহীত হয় বলে এদেশের শিল্প কৃষির ওপর নির্ভরশীল। বাংলাদেশের বেশিরভাগ শিল্প যেমন : পাট, চিনি, চা, কাগজ, হার্ডবোর্ড ইত্যাদি এসব শিল্প তাদের কাঁচামালের চাহিদার সিংহভাগ কৃষিখাতে উৎপাদিত পণ্য দ্বারা পূরণ করে। দেশের কৃষিখাতে এসব শিল্পের কাঁচামাল পাওয়া যায় বলে তা সহজে নিয়মিত ও কম দামে সংগ্রহ করা যায়। তাছাড়া দেশের বেশির ভাগ লোক কৃষিজীবী বলে এসব শিল্প তাদের উৎপাদিত দ্রব্য বিক্রয়ের জন্য কৃষিখাতের ওপর নির্ভর করে।
গ উদ্দীপকে উল্লিখিত আনিসের শিল্পটি হলো কুটিরশিল্প। কুটির বা গৃহে পারিবারিক ভিত্তিতে স্বল্পমূলধন এবং সহজলভ্য কাঁচামাল ও ছোটখাটো সাধারণ যন্ত্রপাতির সাহায্যে কুটিরশিল্প পরিচালিত হয়। সাধারণত এ শিল্পে পরিবারের লোকজনের পুঁজি ও শ্রম ব্যবহৃত হয়। এসব শিল্পে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বিদ্যুতের ব্যবহার হয় না এবং উৎপাদন কৌশল মান্ধাতার আমলের। বাংলাদেশের হস্তচালিত তাঁতশিল্প, মৃৎশিল্প, বাঁশ ও বেতশিল্প, বিড়িশিল্প, কাঁসা ও পিতলশিল্প, শঙ্খ ও ঝিনুকশিল্প প্রভৃতি হলো কুটিরশিল্প। উদ্দীপকে দেখা যায়, আনিস সাহেব বাঁশ ও বেত দিয়ে ঝুড়ি, মোড়া তৈরি করে বাজারে বিক্রি করেন। সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত উদ্যোগে পরিবারের সহযোগিতায় তিনি এ কাজটি করছেন। যা সম্পূর্ণভাবেই কুটিরশিল্পের বৈশিষ্ট্যকে ধারণ করে। বাংলাদেশের বেকার সমস্যা লাঘব, স্বকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা, মহিলাদের জন্য কর্মসংস্থানের দেশীয় কাঁচামালের ব্যবহার, কৃষিতে জনসংখ্যার চাপ হ্রাস ইত্যাদি ক্ষেত্রে কুটিরশিল্পের ভ‚মিকা গুরুত্বপূর্ণ। কুটিরশিল্পগুলো ব্যক্তিগত উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত বা ব্যক্তিগত ব্যবস্থায় পরিচালিত হয়। তাই বলা যায়, আনিস সাহেবের কাজটি সম্পূর্ণভাবেই কুটিরশিল্পের অন্তর্ভুক্ত।
ঘ ‘আত্মকর্মসংস্থানের পাশাপাশি জাতীয় অর্থনীতিতে আনিস সাহেবরা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন বলে আমি মনে করি। উদ্দীপকে বর্ণিত আনিস সাহেব একজন কুটিরশিল্পী। তার মতো কুটির বেকারত্ব দূরীকরণ এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করছেন। কারণ তারা তাদের শিল্পের মাধ্যমে নিজেদের এবং অন্যদের জন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করছেন। ফলে বেকার সমস্যার যেমন সমাধান হচ্ছে, তেমনি দেশেরও উন্নয়ন হচ্ছে। নিচে এ সম্পর্কে যুক্তি উপস্থাপন করা হলো :
প্রথমত : এদেশের কুটিরশিল্পীরা কুটিরশিল্প স্থাপনের মাধ্যমে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছেন। এর ফলে দেশের বেকার সমস্যার লাঘব হচ্ছে।
দ্বিতীয়ত : কুটিরশিল্পে এদেশের বেকার ও অবহেলিত মহিলাদের কর্মসংস্থান হচ্ছে।
তৃতীয়ত: কুটিরশিল্পীরা কৃষিখাতের লোকজনকে কাজ দিয়ে জমির ওপর জনসংখ্যার চাপ কমাতে সাহায্য করছেন। এর ফলে জমির বিভক্তি ও বিচ্ছিন্নতা সমস্যা কমে আসছে।
চতুর্থত : এদেশের কুটিরশিল্পে পাট, চামড়া, বাঁশ ও বেত কাট ও অনেক রকম কাঁচামাল ব্যবহার হচ্ছে। এর ফলে সম্পূরকের সদ্ব্যবহার সম্ভব হচ্ছে।
পঞ্চমত : সামান্য পুঁজি নিয়েই এ শিল্প স্থাপন করা যায় বলে খুব কম পুঁজির লোকদের পক্ষেও শিল্পস্থাপন সম্ভব হচ্ছে।
ষষ্ঠত : কুটিরশিল্পের প্রসারের সাথে সাথে দরিদ্রশ্রেণির লোকদের আয় বাড়ছে। এজন্য বলা চলে কুটিরশিল্পীরা সমাজে বিদ্যমান আয়বৈষম্য কমাতে সাহায্য করছেন।
পরিশেষে বলা যায়, স্বনির্ভরতা অর্জন এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে আনিস সাহেবরা জাতীয় অর্থনীতিতে গুরত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন।
মাস্টার ট্রেইনার প্রণীত সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন- ৪ বাংলাদেশের অর্থনৈতিক বৈশিষ্ট্য
নারায়ণপুর ইউনিয়নের তাজু মিয়া একজন ধনী কৃষক। গত কয়েক বছর ধরে তার জমিতে আধুনিক চাষাবাদ পদ্ধতি অনুসরণ করায় অধিক ফসল উৎপাদন হয়। এ ফসল বিক্রি করে তাজু একটি ছোট পোশাক কারখানা তৈরি করে, যা তার স্ত্রী পরিচালনা করছে। এ কারখানাটিতে তাজুর গ্রামের অধিকাংশ নারীর কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে। এসব পরিবারের আয় বৃদ্ধি পেয়ে জীবনযাত্রার মান বাড়ছে।
ক. ঊচত-এর পূর্ণরূপ কী? ১
খ. বাংলাদেশে খাদ্য ঘাটতি ও পুষ্টিহীনতার কারণ কী? লেখ। ২
গ. উদ্দীপকে বাংলাদেশের কোন চিত্রটি ফুটে উঠেছে? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. উদ্দীপকটি বাংলাদেশের উক্ত দিকের সার্বিক চিত্র উপস্থাপনে সক্ষম হয়েছে কি? মতামতের পক্ষে যুক্তি দাও। ৪
ক ঊচত-এর পূর্ণরূপ হলো ঊীঢ়ড়ৎঃ চৎড়পবংংরহম তড়হব.
খ বাংলাদেশে খাদ্য ঘাটতি ও পুষ্টিহীনতার প্রধান কারণ হলো অধিক জনসংখ্যা। বাংলাদেশে জনসংখ্যার তুলনায় খাদ্য উৎপাদন হয় অনেক কম। প্রতিবছর বাংলাদেশের জনগণের খাদ্য চাহিদা মেটানোর জন্য প্রচুর খাদ্যশস্য আমদানি করতে হয়। কিন্তু তারপরও এত অধিক লোকের খাবারের চাহিদা মেটানো সম্ভব হয় না। ফলে দেখা দেয় খাদ্য ঘাটতি এবং পুষ্টিহীনতা। অতিরিক্ত জনসংখ্যার কারণে মানুষের পক্ষে পুষ্টিকর খাবার খাওয়াও সম্ভব হয় না। এভাবে মানুষ পুষ্টিহীনতার শিকার হয়।
গ উদ্দীপকে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনের কিছু বৈশিষ্ট্য ফুটে উঠেছে। বাংলাদেশ তৃতীয় বিশ্বের একটি উন্নয়নশীল দেশ। ঔপনিবেশিক শাসন-শোষণের ফলে এদেশের অবকাঠামো ধ্বংসপ্রাপ্ত হলেও স্বাধীনতা-পরবর্তী চার দশক ধরে বাংলাদেশ কৃষি ও শিল্পের উন্নয়নের মাধ্যমে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনের চেষ্টা করছে, যার একটি আংশিক চিত্র আমরা উদ্দীপকে লক্ষ করি। উদ্দীপকে দেখা যায়, তাজু মিয়া কৃষিতে আধুনিক যন্ত্রপাতির ব্যবহারের মাধ্যমে অধিক উৎপাদনে সক্ষম হয়েছে। এটি বাংলাদেশের কৃষিক্ষেত্রের একটি বর্তমান চিত্র। বর্তমানে এ খাতের উন্নয়নের জন্য আধুনিক চাষ পদ্ধতিও উন্নত ধরনের সার, বীজ, কীটনাশক প্রভৃতি ব্যবহার করা হচ্ছে। কৃষি খাতের উন্নয়নের মাধ্যমে এদেশটি এগিয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। অন্যদিকে তাজুর পোশাক কারখানা নির্মাণের বিষয়টি শিল্পের অগ্রগতির ইঙ্গিত দেয়। সরকার এদেশের শিল্পখাতের উন্নয়নে ব্যাপক প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। শিল্পঋণ সরবরাহ, শিল্পনীতি ঘোষণার মাধ্যমে এ খাতে শিল্প উদ্যোক্তা সৃষ্টির চেষ্টা করা হচ্ছে। এ খাতের উন্নয়নের মাধ্যমে দারিদ্র্য দূরীকরণ ও নারীর কর্মসংস্থানের সম্ভাবনা সৃষ্টি করছে সরকার, যার ইঙ্গিত রয়েছে উদ্দীপকে। এছাড়া মানুষের জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধি, মাথাপিছু আয় বৃদ্ধিরও ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে উদ্দীপকে, যা এদেশের বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থাকেই তুলে ধরে। সুতরাং আমরা বলতে পাই, উদ্দীপকে এদেশের অর্থনীতির একটি আংশিক চিত্র উপস্থাপন করা হয়েছে।
ঘ বাংলাদেশের অর্থনীতির ইতিবাচক, নেতিবাচক নানা বৈশিষ্ট্যের মধ্যে উন্নয়নের ক্ষেত্রে সম্ভাবনাময় কিছু বৈশিষ্ট্য উদ্দীপকে তুলে ধরা হয়েছে, যা থেকে এদেশের অর্থনীতির সার্বিক বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া সম্ভব নয়। বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল দেশ। দারিদ্র্য, বেকারত্ব, অধিক জনসংখ্যা, নিরক্ষরতা এদেশের প্রধান সমস্যা। কৃষি ও শিল্পের উন্নয়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ এসব সমস্যা উত্তরণের প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। কৃষিপ্রধান এদেশটিতে শিল্পের বিকাশের মাধ্যমে উন্নয়নের প্রচেষ্টা চালানো হলেও এদেশের অর্থনীতিতে নানা ধরনের সমস্যা এখনও উন্নয়নের ধারাকে ব্যাহত করছে। উদ্দীপকে আমরা বাংলাদেশের অর্থনীতির অগ্রগতির একটি আংশিক চিত্র লক্ষ করি। এখানে কৃষি ও শিল্পের উন্নয়নের মাধ্যমে নারীর আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টি, মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি ও জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের একটি চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। তবে বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রধান ইতিবাচক দিকগুলো উদ্দীপকে উঠে এলেও উন্নয়নের পথে অন্তরায়গুলো একেবারেই অনুপস্থিত রয়েছে। যেমন : খাদ্যঘাটতি, পুষ্টিহীনতা, জনসংখ্যা বৃদ্ধির ঊর্ধ্বগতি, ব্যাপক বেকারত্ব, বৈদেশিক বাণিজ্যের ঘাটতি, বৈদেশিক সাহায্যের ওপর নির্ভরশীলতা প্রভৃতি। এসব কারণে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন চরমভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। আবার উন্নয়নের পথে এগিয়ে যেতে বাংলাদেশ যেসব পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে তার সব চিত্র উদ্দীপকে প্রকাশ পায়নি। উৎপাদন বৃদ্ধি, উৎপাদিত পণ্যের সুষ্ঠু বাজারজাতকরণ এবং দ্রব্যমূল্যের স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য অর্থনৈতিক অবকাঠামো তথা সড়ক, নৌ ও রেল, বিদ্যুৎ, টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নয়ন করছে। তাছাড়া রূপকল্প-২০২১ পরিকল্পনার মাধ্যমে সরকার বাংলাদেশকে একটি সমৃদ্ধ সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তোলার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। উদ্দীপকে বাংলাদেশের কৃষি ও শিল্প উন্নয়নের একটি চিত্র উপস্থাপিত হলেও অর্থনীতির উল্লিখিত বৈশিষ্ট্যগুলোর কোনো ইঙ্গিত দেওয়া হয়নি। তাই একথা নিঃসন্দেহে বলা যায় যে, উদ্দীপকটি বাংলাদেশের অর্থনীতির সার্বিক চিত্র উপস্থাপনে সক্ষম হয়নি।
প্রশ্ন- ৫ অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবকাঠামোগত ক্রমোন্নতি
ঢাকা মহাসড়কের ওপর দিয়ে যাওয়ার সময় খিলক্ষেত ফ্লাইওভারে উঠে সদ্য বিদেশ থেকে আগত নোমান চৌধুরী অবাক হন। দশ বছর আগের ঢাকা আর বর্তমান ঢাকার মধ্যে তিনি বিস্তর পার্থক্য অনুভব করেন। যোগাযোগ ব্যবস্থাকে উন্নত করতে সরকারের নানামুখী প্রচেষ্টাকে তিনি স্বাগত জানান। তিনি মনে করেন সরকারের এমন ইতিবাচক কর্মসূচিই বাংলাদেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করতে পারে।
ক. ‘রূপকল্প-২০২১’ কত থেকে কত সালের জন্য প্রণয়ন করা হয়েছে? ১
খ. ‘কৃষিই বাংলাদেশের অর্থনীতির মূলভিত্তি’ ব্যাখ্যা কর। ২
গ. উদ্দীপকটি বাংলাদেশের অর্থনীতির কোন বৈশিষ্ট্যটি তুলে ধরে? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. শুধু উদ্দীপকের কর্মসূচিই বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সরকারের গৃহীত একমাত্র কর্মসূচি নয় মন্তব্যটি বিশ্লেষণ কর। ৪
ক ‘রূপকল্প’-২০২১’ পরিকল্পনাটি ২০১০-২০২১ সালের জন্য প্রণয়ন করা হয়েছে।
খ বাংলাদেশের মানুষের জীবন-জীবিকা এবং অর্থনীতি কৃষির ওপর নির্ভরশীল। তাই এটি অর্থনীতির মূলভিত্তি হিসেবে পরিগণিত। বাংলাদেশের প্রায় ৭৫ ভাগ মানুষ কৃষির ওপর নির্ভরশীল। এদেশের প্রধান প্রধান শিল্পগুলোর কাঁচামালের যোগানদাতা হিসেবে কৃষির রয়েছে ব্যাপক অবদান। কৃষি ছাড়া এদেশের ৮৫ হাজার গ্রাম কল্পনা করা যায় না। আর গ্রামীণ অর্থনীতি হচ্ছে অর্থনীতির প্রধান চালিকাশক্তি। সুতরাং এদেশের অর্থনীতির ভিত্তি যে কৃষি, সে বিষয়ে আর কোনো সন্দেহের অবকাশ নেই।
গ উদ্দীপকটি বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম একটি বৈশিষ্ট্য অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবকাঠামোর ক্রমোন্নতিগত দিকটি তুলে ধরে। দেশের উৎপাদন বৃদ্ধি, উৎপাদনের উপকরণ ও উৎপাদিত পণ্যের সুষ্ঠু বাজারজাতকরণ এবং দ্রব্যমূল্যের স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য অর্থনৈতিক অবকাঠামো, যেমন : সড়ক, রেল ও নৌ-পথ, বিদ্যুৎ ও টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করে। সরকার এসব অবকাঠামো উন্নয়নে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে, যার একটি পদক্ষেপ আমরা উদ্দীপকের বর্ণনায় লক্ষ্য করি। উদ্দীপকে আমরা ঢাকা শহরের যানজট নিরসনে সরকারের এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়ে নির্মাণের একটি উদ্যোগ লক্ষ করি। ঢাকা সড়কের সরকারের নির্মিত খিলক্ষেত সংলগ্ন ফ্লাইওভারটি ঢাকার বিভিন্ন যানজটমুক্ত এলাকাকে সংযুক্ত করেছে। ফলে সহজেই যানজটমুক্ত চলাফেরা করা সম্ভব হচ্ছে। এ ধরনের উদ্যোগ ছাড়াও নিরাপদ নৌ-চলাচল নিশ্চিত, দ্বিতীয় সাবমেরিন কেবলের মাধ্যমে একটি আধুনিক টেলিকমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক তৈরির কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। দেশের মানবসম্পদ উন্নয়নে সামাজিক অবকাঠামো শিক্ষা, প্রশিক্ষণ, গবেষণা, জনস্বাস্থ্য প্রভৃতি উন্নয়নে সরকার আন্তরিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সুতরাং আমরা বলতে পারি, উদ্দীপকটি আমাদের অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবকাঠামোগত অর্থনৈতিক বৈশিষ্ট্য সম্পর্কেই ধারণা দেয়।
ঘ বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সরকার কৃষি ও শিল্পের উন্নয়নসহ প্রাকৃতিক ও মানবসম্পদের ব্যবহার বৃদ্ধি, বেসরকারিকরণ কর্মসূচি গ্রহণ, নানামুখী পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছে। এ প্রেক্ষিতে প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি সঠিক। বাংলাদেশকে একটি উন্নত ও শিল্পসমৃদ্ধ দেশে পরিণত করার জন্য সরকার নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। কৃষি শিল্প উন্নয়ন ছাড়াও অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য সরকার আন্তরিক প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। প্রাকৃতিক সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিতকরণ, রূপকল্প পরিকল্পনা গ্রহণ সরকারি উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের অন্যতম দিক। উদ্দীপকে আমরা অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবকাঠামো উন্নয়নের একটি চিত্র লক্ষ করি। এছাড়াও কৃষি উন্নয়নে উন্নত সার, বীজ, কীটনাশক সরবরাহ, উন্নত চাষ পদ্ধতির ব্যবহার নিশ্চিতকরণ প্রভৃতি কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। শিল্পক্ষেত্রে কর্মসংস্থান বৃদ্ধি, নারীর শিল্পায়ন প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ বৃদ্ধি, দারিদ্র্য কমানোর লক্ষ্যে শিল্পনীতি-২০১০ ঘোষণা করা হয়েছে। বিনিয়োগ বাধা কমানো, করমুক্ত করা, বেসরকারি উৎসাহিত করা, মূলধনের অবাধ প্রবাহ নিশ্চিত করা, বৈদেশিক বাণিজ্য বৃদ্ধি, বিদেশে বাজার সৃষ্টি এবং স্বমনির্ভর শিল্প স্থাপনে সরকারি প্রচেষ্টা লক্ষ করা যাচ্ছে। দেশে বিনিয়োগ বৃদ্ধির জন্য সরকার অনেক উদ্দীপনা ও সহযোগিতামূলক নীতি ঘোষণা করেছে। ফলে দেশি ও বিদেশি বিনিয়োগ অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রাকৃতিক ও মানবসম্পদ উন্নয়নে সরকারি প্রচেষ্টা অনেকটাই প্রশংসনীয়। মানবসম্পদের সঠিক ব্যবহারে গড়ে তোলা হয়েছে নানা প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। সরকারি ও বেসরকারি কর্মসূচির সমন্বয় সাধন, সম্পদের সুষম ব্যবহার ও বণ্টনের জন্য উন্নয়ন পরিকল্পনা ‘রূপকল্প-২০২১’ প্রণয়ন করা হয়েছে। আলোচনায় দেখা যাচ্ছে, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য বাংলাদেশ সরকার নানামুখী প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সরকারি এ প্রচেষ্টার একটি দিক উদ্দীপকে উপস্থাপিত হয়েছে। তাই প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি সঠিক।
প্রশ্ন- ৬ শিল্পখাত ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন
গাজীপুর জেলার ভবানীপুরে জনাব খালেদ মোশাররফ বেশ কিছু গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি গড়ে তুলেছেন। তার এসব ফ্যাক্টরিতে হাজারও মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্যই তিনি এখাতে আরও বিনিয়োগের সম্ভাবনা খুঁজে পেয়েছেন।
ক. সেবা কী? ১
খ. ঊচত প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে কেন? ২
গ. উদ্দীপকে বাংলাদেশের অর্থনীতির কোন খাতের ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. উদ্দীপকে খালেদ মোশাররফের এ খাতে অর্থ বিনিয়োগের কারণটির যৌক্তিকতা তুলে ধর। ৪
ক অর্থনৈতিক যেসব কাজের মাধ্যমে অবস্তুগত দ্রব্য উৎপাদিত হয় অর্থাৎ দৃশ্যমান নয় যা মানুষের বিভিন্ন অভাব পূরণ করে এবং যার বিনিময় মূল্য রয়েছে, তাই সেবা।
খ দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়ন, দারিদ্র্য বিমোচন, শিল্পখাতের দ্রæত বিকাশের জন্য বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ কর্তৃপক্ষ ঊচত স্থাপন করেছে। ঊচত এর পূর্ণরূপ হলো ঊীঢ়ড়ৎঃ চৎড়পবংংরহম তড়হব. অর্থাৎ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল। দেশের শিল্পসমৃদ্ধ অঞ্চলগুলো চিিহ্নত করে ঊচত প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে, যাতে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীরা আকৃষ্ট হয় এবং শিল্পখাতের বিকাশে এগিয়ে আসে। অর্থাৎ শিল্পখাত বিকাশে সার্বিক সহযোগিতা করার জন্যই ঊচত প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।
গ উদ্দীপকে বাংলাদেশের অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ খাত শিল্পখাতের ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে। প্রকৃতি প্রদত্ত সম্পদ বা কাঁচামালের বা প্রাথমিক দ্রব্যকে কারখানাভিত্তিক প্রস্তুত প্রণালির মাধ্যমে মাধ্যমিক দ্রব্য বা চ‚ড়ান্ত দ্রব্যে রূপান্তরিত করাকে শিল্প বলে। উদ্দীপকে গার্মেন্টস কারখানা স্থাপনটি এ শিল্পেরই ইঙ্গিত দেয়। উদ্দীপকে দেখা যায়, খালেদ মোশাররফ গাজীপুরে বেশ কয়েকটি পোশাক কারখানা স্থাপন করেছেন। তার এ পোশাক কারখানায় সাধারণত প্রকৃতি প্রদত্ত সম্পদ যথা : সুতা ও তুলার সর্বোচ্চ ব্যবহার করে কাপড় উৎপাদন করা হয়। এ উৎপাদন কাজটি যন্ত্রের মাধ্যমে সম্পন্ন করা হয়। আবার শিল্পকারখানায় হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়। যেমনটি খালেদ মোশাররফের গার্মেন্টস কারখানায়ও হয়েছে। সুতরাং আমরা বলতে পারি যে, উদ্দীপকে বর্ণিত গাজীপুরে স্থাপিত গার্মেন্টস কারখানাগুলো বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্তর্ভুক্ত শিল্পখাতেরই ইঙ্গিত দেয়।
ঘ উদ্দীপকের খালেদ মোশাররফ দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য গার্মেন্টস খাতে অর্থ বিনিয়োগের সম্ভাবনা দেখতে পেয়েছেন। তার এ উদ্যোগটি দেশের সার্বিক পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে অত্যন্ত যৌক্তিক। বাংলাদেশ তৃতীয় বিশ্বের একটি উন্নয়নশীল দেশ। কৃষি ও শিল্পের উন্নয়নের মাধ্যমে এদেশটি দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সরকার শিল্পখাতে বিনিয়োগে উৎসাহিত করার জন্য দেশের অর্থনৈতিক অবকাঠামো সমৃদ্ধি করার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। উদ্দীপকে খালেদ মোশাররফ গাজীপুরে আরও নতুন গার্মেন্টস করার ইচ্ছা পোষণ করেছেন। তার এ ধরনের ইচ্ছার পেছনে দেশের অর্থনৈতিক অবকাঠামোর উন্নয়ন কাজ করেছে। সরকার দেশের উৎপাদন বৃদ্ধি, পণ্যের উপকরণ ও উৎপাদিত পণ্যের সুষ্ঠুবাজারজাতকরণের লক্ষ্যে সড়ক, রেল নৌপথ, বিদ্যুৎ ও টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা আধুনিক করার উদ্যোগ নিয়েছে। পদ্মা সেতু নির্মাণ প্রকল্প, ঢাকা শহরের যানজট নিরসনে ২৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এলিভেটেড নির্মাণ, নিরাপদ নৌচলাচল নিশ্চিতকরণ, সাবমেরিন কেবলের মাধ্যমে টেলি কমিনিকেশন নেটওয়ার্ক তৈরির কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। এসব কার্যক্রম দেশের বিনিয়োগকারীদের শিল্পবিনিয়োগে আকৃষ্ট করছে। কারণ যোগাযোগ ও যাতায়াত ব্যবস্থা উন্নত শিল্পে সাফল্য অর্জনের অন্যতম শর্ত। এ ব্যাপারে কেউ নিশ্চয়তা পেলে তারা বিনিয়োগে আর কোনো শঙ্কা প্রকাশ করে না। পরিশেষে বলা যায়, উদ্দীপকের শিল্প উদ্যোক্তা খালেদ মোশাররফ বাংলাদেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নের প্রেক্ষিতে শিল্পে বিনিয়োগের যে চিন্তা করেছেন তা অত্যন্ত যৌক্তিক ও যথার্থ।
প্রশ্ন- ৭ কুটির শিল্প
বড়াইগ্রামের কৃষক আনিস মিয়া কৃষি উৎপাদনের মাধ্যমে পরিবারের দৈনন্দিন চাহিদা মেটাতে সক্ষম না হওয়ায় স্থানীয় একটি ঘএঙ থেকে কিছু টাকা ঋণ নিয়ে শাড়ি, লুঙ্গি তৈরির ব্যবসা শুরু করেন। তিনি ও তার স্ত্রী মিলে এ কাজ শুরু করলেও বর্তমানে গ্রামে আরও আটদশ জন তাদের কাজে সহযোগিতা করছে। তাদের কাজের পরিধিও বৃদ্ধি পেয়েছে। তাদের তৈরি জিনিসপত্র বাজারে ব্যাপক প্রশংসা পেয়েছে।
ক. বৃহদায়তন শিল্প কী? ১
খ. বাংলাদেশে বেকারত্বের হার এত বেশি কেন? ২
গ. উদ্দীপকের আনিস মিয়ার দ্বিতীয় কাজটি বাংলাদেশের শিল্পের কোন দিকটি উপস্থাপন করে? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশের অগ্রগতিতে আনিসের গড়ে তোলা শিল্পের গুরুত্ব কতটুকু বলে তুমি মনে কর? মতামত দাও। ৪
ক যেসব শিল্প-কারখানায় বেশি মূলধন ও কাঁচামাল এবং বেশি সংখ্যক শ্রমিক নিয়োগ করে বিপুল পরিমাণ দ্রব্য উৎপাদন করা হয়, তাই বৃহদায়তন শিল্প।
খ প্রয়োজনীয় মূলধনের অভাবে কৃষি ও শিল্পে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে না পারায় বাংলাদেশে বেকারত্বের হার অত্যধিক। বাংলাদেশ একটি জনবহুল দেশ। এদেশে জনসংখ্যা বৃদ্ধির তুলনায় সঞ্চয় কম। এতে বিনিয়োগ কম হয়। ফলে মূলধন গঠনের হার কম। মূলধনের অভাবে দেশে পর্যাপ্ত সংখ্যক শিল্প-কারখানা গড়ে উঠছে না এবং কৃষিখাতের উন্নয়নও ব্যাহত হচ্ছে। ফলে প্রয়োজনীয় কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে না। এ কারণে এদেশের বেকারত্বের হার বেড়ে যাচ্ছে।
গ উদ্দীপকে আনিস মিয়ার দ্বিতীয় কাজ বাংলাদেশের শিল্পের অন্তর্ভুক্ত কুটিরশিল্পের ইঙ্গিত দেয়। সাধারণত অল্প মূলধন নিয়ে পারিবারিক ব্যয়ভার মেটাতে ব্যক্তিগত উদ্যোগে এবং পরিবারের সহযোগিতায় যে শিল্প গড়ে তোলা হয়, তাই কুটিরশিল্প। দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য রক্ষা ও সংরক্ষণে এ শিল্পের গুরুত্ব অপরিসীম। উদ্দীপকের বর্ণনায় আমরা এ ধরনের বেশিক্ষেত্রেরই ইঙ্গিত পাচ্ছি। উদ্দীপকে দেখা যায়, আনিস মিয়া সংসারের ব্যয়ের জন্য আয় বাড়াতে কৃষির পাশাপাশি শাড়ি, লুঙ্গি, মোরা, ঝুড়ি প্রভৃতি তৈরির কাজ শুরু করেন। তিনি তার স্ত্রী ও সন্তানদের সহযোগিতায় এ কাজটি করছেন। তা কাজের পরিধি বৃদ্ধির ফলে এখানে আরও কিছু লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে। তাছাড়া তিনি যেসব সামগ্রী তৈরি করছেন, তা দেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্য সংরক্ষণেও অবদান রাখছে। অর্থাৎ আনিস মিয়ার কাজের ধরন এবং বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ করে বলা যায়, তার কাজটি কুটিরশিল্পের অন্তর্ভুক্ত।
ঘ বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির ক্ষেত্রে আনিস মিয়ার কুটিরশিল্প অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করে বলে আমি মনে করি। বাংলাদেশের বর্তমান আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটে কুটিরশিল্প স্থাপন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ। এ কাজের মাধ্যমে নিজেদের পারিবারিক অভাব পূরণের পাশাপাশি অন্যদের কর্মসংস্থাপনের ব্যবস্থা করা সম্ভব। যা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করে। কুটিরশিল্পে স্বল্প পুঁজির প্রয়োজন হয় এবং অধিক কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা সম্ভব হয়। এটি সম্পূর্ণ শ্রমনির্ভর শিল্প। বাংলাদেশের অধিকাংশ কৃষক একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত বেকার থাকে। কুটিরশিল্প তাদের সহায়ক পেশা হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা রাখে। উদ্দীপকের আনিস মিয়া তার পারিবারিক চাহিদা মেটাতে কৃষির পাশাপাশি কুটিরশিল্প গড়ে তুলেছেন, যা তাকে স্বাবলম্বী করেছে এবং গ্রামের অন্যদেরও স্বাবলম্বী করতে ভ‚মিকা রেখেছে। কুটিরশিল্প সাধারণত স্থানীয় কাঁচামাল ও উপকরণ দ্বারা পরিচালিত হয়। ফলে দেশের মধ্যে প্রাপ্ত কাঁচামাল ও অন্যান্য প্রাকৃতিক সম্পদের সদ্বব্যহার সম্ভব হয়। এটি একটি স্বল্প পুঁজিনির্ভর বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ। এ ধরনের কাজের মাধ্যমে আমাদের বিপুল সংখ্যক বেকার ও অর্ধ-বেকারদের আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টি করা সম্ভব। এ কাজে সফলতা পেলে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাগণ বৃহৎশিল্প স্থাপনে অনুপ্রাণিত হবেন। ফলে দেশের অর্থনীতি ত্বরান্বিত হবে। পরিশেষে বলা যায়, কুটিরশিল্প এদেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য সংরক্ষণের জন্য যেমন জরুরি, তেমনি দেশের অগ্রগতিকে এগিয়ে নিতে এ ধরনের শিল্প স্থাপনে উদ্যোগ নেওয়াও জরুরি।
প্রশ্ন- ৮ কৃষির আধুনিকায়ন
চরমণি এলাকার অধিকাংশ লোক কৃষক। কৃষিকাজই তাদের জীবিকা অর্জনের প্রধান উপায়। কিন্তু এখানকার বেশিরভাগ পরিবার দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করছে। কারণ জানতে চাইলে তারা বলেন, সারাবছর কঠোর পরিশ্রম করে চাষাবাদ করলেও বছর শেষে তারা আশানুরূপ ফসল উৎপাদনে ব্যর্থ হচ্ছেন। হালের বলদ, মই; তাদের চাষের উপকরণ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। তাছাড়া ফসলি জমিতে কীটনাশক ব্যবহারের কোনো সুযোগ না থাকায় তারা পর্যাপ্ত ফসল উৎপাদনে ব্যর্থ হচ্ছেন।
ক. কৃষি কী? ১
খ. সনাতন পদ্ধতিতে চাষাবাদ বলতে কী বোঝায়? ২
গ. চরমণি এলাকার কৃষকেরা কোন পদ্ধতিতে চাষাবাদ করলে পর্যাপ্ত ফসল উৎপাদন করতে সক্ষম হবে? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. বাংলাদেশের অর্থনীতির চাকা সচল করতে সকল কৃষকের এই পদ্ধতিতে চাষাবাদ করা আবশ্যক-তুমি কি বক্তব্যটি সমর্থন কর? যুক্তি দাও। ৪
ক কৃষি হচ্ছে এরূপ সৃষ্টি সম্বন্ধীয় একটি কাজ, যা ভ‚মিকর্ষণ, বীজ বপন, শস্য-উদ্ভিদ পরিচর্যা, ফসল কর্তন ইত্যাদি থেকে শুরু করে উৎপাদিত পণ্য গুদামজাতকরণ, সংরক্ষণ ও বাজারজাতকরণ পর্যন্ত বিস্তৃত।
খ সনাতন পদ্ধতিতে চাষাবাদ বলতে কৃষিকাজে আধুনিক প্রযুক্তির পরিবর্তে মান্ধাতার আমলের হালের বলদ দিয়ে আর প্রকৃতিনির্ভর হয়ে চাষাবাদ করা বোঝায়। হালের বলদ এদেশের সনাতন চাষ পদ্ধতির প্রধান উপকরণ। প্রকৃতির ওপর নির্ভর করেই এদেশের চাষ ব্যবস্থা পরিচালিত হতো। কৃষিক্ষেত্রে আধুনিক যন্ত্রপাতি, সার, কীটনাশক ব্যবহার না করে প্রকৃতিনির্ভর চাষাবাদ পদ্ধতিকে সনাতন চাষাবাদ পদ্ধতি বলে।
গ চরমণি এলাকার কৃষকেরা আধুনিক বা প্রযুক্তিগত পদ্ধতিতে চাষাবাদ করলে পর্যাপ্ত ফসল উৎপাদন করতে সক্ষম হবে। উদ্দীপকে কৃষি বাংলাদেশের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি। তাই দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য কৃষির আধুনিকীকরণ অত্যন্ত জরুরি। কৃষি আধুনিকীকরণ ছাড়া উৎপাদন ক্ষেত্রে প্রত্যাশা পূরণ করা সম্ভব নয়। আর এটি চরমণি এলাকার কৃষকদের জন্যও সমভাবে প্রযোজ্য। উদ্দীপকে চরমণি এলাকার কৃষকেরা হাড়ভাঙা পরিশ্রম করেও প্রত্যাশা অনুযায়ী ফসল পাচ্ছেন না। কারণ তারা সনাতন পদ্ধতিতে চাষাবাদ করছেন। কৃষিক্ষেত্রে উন্নত বীজ, সার, কীটনাশক, বা কৃত্রিম সেচ পদ্ধতির ব্যবহার করা তাদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। তারা যদি আধুনিক পদ্ধতিতে কলের লাঙল দিয়ে চাষাবাদ করে তাহলে এদিকটিতে উৎপাদন খরচ কম হবে। অন্যদিকে কৃষিতে উন্নত বীজ, সার, কীটনাশক বা কৃত্রিম সেচ পদ্ধতির ব্যবহার করলে উৎপাদন বহুগুণে বেড়ে যাবে। কেননা কৃষির আধুনিক এসব উপকরণ কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। সুতরাং বলা যায় যে, চরমণি এলাকার কৃষকেরা যদি আধুনিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ করে তাহলে তারা পর্যাপ্ত ফসল উৎপাদনে সক্ষম হবে।
ঘ বাংলাদেশের অর্থনীতি কৃষিনির্ভর হওয়ায় কৃষির আধুনিকীকরণ অত্যন্ত জরুরি। এ প্রেক্ষিতে প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি আমি সমর্থন করি। বাংলাদেশের প্রায় ৭৫ ভাগ মানুষের জীবন-জীবিকার প্রধান মাধ্যম হলো কৃষি, যা অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি হিসেবে বিবেচিত। তাই কৃষি উন্নয়ন ব্যতীত দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন প্রত্যাশা করা যায় না। কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধিতে বাংলাদেশের সকল কৃষকের আধুনিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ করা অত্যন্ত জরুরি। উদ্দীপকের কৃষকেরা সনাতন পদ্ধতিতে চাষাবাদ করে বলে তারা প্রত্যাশা অনুযায়ী ফসল উৎপাদন করতে ব্যর্থ হচ্ছে। ফলে জাতীয় আয়ে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। তাই দেশের উন্নয়নের স্বার্থে কৃষিতে আধুনিক পদ্ধতির ব্যবহার অত্যাবশ্যক। কৃষিতে উন্নত সার, বীজ, কীটনাশক ব্যবহৃত হলে তা উৎপাদন বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে, যা জাতীয় বৃদ্ধিতে ভ‚মিকা রাখবে। দেশের জাতীয় আয়ে কৃষিখাতের অবদান সর্বাধিক। তাই এ খাতের উন্নয়ন ব্যতীত উন্নয়ন প্রত্যাশা করা অযৌক্তিক। কৃষি এদেশের অধিকাংশ শিল্পের কাঁচামাল যোগান দেয়। তাই কৃষির অগ্রগতির সাথে শিল্পের উন্নয়ন জড়িয়ে রয়েছে। তাছাড়া কৃষির উন্নয়ন ঘটলে বেকার সমস্যার যেমন সমাধান হবে, তেমনি পরিবারের আয়-উপার্জন বৃদ্ধি পেয়ে মানুষের জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধি পাবে। তখন দেশের উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে। কারণ দেশে অর্থনৈতিক সমস্যাগুলোর সমাধান হলে দেশ ক্রমান্বয়ে উন্নতির দিকে এগিয়ে যাবে। পরিশেষে বলা যায়, কৃষি যেহেতু দেশের অর্থনীতির মেরুদণ্ড। তাই কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধিতে কৃষকদের আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহার অত্যন্ত জরুরি বলে আমি মনে করি।
প্রশ্ন- ৯ কৃষিখাতের উপখাত
বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত সুন্দরবনের পাশ ঘেঁষে বয়ে যাওয়া পশুর নদীর তীরে বসবাস করছে বেশ-কয়েকটি পরিবার। এসব পরিবারের জীবিকার মাধ্যম হচ্ছে বন থেকে কাঠ কেটে বাজারে বিক্রি করা এবং বনের নানা উপকরণ ব্যবহার করে রাবার, গাম-মোম-মধু-তৈরি করা। এসব কাজ করে তারা যেমন নিজেদের জীবিকার সংস্থান করছে, তেমনি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নেও ভ‚মিকা রাখছে।
ক. বাংলাদেশে আধুনিক শিল্পনীতি ঘোষণা করা হয় কত সালে? ১
খ. বাংলাদেশের অর্থনীতি কীভাবে গড়ে উঠেছে? ২
গ. উদ্দীপকে ইঙ্গিতকৃত উপখাতটি দেশের অর্থনীতিতে কী ধরনের ভ‚মিকা রাখছে? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. উদ্দীপকটি বাংলাদেশের অর্থনীতির কৃষিখাতকে পরিপূর্ণভাবে উপস্থাপন করে না মন্তব্যটি বিশ্লেষণ কর। ৪
ক বাংলাদেশের আধুনিক শিল্পনীতি ঘোষণা করা হয় ২০১০ সালে।
খ বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বিরাজমান শাখা বা বিভাগসমূহ নিজ নিজ পরিমণ্ডলে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সম্পাদন করে থাকে এবং এদের সমষ্টিগত অবদানের দ্বারা দেশের অর্থনীতির ভিত্তি গড়ে উঠেছে। বাংলাদেশের অর্থনীতির বিভাগ শাখাসমূহকে তিনটি খাতে বিভক্ত করা হয়েছে, যাদের রয়েছে বিভিন্ন ধরনের উপখাত। এ খাতগুলো হচ্ছে- কৃষি, শিল্প ও সেবাখাত এদের সমষ্টিগত অবদানের দ্বারা দেশের অর্থনীতি গড়ে উঠেছে।
গ উদ্দীপকে বাংলাদেশের অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ খাত কৃষির অন্তর্ভুক্ত উপখাত বনজ সম্পদের ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে যার অবদান অপরিসীম। একটি দেশের প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষার্থে বনজসম্পদের গুরুত্ব যেমন অপরিসীম, তেমনি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে রয়েছে এর ব্যাপক অবদান। আমাদের দেশের মোট ভ‚খণ্ডের প্রায় ১৭ ভাগ জুড়ে রয়েছে বনাঞ্চল। প্রয়োজনের তুলনায় এর পরিমাণ কম হলেও এর অবদান কম নয়। বাংলাদেশের বনাঞ্চলের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলোÑ সুন্দরবন, মধুপুর ও ভাওয়ালগড়ের বনাঞ্চল, গাজীপুরের গজারি ও শালবন প্রভৃতি। এসব বনাঞ্চলে রয়েছে বাঁশ, বেত, শাল, সেগুন, গর্জন, সুন্দরি, গরান, গেওয়া, গামারি, কড়াই উল্লেখযোগ্য। এসব গাছ থেকে কাঠ, মধু, রাবার, গাম, তৈল, শণ, মোম প্রভৃতি সংগ্রহ করে আমরা যেমন : আমাদের প্রয়োজন মেটাই, তেমনি এগুলো থেকে আয়কৃত অর্থ দেশের জাতীয় আয় বৃদ্ধিতেও ভ‚মিকা রাখছে। এসব কাজে সম্পৃক্ত মানুষ নিজেদেরকে বেকারত্বের অভিশাপ থেকে মুক্ত করতে সক্ষম হয়েছে। উদ্দীপকে আমরা এ বনজ সম্পদের এরকমই ভ‚মিকা লক্ষ করি। তাছাড়া ২০১২-১৩ এবং ২০১৩-১৪ অর্থবছরে জাতীয় আয়ে কৃষিখাতের অন্তর্ভুক্ত বনজসম্পদের অবদান ছিল যথাক্রমে ১.৭৬ এবং ১.৭৪। অর্থাৎ বনজসম্পদ মানুষের জ্বালানি ও আসবাবপত্রের প্রয়োজন মিটিয়ে, কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করে এবং জাতীয় আয় বৃদ্ধিতে ভ‚মিকা রেখে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করছে।
ঘ বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রধান ও গুরুত্বপূর্ণ একটি খাত হিসেবে এটি বিভিন্ন উপখাত নিয়ে গঠিত, যার একটি উপখাতের বর্ণনা আমরা উদ্দীপকে লক্ষ করি। তাই প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি সঠিক। কৃষি বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রাণ। কৃষিখাতই এদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধিতে ভ‚মিকা রাখছে। এ খাতটি নানা উপখাতের সমন্বয়ে গঠিত। যেমন : শস্য ও শাকসবজি প্রাণিসম্পদ, মৎস্যসম্পদ এবং বনজসম্পদের একটি আংশিক ধারণা লাভ করি। কৃষি বলতে সাধারণত ফসল উৎপাদনকে বোঝালেও মাছ ও মৌমাছি চাষ, পশুপালন ও বনায়ন কৃষি খাতের অন্তর্ভুক্ত। আমাদের দেশের কৃষকেরা শস্যের মধ্যে ধান, গম, পাট, ডাল, আখ, তামাক, চা, তৈলবীজ আর শাকসবজির মধ্যে আলু, শিম, লাউ, মটরশুঁটি, পটোল, করলা, বেগুন ইত্যাদি উৎপাদন করে। ২০১২-১৩ অর্থবছরে কৃষিখাতের এসব উপাদান জাতীয় আয়ে ৯.৪৯ শতাংশ ভ‚মিকা রাখে। প্রাণিসম্পদও কৃষির একটি উল্লেখযোগ্য উপখাত। আমাদের দেশে পারিবারিক ও বাণিজ্যিকভাবে হাঁস-মুরগি, গরু, ছাগল, ভেড়া, মহিষ, ঘোড়া, কবুতর, পাখি পালন করা হয়। এদের মাংস, ডিম, দুধ, পালক, চামড়া দেশের জাতীয় আয়ে অবদান রাখছে। মৎস্যসম্পদ দেশের গুরুত্বপূর্ণ একটি কৃষি উপখাত। এদেশের অভ্যন্তরীণ ও সামুদ্রিক উৎস থেকে প্রজাতির মাছ পাওয়া যায়। উদ্দীপকে আমরা কৃষিখাতের উল্লেখকৃত উপখাতগুলোর কোনো বর্ণনা পাই না। এখানে শুধু বনজসম্পদের একটি সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দেওয়া হয়েছে। আলোচনার প্রেক্ষিতে এটি স্পষ্ট যে, উদ্দীপকটি বাংলাদেশের কৃষিখাতকে পরিপূর্ণভাবে উপস্থাপনের জন্য যথেষ্ট নয়।
প্রশ্ন- ১০ সেবাখাত ও শিল্পখাত
এলাকার উচ্চ শিক্ষিত মানুষ হিসেবে জনাব সামছুল হুদা বরাবরই ছিলেন সবার কাছে সম্মান ও শ্রদ্ধার পাত্র। তিনি সারাজীবন মানুষের মধ্যে জ্ঞান বিলিয়েছেন। শিক্ষিত হিসেবে তার কর্তব্য পালনে তিনি কখনো পিছপা হননি। নিজের ছেলেকে তিনি বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠে ভর্তি করিয়েছেন। সবার ধারণা ছিল শিক্ষক বাবার সন্তান হিসেবে রহিমও একজন শিক্ষক হবে। কিন্তু পড়াশোনা শেষ করে রহিম নিজ এলাকায় ক্ষুদ্র শিল্প গড়ে তুলে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
ক. কোন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে একটি সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে? ১
খ. কৃষি উন্নয়নের জন্য শিল্পায়ন জরুরি কেন? ২
গ. জনাব সামছুল হুদার পেশাটি অর্থনীতির কোন খাতের অন্তর্ভুক্ত? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. উদ্দীপকের রহিম বাংলাদেশের বেকারত্ব দূরীকরণে ও জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে ভ‚মিকা রাখবে- তুমি কি বক্তব্যটি সমর্থন কর? যুক্তিসহ উপস্থাপন কর। ৪
ক ‘রূপকল্প ২০২১’-বাস্তবায়নের মাধ্যমে একটি সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
খ শিল্পায়নের মাধ্যমে কৃষির আধুনিকীকরণ সম্ভব। তাই কৃষি উন্নয়নে শিল্পায়নের ওপর জোর দেওয়া উচিত। বাংলাদেশ কৃষিপ্রধান দেশ। এদেশের ৭৫ ভাগ মানুষ সরাসরি কৃষির ওপর নির্ভরশীল। তাছাড়া খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, দারিদ্র্য বিমোচন, কর্মসংস্থান বৃদ্ধি প্রভৃতি কৃষির অগ্রগতির সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত। তাই কৃষিতে উন্নত সার, বীজ, কীটনাশক ব্যবহার এবং কৃত্রিম সেচের ব্যবস্থা করে উৎপাদন বাড়ানো জরুরি। কিন্তু এগুলো সবই শিল্পের মাধ্যমে উৎপাদিত হয়। তাই কৃষি উন্নয়নের জন্য এদেশে শিল্পায়ন জরুরি।
গ জনাব সামছুল হুদার পেশাটি অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ একটি খাত সেবা খাতের অন্তর্ভুক্ত। অর্থনৈতিক যেসব কাজের মাধ্যমে অবস্তুগত দ্রব্য উৎপাদিত হয়, অর্থাৎ দৃশ্যমান নয়, যা মানুষের বিভিন্ন অভাব পূরণ করে এবং যার বিনিময় মূল্য রয়েছে তাকে সেবা বলে। জনাব সামছুল হুদার শিক্ষকতার কাজটি সামাজিক সেবা প্রদান করেছে। উদ্দীপকের জনাব সামছুল হুদা একজন শিক্ষক। তিনি জনগণকে শিক্ষার আলোয় আলোকিত করার মহান দায়িত্বটি পালন করেছেন। তার এ কাজের বিনিময়ে সরকার তাকে নির্দিষ্ট পারিশ্রমিক দিচ্ছেন। অর্থাৎ সরকার শিক্ষা সেবার ন্যায় অন্যান্য সেবা অর্থের বিনিময়ে জনগণের কাছে সরবরাহ করছে এবং জনগণ এসব সেবা ক্রয় করে অভাব পূরণ করছে। জনাব সামছুল হুদা দেশের একক বৃহত্তম খাত হিসেবে সেবা খাতের সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত। বাংলাদেশে সেবাখাতের অন্তর্ভুক্ত বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে পরিবহন, যোগাযোগ, ব্যাংকিং বিমা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সামাজিক সেবা, লোক প্রশাসন ও প্রতিরক্ষা প্রভৃতি। জনাব সামছুল হুদা যেহেতু শিক্ষার সাথে জড়িত, তাই তার কাজটি সেবা খাতের অন্তর্ভুক্ত।
ঘ বাংলাদেশের বেকারত্ব দূরীকরণ এবং জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে উদ্দীপকের রহিমের গড়ে তোলা ক্ষুদ্র শিল্প কার্যক্রম ভ‚মিকা রাখবে বলে আমি মনে করি। বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে ক্ষুদ্র শিল্প গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করে। মানুষের দারিদ্র্য বিমোচন, জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন, বেকারত্ব দূরীকরণে রহিমের গড়ে তোল্য ক্ষুদ্রায়তন শিল্প প্রতিষ্ঠানটি কার্যকর ভ‚মিকা পালনে সক্ষম হবে। উদ্দীপকের রহিম তার নিজ এলাকায় যে শিল্পপ্রতিষ্ঠানটি গড়ে তুলেছে, তা ঐ এলাকার বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান হিসেবে ভ‚মিকা রাখবে। বেকারত্বের অভিশাপ থেকে মুক্তি পেয়ে এসব জনগোষ্ঠী নিজেদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন করতে পারবে। তার শিল্পে উৎপাদিত পণ্য স্থানীয় বাজারের চাহিদা মিটিয়ে দেশের অন্যান্য অঞ্চলে এবং বিদেশে রপ্তানি করার ফলে মোট দেশজ উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে এবং জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন হবে। দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়ন, দারিদ্র্য বিমোচন, প্রাকৃতিক সম্পদের সদ্ব্যবহার, বিদেশি নির্ভরতা হ্রাসকরণ নারীর কর্মসংস্থান বৃদ্ধি, বেকারত্ব দূরীকরণে রহিমের গড়ে তোলা ক্ষুদ্র শিল্পের ভ‚মিকা অপরিসীম। পরিশেষে বলা যায়, একজন সফল উদ্যোক্তা হিসেবে রহিমের উদ্যোগটি বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে অত্যন্ত প্রশংসনীয় এবং এ ধরনের শিল্প অবশ্যই বেকারত্ব দূরীকরণ ও জনগণের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে সক্ষম বলে আমি মনে করি।
প্রশ্ন- ১১ কৃষি ও শিল্পের পারস্পরিক নির্ভরশীলতা
জমির একজন কৃষক। মান্ধাতা আমলের চাষ পদ্ধতি ছেড়ে বর্তমানে তিনি উচ্চ ফলনশীল ধান চাষ করেন, গভীর নলক‚পের মাধ্যমে জমিতে সেচ দেন। উৎপাদিত কৃষিপণ্য, পাটের বস্তায় করে বাজারে সরবরাহ করেন। এভাবে তিনি এলাকাবাসীর চাহিদা পূরণ করে জাতীয় অর্থনীতিতে ভ‚মিকা রাখছেন।
ক. আমাদের দেশের ক্ষুদ্রশিল্পের ভিত্তি কী? ১
খ. শিল্পনীতি ২০১০ ঘোষণা করা হয়েছে কেন? ২
গ. উদ্দীপকে অর্থনীতির কী ধরনের সম্পর্ক ফুটে উঠেছে? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. তুমি কি মনে কর, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে উদ্দীপকে ইঙ্গিতকৃত দুটি বিষয়ের উন্নয়নের ওপরই গুরুত্ব দেওয়া উচিত? মতামতের পক্ষে যুক্তি দাও। ৪
ক আমাদের দেশের ক্ষুদ্র শিল্পের ভিত্তি হলো কৃষি।
খ দেশের শিল্পায়নের গতিকে বেগবান করতে শিল্পনীতি ২০১০ ঘোষণা করা হয়েছে। দেশের উৎপাদনশীল কর্মসংস্থান সৃষ্টি, নারীকে শিল্পায়ন প্রক্রিয়ার মূল ধারায় নিয়ে আসা, দারিদ্র দূরীকরণ এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের প্রসার ঘটানোর উদ্দেশ্যে সরকার ২০১০ সালে আধুনিক শিল্পনীতি ঘোষণা করে।
গ উদ্দীপকে বাংলাদেশের অর্থনীতির দুটি গুরুত্বপূর্ণ খাত কৃষি এবং শিল্পের পারস্পরিক নির্ভরশীলতার সম্পর্ক ফুটে উঠেছে। কৃষি ও শিল্প দুটি খাতই দেশের অর্থনীতির চাকাকে সচল করতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। তাই এটি দুটি খাত একে অপরের ওপর নির্ভরশীল। কৃষিখাতের উন্নতি ও আধুনিকায়নের জন্য বিভিন্ন কৃষি সরঞ্জাম ও সারের যোগান দেয় শিল্প। আবার শিল্পের প্রসারের জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচামাল ও শিল্পজাত দ্রব্যের বাজার সৃষ্টিতে সহায়তা করে কৃষিখাত উদ্দীপকে কৃষি ও শিল্পের এ ধরনের সম্পর্কই পরিলক্ষিত হচ্ছে। উদ্দীপকে দেখা যায়, জমির উচ্চফলনশীল ধান উৎপাদন করতে গিয়ে গভীর নলক‚পের মাধ্যমে সেচের ব্যবস্থা করেছেন। এর ফলে তিনি অধিক উৎপাদন সক্ষম হয়েছেন। এখানে গভীর নলক‚প শিল্পে উৎপাদিত পণ্য। আবার শিল্পের ভিত্তি হিসেবে যে কৃষি কাজ করে উদ্দীপকে সেটিও স্পষ্ট। যেমন : শিল্পের মাধ্যমে উৎপাদিত বস্তার মূল উপকরণ হলো পাট, যা কৃষিকাজ থেকে উৎপাদিত হয়েছে। অর্থাৎ এদেশের উল্লেখযোগ্য শিল্প যেমন : পাট, চা, চামড়া, চিনি ও কাগজ প্রভৃতি শিল্পের প্রধান কাঁচামাল হিসেবে কৃষিজাত পণ্য ব্যবহৃত হয়। আবার কৃষির আধুনিকায়নের মাধ্যমে খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করতে পারলে আমদানি ব্যয় বাঁচবে, যা শিল্পোন্নয়নে ব্যয় হবে। উদ্দীপকে আমরা কৃষি ও শিল্প উন্নয়নের এই পারস্পরিক নির্ভরশীলতার সম্পর্কই লক্ষ করি।
ঘ আমি মনে করি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য উদ্দীপকে ইঙ্গিতকৃত কৃষি এবং শিল্প দুটি খাতের উন্নয়নের ওপরই সমানভাবে গুরুত্ব দেওয়া উচিত। বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে কৃষি হলো অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মূল চালিকাশক্তি এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের মূল চাবিকাঠি, কেননা এদেশের অর্থনৈতিক কাঠামো গড়ে উঠেছে কৃষি কার্যক্রমকে কেন্দ্র করে। অন্যদিকে বিশ্বের সাথে তাল মিলাতে শিল্পায়নের গতিকে ত্বরান্বিত করতে শিল্পের ভ‚মিকা অপরিসীম। এককথায় কৃষি উন্নয়নের জন্যই শিল্পোন্নয়ন জরুরি। উদ্দীপকে আমরা কৃষি ও শিল্পের পারস্পরিক সম্পর্ক লক্ষ করি। এ প্রেক্ষিতে এটি স্পষ্টতই যে, কৃষি এবং শিল্পের যুগপৎ উন্নয়নই দেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করতে পারে। বাংলাদেশের বিপুল জনগোষ্ঠীর খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ দারিদ্র্য দূরীকরণ, জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন, কর্মসংস্থান বৃদ্ধি ইত্যাদি কৃষির অগ্রগতির সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত। কিন্তু কৃষি প্রকৃতির ওপর নির্ভরশীল বলে অস্থিতিশীল অর্থনীতি নির্দেশ করে না। কারণ এদেশে প্রতিবছর বন্যা, ঘূর্ণিঝড় সাইক্লোন, জলোচ্ছ¡াস প্রভৃতি কারণে কৃষিক্ষেত্রে উৎপাদন অনিশ্চিত থাকে। তাই বর্তমানে মুক্তবাজার অর্থনীতি এবং বিশ্বায়নের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে আমাদের দেশের সার্বিক উন্নয়নের স্বার্থে শিল্পায়িত অর্থনীতি গড়ে তোলা প্রয়োজন। কেননা শিল্পায়নের মাধ্যমে কৃষির আধুনিকীকরণ, প্রাকৃতিক সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার, বিদেশের ওপর নির্ভরশীলতা হ্রাসের পাশাপাশি শক্তিশালী প্রতিরক্ষার ব্যবহার গড়ে তোলা সম্ভব। ২০২১ সালের মধ্যে একটি সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়ে তোলার লক্ষ্যে কৃষিখাতের যেমন উন্নয়ন জরুরি, তেমনি শিল্পখাতেরও ব্যাপক উন্নয়ন করতে হবে। তাই কৃষি ক্ষেত্রে ভর্তুকি প্রদান, সেচের জন্য নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ কৃষিঋণের প্রবাহ বৃদ্ধি, প্রতিক‚ল আবহাওয়া ও লবণাক্ততা সহিষ্ণু বীজ উদ্ভাবন অত্যন্ত জরুরি। অন্যদিকে কৃষিভিত্তিক শিল্পের বিকাশে বিদ্যুৎসহ অবকাঠামোগত খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি করা দরকার। উপরিউক্ত আলোচনায় এটি স্পষ্ট প্রতীয়মান হয় যে, বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশের উন্নয়নের লক্ষ্যে কৃষি এবং শিল্পে উভয় খাতেরই উন্নয়ন জরুরি।
বোর্ড ও সেরা স্কুলের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন- ১ বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রধান খাতসমূহ
নিচের ছকটি লক্ষ কর :
[স. বো. ’১৬]
ক. অর্থনৈতিক খাত কী? ১
খ. সেবা খাত বলতে কী বোঝায়? ২
গ. ‘অ’ খাতের উপর বাংলাদেশের অর্থনীতি অনেকটাই নির্ভরশীল- ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. ‘অ’ ও ‘ই’ খাতে একে অপরের উপর নির্ভরশীল বিশ্লেষণ কর। ৪
ক যেকোনো দেশের অর্থনীতিতে বিদ্যমান শাখা বা বিভাগসমূহ যেগুলোর অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের সমষ্টিগত অবদানের দ্বারা দেশের অর্থনীতির ভিত্তি গড়ে ওঠে; অর্থনীতির অন্তর্ভুক্ত সেসব শাখা বা বিভাগকে অর্থনৈতিক খাত বলে।
খ অর্থনৈতিক যেসব কাজের মাধ্যমে অবস্তুগত দ্রব্য উৎপাদিত হয় অর্থাৎ দৃশ্যমান নয় যা মানুষের বিভিন্ন অভাব পূরণ করে এবং যার বিনিময় মূল্য রয়েছে তাকে সেবা বলে। আর এসব অর্থনৈতিক কাজ নিয়েই একটি দেশের সেবাখাত গঠিত। এসব সেবা অর্থের বিনিময়ে বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠান ও জনগণের নিকট সরবরাহ করা হয় এবং জনগণ এসব সেবা ক্রয় করে তাদের অভাব পূরণ করে।
গ ‘অ’ খাতটি হচ্ছে কৃষিখাত। বাংলাদেশের অর্থনীতি কৃষিখাতের উপর অনেকটাই নির্ভরশীল। মূলত আমাদের অর্থনীতির মূল বৈশিষ্ট্যই হচ্ছে কৃষিখাতের প্রাধান্য। কৃষি বাংলাদেশের অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ খাত। যদিও অনুন্নত চাষ পদ্ধতি, উন্নত বীজ, সার, সেচ এবং কৃষিঋণের অভাব, প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে উন্নত দেশের তুলনায় আমাদের কৃষি উৎপাদন অনেক কম। তথাপি কৃষিতে আমাদের নির্ভরতা অনেক বেশি। অনুন্নত কৃষিব্যবস্থা এ নির্ভরতাকে আরও প্রকট করে তোলে। তবে আশার কথা ক্রমান্বয়ে এই অবস্থার উন্নতি হচ্ছে। উন্নত বীজ, সার, কীটনাশক, সেচ সুবিধা বাড়ছে। সংগে সংগে উৎপাদনও বাড়ছে। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদনে সার্বিক কৃষিখাতের (ফসল, মৎস্য সম্পদ, পশুসম্পদ ও বনজ সম্পদ) অবদান ১৩ শতাংশ হয়েছে। দেশের শ্রমশক্তির মোট ৪৭.৫ শতাংশ কৃষিখাতে নিয়োজিত (এম ই এস, ২০১০, বিবিএস)। মূলত এই বিপুল কর্মসংস্থানের প্রেক্ষিতেও একথা বলা অত্যুক্তি নয় যে, বাংলাদেশের অর্থনীতি অনেকটাই কৃষিখাতের উপর নির্ভরশীল।
ঘ ‘অ’ খাত হচ্ছে কৃষিখাত এবং ‘ই’ খাত হচ্ছে শিল্পখাত।
এ খাত দুটি অর্থাৎ কৃষি ও শিল্প খাত পরস্পর নির্ভরশীল। আমাদের দেশের অধিকাংশ শিল্প কৃষিভিত্তিক। এ দেশের উল্লেখযোগ্য শিল্প যেমন : পাট, চা, চামড়া, চিনি ও কাগজ প্রভৃতি শিল্প, প্রধান কাঁচামালের জন্য কৃষির ওপর নির্ভরশীল। তাই আমাদের দেশে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে পাটশিল্প; চট্টগ্রাম ও সিলেট অঞ্চলে চাশিল্প; উত্তরবঙ্গে চিনিশিল্প গড়ে উঠেছে। এসব শিল্পের প্রসারের ফলে কাঁচামালের বর্ধিত চাহিদার কারণে কৃষি উৎপাদন বাড়বে, কৃষক উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য দাম পাবে। ফলে কৃষকদের আয় বাড়বে এবং জীবনযাত্রার মান উন্নত হবে। বিপরীতক্রমে জনগণের আয় বৃদ্ধির ফলে সঞ্চয় ও মূলধন গঠন বৃদ্ধ পাবে এবং শিল্পক্ষেত্রে বেশি করে বিনিয়োগ করা সম্ভব হবে। আমাদের ক্ষুদ্রশিল্পের ভিত্তি হলো কৃষি। কৃষিতে উৎপাদিত বাঁশ-বেত ক্ষুদ্রশিল্পের কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত হয়। অন্যদিকে শিল্পে উৎপাদিত চাষাবাদের যন্ত্রপাতি, সার, কীটনাশক, ওষুধ ইত্যাদি কৃষিকাজে ব্যবহার করা হয়। তাই শিল্পজাত দ্রব্যের বাজার সৃষ্টিতে কৃষি ভ‚মিকা পালন করে। আবার কৃষকদের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে শিল্পজাত অন্যান্য দ্রব্যের চাহিদাও বৃদ্ধি পায় যা শিল্পের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করে। উপরন্তু কৃষির আধুনিকায়নের মাধ্যমে খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করতে পারলে আমদানি ব্যয় বাঁচবে যা শিল্পোন্নয়নে ব্যয় করা যাবে। উপরিউক্ত আলোচনা থেকে বলা যায় যে, আমাদের কৃষি ও শিল্পের উন্নয়ন পরস্পর নির্ভরশীল এবং একে অপরের পরিপূরক।
প্রশ্ন- ২ কৃষি ও শিল্পখাতের আলোচনা
কৃষক রহিম পাট চাষাবাদের জন্য ট্রাক্টর, সার কীটনাশক ব্যবহার বৃদ্ধি করার কারণে পাটের উৎপাদন বহুগুণ বেড়েছে। অপরদিকে, করিম তার উৎপাদিত সার বাজারজাতকরণে প্লাস্টিক ব্যাগের পরিবর্তে পাটের ব্যাগ ব্যবহার করছে। [স. বো. ’১৫]
ক. শিল্প কাকে বলে? ১
খ. সেবাখাত বলতে কী বোঝায়? ব্যাখ্যা কর। ২
গ. রহিমের কাজের খাতটিকে অর্থনীতির ভাষায় কী বলা যায়? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. দৃশ্যকল্পে বর্ণিত রহিম ও করিমের খাত দুইটি পারস্পরিক নির্ভরশীলÑ উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দাও। ৪
ক প্রকৃতিপ্রদত্ত সম্পদ বা কাঁচামাল বা প্রাথমিক দ্রব্যকে কারখানাভিত্তিক প্রস্তুত প্রণালির মাধ্যমে মাধ্যমিক দ্রব্য বা চূড়ান্ত দ্রব্যে রূপান্তরিত করাই হলো শিল্প।
খ অর্থনৈতিক যেসব কাজের মাধ্যমে অবস্তুগত দ্রব্য উৎপাদিত হয় অর্থাৎ দৃশ্যমান নয় যা মানুষের বিভিন্ন অভাব পূরণ করে এবং যার বিনিময় মূল্য রয়েছে তাকে সেবা বলে। আর এসব অর্থনৈতিক কাজ নিয়েই একটি দেশের সেবাখাত গঠিত। যেমন : বাংলাদেশের পাইকারি ও খুচরা বিপণন, হোটেল ও রেস্তোরাঁ, পরিবহন, সংরক্ষণ ও যোগাযোগ, ব্যাংক, বিমা ও অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান, গৃহায়ণ, লোক প্রশাসন ও প্রতিরক্ষা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক সেবা, কমিউনিটি, সামাজিক ও ব্যক্তিগত সেবা প্রভৃতি ক্ষেত্রে সেবাকর্ম উৎপন্ন হয়।
গ রহিমের কাজের খাতটিকে অর্থনীতির ভাষায় কৃষিখাত বলা হয়।কৃষিখাত যেকোনো দেশের অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ খাত। অর্থনীতির ভাষায় কৃষি হচ্ছে এরূপ সৃষ্টি সম্বন্ধীয় কাজ যা ভ‚মিকর্ষণ, বীজ বপন, শস্য-উদ্ভিদ পরিচর্যা, ফসল কর্তন ইত্যাদি থেকে শুরু করে উৎপাদিত পণ্য গুদামজাতকরণ, সংরক্ষণ ও বাজারজাতকরণ পর্যন্ত বিস্তৃত। ফসল উৎপাদন ছাড়াও মাছ ও মৌমাছি, পশুপালন ও বনায়ন কৃষি খাতের অন্তর্ভুক্ত। উদ্দীপকে দেখা যায় কৃষক রহিম পাট চাষাবাদের জন্য ট্রাক্টর, সার কীটনাশক ব্যবহার বৃদ্ধি করার কারণে পাটের উৎপাদন বহুগুণ বেড়েছে। অর্থাৎ সে ভ‚মিকর্ষণ, বীজ বপণ, শস্য উৎপাদনের সাথে জড়িত। সুতরাং রহিমের কাজের খাতটি হচ্ছে কৃষিখাত।
ঘ দৃশ্যকল্পে বর্ণিত রহিমের খাত হচ্ছে কৃষিখাত। অন্যদিকে করিম সার উৎপাদন করে। সুতরাং করিমের খাতটি হচ্ছে শিল্পখাত। দৃশ্যকল্পে বর্ণিত এ খাত দুটি অর্থাৎ কৃষি ও শিল্প খাত পরস্পর নির্ভরশীল। আমাদের দেশের অধিকাংশ শিল্প কৃষিভিত্তিক। এ দেশের উল্লেখযোগ্য শিল্প যেমন : পাট, চা, চামড়া, চিনি ও কাগজ প্রভৃতি শিল্পের প্রধান কাঁচামালের জন্য কৃষির ওপর নির্ভরশীল। তাই আমাদের দেশে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে পাটশিল্প; চট্টগ্রাম ও সিলেট অঞ্চলে চাশিল্প; উত্তরবঙ্গে চিনিশিল্প গড়ে উঠেছে। উপরন্তু উদ্দীপকের করিমের মতো প্লাস্টিকের ব্যাগের পরিবর্তে পাটের ব্যাগের ব্যবহার কৃষির ওপর শিল্পের নির্ভরতা বাড়ায়। এসব শিল্পের প্রসারের ফলে কাঁচামালের বর্ধিত চাহিদার কারণে কৃষি উৎপাদন বাড়বে, কৃষক উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য দাম পাবে। ফলে কৃষকদের আয় বাড়বে এবং জীবনযাত্রার মান উন্নত হবে। জনগণের আয় বৃদ্ধির ফলে সঞ্চয় ও মূলধন গঠন বৃদ্ধি পাবে এবং শিল্পক্ষেত্রে বেশি করে বিনিয়োগ করা সম্ভব হবে। আমাদের ক্ষুদ্রশিল্পের ভিত্তি হলো কৃষি। কৃষিতে উৎপাদিত বাঁশ-বেত ক্ষুদ্রশিল্পের কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত হয়। অন্যদিকে শিল্পে উৎপাদিত চাষাবাদের যন্ত্রপাতি, সার, কীটনাশক, ওষুধ ইত্যাদি কৃষিকাজে ব্যবহার করা হয়। তাই শিল্পজাত দ্রব্যের বাজার সৃষ্টিতে কৃষি ভ‚মিকা পালন করে। কৃষকদের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে শিল্পজাত অন্যান্য দ্রব্যের চাহিদাও বৃদ্ধি পায় যা শিল্পের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করে। কৃষির আধুনিকায়নের মাধ্যমে খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করতে পারলে আমদানি ব্যয় বাঁচবে যা শিল্পোন্নয়নে ব্যয় করা যাবে। উপরিউক্ত আলোচনা থেকে বলা যায় যে, আমাদের কৃষি ও শিল্পের উন্নয়ন পরস্পর নির্ভরশীল এবং একে অপরের পরিপূরক।
প্রশ্ন- ৩ বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কুটির শিল্পের ভ‚মিকা
সিলেটের আনিস সাহেব বাঁশ ও বেত দিয়ে ঝুড়ি, মোড়া, মাদুরসহ হস্তশিল্পজাত দ্রব্য তৈরি করেন। এ কাজে তাকে তার দুই ভাই ও তিন বোন সহযোগিতা করে। তার তৈরি দ্রব্যের চাহিদা দেশে-বিদেশে দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। [যশোর জিলা স্কুল]
ক. এসপিএম কার্যক্রম কী? ১
খ. বাংলাদেশের বেশিরভাগ শিল্প কৃষির ওপর নির্ভরশীল কেন? ২
গ. উদ্দীপকের উল্লিখিত আনিসের কাজটি কোন ধরনের শিল্প? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. ‘আত্মকর্মসংস্থানের পাশাপাশি জাতীয় অর্থনীতিতে আনিস সাহেবেরা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন’- তোমার মতামতের পক্ষে যুক্তি দাও। ৪
ক গভীর সমুদ্রে শোধিত ও অপরিশোধিত জ্বালানি তেল খালাসের জন্য যে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়, তা-ই এসপিএম (ঝরহমষব চড়রহঃ গড়ড়ৎরহম)।
খ বাংলাদেশের বেশিরভাগ শিল্পের কাঁচামাল কৃষিখাত থেকে সংগৃহীত হয় বলে এদেশের শিল্প কৃষির ওপর নির্ভরশীল। বাংলাদেশের বেশিরভাগ শিল্প যেমন : পাট, চিনি, চা, কাগজ, হার্ডবোর্ড ইত্যাদি এসব শিল্প তাদের কাঁচামালের চাহিদার সিংহভাগ কৃষিখাতে উৎপাদিত পণ্য দ্বারা পূরণ করে। দেশের কৃষিখাতে এসব শিল্পের কাঁচামাল পাওয়া যায় বলে তা সহজে নিয়মিত ও কম দামে সংগ্রহ করা যায়। তাছাড়া দেশের বেশির ভাগ লোক কৃষিজীবী বলে এসব শিল্প তাদের উৎপাদিত দ্রব্য বিক্রয়ের জন্য কৃষিখাতের ওপর নির্ভর করে।
গ উদ্দীপকে উল্লিখিত আনিসের শিল্পটি হলো কুটিরশিল্প। কুটির বা গৃহে পারিবারিক ভিত্তিতে স্বল্পমূলধন এবং সহজলভ্য কাঁচামাল ও ছোটখাটো সাধারণ যন্ত্রপাতির সাহায্যে কুটিরশিল্প পরিচালিত হয়। সাধারণত এ শিল্পে পরিবারের লোকজনের পুঁজি ও শ্রম ব্যবহৃত হয়। এসব শিল্পে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বিদ্যুতের ব্যবহার হয় না এবং উৎপাদন কৌশল মান্ধাতার আমলের। বাংলাদেশের হস্তচালিত তাঁতশিল্প, মৃৎশিল্প, বাঁশ ও বেতশিল্প, বিড়িশিল্প, কাঁসা ও পিতলশিল্প, শঙ্খ ও ঝিনুকশিল্প প্রভৃতি হলো কুটিরশিল্প। উদ্দীপকে দেখা যায়, আনিস সাহেব বাঁশ ও বেত দিয়ে ঝুড়ি, মোড়া তৈরি করে বাজারে বিক্রি করেন। সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত উদ্যোগে পরিবারের সহযোগিতায় তিনি এ কাজটি করছেন। যা সম্পূর্ণভাবেই কুটিরশিল্পের বৈশিষ্ট্যকে ধারণ করে। বাংলাদেশের বেকার সমস্যা লাঘব, স্বকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা, মহিলাদের জন্য কর্মসংস্থানের দেশীয় কাঁচামালের ব্যবহার, কৃষিতে জনসংখ্যার চাপ হ্রাস ইত্যাদি ক্ষেত্রে কুটিরশিল্পের ভ‚মিকা গুরুত্বপূর্ণ। কুটিরশিল্পগুলো ব্যক্তিগত উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত বা ব্যক্তিগত ব্যবস্থায় পরিচালিত হয়। তাই বলা যায়, আনিস সাহেবের কাজটি সম্পূর্ণভাবেই কুটিরশিল্পের অন্তর্ভুক্ত।
ঘ ‘আত্মকর্মসংস্থানের পাশাপাশি জাতীয় অর্থনীতিতে আনিস সাহেবরা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন বলে আমি মনে করি। উদ্দীপকে বর্ণিত আনিস সাহেব একজন কুটিরশিল্পী। তার মতো কুটির বেকারত্ব দূরীকরণ এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করছেন। কারণ তারা তাদের শিল্পের মাধ্যমে নিজেদের এবং অন্যদের জন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করছেন। ফলে বেকার সমস্যার যেমন সমাধান হচ্ছে, তেমনি দেশেরও উন্নয়ন হচ্ছে। নিচে এ সম্পর্কে যুক্তি উপস্থাপন করা হলো :
প্রথমত : এদেশের কুটিরশিল্পীরা কুটিরশিল্প স্থাপনের মাধ্যমে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছেন। এর ফলে দেশের বেকার সমস্যার লাঘব হচ্ছে।
দ্বিতীয়ত : কুটিরশিল্পে এদেশের বেকার ও অবহেলিত মহিলাদের কর্মসংস্থান হচ্ছে।
তৃতীয়ত: কুটিরশিল্পীরা কৃষিখাতের লোকজনকে কাজ দিয়ে জমির ওপর জনসংখ্যার চাপ কমাতে সাহায্য করছেন। এর ফলে জমির বিভক্তি ও বিচ্ছিন্নতা সমস্যা কমে আসছে।
চতুর্থত : এদেশের কুটিরশিল্পে পাট, চামড়া, বাঁশ ও বেত কাট ও অনেক রকম কাঁচামাল ব্যবহার হচ্ছে। এর ফলে সম্পূরকের সদ্ব্যবহার সম্ভব হচ্ছে।
পঞ্চমত : সামান্য পুঁজি নিয়েই এ শিল্প স্থাপন করা যায় বলে খুব কম পুঁজির লোকদের পক্ষেও শিল্পস্থাপন সম্ভব হচ্ছে।
ষষ্ঠত : কুটিরশিল্পের প্রসারের সাথে সাথে দরিদ্রশ্রেণির লোকদের আয় বাড়ছে। এজন্য বলা চলে কুটিরশিল্পীরা সমাজে বিদ্যমান আয়বৈষম্য কমাতে সাহায্য করছেন।
পরিশেষে বলা যায়, স্বনির্ভরতা অর্জন এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে আনিস সাহেবরা জাতীয় অর্থনীতিতে গুরত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন।
মাস্টার ট্রেইনার প্রণীত সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন- ৪ বাংলাদেশের অর্থনৈতিক বৈশিষ্ট্য
নারায়ণপুর ইউনিয়নের তাজু মিয়া একজন ধনী কৃষক। গত কয়েক বছর ধরে তার জমিতে আধুনিক চাষাবাদ পদ্ধতি অনুসরণ করায় অধিক ফসল উৎপাদন হয়। এ ফসল বিক্রি করে তাজু একটি ছোট পোশাক কারখানা তৈরি করে, যা তার স্ত্রী পরিচালনা করছে। এ কারখানাটিতে তাজুর গ্রামের অধিকাংশ নারীর কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে। এসব পরিবারের আয় বৃদ্ধি পেয়ে জীবনযাত্রার মান বাড়ছে।
ক. ঊচত-এর পূর্ণরূপ কী? ১
খ. বাংলাদেশে খাদ্য ঘাটতি ও পুষ্টিহীনতার কারণ কী? লেখ। ২
গ. উদ্দীপকে বাংলাদেশের কোন চিত্রটি ফুটে উঠেছে? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. উদ্দীপকটি বাংলাদেশের উক্ত দিকের সার্বিক চিত্র উপস্থাপনে সক্ষম হয়েছে কি? মতামতের পক্ষে যুক্তি দাও। ৪
ক ঊচত-এর পূর্ণরূপ হলো ঊীঢ়ড়ৎঃ চৎড়পবংংরহম তড়হব.
খ বাংলাদেশে খাদ্য ঘাটতি ও পুষ্টিহীনতার প্রধান কারণ হলো অধিক জনসংখ্যা। বাংলাদেশে জনসংখ্যার তুলনায় খাদ্য উৎপাদন হয় অনেক কম। প্রতিবছর বাংলাদেশের জনগণের খাদ্য চাহিদা মেটানোর জন্য প্রচুর খাদ্যশস্য আমদানি করতে হয়। কিন্তু তারপরও এত অধিক লোকের খাবারের চাহিদা মেটানো সম্ভব হয় না। ফলে দেখা দেয় খাদ্য ঘাটতি এবং পুষ্টিহীনতা। অতিরিক্ত জনসংখ্যার কারণে মানুষের পক্ষে পুষ্টিকর খাবার খাওয়াও সম্ভব হয় না। এভাবে মানুষ পুষ্টিহীনতার শিকার হয়।
গ উদ্দীপকে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনের কিছু বৈশিষ্ট্য ফুটে উঠেছে। বাংলাদেশ তৃতীয় বিশ্বের একটি উন্নয়নশীল দেশ। ঔপনিবেশিক শাসন-শোষণের ফলে এদেশের অবকাঠামো ধ্বংসপ্রাপ্ত হলেও স্বাধীনতা-পরবর্তী চার দশক ধরে বাংলাদেশ কৃষি ও শিল্পের উন্নয়নের মাধ্যমে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনের চেষ্টা করছে, যার একটি আংশিক চিত্র আমরা উদ্দীপকে লক্ষ করি। উদ্দীপকে দেখা যায়, তাজু মিয়া কৃষিতে আধুনিক যন্ত্রপাতির ব্যবহারের মাধ্যমে অধিক উৎপাদনে সক্ষম হয়েছে। এটি বাংলাদেশের কৃষিক্ষেত্রের একটি বর্তমান চিত্র। বর্তমানে এ খাতের উন্নয়নের জন্য আধুনিক চাষ পদ্ধতিও উন্নত ধরনের সার, বীজ, কীটনাশক প্রভৃতি ব্যবহার করা হচ্ছে। কৃষি খাতের উন্নয়নের মাধ্যমে এদেশটি এগিয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। অন্যদিকে তাজুর পোশাক কারখানা নির্মাণের বিষয়টি শিল্পের অগ্রগতির ইঙ্গিত দেয়। সরকার এদেশের শিল্পখাতের উন্নয়নে ব্যাপক প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। শিল্পঋণ সরবরাহ, শিল্পনীতি ঘোষণার মাধ্যমে এ খাতে শিল্প উদ্যোক্তা সৃষ্টির চেষ্টা করা হচ্ছে। এ খাতের উন্নয়নের মাধ্যমে দারিদ্র্য দূরীকরণ ও নারীর কর্মসংস্থানের সম্ভাবনা সৃষ্টি করছে সরকার, যার ইঙ্গিত রয়েছে উদ্দীপকে। এছাড়া মানুষের জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধি, মাথাপিছু আয় বৃদ্ধিরও ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে উদ্দীপকে, যা এদেশের বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থাকেই তুলে ধরে। সুতরাং আমরা বলতে পাই, উদ্দীপকে এদেশের অর্থনীতির একটি আংশিক চিত্র উপস্থাপন করা হয়েছে।
ঘ বাংলাদেশের অর্থনীতির ইতিবাচক, নেতিবাচক নানা বৈশিষ্ট্যের মধ্যে উন্নয়নের ক্ষেত্রে সম্ভাবনাময় কিছু বৈশিষ্ট্য উদ্দীপকে তুলে ধরা হয়েছে, যা থেকে এদেশের অর্থনীতির সার্বিক বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া সম্ভব নয়। বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল দেশ। দারিদ্র্য, বেকারত্ব, অধিক জনসংখ্যা, নিরক্ষরতা এদেশের প্রধান সমস্যা। কৃষি ও শিল্পের উন্নয়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ এসব সমস্যা উত্তরণের প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। কৃষিপ্রধান এদেশটিতে শিল্পের বিকাশের মাধ্যমে উন্নয়নের প্রচেষ্টা চালানো হলেও এদেশের অর্থনীতিতে নানা ধরনের সমস্যা এখনও উন্নয়নের ধারাকে ব্যাহত করছে। উদ্দীপকে আমরা বাংলাদেশের অর্থনীতির অগ্রগতির একটি আংশিক চিত্র লক্ষ করি। এখানে কৃষি ও শিল্পের উন্নয়নের মাধ্যমে নারীর আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টি, মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি ও জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের একটি চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। তবে বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রধান ইতিবাচক দিকগুলো উদ্দীপকে উঠে এলেও উন্নয়নের পথে অন্তরায়গুলো একেবারেই অনুপস্থিত রয়েছে। যেমন : খাদ্যঘাটতি, পুষ্টিহীনতা, জনসংখ্যা বৃদ্ধির ঊর্ধ্বগতি, ব্যাপক বেকারত্ব, বৈদেশিক বাণিজ্যের ঘাটতি, বৈদেশিক সাহায্যের ওপর নির্ভরশীলতা প্রভৃতি। এসব কারণে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন চরমভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। আবার উন্নয়নের পথে এগিয়ে যেতে বাংলাদেশ যেসব পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে তার সব চিত্র উদ্দীপকে প্রকাশ পায়নি। উৎপাদন বৃদ্ধি, উৎপাদিত পণ্যের সুষ্ঠু বাজারজাতকরণ এবং দ্রব্যমূল্যের স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য অর্থনৈতিক অবকাঠামো তথা সড়ক, নৌ ও রেল, বিদ্যুৎ, টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নয়ন করছে। তাছাড়া রূপকল্প-২০২১ পরিকল্পনার মাধ্যমে সরকার বাংলাদেশকে একটি সমৃদ্ধ সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তোলার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। উদ্দীপকে বাংলাদেশের কৃষি ও শিল্প উন্নয়নের একটি চিত্র উপস্থাপিত হলেও অর্থনীতির উল্লিখিত বৈশিষ্ট্যগুলোর কোনো ইঙ্গিত দেওয়া হয়নি। তাই একথা নিঃসন্দেহে বলা যায় যে, উদ্দীপকটি বাংলাদেশের অর্থনীতির সার্বিক চিত্র উপস্থাপনে সক্ষম হয়নি।
প্রশ্ন- ৫ অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবকাঠামোগত ক্রমোন্নতি
ঢাকা মহাসড়কের ওপর দিয়ে যাওয়ার সময় খিলক্ষেত ফ্লাইওভারে উঠে সদ্য বিদেশ থেকে আগত নোমান চৌধুরী অবাক হন। দশ বছর আগের ঢাকা আর বর্তমান ঢাকার মধ্যে তিনি বিস্তর পার্থক্য অনুভব করেন। যোগাযোগ ব্যবস্থাকে উন্নত করতে সরকারের নানামুখী প্রচেষ্টাকে তিনি স্বাগত জানান। তিনি মনে করেন সরকারের এমন ইতিবাচক কর্মসূচিই বাংলাদেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করতে পারে।
ক. ‘রূপকল্প-২০২১’ কত থেকে কত সালের জন্য প্রণয়ন করা হয়েছে? ১
খ. ‘কৃষিই বাংলাদেশের অর্থনীতির মূলভিত্তি’ ব্যাখ্যা কর। ২
গ. উদ্দীপকটি বাংলাদেশের অর্থনীতির কোন বৈশিষ্ট্যটি তুলে ধরে? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. শুধু উদ্দীপকের কর্মসূচিই বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সরকারের গৃহীত একমাত্র কর্মসূচি নয় মন্তব্যটি বিশ্লেষণ কর। ৪
ক ‘রূপকল্প’-২০২১’ পরিকল্পনাটি ২০১০-২০২১ সালের জন্য প্রণয়ন করা হয়েছে।
খ বাংলাদেশের মানুষের জীবন-জীবিকা এবং অর্থনীতি কৃষির ওপর নির্ভরশীল। তাই এটি অর্থনীতির মূলভিত্তি হিসেবে পরিগণিত। বাংলাদেশের প্রায় ৭৫ ভাগ মানুষ কৃষির ওপর নির্ভরশীল। এদেশের প্রধান প্রধান শিল্পগুলোর কাঁচামালের যোগানদাতা হিসেবে কৃষির রয়েছে ব্যাপক অবদান। কৃষি ছাড়া এদেশের ৮৫ হাজার গ্রাম কল্পনা করা যায় না। আর গ্রামীণ অর্থনীতি হচ্ছে অর্থনীতির প্রধান চালিকাশক্তি। সুতরাং এদেশের অর্থনীতির ভিত্তি যে কৃষি, সে বিষয়ে আর কোনো সন্দেহের অবকাশ নেই।
গ উদ্দীপকটি বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম একটি বৈশিষ্ট্য অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবকাঠামোর ক্রমোন্নতিগত দিকটি তুলে ধরে। দেশের উৎপাদন বৃদ্ধি, উৎপাদনের উপকরণ ও উৎপাদিত পণ্যের সুষ্ঠু বাজারজাতকরণ এবং দ্রব্যমূল্যের স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য অর্থনৈতিক অবকাঠামো, যেমন : সড়ক, রেল ও নৌ-পথ, বিদ্যুৎ ও টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করে। সরকার এসব অবকাঠামো উন্নয়নে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে, যার একটি পদক্ষেপ আমরা উদ্দীপকের বর্ণনায় লক্ষ্য করি। উদ্দীপকে আমরা ঢাকা শহরের যানজট নিরসনে সরকারের এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়ে নির্মাণের একটি উদ্যোগ লক্ষ করি। ঢাকা সড়কের সরকারের নির্মিত খিলক্ষেত সংলগ্ন ফ্লাইওভারটি ঢাকার বিভিন্ন যানজটমুক্ত এলাকাকে সংযুক্ত করেছে। ফলে সহজেই যানজটমুক্ত চলাফেরা করা সম্ভব হচ্ছে। এ ধরনের উদ্যোগ ছাড়াও নিরাপদ নৌ-চলাচল নিশ্চিত, দ্বিতীয় সাবমেরিন কেবলের মাধ্যমে একটি আধুনিক টেলিকমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক তৈরির কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। দেশের মানবসম্পদ উন্নয়নে সামাজিক অবকাঠামো শিক্ষা, প্রশিক্ষণ, গবেষণা, জনস্বাস্থ্য প্রভৃতি উন্নয়নে সরকার আন্তরিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সুতরাং আমরা বলতে পারি, উদ্দীপকটি আমাদের অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবকাঠামোগত অর্থনৈতিক বৈশিষ্ট্য সম্পর্কেই ধারণা দেয়।
ঘ বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সরকার কৃষি ও শিল্পের উন্নয়নসহ প্রাকৃতিক ও মানবসম্পদের ব্যবহার বৃদ্ধি, বেসরকারিকরণ কর্মসূচি গ্রহণ, নানামুখী পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছে। এ প্রেক্ষিতে প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি সঠিক। বাংলাদেশকে একটি উন্নত ও শিল্পসমৃদ্ধ দেশে পরিণত করার জন্য সরকার নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। কৃষি শিল্প উন্নয়ন ছাড়াও অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য সরকার আন্তরিক প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। প্রাকৃতিক সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিতকরণ, রূপকল্প পরিকল্পনা গ্রহণ সরকারি উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের অন্যতম দিক। উদ্দীপকে আমরা অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবকাঠামো উন্নয়নের একটি চিত্র লক্ষ করি। এছাড়াও কৃষি উন্নয়নে উন্নত সার, বীজ, কীটনাশক সরবরাহ, উন্নত চাষ পদ্ধতির ব্যবহার নিশ্চিতকরণ প্রভৃতি কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। শিল্পক্ষেত্রে কর্মসংস্থান বৃদ্ধি, নারীর শিল্পায়ন প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ বৃদ্ধি, দারিদ্র্য কমানোর লক্ষ্যে শিল্পনীতি-২০১০ ঘোষণা করা হয়েছে। বিনিয়োগ বাধা কমানো, করমুক্ত করা, বেসরকারি উৎসাহিত করা, মূলধনের অবাধ প্রবাহ নিশ্চিত করা, বৈদেশিক বাণিজ্য বৃদ্ধি, বিদেশে বাজার সৃষ্টি এবং স্বমনির্ভর শিল্প স্থাপনে সরকারি প্রচেষ্টা লক্ষ করা যাচ্ছে। দেশে বিনিয়োগ বৃদ্ধির জন্য সরকার অনেক উদ্দীপনা ও সহযোগিতামূলক নীতি ঘোষণা করেছে। ফলে দেশি ও বিদেশি বিনিয়োগ অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রাকৃতিক ও মানবসম্পদ উন্নয়নে সরকারি প্রচেষ্টা অনেকটাই প্রশংসনীয়। মানবসম্পদের সঠিক ব্যবহারে গড়ে তোলা হয়েছে নানা প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। সরকারি ও বেসরকারি কর্মসূচির সমন্বয় সাধন, সম্পদের সুষম ব্যবহার ও বণ্টনের জন্য উন্নয়ন পরিকল্পনা ‘রূপকল্প-২০২১’ প্রণয়ন করা হয়েছে। আলোচনায় দেখা যাচ্ছে, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য বাংলাদেশ সরকার নানামুখী প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সরকারি এ প্রচেষ্টার একটি দিক উদ্দীপকে উপস্থাপিত হয়েছে। তাই প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি সঠিক।
প্রশ্ন- ৬ শিল্পখাত ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন
গাজীপুর জেলার ভবানীপুরে জনাব খালেদ মোশাররফ বেশ কিছু গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি গড়ে তুলেছেন। তার এসব ফ্যাক্টরিতে হাজারও মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্যই তিনি এখাতে আরও বিনিয়োগের সম্ভাবনা খুঁজে পেয়েছেন।
ক. সেবা কী? ১
খ. ঊচত প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে কেন? ২
গ. উদ্দীপকে বাংলাদেশের অর্থনীতির কোন খাতের ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. উদ্দীপকে খালেদ মোশাররফের এ খাতে অর্থ বিনিয়োগের কারণটির যৌক্তিকতা তুলে ধর। ৪
ক অর্থনৈতিক যেসব কাজের মাধ্যমে অবস্তুগত দ্রব্য উৎপাদিত হয় অর্থাৎ দৃশ্যমান নয় যা মানুষের বিভিন্ন অভাব পূরণ করে এবং যার বিনিময় মূল্য রয়েছে, তাই সেবা।
খ দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়ন, দারিদ্র্য বিমোচন, শিল্পখাতের দ্রæত বিকাশের জন্য বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ কর্তৃপক্ষ ঊচত স্থাপন করেছে। ঊচত এর পূর্ণরূপ হলো ঊীঢ়ড়ৎঃ চৎড়পবংংরহম তড়হব. অর্থাৎ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল। দেশের শিল্পসমৃদ্ধ অঞ্চলগুলো চিিহ্নত করে ঊচত প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে, যাতে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীরা আকৃষ্ট হয় এবং শিল্পখাতের বিকাশে এগিয়ে আসে। অর্থাৎ শিল্পখাত বিকাশে সার্বিক সহযোগিতা করার জন্যই ঊচত প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।
গ উদ্দীপকে বাংলাদেশের অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ খাত শিল্পখাতের ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে। প্রকৃতি প্রদত্ত সম্পদ বা কাঁচামালের বা প্রাথমিক দ্রব্যকে কারখানাভিত্তিক প্রস্তুত প্রণালির মাধ্যমে মাধ্যমিক দ্রব্য বা চ‚ড়ান্ত দ্রব্যে রূপান্তরিত করাকে শিল্প বলে। উদ্দীপকে গার্মেন্টস কারখানা স্থাপনটি এ শিল্পেরই ইঙ্গিত দেয়। উদ্দীপকে দেখা যায়, খালেদ মোশাররফ গাজীপুরে বেশ কয়েকটি পোশাক কারখানা স্থাপন করেছেন। তার এ পোশাক কারখানায় সাধারণত প্রকৃতি প্রদত্ত সম্পদ যথা : সুতা ও তুলার সর্বোচ্চ ব্যবহার করে কাপড় উৎপাদন করা হয়। এ উৎপাদন কাজটি যন্ত্রের মাধ্যমে সম্পন্ন করা হয়। আবার শিল্পকারখানায় হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়। যেমনটি খালেদ মোশাররফের গার্মেন্টস কারখানায়ও হয়েছে। সুতরাং আমরা বলতে পারি যে, উদ্দীপকে বর্ণিত গাজীপুরে স্থাপিত গার্মেন্টস কারখানাগুলো বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্তর্ভুক্ত শিল্পখাতেরই ইঙ্গিত দেয়।
ঘ উদ্দীপকের খালেদ মোশাররফ দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য গার্মেন্টস খাতে অর্থ বিনিয়োগের সম্ভাবনা দেখতে পেয়েছেন। তার এ উদ্যোগটি দেশের সার্বিক পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে অত্যন্ত যৌক্তিক। বাংলাদেশ তৃতীয় বিশ্বের একটি উন্নয়নশীল দেশ। কৃষি ও শিল্পের উন্নয়নের মাধ্যমে এদেশটি দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সরকার শিল্পখাতে বিনিয়োগে উৎসাহিত করার জন্য দেশের অর্থনৈতিক অবকাঠামো সমৃদ্ধি করার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। উদ্দীপকে খালেদ মোশাররফ গাজীপুরে আরও নতুন গার্মেন্টস করার ইচ্ছা পোষণ করেছেন। তার এ ধরনের ইচ্ছার পেছনে দেশের অর্থনৈতিক অবকাঠামোর উন্নয়ন কাজ করেছে। সরকার দেশের উৎপাদন বৃদ্ধি, পণ্যের উপকরণ ও উৎপাদিত পণ্যের সুষ্ঠুবাজারজাতকরণের লক্ষ্যে সড়ক, রেল নৌপথ, বিদ্যুৎ ও টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা আধুনিক করার উদ্যোগ নিয়েছে। পদ্মা সেতু নির্মাণ প্রকল্প, ঢাকা শহরের যানজট নিরসনে ২৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এলিভেটেড নির্মাণ, নিরাপদ নৌচলাচল নিশ্চিতকরণ, সাবমেরিন কেবলের মাধ্যমে টেলি কমিনিকেশন নেটওয়ার্ক তৈরির কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। এসব কার্যক্রম দেশের বিনিয়োগকারীদের শিল্পবিনিয়োগে আকৃষ্ট করছে। কারণ যোগাযোগ ও যাতায়াত ব্যবস্থা উন্নত শিল্পে সাফল্য অর্জনের অন্যতম শর্ত। এ ব্যাপারে কেউ নিশ্চয়তা পেলে তারা বিনিয়োগে আর কোনো শঙ্কা প্রকাশ করে না। পরিশেষে বলা যায়, উদ্দীপকের শিল্প উদ্যোক্তা খালেদ মোশাররফ বাংলাদেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নের প্রেক্ষিতে শিল্পে বিনিয়োগের যে চিন্তা করেছেন তা অত্যন্ত যৌক্তিক ও যথার্থ।
প্রশ্ন- ৭ কুটির শিল্প
বড়াইগ্রামের কৃষক আনিস মিয়া কৃষি উৎপাদনের মাধ্যমে পরিবারের দৈনন্দিন চাহিদা মেটাতে সক্ষম না হওয়ায় স্থানীয় একটি ঘএঙ থেকে কিছু টাকা ঋণ নিয়ে শাড়ি, লুঙ্গি তৈরির ব্যবসা শুরু করেন। তিনি ও তার স্ত্রী মিলে এ কাজ শুরু করলেও বর্তমানে গ্রামে আরও আটদশ জন তাদের কাজে সহযোগিতা করছে। তাদের কাজের পরিধিও বৃদ্ধি পেয়েছে। তাদের তৈরি জিনিসপত্র বাজারে ব্যাপক প্রশংসা পেয়েছে।
ক. বৃহদায়তন শিল্প কী? ১
খ. বাংলাদেশে বেকারত্বের হার এত বেশি কেন? ২
গ. উদ্দীপকের আনিস মিয়ার দ্বিতীয় কাজটি বাংলাদেশের শিল্পের কোন দিকটি উপস্থাপন করে? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশের অগ্রগতিতে আনিসের গড়ে তোলা শিল্পের গুরুত্ব কতটুকু বলে তুমি মনে কর? মতামত দাও। ৪
ক যেসব শিল্প-কারখানায় বেশি মূলধন ও কাঁচামাল এবং বেশি সংখ্যক শ্রমিক নিয়োগ করে বিপুল পরিমাণ দ্রব্য উৎপাদন করা হয়, তাই বৃহদায়তন শিল্প।
খ প্রয়োজনীয় মূলধনের অভাবে কৃষি ও শিল্পে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে না পারায় বাংলাদেশে বেকারত্বের হার অত্যধিক। বাংলাদেশ একটি জনবহুল দেশ। এদেশে জনসংখ্যা বৃদ্ধির তুলনায় সঞ্চয় কম। এতে বিনিয়োগ কম হয়। ফলে মূলধন গঠনের হার কম। মূলধনের অভাবে দেশে পর্যাপ্ত সংখ্যক শিল্প-কারখানা গড়ে উঠছে না এবং কৃষিখাতের উন্নয়নও ব্যাহত হচ্ছে। ফলে প্রয়োজনীয় কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে না। এ কারণে এদেশের বেকারত্বের হার বেড়ে যাচ্ছে।
গ উদ্দীপকে আনিস মিয়ার দ্বিতীয় কাজ বাংলাদেশের শিল্পের অন্তর্ভুক্ত কুটিরশিল্পের ইঙ্গিত দেয়। সাধারণত অল্প মূলধন নিয়ে পারিবারিক ব্যয়ভার মেটাতে ব্যক্তিগত উদ্যোগে এবং পরিবারের সহযোগিতায় যে শিল্প গড়ে তোলা হয়, তাই কুটিরশিল্প। দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য রক্ষা ও সংরক্ষণে এ শিল্পের গুরুত্ব অপরিসীম। উদ্দীপকের বর্ণনায় আমরা এ ধরনের বেশিক্ষেত্রেরই ইঙ্গিত পাচ্ছি। উদ্দীপকে দেখা যায়, আনিস মিয়া সংসারের ব্যয়ের জন্য আয় বাড়াতে কৃষির পাশাপাশি শাড়ি, লুঙ্গি, মোরা, ঝুড়ি প্রভৃতি তৈরির কাজ শুরু করেন। তিনি তার স্ত্রী ও সন্তানদের সহযোগিতায় এ কাজটি করছেন। তা কাজের পরিধি বৃদ্ধির ফলে এখানে আরও কিছু লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে। তাছাড়া তিনি যেসব সামগ্রী তৈরি করছেন, তা দেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্য সংরক্ষণেও অবদান রাখছে। অর্থাৎ আনিস মিয়ার কাজের ধরন এবং বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ করে বলা যায়, তার কাজটি কুটিরশিল্পের অন্তর্ভুক্ত।
ঘ বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির ক্ষেত্রে আনিস মিয়ার কুটিরশিল্প অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করে বলে আমি মনে করি। বাংলাদেশের বর্তমান আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটে কুটিরশিল্প স্থাপন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ। এ কাজের মাধ্যমে নিজেদের পারিবারিক অভাব পূরণের পাশাপাশি অন্যদের কর্মসংস্থাপনের ব্যবস্থা করা সম্ভব। যা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করে। কুটিরশিল্পে স্বল্প পুঁজির প্রয়োজন হয় এবং অধিক কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা সম্ভব হয়। এটি সম্পূর্ণ শ্রমনির্ভর শিল্প। বাংলাদেশের অধিকাংশ কৃষক একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত বেকার থাকে। কুটিরশিল্প তাদের সহায়ক পেশা হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা রাখে। উদ্দীপকের আনিস মিয়া তার পারিবারিক চাহিদা মেটাতে কৃষির পাশাপাশি কুটিরশিল্প গড়ে তুলেছেন, যা তাকে স্বাবলম্বী করেছে এবং গ্রামের অন্যদেরও স্বাবলম্বী করতে ভ‚মিকা রেখেছে। কুটিরশিল্প সাধারণত স্থানীয় কাঁচামাল ও উপকরণ দ্বারা পরিচালিত হয়। ফলে দেশের মধ্যে প্রাপ্ত কাঁচামাল ও অন্যান্য প্রাকৃতিক সম্পদের সদ্বব্যহার সম্ভব হয়। এটি একটি স্বল্প পুঁজিনির্ভর বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ। এ ধরনের কাজের মাধ্যমে আমাদের বিপুল সংখ্যক বেকার ও অর্ধ-বেকারদের আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টি করা সম্ভব। এ কাজে সফলতা পেলে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাগণ বৃহৎশিল্প স্থাপনে অনুপ্রাণিত হবেন। ফলে দেশের অর্থনীতি ত্বরান্বিত হবে। পরিশেষে বলা যায়, কুটিরশিল্প এদেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য সংরক্ষণের জন্য যেমন জরুরি, তেমনি দেশের অগ্রগতিকে এগিয়ে নিতে এ ধরনের শিল্প স্থাপনে উদ্যোগ নেওয়াও জরুরি।
প্রশ্ন- ৮ কৃষির আধুনিকায়ন
চরমণি এলাকার অধিকাংশ লোক কৃষক। কৃষিকাজই তাদের জীবিকা অর্জনের প্রধান উপায়। কিন্তু এখানকার বেশিরভাগ পরিবার দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করছে। কারণ জানতে চাইলে তারা বলেন, সারাবছর কঠোর পরিশ্রম করে চাষাবাদ করলেও বছর শেষে তারা আশানুরূপ ফসল উৎপাদনে ব্যর্থ হচ্ছেন। হালের বলদ, মই; তাদের চাষের উপকরণ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। তাছাড়া ফসলি জমিতে কীটনাশক ব্যবহারের কোনো সুযোগ না থাকায় তারা পর্যাপ্ত ফসল উৎপাদনে ব্যর্থ হচ্ছেন।
ক. কৃষি কী? ১
খ. সনাতন পদ্ধতিতে চাষাবাদ বলতে কী বোঝায়? ২
গ. চরমণি এলাকার কৃষকেরা কোন পদ্ধতিতে চাষাবাদ করলে পর্যাপ্ত ফসল উৎপাদন করতে সক্ষম হবে? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. বাংলাদেশের অর্থনীতির চাকা সচল করতে সকল কৃষকের এই পদ্ধতিতে চাষাবাদ করা আবশ্যক-তুমি কি বক্তব্যটি সমর্থন কর? যুক্তি দাও। ৪
ক কৃষি হচ্ছে এরূপ সৃষ্টি সম্বন্ধীয় একটি কাজ, যা ভ‚মিকর্ষণ, বীজ বপন, শস্য-উদ্ভিদ পরিচর্যা, ফসল কর্তন ইত্যাদি থেকে শুরু করে উৎপাদিত পণ্য গুদামজাতকরণ, সংরক্ষণ ও বাজারজাতকরণ পর্যন্ত বিস্তৃত।
খ সনাতন পদ্ধতিতে চাষাবাদ বলতে কৃষিকাজে আধুনিক প্রযুক্তির পরিবর্তে মান্ধাতার আমলের হালের বলদ দিয়ে আর প্রকৃতিনির্ভর হয়ে চাষাবাদ করা বোঝায়। হালের বলদ এদেশের সনাতন চাষ পদ্ধতির প্রধান উপকরণ। প্রকৃতির ওপর নির্ভর করেই এদেশের চাষ ব্যবস্থা পরিচালিত হতো। কৃষিক্ষেত্রে আধুনিক যন্ত্রপাতি, সার, কীটনাশক ব্যবহার না করে প্রকৃতিনির্ভর চাষাবাদ পদ্ধতিকে সনাতন চাষাবাদ পদ্ধতি বলে।
গ চরমণি এলাকার কৃষকেরা আধুনিক বা প্রযুক্তিগত পদ্ধতিতে চাষাবাদ করলে পর্যাপ্ত ফসল উৎপাদন করতে সক্ষম হবে। উদ্দীপকে কৃষি বাংলাদেশের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি। তাই দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য কৃষির আধুনিকীকরণ অত্যন্ত জরুরি। কৃষি আধুনিকীকরণ ছাড়া উৎপাদন ক্ষেত্রে প্রত্যাশা পূরণ করা সম্ভব নয়। আর এটি চরমণি এলাকার কৃষকদের জন্যও সমভাবে প্রযোজ্য। উদ্দীপকে চরমণি এলাকার কৃষকেরা হাড়ভাঙা পরিশ্রম করেও প্রত্যাশা অনুযায়ী ফসল পাচ্ছেন না। কারণ তারা সনাতন পদ্ধতিতে চাষাবাদ করছেন। কৃষিক্ষেত্রে উন্নত বীজ, সার, কীটনাশক, বা কৃত্রিম সেচ পদ্ধতির ব্যবহার করা তাদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। তারা যদি আধুনিক পদ্ধতিতে কলের লাঙল দিয়ে চাষাবাদ করে তাহলে এদিকটিতে উৎপাদন খরচ কম হবে। অন্যদিকে কৃষিতে উন্নত বীজ, সার, কীটনাশক বা কৃত্রিম সেচ পদ্ধতির ব্যবহার করলে উৎপাদন বহুগুণে বেড়ে যাবে। কেননা কৃষির আধুনিক এসব উপকরণ কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। সুতরাং বলা যায় যে, চরমণি এলাকার কৃষকেরা যদি আধুনিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ করে তাহলে তারা পর্যাপ্ত ফসল উৎপাদনে সক্ষম হবে।
ঘ বাংলাদেশের অর্থনীতি কৃষিনির্ভর হওয়ায় কৃষির আধুনিকীকরণ অত্যন্ত জরুরি। এ প্রেক্ষিতে প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি আমি সমর্থন করি। বাংলাদেশের প্রায় ৭৫ ভাগ মানুষের জীবন-জীবিকার প্রধান মাধ্যম হলো কৃষি, যা অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি হিসেবে বিবেচিত। তাই কৃষি উন্নয়ন ব্যতীত দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন প্রত্যাশা করা যায় না। কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধিতে বাংলাদেশের সকল কৃষকের আধুনিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ করা অত্যন্ত জরুরি। উদ্দীপকের কৃষকেরা সনাতন পদ্ধতিতে চাষাবাদ করে বলে তারা প্রত্যাশা অনুযায়ী ফসল উৎপাদন করতে ব্যর্থ হচ্ছে। ফলে জাতীয় আয়ে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। তাই দেশের উন্নয়নের স্বার্থে কৃষিতে আধুনিক পদ্ধতির ব্যবহার অত্যাবশ্যক। কৃষিতে উন্নত সার, বীজ, কীটনাশক ব্যবহৃত হলে তা উৎপাদন বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে, যা জাতীয় বৃদ্ধিতে ভ‚মিকা রাখবে। দেশের জাতীয় আয়ে কৃষিখাতের অবদান সর্বাধিক। তাই এ খাতের উন্নয়ন ব্যতীত উন্নয়ন প্রত্যাশা করা অযৌক্তিক। কৃষি এদেশের অধিকাংশ শিল্পের কাঁচামাল যোগান দেয়। তাই কৃষির অগ্রগতির সাথে শিল্পের উন্নয়ন জড়িয়ে রয়েছে। তাছাড়া কৃষির উন্নয়ন ঘটলে বেকার সমস্যার যেমন সমাধান হবে, তেমনি পরিবারের আয়-উপার্জন বৃদ্ধি পেয়ে মানুষের জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধি পাবে। তখন দেশের উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে। কারণ দেশে অর্থনৈতিক সমস্যাগুলোর সমাধান হলে দেশ ক্রমান্বয়ে উন্নতির দিকে এগিয়ে যাবে। পরিশেষে বলা যায়, কৃষি যেহেতু দেশের অর্থনীতির মেরুদণ্ড। তাই কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধিতে কৃষকদের আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহার অত্যন্ত জরুরি বলে আমি মনে করি।
প্রশ্ন- ৯ কৃষিখাতের উপখাত
বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত সুন্দরবনের পাশ ঘেঁষে বয়ে যাওয়া পশুর নদীর তীরে বসবাস করছে বেশ-কয়েকটি পরিবার। এসব পরিবারের জীবিকার মাধ্যম হচ্ছে বন থেকে কাঠ কেটে বাজারে বিক্রি করা এবং বনের নানা উপকরণ ব্যবহার করে রাবার, গাম-মোম-মধু-তৈরি করা। এসব কাজ করে তারা যেমন নিজেদের জীবিকার সংস্থান করছে, তেমনি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নেও ভ‚মিকা রাখছে।
ক. বাংলাদেশে আধুনিক শিল্পনীতি ঘোষণা করা হয় কত সালে? ১
খ. বাংলাদেশের অর্থনীতি কীভাবে গড়ে উঠেছে? ২
গ. উদ্দীপকে ইঙ্গিতকৃত উপখাতটি দেশের অর্থনীতিতে কী ধরনের ভ‚মিকা রাখছে? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. উদ্দীপকটি বাংলাদেশের অর্থনীতির কৃষিখাতকে পরিপূর্ণভাবে উপস্থাপন করে না মন্তব্যটি বিশ্লেষণ কর। ৪
ক বাংলাদেশের আধুনিক শিল্পনীতি ঘোষণা করা হয় ২০১০ সালে।
খ বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বিরাজমান শাখা বা বিভাগসমূহ নিজ নিজ পরিমণ্ডলে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সম্পাদন করে থাকে এবং এদের সমষ্টিগত অবদানের দ্বারা দেশের অর্থনীতির ভিত্তি গড়ে উঠেছে। বাংলাদেশের অর্থনীতির বিভাগ শাখাসমূহকে তিনটি খাতে বিভক্ত করা হয়েছে, যাদের রয়েছে বিভিন্ন ধরনের উপখাত। এ খাতগুলো হচ্ছে- কৃষি, শিল্প ও সেবাখাত এদের সমষ্টিগত অবদানের দ্বারা দেশের অর্থনীতি গড়ে উঠেছে।
গ উদ্দীপকে বাংলাদেশের অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ খাত কৃষির অন্তর্ভুক্ত উপখাত বনজ সম্পদের ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে যার অবদান অপরিসীম। একটি দেশের প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষার্থে বনজসম্পদের গুরুত্ব যেমন অপরিসীম, তেমনি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে রয়েছে এর ব্যাপক অবদান। আমাদের দেশের মোট ভ‚খণ্ডের প্রায় ১৭ ভাগ জুড়ে রয়েছে বনাঞ্চল। প্রয়োজনের তুলনায় এর পরিমাণ কম হলেও এর অবদান কম নয়। বাংলাদেশের বনাঞ্চলের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলোÑ সুন্দরবন, মধুপুর ও ভাওয়ালগড়ের বনাঞ্চল, গাজীপুরের গজারি ও শালবন প্রভৃতি। এসব বনাঞ্চলে রয়েছে বাঁশ, বেত, শাল, সেগুন, গর্জন, সুন্দরি, গরান, গেওয়া, গামারি, কড়াই উল্লেখযোগ্য। এসব গাছ থেকে কাঠ, মধু, রাবার, গাম, তৈল, শণ, মোম প্রভৃতি সংগ্রহ করে আমরা যেমন : আমাদের প্রয়োজন মেটাই, তেমনি এগুলো থেকে আয়কৃত অর্থ দেশের জাতীয় আয় বৃদ্ধিতেও ভ‚মিকা রাখছে। এসব কাজে সম্পৃক্ত মানুষ নিজেদেরকে বেকারত্বের অভিশাপ থেকে মুক্ত করতে সক্ষম হয়েছে। উদ্দীপকে আমরা এ বনজ সম্পদের এরকমই ভ‚মিকা লক্ষ করি। তাছাড়া ২০১২-১৩ এবং ২০১৩-১৪ অর্থবছরে জাতীয় আয়ে কৃষিখাতের অন্তর্ভুক্ত বনজসম্পদের অবদান ছিল যথাক্রমে ১.৭৬ এবং ১.৭৪। অর্থাৎ বনজসম্পদ মানুষের জ্বালানি ও আসবাবপত্রের প্রয়োজন মিটিয়ে, কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করে এবং জাতীয় আয় বৃদ্ধিতে ভ‚মিকা রেখে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করছে।
ঘ বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রধান ও গুরুত্বপূর্ণ একটি খাত হিসেবে এটি বিভিন্ন উপখাত নিয়ে গঠিত, যার একটি উপখাতের বর্ণনা আমরা উদ্দীপকে লক্ষ করি। তাই প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি সঠিক। কৃষি বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রাণ। কৃষিখাতই এদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধিতে ভ‚মিকা রাখছে। এ খাতটি নানা উপখাতের সমন্বয়ে গঠিত। যেমন : শস্য ও শাকসবজি প্রাণিসম্পদ, মৎস্যসম্পদ এবং বনজসম্পদের একটি আংশিক ধারণা লাভ করি। কৃষি বলতে সাধারণত ফসল উৎপাদনকে বোঝালেও মাছ ও মৌমাছি চাষ, পশুপালন ও বনায়ন কৃষি খাতের অন্তর্ভুক্ত। আমাদের দেশের কৃষকেরা শস্যের মধ্যে ধান, গম, পাট, ডাল, আখ, তামাক, চা, তৈলবীজ আর শাকসবজির মধ্যে আলু, শিম, লাউ, মটরশুঁটি, পটোল, করলা, বেগুন ইত্যাদি উৎপাদন করে। ২০১২-১৩ অর্থবছরে কৃষিখাতের এসব উপাদান জাতীয় আয়ে ৯.৪৯ শতাংশ ভ‚মিকা রাখে। প্রাণিসম্পদও কৃষির একটি উল্লেখযোগ্য উপখাত। আমাদের দেশে পারিবারিক ও বাণিজ্যিকভাবে হাঁস-মুরগি, গরু, ছাগল, ভেড়া, মহিষ, ঘোড়া, কবুতর, পাখি পালন করা হয়। এদের মাংস, ডিম, দুধ, পালক, চামড়া দেশের জাতীয় আয়ে অবদান রাখছে। মৎস্যসম্পদ দেশের গুরুত্বপূর্ণ একটি কৃষি উপখাত। এদেশের অভ্যন্তরীণ ও সামুদ্রিক উৎস থেকে প্রজাতির মাছ পাওয়া যায়। উদ্দীপকে আমরা কৃষিখাতের উল্লেখকৃত উপখাতগুলোর কোনো বর্ণনা পাই না। এখানে শুধু বনজসম্পদের একটি সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দেওয়া হয়েছে। আলোচনার প্রেক্ষিতে এটি স্পষ্ট যে, উদ্দীপকটি বাংলাদেশের কৃষিখাতকে পরিপূর্ণভাবে উপস্থাপনের জন্য যথেষ্ট নয়।
প্রশ্ন- ১০ সেবাখাত ও শিল্পখাত
এলাকার উচ্চ শিক্ষিত মানুষ হিসেবে জনাব সামছুল হুদা বরাবরই ছিলেন সবার কাছে সম্মান ও শ্রদ্ধার পাত্র। তিনি সারাজীবন মানুষের মধ্যে জ্ঞান বিলিয়েছেন। শিক্ষিত হিসেবে তার কর্তব্য পালনে তিনি কখনো পিছপা হননি। নিজের ছেলেকে তিনি বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠে ভর্তি করিয়েছেন। সবার ধারণা ছিল শিক্ষক বাবার সন্তান হিসেবে রহিমও একজন শিক্ষক হবে। কিন্তু পড়াশোনা শেষ করে রহিম নিজ এলাকায় ক্ষুদ্র শিল্প গড়ে তুলে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
ক. কোন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে একটি সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে? ১
খ. কৃষি উন্নয়নের জন্য শিল্পায়ন জরুরি কেন? ২
গ. জনাব সামছুল হুদার পেশাটি অর্থনীতির কোন খাতের অন্তর্ভুক্ত? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. উদ্দীপকের রহিম বাংলাদেশের বেকারত্ব দূরীকরণে ও জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে ভ‚মিকা রাখবে- তুমি কি বক্তব্যটি সমর্থন কর? যুক্তিসহ উপস্থাপন কর। ৪
ক ‘রূপকল্প ২০২১’-বাস্তবায়নের মাধ্যমে একটি সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
খ শিল্পায়নের মাধ্যমে কৃষির আধুনিকীকরণ সম্ভব। তাই কৃষি উন্নয়নে শিল্পায়নের ওপর জোর দেওয়া উচিত। বাংলাদেশ কৃষিপ্রধান দেশ। এদেশের ৭৫ ভাগ মানুষ সরাসরি কৃষির ওপর নির্ভরশীল। তাছাড়া খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, দারিদ্র্য বিমোচন, কর্মসংস্থান বৃদ্ধি প্রভৃতি কৃষির অগ্রগতির সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত। তাই কৃষিতে উন্নত সার, বীজ, কীটনাশক ব্যবহার এবং কৃত্রিম সেচের ব্যবস্থা করে উৎপাদন বাড়ানো জরুরি। কিন্তু এগুলো সবই শিল্পের মাধ্যমে উৎপাদিত হয়। তাই কৃষি উন্নয়নের জন্য এদেশে শিল্পায়ন জরুরি।
গ জনাব সামছুল হুদার পেশাটি অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ একটি খাত সেবা খাতের অন্তর্ভুক্ত। অর্থনৈতিক যেসব কাজের মাধ্যমে অবস্তুগত দ্রব্য উৎপাদিত হয়, অর্থাৎ দৃশ্যমান নয়, যা মানুষের বিভিন্ন অভাব পূরণ করে এবং যার বিনিময় মূল্য রয়েছে তাকে সেবা বলে। জনাব সামছুল হুদার শিক্ষকতার কাজটি সামাজিক সেবা প্রদান করেছে। উদ্দীপকের জনাব সামছুল হুদা একজন শিক্ষক। তিনি জনগণকে শিক্ষার আলোয় আলোকিত করার মহান দায়িত্বটি পালন করেছেন। তার এ কাজের বিনিময়ে সরকার তাকে নির্দিষ্ট পারিশ্রমিক দিচ্ছেন। অর্থাৎ সরকার শিক্ষা সেবার ন্যায় অন্যান্য সেবা অর্থের বিনিময়ে জনগণের কাছে সরবরাহ করছে এবং জনগণ এসব সেবা ক্রয় করে অভাব পূরণ করছে। জনাব সামছুল হুদা দেশের একক বৃহত্তম খাত হিসেবে সেবা খাতের সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত। বাংলাদেশে সেবাখাতের অন্তর্ভুক্ত বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে পরিবহন, যোগাযোগ, ব্যাংকিং বিমা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সামাজিক সেবা, লোক প্রশাসন ও প্রতিরক্ষা প্রভৃতি। জনাব সামছুল হুদা যেহেতু শিক্ষার সাথে জড়িত, তাই তার কাজটি সেবা খাতের অন্তর্ভুক্ত।
ঘ বাংলাদেশের বেকারত্ব দূরীকরণ এবং জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে উদ্দীপকের রহিমের গড়ে তোলা ক্ষুদ্র শিল্প কার্যক্রম ভ‚মিকা রাখবে বলে আমি মনে করি। বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে ক্ষুদ্র শিল্প গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করে। মানুষের দারিদ্র্য বিমোচন, জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন, বেকারত্ব দূরীকরণে রহিমের গড়ে তোল্য ক্ষুদ্রায়তন শিল্প প্রতিষ্ঠানটি কার্যকর ভ‚মিকা পালনে সক্ষম হবে। উদ্দীপকের রহিম তার নিজ এলাকায় যে শিল্পপ্রতিষ্ঠানটি গড়ে তুলেছে, তা ঐ এলাকার বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান হিসেবে ভ‚মিকা রাখবে। বেকারত্বের অভিশাপ থেকে মুক্তি পেয়ে এসব জনগোষ্ঠী নিজেদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন করতে পারবে। তার শিল্পে উৎপাদিত পণ্য স্থানীয় বাজারের চাহিদা মিটিয়ে দেশের অন্যান্য অঞ্চলে এবং বিদেশে রপ্তানি করার ফলে মোট দেশজ উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে এবং জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন হবে। দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়ন, দারিদ্র্য বিমোচন, প্রাকৃতিক সম্পদের সদ্ব্যবহার, বিদেশি নির্ভরতা হ্রাসকরণ নারীর কর্মসংস্থান বৃদ্ধি, বেকারত্ব দূরীকরণে রহিমের গড়ে তোলা ক্ষুদ্র শিল্পের ভ‚মিকা অপরিসীম। পরিশেষে বলা যায়, একজন সফল উদ্যোক্তা হিসেবে রহিমের উদ্যোগটি বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে অত্যন্ত প্রশংসনীয় এবং এ ধরনের শিল্প অবশ্যই বেকারত্ব দূরীকরণ ও জনগণের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে সক্ষম বলে আমি মনে করি।
প্রশ্ন- ১১ কৃষি ও শিল্পের পারস্পরিক নির্ভরশীলতা
জমির একজন কৃষক। মান্ধাতা আমলের চাষ পদ্ধতি ছেড়ে বর্তমানে তিনি উচ্চ ফলনশীল ধান চাষ করেন, গভীর নলক‚পের মাধ্যমে জমিতে সেচ দেন। উৎপাদিত কৃষিপণ্য, পাটের বস্তায় করে বাজারে সরবরাহ করেন। এভাবে তিনি এলাকাবাসীর চাহিদা পূরণ করে জাতীয় অর্থনীতিতে ভ‚মিকা রাখছেন।
ক. আমাদের দেশের ক্ষুদ্রশিল্পের ভিত্তি কী? ১
খ. শিল্পনীতি ২০১০ ঘোষণা করা হয়েছে কেন? ২
গ. উদ্দীপকে অর্থনীতির কী ধরনের সম্পর্ক ফুটে উঠেছে? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. তুমি কি মনে কর, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে উদ্দীপকে ইঙ্গিতকৃত দুটি বিষয়ের উন্নয়নের ওপরই গুরুত্ব দেওয়া উচিত? মতামতের পক্ষে যুক্তি দাও। ৪
ক আমাদের দেশের ক্ষুদ্র শিল্পের ভিত্তি হলো কৃষি।
খ দেশের শিল্পায়নের গতিকে বেগবান করতে শিল্পনীতি ২০১০ ঘোষণা করা হয়েছে। দেশের উৎপাদনশীল কর্মসংস্থান সৃষ্টি, নারীকে শিল্পায়ন প্রক্রিয়ার মূল ধারায় নিয়ে আসা, দারিদ্র দূরীকরণ এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের প্রসার ঘটানোর উদ্দেশ্যে সরকার ২০১০ সালে আধুনিক শিল্পনীতি ঘোষণা করে।
গ উদ্দীপকে বাংলাদেশের অর্থনীতির দুটি গুরুত্বপূর্ণ খাত কৃষি এবং শিল্পের পারস্পরিক নির্ভরশীলতার সম্পর্ক ফুটে উঠেছে। কৃষি ও শিল্প দুটি খাতই দেশের অর্থনীতির চাকাকে সচল করতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। তাই এটি দুটি খাত একে অপরের ওপর নির্ভরশীল। কৃষিখাতের উন্নতি ও আধুনিকায়নের জন্য বিভিন্ন কৃষি সরঞ্জাম ও সারের যোগান দেয় শিল্প। আবার শিল্পের প্রসারের জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচামাল ও শিল্পজাত দ্রব্যের বাজার সৃষ্টিতে সহায়তা করে কৃষিখাত উদ্দীপকে কৃষি ও শিল্পের এ ধরনের সম্পর্কই পরিলক্ষিত হচ্ছে। উদ্দীপকে দেখা যায়, জমির উচ্চফলনশীল ধান উৎপাদন করতে গিয়ে গভীর নলক‚পের মাধ্যমে সেচের ব্যবস্থা করেছেন। এর ফলে তিনি অধিক উৎপাদন সক্ষম হয়েছেন। এখানে গভীর নলক‚প শিল্পে উৎপাদিত পণ্য। আবার শিল্পের ভিত্তি হিসেবে যে কৃষি কাজ করে উদ্দীপকে সেটিও স্পষ্ট। যেমন : শিল্পের মাধ্যমে উৎপাদিত বস্তার মূল উপকরণ হলো পাট, যা কৃষিকাজ থেকে উৎপাদিত হয়েছে। অর্থাৎ এদেশের উল্লেখযোগ্য শিল্প যেমন : পাট, চা, চামড়া, চিনি ও কাগজ প্রভৃতি শিল্পের প্রধান কাঁচামাল হিসেবে কৃষিজাত পণ্য ব্যবহৃত হয়। আবার কৃষির আধুনিকায়নের মাধ্যমে খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করতে পারলে আমদানি ব্যয় বাঁচবে, যা শিল্পোন্নয়নে ব্যয় হবে। উদ্দীপকে আমরা কৃষি ও শিল্প উন্নয়নের এই পারস্পরিক নির্ভরশীলতার সম্পর্কই লক্ষ করি।
ঘ আমি মনে করি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য উদ্দীপকে ইঙ্গিতকৃত কৃষি এবং শিল্প দুটি খাতের উন্নয়নের ওপরই সমানভাবে গুরুত্ব দেওয়া উচিত। বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে কৃষি হলো অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মূল চালিকাশক্তি এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের মূল চাবিকাঠি, কেননা এদেশের অর্থনৈতিক কাঠামো গড়ে উঠেছে কৃষি কার্যক্রমকে কেন্দ্র করে। অন্যদিকে বিশ্বের সাথে তাল মিলাতে শিল্পায়নের গতিকে ত্বরান্বিত করতে শিল্পের ভ‚মিকা অপরিসীম। এককথায় কৃষি উন্নয়নের জন্যই শিল্পোন্নয়ন জরুরি। উদ্দীপকে আমরা কৃষি ও শিল্পের পারস্পরিক সম্পর্ক লক্ষ করি। এ প্রেক্ষিতে এটি স্পষ্টতই যে, কৃষি এবং শিল্পের যুগপৎ উন্নয়নই দেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করতে পারে। বাংলাদেশের বিপুল জনগোষ্ঠীর খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ দারিদ্র্য দূরীকরণ, জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন, কর্মসংস্থান বৃদ্ধি ইত্যাদি কৃষির অগ্রগতির সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত। কিন্তু কৃষি প্রকৃতির ওপর নির্ভরশীল বলে অস্থিতিশীল অর্থনীতি নির্দেশ করে না। কারণ এদেশে প্রতিবছর বন্যা, ঘূর্ণিঝড় সাইক্লোন, জলোচ্ছ¡াস প্রভৃতি কারণে কৃষিক্ষেত্রে উৎপাদন অনিশ্চিত থাকে। তাই বর্তমানে মুক্তবাজার অর্থনীতি এবং বিশ্বায়নের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে আমাদের দেশের সার্বিক উন্নয়নের স্বার্থে শিল্পায়িত অর্থনীতি গড়ে তোলা প্রয়োজন। কেননা শিল্পায়নের মাধ্যমে কৃষির আধুনিকীকরণ, প্রাকৃতিক সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার, বিদেশের ওপর নির্ভরশীলতা হ্রাসের পাশাপাশি শক্তিশালী প্রতিরক্ষার ব্যবহার গড়ে তোলা সম্ভব। ২০২১ সালের মধ্যে একটি সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়ে তোলার লক্ষ্যে কৃষিখাতের যেমন উন্নয়ন জরুরি, তেমনি শিল্পখাতেরও ব্যাপক উন্নয়ন করতে হবে। তাই কৃষি ক্ষেত্রে ভর্তুকি প্রদান, সেচের জন্য নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ কৃষিঋণের প্রবাহ বৃদ্ধি, প্রতিক‚ল আবহাওয়া ও লবণাক্ততা সহিষ্ণু বীজ উদ্ভাবন অত্যন্ত জরুরি। অন্যদিকে কৃষিভিত্তিক শিল্পের বিকাশে বিদ্যুৎসহ অবকাঠামোগত খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি করা দরকার। উপরিউক্ত আলোচনায় এটি স্পষ্ট প্রতীয়মান হয় যে, বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশের উন্নয়নের লক্ষ্যে কৃষি এবং শিল্পে উভয় খাতেরই উন্নয়ন জরুরি।
জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন \ ১ \ কোথায় আদমজী জুটমিল স্থাপিত হয়?
উত্তর : আদমজী জুটমিল নারায়ণগঞ্জে স্থাপিত হয়।
প্রশ্ন \ ২ \ ইংরেজরা এদেশকে শাসন করেছে কত বছর?
উত্তর : ইংরেজরা এদেশকে শাসন করেছে প্রায় ২০০ বছর।
প্রশ্ন \ ৩ \ অর্থনৈতিকভাবে বাংলাদেশ কোন ধরনের দেশ?
উত্তর : অর্থনৈতিকভাবে বাংলাদেশ নিম্ন আয়ের উন্নয়নশীল দেশ।
প্রশ্ন \ ৪ \ মোট শ্রমশক্তির কত শতাংশ শিল্পখাতে নিয়োজিত?
উত্তর : মোট শ্রমশক্তির ১৭.৬৪ শতাংশ শিল্পখাতে নিয়োজিত।
প্রশ্ন \ ৫ \ চলতি আয়ে বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু জিডিপি কত?
উত্তর : চলতি আয়ে বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু জিডিপি ১৩১৪ মার্কিন ডলার।
প্রশ্ন \ ৬ \ বাংলাদেশে বর্তমানে সাক্ষরতার হার কত?
উত্তর : বাংলাদেশে বর্তমানে সাক্ষরতার হার ৫৭.৯ শতাংশ।
প্রশ্ন \ ৭ \ ২০১৩-১৪ অর্থবছরে সার্বিক শিল্পখাতের মধ্যে কোন খাতের অবদান সর্বোচ্চ?
উত্তর : সার্বিক শিল্পখাতের মধ্যে ম্যানুফ্যাকচারিং খাতের অবদান সর্বোচ্চ।
প্রশ্ন \ ৮ \ বাংলাদেশের অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ খাত কোনটি?
উত্তর : কৃষি বাংলাদেশের অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ খাত।
প্রশ্ন \ ৯ \ ২০১৩-১৪ অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদে কৃষির অবদান কত?
উত্তর : ২০১২-১৩ অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদে কৃষির অবদান ১৩ শতাংশ।
প্রশ্ন \ ১০ \ বাংলাদেশের অর্থনীতির খাত কয়টি?
উত্তর : বাংলাদেশের অর্থনীতির খাত তিনটি।
প্রশ্ন \ ১১ \ ঝচগ-এর পূর্ণরূপ কী?
উত্তর : ঝচগ-এর পূর্ণরূপ হলো ঝরহমষব ঢ়ড়রহঃ গড়ড়ৎরহম।
প্রশ্ন \ ১২ \ প্রযুক্তিগত উৎপাদন কী?
উত্তর : আধুনিক যন্ত্রপাতি এবং উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে যে উৎপাদন করা হয়, তাই প্রযুক্তিগত উৎপাদন।
প্রশ্ন \ ১৩ \ ২০১১-১২ অর্থবছরে সার্বিক সেবাখাতে কোনটির অবদান সর্বাধিক?
উত্তর : ২০১২-১৩ অর্থবছরে সার্বিক সেবাখাতে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অবদান ছিল সর্বাধিক?
প্রশ্ন \ ১৪ \ ২০১২-১৩ অর্থবছরে সার্বিক সেবাখাতে কোনটির অবদান সর্বাধিক।
উত্তর : ২০১২-১৩ অর্থবছরে সার্বিক সেবাখাতে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অবদান ছিল সর্বাধিক।
প্রশ্ন \ ১৫ \ ‘রূপকল্প ২০২১’ কী?
উত্তর : অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য সরকারি ও বেসরকারি কর্মসূচির সমন্বয় সাধন, সম্পদের সুষম বণ্টন ও ব্যবহারের জন্য বাস্তবায়নযোগ্য যে উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়, তাই ‘রূপকল্প-২০২১’।
প্রশ্ন \ ১৬ \ বর্তমান বাংলাদেশের লোকসংখ্যা কত?
উত্তর : বর্তমান বাংলাদেশের লোকসংখ্যা ১৪ কোটি ৯৭ লক্ষ ৭২ হাজার ৩৬৪ জন। (২০১১ সালের হিসাব অনুযায়ী)
প্রশ্ন \ ১৭ \ বাণিজ্য ঘাটতি কী?
উত্তর : একটি দেশের আমদানি ব্যয় রপ্তানি আয়ের থেকে বেশি হলে, যে ঘাটতির সৃষ্টি হয়, তাই বাণিজ্য ঘাটতি।
প্রশ্ন \ ১৮ \ দেশের মোট শ্রমশক্তির কত শতাংশ কৃষিকাজে নিয়োজিত?
উত্তর : দেশের মোট শ্রমশক্তির ৪৭.৫ শতাংশ কৃষিকাজে নিয়োজিত?
প্রশ্ন \ ১৯ \ ক্ষুদ্রায়তন শিল্প কয়ভাগে বিভক্ত?
উত্তর : ক্ষুদ্রায়তন শিল্প ২ ভাগে বিভক্ত।
প্রশ্ন \ ২০ \ শিল্পনীতি-২০১০-এর প্রধান উদ্দেশ্য কী?
উত্তর : শিল্পনীতি-২০১০-এর প্রধান উদ্দেশ্য হলো কর্মসংস্থান বৃদ্ধি, শিল্পায়নে নারীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধি এবং দারিদ্র্য কমিয়ে আনা।
প্রশ্ন \ ২১ \ বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদ কতটি খাত নিয়ে গঠিত?
উত্তর : বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদ ১৫টি খাত নিয়ে গঠিত।
প্রশ্ন \ ২২ \ বাংলাদেশে খাদ্য ঘাটতি ও পুষ্টিহীনতার প্রধান কারণ কী?
উত্তর : জনসংখ্যার আধিক্য বাংলাদেশের খাদ্য ঘাটতি ও পুষ্টিহীনতার প্রধান কারণ।
প্রশ্ন \ ২৩ \ বিনিয়োগ বৃদ্ধির জন্য সরকার কী নীতি ঘোষণা করেছে?
উত্তর : বিনিয়োগ বৃদ্ধির জন্য সরকার উদ্দীপনামূলক ও সহযোগিতা-মূলক নীতি ঘোষণা করেছে।
প্রশ্ন \ ২৪ \ বাংলাদেশের বর্তমান মাথাপিছু আয় কত?
উত্তর : বাংলাদেশের বর্তমান মাথাপিছু আয় ১৩১৪ মার্কিন ডলার।
প্রশ্ন \ ২৫ \ ঊচত কী?
উত্তর : বাংলাদেশের রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলসমূকে সংক্ষেপে ঊচত বলা হয়।
প্রশ্ন \ ২৬ \ ২০১০-২০২১ সালের জন্য প্রণীত বাংলাদেশ প্রেক্ষিত পরিকল্পনা রূপরেখার মৌলিক উদ্দেশ্য কী?
উত্তর : উচ্চতর প্রবৃদ্ধি অর্জন, দারিদ্র্য-দূরীকরণ, বাংলাদেশকে একটি মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করা এবং আঞ্চলিক বৈষম্য দূর করা।
অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন \ ১ \ কুটিরশিল্প বলতে কী বোঝ?
উত্তর : কুটির বা গৃহে পারিবারিক ভিত্তিতে স্বল্প মূলধনের যে শিল্প পরিচালিত হয় তাকে কুটিরশিল্প বলে। বাংলাদেশের কারখানা আইন অনুযায়ী যে শিল্পে অনধিক ২০জন শ্রমিক নিয়োজিত হয় তা কুটিরশিল্প। বাংলাদেশের হস্তচালিত তাঁতশিল্প, মৃৎশিল্প, বাঁশ ও বেতশিল্প, তাঁতশিল্প ইত্যাদি হলো কুটিরশিল্প।
প্রশ্ন \ ২ \ বাংলাদেশের কুটিরশিল্পে স্ব-কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে। ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : বাংলাদেশের প্রায় সব কুটিরশিল্পই স্ব-উদ্যোগে পরিচালিত হয়। তাই এক্ষেত্রে স্বকর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে। শহর ও গ্রাম অঞ্চলের বেকার লোকজন নিতান্ত ঘরোয়া পরিবেশে বিভিন্ন কুটিরশিল্পের কারখানা করতে পারে। যেমন : বাঁশ ও বেতের ঝুড়ি, চাটাই, চেয়ার, টেবিল ইত্যাদি। এছাড়াও মৃৎশিল্প, সূচিশিল্প, নারকেলের ছোবরার সামগ্রী তৈরির মাধ্যমেও কর্মসংস্থান তৈরি করা যায়। আমাদের দেশের প্রায় সর্বত্র এসব কুটিরশিল্প ব্যক্তি উদ্যোগে পরিচালিত হচ্ছে, যা দেশের বেকার জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে ভ‚মিকা রাখছে।
প্রশ্ন \ ৩ \ শিল্প বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : শিল্প বলতে প্রকৃতি প্রদত্ত সম্পদ বা কাঁচামাল বা প্রাথমিক দ্রব্যকে কারখানাভিত্তিক প্রস্তুত প্রণালির মাধ্যমে মাধ্যমিক বা চ‚ড়ান্ত দ্রব্যে পরিণত করাকে বোঝায়। শিল্পের সাথে আধুনিক যন্ত্রপাতি এবং প্রযুক্তি ধারণাগুলো সমৃদ্ধ। প্রাকৃতিক সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহারে প্রযুক্তিনির্ভর উৎপাদন ব্যবস্থাই হলো শিল্প।
প্রশ্ন \ ৪ \ কৃষিতে আধুনিক প্রযুক্তির প্রয়োজন কেন?
উত্তর : কৃষিজাত দ্রব্য তথা খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য কৃষিতে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার প্রয়োজন। বাংলাদেশের অর্থনীতি কৃষির ওপর নির্ভরশীল হলেও, এদেশে এখনও সনাতন পদ্ধতিতে চাষাবাদ হচ্ছে। তাই কৃষি উৎপাদন কম হচ্ছে। ফলে খাদ্য ঘাটতি দেখা দিচ্ছে। এদেশের অধিকাংশ মানুষের খাদ্যের চাহিদা পূরণে উৎপাদিত খাদ্যশস্য যথেষ্ট নয়। তাই প্রতিবছর প্রচুর খাদ্যশস্য আমদানি করতে হয়। কিন্তু কৃষিতে আধুনিক প্রযুক্তি তথা উন্নতসার, বীজ, কীটনাশক, ট্রাক্টর কৃত্রিম সেচব্যবস্থা চালু করা হলে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি পেতে এবং আমদানি ব্যয়ও কমে আসবে।
প্রশ্ন \ ৫ \ বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষ কৃষির ওপর নির্ভরশীল কেন?
উত্তর : বাংলাদেশ কৃষিপ্রধান দেশ এবং এদেশের অর্থনীতি কৃষিভিত্তিক। তাই এদেশের ৭৫ ভাগ মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কৃষির ওপর নির্ভরশীল। বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ কৃষক। কৃষিকাজ করেই তাদের জীবিকার সংস্থান হয়। তাছাড়া এদেশে যেসব শিল্প গড়ে উঠেছে তার কাঁচামাল যোগান দিচ্ছে কৃষি। তাই দেখা যায়, এদেশের মানুষের জীবন-জীবিকা কৃষির সাথে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত।
প্রশ্ন \ ৬ \ ক্ষুদ্রশিল্প বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : ক্ষুদ্রশিল্প বলতে ঐ ধরনের শিল্প বোঝায়, যেখানে অল্প মূলধন এবং কম লোকবলের মাধ্যমেও শিল্প পরিচালনা করা যায়। বাংলাদেশে সাধারণত আত্মকর্মসংস্থানমূলক শিল্পগুলো ক্ষুদ্র শিল্প হিসেবে পরিচিত। এ ধরনের শিল্পের মধ্যে রয়েছে ক্ষুদ্র যন্ত্রাংশ তৈরি, দিয়াশলাই শিল্প, কাঠশিল্প, সাবানশিল্প, প্রসাধনীশিল্প এবং যানবাহন সার্ভিসিং ও মেরামত শিল্প।
প্রশ্ন \ ৭ \ কুটিরশিল্প বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : কুটিরশিল্প বলতে পারিবারিক উদ্যোগে ঘরোয়া পরিবেশে সৃষ্ট আত্মকর্মসংস্থানমূলক শিল্প বোঝায়। সাধারণত পরিবারের সদস্যরা একত্রিত হয়ে কুটির শিল্প গড়ে তোলে। তবে লাভজনক হলে পরবর্তীতে বাইরের লোকজনেরও কর্মসংস্থান হয়ে থাকে। কুটিরশিল্পের উৎপাদন, বাজারজাতকরণ, বিক্রয়-বিপণন সবকিছুতে পরিবারের সদস্যদের সক্রিয় ভ‚মিকা রয়েছে। তাঁতশিল্প রেশমশিল্প, কাঁসাশিল্প, বেতশিল্প, মৃৎশিল্প প্রভৃতি।
প্রশ্ন \ ৮ \ বৃহৎশিল্প বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : বৃহৎশিল্প বলতে এমন ধরনের শিল্পকে বোঝায় যেখানে বেশি মূলধন, অধিক জনবলের প্রয়োজন হয়। বৃহৎশিল্প সাধারণত প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর আওতায় পরিচালিত হয়। এসব শিল্পের মধ্যে রয়েছে বস্ত্র, চিনি, পাট, সিমেন্ট, কাগজ প্রভৃতি শিল্প।
প্রশ্ন \ ৯ \ অর্থনৈতিক খাত বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : অর্থনৈতিক খাত বলতে দেশের অর্থনীতিতে বিদ্যমান শাখা বা বিভাগসমূহ বোঝায়- যেগুলো নিজ নিজ পরিমণ্ডলে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সম্পাদন করে থাকে এবং যাদের সমষ্টিগত অবদানের দ্বারা দেশের অর্থনীতির ভিত্তি গড়ে ওঠে। বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রধান তিনটি খাত রয়েছে, যাদের সমষ্টিগত অবদানে এদেশের অর্থনৈতিক ভিত্তি গড়ে উঠেছে। এগুলো হলো কৃষি, শিল্প এবং সেবাখাত।
প্রশ্ন \ ১০ \ সরকার কৃষিখাতের উন্নতির প্রচেষ্টা চালাচ্ছে কেন?
উত্তর : কৃষি আমাদের দেশের অর্থনীতির প্রধান ভিত্তি হওয়ায় সরকার এ খাতের উন্নতির প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। বাংলাদেশের ৭৫ ভাগ মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কৃষির ওপর নির্ভরশীল। প্রতিবছর কৃষি উল্লেখযোগ্য জাতীয় আয়ে অবদান রাখছে। তাছাড়া এদেশের শিল্পের কাঁচামালের প্রধান যোগানদাতা কৃষি। কৃষি আধুনিকীকরণ সম্ভব হলে জনগণের জীবনযাত্রার মান উন্নত হবে, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জিত হবে, আমদানি ব্যয় কমবে, প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি পাবে। সর্বোপরি এদেশে শিল্পের বিকাশ ঘটবে। তাই সরকার কৃষি খাতের উন্নতির প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।
প্রশ্ন \ ১১ \ সেবাখাত বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : সেবাখাত বলতে এমন ধরনের অর্থনৈতিক কাজ বোঝায় যার মাধ্যমে অবস্তুগত দ্রব্য উৎপাদিত হয়। অর্থাৎ যা দৃশ্যমান নয়, কিন্তু মানুষের বিভিন্ন অভাব পূরণ করে এবং যার বিনিময় মূল্য রয়েছে, তাই সেবাখাত। বাংলাদেশে পাইকারি ও খুচরা বিপণন, হোটেল, রেস্তোরাঁ পরিবহন, সংরক্ষণ ও যোগাযোগ, ব্যাংক, বিমা ও অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান, লোক প্রশাসন, শিক্ষা, প্রতিরক্ষা, গৃহায়ণ, সামাজিক সেবা প্রভৃতি ক্ষেত্রে সেবাকর্ম উৎপন্ন হয়।
প্রশ্ন \ ১২ \ শিল্পখাতের বিকাশ ঘটানো উচিত কেন?
উত্তর : শিল্পখাত দেশের জাতীয় ও মাথাপিছু আয় বৃদ্ধিতে ভ‚মিকা রাখে, তাই এ খাতের বিকাশ ঘটানো উচিত। শিল্প অর্থনীতিতে বিরাট অবদান রাখে। শিল্পের উন্নতি হলে দারিদ্র্য ও বেকারত্ব হ্রাস পায়। ফলে জনগণের জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধি পায়। জনগণের মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি পায়। শিল্পের বিকাশ ঘটলে রপ্তানি বৃদ্ধি পাবে, সরকার প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে পারবে। ফলে দেশের সার্বিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে। তাই শিল্পের বিকাশ ঘটানো উচিত।
প্রশ্ন \ ১৩ \ বিনিয়োগযোগ্য পুঁজির প্রভাব কীভাবে বৃদ্ধি পায়?
উত্তর : সরকারের সহযোগিতামূলক ও উদ্দীপনামূলক নীতির দ্বারা প্রেক্ষিত হয়ে দেশের উদ্যোক্তাগণ বিনিয়োগযোগ্য পুঁজি বিনিয়োগের উদ্যোগ নেন, যা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করে। দেশি ও বিদেশি উদ্যোক্তাগণ সরকারের আশ্বাস পেয়ে কৃষি ও শিল্পক্ষেত্রে বিনিয়োগ বৃদ্ধি করছে। ফলে শিল্পোৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে, কৃষি সমৃদ্ধ হচ্ছে এবং দেশের দারিদ্র্য দূরীকরণ সম্ভব হচ্ছে।
প্রশ্ন \ ১৪ \ বৈদেশিক বাণিজ্যের ঘাটতি কীভাবে কমে আসছে?
উত্তর : কৃষি, শিল্প ও সেবাখাতের অবদান বৃদ্ধি পাওয়ায় সরকারের আমদানি ব্যয় রপ্তানি আয়ের তুলনায় কমে আসছে। ফলে বাণিজ্য ঘাটতি কমে আসছে।
কৃষি আধুনিকীকরণের ফলে উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে, পাশাপাশি শিল্পের বিকাশ ঘটছে। ফলে উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং রপ্তানি আয়ও বাড়ছে। কিন্তু সে তুলনায় আমদানি ব্যয় তুলনামূলক কমছে। জনগণের মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি, সঞ্চয় ও বিনিয়োগ বাড়ার কারণে বাণিজ্য ঘাটতি কমে আসছে।
প্রশ্ন \ ১৫ \ দেশের অর্থনীতিতে প্রাকৃতিক গ্যাসের ভ‚মিকা ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : বাংলাদেশের প্রধান খনিজসম্পদ হিসেবে প্রাকৃতিক গ্যাস দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা রাখছে। প্রাকৃতিক সম্পদের মধ্যে প্রাকৃতিক গ্যাস দেশের মোট বাণিজ্যিক জ্বালানি ব্যবহারের শতকরা ৭৫ ভাগ পূরণ করে। আমাদের দেশে এ যাবৎ ২৫টি গ্যাসক্ষেত্রের মধ্যে ২৩টি গ্যাসক্ষেত্রে ৮৩টি ক‚প থেকে গ্যাস উত্তোলন করা হচ্ছে। উৎপাদিত গ্যাস বিদ্যুৎ উৎপাদনে সর্বাধিক ব্যবহৃত হয়। এছাড়া গৃহ ও কলকারখানায় এ গ্যাস জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
প্রশ্ন \ ১৬ \ কৃষি কীভাবে শিল্পের বিকাশে ভ‚মিকা পালন করে?
উত্তর : শিল্পের কাঁচামাল যোগান দিয়ে কৃষিশিল্পের বিকাশে ভ‚মিকা রাখছে।
আমাদের দেশের ক্ষুদ্রশিল্পের ভিত্তি হচ্ছে কৃষি। কৃষিতে উৎপাদিত বাঁশ, বেত ক্ষুদ্রশিল্পের কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত হয়। অন্যদিকে শিল্পে উৎপাদিত চাষাবাদের যন্ত্রপাতি, সার, কীটনাশক ওষুধ প্রভৃতি কৃষিকাজে ব্যবহৃত হয়। তাই শিল্পের বাজার সৃষ্টিতে কৃষি ভ‚মিকা রাখছে। কৃষকের ক্রয়ক্ষমতাবৃদ্ধি পেলে শিল্পের চাহিদা বাড়ে, যা শিল্পের বিকাশে ভ‚মিকা রাখে।
প্রশ্ন \ ১৭ \ একটি সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়া যায় কীভাবে?
উত্তর : দেশের প্রাপ্ত সম্পদের সঠিক বণ্টন এবং সর্বোচ্চ সদ্ব্যবহারের মাধ্যমে একটি সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়ে তোলা সম্ভব। বাংলাদেশ প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর একটি দেশ। এ দেশে রয়েছে হাজারও শ্রমিক। এসব শ্রমিকদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দিয়ে মানবসম্পদে পরিণত করে দেশের সম্পদ ব্যবহারে কাজে লাগানো যায়। বিদেশিদের দ্বারা নয়, দেশীয় বিশেষজ্ঞ এবং শ্রমিকদের দ্বারা সম্পদ চিিহ্নতকরণ এবং তা উত্তোলনের ব্যবস্থা করা উচিত। আর এজন্য প্রয়োজন পরিকল্পনা গ্রহণ এবং বাস্তবায়ন। আর এর ফলেই গড়ে উঠবে একটি সমৃদ্ধ সোনার বাংলা।
প্রশ্ন \ ১৮ \ ‘রূপকল্প ২০২১’ ধারণাটি ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : ‘রূপকল্প-২০২১’ বাংলাদেশ সরকারের একটি উন্নয়নমূলক পরিকল্পনা। ২০১০-২১ সাল পর্যন্ত মেয়াদে ‘রূপকল্প-২০২১’ নামক উন্নয়ন পরিকল্পনাটি প্রণয়ন করা হয়। এর মৌলিক উদ্দেশ্য হচ্ছে উচ্চতর প্রবৃদ্ধি অর্জন, দারিদ্র্য-বিমোচন, বাংলাদেশকে একটি মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করা এবং আঞ্চলিক বৈষম্য দূর করা। সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগের সমন্বয়, সম্পদের সুষম বণ্টন ও সঠিক ব্যবহার করে এ উদ্দেশ্য অর্জনের চেষ্টা করা হচ্ছে।