এইচএসসি বাংলা সাম্যবাদী সৃজনশীল ও জ্ঞানমূলক প্রশ্নোত্তর
সাম্যবাদী কাজী নজরুল ইসলাম গুরুত্বপূর্ণ সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও। শুধাও আমাকে “এতদূর তুমি কোন প্রেরণায় এলে তবে তুমি বুঝি বাঙালি জাতির বীজমন্ত্রটি শোন নাই সবার উপর মানুষ সত্য তাহার উপরে নাই।” এক সাথে আছি একসাথে বাঁচি আরও একসাথে থাকবই সব বিভেদের রেখা মুছে দিয়ে সাম্যের ছবি আঁকবই। ক. ‘যুগাবতার’ অর্থ কী? খ. কবি কেন সাম্যের গান গেয়েছেন? গ. উদ্দীপকে ‘সাম্যবাদী’ কবিতার কোন দিকটি তুলে ধরা হয়েছে? ব্যাখ্যা কর। ঘ. “উদ্দিষ্ট দিকটি হৃদয়ে লালন করার মাধ্যমে আমরা সুন্দর-সুখী-সমৃদ্ধ সমাজ গড়ে তুলতে পারব।” বিশ্লেষণ কর। ১ ২ ৩ ৪ ১ নং প্রশ্নের উত্তর যুগাবতার এর অর্থ হলো বিভিন্ন যুগে অবতীর্ণ মহাপুরুষ। মানবসমাজকে ঐক্যবদ্ধ করতে কবি সাম্যের গান গেয়েছেন। কবি বৈষম্যহীন অসা¤প্রদায়িক সমাজ গড়ে তুলতে চান। কবির বিশ্বাস মানুষের হৃদয়ের চেয়ে শ্রেষ্ঠ কিছু নেই এবং প্রতিটি মানুষই সমান মর্যাদার অধিকারী। মানুষে মানুষে সব ব্যবধান ঘুচিয়ে দিয়ে একটি নতুন সমাজ গড়ে তোলার প্রত্যয়ে তিনি ‘সাম্যের গান’ গেয়েছেন। উদ্দীপকে ‘সাম্যবাদী’ কবিতার মানবতার স্বীকৃতি প্রদানের মাধ্যমে সাম্যবাদী সমাজ প্রতীক্ষার দিকটি তুলে ধরা হয়েছে। পৃথিবীতে আজ মানুষে মানুষে বিভেদ চরমে পৌঁছে গিয়েছে। অর্থ, ক্ষমতা, সম্মান আর মর্যাদার লোভে মানুষ উন্মাদ হয়ে উঠেছে। মানুষের হৃদয়সত্যই সব থেকে বড় সত্য। ‘সাম্যবাদী’ কবিতায় কবি জোর দিয়েছেন মানুষের অন্তরধর্মের ওপর। ধর্ম-বর্ণ-গোষ্ঠীর দোহাই দিয়ে মানুষ আজ মানুষকে দূরে ঠেলে দিয়েছে। কবি এ সমাজ চান না। তিনি চান এমন এক সমাজ যেখানে সাম্যবাদ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। উদ্দীপকে আমরা ‘সাম্যবাদী’ কবিতার হৃদয়সত্যের উদ্বোধনের বিষয়টি লক্ষ্য করি। বাঙালি জাতির মানবতাবাদী চেতনা, তাদের হৃদয়সত্যের ওপর বিশ্বাসের কথাই আলোচ্য উদ্দীপকে প্রকাশিত হয়েছে। আর এর মধ্য দিয়েই বাঙালি জাতি এক অসা¤প্রদায়িক সমাজ গড়ে তুলেছে। সুতরাং, উদ্দীপকে মূলত ‘সাম্যবাদী’ হৃদয়সত্য বিষয়টিই মুখ্য হিসেবে দেখা দিয়েছে। উদ্দীপকে ‘সাম্যবাদী’ কবিতার সাম্যবাদী ও মানবতাবাদী চেতনার প্রকাশ ঘটেছে, যা হৃদয়ে লালন করার মাধ্যমে আমরা সুন্দর সুখী সমাজ গড়ে তুলতে পারব। সুখী সুন্দর সমাজ গঠনের অন্যতম পূর্বশর্ত হলো মানুষে মানুষে সাম্য প্রতিষ্ঠা। যে সমাজে মানুষে মানুষে বিভেদ বিদ্যমান যে সমাজে আছে কেবল অশান্তি, হানাহানি। তাই সুন্দর সমাজ গঠনের জন্য সর্বাগ্রে প্রয়োজন সাম্যবাদ প্রতিষ্ঠা করা। ‘সাম্যবাদী’ কবিতায় কবির বিশ্বাস মানুষ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়ে পরিচিত হয়ে ওঠার চেয়ে সম্মানের আর কিছু হতে পারে না। প্রতিটি মানুষ যখন এ স্বীকৃতি লাভ করে তখন মানুষে মানুষে কোনো বিভেদ থাকে না। তবে বিভেদহীন সমাজ তখনই গড়ে তোলা সম্ভব যখন প্রতিটি মানুষ অন্তর ধর্মকে স্বীকৃতি দেবে, যখন মানুষের মধ্যে মানবধর্মই প্রধান হয়ে উঠবে। উদ্দীপকে আমরা বাঙালি জাতির অসা¤প্রদায়িক ও মানবতাবাদী চেতনার পরিচয় পাই। ধর্মকে নয়, জাতিকে নয়, মানুষকে, মানুষের হৃদয়ধর্মকে প্রাধান্য দিয়েছিল বলেই বাঙালির জীবনে এত বড় বিজয় অর্জিত হয়েছে। আপামর বাঙালির প্রচেষ্টায় একটি স্বাধীন রাষ্ট্র গঠিত হয়েছে। উপর্যুক্ত আলোচনায় এ বিষয়টি স্পষ্ট হয় যে, সাম্য ও মানবতা এ দুটি সুখী সুন্দর সমাজ গঠনের জন্য অপরিহার্য। তাই প্রতিটি বাঙালি এ দিকটি হৃদয়ে লালন করলেই সুখী সুন্দর সমাজ গঠন সম্ভব। উদ্দীপকে এবং ‘সাম্যবাদী’ কবিতায় এ সমাজ গঠনের প্রত্যাশা ব্যক্ত হয়েছে। অতিরিক্ত অনুশীলন (সৃজনশীল) অংশ নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও। অনুপ একা বাড়িতে বৃদ্ধা মাকে রেখে তীর্থদর্শনে বের হলো। পথে গুরুতর অসুস্থ হয়ে সে এক ব্রাহ্মণের বাড়িতে আশ্রয় নিল। আশ্রয়দাতা ব্রাহ্মণের সেবা শুশ্রষায় সুস্থ হলে প্রায় দু’সপ্তাহ পরে অনুপ পুনরায় তীর্থভ্রমণে যাওয়ার উদ্যোগ নিল। ব্রাহ্মণ এবার অনুপকে বললেন, “এই দুর্বল শরীরে তীর্থে যেও না। কারণ তোমার হৃদয়ই তো প্রকৃত তীর্থস্থল।” ক. ‘সাম্যবাদী’ কবিতায় মগজে কী হানার কথা বলা হয়েছে? খ. পুঁথিকে মৃত-কঙ্কালের সাথে তুলনা করা হয়েছে কেন? গ. উদ্দীপকটির মূল বক্তব্য কোন দিক থেকে ‘সাম্যবাদী’ কবিতার সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ ব্যাখ্যা কর। ঘ. “আশ্রয়দাতা’ ও কবি কাজী নজরুল ইসলামের মানসিকতা যেন একসূত্রে গাঁথা”-মন্তব্যটির যথার্থতা নিরূপণ কর। ১ ২ ৩ ৪ ২ নং প্রশ্নের উত্তর ‘সাম্যবাদী’ কবিতায় মগজে শূল হানার কথা বলা হয়েছে। পুঁথি নির্জীব ও জড় বলে একে মৃত কঙ্কালের সাথে তুলনা করা হয়েছে। মৃত ব্যক্তি ও কঙ্কাল চলাচল করতে পারে না। এরা অনড় ও অচলায়তনের প্রতীক। পুঁথি তথা শাস্ত্রগ্রন্থ বা কেতাব মৃতবৎ কঙ্কালস্বরূপ। জড়ত্ব ও নির্জীবতার জন্যই এসব পুঁথিকে মৃত-কঙ্কালের সাথে তুলনা করা হয়েছে। মানুষের অন্তরের ঐশ্বর্য প্রকাশের দিক দিয়ে উদ্দীপকের মূলবক্তব্য ‘সাম্যবাদী’ কবিতার সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। মানব হৃদয় অনন্ত ঐশ্বর্যের আধার। নীতি, জ্ঞান, প্রজ্ঞাসহ সবকিছুই মানুষের অন্তর হতেই উৎসারিত, যা উদ্দীপক ও ‘সাম্যবাদী’ কবিতা উভয়ক্ষেত্রেই আলোচিত হয়েছে। উদ্দীপকে তীর্থভ্রমণে যাওয়ার জন্য অনুপের আকুলতা প্রকাশ পেয়েছে। জাগতিক তীর্থভূমির দিকে মানুষের আকর্ষণ বেশি। কারণ, মানবহৃদয়ই সকল ঐশ্বর্যের কেন্দ্রবিন্দু অনেকেই তা অনুধাবন করতে ব্যর্থ হয়। কিন্তু ‘সাম্যবাদী’ কবিতায় কবি মানুষের হৃদয়কে বিশ্বদেউল বা সকল তীর্থের পুঞ্জীভূত রূপ হিসেবে কল্পনা করেছেন। মানুষের হৃদয়ের চেয়ে বড় কোনো মন্দির-কাবা আছে বলে কবি বিশ্বাস করেন না। অন্যদিকে উদ্দীপকের মূলবক্তব্য হলো আপন অন্তরে প্রকৃত তীর্থস্থলের অবস্থান। অর্থাৎ, ‘সাম্যবাদী’ কবিতা এবং উদ্দীপক উভয়ক্ষেত্রেই মানুষের অন্তরের ঐশ্বর্য ও পবিত্রতাকেই গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। এদিক থেকে উভয়ের মধ্যে সাদৃশ্য বিদ্যমান। উক্তিটি আলোচ্য উদ্দীপক ও ‘সাম্যবাদী’ কবিতার আলোকে সঠিক ও যথার্থ। মানবহৃদয়েই সকল ঐশ্বর্যের অবস্থান। কিন্তু সংশয়গ্রস্ত মানুষ সময়, শ্রম ও অর্থ ব্যয় করে তীর্থস্থান ভ্রমণে বের হয়। অথচ নিজের হৃদয়ই যে প্রকৃত তীর্থস্থল-তা তারা বুঝতে পারে না। উদ্দীপকে আশ্রয়দাতা ব্রাহ্মণকে আপন অস্তিত্বে বিশ্বাসী একজন দৃঢ় মানসিকতার মানুষ হিসেবে দেখা যায়। প্রতিটি মানুষের মনের মণিকোঠায় প্রকৃত তীর্থস্থলের অবস্থান রয়েছে বলে তিনি বিশ্বাস করেন। তাই তিনি অনুপকে তীর্থভ্রমণে যেতে নিষেধ করেন। ‘সাম্যবাদী’ কবিতায় কবির কণ্ঠে খুব দৃঢ়তার সাথে উচ্চারিত হয়েছে, ‘এই হৃদয়ের চেয়ে বড় কোনো মন্দির-কাবা নাই।’ মানুষের অন্তরকে তাই পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ দেবালয় বলে অভিমত পোষণ করেছেন কবি। আলোচ্য উদ্দীপকে ব্রাহ্মণের মানসিকতা ও ‘সাম্যবাদী’ কবিতায় কবি কাজী নজরুল ইসলামের মনোভাব এক ও অভিন্ন। তাঁরা দুজনই হৃদয়ের পবিত্রতা ও ঐশ্বর্যে বিশ্বাসী। অতএব স্পষ্টতই ‘আশ্রয়দাতা’ ও কবি কাজী নজরুল ইসলামের মানসিকতা যেন একসূত্রে গাঁথা উক্তিটি যথার্থ। নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও। স্রষ্টা সৃষ্টি করেছেন মানুষ, মানুষের সৃষ্টি ধর্ম, জাতি-বর্ণে হানাহানি ও কোন মানুষের কর্ম? বৃথা ঘুরিনু তীর্থক্ষেত্রে খোদা-যিশু জিকির তুলি, হৃদয়ে রয়েছে তোর স্রষ্টা কেন গেলে তা ভুলি? ক. ইরানের নাগরিকদের কী বলে? খ. ধর্মগ্রন্থ পাঠ পণ্ডশ্রম হয় কখন? গ. উদ্দীপকে ‘সাম্যবাদী’ কবিতার যে দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে তা তুলে ধর। ঘ. “উদ্দীপকটি ‘সাম্যবাদী’ কবিতার পূর্ণচিত্র নয়”Ñযুক্তিসহ উপস্থাপন কর। ১ ২ ৩ ৪ ৩ নং প্রশ্নের উত্তর ইরানের নাগরিকদের পার্সি বলে। ধর্মগ্রন্থের মূলমন্ত্র যে মানবতাবোধ তা আত্মস্থ না হলে সেই পাঠ পণ্ডশ্রম হয়। প্রত্যেক ধর্মের মানুষের জন্য পৃথক পৃথক ধর্মগ্রন্থ থাকলেও তার মূলমন্ত্র হলো নৈতিক শিক্ষা, মানবতাবোধ এবং সমতার দৃষ্টিভঙ্গি। ধর্মগ্রন্থের এ মূল সুর যদি মানুষের অন্তরে স্থায়ী আসন সৃষ্টি করতে ব্যর্থ হয় তবে তা পাঠ করা
এইচএসসি বাংলা সাম্যবাদী সৃজনশীল ও জ্ঞানমূলক প্রশ্নোত্তর Read More »