নবম-দশম শ্রেণির ভূগোল অধ্যায় ৬ বারিমন্ডল

ষষ্ঠ অধ্যায়
 বারিমন্ড

ছবি সংক্রান্ত তথ্য শিখনফল
 বারিমণ্ডলের ধারণা ব্যাখ্যা করতে পারবে।
 মহাসাগর, সাগর ও উপসাগর বর্ণনা করতে পারবে।
 সমুদ্র তলদেশের ভ‚মিরূপ ও সামুদ্রিক সম্পদ বর্ণনা করতে পারবে।
 সমুদ্রস্্েরাতের কারণ ও প্রভাব ব্যাখ্যা করতে পারবে।
 জোয়ার-ভাটার কারণ ও প্রভাব ব্যাখ্যা করতে পারবে।
অধ্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো সংক্ষেপে জেনে রাখি
 বারিমণ্ডলের ধারণা : বারিমণ্ডলে পানি কঠিন, তরল ও গ্যাসীয় অবস্থায় রয়েছে। পৃথিবীর শতকরা ৯৭ ভাগ পানি রয়েছে সমুদ্রে। মাত্র ৩ ভাগ পানি আছে নদী, হিমবাহ, ভ‚গর্ভস্থ, হ্রদ, মৃত্তিকা, বায়ুমণ্ডল ও জীবমণ্ডলে।
 মহাসাগর : বায়ুমণ্ডলের উন্মুক্ত বিস্তীর্ণ বিশাল লবণাক্ত জলরাশিকে মহাসাগর বলে। পৃথিবীতে পাঁচটি মহাসাগর রয়েছে। এগুলো হলোÑ প্রশান্ত মহাসাগর, আটলান্টিক মহাসাগর, ভারত মহাসাগর, উত্তর মহাসাগর ও দক্ষিণ মহাসাগর।
 সাগর : মহাসাগর অপেক্ষা স্বল্প আয়তন বিশিষ্ট জলরাশিকে সাগর বলে।
 উপসাগর : একদিকে জল এবং তিনদিক স্থল দ্বারা বেষ্টিত সমুদ্র ভাগকে বলে উপসাগর।
 হ্রদ : চারদিকে স্থলভাগ দ্বারা বেষ্টিত জলভাগকে হ্রদ বলে।
 সমুদ্র তলদেশের ভ‚মিরূপ : সমুদ্র তলদেশের ভ‚মিরূপকে পাঁচ ভাগে ভাগ করা হয়Ñ
১. মহীসোপান : সমুদ্রের উপক‚লরেখা থেকে তলদেশের দিকে ক্রমনিম্ন নিমজ্জিত অংশকে মহীসোপান বলে।
২. মহীঢাল : মহীঢালের শেষ সীমা থেকে ভ‚ভাগ হঠাৎ খাড়াভাবে নেমে সমুদ্রের গভীর তলদেশের সাথে মিশে যায়। এ ঢালু অংশকে মহীঢাল বলে।
৩. গভীর সমুদ্রের সমভ‚মি : মহীঢালের শেষ থেকে গভীর সমুদ্রের বিস্তৃত সমভ‚মি দেখা যায়। এখানে বহু শৈলশিরা অবস্থান করে।
৪. নিমজ্জিত শৈলাশিরা : সমুদ্র তলদেশের আগ্নেয়গিরি থেকে লাভা সঞ্চিত হয়ে নিমজ্জিত শৈলশিরা গঠিত হয়।
৫. গভীর সমুদ্রখাত : গভীর সমুদ্রের সমভ‚মিতে গভীর খাত দেখা যায়। ম্যারিয়ান খাত পৃথিবীর গভীরতম খাত।
 সমুদ্রস্রোত : সমুদ্রের পানির একটি নির্দিষ্ট দিকে চলাচলকে সমুদ্রস্রোত বলে। এটি দুই প্রকারÑ উষ্ণ স্রোত ও শীতল স্রোত।
 সমুদ্রস্রোতের কারণ : সমুদ্রস্রোতের কারণগুলোর মধ্যে রয়েছেÑ
১. নিয়ত বায়ুপ্রবাহ
২. পৃথিবীর আ‎িহ্নক গতি
৩. সমুদ্রজলের তাপমাত্রার পার্থক্য
৪. মেরু অঞ্চলে সমুদ্রে বরফের গলন
৫. সমুদ্রের গভীরতার তারতম্য
৬. সমুদ্রজলের লবণাক্ততার পার্থক্য
৭. ভ‚খণ্ডের অবস্থান।
 সমুদ্রস্রোতের প্রভাব : সমুদ্রস্রোতের প্রভাব মানবজীবনের নানাক্ষেত্রে বিস্তৃত, যেমনÑ
১. পরিবহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উপর প্রভাব
২. আবহাওয়ার উপর প্রভাব
৩. কুয়াশা ও ঝড়ঝঞ্ঝা সৃষ্টি
৪. মৎস্য ব্যবসায় সুবিধা
৫. হিমশৈলের আঘাতে বিপদ
৬. সমুদ্রে অগভীর মগ্নচড়ার সৃষ্টি।
 জোয়ার ভাটার কারণ : প্রধানত দুটি কারণে জোয়ার ভাটার সৃষ্টি হয় যথাÑ
১. চাঁদ ও সূর্যের মহাকর্ষ শক্তির প্রভাব
২. পৃথিবীর আবর্তনের ফলে উৎপন্ন কেন্দ্রাতিগ শক্তি।
 জোয়ার ভাটার প্রভাব : মানবজীবনে জোয়ার ভাটার অনেক প্রভাব দেখা যায়। জোয়ার ভাটার প্রভাবে নদীর মোহনা পরিষ্কার থাকে, জলবিদ্যুৎ উৎপন্ন করা যায়, ব্যবসা-বাণিজ্যের সুবিধা হয় ইত্যাদি।

 বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর 
১. হিমশৈল কী?
ক এন্টার্কটিকায় জমাটবাঁধা বরফ
খ গ্রিনল্যান্ডে জমাটবাঁধা বরফ
 সমুদ্র স্রোতে ভেসে আসা বিশাল বরফখণ্ড
ঘ হিমালয়ের চ‚ড়ায় জমাটবাঁধা বরফ
২. সমুদ্রের গভীরতার সঙ্গে সম্পর্কিত হলো-
র. তাপমাত্রা
রর. সমুদ্রস্রোত
ররর. লবণাক্ততা
নিচের কোনটি সঠিক?
 র ও রর
খ র ও ররর
গ রর ও ররর
ঘ র, রর ও ররর
নিচের মানচিত্রটি পর্যবেক্ষণ করে ৩ ও ৪ নম্বর প্রশ্নের উত্তর দাও :

৩. ‘চ’ চিহ্নিত স্রোত অঞ্চলে সারাবছর জাহাজ চলাচল করতে পারে কেন?
ক সমুদ্রের গভীরতার জন্য খ ভগ্ন উপক‚লের জন্য
 উষ্ণ স্রোতের জন্য ঘ জাহাজের শক্তির জন্য
৪. ‘ছ’ ও ‘জ’ স্রোতদ্বয়ের মিলনের ফলে সৃষ্টি হয়-
র. মগ্নচড়া রর. হিমপ্রাচীর
ররর. হিমশৈল
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর  র ও ররর
গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর

 সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর 
প্রশ্ন- ১  সমুদ্রস্রোত

নিচের চিত্রটি দেখে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :

ক. পৃথিবীর গভীরতম খাতের নাম কী?
খ. মহীসোপানের বৈশিষ্ট্য লেখ।
গ. ‘অ’ চিহ্নিত স্থানের পানির প্রবাহ স্থলভাগের উপর কিরূপ প্রভাব ফেলবে ব্যাখ্যা কর।
ঘ. ‘চ’ ও ‘ই’ চিহ্নিত স্থানের পানিরাশির আবর্তন না হলে ঐ এলাকার বাণিজ্যের উপর সম্ভাব্য প্রভাব- বিশ্লেষণ কর।

ক পৃথিবীর গভীরতম খাতের নাম ম্যারিয়ানা খাত যা গুয়াম দ্বীপের ৩২২ কিলোমিটার দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থিত।
খ মহীসোপানের বৈশিষ্ট্য হলো :
১. এটি সমুদ্রের উপক‚লরেখা থেকে ১ কোণে সমুদ্র তলদেশে নিমজ্জিত থাকে।
২. উপক‚ল সমভ‚মি হলে এর বিস্তৃতি হয় প্রশস্ত আর মালভ‚মি বা পর্বত হলে বিস্তৃতি হয় সংকীর্ণ।
৩. গড় প্রশস্ততা ৭০ কিলোমিটার।
৪. এর সবচেয়ে উপরের অংশকে উপক‚লীয় ঢাল বলে।
গ চিত্রের ‘অ’ চি‎িহ্নত স্থানের পানির প্রবাহ বা স্রোতটি একটি শীতল ল্যাব্রাডর স্রোত। উত্তর মহাসাগর হতে আগত দুইটি সুমেরু শীতল স্রোত গ্রীনল্যান্ডের পূর্ব ও পশ্চিম পার্শ্ব দিয়ে দক্ষিণ দিকে প্রবাহিত হয়ে ল্যাব্রাডর উপদ্বীপের নিকট মিলিত হয়। এই মিলিত স্রোত শীতল ল্যাব্রাডর উপদ্বীপের নিকট মিলিত হয়। এই মিলিত স্রোত শীতল ল্যাব্রাডর স্রোত। এই শীতল ল্যাব্রাডর স্রোত উত্তর আমেরিকার স্থলভাগের উপর ব্যাপক প্রভাব ফেলে। এই সুমেরু শীতল স্রোতের জন্য উত্তর আমেরিকার ল্যাব্রাডর উপদ্বীপের বন্দরগুলো বছরের প্রায় নয় মাস বরফে আচ্ছাদিত থাকে। এ স্রোতের ওপর দিয়ে প্রবাহিত বায়ু শুষ্ক ও শীতল হওয়ায় নিকটবর্তী স্থলভাগে বৃষ্টিপাত হয় না বরং ব্যাপক তুষারপাত ঘটে। ফলে এ অঞ্চল কৃষি, শিল্প ও ব্যবসা-বাণিজ্যে পঞ্চাৎপদ হওয়ায় মানুষের অর্থনৈতিক ক্রিয়াকলাপে বিঘœ ঘটে।
ঘ ‘চ’ ও ‘ই’ চি‎িহ্নত স্থানে দক্ষিণ নিরক্ষীয় স্রোত ও ব্রাজিল স্রোত পরিলক্ষিত হয়। এগুলো উষ্ণ স্রোত। এই দুটি স্রোতের আবর্তন না হলে ওই এলাকার বাণিজ্যের উপর সম্ভাব্য প্রভাব হবে নেতিবাচক এবং তা সারাবিশ্বের বাণিজ্যের উপরই প্রভাব বিস্তার করবে। এ দুই স্রোতের প্রভাবে আমেরিকা মহাদেশের উপক‚লভাগ বরফমুক্ত থাকে। বন্দরগুলো সারাবছর ব্যবহার করা যায়। যদি এই দুই স্রোতের আবর্তন না হতো বন্দরগুলো বরফাচ্ছন্ন দেখা যেত। ব্যবসা, বাণিজ্যে বিরূপ প্রভাব পড়ত। এই দুই স্রোতের প্রভাবে নৌকা-জাহাজ প্রভৃতি চলাচলে সুবিধা হয়। যদি স্রোতের আবর্তন না হতো যাতায়াতে অসুবিধা হতো। আর আমেরিকা মহাদেশের উপক‚ল ভাগের এ স্রোতদ্বয় সারাবিশ্বের বাণিজ্যের উপর প্রভাব ফেলত বাণিজ্য ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাপী আমেরিকার প্রভাবের কারণে। উদ্দীপকের এ দুই স্রোতের প্রভাবে বায়ুপ্রবাহ প্রচুর জলীয়বাষ্প সংগ্রহ করে এবং উপক‚ল অঞ্চলে প্রচুর বৃষ্টিপাত ঘটায়। ফলে আমেরিকার এ উপক‚লীয় অঞ্চলে কৃষির ব্যাপক প্রসার ঘটেছে। যা পরোক্ষভাবে বাণিজ্যে ভ‚মিকা রাখে। সুতরাং ‘চ’ ও ‘ই’ চি‎িহ্নত স্থানে পানিরাশির আবর্তন না হলে ঐ এলাকার বাণিজ্যের উপর বিরূপ প্রভাব পড়ত।

প্রশ্ন- ২  জোয়ার-ভাটা

তুহিন তার বাবার সঙ্গে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে বেড়াতে যায়। সকাল বেলায় দেখতে পায় সমুদ্রের পানি স্ফীত হয়ে উপরে উঠে এসেছে কিন্তু সন্ধ্যার সময় আবার নেমে গেছে।
ক. সমুদ্রস্রোতের প্রধান কারণ কী?
খ. জোয়ার-ভাটা সৃষ্টিতে কেন্দ্রাতিগ শক্তির প্রভাব ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত পানির এরূপ আচরণের কারণ ব্যাখ্যা কর।
ঘ. তুহিনের দেখা সমুদ্রের পানির ঐরূপ আচরণ উপক‚লীয় অঞ্চলে কিরূপ প্রভাব ফেলে বিশ্লেষণ কর।

ক অয়ন বায়ু, পশ্চিমা বায়ু, মেরু বায়ুপ্রবাহ এসব নিয়ত বায়ুপ্রবাহ সমুদ্রস্রোত সৃষ্টির প্রধান কারণ।
খ কেন্দ্রাতিগ শক্তির প্রভাবে জোয়ার-ভাটা সৃষ্টি হয়। পৃথিবী নিজ মেরুরেখার চারদিকে অনবরত আবর্তন করে বলে কেন্দ্রাতিগ শক্তি বা বিকর্ষণ শক্তির সৃষ্টি হয়। এই কেন্দ্রাতিগ শক্তির প্রভাবে পৃথিবীর প্রতিটি অণুই মহাকর্ষ শক্তির বিপরীত দিকে বিকর্ষিত হয় বা ছিটকে যায়। তাই পৃথিবীর কেন্দ্রাতিগ শক্তির প্রভাবে যেখানে জোয়ারের সৃষ্টি হয় তার বিপরীত দিকে সমুদ্রের পানি বিক্ষিপ্ত হয়েও জোয়ারের সৃষ্টি করে।
গ উদ্দীপকে উল্লিখিত পানির এরূপ আচরণের কারণ হলো জোয়ার ও ভাটা। সমুদ্র এবং উপক‚লবর্তী নদীর পানিরাশি প্রতিদিনই কোনো একটি সময়ে ধীরে ধীরে ফুলে ওঠে আবার নেমে যায়। পানিরাশির এরকম নিয়মিত স্ফীতি বা ফুলে ওঠাকে জোয়ার এবং নেমে যাওয়াকে ভাটা বলে। জোয়ার ভাটা সৃষ্টির কারণ দুটিÑ
১. চাঁদ ও সূর্যের মহাকর্ষ শক্তির প্রভাব : মহাকর্ষ শক্তির প্রভাবে সূর্য ও চাঁদ পৃথিবীকে আকর্ষণ করে। কিন্তু পৃথিবীর উপর সূর্য অপেক্ষা চাঁদের আকর্ষণ বল বেশি হয়। কারণ সূর্যের ভর অপেক্ষা চাঁদের ভর অনেক কম হলেও চাঁদ সূর্য অপেক্ষা পৃথিবীর অনেক নিকটে অবস্থিত। তাই সমুদ্রের পানি তরল বলে চাঁদের আকর্ষণেই প্রধানত সমুদ্রের পানি ফুলে ওঠে ও জোয়ার হয়। সূর্যের আকর্ষণে জোয়ার তত জোরালো হয় না। চাঁদ ও সূর্য একই সরলরেখায় অবস্থিত হলে চাঁদ ও সূর্য উভয়ের আকর্ষণে জোয়ার অত্যন্ত প্রবল হয়।
২. পৃথিবীর আবর্তনের ফলে উৎপন্ন কেন্দ্রাতিগ শক্তি : পৃথিবীর কেন্দ্রাতিগ শক্তির প্রভাবে যেখানে মহাশক্তির প্রভাবে জোয়ারের সৃষ্টি হয়, তার বিপরীত দিকে সমুদ্রের পানি বিক্ষিপ্ত হয়েও জোয়ারের সৃষ্টি করে।
আবার পৃথিবীর যেসব স্থানে জোয়ার হয় তার সমকৌণিক স্থানে পানি সরে গিয়ে ভাটা হয়।
ঘ তুহিনের দেখা সমুদ্রের পানির জোয়ার ভাটার আচরণ উপক‚লীয় অঞ্চলে ব্যাপক প্রভাব ফেলে। যেমনÑ
১. জোয়ার ভাটার মাধ্যমে ভ‚খণ্ড থেকে আবর্জনাসমূহ নদীর মধ্য দিয়ে সমুদ্রে গিয়ে পতিত হয়।
২. দৈনিক দুবার জোয়ার-ভাটা হওয়ার ফলে ভাটার টানে নদীর মোহনায় পলি ও আবর্জনা জমতে পারে না।
৩. জোয়ার-ভাটার ফলে সৃষ্ট স্রোতের সাহায্যে নদীখাত গভীর হয়।
৪. বহু নদীতে ভাটার স্রোতের বিপরীতে বাঁধ দিয়ে জলবিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়।
৫. জোয়ারের পানি নদীর মাধ্যমে সেচে সহায়তা করে এবং অনেক সময় খাল খনন করে জোয়ারের পানি আটকিয়ে সেচকার্যে ব্যবহার করা হয়।
৬. শীতপ্রধান দেশে সমুদ্রের লবণাক্ত পানি জোয়ারের সাহায্যে নদীতে প্রবেশ করে এবং এর ফলে নদীর পানি সহজে জমে না।
৭. জোয়ার ভাটার ফলে নৌযান চলাচলের মাধ্যমে ব্যবসা-বাণিজ্যের সুবিধা হয়। জোয়ারের সময় নদীর মোহনায় ও তার অভ্যন্তরে পানি অধিক হয় বলে বড় বড় সমুদ্রগামী জাহাজের পক্ষে নদীতে প্রবেশ করা সুবিধা হয়। আবার জোয়ারের টানে ওই জাহাজ অনায়াসে সমুদ্রে নেমে আসতে পারে। বাংলাদেশের দুটি প্রধান সমুদ্রবন্দর পতেঙ্গা ও মংলা এবং অন্যান্য উপক‚লবর্তী নদীবন্দর সচল রাখতে জোয়ার ভাটার ভ‚মিকা রয়েছে।
৮. অমাবস্যা ও পূর্ণিমা তিথিতে নদীতে জোয়ারের সময় বান ডাকার ফলে অনেক সময় নৌকা, লঞ্চ প্রভৃতি ডুবে যায় বা ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং এতে নদীর উপক‚লবর্তী এলাকায় জানমালের ক্ষতি হয়।

 বোর্ড ও সেরা স্কুলের বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
১. কোনটি দিয়ে সমুদ্রের গভীরতা মাপা যায়? [স. বো.’১৬]
ক থার্মোমিটার খ ল্যাকটোমিটার
গ ফ্যাদোমিটার ঘ রিখটার স্কেল
৫. গভীর খাত হলো [স. বো. ’১৫]
র. অধিক প্রশস্ত
রর. অধিক প্রশস্ত নয়
ররর. খাড়া ঢালবিশিষ্ট
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর  রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ে ৬ ও ৭নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
রায়হান টেলিভিশনে একটি বিখ্যাত চলচ্চিত্র দেখছিল। চলচ্চিত্রের দৃশ্যে দেখা গেল শান্ত সমুদ্রে একটি জাহাজ ক্যানারি স্রোত অতিক্রম করছে। এক সময় দেখা গেল জাহাজটি প্রচণ্ড ধাক্কা খেয়ে ডুবে গেল। [স. বো. ’১৫]
৬. চলচ্চিত্রে রায়হানের দেখা জাহাজটি কোন সাগর দিয়ে যাচ্ছিল?
ক প্রশান্ত মহাসাগর খ উত্তর মহাসাগর
 আটলান্টিক মহাসাগর ঘ দক্ষিণ মহাসাগর
৭. রায়হানের দেখা জাহাজটি যার সংগে ধাক্কা খেয়ে ডুবেছিল তা পরিবাহিত হয়
ক উষ্ণ স্রোতের সংগে
 শীতল স্রোতের সংগে
গ উষ্ণ ও শীতল স্রোতের মিলন স্থলে
ঘ বায়ুমণ্ডলের মাধ্যমে
৮. ‛ঐুফৎড়ংঢ়যবৎব’- এর বাংলা প্রতিশব্দ কী?
[গাজীপুর ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড আন্ত: উচ্চ বিদ্যালয়]
 বারিমণ্ডল খ বায়ুমণ্ডল গ আবহাওয়া মণ্ডল ঘ অশ্মমণ্ডল
৯. নদী, হ্রদ ও ভ‚গর্ভস্থ পানি কোন ধরনের পানির উৎস?
[পুলিশ লাইন হাইস্কুল, ফরিদপুর]
ক দূষিত ˜ মিঠা গ লবণাক্ত ঘ উষ্ণ
১০. পৃথিবীর বৃহত্তম ও গভীরতম মহাসাগর কোনটি?
[যাত্রাবাড়ি আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজ, ঢাকা]
ক আটলান্টিক  প্রশান্ত
গ ভারত ঘ উত্তর
১১. শব্দতরঙ্গের সাহায্যে সমুদ্রের কী মাপা হয়? [অগ্রণী স্কুল এন্ড কলেজ, ঢাকা]
ক দৈর্ঘ্য  গভীরতা গ প্রস্থ ঘ আয়তন
১২. কোন যন্ত্রের সাহায্যে সমুদ্রের গভীরতা নির্ণয় করা হয়?
[বিএএফ শাহীন কলেজ, ঢাকা]
ক ব্যারোমিটার ˜ ফ্যাদোমিটার গ হাইগ্রোমিটার ঘ থার্মোমিটার
১৩. সমুদ্রের তলদেশের ভ‚মিরূপকে কয়টি ভাগে ভাগ করা হয়?
[এ.ভি.জে.এম সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, মুন্সিগঞ্জ]
ক তিন খ চার ˜ পাঁচ ঘ ছয়
১৪. মহীসোপানের সমুদ্রের পানির সর্বোচ্চ গভীরতা কত?
[হলিক্রস উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়, ঢাকা]
ক ৫০ মিটার খ ১০০ মিটার গ ১২০ মিটার  ১৫০ মিটার
১৫. পৃথিবীর বৃহত্তম মহীসোপান কোথায় অবস্থিত?
[ভিকারুন নিসা নূল স্কুল ও কলেজ, ঢাকা]
ক আমেরিকার পূর্ব উপক‚লে খ এশিয়ার পশ্চিম উপক‚লে
 ইউরোপের উত্তর-পশ্চিমে ঘ আফ্রিকার দক্ষিণ-পূর্বে
১৬. পৃথিবীর গভীরতম ম্যাবিয়ানা খাতটির অবস্থান কোথায়?
[কদমতলা পূর্ব বাসাবো স্কুল এন্ড কলেজ, ঢাকা]
 প্রশান্ত মহাসাগরে খ আটলান্টিক মহাসাগরে
গ ভারত মহাসাগরে ঘ উত্তর মহাসাগরে
১৭. সমুদ্রস্রোত সৃষ্টিতে সবচেয়ে বেশি প্রভাব বিস্তার করে কোনটি?
[আজিমপুর গভ. গার্লস স্কুল এন্ড কলেজ, ঢাকা]
ক জলবায়ু খ উষ্ণ স্রোত  বায়ুপ্রবাহ ঘ শীতল স্রোত
১৮. কোন স্রোতের অনুক‚লে পৃথিবীর সর্বাধিক জাহাজ যাতায়াত করে?
[খিলগাঁও গার্লস স্কুল এন্ড কলেজ, ঢাকা]
 উত্তর আটলান্টিক খ উপসাগরীয় গ ল্যাব্রাডর ঘ ক্যানারি
১৯. ল্যাব্রাডর স্রোত দিয়ে জাহাজ চলাচল করতে পারে না কেন?
[মোহাম্মদপুর উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়, ঢাকা]
ক সমুদ্রের গভীরতার জন্য  শীতল স্রোতের জন্য
গ ভগ্ন উপক‚লের জন্য ঘ জাহাজের শক্তির জন্য
২০. শীতল ও উষ্ণ স্রোতের মিলিতস্থলে কী তৈরি হয়?
[মোহাম্মদপুর উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়, ঢাকা]
ক ভ‚মিকম্প খ বন্যা  মগ্নচড়া ঘ সুনামি
২১. প্ল্যাংটন কোথায় জš§ায়? [কদমতলা পূর্ব বাসাবো স্কুল এন্ড কলেজ, ঢাকা]
ক গভীর মগ্নচড়ায় খ উপক‚লে
গ স্থলভাগে  অগভীর মগ্নচড়ায়
২২. শীতল স্রোতে জাহাজ চলাচলে অসুবিধা কেন? [অগ্রণী স্কুল এন্ড কলেজ, ঢাকা]
ক হিমবাহের জন্য ˜ হিমশৈলের জন্য
খ বায়ুপ্রবাহ বেশি থাকার জন্য ঘ উত্তাপ বৃদ্ধি পাওয়ার জন্য
২৩. কোনটির সঙ্গে আঘাতের কারণে টাইটানিক জাহাজ আটলান্টিক মহাসাগরে ডুবে যায়? [ভিকারুন নিসা নূল স্কুল ও কলেজ, ঢাকা]
ক বরফ  হিমশৈল গ পর্বত ঘ হিমপ্রাচীর
২৪. কখন চাঁদ ও সূর্য উভয়ের আকর্ষণে জোয়ার অত্যন্ত প্রবল হয়?
[বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফ পাবলিক কলেজ, ঢাকা]
ক দুটি ভিন্ন রেখায় অবস্থিত
˜ একই সরল রেখায় অবস্থিত
গ দুটি বিপরীত দিক থেকে আকর্ষণ
ঘ উত্তর ও দক্ষিণে একই সরলরেখায় অবস্থিত
২৫. বারিমণ্ডল গঠিত  [ব্রাহ্মন্দী মাধ্যমিক বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, নরসিংদী]
র. মহাসাগর ও সাগর নিয়ে
রর. মেঘ ও জলীয়বাষ্প নিয়ে
ররর. উপসাগর ও হ্রদ নিয়ে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর  র, রর ও ররর
নিচের চিত্রটি পর্যবেক্ষণ করে ১৭৮ ও ১৭৯ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :

[রাজবাড়ি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়]
২৬. জানুয়ারি মাসে একটি জাহাজকে ‘অ’ স্থান থেকে ‘ই’ স্থানে পৌঁছতে কোন স্রোত প্রবাহে যেতে হবে?
 নিরক্ষীয় বিপরীত খ উপসাগরীয়
গ ক্যানারি ঘ উত্তর নিরক্ষীয়
২৭. জাহাজটি একই মাসে ‘ই’ থেকে ‘ঈ’ স্থানে যেতে চিত্রের চি‎িহ্নত স্রোতটি ব্যবহার করলে কোন প্রতিবন্ধকতায় পড়বে?
ক মগ্নচড়া খ শৈলশিরা  হিমশৈল ঘ অন্তরীপ

 বিষয়ক্রম অনুযায়ী বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
 বারিমণ্ডলের ধারণা  বোর্ড বই, পৃষ্ঠা- ৮১
¡ ‘ঐুফৎড়ংঢ়যবৎব’ -এর বাংলা প্রতিশব্দ বারিমণ্ডল।
¡ পৃথিবীর সকল জলরাশির শতকরা ৯৭ ভাগ পানি রয়েছে- সমুদ্রে।
¡ পৃথিবীর সমস্ত পানিকে- দুই ভাগে ভাগ করা যায়।
¡ মিঠা পানির উৎস হচ্ছে- নদী, হ্রদ ও ভ‚গর্ভ।
¡ জলরাশি পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে রয়েছে- কঠিন, গ্যাসীয়, তরল অবস্থায়।
¡ বারিমণ্ডলের উন্মুক্ত বিস্তীর্ণ বিশাল লবণাক্ত জলরাশিকে- মহাসাগর বলে।
¡ পৃথিবীতে মহাসাগর রয়েছে- ৫টি।
¡ মহাসাগর অপেক্ষা স্বল্প আয়তনবিশিষ্ট জলরাশিকে- সাগর বলে।
¡ তিনদিকে স্থল এবং একদিকে জল থাকলে তাকে- উপসাগর বলে।
¡ চারদিকে স্থলভাগ দ্বারা বেষ্টিত জলভাগকে – হ্রদ বলে।
সাধারণ বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
২৮. ‘ঐুফৎড়’ শব্দের অর্থ কী? (জ্ঞান)
ক মাটি ˜ পানি গ বায়ু ঘ জলবায়ু
২৯. ‘ঝঢ়যবৎব’ শব্দের অর্থ কী? (জ্ঞান)
˜ ক্ষেত্র খ পানি গ স্থল ঘ আকাশ
৩০. বায়ুমণ্ডলে পানি কী অবস্থায় বিরাজ করে? (জ্ঞান)
ক তরল খ কঠিন গ বরফ  জলীয়বাষ্প
৩১. ভ‚পৃষ্ঠে পানি কী অবস্থায় আছে? (জ্ঞান)
ক কঠিন  তরল ও কঠিন গ জলীয়বাষ্প ঘ শীতল
৩২. পৃথিবীর সকল জলরাশির অবস্থানভিত্তিক বিস্তরণকে কী বলা হয়? (অনুধাবন)
 বারিমণ্ডল খ অশ্বমণ্ডল গ বায়ুমণ্ডল ঘ গুরুমণ্ডল
৩৩. পৃথিবীর জলরাশির শতকরা কতভাগ সমুদ্রে বিস্তৃত? (জ্ঞান)
ক ৯৩ খ ৯৫ ˜ ৯৭ ঘ ৯৯
৩৪. পৃথিবীর পানিকে কত ভাগে ভাগ করা হয়েছে? (জ্ঞান)
 ২ খ ৩ গ ৪ ঘ ৫
৩৫. জলরাশির অবস্থানভিত্তিক বিস্তরণে সমুদ্রে পানির পরিমাণ কত? (জ্ঞান)
ক ১১.৫ লক্ষ ঘন কিলোমিটার খ ৯.৫ লক্ষ ঘন কিলোমিটার
গ ২৯ লক্ষ ঘন কিলোমিটার  ১৩৭০ লক্ষ ঘন কিলোমিটার
৩৬. পৃথিবীর জলরাশির মধ্যে হিমবাহ শতকরা কত ভাগ ধারণ করে আছে? (জ্ঞান)
ক ০.০১% খ ০.৬৮%
গ ১.০৫%  ২.০৫%
৩৭. জলরাশির অবস্থানভিত্তিক বিস্তরণে ভ‚গর্ভস্থ পানির পরিমাণ কত? (জ্ঞান)
ক ০.১২৫ লক্ষ ঘন কিলোমিটার  ৯.৫ লক্ষ ঘন কিলোমিটার
গ ১৫ লক্ষ ঘন কিলোমিটার ঘ ২৯ লক্ষ ঘনকিলোমিটার
৩৮. পৃথিবীর জলরাশির মধ্যে ভ‚গর্ভস্থ পানি শতকরা কত ভাগ বিরাজ করছে? (জ্ঞান)
ক ০.০১% খ ০.০০৫%  ০.৬৮% ঘ ২.০৫%
৩৯. জলরাশির অবস্থানভিত্তিক বিস্তরণের মধ্যে নদীর ভাগ শতকরা কত? (জ্ঞান)
ক ০.০০০০৪%  ০.০০০১% গ ০.০০১% ঘ ০.০০৫%
৪০. জীবমণ্ডলে জলরাশির অবস্থানভিত্তিক বিস্তরণের মধ্যে পানি কত ভাগ জুড়ে আছে? (জ্ঞান)
 ০.০০০৬ লক্ষ ঘন কিলোমিটার খ ০.০১৩ লক্ষ ঘন কিলোমিটার
গ ০.০০১৭ লক্ষ ঘন কিলোমিটার ঘ ০.৬৫ লক্ষ ঘন কিলোমিটার
৪১. বারিমণ্ডলের উন্মুক্ত বিস্তীর্ণ বিশাল লবণাক্ত জলরাশিকে কী বলে? (জ্ঞান)
ক সাগর খ উপসাগর গ হ্রদ  মহাসাগর
৪২. পৃথিবীতে কতটি মহাসাগর রয়েছে? (জ্ঞান)
ক তিন খ চার  পাঁচ ঘ ছয়
৪৩. কোন মহাসাগর ভগ্ন উপক‚লবিশিষ্ট এবং অনেক আবদ্ধ সাগরের সৃষ্টি করেছে? (জ্ঞান)
 আটলান্টিক খ প্রশান্ত গ ভারত ঘ উত্তর
৪৪. এশিয়া, আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়া এই তিন মহাদেশে কোন মহাসাগর অবস্থান? (জ্ঞান)
ক উত্তর খ প্রশান্ত ˜ ভারত ঘ আটলান্টিক
৪৫. ৬০ দক্ষিণ অক্ষাংশ থেকে এন্টার্কটিকা পর্যন্ত অবস্থান করছে কোন মহাসাগর? (অনুধাবন)
ক উত্তর  দক্ষিণ গ ভারত ঘ প্রশান্ত
৪৬. ভ‚পৃষ্ঠের কোন স্থান বছরের সকল সময় বরফে আচ্ছন্ন থাকে? (অনুধাবন)
ক উত্তর মহাসাগর খ দক্ষিণ মহাসাগর
 এন্টার্কটিকা মহাদেশ ঘ বৈকাল হ্রদ
৪৭. পৃথিবীর উত্তর গোলার্ধের উত্তর প্রান্তে কোন মহাসাগরে অবস্থান? (জ্ঞান)
ক আটলান্টিক খ প্রশান্ত গ ভারত ˜ উত্তর
৪৮. আমেরিকা ও এশিয়ার মধ্যবর্তী স্থানে কোন মহাসাগর বিরাজ করছে? (অনুধাবন)
ক উত্তর খ ভারত গ আটলান্টিক  প্রশান্ত
৪৯. প্রশান্ত মহাসাগরের গড় গভীরতা কত? (জ্ঞান)
ক ৩,২৭০ মিটার  ৪,২৭০ মিটার
গ ৪,৫৭০ মিটার ঘ ৫,২৭০ মিটার
৫০. গভীরতার দিক দিয়ে পৃথিবীর তৃতীয় মহাসাগর কোনটি? (জ্ঞান)
ক প্রশান্ত খ ভারত  আটলান্টিক ঘ উত্তর
৫১. আয়তনের দিক দিয়ে পৃথিবীর তৃতীয় মহাসাগর কোনটি? (জ্ঞান)
ক উত্তর  ভারত গ আটলান্টিক ঘ প্রশান্ত
৫২. কোন মহাসাগরের গড় গভীরতা সবচেয়ে কম? (জ্ঞান)
ক আটলান্টিক খ ভারত গ উত্তর  দক্ষিণ
৫৩. মহাসাগর অপেক্ষা স্বল্প আয়তনবিশিষ্ট জলরাশিকে কী বলে? (জ্ঞান)
ক হ্রদ খ উপসাগর  সাগর ঘ নদী
৫৪. তিনদিকে স্থল এবং একদিক জলদ্বারা বেষ্টিত জলভাগকে কী বলে? (অনুধাবন)
ক সাগর  উপসাগর গ হ্রদ ঘ দ্বীপ
৫৫. চারদিকে স্থলভাগ দ্বারা বেষ্টিত জলভাগকে কী বলে? (জ্ঞান)
ক সাগর  হ্রদ গ মহাসাগর ঘ উপসাগর
৫৬. বৈকাল হ্রদ কোথায় অবস্থিত? (জ্ঞান)
ক যুক্তরাষ্ট্র  রাশিয়া গ কানাডা ঘ জাম্বিয়া
৫৭. সুপিরিয়র কী? (অনুধাবন)
 হ্রদ খ দ্বীপ গ শৈলশিরা ঘ উপসাগর
৫৮. যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার সীমান্তে অবস্থিত হ্রদ কোনটি? (অনুধাবন)
ক বৈকাল খ ভিক্টোরিয়া  সুপিরিয়র ঘ এলিজাবেথ
বহুপদী সমাপ্তিসূচক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
৫৯. পৃথিবীর মহাসাগরগুলো হলো (অনুধাবন)
র. প্রশান্ত ও আটলান্টিক
রর. উত্তর ও দক্ষিণ
ররর. আরব ও লোহিত
নিচের কোনটি সঠিক?
 র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৬০. ভারত মহাসাগরের ক্ষেত্রে সঠিক (উচ্চতর দক্ষতা)
র. আয়তন ৭ কোটি ৩৬ লাখ বর্গকিলোমিটার
রর. গড় গভীরতা ৮২৪ মিটার
ররর. আফ্রিকা, ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থান
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর  র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৬১. আটলান্টিক মহাসাগরের ক্ষেত্রে সঠিক (উচ্চতর দক্ষতা)
র. আয়তন ১৬ কোটি ৬০ লাখ বর্গকিলোমিটার
রর. গড় গভীরতা ৩,৯৩২ মিটার
ররর. আমেরিকা, ইউরোপ ও আফ্রিকা মহাদেশের মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থান
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর  রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৬২. উপসাগরের উদাহরণ (অনুধাবন)
র. ক্যারিবিয়ান
রর. বঙ্গোপসাগর
ররর. লোহিত
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র  রর গ র ও রর ঘ র, রর ও ররর
অভিন্ন তথ্যভিত্তিক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
নিচের চিত্রটি পর্যবেক্ষণ করে ৪৩ ও ৪৪নং প্রশ্নের উত্তর দাও :

৬৩. চিত্রে ১ চি‎িহ্নত স্থানটি কোন মহাসাগর? (প্রয়োগ)
 প্রশান্ত খ আটলান্টিক গ উত্তর ঘ দক্ষিণ
৬৪. চিত্রে ২ চি‎িহ্নত মহাসাগরের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হলো (উচ্চতর দক্ষতা)
র. পৃথিবীর উত্তর গোলার্ধে অবস্থিত
রর. আয়তন ১ কোটি ৫০ লাখ বর্গকিলোমিটার
ররর. এর গড় গভীরতা ১৪৯ মিটার
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র  র ও রর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
 সমুদ্র তলদেশের ভ‚মিরূপ ও সামুদ্রিক সম্পদ  বোর্ড বই, পৃষ্ঠা- ৮৩
¡ ভ‚পৃষ্ঠের উপরের ভ‚মিরূপ যেমন উঁচুনিচু তেমনি- সমুদ্র তলদেশও অসমান।
¡ শব্দতরঙ্গের সাহায্যে- সমুদ্রের গভীরতা মাপা হয়।
¡ সমুদ্র তলদেশের ভ‚মিরূপকে-৫টি ভাগে বিভক্ত করা হয়।
¡ মহীসোপানের গড় প্রশস্ততা-৭০ কিলোমিটার।
¡ বাংলাদেশের উপক‚লীয় অঞ্চলের দৈর্ঘ্য প্রায় -৭১৬ কি মি।
¡ সমুদ্রের মহীঢালের গড় গভীরতা -২০০ থেকে ৩০০ মিটার।
¡ সমুদ্র তলদেশে বিস্তৃত সমভ‚মিই হলো -গভীর সমুদ্রের সমভ‚তি।
¡ সমুদ্রের গভীরতা মাপা হয়- ফ্যাদোমিটার যন্ত্র দিয়ে।
¡ পশ্চিম উপক‚ল বরাবর- মহীসোপান খুবই সংকীর্ণ।
¡ পৃথিবীর গভীরতম খাত হচ্ছে- ম্যারিয়ানা খাত।

সাধারণ বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
৬৫. ফ্যাদোমিটার যন্ত্রের শব্দতরঙ্গ প্রতি সেকেন্ডে পানির মধ্যে কত মিটার নিচে গিয়ে আবার ফিরে আসে? (প্রয়োগ)
ক ৮৭৫ খ ১২৫০  ১৪৭৫ ঘ ১৬২৫
৬৬. পৃথিবীর মহাদেশসমূহের স্থলভাগের কিছু অংশ অল্প ঢালু হয়ে সমুদ্রের পানির মধ্যে নেমে গেছে। এরূপ নিমজ্জিত অংশকে কী বলে? (প্রয়োগ)
 মহীসোপান খ মহীঢাল গ শৈলশিরা ঘ মগ্নচড়া
৬৭. মহীসোপান কত ডিগ্রি কোণে সমুদ্র তলদেশে নিমজ্জিত থাকে? (জ্ঞান)
ক ০  ১ গ ২ ঘ ৪
৬৮. মহীসোপানের গড় প্রশস্ততা কত কিলোমিটার? (জ্ঞান)
ক ৪৫  ৭০ গ ১০৫ ঘ ১৫০
৬৯. মহীসোপানের সবচেয়ে উপরের অংশকে কী বলে? (জ্ঞান)
ক উত্থিত মহীসোপান খ মহীঢাল
গ মহাসাগরীয় খাত  উপক‚লীয় ঢাল
৭০. মহীসোপানের বিস্তৃতি কিসের ওপর নির্ভর করে? (অনুধাবন)
ক সমুদ্রের আয়তন ˜ উপক‚ল ভাগের বন্ধুরতা
গ সমুদ্রের গভীরতা ঘ উপক‚লের বিস্তৃতি
৭১. কখন মহীসোপান অধিক প্রশস্ত হয়? (অনুধাবন)
 উপক‚ল বিস্তৃত সমভ‚মি হলে খ উপক‚ল বিস্তৃত মালভ‚মি হলে
গ উপক‚ল পর্বত বেষ্ঠিত হলে ঘ উপক‚ল বিশিষ্ট হলে গিরিখাত
৭২. মহাদেশের উপক‚লে পর্বত থাকলে মহীসোপান কেমন হয়? (অনুধাবন)
ক ঢালু খ বিস্তৃত
গ প্রশস্ত ˜ সংকীর্ণ
৭৩. ইউরোপের উত্তরে বিস্তীর্ণ সমভ‚মি থাকায় উত্তর মহাসাগরের মহীসোপানের আকৃতি কেমন? (প্রয়োগ)
ক প্রশস্ত খ সংকীর্ণ গ খুবই সংকীর্ণ  খুবই প্রশস্ত
৭৪. উত্তর মহাসাগরের মহীসোপানের বিস্তৃতি কত? (জ্ঞান)
ক ৭০ কিলোমিটার খ ৭৯১ কিলোমিটার
গ ৮৯৮ কিলোমিটার  ১,২৮৭ কিলোমিটার
৭৫. মহীসোপানের দ্বিতীয় বৃহত্তম অংশ কোথায় দেখা যায়? (জ্ঞান)
 আমেরিকার পূর্ব উপক‚লে খ এশিয়ার পশ্চিম উপক‚লে
গ ইউরোপের উত্তর-পশ্চিমে ঘ দক্ষিণ আফ্রিকার পূর্ব উপক‚লে
৭৬. কিসের অবস্থানের কারণে আফ্রিকা মহাদেশের পূর্ব ও পশ্চিম উপক‚লের মহীসোপান খুবই সরু? (উচ্চতর দক্ষতা)
 মালভ‚মি খ সমভ‚মি গ বদ্বীপ ঘ শৈলশিরা
৭৭. মহীসোপান হঠাৎ খাড়াভাবে নেমে গেলে, তাকে কী বলা হয়? (জ্ঞান)
ক সমুদ্রখাত খ শৈলশিরা গ উপক‚লীয় রেখা  মহীঢাল
৭৮. সমুদ্রে মহীঢালের গভীরতা কত? (জ্ঞান)
ক ১০০-১০০০ মিটার ˜ ২০০ Ñ ৩,০০০ মিটার
গ ২৫০-৩,৫০০মিটার ঘ ৩০০ – ৩,৫০০ মিটার
৭৯. মহীঢাল তেমন প্রশস্ত নয় কেন? (অনুধাবন)
ক বিস্তৃতি বেশি বলে খ জলপ্রবাহ কম বলে
˜ অধিক খাড়া বলে ঘ স্রোতের পরিমাণ কম বলে
৮০. মহীঢালের উপরিভাগ সমান না হওয়ার কারণ কী? (উচ্চতর দক্ষতা)
 আন্তঃসাগরীয় গিরিখাতের অবস্থান
খ মহীসোপানের বন্ধুরতা
গ সমুদ্র উপক‚লের বন্ধুরতা
ঘ মহাদেশীয় গিরিখাতের অবস্থান
৮১. মহীঢাল শেষ হওয়ার পর সমুদ্র তলদেশে বিস্তৃত সমভ‚মি দেখা যায়, এটিকে কী বলা হয়? (প্রয়োগ)
ক নিমজ্জিত শৈলশিরা খ ক্ষয়জাত সমভ‚মি
গ সঞ্চয়জাত সমভ‚মি  গভীর সমুদ্রের সমভ‚মি
৮২. গভীর সমুদ্রের সমভ‚মির গড় গভীরতা কত? (জ্ঞান)
ক ২,০০০ মিটার খ ৩,০০০ মিটার
গ ৪,০০০ মিটার  ৫,০০০ মিটার
৮৩. গভীর সমুদ্রের সমভ‚মিতে পলিমাটি, সিন্ধুমল প্রভৃতি স্তরে স্তরে সঞ্চিত হয়ে কী শিলা গঠন করে? (প্রয়োগ)
ক আগ্নেয়  পাললিক গ রূপান্তরিত ঘ অস্তরীভ‚ত
৮৪. গভীর সমুদ্রের সমভ‚মি কেমন? (অনুধাবন)
ক আগ্নেয় পর্বতপূর্ণ খ গিরিখাতবেষ্টিত
গ বিস্তীর্ণ সমভ‚মি ˜ বন্ধুর প্রকৃতির
৮৫. শৈলশিরা কী দ্বারা গঠিত? (জ্ঞান)
ক পলিমাটি ˜ লাভা দ্বারা
গ সিন্ধুমল ঘ কাঁকর ও নুড়ি দ্বারা
৮৬. আগ্নেয়গিরি থেকে লাভা বেরিয়ে এসে সমুদ্রগর্ভে সঞ্চিত হয়ে যে ভ‚মিরূপ তৈরি করে তাকে কী বলে? (জ্ঞান)
 শৈলশিরা খ মহীঢাল
গ মহীসোপান ঘ সমুদ্রখাত
৮৭. প্লেট সীমানায় সমুদ্রখাত সৃষ্টি হওয়ার কারণ কী? (উচ্চতর দক্ষতা)
ক মহাদেশীয় প্লেটসমূহের মধ্যকার সংঘর্ষ
খ সামুদ্রিক প্লেটসমূহের পারস্পরিক সংঘর্ষ
 মহাদেশীয় ও সামুদ্রিক প্লেটের সংঘর্ষ
ঘ প্লেটের দুর্বল অংশ ধসে পড়া
৮৮. গভীর সমুদ্রখাতের গড় গভীরতা কত? (জ্ঞান)
ক ৩,৫০০ মিটারের অধিক খ ৪,৪০০ মিটারের অধিক
˜ ৫,৪০০ মিটারের অধিক ঘ ৬,০০০ মিটারের অধিক
৮৯. কোন মহাসাগরে গভীর সমুদ্রখাতের সংখ্যা অধিক? (জ্ঞান)
ক আটলান্টিক  প্রশান্ত গ ভারত ঘ দক্ষিণ
৯০. ম্যারিয়ানা খাতের গভীরতা কত? (জ্ঞান)
ক প্রায় ৫,৪০০ মিটার খ প্রায় ৮,৫৩৮ মিটার
˜ প্রায় ১০,৮৭০ মিটার ঘ প্রায় ১১,৩৪০ মিটার
৯১. আটলান্টিক মহাসাগরের গভীরতম খাত কোনটি? (প্রয়োগ)
 পোর্টোরিকো খ শুণ্ডা
গ ভিক্টোরিয়া ঘ এলিজাবেথ
৯২. আটলান্টিক মহাসাগরের পোর্টোরিকো খাতের গভীরতা কত? (জ্ঞান)
ক প্রায় ৫,৪০০ মিটার ˜ প্রায় ৮,৫৩৮ মিটার
গ প্রায় ১০,৮৭০ মিটার ঘ প্রায় ১১,৩৪০ মিটার
৯৩. কোনটি ভারত মহাসাগরের গভীর সমুদ্রখাত? (অনুধাবন)
ক ম্যারিয়ানা খ পোর্টোরিকো
 শুণ্ডা ঘ ভিক্টোরিয়া
বহুপদী সমাপ্তিসূচক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
৯৪. সমুদ্রের তলদেশের ভ‚মিরূপ  (অনুধাবন)
র. মহীসোপান ও মহীঢাল
রর. শৈলশিরা ও সমুদ্রখাত
ররর. উষ্ণস্রোত ও শীতলস্রোতে তৈরি
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র  র ও রর গ র ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৯৫. মহাদেশের উপক‚লে পর্বত বা মালভ‚মি থাকলে মহীসোপান- (অনুধাবন)
র. সংকীর্ণ হয়
রর. বিস্তীর্ণ হয়
ররর. গভীর হয়
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র খ র ও রর  র ও ররর ঘ রর ও ররর
৯৬. মহীসোপান গঠনে সহায়তা করেÑ (অনুধাবন)
র. স্থলভাগের নিমজ্জিত উপক‚লীয় অঞ্চল
রর. সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতার তারতম্য
ররর. জলযানের চলাচল
নিচের কোনটি সঠিক?
 র ও রর খ র ও ররর গ ররর ঘ র, রর ও ররর
৯৭. মহীঢাল মৃদু হলে যেসব অবক্ষেপণ দেখা যায় (অনুধাবন)
র. জীবজন্তুর দেহাবশেষ
রর. পলি
ররর. মূল্যবান খনিজ
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র খ রর  র ও রর ঘ র, রর ও ররর
৯৮. গভীর সমুদ্রের সমভ‚মির ওপর অবস্থান করে (প্রয়োগ)
র. শৈলশিরা ও উচ্চভ‚মি
রর. আগ্নেয়গিরি
ররর. মালভ‚মি
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র  র ও রর গ র ও ররর ঘ র, রর ও ররর
অভিন্ন তথ্যভিত্তিক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
নিচের চিত্র দেখে ৭৯ ও ৮০নং প্রশ্নের উত্তর দাও :

৯৯. ‘ক’ চি‎িহ্নত স্থানের ভ‚মিরূপকে কী বলা হয়? (প্রয়োগ)
ক সমুদ্রখাত খ শৈলশিরা  মহীসোপান ঘ মহীঢাল
১০০. ‘খ’ চি‎িহ্নত স্থানের ভ‚মিরূপের বৈশিষ্ট্য হলো (উচ্চতর দক্ষতা)
র. হঠাৎ খাড়াভাবে নেমে সমভ‚মির সঙ্গে মিশে যায়
রর. অসংখ্য আন্তঃসাগরীয় গিরিখাত অবস্থান করে
ররর. সমুদ্রখাত এর সীমানায় বিরাজ করে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র  র ও রর গ র ও ররর ঘ র, রর ও ররর
নিচের চিত্রটি দেখে ৮১ ও ৮২নং প্রশ্নের উত্তর দাও :

১০১. সমুদ্র তলদেশের ‘ক’ ভ‚মিরূপটি কী নির্দেশ করছে? (প্রয়োগ)
ক মহীসোপান খ মহীঢাল
 নিমজ্জিত শৈলশিরা ঘ গভীর সমুদ্রখাত
১০২. ‘ক’ ভ‚মিরূপটি গঠিত হয় (উচ্চতর দক্ষতা)
র. আগ্নেয়গিরি থেকে লাভা বেরিয়ে এসে
রর. সূ² ভস্ম ও ছাই সঞ্চিত হয়ে
ররর. গলিত শিলা ও ধাতু জমাট বেঁধে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র খ র ও রর গ র ও ররর  র, রর ও ররর
 সমুদ্রস্রোত  বোর্ড বই, পৃষ্ঠা- ৮৫
¡ সমুদ্রের পানি একটি নির্দিষ্ট গতিপথ অনুসরণ করে চলাচল করে, একে বলে- সমুদ্রস্রোত।
¡ অয়ন বায়ু, পশ্চিমা বায়ু ও মেরু বায়ুপ্রবাহ- সমুদ্রস্রোতের সৃষ্টি করে।
¡ শীতল ল্যাব্রাডর স্রোত ও উষ্ণ উপসাগরীয় স্রোতে- ঘন কুয়াশা ও ঘূর্ণিবাতের সৃষ্টি হয়।
¡ অগভীর মগ্নচড়াগুলো- পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মাছ আহরণ ক্ষেত্র।
¡ নিউফাউন্ডল্যান্ডের উপক‚লে গ্র্যান্ড ব্যাঙ্ক, সেবল ব্যাংক- মগ্নচড়ার প্রকৃষ্ট উদাহরণ।
¡ যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত টাইটানিক জাহাজ ডুবে গিয়েছিল- হিমশৈলের কারণে।
¡ কানাডার পূর্ব উপক‚লে ল্যাব্রাডর দ্বীপপুঞ্জ বরফাচ্ছন্ন থাকে- ‘উষ্ণ উপসাগরীয় স্রোতের প্রভাবে।
¡ উষ্ণ উপসাগরীয় স্রোতের প্রভাবে বরফমুক্ত থাকে- নরওয়ে ও ব্রিটিশ দ্বীপপুঞ্জ।
¡ কানাডার পূর্ব উপক‚লে ল্যাব্রাডর দ্বীপপুঞ্জ বরফাচ্ছন্ন থাকে- উষ্ণ উপসাগরীয় স্রোতের প্রভাবে।
¡ উষ্ণ উপসাগরীয় স্রোতের উপর দিয়ে প্রবাহিত বায়ু- ব্রিটিশ দ্বীপপুঞ্জের পশ্চিম উপক‚লে প্রচুর বৃষ্টিপাত ঘটায়।
¡ সমুদ্র স্রোতের অনক‚লে- নৌকা, জাহাজ প্রভৃতি চলাচলের সুবিধা হয়।

সাধারণ বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
১০৩. সমুদ্রস্রোতের ক্ষেত্রে পানিতে ঘূর্ণন সৃষ্টি হওয়ার কারণ কী?(উচ্চতর দক্ষতা)
ক বায়ু ও স্রোতের ঘর্ষণ  বায়ু ও পানির ঘর্ষণ
গ পানির গতিপ্রকৃতি ঘ বায়ুর গতিপ্রকৃতি
১০৪. সমুদ্রস্রোত কী? (অনুধাবন)
ক সমুদ্রের উষ্ণ স্রোত ও শীতল স্রোতের প্রবাহ
 সমুদ্রের পানির নির্দিষ্ট গতিপথে চলাচল
গ সমুদ্রের পানির সঙ্গে বায়ুপ্রবাহের ঘর্ষণ
ঘ সমুদ্রের হালকা ও ভারী পানির চলাচল
১০৫. উষ্ণতার তারতম্য অনুসারে সমুদ্রস্রোতকে কয়ভাগে ভাগ করা হয়েছে? (জ্ঞান)
˜ দুই খ তিন গ চার ঘ পাঁচ
১০৬. নিরক্ষীয় অঞ্চলের হালকা জলরাশি পৃষ্ঠপ্রবাহরূপে মেরু অঞ্চলের দিকে প্রবাহকালে যে স্রোত সৃষ্টি করে তার প্রকৃতি কী? (প্রয়োগ)
ক শীতল  উষ্ণ গ নিরক্ষীয় ঘ কুমেরু
১০৭. কোনটি উষ্ণ স্রোত? (অনুধাবন)
ক কুমেরু খ বেঙ্গুয়েলা গ ফকল্যাণ্ড  ব্রাজিল
১০৮. ভারী পানি কী হিসেবে প্রবাহিত হয়? (জ্ঞান)
ক বহিঃস্রোত  অন্তঃপ্রবাহ গ উষ্ণস্রোত ঘ শীতল স্রোত
১০৯. মেরু অঞ্চলের ভারী জলরাশি অন্তঃপ্রবাহরূপে নিরক্ষীয় অঞ্চলের দিকে প্রবাহকালে যে স্রোত সৃষ্টি করে, তার প্রকৃতি কী? (প্রয়োগ)
ক নিরক্ষীয় খ কুমেরু  শীতল ঘ উষ্ণ
১১০. সমুদ্রস্রোত সৃষ্টির প্রধান কারণ কোনটি? (অনুধাবন)
ক সমুদ্র বায়ু খ স্থলবায়ু গ মৌসুমি বায়ু  নিয়ত বায়ু
১১১. সমুদ্রস্রোতের দিক ও গতি নিয়ন্ত্রিত হয় কীসের দ্বারা? (অনুধাবন)
 বায়ুপ্রবাহ খ লবণাক্ততা গ গভীরতা ঘ অন্তঃপ্রবাহ
১১২. সমুদ্রস্রোত উত্তর গোলার্ধে ডানদিকে এবং দক্ষিণ গোলার্ধে বামদিকে বেঁকে যাওয়ার কারণ কী? (উচ্চতর দক্ষতা)
ক পৃথিবীর বার্ষিক গতি  পৃথিবীর আ‎িহ্নক গতি
গ বায়ুপ্রবাহ ঘ স্থলভাগের অবস্থান
১১৩. ফেরেলের সূত্র অনুযায়ী সমুদ্র স্রোত উত্তর গোলার্ধে বেঁকে যায় কোন দিকে? (জ্ঞান)
 ডানদিকে খ বামদিকে গ পশ্চিম দিকে ঘ উত্তর দিকে
১১৪. নিরক্ষীয় অঞ্চলের সমুদ্রের পানি মেরু অঞ্চলের দিকে পৃষ্ঠ প্রবাহরূপে প্রবাহিত হওয়ার কারণ কী? (উচ্চতর দক্ষতা)
ক লবণাক্ততার পার্থক্য খ ভ‚খণ্ডের অবস্থান
 তাপমাত্রার পার্থক্য ঘ নিয়ত বায়ুপ্রবাহ
১১৫. মেরু অঞ্চলের শীতল ও ভারী পানি নিরক্ষীয় উষ্ণমণ্ডলের দিকে অন্তঃপ্রবাহরূপে প্রবাহিত হওয়ার কারণ কী? (উচ্চতর দক্ষতা)
ক পৃথিবীর আ‎িহ্নত গতি  তাপমাত্রার পার্থক্য
গ বরফের গলন ঘ ভ‚খণ্ডের অবস্থান
১১৬. মেরুঅঞ্চল থেকে শীতল ও ভারী জল উষ্ণমণ্ডলের দিকে কী রূপে প্রবাহিত হয়? (উচ্চতর দক্ষতা)
ক বহিঃস্রোত খ বহিঃপ্রবাহ গ উষ্ণ স্রোত  অন্তঃপ্রবাহ
১১৭. সমুদ্রস্রোত কীভাবে মহাসাগরের জলভাগের তাপের ভারসাম্য রক্ষা করে? (অনুধাবন)
ক বহিঃস্রোত ও পৃষ্ঠস্রোতের মাধ্যমে
খ ঊর্ধ্বগামী ও নিম্নগামী স্রোত প্রবাহের মাধ্যমে
 পৃষ্ঠপ্রবাহ ও অন্তঃপ্রবাহের মাধ্যমে
ঘ সমান্তরাল ও উল্লম্ব স্রোতের মাধ্যমে
১১৮. কোন কারণে মেরু অঞ্চলের জলরাশি স্ফীত হয় ও লবণাক্ততার পরিমাণ হ্রাস পায়? (অনুধাবন)
ক আ‎িহ্নক গতি খ তাপমাত্রার পার্থক্য
 বরফের গলন ঘ গভীরতার তারতম্য
১১৯. কোথায় সমুদ্রস্রোতের গতি সবচেয়ে বেশি? (জ্ঞান)
ক সমুদ্রের নিচের ভাগে  সমুদ্র পৃষ্ঠে
গ ১০০ মিটার নিচে ঘ ১০০০ মিটার নিচে
১২০. কোনটির ওপর পানির ঘনত্ব নির্ভর করে? (অনুধাবন)
[ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজ, ঢাকা]
 লবণাক্ততা খ পৃথিবীর আবর্তন গতি
গ বায়ুপ্রবাহ ঘ স্থলভাগ
১২১. সমুদ্রের পানিতে লবণাক্ততা কম হলে পানি কী হয়? (অনুধাবন)
 হালকা খ ভারী গ শীতল ঘ উষ্ণ
১২২. কোনটির কারণে সমুদ্রস্রোত দিক পরিবর্তন করে নতুন পথে প্রবাহিত হয়? (অনুধাবন)
ক উষ্ণতার তারতম্যের কারণে খ গভীরতার তারতম্যের কারণে
গ লবণাক্ততার তারতম্যের কারণে  স্থলভাগের অবস্থানের কারণে

১২৩. প্রবাহচিত্রের ‘ক’ চি‎িহ্নত স্থানের জন্য কোন উক্তিটি সঠিক?
(উচ্চতর দক্ষতা)
 সমুদ্রের অন্তঃস্রোত পার্শ্ববর্তী অল্প চাপের এলাকায় জায়গা দখল করে
খ সমুদ্রের অন্তঃস্রোত সঞ্চালন স্রোত সৃষ্টি করে
গ সমুদ্রের অন্তঃস্রোত নিরক্ষীয় অঞ্চলের দিকে প্রবাহিত হয়
ঘ সমুদ্রের অন্তঃস্রোত একস্থান থেকে অন্যস্থানে প্রবাহিত হয়
১২৪. সমুদ্রের উপরের এবং নিমজ্জিত স্রোত একসঙ্গে সঞ্চালন স্রোত তৈরি করে, এর ফলে কী ঘটে? (প্রয়োগ)
ক সমুদ্রে শীতল ও উষ্ণ স্রোত সৃষ্টি হয়
 সমুদ্রের জলরাশি একস্থান থেকে অন্যস্থানে যায়
গ সমুদ্রে গভীরতার তারতম্য ঘটে
ঘ পরিবহন ও যোগাযোগে প্রভাব পড়ে
১২৫. ব্রিটিশ দ্বীপপুঞ্জের পশ্চিম উপক‚ল শীতকালে বরফমুক্ত থাকার কারণ কী? (উচ্চতর দক্ষতা)
ক প্রবহমান শীতল স্রোত  উষ্ণ উপসাগরীয় স্রোত
গ সূর্যালোকের ঘাটতি ঘ মহাদেশীয় স্রোত
১২৬. সমুদ্রস্রোত কীভাবে বাণিজ্যের ওপর প্রভাব রাখে? (অনুধাবন)
 উষ্ণ স্রোত প্রবাহের মাধ্যমে বন্দরকে বরফমুক্ত রেখে
খ উষ্ণ স্রোত প্রবাহিত অঞ্চলে বৃষ্টিপাত ঘটিয়ে
গ উষ্ণ স্রোত প্রবাহের মাধ্যমে বন্দরকে রক্ষা করে
ঘ উষ্ণ স্রোত প্রবাহিত অঞ্চলে সামুদ্রিক ঝড় ঘটিয়ে

বোর্ড ও সেরা স্কুলের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন- ১  ========

জেবা বাবা-মায়ের সাথে পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতে বেড়াতে গেল এবং দেখল দূরে কর্ণফুলী নদীর মোহনায় একটি জাহাজ দাঁড়িয়ে আছে। জেবা লক্ষ করল, সমুদ্রের পানি হঠাৎ করে ফুলে উঠতে শুরু করেছে এবং জাহাজটি দ্রæত বন্দরে প্রবেশ করছে। [স. বো. ’১৬]
ক. মহীসোপান কাকে বলে? ১
খ. সমুদ্রস্রোত সৃষ্টির প্রধান কারণ ব্যাখ্যা কর। ২
গ. জেবার দেখা সমুদ্রের পানিতে পারিবর্তনের কারণ ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. মানবজীবনে পানির এরূপ পরিবর্তনের প্রভাব বিশ্লেষণ কর। ৪

ক সমুদ্রের উপক‚ল রেখা থেকে তল দেশের দিকে ক্রমনিম্ন নিমজ্জিত অংশকে মহীসোপান বলে।
খ সমুদ্রস্রোত সৃষ্টির প্রধান কারণ হলো নিয়ত বায়ুপ্রবাহ। এসব বায়ুপ্রবাহ সমুদ্রস্রোতের দিক ও গতি নিয়ন্ত্রণ করে। অয়ন বায়ু, পশ্চিমা বায়ু ও মেরুবায়ুর প্রবাহ অনুযায়ী প্রধান সমুদ্রস্রোতগুলোর সৃষ্টি হয়।
গ জেবার দেখা সমুদ্রের পানিতে পরিবর্তনটি হচ্ছে জোয়ার ভাটা। এ কারণেই সে লক্ষ করে, সমুদ্রের পানি হঠাৎ ফুলে উঠলে নদীর মোহনায় দাঁড়িয়ে থাকা জাহাজ দ্রæত বন্দরে প্রবেশ করে। প্রধানত দুটি কারণে জোয়ার-ভাটার সৃষ্টি হয়। যথা :
১. চাঁদ ও সূর্যের মহাকর্ষ শক্তির প্রভাব : মহাকর্ষ শক্তির প্রভাবে সূর্য ও চাঁদ পৃথিবীকে আকর্ষণ করে। সূর্যের ভর অপেক্ষা চাঁদের ভর অনেক কম হলেও চাঁদ সূর্য অপেক্ষা পৃথিবীর অনেক নিকটে অবস্থিত বলে চাঁদের আকর্ষণেই প্রধানত সমুদ্রের তরল জল ফুলে ওঠে ও জোয়ার হয়।

চিত্র : জোয়ার-ভাটা সৃষ্টিতে পৃথিবীর কেন্দ্রাতিগ ও মহাকর্ষ শক্তির প্রভাব
২. পৃথিবীর আবর্তনের ফলে উৎপন্ন কেন্দ্রাতিগ শক্তির প্রভাব : পৃথিবীর নিজ মেরুরেখার চারদিকে আবর্তনজনিত কারণে সৃষ্ট কেন্দ্রাতিগ শক্তির প্রভাবে যেখানে মহাকর্ষ শক্তির প্রভাবে জোয়ারের সৃষ্টি হয়, তার বিপরীত দিকে সমুদ্রের জল বিক্ষিপ্ত হয়েও জোয়ারের সৃষ্টি করে।
ঘ মানবজীবনের উপর জোয়ার-ভাটার যথেষ্ট প্রভাব আছে। বিশ্বের সমুদ্র উপক‚লবর্তী দেশসমূহে জোয়ার-ভাটার প্রভাবসমূহ বিশেষভাবে লক্ষ করা যায়। জোয়ার-ভাটার মাধ্যমে ভ‚খণ্ড থেকে আবর্জনাসমূহ নদীর মধ্য দিয়ে সমুদ্রে গিয়ে পতিত হয়। জোয়ার-ভাটার ফলে সৃষ্ট স্রোতের সাহায্যে নদীখাত গভীর হয়। নদীর পানি তাই নির্মল থাকে যা মানবসভ্যতার বিকাশ থেকে নিয়ে আজ পর্যন্ত মানবজীবনের অপরিহার্য ভ‚মিকা রাখছে। বহু নদীতে ভাটার স্রোতের বিপরীতে বাঁধ দিয়ে জলবিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়। জোয়ারের পানি নদীর মাধ্যমে সেচে সহায়তা করে এবং অনেক সময় খাল খনন করে জোয়ারের পানি আটকিয়ে সেচকার্যে ব্যবহার করা হয়। জোয়ার-ভাটার ফলে নৌযান চলাচলের মাধ্যমে ব্যবসা-বাণিজ্যের সুবিধা হয়। সুতরাং দেখা যাচ্ছে মানবজীবনে জোয়ার ভাটার প্রভাব ব্যাপক।
উল্লেখ্য অমাবস্যা ও পূর্ণিমা তিথিতে নদীতে অধিক মাত্রায় জোয়ারের সময় নৌকা, লঞ্চ প্রভৃতি ডুবে যায় বা ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং এতে নদীর পার্শ্ববর্তী এলাকায় জানমালের ক্ষতি হয়।

প্রশ্ন- ২  সমুদ্র খাত ও সমুদ্র সম্পদ

[স. বো. ’১৫]
ক. মহীসোপানের গড় প্রশস্ততা কত কিলোমিটার? ১
খ. সমুদ্রের নিমজ্জিত শৈলশিলা সৃষ্টির প্রক্রিয়া- ব্যাখ্যা কর। ২
গ. সমুদ্র তলদেশের ‘ই’ চি‎িহ্নত ভ‚মিরূপটি সৃষ্টির কারণ ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. বাংলাদেশের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ অর্থনীতিতে প্রদত্ত চিত্র ‘অ’ এ প্রাপ্ত সম্পদগুলোর গুরুত্ব বিশ্লেষণ কর। ৪

ক মহীসোপানের গড় প্রশস্ততা ৭০ কিলোমিটার।
খ সমুদ্রের অভ্যন্তরে অনেকগুলো আগ্নেয়গিরি অবস্থান করছে। ঐসব আগ্নেয়গিরি থেকে লাভা বেরিয়ে এসে সমুদ্রগর্ভে সঞ্চিত হয়ে শৈলশিলার ন্যায় ভ‚মিরূপ গঠন করেছে। এগুলোই নিমজ্জিত শৈলশিলা নামে পরিচিত। নিমজ্জিত শৈলশিলাগুলোর মধ্যে মধ্য আটলান্টিক শৈলশিলা সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য।
গ সমুদ্র তলদেশে ‘ই’ চি‎িহ্নত ভ‚মিরূপ হচ্ছে মহাসাগরীয় খাত বা গভীর সমুদ্রখাত। গভীর সমুদ্রের সমভ‚মি অঞ্চলের মাঝে মাঝে গভীর খাত দেখা যায়। এসব খাতকে গভীর সমুদ্রখাত বলে। পাশাপাশি অবস্থিত মহাদেশীয় ও সামুদ্রিক প্লেট সংঘর্ষের ফলে সমুদ্রখাত প্লেট সীমানায় অবস্থিত। প্লেট সীমানায় ভ‚মিকম্প ও আগ্নেয়গিরি অধিক হয় বলেই এসব খাত সৃষ্টি হয়েছে। এ খাতগুলো অধিক প্রশস্ত হলেও খাড়া ঢালবিশিষ্ট। এদের গভীরতা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৫,৪০০ মিটারের অধিক। আগ্নেয়গিরি বলয়ের অবস্থানের কারণে প্রশান্ত মহাসাগরেই গভীর সমুদ্রখাতের সংখ্যা অধিক। এর অধিকাংশ পশ্চিম প্রান্তে অবস্থিত। এসব গভীর সমুদ্রখাতের মধ্যে গুয়াম দ্বীপের ৩২২ কিলোমিটার দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থিত ম্যারিয়ানা খাত সর্বাপেক্ষা গভীর। এর গভীরতা প্রায় ১০,৮৭০ মিটার এবং এটাই পৃথিবীর গভীরতম খাত।
ঘ বাংলাদেশের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ অর্থনীতিতে প্রদত্ত চিত্র ‘অ’ তথা সমুদ্র তলদেশে প্রাপ্ত সামুদ্রিক সম্পদ অতীব গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের প্রায় ৭১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ উপক‚লীয় অঞ্চলের বঙ্গোপসাগরে রয়েছে অনেক সামুদ্রিক সম্পদ। এর সমুদ্র তলদেশে ৪৪২ প্রজাতির মৎস্য, ৩৩৬ প্রজাতির মলাস্কস (গড়ষষঁংশং), ১৯ প্রজাতির চিংড়ি, নানারকম কাঁকড়া, ম্যানগ্রোভ বনসহ আরও বিভিন্ন ধরনের সামুদ্রিক জলজ উদ্ভিদ। কক্সবাজারের উপক‚লীয় এলাকায় পারমাণবিক খনিজ জিরকন, মোনাজাইট, ইলমেনাইট, ম্যাগনেটাইট, রিওটাইল ও লিউকক্সেন পাওয়া গেছে। এছাড়া সমুদ্র তলদেশে রয়েছে খনিজ তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস সম্পদ। বাংলাদেশে বর্তমান অর্থনীতির প্রাণিজ সামুদ্রিক সম্পদ তথা মৎস্য, মলাস্কস, চিংড়ি, কাঁকড়া প্রভৃতি গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা রয়েছে। চিংড়ি রপ্তানি করে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছে। ম্যানগ্রোভ বনের সম্পদ দেশের বৃহৎ শিল্পের কাঁচামালের জোগানদার। উপক‚লীয় পারমাণবিক খনিজ সার্থক এবং লাভজনক প্রযুক্তি উদ্ভাবনের মধ্য দিয়ে ব্যবহারের চেষ্টা চলছে। খনিজ তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস শিল্পকারখানায় জ্বালানি ও কাঁচামাল হিসেবে, বিদ্যুৎ উৎপাদনে বহুল ব্যবহৃত হচ্ছে। বাংলাদেশে ভবিষ্যতে এ সম্পদের আরও উপযুক্ত ব্যবহারের ক্ষেত্র সৃষ্টির চেষ্টা করা হচ্ছে। স্বল্প আয়তনের এ দেশে সামুদ্রিক সম্পদ ব্যবহারে জোরে প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। তাই আশা করা যায় দেশের ভবিষ্যৎ অর্থনীতিতেও সামুদ্রিক সম্পদ গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা রাখবে। উপরিউক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায়, বাংলাদেশের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ অর্থনীতিতে প্রদত্ত চিত্র ‘অ’ তথা সমুদ্র তলদেশে প্রাপ্ত সামুদ্রিক সম্পদ অতীব গুরুত্বপূর্ণ।

প্রশ্ন- ৩  সমুদ্র তলদেশের ভ‚মিরূপ

নিচের চিত্রটি দেখে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :

[মধুপুর শহীদ স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয়, টাঙ্গাইল]
ক. ফ্যাদোমিটার কী? ১
খ. উষ্ণ স্রোত ও শীতল স্রোত বলতে কী বুঝ? ২
গ. ঈ, উ ও ঊ ভ‚মিরূপের ১টি করে বৈশিষ্ট্য ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. অ ও ই ভ‚মিরূপদ্বয় নিজের ভাষায় বিশ্লেষণ কর। ৪

ক সমুদ্রের গভীরতা মাপার যন্ত্রকে বলা হয় ফ্যাদোমিটার।
খ নিরক্ষীয় অঞ্চলে তাপমাত্রা বেশি হওয়ায় পানিরাশি হালকা হয় ও হালকা জলরাশি সমুদ্রের উপরিভাগ দিয়ে পৃষ্ঠপ্রবাহরূপে শীতল মেরু অঞ্চলের দিকে প্রবাহিত হয়। এরূপ স্রোতকে উষ্ণ স্রোত বলে। আর মেরু অঞ্চলের শীতল ও ভারী পানিরাশি জলের নিচের অংশ দিয়ে অন্তঃপ্রবাহরূপে নিরক্ষীয় উষ্ণমণ্ডলের দিকে প্রবাহিত হয়। এরূপ স্রোতকে শীতল স্রোত বলে।
গ চিত্রে সমুদ্র তলদেশের ভ‚মিরূপ দেখানো হয়েছে। এ ভ‚মিরূপের মধ্যে ঈ, উ ও ঊ হলো যথাক্রমে গভীর সমুদ্রের সমভ‚মি, গভীর সমুদ্রখাত ও নিমজ্জিত শৈলশিরা। ঈ, উ ও ঊ ভ‚মিরূপের একটি করে বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করা হলো :
গভীর সমুদ্রের সমভূমির (ঈ) বৈশিষ্ট্য : মহীঢালের পর থেকে সমুদ্র তলদেশে এ সমভ‚মি দেখা যায়। সমভ‚মি নাম হলেও এ অঞ্চলটি প্রকৃতপক্ষে বন্ধুর। এর উপর বহু শৈলশিরা ও উচ্চ ভ‚মি অবস্থান করে।
গভীর সমুদ্রখাতের (উ) বৈশিষ্ট্য : গভীর সমুদ্রের সমভ‚মি অঞ্চলে মাঝে মাঝে খাত সৃষ্টি হয়। এগুলো অধিক প্রশস্ত না হলেও খাড়া ঢালবিশিষ্ট। ভ‚মিকম্প ও আগ্নেয়গিরি থেকে এসব খাত সৃষ্টি হয়।
নিমজ্জিত শৈলশিরার (ঊ) বৈশিষ্ট্য : সমুদ্রের অভ্যন্তরে আগ্নেয়গিরি লাভা বেরিয়ে এসে সমুদ্রগর্ভে সঞ্চিত হয়ে শৈলশিরা গঠন করে।
ঘ অ ও ই ভ‚মিরূপদ্বয় হলো মহীসোপান ও মহীঢাল।
মহীসোপান (অ) : পৃথিবীর মহাদেশসমূহের চারদিকে স্থলভাগের কিছু অংশ অল্প ঢালু হয়ে সমুদ্রের পানির মধ্যে নেমে গেছে। এরূপে সমুদ্রের উপক‚লরেখা থেকে তলদেশ ক্রমনিম্ন নিমজ্জিত অংশকে মহীসোপান বলে। মহীসোপানের সমুদ্রের পানির সর্বোচ্চ গভীরতা ১৫০ মিটার। এটি ১ কোণে সমুদ্র তলদেশে নিমজ্জিত থাকে।
উপক‚লভাগের বন্ধুরতার উপর এর বিস্তৃতি নির্ভর করে। উপক‚ল যদি বিস্তৃত সমভ‚মি হয়, তবে মহীসোপান অধিক প্রশস্ত হয়। মহাদেশের উপক‚লে পর্বত বা মালভ‚মি থাকলে মহীসোপান সংকীর্ণ হয়। ইউরোপের উত্তরে বিস্তীর্ণ সমভ‚মি থাকায় উত্তর মহাসাগরের মহীসোপান খুবই প্রশস্ত (প্রায় ১,২৮৭ কিলোমিটার)। আফ্রিকা মহাদেশের অধিকাংশ স্থান মালভ‚মি বলে এর পূর্ব ও পশ্চিম উপক‚লের মহীসোপান খুবই সরু। স্থলভাগের উপক‚লীয় অঞ্চল নিমজ্জিত হওয়ার ফলে অথবা সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতার তারতম্য হওয়ার কারণে মহীসোপানের সৃষ্টি হয়। এছাড়া সমুদ্রতটে সমুদ্রতরঙ্গও ক্ষয়ক্রিয়ার দ্বারা মহীসোপান গঠনে সহায়তা করে থাকে।
মহীঢাল (ই) : মহীসোপানের শেষ সীমা থেকে ভ‚ভাগ হঠাৎ খাড়াভাবে নেমে সমুদ্রের গভীর তলদেশের সঙ্গে মিশে যায়। এ ঢালু অংশকে মহীঢাল বলে। সমুদ্রে এর গভীরতা ২০০ থেকে ৩,০০০ মিটার। এটা অধিক খাড়া হওয়ার জন্য খুব প্রশস্ত নয়। এটি গড়ে প্রায় ১৬ থেকে ৩২ কিলোমিটার প্রশস্ত। মহীঢালের উপরিভাগ সমান নয়। অসংখ্য আন্তঃসাগরীয় গিরিখাত অবস্থান করায় তা খুবই বন্ধুর প্রকৃতির। এর ঢাল মৃদু হলে জীবজন্তুর দেহাবশেষ, পলি প্রভৃতির অবক্ষেপণ দেখা যায়।

প্রশ্ন- ৪  সমুদ্রস্রোতের প্রভাব

রফিক সাহেব একজন নাবিক। ফলে তার বেশির ভাগ সময় সমুদ্রে কাটে। সমুদ্রস্রোতের অনেক বিচিত্র অভিজ্ঞতা তার রয়েছে। কারণ তিনি ব্যবসা-বাণিজ্যের উদ্দেশে এক দেশ থেকে অন্য দেশে গমন করেন।
[পুলিশ লাইন হাইস্কুল এন্ড কলেজ, বগুড়া]
ক. পৃথিবীর গভীরতম খাত কোনটি? ১
খ. হিমশৈল কীভাবে সৃষ্টি হয়? ২
গ. রফিক সাহেবের বিচিত্র অভিজ্ঞতা সৃষ্টির পিছনে কার্যরত ঘটনার কারণ হিসেবে পৃথিবীর আ‎িহ্নক গতি, মেরু অঞ্চলে সমুদ্রের বরফের গলন ও ভ‚খণ্ডের অবস্থান ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. উক্ত প্রপঞ্চ কীভাবে ব্যবসা-বাণিজ্যের ওপর প্রভাব বিস্তার করেÑ বিশ্লেষণ কর। ৪

ক পৃথিবীর গভীরতম খাত ম্যারিয়ানা খাত।
খ সমুদ্রে ভাসমান অতিকায় বরফবস্তুকে ‘হিমশৈল’ বলে। প্রকৃতপক্ষে হিমশৈল হলো হিমবাহেরই খণ্ডিত অংশ। পাহাড়-পর্বত ও উপত্যকার ওপর দিয়ে হিমবাহ চলতে চলতে যখন সমুদ্রে পতিত হয় তখন সেই বিরাট হিমবাহ সমুদ্রের ঢেউ ও স্রোতের ধাক্কায় ভেঙে গিয়ে বড় বড় খণ্ডে বিভক্ত হয়। বৃহৎ এই বরফ খণ্ডগুলোই হিমশৈল নামে পরিচিত। এগুলো সমুদ্রের অনেক দূর পর্যন্ত ভেসে চলে এবং বরফ পাহাড়ের মতোই দেখা যায়।
গ রফিক সাহেবের বিচিত্র অভিজ্ঞতা সৃষ্টির পিছনে কার্যরত রয়েছে সমুদ্রস্রোত। উদ্দীপকে এরূপই উল্লেখ রয়েছে। সমুদ্রস্রোত সৃষ্টির বিভিন্ন কারণ রয়েছে। তš§ধ্যে পৃথিবীর আ‎িহ্নক গতি, মেরু অঞ্চলের সমুদ্রের বরফের গলন এবং ভ‚খণ্ডের অবস্থান ব্যাখ্যা করা হলো।
পৃথিবীর আ‎িহ্নক গতি : পৃথিবীর আ‎িহ্নক গতির ফলে ফেরেলের সূত্র অনুসারে বায়ুপ্রবাহের মতো সমুদ্রের পানিও উত্তর গোলার্ধে ডান দিকে এবং দক্ষিণ গোলার্ধে বাম দিকে বেঁকে যায়। এর ফলে সমুদ্রস্রোতের সৃষ্টি হয়।
মেরু অঞ্চলের সমুদ্রে বরফের গলন : মেরু অঞ্চলের সমুদ্রে বরফ কিছু পরিমাণ গলে গেলে পানিরাশি স্ফীত হয় ও সমুদ্র পানির লবণাক্ততার পরিমাণ হ্রাস পায়। এর ফলে সমুদ্রস্রোতের সৃষ্টি হয়।
ভ‚খণ্ডের অবস্থান : সমুদ্রস্রোতের প্রবাহপথে কোনো মহাদেশ, দ্বীপ প্রভৃতি ভ‚খণ্ড অবস্থান করলে সমুদ্রস্রোত তাতে বাধা পেয়ে দিক ও গতিপথ পরিবর্তন করতে বাধ্য হয়। অনেক সময় এর প্রভাবে সমুদ্রস্রোত একাধিক শাখায় বিভক্ত হয়।
ঘ উক্ত প্রপঞ্চ তথা সমুদ্রস্রোত ব্যবসা-বাণিজ্যের ওপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব বিস্তার করে। যথা :
১. নাতিশীতোষ্ণ ও হিমমণ্ডলের পানি রাশিতে শীতকালে বরফ জমে যায়। এ অঞ্চলগুলোতে উষ্ণ স্রোত প্রবাহিত হলে সমুদ্রের পানি বরফ হতে পারে না। যেমন : উপসাগরীয় উষ্ণ স্রোতের প্রভাবে নরওয়ের উত্তর উপক‚লীয় অঞ্চলে শীতকালেও বরফ জমে না। এ কারণে বন্দরগুলোর পথ বন্ধ থাকে না এবং সারাবছর ব্যবসা-বাণিজ্য চলে।
২. উষ্ণ ও শীতল স্রোতের মিলনস্থলে শীতল স্রোত উষ্ণ হওয়ায় এর সাথে প্রবাহিত হিমশৈল গলে বালি, কাঁকর ও নুড়ি প্রভৃতি সমুদ্রের তলদেশে সঞ্চিত হয়ে মগ্নচড়ার সৃষ্টি করে। এরূপ মগ্নচড়ায় প্রচুর মৎস্যের সমাগম হয় এবং সেখানে মৎস্য শিকার ও মৎস্য ব্যবসা গড়ে ওঠে। ফলে ব্যবসায় বাণিজ্যের প্রসার ঘটে।
৩. সামুদ্রিক জাহাজ চলাচলের ওপর সমুদ্রস্রোতের যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে। স্রোতের অনুক‚লে জাহাজ চালিয়ে দ্রæত গন্তব্যস্থলে যাওয়া যায়। এতে মালপত্র রপ্তানি ও আমদানি করা সহজ হয়।
৪. শীতল স্রোতের সাথে প্রচুর মাছ আসে এবং উষ্ণ স্রোতের সাথে শীতল স্রোত যেখানে মিলিত হয় সেখানে মাছগুলো থেকে যায়। আবার এরূপ স্থানে মৎস্য খাদ্য প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। ফলে বাণিজ্য প্রসার লাভ করে।

 মাস্টার ট্রেইনার প্রণীত সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন- ৫ 

নিচের চিত্রটি দেখে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
মহাসাগরসমূহের অবস্থান ও প্রয়োজনীয়তা

ক. মিঠা পানির উৎস কী কী? ১
খ. সাগর ও হ্রদের মধ্যে পার্থক্য কী? ব্যাখ্যা কর। ২
গ. প্রদত্ত মানচিত্রে মহাসাগরগুলোর অবস্থান চি‎িহ্নত কর। ৩
ঘ. “মানবজীবনে তোমার চি‎ি‎‎হ্নত জলরাশির গুরুত্ব অপরিসীম।”Ñ কথাটি ব্যাখ্যা কর। ৪

ক নদী, হ্রদ ও ভ‚গর্ভস্থ পানি মিঠা পানির উৎস।
খ মহাসাগর অপেক্ষা স্বল্প আয়তনবিশিষ্ট পানিরাশিকে সাগর বলে। বেশির ভাগ সাগরের সাথে সরাসরি মহাসাগরের সংযোগ রয়েছে। সাগরের পানি রাশি লবণাক্ত। ভ‚মধ্যসাগর, লোহিত সাগর, ক্যারিবিয়ান সাগর, জাপান সাগর প্রভৃতি সাগরের উদাহরণ। অন্যদিকে চারদিক স্থলভাগ দ্বারা বেষ্টিত পানিরাশিকে হ্রদ বলে। হ্রদের পানিরাশি সাগর বা মহাসাগরের সাথে যুক্ত নয়। পৃথিবীতে মিঠা ও লবণাক্ত উভয় ধরনের জলরাশির হ্রদ দেখা যায়। বৈকাল হ্রদ, সুপিরিয়র হ্রদ, ভিক্টোরিয়া হ্রদ প্রভৃতি হ্রদের উদাহরণ।
গ প্রদত্ত মানচিত্রে মহাসাগরগুলোর অবস্থান চি‎িহ্নত করা হলো :

ঘ মানচিত্রে আমি মহাসাগরগুলো চি‎িহ্নত করেছি। মানবজীবনে এই বিপুল জলরাশির গুরুত্ব অপরিসীম। কারণÑ
১. সমুদ্রের পানিরাশি বাষ্পায়িত হয়ে বৃষ্টিপাত ঘটায় যা পানিচক্রকে সক্রিয় রাখে। ফলে মিঠা পানির উৎসগুলো সচল থাকে যা আমাদের জীবন ধারণের জন্য অপরিহার্য।
২. সমুদ্র মৎস্য সম্পদে ভরপুর। মৎস্য শিল্প ও বাণিজ্যের মাধ্যমে অনেক দেশ উন্নতি করতে সক্ষম হয়েছে।
৩. সাগরের মহীসোপানে প্রচুর খনিজ সম্পদ পাওয়া যায়। যেমন: পারস্যসাগর ও আরবসাগরের উপক‚লে প্রচুর খনিজ তেল পাওয়া গেছে। বঙ্গোপসাগরের উপক‚লে প্রাকৃতিক গ্যাস ও খনিজ তেল প্রাপ্তির অপার সম্ভাবনা রয়েছে।
৪. সমুদ্র স্রোত আবহাওয়া ও জলবায়ুর ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলে।
৫. বিশ্ব বাণিজ্যের ৮০ শতাংশ সমুদ্রপথে পরিচালিত হয়।
৬. উপক‚লীয় এলাকা বিনোদন কেন্দ্র ও স্বাস্থ্যকর স্থান হিসেবে পরিচিতি লাভ করে।
৭. সৈকতের বালি থেকে অনেক ধরনের পারমাণবিক খনিজ পদার্থ পাওয়া যায়। যেমন : কক্সবাজারের উপক‚লীয় এলাকা থেকে জিরকন, মোনাজাইট, ইলমেনাইট, ম্যাগনেটাইট, রিওটাইল, লিউকক্সেন ইত্যাদি পারমাণবিক খনিজ পাওয়া যায়।
এসব কারণে দেখা যায় পৃথিবীর সমুদ্রের তীরবর্তী দেশগুলোই কৃষি, শিল্প ও বাণিজ্যে সবচেয়ে বেশি উন্নত। সুতরাং আমাদের জীবনে সমুদ্রের জলরাশির গুরুত্ব অপরিসীম।

প্রশ্ন- ৬  সমুদ্রস্রোতের উপর বায়ুর প্রভাব

আনিস ও শাহীনা ফকল্যান্ড দ্বীপপুঞ্জে বেড়াতে গিয়ে সমুদ্র সৈকতে হাঁটতে বের হয়। উভয়ই সমুদ্র সৈকতে হাঁটতে গিয়ে দেখে বিশাল বিশাল ঢেউ তাদের পায়ের কাছে এসে যেন আছড়ে পড়ছে। আনিস আনমনা হয়ে পড়ে, এ স্রোত নিরবচ্ছিন্নভাবে তার দেশেও সাগর উপক‚লে আছড়ে পড়ছে। হঠাৎ শাহীনার প্রশ্নে সে বাস্তবে ফিরে আসে। বায়ুপ্রবাহ কী এ স্রোত নিয়ন্ত্রণ করে থাকে? আনিস বলে, এ স্রোত ছাড়াও পৃথিবীর সকল সাগর ও মহাসাগরের স্রোতের জন্য বায়ুপ্রবাহ একটি প্রধান নিয়ামক।
ক. সমুদ্রস্রোতকে উষ্ণতার তারতম্য অনুসারে কী কী ভাগে ভাগ করা যায়? ১
খ. বায়ুপ্রবাহ ছাড়া সমুদ্রস্রোত উৎপত্তির অন্য যেকোনো একটি কারণ ব্যাখ্যা কর। ২
গ. মানচিত্র অঙ্কন করে আনিস ও শাহীনার পায়ে আছড়ে পড়া স্রোতসহ তিনটি স্রোত চি‎িহ্নত কর। ৩
ঘ. শাহীনার প্রশ্নের জবাবে আনিসের উক্তিটি কতটা যথার্থ! মূল্যায়ন কর। ৪

ক সমুদ্রস্রোতকে উষ্ণতার তারতম্য অনুসারে উষ্ণ স্রোত ও শীতল স্রোত এই দুই ভাগে ভাগ করা যায়।
খ বায়ুপ্রবাহ ছাড়াও সমুদ্রস্রোত উৎপত্তির অন্য অনেক কারণ রয়েছে :
এগুলোর মধ্যে লবণাক্ততার পার্থক্য একটি। সমুদ্র জলে লবণের পরিমাণ সর্বত্র সমান নয়। অধিক লবণাক্ত জল বেশি ভারী বলে তার ঘনত্ব বেশি। বেশি ঘনত্বের জল কম ঘনত্বের দিকে নি¤œ প্রবাহরূপে প্রবাহিত হয় ও সমুদ্রস্রোতের সৃষ্টি করে।
গ আনিস ও শাহীনা ফকল্যান্ড দ্বীপপুঞ্জে দক্ষিণ আটলান্টিকের তীরে বেড়াতে যায়। সুতরাং তাদের পায়ে ফকল্যান্ড স্রোত আছড়ে পড়ে। মানচিত্রের মাধ্যমে উক্ত স্রোতসহ আটলান্টিক মহাসাগরের তিনটি স্রোত চি‎িহ্নত করা হলো :

ঘ শাহীনার প্রশ্নের জবাবে উদ্দীপকে আনিস বলে, সাগর ও মহাসাগরের স্রোতের জন্য বায়ুপ্রবাহ একটি প্রধান নিয়ামক। মূলত নিয়ত বায়ুপ্রবাহ সমুদ্র স্রোত সৃষ্টির প্রধান কারণ। নিয়ত বায়ুপ্রবাহকে সাধারণত তিন ভাগে ভাগ করা যায়। যথা : অয়ন বায়ু, প্রত্যয়ন বায়ু ও মেরুদেশীয় বায়ু। অয়ন বায়ু বলতে একইদিকে, একই পথে নিয়মিতভাবে নির্দিষ্ট বেগে বায়ুর প্রবাহকে বোঝায়। আর অয়ন বায়ুর বিপরীত দিক থেকে প্রবাহিত নিয়ত বায়ু প্রবাহকে প্রত্যয়ন বায়ু বলে। পশ্চিম দিক থেকে প্রবাহিত হয় বলে এই বায়ু প্রবাহকে পশ্চিমা বায়ু বলা হয়। এছাড়া সুমেরু ও কুমেরু অঞ্চলের বায়ুপ্রবাহকে বলা হয় মেরুদেশীয় বায়ু।

চিত্র : সমুদ্রস্রোতের উপর বায়ু প্রবাহের প্রভাব
অয়ন বায়ু প্রবাহিত এলাকায় সমুদ্রস্রোত পূর্ব থেকে পশ্চিম দিকে এবং পশ্চিমা বায়ু প্রবাহিত এলাকায় সমুদ্রস্রোত পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে প্রবাহিত হয়। যে সমুদ্রস্রোত যে দেশের পাশ দিয়ে বয়ে যায় তার নাম সেই দেশ অনুযায়ী হয়ে থাকে। যেমনÑ ব্রাজিল স্রোত, পেরু স্রোত, ল্যাব্রাডর স্রোত ইত্যাদি। সমুদ্রস্রোতগুলো সোজা পথে না গিয়ে উত্তর গোলার্ধে ডানদিকে এবং দক্ষিণ গোলার্ধে বাম দিকে বেঁকে যায়। সমুদ্রস্রোতগুলো উষ্ণ অঞ্চল থেকে শীতল অঞ্চলে বহিঃস্রোত রূপে এবং শীতল অঞ্চল থেকে উষ্ণ অঞ্চলে অন্তঃস্রোত রূপে প্রবাহিত হয়। সুতরাং আনিসের মতো যথার্থই বলা যায়, বায়ুপ্রবাহই সমুদ্রস্রোত উৎপত্তির প্রধান কারণ।

প্রশ্ন- ৭  সমুদ্রস্রোত ও যোগাযোগ ব্যবস্থা

নিচের চিত্রটি দেখে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :

ক. অয়ন বায়ু প্রবাহিত এলাকায় সমুদ্রস্রোত কোন দিকে প্রবাহিত হয়? ১
খ. সমুদ্রে ঊর্ধ্ব ও নিম্নগামী স্রোত সৃষ্টির কারণ ব্যাখ্যা কর। ২
গ. মানচিত্রে অ থেকে ই অভিমুখী জাহাজটি সমুদ্রস্রোত জনিত কোন ধরনের প্রাকৃতিক বাধার সম্মুখীন হতে পারে? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. জাহাজটি ‘ই’ চি‎িহ্নত স্থান থেকে উ চি‎িহ্নত স্থানে পৌঁছাতে মানচিত্রে ইঈউ ও ইঊউ এর কোন সমুদ্র পথ বেছে নেওয়া যথার্থ হবে তা যুক্তিসহ উল্লেখ কর। ৪

ক অয়ন বায়ু প্রবাহিত এলাকায় সমুদ্রস্রোত পূর্ব থেকে পশ্চিম দিকে প্রবাহিত হয়।
খ সমুদ্রে ঊর্ধ্ব ও নিম্নগামী স্রোত সৃষ্টির প্রধান কারণ সমুদ্রের পানির উষ্ণতার তারতম্য। অধিক উত্তাপে নিরক্ষীয় ও ক্রান্তীয় অঞ্চলের পানি বেশি উত্তপ্ত হয়ে আয়তনে বেড়ে যায়, হালকা হয় ও এর ঘনত্ব কমে যায়। কিন্তু উচ্চ ও মধ্য অক্ষাংশের দেশগুলো উত্তাপ কম পায় বলে সেখানে সমুদ্রের পানি ভারি হয়। নিরক্ষীয় অঞ্চলের উষ্ণ ও হালকা পানি শীতল মেরু অঞ্চলের দিকে ঊর্ধ্বগামী স্রোতরূপে প্রবাহিত হয়। নিরক্ষীয় অঞ্চলের এ শূন্যস্থান পূরণ করার জন্য মেরু অঞ্চলের শীতল ও ভারী পানি নিম্নগামী স্রোতরূপে নিরক্ষীয় অঞ্চলের দিকে প্রবাহিত হয়।
গ ‘অ’ থেকে ‘ই’ অভিমুখী জাহাজ চললে হিমশৈল, হিমপ্রাচীর, তুষারঝড় প্রভৃতি প্রাকৃতিক সমস্যায় পড়তে পারে। চিত্রে উল্লিখিত ‘অ’ হচ্ছে উত্তর মহাসাগরের গ্রিনল্যান্ড দ্বীপের পশ্চিম প্রান্ত থেকে আগত একটি শীতল স্রোত। ‘ই’ কানাডার ল্যাব্রাডর উপদ্বীপের উত্তরে অবস্থিত একটি স্রোত যাকে ল্যাব্রাডর স্রোত বলে। চিত্রে উল্লিখিত ‘অ’ থেকে ‘ই’ অভিমুখী জাহাজ চললে সমুদ্রস্রোতজনিত যে প্রাকৃতিক বাধার সম্মুখীন হবে তা হলো :
১. ‘অ’ স্থানের নিকটে প্রচুর হিমপ্রাচীর রয়েছে। এখানে জাহাজ চলাচল করলে কোনো কোনো স্থানে বিশাল আকৃতির বরফের প্রাচীর দ্বারা বাঁধা পাবে।
২. ‘ই’ স্থান তথা ল্যাব্রাডর স্রোত যেহেতু শীতল স্রোত তাই এখানে উপসাগরীয় একটি উষ্ণস্রোত আসার ফলে কিছু কিছু হিমপ্রাচীর গলে হিমশৈলে রূপান্তরিত হবে। তাছাড়া এই অঞ্চলগুলোতে বছরের বিভিন্ন সময় হৈমশৈল, হিমপ্রাচীর, তুষারঝড় প্রভৃতির আবির্ভাব হয়।
আলোচনা থেকে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয় যে প্রাকৃতিক বাধার কারণে ‘অ’ থেকে ‘ই’ অভিমুখী জাহাজ চলাচল নিরাপদ নয়।
ঘ জাহাজটি ‘ই’ চি‎িহ্নত স্থান অর্থাৎ ল্যাব্রাডর উপদ্বীপ হতে ‘উ’ চি‎িহ্নত স্থান অর্থাৎ পশ্চিম ইউরোপের নিকট পৌঁছাতে ‘ইঈউ’ এর চেয়ে ‘ইঊউ’ সমুদ্রপথ বেছে নেবে। জাহাজটি ‘ই’ চি‎িহ্নত স্থান থেকে ‘উ’ চি‎িহ্নত স্থানে পৌঁছাতে ‘ইঊউ’ সমুদ্রপথ বেছে নেওয়ার পক্ষে যুক্তিগুলো হলো 
১. উত্তর নিরক্ষীয় স্রোতের উষ্ণ স্রোত ল্যাব্রাডর স্রোতের সাথে ‘ই’ স্থানে মিলিত হয়ে উত্তর আটলান্টিক প্রবাহ নামে ‘ঊ’ স্থান দিয়ে পশ্চিম ইউরোপ, ব্রিটিশ দ্বীপপুঞ্জ ও নরওয়ের পাশ দিয়ে প্রবাহিত হয়ে উষ্ণ স্রোত হিসেবে ‘উ’ স্থানে উত্তর মহাসাগরে প্রবেশ করে। সুতরাং ‘ইঊউ’ অনুক‚ল এবং মানচিত্র অনুযায়ী সংক্ষিপ্ত পথ।
২. ‘ইঈউ’ সমুদ্রস্রোত পশ্চিম ইউরোপের দিকে নেই। বরং এটি নিরক্ষীয় বিপরীত স্রোত আকারে আফ্রিকার পশ্চিম উপক‚লে পৌঁছাবে। ‘উ’ তে পৌঁছানো সম্ভব নয়।
সুতরাং সহজেই বলা যায়, ‘ইঈউ’ সমুদ্র স্রোতের চেয়ে ‘ইঊউ’ সমুদ্রস্রোতে জাহাজ চালান সহজ এবং অনুক‚ল পরিবেশে সহজে গন্তব্যস্থল ‘উ’ তে পৌঁছাবে।

প্রশ্ন- ৮  আটলান্টিক মহাসাগরের উষ্ণ ও শীতল স্রোত

নিচের চিত্রটি পর্যবেক্ষণ করে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :

ক. সমুদ্র স্রোত কী? ১
খ. সমুদ্র স্রাত উৎপত্তির যেকোনো একটি কারণ বর্ণনা কর। ২
গ. চিত্রের ‘ঈ’ রেখাটি ‘অ’ স্রোতের ক্ষেত্রে কী প্রভাব রেখেছে? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ‘অ’ ও ‘ই’ স্রোতের গুরুত্ব বিশ্লেষণ কর। ৪

ক মহাসাগরের এক স্থান থেকে অন্য স্থানে পানির নির্দিষ্ট ও নিয়মিত চলাচলকে সমুদ্রস্রোত বলে।
খ সমুদ্রস্রোত উৎপত্তির একটি কারণ হলো বায়ুপ্রবাহ। প্রবল নিয়ত বায়ুপ্রবাহ সমুদ্র পৃষ্ঠের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার সময় সমুদ্রের উপরের স্তরের পানিরাশিকে একই দিকে চালিত করে। সুতরাং বায়ুপ্রবাহ সমুদ্রস্রোতের প্রধান কারণ। অয়ন বায়ু প্রবাহিত এলাকায় সমুদ্রস্রোত পূর্ব থেকে পশ্চিম দিকে এবং পশ্চিমা বায়ু প্রবাহিত এলাকায় সমুদ্রস্রোত পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে প্রবাহিত হয়।
গ চিত্রের ঈ রেখাটি নিরক্ষরেখাকে নির্দেশ করে। চিত্রের অ স্রোতটির নাম ব্রাজিল স্রোত। চিত্রের ঈ রেখাটি যেহেতু নিরক্ষরেখাকে চি‎িহ্নত করেছে, সুতরাং ব্রাজিল স্রোতের ওপর এর প্রভাব আলোচ্য। বেঙ্গুয়েলা স্রোতের বর্ধিত অংশটি নিরক্ষরেখার পাশ দিয়ে দক্ষিণ নিরক্ষীয় স্রোত নামে প্রবাহিত হয়। এই স্রোতের যে শাখাটি ব্রাজিলের পূর্ব উপক‚ল দিয়ে অগ্রসর হয়েছে তা ‘ব্রাজিল স্রোত’ নামে পরিচিত। উষ্ণ স্রোত থেকে উৎপত্তি লাভ করায় এবং ক্রান্তীয় অঞ্চল দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় এটিও উষ্ণ স্রোত। মকরক্রান্তি অতিক্রম করার পর পশ্চিমা বায়ুর প্রভাবে এ স্রোতটি ক্রমশ পূর্বদিকে বেঁকে কুমেরু স্রোতের সঙ্গে মিলিত হয়েছে। যেহেতু নিরক্ষরেখার কাছে স্রোত খুব উষ্ণ সুতরাং দক্ষিণ নিরক্ষীয় স্রোতের শাখা ব্রাজিল স্রোতের উষ্ণতা সৃষ্টিতে নিরক্ষরেখার ভ‚মিকা অত্যধিক।
ঘ চিত্রের অ ব্রাজিল স্রোত এবং ই স্রোতটি বেঙ্গুয়েলা স্রোত নামে পরিচিত। দক্ষিণ আফ্রিকার উত্তমাশা অন্তরীপের নিকট বাধাপ্রাপ্ত হওয়ায় কুমেরু স্রোতের যে শাখাটি উত্তরদিকে ঘুরে দক্ষিণ আফ্রিকার পাশ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে তাকে বেঙ্গুয়েলা স্রোত এবং দক্ষিণ নিরক্ষীয় স্রোতের যে শাখাটি ব্রাজিলের পূর্ব উপক‚ল দিয়ে দক্ষিণে অগ্রসর হয়েছে তাকে ব্রাজিল স্রোত বলে। ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে এই দুটি স্রোতের গুরুত্ব ব্যাপক। মধ্য অক্ষাংশ ও উচ্চ অক্ষাংশের সমুদ্রের পানি শীতকালে জমে যায় বলে তখন সাগরের ওপর দিয়ে জাহাজ চলাচল করতে পারে না। কিন্তু এই দুটি স্রোত উষ্ণ হওয়ায় বন্দরগুলো বরফমুক্ত থাকে এবং সারা বছর জাহাজ চলাচল করতে পারে। এ স্রোতের অনুক‚লে জাহাজ চলাচল করা সহজ। উষ্ণ স্রোতের গতিপথে জাহাজ চালানো নিরাপদ। শীতল স্রোতের সঙ্গে অনেক হিমশৈল ভেসে আসে। এ প্রকার হিমশৈলের সঙ্গে ধাক্কা লাগলে জাহাজের ক্ষতি হয় এবং জাহাজ ডুবে যায়। টাইটানিক জাহাজ ১৯১২ সালে এভাবেই ডুবে গিয়েছিল। দক্ষিণ নিরক্ষীয় স্রোতের পাশে বেঙ্গুয়েলা এবং ব্রাজিল স্রোত অবস্থিত হওয়ায় এ দুটি স্রোতকে কাজে লাগিয়ে এগুলোর আশপাশে অনেক বন্দর ও পোতাশ্রয় গড়ে উঠেছে। এর মাধ্যমে আশপাশের দেশগুলো মৎস্যশিল্পে ব্যাপক অগ্রগতি সাধন করেছে। সুতরাং বলা যায়, ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে অ ও ই চি‎িহ্নত ব্রাজিল ও বেঙ্গুয়েলা স্রোতের গুরুত্ব অপরিসীম।

প্রশ্ন- ৯  উষ্ণ ও শীতল স্রোত

নিচের মানচিত্রটি পর্যবেক্ষণ করে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :

ক. মগ্নচড়া কী? ১
খ. কোন ধরনের স্রোত সমুদ্রের পানির তাপের সমতা রক্ষণ করে? ব্যাখ্যা কর। ২
গ. ঈ চি‎িহ্নত অঞ্চলের বন্দরগুলো সারাবছর ব্যবহার করা যায় কেন? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. অ ও ই স্রোতদ্বয়ের মিলনস্থলে কীরূপ প্রভাব পড়ে? বিশ্লেষণ কর। ৪

ক উষ্ণ ও শীতল স্রোতের মিলনস্থলে শীতল স্রোতের সঙ্গে আসা হিমশৈল উষ্ণ স্রোতের প্রভাবে গলে যায় এবং সমুদ্রতলে সঞ্চিত হয়ে মগ্নচড়ার সৃষ্টি করে।
খ ঊর্ধ্বগামী ও নি¤œগামী স্রোত সমুদ্রের পানির তাপের সমতা রক্ষা করে। যেখানে সমুদ্রের গভীরতা বেশি সেখানকার পানি খুব দ্রæত উত্তপ্ত ও হালকা হয়ে উপরে উঠে আসে। ফলে উপরে উঠে আসা পানির স্থান পূরণের জন্য শীতল নিম্নগামী একটি পানির প্রবাহ সৃষ্টি হয়। এ কারণে সমুদ্রে ঊর্ধ্বগামী ও নিম্নগামী স্রোতের সৃষ্টি হয়। এ ধরনের স্রোত সমুদ্রের পানির তাপের সমতা রক্ষা করে।
গ উষ্ণ স্রোতের জন্য ঈ চি‎িহ্নত অঞ্চলের বন্দরগুলো সারাবছর ব্যবহার করা যায়। ঈ চি‎িহ্নত অঞ্চলে উত্তর আটলান্টিক স্রোত প্রবাহিত হয়। এটি একটি উষ্ণ স্রোত। উষ্ণ সমুদ্রস্রোতের প্রভাবে ওই অঞ্চলের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়। তাই শীতল মেরু অঞ্চলের উপর এ উষ্ণ স্রোত প্রবাহের ফলে শীতকালেও বরফ জমতে পারে না। তাই বন্দরগুলো সারাবছর ব্যবহার করা যায়। উষ্ণ সমুদ্রস্রোতে জাহাজ ও নৌ-চলাচলের সুবিধা বেশি। এ জন্য উত্তর আটলান্টিক সমুদ্রস্রোতের অনুক‚লে পৃথিবীর মধ্যে সর্বাধিক জাহাজ যাতায়াত করে এবং এখানে প্রচুর বন্দর গড়ে উঠেছে।
ঘ অ স্রোত হলো ল্যাব্রাডর স্রোত। এটি একটি শীতল স্রোত। ই স্রোত হলো উপসাগরীয় স্রোত। এটি একটি উষ্ণ স্রোত। উষ্ণ ও শীতল স্রোতের মিলন অঞ্চলে অল্প স্থানব্যাপী উষ্ণতার ব্যাপক পরিবর্তন দেখা যায়। এই অঞ্চলে ঘন কুয়াশা ও ঘূর্ণাবাতের সৃষ্টির ফলে প্রবল ঝড়ঝঞ্ঝার সৃষ্টি হয়। জাহাজ ও বিমান চলাচলে অসুবিধা দেখা দেয়। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া বিরাজ করে। উত্তর আমেরিকার পূর্ব উপক‚লে এরূপ অবস্থা বিরাজ করে। তবে এ স্রোতদ্বয়ের মিলনস্থলে মগ্নচড়ার সৃষ্টি হয়। এ মগ্নচড়াগুলোতে প্রচুর প্ল্যাংটন জমা হয়। এই প্ল্যাংটন মাছের অতি প্রিয় খাদ্য। এ মগ্নচড়াগুলো তাই পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মাছ আহরণ ক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে।

প্রশ্ন- ১০  সমুদ্রস্রোতের প্রভাব

এনামুল হক বাংলাদেশি জাহাজে কর্মরত একজন নাবিক। সমুদ্র পথে বিভিন্ন দেশে ভ্রমণের সময় তিনি এক অঞ্চলে লক্ষ করলেন পানি বেশ ঘন এবং তাপমাত্রাও অপেক্ষাকৃত কম। তার চিন্তায় তখন আসলো জাহাজ চলাচল ব্যতীত এই স্রোতের আরও বিভিন্ন দিকে প্রভাব আছে।
ক. উপসাগর কাকে বলে? ১
খ. সমুদ্রের পানিরাশির স্থানান্তর একটি প্রবাহচিত্রের সাহায্যে দেখাও। ২
গ. সমুদ্র পথে ভ্রমণকালে এনামুল হক সমুদ্রস্রোত সৃষ্টির কোন কারণগুলো চিহ্নিত করেন? বর্ণনা কর। ৩
ঘ. এনামুল হকের চিন্তায় আসা বিষয়টির প্রভাব বিশ্লেষণ কর। ৪

ক তিনদিকে স্থলভাগ দ্বারা পরিবেষ্টিত এবং একদিকে পানি তাকে উপসাগর বলে।
খ সমুদ্রের পানিরাশির স্থানান্তর একটি প্রবাহচিত্রের মাধ্যমে দেখানো হলো :

গ এনামুল হক সমুদ্র স্রোত সৃষ্টির যে কারণগুলো চি‎িহ্নত করেন তা হচ্ছে সমুদ্রের পানিতে তাপমাত্রার পার্থক্য ও সমুদ্র পানির লবণাক্ততার পার্থক্য। এনামুল হক এক অঞ্চলে সমুদ্রের পানিতে তাপমাত্রা অপেক্ষাকৃত কম লক্ষ করেন যা বেশ ঘন। এখানে তাপমাত্রার পার্থক্য এবং ঘনত্ব তথা লবণাক্ততার পার্থক্য ধরা পড়েছে। নিরক্ষীয় অঞ্চলে উষ্ণমণ্ডলের সমুদ্রের পানি বেশি উষ্ণ বলে তা পানির উপরের অংশ দিয়ে পৃষ্ঠপ্রবাহ বা বহিঃস্রোতরূপে মেরু অঞ্চলের দিকে প্রবাহিত হয়। অন্যদিকে মেরু অঞ্চল থেকে শীতল ও ভারী জল নিচের অংশ দিয়ে অন্তঃপ্রবাহ বা অন্তঃস্রোতরূপে নিরক্ষীয় উষ্ণমণ্ডলের দিকে প্রবাহিত হয়। এভাবে উষ্ণ ও শীতল সমুদ্রস্রোতের সৃষ্টি হয়। সমুদ্রজলে লবণের পরিমাণ সর্বত্র সমান নয়। অধিক লবণাক্ত জল বেশি ভারী বলে তার ঘনত্বও বেশি। বেশি ঘনত্বের জল কম ঘনত্বের দিকে প্রবাহিত হয় ও সমুদ্রস্রোতের সৃষ্টি করে।
ঘ এনামুল হক সমুদ্রজলের ঘনত্ব ও তাপমাত্রার পার্থক্য লক্ষ করে জাহাজ চলাচল ব্যতীত সমুদ্রস্রোতের নানামুখী প্রভাবের কথা চিন্তা করেন। বস্তুত আমাদের জীবনে সমুদ্র স্রোতের প্রভাব ব্যাপক। যথা-
১. উষ্ণ সমুদ্র স্রোতের প্রভাবে উষ্ণতা বৃদ্ধি পায়। শীতল অঞ্চলের উপর দিয়ে এই স্রোত প্রবাহিত হলে বরফ জমতে পারে না। ফলে বন্দরগুলো সারাবছর ব্যবহার করা যায়।
২. শীতল সমুদ্র স্রোতের প্রভাবে কোনো অঞ্চলের শীতলতা বৃদ্ধি পায়। শীতল ল্যাব্রাডর স্রোতের প্রভাবে কানাডার পূর্ব উপক‚ল সারাবছর বরফাচ্ছন্ন থাকে।
৩. উষ্ণ সমুদ্রস্রোতের উপর দিয়ে প্রবাহিত হলে বায়ুপ্রবাহ প্রচুর পরিমাণে জলীয়বাষ্প সংগ্রহ করে। এই উষ্ণ বায়ুর প্রভাবে উপক‚ল অঞ্চলে প্রচুর বৃষ্টিপাত ঘটায়। অপরদিকে শীতল সমুদ্রস্রোতের উপর দিয়ে প্রবাহিত বায়ু শুষ্ক বলে বৃষ্টিপাত ঘটায় না।
৪. উষ্ণ ও শীতল স্রোতের মিলন অঞ্চলে অল্প স্থানব্যাপী উষ্ণতার ব্যাপক পরিবর্তন দেখা যায়। এই অঞ্চলে ঘন কুয়াশা ও ঘূর্ণাবাতের সৃষ্টির ফলে প্রবল ঝড়ঝঞ্ঝার সৃষ্টি হয়। জাহাজ ও বিমান চলাচলে অসুবিধা দেখা দেয়।
৫. উষ্ণ ও শীতল স্রোতের মিলন স্থলে শীতল স্রোতের সঙ্গে বাহিত বড় হিমশৈল উষ্ণ স্রোতের প্রভাবে গলে যায়। ফলে হিমশৈলের মধ্যে অবস্থিত বিভিন্ন নুড়ি, কাঁকর, বালি প্রভৃতি সমুদ্রতলে সঞ্চিত হয় এবং একসময় মগ্নচড়ার সৃষ্টি করে।
৬. অগভীর মগ্নচড়াগুলোতে প্রচুর পরিমাণে প্ল্যাংটন (এক প্রকার অতি ক্ষুদ্র উদ্ভিদ ও প্রাণী) জš§ায় ও বংশবৃদ্ধি করে। এই প্ল্যাংটন মাছের অতি প্রিয় খাদ্য।
৭. শীতল সমুদ্রস্রোতের সঙ্গে যেসব হিমশৈল (ওপবনবৎম) ভেসে আসে সেগুলোর কারণে জাহাজ চলাচলে বাধার সৃষ্টি হয়। অনেক সময় হিমশৈলের সঙ্গে ধাক্কা লেগে জাহাজডুবির ঘটনা ঘটে।

প্রশ্ন- ১১  জোয়ার-ভাটার কারণ

সাকিব তার বাবার সঙ্গে কক্সবাজার গিয়ে সমুদ্র সৈকত দেখতে যায়। সেখানে সে দেখতে পায় সমুদ্রের পানি ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এক সময় পানি বৃদ্ধি বন্ধ হওয়ার পর আবার ধীরে ধীরে কমছে। সাকিব তার বাবার সাথে বায়না ধরল ২৪ ঘণ্টা সে সমুদ্রের তীরে দাঁড়িয়ে পানির এ হ্রাস-বৃদ্ধি দেখতে চায়।
ক. ধীরে ধীরে সমুদ্রের পানি বৃদ্ধিকে কী বলে? ১
খ. জোয়ার-ভাটার ফলে ব্যবসা-বাণিজ্যে কী সুবিধা হয়? ২
গ. সাকিবের ইচ্ছে পূরণ হলে সে কতবার পানির এ হ্রাস বৃদ্ধি দেখতে পেত? কারণসহ বর্ণনা কর। ৩
ঘ. সমুদ্রের পানির উক্ত হ্রাস-বৃদ্ধি সৃষ্টি হওয়ার একটি কারণ চিত্রের সাহায্যে ব্যাখ্যা কর। ৪

ক ধীরে ধীরে সমুদ্রের পানি বৃদ্ধিকে জোয়ার বলে।
খ জোয়ার-ভাটার ফলে নৌযান চলাচলের মাধ্যমে ব্যবসা-বাণিজ্যের সুবিধা হয়। জোয়ারের সময় নদীর মোহনায় ও তার অভ্যন্তরে পানি অধিক হয় বলে বড় বড় সমুদ্রগামী জাহাজের পক্ষে নদীতে প্রবেশ করা সুবিধা হয়। আবার ভাটার টানে ঐ জাহাজ অনায়াসে সমুদ্রে নেমে আসতে পারে। বাংলাদেশের দুটি প্রধান সমুদ্রবন্দর পতেঙ্গা ও মংলা এবং উপক‚লবর্তী নদীবন্দর সচল রাখতে জোয়ার-ভাটার ভ‚মিকা রয়েছে।
গ সাকিবের ইচ্ছা পূরণ হলে সে সমুদ্রের পানির হ্রাস-বৃদ্ধি তথা জোয়ার-ভাটা দুইবার দেখতে পেত। চাঁদ পৃথিবীর পারস্পরিক আকর্ষণে স্থলভাগ অপেক্ষা জলভাগ বেশি প্রভাবিত হয়। জলভাগের উপর চাঁদের আকর্ষণ বেশি বলে চারদিক থেকে পানি ওই আকর্ষণের স্থানের দিকে প্রবাহিত হয়। ফলে চাঁদের কাছাকাছি অংশে পানি ফুলে ওঠে জোয়ারের সৃষ্টি হয়। এ জোয়ার হলো প্রবল জোয়ার। আবার ঠিক ওই সময়ে পৃথিবীর যে অংশে চাঁদের আকর্ষণে প্রবল জোয়ার হয় তার বিপরীত দিকের পানি অপেক্ষা নিচের স্থলভাগ চাঁদের দিকে বেশি আকৃষ্ট হয়। ফলে পানির ওপর পৃথিবীর প্রভাব কমে গৌণ জোয়ারের সৃষ্টি করে। অর্থাৎ পৃথিবীর কোনো একটি অংশে প্রবল জোয়ার হলে তখন তার বিপরীত অংশে গৌণ জোয়ার হয়। সে সময় জোয়ারের মধ্যবর্তী দুই পাশের স্থানে পানি কমে অর্থাৎ মধ্যবর্তী স্থানে ভাটা হয়। তাই প্রতিদিন পৃথিবীর প্রত্যেক স্থানে দুবার জোয়ার ও দুবার ভাটা হয়। তাই সাকিবের ইচ্ছা পূরণ হলে সে ২৪ ঘণ্টায় দুবার জোয়ার ও দুবার ভাটার দৃশ্য অবলোকন করতে পারত।
ঘ প্রধানত দুটি কারণে সমুদ্রের পানির উক্ত হ্রাস-বৃদ্ধি তথা জোয়ার-ভাটার সৃষ্টি হয়। এগুলো হলো ১. চাঁদ ও সূর্যের মহাকর্ষ শক্তির প্রভাব এবং ২. পৃথিবীর আবর্তনের ফলে উৎপন্ন কেন্দ্রাতিগ শক্তি। তš§ধ্যে একটি কারণ নিচে চিত্রসহ ব্যাখ্যা করা হলো।
পৃথিবীর আবর্তনের ফলে উৎপন্ন কেন্দ্রাতিগ শক্তি :

চিত্র : জোয়ার-ভাটা সৃষ্টিতে পৃথিবীর কেন্দ্রাতিগ ও মহাকর্ষ শক্তির প্রভাব
পৃথিবী নিজ মেরুরেখার চারদিকে অনবরত আবর্তন করে বলে কেন্দ্রাতিগ শক্তি বা বিকর্ষণ শক্তির সৃষ্টি হয়। এই কেন্দ্রাতিগ শক্তির প্রভাবে পৃথিবীর প্রতিটি অণুই মহাকর্ষ শক্তির বিপরীত বিকর্ষিত হয় বা ছিটকে যায়। তাই পৃথিবীর কেন্দ্রাতিগ শক্তির প্রভাবে যেখানে মহাশক্তির প্রভাবে জোয়ারের সৃষ্টি হয়, তার বিপরীত দিকে সমুদ্রের পানি বিক্ষিপ্ত হয়েও জোয়ারের সৃষ্টি করে।

প্রশ্ন- ১২  জোয়ার-ভাটার প্রভাব

সুমন কক্সবাজারে বেড়াতে এসে লক্ষ করল গতকাল রাতে সৈকতে যেখানে পানি পৌঁছেছিল, আজ সকালে তা থেকে অনেক নিচে অবস্থান করছে। কিন্তু বিকালে সমুদ্রের পানি ধীরে ধীরে ফুলে উঠে সৈকতের অনেক ভেতরে চলে আসতে দেখে তার কৌত‚হল বেড়ে গেল।
ক. মহাকর্ষ কী? ১
খ. জোয়ার ভাটা বলতে কী বোঝ? ২
গ. সুমনের দেখা সৈকতে পানির এরূপ অবস্থার পেছনে চাঁদ ও সূর্যের ভ‚মিকা ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত বিষয়টি মানবজীবনের ওপর
কীরূপ প্রভাব ফেলতে পারে তার বিবরণ দাও। ৪

ক মহাবিশ্বের যে কোনো দুটি বস্তুর মধ্যে যে আকর্ষণ তাকে মহাকর্ষ বলে।
খ সমুদ্র ও উপক‚লীয় এলাকার পানিরাশি প্রতিদিনই কোনো একটি সময়ে ফুলে ওঠে এবং কিছুক্ষণ পর আবার তা ধীরে ধীরে নেমে যায়। পানিরাশির এ রকম নিয়মিত স্ফীতি বা ফুলে ওঠাকে জোয়ার ও নেমে যাওয়াকে ভাটা বলে।
গ সুমনের দেখা সমুদ্রের পানিরাশির এরূপ অবস্থাকে তথা ফুলে ওঠা ও নেমে যাওয়াকে জোয়ার ভাটা বলা হয়। প্রধানত দুটি কারণে জোয়ার ভাটার সৃষ্টি হয়। যথা : ১. চাঁদ ও সূর্যের মহাকর্ষ শক্তির প্রভাব এবং ২. পৃথিবীর আবর্তনের ফলে উৎপন্ন কেন্দ্রাতিগ বল। নিচে চাঁদ ও সূর্যের মহাকর্ষ শক্তি কীভাবে জোয়ার ভাটার সৃষ্টি করে তার ব্যাখ্যা প্রদান করা হলো : মহাকর্ষ সূত্র অনুযায়ী মহাকাশে বিভিন্ন গ্রহ, উপগ্রহ, নক্ষত্র প্রভৃতি জ্যোতিষ্ক পরস্পরকে আকর্ষণ করে। এভাবে চাঁদ ও সূর্য আমাদের পৃথিবীকেও আকর্ষণ করে। হিসাব করে দেখা গেছে পৃথিবীর ওপর চাঁদের আকর্ষণ বল সূর্য থেকে প্রায় দ্বিগুণ। সূর্যের ভর চাঁদ থেকে বেশি হলেও দূরত্বের কারণে চাঁদের আকর্ষণ বল বেশি হয়। তাই চাঁদের আকর্ষণে পৃথিবীর পানিরাশি ফুলে উঠে ও জোয়ারের সৃষ্টি হয়। সূর্যের আকর্ষণে এ জোয়ার তত জোরালো হয় না। অর্থাৎ পানিরাশি ততটা ফুলে ওঠে না। এভাবে চাঁদ ও সূর্য একই সরলরেখায় অবস্থিত হলে চাঁদ ও সূর্যের মিলিত আকর্ষণে প্রবল জোয়ারের সৃষ্টি হয়।
ঘ উদ্দীপকে উল্লিখিত বিষয়টি হলো জোয়ার ভাটা। মানব জীবনে এই জোয়ার ভাটার যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে যা বিশ্বের সমুদ্র উপক‚লবর্তী দেশসমূহে বেশি পরিলক্ষিত হয়। যেমন :
১. জোয়ার ভাটা ভ‚পৃষ্ঠে ময়লা আবর্জনাকে সরিয়ে নেয়।
২. নদীর মোহনায় পলি, বালিকে সরিয়ে পরিষ্কার রাখে।
৩. জোয়ার ভাটার প্রভাবে নদী খাত গভীর হয়।
৪. নদীতে ভাটার স্রোতে বিপরীতে বাঁধ দিয়ে জলবিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়।
৫. জোয়ারের পানি সেচকার্যে ব্যবহৃত হয়।
৬. শীতের সময় লবণাক্ত পানি প্রবেশ করলে পানি সহজে বরফ বা জমে না।
৭. জোয়ার-ভাটা ব্যবসা-বাণিজ্যে সাহায্য করে। জোয়ারের সময় জাহাজ মালামাল নিয়ে নদীপথে ভেতরে যেতে পারে। আবার ভাটার টানে অনায়াসে সমুদ্রে নেমে আসতে পারে ও
৮. প্রবল জোয়ারের সময় বান ডাকার ফলে অনেক সময় জানমালের ক্ষতি হয়।
এভাবে জোয়ার ভাটা মানবজীবনে ব্যাপক প্রভাব ফেলে।

 অনুশীলনমূলক কাজের আলোকে সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন- ১৩  মহাসাগর ও সমুদ্র তলদেশের সম্পদ

কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে শিক্ষা সফরে এসে বিশাল জলরাশি দেখে রুখসানা অবাক হয়। তার বিস্ময় দেখে ভ‚গোল শিক্ষক হুমায়ুন কবীর চুন্নু বললেন, ‘এর চেয়ে আরও বিস্ময় লুকিয়ে আছে এই বিশাল জলরাশির গভীরে বিস্তৃত সমভ‚মিতে।’
ক. বারিমণ্ডল কাকে বলে? ১
খ. উষ্ণ ও শীতল সমুদ্রস্রোত কীভাবে সৃষ্টি হয়? ২
গ. রুখসানার দেখা বিশাল জলরাশির পৃথিবীব্যাপী অবস্থান মানচিত্র এঁকে দেখাও। ৩
ঘ. উদ্দীপকে শিক্ষকের উল্লিখিত বিশাল জলরাশির গভীরে কী বিস্ময় লুকিয়ে আছে? ব্যাখ্যা কর। ৪

ক পৃথিবীর সকল জলরাশির অবস্থানভিত্তিক বিস্তরণকে বারিমণ্ডল বলে।
খ সমুদ্রে পানির তাপমাত্রার পার্থক্যের কারণে উষ্ণ ও শীতল সমুদ্রস্রোতের সৃষ্টি হয়। নিরক্ষীয় অঞ্চলে উষ্ণমণ্ডলের সমুদ্রের পানি বেশি উষ্ণ বলে তা পানির উপরের অংশ দিয়ে পৃষ্ঠপ্রবাহ বা বহিঃস্রোতরূপে মেরু অঞ্চলের দিকে প্রবাহিত হয়। এরূপ স্রোতকে উষ্ণ স্রোত বলে। অন্যদিকে মেরু অঞ্চল থেকে শীতল ও ভারী পানির নিচের অংশ দিয়ে অন্তঃপ্রবাহ বা অন্তঃস্রোতরূপে নিরক্ষীয় উষ্ণমণ্ডলের দিকে প্রবাহিত হয়। এভাবে শীতল সমুদ্রস্রোতের সৃষ্টি হয়।
গ উদ্দীপকে সমুদ্র সৈকতে রুখসানার দেখা বিশাল জলরাশি মহাসাগর। মানচিত্র অঙ্কন করে পৃথিবীর মহাসাগরগুলোর অবস্থান তুলে ধরা হলো :

চিত্র : পৃথিবীর মহাসাগরগুলোর অবস্থান
ঘ মহাসাগরের বিশাল জলরাশি দেখে বিস্ময় প্রকাশ করেছিল রুখসানা। কিন্তু এই জলরাশির নিচে একেবারে গভীরে যাকে আমরা গভীর সমুদ্রের সমভ‚মি বলে থাকি তা আরও বিস্ময়ের। কারণ বৈচিত্র্যপূর্ণ ভ‚প্রকৃতি আর নানা প্রজাতির সামুদ্রিক উদ্ভিদ ও প্রাণীর বিচরণের কারণে গভীর সমুদ্রের সমভ‚মি সবার কাছে অপার বিস্ময়। শিক্ষক মহোদয় উদ্দীপকে এমনটিই বলেছেন। মহীঢালের পর থেকে সমুদ্র তলদেশে যে বিস্তৃত সমভ‚মি দেখা যায় তাকে গভীর সমুদ্রের সমভ‚মি বলে। এর গড় গভীরতা ৫,০০০ মিটার। এটি সমভ‚মি নামে খ্যাত হলেও আসলে বন্ধুর। গভীর সমুদ্রের সমভ‚মির ওপর জলমগ্ন বহু শৈলশিরা ও উচ্চভ‚মি থাকে। আবার কোথাও আছে নানা ধরনের আগ্নেয়গিরি। আর এসব উচ্চভ‚মির কোনো কোনোটি জলরাশির ওপর দ্বীপরূপে অবস্থান করে। সমুদ্রের এরকম গভীর অংশে পলিমাটি, সিন্ধুমল, আগ্নেয়গিরি থেকে উত্থিত লাভা ও সূ² ভস্ম প্রভৃতি সঞ্চিত হয়। আর এসব সঞ্চিত পদার্থ স্তরে স্তরে জমা হয়ে পাললিক শিলার সৃষ্টি করে। এসব কারণেই উদ্দীপকে রুখসানার কাছে শিক্ষক চুন্নু গভীর সমুদ্রের সমভ‚মিতে বিস্ময় লুকিয়ে আছে বলেছেন।

প্রশ্ন- ১৪  মহীঢাল, শৈলশিয়া ও গভীর সমুদ্রখাত

একটি প্রতিযোগিতায় দুটি গ্রæপকে সমুদ্র তলদেশের ভ‚মিরূপের দুটি ভিন্ন ভিন্ন ছবি দিয়ে ভ‚মিরূপ চি‎িহ্নত করতে বলা হলো :
প্রথম গ্রæপ : তারা ছবির একটি অংশে খাড়াভাবে নেমে আসার পর সমভ‚মির ন্যায় ভ‚মিরূপ দেখতে পেল।
দ্বিতীয় গ্রæপ : তারা ছবিতে সমুদ্রের তলদেশে অনেক আগ্নেয়গিরির অবস্থান ও খাত দেখতে পেল।
ক. পানিতে শব্দ তরঙ্গের দৈর্ঘ্য কত? ১
খ. বঙ্গোপসাগরকে কেন সামুদ্রিক ও প্রাকৃতিক সম্পদের আধার বলা হয়? ২
গ. প্রথম গ্রæপ যে ভ‚মিরূপ দেখল তা ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. দ্বিতীয় গ্রæপের দেখা ভ‚মিরূপগুলো নিজের ভাষায় বিশ্লেষণ কর। ৪

ক পানিতে শব্দ তরঙ্গের দৈর্ঘ্য প্রতি সেকেন্ডে ১,৪৭৫ মিটার।
খ বাংলাদেশের ৭১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ উপক‚লীয় অঞ্চলের বঙ্গোপসাগরে রয়েছে অনেক সামুদ্রিক সম্পদ। এর তলদেশে রয়েছে ৪৪২ প্রজাতির মৎস্য, ৩৩৬ প্রজাতির মলাস্কস, ১৯ প্রজাতির চিংড়ি, নানারকম কাঁকড়া, ম্যানগ্রোভ বনসহ আরও বিভিন্ন ধরনের সামুদ্রিক জলজ ইত্যাদি। কক্সবাজারের উপক‚লীয় এলাকায় পারমাণবিক খনিজ জিরকন, মোনাজাইট, ইলমেনাইট, ম্যাগনেটাইট, রিওটাইল ও লিউকক্সেন পাওয়া গেছে। এছাড়া সমুদ্রের তলদেশে রয়েছে খনিজ তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস সম্পদ। তাই বঙ্গোপসাগরকে সামুদ্রিক ও প্রাকৃতিক সম্পদের আধার বলা হয়।
গ প্রথম গ্রæপ ছবিতে মহীঢাল ও গভীর সমুদ্রের সমভ‚মি অঞ্চল দেখতে পেয়েছে। মহীসোপানের শেষ সীমা হতে ভ‚ভাগ হঠাৎ খাড়াভাবে নেমে সমুদ্রের গভীর তলদেশে মিশে গেছে। এ ঢালু অংশকে মহীঢাল বলে। উদ্দীপকের ছবিতে ছাত্ররা এমনি একটি ভ‚মিরূপ দেখেছে। সমুদ্রে এর গভীরতা ২০০ থেকে ৩,০০০ মিটার। এটা অধিক খাড়া হওয়ার জন্য খুব প্রশস্ত নয়। এটি গড়ে প্রায় ১৬ থেকে ৩২ কিলোমিটার প্রশস্ত। মহীঢালের উপরিভাগ সমান নয়। অসংখ্য আন্তঃসাগরীয় খাত অবস্থান করায় তা খুবই বন্ধুর প্রকৃতির। এর ঢাল মৃদু বলে জীবজন্তুর দেহাবশেষ, পলি প্রভৃতির অবক্ষেপণ দেখা যায়। গভীর সমুদ্রের সমভ‚মি : মহীঢাল শেষ হওয়ার পর থেকে সমুদ্র তলদেশে যে বিস্তৃত সমভ‚মি দেখা যায় তাকে গভীর সমুদ্রের সমভ‚মি বলে। উদ্দীপকে ছাত্ররা এ ভ‚মিরূপটিও দেখেছে। এর গড় গভীরতা ৫,০০০ মিটার। এ অঞ্চলটি সমভ‚মি নামে খ্যাত হলেও প্রকৃতপক্ষে তা বন্ধুর। কারণ গভীর সমুদ্রের সমভ‚মির উপর জলমগ্ন বহু শৈলশিরা ও উচ্চভ‚মি অবস্থান করে। আবার কোথাও রয়েছে নানা ধরনের আগ্নেয়গিরি। এসব উচ্চভ‚মির কোনো কোনোটি আবার পানিরাশির উপর দ্বীপরূপে অবস্থান করে। সমুদ্রের এ গভীর অংশে পলিমাটি, সিন্ধুমল, আগ্নেয়গিরি থেকে উত্থিত লাভা ও সূ² ভস্ম সঞ্চিত হয়। এসব সঞ্চিত পদার্থ স্তরে স্তরে জমা হয়ে পাললিক শিলার সৃষ্টি করে।
ঘ দ্বিতীয় গ্রæপ ছবিতে নিমজ্জিত শৈলশিরা ও গভীর সমুদ্র খাত দেখতে পায়। সমুদ্রের তলদেশে অনেক আগ্নেয়গিরির অবস্থান রয়েছে। যা ছাত্ররা ছবিতে দেখতে পায়। ওইসব আগ্নেয়গিরি থেকে লাভা বের হয়ে সমুদ্রগর্ভে সঞ্চিত হয়ে শৈলশিরার ন্যায় ভ‚মিরূপ গঠন করে। এগুলো নিমজ্জিত শৈলশিরা নামে পরিচিত। নিমজ্জিত শৈলশিরার মধ্যে মধ্য আটলান্টিক শৈলশিরা সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য। গভীর সমুদ্রের সমভ‚মি অঞ্চলে মাঝে মাঝে গভীর খাত দেখা যায়। ছবিতে দ্বিতীয় গ্রæপের ছাত্ররা তা দেখেছিল এসব খাতকে গভীর সমুদ্রখাত বলে। পাশাপাশি অবস্থিত মহাদেশীয় ও সামুদ্রিক প্লেট সংঘর্ষের ফলে সমুদ্রখাত প্লেট সীমানায় অবস্থিত হয়। এ প্লেট সীমানায় ভ‚মিকম্প ও আগ্নেয়গিরি অধিক হয় বলেই এসব খাতের সৃষ্টি হয়েছে। এ খাতগুলো অধিক প্রশস্ত না হলেও খাড়া ঢালবিশিষ্ট। এদের গভীরতা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৫,৪০০ মিটারের অধিক। প্রশান্ত মহাসাগরেই গভীর সমুদ্রখাতের সংখ্যা অধিক। এসব গভীর সমুদ্রখাতের মধ্যে গুয়াম দ্বীপের ৩৩২ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত ম্যারিয়ানা খাত সর্বাপেক্ষা গভীর। এর গভীরতা প্রায় ১০,৮৭০ মিটার এবং এটি পৃথিবীর গভীরতম খাত। এছাড়া আটলান্টিক মহাসাগরের পোর্টোরিকো খাত (৮,৫৩৮ মিটার), ভারত মহাসাগরের শুন্ডা খাত প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।

 জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর 
প্রশ্ন \ ১ \ পৃথিবীর পানিরাশির শতকরা কতভাগ সমুদ্রে রয়েছে?
উত্তর : পৃথিবীর পানিরাশির শতকরা ৯৭ ভাগ সমুদ্রে রয়েছে।
প্রশ্ন \ ২ \ পৃথিবীর পানিকে কত ভাগে ভাগ করা হয়েছে?
উত্তর : পৃথিবীর পানিকে লবণাক্ত ও মিঠা পানি এই দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
প্রশ্ন \ ৩ \ মহাসাগর কাকে বলে?
উত্তর : বারিমণ্ডলের উন্মুক্ত বিস্তীর্ণ বিশাল পানিরাশিকে মহাসাগর বলে।
প্রশ্ন \ ৪ \ পৃথিবীতে কতটি মহাসাগর রয়েছে?
উত্তর : পৃথিবীতে পাঁচটি মহাসাগর রয়েছে।
প্রশ্ন \ ৫ \ পৃথিবীর বৃহত্তম ও গভীরতম মহাসাগর কোনটি?
উত্তর : পৃথিবীর বৃহত্তম ও গভীরতম মহাসাগর হলো প্রশান্ত মহাসাগর।
প্রশ্ন \ ৬ \ দক্ষিণ মহাসাগরের অবস্থান লিখ।
উত্তর : ৬০ দক্ষিণ অক্ষাংশ থেকে এন্টার্কটিকার হিমভাগ পর্যন্ত দক্ষিণ মহাসাগরের অবস্থান।
প্রশ্ন \ ৭ \ পৃথিবীর উত্তর মেরু কোন মহাসাগরে অবস্থান করছে?
উত্তর : পৃথিবীর উত্তর মেরু উত্তর মহাসাগরে অবস্থান করছে।
প্রশ্ন \ ৮ \ এশিয়া ও আফ্রিকা মহাদেশ দ্বারা পরিবেষ্টিত কোন মহাসাগর?
উত্তর : এশিয়া ও আফ্রিকা মহাদেশ দ্বারা পরিবেষ্টিত ভারত মহাসাগর।
প্রশ্ন \ ৯ \ হ্রদ কাকে বলে?
উত্তর : চারদিকে স্থলভাগ দ্বারা বেষ্টিত পানি রাশিকে হ্রদ বলে।
প্রশ্ন \ ১০ \ পানির মধ্যে প্রতি সেকেন্ডে শব্দ তরঙ্গের গতিবেগ কত?
উত্তর : প্রতি সেকেন্ডে শব্দ তরঙ্গ পানির মধ্য দিয়ে প্রায় ১,৪৭৫ মিটার নিচে যায় এবং আবার ফিরে আসে।
প্রশ্ন \ ১১ \ সমুদ্রের তলদেশের ভ‚মিরূপকে কয়টি ভাগে ভাগ করা হয়?
উত্তর : সমুদ্রের তলদেশের ভ‚মিরূপকে পাঁচটি ভাগে ভাগ করা হয়।
প্রশ্ন \ ১২ \ মহীসোপানের সমুদ্রের পানির সর্বোচ্চ গভীরতা কত?
উত্তর : মহীসোপানের সমুদ্রের পানির সর্বোচ্চ গভীরতা ১৫০ মিটার।
প্রশ্ন \ ১৩ \ সমুদ্রে মহীঢালের গভীরতা কত?
উত্তর : সমুদ্রে মহীঢালের গভীরতা ২০০ থেকে ৩,০০০ মিটার।
প্রশ্ন \ ১৪ \ গভীর সমুদ্রের গড় গভীরতা কত মিটার?
উত্তর : গভীর সমুদ্রের গড় গভীরতা ৫,৪০০ মিটারের অধিক।
প্রশ্ন \ ১৫ \ পৃথিবীর গভীরতম খাত কোনটি?
উত্তর : পৃথিবীর গভীরতম খাত গুয়াম দ্বীপের ৩২২ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত ম্যারিয়ানা খাত।
প্রশ্ন \ ১৬ \ ম্যারিয়ানা খাতের গভীরতা কত?
উত্তর : ম্যারিয়ানা খাতের গভীরতা প্রায় ১০,৮৭০ মিটার।
প্রশ্ন \ ১৭ \ আটলান্টিক মহাসাগরের পোর্টোরিকো খাতের গভীরতা কত?
উত্তর : আটলান্টিক মহাসাগরের পোর্টোরিকো খাতের গভীরতা ৮,৫৩৮ মিটার।
প্রশ্ন \ ১৮ \ সমুদ্রস্রোতের প্রধান কারণ কী?
উত্তর : সমুদ্রস্রোতের প্রধান কারণ বায়ুপ্রবাহ।
প্রশ্ন \ ১৯ \ উষ্ণতার তারতম্য অনুসারে সমুদ্রস্রোতকে কয়ভাগে ভাগ করা হয়েছে?
উত্তর : উষ্ণতার তারতম্য অনুসারে সমুদ্রস্রোতকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে- উষ্ণ স্রোত ও শীতল স্রোত।
প্রশ্ন \ ২০ \ বাংলাদেশের উপক‚লীয় অঞ্চলের দৈর্ঘ্য কত?
উত্তর : বাংলাদেশের উপক‚লীয় অঞ্চলের দৈর্ঘ্য ৭১৬ কিলোমিটার।
প্রশ্ন \ ২১ \ কক্সবাজারের উপক‚লীয় এলাকায় কী পাওয়া গেছে?
উত্তর : কক্সবাজারের উপক‚লীয় এলাকায় পারমাণবিক খনিজ জিরকন, মোনাজাইট, ইলমেনাইট, ম্যাগনেটাইট, রিওটাইল ও লিউকক্সেন পাওয়া গেছে।
প্রশ্ন \ ২২ \ কোন যন্ত্রের সাহায্যে সমুদ্রের গভীরতা মাপা হয়?
উত্তর : ফ্যাদোমিটার যন্ত্রের সাহায্যে সমুদ্রের গভীরতা মাপা হয়।
প্রশ্ন \ ২৩ \ সমুদ্রস্রোতের গতি কোথায় সবচেয়ে বেশি?
উত্তর : সমুদ্রস্রোতের গতি সমুদ্রপৃষ্ঠে সবচেয়ে বেশি।
প্রশ্ন \ ২৪ \ মাছের অতি প্রিয় খাদ্য কী?
উত্তর : মাছের অতি প্রিয় খাদ্য প্ল্যাংটন (এক প্রকার অতি ক্ষুদ্র উদ্ভিদ ও প্রাণী)।
প্রশ্ন \ ২৫ \ ভ‚পৃষ্ঠের তলদেশে পানি কোন অবস্থায় বিরাজ করে?
উত্তর : ভ‚পৃষ্ঠের তলদেশে পানি তরল অবস্থায় বিরাজ করে।
প্রশ্ন \ ২৬ \ ভগ্ন উপক‚লবিশিষ্ট মহাসাগর কোনটি?
উত্তর : ভগ্ন উপক‚লবিশিষ্ট মহাসাগর আটলান্টিক মহাসাগর।
প্রশ্ন \ ২৭ \ মহীসোপানের সবচেয়ে উপরের অংশকে কী বলে?
উত্তর : মহীসোপানের সবচেয়ে উপরের অংশকে উপক‚লীয় ঢাল বলে।
প্রশ্ন \ ২৮ \ পৃথিবীর বৃহত্তম মহীসোপান কোথায় অবস্থিত?
উত্তর : পৃথিবীর বৃহত্তম মহীসোপান ইউরোপের উত্তর-পশ্চিমে।
প্রশ্ন \ ২৯ \ পানিতে কী করে ঘূর্ণন তৈরি হয়?
উত্তর : বায়ুপ্রবাহ সমুদ্রের উপরিভাগের পানির সঙ্গে ঘর্ষণ তৈরি করে এবং ঘর্ষণের জন্য পানিতে ঘূর্ণন তৈরি হয়।
প্রশ্ন \ ৩০ \ সমুদ্রের পানিরাশি কী করে একস্থান থেকে অন্যস্থানে প্রবাহিত হয়?
উত্তর : সমুদ্রের উপরের এবং নিমজ্জিত স্রোত একসঙ্গে সঞ্চালন স্রোত তৈরি করে, যার ফলশ্রæতিতে পানিরাশি একস্থান থেকে অন্যস্থানে প্রবাহিত হয়।
প্রশ্ন \ ৩১ \ দক্ষিণ আমেরিকার আতাকামা মরুভ‚মি কোন স্রোত দ্বারা প্রভাবিত হয়?
উত্তর : দক্ষিণ আমেরিকার আতাকামা মরুভ‚মি শীতল পেরু স্রোত দ্বারা প্রভাবিত হয়।
প্রশ্ন \ ৩২ \ ভাটার স্রোতের বিপরীতে বাঁধ দিয়ে কী উৎপাদন করা যায়?
উত্তর : ভাটার স্রোতের বিপরীতে বাঁধ দিয়ে জলবিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায়।

 অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর 
প্রশ্ন \ ১ \ বারিমণ্ডল সম্পর্কে লেখ।
উত্তর : ভ‚পৃষ্ঠের যে সাত ভাগের প্রায় পাঁচ ভাগ (শতকরা ৭১ ভাগ) স্থান জলরাশির দ্বারা আবৃত তার ভৌগোলিক নাম বারিমণ্ডল। পৃথিবীর সকল জলরাশির শতকরা ৯৭ ভাগ পানি রয়েছে সমুদ্রে (মহাসাগর, সাগর ও উপসাগর)। মাত্র ৩ ভাগ পানি রয়েছে নদী, হিমবাহ, ভ‚গর্ভস্থ, হ্রদ, মৃত্তিকা, বায়ুমণ্ডল ও জীবমণ্ডলে। পৃথিবীর সমস্ত পানিরাশিকে দুভাগে ভাগ করা যায় যেমন, লবণাক্ত ও মিঠা পানি। পৃথিবীর সকল মহাসাগর, সাগর, উপসাগরের পানিরাশি লবণাক্ত এবং নদী, হ্রদ ও ভ‚গর্ভস্থ পানি মিঠা পানির উৎস।
প্রশ্ন \ ২ \ সমুদ্রস্রোত কী?
উত্তর : সমুদ্রের পানিরাশি সাধারণত বায়ুপ্রবাহ, উষ্ণতার তারতম্য, স্থলভাগের অবস্থান, পৃথিবীর আবর্তন, নানাবিধ কারণে একস্থান থেকে অন্যস্থানে নিয়মিতভাবে প্রবাহিত হয়। সমুদ্রের পানিরাশির এই নিয়মিত প্রবাহকেই সমুদ্রস্রোত বলে।
প্রশ্ন \ ৩ \ সমুদ্র স্রোতের ফলাফল লেখ।
উত্তর : সমুদ্র স্রোতের ফলাফল হলো : ১. জলবায়ুর উপর প্রভাব বিস্তার, ২. ব্যবসা-বাণিজ্যের উপর প্রভাব বিস্তার; ৩. বৃষ্টি, কুয়াশা ও ঝড়-তুফানের প্রাদুর্ভাব ঘটায়, ৪. মগ্নচড়া সৃষ্টি করে ও ৫. মৎস্য শিকার ও ব্যবসায়ে সহায়তা করে।
প্রশ্ন \ ৪ \ নরওয়ে ও ব্রিটিশ দ্বীপপুঞ্জের পশ্চিম উপক‚ল শীতকালে বরফমুক্ত থাকে কেন?
উত্তর : উত্তর আটলান্টিক উষ্ণ সমুদ্রস্রোতের প্রভাবে নরওয়ে ও ব্রিটিশ দ্বীপপুঞ্জের পশ্চিম উপক‚ল শীতকালে বরফমুক্ত থাকে। এ অঞ্চল উত্তর মেরুর নিকটে, তাই শীতল। স্থলভাগে বরফাচ্ছন্ন অবস্থা দেখা যায়। কিন্তু উষ্ণ সমুদ্রস্রোতের প্রভাবে জলপথ বরফমুক্ত থাকে।
প্রশ্ন \ ৫ \ ব্রিটিশ দ্বীপপুঞ্জের পশ্চিম উপক‚লে প্রচুর বৃষ্টিপাত ঘটে কেন?
উত্তর : ব্রিটিশ দ্বীপপুঞ্জের পশ্চিম উপক‚ল দিয়ে উষ্ণ উপসাগরীয় স্রোত প্রবাহিত হয়। এ স্রোতের কারণে বায়ুপ্রবাহ প্রচুর পরিমাণে জলীয়বাষ্প সংগ্রহ করে। এই উষ্ণ বায়ুর প্রভাবে এ অঞ্চলে প্রচুর বৃষ্টিপাত ঘটে।
প্রশ্ন \ ৬ \ উত্তর আমেরিকার পূর্ব উপক‚লে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া বিরাজ করে কেন?
উত্তর : উত্তর আমেরিকার পূর্ব উপক‚লে শীতল ল্যাব্রাডর স্রোত ও উষ্ণ উপসাগরীয় স্রোতের মিলন ঘটে। এই উষ্ণ ও শীতল স্রোতের মিলন অঞ্চলে ঘন কুয়াশা ও ঘূর্ণাবাতের সৃষ্টির ফলে প্রবল ঝড়ঝঞ্ঝার সৃষ্টি হয়। এ জন্য এ স্থানে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া বিরাজ করে।
প্রশ্ন \ ৭ \ নিউ ফাউন্ডল্যান্ডের উপক‚ল ও জাপান উপক‚লে পৃথিবীর অধিকাংশ মাছ ধরা হয় কেন?
উত্তর : নিউ ফাউন্ডল্যান্ডের উপক‚ল ও জাপান উপক‚লে অগভীর মগ্নচড়া সৃষ্টি হয়েছে। অগভীর মগ্নচড়াগুলোতে প্রচুর পরিমাণে প্ল্যাংটন জন্মায় ও বংশ বৃদ্ধি করে। এই প্ল্যাংটন মাছের অতি প্রিয় খাদ্য। এ জন্য নিউ ফাউন্ডল্যান্ডের উপক‚ল ও জাপান উপক‚লে পৃথিবীর অধিকাংশ মাছ ধরা হয়।
প্রশ্ন \ ৮ \ মেরু অঞ্চলে বরফ জমার কারণ কী? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : মেরু অঞ্চলে সূর্যের তাপ কম পাওয়ার কারণে এ অঞ্চলে বরফ জমে। আমরা জানি মেরু অঞ্চল সূর্যরশ্মি তির্যকভাবে কিরণ দেয়। ফলে এ অঞ্চল তাপ খুব কম পায়। তাছাড়া শীতকালে এ অঞ্চলে সূর্যের আলো প্রায় দেখাই যায় না। ফলশ্রæতিতে এ অঞ্চলে সূর্যের তাপ কম হওয়ায় উষ্ণতা কম যা ০-এরও নিচে এবং তাই এ অঞ্চলে বরফ জমে।
প্রশ্ন \ ৯ \ পৃথিবীর আ‎িহ্নক গতির ফলে কীভাবে সমুদ্রস্রোতের সৃষ্টি হয়?
উত্তর : পৃথিবীর আ‎িহ্নক গতির ফলে সমুদ্রস্রোতের সৃষ্টি হয়। আ‎ি‎হ্নক গতির ফলে ফেরেলের সূত্র অনুসারে বায়ুপ্রবাহের মতো সমুদ্রজলও উত্তর গোলার্ধে ডানদিকে এবং দক্ষিণ গোলার্ধে বামদিকে বেঁকে যায়। এর ফলে সমুদ্রস্রোতের সৃষ্টি হয়।
প্রশ্ন \ ১০ \ টাইটানিক জাহাজ কীভাবে ডুবে গিয়েছিল? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : টাইটানিক জাহাজ মূলত হিমশৈলের আঘাতে ডুবে গিয়েছিল। সাধারণত শীতল সমুদ্রস্রোতের সঙ্গে যেসব হিমশৈল ভেসে আসে সেগুলোর কারণে জাহাজ চলাচলে বাধার সৃষ্টি হয়। অনেক সময় হিমশৈলের সঙ্গে ধাক্কা লেগে জাহাজডুবির ঘটনা ঘটে। যেমন : যুক্তরাজ্যের বিখ্যাত টাইটানিক জাহাজ প্রথম যাত্রাতেই হিমশৈলের আঘাতে সমুদ্রে ডুবে গিয়েছিল।

 

 

Leave a Reply