নবম-দশম শ্রেণির বা এসএসসি পদার্থবিজ্ঞান দ্বিতীয় অধ্যায় সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর নিচে দেওয়া হলো। এখানে সবগুলো প্রশ্নের উত্তর দেওয়া সম্ভব নয় তাই উত্তরগুলো পিডিএফ আকারে পেতে নিচে মেইল সহ কমেন্ট করুন। এসএসসি পদার্থবিজ্ঞান ২য় অধ্যায় সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর প্রশ্ন -১ → নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও : রাজীবরা সপরিবারে সিলেটের জাফলং বেড়াতে যাবার জন্য একটি মাইক্রোবাসে রওনা হলো। সে যাত্রার শুরু থেকে সিলেট যাওয়া পর্যন্ত প্রতি ৫ সরহ পর পর গাড়ির স্পিডোমিটার থেকে বেগের মান তথা দ্রæতি লিখে নিল। বেগের মান পেল যথাক্রমে প্রতি ঘণ্টায় ১৮, ৩৬, ৫৪, ৫৪, ৫৪, ৩৬ ও ১৮ কিলোমিটার। ক. তাৎক্ষণিক দ্রæতি কী? খ. বৃত্তাকার পথে গতিশীল কোনো বস্তুর ত্বরণ ব্যাখ্যা কর। গ. প্রথম ৫ মিনিটে গাড়িটির অতিক্রান্ত দূরত্ব নির্ণয় কর। ঘ. সংগৃহীত উপাত্ত দিয়ে বেগ-সময় লেখচিত্র অঙ্কন করে তা ব্যাখ্যা কর? ১নং প্রশ্নের উত্তর ক. কোনো গতিশীল বস্তুর কোনো একটি বিশেষ মুহূর্তের দ্রæতিকে বস্তুটির প্রকৃত দ্রæতি বা তাৎক্ষণিক দ্রæতি বলে। খ. সময়ের সাথে বৃত্তাকার পথে গতিশীল কোনো বস্তুর বেগের পরিবর্তনের হারকে কৌণিক ত্বরণ বলে। কৌণিক ত্বরণ a দ্বারা প্রকাশ করা হয়। t সময়ে কোনো বস্তুর কৌণিক বেগের পরিবর্তন w হলে, কৌণিক ত্বরণ, a = এখানে w = গ. এখানে, প্রথম 5 min পর বেগ, v = 18 km h–1 = ms–1 = 5 m s–1 সময়, t = 5 min = 5 × 60 s = 300 s আদিবেগ, u = 0 প্রথম ৫ মিনিটে অতিক্রান্ত দূরত্ব, s =? সুতরাং, প্রথম ৫ মিনিটে গাড়িটি ৭৫০ স দূরত্ব অতিক্রম করে। ঘ. ছক কাগজের ঢ অক্ষ বরাবর সময় (ঃ) এবং ণ অক্ষ বরাবর বেগ (া) স্থাপন করে যে লেখ পাওয়া যায় তাকে বেগ-সময় লেখচিত্র বলা হয়। উদ্দীপক হতে প্রথম ৫, ১০, ১৫, ২০, ২৫, ৩০ ও ৩৫ সরহ-এ বেগ যথাক্রমে ১৮, ৩৬, ৫৪, ৫৪, ৫৪, ৩৬ ও ১৮শসয১। তাহলে ঢ অক্ষে সরহ এককে সময় এবং ণ অক্ষে শস য১ এককে বেগ বিবেচনা করে ঢণ তলে (৫, ১৮), (১০, ৩৬), (১৫, ৫৪), (২০, ৫৪), (২৫, ৫৪), (৩০, ৩৬) ও (৩৫, ১৮) বিন্দুগুলো স্থাপন করি। লেখচিত্র হতে দেখা যায়, মাইক্রোবাসটি প্রথমে স্থির অবস্থান অর্থাৎ ঙ বিন্দু থেকে যাত্রা শুরু করে এবং লেখচিত্রের অ বিন্দু পর্যন্ত সমত্বরণে চলে। এরপর ত্বরণ শূন্য হয়ে যায় এবং ই বিন্দু পর্যন্ত সুষম বেগে চলে। এরপর মন্দন সৃষ্টি হয়। ফলে মাইক্রোবাসটির বেগ আস্তে আস্তে কমতে থাকে। অতএব, লেখচিত্র থেকে খুব সহজেই ত্বরণ, অর্থাৎ সময়ের সাথে বেগের পরিবর্তনের হার নির্ণয় করা যায়। প্রশ্ন -২ → নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও : হাত দিয়ে একটা কলম ধরে রাখ। কিছুক্ষণ পর তোমার হাতে ধরে থাকা কলমটিকে এদিক সেদিক নাড়তে থাক। ক. স্থিতি কাকে বলে? ১ খ. এদিক সেদিক নাড়তে থাকা কলমটির অবস্থান পরিবর্তনের ঘটনাকে কী বলে? ২ গ. তোমার সাপেক্ষে কলমের গতির অবস্থা ব্যাখ্যা কর। ৩ ঘ. কলমটির স্থিতি বা গতি সম্পূর্ণই আপেক্ষিক- বিশ্লেষণ কর। ৪ ২নং প্রশ্নের উত্তর ক. সময়ের পরিবর্তনের সাথে পরিপার্শ্বের সাপেক্ষে যখন কোনো বস্তুর অবস্থানের পরিবর্তন ঘটে না তখন ঐ বস্তুকে স্থিতিশীল বা স্থির বস্তু বলে। আর এই অবস্থান অপরিবর্তিত থাকাকে বলে স্থিতি। খ. আমার হাতে থাকা কলমটি যখন এদিক সেদিক নাড়তে থাকি তখন কলমটির আশপাশের প্রত্যেকটি বস্তু থেকে কলমের দূরত্ব এবং দিক ক্রমাগত পরিবর্তন হচ্ছে। সময়ের সাথে কলমটির অবস্থানের পরিবর্তন হচ্ছে। তাহলে বলতে পারি সময়ের পরিবর্তনের সাথে পরিপার্শ্বের সাপেক্ষে কলমটির অবস্থানের পরিবর্তন ঘটে আর অবস্থানের এ পরিবর্তনের ঘটনাকে বলে গতি। গ. আমরা জানি, দুটি বস্তুর মধ্যকার আপেক্ষিক অবস্থানের পরিবর্তন না হলে একটিকে অপরটির সাপেক্ষে স্থির বা স্থিতিশীল বিবেচনা করা হয়। এ বিবেচনায়, আমি যখন কলমটি হাতে ধরেছিলাম তখন এটি আমার সাপেক্ষে স্থির ছিল। অপরদিকে, দুটি বস্তুর মধ্যকার আপেক্ষিক অবস্থানের পরিবর্তন হলে একটিকে অপরটির সাপেক্ষে গতিশীল বলে বিবেচনা করা হয়। তাই যখন হাতে ধরে থাকা কলমটিকে যতক্ষণই এদিক সেদিক নাড়তে থাকি ততক্ষণই কলমটি আমার সাপেক্ষে গতিশীল ছিল। নাড়ানোর সময় কলমের গতি স্পন্দন গতি হওয়ায় কিছুক্ষণ পরপর অতি সামান্য সময়ের জন্য কলমটি আমার সাপেক্ষে স্থির অবস্থানে আসে। ঘ. কলমের স্থিতি বা গতি বিবেচনা করা হয়েছিল আমার সাপেক্ষে। তাই এক্ষেত্রে কলমের গতির অবস্থা সম্পূর্ণই আপেক্ষিক। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে আমার অবস্থান স্থির নয়। যদি স্থির থাকতাম তাহলে কলমের স্থিতি বা গতিকে পরম স্থিতি বা পরম গতি বলা হতো। বিবেচ্য স্থিতি বা গতির ক্ষেত্রে আমি নিজেই প্রসঙ্গ বস্তু বা ব্যক্তি। এ মহাবিশ্বে এমন কোনো প্রসঙ্গ বস্তু পাওয়া সম্ভব নয় যা প্রকৃতপক্ষে স্থির রয়েছে। কারণ পৃথিবী প্রতিনিয়ত সূর্যের চারদিকে ঘুরছে, সূর্যও তার গ্রহ, উপগ্রহ নিয়ে ছায়াপথে ঘুরছে। আমার অবস্থান পৃথিবী পৃষ্ঠে অবস্থিত হওয়ায় পৃথিবীর সাথে সাথে আমিও ঘুরছি। সুতরাং উদ্দীপকে বিবেচ্য গতির প্রসঙ্গ বস্তু স্থির নয়, বরং গতিশীল। তাই আমার সাপেক্ষে কলমের স্থিতি বা গতি সম্পূর্ণই আপেক্ষিক, পরম নয়। প্রশ্ন -৩ → নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও : একটি গাড়ি ঢালু রাস্তা বরাবর নিচে নামছে। কোনো এক মুহূর্তে (সময় ঃ = ০) হতে শুরু করে পাঁচ সেকেন্ড পর পর এর বেগের পাঠ নিচের সারণি আকারে দেওয়া হলো। সময় (s) বেগ (kmh-1) বেগ (ms-1) 0 0 0 5 9 2×5 10 18 5×0 15 27 7×5 20 36 10×0 25 45 12×5 30 54 15×0 ক. ত্বরণের একক কী? ১ খ. সুষম ত্বরণের ক্ষেত্রে বেগ বনাম সময় লেখ থেকে কীভাবে ত্বরণ পাওয়া যায় ব্যাখ্যা কর। ২ গ. তোমার পছন্দমতো সুবিধাজনক একক নিয়ে উদ্দীপকের সারণিতে বর্ণিত গতির জন্য বেগ-সময় লেখচিত্রটি অঙ্কন কর। ৩ ঘ. লেখচিত্র থেকে ১২ সেকেন্ডের সময় গাড়িটির বেগ ও ত্বরণ বের কর। ৪ ৩নং প্রশ্নের উত্তর ক. ত্বরণের একক ms-2। খ. সুষম ত্বরণের ক্ষেত্রে বেগ বনাম সময় লেখ একটি মূল বিন্দুগামী সরলরেখা হয়। এ সরলরেখার ঢাল বস্তুর ত্বরণ নির্দেশ করে। চিত্রে p সরলরেখার ওপর যেকোনো বিন্দু। গ. ছক কাগজের ক্ষুদ্রতম বর্গের বাহুর দৈর্ঘ্যকে একক ধরে x অক্ষ বরাবর সময় এবং y অক্ষ বরাবর বেগের মানসমূহ বসিয়ে লেখটি অঙ্কন করা হলো। ঘ. লেখচিত্রে সময় অক্ষ বরাবর t= ১২s মুহূর্তকাল নির্দেশক বিন্দুটির ওপর লম্ব আঁকি, তা লেখটিকে চ বিন্দুতে ছেদ করে। চ হতে ‘বেগ’ অক্ষের ওপর লম্ব টানলে সংশ্লিষ্ট বেগ ৬ms-1 পাওয়া যায়। সুতরাং ১২ সেকেন্ডের সময় গাড়িটির বেগ ৬ms-1 । এভাবে বিভিন্ন সময়ে গাড়িটির বেগ বিভিন্ন ছিল অর্থাৎ, গাড়িটি অসম বেগে নিচে নামছিল। আমরা জানি, ত্বরণ হলো সময়ের সাপেক্ষে বেগের পরিবর্তনের হার। বেগ-সময় লেখের যেকোনো বিন্দুতে ঢাল নির্ণয় করলে প্রাপ্ত মান উক্ত বিন্দুতে ত্বরণ নির্দেশ করে। সুতরাং ১২ সেকেন্ডের ত্বরণ = বেগের পরিবর্তন/সময় ব্যবধান অতএব, লেখটি মূলবিন্দুগামী সরলরেখা বলে এক্ষেত্রে