এসএসসি সাধারণ বিজ্ঞান সপ্তম অধ্যায় অম, ক্ষারক ও লবণের ব্যবহার
পাঠ সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াদি
অ¤ø বা এসিড : হাইড্রোজেন যুক্ত যেসব যৌগ পানিতে দ্রবীভ‚ত হয়ে হাইড্রোজেন আয়ন (ঐ+) উৎপন্ন করে সেগুলোকে এসিড বলে।
যেমন : ঐঈষ, ঐঘঙ৩, ঐ২ঝঙ৪ পানিতে দ্রবীভ‚ত হয়ে ঐ+ দেয়, তাই এগুলো এসিড।
অজৈব ও জৈব এসিড : এসিডকে অজৈব এসিড ও জৈব এসিডে ভাগ করা হয়। কার্বনবিহীন এসিডকে অজৈব এসিড এবং কার্বনযুক্ত এসিডকে জৈব এসিড বলা হয়। অজৈব এসিড শিল্প কারখানায় ব্যবহৃত হয়। জৈব এসিডকে আমরা অনেক সময় খাবার হিসেবে গ্রহণ করি।
শক্তিশালী ও দুর্বল এসিড : অজৈব বা খনিজ এসিডসমূহ পানিতে পুরোপুরি বিয়োজিত হয়ে হাইড্রোজেন আয়ন (ঐ+) তৈরি করে। এদেরকে শক্তিশালী এসিড বলে। যেমন : ঐ২ঝঙ৪, ঐঘঙ৩, ঐঈষ। জৈব এসিডসমূহ পানিতে পুরোপুরিভাবে বিয়োজিত না হয়ে আংশিকভাবে বিয়োজিত হয়, এদেরকে দুর্বল এসিড বলে। যেমন : ঈঐ৩ঈঙঙঐ, ঐঙঙঈঈঙঙঐ ইত্যাদি।
নির্দেশক : এসিড-ক্ষারক টাইট্রেশনের সময় এর শেষ বিন্দু নির্ধারণের জন্য কতিপয় যৌগ ব্যবহার করা হয়। এসব যৌগ এসিড মাধ্যমে এক ধরনের বর্ণ দেখায় এবং ক্ষারীয় মাধ্যমে অন্য ধরনের বর্ণ দেখায়। যেসব যৌগ তার নিজস্ব বর্ণ পরিবর্তন দ্বারা একটি দ্রবণ এসিডীয় না ক্ষারকীয় না প্রশমন তা নির্দেশ করে অথবা কোনো বিক্রিয়ার শেষ বিন্দু নির্ধারণ করে তাকে নির্দেশক বলে। এসিড ও ক্ষারকের তীব্রতার উপর নির্ভর করে এসিড-ক্ষারক টাইট্রেশনে বিভিন্ন রকম নির্দেশক ব্যবহার করা হয়। যেমন : তীব্র এসিড-তীব্র ক্ষারকের ক্ষেত্রে ফেনোলফথ্যালিন ব্যবহার করা হয় এবং তীব্র এসিড-মৃদু ক্ষারকের ক্ষেত্রে মিথাইল অরেঞ্জ বা মিথাইল রেড ব্যবহার করা হয়।
লিটমাস কাগজ : একটি দ্রবণ অ¤øীয় না ক্ষারকীয় তা প্রমাণের জন্য লিটমাস কাগজ ব্যবহৃত হয়। এসিডে লিটমাস কাগজের রং নীল থেকে লাল হয়ে যায়। আর ক্ষারকে লিটমাস কাগজের রং লাল থেকে নীল হয়ে যায়।
এসিডের ধর্ম : এসিড নির্দেশকের বর্ণ পরিবর্তন করে। এসিডের জলীয় দ্রবণ নীল লিটমাসকে লাল করে। এসিড সক্রিয় ধাতু যেমন- গম, তহ, ঋব, অষ প্রভৃতির সাথে বিক্রিয়া করে লবণ গঠন করে এবং হাইড্রোজেন গ্যাস নির্গত হয়। ধাতব হাইড্রোজেন কার্বনেটের সাথে এসিডের বিক্রিয়ায় কার্বন ডাইঅক্সাইড গ্যাস নির্গত হয়। ক্ষার বা ক্ষারকের সাথে অর্থাৎ ধাতব অক্সাইড এবং হাইড্রোক্সাইডের সাথে এসিডের বিক্রিয়ায় লবণ এবং পানি উৎপন্ন হয়।
ঢ়ঐ : আভিধানিক অর্থে ঢ়ঐ মানে হলো হাইড্রোজেনের ক্ষমতা। কোনো দ্রবণে ঢ়ঐ মান ০ থেকে ১৪ এর মধ্যে হবে। কোনো দ্রবণের ঢ়ঐ মান ৭ এর কম হলে দ্রবণটি অ¤øীয় আবার ৭-এর বেশি হলে দ্রবণটি ক্ষারীয়। কোনো দ্রবণের ঢ়ঐ মান ৭ হলে দ্রবণটি প্রশমন।
ঢ়ঐ এর গুরুত্ব : কোনো কিছুর মানদণ্ড নির্ভর করে ঢ়ঐ এর ওপর। নির্ভেজাল, ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ ও তেজস্ক্রিয়তামুক্ত একটি পদার্থের ঢ়ঐ এর মান ৬৮ এর মধ্যে থাকতে হয়। একটি পদার্থের ঢ়ঐ এর মান এর থেকে যদি খুব বেশি বেড়ে যায় বা কমে যায় তা প্রাণী ও উদ্ভিদের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর হয়। এজন্য ঢ়ঐ এর আদর্শ মান জানা অত্যন্ত জরুরি।
ক্ষারক : ক্ষারক হলো সেই সকল রাসায়নিক বস্তু যাদের মধ্যে অক্সিজেন ও হাইড্রোজেন পরমাণু থাকে এবং যারা পানিতে হাইড্রক্সিল আয়ন (ঙঐ) হাইড্রোক্সাইড তৈরি করে। যেমন : ঘধঙঐ, কঙঐ, ঘঐ৪ঙঐ ইত্যাদি। কিছু রাসায়নিক পদার্থ আছে যাদের মধ্যে অক্সিজেন ও হাইড্রোজেন দুই ধরনের পরমাণু নেই, কিন্তু পানিতে ঙঐ তৈরি করে, এদেরকেও ক্ষারক বলা হয়। যেমন : ঈধঙ, ঘঐ৩ ইত্যাদি।
ক্ষার : যেসব ক্ষারক পানিতে দ্রবীভ‚ত হয় তাদেরকে ক্ষার বলে । ঘধঙঐ, কঙঐ, ঈধ(ঙঐ)২, ঘঐ৪ঙঐ এরা সবাই ক্ষার।
ক্ষারের ধর্ম : ক্ষারের জলীয় দ্রবণ স্পর্শ করলে সাবানের মতো পিচ্ছিল মনে হয়। ক্ষারের জলীয় দ্রবণ লাল লিটমাসকে নীল করে। ক্ষার সাধারণত ধাতব লবণের সাথে বিক্রিয়া করে ধাতব হাইড্রোক্সাইড উৎপন্ন করে। ক্ষার এসিডের সাথে তীব্রভাবে বিক্রিয়া করে লবণ এবং পানি উৎপন্ন করে। অ্যামোনিয়া যৌগের সাথে ক্ষারের বিক্রিয়ায় অ্যামোনিয়া গ্যাস বিমুক্ত হয়।
এন্টাসিড : আমাদের পাকস্থলীতে এসিডিটি হলে যে ওষুধ সেবন করি তা এন্টাসিড নামে পরিচিত। এন্টাসিড হলো মূলত ম্যাগনেসিয়াম হাইড্রোক্সাইড [গম(ঙঐ)২] যা সাসপেনশান ও ট্যাবলেট দুভাবেই পাওয়া যায়। হাইড্রোক্সিল (ঙঐ)২ এর সাসপেনশান মিল্ক অব ম্যাগনেসিয়া নামেই অধিক পরিচিত। কখনও কখনও এন্টাসিডে অ্যালুমিনিয়াম হাইড্রোক্সাইডও [অষ(ঙঐ)৩] থাকে।
প্রশমন বিক্রিয়া : এসিড ও ক্ষারের মধ্যে যে বিক্রিয়ার ফলে এসিড বা ক্ষারের ধর্ম সম্পূর্ণভাবে লোপ পেয়ে লবণ ও পানি উৎপন্ন হয় সেই বিক্রিয়াকে প্রশমন বিক্রিয়া বলে। এ বিক্রিয়ায় এসিড থেকে উৎপন্ন ঐ+ আয়ন ক্ষার থেকে উৎপন্ন ঙঐ আয়নের সাথে যুক্ত হয়ে অবিয়োজিত পানির অণু গঠন করে, তাকে প্রশমন বলে।
প্রশমন বিক্রিয়ার গুরুত্ব : ঢ়ঐ মান নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রশমন বিক্রিয়ার গুরুত্ব অপরিসীম। কোনো পদার্থের ঢ়ঐ মান ৬৮ এর থেকে কমে বা বেড়ে গেলে তা এ সীমার মধ্যে রাখার জন্য প্রশমন বিক্রিয়া পরিচালনা করা হয়। পরিপাক প্রক্রিয়ায়, দাঁতের যতেœ, কেক তৈরিতে, কৃষিক্ষেত্রে মাটি পরিচর্যা ইত্যাদি ক্ষেত্রে প্রশমন বিক্রিয়ার সাহায্যে নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
লবণ : এসিডের সকল প্রতিস্থাপনযোগ্য হাইড্রোজেন পরমাণু ধাতু বা ধাতুধর্মীমূলক দ্বারা প্রতিস্থাপন হয়ে যে লবণ উৎপন্ন করে তাকে সাধারণভাবে লবণ বলে। যেমনÑ ঘধঈষ, ঘধ২ঝঙ৪, ঈধঝঙ৪ ইত্যাদি। অ¤ø ও ক্ষারের প্রশমন বিক্রিয়া দ্বারা কোনো ঈপ্সিত লবণ তৈরি করা যায়।
লবণের ব্যবহার : সোডিয়াম ক্লোরাইড (ঘধঈষ) যা সাধারণ লবণ বা টেবিল লবণ নামেও পরিচিত। তরিতরকারি ছাড়াও আরও অনেক খাবার যেমনÑ পাউরুটি, আচার, চানাচুর ইত্যাদিতে খাবার লবণ ব্যবহার করা হয়। খাবারের স্বাদ বৃদ্ধি করার জন্য সোডিয়াম গøুটামেট ব্যবহার করা হয় যা টেস্টিং সল্ট নামে পরিচিত। আমরা কাপড় কাচার যে সাবান ব্যবহার করি তা হলো সোডিয়াম স্টিয়ারেট (ঈ১৭ঐ৩৫ঈঙঙঘধ)। কাপড় কাচার সোডা হিসেবে আমরা যে সোডিয়াম কার্বনেট (ঘধ২ঈঙ৩.১০ঐ২ঙ) ব্যবহার করি তাও একটি লবণ। জীবাণুনাশক হিসেবে যে তুঁতে বা ফিটকিরি ব্যবহৃত হয় সেগুলোও লবণ।
অনুশীলনীর বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
১. কোনটি দুর্বল এসিড?
ক ঐঈষ খ ঐঘঙ৩ ঐ২ঈঙ৩ ঘ ঐ২ঝঙ৪
২. একটি বর্ণহীন দ্রবণে ঘধঙঐ মিশালে দ্রবণটি গোলাপি হয়ে গেল। দ্রবণটি কী?
ক মিথাইল রেড খ মিথাইল অরেঞ্জ
ফেনফথ্যালিন ঘ লিটমাস দ্রবণ
নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ে ৩ ও ৪নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
রাজির পায়ে পিঁপড়া কামড় দেয়ায় পায়ে যন্ত্রণা হয় এবং ফুলে যায়। তার মা পায়ে একটু কেরামিন লোশন লাগিয়ে দেন। এতে রাজির পায়ের জ্বালা কমে যায়।
৩. রাজির পা ফুলে যাওয়ার কারণ কোনটি?
ফরমিক এসিড খ অক্সালিক এসিড
গ এসিটিক এসিড ঘ সাইট্রিক এসিড
৪. পায়ে লাগানো লোশনটিÑ
র. এসিডকে প্রশমিত করে
রর. জিঙ্ক কার্বনেট জাতীয় লবণ
ররর. মেলিটিন ও অ্যাপারিন নামক এসিডিক পদার্থ
নিচের কোনটি সঠিক?
র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
গুরুত্বপূর্ণ বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
৫. মৌমাছি হুল ফুটালে ব্যবহার করা হয় নিচের কোনটি?
ক ঈধঈঙ৩ খ ঘধ২ঈঙ৩ তহঈঙ৩ ঘ ঘ২ঈঙ৩
৬. নিচের কোন এসিডটি শক্তিশালী?
ক ঈঐ৩ঈঙঙঙঐ ঐ২ঝঙ৪
গ ঐ২ঈঙ৩ ঘ ঐঙঙঈঈঙঙঐ
৭. ধমনীর রক্তের ঢ়ঐ কত?
ক প্রায় ৬.৬ খ প্রায় ৭ গ প্রায় ৭.২ প্রায় ৭.৪
৮. অ্যামোনিয়াম ফসফেট এর সংকেত কোনটি?
ক (ঘঐ৪)২চঙ৪ খ (ঘঐ৪)৩চঙ৩ (ঘঐ৪)৩চঙ৪ ঘ (ঘঐ৩)৩চঙ৪
৯. ঘধঐঈঙ৩ + ঐঈষ “অ” + ঐ২ঙ + ঈঙ২
উদ্দীপকের “অ” চিহ্নিত স্থানে কী হওয়া উচিত?
ক ঐঘঙ৩ খ ঘধঙঐ ঘধঈষ ঘ ঘধ২ঈঙ৩
১০. মাটির ঢ়ঐ এর মান ৩ এর কম হলে, কোন খনিজ পদার্থযুক্ত সার ব্যবহার করতে হবে?
ক নাইট্রোজেন ও সালফার খ পটাশিয়াম ও ফসফরাস
গ ফসফরাস ও ক্যালসিয়াম ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম
১১. সোডিয়াম গøুটামেট কী নামে পরিচিত?
টেস্টিং সল্ট খ স্ন্যাক লাইম গ বেকিং সোডা ঘ ক্যালমিন
১২. কাপড় কাচা সোডার সাথে কত অণু পানি থাকে?
ক ৫ ১০ গ ১৫ ঘ ২০
১৩. কোনটি দুর্বল এসিড?
ঈঐ৩ঈঙঙঐ খ ঐ২ঝঙ৪ গ ঐঘঙ৩ ঘ ঐঈষ
১৪. কোনো জলীয় দ্রবণ ক্ষারীয় হলে, এর ঢ়ঐ কোনটি?
ক ৪.৫ খ ৫.৫ গ ৬.৫ ৭.৫
১৫. নিচের কোনটি টেবিল লবণ?
ক ঘঐ৪ঘঙ৩ ঘধঈষ গ ঈধঈষ২ ঘ (ঘঐ৪)২ ঝঙ৪
১৬. ঘধঙঐ ও ঐঈষ এর বিক্রিয়ায় কী উৎপন্ন হয়?
ক ক্ষার খ এসিড গ ক্ষারক লবণ
১৭. শক্তিশালী এসিড হচ্ছে
র. ঐ২ঝঙ৪
রর. ঐঘঙ৩
ররর. ঐঈষ
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
নিচের অনুচ্ছেদটি পড় এবং ১৮ ও ১৯ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
প্রসাধন সামগ্রী সংকেত
সেভিং ফোম ঢ
তুঁতে ণ
১৮. ‘ঢ’ এর সংকেত কোনটি?
ক ঘধ২ঈঙ৩.১০ঐ২ঙ খ ঈ১৭ঐ৩৫ঈঙঙঘধ
ঈ১৭ঐ৩৫ঈঙঙক ঘ ঈঁঝঙ৪. ৫ঐ২ঙ
১৯. ‘ণ’ পদার্থটি
র. একটি লবণ
রর. জীবাণুনাশক হিসেবে ব্যবহৃত হয়
ররর. এর সংকেত ঈঁঝঙ৪ . ৫ঐ২ঙ
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর র, রর ও ররর
নিচের উদ্দীপকটি লক্ষ কর এবং ২০ ও ২১ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
সকাল নানু বাড়িতে বেড়াতে গেল। সে দেখল কৃষকরা জমিতে চুন ছিটাচ্ছে।
২০. বস্তুটি ছিটানোর পূর্বে জমির ঢ়ঐ এর মান কত হতে পারে?
৪ খ ৬.৫ গ ৮.৫ ঘ ৭
২১. বস্তুটির পরিমাণ বেশি দেওয়া হলে কোনটি ব্যবহার করতে হবে?
ঘঐ৪ঘঙ৩ খ ঈধঈঙ৩ গ ঐ২ঝঙ৪ ঘঈঁঝঙ৪.৫ঐ২ঙ
নিচের অনুচ্ছেদ লক্ষ কর এবং ২২ ও ২৩ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
খাবার লবণ ছাড়াও আমরা দৈনন্দিন জীবনে আরও অনেক ধরনের লবণ ব্যবহার করি। জাতীয় অর্থনীতিতে এগুলোর যথেষ্ট ভ‚মিকা রয়েছে।
২২. প্রথম লবণটির রাসায়নিক সংকেত কোনটি?
ঘধঈষ খ ঘধঙঐ গ ঈধঈষ২ ঘ ঈধঈঙ৩
২৩. পরবর্তী লবণগুলো গুরুত্বপূর্ণ কেন?
ক জীবাণু বৃদ্ধি করে
মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি করে
গ সহজে পাওয়া যায়
ঘ এসিড ও অধাতুর বিক্রিয়ায় তৈরি হয়
নিচের রাসায়নিক বিক্রিয়াটি লক্ষ কর এবং ২৪ ও ২৫ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
ঘধঐঈঙ৩ + (অ) ঘধঈষ + ঐ২ঙ + (ই)
২৪. নিচের কোনটি ‘ই’ যৌগ?
ক ঈঙ ঈঙ২ গ ঘধঙঐ ঘ ঐঈঙ৩
২৫. ‘অ’ যৌগটি [রা. বো. ’১৫]
র. শক্তিশালী এসিড
রর. দুর্বল এসিড
ররর. পাকস্থলীতে পাওয়া যায়
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
নিচের উদ্দীপকটি লক্ষ কর এবং ২৬ ও ২৭ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
চিত্রাকে খাবার শেষে সেভেনআপ জাতীয় কোমল পানীয় পান করতে দিলে সে তাতে ২/৩ চা চামচ লেবুর মিশ্রণ করে। অতঃপর সে তা পান করে।
২৬. উদ্দীপকে উল্লিখিত রসে কোন উপাদানটি বিদ্যমান?
ক ঐঙঙঈ ঈঙঙঐ
খ ঈঐ৩ঈঙঙঐ
ঐঙঙঈ ঈঐ২ঈ (ঙঐ) (ঈঙঙঐ) ঈঐ২ঈঙঙঐ
ঘ ঐ৩ঈ (ঈঐ২) ঈঙঙঐ
২৭. লেবুর রস যোগ করায়
র. সোডিয়াম সাইট্রেট লবণ তৈরি হবে রর. ঈঙ২ গ্যাস তৈরি হবে
ররর. কোমল পানীয়ের কার্যকারিতা বৃদ্ধি পাবে
নিচের কোনটি সঠিক?
র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
নিচের উদ্দীপকটি লক্ষ কর এবং ২৮ ও ২৯ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
স্কুল থেকে আসার পথে রাহিকে পিঁপড়া কামড়ায়। বাসায় আসার পর কামড়ানো স্থানে তার মা টুথপেস্ট লাগিয়ে দেয়। তাতে রাহির জ্বালা কমে।
২৮. উল্লিখিত প্রাণিটির কামড়ের ফলে কোন এসিড নিঃসৃত হয়?
ক অ্যাসিটিক খ মেলিটিন গ অ্যাপামিন ফরমিক
২৯. রাহির ব্যবহৃত দ্রব্যটি
র. এসিড নিষ্ক্রিয় করে
রর. দাঁত ক্ষয়রোধ করে
ররর. দাঁত পরিষ্কার করে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর র, রর ও ররর
জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন \ ১ \ মানুষের পাকস্থলীতে কোন এসিড উৎপন্ন হয়?
উত্তর : মানুষের পাকস্থলীতে হাইড্রোক্লোরিক এসিড উৎপন্ন হয়।
প্রশ্ন \ ২ \ আমাদের খুব পরিচিত দুটি ক্ষারের উদাহরণ দাও।
উত্তর : কাপড় কাচার সোডা ও কস্টিক পটাশ।
প্রশ্ন \ ৩ \ মিথাইল রেড কী?
উত্তর : মিথাইল রেড একটি নির্দেশক।
প্রশ্ন \ ৪ \ এসিড ও ক্ষারের স্বাদ কিরূপ?
উত্তর : এসিডের স্বাদ টক ও ক্ষারের স্বাদ কটু।
প্রশ্ন \ ৫ \ ভিনেগার কী?
উত্তর : ৬ থেকে ১০% অ্যাসিটিক এসিডকে ভিনেগার বলে।
প্রশ্ন \ ৬ \ ভিনেগার ব্যবহৃত হয় এমন দুটি খাদ্যের নাম বল।
উত্তর : আচার ও সসে ভিনেগার ব্যবহৃত হয়।
প্রশ্ন \ ৭ \ খাবার সোডা হিসেবে আমরা কী ব্যবহার করি?
উত্তর : খাবার সোডা হিসেবে আমরা ঘধঐঈঙ৩ ব্যবহার করি।
প্রশ্ন \ ৮ \ কাপড় কাচার সোডার সংকেত কী?
উত্তর : কাপড় কাচার সোডার সংকেত ঘধ২ঈঙ৩.১০ঐ২ঙ (পানিযুক্ত সোডিয়াম কার্বনেট)
প্রশ্ন \ ৯ \ খাদ্য প্রস্তুতিতে স্বাদ বৃদ্ধিকারী একটি লবণের নাম লেখ।
উত্তর : খাদ্য প্রস্তুতিতে স্বাদ বৃদ্ধিকারী একটি লবণের নাম মনোসোডিয়াম গ্লুটামেট।
প্রশ্ন \ ১০ \ মাটির এসিডিটি দূর করে উর্বরতা বৃদ্ধিতে কী ব্যবহার করা হয়?
উত্তর : মাটির এসিডিটি দূর করে উর্বরতা বৃদ্ধিতে চুন (ঈধঙ), ¯ø্যাক লাইম [ঈধ(ঙঐ)২], চুনাপাথর (ঈধঈঙ৩) ব্যবহার করা হয়।
প্রশ্ন \ ১১ \ টুথপেস্ট কী কী থাকে?
উত্তর : টুথপেস্টে ক্যালসিয়াম হাইড্রোক্সাইড, বেকিং সোডা, ট্রেট্রাসোডিয়াম পাইরোফসফেট জাতীয় পদার্থ থাকে।
প্রশ্ন \ ১২ \ কেক তৈরিতে কী ব্যবহার করা হয়?
উত্তর : কেক তৈরিতে বেকিং সোডা ব্যবহার করা হয়।
প্রশ্ন \ ১৩ \ দেহত্বকের জন্য আদর্শ ঢ়ঐ মান কত?
উত্তর : দেহত্বকের জন্য আদর্শ ঢ়ঐ মান হলো ৫.৫।
প্রশ্ন \ ১৪ \ আমাদের পাকস্থলীতে খাদ্য হজম করার জন্য দরকারি ঢ়ঐ মান কত?
উত্তর : আমাদের পাকস্থলীতে খাদ্য হজম করার জন্য দরকারি ঢ়ঐ মান ২।
প্রশ্ন \ ১৫ \ আমাদের শরীরে কিসের অভাবে স্কার্ভি রোগ হয়?
উত্তর : আমাদের শরীরে ভিটামিন সি বা এসকরবিক এসিডের অভাবে স্কার্ভি রোগ হয়।
প্রশ্ন \ ১৬ \ কোন কোন খাদ্যশস্য এসিডিটি কমাতে সাহায্য করে?
উত্তর : ডাল, ধান, মিষ্টি ভুট্টা ইত্যাদি খাদ্যশস্য এসিডিটি কমাতে সাহায্য করে।
প্রশ্ন \ ১৭ \ কী থেকে সেভিং ফোম তৈরি করা হয়?
উত্তর : পটাসিয়াম হাইড্রোক্সাইড ও চর্বি বা তেল থেকে সেভিং ফোম তৈরি করা হয়।
প্রশ্ন \ ১৮ \ মৌমাছির হুল ফুটালে এ থেকে কী কী পদার্থ নিঃসৃত হয়?
উত্তর : মৌমাছি হুল ফুটালে এ থেকে ফরমিক এসিড, মেলিটিন ও অ্যাপামিন নামক এসিডিক পদার্থ নিঃসৃত হয়।
প্রশ্ন \ ১৯ \ ক্যালামিন কী?
উত্তর : ক্যালামিন এক রকম লোশন যা মূলত জিংক কার্বনেট (তহঈঙ৩)।
অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন \ ১ \ মাটির উর্বরতা বাড়াতে কী কী সার ব্যবহার করা হয়?
উত্তর : মাটির উর্বরতা বাড়াতে অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট (ঘঐ৪ঘঙ৩), অ্যামোনিয়াম ফসফেট [(ঘঐ৪)৩চঙ৪], পটাসিয়াম নাইট্রেট (কঘঙ৩) ইত্যাদি সার ব্যবহার করা হয়।
প্রশ্ন \ ২ \ শিল্পকারখানায় প্রভাবক হিসেবে কী কী লবণ ব্যবহৃত হয়?
উত্তর : শিল্পকারখানায় প্রভাবক হিসেবে তুঁতে (ঈঁঝঙ৪.৫ঐ২ঙ), মারকিউরিক সালফেট (ঐমঝঙ৪), সিলভার সালফেট (অমঝঙ৪) ইত্যাদি লবণ ব্যবহৃত হয়।
প্রশ্ন \ ৩ \ এসিড ও ক্ষারের প্রশমন বিক্রিয়ার গুরুত্ব আলোচনা কর।
উত্তর : এসিড ও ক্ষারের প্রশমন বিক্রিয়ার গুরুত্ব নিম্নরূপ Ñ
র. জলীয় দ্রবণে এসিড ও ক্ষারের প্রশমন বিক্রিয়া দ্বারা একটি দ্রবণের জানা ঘনমাত্রা থেকে অপর দ্রবণের অজানা ঘনমাত্রা নির্ণয় করা যায়।
রর. অম্ল ও ক্ষারের প্রশমন বিক্রিয়া দ্বারা লবণ তৈরি করা যায়।
প্রশ্ন \ ৪ \ প্রশমন বিক্রিয়ায় নির্দেশকের ভূমিকা কী?
উত্তর : নির্দেশক এসিড ক্ষারের প্রশমন বিক্রিয়ায় প্রশমন ক্ষণ বা শেষ বিন্দু নির্দেশ করে। তাছাড়া নির্দেশকের সাহায্যে দ্রবণটি এসিডীয় না ক্ষারীয় না নিরপেক্ষ তা শনাক্ত করা যায়।
প্রশ্ন \ ৫ \ র. লঘু এসিড দ্রবণে; রর. ক্ষারের জলীয় দ্রবণে এবং ররর. ঘধঈষ এর জলীয় দ্রবণে লাল বর্ণের লিটমাস কাগজ ফেললে কাগজটির বর্ণের কী পরিবর্তন দেখা যাবে?
উত্তর : র. লঘু এসিড দ্রবণে লাল বর্ণের লিটমাস কাগজ লালই থাকবে।
রর. ক্ষারের জলীয় দ্রবণে লাল বর্ণের লিটমাস কাগজ নীল হয়ে যাবে।
ররর. ঘধঈষ এর জলীয় দ্রবণে লাল বর্ণের লিটমাস কাগজ লাল বর্ণই থাকবে। কোনো পরিবর্তন হবে না।
প্রশ্ন \ ৬ \ আমাদের দৈনিক খাদ্য তালিকায় এসিডযুক্ত খাদ্যের একটি তালিকা প্রস্তুত করে কোনটিতে কী এসিড আছে লেখ।
উত্তর : আমাদের দৈনিক খাদ্য তালিকায় এসিডযুক্ত খাদ্যের একটি তালিকা নিম্নরূপ :
এসিডযুক্ত খাদ্য এসিডের নাম
লেবু, টমাটো, কমলা, আনারস সাইট্রিক এসিড
শাকসবজি এবং কচু ও কচুর লতি অক্সালিক এসিড
দই ল্যাকটিক এসিড
আঙুর টারটারিক এসিড
আপেল, নাশপাতি ম্যালিক এসিড
তেঁতুল টারটারিক এসিড
প্রশ্ন \ ৭ \ কয়েকটি ক্ষারকের নামের তালিকা তৈরি কর যা আমরা খাদ্য ও পানীয়তে ব্যবহার করি।
উত্তর : কয়েকটি ক্ষারকের নামের তালিকা নিম্নরূপ :
খাদ্য ক্ষারকের নাম
চুন ঈধঙ
চুনের পানি ঈধ(ঙঐ)২
বেকিং সোডা ঘধঐঈঙ৩
বিভিন্ন ফিজি (গ্যাসমুক্ত) পানীয় ঘধঐঈঙ৩
প্রশ্ন \ ৮ \ বেকিং সোডা কীভাবে কাজ করে?
উত্তর : বেকিং সোডা হলো ঘধঐঈঙ৩। ময়দার সাথে বেকিং সোডা মেখে যখন কেক, পাউরুটি তৈরি করা হয়, তখন এটি উত্তাপে বিয়োজিত হয় এবং উৎপন্ন ঈঙ২ ছিদ্র তৈরি করে বের হয়ে যায় যা কেক বা পাউরুটিকে ফুলিয়ে তোলে।
প্রশ্ন \ ৯ \ কোক, ফানটা, পেপসি প্রভৃতি পানীয়ের বোতলে ছিপি খোলার পর বুদবুদ ওঠে কেন?
উত্তর : বাজারে দৈনন্দিন ব্যবহার্য বিভিন্ন পানীয় যেমন : কোক, ফানটা, পেপসি প্রভৃতি পাওয়া যায়। এগুলোতে প্রচণ্ড চাপে সোডিয়াম বাইকার্বনেট এবং সাইট্রিক এসিড যোগ করা হয়। বোতলের মুখ খুললে চাপ অপসারিত হয়। ফলে দ্রবীভূত কার্বন ডাইঅক্সাইড বুদবুদ আকারে বের হয়ে আসে।
প্রশ্ন \ ১০ \ খাদ্যে লবণ ব্যবহার করা হয় কেন?
উত্তর : খাদ্যের স্বাদ বৃদ্ধি এবং খাদ্যকে পচন থেকে সংরক্ষণে সহায়তা করে বলে খাদ্যে লবণ ব্যবহার করা হয়।
খাদ্য লবণের সঙ্গে পটাসিয়াম আয়োডাইড লবণ মিশিয়ে আয়োডাইড লবণ তৈরি করা হয়। আয়োডাইড লবণ ব্যবহারে আমরা হাবাগোবা গলগণ্ড ইত্যাদি রোগ থেকে রক্ষা পাই। একারণেই প্রায় সকল প্রকার খাদ্য প্রস্তুতিতে সর্বদা খাদ্য লবণ ব্যবহৃত হয়।
প্রশ্ন \ ১১ \ মৌমাছির হুল ফুটানো স্থানে বেকিং সোডা লাগালে ব্যথা কমে যায় কেন?
উত্তর : মৌমাছির হুলে ফরমিক এসিড থাকে। এই এসিডকে প্রশমিত করতে একটি দুর্বল ক্ষারকের প্রয়োজন হয়। তাই আমরা বেকিং সোডা আক্রান্ত স্থানে লাগাই। এতে ব্যথা উপশম হয়।
প্রশ্ন \ ১২ \ বোলতা বা ভীমরুলের হুল ফুটানো স্থানে ভিনেগার কেন ব্যবহার করা হয়?
উত্তর : বোলতা বা ভীমরুলের হুলে হিস্টামিন নামক ক্ষারক পদার্থ থাকে। এই ক্ষারককে প্রশমিত করতে একটি এসিডের প্রয়োজন হয়। তাই আমরা ক্ষতস্থানে ভিনেগার বা এসিটিক এসিড (ঈঐ৩ঈঙঙঐ) লাগাই।
প্রশ্ন \ ১৩ \ পরীক্ষাগারে যে লবণ তৈরি হয় তার দুটি প্রস্তুতি উলেখ কর।
উত্তর : পরীক্ষাগারে লবণ তৈরির দুটি প্রস্তুতি নিম্নরূপ :
র. ধাতুর সাথে এসিডের বিক্রিয়ায় লবণ তৈরি হয়। যেমনÑ
তহ + ঐ২ঝঙ৪ তহঝঙ৪ + ঐ২
রর. এসিড ও ক্ষারের প্রশমন বিক্রিয়ায় লবণ তৈরি হয়। যেমনÑ
ঐঈষ + ঘধঙঐ ঘধঈষ + ঐ২ঙ
প্রশ্ন \ ১৪ \ ঐঈষ তীব্র এসিড অথচ ঐ২ঈঙ৩ মৃদু এসিড কেন?
উত্তর : ঐঈষ জলীয় দ্রবণে সম্পূর্ণরূপে আয়নিত হয়ে ঐ+ উৎপন্ন করে। তাই ঐঈষ তীব্র এসিড। ঐ২ঈঙ৩ জলীয় দ্রবণে অতি অল্প সংখ্যক ঐ+ উৎপন্ন করে। তাই ঐ২ঈঙ৩ মৃদু এসিড।
প্রশ্ন \ ১৫ \ কোনো যৌগে ঙঐ মূলক থাকলেই তা ক্ষার হয় নাÑ উক্তিটির ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : কোনো যৌগে ঙঐ মূলক থাকলে তা ক্ষার না হয়ে ক্ষারকও হতে পারে। ক্ষার হতে হলে অবশ্যই তা পানিতে দ্রাব্য হতে হবে। কিন্তু ক্ষারক পানিতে দ্রবীভূত হতে পারে নাও হতে পারে।
প্রশ্ন \ ১৬ \ নিচের যৌগগুলোর মধ্যে তীব্র এসিড, মৃদু এসিড, তীব্র ক্ষার এবং মৃদু ক্ষার নির্দেশ কর।
ঐঈষ, ঈঐ৩ঈঙঙঐ, ঐ২ঈঙ৩, ঐঈঙঙঐ, ঘধঙঐ, ঘঐ৪ঙঐ
উত্তর : তীব্র এসিড Ñ ঐঈষ
মৃদু এসিড ঈঐ৩ঈঙঙঐ, ঐঈঙঙঐ, ঐ২ঈঙ৩
তীব্র ক্ষার ঘধঙঐ
মৃদু ক্ষার ঘঐ৪ঙঐ
প্রশ্ন \ ১৭ \ কোনো তরল পদার্থ ক্ষারক কিনা তা কী কী পরীক্ষা থেকে জানা যায়?
উত্তর : কোনো তরল পদার্থ ক্ষারক কিনা তা নিম্নলিখিত পরীক্ষা থেকে জানা যায়Ñ
র. ক্ষারের দ্রবণে লাল রঙের লিটমাস কাগজ ফেললে লাল কাগজটি নীল হয়ে যায়। এই পরীক্ষাটি প্রমাণ করে যে দ্রবণটি ক্ষার।
রর. যেকোনো ক্ষারকের মধ্যে অ্যামোনিয়াম লবণ যোগ করলে বিক্রিয়ায় অ্যামোনিয়া গ্যাস উৎপন্ন হবে। যেমনÑ
ঘঐ৪ঈষ + ঘধঙঐ ঘধঈষ + ঐ২ঙ + ঘঐ৩ (গ্যাস)
ররর. ক্ষারের জলীয় দ্রবণে দুই তিন ফোঁটা ফেনলফথ্যালিন যোগ করলে দ্রবণটির বর্ণ গোলাপি হয়।
প্রশ্ন \ ১৮ \ দুর্বল এসিড ও শক্তিশালী এসিডের মধ্যে পার্থক্য কী?
উত্তর : দুর্বল এসিড ও শক্তিশালী এসিডের মধ্যে পার্থক্য হলোÑ
দুর্বল এসিড শক্তিশালী এসিড
১. প্রাণী বা উদ্ভিদের দেহে যে এসিড পাওয়া যায়, তাকে দুর্বল এসিড বলে। ১. খনিজ পদার্থ থেকে তৈরি এসিডকে শক্তিশালী এসিড বলে।
২. এ ধরনের এসিডে কার্বন পরমাণু যুক্ত থাকে। ২. এ ধরনের এসিডে কার্বন পরমাণু যুক্ত থাকে না।
৩. দুর্বল এসিড খাওয়ার উপযোগী। ৩. শক্তিশালী এসিড খাওয়ার উপযোগী নয়।
৪. উদাহরণ- ঐঙঙঈ ঈঙঙঐ, ঈঐ৩ঈঙঙঐ। ৪. উদাহরণÑ ঐঈষ, ঐঘঙ৩, ঐ২ঝঙ৪।
প্রশ্ন \ ১৯ \ এসিড-ক্ষার নির্ধারণে ঢ়ঐ মানের ভ‚মিকা ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : দ্রবণে ঢ়ঐ মানের সীমা হলো ০-১৪ এর মধ্যে। দ্রবণে ঢ়ঐ মান ৭ এর কম হলে দ্রবণটি অ¤øীয় অর্থাৎ এসিডিক হবে। আর ঢ়ঐ মান ৭ এর বেশি হলে তা ক্ষারীয় হবে। ঢ়ঐ মান ৭ হলে তা প্রশম হবে।
প্রশ্ন \ ২০ \ বেকিং সোডা হাইড্রোক্লোরিক এসিডের সাথে ক্রিয়া করে কী উৎপন্ন করে?
উত্তর : বেকিং সোডা হাইড্রোক্লোরিক এসিডের সাথে ক্রিয়া করে লবণ, পানি ও কার্বন ডাইঅক্সাইড গ্যাস উৎপন্ন করে।
ঘধঐঈঙ৩ + ঐঈষ ঘধঈষ + ঐ২ঙ + ঈঙ২
প্রশ্ন \ ২১ \ শিল্প রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় ঢ়ঐ নিয়ন্ত্রণ ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : বিভিন্ন শিল্প রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় ঢ়ঐ নিয়ন্ত্রণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নানারকম ওষুধ, কলমের কালি, বেকারিতে লজেন্স জাতীয় মিষ্টি খাদ্যদ্রব্য, চামড়া প্রস্তুতি ইত্যাদি অনেক ক্ষেত্রে ঢ়ঐ এর মান নিয়ন্ত্রণ অত্যাবশ্যক। এছাড়া আলোকচিত্র সংক্রান্ত রাসায়নিক বিক্রিয়ায় রং তৈরি ও ব্যবহারে ধাতব পদার্থের ইলেকট্রোপ্লেটিং ইত্যাদি হাজারো ক্ষেত্রে ঢ়ঐ এর মান নিয়ন্ত্রণ করে কাজ করতে হয়।
প্রশ্ন \ ২২ \ পাকস্থলীতে স্বাভাবিক ঢ়ঐ এর মান নিচে নেমে গেলে কী হতে পারে?
উত্তর : মানুষের পাকস্থলীতে স্বাভাবিক ঢ়ঐ এর মান ২। ঢ়ঐ তার নিচে নেমে গেলে অর্থাৎ পাকস্থলীতে এসিডের ঘনমাত্রা আরো বেড়ে গেলে খাদ্যবস্তু হজমের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়। তাতে করে মানুষের পাকস্থলীতে বদহজম হতে পারে যার ফলে ক্ষুধামন্দা রোগ দেখা দিতে পারে।
প্রশ্ন \ ২৩ \ কয়েকটি অম্ল-ক্ষারক প্রশমন বিক্রিয়ার উদাহরণ দাও।
উত্তর : কয়েকটি অম্ল-ক্ষারক প্রশমন বিক্রিয়া নিম্নরূপ :
- H2SO4 + 2NaOH ® Na2SO4 + 2H2O
- Na2CO3 + 2HCl ® 2NaCl + H2O + CO2
iii. Ca(OH)2 + 2HCl ® CaCl2 + 2H2O
- KOH + HNO3 ® KNO3 + H2O
- CaO + H2SO4 ® CaSO4 + H2O
অনুশীলনীর সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন -১ ল্ফ নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
অন্তু সবসময় মাংস, তৈলাক্ত খাবার ও চকলেট খায়। একদিন অন্তু বিরিয়ানি খাওয়ার পর তার বদহজম হয়। তার মা তাকে কোমল পানীয় খাওয়ালে সুস্থ হয়ে ওঠে। অন্যদিকে তার বোন শৈলী সয়াদুধ, সয়ামাখন এবং ফলমূল বেশি পছন্দ করে।
ক. আচার সংরক্ষণে কোন এসিড ব্যবহার করা হয়?
খ. দুর্বল এসিড বলতে কী বোঝায়?
গ. অন্তু কীভাবে সুস্থ হলো? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. অন্তু ও শৈলীর খাবারের মধ্যে কোনটি এসিডিটির কারণÑ বিশ্লেষণ কর।
১নং প্রশ্নের উত্তর
ক. আচার সংরক্ষণে অ্যাসিটিক এসিড বা ভিনেগার ব্যবহার করা হয়।
খ. জলীয় দ্রবণে যে এসিডের অণুগুলোর মধ্যে খুব কম সংখ্যক অণু আয়নে বিয়োজিত হয় এবং দ্রবণে কম সংখ্যক ঐ+ আয়ন দেয়, তাদের দুর্বল এসিড বলে।
প্রায় সকল জৈব এসিডই দুর্বল এসিড। আমরা খাবার হিসেবে দুর্বল এসিডই গ্রহণ করে থাকি। যেমন : কার্বনিক এসিড (ঐ২ঈঙ৩), এসিটিক এসিড (ঈঐ৩ঈঙঙঐ) ইত্যাদি।
গ. অন্তু সুস্থ হলো কোমল পানীয়তে থাকা দ্রবীভূত বেকিং সোডার কারণে।
কোমল পানীয়তে থাকে দ্রবীভূত বেকিং সোডা (ঘধঐঈঙ৩)। খাবার হজম করার জন্য পাকস্থলীতে নির্দিষ্ট মাত্রায় হাইড্রোক্লোরিক এসিডের প্রয়োজন হয়। এর মাত্রার হেরফের হলে বদহজম হয়। কারণ বেশি প্রোটিনযুক্ত খাবার খেলে পাকস্থলীতে এসিডের পরিমাণ বেড়ে যায়। তখন কোমল পানীয়তে থাকা সোডিয়াম বাইকার্বনেট অতিরিক্ত এসিডের সাথে বিক্রিয়া করে। ফলে পাকস্থলীতে এসিডের মাত্রা প্রশমিত হয়। বেকিং সোডাও একটি এসিড। কিন্তু ঐঈষ অনেক শক্তিশালী এসিড বলে এদের মধ্যে নিম্নরূপ বিক্রিয়া হয় :
ঘধঐঈঙ৩ + ঐঈষ ঘধঈষ + ঐ২ঙ + ঈঙ২
অন্তু মাংস, তৈলাক্ত খাবার ও চকলেট খায়। বিরিয়ানি খাওয়ার পর অতিরিক্ত তেলের কারণে তার বদহজম হয়। পরে কোমল পানীয় খাওয়াতে তার পাকস্থলীতে উপরিউক্ত বিক্রিয়া সংঘটিত হয় এবং অতিরিক্ত এসিড প্রশমিত হয়। এভাবেই অন্তু সুস্থ হলো।
ঘ. অন্তু ও শৈলীর খাবারের মধ্যে অন্তুর খাবার এসিডিটির কারণ।
আমেরিকার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী পিঁয়াজ, রসুন, মরিচ ও অন্যান্য অতিরিক্ত মসলাযুক্ত খাবার, চকলেট এগুলো এসিডিটি তৈরির কারণ। অর্থাৎ পাকস্থলীতে এসিডের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ হলো খাদ্যদ্রব্য। ভাজা পোড়া, তেলযুক্ত ও চর্বি জাতীয় খাবার পাকস্থলীতে এসিডিটি বাড়িয়ে দেয়। আবার কিছু কিছু খাদ্য আছে যারা এসিডিটি কমাতে সাহায্য করে। সয়াদুধ, সয়ামাখন এবং ফলমূল এসিডিটি কমাতে ভূমিকা রাখে।
অন্তু পছন্দ করে মাংস, তৈলাক্ত খাবার ও চকলেট। আর তার বোন পছন্দ করে সয়াদুধ, সয়ামাখন এবং ফলমূল। অন্তুর খাবারগুলো এসিডিটির কারণ হলেও শৈলীর খাবারগুলো বরং এসিডিটি কমাতে সাহায্য করে।
সুতরাং উপযুক্ত খাদ্য নির্বাচন করে এসিডিটির হাত থেকে রেহাই পাওয়া যায়।
প্রশ্ন -২ ল্ফ নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
তুহিন সাহেবের পেটে প্রায়ই বিভিন্ন সমস্যা হয়। ডাক্তারের কাছে গেলে তিনি কিছু পরীক্ষা করাতে বলেন। পরীক্ষার রিপোর্টে দেখা গেল, পাকস্থলিতে ঢ়ঐ ১.৬ এবং ধমনির রক্তে ৭.৫। রিপোর্ট নিয়ে বাসায় ফেরার সময় সে তার দুই মাসের বাচ্চার জন্য একটি লোশন কিনতে চাইলো যার ঢ়ঐ ৫.৫। কিন্তু দোকানি তাকে বাচ্চার জন্য অন্যটি নিতে বললেন।
ক. অ্যামোনিয়াম সালফেটের সংকেত লেখ।
খ. ভিনেগারকে কেন দুর্বল এসিড বলা হয়?
গ. দোকানি তাকে লোশনটি নিতে নিষেধ করলেন কেন? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. তুহিন সাহেবের পাকস্থলিতে এবং রক্তে এসিড ও ক্ষারের পরিমাণ যথাযথ আছে কি? মতামত দাও।
২নং প্রশ্নের উত্তর
ক. অ্যামোনিয়াম সালফেটের সংকেত হলো (ঘঐ৪)২ঝঙ৪।
খ. পানিতে পুরোপুরি বিয়োজিত না হয়ে আংশিকভাবে বিয়োজিত হয় বলে ভিনেগারকে দুর্বল এসিড বলা হয়।
ভিনেগার একটি জৈব এসিড যা ৬ থেকে ১০% এসিটিক এসিডের (ঈঐ৩ঈঙঙঐ) জলীয় দ্রবণ। এটি পানিতে পুরোপুরি বিয়োজিত না হয়ে আংশিকভাবে বিয়োজিত হয়। ফলে এতে যতগুলো এসিডের অণু আছে তার সবগুলো হাইড্রোজেন আয়ন (ঐ+) তৈরি করে না। তাই ভিনেগারকে দুর্বল এসিড বলা হয়।
গ. তুহিন সাহেব তার দুই মাসের বাচ্চার জন্য যে লোশন কিনতে চাইলেন তা শিশুদের উপযোগী নয় বলে দোকানি তাকে লোশনটি নিতে নিষেধ করলেন।
আমাদের দৈনন্দিন জীবনের ব্যবহার্য দ্রব্যসামগ্রীতে ঢ়ঐ এর মান জানা ও নিয়ন্ত্রণ করা অতীব গুরুত্বপূর্ণ। তা না হলে বড় ধরনের অসুবিধা তৈরি হয়। বড়দের ত্বক সাধারণত এসিডিক হয় এবং এর ঢ়ঐ ৪-৬ এর মধ্যে থাকে। তবে নবজন্ম নেওয়া শিশুদের ত্বকের ঢ়ঐ ৭-এর কাছাকাছি থাকে। তাই বড়দের প্রসাধনীতে ঢ়ঐ এর যে মাত্রা থাকে, তা শিশুদের জন্য প্রযোজ্য নয়।
তুহিন সাহেব যে লোশন কিনতে চাইলেন তার ঢ়ঐ ছিল ৫.৫ যা দুই মাসের শিশুর ত্বকের জন্য উপযোগী নয়। এটি তার বাচ্চার ত্বকে ব্যবহার করা হলে মারাত্মক ক্ষতি হতে পারত। এজন্য দোকানি তাকে লোশনটি নিতে নিষেধ করলেন।
ঘ. তুহিন সাহেবের পাকস্থলীতে এবং রক্তে এসিড ও ক্ষারের পরিমাণ যথাযথ নেই।
পাকস্থলীতে খাদ্য হজম করার জন্য দরকারি ঢ়ঐ হলো ২ আর রক্তের ঢ়ঐ হলো প্রায় ৭.৪। এর সামান্য হেরফের হলে (০.৪) মারাত্মক বিপর্যয়, এমনকি মৃত্যুর কারণও হতে পারে।
তুহিন সাহেবের পাকস্থলীর ঢ়ঐ ১.৬ এবং ধমনির রক্তের ঢ়ঐ হলো ৭.৫। ঢ়ঐ-এর এরূপ মানের জন্যই তুহিন সাহেবের পেটে প্রায়ই বিভিন্ন সমস্যা হয়।
এক্ষেত্রে আমার মতামত হলো তুহিন সাহেবের ঢ়ঐ-এর মান নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি। এজন্য তিনি উপযুক্ত খাদ্য নির্বাচন করে এবং সেগুলো আহারে এসিডিটির হাত থেকে রেহাই পেতে পারেন। যেসব খাদ্যদ্রব্য বা পানীয়ের কারণে এসিডিটি হয়, তুহিন সাহেবের সেগুলো অতিরিক্ত গ্রহণ না করে পরিমিত হারে গ্রহণ করতে হবে এবং সাময়িকভাবে ঐসব খাদ্য গ্রহণ থেকে বিরত থাকতে হবে।
ভাল লাগলো