নবম-দশম শ্রেণির ব্যবসায় উদ্যোগ চতুর্থ অধ্যায় মালিকানার ভিত্তিতে ব্যবসায় সৃজনশীল ও জ্ঞানমূলক প্রশ্নোত্তর

চতুর্থ অধ্যায়
মালিকানার ভিত্তিতে ব্যবসায়

একমালিকানা ব্যবসায় : সাধারণভাবে একজন ব্যক্তির মালিকানায় প্রতিষ্ঠিত, পরিচালিত ও নিয়ন্ত্রিত ব্যবসায়কে একমালিকানা ব্যবসায় বলে। একক মালিকানায় পৃথিবীতে সর্বপ্রথম ব্যবসায় কার্যক্রম শুরু হয়েছিল। এ জন্য এটিকে সবচেয়ে প্রাচীনতম ব্যবসায় সংগঠন বলা হয়। একমালিকানা ব্যবসায়ে মালিকই সর্বেসর্বা। তিনি তার প্রতিষ্ঠানের মুনাফা যেমন একাই ভোগ করবেন, তেমনি সকল দায়ভার তিনি একাই বহন করবেন।
 একমালিকানা ব্যবসায়ের বৈশিষ্ট্য : ১. একক মালিকানা, ২. সহজ গঠন, ৩. স্বল্প মূলধন, ৪. ব্যবসায়ের আয়তন, ৫. একক ঝুঁকি, ৬. আইনগত সত্তা, ৭. পরিচয় ও তত্ত¡াবধান, ৮. লাভ-লোকসান বণ্টন, ৯. স্থায়িত্ব ইত্যাদি।
 একমালিকানা ব্যবসায়ের সুবিধা : ১. সহজ গঠন, ২. মালিকের স্বাধীনতা, ৩. মুনাফা ভোগ, ৪. সুষ্ঠু ব্যবস্থা, ৫. অবচয় হ্রাস, ৬. আত্মকর্মসংস্থান ও ব্যক্তিগত যোগাযোগ প্রদর্শন, ৭. দ্রæত সিদ্ধান্ত, ৮. গোপনীয়তা, ৯. অবস্থান ও সুবিধা, ১০. নমনীয়তা ইত্যাদি।
 একমালিকানা ব্যবসায়ের অসুবিধাসমূহ : ১. মূলধনের স্বল্পতা, ২. অসীম দায়, ৩. ব্যক্তিগত সামর্থ্যরে সীমাবদ্ধতা, ৪. অধিক ব্যক্তিগত ঝুঁকি, ৫. বৃহদায়তন ব্যবসায়ে অনুপযুক্ত, ৬. আইনগত স্বীকৃতির অবস্থা, ৭. স্থায়িত্বের অভাব ইত্যাদি।
 একমালিকানা ব্যবসায়ের উপযোগী ক্ষেত্রসমূহ : ১. ছোট হোটেল, ২. লণ্ড্রি, ৩. মুদি দোকান, ৪. ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প, ৫. কৃষি ও পচনশীল দ্রব্যের ব্যবসায়, ৬. প্রত্যক্ষ সেবামূলক (সেলুন, দরজিগিরি) ইত্যাদি।
 অংশীদারি ব্যবসায় : একমালিকানা ব্যবসায়ের বিভিন্ন অসুবিধা দূর করার প্রয়োজনেই সময়ের সিঁড়ি বেয়ে আগমন ঘটে অংশীদারি ব্যবসায়ের। অর্থাৎ একমালিকানা সংগঠনের সীমিত আয়তন ও ক্ষেত্র, স্বল্প পুঁজি এবং পরিমিত ব্যবস্থাপনা দক্ষতার বাধা অপসারিত হয়ে গঠিত হয় দুই বা ততোধিক ব্যক্তির সমন্বিত মেধা, দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা এবং সরবরাহকৃত অধিক পুঁজির ব্যবসায়। অংশীদারি ব্যবসায় ১৯৩২ সালের আইন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত ও পরিচালিত হয়। ১৯৩২ সালের অংশীদারি আইন অনুযায়ী সর্বনিম্ন ২ জন এবং সর্বোচ্চ ২০ জন অংশীদার হতে পারবে। তবে ব্যাংকিং ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সদস্য সংখ্যা ১০-এর বেশি হবে না। অংশীদারি ব্যবসায় লিখিত বা মৌখিক উভয়ই হতে পারে। লিখিত চুক্তিকে চুক্তিপত্র (উববফ) বলা হয়। আর তাই ভবিষ্যৎ ভুল বোঝাবুঝি, মনোমালিন্য, বিরোধ এবং মামলা এড়ানোর জন্য চুক্তি লিখিত এবং নিবন্ধিত হওয়া ভালো।
 অংশীদারি ব্যবসায়ের বৈশিষ্ট্য : ১. চুক্তিবদ্ধ সম্পর্ক, ২. সহজ গঠন, ৩. সদস্য সংখ্যা, ৪. মূলধন সরবরাহ, ৫. সীমাহীন দায়, ৬. আইনগত সত্তা, ৭. চ‚ড়ান্ত সদ্বিশ্বাস, ৮. লাভ-লোকসান বণ্টন, ৯. পরিচালনা ১০. স্থায়িত্ব ইত্যাদি।
 অংশীদারি সংগঠনের চুক্তিপত্র : যে দলিলে অংশীদারি ব্যবসায়ের গঠন, উদ্দেশ্য, পরিচালনা পদ্ধতি, অংশীদারের অধিকার ও দায়িত্ব প্রভৃতি লিপিবদ্ধ থাকে তাকে অংশীদারি ব্যবসায়ের চুক্তিপত্র বলে।
 অংশীদারি চুক্তিপত্রের বিষয়বস্তু : ১. অংশীদারদের নাম ও ঠিকানা, ২. অংশীদারদের সংজ্ঞা, ৩. ব্যবসায়ের প্রকৃতি ও সময়কাল, ৪. ব্যবসায়ের মোট মূলধন ও পরিশোধ পদ্ধতি, ৫. হিসাবরক্ষণ ও নিরীক্ষণ পদ্ধতি। ৬. লাভ-লোকসান বণ্টনের অনুপাত ও পদ্ধতি, ৭. অংশীদার গ্রহণ ও বহিষ্কার নিয়মাবলি, ৮.ব্যবসায়ের বিলোপসাধন ইত্যাদি।
 অংশীদারি ব্যবসায়ের নিবন্ধন : অংশীদারি ব্যবসায়ের নিবন্ধন বলতে সরকার কর্তৃক নিয়োজিত নিবন্ধক অফিসে ব্যবসায়ের নাম তালিকাভুক্তকরণকে বোঝায়। বাংলাদেশের অংশীদারি আইনে ব্যবসায়ের নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করা হয়নি। তবে নিবন্ধিত অংশীদারি ব্যবসায় অনিবন্ধিত অংশীদারি ব্যবসায় থেকে অতিরিক্ত সুবিধা ভোগ করে থাকে।
 অংশীদারের প্রকারভেদ : ১. সাধারণ অংশীদার, ২. ঘুমন্ত অংশীদার, ৩. নামমাত্র অংশীদার, ৪. আপাতদৃষ্টিতে অংশীদার, ৫. সীমিত অংশীদার, ৬. আচরণে অনুমিত অংশীদার।
 অংশীদারি ব্যবসায়ের বিলোপসাধন : ১. সকলে একমত হয়ে, ২. বিজ্ঞপ্তি দিয়ে, ৩. বিশেষ কোনো ঘটনার কারণে, ৪. বাধ্যতামূলক বিলোপসাধন, ৫. আদালতের আদেশে।
 যৌথ মূলধনী ব্যবসায় : যৌথ মূলধনী ব্যবসায় আইনের মাধ্যমে সৃষ্ট ও পরিচালিত হয়। সর্বপ্রথম কোম্পানি আইন পাস হয় ব্রিটেনে ১৮৪৪ সালে, যা ‘ঞযব ঔড়রহঃ ঝঃড়পশ ঈড়সঢ়ধহু অপঃ ১৮৪৪’ নামে পরিচিত ছিল। ব্রিটিশশাসিত ভারতীয় উপমহাদেশে প্রথম কোম্পানি আইন পাস হয় ১৮৫০ সালে। ১৯১৩ সালে ভারতীয় কোম্পানি আইন আবার নতুন করে পাস হয়। স্বাধীন বাংলাদেশেও অনেক বছর ধরে ১৯১৩ সালের কোম্পানি আইন চালু ছিল। বর্তমানে বাংলাদেশের সকল কোম্পানি আইন ১৯৯৪ সালের আইন অনুযায়ী পরিচালিত হচ্ছে। যৌথ মূলধনী কোম্পানিকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। যথা : প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি ও পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি। প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানির ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন সদস্য সংখ্যা ২ জন এবং সর্বোচ্চ ৫০ জন এবং পাবলিক লিমিটেড কোম্পানির ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন ৭ জন এবং সর্বোচ্চ সংখ্যা শেয়ার দ্বারা সীমাবদ্ধ। এ ধরনের ব্যবসায় সংগঠন সাধারণত চিরন্তন অস্তিত্বসম্পন্ন হয়ে থাকে।
 কোম্পানি ব্যবসায় সংগঠনের গুরুত্ব : ১. বৃহদাকার প্রতিষ্ঠান, ২. সঞ্চয় বৃদ্ধি ও পুঁজি গঠন, ৩. ঝুঁকি বণ্টন ও উদ্যোগ গ্রহণ, ৪. কর্মসংস্থান, ৫. বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টি, ৬. সরকারের আয়ের উৎস।
 কোম্পানির বৈশিষ্ট্য : ১. স্বেচ্ছামূলক প্রতিষ্ঠান, ২. আইনের সৃষ্টি, ৩. কৃত্রিম সত্তা, ৪. স্থায়িত্ব, ৫. সীমাবদ্ধ দায়, ৬. সদস্য সংখ্যা, ৭. শেয়ার হস্তান্তরযোগ্যতা ইত্যাদি।
 যৌথমূলধনী ব্যবসায়ের প্রকারভেদ : যৌথ মালিকানাধীনে যত রকমের ব্যবসায় সংগঠন আছে তার মধ্যে কোম্পানির সংগঠন সবচেয়ে বেশি পরিচিত। বাংলাদেশের কোম্পানি সংগঠনগুলোকে প্রধানত দু’ভাগে ভাগ করা হয়েছে ক. প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি খ. পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি।
 কোম্পানি ব্যবসায়ের গঠনপ্রণালি : ১৯৯৪ সালের কোম্পানি আইন অনুযায়ী কোম্পানি গঠনে চারটি পর্যায় রয়েছে : ১. উদ্যোগ গ্রহণ (প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানিতে ২-৫০ জন এবং পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে সর্বনিম্ন ৭ জন উদ্যোগ নিতে হয়।) ২. দলিলপত্র প্রস্তুত (সংঘ স্মারক ও সংঘবিধি), ৩. নিবন্ধন, ৪. কার্যারম্ভ।
 সমবায় সমিতি : সমাজের নিম্ন ও মধ্যবিত্ত কৃষক, কামার, কুমার, জেলে, তাঁতি, চাকরিজীবী, শ্রমিক প্রভৃতি শ্রেণির লোকজন নিজেদের কল্যাণের লক্ষ্যে সমবায় আইন অনুযায়ী স্বেচ্ছায় যে ব্যবসায় সংগঠন গড়ে তোলে তাকে সমবায় সমিতি বলে। সমবায়ের শাব্দিক অর্থ সম্মিলিত বা যৌথভাবে কাজ করা। এর মূলমন্ত্র হলো ‘সকলের তরে সকলে কাজ করা’। অর্থাৎ সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এগিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা ও চিন্তা থেকেই সমবায়ের উৎপত্তি। পুঁজিবাদী সমাজের সৃষ্ট বিভিন্ন বৈষম্য ও দুরবস্থা থেকে মুক্তির প্রয়াসে বিভিন্ন দেশে সমবায় সংগঠন গড়ে ওঠে।
 সমবায় সংগঠনের বৈশিষ্ট্য : ১. স্বেচ্ছাপ্রণোদিত সংগঠন, ২. সদস্য সংখ্যা, ৩. গঠন, ৪. পুঁজি সরবরাহ, ৫. পৃথক সত্তা, ৬. শেয়ার হস্তান্তর, ৭. উদ্দেশ্য, ৮. গণতন্ত্র, ৯. দায়িত্বের প্রকৃতি, ১০. মুনাফার বিভাজন।
 প্রকারভেদ : ১. কৃষি সমবায় সমিতি, ২. মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি, ৩. শ্রমজীবী সমবায় সমিতি, ৪. মৃৎ শিল্পী সমবায় সমিতি, ৫. তাঁতি সমবায় সমিতি, ৬. ভ‚মিহীন সমবায় সমিতি, ৭. বিত্তহীন সমবায় সমিতি, ৮. মহিলা সমবায় সমিতি, ৯. অটোরিক্সা, অটোটেম্পো, ট্যাক্সিক্যাব, মোটর, ট্রাক, ট্যাঙ্ক-লরি চালক সমবায় সমিতি, ১০. হকার্স সমবায় সমিতি ইত্যাদি।
 গঠনপ্রক্রিয়া : বাংলাদেশে ২০০১ সালের সমবায় আইনে সমবায় সংগঠন গঠন করতে চাইলে তিনটি পর্যায়ে সমবায় সমিতির গঠন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হয়। যেমন : ১. উদ্যোগ গ্রহণ পর্যায়, ২. নিবন্ধন পর্যায়, ৪. কার্যারম্ভ পর্যায়।
 সমস্যা ও সম্ভাবনা : বাংলাদেশের শতকরা ৮০ ভাগ মানুষ কৃষি ও গ্রামভিত্তিক বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত থেকে জীবিকা নির্বাহ করছে। তারা বেশিরভাগই স্বল্প ও নিম্ন আয়ের ফলে তারা বিভিন্ন অর্থনৈতিক ও সামাজিক সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত, প্রাচীন চাষাবাদ পদ্ধতি, মূলধনের স্বল্পতা, উন্নত সার, বীজ ও কীটনাশকের অভাব, খণ্ড খণ্ড কৃষি জমি ইত্যাদি কারণে এদেশের অর্থনীতির প্রাণ কৃষক ও কৃষি তাদের যথাযথ অবদান রাখতে পারছে না। এসব স্বল্প ও নিম্নবিত্তের কৃষিজীবী, শ্রমজীবী ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের আর্থসামাজিক উন্নয়নের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত ক্ষেত্র হচ্ছে সমবায় সংগঠন।
 রাষ্ট্রীয় ব্যবসায় : দেশের সরকার বা রাষ্ট্র কর্তৃক গঠিত, পরিচালিত ও নিয়ন্ত্রিত ব্যবসায়কে রাষ্ট্রীয় ব্যবসায় বলে। ব্যক্তিমালিকানাধীন যেকোনো ব্যবসায়কে রাষ্ট্রে প্রয়োজনে জাতীয়করণের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় ব্যবসায়ে রূপান্তর করা যায়। দেশে অধিক শিল্পায়ন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, মুদ্রা ও ব্যাংকিং ব্যবসায় নিয়ন্ত্রণ, প্রাকৃতিক সম্পদের সুষম বণ্টন ও জনকল্যাণমূলক কাজে এই ব্যবসায় গড়ে ওঠে।
 রাষ্ট্রীয় ব্যবসায় সংগঠন : ১. জনগণের কল্যাণ সাধন, ২. একচেটিয়া ব্যবসায় বন্ধ করা, ৩. দ্রæত অর্থায়নে উন্নয়ন, ৪. সুষম শিল্পায়ন, ৫. সম্পদের সুষ্ঠু বণ্টন, ৬. অর্থনৈতিক ভারসাম্য রক্ষা, ৭. মিশ্র অর্থব্যবস্থা রক্ষা, ৮. কর্মসংস্থান ইত্যাদি।
 রাষ্ট্রীয় ব্যবসায় সংগঠনের বৈশিষ্ট্য : ১. গঠন, ২. মালিকানা, ৩. মূলধন, ৪. উদ্দেশ্য, ৫. আইনগত মর্যাদা, ৬. চিরন্তন অস্তিত্ব, ৮. মুনাফা বণ্টন, ৮. ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনা, ৯. জবাবদিহিতা ইত্যাদি।
 বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয় ব্যবসায় : ১. বাংলাদেশ রাসায়নিক শিল্প সংস্থা, ২. বাংলাদেশ পাটকল শিল্প সংস্থা, ৩. বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড, ৪. বাংলাদেশ ব্যাংক, ৫. বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সংস্থা, ৬. বাংলাদেশ রেলওয়ে, ৭. বাংলাদেশ পর্যটন সংস্থা, ৮. বাংলাদেশ বিমান, ৯. বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ জল পরিবহন সংস্থা, ১০. বাংলাদেশ বস্ত্রকল সংস্থা, ১১. বাংলাদেশ টেলিফোন শিল্প সংস্থা।

অনুশীলনীর সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর

প্রশ্ন-১  নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
নিম্নবিত্ত পরিবারের বড় সন্তান আবির যখন এসএসসি পাস করে সে সময়ে হঠাৎ তার বাবা মারা যায়। ফলে সংসারের দায়িত্ব তার উপর এসে পড়ে। এতে তার লেখাপড়ার সমাপ্তি ঘটে। ফলশ্রæতিতে আবির কিছু টাকা ধার করে কালীগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডের কাছে ছোট একটি চায়ের দোকান খুলে কর্মজীবন শুরু করেন।
ক. একমালিকানা ব্যবসায়ের প্রধান উদ্দেশ্য কী?
খ. একমালিকানা ও অংশীদারি ব্যবসায়ের ১টি পার্থক্য ব্যাখ্যা কর।
গ. আবিরের ব্যবসায়ের স্থায়িত্ব কেমন হবে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. সাংগঠনিক ধরন বিবেচনায় আবিরের ব্যবসায়টি ‘কম ঝুঁকিপূর্ণ’ অথচ অসীম দায়সম্পন্নÑউদ্দীপকের আলোকে তোমার মতামত দাও।
 ১নং প্রশ্নের উত্তর 
ক. একমালিকানা ব্যবসায়ের প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে মুনাফা অর্জন করা।
খ. একমালিকানা ও অংশীদারি ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে চুক্তি একটি পার্থক্য। একমালিকানা ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে কোনো চুক্তির প্রয়োজন হয় না। আর অংশীদারি ব্যবসায়ে অবশ্যই চুক্তি থাকতে হবে। কারণ, একমালিকানা ব্যবসায়ের মালিক একজন। অংশীদারি ব্যবসায় দুই বা ততোধিক ব্যক্তির সমন্বয়ে গঠিত হয় বলে চুক্তির বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
গ. আবিরের একমালিকানাধীন ব্যবসায়ের স্থায়িত্ব অনিশ্চিত।
এক ব্যক্তির মালিকানায় প্রতিষ্ঠিত ও পরিচালিত ব্যবসায়কে একমালিকানা ব্যবসায় বলে। এ ব্যবসায়ের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো স্থায়িত্বের অনিশ্চয়তা। কেননা সংগঠন ও মালিকের অস্তিত্ব অভিন্ন। উদ্দীপকে আবিরের চায়ের দোকানটি একটি একমালিকানা ব্যবসায় সংগঠন। দোকানটি আবির নিজেই পরিচালনা করেন। দোকানের সব লাভ তিনি একাই ভোগ করেন। তেমনি চায়ের দোকানের লোকসানও তাকে একাই বহন করতে হয়। ফলে চায়ের দোকানের যদি লোকসান হয় অথবা আবিরের মৃত্যু, শারীরিক অসুস্থতা, দেউলিয়াত্ত¡ ইত্যাদি কারণে চায়ের দোকানটি যেকোনো সময় বন্ধ হয়ে যেতে পারে। আবিরের দোকানটি বন্ধ করা বা হয়ে যাওয়া সম্পূর্ণ আবিরের সুবিধা-অসুবিধার ওপর নির্ভর করে। তাই বলা যায় আবিরের চায়ের দোকানের স্থায়িত্ব সব সময় অনিশ্চিত।
ঘ. আবিরের ব্যবসায়টি একমালিকানা হওয়ায় এর ঝুঁকি কম কিন্তু অসীম দায়সম্পন্ন।
সাধারণত একজন ব্যক্তির মালিকানা ও ব্যবস্থাপনায় যে ব্যবসায় পরিচালিত হয় তাকে একমালিকানা ব্যবসায় বলে। এরূপ ব্যবসায় একজন ব্যক্তির তত্ত¡াবধানে হওয়ায় আয়তন যেমন ক্ষুদ্রাকৃতির হয় তেমনি এর ঝুঁকিও কম থাকে। অন্যদিকে লাভ হলে যেমন মালিক একা ভোগ করেন তেমনি লোকসান হলেও তিনি একাই বহন করেন। তাই তার দায় অসীম। উদ্দীপকের আবির তার ব্যবসায়টি প্রতিষ্ঠা করেছেন স্বল্প পুঁজি নিয়ে নিজস্ব তত্ত¡াবধানে। ব্যবসায়ের যাবতীয় কার্যাবলি তিনি আন্তরিকতার সাথে সম্পন্ন করেন। ব্যবসায়ের যে কোনো ব্যাপারে তার সিদ্ধান্তই চ‚ড়ান্ত। তিনি ব্যবসায়ের প্রয়োজনে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবসায়ে যে কোনো ধরনের পরিবর্তন আনতে পারেন। স্বল্প পুঁজি এবং অধিক নমনীয়তার কারণে তার ব্যবসায়ের ঝুঁকি কম। কিন্তু তার ব্যবসায়টি অসীম দায়সম্পন্ন। কারণ ব্যবসায়ে কোনো লোকসান হলে সকল দায়-দায়িত্ব তাকেই এককভাবে বহন করতে হবে। ব্যবসায়ের ক্ষতিতে যেকোনো দায়-দেনার জন্য আবির ব্যক্তিগতভাবে দায়বদ্ধ। ব্যবসায়ের ক্ষতিতে প্রয়োজনে সে ব্যক্তিগত সম্পত্তি বিক্রয় করে ব্যবসায়ের দায় পরিশোধ করতে বাধ্য। তাই প্রশ্নে উল্লেখিত উক্তিটির সাথে আমি একমত পোষণ করি।
প্রশ্ন-২  নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
নাফিজ ও তার চার বন্ধু চুক্তির ভিত্তিতে একটি খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা স্থাপন করেন। উৎপাদিত পণ্যের গুণগত মান ভালো হওয়ায় দিন দিন চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে ব্যবসায় স¤প্রসারণ ও আধুনিকায়নে সমস্যা হচ্ছে। তাই তারা সংগঠনের ধরন পরিবর্তন করে ১৯৯৪ সালের আইনানুযায়ী ‘নাফিজ এন্ড ফ্রেন্ডস’ কোং লিঃ নামে প্রতিষ্ঠানটি নিবন্ধন করে বৃহৎ পরিসরে কাজ শুরু করেন। ২ বছরের মধ্যে তারা দুইটি বিভাগীয় শহরে তাদের শাখা খুলে ব্যবসায় স¤প্রসারণ করেন।
ক. ব্যবসায় সংগঠন কত প্রকার?
খ. একমালিকানা ব্যবসায় ‘মালিকের দায় অসীম’ কথাটি ব্যাখ্যা কর।
গ. নাফিজ ও তার বন্ধুদের ১ম পর্যায়ের ব্যবসায় সংগঠনটি কী ছিল? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. সাংগঠনিক ধরন পরিবর্তন করায় নাফিজদের প্রতিষ্ঠানটি দেশের অর্থনীতিতে আরও বেশি ভ‚মিকা রাখবেÑ বিষয়টি মূল্যায়ন কর।
 ২নং প্রশ্নের উত্তর 
ক. ব্যবসায় সংগঠন পাঁচ প্রকার।
খ. একক ব্যক্তির মালিকানায় প্রতিষ্ঠিত ও পরিচালিত ব্যবসায়টি হলো একমালিকানা ব্যবসায়। এই ব্যবসায়ে অন্য কোনো অংশীদার না থাকায় যাবতীয় দায়-দেনার জন্য মালিক ব্যক্তিগতভাবে দায়ী থাকে। ব্যবসায়ের প্রয়োজনে ব্যক্তিগত সম্পত্তি বিক্রয় করে তাকে ব্যবসায়ের দায়-দেনা পরিশোধ করতে হয়। এসব কারণেই একমালিকানা ব্যবসায়ের মালিকের দায় অসীম।
গ. নাফিজ ও তার বন্ধুদের প্রথম পর্যায়ের ব্যবসায় সংগঠনটি ছিল একটি অংশীদারি ব্যবসায় সংগঠন।
মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে দুই বা ততোধিক ব্যক্তি সমঝোতার ভিত্তিতে চুক্তিবদ্ধ হয়ে যখন কোনো বৈধ ব্যবসায় স্থাপন করে তখন তাকে অংশীদারি ব্যবসায় বলে। অংশীদারি ব্যবসায়ের লাভ-লোকসান বণ্টন, পরিচালনা পদ্ধতি এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় বিষয়াবলি অংশীদারি চুক্তিপত্রে উল্লেখ থাকে। উদ্দীপকে নাফিজ ও তার চার বন্ধুর খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানাটি চুক্তির ভিত্তিতে গঠিত। এ চুক্তি তাদের ব্যবসায়ের অন্যতম প্রধান ভিত্তি। চুক্তির আলোকেই নাফিজ ও তার বন্ধু তাদের ব্যবসায়ের যাবতীয় কাজ সম্পাদন করতেন। অর্থাৎ অংশীদারি ব্যবসায় হিসেবে নাফিজদের ব্যবসায়টির মূলধন সবাই মিলে সরবরাহ করেছেন। ব্যবসায়ের লাভ-লোকসান ও চুক্তি অনুযায়ী বণ্টন করেছেন। তাই বলা যায়, নাফিজ ও তার বন্ধুদের ১ম পর্যায়ে গঠিত ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান ছিল অংশীদারি ব্যবসায়।
ঘ. সাংগঠনিক ধরন পরিবর্তন করায় নাফিজদের প্রতিষ্ঠানটি দেশের অর্থনীতিতে আরও বেশি ভ‚মিকা রাখবেÑ উক্তিটি যথার্থ।
অংশীদারি ব্যবসায়ের সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে উঠতে যৌথ মূলধনী ব্যবসায়ের উদ্ভব হয়েছে। বর্তমানে উন্নত ও অনুন্নত দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে এরূপ ব্যবসায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। উদ্দীপকে উৎপাদিত পণ্যের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়া নাফিজ ও তার বন্ধুরা তাদের ব্যবসায়ে সাংগঠনিক ধরন পরিবর্তন করেন। তারা তাদের অংশীদারি ব্যবসায়কে যৌথ মূলধনী ব্যবসায় সংগঠন হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমানে তাদের ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানটি একটি বৃহদাকার ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান। বৃহদায়তন হওয়ায় বর্তমানে নাফিজদের ব্যবসায়ের মূলধন যেমন বেশি তেমনি বিনিয়োগের পরিমাণও বেশি। ফলে নাফিজদের ব্যবসায় থেকে সরকার প্রচুর কর পেয়ে থাকে, যা দেশের অর্থনীতিতে ব্যাপক ভূমিকা রাখছে। এছাড়া তাদের বৃহদায়তন ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানটি দেশের বৃহৎ বেকার জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করার পাশাপাশি কর্মচারীদের কর্মের উন্নত পরিবেশ সৃষ্টি, অধিক আর্থিক সুযোগ সুবিধা, বাসস্থান, চিকিৎসা এবং পোষ্যদের শিক্ষা সুযোগও দিতে পারবে। তাছাড়া অর্জিত মুনাফার একটি অংশ দেশের শিক্ষা বিস্তার, জনসেবা, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান পরিচালনা, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড ও খেলাধুলার উন্নয়নে ব্যয় করতে পারবে। যা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের অন্যতম নিয়ামক হিসেবে কাজ করবে।
সুতরাং বলা যায়, বৃহদায়তন প্রতিষ্ঠান বলে নাফিজদের যৌথ মূলধনী প্রতিষ্ঠান অবশ্যই দেশের অর্থনীতিকে আরো বেশি সমৃদ্ধ করে তুলবে।

প্রশ্ন-৩  নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
অলিপুর গ্রামে জুয়েল মিয়ার বাড়ি। স্থানীয় বাজার অনেক দূরে হওয়ায় জুয়েল মিয়া নিজেই স্বল্পপুঁজি নিয়ে বাড়ির পাশে একটি সবজির দোকান স্থাপন করলেন। একমাত্র দোকান হওয়ায় জুয়েল মিয়ার ব্যবসায়টিতে গ্রাহক বাড়তে থাকে। ব্যবসায়ের কার্যক্রম বৃদ্ধি পাওয়ায় জুয়েল মিয়া একজন কর্মচারী নিয়োগ করলেন।
ক. অংশীদারি ব্যবসায়ের সর্বোচ্চ সদস্য সংখ্যা কত? ১
খ. অংশীদারি ব্যবসায়ের মূলভিত্তি কোনটি? ব্যাখ্যা কর। ২
গ. মালিকানার ভিত্তিতে জুয়েল মিয়ার ব্যবসায়টির ধরন ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. তুমি কি মনে কর জুয়েল মিয়ার ব্যবসায়টি সবচেয়ে জনপ্রিয়? মতামত দাও। ৪
 ৩নং প্রশ্নের উত্তর 
ক. অংশীদারি ব্যবসায়ের সর্বোচ্চ সদস্য সংখ্যা ২০ জন।
খ. দুই বা ততোধিক ব্যক্তির মধ্যে সম্পাদিত চুক্তির মাধ্যমে অংশীদারি ব্যবসায় গঠিত হয়। এ চুক্তি লিখিত, মৌখিক বা নিবন্ধিত হতে পারে। তবে মৌখিক, লিখিত ও নিবন্ধিত যেভাবেই হোক, অংশীদারি ব্যবসায় শুরু করার জন্য চুক্তি করা বা চুক্তি থাকা বাধ্যতামূলক। অংশীদারি সম্পর্ক সৃষ্টি হয় চুক্তি থেকে, মর্যাদা থেকে নয়। এজন্যই চুক্তিকে অংশীদারি ব্যবসায়ের মূলভিত্তি বলা হয়।
গ. মালিকানার ভিত্তিতে জুয়েল মিয়ার ব্যবসায়ের ধরনটি একমালিকানা ব্যবসায় সংগঠন।
একক ব্যক্তির মালিকানায় যখন কোনো ব্যবসায় গঠিত, পরিচালিত ও নিয়ন্ত্রিত হয় তখন তাকে একমালিকানা ব্যবসায় বলে এ ব্যবসায়ে একজন ব্যক্তিই নিজ উদ্যোগে পুঁজির সংস্থান করেন এবং ব্যবসায় পরিচালনা ও ঝুঁকি বহন করেন। উদ্দীপকে জুয়েল মিয়া স্বল্প পুঁজি নিয়ে তার বাড়ির পাশে একটি সবজির দোকান স্থাপন করেছেন। দোকানের প্রয়োজনীয় মূলধন তিনি নিজেই সরবরাহ করেছেন। মুনাফা বাবদ অর্জিত অর্থ তিনি একাই ভোগ করেন। অপরদিকে দোকানটিতে কোনো লোকসান হলে তার ক্ষতি তিনি এককভাবে বহন করবেন। তাছাড়া দোকানটির স্থায়িত্বও তার ইচ্ছার ওপর নির্ভরশীল। তাই সাংগঠনিক ধরন বিবেচনায় জুয়েল মিয়ার ব্যবসায়টি একটি একমালিকানা ব্যবসায়।
ঘ. জুয়েল মিয়ার একমালিকানা ব্যবসায়টি সবচেয়ে জনপ্রিয় বলে আমি মনে করি।
বর্তমান প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে বৃহদায়তন ব্যবসায়ের পাশাপাশি সুপ্রাচীন ক্ষুদ্রায়তনের একমালিকানা ব্যবসায় সর্বাধিক জনপ্রিয়। উন্নত-অনুন্নত নির্বিশেষে সকল দেশেই এ ব্যবসায়ের সংখ্যা সর্বাধিক। এটি হতেই একমালিকানা সংগঠনের সার্বজনীন গুরুত্ব ও গ্রহণযোগ্যতা প্রমাণিত হয়। উদ্দীপকে জুয়েল মিয়ার ব্যবসায়টি হলো একমালিকানা ব্যবসায় সংগঠন। জুয়েল মিয়ার ব্যবসায়টিতে এমন কিছু সুবিধা আছে যেগুলো অন্য কোনো ব্যবসায়ে পাওয়া যায় না। জুয়েল মিয়ার মতো যে কেউ ইচ্ছা করলে ব্যক্তিগত উদ্যোগ, স্বাধীনচেতা মনোভাব, স্বল্প পুঁজি ও স্বল্পশ্রম বিনিয়োগ করে এ ব্যবসায় যেকোনো সময় যেকোনো স্থানে স্থাপন করতে পারে। এ ব্যবসায়ে আইনি জটিলতামুক্ত এবং এতে ঝুঁকিও কম। অন্যদিকে একমালিকানা ব্যবসায় ভোক্তাদের অত্যন্ত নিকটে থাকায় তাদের পছন্দ ও রুচি অনুযায়ী পণ্য বা সেবা প্রদান করতে পারে। ফলে প্রাচীন ব্যবসায় হওয়া সত্তে¡ও একমালিকানা ব্যবসায়ের ক্ষেত্র যেমন ব্যাপক, তেমনি সকলের নিকট গ্রহণযোগ্য।
সুতরাং বলা যায়, এক মালিকানার ভিত্তিতে স্বাধীন পেশা হিসেবে জুয়েল মিয়ার ব্যবসায়টিই সবচেয়ে জনপ্রিয়।
প্রশ্ন -৪ ল্ফ নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
জনাব সাত্তার একক মালিকানায় একটি খাবার হোটেল স্থাপন করেন। খাবারের মান ভালো হওয়ায় দিন দিন ভোক্তার পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই তার ব্যবসায় স¤প্রসারণের দরকার হয়। প্রয়োজনীয় মূলধনের অভাব থাকায় তার বন্ধু মতিউরকে চুক্তির ভিত্তিতে ব্যবসায়ে অন্তর্ভুক্ত করলেন। কিছু দিন ব্যবসায় করার পর হিসাবে গরমিল বিষয় নিয়ে ঝগড়া হওয়ায় জনাব সাত্তার মতিউরকে পাওনা টাকা না দিয়েই ব্যবসায়ের চুক্তি বাতিল করে দেন। তাদের ব্যবসায়টি নিবন্ধিত ছিল না।
ক. অংশীদারি ব্যবসায়ের উৎপত্তি কোন যুগে? ১
খ. অংশীদারি ব্যবসায়ে বাধ্যতামূলক বিলোপসাধন কেন ঘটে? ২
গ. জনাব সাত্তার ও মতিউরের ব্যবসায়টির ধরন ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. তুমি কি মনে কর মতিউর তার পাওনা টাকা ফেরত পাবে? মতামত দাও। ৪

 ৪নং প্রশ্নের উত্তর 
ক. অংশীদারি ব্যবসায়ের উৎপত্তি মধ্যযুগে।
খ. অংশীদারি আইনের ৪১ ধারা অনুসারে দুটি কারণে বাধ্যতামূলক বিলোপসাধন ঘটে। যথা :
র. একজন ব্যতীত সকল অংশীদার অথবা সকল অংশীদার দেউলিয়া বলে বিবেচিত হলে।
রর. কোনো কার্য দ্বারা ব্যবসায়টি আইন বিরুদ্ধ বা অবৈধ হয়ে পড়লে।
গ. জনাব সাত্তার ও মতিউরের ব্যবসায়টি অংশীদারি ব্যবসায় সংগঠন।
দুই বা ততোধিক ব্যক্তি সেচ্ছায় মিলিত হয়ে অংশীদারি চুক্তির আওতায় যে ব্যবসায় গঠন করে তাকে অংশীদারি ব্যবসায় বলে। এ ব্যবসায়ের মূল ভিত্তি হলো চুক্তি। উদ্দীপকে জনাব সাত্তার তার বন্ধু মতিউরকে খাবার হোটেলের মালিকানার অংশ প্রদান করেন। মালিকানার অংশ প্রদানের মূল ভিত্তি হলো চুক্তি। এর ফলে চুক্তির আওতায় জনাব সাত্তারের খাবার হোটেলটি পরিচালিত হবে। তাদের দুজনের পারস্পরিক আস্থা ও বিশ্বাসের ফলেই ব্যবসায়টি গড়ে ওঠেছে। ব্যবসায়ের লাভ লোকসান তারা চুক্তির ভিত্তিতে বহন করবেন। তবে দুই বন্ধুর ব্যবসায়টির দায় অসীম হওয়ায় ব্যবসায়ের দায়ের জন্য তারা ব্যক্তিগতভাবে দায়বদ্ধ থাকবেন। তাই বলা যায়, জনাব সাত্তার ও মতিউরের ব্যবসায়টি একটি অংশীদারি ব্যবসায় সংগঠন।
ঘ. উদ্দীপকের আলোকে আমি মনে করি ব্যবসায়টি অনিবন্ধিত হওয়ায় মতিউর তার পাওনা টাকা ফেরত পাবে না।
অংশীদারি আইনে ব্যবসায়ে নিবন্ধন বাধ্যতামূলক নয়। তবে নিবন্ধন বাধ্যতামূলক না হলেও অনিবন্ধিত অংশীদারি ব্যবসায় থেকে নিবন্ধিত ব্যবসায়গুলো বেশ কিছু অতিরিক্ত সুবিধা ভোগ করে। নিবন্ধিত অংশীদারি ব্যবসায়ের যেকোনো অংশীদারই অপর কোনো অংশীদারের বিরুদ্ধে চুক্তিতে উল্লিখিত অধিকার আদায়ের জন্য মামলা করতে পারে যা অনিবন্ধিত ব্যবসায়ের অংশীদাররা পারে না। নিবন্ধিত না হলে চুক্তিতে উল্লিখিত অধিকার আদায়ের জন্য অপর কোনো তৃতীয় পক্ষের বিরুদ্ধেও মামলা করতে পারে না। উদ্দীপকে জনাব সাত্তার ও মতিউরের ব্যবসায়টি নিবন্ধিত না হওয়ায় মতিউর বেশ কিছু সমস্যায় পড়েন। জনাব সাত্তার মতিউরকে পাওনা টাকা না দিয়েই চুক্তি বাতিল করে দেন। এক্ষেত্রে ব্যবসায়টি অনিবন্ধিত হওয়া ১০০ টাকার অধিক পাওনার জন্য মতিউর মামলাও করতে পারবেন না। এমনকি চুক্তির আলোকে ব্যবসায়ে মতিউরের যে অধিকার তাও আদায় করতে পারবেন না। তবে তাদের ব্যবসায়টি যদি নিবন্ধন করা থাকত তাহলে মতিউর তার অর্থ ফেরত পেতেন।
সুতরাং বলা যায়, জনাব সাত্তার ও মতিউরের ব্যবসায়টি অনিবন্ধিত হওয়ায় মতিউর তার পাওনা অর্থ ফেরত পাবেন না।

প্রশ্ন-৫  নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
প্রিন্স একক মালিকানায় একটি কমার্সিয়াল ইনস্টিটিউট স্থাপন করেন। তার প্রতিষ্ঠানে তিনি টাইপরাইটার মেশিনের সাহায্যে দরখাস্ত, চিঠিপত্র ইত্যাদি টাইপ করতেন। আধুনিক যুগে আবিষ্কৃত কম্পিউটারের সাহায্যে অতিসহজে ও দ্রুততার সাথে টাইপ করা যায়। তাই প্রিন্স টাইপরাইটার মেশিনের পরিবর্তে তার প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার স্থাপন করেন।
ক. ট্রেড লাইসেন্স কী? ১
খ. একমালিকানা ব্যবসায়কে প্রাচীনতম সংগঠন বলার কারণ কী? ২
গ. টাইপরাইটার মেশিনের পরিবর্তে কম্পিউটার স্থাপনের মাধ্যমে প্রিন্সের একমালিকানা ব্যবসায়ের কোন সুবিধাটি ফুটে উঠেছে? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. প্রিন্সের একক মালিকানায় ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান স্থাপনের যৌক্তিকতা তুলে ধর। ৪
 ৫নং প্রশ্নের উত্তর 
ক. ব্যবসায় শুরু করার জন্য সরকারি অনুমতিপত্রই ট্রেড লাইসেন্স।
খ. প্রাচীনকালে মানুষের প্রয়োজনে সর্বপ্রথম যে ব্যবসায় সংগঠনের প্রচলন ঘটেছিল তা ছিল একমালিকানা ব্যবসায় সংগঠন। মানুষ যখন সমাজবদ্ধভাবে বসবাস করত তখন বিনিময় প্রথার উদ্ভব ঘটে। কিন্তু বিনিময় প্রথার নানাবিধ সমস্যার কারণে অর্থের মাধ্যমে পণ্য ক্রয়-বিক্রয় শুরু হয়। আর এর ধারাবাহিকতায় একমালিকানা ব্যবসায় বিকাশ লাভ করে।
গ. টাইপরাইটার মেশিনের পরিবর্তে কম্পিউটার স্থাপনের মাধ্যমে প্রিন্সের একমালিকানা ব্যবসায়ের পরিবর্তনশীলতা সুবিধাটি ফুটে উঠেছে।
ব্যবসায়ের বৃহত্তর স্বার্থে ও প্রয়োজনে যেকোনো পরিবর্তিত অবস্থায় দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও নীতির পরিবর্তন একমালিকানা ব্যবসায়ের অন্যতম সুবিধা। অর্থাৎ এ ব্যবসায়ের মালিক পরিবর্তিত অবস্থা ও চাহিদা অনুযায়ী তার ব্যবসায়ের পরিচালনার নীতি ও কার্যপদ্ধতি অতি সহজে পরিবর্তন করতে পারেন। উদ্দীপকে প্রিন্স তার একমালিকানা ব্যবসায়ে টাইপরাইটারের পরিবর্তে কম্পিউটার স্থাপন করেন। প্রিন্সের ব্যবসায়ে কম্পিউটার স্থাপনের মাধ্যমে মূলত একমালিকানা ব্যবসায়ের পরিবর্তনশীলতার সুবিধাটি ফুটে উঠেছে। একমালিকানা ব্যবসায়ে প্রিন্স একক মালিক থাকার কারণে ব্যবসায়ের স্বার্থে যেকোনো পরিস্থিতি বিবেচনা করে তিনি যে কোনো ধরনের পরিবর্তন করতে পারেন। প্রিন্স তার ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে টাইপরাইটার মেশিনের পরিবর্তে কম্পিউটার স্থাপন করায় এখন তিনি দরখাস্ত, চিঠি পত্র ইত্যাদি আগের তুলনায় সহজে ও দ্রুততার সাথে টাইপ করতে পারেন।
ঘ. একক মালিকানা স্বত্ব, সহজ গঠন, স্বল্প পুঁজি, স্বাধীন তত্ত¡াবধান ও একক মুনাফা ভোগের সুবিধা থাকায় প্রিন্স একমালিকানা ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান স্থাপন করেছেন।
একমালিকানা ব্যবসায়ের নানাবিধ সুবিধা থাকার কারণে প্রাচীনকাল থেকেই এটি অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি ব্যবসায় সংগঠন। ব্যবসায়ের গঠনপ্রণালি অত্যন্ত সহজ বলে যে কেউ ইচ্ছা করলেই স্বল্প পুঁজি নিয়ে এটি আরম্ভ করতে পারে। উদ্দীপকে প্রিন্স একক মালিকানায় একটি কমার্সিয়াল ইনস্টিটিউট স্থাপন করলেন। এরূপ ব্যবসায়ের গঠন প্রণালি অত্যন্ত সহজ। এতে কোনো আইনি জটিলতা নেই। ব্যবসায়ের লাভ-লোকসান প্রিন্স একাই ভোগ করবেন। মালিক একজন থাকে বলে প্রিন্স তার ব্যবসায়ের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর সহজেই গোপন রাখতে পারবেন। ব্যবসায়ের যে কোনো সিদ্ধান্ত প্রিন্স দ্রুত নিতে পারবেন। প্রিন্স তার ইচ্ছা অনুযায়ী ব্যবসায়ের প্রয়োজনে যে কোনো বিষয় বা কৌশল সহজেই পরিবর্তন করতে পারবেন। ব্যবসায়ের ভালমন্দের জন্য তাকে অন্য কারো নিকট জবাবদিহি করতে হবে না। তিনি স্বাধীনভাবে ব্যবসায় পরিচালনা করতে পারবেন। এছাড়া মালিক হওয়ায় প্রিন্স নিজের ব্যক্তিগত উৎপাদন ও ব্যবস্থাপনা কুশলতা প্রদর্শন করে ব্যবসায়ের উন্নতি বিধান করতে পারবেন।
সুতরাং উপরিউক্ত আলোচনা পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায়, প্রিন্সের একমালিকানা ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান স্থাপন যুক্তিযুক্ত।
প্রশ্ন-৬  নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
নজরুল একক মালিকানায় ব্যবসায় চালিয়ে ছোট ব্যবসায়ী থেকে এখন অনেক বড় ব্যবসায়ী হয়েছেন। কর্মচারী রাখলেও তাদের ওপর নির্ভর করতে পারছেন না। তার শরীরটাও ভালো নেই। এতে ব্যবসায়ের ক্ষতি হচ্ছে। তাই তিনি সমঝোতার ভিত্তিতে একজন দক্ষ ব্যক্তিকে ব্যবসায়ের অন্তর্ভুক্ত করেছেন। দুজন মিলে চালানোতেই ব্যবসায়ে নতুন প্রাণচাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।
ক. একমালিকানা ব্যবসায় কী? ১
খ. অসীম দায় বলতে কী বোঝায়? ২
গ. নজরুল তার ব্যবসায়টি চালাতে কোন ধরনের সমস্যা অনুভব করেছেন? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. পরবর্তীতে নেয়া নজরুলের সিদ্ধান্ত প্রতিষ্ঠানের জন্যে কতটুকু ফলপ্রসূ হবে বলে তুমি মনে কর? তোমার উত্তর বিশ্লেষণ কর। ৪
 ৬নং প্রশ্নের উত্তর 
ক. যে ব্যবসায় এক ব্যক্তির মালিকানায় প্রতিষ্ঠিত ও পরিচালিত এবং ব্যবসায়ের সকল প্রকার লাভ-লোকসান, দায়-দেনা মালিক একাই বহন করে তাকে একমালিকানা ব্যবসায় বলে।
খ. সীমাহীন দায়কে অসীম দায় বলে। অর্থাৎ যে দায়ের জন্য ব্যবসায়ের সমস্ত সম্পদ ছাড়াও মালিকের নিজস্ব সম্পত্তি দায়বদ্ধ থাকে তাকে অসীম দায় বলে। একমালিকানা ব্যবসায়কে অসীম দায়সম্পন্ন ব্যবসায় বলা হয়। কেননা ব্যবসায়ের দায়-দেনার জন্য মালিক ব্যক্তিগতভাবেও দায়বদ্ধ থাকেন। কোনো কারণে ব্যবসায়ের অর্থ দ্বারা ব্যবসায়ের দায়-দেনা পরিশোধ করা সম্ভব না হলে মালিককে তার ব্যক্তিগত সম্পদ ব্যবহার করে ব্যবসায়ের দায়-দেনা পরিশোধ করতে হয়।
গ. নজরুল তার ব্যবসায়টি চালাতে ব্যক্তিগত সামর্থের সমস্যা অনুভব করেছেন।
একমালিকানা ব্যবসায়ের মালিক একাই সংগঠন পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনার কাজকর্ম করে থাকেন। কিন্তু একজন মানুষের ব্যক্তিগত কর্মক্ষমতারও একটা সীমা আছে, যার অতিরিক্ত কিছু তার পক্ষে সুষ্ঠুভাবে করা সম্ভব হয় না। তাই ব্যবসায়ের আয়তন বৃদ্ধি পেলে দক্ষভাবে তা পরিচালনা করা মালিকের একার পক্ষে সম্ভব হয়ে ওঠে না। উদ্দীপকে নজরুলের ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানটি ছিল একমালিকানা ব্যবসায়। একমালিকানা ব্যবসায়ে নজরুল যেমন সমুদয় মুনাফা একা ভোগ করত তেমনি সমুদয় ঝুঁকি ও অনিশ্চয়তা তাকে বহন করতে হতো। কিন্তু নজরুল অসুস্থ হওয়ার ফলে তার পক্ষে প্রতিদিন ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে উপস্থিত থেকে সঠিকভাবে ব্যবসায় পরিচালনা করা সম্ভব হয়নি। আর তিনি ছাড়া যেহেতু প্রতিষ্ঠানে অন্য কোনো মালিক ছিল না তাই যথাযথ নিয়ন্ত্রণের অভাবে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানটি তার স্বাভাবিক কাজের গতি হারিয়ে ফেলেছিল। কর্মচারীরা কাজে ফাঁকি দিয়েছে। অনেক ব্যবসায়িক সুযোগ হাত ছাড়া হয়ে গেছে। এতে ব্যবসায়ের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। তাই বলা যায়, নজরুলের ব্যবসায়টি পরিচালনায় তার ব্যক্তিগত সীমাবদ্ধতা বেশি পরিলক্ষিত হয়েছে।
ঘ. নজরুলের পরবর্তীতে নেয়া সিদ্ধান্তটি অর্থাৎ তার একমালিকানা ব্যবসায়কে অংশীদারি ব্যবসায়ে রূপান্তরে সিদ্ধান্তটি তার প্রতিষ্ঠানের জন্য অনেক বেশি ফলপ্রসূ হবে বলে আমি মনে করি।
একাধিক ব্যক্তি মিলে নিজেদের পুঁজি ও সামর্থ্য একত্রিত করে যে নতুন ধরনের ব্যবসায় সংগঠন গড়ে তুলে তাকে অংশীদারি ব্যবসায় বলে অভিহিত করা হয়। মূলত একমালিকানা ব্যবসায়ের অসুবিধাগুলো দূর করার প্রয়োজনেই অংশীদারি ব্যবসায়ের উদ্ভব হয়। উদ্দীপকে নজরুল একমালিকানা ব্যবসায়ের প্রতিবন্ধকতা দূর করার জন্য অংশীদারি ব্যবসায় শুরু করেন। নজরুলের অংশীদারি ব্যবসায়ের সিদ্ধান্তটি তার প্রতিষ্ঠানের জন্য মঙ্গলজনক হয়েছে। কেননা ব্যবসায়ের অংশীদার বাড়ার ফলে মূলধনের সরবরাহ বৃদ্ধি পেয়েছে। সকল অংশীদারের স্বার্থ এক ও অভিন্ন হওয়ায় সকলকেই দলবদ্ধভাবে ব্যবসায়ের সফলতার জন্য কাজ করতে হয়। ফলে ব্যবসায়ের উন্নতি ত্বরান্বিত হয়। একমালিকানা ব্যবসায়ে এটা সম্ভব হয় না। তাছাড়া নজরুল তার ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানটি অংশীদারি ব্যবসায়ে রূপান্তর করে ব্যবসায়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণে সকল অংশীদারের মত গ্রহণের সুযোগ করেছেন। ফলে ব্যবসায়ের গৃহীত সিদ্ধান্তটি সম্মিলিতভাবে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়।
সুতরাং, নজরুলের ব্যবসায়টি অংশীদারি ব্যবসায়ে রূপান্তর করায় ব্যবসায়টি আগের চেয়ে বেশি লাভবান হবে।
প্রশ্ন -৭ ল্ফ নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
আজিম সবচেয়ে প্রাচীন ও জনপ্রিয় ব্যবসায় সংগঠন পরিচালনা করেন। মাঝে মধ্যেই তাকে আর্থিক সংকটে পড়তে হয়। পরবর্তীতে আজিম তার সুনাম ব্যবহার করে দুই বন্ধুর সাথে অন্য একটি ব্যবসায় চুক্তির ভিত্তিতে যুক্ত হলেন। তিনি দেখলেন এ ব্যবসায় ঝুঁকি কম, দায়িত্ব বণ্টন ইত্যাদি সুবিধা রয়েছে।
ক. অংশীদার কয় ধরনের? ১
খ. প্রাইভেট লি. কোম্পানি বলতে কী বোঝায়? ২
গ. আজিম কোন ধরনের অংশীদার? বর্ণনা কর। ৩
ঘ. আজিমের বর্তমান ও পূর্বের ব্যবসায়িক অবস্থার তুলনামূলক বিশ্লেষণ কর। ৪
 ৭নং প্রশ্নের উত্তর 
ক. অংশীদার প্রধানত ছয় ধরনের।
খ. যে কোম্পানির সদস্য সংখ্যা সর্বনিম্ন দুজন এবং সর্বোচ্চ ৫০ জনে সীমাবদ্ধ এবং যার শেয়ার অবাধে হস্তান্তরযোগ্য নয় তাকে প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি বলে। প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানিতে উদ্যোক্তারাই মালিক হিসেবে পরিচিত হন। এখানে নতুন মালিক গ্রহণের সুযোগ নেই।
গ. আজিম একজন নামমাত্র অংশীদার।
একটি অংশীদারি ব্যবসায়ে সাধারণত ছয় ধরনের অংশীদার লক্ষ করা যায়। এ ধরনের অংশীদারদের মধ্যে অন্যতম হলো নামমাত্র অংশীদার। যে অংশীদার ব্যবসায়ে মূলধন বিনিয়োগ করেন না এবং ব্যবসায় পরিচালনায়ও অংশগ্রহণ করেন না কিন্তু সুনাম ব্যবহার করতে দেয়ার বিনিময়ে ঐ ব্যবসায় থেকে মুনাফা গ্রহণ করেন তাকে নামমাত্র অংশীদার বলে। উদ্দীপকে আজিম তার দুই বন্ধুকে নিয়ে যে অংশীদারি ব্যবসায় গঠন করেছেন সেখানে তিনি মূলধন বিনিয়োগ করেননি। তিনি সুনাম ব্যবহার করে উক্ত ব্যবসায় থেকে মুনাফা পাবেন। তাছাড়াও তিনি ব্যবসায় পরিচালনায় অংশগ্রহণ করবেন না এবং তার দায় অসীম নয়। তবে কোনো তৃতীয় পক্ষ যদি তাকে অংশীদার মনে করে ঋণ দেয় এবং তা প্রমাণ করতে পারে তাহলে সেই ঋণের জন্য তিনি সাধারণ অংশীদারের ন্যায় দায়বদ্ধ। তাই অংশীদারদের বৈশিষ্ট্য বিবেচনায় আজিম নিঃসন্দেহে একজন নামমাত্র অংশীদার।
ঘ. আজিম বর্তমানে অংশীদারি ব্যবসায়ে যুক্ত আছেন এবং পূর্বে তিনি একমালিকানা ব্যবসায়ে যুক্ত ছিলেন।
ব্যবসায় জগতে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ব্যবসায় সংগঠনের আবির্ভাব ঘটেছে। এদের মধ্যে প্রথমে একমালিকানা এবং পরবর্তীতে অংশীদারি ব্যবসায়ের উদ্ভব ঘটে। উদ্দীপকের আজিম পূর্বের একমালিকানা ব্যবসায়টিতে একক মালিক ছিলেন তাই ব্যবসায়ের সকল সিদ্ধান্ত যেমন তিনি একা নিতেন তেমনি লাভ-লোকসানও একই ভোগ করতেন। কিন্তু অংশীদারি ব্যবসায়ে সকল অংশীদাররা সম্মিলিতভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন এবং লাভ-লোকসানও নিজেদের মধ্যে চুক্তি অনুযায়ী বণ্টন করে নেন। তাছাড়া তার প্রথম ব্যবসায়টি অপেক্ষা দ্বিতীয় ব্যবসায়টির গঠন কিছুটা কঠিন। বর্তমান ব্যবসায়ে অধিক মূলধন সংস্থানের সুযোগ থাকলেও পূর্বের ব্যবসায়ে ছিল না। পূর্বের ব্যবসায়ে গোপনীয়তা রক্ষা করা গেলেও বর্তমান ব্যবসায়ে তা রক্ষা করা খুবই কঠিন। বর্তমান ব্যবসায়ের জন্য ১৯৩২ সালের আইন থাকলেও পূর্বের ব্যবসায়ে কোনো আইন ছিল না। অর্থাৎ আজিমের পূর্বের ব্যবসায়ে একক মুনাফা ভোগ ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের পর্যাপ্ত সুযোগ থাকা সত্তে¡ও মালিকের পরিচালন ক্ষমতা ও মূলধন সরবরাহে সীমাবদ্ধতা, অসীম দায় ইত্যাদি অসুবিধা ছিল। কিন্তু এখন তিনি ব্যবসায় স¤প্রসারণ করার পাশাপাশি ঝুঁকি ও দায়িত্ব বণ্টন করার সুযোগ পাচ্ছেন।
সুতরাং বলা যায়, তার বর্তমান ব্যবসায়িক অবস্থা পূর্বের তুলনায় অধিক সুবিধাজনক।
প্রশ্ন-৮  নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
পরশ, পিয়াল ও পাপ্পু তিনজন বন্ধু মিলে একত্রে তৈরি পোশাক কেনা-বেচার জন্য সমঝোতার ভিত্তিতে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছে। কিছু তৈরি পোশাক কিনে কিছু দিন পর বিক্রয় করে। আবার কিছু তৈরি পোশাক কিনে ৪ বা ৫ দিনের মধ্যেই বিক্রয় করে দেয়। কোন পোশাক কখন বিক্রয় করবে এ নিয়ে প্রায়ই ঝগড়া হয়। তাই তারা যার যার মতো ব্যবসায় করার সিদ্ধান্ত নিল। এখন অন্যকে আর জিজ্ঞাসা করার প্রয়োজন পড়ে না। যার যার দায় এখন তার তার।
ক. সমবায় সংগঠনে ন্যূনতম কতজন সদস্য দরকার? ১
খ. অংশীদারি ব্যবসায়ের আবির্ভাব ঘটে কেন? ২
গ. তিন বন্ধু প্রথমে কোন ধরনের ব্যবসায় গঠন করেছিল? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. তিন বন্ধু পরে কোন ধরনের ব্যবসায় করার সিদ্ধান্ত নিল? তাদের সিদ্ধান্তের যৌক্তিকতা তুলে ধর। ৪
 ৮নং প্রশ্নের উত্তর 
ক. সমবায় সংগঠনে ন্যূনতম ২০ জন সদস্য দরকার।
খ. একমালিকানা ব্যবসায়ের অসুবিধাগুলো দূর করার প্রয়োজনেই অংশীদারি ব্যবসায়ের আবির্ভাব ঘটে। ব্যবসায় জগতে একমালিকানা ব্যবসায়ে প্রাচীন ও জনপ্রিয় হলেও একক মালিকের মূলধনের স্বল্পতা, অসীম দায়, ব্যবসায়ের ক্ষুদ্র আওতা ইত্যাদি সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে উঠতে ব্যবসায় জগতে অংশীদারি ব্যবসায়ের প্রয়োজন দেখা দেয়। তার পরিপ্রেক্ষিতে অংশীদারি ব্যবসায়ের উদ্ভব হয়।
গ. পরশ, পিয়াল ও পাপ্পু তিন বন্ধু প্রথমে অংশীদারি ব্যবসায় গঠন করেছিল।
মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে দুই বা ততোধিক ব্যক্তি স্বেচ্ছায় মিলিত হয়ে অংশীদারি চুক্তির ভিত্তিতে যে ব্যবসায় গঠন করে তাকে অংশীদারি ব্যবসায় বলে। উদ্দীপকে তিন বন্ধু তৈরি পোশাক কেনা-বেচার জন্য প্রথমে অংশীদারি ব্যবসায় গড়ে তোলে। এ ব্যবসায়ে সদস্য সংখ্যা হলো সর্বনিম্ন ২ জন এবং সর্বোচ্চ ২০ জন। এ ব্যবসায়ের মূলধনের পরিমাণ একমালিকানা ব্যবসায়ের তুলনায় অনেক বেশি থাকে। কারণ এখানে প্রত্যেক অংশীদার সম্মিলিতভাবে তাদের নিজ নিজ পুঁজি ব্যবসায়ে বিনিয়োগ করে। ব্যবসায়ের সার্বিক সাফল্য অংশীদারদের মধ্যে পারস্পরিক সমঝোতার ওপর নির্ভর করে। উদ্দীপকের ব্যবসায়টির সদস্য সংখ্যা তিন জন এবং পারস্পরিক সমঝোতার ভিত্তিতে ব্যবসায়টি গঠন করা হয়েছে। অংশীদারগণ যে কোনো বিষয়ে সম্মিলিতভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। তাই তিন বন্ধুর প্রথম ব্যবসায়টি অংশীদারি ব্যবসায়।
ঘ. পরশ, পিয়াল ও পাপ্পু তিন বন্ধু সিদ্ধান্ত সংক্রান্ত ঝামেলা থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য প্রত্যেক আলাদা হয়ে একমালিকানা ব্যবসায় গঠন করে।
অংশীদারি ব্যবসায়ে সদস্যদের মধ্যে প্রায়ই বিভিন্ন বিষেয়ে মত পার্থক্য দেখা দেয়। ফলে এক সময় সমঝোতা ও বিশ্বাসের অভাবে সংগঠনের অবসান হয়। অর্থাৎ সমমনা লোকের অভাবে প্রতিষ্ঠান ভেঙ্গে যায়। উদ্দীপকের তিন বন্ধুর প্রথম ব্যবসায়টিতে যেকোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময় সবার সম্মতির প্রয়োজন হতো। কিন্তু যথাসময়ে সকল সদস্যদের সিদ্ধান্ত পাওয়া যেত না। ফলে তাদের মধ্যে মত পার্থক্য দেখা দেয়। তাদের পারস্পরিক অবিশ্বাস ও সমঝোতার অভাবে ব্যবসায় ধ্বংস হয়ে যায়। এরূপ ঝামেলা এড়ানোর এজন্যই তারা প্রত্যেকে আলাদা হয়ে একমালিকানা ব্যবসায় গঠন করে।এ ব্যবসায়ে মালিক ব্যবসায়ের সার্বিক ক্ষমতার অধিকারী। তিনি যেকোনো বিষয়ে যেকোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। এজন্য তাকে কারও সাথে আলোচনা করতে হয় না। এ ব্যবসায়ের সমস্ত লাভ মালিক একাই ভোগ করে এবং সাথে সাথে ব্যবসায়ের অসীম দায় তাকে নিতে হয়। তিন বন্ধু প্রত্যেকে নিজ নিজ ব্যবসায় করার ফলে অংশীদারি ব্যবসায়ে সৃষ্ট সমস্যা দূর হয়ে যায়।
সুতরাং বলা যায়, পারস্পরিক ঝামেলা এড়ানোর জন্য তিন বন্ধুর একমালিকানা ব্যবসায় গঠন করার সিদ্ধান্ত যৌক্তিক হয়েছে।
প্রশ্ন -৯ ল্ফ নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
মিসেস শাহানারা একটি বুটিক হাউজ প্রতিষ্ঠানের মালিক। তার এক বান্ধবীর সহযোগিতায় ৫ জন শ্রমিক নিয়ে ছোট্ট প্রতিষ্ঠান গড়ে তিনি ব্যবসায় শুরু করেছিলেন। এখন পাঁচটি কারখানায় একশত জন শ্রমিক কাজ করে। কখনও তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে বা অনুপস্থিত থাকলে সমস্যার শেষ থাকে না। তাই তিনি তার ছোট বোনকে সমঝোতার ভিত্তিতে ব্যবসায়ে নিয়ে এসেছেন।
ক. রাষ্ট্রীয় ব্যবসায় কার অধ্যাদেশে গড়ে ওঠে? ১
খ. অসীম দায়ের পরোক্ষ সুবিধা বলতে কী বোঝায়? ২
গ. মিসেস শাহানারা প্রথমে কোন ধরনের ব্যবসায় গঠন করেছিলেন? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. কোন ধরনের অসুবিধার কারণে মিসেস শাহানারা ছোট বোনকে অংশীদার হিসেবে গ্রহণ করেছেন? তার সিদ্ধান্তের যৌক্তিকতা মূল্যায়ন কর। ৪
 ৯নং প্রশ্নের উত্তর 
ক. রাষ্ট্রীয় ব্যবসায় রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশে গড়ে ওঠে।
খ. অংশীদারি ব্যবসায়ে অংশীদারের দায় অসীম হওয়ার কারণে প্রত্যেক অংশীদার অত্যন্ত সতর্কতার সাথে ব্যবসায় পরিচালনা করার চেষ্টা করে। এর ফলে ব্যবসায়ে জরুরি মূলধনের প্রয়োজনে সহজেই তৃতীয় পক্ষ হতে ঋণ সংগ্রহ করা যায়। অসীম দায়ের ফলে প্রত্যেক অংশীদার ব্যবসায়ের সম্পদের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করার প্রচেষ্টা চালায়।
গ. মিসেস শাহানারা প্রথমে একমালিকানা ব্যবসায় গঠন করেছিলেন।
সাধারণভাবে একজন ব্যক্তির মালিকানায় প্রতিষ্ঠিত, পরিচালিত ও নিয়ন্ত্রিত ব্যবসায়কে একমালিকানা ব্যবসায় বলে। যেকোনো ব্যক্তি নিজের উদ্যোগে স্বল্প অর্থ নিয়ে এ ধরনের কারবার শুরু করতে পারেন। উদ্দীপকে প্রথমে মিসেস শাহানারার প্রতিষ্ঠানটি ছিল একমালিকানা প্রতিষ্ঠান। কারণ এ প্রতিষ্ঠানের মালিক একমাত্র শাহানারা। তিনিই ব্যবসায়টি নিয়ন্ত্রণ ও তত্ত¡াবধান করেন। প্রতিষ্ঠানের লাভ-লোকসান একাই ভোগ করেন এবং নিজে অসুস্থ হয়ে পড়লে পরিচালনাগত সমস্যায় পড়েন। এ ব্যবসায়ে সার্বিক সাফল্য নির্ভর করে শাহানারার ব্যবস্থাপনা দক্ষতার ওপর। অর্থাৎ মিসেস শাহানারা প্রথম যে বুটিক হউজ গড়ে তোলেন তা এমকালিকানা ব্যবসায়ের বৈশিষ্ট্যের অনুরূপ। তাই বলা যায়, প্রতিষ্ঠানটি একমালিকানা ব্যবসায়ের অন্তর্ভুক্ত।
ঘ. ব্যক্তিগত প্রতিবন্ধকতার কারণে মিসেস শাহানারা ছোট বোনকে অংশীদার হিসেবে গ্রহণ করেছেন।
একমালিকানা ব্যবসায় পৃথিবীর সর্বাধিক জনপ্রিয় ব্যবসায় হওয়ার পরও এর এমন কিছু সমস্যা রয়েছে, যা এর অগ্রগতি থামিয়ে দেয়। এসব সমস্যার হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য অংশীদারি ব্যবসায়ের উদ্ভব হয়। উদ্দীপকে মিসেস শাহানারা তার একমালিকানা ব্যবসায় পরিচালনার ক্ষেত্রে যে সকল সমস্যার মুখোমুখি হয়েছিলেন তার মধ্যে প্রধান ছিল তার সামর্থ্যরে সীমাবদ্ধতা। শাহানারা অসুস্থ হয়ে পড়লে ব্যবসায় পরিচালনায় সমস্যা হয়। কেননা মালিক তার ব্যবসায়ে যতটা দায়িত্বের সাথে কাজ করে নিয়োগকৃত কর্মীরা সেভাবে কাজ করে না। তাই মিসেস শাহানারা তার ছোট বোনকে ব্যবসায়ের অংশীদার করেন এতে তার ব্যবসায়ের কার্যক্রমে গতিশীলতা ফিরে আসে। কারণ তিনি অসুস্থ থাকলেও তার অংশীদারি ব্যবসায়ের সার্বিক কার্যক্রম তার বোনের তত্ত¡াবধানে সঠিকভাবে চলতে থাকে। যেকোনো বিষয়ে তারা এখন যৌথ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারেন। ফলে ব্যবসায়ে ক্ষতির সম্ভাবনা আগের তুলনায় এখন অনেক কম।
সুতরাং বলা যায়, সমঝোতার ভিত্তিতে মিসেস শাহানারার তার বোনকে অংশীদার হিসেবে গ্রহণ করা যৌক্তিক হয়েছে।
প্রশ্ন-১০  নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
এমবিএ পড়–য়া ১০ বন্ধু মিলে সমঝোতার ভিত্তিতে স্টুডেন্টস ভিসা সার্ভিস নামে একটি প্রতিষ্ঠান গঠন করে। তারা শিক্ষার্থীদের বিদেশ পড়তে যেতে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেয়। এ কাজে তারা যথেষ্ট দক্ষতা ও সুখ্যাতি অর্জন করায় ব্যবসায় উত্তরোত্তর ভালো করছে। কিন্তু এখানে নানান বিষয়ে তাদের মধ্যে সমস্যা হচ্ছে। তাই তারা মনে করছে শুধুমাত্র কথার ওপরে না চলে আইনগত কিছু করে নিলে ভালো হবে।
ক. অংশীদারি আইন কী? ১
খ. বৃহদায়তন ব্যবসায় বলতে কী বোঝায়? ২
গ. উদ্দীপকের বন্ধুরা মিলে যে ব্যবসায় গড়ে তুলেছে তা কোন ধরনের ব্যাখ্যা কর? ৩
ঘ. উদ্দীপকের বন্ধুরা আইনগত কিছু করবে বলে যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তার যৌক্তিকতা তুলে ধর। ৪
 ১০নং প্রশ্নের উত্তর 
ক. যে আইনে অংশীদারি ব্যবসায়ের গঠন, নিবন্ধন, পরিচালনা, নিয়ন্ত্রণ, বিলোপসাধনসহ অংশীদারি ব্যবসায়ের নিয়ন-নীতি বর্ণনা করা হয়েছে তাকে অংশীদারি আইন বলে।
খ. বৃহদায়তন শব্দের অর্থ বৃহৎ আকার। যে ব্যবসায় অধিক পুঁজি নিয়ে গঠিত হয়ে বৃহৎ পরিসরে উৎপাদন বা সেবা কার্যক্রম অব্যাহত রাখে সেটিকে বৃহদায়তন ব্যবসায় বলে। এ ব্যবসায়ে যন্ত্রের মাধ্যমে অধিক পণ্য উৎপাদন করা হয় এবং বৃহৎ বাজারে বিক্রি করা হয়। যেমন : স্টিল তৈরির ব্যবসায়ে অধিক মূলধন যেমন প্রয়োজন হয় তেমনি অধিক কর্মীবাহিনী নিয়োজিত থেকে অধিক পরিমাণ পণ্য তৈরি করে।
গ. উদ্দীপকের এমবিএ পড়–য়া ১০ জন বন্ধু মিলে অংশীদারি ব্যবসায় গড়ে তুলেছে।
একাধিক ব্যক্তি অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে যে ব্যবসায় গঠন করে তাকে অংশীদারি ব্যবসায় বলে। অংশীদারি ব্যবসায় একাধিক ব্যক্তির মধ্যে একটি চুক্তিবন্ধ সম্পর্ক যেখানে সদস্যরা মুনাফা অর্জন ও বণ্টন, পারস্পরিক প্রতিনিধিত্ব, বিশ্বাস ও আস্থার ভিত্তিতে কাজ করে। উদ্দীপকের ১০ জন বন্ধু মিলে স্টুডেন্টস ভিসা সার্ভিস নামে অংশীদারি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠা করেছে। তারা শিক্ষার্থীদের বিদেশে পড়তে যেতে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদান করে থাকে। বন্ধুদের মধ্যে পারস্পরিক আস্থা ও বিশ্বাসের ওপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠানটি গড়ে উঠেছে। ফলে তাদের ব্যবসায় উত্তরোত্তর মুনাফা ও সুখ্যাতি অর্জন করতে পারছে। প্রতিষ্ঠানের অর্জিত মুনাফা সদস্যদের মধ্যে সাধারণত চুক্তির শর্ত অনুযায়ী বণ্টন করে অথবা চুক্তিতে উলে­খ না থাকলে সমহারে বণ্টন করে। অর্থাৎ তাদের ব্যবসায়টি একটি অংশীদারি ব্যবসায় সংগঠন।
ঘ. উদ্দীপকে এমবিএ পড়–য়া ১০ জন বন্ধু আইনগত প্রমাণ হিসেবে অংশীদারি চুক্তিপত্র লিখিত ও নিবন্ধিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
অংশীদারি সংগঠনের লিখিত চুক্তিকেই অংশীদারি চুক্তিনামা বা চুক্তিপত্র বলা হয়। ভবিষ্যৎ বিবাদের ও ভুল বোঝাবুঝির মীমাংসার জন্য চুক্তি লিখিত হওয়াই বাঞ্ছনীয়। কেননা মৌখিক চুক্তি আইনের চোখে মূল্যহীন। উদ্দীপকের ১০ জন বন্ধুরা তাদের অংশীদারি ব্যবসায়ের ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনার জন্যই আইনগত প্রমাণস্বরূপ চুক্তিপত্র গঠন করতে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কারণ অংশীদারি চুক্তিপত্রে অংশীদারদের পারস্পরিক সম্পর্ক ও অন্যান্য বিষয়াবলির উলে­খ থাকে। অংশীদারদের মধ্যে কোনো বিষয়ে বিরোধ দেখা দিলে বা ব্যবসায় সংশ্লিষ্ট কোনো বিষয়ে সমস্যার জন্য চুক্তিপত্রে লিখিত নিয়ম অনুযায়ী যাবতীয় বিষয়ের সুষ্ঠু মীমাংসা করা সম্ভব হয়। তাছাড়া অংশীদারি ব্যবসায় শুধুমাত্র পারস্পরিক আস্থা ও বিশ্বাসের ওপর নির্ভর করে না। এজন্য প্রয়োজন হয় এ ব্যবসায়ের মূলভিত্তি চুক্তিপত্র। উদ্দীপকের ১০ জন বন্ধু অর্থাৎ ব্যবসায়ের অংশীদারদের ভবিষ্যৎ স্বার্থ রক্ষার্থে এবং তাদের মধ্যে লাভ-লোকসান বণ্টন, পরিচালনা বা অন্য যেকোনো সম্ভাব্য বিষয়ে ভুল বোঝাবুঝির হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য চুক্তিপত্র লিখিত ও নিবন্ধিত হওয়াই বাঞ্ছনীয়। কারণ, তাদের মধ্যকার গঠনকালীন বন্ধুত্ব ও পারস্পরিক বিশ্বাস ভবিষ্যতে নাও থাকতে পারে। তখন চুক্তিপত্র মীমাংসার প্রধান ভিত্তি হিসেবে কাজ করবে।
সুতরাং বলা যায়, ১০ বন্ধুর আইনগত প্রমাণ হিসেবে অংশীদারি চুক্তিপত্র তৈরি করার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা অত্যন্ত যুক্তিসংগত।
প্রশ্ন -১১ ল্ফ নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
সমমূলধনের ভিত্তিতে জুয়েল ও তার বন্ধু আজাদ মিলে একটি অংশীদারি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। জুয়েল বলেন তিনি ব্যবসায় পরিচালনায় অংশ নিতে পারবেন না এবং সরবরাহকৃত মূলধন পর্যন্ত দায় গ্রহণ করবেন। সর্বসম্মতিক্রমে আজাদকে প্রতিষ্ঠান পরিচালনার দায়িত্ব দেয়া হয়। পরবর্তীতে একজন প্রভাবশালী দেনাদার ৫০,০০০ টাকা না দেয়ায় আজাদ আইনের আশ্রয় নিয়ে তা আদায় করতে সমর্থ হন।
ক. কোন ধরনের ব্যবসায় সংগঠনে মুনাফার ১৫% সঞ্চয় তহবিলে জমা রাখতে হয়? ১
খ. সমবায় সংগঠন গড়ে ওঠার কারণ লেখ। ২
গ. দায়ের ভিত্তিতে জুয়েল কোন ধরনের অংশীদার? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. কী কারণে আজাদ আইনের আশ্রয় গ্রহণ করতে পেরেছেন বলে তুম মনে কর? তোমার উত্তর বিশ্লেষণ কর। ৪
 ১১নং প্রশ্নের উত্তর 
ক. সমবায় সংগঠনে মুনাফার ১৫% সঞ্চয় তহবিলে জমা রাখতে হয়।
খ. পুঁজিবাদী সমাজ ব্যবসায় সমাজে অর্থনৈতিক বৈষম্য দেখা দেয়। স্বল্পবিত্ত ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির পেশাজীবী ও ব্যবসায়ীরা আর্থিকভাবে সমস্যার সম্মুখীন হতে থাকে। পুঁজিবাদী সমাজের সৃষ্ট এ জাতীয় অর্থনৈতিক বৈষম্য ও দূরবস্থা থেকে মুক্তির প্রয়াসে সমবায় সংগঠন গড়ে ওঠে।
গ. দায়ের ভিত্তিতে জুয়েল ঘুমন্ত অংশীদার।
বিনিয়োগ শর্তের ভিন্নতার ওপর ভিত্তি করে অংশীদারি ব্যবসায়ে নানা ধরনের অংশীদারের সমাবেশ ঘটে। এ ধরনের অংশীদারদের মধ্যে একটি হলো ঘুমন্ত অংশীদার। ঘুমন্ত অংশীদার বলতে বোঝায়, যে অংশীদার মুনাফার উদ্দেশ্যে ব্যবসায়ে কেবলমাত্র মূলধন বিনিয়োগ করে, অথচ ব্যবসায় পরিচালনায় অংশগ্রহণ করে না। উদ্দীপকে জুয়েল ও তার বন্ধু আজাদ মিলে একটি অংশীদারি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান স্থাপন করেন। কিন্তু জুয়েল অধিকার থাকা সত্তে¡ও স্বক্রিয়ভাবে ব্যবসায় পরিচালনায় অংশগ্রহণে অপারগতা প্রকাশ করেন। তিনি ব্যবসায়ে শুধু মূলধন বিনিয়োগ করবেন। এছাড়াও জুয়েল চুক্তি অনুযায়ী লাভে অংশগ্রহণ করবেন এবং সরবরাহকৃত মূলধন পর্যন্ত দায় গ্রহণ করবেন, যা ঘুমন্ত অংশীদারের বৈশিষ্ট্য। সুতরাং উদ্দীপকের শর্ত অনুযায়ী জুয়েল একজন ঘুমন্ত অংশীদার।
ঘ. অংশীদারি ব্যবসায়টি নিবন্ধিত হওয়ার কারণে আজাদ আইনের আশ্রয় গ্রহণ করতে পেরেছেন বলে আমি মনে করি।
অংশীদারি ব্যবসায়ের নিবন্ধন বলতে সরকার কর্তৃক নিয়োজিত নিবন্ধক অফিসে ব্যবসায়ের নাম তালিকাভুক্তকরণকে বোঝায়। অনিবন্ধিত অংশীদারি ব্যবসায় থেকে নিবন্ধিত অংশীদারি ব্যবসায় বেশ কিছু অতিরিক্ত সুবিধা ভোগ করে। উদ্দীপকে জুয়েল ও তার বন্ধু আজাদ মিলে একটি নিবন্ধিত অংশীদারি ব্যবসায় গড়ে তোলেন। তাদের অংশীদারি ব্যবসায়ের নিবন্ধনের কারণে ব্যবসায়ের একজন প্রভাবশালী দেনাদার ৫০,০০০ টাকা না দেয়ায় মি. আজাদ আইনের আশ্রয় গ্রহণ করেছেন। কিন্তু তাদের ব্যবসায়টি যদি নিবন্ধন করা না থাকত তাহলে তিনি দেনাদারের কাছ থেকে ১০০ টাকার বেশি কোনো পাওনা আদায়ের জন্য মামলা করতে পারতেন না। এমনকি তৃতীয় কোনো পক্ষ যদি তাদের প্রতিষ্ঠান বা অংশীদারদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করত, শুধু অনিবন্ধিত হবার কারণে তারা বাদীপক্ষের বিরুদ্ধে পাল্টা পাওনা দাবি করতে পারত না। কারণ অংশীদারি ব্যবসায় নিবন্ধিত হলেই কেবল তৃতীয় পক্ষের বিরুদ্ধে যেকোনো পরিমাণ অর্থ আদায়ের জন্য মামলা করা যায়।
সুতরাং, আজাদের অংশীদারি ব্যবসায়টি নিবন্ধিত হওয়ার কারণে ৫০,০০০ টাকা পাওনা আদায়ের জন্য তিনি আইনের আশ্রয় নিয়ে তা আদায় করতে সমর্থ হন।
প্রশ্ন-১২  নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
পুরান ঢাকার পাঁচ বন্ধু সমঝোতার ভিত্তিতে প্রত্যেকেই সমান মূলধন বিনিয়োগ করে ঢাকার বাংলা বাজারে একটা আধুনিক ছাপাখানা চালু করে। পাঁচজন মিলেমিশে ও ভাগ করে মনোযোগ দিয়ে কাজ করায় তারা সফল হয়। এখন তাদের আরেকটা মেশিন ওঠানো প্রয়োজন। কিন্তু হাতে নগদ টাকা না থাকায় তারা এমন অংশীদার নেয়ার কথা ভাবছে যাতে তার দায় যেমনই হোক না কেন পরিচালনায় অংশ নিতে পারবে না।
ক. অংশীদারি ব্যবসায়ের আবেদনপত্র পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন কে? ১
খ. একমালিকানা ব্যবসায় সবচেয়ে জনপ্রিয় কেন? ২
গ. পাঁচ বন্ধুর অংশীদারি ব্যবসায়টি কোন ধরনের? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. উদ্দীপকে নতুন অংশীদার গ্রহণ করা কতটুকু যুক্তিসংগত হবে বলে তুমি মনে কর? তোমার উত্তর বিশ্লেষণ কর। ৪
 ১২নং প্রশ্নের উত্তর 
ক. অংশীদারি ব্যবসায়ের আবেদনপত্র পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন নিবন্ধক।
খ. একমালিকানা ব্যবসায় পৃথিবীর প্রাচীনতম ব্যবসায় সংগঠন। একক মালিকানায় সামান্য পুঁজি বিনিয়োগ করে আইনগত বাধ্যবাধকতা ছাড়াই যে কেউ একমালিকানা ব্যবসায় গঠন করতে পারেন। একমালিকানা ব্যবসায়ের মালিক এককভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন এবং ব্যবসায়ের সকল সুযোগ-সুবিধা ভোগ করেন। এজন্য একমালিকানা ব্যবসায় সবচেয়ে জনপ্রিয়।
গ. পুরান ঢাকার পাঁচ বন্ধু মিলে সমঝোতার ভিত্তিতে সাধারণ অংশীদারি ব্যবসায় গঠন করেছে।
অংশীদারি ব্যবসায়ের চুক্তি অনুযায়ী সাধারণ অংশীদারি ব্যবসায়ে সকল অংশীদারের দায় সীমাহীন থাকে এবং ব্যবসায় পরিচালনায় প্রত্যেকেই অংশগ্রহণ করে। অংশীদারগণ ব্যবসায়ে অর্জিত মুনাফা চুক্তি অনুযায়ী ভোগ করে। উদ্দীপকে পাঁচ বন্ধু মিলে ঢাকার বাংলা বাজারে সমান মূলধন বিনিয়োগ করে একটি আধুনিক ছাপাখানা প্রতিষ্ঠান গঠন করে। তারা পাঁচজন মিলেমিশে কাজ করে এবং একে অপরকে সহযোগিতার ভিত্তিতে কাজ করার জন্য দায়িত্ব ভাগ করে নেয়। তারা প্রত্যেকে সমান মর্যাদার অধিকারী। সকলে ব্যবসায় পরিচালনায় অংশগ্রহণ করে এবং সকলে সমানভাবে দায় বহন করে। তাদের মধ্যে ব্যবসায়ের অন্যতম অপরিহার্য উপাদান চুক্তি বিদ্যমান। তাদের মূলধন সরবরাহের ধরন এবং ব্যবসায়িক কার্যাবলি তাদেরকে সাধারণ অংশীদার হিসেবে ঘোষণা করছে।
সুতরাং বলা যায়, পুরান ঢাকার পাঁচ বন্ধু মিলে সাধারণ অংশীদারি ব্যবসায় গঠন করেছে।
ঘ. উদ্দীপকে পাঁচ বন্ধুর ব্যবসায়ে মূলধন সংকটের জন্য নতুন একজন অংশীদায় নিয়োগ দেয়া সঠিক হবে বলে আমি মনে করি।
অনেক সময় ব্যবসায়ের সুবিধার্থে পুরাতন অংশীদারগণ নতুন অংশীদার গ্রহণ করে থাকে। সে চুক্তি পালনে রাজি হলে সদস্য হিসেবে গণ্য হবে। যেদিন হতে সে ব্যবসায়ে যোগ দেবে তার আগের কোনো দায়ের জন্য তাকে দায়ী করা যাবে না। তবে স্বেচ্ছায় পূর্বের দায় গ্রহণে রাজি হলে পুরাতন অংশীদারদের সাথে তাকে পৃথকভাবে চুক্তিবদ্ধ হতে হবে। উদ্দীপকে পাঁচ বন্ধু তাদের ব্যবসায়ে নতুন অংশীদার নিয়োগ করতে চান, যিনি মূলধন বিনিয়োগ করবেন কিন্তু ব্যবসায় পরিচালনায় অংশ নিতে পারবেন না। বন্ধুদের এ সিদ্ধান্ত অত্যন্ত যুক্তিসংগত। কারণ তাদের ব্যবসায়ে নগদ অর্থের প্রয়োজন দায়িত্ব নিয়ে কাজ করবে এমন লোকের প্রয়োজন নেই। নতুন অংশীদার ব্যবসায়ে মূলধন বিনিয়োগ করলে তা নগদ অর্থের চাহিদা পূরণ করবে। ফলে সহজেই ব্যবসায় স¤প্রসারণ করা যাবে। তারা এমন অংশীদার চান যারা ব্যবসায় পরিচালনার বিষয়ে ইচ্ছুক না অথচ বিনিয়োগে অধিক আগ্রহী। কারণ বেশি অংশীদার ব্যবসায় পরিচালনায় অংশ নিলে তা সিদ্ধান্ত গ্রহণে জটিলতা, গোপনীয়তা, পারস্পরিক অবিশ্বাস, যৌথ দায়িত্বে ঝুঁকি প্রভৃতি সমস্যার সৃষ্টি করে। পাঁচ বন্ধুর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অংশীদার নিয়োগের মাধ্যমে এ সমস্যার সমাধান এবং ব্যবসায়ের গতিশীলতা বৃদ্ধি করা সম্ভব।
সুতরাং বলা যায়, পাঁচ বন্ধুদের নতুন অংশীদার নেওয়ার সিদ্ধান্ত যুক্তিসংগত।
প্রশ্ন -১৩ ল্ফ নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
এমবিএ পাস করা আট বন্ধু কোম্পানি গঠনের জন্য কোম্পানি আইন উপদেষ্টার নিকট কোম্পানি গঠনের আগ্রহ জানালেন। উপদেষ্টা বললেন, তারা যে কোম্পানি গঠন করতে চায় তার জন্য কার্যারম্ভের অনুমতিপত্র সংগ্রহ করতে হবে না। তবে দু’টি দলিল তৈরি করতে হবে এবং কিছুটা সময় লাগবে। বন্ধুরা সব শুনে সমঝোতার ভিত্তিতে আইনের আনুষ্ঠানিকতার বাইরেই একটা প্রতিষ্ঠান গড়লেন।
ক. প্রবর্তক কাকে বলে? ১
খ. ট্রেড লাইসেন্সের ধারণা দাও। ২
গ. আট বন্ধু মিলে কোন ধরনের কোম্পানি গঠন করতে আগ্রহী ছিলেন? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. বন্ধুদের নতুন প্রতিষ্ঠান গড়ার সিদ্ধান্তের যৌক্তিকতা মূল্যায়ন কর। ৪
 ১৩নং প্রশ্নের উত্তর 
ক. যে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করে তাকে প্রবর্তক বলে।
খ. ট্রেড লাইসেন্স বলতে ব্যবসায়ের আইনগত অনুমতিপত্রকে বোঝায়। একমালিকানা ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে ব্যক্তি ইচ্ছে করলেই যেকোনো স্থানে ব্যবসায় স্থাপন করতে পারেন। কিন্তু পৌরসভা বা সিটি কর্পোরেশন এলাকায় একমালিাকনা ব্যবসায় শুরু করতে হলে পৌরসভা বা সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষের নিকট থেকে অনুমতিপত্র সংগ্রহ করতে হয়। ব্যবসায়ের এই অনুমতিপত্রকে ট্রেডলাইসেন্স বলা হয়। নির্দিষ্ট পরিমাণ ফি প্রদান করে ট্রেড লাইসেন্স সংগ্রহ করা যায়।
গ. আট বন্ধু মিলে প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি গঠন করতে আগ্রহী ছিলেন।
১৯৯৪ সালের কোম্পানি আইন অনুসারে প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানির ক্ষেত্রে কার্যারম্ভের অনুমতিপত্র সংগ্রহ করা আবশ্যক নয়। নিবন্ধনপত্র পাওয়ার পরই কোম্পানিটি ব্যবসায় শুরু করতে পারে। উদ্দীপকে এমবিএ পাস করা আট বন্ধু কোম্পানি গঠনের জন্য কোম্পানি আইন উপদেষ্টার নিকট গিয়েছিলেন। তারা এমন একটি কোম্পানি গঠন করতে চেয়েছিলেন যেখানে কার্যারম্ভের অনুমতিপত্র সংগ্রহ করতে হবে না। দুটি দলিল অর্থাৎ স্মারকলিপি এবং পরিমেল নিয়মাবলি প্রস্তুতের মাধ্যমে কোম্পানিটি নিবন্ধনপত্র সংগ্রহ করতে পারবে। সুতরাং, আট বন্ধুর পরিকল্পিত কোম্পানিটি একটি প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি।
ঘ. আট বন্ধুর অংশীদারি ব্যবসায় গঠনের সিদ্ধান্ত অত্যন্ত যৌক্তিক।
অংশীদারি ব্যবসায় সহজ গঠন ও ঝামেলামুক্ত হওয়ায় যেকোনো সময় এ ব্যবসায় গঠন করা যায়। চুক্তি সম্পাদনের জন্য যোগ্য কমপক্ষে দুজন ব্যক্তি চুক্তিবদ্ধ হয়ে এরূপ ব্যবসায় শুরু করতে পারে। উদ্দীপকে আট বন্ধু প্রাইভেট লি. কোম্পানি গঠন করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু প্রাইভেট লি. কোম্পানি গঠন করতে আইনি ঝামেলা পোহাতে হয় এবং সময় সাপেক্ষ। তাই আট বন্ধু মিলে প্রাইভেট লি. কোম্পানির পরিবর্তে অংশীদারি ব্যবসায় গঠন করেছে। কারণ অংশীদারি ব্যবসায়ে কোনো আইনগত ঝামেলা নেই। যেকোনো সময় সদস্যগণ চুক্তিবদ্ধ হয়ে এ ব্যবসায় গঠন করতে পারে। তাছাড়া প্রাইভেট লি. কোম্পানিতে যেকোনো শর্ত সহজেই পরিবর্তন করা যায় না কিন্তু অংশীদারি ব্যবসায়ের সদস্যগণ সম্মিলিতভাবে যেকোনো বিষয়ে দ্রæত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারে।
সুতরাং, আইনগত ঝামেলা ও জটিল গঠন উপেক্ষা করে আট বন্ধুর অংশীদারি ব্যবসায় গঠনের সিদ্ধান্ত অত্যন্ত যৌক্তিক হয়েছে বলে আমি মনে করি।
প্রশ্ন-১৪  নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
সবুজ ও তার ১০ বন্ধু মিলে ঢাকার পোশাক তৈরির কারখানা দিগন্ত গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠা করলেন। চুক্তিভিত্তিক গঠিত এ কারখানায় অর্থের সংকট মোকাবিলা করার জন্য সকল সদস্যের সিদ্ধান্তে প্রতিষ্ঠানটি মালিকানা সদস্য বৃদ্ধি করল এবং মুদ্রা বাজারের সদস্য হয়ে জনগণের নিকট শেয়ার বিক্রয়ের ঘোষণা দিল।
ক. কোম্পানি ব্যবসায়ের সদস্যদের দায় কেমন? ১
খ. বৈধ ব্যবসায় বলতে কী বোঝায়? ২
গ. দিগন্ত গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠার প্রথম পর্যায়ে কোন ধরনের সংগঠন ছিল? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. দিগন্ত গার্মেন্টসের আর্থিক সংকট মোকাবিলায় গৃহীত পদক্ষেপটি কতটুকু যুক্তিসংগত বলে তুমি মনে কর? ৪
 ১৪নং প্রশ্নের উত্তর 
ক. কোম্পানি ব্যবসায়ের সদস্যদের দায় শেয়ার মূল্য দ্বারা সীমাবদ্ধ।
খ. যে ব্যবসায় দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী স্বীকৃত তাকে বৈধ ব্যবসায় বলে। যেকোনো ব্যবসায় শুরু করতে হলে যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট থেকে অনুমতি নিতে হয়। আইনগতভাবে যে সকল ব্যবসায় নিষিদ্ধ নয় এবং সকল ব্যবসায় যথাযথ নিয়মে গঠিত হয় সে সকল ব্যবসায়কে বৈধ ব্যবসায় বলা হয়। জনকল্যাণের পরিপন্থী নয় এমন ব্যবসায়ই হলো বৈধ ব্যবসায়।
গ. উদ্দীপকে দিগন্ত গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠার প্রথম পর্যায়ে অংশীদারি ব্যবসায় সংগঠন ছিল।
অংশীদারি ব্যবসায় হলো মুনাফা অর্জনের জন্য দুই বা ততোধিক ব্যক্তির মধ্যে চুক্তিবদ্ধ সম্পর্কের মাধ্যমে গঠিত এক ধরনের ব্যবসায় যেখানে তারা সবার অথবা তাদের মধ্য থেকে একজন সবার পক্ষে উক্ত ব্যবসায়টি পরিচালনা করে থাকে। উদ্দীপকে দিগন্ত গার্মেন্টস চুক্তির ভিত্তিতে গঠিত হয়েছিল। সবুজ ও তার ১০ বন্ধু মিলে ঢাকায় পোশাক তৈরির উদ্দেশ্যে দিগন্ত গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠা করলেন। চুক্তিবদ্ধ হয়েই তারা এটা গঠন করলেন। এছাড়া দিগন্ত গার্মেন্টসের সদস্য সংখ্যা ১১ জন এবং সবুজ কর্তৃক তা পরিচালিত হয়। সবুজ ও তার দশ বন্ধু চুক্তির ভিত্তিতে এটি প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তাই বলা যায়, দিগন্ত গার্মেন্টস একটি অংশীদারি ব্যবসায় হিসেবে চালু হয়েছিল।
ঘ. দিগন্ত গার্মেন্টসের আর্থিক সংকট মোকাবিলায় সবুজ ও তার বন্ধুদের গৃহীত পদক্ষেপটি যথার্থ হয়েছে।
অংশীদারি বা প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানির চেয়ে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানির আয়তন বড় হয়ে থাকে এবং মূলধনের পরিমাণও বেশি হয়। কারণ জনগণের মধ্যে শেয়ার বিক্রয় করে অর্থ সংগ্রহ করা হয়। উদ্দীপকে দিগন্ত গার্মেন্টস কারখানা যথাযথভাবে পরিচালনা একটি ব্যয়বহুল কাজ। এ কাজ করতে গিয়ে সবুজ ও তার ১০ বন্ধু যখন আর্থিক সংকটে পড়ল তখন অর্থ সংকট মোকাবিলার জন্য সবার পরামর্শে সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধি করে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে রূপান্তরিত করে জনগণের মধ্যে শেয়ার বিক্রয়ের মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহের জন্য সিদ্ধান্ত নিল। দিগন্ত গার্মেন্টসের অংশীদারগণ যেহেতু প্রতিষ্ঠানের আর্থিক সংকট মেটানোর জন্য জনগণের মধ্যে শেয়ার বিক্রয়ের ঘোষণা দিয়েছে সেহেতু ঐ প্রতিষ্ঠানের সদস্য সংখ্যা বাড়ায় মূলধনের পরিমাণও বৃদ্ধি পাবে। সেক্ষেত্রে দিগন্ত গার্মেন্টস অধিক পুঁজির সাহায্যে যেমন ব্যবসায় স¤প্রসারণ করতে পারবে তেমনি পুঁজির যথার্থ ব্যবহারের দ্বারা প্রচুর কাঁচামাল ও আধুনিক যন্ত্রপাতি ক্রয়, সুদক্ষ কর্মচারী নিয়োগ, অধিক ক্রয় ও বণ্টন ইত্যাদি বৃহদায়তন ব্যবসায়ের সুবিধাগুলোও ভোগ করতে পারবে।
সুতরাং বলা যায়, মূলধনের সংকট মেটানোর জন্য সবুজ ও তার বন্ধুদের গৃহীত পদক্ষেপটি যথার্থ হয়েছে।

 জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর 
প্রশ্ন \ ১ \ ইউরোপ ও আমেরিকায় শতকরা কত ভাগ একমালিকানা ব্যবসায় রয়েছে?
উত্তর : ইউরোপ ও আমেরিকার শতকরা ৮০ ভাগ ব্যবসায় একমালিকানা ব্যবসায়।
প্রশ্ন \ ২ \ একমালিকানা ব্যবসায়ের স্থায়িত্ব কীসের ওপর নির্ভর করে?
উত্তর : একমালিকানা ব্যবসায়ের স্থায়িত্ব মালিকের ইচ্ছার ওপর নির্ভরশীল।
প্রশ্ন \ ৩ \ বিশ্বের সবচেয়ে আদি ব্যবসায় সংগঠন বলা হয় কোন ব্যবসায়কে?
উত্তর : বিশ্বের সবচেয়ে আদি ব্যবসায় সংগঠন বলা হয় একমালিকানা ব্যবসায়কে।
প্রশ্ন \ ৪ \ কোন ব্যবসায় সংগঠনের উপযুক্ত ক্ষেত্র ব্যাপক?
উত্তর : একমালিকানা ব্যবসায় সংগঠনের উপযুক্ত ক্ষেত্র ব্যাপক।
প্রশ্ন \ ৫ \ অংশীদারি ব্যবসায়ের ভিত্তি কী?
উত্তর : অংশীদারি ব্যবসায়ের ভিত্তি হলো চুক্তি।
প্রশ্ন \ ৬ \ বাংলাদেশের অংশীদারি ব্যবসায় কত সালের অংশীদারি আইন দ্বারা পরিচালিত?
উত্তর : বাংলাদেশের অংশীদারি ব্যবসায় ১৯৩২ সালের অংশীদারি আইন দ্বারা পরিচালিত হয়।
প্রশ্ন \ ৭ \ ব্যাংকিং অংশীদারি ব্যবসায়ের সর্বোচ্চ সদস্য সংখ্যা কতজন?
উত্তর : ব্যাংকিং অংশীদারি ব্যবসায়ের সর্বোচ্চ সদস্য সংখ্যা ১০ জন।
প্রশ্ন \ ৮ \ অংশীদারি ব্যবসায়ে কয় ধরনের অংশীদার দেখতে পাওয়া যায়?
উত্তর : অংশীদারি ব্যবসায়ে ৬ ধরনের অংশীদার দেখতে পাওয়া যায়।
প্রশ্ন \ ৯ \ সীমিত অংশীদার কাকে বলে?
উত্তর : চুক্তি অনুযায়ী কোনো অংশীদারের দায় সীমাবদ্ধ হলে বা আইন অনুযায়ী সকল অংশীদারের সম্মতিতে কোনো নাবালক সুবিধা প্রদানের জন্য অংশীদার করা হলে তাকে সীমিত অংশীদার বলা হয়।
প্রশ্ন \ ১০ \ আচরণে অনুমতি অংশীদার কাকে বলে?
উত্তর : কোনো ব্যক্তি যদি ব্যবসায়ের অংশীদার না হয়েও মৌখিক কথাবার্তা, লেখা বা অন্য কোনো আচরণের দ্বারা নিজেকে ব্যবসায়ের অংশীদার হিসেবে পরিচয় দেন, তবে তাকে আচরণে অনুমতি অংশীদার বলে।
প্রশ্ন \ ১১ \ অংশীদারি আইনের বিধান অনুসারে কয়টি প্রক্রিয়ায় অংশীদারি ব্যবসায়ের বিলুপ্তি হতে পারে?
উত্তর : অংশীদারি আইনের বিধান অনুসারে ৬টি প্রক্রিয়ায় অংশীদারি ব্যবসায়ের বিলুপ্তি হতে পারে।
প্রশ্ন \ ১২ \ সর্বপ্রথম কত সালে কোথায় কোম্পানি আইন পাস হয়?
উত্তর : সর্বপ্রথম ১৮৪৪ সালে ব্রিটেনে কোম্পানি আইন পাস হয়।
প্রশ্ন \ ১৩ \ বর্তমানে বাংলাদেশের সকল কোম্পানি ব্যবসায় কত সালের আইন অনুযায়ী পরিচালিত হচ্ছে?
উত্তর : বর্তমানে বাংলাদেশের সকল কোম্পানি ব্যবসায় ১৯৯৪ সালের আইন অনুযায়ী পরিচালিত হচ্ছে।
প্রশ্ন \ ১৪ \ কোম্পানির গঠন প্রক্রিয়া সাধারণত কয়টি ধারাবাহিক পর্যায়ে সম্পন্ন হয়?
উত্তর : কোম্পানির গঠন প্রক্রিয়া সাধারণত ৪টি ধারাবাহিক পর্যায়ে সম্পন্ন হয়।
প্রশ্ন \ ১৫ \ বিশ্বের সর্বপ্রথম প্রতিষ্ঠিত সমবায় সমিতিটির নাম কী?
উত্তর : বিশ্বের সর্বপ্রথম প্রতিষ্ঠিত সমবায় সমিতির নাম ‘রচডেল সমিতি’।
প্রশ্ন \ ১৬ \ ১৯৫৯ সালে সিভিল সার্ভিস কর্মকর্তা ড. আক্তার হামিদ খানের নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত সমবায় সমিতির নাম কী?
উত্তর : ১৯৫৯ সালে সিভিল সার্ভিস কর্মকর্তা ড. আক্তার হামিদের নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত সমবায় সমিতি হলো বাংলাদেশ পল্লি উন্নয়ন একাডেমি (ইঅজউ)।
প্রশ্ন \ ১৭ \ ২০০৯ সালের হিসাব মতে, বাংলাদেশে মোট কতটি প্রাথমিক সমবায় সমিতি রয়েছে?
উত্তর : ২০০৯ সালের হিসাব মতে, বাংলাদেশে মোট ১,৬৩,৪০৮টি প্রাথমিক সমবায় সমিতি রয়েছে।
প্রশ্ন \ ১৮ \ কত সালের আইন অনুযায়ী দেশের সকল সমবায় সমিতি পরিচালিত হচ্ছে?
উত্তর : ১৯২১ সালের সমবায় আইন এবং ২০০৪ সালের সমবায় বিধিমালা অনুযায়ী পরিচালিত হয়।
প্রশ্ন \ ১৯ \ ২০০১ সালের সমবায় আইনে সমবায় সংগঠন গঠন করতে কয়টি পর্যায়ে গঠন প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন হয়?
উত্তর : ২০০১ সালের সমবায় আইনের সমবায় সংগঠন তিনটি পর্যায়ে গঠন প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন হয়।
প্রশ্ন \ ২০ \ রাষ্ট্রীয় ব্যবসায়ের প্রধান উদ্দেশ্য কী?
উত্তর : রাষ্ট্রীয় ব্যবসায়ের প্রধান উদ্দেশ্য জনকল্যাণ।
প্রশ্ন \ ২১ \ বাংলাদেশ ব্যাংক কোন ধরনের প্রতিষ্ঠান?
উত্তর : বাংলাদেশ ব্যাংক বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় মালিকানায় প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্রীয় ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান।
প্রশ্ন \ ২২ \ বাংলাদেশ বিমান কোন মন্ত্রণালয়ের অধীন?
উত্তর : বাংলাদেশ বিমান বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের অধীন প্রতিষ্ঠান।
প্রশ্ন \ ২৩ \ বাংলাদেশের সমবায় সমিতি আইন কত সালের?
উত্তর : বাংলাদেশের সমবায় সমিতি আইন ২০০১ সালের।
প্রশ্ন \ ২৪ \ সবচেয়ে জনপ্রিয় প্রাচীনতম ব্যবসায় সংগঠন কী?
উত্তর : সবচেয়ে জনপ্রিয় প্রাচীনতম সংগঠন হলো একমালিকানা ব্যবসায় সংগঠন।
প্রশ্ন \ ২৫ \ বাংলাদেশের কতভাগ ব্যবসায় সংগঠন একমালিকানা ভিত্তিক?
উত্তর : বাংলাদেশের শতকরা ৮৫ ভাগ ব্যবসায় সংগঠন একমালিকানা ভিত্তিক।
প্রশ্ন \ ২৬ \ কোন ব্যবসায়ের আইনগত পৃথক সত্তা নেই?
উত্তর : একমালিকানা ব্যবসায়ের আইনগত পৃথক সত্তা নেই।
প্রশ্ন \ ২৭ \ নামমাত্র অংশীদার কে?
উত্তর : যে অংশীদার ব্যবসায়ের স্বার্থে শুরু নিজের খ্যাতি বা সুনাম ব্যবহারের সুযোগ দেয় তাকে নামমাত্র অংশীদার বলে
প্রশ্ন \ ২৮ \ কোম্পানি ব্যবসায় কী?
উত্তর : মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে কতিপয় ব্যক্তি স্বেচ্ছায় যৌথ সংগঠিত মূলধন দ্বারা যে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান স্থাপন করে তাকে কোম্পানি ব্যবসায় বলে।
প্রশ্ন \ ২৯ \ প্রাথমিক সমবায় সমিতিতে ন্যূনতম কতজন সদস্য থাকতে হয়?
উত্তর : প্রাথমিক সমবায় সমিতিতে ন্যূনতম ২০ জন সদস্য থাকতে হয়।
প্রশ্ন \ ৩০ \ সমবায় পরিচালনার মুখ্য দলিলকে কী বলে?
উত্তর : সমবায় সমিতি পরিচালনার মুখ্য দলিলকে সমবায়ের উপবিধি বলে।
প্রশ্ন \ ৩১ \ বাংলাদেশ পর্যটন সংস্থা কোন মন্ত্রণালয়ের অধীনে?
উত্তর : বাংলাদেশ পর্যটন সংস্থা বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের অধীনে।
প্রশ্ন \ ৩২ \ কোন ব্যবসায়কে ব্যবসায় সংগঠনের মুরব্বি বলা হয়?
উত্তর : একমালিকানা ব্যবসায়কে ব্যবসায় সংগঠনের মুরব্বি বলা হয়।
প্রশ্ন \ ৩৩ \ বাংলাদেশে সমবায় কত সালের বিধিমালায় পরিচালিত হচ্ছে?
উত্তর : বাংলাদেশে সমবায় ২০০৪ সালের বিধিমালা অনুযায়ী পরিচালিত হচ্ছে।

 অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর 
প্রশ্ন \ ১ \ অংশীদারি ব্যবসায়ের স্থায়িত্ব অংশীদারদের ইচ্ছা-অনিচ্ছার ওপর নির্ভর করে। ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : অংশীদারি ব্যবসায়ের নিবন্ধন বাধ্যতামূলক নয়। তবে যে সকল অংশীদারি ব্যবসায় নিবন্ধিত হয়, সেগুলো অনিবন্ধিত ব্যবসায় থেকে বেশ কিছু সুবিধা ভোগ করে থাকে। নিবন্ধিত হলেও এ ব্যবসায়ে কোনো আইনগত সত্তার সৃষ্টি হয় না। ফলে ব্যবসায় নিজস্ব নামে পরিচালিত হতে পারে না। ব্যবসায়ের সকল লেনদেনও অংশীদারদের সাথে ব্যক্তিগতভাবে হয়েছে বলে ধরা হয়। পৃথক আইনগত সত্তা না থাকায় এ ব্যবসায়ের স্থায়িত্ব অংশীদারদের ইচ্ছা-অনিচ্ছার ওপর নির্ভরশীল।
প্রশ্ন \ ২ \ যৌথ মূলধনী কোম্পানি একটি আইনসৃষ্ট ব্যবসায় সংগঠন ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : যৌথ মূলধনী কোম্পানি একটি আইনসৃষ্ট ব্যবসায় সংগঠন। দেশের প্রচলিত কোম্পানি আইনের আওতায় এ ব্যবসায় গঠিত হয়। আইনি প্রক্রিয়ার অধীনে হয় বলে এর গঠন বেশ জটিল ও আনুষ্ঠানিকতাপূর্ণ। আইন অনুযায়ী এর সদস্য সংখ্যা নির্ধারিত। প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানির ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন ২ জন এবং সর্বোচ্চ ৫০ জন এবং পাবলিক লিমিটেড কোম্পানির ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন সদস্য ৭ জন এবং সর্বোচ্চ সংখ্যা শেয়ার সংখ্যা দ্বারা সীমাবদ্ধ।
প্রশ্ন \ ৩ \ সমবায় সমিতি গঠন প্রক্রিয়ার উদ্যোগ গ্রহণ পর্যায় ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : প্রাথমিক সমবায় সমিতি গঠন করতে চাইলে সমমনা, সমশ্রেণি, সমপেশা ও সমমর্যাদার প্রাপ্তবয়স্ক ন্যূনতম ২০ জন মানুষ স্বেচ্ছায় একত্রিত হয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হয়। এসব উদ্যোক্তা নিজেদের মধ্য থেকে ৬ জনকে নিয়ে একটি ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন করে। উক্ত কমিটি নিবন্ধনসহ সমবায় সমিতি গঠনের জন্য একটি উপবিধি তৈরি করে। উপবিধিতে সমবায় সমিতির নাম, ঠিকানা, উদ্দেশ্য, মূলধনের পূর্ণ বিবরণ, শেয়ারের মূল্যমান ও সংখ্যা, শেয়ার বিক্রয় পদ্ধতি, উদ্যোক্তাদের নাম, ঠিকানা ও পদবি এবং সমিতি পরিচালনার নিয়ম উল্লেখ থাকে। সমিতির জন্য একটি সীলমোহরও তৈরি করতে হয়। সমিতি সসীম দায়বিশিষ্ট হলে নামের শেষে লিঃ কথাটি লিখতে হয়।
প্রশ্ন \ ৪ \ রাষ্ট্রীয় ব্যবসায় প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : সাধারণত দেশে অধিক শিল্পায়ন, অধিক কর্মসংস্থান সৃষ্টি, মুদ্রা ও ব্যাংকিং ব্যবসায় নিয়ন্ত্রণ, প্রাকৃতিক সম্পদসহ সকল সম্পদের সুষম বণ্টন ও ব্যবহারের উদ্দেশ্য এবং বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে জনকল্যাণমূলক ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয়ভাবে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠিত হয়ে থাকে।
প্রশ্ন \ ৫ \ ব্যবসায়ের স্বাধীন সত্তা বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : ব্যবসায়ের স্বাধীন সত্তা হলো মালিক থেকে ব্যবসায়ের পৃথক সত্তা। অর্থাৎ ব্যক্তি না হয়েও যখন কোনো কিছুর ব্যক্তির ন্যায় মর্যাদা ও অধিকার থাকে। ব্যবসায়ের স্বাধীন সত্তা থাকলে যে সকল সুবিধা পাওয়া যায় তা হলো নিজ নামে পরিচিত ও পরিচালিত হওয়া, নিজ নামে অন্যের সাথে চুক্তি করতে পারা, নিজ নামে অন্যের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারা ইত্যাদি।
প্রশ্ন \ ৬ \ রাষ্ট্রীয় ব্যবসায় সংগঠনের মূল উদ্দেশ্যটি সম্পর্কে লেখ।
উত্তর : রাষ্ট্রীয় ব্যবসায় সংগঠনের মূল উদ্দেশ্য হলো জনকল্যাণ সাধন করা। অর্থাৎ জনগণের স্বার্থ সংরক্ষণ করার জন্যই রাষ্ট্রীয় ব্যবসায় সংগঠন গঠিত হয়। তাই জনকল্যাণমূলক প্রায় সকল প্রতিষ্ঠানই রাষ্ট্রীয় মালিকানায় নিয়ন্ত্রিত ও পরিচালিত হয়।
প্রশ্ন \ ৭ \ সীমিত অংশীদারি ব্যবসায় বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : চুক্তি অনুযায়ী ব্যবসায়ের কোনো অংশীদারের দায় সীমাবদ্ধ হলে বা আইনগতভাবে সকল অংশীদারের সম্মতিক্রম কোনো নাবালককে সুবিধা প্রদানের উদ্দেশ্যে অংশীদার হিসেবে গ্রহণ করা হলে এরূপ অংশীদারকে সীমিত অংশীদার বলা হয়।
প্রশ্ন \ ৮ \ অংশীদারি ব্যবসায়ের নিবন্ধন বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : সরকার কর্তৃক নিয়োজিত অংশীদারি নিবন্ধনের অফিসে অংশীদারি ব্যবসায়ের নাম তালিকাভুক্ত রাখাকে অংশীদারি ব্যবসায়ের নিবন্ধন বলে। এ পদ্ধতি অনুযায়ী নিবন্ধনের অফিস থেকে আবেদন পত্র সংগ্রহ করে যথাযথভাবে পূরণের পর নির্ধারিত ফিসহ জমা দিয়ে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করতে হয় এবং নিবন্ধক পত্র দিয়ে নিবন্ধনের বিষয় জানিয়ে দেন। এটাই অংশীদারি ব্যবসায়ের নিবন্ধন।
প্রশ্ন \ ৯ \ সাধারণ অংশীদার বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : যে অংশীদার ব্যবসায়ে মূলধন বিনিয়োগ করে এবং সক্রিয়ভাবে ব্যবসায় পরিচালনায় অংশগ্রহণ করে এবং অসীম দায় বহন করে তাকে সাধারণ অংশীদার বলে। এরূপ অংশীদারের ব্যবসায়ে কর্তৃত্ব, কার্যগত দায়িত্ব অসীম থাকে। এরূপ অংশীদারের মৃত্যু বা দেউলিয়ায় ব্যবসায়ের বিলুপ্তি ঘটতে পারে।
প্রশ্ন \ ১০ \ কোম্পানির গঠনতন্ত্র বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : যে আইন বা গঠনতন্ত্র অনুসারে কোম্পানি গঠিত ও পরিচালিত হয় তাকে কোম্পানির গঠনতন্ত্র বলে। আমাদের দেশে ১৯৯৪ সালের কোম্পানি আইন অনুযায়ী কোম্পানি গঠিত ও পরিচালিত হয়।
প্রশ্ন \ ১১ \ প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি বলতে কী বোঝ? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : যে কোম্পানির সদস্য সংখ্যা সর্বনিম্ন ২ জন এবং সর্বোচ্চ ৫০ জনে সীমাবদ্ধ এবং যার শেয়ার অবাধে হস্তান্তরযোগ্য নয় তাকে প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি বলে। এ কোম্পানির সদস্য কেবল নিজেরাই শেয়ার ক্রয় করতে পারেন। আইন অনুযায়ী এ কোম্পানির পরিচালকের সংখ্যা ২ জন হয়ে থাকে।
প্রশ্ন \ ১২ \ বহুমুখী সমবায় সমিতি বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : একাধিক উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য কোনো সমবায় সমিতি গঠিত হলে তাকে বহুমুখী সমবায় সমিতি বলে। বহুমুখী সমবায় সমিতি উৎপাদন, ক্রয়-বিক্রয়, ঋণদান ইত্যাদি বিভিন্ন উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য গঠিত হতে পারে। এ ধরনের সমবায় সমিতির উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য গঠিত হতে পারে। কারণ এ ধরনের সমবায় সমিতির সীমিত নয়।
প্রশ্ন \ ১৩ \ কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতি বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : কয়েকটি প্রাথমিক সমবায় সমিতির সমন্বয়ে গঠিত প্রতিষ্ঠানকে কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতি বলে। এতে কোনো ব্যক্তি সদস্য হতে পারে না। কমপক্ষে ১০টি প্রাথমিক সমবায় সমিতি মিলে কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতি গঠন করা হয়।
প্রশ্ন \ ১৪ \ শেয়ার কাকে বলে?
উত্তর : কোম্পানির মূলধনের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশকে শেয়ার বলে। কোম্পানি একটি বৃহদায়তন সংগঠন যেখানে অধিক পুঁজি বিনিয়োগ করা হয়। কোম্পানির এ বৃহৎ মূলধনকে ছোট ছোট অংশে ভাগ করা হয়। এ এক একটি ভাগকে কোম্পানির শেয়ার বলে। যেমন : ১০ টাকার শেয়ার, ২০ টাকার শেয়ার। শেয়ার ক্রয়ের মাধ্যমে কোম্পানির মালিকানা লাভ করা যায়।
প্রশ্ন \ ১৫ \ একচেটিয়া ব্যবসায়ের ধারণা দাও।
উত্তর : যে ব্যবসায়ের কোনো প্রতিযোগী থাকে না তাকে একচেটিয়া ব্যবসায় বলে। সরকার বেশ কিছু ব্যবসায়কে এককভাবে ব্যবসায় পরিচালনার অনুমতি প্রদান করে থাকে। সেক্ষেত্রে অন্য কোনো প্রতিযোগী ঐ বাজারে প্রবেশ করতে পারে না। ফলে এককভাবে ব্যবসায়টি পণ্য বা সেবা মূল্য নির্ধারণ করতে পারে। এরূপ ব্যবসায়কে একচেটিয়া ব্যবসায় বলে। যেমন : বাংলাদেশ রেলওয়ে।
প্রশ্ন \ ১৬ \ জাতীয় সম্পদের ধারণা দাও।
উত্তর : যে সম্পদের মালিক কোনো ব্যক্তি হতে পারে না, বরং রাষ্ট্র বা সরকার ঐ সম্পদের মালিকানা লাভ করে তাকে জাতীয় সম্পদ বলে। এক কথায় সরকারি মালিকানাধীন সকল সম্পদই হলো জাতীয় সম্পদ। যেমন : খনিজ সম্পদ, বনজ সম্পদ ইত্যাদির মালিকানা কেবল সরকারই লাভ করতে পারে। এসব সম্পদ দেশের জনকল্যাণে ব্যবহৃত হয়।

প্রশ্ন \ ১৭ \ একমালিকানা সংগঠনকে ব্যবসায় জগতের মুরব্বি বলা হয় কেন?
উত্তর : ব্যবসায় সংগঠনগুলোর আবির্ভাব মধ্যযুগ থেকে। মধ্যযুগে ব্যবসায় সংগঠন হিসেবে প্রথম আবির্ভাব ঘটে একমালিকানা সংগঠনের। একমালিকানা সংগঠন ব্যবসায় জগতের প্রথম এবং প্রাচীনতম সংগঠন হওয়াতে এটিতে ব্যবসায় জগতের মুরব্বি বলা হয়।
প্রশ্ন \ ১৮ \ একমালিকানা ব্যবসায়ের আয়তন ছোট হয় কেন?
উত্তর : একমালিকানা ব্যবসায় একটি ক্ষুদ্রায়তনের ব্যবসায়। একজন ব্যক্তি সামান্য মূলধন নিয়েই একমালিকানা সংগঠন গড়ে তুলতে পারে। একক ব্যক্তির প্রচেষ্টায় গঠিত ও পরিচালিত হয় বলে একমালিকানা ব্যবসায়ের আয়তন ছোট হয়।
প্রশ্ন \ ১৯ \ অংশীদারি ব্যবসায়ে চুড়ান্ত সদ্বিশ্বাস বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : অংশীদাররা চুক্তিবদ্ধ হলেই অংশীদারি ব্যবসায়ে চ‚ড়ান্ত সদ্বিশ্বাসের জন্ম হয়। এ চ‚ড়ান্ত সদ্বিশ্বাসের কারণে অংশীদাররা ব্যবসায় সংক্রান্ত বিষয়ে একে অন্যের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করে। চ‚ড়ান্ত সদ্বিশ্বাসের বলে যেমন অংশীদারি ব্যবসায়ের সৃষ্টি হয় তেমনি এ বিশ্বাসের ঘাটতি হলে ব্যবসায়ের পরিসমাপ্তিও ঘটতে পারে।
প্রশ্ন \ ২০ \ মৌসুমি ফলের দোকান একমালিকানার অধীনে হওয়া উচিত কেন?
উত্তর : দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য একমালিকানা ব্যবসায় উত্তম। মৌসুমি ফল ক্ষণস্থায়ী। কিন্তু এ ব্যবসায়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হয়।
আর মালিকের সংখ্যা একাধিক থাকলে সিদ্ধান্ত গ্রহণ বিলম্ব হয়। তাই দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য মৌসুমি ফলের দোকান একমালিকানার অধীনে হওয়া উচিত।
প্রশ্ন \ ২১ \ একমালিকানা ব্যবসায়ে মালিকের উৎসাহ অনেক বেশি থাকে কেন?
উত্তর : একক মালিকানা ব্যবসায়ে মালিক একজন। ফলে ব্যবসায়ের যাবতীয় আয় ও সুনাম সবকিছু মালিক একাই ভোগ করে। ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে ব্যবসায়ের উন্নয়ন কার্য ব্যক্তির উন্নয়ন বলে বিবেচিত হয়। কার্যক্ষেত্রেও তারা স্বাধীনতা ভোগ করে সব মিলিয়ে একমালিকানা ব্যবসায়ে মালিকের উৎসাহ অনেক বেশি থাকে।

 

Leave a Reply