নবম-দশম শ্রেণির ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং চতুর্থ অধ্যায় ঝুঁকি ও অনিশ্চয়তা সৃজনশীল ও জ্ঞানমূলক প্রশ্নোত্তর

চতুর্থ অধ্যায়
ঝুঁকি ও অনিশ্চয়তা

 ঝুঁকির ধারণা
কোনো ঘটনা ঘটবেই এমন নিশ্চয়তা থাকলে সেখানে কোনো ঝুঁকি নেই। আবার অতীতে সংঘটিত কোনো ঘটনার মধ্যেও কোনো ঝুঁকি নেই। কারণ সেটা ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়ে গেছে। ভবিষ্যতে ঘটতে পারে এমন বিষয়ের সাথে ঝুঁিক জড়িত থাকে, কারণ এর মধ্যে অনিশ্চয়তা রয়েছে। ভবিষ্যতে ‘প্রত্যাশিত ফলাফল’ অর্জিত হবে কি হবে না এ রকম অনিশ্চয়তার মধ্যেই ঝুঁকির সৃষ্টি হয়।
সাধারণত ঝুঁকি বলতে আমরা নেতিবাচক (ঘবমধঃরাব) ফলাফল অর্জনের সম্ভাবনা বুঝে থাকি; কিন্তু আর্থিক বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ঝুঁকি বলতে ‘চড়ংরঃরাব’ ও ‘ঘবমধঃরাব’ দুই ধরনের ফলাফল অর্জনের সম্ভাবনাকেই বুঝানো হয়ে থাকে। অর্থাৎ আর্থিক ক্ষতির সম্ভাবনাই ঝুঁকি। আনুষ্ঠানিকভাবে একটি নির্দিষ্ট বিনিয়োগের আয়ের তারতম্যই ঝুঁকি।
 ঝুঁকি ও অনিশ্চয়তার মধ্যে পার্থক্য
যদিও অনিশ্চয়তা থেকে ঝুঁকির সৃষ্টি হয় তথাপিও ঝুঁকি ও অনিশ্চয়তার মধ্যে কিছু পার্থক্য রয়েছে। সব অনিশ্চয়তা ঝুঁকি নয়। অনিশ্চয়তার যে অংশটুকু পরিমাপ করা যায় সে অংশকে ঝুঁকি বলা যায়। আর যখন কোনো খারাপ ঘটনা ঘটার আশক্সকার প্রকৃতি জানা যায় না তাকে অনিশ্চয়তা বলে। ঝুঁকি পরিমাপযোগ্য অর্থাৎ ঝুঁকিকে পূর্বেই পরিমাপ করা যায়। কিন্তু অনিশ্চয়তাকে পরিমাপ করা যায় না। বিভিন্ন কৌশল প্রয়োগ করে ঝুঁকির পরিমাণ কমানো যায়। যেহেতু অনিশ্চয়তা পরিমাপ করা যায় না, তাই অনিশ্চয়তা হ্রাস করা যায় না। আর যেহেতু ঝুঁকি পরিমাপ করা যায় তাই ঝুঁকি হ্রাস করা যায়। ঝুঁকি পরিমাপের জন্য পরিমিত ব্যবধান, বিভেদাঙ্ক ইত্যাদি একক ব্যবহার করা হয়। কিন্তু অনিশ্চয়তা যেহেতু পরিমাপ করা যায় না, সেহেতু এরূপ কোনো একক ব্যবহারের প্রশ্নই থাকে না। ঝুঁকি পরিমাপযোগ্য বিধায় বিমাযোগ্য। কিন্তু সিদ্ধান্ত গ্রহণকালে সম্ভাব্য ফলাফল সম্পর্কে কোনোভাবেই জ্ঞাত থাকা যায় না বিধায় অনিশ্চয়তা বিমাযোগ্য নয়।
 ঝুঁকির উৎস
 ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের দৃষ্টিকোণ থেকে :
ক. ব্যবসায়িক ঝুঁকি : ব্যবসায় পরিচালনার জন্য বিভিন্ন ধরনের খরচ যেমন : অফিস ভাড়া, বিদ্যুৎ বিল, কাঁচামাল ইত্যাদি নির্বাহের প্রয়োজন হয়। এই খরচ মেটানোর ক্ষমতা নির্ভর করে আয়ের স্থিতিশীলতা, চলতি খরচের অনুপাত ইত্যাদির ওপর। বিক্রয় আয়ে অস্থিতিশীলতা, উচ্চ বা অধিক চলতি খরচ ব্যবসায়িক ঝুঁকি বৃদ্ধি করে। বিক্রয়মূল্য, কাঁচামালের মূল্য অধিক পরিচালন ব্যয় ব্যবসায়িক ঝুকির উল্লেখযোগ্য উৎস। অর্থাৎ বন্যা, অগ্নিকাণ্ড, যুদ্ধ, দাঙ্গা, চুরি, ডাকাতি ইত্যাদি কারণে ব্যবসায়ের বিনিয়োগকৃত সম্পত্তি বিনষ্ট হয়ে ব্যবসায়ের মুনাফার ওপর যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে তাই ব্যবসায়িক ঝুঁকি।
খ. আর্থিক ঝুঁকি : যখন কোনো প্রতিষ্ঠান বাইরের কোনো উৎস হতে মূলধন সংগ্রহ করে তখন আর্থিক ঝুঁকি সৃষ্টি হয়। অর্থাৎ ব্যবসায়ে অর্থসংস্থানের ক্ষেত্রে ক্ষতির সম্ভাবনাকে আর্থিক ঝুঁকি বলে। এই অর্থ সুদসহ পরিশোধ করা হয় ব্যবসায়ের নগদ প্রবাহ থেকে। যদি ব্যবসায়ের নগদ প্রবাহ পর্যাপ্ত না থাকে তাহলে সুদ পরিশোধে অক্ষমতা দেখা দেয়। ফলে ঋণমূলধন সরবরাহকারী আইনানুগ ব্যবস্থা নিলে ব্যবসায় বন্ধ হওয়ায় ঝুঁকি থাকে। যে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের ঋণ মূলধন যত বেশি সেই প্রতিষ্ঠানের আর্থিক ঝুঁকি তত বেশি। অর্থাৎ মূলধন কাঠামোতে ব্যবসায়ের ঋণের পরিমাণ বেশি থাকলে আর্থিক ঝুঁকির আশঙ্কা বেশি থাকে। তাই ব্যবসায়িক ঝুঁকি ও মূলধন কাঠামো দ্বারা প্রতিষ্ঠানের আর্থিক ঝুঁকি নিয়ন্ত্রিত হয়।
 বিনিয়োগকারীর দৃষ্টিকোণ থেকে :
ক. সুদ হারের ঝুঁকি : সুদের হারের পরিবর্তনের কারণে বিনিয়োগ যেমন : বন্ড, ডিবেঞ্চার ইত্যাদির মূল্য হ্রাস বৃদ্ধির আশঙ্কাকে সুদের হারের ঝুঁকি বলে। সাধারণত সুদের হার বাড়লে বন্ড, ডিবেঞ্চারের দাম কমে আবার সুদের হার কমলে এগুলোর বাজার মূল্য বাড়ে।
খ. তারল্য ঝুঁকি : শেয়ার বন্ড বা ডিবেঞ্চারে অর্থ বিনিয়োগের পর ব্যবসায়ের প্রয়োজনে বিনিয়োগকারী যখন যথাযথ মূল্যে এগুলো বিক্রি করতে ব্যর্থ হয় তখন তারল্য ঝুঁকির সৃষ্টি হয়। তারল্য ঝুঁকি বিনিয়োগকৃত বাজারের আকার এবং কাঠামোর ওপর নির্ভরশীল।
 ঝুঁকির তাৎপর্য
ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণে ঝুঁকির বিশেষ ভ‚মিকা রয়েছে, যা ঝুঁকির তাৎপর্য বহন করে। প্রথমত যেকোনো কোম্পানির সাফল্য তথা সার্বিক উদ্দেশ্য সাধনে ঝুঁকির প্রভাব রয়েছে। ফলে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের পরিকল্পনা প্রণয়নের সময়েই ভবিষ্যতের সম্ভাব্য ঘটনাসমূহ বিচার বিশ্লেষণ করে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করলে প্রত্যাশিত ক্ষতি থেকে বাঁচা যায়। দ্বিতীয়ত, ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের মুনাফা অর্জন নির্ভর করে পণ্যের চাহিদার ওপর। বাজারের প্রকৃত চাহিদা অনুমেয় চাহিদা থেকে কম বা বেশি হতে পারে। সঠিক চাহিদা নিরূপণ করে মুনাফা অর্জন করতে হলে এক্ষেত্রে ঝুঁকিগত দিক বিবেচনা করা অপরিহার্য। অর্থাৎ যদি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান পণ্যের চাহিদা বিশ্লেষণ না করে পণ্য উৎপাদন করে তবে অধিক অবিক্রীত পণ্য বা পণ্য সরবরাহে ঘাটতির ঝুঁকি দেখা দিতে পারে যা কি-না ব্যবসায়ের মূল উদ্দেশ্য অর্জনের অন্তরায় হতে পারে।
 ঝুঁকিমুক্ত আয় ও ঝুঁকিবহুল আয়
ঝুঁকিমুক্ত আয়ে প্রকৃত আয় সব সময় প্রত্যাশিত আয়ের সমান হয়। কোনো ব্যাংকে যদি মেয়াদি আমানত রাখা হয় তবে এর প্রত্যাশিত আয় ও প্রকৃত আয়ের মধ্যে তেমন পার্থক্য হয় না। এটা ঝুঁকিমুক্ত আয়ের একটি ধরন যেমন : সরকারি ট্রেজারি বিল, ট্রেজারি বন্ড ইত্যাদি। অন্যদিকে যেসব আয়ের সাথে ঝুঁকি জড়িত সেসব আয়কে ঝুঁকিবহুল আয় বলা হয়। যেমন : শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ, একটি ঝুঁকিবহুল আয় হিসেবে পরিগণিত।
 ঝুঁকি ও অনিশ্চয়তার পরিমাণ
ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান সফলভাবে পরিচালনার জন্য ঝুঁকি পরিমাপ করা অত্যাবশ্যকীয়। প্রত্যাশিত আয় থেকে প্রকৃত আয়ের বিচ্যুতি থেকেই ঝুঁকির সৃষ্টি হয়। এ কারণে প্রত্যাশিত আয় ও প্রকৃত আয়ের বিচ্যুতি বা প্রত্যাশিত ফলাফল এবং প্রকৃত ফলাফলের বিচ্যুতি থেকে ঝুঁকি পরিমাপ করা হয়। ঝুঁকি পরিমাপের বিভিন্ন পদ্ধতি রয়েছে। তার মধ্যে আদর্শ বিচ্যুতি পরিমাপ পদ্ধতি অন্যতম।
 আদর্শ বিচ্যুতি
আদর্শ বিচ্যুতি একটি পরিসংখ্যানিক পদ্ধতি। অতীত অর্জিত আয়ের ব্যবধান থেকে ঝুঁকি পরিমাপ এবং ভবিষ্যৎ প্রত্যাশিত আয়ের ঝুঁকি পরিমাপের একটি পদ্ধতি হচ্ছে আদর্শ বিচ্যুতি। এর সূত্র হলো :
আদর্শ বিচ্যুতি = (আয় হার  গড় হার)২ হ – ১
এখানে,  (আয় হার  গড় হার)২ = অতীতে অর্জিত আয় হার থেকে গড় আয় হারের পার্থক্যের বর্গের সমষ্টি।
হ = বছরের সংখ্যা।

অনুশীলনীর সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর

প্রশ্ন-১  নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
রায়না হক ফ্যাশন ডিজাইন ইনস্টিটিউট থেকে প্রশিক্ষণ শেষে অনেক চিন্তাভাবনার পর ‘আহŸান ক্রায়াট’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। এটি ঢাকা ও কুমিল্লা শহরে অবস্থিত। তার বান্ধবী রোমানা টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট থেকে পাস করে মনিপুরী তাঁত বস্ত্রের বিভিন্ন পোশাক সামগ্রীর ব্যবসা শুরু করে সিলেটের বিভিন্ন অঞ্চলে। তাদের কয়েক বছরের ব্যবসায়ের চিত্র নিচে দেয়া হলো।

ক. অতীতে অর্জিত আয়ের বিচ্যুতি থেকে কী পরিমাপ করা হয়?
খ. ব্যবসায় ক্ষেত্রে প্রত্যাশিত ফলের চাইতে প্রকৃত ফল কম হবার কারণটি ব্যাখ্যা কর।
গ. রোমানার ব্যবসায় কম সাফল্য হবার কারণ বর্ণনা কর।
ঘ. রায়না ও রোমানার ব্যবসায়িক চিত্রটির তুলনামূলক বিশ্লেষণ কর।
 ১নং প্রশ্নের উত্তর 
ক. অতীতে অর্জিত আয়ের বিচ্যুতি থেকে ঝুঁকি পরিমাপ করা হয়।
খ. ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে প্রত্যাশিত ফলের চাইতে প্রকৃত ফল কম হবার কারণ হলো ঝুঁকি। ভবিষ্যৎ সর্বদা অনিশ্চিত আর এই অনিশ্চয়তার মধ্যেই লক্ষ্য অর্জনের জন্য ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। অনিশ্চয়তার যে অংশ পরিমাপ করা যায় তাই ঝুঁকি। কাঁচামালের মূল্য বৃদ্ধি, আশানুরূপ বিক্রয় না হওয়া এবং প্রত্যাশিত মুনাফা অর্জন করতে না পারার ঝুঁকির কারণে প্রত্যাশিত ফলাফল অর্জন করা সম্ভব হয় না।
গ. রোমানার ব্যবসায় কম সাফল্য হবার কারণ হলো সঠিকভাবে ব্যবসায়ের ঝুঁকি ও অনিশ্চয়তা পরিমাপ করতে না পারা।
ঝুঁকি ও অনিশ্চয়তা ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে বিনিয়োগকারী পর্যন্ত সবাইকে লক্ষ্য অর্জনে বাধা দেয়। তাই ব্যবসায় শুরু করার আগেই প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে তার চাহিদা সম্পর্কিত বিচার বিশ্লেষণ করে বাস্তবসম্মত চাহিদা অনুমান করে সেই অনুযায়ী ব্যবসায় পরিচালনা করতে হয়। উদ্দীপকে রোমানা মণিপুরি তাঁত বস্ত্রের বিভিন্ন পোশাক নিয়ে সিলেট অঞ্চলে তার ব্যবসায় শুরু করেছে। কিন্তু তিনি যদি ব্যবসায় শুরুর পূর্বে সিলেট অঞ্চলে তাঁত বস্ত্রের পোশাকের চাহিদা বিশ্লেষণ করতেন তাহলে তিনি কখনোই তার ব্যবসায় প্রতিষ্ঠার জন্য সিলেট অঞ্চলকে নির্বাচন করতেন না। কারণ সিলেটের মণিপুরি গোষ্ঠী নিজেরাই নিজেদের বস্ত্র তৈরি করে ব্যবহার করে। তাই তাদের নিকট অন্যের তৈরি পোশাকের তেমন চাহিদা নেই। অর্থাৎ সে মূলত তার ব্যবসায়ের বাজার চাহিদা বিশ্লেষণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। সুতরাং, রোমানা সিলেটে মণিপুরি তাঁত বস্ত্রের ব্যবসায় পরিচালনার সম্ভাব্য ঝুঁকি ও অনিশ্চয়তা যথাযথভাবে বিশ্লেষণ না করে ব্যবসায় শুরু করায় রোমানার ব্যবসায়িক সাফল্য কম।
ঘ. রোমানার তুলনায় রায়না হকের ব্যবসায়ের অবস্থান ভালো।
যে কোনো ধরনের ব্যবসায় শুরু করার পূর্বে ব্যবসায়ীর উচিত তার পণ্যের বাজার চাহিদা বিচার বিশ্লেষণ করে সেই অনুযায়ী ব্যবসায় পরিচালনা ও বাস্তবায়ন করা। উদ্দীপকে রায়না হক ব্যবসায় শুরু করার পূর্বে পণ্যের বাজার চাহিদা বিশ্লেষণ করে তার ব্যবসায়ের স্থান নির্বাচন করেছেন। তাই অনুমেয় বিক্রয় ও প্রকৃত বিক্রয়ের মধ্যে তেমন কোনো পার্থক্য সৃষ্টি না হওয়ায় তার মুনাফা প্রতি বছর বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্যদিকে রোমানা তার পণ্যের বাজার চাহিদা বিশ্লেষণ না করেই সিলেট অঞ্চলে মণিপুরি তাঁত বস্ত্রের ব্যবসায় শুরু করেছে। কিন্তু সিলেটের মণিপুরি গোষ্ঠী নিজেরাই তাঁত বস্ত্র তৈরি করতে পারে বলে সেখানে তাঁত বস্ত্রের তেমন চাহিদা নেই। তাই রোমানা ব্যবসায় শুরু করায় তার প্রকৃত বিক্রয় অনুমেয় বিক্রয় অপেক্ষা কম হয়েছে।
উদ্দীপকের চিত্রে আমরা দেখতে পাই, রায়না হকের মুনাফা প্রতি বছর ক্রমবর্ধমান হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু রোমানার ব্যবসায়ের মুনাফার হার প্রতিবছর হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটেছে। এর মধ্যে প্রথম তিন বছরে রায়না ও রোমানার মুনাফার হারের মধ্যে ১ ধাপের ব্যবধান হলেও চতুর্থ বছরে রায়না রোমানার চেয়ে ৬ ধাপ বেশি মুনাফা অর্জন করে। অর্থাৎ রায়না হকের মুনাফা প্রতি বছর বৃদ্ধি পেয়েছে। তার আয়ে স্থিতিশীলতা থাকায় তার ব্যবসায়িক ঝুঁকির পরিমাণও কম। অপরদিকে রোমানার আয়ে উত্থান-পতন আছে বলেই ব্যবসায়ে ঝুঁকির পরিমাণ বেশি।
সুতরাং দুটি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের মুনাফার হারের চিত্র থেকে বোঝা যায় যে, রায়না হকের প্রতিষ্ঠানে মুনাফার হার বেশি। অর্থাৎ রোমানার থেকে রায়না অধিক লাভজনক অবস্থায় রয়েছে।
প্রশ্ন-২  নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
বিনিয়োগকারীর নাম-জনাব শফিকুর রহমান
বিনিয়োগ করা প্রতিষ্ঠানের নাম :
ক. ঝর্ণা কোম্পানি লিমিটেড
খ. আজাদ কোম্পানি লিমিটেড

ক. ভবিষ্যতের সম্ভাব্য ঘটনাসমূহ বিচার বিশ্লেষণ করে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করলে কোন ধরনের ক্ষতি থেকে বাঁচা যায়?
খ. বন্ডে বিনিয়োগকারীদের কোন ঝুঁকি মোকাবিলা করতে হয়? ব্যাখ্যা কর।
গ. জনাব শফিকুর রহমানের আজাদ কোম্পানিতে বিনিয়োগ কিরূপ ব্যাখ্যা কর।
ঘ. ঝর্ণা কোম্পানির আয়কে নিয়মিত করার জন্য কোন পদক্ষেপ নেয়া যুক্তিসঙ্গত হবে? বিশ্লেষণ কর।
 ২নং প্রশ্নের উত্তর 
ক. ভবিষ্যতের সম্ভাব্য ঘটনাসমূহ বিচার-বিশ্লেষণ করে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করলে অপ্রত্যাশিত ক্ষতি থেকে বাঁচা যায়।
খ. বন্ডে বিনিয়োগকারীদের সুদ হারের ঝুঁকি ও তারল্য ঝুঁকি মোকাবিলা করতে হয়। কারণ সুদের হার বৃদ্ধি বা হ্রাসের ওপর বন্ডের বাজার মূল্য নির্ভর করে। সেক্ষেত্রে যদি বিনিয়োগকারীর বন্ডের মূল্য কমে যায় তখন সুদের হারের ঝুঁকি সৃষ্টি হয়। অন্যদিকে মূলধন বাজারের আকার ও কাঠামোর ওপর নির্ভর করে বিনিয়োগকারীর তারল্য ঝুঁকি। বিনিয়োগকারী যদি তার প্রত্যাশিত মূল্যে মূলধন বাজারে বন্ড বিক্রয় করতে না পারেন তখনই তারল্য ঝুঁকির সৃষ্টি হয়।
গ. জনাব শফিকুর রহমানের আজাদ কোম্পানিতে বিনিয়োগটি ঝুঁকিমুক্ত বিনিয়োগ।
যে বিনিয়োগে প্রকৃত আয় সবসময় প্রত্যাশিত আয়ের সমান হয় তাই ঝুঁকিমুক্ত বিনিয়োগ। যেমন : ট্রেজারি বিল ক্রয় করলে সবসময় একই হারে সুদ পাওয়া যায় ফলে কোনো ঝুঁকি থাকে না।
উদ্দীপকের সারণীতে দেখা যাচ্ছে, ২০০৮ সাল থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত আজাদ কোম্পানির লাভ ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে। তাই উক্ত
প্রতিষ্ঠানে তার বিনিয়োগকৃত অর্থের প্রাপ্ত আয়ও ঊর্ধ্বমুখী। আয়ের উত্থান-পতন না থাকায় উক্ত প্রতিষ্ঠান হতে প্রাপ্ত আয়ের পুরোটাই ঝুঁকিমুক্ত আয়। আবার আজাদ কোম্পানির লাভ প্রতিবছর ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় প্রাপ্য লাভের নিশ্চয়তাও রয়েছে। আয়ের অধিক উত্থান-পতনের কারণে সৃষ্ট ঝুঁকির কবলেও তাকে পড়তে হবে না। সবদিক বিবেচনায় জনাব শফিকুর রহমানের আজাদ কোম্পানিতে বিনিয়োগটি একটি ঝুঁকিমুক্ত বিনিয়োগ।
ঘ. ঝর্ণা কোম্পানির আয়কে নিয়মিত করার জন্য সুষ্ঠু ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ঝুঁকি হ্রাসের ব্যবস্থা করতে হবে।
আয়ের উত্থান-পতনের কারণে ঝুঁকির সৃষ্টি হয়। যত বেশি উত্থান-পতন হবে তত বেশি ঝুঁকি এবং উত্থানÐপতন না হলে ঝুঁকি কম বলে ধরা হয়। উদ্দীপকের প্রদত্ত চিত্র অনুযায়ী ঝর্ণা কোম্পানির লাভের হার স্থিতিশীল নয়। প্রতি বছরই লাভের পরিমাণে উত্থান-পতন ঘটেছে। তাই ঝর্ণা কোম্পানির ঝুঁকির পরিমাণ অনেক বেশি। ঝুঁকির হার কমিয়ে প্রতিষ্ঠানটির আয় নিয়মিত করতে সঠিক আর্থিক পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। এক্ষেত্রে স্থান, কাল, পাত্রভেদে ব্যবসায়ের সিদ্ধান্ত নেয়া যেতে পারে।
ঝর্ণা কোম্পানির উৎপাদিত পণ্যের বাজার চাহিদা বিশ্লেষণ করে যে অঞ্চলে উক্ত পণ্যের চাহিদা বেশি সেখানে প্রতিষ্ঠানটি স্থানান্তর করতে হবে। আবার বাজারে চাহিদা আছে সে রকম পণ্য উৎপাদন করতে হবে। কম মূল্যে যাতে কাঁচামাল ও অন্যান্য জিনিস কিনতে পারে সে ব্যবস্থা নিতে হবে। তাছাড়া কোম্পানির পরিচালন ব্যয় স্থিতিশীল ও নিয়ন্ত্রণে রেখে বিক্রয়ের পরিমাণ বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
সুতরাং, ঝর্ণা কোম্পানি আয়কে নিয়মিত করার জন্য সুষ্ঠু ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা গ্রহণ করাই যুক্তিযুক্ত হবে।

প্রশ্ন-৩  নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
বছর ২০১০ ২০১১ ২০১২ ২০১৩
‘নীলগিরি’ প্রকল্পের আয় হার ২০% ৬% ১৫% ২৩%
‘নীলাচল’ প্রকল্পের আয় হার ৫% ১৫% ২০% ২৪%
[স. বো. ’১৫]
ক. প্রত্যাশার বাইরে কোনো কিছু ঘটার সম্ভাবনাকে কী বলে? ১
খ. বন্ড-এ বিনিয়োগকারীদের কিসের ঝুঁকি বহন করতে হয়? ব্যাখ্যা কর। ২
গ. নীলগিরি প্রকল্পের আদর্শ বিচ্যুতি নিরূপণ কর। ৩
ঘ. প্রকল্প দুটির মধ্যে কোনটি অধিকতর গ্রহণযোগ্য? যুক্তি দেখাও। ৪
 ৩নং প্রশ্নের উত্তর 
ক. প্রত্যাশার বাইরে কোনো কিছু ঘটনার সম্ভাবনাকে ঝুঁকি বলে।
খ. বন্ডে বিনিয়োগকারীদের সুদ হারে ঝুঁকি ও তারল্য ঝুঁকি মোকাবিলা করতে হয়।
সুদের হার বৃদ্ধি বা হ্রাসের ওপর বন্ডের বাজার মূল্য নির্ভর করে। সেক্ষেত্রে যদি বিনিয়োগকারীর বন্ডের মূল্য কমে যায় তখন সুদের হারের ঝুঁকি সৃষ্টি হয়। অন্যদিকে বাজারের আকার ও কাঠামোর ওপর নির্ভর করে বিনিয়োগকারীর তারল্য ঝুঁকি। বিনিয়োগকারী যদি তার প্রত্যাশিত মূল্যে বাজারে বন্ড বিক্রয় করতে না পারেন তখনই তারল্য ঝুঁকির সৃষ্টি হয়।
গ. নীলগিরি প্রকল্পের আদর্শ বিচ্যুতি নির্ণয়ে এর সূত্র প্রয়োগ করতে হবে। ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান সফলভাবে পরিচালনার জন্য ঝুঁকি পরিমাপ করা অত্যাবশ্যকীয়। প্রত্যাশিত আয় থেকে প্রকৃত আয়ের বিচ্যুতি থেকেই ঝুঁকির সৃষ্টি।
নীলগিরি প্রকল্পের আদর্শ বিচ্যুতি নির্ণয়ের ছকটি নিম্নরূপ :
আমরা জানি,
আদর্শ বিচ্যুতি =  (আয় হার  গড় হার)২হ  ১
এখানে, হ = বছর সংখ্যা
বছর আয় (%) গড় থেকে ব্যবধান (আয় Ñ গড়) ব্যবধানের বর্গ
২০১০ ২০ ৪ ১৬
২০১১ ৬ ১০ ১০০
২০১২ ১৫ ১ ১
২০১৩ ২৩ ৭ ৪৯
আয় হারের যোগফল ৬৪ ব্যবধানের বর্গের যোগফল ১৬৬
গড় আয় ১৬ ব্যবধান বর্গের গড়
= ১৬৬/হ-১ ৫৫.৩৩
গড় আয় = ৬৪৪
= ১৬
আদর্শ বিচ্যুতি = ৫৫.৩৩
= ৭.৪৪%
অতএব, নীলগিরি প্রকল্পের আদর্শ বিচ্যুতি ৭.৪৪%
ঘ. নীলগিরি ও নীলাচল প্রকল্পের মধ্যে অধিকতর গ্রহণযোগ্য কোনটি হবে এর জন্য দুটি প্রকল্পের আদর্শ বিচ্যুতি নির্ণয় করে বিশ্লেষণ করতে হবে।

প্রশ্ন-৪  নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
জনাব আফজাল তার সঞ্চিত অর্থ দিয়ে প্রাইড লি. কোম্পানির শেয়ার ক্রয় করেন। কারণ তিনি জানেন শেয়ার ক্রয়ে তারল্য ঝুঁকি কম। তার এই বিনিয়োগ থেকে গত দশ বছরে প্রাপ্ত আয়ের হার যথাক্রমে ১০%, ২০%, Ñ ৫%, ১৫%, ৩৫%, ১০%, ২৫%, ৩০%, ১২% ও ০%।
[কাজ : পৃষ্ঠা Ñ ৪২]
ক. মুনাফাসংক্রান্ত অনিশ্চয়তা কখন সৃষ্টি হয়? ১
খ. কোম্পানির ম্যানেজার দুর্ঘটনায় মারা যেতে পারেন- এটি ঝুঁকি নয় কেন? ২
গ. জনাব আফজালের বিনিয়োগের ঝুঁকি নির্ণয় কর। ৩
ঘ. আফজাল সাহেবের অভিমতের সাথে তুমি কি একমত? যুক্তি দাও। ৪
 ৪নং প্রশ্নের উত্তর 
ক. কোম্পানি বহিস্থ অর্থায়ন না করে সম্পূর্ণ অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে তহবিল সংগ্রহ করলে মুনাফাসংক্রান্ত অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়।
খ. খারাপ কোনো ঘটনা ঘটার আশঙ্কাই হচ্ছে ঝুঁকি। কিন্তু খারাপ কোনো ঘটনা ঘটার আশঙ্কা কেমন তা যদি জানা না থাকে, তবে সেই অনিশ্চয়তাকে ঝুঁকি বলা যায় না। অন্যভাবে বলা যায় ঝুঁকি এক প্রকার অনিশ্চয়তা হলেও অনিশ্চয়তার যে অংশটুকু পরিমাপ করা যায় সে অংশকে ঝুঁকি বলা হয়। কোম্পানির ম্যানেজার মারা যেতে পারেন এটি একটি অনিশ্চয়তা কিন্তু এই অনিশ্চয়তাকে পরিমাপ করা যায়। তাই বলা যায়, ঘটনাটি ঝুঁকি নয় অনিশ্চয়তা।
গ. জনাব আফজালের বিনিয়োগের ঝুঁকি নির্ণয়ের জন্য বিনিয়োগটির অতীতে অর্জিত আয়ের বিচ্যুতি থেকে আদর্শ বিচ্যুতি নির্ণয় করতে হবে।
সাধারণত আদর্শ বিচ্যুতির বড় মান অধিক ঝুঁকি ও ছোট মান কম ঝুঁকি নির্দেশ করে।
জনাব আফজালের বিনিয়োগটির ঝুঁকি নির্ণয় করা হলো।
আমরা জানি,
আদর্শ বিচ্যুতি = (আয় হার Ñ গড় হার)২ হ – ১
এখানে,
 (আয়হার Ñ গড় হার)২ = অতীতে অর্জিত আয় হার থেকে গড় আয়ের হারের পার্থক্যের বর্গের সমষ্টি
হ = বছরের সংখ্যা
বছর আয় (%) গড় থেকে ব্যবধান (আয়-গড়) ব্যবধানের বর্গ
প্রথম ১০ (১০-১৫.২) = -৫.২ (৫.২  ৫.২) = ২৭.০৪
দ্বিতীয় ২০ (২০-১৫.২) = ৪.৮ (৪.৮  ৪.৮) = ২৩.০৪
তৃতীয় -৫ (-৫-১৫.২) = -২০.২ (২০.২  ২০.২) = ৪০৮.০৪
চতুর্থ ১৫ (১৫-১৫.২) = -০.২ (০.২  ০.২) = ০.০৪
পঞ্চম ৩৫ (৩৫-১৫.২) = ১৯.৮ (১৯.৮  ১৯.৮) = ৩৯২.০৪
ষষ্ঠ ১০ (১০-১৫.২) = -৫.২ (৫.২  ৫.২) = ২৭.০৪
সপ্তম ২৫ (২৫-১৫.২) = ৯.৮ (৯.৮  ৯.৮) = ৯৬.০৪
অষ্টম ৩০ (৩০-১৫.২) = ১৪.৮ (১৪.৮  ১৪.৮) = ২১৯.০৪
নবম ১২ (১২-১৫.২) = -৩.২ (৩.২  ৩.২) = ১০.২৪
দশম ০ (০-১৫.২) = -১৫.২ (১৫.২  ১৫.২) = ২৩১.০৪
আয়ের হারের যোগফল ১৫২% ব্যবধানের বর্গের যোগফল ১,৪৩৩.৬
গড় আয় ১৫২১০ = ১৫.২%
ব্যবধান বর্গের গড় = ১,৪৩৩.৬/(হ-১) ১৫৯.২৯
আদর্শ বিচ্যুতি = ১৫৯.২৯
= ১২.৬২%
অতএব, জনাব আফজালের বিনিয়োগটির ঝুঁকি ১২.৬২%।
ঘ. শেয়ার ক্রয়ে তারল্য ঝুঁকি কম জনাব আফজালের এই অভিমতটির সাথে আমি সম্পূর্ণ একমত।
ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের প্রতিটি সিদ্ধান্তের সাথে কিছু না কিছু ঝুঁকি জড়িত থাকে। তারল্য ঝুঁকি তার মধ্যে অন্যতম এই ঝুঁকি একজন বিনিয়োগকারীকে অবশ্যই বিবেচনায় রাখতে হয়। কারণ বিনিয়োগকারীর অর্থ শেয়ার, বন্ড বা ডিবেঞ্চার ইত্যাদিতে বিনিয়োগের পর যেকোনো সময় এসব বিনিয়োগ নগদায়নের প্রয়োজন হয়। কিন্তু কোনো কারণে যদি বিনিয়োগকারী সহজে এবং যুক্তিসংগত মূল্যে বিক্রয় করতে না পারে, তখন তারল্য ঝুঁকির সৃষ্টি হয়। তারল্য ঝুঁকি সাধারণত যে বাজারে শেয়ার, বন্ড, ডিবেঞ্চার ইত্যাদি কেনাবেচা হয়, সে বাজারের আকার এবং কাঠামোর ওপর নির্ভর করে। একমালিকানা ও অংশীদারি কারবারে তারল্য ঝুঁকি অনেক বেশি। কারণ নগদ অর্থের প্রয়োজন হলে কারবারটির স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ সহজে ও যুক্তিসংগত মূল্যে বিক্রয় করা যায় না। পক্ষান্তরে একজন বিনিয়োগকারী কোনো কোম্পানির শেয়ার কিনলে, তাকে তারল্য ঝুঁকি নিয়ে চিন্তা করতে হয় না। কারণ সে ইচ্ছে করলে যেকোনো সময় সেকেন্ডারি মূলধন বাজারে বা শেয়ার মার্কেটে গিয়ে তার শেয়ার বিক্রয় করে দিতে পারে।
সুতরাং, শেয়ার বিনিয়োগের তারল্য ঝুঁকি সম্পর্কে জনাব আফজালের ধারণাটাই সঠিক। তবে যারা বন্ড বা ডিবেঞ্চার ক্রয় করে তাদের তারল্য ঝুঁকি বেশি থাকে। কারণ মাধ্যমিক মূলধনী বাজারে যত সহজে শেয়ারের ক্রেতা পাওয়া যায়, তত সহজে বন্ড ডিবেঞ্চারের ক্রেতা পাওয়া যায় না।

প্রশ্ন-৫  নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
রজনী কান্ত সেন ২০১১ সালে মাধ্যমিক মূলধন বাজার থেকে ৫ লক্ষ টাকা মূল্যের সাত্তার ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানির শেয়ার ক্রয় করেছিলেন। গত পাঁচ বছরে উক্ত কোম্পানি হতে তার প্রাপ্ত আয়ের হার যথাক্রমে ১২%, ৮%, ১৭%, -৫% ও ১৩%। তিনি তার শেয়ারগুলো বিক্রি করে বিক্রয়লব্ধ অর্থ এনসিসি ব্যাংকে জমা রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সেক্ষেত্রে ব্যাংক তাকে ১০% হারে সুদ প্রদান করবে।
ক. কিসের বিচ্যুতি থেকে ঝুঁকি সৃষ্টি হয়? ১
খ. বিনিয়োগের মূল্য ওঠানামা করে কেন? ২
গ. রজনী কান্ত সেনের আয়ের আদর্শ বিচ্যুতি নির্ণয় কর। ৩
ঘ. রজনী কান্ত সেনের শেয়ার বিক্রয় করে বিক্রয়লব্ধ অর্থ ব্যাংকে জমা রাখার সিদ্ধান্তটি কতটা যুক্তিসংগত বলে তুমি মনে কর? তোমার উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দাও। ৪
 ৫নং প্রশ্নের উত্তর 
ক. প্রত্যাশিত এবং প্রাপ্ত ফলাফলের বিচ্যুতি থেকে ঝুঁকি সৃষ্টি হয়।
খ. যেসব বিনিয়োগকারী বন্ড, ডিবেঞ্চার ইত্যাদি ক্রয় করে, তাদের সুদ হারের ঝুঁকি মোকাবিলা করতে হয়। কারণ বিনিয়োগের মূল্য বাজার সুদের হারের ওপর নির্ভরশীল। বিভিন্ন কারণে সুদের হারের তারতাম্য ঘটে। আর বাজারে সুদের হারের পরিবর্তনের দরুন বিনিয়োগ মূল্য ওঠানামা করে।
গ. কোনো বিনিয়োগ থেকে প্রাপ্ত আয়সমূহের বিচ্যুতি থেকে আদর্শ বিচ্যুতি নির্ণয় করা হয়।
রজনী কান্ত সেনের আদর্শ বিচ্যুতি নির্ণয় করা হলো-
আমরা জানি,
আদর্শ বিচ্যুতি = (আয় হার  গড় হার)২হ – ১, হ = বছর সংখ্যা
বছর আয় (%) গড় থেকে ব্যবধান (আয়-গড়) ব্যবধানের বর্গ
২০১১ ১২ (১২-৯)= ৩ (৩  ৩) = ৯
২০১২ ৮ (৮-৯)=-১ (১  ১) = ১
২০১৩ ১৭ (১৭-৯)= ৮ (৮  ৮) = ৬৪
২০১৪ -৫ (-৫-৯)= Ñ১৪ (১৪  ১৪) = ১৯৬
২০১৫ ১৩ (১৩-৯)=৪ (৪  ৪) = ১৬
আয়ের হারের যোগফল ৪৫ ব্যবধানের বর্গের যোগফল = ২৮৬
গড় আয় ৪৫৫ = ৯
ব্যবধানের বর্গের গড়
= ২৮৬/(হ-১) ৭১.৫
 আদর্শ বিচ্যুতি = ৭১.৫
= ৮.৪৬%
অতএব, রজনী কান্ত সেনের আয়ের আদর্শ বিচ্যুতি ৮.৪৬%।
ঘ. রজনী কান্ত সেনের শেয়ার বিক্রয় করে বিক্রয়লব্ধ অর্থ ব্যাংকে জমা রাখার সিদ্ধান্তটি আমি যুক্তিসংগত মনে করি।
যেসব আয়ের সাথে ঝুঁকি জড়িত সেসব আয়কে ঝুঁকিবহুল আয় বলা হয়। যেমন : শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ, বিনিয়োগকারীর জন্য উক্ত শেয়ার থেকে আয় একটি ঝুঁকিবহুল আয় হিসেবে পরিগণিত হয়। উদ্দীপকে রজনী কান্ত সেনের বিনিয়োগকৃত শেয়ার থেকে প্রাপ্ত আয় একটি ঝুঁকিবহুল আয়। এক্ষেত্রে তিনি ভবিষ্যতে যে পরিমাণ লভ্যাংশ পাবে তা তার প্রত্যাশিত আয়ের সমান হবে এরকম কোনো নিশ্চয়তা থাকে না। আবার ভবিষ্যতে কোম্পানি কী পরিমাণ লভ্যাংশ দেবে সেটা নির্ভর করে কোম্পানির ভবিষ্যৎ বছরগুলোতে অর্জিত মুনাফা এবং অন্যান্য বিষয়ের ওপর। যার কারণে শেয়ার বিনিয়োগ হতে প্রাপ্ত আয়ের উত্তান-পতন অনেক বেশি হয়। তাই শেয়ার থেকে প্রাপ্ত আয়কে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিবহুল আয় হিসেবে গণ্য করা হয়। অন্যদিকে ব্যাংকের মেয়াদি আমানত হতে প্রাপ্ত আয় একটি ঝুঁকিমুক্ত আয়। এক্ষেত্রে প্রকৃত আয় সবসময় প্রত্যাশিত আয়ের সমান হয়। সুতরাং বিনিয়োগের ক্ষেত্রে রজনীকান্ত সেনের গৃহীত সিদ্ধান্তটিই সঠিক।
প্রশ্ন-৬  নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
শোভন পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি তার বিনিয়োগকারীদের গত পাঁচ বছর নিম্নোক্ত হারে মুনাফা প্রদান করেছে-

আনিসুল হক ২০১২ সালে এই কোম্পানিতে ২০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন। কোম্পানির মুনাফা প্রদানের হারের উত্থান-পতন দেখে তিনি ২০১৫ সালে ১৫% মুনাফা প্রত্যাশা করেছিলেন। কিন্তু বছর শেষে ২০% মুনাফা পাওয়ায় তিনি খুব খুশি হন।
ক. আর্থিক ঝুঁকি কী থেকে সৃষ্টি হয়? ১
খ. ট্রেজারি বিল ঝুঁকিমুক্ত কেন? ব্যাখ্যা কর। ২
গ. আনিসুল হক শোভন পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে কোন ধরনের বিনিয়োগ করেছেন? বর্ণনা কর। ৩
ঘ. আসিনুল হক তার প্রত্যাশার অতিরিক্ত যে মুনাফা পেলেন তা কী ঝুঁকির অন্তর্ভুক্ত হবে? তোমার উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দাও। ৪
 ৬নং প্রশ্নের উত্তর 
ক. আর্থিক ঝুঁকি বহিস্থ উৎসের অর্থায়ন হতে সৃষ্টি হয়।
খ. ট্রেজারি বিল সরকার কর্তৃক ইস্যু করা হয়। এ বিলে প্রতিবছর নির্দিষ্ট হারে সুদ প্রদান করা হয়। ফলে ট্রেজারি বিলের আয় হচ্ছে নির্দিষ্ট আয়। তাছাড়া সরকারের দেউলিয়া হওয়ার সুযোগ নেই। অর্থাৎ এই বিনিয়োগে প্রকৃত আয় প্রত্যাশিত আয়ের সমান হয় বলে ট্রেজারি বিল ঝুঁকিমুক্ত আয়।
গ. শোভন পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে আনিসুল হকের বিনিয়োগটি একটি ঝুঁকিপূর্ণ বিনিয়োগ।
যেসব আয়ের সাথে ঝুঁকি জড়িত সেসব আয়কে ঝুঁকিবহুল বা ঝুঁকিপূর্ণ আয় বলা হয়। যেমন : শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ, বিনিয়োগকারীর জন্য উক্ত শেয়ার থেকে আয় একটি ঝুঁকিপূর্ণ আয় হিসেবে পরিগণিত হয়।
উদ্দীপকে শোভন পাবলিক লিমিটেড কোম্পানির প্রদত্ত মুনাফার পরিমাণ স্থিতিশীল নয়। কোম্পানিটি একেক বছর একক পরিমাণে মুনাফা প্রদান করেছে। তাই আনিসুল হকের মতো উক্ত কোম্পানির বিনিয়োগকারীরা পূর্ব হতে প্রত্যাশিত মুনাফার পরিমাণ স্থির করতে পারে না। তারা যে পরিমাণ মুনাফা প্রত্যাশা করে দেখা যায় প্রকৃত মুনাফা তার চেয়ে কম বা বেশি হয়। ২০১১ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত কোম্পানির মুনাফা প্রদানের হার বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, উক্ত কোম্পানির বিনিয়োগকারীদের প্রাপ্ত আয়ে প্রতিবছরই উত্থান-পতন ঘটেছে। আর আয়ের উত্থান-পতন যত বেশি হবে, বিনিয়োগের ঝুঁকি তত বৃদ্ধি পাবে।
সুতরাং, শোভন পাবলিক লিমিটেড কোম্পানির প্রদত্ত মুনাফার হারে উত্থান-পতন বেশি বলে উক্ত কোম্পানিতে আনিসুল হকের বিনিয়োগটিও অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।
ঘ. আসিনুল হক তার প্রত্যাশার অতিরিক্ত যে মুনাফা পেলেন তা ঝুঁকির অন্তর্ভুক্ত হবে বলে আমি মনে করি।
ঝুঁকি ও অনিশ্চয়তা ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে বিনিয়োগকারী পর্যন্ত সবাইকে লক্ষ্য অর্জনে বাধা দেয়। ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান ও বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশিত এবং প্রাপ্ত ফলাফলের মধ্যে সাধারণত গরমিল বা বিচ্যুতি থাকে। আর এ বিচ্যুতি থেকেই ঝুঁকির সৃষ্টি হয়। ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান বা বিনিয়োগকারীদের বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণে এ ঝুঁকি ভ‚মিকা রাখে। উদ্দীপকে শোভন পাবলিক লিমিটেড কোম্পানির মুনাফা প্রদানের হারের উত্থান-পতন লক্ষ করে আনিসুল হক ২০১৫ সালে ১৫% মুনাফা প্রত্যাশা করেছিলেন। কিন্তু তিনি ২০% মুনাফা পেয়েছেন। অর্থাৎ তার প্রকৃত মুনাফা তার প্রত্যাশিত মুনাফা হতে ৫% বেশি। এভাবে প্রত্যাশিত মুনাফা হতে অধিক মুনাফা পাওয়ায় তিনি খুশি হয়েছেন। কিন্তু এরূপ অপ্রত্যাশিত আয় তার জন্য ঝুঁকি সৃষ্টি করেছে। কেননা প্রকৃত আয় কোনো প্রত্যাশিত আয় থেকে বেশি হলে তা তার নিকট অজানা।
সুতরাং, আসিনুল হকের নিকট তার প্রত্যাশার অতিরিক্ত প্রাপ্ত মুনাফা ঝুঁকি হিসেবে গণ্য হবে।
প্রশ্ন-৭  নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
জনাব রাশেদ একজন ফল ব্যবসায়ী। বছরের বিভিন্ন সময় তিনি বিভিন্ন অঞ্চলের উৎপাদকদের নিকট হতে কম মূল্যে ফল কিনে গুদামজাত করে রাখেন এবং উক্ত পণ্যের উৎপাদন সময় শেষ হলে তিনি তা ঢাকায় এনে অধিক মূল্যে বিক্রয় করে লাভবান হন। গত বছর তিনি রাজশাহী থেকে প্রচুর পরিমাণে আম ক্রয় করে সেখানে গুদামঘর ভাড়া নিয়ে মজুদ করে রেখেছিলেন। কিন্তু রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে তিনি সেই আম সময়মতো ঢাকায় এনে বিক্রি করতে না পারায় আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন। কাক্সিক্ষত আয় অর্জিত না হওয়ায় তিনি গুদাম ভাড়া, কর্মচারীর বেতন, পরিবহন ভাড়া ইত্যাদি ব্যয় সুষ্ঠুভাবে নির্বাহে ব্যর্থ হন।
ক. ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের মুনাফা অর্জন কিসের ওপর নির্ভর করে? ১
খ. বহিস্থ অর্থায়নে বেশি ঝুঁকি কেন? ২
গ. জনাব রাশেদ কোন ধরনের ঝুঁকির সম্মুখীন হলেন? বর্ণনা কর। ৩
ঘ. জনাব রাশেদ উক্ত ব্যবসায়িক ঝুঁকি কীভাবে মোকাবিলা করতে পারে বলে তুমি মনে কর। ৪
 ৭নং প্রশ্নের উত্তর 
ক. ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের মুনাফা অর্জন পণ্যের বাজার চাহিদার ওপর নির্ভর করে।
খ. বহিস্থ অর্থায়ন ব্যবসায় ব্যবহার করা হলে সুদসহ ঋণের অর্থ পরিশোধ করতে হয়। ব্যবসায়টি যদি লাভবান না হয় তাহলে দায় পরিশোধে অক্ষমতা দেখা দিতে পারে। অপরদিকে দীর্ঘদিন দায় পরিশোধ করতে না পারলে প্রতিষ্ঠান দেউলিয়া হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই বহিস্থ অর্থায়নে বেশি ঝুঁকি থাকে।
গ. জনাব রাশেদ তার কাক্সিক্ষত আয় উপার্জনে ব্যর্থ হওয়ায় ব্যবসায়িক ঝুঁকির সম্মুখীন হয়েছেন।
ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা ব্যয় মেটানো সংক্রান্ত অনিশ্চয়তাকে ব্যবসায়িক ঝুঁকি বলা হয়। একটি প্রতিষ্ঠান মুনাফা প্রত্যাশা করে ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। বিক্রয় আয়ে স্থিতিশীলতা না থাকলে প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা ব্যয় মেটাতে অনিশ্চয়তা দেখা দেয় এবং তা থেকেই ব্যবসায়িক ঝুঁকির সৃষ্টি হয়। উদ্দীপকে জনাব রাশেদ রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে তার সংরক্ষিত আম সময়মতো ঢাকায় এনে বিক্রি করতে পারেননি। ফলে আশানুরূপ বিক্রি না হওয়ায় তিনি তার কাক্সিক্ষত আয় অর্জনে ব্যর্থ হন। তাই তিনি তার ব্যবসায় পরিচালনার বিভিন্ন ব্যয় নির্বাহ করতে গিয়ে আর্থিক সমস্যায় সম্মুখীন হন। ব্যবসায় পরিচালনা খরচ পরিশোধের অক্ষমতা থেকে তার ব্যবসায়িক ঝুঁকি সৃষ্টি হয়।
সুতরাং, দেশের অস্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে জনাব রাশেদ তার কাক্সিক্ষত মুনাফা অর্জন করতে না পারায় ব্যবসায়িক ঝুঁকির সম্মুখীন হয়েছেন।
ঘ. জনাব রাশেদকে ব্যবসায়িক ঝুঁকি মোকাবিলা করার জন্য ঝুঁকি বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে।
প্রত্যাশার বাইরে কোনো কিছু ঘটার সম্ভাবনাকেই ঝুঁকি বলে। তাই ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের পরিকল্পনা প্রণয়নের সময় ভবিষ্যতের সম্ভাব্য ঘটনাসমূহ বিচার-বিশ্লেষণ করে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করলে অপ্রত্যাশিত ক্ষতির পরিমাণ কমানো যায়। উদ্দীপকে জনাব রাশেদের ব্যবসায়ে ব্যবসায়িক ঝুঁকির সৃষ্টি হয়েছে। অর্থাৎ তার ব্যবসায়ে একদিকে বিক্রয়জনিত আয় হ্রাস অপরদিকে স্থায়ী খরচ বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে ব্যবসায়ের অভ্যন্তরীণ তহবিলের ওপর চাপ সৃষ্টি হয়েছে। ফলে মূলধনী তহবিল হ্রাস পাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে তাকে অপেক্ষাকৃত কম ঝুঁকিপূর্ণ বিনিয়োগ খাতের প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে। তাকে ঝুঁকি হ্রাসের বিভিন্ন কৌশলগুলো গ্রহণ করতে হবে। ছোট ছোট ঝুঁকি ধারণ করার ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে। ঝুঁকির বিপক্ষে তহবিল গঠন করে ঝুঁকির মোকাবিলা করতে হবে। এছাড়া ঝুঁকি হ্রাসের নির্ধারিত কৌশলগুলোকে পৃথক পৃথকভাবে বিশ্লেষণ করে সর্বোত্তম প্রকল্পটি বাছাই করে এবং বাছাইকৃত প্রকল্পটি যথাযথভাবে ব্যবহার করে ঝুঁকি মোকাবিলা করতে হবে।
পরিশেষে বলা যায়, জনাব রাশেদ উপরিউক্ত পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করলে তার ব্যবসায়িক ঝুঁকি মোকাবিলা করতে সক্ষম হবেন।
প্রশ্ন-৮  নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
জনাব মাহমুদ সোনালী ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ছিলেন। স¤প্রতি তিনি অবসর গ্রহণ করেছেন। পেনশন বাবদ তিনি ব্যাংক হতে একটা বিশাল অঙ্কের টাকা পেয়েছেন। উক্ত টাকা দ্বারা তিনি একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চালু করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তার স্ত্রী তাকে উক্ত অর্থ কোনো একটি ঝুঁকিমুক্ত প্রকল্পে বিনিয়োগ করতে বলেন। কারণ এক্ষেত্রে আয় কিছুটা কম হলেও তিনি দুশ্চিন্তামুক্ত থাকবেন।
ক. আদর্শ বিচ্যুতির বড় মান কী নির্দেশ করে? ১
খ. পণ্যের বাজার চাহিদা আবশ্যক কেন? ২
গ. কোন ধরনের প্রকল্পে বিনিয়োগ করলে জনাব মাহমুদের আয় ঝুঁকিমুক্ত থাকবে? বর্ণনা কর। ৩
ঘ. দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে জনাব মাহমুদের মতো পেনশনভোগীদের ভ‚মিকা মূল্যায়ন কর। ৪
 ৮নং প্রশ্নের উত্তর 
ক. আদর্শ বিচ্যুতির বড় মান অধিক ঝুঁকি নির্দেশ করে।
খ. ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের মুনাফা অর্জন নির্ভর করে পণ্যের বাজার চাহিদার ওপর। বাজারে পণ্যের চাহিদা সৃষ্টি না করতে পারলে উৎপাদনের চাকা ঘুরবে না। তাই যেকোনো ব্যবসা শুরু করার আগেই প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে বাজার চাহিদা সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য বিচার-বিশ্লেষণ করে বাস্তবসম্মত চাহিদার অনুমান করে সেই অনুযায়ী ব্যবসায় পরিচালনা ও বাস্তবায়ন করতে হয়। কোনো কারণে প্রকৃত বিক্রয় অনুমেয় বিক্রয় থেকে খুব কম হলে পর্যাপ্ত মুনাফা অর্জন সম্ভব হয় না।
গ. জনাব মাহমুদ পেনশন বাবদ প্রাপ্ত অর্থ ব্যাংকে জমা রাখলে তার আয় ঝুঁকিমুক্ত থাকবে।
সকল আয় ঝুঁকিবহুল নয়, কিছু আয় আছে যা ঝুঁকিমুক্ত আয় হিসেবে গণ্য হয়। অর্থাৎ এ রকম আয়ে, প্রকৃত আয় সব সময় প্রত্যাশিত আয়ের সমান হয়। তাই বিনিয়োগকারীদের তাদের আয় নিয়ে চিন্তা করতে হয় না। উদ্দীপকে জনাব মাহমুদ তার অর্থ কোনো ব্যাংকে আমানত হিসেবে জমা রাখতে পারেন। তাহলে তিনি প্রতি বছর একটি নির্দিষ্ট হারে সুদ পাবেন। তার প্রত্যাশিত আয় এবং তার প্রকৃত আয়ের মধ্যে কোনো তফাৎ থাকবে না। তার প্রাপ্ত আয় হবে ঝুঁকিমুক্ত। এছাড়া তিনি সরকার কর্তৃক ইস্যুকৃত ট্রেজারি বিল, ট্রেজারি বন্ড, সঞ্চয়পত্র ইত্যাদি প্রকল্পে বিনিয়োগ করতে পারেন। সরকার কর্তৃক ইস্যু হয় বলে এসব বিনিয়োগকে ঝুঁকিমুক্ত বিনিয়োগ বলা হয়। এসব ঝুঁকিমুক্ত বিনিয়োগ থেকে প্রাপ্ত আয় নির্দিষ্ট থাকে বলে অর্থাৎ নির্দিষ্ট হারে আয় দেয়া হয় বলে, প্রাপ্ত আয়কে ঝুঁকিমুক্ত আয় হিসেবে গণ্য করা হয়।
ঘ. দেশের শিল্পবাণিজ্য তথা সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে জনাব মাহমুদের মতো পেনশনভোগীদের অবদান অপরিসীম।
মানুষ তার অর্জিত আয়ের সম্পূর্ণ অংশ বর্তমানে ভোগ না করে কিছু অংশ ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চয় করে রাখে। এই সঞ্চয় যখন লাভের আশায় কোনো অর্থনৈতিক প্রকল্পে ব্যবহার করা হয় তখন তাকে বিনিয়োগ বলে।
উদ্দীপকে জনাব মাহমুদ একজন অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা। তার মতো পেনশনভোগীরা তাদের সঞ্চিত অর্থ সাধারণত বিভিন্ন ঝুঁকিমুক্ত প্রকল্পে বিনিয়োগ করে থাকেন। আর ঝুঁকিমুক্ত প্রকল্পগুলোর বেশির ভাগই দীর্ঘমেয়াদি হয়। তাই তার মতো অসংখ্য পেনশনধারী ব্যক্তির ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দীর্ঘমেয়াদি সঞ্চয় একত্রিত হয়ে বৃহৎ পুঁজি গঠন করে। এ পুঁজি দেশের শিল্প ও বাণিজ্যের স¤প্রসারণের জন্য প্রয়োজনীয় মূলধনের অভাব পূরণ করে দেশের অর্থনীতির চাকাকে সচল রাখে। ফলে দেশের সামগ্রিক বিনিয়োগ ক্ষমতা বাড়ে, শিল্প ও ব্যবসায়-বাণিজ্য স¤প্রসারিত হয়, উৎপাদন বাড়ে, চাকরির সুযোগ সৃষ্টি হয়, জনগণের আয় এবং ক্রয়-ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এতে পুনরায় সঞ্চয় বাড়ে এবং জনগণের জীবন যাত্রার মান উন্নত হয়।
সুতরাং, দেশের শিল্প-বাণিজ্য তথা জনগণের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে জনাব মাহমুদের মতো পেনশনভোগীদের ব্যাপক ভ‚মিকা রয়েছে।
প্রশ্ন-৯  নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
২০১১ সালের জানুয়ারি মাসে বিকাশ চন্দ্র ‘স্বপ্নপূরণ’ নামে একটি ডিপার্টমেন্টাল স্টোর চালু করেন। তিনি আশা করেছিলেন ডিপার্টমেন্টাল স্টোরের বিক্রয় খুব ভালো হবে এবং তিনি তার বিনিয়োগকৃত অর্থ হতে প্রতি বছর ২০% আয় উপার্জনে সক্ষম হবেন। কিন্তু বিভিন্ন রকম বাধা-বিপত্তির কারণে ডিপার্টমেন্টাল স্টোরের বিক্রয় প্রতি বছর ওঠানামা করে এবং তিনি তার প্রত্যাশিত আয় অর্জনে ব্যর্থ হন। নিচে ‘স্বপ্নপূরণ ডিপার্টমেন্টাল স্টোরের’ বিগত বছরের আয়ের হার দেয়া হলো :
বছর আয় (%)
২০১১ ১৮
২০১২ ২৪
২০১৩ ২২
২০১৪ ১৭
২০১৫ ১৪

ক. খারাপ কোনো ঘটনা ঘটার আশঙ্কাকে কী বলে? ১
খ. ঝুঁকিবহুল আয় বলতে কী বোঝ? ২
গ. বিকাশ চন্দ্রের আয়ের আদর্শ বিচ্যুতি নির্ণয় কর। ৩
ঘ. প্রত্যাশিত আয় অর্জিত না হওয়ায় বিকাশ চন্দ্র কোন ধরনের ঝুঁকির সম্মুখীন হতে পারেন বলে তুমি মনে কর? ৪
 ৯নং প্রশ্নের উত্তর 
ক. খারাপ কোনো ঘটনা ঘটার আশঙ্কাকে ঝুঁকি বলে।
খ. প্রত্যাশিত আয় এবং প্রকৃত আয়ের মধ্যে ব্যবধান হওয়ার সম্ভাবনা হচ্ছে ঝুঁকি। সাধারণ আয়ের একটা অংশ ঝুঁকিমুক্ত আর বাকিটা ঝুঁকিযুক্ত। যেসব আয়ের সাথে ঝুঁকি জড়িত সেসব আয়কে ঝুঁকিবহুল আয় বলে। যেমন : কোনো কোম্পানির সাধারণ শেয়ার ক্রয় করে একজন বিনিয়োগকারী বছর শেষে কী পরিমাণ লভ্যাংশ পাবেন তা পূর্ব থেকে নিশ্চিতভাবে বলা যায় না। তাই বিনিয়োগকারীর জন্য শেয়ার থেকে আয় একটি ঝুঁকিবহুল আয়।
গ. কোনো বিনিয়োগ থেকে প্রাপ্ত বিগত বছরের আয়সমূহের বিচ্যুতি থেকে আদর্শ বিচ্যুতি নির্ণয় করা হয়।
বিকাশ চন্দ্রের আয়ের আদর্শ বিচ্যুতি নির্ণয় করা হলো-
আমরা জানি,
আদর্শ বিচ্যুতি = (আয় হার  গড় হার)২হ – ১, হ = বছর সংখ্যা
বছর আয় % গড় থেকে ব্যবধান (আয়-গড়) ব্যবধানের বর্গ
২০১১ ১৮ (১৮ – ১৯) =  ১ (১  ১) = ১
২০১২ ২৪ (২৪ – ১৯) = ৫ (৫  ৫) = ২৫
২০১৩ ২২ (২২ – ১৯) = ৩ (৩  ৩) = ৯
২০১৪ ১৭ (১৭ – ১৯) = -২ (২  ২) = ৪
২০১৫ ১৪ (১৪ – ১৯) = -৫ (৫  ৫) =২৫
যোগফল = ৯৫ ব্যবধানের বর্গের যোগফল = ৬৪
গড় আয় = ৯৫৫= ১৯
ব্যবধানের বর্গের গড় =
৬৪ /( হ -১) ১৬
 আদর্শ বিচ্যুতি = ১৬
= ৪%
অর্থাৎ বিকাশ চন্দ্রের আয়ের আদর্শ বিচ্যুতি ৪%।
ঘ. বিকাশ চন্দ্র তার ‘স্বপ্নপূরণ ডিপার্টমেন্টাল স্টোর’ প্রকল্পটি থেকে প্রত্যাশিত মুনাফা অর্জন করতে না পারায় ব্যবসায়িক ঝুঁকির সম্মুখীন হতে পারেন বলে আমি মনে করি।
ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের প্রতিটি সিদ্ধান্তের সাথে কিছু না কিছু ঝুঁকি জড়িত থাকে। এসব ঝুঁকির কারণে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের কাক্সিক্ষত ফলাফল না পাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়। উদ্দীপকে ‘স্বপ্নপূরণ ডিপার্টমেন্টাল স্টোরটি’ বিকাশ চন্দ্র নিজস্ব সঞ্চয় ব্যবহার করে প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনা করছেন। সম্পূর্ণ অভ্যন্তরীণ তহবিল উৎস ব্যবহার করায় প্রকল্পটিতে মুনাফা সংক্রান্ত অনিশ্চয়তা বিদ্যমান রয়েছে। এই মুনাফা সংক্রান্ত অনিশ্চয়তার কারণে তিনি ব্যবসায়িক ঝুঁকির সম্মুখীন হতে পারেন।
তাছাড়া ডিপার্টমেন্টাল স্টোরটি পরিচালনা করতে তাকে বিভিন্ন রকম ব্যয় যেমন : কর্মচারীর বেতন, দোকান ভাড়া, পরিবহন খরচ, বিমা খরচ ইত্যাদি ব্যয় নির্বাহ করতে হয়। তিনি যদি তার প্রকল্পটি থেকে পর্যাপ্ত আয় উপার্জন করতে না পারেন তা হলে এসব পরিচালন ব্যয়ও সময়মতো নির্বাহ করতে পারবেন না। ফলে অস্থিতিশীল আয়ের কারণে প্রতিষ্ঠানের পরিচালন ব্যয় মেটাতে অক্ষম হয়ে তিনি ব্যবসায়িক ঝুঁকির সম্মুখীন হবেন।
সুতরাং, বিকাশ চন্দ্রের ‘স্বপ্নপূরণ’ প্রকল্পটি মুনাফা এবং পরিচালন খরচ পরিশোধ সংক্রান্ত অনিশ্চয়তা বিদ্যমান থাকায় তিনি ব্যবসায়িক ঝুঁকির সম্মুখীন হতে পারেন।
প্রশ্ন-১০  নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
ইকবাল সাহেব ঢ ও ণ নামক দুইটি প্রকল্পে সমান পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করেছেন। কিন্তু আর্থিক সংকটের কারণে ইকবাল সাহেব যে কোনো একটি প্রকল্প চালু রাখার এবং অন্যটি বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। প্রকল্প দুইটির গত পাঁচ বছরের আয়ের হার নিম্নরূপ ছিল :
ঢ প্রকল্প ণ প্রকল্প
বছর আয় (%) আয় (%)
২০১১ ১৫ ১৮
২০১২ ২২ ১৪
২০১৩ ১৭ ১৯
২০১৪ ২০ ২৫
২০১৫ ২৩ ১৯

ক. ট্রেজারি বিল কে ইস্যু করে? ১
খ. আর্থিক ঝুঁকি বলতে কী বোঝায়? ব্যাখ্যা কর। ২
গ. ঢ ও ণ প্রকল্প দুইটির আদর্শ বিচ্যুতি নির্ণয় কর। ৩
ঘ. ইকবাল সাহেবের কোন প্রকল্পটি বন্ধ করে দেওয়া উচিত বলে তুমি মনে কর? তোমার উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দাও। ৪
 ১০নং প্রশ্নের উত্তর 
ক. ট্রেজারি বিল সরকার ইস্যু করে।
খ. কোম্পানি সাধারণত ঋণকৃত মূলধন বিনিয়োগ করে তা থেকে প্রাপ্ত নগদ প্রবাহ দিয়ে ঋণকৃত মূলধনের দায় পরিশোধ করে। কোনো কারণে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান বিনিয়োগকৃত অর্থ থেকে পর্যাপ্ত নগদ প্রবাহ না পেলে দায় পরিশোধের অক্ষমতা দেখা দেয়। এ রূপ দায় পরিশোধের অক্ষমতাকে আর্থিক ঝুঁকি বলে।
গ. কোনো বিনিয়োগ থেকে প্রাপ্ত বিগত বছরের আয়সমূহের বিচ্যুতি থেকে আদর্শ বিচ্যুতি নির্ণয় করা হয়।
ঢ ও ণ প্রকল্প দুটির আদর্শ বিচ্যুতি নির্ণয় করা হলো
আমরা জানি, আদর্শ বিচ্যুতি = (আয় হার  গড় হার)হ  ১
হ = বছর সংখ্যা

সাল ঢ প্রকল্প ণ প্রকল্প
আয় (%) গড় থেকে ব্যবধান ব্যবধানের বর্গ আয় (%) গড় থেকে ব্যবধান ব্যবধানের বর্গ
২০১১ ১৫ Ñ৪.৪ ১৯.৩৬ ১৮ – ১ ১
২০১২ ২২ ২.৬ ৬.৭৬ ১৪ – ৫ ২৫
২০১৩ ১৭ Ñ২.৪ ৫.৭৬ ১৯ ০ ০
২০১৪ ২০ ০.৬ ০.৩৬ ২৫ ৬ ৩৬
২০১৫ ২৩ ৩.৬ ১২.৯৬ ১৯ ০ ০
যোগফল ৯৭ ৪৫.২০ ৯৫ ৬২
ব্যবধানের বর্গের গড় = ৪৫.২০হ-১
১১.৩০ ব্যবধানের বর্গের গড় = ৬২হ-১
১৫.৫০
গড় আয় = মোট আয় %মোট বছর
ঢ প্রকল্প = ৯৭৫ = ১৯.৪%

ণ প্রকল্প = ৯৫৫ = ১৯%

আদর্শ বিচ্যুতি = ব্যবধানের বর্গের গড়
ঢ প্রকল্পের আদর্শ বিচ্যুতি = ১১.৩০
= ৩.৩৬
ণ প্রকল্পের আদর্শ বিচ্যুতি = ১৫.৫০
= ৩.৯৪
অতএব, ঢ ও ণ প্রকল্প দুইটির আদর্শ বিচ্যুতি যথাক্রমে ৩.৩৬% ও ৩.৯৮%।
ঘ. ইকবাল সাহেবের ঢ ও ণ দুটি প্রকল্পের মধ্যে যে প্রকল্পটির ঝুঁকি বেশি অথচ লাভ কম সেই প্রকল্পটি বন্ধ করে দেয়া উচিত।
ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের প্রত্যাশিত আয় এবং প্রকৃত আয়ের বিচ্যুতি থেকে ঝুঁকি সৃষ্টি হয়। এই ঝুঁকি ব্যবসায়ীদের লক্ষ্য অর্জনে বাধা দেয়। তাই ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য অর্জনের জন্য ব্যবসায়ীদেরকে সম্ভাব্য ঝুঁকির পরিমাণ পরিমাপ করে সেই অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হয়। উদ্দীপকে ইকবাল সাহেব তার আর্থিক সংকটের কারণে ঢ এবং ণ এই দুইটি প্রকল্পের একটি চালু রাখার এবং অন্যটি বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। ণ প্রকল্পটির আদর্শ বিচ্যুতি ৩.৯৮% যেখানে ঢ প্রকল্পটির আদর্শ বিচ্যুতি ৩.৩৬%। অর্থাৎ ণ প্রকল্পটি আদর্শ বিচ্যুতি ঢ প্রকল্পটির আদর্শ বিচ্যুতি অপেক্ষা ০.১৬% বেশি। তাছাড়া ণ প্রকল্পের গড় আয়ের হার ঢ প্রকল্প থেকে কম। অর্থাৎ ণ প্রকল্পটিতে ইকবাল সাহেব আদর্শ বিচ্যুতি বেশি কিন্তু অর্জিত মুনাফার গড় হার কম। তাই ণ প্রকল্পটি ঢ প্রকল্প থেকে অধিক ঝুঁকিবহুল প্রকল্প।
সুতরাং, ইকবাল সাহেবের অধিক ঝুঁকি ও কম লাভজনক ণ প্রকল্পটি বন্ধ করে দেওযা উচিত।
প্রশ্ন-১১  নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
পলাশ মণ্ডল ও পরাগ মণ্ডল দুই ভাই। পড়াশোনা শেষ করে তারা তাদের গ্রামে একটি পোশাক তৈরির কারখানা স্থাপন করার সিদ্ধান্ত নেন। কারখানা চালু করার জন্য তারা তাদের পৈতৃক সম্পত্তি ব্যাংকে জমা রেখে ৫ বছরের জন্য ১০ লাখ টাকার ঋণ গ্রহণ করেন। কারখানার স্থায়ী খরচ নির্বাহ করতে উক্ত অর্থ ব্যয় হয়ে যাওয়ায় তারা কারবার পরিচালনা ব্যয় নির্বাহের জন্য পুনরায় বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ গ্রহণ করেন। কিন্তু পরপর দুই বছর কারখানা থেকে তারা ভালো মুনাফা না পাওয়ায় পাওনাদারদের দায় পরিশোধে তারা বেশ জটিলতর সমস্যার সম্মুখীন হয়।
ক. কিসের উত্থান-পতন বেশি হলে ঝুঁকি বেশি হয়? ১
খ. আদর্শ বিচ্যুতি কেন ব্যবহার করা হয়? ২
গ. পলাশ মণ্ডল ও পরাগ মন্ডলের ঝুঁকির ধরন বর্ণনা কর। ৩
ঘ. পলাশ মণ্ডল ও পরাগ মণ্ডল কীভাবে ব্যবসায় সাফল্য পেতে পারেন তা বিশ্লেষণ কর। ৪
 ১১নং প্রশ্নের উত্তর 
ক. আয়ের উত্থান-পতন বেশি হলে ঝুঁকি বেশি হয়।
খ. আদর্শ বিচ্যুতি হলো ঝুঁকি পরিমাপের একটি পরিসংখ্যানিক পদ্ধতি। এই পদ্ধতি ব্যবহার করে অতীতে অর্জিত আয়ের বিচ্যুতি থেকে যেমন ঝুঁকি পরিমাপ করা হয়, তেমনি ভবিষ্যতে প্রত্যাশিত আয়ের ঝুঁকিও পরিমাপ করা হয়। আদর্শ বিচ্যুতির বড় মান অধিক ঝুঁকি এবং আদর্শ বিচ্যুতির ছোট মান কম ঝুঁকি বহন করে। সমান আয়ে কম ঝুঁকি বেশি গ্রহণযোগ্য এবং সমান ঝুঁকিতে অধিক লাভ বেশি গ্রহণযোগ্য।
গ. পাওনাদারদের দায় পরিশোধে অক্ষম পলাশ মণ্ডল ও পরাগ মণ্ডল আর্থিক ঝুঁকির সম্মুখীন হয়েছেন।
ব্যবসায়ীরা সাধারণত ঋণকৃত মূলধন বিনিয়োগ করে তা থেকে প্রাপ্ত নগদ প্রবাহ দিয়ে ঋণকৃত মূলধনের দায় পরিশোধ করে। কোনো কারণে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান বিনিয়োগকৃত অর্থ থেকে পর্যাপ্ত নগদ প্রবাহ না পেলে দায় পরিশোধের অক্ষমতা দেখা দেয়। এরূপ দায় পরিশোধের অক্ষমতাকে আর্থিক ঝুঁকি বলে। উদ্দীপকে পলাশ মণ্ডল ও পরাগ মণ্ডল তাদের ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় তহবিল সংগ্রহ করতে ব্যাংক ঋণসহ বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান হতে ঋণ গ্রহণ করেছেন। আর ঋণ মূলধনের জন্য সুদ প্রদান করা বাধ্যতামূলক। কিন্তু পর পর দুই বছর ভালো মুনাফা না পাওয়ায় তারা ঋণ মূলধনের সুদ পরিশোধ করতে ব্যর্থ হয়। এতে ব্যবসায়ের দায় আরও বেড়ে যায় এবং তারা তাদের পাওনাদারদের দায় পরিশোধে অক্ষম হয়ে পড়েন। সুতরাং পলাশ মণ্ডল ও পরাগ মণ্ডল ব্যবসায় হতে পর্যাপ্ত আয় না পাওয়ায় পাওনাদারদের দায় পরিশোধে অক্ষম হয়ে পড়ায় আর্থিক ঝুঁকির সম্মুখীন হয়েছেন।
ঘ. পলাশ মণ্ডল ও পরাগ মণ্ডল তাদের ব্যবসায়ের আর্থিক ঝুঁকি কমিয়ে ব্যবসায় সাফল্য পেতে পারেন।
ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের প্রতিটি সিদ্ধান্তের সাথে কিছু না কিছু ঝুঁকি জড়িত থাকে। এসব ঝুঁকি ব্যবসায়ীদের তাদের লক্ষ্য অর্জনে বাধা দেয়। তাই ব্যবসায়িক সাফল্য পেতে ব্যবসায়ীদের এসব ঝুঁকি মোকাবিলার উপায় সম্পর্কে জানা এবং দক্ষতার সহিত সেগুলো ব্যবহার করতে হয়। উদ্দীপকে পলাশ মণ্ডল ও পরাগ মণ্ডলের ব্যবসায় আর্থিক ঝুঁকির সম্মুখীন হয়েছে। তাই তাদেরকে আর্থিক ঝুঁকি মোকাবিলার সুবিধাজনক কৌশল নির্ধারণ ও তা ব্যবহার করে ঝুঁকিকে কার্যকরভাবে মোকাবিলা করতে হবে। কোন কোন ক্ষেত্রে ঝুঁকি পরিহার করা সম্ভব, কোন ক্ষেত্রে ঝুঁকিকে হ্রাস বা স্থানান্তর করা সম্ভব এবং কোন কোন ক্ষেত্রে ঝুঁকি গ্রহণ করা যেতে পারে সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে। তারা ঝুঁকিকে যতটা সর্বনিম্ন পর্যায়ে রাখতে সক্ষম হবেন তত স্বাচ্ছন্দ্যে তারা ব্যবসায় পরিচালনা করতে পারবেন।এজন্য তাদের সঞ্চিতি তহবিল গঠন, প্রতিষ্ঠানের প্রতিযোগিতার সামর্থ্য বৃদ্ধি, অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে মূলধন সৃষ্টি ইত্যাদি বিষয়ের প্রতি নজর দিতে হবে।
সুতরাং, পলাশ মণ্ডল ও পরাগ মণ্ডল তাদের ব্যবসায়ের ঝুঁকি পরিমাপ করে সেই অনুযায়ী ঝুঁকি মোকাবিলার ব্যবস্থা করে ব্যবসায় সাফল্য পেতে পারেন।
প্রশ্ন-১২  নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
রোহান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সদ্য বিবিএ পাস করেছে। এমবিএ প্রোগ্রামে পড়াশোনা করার পাশাপাশি উপার্জন করার জন্য সে শেয়ারের ব্যবসা করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। এজন্য তিনি তার বাবার নিকট থেকে ২ লক্ষ টাকা ঋণ গ্রহণ করেন। সরকারি বিনিয়োগ প্রকল্পগুলোতে সুদের হার কম দেখে তিনি ঢ কোম্পানির ডিবেঞ্চার ক্রয় করবেন। তিনি এ কথা তার বাবাকে জানালে তিনি রোহানকে প্রাথমিক পর্যায়ে ঝুঁকিবহুল বিনিয়োগ ক্ষেত্রে বিনিয়োগ না করার পরামর্শ দেন। বাবার পরামর্শ অনুযায়ী রোহান ডিবেঞ্চার বিক্রি করে সরকারি সঞ্চয়পত্র ক্রয়ের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। কিন্তু মাধ্যমিক মূলধনী বাজারে ডিবেঞ্চার ক্রেতা সংকট থাকায় তিনি তার ডিবেঞ্চার বিক্রি করতে পারেননি।
ক. সবচেয়ে ঝুঁকিবহুল আয় কোনটি? ১
খ. কোম্পানির ঋণ মূলধন বেশি হলে আর্থিক ঝুঁকি বেশি হয় কেন? ২
গ. রোহান কোন ধরনের ঝুঁকির সম্মুখীন হয়েছেন? বর্ণনা কর। ৩
ঘ. ঢ কোম্পানির ডিবেঞ্চার বিক্রি করতে না পারলে রোহানকে আর কোন ধরনের ঝুঁকি মোকাবিলা করতে হতে পারে বলে তুমি মনে কর? উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দাও। ৪
 ১২নং প্রশ্নের উত্তর 
ক. সবচেয়ে ঝুঁকিবহুল আয় হলো শেয়ার থেকে প্রাপ্ত আয়।
খ. কোম্পানি সাধারণত ঋণকৃত মূলধন বিনিয়োগ করে প্রাপ্ত নগদ প্রবাহ দিয়ে ঋণকৃত মূলধনের দায় পরিশোধ করে। কোম্পানির ঋণ মুলধন বেশি হলে আর্থিক ঝুঁকি বেশি হয়। কারণ ঋণ মূলধনের জন্য সুদ প্রদান করা বাধ্যতামূলক। কোম্পানি যদি দীর্ঘদিন দায় পরিশোধ করতে ব্যর্থ হয় তাহলে ঋণ সরবরাহকারী কোম্পানির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে পারে এবং কোম্পানি দেউলিয়া হতে পারে।
গ. রোহান ঢ কোম্পানির ডিবেঞ্চার ক্রয় করে তারল্য ঝুঁকির সম্মুখীন হয়েছেন।
যে সকল বিনিয়োগকারীরা শেয়ার, বন্ড বা ডিবেঞ্চার ইত্যাদিতে বিনিয়োগ করেন তাদের যে কোনো সময় এসব বিনিয়োগ নগদায়নের প্রয়োজন পড়ে। আশা করা হয়, তারা তাদের বিনিয়োগ যুক্তিসংগত মূল্যে বিক্রয় করে নগদায়ন করতে পারবেন। কিন্তু কোনো কারণবশত যদি বিনিয়োগকারী সহজে এবং যুক্তিসংগত মূল্যে এসব বিনিয়োগ বিক্রি করতে না পারে তাহলে তারল্য ঝুঁকি সৃষ্টি হয়। তারল্য ঝুঁকি নির্ভর করে যে বাজারে এসব বিনিয়োগ কেনাবেচা হয়, সে বাজারের আকার এবং কাঠামোর ওপর। উদ্দীপকে রোহান একজন ডিবেঞ্চার হোল্ডার। তিনি তার বাবার পরামর্শে ডিবেঞ্চার বিক্রি করে সরকারি সঞ্চয়পত্র কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কিন্তু শেয়ারকে যতটা সহজে নগদায়ন করা যায় বন্ড বা ডিবেঞ্চারকে ততটা সহজে নগদায়ন করা যায় না। কারণ মাধ্যমিক মূলধন বাজারে শেয়ারের ক্রেতা সংখ্যার তুলনায় বন্ড ডিবেঞ্চারের ক্রেতা সংখ্যা অনেক কম থাকে। সুতরাং, ক্রেতা সংকটের কারণে রোহান তার ক্রয়কৃত ডিবেঞ্চার বিক্রি করে নগদায়ন করতে না পারায় তারল্য সংকটের সম্মুখীন হয়েছেন।
ঘ. ঢ কোম্পানির ডিবেঞ্চার বিক্রি করতে না পারলে রোহানকে সুদ হারের ঝুঁকি মোকাবিলা করতে হতে পারে বলে আমি মনে করি।
বাজারে সুদের হার পরিবর্তনের সাথে সাথে ডিবেঞ্চারের মূল্য ওঠানামা করে। বাজারে সুদের হার বাড়লে ডিবেঞ্চারের বাজারমূল্য কমে, আবার সুদের হার কমলে ডিবেঞ্চারের বাজার মূল্য বাড়ে। সুদের হার পরিবর্তনের কারণে এভাবে ডিবেঞ্চারের মূল্য কমার আশঙ্কাই হলো সুদ হারের ঝুঁকি। উদ্দীপকে রোহান যেহেতু ঢ কোম্পানির ডিবেঞ্চার ক্রয় করেছে তাই তাকে তারল্য ঝুঁকির পাশাপাশি সুদ হারের ঝুঁকি মোকাবিলা করতে হতে পারে। কারণ সুদের হার বাড়লেই ডিবেঞ্চারের মূল্য অর্থাৎ তার বিনিয়োগ মূল্য কমে যাবে। অর্থাৎ সুদের হারের পরিবর্তনের কারণে বিনিয়োগ যেমন : বন্ড, ডিবেঞ্চার ইত্যাদির মূল্য হ্রাস বৃদ্ধির আশঙ্কা থাকে।
সুতরাং বলা যায় ঢ কোম্পানির ডিবেঞ্চার বিক্রি করতে না পারলে রোহানকে ডিবেঞ্চারের মূল্যের হ্রাস-বৃদ্ধিজনিত ঝুঁকি অর্থাৎ সুদের হারের ঝুঁকি মোকাবিলা করতে হতে পারে।

 জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর 
প্রশ্ন \ ১ \ কোনটি বিনিয়োগকারীকে লক্ষ্য অর্জনে বাধা দেয়?
উত্তর : ঝুঁকি ও অনিশ্চয়তা বিনিয়োগকারীকে লক্ষ্য অর্জনে বাধা দেয়।
প্রশ্ন \ ২ \ কিসের বিচ্যুতি থেকে ঝুঁকি সৃষ্টি হয়?
উত্তর : প্রত্যাশিত ও প্রাপ্ত ফলাফলের বিচ্যুতি থেকে ঝুঁকি সৃষ্টি হয়।
প্রশ্ন \ ৩ \ পরিচালনা খরচের মিশ্রণ কী?
উত্তর : পরিচালনা খরচের মিশ্রণ হলো স্থায়ী ও চলতি খরচের অনুপাত।
প্রশ্ন \ ৪\ অনিশ্চয়তার কোন অংশকে ঝুঁকি বলা যায় না?
উত্তর : অনিশ্চয়তার যে অংশটুকু পরিমাপ করা যায় না সেই অংশকে ঝুঁকি বলা যায় না।
প্রশ্ন \ ৫ \ মুনাফাসংক্রান্ত অনিশ্চয়তাকে কী বলে?
উত্তর : মুনাফাসংক্রান্ত অনিশ্চয়তাকে ব্যবসায়িক ঝুঁকি বলে।
প্রশ্ন \ ৬ \ বহিস্থ উৎস থেকে অর্থায়ন করলে কোন ধরনের ঝুঁকি সৃষ্টি হয়?
উত্তর : বহিস্থ উৎস থেকে অর্থায়ন করলে আর্থিক ঝুঁকি সৃষ্টি হয়।
প্রশ্ন \ ৭ \ কোন ধরনের কারবারে তারল্য ঝুঁকি অনেক বেশি?
উত্তর : একমালিকানা ও অংশীদারি কারবারে তারল্য ঝুঁকি অনেক বেশি।
প্রশ্ন \ ৮ \ বাজারের প্রকৃত চাহিদা অনুমেয় চাহিদা হতে কম হলে কী হয়?
উত্তর : বাজারের প্রকৃত চাহিদা অনুমেয় চাহিদা হতে কম হলে পর্যাপ্ত মুনাফা অর্জন সম্ভব হয় না।
প্রশ্ন \ ৯ \ সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিবহুল আয় কোনটি?
উত্তর : সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিবহুল আয় হলো শেয়ার থেকে প্রাপ্ত আয়।
প্রশ্ন \ ১০ \ প্রতিষ্ঠান পরিচালনার জন্য কোনটি পরিমাপ করা আবশ্যক?
উত্তর : প্রতিষ্ঠান পরিচালনার জন্য ঝুঁকি পরিমাপ করা আবশ্যক।
প্রশ্ন \ ১১ \ কোনটি ব্যবহার করে ভবিষ্যৎ আয়ের ঝুঁকি পরিমাপ করা যায়?
উত্তর : আদর্শ বিচ্যুতি ব্যবহার করে ভবিষ্যৎ আয়ের ঝুঁকি পরিমাপ করা যায়।
প্রশ্ন \ ১২ \ কোন ধরনের বিনিয়োগ থেকে প্রাপ্ত আয় নির্দিষ্ট থাকে?
উত্তর : ঝুঁকিমুক্ত বিনিয়োগ থেকে প্রাপ্ত আয় নির্দিষ্ট থাকে।
প্রশ্ন \ ১৩ \ ঝুঁকিবহুল আয় কাকে বলে?
উত্তর : যেসব আয়ের সাথে ঝুঁকি জড়িত সেসব আয়কে ঝুঁকিবহুল আয় বলা হয়।
প্রশ্ন \ ১৪ \ ব্যাংক আমানত কোন ধরনের আয়?
উত্তর : ব্যাংক আমানত ঝুঁকিমুক্ত আয়।
প্রশ্ন \ ১৫ \ ঋণ মূলধনের জন্য কোনটি বাধ্যতামূলক?
উত্তর : ঋণ মূলধনের জন্য সুদ প্রদান বাধ্যতামূলক।
প্রশ্ন \ ১৬ \ আয়ের বিচ্যুতি বেশি হলে কী বাড়ে?
উত্তর : আয়ের বিচ্যুতি বেশি হলে ঝুঁকি বাড়ে।
প্রশ্ন \ ১৭ \ কখন বিনিয়োগের বাজার মূল্য কমে যায়?
উত্তর : সুদের হার বাড়লে বিনিয়োগের বাজার মূল্য কমে যায়।
প্রশ্ন \ ১৮ \ সবচেয়ে ঝুঁকিবহুল আয় কোনটি?
উত্তর : সবচেয়ে ঝুঁকিবহুল আয় হলো শেয়ার থেকে প্রাপ্ত আয়।
প্রশ্ন \ ১৯ \ ট্রেজারি বন্ড কোন ধরনের আয়?
উত্তর : ট্রেজারি বন্ড ঝুঁকিমুক্ত আয়।
প্রশ্ন \ ২০ \ অতীত অর্জিত আয় থেকে কী পরিমাপ করা হয়?
উত্তর : অতীত অর্জিত আয় থেকে ঝুঁকি পরিমাপ করা হয়।
প্রশ্ন \ ২১ \ আয়ের উত্থান-পতন ধারণাটি কিসের সাথে জড়িত?
উত্তর : আয়ের উত্থান-পতন ধারণাটি ঝুঁকির সাথে জড়িত।
প্রশ্ন \ ২২ \ কারা সুদ হারের ঝুঁকি মোকাবিলা করে?
উত্তর : যেসব বিনিয়োগকারী বন্ড, ডিবেঞ্চার ইত্যাদি ক্রয় করে তারা সুদ হারের ঝুঁকি মোকাবিলা করে।
প্রশ্ন \ ২৩ \ ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান সফলভাবে পরিচালনার জন্য কী করা প্রয়োজন?
উত্তর : ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান সফলভাবে পরিচালনার জন্য ঝুঁকি পরিমাপ করা প্রয়োজন।
প্রশ্ন \ ২৪ \ সুদ হারে ঝুঁকি কী?
উত্তর : সদের হার পরিবর্তনের কারণে বিনিয়োগের মূল্য কমার আশঙ্কাই সুদের হারের ঝুঁকি।
প্রশ্ন \ ২৫ \ মূলধনী বাজার কী?
উত্তর : যে বাজারে যৌথ মূলধনী কোম্পানির শেয়ার ও ঋণপত্র ইত্যাদি কেনা-বেচা করা হয় তাকে মূলধনী বাজার বলে।

 অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর 
প্রশ্ন \ ১ \ ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান কীভাবে আর্থিক ঝুঁকি মোকাবিলা করতে পারে?
উত্তর : বহিস্থ উৎস হতে অর্থায়ন করলে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে আর্থিক ঝুঁকি সৃষ্টি হয়। কারণ ঋণ মূলধনের জন্য সুদ প্রদান করা বাধ্যতামূলক। তাই কোনো প্রতিষ্ঠান ঋণ মূলধন ব্যবহার করলে সুদ এবং উক্ত অর্থ পরিশোধের দায় সৃষ্টি হয়। এরূপ দায় পরিশোধের অক্ষমতাই ব্যবসায়ের আর্থিক ঝুঁকি। তাই অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে প্রয়োজনীয় তহবিল সংগ্রহ করে। ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান তার আর্থিক ঝুঁকি মোকাবিলা করতে পারে।
প্রশ্ন \ ২ \ বন্ড-ডিবেঞ্চারের বিনিয়োগকে নগদায়ন করা সময়সাধ্য ও ব্যয়বহুল কেন?
উত্তর : বিনিয়োগকারীর অর্থ শেয়ার, বন্ড বা ডিবেঞ্চার ইত্যাদিতে বিনিয়োগের পর যে কোনো সময় এসব বিনিয়োগ নগদায়নের প্রয়োজন হয়। বিনিয়োগকারীরা আশা করে এসব বিনিয়োগ যুক্তিসংগত মূল্যে বিক্রি করে নগদায়ন করতে পারবেন। মাধ্যমিক মূলধন বাজারে এসব বিনিয়োগ কেনাবেচা হয়। কিন্তু বাজারে বন্ড ও ডিবেঞ্চারের ক্রেতা সহজে পাওয়া যায় না। তাই বন্ড-ডিবেঞ্চারের বিনিয়োগকে নগদায়ন করা সময়সাধ্য ও ব্যয়বহুল।
প্রশ্ন \ ৩ \ ঝুঁকি ও অনিশ্চয়তার মধ্যে দুইটি পার্থক্য লেখ।
উত্তর : ঝুঁকি ও অনিশ্চিয়তার মধ্যে দুইটি পার্থক্য নিচে দেওয়া হলো-
১. পরিমাপ ঝুঁকি পরিমাপ করা যায়। অনিশ্চিয়তা পরিমাপ করা যায় না।
২. হ্রাস ঝুঁকি পরিমাপ করা যায় বলে ঝুঁকির পরিমাণ কমানো যায়। অনিশ্চয়তার পরিমাণ কমানো যায় না।
প্রশ্ন \ ৪ \ আর্থিক ঝুঁকি ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : আর্থিক ঝুঁকি বহিস্থ উৎস থেকে অর্থায়নের মাধ্যমে সৃষ্টি হয়। যে প্রতিষ্ঠানের ঋণ মূলধন বেশি, সেই প্রতিষ্ঠানের আর্থিক ঝুঁকি বেশি। কারণ ঋণ মূলধনের জন্য সুদ প্রদান করা বাধ্যতামূলক। দীর্ঘদিন দায় পরিশোধ করতে না পারলে ঋণ সরবরাহকারী কোম্পানির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে পারে এবং কোম্পানি দেউলিয়া হওয়ার আশক্সকা থাকে। ফলে এরূপ দায় পরিশোধের অক্ষমতা থেকে যে ঝুঁকির সৃষ্টি হয় তাকে আর্থিক ঝুঁকি বলা হয়।
প্রশ্ন \ ৫ \ আয় হার বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : কোনো বিনিয়োগ প্রকল্প হতে বিনিয়োগকারীরা যে পরিমাণ অর্থ প্রতি বছর আয় হিসেবে ফেরত পায় তাকে আয় হার বলে। প্রকৃত আয় হার ও প্রত্যাশিত আয় হারের মধ্যে পার্থক্য থাকতে পারে। কিন্তু তা খুব বেশি অস্বাভাবিক হলে বিনিয়োগকারীরা উৎসাহ হারিয়ে ফেলে।
প্রশ্ন \ ৬ \ বহিস্থ অর্থায়নে বেশি ঝুঁকি কেন?
উত্তর : বহিস্থ অর্থায়ন ব্যবসায় ব্যবহার করা হলে সুদসহ ঋণের অর্থ পরিশোধ করতে হয়। ব্যবসায়টি যদি লাভবান না হয় তাহলে দায় পরিশোধে অক্ষমতা দেখা দিতে পারে। অপরদিকে দীর্ঘদিন দায় পরিশোধ করতে না পারলে প্রতিষ্ঠান দেউলিয়া হওয়ার আশক্সকা থাকে। তাই বহিস্থ অর্থায়নে বেশি ঝুঁকি থাকে।
প্রশ্ন \ ৭ \ শেয়ারে তারল্য ঝুঁকি কম কেন? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : মাধ্যমিক বাজারের আকার এবং কাঠামোর ওপর তারল্য ঝুঁকি নির্ভর করে। শেয়ার বাজারে প্রচুর ক্রেতা থাকায় শেয়ার ক্রয়ে তারল্য ঝুঁকি কম। কারণ নগদ অর্থের প্রয়োজন হলে মাধ্যমিক বাজারে যেকোনো সময় শেয়ার বিক্রি করা যায়। অর্থাৎ বিনিয়োগ নগদায়ন কম সময় ও কম ব্যয়ে করা যায় বলে শেয়ারে তারল্য ঝুঁকি কম।
প্রশ্ন \ ৮ \ ঝুঁকি পরিমাপ করতে হয় কেন?
উত্তর : ব্যবসায় পরিকল্পনা প্রণয়নের সময় ঝুঁকি পরিমাপ করতে হয় কারণ ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান শুরু করলেই সফল হওয়া যায় না। এ জন্য প্রয়োজন ঝুঁকি পরিমাপ করা এবং ভবিষ্যতে সেই অনুযায়ী ঝুঁকি মোকাবিলার ব্যবস্থা করা।
প্রশ্ন \ ৯ \ ঘূর্ণিঝড় কী ঝুঁকি না অনিশ্চয়তা? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : ঘূর্ণিঝড় একটি অনিশ্চয়তা। কেননা ঘূর্ণিঝড় সংঘটিত হওয়ার কারণ পূর্বানুমানযোগ্য নয়। আবার ঘূর্ণিঝড়ের ফলে সংঘটিত ঝুঁকির পরিমাণ পূর্বেই জানা যায় না। তাছাড়া কৌশল প্রয়োগে ঘূর্ণিঝড় নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। এজন্য ঘূর্ণিঝড় ঝুঁকি নয়, অনিশ্চয়তার অন্তর্ভুক্ত।
প্রশ্ন \ ১০ \ শেয়ার ক্রয় কোন ধরনের আয়? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : শেয়ার ক্রয় ঝুঁকিবহুল বিনিয়োগ। এতে প্রত্যাশিত লভ্যাংশ প্রাপ্তির আশা থেকে প্রকৃত প্রাপ্তির ব্যবধান হয়ে থাকে। অর্থাৎ ভবিষ্যতে কী পরিমাণ লভ্যাংশ দেয়া হবে তা নির্দিষ্ট নয় বলে শেয়ার একটি ঝুঁকিবহুল বিনিয়োগ এবং লভ্যাংশ ঝুঁকিপূর্ণ আয়।
প্রশ্ন \ ১১ \ পরিচালনা ব্যয় বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : কোনো ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করার জন্য যে সকল চলতি ব্যয় সম্পাদন করতে হয় সে সকল ব্যয়কে পরিচালনা ব্যয় বলে। পরিচালনা ব্যয় সঠিকভাবে সম্পাদন করতে পারলে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানকে দৈনন্দিন কার্যাবলি সম্পাদনে কোনো বাধার সম্মুখীন হতে হয় না।
প্রশ্ন \ ১২ \ আদর্শ বিচ্যুতি ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : আদর্শ বিচ্যুতি ব্যবহার করে অতীত অর্জিত আয়ের বিচ্যুতি থেকে যেমন ঝুঁকি পরিমাপ করা হয়, তেমনি ভবিষ্যতে প্রত্যাশিত আয়ের ঝুঁকিও পরিমাণ করা হয় এটি একটি পরিসংখ্যানিক পদ্ধতি। নিচে আদর্শ বিচ্যুতির সূত্র দেওয়া হলো-
আদর্শ বিচ্যুতি = (আয় হার  গড় হার)২হ  ১
এখানে,
 (আয় হার  গড় হার)২ = অতীতে অর্জিত আয় হার থেকে বড় আয় হারের পার্থক্যের বর্গের সমষ্টি
হ = বছরের সংখ্যা।
প্রশ্ন \ ১৩ \ পণ্যের বাজার চাহিদা বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : পণ্যের বাজার চাহিদা বলতে ভোক্তাদের মধ্যে নির্দিষ্ট পণ্যটির জনপ্রিয়তা এবং তাদের চাহিদা পূরণের সক্ষমতাকে বোঝায়। প্রতিযোগিতাপূর্ণ বাজারে টিকে থাকার জন্য কোনো নির্দিষ্ট পণ্য সম্পর্কে ভোক্তাদের মতামত গ্রহণ করার মাধ্যমে পণ্যটির বাজার চাহিদা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।
প্রশ্ন \ ১৪ \ ঝুঁকি পরিমাপ বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : প্রকৃত ফলাফল প্রত্যাশিত ফলাফল থেকে ভিন্ন হওয়ার সম্ভাবনাকেই ঝুঁকি বলা হয়। বিনিয়োগের সাথে জড়িত সম্ভাব্য ঝুঁকির মাত্রা যখন কোনো গাণিতিক পদ্ধতি প্রয়োগ করার মাধ্যমে নিরূপণ করা যায় তাকে ঝুঁকি পরিমাপ বলে। ব্যবসায়ের ঝুঁকি সবসময় পরিমাপযোগ্য।
প্রশ্ন \ ১৫ \ পরিসংখ্যানিক পদ্ধতি সম্পর্কে লেখ।
উত্তর : পরিসংখ্যানে ব্যবহৃত সকল গাণিতিক পদ্ধতি ও সূত্রকে পরিসংখ্যানিক পদ্ধতি বলে। পরিসংখ্যানিক পদ্ধতিসমূহ ব্যবহার করে একজন বিনিয়োগকারী বিনিয়োগ প্রকল্পসমূহের সাথে সংশ্লিষ্ট ঝুঁকি পরিমাপ করে লাভজনক প্রকল্পে বিনিয়োগ করতে সহায়তা পেতে পারে।

প্রশ্ন \ ১ \ জনাব আবির হাসান শেয়ার বাজারের একজন বিনিয়োগকারী। গত সাত বছরে বিনিয়োগ থেকে তার আয়ের হার যথাক্রমে ১৪%, ২০%, ১২%, -৫%, ৩৫%, ১০% ও ২৫%। [ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল]
র. বিনিয়োগের আয়ের গড় থেকে ব্যবধানের বর্গের যোগফল নির্ণয় কর।
রর. জনাব আবির হাসানের বিনিয়োগের ঝুঁকি পরিমাপের জন্য আদর্শ বিচ্যুতি নির্ণয় কর।
সমাধান :
র. বিনিয়োগের আয়ের গড় থেকে ব্যবধানের বর্গের যোগফল নির্ণয় :
বছর আয় (%) গড় থেকে ব্যবধান (আয়-গড়) ব্যবধানের বর্গ
১ম ১৪ ১৪ – ১৫.৮৬ = -১.৮৬ (Ñ ১.৮৬)২ = ৩.৪৫৯৬
২য় ২০ ২০ – ১৫.৮৬ = ৪.১৪ (৪.১৪)২ = ১৭.১৩৯৬
৩য় ১২ ১২ – ১৫.৮৬ = -৩.৮৬ (Ñ ৩.৮৬)২ = ১৪.৮৯৯৬
৪র্থ -৫ – ৫ – ১৫.৮৬ = -২০.৮৬ (Ñ ২০.৮৬)২ = ৪৩৫.১৩৯৬
৫ম ৩৫ ৩৫ – ১৫.৮৬ = ১৯.১৪ (১৯.১৪)২ = ৩৬৬.৩৩৯৬
৬ষ্ঠ ১০ ১০ – ১৫.৮৬ = -৫.৮৬ (Ñ ৫.৮৬)২ = ৩৪.৩৩৯৬
৭ম ২৫ ২৫ – ১৫.৮৬ = ৯.১৪ (৯.১৪)২ = ৮৩.৫৩৯৬
যোগফল = ১১১ ব্যবধানের বর্গের যোগফল = ৯৫৪.৪৫৭২
আয়ের গড় = ১১১৭
= ১৫.৮৬
অতএব, বিনিয়োগের আয়ের গড় ব্যবধানের বর্গের যোগফল = ৯৫৪.৪৫৭২।
রর. আমরা জানি,
আদর্শ বিচ্যুতি = (আয় হার – গড় হার)২ হ  ১
= ৯৫৪.৪৫৭২ ৭  ১ [সূত্রে মান বসিয়ে]
= ৯৫৪.৪৫৭২ ৬
= ১৫৯.১৪
= ১২.৬২% (প্রায়)।
অতএব, জনাব আবির হাসানের আদর্শ বিচ্যুতি ১২.৬২% (প্রায়)।
প্রশ্ন \ ২ \ জনাব আমিনুল দুটি ব্যাংকে সমপরিমাণ মূলধন বিনিয়োগের চিন্তা করছেন। বিগত ৪ বছরে উক্ত ব্যাংক দুটি হতে প্রাপ্ত আয়ের হার নিম্নরূপ :
সাল ১ম ব্যাংক ২য় ব্যাংক
২০০৮ ১০% ১৬%
২০০৯ ১২% ১০%
২০১০ ৮% ৬%
২০১১ ১৩% ১২%
জনাব আমিনুল গড় আয় ও আদর্শ বিচ্যুতি নির্ণয় করে কোন ব্যাংকে বিনিয়োগ করলে অধিক লাভজনক হবে তার তুলনামূলক বিশ্লেষণ কর।
[লালবাগ মডেল স্কুল ও কলেজ, ঢাকা]
সমাধান : প্রথম ব্যাংক ও দ্বিতীয় ব্যাংক দুটির আদর্শ বিচ্যুতি নির্ণয় :
সাল ১ম ব্যাংক ২য় ব্যাংক
আয় (%) গড় থেকে ব্যবধান ব্যবধানের বর্গ আয় (%) গড় থেকে ব্যবধান ব্যবধানের বর্গ
২০০৮ ১০ -০.৭৫ ০.৫৬২৫ ১৬ ৫ ২৫
২০০৯ ১২ ১.২৫ ১.৫৬২৫ ১০ -১ ১
২০১০ ৮ -২.৭৫ ৭.৫৬২৫ ৬ -৫ ২৫
২০১১ ১৩ ২.২৫ ৫.০৬২৫ ১২ ১ ১
যোগফল = ৪৩ ব্যবধানের বর্গের যোগফল = ১৪.৭৫ ৪৪ ব্যবধানের বর্গের যোগফল = ৫২
গড় = ৪৩৪ = ১০.৭৫
ব্যবধানের বর্গের গড় = ১৪.৭৫৪-১
= ৪.৯২ গড় = ৪৪৪
= ১১ ব্যবধানের বর্গের গড় = ৫২৪-১
= ১৭.৩৩
 ১ম ব্যাংক-এর আদর্শ বিচ্যুতি = ৪.৯২
= ২.২২% (প্রায়)।
 ২য় ব্যাংক-এর আদর্শ বিচ্যুতি = ১৭.৩৩
= ৪.১৬% (প্রায়)।
অতএব, ১ম ব্যাংকে বিনিয়োগ অধিক লাভজনক হবে।
প্রশ্ন \ ৩ \ আমিন সাহেব ঢ ও ণ দুটি প্রকল্পে তার মূলধন বিনিয়োগ করেছেন। কিন্তু মূলধন অপর্যাপ্ততার কারণে তিনি একটি প্রকল্পের কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। প্রকল্প দুটির ৫ বছরের আয়ের পরিমাণ নিম্নরূপ :
সাল প্রকল্প ঢ (আয়%) প্রকল্প ণ (আয়%)
২০০৯ ২২% ২৩%
২০১০ ২০% ১৯%
২০১১ ১৬% ১৮%
২০১২ ১৮% ২০%
২০১৩ ১৪% ১০%
আমিন সাহেবের কোন প্রকল্পটি বন্ধ করে দেওয়া উচিত বলে তুমি মনে কর। [আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মতিঝিল, ঢাকা]
সমাধান :
সাল প্রকল্প ঢ প্রকল্প ণ
আয় (%) গড় থেকে ব্যবধান ব্যবধানের বর্গ আয় (%) গড় থেকে ব্যবধান ব্যবধানের বর্গ
২০০৯ ২২ ৪ ১৬ ২৩ ৫ ২৫
২০১০ ২০ ২ ৪ ১৯ ১ ১
২০১১ ১৬ -২ ৪ ১৮ ০ ০
২০১২ ১৮ ০ ০ ২০ ২ ৪
২০১৩ ১৪ -৪ ১৬ ১০ -৮ ৬৪
যোগফল = ৯০ ব্যবধানের বর্গের যোগফল = ৪০ ৯০ ব্যবধানের বর্গের যোগফল = ৯৪
গড় = ৯০৫ = ১৮
ব্যবধানের বর্গের যোগফল = ৪০৫-১
= ১০ গড় = ৯০৫
= ১৮ ব্যবধানের বর্গের যোগফল = ৯৪৫-১
= ২৩.৫
 ঢ -এর আদর্শ বিচ্যুতি = ১০
= ৩.১৬% (প্রায়)।
 ণ -এর আদর্শ বিচ্যুতি = ২৩.৫
= ৪.৮৫% (প্রায়)।
অতএব, প্রকল্প ণ- তে ঝুঁকি বেশি বিধায় প্রকল্প ণ বন্ধ করে দেওয়া উচিত।

Leave a Reply