নবম-দশম শ্রেণির ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং অষ্টম অধ্যায় মুদ্রা, ব্যাংক ও ব্যাংকিং সৃজনশীল ও জ্ঞানমূলক প্রশ্নোত্তর

অষ্টম অধ্যায়
মুদ্রা, ব্যাংক ও ব্যাংকিং

 মুদ্রা ও তার ইতিহাস
মুদ্রার ইতিহাস খুবই বিচিত্র। ইতিহাস থেকে দেখা যায় বিভিন্ন সময় বিভিন্ন আকার এবং প্রকৃতির মুদ্রা বিভিন্ন দেশে ব্যবহৃত হতো। বিনিময় মাধ্যমে মুদ্রা হিসেবে বিভিন্ন সময় কড়ি, হাঙ্গরের দাঁত, হাতির দাঁত, পাথর, ঝিনুক, পোড়া মাটি, তামা, রূপা ও সোনার ব্যবহার লক্ষ করা যায়। ব্যবহার, স্থানান্তর, বহন এবং অন্যান্য প্রয়োজনের কারণে ধাতব মুদ্রার ব্যবহার বেশিদিন স্থায়িত্ব লাভ করতে পারেনি। ধাতব পদার্থের সরবরাহে ঘাটতি দেখা দেয়। তাছাড়া স্বর্ণ এবং রৌপ্যের অলঙ্কারাদিসহ অন্যান্য ব্যবহারের কারণে কাগজি মুদ্রার প্রচলন ঊনবিংশ শতাব্দীতে শুরু হয়। কাগজের সহজলভ্যতা, সহজে বহনযোগ্য হওয়া এবং বর্তমানে বিভিন্ন রকমের নিরাপত্তা নিশ্চিত হওয়ায় কাগজি মুদ্রা ব্যাপক প্রসার লাভ করেছে।
 মুদ্রা কী
কার্যকারিতার ভিত্তিতে মুদ্রা বলতে আমরা বুঝি ‘মুদ্রা’ একটি বিনিময় মাধ্যম, যা সবার নিকট গ্রহণীয় এবং যা মূল্যের পরিমাপক ও সঞ্চয়ের বাহন হিসেবে কাজ করে’। অর্থাৎ যেকোনো লেনদেন করার জন্য মুদ্রা ব্যবহার করা হয়।
 মুদ্রা ও ব্যাংকের সম্পর্ক
মুদ্রা প্রচলনের পরপরই ব্যাংক ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়, যার জন্য মুদ্রাকে ব্যাংক ব্যবস্থার জননী বলা হয়। মানুষের কাছে থাকা প্রয়োজনের অতিরিক্ত অর্থ তার সঞ্চয় হিসাবে সংগ্রহের মাধ্যমে ব্যাংক আমানতের সৃষ্টি করে এবং সঞ্চয়কারীকে একটি নির্দিষ্ট সুদ বা মুনাফা দিয়ে থাকে। এ আমানত ঋণগ্রহীতাকে বর্ধিত সুদে ঋণ প্রদানের মাধ্যমে ব্যাংক তার ব্যবসায়িক মুনাফা করে থাকে। মুদ্রা ছাড়া যেমন ব্যাংক চলতে পারে না তেমনি ব্যাংক ছাড়া মুদ্রার ব্যবহারও সীমিত।
 ব্যাংক, ব্যাংকিং ও ব্যাংকার
ব্যাংক : ব্যাংক হলো একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান, যা জনগণের কাছ থেকে সুদের বিনিময়ে আমানত সংগ্রহ করে, মুনাফা অর্জনের নিমিত্তে তা বিনিয়োগ করে এবং চাহিবামাত্র অথবা নির্দিষ্ট সময়ান্তে সঞ্চয়কারীর কাছে তা ফেরত দিতে বাধ্য থাকে। অর্থাৎ ব্যাংক হচ্ছে অর্থ জমা, তোলা ও ঋণদানের একটি নিরাপদ প্রতিষ্ঠান।
ব্যাংকিং : জনসাধারণের কাছ থেকে চলতি, সঞ্চয়ী ও মেয়াদি হিসাবে অর্থ গ্রহণ, চেক গ্রহণ ও পরিশোধ, ঋণ প্রদান, বিল বাট্টাকরণ, একস্থান থেকে অন্যস্থানে গ্রাহকদের অর্থ স্থানান্তরে সাহায্যকরণ প্রভৃতি কাজকে সমষ্টিগতভাবে ব্যাংকিং বলা হয়। অর্থাৎ ব্যাংক কর্তৃক গ্রাহকদের জন্য সম্পাদিত সকল কার্যাবলি হলো ব্যাংকিং।
ব্যাংকার : যে ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গ ব্যাংকিং ব্যবসায় পরিচালনার সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত থাকে তাকে ব্যাংকার বলা হয়।
 ব্যাংক ব্যবসায়ের ইতিহাস ও ক্রমবিকাশ
মুদ্রা ব্যবস্থার আবির্ভাব এবং মুদ্রা ব্যবহারের প্রথম যুগ থেকেই ব্যাংক ব্যবস্থার শুরু। মুদ্রা আবিষ্কারের পর পর ব্যবসায় বাণিজ্য, লেনদেন এবং মুদ্রার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তা ব্যাংক সৃষ্টিতে ব্যাপক অবদান রাখে। খ্রিষ্টপূর্ব পাঁচ হাজার সালে প্রথম ব্যাংক ব্যবস্থা ইতিহাসে স্থান করে নেয়। পরবর্তীতে ব্যাবিলনীয় সভ্যতা, রোমান সভ্যতা, চৈনিক সভ্যতা, গ্রিক সভ্যতা ব্যাংকিং ব্যবসায়কে উত্তরোত্তর উন্নতি সাধনে অবদান রাখে।
 বাংলাদেশ ব্যাংক
কেন্দ্রীয় ব্যাংক হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংক মুদ্রা প্রচলন, ঋণ নিয়ন্ত্রণ এবং ব্যাংকিং ব্যবসায়ের অভিভাবকের দায়িত্ব পালন করে এবং সব ব্যাংকের জাতীয়করণ করেন। যার কারণে সোনালী ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক ও উত্তরা ব্যাংক রাষ্ট্রেয়ত্ত¡ ব্যাংক জš§ লাভ করে।

অনুশীলনীর সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর

প্রশ্ন-১  নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
ওমর আলী একজন কৃষক। তিনি জমি চাষ করে ধান, গমসহ বিভিন্ন রকম ফসল ফলান। তার প্রতিবেশী মতিন একজন দর্জি। তিনি ছেলে মেয়ে সবার জন্য পোশাক তৈরি করেন। মুদ্রার প্রচলন না থাকায় ওমর আলী মতিনের কাছ থেকে পরিবারের সদস্যদের জন্য দরকারি পোশাক সংগ্রহ করেন। মতিনও কাপড়ের বিনিময়ে পরিবারের খাদ্যের চাহিদা মেটাতে পারেন। এটাই দ্রব্য বিনিময় প্রথা।
ক. কোনটি নিরাপদ বিনিময় মাধ্যম হিসেবে বিবেচিত? ১
খ. ‘দ্রব্যের বিনিময়ে দ্রব্য’ এ প্রথাটি ব্যাখ্যা কর। ২
গ. ওমর আলী ও মতিনের পণ্য বিনিময় কিসের অভাব ফুটিয়ে তুলেছে? বর্ণনা কর। ৩
ঘ. ওমর আলী ও মতিনের চাহিদা মেটাতে ‘দ্রব্যের বিনিময়ে দ্রব্য’কতটুকু কার্যকর তা মূল্যায়ন কর। ৪
 ১নং প্রশ্নের উত্তর 
ক. কাগজি মুদ্রা নিরাপদ বিনিময় মাধ্যম হিসেবে বিবেচিত।
খ. ‘দ্রব্যের বিনিময়ে দ্রব্য’ এই প্রথাটিই বিনিময় প্রথা হিসেবে পরিচিত। প্রথাটি মুদ্রা প্রচলনের পূর্বের একটি প্রাচীন বিনিময় প্রথা। মানব সৃষ্টি ও সভ্যতার বিবর্তনের সাথে সাথে মানুষের প্রয়োজন, কর্মকাণ্ড এবং সামাজিক বন্ধনের পরিধি প্রসার লাভ করতে থাকে। তখন মানুষ নিজেদের পরস্পরের মধ্যে তার প্রয়োজনের অতিরিক্ত দ্রব্যাদি বিনিময়ের মাধ্যমে নিজেদের চাহিদা পূরণ করত। এটাই ‘দ্রব্যের বিনিময়ে দ্রব্য’ প্রথা।
গ. ওমর আলী ও মতিনের পণ্য বিনিময় বিনিময় মাধ্যম হিসেবে মুদ্রার অভাব ফুটিয়ে তুলেছে।
মানব সৃষ্টি ও সভ্যতার বিবর্তনের সাথে সাথে মানুষের প্রয়োজন, কর্মকাণ্ড ও সামাজিক পরিধি বৃদ্ধিতে মানুষের চাহিদার মাত্রা বেড়ে গেল। মানুষ একে অপরের চাহিদা মেটাতে দ্রব্য বিনিময় করত। উদ্দীপকে ওমর আলী ও মতিন দ্রব্য বিনিময় ঘটিয়ে নিজেদের প্রয়োজন পূরণ করেছেন। বিনিময় মাধ্যম না থাকায় তারা দ্রব্য বা পণ্য বিনিময়ে বাধ্য হয়েছেন। একক বিনিময় মাধ্যম হিসেবে পরিচিত মুদ্রা প্রচলিত থাকলে তারা প্রতিটি পণ্য বা বস্তুর মূল্য পরিমাপ করতে পারতেন। আর মূল্য পরিমাপ করতে পারলে মুদ্রার মাধ্যমে বিনিময় কাজ সম্পন্ন করতে পারতেন। কিন্তু সভ্যতার শুরুতে মুদ্রা না থাকায় ওমর আলী ও মতিনকে পণ্য বা দ্রব্য বিনিময়ের মাধ্যমে চাহিদা মেটাতে হয়েছে।
ঘ. মুদ্রার প্রচলন না থাকায় ওমর আলী ও মতিনের চাহিদা মেটাতে দ্রব্যের বিনিময়ে দ্রব্য কার্যকর ভ‚মিকা পালন করছে।
মানব সৃষ্টি ও সভ্যতার বিবর্তনের সাথে সাথে মানুষের প্রয়োজন, কর্মকাণ্ড এবং সামাজিক বন্ধনের পরিধি প্রসার লাভ করতে থাকে। প্রথমদিকে মানুষের চাহিদা ছিল খুব সীমিত এবং পরস্পরের মধ্যে তারা প্রয়োজনের অতিরিক্ত দ্রব্যাদি বিনিময়ের মাধ্যমে নিজেদের চাহিদা পূরণ করত। দ্রব্যের বিনিময়ে দ্রব্যের আদান-প্রদানের এ ব্যবস্থাই হলো বিনিময় প্রথা। উদ্দীপকের ওমর আলী কৃষক হিসেবে যেসব ফসল ফলাত তার সবটুকু তার প্রয়োজন হতো না। ফলে প্রয়োজনের অতিরিক্ত দ্রব্য মতিনের সাথে বিনিময় করতেন। মতিনও ওমর আলীকে পোশাক সরবরাহের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় খাদ্যশস্য সংগ্রহ করতেন। এভাবে দ্রব্য বিনিময়ের মাধ্যমে ওমর আলী ও মতিন নিজেদের চাহিদা মেটাতে সক্ষম হন। কারণ ঐ সময়ে মুদ্রার প্রচলন ছিল না।
সুতরাং, ওমর আলী ও মতিনের চাহিদার প্রয়োজনেই মূলত বিনিময় প্রথার উদ্ভব হয়েছে।
প্রশ্ন-২  নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
মকবুল একজন নির্মাণ শ্রমিক। তার দৈনিক মজুরি ৫০০ টাকা। কিন্তু একই সময়ে কাজ করে তার সহকারী নিয়ামতের মজুরি ৩০০ টাকা। আবার ১ কেজি বাসমতি চাল ১৫০ টাকা হলেও ১ কেজি নাজির চাল ৪০ টাকা। একই সময় বা একই পণ্য হলেও এদের বিনিময়ে তারতম্য দেখা যায়। এ তারতম্যতা অনুধাবনের মাধ্যমে ব্যবসায়িক লেনদেনগুলো বোধগম্য হয়।
ক. বিনিময় প্রথার মূল কথা কী? ১
খ. বিরাষ্ট্রীয়করণ প্রক্রিয়া বলতে কী বোঝ? ২
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত লেনদেনে মুদ্রা কী হিসেবে কাজ করেছে? বর্ণনা কর। ৩
ঘ. উদ্দীপকে মুদ্রার ভ‚মিকা অর্থনৈতিক ক্রিয়াকলাপে কী কোনো প্রভাব ফেলেছে? তোমার মতামত দাও। ৪
 ২নং প্রশ্নের উত্তর 
ক. বিনিময় প্রথার মূলকথা হলোÑ দ্রব্যের বিনিময়ে দ্রব্য।
খ. যে প্রক্রিয়ায় একটি ব্যাংক ব্যক্তি বা বেসরকারি মালিকানায় গঠিত ও পরিচালিত হয় তাই বিরাষ্ট্রীয়করণ প্রক্রিয়া নামে পরিচিত। বিরাষ্ট্রীয়করণ প্রক্রিয়ায় ব্যাংকগুলোর অধিকাংশ শেয়ারের মালিক বেসরকারি ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান। এ প্রক্রিয়ায় ব্যাংকসমূহ সর্বাধিক গ্রাহক সেবা, ব্যাংকিং দক্ষতা এবং জনগণের চাহিদা বিবেচনায় পরিচালিত হয়।
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত লেনদেনে মুদ্রা বিনিময়ের মাধ্যম হিসেবে কাজ করেছে।
মুদ্রা এমন একটি বিনিময় মাধ্যম, যা সবার নিকট গ্রহণীয় এবং যা মূল্যের পরিমাপক ও সঞ্চয়ে বাহন হিসাবে কাজ করে। মুদ্রার বিভিন্ন ধরনের কার্য সম্পাদনের মাধ্যম হিসেবে কাজ করে।
উদ্দীপকে নির্মাণ শ্রমিক মকবুল ও তার সহকারী নিয়ামত তাদের শ্রমের বিনিময়ে মুদ্রা পেয়ে থাকে। এছাড়া চাল ক্রয় করার মাধ্যম হিসেবেও মুদ্রা ব্যবহৃত হয়। এর মাধ্যমে সহজে বিনিময় সম্ভব হয়। অর্থাৎ যেকোনো লেনদেন করতে মুদ্রা ব্যবহার করা হয়। কোনো কিছু ক্রয় করতে, বিক্রয় করতে, কোনো বস্তু বা সেবার আদান-প্রদানেও মুদ্রা ব্যবহার করা হয়। মূলত মুদ্রা ব্যতীত অন্য কোনো কিছুর দ্বারা বস্তু বা সেবা ক্রয়-বিক্রয় সম্ভব নয়।
ঘ. উদ্দীপকে মুদ্রার ভ‚মিকা অর্থনৈতিক ক্রিয়াকলাপে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলেছে বলে আমি মনে করি।
বিনিময়ের সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য মাধ্যম হলো মুদ্রা। বিনিময়ের মাধ্যম ছাড়াও সঞ্চয়ের ভাণ্ডার এবং মূল্যের পরিমাপক হিসাবে মুদ্রার প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। উদ্দীপকে মকবুল ও নিয়ামতের মজুরির ভিন্নতা, বাসমতি ও নাজির চালের মূল্যের তারতম্য, ব্যবসায়িক লেনদেন প্রভৃতি সহজেই মূল্যায়িত করা হয় মুদ্রার মাধ্যমে। অর্থাৎ বর্তমানে সকল প্রকার পণ্য ও সেবার মূল্য অর্থের মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়। অর্থ মূল্য পরিমাপের একটি সাধারণ মানদণ্ড। মুদ্রার অস্তিত্ব আছে বলে শ্রমিকের মজুরি, সেবামূলক পণ্যের মূল্য নির্ধারণ করা হয়। অর্থাৎ প্রতিটি অর্থনৈতিক কাজে মুদ্রার ব্যবহার আবশ্যক। মুদ্রার আলোকেই একই প্রকার এবং যাবতীয় অর্থনৈতিক কাজের মূল্য নির্ধারিত হয়। মুদ্রার প্রচলনের সাথে সাথে লেনদেন ও বিনিময় কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি পায়। এর ফলে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডও বৃদ্ধি পায়।
সুতরাং, মকবুল ও নিয়ামতের ব্যবসায়িক লেনদেনে মূল্যের পরিমাপক হিসেবে মুদ্রা বিনিময় প্রথার নানান সমস্যা সমাধানে অগ্রণী ভ‚মিকা রেখেছে।
প্রশ্ন-৩  নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
তাপস একজন স্বর্ণকার। তিনি মুদ্রার মাধ্যমে সকল ব্যবসায়িক লেনদেন সম্পন্ন করেন। সভ্যতার উন্নতির সাথে সাথে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বিস্তৃতি লাভ করে। মুদ্রার ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় তাপস ও তার স্বর্ণকার বন্ধুরা মিলে একটি ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করলেন। ব্যাংক প্রতিষ্ঠার পর তারা লক্ষ করলেন যে, মুদ্রা ছাড়া ব্যাংক ব্যবস্থা একদিনও চলতে পারবে না। তাই তারা ব্যাংকিং ব্যবস্থার সাথে মুদ্রা ব্যবস্থার সম্পর্ককে সুসংহত করলেন।
ক. মূল্যের পরিমাপক বলা হয় কাকে? ১
খ. ধাতব মুদ্রার অসুবিধাগুলো ব্যাখ্যা কর। ২
গ. তাপস ও তার বন্ধুদের ব্যাংক সৃষ্টিতে মুদ্রা কীভাবে ভ‚মিকা রেখেছে তা বর্ণনা কর। ৩
ঘ. তাপস মুদ্রা ছাড়া ব্যাংক চালাতে পারবেন কি? তোমার মতামত ব্যক্ত কর। ৪
 ৩নং প্রশ্নের উত্তর 
ক. মুদ্রাকে মূল্যের পরিমাপক বলা হয়।
খ. ধাতব মুদ্রা ব্যবহার, এক স্থান থেকে অন্যত্র স্থানান্তর, বহন ততটা সুবিধাজনক নয়। এছাড়া জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে ধাতব পদার্থ ও মুদ্রা দিয়ে বিভিন্ন অলঙ্কার প্রস্তুত করা হয়। ফলে ধাতব মুদ্রার ঘাটতি দেখা দেয়।
গ. তাপস ও তার স্বর্ণকার বন্ধুদের ব্যাংক সৃষ্টিতে মুদ্রা প্রত্যক্ষ ভ‚মিকা রেখেছে।
মুদ্রার প্রচলনের সাথে সাথে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি পায়। এর ফলে লেনদেন এবং বিনিময়ের কর্মকাণ্ডও বৃদ্ধি পায়। সাথে সাথে ব্যাংক ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তাও দেখা দেয়। এ কারণে মুদ্রাকে ব্যাংক ব্যবস্থার জননী বলা হয়। ব্যাংক ব্যবস্থার বিবর্তন হওয়ার পর থেকে অদ্যাবধি ব্যাংক মুদ্রাকে ব্যবসায়ের প্রধান উপাদান হিসেবে ব্যবহার করছে। উদ্দীপকে তাপস ও তার বন্ধুরা মিলে মুদ্রার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যাংক ব্যবস্থা গড়ে তোলেন। অর্থাৎ মুদ্রা হস্তান্তরে বিশ্বাসযোগ্য মাধ্যম হিসেবে তারা ব্যাংক সৃষ্টি করে থাকেন। মানুষ মুদ্রাকে বহুমুখী ব্যবহারে কাজে লাগাতে চায়। কিন্তু ব্যক্তিগতভাবে এ কাজটি করা কষ্টসাধ্য ব্যাপার। এছাড়া সকলের নিকট মুদ্রা না থাকায় ঋণ প্রদানের মাধ্যম হিসেবে তারা ব্যাংক সৃষ্টি করেছেন।
ঘ. তাপস মুদ্রা ছাড়া একটি মুহূর্তের জন্যও ব্যাংক চালাতে পারবেন না।
ব্যাংক একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান। অর্থ নিয়েই ব্যাংকের সকল কার্যক্রম আবর্তিত। তাই আর্থিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে ব্যাংক অর্থ বা মুদ্রা ছাড়া চলতে পারে না। অর্থ জমা এবং ঋণদান কাজের মধ্য দিয়ে তাপসের ব্যাংকের যাত্রা শুরু হয়েছে। তাই ব্যাংককে বলা হয় পরের অর্থের ব্যবসায়ী। জনগণের সংরক্ষিত মুদ্রা ছাড়া ব্যাংক তার ব্যাংকিং কার্যক্রম চালাতে পারে না। ব্যাংকের আয়ের উৎস হলো জনগণের গ্রহণকৃত ঋণ থেকে সুদ আদায়। জনগণকে ব্যাংক ঋণ প্রদান করে মুদ্রার মাধ্যমে। অর্থাৎ তাপস ব্যাংকের আমানত গ্রহণ ও ঋণদান মুদ্রার মাধ্যমেই সম্পাদিত হয়।
তাছাড়া ব্যাংকটি মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন প্রকার আর্থিক ও অনার্থিক কার্যাবলি সম্পাদন করে। অর্থকে কেন্দ্র করে ব্যাংক এসব কার্যাবলি সম্পাদন করে থাকে। অর্থ ছাড়া ব্যাংক কোনো কাজ করতে পারে না।
সুতরাং বলা যায়, তাপসের ব্যাংক অর্থ ছাড়া ব্যাংকের আর্থিক ও অনার্থিক কোনো কাজই সম্পাদন করতে পারবে না।
প্রশ্ন-৪  নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
সুলতানা বেগম ব্যাংকিং বিষয়ের শিক্ষক। তিনি মনে করেন ব্যাংক ও মুদ্রা একে অপরের পরিপূরক। ব্যাংক ও মুদ্রা সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের জ্ঞান দান করতে তিনি নিচের ছকটি আলোকপাত করেন-

ক. মুদ্রার প্রধান কাজ কী? ১
খ. মুদ্রাকে ব্যাংক ব্যবস্থার জননী বলা হয় কেন? ব্যাখ্যা কর। ২
গ. সুলতানা বেগম উপরের চিত্রটি দ্বারা কিসের সম্পর্ক বুঝিয়েছেন? বর্ণনা কর। ৩
ঘ. সুলতানা বেগম ব্যাংকিং ব্যবস্থায় মুদ্রার অপরিহার্যতা সম্পর্কে যে তথ্য দিয়েছেন, তা মূল্যায়ন কর। ৪
 ৪নং প্রশ্নের উত্তর 
ক. মুদ্রার প্রধান কাজ হলো বিনিময়ের মাধ্যম হিসেবে কাজ করা।
খ. মুদ্রা প্রচলনের পরপরই ব্যাংক ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়, যার জন্য মুদ্রাকে ব্যাংক ব্যবস্থার জননী বলা হয়। ব্যাংক ব্যবস্থা প্রবর্তনের প্রথম থেকে আজ পর্যন্ত ব্যাংক মুদ্রাকেই তার ব্যবসার প্রধান উপাদান হিসেবে ব্যবহার করে আসছে। মুদ্রা প্রচলনের পরপরই ব্যাংকিং ব্যবস্থার আবির্ভাব ঘটে।
গ. সুলতানা বেগম উল্লিখিত চিত্রটি দ্বারা ব্যাংকের সাথে মুদ্রার সম্পর্ক বুঝিয়েছেন।
ব্যাংক গ্রাহকদের কাছ থেকে বিভিন্ন হিসাবের মাধ্যমে আমানত গ্রহণ করে যার বিপরীতে স্বল্প পরিমাণ সুদ প্রদান করে থাকে। অন্যদিকে আমানত হিসেবে গৃহীত টাকা আবার ঋণ দিয়ে থাকে, এবং তার বিনিময়ে ঋণ গ্রহীতার নিকট থেকে উচ্চহারে সুদ গ্রহণ করে থাকে। আর এসব কাজ ব্যাংক মুদ্রার মাধ্যমে করে থাকে। উদ্দীপকে সুলতানা বেগম চিত্রে ব্যাংকের অর্থসংস্থানের তিনটি উৎস দেখিয়েছেন। উদ্যোক্তাদের মূলধন, বিনিয়োগকারী বিনিয়োগ এবং আমানতকারীর আমানত ব্যাংকের তহবিল হিসেবে কাজ করছে। ব্যাংক তহবিল সংগ্রহ করেই বসে নেই। তহবিলের কার্যকর ব্যবহারের মাধ্যমে মুনাফা অর্জনকল্পে ব্যাংক বিভিন্ন কৌশল গ্রহণ করে। ব্যাংক গ্রাহককে চাহিবামাত্র অর্থ পরিশোধের জন্য অর্থকে তারল্য সম্পদ হিসেবে সংরক্ষণ করে। ব্যাংক সংগৃহীত অর্থ বিভিন্ন লাভজনক খাতে বিনিয়োগ করে। ব্যাংক অধিক সুদ অর্জনের লক্ষ্যে জনগণকে ঋণ প্রদান করে। মূলত চিত্রে ব্যাংকের কার্যক্রমে মুদ্রার সংশ্লিষ্টতা প্রকাশ পেয়েছে।
ঘ. সুলতানা বেগম ব্যাংকিং ব্যবস্থায় মুদ্রার অপরিহার্যতা সম্পর্কে যে তথ্য দিয়েছেন তা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।
ব্যাংকিং ব্যবস্থা সৃষ্টি হয়েছে মুদ্রাকে কেন্দ্র করে। মুদ্রার বহুমুখী প্রচলনের মাধ্যমে মানুষের চাহিদা বৃদ্ধি পায়। মুদ্রার বহুমুখী ব্যবহার নিশ্চিত করে ব্যাংক। ব্যাংকের প্রতিটি কার্যক্রমে মুদ্রা প্রত্যক্ষভাবে ভ‚মিকা পালন করে। উদ্দীপকের সুলতানা বেগম চিত্রের মাধ্যমে দেখিয়েছেন ব্যাংক জনগণের কাছ থেকে আমানত সংগ্রহ করে। আমানত হিসেবে ব্যাংক মূলত মুদ্রা সংগ্রহ করে থাকে। ব্যাংকের প্রাথমিক বিনিয়োগ ও জনসাধারণের আমানত ছাড়া ব্যাংক তার কার্যক্রম শুরু করতে পারে না। ব্যাংক বিভিন্ন উৎস থেকে সংগৃহীত মুদ্রা কিছুটা তারল্য হিসেবে সংরক্ষণ করে। বাকি মুদ্রা বিনিয়োগ করে এবং জনগণকে ঋণ প্রদান করে। ব্যাংক বিনিময়ের মাধ্যম সৃষ্টি করে, মুদ্রার ব্যবহারও স্থানান্তর করে। তিনি আরও বুঝিয়েছেন, ব্যাংক ব্যবস্থার বিবর্তন দেখিয়েছেন অদ্যাবধি ব্যাংক মুদ্রাকে ব্যবসায়ের প্রধান উপাদান হিসেবে ব্যবহার করছে। অর্থাৎ মুদ্রা আগমনের ফলেই ব্যাংক ব্যবস্থার উৎপত্তি ঘটেছিল। ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রথমে ধারক হিসেবে গ্রহণ করে এবং পরবর্তীতে সংগৃহীত মুদ্রা বা অর্থ তৃতীয় পক্ষকে প্রদান করে। অর্থাৎ মুদ্রাকে কেন্দ্র করেই ব্যাংকিং ব্যবস্থার সৃষ্টি ও পরিচালিত হয়।
সুতরাং, ব্যাংকিং ব্যবস্থায় মুদ্রা অপরিহার্য একটি উপাদান।
প্রশ্ন-৫  নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
জনাব কামরুল সোনালী ব্যাংকের একজন নতুন কর্মকর্তা। প্রথম দিনই তাকে ব্যাংক ও ব্যাংকিং সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হলো। তিনি নিজেও ব্যাংকের উৎপত্তি ও ইতিহাস সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য জানেন। ব্যাংক শব্দের উৎপত্তিগত তথ্যের অমিল সম্পর্কে তিনি ল্যাটিন শব্দে বেশি সমর্থন খুঁজে পেলেন। একজন ব্যাংকার হিসেবে তিনি ব্যাংক ও ব্যাংকিং থেকে নিজেকে পৃথক ভাবতে পারেন না। ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা হলেও ব্যাংকে তার যথেষ্ট অবদান রয়েছে।
ক. ব্যাংক শব্দের অর্থ কী? ১
খ. ব্যাংক, ব্যাংকিং থেকে আলাদা কেন? ২
গ. জনাব কামরুলকে ব্যাংকার বলার কারণ ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. জনাব কামরুলের সাথে ব্যাংক ও ব্যাংকিং ওতপ্রোতভাবে জড়িত কিনা তা যাচাই কর। ৪
 ৫নং প্রশ্নের উত্তর 
ক. ব্যাংক শব্দের অর্থ কোনো বস্তুবিশেষের স্ত‚প, কোষাগার, লম্বা টেবিল, বেঞ্চ ইত্যাদি।
খ. যে প্রতিষ্ঠান জনগণের অর্থ আমানত হিসেবে গ্রহণ করে এবং তা আবার জনগণের ঋণ হিসেবে প্রদান করে গ্রাহকদের অর্থ সংক্রান্ত বিভিন্ন সেবা প্রদান করে তাকে ব্যাংক বলে। অন্যদিকে ব্যাংকিং হলো এমন কতগুলো আইনসিদ্ধ কার্যাবলি যা ব্যাংক কর্তৃক সম্পন্ন হয়। তাই বলা যায় যে, ব্যাংক কর্তৃক গ্রাহকদের জন্য সম্পাদিত সকল কার্যাবলিই হলো ব্যাংকিং।
গ. জনাব কামরুলকে একজন ব্যাংকার বলার কারণ তিনি ব্যাংকিং কার্যাবলি সম্পাদন করে থাকেন।
ব্যাংক হলো অর্থ জমা, উত্তোলন এবং ঋণ প্রদানের একটি নিরাপদ আর্থিক প্রতিষ্ঠান। ব্যাংকিং ব্যাংকের কার্যাবলির একটি ব্যাপক ধারণা। অর্থাৎ ব্যাংকের সকল প্রকার আইনসিদ্ধ কার্যাবলি ব্যাংকিং হিসেবে অভিহিত। যে ব্যক্তি নিজেকে ব্যাংকিংয়ের সাথে জড়িত রাখেন তাকে ব্যাংকার বলা হয়। উদ্দীপকে জনাব কামরুল ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা। ব্যাংকের অন্যতম প্রধান কাজ জনগণ বা গ্রাহকের নিকট থেকে আমানত গ্রহণ আবার সেই অর্থ বিভিন্ন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে ঋণ প্রদান করা। যে কাজটি ব্যাংকের কর্মকর্তা হিসেবে কামরুল করে থাকে। জনাব কামরুল যেহেতু ব্যাংকের বিভিন্ন কাজের সাথে জড়িত সুতরাং নিঃসন্দেহে তিনি একজন ব্যাংকার।
ঘ. জনাব কামরুলের সাথে ব্যাংক ও ব্যাংকিং ওতপ্রোতভাবে জড়িত। যে প্রতিষ্ঠান আমানত গ্রহণ ও ঋণদানের ক্ষেত্রে মধ্যস্থ ব্যবসায়ী হিসেবে মুনাফা অর্জন করে তাই ব্যাংক। এটি জনগণের কাছ থেকে সুদের বিনিময়ে আমানত সংগ্রহ করে। মুনাফা অর্জনের নিমিত্তে এটি উচ্চহার সুদে অন্যত্র বিনিয়োগ করে। আর ব্যাংকিং হলো এমন কতকগুলো আইনসিদ্ধ কার্যাবলি যা ব্যাংক কর্তৃক সম্পাদন করা হয়। অর্থাৎ ব্যাংক কর্তৃক গ্রাহকদের জন্য সম্পাদিত সকল কার্যাবলি হলো ব্যাংকিং। উদ্দীপকে কামরুল সাহেব একজন ব্যাংকার। ব্যাংকার হিসেবে তার কাজ হলো ব্যাংকিং কার্যাবলি সম্পাদন করা। আর ব্যাংকিং কার্যাবলি হলো ব্যাংক সংক্রান্ত কার্যাবলি। ব্যাংক এমন একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান যা মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্য নিয়ে গঠিত হয়। এ উদ্দেশ্য অর্জনে ব্যাংক আমানত সংগ্রহ, ঋণদান, বাট্টাকরণ, বিনিময় বিলে স্বীকৃতি দান, বৈদেশিক বাণিজ্য অর্থায়ন ও প্রত্যয়ন, অর্থ স্থানান্তর, সম্পদের নিরাপত্তা ইত্যাদি কার্যাবলি সম্পাদন করে। ব্যাংক কোনো ব্যক্তি না হওয়াতে এ সকল কাজ কোনো কোনো ব্যক্তিকে সম্পাদন করতে হয়। ব্যাংকার ব্যাংকিং কার্যাবলি সম্পাদনের মাধ্যমে ব্যাংকের অস্তিত্ব বজায় রাখেন।
সুতরাং উপরিউক্ত আলোচনা থেকে বলা যায় যে, জনাব কামরুলের সাথে ব্যাংক ও ব্যাংকিং ওতপ্রোতভাবে জড়িত।
প্রশ্ন -৬ ল্ফ নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
জনাব সাত্তার সাহেব তার বেতনের টাকা থেকে অল্প অল্প করে বেশ কিছু জমিয়েছেন। এক রাতে তিনি গুণে দেখলেন তার প্রায় ১,০০,০০০ টাকা জমা হয়েছে। তিনি টাকা কীভাবে সংরক্ষণ করবে তা নিয়ে চিন্তায় পড়ে গেলেন। পরে তিনি তার এক বন্ধুর পরামর্শে চাল ব্যবসায়ী সিকদার আলীর কাছে অর্থ জমা রাখেন। তার কাছে অনেকেই অর্থ জমা রাখেন। উক্ত অর্থ তিনি সুদের বিনিময়ে এলাকার লোকজনকে ঋণ দিয়ে থাকেন।
ক. ব্যাংক শব্দটি কোন ভাষা থেকে এসেছে? ১
খ. মুদ্রা ছাড়া যেমন ব্যাংক চলতে পারে না তেমনি ব্যাংক ছাড়া মুদ্রার ব্যবহারও সীমিত- ব্যাখ্যা কর। ২
গ. জমানো অর্থ নিয়ে জনাব সাত্তার সাহেবের সমস্যা কোন সমস্যার প্রতি ইঙ্গিত করেছে? বর্ণনা কর। ৩
ঘ. তুমি কি মনে কর চাল ব্যবসায়ী সিকদার আলীর কার্যক্রমের ধারায় আধুনিক ব্যাংকের যাত্রা শুরু হয়েছে? বিশ্লেষণ কর। ৪
 ৬নং প্রশ্নের উত্তর 
ক. ব্যাংক শব্দটি ল্যাটিন শব্দ থেকে এসেছে।
খ. ব্যাংক ব্যবস্থা বিবর্তনের প্রথম থেকে আজ পর্যন্ত ব্যাংক মুদ্রাকেই তার ব্যবসায়ের প্রধান উপাদান হিসেবে ব্যবহার করে আসছে। মানুষের কাছে থাকা প্রযোজনের অতিরিক্ত অর্থ তার সঞ্চয় হিসেবে সংগ্রহের মাধ্যমে ব্যাংক তার আমানত সৃষ্টি করে, যার বিনিময়ে সঞ্চয়কারী একটি নির্দিষ্ট সুদ বা মুনাফা পেয়ে থাকে। এই আমানত ঋণগ্রহীতাকে ঋণ হিসেবে বর্ধিত সুদ প্রদানের মাধ্যমে ব্যাংক তার ব্যবসায়িক মুনাফা লাভ করে থাকে। এ থেকে বোঝা যায়, মুদ্রা ও ব্যাংক একে অপরের পরিপূরক।
গ. জমানো অর্থ নিয়ে জনাব সাত্তার সাহেবের সমস্যা অর্থের নিরাপত্তাজনিত সমস্যার প্রতি ইঙ্গিত করেছে।
অর্থের মাধ্যমেই মানুষ তার সমস্যার সমাধান করে থাকে। তাই অর্থ নিরাপদ সংরক্ষণই মানুষ সবচেয়ে আগে বিবেচনা করে থাকে।
অর্থজনিত এই সমস্যার সমাধানের জন্য মানুষ বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জনের কাছে টাকা জমা রাখে। আদিকাল থেকে মানুষ অর্থের প্রয়োজনেই নানান ধরনের কাজ করে আসছে। আর এ অর্জিত অর্থ যাতে যথাযথ এবং নিরাপদভাবে সংরক্ষিত থাকে সেজন্য মানুষ বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ক্ষেত্রে কখনও পুরোহিত, কখনও স্বর্ণকার শ্রেণির সাহায্য নিয়েছে। কারণ মানুষ অর্থের নিরাপত্তার জন্য এদেরকেই সময়ভেদে সবচেয়ে বেশি বিশ্বাস করেছে এবং তাদের অর্থের নিরাপত্তাও সংরক্ষিত হয়েছে। উদ্দীপকের জনাব সাত্তার সাহেব তার জমাকৃত অর্থ নিরাপদে সংরক্ষণ করতে চান। এ ব্যাপারে বন্ধুর সাথে পরামর্শ করে তিনি চাল ব্যবসায়ী সিকদারের কাছে অর্থ জমা রাখেন। উদ্দীপকে উল্লিখিত সমস্যা, অর্থের নিরাপত্তার জন্য কালের বিবর্তনে যথাযথ এবং আধুনিক সংস্করণই হলো ব্যাংক ব্যবস্থা।
ঘ. চাল ব্যবসায়ী সিকদার আলীর অর্থ জমা রাখা ও ঋণদান কার্যক্রমের ধারায় আধুনিক ব্যাংকের যাত্রা শুরু হয়েছে বলে আমি মনে করি। কারণ অতীতে মানুষ তার প্রয়োজন অনুসারে পুরোহিত, স্বর্ণকার, ব্যবসায়ী শ্রেণির কাছে অর্থ জমা রাখত। মূলত নিরাপদ অর্থের সংরক্ষণের জন্যই মানুষ বিশ্বাস করে এসব শ্রেণির লোকজনের কাছে অর্থ জমা রাখত। পরবর্তীতে এসব শ্রেণির লোকজন নিজেদের ব্যবসায়িক কাজ স¤প্রসারণ করার উদ্দেশ্যে বিভিন্ন জনকে ঋণদান কাজ শুরু করে। ফলে ধীরে ধীরে অর্থ জমা, ঋণদান, অর্থ উত্তোলনের কাজে স¤প্রসারিত হয়ে ব্যাংকিং ব্যবস্থার উদ্ভব ঘটায়।
তাই বলা যায়, উল্লিখিত কাজের উন্নত সংস্করণই হলো আজকের আধুনিক ব্যাংকিং।

প্রশ্ন-৭  নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
সজল প্রতিদিন রাতে দাদুর কাছে পুরোনো দিনের গল্প শোনে। দাদু কড়ি, পাথর, হাঙরের দাঁত ইত্যাদি যে টাকা হিসেবে ব্যবহৃত হতো তার গল্প করে। এমনকি এক সময় স্বর্ণ-রূপাও মুদ্রা ছিল তাও বলেন। কিন্তু কিছু সমস্যার কারণে এসবের বিকল্প বিনিময় মাধ্যম আবিভর্‚ত হয়। সজল মুদ্রা ব্যবস্থার এ গতিশীল পরিবর্তনের কথা শুনে অভিভ‚ত হয়। [ডা.
খাস্তগীর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, চট্টগ্রাম]
ক. কোন শতাব্দীতে কাগজের মুদ্রার প্রচলন হয়? ১
খ. অর্থকে সঞ্চয়ের ভাণ্ডার বলা হয় কেন? ২
গ. দাদু বিনিময় মাধ্যম হিসেবে প্রথমে কিসের ব্যবহারের কথা উল্লেখ করেছেন? বর্ণনা কর। ৩
ঘ. বিকল্প ব্যবস্থার প্রচলনের পেছনে দাদু কোন সমস্যার কথা বলেছেন? বিশ্লেষণ কর। ৪
 ৭নং প্রশ্নের উত্তর 
ক. ঊনবিংশ শতাব্দীতে কাগজের মুদ্রার প্রচলন হয়।
খ. অর্থের মূল্য অপেক্ষাকৃত স্থায়ী বলে এর মাধ্যমে সঞ্চয় করা নিরাপদ, তাই অর্থকে সঞ্চয়ের ভাণ্ডার বলা হয়। মানুষ তার আয়ের সবটুকুই বর্তমান ভোগের জন্য ব্যয় করে না। আয়ের কিছু অংশ ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চয় করতে চায়। পণ্যের মাধ্যমে সঞ্চয় করা সম্ভব নয়। কারণ অনেক দ্রব্যই ক্ষণস্থায়ী এবং পচনশীল। তাই অর্থের মাধ্যমে সঞ্চয় করা অধিক নিরাপদ।
গ. দাদু বিনিময় মাধ্যম হিসেবে প্রথমে ধাতব মুদ্রার ব্যবহারের কথা উল্লেখ করেছেন।
তামা, রূপা ও সোনা দিয়ে তৈরি মুদ্রাকে ধাতব মুদ্রা বলা হয়। মুদ্রা প্রচলনের পরপর ধাতব মুদ্রা ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হতো। কিন্তু ধাতব পদার্থ দিয়ে বিভিন্ন অলঙ্কার প্রস্তুত করা হয় বলে ধাতব মুদ্রার ঘাটতি দেখা দেয়। এছাড়া মুদ্রা আবিষ্কারের আগে মানুষ বিনিময় মাধ্যম হিসেবে বিভিন্ন সময় কড়ি, হাঙরের দাঁত, হাতির দাঁত, পাথর, ঝিনুক, পোড়া মাটি ইত্যাদি ব্যবহার করত। উদ্দীপকে দাদু সজলকে মুদ্রা ব্যবস্থার গতিশীলতা সম্পর্কে বলেছেন। অর্থাৎ দাদু বলেছেন মুদ্রা হিসেবে আগে কড়ি, পাথর, হাঙরের দাঁত ইত্যাদির প্রচলন ঘটে এবং এগুলো মুদ্রা হিসেবে ব্যবহার করা হতো। পরবর্তীতে ধাতব মুদ্রা হিসেবে তামা, রূপা ও সোনা ব্যবহার করা হতো। কিন্তু ব্যবহার, স্থানান্তর, বহন এবং অন্যান্য প্রয়োজনের কারণে ধাতব মুদ্রার ব্যবহার বেশি স্থায়িত্ব লাভ করতে পারেনি। তাছাড়া পৃথিবীর জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে ধাতব মুদ্রা ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে ধাতব পদার্থের সরবরাহে ঘাটতি দেখা দেয়।
ঘ. বিকল্প ব্যবস্থার প্রচলনের পেছনে দাদু ধাতব পদার্থের সরবরাহ ঘাটতির সমস্যার কথা বলেছেন।
বর্তমানে কাগজি মুদ্রার সাথে সাথে ধাতব মুদ্রার প্রচলন থাকলেও ধাতব মুদ্রার ব্যবহার এখন ক্রমশ সীমিত হয়ে আসছে। কাগজের মুদ্রা সহজলভ্যতা, সহজে বহনযোগ্য হওয়া এবং বর্তমানে বিভিন্ন রকমের নিরাপত্তা নিশ্চিত হওয়ায় কাগজি মুদ্রা ব্যাপক প্রসার লাভ করেছে। উদ্দীপকে বিকল্প প্রচলনের পেছনে দাদু সজলের নিকট ধাতব মুদ্রার ব্যবহার অর্থাৎ এক স্থান থেকে অন্যত্র লেনদেনের ক্ষেত্রে ব্যাপক অসুবিধার কথা তুলে ধরেছেন। ধাতব মুদ্রার তুলনায় কাগজের মুদ্রা সহজলভ্যতা, সহজে বহনযোগ্য হওয়া এবং বর্তমানে বিভিন্ন রকমের নিরাপত্তা নিশ্চিত হওয়ায় ব্যাপক প্রসার লাভ করছে। এছাড়া জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে ধাতব পদার্থ ও মুদ্রা দিয়ে বিভিন্ন অলঙ্কার প্রস্তুত করা হয় ফলে ধাতব মুদ্রার ঘাটতি দেখা দেয়। অর্থাৎ ব্যবহার, স্থানান্তর, বহন ইত্যাদি সমস্যার কারণে ধাতব মুদ্রার প্রচলন হ্রাস পায় বিধায় কাগজি মুদ্রার ব্যবহার শুরু হয়। অর্থাৎ ব্যবহার, স্থানান্তর, বহন এবং অন্যান্য প্রয়োজনের কারণে ধাতব মুদ্রার ব্যবহার বেশিদিন স্থায়িত্ব লাভ করতে পারেনি।
সুতরাং, স্বর্ণ এবং রৌপ্যের অলঙ্কারাদিসহ অন্যান্য ব্যবহারের কারণে কাগজি মুদ্রায় প্রচলন শুরু হয়।
প্রশ্ন-৮  নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
অনিমা তার নানুর কাছে গল্প শুনতে চাইলে অনিমার নানু বলেন আমরা যে এখন টাকা পয়সা দিয়ে সব কিছু কিনতে পারছি এক সময় এ ব্যবস্থা ছিল না। এককালে মানুষ একটি দ্রব্য দিয়ে আরেকটি দ্রব্য গ্রহণ করত। তিনি আরও বলেন, তখন আমাদের রসুলপুর গ্রামে ঘোড়ার গাড়ি প্রচলন হওয়ায় ১০ মাইল দূর থেকে ধান-চালের বিনিময়ে আমাদের পূর্বপুরুষরা সুশীল কর্মকারের তৈরিকৃত স্বর্ণের গহনা নিয়ে আসত।
[কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় হাইস্কুল, ময়মনসিংহ]
ক. বাংলাদেশে সরকারি ব্যাংক কয়টি? ১
খ. কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দুইটি কাজ উল্লেখ কর। ২
গ. অনিমার নানু তার পূর্বপুরুষদের কোন প্রথাটির প্রতি ইঙ্গিত করেছেন? বর্ণনা কর। ৩
ঘ. রসুলপুর গ্রামের মানুষের চাহিদা পূরণে যোগাযোগ ব্যবস্থার ভ‚মিকা মূল্যায়ন কর। ৪
 ৮নং প্রশ্নের উত্তর 
ক. বাংলাদেশে সরকারি ব্যাংক ৪টি।
খ. ব্যাংক ব্যবস্থার উন্নয়ন ও অর্থনীতিকে গতিশীল করার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক কাজ করে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক দেশের প্রয়োজন অনুযায়ী বিভিন্ন মুদ্রার প্রচলন করে থাকে এবং বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংক কর্তৃক গ্রাহকদের প্রদত্ত ঋণ নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। মূলত কেন্দ্রীয় ব্যাংক সকল ব্যাংকের অভিভাবক হিসেবে কাজ করে।
গ. অনিমার নানু তার পূর্বপুরুষদের ব্যবহৃত যে প্রথাটির প্রতি ইঙ্গিত করেছেন তা হলো বিনিময় প্রথা।
মুদ্রা প্রচলনের পূর্বে পূর্বপুরুষরা বিশেষ এক ধরনের ব্যবস্থায় তাদের চাহিদা পূরণ করত। তারা একজনের উৎপাদিত পণ্যসামগ্রী আরেকজনের উৎপাদিত দ্রব্যসামগ্রীর পরিবর্তে অদল-বদল করত। অর্থাৎ পরস্পরের মধ্যে তার প্রয়োজনের অতিরিক্ত দ্রব্যাদি বিনিময়ের মাধ্যমে নিজের চাহিদা পূরণ করত। দ্রব্যের বিনিময়ে দ্রব্য এই প্রথাটিকে বিনিময় প্রথা বলে। উদ্দীপকে অনিমার নানুর কথা অনুযায়ী পূর্বপুরুষরা বিনিময় প্রথার আওতায় তাদের চাহিদা নিয়মিতভাবে পূরণ করত। কারণ সেই সময় মুদ্রার ব্যবহার শুরু হয়নি। তাই পরস্পরের মধ্যে তারা প্রয়োজনের অতিরিক্ত দ্রব্যাদি বিনিময়ের মাধ্যমে নিজেদের চাহিদা পূরণ করত। অর্থাৎ দ্রব্যের বিনিময়ে দ্রব্য প্রথাটির প্রচলন ঘটার ফলে সভ্যতার উšে§াষকালে মানুষের চাহিদা মেটানোর জন্য বিনিময় কর্মকাণ্ডের প্রসার ঘটে।
ঘ. রসুলপুর গ্রামে মানুষের চাহিদা পূরণে যোগাযোগ ব্যবস্থার ভ‚মিকা ব্যাপক।
যোগাযোগ ব্যবস্থার মাধ্যমে মানুষ ভৌগোলিক অসুবিধা দূর করে সহজেই তাদের পণ্য পেতে সক্ষম হয়। সভ্যতার সৃষ্টিলগ্নের পর থেকে চাহিদা পূরণের জন্য মানুষ বিভিন্ন উপায় আবিষ্কার করেছে। তার মধ্যে অন্যতম একটি হলো যোগাযোগ ব্যবস্থা। উদ্দীপকে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হওয়ার জন্যই মূলত রসুলপুর গ্রামের মানুষজন ১০ মাইল দূর থেকেও তৈরিকৃত গহনা ব্যবহার করতে পেরেছে। অর্থাৎ চাহিদা পূরণে যোগাযোগ ব্যবস্থা একদিকে যেমন মানুষের সময়, শ্রম বাঁচায় অন্যদিকে অর্থের ব্যবহার ও সাশ্রয়ী করে তোলে, যার অন্যতম উদাহরণ রসুলপুর গ্রামের মানুষজন। তাদের জ্ঞান ও বুদ্ধির পরিধি বাড়ার সাথে সাথে তাদের কর্মকাণ্ড বিশেষভাবে বিনিময় কর্মকাণ্ডের প্রসার ঘটেছে। তাদের দৈনন্দিন চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে। এই চাহিদা পূরণে ঘোড়ার গাড়ি, নৌকা এবং পরবর্তীতে জাহাজ অসামান্য অবদান রেখেছে। যোগাযোগের অসুবিধা দূর হওয়ার সাথে সাথে তারা ভৌগোলিক বিভিন্ন অবস্থান থেকে প্রয়োজনমতো দ্রব্যাদি সংগ্রহের চেষ্টা চালায়।
সুতরাং, রসুলপুর গ্রামের মানুষের চাহিদা পূরণের ক্ষেত্রে যথাযথ এবং উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার ভ‚মিকা অপরিসীম।
প্রশ্ন-৯  নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
সালাম সাহেব ৩০ বছর বিভিন্ন ব্যাংকে চাকরি করেছেন। একদিন তার দশম শ্রেণির পড়–য়া ছেলে সুমন তার কাছে ব্যাংকের অর্থনৈতিক কাজ সম্পর্কে জানতে চাইলে সালাম সাহেব তার ছেলেকে ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার আলোকে ব্যাংকের মূলধন গঠন, কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে বিভিন্ন প্রকার অর্থনৈতিক কাজ সম্পর্কে ধারণা দিলেন। পাশাপাশি তিনি এও বললেন ব্যাংক এবং ব্যাংকিং এক নয়। [বøু-বার্ড উচ্চ বিদ্যালয়, সিলেট]
ক. ব্যাংকের প্রধান উদ্দেশ্য কী? ১
খ. ব্যাংককে ঋণের ব্যবসায়ী বলা হয় কেন? ২
গ. সালাম সাহেব ব্যাংকের যেসব অর্থনৈতিক কাজসমূহের কথা উল্লেখ করেছেন সেগুলোর বর্ণনা দাও। ৩
ঘ. তুমি কি মনে কর সালাম সাহেবের ব্যাংকের সামগ্রিক কাজটি ব্যাংকিং? মতামত দাও। ৪
 ৯নং প্রশ্নের উত্তর 
ক. ব্যাংকের প্রধান উদ্দেশ্য হলো মুনাফা অর্জন।
খ. ব্যাংক একটি আর্থিক মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রথমে ধারক হিসেবে আমনত গ্রহণ করে এবং পরবর্তীতে সংগৃহীত অর্থ তৃতীয় পক্ষকে প্রদান করে। অর্থাৎ একই সাথে ব্যাংক দেনাদার ও পাওনাদারের ভ‚মিকায় অবতীর্ণ হয়। মূলত স্বল্প সুদে আমানত গ্রহণ করে এবং উক্ত আমানতের অর্থ অধিক সুদে ব্যক্তি, ব্যবসায়ী বা প্রতিষ্ঠানকে ঋণ প্রদান করে। এ কাজের জন্যই ব্যাংককে ঋণের ব্যবসায়ী বলা হয়।
গ. সালাম সাহেব তার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার আলোকে ব্যাংকের বিভিন্ন প্রকার অর্থনৈতিক কার্যাবলি সম্পর্কে ব্যাখ্যা করেছেন।
ব্যাংক ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের হয়ে যেকোনো স্থানে বা জায়গায় ঐ ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সম্পদ রক্ষণাবেক্ষণ, উন্নয়ন এবং নিরাপদে রাখতে প্রয়োজনীয় সহায়তা দিয়ে থাকে। নির্দিষ্ট চার্জের বিনিময়ে ব্যাংক এ দায়িত্ব পালন করে থাকে। উদ্দীপকের সালাম সাহেব ব্যাংকে যে সকল অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সম্পর্কে বলেছেন তার মধ্যে অন্যতম হলো ব্যাংক বিক্ষিপ্তভাবে পড়ে থাকা অর্থসমূহ সঞ্চয় করে মূলধন গঠন করে। পরবর্তীতে তা দেশের শিল্প ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিনিয়োগ করে। অর্থাৎ ব্যাংক আমানত গ্রহণ ও ঋণদানের ক্ষেত্রে মধ্যস্থ ব্যবসায়ী হিসেবে মুনাফা অর্জন করে থাকে। এটি জনগণের কাছ থেকে সুদের বিনিময়ে আমানত সংগ্রহ করে। মুনাফা অর্জনের নিমিত্তে এটি উচ্চহার সুদে অন্যত্র বিনিয়োগ করে। ব্যাংকের বিভিন্ন শাখায় এবং ব্যাংক যেসব শিল্প প্রতিষ্ঠানকে আর্থিক সহায়তা করে সেখানে প্রচুর কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়। অর্থাৎ সালাম সাহেব ব্যাংকের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বলতে সঞ্চয় একত্রিকরণ, মূলধন গঠন, কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি এগুলোকেই উল্লেখ করেছেন।
ঘ. উদ্দীপকের আলোকে আমি মনে করি সালাম সাহেবের ব্যাংকের মূলধন গঠনের সামগ্রিক কাজটি ব্যাংকিং-এর অন্তর্ভুক্ত।
ব্যাংক তার ব্যবসায়িক প্রয়োজনে যেসব কাজ সম্পাদন করে তাকে ব্যাংকিং বলা হয়। ব্যাংকের কাজ ব্যাংক কোম্পানি অধ্যাদেশের আওতায় স্ব-স্ব ব্যাংক সৃষ্ট নিয়ম অনুযায়ী পরিচালিত হয়ে থাকে। উদ্দীপকে সালাম সাহেবের ব্যাংক জনগণের বিক্ষিপ্ত সঞ্চয় আমানত হিসেবে গ্রহণ করে মূলধন গঠন করে। এ মূলধন বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করে এবং জনগণকে ঋণ প্রদান করে। অর্থাৎ যে প্রতিষ্ঠান অর্থ আমানত হিসেবে গ্রহণ করে তা আবার ঋণ হিসেবে প্রদান করে ও গ্রাহকদের অর্থ বিষয়ক বিভিন্ন সেবা প্রদান করে তাকে ব্যাংক বলে। ব্যাংক যখন মূলধন গঠন করে তখন একটি নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া অনুসরণ করে কাজটি করে আর এ কাজটির সামগ্রিক এবং সমন্বিত রূপই হলো ব্যাংকিং। অর্থাৎ ব্যাংক কর্তৃক গ্রাহকদের জন্য সম্পাদিত সকল কার্যাবলি হলো ব্যাংকিং।
সুতরাং, সালাম সাহেবের ব্যাংকের সকল কর্মকাণ্ড ব্যাংকিং-এর আওতাভুক্ত।
প্রশ্ন -১০ ল্ফ নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
সাজুর বাবা সাজুকে ঢাকায় ব্যাংকের মাধ্যমে ১০,০০০ টাকা পাঠালেন। সাজু উক্ত টাকা পেয়ে নিজের ছোট ভাই-বোনের এবং মায়ের জন্য ঈদের কেনাকাটা করে গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়ায় ফিরলেন।
[সাতক্ষীরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়]
ক. বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নাম কী? ১
খ. জাতীয়করণ বলতে কী বোঝায়? ২
গ. সাজুর বাবা কুষ্টিয়া থেকে যে টাকা পাঠিয়েছেন তা ব্যাংকের কোন ধরনের কাজের আওতাভুক্ত বর্ণনা কর। ৩
ঘ. সাজুর কেনাকাটায় মুদ্রার ভ‚মিকা বিশ্লেষণ কর। ৪
 ১০নং প্রশ্নের উত্তর 
ক. বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নাম হলো বাংলাদেশ ব্যাংক।
খ. যখন দেশের বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহকে জাতীয় স্বার্থে বা কোনো বিশেষ ঘটনার প্রেক্ষিতে সরকারের অধীনে আনা হয় বা সরকারিকরণ করা হয় তাকে জাতীয়করণ বলে। জাতীয়করণের ফলে প্রতিষ্ঠানটি সরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে চি‎িহ্নত হয় এবং তা জনকল্যাণে পরিচালিত হয়। এর ফলে প্রতিষ্ঠানের মূলধন সরবরাহ, পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণ সরকারের ওপর ন্যস্ত থাকে।
গ. উদ্দীপকে সাজুর বাবা কুষ্টিয়া থেকে যে টাকা পাঠিয়েছেন তা ব্যাংকের অর্থ স্থানান্তর কাজের আওতাভুক্ত। ব্যাংক হচ্ছে অর্থ জমা, তোলা এবং ঋণ দেয়ার একটি নিরাপদ প্রতিষ্ঠান। ব্যাংকের অন্যতম কাজ হলো অর্থ স্থানান্তর। এ কাজের আওতায় ব্যাংক গ্রাহকের পক্ষ হয়ে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে, দেশে বা বিদেশেও অর্থ প্রেরণ করে। উদ্দীপকে সাজুর বাবা কুষ্টিয়ায় এবং সাজু ঢাকায় থাকে। সাজুর বাবা সাজুকে ঢাকায় ব্যাংকের মাধ্যমে ১০,০০০ টাকা পাঠালেন। অর্থাৎ সাজুর বাবার হিসাব থেকে সাজুর ব্যাংক হিসাবে অথবা নগদ টাকা সাজুর হিসাবে তার বাবা কুষ্টিয়া থেকে জমা দেয়। এর ফলে সাজু ঢাকা থেকে সহজেই ১০,০০০ টাকা উত্তোলন করতে পেরেছে, যা অর্থ স্থানান্তর কাজের আওতাভুক্ত।
ঘ. সাজুর কেনাকাটায় মুদ্রার ভ‚মিকা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।
মুদ্রা একটি বিনিময়ের মাধ্যম যা সবার নিকট গ্রহণীয় এবং যা মূল্যের পরিমাপক ও সঞ্চয়ের বাহন হিসেবে কাজ করে। মানবসভ্যতা সৃষ্টি ও স¤প্রসারণের সাথে সাথে মুদ্রার গুরুত্বও বৃদ্ধি পেয়েছে। সাজুর বাবা সাজুকে ব্যাংকের মাধ্যমে ১০,০০০ টাকা পাঠিয়েছে। এ টাকার মাধ্যমে সাজু ছোট ভাই-বোনের এবং মায়ের জন্য ঈদের কেনাকাটা করে। এখানে সাজুর বাবার প্রেরিত অর্থ বা মুদ্রা বিনিময়ের মাধ্যম হিসেবে কাজ করেছে। কারণ যে কোনো লেনদেন করার জন্য মুদ্রার ব্যবহার করা হয়। আবার সাজু যে কেনাকাটা করেছে তার জন্যও তাকে অর্থ বিনিময় করতে হয়েছে। সাজুর কেনাকাটায় মুদ্রা মূল্যের পরিমাপক হিসেবেও ভ‚মিকা রেখেছে। কারণ সাজুর ক্রয়কৃত শাড়ি বা অন্যান্য সামগ্রীর নির্দিষ্ট মূল্য রয়েছে এবং সে হিসেবে সাজু মূল্য পরিশোধ করেছে।
পরিশেষে বলা যায়, সাজুর কেনাকাটায় মুদ্রা উপরিউক্তভাবে ভ‚মিকা রেখেছে।
প্রশ্ন -১১ ল্ফ নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
মি. বাদল বর্তমান সময়ের একজন ব্যবসায়ী। তিনি তার ব্যবসায়িক সকল লেনদেন মুদ্রার সাহায্যে সুষ্ঠুভাবে সম্পাদন করে থাকেন। কিন্তু প্রাচীনকালে মানুষ দ্রব্যের বিনিময়ে দ্রব্য দ্বারা লেনদেন কাজ সম্পাদন করত। অথচ এখন মুদ্রার প্রচলন হয়ে মানুষের জীবনযাত্রা সহজ হয়ে উঠেছে। [সরকারি হাজী মোহাম্মদ মহসিন উচ্চ বিদ্যালয়, চট্টগ্রাম]
ক. মুদ্রা কী? ১
খ. মুদ্রাকে বিনিময় মাধ্যম বলা হয় কেন? ২
গ. মি. বাদল কীভাবে লেনদেন কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পাদন করতে পারেন? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. মি. বাদলের মতো অন্যান্য মানুষের জীবনে মুদ্রা কতটুকু গুরুত্ব বহন করে তা মূল্যায়ন কর। ৪
 ১১নং প্রশ্নের উত্তর 
ক. মুদ্রা এক ধরনের বিনিময় মাধ্যম, যা সবার নিকট গ্রহণযোগ্য এবং যা মূল্যের পরিমাপক ও সঞ্চয়ের বাহন হিসাবে কাজ করে।
খ. দ্রæত ও সহজতর উপায়ে বিনিময় কাজ সম্পন্ন করা যায় বলে মুদ্রাকে বিনিময়ের মাধ্যম বলা হয়।
মুদ্রা গ্রহণযোগ্য বিনিময়ের মাধ্যম। ক্রেতা ও বিক্রেতা মুদ্রার মাধ্যমে পণ্য বিনিময় করে। যেকোনো সময় যেকোনো পণ্য মূল্যের বিনিময়ে ক্রেতা ক্রয় করতে পারে। মুদ্রার মাধ্যমে পণ্য ক্রয়-বিক্রয় সহজ ও দ্রæততর হয়। তাই মুদ্রাকে বিনিময়ের মাধ্যম বলা হয়।
গ. মি. বাদল মুদ্রার মাধ্যমে সুষ্ঠুভাবে লেনদেন কাজ সম্পাদন করেন।
সভ্যতার বিকাশের সাথে সাথে মানুষের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি পায় এবং মূল্যের পরিমাপক হিসাবে মুদ্রার প্রয়োজনীয়তা সৃষ্টি হয়। বিনিময় মাধ্যম হিসেবে বিভিন্ন সময় কড়ি, হাঙ্গরের দাঁত, পাথর, ঝিনুক, পোড়া মাটি, তামা, রূপা ও সোনার ব্যবহার হয়। এসব বহন, সথানান্তরের অসুবিধার জন্য কাগজি মুদ্রার প্রচলন হয়। কাগজের সহজলভ্যতা ও সহজে বহনযোগ্য হওয়ায় কাগজি মুদ্রার ব্যাপক প্রসার ঘটে। উদ্দীপকে মি. বাদল একজন ব্যবসায়ী। তিনি তার ব্যবসায়িক সব লেনদেন মুদ্রার সাহায্যে সুষ্ঠুভাবে সম্পাদন করে থাকে। মুদ্রার মাধ্যমে খুব সহজে পণ্যের মূল্য নির্ধারণ করতে পারেন। এতে করে অর্থনৈতিক ক্রিয়াকলাপ সহজসাধ্য হয়ে যায়। এছাড়া মুদ্রার মাধ্যমে তিনি দ্রæত অর্থ স্থানান্তর করতে সক্ষম হন।
ঘ. মুদ্রার গ্রহণযোগ্যতা, বহনযোগ্যতা থাকার কারণে মি. বাদলের মত অন্যান্য মানুষের জীবনে মুদ্রা ব্যাপক গরুত্ব বহন করে থাকে।
পণ্যদ্রব্য বিনিময় প্রথার সমস্যা দূর করার জন্য সমাজের মানুষের মধ্যে সহজ বিনিময় মাধ্যম হিসেবে মুদ্রার প্রচলন হয়। মুদ্রার মাধ্যমে সমাজের ব্যবসায়িক লেনদেন সহজ হয়। মুদ্রার মাধ্যমে মানুষ তার প্রয়োজনে বিভিন্ন পণ্যদ্রব্য ক্রয় বা বিক্রয় করতে পারে। উদ্দীপকে মি. বাদল একজন ব্যাবসায়ী। তিনি তার ব্যবসায়িক লেনদেন সহজ করার জন্য মুদ্রা ব্যবহার করেন। এটি সহজেই বহন ও স্থানান্তর করা যায়। মুদ্রা ব্যবহারের বহুবিধ সুবিধার জন্য অন্যান্য মানুষ ব্যবহার করে থাকে। যা তাদের সময় বাচায় এবং জীবনযাত্রা সহজ করে তুলতে সহায়তা করে।
সুতরাং, মুদ্রার সহজলভ্যতা, সহজে বহনযোগ্য এবং বর্তমানে বিভিন্ন রকমের নিরাপত্তা নিশ্চিত হওয়ায় মানুষের জীবনে মুদ্রার ব্যবহার ব্যাপক গুরুত্ব বহন করে।

 জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর 
প্রশ্ন \ ১ \ ‘দ্রব্যের বিনিময়ে দ্রব্য’ প্রথাটি কী নামে পরিচিত?
উত্তর : ‘দ্রব্যের বিনিময়ে দ্রব্য’ প্রথাটি বিনিময় প্রথা হিসেবে পরিচিত।
প্রশ্ন \ ২ \ কখন কাগজি মুদ্রায় প্রচলন শুরু হয়?
উত্তর : ঊনবিংশ শতাব্দীতে কাগজি মুদ্রার প্রচলন শুরু হয়?
প্রশ্ন \ ৩ \ মুদ্রার সংজ্ঞা লেখ?
উত্তর : মুদ্রা একটি বিনিময় মাধ্যম, যা সবার নিকট গ্রহণীয় এবং যা মূল্যের পরিমাপক ও সঞ্চয়ের বাহন হিসেবে কাজ করে।
প্রশ্ন \ ৪ \ ব্যাংক কোনটিকে তার ব্যবসায় প্রধান উপাদান হিসেবে ব্যবহার করে আসছে?
উত্তর : ব্যাংক মুদ্রাকে তার ব্যবসায়ের প্রধান উপাদান হিসেবে ব্যবহার করে আসছে।
প্রশ্ন \ ৫ \ সঞ্চয়ের বাহন কী?
উত্তর : সঞ্চয়ের বাহন হলো মুদ্রা।
প্রশ্ন \ ৬ \ কোনটির ইতিহাস খুবই বিচিত্র?
উত্তর : মুদ্রার ইতিহাস খুবই বিচিত্র।
প্রশ্ন \ ৭ \ কখন মানুষের চাহিদা সীমিত ছিল?
উত্তর : সভ্যতার প্রাথমিক পর্যায়ে মানুষের চাহিদা সীমিত ছিল।
প্রশ্ন \ ৮ \ বর্তমানে বাংলাদেশে পূর্ণাঙ্গ ইসলামি ব্যাংক কয়টি?
উত্তর : বর্তমানে বাংলাদেশের পূর্ণাঙ্গ ইসলামি ব্যাংক ৭টি।
প্রশ্ন \ ৯ \ ব্যাংকিং ব্যবসায় কখন থেকে শুরু হয়?
উত্তর : ব্যাংকিং ব্যবসায় শুরু হয় মুদ্রা প্রচলনের প্রথম যুগ থেকে।
প্রশ্ন \ ১০ \ মুদ্রার সাথে ব্যাংকের কী সম্পর্ক?
উত্তর : মুদ্রা ও ব্যাংক এ দুটি একে অপরের পরিপূরক।
প্রশ্ন \ ১১ \ মূল্যের পরিমাপক বলা হয় কাকে?
উত্তর : মূল্যের পরিমাপক বলা হয় মুদ্রাকে।
প্রশ্ন \ ১২ \ ব্যাংক ব্যবসায় জননী কে?
উত্তর : মুদ্রাই ব্যাংক ব্যবস্থার জননী।
প্রশ্ন \ ১৩ \ ব্যাংকিং ব্যবসায়ে অভিভাবকের দায়িত্ব পালন করে কোন ব্যাংক?
উত্তর : ব্যাংকিং ব্যবসায়ে অভিভাবকের দায়িত্ব পালন করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
প্রশ্ন \ ১৪ \ আধুনিক অর্থনীতির জীবনীশক্তি কী?
উত্তর : ব্যাংক হচ্ছে আধুনিক অর্থনীতির জীবনীশক্তি।
প্রশ্ন \ ১৫ \ ব্যাংক শব্দটির আভিধানিক অর্থ কী?
উত্তর : ব্যাংক শব্দটির আভিধানিক অর্থ হলো কোনো বস্তুবিশেষের স্ত‚প, কোষাগার, লম্বা টেবিল ইত্যাদি।
প্রশ্ন \ ১৬ \ ভারত উপমহাদেশে ব্যাংকিং ব্যবসায় কত সাল থেকে বিস্তৃত?
উত্তর : ভারত উপমহাদেশে ব্যাংকিং ব্যবসায় খ্রিস্টপূর্ব ৫০০০ সাল থেকেই বিস্তৃত।
প্রশ্ন \ ১৭ \ কোনটির ইতিহাস খুবই বিচিত্র?
উত্তর : মুদ্রার ইতিহাস খুবই বিচিত্র।
প্রশ্ন \ ১৮ \ কী কারণে ধাতব পদার্থের সরবরাহ ঘাটতি দেখা দেয়?
উত্তর : ধাতব মুদ্রার ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে ধাতব পদার্থের সরবরাহ ঘাটতি দেখা দেয়।
প্রশ্ন \ ১৯ \ কোন যুগে লম্বা টুল বা বেঞ্চে বসে অর্থের ব্যবসায় করা হতো?
উত্তর : মধ্যযুগে লম্বা টুল বা বেঞ্চে বসে অর্থের ব্যবসার কথা হতো।
প্রশ্ন \ ২০ \ ব্যাংকিং শব্দটি ব্যাংকের কার্যাবলির একটি কী?
উত্তর : ব্যাংকিং শব্দটি ব্যাংকের কার্যাবলির একটি বিস্তৃত ধারণা।
প্রশ্ন \ ২১ \ বৈদেশিক বাণিজ্য কী?
উত্তর : আমদানি ও রপ্তানিকে বৈদেশিক বাণিজ্য বলে।
প্রশ্ন \ ২২ \ মূল্যবান সামগ্রী ও দলিলাদি কোথায় নিরাপদে সংরক্ষণ করা যায়?
উত্তর : মূল্যবান সামগ্রী ও দলিলাদি ব্যাংকে নিরাপদে সংরক্ষণ করা যায়।
প্রশ্ন \ ২৩ \ ব্যাংকার কারা?
উত্তর : ব্যাংকিং ব্যবসায় পরিচালনার সাথে সরাসরি যুক্ত ব্যক্তিবর্গরাই হলো ব্যাংকার।
প্রশ্ন \ ২৪ \ ভারতীয় উপমহাদেশের প্রথম আধুনিক ব্যাংকের নাম কী?
উত্তর : ভারতীয় উপমহাদেশের প্রথম আধুনিক ব্যাংক হলো ‘দি হিন্দুস্তান ব্যাংক’।
প্রশ্ন \ ২৫ \ বাংলাদেশে কয়টি অতালিকাভুক্ত ব্যাংক রয়েছে?
উত্তর : বাংলাদেশে ৪টি অতালিকাভুক্ত ব্যাংক রয়েছে।
প্রশ্ন \ ২৬ \ বাংলাদেশে কয়টির অধিক বেসরকারি ব্যাংক কার্যকর আছে?
উত্তর : বাংলাদেশে ৩০টির অধিক বেসরকারি ব্যাংক কার্যকর আছে।

 অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর 
প্রশ্ন \ ১ \ ‘মুদ্রা মূল্যের পরিমাপক হিসেবে কাজ করে’- ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : মুদ্রা মূল্যের পরিমাপক হিসেবে কাজ করে অর্থাৎ যে কোনো অর্থনৈতিক পণ্য বা সেবার মূল্য কত- এটা নির্ধারণ করা মুদ্রার একটি কাজ। মুদ্রার অস্তিত্ব আছে বলেই আমরা খুব সহজেই একজন শ্রমিকের দৈনিক মজুরি ১০০ টাকা নির্ধারণ করতে পারি, একটা বইয়ের মূল্য ২০০ টাকা নির্ধারণ করতে পারি। এতে করে অর্থনৈতিক ক্রিয়াকলাপ সহজসাধ্য হয়ে যায়।
প্রশ্ন \ ২ \ মুদ্রাকে ব্যাংক ব্যবস্থার জননী বলা হয় কেন?
উত্তর : সভ্যতার বিকাশের সাথে সাথে মানুষের সামাজিক বন্ধন ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি পায়, যার ফলে মানুষের মধ্যে লেনদেন ও বিনিময় কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি পায়। ফলে মুদ্রা প্রচলনের পর পরই ব্যাংক ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। আর এ কারণেই মুদ্রাকে ব্যাংক ব্যবস্থার জননী বলা হয়। ব্যাংক ব্যবস্থা বিবর্তনের প্রথম থেকে আজ পর্যন্ত ব্যাংক মুদ্রাকেই তার ব্যবসার প্রধান উপাদান হিসেবে ব্যবহার করে আসছে।
প্রশ্ন \ ৩ \ ব্যাংক আমানতকারীর চাহিবামাত্র অর্থ ফেরত প্রদানে বাধ্য কেন ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : যাদের আয় বেশি তারা দেশের সঞ্চয়কারী। ব্যাংক তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন মেয়াদি আমানত সংগ্রহ করে। মুনাফা অর্জনের নিমিত্তে এসব আমানত বিনিয়োগ করে। ব্যাংক একটি নিরাপদ প্রতিষ্ঠান হিসেবে খ্যাত। কাজেই জনগণ এখানে সঞ্চয় করে থাকে। তাই তাদের প্রয়োজনে ব্যাংক নির্দিষ্ট সময় সঞ্চয়কারীর অর্থ ফেরত দিতে বাধ্য থাকে।
প্রশ্ন \ ৪ \ কেন্দ্রীয় ব্যাংককে ব্যাংক ব্যবস্থার অভিভাবক বলা হয় কেন? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : একটি সফল অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে নিয়ন্ত্রণ করে থাকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ব্যাংক ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক মুদ্রার প্রচলন,
ঋণ নিয়ন্ত্রণ ও ব্যাংক সংক্রান্ত সকল সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে থাকে এবং অন্যান্য সকল আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ওপর খবরদারি করে। তাই কেন্দ্রীয় ব্যাংককে ব্যাংকিং ব্যবস্থার অভিভাবক বলা হয়।
প্রশ্ন \ ৫ \ খঈ ইস্যু করা হয় কেন?
উত্তর : খঈ বা প্রত্যয়নপত্র বৈদেশিক বাণিজ্যে ব্যবহৃত একটি দলিল। বৈদেশিক বাণিজ্য সুষ্ঠুভাবে সম্পাদন করার জন্য পণ্য মূল্যে পরিশোধের নিশ্চয়তা প্রদান করতে হয়। এ জন্য আমদানিকারকের পক্ষে ব্যাংক খবঃঃবৎ ড়ভ ঈৎবফরঃ ইস্যু করে।
প্রশ্ন \ ৬ \ সভ্যতার বিবর্তন বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : ব্যক্তিগত, সাংস্কৃতিক এবং বস্তুগত উন্নয়ন যা মানুষের সামাজিক জীবনকে একটি অগ্রগতির দিকে নিয়ে যায় তাকে সভ্যতার বিবর্তন বলে। যে কোনো সামাজিক জীবনে সভ্যতার বিবর্তনে বিজ্ঞান ও শিল্পের প্রসার এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলো গুরুত্বপূর্ণ তাৎপর্য বহন করে।
প্রশ্ন \ ৭ \ বিনিময় প্রথা কী? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : দ্রব্যের বিনিময়ে দ্রব্য বিনিময় করে নিজেদের প্রয়োজন ও চাহিদা পূরণের ব্যবস্থাকে বিনিময় প্রথা বলে। সভ্যতার বিবর্তন এবং সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে মানুষের প্রয়োজন, কর্মকাণ্ড এবং সামাজিক বন্ধনের পরিধি বাড়তে থাকে। সমাজের বাড়তি পরিধি হতে সৃষ্ট চাহিদা মিটাতে সমাজের মানুষজন নিজের প্রয়োজনের অতিরিক্ত দ্রব্যাদি বিনিময় করার মাধ্যমে বিনিময় প্রথা চালু হয়।
প্রশ্ন \ ৮ \ ‘ঝধভবঃু ভরৎংঃ’ কথাটির তাৎপর্য ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : ‘ঝধভবঃু ভরৎংঃ’ কথাটির তাৎপর্য ব্যাংকিং ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে অপরিসীম। ব্যাংক জনগণের গচ্ছিত আমানত নিরাপদে সংরক্ষণের দায়িত্ব গ্রহণ করে। কারণ গ্রাহকদের জমাকৃত আমানতের নিরাপত্তার বিধান এবং ব্যাংকের নিজস্ব সম্পদ ও বিনিয়োগের নিরাপত্তা দেয়া ব্যাংকের একটি গুরুত্বপূর্ণ নীতি।

 

 

 

 

Share to help others:

Leave a Reply