নবম-দশম শ্রেণির রসায়ন প্রথম অধ্যায় রসায়নের ধারণা সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর

এসএসসি রসায়ন প্রথম অধ্যায় রসায়নের ধারণা সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর

গুরুত্বপূর্ণ সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর

প্রশ্ন -১ ল্ফ নিচের চিত্রদ্বয় লক্ষ কর এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
এসএসসি রসায়ন প্রথম অধ্যায় রসায়নের ধারণা সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
ক. মরিচা কী?
খ. পেঁপে পাকলে হলুদ হয় কেন?
গ. উদ্দীপকের ১ম চিত্রে রসায়ন কীভাবে সম্পর্কিত- ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকের কোনটির অতিরিক্ত ব্যবহার পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর যুক্তিসহ লিখ।
 ১নং প্রশ্নের উত্তর 
ক. মরিচা হলো লোহার অক্সাইড যা জলীয় বাষ্পের উপস্থিতিতে বিশুদ্ধ লোহা ও বায়ুর অক্সিজেনের রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে তৈরি হয়।
খ. পাকার সময় পেঁপেতে নতুন যৌগ সৃষ্টির কারণে তা হলুদ বর্ণ ধারণ করে।
পেঁপে যখন পাকতে শুরু করে তখন এতে বিদ্যমান উপাদানগুলোর মধ্যে জীবরাসায়নিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে হলুদ বর্ণধারী নতুন যৌগের উদ্ভব হয়। এতে পেঁপে পাকার সময় হলুদ বর্ণ ধারণ করে।
গ. উদ্দীপকের ১ম চিত্র ঔষধ ও ঔষধ সেবনের সাথে সম্পর্কযুক্ত। ঔষধ একটি রাসায়নিক যৌগ। এতে বিভিন্ন ধরনের জৈব বা অজৈব যৌগ বিভিন্ন মাত্রায় সংমিশ্রিত থাকে যা পরীক্ষাগার ও ঔষধ কারখানায় নানা রকম পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও পরিমাপের মাধ্যমে তৈরি করা হয়।
জীবনক্রিয়ার ধারা বজায় রাখার জন্য জীবদেহের বৃদ্ধি ও পুষ্টিসাধন, সংরক্ষণ ও ক্ষয়পূরণ, চলাচল করার ক্ষমতা, দেহের মধ্যে বিভিন্ন রাসায়নিক বিক্রিয়া, বংশবৃদ্ধি ও বংশধারা রক্ষণ প্রভৃতি প্রয়োজনগুলো পূরণ করতে বিভিন্ন রাসায়নিক যৌগ অংশগ্রহণ করে। এ কার্যক্রমের কোথাও বিঘœ সৃষ্টি হলে আমরা অসুস্থ হই এবং ঔষধ সেবন করি। বর্তমানে বেশিরভাগ ঔষধ কৃত্রিম উপায়ে পরীক্ষাগারে তৈরি করা হয়। এসব ঔষধের ব্যবহারিক গুণ জেনে মানুষ সেবন করে এবং দেহ অভ্যন্তরের নানা ধরনের জৈব রাসায়নিক কার্যক্রম দ্বারা আরোগ্য লাভ করে। সুতরাং উদ্দীপকের ১ম চিত্রে রসায়ন নিবিড়ভাবে সম্পর্কিত।
ঘ. উদ্দীপকের ২য় চিত্রে প্রদর্শিত কীটনাশকের অতিরিক্ত ব্যবহার পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর।
সবজিক্ষেতে পোকামাকড় দমনের জন্য যেসব কীটনাশক ব্যবহার করা হয় তার মধ্যে গ্যামাক্সিন, ডিডিটি, অ্যালড্রিন, ক্লোরডেন, ডিলপ্রিন অন্যতম। এগুলো অতিরিক্ত ব্যবহার পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। জমিতে ছিটানো হলে এগুলো বাতাসে মিশে বাতাসকে দূষিত করে যা মানুষ প্রশ্বাসের সঙ্গে গ্রহণ করে। শুধু তাই নয়, কীটনাশক মাটিতে মিশে মাটিকেও দূষিত করে। বৃষ্টির পানির মাধ্যমে এসব কীটনাশক পুকুরে, নদীনালা ও জলাশয়ের পানির সাথে মিশে পানিকে দূষিত করে তোলে।
কীটনাশকের অতিরিক্ত ব্যবহার পোকামাকড়ের অনিষ্ট থেকে কমলকে রক্ষা করলেও এটি মাটি, পানি, বায়ু কে দূষিত করে তোলে। যা পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।
উপর্যুক্ত আলোচনা থেকে দেখা যায়, কীটনাশকের ব্যবহারে ফসলের মারাত্মক ক্ষতি হয়। ফসলের উৎপাদন কমে যায়। মাটির উর্বরতা শক্তি কমে যায় এবং মাটি দূষিত হয়ে যায়। এ দূষিত মাটিতে উৎপন্ন শাকসবজি খাওয়ার ফলে ক্ষতিকর পদার্থ রক্তের মাধ্যমে আমাদের শরীরের বিভিন্ন অংশে পৌঁছে যায়। আবার পানিতে থাকা মাছ ও বৈচিত্র্যের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে। তাই বলা যায়, কীটনাশকের অতিরিক্ত ব্যবহার সমগ্র পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।

প্রশ্ন -২ ল্ফ নিচের ছকটি লক্ষ কর এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
বিষয় উপাদান
(ক) লোহায় মরিচা ধরা লোহা + জলীয়বাষ্প + বায়ুর অক্সিজেন = মরিচা
(খ) মোমে আগুন জ্বালানো মোম + অক্সিজেন = ঈঙ২ + জলীয়বাষ্প + তাপ

ক. বিদ্যুৎ পরিবাহী তারে কোন ধাতু ব্যবহৃত হয়? ১
খ. প্রাচীন মিশরীয় সভ্যতা রসায়ন চর্চার মাধ্যমে কী করে মানুষের চাহিদা মেটাতে সক্ষম হয়েছিল? ২
গ. ‘ক’ ও ‘খ’ তে রসায়নের উপস্থিতি ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. ‘খ’ তে ভৌত ও রাসায়নিক উভয় ধরনের পরিবর্তন সংঘটিত হয়- বিশ্লেষণ কর। ৪
 ২নং প্রশ্নের উত্তর 
ক. বিদ্যুৎ পরিবাহী তারে তামা ব্যবহৃত হয়।
খ. প্রাচীন মিশরীয় সভ্যতায় রসায়ন প্রযুক্তি ব্যবহার করে খনিজ থেকে মূল্যবান ধাতু যেমন : স্বর্ণ, রৌপ্য, সিসা প্রভৃতি আহরণ করা হতো। এসব ধাতু অভিজাত বলে অলংকার তৈরিতে ব্যবহৃত হতো। এছাড়াও তৈজসপত্র নির্মাণ, অস্ত্র তৈরি ইত্যাদি নানা কাজে ধাতব অস্ত্রের ব্যবহার, লাঙল ব্যবহার করে ফসল উৎপাদন, মূল্যবান ধাতু আহরণ ইত্যাদি দ্বারা প্রাচীন মিশরীয়রা মানুষের নানাবিধ চাহিদা মেটাতে সক্ষম হয়েছিল।
গ. ‘ক’ ঘটনায় বিশুদ্ধ লোহা জলীয় বাষ্পের উপস্থিতিতে বায়ুর অক্সিজেনের সাথে রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে লোহার অক্সাইড নামক পদার্থে পরিণত হয়, যা সাধারণভাবে লোহার মরিচা নামে পরিচিত। এ ঘটনার প্রতিটি বিষয় রসায়নে আলোচিত হয়। সুতরাং পরিবেশে ঘটে যাওয়া এ পরিবর্তনে রসায়ন উপস্থিত।
‘খ’ ঘটনায় মোমে আগুন জ্বালানো হয়। মোম হলো কার্বন ও হাইড্রোজেনের যৌগ। এতে আগুন জ্বালানোর অর্থ হলো কার্বন যৌগের দহন, অর্থাৎ মোম ও অক্সিজেনের রাসায়নিক বিক্রিয়া। এর ফলে কার্বন ডাইঅক্সাইড গ্যাস, জলীয়বাষ্প ও তাপ উৎপাদিত হয়। এ পরিবর্তনে রসায়নের উপস্থিতি লক্ষণীয়।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত মোমবাতিটির দহনে ভৌত ও রাসায়নিক উভয় ধরনের পরিবর্তন সংঘটিত হয়।
মোমবাতিটি জ্বলার সময় উত্তাপে মোমের কিছু অংশ গলে যায়। এখানে গলিত মোম এবং কঠিন মোমবাতি উভয়ের আণবিক গঠন একই, কিন্তু পরিবর্তন বাহ্যিক তাই এটি ভৌত পরিবর্তন। আবার জ্বলার সময়ের মোম বাতাসের অক্সিজেনের সাথে বিক্রিয়া করে কার্বন ডাইঅক্সাইড ও জলীয়বাষ্প নামক উৎপাদ সৃষ্টি করে। এক্ষেত্রে উৎপাদ কার্বন ডাইঅক্সাইড ও জলীয় বাষ্পের বৈশিষ্ট্য মোমবাতির বৈশিষ্ট্য থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন। তাই, এটি রাসায়নিক পরিবর্তন।

সুতরাং কঠিন মোম থেকে গলিত মোমে পরিণত হওয়া ভৌত পরিবর্তন আর মোমের সাথে বাতাসের অক্সিজেনের বিক্রিয়া রাসায়নিক পরিবর্তন। এক্ষেত্রে উৎপাদ ঈঙ২ ও ঐ২ঙ এর বৈশিষ্ট্য বিক্রিয়ক (ঈ, ঙ২)-এর বৈশিষ্ট্য থেকে ভিন্ন। যেমন : ঙ২ আগুন জ্বালাতে সাহায্য করে আর ঈঙ২ আগুন নেভায়। সুতরাং এটি রাসায়নিক পরিবর্তন। অতএব, ‘খ’ তে ভৌত ও রাসায়নিক উভয় ধরনের পরিবর্তন সংঘটিত হয়েছে।
প্রশ্ন -৩ ল্ফ রসায়নের পরিধি বিবেচনার উদাহরণগুলো লক্ষ করে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
বস্তু উপাদান ব্যবহার
(ক) পানি হাইড্রোজেন ও অক্সিজেন পানীয়রূপে, গার্হস্থ্য কাজে, সেচরূপে, কারখানার উৎপাদন কাজে
(খ) খাবার জৈব যৌগ ও খনিজ পদার্থ জীবদেহের শক্তি উৎপাদন ও সঞ্চয় কাজে
(গ) পোশাক জৈব যৌগ ও তন্তু পরিধেয় বস্ত্র হিসেবে

ক. ট্রিফয়েল কী? ১
খ. রাসায়নিক দ্রব্যাদির সঠিক ব্যবহার না হলে কী কী ক্ষতি হতে পারে? ২
গ. ক ও খ বস্তুর ওপর রসায়নের নির্ভরশীলতা ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. ‘গ’ এর উৎপাদনে রসায়নবিজ্ঞানের ভ‚মিকা বিশ্লেষণ কর। ৪
 ৩নং প্রশ্নের উত্তর 
ক. ট্রিফয়েল হলো আন্তর্জাতিক রশ্মি চি‎‎‎হ্ন যা দ্বারা অতিরিক্ত ক্ষতিকর তেজস্ক্রিয় রশ্মিকে (শক্তি) বুঝানো হয়।
খ. রাসায়নিক দ্রব্যাদির সঠিক ব্যবহার না হলে যে যে ক্ষতি হতে পারে তা নিম্নরূপ :
১. রাসায়নিক দ্রব্যাদি পরিবেশে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে।
২. এসব দ্রব্যাদির সঠিক ব্যবহার না হলে আমাদের দেহত্বকে অ্যালার্জি, একজিমা, ঘা ইত্যাদি হতে পারে।
৩. উৎকট গন্ধের রাসায়নিক দ্রব্যাদি আমাদের ঘ্রাণ ও শ্রবণ ইন্দ্রিয়ের ক্ষমতা কমিয়ে দেয়।
৪. স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যাহত করে অস্থিরভাবসহ বেশ কিছু অস্বাস্থ্যকর উপসর্গ দেখা দিতে পারে।
গ. ক ও খ যৌগ হলো পানি ও খাবার। এদের ওপর রসায়ন অনেকাংশেই নির্ভরশীল।
ব্যবহারিক কাজে পানি বিশেষভাবে দরকার। রসায়নের বিভিন্ন যৌগ যেমন ফিটকিরি, বিøচিং পাউডার, পটাশ পারম্যাঙ্গানেট, ক্লোরিন, সোডিয়াম হাইপো ক্লোরাইট ইত্যাদি যৌগ পানি বিশুদ্ধকরণে ব্যবহার করা হয়। অতি বিশুদ্ধ পানির দরকার হলে পাতন প্রক্রিয়ার সাহায্য নেওয়া হয়। এটি রসায়নের একটি বিশেষ পরীক্ষা পদ্ধতি। দ্রাবক পানি বহু কঠিন, তরল ও গ্যাসীয় পদার্থকে দ্রবীভ‚ত করতে পারে। এজন্য পানিকে সার্বজনীন দ্রাবক বলা হয়। রসায়নের একটি অন্যতম বিষয় হলো তড়িৎ বিশ্লেষণ। পানির তড়িৎ পরিবাহিতা ব্যাখ্যার সাহায্যে এটি প্রমাণ করা যায়।
দেহের পুষ্টি, বৃদ্ধি এবং শক্তি বজায় রাখার জন্য আমরা খাবার গ্রহণ করি। এর প্রধান উপাদান হলো জৈব যৌগ। কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ভিটামিন ও স্নেহ জাতীয় খাদ্যের প্রায় সবগুলোই জটিল জৈব যৌগ দ্বারা গঠিত। এসব খাদ্য দেহে আর্দ্রবিশ্লেষিত হয়ে রক্তের সাথে মিশে গিয়ে দেহের পুষ্টি সাধন করে। অর্থাৎ খাবারের রাসায়নিক বিক্রিয়া দেহে তাপ সৃষ্টি করে এবং শক্তি জোগায়। এসব বিষয়ের সবকিছুই রসায়নের সাথে জড়িত। সুতরাং ক ও খ যৌগের ওপর রসায়ন অনেকাংশেই নির্ভরশীল।
ঘ. উদ্দীপকে ‘গ’ হলো পোশাক। যার উৎপাদনের প্রতিটি স্তরেই রসায়নবিজ্ঞানের ভ‚মিকা রয়েছে।
পোশাক তৈরির প্রধান উপকরণ হলো সুতা। এ সুতা গঠিত হয় অসংখ্য ক্ষুদ্র আঁশের সমন্বয়ে। এসব ক্ষুদ্র আঁশকে তন্তু বলা হয়। কৃত্রিম বা প্রাকৃতিক তন্তুর সাথে রঞ্জকের সমন্বয়ে টেক্সটাইল-ফেব্রিকস শিল্পে পোশাক তৈরি করা হয়।
প্রাকৃতিক ও কৃত্রিম নানা প্রক্রিয়ার সাহায্যে তন্তু থেকে সুতা তৈরি করা হয়। এ সুতা তৈরি করার প্রতিটি ধাপ যেমন : সুতাকে বিশুদ্ধ করা, বিরঞ্জন করা, ধৌত করা, শুষ্ক করা ইত্যাদি স্তরের সাথে রসায়ন জড়িত। এতে যেসব রাসায়নিক দ্রব্যাদি ব্যবহৃত হয় তা রসায়ন থেকেই আহরিত। সুতা তৈরির পর বিভিন্ন বুনন পদ্ধতির সাহায্যে তা কাপড়ে পরিণত করা হয়। স্পিনিং কারখানায় কাপড় তৈরির যেসব প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয় সেখানেও বিভিন্ন রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহৃত হয়। কাপড়কে আকর্ষণীয় করার জন্য রং ব্যবহৃত হয়। কাপড়ে যেসব রং ব্যবহৃত হয় সেগুলো উৎপত্তিগত কারণে বিভিন্ন ধরনের হয়।
যেমন : অ¤ø জাতীয় রং, ক্ষার জাতীয় রং, এজোইক রং, পিগমেন্ট রং ইত্যাদি। এগুলোর সবগুলোর সাথে রসায়ন জড়িত।
অতএব, গ এর উৎপাদনের প্রতিটি ক্ষেত্রে রসায়নবিজ্ঞানের ভ‚মিকা জড়িত।
প্রশ্ন -৪ ল্ফ নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
আরিফ তার আব্বুর সাথে গাড়িতে চড়ে খালার বাসায় যাচ্ছিল। একটা ট্রাক কালো ধোঁয়া ছাড়তে ছাড়তে তাদের গাড়িকে অতিক্রম করে গেল। আরিফ ঘটনাটি বলার জন্য আব্বুর দিকে তাকিয়ে দেখে তিনি ল্যাপটপ নিয়ে ব্যস্ত। সে আব্বুকে কিছু না বলে জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে দেখল একটা দশতলা বিল্ডিং তৈরির কাজ চলছে।
ক. অনুসন্ধান ও গবেষণা প্রক্রিয়ার দ্বিতীয় ধাপ কোনটি? ১
খ. ট্রিফয়েল চি‎হ্নটি কেন ব্যবহৃত হয়? ২
গ. আরিফের দেখা ঘটনাগুলোতে রসায়নের উপস্থিতি ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. উদ্দীপকে ধোঁয়া হিসেবে যে গ্যাস বের হচ্ছে পরিবেশের উপর তার বিরূপ প্রভাব বিশ্লেষণ কর। ৪
 ৪নং প্রশ্নের উত্তর 
ক. অনুসন্ধান ও গবেষণা প্রক্রিয়ার দ্বিতীয় ধাপ হলোÑ বিষয়বস্তু সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান অর্জন করা।
খ. অতিরিক্ত ক্ষতিকর তেজস্ক্রিয় রশ্মি তথা শক্তিকে বুঝানোর জন্য ট্রিফয়েল চি‎হ্নটি ব্যবহৃত হয়।
ট্রিফয়েল একটি আন্তর্জাতিক চি‎‎হ্ন যা কোনো বস্তুর গায়ে লাগানো থাকলে বুঝতে হবে বস্তুটিতে তেজস্ক্রিয় পদার্থ রয়েছে। এ রশ্মি মানবদেহকে বিকলাঙ্গ করে দিতে পারে এবং শরীরে ক্যান্সার সৃষ্টি করতে পারে। তাই এ ধরনের তেজস্ক্রিয় রশ্মি থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখার জন্য সতর্কতা নির্দেশ করতে ট্রিফয়েল চি‎‎হ্নটি ব্যবহৃত হয়।
গ. আরিফের দেখা ঘটনাগুলোতে রসায়নের উপস্থিতি উল্লেখযোগ্যভাবে লক্ষণীয়।
ট্রাক থেকে নির্গত কালো ধোঁয়ায় রসায়নের উপস্থিতি রয়েছে। ট্রাকে জ্বালানি ব্যবহৃত হয়েছে। তাতে কার্বন, হাইড্রোজেন ও অক্সিজেনের উপস্থিতিতে দহন প্রক্রিয়ায় কালো ধোঁয়া উৎপন্ন করে। কালো ধোঁয়া উৎপন্ন প্রক্রিয়াটি রসায়নের অন্তর্ভুক্ত। আরিফের আব্বু যে ল্যাপটপ নিয়ে কাজ করছিলেন তা মূলত লেড সঞ্চয়ী কোষ দ্বারা চালিত। ল্যাপটপে ব্যাটারি হিসেবে ব্যবহৃত লেড সঞ্চয়ী কোষের ক্রিয়াকৌশলও রসায়ন পাঠের অন্তর্গত।
আবার, বিল্ডিং তৈরিতে বিভিন্ন ধরনের উপাদান যেমন : রড, সিমেন্ট, বালি প্রভৃতি ব্যবহৃত হয়। লোহা খনি থেকে সংগ্রহ করে বিভিন্ন প্রক্রিয়া দ্বারা শক্ত রডে পরিণত হয়। সিমেন্ট, বালি প্রভৃতিও রাসায়নিকভাবে প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে তৈরি হয়। তাই বলা যায় যে, আরিফের দেখা ঘটনাগুলোতে রসায়নের ব্যাপক উপস্থিতি রয়েছে।
ঘ. উদ্দীপকে ধোঁয়া হিসেবে ঈঙ২ গ্যাস বের হচ্ছে। পরিবেশের ওপর এর বিরূপ প্রভাব রয়েছে।
ঈঙ২ বায়ুর অন্য উপাদানের সাথে বিক্রিয়া করে অধিক ক্ষতিকর গ্যাসীয় ও কঠিন পদার্থ উৎপন্ন করে যা পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। তাছাড়া, ঈঙ২ তাপ ধারণ করে রাখতে পারে এবং এ গ্যাস ওজনে ভারী হওয়ায় ভ‚পৃষ্ঠের কাছাকাছি অবস্থান করে। এতে পৃথিবীর তাপমাত্রা বেড়ে যাচ্ছে, যাকে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন বলা হয়। এ প্রক্রিয়াটিকে গ্রিনহাউজ প্রভাবও বলা হয়।
বৈশ্বিক উষ্ণায়নের ফলে মেরু অঞ্চলের বরফ গলে গিয়ে অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে, যা আমাদের পৃথিবীকে বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। ঈঙ২ গ্যাসের কারণে বায়ু দূষণ বাড়ছে। বায়ুমণ্ডলের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। আবহাওয়ায় রুক্ষভাব বিরাজ করছে। চোখজ্বালা করা, বুক ধড়ফড় করা, অস্থিরভাব ইত্যাদি সমস্যায় মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে।
অতএব, উদ্দীপকের ধোঁয়া হিসেবে নির্গত গ্যাসটি পরিবেশের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে।
প্রশ্ন -৫ ল্ফ নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
করিম ঘুম থেকে উঠে পেস্ট ও ব্রাশ ব্যবহার করে দাঁত ব্রাশ করল। এরপর সে সাবান ও শ্যাম্পু ব্যবহার করে গোসল শেষে পরোটা ও ডিমসহ নাস্তা করল। সে নীল রংয়ের টি শার্ট ও কালো রংয়ের প্যান্ট পড়ে মোটরসাইকেল যোগে কলেজে যায়। সে কলেজে রসায়ন পরীক্ষায় সাদা কাগজে কালো বলপেন ও গ্রাফাইট পেন্সিল ব্যবহার করে।
ক. প্রিজারভেটিভস কী? ১
খ. অনুসন্ধান ও গবেষণা প্রক্রিয়ার ধাপসমূহ লেখ। ২
গ. করিমের পরীক্ষায় রসায়ন কীভাবে সংশ্লিষ্ট তা ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. ‘দৈনন্দিন জীবনের সর্বত্র রসায়ন ওতপ্রোতভাবে মিশে আছে’Ñ উদ্দীপকের আলোকে উক্তিটি বিশ্লেষণ কর। ৪
 ৫নং প্রশ্নের উত্তর 
ক. যেসব রাসায়নিক পদার্থ পরিমিত পরিমাণে ব্যবহার করে খাদ্য সামগ্রী বিশেষ করে জুস, সস, কেক, বিস্কুট প্রভৃতি প্রক্রিয়াজাত করে দীর্ঘসময় সংরক্ষণ করা হয়। তাদেরকে প্রিজারভেটিভস বলে।
খ. অনুসন্ধান ও গবেষণা কাজের ধাপসমূহ নিম্নরূপ :

গ. করিম পরীক্ষায় লেখার সময় কাগজ, বলপেন এবং গ্রাফাইট পেন্সিল ব্যবহার করে। এগুলোর সবই রাসায়নিক সামগ্রী এবং এগুলো সঠিকভাবে প্রক্রিয়াজাত করে আমরা ব্যবহার করে থাকি।
কাগজ মূলত কাঠ বা বাঁশ থেকে তৈরি করা হয়; এগুলোর মূল উপাদান হলো সেলুলোজ। উদ্ভিদ সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় গøুকোজ উৎপন্ন করে পরবর্তীতে উদ্ভিদ সেটা রূপান্তর করে সেলুলোজ গঠনের মাধ্যমে তার দেহে সঞ্চয় করে। গাছ প্রক্রিয়াজাত করে কাগজ তৈরি করি যা রসায়নের জ্ঞান ও রাসায়নিক সামগ্রী ছাড়া সম্ভব নয়। অন্যদিকে, বলপেনের প্লস্টিক, কালি, বল সবই রাসায়নিক সামগ্রী, পেন্সিলের গ্রাফাইট রাসায়নিক সামগ্রী।
সুতরাং, করিম যখন পরীক্ষা দিচ্ছিল তখন সে যেসব উপকরণ কাগজ, কলম, পেন্সিল ব্যবহার করছিল সবই রাসায়নিক দ্রব্য ও রসায়নের সাথে নিবিড়ভাবে সংশ্লিষ্ট। রসায়নের জ্ঞান ছাড়া এগুলোর কোনোটাই প্রক্রিয়াজাত করে মানবকল্যাণে ব্যবহার সম্ভব নয়।
ঘ. আমাদের দৈনন্দিন জীবনের সর্বত্র রসায়নের নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে।
উদ্দীপকে দেখা যাচ্ছে, করিম ঘুম থেকে উঠে ব্রাশ ও পেস্ট ব্যবহার করছে। এখানে ব্রাশ প্লাস্টিক সামগ্রী আর পেস্টে ব্যবহার করা হয়েছে বিভিন্ন রাসায়নিক সামগ্রী। গোসলখানায় সে সাবান ও শ্যাম্পু ব্যবহার করে। সাবান ও শ্যাম্পুতে তৈল, চর্বি ও রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার করা হয়েছে। এরপর সে নাস্তা করার সময় ডিম (প্রোটিন) ও পরোটা (স্টার্চ) ব্যবহার করেছে। প্রোটিন, স্টার্চ, সেলুলোজ বায়ো-রসায়নের অন্তর্ভুক্ত। সে যে প্যান্ট ও টি শার্ট ব্যবহার করেছে সেগুলোর উৎপাদন ও প্রক্রিয়াজাতকরণে রসায়ন মুখ্য ভ‚মিকা পালন করে। প্যান্ট ও শার্টের সুতা এবং রং সবই রাসায়নিকভাবে প্রস্তুত করা হয়। তার ব্যবহৃত মোটরবাইক ও জ্বালানি সব ক্ষেত্রেই রয়েছে রসায়নের গভীর সম্পর্ক। তার পরীক্ষায় ব্যবহৃত সকল পণ্য সামগ্রীই রসায়ন থেকে প্রাপ্ত।
সুতরাং আমাদের জীবনের সাথে রসায়ন ওতপ্রোতভাবে মিশে আছে।
প্রশ্ন -৬ ল্ফ নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
আমাদের মৌলিক চাহিদা যেমন, অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা, শিক্ষা সবকিছুতেই রসায়নের উপস্থিতি রয়েছে।
ক. নিঃশ্বাসে গৃহীত বায়ুর প্রধান উপাদান কী? ১
খ. বায়ু দূষণের দুটি কারণ ব্যাখ্যা কর। ২
গ. উদ্দীপকের প্রথম তিনটি চাহিদার মূল উপাদান ও উৎস ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. উদ্দীপকের শেষ দুটি চাহিদার উন্নয়নে রসায়নের অবদান বিশ্লেষণ কর। ৪
 ৬নং প্রশ্নের উত্তর 
ক. নিঃশ্বাসে গৃহীত বায়ুর প্রধান উপাদান অক্সিজেন।
খ. বায়ু দূষণের দুটি কারণ হচ্ছেÑ
১. কলকারখানা থেকে নির্গত কার্বন মনোক্সাইড, কার্বন ডাইঅক্সাইড গ্যাস ও কালো ধোঁয়া যা সহনীয় মাত্রা অতিক্রম করলে বায়ু দূষিত হয়।
২. অতিরিক্ত সার, কীটনাশক, সাবান, ডিটারজেন্ট, শ্যাম্পু, মশার কয়েল বা অ্যারোসলের ধোঁয়া, কৃত্রিম প্রসাধনী ও রঙের গন্ধ ইত্যাদি বায়ুর সাথে মিশে দূষণ ঘটায়।
গ. উদ্দীপকের প্রথম ৩টি চাহিদা হচ্ছে অন্ন বা খাবার, বস্ত্র বা পোশাক এবং বাসস্থান। নিচে ছকের সাহায্যে এগুলোর মূল উপাদান ও উৎস ব্যাখ্যা করা হলো :
বস্তু উপাদান উৎস
১. অন্ন শ্বেতসার, আমিষ, চর্বি ইত্যাদি জৈব যৌগ এবং বিভিন্ন খনিজ পদার্থ। উদ্ভিদ সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে খাদ্য উৎপাদন ও সঞ্চয় করে।
২. বস্ত্র জৈব যৌগ ও তন্তু রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে বিভিন্ন যৌগ থেকে তৈরি কৃত্রিম তন্তু বা প্রাকৃতিক তন্তু এবং সাথে রঞ্জকের সমন্বয়ে টেক্সটাইল ফেব্রিকস শিল্পে বস্ত্র তৈরি করা হয়।
৩. বাসস্থান রড ও সিমেন্টের মূল উপাদান লৌহ ও চুনাপাথর লোহার আকরিক থেকে কার্বন বিজারণ প্রক্রিয়ায় লৌহ পাওয়া যায়। আর খনি থেকে চুনাপাথর সংগ্রহ করা হয়।
ঘ. উদ্দীপকের শেষ দুটি চাহিদা হচ্ছে চিকিৎসা ও শিক্ষা। এ দুটি চাহিদার উন্নয়নে রসায়নের অবদান অপরিসীম।
চিকিৎসা ক্ষেত্রে ঔষধপত্রের ভ‚মিকা মুখ্য। ঔষধপত্র সবই রাসায়নিক উপাদান থেকে তৈরি। রসায়নের গবেষণার মাধ্যমে উন্নত থেকে উন্নততর ঔষধ আবিষ্কৃত হচ্ছে। সৃষ্টি হচ্ছে উন্নত ধরনের রোগ নির্ণয় পদ্ধতি এবং উন্নত চিকিৎসা। ফলে অনেক জটিল রোগের চিকিৎসা মানুষ সহজেই পাচ্ছে। তাছাড়া জীবন রক্ষাকারী অ্যান্টিবায়োটিকস মানেই রাসায়নিক দ্রব্যাদির ব্যবহার। ঢ রশ্মিসহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় রশ্মিগুলো পরমাণু কণা থেকে বিচ্ছুরিত হয়।
অপরদিকে, শিক্ষার বিভিন্ন সামগ্রী যেমনÑ কাগজ, কলম, বই, কালি ইত্যাদি রাসায়নিক দ্রব্যাদি এবং শিক্ষাক্ষেত্রে কম্পিউটার ও অন্যান্য ইলেকট্রনিক্সের বিভিন্ন ক্ষুদ্রাংশ যেমন : সিডি, মেমোরি ডিস্ক, মনিটর ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়। বিভিন্ন পদার্থের রাসায়নিক ধর্মের সমন্বয় ঘটিয়েই এ বস্তুগুলো তৈরি করা হয়।
সুতরাং চিকিৎসা ও শিক্ষাক্ষেত্রের চাহিদার উন্নয়নে রসায়নের অবদান অনস্বীকার্য।
প্রশ্ন -৭ ল্ফ নিচের চিত্র দুটি লক্ষ কর এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
চিত্র -১

ক. অনুন্ধান ও গবেষণা কাজের তৃতীয় ধাপ কোনটি? ১
খ. পরিবেশ ও উন্নয়ন সম্মেলনের প্রতিপাদ্য বিষয়গুলো লেখ। ২
গ. ১নং চিত্র অনুযায়ী (র) ও (রর)নং ধাপদ্বয় রসায়ন চর্চার আলোকে ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. ২নং চিত্রানুযায়ী (রর)নং প্রক্রিয়া থেকে পরিত্রাণের উপায় কী হতে পারে বিশ্লেষণ কর। ৪
 ৭নং প্রশ্নের উত্তর 
ক. কাজের পরিকল্পনা প্রণয়ন করা অনুসন্ধান ও গবেষণা প্রক্রিয়ার তৃতীয় ধাপ।
খ. পরিবেশ ও উন্নয়ন সম্মেলনের প্রতিপাদ্য বিষয়গুলো নিম্নরূপÑ
র. রাসায়নিক পদার্থকে ঝুঁকি ও ঝুঁকির মাত্রার ভিত্তিতে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করা,
রর. ঝুঁকির সতকর্তা সংক্রান্ত তথ্য উপাত্ত তৈরি করা এবং
ররর. ঝুঁকি ও ঝুঁকির মাত্রা বুঝাবার জন্য সর্বজনীন সাংকেতিক চি‎‎হ্ন নির্ধারণ করা।
গ. ১নং চিত্র অনুযায়ী কম্পিউটার ও ইলেকট্রনিক্স সামগ্রীর রাসায়নিক বস্তুসমূহ একটি নির্দিষ্ট সময় অতিক্রান্ত হলে বা ব্যবহারের পর ইলেকট্রনিক বর্জ্যে পরিণত হয় যা (র) নং ধাপে দেখানো হয়েছে। কিন্তু (রর) নং ধাপে দেখানো হয়েছে যথাযথ রসায়ন চর্চার মাধ্যমে সেসব বর্জ্য পুনঃচক্রায়ন করা সম্ভব।
কম্পিউটার ও বিভিন্ন ইলেকট্রনিকস সামগ্রী প্রস্তুতিতে প্রচুর পরিমাণ তামা, সিলিকন ও পলিমারজাতীয় বস্তুর প্রয়োজন হয়। তামা একটি অনবায়নযোগ্য খনিজ সম্পদ এবং সাংশ্লেষিক পলিমারসমূহও অনবায়নযোগ্য পেট্রোরাসায়নিক সামগ্রী থেকে প্রস্তুত করা হয়। তদুপরি এসব সামগ্রী পরিবেশে জীবভাঙনের সম্মুখীন হয় না। বিশ্বব্যাপী এসব সামগ্রীর অত্যাধিক ব্যবহারের ফলে নষ্ট হয়ে যাওয়া এসব সামগ্রী ইলেকট্রনীয় বর্জ্য হিসেবে পরিবেশকে বিপন্ন করে তুলছে। ওইসব যন্ত্রাংশ থেকে তামার পুনরুদ্ধার করে তার পুর্নব্যবহার অত্যন্ত জরুরি। ইলেকট্রনিক বর্জ্যসমূহকে যথাযথভাবে পুনঃচক্রায়ন করে কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার আওতায় আনা আবশ্যক। একমাত্র রসায়ন চর্চার যথাযথ প্রয়োগেই এ সমস্যার সমাধান সম্ভব।
অর্থাৎ, ১নং চিত্রের (র) নং ও (রর) নং ধাপদ্বয় রসায়ন চর্চার আলোকে সংরক্ষণ সম্ভব।
ঘ. ২নং চিত্রে প্রদর্শিত (রর) নং প্রক্রিয়াটি হলো পরিবেশ দূষণ যা জীবাশ্ম জ্বালানির দহনের কারণে ঘটে। এ দূষণ থেকে পরিত্রাণের উপায় হতে পারে বিকল্প শক্তির আহরণ ও ব্যবহার।
বর্তমানে সারাবিশ্বে জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে শক্তি রূপান্তরের নীতি কাজে লাগিয়ে তাপশক্তি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়। তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রসমূহে জ্বালানি যেমনÑ কয়লা, প্রাকৃতিক গ্যাস, ডিজেল, ফার্নেস অয়েল-এর রাসায়নিক শক্তিকে প্রথমে তাপশক্তিতে রূপান্তর করা হয়। পরে তাপশক্তি থেকে যান্ত্রিক শক্তি এবং যান্ত্রিক শক্তি থেকে বিদ্যুৎ শক্তি উৎপন্ন করা হয়।
উল্লেখ্য যে, এসব প্রচলিত অনবায়নযোগ্য শক্তির উৎস থেকে শক্তি আহরণ পরিবেশের ওপর ক্ষতিকারক প্রভাব ফেলে। ফলে জীবাশ্ম জ্বালানির দহনে পরিবেশ দূষণকারী গ্যাস যেমনÑ সালফার ডাইঅক্সাইড, নাইট্রোজেন অক্সাইড, কার্বন মনোক্সাইড ও ভ‚মণ্ডলীয় উষ্ণতা বৃদ্ধিকারী কার্বন ডাইঅক্সাইড গ্যাস উৎপন্ন হয়। এই অবস্থায় পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় প্রচলিত শক্তি উৎসের ক্রমবর্ধমান ব্যবহার মানুষকে ভাবিয়ে তুলেছে। পরিবেশ সংকটের এই সন্ধিক্ষণে দূষণ থেকে পরিত্রাণের একমাত্র উপায় হলো অপ্রচলিত নবায়নযোগ্য শক্তির উৎস থেকে শক্তি আহরণ। এসব নবায়নযোগ্য উৎস হলো : সৌরশক্তি, বায়ুপ্রবাহ, ভ‚তাপ, জলপ্রবাহ ইত্যাদি।
প্রকৃতিতে এসব শক্তি উৎসের জোগান অফুরন্ত এবং এদের ব্যবহারে পরিবেশ সংরক্ষিত হবে।
প্রশ্ন -৮ ল্ফ নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
মৃত জীবজন্তু বা তার অংশবিশেষ সংরক্ষণে ফরমালিন ব্যবহার হয়। বিভিন্ন ধরনের প্লাস্টিক সামগ্রী, ঔষধ এবং গবেষণার কাজে এটি ব্যবহার করা হয়। আজকাল আমাদের দেশে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ফলমূল, শাকসবজি ও মাছে এটি ব্যবহার করছে।
ক. পরমাণুর গঠন ব্যাখ্যা করা যায় কিসের সাহায্যে? ১
খ. রসায়নকে ‘জীবনের জন্য বিজ্ঞান’ বলা হয় কেন? ২
গ. উদ্দীপকে রসায়নের সাথে বিজ্ঞানের কোন শাখার সম্পর্কের ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে তা ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. উদ্দীপকের রাসায়নিক দ্রব্যটি ইদানিং স্বাস্থ্য ঝুঁকির অন্যতম কারণ হিসেবে বিবেচিত Ñ উক্তিটি বিশ্লেষণ কর। ৪
 ৮নং প্রশ্নের উত্তর 
ক. পরমাণুর গঠন ব্যাখ্যা করা যায় কোয়ান্টাম ম্যাকানিকসের সাহায্যে।
খ. জীবনের প্রতিটি ঘটনার সাথে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কযুক্ত বলে রসায়নকে জীবনের জন্য বিজ্ঞান বলা হয়।
মানুষসহ সৃষ্টির সকল জীব এমনকি অজীব পদার্থের সৃষ্টি, বৃদ্ধি, ধ্বংস, রূপান্তর, উৎপাদন ইত্যাদির আলোচনা করা হয় রসায়নে। মানুষের জীবনেও সময়ের সাথে রসায়ন জড়িত। বিজ্ঞানের অন্যান্য শাখার সাথে রসায়নের যোগসূত্র রয়েছে। আমাদের পরিবেশে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন পরিবর্তনের সাথে রসায়ন কোনো না কোনোভাবে সম্পৃক্ত। অর্থাৎ, যেখানেই জীবন, সেখানেই রসায়ন। এ কারণেই রসায়নকে ‘জীবনের জন্য বিজ্ঞান’ বলা হয়।
গ. উদ্দীপকে জীববিজ্ঞান ও রসায়নের সম্পর্কের বিষয় ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে।
জীববিজ্ঞান গবেষণাগারে ফরমালিন দিয়ে বিভিন্ন নমুনা যেমনÑ মাছ, সাপ, ব্যাঙ ইত্যাদিসহ বিভিন্ন প্রজাতির উদ্ভিদ ও প্রাণী সংরক্ষণ করা হয়। ফরমালিন মিথান্যালের ৩০%৪০% জলীয় দ্রবণ যা রসায়নবিদরা উৎপাদন করে থাকেন। ঔষধ প্রস্তুতি ও সংরক্ষণ উদ্ভিদবিজ্ঞানের সাথে মিলে, কেননা অনেক ঔষধ গাছ-গাছালি থেকে সংগ্রহ করে তা বিশোধনের মাধ্যমে মানবকল্যাণে কাজে লাগানো হয়।
উপর্যুক্ত আলোচনা থেকে দেখা যায়, বিভিন্ন উদ্ভিদ ও প্রাণী সংরক্ষণে যে রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করা হয় তা রসায়নবিদদের উৎপাদন। আবার ঔষুধ তৈরিতে উদ্ভিদ ব্যবহার করা হয় তা উদ্ভিদ বিজ্ঞানীদের গবেষণার ফল। তাই বলা যায়, রসায়নের সাথে জীববিজ্ঞানের গভীর সম্পর্ক রয়েছে।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লেখিত রাসায়নিক দ্রব্যটি হলো ফরমালিন যা ইদানিং স্বাস্থ্যঝুঁকির অন্যতম কারণ হিসেবে বিবেচিত।
আধুনিককালে প্রাকৃতিক গ্যাস থেকে এটি প্রস্তুত করা হয়। ফরমালিন এর রয়েছে বহুমাত্রিক ব্যবহার। জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে এর রয়েছে অনন্য ভ‚মিকা। এছাড়া প্লাস্টিক সামগ্রী নির্মাণ, ঔষধ তৈরি এবং জৈবিক ও রাসায়নিক গবেষণার কাজেও ফরমালিন ব্যবহৃত হয়।
কিন্তু ইদানিং দেখা যাচ্ছে কিছু অসৎ ব্যবসায়ী এ রাসায়নিক দ্রব্যটির অপব্যবহার করছে। ব্যাকটেরিয়া ধ্বংসের ক্ষমতা থাকায় ব্যবসায়ীরা ফল, শাকসবজি, মাছসহ অন্যান্য পচনশীল খাবার সংরক্ষণে এটির মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার করছে যা মানুষের শরীরের জন্য ক্ষতিকর। এটি খাবারের সাথে গ্রহণ করলে ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু, অনভিজ্ঞ ও অসাধু ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান মানুষের ক্ষতির দিক বিবেচনা না করে এ বিষাক্ত পদার্থ ব্যবহার করছে। তাই ফরমালিন ইদানিং স্বাস্থ্যঝুঁকির অন্যতম কারণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
প্রশ্ন -৯ ল্ফ নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
আমাদের দৈনন্দিন জীবনে সার্বক্ষণিক ব্যবহৃত রাসায়নিক বস্তুগুলোর মধ্যে কাঠ, প্রাকৃতিক গ্যাস, কয়লা, পেট্রোলিয়াম, কীটনাশক, সার, ডিটারজেন্ট, পলিমার সামগ্রী, অ্যারোসল, সাবান, শ্যাম্পু, অ্যান্টিবায়োটিক, ভিটামিন, প্রসাধন সামগ্রী ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।
ক. কার্বন কণা কী? ১
খ. রাসায়নিক বস্তুর অতিরিক্ত ব্যবহারের কুফল কী? ২
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত বস্তুসমূহের মধ্যে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত পদার্থগুলো কীভাবে ক্ষতিকারক গ্যাস সৃষ্টি করে? ৩
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত রাসায়নিক পদার্থ কীভাবে পরিবেশ দূষিত করে? বিশ্লেষণ কর। ৪
 ৯নং প্রশ্নের উত্তর 
ক. কার্বন কণা হলো জ্বালানির আংশিক দহনে উৎপন্ন কণা যা পাত্রের গায়ে জমে কালি তৈরি করে।
খ. রাসায়নিক বস্তুর অতিরিক্ত ব্যবহার জীবজগৎ এবং পরিবেশে বিরূপ ফলাফল সৃষ্টি করে।
উদাহরণস্বরূপ রাসায়নিক সারের অতিরিক্ত ব্যবহারে গাছের ক্ষতি হয়। মাত্রাতিরিক্ত ওষুধ সেবনে মানুষের মৃত্যুও হতে পারে। অতিরিক্ত সার, কীটনাশক, সাবান, ডিটারজেন্ট, শ্যাম্পু প্রভৃতি মাটি এবং নদীনালা ও খালবিলের পানি দূষিত করে। অতিরিক্ত মাত্রায় জীবাশ্ম জ্বালানির দহনে পরিবেশ দূষিত হয়। অতিরিক্ত কার্বন ডাইঅক্সাইড নিঃসরণে বায়ুমণ্ডলের উষ্ণতা বৃদ্ধি পায়। এগুলোই হলো রাসায়নিক বস্তুর অতিরিক্ত ব্যবহারের কুফল।
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত বস্তুসমূহের মধ্যে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত কাঠ, কয়লা, প্রাকৃতিক গ্যাস ও পেট্রোলিয়াম অতি স্বল্প পরিমাণ বায়ুর উপস্থিতিতে পোড়ালে স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকারক গ্যাস সৃষ্টি করে।
কয়লা, প্রাকৃতিক গ্যাস ও পেট্রোলিয়াম হলো অনবায়নযোগ্য জীবাশ্ম জ্বালানি। চুলায় রান্না করার কাজে কিংবা শিল্প কারখানায়, ইটভাটায়, তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে কাঠ বা জীবাশ্ম জ্বালানি পুড়িয়ে তাপোৎপাদনকালে তাপ, কার্বন ডাইঅক্সাইড, পানি ও স্বল্প পরিমাণে অন্যান্য পদার্থ উৎপন্ন হয়। কিন্তু অতি স্বল্প পরিমাণ বায়ুর উপস্থিতিতে কাঠ বা জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ালে স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর কার্বন মনোক্সাইড নামক গ্যাস তৈরি হয়। এছাড়াও কাঠ ও কয়লা পোড়ালে ক্ষতিকারক কার্বন কণা উৎপন্ন হয়, যা পাত্রের গায়ে জমলে তাকে আমরা ‘কালি’ বলে থাকি। এসব যৌগ নিঃশ্বাসের সাথে গ্রহণ করা স্বাস্থ্যের জন্য বিপদজনক।
কাজেই জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত পদার্থগুলো ভুল পদ্ধতিতে দহন করলেই তা ক্ষতিকর পদার্থ সৃষ্টি করে।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত রাসায়নিক বস্তুসমূহের মধ্যে সার, কীটনাশক, সাবান, ডিটারজেন্ট, শ্যাম্পু, কয়লা, পেট্রোলিয়াম, অ্যারোসল, পলিমার প্রভৃতির মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার পরিবেশকে দূষণ করে থাকে।
অতিরিক্ত সার ও কীটনাশক, বৃষ্টির পানি দ্বারা নিকটস্থ জলাশয়, খালবিল, নদীনালায় প্রবাহিত হয়। এতে পানি দূষিত হয় এবং জলজ প্রাণী ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এসব জৈব যৌগের জীবভাঙনে পানির দ্রবীভ‚ত অক্সিজেন হ্রাস পায় বলে জলাশয়ের পানিতে জলজ প্রাণীর জীবনধারণ অসম্ভব হয়ে পড়ে। সাবান, ডিটারজেন্ট, শ্যাম্পু অনুরূপভাবে পানিকে দূষিত করে। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহৃত পলিমার সামগ্রীগুলোর (পলিথিন, পানির বোতল, বালতি, চেয়ার, টেবিল প্রভৃতি) জীবভাঙন সংঘটিত হয় না। ফলে এসব সামগ্রী কঠিন বর্জ্য হিসেবে ড্রেন, জমি, পুকুর, খাল-বিলে চরম সংকট সৃষ্টি করে। অধিকন্তু জীবাশ্ম জ্বালানির দহনে বায়ুমণ্ডলে যুক্ত হচ্ছে কার্বন ডাইঅক্সাইড (গ্রিনহাউস গ্যাস), কার্বন মনোক্সাইড, সালফার অক্সাইড, নাইট্রোজেন অক্সাইড ইত্যাদি ক্ষতিকর গ্যাস।
এভাবে উপরিউক্ত রাসায়নিক বস্তুগুলোর ব্যবহার আমাদের পরিবেশকে দূষিত করছে।
প্রশ্ন -১০ ল্ফ নিচের ছকটি লক্ষ করে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :

ক. কালি কী? ১
খ. কাঠ জ্বালানোর ঘটনাকে রাসায়নিক বিক্রিয়া বলা হয় কেন? ২
গ. ই প্রবাহ চিত্রটি বর্ণনা কর। ৩
ঘ. প্রবাহচিত্রের অ ও ঈ অংশের সাথে রসায়নের সম্পৃক্ততা আলোচনা কর। ৪
 ১০নং প্রশ্নের উত্তর 
ক. কালি হলো পাত্রের গায়ে জমা কার্বন কণা।
খ. কাঠে আগুন জ্বালানোর ঘটনায় মূলত কার্বন যৌগের দহন ঘটে বলে একে রাসায়নিক বিক্রিয়া বলা হয়।
কাঠ হলো প্রধানত সেলুলোজ যা কার্বন ও হাইড্রোজেন সমৃদ্ধ একটি যৌগ। আর আগুন জ্বালানো হলো অক্সিজেন সংযোজন। কাজেই কাঠে আগুন জ্বালালে কার্বন যৌগের দহন ঘটে তথা কার্বন ও অক্সিজেনের বিক্রিয়া ঘটে। ফলে কার্বন ডাইঅক্সাইড গ্যাস, জলীয়বাষ্প ও তাপ উৎপন্ন হয়। এ কারণেই কাঠে আগুন জ্বালানোর ঘটনাকে রাসায়নিক বিক্রিয়া বলা হয়।
গ. প্রবাহ চিত্রের ‘ই’ অংশে খাদ্য সংরক্ষণে ফরমালিনের ব্যবহার প্রদর্শিত হয়েছে।
প্রিজারভেটিভস বলতে সেসব রাসায়নিক পদার্থকে বোঝায়, যেগুলো প্রক্রিয়াজাত খাদ্য বিশেষ করে জুস, সস, কেক, বিস্কুট প্রভৃতি বেশি সময় ধরে সংরক্ষণের জন্য ব্যবহৃত হয়। আর ফরমালিন হলো বিশেষ ধরনের রাসায়নিক পদার্থ যা মৃত জীবজন্তুর দেহ সংরক্ষণে ব্যবহৃত হয়।
আজকাল ফরমালিন ও প্রিজারভেটিভ এসব উপকারী কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে না। ফলমূল, মাছ-মাংস ও অন্যান্য খাবার সংরক্ষণে এসব সহনীয় মাত্রার অধিক ব্যবহৃত হচ্ছে। অসাধু ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান দ্বারা খাদ্যদ্রব্যে ফরমালিন ব্যবহারের ফলে বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে। অথচ সহনীয় মাত্রায় এ জাতীয় পদার্থের ব্যবহার নিশ্চিত করা গেলে এসব রোগের ঝুঁকি হ্রাস করা সম্ভব। অন্যদিকে, স্বাস্থ্যঝুঁকি কমাতে খাদ্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণে প্রিজারভেটিভস ব্যবহার করা জরুরি। সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট খাদ্যের জন্য প্রিজারভেটিভসের উপযুক্ততা ও সহনশীলতা নিশ্চিত করতে হবে। অতএব, খাদ্য সংরক্ষণে ফরমালিন বা প্রিজারভেটিভস ব্যবহারে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
ঘ. প্রবাহচিত্রের অ ও ঈ অংশে যথাক্রমে খাদ্য উৎপাদনে সার বা কীটনাশকের ব্যবহার ও কাঠ এবং প্রাকৃতিক গ্যাসের দহনের সময় ঈঙ বা ঈঙ২ গ্যাস সৃষ্টির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এ দুটি প্রক্রিয়াই রসায়নের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
কৃষিকাজে ব্যবহৃত সার, কীটনাশক সবই রাসায়নিক দ্রব্য। সারের মূল উপাদান হলো- কার্বন, অক্সিজেন, নাইট্রোজেন, ফসফরাস, সালফার প্রভৃতি। এসব উপাদান উদ্ভিদকে পুষ্টি প্রদান করে থাকে। মাটিস্থ বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থের সাথে বিক্রিয়া করে সার, ফসল তথা উদ্ভিদের বৃদ্ধিতে সহায়ক ভ‚মিকা পালন করে। এসব সার যখন পানির সান্নিধ্যে আসে তখনও নানারূপ রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটে থাকে।
কাঠ বা প্রাকৃতিক গ্যাস পোড়ালে ঈঙ বা ঈঙ২ উৎপন্ন হয়, যা রাসায়নিক বিক্রিয়া। কাঠ বা প্রাকৃতিক গ্যাস হচ্ছে কার্বনের যৌগ। কাঠ বা প্রাকৃতিক গ্যাসে থাকা কার্বন দহনকালে অক্সিজেনের সাথে রাসায়নিক বিক্রিয়া করে ঈঙ বা ঈঙ২ উৎপন্ন করে।
সুতরাং, দেখা যাচ্ছে যে, প্রবাহচিত্রের অ ও ঈ অংশের সাথে রসায়নের সম্পৃক্ততা রয়েছে।

Scroll to Top