নবম অধ্যায়
ইংরেজ শাসন আমলে বাংলায় প্রতিরোধ, নবজাগরণ ও সংস্কার আন্দোলন
১৭৫৭ খ্রিষ্টাব্দে পলাশী যুদ্ধের পর এ অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অবস্থার পরিবর্তনের সূচনা হয়। এ সময়ে বাংলার কিছুসংক্যক ব্যক্তি এই বৈপ্লবিক পরিবর্তনের সংস্পর্শে আসেন। এদের নেতৃত্বের প্রভাবে শিখনফল
ইংরেজ শাসন আমলে বাংলায় প্রতিরোধ আন্দোলনের প্রেক্ষিত এবং এর তাৎপর্য বিশ্লেষণ করতে পারবে।
নবজাগরণ ও সংস্কার আন্দোলনে বিশেষ ব্যক্তিবর্গের অবদান মূল্যায়ন করতে পারবে।
ইংরেজ শাসনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ও প্রতিরোধ আন্দোলনের বিভিন্ন ঘটনাপ্রবাহ বিশ্লেষণ করতে পারবে।
বিভিন্ন সংস্কার ও সংস্কার কর্মকাণ্ড জানার মাধ্যমে মুক্তচিন্তায় অনুপ্রাণিত হবে।
দেশবাসীর মধ্যে আত্মসচেতনতা, আত্মমর্যাদাবোধ ও স্বাতন্ত্রবোধ তীব্রভাবে জাগ্রত হতে থাকে। এসব নেতৃস্থানীয় মনীষীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন। রাজা রামমোহন রায়, হেনরি লুই ডিরোজিও, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, হাজী মুহম্মদ মহসীন, নওয়াব আবদুল লতিফ, সৈয়দ আমীর আলী, বেগম রোকেয়া প্রমুখ।
অধ্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো সংক্ষেপে জেনে রাখি
ফকির-সন্ন্যাসী আন্দোলন : বাংলার ফকির-সন্ন্যাসী আন্দোলন ছিল একটি ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন। অষ্টাদশ শতকের শেষার্ধে এই আন্দোলনের শুরু। এর আগে নবাব মীরকাশিম ইংরেজদের সঙ্গে যুদ্ধে ফকির-সন্ন্যাসীদের সাহায্য চান। এই ডাকে সাড়া দিয়ে ফকির-সন্ন্যাসীরা নবাবের পক্ষে যুদ্ধ করেন। যুদ্ধে পরাজিত হয়ে মীরকাশিম পালিয়ে গেলেও ফকির সন্ন্যাসীরা তাদের ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন চালিয়ে যেতে থাকেন। নবাবকে সাহায্য করার কারণে ইংরেজরা তাদের গতিবিধির প্রতি কড়া নজর রাখতে থাকে।
তিতুমীরের বিদ্রোহ : মীর নিসার আলী ওরফে তিতুমীর চব্বিশ পরগণা জেলার বারাসাত মহকুমার চাঁদপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। উত্তর ভারত ও উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশে যখন ওয়াহাবি আন্দোলনের জোয়ার চলছে; তখন পশ্চিমবঙ্গে বারাসাত অঞ্চলে এই আন্দোলন তিতুমীরের নেতৃত্বে প্রবল আকার ধারন করে।
উনিশ শতকে ভারতবর্ষে মুসলমান সমাজে এক ধর্মীয় সংস্কার আন্দোলনের সূত্রপাত হয়েছিল। বাংলায় তার দুটি ধারা প্রবহমান ছিল। যার একটি ওয়াহাবি বা মুহাম্মদীয়া আন্দোলন, অপরটি ফরায়েজি আন্দোলন নামে খ্যাত। উভয় আন্দোলনের মূল উদ্দেশ্য ছিল ধর্মীয় সামাজিক কুসংস্কার দূর করে মুসলিম স¤প্রদায়কে ধর্মীয় অনুশাসন পালনের সঠিক পথ নির্দেশ করা। বাংলার ওয়াহাবিরা তিতুমীরের নেতৃত্বে সংগঠিত হয়েছিলেন।
নীল বিদ্রোহ : অষ্টাদশ শতকের শেষ ভাগে চতুর ইংরেজ নীলকর সাহেবরা বাংলার গ্রামাঞ্চলে শুধু ব্যবসায়ীরূপে নয় দোর্দণ্ড প্রতাপশালী এক অভিনব অত্যাচারী জমিদাররূপেও আত্মপ্রকাশ করে। এরা এতটাই নিষ্ঠুর
আর বেপরোয়া হয়ে উঠেছিল যে অবাধ্য নীলচাষিকে হত্যা করতেও দ্বিধা করেনি। শেষ পর্যন্ত দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া নীলচাষিরা ১৮৫৯ খ্রিষ্টাব্দে প্রচণ্ড বিদ্রোহে ফেটে পড়ে। গ্রামে-গ্রামে কৃষকরা সংগঠিত এবং ঐক্যবদ্ধ হতে থাকে। এসব বিদ্রোহের নেতৃত্ব দেয় নীলচাষিরাই।
শেষ পর্যন্ত বাংলার সংগ্রামী কৃষকদের জয় হয়। ১৮৬১ খ্রিষ্টাব্দে ব্রিটিশ সরকার ইন্ডিগো কমিশন বা নীল কমিশন গঠন করে। এই কমিশনের সুপারিশের ওপর ভিত্তি করে নীল চাষকে কৃষকদের ‘ইচ্ছাধীন’ বলে ঘোষণা করা হয়। তাছাড়া ইন্ডিগো কন্ট্রাক্ট বাতিল হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে নীল বিদ্রোহের অবসান হয়। পরবর্তীকালে নীলের বিকল্প কৃত্রিম নীল আবিষ্কৃত হওয়ায় ১৮৯২ খ্রিষ্টাব্দে এদেশের নীলচাষ চিরতরে বন্ধ হয়ে যায়।
ফরায়েজি আন্দোলন : ফরায়েজি আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা হাজী শরীয়তউল্লাহ বৃহত্তর ফরিদপুরের মাদারীপুর জেলার শাসশাইল গ্রামে ১৭৮২ খ্রিষ্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি দীর্ঘ বিশ বছর মক্কায় অবস্থান করেন। সেখানে তিনি ইসলাম ধর্মের ওপর লেখাপড়া করে অগাধ পাণ্ডিত্য অর্জন করেন।
দেশে ফিরে তিনি বুঝতে পারেন যে বাংলার মুসলমানরা ইসলামের প্রকৃত শিক্ষা থেকে অনেক দূরে সরে গেছে। তাদের মধ্যে অনৈসলামিক রীতিনীতি, কুসংস্কার, অনাচার প্রবেশ করেছে। ইসলাম ধর্মকে কুসংস্কার আর এসব অনৈসলামিক অনাচারমুক্ত করতে তিনি দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হন। এই প্রতিজ্ঞার বশবর্তী হয়ে তিনি উনিশ শতকের প্রথমার্ধে বাংলার মুসলমানদের মধ্যে এক ধর্র্মীয়-সামাজিক সংস্কার আন্দোলনের সূত্রপাত করেন। হাজী শরীয়তউল্লাহর এই ধর্মীয় সংস্কার আন্দোলনের নামই ‘ফরায়েজি আন্দোলন’।
বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
১. “সম্বাদ কৌমুদী” পত্রিকার প্রকাশক কে ছিলেন?
ক মাইকেল মধুসূদন দত্ত খ ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর
রাজা রামমোহন রায় ঘ হাজী শরীয়তউল্লাহ
২. ফকির-সন্ন্যাসীরা ইংরেজদের বিরুদ্ধে দীর্ঘ আন্দোলনে অবতীর্ণ হয়, কারণ ইংরেজরা-
র. তাদেরকে ডাকাত-দস্যু মনে করত
রর. তীর্থস্থান দর্শনের উপর করারোপ করত
ররর. তাদের চলাফেরায় বাধার সৃষ্টি করত
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর
গ রর ও ররর র, রর ও ররর
উদ্দীপকটি পড়ে ৩ ও ৪ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
সচেতন ও ধর্মীয় সুশিক্ষিত লোকের অভাবে রসুলপুর গ্রামের লোকজন নানারকম কুসংস্কার ও অনৈসলামিক রীতিনীতিতে অভ্যস্ত হয়ে পড়ে। কুসংস্কারাচ্ছন্ন এ অঞ্চলের মানুষদের সঠিক পথের সন্ধান দিতে এগিয়ে আসেন আব্দুল্লাহ নামক একজন সচেতন ব্যক্তি।
৩. কোন ব্যক্তির জীবনের শিক্ষা কাজে লাগিয়ে আব্দুল্লাহ কুসংস্কারমুক্ত সমাজ গঠনে এগিয়ে আসেন?
হাজী শরীয়তউল্লাহ খ দুদু মিয়া
গ তিতুমীর ঘ গোলাম মাসুম
৪. উক্ত ব্যক্তির আন্দোলনের ধরন ছিল-
র. সামাজিক
রর. ধর্মীয়
ররর. রাজনৈতিক
নিচের কোনটি সঠিক?
র ও রর খ রর ও ররর
গ র ও ররর ঘ র, রর ও ররর
সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন- ১ নীল বিদ্রোহ
রূপপুর অঞ্চলে দরিদ্র কৃষকদের জীবনধারা সচ্ছল ছিল না। বিভিন্ন সিগারেট কোম্পানির লোকজন তাদের এই অসচ্ছল জীবনধারার সুযোগ নিয়ে তাদেরকে চড়া সুদে অর্থ প্রদান করে অসম চুক্তির মাধ্যমে তামাক চাষে আগ্রহী করে তোলে। কৃষকদের প্রাপ্ত মূল্য উৎপাদন খরচের তুলনায় কম হওয়ায় তামাক চাষিরা কোম্পানির রাহুগ্রাস থেকে বের হতে না পেরে প্রতিবাদী হয়ে ওঠে। উপরন্তু টেলিভিশনে তামাকের স্বাস্থ্য ঝুঁকির কথা জেনে ঐ অঞ্চলের তামাক চাষিরা করিম ও জলিলের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হয় এবং কোম্পানির এ ধরনের কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ জানায়।
ক. ভারতের প্রথম আধুনিক পুরুষ বলা হয় কাকে?
খ. ফরায়েজি আন্দোলনের মূল উদ্দেশ্য কী ছিল?
গ. উদ্দীপক সংশ্লিষ্ট তথ্যগুলো তোমার পাঠ্যপুস্তকে পঠিত কোন ঘটনার কথা স্মরণ করিয়ে দেয়? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উক্ত ঘটনাটি কৃষকদের স্বার্থরক্ষায় কতটুকু যুক্তিযুক্ত ছিল বলে তুমি মনে কর? মতামত দাও।
ক ভারতের প্রথম আধুনিক পুরুষ বলা হয় রাজা রামমোহন রায়কে।
খ ফরায়েজি আন্দোলনের মূল উদ্দেশ্য ছিল ধর্মীয় সংস্কার। ইসলাম ধর্মকে কুসংস্কার ও অনৈসলামিক অনাচার থেকে মুক্ত করার জন্য ফরায়েজি আন্দোলনের সূত্রপাত হয়। এ আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন হাজী শরীয়তউল্লাহ। তিনি মুসলমানদের মধ্যে ধর্মীয় ও সামাজিক সংস্কারের জন্য এ আন্দোলন করেন।
গ উদ্দীপক সংশ্লিষ্ট তথ্যগুলো আমার পাঠ্যপুস্তকে পঠিত নীল চাষ ঘটনার কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। ব্রিটেনের নীলের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় বাংলার ইংরেজ বণিকগণ এদেশের কৃষকদের নীলচাষে বাধ্য করে। তারা কৃষকদের নীলচাষের জন্য অগ্রীম অর্থ গ্রহণে (দাদন) বাধ্য করত। আর একবার এই দাদন গ্রহণ করলে সুদ-আসলে কৃষকরা যতই ঋণ পরিশোধ করুক না কেন, বংশ পরম্পরায় কোনো দিনই ঋণ শেষ হতো না। নীলকরদের কাছ থেকে নীলচাষিদের প্রাপ্ত মূল্য উৎপাদন খরচের তুলনায় কম হওয়ায় তারা ক্ষতিগ্রস্ত হতো। অবশেষে নীলচাষিরা নীলকরদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী হয়ে ওঠে। যশোরে এই বিদ্রোহের নেতা ছিলেন নবীন মাধব ও বেনী মাধব। তাছাড়াও হুগলি ও নদিয়ার নীলচাষিরাও বিদ্রোহী হয়ে ওঠে। উদ্দীপকে আমরা দেখি যে, নীলচাষিদের মতো রূপপুর অঞ্চলের দরিদ্র কৃষকরাও চড়া সুদে অর্থ গ্রহণ করে তামাক চাষে আগ্রহী হয়। কৃষকদের প্রাপ্ত মূল্য উৎপাদন খরচের তুলনায় কম হওয়ায় তাকামচাষিরা কোম্পানির রাহুগ্রাস থেকে বের হতে না পেরে প্রতিবাদী হয়ে উঠে। উপরন্তু টেলিভিশনে তামাকের স্বাস্থ্য ঝুঁকির কথা জেনে ঐ অঞ্চলের তামাকচাষিরা করিম ও জলিলের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হয় এবং কোম্পানির এ ধরনের কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ জানায়। এ বিষয়গুলোর সাথে বাংলার নীল বিদ্রোহের মিল বিদ্যমান।
ঘ উক্ত ঘটনাটি অর্থাৎ নীল বিদ্রোহ কৃষকদের স্বার্থরক্ষায় যথেষ্ট যুক্তিযুক্ত ছিল বলে আমি মনে করি। ইংরেজ বণিকরা বাংলার কৃষকদের নীলচাষে বাধ্য করে। তারা নীলচাষিদের ওপর নানা ধরনের নির্যাতন, শোষণ ও অত্যাচার চালায়। শেষ পর্যন্ত দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া নীলচাষিরা ১৮৫৯ খ্রিষ্টাব্দে প্রচণ্ড বিদ্রোহে ফেটে পড়ে। গ্রামে-গ্রামে কৃষকরা সংগঠিত এবং ঐক্যবদ্ধ হতে থাকে। এইসব বিদ্রোহের নেতৃত্ব দেয় নীলচাষিরাই। স্থানীয় পর্যায়ের এই নেতৃত্বে বাংলায় কৃষক বিদ্রোহের আগুন জ্বলে ওঠে। কৃষকরা নীলচাষ না করার পক্ষে দৃঢ় অবস্থান নেয়। এমনকি তারা ইংরেজ ম্যাজিস্ট্রেটের উপদেশও অগ্রাহ্য করে। শিক্ষিত মধ্যবিত্তশ্রেণি নীল চাষিদের প্রতি সহানুভ‚তিশীল মনোভাব প্রকাশ করতে থাকে। বিভিন্ন পত্রিকায় নীলকরদের অত্যাচারের কাহিনী ছাপা হতে থাকে। দীনবন্ধু মিত্রের লেখা ‘নীলদর্পণ’ নাটকের কাহিনী চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। শেষ পর্যন্ত বাংলার সংগ্রামী কৃষকদের জয় হয়। ১৮৬১ খ্রিষ্টাব্দে ব্রিটিশ সরকার ইন্ডিগো কমিশন বা নীল কমিশন গঠন করে। এই কমিশনের সুপারিশের ওপর ভিত্তি করে নীল চাষকে কৃষকদের ‘ইচ্ছাধীন’ বলে ঘোষণা করা হয়। তাছাড়া নীলকর কর্তৃক আরোপিত ইন্ডিগো কন্ট্রাক্ট বাতিল করা হয়। এর ফলে কৃষকরা তাদের স্বাধীনতা ফিরে পায়। তারা তাদের জমিতে বিভিন্ন ধরনের ফসল উৎপাদন করার সুযোগ পায়। ফলে তারা জমিতে লাভজনক ফসল উৎপাদন করে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হয়। উপরিউক্ত এ আলোচনা হতে বলা যায়, নীল বিদ্রোহের মাধ্যমে বাংলায় কৃষকদের স্বার্থরক্ষা হয়েছিল।
প্রশ্ন- ২ বেগম রোকেয়া
সুলতানপুর অঞ্চলটি প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চল। সেখানে এখন নানা ধরনের সামাজিক কুসংস্কার বিরাজমান। এ গ্রামের মেয়েদের বাড়ির বাইরে যাওয়া নিষিদ্ধ ছিল। গ্রামের বয়োজ্যেষ্ঠ জামিলা বেগম মেয়েদের পড়ালেখা করতে বাধা দেন। মেয়েদের বাড়ির বাইরে বের হওয়াকে তিনি ধর্মীয় অনুশাসনের পরিপন্থী এবং গর্হিত কাজ মনে করতেন।
ক. ‘ঞযব ঝঢ়রৎরঃ ড়ভ ওংষধস’ বইটির লেখক কে?
খ. ‘সেন্ট্রাল ন্যাশনাল মোহামেডান এসোসিয়েশন’ গঠনের উদ্দেশ্য কী ছিল?
গ. উদ্দীপকে জামিলা বেগমের চরিত্রের বিপরীত চিত্র পাঠ্যপুস্তকে পঠিত কোন মহীয়সীর জীবনে প্রতিফলিত হয়েছে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. তুমি কি মনে কর বর্তমান নারী-শিক্ষার অগ্রগতিতে উক্ত মহীয়সীর অবদান অনস্বীকার্য? যুক্তি দাও।
ক ‘ঞযব ঝঢ়রৎরঃ ড়ভ ওংষধস’- বইটির লেখক সৈয়দ আমীর আলী।
খ সেন্ট্রাল ন্যাশনাল মোহামেডান অ্যাসোসিয়েশন গঠনের উদ্দেশ্য ছিল মুসলমানদের রাজনৈতিক স্বার্থরক্ষা। সৈয়দ আমীর আলী বিশ্বাস করতেন মুসলমানদের জন্য একটি পৃথক রাজনৈতিক সংগঠন থাকা প্রয়োজন। তিনি বিশ্বাস করতেন, মুসলমানদের স্বার্থরক্ষা এবং তাদের দাবিদাওয়ার প্রতি সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য নিজস্ব রাজনৈতিক সংগঠন থাকা প্রয়োজন। এই উদ্দেশ্যে তিনি ১৮৭৭ খ্রিষ্টাব্দে কলকাতায় ‘সেন্ট্রাল ন্যাশনাল মোহামেডান এসোসিয়েশন’ নামে একটি সমিতি গঠন করেন।
গ উদ্দীপকে জামিলা বেগমের চরিত্রের বিপরীত চিত্র পাঠ্যপুস্তকে পঠিত মহীয়সী নারী বেগম রোকেয়ার জীবনে প্রতিফলিত হয়েছে। বিশ শতকের শুরুতে যখন ঘরে ঘরে শিক্ষার আলো জ্বলছে, বাঙালি মুসলমান মেয়েরা তখনও পিছিয়ে ছিল। তারা সব ধরনের অধিকার থেকে বঞ্চিত ছিল। মুসলমান মেয়েদের এই বন্দিদশা থেকে মুক্তি দেন বেগম রোকেয়া। তিনি নারীদের সুশিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ার জন্য আহŸান করেন। তিনি মুসলিম মেয়েদের ধর্মীয় অনুশাসন পালন করে বাইরের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড সম্পাদন করতে বলেন। তিনি মেয়েদের শিক্ষা গ্রহণে উৎসাহিত করেন। উদ্দীপকে আমরা লক্ষ করি যে, সুলতানপুর গ্রামের বয়োজ্যেষ্ঠ জামিলা বেগম মেয়েদের লেখাপড়া করতে বাধা দেন। মেয়েদের বাড়ির বাইরে বের হওয়াকে তিনি ধর্মীয় অনুশাসনের পরিপন্থী এবং গর্হিত কাজ মনে করতেন। এ বিষয়গুরো বেগম রোকেয়ার আদর্শের বিপরীত।
ঘ আমি মনে করি বর্তমান নারী-শিক্ষার অগ্রগতিতে মহীয়সী নারী বেগম রোকেয়ার অবদান অনস্বীকার্য। বেগম রোকেয়া বিংশ শতাব্দীর শুরুতে নারী শিক্ষার ক্ষেত্রে অনন্য ভ‚মিকা পালন করেন। তিনি নারীসমাজকে নিয়ে অনেক সাহিত্য রচনা করেন। তিনি সমাজের কুসংস্কার, নারীসমাজের অবহেলা বঞ্চনার করুণ চিত্র নিজ চোখে দেখেছেন। যা উপলব্ধি করেছেন তাই তিনি তার লেখার মধ্যে তুলে ধরেছেন। সমাজকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখাতে চেয়েছেন নারীদের করুণদশা, তাদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণের নমুনা। তার ‘অবরোধবাসিনী’ ‘পদ্মরাগ’ ‘মতিচুর’ প্রভৃতি গ্রন্থে সে চিত্র ফুটে উঠেছে। অর্থাৎ মুসলমান নারীমুক্তি আন্দোলনের পথিকৃৎ বেগম রোকেয়ার মনে নারীর প্রতি সমাজের নানা অত্যাচার ও অসহিষ্ণুতার বিরুদ্ধে ছিল তীব্র প্রতিবাদ। এছাড়াও তিনি নারী-শিক্ষার উন্নয়নের জন্য ভাগলপুরে একটি প্রাথমিক বালিকা বিদ্যালয় স্থাপন করেন। তিনি ১৯১১ খ্রিষ্টাব্দে কলকাতায় শাখাওয়াত মেমোরিয়াল উর্দু প্রাইমারি স্কুল স্থাপন করেন, যা ১৯৩১ খ্রিষ্টাব্দে উচ্চ ইংরেজি গার্লস স্কুলে উন্নীত হয়। ফলে তার এ প্রচেষ্টায় সমাজে নারী-শিক্ষার বীজ রোপণ হয়। তিনি নারীদের বর্তমান অবস্থানে আসার ক্ষেত্রে অসাধারণ ভ‚মিকা পালন করেছেন। তিনিই বাঙালি মেয়েদের গৃহকোণে আবদ্ধ না থেকে বাইরে এসে বিভিন্ন কর্মকাণ্ড সম্পাদন করতে অনুরোধ করেন।
বোর্ড ও সেরা স্কুলের বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
সাধারণ বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
১. রেঁনেসা শব্দের অর্থ কি? [স. বো. ’১৬]
ক জাগরণ নবজাগরণ গ সংগ্রাম ঘ গণঅভ্যুত্থান
২. হাজী শরীয়তউল্লাহ ইংরেজ রাজত্বকে ঘৃণার চোখে দেখতেন; কারণ
[স. বো. ’১৬]
ক দেশ দখলকারী খ আধিপত্য বিস্তারকারী
স্বাধীনতা হরণকারী ঘ প্রজা নির্যাতনকারী
৩. সন্ন্যাসীদের নেতার নাম কী ছিল? [স. বো. ’১৫]
ক মজনু শাহ ভবানী পাঠক গ চেরাগ আলী শাহ ঘ মাদার বক্শ
৪. কত শতকের শেষার্ধে ফকির-সন্ন্যাসী আন্দোলন শুরু হয়?
[পুলিশ লাইন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, যশোর]
ক সতরো আঠারো গ উনিশ ঘ বিশ
৫. মজনু শাহ কত খ্রিষ্টাব্দে ইংরেজবিরোধী তৎপরতা শুরু করেন?
[মকুল নিকেতন উচ্চ বিদ্যালয়, ময়মনসিংহ]
ক ১৭৫০ খ ১৭৬০ ১৭৭১ ঘ ১৭৮৬
৬. ফকির-সন্ন্যাসীরা কীভাবে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে করত?
[বি. কে. জি. সি. সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, হবিগঞ্জ]
ক সরাসরি খ বোমা নিক্ষেপের দ্বারা
গেরিলা পদ্ধতিতে ঘ দলগতভাবে
৭. মজনু শাহ কখন মৃত্যুবরণ করেন? [সেন্ট জোসেফ উচ্চ বিদ্যালয়, খুলনা]
ক ১৭৮৪ খ্রিষ্টাব্দে খ ১৭৮৫ খ্রিষ্টাব্দে
গ ১৭৮৬ খ্রিষ্টাব্দে ১৭৮৭ খ্রিষ্টাব্দে
৮. তিতুমীরের আসল নাম কী? [পল্লী উন্নয়ন একাডেমী ল্যাবঃ স্কুল এন্ড কলেজ, বগুড়া]
মীর নিসার আলী খ মীর আমির আলী
গ মীর সাহেব আলী ঘ মীর আব্দুল আলী
৯. বাংলায় ওয়াহাবিরা কার নেতৃত্বে সংগঠিত হয়?
[মকুল নিকেতন উচ্চ বিদ্যালয়, ময়মনসিংহ]
ক শরীয়তউল্লাহ খ আবদুল লতিফ
তিতুমীর ঘ আমীর আলি
১০. তিতুমীর কৃষক আন্দোলন গড়ে তোলেন কীভাবে?
[রাজশাহী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
ক সামাজিক সংস্কারের মাধ্যমে
খ রাজনৈতিক মতাদর্শের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে
ধর্মীয় সংস্কারের মাধ্যমে
ঘ কৃষকদের জোরপূর্বক আন্দোলনে বাধ্য করে
১১. তিতুমীর কোথায় বাঁশের কেল্লা নির্মাণ করেন?
[পঞ্চগড় সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, পঞ্চগড়]
ক বারাসতে নারিকেলবাড়িয়ায়
গ হুগলিতে ঘ নদীয়ায়
১২. কার নেতৃত্বে ইংরেজরা নারিকেলবাড়ীয়া বাঁশের কেল্লা আক্রমণ করেন?
[মুকুল নিকেতন উচ্চ বিদ্যালয়, ময়মনসিংহ]
মেজর স্কট খ আলেকজান্ডার
গ লে. ব্রেনান ঘ ব্রায়ান
১৩. নীল চাষে কৃষকেরা রাজি না হলে কী করা হতো?
[পুলিশ লাইন্স স্কুল এন্ড কলেজ, বগুড়া]
ক মামলা খ মকদ্দমা
গ যুদ্ধ অত্যাচার
১৪. নীল চাষিরা কত খ্রিষ্টাব্দে প্রচণ্ড বিদ্রোহে ফেটে পড়ে?
[বগুড়া সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
ক ১৮৪৯ ১৮৫৯ গ ১৮৬৯ ঘ ১৮৭৯
১৫. ১৮৫৯ খ্রিষ্টাব্দে কৃষকরা কিসের চাষ না করার পক্ষে দৃঢ় অবস্থান নেয়?
[বরগুনা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
ক ধান খ পাট গ তামাক নীল
১৬. বাংলার নীল বিদ্রোহের অন্যতম প্রকৃতি ছিল কোনটি?
[সেন্ট ফ্রান্সিসে জেভিয়ার্স হাইস্কুল এন্ড কলেজ, ঢাকা]
ক সশস্ত্র বিদ্রোহ খ সেনাবাহিনীর বিদ্রোহ
গ ফকিরদের বিদ্রোহ কৃষক বিদ্রোহ
১৭. ‘নীলদর্পণ’ নাটকটি কার লেখা? [পুলিশ লাইন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, যশোর]
ক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দীনবন্ধু মিত্রের
গ রতিলাল রায়ের ঘ দীনেশ মুখার্জীর
১৮. ব্রিটিশ সরকার কত খ্রিষ্টাব্দে ইন্ডিগো কমিশন গঠন করেন?
[বিএএফ শাহীন কলেজ, তেজগাঁও, ঢাকা]
ক ১৮৫৯ খ ১৮৬০
১৮৬১ ঘ ১৮৬২
১৯. কত খ্রিষ্টাব্দে কৃত্রিম নীল আবিষ্কৃত হয়?
[রাজশাহী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, হেলেনাবাদ, রাজশাহী]
ক ১৮৮২ ১৮৯২
গ ১৯০২ ঘ ১৯১২
২০. যারা ফরজ পালন করে তাদেরকে বলা হতো?
[আজিমপুর গার্লস স্কুল এন্ড কলেজ, ঢাকা]
ক খারিজি খ জাবারি
ফরায়েজি ঘ মুরাজিয়া
২১. হাজী শরীয়ত উল্লাহ ভারতবর্ষকে দারুল হারব বলার কারণ কী?
[মুকুল নিকেতন উচ্চ বিদ্যালয়, ময়মনসিংহ]
ক তিনি ইংরেজ রাজত্বকে ঘৃণার চোখে দেখতেন
খ বাংলার মুসলমানরা ইসলামের প্রকৃত শিক্ষা থেকে সরে গিয়েছিল
বাংলার সংস্কৃতিতে বিধর্মী ও বিজাতীয় সংস্কৃতির অনুপ্রবেশ ঘটেছিল
ঘ বাংলায় ব্রিটিশদের প্রভাব বৃদ্ধি পেয়েছিল
২২. জালালউদ্দিন মোল্লা কার আমলের লাঠিয়াল ছিলেন?
[বগুড়া সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
ক দুদু মিয়া খ তিতুমীর
শরীয়তউল্লাহ ঘ সৈয়দ আহমদ
২৩. দুদু মিয়া কখন মৃত্যুবরণ করেন কত? [পুলিশ লাইন্স স্কুল এন্ড কলেজ, বগুড়া]
ক ১৮৬০ খ্রিষ্টাব্দে খ ১৮৬১ খ্রিষ্টাব্দে
১৮৬২ খ্রিষ্টাব্দে ঘ ১৮৬৩ খ্রিষ্টাব্দে
২৪. ব্রাহ্মসমাজ প্রতিষ্ঠিত হয় কখন? [সেন্ট জোসেফ উচ্চ বিদ্যালয়, খুলনা]
ক ১৮২৬ খ্রিষ্টাব্দে খ ১৮২৭ খ্রিষ্টাব্দে
১৮২৮ খ্রিষ্টাব্দে ঘ ১৮২৯ খ্রিষ্টাব্দে
২৫. ইয়াং বেঙ্গল আন্দোলনকারীদের অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল কোনটি?
[পুলিশ লাইন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, যশোর]
ক ব্রিটিশদের ব্যবসায়ে সহায়তা খ জাতীয়তা আন্দোলন
ভারতীয়দের স্বার্থরক্ষা ঘ সম্মান অর্জন করা
২৬. ‘পার্থেনন’ কী? [আল-আমিন একাডেমি স্কুল এন্ড কলেজ, চাঁদপুর]
ইংরেজি সাপ্তাহিক পত্রিকা খ ম্যাগাজিন
গ দৈনিক পত্রিকা ঘ ষান্মাসিক পত্রিকা
২৭. হাজী মুহম্মদ মহসীন হুগলিতে কয়টি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন?
[সেন্ট জোসেফ উচ্চ বিদ্যালয়, খুলনা]
১ খ ২ গ ৩ ঘ ৪
২৮. মোহামেডান লিটারেরি সোসাইটি কখন প্রতিষ্ঠিত হয়?
[পুলিশ লাইন্স স্কুল এন্ড কলেজ, বগুড়া]
ক ১৮৬১ খ্রিষ্টাব্দে খ ১৮৬২ খ্রিষ্টাব্দে
১৮৬৩ খ্রিষ্টাব্দে ঘ ১৮৬৪ খ্রিষ্টাব্দে
২৯. নওয়াব আব্দুল লতিফের অন্যতম কৃতিত্ব কোনটি?
[বিএএফ শাহীন কলেজ, চট্টগ্রাম]
ক দানশীলতা মুসলিম সাহিত্য সমাজ
গ ডাক বিভাগের সংস্কার ঘ মুদ্রা প্রবর্তন
৩০. ‘ঞযব ংঢ়রৎরঃ ড়ভ ওংষধস’-এর লেখক কে?
[এসএম মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, গোপালগঞ্জ]
সৈয়দ আমীর আলী খ ঈশ্চরচন্দ্র বিদ্যাসাগর
গ রাজা রামমোহন রায় ঘ হাজী শরীয়তউল্লাহ
৩১. যুথি ‘অ ঝযড়ৎঃ ঐরংঃড়ৎু ড়ভ ঃযব ঝধৎধপবহং’ গ্রন্থের লেখকের কথা বলে, যুথি কোন লেখকের নাম উল্লেখ করে?
[বিএএফ শাহীন কলেজ, চটগ্রাম]
সৈয়দ আমীর আলী খ রাজা রামমোহন রায়
গ নওয়াব আব্দুল লতিফ ঘ হাজী শরীয়তউল্লাহ
৩২. বেগম রোকেয়ার সময় মেয়েরা কেমন ছিল?
[পল্লী-উন্নয়ন একাডেমি ল্যাবঃ, স্কুল এন্ড কলেজ, বগুড়া]
ক উগ্র খ লাজুক
গ বেহায়া খুবই পর্দানশীল
বহুপদী সমাপ্তিসূচক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
৩৩. রাজা রামমোহন রায়কে আধুনিক ভারতের রূপকার বলা হয়, কারণ তিনি- [স. বো. ’১৫]
র. সংস্কৃত শিক্ষার বদলে আধুনিক শিক্ষার প্রতি গুরুত্ব দেন
রর. কুসংস্কারমুক্ত সমাজ গঠনে কাজ করেন
ররর. বৃটেন থেকে ভারতের জনগণকে আধুনিক চিন্তার পরামর্শ দেন
নিচের কোনটি সঠিক?
র ও রর খ র ও রর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৩৪. ফকির সন্ন্যাসী দলের নেতা হিসেবে পরিচিত
[এস এম মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় গোপালগঞ্জ]
র. মজনু শাহ
রর. ভবানী পাঠক
ররর. তিতুমীর
নিচের কোনটি সঠিক?
র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৩৫. ব্রিটেনে নীলের চাহিদা বৃদ্ধি পায় [ভিকারুননিসা নূন স্কুল এন্ড কলেজ, ঢাকা]
র. শিল্পের উন্নতির জন্য
রর. কাপড়ে রং করার জন্য
ররর. রপ্তানি করার জন্য
নিচের কোনটি সঠিক?
র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর গ র, রর ও ররর
৩৬. ব্রিটিশরা নীল চাষে আগ্রহী হয়, কারণÑ
[বি.কে.জি.সি. সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, হবিগঞ্জ]
র. লাভজনক ব্যবসা
রর. নীলের চাহিদা প্রচুর
ররর. কৃষকদের প্রচুর লাভের জন্য
নিচের কোনটি সঠিক?
র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর গ র, রর ও ররর
৩৭. ফরায়েজি আন্দোলন দুর্বল হয়ে পড়ে [বিএএফ শাহীন কলেজ, চট্টগ্রাম]
র. দুদু মিয়ার মৃত্যুর পর
রর. যোগ্য নেতৃত্বের অভাব
ররর. ইংরেজদের কঠোর শাসনের ফলে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর র, রর ও ররর
৩৮. রাজা রামমোহন রায়-এর অন্যতম অবদান হচ্ছে
[বিএএফ শাহীন কলেজ, তেজগাঁও, ঢাকা]
র. বাল্যবিবাহ রোধের প্রচেষ্টা
রর. একেশ্বরবাদী চিন্তা প্রতিষ্ঠার চেষ্টা
ররর. সতীদাহ প্রথা রোধে প্রচেষ্টা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর র, রর ও ররর
৩৯. ইয়াং বেঙ্গল আন্দোলনের প্রকৃতি ছিল [বিএএফ শাহীন কলেজ, তেজগাঁও ঢাকা]
র. ব্রিটিশবিরোধী
রর. গোঁড়া ধর্মীয় বিরোধী
ররর. আধুনিক মনোভাবসম্পন্ন
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর র, রর ও ররর
৪০. বেগম রোকেয়া নারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় ভ‚মিকা রাখেন
[পঞ্চগড় সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, পঞ্চগড়]
র. নারী শিক্ষার পথ উন্মোচন করে
রর. নারীদের নিয়ে লেখালেখি করে
ররর. নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠায় আন্দোলন করে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর র, রর ও ররর
অভিন্ন তথ্যভিত্তিক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ে ৪১ ও ৪২ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
হাসনাবানু রসুলপুর গ্রামে এক মুসলিম পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। ঐ সময়ে পর্দা প্রথার জন্য মুসলিম নারীরা শিক্ষা ক্ষেত্রে পিছিয়ে ছিল। তিনি নিজ উদ্যোগে শিক্ষা লাভ করেন এবং নারী শিক্ষা প্রসারে অগ্রণী ভ‚মিকা পালন করেন।
[স. বো. ’১৫]
৪১. হাসনাবানুর চরিত্রে তোমার পাঠ্য বইয়ের কোন নারীর বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান?
ক ফয়জুন্নেসা খ শামসুন্নাহার বেগম রোকেয়া ঘ মুন্নুজান
৪২. উক্ত নারীর প্রচেষ্টায় মুসলিম সমাজে কী পরিবর্তন আসে?
নারী শিক্ষার প্রসার ঘটে খ নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয় না
গ নারীর অবস্থার অবনতি হয় ঘ পর্দাপ্রথা দূরীভ‚ত হয়
নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ে ৪৩ ও ৪৪ প্রশ্নের উত্তর দাও :
ভৌমিক স্যার ক্লাসে আধুনিক ভারতের রূপকার সম্পর্কে বলেন যে, এই মহান ব্যক্তি তৎকালীন সমাজের সামাজিক ও রাজনেতিক গতিধারা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করেন। তিনি নিজের চিন্তাধারার আলোকে নতুন সমাজ গঠনে প্রয়াসী হন। এছাড়াও তিনি সতীদাহ, বাল্যবিবাহ ও ‘কৌলীন্য প্রথা’ রোধে প্রচেষ্টা চালান। [সেন্ট ফ্রান্সিস জেভিয়ার্স হাইস্কুল এন্ড কলেজ, ঢাকা]
৪৩. অনুচ্ছেদের এই মহান ব্যক্তির সাথে কার মিল বিদ্যমান?
ক ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর খ অক্ষয়কুমার মিত্র
রাজা রামমোহন রায় ঘ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
৪৪. এ মহান ব্যক্তির অন্যতম চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য হচ্ছে
র. ইংরেজি শিক্ষার প্রতি আগ্রহ
রর. অগাধ পাণ্ডিত্যের অধিকারী
ররর. বিভিন্ন কুসংস্কার দূরীকরণের প্রচেষ্টা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর র, রর ও ররর
বিষয়ক্রম অনুযায়ী বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
ভ‚মিকা বোর্ড বই, পৃষ্ঠা- ০০
সাধারণ বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
৪৫. ইউরোপীয় বণিকরা বাংলায় এসে প্রথম কী ধ্বংস করেছিল? (জ্ঞান)
ক ঘরবাড়ি খ ছাপাখানা
কুটিরশিল্প ঘ বস্ত্রশিল্প
৪৬. কখন বাংলার আর্থসামাজিক রাজনীতিতে পরিবর্তনের হাওয়া বইতে থাকে? (জ্ঞান)
ক পনেরো-ষোলো শতকে খ ষোলো-সতেরো শতকে
গ সতেরো-আঠারো শতকে আঠারো-উনিশ শতকে
বহুপদী সমাপ্তিসূচক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
৪৭. বাংলায় সন্ধ্যার আসর জমে উঠত (অনুধাবন)
র. জারি গানে
রর. কীর্তনে
ররর. যাত্রাপালায়
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর র, রর ও ররর
৪৮. পনেরো শতকের শেষদিকে ইউরোপীয় বণিক স¤প্রদায়ের আগ্রাসী আগমন ধীরে ধীরে কেড়ে নিতে থাকে বাংলার কৃষকদের (অনুধাবন)
র. মুখের হাসি
রর. আনন্দ উৎসব
ররর. অন্নবস্ত্র
নিচের কোনটি সঠিক?
র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৪৯. বাংলার আর্থ-সামাজিক রাজনীতিতে প্রথম পরিবর্তন সূচনা করে (অনুধাবন)
র. বাংলার কৃষক
রর. সাধারণ মানুষ
ররর. ইউরোপীয় বনিক
নিচের কোনটি সঠিক?
র ও রর খ রর ও ররর গ র ও ররর ঘ র, রর ও ররর
ফকির সন্ন্যাসী আন্দোলন বোর্ড বই, পৃষ্ঠা-১১১
ফকির-সন্ন্যাসীরা জীবিকা নির্বাহ করত ভিক্ষাবৃত্তি বা মুষ্টি সংগ্রহের মাধ্যমে।
বিদ্রোহী ফকির দলের নেতার নাম ছিল মজনু শাহ।
সন্ন্যাসী নেতার নাম ছিল ভবানী পাঠক।
পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলায় সন্ন্যাসীরা ইংরেজদের বিরুদ্ধে প্রথম বিদ্রোহ শুরু করে ১৭৬০ খ্রিষ্টাব্দে।
মজনু শাহ সারা উত্তর বাংলায় ইংরেজ বিরোধী তৎপরতা শুরু করেন ১৭৭১ খ্রিষ্টাব্দে।
ফকির নেতা মজনু শাহ যুদ্ধ কৌশল ছিল গেরিলা।
সন্ন্যাসী বিদ্রোহের অবসান ঘটে সন্ন্যাসী নেতা ভবানী পাঠকের মৃত্যুতে।
ব্রিটিশরা ফকির-সন্ন্যাসীদের ডাকত ডাকাত দস্যু বলে।
ইংরেজদের সঙ্গে যুদ্ধে নবাব মীর কাশিম সাহায্য চান ফকির সন্ন্যাসীদের।
ফকির-সন্ন্যাসীরা নিরাপত্তার জন্য সঙ্গে রাখত হালকা অস্ত্র।
সাধারণ বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
৫০. ফকির-সন্ন্যাসীদের আন্দোলন মূলত কী ধরনের আন্দোলন ছিল? (জ্ঞান)
ক ওলন্দাজবিরোধী খ পর্তুগিজবিরোধী
ব্রিটিশবিরোধী ঘ ডাচবিরোধী
৫১. মীরকাশিম কাদের সঙ্গে যুদ্ধ করার জন্য ফকির-সন্ন্যাসীদের সাহায্য চেয়েছিলেন? (জ্ঞান)
ক ফরাসি খ পর্তুগিজ
গ ওলন্দাজ ইংরেজ
৫২. ফকির-সন্ন্যাসীরা কার পক্ষ নিয়ে ইংরেজদের বিপক্ষে যুদ্ধ করেছিলেন? (জ্ঞান)
ক মীরজাফর খ শওকত জং
মীরকাশিম ঘ নবাব সিরাজউদ্দৌলা
৫৩. ব্রিটিশ বিরোধী যুদ্ধে মীরকাশিম পরাজিত হয়ে পালিয়ে গেলেও কারা যুদ্ধ চালিয়ে যেতে থাকে? (প্রয়োগ)
ক ইংরেজরা ফকির-সন্ন্যাসীরা
গ নবাবরা ঘ তিতুমীর বাহিনীরা
৫৪. ইংরেজরা ফকির-সন্ন্যাসীদের প্রতি কড়া নজর রেখেছিল কেন? (অনুধাবন)
নবাবকে সাহায্য করার জন্য
খ বাণিজ্য করার জন্য
গ তারা শক্তিশালী হয়ে উঠেছিল বলে
ঘ ভারী অস্ত্র ব্যবহার করত বলে
৫৫. ফকির-সন্ন্যাসীরা কীভাবে জীবিকা নির্বাহ করত? (অনুধাবন)
ক কৃষিকাজ করে খ ব্যবসা করে
ভিক্ষাবৃত্তি করে ঘ পশুপালন করে
৫৬. ফকির-সন্ন্যাসীরা মূলত কোন শ্রেণির ছিল? (অনুধাবন)
যাযাবর খ কৃষক
গ ব্যবসায়ী ঘ ক্ষত্রিয়
৫৭. ফকির-সন্ন্যাসীরা নিজেদের নিরাপত্তার জন্য তাদের কাছে কী রাখত? (জ্ঞান)
ক ভারী অস্ত্র হালকা অস্ত্র
গ রাসায়নিক পদার্থ ঘ মারণাস্ত্র
৫৮. বাংলায় ব্রিটিশ শাসন প্রতিষ্ঠার পূর্ব পর্যন্ত কারা স্বাধীন ও মুক্ত ছিল? (অনধাবন)
ফকির-সন্ন্যাসী খ বাংলার কৃষক
গ তিতুমীর বাহিনী ঘ ইংরেজজাতি
৫৯. ইংরেজ সরকার ফকির-সন্ন্যাসীদের কী বলে আখ্যায়িত করেছিল? (জ্ঞান)
ক ব্যবসায়ী ডাকাত-দস্যু
গ আদর্শ কৃষক ঘ সমাজসেবক
৬০. বিদ্রোহী ফকির দলের নেতার নাম কী ছিল? (জ্ঞান)
ক মীরকাশিম খ মাদার বকস
মজনু শাহ ঘ ভবানী পাঠক
৬১. ফকির-সন্ন্যাসীরা কত খ্রিষ্টাব্দে ইংরেজদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ শুরু করেন? (জ্ঞান)
ক ১৭৫৮ খ ১৭৫৯
১৭৬০ ঘ ১৭৬১
৬২. ইংরেজদের সাথে ফকির-সন্ন্যাসীদের সম্পর্ক কেমন ছিল? (জ্ঞান)
ক সহযোগিতামূলক সংঘর্ষমূলক
গ বন্ধুত্বপূর্ণ ঘ নিবিড়
৬৩. ফকির-সন্ন্যাসীরা চ‚ড়ান্তভাবে পরাজিত হয় কত খ্রিষ্টাব্দে? (জ্ঞান)
১৮০০ খ ১৮০১
গ ১৮০২ ঘ ১৮০৩
৬৪. ভবানী পাঠক নিহত হন কত খ্রিষ্টাব্দে? (জ্ঞান)
ক ১৭৮০ খ ১৭৮১
১৭৮৭ ঘ ১৭৮৮
৬৫. কার মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে সন্ন্যাসী আন্দোলনের অবসান ঘটে? (জ্ঞান)
ক মজনু শাহ খ তিতুমীর
ভবানী পাঠক ঘ আব্দুল ওহাব
বহুপদী সমাপ্তিসূচক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
৬৬. ফকির-সন্ন্যাসীরা (অনুধাবন)
র. ভিক্ষাবৃত্তি করে জীবিকা নির্বাহ করত
রর. তীর্থস্থান দর্শন করত
ররর. নিজেদের নিরাপত্তার জন্য হালকা অস্ত্র ব্যবহার করত
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর র, রর ও ররর
৬৭. ফকির-সন্ন্যাসীদের আক্রমণের মূল লক্ষ্য ছিলÑ (অনুধাবন)
র. সরকারি কুঠি
রর. জমিদারদের কাছারি
ররর. নায়েব-গোমস্তাদের বাড়ি
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর র, রর ও ররর
৬৮. ফকির মজনু শাহ যেসব জেলায় ইংরেজদের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হনÑ (অনুধাবন)
র. রংপুর
রর. রাজশাহী
ররর. দিনাজপুর
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর র, রর ও ররর
৬৯. মজনু শাহের মৃত্যুর পর ফকির আন্দোলনের নেতৃত্ব গ্রহণ করেন (অনুধাবন)
র. মুসা শাহ
রর. সোবান শাহ
ররর. চেরাগ আলী শাহ
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর র, রর ও ররর
অভিন্ন তথ্যভিত্তিক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
নিচের অনুচ্ছেদটি পড় এবং ৭০ ও ৭১ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
সুন্দরবনের মৌয়ালরা সম্মিলিতভাবে একটি শিল্পগোষ্ঠী গড়ে তোলে। নিজেদের নিরাপত্তার জন্য তারা বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র সাথে রাখত। মাঝে মধ্যে লোকালয় নাচগানের আয়োজন করত। কিন্তু প্রশাসন তাদের অস্ত্র রাখা অবৈধ ঘোষণা করলে উক্ত শিল্পগোষ্ঠী নিজের স্বার্থ রক্ষার্থে প্রশাসনের বিরুদ্ধে এক সংঘর্ষে লিপ্ত হয়।
৭০. উদ্দীপকের ঘটনা ব্রিটিশ শাসনামলের ঐতিহাসিক কোন ঘটনা মনে করিয়ে দেয়? (প্রয়োগ)
ক তিতুমীরের সংগ্রাম খ ফরায়জি আন্দোলন
ফকির-সন্ন্যাসী আন্দোলন ঘ নীল বিদ্রোহ
৭১. উদ্দীপকের মৌয়াল দ্বারা প্রকাশিত ঐতিহাসিক ব্যাক্তিদের কর্মকাণ্ড ছিল- (উচ্চতর দক্ষতা)
র. ভিক্ষাবৃত্তি
রর. ঘুরে বেড়ানো
ররর. মুষ্টি সংগ্রহ
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও রর গ রর ও ররর র, রর ও ররর
তিতুমীরের সংগ্রাম বোর্ড বই, পৃষ্ঠা- ১১১
তিতুমীরের আসল নাম মীর নিসার আলী।
চব্বিশ পরগনা জেলার বারাসত মহকুমার চাঁদপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিতুমীর।
তিতুমীর ধর্মসংস্কারের কাজে আত্মনিয়োগ করেন ১৮২৭ খ্রিষ্টাব্দে।
বাংলার ওয়াহাবিরা সংগঠিত হয়েছিল তিতুমীরের নেতৃত্বে।
তিতুমীরের নেতৃত্বে পরিচালিত আন্দোলনের নাম তরিকায়ে মুহাম্মাদিয়া।
তিতুমীর তার বাশের কেল্লা নির্মাণ করেন নারিকেলবাড়িয়া গ্রামে।
সুদক্ষ ও শক্তিশালী লাঠিয়াল বাহিনী গড়ে তোলেন গোলাম মাসুমের নেতৃত্বে।
তিতুমীরের ধর্মসংস্কার আন্দোলন একপর্যায়ে রূপ নেয় কৃষক আন্দোলনে।
তিতুমীরের বাঁশের কেল্লা আক্রমণে নেতৃত্ব দেন মেজর স্কট।
ইংরেজদের সাথে বীরের মতো লড়াই করে নিহত হন তিতুমীর।
সাধারণ বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
৭২. তিতুমীর কত খ্রিষ্টাব্দে নারিকেলবাড়িয়ায় বাঁশের কেল্লা নির্মাণ করেন? (জ্ঞান)
ক ১৮৩০ ১৮৩১ গ ১৮৩২ ঘ ১৮৩৩
৭৩. কোন শতকে ভারতবর্ষে মুসলমান সমাজে এক ধর্মীয় সংস্কার আন্দোলনের সূত্রপাত হয়েছিল? (জ্ঞান)
ক সতেরো খ আঠারো
উনিশ ঘ বিশ
৭৪. উনিশ শতকে ভারতে মুসলমান সমাজে কোন ধরনের আন্দোলনের সূত্রপাত হয়েছিল? (জ্ঞান)
ক রাজনৈতিক আন্দোলন খ সামাজিক আন্দোলন
ধর্মীয় সংস্কার আন্দোলন ঘ অর্থনৈতিক আন্দোলন
৭৫. উনিশ শতকে বাংলায় কতটি ধারায় আন্দোলন প্রবাহিত ছিল? (জ্ঞান)
ক এক দুই গ তিন ঘ চার
৭৬. ওয়াহাবি ও ফরায়েজি আন্দোলনের মূল উদ্দেশ্য কী ছিল? (জ্ঞান)
ক আর্থসামাজিক সক্ষমতা অর্জন করা খ অর্থনৈতিক মুক্তি ত্বরান্বিত করা
ধর্মীয় সামাজিক কুসংস্কার দূর করা ঘ অত্যাচার থেকে মুক্তি লাভ করা
৭৭. উত্তর ভারতের কোন আন্দোলন সৈয়দ আহমদ শহীদের ভাবধারায় অনুপ্রাণিত হয়েছিল? (জ্ঞান)
ক ফরায়েজি আন্দোলন তরিকায়ে মুহাম্মদীয়া আন্দোলন
গ ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন ঘ ফকির সন্ন্যাসী আন্দোলন
৭৮. হজ শেষে তিতুমীর কত খ্রিষ্টাব্দে দেশে ফিরে আসেন? (জ্ঞান)
ক ১৮২৫ খ ১৮২৬ ১৮২৭ ঘ ১৮২৮
৭৯. তিতুমীরের আন্দোলনের সময় জমিদাররা কোন ধর্মাবলম্বী প্রজাদের ওপর নির্যাতন চালাত? (জ্ঞান)
ক হিন্দু মুসলমান
গ শিখ ঘ বৌদ্ধ
৮০. লাঠিয়াল বাহিনীর নেতৃত্বে কে ছিলেন? (জ্ঞান)
ক গোলাম আযম খ মীর কাশিম
গোলাম মাসুম ঘ তিতুমীর
৮১. তিতুমীরের ধর্মীয় সংস্কার আন্দোলনের পক্ষে কারা জোরালো ভ‚মিকা পালন করেন? (জ্ঞান)
ক তাঁতি কৃষক
গ জমিদার ঘ ফকির
৮২. তিতুমীর বাঁশের কেল্লা নির্মাণ করেছিলেন কেন? (অনুধাবন)
ক নিজে নিরাপদ থাকার জন্য খ কৃষকদের নিরাপদ রাখার জন্য
সশস্ত্র সংগ্রাম করার জন্য ঘ বিদ্রোহ দুর্দমনীয় করার জন্য
৮৩. কার নেতৃত্বের লড়াইয়ে তিতুমীর নিহত হন? (জ্ঞান)
ক লর্ড ক্লাইভ মেজর স্কট
গ ডিরোজিও ঘ ব্রেনান
৮৪. তিতুমীর কত খ্রিষ্টাব্দে নিহত হন? (জ্ঞান)
ক ১৫৩১ খ ১৬৩১ গ ১৭৩১ ১৮৩১
৮৫. ইংরেজদের গোলার আঘাতে বাঁশের কেল্লার কী অবস্থা হয়? (অনুধাবন)
উড়ে যায় খ কেঁপে ওঠে
গ নড়ে যায় ঘ ভেঙে পড়ে
বহুপদী সমাপ্তিসূচক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
৮৬. তিতুমীরের ধর্মীয় সংস্কার আন্দোলনের সময় বাংলায় যেসব ধারা প্রবহমান ছিলÑ (অনুধাবন)
র. ওয়াহাবি
রর. ফরায়েজি
ররর. ইয়াহুদি
নিচের কোনটি সঠিক?
র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৮৭. তিতুমীর (অনুধাবন)
র. মক্কা শরিফে হজ করেন
রর. তরিকায়ে মুহাম্মদীয়া আন্দোলন পরিচালনা করেন
ররর. ইংরেজ কর্তৃক বাংলার মুসলমানদের ওপর নির্যাতনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর র, রর ও ররর
নীল বিদ্রোহ বোর্ড বই, পৃষ্ঠা- ১১২
ইংরেজরা বাংলাদেশের উর্বর জমিকে বেছে নেয় নীল চাষে।
ইংরেজরা এদেশের শাসকে পরিণত হয় উপমহাদেশের শাসকদের দুর্বলতার কারণে।
উপমহাদেশে ইংরেজদের বাণিজ্যিক ফসল ছিল নীল চাষ।
নীল চাষিরা বিদ্রোহে ফেটে পড়ে ১৮৫৯ খ্রিষ্টাব্দে।
যশোরে নীল বিদ্রোহের নেতৃত্ব দেন নবীন মাধব ও বেনি মাধব।
‘নীলদর্পণ’ নাটকটির রচয়িতা হলেন দীনবন্ধু মিত্র।
নীল বিদ্রোহে জয়লাভ করে বাংলার কৃষকগণ।
ব্রিটিশ সরকার ইন্ডিগো কমিশন যা নীল কমিশন গঠন করে ১৮৬১ খ্রিষ্টাব্দে।
১৮৯২ খ্রিষ্টাব্দে এদেশে নীল চাষ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায় কৃত্রিম নীল আবিষ্কৃত হয়ে।
বাংলাদেশে নীল চাষ শুরু হয় ১৭৭০-১৭৮০ খ্রিষ্টাব্দ।
সাধারণ বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
৮৮. নীলকরগণ কৃষকদের সর্বোৎকৃষ্ট জমি বেছে নিত কেন? (অনুধাবন)
ক সরকারি নিয়ম থাকায় নীলচাষের জন্য
গ নীলের গোডাউন বানাতে ঘ কৃষককে কষ্ট দিতে
৮৯. যশোরে নীল বিদ্রোহের নেতা কে ছিলেন? (জ্ঞান)
নবীন মাধব খ নবীন চন্দ্র
গ মেঘনা সর্দার ঘ দিগম্বর বিশ্বাস
৯০. নীল বিদ্রোহে বৈদ্যনাথ ও বিশ্বনাথ সর্দার কোথায় নেতৃত্ব দেন? (জ্ঞান)
ক কর্ণাটে খ পশ্চিমবঙ্গে হুগলিতে ঘ পাটনায়
৯১. নদীয়ায় নীল বিদ্রোহের নেতৃত্ব দেন কে? (জ্ঞান)
ক নবীন মাধব খ বেনী মাধব
মেঘনা সর্দার ঘ দিগম্বর বিশ্বাস
৯২. নীল বিদ্রোহের ফলে কারা জয়ী হয়? (জ্ঞান)
ক ইংরেজরা বাংলার কৃষকরা
গ ব্যবসায়ীরা ঘ জমিদাররা
৯৩. নীল চাষ বন্ধ হয়ে যায় কেন? (জ্ঞান)
কৃত্রিম নীল আবিষ্কারের জন্য খ অর্থনৈতিক মন্দার কারণে
গ ইংল্যান্ডে যুদ্ধের কারণে ঘ প্রাকৃতিক কারণে
৯৪. কত খ্রিষ্টাব্দে এদেশে নীল চাষ চিরতরে বন্ধ হয়ে যায়? (জ্ঞান)
ক ১৮৯০ খ ১৮৯১ ১৮৯২ ঘ ১৮৯৩
বহুপদী সমাপ্তিসূচক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
৯৫. নীল চাষের জন্য উৎকৃষ্ট জায়গা হচ্ছেÑ (অনুধাবন)
র. যশোর রর. হুগলি
ররর. চৌগাছা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর র, রর ও ররর
অভিন্ন তথ্যভিত্তিক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
নিচের অনুচ্ছেদটি পড় এবং ৯৬ ও ৯৭ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
শোলধারা গ্রামের কৃষকদের জীবনযাত্রা সচ্ছল ছিল না। বিভিন্ন তামাক ব্যবসায়ী লোকজন তাদের এ অসচ্ছল জীবনধারার সুযোগ নিয়ে তাদেরকে চড়া সুদে অর্থ প্রদান করে তামাক চাষে আগ্রহী করে তোলে। কৃষকদের প্রাপ্ত মূল্য উৎপাদন খরচের তুলনায় কম হওয়ায় তামাক চাষিরা তামাক ব্যবসায়ীদের রাহুগ্রাস থেকে বের হতে না পেরে প্রতিবাদী হয়ে ওঠে। তারা রহিম, করিমের নেতৃত্বে একত্রিত হয়ে তামাক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানায়।
৯৬. উদ্দীপকটি দ্বারা ঐতিহাসিক কোন ঘটনার ইঙ্গিত করা হয়েছে? (অনুধাবন)
ক ফকির-সন্ন্যাসী বিদ্রোহ খ সিপাহি বিদ্রোহ
গ অন্ধক‚প হত্যা নীল বিদ্রোহ
৯৭. উক্ত ঘটনাটি দ্বারা প্রকাশিত ঐতিহাসিক বিদ্রোহটির মধ্যে ঘটেছিল
(উচ্চতর দক্ষতা)
র. চাষিদের মেরে ফেলা
রর. নীলকররা বাংলার জমিদার হয়
ররর. অর্থ গ্রহণে বাধা করে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ রর ও রর র ও ররর ঘ র, রর ও ররর
ফরায়েজি আন্দোলন বোর্ড বই, পৃষ্ঠা- ১১৪
ফরায়েজি আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা হাজী শরীয়তউল্লাহ।
হাজী শরীয়তউল্লাহ-এর ধর্মসংস্কার আন্দোলনকেই বলে ফরায়েজি আন্দোলন।
ফরায়েজি শব্দটি এসেছে আরবি ‘ফরজ’ শব্দ হতে।
হাজী শরীয়তউল্লাহ ভারতবর্ষকে ঘোষণা দেন ‘দারুল হরর’ বা বিধর্মীয় দেশ বলে।
হাজী শরীয়তউল্লাহ-এর উপর পুলিশি নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয় ১৬৩৯ খ্রিষ্টাব্দে।
ফরায়েজি আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন দুদু মিয়া।
‘ভ‚মির খাজনা আদায় কুরআন ও সুন্নাহ-এর পরিপন্থি’ বলেছেন দুদু মিয়া।
ভারতে প্রথম স্বাধীনতা যুদ্ধের আগুন জ্বলে উঠে ১৮০৭ খ্রিষ্টাব্দে।
সুদক্ষ লাঠিয়াল বাহিনী গড়ে তুলতে দুদু মিয়া সেনাপতি হিসেবে নিয়োগ দেন জালাল উদ্দিন মোল্লাকে।
ফরায়েজি আন্দোলন দুর্বল হয়ে পড়ে দুদু মিয়ার মৃত্যুর পর।
সাধারণ বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
৯৮. ফরায়েজি আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা কে ছিলেন? (জ্ঞান)
ক হাজী মুহম্মদ মহসীন হাজী শরীয়তউল্লাহ
গ তিতুমীর ঘ দুদু মিয়া
৯৯. হাজী শরীয়তউল্লাহ কোন জেলায় জন্মগ্রহণ করেন? (জ্ঞান)
ক শরিয়তপুর খ কুষ্টিয়া
মাদারীপুর ঘ ফেনী
১০০. কত খ্রিষ্টাব্দে হাজী শরীয়তউল্লাহ জন্মগ্রহণ করেন? (জ্ঞান)
ক ১৭৮০ খ ১৭৮১ ১৭৮২ ঘ ১৭৮৩
১০১. হাজী শরীয়তউল্লাহ কত বছর মক্কায় অবস্থান করেন? (জ্ঞান)
২০ খ ২২ গ ২৪ ঘ ২৬
১০২. একজন ধর্মসংস্কারক মক্কা থেকে বাংলা দেশে ফিরে এসে বুঝতে পারলেন যে, এদেশের মুসলমানরা ইসলামের প্রকৃত শিক্ষা থেকে অনেক দূরে সরে গেছে। এ সংস্কারক কে ছিলেন? (প্রয়োগ)
ক আব্দুল ওহাব নজদি খ তিতুমীর
হাজী শরিয়তউল্লাহ ঘ ইসমাইল দেহলভী
১০৩. অবশ্য কর্তব্য দ্বারা কোন কাজ বোঝায়? (জ্ঞান)
ক ওয়াজিব খ নফল ফরজ ঘ সুন্নত
১০৪. ভারতবর্ষকে ‘দারুল হারব’ ঘোষণা করেন কে? (জ্ঞান)
হাজী শরীয়তউল্লাহ খ তিতুমীর
গ রামমোহন রায় ঘ দুদু মিয়া
১০৫. ‘দারুল হারব’ অর্থ কী? (জ্ঞান)
ক শান্তিময় দেশ খ উন্নত দেশ
বিধর্মীর দেশ ঘ ইসলাম ধর্ম প্রধান দেশ
১০৬. হাজী শরীয়তউল্লাহ দেশজুড়ে অভাব দেখা দিলে কী দাবি উত্থাপন করেন? (জ্ঞান)
ক অর্থের দাবি খ চিকিৎসার দাবি
নুন-ভাতের দাবি ঘ নিরাপত্তার দাবি
১০৭. হাজী শরীয়তউল্লাহ কত খ্রিষ্টাব্দে মারা যান? (জ্ঞান)
১৮৪০ খ ১৮৪১ গ ১৮৪২ ঘ ১৮৪৫
১০৮. মুহম্মদ মুহসিনউদ্দীন আহমদ কার প্রকৃত নাম? (জ্ঞান)
ক তিতুমীর খ শরীয়তউল্লাহ
দুদু মিয়া ঘ সৈয়দ আহমদ
১০৯. দুদু মিয়া কত খ্রিষ্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন? (জ্ঞান)
১৮১৯ খ ১৮২০ গ ১৮২১ ঘ ১৮২২
১১০. কত খ্রিষ্টাব্দে দুদু মিয়া মুক্তি পান? (জ্ঞান)
১৮৬০ খ ১৮৬১ গ ১৮৬২ ঘ ১৮৬৩
১১১. কার মৃত্যুর পর ফরায়েজি আন্দোলন দুর্বল হয়ে পড়ে? (জ্ঞান)
ক হাজী শরীয়তউল্লাহ খ ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর
দুদু মিয়া ঘ তিতুমীর
বহুপদী সমাপ্তিসূচক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
১১২. হাজী শরীয়তউল্লাহÑ (অনুধাবন)
র. শাসশাইল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন
রর. বিশ বছর মক্কায় অবস্থান করেন
ররর. ফরায়েজি আন্দোলন পরিচালনা করেন
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর র, রর ও ররর
১১৩. ফরায়েজি আন্দোলনে যোগ দেয়Ñ (অনুধাবন)
র. তাঁতি
রর. তেলি স¤প্রদায়
ররর. কৃষক
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর র, রর ও ররর
অভিন্ন তথ্যভিত্তিক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
নিচের অনুচ্ছেদটি পড় এবং ১১৪ ও ১১৫ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
মুসলিম সমাজের উন্নয়নে হাজী শরীয়তউল্লাহর অবদান কোনোভাবেই অস্বীকার করা যায় না। তিনি তাঁর ফরোয়েজি আন্দোলনের মাধ্যমে এদেশের মানুষকে উন্নয়ন ও অগ্রগতির চতনায় উদ্বুদ্ধ করেছিলেন।
১১৪. উদ্দীপকে উল্লিখিত আন্দোলন পরবর্তীতে কীভাবে অসা¤প্রদায়িক আন্দোলন হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে? (প্রয়োগ)
ক আন্দোলনের নাম পরিবর্তনের মাধ্যমে
খ আন্দোলন থেকে মুসলমানদের বাদ দেওয়ার মাধ্যমে
গ মুসলমানদের ঐক্যবদ্ধ করার মাধ্যমে
হিন্দু ও মুসলমানদের মধ্যে ঐক্য প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে
১১৫. বাংলার উন্নয়নে উক্ত আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারীর অবদান হলো
(উচ্চতর দক্ষতা)
নিচের কোনটি সঠিক?
র. বাংলার মানুষকে অর্থনৈতিকভাবে স্বয়ংসম্পূর্ণ করেছিলেন
রর. বাংলার কৃষকদের মধ্যে জাগরণ সঞ্চার করেন
ররর. অত্যাচারের বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধ হওয়ার শক্তি সঞ্চার করেন
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর
রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
নবজাগরণ ও সংস্কার আন্দোলন
বোর্ড বই, পৃষ্ঠা- ১১৫
ইংল্যান্ডের শিল্পবিপ্লব ও ফ্রান্সে রক্তক্ষয়ী ফরাসি বিপ্লবের প্রভাব এসে পড়ে বাংলার রাজনীতি ও অর্থনীতিতে।
বৈপ্লবিক পরিবর্তনের সংস্পর্শে এসে সূচনা হয় রেনেসাঁ বা নবজাগরণের।
ফরাসি বিপ্লব সংঘটিত হয় ১৭৮৯ খ্রিষ্টাব্দে।
ইউরোপীয় বিপ্লবের প্রভাবে শিক্ষিত বাঙালিদের মনে সূচনা হয় নবজাগরণের।
নবজাগরণের প্রভাবেই দেশবাসীর মধ্যে ভিত রচিত হয় জাতীয়তাবাদী চেতনার।
সারা ভারত বর্ষে বাংলা হয়ে উঠে আধুনিক চিন্তা চেতনার কেন্দ্রস্থল।
আধুনিক ভাবধারা প্রসারে উল্লেখযোগ্য ভ‚মিকা পালন করে খ্রিষ্টান মিশনারীদের প্রতিষ্ঠিত ছাপাখানা।
সাধারণ বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
১১৬. কোন শতকে ইংল্যান্ডে শিল্প বিপ্লব ঘটে? (জ্ঞান)
ক সপ্তদশ অষ্টাদশ
গ উনিশ ঘ বিশ
১১৭. ফরাসি বিপ্লব সংঘটিত হয় কত খ্রিষ্টাব্দে? (জ্ঞান)
ক ১৭৮৭ খ ১৭৮৮ ১৭৮৯ ঘ ১৭৯০
১১৮. ‘রেনেসাঁ’ শব্দের অর্থ কী? (জ্ঞান)
ক নতুন আশা খ নতুন স্বপ্ন
নবজাগরণ ঘ পুনর্জন্ম
১১৯. নবজাগরণের প্রভাবে বাঙালিদের মধ্যে কোন চেতনার প্রাথমিক ভিত রচিত হয়? (জ্ঞান)
জাতীয়তাবাদী খ সাংস্কৃতিক
গ রাজনৈতিক ঘ ধর্মীয়
১২০. নবজাগরণের প্রভাবে বাঙালি বুদ্ধিজীবীরা কোন চিন্তা-চেতনা প্রত্যাখ্যান করেন? (জ্ঞান)
মধ্যযুগীয় খ ধর্মীয়
গ রাজনৈতিক ঘ বৈজ্ঞানিক
১২১. খ্রিষ্টান মিশনারিদের প্রতিষ্ঠিত আধুনিক শিক্ষার ভাবধারা প্রসারে উল্লেখযোগ্য ভ‚মিকা রেখেছিল কোনটি? (জ্ঞান)
ছাপাখানা খ মাদ্রাসা
গ বিশ্ববিদ্যালয় ঘ কাগজ শিল্প
বহুপদী সমাপ্তিসূচক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
১২২. বাংলার নবজাগরণ ও সংস্কার আন্দোলনে প্রভাব ফেলে- (অনুধাবন)
র. শিল্প বিপ্লব
রর. ফরাসি বিপ্লব
ররর. রুশ বিপ্লব
নিচের কোনটি সঠিক?
র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
১২৩. নবজাগরণ ও সংস্কার আন্দোলনের প্রভাবে যেসব ক্ষেত্রে চিন্তার বিপ্লব ঘটেÑ (অনুধাবন)
র. প্রচলিত ধর্ম
রর. শিক্ষা-সংস্কৃতি
ররর. সাহিত্য
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর র, রর ও ররর
১২৪. ইংরেজ প্রশাসকদের অনেকে ভারতবাসীকে আধুনিক শিক্ষায় উজ্জীবিত করাকে মনে করতেন (অনুধাবন)
র. নৈতিক দায়িত্ব-কর্তব্য
রর. মানবিক দায়িত্ব-কর্তব্য
ররর. ধর্মীয় দায়িত্ব-কর্তব্য
নিচের কোনটি সঠিক?
র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
রাজা রামমোহন রায় বোর্ড বই, পৃষ্ঠা- ১১৬
ভারতের প্রথম আধুনিক পুরুষ ছিলেন রাজা রামমোহন রায়।
রাজা রামমোহন রায় জন্মগ্রহণ করেন ১৭৭৪ খ্রিষ্টাব্দে।
‘বেদান্ত সূত্র’ ও ‘বেদান্ত সার’ উপনিষদের অনুবাদ করেন রাজা রামমোহন রায়।
‘সম্বদ কৌমুদী’ পত্রিকার প্রকাশক ছিলেন রাজা রামমোহন রায়।
উপমহাদেশর ধর্মীয় ইতিহাসে এক নবযুগের সূচনা করে রাজা রামমোহন রায়।
রাজা রামমোহন রায় ‘অ্যাংলা হিন্দু স্কুল’ প্রতিষ্ঠা করেন ১৮২২ খ্রিষ্টাব্দে কলকাতায়।
ভারতীয় রেনেসাঁর স্রষ্টা রাজা রামমোহন রায় মৃত্যুবরণ করেন ১৮৩৩ খ্রিষ্টাব্দে।
ভারতীয়দের পাশ্চাত্য ভাষায় শিক্ষা দেয়ার সরকারি সিদ্ধান্ত গৃহিত হয় রামমোহন রায়ের মৃত্যুর দুই বছর পর।
ব্রাহ্মসমাজ প্রতিষ্ঠা করেন রাজা রামমোহন রায়।
সকল কুসংস্কার দূর করে একেশ্বরবাদীর ভিত্তিতে হিন্দুধর্ম প্রতিষ্ঠা করেন রামমোহন রায়।
সাধারণ বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
১২৫. রাজা রামমোহন রায়কে কেন ভারতের প্রথম আধুনিক পুরুষ বলা হয়? (অনুধাবন)
ক প্রচুর অর্থসম্পদ থাকার কারণে
খ প্রচুর ইংরেজি জানার কারণে
বাংলায় নবজাগরণের স্রষ্টা হিসেবে
ঘ একজন দক্ষ ক‚টনৈতিক হিসেবে
১২৬. রাজা রামমোহন রায় কত খ্রিষ্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন? (জ্ঞান)
ক ১৭৭০ খ ১৭৭১ গ ১৭৭৩ ১৭৭৪
১২৭. রাজা রামমোহন রায় কোন জেলায় জন্মগ্রহণ করেন? (জ্ঞান)
ক যশোর খ নদীয়া হুগলি ঘ পাটনা
১২৮. বেদান্তসূত্র অনুবাদ করেন কে? (জ্ঞান)
ক হাজী শরীয়তউল্লাহ খ দুদু মিয়া
রামমোহন রায় ঘ ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর
১২৯. ‘মনজারাতুল আদিয়ান’ রচনা করেন কে? (জ্ঞান)
ক ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর খ বেগম রোকেয়া
রাজা রামমোহন রায় ঘ দুদু মিয়া
১৩০. সমাজ থেকে সতীদাহ প্রথা বন্ধ করেন কে? (জ্ঞান)
ক দুদু মিয়া রাজা রামমোহন রায়
গ ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ঘ হাজী শরীয়তউল্লাহ
বোর্ড ও সেরা স্কুলের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন- ১ ফরায়েজি আন্দোলন
আব্দুল কাদির মক্কায় গিয়ে ইসলামি শিক্ষায় জ্ঞান লাভ করেন। দেশে ফিরে তিনি দেখেন, বিদেশি শাসনের প্রভাবে মুসলমানরা ইসলামের মূল ধারা থেকে দূরে সরে পড়েছে। তিনি ইসলাম রক্ষা ও বিদেশি শাসন থেকে দেশকে মুক্ত করার জন্য আন্দোলন শুরু করেন। তার ধর্মসংস্কার আন্দোলনটি শেষ পর্যন্ত বিদেশি বিরোধী আন্দোলনে রূপ নেয়।
[স. বো. ’১৬]
ক. ভারতের প্রথম আধুনিক পুরুষ কে? ১
খ. কেন মুহম্মদ মহসীনকে দানবীর বলা হয়? ২
গ. উদ্দীপকে বর্ণিত আব্দুল কাদিরের সাথে তোমার পাঠ্যবইয়ের কোন মনীষীর মিল পাওয়া যায়? পাঠ্যবইয়ের আলোকে ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. “ধর্মসংস্কার আন্দোলনটি বিদেশি বিরোধী আন্দোলনে রূপ নেয়” বক্তব্যটি বিশ্লেষণ কর। ৪
ক ভারতের প্রথম আধুনিক পুরুষ হলেন রাজা রামমোহন রায়।
খ ১৮০৩ খ্রিষ্টাব্দে তাঁর একমাত্র বোনের মৃত্যু হলে মুহম্মদ মহসীন নিঃসন্তান বোনের বিশাল সম্পত্তির মালিক হন। তিনি তাঁর সমুদয় অর্থ শিক্ষা বিস্তার, চিকিৎসা এবং দরিদ্র মানুষের জন্য ব্যয় করেন। তিনি হুগলিতে একটি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। ঢাকা, চট্টগ্রাম, যশোর প্রভৃতি স্থানের মাদ্রাসার উন্নতি সাধনের উদ্দেশ্যে প্রচুর অর্থ দান করেন। মৃত্যুর ছয় বছর পূর্বে ১৮০৬ খ্রিষ্টাব্দে একটি ফান্ড গঠন করে জনহিতকর কাজে সমস্ত সম্পত্তি দান করেন। এই বিশাল দানের প্রেক্ষিতেই মুহম্মদ মহসীনকে দানবীর বলা হয়।
গ উদ্দীপকে বর্ণিত আব্দুল কাদিরের সাথে আমার পাঠ্যবইয়ের মনীষী হাজী শরীয়তউল্লাহর মিল পাওয়া যায়। উদ্দীপকে আব্দুল কাদিরকে একটি আন্দোলনের নেতৃত্ব দিতে দেখা যায়। অনুরূপ পাঠ্যবইয়ের মনীষী ফরায়েজি আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা হাজী শরীয়তউল্লাহ দীর্ঘ বিশ বছর মক্কায় অবস্থান করেন। সেখানে তিনি ইসলাম ধর্মের ওপর লেখাপড়া করে অগাধ পাণ্ডিত্য অর্জন করেন। দেশে ফিরে তিনি বুঝতে পারেন যে বাংলার মুসলমানরা ইসলামের প্রকৃত শিক্ষা থেকে অনেক দূরে সরে গেছে। তাদের মধ্যে অনৈসলামিক রীতিনীতি, কুসংস্কার, অনাচার প্রবেশ করেছে। ইসলাম ধর্মকে কুসংস্কার আর এসব অনৈসলামিক অনাচারমুক্ত করতে তিনি দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হন। এই প্রতিজ্ঞার বশবর্তী হয়ে তিনি উনিশ শতকের প্রথমার্ধে বাংলার মুসলমানদের মধ্যে এক ধর্মীয়-সামাজিক সংস্কার আন্দোলনের সূত্রপাত করেন।
ঘ হাজী শরীয়তউল্লাহর ধর্মসংস্কার আন্দোলন তথা ফরায়েজি আন্দোলন বিদেশি বিরোধী আন্দোলনে রূপ নেয়। হাজী শরীয়তউল্লাহ বাংলা তথা ভারতবর্ষে ব্রিটিশ শাসন মেনে নিতে পারেননি। তিনি ইংরেজ রাজত্বকে ঘৃণার চোখে দেখতেন। তিনি ভারতবর্ষকে ‘দারুল হারব’ অর্থাৎ ‘বিধর্মীর দেশ’ বলে ঘোষণা করেন। ইসলাম অননুমোদিত সব বিশ্বাস, আচার-আচরণ ও অনুষ্ঠান ত্যাগ করে ইসলাম ধর্মে যা অবশ্যকীয়, তা পালন করার জন্য তিনি মুসলমান সমাজকে আহŸান জানান। তিনি বিধর্মী-বিজাতীয় শাসিত দেশে জুমা এবং দুই ঈদের নামাজ বর্জনের জন্য মুসলমানদের নির্দেশ দিয়েছিলেন। এ আন্দোলন জনগণের মনে সাড়া জাগায়। জমিদার ও ব্রিটিশদের শোষণ ও নির্যাতনে অতিষ্ঠ বাংলার দরিদ্র রায়ত, কৃষক, তাঁতী, তেলি স¤প্রদায় স্বতঃস্ফ‚র্তভাবে এই আন্দোলনে যোগদান করে। শরীয়তউল্লাহর ওপর দরিদ্র জনগোষ্ঠীর আস্থা, বিশ্বাস, তাঁর অসাধারণ সাফল্য নিম্নশ্রেণির জনগণের মধ্যে দৃঢ় ঐক্য গড়ে তোলে। জমিদারশ্রেণি নানা অজুহাতে ফরায়েজি প্রজাদের ওপর অত্যাচার শুরু করলে প্রজাদের রক্ষার জন্য তিনি লাঠিয়াল বাহিনী গঠনের সিদ্ধান্ত নেন। এমতাবস্থায় ১৮৪০ সালে তার মৃত্যু হলে তার সুযোগ্য পুত্র দুদু মিয়ার নেতৃত্বে ফরায়েজি আন্দোলন একাধারে একটি ধর্মীয় সংস্কার আন্দোলনের পাশাপাশি কৃষকশ্রেণির শোষণ মুক্তির সশস্ত্র সংগ্রামে পরিণত হয়। ইংরেজ শাসকদের চরম অর্থনৈতিক শোষণে বিপর্যস্ত বাংলার কৃষক এই আন্দোলনের মাধ্যমে শোষণবিরোধী প্রত্যক্ষ ভ‚মিকায় অবতীর্ণ হলো।
প্রশ্ন- ২ নীল বিদ্রোহ
বাদল ব্যানার্জী বরিশাল অঞ্চলের জমিদার ছিলেন। তিনি বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে কৃষকদের ধানের পরিবর্তে জোর করে আখ চাষে বাধ্য করেন। কেউ আখ চাষে অস্বীকৃতি জানালে তাকে শারীরিক নির্যাতন করত। প্রথম দিকে জমিদার আখের চারার যোগান দিলেও পরবর্তীতে তা বন্ধ করে দেয়। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির সাথে আখ চাষেও খরচ বাড়ে কিন্তু জমিদার এ বিষয়ে তেমন নজর দিত না। উপায়ান্তর না দেখে গ্রামে গ্রামে চাষিরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে বিদ্রোহ করে। সারা বরিশালে এ বিদ্রোহের আগুন জ্বলে ওঠে। বিভিন্ন পত্রিকায় জমিদারের অত্যাচারের কাহিনী ছাপা হলে সরকার আখ কমিশন গঠন করে। [স. বো. ’১৫]
ক. বেগম রোকেয়া কত খ্রিষ্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন? ১
খ. রাজা রামমোহন রায়কে আধুনিক ভারতের রূপকার বলা হয় কেন? ২
গ. উদ্দীপকের কৃষকদের আন্দোলনের মধ্যে ব্রিটিশ ভারতের কোন আন্দোলনের বৈশিষ্ট্য ফুটে উঠেছে? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. ‘উদ্দীপকে আখ চাষিদের ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামের মতো বাংলার কৃষকরাও ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামে সফল হয়েছিল’Ñ উক্তিটির যথার্থতা মূল্যায়ন কর। ৪
ক বেগম রোকেয়া ১৮৮০ খ্রিষ্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন।
খ রাজা রামমোহন রায়ের বিশ্বাস, চিন্তাধারা এবং কর্ম তাকে আধুনিক ভারতের রূপকার হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। রাজা রামমোহন তৎকালীন সমাজের সামাজিক ও রাজনৈতিক গতিধারা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করেন। নিজের চিন্তাধারার আলোকে নতুন সমাজ গঠনে প্রয়াসী হন। তিনি হিন্দু সমাজের সতীদাহ, বাল্যবিবাহ, কৌলিন্য প্রথা, মূর্তিপূজা ও অন্যান্য কুসংস্কার দূর করতে প্রচেষ্টা চালান। তাই যথার্থই বলা হয় রাজা রামমোহন রায় আধুনিক ভারতের রূপকার।
গ উদ্দীপকের কৃষকদের আন্দোলনের মধ্যে ব্রিটিশ ভারতের নীল বিদ্রোহের বৈশিষ্ট্য ফুটে উঠেছে। উদ্দীপকের বাদল ব্যানার্জী কৃষকদের ধানের পরিবর্তে বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে আখ চাষে বাধ্য করেন। তদ্রæপ ব্রিটিশ ভারতে ইংরেজরা এদেশে এসেছিল ব্যবসা-বাণিজ্য করতে। সব সময় তাদের ব্যবসায়ী বুদ্ধি ছিল সজাগ। এই সজাগ ব্যবসায়ী বুদ্ধির কারণেই বাংলার উর্বর ফসলের ক্ষেতে তাদের দৃষ্টি পড়ে। তারা এই উর্বর ক্ষেতগুলোতে খাদ্য ফসলের পরিবর্তে বাণিজ্য ফসল নীল উৎপাদনে আগ্রহী হয়ে উঠে। নীলচাষে কৃষকরা রাজি না হলে তাদের ওপর চরম অত্যাচার চালানো হতো। আবার উদ্দীপকে যেমন দেখা যায়, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির সাথে সাথে আখ চাষের খরচ বেড়ে যায় তদ্রæপ ব্রিটিশ ভারতেও জিনিসপত্রের মূল্য বৃদ্ধির সাথে সাথে নীল চাষের খরচও বৃদ্ধি পায়। নীলকররা বিষয়টি উদ্দীপকের জমিদার বাদল ব্যানার্জীর মতোই বিবেচনায় রাখত না। তাছাড়া, প্রথম দিকে নীলকররা চাষিদের বিনামূল্যে নীল বীজ সরবরাহ করলেও পরের দিকে তাও বন্ধ হয়ে যায়। ফলে ক্রমাগত নীলচাষ চাষিদের জন্য অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়। উদ্দীপকে এ অবস্থাটিও ফুটে উঠেছে। সুতরাং উদ্দীপকের কৃষকদের আন্দোলন ব্রিটিশ ভারতের নীল বিদ্রোহের বৈশিষ্ট্যের প্রতিফলন।
ঘ উদ্দীপকে ঐক্যবদ্ধ আখ চাষিদের সংগ্রামের মতো নীল বিদ্রোহের প্রেক্ষাপটে বাংলার কৃষকরাও ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামে সফল হয়েছিল। উদ্দীপকে আখ চাষিরা উপায়ান্তর না দেখে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলে। বিদ্রোহের আগুন জ্বলে উঠলে তা পত্রিকায় আসতে থাকে এবং সরকার আখ কমিশন গঠন করে। বিট্রিশ ভারতেও দেখা যায়, শেষ পর্যন্ত দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া নীল চাষিরা ১৮৫৯ খ্রিষ্টাব্দে প্রচণ্ড বিদ্রোহে ফেটে পড়ে। গ্রামে-গ্রামে কৃষকরা সংগঠিত এবং ঐক্যবদ্ধ হতে থাকে। এই সব বিদ্রোহের নেতৃত্ব দেন নীলচাষিরাই। যশোরের নীল বিদ্রোহের নেতা ছিলেন নবীন মাধব ও বেনী মাধব নামে দুই ভাই। হুগলীতে নেতৃত্ব দেন বৈদ্যনাথ ও বিশ্বনাথ সর্দার। নদীয়ায় ছিলেন মেঘনা সর্দার এবং নদীয়ার চৌগাছায় বিদ্রোহের নেতৃত্ব দেন বিষ্ণুচরণ বিশ্বাস ও দিগম্বর বিশ্বাস নামে দুই ভাই। স্থানীয় পর্যায়ের এই নেতৃত্বে বাংলায় কৃষক বিদ্রোহের আগুন জ্বলে উঠে। কৃষকরা নীল চাষ না করার পক্ষে দৃঢ় অবস্থান নেয়। এমনকি তারা ইংরেজ ম্যাজিস্ট্রেটের উপদেশও অগ্রাহ্য করে। শিক্ষিত মধ্যবিত্ত শ্রেণি নীলচাষিদের প্রতি সহানুভ‚তিশীল মনোভাব প্রকাশ করতে থাকে। বিভিন্ন পত্রিকায় নীলকরদের অত্যাচারে কাহিনী ছাপা হতে থাকে। দীনবন্ধু মিত্রের লেখা ‘নীলদর্পণ’ নাটকের কাহিনী চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। শেষ পর্যন্ত বাংলার সংগ্রামী কৃষকদের জয় হয়। ১৮৬১ খ্রিষ্টাব্দে ব্রিটিশ সরকার ইন্ডিগো কমিশন বা নীল কমিশন গঠন করে। এই কমিশনের সুপারিশের উপর ভিত্তি করে নীল চাষকে কৃষকদের ‘ইচ্ছাধীন’ বলে ঘোষণা করা হয়। তাছাড়া ইন্ডিগো কন্ট্রাক্ট বাতিল হয়।
প্রশ্ন- ৩ তিতুমীরের সংগ্রাম ও নীল বিদ্রোহ
অশ্রæ কলেজের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে একটি সংগীত পরিবেশন করে ‘তোমার সমাধী ফুলে ফুলে ঢাকা, কে বলে আজ তুমি নাই, তুমি আছো মন বলে তাই।” অশ্রæ কেন এই গানটি গাইল এটি জানতে চাইলে সে বলল, আমি আমার গানটির মাধ্যমে স্মরণ করতে চাই ব্রিটিশ আমলের বাংলার প্রতিরোধ সংগ্রামের এক অমর সেনানীকে। যার নামে আমাদের কলেজটির নামকরণ করা হয়েছে। তিনি ইংরেজদের কামান ও বন্দুকের সামনে বীরের মতো লড়াই করে শহিদ হন। ইংরেজদের গোলাবারুদের সামনে তার বাঁশের কেল্লা ছিল দুঃসাহস আর দেশপ্রেমের প্রতীক।
[আঞ্জুমান আদর্শ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় নেত্রকোনা]
ক. ‘নীলদর্পণ’ নাটকের রচয়িতা কে? ১
খ. নীল বিদ্রোহের স্বরূপ তুলে ধর। ২
গ. উদ্দীপকে ইংরেজ শাসন আমলের কোন দেশপ্রেমিকের ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে? তার কোন কর্মকাণ্ড দুঃসাহস আর দেশপ্রেমের প্রতীক? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. তার ধর্মীয় সংস্কার আন্দোলন কি তখন কৃষক আন্দোলনে পরিণত হয়েছিল? বিশ্লেষণ কর। ৪
ক ‘নীলদর্পণ’ নাটকের রচয়িতা হলেন দীনবন্ধু মিত্র।
খ ইংরেজ বণিক, নীলকরদের অত্যাচারে ও বঞ্চনায় দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া নীলচাষিরা ১৮৫৯ খ্রিষ্টাব্দে প্রচণ্ড বিদ্রোহে ফেটে পড়ে। শুরু হয় নীল বিদ্রোহ। গ্রামে গ্রামে কৃষকরা সংগঠিত এবং ঐক্যবদ্ধ হতে থাকে। এসব বিদ্রোহের নেতৃত্ব দেয় নীল চাষিরাই। স্থানীয় পর্যায়ের এই নেতৃত্বে বাংলায় কৃষক বিদ্রোহের আগুন জ্বলে ওঠে। কৃষকরা নীলচাষ না করার পক্ষে দৃঢ় অবস্থান নেয়। শিক্ষিত মধ্যবিত্তশ্রেণি এবং বিভিন্ন পত্রিকা বিদ্রোহীদের পক্ষে অবস্থান নেয়। ‘নীলদর্পণ’ নাটকের কাহিনী চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। শেষ পর্যন্ত বাংলার সংগ্রামী কৃষকদের জয় হয়।
গ উদ্দীপকে ইংরেজ শাসন আমলের দেশপ্রেমিক শহিদ তিতুমীরের প্রতি ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে। বিপ্লবী আন্দোলন আর দুঃসাহস তার দেশপ্রেমের প্রতীক হয়ে আছে। বাংলার প্রজাকুলের ওপর স্থানীয় জমিদার ও ইউরোপীয় নীলকরদের অত্যাচার প্রতিরোধ এবং ব্রিটিশ শাসন থেকে বাংলাকে মুক্ত করার লক্ষ্যে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধের পথ অবলম্বন করেন তিতুমীর। মুসলমানদের প্রতি সা¤প্রদায়িক বিদ্বেষ ও অবৈধ কর আরোপের জন্য হিন্দু জমিদারের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়ে সামাজিক ও ধর্মীয় সংস্কারক এবং দুঃসাহসের পরিচয় দেন। কৃষক, তাঁতি তথা বাংলার প্রজাকুলের নিরাপত্তা দানের লক্ষ্যে দুর্ভেদ্য বাঁশের কেল্লা নির্মাণ করেন। তার পক্ষে ছিল ইংরেজ, জমিদার, নীলকরদের দ্বারা নির্যাতিত কৃষকেরা। তাদের একমাত্র অস্ত্র ছিল লাঠি। তিতুমীর তার এই অত্যাধুনিক অস্ত্রহীন বাহিনী নিয়ে নির্যাতন নিষ্পেষণের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন। ইংরেজ সেনাবাহিনী বাঁশের কেল্লা আক্রমণ করলে বীরের মতো লড়াই করে তিতুমীর শহিদ হন। উদ্দীপকে অশ্রæ তার গানের মাধ্যমে ব্রিটিশ আমলের বাংলার প্রতিরোধ সংগ্রামের যে অমর সেনানীকে স্মরণ করেছে তিনি হলেন এই বীর শহিদ তিতুমীর। যিনি ইংরেজদের কামান বন্দুকের সামনে বীরের মতো লড়াই করে শহিদ হয়েছিলেন। ইংরেজদের গোলাবারুদ, নীলকর, জমিদারদের ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধের মুখে তার বাঁশের কেল্লা ছিল দুঃসাহস আর দেশপ্রেমের প্রতীক, যা যুগে যুগে বাঙালিকে অন্যায়-অত্যাচারের বিরুদ্ধে সাহস যুগিয়েছে। প্রেরণা যুগিয়েছে স্বাধীনতার পথে এগিয়ে যেতে।
ঘ শহিদ তিতুমীরের ধর্মীয় সংস্কার আন্দোলন কৃষক আন্দোলনে পরিণত হয়েছিল। তিতুমীরের ধর্মীয় সংস্কার আন্দোলনে বহু মুসলমান বিশেষ করে নদীয়া জেলার বহু কৃষক, তাঁতি সাড়া দিলে জমিদাররা মুসলমানদের প্রতি নানা নির্যাতনমূলক আচরণ শুরু করে। তিতুমীর এ অত্যাচারের বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষের কাছে শান্তিপূর্ণভাবে সুবিচার চেয়ে ব্যর্থ হন। শেষ পর্যন্ত তিনি ও তার অনুসারীরা সশস্ত্র প্রতিরোধের পথ অবলম্বন করেন। ১৮৩১ খ্রিষ্টাব্দে নারিকেলবাড়িয়া গ্রামে দুর্ভেদ্য বাঁশের কেল্লা নির্মাণ করেন এবং গড়ে তোলেন সুদক্ষ শক্তিশালী লাঠিয়াল বাহিনী। ইংরেজ, জমিদার, নীলকরদের দ্বারা নির্যাতিত কৃষকরা দলে দলে তিতুমীরের বাহিনীতে যোগ দিলে ধর্ম সংস্কারের আন্দোলন একটি ব্যাপক কৃষক আন্দোলনে রূপ নেয়। ১৮৩১ খ্রিষ্টাব্দে ইংরেজ সেনাবাহিনী তিতুমীরের বাঁশের কেল্লা আক্রমণ করলে কামান ও বন্দুকের সামনে বীরের মতো লড়াই করে পরাজিত হয় তিতুমীরের বাহিনী। তিনি যুদ্ধে নিহত হন। গোলার আঘাতে বাঁশের কেল্লা উড়ে যায়। এভাবেই পরিসমাপ্তি ঘটে একটি সুসংগঠিত কৃষক আন্দোলনের। উপরিউক্ত আলোচনা হতে বলা যায়, তিতুমীর ধর্মীয় সংস্কার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ব্যাপক কৃষক আন্দোলন গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছিলেন।
প্রশ্ন- ৪ রাজা রামমোহন রায়ের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান
পূর্বকান্দি গ্রামের হিন্দুসমাজে এখনও একটি নিষ্ঠুর প্রথা প্রচলিত আছে। এখানে স্বামী মারা গেলে স্ত্রীর বিষপানে আত্মহত্যা করার নিয়ম। পরে স্বামী ও স্ত্রীকে এক চিতায় পোড়ানো হয়। প্রদীপ শহর থেকে লেখাপড়া শেষ করে গ্রামে এসে এ নিষ্ঠুরতার বিরুদ্ধে এলাকাবাসীকে সচেতন করেন। বিভিন্ন মিডিয়ায় বিষয়টি প্রচারের ব্যবস্থা করেন। এতে বিষয়টি সরকারের দৃষ্টিতে এলে সরকার তা কঠোর হস্তে দমন করে।
[গ্রীন ভিউ উচ্চ বিদ্যালয়, চাঁপাইনবাবগঞ্জ]
ক. ‘তুহফাতুল মুজাহহিদদীন’ গ্রন্থটি কে রচনা করেন? ১
খ. কীভাবে বাংলায় নবজাগরণ ঘটে? ২
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত প্রদীপের কর্মকাণ্ডে তোমার পাঠ্যবইয়ের কোন নেতার আদর্শের প্রতিফলন ঘটেছে? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. উক্ত নেতার কর্মকাণ্ড কি শুধু উক্ত ক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধ ছিল? তোমার উত্তরের পক্ষে যুক্তি দাও। ৪
ক ‘তুহফাতুল মুজাহহিদদীন’ গ্রন্থটি রচনা করেন রাজা রামমোহন রায়।
খ অষ্টাদশ শতকের শেষার্ধে ইংল্যান্ডে শিল্প বিপ্লব এবং ফ্রান্সে রক্তক্ষয়ী ফরাসি বিপ্লবের প্রভাব এসে পড়ে এ অঞ্চলের রাজনীতি ও অর্থনীতিতে। এসময়ে প্রচলিত ধর্ম, শিক্ষা-সংস্কৃতি, সাহিত্য, সামাজিক রীতিনীতি ও ঐতিহ্যের বিরুদ্ধে এক ধরনের চিন্তার বিপ্লব সূচিত হয়। এরই পরিণতিতে উদ্ভব ঘটে নতুন ধর্মমত, নতুন শিক্ষা, নতুন সাহিত্য, নতুন সামাজিক আদর্শ ও রীতিনীতির। এ সময়ে বাংলার কিছুসংখ্যক ব্যক্তি এই বৈপ্লবিক পরিবর্তনের সংস্পর্শে আসেন এবং তারাই বাংলায় রেনেসাঁ বা নবজাগরণের সূচনা করেন।
গ উদ্দীপকে উল্লিখিত প্রদীপের কর্মকাণ্ডে আমার পাঠ্যবইয়ের নেতা রাজা রামমোহন রায়ের আদর্শের প্রতিফলন ঘটেছে। রাজা রামমোহন রায়ের সময়ে ভারতবর্ষের হিন্দুসমাজ ছিল নানা কুসংস্কারে আচ্ছাদিত। তৎকালীন সমাজে নারীদের তেমন কোনো সামাজিক অধিকার ছিল না। এমনকি সমাজের নানা কুসংস্কার নারীদের অধিকারকে অন্ধকারের করাল গ্রাসে নিমজ্জিত করেছিল। সমাজে কোনো স্ত্রীর স্বামী মারা গেলে ঐ স্ত্রীকে স্বামীর সাথে চিতায় পুড়ে মরতে হতো, যা সমাজে অতি পুণ্যের কাজ হিসেবে বিবেচিত হতো। আর এসব কুসংস্কারের বিরুদ্ধে রাজা রামমোহন রায় বলিষ্ঠ ভ‚মিকা পালন করেন। উদ্দীপকেও দেখা যায়, পূর্বকান্দি গ্রামের হিন্দুসমাজে স্বামী মারা গেলে স্ত্রীকে আত্মহত্যা করার এবং একই চিতায় পোড়ানোর নিয়ম প্রচলিত ছিল। তবে এই নিষ্ঠুর প্রথার বিরুদ্ধে রাজা রামমোহন রায়ের মতো গ্রামের মানুষকে সচেতন করতে বলিষ্ঠ ভ‚মিকা পালন করে প্রদীপ। ভারতবর্ষের হিন্দুসমাজের মতো উদ্দীপকে উল্লিখিত হিন্দুসমাজ থেকেও প্রদীপের একান্ত প্রচেষ্টায় একসময় বিলোপ ঘটে সতীদাহ প্রথার।
ঘ উদ্দীপকে ইঙ্গিতপূর্ণ নেতা রাজা রামমোহন রায়ের কর্মকাণ্ড শুধু সতীদাহ প্রথা বিলোপের ক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধ ছিল না বলে আমি মনে করি। আধুনিক ভারতের রূপকার রাজা রামমোহন রায় তৎকালীন সমাজের সামাজিক ও রাজনৈতিক গতিধারা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করেন। তিনি হিন্দুসমাজের সতীদাহ, বাল্যবিবাহ, কৌলীন্য প্রথা, মূর্তিপূজা ও অন্যান্য কুসংস্কার দূর করতে প্রচেষ্টা চালান। তবে উদ্দীপকে বর্ণিত সতীদাহ প্রথা বিলোপ নিয়ে তিনি নিজের চিন্তাধারার আলোকে নতুন সমাজ গঠনে প্রয়াসী হন। হিন্দুধর্মের নানা সংস্কার সাধনের লক্ষ্যে তিনি আত্মীয়সভা নামে একটি সমিতি গঠন করেন। ১৮২৮ খ্রিষ্টাব্দের ২০ আগস্ট তিনি ব্রাহ্মসমাজ প্রতিষ্ঠা করেন। ১৮৩০ খ্রিষ্টাব্দে তিনি ব্রাহ্মসমাজের উপাসনালয় প্রতিষ্ঠা করেন। তার ব্রাহ্মসমাজ প্রতিষ্ঠা উপমহাদেশের ধর্মীয় ইতিহাসে এক নবযুগের সূচনা করে। শুধু সামাজিক আর ধর্মীয় বিষয় নয় শিক্ষাবিস্তারেও তার অবদান ছিল। দেশের মানুষের জন্য ইংরেজি শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে ১৮২২ খ্রিষ্টাব্দে কলকাতায় ‘অ্যাংলো হিন্দু স্কুল’ প্রতিষ্ঠা করেন। সেখানে ইংরেজি, দর্শন, আধুনিক বিজ্ঞান পড়াবার ব্যবস্থা ছিল। এদেশবাসীকে সংস্কৃত শিক্ষার বদলে আধুনিক জ্ঞান, বিজ্ঞান, দর্শন শিক্ষার গুরুত্ব ব্যাখ্যা করে গভর্নর জেনারেল লর্ড আমহার্স্টকে চিঠি লেখেন। তাছাড়া ভারতীয়দের শিক্ষার জন্য ইংরেজ সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ১ লক্ষ টাকা তিনি সংস্কৃত ও মাদ্রাসা শিক্ষায় ব্যয় না করে আধুনিক শিক্ষায় ব্যয় করার জন্যও আবেদন করেন। সুতরাং বলা যায় যে, বাংলার নবজাগরণে রাজা রামমোহন রায় এক অগ্রগণ্য ভ‚মিকা পালন করেছেন।
প্রশ্ন- ৫ রাজা রামমোহন রায় ও সৈয়দ আমীর আলী
জহির ও আকাশ দুই বন্ধু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়া শেষ করে গ্রামে চলে আসে। দুজনই খুব সচেতন এবং আধুনিক মন-মানসিকতার ছেলে। আকাশ গ্রামে এসে ক্লাব গঠন করে। এখানে ছেলেমেয়েদের ধর্ম, সমাজ, সংস্কৃতি ও দেশ নিয়ে শিক্ষা দেয়। সে ধর্মের আধুনিক ব্যাখ্যাও ছেলেমেয়েদের সামনে তুলে ধরে। জহির পথশিশু ও বড়দের শিক্ষার আলো দেয়ার জন্য রাতের স্কুল প্রতিষ্ঠা করে এবং নানা উন্নয়নমূলক কাজ করে। গ্রামের সপ্তম শ্রেণিতে পড়–য়া এক ছাত্রীর বিয়ে বন্ধ করে আবার স্কুলে পাঠায় লেখাপড়ার জন্য। জহির খুব সাহসী ও সংস্কারমুক্ত একটি ছেলে। [কামরুন্নেসা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, ঢাকা]
ক. ব্রাহ্মসমাজ প্রতিষ্ঠা করেন কে? ১
খ. বাংলার ইংরেজ শাসন প্রতিষ্ঠার পূর্বে ফকির- সন্ন্যাসীদের জীবন কেমন ছিল? ২
গ. ইতিহাসের কোন ব্যক্তি দ্বারা জহিরের কর্মকাণ্ড প্রভাবিত হয়েছে? ব্যাখ্যা দাও। ৩
ঘ. আকাশের কাজের সঙ্গে সৈয়দ আমীর আলীর কাজের মিল রয়েছে যুক্তি দাও। ৪
ক ব্রাহ্মসমাজ প্রতিষ্ঠা করেন রাজা রামমোহন রায়।
খ বাংলায় ইংরেজ শাসন প্রতিষ্ঠার পূর্বে ফকির সন্ন্যাসীদের জীবন ছিল স্বাধীন এবং মুক্ত। কেননা, চিরাচরিত রীতি অনুযায়ী, ফকিরসন্ন্যাসীরা ভিক্ষাবৃত্তি বা মুষ্টি সংগ্রহের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করত। ধর্মীয় উৎসব, তীর্থস্থান দর্শন উপলক্ষে সারাবছর তারা এক স্থান থেকে আরেক স্থানে ঘুরে বেড়াত। তাদের নিরাপত্তার জন্য নানা ধরনের হালকা অস্ত্র থাকত।
গ রাজা রামমোহন রায় দ্বারা জহিরের কর্মকাণ্ড প্রভাবিত হয়েছে। রাজা রামমোহন রায় তৎকালীন সমাজের সামাজিক ও রাজনৈতিক গতিধারা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করেন। তিনি হিন্দুসমাজের সতীদাহ, বাল্যবিবাহ, কৌলীন্য প্রথা, মূর্তিপূজা ও অন্যান্য কুসংস্কার দূর করতে প্রচেষ্টা চালান। হিন্দুধর্মের সংস্কার তথা নিজ ধর্মীয় মতবাদ প্রচারের উদ্দেশ্যে আত্মীয় সভা নামে একটি সমিতি গঠন করেন। তিনি ব্রাহ্মসমাজ প্রতিষ্ঠা করেন। শুধু সামাজিক আর ধর্র্মীয় বিষয় নয়, শিক্ষাবিস্তারেও তার অবদান ছিল। দেশের মানুষের জন্য ইংরেজি শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে অ্যাংলো হিন্দু স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। অনুরূপভাবে উদ্দীপকের জহিরও বাল্যবিবাহ তথা সামাজিক কুসংস্কার নির্মূলের পাশাপাশি শিক্ষাবিস্তারের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করে। পথশিশু ও বড়দের শিক্ষার জন্য রাতের স্কুল প্রতিষ্ঠা করে। তার এই নানামুখী উদ্যোগে রাজা রামমোহন রায়ের কর্মকাণ্ডেরই ধারাবাহিকতার অনুরূপ। তাই বলা যায়, জহির রাজা রামমোহন রায়ের কর্মকাণ্ড দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে।
ঘ আকাশের কাজের সঙ্গে সৈয়দ আমীর আলীর কাজের মিল রয়েছে। সৈয়দ আমীর আলী মুসলমানদের স্বার্থরক্ষামূলক দাবিদাওয়া আদায়ের জন্য নিজস্ব সংগঠনের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন। এজন্য ১৮৭৭ খ্রিষ্টাব্দে কলকাতায় ‘সেন্ট্রাল মোহামেডন অ্যাসোসিয়েশন’ নামে একটি সমিতি গঠন করেন। তিনি বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় শিক্ষা ও বিভিন্ন ক্ষেত্রে মুসলমানদের পিছিয়ে পড়ার বিষয়টি নিয়ে লেখালেখি করেন। তার এই লেখালেখির ফলে ১৮৮৫ খ্রিষ্টাব্দে সরকার মুসলমানদের অগ্রগতির জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। এ কারণে তিনি কলকাতা মাদ্রাসায় কলেজ পর্যায়ে ইংরেজি শিক্ষা এবং করাচিতে একটি কলেজ প্রতিষ্ঠায় উৎসাহিত করেন। উদ্দীপকের আকাশ ও সৈয়দ আমীর আলীর মতো সচেতন মানসিকতার পরিচয় দিয়ে ‘সেন্ট্রাল মোহামেডান অ্যাসোসিয়েশনের মতো গ্রামে একটি ক্লাব প্রতিষ্ঠা করেছে। যেখানে ছেলেমেয়েদের ধর্ম, সমাজ, সংস্কৃতি ও দেশ নিয়ে শিক্ষার পাশাপাশি ধর্মের আধুনিক ব্যাখ্যাও তাদের সামনে তুলে ধরা হয়। উপর্যুক্ত আলোচনা থেকে বলতে পারি, সৈয়দ আমীর আলীর জন্ম, চেতনামূলক কাজ এবং আধুনিক মানসিকতারই বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে উদ্দীপকে আকাশের কর্মকাণ্ডে।
মাস্টার ট্রেইনার প্রণীত সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন- ৬ ফকির সন্ন্যাসি আন্দোলন
আঠারো শতকের শেষার্ধে ইংরেজদের বিরুদ্ধে একটি আন্দোলনের সূচনা হয়। উক্ত আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীরা মুষ্টি সংগ্রহের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করত। ধর্মীয় উৎসব ও তীর্থস্থান দর্শনের জন্য তারা এক স্থান থেকে আরেক স্থানে ঘুরে বেড়াত।
ক. কে ‘হিসপাবাস’ নামক পত্রিকা সম্পাদনা করেন? ১
খ. বিশ শতকের শুরুতে বাঙালি মুসলমান মেয়েদের অবস্থা কিরূপ ছিল? ২
গ. উদ্দীপকে ইঙ্গিতকৃত আন্দোলনের কারণ ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. বিভিন্ন কারণে উক্ত আন্দোলনের অবসান ঘটে বিশ্লেষণ কর। ৪
ক হেনরি লুই ডিরোজিও ‘হিসপাবাস’ নামক পত্রিকা সম্পাদন করেন।
খ বিশ শতকের শুরুতে যখন ঘরে ঘরে শিক্ষার আলো জ্বলছে বাঙালি মুসলমান মেয়েরা তখন পিছিয়ে ছিল। মুসলমান সমাজের মেয়েরা সব ধরনের অধিকার হতে বঞ্চিত ছিল। লেখাপড়া শেখা তাদের জন্য এক রকম নিষিদ্ধই ছিল। ধর্মের নামে তাদের রাখা হতো পর্দার আড়ালে গৃহবন্দী করে। বেগম রোকেয়ার অবরোধবাসিনী, পদ্মরাগ এবং মতিচুর, সুলতানার স্বপ্ন প্রভৃতি গ্রন্থে সে চিত্র ফুটে উঠেছে।
গ উদ্দীপকে ফকির-সন্ন্যাসী আন্দোলনের ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে। উদ্দীপকে দেখা যায়, আঠারো শতকের শেষার্ধে ইংরেজদের বিরুদ্ধে একটি আন্দোলনের সূচনা হয়। এ আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীরা মুষ্টি সংগ্রহের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করত এবং ধর্মীয় উৎসব ও তীর্থস্থান দর্শনের জন্য এক স্থান থেকে অন্য স্থানে ঘুরে বেড়াত, যা ফকির-সন্ন্যাসী আন্দোলনকে নির্দেশ করে। ইংরেজদের দমন-নিপীড়নমূলক কর্মকাণ্ডের ফলে ফকির-সন্ন্যাসী আন্দোলন সংঘটিত হয়। এই আন্দোলন করেছিলেন ফকির-সন্ন্যাসীগণ। ব্রিটিশ শাসনের পূর্বে তারা স্বাধীনভাবে ঘোরাফেরা করতে পারত। নিজেদের নিরাপত্তার জন্যই তাদের হাতে হাল্কা অস্ত্র থাকত। ইংরেজ সরকার তাদেরকে স্বাধীনভাবে চলতে বাধাদান করে। তাদের ওপর করারোপ করে, ভিক্ষা ও মুষ্টি সংগ্রহকে বেআইনি ঘোষণা করে। তাছাড়া তাদেরকে ডাকাত, দস্যু বলে আখ্যায়িত করতে থাকে। যার ফলে ফকির-সন্ন্যাসীগণ ইংরেজদের ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। তারা আন্দোলনের ডাক দেয়। তাদের পরিচালিত আন্দোলনই হলো ফকির-সন্ন্যাসী আন্দোলন।
ঘ উদ্দীপকে ফকির-সন্ন্যাসী আন্দোলনের ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। ইংরেজদের দমননীতির কারণে এই আন্দোলন শুরু হয়। আবার এই আন্দোলনের অবসানের পেছনেও বিভিন্ন কারণ বিদ্যমান ছিল। ফকির-সন্ন্যাসী আন্দোলন ছিল ফকির ও সন্ন্যাসীদের যুগপৎ আন্দোলন। ফকির আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন ফকির মজনু শাহ। ১৭৭৭-১৭৮৬ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত রংপুর, রাজশাহী, দিনাজপুর ও ময়মনসিংহ জেলায় ইংরেজদের সাথে তিনি সংঘর্ষে লিপ্ত হন। তার যুদ্ধ কৌশল ছিল গেরিলা পদ্ধতি। ইংরেজদের পক্ষে তাকে চ‚ড়ান্তভাবে পরাজিত করা কখনই সম্ভব হয়নি। তিনি ১৭৮৭ খ্রিষ্টাব্দে মৃত্যুবরণ করলে বিদ্রোহের নেতৃত্ব গ্রহণ করেন মুসা শাহ, সোবান শাহ, চেরাগ আলী শাহ, করিম শাহ, মাদার বকস প্রমুখ ফকির। ১৮০০ খ্রিষ্টাব্দে তারা চ‚ড়ান্তভাবে পরাজিত হয়। সন্ন্যাসী বিদ্রোহের নেতা ছিলেন ভবানী পাঠক, তিনি ইংরেজদের সাথে সরাসরি যুদ্ধে লিপ্ত হন। তিনি ১৭৮৭ খ্রিষ্টাব্দে লেফটেন্যান্ট ব্রেনানের নেতৃত্বে একদল ব্রিটিশ সৈন্যের আক্রমণে দুই সহকারীসহ নিহত হন। সন্ন্যাসী আন্দোলনের প্রধান নেতার মৃত্যুর ফলে সন্ন্যাসী আন্দোলনেরও অবসান ঘটে। ইংরেজদের দমন অভিযানের ফলে ফকির-সন্ন্যাসী আন্দোলনের পরিসমাপ্তি ঘটে।
প্রশ্ন- ৭ হাজী শরীয়ত উল্লাহ ও রাজা রামমোহন রায়ের কর্মকাণ্ড
১৭৫৭ খ্রিষ্টাব্দে পলাশীর যুদ্ধের পর বাংলার রাজনৈতিক ও সামাজিক জীবনে নেমে আসে অবক্ষয়। এ সময় বাংলার অর্থনৈতিক ও সামাজিক ভিত্তি প্রায় ভেঙে যায়। এদেশের ধর্মীয় ও সামাজিক জীবনে প্রবেশ করতে থাকে নানা কুসংস্কার। এই অবস্থার হাত থেকে বাংলার মানুষকে রক্ষা করার জন্য প্রথম এগিয়ে আসেন দুজন বাঙালি। একজনের সংস্কার আন্দোলন ছিল হিন্দুসমাজকে কেন্দ্র করে, অন্য জনের সংস্কার আন্দোলন ছিল মুসলমান সমাজকে কেন্দ্র করে। বাংলার সামাজিক ও ধর্মীয় সংস্কারের ইতিহাসে তাদের অবদান ছিল অপরিসীম।
ক. ‘ইস্ট ইন্ডিয়া’ নামক দৈনিক পত্রিকার প্রকাশক কে ছিলেন? ১
খ. ফরায়েজি আন্দোলনের নামকরণ সম্পর্কে ধারণা দাও? ২
গ. উদ্দীপকে বর্ণিত মুসলমান সমাজকে কেন্দ্র করে কোন আন্দোলন সংঘটিত হয়েছিল? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. ঐতিহাসিক দৃষ্টিভঙ্গির আলোকে উদ্দীপকে উল্লিখিত ব্যক্তিদ্বয়ের কর্মকাণ্ড বিশ্লেষণ কর। ৪
ক ‘ইস্ট ইন্ডিয়া’ নামক দৈনিক পত্রিকার প্রকাশক ছিলেন হেনরি লুই ডিরোজিও।
খ ফরায়েজি আন্দোলনের প্রবর্তক ছিলেন হাজী শরীয়তউলাহ। তার উদ্দেশ্য ছিল মুসলমান সমাজে দিনে দিনে যেসব কুসংস্কার প্রবেশ করেছে তার মূলোৎপাটন করে মুসলমানদেরকে ইসলাম ধর্মের মূল অবস্থায় ফিরিয়ে নেয়া। ইসলাম ধর্মে করণীয় কর্তব্যকে বলা হয় ফরজ। আর যারা এ ফরজ পালন করে তাদের বলা হয় ফরায়েজি। এ চিন্তা থেকে হাজী শরীয়তউলাহ তার সংস্কার আন্দোলনের নাম দেন ফরায়েজি আন্দোলন।
গ উদ্দীপকে বর্ণিত মুসলমান সমাজকে কেন্দ্র করে হাজী শরিয়তউল্লাহর ধর্মীয় সংস্কার আন্দোলন সংঘটিত হয়েছিল। উদ্দীপক থেকে জানা যায়, ১৯৫৭ খ্রিষ্টাব্দে পলাশীর যুদ্ধের পর বাংলার সামাজিক ও রাজনৈতিক ভিত্তি প্রায় ভেঙে যায়। এদেশের ধর্মীয় ও সামাজিক জীবনে প্রবেশ করতে থাকে নানা-কুসংস্কার। এই অবস্থার হাত থেকে বাংলার মানুষকে বিশেষ করে বাংলার মুসলমানদের বাঁচাতে এগিয়ে আসেন হাজী শরীয়তউল্লাহ। তিনি বুঝতে পারেন, বাংলার মুসলমানরা ইসলামের প্রকৃত শিক্ষা থেকে অনেক দূরে সরে গেছে। তাদের মধ্যে অনৈসলামিক রীতিনীতি, কুসংস্কার, অনাচার প্রবেশ করেছে। ইসলাম ধর্মকে কুসংস্কার আর এসব অনৈসলামিক অনাচারমুক্ত করতে তিনি এক ধর্মীয় সামাজিক সংস্কার আন্দোলনের সূত্রপাত করেন। যা ‘ফরায়েজি আন্দোলন’ নামে পরিচিত। ইসলাম অননুমোদিত সব বিশ্বাস, আচার-আচরণ ও অনুষ্ঠান ত্যাগ করে ইসলাম ধর্মে যা অবশ্যকরণীয় তা পালন করার জন্য তিনি মুসলমান সমাজকে আহŸান জানান। বাংলার শোষিত, নির্যাতিত দরিদ্র কৃষক, র্তাঁতি, তেলি স¤প্রদায় স্বতঃস্ফ‚র্তভাবে তার আন্দোলনে যোগদান করে। মুসলমানদের ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানে জমিদাররা বাধা প্রদান করতে থাকলে জমিদারদের সব অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার প্রস্তুতি নেন। দেশজুড়ে অভাব দেখা দিলে তিনি নুন-ভাতের দাবিও উত্থাপন করেন।
ঘ উদ্দীপকে ইঙ্গিতকৃত ব্যক্তিদ্বয় হলেন হাজী শরীয়তউল্লাহ ও রাজা রামমোহন রায়। পলাশী যুদ্ধ-পরবর্তী বাংলার সামাজিক ও ধর্মীয় জীবনে যে কুসংস্কার ও অনাচার প্রবেশ করতে থাকে তা থেকে বাংলার মানুষকে রক্ষা করার জন্য এগিয়ে এসেছিলেন এ দুজন মনীষী। রাজা রামমোহন রায় সর্বপ্রথম হিন্দু সমাজকে কুসংস্কার মুক্ত করার জন্য ধর্মীয় সংস্কারের প্রতি গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি হিন্দুসমাজের সতীদাহ, বাল্যবিবাহ, কৌলীন্য প্রথা, মূর্তিপূজা ও অন্যান্য কুসংস্কার দূর করতে প্রচেষ্টা চালান। তিনি সব কুসংস্কার দূর করে আদি একেশ্বরবাদের ভিত্তিতে হিন্দুধর্ম পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে সচেষ্ট হন। হিন্দুধর্মের সংস্কার তথা নিজ ধর্মীয় মতবাদ প্রচারের উদ্দেশ্যে তিনি আত্মীয়সভা গঠন করেন, শিক্ষাবিস্তারেও তার অবদান ছিল অপরিসীম। প্রায় সমসাময়িক সময়ে হাজী শরীয়তউল্লাহ মুসলিম সমাজ থেকে অনাচার ও কুসংস্কার দূর করার লক্ষ্যে আন্দোলন গড়ে তোলেন। ইসলাম ধর্মকে কুসংস্কার আর অনৈসলামিক অনাচার মুক্ত করতে তিনি এক ধর্মীয়-সামাজিক সংস্কার আন্দোলনের সূত্রপাত করেন। বাংলার শোষিত, নির্যাতিত, দরিদ্র কৃষক, তাঁতি, তেলি স¤প্রদায় স্বতঃস্ফ‚র্তভাবে তার এই আন্দোলনে যোগদান করে। জমিদাররা মুসলমানদের ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানে বাধা প্রদান করলে তিনি জমিদারদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার প্রস্তুতি নেন। ঐতিহাসিক দৃষ্টিকোণ থেকে বলা যায়, রামমোহন রায় ও হাজী শরীয়তউল্লাহর সংস্কার আন্দোলনের মূল বিষয় ছিল। দুজনই দুটো ধর্মকে কেন্দ্র করে আন্দোলন গড়ে তোলেন। তাদের এ সংস্কার আন্দোলনের ফলে মানুষ সর্বপ্রথম কুসংস্কারের বেড়াজালের বাইরে আসতে সক্ষম হয়। হিন্দু ও মুসলমান উভয় ধর্মের মানুষদের চেতনাবোধ জাগ্রত করতে এ দুজন মনীষীর ভ‚মিকা ছিল উল্লেখযোগ্য।
প্রশ্ন- ৮ রাজা রামমোহন রায়
ক. তিতুমীর কার নেতৃত্বে সুদক্ষ শক্তিশালী লাঠিয়াল বাহিনী গড়ে তোলেন? ১
খ. নওয়াব আব্দুল লতিফের কর্মজীবন ব্যাখ্যা কর। ২
গ. প্রদর্শিত ছবির ব্যক্তি সম্পর্কে ধারণা দাও। ৩
ঘ. উক্ত ব্যক্তিকে আধুনিক ভারতের রূপকার বলা হয়Ñ এই কথার সাথে কি তুমি একমত? উত্তরের পক্ষে যুক্তি দাও। ৪
ক তিতুমীর গোলাম মাসুমের নেতৃত্বে সুদক্ষ শক্তিশালী লাঠিয়াল বাহিনী গড়ে তোলেন।
খ নওয়াব আবদুল লতিফ শিক্ষাজীবন শেষ করে প্রথমে ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল এবং পরে কলকাতা মাদ্রাসায় অধ্যাপনা করেন। ১৮৪৯ খ্রিষ্টাব্দে তিনি ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটের পদে যোগদান করেন। ১৮৭৭ খ্রিষ্টাব্দে তাকে কলকাতা প্রেসিডেন্সির ম্যাজিস্ট্রেট পদে উন্নীত করা হয়। ১৮৮৪ খ্রিষ্টাব্দে তিনি সরকারি চাকরি থেকে অবসর গ্রহণ করেন।
গ প্রদর্শিত ছবিটি হচ্ছে রাজা রামমোহন রায়ের। বাংলার নবজাগরণের স্রষ্টা ভারতের প্রথম আধুনিক পুরুষ ছিলেন রাজা রামমোহন রায়। ১৭৭৪ খ্রিষ্টাব্দে হুগলি জেলার রাধানগর গ্রামে তার জন্ম। তিনি অসাধারণ পাণ্ডিত্যের অধিকারী ছিলেন। বিশেষ করে আরবি, ফারসি, উর্দু, ল্যাটিন ও গ্রিক ভাষায় তিনি অসামান্য দক্ষতা অর্জন করেন। তিনি বেদান্তসূত্র ও বেদান্তসারসহ উপনিষদের অনুবাদ প্রকাশ করেন। তার অন্যান্য রচনার মধ্যে আছে তুহ্ফাতুল মুজাহহিদদীন (একেশ্বরবাদ সৌরভ), মনজারাতুল আদিয়ান (বিভিন্ন ধর্মের ওপর আলোচনা), ভট্টাচার্যের সহিত বিচার, হিন্দুদিগের পৌত্তলিক ধর্মপ্রণালি ইত্যাদি। তাছাড়া তিনি সম্বাদ কৌমুদী, মিরাতুল আখবার ও ব্রাহ্মণিকাল ম্যাগাজিন নামে তিনটি পত্রিকার প্রকাশকও ছিলেন।
ঘ রাজা রামমোহন রায়কে আধুনিক ভারতের রূপকার বলা হয় এ কথার সাথে আমি একমত। রাজা রামমোহন রায় তৎকালীন সমাজের সামাজিক ও রাজনৈতিক গতিধারা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করেন। নিজের চিন্তাধারার আলোকে নতুন সমাজ গঠনে প্রয়াসী হন। তিনি হিন্দুসমাজের সতীদাহ, বাল্যবিবাহ, ‘কৌলীন্য প্রথা’, মূর্তিপূজা ও অন্যান্য কুসংস্কার দূর করতে প্রচেষ্টা চালান। তাছাড়া তিনি সব কুসংস্কার দূর করে আদি একেশ্বরবাদের ভিত্তিতে হিন্দুধর্ম পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে সচেষ্ট হন। হিন্দুধর্মের সংস্কার তথা নিজ ধর্মীয় মতবাদ প্রচারের উদ্দেশ্যে ‘আত্মীয়সভা’ নামে একটি সমিতি গঠন করেন। ১৮২৮ খ্রিষ্টাব্দের ২০ আগস্ট তিনি ব্রাহ্মসমাজ প্রতিষ্ঠা করেন। ১৮৩০ খ্রিষ্টাব্দে তিনি ব্রাহ্মসমাজের উপাসনালয় স্থাপন করেন। তার ব্রাহ্মসমাজ প্রতিষ্ঠা উপমহাদেশের ধর্মীয় ইতিহাসে এক নবযুগের সূচনা করে। শুধু সামাজিক আর ধর্মীয় বিষয় নয়, শিক্ষাবিস্তারেও তার অবদান ছিল। তিনি বিশ্বাস করতেন, দেশের মানুষের জন্য প্রয়োজন ইংরেজি শিক্ষার। এ কারণে তিনি নিজে সংস্কৃত পণ্ডিত হওয়া সত্তে¡ও ১৯২৩ খ্রিষ্টাব্দে প্রস্তাবিত সরকারি সংস্কৃত কলেজ প্রতিষ্ঠার বিরোধিতা করেন। রাজা রামমোহন ১৮২২ খ্রিষ্টাব্দে কলকাতায় ‘অ্যাংলো হিন্দু স্কুল’ প্রতিষ্ঠা করেন, যেখানে ইংরেজি, দর্শন, আধুনিক বিজ্ঞান পড়াবার ব্যবস্থা ছিল। এদেশবাসীকে সংস্কৃত শিক্ষার বদলে আধুনিক জ্ঞানবিজ্ঞান, দর্শন শিক্ষার গুরুত্ব ব্যাখ্যা করে গভর্নর জেনারেল লর্ড আমহার্স্টকে চিঠি লেখেন। তাছাড়া ভারতীয়দের শিক্ষার জন্য ইংরেজ সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ১ লাখ টাকা তিনি সংস্কৃত ও মাদরাসা শিক্ষায় ব্যয় না করে আধুনিক শিক্ষায় ব্যয় করার জন্যও আবেদন করেন। সুতরাং বলা যায় যে, রাজা রামমোহন রায়ই হচ্ছেন আধুনিক ভারতের রূপকার।
প্রশ্ন- ৯ ডিরোজিও ও ইয়াং বেঙ্গল মভমেন্ট
ভিনদেশি মানুষ ফাদার মারিনো রিগনের কাছে বাঙালি জাতি চিরঋণী। কারণ তিনি ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে মানবতার মূলমন্ত্রে উজ্জীবিত হয়ে যুদ্ধপীড়িত ও যুদ্ধাহত মানুষের জন্য দাঁড়িয়েছিলেন। পরবর্তীতে বাঙালি যুবসমাজের মধ্যে প্রগতিবাদী, সংস্কারমুক্ত অসা¤প্রদায়িক চেতনাসমৃদ্ধ একটি আন্দোলনের সূচনা করেন। এজন্য তিনি ‘জাগো যুবক জাগো’ নামে একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন। যে সংগঠনের সদস্যরা তরুণ সমাজের পুরনো ধারণা পাল্টে দিতে কুসংস্কারমুক্ত যুক্তিবাদী দর্শন প্রচার করেন।
ক. কত খ্রিষ্টাব্দে বিধবা বিবাহ আইন পাস হয়? ১
খ. নারী অধিকার প্রতিষ্ঠায় বেগম রোকেয়ার গৃহীত পদক্ষেপগুলো ব্যাখ্যা কর। ২
গ. উদ্দীপকে ‘জাগো যুবক জাগো’ সংগঠনটির সাথে ইংরেজ শাসনামলের সাদৃশ্যপূর্ণ আন্দোলনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. উক্ত আন্দোলনের প্রবক্তা কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত সংগঠন তরুণ সমাজের পুরনো ধারণাকে পাল্টে দিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছিলেন বিশ্লেষণ কর। ৪
ক ১৮৫৬ খ্রিষ্টাব্দে বিধবাবিবাহ আইন পাস হয়।
খ মুসলমান নারীমুক্তি আন্দোলনের পথিকৃৎ বেগম রোকেয়া নারী অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য প্রয়াসী এক অনন্য নাম। সমাজের কুসংস্কার, নারীসমাজের বঞ্চনা, প্রভৃতির জন্য তিনি সারাজীবন কাজ করেছেন। তার সব লেখনির মধ্যে তৎকালীন নারীসমাজের করুণ চিত্র ফুটে উঠেছে। তিনি নারীশিক্ষার জন্য ভাগলপুরে একটি প্রাথমিক বালিকা বিদ্যালয় স্থাপন করেন। ১৯১৬ খ্রিষ্টাব্দে ‘আঞ্জুমান খাওয়াতীনে ইসলাম’ প্রতিষ্ঠা করেন, যা নারীর শিক্ষা, কর্মসংস্থান ও আইনগত অধিকার প্রতিষ্ঠায় বলিষ্ঠ ভ‚মিকা রাখে।
গ উদ্দীপকে ‘জাগো যুবক জাগো’ সংগঠনটির সাথে ইংরেজ শাসনামলের ‘ইয়াং বেঙ্গল’ আন্দোলনের সাদৃশ্য রয়েছে। ইয়াং বেঙ্গল আন্দোলনের নাম থেকেই এর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য উপলব্ধি করা যায়। ইয়াং বেঙ্গল মানে হলো বাংলার যুবসমাজ। বাংলার যুবকদের মাঝে সংস্কার ও উন্নয়নের লক্ষ্যে এই আন্দোলন। এই আন্দোলনের লক্ষ্য ছিল সামাজিক বৈষম্য, বর্ণপ্রথা, সামাজিক কুসংস্কার ইত্যাদির বিরুদ্ধে জাগিয়ে তোলা। যুবকরা নিজেরাই শুধু এই বিষয়ে সচেতন হবে তা নয়, পাশাপাশি সামাজিকভাবে এসব বিষয়ে জনগণকে সচেতন করে তুলবে। এই আন্দোলনের লক্ষ্য যেমন হিন্দুধর্মের কুসংস্কারকে আঘাত করে তেমনি খ্রিষ্টানদের গোঁড়ামিকেও মূল্যোৎপাটন করতে চায়। আন্দোলনের লক্ষ্য ও গতি-প্রকৃতির দিক থেকে উদ্দীপকের ‘জাগো যুবক জাগো’ আন্দোলনের সাথে ‘ইয়াং বেঙ্গল’ আন্দোলনের মিল রয়েছে।
ঘ উদ্দীপকের ‘জাগো যুবক জাগো’ আন্দোলনের সাথে ডিরোজিওর ‘ইয়াং বেঙ্গল’ আন্দোলনের মিল রয়েছে। ডিরোজিওর প্রতিষ্ঠিত সংগঠন হচ্ছে একাডেমি অ্যাসোসিয়েশন। তরুণ সমাজের পুরনো ধ্যানধারণা পাল্টে দিতে ১৮২৮ খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত একাডেমি অ্যাসোসিয়েশন গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা রাখে। একাডেমিতে তরুণদের এই শিক্ষা দেওয়া হয় যে, যুক্তিহীন বিশ্বাস হলো মৃত্যুর সমান। ১৮৩০ খ্রিষ্টাব্দে ডিরোজিওর অনুপ্রেরণায় হিন্দু কলেজের ছাত্ররা ‘পার্থেনন’ নামে একটি ইংরেজি সাপ্তাহিক পত্রিকা প্রকাশ করে। এতে সমাজ, ধর্ম, বিভিন্ন কুসংস্কারের বিরুদ্ধে নিন্দাসূচক সমালোচনা প্রকাশিত হতে থাকলে কলেজ কর্তৃপক্ষ এটি বন্ধ করে দেয়। তিনি ১৮৩১ খ্রিষ্টাব্দে ‘হিসপাবাস’ নামক একটি পত্রিকা সম্পাদনা এবং ‘ইস্ট ইন্ডিয়া’ নামে একটি দৈনিক পত্রিকা প্রকাশ করেন। ডিরোজিওর মৃত্যুর পরও তার প্রদর্শিত ইয়াং বেঙ্গল আন্দোলনের অনুসরণ করে চলতে থাকে তার হাতে গড়া অনুসারীরা। ডিরোজিওর অনুসারীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন রামতনু লাহিড়ী, রাধানাথ সিকদার, প্যারিচাঁদ মিত্র, কৃষ্ণমোহন ব্যানার্জি প্রমুখ। মাইকেল মধুসূদন দত্ত তার ছাত্র না হলেও তার আদর্শ দ্বারা গভীরভাবে প্রভাবিত হয়েছিলেন। ডিরোজিওর অনুসারীদের আন্দোলন মাইকেল মধুসূদন ও ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরকেও প্রভাবিত করেছিল।
প্রশ্ন- ১০ ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর
রুবেল ও রবি দুই বন্ধু। তারা নবম শ্রেণিতে পড়ে। রুবেল বলে, দরিদ্র পরিবারের ছেলে হয়েও মেধার কারণে একজন গুণীব্যক্তি সংস্কৃত কলেজের অধ্যক্ষ হন এবং তিনি বাংলা গদ্যের জনক। তিনি ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের পণ্ডিতের দায়িত্ব পালন করেন। রবি বলে, তিনি হিন্দুসমাজের নানা কুসংস্কার দূর করে সমাজ সংস্কারে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। তিনি শিক্ষাবিস্তারে অগ্রগণ্য ছিলেন এবং দান ও দাক্ষিণ্যের জন্যও খ্যাত ছিলেন।
ক. রাজা রামমোহন রায় কোন জেলায় জন্মগ্রহণ করেন? ১
খ. কারা ডিরোজিও এর আদর্শে প্রভাবিত হয়েছিলেন? ২
গ. উদ্দীপকে ইঙ্গিতকৃত ব্যক্তির পরিচয় ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. উদ্দীপকে রবির বক্তব্যটিকে তুমি সমর্থন কর কি? নিজের পক্ষে মতামত দাও। ৪
ক রাজা রামমোহন রায় হুগলি জেলায় জন্মগ্রহণ করেন।
খ ডিরোজিও ছিলেন রেনেসাঁর যুগে বাঙালি যুব সমাজের মধ্যে আলোড়ন সৃষ্টিকারী ‘ইয়াং বেঙ্গল’ আন্দোলনের প্রবক্তা। ১৮৩১ খ্রিষ্টাব্দে তার মৃত্যুর পর তার অনুসারীরা ইয়াং বেঙ্গল-এর কার্যক্রম চালিয়ে নেয়। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন রামতনু লাহিড়ী, রাধানাধ সিকদার, প্যারিচাঁদ মিত্র প্রমুখ। মাইকেল মধুসূদন দত্ত তার ছাত্র না হলেও তার আদর্শ দ্বারা গভীরভাবে প্রভাবিত হয়েছিলেন। তার আন্দোলন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরকেও প্রভাবিত করেছিল।
গ উদ্দীপকে ইঙ্গিতকৃত ব্যক্তি হলেন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর একটি দরিদ্র পরিবারের সন্তান ছিলেন। দরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করার কারণে তিনি প্রয়োজনীয় শিক্ষা উপকরণ ও সুযোগ-সুবিদা থেকে বঞ্চিত হয়েছিলেন। তবে অসাধারণ মেধা আর অধ্যবসায়ের গুণে তিনি মাত্র একুশ বছর বয়সে সংস্কৃত সাহিত্য, ব্যাকরণ, ন্যায়, বেদান্ত, স্মৃতি, অলঙ্কার ইত্যাদি বিষয়ে অগাধ পাণ্ডিত্য অর্জন করেছিলেন। তিনি বাংলা গদ্যসাহিত্যকে নবজীবন দান করেন। এজন্য তাকে বাংলা গদ্যসাহিত্যের জনক বলা হয়। শিশুদের লেখাপড়া সহজ করার জন্য তিনি রচনা করেন বর্ণ পরিচয়ের প্রথম ও দ্বিতীয় ভাগ। সংস্কৃত ভাষা শিক্ষাকে সহজ করার জন্য তিনি ব্যাকরণের উপক্রমণিকা রচনা করেন। সংস্কৃত শিক্ষার সংস্কার, বাংলা শিক্ষার ভিত্তিস্থাপন এবং নারী-শিক্ষা প্রসারে অগ্রণী ভ‚মিকা তার অক্ষয় কীর্তি। তিনি হিন্দুসমাজে বিধবা বিবাহের পক্ষে কঠোর অবস্থান নিয়েছিলেন। উদ্দীপকেও রুবেল একজন গুণি ব্যক্তির বিভিন্ন গুণের কথা তুলে ধরেছে, যা ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ।
ঘ উদ্দীপকের বর্ণিত রবির বক্তব্যটিকে আমি সমর্থন করি। রবির বক্তব্য হলো ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর হিন্দুসমাজের নানা কুসংস্কার দূর করে সমাজ সংস্কারে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। তিনি শিক্ষাবিস্তারে অগ্রগণ্য ছিলেন এবং দানদাক্ষিণ্যের জন্যও খ্যাত ছিলেন। উদ্দীপকে বর্ণিত রবির এ বক্তব্যটি আমি সমর্থন করি। শিক্ষাবিস্তারে তার কৃতিত্ব অসাধারণ। সংস্কৃত শিক্ষার সংস্কার, বাংলা শিক্ষার ভিত্তিস্থাপন এবং নারী-শিক্ষা প্রসারে অগ্রণী ভ‚মিকা তার অক্ষয় কীর্তি। তাছাড়া স্কুল পরিদর্শক থাকাকালে গ্রামেগঞ্জে ২০টি মডেল স্কুল, ৩৫টি বালিকা বিদ্যালয় স্থাপন করেন। দেশে প্রচলিত নানা ধরনের কুসংস্কারের বিরুদ্ধে তিনি রুখে দাঁড়িয়েছিলেন। তিনি কন্যাশিশু হত্যা, বহুবিবাহ প্রথার বিরুদ্ধে সংগ্রামে লিপ্ত হন। তিনি হিন্দুসমাজে বিধবা বিবাহের পক্ষে কঠোর অবস্থান নেন। তার নিরলস প্রচেষ্টার কারণে ১৮৫৬ খ্রিষ্টাব্দে গভর্নর জেনারেলের সম্মতিক্রমে বিধবা বিবাহ আইন পাস হয়।
বিদ্যাসাগর দানদাক্ষিণ্যের জন্য খ্যাত ছিলেন। এ কারণে তাকে দয়ার সাগরও বলা হতো। তিনি যথেষ্ট সচ্ছল না হলেও বহু অনাথ ছাত্র তার বাসায় থেকে লেখাপড়া করত। কবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের চরম অর্থকষ্টের সময়ে বিদ্যাসাগর তাকে প্রচুর অর্থ সাহায্য করেছেন। কবি নবীনচন্দ্র সেন তরুণ বয়সে বিদ্যাসাগরের অর্থে লেখাপড়া করেছেন। তাই বলা যায়, রবির বক্তব্যটি সঠিক এবং সমর্থনযোগ্য।
জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন \ ১ \ বিদ্রোহী ফকির দলের নেতার নাম কী ছিল?
উত্তর : বিদ্রোহী ফকির দলের নেতার নাম ছিল মজনু শাহ।
প্রশ্ন \ ২ \ সন্ন্যাসীদের নেতার নাম কী ছিল?
উত্তর : সন্ন্যাসীদের নেতার নাম ছিল ভবানী পাঠক।
প্রশ্ন \ ৩ \ কত খ্রিষ্টাব্দে তিতুমীর দেশে ফিরে এসে ধর্ম সংস্কার কাজে আত্মনিয়োগ করেন?
উত্তর : ১৮২৭ খ্রিষ্টাব্দে তিতুমীর দেশে ফিরে এসে ধর্ম সংস্কার কাজে আত্মনিয়োগ করেন।
প্রশ্ন \ ৪ \ কত খ্রিষ্টাব্দে নারিকেলবাড়িয়া গ্রামে তিতুমীর তার প্রধান ঘাঁটি স্থাপন করেন?
উত্তর : ১৮৩১ খ্রিষ্টাব্দে নারিকেলবাড়িয়া গ্রামে তিতুমীর তার প্রধান ঘাঁটি স্থাপন করেন।
প্রশ্ন \ ৫ \ কত খ্রিষ্টাব্দে নীল কমিশন গঠিত হয়?
উত্তর : ১৮৬১ খ্রিষ্টাব্দে নীল কমিশন গঠিত হয়।
প্রশ্ন \ ৬ \ ফরায়েজি শব্দটি কোন ভাষা থেকে এসেছে?
উত্তর : ফরায়েজি শব্দটি আরবি ফরজ থেকে এসেছে।
প্রশ্ন \ ৭ \ কত খ্রিষ্টাব্দে শরীয়তউল্লাহ মৃত্যুবরণ করেন?
উত্তর : ১৮৪০ খ্রিষ্টাব্দে শরীয়তউলাহ মৃত্যুবরণ করেন।
প্রশ্ন \ ৮ \ দুদু মিয়া কত খ্রিষ্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন?
উত্তর : ১৮১৯ খ্রিষ্টাব্দে দুদু মিয়া মৃত্যুবরণ করেন।
প্রশ্ন \ ৯ \ বাংলার নবজাগরণের স্রষ্টা ভারতের প্রথম আধুনিক পুরুষ কে ছিলেন?
উত্তর: বাংলার নব জাগরণের স্রষ্টা ভারতের প্রথম আধুনিক পুরুষ ছিলেন রাজা রামমোহন রায়।
প্রশ্ন \ ১০ \ রাজা রামমোহন কত খ্রিষ্টাব্দে ‘অ্যাংলো হিন্দু স্কুল’ প্রতিষ্ঠা করেন?
উত্তর : রাজা রামমোহন রায় ১৮২২ খ্রিষ্টাব্দে অ্যাংলো হিন্দু স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন।
প্রশ্ন \ ১১ \ ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর কত খ্রিষ্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন?
উত্তর : ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ১৮২০ খ্রিষ্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন।
প্রশ্ন \ ১২ \ কবি নবীনচন্দ্র সেন তরুণ বয়সে কার অর্থে লেখাপড়া করেছেন?
উত্তর : কবি নবীনচন্দ্র সেন তরুণ বয়সে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের অর্থে লেখাপড়া করেছেন।
প্রশ্ন \ ১৩ \ হাজী মুহম্মদ মহসীন কত খ্রিষ্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন?
উত্তর : হাজী মুহম্মদ মহসীন ১৭৩২ খ্রিষ্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন।
প্রশ্ন \ ১৪ \ হাজী মুহম্মদ মহসীনের পিতার নাম কী?
উত্তর : হাজী মুহম্মদ মহসীনের পিতার নাম মুহম্মদ ফয়জুল্লাহ।
প্রশ্ন \ ১৫ \ সৈয়দ আমীর আলী কত খ্রিষ্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন?
উত্তর : সৈয়দ আমীর আলী ১৮৪৯ খ্রিষ্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন।
প্রশ্ন \ ১৬ \ কত খ্রিষ্টাব্দে বেগম রোকেয়া জন্মগ্রহণ করেন?
উত্তর : ১৮৮০ খ্রিষ্টাব্দে বেগম রোকেয়া জন্মগ্রহণ করেন।
প্রশ্ন \ ১৭ \ ‘মেট্রোপলিটন ইনস্টিটিউশন’-এর প্রতিষ্ঠাতা কে?
উত্তর : ‘মেট্রোপলিটন ইনস্টিটিউশন’-এর প্রতিষ্ঠাতা ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর।
প্রশ্ন \ ১৮ \ ‘মেট্রোপলিটন ইনস্টিটিউশন’-এর বর্তমান নাম কী?
উত্তর : ‘মেট্রোপলিটন ইনস্টিটিউশন’-এর বর্তমান নাম বিদ্যাসাগর কলেজ।
প্রশ্ন \ ১৯ \ কার প্রচেষ্টায় ‘বিধবা বিবাহ আইন’ পাস হয়?
উত্তর : ‘ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের প্রচেষ্টায় ‘বিধবা বিবাহ আইন’ পাস হয়।
প্রশ্ন \ ২০ \ ‘মিরাতুল আখবার’ ম্যাগাজিনের প্রকাশক কে ছিলেন?
উত্তর : ‘মিরাতুল আখবার’ ম্যাগাজিনের প্রকাশক ছিলেন রাজা রামমোহন রায়।
প্রশ্ন \ ২১ \ ধর্মীয় মতবাদ প্রচারের উদ্দেশ্যে রাজা রামমোহন কর্তৃক গঠিত সমিতির নাম কী?
উত্তর : ধর্মীয় মতবাদ প্রচারের উদ্দেশ্যে রাজা রামমোহন কর্তৃক গঠিত সমিতির নাম ছিল আত্মীয় সভা।
প্রশ্ন \ ২২ \ ব্রাহ্মসমাজ গঠিত হয় কখন?
উত্তর : ব্রাহ্মসমাজ গঠিত হয় ১৮২৮ খ্রিষ্টাব্দে ২০ আগস্ট।
প্রশ্ন \ ২৩ \ রাজা রামমোহন রায় কত খ্রিষ্টাব্দে ব্রাহ্মসমাজের উপাসনালয় স্থাপন করেন?
উত্তর : রাজা রামমোহন রায় ১৮৩০ খ্রিষ্টাব্দে ব্রাহ্মসমাজের উপাসনালয় স্থাপন করেন।
প্রশ্ন \ ২৪ \ ডিরোজিও এর সময় ধর্মতলা একাডেমির প্রধান শিক্ষক কে ছিলেন?
উত্তর : ডিরোজিও এর সময় ধর্মতলা একাডেমির প্রধান শিক্ষক ছিলেন ডেবিড ড্রামন্ড।
প্রশ্ন \ ২৫ \ কত খ্রিষ্টাব্দে ‘একাডেমি অ্যাসোসিয়েশন’ প্রতিষ্ঠিত হয়?
উত্তর : ১৮২৮ খ্রিষ্টাব্দে ‘একাডেমি অ্যাসোসিয়েশন’ প্রতিষ্ঠিত হয়।
প্রশ্ন \ ২৬ \ কত খ্রিষ্টাব্দে ‘পার্থেনন’ পত্রিকাটি প্রকাশিত হয়?
উত্তর : ১৮৩০ খ্রিষ্টাব্দে ‘পার্থেনন’ পত্রিকাটি প্রকাশিত হয়।
প্রশ্ন \ ২৭ \ কত খ্রিষ্টাব্দে ‘হিসপাবাস’ পত্রিকাটি প্রকাশিত হয়?
উত্তর : ১৮৩১ খ্রিষ্টাব্দে ‘হিসপাবাস’ পত্রিকাটি প্রকাশিত হয়।
প্রশ্ন \ ২৮ \ তিতুমীরের আন্দোলনের সময় উত্তর ভারতে কী আন্দোলন চলছিল?
উত্তর : তিতুমীরের আন্দোলনের সময় উত্তর ভারতে তরিকায়ে মুহাম্মদীয়া আন্দোলন চলছিল।
প্রশ্ন \ ২৯ \ হাজী শরীয়তুল্লাহ কী বর্জনের জন্য মুসলমানদের নির্দেশ দেন?
উত্তর : হাজী শরীয়তুল্লাহ জুমা ও দুই ঈদের নামাজ বর্জনের জন্য মুসলমানদের নির্দেশ দেন।
প্রশ্ন \ ৩০ \ ১৮৪৯ খ্রিষ্টাব্দে নওয়াব আবদুল লতিফ কোন পদে যোগদান করেন?
উত্তর : ১৮৪৯ খ্রিষ্টাব্দে নওয়াব আবদুল লতিফ ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটের পদে যোগদান করেন।
প্রশ্ন \ ৩১ \ মাত্র একুশ বছর বয়সে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর কোন কলেজের পণ্ডিতের দায়িত্ব লাভ করেন?
উত্তর : মাত্র একুশ বছর বয়সে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের পণ্ডিতের দায়িত্ব লাভ করেন।
প্রশ্ন \ ৩২ \ নদীয়ার চৌগাছায় বিদ্রোহের নেতৃত্ব দেন কে?
উত্তর : নদীয়ার চৌগাছায় বিদ্রোহের নেতৃত্ব দেন বিষ্ণুচরণ বিশ্বাস ও দিগম্বর বিশ্বাস।
প্রশ্ন \ ৩৩ \ কত খ্রিষ্টাব্দে হুগলি মহসীন ফান্ড প্রতিষ্ঠিত হয়?
উত্তর : ১৮৩৬ খ্রিষ্টাব্দে হুগলি মহসীন ফান্ড প্রতিষ্ঠিত হয়।
প্রশ্ন \ ৩৪ \ কত খ্রিষ্টাব্দে হুগলি ইমামবাড়া প্রতিষ্ঠিত হয়?
উত্তর : ১৮৪৮ খ্রিষ্টাব্দে হুগলি ইমামবাড়া প্রতিষ্ঠিত হয়।
প্রশ্ন \ ৩৫ \ মজনু শাহ কত খ্রিষ্টাব্দে সারা উত্তর বাংলায় ইংরেজবিরোধী তৎপরতা শুরু করেন?
উত্তর : মজনু শাহ ১৭৭১ খ্রিষ্টাব্দে সারা উত্তর বাংলায় ইংরেজবিরোধী তৎপরতা শুরু করেন।
প্রশ্ন \ ৩৬ \ ফকির মজনু শাহ কোন পদ্ধতিতে যুদ্ধ করতেন?
উত্তর : ফকির মজনু শাহ গেরিলা পদ্ধতিতে যুদ্ধ করতেন।
প্রশ্ন \ ৩৭ \ কত বছর বয়সে হেনরি ডিরোজিও মৃত্যুবরণ করেন?
উত্তর : ২৩ বছর বয়সে হেনরি ডিরোজিও মৃত্যুবরণ করেন।
প্রশ্ন \ ৩৮ \ ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর জন্মগ্রহণ করেন কোথায়?
উত্তর : ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর জন্মগ্রহণ করেন মেদেনীপুর জেলার বীরসিংহ গ্রামে।
অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন \ ১ \ ইংরেজরা কেন ফকির-সন্ন্যাসীদের গতিবিধির ওপর কড়া নজর রাখতে শুরু করে?
উত্তর : নবাবকে সাহায্য করার কারণে ইংরেজরা ফকির সন্ন্যাসীদের গতিবিধির প্রতি কড়া নজর রাখতে থাকে। বাংলার ফকির-সন্ন্যাসী আন্দোলন ছিল ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন। আঠারো শতকের শেষার্ধে এই আন্দোলনের শুরু। এর আগে নবাব মীরকাশিম ইংরেজদের সঙ্গে যুদ্ধে ফকির-সন্ন্যাসীদের সাহায্য চান। এই ডাকে সাড়া দিয়ে ফকির-সন্ন্যাসীরা নবাবের পক্ষে যুদ্ধ করে। যুদ্ধে পরাজিত হয়ে মীরকাশিম পালিয়ে গেলেও ফকির-সন্ন্যাসীরা তাদের ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন চালিয়ে যেতে থাকে।
প্রশ্ন \ ২ \ ইংরেজরা কেন এই উপমহাদেশে এসেছিল?
উত্তর : ইংরেজরা ব্যবসা-বাণিজ্য করতে এই উপমহাদেশে এসেছিল। উপমহাদেশের শাসকদের দুর্বলতার সুযোগে তারা এদেশের শাসক হয়ে উঠে। তবে সবসময় তাদের ব্যবসায়ী বুদ্ধি ছিল সজাগ। এই সজাগ ব্যবসায়ী বুদ্ধির কারণেই বাংলার উর্বর ফসলের জমিতে তাদের দৃষ্টি পড়ে। তারা এই উর্বর জমিগুলোতে খাদ্য ফসলের (খাবার ফসল) পরিবর্তে বাণিজ্য ফসল (বাণিজ্যের জন্য যে ফসল) উৎপাদনের আগ্রহী হয়ে উঠে। নীল ছিল তাদের সেই বাণিজ্যিক ফসল।
প্রশ্ন \ ৩ \ ডিরোজিও কেন বিখ্যাত?
উত্তর : আদর্শ ডিরোজিওকে তার শিশুকাল থেকে মৃত্যু পর্যন্ত প্রভাবিত করে রেখেছিল। যে কারণে পরবর্তীকালে তিনি হতে পেরেছিলেন রাজা রামমোহন রায়ের যোগ্য উত্তরসূরি। তিনি ছিলেন ‘রেনেসাঁ’ যুগে বাঙালি যুব সমাজের মধ্যে আলোড়ন সৃষ্টিকারী ‘ইয়াং বেঙ্গল’ আন্দোলনের প্রবক্তা। বয়সে তরুণ হলেও তিনি ইতিহাস, ইংরেজি, সাহিত্য, দর্শনশাস্ত্রে গভীর জ্ঞানের অধিকারী ছিলেন। তার দূরদৃষ্টি, বাগ্মিতা ও বিশ্লেষণক্ষমতা তৎকালীন তরুণ সমাজকে ব্যাপক প্রভাবিত করতে সক্ষম হয়েছিল।
প্রশ্ন \ ৪ \ নওয়াব আবদুল লতিফের উপাধি প্রাপ্তির কারণ কী?
উত্তর : আবদুল লতিফ শিক্ষাজীবন শেষ করে প্রথমে ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল এবং পরে কলকাতা মাদ্রাসায় অধ্যাপনা করেন। ১৮৪৯ খ্রিষ্টাব্দে তিনি ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটের পদে যোগদান করেন। ১৮৭৭ খ্রিষ্টাব্দে তাকে কলকাতা প্রেসিডেন্সি ম্যাজিস্ট্রেট পদে উন্নীত করা হয়। ১৮৮৪ খ্রিষ্টাব্দে তিনি সরকারি চাকরি থেকে অবসর গ্রহণ করেন। কর্মজীবনে তার কৃতিত্বের জন্য সরকার তাকে প্রথমে ‘খান বাহাদুর’ ও পরে ‘নওয়াব’ উপাধিতে ভ‚ষিত করে।
প্রশ্ন \ ৫ \ ইংরেজরা এদেশে নীলচাষে বেশি গুরুত্ব দিয়েছিল কেন?
উত্তর : ইংরেজরা এদেশে এসেছিল ব্যবসা-বাণিজ্য করতে আর ঐ সময়ে নীল ব্যবসা ছিল খুবই লাভজনক। বস্তুত শিল্পের উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে কাপড় রং করার জন্য ব্রিটেনে নীলের চাহিদা বেড়ে গিয়েছিল। তাছাড়া আমেরিকার ব্রিটিশ উপনিবেশগুলো স্বাধীন হয়ে যাওয়ার কারণে ইংরেজ বণিকদের সেখানকার নীলচাষ বন্ধ হয়ে যায়। ফলে বাংলা হয়ে ওঠে নীল সরবরাহের প্রধান কেন্দ্র।
প্রশ্ন \ ৬ \ দুদু মিয়া লাঠিয়াল বাহিনী গঠন করেছিলেন কেন?
উত্তর : জমিদারশ্রেণি নানা অজুহাতে ফরায়েজি প্রজাদের ওপর অত্যাচার শুরু করলে হাজী শরীয়তুল্লাহ লাঠিয়াল বাহিনী গঠনের সিদ্ধান্ত
নিয়েছিলেন। দুদু মিয়া জালাউদ্দিন মোল্লাকে সেনাপতি নিয়োগ করে
এক সুদক্ষ লাঠিয়াল বাহিনী গড়ে তোলেন। দুদু মিয়া ফরায়েজিদের প্রতিরোধ সংগ্রামকে দৃঢ় এবং শক্তিশালী করার লক্ষ্যে তিনি নিজেও লাঠি চালনা শিক্ষালাভ করেন। দুদু মিয়ার লাঠিয়াল বাহিনী গঠনের উদ্দেশ্য ছিল জমিদারদের অবৈধ করারোপ ও নীলকরদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের ব্যবস্থা করা।
প্রশ্ন \ ৭ \ রেনেসাঁসের ভাবধারা প্রসারে ইংরেজ প্রশাসকদের অবদান উল্লেখ কর।
উত্তর : বাংলায় রেনেসাঁসের ভাবধারা প্রসারে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কিছু সংখ্যক উদারচেতা প্রশাসকেরও অবদান রয়েছে। এরা দেশি ভাষা সাহিত্যের উন্নতির জন্য প্রবল উৎসাহ দেখিয়েছেন। হেস্টিংস, অ্যালফিনস্টোন, ম্যালকন মনরো, মেটকাফ প্রমুখ ইংরেজ প্রশাসকবৃন্দের অনেকে ভারতবাসীকে পাশ্চাত্য ভাবধারায় জ্ঞান-বিজ্ঞান দর্শনে উজ্জীবিত করাকে তাদের নৈতিক ও মানবিক দায়িত্ব কর্তব্য বলে মনে করতেন। এভাবে বাংলার নবজাগরণে তারা গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করেন।
প্রশ্ন \ ৮ \ সারা ভারতবর্ষের মধ্যে বাংলা আধুনিক চিন্তাচেতনার কেন্দ্রস্থল হয়ে ওঠে কেন?
উত্তর : ইউরোপীয় আর্থসামাজিক রাজনৈতিক পরিবর্তনের প্রভাবে শিক্ষিত বাঙালিদের মনে নবজাগরণের সূচনা হয়। এই সময়ে বিদ্রোহ
ঘোষিত হয় প্রচলিত ধর্ম, শিক্ষা-সংস্কৃতি, সাহিত্য, সামাজিক রীতিনীতি ও ঐতিহ্যের বিরুদ্ধে। এই বিদ্রোহের পরিণতিতে উদ্ভব ঘটে নতুন ধর্মমত, নতুন শিক্ষা, নতুন সাহিত্য, নতুন সামাজিক আদর্শ ও রীতিনীতির। এই নতুনের মধ্যেই বাংলায় রেনেসঁ বা নবজাগরণের সূত্রপাত ঘটে। ফলে সারা ভারতবর্ষের মধ্যে বাংলা হয়ে ওঠে আধুনিক চিন্তাচেতনার কেন্দ্রস্থল।
প্রশ্ন \ ৯ \ ব্রাহ্মসমাজ প্রতিষ্ঠা উপমহাদেশের ধর্মীয় ইতিহাসে কীভাবে নবযুগের সূচনা করেছিলে?
উত্তর : আধুনিক ভারতের রূপকার রাজা রামমোহন তৎকালীন সমাজের সামাজিক ও রাজনৈতিক গতিধারা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করেন। নিজের চিন্তাধারার আলোকে নতুন সমাজ গঠনে প্রয়াসী হন। তিনি হিন্দুসমাজের সতীদাহ, বাল্যবিবাহ, কৌলীন্য, মূর্তিপূজা ও অন্যান্য কুসংস্কার দূর করতে প্রচেষ্টা চালান। তাছাড়া তিনি সব কুসংস্কার দূর করে আদি একেশ্বরবাদের ভিত্তিতে হিন্দুধর্ম পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে সচেষ্ট হন। ১৮২৮ খ্রিষ্টাব্দের ২০ আগস্ট তিনি ব্রাহ্মসমাজ প্রতিষ্ঠা করেন। তার ব্রাহ্মসমাজ প্রতিষ্ঠা উপমহাদেশের ধর্মীয় ইতিহাসে এক নবযুগের সূচনা করে। কারণ, তিনি প্রতিমা পূজাহীন এক নিরাকার ব্রহ্মার আরাধনার কথা বলেন।