পঞ্চম অধ্যায় আদর্শ জীবনচরিত
অনুশীলনীর প্রশ্ন ও উত্তর
বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
১. ‘আল-কানুন ফিত-তিব্ব’ গ্রন্থটির প্রণেতা কে?
ক আল বিরুনি ইবনে সিনা
গ আল রাযি ঘ ইবনে রুশদ
২. খলিফা আল-মানসুর কাকে প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব নিতে প্রস্তাব দিয়েছিলেন?
ক ইমাম গাযালি (র) খ ইমাম শাফি (র)
গ ইমাম বুখারি (র) ইমাম আবু হানিফা (র)
৩. ন্যায়বিচার বলতে বোঝায়
র. আইন অনুযায়ী বিচার করা
রর. গণ্যমান্যদের সম্মান প্রদর্শন করা
ররর. সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠা করা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ রর ও ররর র ও ররর ঘ র, রর ও ররর
নিচের অনুচ্ছেদটি পড় এবং ৪ ও ৫ নম্বর প্রশ্নের উত্তর দাও :
হাফিজ সাহেবের সন্তান যায়েদ বন্ধুদের সাথে মিলে খালেদকে প্রহার করে। খালেদ যায়েদের পিতার কাছে বিচারপ্রার্থী হলে তিনি তাঁর সন্তানকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেন এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের কাজ থেকে বিরত থাকার প্রতিশ্রæতি নেন।
৪. হাফিজ সাহেবের কাজের মাধ্যমে কোন খলিফার আদর্শ ফুটে উঠেছে?
ক হযরত আবু বকর (রা) হযরত উমর (রা)
গ হযরত উসমান (রা) ঘ হযরত আলি (রা)
৫. হাফিজ সাহেবের বিচারের ফলে সমাজে প্রতিষ্ঠিত হবে
র. ভ্রাতৃত
রর. শান্তি
ররর. শৃঙ্খলা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন- ১ হযরত মুহাম্মদ (স) এর মক্কা বিজয় ও বিদায় হজ
সামাজিক প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে জনাব সিহাব চৌধুরী লোকমান সাহেবকে মারাত্মকভাবে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেন। কিছুদিন পর লোকমান সাহেব প্রতিশোধ নেওয়ার সুবর্ণ সুযোগ পেয়েও এ থেকে বিরত থাকেন। এ ধরনের উদারতা দেখে জনাব সিহাব চৌধুরীর মধ্যে বেশ পরিবর্তন আসে। তিনি প্রতিজ্ঞা করেন যে, কোনো মানুষের সাথে আর অন্যায় আচরণ করবেন না। গোত্র-বর্ণ ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে সকলের সাথে ভ্রাতৃত্ব বন্ধনে আবদ্ধ হবেন। সকল কাজকর্মে কুরআন ও হাদিসকে অনুকরণ করে চলবেন।
ক. মদিনা সনদের ধারা কয়টি?
খ. রাসুলের জীবনাদর্শ অনুকরণীয় কেন?
গ. লোকমান সাহেবের আচরণে মহানবি (স)-এর কোন গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার আদর্শ ফুটে উঠেছে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. সিহাব সাহেবের পরিবর্তন বিদায় হজের ভাষণের আলোকে পর্যালোচনা কর।
ক মদিনা সনদের ধারা মোট ৪৭টি।
খ রাসুল (স) সর্বোত্তম চরিত্রের অধিকারী ছিলেন বলে তাঁর জীবনাদর্শ আমাদের জন্য অনুকরণীয়। তাঁর চরিত্রে সব ধরনের সৎগুণাবলি পাওয়া যায়। আল্লাহ বলেন, ‘অবশ্যই তোমাদের জন্য আল্লাহর রাসুলের জীবনে রয়েছে উত্তম আদর্শ।’ আল্লাহর নির্দেশ মতো রাসুলের জীবনাদর্শ অনুকরণ করে আদর্শ মানুষ হওয়া যায়। এজন্যই রাসুল (স)-এর জীবনাদর্শ অনুকরণীয়।
গ লোকমান সাহেবের আচরণে মহানবি (স)-এর মক্কা বিজয়পরবর্তী অপূর্ব ক্ষমার আদর্শ ফুটে উঠেছে। ষষ্ঠ হিজরিতে মক্কার কুরাইশরা মহানবি হযরত মুহাম্মদ (স) ও মুসলমানদের সাথে হুদায়বিয়ার সন্ধি করে। কুরাইশরা সন্ধির শর্ত ভঙ্গ করলে রাসুল (স) ৬৩০ খ্রিষ্টাব্দে ১০০০০ (দশ হাজার) মুসলিম বাহিনী নিয়ে মক্কা অভিমুখে অভিযান পরিচালনা করেন। অতঃপর বিনা রক্তপাতে ও বিনা বাধায় মুসলিম বাহিনী মক্কা বিজয় করে। মক্কা বিজয়ের পর মহানবি হযরত মুহাম্মদ (স) সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করে বলেন-
‘আজ তোমাদের প্রতি আমার কোনো অভিযোগ নেই, যাও তোমরা মুক্ত ও স্বাধীন।’ মক্কা বিজয়ের পর মহানবি (স) ইসলামের চরম শত্রæ আবু সুফিয়ানসহ সকলকে হাতের নাগালে পেয়েও যেভাবে ক্ষমা করে দেন মানবতার ইতিহাসে তা বিরল। এ অপূর্ব ক্ষমার আদর্শ ফুটে উঠেছে উদ্দীপকের লোকমান সাহেবের আচরণে। সামাজিক প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে সিহাব চৌধুরী তাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করেন। অথচ কিছু দিন পর লোকমান সাহেব প্রতিশোধ নেওয়ার সুবর্ণ সুযোগ পেয়েও এ থেকে বিরত থাকেন। কেননা তিনি মহানবি (স)-এর মক্কাবিজয় পরবর্তী অপূর্ব ক্ষমা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করেছেন। সুতরাং বলা যায়, মহানবি (স)-এর আদর্শ অনুসরণ করে উদ্দীপকের লোকমান সাহেব শত্রæকে ক্ষমা করে মহানুভবতার পরিচয় দিয়েছেন।
ঘ সিহাব সাহেবের পরিবর্তন মহানবি (স)-এর বিদায় হজের ভাষণের আলোকে বিশ্লেষণ করা হলো। সামাজিক প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে জনাব সিহাব চৌধুরী লোকমান সাহেবকে মারাত্মকভাবে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করলেও উদ্দীপকের লোকমান সাহেব প্রতিশোধ নেওয়ার সুবর্ণ সুযোগ পেয়েও এ থেকে বিরত থাকেন। এ ধরনের উদারতা দেখে জনাব সিহাব চৌধুরীর মধ্যে বেশ পরিবর্তন আসে। তিনি প্রতিজ্ঞা করেন, কোনো মানুষের সাথে অন্যায় আচরণ করবেন না, গোত্র-বর্ণ ভেদাভেদ ভুলে সকলের সাথে ভ্রাতৃত্ব বন্ধনে আবদ্ধ হবেন। সকল কাজকর্মে কুরআন ও হাদিস অনুকরণ করে চলবেন। বিদায় হজের ভাষণে মহানবি (স) অন্যায়ভাবে কাউকে হত্যা করতে নিষেধ করেছেন। জনাব সিহাব চৌধুরী মহানবি (স)-এর এ বক্তব্য গ্রহণ করেছেন। মহানবি (স) গোত্র-বর্ণ ভেদাভেদ ভুলে সকলের সাথে ভ্রাতৃত্ব বন্ধনে আবদ্ধ হতে বলেছেন। জনাব সিহাব চৌধুরীর মধ্যে এ বক্তব্যের প্রতিফলন লক্ষ করা যায়। মহানবি (স) আরও বলেছেন, ‘তোমাদের পথ প্রদর্শনের জন্য আলাহর বাণী তথা আল-কুরআন এবং রাসুল (স)-এর আদর্শ তথা হাদিস রেখে যাচ্ছি। এগুলো যতদিন তোমরা আঁকড়ে থাকবে ততদিন তোমরা বিপথগামী হবে না।’ জনাব সিহাব চৌধুরী বিপথগামী হতে চান না। একারণে সকল কাজকর্মে তিনি কুরআন ও হাদিস অনুকরণ করে চলতে চান। সুতরাং বলা যায়, জনাব সিহাব সাহেবের পরিবর্তনের মূলে রয়েছে রাসুল (স)-এর বিদায় হজের ভাষণের প্রভাব।
প্রশ্ন- ২ হযরত ফাতিমা (রা) এবং হযরত উসমান (রা)
জামিল সাহেব টঙ্গী এলাকার একজন শিল্পপতি। তিনি এলাকার মানুষের পানির তীব্র সংকট দূর করার উদ্দেশ্যে দশ লক্ষ টাকা ব্যয় করে একটি পানির পাম্প স্থাপন করেন। এছাড়া এলাকায় মুসলিদের তুলনায় মসজিদ ছোট হওয়ায় উহা স¤প্রসারণের ব্যবস্থা করেন। তাঁর সহধর্মিণী মিসেস নাবিলা নিয়মিত সালাত আদায়ের পাশাপাশি ইসলামের মৌলিক বিধানগুলো মেনে চলার আপ্রাণ চেষ্টা করেন। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি সংসারের সকল কাজ নিজ হাতে সম্পাদন করেন।
ক. কোন সাহাবি তাবুক যুদ্ধে সকল সম্পদ ব্যয় করেছিলেন?
খ. ‘হযরত উমর (রা) ছিলেন ন্যায় ও ইনসাফের এক মূর্ত প্রতীক’Ñ বুঝিয়ে লেখ।
গ. মিসেস নাবিলা কাজের মাধ্যমে কোন মহীয়সী নারীর আদর্শের অনুকরণ করার চেষ্টা করেছেন? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. জামিল সাহেবের কার্যক্রম হযরত উসমান (রা)-এর জীবনাদর্শের আলোকে মূল্যায়ন কর।
ক হযরত আবু বকর (রা) তাবুক যুদ্ধে সকল সম্পদ ব্যয় করেছিলেন।
খ হযরত উমর ফারুক (রা) ছিলেন ন্যায় ও ইনসাফের এক মূর্ত প্রতীক। আইনের চোখে তিনি ধনী-গরিব, উঁচু-নীচু, আপন-পর কোনো ভেদাভেদ করতেন না। তাঁর নীতি ছিল ‘আইন সবার জন্য সমান’। এজন্য মদপানের অপরাধে স্বীয় পুত্র আবু শাহমাকে তিনি কঠোর শাস্তি দিয়েছিলেন।
গ মিসেস নাবিলা কাজের মাধ্যমে যে মহীয়সী নারীর আদর্শের অনুকরণ করার চেষ্টা করেছেন তিনি হলেন মহানবি (স) কলিজার টুকরা নবি তনয়া হযরত ফাতিমা (রা)। ইসলামের ইতিহাস পাঠে জানা যায় যে, হযরত আলি (রা) মুসলিম জাহানের খলিফা হওয়ার পরও বাসায় কোনো কাজের লোক রাখেননি। তাঁর স্ত্রী রাসুলের (স) আদরের কন্যা ফাতিমা (রা) নিজ হাতে যাঁতায় গম পিষে গুঁড়ো করতেন ও রুটি তৈরি করতেন। উদ্দীপকের শিল্পপতি জামিল সাহেবের স্ত্রী মিসেস নাবিলা নিয়মিত সালাত আদায়ের পাশাপাশি ইসলামের মৌলিক বিধানগুলো মেনে চলার আপ্রাণ চেষ্টা করেন। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি সংসারের সকল কাজ নিজ হাতে সম্পাদন করেন। উপরিউক্ত আলোচনা থেকে প্রতীয়মান হয় যে, উদ্দীপকের মিসেস নাবিলা হযরত ফাতিমার জীবনাদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে জীবন পরিচালনার চেষ্টা করছেন।
ঘ জামিল সাহেব অনেক জনকল্যাণমূলক কাজ করেছেন। তাঁর কার্যক্রম হযরত উসমান (রা)-এর জীবনাদর্শের আলোকে মূল্যায়ন করা হলো। হযরত উসমান (রা) ছিলেন আরবের শ্রেষ্ঠ ধনী। ইসলাম গ্রহণের পর তিনি ইসলাম ও মানবতার সেবায় অকাতরে তাঁর সম্পদ ব্যয় করেন। মদিনার অধিবাসীদের পানির অভাব দূর করার জন্য তিনি ১৮০০০ (আঠার হাজার) দিনার (স্বর্ণমুদ্রা) ব্যয় করে একটি ক‚প ক্রয় করে তা ওয়াকফ করে দেন। মদিনায় দুর্ভিক্ষ দেখা দিলে তিনি মদিনাবাসীদের মাঝে ত্রাণ হিসেবে খাবার বিতরণ করেন। মসজিদে নববিতে মুসলিদের স্থান সংকুলান না হওয়ায় তিনি সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত খরচে মসজিদ স¤প্রসারণ করেন। হযরত উসমান (রা) এর জীবনাদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে জামিল সাহেবও বিভিন্ন জনহিতকর কাজ করেছেন। তিনি এলাকার মানুষের পানির তীব্র সংকট দূর করার উদ্দেশ্যে দশ লক্ষ টাকা ব্যয় করে একটি পানির পাম্প স্থাপন করেন এবং মুসল্লিদের তুলনায় মসজিদ ছোট হওয়ায় মসজিদ স¤প্রসারণের ব্যবস্থা করেন। অতএব একথা নির্দ্বিধায় বলা যায় যে, উদ্দীপকের জামিল সাহেবের কার্যক্রম হযরত উসমান (রা)-এর উন্নয়ন জীবনাদর্শের প্রতিফলন মাত্র।
সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
প্রশ্ন \ ১ \ মুহাম্মদ নাসির উদ্দিন তুসি কত খ্রিষ্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন?
উত্তর : মুহাম্মদ নাসির উদ্দিন তুসি ১২০১ খ্রিষ্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন।
প্রশ্ন \ ২ \ ‘হিসাব আল জাবর ওয়াল মুকাবালা’ কে রচনা করেন?
উত্তর : ‘হিসাব আল জাবর ওয়াল মুকাবালা’ রচনা করেন মুহাম্মদ ইবনে মুসা আল খাওয়ারেযমি ।
প্রশ্ন \ ৩ \ প্রথম শ্রেণির গণিতবিদ কে ছিলেন?
উত্তর : প্রথম শ্রেণির গণিতবিদ ছিলেন উমর ইবনে ইবরাহিম আল খৈয়াম।
বর্ণনামূলক প্রশ্নোত্তর
প্রশ্ন \ ১ \ মহানবি হযরত মুহাম্মদ (স)-এর সমকালীন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অবস্থা বর্ণনা কর।
উত্তর : মহানবি হযরত মুহাম্মদ (স)-এর আবির্ভাবের পূর্বে আরবের সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয় ও অর্থনৈতিক অবস্থা ছিল চরমভাবে অধঃপতিত। নিচে মহানবি (স)-র সমকালীন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অবস্থার বর্ণনা দেয়া হলোÑ
সামাজিক অবস্থা : মহানবি (স)-এর আবির্ভাবের পূর্বে আরব সমাজের লোকেরা নবি ও রাসুল-এর শিক্ষা ভুলে অসামাজিক কার্যকলাপে লিপ্ত ছিল। তাদের আচার-ব্যবহার ও চালচলন ছিল বর্বর ও মানবতাবিরোধী। সুষ্ঠু ও সুন্দর সামাজিক ব্যবস্থা সম্পর্কে তাদের কোনো ধারণাই ছিল না। মানুষের জান, মাল, ইজ্জতের কোনো নিরাপত্তা ছিল না। নরহত্যা, রাহাজানি, খুনখারাবি, ডাকাতি, মারামারি, কন্যা সন্তানকে জীবন্ত কবর দেওয়া, জুয়াখেলা, মদ্যপান, সুদ, ঘুষ, ব্যভিচার ছিল তখনকার প্রচলিত ব্যাপার। তৎকালীন সমাজে নারীর কোনো মর্যাদা ছিল না। বরং দাসী হিসেবে বিক্রি করা হতো, ভোগবিলাসের বস্তু মনে করা হতো। তৎকালীন আরব সমাজে দাম্পত্য জীবনের কোনো পবিত্রতা ছিল না। একজন লোক যত খুশি স্ত্রী গ্রহণ করত এবং যখন যাকে খুশি তালাক দিত। সে সময় কোনো আইন-কানুন ও ন্যায়নীতি ছিল না। ‘জোর যার মুল্লুক তার’ এটাই ছিল আরবের নীতি। ফলে নানারকম পাপাচারে ভরে গিয়েছিল তখনকার আরবসমাজ।
সাংস্কৃতিক অবস্থা : জাহিলি যুগে আরবের লোকজন অধিকাংশ নিরক্ষর ও অশিক্ষিত হলেও সাহিত্যের প্রতি তাদের খুব অনুরাগ ছিল। তাদের অনেকেই মুখে মুখে গীতিকবিতা চর্চা করত। তবে নগ্নতা, বেহায়াপনা ও অশ্লীলতাই ছিল তাদের সংস্কৃতির অপরিহার্য অঙ্গ। তৎকালীন আরবে উকায মেলা নামে বাৎসরিক একটি মেলা বসত। মেলায় নগ্ন নৃত্যের আয়োজন করা হতো। ঘোড়দৌড় ও উটের দৌড় প্রতিযোগিতার মাধ্যমে শিশু ও নারী হত্যা করে তারা উল্লাস করত। মেলায় তৎকালীন সময়ের প্রসিদ্ধ কবিগণ তাদের স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি করত। যেসব কবিতা সেরা বিবেচিত হতো তা সোনালি বর্ণে লিখে পবিত্র কাবার দেয়ালে ঝুলিয়ে দেওয়া হতো।
প্রাচীন আরবদের সাংস্কৃতিক জীবনে অসংখ্য প্রবাদ-প্রবচন, নানা কিংবদন্তি ও মুখরোচক কাহিনী এবং বাগ্মিতার প্রচলন ছিল, তবে তাদের সংস্কৃতি চর্চার প্রধান মাধ্যম ছিল কবিতা।
কমন উপযোগী জ্ঞান ও অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন \ ১ \ উকায মেলায় কী হতো?
উত্তর : উকায মেলায় তৎকালীন আরবের প্রসিদ্ধ কবিগণ তাদের স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি করত।
প্রশ্ন \ ২ \ জাহিলি যুগে আরবরা কী কারণে বিশ্বে খ্যাতি অর্জন করেছিল?
উত্তর : জাহিলি যুগে আরবরা কবিতা রচনার কারণে বিশ্বে খ্যাতি অর্জন করেছিল।
প্রশ্ন \ ৩ \ আবু তালিবের আর্থিক অবস্থা কেমন ছিল?
উত্তর : আবু তালিবের আর্থিক অবস্থা ছিল অসচ্ছল।
প্রশ্ন \ ৪ \ মহানবি (স) কী চরাতেন?
উত্তর : মহানবি (স) মেষ চরাতেন।
প্রশ্ন \ ৫ \ হারবুল ফিজার কত বছর স্থায়ী ছিল?
উত্তর : হারবুল ফিজার পাঁচ বছর স্থায়ী ছিল।
প্রশ্ন \ ৬ \ মহানবি (স)-এর সাথে সিরিয়া যান কে?
উত্তর : হযরত খাদিজা (রা)-এর অত্যন্ত বিশ্বস্ত কর্মচারী মাইসারা মহানবি (স)-এর সাথে সিরিয়া যান।
প্রশ্ন \ ৭ \ মহানবি (স)-এর কত বছর বয়সে কাবা শরিফ পুনঃনির্মাণ করা হয়?
উত্তর : মহানবি (স)-এর বয়স যখন পঁয়ত্রিশ বছর তখন কাবা শরিফ পুনঃনির্মাণ করা হয়।
প্রশ্ন \ ৮ \ মহানবি (স) খাদিজা (রা)-কে কার অনুমতি নিয়ে বিবাহ করেন?
উত্তর : চাচা আবু তালিবের অনুমতি নিয়ে মহানবি (স) খাদিজা (রা)-কে বিবাহ করেন।
প্রশ্ন \ ৯ \ মদিনায় কারা বসবাস করত?
উত্তর : মদিনা ছিল বিভিন্ন ধর্ম ও গোত্রের লোকজনের আবাস।
প্রশ্ন \ ১০ \ রাসুলে পাক (স)-এর লিখিত সনদের নাম কী?
উত্তর : রাসুলে পাক (স)-এর লিখিত সনদের নাম মদিনা সনদ।
প্রশ্ন \ ১১ \ মহানবি (স) মদিনায় হিজরত করার ফলে কী হলো?
উত্তর : সামাজিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে এক নতুন দিগন্তের সূচনা হলো।
প্রশ্ন \ ১২ \ সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করে মহানবি (স) কুরাইশদের কী বললেন?
উত্তর : সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করে মহানবি (স) কুরাইশদের বললেন, “আজ তোমাদের প্রতি আমার কোনো অভিযোগ নেই, যাও তোমরা মুক্ত ও স্বাধীন।’
প্রশ্ন \ ১৩ \ ইসলাম আমাদের জন্য কী?
উত্তর : ইসলাম আমাদের জন্য পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা।
প্রশ্ন \ ১৪ \ বিদায় হজের ভাষণে প্রথম মহানবি (স) কী বলেন?
উত্তর : বিদায় হজের ভাষণে মহানবি (স) প্রথম বলেন, ‘হে মানবসকল! আমার কথা মনোযোগ দিয়ে শুনবে। কারণ আগামী বছর আমি তোমাদের সাথে এখানে সমবেত হতে পারব কিনা জানি না।’
প্রশ্ন \ ১৫ \ বয়স্কদের মধ্যে সর্বপ্রথম ইসলাম গ্রহণ করেন কে?
উত্তর : বয়স্কদের মধ্যে হযরত আবু বকর (রা) সর্বপ্রথম ইসলাম গ্রহণ করেন।
প্রশ্ন \ ১৬ \ সিদ্দিক কার উপাধি?
উত্তর : সিদ্দিক হযরত আবু বকর (রা)-এর উপাধি।
প্রশ্ন \ ১৭ \ কার শাসন সর্বকালের শাসকদের জন্য আদর্শ?
উত্তর : হযরত আবু বকর (রা)-এর শাসন সর্বকালের শাসকদের জন্য আদর্শ।
প্রশ্ন \ ১৮ \ কে আটার বস্তা কাঁধে নিয়েছিলেন?
উত্তর : হযরত উমর (রা) আটার বস্তা কাঁধে নিয়েছিলেন।
প্রশ্ন \ ১৯ \ হযরত উমর (রা)-এর বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছিল কে?
উত্তর : হযরত উমর (রা) এর বিরুদ্ধে এক প্রজা অভিযোগ দিয়েছিল।
প্রশ্ন \ ২০ \ প্রজার প্রশ্নের উত্তর দিয়েছিলেন কে?
উত্তর : হযরত উমর (রা)-এর ছেলে আব্দুলাহ প্রজার প্রশ্নের উত্তর দিয়েছিলেন।
প্রশ্ন \ ২১ \ হযরত উসমান (রা)-কে আলাহ কী দিয়েছিলেন?
উত্তর : হযরত উসমান (রা)-কে আলাহ প্রচুর ধনসম্পদ দিয়েছিলেন।
প্রশ্ন \ ২২ \ কাকে ‘জামিউল কুরআন’ বলা হয়?
উত্তর : হযরত উসমান (রা)-কে ‘জামিউল কুরআন’ বলা হয়।
প্রশ্ন \ ২৩ \ হযরত উসমান (রা)-এর ওপর কে অত্যাচার করেন?
উত্তর : ইসলাম গ্রহণের কারণে হযরত উসমান (রা)-এর ওপর তাঁর চাচা হাকাম অত্যাচার করেন।
প্রশ্ন \ ২৪ \ হযরত আলি (রা)-এর পিতার নাম কী ছিল?
উত্তর : হযরত আলি (রা)-এর পিতার নাম ছিল আবু তালিব বিন আব্দুল মুত্তালিব।
প্রশ্ন \ ২৫ \ আবু তালিব কে ছিলেন?
উত্তর : আবু তালিব ছিলেন রাসুল (স)-এর চাচা।
প্রশ্ন \ ২৬ \ কে ইসলামের প্রত্যেকটি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন?
উত্তর : হযরত আলি (রা) ইসলামের প্রত্যেকটি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।
প্রশ্ন \ ২৭ \ ইমাম বুখারি (র)-এর মেধা কেমন ছিল?
উত্তর : ইমাম বুখারি (র) খুব তীক্ষèমেধার অধিকারী ছিলেন।
প্রশ্ন \ ২৮ \ ইমাম বুখারি (র) কার লেখা হাদিস মুখস্থ করেন?
উত্তর : ইমাম বুখারি (র) হযরত আব্দুলাহ ইবনে মুবারক (র) ও আল্লামা ওয়াকি-এর লেখা হাদিস গ্রন্থদ্বয় মুখস্থ করেন।
প্রশ্ন \ ২৯ \ প্রাথমিক জীবনে ইমাম আবু হানিফা (র) কী করতে চাইলেন?
উত্তর : প্রাথমিক জীবনে ইমাম আবু হানিফা (র) ব্যবসায় মনোনিবেশ করতে চাইলেন।
প্রশ্ন \ ৩০ \ ইমাম আবু হানিফা (র) কত বছর বয়স থেকে জ্ঞান সাধনা শুরু করেন।
উত্তর : ইমাম আবু হানিফা (র) সতের বছর বয়স থেকে জ্ঞান সাধনা শুরু করেন।
প্রশ্ন \ ৩১ \ কঠিন সাধনা থাকলে কী করা সম্ভব?
উত্তর : কঠিন সাধনা থাকলে যেকোনো সময় জ্ঞানার্জন করা সম্ভব।
প্রশ্ন \ ৩২ \ ইহইয়াউ উলুমিদ্ দীন অর্থ কী?
উত্তর : ইহইয়াউ উলুমিদ্ দীন অর্থ ধর্মীয় বিজ্ঞানের পুনর্জীবন।
প্রশ্ন \ ৩৩ \ ইমাম গাযালি (র) কাদের জন্য আদর্শ?
উত্তর : যারা আধ্যাত্মিক ও আত্মিক উন্নতি করতে চান ইমাম গাযালি (র) তাদের জন্য আদর্শ।
প্রশ্ন \ ৩৪ \ হুজ্জাতুল ইসলাম অর্থ কী?
উত্তর : হুজ্জাতুল ইসলাম অর্থ ইসলামের দলিল।
প্রশ্ন \ ৩৫ \ চিকিৎসাশাস্ত্রে কাদের অবদান অবিস্মরণীয়?
উত্তর : চিকিৎসাশাস্ত্রে মুসলমানদের অবদান অবিস্মরণীয়।
প্রশ্ন \ ৩৬ \ আল রাযি কে ?
উত্তর : আল রাযি একজন চিকিৎসাবিজ্ঞানী।
প্রশ্ন \ ৩৭ \ ভ‚গোলের অক্ষরেখার পরিমাপ নির্ণয় করেন কে?
উত্তর : ভ‚গোলের অক্ষরেখার পরিমাপ নির্ণয় করেন আল বিরুনি।
প্রশ্ন \ ৩৮ \ আল কাসির পূর্ণনাম কী?
উত্তর : আল কাসির পূর্ণনাম আবুল হাকিম মুহাম্মদ ইবনে আব্দুল মালিক আল খারেজেমি আল কাসি।
প্রশ্ন \ ৩৯ \ আল কাসির কোন গ্রন্থ রসায়নশাস্ত্রের উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ?
উত্তর : আল কাসির লিখা ‘আইনুস সানাহ ওয়া আইওয়ানুস সানাহ’ (ঊংংবহপব ড়ভ ঃযব অৎঃ ধহফ অরফ ড়ভ ড়িৎশবৎ) গ্রন্থটি রসায়নশাস্ত্রের উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ।
প্রশ্ন \ ৪০ \ আল কিন্দি কোথায় জন্মগ্রহণ করেন?
উত্তর : আবু ইয়াকুব ইবনে ইছহাক আল কিন্দি ৮০১ খ্রিষ্টাব্দে কুফায় জন্মগ্রহণ করেন।
প্রশ্ন \ ৪১ \ আল মোকাদ্দাসি ভ্রমণ অভিজ্ঞতার আলোকে কোন গ্রন্থ রচনা করেন?
উত্তর : আল মোকাদ্দাসি দীর্ঘ বিশ বছরের ভ্রমণ অভিজ্ঞতার আলোকে যে গ্রন্থ রচনা করেন তার নাম আহসানুত তাকাসিম ফি মারিফাতুল আকালিম।
প্রশ্ন \ ৪২ \ আল-মাসুদির পুরো নাম কী?
উত্তর : আল-মাসুদির পুরো নাম আবুল হাসান আলি বিন হুসাইন আল-মাসুদি।
প্রশ্ন \ ৪৩ \ মুকাদ্দিমা কী?
উত্তর : ইবনে খালদুন এর ভ‚গোল বিষয়ক গ্রন্থ আল মুকাদ্দিমা নামে পরিচিত।
প্রশ্ন \ ৪৪ \ নাসির উদ্দিন তুসি কত খ্রিষ্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন?
উত্তর : নাসির উদ্দিন তুসি ১২০১ খ্রিষ্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন।
প্রশ্ন \ ৪৫ \ উমর খৈয়াম কত খ্রিষ্টাব্দে ইন্তিকাল করেন?
উত্তর : উমর খৈয়াম ১১২২ খ্রিষ্টাব্দে ইন্তিকাল করেন।
প্রশ্ন \ ৪৬ \ হাসান ইবনে হায়সাম কী বিষয়ের বিজ্ঞানী ছিলেন?
উত্তর : হাসান ইবনে হায়সাম চক্ষুবিজ্ঞানী ছিলেন।
অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন \ ১ \ মহান আলাহ মহানবি (স)-কে কেন প্রেরণ করেন?
উত্তর : আল্লাহ তায়ালা মহানবি (স)-কে পথপ্রদর্শক হিসেবে পৃথিবীতে প্রেরণ করেন। মহানবি (স) এর আবির্ভাবের পূর্বে আরবের মানুষ চরম বর্বরতা ও অজ্ঞতার মাঝে লিপ্ত ছিল। তাদের সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয় ও অর্থনৈতিক অবস্থা ছিল চরমভাবে অধঃপতিত। তারা অসংখ্য মূর্তি তৈরি করত এবং মূর্তির পূজা করত। গোত্রের ভিন্নতার পাশাপাশি তাদের মূর্তিও ভিন্ন ভিন্ন ছিল। তারা পবিত্র কাবাঘরে ৩৬০টি মূর্তি স্থাপন করেছিল। কালের এ চরম অবক্ষয়ের কারণে একজন পথপ্রদর্শক হিসেবে আলাহ তায়ালা সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব মহানবি হযরত মুহাম্মদ (স)-কে প্রেরণ করলেন।
প্রশ্ন \ ২ \ কবিতা সম্পর্কে হযরত ইবনে আব্বাস (রা)-এর অভিমত কী?
উত্তর : হযরত ইবনে আব্বাস (রা) বলেন, ‘যদি তোমরা আলাহর কিতাবের কোনো কিছু বুঝতে না পার তবে তার অর্থ আরবদের কবিতায় তালাশ কর। কারণ কবিতা তাদের জীবনালেখ্য।’
প্রশ্ন \ ৩ \ মহানবি (স) হিলফুল ফুযুল গঠন করেছিলেন কেন?
উত্তর : শৈশবকাল হতেই মহানবি হযরত মুহাম্মদ (স) ছিলেন সত্যবাদী ও শান্তিকামী। সিরিয়া হতে ফিরে এসে তিনি ফিজার যুদ্ধের বিভীষিকা দেখলেন। পাঁচ বছর এ যুদ্ধ স্থায়ী ছিল। হযরত মুহাম্মদ (স) এ যুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন নি। তবে যুদ্ধের ভয়াবহতা প্রত্যক্ষ করেছিলেন। এ যুদ্ধে বহু মানুষ আহত ও নিহত হয়। তাতে তাঁর কোমল হৃদয় কেঁদে উঠে। আহতদের আর্তনাদ শুনে তিনি অস্থির হয়ে পড়েন। শান্তিকামী মানুষ হিসেবে এ অশান্তি তাঁর সহ্য হলো না। তাই তিনি আরবের শান্তিকামী যুবকদের নিয়ে ‘হিলফুল ফুযুল’ (শান্তি সংঘ) গঠন করেন।
প্রশ্ন \ ৪ \ মহানবি (স) কীভাবে নবুয়তপ্রাপ্ত হন?
উত্তর : হযরত খাদিজা (রা)-এর সাথে বিবাহের পর হযরত মুহাম্মদ (স) মক্কার অদূরে হেরা পর্বতের গুহায় গভীর ধ্যানে মগ্ন থাকতেন। দীর্ঘদিন ধ্যানে মগ্ন থাকার পর ৪০ বছর বয়সে ৬১০ খ্রিষ্টাব্দের পবিত্র রমযান মাসের ২৭ তারিখ রাতে হযরত জিবরাইল (আ) তাঁর নিকট ওহি নিয়ে আসেন এবং তিনি নবুয়তপ্রাপ্ত হন। জিবরাইল (আ) বললেন, অর্থ : পড়–ন! আপনার প্রভুর নামে যিনি সৃষ্টি করেছেন (সূরা আলাক, আয়াত ১)। উত্তরে মহানবি হযরত মুহাম্মদ (স) বললেন, আমি পড়তে জানি না। জিবরাইল (আ) তাঁকে জড়িয়ে ধরে বললেন, পড়–ন! তিনি বললেন, আমি পড়তে জানি না। এভাবে তিনবার প্রিয়নবি (স)-কে জড়িয়ে ধরলেন। অতঃপর তৃতীয়বারের সময় তিনি পড়তে সক্ষম হলেন।
প্রশ্ন \ ৫ \ মদিনা সনদ কী? বুঝিয়ে দাও।
উত্তর : মদিনা সনদ হলো মানব ইতিহাসের সর্বপ্রথম লিখিত সংবিধান। হযরত মুহাম্মদ (স) মদিনায় বসবাসরত সকল জাতিকে এক করে সেখানে একটি ইসলামি রাষ্ট্র গঠনের পরিকল্পনা নেন। এ কাজ করতে গিয়ে তিনি সকল গোত্রের নেতাদের সাথে বৈঠক করে একটি লিখিত সনদ প্রণয়ন করেন, যা ইসলামের ইতিহাসে ‘মদিনা সনদ’ নামে খ্যাত।
প্রশ্ন \ ৬ \ মক্কা বিজয়ের কাহিনী সংক্ষেপে লেখ।
উত্তর : ষষ্ঠ হিজরিতে মক্কার কুরাইশরা মহানবি হযরত মুহাম্মদ (স) ও মুসলমানদের সাথে হুদায়বিয়ার সন্ধি করে। কুরাইশরা সন্ধির শর্ত ভঙ্গ করলে রাসুল (স) ৬৩০ খ্রিষ্টাব্দে দশ হাজার মুসলিম বাহিনী নিয়ে মক্কা অভিমুখে অভিযান করেন। মক্কার অদূরে হযরত মুহাম্মদ (স) তাঁবু স্থাপন করেন। কুরাইশরা মুসলিমদের এই বাহিনী দেখে ভীতসন্ত্রস্ত হলো। বিনা রক্তপাতে ও বিনা বাধায় মুসলিম বাহিনী মক্কা বিজয় করল। পবিত্র কুরআনে মক্কা বিজয়কে ফাতহাম মুবীন বা প্রকাশ্য বিজয় বলা হয়েছে।
প্রশ্ন \ ৭ \ হযরত আবু বকর (রা)-এর সময় কী কী সমস্যা দেখা দিয়েছিল?
উত্তর : হযরত আবু বকর (রা)-এর সময় মুসলিম রাষ্ট্রে কতিপয় সমস্যা দেখা দেয়। কেউ কেউ মিথ্যা নবুয়তের দাবি করে, কতিপয় লোক যাকাত দিতে অস্বীকার করে, আবার কতিপয় লোক ইসলাম ত্যাগ করে। হযরত আবু বকর (রা) অত্যন্ত দৃঢ়তার সাথে এসব মোকাবিলা করে ইসলাম ও মুসলমানগণকে বিশৃঙ্খলা হতে রক্ষা করেন।
প্রশ্ন \ ৮ \ হযরত উমর (রা)-এর শাসননীতি বুঝিয়ে লেখ।
উত্তর : ইসলামের ইতিহাসে হযরত উমর (রা)-এর শাসনব্যবস্থা উলেখযোগ্য স্থান দখল করে আছে। হযরত মুহাম্মদ (স) কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত ইসলামি প্রজাতন্ত্রের শাসন প্রণালিতে হযরত উমর (রা) কুরআন ও হাদিসের নির্দেশ মোতাবেক পরিপূর্ণ রূপদান করেন এবং প্রজাতন্ত্রকে ইসলামের মূলমন্ত্র সাম্য ও গণতন্ত্রের ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত করেন। হযরত উমর (রা) ইসলামের রাজনৈতিক শাসনব্যবস্থার প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। জনগণের সমর্থন ও কল্যাণের দিকে সবিশেষ লক্ষ রেখে এবং সকল এলাকার পরিবেশ ও পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে তিনি এক অনন্য সাধারণ শাসনব্যবস্থা কায়েম করেন।
প্রশ্ন \ ৯ \ ইসলামে হযরত উসমান (রা)-এর অবদান উল্লেখ কর।
উত্তর : হযরত উসমান (রা) ইসলাম ও মানবতার সেবায় অকাতরে অর্থ-সম্পদ ব্যয় করেন। মদিনার অধিবাসীদের পানির অভাব দূর করার জন্য তিনি ১৮০০০ (আঠার হাজার) দিনার ব্যয় করে একটি ক‚প ক্রয় করে তা ওয়াকফ করে দেন। মদিনায় দুর্ভিক্ষ দেখা দিলে তিনি মদিনাবাসীদের মাঝে ত্রাণ হিসেবে খাবার বিতরণ করেন। মসজিদে নববিতে মুসলিদের স্থান সংকুলান না হওয়ায় তিনি সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত খরচে মসজিদ সম্প্রসারণ করেন। তাবুক যুদ্ধে দশ হাজার সৈন্যের ব্যয়ভার তিনি গ্রহণ করেন এবং এক হাজার উট দান করেন। এ ছাড়াও তিনি সাতটি ঘোড়া ও এক হাজার দিনার মহানবি হযরত মুহাম্মদ (স)-এর দরবারে দান করেন। তিনি পবিত্র কুরআন সংকলন করেন।
প্রশ্ন \ ১০ \ মহানবি (স) হযরত আলি (রা)-কে আসাদুলাহ উপাধি দেন কেন?
উত্তর : হযরত আলি (রা) ইসলামের প্রায় প্রত্যেকটি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে অসীম বীরত্বের পরিচয় দেন। খায়বার যুদ্ধে হযরত আলি (রা) বিশেষ কৃতিত্ব প্রদর্শন করে কামুসদুর্গ দখল করেন। এ কারণেই রাসুল (স) হযরত আলি (রা)-কে আসাদুলাহ বা আলাহর সিংহ উপাধিতে ভূষিত করেন। উলেখ্য যে, এ যুদ্ধে হযরত আলি (রা) দুর্গের একটি বিশালাকার দরজাকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেন।
প্রশ্ন \ ১১ \ ইমাম বুখারি (র)-এর পরিচয় দাও।
উত্তর : ইমাম বুখারি (র)-এর নাম মুহাম্মদ, উপনাম আবু আব্দুলাহ, পিতার নাম ইসমাঈল, দাদার নাম ইবরাহিম। উপাধি ‘আমিরুল মু’মিনুন ফিল হাদিস’ (হাদিস বর্ণনায় মু’মিনদের নেতা)। তিনি ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতির লালন কেন্দ্র বুখারা (বর্তমান রাশিয়ায়) নগরীতে ১৯৪ হিজরি ১৩ শাওয়াল, ৮১০ খ্রিষ্টাব্দের ২১ জুলাই, শুক্রবার জন্মগ্রহণ করেন। বাল্যকালেই তাঁর পিতা ইন্তিকাল করেন। মায়ের স্নেহ ও ভালোবাসায় তিনি বড় হন।
প্রশ্ন \ ১২ \ ইমাম বুখারি (র) রাজা-বাদশাহদের দরবারে যেতেন না কেন?
উত্তর : ইমাম বুখারি (র) রাজা-বাদশাহদের দরবারে যেতেন না। কারণ তিনি ছিলেন স্বাধীনচেতা ও আত্মসম্মানবোধ সম্পন্ন ব্যক্তি।
প্রশ্ন \ ১৩ \ ইমাম আবু হানিফা (র) কীভাবে ইন্তিকাল করেন?
উত্তর : তৎকালীন বাগদাদের খলিফা আল মানসুর ইমাম আবু হানিফা (র)-কে প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব নিতে প্রস্তাব দিলে তিনি তা গ্রহণ করেন নি। ফলে তাঁকে জেলখানায় আবদ্ধ করে রাখা হয়। অতঃপর ১৫০ হিজরি মোতাবেক ৭৬৭ খ্রিষ্টাব্দে খলিফার নির্দেশে প্রয়োগকৃত বিষক্রিয়ার প্রভাবে এই মহান মনীষী ইন্তিকাল করেন।
প্রশ্ন \ ১৪ \ ইমাম গাযালির পরিচয় বর্ণনা কর।
উত্তর : ইমাম গাযালির পুরো নাম আবু হামিদ মুহাম্মদ ইবনে তাউস আহমদ আল তুসী আল শাফী আল নিশাপুরী আল গাযালি (র)। তিনি ৪৫০ হিজরী ১০৫৮ খ্রিষ্টাব্দে ইরানের ‘তুস’ নগরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি তুস নগরে প্রাথমিক শিক্ষা লাভের পর উচ্চতর শিক্ষা গ্রহণের জন্য জুরজান, নিশাপুর, বাগদাদ প্রভৃতি স্থান ভ্রমণ করেন। তিনি ছিলেন মুসলিম চিন্তাজগতের সর্বশেষ দিশারি, মহান সুফি ও যুক্তিবাদী দার্শনিক।
প্রশ্ন \ ১৫ \ জ্ঞান-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি চর্চায় মুসলমানদের অবদান বর্ণনা কর।
উত্তর : শুধু সাধারণ শিক্ষায় নয়, জ্ঞান-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি চর্চায়ও মুসলমানগণ সমান দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। এ প্রচেষ্টা ও অবদানের ওপর ভিত্তি করে মুসলমানগণ একসময়ে সারা বিশ্বে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। আধুনিক যুগের জ্ঞান-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অনেক শাখা মুসলমানদের জ্ঞান-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিরই ফসল। চিকিৎসা, রসায়ন, ভ‚গোল, গণিত প্রভৃতি শাস্ত্রে মুসলিম মনীষীদের অবদান স্বর্ণাক্ষরে সমুজ্জ্বল।
প্রশ্ন \ ১৬ \ জুননুন মিসরির পরিচয় ও অবদান উল্লেখ কর।
উত্তর : নুননুন মিসরির নাম ছাওবান, পিতার নাম ইব্রাহিম। তিনি জুননুন মিসরি নামে পরিচিত। তিনি মিসরের আখমিম নামক স্থানে ৭৯৬ খ্রিষ্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি সুফি হিসেবে প্রসিদ্ধ হলেও আরব মুসলিম বিজ্ঞানীদের মধ্যে রসায়নশাস্ত্রের উপর যাঁরা প্রথমদিকে গবেষণা করেন তাঁদের অন্যতম। তিনি রসায়নশাস্ত্রের বিভিন্ন উপকরণ নিয়ে গবেষণা ও লেখালেখি করেন। তাঁর লেখায় সোনা, রূপাসহ বিভিন্ন খনিজ পদার্থের বর্ণনা পাওয়া যায়। তিনি মিসরিয় সংকেতিক বর্ণের মর্মার্থ বুঝতেন। তিনি মিসরের আল জিজাহ নামক স্থানে ৮৫৯ খ্রিষ্টাব্দে ইন্তিকাল করেন।
প্রশ্ন \ ১৭ \ ভ‚গোলশাস্ত্রে অসামান্য অবদান রাখেন কারা?
উত্তর : যেসব মুসলিম মনীষী ভ‚গোলশাস্ত্রে অসামান্য অবদান রাখেন তাঁরা হলেন, আল মোকাদ্দাসি, আল মাসুদি, ইয়াকুত ইবনে আব্দুল্লাহ ও ইবনে খালদুনসহ অনেক মুসলিম মনীষী।
প্রশ্ন \ ১৮ \ নাসির উদ্দিন তুসির গণিত বিষয়ে রচিত গ্রন্থগুলোর নাম লেখ।
উত্তর : গণিতশাস্ত্র বিষয়ে নাসির উদ্দিন তুসি রচিত গ্রন্থগুলোর মধ্যে মুতাওয়াসিতাত বাইনাল হান্দাসা ওয়াল হাইয়া (ঞযব গরফফষব ইড়ড়শং নবঃবিবহ এবড়সবঃৎু ধহফ অংঃৎড়হড়সু), জামিউল হিসাব বিত্ তাখতে ওয়াত্বোরাব (ঝঁসসধৎু ড়ভ ঃযব ডযড়ষব ড়ভ ঈড়সঢ়ঁঃধঃরড়হ রিঃয ঞধনষব ধহফ ঊধৎঃয), কাওয়ায়েদুল হান্দাসা, তাহরিরুল উসুল অন্যতম।
সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
বোর্ড ও সেরা স্কুলের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন- ১ মহানবি (স) এর হিলফুল ফুযুল এবং হযরত উমর (রা)
জনাব আব্দুল হক রহমতপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান। তিনি ইউনিয়নের সার্বিক উন্নয়নে অত্যন্ত তৎপর। ন্যায়-বিচারের স্বার্থে তিনি আপন-পর পার্থক্য করেন না। তিনি সংশ্লিষ্ট সকলের সাথে পরামর্শ করে কাজ করেন। তাঁর ইউনিয়নের একটি গ্রামে চুরি-ডাকাতি ও বিশৃঙ্খলা বেড়ে গেলে স্থানীয় মেম্বার জনাব আবুল খায়ের গ্রামের যুবকদেরকে নিয়ে একটি শান্তি সংঘ গড়ে তোলেন। মুরব্বিদের সহযোগিতায় ঐ যুবকসংঘ গ্রামের বিশৃঙ্খলা দূর করে শান্তি স্থাপন করতে সক্ষম হয়। [স. বো. ’১৫]
ক. ‘যুননুরাইন’ বলা হয় কাকে? ১
খ. প্রাক-ইসলামি যুগে নারীদের অবস্থা কেমন ছিল? ব্যাখ্যা দাও। ২
গ. আবুল খায়েরের পদক্ষেপটি মহানবি (স)-এর কোন উদ্যোগের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. জনাব আব্দুল হকের কর্মতৎপরতা হযরত উমর (রা)-এর জীবনাদর্শের আলোকে মূল্যায়ন কর। ৪
ক হযরত উসমান (রা) কে ‘যুননুরাইন’ বলা হয়।
খ প্রাক ইসলামি যুগে নারীদের অবস্থা ছিল শোচনীয়।
প্রাক ইসলামি যুগে নারীদের কোনো মান-মর্যাদা ছিল না। তাদের কোনোরূপ অধিকার ছিল না। সেসময় নারীদের দ্রব্যসামগ্রী মনে করা হতো। তাদের ক্রীতদাসী হিসেবে বাজারে কেনাবেচা করা হতো। তারা ছিল ভোগ্যপণ্য, আনন্দদায়ক, প্রেমদায়িনী, সকল ভাঙনের উৎস, নরকের দরজা অনিবার্য পাপ ইত্যাদি নামে খ্যাত।
গ আবুল খায়েরের পদক্ষেপটি মহানবি (স) এর ‘হিলফুল ফুযুল’ (শান্তি সংঘ) গঠনের উদ্যোগের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। সিরিয়া থেকে ফিরে এসে মহানবি (স) ফিজার যুদ্ধের বিভীষিকা দেখলেন। যুদ্ধটি শুরু হলো নিষিদ্ধ মাসে। তাছাড়া কায়স গোত্র অন্যায়ভাবে কুরাইশদের ওপর এ যুদ্ধ চাপিয়ে দিয়েছিল। এ জন্য একে ‘হারবুল ফিজার’ বা অন্যায় যুদ্ধ বলা হয়। পাঁচ বছর যাবৎ এ যুদ্ধ স্থায়ী হয়। হযরত মুহাম্মদ (স) এ যুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন নি। তবে যুদ্ধের ভয়াবহতা প্রত্যক্ষ করেছিলেন। এ যুদ্ধে বহু মানুষ আহত ও নিহত হয়। তাতে তাঁর কোমল হৃদয় কেঁদে উঠে। আহতদের আর্তনাদ শুনে তিনি অস্থির হয়ে পড়লেন। শান্তিকামী মানুষ হিসেবে এ অশান্তি তাঁর সহ্য হলো না। তাই তিনি আরবের শান্তিকামী যুবকদের নিয়ে ‘হিলফুল ফুযুল’ (শান্তি সংঘ) গঠন করলেন। এই সংঘের উদ্দেশ্য ছিল আর্তের সেবা, অত্যাচারীকে প্রতিরোধ ও অত্যাচারিতকে সাহায্য করা, শান্তি-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করা এবং গোত্রে গোত্রে শান্তি, স¯প্রীতি বজায় রাখা।
উদ্দীপক পাঠেও আমরা ঠিক এরকমই একটি সংঘের কথা জানতে পারি যে, রহমতপুর ইউনিয়নের একটি গ্রামে চুরি-ডাকাতি ও বিশৃঙ্খলা বেড়ে গেলে স্থানীয় মেম্বার জনাব আবুল খায়ের গ্রামের যুবকদের নিয়ে একটি শান্তি সংঘ গড়ে তোলেন। মুরব্বীদের সহযোগিতায় ঐ যুবসংঘ গ্রামে বিশৃঙ্খলা দূর করে শান্তি স্থাপন করতে সক্ষম হয়। এ যেন মহানবি (স) এর হিলফুল ফুজুলের প্রতিচ্ছবি। উপরিউক্ত আলোচনা দ্বারা এটাই প্রতীয়মান হয় যে, আবুল খায়েরের পদক্ষেপটি মহানবি (স) এর হিলফুল ফুযুল (শান্তি সংঘ) গঠনের উদ্যোগের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ।
ঘ জনাব আবুল হকের কর্মতৎপরতা হযরত উমর (রা) এর জীবনাদর্শের প্রতিচ্ছবি। হযরত উমর ফারুক (রা) ৬৩৪ খ্রিষ্টাব্দে খিলাফতের দায়িত্ব গ্রহণের পর তাঁর মানবীয় গুণটি আরও উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। তিনি সত্য ও অসত্যের বিষয়ে অত্যন্ত সজাগ থাকতেন। হযরত উমর ফারুক (রা) ছিলেন ন্যায় ও ইনসাফের এক মূর্ত প্রতীক। আইনের চোখে তিনি ধনী-গরিব, উঁচু-নিচু, আপন-পরের মধ্যে কোনো ভেদাভেদ করতেন না। মধ্যপানের অপরাধে স্বীয় পুত্র আবু শাহমাকে তিনি অত্যন্ত কঠোর শাস্তি দিয়েছিলেন। হযরত উমর (রা) ছিলে গণতন্ত্রমনা। রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ কাজে তিনি সাহাবিদের সঙ্গে পরামর্শ করতেন এবং তাঁদের মতামতের প্রতি গুরুত্বারোপ করতেন। উদ্দীপকেও আমরা দেখতে পাই যে, চেয়ারম্যান জনাব আব্দুল হক রহমতপুর ইউনিয়নের সার্বিক উন্নয়নে অত্যন্ত তৎপর থাকেন। ন্যায়-বিচারের সাথে তিনি আপন-পর পার্থক্য করেন না। তিনি সংশ্লিষ্ট সবার সাথে পরামর্শ করে কাজ করেন। এ যেন হযরত উমর (রা) এর অনুরকরণ।আমাদের দেশেও যদি শাসনকার্যে জবাবদিহি নিশ্চিত করা যায় তাহলে আমাদের শাসনকাজে নিয়োজিত ব্যক্তিগণও হযরত উমর (র) এর জীবনার্দশে অনুপ্রানিত হয়ে উদ্দীপকের জনাব আব্দুস হকে মতো ন্যায়পরায়ণ হবেন।
প্রশ্ন- ২ হযরত মুহাম্মদ (স)-এর সমকালীন, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অবস্থা
জাগুরা গ্রামে অনেক অন্যায়-অত্যাচার সংঘটিত হচ্ছে। গ্রামবাসী নানা পাপাচারে লিপ্ত। তাদের সকল কাজ এবং আচরণই নিষ্ঠুর। তুচ্ছ কারণে একে অপরকে হত্যা করে। গ্রামের দুটি বংশের মধ্যে সংঘর্ষ লেগেই থাকে। শত শত লোক এতে মারা যাচ্ছে। এ অবস্থা অবলোকন করে সাঈদুল নামে এক যুবক ‘পরিত্রাণ’ নামে একটি সংগঠন তৈরি করে এলাকায় শান্তি স্থাপনের চেষ্টা করে। [রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঢাকা]
ক. কোন গোত্র বিশুদ্ধ আরবিতে কথা বলত? ১
খ. ‘উছওয়া’ বলতে কী বোঝায়? ২
গ. ইসলাম-পূর্ব যুগের কোন অবস্থার সাথে জাগুরা গ্রামের অবস্থার মিল রয়েছে? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. মুহাম্মদ (স)-এর একটি পদক্ষেপের আলোকে ‘পরিত্রাণ’ সংগঠনটির কার্যক্রম বিশ্লেষণ কর। ৪
ক বনু সাদ গোত্র বিশুদ্ধ আরবিতে কথা বলত।
খ ‘উছওয়া’-এর বাংলা প্রতিশব্দ আদর্শ। আদর্শ বলতে বোঝায় অনুকরণীয়, অনুসরণীয় এবং গ্রহণযোগ্য চালচলন ও রীতিনীতিকে। মানুষের সামগ্রিক জীবন সুন্দর ও সফল করতে যেসব মনীষীর জীবনকর্ম অনুসরণ করা হয় তাই হলো জীবনাদর্শ। মহানবি হযরত মুহাম্মদ (স) হলেন আমাদের জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ আদর্শ।
গ ইসলাম-পূর্ব আইয়ামে জাহিলিয়া যুগের অবস্থার সাথে জাগুরা গ্রামের অবস্থার মিল রয়েছে। মহানবি (স)-এর আবির্ভাবের পূর্বে আরব সমাজের লোকেরা নবি ও রাসুলগণের শিক্ষা ভুলে অসামাজিক নানা অপকর্মে লিপ্ত ছিল। তাদের আচার, ব্যবহার ও চালচলন ছিল বর্বর ও মানবতাবিরোধী। তাই সে যুগকে ‘আইয়ামে জাহিলিয়া’ বা ‘অজ্ঞতার যুগ’ বলা হয়। সে যুগে মানুষের জান, মাল, ইজ্জতের কোনো নিরাপত্তা ছিল না। নরহত্যা, রাহাজানি, খুন-খারাবি, ডাকাতি, মারামারি, কন্যা সন্তানকে জীবন্ত কবর দেওয়া, জুয়াখেলা, মদ্যপান, সুদ, ব্যভিচার ছিল তখনকার নিত্যদিনের ঘটনা। সে সময় নারীর কোনো মর্যাদা ছিল না। বিভিন্ন গোত্রে গোত্রে যুদ্ধ লেগেই থাকত। উদ্দীপকে আমরা দেখতে পাই, আইয়ামে জাহিলিয়া যুগের ন্যায় জাগুরা গ্রামে অনেক অন্যায়-অত্যাচার সংঘটিত হয়। গ্রামবাসীরা নানা রকম পাপাচারে লিপ্ত থাকে। তুচ্ছ কারণে তারা একে অপরকে হত্যা করে। সুতরাং বলা যায়, ইসলাম-পূর্ব আরব সমাজের অবস্থার সাথে জাগুরা গ্রামের মিল রয়েছে।
ঘ মহানবি (স)-এর হিলফুল ফুযুলের অনুকরণে জাগুরা গ্রামের ‘পরিত্রাণ’ নামক সংগঠনটির কার্যক্রম বিদ্যমান। মহানবি (স) আরবদের অন্যায়-অত্যাচার বন্ধে শান্তি-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে হিলফুল ফুযুল গঠন করেন। শৈশবকাল হতে মহানবি হযরত মুহাম্মদ (স) ছিলেন সত্যবাদী ও শান্তিকামী। তৎকালীন আরব সমাজের লোকেরা ছিল নানা অন্যায় ও অপকর্মে লিপ্ত। হত্যা, রাজাহানি, লুটপাট, যুদ্ধ-সংঘাত এসব কিছু ছিল তাদের নিত্যদিনের কাজ। এ সময় কায়স গোত্র অন্যায়ভাবে নিষিদ্ধ মাসে কুরাইশদের ওপর ফিজার যুদ্ধ চাপিয়ে দিয়েছিল। পাঁচ বছর ধরে চলা এ যুদ্ধের ভয়াবহতা প্রত্যক্ষ করে তিনি অস্থির হয়ে পড়লেন এবং এ অশান্তি তাঁর সহ্য হয়নি। তাই আরবের কয়েকজন শান্তিকামী যুবককে নিয়ে হিলফুল ফুযুল বা শান্তিসংঘ গঠন করলেন। এই সংঘের উদ্দেশ্য ছিল আর্তের সেবা করা, অত্যাচারীকে প্রতিরোধ ও অত্যাচারিতকে সাহায্য করা, শান্তিশৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করা এবং গোত্রে গোত্রে শান্তি ও স¤প্রীতি বজায় রাখা। এসব কাজের ফলে তৎকালীন আরবে শান্তি ফিরে আসে। উদ্দীপকের জাগুরা গ্রামে যে অন্যায়-অত্যাচার সংঘটিত হয় তা প্রতিরোধের জন্য সাইদুল নামে একজন যুবক মহানবি (স) -এর গঠিত হিলফুল ফুযুলের আলোকে ‘পরিত্রাণ’ নামে একটি সংগঠন গড়ে তোলে। এই সংগঠনের মাধ্যমে এলাকায় অন্যায়-অত্যাচার প্রতিরোধ এবং শান্তি ও স¤প্রতি পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করে।
প্রশ্ন- ৩ হযরত উমর (রা) এবং হযরত উসমান (রা)
শফিক তার বড় ভাইয়ের কাছে দ্বিতীয় ও তৃতীয় খলিফা সম্পর্কে জানতে চাইলে দ্বিতীয় খলিফা সম্পর্কে বলেন, এ খলিফাকে হযরত মুহাম্মদ (স) ফারুক উপাধি প্রদান করেছিলেন। তিনি ছিলেন একজন আদর্শ রাষ্ট্রনায়ক। রাতের আঁধারে প্রজাদের সুখ-দুঃখ ঘুরে ঘুরে দেখতেন তিনি। তিনি ছিলেন সাম্য ও মানবতাবোধের এক মহান আদর্শ। বড় ভাই তৃতীয় খলিফা সম্পর্কে বলেন, তাঁর উপাধি ছিল গণি এবং যুননুরাইন। ৩৪ বছর বয়সে তিনি ইসলাম গ্রহণ করেন। ইসলামের সেবায় তাঁর অবদান ছিল অসামান্য। তিনি ‘জামেউল কুরআন’ হিসেবে খ্যাতি লাভ করেছিলেন। [সরকারি অগ্রগামী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ, সিলেট]
ক. হযরত উমর (রা) কত খ্রিষ্টাব্দে জš§গ্রহণ করেন? ১
খ. ‘অবশ্যই তোমাদের জন্য আল্লাহর রাসুলের জীবনে রয়েছে উত্তম আদর্শ।’ সূরা আল-আহযাব-এর আয়াতাংশটি বুঝিয়ে লেখ। ২
গ. উদ্দীপকে যে দ্বিতীয় খলিফার কথা বলা হয়েছে তার নাম কী? আইনের শাসন ও সাম্য প্রতিষ্ঠায় একজন রাষ্ট্রনায়ক তার কাছ থেকে কী শিক্ষালাভ করতে পারে? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. তৃতীয় খলিফা হিসেবে ইসলামের সেবায় যার বিভিন্নমুখী অবদানের কথা উদ্দীপকে উল্লেখ করা হয়েছে তার নামসহ উল্লিখিত অবদানগুলো মূল্যায়ন কর। ৪
ক হযরত উমর (রা) ৫৮৩ খ্রিষ্টাব্দে জš§গ্রহণ করেন।
খ মানুষের সামগ্রিক জীবন সুন্দর ও সফল করতে যেসব মনীষীর জীবনকর্ম অনুসরণ করা হয় তাই হলো জীবনাদর্শ। শেষ নবি ও রাসুল হযরত মুহাম্মদ (স) হলেন আমাদের জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ আদর্শ। এ প্রসঙ্গে সূরা আল-আহযাব-এ আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘অবশ্যই তোমাদের জন্য আল্লাহর রাসুলের জীবনে রয়েছে উত্তম আদর্শ।’ সুতরাং মহানবি (স)-এর জীবনাদর্শ আমাদের গ্রহণ করা উচিত।
গ উদ্দীপকে যে দ্বিতীয় খলিফার কথা বলা হয়েছে তাঁর নাম হযরত উমর ফারুক (রা)। আইনের শাসন ও সাম্য প্রতিষ্ঠায় তিনি ছিলেন ন্যায় ও ইনসাফের মূর্ত প্রতীক। তিনি ধনী-গরিব, উঁচু-নিচু, আপন-পর কোনো ভেদাভেদ করতেন না। তার শাসনামলে আইন ছিল সকলের জন্যই সমান। আইনের শাসন ও সাম্য প্রতিষ্ঠার জন্য একজন রাষ্ট্রনায়ক তার কাছ থেকে নানা বিষয়ে শিক্ষালাভ করতে পারে যেমন :
অবশ্যই একজন রাষ্ট্রনায়ককে গণতন্ত্রমনা এবং সাম্য ও মানবতাবোধের অধিকারী হতে হবে। শাসকের বিরুদ্ধে জনসাধারণের অভিযোগের ব্যবস্থা করতে হবে যাতে রাষ্ট্রীয় সম্পদের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করা যায়। শাসনকার্যে শাসকের জবাবদিহিতার ব্যবস্থা থাকতে হবে। লোভ, প্রতিহিংসা ত্যাগ করে ন্যায়পরায়ণ হতে হবে। সর্বোপরি আইনের শাসন ও সাম্য প্রতিষ্ঠায় একজন রাষ্ট্রনায়ক তাঁর কাছ থেকে শিক্ষা লাভ করতে পারে।
ঘ তৃতীয় খলিফা হিসেবে ইসলামের সেবায় যার বিভিন্ন অবদানের কথা উদ্দীপকে উল্লেখ করা হয়েছে তিনি হলেন ইসলামের তৃতীয় খলিফা হযরত উসমান (রা)। বাল্যকাল থেকেই তিনি অত্যন্ত নম্র, ভদ্র ও লজ্জাশীল ছিলেন। ইসলাম গ্রহণের পর তিনি ইসলাম ও মানবতার সেবায় অকাতরে তার সম্পদ ব্যয় করেন। মদিনার অধিবাসীদের পানির অভাব দূর করার জন্য তিনি আঠারো হাজার দিনার ব্যয়ে একটি ক‚প ক্রয় করে তা জনসেবায় ওয়াকফ করে দেন। আবার মদিনায় দুর্ভিক্ষ দেখা দিলে তিনি মদিনাবাসীদের মাঝে ত্রাণ হিসেবে খাবার বিতরণ করেন। মসজিদে নববিতে যখন মুসল্লিদের স্থান সংকুলান হচ্ছিল না তখন তিনি নিজ খরচে মসজিদ স¤প্রসারণ করে দেন। তাবুক যুদ্ধে দশ হাজার সৈন্যের ব্যয়ভার তিনি গ্রহণ করেন এবং এক হাজার উট দান করেন। এছাড়াও তিনি সাতটি ঘোড়া ও এক হাজার দিনার মহানবি হযরত মুহাম্মদ (স)-এর দরবারে দান করেন। হযরত উসমান (রা)-এর খেলাফতকালে কুরআন তিলাওয়াত নিয়ে মুসলমানদের মধ্যে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়। ফলে মুসলমানদের মধ্যে ঐক্য বিনষ্ট হওয়ার আশঙ্কা দেখা দেয়। তিনি উম্মুল মুমিনিন হযরত হাফসা (রা) -এর কাছে সংরক্ষিত পবিত্র কুরআনের মূল কপি সংগ্রহ করেন এবং সংগৃহীত কপির আলোকে আরও ৭টি কপি তৈরি করে মুসলিম সাম্রাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চলে পাঠিয়ে দেন। ফলে সারাবিশ্বে একই রীতিতে কুরআন তিলাওয়াত সম্ভব হয়। এজন্য তাঁকে ‘জামেউল কুরআন’ বলা হয়। এভাবেই হযরত উসমান (রা) ইসলামের সেবায় বিভিন্ন অবদান রেখেছেন।
প্রশ্ন- ৪ হুদায়বিয়ার সন্ধি ও মদিনা সনদ
একটি তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পাশাপাশি অবস্থিত দুই গ্রামের লোকদের মধ্যে বিবাদের সৃষ্টি হয়। হাকিম সাহেবের মধ্যস্থতায় তা মীমাংসা হলেও তৃতীয় পক্ষের কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি হাকিম সাহেবকে কাজ করতে দিচ্ছিল না। পরবর্তীকালে হাকিম সাহেব কিছু শর্তসাপেক্ষে সকল পক্ষের সাথে একটি সমঝোতা চুক্তি করেন। এতে এলাকায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ফিরে আসে। [ময়মনসিংহ জিলা স্কুল]
ক. কাদেরকে আনসার বলা হয়? ১
খ. সকল মুসলিমের মিলন কেন্দ্রে পরিণত হলো মসজিদে নববি।-ব্যাখ্যা কর। ২
গ. উদ্দীপকের সমঝোতা চুক্তিটি মহানবি (স)- এর যে চুক্তির সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ তার গুরুত্ব ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. মহানবি (স)-এর মাদানি জীবনের গুরুত্ব পাঠ্যবইয়ের আলোকে বিশ্লেষণ কর। ৪
ক মুহাজিরদের সার্বিকভাবে সাহায্যকারী মদিনাবাসীকে আনসার বলা হয়।
খ মহানবি হযরত মুহাম্মদ (স) মদিনায় হিজরত করে সেখানকার বিভিন্ন গোত্রের মাঝে দীর্ঘদিনের যুদ্ধবিগ্রহ বন্ধের জন্য উদ্যোগ নেন। এখানে মুহাজির ও আনসারদের মাঝে ভ্রাতৃত্ব বন্ধন ও সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্ক তৈরির এক নতুন দিগন্তের উšে§াচন করেন। গড়ে তুললেন ইসলামি আদর্শের ভিত্তিতে সুশৃঙ্খল সমাজব্যবস্থা ও সকল মুসলমানের মিলনকেন্দ্র মসজিদে নববি। এই মসজিদে সকল মুসলিম ভ্রাতৃত্ব ও সৌহার্দ বজায় রেখে সুশৃঙ্খলভাবে আল্লাহর ইবাদতে লিপ্ত হন।
গ উদ্দীপকের সমঝোতা চুক্তিটি মহানবি (স)-এর হুদাইবিয়ার সন্ধি বা চুক্তির সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। হুদাইবিয়ার সন্ধির কিছু কিছু শর্ত আপাতদৃষ্টিতে মুসলমানদের জন্য অপমানজনক মনে হলেও প্রকৃতপক্ষে এ সন্ধির গুরুত্ব ছিল অপরিসীম ও সুদূরপ্রসারী। মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনে এ সন্ধিকে ‘প্রকাশ্য বিজয়’ বলে উল্লেখ করেছেন। এ সন্ধির দ্বারা কুরাইশরা মুসলমানদের একটি স্বতন্ত্র শক্তিধর জাতি হিসেবে স্বীকার করে নেয়। এ সন্ধিতে দশ বছর যুদ্ধবিগ্রহ বন্ধ থাকার কথা উল্লেখ ছিল। এ কারণে মহানবি (স) নিশ্চিত মনে দেশে ও বিদেশে ইসলাম প্রচার করতে সক্ষম হয়েছিলেন। এ সময় বিধর্মীরা মুসলমানদের সান্নিধ্যে এসে মুক্তমনে ইসলামকে জানবার ও বুঝবার সুযোগ পায়। ফলে ক্রমান্বয়ে তারা ইসলামের অন্তর্নিহিত গুণাবলির প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়ে এবং দলে দলে ইসলাম গ্রহণ করে থাকে। আর এ প্রেক্ষিতে হুদাইবিয়া সন্ধির গুরুত্ব অনস্বীকার্য।
ঘ মহানবি (স)-এর মাদানি জীবন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিচে পাঠ্যপুস্তকের আলোকে তা বিশ্লেষণ করা হলো। মহানবি (স) তাঁর জš§ভ‚মি মক্কায় কাফিরদের অত্যাচারের মুখে আল্লাহ পাকের নির্দেশে মদিনায় হিজরত করেন। মদিনায় নবি (স) ধর্ম প্রচারের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ পান। এখানে গোত্রে গোত্রে দীর্ঘ দিনের যুদ্ধ নিরসন করে ভ্রাতৃত্ব স্থাপনে সক্ষম হন। মুহাজির ও আনসারদের মাঝে সৌহার্দ ও ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপন করেন, যা ইতিহাসে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। এর ফলে সমাজে শান্তিশৃঙ্খলা বিরাজ করে। এখানে তিনি মুসলিমদের মিলনকেন্দ্র হিসেবে মসজিদে নববি স্থাপন করেন। মদিনায় বিভিন্ন গোত্রের মানুষ বসবাস করত। মুহাম্মদ (স) এখানে একটি ইসলামি রাষ্ট্র গঠনের জন্য বিভিন্ন গোত্রকে একত্র করে একটি লিখিত সনদ প্রণয়ন করেন, যা ইসলামের ইতিহাসে মদিনা সনদ হিসেবে পরিচিত। এ সনদের প্রতিটি ধারা শান্তিপূর্ণ সমাজ গঠনের পথিকৃৎ।
প্রশ্ন- ৫ মহানবি হযরত মুহাম্মদ (স) এর হিলফুল ফুযুল গঠন
ছগির দশম শ্রেণির ছাত্র। তার মহল্লায় অন্যায় প্রতিরোধ ও শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য কয়েকজন সমমনা বন্ধুকে নিয়ে একটি সংগঠন গড়ে তুলল। সে নিজেও এ সংগঠনের একজন সদস্য। [চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল]
ক. হিলফুল ফুযুল কী? ১
খ. উন্নত সমাজ গঠনে তরুণদের ভ‚মিকা উল্লেখ কর। ২
গ. ছগির সংগঠনের সদস্য হওয়ায় কীভাবে সমাজের দায়িত্ব পালন করার সুযোগ পাচ্ছে? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. উদ্দীপকে ছগিরের পদ্ধতি অনুসরণ করে সমাজে কি শান্তি প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব? পাঠ্যপুস্তকের আলোকে বিশ্লেষণ কর। ৪
ক হিলফুল ফুযুল হচ্ছে শান্তিসংঘ।
খ উন্নত সমাজ গঠনে তরুণদের ভ‚মিকা অপরিসীম। কেননা তরুণরাই হচ্ছে সমাজের প্রাণ। সমাজ থেকে যেকোনো ধরনের অন্যায় ও অরাজকতা দূর করতে তরুণদের ভ‚মিকাই প্রধান। তরুণরা তাদের সমাজসেবামূলক মনোভাব ও দেশপ্রেমের মাধ্যমে সমাজে গণতান্ত্রিক চেতনা, শান্তিশৃঙ্খলা ও শিক্ষাবিস্তারে অবদান রাখতে পারে।
গ ছগির সংগঠনের সদস্য হওয়ায় সমাজের অন্যায় প্রতিরোধ ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় দায়িত্ব পালন করার সুযোগ পাচ্ছে। উদ্দীপকের ছগির দশম শ্রেণির ছাত্র। সে কয়েকজন সমমনা বন্ধুকে নিয়ে তার মহল্লায় একটি সংগঠন গড়ে তুলেছে। ছগিরের মহল্লায় যেসব অন্যায় আচরণ সংঘটিত হয় তার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে এবং এলাকার শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য তারা কয়েকজন বন্ধু মিলে এই সংগঠনটি গড়ে তোলে। সে নিজেও এই সংগঠনের সক্রিয় সদস্য। সমাজের প্রতি দায়িত্ববোধ থেকে ছগির এই সংগঠনের সাথে জড়িত হয়েছে। দেশের নাগরিক হিসেবে সকলেরই দেশের প্রতি কিছু দায়িত্ব-কর্তব্য থাকে। সেসব দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করাই একজন সুনাগরিকের কাজ। সমাজের প্রতি দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে ছগির সকলের ভালোবাসা পাবে। বর্তমানে পাড়া বা মহল্লাগুলোতে বিভিন্ন ধরনের অন্যায়-অনাচার সংঘটিত হয়ে থাকে। এসব অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ালে অন্যায়কারী আর অন্যায় করতে সাহস পাবে না।
ঘ ছগিরের পদ্ধতি অবলম্বন করে সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব। কেননা যুবকরাই জাতি গঠনের কারিগর। যুবকরা সমাজের অন্যায়-অত্যাচার দূর করে সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারে। তবে এজন্য দরকার সংঘবদ্ধ প্রচেষ্টা। উদ্দীপকের ছগির এ রকম একজন যুবক। সে সমমনা কয়েকজন যুবককে নিয়ে মহানবি (স) -এর হিলফুল ফুযুল সংঘের অনুকরণে একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করে। পাঠ্যপুস্তকের সংশ্লিষ্ট পাঠ থেকে জানা যায় যে, শৈশবকাল থেকেই মহানবি (স) ছিলেন সত্যবাদী ও শান্তিকামী। সে সময় আরবে ফিজার যুদ্ধ শুরু হয়। পাঁচ বছর স্থায়ী এ যুদ্ধের ভয়াবহতা প্রত্যক্ষ করে বাল্যাবস্থায় মহানবি (স)-এর কোমল হৃদয় অস্থির হয়ে ওঠে। তিনি আরবের শান্তিকামী কতিপয় যুবককে নিয়ে ‘হিলফুল ফুযুল’ বা শান্তিসংঘ গড়ে তোলেন। মহানবি (স)-এর আদর্শ অনুসরণ করে উদ্দীপকের ছগির তার মহল্লার অন্যায় প্রতিরোধ ও শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য সমমনা কয়েকজন বন্ধুকে নিয়ে সেইরূপ একটি সংগঠন গড়ে তোলে। জাতিসংঘ থেকে শুরু করে আধুনিক বিশ্বের বিভিন্ন শান্তিসংঘ হযরত মুহাম্মদ (স)-এর হিলফুল ফুযুল-এর কাছে অনেকাংশে ঋণী। তারাও হিলফুল ফুযুলের মতো শান্তিশৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করতে সচেষ্ট। তাই ছগির মহানবি (স)-এর আদর্শ অনুসরণ করে যে সংগঠন গড়ে তুলেছে তার মাধ্যমে গোটা সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব।
প্রশ্ন- ৬ হযরত মুহাম্মদ (স) এর শৈশবকাল এবং মদিনা সনদ
মাওলানা আক্কাছ বলেন, মহানবি (স)-এর শৈশব, কৈশোর ও যৌবন মক্কায় কেটেছে। মক্কার লোকেরা তার পূতপবিত্র চরিত্রে মুগ্ধ হয়ে তাকে আল-আমিন উপাধি দিয়েছে। কিন্তু নবুয়ত পাওয়ার পর যখন ইসলাম প্রচার শুরু করেন তখন মক্কার লোকেরা তার সাথে চরম শত্রæতা শুরু করে। অন্যদিকে মাওলানা কাশেম বলেন, পরবর্তীকালে মদিনায় হিজরত করে সেখানে তিনি একটি ইসলামি রাষ্ট্র গঠন করেন এবং মদিনার সনদ প্রণয়ন করেন। যা ছিল মানবাধিকারের এক অনন্য দলিল। [কুমিল্লা জিলা স্কুল]
ক. কে মহানবি (স) কে শেষ নবি বলে ভবিষ্যদ্বাণী করেন? ১
খ. কাবা শরিফে হাজরে আসওয়াদ স্থাপনের ঘটনাটি ব্যাখ্যা কর। ২
গ. মাওলানা আক্কাছের বক্তব্যের আলোকে মহানবি (স)-এর শৈশব ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. ‘মদিনার সনদ’ বিষয়ে মাওলানা আক্কাছের বক্তব্যের সাথে তুমি কি একমত? গুরুত্বপূর্ণ ধারা উল্লেখপূর্বক তোমার মতের পক্ষে যুক্তি দাও। ৪
ক বুহায়রা মহানবি (স) কে শেষ নবি বলে ভবিষ্যদ্বাণী করেন।
খ কাবা শরিফ পুনঃনির্মাণ করার সময় হাজরে আসওয়াদ (কালো পাথর) স্থাপন নিয়ে আরবের বিভিন্ন গোত্রে বিরোধ দেখা দেয়। সবাই হাজরে আসওয়াদ স্থাপনের গৌরব অর্জন করতে চাইলে গোত্রে গোত্রে যুদ্ধ বেধে যাওয়ার উপক্রম হয়। অবশেষে হযরত মুহাম্মদ (স) অত্যন্ত বিচক্ষণতা ও নিরপেক্ষতার সাথে যে ফয়সালা দেন সকলে তা নির্দ্বিধায় মেনে নেয়।
গ মাওলানা আক্কাছের বক্তব্যের আলোকে মহানবি (স)-এর শৈশব বর্ণনা করা হলো
আরবের কুরাইশ বংশে ৫৭০ খ্রিষ্টাব্দে মহানবি হযরত মুহাম্মদ (স)-এর জন্ম হয়। তাঁর পিতার নাম আব্দুল্লাহ। মাতার নাম আমিনা। জন্মের পর মহানবি হযরত মুহাম্মদ (স) ধাত্রী মা হালিমার ঘরে লালিত-পালিত হন। শৈশবকাল থেকে মহানবি হযরত মুহাম্মদ (স)-এর মাঝে ন্যায় ও ইনসাফের নজির দেখা যায়। তিনি ধাত্রী হালিমার একটি স্তন পান করতেন অন্যটি তাঁর দুধভাই আব্দুল্লাহর জন্য রেখে দিতেন। হালিমা মহানবি হযরত মুহাম্মদ (স)-কে পাঁচ বছর লালন-পালন করে তাঁর মা আমিনার নিকট রেখে যান। তাঁর বয়স যখন ছয় বছর তখন তাঁর মাতা ইন্তিকাল করেন। চাচা আবু তালিব অত্যন্ত আদর-স্নেহ দিয়ে হযরত মুহাম্মদ (স)-কে লালন-পালন করতে থাকেন। তিনি ১২ বছর বয়সে ব্যবসার উদ্দেশ্যে চাচার সঙ্গে সিরিয়া যান। যাত্রা পথে ‘বুহায়রা’ নামক এক পাদ্রির সাথে দেখা হলে বুহায়রা মুহাম্মদকে অসাধারণ বালক বলে উল্লেখ করেন এবং ভবিষ্যদ্বাণী করে বলেন যে, ‘এ বালকই হবে শেষ যামানার আখেরি নবি।’
এভাবেই মহানবি (স)-এর শৈশব অতিবাহিত হয়।
ঘ মাওলানা আক্কাছের বক্তব্যের সাথে আমি একমত পোষণ করি। কারণ মহানবি (স) প্রণীত মদিনা সনদ মানবাধিকারের এক অনন্য দলিল। মক্কার লোকদের অত্যাচারের প্রেক্ষিতে আল্লাহ তায়ালার আদেশে হযরত মুহাম্মদ (স) ৬২২ খ্রিষ্টাব্দে মদিনায় হিজরত করেন। মদিনা ছিল বিভিন্ন গোত্র ও ধর্মের লোকজনের আবাস। হযরত মুহাম্মদ (স) সকল জাতিকে এক করে সেখানে একটি ইসলামি রাষ্ট্র গঠনের পরিকল্পনা নিলেন। এ কাজ করতে গিয়ে তিনি সকল গোত্রের নেতাদের সাথে বৈঠক করে একটি লিখিত সনদ প্রণয়ন করেন, যা মদিনা সনদ নামে খ্যাত। মদীনা সনদে মোট ৪৭টি ধারা ছিল। তন্মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি ধারা হলো
১. সনদে স্বাক্ষরকারী, মুসলমান, ইহুদি, খ্রিষ্টান ও পৌত্তলিক স¤প্রদায়গুলো সমানভাবে নাগরিক অধিকার ভোগ করবে।
২. মহানবি হযরত মুহাম্মদ (স) হবেন প্রজাতন্ত্রের প্রধান এবং সর্বোচ্চ বিচারালয়ের কর্তা।
৩. মুসলমান ও অমুসলমান স¤প্রদায় স্বাধীনভাবে নিজ নিজ ধর্ম পালন করবে। অর্থাৎ কেউ কারও ধর্ম পালনে হস্তক্ষেপ করবে না।
৪. স্বাক্ষরকারী স¤প্রদায়সমূহের মধ্যে কখনো বিরোধ দেখা দিলে হযরত মুহাম্মদ (স) আল্লাহর বিধান অনুযায়ী তা মীমাংসা করবেন।
৫. মদিনা পবিত্র নগরী বলে ঘোষণা করা হলো। এখন থেকে এই শহরে রক্তপাত, হত্যা, ব্যভিচার এবং অন্যান্য অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হলো।
উপরিউক্ত ধারাসমূহ বিশ্লেষণ করলে বোঝা যায়, এ সনদ শুধু মদিনাবাসীর জন্য নয় বরং বিশ্বের সর্বত্র সকল জাতির জন্য কল্যাণকর। আর তাই মাওলানা কাশেম সাহেব এ সনদকে মানবাধিকারের অনন্য দলিল বলেছেন; যার সাথে আমিও সম্পূর্ণ একমত পোষণ করছি।
প্রশ্ন- ৭ হারত উমর (রা)
সাদেকা ও সালমা সহপার্ঠী। বিশ্বব্যাপী রাজনৈতিক দুরাবস্থা দেখে সাদেকা বলল, এ অবস্থা থেকে উত্তরণের কোনো উপায় দেখছি না। সালমা বলল, আমি মনে করি, বর্তমান শাসকশ্রেণি যদি হযরত উমর (রা)-এর ন্যায় রাষ্ট্র পরিচালনা করেন তাহলে আবার বিশ্বব্যাপী শান্তি প্রতিষ্ঠা হবেই। কেননা, ‘উমর (রা) ছিলেন সাম্য ও মানবতাবোধের মহান আদর্শ। [পটুয়াখালী সরকারি জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয়]
ক. উমর (রা) কে ছিলেন? ১
খ. হযরত উমর (রা)-এর ন্যায়বিচারের একটি উদাহরণ দাও। ২
গ. বর্তমান শাসকশ্রেণি কীভাবে উমর (রা)-এর পদাঙ্ক অনুসরণ করতে পারে? বর্ণনা কর। ৩
ঘ. ‘উমর (রা) ছিলেন সাম্য ও মানবতাবোধের মহান আদর্শ।’ উক্তিটি বিশ্লেষণ কর। ৪
ক হযরত উমর (রা) ছিলেন মুসলিম জাহানের দ্বিতীয় খলিফা।
খ হযরত উমর (রা) ছিলেন ন্যায় ও ইনসাফের মূর্তপ্রতীক। ন্যায়বিচারের ক্ষেত্রে তিনি ধনী-গরিব, উঁচু-নিচু, আপন-পর কোনো ভোদাভেদ করতেন না। তিনি নিজের পুত্র আবু শাহমাকে মদ্যপানের অপরাধে কঠোর শাস্তি দিয়েছিলেন।
গ হযরত উমর (রা)-এর ন্যায়বিচার ও শাসননীতি অনুসরণ করে বর্তমান শাসকশ্রেণি তাদের রাষ্ট্র পরিচালনা করতে পারে। হযরত উমর (রা) ৬৩৪ খ্রিষ্টাব্দে খিলাফতের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন গণতন্ত্রমনা। রাষ্ট্রের যেকোনো গুরুত্বপূর্ণ কাজে তিনি সাহাবিদের সাথে পরামর্শ করতেন। সকল সাহাবির মতামতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিতেন। খলিফা নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি রাষ্ট্রের উন্নয়ন ও নিরাপত্তার জন্য অনেক কাজ করেন। রাষ্ট্রের জনগণের খোঁজখবর রাখার জন্য পুলিশ বিভাগ ও গোয়েন্দা বিভাগ স্থাপন করেন। সেনাবাহিনীকে সুশৃঙ্খল করার জন্য প্রতি চার মাস পর বাধ্যতামূলক ছুটির ব্যবস্থা করতেন। এছাড়া কৃষি কাজের উন্নয়নের জন্য খাল খননের ব্যবস্থা করেন। জনসাধারণের অবস্থা নিজ চোখে দেখার জন্য তিনি রাতের অন্ধকারে পাড়া-মহল্লায় ঘুরে বেড়াতেন। একবার রাতে তিনি বের হয়ে ক্ষুধার্ত শিশুর কান্নার আওয়াজ শুনতে পান। শাসক হয়েও তিনি নিজ কাঁধে আটার বস্তা ঐ তাঁবুতে নিয়ে যান। সুতরাং বলা যায়, বর্তমান শাসকশ্রেণি হযরত উমর (রা)-এর উল্লিখিত শাসনব্যবস্থা অনুসরণ করে সমাজ ও দেশকে উন্নত ও সুন্দর করতে পারে।
ঘ ‘উমর (রা) ছিলেন সাম্য ও মানবতাবোধের মহান আদর্শ’- উক্তিটি যথার্থ। হযররত উমর ফারুক (রা) ছিলেন ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা। ইসলাম ধর্ম গ্রহণের পর ইসলামের প্রচার ও প্রসারের জন্য নিজ ধনসম্পদ অকাতরে ব্যয় করেন। তাবুক অভিযানে তিনি তার সমুদয় সম্পদের অর্ধেক আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় করেন। তিনি ছিলেন ন্যায় ও ইনসাফের মূর্তপ্রতীক। তার চোখে ধনী-গরিব, উঁচু-নিচু, আপন-পর কোনো ভেদাভেদ ছিল না। মদ্যপানের অপরাধে তিনি নিজ পুত্রকে শাস্তি দিতেও দ্বিধা করেননি। খিলাফতের দায়িত্ব গ্রহণের পর তার মানবীয় গুণাবলি আরও উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। সুশৃঙ্খলভাবে রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য তিনি পুলিশ বিভাগ ও গোয়েন্দা বিভাগ স্থাপন করেন। কৃষিকাজের উন্নয়নের জন্য খাল খনন করেন। জনসাধারণের অবস্থা নিজ চোখে দেখার জন্য তিনি রাতের অন্ধকারে পাড়া-মহল্লা ঘুরে ঘুরে দেখতেন। একজন শাসক হয়েও তিনি নিজ কাঁধে আটার বস্তা নিয়ে ক্ষুধার্ত শিশুর ঘরে রেখে আসেন। পৃথিবীর রাজা বাদশাহের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে এমন প্রজাবৎসল শাসক আর কোথাও পাওয়া যাবে না। তিনি ছিলেন মানবদরদি। সাম্য ও মানবতাবোধের মহান আদর্শ ছিলেন হযরত উমর ফারুক (রা)। প্রত্যেক শুক্রবার জুমুআর নামাযের সময় তিনি জনসাধারণের জন্য শাসকের বিরুদ্ধে কারও কোনো অভিযোগ থাকলে তা জানানোর ব্যবস্থা প্রচলন করেন। আমাদের দেশেও যদি শাসনকার্যে এরকম জবাবদিহিতার ব্যবস্থা করা যায় তবে শাসন কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিগণ কোনো ধরনের অন্যায় করতে পারবেন না। সুতরাং, হযরত উমর ফারুক (রা)-এর সার্বিক জীবন পর্যালোচনা করলে বোঝা যায়, তিনি ছিলেন সাম্য ও মানবতাবোধের মহান আদর্শ।
প্রশ্ন- ৮ হিলফুল ফুযুল
রহমতপুর গ্রামের দু’পাড়ার লোকদের মধ্যে একবার ধান কাটাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ হয় এবং তাকে অনেক লোক আহত হয়। উক্ত পরিস্থিতিতে স্থানীয় ইমাম সাহেব উক্ত পাড়ার বিশিষ্ট ব্যক্তিদের একত্রিত করে মহানবি (স) এর ‘হিলফুল ফুযুল’ সংগঠনের ভ‚মিকা আলোচনা করেন। অতঃপর সকলের সম্মতিতে উভয় পাড়ার সমান সংখ্যাক সদস্য নিয়ে ‘সবুজ সংঘ’ সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন এবং এ সংগঠনের সদস্যবৃন্দের সক্রিয় ভ‚মিকায় বিরাজমান বিবাদ মিটিয়ে উভয় পাড়ার মধ্যে শান্তি-স¤প্রীতি স্থাপনে সক্ষম হন। [ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুল এন্ড কলেজ, ঢাকা]
ক. কে মহাম্মদ (স) কে অসাধারণ বালক বলে উল্লেখ করেন? ১
খ. আইয়্যামে জাহিলিয়া বলতে কী বোঝায়? ২
গ. ‘সবুজ সংঘ’ প্রতিষ্ঠায় হিলফুল ফুযুলের কী প্রভাব ছিল?’ ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. “আধুনিক বিশ্বের জাতিসংঘ হিলফুল ফুযুলের কাছে অনেকাংশে ঋণি।” মূল্যায়ন কর। ৪
ক বুহায়রা নামক এক পাদ্রি মুহাম্মদ (স) কে অসাধারণ বালক বলে উল্লেখ করেন।
খ আইয়ামে জাহিলিয়া বলতে বোঝায় ইসলাম পূর্ব অজ্ঞতার যুগকে। মহানবি (স)-এর আবির্ভাবের পূর্বে আরব সমাজের লোকেরা পূর্বোক্ত নবি ও রাসুলগণের আদর্শ ও শিক্ষা ভুলে গিয়েছিল। ফলে তারা বিভিন্ন অসামাজিক কার্যকলাপে লিপ্ত হয়ে পড়েছিল। যেমন : নরহত্যা, রাহাজানি, খুন-খারাবি, ডাকাতি মূর্তিপূজা ইত্যাদি। আরব সমাজের এ বর্বর সময়কে আইয়ামে জাহিলিয়া বা অজ্ঞতার যুগ বলা হয়।
গ সবুজসংঘ প্রতিষ্ঠায় হিলফুল ফুযুলের আদর্শের প্রভাব ছিল। মহানবি (স) এর প্রতিষ্ঠিত হিলফুল ফুযুল নামক সংগঠনটির একটি আদর্শ ছিল শান্তি-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করা এবং গ্রোত্রে গোত্রে শান্তি, স¤প্রীতি বজায় রাখা। সবুজ সংঘ প্রতিষ্ঠায় এই আদর্শের প্রভাবই লক্ষণীয়। ইসলাম পূর্ব যুগে কায়েস গোত্র অন্যায়ভাবে কুরাইশদের ওপর ফিজার যুদ্ধ চাপিয়ে দিয়েছিল। এ যুদ্ধের বিভীষিকা দেখে নবি (স) এর হৃদয় কেঁদে উঠল। আহতদের আর্তনাদ শুনে তিনি অস্থির হয়ে পড়লেন। শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য তিনি হিলফুল ফুযুল গঠন করলে। ফলে সেখানে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হলো। এর অনুসরণেই সবুজ সংঘ সংগঠনটি প্রতিষ্ঠিত হয়। রহমতপুর গ্রামের দু’পাড়ার লোকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ পরিস্থিতিতে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ইমাম সাহেব উভয় পাড়ার লোকদের নিয়ে সবুজ সংঘ গঠন করলেন। ফলে উভয় পাড়ার মধ্যে বিরাজমান বিবাদ মিটে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হলো। এতে প্রমাণিত হয় যে, সবুজ সংঘ প্রতিষ্ঠায় হিলফুল ফুযুলের আদর্শের প্রভাব ছিল।
ঘ আধুনি বিশ্বের জাতিসংঘ হিলফুল ফুযুলের কাছে অনেকাংশে ঋণি- মন্তব্যটি যথার্থ। মহিনবি (স) প্রতিষ্ঠিত হিলফুল ফুযুল নামক সংঘঠনটি কয়েকটি উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে গঠিত হয়েছিল। যেমন- আর্তের সেবা, অত্যাচারীকে প্রতিরোধ ও অত্যাচারিতকে সাহায্য করা। শান্তি-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করা এবং গোত্রে গোত্রে শান্তি-স¤প্রীতি বজায় রাখা। আধুনিক বিশ্বের জাতিসংঘ নামক সংগঠনটিও এসব উদ্দেশ্য নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়। মানবতার মুক্তির দূত রাসুল (স) ফিজার যুদ্ধের ভয়াবহতা দেখে অত্যন্ত দুঃখিত হয়েছিলেন। ফলে তিনি আরবের শান্তিকামী যুবকদের নিয়ে হিলফুল ফুযুল নামক সংগঠন প্রতিষ্ঠা করলেন। এর আদর্শে তৎকালীন আরবের গোত্রকলাহ বন্ধ হয়ে শান্তি ও স¤প্রীতি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। উল্লিখিত অবস্থার মতো এক পরিস্থিতিতেই জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ভয়াবহতা বিবেকবান মানুষের সৃদয়কে প্রকম্পিত করেছিল। ফলে তারা বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠা করলেন জাতিসংঘ। এ সংগঠনটি হিলফুল ফুযুলের মতো সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে শান্তি ও স¤প্রতি প্রতিষ্ঠায় অসামান্য অবদান রেখে যাচ্ছে। হিলফুল ফুযুল নামক শান্তিসংঘ প্রতিষ্ঠার পর আরবের গোত্রীয় দ্ব›েদ্বর প্রতিষ্ঠা মানসিকতা তৈরি হয়। অন্যায়, অত্যাচার পরিহার করে তারা সাম্য ভিত্তিক শান্তিময় সমাজ প্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদধ হয়।
মাস্টার ট্রেইনার প্রণীত সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন- ৯ মহানবি হযরত মুহাম্মদ (স) এর সমকালীন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অবস্থা
এক ওয়াজ মাহফিলে মাওলানা কেরামত আলী বলেন, মহানবি (স)-এর আবির্ভাবের পূর্বে আরবের মানুষ সর্বপ্রকার জঘন্যতম অনাচার ও পাপাচারে লিপ্ত ছিল। তাদের আচার-আচরণ ছিল মানবতাবিরোধী। এ সময়ে মানুষের জানমাল, ইজ্জত-আব্রæর কোনো নিরাপত্তা ছিল না। ওই যুগে আরবদের সংস্কৃতি চর্চার প্রধান মাধ্যম ছিল কবিতা।
ক. কাবাঘরে কয়টি মূর্তি ছিল? ১
খ. ‘আস-সাবউল মুআল্লাকাত’ বলতে কী বোঝায়? ২
গ. মাওলানা কেরামত আলীর আলোচনায় কোন যুগের প্রতিচ্ছবি ফুটে উঠেছে? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. ‘ওই যুগে আরবদের সংস্কৃতি চর্চার প্রধান মাধ্যম ছিল কবিতা’Ñবিশ্লেষণ কর। ৪
ক কাবাঘরে ৩৬০টি মূর্তি ছিল।
খ ‘আস-সাবউল মুআল্লাকাত’ হলো সাতটি ঝুলন্ত গীতিকবিতা। আরবি সাহিত্যের শ্রেষ্ঠ এ সম্পদটি জাহিলি যুগেই রচিত। তৎকালীন আরবে উকায মেলা নামে বাৎসরিক একটি মেলা বসত। মেলায় সে সময়ের প্রসিদ্ধ কবিগণ তাদের স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি করতেন। যেসব কবিতা সেরা বিবেচিত হতো তা সোনালি বর্ণে লিখে পবিত্র কাবার দেয়ালে ঝুলিয়ে দেয়া হতো।
গ মাওলানা কেরামত আলীর আলোচনায় ‘আইয়ামে জাহিলিয়্যা’ বা অজ্ঞতার যুগের প্রতিচ্ছবি ফুটে উঠেছে। মহানবি (স) এর আবির্ভাবের পূর্বে আরবের মানুষ চরম বর্বরতা ও অজ্ঞতার মাঝে ডুবে ছিল। সুষ্ঠু ও সুন্দর সামাজিক ব্যবস্থা সম্পর্কে তাদের কোনো ধারণাই ছিল না। মানুষের জান, মাল, ইজ্জতের কোনো নিরাপত্তা ছিল না। নরহত্যা, রাহাজানি, খুন-খারাবি, ডাকাতি, মারামারি, কন্যা সন্তানকে জীবন্ত কবর দেওয়া, জুয়াখেলা, মদপান, সুদ, ব্যভিচার ছিল তখনকার প্রচলিত ব্যাপার। তৎকালীন সমাজে নারীর কোনো মর্যাদা ছিল না। নারীদের ভোগ বিলাসের বস্তু মনে করা হতো। দাসী হিসেবে নারীদের বাজারে বিক্রি করা হতো। এককথায় অপরাধের এমন কোনো দিক ছিল না যা তারা করত না। তাই সে যুগকে আইয়্যামে জাহেলিয়া বা অজ্ঞতার যুগ বলা হয়। উদ্দীপকের মাওলানা কেরামত আলী তার আলোচনায় সেই যুগের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অবস্থার বর্ণনা দিয়েছেন। প্রকৃতপক্ষে তৎকালীন আরবের সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয় ও অর্থনৈতিক অবস্থা ছিল চরমভাবে অধঃপতিত।
ঘ ‘ওই যুগে আরবদের সংস্কৃতি চর্চার প্রধান মাধ্যম ছিল কবিতা’। জাহেলি যুগে আরবের অধিকাংশ লোক নিরক্ষর ও অশিক্ষিত থাকলেও সাহিত্যের প্রতি তাদের খুব অনুরাগ ছিল। তাদের অনেকেই মুখে মুখে গীতিকবিতা চর্চা করত। তৎকালীন আরবে উকায মেলা নামে বাৎসরিক একটি মেলা বসত। মেলায় তৎকালীন সময়ের প্রসিদ্ধ কবিগণ তাদের স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি করত। যেসব কবিতা সেরা বিবেচিত হতো সেগুলো সোনালি বর্ণে লিখে পবিত্র কাবার দেয়ালে ঝুলিয়ে দেওয়া হতো। আরবি সাহিত্যের শ্রেষ্ঠ সম্পদ ‘আস-সাবউল মুআল্লাকাত’ জাহিলি যুগেই রচিত। কবিতা রচনার কারণে আরবরা জাহিলি যুগেই বিশ্বে খ্যাতি অর্জন করেছিল। তাদের কবিতা মানের দিক থেকে ছিল খুব উন্নত। হযরত ইবনে আব্বাস (রা) বলেন, ‘যদি তোমরা আল্লাহর কিতাবের কোনো কিছু বুঝতে না পার তবে তার অর্থ আরবদের কবিতায় তালাশ কর। কারণ কবিতা তাদের জীবনালেখ্য।’ এতে বোঝা যায়, প্রাচীন আরবদের সংস্কৃতি চর্চার প্রধান মাধ্যম ছিল কবিতা। আর এ কারণেই উদ্দীপকের মাওলানা সাহেব জাহিলি যুগের সাংস্কৃতিক অবস্থা তুলে ধরতে উক্তিটি করেন, যা ঐতিহাসিকভাবে সত্য ও যথার্থ।
প্রশ্ন- ১০ মহানবি হযরত মুহম্মদ (স) এর জন্ম, শৈশব ও কৈশোর
সেলিম সাহেব প্রায় তার নাতি-নাতনিকে বিভিন্ন নবি-রাসুলের জীবনী শুনিয়ে থাকেন। গতকাল তিনি তাদেরকে যে মহান ব্যক্তির জীবনী শুনিয়েছেন তিনি ছয় বছর বয়সে মাকে হারান, জন্মের পূর্বেই পিতাকে হারান। শৈশবে তিনি প্রথমে দাদা ও পরে চাচার কাছে লালিত-পালিত হন। তিনি ছিলেন সত্যবাদী ও শান্তিকামী।
ক. মহানবির (স) মাতার নাম কী? ১
খ. বিয়ের পর মহানবি (স) কীভাবে প্রচুর ধন-সম্পদের মালিক হন? ২
গ. উদ্দীপকে যে মহান মনীষীর কথা বলা হয়েছে তাঁর শৈশবকাল পাঠ্যপুস্তকের আলোকে ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. ‘তিনি ছিলেন সত্যবাদী ও শান্তিকামী’Ñ বিশ্লেষণ কর। ৪
ক মহানবি (স)-এর মাতার নাম আমিনা।
খ মহানবি (স) চাচা আবু তালিবের অনুমতি নিয়ে খাদিজাকে বিবাহ করেন। বিবাহের পর খাদিজার আন্তরিকতায় ও সৌজন্যে হযরত মুহাম্মদ (স) প্রচুর সম্পদের মালিক হন। কিন্তু হযরত মুহাম্মদ (স) এ সম্পদ নিজের ভোগ-বিলাসে ব্যয় না করে অসহায়, দুঃখী, পীড়িত ও গরিব-মিসকিনদের সেবায় ব্যয় করেন।
গ উদ্দীপকে যে মহান মনীষীর কথা বলা হয়েছে তিনি হলেন আমাদের প্রিয় নবি হযরত মুহাম্মদ (স)। তাঁর শৈশবকাল পাঠ্যপুস্তকের আলোকে ব্যাখ্যা করা হলো। মহানবি হযরত মুহাম্মদ (স) ৫৭০ খ্রিষ্টাব্দে আরব দেশের মক্কা নগরিতে সম্ভ্রান্ত কুরাইশ বংশে জন্মগ্রহণ করেন। জন্মের পূর্বেই তাঁর পিতা ইন্তিকাল করেন। দাদা আব্দুল মুত্তালিব তাঁর নাম রাখেন মুহাম্মদ। আর তাঁর মাতা নাম রাখেন আহমাদ। জন্মের পর মহানবি হযরত মুহাম্মদ (স) ধাত্রী মা হালিমার ঘরে লালিত-পালিত হন। শৈশবকাল থেকে মহানবি (স)-এর মাঝে ন্যায় ও ইনসাফের দৃষ্টান্ত দেখা যায়। তিনি ধাত্রী হালিমার একটি স্তন পান করতেন অন্যটি তাঁর দুধভাই আব্দুল্লাহর জন্য রেখে দিতেন। হালিমা মহানবি (স)-কে পাঁচ বছর লালন-পালন করে তাঁর মা আমিনার নিকট রেখে যান। তাঁর বয়স যখন ছয় বছর তখন তাঁর মাতা ইন্তিকাল করেন। এ সময় প্রিয় নবি (স) অসহায় হয়ে পড়লে তাঁর লালন-পালনের দায়িত্ব নেন দাদা আব্দুল মুত্তালিব। আট বছর বয়সে তাঁর দাদাও মারা যান। এরপর লালন-পালনের দায়িত্ব নেন চাচা আবু তালিব। এভাবেই মহানবি (স)-এর শৈশবকাল অতিবাহিত হয়। উদ্দীপকের সেলিম সাহেব তার নাতি-নাতনিদের উদ্দেশ্যে নবি-রাসুলের জীবনী আলোচনার ধারাবাহিকতায় মহানবি হযরত মুহাম্মদ (স)-এর শৈশবকালের এ বর্ণনা দিয়েছেন।
ঘ ‘তিনি ছিলেন সত্যবাদী ও শান্তিকামী’ মহানবি (স) সম্পর্কে এ উক্তিটি করেছেন উদ্দীপকের সেলিম সাহেব। মানুষকে সঠিক পথ প্রদর্শনের জন্য আল্লাহ তায়ালা যুগে যুগে যে সব নবি-রাসুল পাঠিয়েছেন তাঁদের মধ্যে সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ নবি ও রাসুল হলেন আমাদের প্রিয়নবি হযরত মুহাম্মদ (স)। এ মহামনীষীর জীবনী বর্ণনার শেষ পর্যায়ে উদ্দীপকের সেলিম সাহেব বলেন, ‘তিনি ছিলেন সত্যবাদী ও শান্তিকামী।’ মহানবি (স) মাত্র ১২ বছর বয়সে ব্যবসার উদ্দেশ্যে চাচার সঙ্গে সিরিয়া যান। সেখান থেকে ফিরে এসে তিনি ফিজার যুদ্ধের বিভীষিকা দেখেন। পাঁচ বছর স্থায়ী এ যুদ্ধে বহু মানুষ আহত ও নিহত হয়। এ যুদ্ধের ভয়াবহতা প্রত্যক্ষ করে মুহাম্মদ (স)-এর কোমল হৃদয় কেঁদে ওঠে। তাই তিনি আরবের শান্তিকামী যুবকদের নিয়ে হিলফুল ফুযুল (শান্তিসংঘ) গঠন করেন। এ সংঘের মাধ্যমেই তিনি আর্তের সেবা, অত্যাচারীকে প্রতিরোধ ও অত্যাচারিতকে সাহায্য করেন এবং শান্তিশৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করেন। অন্যদিকে মহানবি (স)-এর চারিত্রিক গুণাবলি, আমানতদারিতা, সত্যবাদিতা, ন্যায়নিষ্ঠা ও দায়িত্বশীলতার কারণে তৎকালীন আরবের লোকজন তাঁকে আল-আমিন (বিশ্বাসী) উপাধি দিয়েছিল। উপরিউক্ত আলোচনায় প্রতীয়মান হয় যে, মহানবি হযরত মুহাম্মদ (স) ছিলেন সত্যবাদী ও শান্তিকামী।
বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
বোর্ড ও সেরা স্কুলের বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
সাধারণ বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
১. ‘কিতাবুল মানাযির’ গ্রন্থখানি কোন বিষয়ের উপর রচিত? [স. বো. ’১৬]
ক রসায়ন খ গণিত
গ চিকিৎসা বিজ্ঞান দৃষ্টিবিজ্ঞান
২. কোন খলিফার ভাষণ সকল রাষ্ট্রনায়কদের জন্য আদর্শ হিসেবে বিবেচিত হয়? [স. বো. ’১৬]
হযরত আবু বকর (রা) এর খ হযরত উমর (রা) এর
গ হযরত উসমান (রা) এর ঘ হযরত আলি (রা) এর
৩. কাকে ‘হুজ্জাতুল ইসলাম’ নামে অভিহিত করা হয়? [স. বো. ’১৬]
ইমাম গাযালি (র) খ ইমাম আবু হানিফা (র)
গ জাবির ইবনে হাইয়ান ঘ জুননুন মিসরি
৪. জাহিলিয়া যুগের ঘোর অন্ধকারের মধ্যেও আরবদের কোন দিকটি প্রশংসার দাবি রাখে? [স. বো. ’১৬]
ক সামাজিক ব্যবস্থা খ অর্থনৈতিক অবস্থা
সংস্কৃতি চর্চা ঘ ধর্মীয় অবস্থা
৫. আস সাবউল মুয়াল্লাকাহ’ অর্থ কী? [স. বো. ’১৫]
সাতটি ঝুলন্ত গীতিকবিতা খ মুখরোচক কাহিনী
গ প্রবাদ-প্রবচন ঘ আরবদের জীবনালেখ্য
৬. কোনটির পার্শ্বে ‘জাবালে রহমত’ অবস্থিত? [স. বো. ’১৫]
ক মক্কা শরিফ খ মদিনা শরিফ
গ বদর প্রান্তর আরাফাতের ময়দান
৭. ইমাম আবু হানিফা (র) কে ইমাম আজম বা বড় ইমাম বলার কারণ হচ্ছেÑ [স. বো. ’১৫]
ক জীবনে ৫৫ বার হজ করা
খ একাধারে ৩০ বছর রোযা রাখা
ফিকহ শাস্ত্রে সর্বাধিক অবদান রাখা
ঘ সর্বাধিক সময় ইবাদতে মগ্ন থাকা
৮. আল-জামি গ্রন্থে কোনগুলো আলোচিত হয়েছে? [স. বো. ’১৫]
ক পদার্থ, রসায়ন ও চিকিৎসা খ গণিত, ভ‚গোল ও জ্যোতির্বিদ্যা
জ্যোতির্বিদ্যা, দর্শন ও চিকিৎসা ঘ তাফসির, হাদিস ও ফিকহ
৯. আল-কিন্দি কত খ্রিষ্টাব্দে ইন্তিকাল করেন? [স. বো. ’১৫]
ক ৮৬৪ ৮৭৪ গ ৮৮৪ ঘ ৮৯৪
১০. কাওয়ায়েদুল হান্দাসা’ কোন বিষয়ের ওপর লিখিত গ্রন্থ? [স. বো. ’১৫]
ক ভ‚গোল গণিত গ রসায়ন ঘ পদার্থ
১১. শৈশবকাল হতে মহানবি হযরত মুহাম্মদ (স)-এর মাঝে কীসের দৃষ্টান্ত দেখা যায়? [রাজউক উত্তরা মডেল কলেজ, ঢাকা]
ক ঐক্য ও সাম্যের খ উদারতার
ন্যায় ও ইনসাফের ঘ দয়া ও অনুগ্রহের
১২. রাসুল (স)-এর দাফন ও তাঁর উত্তরাধিকারীর বিষয়ে কার থেকে বর্ণিত হাদিস দ্বারা সমাধান হয়? [রাজউক উত্তরা মডেল কলেজ, ঢাকা]
হযরত আবু বকর (রা) খ হযরত উমর (রা)
গ হযরত উসমান (রা) ঘ হযরত আলি (রা)
১৩. হযরত মুহাম্মদ (স)-এর কত বছর বয়সে কাবা শরিফ পুনর্নির্মাণ করা হয়? [আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজ, মতিঝিল, ঢাকা]
ক পঁচিশ খ পঞ্চাশ গ চল্লিশ পঁয়ত্রিশ
১৪. রাসুল (রা) কোন বংশে জন্মগ্রহণ করেন? [গভ. ল্যাবরেটরি স্কুল এন্ড কলেজ, ঢাকা]
কুরাইশ খ তাইম গ কায়েস ঘ বনুবকর
১৫. আল মানসুরি কত খণ্ডে রচিত? [গভ. ল্যাবরেটরি স্কুল এন্ড কলেজ, ঢাকা]
১০ খ ১২ গ ১৫ ঘ ২০
১৬. মক্কা বিজয়ের সময় মুসলিম বাহিনীর পতাকা কার হাতে ছিল?
[মাইলস্টোন কলেজ, ঢাকা]
ক হযরত আবু বকর (রা)-এর খ হযরত উমর (রা)-এর
গ হযরত খালিদ বিন ওয়ালিদ (রা)-এর হযরত আলি (রা)-এর
১৭. ভ‚কম্পন বিষয়ে প্রবন্ধ লেখেন কোন মনীষী? [মাইলস্টোন কলেজ, ঢাকা]
ক আল মোকাদ্দাসি আল মাসুদি
গ ইবনে খালদুন ঘ ইবনে আব্দুল্লাহ
১৮. মসজিদে নববির বারান্দায় যে শিক্ষায়তন গড়ে তোলা হয় তা হলোÑ
[ময়মনসিংহ জিলা স্কুল]
ক বায়তুল হিকমাহ খ বায়তুন নূর
গ বায়তুল ফালাহ সুফফা
১৯. লক্ষাধিক হাদিস সনদসহ মুখস্ত করেনÑ [ময়মনসিংহ জিলা স্কুল]
ক ইমাম মালেক (রা) খ ইমাম আবু হানিফা (রা)
ইমাম বুখারি (রা) ঘ ইমাম গাযালি (রা)
২০. ভ‚গোলকের অক্ষ রেখা পরিমাপ করেনÑ [ময়মনসিংহ জিলা স্কুল]
ক জুননুন মিসরি খ জাবির ইবনে হাইয়ান
আল বিরুনি ঘ আল কিন্দি
২১. ‘কিতাবুল জিবার ওয়াল মুকাবালা’-গ্রন্থখানিÑ [ময়মনসিংহ জিলা স্কুল]
ক ইতিহাসশাস্ত্র গণিতশাস্ত্র
গ ভূগোলশাস্ত্র ঘ চিকিৎসাশাস্ত্র
২২. মহানবি (স) মক্কায় যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তোলেন তার নাম কী?
[খুলনা জিলা স্কুল]
ক দারুস সালাম দারুল আরকাম
গ দারুল আমান ঘ বাইতুল হামদ
২৩. “কিতাবুল মানাযির” গ্রন্থের রচয়িতা কে? [খুলনা জিলা স্কুল]
ক ইবনে রুশদ হাসান ইবনে হায়সাম
গ নাসির উদ্দিন তুসি ঘ জাবির ইবনে হাইয়ান
২৪. চরম মিথ্যাবাদীকে কী বলা হয়? [খুলনা জিলা স্কুল]
কায্যাব খ কিযব গ কাযিব ঘ সিদ্দিক
২৫. মদিনা সনদের মোট কতটি ধারা ছিল? [বরিশাল জিলা স্কুল]
৪৭ খ ৪৮ গ ৪৯ ঘ ৪৬
২৬. বসন্ত ও হাম রোগের ওপর আল জুদাইরি ওয়াল হাসবাহ নামক গ্রন্থটি রচনাকারী কে? [বরিশাল জিলা স্কুল]
ক ইমাম গাযালি আবু বকর আল রাযি
গ আল বিরুনি ঘ জাবির ইবনে হাইয়ান
২৭. ইসলামের ত্রাণকর্তা বলা হয় কাকে? [বরিশাল জিলা স্কুল]
হযরত আবু বকর (রা) খ হযরত উসমান (রা)
গ হযরত উমর (রা) ঘ হযরত মুয়াবিয়া (রা)
২৮. রসায়নশাস্ত্রের জনক বলা হয় কাকে? [নওগাঁ জিলা স্কুল]
ক আল রাযিকে খ আল কিন্দিকে
গ ইবনে সিনাকে জাবির ইবনে হাইয়ানকে
২৯. ম্যাগনিফাইং গøাস আবিষ্কার করেন কে?
[সরকারি করোনেশন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়, খুলনা]
ক নাসির উদ্দিন তুসি খ উমর খৈয়াম
হাসান ইবনে হায়সাম ঘ ইয়াকুত ইবনে আব্দুল্লাহ
৩০. ইমাম আবু হানিফা (রা) কত হিজরিতে জন্মগ্রহণ করেন?
[দাউদ পাবলিক স্কুল, যশোর, সেনানিবাস]
ক ৬০ খ ৭০ ৮০ ঘ ১০০
৩১. কোন কোন গোত্রের মধ্যে ফিজারের যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল?
[ঝিনাইদহ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
ক কুরাইশ ও বনু বকর কুরাইশ ও কায়স
গ বদর যুদ্ধ ঘ উহুদ যুদ্ধ
৩২. ‘উসওয়াতুন’ শব্দের অর্থ কী? [পটুয়াখালী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
ক জীবনী খ চরিত্র আদর্শ ঘ নীতি
৩৩. ‘ঞযব গরফফষব ইড়ড়শং নবঃবিবহ এবড়সবঃৎু ধহফ অংঃৎড়হড়সু’ এই বইটি কার লেখা? [পটুয়াখালী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
ক হাসান ইবনে হায়সাম খ মুসা আল খাওয়ারেজামি
গ উমর খৈয়াম নাসির উদ্দিন তুসি
৩৪. পৃথিবীর ইতিহাসে সর্বপ্রথম লিখিত সংবিধান কোনটি?
[পুলিশ লাইন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, যশোর]
ক ব্রিটিশ সংবিধান খ গ্রিক সংবিধান
গ যুক্তরাজ্য সংবিধান মদিনা সনদ
৩৫. বীজগণিতের প্রথম আবিষ্কারক কে? [সেন্ট জোসেফ উচ্চ বিদ্যালয়, খুলনা]
ক আলমাসুদি খ তাবারি
আল-খাওয়ারেযমি ঘ আল বিরুনি
৩৬. ‘কানুন ফিততিব্ব’ গ্রন্থখানি কোন বিষয়ের ওপর রচিত?
[সেন্ট জোসেফ উচ্চ বিদ্যালয়, খুলনা]
ক রসায়ন খ গণিত চিকিৎসা ঘ পদার্থ
৩৭. ‘কামুস’ দুর্গ জয় করার গৌরব অর্জন করেন- [সেন্ট জোসেফ উচ্চ বিদ্যালয়, খুলনা]
ক হযরত খালেদ (রা) হযরত আলি (রা)
গ হযরত আব্দুলাহ ইবনে জুবাইর (রা) ঘ হযরত মুহাম্মদ (স)
৩৮. দারুল আরকাম একটি- [বাংলাদেশ নৌবাহিনী স্কুল এন্ড কলেজ, খুলনা]
ক লাইব্রেরি খ মসজিদ গ বিজ্ঞানাগার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান
৩৯. হাজ্জাজ ইবন ইউসুফ কুরআন মাজিদের কী প্রবর্তন করেন?
[বাংলাদেশ নৌবাহিনী স্কুল এন্ড কলেজ, খুলনা]
ক মনজিল খ পারা গ রুকু হরকত
৪০. জ্যামিতিকে জ্যোতির্বিজ্ঞান হতে পৃথক করে বর্ণনা করেনÑ
[সাতক্ষীরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়]
ক মুসা আল খাওয়ারেযমি খ হাসান ইবনে হায়সাম
গ উমর খৈয়াম নাসির উদ্দিন তুসি
৪১. ইমাম বুখারি একাধারে কয় বছর হাদিস বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করেন?
[বরিশাল সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
ক ৪ খ ৫ ৬ ঘ ৭
৪২. ‘বায়াতুল হিকমাহ’ কোথায় অবস্থিত? [ভোলা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
ক রোমে খ পারস্যে বাগদাদে ঘ মদিনায়
৪৩. ‘বাইতুল হিকমা’ কে প্রতিষ্ঠা করেন? [ক্যান্টেনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজ, রংপুর]
ক রাসুল (স) খ আবু বকর (রা) গ উমর (রা) খলিফা মামুন
৪৪. “আল জুদাইরি ওয়াল হাসবাহ” কী বিষয়ক গ্রন্থ?
[ক্যান্টেনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজ, রংপুর]
ক দৃষ্টি বিজ্ঞান খ আরবি অভিধান চিকিৎসা ঘ ভ্রমণ
৪৫. বুহায়রা মহানবি (স) কে কী বলে উলেখ করেন?
[ক্যান্টেনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজ, রংপুর]
শেষ নবি খ অসাবধান বালক
গ বুদ্ধিমান বালক ঘ আদর্শ বালক
৪৬. রসায়ন শাস্ত্রে কার অবদান সবচেয়ে বেশি?
[সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, হেলেনাবাদ, রাজশাহী]
ক আলবিরুনি খ আল খাওয়ারিযমি
গ উমর খৈয়াম জাবির ইবন হাইয়ান
৪৭. ইমাম বুখারি (র) কতজন হাদিস বিশারদ এর সামনে হাদিস মুখস্থের পরীক্ষা দেন? [নওয়াব ফয়জুন্নেছা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, কুমিলা]
ক একশত খ দুইশত গ তিনশত চারশত
৪৮. ‘মুজামুল বুলদান’ কোন ধরনের গ্রন্থ? [ব−ু-বার্ড স্কুল এন্ড কলেজ, সিলেট]
ক তাফসির খ হাদিস গ ইতিহাস ভ‚গোল
৪৯. ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাকুর তার ছেলেকে মদ্যপানের অপরাধে কঠিন শাস্তি দিলেন। শাকুর সাহেবের কাজে কোন খলিফার আদর্শ ফুটে উঠেছে? [ব−ু-বার্ড স্কুল এন্ড কলেজ, সিলেট]
ক হযরত আবু বকর (রা) হযরত উমর (রা)
গ হযরত উসমান (রা) ঘ হযরত আলি (রা)
৫০. ‘মুজামুল বুলদান’ গ্রন্থের রচয়িতাÑ [চট্টগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়]
ক উমর খৈয়াম খ আল-খাওয়ারেযমি
ইয়াকুত ইবনে আব্দুল্লাহ ঘ হাসান ইবনে হায়সাম
৫১. ‘হিলফুল ফুযুল’ হচ্ছেÑ [চট্টগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়]
ক শান্তি চুক্তি শান্তি সংঘ গ মৈত্রী চুক্তি ঘ জাতিসংঘ
৫২. হযরত মুহাম্মদ (স) নবি হবেন এ ভবিষ্যদ্বাণী সর্বপ্রথম কে করেছিলেন?
[চট্টগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়]
ক ওয়ারাকা বুহায়রা গ খাদিজা ঘ আমিনা
৫৩. রাসুল (স) কত বছর গোপনে দাওয়াতের কাজ করেছেন?
[নাসিরাবাদ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, চট্টগ্রাম]
ক দুই তিন গ চার ঘ পাঁচ
৫৪. হযরত উমর (রা) স্বীয় পুত্রকে শাস্তি দিয়ে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন-
[নাসিরাবাদ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, চট্টগ্রাম]
ক সততা ও মানবতা ন্যয়বিচার ও সাম্য
গ আমানতদারিতা ঘ ভালোবাসা ও স¤প্রীতি
বহুপদী সমাপ্তিসূচক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
৫৫. রিপন সাহেব একজন বিচারক। তার ন্যায় বিচারের ফলে সমাজে প্রতিষ্ঠিত হবেÑ [পাবনা জিলা স্কুল]
র. ভ্রাতৃত্ব
রর. শান্তি
ররর. শৃঙ্খলা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর র, রর ও ররর
৫৬. মহানবি (স) এর শিশু চরিত্রে অনুপম দৃষ্টান্ত ফুটে ওঠে-
[সেন্ট জোসেফ উচ্চ বিদ্যালয়, খুলনা]
র. ইনসাফের
রর. সততার
ররর. আমানতদারীর
নিচের কোনটি সঠিক?
র খ রর গ ররর ঘ রর ও ররর
৫৭. হযরত উমর (রা) এর সময় কোন ধরনের সরকারব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল? [বাংলাদেশ নৌবাহিনী স্কুল এন্ড কলেজ, খুলনা]
র. গণতান্ত্রিক
রর. স্বৈরতান্ত্রিক
ররর. জবাবদিহিমূলক
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র খ রর গ রর ও ররর র ও ররর
৫৮. হযরত আলি (রা)-এর নাম ছিলÑ [ভোলা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
র. আবু তোরাব
রর. আবুল হাসান
ররর. আতিক
নিচের কোনটি সঠিক?
র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৫৯. “আলকানুন ফিত-তিব্ব”-গ্রন্থটিকে বাইবেল বলার কারণÑ
[ক্যান্টেনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজ, রংপুর]
র.. এর সমপর্যায়ের কোনো গ্রন্থ আজও দেখা যায় না
রর. আধুনিক বিশ্বেও বিভিন্ন ভাষায় অনুবাদ করে পাঠদান করা হচ্ছে
ররর. চিকিৎসা সম্বন্ধীয় যাবতীয় তথ্যের আশ্চর্য সমাবেশ
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র র ও ররর গ ররর ঘ র, রর ও ররর
৬০. হযরত উমর (রা)-এর বৈশিষ্ট্য- [সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, হেলেনাবাদ, রাজশাহী]
র. ন্যায় ও ইনসাফ
রর. কঠোরতা
ররর. গণতন্ত্রমণা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৬১. হযরত আবু বকর (রা) উদীয়মান ইসলামি রাষ্ট্রকে বিকৃতি ও ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করেনÑ [চট্টগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়]
র. কুরআন সংকলন করে
রর. ভণ্ড নবিদের দমন করে
ররর. যাকাত অস্বীকারকারীদের দমন করে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর র, রর ও ররর
৬২. ‘কিতাবুল মানাযির’ গ্রন্থখানির বৈশিষ্ট্যÑ [পুলিশ লাইন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, যশোর]
র. দৃষ্টি বিজ্ঞানের মৌলিক বই
রর. চিকিৎসা বিজ্ঞান বিষয়ক প্রাচীন গ্রন্থ
ররর. গণিত শাস্ত্রের বিশ্বকোষ
নিচের কোনটি সঠিক?
র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
অভিন্ন তথ্যভিত্তিক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ে ৬৩ ও ৬৪ প্রশ্নের উত্তর দাও :
বন্দর জামে মসজিদের খতিব সাহেব উপস্থিত মুসল্লিদের বেশি বেশি করে আল্লাহর রাস্তায় দান করতে উৎসাহিত করেন। তাঁর আহŸানে সাড়া দিয়ে জনাব ‘ক’ তাঁর সমুদয় সম্পত্তি আল্লাহর রাস্তায় দান করে দেন। [স. বো. ’১৬]
৬৩. জনাব ‘ক’ এর কার্যক্রমের সাথে ‘খুলাফায়ে রাশেদুনের’ কোন খলিফার কার্যক্রম সাদৃশ্যপূর্ণ?
হযরত আবু বকর (রা) খ হযরত উমর (রা)
গ হযরত উসমান (রা) ঘ হযরত আলি (রা)
৬৪. উল্লিখিত খলিফার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য হলো
র. বয়স্কদের মধ্যে প্রথম ইসলাম গ্রহণ করেন
রর. কঠোরহস্তে ভণ্ড নবিদের দমন করেন
ররর. আল-কুরআনকে গ্রন্থাকারে প্রকাশ করেন
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ রর ও ররর গ র ও ররর র, রর ও ররর
নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ে ৬৫ ও ৬৬ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
গাজীপুর ইউনিয়নের খান এবং ভঁ‚ইয়া বংশ তাদের নিজ নিজ সুনামের জন্য বিখ্যাত। তবে কিছুদিন ধরে তাদের মধ্যে দ্ব›দ্ব চলে আসছে। খানেরা অন্যায়ভাবে ভঁ‚ইয়াদের ওপর আক্রমণ চালায়। পরিস্থিতি ভয়াবহ দেখে গ্রামের একজন নামকরা সমাজসেবক কতিপয় শান্তিকামী লোক নিয়ে একটি সংঘ গঠন করেন যা গ্রামের শান্তিশৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় ভ‚মিকা রাখে। [দিনাজপুর জিলা স্কুল]
৬৫. অনুচ্ছেদের ঘটনাটি রাসুল (স)Ñএর কোন ঘটনার সাথে সম্পর্কিত?
ক হিজরত হিলফুল ফুযুল গঠন
গ মদিনায় আদর্শ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা গ হুদায়বিয়ার সন্ধি স্থাপন
৬৬. উক্ত ঘটনাটির প্রেক্ষাপট কী ছিল?
ক বদর যুদ্ধের বিভীষিকা ফিজার যুদ্ধের ভয়াবহতা
গ কাফিরদের নির্মম অত্যাচার গ মুসলমানদের ইসলাম গ্রহণ
বিষয়ক্রম অনুযায়ী বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
পাঠ-১ : মহানবি হযরত মুহাম্মদ (স)-এর সমকালীন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অবস্থা
বোর্ড বই, পৃষ্ঠা ১৫৫
আরবরা অনেকেই মুখে মুখে চর্চা করত- গীতি কবিতা।
আমাদের জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ আদর্শ- মুহাম্মদ (স)।
রাসুলগণের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ রাসুল- মুহাম্মদ (স)।
রাসুল (স)-এর ওপর নাজিল হয়- আল-কুরআন।
আইয়ামে জাহিলিয়া অর্থ- অজ্ঞতার যুগ।
জাহিলি যুগে আরবের অধিকাংশ লোক ছিল- নিরক্ষর ও অশিক্ষিত।
তৎকালীন আরবের বাৎসরিক মেলার নাম ছিল- উকায মেলা।
আরবি সাহিত্যের শ্রেষ্ঠ সম্পদ আস সাবউল মুআল্লাকাত।
সাধারণ বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
৬৭. আল্লাহ তায়ালা নবি-রাসুল প্রেরণ করেছিলেন কেন? (অনুধাবন)
ক পৃথিবীকে বসবাসের উপযোগী করার জন্য
মানুষকে সঠিক পথ প্রদর্শনের জন্য
গ মানুষকে কৃষিকাজ শেখানোর জন্য
ঘ মানুষকে নিরাপত্তা দানের জন্য
৬৮. মহান আল্লাহ হযরত মুহাম্মদ (স) কে কেন প্রেরণ করেছিলেন? (জ্ঞান)
ক আরব দেশের সার্বিক উন্নতির জন্য
খ পৃথিবীর সৌন্দর্য অবলোকনের জন্য
গ রাজনৈতিক ঐক্য ও স¤প্রীতি গড়ার জন্য
মানুষকে সঠিক পথ দেখানোর জন্য
৬৯. রাসল (স)-এর আগমনের পূর্বে আরবের মানুষ কেমন ছিল? (অনুধাবন)
ক ধ্যান-জ্ঞানে মগ্ন থাকত
খ পারস্পরিক স¤প্রীতি ও সাম্যে বিশ্বাসী ছিল
বর্বরতা ও অজ্ঞতার মাঝে লিপ্ত ছিল
ঘ সামাজিক আতিথেয়তা ও শান্তিতে বসবাস করত
৭০. রাসুল (স)-এর আগমনের পূর্বে পবিত্র কাবায় কতটি মূর্তি স্থাপন করা হয়েছিল? (জ্ঞান)
ক ৩৪০ খ ৩৫০ ৩৬০ ঘ ৩৭০
৭১. মানুষকে মুক্তির পথ দেখিয়েছেন কে? (জ্ঞান)
ক ইমাম বুখারি (রা) খ ইমাম আবু হানিফা (রা)
মহানবি (স) ঘ ইমাম মালেক (র)
৭২. আরবদের আচার-ব্যবহার ছিল (জ্ঞান)
ক মাধুর্যতাপূর্ণ খ অমায়িক
গ সুন্দর মানবতাবিরোধী
৭৩. ‘আইয়ামে জাহিলিয়া’ অর্থ কী? (জ্ঞান)
অজ্ঞতার যুগ খ আলোর যুগ
গ নবযুগ ঘ আধুনিক যুগ
৭৪. রূপনগর এলাকার বাসিন্দারা ব্যভিচার, রাহাজানি, খুন-খারাবি, অপহরণসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত। তাদের এরূপ আচরণ কোন যুগের কার্যকলাপের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ? (প্রয়োগ)
ক প্রাচীন খ আধুনিক
জাহিলি ঘ মধ্য
৭৫. জয়াদের গ্রামের নারী সমাজের কোনো মর্যাদা নেই। প্রায় সময় নারীদের উপর পুরুষরা অত্যাচার করে। জয়াদের গ্রামের নারীদের অবস্থা কোন যুগের নারীদের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। (প্রয়োগ)
ক স্যাসেনীয় জাহিলিয়া গ প্রাচীন ঘ বর্তমান
৭৬. কারা কন্যাকে জীবন্ত কবর দিত? (জ্ঞান)
আরবরা খ কাফিররা
গ তায়েফবাসীরা ঘ মুশরিকরা
৭৭. আমবাজ শহরের জনগণ অশিক্ষিত নিরক্ষর হলেও সাহিত্যের প্রতি তাদের বিশেষ অনুরাগ রয়েছে। জাহিলি যুগের কাদের সাথে এদের তুলনা করা যায়? (প্রয়োগ)
আরবদের খ আমেরিকানদের
গ ইহুদিদের ঘ বিধর্মীদের
৭৮. জাহিলি যুগে আরবে কোন মেলার প্রচলন ছিল? (জ্ঞান)
ক বৈশাখী উকায
গ বই ঘ সারদীয়
৭৯. ‘আস-সাবউল মুআল্লাকাত’ জাহিলি যুগেই রচিত। এরূপ কবিতা রচনার ফলে আরবরা কী অর্জন করেছিল? (উচ্চতর দক্ষতা)
ক ধন-সম্পদ খ্যাতি
গ নেতৃত্ব ঘ কর্তৃত্ব
৮০. আরবরা জাহিলি যুগেই বিশ্বে খ্যাতি অর্জন করেছিল কেন? (অনুধাবন)
ক অমায়িক ব্যবহারের কারণে খ গান রচনার কারণে
কবিতা রচনার কারণে ঘ সুন্দর বাচনভঙ্গির কারণে
৮১. যখন তোমরা আল্লাহর কিতাবের কোনো কিছু বুঝতে না পার তবে তার অর্থ আরবদের কবিতায় তালাশ কর।”Ñ এর মর্মার্থ কী? (উচ্চতর দক্ষতা)
ক তাদের কবিতা খুব উন্নতমানের ছিল
খ কবিতার দ্বারা তারা জীবিকা নির্বাহ করত
কবিতা তাদের জীবনালেখ্য ছিল
ঘ কবিতা দ্বারা তারা মুখরোচক কাহিনী তৈরি করত
৮২. মুখরোচক কাহিনী কোথায় ছিল? (জ্ঞান)
ক আরবদের বাড়িতে খ আরবদের কাহিনীতে
আরবদের কবিতায় ঘ মক্কার কাবাঘরে
বহুপদী সমাপ্তিসূচক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
৮৩. রাসুল (স)-এর আবির্ভাবের সময় আরবের লোকেরা নিমজ্জিত হয়ে পড়েছিলÑ (অনুধাবন)
র. অনাচারে রর. পাপাচারে
ররর. অত্যাচারে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর র, রর ও ররর
৮৪. জাহলি যুগে আরবের লোকদের আচার-আচরণ ও চালচলন ছিল- (অনুধাবন)
র. বর্বর রর. মানবতাবিরোধী
ররর. স্বাভাবিক
নিচের কোনটি সঠিক?
র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৮৫. প্রাক ইসলামি যুগকে আইয়ামে জাহিলিয়া বলা হয়, কারণ- (উচ্চতর দক্ষতা)
র. তখন মানুষ অজ্ঞতা ও বর্বরতায় লিপ্ত ছিল
রর. সাহিত্যের প্রতি মানুষের বিশেষ অনুরাগ ছিল
ররর. নারী সমাজকে সামাজিক জীব হিসেবে মনে করা হতো না
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৮৬. জাহিলি যুগে নারী সমাজ- (অনুধাবন)
র. বিশেষ মর্যাদার অধিকারী ছিল
রর. ভোগ-বিলাসের বস্তু ছিল
ররর. অধিকার থেকে বঞ্চিত ছিল
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৮৭. জাহিলি যুগের আরবসমাজ নিরক্ষর ও অজ্ঞ থাকলেও সাংস্কৃতিক দিক দিয়ে তারা বিশ্বে খ্যাতি অর্জন করেছিল। কারণ- (উচ্চতর দক্ষতা)
র. তারা কবিতা রচনা করত
রর. বাগ্মিতায় তাদের পাণ্ডিত্য ছিল
ররর. তারা অতিথিপরায়ণ ছিল
নিচের কোনটি সঠিক?
র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
অভিন্ন তথ্যভিত্তিক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ে ৮৮ ও ৮৯ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
মানিকনগর গ্রামের অনেক যুবকই মদ, গাঁজা, ফেনসিডিল, ইয়াবাসহ বিভিন্ন মাদক সেবন ও বিক্রি করে। তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সেখানে প্রায়ই মারামারি ও খুন-খারাবি হয়।
৮৮. মানিকনগর গ্রামে কোন যুগের আচরণ পরিলক্ষিত হয়? (প্রয়োগ)
ক সমকালীন যুগের খ মাদানি যুগের
জাহিলি যুগের ঘ ইসলামি যুগের
৮৯. ঐ গ্রামের অবস্থা পরিবর্তনের জন্য আমাদের করণীয় হলো (উচ্চতর দক্ষতা)
র. দীনের দাওয়াত দেওয়া
রর. রাসুলের আদর্শ তুলে ধরা
ররর. তাদের বিরুদ্ধে জিহাদ করা
নিচের কোনটি সঠিক?
র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
পাঠ-২ : মহানবি হযরত মুহাম্মদ (স)-এর জন্ম, শৈশব ও কৈশোর বোর্ড বই, পৃষ্ঠা ১৫৬
ফিজার যুদ্ধ স্থায়ী হয়- ৫ বছর।
জাতিসংঘ ঋণি হিলফুল ফুযুলের কাছে।
রাসুল (স) জন্মগ্রহণ করেন- কুরাইশ বংশে।
মহানবি (স)-এর মাতার নাম- আমিনা।
হারবুল ফিজার অর্থ- অন্যায় যুদ্ধ।
হিলফুল ফুযুল অর্থ- শান্তিসংঘ।
মহানবি (স)-এর দুধ মাতার নাম- হালিমা।
শৈশবকাল থেকে মুহাম্মদ (স) ছিলেন- সত্যবাদী ও শান্তিকামী।
মহানবি (স) সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বাণী প্রদানকারী পাদ্রী হলেন- বুহায়রা।
সাধারণ বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
৯০. মহানবি হযরত মুহাম্মদ (স) কোন বংশে জন্মগ্রহণ করেন? (জ্ঞান)
ক কায়েস কুরাইশ গ বনু তাইম ঘ বনু নাজির
৯১. মহানবি (স)-এর জন্ম কত খ্রিষ্টাব্দে? (জ্ঞান)
৫৭০ খ ৬৭০ গ ৭৭০ ঘ ৮৭০
৯২. মহানবি (স)-এর পিতার নাম কী? (জ্ঞান)
ক আব্বাস আব্দুলাহ গ মুত্তালিব ঘ হাশিম
৯৩. মহানবি (স)-এর মায়ের নাম কী? (জ্ঞান)
ক হালিমা খ রহিমা আমিনা ঘ খাদিজা
৯৪. মহানবি (স)-এর নানার নাম কী? (জ্ঞান)
ক আবু বকর খ জুহুরি গ নওফেল ওয়াহাব
৯৫. মহানবি (স)-এর দাদার নাম কী? (জ্ঞান)
ক আবু তালিব আব্দুল মুত্তালিব
গ আব্দুল্লাহ ঘ আবুল হাশিম
৯৬. মহানবি (স)-এর আহমাদ নাম কে রাখেন? (জ্ঞান)
তাঁর মাতা খ তাঁর পিতা গ তাঁর দাদা ঘ তাঁর নানা
৯৭. মহানবি (স)-কে লালনপালন করেন কে? (জ্ঞান)
ক খাদিজা খ আয়িশা হালিমা ঘ জুবাইদা
৯৮. শৈশবকালে দুধ ভাইয়ের জন্য এক স্তন রেখে দিয়ে রাসুল (স) দৃষ্টান্ত প্রতিষ্ঠা করেছিলেনÑ (জ্ঞান)
ক শান্তি ও সমৃদ্ধির ন্যায় ও ইনসাফের
গ আদর ও ভালোবাসার ঘ স্নেহ ও মমতার
৯৯. মহানবি (স) তার ধাত্রীমাতা হালিমার একটি স্তন পান করতেন এবং অন্যটি তাঁর দুধ ভাইয়ের জন্য রেখে দিতেন। এটি কীসের দৃষ্টান্ত? (প্রয়োগ)
ক সহানুভ‚তির খ ভালোবাসার গ বদান্যতার ইনসাফের
১০০. বিবি হালিমার একটি স্তন শিশুনবি (স) কার জন্য রেখে দিতেন? (জ্ঞান)
দুধ ভাইয়ের খ চাচাতো ভাইয়ের
গ দুধবোনের ঘ চাচাতো বোনের
১০১. মহানবি (স)-এর দুধ ভাইয়ের নাম কী? (জ্ঞান)
ক আসাদুল্লাহ খ উবায়দুল্লাহ আব্দুল্লাহ ঘ হযরত আলি (রা)
১০২. কত বছর বয়সে মহানবি (স) তাঁর মাকে হারান? (জ্ঞান)
ছয় খ সাত গ আট ঘ নয়
১০৩. মাতার ইন্তিকালের পর মহানবি (স)-এর লালনপালনের দায়িত্ব নেন কে? (জ্ঞান)
ক চাচা আবু তালিব দাদা আব্দুল মুত্তালিব
গ দাসী সুওয়াইবা ঘ আবু জাহেল
১০৪. কত বছর বয়সে মহানবি (স) তাঁর দাদাকে হারান? (জ্ঞান)
ক ৬ খ ৭ ৮ ঘ ৯
১০৫. দাদার মৃত্যুর পর মহানবি (স)-এর লালনপালনের দায়িত্ব নেন কে? (জ্ঞান)
ক চাচা আব্বাস (রা) চাচা আবু তালিব
গ চাচা আবু জাহেল ঘ নানা ওয়াহাব
১০৬. মেষপালক রাখাল বালকদের জন্য মহানবি (স) উত্তম আদর্শ ছিলেন কেন? (অনুধাবন)
তাদের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ করতেন বলে
খ তাদের সাথে খাবার খেতেন বলে
গ তাদের কাজে সহযোগিতা করতেন বলে
ঘ তাদের কাজের ব্যবস্থা করে দিতেন বলে
১০৭. মেষপালক রাখাল বালকদের সাথে মহানবি (স) কেমন আচরণ করতেন? (জ্ঞান)
বন্ধুত্বপূর্ণ খ রূঢ় গ উত্তেজনাপূর্ণ ঘ শত্রæতামূলক
১০৮. চাচার সাথে মহানবি (স) সিরিয়ায় যান কী উদ্দেশ্যে? (জ্ঞান)
ক শিক্ষার খ ভ্রমণের
ব্যবসার ঘ দীনের দাওয়াতের
১০৯. মহানবি (স) ব্যবসার উদ্দেশ্যে কোথায় গিয়েছিলেন? (জ্ঞান)
ক ইরাক খ মিসর গ ইরান সিরিয়া
১১০. ফিজার যুদ্ধ কখন হয়েছিল? (জ্ঞান)
নিষিদ্ধ মাসে খ প্রসিদ্ধ মাসে
গ মহররম মাসে ঘ শাওয়াল মাসে
১১১. কুরাইশদের ওপর অন্যায় যুদ্ধ চাপিয়ে দিয়েছিল কারা? (জ্ঞান)
ক জুরহাম গোত্র খ কায়নুকা গোত্র
কায়স গোত্র ঘ সামুদ গোত্র
১১২. জয়দেবপুর ইউনিয়নের মণ্ডল বংশ অন্যায়ভাবে ফতে বংশের লোকের সাথে দ্ব›েদ্ব জড়িয়ে পড়ে। এ নিয়ে তাদের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। এ ঘটনা রাসুল (স)-এর সময়ের কোন ঘটনাকে মনে করিয়ে দেয়? (প্রয়োগ)
হারবুল ফিজারের খ মিরাজের
গ ওহুদ যুদ্ধের ঘ বদর যুদ্ধের
১১৩. হারবুল ফিজার বলতে কী বোঝায়? (অনুধাবন)
ক ন্যায় যুদ্ধ খ ন্যায় ফায়সালা অন্যায় যুদ্ধ ঘ ন্যায় বিচার
১১৪. পাঁচ বছর স্থায়ী ছিল কোন যুদ্ধ? (জ্ঞান)
ক বদর যুদ্ধ খ ওহূদ যুদ্ধ ফিজার যুদ্ধ ঘ তাবুক যুদ্ধ
১১৫. ফিজার যুদ্ধের ভয়াবহতা প্রত্যক্ষ করে মহানবি (স)-এর অন্তর কেঁদে উঠে। এর প্রকৃত কারণ কী? (উচ্চতর দক্ষতা)
ক যুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে পারেননি খ যুদ্ধে আহত হয়েছিরেন
গ যুদ্ধে তাঁর আপনজন মারা গিয়েছিল বহুলোক আহত-নিহত হয়েছিল
১১৬. মহানবি (স) কাদের নিয়ে ‘হিলফুল ফুযুল’ গঠন করেছিলেন? (জ্ঞান)
ক কিশোরদের যুবকদের
গ বৃদ্ধদের ঘ কিশোর ও যুবকদের
১১৭. সারা বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য গঠন করা হয় জাতিসংঘ। এটি মহানবি (স)-এর কোন কাজের সাথে তুলনীয়? (প্রয়োগ)
ক হুদায়বিয়ার সন্ধি স্থাপন খ মদিনা সনদ প্রণয়ন
হিলফুল ফুযুল গঠন ঘ মদিনায় হিজরত
১১৮. বর্তমান বিশ্বের জাতিসংঘ হিলফুল ফুযুলের কাছে অনেকাংশে ঋণী। এর কারণ কী? (উচ্চতর দক্ষতা)
এটি যুদ্ধ বন্ধ করে শান্তি প্রতিষ্ঠায় সচেষ্ট
খ এটি দুর্বল দেশকে সামরিক সাহায্য করে
গ তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোকে অর্থনৈতিক সহযোগিতা দান করে
ঘ এটি মানুষকে পাপাচার থেকে মুক্ত করে
১১৯. মহানবি (স) ‘হিলফুল ফুযুল’ গঠন করেছিলেন কেন? (অনুধাবন)
ক আর্থিক সচ্ছলতা অর্জনের জন্য খ রাজনৈতিক ঐক্য গড়ে তোলার জন্য
শান্তি-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার জন্য ঘ যুবকদেরকে একত্রিত করার জন্য
১২০. ‘আল-আমিন’ শব্দের অর্থ কী? (জ্ঞান)
ক সত্যবাদী খ আমানতদারী
বিশ্বাসী ঘ ন্যায়নিষ্ঠ
১২১. ‘আল-আমিন’ কার উপাধি ছিল? (জ্ঞান)
হযরত মুহাম্মদ (স) খ হযরত আবু বকর (রা)
গ হযরত উমর (রা) ঘ হযরত উসমান (রা)
১২২. নবুয়ত প্রাপ্তির পর যারা মহানবি (স) কে অস্বীকার করেছিল তারাও তাঁকে মিথ্যাবাদী বলতে পারেনি। এর প্রকৃত কারণ কী? (উচ্চতর দক্ষতা)
সত্যবাদিতা খ দায়িত্বশীলতা গ বুদ্ধিমত্তা ঘ চতুরতা
বহুপদী সমাপ্তিসূচক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
১২৩. শৈশবকাল হতেই মহানবি (স) ছিলেনÑ (অনুধাবন)
র. সত্যবাদী রর. শান্তিকামী
ররর. উদাসীন
নিচের কোনটি সঠিক?
র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
১২৪. তৎকালীন আরবের লোকজন মহানবি (স)-কে আল-আমিন উপাধি দিয়েছিলÑ (প্রয়োগ)
র. চারিত্রিক গুণাবলির কারণে
রর. আমানতদারিতার কারণে
ররর. সত্যবাদিতার কারণে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর র, রর ও ররর
১২৫. হিলফুল ফুযুল বা শান্তিসংঘের উদ্দেশ্য ছিলÑ (উচ্চতর দক্ষতা)
র. আর্তের সেবা করা
রর. অত্যাচারিতকে সাহায্য করা
ররর. শান্তি-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র খ রর গ র ও রর র, রর ও ররর
১২৬. রাসুল (স) কে তৎকালীন আরবের লোকজন আল-আমিন উপাধি দিয়েছিলেন। কারণ (উচ্চতর দক্ষতা)
র. তিনি দায়িত্বশীল ছিলেন
রর. তিনি দেখতে অসাধারণ সুন্দর ছিলেন
ররর. আমানতদার হিসেবে তিনি বিশ্বাসী ছিলেন
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
অভিন্ন তথ্যভিত্তিক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ে ১২৭ ও ১২৮ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
হাজিপুর ও গাজীপুর পাশাপাশি দু’গ্রামের অধিবাসীদের মধ্যে বহুদিন ধরে দ্ব›দ্ব চলে আসছিল। তারা প্রায়ই পরস্পর মারামারি করত। এ প্রেক্ষাপটে ইউনিয়ন চেয়ারম্যান হেলাল মিয়ার উভয় গ্রামের শান্তিকামী যুবকদের নিয়ে একটি শান্তিসংঘ গঠন করেন, যা পরবর্তীতে এলাকার শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষায় কার্যকর ভ‚মিকা রাখে।
১২৭. চেয়ারম্যান হেলাল মিয়ার কাজে মহানবি (স)-এর কোন কাজের প্রতিফলন ঘটেছে? (প্রয়োগ)
ক হুদায়বিয়ার সন্ধি খ মদিনায় হিজরত
হিলফুল ফুযুল গঠন ঘ ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা
১২৮. এ কাজের ফলেÑ (উচ্চতর দক্ষতা)
র. সমাজে শান্তিশৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হবে
রর. মানুষের আর্থিক উন্নতি হবে
ররর. পারস্পরিক স¤প্রীতি বজায় থাকবে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর