নবম-দশম শ্রেণির সাধারণ বিজ্ঞান পঞ্চম অধ্যায় দেখতে হলে আলো চাই

এসএসসি সাধারণ বিজ্ঞান পঞ্চম অধ্যায় দেখতে হলে আলো চাই

পাঠ সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াদি

দর্পণ : যে মসৃণ তলে আলোর নিয়মিত প্রতিফলন ঘটে তাকে দর্পণ বলে। চকচকে ধাতব পাত, পলিশ করা টেবিল ইত্যাদি দর্পণ হিসেবে কাজ করে।
 গোলীয় দর্পণ : যে দর্পণের প্রতিফলক পৃষ্ঠ কোনো গোলকের অংশবিশেষ তাকে গোলীয় দর্পণ বলে।
 আলোর প্রতিসরণ : আলোকরশ্মি এক স্বচ্ছ মাধ্যম থেকে অন্য স্বচ্ছ মাধ্যমে যাওয়ার সময় মাধ্যমদ্বয়ের বিভেদতলে তীর্যকভাবে আপতিত আলোকরশ্মির দিক পরিবর্তন করার ঘটনাকে আলোর প্রতিসরণ বলে।
 আলোর প্রতিসরণের সূত্র : আলোর প্রতিসরণ দুটি সূত্র মেনে চলে
প্রথম সূত্র : আপতিত রশ্মি, প্রতিসরিত রশ্মি ও আপতন বিন্দুতে বিভেদতলের উপর অঙ্কিত অভিলম্ব একই সমতলে অবস্থান করে।
দ্বিতীয় সূত্র : একজোড়া নির্দিষ্ট মাধ্যম ও নির্দিষ্ট বর্ণের আলোর জন্য আপতন কোণের সাইন ও প্রতিসরণ কোণের সাইনের অনুপাত সর্বদা ধ্রæবক। এ ধ্রæবককে সাধারণত  দ্বারা প্রকাশ করা হয়।
অর্থাৎ, যদি আপতন কোণ = র এবং প্রতিসরণ কোণ = ৎ হয় তবে,  = ংরহ রংরহ ৎ
 প্রতিসরাঙ্ক : আলোকরশ্মি যখন এক স্বচ্ছ মাধ্যম থেকে অন্য স্বচ্ছ মাধ্যমে তীর্যকভাবে প্রবেশ করে তখন নির্দিষ্ট রঙের আলোর জন্য আপতন কোণের সাইন ও প্রতিসরণ কোণের সাইনের অনুপাত যে ধ্রæব সংখ্যা হয় তাকে প্রথম মাধ্যমের সাপেক্ষে দ্বিতীয় মাধ্যমের প্রতিসরাঙ্ক বা আপেক্ষিক প্রতিসরাঙ্ক বলে।
 লেন্স : দুটি গোলীয় পৃষ্ঠ দ্বারা সীমাবদ্ধ কোনো স্বচ্ছ প্রতিসারক মাধ্যমকে লেন্স বলে। লেন্স প্রধানত দুই রকমের হয়। যথা :
উত্তল বা অভিসারী লেন্স এবং অবতল বা অপসারী লেন্স।
 উত্তল বা অভিসারী লেন্স : যে লেন্সের মধ্যভাগ মোটা ও প্রান্ত সরু তাকে উত্তল লেন্স বলে। এ লেন্সে আলোকরশ্মি উত্তল পৃষ্ঠে আপতিত হয় বলে একে উত্তল লেন্স বলে। এ লেন্স সাধারণত এক গুচ্ছ সমান্তরাল আলোকরশ্মিকে অভিসারী করে থাকে বলে একে অভিসারী লেন্সও বলা হয়।
 অবতল বা অপসারী লেন্স : যে লেন্সের মধ্যভাগ সরু ও প্রান্তের দিকে মোটা তাকে অবতল লেন্স বলে। এ লেন্সে আলোকরশ্মি অবতল পৃষ্ঠে আপতিত হয় বলে একে অবতল লেন্স বলে। এ লেন্স সাধারণত একগুচ্ছ আলোকরশ্মিকে অপসারী করে থাকে বলে একে অপসারী লেন্সও বলে।
 বক্রতার কেন্দ্র : সাধারণত লেন্সের পৃষ্ঠসমূহ যে গোলকের অংশ তার কেন্দ্রকে বক্রতার কেন্দ্র বলে। লেন্সের দুই পৃষ্ঠের জন্য বক্রতার কেন্দ্র দুইটি।
 প্রধান অক্ষ : লেন্সের উভয় পৃষ্ঠের বক্রতার কেন্দ্র দুটির মধ্য দিয়ে গমনকারী সরলরেখাকে প্রধান অক্ষ বলে।
 লেন্সের প্রধান ফোকাস : লেন্সের প্রধান অক্ষের সমান্তরাল এবং নিকটবর্তী রশ্মিগুচ্ছ প্রতিসরণের পর প্রধান অক্ষের ওপর যে বিন্দুতে মিলিত হয় (উত্তল লেন্সে) বা যে বিন্দু থেকে অপসৃত হচ্ছে বলে মনে হয় (অবতল লেন্সে) সেই বিন্দুকে লেন্সের প্রধান ফোকাস বলে।
 ফোকাস দূরত্ব : লেন্সের আলোক বিন্দু থেকে প্রধান ফোকাস পর্যন্ত দূরত্বকে লেন্সের ফোকাস দূরত্ব বলে।
 লেন্সের ক্ষমতা : একগুচ্ছ সমান্তরাল আলোক রশ্মিকে কোনো লেন্সের অভিসারী (উত্তল লেন্সে) গুচ্ছে বা অপসারী (অবতল লেন্সে) গুচ্ছে পরিণত করার প্রবণতাকে ঐ লেন্সের ক্ষমতা বলে।
 ডায়অপ্টার : লেন্সের ক্ষমতার প্রচলিত একক হলো ডায়অপ্টার। এক মিটার ফোকাস দূরত্বের কোনো লেন্সের ক্ষমতাকে এক ডায়অপ্টার বলে। কোনো লেন্সের ফোকাস দূরত্ব ƒ মিটার এবং ক্ষমতা চ ডায়অপ্টার হলে, চ = ১ƒ।
 চোখের নিকট বিন্দু ও দূরবিন্দু : সুস্থ ও স্বাভাবিক চোখ যে নিকটতম বিন্দু পর্যন্ত বিনা শ্রান্তিতে স্পষ্ট দেখতে পায় তাকে চোখের নিকট বিন্দু প্রায় ২৫ সে.মি. বলে। সবচেয়ে দূরে অবস্থিত যে বিন্দু পর্যন্ত স্বাভাবিক চোখ স্পষ্ট দেখতে পায় তাকে চোখের দূরবিন্দু (সাধারণত অসীম) বলে।
 স্পষ্ট দর্শনের নিকটতম দূরত্ব ২৫ সেমি-এর অর্থ : কোনো ব্যক্তির স্পষ্ট দর্শনের নিকটতম বিন্দু ২৫ সে.মি. বলতে বোঝায় কোনো বস্তু ২৫ সে.মি. দূরে থাকলে একজন ব্যক্তির চোখ বিনা বাধায় তা স্পষ্ট দেখতে পায়।
 চোখের ত্রæটি : স্বাভাবিক চোখের দৃষ্টির পাল্লা ২৫ পস থেকে অসীম পর্যন্ত বিস্তৃত অর্থাৎ স্বাভাবিক চোখ ২৫ সে.মি. থেকে অসীম দূরত্বের মধ্যে যে কোনো বস্তু স্পষ্ট দেখতে পায়। যদি কোনো চোখ এই পাল্লার মধ্যে কোনো বস্তুকে স্পষ্ট দেখতে না পায় তাহলে সেই চোখ ত্রæটিপূর্ণ বলে ধরা হয়। চোখে মোট চার ধরনের ত্রæটি দেখা যায় (ক) হ্রস্বদৃষ্টি বা মাইওপিয়া, (খ) দীর্ঘদৃষ্টি বা হাইপারমেট্রোপিয়া, (গ) বার্ধক্য দৃষ্টি বা চালশে ও (ঘ) বিষম দৃষ্টি বা নকুলান্ধতা।
এদের মধ্যে হ্রস্বদৃষ্টি বা মাইওপিয়া ও দীর্ঘদৃষ্টি বা হাইপারমেট্রোপিয়া এই দুটিকে দৃষ্টির প্রধান ত্রæটি বলা হয়।
 হ্রস্বদৃষ্টি বা মাইওপিয়া : এই ত্রæটিগ্রস্ত চোখ দূরের জিনিস ভালোভাবে দেখতে পায় না কিন্তু কাছের জিনিস স্পষ্ট দেখতে পায়। এমনকি এই চোখের নিকট বিন্দু ২৫ সে.মি. এরও কম হতে পারে।
কারণ : অক্ষিগোলকের ব্যাসার্ধ বেড়ে গেলে বা চোখের লেন্সের ফোকাস দূরত্ব কমে গেলে অর্থাৎ অভিসারী ক্ষমতা বেড়ে গেলে এই ত্রæটি দেখা যায়।
 দীর্ঘ দৃষ্টি বা হাইপারমেট্রোপিয়া : এই ত্রæটিগ্রস্ত চোখ দূরের জিনিস দেখতে পায় কিন্তু কাছের জিনিস স্পষ্ট দেখতে পায় না।
কারণ : অক্ষিগোলকের ব্যাসার্ধ কমে গেলে বা চোখের লেন্সের ফোকাস দূরত্ব বেড়ে গেলে অর্থাৎ অভিসারী ক্ষমতা কমে গেলে চোখে এই ধরনের ত্রæটি দেখা দেয়।

অনুশীলনীর বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর

১. স্বাভাবিক চোখে স্পষ্ট দৃষ্টির ন্যূনতম দূরত্ব কত?
ক ৫ সেমি খ ১০ সেমি  ২৫ সেমি ঘ ৫০ সেমি
২. উত্তল লেন্সের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হলোÑ
র. এটির ক্ষমতা ধনাত্মক
রর. লেন্সের মধ্যভাগ সরু ও মোটা
ররর. সমান্তরাল রশ্মিগুলোকে একটি বিন্দুতে মিলিত করে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর  র ও ররর
গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর

নিচের চিত্রটি লক্ষ কর এবং ৩ ও ৪নং প্রশ্নের উত্তর দাও :

৩. উদ্দীপকে উল্লিখিত চোখের ত্রæটিকে কী বলা হয়?
 হ্রস্বদৃষ্টি খ দীর্ঘদৃষ্টি গ বার্ধক্য দৃষ্টি ঘ বিষম দৃষ্টি
৪. উল্লিখিত ত্রæটি দূর করতে হলে কোন ধরনের লেন্স ব্যবহার করতে হবে?
ক উত্তল লেন্স  অবতল লেন্স
গ উত্তলাবতল লেন্স ঘ সমতলাবতল লেন্স

গুরুত্বপূর্ণ বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর

৫. কাছের বস্তুকে দেখার জন্য ব্যবহার করা হয় নিচের কোন লেন্স?
ক অবতল লেন্স খ সমতলাবতল লেন্স
 উত্তল লেন্স ঘ উত্তলাবতল লেন্স
৬. শিশুর চোখের স্পষ্ট দৃষ্টির ন্যূনতম দূরত্ব কত?
ক ৫০ সে.মি. খ ২৫ সে.মি. গ ১০ সে.মি.  ৫ সে.মি.
৭. চোখের অক্ষিগোলকের ব্যাসার্ধ হ্রাস পেলে কোন ত্রæটি হয়?
ক বার্ধক্য দৃষ্টি খ বিষম দৃষ্টি গ হ্রস্বদৃষ্টি  দূর দৃষ্টি
৮. কোনটি দীর্ঘদৃষ্টির কারণ?
 চোখের লেন্সের অভিসারী ক্ষমতা হ্রাস পেলে
খ চোখের লেন্সের অভিসারী ক্ষমতা বৃদ্ধি পেলে
গ কোনো কারণে অক্ষিগোলকের ব্যাসার্ধ বৃদ্ধি পেলে
ঘ চোখের লেন্সের ফোকাস দূরত্ব হ্রাস পেলে
৯. আবছা আলোয় সংবেদনশীল হয় কোনটি?
ক কোন  রড গ রেটিনা ঘ চোখের লেন্স
১০. অক্ষিগোলকের ব্যাসার্ধ বৃদ্ধি পেলে কোন ত্রæটি হয়?
 ক্ষীণদৃষ্টি খ দূর দৃষ্টি গ চালশে ঘ নকুলান্ধতা
১১. চিত্রের ক্ষেত্রে প্রতিসরাঙ্ক কত?

২ খ ১২ গ ৩২ ঘ ১২
১২. লেন্সের ক্ষমতার এস.আই একক কী?
ক ডায়অপ্টার খ মায়েপিয়া
 রেডিয়ান/মিটার ঘ রেডিয়ান/সেন্টিমিটার
১৩. সুস্থ ও স্বাভাবিক চোখের নিকট বিন্দু চোখ হতে কত দূরে থাকে?
ক ২০ সে.মি.  ২৫ সে.মি. গ ৩০ সে.মি. ঘ ৩৫ সে.মি.
১৪. গাড়ির দুই পাশে ও পেছনের জন্য কয়টি দর্পণ ব্যবহার করা হয়?
ক ২টি  ৩টি গ ৪টি ঘ ৫টি
১৫. চোখের কোন অংশ রক্তের অনুভ‚তি ও রঙের পার্থক্য নির্ধারণে সাহায্য করে?
ক রেটিনা খ রড  কোন ঘ আইরিশ
১৬. অবতল লেন্সের জন্য প্রযোজ্যÑ
র. মধ্যভাগ সরু ও প্রান্তভাগ মোটা
রর. একগুচ্ছ আলোকরশ্মিকে অপসারী করে
ররর. দুই পৃষ্ঠের জন্য বক্রতার কেন্দ্র দুটি
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর  র, রর ও ররর
১৭. দীর্ঘ দৃষ্টির ক্ষেত্রেÑ
র. চোখের লেন্সের অভিসারী ক্ষমতা হ্রাস পায়
রর. চোখের লেন্সের ফোকাস দূরত্ব বৃদ্ধি পায়
ররর. কাছের বস্তু ভালো দেখতে পায়
নিচের কোনটি সঠিক?
 র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
১৮. লেন্সের ক্ষমতা২উ হলেÑ
র. লেন্সটি অবতল
রর. লেন্সটি উত্তল
ররর. আলোকরশ্মি অপসারিত হয়
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর  র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
নিচের তথ্যের আলোকে ১৯ও ২০নং প্রশ্নের উত্তর দাও :

১৯. প্রতিসরণ কোণ কোনটি?
ক অঙঘ খ ঘঙছ গ অঙই  অঙঘ
২০. উদ্দীপকের চিত্রেÑ
র. ধ মাধ্যমের চেয়ে ন মাধ্যম ঘন
রর. ঙই প্রতিসরিত রশ্মি
ররর. ধ মাধ্যমে আলোর বেগ বেশি
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর  র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
নিচের চিত্রটি দেখ এবং ২১ ও ২২নং প্রশ্নের উত্তর দাও :

২১. উদ্দীপকে উল্লিখিত মানবদেহের কোন অংশটি উল্টো প্রতিবিম্বকে পুনরায় উল্টো করে দেয়?
ক অ খ ই গ ঈ  উ
২২. উপরের চিত্রের কোন অংশটি মস্তিষ্কে তড়িৎ প্রেরণা প্রেরণ করে?
 অ খ ই গ ঈ ঘ উ
নিচের অনুচ্ছেদটি পড় এবং ২৩ ও ২৪ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
রাসেল ক্লাসে বসে বুঝতে পারল যে, সে বোর্ডের লেখা ঠিকমতো পড়তে পারছে কিন্তু নিম্নের খাতার লেখা পড়তে অসুবিধা হচ্ছে।
২৩. রাসেলের সমস্যাটি কী?
ক হ্রস্বদৃষ্টি খ চালশে দৃষ্টি গ বিষম দৃষ্টি  দীর্ঘ দৃষ্টি
২৪. রাসেলের সমস্যা সমাধানের জন্য কোন লেন্সের চশমা ব্যবহার করতে হবে?
 উত্তল খ অবতল গ অবতলোত্তল ঘ উত্তলাবতল

জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর

জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর 
প্রশ্ন \ ১ \ গাড়িতে সাধারণত কয়টি দর্পণ ব্যবহার করা হয়?
উত্তর : গাড়িতে সাধারণত ৩টি দর্পণ ব্যবহার করা হয় ।
প্রশ্ন \ ২ \ পাহাড়ি রাস্তায় নিরাপদ ড্রাইভিং এর জন্য কোন ধরনের দর্পণ ব্যবহার করা হয়?
উত্তর : পাহাড়ি রাস্তায় নিরাপদ ড্রাইভিং এর জন্য গোলীয় দর্পণ ব্যবহার করা হয়।
প্রশ্ন \ ৩ \ প্রতিসরণের সূত্র কয়টি?
উত্তর : প্রতিসরণের সূত্র ২টি।
প্রশ্ন \ ৪ \ কোন কোষ মৃদু আলোতে সংবেদনশীলতা প্রকাশ করে?
উত্তর : রড কোষ মৃদু আলোতে সংবেদনশীলতা প্রকাশ করে।
প্রশ্ন \ ৫ \ মস্তিষ্ককে রঙের অনুভ‚তি ও রঙের পার্থক্য বুঝিয়ে দেয় কোন ধরনের কোষ?
উত্তর : মস্তিষ্ককে রঙের অনুভ‚তি ও রঙের পার্থক্য বুঝিয়ে দেয় কোন কোষ।
প্রশ্ন \ ৬ \ একজন শিশুর স্পষ্ট বিন্দুর ন্যূনতম দূরত্ব কত সে.মি.?
উত্তর : একজন শিশুর স্পষ্ট বিন্দুর ন্যূনতম দূরত্ব ৫ সে.মি.।
প্রশ্ন \ ৭ \ লেন্স প্রধানত কত প্রকার?
উত্তর : লেন্স প্রধানত ২ প্রকার।
প্রশ্ন \ ৮ \ স্থূলমধ্য লেন্স কী?
উত্তর : যে লেন্সের মধ্যভাগ মোটা ও প্রান্ত সরু তাকে স্থূলমধ্য লেন্স বলে।
প্রশ্ন \ ৯ \ একটি লেন্সের বক্রতার কেন্দ্র কয়টি?
উত্তর : একটি লেন্সের বক্রতার কেন্দ্র ২টি।
প্রশ্ন \ ১০ \ লেন্সের ক্ষমতা কাকে বলে?
উত্তর : প্রধান অক্ষের সমান্তরাল একগুচ্ছ আলোকরশ্মিকে অভিসারী (উত্তল লেন্সে) বা অপসারী (অবতল লেন্সে) পরিণত করার ক্ষমতাকে লেন্সের ক্ষমতা বলে।
প্রশ্ন \ ১১ \ দৃষ্টির প্রধান ত্রæটি কয়টি?
উত্তর : দৃষ্টির প্রধান ত্রæটি ২টি।
প্রশ্ন \ ১২ \ প্রতিসরাঙ্কের সংজ্ঞা দাও।
উত্তর : আলোকরশ্মি যখন এক স্বচ্ছ মাধ্যম থেকে অন্য স্বচ্ছ মাধ্যমে তীর্যকভাবে প্রবেশ করে তখন নির্দিষ্ট রঙের জন্য আপতন কোণের সাইন ও প্রতিসরণ কোণের সাইনের অনুপাত যে ধ্রæব সংখ্যা হয় তাকে প্রথম মাধ্যমের সাপেক্ষে দ্বিতীয় মাধ্যমের প্রতিসরাঙ্ক বলে।
প্রশ্ন \ ১৩ \ প্রতিসরাঙ্ক কিসের ওপর নির্ভর করে?
উত্তর : প্রতিসরাঙ্ক মাধ্যমদ্বয়ের প্রকৃতি ও আলোর রঙের ওপর নির্ভর করে।
প্রশ্ন \ ১৪ \ চোখের দৃষ্টির ত্রæটি কত প্রকার?
উত্তর : চোখের দৃষ্টির ত্রæটি ৪ প্রকার।
প্রশ্ন \ ১৫ \ চোখের কোথায় বস্তুর উল্টো প্রতিবিম্ব গঠিত হয়?
উত্তর : চোখের রেটিনায় বস্তুর উল্টো প্রতিবিম্ব গঠিত হয় ।
প্রশ্ন \ ১৬ \ স্বাভাবিক চোখের স্পষ্ট দর্শনের দূরবিন্দু কত?
উত্তর : স্বাভাবিক চোখের জন্য দূরবিন্দুর দূরত্বের মান অসীম।
প্রশ্ন \ ১৭ \ ক্ষীণদৃষ্টি প্রতিকারে কোন ধরনের লেন্সের চশমা ব্যবহার করতে হয়?
উত্তর : (অবতল) লেন্সের চশমা।
প্রশ্ন \ ১৮ \ দীর্ঘদৃষ্টি প্রতিকারে কোন ধরনের লেন্সের চশমা ব্যবহার করতে হয়?
উত্তর : উত্তল লেন্সের চশমা।
প্রশ্ন \ ১৯ \ চোখের লেন্স কোন প্রকৃতির?
উত্তর : চোখের লেন্স উত্তল প্রকৃতির।
প্রশ্ন \ ২০ \ লেন্স প্রধানত কত প্রকার ও কী কী?
উত্তর : লেন্স প্রধানত দুই প্রকার। যথা : ক. উত্তল বা অভিসারী লেন্স ও খ. অবতল বা অপসারী লেন্স।
প্রশ্ন \ ২১ \ উত্তল লেন্স কেমন?
উত্তর : উত্তল লেন্সের মধ্যভাগ মোটা ও প্রান্ত সরু।
প্রশ্ন \ ২২ \ বক্রতার কেন্দ্র কাকে বলে?
উত্তর : সাধারণত লেন্সের পৃষ্ঠসমূহ যে গোলকের অংশ তার কেন্দ্রকে বক্রতার কেন্দ্র বলে।
প্রশ্ন \ ২৩ \ প্রধান অক্ষ কী?
উত্তর : বক্রতার কেন্দ্র দুটির মধ্য দিয়ে গমনকারী সরলরেখাই হলো লেন্সের প্রধান অক্ষ।
প্রশ্ন \ ২৪ \ প্রধান ফোকাস কী?
উত্তর : লেন্সের প্রধান অক্ষের সমান্তরাল এবং নিকটবর্তী রশ্মিগুচ্ছ প্রতিসরণের পর প্রধান অক্ষের যে বিন্দুতে মিলিত হয় (উত্তল লেন্স) বা যে বিন্দু থেকে অপসৃত হচ্ছে বলে মনে হয় (অবতল লেন্স) সেই বিন্দুকে লেন্সের প্রধান ফোকাস বলে।
প্রশ্ন \ ২৫ \ ফোকাস দূরত্ব কী?
উত্তর : প্রধান অক্ষ থেকে প্রধান ফোকাস পর্যন্ত দূরত্বই হলো লেন্সের ফোকাস দূরত্ব।
প্রশ্ন \ ২৬ \ অবতল লেন্সের ক্ষমতা কীরূপ?
উত্তর : অবতল লেন্সের ক্ষমতা ঋণাত্মক।
প্রশ্ন \ ২৭ \ সুস্থ এবং স্বাভাবিক চোখের নিকটবিন্দু কত?
উত্তর : সুস্থ ও স্বাভাবিক চোখের নিকটবিন্দু চোখ হতে প্রায় ২৫ সেমি।
প্রশ্ন \ ২৮ \ রেটিনা কোথায় অবস্থিত?
উত্তর : রেটিনা চক্ষুগোলকের পেছন দিকে অবস্থিত।
 অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর 
প্রশ্ন \ ১ \ দর্পণ কী কাজে ব্যবহৃত হয়?
উত্তর : দর্পণ মূলত প্রতিবিম্ব দেখার কাজে ব্যবহৃত হয়।
দর্পণে অভীষ্ট প্রতিবিম্বের আকারের উপর নির্ভর করে সমতল, অবতল বা উত্তল দর্পণ ব্যবহার করা হয়। বস্তুর আকারের সমান প্রতিবিম্ব দেখতে হলে সমতল দর্পণ, বিবর্ধিত সোজা বিম্ব দেখতে হলে অবতল দর্পণ এবং গাড়ি ড্রাইভিংএর সময় খর্বিত বিম্ব দেখতে হলে উত্তল দর্পণ ব্যবহৃত হয়।
প্রশ্ন \ ২ \ কোনো একটি নির্দিষ্ট মাধ্যমের প্রতিসরাঙ্ক বিভিন্ন হতে পারে কি?
উত্তর : হ্যাঁ, কোনো একটি নির্দিষ্ট মাধ্যমের প্রতিসরাঙ্ক বিভিন্ন হতে পারে।
প্রতিসরাঙ্ক দুটি বিষয়ের ওপর নির্ভরশীল। যথা : মাধ্যমদ্বয়ের প্রকৃতি ও আলোর রং। সুতরাং মাধ্যমদ্বয় অপরিবর্তিত থাকলেও যদি আলোর রঙ পরিবর্তিত হয় তবে কোনো নির্দিষ্ট মাধ্যমের প্রতিসরাঙ্ক ভিন্ন হবে।
প্রশ্ন \ ৩ \ আলোর প্রতিসরণের দ্বিতীয় সূত্রে যে ধ্রæব সংখ্যার কথা বলা হয়েছে সেটি আসলে কী?
উত্তর : আলোর প্রতিসরণের দ্বিতীয় সূত্রে যে ধ্রæব সংখ্যাটির কথা বলা হয়েছে, সেটি হলো নির্দিষ্ট রঙের জন্য প্রথম মাধ্যমের সাপেক্ষে দ্বিতীয় মাধ্যমের প্রতিসরাঙ্ক। অর্থাৎ বিভিন্ন রঙের জন্য এই প্রতিসরাঙ্কের মাত্রা বিভিন্ন হয়।
প্রশ্ন \ ৪ \ মানব চক্ষুর রেটিনায় রড ও কোন কোষ না থাকলে কী কী অসুবিধা ঘটবে বলে মনে হয়?
উত্তর : মানব চক্ষুর রেটিনায় রড ও কোন কোষ না থাকলে বিভিন্ন আলোর ও উজ্জ্বলতার বস্তু দেখতে আমাদের অসুবিধা হতো।
রড ও কোণ কোষ আলোক গ্রাহক এবং বর্ণ গ্রাহক হিসেবে কাজ করে। এগুলো থেকে আগত আলোকরশ্মি শোষণ করে অপটিক স্নায়ুর মাধ্যমে মস্তিষ্কের দর্শনকেন্দ্রে প্রেরণ করে। ফলে বস্তুটিকে আমরা দেখতে পাই। যদি এ কোষগুলো রেটিনায় না থাকে তাহলে উজ্জ্বল বা অনুজ্জ্বল আলো এবং রঙিন বস্তু দেখতে অসুবিধা হবে।
প্রশ্ন \ ৫ \ লেন্সের ফোকাস দূরত্ব বা প্রতিবিম্বের দূরত্ব নির্ণয়ের সময় ধনাত্মক বা ঋণাত্মক চিহ্ন ব্যবহার করা হয় কেন?
উত্তর : লেন্সের সম্মুখে বস্তু স্থাপন করলে প্রতিবিম্ব কখনো সম্মুখে হয় আবার কখনো পেছনে বা বিপরীত দিকে সৃষ্টি হয়। আবার একই দিক থেকে প্রধান অক্ষের সমান্তরাল আলোক রশ্মি উত্তল লেন্সে প্রতিসরিত হলে যেদিকে ফোকাস বিন্দু পাওয়া যায় অবতল লেন্সে ফোকাস বিন্দু তার বিপরীত দিকে পাওয়া যায়। তাই বস্তুর দূরত্ব, প্রতিবিম্বের দূরত্বের সাথে ফোকাস দূরত্বের সম্পর্ক নির্ণয় করার জন্য চিহ্ন বিবেচনা করা হয়।
প্রশ্ন \ ৬ \ অবতল লেন্সকে অপসারী লেন্স বলা হয় কেন?
উত্তর : অপসারী শব্দের অর্থ কোনো বিন্দু থেকে চারদিকে ছড়িয়ে পড়া। অবতল লেন্স সাধারণত একগুচ্ছ আলোকরশ্মি অপসারী করে থাকে বলে একে অপসারী লেন্স বলা হয়। চিত্রে, অবতল লেন্সে সমান্তরাল রশ্মিগুচ্ছ প্রতিসরণের পর ঋ বিন্দু হতে আসছে বলে মনে হয়।

প্রশ্ন \ ৭ \ লেন্সের ক্ষমতা -২উ বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : লেন্সের ক্ষমতা -২উ বলতে বোঝায় লেন্সটি অবতল এবং এটি প্রধান অক্ষের সমান্তরাল একগুচ্ছ আলোক রশ্মিকে এমনভাবে অপসারিত করে যে, এগুলো লেন্স থেকে ৫০ সেমি দূরের কোনো বিন্দু থেকে অপসৃত হচ্ছে বলে মনে হয়।
প্রশ্ন \ ৮ \ কোনো ব্যক্তি দীর্ঘ দৃষ্টিসম্পন্ন হলে কাছের ও দূরের দেখার ক্ষেত্রে কীরূপ সমস্যা হয়?
উত্তর : কোনো ব্যক্তি দীর্ঘ দৃষ্টিসম্পন্ন হলে দূরের বস্তু দেখতে কোনো সমস্যা হয় না। কিন্তু কাছের বস্তুসমূহ স্পষ্ট দেখতে অসুবিধা হয়। এজন্য তিনি তখন বই বা খবরের কাগজ পড়তে পারেন না। এ ত্রæটি দূরীকরণে তিনি উত্তল লেন্সের চশমা ব্যবহার করতে পারেন।
প্রশ্ন \ ৯ \ ক্ষীণদৃষ্টি এবং দীর্ঘদৃষ্টির মধ্যকার পার্থক্য উল্লেখ কর।
উত্তর : ক্ষীণদৃষ্টি এবং দীর্ঘদৃষ্টির মধ্যকার পার্থক্য নিম্নে দেওয়া হলো-
ক্ষীণদৃষ্টি দীর্ঘদৃষ্টি
১. চোখের লেন্সের অভিসারী ক্ষমতা বৃদ্ধি পেলে অথবা চোখের লেন্সের ফোকাস দূরত্ব কমে গেলে ক্ষীণদৃষ্টি দেখা দেয়।
২. অক্ষিগোলকের ব্যাসার্ধ বৃদ্ধি পেলে এ ত্রæটি হয়। ১. চোখের লেন্সের অভিসারী ক্ষমতা কমে গেলে অথবা চোখের লেন্সের ফোকাস দূরত্ব বেড়ে গেলে দীর্ঘদৃষ্টি দেখা দেয়।
২. অক্ষিগোলকের ব্যাসার্ধ হ্রাস পেলে এ ত্রæটি হয়।

 

ক্ষীণদৃষ্টি দীর্ঘদৃষ্টি
৩. অবতল লেন্সের চশমা ব্যবহারের দ্বারা এ ত্রæটি দূর করা যায়। ৩. উত্তল লেন্সের চশমা ব্যবহারের দ্বারা এ ত্রæটি দূর করা যায়।
৪. অবতল লেন্সের চশমার ফোকাস দূরত্ব হবে ক্ষীণদৃষ্টির দীর্ঘতম দূরত্বের সমান। ৪. উত্তল লেন্সের চশমার ফোকাস দূরত্ব হবে দীর্ঘদৃষ্টির নিকটতম দূরত্বের সমান।
প্রশ্ন \ ১০ \ চোখ ভালো রাখার প্রধান উপায় কী কী?
উত্তর : চোখ ভালো রাখার উপায় হলো :
১. পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন ও খনিজ লবণ সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ চোখ ভালো রাখার প্রধান উপায়।
২. দিনে বেশ কয়বার ঠাণ্ডা পানি দিয়ে চোখ ধুতে হবে। লক্ষ রাখতে হবে চোখে যেন পিচুটি না জমে।
৩. চোখের খুব কাছে বা দূরে রেখে বই পড়তে নেই। এতে চোখের দৃষ্টি ঝাপসা হতে পারে।
প্রশ্ন \ ১৬ \ সঠিক পুষ্টি গ্রহণ চোখের জন্য দরকারি Ñ ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : সঠিক পুষ্টি গ্রহণ চোখের জন্য খুবই দরকারি। কারণ সঠিক পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার চোখকে রোগমুক্ত রাখে। চোখের স্বাভাবিক দৃষ্টির জন্য উপকারি খাবার হলো ভিটামিন এ, সি ও ই সমৃদ্ধ খাবার; ফ্যাটি এসিড যুক্ত খাবার, জিংকসমৃদ্ধ খাবার, গাঢ় সবুজ শাকসবজি ও বিভিন্ন ফল চোখের জন্য খুবই ভালো। এ ধরনের খাবার চোখকে রোগমুক্ত রাখতে সহায়তা করে। তাই বলা যায়, চোখকে রোগমুক্ত ও সুস্থ রাখার জন্য সঠিক পুষ্টি গ্রহণ চোখের জন্য দরকারি।
প্রশ্ন \ ১১ \ ড্রাইভার কীভাবে শরীর না ঘুরিয়ে আশপাশ দেখতে পারে?
উত্তর : ড্রাইভার গাড়িতে অবস্থিত তিনটি দর্পণ ব্যবহার করে শরীর না ঘুরিয়ে আশপাশ দেখতে পারে। গাড়ির সামনের দরজার সম্মুখ দিকে দু’পাশে দুটি দর্পণ এবং অপরটি গাড়ির ভিতরে সামনের দিকে মাঝখানে থাকে। গাড়ির দু’পাশের দর্পণ দু’টি গাড়ির দু’পাশের বস্তু দেখতে সহায়তা করে। অপরদিকে গাড়ির ভিতরের সামনের দিকের দর্পণে পিছনের বস্তুর প্রতিবিম্ব দেখা যায়। ফলে এই তিনটি দর্পণের সাহায্যে ড্রাইভার শরীর না ঘুরিয়েও আশপাশ দেখতে পারে।

অনুশীলনীর সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর

প্রশ্ন -১ ল্ফ নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
সেঁজুতি দূর থেকে বø্যাকবোর্ডে শিক্ষকের লেখা স্পষ্ট দেখতে পায় না। অন্যদিকে সেঁজুতির বাবার কাছের জিনিস দেখতে সমস্যা হয়। পরবর্তীতে সেঁজুতি ও তার বাবা ডাক্তারের শরণাপন্ন হলে ডাক্তার সেঁজুতির জন্য এক ধরনের লেন্স এবং তার বাবার জন্য ভিন্ন ধরনের লেন্স ব্যবহারের পরামর্শ দিলেন।
ক. আলোর প্রতিসরণ কাকে বলে?
খ. স্পষ্ট দৃষ্টির ন্যূনতম দূরত্ব বলতে কী বুঝায়?
গ. সেঁজুতি চোখের কোন ধরনের ত্রæটিতে আক্রান্ত? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. সেঁজুতির বাবার জন্য ডাক্তারের ভিন্ন ধরনের লেন্স ব্যবহারের পরামর্শের যৌক্তিকতা বিশ্লেষণ কর।
 ১নং প্রশ্নের উত্তর 
ক. আলো যখন এক স্বচ্ছ মাধ্যম থেকে অন্য স্বচ্ছ মাধ্যমে তির্যকভাবে আপতিত হয়, তখন মাধ্যম দুটির বিভেদতলে এর গতিপথ পরিবর্তিত হয়। আলোকরশ্মির এভাবে দিক পরিবর্তন করার ঘটনাকে আলোর প্রতিসরণ বলে।
খ. লক্ষ্যবস্তু চোখের কাছাকাছি একটি নির্দিষ্ট দূরত্ব অপেক্ষা কম দূরত্বে অবস্থান করলে তা আর চোখে স্পষ্ট দেখা যায় না। চোখের সাপেক্ষে সবচেয়ে কাছের যে বিন্দু পর্যন্ত লক্ষ্যবস্তুকে বিনা শ্রান্তিতে চোখে স্পষ্ট দেখা যায়, তাকে স্পষ্ট দৃষ্টির নিকট বিন্দু বলে এবং চোখ থেকে ঐ বিন্দুর দূরত্বকে স্পষ্ট দৃষ্টির ন্যূনতম দূরত্ব বলে। একটি শিশুর এই দূরত্ব ৫ সেন্টিমিটার এবং একজন স্বাভাবিক ও প্রাপ্ত বয়স্ক লোকের এই দূরত্ব ২৫ সেমি।
গ. সেঁজুতি চোখের হ্রস্বদৃষ্টি বা ক্ষীণদৃষ্টিজনিত ত্রæটিতে আক্রান্ত। এ রোগে আক্রান্ত রোগী কাছের জিনিস দেখতে পায় কিন্তু দূরের জিনিস দেখতে পায় না।
যখন চোখ কাছের বস্তু দেখতে পায় কিন্তু দূরের বস্তু দেখতে পায় না, তখন চোখের এই ত্রæটিকে হ্রস্বদৃষ্টি বলে। এরূপ চোখের দূর বিন্দুটি অসীম দূরত্ব অপেক্ষা খানিকটা কাছে থাকে এবং বস্তুকে স্পষ্ট দৃষ্টির ন্যূনতম দূরত্ব থেকে আরও কাছে আনলে অধিকতর স্পষ্ট দেখায়। নিম্নলিখিত দুটি কারণে এই ত্রæটি হয়ে থাকে :
১. চোখের লেন্সের অভিসারী শক্তি বৃদ্ধি পেলে ও
২. কোনো কারণে অক্ষিগোলকের ব্যাসার্ধ বৃদ্ধি পেলে।
ফলে দূরের বস্তু থেকে নির্গত আলোক রশ্মি চোখের লেন্সের মধ্য দিয়ে প্রতিসরণের পর রেটিনার সামনে (ঋ) বিন্দুতে প্রতিবিম্ব গঠন করে (চিত্র)। ফলে চোখ বস্তু দেখতে পায় না।

ঘ. সেঁজুতির বাবা দীর্ঘদৃষ্টি বা দূরদৃষ্টিজনিত ত্রæটিতে আক্রান্ত। এ রোগে আক্রান্ত রোগী দূরের জিনিস দেখতে পায় কিন্তু কাছের জিনিস দেখতে পায় না। তাই সেঁজুতির বাবার জন্য ডাক্তার উত্তল লেন্সের চশমা ব্যবহারের পরামর্শ দেন।
সাধারণত বয়স্ক ব্যক্তিদের মধ্যে এই ত্রæটি দেখা যায়। নিম্নলিখিত দুটি কারণে এই ত্রæটি ঘটে :
১. চোখের লেন্সের অভিসারী ক্ষমতা হ্রাস পেলে অথবা চোখের লেন্সের ফোকাস দূরত্ব বৃদ্ধি পেলে।
২. কোনো কারণে অক্ষি-গোলকের ব্যাসার্ধ হ্রাস পেলে।
ফলে স্বাভাবিক নিকট বিন্দু (ঘ) হতে নির্গত আলোক রশ্মি চোখের লেন্সের মধ্য দিয়ে প্রতিসরণের পর রেটিনার পেছনে (ঋ) বিন্দুতে মিলিত হয় (চিত্র ক)। এতে চোখ কাছের বস্তু দেখতে পায় না।

এই ত্রæটি দূর করার জন্য চোখের সামনে একটি উত্তল লেন্সের চশমা ব্যবহার করতে হবে। ফলে চোখের নিকটতম বিন্দু (ঋ) চিত্র খ হতে নির্গত আলোক রশ্মি এই সাহায্যকারী লেন্সে এবং চোখের লেন্সে পর পর দুইবার প্রতিসরিত হবার পর প্রয়োজনমতো অভিসারী হয়ে রেটিনা (জ) এর উপরে পড়বে। এই প্রতিসরিত রশ্মিগুলোকে পেছনের দিকে বর্ধিত করলে এরা ঘ১ বিন্দুতে মিলিত হবে। অতএব চোখ বস্তুটিকে ঘ১ বিন্দুতে দেখবে এবং এই ঘ১ বিন্দুই দীর্ঘদৃষ্টির নিকটতম দূরত্ব।
চোখের ত্রæটি প্রতিকারে ডাক্তার সেঁজুতিকে অবতল লেন্স ব্যবহার করতে বলেন। কিন্তু তার বাবার চোখের ত্রæটি ভিন্ন হওয়ার কারণে ডাক্তার ভিন্ন ধরনের লেন্স ব্যবহারের পরামর্শ দেন। তার এ পরামর্শ যথার্থ ও যৌক্তিক।
প্রশ্ন -২ ল্ফ নিচের চিত্র দেখে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :

ক. লেন্স কাকে বলে?
খ. লেন্সের ক্ষমতা বলতে কী বুঝায়?
গ. চিত্র-১ এ ঢ দর্পণটি ব্যবহারের কারণ কী? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. চিত্র-২ এর গাড়িটিতে চ, ছ, জ দর্পণের ভ‚মিকা বিশ্লেষণ কর।
 ২নং প্রশ্নের উত্তর 
ক. দুটি গোলীয় পৃষ্ঠ দ্বারা সীমাবদ্ধ কোনো স্বচ্ছ প্রতিসারক মাধ্যমকে লেন্স বলে।
খ. লেন্সের আলোকরশ্মিকে অভিসারী বা অপসারী করার ক্ষমতাই হলো লেন্সের ক্ষমতা।
প্রকৃত অর্থে একগুচ্ছ সমান্তরাল আলোক রশ্মিকে কোনো লেন্সের অভিসারী (উত্তল লেন্সে) গুচ্ছ অপসারী (অবতল লেন্সে) গুচ্ছ পরিণত করার প্রবণতাই হলো লেন্সের ক্ষমতা। লেন্সের ক্ষমতা ধনাত্মক বা ঋণাত্মক হতে পারে।
গ. চিত্র-১ এর ঢ দর্পণটি ।
ব্যবহারের কারণ : পাহাড়ি রাস্তার অদৃশ্য বাঁক দেখার কাজ।
পাহাড়ি রাস্তা সাধারণত আঁকাবাঁকা হয়। অনেক সময় এমনও অদৃশ্য বাঁক থাকে যে পরবর্তী রাস্তাটি প্রায় ৯০০ কোণে থাকে। এই কারণে পাহাড়ি রাস্তায় ড্রাইভিং করা বিপজ্জনক। এ কারণে পাহাড়ি রাস্তায় বিভিন্ন বাঁকে বড় সাইজের গোলীয় দর্পণ স্ট্যান্ডে দাঁড় করে রাখা হয়। ফলে এর কাছাকাছি এসে দর্পণে তাকালে বাঁকের অন্য পাশ থেকে কোনো গাড়ি আসে কিনা তা দেখা যায় এবং ড্রাইভার সাবধান হয়ে গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণ করে নিরাপদে গাড়ি চালাতে পারে। এ কারণেই চিত্রÑ১ এ ঢ দর্পণটি ব্যবহার করা হয়েছে।
ঘ. নিরাপদ গাড়ি চালানোর ক্ষেত্রে উদ্দীপকে উল্লিখিত চ, ছ ও জ গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করে।
গাড়ি নিরাপদে ড্রাইভিং করার অন্যতম শর্ত হলো নিজ গাড়ির আশপাশে সর্বদা কী ঘটছে তা খেয়াল রাখা। সাধারণত গাড়ির সামনের দরজার সম্মুখ দিকে দু’পাশে দুটি দর্পণ চ ও ছ ব্যবহার করতে হয়। এছাড়া গাড়ির ভেতরে সামনের দিকে মাঝখানে ছ থাকে। এগুলো যথাক্রমে গাড়ির দু’পাশে এবং পিছনের দিকে দেখার কাজে সহায়তা করে। ফলে ড্রাইভারকে শরীরে কোনো রকম মোচড় দিতে বা নাড়াতে হয় না।
এর ফলে কোনো ঘটনার প্রতিক্রিয়া দেখানোর জন্য ড্রাইভারকে তার হাতকে সর্বদা হুইলে রেখে সামনে বা পিছনের দিকে নজর রাখতে সহজ হয়। গাড়ি চালনা শুরু করার আগেই দর্পণদুটিকে যথাযথ জায়গায় স্থাপন করে নিতে হয়, যাতে ড্রাইভিং সিটে বসেই পেছন এবং দু’পাশ সঠিকভাবে দেখা যায়।
উপরিউক্ত আলোচনা থেকে বলা যায়। নিরাপদ গাড়ি চালানোর ক্ষেত্রে উদ্দীপকে উল্লিখিত চ, ছ ও জ গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করে।

 

Leave a Reply