নবম-দশম শ্রেণির মানবিক অর্থনীতি অধ্যায় ২ অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ ধারণাসমূহ

দ্বিতীয় অধ্যায়
 অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ ধারণাসমূহ
অর্থনীতিতে সম্পদ হলো সেসব জিনিস বা দ্রব্য যেগুলো পেতে চাইলে অর্থ ব্যয় করতে হয়। সংক্ষেপে আমরা এ দ্রব্যগুলোকে অর্থনৈতিক দ্রব্যও বলে থাকি। যেমন : ঘরবাড়ি, আসবাবপত্র, টিভি ইত্যাদি দৃশ্যমান বস্তুগত সম্পদ এবং ডাক্তারের সেবা, শিক্ষকের পাঠদান ইত্যাদি অদৃশ্যমান বা অবস্তুগত সম্পদ। উল্লিখিত জিনিসগুলো পেতে চাইলে অর্থ ব্যয় করতে হবে। শিখনফল
 অর্থনৈতিক সম্পদের ধারণা
 প্রাকৃতিক সম্পদ, মানবসম্পদ এবং উৎপাদিত সম্পদের মধ্যে তুলনা
 বাংলাদেশের বিভিন্ন অর্থনৈতিক সম্পদ চিহ্নিত
 অবাধলভ্য দ্রব্য এবং অর্থনৈতিক দ্রব্যের মধ্যে পার্থক্য
 স্থায়ী ও অস্থায়ী ভোগ্যদ্রব্যের তুলনা
 মধ্যবর্তী দ্রব্য ও মূলধনী দ্রব্যের মধ্যে পার্থক্য
 সুযোগ ব্যয় ও নির্বাচনের ধারণা
 আয়, সঞ্চয় ও বিনিয়োগের মধ্যে সম্পর্ক
 বাংলাদেশের বিভিন্ন অর্থনৈতিক কার্যাবলি
অধ্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো সংক্ষেপে জেনে রাখি

 অর্থনৈতিক সম্পদ : অর্থনীতিতে সম্পদ হলো সেসব জিনিস বা দ্রব্য যেগুলো পেতে চাইলে অর্থ ব্যয় করতে হয়। সংক্ষেপে আমরা এ দ্রব্যগুলোকে অর্থনৈতিক দ্রব্যও বলে থাকি। যেমন : ঘরবাড়ি, আসবাবপত্র, টিভি ইত্যাদি দৃশ্যমান বস্তুগত সম্পদ এবং ডাক্তারের সেবা, শিক্ষকের পাঠদান ইত্যাদি অদৃশ্যমান বা অবস্তুগত সম্পদ। উল্লিখিত জিনিসগুলো পেতে চাইলে অর্থ ব্যয় করতে হবে। কোনো জিনিসকে যদি অর্থনীতিতে সম্পদ বলতে হয় তবে তার চারটি বৈশিষ্ট্য থাকা আবশ্যক। বৈশিষ্ট্যগুলো হলো : ১. উপযোগ; ২. অপ্রাচুর্যতা; ৩. হস্তান্তরযোগ্য; ৪. বাহ্যিকতা।
 সম্পদের শ্রেণিবিভাগ : উৎপত্তির দিক থেকে সম্পদ তিন প্রকার। যথা : ১. প্রাকৃতিক সম্পদ; ২. মানবিক সম্পদ; ৩. উৎপাদিত সম্পদ।
 বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্পদ : বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। উন্নয়নের সাথে দেশের অর্থনৈতিক সম্পদের বিশেষ সম্পর্ক থাকে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্পদের মধ্যে রয়েছে : ১. কৃষি সম্পদ; ২. খনিজ সম্পদ; ৩. বনজ সম্পদ; ৪. প্রাণিজ সম্পদ; ৫. শক্তি সম্পদ; ৬. পানি সম্পদ প্রভৃতি।
 দ্রব্য : অর্থনীতিতে যে জিনিসের উপযোগ আছে তাই দ্রব্য। অর্থনীতিতে এসব দ্রব্যকে আবার অবাধলভ্য দ্রব্য, অর্থনৈতিক দ্রব্য; ভোগ্য দ্রব্য; মধ্যবর্তী দ্রব্য; চ‚ড়ান্ত দ্রব্য; মূলধনী দ্রব্য প্রভৃতি বৈশিষ্ট্যে ভাগ করা হয়।
 সুযোগ ব্যয় : অর্থনীতিতে বহুল ব্যবহৃত একটি ধারণা ‘সুযোগ ব্যয়’। কোনো একটি জিনিস পাওয়ার জন্য অন্যটিকে ত্যাগ করতে হয়Ñ এই ত্যাগকৃত পরিমাণই হলো অন্য দ্রব্যটির ‘সুযোগ ব্যয়’ (ঙঢ়ঢ়ড়ৎঃঁহরঃু ঈড়ংঃ)।
 নির্বাচন : অর্থনীতিতে সম্পদের স্বল্পতার জন্যই নির্বাচন করতে হয় এবং এটি ব্যক্তি পর্যায়ের পাশাপাশি সমাজ ও রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে সম্পদে স্বল্পতার জন্য হয়ে থাকে।
 আয় : উৎপাদনের কোনো উপকরণ ব্যবহারের জন্য উপকরণটি বা এটির মালিক একটি নির্দিষ্ট সময়ে যে অর্থ পায় তাকে আয় বলে। শ্রমের জন্য প্রাপ্ত আয়কে মজুরি বলে।
 সঞ্চয় : মানুষ আয় করে ভোগ করার জন্য। ভবিষ্যতের কথা ভেবে বর্তমানে অর্জিত আয়ের পুরোটাই মানুষ ভোগ করে না। আয়ের একটি অংশ রেখে দেয় কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠানে। এই রেখে দেওয়া অংশের নাম সঞ্চয়।
 বিনিয়োগ : মানুষ আয় থেকে সঞ্চয় করে থাকে। সঞ্চিত অর্থ যখন উৎপাদন বাড়ানো কাজে ব্যবহৃত হয় তখন তাকে বিনিয়োগ বলে।
 অর্থনৈতিক কার্যাবলি : মানুষ জীবিকা সংগ্রহের জন্য যে কার্যাবলি করে থাকে তাকে অর্থনৈতিক কার্যাবলি বলা হয়। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে মানুষ অর্থ উপার্জন করে এবং জীবনধারণের জন্য তা ব্যয় করে। মানুষের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের মূল প্রেরণা হলো দ্রব্যসামগ্রীর অভাব পূরণ করা।
 অ-অর্থনৈতিক কার্যাবলি : যে সমস্ত অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে অর্থ উপার্জিত হয় না এবং তা জীবনধারণের জন্য ব্যয় করা যায় না তাকে অ-অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বলা হয়। এ ধরনের কর্মকাণ্ড মানুষের অভাব পূরণ করলেও অর্থ উপার্জনে ভ‚মিকা রাখতে পারে না।

 বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর 
১. কোনটি সমষ্টিগত সম্পদ?
ক ঘরবাড়ি  ডাকঘর গ পদ্মা নদী ঘ বঙ্গোপসাগর
২. ব্যবসায়ের সুনাম সম্পদ। কারণ এর
র. অভাব পূরণের ক্ষমতা আছে
রর. স্বত্ব পরিবর্তন করা যায়
ররর. সামষ্টিক মালিকানা দেখা যায়
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র  র ও রর
গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
নিচের অনুচ্ছেদটি পড় এবং ৩ ও ৪ নম্বর প্রশ্নের উত্তর দাও :
রাহেলার একটি সেলাই মেশিন আছে। এর থেকে তার মাসিক আয় ১০,০০০/- টাকা। তিনি পারিবারিক ভরণপোষণ, সন্তানের শিক্ষা ব্যয় বাদে বাকি টাকা সঞ্চয় পত্রে জমা করেন। সঞ্চয়ের অর্থ থেকে এ বছর তিনি আরেকটি সেলাই মেশিন ক্রয় করেছেন।
৩. রাহেলার নতুন সেলাই মেশিন ক্রয়কে অর্থনীতিতে কী বলে?
ক সঞ্চয় খ মূলধন  বিনিয়োগ ঘ সুযোগ ব্যয়
৪. রাহেলার শেষোক্ত কাজের মাধ্যমে
র. পারিবারিক নিরাপত্তা বাড়বে
রর. সন্তানের প্রতি দায়িত্ব বৃদ্ধি পাবে
ররর. কর্মসংস্থান বৃদ্ধি হবে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র খ র ও রর গ রর ও ররর  র ও ররর

 সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর 
প্রশ্ন- ১  সুযোগ ব্যয় ও নির্বাচন

শফিকদের বাড়িতে কয়েকজন মেহমান এসেছেন। তার মা তাকে ১০০০/- টাকা দিয়ে কিছু মাছ ও মাংস কিনতে বাজারে পাঠান। সে বাজারে গিয়ে দেখে পুরো টাকা দিয়ে ২ কেজি মাছ অথবা ৪ কেজি মাংস কিনতে পারে। অনেক চিন্তার পর সে ১ কেজি মাছ এবং ২ কেজি মাংস ক্রয় করে।
ক. আয় কী?
খ. শক্তি সম্পদ বলতে কী বোঝায়?
গ. শফিকের মাছ-মাংস ক্রয়ের ধারণাটি চিত্রে উপস্থাপন করে ব্যাখ্যা কর।
ঘ. শফিকের দুটি দ্রব্য নির্বাচনের অর্থনৈতিক তাৎপর্য বিশ্লেষণ কর।

ক উৎপাদনের কোনো উপকরণ ব্যবহারের জন্য উপকরণটি বা এটির মালিক একটি নির্দিষ্ট সময়ে যে অর্থ পায়, তাই আয় নামে পরিচিত।
খ কলকারখানা, যানবাহন ও যোগাযোগ, যান্ত্রিক চাষাবাদ ও গৃহকর্ম প্রভৃতি ক্ষেত্রে যে শক্তি ব্যবহার হয় তাকে শক্তি সম্পদ বলা হয়। কয়লা, খনিজ তেল, প্রাকৃতিক গ্যাস, পানি, আণবিক শক্তি, সৌরশক্তি প্রভৃতি হচ্ছে শক্তি সম্পদের উদাহরণ।
গ উদ্দীপকের শফিকের মাছ-মাংস ক্রয়ের ধারণাটি নিচের চিত্রে উপস্থাপন করা হলো :

প্রদত্ত চিত্রে ঙঢ ভ‚মি অক্ষে মাংসের পরিমাণ এবং ঙণ লম্ব অক্ষে মাছের পরিমাণ অঙ্কন করা হয়েছে। এখানে ১০০০ টাকা দিয়ে কেবল ২ কেজি মাছ কিংবা ৪ কেজি মাংস কিনলে জঞ উৎপাদন সম্ভাবনা রেখাটি পাওয়া যায়। শফিকের মাছ-মাংস উভয় দ্রব্যই কেনার প্রয়োজন হওয়ায় সে জঞ রেখার ঝ বিন্দুতে অবস্থান করে। এখানে সে ১০০০ টাকা দিয়ে ১ কেজি মাছ ও ২ কেজি মাংস কিনতে সক্ষম হয়। সুতরাং উৎপাদন সম্ভাবনা রেখার উপরিস্থিত যেকোনো বিন্দু সীমিত সম্পদ দিয়ে দুটি দ্রব্যের বিভিন্ন সংমিশ্রণ ক্রয় নির্দেশ করে।
ঘ অর্থনৈতিক দ্রব্য হওয়ায় শফিকের মাছ-মাংস নির্বাচনে অর্থনৈতিক তাৎপর্য রয়েছে। মানুষের জীবনে অভাব অসীম, কিন্তু তা পূরণের জন্য প্রয়োজনীয় সম্পদ নিতান্তই কম। সম্পদের এ সীমাবদ্ধতার জন্য মানুষ কিছু অভাব পূরণ করলে অন্যগুলো তার হাতছাড়া হয়। কিন্তু সুন্দরভাবে জীবনযাপনের জন্য অনেক অভাব পূরণের প্রয়োজন পড়ে। সেক্ষেত্রে মানুষ অভাব নির্বাচন করে। অভাব নির্বাচন করতে গিয়ে মানুষ আগে সেসব অভাব পূরণ করে যেগুলো অধিক প্রয়োজনীয়। এক্ষেত্রে সমস্যার অন্ত নেই। সম্পদ কম বলে তাকে অধিক প্রয়োজনীয় অভাবের মধ্যেও অভাব নির্বাচন করতে হয়। কিন্তু অতি প্রয়োজনীয় অভাবগুলোর মধ্যে একটির বদলে অন্যটি পূরণ করা বাস্তবোচিত হয় না। তাই সে তার অনেক অভাবই পূরণ করে। এর ফলে জীবন সুন্দর ও স্বাচ্ছন্দ্যপূর্ণ হয়। এ অবস্থার প্রেক্ষিতেই দেখা যায়, মানুষ দুটি প্রয়োজনীয় অভাবের মধ্যে একটিকে বাদ দিয়ে অন্যটি পূরণের চেষ্টা করে না; বরং সে তার সীমিত অর্থ দিয়ে দুটি দ্রব্যের অভাবই অল্প অল্প করে পূরণ করে। পরিশেষে বলা যায় যে, শফিকের দুটি দ্রব্য নির্বাচনের যথেষ্ট অর্থনৈতিক তাৎপর্য রয়েছে।

প্রশ্ন- ২  অর্থনৈতিক দ্রব্য

হাফিজ তাঁর কথার মাধ্যমে সহজেই মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে পারেন। মানুষকে সংগঠিত করার দক্ষতা তাঁর অপরিসীম। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা মালামাল সংরক্ষণের জন্য সদরঘাটে তার একটি ঘর আছে। এখান থেকে তাঁর কর্মচারীরা তাঁর কথামতো দেশের বিভিন্ন স্থানে মালামাল সরবরাহ করেন।
ক. অর্থনৈতিক দ্রব্য কাকে বলে?
খ. প্রাকৃতিক সম্পদ বলতে কী বোঝায়?
গ. হাফিজের সদরঘাটের ঘরটি অর্থনীতিতে কী ধরনের দ্রব্য? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. হাফিজের গুণাবলি কী সম্পদ? উত্তরের স্বপক্ষে যুক্তি দাও।

ক যে জিনিসের উপযোগ আছে তাকে অর্থনৈতিক দ্রব্য বলে।
খ প্রকৃতির কাছ থেকে পাওয়া যেসব দ্রব্য মানুষের প্রয়োজন মেটায় তাকে প্রাকৃতিক সম্পদ বলে। যেমনÑ ভ‚মি, বনভ‚মি, খনিজ সম্পদ, নদনদী ইত্যাদি। এ সম্পদগুলো মানুষের জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ তাৎপর্য বহন করে।
গ হাফিজের সদরঘাটের ঘরটি অর্থনীতিতে মূলধনী দ্রব্য। কারণ, যেসব উৎপাদিত দ্রব্য অন্য দ্রব্য উৎপাদনে সাহায্য করে তাকে মূলধনী দ্রব্য বলে। যেমন- যন্ত্রপাতি, গুদামঘর, কারখানা প্রভৃতি। মূলধনী দ্রব্য বারবার উৎপাদন কাজে ব্যবহৃত হয়। মূলধনী দ্রব্য আবার মূলধনী দ্রব্য উৎপাদনেও ব্যবহৃত হয়। হাফিজের ঘরটি দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা মালামাল সংরক্ষণ করে। এখান থেকে হাফিজের কর্মচারীরা তাঁর কথামতো দেশের বিভিন্ন স্থানে মালামাল সরবরাহ করেন। এতে এই দ্রব্যগুলোই পরবর্তীতে অন্য দ্রব্য উৎপাদনে সহায়তা করবে। তাই উক্ত ঘরটি একটি মূলধনী দ্রব্য।
ঘ হাফিজের গুণাবলি সম্পদ নয়। অর্থনীতিতে কোনো জিনিসকে সম্পদ হতে হলে তার মধ্যে চারটি বৈশিষ্ট্য থাকা দরকার। বৈশিষ্ট্যগুলো হলো উপযোগ, অপ্রাচুর্যতা, হস্তান্তরযোগ্য ও বাহ্যিকতা। উদ্দীপকের হাফিজ মানুষকে উদ্বুদ্ধ করার ক্ষমতা, ব্যবসায় সংগঠন পরিচালনা, মূল্যায়ন ইত্যাদি গুণাবলিসম্পন্ন। হাফিজের এ গুণাবলির উপযোগ রয়েছে। এর দ্বারা অভাব মেটানো যায়। তবে তাঁর এ গুণাবলি অপ্রতুল এবং এগুলোর হস্তান্তরযোগ্যতা নেই। এছাড়া তাঁর এ গুণাবলির কোনো বাহ্যিকতা নেই। এগুলো অভ্যন্তরীণ গুণ। অর্থনীতিতে সম্পদ হওয়ার জন্য যে চারটি বৈশিষ্ট্য থাকা দরকার তার কোনো একটিও অনুপস্থিত থাকলে তাকে সম্পদ বলা যাবে না। হাফিজের গুণাবলির মধ্যে সম্পদের দুটি বৈশিষ্ট্য উপস্থিত থাকলেও আর দুটি বৈশিষ্ট্য অনুপস্থিত। তাই হাফিজের গুণাবলিকে অর্থনীতিতে সম্পদ বলা যায় না। পরিশেষে বলা যায়, সম্পদের সবগুলো বৈশিষ্ট্য ধারণ না করায় হাফিজের গুণাবলি সম্পদ নয়।

 বোর্ড ও সেরা স্কুলের বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
সাধারণ বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
১. বাংলাদেশের কয়টি ক্ষেত্র থেকে গ্যাস উত্তোলন করা হয়? [স. বো. ’১৬]
ক ১৩ খ ১৮  ১৯ ঘ ২৩
২. অর্থনৈতিক কাজ কোনটি? [স. বো. ’১৬]
ক ভিক্ষার মাধ্যমে অর্থ উপার্জন  শ্রমিকের কারখানার কাজ
গ সন্তানের পরিচর্যা ঘ শখ করে বাগান করা
৩. জাতীয় আয়ের কত ভাগ কৃষি থেকে আসে? [স. বো. ’১৬]
 ১৩% খ ১৭% গ ২১% ঘ ২৫%
৪. সুন্দরবনের আয়তন কত? [স. বো. ’১৬]
ক প্রায় ৫,০১৭ বর্গ কি.মি.  প্রায় ৬,০১৭ বর্গ কি.মি.
গ প্রায় ৭,০১৭ বর্গ কি.মি. ঘ প্রায় ৮,০১৭ বর্গ কি.মি.
৫. কোন দ্বীপে গন্ধক পাওয়ার সম্ভাবনা দেখা গিয়েছে? [স. বো. ’১৬]
ক সেন্টমার্টিন দ্বীপ খ নিঝুম দ্বীপ
 কুতুবদিয়া দ্বীপ ঘ মনপুরা দ্বীপ
৬. সরকার ও জনগণের মালিকানাধীন সম্পদকে কী বলে? [স. বো. ’১৫]
ক ব্যক্তিগত  জাতীয় গ সমষ্টিগত ঘ আন্তর্জাতিক
৭. শারীরিক যোগ্যতা কোন ধরনের সম্পদ? [স. বো. ’১৫]
ক ব্যক্তিগত খ প্রাকৃতিক গ সমষ্টিগত  মানবিক
৮. সিলেটের বনভ‚মির আয়তন কত? [স. বো. ’১৫]
ক ৮৪০ বর্গ কি.মি. খ ৯৪০ বর্গ কি.মি.
 ১০৪০ বর্গ কি.মি. ঘ ১১৪০ বর্গ কি.মি.
৯. কোনটি বস্তুগত সম্পদ? [বি এ এফ শাহীন কলেজ, চট্টগ্রাম]
ক সুনাম  টিভি
গ সততা ঘ আসবাবপত্র
১০. কোনটি অবস্তুগত সম্পদ? [বি এ এফ শাহীন কলেজ, চট্টগ্রাম]
 ডাক্তারের সেবা খ টিভি
গ বাড়ি ঘ কলম
১১. বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার প্রতিভার প্রমাণ করেন গীতাঞ্জলি কাব্য রচনার মাধ্যমে। এরপর তার সুনাম বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে। এখানে সম্পদ কোনটি? [গণবিদ্যা নিকেতন উচ্চ বিদ্যালয়, নারায়ণগঞ্জ]
ক প্রতিভা  গীতাঞ্জলি
গ সুনাম ঘ তাঁর নাম
১২. উৎপত্তির ভিত্তিতে সম্পদকে কয়ভাগে ভাগ করা যায়?
[সরকারি হরিচন্দ্র বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, ঝালকাঠি]
ক ২  ৩ গ ৪ ঘ ৫
১৩. কোনটি প্রাকৃতিক সম্পদ? [হলিক্রস বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, ঢাকা]
 খনিজ সম্পদ খ মানুষের শরীর
গ স্বাস্থ্য কেন্দ্র ঘ সেচ ব্যবস্থা
১৪. প্রাকৃতিক ও মানবিক সম্পদ কাজে লাগিয়ে কোন সম্পদ সৃষ্টি করা যায়? [মধুপুর শহীদ স্মৃতি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, টাঙ্গাইল]
ক প্রাকৃতিক সম্পদ খ জাতীয় সম্পদ
 উৎপাদিত সম্পদ ঘ ব্যক্তিগত সম্পদ
১৫. কোনটি উৎপাদিত সম্পদ? [বি এ এফ শাহীন কলেজ, চট্টগ্রাম]
 যোগাযোগ ব্যবস্থা খ নদনদী
গ ভ‚মি ঘ আবহাওয়া
১৬. কোনটি মনুষ্যসৃষ্ট সম্পদ?
[পাবনা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়; স্বরূপকাঠি কলেজিয়েট একাডেমি]
ক বনভ‚মি  স্বাস্থ্যকেন্দ্র
গ খনিজ সম্পদ ঘ সংগঠন ক্ষমতা
১৭. বাংলাদেশের প্রধান খনিজ সম্পদ কী? [হলিক্রস উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়, ঢাকা]
ক কয়লা খ খনিজ তেল
 প্রাকৃতিক গ্যাস ঘ চুনাপাথর
১৮. বাংলাদেশে এ পর্যন্ত কয়টি গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কৃত হয়েছে? [বরিশাল জিলা স্কুল]
ক ২০ খ ২১ গ ২২  ২৫
১৯. বাংলাদেশের ২৫টি গ্যাস ক্ষেত্রে গ্যাস মজুদের পরিমাণ কত?
[কামরুন্নেসা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, ঢাকা]
 ১৬ বিলিয়ন ঘনফুট খ ২০ ট্রিলিয়ন ঘনফুট
গ ২২ ট্রিলিয়ন ঘনফুট ঘ ২৫ বিলিয়ন ঘনফুট
২০. কোন শিল্পে প্রাকৃতিক গ্যাস কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত হয়?
[শিশুকুঞ্জ স্কুল এন্ড কলেজ, ঝিনাইদহ; বর্ডার গার্ড পাবলিক স্কুল, সিলেট]
 রাসায়নিক সার খ প্লাস্টিক
গ সিমেন্ট ঘ দিয়াশলাই
২১. কাগজ উৎপাদনে কী ব্যবহৃত হয়? [দিনাজপুর সেন্ট ফিলিপস স্কুল]
ক চীনামাটি খ কঠিন শিলা গ গন্ধক  চুনাপাথর
২২. বাংলাদেশের কোন জেলায় চুনাপাথরের মজুদ রয়েছে?
[বিএএফ শাহীন কলেজ, চট্টগ্রাম]
 জয়পুরহাট খ ফেনী গ নেত্রকোনা ঘ খুলনা
২৩. বাংলাদেশে চুনাপাথর কোথায় মজুদ রয়েছে?
[বি কে জি সি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, হবিগঞ্জ]
ক মধ্যপাড়ায় খ বিজয়পুরে
গ বড় পুকুরিয়ায়  সেন্টমার্টিন দ্বীপে
২৪. পতœীতলায় কোন খনিজ দ্রব্য মজুদ রয়েছে? [বি এ এফ শাহীন কলেজ, চট্টগ্রাম]
ক চুনাপাথর  চীনামাটি গ গন্ধক ঘ সিলিকা বালু
২৫. বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি কোন জেলায় অবস্থিত? [কুমিল্লা জিলা স্কুল]
ক গাইবান্ধা খ লালমনিরহাট
 দিনাজপুর ঘ জয়পুরহাট
২৬. স¤প্রতি কোন অঞ্চলে কয়লা উত্তোলন করা হচ্ছে?
[হলিক্রস উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়, ঢাকা]
 দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়ায় খ সিলেটের হরিপুরে
গ চট্টগ্রামের সেন্টমার্টিনে ঘ দিনাজপুরের মধ্যপাড়ায়
২৭. গন্ধক ব্যবহৃত হয় কোনটিতে? [গণ বিদ্যানিকেতন উচ্চ বিদ্যালয়]
 দিয়াশলাইয়ে খ কয়লায় গ তামায় ঘ চুনাপাথরে
২৮. স¤প্রতি কোথায় খনিজ তেল পাওয়া গেছে?
[বি কে জি সি সরকারি বালিক উচ্চ বিদ্যালয়, হবিগঞ্জ]
 সিলেটের হরিপুরে খ শাহজিবাজারে
গ তামাবিল ঘ কুতুবদিয়া দ্বীপে
২৯. প্রাকৃতিক ও পরিবেশগত অবস্থা ভালো রাখার জন্য দেশের ভ‚খণ্ডের কমপক্ষে শতকরা কত ভাগ বনাঞ্চল থাকা দরকার?
[কামরুন্নেসা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, ঢাকা]
ক ১৭ খ ২১ গ ২২  ২৫
৩০. জাপানে বনভ‚মির পরিমাণ মোট ভ‚খণ্ডের কত ভাগ?
[সাতক্ষীরা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
ক ২৫% খ ৩৫% গ ৩৪%  ৬৩%
৩১. জাপান ও বার্মার কোন অবস্থা ভালো থাকার সম্ভাবনা রয়েছে?
[সেন্ট ফ্রান্সিস হাইস্কুল, ঢাকা]
ক সামাজিক খ ধর্মীয়
 প্রাকৃতিক ও পরিবেশগত ঘ ভৌগোলিক
৩২. নিচের কোনটি সুন্দরবনে পাওয়া যায়? [হলিক্রস বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, ঢাকা]
ক গর্জন খ গামারি  গরান ঘ সেগুন
৩৩. ‘বাইন’ কোন বনভ‚মির বৃক্ষ? [বি এ এফ শাহীন কলেজ, চট্টগ্রাম]
 সুন্দরবন খ চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামের বনভ‚মি
গ সিলেটের বনভ‚মি ঘ বরেন্দ্র বনভ‚মি
৩৪. বাংলাদেশের চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামের বনভ‚মির আয়তন কত?
[গাজীপুর ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
ক ১৪,৩৩৩ বর্গকিলোমিটার  ১৫,৩৩৩ বর্গকিলোমিটার
গ ১৬,৩৩৩ বর্গকিলোমিটার ঘ ১৭,৩৩৩ বর্গকিলোমিটার
৩৫. নিচের কোন উৎস থেকে বাংলাদেশে এখনো শক্তির উৎপাদন শুরু করা সম্ভব হয়নি? [নড়াইল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়]
ক কয়লা খ খনিজ তেল গ পানি  আণবিক শক্তি
৩৬. বাংলাদেশের একমাত্র পানি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রটি কোন নদীর তীরে অবস্থিত? [দি বাডস রেসিডেনসিয়াল মডেল স্কুল এন্ড কলেজ, শ্রীমঙ্গল]
ক মেঘনা খ নাফ  কর্ণফুলি ঘ সাঙ্গু
৩৭. গ্যাস, তেল ও কয়লার সাহায্যে যে বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয় তাকে কী বলে?
[ভিকারুননি নূন স্কুল এন্ড কলেজ, ঢাকা]
ক পানি বিদ্যুৎ  তাপ বিদ্যুৎ গ চল বিদ্যুৎ ঘ স্থির বিদ্যুৎ
৩৮. বাংলাদেশের কোন বিদ্যুৎ কেন্দ্রে খনিজ তেল জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত হয়? [বর্ডার গার্ড পাবলিক স্কুল, সিলেট]
ক সিদ্ধিরগঞ্জ তাপবিদ্যুৎ খ ঘোড়াশাল তাপবিদ্যুৎ
গ চট্টগ্রাম তাপবিদ্যুৎ  ভেড়ামারা তাপবিদ্যুৎ
৩৯. বাংলাদেশের কোন বিদ্যুৎ কেন্দ্রে খনিজ তেল ব্যবহৃত হয়?
[হলিক্রস উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়, ঢাকা]
 ঠাকুরগাঁও তাপবিদ্যুৎ খ ঘোড়াশাল তাপবিদ্যুৎ
গ চট্টগ্রাম তাপ বিদ্যুৎ ঘ শাহজীবাজার তাপবিদ্যুৎ
৪০. বাংলাদেশে গ্যাসচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র কয়টি? [বিএএফ শাহীন কলেজ, ঢাকা]
ক ৮ খ ১০ গ ৭  ৫
৪১. আশুগঞ্জ তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র কোথায় অবস্থিত? [পঞ্চগড় বিপি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়]
ক কুষ্টিয়া  ব্রা‏‏‏হ্মণবাড়িয়া গ সিলেট ঘ নরসিংদী
৪২. আধুনিক বিশ্ব কোন শক্তির ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে?
[সেন্ট যোসেফস হাইস্কুল, খুলনা]
ক প্রাকৃতিক গ্যাস খ সৌরতাপ
গ জৈব গ্যাস  আণবিক
৪৩. বাংলাদেশে পানির উৎস প্রধানত কতটি?
[ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ, রংপুর]
ক ২  ৩ গ ৪ ঘ ৫
৪৪. সমষ্টিগত সম্পদ কোনটি? [গাজীপুর ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড উচ্চ বিদ্যালয়]
ক পানি সম্পদ খ সাগর  হাসপাতাল ঘ ঘরবাড়ি
৪৫. মানুষের অভাব মিটানোর ক্ষমতাসম্পন্ন বস্তুগত ও অবস্তুগত সব জিনিসকে আমরা কী বলে থাকি?
[কাদিরাবাদ কান্দির পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ, নাটোর]
 অর্থনৈতিক দ্রব্য খ অভিজাত দ্রব্য
গ মূলধনী দ্রব্য ঘ মধ্যবর্তী দ্রব্য
৪৬. যেসব দ্রব্য বিনা পরিশ্রমে এবং বিনামূল্যে পাওয়া যায় তাকে কী বলে?
[বিএএফ শাহীন কলেজ, চট্টগ্রাম]
 অবাধলভ্য দ্রব্য খ স্থায়ী ভোগ্য দ্রব্য
গ অস্থায়ী ভোগ্য দ্রব্য ঘ অর্থনৈতিক দ্রব্য
৪৭. কোনটি অর্থনৈতিক দ্রব্য? [হলিক্রস উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়, ঢাকা]
 টেবিল খ আলো গ বাতাস ঘ সুনাম
৪৮. নিচের কোনটি অস্থায়ী দ্রব্য? [হলিক্রস উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়, ঢাকা]
ক জমি খ বাড়ি গ বাতাস  খাদ্য
৪৯. নিচের কোনটি মধ্যবর্তী দ্রব্য? [বি এ এফ শাহীন কলেজ, চট্টগ্রাম]
ক গম  রসগোল্লা তৈরির জন্য দুধ চিনি
গ রুটি ঘ ভাত
৫০. রসগোল্লা তৈরিতে দুধ ও চিনি ব্যবহার করা হয়। এখানে দুধ ও চিনি কোন দ্রব্যের উদাহরণ? [পঞ্চগড় বিপি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়]
ক মূলধনী খ স্থায়ী ভোগ্য গ অবাধলভ্য  মধ্যবর্তী
৫১. চেয়ার কোন জাতীয় দ্রব্য? [বগুড়া জিলা স্কুল]
ক অস্থায়ী  চ‚ড়ান্ত গ স্থায়ী ঘ অবাধলভ্য
৫২. ভোগ ব্যয়ের পরে আয়ের যে অংশ অবশিষ্ট থাকে তাকে কী বলে?
[পাবনা সরকারি বালিক উচ্চ বিদ্যালয়]
 সঞ্চয় খ বিনিয়োগ গ মজুদ ঘ মূলধন
৫৩. আয় ও ভোগ ব্যয়ের মধ্যে পার্থক্যকে কী বলে?
[বি কে জি সি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, হবগিঞ্জ]
ক বিনিয়োগ খ মূলধন  সঞ্চয় ঘ সুদ
৫৪. বিনিয়োগের ভিত্তি কী? [ভিকারুননিসা নূন স্কুল এন্ড কলেজ, ঢাকা]
ক আয়  সঞ্চয় গ মূলধন ঘ ব্যয়
৫৫. সঞ্চিত অর্থ যখন উৎপাদন বাড়ানোর কাজে ব্যবহৃত হয় তখন তাকে কী বলে? [বি কে জি সি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, হবগিঞ্জ]
ক মূলধন খ সঞ্চয়  বিনিয়োগ ঘ আয়
৫৬. কীসের মাধ্যমে উৎপাদনের পরিমাণ বাড়ে? [বি এ এফ শাহীন কলেজ, চট্টগ্রাম]
 বিনিয়োগ খ মূলধন গ সঞ্চয় ঘ মুনাফা
৫৭. সজীব একজন কৃষক। তার কোন কাজটি অর্থনৈতিক কাজ হিসেবে গণ্য হবে?
[ভোলা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়; নীলফামারী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়]
ক অফিসে যাতায়াত করা খ পরের ক্ষেতের ধান কেটে আনা
 ধান চাষ করা ঘ ক্ষেতে কাজ না করে বিশ্রাম করা
৫৮. কোনটি কৃষিবহিভর্‚ত কাজ? [পঞ্চগড় সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
 মাটির পুতুল তৈরি খ ফলমূল উৎপাদন
গ সার ছিটানো ঘ মাছ ধরা
বহুপদী সমাপ্তিসূচক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
৫৯. অবাধলভ্য দ্রব্যের বৈশিষ্ট্য হলো- [ঝালকাঠি সরকারি হরচন্দ্র বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
র. যোগান সীমাহীন
রর. প্রকৃতিতে অবাধে পাওয়া যায়
ররর. অর্থব্যয় করার প্রয়োজন হয় না
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর  র, রর ও ররর
৬০. মধ্যবর্তী দ্রব্য হলো- [কদমতলা পূর্ব বাসাবো স্কুল, ঢাকা]
র. দুধ ও চিনি
রর. ভাত ও রুটি
ররর. আটা ও ময়দা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর  র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৬১. বাংলাদেশে কয়লা পাওয়া যায়- [বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফ পাবলিক কলেজ, ঢাকা]
র. জয়পুরহাটে
রর. রংপুরে
ররর. দিনাজপুর
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর  র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৬২. খনিজ তেল পাওয়া যায় [বি এ এফ শাহীন কলেজ, চট্টগ্রাম]
র. বাখরাবাদ
রর. হরিপুর
ররর. জয়পুরহাট
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র  রর গ ররর ঘ র, রর ও ররর
৬৩. বাংলাদেশের বনভ‚মিকে ভাগ করা হয়- [বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফ পাবলিক কলেজ, ঢাকা;
পাবলিক কলেজ, ঢাকা;মধুপুর শহীদ স্মৃতি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, টাঙ্গাইল; স্বরূপকাঠি কলেজিয়েট একাডেমি]
র. চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামের বনভ‚মি
রর. সিলেটের বনভ‚মি
ররর. রাজশাহীর বনভ‚মি
নিচের কোনটি সঠিক?
 র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৬৪. সুন্দরবনে পাওয়া যায়- [বর্ডার গার্ড পাবলিক স্কুল, সিলেট]
র. রয়েল বেঙ্গল টাইগার
রর. মধু ও গোলপাতা
ররর. সেগুন, গর্জন ও গামারি
নিচের কোনটি সঠিক?
 র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৬৫. যে সম্পদের অস্তিত্ব রক্ষা ও উন্নয়নের জন্য পানির প্রয়োজন-
[ভিকারুননিসা নূন স্কুল এন্ড কলেজ, ঢাকা]
র. বনজ সম্পদ
রর. কৃষি সম্পদ
ররর. প্রাণিজ ও শক্তি সম্পদ
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর  র, রর ও ররর
৬৬. অর্থনৈতিক কাজ হলোÑ [আলহেরা একাডেমি স্কুল এন্ড কলেজ, পাবনা]
র. শখের বশে খেলাধুলা করা
রর. কৃষকের জমিতে কাজ করা
ররর. শ্রমিকের কলকারখানায় কাজ করা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর  রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
অভিন্ন তথ্যভিত্তিক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ে ৬৭ ও ৬৮ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
বাংলাদেশের মানুষজন কেন সৌদি আরবে কাজ করতে যায়? এ প্রশ্নটি রাইমা তার বাবাকে করেছিল। বাবা উত্তরে বলেছিলেন, ওখানে প্রচুর খনিজ তেল আছে বিধায় ঐ দেশটি ধনী। বাবা আরও বলেন, তবে আমাদেরও তেল ছাড়া এ ধরনের আরও অনেক সম্পদ রয়েছে।
৬৭. সৌদি আরবের সম্পদটি কোন ধরনের সম্পদ?
[বি এ এফ শাহীন কলেজ, চট্টগ্রাম]
ক কৃত্রিম  প্রাকৃতিক
গ রাসায়নিক ঘ তেজস্ক্রিয়
৬৮. এ ধরনের সম্পদ পরিকল্পিতভাবে ব্যবহার করলে দেশের-
র. আন্তর্জাতিক উন্নয়ন হবে
রর. অর্থনৈতিক উন্নয়ন হবে
ররর. সামাজিক উন্নয়ন হবে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর  রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ে ৬৯ ও ৭০ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
জালাল মিয়া একজন কৃষক। তার জমির পরিমাণ পাঁচ বিঘা। এই জমিতে সে ধান উৎপাদন করে। কিন্তু গত তিন বছর ধরে পাটের দাম বেশি হওয়ায় সে ঐ জমিতে ধান উৎপাদন না করে পাট উৎপাদন করে।
৬৯. অনুচ্ছেদে কোন ধারণাটি প্রতিফলিত হয়েছে?
[প্রেসিডেন্ট প্রফেসর ড. ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদ রেসি. মডেল স্কুল এন্ড কলেজ, মুন্সীগঞ্জ]
 সুযোগ ব্যয় খ শ্রম বিভাগ
গ উৎপাদন ঘ মুনাফা
৭০. এই ধারণাটি হলো
র. প্রকৃত হিসাব
রর. আপেক্ষিক হিসাব
ররর. মানসিক হিসাব
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর  রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
 বিষয়ক্রম অনুযায়ী বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
 ২.১ : অর্থনৈতিক সম্পদ  বোর্ড বই, পৃষ্ঠা- ১৩
 অর্থনীতিতে সম্পদের বৈশিষ্ট্য ৪টি।
 উপযোগ বলতে বোঝায় অভাব পূরণের ক্ষমতাকে।
 উৎপত্তির দিক হতে সম্পদের শ্রেণিবিভাগ ৩টি।
 মানবীয় যোগ্যতা ও দক্ষতাকে বলা হয় মানবিক সম্পদ।
 উৎপাদিত সম্পদের উদাহরণ কাঁচামাল ও কলকারখানা।
 একজন কবির সৃষ্টিশীল ক্ষমতা হলো মানবিক সম্পদ।
 বাংলাদেশ একটি কৃষিপ্রধান দেশ।
 পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার জন্য প্রয়োজন বনাঞ্চল।
 একটি দেশের মোট ভ‚খণ্ডে বনাঞ্চল থাকা দরকার ২৫ ভাগ।
সাধারণ বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
৭১. অর্থনীতিতে কোনো দ্রব্যকে সম্পদ হিসেবে বিবেচনা করার জন্য কয়টি বৈশিষ্ট্য থাকা আবশ্যক? (জ্ঞান)
ক ৫  ৪ গ ৩ ঘ ২
৭২. কোনো দ্রব্যের অভাব মোচনের ক্ষমতাকে কী বলে? (জ্ঞান)
 উপযোগ খ চাহিদা গ ভোগ ঘ উৎপাদন
৭৩. উপযোগহীন দ্রব্যের ক্ষেত্রে কোনটি সঠিক? (অনুধাবন)
ক বাজারে চাহিদা বেশি খ মানুষ কম দামে কিনে
গ বাজারে চাহিদা অপেক্ষাকৃত কম  মানুষ অর্থ দিয়ে কিনে না
৭৪. অপ্রাচুর্যতা কথাটির অর্থ কী? (অনুধাবন)
ক যোগানের তুলনায় চাহিদা সীমাবদ্ধ  চাহিদার তুলনায় যোগান সীমাবদ্ধ
গ সম্পদের পরিমাণ অসীম ঘ সম্পদের পরিমাণ সসীম
৭৫. আলো, বাতাস সম্পদ হওয়ার অযোগ্য কেন? (অনুধাবন)
ক চাহিদার তুলনায় যোগান পর্যাপ্ত খ চাহিদা ও যোগান অপর্যাপ্ত
 চাহিদার তুলনায় যোগান সীমাবদ্ধ নয় ঘ যোগানের তুলনায় চাহিদা পর্যাপ্ত
৭৬. যেসব দ্রব্যের মালিকানা বদল বা পরিবর্তন করা যায় তাকে কী বলে? (অনুধাবন)
ক উপযোগ  সম্পদ গ চাহিদা ঘ দ্রব্য
৭৭. কবি ফেরদৌসী তাঁর কাব্য প্রতিভার দ্বারা বিখ্যাত কাব্য ‘শাহনামা’ রচনা করেন। কবির কাব্য প্রতিভা সম্পদ নয় কেন? (উচ্চতর দক্ষতা)
 হস্তান্তরযোগ্যতার অভাবে খ যোগানের অভাবে
গ উপযোগের অভাবে ঘ প্রাচুর্যতার অভাবে
৭৮. বাহ্যিকতা কীসের বৈশিষ্ট্য? (অনুধাবন)
 সম্পদের খ উপযোগের গ অভাবের ঘ ব্যক্তির
৭৯. নিচের কোনটি সম্পদ বহির্ভূত? (অনুধাবন)
ক যন্ত্রপাতি খ খনিজ দ্রব্য
 শিক্ষকের দক্ষতা ঘ কবির কাব্যগ্রন্থ
৮০. কোনটি প্রাকৃতিক সম্পদের অন্তর্ভুক্ত? (জ্ঞান)
ক উদ্যোগ খ প্রতিভা গ দক্ষতা  ভ‚মি
৮১. কোনটি প্রাকৃতিক সম্পদ? (জ্ঞান)
 বনভ‚মি খ প্রতিজ্ঞা গ উদ্যোগ ঘ দক্ষতা
৮২. মানবিক সম্পদ কোনটি? (জ্ঞান)
 প্রতিভা খ বনভ‚মি
গ কলকারকানা ঘ সেচ ব্যবস্থা
৮৩. নিচের কোনটি মানবিক সম্পদ? (জ্ঞান)
ক নদনদী  সাংগঠনিক ক্ষমতা
গ ভ‚মি ঘ খনিজ সম্পদ
৮৪. রসুলপুর গ্রামবাসী বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদানের লক্ষ্যে একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র স্থাপন করল। স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি কী জাতীয় সম্পদ? (প্রয়োগ)
ক মানবিক  উৎপাদিত গ জাতীয় ঘ ব্যক্তিগত
৮৫. বাংলাদেশে চাষযোগ্য কৃষিজমির পরিমাণ কত? (জ্ঞান)
 ২ কোটি ১৭ লাখ একর খ ৪ কোটি ১৪ লাখ একর
গ ৫ কোটি ১৭ লাখ একর ঘ ৬ কোটি ১৭ লাখ একর
৮৬. কোনটি অর্থকরী ফসল? (জ্ঞান)
ক তৈলবীজ খ আলু  চা ঘ ধান
৮৭. কোনটি অর্থকরী ফসল? (জ্ঞান)
 রেশম খ শাকসবজি গ ফলমূল ঘ গম
৮৮. বাংলাদেশের কত ভাগ লোক কৃষির ওপর নির্ভরশীল? (জ্ঞান)
ক ৮০  ৭৫ গ ৭২ ঘ ৭০
৮৯. জাতীয় আয়ের কতভাগ কৃষি থেকে আসে? (জ্ঞান)
ক ১০  ১৩ গ ২২ ঘ ২৩
৯০. ব্লিচিং পাউডার উৎপাদনে কোনটি ব্যবহৃত হয়? (জ্ঞান)
ক সিলিকা বালু খ গন্ধক  চুনাপাথর ঘ তামা
৯১. সিমেন্ট তৈরিতে ব্যবহৃত হয় কোনটি? (জ্ঞান)
ক চীনামাটি  চুনাপাথর গ লোহা ঘ স্যানিটারি দ্রব্য
৯২. টেকেরহাট কোন জেলায় অবস্থিত? (জ্ঞান)
ক সিলেট  সুনামগঞ্জ গ বাগেরহাট ঘ কুমিল্লা
৯৩. বাংলাদেশের কোথায় চীনামাটির মজুদ রয়েছে? (জ্ঞান)
 বিজয়পুর খ জয়পুর
গ ফরিদপুর ঘ রংপুর
৯৪. বাংলাদেশের কোন জেলায় চীনামাটির মজুদ রয়েছে? (জ্ঞান)
ক রংপুর খ কুড়িগ্রাম  নওগাঁ ঘ শরীয়তপুর
৯৫. বাসনপত্র তৈরিতে কোনটি ব্যবহৃত হয়? (জ্ঞান)
ক কয়লা খ কঠিন শিলা  চীনামাটি ঘ চুনাপাথর
৯৬. বাংলাদেশের কোথায় কঠিন শিলা মজুদ রয়েছে? (জ্ঞান)
ক ভাঙারহাট  রাণীপুকুর গ বিজয়পুর ঘ বড় পুকুরিয়া
৯৭. রেলপথ নির্মাণে কোনটি ব্যবহৃত হয়? (জ্ঞান)
ক চুনাপাথর খ নুড়িপাথর গ আগ্নেয়শিলা  কঠিন শিলা
৯৮. বাঁধ নির্মাণে ব্যবহার হয় কোনটি? (জ্ঞান)
 কঠিন শিলা খ তামা গ চীনামাটি ঘ গন্ধক
৯৯. কোথায় সিলিকা বালু পাওয়া যায়? (জ্ঞান)
ক দিনাজপুর খ রংপুর গ গাইবান্ধা  জামালপুর
১০০. কাচ তৈরির প্রধান উপাদান কোনটি? (জ্ঞান)
ক গন্ধক খ তামা গ কয়লা  সিলিকা বালু
১০১. রং তৈরিতে কোনটি ব্যবহৃত হয়? (জ্ঞান)
ক কয়লা  সিলিকা বালু গ তামা ঘ চুনাপাথর
১০২. চট্টগ্রামের কুতুবদিয়া দ্বীপে কী পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে? (জ্ঞান)
 গন্ধক খ তামা গ স্বর্ণ ঘ কেরোসিন
১০৩. বারুদ তৈরিতে নিচের কোনটি প্রয়োজন? (জ্ঞান)
ক তামা  গন্ধক গ সিলিকা বালু ঘ খনিজ তেল
১০৪. জাহাঙ্গীর হোসেনের কারখানায় তেল পরিশোধন করা হবে। এজন্য তিনি নিচের কোনটি ব্যবহার করবেন? (প্রয়োগ)
 গন্ধক খ সিলিকা বালু গ খনিজ তেল ঘ তামা
১০৫. বাংলাদেশের কোন জেলায় তামার সন্ধান পাওয়া যায়? (জ্ঞান)
 রংপুর খ বগুড়া গ রাজশাহী ঘ নবাবগঞ্জ
১০৬. বাংলাদেশের কোথায় সামান্য তামার সন্ধান পাওয়া গেছে? (জ্ঞান)
ক সিলেটের হরিপুরে  মধ্যপাড়ায়
গ তামাবিলে ঘ কুতুবদিয়া
১০৭. বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি ও তার তৈরিতে ব্যবহৃত হয় কোনটি? (জ্ঞান)
ক গন্ধক  তামা গ শিলা ঘ খনিজ তেল
১০৮. ‘ক’ দেশের সরকার মুদ্রা তৈরির জন্য ব্যাংককে নির্দেশ দিল। এ কাজের জন্য ব্যাংক নিচের কোনটি ব্যবহার করবে? (প্রয়োগ)
 তামা খ সিলিকা বালু গ গন্ধক ঘ খনিজ তেল
১০৯. বাংলাদেশের বনভ‚মি মোট ভ‚খণ্ডের শতকরা কত ভাগ? (জ্ঞান)
 প্রায় ১৭ খ প্রায় ২৭ গ প্রায় ৪০ ঘ প্রায় ২৩
১১০. আমেরিকায় শতকরা কত ভাগ বনভ‚মি রয়েছে? (জ্ঞান)
ক ৩০ খ ৩১ গ ৩২  ৩৪
১১১. বার্মায় শতকরা কত ভাগ বনভ‚মি রয়েছে? (জ্ঞান)
ক ২২ খ ৩৪ গ ৬৩  ৬৭
১১২. ভারতের শতকরা কত ভাগ বনভ‚মি রয়েছে? (জ্ঞান)
ক ২০ খ ২১  ২২ ঘ ২৩
১১৩. বাংলাদেশের সমগ্র বনভ‚মিকে কয় ভাগে ভাগ করা যায়? (জ্ঞান)
ক তিন খ চার  পাঁচ ঘ ছয়
১১৪. বাংলাদেশের তুলনায় আমেরিকার বনাঞ্চলের পরিমাণ কতগুণ বেশি? (অনুধাবন)
 দ্বিগুণ খ তিনগুণ গ চারগুণ ঘ ছয়গুণ
১১৫. বাংলাদেশের কোন বনাঞ্চল সমুদ্র উপক‚লে অবস্থিত? (জ্ঞান)
ক চট্টগ্রামের বনভ‚মি খ বরেন্দ্র বনভ‚মি
গ ভাওয়াল গড়ের বনভ‚মি  সুন্দরবন
১১৬. সুন্দরবনের আয়তন কত? (জ্ঞান)
ক ৫৭৭৪ বর্গকিলোমিটার খ ৫৭৪৭ বর্গকিলোমিটার
 ৬০১৭ বর্গকিলোমিটার ঘ ৬৭৭৪ বর্গকিলোমিটার
১১৭. কোন মূল্যবান গাছটি সুন্দরবনে পাওয়া যায়? (জ্ঞান)
 সুন্দরী খ জারুল গ গামারি ঘ সেগুন
১১৮. নিচের কোন বৃক্ষটি সুন্দরবনে পাওয়া যায়? (জ্ঞান)
ক গর্জন  গেওয়া গ গামারি ঘ সেগুন
১১৯. কোনটি সুন্দরবনের বৃক্ষ? (জ্ঞান)
 কেওড়া খ গামারি গ সেগুন ঘ জারুল
১২০. পার্বত্য চট্টগ্রাম বনভ‚মির গাছ কোনটি? (জ্ঞান)
ক বাইন খ গেওয়া গ সুন্দরী  গর্জন
১২১. মধুপুর ও ভাওয়াল বনভ‚মির আয়তন কত? (জ্ঞান)
ক ১০৬০ বর্গকিলোমিটার খ ১০৬০ বর্গকিলোমিটার
 ১০৬৪ বর্গকিলোমিটার ঘ ১০৬৫ বর্গকিলোমিটার
১২২. মধুুপুর ও ভাওয়ালের বনভ‚মির বৃক্ষ কোনটি? (জ্ঞান)
 শাল খ সুন্দরী গ বাঁশ ঘ গরান
১২৩. গজারি কোন বনভ‚মিতে জন্মে? (জ্ঞান)
ক সুন্দরবন  মধুপুর ও ভাওয়াল
গ সিলেটের ঘ চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামের
১২৪. সিলেটের বনভ‚মির আয়তন কত? (জ্ঞান)
 ১০৪০ বর্গকিলোমিটার খ ১০৬৪ বর্গকিলোমিটার
গ ১০৯০ বর্গকিলোমিটার ঘ ২০০০ বর্গকিলোমিটার
১২৫. বনজাম কোন বনভ‚মির অন্তর্গত? (জ্ঞান)
ক মধুপুরের খ রংপুরের  সিলেটের ঘ চট্টগ্রামের
১২৬. দিনাজপুর ও রংপুরের বনভ‚মির আয়তন কত? (জ্ঞান)
ক ২০ বর্গকিলোমিটার  ৩৯ বর্গকিলোমিটার
গ ৪৬ বর্গকিলোমিটার ঘ ৫০ বর্গকিলোমিটার
১২৭. দিনাজপুর ও রংপুরের বনভ‚মির বৃক্ষ কোনটি? (জ্ঞান)
 গজারি খ বনজাম গ বাইন ঘ গামারি
১২৮. কোথায় পেট্রোলিয়ামের সন্ধান পাওয়া গেছে? (জ্ঞান)
 হরিপুরে খ পাবনায় গ নাচোলে ঘ নান্নেরচরে
১২৯. কোনটি বাংলাদেশ বিদেশ থেকে আমদানি করে? (অনুধাবন)
ক প্রাকৃতিক গ্যাস  পেট্রোলিয়াম
গ কয়লা ঘ সৌর শক্তি
১৩০. বাংলাদেশের একমাত্র পানিবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি কোথায় অবস্থিত? (জ্ঞান)
ক খুলনার গোয়ালপাড়ায় খ নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ
 পার্বত্য চট্টগ্রামের কাপ্তাইয়ে ঘ নরসিংদীর ঘোড়াশালে
১৩১. নদীর স্রোত থেকে দেশের কোন গুরুত্বপূর্ণ উপাদানটি উৎপন্ন হয়? (জ্ঞান)
ক অটোমোবাইল শিল্প খ শিল্পের কাঁচামাল
 বিদ্যুৎ ঘ আলো
১৩২. গোয়ালপাড়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি কোন জেলায় অবস্থিত? (জ্ঞান)
 খুলনা খ বরিশাল গ ঢাকা ঘ রাজশাহী
১৩৩. ভেড়ামারা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি কোন জেলায় অবস্থিত? (জ্ঞান)
ক খুলনা  কুষ্টিয়া গ নীলফামারী ঘ ব্রা‏হ্মণবাড়িয়া
১৩৪. সিদ্ধিরগঞ্জ তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি কোন জেলায় অবস্থিত? (জ্ঞান)
 নারায়ণগঞ্জ খ নীলফামারী
গ নরসিংদী ঘ সিলেট
১৩৫. কোনটি গ্যাসচালিত বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র? (জ্ঞান)
 ঘোড়াশাল তাপবিদ্যুৎ খ ভেড়ামারা তাপবিদ্যুৎ
গ গোয়ালপাড়া তাপবিদ্যুৎ ঘ ঠাকুরগাঁও তাপবিদ্যুৎ
১৩৬. বাংলাদেশের কোনটি গ্যাসচালিত বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র? (জ্ঞান)
ক গোয়ালপাড়া তাপবিদ্যুৎ  শাহজীবাজার তাপবিদ্যুৎ
গ ভেড়ামারা তাপবিদ্যুৎ ঘ সৈয়দপুর তাপবিদ্যুৎ
১৩৭. বাংলাদেশে গ্যাস পরিচালিত বিদ্যুৎ উৎপাদান কেন্দ্র কোনটি? (অনুধাবন)
ক গোয়ালপাড়া তাপবিদ্যুৎ  চট্টগ্রাম তাপবিদ্যুৎ
গ ভেড়ামারা তাপবিদ্যুৎ ঘ সৈয়দপুর তাপবিদ্যুৎ
১৩৮. কুইক রেন্টাল সার্ভিসের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে কে? (জ্ঞান)
 বর্তমান সরকার খ বাংলাদেশ সেনাবাহিনী
গ যোগাযোগ মন্ত্রণালয় ঘ বেসরকারি প্রতিষ্ঠান
১৩৯. নিচের কোনটি মৌলিক প্রাকৃতিক সম্পদ? (জ্ঞান)
 পানি খ খনিজ তেল গ কয়লা ঘ প্রাকৃতিক গ্যাস
১৪০. প্রাণী ও উদ্ভিদের জীবনধারণের জন্য অপরিহার্য সম্পদ কোনটি? (জ্ঞান)
 পানি খ কৃষি গ খনিজ ঘ বনজ
১৪১. কোনটির যোগান কম বা বেশি হলে কৃষিকাজে ক্ষতিগ্রস্ত হয়? (অনুধাবন)
ক ভ‚মি খ রাসায়নিক সার  পানি ঘ ভ‚মির উর্বরতা
১৪২. কোনটি থেকে পানি বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয়? (জ্ঞান)
ক গ্যাস খ তেল  নদীর স্রোত ঘ কয়লা
বহুপদী সমাপ্তিসূচক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
১৪৩. বাংলাদেশের প্রধান অর্থকরী ফসল হচ্ছে (অনুধাবন)
র. পাট, ইক্ষু
রর. চা, রেশম
ররর. গম, ডাল
নিচের কোনটি সঠিক?
 র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
১৪৪. বাংলাদেশের উৎপাদনরত গ্যাসক্ষেত্র হচ্ছে (অনুধাবন)
র. হবিগঞ্জ
রর. কৈলাসটিলা
ররর. তিতাস
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর  র, রর ও ররর
১৪৫. সম্পদের বৈশিষ্ট্য হলো (অনুধাবন)
র. উপযোগ, অপ্রাচুর্যতা
রর. হস্তান্তরযোগ্যতা, বাহ্যিকতা
ররর. ভোগ, তৃপ্তি
নিচের কোনটি সঠিক?
 র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
১৪৬. নদীর পানি সম্পদ নয়, কারণ (অনুধাবন)
র. চাহিদার তুলনায় অঢেল বলে
রর. বিনামূল্যে পাওয়া যায় বলে
ররর. সব মানুষ ব্যবহার করে বলে
নিচের কোনটি সঠিক?
 র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
১৪৭. দেশের যে সম্পদের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য পানি সম্পদ প্রয়োজন (অনুধাবন)
র. কৃষিজ ও বনজ
রর. প্রাণিজ ও শক্তি
ররর. খনিজ ও প্রযুক্তিগত
নিচের কোনটি সঠিক?
 র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
১৪৮. কৃষিকাজ ক্ষতিগ্রস্ত হয় (অনুধাবন)
র. পানির যোগান কম হলে
রর. পানি মিষ্টি হলে
ররর. পানির যোগান বেশি হলে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর  র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
১৪৯. বাংলাদেশে শক্তির যোগান বহুলাংশে আসে (অনুধাবন)
র. প্রাকৃতিক গ্যাস থেকে
রর. বিদ্যুৎ থেকে
ররর. প্রচলিত উপকরণ থেকে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর  র, রর ও ররর
১৫০. প্রাকৃতিক গ্যাস ব্যবহৃত হয় (অনুধাবন)
র. বিদ্যুৎ উৎপাদনে
রর. কলকারখানায়
ররর. গৃহকর্মে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর  র, রর ও ররর
১৫১. যে ক্ষেত্রে শক্তি সম্পদের ব্যবহার অপরিহার্য (অনুধাবন)
র. যানবাহন ও যোগাযোগ
রর. যান্ত্রিক চাষাবাদ
ররর. গৃহকর্ম
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর  র, রর ও ররর

বোর্ড ও সেরা স্কুলের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন- ১  অর্থনৈতিক সম্পদ

আবেদ একজন চা বিক্রেতা। শেখাহার বাজারে প্রতিদিন চা বিক্রয় করে জীবিকা নির্বাহ করে। সন্তানেরা প্রতিদিন টিভি দেখার জন্য পাশের বাড়িতে যায়। এতে তার মন খারাপ হয়। নির্বাচনের কারণে গত কয়েকদিন ভালো চা বিক্রয় হওয়ায় সন্তানেরা টিভির জন্য বায়না ধরে। সে একটি টিভি ক্রয় করে। [স. বো. ’১৬]
ক. প্রাকৃতিক সম্পদ কী? ১
খ. হস্তান্তরযোগ্যতা বলতে কী বুঝায়? ২
গ. প্রথমদিকে আবেদ টিভি ক্রয় করতে সক্ষম হয়নি কেন? অর্থনীতির ভাষায় তা ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. উদ্দীপকে বর্ণিত ক্রয়কৃত টিভিটি কী অর্থনীতিতে সম্পদ? যুক্তিসহ উপস্থাপন কর। ৪

ক প্রকৃতির কাছ থেকে প্রাপ্ত যেসব সম্পদ মানুষের প্রয়োজন মেটায় তাই প্রাকৃতিক সম্পদ।
খ সম্পদের একটি বৈশিষ্ট্য হলো এর হস্তান্তরযোগ্যতা। হস্তান্তরযোগ্য বলতে বোঝায় হাত বদল হওয়া। অর্থাৎ যে দ্রব্যের মালিকানা বদল বা পরিবর্তন করা যায় তাই হলো সম্পদ। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রতিভাকে অর্থনীতির ভাষায় সম্পদ বলা যাবে না। কারণ তার প্রতিভাকে হস্তান্তর বা মালিকানা বদল করা সম্ভব নয়। আবার টিভির মালিকানা বদল করা যায় বলে টিভি সম্পদ।
গ প্রথমদিকে আবেদ প্রয়োজনীয় আর্থিক সামর্থ্যরে অভাবে টিভি ক্রয় করতে সক্ষম হয়নি। এক্ষেত্রে অর্থনীতির ভাষায় বলা যায়, আবেদ চাহিদার অভাবে টিভি ক্রয় করতে সক্ষম হয়নি। উদ্দীপকে চা বিক্রেতা আবেদের প্রথমদিকেও টিভি কেনার আকাক্সক্ষা ছিল। কেননা তার সন্তানেরা প্রতিদিন টিভি দেখার জন্য পাশের বাড়িতে গেলে তার মন খারাপ হয়। কিন্তু অর্থনীতির ভাষায় আমাদের সব আকাক্সক্ষাই চাহিদা নয়। অর্থনীতিতে চাহিদা হতে হলে তিনটি শর্ত পূরণ করতে হয়। যেমন ১. কোনো দ্রব্য পাওয়ার ইচ্ছা বা আকাক্সক্ষা, ২. ক্রয়ের জন্য প্রয়োজনীয় আর্থিক সামর্থ্য এবং ৩. অর্থ ব্যয় করে দ্রব্যটি ক্রয়ের ইচ্ছা। সুতরাং, ক্রেতার একটি পণ্য নির্দিষ্ট সময়ে কেনার আকাক্সক্ষা, সামর্থ্য এবং নির্দিষ্ট মূল্যে দ্রব্যটি ক্রয় করার ইচ্ছা থাকলে তাকে অর্থনীতিতে চাহিদা (উবসধহফ) বলে। উদ্দীপকে আবেদের টিভি ক্রয়ের আকাক্সক্ষা ও ইচ্ছা ছিল কিন্তু সামর্থ্য ছিল না।
ঘ উদ্দীপকে বর্ণিত ক্রয়কৃত টিভিটি অর্থনীতিতে সম্পদ। কোনো জিনিসকে যদি অর্থনীতিতে সম্পদ বলতে হয় তবে তার চারটি বৈশিষ্ট্য থাকা আবশ্যক। বৈশিষ্ট্যগুলো হলো ১. উপযোগ : উপযোগ বলতে বোঝায় কোনো দ্রব্যের মানুষের অভাব মেটানোর ক্ষমতা। কোনো দ্রব্য সম্পদ হতে হলে সেই দ্রব্যের উপযোগ সৃষ্টির ক্ষমতা থাকতে হবে। টিভি দেখার উপযোগ মানুষের রয়েছে। ২. অপ্রাচুর্যতা : কোনো দ্রব্য সম্পদ হতে হলে তার পরিমাণ ও যোগান সীমিত থাকবে। যেমন : নদীর পানি, বাতাস প্রভৃতির যোগান প্রচুর। এগুলো সম্পদ নয়। এক্ষেত্রে টিভি চাইলেই প্রচুর পাওয়া সম্ভব নয়। অর্থাৎ টিভি আমাদের কাছে অপর্যাপ্ত দ্রব্য। ৩. হস্তান্তরযোগ্য : সম্পদের একটি বৈশিষ্ট্য হলো এর হস্তান্তরযোগ্যতা। হস্তান্তরযোগ্য বলতে বোঝায় হাত বদল হওয়া। অর্থাৎ যে দ্রব্যের মালিকানা বদল বা পরিবর্তন করা যায় তাই হলো সম্পদ। যেমন : উদ্দীপকে আবেদ টিভি ক্রয় করে তার মালিক হয়েছে। ৪. বাহ্যিকতা : যে সমস্ত দ্রব্য মানুষের অভ্যন্তরীণ গুণ বোঝায় তা অর্থনীতির ভাষায় সম্পদ নয়। টিভির বাহ্যিক অস্তিত্ব রয়েছে। সুতরাং, সম্পদের চারটি বৈশিষ্ট্যই পূরণ করে বলে টিভি অর্থনীতিতে সম্পদ।

প্রশ্ন- ২  অর্থনৈতিক ও অ-অর্থনৈতিক কার্যাবলি

স্বল্পশিক্ষিত শামীমা তার দুই ছেলে ও দুই মেয়ের লালনপালন ও পারিবারিক যাবতীয় কাজ দেখাশুনা করত। তার স্বামী একটি কারখানায় কাজ করত। স্বামীর আকস্মিক মৃত্যুর পর শামীমা আর্থিক সংকট দূর করার জন্য উক্ত কারখানায় কাজে যোগদান করে। [স. বো. ’১৫]
ক. বিনিয়োগ কী? ১
খ. সঞ্চয় বলতে কী বোঝায়? ব্যাখ্যা কর। ২
গ. শামীমা প্রাথমিক পর্যায়ে যে সকল কাজ করত, সেগুলো কোন ধরনের কার্যাবলির অন্তর্ভুক্ত? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. দৃশ্যকল্প অনুযায়ী শামীমার পরবর্তী কাজটিই “অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের মূল প্রেরণা” উক্তিটির যথার্থতা প্রমাণ করে মতামত দাও। ৪

ক মানুষ কর্তৃক সঞ্চিত অর্থ যখন উৎপাদন বাড়ানোর কাজে ব্যবহৃত হয় তখন তাকে বিনিয়োগ বলে।
খ মানুষ আয় করে ভোগ করার জন্য। ভবিষ্যতের কথা ভেবে বর্তমানে অর্জিত আয়ের পুরোটাই মানুষ ভোগ করে না। আয়ের একটি অংশ রেখে দেয় কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠানে। এই রেখে দেওয়া অংশের নাম সঞ্চয়। সঞ্চয়ের ধারণাটি সমীকরণ দিয়ে বোঝানো যায়। যেমন : ঝ = ণ – ঈ (যখন ণ  ঈ)
এখানে, ঝ = সঞ্চয়, ণ = আয়, ঈ = ভোগ ব্যয়।
ব্যক্তির সঞ্চয় নির্ভর করে মূলত আয়ের পরিমাণ, পারিবারিক দায়িত্ববোধ, দূরদৃষ্টি, সামাজিক নিরাপত্তা এবং সুদের হারের ওপর।
গ শামীমা প্রাথমিক পর্যায়ে যেসব কাজ করত তা অ-অর্থনৈতিক কার্যাবলির অন্তর্ভুক্ত। যে সমস্ত অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে অর্থ উপার্জিত হয় না এবং তা জীবনধারণের জন্য ব্যয় করা যায় না তাকে অ-অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বলা হয়। এ ধরনের কর্মকাণ্ড মানুষের অভাব পূরণ করলেও অর্থ উপার্জনে ভ‚মিকা রাখতে পারে না। যেমন : পিতামাতার সন্তান লালনপালন, শখের বশে খেলাধুলা করা ইত্যাদি অ-অর্থনৈতিক কাজের উদাহরণ। উদ্দীপকে স্বল্পশিক্ষিত শামীমাও প্রাথমিক পর্যায়ে তার দুই ছেলে ও দুই মেয়ের লালনপালন ও পারিবারিক যাবতীয় কাজ দেখাশুনা করত। যার সাথে অর্থ উপার্জনের কোনো সম্পর্ক নেই। তাই শামীমার প্রাথমিক পর্যায়ের কাজগুলো অ-অর্থনৈতিক কার্যাবলির অন্তর্ভুক্ত।
ঘ দৃশ্যকল্প অনুযায়ী শামীমার পরবর্তী কাজটি “অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের মূল প্রেরণা। এক্ষেত্রে আমরা দেখি স্বামীর আকস্মিক মৃত্যুর পর শামীমা আর্থিক সংকট দূর করার জন্য কারখানায় কাজে যোগদান করে। অর্থাৎ আর্থিক সংকট দূর করাই “অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের মূল প্রেরণা”। বেঁচে থাকার জন্য মানুষ নানাবিধ কাজ করে। এসব কাজের মূল লক্ষ্য হলো জীবিকা সংগ্রহ করা। জীবিকার জন্য কেউ কল-কারখানায়, কেউ অফিস বা কেউ জমিতে কাজ করে। মানুষ জীবিকা সংগ্রহের জন্য যে কার্যাবলি করে থাকে তাকে অর্থনৈতিক কার্যাবলি বলা হয়। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে মানুষ অর্থ উপার্জন করে এবং জীবন ধারণের জন্য তা ব্যয় করে। যেমন : শ্রমিকরা কলকারখানায় কাজ করে, কৃষকরা জমিতে কাজ করে, ডাক্তার রোগীদের চিকিৎসা করে, শিল্পপতিরা শিল্পপ্রতিষ্ঠান পরিচালনা করেÑ এগুলো হলো অর্থনৈতিক কাজ। মানুষের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের মূল প্রেরণা হলো দ্রব্যসামগ্রীর অভাব পূরণ করা। এক্ষেত্রে অর্থই মাধ্যম। তাই এভাবেও বলা যায়, মানুষের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের মূল প্রেরণা আর্থিক সংকট দূর করা। দৃশ্যকল্পে যা শামীমার পরবর্তী কাজে ধরা পড়েছে।

প্রশ্ন- ৩  সুযোগ ব্যয় ও নির্বাচন

আনোয়ার মিয়ার ৫ বিঘা জমি আছে। এই জমিতে ৪০ মণ ধান অথবা ২০ মণ পাট উৎপাদন করতে পারেন। কিন্তু তার দুটোই চাই। এ কারণে তিনি ২০ মণ ধান এবং ১০ মণ পাট উৎপাদনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
[বরিশাল সরকারি বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়]
ক. সুন্দরবনের আয়তন কত? ১
খ. বাংলাদেশের প্রাকৃতিক গ্যাসের অবস্থান, মজুদ ও ব্যবহারের বর্ণনা দাও। ২
গ. আনোয়ার মিয়ার ধান-পাট উৎপাদনের ধারণাটি চিত্রে উপস্থাপন করে ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. আনোয়ার মিয়ার দুটি দ্রব্য উৎপাদনের অর্থনৈতিক তাৎপর্য বিশ্লেষণ কর। ৪

ক সুন্দরবনের আয়তন ৬,০১৭ বর্গকিলোমিটার।
খ প্রাকৃতিক গ্যাস বাংলাদেশের প্রধান খনিজ সম্পদ। বাংলাদেশে এ পর্যন্ত ২৫টি গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কৃত হয়েছে। এখানে গ্যাসের মোট মজুদ প্রায় ১৬ বিলিয়ন ঘনফুট। বর্তমানে কেবল ১৯টি গ্যাসক্ষেত্র থেকে গ্যাস উত্তোলিত হচ্ছে। এ গ্যাস রাসায়নিক সার তৈরিতে কাঁচামালরূপে ব্যবহৃত হয়। এছাড়া বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রে, কলকারখানা ও গৃহে এ গ্যাস জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
গ আনোয়ার মিয়া ৫ বিঘা জমিতে ৪০ মণ ধান অথবা ২০ মণ পাট উৎপাদন করতে পারেন। এই দুটি দ্রব্যের মধ্যে যেকোনো একটিকে বেছে নেওয়া হলো ‘সুযোগ ব্যয়’। কিন্তু আনোয়ার মিয়া দুটি দ্রব্যই উৎপাদন করতে চান। এক্ষেত্রে দুটি দ্রব্য উৎপাদন করার ধারণাই হলো নির্বাচন। আনোয়ার মিয়ার ধান-পাট উৎপাদনের ধারণার চিত্রটি নি¤œরূপ :

চিত্রে ঙঢ অক্ষে ধান এবং ঙণ অক্ষে পাট দেখানো হয়েছে।
আনোয়ার মিয়ার সব সম্পদ যদি পাট উৎপাদনের জন্য ব্যয় করা হয় তবে ঙঅ পরিমাণ পাট অর্থাৎ ২০ মণ পাট উৎপাদন করতে পারবেন। আবার যদি শুধু ধান উৎপাদন করতে চান তবে ঙই পরিমাণ ধান অর্থাৎ ৪০ মণ ধান উৎপাদন করতে পারবেন। অ ও ই বিন্দু সংযোগকারী অই রেখাটি হলো উৎপাদন সম্ভাবনা রেখা বা চৎড়ফঁপঃরড়হ চড়ংরনরষরঃু ঈঁৎাব। এক্ষেত্রে আনোয়ার মিয়া ধান ও পাট দুটিই উৎপাদন করতে চায়। তাই তিনি পুরো সম্পদ ব্যয় করে ঙঘ পরিমাণ পাট। অর্থাৎ ১০ মণ পাট এবং ঙগ পরিমাণ ধান অর্থাৎ ২০ মণ ধান উৎপাদন করতে পারবেন। উৎপাদন সম্ভাবনা রেখা ক বিন্দু এই অবস্থা দেখায়। আনোয়ার মিয়া ইচ্ছে করলে পাটের পরিমাণ কমিয়ে ঘ১ এবং ধানের উৎপাদন বাড়িয়ে ঙগ১ উৎপাদন করতে পারেন।
ঘ আনোয়ার মিয়ার ধান ও পাট উৎপাদনের অর্থনৈতিক তাৎপর্য রয়েছে। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে কৃষি তথা ধান ও পাট উৎপাদনের ধারণাটির কার্যকারিতা অর্থবহ এবং ফলপ্রসূ। মানুষের জীবনে অভাব অসীম, কিন্তু তা পূরণের জন্য প্রয়োজনীয় সম্পদ নিতান্তই কম। সম্পদের এ সীমাবদ্ধতার জন্য মানুষ কিছু অভাব পূরণ করলে অন্যগুলো তার হাতছাড়া হয়। কিন্তু সুন্দরভাবে জীবনযাপনের জন্য অনেক অভাব পূরণের প্রয়োজন পড়ে। সেক্ষেত্রেও মানুষ অভাব নির্বাচন করে। অভাব নির্বাচন করতে গিয়ে যেগুলো অধিক প্রয়োজন সে অভাবগুলো মানুষ আগে পূরণ করে। এক্ষেত্রেও মানুষ অনেক সমস্যার সম্মুখীন হয়। সম্পদ কম বলে তাকে অধিক প্রয়োজনীয় অভাবের মধ্যেও অভাব নির্বাচন করতে হয়। কিন্তু অতি প্রয়োজনীয় অভাবগুলোর মধ্যে একটির বদলে অন্য অভাবটি পূরণ করে। এর ফলে জীবন সুন্দর ও স্বাচ্ছন্দ্যপূর্ণ হয়। এ অবস্থার প্রেক্ষিতে দেখা যায়, মানুষ দুটি প্রয়োজনীয় অভাবের মধ্যে একটিকে বাদ দিয়ে অন্যটি পূরণের চেষ্টা করে না বরং সে তার সীমিত অর্থ দিয়ে দুটি দ্রব্যের অভাবই অল্প অল্প করে পূরণ করে। উপর্যুক্ত আলোচনায় প্রমাণিত হয় আনোয়ার মিয়ার দুটি দ্রব্য উৎপাদনের যথেষ্ট অর্থনৈতিক তাৎপর্য রয়েছে।
প্রশ্ন- ৪  সম্পদের শ্রেণিবিভাগ ও দ্রব্য

রানার লেখা কবিতা সাপ্তাহিক ম্যাগাজিনে প্রকাশিত হওয়ায় বন্ধুরা তার অনেক প্রশংসা করল। রানার বাবাও খুব খুশি হলো এবং তাকে একটি নতুন ড্রেস কিনে দিল। এতে রানা খুব আনন্দিত হলো।
[কামরুন্নেসা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, ঢাকা]
ক. সঞ্চয় কী? ১
খ. অর্থনৈতিক কার্যাবলি কাকে বলে? ব্যাখ্যা কর। ২
গ. রানার বাবা রানাকে যে উপহারটি দেয় সেটি অর্থনীতিতে কী ধরনের দ্রব্য? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. রানার কাজটি কী সম্পদ? তোমার উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দাও। ৪

ক বর্তমান আয়ের যে অংশ ভোগ না করে মানুষ ভবিষ্যতের জন্য রেখে দেয় তা-ই সঞ্চয়।
খ অর্থনৈতিক কার্যাবলি বলতে মানুষের জীবিকা সংগ্রহের জন্য সম্পাদিত কার্যাবলিকে বোঝায়। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে মানুষ অর্থ উপার্জন করে এবং জীবনধারণের জন্য তা ব্যয় করে। যেমন শ্রমিকরা কলকারখানায় কাজ করে, কৃষকরা জমিতে কাজ করে, ডাক্তার রোগীর চিকিৎসা করে প্রভৃতি। এগুলো সবই অর্থনৈতিক কার্যাবলি।
গ রানার বাবা রানাকে উপহার হিসেবে যে নতুন ড্রেসটি কিনে দেয়, অর্থনীতিতে তা ভোগ্য দ্রব্য নামে পরিচিত। মানুষের অভাব মেটানোর ক্ষমতাসম্পন্ন বস্তুগত ও অবস্তুগত সব জিনিসকে আমরা অর্থনৈতিক দ্রব্য বলে থাকি। অর্থাৎ যে জিনিসের উপযোগ আছে অর্থনীতিতে তাই দ্রব্য। এসব দ্রব্যকে অভাব মেটানোর ক্ষমতানুযায়ী বিভিন্ন ভাগে ভাগ করা হয়েছে। ভোগ্যদ্রব্য এর মধ্যে একটি। ভোগ বা ব্যবহারের মাধ্যমে যেসব দ্রব্যের উপযোগ নিঃশেষ করা হয়, তাদেরকে ভোগ্যদ্রব্য বলে। যেমন- গাড়ি, বস্ত্র প্রভৃতি। উদ্দীপকে রানার বাবা তার কাজে খুশি হয়ে ছেলেকে একটি ড্রেস কিনে দিয়েছে। এই দ্রব্যটি ব্যবহার বা ভোগের মাধ্যমে এর উপযোগ নিঃশেষ হবে। তাই অর্থনীতির দৃষ্টিতে এ দ্রব্যটি একটি ভোগ্যদ্রব্য।
ঘ অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে রানার কাজটি সম্পদ নয়, তবে এটি এক ধরনের মানবিক সম্পদ। অর্থনীতিতে চারটি বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন বস্তুগত বা অবস্তুগত দ্রব্যসামগ্রীকে সম্পদ বলা হয়। এগুলো হলো- উপযোগ, অপ্রাচুর্যতা, হস্তান্তরযোগ্যতা এবং বাহ্যিকতা। কিন্তু রানার কাজটির এ চারটি বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায় না। রানা একজন প্রতিভাবান ছাত্র। তার লেখা কবিতা ম্যাগাজিনে প্রকাশিত হয়েছে। কবিতা লেখার কাজটি এক ধরনের যোগ্যতা বা দক্ষতা। এটি হস্তান্তরযোগ্য নয় বা এর কোনো বাহ্যিকতা নেই। তাই অর্থনীতিতে এটি সম্পদ নয়। তবে মানুষের বিভিন্ন প্রকার যোগ্যতা বা দক্ষতাকে মানবিক সম্পদ বলা হয়, যেমন- শারীরিক যোগ্যতা, প্রতিভা, উদ্যোগ, দক্ষতা, সাংগঠনিক ক্ষমতা ইত্যাদি। এই দৃষ্টিকোণ থেকে রানার কাজটিকে মানবিক সম্পদ বলা যেতে পারে। পরিশেষে বলা যায়, সম্পদ হওয়ার বৈশিষ্ট্যগুলো না থাকার কারণে রানার কাজটি অর্থনীতিতে সম্পদ নয়।
 মাস্টার ট্রেইনার প্রণীত সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন- ৫  সম্পদের শ্রেণিবিভাগ

রূপগঞ্জ উপজেলার মেধাবী ছাত্র জহির খান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলা বিভাগ থেকে এমএ পাস করেন। তিনি বহুমুখী গুণসম্পন্ন একজন মানুষ। তবে কবিতা লেখায় তিনি অত্যন্ত পারদর্শী। বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ষিক কবিতা উৎসবে তিনি বরাবরই প্রথম হতেন। একটি বেসরকারি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রভাষক হিসেবে তিনি কর্মজীবন শুরু করেন। পরবর্তীতে নিজ উদ্যোগে রূপগঞ্জে একটি কলেজ স্থাপন করে স্থায়ীভাবে সবার দৃষ্টি ও মনে স্থান করে নেন।
ক. অর্থনীতিতে সম্পদ কী? ১
খ. সম্পদের একটি প্রধান বৈশিষ্ট্য ব্যাখ্যা কর। ২
গ. জহির খানের কবিতা লেখার পারদর্শিতা কোন ধরনের সম্পদ? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. ‘জহির খানের স্থাপিত কলেজটি একটি উৎপাদিত সম্পদ’- মন্তব্যটির সত্যতা যাচাই কর। ৪

ক যেসব জিনিস বা দ্রব্য পেতে হলে অর্থ ব্যয় করতে হয় অর্থনীতিতে তাই সম্পদ।
খ উপযোগ সম্পদের প্রধান বৈশিষ্ট্য। কোনো দ্রব্যের অভাব মোচনের ক্ষমতাকে উপযোগ বলে। অর্থাৎ উপযোগ বলতে কোনো দ্রব্যের উপকারিতাকে বোঝায়। যেকোনো দ্রব্য তা বস্তুগত বা অবস্তুগত হোক, তা যদি মানুষের কোনো অভাব পূরণ করতে পারে তা হলে বোঝা যায়, দ্রব্যটির উপযোগ আছে। যেমন- খাদ্য, বস্ত্র, বইপত্র, কলম ইত্যাদি।
গ জহির খানের প্রতিভা মানবিক সম্পদ। উৎপত্তিগত দিক দিয়ে সম্পদের যে শ্রেণিবিভাগ করা হয়েছে তার মধ্যে মানবিক সম্পদ একটি। মানুষের মানবীয় গুণাবলিকে মানবিক সম্পদ বলা হয়। যেমন- শারীরিক যোগ্যতা, প্রতিভা, উদ্যোগ, দক্ষতা, সাংগঠনিক ক্ষমতা ইত্যাদি। এগুলোর হস্তান্তরযোগ্যতা ও বাহ্যিকতা না থাকার কারণে অর্থনীতিতে সম্পদ হিসেবে গণ্য না হলেও মানবিক সম্পদ বলে বিবেচ্য। উদ্দীপকে জহির খান বহুমুখী গুণসম্পন্ন একজন মানুষ। তিনি কবিতা লেখায় অত্যন্ত পারদর্শী। বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ষিক কবিতা উৎসবে তিনি বরাবরই প্রথম স্থান অধিকার করতেন। তার এ পারদর্শিতা তার ব্যক্তিগত প্রতিভা, আর এটি মানবীয় গুণাবলির অন্তর্ভুক্ত। তাই জহির খানের কবিতা লেখার পারদর্শিতা মানবিক সম্পদ।
ঘ ‘জহির খানের স্থাপিত কলেজটি একটি উৎপাদিত সম্পদ’- মন্তব্যটি সঠিক। উৎপত্তিগত দিক থেকে সম্পদের যে শ্রেণিবিভাগ করা হয় তার মধ্যে উৎপাদিত সম্পদ একটি। প্রাকৃতিক ও মানবিক সম্পদ কাজে লাগিয়ে যে সম্পদ সৃষ্টি হয় তাকে উৎপাদিত সম্পদ বা মানুষের তৈরি সম্পদ বলা হয়। যেমন : কাঁচামাল, যন্ত্রপাতি, কলকারখানা, যাতায়াত ও যোগাযোগ ব্যবস্থা, স্বাস্থ্যকেন্দ্র ইত্যাদি। উদ্দীপকে জহির খান একজন মেধাবী মানুষ। তিনি বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী। তার এই মেধা ও প্রতিভা মানবিক সম্পদ। বার্ষিক কবিতা উৎসবে এ সম্পদ ব্যবহার করে তিনি প্রথম স্থান অধিকার করেছেন। উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রভাষক হিসেবে কর্মরত অবস্থায়ও তিনি এই মানবিক সম্পদ ব্যবহার করেছেন। অবশেষে এই ব্যবহৃত সম্পদের ফলে তিনি যে অভিজ্ঞতা অর্জন করেন সে অভিজ্ঞতার আলোকে তিনি নিজ এলাকায় কলেজ স্থাপন করেন। কলেজটি যেখানে স্থাপন করা হয় সেই ভ‚মি বা জমি একটি প্রাকৃতিক সম্পদ। আর আমরা জানি মানবিক ও প্রাকৃতিক সম্পদ কাজে লাগিয়ে যে সম্পদ সৃষ্টি হয় তা হলো উৎপাদিত সম্পদ। উপরিউক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায়, জহির খানের স্থাপিত কলেজটি একটি উৎপাদিত সম্পদ।

প্রশ্ন- ৬  বাংলাদেশের অর্থনৈতিক কার্যাবলি

মি. শিহাব একটি খাবার হোটেলের মালিক। এটি পুরনো ঢাকার নাজিম উদ্দিন রোডে অবস্থিত। তার হোটেলের খাবারের গুণগত মান এবং সার্বিক পরিবেশ অত্যন্ত ভালো। ঢাকার এই অঞ্চলে মি. শিহাব সততা এবং সুনামের সাথে প্রায় ২০ বছর ধরে ব্যবসা চালিয়ে আসছেন। এ সময়ের মধ্যে ব্যবসা করে মি. শিহাব তার সম্পদের বৃদ্ধি ঘটিয়েছেন। বর্তমানে তার হোটেলে প্রায় ৪০ জন লোক কাজ করে। মি. শিহাবের যে সম্পদ রয়েছে তা ব্যবহার করে তিনি তার হোটেল ব্যবসাকে আরো প্রসারিত করতে চান।
ক. উৎপত্তির দিক থেকে সম্পদ কত প্রকার? ১
খ. ব্যক্তিগত সম্পদ বলতে কী বোঝায়? ২
গ. অর্থনৈতিক সম্পদের বৈশিষ্ট্যের আলোকে শিহাব সাহেবের ব্যবসার সুনাম ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. মি. শিহাবের খাবারের হোটেল কি অর্থনৈতিক সম্পদ? উত্তরের পক্ষে যুক্তি দাও। ৪

ক উৎপত্তির দিক থেকে সম্পদ ৩ প্রকার।
খ ব্যক্তিগত সম্পদ বলতে ব্যক্তির নিজ মালিকানাধীন সকল সম্পদকে বোঝায়। যেমনÑ নিজস্ব জমি, ঘরবাড়ি, আসবাবপত্র, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সুনাম ইত্যাদি ব্যক্তিগত সম্পদের অন্তর্ভুক্ত। ব্যক্তিগত সম্পদের ওপর ব্যক্তির মালিকানা বা অধিকার বজায় থাকে। ব্যক্তি ইচ্ছা করলে এ সম্পত্তি বিক্রি, দান বা নিজে ভোগ করতে পারেন।
গ শিহাবের ব্যবসায়ের সুনামে অর্থনৈতিক সম্পদের সবকটি বৈশিষ্ট্য উপস্থিত আছে।
অর্থনীতিতে যেসব দ্রব্যসামগ্রীর উপযোগ আছে, যার যোগান সীমাবদ্ধ, যা হস্তান্তরযোগ্য এবং যার বাহ্যিকতা আছে তাকে সম্পদ বলে। কোনো ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান একবার সুনাম অর্জন করতে পারলে, সেই সুনামের ওপর ভিত্তি করে তার অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বা দৈনন্দিন লেনদেন আগের তুলনায় অনেক গুণ বেড়ে যায়। শিহাবের ব্যবসায়ের প্রতিষ্ঠানটি হলো খাবার হোটেল। সুনাম বৃদ্ধির অর্থ তার পণ্যের গুণগত মান ভালো। এ গুণগত মানের জন্যই ক্রেতারা অধিক পরিমাণে খাবার ক্রয় করেছে, যা তার অধিক মুনাফা অর্জনের জন্য অত্যন্ত সহায়ক। কোনো কারণে যদি শিহাবের হোটেলটির মালিকানা হস্তান্তরও হয়, তবুও তার প্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তন করে নতুন নাম রাখার ঝুঁকি নতুন মালিক নেবেন না। কারণ এ নামটিই তার সম্পদ। এই প্রতিষ্ঠানের নামের সুনামকে পুঁজি করেই পরবর্তী ব্যবসায় আরও প্রসারিত হয়। তাই অর্থনৈতিক বৈশিষ্ট্যের বিচারে শিহাবের ব্যবসায়ের সুনামে সম্পদের সবকটি বৈশিষ্ট্যই উপস্থিত রয়েছে।
ঘ মি. শিহাবের খাবারের হোটেল একটি অর্থনৈতিক সম্পদ। অর্থনীতিতে সম্পদ বলতে যেসব দ্রব্যসামগ্রীকে বোঝায়, সেগুলো পেতে গেলে অর্থ ব্যয় করতে হয়। যেমন- ঘরবাড়ি, আসবাবপত্র, টিভি ইত্যাদি দৃশ্যমান বা বস্তুগত সম্পদ এবং ডাক্তারের সেবা অদৃশ্যমান বা অবস্তুগত সম্পদ। সম্পদের উল্লিখিত সংজ্ঞার আলোকে যেসব দ্রব্যের উপযোগ নেই অর্থের বিনিময়ে ক্রয়-বিক্রয়যোগ্য নয় তা সম্পদ হতে পারে না। মি. শিহাবের হোটেল ব্যবসায়ের উপযোগ আছে তা অর্থের বিনিময়ে ক্রয়-বিক্রয়যোগ্য। কাজেই তার খাবারের হোটেলকে সম্পদ হিসেবে গণ্য করা যায়। আবার কোনো দ্রব্য সম্পদ হতে হলে তার যোগান চাহিদার তুলনায় অপর্যাপ্ত হতে হবে। মি. শিহাবের হোটেল ব্যবসায় চাহিদার তুলনায় অপর্যাপ্ত হওয়ায় তা সম্পদ। মি. শিহাবের খাবারের হোটেলের মালিকানা হস্তান্তরযোগ্য। কাজেই তার হোটেলের মালিকানা পরিবর্তন করা যাবে বলে তা সম্পদ। দ্রব্য বাহ্যিক হলে তা হস্তান্তরযোগ্য হয় এবং সম্পদ হিসেবে গণ্য হয়। যেহেতু মি. শিহাবের ব্যবসায়ের সুনাম, হোটেলের আসবাবপত্র প্রভৃতি হস্তান্তরযোগ্য কাজেই তা সম্পদ।
উপর্যুক্ত যুক্তির আলোকে প্রতীয়মান হয়, মি. শিহাবের হোটেল ব্যবসায় একটি অর্থনৈতিক সম্পদ।
প্রশ্ন- ৭  বাংলাদেশের অর্থনৈতিক কার্যাবলি

সীমার ‘মা’ একজন নার্স। তিনি একটি শিশু হাসপাতালে কাজ করেন। দিন শেষে বাড়ি ফিরে এসে তার দুই মেয়ে সীমা ও রীমাকে দেখাশোনা করেন।
ক. মজুরি কী? ১
খ. সঞ্চয় ও বিনিয়োগের মধ্যে পার্থক্য ব্যাখ্যা কর। ২
গ. সীমার মায়ের পেশাটি কী ধরনের কাজ? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. সীমার মায়ের সন্তানদের দেখাশোনা করা এবং হাসপাতালে শিশুদের দেখাশোনা করার মাঝে কোনো পার্থক্য আছে কি? যৌক্তিক মতামত প্রদান কর। ৪

ক শ্রমের জন্য প্রাপ্ত আয়কে মজুরি বলে।
খ মানুষ আয়ের যে অংশ বর্তমান ভোগের জন্য ব্যয় না করে ভবিষ্যতের জন্য জমা রাখে তাকে সঞ্চয় বলে। আর সঞ্চিত অর্থ যখন উৎপাদন বৃদ্ধির কাজে ব্যবহৃত হয় তখন তাকে বিনিয়োগ বলে। অর্থাৎ আয় হতে ভোগের জন্য বাদ দেওয়ার পর যা অবশিষ্ট থাকে তাই হলো সঞ্চয়। অন্যদিকে সঞ্চয়কৃত অর্থ বা সম্পদ উৎপাদনের কাজে ব্যবহৃত হওয়া বিনিয়োগ। এদিক থেকে সঞ্চয় ও বিনিয়োগের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে।
গ সীমার মায়ের পেশাটি একটি অর্থনৈতিক কাজ। মানুষ জীবিকা সংগ্রহের জন্য যেসব কাজ করে থাকে তাকে অর্থনৈতিক কাজ বলা হয়। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে মানুষ অর্থ উপার্জন করে এবং জীবনধারণের জন্য তা ব্যয় করে। হাসপাতালে রোগীদের চিকিৎসা সেবা প্রদানও এমনই একটি অর্থনৈতিক কাজ। উদ্দীপকে সীমার মা একজন নার্স। তিনি একটি শিশু হাসপাতালে রোগীদের সেবা প্রদানের কাজে নিয়োজিত। তার এ কাজটি একটি অর্থনৈতিক কাজ। কেননা, তিনি হাসপাতালে ভর্তিকৃত শিশুদের প্রয়োজনীয় পরিচর্যা ও চিকিৎসা সেবা প্রদানের কাজ করেছেন। ডাক্তারদের সুপারিশকৃত ওষুধ ও পথ্য রোগীদের সেবন করানোর কাজটি তিনিই করেন। এছাড়া তারা আদর যতœ ও রোগীদের দ্রæত সুস্থ করে তোলায় ভ‚মিকা রাখে। এর বিনিময়ে তিনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে মাসিক বেতন-ভাতাদি পেয়ে থাকেন, যা তার জীবিকা অর্জনের মাধ্যম হিসেবে কাজ করছে। কাজেই সীমার মায়ের হাসপাতালে কাজ করার মূল লক্ষ্য হলো জীবিকা সংগ্রহ করা, যা তার কাজটিকে অর্থনৈতিক কাজের মর্যাদা দান করেছে।
ঘ সীমার মায়ের সন্তানদের দেখাশোনা করা এবং হাসপাতালে শিশুদের দেখাশোনা করা ভিন্ন ধরনের কাজের অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় উক্ত কাজের মধ্যে পার্থক্য বিদ্যমান। সন্তান প্রতিপালন একটি অ-অর্থনৈতিক কাজ। কেননা এ কাজের মধ্য দিয়ে মা-বাবার স্নেহের দিকটি প্রকাশিত হয়। কিন্তু কাজটির মূল লক্ষ্য জীবিকা সংগ্রহ না হওয়ায় তা অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বহিভর্‚ত। পক্ষান্তরে হাসপাতালে দায়িত্ব পালনের মূল উদ্দেশ্য জীবিকা সংগ্রহ করা। এ কারণে এ কাজটি অর্থনৈতিক কাজ হিসেবে পরিগণিত। সীমার মায়ের কর্মকাণ্ডে উপরিউক্ত দুই ধরনের কাজই প্রতিফলিত হয়। উদ্দীপকে দেখা যায়, সীমার মা একটি শিশু হাসপাতালে কাজ করেন। পেশাগত দায়িত্ব পালনের অংশ হিসেবে সেখানে চিকিৎসা সেবা নেওয়ার উদ্দেশ্যে আগত শিশুদের দেখাশোনা করার কাজ করতে হয় তাকে। পাশাপাশি তিনি হাসপাতালের কাজ শেষে বাড়ি ফিরে এসে নিজের দুটি মেয়ে সীমা ও রীমাকে দেখাশোনা করেন। তার শেষোক্ত কাজটি স্বাভাবিক মাতৃসুলভ দায়িত্ববোধেরই পরিচায়ক। কাজেই সীমার মাকে বাড়িতে ও হাসপাতালে উভয়ক্ষেত্রেই শিশুদের দেখাশোনার কাজ করতে দেখা যায়। কিন্তু নিজের মেয়েদের দেখাশোনা করা তার পারিবারিক কাজ তথা অ-অর্থনৈতিক কাজের বহিঃপ্রকাশ। কারণ এ কাজের বিনিময়ে তিনি কোনো পারিশ্রমিক পান না। অন্যদিকে হাসপাতালে শিশুদের দেখাশোনার কাজের বিনিময়ে তিনি পারিশ্রমিক পান। উপরিউক্ত আলোচনায় দেখা যায়, সীমার মায়ের পারিবারিক ও পেশাগত কাজের ধরন একই রকমের হলেও অর্থনৈতিক বিচারে উভয়ের মধ্যে বিস্তর পার্থক্য বিদ্যমান।

প্রশ্ন- ৮  খনিজ সম্পদ

আলম একজন হোটেলের মালিক। তার হোটেলে রান্নার কাজে গ্যাস ব্যবহার করা হয়। যখন ভোক্তারা হোটেলে চা-নাস্তা খান তখন গ্যাসের চুলা চালু করেন। ভোক্তা না থাকলে চুলা বন্ধ রাখেন। আলম কোনোভাবেই তার অপচয় করতে চান না। তিনি মনে করেন, গ্যাসের অপচয়রোধের জন্য প্রয়োজন তার যথাযথ ও সচেতন ব্যবহার।
ক. প্রাকৃতিক সম্পদ কী? ১
খ. খনিজ সম্পদ বলতে কী বোঝায়? ২
গ. আলম যে সম্পদটির অপচয় রোধে সচেতন সেটি বাংলাদেশের কোন ধরনের সম্পদ? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. বাংলাদেশে উক্ত প্রকৃতির সম্পদের মধ্যে আলমের ব্যবহৃত সম্পদটি ছাড়া আরও কোনো সম্পদ আছে কি? উত্তরের পক্ষে যুক্তি দাও। ৪

ক প্রকৃতির কাছ থেকে প্রাপ্ত যেসব সম্পদ মানুষের প্রয়োজন মেটায় তাই প্রাকৃতিক সম্পদ।
খ প্রাকৃতিক গ্যাস, কয়লা, খনিজ তেল ইত্যাদির মতো প্রকৃতির যে সব দান ভ‚গর্ভ থেকে আহরণ করা হয় তাই খনিজ সম্পদ। বাংলাদেশ খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধ নয়। এখানে এ পর্যন্ত যেসব খনিজ সম্পদ আবিষ্কৃত হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে প্রাকৃতিক গ্যাস, চুনাপাথর, চীনামাটি, কয়লা, কঠিন শিলা, সিলিকা বালু, গন্ধক, খনিজ তেল ও তামা।
গ আলম যে সম্পদটির অপচয় রোধে সচেতন সেটি বাংলাদেশের একটি খনিজ সম্পদ। প্রাকৃতিক গ্যাস বাংলাদেশের প্রধান খনিজ সম্পদ। এ পর্যন্ত দেশে ২৫টি গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কৃত হয়েছে। বর্তমানে কেবল ১৯টি গ্যাসক্ষেত্র থেকে গ্যাস উত্তোলিত হচ্ছে। এ গ্যাস রাসায়নিক সার তৈরিতে কাঁচামালরূপে ব্যবহৃত হয়। এছাড়া বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রে, কলকারখানায় ও গৃহে এ গ্যাস জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত হয়। আলম তার হোটেলের রান্নার কাজে গ্যাস সম্পদটি ব্যবহার করে থাকেন। প্রয়োজনের সময় তিনি গ্যাসের চুলা চালু রাখেন। এছাড়া চুলা বন্ধ রেখে তিনি এ গ্যাসের অপচয় রোধ করেন। এ সম্পদটি মাটির নিচের খনি থেকে আহরণ করা হয় বলে এটি খনিজ সম্পদ।
ঘ আলমের ব্যবহৃত সম্পদটি অর্থাৎ গ্যাস হলো খনিজ সম্পদ। গ্যাস ছাড়াও বাংলাদেশে বিভিন্ন ধরনের খনিজ সম্পদ রয়েছে। যেমন :
১. চীনামাটি : এটি বাসনপত্র, সেনিটারি দ্রব্য তৈরির জন্য ব্যবহৃত হয়।
২. সিলিকা বালু : এটি কাচ, রং, রাসায়নিক দ্রব্য তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।
৩. গন্ধক : বারুদ তৈরি, দিয়াশলাই কারখানা, তেল পরিশোধন প্রভৃতি ক্ষেত্রে গন্ধক প্রয়োজন হয়।
৪. খনিজ তেল : সিলেটের হরিপুরে খনিজ তেলের সন্ধান পাওয়া গেছে। কলকারখানায় তাপবিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য এটি ব্যবহার হয়।
৫. তামা : বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি ও তার, মুদ্রা প্রভৃতি তৈরির জন্য তামা ব্যবহার করা হয়।
উপরিউক্ত আলোচনায় দেখা যায়, আলমের ব্যবহৃত গ্যাস জাতীয় খনিজ সম্পদ ছাড়াও বাংলাদেশে নানা ধরনের খনিজ সম্পদ রয়েছে, যা আমাদের বহুমুখী প্রয়োজন মেটাচ্ছে।

প্রশ্ন- ৯  আয়, সঞ্চয় ও বিনিয়োগ

আহসান দীর্ঘদিন যাবৎ একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি করেন। এখান থেকে তিনি প্রতি মাসে ২০,০০০ টাকা বেতন পান। এই বেতনের টাকা থেকে তিনি ৮,০০০ টাকা ব্যাংকে জমা রাখেন এবং ১২,০০০ টাকা খরচ করেন। তার বাবা কিছুদিন আগে ১ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি মৎস্য প্রজেক্ট হাতে নেন। আহসান তার ব্যাংকে জমাকৃত টাকা থেকে বাবার প্রজেক্টে এক লাখ টাকা খরচ করেন। তার বিশ্বাস এতে তার বাবার প্রজেক্টের মৎস্য উৎপাদন বাড়বে।
ক. আয় কী? ১
খ. পানিকে মৌলিক সম্পদ বলা হয় কেন? ২
গ. আহসানের ব্যাংকে টাকা জমানোকে অর্থনীতির ভাষায় কী বলে? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. বাবার প্রজেক্টে আহসানের টাকা খরচ করাকে বিনিয়োগ বলা যায় কি? এর পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন কর। ৪

ক উৎপাদনের কোনো উপকরণ ব্যবহারের জন্য উপকরণটি বা এটির মালিক একটি নির্দিষ্ট সময়ে যে অর্থ পায় তাকে আয় বলে।
খ প্রাণী ও উদ্ভিদের জীবনধারণের জন্য অপরিহার্য হওয়ায় পানিকে মৌলিক সম্পদ বলা হয়। পানি আমাদের কৃষির জন্য অপরিহার্য। পানির যোগান কম হলে কৃষিকাজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এছাড়া আমাদের অসংখ্য নদনদী, খালবিল ও জলাশয়কে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে এদেশের যাতায়াত ব্যবস্থা। মোটকথা, দেশের কৃষিজ, বনজ, প্রাণিজ ও শক্তি সম্পদের অস্তিত্ব রক্ষা ও উন্নয়নের জন্য পানি সম্পদ অত্যন্ত প্রয়োজন। তাই পানিকে মৌলিক সম্পদ বলা হয়।
গ আহসানের ব্যাংকে টাকা জমানোকে অর্থনীতির ভাষায় সঞ্চয় বলে। মানুষ তার আয়ের যে অংশ বর্তমান ভোগের জন্য ব্যয় না করে ভবিষ্যতের জন্য জমা রাখে তাকে সঞ্চয় বলে। অর্থাৎ ব্যয়যোগ্য আয় থেকে দ্রব্য ও সেবা বাবদ ব্যয় বাদ দিলে যা থাকে তা যদি আয় = ণ, ভোগ ব্যয় = ঈ এবং সঞ্চয় = ঝ হয় তাহলে সঞ্চয় হলো ঝ = ণ  ঈ এক্ষেত্রে তখনই সঞ্চয় হবে যখন ণ  ঈ হবে। এটি প্রধানত আয়ের পরিমাণ, পারিবারিক দায়িত্ববোধ দূরদৃষ্টি ইত্যাদির ওপর নির্ভর করে। উদ্দীপকে আহসান মাসে ২০,০০০ টাকা বেতন পান। এই বেতনের টাকা থেকে তিনি ১২,০০০ টাকা খরচ করেন এবং ৮,০০০ টাকা ব্যাংকে জমা রাখেন। টাকা জমা রাখার কারণে তার বর্তমান ভোগ হ্রাস পেলেও ভবিষ্যতের নিরাপত্তা ও বিনিয়োগের সুযোগ বেড়ে যায়। তার এই জমা রাখা টাকাকে সঞ্চয় বলা হয়।
ঘ বাবার প্রজেক্টে আহসানের টাকা খরচ করাকে বিনিয়োগ বলা যায়। মানুষ আয় থেকে সঞ্চয় করে। এই সঞ্চিত অর্থ যখন উৎপাদন বাড়ানোর কাজে ব্যবহৃত হয় তখন তাকে বিনিয়োগ বলে। যেমন : একটি নির্দিষ্ট সময়ে একটি কারখানায় এক লাখ টাকার মূলধন সামগ্রী আছে। উৎপাদন বাড়ানোর জন্য আরও পঞ্চাশ হাজার টাকা ঐ কারখানায় ব্যবহৃত হলো। অতিরিক্ত এ পঞ্চাশ হাজার টাকা হলো বিনিয়োগ। এর মাধ্যমে উৎপাদনের পরিমাণ বাড়ে এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব। উদ্দীপকে আহসান মাসে ২০,০০০ টাকা আয় করে। এই আয় থেকে তিনি ১২,০০০ টাকা খরচ করে এবং ৮,০০০ টাকা ব্যাংকে জমা রাখেন। তার এ জমাকৃত টাকাকে সঞ্চয় বলা হয়। এদিকে তার বাবা এক লাখ টাকা ব্যয়ে একটি মৎস্য প্রজেক্ট করেন। এই প্রজেক্টে উৎপাদন বাড়ানোর জন্য আহসান তার সঞ্চয় থেকে এক লাখ টাকা খরচ করেন। এতে তার বাবার প্রজেক্টের মৎস্য উৎপাদন বাড়বে এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব হবে। উপর্যুক্ত আলোচনায় প্রমাণিত হয়, বাবার প্রজেক্টে আহসানের টাকা খরচ করাকে বিনিয়োগ বলা যায়।

প্রশ্ন- ১০  সম্পদের শ্রেণিবিভাগ

রিয়াদ একজন দক্ষ কম্পিউটার টেকনিশিয়ান। সে যে কোনো কম্পিউটারের সমস্যা হলে খুব সহজেই তা মেরামত করতে পারে। সে এ দক্ষতা কারিগরি শিক্ষালাভের মাধ্যমে অর্জন করেছে। একবার তার বন্ধু মিজানের কম্পিউটারের হার্ডডিস্কে সমস্যা হলে সে গিয়ে মেরামত করে দিয়ে আসে।
ক. তাপ বিদ্যুৎ কাকে বলে? ১
খ. বাংলাদেশের প্রাণিজ সম্পদের বর্ণনা দাও। ২
গ. উদ্দীপকের রিয়াদের কাছে কী ধরনের সম্পদ রয়েছে? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. রিয়াদের সম্পদকে কি অর্থনৈতিক সম্পদ বলা যায়? যুক্তিসহ মতামত দাও। ৪

ক গ্যাস, তেল কয়লার সাহায্যে যে বিদ্যুৎ উৎপাদন হয় তাকে তাপ বিদ্যুৎ বলে।
খ প্রাণিজ সম্পদ বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। বাংলাদেশের সর্বত্র বিভিন্ন প্রজাতির পশুপাখি দেখা যায়। গৃহপালিত পশুপাখির মধ্যে গরু, ছাগল, ভেড়া, মহিষ, হাঁস, মুরগি প্রধান। এছাড়া সুন্দরবন ও পার্বত্য চট্টগ্রামের বনাঞ্চলে রয়েছে বাঘ, হাতি, হরিণ প্রভৃতি মূল্যবান জীবজন্তু ও অসংখ্য প্রজাতির পাখি। আবার নদনদী, বিল, হাওড়, পুকুর ইত্যাদি জলাশয় এবং বঙ্গোপসাগরে বিভিন্ন রকম মাছ পাওয়া যায়।
গ উদ্দীপকের রিয়াদের মানবিক সম্পদ রয়েছে। অর্থনীতিতে সম্পদ হলো সেসব জিনিস বা দ্রব্য যেগুলো পেতে চাইলে অর্থ ব্যয় করতে হয়। সম্পদকে বিভিন্ন শ্রেণিতে বিভক্ত করা যায়। এর মধ্যে উৎপত্তির দিক থেকে সম্পদ তিন প্রকার। উদ্দীপকের রিয়াদের সম্পদটি সম্পদের উৎপত্তিগত শ্রেণিবিভাগের মানবিক সম্পদের অন্তর্ভুক্ত। কেননা, মানুষের মানবীয় গুণাবলিকে মানবিক সম্পদ বলা হয়। যেমন শারীরিক যোগ্যতা, প্রতিভা, উদ্যোগ, দক্ষতা, সাংগঠনিক ক্ষমতা ইত্যাদি মানবিক সম্পদ। উদ্দীপকে দেখা যায়, রিয়াদ একজন সুদক্ষ কম্পিউটার টেকনিশিয়ান। কম্পিউটারের যেকোনো সমস্যা সে খুব দ্রæত মেরামত করতে পারে। এ দক্ষতা সে কারিগরি শিক্ষালাভের মাধ্যমে অর্জন করেছে। উপরিউক্ত আলোচনা থেকে বলা যায়, রিয়াদের সম্পদ মানবিক সম্পদ।
ঘ রিয়াদের সম্পদকে অর্থনৈতিক সম্পদ বলা যায় না। অর্থনীতিতে কোনো জিনিসকে সম্পদ হতে হলে তার চারটি বৈশিষ্ট্য থাকা আবশ্যক। প্রথমত, উপযোগ : কোনো জিনিসের উপযোগ বলতে দ্রব্যের মানুষের প্রয়োজন বা অভাব মেটানোর ক্ষমতাকে বোঝায়। কোনো দ্রব্য সম্পদ হতে হলে দ্রব্যের উপযোগ সৃষ্টির ক্ষমতা থাকতে হবে। দ্বিতীয়ত, অপ্রাচুর্যতা : কোনো দ্রব্য সম্পদ হতে হলে তার পরিমাণ ও যোগান সীমিত থাকতে হবে। তৃতীয়ত, হস্তান্তরযোগ্যতা : হস্তান্তরযোগ্যতা বলতে বোঝায়, হাত বদল হওয়া। অর্থাৎ যে দ্রব্যের মালিকানা বদল বা পরিবর্তন করা যায় তাই হলো সম্পদ। যার হস্তান্তরযোগ্যতা নেই অর্থনীতিতে তাকে সম্পদ বলা হয় না। চতুর্থত, বাহ্যিকতা : যেসব দ্রব্য মানুষের অভ্যন্তরীণ গুণ বোঝায় তা অর্থনীতির ভাষায় সম্পদ নয়। কেননা, এর কোনো বাহ্যিক অস্তিত্ব নেই। যেমন কোনো ব্যক্তির কম্পিউটারের ওপর বিশেষ অভিজ্ঞতা বা জ্ঞান কিংবা কারো চারিত্রিক গুণাবলিকে সম্পদ বলা হয় না। উপর্যুক্ত আলোচনা থেকে দেখা যায়, অর্থনৈতিক সম্পদের চারটি বৈশিষ্ট্যের মধ্যে উদ্দীপকের রিয়াদের সম্পদ দুটি বৈশিষ্ট্য- উপযোগ ও অপ্রাচুর্যতা পূরণ করতে সক্ষম হলেও বাকি দুটি বৈশিষ্ট্য- হস্তান্তরযোগ্যতা ও বাহ্যিকতা পূরণ করতে অক্ষম। তাই রিয়াদের সম্পদকে অর্থনৈতিক সম্পদ বলা যায় না।

বোর্ড ও সেরা স্কুলের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন- ১  অর্থনৈতিক সম্পদ

আবেদ একজন চা বিক্রেতা। শেখাহার বাজারে প্রতিদিন চা বিক্রয় করে জীবিকা নির্বাহ করে। সন্তানেরা প্রতিদিন টিভি দেখার জন্য পাশের বাড়িতে যায়। এতে তার মন খারাপ হয়। নির্বাচনের কারণে গত কয়েকদিন ভালো চা বিক্রয় হওয়ায় সন্তানেরা টিভির জন্য বায়না ধরে। সে একটি টিভি ক্রয় করে। [স. বো. ’১৬]
ক. প্রাকৃতিক সম্পদ কী? ১
খ. হস্তান্তরযোগ্যতা বলতে কী বুঝায়? ২
গ. প্রথমদিকে আবেদ টিভি ক্রয় করতে সক্ষম হয়নি কেন? অর্থনীতির ভাষায় তা ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. উদ্দীপকে বর্ণিত ক্রয়কৃত টিভিটি কী অর্থনীতিতে সম্পদ? যুক্তিসহ উপস্থাপন কর। ৪

ক প্রকৃতির কাছ থেকে প্রাপ্ত যেসব সম্পদ মানুষের প্রয়োজন মেটায় তাই প্রাকৃতিক সম্পদ।
খ সম্পদের একটি বৈশিষ্ট্য হলো এর হস্তান্তরযোগ্যতা। হস্তান্তরযোগ্য বলতে বোঝায় হাত বদল হওয়া। অর্থাৎ যে দ্রব্যের মালিকানা বদল বা পরিবর্তন করা যায় তাই হলো সম্পদ। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রতিভাকে অর্থনীতির ভাষায় সম্পদ বলা যাবে না। কারণ তার প্রতিভাকে হস্তান্তর বা মালিকানা বদল করা সম্ভব নয়। আবার টিভির মালিকানা বদল করা যায় বলে টিভি সম্পদ।
গ প্রথমদিকে আবেদ প্রয়োজনীয় আর্থিক সামর্থ্যরে অভাবে টিভি ক্রয় করতে সক্ষম হয়নি। এক্ষেত্রে অর্থনীতির ভাষায় বলা যায়, আবেদ চাহিদার অভাবে টিভি ক্রয় করতে সক্ষম হয়নি। উদ্দীপকে চা বিক্রেতা আবেদের প্রথমদিকেও টিভি কেনার আকাক্সক্ষা ছিল। কেননা তার সন্তানেরা প্রতিদিন টিভি দেখার জন্য পাশের বাড়িতে গেলে তার মন খারাপ হয়। কিন্তু অর্থনীতির ভাষায় আমাদের সব আকাক্সক্ষাই চাহিদা নয়। অর্থনীতিতে চাহিদা হতে হলে তিনটি শর্ত পূরণ করতে হয়। যেমন ১. কোনো দ্রব্য পাওয়ার ইচ্ছা বা আকাক্সক্ষা, ২. ক্রয়ের জন্য প্রয়োজনীয় আর্থিক সামর্থ্য এবং ৩. অর্থ ব্যয় করে দ্রব্যটি ক্রয়ের ইচ্ছা। সুতরাং, ক্রেতার একটি পণ্য নির্দিষ্ট সময়ে কেনার আকাক্সক্ষা, সামর্থ্য এবং নির্দিষ্ট মূল্যে দ্রব্যটি ক্রয় করার ইচ্ছা থাকলে তাকে অর্থনীতিতে চাহিদা (উবসধহফ) বলে। উদ্দীপকে আবেদের টিভি ক্রয়ের আকাক্সক্ষা ও ইচ্ছা ছিল কিন্তু সামর্থ্য ছিল না।
ঘ উদ্দীপকে বর্ণিত ক্রয়কৃত টিভিটি অর্থনীতিতে সম্পদ। কোনো জিনিসকে যদি অর্থনীতিতে সম্পদ বলতে হয় তবে তার চারটি বৈশিষ্ট্য থাকা আবশ্যক। বৈশিষ্ট্যগুলো হলো ১. উপযোগ : উপযোগ বলতে বোঝায় কোনো দ্রব্যের মানুষের অভাব মেটানোর ক্ষমতা। কোনো দ্রব্য সম্পদ হতে হলে সেই দ্রব্যের উপযোগ সৃষ্টির ক্ষমতা থাকতে হবে। টিভি দেখার উপযোগ মানুষের রয়েছে। ২. অপ্রাচুর্যতা : কোনো দ্রব্য সম্পদ হতে হলে তার পরিমাণ ও যোগান সীমিত থাকবে। যেমন : নদীর পানি, বাতাস প্রভৃতির যোগান প্রচুর। এগুলো সম্পদ নয়। এক্ষেত্রে টিভি চাইলেই প্রচুর পাওয়া সম্ভব নয়। অর্থাৎ টিভি আমাদের কাছে অপর্যাপ্ত দ্রব্য। ৩. হস্তান্তরযোগ্য : সম্পদের একটি বৈশিষ্ট্য হলো এর হস্তান্তরযোগ্যতা। হস্তান্তরযোগ্য বলতে বোঝায় হাত বদল হওয়া। অর্থাৎ যে দ্রব্যের মালিকানা বদল বা পরিবর্তন করা যায় তাই হলো সম্পদ। যেমন : উদ্দীপকে আবেদ টিভি ক্রয় করে তার মালিক হয়েছে। ৪. বাহ্যিকতা : যে সমস্ত দ্রব্য মানুষের অভ্যন্তরীণ গুণ বোঝায় তা অর্থনীতির ভাষায় সম্পদ নয়। টিভির বাহ্যিক অস্তিত্ব রয়েছে। সুতরাং, সম্পদের চারটি বৈশিষ্ট্যই পূরণ করে বলে টিভি অর্থনীতিতে সম্পদ।

প্রশ্ন- ২  অর্থনৈতিক ও অ-অর্থনৈতিক কার্যাবলি

স্বল্পশিক্ষিত শামীমা তার দুই ছেলে ও দুই মেয়ের লালনপালন ও পারিবারিক যাবতীয় কাজ দেখাশুনা করত। তার স্বামী একটি কারখানায় কাজ করত। স্বামীর আকস্মিক মৃত্যুর পর শামীমা আর্থিক সংকট দূর করার জন্য উক্ত কারখানায় কাজে যোগদান করে। [স. বো. ’১৫]
ক. বিনিয়োগ কী? ১
খ. সঞ্চয় বলতে কী বোঝায়? ব্যাখ্যা কর। ২
গ. শামীমা প্রাথমিক পর্যায়ে যে সকল কাজ করত, সেগুলো কোন ধরনের কার্যাবলির অন্তর্ভুক্ত? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. দৃশ্যকল্প অনুযায়ী শামীমার পরবর্তী কাজটিই “অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের মূল প্রেরণা” উক্তিটির যথার্থতা প্রমাণ করে মতামত দাও। ৪

ক মানুষ কর্তৃক সঞ্চিত অর্থ যখন উৎপাদন বাড়ানোর কাজে ব্যবহৃত হয় তখন তাকে বিনিয়োগ বলে।
খ মানুষ আয় করে ভোগ করার জন্য। ভবিষ্যতের কথা ভেবে বর্তমানে অর্জিত আয়ের পুরোটাই মানুষ ভোগ করে না। আয়ের একটি অংশ রেখে দেয় কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠানে। এই রেখে দেওয়া অংশের নাম সঞ্চয়। সঞ্চয়ের ধারণাটি সমীকরণ দিয়ে বোঝানো যায়। যেমন : ঝ = ণ – ঈ (যখন ণ  ঈ)
এখানে, ঝ = সঞ্চয়, ণ = আয়, ঈ = ভোগ ব্যয়।
ব্যক্তির সঞ্চয় নির্ভর করে মূলত আয়ের পরিমাণ, পারিবারিক দায়িত্ববোধ, দূরদৃষ্টি, সামাজিক নিরাপত্তা এবং সুদের হারের ওপর।
গ শামীমা প্রাথমিক পর্যায়ে যেসব কাজ করত তা অ-অর্থনৈতিক কার্যাবলির অন্তর্ভুক্ত। যে সমস্ত অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে অর্থ উপার্জিত হয় না এবং তা জীবনধারণের জন্য ব্যয় করা যায় না তাকে অ-অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বলা হয়। এ ধরনের কর্মকাণ্ড মানুষের অভাব পূরণ করলেও অর্থ উপার্জনে ভ‚মিকা রাখতে পারে না। যেমন : পিতামাতার সন্তান লালনপালন, শখের বশে খেলাধুলা করা ইত্যাদি অ-অর্থনৈতিক কাজের উদাহরণ। উদ্দীপকে স্বল্পশিক্ষিত শামীমাও প্রাথমিক পর্যায়ে তার দুই ছেলে ও দুই মেয়ের লালনপালন ও পারিবারিক যাবতীয় কাজ দেখাশুনা করত। যার সাথে অর্থ উপার্জনের কোনো সম্পর্ক নেই। তাই শামীমার প্রাথমিক পর্যায়ের কাজগুলো অ-অর্থনৈতিক কার্যাবলির অন্তর্ভুক্ত।
ঘ দৃশ্যকল্প অনুযায়ী শামীমার পরবর্তী কাজটি “অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের মূল প্রেরণা। এক্ষেত্রে আমরা দেখি স্বামীর আকস্মিক মৃত্যুর পর শামীমা আর্থিক সংকট দূর করার জন্য কারখানায় কাজে যোগদান করে। অর্থাৎ আর্থিক সংকট দূর করাই “অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের মূল প্রেরণা”। বেঁচে থাকার জন্য মানুষ নানাবিধ কাজ করে। এসব কাজের মূল লক্ষ্য হলো জীবিকা সংগ্রহ করা। জীবিকার জন্য কেউ কল-কারখানায়, কেউ অফিস বা কেউ জমিতে কাজ করে। মানুষ জীবিকা সংগ্রহের জন্য যে কার্যাবলি করে থাকে তাকে অর্থনৈতিক কার্যাবলি বলা হয়। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে মানুষ অর্থ উপার্জন করে এবং জীবন ধারণের জন্য তা ব্যয় করে। যেমন : শ্রমিকরা কলকারখানায় কাজ করে, কৃষকরা জমিতে কাজ করে, ডাক্তার রোগীদের চিকিৎসা করে, শিল্পপতিরা শিল্পপ্রতিষ্ঠান পরিচালনা করেÑ এগুলো হলো অর্থনৈতিক কাজ। মানুষের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের মূল প্রেরণা হলো দ্রব্যসামগ্রীর অভাব পূরণ করা। এক্ষেত্রে অর্থই মাধ্যম। তাই এভাবেও বলা যায়, মানুষের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের মূল প্রেরণা আর্থিক সংকট দূর করা। দৃশ্যকল্পে যা শামীমার পরবর্তী কাজে ধরা পড়েছে।

প্রশ্ন- ৩  সুযোগ ব্যয় ও নির্বাচন

আনোয়ার মিয়ার ৫ বিঘা জমি আছে। এই জমিতে ৪০ মণ ধান অথবা ২০ মণ পাট উৎপাদন করতে পারেন। কিন্তু তার দুটোই চাই। এ কারণে তিনি ২০ মণ ধান এবং ১০ মণ পাট উৎপাদনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
[বরিশাল সরকারি বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়]
ক. সুন্দরবনের আয়তন কত? ১
খ. বাংলাদেশের প্রাকৃতিক গ্যাসের অবস্থান, মজুদ ও ব্যবহারের বর্ণনা দাও। ২
গ. আনোয়ার মিয়ার ধান-পাট উৎপাদনের ধারণাটি চিত্রে উপস্থাপন করে ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. আনোয়ার মিয়ার দুটি দ্রব্য উৎপাদনের অর্থনৈতিক তাৎপর্য বিশ্লেষণ কর। ৪

ক সুন্দরবনের আয়তন ৬,০১৭ বর্গকিলোমিটার।
খ প্রাকৃতিক গ্যাস বাংলাদেশের প্রধান খনিজ সম্পদ। বাংলাদেশে এ পর্যন্ত ২৫টি গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কৃত হয়েছে। এখানে গ্যাসের মোট মজুদ প্রায় ১৬ বিলিয়ন ঘনফুট। বর্তমানে কেবল ১৯টি গ্যাসক্ষেত্র থেকে গ্যাস উত্তোলিত হচ্ছে। এ গ্যাস রাসায়নিক সার তৈরিতে কাঁচামালরূপে ব্যবহৃত হয়। এছাড়া বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রে, কলকারখানা ও গৃহে এ গ্যাস জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
গ আনোয়ার মিয়া ৫ বিঘা জমিতে ৪০ মণ ধান অথবা ২০ মণ পাট উৎপাদন করতে পারেন। এই দুটি দ্রব্যের মধ্যে যেকোনো একটিকে বেছে নেওয়া হলো ‘সুযোগ ব্যয়’। কিন্তু আনোয়ার মিয়া দুটি দ্রব্যই উৎপাদন করতে চান। এক্ষেত্রে দুটি দ্রব্য উৎপাদন করার ধারণাই হলো নির্বাচন। আনোয়ার মিয়ার ধান-পাট উৎপাদনের ধারণার চিত্রটি নি¤œরূপ :

চিত্রে ঙঢ অক্ষে ধান এবং ঙণ অক্ষে পাট দেখানো হয়েছে।
আনোয়ার মিয়ার সব সম্পদ যদি পাট উৎপাদনের জন্য ব্যয় করা হয় তবে ঙঅ পরিমাণ পাট অর্থাৎ ২০ মণ পাট উৎপাদন করতে পারবেন। আবার যদি শুধু ধান উৎপাদন করতে চান তবে ঙই পরিমাণ ধান অর্থাৎ ৪০ মণ ধান উৎপাদন করতে পারবেন। অ ও ই বিন্দু সংযোগকারী অই রেখাটি হলো উৎপাদন সম্ভাবনা রেখা বা চৎড়ফঁপঃরড়হ চড়ংরনরষরঃু ঈঁৎাব। এক্ষেত্রে আনোয়ার মিয়া ধান ও পাট দুটিই উৎপাদন করতে চায়। তাই তিনি পুরো সম্পদ ব্যয় করে ঙঘ পরিমাণ পাট। অর্থাৎ ১০ মণ পাট এবং ঙগ পরিমাণ ধান অর্থাৎ ২০ মণ ধান উৎপাদন করতে পারবেন। উৎপাদন সম্ভাবনা রেখা ক বিন্দু এই অবস্থা দেখায়। আনোয়ার মিয়া ইচ্ছে করলে পাটের পরিমাণ কমিয়ে ঘ১ এবং ধানের উৎপাদন বাড়িয়ে ঙগ১ উৎপাদন করতে পারেন।
ঘ আনোয়ার মিয়ার ধান ও পাট উৎপাদনের অর্থনৈতিক তাৎপর্য রয়েছে। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে কৃষি তথা ধান ও পাট উৎপাদনের ধারণাটির কার্যকারিতা অর্থবহ এবং ফলপ্রসূ। মানুষের জীবনে অভাব অসীম, কিন্তু তা পূরণের জন্য প্রয়োজনীয় সম্পদ নিতান্তই কম। সম্পদের এ সীমাবদ্ধতার জন্য মানুষ কিছু অভাব পূরণ করলে অন্যগুলো তার হাতছাড়া হয়। কিন্তু সুন্দরভাবে জীবনযাপনের জন্য অনেক অভাব পূরণের প্রয়োজন পড়ে। সেক্ষেত্রেও মানুষ অভাব নির্বাচন করে। অভাব নির্বাচন করতে গিয়ে যেগুলো অধিক প্রয়োজন সে অভাবগুলো মানুষ আগে পূরণ করে। এক্ষেত্রেও মানুষ অনেক সমস্যার সম্মুখীন হয়। সম্পদ কম বলে তাকে অধিক প্রয়োজনীয় অভাবের মধ্যেও অভাব নির্বাচন করতে হয়। কিন্তু অতি প্রয়োজনীয় অভাবগুলোর মধ্যে একটির বদলে অন্য অভাবটি পূরণ করে। এর ফলে জীবন সুন্দর ও স্বাচ্ছন্দ্যপূর্ণ হয়। এ অবস্থার প্রেক্ষিতে দেখা যায়, মানুষ দুটি প্রয়োজনীয় অভাবের মধ্যে একটিকে বাদ দিয়ে অন্যটি পূরণের চেষ্টা করে না বরং সে তার সীমিত অর্থ দিয়ে দুটি দ্রব্যের অভাবই অল্প অল্প করে পূরণ করে। উপর্যুক্ত আলোচনায় প্রমাণিত হয় আনোয়ার মিয়ার দুটি দ্রব্য উৎপাদনের যথেষ্ট অর্থনৈতিক তাৎপর্য রয়েছে।
প্রশ্ন- ৪  সম্পদের শ্রেণিবিভাগ ও দ্রব্য

রানার লেখা কবিতা সাপ্তাহিক ম্যাগাজিনে প্রকাশিত হওয়ায় বন্ধুরা তার অনেক প্রশংসা করল। রানার বাবাও খুব খুশি হলো এবং তাকে একটি নতুন ড্রেস কিনে দিল। এতে রানা খুব আনন্দিত হলো।
[কামরুন্নেসা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, ঢাকা]
ক. সঞ্চয় কী? ১
খ. অর্থনৈতিক কার্যাবলি কাকে বলে? ব্যাখ্যা কর। ২
গ. রানার বাবা রানাকে যে উপহারটি দেয় সেটি অর্থনীতিতে কী ধরনের দ্রব্য? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. রানার কাজটি কী সম্পদ? তোমার উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দাও। ৪

ক বর্তমান আয়ের যে অংশ ভোগ না করে মানুষ ভবিষ্যতের জন্য রেখে দেয় তা-ই সঞ্চয়।
খ অর্থনৈতিক কার্যাবলি বলতে মানুষের জীবিকা সংগ্রহের জন্য সম্পাদিত কার্যাবলিকে বোঝায়। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে মানুষ অর্থ উপার্জন করে এবং জীবনধারণের জন্য তা ব্যয় করে। যেমন শ্রমিকরা কলকারখানায় কাজ করে, কৃষকরা জমিতে কাজ করে, ডাক্তার রোগীর চিকিৎসা করে প্রভৃতি। এগুলো সবই অর্থনৈতিক কার্যাবলি।
গ রানার বাবা রানাকে উপহার হিসেবে যে নতুন ড্রেসটি কিনে দেয়, অর্থনীতিতে তা ভোগ্য দ্রব্য নামে পরিচিত। মানুষের অভাব মেটানোর ক্ষমতাসম্পন্ন বস্তুগত ও অবস্তুগত সব জিনিসকে আমরা অর্থনৈতিক দ্রব্য বলে থাকি। অর্থাৎ যে জিনিসের উপযোগ আছে অর্থনীতিতে তাই দ্রব্য। এসব দ্রব্যকে অভাব মেটানোর ক্ষমতানুযায়ী বিভিন্ন ভাগে ভাগ করা হয়েছে। ভোগ্যদ্রব্য এর মধ্যে একটি। ভোগ বা ব্যবহারের মাধ্যমে যেসব দ্রব্যের উপযোগ নিঃশেষ করা হয়, তাদেরকে ভোগ্যদ্রব্য বলে। যেমন- গাড়ি, বস্ত্র প্রভৃতি। উদ্দীপকে রানার বাবা তার কাজে খুশি হয়ে ছেলেকে একটি ড্রেস কিনে দিয়েছে। এই দ্রব্যটি ব্যবহার বা ভোগের মাধ্যমে এর উপযোগ নিঃশেষ হবে। তাই অর্থনীতির দৃষ্টিতে এ দ্রব্যটি একটি ভোগ্যদ্রব্য।
ঘ অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে রানার কাজটি সম্পদ নয়, তবে এটি এক ধরনের মানবিক সম্পদ। অর্থনীতিতে চারটি বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন বস্তুগত বা অবস্তুগত দ্রব্যসামগ্রীকে সম্পদ বলা হয়। এগুলো হলো- উপযোগ, অপ্রাচুর্যতা, হস্তান্তরযোগ্যতা এবং বাহ্যিকতা। কিন্তু রানার কাজটির এ চারটি বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায় না। রানা একজন প্রতিভাবান ছাত্র। তার লেখা কবিতা ম্যাগাজিনে প্রকাশিত হয়েছে। কবিতা লেখার কাজটি এক ধরনের যোগ্যতা বা দক্ষতা। এটি হস্তান্তরযোগ্য নয় বা এর কোনো বাহ্যিকতা নেই। তাই অর্থনীতিতে এটি সম্পদ নয়। তবে মানুষের বিভিন্ন প্রকার যোগ্যতা বা দক্ষতাকে মানবিক সম্পদ বলা হয়, যেমন- শারীরিক যোগ্যতা, প্রতিভা, উদ্যোগ, দক্ষতা, সাংগঠনিক ক্ষমতা ইত্যাদি। এই দৃষ্টিকোণ থেকে রানার কাজটিকে মানবিক সম্পদ বলা যেতে পারে। পরিশেষে বলা যায়, সম্পদ হওয়ার বৈশিষ্ট্যগুলো না থাকার কারণে রানার কাজটি অর্থনীতিতে সম্পদ নয়।
 মাস্টার ট্রেইনার প্রণীত সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন- ৫  সম্পদের শ্রেণিবিভাগ

রূপগঞ্জ উপজেলার মেধাবী ছাত্র জহির খান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলা বিভাগ থেকে এমএ পাস করেন। তিনি বহুমুখী গুণসম্পন্ন একজন মানুষ। তবে কবিতা লেখায় তিনি অত্যন্ত পারদর্শী। বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ষিক কবিতা উৎসবে তিনি বরাবরই প্রথম হতেন। একটি বেসরকারি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রভাষক হিসেবে তিনি কর্মজীবন শুরু করেন। পরবর্তীতে নিজ উদ্যোগে রূপগঞ্জে একটি কলেজ স্থাপন করে স্থায়ীভাবে সবার দৃষ্টি ও মনে স্থান করে নেন।
ক. অর্থনীতিতে সম্পদ কী? ১
খ. সম্পদের একটি প্রধান বৈশিষ্ট্য ব্যাখ্যা কর। ২
গ. জহির খানের কবিতা লেখার পারদর্শিতা কোন ধরনের সম্পদ? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. ‘জহির খানের স্থাপিত কলেজটি একটি উৎপাদিত সম্পদ’- মন্তব্যটির সত্যতা যাচাই কর। ৪

ক যেসব জিনিস বা দ্রব্য পেতে হলে অর্থ ব্যয় করতে হয় অর্থনীতিতে তাই সম্পদ।
খ উপযোগ সম্পদের প্রধান বৈশিষ্ট্য। কোনো দ্রব্যের অভাব মোচনের ক্ষমতাকে উপযোগ বলে। অর্থাৎ উপযোগ বলতে কোনো দ্রব্যের উপকারিতাকে বোঝায়। যেকোনো দ্রব্য তা বস্তুগত বা অবস্তুগত হোক, তা যদি মানুষের কোনো অভাব পূরণ করতে পারে তা হলে বোঝা যায়, দ্রব্যটির উপযোগ আছে। যেমন- খাদ্য, বস্ত্র, বইপত্র, কলম ইত্যাদি।
গ জহির খানের প্রতিভা মানবিক সম্পদ। উৎপত্তিগত দিক দিয়ে সম্পদের যে শ্রেণিবিভাগ করা হয়েছে তার মধ্যে মানবিক সম্পদ একটি। মানুষের মানবীয় গুণাবলিকে মানবিক সম্পদ বলা হয়। যেমন- শারীরিক যোগ্যতা, প্রতিভা, উদ্যোগ, দক্ষতা, সাংগঠনিক ক্ষমতা ইত্যাদি। এগুলোর হস্তান্তরযোগ্যতা ও বাহ্যিকতা না থাকার কারণে অর্থনীতিতে সম্পদ হিসেবে গণ্য না হলেও মানবিক সম্পদ বলে বিবেচ্য। উদ্দীপকে জহির খান বহুমুখী গুণসম্পন্ন একজন মানুষ। তিনি কবিতা লেখায় অত্যন্ত পারদর্শী। বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ষিক কবিতা উৎসবে তিনি বরাবরই প্রথম স্থান অধিকার করতেন। তার এ পারদর্শিতা তার ব্যক্তিগত প্রতিভা, আর এটি মানবীয় গুণাবলির অন্তর্ভুক্ত। তাই জহির খানের কবিতা লেখার পারদর্শিতা মানবিক সম্পদ।
ঘ ‘জহির খানের স্থাপিত কলেজটি একটি উৎপাদিত সম্পদ’- মন্তব্যটি সঠিক। উৎপত্তিগত দিক থেকে সম্পদের যে শ্রেণিবিভাগ করা হয় তার মধ্যে উৎপাদিত সম্পদ একটি। প্রাকৃতিক ও মানবিক সম্পদ কাজে লাগিয়ে যে সম্পদ সৃষ্টি হয় তাকে উৎপাদিত সম্পদ বা মানুষের তৈরি সম্পদ বলা হয়। যেমন : কাঁচামাল, যন্ত্রপাতি, কলকারখানা, যাতায়াত ও যোগাযোগ ব্যবস্থা, স্বাস্থ্যকেন্দ্র ইত্যাদি। উদ্দীপকে জহির খান একজন মেধাবী মানুষ। তিনি বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী। তার এই মেধা ও প্রতিভা মানবিক সম্পদ। বার্ষিক কবিতা উৎসবে এ সম্পদ ব্যবহার করে তিনি প্রথম স্থান অধিকার করেছেন। উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রভাষক হিসেবে কর্মরত অবস্থায়ও তিনি এই মানবিক সম্পদ ব্যবহার করেছেন। অবশেষে এই ব্যবহৃত সম্পদের ফলে তিনি যে অভিজ্ঞতা অর্জন করেন সে অভিজ্ঞতার আলোকে তিনি নিজ এলাকায় কলেজ স্থাপন করেন। কলেজটি যেখানে স্থাপন করা হয় সেই ভ‚মি বা জমি একটি প্রাকৃতিক সম্পদ। আর আমরা জানি মানবিক ও প্রাকৃতিক সম্পদ কাজে লাগিয়ে যে সম্পদ সৃষ্টি হয় তা হলো উৎপাদিত সম্পদ। উপরিউক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায়, জহির খানের স্থাপিত কলেজটি একটি উৎপাদিত সম্পদ।

প্রশ্ন- ৬  বাংলাদেশের অর্থনৈতিক কার্যাবলি

মি. শিহাব একটি খাবার হোটেলের মালিক। এটি পুরনো ঢাকার নাজিম উদ্দিন রোডে অবস্থিত। তার হোটেলের খাবারের গুণগত মান এবং সার্বিক পরিবেশ অত্যন্ত ভালো। ঢাকার এই অঞ্চলে মি. শিহাব সততা এবং সুনামের সাথে প্রায় ২০ বছর ধরে ব্যবসা চালিয়ে আসছেন। এ সময়ের মধ্যে ব্যবসা করে মি. শিহাব তার সম্পদের বৃদ্ধি ঘটিয়েছেন। বর্তমানে তার হোটেলে প্রায় ৪০ জন লোক কাজ করে। মি. শিহাবের যে সম্পদ রয়েছে তা ব্যবহার করে তিনি তার হোটেল ব্যবসাকে আরো প্রসারিত করতে চান।
ক. উৎপত্তির দিক থেকে সম্পদ কত প্রকার? ১
খ. ব্যক্তিগত সম্পদ বলতে কী বোঝায়? ২
গ. অর্থনৈতিক সম্পদের বৈশিষ্ট্যের আলোকে শিহাব সাহেবের ব্যবসার সুনাম ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. মি. শিহাবের খাবারের হোটেল কি অর্থনৈতিক সম্পদ? উত্তরের পক্ষে যুক্তি দাও। ৪

ক উৎপত্তির দিক থেকে সম্পদ ৩ প্রকার।
খ ব্যক্তিগত সম্পদ বলতে ব্যক্তির নিজ মালিকানাধীন সকল সম্পদকে বোঝায়। যেমনÑ নিজস্ব জমি, ঘরবাড়ি, আসবাবপত্র, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সুনাম ইত্যাদি ব্যক্তিগত সম্পদের অন্তর্ভুক্ত। ব্যক্তিগত সম্পদের ওপর ব্যক্তির মালিকানা বা অধিকার বজায় থাকে। ব্যক্তি ইচ্ছা করলে এ সম্পত্তি বিক্রি, দান বা নিজে ভোগ করতে পারেন।
গ শিহাবের ব্যবসায়ের সুনামে অর্থনৈতিক সম্পদের সবকটি বৈশিষ্ট্য উপস্থিত আছে।
অর্থনীতিতে যেসব দ্রব্যসামগ্রীর উপযোগ আছে, যার যোগান সীমাবদ্ধ, যা হস্তান্তরযোগ্য এবং যার বাহ্যিকতা আছে তাকে সম্পদ বলে। কোনো ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান একবার সুনাম অর্জন করতে পারলে, সেই সুনামের ওপর ভিত্তি করে তার অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বা দৈনন্দিন লেনদেন আগের তুলনায় অনেক গুণ বেড়ে যায়। শিহাবের ব্যবসায়ের প্রতিষ্ঠানটি হলো খাবার হোটেল। সুনাম বৃদ্ধির অর্থ তার পণ্যের গুণগত মান ভালো। এ গুণগত মানের জন্যই ক্রেতারা অধিক পরিমাণে খাবার ক্রয় করেছে, যা তার অধিক মুনাফা অর্জনের জন্য অত্যন্ত সহায়ক। কোনো কারণে যদি শিহাবের হোটেলটির মালিকানা হস্তান্তরও হয়, তবুও তার প্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তন করে নতুন নাম রাখার ঝুঁকি নতুন মালিক নেবেন না। কারণ এ নামটিই তার সম্পদ। এই প্রতিষ্ঠানের নামের সুনামকে পুঁজি করেই পরবর্তী ব্যবসায় আরও প্রসারিত হয়। তাই অর্থনৈতিক বৈশিষ্ট্যের বিচারে শিহাবের ব্যবসায়ের সুনামে সম্পদের সবকটি বৈশিষ্ট্যই উপস্থিত রয়েছে।
ঘ মি. শিহাবের খাবারের হোটেল একটি অর্থনৈতিক সম্পদ। অর্থনীতিতে সম্পদ বলতে যেসব দ্রব্যসামগ্রীকে বোঝায়, সেগুলো পেতে গেলে অর্থ ব্যয় করতে হয়। যেমন- ঘরবাড়ি, আসবাবপত্র, টিভি ইত্যাদি দৃশ্যমান বা বস্তুগত সম্পদ এবং ডাক্তারের সেবা অদৃশ্যমান বা অবস্তুগত সম্পদ। সম্পদের উল্লিখিত সংজ্ঞার আলোকে যেসব দ্রব্যের উপযোগ নেই অর্থের বিনিময়ে ক্রয়-বিক্রয়যোগ্য নয় তা সম্পদ হতে পারে না। মি. শিহাবের হোটেল ব্যবসায়ের উপযোগ আছে তা অর্থের বিনিময়ে ক্রয়-বিক্রয়যোগ্য। কাজেই তার খাবারের হোটেলকে সম্পদ হিসেবে গণ্য করা যায়। আবার কোনো দ্রব্য সম্পদ হতে হলে তার যোগান চাহিদার তুলনায় অপর্যাপ্ত হতে হবে। মি. শিহাবের হোটেল ব্যবসায় চাহিদার তুলনায় অপর্যাপ্ত হওয়ায় তা সম্পদ। মি. শিহাবের খাবারের হোটেলের মালিকানা হস্তান্তরযোগ্য। কাজেই তার হোটেলের মালিকানা পরিবর্তন করা যাবে বলে তা সম্পদ। দ্রব্য বাহ্যিক হলে তা হস্তান্তরযোগ্য হয় এবং সম্পদ হিসেবে গণ্য হয়। যেহেতু মি. শিহাবের ব্যবসায়ের সুনাম, হোটেলের আসবাবপত্র প্রভৃতি হস্তান্তরযোগ্য কাজেই তা সম্পদ।
উপর্যুক্ত যুক্তির আলোকে প্রতীয়মান হয়, মি. শিহাবের হোটেল ব্যবসায় একটি অর্থনৈতিক সম্পদ।
প্রশ্ন- ৭  বাংলাদেশের অর্থনৈতিক কার্যাবলি

সীমার ‘মা’ একজন নার্স। তিনি একটি শিশু হাসপাতালে কাজ করেন। দিন শেষে বাড়ি ফিরে এসে তার দুই মেয়ে সীমা ও রীমাকে দেখাশোনা করেন।
ক. মজুরি কী? ১
খ. সঞ্চয় ও বিনিয়োগের মধ্যে পার্থক্য ব্যাখ্যা কর। ২
গ. সীমার মায়ের পেশাটি কী ধরনের কাজ? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. সীমার মায়ের সন্তানদের দেখাশোনা করা এবং হাসপাতালে শিশুদের দেখাশোনা করার মাঝে কোনো পার্থক্য আছে কি? যৌক্তিক মতামত প্রদান কর। ৪

ক শ্রমের জন্য প্রাপ্ত আয়কে মজুরি বলে।
খ মানুষ আয়ের যে অংশ বর্তমান ভোগের জন্য ব্যয় না করে ভবিষ্যতের জন্য জমা রাখে তাকে সঞ্চয় বলে। আর সঞ্চিত অর্থ যখন উৎপাদন বৃদ্ধির কাজে ব্যবহৃত হয় তখন তাকে বিনিয়োগ বলে। অর্থাৎ আয় হতে ভোগের জন্য বাদ দেওয়ার পর যা অবশিষ্ট থাকে তাই হলো সঞ্চয়। অন্যদিকে সঞ্চয়কৃত অর্থ বা সম্পদ উৎপাদনের কাজে ব্যবহৃত হওয়া বিনিয়োগ। এদিক থেকে সঞ্চয় ও বিনিয়োগের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে।
গ সীমার মায়ের পেশাটি একটি অর্থনৈতিক কাজ। মানুষ জীবিকা সংগ্রহের জন্য যেসব কাজ করে থাকে তাকে অর্থনৈতিক কাজ বলা হয়। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে মানুষ অর্থ উপার্জন করে এবং জীবনধারণের জন্য তা ব্যয় করে। হাসপাতালে রোগীদের চিকিৎসা সেবা প্রদানও এমনই একটি অর্থনৈতিক কাজ। উদ্দীপকে সীমার মা একজন নার্স। তিনি একটি শিশু হাসপাতালে রোগীদের সেবা প্রদানের কাজে নিয়োজিত। তার এ কাজটি একটি অর্থনৈতিক কাজ। কেননা, তিনি হাসপাতালে ভর্তিকৃত শিশুদের প্রয়োজনীয় পরিচর্যা ও চিকিৎসা সেবা প্রদানের কাজ করেছেন। ডাক্তারদের সুপারিশকৃত ওষুধ ও পথ্য রোগীদের সেবন করানোর কাজটি তিনিই করেন। এছাড়া তারা আদর যতœ ও রোগীদের দ্রæত সুস্থ করে তোলায় ভ‚মিকা রাখে। এর বিনিময়ে তিনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে মাসিক বেতন-ভাতাদি পেয়ে থাকেন, যা তার জীবিকা অর্জনের মাধ্যম হিসেবে কাজ করছে। কাজেই সীমার মায়ের হাসপাতালে কাজ করার মূল লক্ষ্য হলো জীবিকা সংগ্রহ করা, যা তার কাজটিকে অর্থনৈতিক কাজের মর্যাদা দান করেছে।
ঘ সীমার মায়ের সন্তানদের দেখাশোনা করা এবং হাসপাতালে শিশুদের দেখাশোনা করা ভিন্ন ধরনের কাজের অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় উক্ত কাজের মধ্যে পার্থক্য বিদ্যমান। সন্তান প্রতিপালন একটি অ-অর্থনৈতিক কাজ। কেননা এ কাজের মধ্য দিয়ে মা-বাবার স্নেহের দিকটি প্রকাশিত হয়। কিন্তু কাজটির মূল লক্ষ্য জীবিকা সংগ্রহ না হওয়ায় তা অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বহিভর্‚ত। পক্ষান্তরে হাসপাতালে দায়িত্ব পালনের মূল উদ্দেশ্য জীবিকা সংগ্রহ করা। এ কারণে এ কাজটি অর্থনৈতিক কাজ হিসেবে পরিগণিত। সীমার মায়ের কর্মকাণ্ডে উপরিউক্ত দুই ধরনের কাজই প্রতিফলিত হয়। উদ্দীপকে দেখা যায়, সীমার মা একটি শিশু হাসপাতালে কাজ করেন। পেশাগত দায়িত্ব পালনের অংশ হিসেবে সেখানে চিকিৎসা সেবা নেওয়ার উদ্দেশ্যে আগত শিশুদের দেখাশোনা করার কাজ করতে হয় তাকে। পাশাপাশি তিনি হাসপাতালের কাজ শেষে বাড়ি ফিরে এসে নিজের দুটি মেয়ে সীমা ও রীমাকে দেখাশোনা করেন। তার শেষোক্ত কাজটি স্বাভাবিক মাতৃসুলভ দায়িত্ববোধেরই পরিচায়ক। কাজেই সীমার মাকে বাড়িতে ও হাসপাতালে উভয়ক্ষেত্রেই শিশুদের দেখাশোনার কাজ করতে দেখা যায়। কিন্তু নিজের মেয়েদের দেখাশোনা করা তার পারিবারিক কাজ তথা অ-অর্থনৈতিক কাজের বহিঃপ্রকাশ। কারণ এ কাজের বিনিময়ে তিনি কোনো পারিশ্রমিক পান না। অন্যদিকে হাসপাতালে শিশুদের দেখাশোনার কাজের বিনিময়ে তিনি পারিশ্রমিক পান। উপরিউক্ত আলোচনায় দেখা যায়, সীমার মায়ের পারিবারিক ও পেশাগত কাজের ধরন একই রকমের হলেও অর্থনৈতিক বিচারে উভয়ের মধ্যে বিস্তর পার্থক্য বিদ্যমান।

প্রশ্ন- ৮  খনিজ সম্পদ

আলম একজন হোটেলের মালিক। তার হোটেলে রান্নার কাজে গ্যাস ব্যবহার করা হয়। যখন ভোক্তারা হোটেলে চা-নাস্তা খান তখন গ্যাসের চুলা চালু করেন। ভোক্তা না থাকলে চুলা বন্ধ রাখেন। আলম কোনোভাবেই তার অপচয় করতে চান না। তিনি মনে করেন, গ্যাসের অপচয়রোধের জন্য প্রয়োজন তার যথাযথ ও সচেতন ব্যবহার।
ক. প্রাকৃতিক সম্পদ কী? ১
খ. খনিজ সম্পদ বলতে কী বোঝায়? ২
গ. আলম যে সম্পদটির অপচয় রোধে সচেতন সেটি বাংলাদেশের কোন ধরনের সম্পদ? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. বাংলাদেশে উক্ত প্রকৃতির সম্পদের মধ্যে আলমের ব্যবহৃত সম্পদটি ছাড়া আরও কোনো সম্পদ আছে কি? উত্তরের পক্ষে যুক্তি দাও। ৪

ক প্রকৃতির কাছ থেকে প্রাপ্ত যেসব সম্পদ মানুষের প্রয়োজন মেটায় তাই প্রাকৃতিক সম্পদ।
খ প্রাকৃতিক গ্যাস, কয়লা, খনিজ তেল ইত্যাদির মতো প্রকৃতির যে সব দান ভ‚গর্ভ থেকে আহরণ করা হয় তাই খনিজ সম্পদ। বাংলাদেশ খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধ নয়। এখানে এ পর্যন্ত যেসব খনিজ সম্পদ আবিষ্কৃত হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে প্রাকৃতিক গ্যাস, চুনাপাথর, চীনামাটি, কয়লা, কঠিন শিলা, সিলিকা বালু, গন্ধক, খনিজ তেল ও তামা।
গ আলম যে সম্পদটির অপচয় রোধে সচেতন সেটি বাংলাদেশের একটি খনিজ সম্পদ। প্রাকৃতিক গ্যাস বাংলাদেশের প্রধান খনিজ সম্পদ। এ পর্যন্ত দেশে ২৫টি গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কৃত হয়েছে। বর্তমানে কেবল ১৯টি গ্যাসক্ষেত্র থেকে গ্যাস উত্তোলিত হচ্ছে। এ গ্যাস রাসায়নিক সার তৈরিতে কাঁচামালরূপে ব্যবহৃত হয়। এছাড়া বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রে, কলকারখানায় ও গৃহে এ গ্যাস জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত হয়। আলম তার হোটেলের রান্নার কাজে গ্যাস সম্পদটি ব্যবহার করে থাকেন। প্রয়োজনের সময় তিনি গ্যাসের চুলা চালু রাখেন। এছাড়া চুলা বন্ধ রেখে তিনি এ গ্যাসের অপচয় রোধ করেন। এ সম্পদটি মাটির নিচের খনি থেকে আহরণ করা হয় বলে এটি খনিজ সম্পদ।
ঘ আলমের ব্যবহৃত সম্পদটি অর্থাৎ গ্যাস হলো খনিজ সম্পদ। গ্যাস ছাড়াও বাংলাদেশে বিভিন্ন ধরনের খনিজ সম্পদ রয়েছে। যেমন :
১. চীনামাটি : এটি বাসনপত্র, সেনিটারি দ্রব্য তৈরির জন্য ব্যবহৃত হয়।
২. সিলিকা বালু : এটি কাচ, রং, রাসায়নিক দ্রব্য তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।
৩. গন্ধক : বারুদ তৈরি, দিয়াশলাই কারখানা, তেল পরিশোধন প্রভৃতি ক্ষেত্রে গন্ধক প্রয়োজন হয়।
৪. খনিজ তেল : সিলেটের হরিপুরে খনিজ তেলের সন্ধান পাওয়া গেছে। কলকারখানায় তাপবিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য এটি ব্যবহার হয়।
৫. তামা : বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি ও তার, মুদ্রা প্রভৃতি তৈরির জন্য তামা ব্যবহার করা হয়।
উপরিউক্ত আলোচনায় দেখা যায়, আলমের ব্যবহৃত গ্যাস জাতীয় খনিজ সম্পদ ছাড়াও বাংলাদেশে নানা ধরনের খনিজ সম্পদ রয়েছে, যা আমাদের বহুমুখী প্রয়োজন মেটাচ্ছে।

প্রশ্ন- ৯  আয়, সঞ্চয় ও বিনিয়োগ

আহসান দীর্ঘদিন যাবৎ একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি করেন। এখান থেকে তিনি প্রতি মাসে ২০,০০০ টাকা বেতন পান। এই বেতনের টাকা থেকে তিনি ৮,০০০ টাকা ব্যাংকে জমা রাখেন এবং ১২,০০০ টাকা খরচ করেন। তার বাবা কিছুদিন আগে ১ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি মৎস্য প্রজেক্ট হাতে নেন। আহসান তার ব্যাংকে জমাকৃত টাকা থেকে বাবার প্রজেক্টে এক লাখ টাকা খরচ করেন। তার বিশ্বাস এতে তার বাবার প্রজেক্টের মৎস্য উৎপাদন বাড়বে।
ক. আয় কী? ১
খ. পানিকে মৌলিক সম্পদ বলা হয় কেন? ২
গ. আহসানের ব্যাংকে টাকা জমানোকে অর্থনীতির ভাষায় কী বলে? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. বাবার প্রজেক্টে আহসানের টাকা খরচ করাকে বিনিয়োগ বলা যায় কি? এর পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন কর। ৪

ক উৎপাদনের কোনো উপকরণ ব্যবহারের জন্য উপকরণটি বা এটির মালিক একটি নির্দিষ্ট সময়ে যে অর্থ পায় তাকে আয় বলে।
খ প্রাণী ও উদ্ভিদের জীবনধারণের জন্য অপরিহার্য হওয়ায় পানিকে মৌলিক সম্পদ বলা হয়। পানি আমাদের কৃষির জন্য অপরিহার্য। পানির যোগান কম হলে কৃষিকাজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এছাড়া আমাদের অসংখ্য নদনদী, খালবিল ও জলাশয়কে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে এদেশের যাতায়াত ব্যবস্থা। মোটকথা, দেশের কৃষিজ, বনজ, প্রাণিজ ও শক্তি সম্পদের অস্তিত্ব রক্ষা ও উন্নয়নের জন্য পানি সম্পদ অত্যন্ত প্রয়োজন। তাই পানিকে মৌলিক সম্পদ বলা হয়।
গ আহসানের ব্যাংকে টাকা জমানোকে অর্থনীতির ভাষায় সঞ্চয় বলে। মানুষ তার আয়ের যে অংশ বর্তমান ভোগের জন্য ব্যয় না করে ভবিষ্যতের জন্য জমা রাখে তাকে সঞ্চয় বলে। অর্থাৎ ব্যয়যোগ্য আয় থেকে দ্রব্য ও সেবা বাবদ ব্যয় বাদ দিলে যা থাকে তা যদি আয় = ণ, ভোগ ব্যয় = ঈ এবং সঞ্চয় = ঝ হয় তাহলে সঞ্চয় হলো ঝ = ণ  ঈ এক্ষেত্রে তখনই সঞ্চয় হবে যখন ণ  ঈ হবে। এটি প্রধানত আয়ের পরিমাণ, পারিবারিক দায়িত্ববোধ দূরদৃষ্টি ইত্যাদির ওপর নির্ভর করে। উদ্দীপকে আহসান মাসে ২০,০০০ টাকা বেতন পান। এই বেতনের টাকা থেকে তিনি ১২,০০০ টাকা খরচ করেন এবং ৮,০০০ টাকা ব্যাংকে জমা রাখেন। টাকা জমা রাখার কারণে তার বর্তমান ভোগ হ্রাস পেলেও ভবিষ্যতের নিরাপত্তা ও বিনিয়োগের সুযোগ বেড়ে যায়। তার এই জমা রাখা টাকাকে সঞ্চয় বলা হয়।
ঘ বাবার প্রজেক্টে আহসানের টাকা খরচ করাকে বিনিয়োগ বলা যায়। মানুষ আয় থেকে সঞ্চয় করে। এই সঞ্চিত অর্থ যখন উৎপাদন বাড়ানোর কাজে ব্যবহৃত হয় তখন তাকে বিনিয়োগ বলে। যেমন : একটি নির্দিষ্ট সময়ে একটি কারখানায় এক লাখ টাকার মূলধন সামগ্রী আছে। উৎপাদন বাড়ানোর জন্য আরও পঞ্চাশ হাজার টাকা ঐ কারখানায় ব্যবহৃত হলো। অতিরিক্ত এ পঞ্চাশ হাজার টাকা হলো বিনিয়োগ। এর মাধ্যমে উৎপাদনের পরিমাণ বাড়ে এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব। উদ্দীপকে আহসান মাসে ২০,০০০ টাকা আয় করে। এই আয় থেকে তিনি ১২,০০০ টাকা খরচ করে এবং ৮,০০০ টাকা ব্যাংকে জমা রাখেন। তার এ জমাকৃত টাকাকে সঞ্চয় বলা হয়। এদিকে তার বাবা এক লাখ টাকা ব্যয়ে একটি মৎস্য প্রজেক্ট করেন। এই প্রজেক্টে উৎপাদন বাড়ানোর জন্য আহসান তার সঞ্চয় থেকে এক লাখ টাকা খরচ করেন। এতে তার বাবার প্রজেক্টের মৎস্য উৎপাদন বাড়বে এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব হবে। উপর্যুক্ত আলোচনায় প্রমাণিত হয়, বাবার প্রজেক্টে আহসানের টাকা খরচ করাকে বিনিয়োগ বলা যায়।

প্রশ্ন- ১০  সম্পদের শ্রেণিবিভাগ

রিয়াদ একজন দক্ষ কম্পিউটার টেকনিশিয়ান। সে যে কোনো কম্পিউটারের সমস্যা হলে খুব সহজেই তা মেরামত করতে পারে। সে এ দক্ষতা কারিগরি শিক্ষালাভের মাধ্যমে অর্জন করেছে। একবার তার বন্ধু মিজানের কম্পিউটারের হার্ডডিস্কে সমস্যা হলে সে গিয়ে মেরামত করে দিয়ে আসে।
ক. তাপ বিদ্যুৎ কাকে বলে? ১
খ. বাংলাদেশের প্রাণিজ সম্পদের বর্ণনা দাও। ২
গ. উদ্দীপকের রিয়াদের কাছে কী ধরনের সম্পদ রয়েছে? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. রিয়াদের সম্পদকে কি অর্থনৈতিক সম্পদ বলা যায়? যুক্তিসহ মতামত দাও। ৪

ক গ্যাস, তেল কয়লার সাহায্যে যে বিদ্যুৎ উৎপাদন হয় তাকে তাপ বিদ্যুৎ বলে।
খ প্রাণিজ সম্পদ বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। বাংলাদেশের সর্বত্র বিভিন্ন প্রজাতির পশুপাখি দেখা যায়। গৃহপালিত পশুপাখির মধ্যে গরু, ছাগল, ভেড়া, মহিষ, হাঁস, মুরগি প্রধান। এছাড়া সুন্দরবন ও পার্বত্য চট্টগ্রামের বনাঞ্চলে রয়েছে বাঘ, হাতি, হরিণ প্রভৃতি মূল্যবান জীবজন্তু ও অসংখ্য প্রজাতির পাখি। আবার নদনদী, বিল, হাওড়, পুকুর ইত্যাদি জলাশয় এবং বঙ্গোপসাগরে বিভিন্ন রকম মাছ পাওয়া যায়।
গ উদ্দীপকের রিয়াদের মানবিক সম্পদ রয়েছে। অর্থনীতিতে সম্পদ হলো সেসব জিনিস বা দ্রব্য যেগুলো পেতে চাইলে অর্থ ব্যয় করতে হয়। সম্পদকে বিভিন্ন শ্রেণিতে বিভক্ত করা যায়। এর মধ্যে উৎপত্তির দিক থেকে সম্পদ তিন প্রকার। উদ্দীপকের রিয়াদের সম্পদটি সম্পদের উৎপত্তিগত শ্রেণিবিভাগের মানবিক সম্পদের অন্তর্ভুক্ত। কেননা, মানুষের মানবীয় গুণাবলিকে মানবিক সম্পদ বলা হয়। যেমন শারীরিক যোগ্যতা, প্রতিভা, উদ্যোগ, দক্ষতা, সাংগঠনিক ক্ষমতা ইত্যাদি মানবিক সম্পদ। উদ্দীপকে দেখা যায়, রিয়াদ একজন সুদক্ষ কম্পিউটার টেকনিশিয়ান। কম্পিউটারের যেকোনো সমস্যা সে খুব দ্রæত মেরামত করতে পারে। এ দক্ষতা সে কারিগরি শিক্ষালাভের মাধ্যমে অর্জন করেছে। উপরিউক্ত আলোচনা থেকে বলা যায়, রিয়াদের সম্পদ মানবিক সম্পদ।
ঘ রিয়াদের সম্পদকে অর্থনৈতিক সম্পদ বলা যায় না। অর্থনীতিতে কোনো জিনিসকে সম্পদ হতে হলে তার চারটি বৈশিষ্ট্য থাকা আবশ্যক। প্রথমত, উপযোগ : কোনো জিনিসের উপযোগ বলতে দ্রব্যের মানুষের প্রয়োজন বা অভাব মেটানোর ক্ষমতাকে বোঝায়। কোনো দ্রব্য সম্পদ হতে হলে দ্রব্যের উপযোগ সৃষ্টির ক্ষমতা থাকতে হবে। দ্বিতীয়ত, অপ্রাচুর্যতা : কোনো দ্রব্য সম্পদ হতে হলে তার পরিমাণ ও যোগান সীমিত থাকতে হবে। তৃতীয়ত, হস্তান্তরযোগ্যতা : হস্তান্তরযোগ্যতা বলতে বোঝায়, হাত বদল হওয়া। অর্থাৎ যে দ্রব্যের মালিকানা বদল বা পরিবর্তন করা যায় তাই হলো সম্পদ। যার হস্তান্তরযোগ্যতা নেই অর্থনীতিতে তাকে সম্পদ বলা হয় না। চতুর্থত, বাহ্যিকতা : যেসব দ্রব্য মানুষের অভ্যন্তরীণ গুণ বোঝায় তা অর্থনীতির ভাষায় সম্পদ নয়। কেননা, এর কোনো বাহ্যিক অস্তিত্ব নেই। যেমন কোনো ব্যক্তির কম্পিউটারের ওপর বিশেষ অভিজ্ঞতা বা জ্ঞান কিংবা কারো চারিত্রিক গুণাবলিকে সম্পদ বলা হয় না। উপর্যুক্ত আলোচনা থেকে দেখা যায়, অর্থনৈতিক সম্পদের চারটি বৈশিষ্ট্যের মধ্যে উদ্দীপকের রিয়াদের সম্পদ দুটি বৈশিষ্ট্য- উপযোগ ও অপ্রাচুর্যতা পূরণ করতে সক্ষম হলেও বাকি দুটি বৈশিষ্ট্য- হস্তান্তরযোগ্যতা ও বাহ্যিকতা পূরণ করতে অক্ষম। তাই রিয়াদের সম্পদকে অর্থনৈতিক সম্পদ বলা যায় না।

 জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর 
প্রশ্ন \ ১ \ উপযোগ কাকে বলে?
উত্তর : কোনো দ্রব্যের মানুষের অভাব মেটানোর ক্ষমতাকে উপযোগ বলে।
প্রশ্ন \ ২ \ মানবিক সম্পদ কাকে বলে?
উত্তর : মানুষের বিভিন্ন প্রকার দক্ষতা ও যোগ্যতাকে মানবিক সম্পদ বলা হয়।
প্রশ্ন \ ৩ \ বাংলাদেশের জাতীয় আয়ের কত ভাগ কৃষি থেকে আসে?
উত্তর : বাংলাদেশের জাতীয় আয়ের ১৩ ভাগ কৃষি থেকে আসে।
প্রশ্ন \ ৪ \ বাংলাদেশের প্রধান খনিজ সম্পদ কী?
উত্তর : বাংলাদেশের প্রধান খনিজ সম্পদ হচ্ছে প্রাকৃতিক গ্যাস।
প্রশ্ন \ ৫ \ রাসায়নিক দ্রব্য তৈরিতে কোনটি ব্যবহার করা হয়?
উত্তর : রাসায়নিক দ্রব্য তৈরিতে সিলিকা বালু ব্যবহার করা হয়।
প্রশ্ন \ ৬ \ বাংলাদেশে কতভাগ বনভূমি রয়েছে?
উত্তর : বাংলাদেশে শতকরা ১৭ ভাগ বনভ‚মি রয়েছে।
প্রশ্ন \ ৭ \ বাংলাদেশের কৃষি জমিতে প্রচুর পরিমাণে ফসল উৎপাদনের প্রধান কারণ কী?
উত্তর : পলিসমৃদ্ধ উর্বর ভ‚মির কারণে এদেশের জমিতে প্রচুর পরিমাণে ফসল উৎপাদন সম্ভব হয়।
প্রশ্ন \ ৮ \ রাসায়নিক সার তৈরিতে কাঁচামাল হিসেবে কোনটি ব্যবহার করা হয়?
উত্তর : রাসায়নিক সার তৈরিতে কাঁচামাল হিসাবে ব্যবহার করা হয় প্রাকৃতিক গ্যাস, বিশেষ করে মিথেন গ্যাস।
প্রশ্ন \ ৯ \ এ পর্যন্ত বাংলাদেশে মোট কয়টি গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কৃত হয়েছে?
উত্তর : এ পর্যন্ত বাংলাদেশে মোট ২৫টি গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কৃত হয়েছে।
প্রশ্ন \ ১০ \ বর্তমানে বাংলাদেশে কয়টি গ্যাসক্ষেত্র থেকে গ্যাস উত্তোলিত হচ্ছে?
উত্তর : বর্তমানে বাংলাদেশে ১৯টি গ্যাসক্ষেত্র থেকে গ্যাস উত্তোলিত হচ্ছে।
প্রশ্ন \ ১১ \ বেলাবো গ্যাসক্ষেত্রটি কোথায় অবস্থিত?
উত্তর : বেলাবো গ্যাসক্ষেত্রটি নরসিংদীতে অবস্থিত।
প্রশ্ন \ ১২ \ বাংলাদেশের ভ‚খণ্ডে কমপক্ষে কতভাগ বনাঞ্চল থাকা দরকার?
উত্তর : বাংলাদেশের ভ‚খণ্ডে কমপক্ষে ২৫ ভাগ বনাঞ্চল থাকা দরকার।
প্রশ্ন \ ১৩ \ স¤প্রতি কোথায় কয়লা উত্তোলন করা হচ্ছে?
উত্তর : স¤প্রতি দিনাজপুরের বড় পুকুরিয়ায় কয়লা উত্তোলন করা হচ্ছে।
প্রশ্ন \ ১৪ \ আমেরিকায় শতকরা কতভাগ বনভ‚মি রয়েছে?
উত্তর : আমেরিকায় শতকরা ৩৪ ভাগ বনভ‚মি রয়েছে।
প্রশ্ন \ ১৫ \ জাপানে শতকরা কতভাগ বনাঞ্চল রয়েছে?
উত্তর : জাপানে শতকরা ৬৩ ভাগ বনাঞ্চল রয়েছে।
প্রশ্ন \ ১৬ \ বার্মায় শতকরা কত ভাগ বনাঞ্চল রয়েছে?
উত্তর : বার্মায় শতকরা ৬৭ ভাগ বনাঞ্চল রয়েছে।
প্রশ্ন \ ১৭ \ ভারতে শতকরা কতভাগ বনাঞ্চল রয়েছে?
উত্তর : ভারতে শতকরা ২২ ভাগ বনাঞ্চল রয়েছে।
প্রশ্ন \ ১৮ \ দিনাজপুর ও রংপুরের বনভ‚মির আয়তন কত?
উত্তর : দিনাজপুর ও রংপুরের বনভ‚মির আয়তন প্রায় ৩৯ বর্গকিলোমিটার।
প্রশ্ন \ ১৯ \ মধুপুর ও ভাওয়াল বনভ‚মির আয়তন কত?
উত্তর : মধুপুর ও ভাওয়াল বনভ‚মির আয়তন প্রায় ১০৬৪ বর্গকিলোমিটার।
প্রশ্ন \ ২০ \ স্থায়ী ভোগ্য দ্রব্য কাকে বলে?
উত্তর : যেসব ভোগ্যদ্রব্য দীর্ঘকাল ধরে ভোগ করা যায় তাকে স্থায়ী ভোগ্য দ্রব্য বলে।
প্রশ্ন \ ২১ \ বাংলাদেশের একমাত্র জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি কোথায় অবস্থিত?
উত্তর : পার্বত্য চট্টগ্রামের কাপ্তাই নামক স্থানে কর্ণফুলি নদীর তীরে বাংলাদেশের একমাত্র জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি অবস্থিত।
প্রশ্ন \ ২২ \ বাংলাদেশের কোথায় পেট্রোলিয়ামের সন্ধান পাওয়া গেছে?
উত্তর : বাংলাদেশের সিলেটের হরিপুরে পেট্রোলিয়ামের সন্ধান পাওয়া গেছে।
প্রশ্ন \ ২৩ \ ভেড়ামারা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি কোথায় অবস্থিত?
উত্তর : ভেড়ামারা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি কুষ্টিয়ায় অবস্থিত।
প্রশ্ন \ ২৪ \ ঘোড়াশাল তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি কোথায় অবস্থিত?
উত্তর : ঘোড়াশাল তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি নরসিংদিতে অবস্থিত।
প্রশ্ন \ ২৫ \ গোয়ালপাড়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি কোথায় অবস্থিত?
উত্তর : গোয়ালপাড়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি খুলনায় অবস্থিত।
প্রশ্ন \ ২৬ \ পানিবিদ্যুৎ কাকে বলে?
উত্তর : পানি থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎকে পানিবিদ্যুৎ বলে।
প্রশ্ন \ ২৭ \ অর্থনীতিতে দ্রব্য কী?
উত্তর : যে জিনিসের উপযোগ আছে অর্থনীতিতে তাই দ্রব্য।
প্রশ্ন \ ২৮ \ অবাধলভ্য দ্রব্য কী?
উত্তর : যেসব দ্রব্য বিনা পরিশ্রমে এবং বিনামূল্যে পাওয়া যায় তাকে অবাধলভ্য দ্রব্য বলে।
প্রশ্ন \ ২৯ \ বাতাস কোন ধরনের দ্রব্য?
উত্তর : বাতাস অবাধলভ্য ধরনের দ্রব্য।
প্রশ্ন \ ৩০ \ সুযোগ ব্যয় কী?
উত্তর : একটি দ্রব্য বা জিনিস পাওয়ার জন্য অপর দ্রব্য বা জিনিস ত্যাগের নামই হলো সুযোগ ব্যয়।
প্রশ্ন \ ৩১ \ অর্থনৈতিক কার্যাবলি কাকে বলে?
উত্তর : মানুষ জীবিকা সংগ্রহের জন্য যেসব কার্যাবলি করে থাকে তাকে অর্থনৈতিক কার্যাবলি বলে।
প্রশ্ন \ ৩২ \ মানুষের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের মূল প্রেরণা কী?
উত্তর : মানুষের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের মূল প্রেরণা হলো দ্রব্য সামগ্রীর অভাব পূরণ করা।
প্রশ্ন \ ৩৩ \ বিনিয়োগ কী?
উত্তর : সঞ্চিত অর্থ যখন উৎপাদন বাড়ানোর কাজে ব্যবহৃত হয় তখন তাকে বিনিয়োগ বলে।

 অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর 
প্রশ্ন \ ১ \ খনিজ সম্পদ হিসেবে বাংলাদেশের প্রাকৃতিক গ্যাসের অবস্থান ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : প্রাকৃতিক গ্যাস বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান খনিজ সম্পদ। এ পর্যন্ত দেশে ২৫টি গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কৃত হয়েছে। সেখানে গ্যাসের মোট মজুদ প্রায় ১৬ বিলিয়ন ঘনফুট। বর্তমানে কেবল ১৯টি গ্যাসক্ষেত্র থেকে গ্যাস উত্তোলিত হচ্ছে। উৎপাদনরত গ্যাসক্ষেত্রগুলো হলো : বাখরাবাদ, হবিগঞ্জ, কৈলাসটিলা, রশিদপুর, সিলেট, তিতাস, বেলাবো (নরসিংদী), মেঘনা, সাঙ্গু, সালদা নদী, জালালাবাদ, বিয়ানিবাজার, ফেঞ্চুগঞ্জ, মৌলভীবাজার, ফেনী, বিবিয়ানা ও বাঙ্গুরা। এ গ্যাস রাসায়নিক সার তৈরিতে কাঁচামালরূপে ব্যবহৃত হয়। এছাড়া বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রে, কলকারখানা ও গৃহে এ গ্যাস জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
প্রশ্ন \ ২ \ অ-অর্থনৈতিক কার্যাবলি বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : যেসব অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে অর্থ উপার্জিত হয় না এবং জীবনধারণের জন্য ব্যয় করা যায় না তাকে অ-অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বলা হয়।
এ ধরনের কর্মকাণ্ড মানুষের অভাব পূরণ করলেও অর্থ উপার্জনে ভ‚মিকা রাখতে পারে না। যেমন- পিতামাতার সন্তান লালনপালন, খেলাধুলা করা, ধার্মিক লোকের ধর্মচর্চা ইত্যাদি অ-অর্থনৈতিক কাজের উদাহরণ। এছাড়াও যেসব কাজ সমাজে বিরূপ প্রভাব ফেলে তাও অ-অর্থনৈতিক কাজ। যেমন- চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, দুর্নীতি ইত্যাদি।
প্রশ্ন \ ৩ \ বাংলাদেশের প্রাণিজ সম্পদের গুরুত্ব ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : বাংলাদেশের সর্বত্র বিভিন্ন প্রজাতির পশুপাখি দেখা যায়। যা প্রাণিজ সম্পদ হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা রাখছে।
গৃহপালিত পশুপাখির মধ্যে গরু, ছাগল, ভেড়া, মহিষ, হাঁস, মুরগি প্রভৃতি প্রধান। এছাড়া সুন্দরবন ও পার্বত্য চট্টগ্রামের বনাঞ্চলে রয়েছে বাঘ, হাতি, হরিণ প্রভৃতি মূল্যবান জীবজন্তু ও অসংখ্য প্রজাতির পাখি। আমাদের নদনদী, বিল, হাওড়, পুকুর ইত্যাদি জলাশয় এবং বঙ্গোপসাগরে বিভিন্ন রকম মাছ পাওয়া যায়। এসব জলাশয়ের মাছ দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি করা হয়। ফলে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হয়। যা আমাদের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করে। তাই বলা যায়, বাংলাদেশে প্রাণিজ সম্পদের গুরুত্ব অপরিসীম।
প্রশ্ন \ ৪ \ বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কৃষি সম্পদ গুরুত্বপূর্ণ কেন?
উত্তর : বাংলাদেশ কৃষিপ্রধান দেশ হওয়ায় এদেশের অর্থনীতিতে কৃষি সম্পদ গুরুত্বপূর্ণ।
বাংলাদেশে বিস্তৃত এলাকাজুড়ে রয়েছে পলি সমৃদ্ধ উর্বর কৃষিক্ষেত্র। আমাদের জমির উর্বরতা, অনুক‚ল আবহাওয়া, বৃষ্টিপাত, নদনদী প্রভৃতি কৃষি উৎপাদনের সহায়ক। এদেশে প্রায় ২ কোটি ২৭ লক্ষ একর চাষযোগ্য কৃষি জমি রয়েছে। আমাদের কৃষিক্ষেত্রে ধান, গম, ডাল, আলু, তৈলবীজ, ফলমূল প্রভৃতি খাদ্যশস্য এবং পাট, ইক্ষু, চা, তামাক, রেশম প্রভৃতি অর্থকরী ফসল উৎপন্ন হয়। দেশের প্রায় ৭৫ ভাগ লোক প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কৃষির ওপর নির্ভরশীল। জাতীয় আয়ের প্রায় ১৩ ভাগ কৃষি হতে আসে। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কৃষি সম্পদের ভ‚মিকা অপরিহার্য।
প্রশ্ন \ ৫ \ সঞ্চয় কীভাবে বিনিয়োগকে প্রভাবিত করে?
উত্তর : সঞ্চয় সরাসরি বিনিয়োগকে প্রভাবিত করে।
মানুষ আয় থেকে সঞ্চয় করে থাকে। সঞ্চিত অর্থ যখন উৎপাদন বাড়ানোর কাজে ব্যবহৃত হয়, তখন তাকে বিনিয়োগ বলে। বিনিয়োগের মাধ্যমে উৎপাদনের পরিমাণ বাড়ে এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন হয়। তখনই মানুষ বিনিয়োগ বাড়ায়, যখন তার সঞ্চয় বাড়ে। তাই বলা যায়, সঞ্চয় প্রত্যক্ষভাবে বিনিয়োগকে প্রভাবিত করে।
প্রশ্ন \ ৬ \ কৃষিই বাংলাদেশের মানুষের কর্মসংস্থানের বড় খাত- ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : কৃষিপ্রধান দেশ হওয়ায় বাংলাদেশের মানুষের কর্মসংস্থানের দিক থেকে কৃষিই এখন বড় খাত হিসেবে পরিচিত।
বাংলাদেশের শ্রমশক্তির প্রায় ৫০% শ্রমিক এখানে নিয়োজিত। জনসংখ্যার প্রায় ৭৫ ভাগ মানুষ কৃষির ওপর প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত। জমি চাষ, বীজবপন, পানি সেচ, সার ছিটানো, কীটনাশক ছিটানো, ফসল কাটা, ফসল বিক্রয়, পশুপালন, বিভিন্ন রকম তরিতরকারি ও ফলমূল উৎপাদন ও বিক্রয়ের মতো কাজগুলো কৃষিখাতের অন্তর্ভুক্ত। ফলশ্রæতিতে বাংলাদেশের অধিকাংশ জনগণ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে এসব কাজের সাথে জড়িত। তাই কৃষিকে কর্মসংস্থানের সবচেয়ে বড় খাত হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
প্রশ্ন \ ৭ \ বিনিয়োগ কীভাবে উৎপাদন বাড়ায়?
উত্তর : বিনিয়োগের মাধ্যমে উৎপাদনের পরিমাণ বাড়ে এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত হয়। ধরা যাক, একটি নির্দিষ্ট সময়ে একটি কারখানায় এক লক্ষ টাকার মূলধন সামগ্রী আছে। উৎপাদন বাড়ানোর জন্য আরও পঞ্চাশ হাজার টাকা ঐ কারখানায় ব্যবহৃত হলো। অতিরিক্ত এই পঞ্চাশ হাজার টাকা হলো বিনিয়োগ। অর্থাৎ কোনো নির্দিষ্ট সময়ে মজুদ মূলধন দ্রব্যের সঙ্গে যতটা অতিরিক্ত মূলধন দ্রব্য যোগ করা হয় তাকে অর্থনীতিতে বিনিয়োগ বলে।
প্রশ্ন \ ৮ \ সঞ্চয় বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : ভোগ ব্যয়ের পরে আয়ের যে অংশ অবশিষ্ট থাকে তাকে সঞ্চয় বলে।
মানুষ আয় করে ভোগ করার জন্য। কিন্তু আয়ের পুরো অংশ ভোগ না করে ভবিষ্যতের জন্য কিছু অংশ রেখে দেওয়ার নামই সঞ্চয়। যেমন, বাবা এক মাসে দশ হাজার টাকা বেতন পান। নয় হাজার টাকা পরিবারের জন্য ব্যয় করেন। আর এক হাজার টাকা রেখে দেন ভবিষ্যতের জন্য। তাই এক হাজার টাকাই হলো সঞ্চয়। সঞ্চয়ের এ ধারণাটি সমীকরণ দ্বারা বোঝানো যায়। যেমন- ঝ = ণ  ঈ ( যখন ণ > ঈ ) [ এখানে ঝ = সঞ্চয়, ণ = আয়, ঈ = ভোগ ব্যয় ]
প্রশ্ন \ ৯ \ দ্রব্য বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : দ্রব্য বলতে আমরা সাধারণত শুধু বস্তুগত সম্পদকে বুঝে থাকি। কিন্তু বাস্তবে এমন অনেক দ্রব্য আছে যেগুলো অবস্তুগত (যেমনÑ আলো, বাতাস ইত্যাদি) হলেও অর্থনীতিতে এগুলো দ্রব্য। অতএব, মানুষের অভাব মিটাবার ক্ষমতাসম্পন্ন বস্তুগত ও অবস্তুগত সব জিনিসকে আমরা অর্থনৈতিক দ্রব্য বলে থাকি। অর্থাৎ যে জিনিসের উপযোগ আছে অর্থনীতিতে তাই দ্রব্য।
প্রশ্ন \ ১০ \ বিনিয়োগ কী? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : মানুষ আয় থেকে সঞ্চয় করে থাকে। সঞ্চিত অর্থ যখন উৎপাদন বাড়ানোর কাজে ব্যবহৃত হয় তখন তাকে বিনিয়োগ বলে। ধর, একটি নির্দিষ্ট সময়ে একটি কারখানায় এক লক্ষ টাকার মূলধন সামগ্রী আছে। উৎপাদন বাড়ানোর জন্য আরও পঞ্চাশ হাজার টাকা ঐ কারখানায় ব্যবহৃত হলো। অতিরিক্ত এ পঞ্চাশ হাজার টাকা হলো বিনিয়োগ। বিনিয়োগের মাধ্যমে উৎপাদনের পরিমাণ বাড়ে এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব হয়।
প্রশ্ন \ ১১ \ অর্থনৈতিক কাজ বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : মানুষ জীবিকা সংগ্রহের জন্য যে কার্যাবলি করে থাকে তাকে অর্থনৈতিক কার্যাবলি বলা হয়। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে মানুষ অর্থ উপার্জন করে এবং জীবনধারণের জন্য তা ব্যয় করে। যেমন শ্রমিক কলকারখানায় কাজ করে, কৃষকরা জমিতে কাজ করে, ডাক্তার রোগীদের চিকিৎসা করে, শিল্পপতিরা শিল্পপ্রতিষ্ঠান পরিচালনা করেÑ এগুলো হলো অর্থনৈতিক কাজ। মানুষের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের মূল প্রেরণা হলো দ্রব্যসামগ্রীর অভাব পূরণ করা।
প্রশ্ন \ ১২ \ আয় বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : উৎপাদনের কোনো উপকরণ ব্যবহারের জন্য উপকরণ বা দ্রব্যের মালিক একটি নির্দিষ্ট সময়ে যে অর্থ পায় তাকে আয় বলে। শ্রমের জন্য প্রাপ্ত আয়কে মজুরি বলে। আয় না থাকলে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হয়। আয়ের ওপরই মানুষের সঞ্চয় প্রবণতা এবং বিনিয়োগ নির্ভর করে।

 

 

 

Leave a Reply