নবম-দশম শ্রেণির বাংলাদেশের ইতিহাস অধ্যায় ১০ ইংরেজ শাসন আমলে বাংলার স্বাধিকার আন্দোলন

দশম অধ্যায়
 ইংরেজ শাসন আমলে বাংলার স্বাধিকার আন্দোলন
পলাশী যুদ্ধের একশ বছর পর ভারতের উত্তর ও পূর্বাঞ্চলে প্রধানত সিপাহিদের নেতৃত্বে যে ব্যাপক সশস্ত্র বিদ্রোহ সংঘটিত হয়, তাকেই ভারতের প্রথম স্বাধীনতা সংগ্রাম বলা হয়। বিদ্রোহের আগুন প্রথমে জ্বলে উঠে শিখনফল
 ইংরেজ শাসন আমলে বাংলার স্বাধিকার ও রাজনৈতিক আন্দোলন এবং এর ফলাফল মূল্যায়ন করতে পারবে।
 ইংরেজ শাসন আমলের-বিভিন্ন আন্দোলন সম্পর্কে বর্ণনা করতে পারবে।
 সামাজিক ও রাজনৈতিক অধিকার বিষয়ে পারস্পরিক মতবিনিময়ে উদ্বুদ্ধ হবে।
পশ্চিম বঙ্গের ব্যারাকপুরে। ১৮৫৭ খ্রিষ্টাব্দের ২৯ মার্চ বন্দুকের গুলি ছুড়ে বিদ্রোহের সূচনা করেন মঙ্গলপাণ্ডে নামে এক সিপাহি। দ্রæত এই বিদ্রোহ মিরাট, কানপুর, পাঞ্জাব, উত্তর প্রদেশ, মধ্য প্রদেশ, বিহার, বাংলাসহ ভারতের প্রায় সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে।
অধ্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো সংক্ষেপে জেনে রাখি

বঙ্গভঙ্গ (১৯০৫-১৯১১ খ্রিষ্টাব্দ) : বাংলার রাজনৈতিক ইতিহাসে বঙ্গভঙ্গের প্রভাব ছিল সুদূরপ্রসারী। ১৯০৫ খ্রিষ্টাব্দে বঙ্গভঙ্গকে কেন্দ্র করে হিন্দু-মুসলিম স¤প্রদায়ের স¤প্রীতি চিরতরে নষ্ট হয়ে যায়। উভয়ের মধ্যে অবিশ্বাস বৃদ্ধি পেতে থাকে। নেতাদের উদার প্রচেষ্টা, বিভিন্ন যৌথ রাজনৈতিক কর্মসূচির ফলে মাঝে মাঝে ঐক্যের সম্ভাবনা উজ্জ্বল হলেও শেষ পর্যন্ত ব্রিটিশ বিভেদ নীতিরই জয় হয়।
স্বদেশী আন্দোলন : ব্রিটিশ সরকারের বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন ব্যর্থ হলে কংগ্রেসের উগ্রপন্থী অংশের নেতৃত্বে যে আন্দোলন গড়ে উঠে, তাকেই স্বদেশী আন্দোলন বলা হয়। এ আন্দোলনের মূল কর্মসূচি ছিল দুটি-বয়কট ও স্বদেশী।
খিলাফত ও অসহযোগ আন্দোলন : হিন্দু ও মুসলমানের মিলিত সংগ্রাম হিসেবে উপমহাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে খিলাফত ও অসহযোগ আন্দোলন এক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। আন্দোলন দুটি ছিল ইংরেজ শাসনের বিরুদ্ধে প্রথম ব্যাপক ও জাতীয়ভিত্তিক গণ-আন্দোলন। হিন্দু-মুসলমানের এই ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের ভিত কাঁপিয়ে দেয়। তুরস্কের খলিফার মর্যাদা ও তুরস্কের অখণ্ডতা রক্ষার জন্য ভারতীয় মুসলিম সমাজ এই আন্দোলন গড়ে তোলে। অপরদিকে অসহযোগ আন্দোলনের উদ্দেশ্য ছিল ভারতের জন্য স্বরাজ অর্জন।
বাংলার সশস্ত্র বিপ্লবী আন্দোলন (১৯১১-১৯৩০ খ্রিষ্টাব্দ) : বয়কট ও স্বদেশী আন্দোলনের ব্যর্থতা বাংলার স্বাধীনতাকামী দেশপ্রেমিক যুব সমাজকে সশস্ত্র বিপ্লবের পথে ঠেলে দেয়। সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে দেশ স্বাধীন করার যে গোপন তৎপরতার সূত্রপাত ঘটে, তাকেই বাংলার সশস্ত্র বিপ্লবী আন্দোলন বলা হয়ে থাকে।
স্বরাজ দল : ১৯২২ খ্রিষ্টাব্দে কংগ্রেসের একাংশের সমর্থনে সি.আর. দাসের নেতৃত্বে গঠিত হয় স্বরাজ দল। সি.আর. দাস হন এ দলের সভাপতি। দলের উদ্দেশ্য ছিল আইনসভায় যোগ দিয়ে নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনের মাধ্যমে ১৯১৯ খ্রিষ্টাব্দে সংস্কার আইন অচল করে দেওয়া।
বেঙ্গল প্যাক্ট বা বাংলা চুক্তি (ডিসেম্বর, ১৯২৩ খ্রিষ্টাব্দ) : উপমহাদেশের রাজনীতিতে হিন্দু-মুসলিম সমস্যা গভীরভাবে উপলব্ধি করতে সক্ষম হয়েছিলেন স্বরাজ দলের নেতা চিত্তরঞ্জন দাস। ফলে বাংলায় হিন্দু-মুসলিম সমস্যা দূর করার জন্য এই দূরদর্শী, বাস্তববাদী নেতা যে চুক্তি সম্পাদন করেছিলেন, ইতিহাসে তা বেঙ্গল প্যাক্ট বা বাংলা চুক্তি নামে খ্যাত। এই সময়ে বাংলার ইতিহাসে প্রধান ঘটনাই ছিল বেঙ্গল প্যাক্ট।
লাহোর প্রস্তাব : ত্রিশের দশকের সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি, অতীতের তিক্ত অভিজ্ঞতা এবং মুসলমানদের স্বার্থের কথা বিবেচনা করে ১৯৩৯ খ্রিষ্টাব্দে জিন্নাহ তার বহু আলোচিত-সমালোচিত দ্বি-জাতি তত্তে¡র ঘোষণা দেন। ১৯৪০ খ্রিষ্টাব্দে লাহোর প্রস্তাব মূলত তার এই ঘোষণার বাস্তব রূপ দেওয়ার পথনির্দেশ করে। ১৯৪০ খ্রিষ্টাব্দের ২৩ মার্চ মুসলিম লীগের লাহোর অধিবেশনে এই প্রস্তাবটি গৃহীত হয় বলে এটি ইতিহাসে লাহোর প্রস্তাব নামে খ্যাত।
অখণ্ড বাংলার উদ্যোগ : ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দের হিন্দু-মুসলমান সম্পর্ক এক রক্তক্ষয়ী দাঙ্গায় রূপ নেয়। এরকম চরম জটিল পরিস্থিতি মোকাবেলায় ব্যর্থ ব্রিটিশ সরকার ভারতীয়দের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের ইচ্ছা ঘোষণা করে। ঠিক এই রকম পরিস্থিতিতে বাংলার তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী যুক্ত বাংলার প্রস্তাব উত্থাপন করেন। এ প্রস্তাবের পক্ষে দৃঢ় অবস্থান নেন শরৎচন্দ্র বসু। প্রস্তাবটি উপমহাদেমের ইতিহাস ‘বসু’-সোহরাওয়ার্দী প্রস্তাব নামে খ্যাত।
‘ভারত ছাড়’ আন্দোলন : চল্লিশের দশকের শুরুতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন গান্ধীজির ডাকে ‘ভারত ছাড়’ আন্দোলনে জনগণ ঝাঁপিয়ে পড়ে। সারা ভারতব্যাপী আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে এবং প্রবল ব্রিটিশবিরোধী রূপ নেয়। ১৯৪২ খ্রিষ্টাব্দের ৮ আগস্ট বোম্বাইয়ের অনুষ্ঠিত নিখিল ভারত কংগ্রেস কমিটির ঐতিহাসিক অধিবেশনে মহাত্মা গান্ধী এক ঘোষণায় বলেন ‘আমি অবিলম্বে স্বাধীনতা চাই। এমনকি এই রাত্রির মধ্যেই, উষালগ্নের আগেই যদি তা সম্ভব হয়।’ তিনি আরো বলেন, আমরা লড়াই করে স্বাধীনতা অর্জন করব। আর এ হবে আমাদের জীবনে শেষ লড়াই।
ব্রিটিশ শাসনের অবসান : দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ অবসানের পর ইংল্যান্ডের সাধারণ নির্বাচনে শ্রমিক দল জয়লাভ করে। এই পরিবর্তনের ধারা ভারতের রাজনীতিতেও প্রভাব ফেলে। ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে ১৮ জুলাই ‘ভারত স্বাধীনতা আইন’ প্রণয়ন করা হয়, যার ভিত্তিতে ব্রিটিশ শাসনের অবসান ঘটে। ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে ১৪ আগস্ট পাকিস্তান এবং ১৫ আগস্ট ভারত নামে দুটি রাষ্ট্রের জন্ম হয়।

 বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর 
১. ১৯০৫ খ্রিষ্টাব্দে বাংলা ভাগ করেন কে?
ক লর্ড কর্ণওয়ালিস  লর্ড কার্জন
গ লর্ড চেমসফোর্ড ঘ লর্ড রীডিং
২. মাস্টারদা সূর্য সেনা এর নেতৃত্বে গঠিত বিপ্লবী সংগঠনের কর্মকাণ্ডের মধ্যে ছিল-
র. চট্টগ্রাম বিপ্লবী বাহিনী গঠন
রর. স্বাধীন চিটাগাঙ সরকারের ঘোষণা
ররর. চিটাগাঙ রিপাবলিকান আর্মি গঠন
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ রর ও ররর গ র ও ররর  র, রর ও ররর
উদ্দীপকটি পড় এবং ৩ ও ৪ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
নিশাপুর চা-বাগানে চা-শ্রমিকরা তাদের কম মজুরীর প্রতিবাদ করতে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করছিল। অবরোধ, ভাংচুর চালাতে থাকলে শ্রমিক নেতা কিরণ তাদের সহিংস আন্দোলন পরিত্যাগ করে নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনের জন্য আহŸান জানান।
৩. শ্রমিক নেতা কিরণ কোন ব্যক্তির নীতি দ্বারা প্রভাবিত হয়েছেন?
ক ক্ষুদিরাম খ মাস্টারদা সূর্যসেন
 মহাত্মা গান্ধী ঘ পুলিন বিহারী দাস
৪. উক্ত নেতার কর্মকাণ্ডের মধ্যে ছিল-
র. হিন্দু-মুসলমানের ঐক্য দৃঢ়করণ
রর. নির্যাতনমূলক আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ
ররর. সত্যাগ্রহ বন্দীদের মুক্তিদানের দাবি
নিচের কোনটি সঠিক?
 র ও রর খ রর ও ররর গ র ও ররর ঘ র, রর ও ররর

 সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর 
প্রশ্ন- ১  বঙ্গভঙ্গ

সালেহপুর ইউনিয়নটি নদীর তীরবর্তী। গত বছর বন্যায় ফসল ও রাস্তাঘাটের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। আয়তনে বড় হওয়ায় ত্রাণ তৎপরতাসহ বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছিল। উক্ত সমস্যা সমাধানকল্পে এই ইউনিয়নকে দুইটি আলাদা ইউনিটে ভাগ করা হয়।
ক. মুঘল সম্রাট দ্বিতীয় বাহাদুর শাহকে কোথায় নির্বাসিত করা হয়?
খ. স্বত্ববিলোপ নীতি বলতে কী বোঝায়?
গ. উদ্দীপকে বঙ্গভঙ্গের কোন কারণটি ফুটে উঠেছে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উক্ত কারণটিই কি বঙ্গভঙ্গের একমাত্র কারণ মনে কর? মতের সপক্ষে যুক্তি দাও।

ক মুঘল সম্রাট দ্বিতীয় বাহাদুর শাহকে রেঙ্গুনে নির্বাসিত করা হয়।
খ স্বত্বাবিলোপ নীতি হচ্ছে লর্ড ডালহৌসি কর্তৃক গৃহীত একটি নীতি। পলাশী যুদ্ধের পর থেকে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি রাজ্য বিস্তারকল্পে, একের পর এক দেশীয় রাজ্যগুলো নানা অজুহাতে দখল করে নেয়। এরূপ এক নীতিই ছিল স্বত্ববিলোপ নীতি। স্বত্ববিলোপ নীতি অনুযায়ী দত্তক পুত্র সম্পত্তির উত্তরাধিকার হতে পারত না। ফলে উত্তরাধিকার না থাকায় লর্ড ডালহৌসি স্বত্ববিলোপ নীতি প্রয়োগ করে সাঁতারা, ঝাঁসি, নাগপুর, সম্বলপুর, ভগৎ, উদয়পুর, করাউলী ব্রিটিশ সাম্রাজ্যভুক্ত করেন। এই নীতি প্রয়োগ করে কর্নাটের নবাব ও তাঞ্জোরের রাজার দত্তক পুত্র এবং পেশওয়া দ্বিতীয় রাজা বাজিরাওয়ের দত্তক পুত্র নানা সাহেবের ভাতা বন্ধ করে দেওয়া হয়।
গ উদ্দীপকে বঙ্গভঙ্গের প্রশাসনিক কারণটি ফুটে উঠেছে। বঙ্গভঙ্গের পূর্বে বাংলা, বিহার, উড়িষ্যা, মধ্যপ্রদেশ ও আসামের কিছু অংশ নিয়ে গঠিত ছিল বাংলা প্রদেশ। উপমহাদেশের এক-তৃতীয়াংশ লোকের বসবাস ছিল বাংলা প্রদেশে। কলকাতা থেকে পূর্বাঞ্চলের আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও শাসন কাজ সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করা ছিল কঠিন কাজ। আবার, ১৮৫৬ খ্রিষ্টাব্দে বন্যা ও দুর্ভিক্ষে আসাম, বঙ্গ প্রদেশসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রচুর ক্ষতি হয়। কিন্তু বিশাল আয়তনের জন্য সব ধরনের সুবিধা প্রদান করা সম্ভব হয়নি। এসব কারণে বঙ্গভঙ্গের পরিকল্পনা শুরু হয়। আর এরই প্রেক্ষিতে লর্ড কার্জন ১৯০৩ খ্রিষ্টাব্দে বাংলা প্রদেশকে দুভাগ করেন এবং ১৯০৫ খ্রিষ্টাব্দে তা কার্যকর করেন।
উদ্দীপকের ইউনিয়নেরও অনেক বড় হবার কারণে উন্নয়ন কর্মকাণ্ডসহ প্রশাসনিক কাজ ব্যাহত হয় এবং ইউনিয়নকে ইউনিটে ভাগ করা হয়। এখানে বঙ্গভঙ্গের প্রশাসনিক কারণটিই ফুটে উঠেছে।
ঘ আমি মনে করি, বঙ্গভঙ্গের জন্য একমাত্র প্রশাসনিক কারণই দায়ী নয়, এর পেছনে আর্থসামাজিক ও রাজনৈতিক কারণও দায়ী ছিল। তৎকালীন সময়ে কলকাতা হয়ে উঠেছিল আর্থসামাজিক কর্মকাণ্ডের প্রাণকেন্দ্র। শিল্পকারখানা, ব্যবসা-বাণিজ্য, অফিস-আদালত, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সবকিছুই প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল কলকাতাকে ঘিরে। যা কিছু উন্নতি, অগ্রগতি সবকিছুই ছিল কলকাতার মধ্যে সীমাবদ্ধ। ফলে পূর্ব বাংলার উন্নতি ব্যাহত হয়। অথচ এখান থেকে যে কাঁচামাল সরবরাহ করা হতো তার জন্যও সুষ্ঠু যোগাযোগব্যবস্থা ছিল না। ফলে পূর্ব বাংলার অর্থনৈতিক অবস্থা ক্রমে ক্রমে খারাপ হতে থাকে। উপযুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অভাবে শিক্ষা, উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করতে না পারার কারণে এ অঞ্চলের লোকজন অশিক্ষিত থেকে যায়। কর্মহীনদের সংখ্যা দিন দিন বেড়ে যেতে থাকে। এ অবস্থার কথা বিবেচনা করে বঙ্গভঙ্গের প্রয়োজন ছিল। লর্ড কার্জন শুধু শাসন-সুবিধার জন্য বা পূর্ব বাংলার জনগণের কল্যাণের কথা বিবেচনা করে বঙ্গভঙ্গ করেননি। এর পেছনে ব্রিটিশ প্রশাসনের সুদূরপ্রসারী রাজনৈতিক স্বার্থও জড়িত ছিল। লর্ড কার্জন বাংলার রাজনৈতিক সচেতনতা সম্পর্কে সতর্ক ছিলেন। বাঙালি মধ্যবিত্ত বুদ্ধিজীবী শ্রেণি ক্রমশ জাতীয়তাবাদ ও রাজনীতি সচেতন হয়ে উঠেছিল। বিষয়টি তার দৃষ্টি এড়ায়নি। কংগ্রেস নেতারা কলকাতা থেকেই সারা ভারতের আন্দোলনের নেতৃত্ব দিতেন। সুতরাং কলকাতাকে কেন্দ্র করে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন থামিয়ে দেওয়া ছিল এর মূল উদ্দেশ্য। হিন্দু ও মুসলমান সম্মিলিত শক্তি, ঐক্যবদ্ধ বাংলা ছিল ব্রিটিশ প্রশাসনের জন্য বিপজ্জনক। ফলে বাংলা ভাগ করে একদিকে বাঙালির শক্তি দুর্বল করা হলো, অপরদিকে পূর্ব বাংলার উন্নয়নের নামে মুসলমান স¤প্রদায়কে খুশি করা হলো। এভাবেই কার্জন ‘বিভেদ ও শাসন’ নীতি প্রয়োগ করে যতটা না পূর্ব বাংলার কল্যাণে, তার চেয়ে বেশি ব্রিটিশ ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার স্বার্থে বাংলা ভাগ করেন। এভাবে কৌশলে ভারতীয় জাতীয় ঐক্যকে দুর্বল করার ব্যবস্থা করা হলো। সুতরাং বঙ্গভঙ্গের পেছনে শুধু প্রশাসনিক কারণই ভ‚মিকা রাখেনি বরং আর্থসামাজিক ও রাজনৈতিক কারণও বিদ্যমান ছিল।

প্রশ্ন- ২  স্বদেশী পণ্যের ব্যবহার

কেয়া ও কণা দুই বোন ঈদের কেনাকাটা করতে বাজারে যায়। কেয়া তার পছন্দের তালিকায় বিদেশি পণ্য রাখলেও কণা বিদেশি পণ্যকে পরিত্যাগ করে দেশি পণ্য কেনার পক্ষে মত দেন। অবশেষে কণা তার বোন কেয়াকে দেশি পণ্য কেনার বিষয়টি বুঝাতে সক্ষম হয় এবং উভয়ে দেশি পণ্য ক্রয় করে বাসায় ফেরেন।
ক. দিল্লির মুঘল সম্রাটের পদ বিলুপ্ত করেন কে?
খ. ‘এনফিল্ড’ রাইফেল সৈন্যদের বিদ্রোহী করে তুলল কেন?
গ. কোন আন্দোলনের শিক্ষায় অনুপ্রাণিত হয়ে কণা দেশি পণ্য কিনতে উৎসাহবোধ করেন? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. তুমি কি মনে কর কেয়ার মত মানসিকতা আমাদের অর্থনৈতিক অগ্রগতির পথে অন্তরায়? যুক্তি দাও।

ক দিল্লির মুঘল সম্রাটের পদ বিলুপ্ত করেন লর্ড ডালহৌসি।
খ ‘এনফিল্ড’ রাইফেল সৈন্যদের বিদ্রোহী করে তোলে। কারণ এই রাইফেলের টোটা দাঁত দিয়ে কেটে বন্দুকে প্রবেশ করানো হতো। সৈন্যদের মধ্যে ব্যাপকভাবে এ গুজব ছড়িয়ে পড়ে যে, এই টোটায় গরু ও শূকরের চর্বি মিশ্রিত আছে। বিষয়টি উভয় স¤প্রদায়কেই ধর্মীয় দিক থেকে আঘাত হানে। এ কারণে সৈন্যরা ‘এনফিল্ড’ রাইফেল ব্যবহারের ব্যাপারে বিদ্রোহী হয়ে ওঠে।
গ স্বদেশী আন্দোলনের শিক্ষায় অনুপ্রাণিত হয়ে কণা দেশি পণ্য কিনতে উৎসাহবোধ করেন। ‘বয়কট’ বা স্বদেশী আন্দোলনের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল বিলেতি পণ্য বর্জন। বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনের ব্যর্থতার প্রেক্ষিতে বয়কট আন্দোলনের সূচনা ঘটে। ক্রমে ক্রমে এর সাথে বিলেতি শিক্ষা বর্জন কর্মসূচিও যুক্ত হয়। বিলেতি পণ্য বর্জনের মতো শিক্ষা বর্জনের জন্যও বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। স্থানে স্থানে সমিতির মাধ্যমে বিলেতি পণ্য বর্জন এবং দেশীয় পণ্য ব্যবহারের শপথ নেওয়া হয়। কংগ্রেস নেতারা গ্রামে-গঞ্জে-শহরে

প্রকাশ্য সভায় বিলেতি পণ্য পুুড়িয়ে ফেলা এবং দেশীয় পণ্য ব্যবহারের জন্য জনগণকে উৎসাহিত করতে থাকেন। ফলে বিলেতি পণ্যের চাহিদা কমে যেতে থাকে। একই সঙ্গে বাংলার বিভিন্ন অঞ্চলে এ সময় দেশি তাঁতবস্ত্র, সাবান, লবণ, চিনি ও চামড়ার দ্রব্য তৈরির কারখানা গড়ে ওঠে। উদ্দীপকে কণা স্বদেশী আন্দোলনের এ শিক্ষায় অনুপ্রাণিত হয়ে তার পছন্দের তালিকায় দেশি পণ্য রাখেন। এখানে স্বদেশী আন্দোলনের শিক্ষার প্রতিফলন ঘটেছে।
ঘ আমি মনে করি কেয়ার মতো মানসিকতা আমাদের অর্থনৈতিক অগ্রগতির পথে অন্তরায়। উদ্দীপকে কণা স্বদেশী আন্দোলনের শিক্ষায় অনুপ্রাণিত হলেও তার বোন কেয়া ছিলেন তার বিপরীত। স্বদেশী আন্দোলনের মূল লক্ষ্য ছিল বিদেশি পণ্য বর্জন। এছাড়া স্বদেশী পণ্য ব্যবহারও ছিল এ আন্দোলনের মূল উদ্দেশ্য। আর যখনই বিদেশি পণ্য ব্যবহার কমে যাবে তখন দেশি পণ্যের চাহিদা বাড়বে। বিভিন্ন কল-কারখানা গড়ে উঠবে। এতে বিভিন্ন কর্মসংস্থান হবে। ফলে দেশের বেকারত্ব অনেকাংশেই কমে যাবে। দেশি পণ্য ব্যবহার করলে দেশের অর্থ দেশেই থাকবে। তাছাড়া এদেশের পণ্যের মান ভালো হলে বিদেশিরাও এগুলো কিনতে আসবে। ফলে প্রচুর পরিমাণে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন সম্ভব হবে। কিন্তু যদি কেয়ার মতো মানসিকতা সবার মাঝে থাকে তবে তা অর্থনীতির জন্য বড় অন্তরায়। এমনিতেই বাংলাদেশে বাণিজ্য ভারসাম্য প্রতিক‚লে, উপরন্তু দেশি পণ্যের চাহিদা কমে গেলে বিদেশি পণ্য মানুষ ব্যবহার করবে। ফলে দেশের অর্থ বাইরে চলে যাবে। এটা অর্থনীতির জন্য শুভ হবে না। সুতরাং কেয়ার মানসিকতা আমাদের দেশের অর্থনীতির অগ্রগতির পথে অন্তরায়।

 বোর্ড ও সেরা স্কুলের বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
সাধারণ বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
১. বাংলা চুক্তি কী নামে খ্যাত? [স. বো. ’১৬]
 সি আর দাস ফর্মুলা খ মহাত্মাগান্ধী ফর্মুলা
গ সোহরাওয়ার্দী ফর্মুলা ঘ মতিলাল নেহেরু ফর্মুলা
২. ১৮৫৭ খ্রিষ্টাব্দের সিপাহি বিপ্লবের তাৎপর্য কী ছিল? [স. বো. ’১৫]
 কোম্পানি শাসনের অবসান ঘটে
খ কোম্পানি শাসনের স্থায়িত্ব বৃদ্ধি পায়
গ মুসলমানরা জয় লাভ করে
ঘ ইংরেজ শাসনের অবসান ঘটে
৩. চট্টগ্রামের পাহাড়তলীতে ‘ইউরোপিয়ান ক্লাব’ আক্রমণ নেতৃত্বে দেন কে? [স. বো. ’১৫]
ক সূর্যসেন  প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার
গ প্রফুল্ল চাকী ঘ বাঘা যতিন
৪. উপমহাদেশের স্বাধিকার-স্বাধীনতা আন্দোলনে সবচেয়ে গৌরবময় ভ‚মিকা কাদের ছিল? [চুয়াডাঙ্গা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
ক ভারতীয়দের খ ব্যবসায়ীদের
 বাঙালিদের ঘ ব্রিটিশদের
৫. ডালহৌসি কর্তৃক দিল্লি সম্রাট পদ বিলুপ্ত হলে কে সম্রাট পদ থেকে বঞ্চিত হন? [খাগড়াছড়ি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়]
ক শাহ আলম খ শাজাহান
 দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ ঘ আকবর
৬. বাহাদুর শাহকে কোথায় নির্বাসন দেওয়া হয়?
[ইস্পাহানী পাবলিক স্কুল ও কলেজ, কুমিল্লা সেনানিবাস]
ক পাকিস্তানে খ কর্নাটে
 রেঙ্গুনে ঘ ব্যারাকপুরে
৭. কত খ্রিষ্টাব্দে ইংরেজ শাসনের অবসান হয়?
[রাজবাড়ী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
ক ১৮৫৮ খ ১৮৫৯
 ১৯৪৭ ঘ ১৯৪৮
৮. বঙ্গভঙ্গের ফলে কোন নতুন প্রদেশ গঠিত হয়েছিল?
[আল হেরা একাডেমি, পাবনা]
ক পূর্ববাংলা ও বিহার  পূর্ব বাংলা ও আসাম
গ পশ্চিম বাংলা ও উড়িষ্যা ঘ পশ্চিম বাংলা ও আসাম
৯. বঙ্গভঙ্গ রদ ঘোষিত হয় কোথায়? [মেহেরপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
 দিলি­তে খ ইংল্যান্ডে
গ আসানসোলে ঘ লক্ষেèৗতে
১০. স্বদেশী আন্দোলন পরিচালিত হয়েছিল কাদের বিরুদ্ধে?
[প্রগতি মাধ্যমিক বিদ্যাপীঠ, খুলনা]
ক মুসলিম লীগের বিরুদ্ধে খ কংগ্রেসের বিরুদ্ধে
 ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে ঘ মুসলিম লীগ ও ব্রিটিশের বিরুদ্ধে
১১. শিক্ষা আন্দোলনের বৈশিষ্ট্য ছিল কোনটি?
[গাংনী পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মেহেরপুর]
ক সরকারি বিদ্যালয় স্থাপন খ ইংরেজি ভাষায় শিক্ষাদান
 কারিগরি শিক্ষা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা ঘ বিজ্ঞান শিক্ষাকে নিষিদ্ধ করা
১২. বরিশালের চারণ কবি কে ছিলেন? [চুয়াডাঙ্গা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
 মুকুন্দ দাস খ দ্বিজেন্দ্রনাথ
গ রজনীকান্ত ঘ রবীন্দ্রনাথ
১৩. কোনটি হিন্দু-মুসলিম ঐক্যবদ্ধ ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন?
[পিরোজপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়]
ক স্বদেশী ও বিপ্লবী আন্দোলন খ সশস্ত্র ও বিপ্লবী আন্দোলন
গ সশস্ত্র ও খিলাফত আন্দোলন  খিলাফত ও অসহযোগ আন্দোলন
১৪. কোন আইন ভারতের সর্বস্তরের জনগণকে ব্রিটিশ শাসনের প্রতি বিক্ষুব্ধ করে তোলে? [রাজবাড়ী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
ক মর্লি-মিন্টো আইন খ মন্টেগু-চেমসফোর্ড আইন
 রাওলাট আইন ঘ ভারত শাসন আইন
১৫. ভারতবর্ষে খিলাফত ও অসহযোগ আন্দোলন কেন ‘প্রথম সর্বভারতীয় গণআন্দোলন’ হিসেবে পরিগণিত? [খড়রিয়া এজিএম মাধ্যমিক বিদ্যালয় নড়াইল]
ক কংগ্রেস ও মুসলিম লীগকে একক আন্দোলনে উদ্বুদ্ধ করায়
 ঐক্যবদ্ধভাবে হিন্দু-মুসলিমদের ব্রিটিশ বিরোধী চেতনায়
গ হিন্দু ও মুসলমানদের মধ্যে সম্প্রীতি ও সমঝোতা সৃষ্টি করায়
ঘ হিন্দু-মুসলিমদের মধ্যে একক নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করায়
১৬. রাসবিহারীকে ধরার জন্য ইংরেজ সরকার পুরস্কার ঘোষণা করে কেন?
[পাবনা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
ক ইংরেজ সেনাপতির সাথে আঁতাত করায়
খ ইংরেজদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে কথা বলায়
 লর্ড হার্ডিংকে হত্যা প্রচেষ্টার জন্য
ঘ জমিদারদের উৎখাত করার
১৭. মাস্টারদা সূর্যসেন কোন জেলায় জন্মগ্রহণ করেন?
[রাজবাড়ী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়]
ক রাজশাহী  চট্টগ্রাম গ দিনাজপুর ঘ রংপুর
১৮. প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারের চরিত্রের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ কোনটি?
[পিরোজপুর সরকারি বালিকা বিদ্যালয়]
ক অর্থনৈতিক সংস্কার খ রাজস্ব বর্ধিতকরণ
গ মুদ্রানীতি জারিকরণ  ব্রিটিশবিরোধী মনোভাব
১৯. হিন্দু-মুসলমানদের মধ্যে সা¤প্রদায়িক স¤প্রীতি স্থাপনের দলিল হিসেবে নিচের কোনটি অধিক যুক্তিযুক্ত ছিল? [রাজবাড়ী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়]
 বেঙ্গল প্যাক্ট খ ইন্ডিয়া প্যাক্ট
গ পাকিস্তান প্যাক্ট ঘ সাধারণ প্যাক্ট
২০. কেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ‘সা¤প্রদায়িক রোয়েদাদ’ ঘোষণা করেন?
[খড়রিয়া এজিএম মাধ্যমিক বিদ্যালয়, নড়াইল]
ক সা¤প্রদায়িক দাঙ্গা বৃদ্ধির জন্য
খ সা¤প্রদায়িক চেতনা বৃদ্ধির জন্য
 সা¤প্রদায়িক সমস্যা সমাধানের জন্য
ঘ স¤প্রদায়গত মনোভাব সৃষ্টির জন্য
২১. লাহোর প্রস্তাব গৃহীত হয় কত খ্রিষ্টাব্দে?
[নেত্রকোনা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
ক ১৯৫৩  ১৯৪০ গ ১৯৪২ ঘ ১৯৪৩
২২. ১৪ আগস্ট ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে বিশ্বের মানচিত্রে একটি নতুন রাষ্ট্র জন্মলাভ করে। এখানে কোন রাষ্ট্রের কথা বলা হয়েছে?
[নেত্রকোনা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
ক ভারত  পাকিস্তান গ ইংল্যান্ড ঘ বাংলাদেশ
২৩. ‘ভারত ছাড়’ আন্দোলন করে কোন দল?
[মাগুরা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
 কংগ্রেস খ মুসলিম লীগ
খ কৃষক প্রজাপার্টি ঘ খিলাফত আন্দোলন
২৪. ‘ভারত ছাড়’ আন্দোলনের অন্যতম প্রকৃতি ছিল কোনটি?
[প্রগতি মাধ্যমিক বিদ্যাপীঠ, খুলনা]
ক জনগণের বিরোধিতা  জনগণের স্বতঃস্ফ‚র্ত অংশগ্রহণ
গ জমিদারের জন্য সুবিধা ঘ জমিদারের নায়েবদের রক্ষা
২৫. ব্রিটিশ নেতৃবৃন্দের দ্বারা ‘ওয়াভেল পরিকল্পনা’ গ্রহণ করা হয় কেন?
[চুয়াডাঙ্গা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
 ভারতীয় রাজনৈতিক অস্থিরতা দূর করতে
খ ধর্মীয় সংস্কার ব্যবস্থা প্রবর্তন করতে
গ অর্থনৈতিক সংস্কার আনয়ন করতে
ঘ ব্রিটিশ সেনাবাহিনীকে প্রশিক্ষিত করতে
বহুপদী সমাপ্তিসূচক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
২৬. বাঙালি তরুণ সমাজ ইংরেজ শাসনের ভিত কাঁপিয়ে তোলে
[ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিভার্সিটি গার্লস হাইস্কুল, ঢাকা]
র. সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে রর. দলে দলে আত্মাহুতি দিয়ে
ররর. জয়বাংলা ¯েøাগান দিয়ে
 র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
২৭. সিপাহিদের নেতৃত্বে বিদ্রোহের সামরিক কারণ হচ্ছে
[মাগুরা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
র. ইংরেজ ও ভারতীয় সৈন্যদের মাঝে বৈষম্য
রর. ভ‚মি রাজস্বনীতি
ররর. ভারতীয় সেনাদের কম সুযোগ সুবিধা প্রদান
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর  র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
২৮. বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে যারা আন্দোলন করেন [বরগুনা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
র. বিপিনচন্দ্র পাল রর. অরবিন্দ ঘোষ
ররর. অশ্বিনীকুমার দত্ত
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর  র, রর ও ররর
২৯. স্বদেশী আন্দোলনের সময় কবি সাহিত্যিকরা পত্রপত্রিকায় লেখালেখি করেন [খাগড়াছড়ি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়]
র. জনগণকে সচেতন করতে রর. দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করতে
ররর. রাজনৈতিক দক্ষতা অর্জন করতে
নিচের কোনটি সঠিক?
 র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৩০. স্বদেশী আন্দোলনের ফলাফল ছিল [রাজবাড়ী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়]
র. এ আন্দোলন ব্রিটিশবিরোধী ও স্বাধীনতা আন্দোলনের সূচনা করে
রর. এ আন্দোলন দেশীয় ভাষা, শিক্ষা ও সাহিত্যচর্চায় উৎসাহ আনয়ন করে
ররর. এ আন্দোলন হিন্দু-মুসলিম সম্পর্কে নতুন মাত্রা যোগ করে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র  র ও রর গ রর ও ররর ঘ র ও ররর
৩১. স্বদেশী আন্দোলনের পর্যায় ছিল [মেহেরপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়]
র. সভা-সমিতিতে বক্তৃতা দান ও বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জ্ঞাপন
রর. আত্মশক্তি গঠন ও জাতীয় শিক্ষা আন্দোলন
ররর. বয়কট ও সন্ত্রাসের পথ গ্রহণ
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র খ র ও রর গ রর ও ররর  র, রর ও ররর
৩২. খিলাফত আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন- [প্রগতি মাধ্যমিক বিদ্যাপীঠ, খুলনা]
র. মাওলানা মোহাম্মদ আলী রর. মাওলানা শওকত আলী
ররর. মাওলানা আবুল কালাম আজাদ
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ˜ র, রর ও ররর
৩৩. সশস্ত্র বিপ্লবী আন্দোলন ব্যর্থ হওয়ার কারণ হলো
[ইস্পাহানী পাবলিক স্কুল ও কলেজ, কুমিল্লা সেনানিবাস]
র. গণবিচ্ছিন্নতা
রর. গোপনীয়ভাবে কর্মকাণ্ড পরিচালনা
ররর. সমন্বয়ের অভাব
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর  র, রর ও ররর
৩৪. বাংলা চুক্তিতে স্বরাজ দল প্রতিশ্র“তি দিয়েছিল-
[মেহেরপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
র. হিন্দু-মুসলিম সম্প্রীতি
রর. স্বরাজ অর্জনের পর মুসলমানরা প্রশাসনের ৫৫% পদ লাভ করবে
ররর. মসজিদের সামনে বাদ্য বাজানো নিষিদ্ধ এবং মুসলমানরা গরু কোরবানি দিতে পারবে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর  রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৩৫. বাংলা চুক্তির অবসান ঘটে [ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিভার্সিটি গার্লস হাইস্কুল, ঢাকা]
র. কংগ্রেসের বিরোধিতার কারণে
রর. হিন্দু মহাসভা ও মুসলমানদের তাবলীগ, তানজীম আন্দোলনের কারণে
ররর. চিত্তরঞ্জন দাশের অকাল মৃত্যুর ফলে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর  র ও রররল গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৩৬. আতিক বলেন যে, স্বাধীন অখন্ড বাংলা গঠন শুধু কতিপয় নেতার স্বপ্নই রয়ে গেল। আতিক বলেছে [নেত্রকোনা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
র. শরৎচন্দ্র বসুর কথা
রর. হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর কথা
ররর. মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর কথা
নিচের কোনটি সঠিক?
 র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
অভিন্ন তথ্যভিত্তিক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ে ৩৭ ও ৩৮ প্রশ্নের উত্তর দাও :
নিশি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী। সে দেখল বিদেশি শাসকরা এ দেশের জনগণের ওপর নির্যাতন করে। এই প্রতিকারের জন্য সে সশস্ত্র সংগঠন গড়ে তোলে এবং সর্বাত্মক প্রতিরোধ করে ব্যর্থ হয় ও আত্মহত্যা করে। [স. বো. ’১৬]
৩৭. নিশি কোন বাঙালি নারী দ্বারা অনুপ্রাণিত?
ক বেগম রোকেয়া  প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার
গ কল্পনা দত্ত ঘ অম্বিকা চক্রবর্তী
৩৮. উক্ত নারী ও তার বাহিনী পরাজয়ের কারণ
র. গণবিচ্ছিন্নতা রর. স্বার্থপরতা
ররর. গোপনীয়তা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর  র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ে ৩৯ ও ৪০ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাকে কেন্দ্র করে হিন্দু-মুসলিম স¤প্রদায়ের স¤প্রীতি চিরতরে নষ্ট হয়ে যায়। পরস্পর পরস্পরকে শত্রæ ভাবতে শুরু করে। নেতাদের উদার প্রচেষ্টা, বিভিন্ন যৌথ রাজনৈতিক কর্মসূচির ফলে মাঝে মাঝে ঐক্যের সম্ভাবনা উজ্জ্বল হলেও শেষ পর্যন্ত ব্রিটিশ বিভেদ নীতিরই জয় হয়।
[দি বার্ডস রেসিডেনসিয়াল মডেল স্কুল এন্ড কলেজ, সিলেট]
৩৯. অনুচ্ছেদে উল্লিখিত গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাটি কী?
 বঙ্গভঙ্গ খ বঙ্গভঙ্গ রদ
গ অসহযোগ আন্দোলন ঘ স্বদেশী আন্দোলন
৪০. অনুচ্ছেদে উল্লিখিত পরিস্থিতির পরিণতি হলো
র. উপমহাদেশের বিভক্তি রর. ভারত সৃষ্টি
ররর. বাংলাদেশ সৃষ্টি
 র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
 বিষয়ক্রম অনুযায়ী বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
 ভ‚মিকা  বোর্ড বই, পৃষ্ঠা- ১২৪
সাধারণ বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
৪১. কোন যুদ্ধের পরপরই এদেশের কৃষকরা বিদ্রোহী হয়ে ওঠে? (জ্ঞান)
ক স্বাধীনতা যুদ্ধ খ মুক্তিযুদ্ধ
 পলাশী যুদ্ধ ঘ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ
৪২. পলাশী যুদ্ধের কত বছর পরে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম শুরু হয়? (জ্ঞান)
ক দুইশ বছর  একশ বছর গ তিনশ বছর ঘ চারশ বছর
৪৩. বাঙালি তরুণ সমাজ ইংরেজি শাসনের ভিত কাঁপিয়ে তোলে কীভাবে? (অনুধাবন)
ক জয়বাংলা ¯েøাগান দিয়ে খ প্রতিবাদ মিছিল করে
গ প্রতিবাদ সমাবেশ করে  সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে
৪৪. ভারতের প্রথম স্বাধীনতা সংগ্রাম হয় কত খ্রিষ্টাব্দে? (জ্ঞান)
ক ১৮৫৫ খ ১৮৫৬  ১৮৫৭ ঘ ১৮৫৮
বহুপদী সমাপ্তিসূচক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
৪৫. পরাধীনতার একশ বছর পর স্বাধীনতা ঘোষণা করে (অনুধাবন)
র. এদেশের সৈনিকরা
রর. এ দেশের শিক্ষকরা
ররর. দেশীয় রাজরাজারা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর  র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর

 ১৮৫৭ সালের স্বাধীনতা সংগ্রাম
 বোর্ড বই, পৃষ্ঠা- ১২৪
 স্বত্ববিলোপ নীতি প্রয়োগ করেন লর্ড ডালহৌসি।
 ব্রিটিশ অফিসারদের পক্ষপাতিত্ব, ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ সিপাহিদের মধ্যে বিদ্রোহের আগুন জ্বালায়।
 সিপাহিদের ব্যবহারের জন্য প্রচলন হয় এনফিল্ড রাইফেল।
 বিদ্রোহের প্রথম আগুন জ্বলে উঠে পশ্চিমবঙ্গের ব্যারাকপুরে।
 সিপাহি বিদ্রোহের সূচনা করেন মঙ্গলপাণ্ডে।
 সিপাহি বিদ্রোহের সময় দিল্লির সম্রাট ছিলেন দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ।
 বাহাদুর শাহ পার্ক অবস্থিত ঢাকায়।
 সিপাহি বিদ্রোহের ফলে অবসান ঘটে কোম্পানি শাসনের।
 ঝাঁসির রানি লক্ষীবাঈ নিহত হন সিপাহি বিদ্রোহে।
 ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম বেগবান হয় সিপাহি বিদ্রোহের মাধ্যমে।
সাধারণ বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
৪৬. ভারতের প্রথম স্বাধীনতা সংগ্রাম সংঘটিত হয় কত খ্রিষ্টাব্দে? (জ্ঞান)
ক ১৮৫৫  ১৮৫৭
গ ১৮৫৯ ঘ ১৮৬১
৪৭. কোন কোম্পানি ভারতীয় উপমহাদেশে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক শোষণ করে? (জ্ঞান)
ক অ্যাপেক্স কোম্পানি খ ওয়েস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি
 ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ঘ নর্থ ইন্ডিয়া কোম্পানি
৪৮. ইস্টইন্ডিয়া কোম্পানির রাজ্য বিস্তার কোন সময় থেকে? (জ্ঞান)
ক পলাশী যুদ্ধের আগে  পলাশী যুদ্ধের পরে
গ নীল বিদ্রোহের আগে ঘ নীল বিদ্রোহের পরে
৪৯. স্বত্ববিলোপ নীতি প্রয়োগ করেন কে? (জ্ঞান)
ক লর্ড ক্লাইভ খ লর্ড কার্জন
 লর্ড ডালহৌসি ঘ লর্ড মাউন্টব্যাটেন
৫০. কোনটির অজুহাতে অযোধ্যা ব্রিটিশ সাম্রাজ্যভুক্ত করা হয়? (জ্ঞান)
ক অভাব  অপশাসন
গ দুর্নীতি ঘ দুর্ভিক্ষ
৫১. দিল্লির সম্রাট পদ কে বিলুপ্ত করেন? (জ্ঞান)
ক লজ অ্যালেন  লর্ড ডালহৌসি
গ লর্ড কার্জন ঘ লর্ড কর্নওয়ালিস
৫২. দিল্লির সম্রাট কেন ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ হন? (অনুধাবন)
ক উপঢৌকন প্রদান না করায়  সম্রাট পদ বিলোপ করায়
গ কর প্রদান না করায় ঘ সেনাবাহিনী সরবরাহ না করায়
৫৩. ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসন প্রতিষ্ঠার সাথে সাথে কোনটি শুরু হয়? (জ্ঞান)
ক সামাজিক অশান্তি  চরম অর্থনৈতিক শোষণ
গ ধর্মীয় আইন প্রয়োগ ঘ কৃষকদের সহায়তা
৫৪. রাজনৈতিক ক্ষমতা দখলের আগেই এদেশের শিল্প ধ্বংস করেছিল কারা? (অনুধাবন)
 ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি খ ওলন্দাজ কোম্পানি
গ রাজাকার বাহিনী ঘ হানাদার বাহিনী
৫৫. ব্রিটিশদের কোন নীতির কারণে এদেশের কৃষি ধ্বংস হয়? (জ্ঞান)
 ভ‚মি রাজস্ব নীতি খ চার্টার নীতি
গ জন নীতি ঘ খাদ্য সংরক্ষণ নীতি
৫৬. ক্ষমতা দখলের পর ভ‚মি রাজস্ব নীতির নামে দরিদ্র কৃষকের কী ধ্বংস করা হয়? (প্রয়োগ)
ক জমি খ খাজনা
গ অধিকার  অর্থনৈতিক মেরুদণ্ড
৫৭. ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কোন কাজের ফলে অনেক বনেদি জমিদার অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন? (উচ্চতর দক্ষতা)
ক ক্ষমতা দখল  আইন প্রয়োগ গ অর্থবিনিয়োগ ঘ ভ‚মি দখল
৫৮. ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি দরিদ্র কৃষকের ওপর অতিরিক্ত কর ধার্য করে। তাছাড়া জমিদার ও রাজস্ব আদায়কারীরা তাদের ওপর তীব্র শোষণ করে। এর ফলাফল কী দাঁড়ায়? (উচ্চতর দক্ষতা)
ক কৃষক ধনীক শ্রেণি বনে যায়
খ কৃষকদের জন্য ভাগ্যের দুয়ার খুলে যায়
 কৃষক মহাজনদের কাছে ঋণগ্রস্ত হয়
ঘ কৃষকরা আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়
৫৯. সামাজিক ও ধর্মীয় ক্ষেত্রে পাশ্চাত্যের প্রভাব ছিল কোন সময়ে? (জ্ঞান)
ক আঠারো শতকের প্রথমার্ধে  উনিশ শতকের প্রথমার্ধে
গ বিশ শতকের প্রথমার্ধে ঘ একুশ শতকের প্রথমার্ধে
৬০. ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সমাজ সংস্কারমূলক কাজ মেনে নিতে পারেনি কারা? (অনুধাবন)
ক মুসলমান ও খ্রিষ্টান খ হিন্দু ও বৌদ্ধ
গ বৌদ্ধ ও জৈন  মুসলমান ও হিন্দু
৬১. মহাবিদ্রোহ সংঘটিত হয়েছিল কেন? (অনুধাবন)
ক ভারতীয় সৈনিকদের ধর্ম পালনে বাধা দেওয়ায়
 ভারতীয় সৈনিকদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ করায়
গ ভারতীয় সৈনিকদের নিম্নমানের অস্ত্র সরবরাহ করায়
ঘ ভারতীয় সৈনিকদের সমুদ্র পাড়ি দিতে বাধ্য করায়
৬২. ভারতীয় সিপাহীদের মধ্যে বিদ্রোহের আগুন জ্বলে উঠে কেন? (অনুধাবন)
 ব্রিটিশ অফিসারদের পক্ষপাতিত্বে খ ইংরেজদের অত্যাচার
গ পলাশী যুদ্ধের কারণে ঘ সতীদাহপ্রদাহ বিলোপ
৬৩. ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বিরুদ্ধে বিদ্রোহের প্রত্যক্ষ কারণ কী? (অনুধাবন)
ক রাজনৈতিক বৈষম্য  ধর্মীয় অনুভ‚তিতে আঘাত
গ অর্থনৈতিক বৈষম্য ঘ লেনদেনে সমস্যা
৬৪. হিন্দু স¤প্রদায়ের বদ্ধমূল ধারণা মতে কী করলে ধর্ম নষ্ট হয়? (জ্ঞান)
ক মাছ খেলে খ ভাত খেলে
 সমুদ্র পাড়ি দিলে ঘ জীব হত্যা করলে
৬৫. ব্রিটিশরা সিপাহিদের জন্য কোন ধরনের রাইফেল প্রচলন করে? (জ্ঞান)
ক সিগফিল্ড  এনফিল্ড গ এম. এল জি ঘ এন-১
৬৬. গরু ও শূকরের চর্বি মিশ্রিত ছিল কোথায়? (অনুধাবন)
ক রাইফেলের গায়ে খ সৈন্যদের হাতে
 বাইফেলের টোটায় ঘ ইংরেজদের খাদ্যে
৬৭. বিদ্রোহের আগুন প্রথমে জ্বলে ওঠে কোথায়? (জ্ঞান)
ক নাগপুরে খ উদয়পুরে  ব্যারাকপুরে ঘ কর্নাটে
৬৮. ১৮৫৭ খ্রিষ্টাব্দের কত তারিখে বন্দুকের গুলি ছুড়ে বিদ্রোহের সূচনা করা হয়? (জ্ঞান)
ক ২৫ মার্চ খ ২৬ মার্চ  ২৯ মার্চ ঘ ৩০ মার্চ
৬৯. সর্বপ্রথম গুলি ছুড়ে কোন সিপাহি বিদ্রোহের সূচনা করেন? (জ্ঞান)
 মঙ্গলপাণ্ডে খ বাহাদুর শাহ গ শাহাজান ঘ আকবর
৭০. বাহাদুর শাহ কে ছিলেন? (জ্ঞান)
ক সিপাহি খ শিক্ষক  মুঘল সম্রাট ঘ লেখক
৭১. বিদ্রোহীরা দিল্লি দখল করে মুঘল সম্রাট দ্বিতীয় বাহাদুর শাহকে ভারতবর্ষের কী বলে ঘোষণা করা হয়? (জ্ঞান)
ক শিক্ষক খ লেখক
 বাদশা ঘ রাজা
৭২. রেঙ্গুন জায়গাটি কোন দেশে অবস্থিত? (জ্ঞান)
ক বাংলাদেশে খ পাকিস্তানে
 মিয়ানমারে ঘ থাইল্যান্ডে
৭৩. নানা সাহেব পরাজিত হয়ে কী করেন? (জ্ঞান)
ক আত্মহত্যা  অন্তর্ধান
গ দেশত্যাগ ঘ সেচ্ছা নির্বাসন
৭৪. সাধারণ সৈনিকদের ওপর অমানবিক নির্যাতন করা হয় কেন? (অনুধাবন)
ক দুর্নীীতির কারণে খ অন্যকে নির্যাতনের কারণে
 স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশ নেয়ায় ঘ কাজে অবহেলা করায়
৭৫. ঢাকার বাহাদুর শাহ পার্কে কী ঝুলিয়ে রাখা হয়? (জ্ঞান)
ক লাশের চিহ্ন  অনেক সৈনিকের লাশ
গ ভালো খাবার ঘ পশু পাখির মৃতদেহ
৭৬. ইংরেজ শাসকদের বিভিন্ন ধরনের বীভৎস ঘটনা ঘটানোর উদ্দেশ্য কী ছিল? (উচ্চতর দক্ষতা)
ক স্বার্থ হাসিল করা খ ক্ষমতার ভিত মজবুত করা
গ বাংলার জনগণকে দাবিয়ে রাখা  জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করা
৭৭. ভারতবর্ষে প্রথম স্বাধীনতা সংগ্রাম শেষ হয় কখন? (জ্ঞান)
 ১৮৫৮ খ্রিষ্টাব্দে খ ১৮৫৯ খ্রিষ্টাব্দে
গ ১৮৬০ খ্রিষ্টাব্দে ঘ ১৮৬১ খ্রিষ্টাব্দে
৭৮. কত খ্রিষ্টাব্দে স্বত্ববিলোপ নীতি বাতিল করা হয়? (জ্ঞান)
ক ১৮৫৬ খ ১৮৫৫
 ১৮৫৮ ঘ ১৮৬০
৭৯. ১৮৫৭ খ্রিষ্টাব্দের স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম ফলাফল কোনটি? (উচ্চতর দক্ষতা)
ক ইংরেজ শাসনের অবসান  কোম্পানি শাসনের অবসান
গ ভারতের স্বাধীনতা অর্জন ঘ সিপাহিদের অর্থনৈতিক মুক্তি
বহুপদী সমাপ্তিসূচক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
৮০. মঙ্গলপাণ্ডের বিদ্রোহ দ্রæত ছড়িয়ে পড়ে (অনুধাবন)
র. ভারতের সর্বত্র
রর. সমগ্র বাংলায়
ররর. আসামে
নিচের কোনটি সঠিক?
 র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৮১. লর্ড ডালহৌসি স্বত্ববিলোপ নীতি প্রয়োগ করে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যভুক্ত করেন (অনুধাবন)
র. ঝাঁসি
রর. নাগপুর
ররর. সাঁতারা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর  র, রর ও ররর
৮২. স্বত্ববিলোপ নীতি প্রয়োগের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয় (অনুধাবন)
র. কর্নাটের নবাব
রর. নানা সাহেব
ররর. তাঞ্জোরের রাজার দত্তক পুত্র
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ˜ র, রর ও ররর
৮৩. ১৮৫৭ খ্রিষ্টাব্দের স্বাধীনতা যুদ্ধে জড়িতদের পরিণতি হয়েছিল (উচ্চতর দক্ষতা)
র. অনেকে যুদ্ধে শহিদ হন
রর. বাকীদের ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করা হয়
ররর. বাকীরা দেশ ছেড়ে অন্যত্র পালিয়ে যায়
নিচের কোনটি সঠিক?
 র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৮৪. সিপাহিদের নেতৃত্বে বিদ্রোহের অন্যতম অর্থনৈতিক কারণ ছিল (অনুধাবন)
র. অতিরিক্ত কর ধার্য
রর. দেশীয় শিল্প ধ্বংস করা
ররর. নতুন টাকশাল নির্মাণ করা
নিচের কোনটি সঠিক?
 র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
অভিন্ন তথ্যভিত্তিক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ে ৮৫ ও ৮৬ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
বণিক শ্রেণি একদিকে বাজার দখলের নামে স্থানীয় শিল্প ধ্বংস, অপরদিকে অতিরিক্ত অর্থ লাভের আশায় জমি বন্দোবস্তের নামে কৃষি ধ্বংস করতে থাকে।
৮৫. অনুচ্ছেদে বণিক শ্রেণি বলতে কাদের বুঝানো হয়েছে? (প্রয়োগ)
 ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি খ ওলন্দাজ
গ ডাচ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ঘ ফরাসি
৮৬. বণিক শ্রেণির এরূপ অত্যাচারে (উচ্চতর দক্ষতা)
র. বাংলার উন্নতিতে বাধার সৃষ্টি হয়
রর. বাংলার অর্থনৈতিক কাঠামো সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে যায়
ররর. সাধারণ মানুষ কোম্পানির বিরুদ্ধে বিদ্রোহী হয়ে ওঠে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর  র, রর ও ররর
নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ে ৮৭ ও ৮৮ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
ইংরেজরা ক্ষমতা গ্রহণের পর এদেশে ইংরেজি শিক্ষা, সতীদাহ প্রথা উচ্ছেদ, হিন্দু বিধবাদের পুনরায় বিবাহ, খ্রিষ্টান ধর্মযাজকদের ধর্ম প্রচার ইত্যাদির ফলে হিন্দু-মুসলমান স¤প্রদায়ের গোঁড়পন্থীরা শঙ্কিত হয়ে যায়।
৮৭. অনুচ্ছেদের ইংরেজদের সংস্কারমূলক কাজগুলো কোন পর্যায়ে পড়ে? (প্রয়োগ)
ক ধর্মীয় ও উন্নয়নমূলক  ধর্মীয় ও সামাজিক
গ সামাজিক ও সেবামূলক ঘ উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক
৮৮. এরূপ ধর্মীয় ও সামাজিক রীতিনীতি সংস্কারের ফলে (উচ্চতর দক্ষতা)
র. হিন্দুরা ক্ষুব্ধ হয়
রর. মুসলমানরা খুশি হয়
ররর. মুসলমান ক্ষুব্ধ হয়
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর  র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ে ৮৯ ও ৯০ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের স্বাধীনতা যুদ্ধে অমিত বিক্রমে দেশপ্রেমিক বাঙালি সৈনিকেরা পাকিস্তান সরকারের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধারণ করে।
৮৯. শতবর্ষ পূর্বে অনুচ্ছেদের যুদ্ধের অনুরূপ স্বাধীনতা সংগ্রাম ছড়িয়ে পড়েছিল (প্রয়োগ)
র. উত্তর প্রদেশে
রর. কানপুরে
ররর. বাংলায়
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর  র, রর ও ররর
৯০. উক্ত বিদ্রোহের তাৎক্ষণিক গুরুত্ব কী ছিল? (উচ্চতর দক্ষতা)
 ব্রিটিশ সরকারের শাসনভার গ্রহণ
খ কোম্পানির প্রত্যক্ষ শাসনভার গ্রহণ
গ বিদ্রোহী সিপাহিদের মৃত্যুদণ্ড প্রদান
ঘ ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম দমন

 বঙ্গভঙ্গ ১৯০৫১৯১১ খ্রিষ্টাব্দ  বোর্ড বই, পৃষ্ঠা- ১২৬
 হিন্দু-মুসলিম স¤প্রীতি চিরতরে নষ্ট হবার কারণ বঙ্গভঙ্গ।
 পূর্ববঙ্গের মুসলমানরা নবাব সলিমুল্লাহর নেতৃত্বে বঙ্গভঙ্গকে স্বাগত জানান।
 পূর্ববঙ্গের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলেন ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস।
 বঙ্গবঙ্গ কার্যকর করেন লর্ড কার্জন।
 বঙ্গভঙ্গকে জাতীয় দুর্যোগ বলেন সুখেন্দ্রনাথ ব্যানার্জি।
 বঙ্গভঙ্গ রদ হয় ১৯১১ খ্রিষ্টাব্দে।
 বঙ্গভঙ্গ রদের ঘোষণা করেন রাজা পঞ্চম জর্জ।
 বঙ্গভঙ্গে তীব্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ করা যায় হিন্দু সমাজের মধ্যে।
 বঙ্গভঙ্গের অন্যতম কারণ ছিল প্রশাসনিক কেন্দ্রিভ‚তি।
সাধারণ বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
৯১. বঙ্গভঙ্গ করা হয় কত খ্রিষ্টাব্দে? (জ্ঞান)
ক ১৯০৩  ১৯০৫ গ ১৯০৬ ঘ ১৯০৭
৯২. হিন্দু-মুসলিম পরস্পর পরস্পরকে শত্রæ ভাবতে শুরু করে কেন? (অনুধাবন)
 বঙ্গভঙ্গের কারণে খ পারস্পরিক স্বার্থতা
গ ইংরেজি শিক্ষার প্রভাব ঘ বঙ্গভঙ্গ রদ
৯৩. বঙ্গভঙ্গ ঘোষণা দেন কে? (জ্ঞান)
 লর্ড কার্জন খ লর্ড ডালহৌসি গ লর্ড হার্ডিং ঘ লর্ড বেন্টিঙ্ক
৯৪. কত খ্রিষ্টাব্দে বঙ্গভঙ্গের পরিকল্পনা গৃহীত হয়। (জ্ঞান)
ক ১৯০০ খ ১৯০২  ১৯০৩ ঘ ১৯০৪
৯৫. বঙ্গভঙ্গ কার্যকর হলে নবগঠিত প্রদেশের রাজধানী কোথায় স্থাপিত হয়? (জ্ঞান)
 ঢাকায় খ দিলি­তে গ বিক্রমপুরে ঘ ইসলামাবাদে
৯৬. পশ্চিম বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যা নিয়ে কোন প্রদেশ গঠিত হয়? (জ্ঞান)
ক বাংলা প্রদেশ খ আসাম প্রদেশ
 পশ্চিম বাংলা প্রদেশ ঘ ত্রিপুরা প্রদেশ
৯৭. কার শাসনামলে বঙ্গভঙ্গ একটি প্রশাসনিক সংস্কার ছিল? (জ্ঞান)
ক লর্ড কর্ণওয়ালিস  লর্ডকার্জন
গ জেনারেল ডায়ার ঘ লর্ড হার্ডিং
৯৮. উপমহাদেশের এক-তৃতীয়াংশ লোকের বসবাস ছিল কোথায়? (অনুধাবন)
ক কর্ণাটকে খ কোলকাতায়
 বাংলা প্রেসিডেন্সিতে ঘ বিহারে
৯৯. লর্ড কার্জন বাংলা প্রদেশকে দুভাগ করার পরিকল্পনা করেন কত খ্রিষ্টাব্দে? (জ্ঞান)
ক ১৮০০ খ ১৯০১ গ ১৯০২  ১৯০৩
১০০. ব্রিটিশ শাসনের গোড়া থেকেই পূর্ববঙ্গ ছিল অবহেলিত, এর কারণ কী? (অনুধাবন)
 প্রশাসন ছিল কলকাতাকেন্দ্রিক
খ পূর্ববাংলায় প্রতিবছর বন্যা হতো
গ পূর্ববাংলার ভ‚মি ছিল অনুর্বর
ঘ পূর্ববাংলার মানুষ ছিল অশিক্ষিত
১০১. ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের কেন্দ্র কোথায় ছিল? (জ্ঞান)
ক ঢাকা খ করাচি গ লাহোর  কলকাতা
১০২. ব্রিটিশ সরকারের বঙ্গভঙ্গ করার পেছনে কৌশলগত কারণ কী? (অনুধাবন)
 কলকাতাকেন্দ্রিক আন্দোলন বন্ধ করা
খ স্বতন্ত্র দুটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা
গ মুসলমানদের দমন করা
ঘ কংগ্রেসকে দমন করা
১০৩. ‘বিভেদ ও শাসন’ নীতি প্রয়োগ করে বাংলাদেশকে বিভক্ত করতে চাইলেন কে? (জ্ঞান)
ক লর্ড ক্লাইভ খ লর্ড কর্নওয়ালিস  লর্ড কার্জন ঘ লর্ড ডালহৌসি
১০৪. বঙ্গভঙ্গের রাজনৈতিক কারণ কী ছিল? (উচ্চতর দক্ষতা)
 ভারতীয় জাতীয় ঐক্যকে দুর্বল করা
খ ভারতীয় রাজনীতির অবসান ঘটানো
গ ভারতীয় উপমহাদেশের অস্তিত্ব রক্ষা
ঘ ভারতীয় স্বার্থসিদ্ধির পাঁয়তারা
১০৫. বঙ্গভঙ্গ ঘোষণার ফলে বাংলার মানুষের প্রতিক্রিয়া কেমন ছিল? (অনুধাবন)
 মিশ্র খ বিরোধপূর্ণ গ স্বাভাবিক ঘ অস্থীতিশীল
১০৬. পূর্ব বাংলার মুসলমানরা কার নেতৃত্বে বঙ্গভঙ্গকে স্বাগত জানায়? (প্রয়োগ)
ক সৈয়দ আমির আলী  নবাব সলিমুল্লাহ
গ নবাব হাবিবুল্লাহ বাহার ঘ নবাব ফয়জুন্নেসা
১০৭. বঙ্গভঙ্গকে সমর্থন জানান কে? (জ্ঞান)
ক চিত্তরঞ্জন দাস খ এ কে ফজলুল হক
 নবাব সলিমুল­াহ ঘ মৌলভী আব্দুল রসুল
১০৮. মুসলিম পত্র-পত্রিকাগুলো সন্তোষ প্রকাশ করে কেন? (অনুধাবন)
ক ইসলামের বিজয়ে খ মুসলিমদের স্বার্থ হাসিলে
 বঙ্গ বিভাগে ঘ হিন্দুদের পরাজয় দেখে
১০৯. নতুন প্রদেশের জনসংখ্যার সংখ্যাগরিষ্ঠ ছিল কারা? (অনুধাবন)
ক হিন্দু খ বৌদ্ধ গ খ্রিষ্টান  মুসলমান
১১০. কোনটির মাধ্যমে বাংলার হিন্দু ও মুসলমান দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে? (জ্ঞান)
ক স্বদেশী আন্দোলনের মাধ্যমে  বঙ্গভঙ্গের মাধ্যমে
গ বয়কট আন্দোলনের মাধ্যমে ঘ বৈপ্লবিক আন্দোলনের মাধ্যমে
১১১. বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ করা যায় কাদের মধ্যে? (অনুধাবন)
 হিন্দু খ বৌদ্ধ গ খ্রিষ্টান ঘ মুসলমান
১১২. কোন রাজনৈতিক দল বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে বৈপ্লবিক আন্দোলন শুরু করে? (জ্ঞান)
 কংগ্রেস খ মুসলিম লীগ গ জনগণ ঘ ইংরেজগণ
১১৩. কংগ্রেস কেন বঙ্গভঙ্গের বিরোধিতা করে? (অনুধাবন)
 বাংলাকে বিভক্ত করে দুর্বল করার অভিযোগে
খ নবাব সলিমুল­াহ বঙ্গভঙ্গের পক্ষে ছিলেন বলে
গ বঙ্গভঙ্গ হিন্দুদের স্বার্থে করা হয়েছিল বলে
ঘ কংগ্রেসের অবস্থা খারাপ হবে বলে
১১৪. সুখেন্দ্রনাথ ব্যানার্জি বঙ্গভঙ্গকে কী বলে আখ্যায়িত করেন? (উচ্চতর দক্ষতা)
 জাতীয় দুর্যোগ খ কালের বিবর্তন
গ বিমাতাসুলভ আচরণ ঘ জাতীয় ঐক্যের প্রাচীর
১১৫. ব্রিটিশ সরকার বঙ্গভঙ্গ রদ করতে বাধ্য হওয়ার কারণ কী? (অনুধাবন)
 স্বদেশি আন্দোলনের তীব্রতা খ বৈপ্লবিক আন্দোলনের তীব্রতা
গ সিপাহি আন্দোলনের তীব্রতা ঘ অভ্যন্তরীণ আন্দোলনের তীব্রতা
১১৬. বঙ্গভঙ্গ রদ করা হয় কত খ্রিষ্টাব্দে? (জ্ঞান)
 ১৯১১ খ ১৯৪৭ গ ১৯৭১ ঘ ১৯৭৫
১১৭. রাজা পঞ্চম জর্জের অভিষেক দরবার কত খ্রিষ্টাব্দে অনুষ্ঠিত হয়? (জ্ঞান)
 ১৯১১ খ ১৯০৯ গ ১৯১০ ঘ ১৯২১
১১৮. ১৯১১ খ্রিষ্টাব্দে দরবার অনুষ্ঠিত হয় কোথায়? (জ্ঞান)
ক করাচিতে খ ঢাকায়  দিলি­তে ঘ বিহারে
১১৯. ১৯১১ খ্রিষ্টাব্দে সম্রাট পঞ্চম জর্জের অভিষেক অনুষ্ঠানে কী সম্পর্কে ঘোষণা দেয়া হয়? (জ্ঞান)
ক বঙ্গভঙ্গ আইন খ মর্লি-মিন্টো সংস্কার আইন
 বঙ্গভঙ্গ রদ আইন ঘ সূর্যাস্ত আইন
১২০. বাংলার মুসলমানদের মধ্যে হতাশার সৃষ্টি করেছিল কোন ঘটনা? (জ্ঞান)
ক হিন্দু-মুসলিম দ্ব›দ্ব খ স্বদেশী আন্দোলন
গ সিপাহি বিপ্লব  বঙ্গভঙ্গ রদ
১২১. মুসলিম নেতৃবৃন্দ একে ব্রিটিশ সরকারের বিশ্বাসঘাতকতার জঘন্য উদাহরণ বলে মন্তব্য করেন। এখানে কোনটির প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে? (প্রয়োগ)
ক পলাশীর যুদ্ধ  বঙ্গভঙ্গ রদ
গ বাঁশের কেল্লা ধ্বংসকরণ ঘ এপ্রিল ফুল ঘটনা
১২২. মুসলিম লীগ কত খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয়? (জ্ঞান)
ক ১৯০৫  ১৯০৬ গ ১৯১১ ঘ ১৯১২
১২৩. কোন দলের প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে মুসলমানদের রাজনৈতিক সচেতনতা প্রকাশ পায়? (জ্ঞান)
ক কংগ্রেস খ কৃষক-প্রজা
 মুসলিম লীগ ঘ আওয়ামী লীগ
বহুপদী সমাপ্তিসূচক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
১২৪. বাংলার রাজনৈতিক ইতিহাসে সুদূরপ্রসারী ছিল (অনুধাবন)
র. ইংরেজি শিক্ষার প্রভাব
রর. সতীদাহ প্রথা বিলোপ
ররর. বঙ্গভঙ্গের প্রভাব
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র  ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
১২৫. লর্ড কার্জনের সময় কলকাতা হয়ে উঠেছিল (উচ্চতর দক্ষতা)
র. আর্থ-সামাজিক কর্মকাণ্ডের প্রাণকেন্দ্র
রর. বাংলার রাজধানী
ররর. পূর্ব বাংলার অর্থনৈতিক দুরবস্থার মূল কারণ
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর  র, রর ও ররর
১২৬. বঙ্গভঙ্গের কারণ হচ্ছে (অনুধাবন)
র. প্রশাসনিক
রর. রাজনৈতিক
ররর. সামাজিক
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ˜ র, রর ও ররর
১২৭. ১৯০৫ খ্রিষ্টাব্দের বঙ্গভঙ্গের পশ্চাতে কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়Ñ (অনুধাবন)
র. আয়তনের বিশালতার কারণে প্রশাসনিক জটিলতা
রর. লর্ড কার্জনের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য
ররর. কংগ্রেসের ক‚টকৌশল
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র  র ও রর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
অভিন্ন তথ্যভিত্তিক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ে ১২৮ ও ১২৯ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
আরিফদের গ্রামটি বিশাল। সেখানে হিন্দু ও মুসলমানেরা পাশাপাশি দুইটি অংশে বসবাস করত। কিন্তু নব নির্বাচিত সংসদ সদস্য প্রভাব বিস্তারর জন্য তাদের গ্রামকে দুইটি গ্রামে বিভক্ত করার পরিকল্পনা গ্রহণ করে।
১২৮. আরিফদের গ্রামের ঘটনা ব্রিটিশ ভারতের কোন ঘটনা নির্দেশ করে? (প্রয়োগ)
 বঙ্গভঙ্গ খ স্বদেশী আন্দোলন
গ অসহযোগ আন্দোলন ঘ খিলাফত আন্দোলন
১২৯. উক্ত ঘটনার প্রভাবে (উচ্চতর দক্ষতা)
র. পরবর্তীতে উমহাদেশ ভাগ হয়ে যায়
রর. হিন্দুরা শংকিত হয়ে পড়ে
ররর. হিন্দু-মুসলিম স্থায়ী শত্রæতার অবসান ঘটে
নিচের কোনটি সঠিক?
 র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর

 স্বদেশী আন্দোলন  বোর্ড বই, পৃষ্ঠা- ১২৮
 স্বদেশী আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন কংগ্রেসের উগ্রপন্থীরা।
 স্বদেশী আন্দোলনের কর্মসূচি ছিল ২টি।
 বাংলার নারী সমাজ রাজনীতিতে প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ করেন স্বদেশী আন্দোলনের মাধ্যমে।
 স্বদেশী আন্দোলন জাতীয়রূপ লাভে ব্যর্থ হয় মুসলমানদের দূরে থাকার কারণে।
 বিখ্যাত টাটা কোম্পানি টাটা কারখানা স্থাপন করে ১৯১০ খ্রিষ্টাব্দে।
 আমাদের জাতীয় সঙ্গীত রচনা করেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
 স্বদেশী আন্দোলন ব্যর্থতার কারণ হলো বঙ্গভঙ্গের ফলে সৃষ্ট সা¤প্রদায়িকতা।
 স্বদেশী আন্দোলনের তাৎপর্য হলো স্বাধীনতা আন্দোলনের সূচনা।
সাধারণ বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
১৩০. বঙ্গভঙ্গ ও বঙ্গভঙ্গ রদের প্রেক্ষাপটে কোন আন্দোলন গড়ে উঠেছিল? (জ্ঞান)
 স্বদেশী আন্দোলন খ স্বাধীনতা আন্দোলন
গ ভারত ছাড় আন্দোলন ঘ ফরায়েজি আন্দোলন
১৩১. বয়কট কী? (জ্ঞান)
ক স্বদেশী দ্রব্য বর্জন  বিলেতি দ্রব্য বর্জন
গ বিদেশি দ্রব্য গ্রহণ ঘ বিলেতি দ্রব্য গ্রহণ
১৩২. শুরুতে ‘বয়কট’ আন্দোলনের প্রধান লক্ষ্য কী ছিল? (অনুধাবন)
 বিলেতি পণ্য সম্ভার বর্জন খ বিলেতি পণ্য গ্রহণ
গ দেশি পণ্য বর্জন ঘ বিদেশি পণ্য বর্জন
১৩৩. ব্রিটিশ শাসনামলে সংঘটিত জাতীয় শিক্ষা আন্দোলনের প্রভাবে আধুনিক কোন বিষয়টি বিকশিত হয়? (জ্ঞান)
ক জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয় খ ছাত্ররা স্কুলগামী হয়
 জাতীয় বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয় ঘ মুসলমানদের শিক্ষা ব্যবস্থা
১৩৪. কোন আন্দোলন বাংলার বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে? (জ্ঞান)
ক স্ববাজ খ খিলাফত  স্বদেশী ঘ বেঙ্গল প্যাক্ট
১৩৫. বয়কট আন্দোলনের প্রভাব কোনটি? (উচ্চতর দক্ষতা)
ক বিদেশি পণ্য গ্রহণ  স্বদেশী পণ্যের চাহিদা বৃদ্ধি
গ বঙ্গভঙ্গ ঘ শিক্ষার প্রসার
১৩৬. স্বদেশী আন্দোলনকে জোরালো করতে কলকাতায় প্রতিষ্ঠিত সমিতিটির নাম কী ছিল? (জ্ঞান)
ক অনুশীলন  যুগান্তর গ ব্রতী ঘ সাধনা
১৩৭. স্বদেশ বান্ধব কোন স্থানের সংগঠন? (জ্ঞান)
ক ঢাকার খ ফরিদপুরের
 বরিশালের ঘ ময়মনসিংহের
১৩৮. সাধনা সংগঠন কোন এলাকায় প্রতিষ্ঠিত হয়? (জ্ঞান)
 ময়মনসিংহ খ বরিশাল গ চট্টগ্রাম ঘ ঢাকা
১৩৯. মুকুন্দ দাস কোন ধরনের কবি? (জ্ঞান)
 চারণ কবি খ গীতিকার গ রম্য কবি ঘ কথাশিল্পী
১৪০. কে স্বদেশী আন্দোলনের উদ্দীপক গান গেয়ে জনগণের মনে আবেগ সৃষ্টি করেন? (জ্ঞান)
ক ডি. এ কে রায় খ রজনীকান্ত সেন
গ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর  মুকুন্দ দাস
১৪১. বাংলার নারীসমাজ কখন সর্বপ্রথম রাজনীতিতে যোগ দেয়? (জ্ঞান)
 স্বদেশি আন্দোলনের সময় খ স্বাধীনতা আন্দোলনের সময়
গ ভাষা আন্দোলনের সময় ঘ বৈপ্লবিক আন্দোলনের সময়

 বোর্ড ও সেরা স্কুলের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন- ১  বঙ্গভঙ্গ

দুর্গাপুর ও শেরপুর নিয়ে বিশাল জামালপুর ইউনিয়ন। চেয়ারম্যান সোহাগ হোসেন দুর্গাপুর অঞ্চলের অধিবাসী বলে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়, বাজার, বিভিন্ন এনজিও এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সবই দুর্গাপুরে স্থাপন করেন। কিন্তু শেরপুরে তেমন কিছু গড়ে ওঠেনি। ফলে শেরপুরের অর্থনৈতিক অবস্থা ক্রমে খারাপ হতে থাকে। উপজেলা চেয়ারম্যান জামালপুর ইউনিয়নকে দুই ভাগে ভাগ করে দেন। এর ফলে শেরপুরের জনগণ খুশি হতে পারেনি। [স. বো. ’১৫]
ক. ফরায়েজি আন্দোলনের নেতা কে? ১
খ. ১৮৫৭ খ্রিষ্টাব্দের সংগ্রামকে ভারতের প্রথম স্বাধীনতা সংগ্রাম বলা হয় কেন? ২
গ. উদ্দীপকে জামালপুর ইউনিয়নের বিভক্তি পাঠ্যবইয়ের কোন ঘটনার প্রতিচ্ছবি? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. উদ্দীপকের ঘটনাটি বাংলার হিন্দু মুসলমানদের মধ্যে কী ধরনের প্রতিক্রিয়া করেছিল? বিশ্লেষণ কর। ৪

ক ফরায়েজি আন্দোলনের নেতা হাজী শরীয়তউল্লাহ।
খ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির দীর্ঘ সময় ধরে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিকভাবে চরম শোষণ, সামাজিকভাবে হেয় করা, ধর্মীয় অনুভ‚তিতে আঘাত-সর্বোপরি ভারতীয় সৈনিকদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ-এসবই মহাবিদ্রোহ বা স্বাধীনতা সংগ্রামের পটভ‚মি রচনা করে। ফলশ্রæতিতে পরাধীনতার একশ বছর পর স্বাধীনতা ঘোষণা করে এদেশের সৈনিকরা। ব্রিটিশ শাসন ও শোষণের বিরুদ্ধেই এটিই ছিল সর্বপ্রথম সর্বাত্মক স্বাধীনতার জন্য আন্দোলন। তাই পলাশী যুদ্ধের একশ বছর পর ভারতের উত্তর ও পূর্বাঞ্চলে প্রধানত সিপাহীদের নেতৃত্বে ১৮৫৭ সালে যে ব্যাপক সশস্ত্র বিদ্রোহ সংঘটিত হয়, তাকে ভারতের প্রথম স্বাধীনতা সংগ্রাম বলা হয়।
গ উদ্দীপকে জামালপুর ইউনিয়নের বিভক্তি পাঠ্যবইয়ের বঙ্গভঙ্গ ঘটনার প্রতিচ্ছবি। জামালপুর ইউনিয়নের দুর্গাপুরে ইউনিয়ন কার্যালয়, বাজার, বিভিন্ন এনজিও, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। শেরপুর অংশে তেমন কিছুই নেই। এ দুর্গাপুর যেন ব্রিটিশ ভারতের কলকাতা। আর উদ্দীপকে শেরপুর যেমন অর্থনৈতিক দুরবস্থা এবং ক্রমাবনতির সম্মুখীন তা ব্রিটিশ ভারতের পূর্ব বাংলাকে স্মরণ করিয়ে দেয়। তৎকালীন সময়ে কলকাতা হয়ে উঠেছিল আর্থ-সামাজিক কর্মকাণ্ডের প্রাণকেন্দ্র। শিল্প, কারখানা, ব্যবসা-বাণিজ্য, অফিস-আদালত, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সবকিছুই প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল কলকাতাকে ঘিরে। যা কিছু উন্নতি-অগ্রগতি, সবকিছুই ছিল কলকাতার মধ্যে সীমাবদ্ধ। ফলে, পূর্ব বাংলার উন্নতি ব্যাহত হয়। অথচ এখান থেকে যে কাঁচামাল সরবরাহ করা হতো তার জন্যও সুষ্ঠু যোগাযোগ ব্যবস্থা ছিল না। ফলে পূর্ব বাংলার অর্থনৈতিক অবস্থা ক্রমে খারাপ হতে থাকে। উপযুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অভাবে শিক্ষা, উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করতে না পারার কারণে এ অঞ্চলের লোকজন অশিক্ষিত থেকে যায়। কর্মহীনদের সংখ্যা দিন দিন বেড়ে যেতে থাকে। এ ধরনের আর্থ-সামাজিক অবস্থায় বঙ্গভঙ্গ সংঘটিত হয়। সুতরাং জামালপুর ইউনিয়নের বিভক্তি নিঃসন্দেহে পাঠ্যবইয়ের বঙ্গভঙ্গ ঘটনার প্রতিচ্ছবি।
ঘ উদ্দীপকের ঘটনাটি বঙ্গভঙ্গ ঘটনাকে নির্দেশ করে। বঙ্গভঙ্গ ঘোষণার ফলে বাংলার হিন্দু-মুসলমানদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। পুর্ব বাংলার মুসলমানরা নবাব সলিমুল্লাহর নেতৃত্বে বঙ্গভঙ্গকে স্বাগত জানায়। মুসলিম পত্র-পত্রিকাগুলোও বঙ্গ বিভাগে সন্তোষ প্রকাশ করে। নতুন প্রদেশের জনসংখ্যার সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ ছিল মুসলমান। সুতরাং পূর্ব বাংলার পিছিয়ে পড়া মুসলমান স¤প্রদায় শিক্ষা-দীক্ষা এবং প্রশাসনিক ও অর্থনৈতিকভাবে বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা পাবে এ আশায় তারা বঙ্গভঙ্গের প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন প্রদান করে। অপরদিকে বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ করা যায় হিন্দু স¤প্রদায়ের মধ্যে। ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের নেতৃত্বে তারা বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে সুদৃঢ় ঐক্যবদ্ধ আনেদালন গড়ে তোলে। এর পেছনের কারণ সম্পর্কে কোনো কোনো ঐতিহাসিক বলেছেন উঁচুতলার মানুষ অর্থাৎ পুঁজিপতি, শিক্ষিত, মধ্যবিত্ত, জমিদার, আইনজীবী, সংবাদপত্রের মালিক, রাজনীতিবিদদের স্বার্থে আঘাত লাগার কারণে এরা বঙ্গভঙ্গের ঘোর বিরোধিতা শুরু করে। সুতরাং দেখা যাচ্ছে বঙ্গভঙ্গ মূলত বাংলার হিন্দু-মুসলমানদের মধ্যে বিপরীত প্রক্রিয়া সৃষ্টি করে।

প্রশ্ন- ২  ১৮৫৭ সালের স্বাধীনতা সংগ্রাম

সীমা ও রিমা একই স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী। রিমা তার দেশের একটি সংগ্রামের জন্য দেশটির তৎকালীন বিদেশি শাসনের সাম্রাজ্যবাদ নীতিকে দায়ী করে। অপরপক্ষে সীমা মনে করে এই সংগ্রাম অনুষ্ঠিত হয়েছিল দেশের শিল্প ও কৃষি কারখানা ধ্বংস হওয়ার কারণে।
[হবিগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়]
ক. প্রধানত ভারতের কোন অঞ্চলে সিপাহীদের নেতৃত্বে ব্যাপক সশস্ত্র বিদ্রোহ সংগঠিত হয়? ১
খ. বঙ্গভঙ্গের কারণ ব্যাখ্যা কর। ২
গ. সীমার মতে ইংরেজ শাসনের বিরুদ্ধে ভারতে ১৮৫৭ খ্রিষ্টাব্দের সংগ্রামের কোন কারণ প্রতিফলিত হয়েছে ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. উক্ত সংগ্রামের গুরুত্ব বিশ্লেষণ কর। ৪

ক ভারতের উত্তর ও পূর্বাঞ্চলে প্রধানত সিপাহীদের নেতৃত্বে ব্যাপক সশস্ত্র বিদ্রোহ সংঘটিত হয়।
খ লর্ড কার্জনের শাসনামলে বঙ্গভঙ্গ ছিল একটি প্রশাসনিক সংস্কার। উপমহাদেশের এক-তৃতীয়াংশ লোকের বসবাস ছিল বাংলা প্রেসিডেন্সিতে। কলকাতা থেকে পূর্বাঞ্চলের আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও শাসনকার্য সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করা ছিল কঠিন কাজ। যে কারণে লর্ড কার্জন এত বড় অঞ্চলকে একটিমাত্র প্রশাসনিক ইউনিটে রাখা যুক্তিসংগত মনে করেননি। তাই ১৯০৩ খ্রিষ্টাব্দে বাংলা প্রদেশকে দুভাগ করার পরিকল্পনা করেন এবং ১৯০৫ খ্রিষ্টাব্দে তা কার্যকর হয়।
গ ১৮৫৭ খ্রিষ্টাব্দের ভারতীয় উপমহাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের অর্থনৈতিক কারণ উদ্দীপকে সীমার মতে প্রতিফলিত হয়েছে। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসন প্রতিষ্ঠার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় চরম অর্থনৈতিক শোষণ বঞ্চনা। কোম্পানি রাজনৈতিক ক্ষমতা দখলের আগেই এদেশের শিল্প ধ্বংস করেছিল। ক্ষমতা দখলের পর ভ‚মি রাজস্ব নীতির নামে ধ্বংস করা হয় দরিদ্র কৃষকের অর্থনৈতিক মেরুদণ্ড। আইন প্রয়োগের ফলে অনেক বনেদি জমিদার অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন এবং সামাজিকভাবে হেয় হন। দরিদ্র কৃষকদের ওপর অতিরিক্ত কর ধার্য করার ফলে এবং জমিদার ও রাজস্ব আদায়কারীদের তীব্র শোষণের শিকার কৃষক মহাজনদের কাছে ঋণগ্রস্ত হয়ে সর্বস্বান্ত হয়ে পড়ে। এরপর ছিল কৃষকদের ওপর নানা অত্যাচার। একদিকে বাজার দখলের নামে স্থানীয় শিল্প ধ্বংস, অপর দিকে অতিরিক্ত অর্থ লাভের আশায় জমি বন্দোবস্তের নামে কৃষি ধ্বংস হয়। ফলে বাংলার অর্থনৈতিক কাঠামো সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে যায়। এ অবস্থার শিকার সাধারণ মানুষ কোম্পানি শাসন-শোষণের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী হয়ে উঠে।
ঘ উক্ত সংগ্রাম তথা ১৮৫৭ খ্রিষ্টাব্দের ভারতীয় উপমহাদেশের।
প্রথম স্বাধীনতা সংগ্রামের গুরুত্ব তাৎপর্যমণ্ডিত। এই বিদ্রোহের তাৎক্ষণিক গুরুত্বও ছিল। এর ফলে কোম্পানি শাসনের অবসান হয়। ব্রিটিশ সরকার ভারতের শাসনভার নিজ হাতে গ্রহণ করে। ১৮৫৮ খ্রিষ্টাব্দের ১ নভেম্বর মহারানি ভিক্টোরিয়ার এক ঘোষণাপত্রে স্বত্ববিলোপ নীতি এবং এর সঙ্গে যুক্ত অন্যান্য নিয়ম বাতিল করা হয়। তাছাড়া এই ঘোষণাপত্রে যোগ্যতা অনুযায়ী ভারতীয়দের চাকরি প্রদান এবং ধর্মীয় স্বাধীনতার নিশ্চয়তাসহ যুদ্ধে অংশগ্রহণকারীদের প্রতি ক্ষমা ঘোষণা করা হয়। দ্বিতীয় বাহাদুর শাহকে রেঙ্গুনে নির্বাসিত করা হয়। এই বিদ্রোহের সুদূরপ্রসারি গুরুত্ব হচ্ছে এই বিদ্রোহের ক্ষোভ থেমে যায়নি। এই সংগ্রামের পরিপ্রেক্ষিতে জনগণ সচেতন হয়ে উঠে এবং নানা আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে ইংরেজ শাসনের অবসান ঘটায়।

প্রশ্ন- ৩  প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার

সুইটি সামাজিক অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী এক ব্যক্তিত্ব। সমাজের কুকর্ম, অন্যায়, অবিচারে তিনি তিক্ত হন। একপর্যায়ে তিনি বিপ্লবী কর্মকাণ্ডে মেতে যান এবং বৈষম্যে বাঁধা দিতে চেষ্টা করায় পুলিশের কাছে ধরা পড়ার আগেই আত্মহত্যার পথ বেছে নেন।
[কুড়িগ্রাম সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
ক. ১৯৩৪ খ্রিষ্টাব্দে সংক্ষিপ্ত ট্রাইব্যুনালের বিচারে কাকে ফাঁসির আদেশ দেয়া হয়? ১
খ. প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদায় শিক্ষা জীবনে কেমন শিক্ষার্থী ছিলেন? ২
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত চরিত্রের সাথে পাঠ্যবইয়ের কোন চরিত্রের মিল খুঁজে পাও? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. উক্ত চরিত্র যে বিপ্লবী সংগঠনের সাথে জড়িত ছিলেন তার বিপ্লবী কার্যক্রম আলোচনা কর। ৪

ক ১৯৩৪ খ্রিষ্টাব্দে সংক্ষিপ্ত ট্রাইব্যুনালের বিচারে সূর্যসেনকে ফাঁসির আদেশ দেওয়া হয়।
খ শিক্ষাজীবনে প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার অসাধারণ মেধাবী ছাত্রী ছিলেন। প্রীতিলতা ১৯০০ খ্রিষ্টাব্দে ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করেন এবং ডিসটিংশন নিয়ে বি.এ পাস করেন।
গ উদ্দীপকে উল্লিখিত সুইটি চরিত্রের সাথে পাঠ্যবইয়ের বিপ্লবী প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারের মিল খুঁজে পাওয়া যায়।
সূর্য সেনের বিপ্লবী বাহিনীতে নারী যোদ্ধা ছিলেন প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার।
শিক্ষাজীবনেই তিনি বিপ্লবী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন এবং সূর্য সেনের দলের সঙ্গে যুক্ত হন। উদ্দীপকের সুইটিও এরূপ চরিত্রের অসম্ভব সাহসী নারী প্রীতিলতাকে তার যোগ্যতার জন্য চট্টগ্রাম ‘পাহাড়তলী ইউরোপিয়ান ক্লাব’ আক্রমণের নেতৃত্ব দেওয়া হয়। সফল অভিযান শেষে তিনি তার সঙ্গী বিপ্লবীদের নিরাপদে স্থান ত্যাগ করতে সহায়তা করেন। কিন্তু ধরা পড়ার আগে বিষপানে আত্মহত্যা করেন। উদ্দীপকের সুইটিও আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছিল। প্রীতিলতা বাংলার সমস্ত বিপ্লবী আন্দোলনের ইতিহাসে এক কিংবদন্তি হয়ে আছেন।
ঘ উক্ত চরিত্র তথা প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার চট্টগ্রামের মাস্টারদা সূর্যসেনের বিপ্লবী বাহিনীর সদস্য ছিলেন। সূর্যসেন স্নাতক ডিগ্রি লাভের পর উমাতারা উচ্চ ইংরেজি বিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। এর মধ্যেই তিনি মাস্টারদা নামে পরিচিত হয়ে ওঠেন। এ সময় তিনি অম্বিকা চক্রবর্তী, অনুরূপ সেন, নগেন সেনের সহায়তায় একটি বিপ্লবী সংগঠন গড়ে তোলেন। তার সংগঠন এবং তিনি নিজে একের পর এক সশস্ত্র কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত হয়ে বারবার গ্রেফতার হলেও প্রমাণের অভাবে মুক্তি পেয়ে যান। চট্টগ্রামকে ব্রিটিশ শাসনমুক্ত করার জন্য গঠন করেন চট্টগ্রাম বিপ্লবী বাহিনী। পরে এই আত্মঘাতী বাহিনীর নাম হয় ‘চিটাগাঙ রিপাবলিকান আর্মি’। এই বাহিনী একের পর এক সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো দখল করতে থাকে। শেষ পর্যন্ত সরকারি অস্ত্রাগার লুণ্ঠন করে। ‘স্বাধীন চিটাগাঙ সরকার’-এর ঘোষণা দেয়া হয় এবং একই সঙ্গে ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করা হয়। এই যুদ্ধ ছিল অসম শক্তির যুদ্ধ। সূর্য সেনের বিপ্লবীদের বিরুদ্ধে ইংরেজ সরকার বিপুল বাহিনী নিয়োগ করে। চ‚ড়ান্ত যুদ্ধ সংঘটিত হয় জালালাবাদ পাহাড়ে। গোলাবারুদ ফুরিয়ে গেলে বিপ্লবীরা পিছু হটতে বাধ্য হয়। বেশ কিছু তরুণ বিপ্লবী এই খণ্ডযুদ্ধে এবং অন্যান্য অভিযানে নিহত হন। বিপ্লবীরা গ্রামের কৃষকদের বাড়িতে বাড়িতে আশ্রয় নেন। ১৯৩৩ খ্রিষ্টাব্দে সূর্য সেন গ্রেফতার হন। ১৯৩৪ খ্রিষ্টাব্দে সংক্ষিপ্ত ট্রাইবুনালের বিচারে তাকে ফাঁসির আদেশ দেওয়া হয়। চরম নির্যাতনের পর ১২ জানুয়ারি তাকে ফাঁসি দেওয়া এবং তার মৃতদেহ বঙ্গোপসাগরে ভাসিয়ে দেওয়া হয়। আর সংগঠনটির সশস্ত্র বিপ্লবও স্তিমিত হয়।
 মাস্টার ট্রেইনার প্রণীত সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন- ৪  বঙ্গভঙ্গ

ফাইজা, তারাননুম, আশিক, রাফি সবাই সকাল থেকে বিভিন্ন প্রকার অনুষ্ঠান নিয়ে ব্যস্ত। কারণ আজ ২৬ মার্চ। ফাইজার বাবা একজন মুক্তিযোদ্ধা। তিনি সবাইকে ডেকে বললেন, এই দিবসের মানে বোঝ? এই দিন আমরা পাকিস্তানের অর্থনৈতিক, সামরিক ও সাংস্কৃতিক শোষণের হাত থেকে মুক্তিলাভের জন্য যুদ্ধ করি। কারণ শিক্ষার ক্ষেত্রে, জীবনযাত্রার ক্ষেত্রে, চাকরির ক্ষেত্রে আমরা ছিলাম অবহেলিত। নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্যই ছিল আমাদের এই আন্দোলন।
ক. কত সালে বঙ্গভঙ্গ ঘোষণা করা হয়? ১
খ. বঙ্গভঙ্গ কোন কোন অঞ্চল নিয়ে গঠিত হয়? ২
গ. ফাইজার বাবা মুক্তিযুদ্ধের ক্ষেত্রে প্রথম যে কারণটির কথা বলেছেন তার সাথে বঙ্গভঙ্গের উদ্দেশ্যের তুলনা কর। ৩
ঘ. ফাইজার বাবা মুক্তিযুদ্ধের ক্ষেত্রে যে সকল কারণ উলে­খ করেছেন বঙ্গভঙ্গের ক্ষেত্রেও কি সে কারণগুলো বিদ্যমান ছিল? উত্তরের পক্ষে তোমার মতামত দাও। ৪

ক ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গ ঘোষণা করা হয়।
খ বাংলাদেশের ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, আসাম, জলপাইগুড়ি, পার্বত্য ত্রিপুরা ও মালদহ নিয়ে গঠিত হয় পূর্ববাংলার ও আসাম প্রদেশ। অন্যদিকে পশ্চিমবাংলা, বিহার ও উড়িষ্যা নিয়ে গঠিত হয় পশ্চিমবাংলা।
গ ফাইজার বাবা মুক্তিযুদ্ধের ক্ষেত্রে যেসব উদ্দেশ্যের কথা বলেছেন সেগুলোর মধ্যে প্রথম বলেছেন অর্থনৈতিক কারণের কথা। এ কারণের সাথে বঙ্গভঙ্গের অর্থনৈতিক কারণের তুলনামূলক আলোচনা করা হলো। ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম প্রধান কারণ ছিল অর্থনৈতিক। কেননা পশ্চিম পাকিস্তানিরা পূর্ববাংলার জনগণকে সরকারি চাকরি, অবকাঠামোগত উন্নয়নসহ সকল অর্থনৈতিক দিক থেকে বঞ্চিত করে রেখেছিল। তেমনি বঙ্গভঙ্গের পেছনে অর্থনৈতিক উদ্দেশ্য বিদ্যমান ছিল। দেখা যায় যে, ব্রিটিশ শাসনের গোড়া থেকেই পূর্ববঙ্গ ব্যবসায়-বাণিজ্য, অর্থনৈতিক বিকাশ ও যোগাযোগ ব্যবস্থার ক্ষেত্রে ছিল অবহেলিত। পূর্ববঙ্গের জনগণের আয়ের প্রধান উৎস কৃষি হলেও কৃষকের উন্নয়নের জন্য সরকার কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। মূলত এ বিষয়টি মুক্তিযুদ্ধকে যেমন প্রভাবিত করেছিল তেমনি বঙ্গভঙ্গের ক্ষেত্রেও কাজ করেছিল। সুতরাং অর্থনৈতিক কারণ মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গভঙ্গ উভয়টির ক্ষেত্রে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ।
ঘ উদ্দীপকে ফাইজার বাবা মুক্তিযুদ্ধের ক্ষেত্রে যে কারণগুলো উল্লেখ করেছেন বঙ্গভঙ্গের ক্ষেত্রে ও সে কারণগুলো বিদ্যমান বলে আমি মনে করি। ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পশ্চাতে প্রধান কারণ হলো পূর্ব পাকিস্তানের প্রতি পশ্চিম পাকিস্তানের দীর্ঘদিনের অত্যাচার, নির্যাতন, শোষণ ও নিপীড়ন। এসব অন্যায় কাজের প্রতিবাদস্বরূপ পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ প্রতিবাদী হয়ে ওঠে এবং অর্থনৈতিক, সামরিক রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক শোষণের হাত থেকে মুক্তিলাভের আশায় স্বাধীনতা সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ে। অন্যদিকে, ১৯০৫ খ্রিষ্টাব্দের বঙ্গভঙ্গের পেছনেও ছিল পূর্ববাংলার প্রতি পশ্চিম সরকারের আচরণ। পশ্চিম বাংলার উঁচু তলার মানুষ অর্থাৎ পুঁজিপতি, শিক্ষিত মধ্যবিত্ত, জমিদার, আইনজীবী, সংবাদপত্রের মালিক, রাজনীতিবিদ তারাও পূর্ববাংলার উন্নয়নের ব্যাপারে ছিলেন উদাসীন। ব্রিটিশ শাসনের গোড়া থেকে পূর্ববাংলা ছিল অর্থনৈতিকভাবে অনুন্নত ও অবহেলিত। এ অঞ্চলের শিক্ষা, ব্যবসায়-বাণিজ্য, অর্থনৈতিক বিকাশ ও যোগাযোগ ব্যবস্থার কোনো উন্নতি এর পূর্বে হয়নি। অন্যদিকে, রাজধানী কলকাতা ছিল ব্রিটিশ শাসনের প্রশাসনিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক উন্নয়নের মূলকেন্দ্র। যোগাযোগ ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেও পূর্ব বাংলা পশ্চিমবাংলার তুলনায় বহু পেছনে ছিল। তাই পূর্ববাংলায় অর্থনৈতিক উন্নতির জন্য ব্রিটিশ সরকার বঙ্গভঙ্গের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। তাছাড়া বঙ্গভঙ্গের পেছনে ব্রিটিশ সরকারের রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক উদ্দেশ্যও বিদ্যমান ছিল। তাই ফাইজার বাবা মুক্তিযুদ্ধের ক্ষেত্রে যে কারণগুলো উলে­খ করেছেন সে কারণগুলো বঙ্গভঙ্গের ক্ষেত্রেও বিদ্যমান ছিলÑএ উক্তিটি যথার্থই যুক্তিসংগত।

প্রশ্ন- ৫  বঙ্গভঙ্গের প্রতিক্রিয়া

রোহিতপুর এলাকায় অনেক লোকের বসবাস। বিস্তীর্ণ এলাকা বলে এ এলাকাকে কাজের সুবিধার্থে দুই ভাগে ভাগ করা হয়। এ এলাকার এক অংশ হিন্দু এবং অন্য অংশ মুসলিম অধ্যুষিত ছিল। মুসলমানরা এ বিভাজনকে স্বাগত জানালেও হিন্দুরা বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। ফলে উভয়পক্ষের মধ্যে বিশাল সংঘর্ষ সৃষ্টি হয় এবং অবশেষে আবার একত্রিত করা হয়।
ক. বঙ্গভঙ্গ কত খ্রিষ্টাব্দে রদ করা হয়? ১
খ. বঙ্গভঙ্গ বলতে কী বোঝ? ২
গ. রোহিতপুরের মুসলিমদের প্রতিক্রিয়ার সাথে বঙ্গভঙ্গ পরবর্তী মুসলিমদের প্রতিক্রিয়ার সাদৃশ্য ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. উদ্দীপকের ন্যায় বঙ্গভঙ্গ পরবর্তী সময়ে সমাজে কী ধরনের প্রভাব পরিলক্ষিত হয় বলে তুমি মনে কর? মতামত দাও। ৪

ক ১৯১১ খ্রিষ্টাব্দে বঙ্গভঙ্গ রদ করা হয়।
খ ১৯০৫ খ্রিষ্টাব্দের ১৬ অক্টোবর ভারতের বড়লাট লর্ড কার্জন এক ঘোষণায় বাংলা প্রদেশকে দু’ভাগে বিভক্ত করেন। এ ঘটনা বঙ্গভঙ্গ নামে পরিচিত। বঙ্গভঙ্গ অনুযায়ী বাংলাদেশের ঢাকা, চট্টগ্রাম ও রাজশাহী, আসাম, জলপাইগুড়ি, পার্বত্য ত্রিপুরা ও মালদহ নিয়ে গঠিত হয় পূর্ব বাংলা ও আসাম প্রদেশ। এ নবগঠিত প্রদেশের রাজধানী হয় ঢাকা। অন্যদিকে পশ্চিম বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যা নিয়ে গঠিত হয় পশ্চিম বাংলা প্রদেশ, যার রাজধানী হয় কলকাতা।
গ রোহিতপুর এলাকাকে বিভাজনের পর মুসলমানদের প্রতিক্রিয়ার সাথে বঙ্গভঙ্গ পরবর্তী সময়ে মুসলিমদের প্রতিক্রিয়ার সাদৃশ্য রয়েছে। উভয়েই এ বিভাজনকে বিভিন্ন সুবিধার জন্য স্বাগত জানায়। ১৯০৫ খ্রিষ্টাব্দে বঙ্গভঙ্গ করা হলে মুসলমান সমাজের একাংশ শুরুতে এর বিরোধিতা করে। কিন্তু খুব শিগগিরই মুসলমানগণ বঙ্গভঙ্গকে স্বাগত জানান। ঢাকার নবাব সলিমুল­াহ প্রথমে বঙ্গভঙ্গকে মুসলমানদের স্বার্থের পক্ষে বলে মতপ্রকাশ করেন। নতুন প্রদেশের জনসংখ্যার সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ ছিল মুসলমান। সুতরাং পূর্ব বাংলার পিছিয়ে পড়া মুসলমান স¤প্রদায় শিক্ষা-দীক্ষা এবং প্রশাসনিক ও অর্থনৈতিকভাবে বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা পাবে এ আশায় তারা বঙ্গভঙ্গের প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন প্রদান করে। মুসলমান সম্পাদিত পত্রিকাগুলো বঙ্গভঙ্গকে সমর্থন করে এবং সন্তোষ প্রকাশ করে। প্রকৃতপক্ষে মুসলিম সমাজ তাদের নিজ স্বার্থের প্রতি লক্ষ রেখে বঙ্গভঙ্গের প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করে। তাই উদ্দীপকের মুসলিমদের প্রতিক্রিয়াটির সাথে তাদের প্রতিক্রিয়ার সাদৃশ্য দেখা যায়।
ঘ রোহিতপুর এলাকায় বিভাজন পরবর্তী সময়ে হিন্দু-মুসলমানদের মধ্যে যেমন প্রভাব পরিলক্ষিত হয় তেমনি বঙ্গভঙ্গের পরেও জনগণের মধ্যে গভীর প্রভাব লক্ষ করা যায়। বাংলার রাজনৈতিক ইতিহাসে ১৯০৫ খ্রিষ্টাব্দের বঙ্গভঙ্গ এক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। প্রশাসনিক কারণে বঙ্গভঙ্গ করা হলেও ক্রমশ তা ব্রিটিশ শাসননীতিকে সাহায্য করে। কেননা বঙ্গভঙ্গের মাধ্যমেই বাংলায় হিন্দু ও মুসলমান দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে। বঙ্গভঙ্গ করা হলে বাংলার অভিজাত হিন্দুরা ও কংগ্রেস একে তাদের স্বার্থের পরিপন্থী মনে করে এর বিরুদ্ধে প্রবল আন্দোলন গড়ে তোলে। তাদের আন্দোলনের ফলেই ব্রিটিশ সরকার বঙ্গভঙ্গ রদ করতে বাধ্য হন। এতে কংগ্রেস একটি বিশাল শক্তি হিসেবে ব্রিটিশ সরকারের নিকট আবিভর্‚ত হয়। অন্যদিকে শুরু থেকেই মুসলমানরা বঙ্গভঙ্গের পক্ষে অবস্থান গ্রহণ করে এবং বঙ্গভঙ্গকে তাদের জন্য মঙ্গলময় মনে করে। একই সময়ে মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠায় মুসলমানরাও একটি রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। তাই প্রথমদিকে মুসলমানদের সুযোগ ও পরবর্তীতে বঙ্গভঙ্গ রদে কংগ্রেসের বিজয় হিন্দু-মুসলমানদের আত্মোপলব্ধির সুযোগ করে দেয়। উভয় সংগঠনই নিজেদের অবস্থান সম্পর্কে সচেতন হয়। ব্রিটিশ সরকারও বঙ্গভঙ্গ কেন্দ্রিক ঘটনাবলিকে সামাল দিতে হিমশিম খায় এবং ভারতে তাদের অবস্থান সম্পর্কে সজাগ হয়। মুসলিম, হিন্দু ও ব্রিটিশ সরকার সবাই নিজেদের সম্পর্কে নতুন করে ভাবতে শেখে এবং বাংলার রাজনীতিতে নতুন ধারার সূচনা হয়।

প্রশ্ন- ৬  মুসলিম লীগ

কাঞ্চননগর গ্রামে হিন্দু ও মুসলিম উভয় ধর্মাবলম্বী লোক বাস করে। একাধিকবার হিন্দু চেয়ারম্যান ক্ষমতায় থাকায় এখানে হিন্দুরাই বেশি প্রাধান্য বিস্তার করে এবং তাদের অনেক উন্নতি সাধিত হয়। মুসলমানরা নিজেদের জন্য একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করে। এর মাধ্যমে তারা শিক্ষাদীক্ষা, সংস্কৃতিসহ সকল ক্ষেত্রে নিজেদের অগ্রগতি নিশ্চিত করে।
ক. কত খ্রিষ্টাব্দে মুসলিম লীগ গঠিত হয়? ১
খ. বঙ্গভঙ্গ রদে মুসলমানদের প্রতিক্রিয়া কী ছিল? ২
গ. মুসলমানদের স্বার্থে প্রতিষ্ঠিত কোন সংগঠনের সাথে উদ্দীপকের মিল রয়েছে? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. উদ্দীপকের সংগঠনের মতোই “ব্রিটিশ ভারতীয় শাসনব্যবস্থায় একটি সংগঠন মুসলিম প্রতিনিধিত্বকে সুসংহত করেছিল” যুক্তিসহ মতামত দাও। ৪

ক ১৯০৬ খ্রিষ্টাব্দে মুসলিম লীগ গঠিত হয়।
খ মুসলমান স¤প্রদায় বঙ্গভঙ্গ রদে প্রচণ্ড মর্মাহত হয়। তাদের ব্রিটিশ সরকার ও কংগ্রেসের প্রতি আস্থা নষ্ট হয়ে যায়। তারা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করতে শুরু করে কংগ্রেস মুসলমানদের স্বার্থ রক্ষার জন্য নয়। মুসলিম নেতৃবৃন্দ একে ব্রিটিশ সরকারের বিশ্বাসঘাতকতার জঘন্য উদাহরণ বলে মন্তব্য করেন।
গ মুসলমানদের স্বার্থে প্রতিষ্ঠিত মুসলিম লীগের সাথে কাঞ্জননগরে প্রতিষ্ঠিত মুসলিম সংগঠনের মিল রয়েছে। বঙ্গভঙ্গের (১৯০৫ খ্রিষ্টাব্দ) মাধ্যমে বাংলার হিন্দু ও মুসলমান দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে। মুসলমানরা ছিল অনগ্রসর এবং রাজনৈতিকভাবে কিছুটা কম সচেতন। তাছাড়া ১৮৫৭ খ্রিষ্টাব্দের মহাবিদ্রোহের জন্য ব্রিটিশ সরকার ভারতীয় মুসলমানদের অধিকতর দায়ী বলে মনে করে। তাদের প্রতি ব্রিটিশ সরকার কঠোর মনোভাব পোষণ করে। ১৮৮৫ খ্রিষ্টাব্দে কংগ্রেস গঠিত হলেও অধিকাংশ মুসলিম নেতা এতে যোগদান করেননি। ১৯০৫ খ্রিষ্টাব্দের বঙ্গভঙ্গ ঘোষণা হলে বাংলার অবহেলিত মুসলমানদের মধ্যে নতুন আশা ও উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়। কংগ্রেস বঙ্গভঙ্গের বিরোধিতা করলে মুসলমানদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। তারা একটি স্বতন্ত্র রাজনৈতিক সংগঠনের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে। এর ফলস্বরূপ ১৯০৬ খ্রিষ্টাব্দে মুসলিম লীগ গঠিত হয় যার সাথে উদ্দীপকের সংগঠন প্রতিষ্ঠার মিল রয়েছে।
ঘ উদ্দীপকের সংগঠনের মতোই মুসলিম লীগ ব্রিটিশ ভারতে মুসলিমদের প্রতিনিধিত্বকে সুসংহত করে। ব্রিটিশ ভারতীয় শাসনব্যবস্থায় মুসলমানরা ছিল রাজনৈতিকভাবে কম সচেতন। ফলে রাজনীতিতে মুসলমানদের অংশগ্রহণ তুলনামূলকভাবে কম ছিল। মুসলমানদের একত্রিত করার জন্য কোনো রাজনৈতিক সংগঠনও ছিল না। ১৮৮৫ খ্রিষ্টাব্দে কংগ্রেস সর্বভারতীয় হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হলেও পরবর্তীতে হিন্দুদের সংগঠন হিসেবেই এর কার্যক্রম পরিচালিত হয়। ১৯০৫ খ্রিষ্টাব্দে কংগ্রেস বঙ্গভঙ্গের বিরোধিতা করলে মুসলমানদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। মুসলমানরা স্বতন্ত্র রাজনৈতিক সংগঠনের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে। তাই মুসলিম লীগ গঠনের মাধ্যমে রাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে মুসলমানদের অংশগ্রহণের ইচ্ছা প্রতিফলিত হয়। মুসলমানদের রাজনৈতিক অধিকার, স্বার্থ, আশা-আকাক্সক্ষা ও প্রয়োজনীয়তা সরকারের নিকট ব্যক্ত করা হয়। মুসলমানদের জন্য পৃথক নির্বাচনের অধিকার, আইন সভায় প্রাপ্য আসন, সামরিক ও বেসামরিক চাকরিতে অধিক সংখ্যায় নিয়োগ, জেলা পরিষদ ও পৌরসভায় মুসলমানদের নিয়োগ এবং মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের দাবিও পেশ করা হয়। অর্থাৎ মুসলিম লীগ গঠনের মাধ্যমেই মুসলমানরা আলাদা রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে নিজেদের আত্মপ্রকাশ করে। মুসলিম লীগই মুসলিম প্রতিনিধিত্বকে সুসংহত করেছিল। অন্যান্য সম্প্রদায়ের মতো মুসলমানরাও মুসলিম লীগের মাধ্যমে রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে সরকারের নিকট নিজেদের উত্থাপন করেছিল।

প্রশ্ন- ৭  স্বদেশী আন্দোলন

লর্ড কার্জন ১৯০৫ খ্রিষ্টাব্দে শাসনতান্ত্রিক প্রয়োজনে বঙ্গভঙ্গ করলে তৎকালীন বাংলার কলকাতাকেন্দ্রিক শিক্ষিত শ্রেণি বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করে। এ সময়েই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আমাদের জাতীয় সংগীত ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি’ রচনা করেন। বঙ্গভঙ্গের প্রতিক্রিয়াস্বরূপ একটি আন্দোলন শুরু হয়। বিলেতি দ্রব্যে প্রকাশ্যে আগুন জ্বালানো হয়। ছাত্ররা স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় বর্জন করে। জাতীয় স্কুল ও কলেজ স্থাপনের ব্যবস্থা করা হয়। এরই মাঝে সশস্ত্র আন্দোলনের বিস্তার ঘটে। ১৯১১ খ্রিষ্টাব্দে বঙ্গভঙ্গ রদ হলে এ ঘটনা স্তিমিত হয়।
ক. কোথায় বঙ্গভঙ্গ রদের ঘোষণা দেওয়া হয়? ১
খ. বঙ্গভঙ্গের পিছনে ব্রিটিশ সরকারের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা কর। ২
গ. কোন পটভ‚মির ওপর ভিত্তি করে উক্ত আন্দোলন সংঘটিত হয়? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. তুমি কী মনে কর উদ্দীপকের ঘটনাগুলো বঙ্গভঙ্গ রদকে ত্বরানি¦ত করেছিল? মতামত দাও। ৪

ক ইংল্যান্ডের রাজা পঞ্চম জর্জের অভিষেক উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে দিলি­র দরবারে বঙ্গভঙ্গ রদের ঘোষণা দেওয়া হয়।
খ ১৯০৫ খ্রিষ্টাব্দের ১৬ অক্টোবর বঙ্গভঙ্গ ঘোষণার পেছনের প্রধান কারণ ছিল ব্রিটিশ সরকারের রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করা। ঐক্যবদ্ধ বাংলার বিরাট শক্তি ব্রিটিশ সরকারের পক্ষে নিরাপদ ছিল না। বঙ্গভঙ্গের ফলে পূর্ববঙ্গের মুসলমানগণ সন্তুষ্ট হয়ে ব্রিটিশ সরকারের প্রতি অনুগত থাকবে এবং ভারতীয় জাতীয় ঐক্য দুর্বল হবে, যা ছিল লর্ড কার্জনের অন্যতম উদ্দেশ্য। প্রশাসনিক উন্নতি ও অর্থনৈতিক সমতা বিধানের উদ্দেশ্য ছাড়াও বঙ্গভঙ্গের পেছনে ব্রিটিশ সরকারের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যও ছিল।
গ বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনের ব্যর্থতার পটভ‚মিতে কংগ্রেসের উগ্রপন্থী অংশের নেতৃত্বে উক্ত আন্দোলন তথা স্বদেশী আন্দোলন সংঘটিত হয়। বঙ্গভঙ্গ হলে কলকাতাকেন্দ্রিক হিন্দু জমিদার, পুঁজিপতি, শিক্ষিত মধ্যবিত্ত, আইনজীবী সাংবাদিক ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ বঙ্গভঙ্গের বিরোধিতা করে এবং তারা এর বিরুদ্ধে তুমুল আন্দোলন গড়ে তোলে। তারা একে জাতীয় সংহতি ও রাজনৈতিক আন্দোলনের প্রতি আঘাত বলে বর্ণনা করে। উগ্রপন্থী কংগ্রেস নেতৃবৃন্দ বঙ্গভঙ্গবিরোধী আন্দোলন পরিচালনা করে। আন্দোলনকারীরা বিভিন্ন সভা-সমিতির মাধ্যমে এর প্রতিবাদ জানায় এবং বঙ্গভঙ্গ রদসহ ব্রিটিশদের চাপে ফেলার জন্য বয়কট ও ‘স্বদেশী’ কর্মপন্থা নিয়ে এক আন্দোলন গড়ে তোলে, যা পরবর্তীতে ‘বয়কট’ ও ‘স্বদেশী আন্দোলন’ নামে পরিচিত হয়। বিদেশি দ্রব্য বর্জন ও স্বদেশী দ্রব্য ব্যবহারকে এ আন্দোলনের ভিত্তি বলে ধরা হয়।
ঘ বঙ্গভঙ্গের প্রতিবাদে উদ্দীপকের ঘটনাগুলো পরিচালিত হয়। ১৯০৬ খ্রিষ্টাব্দের ৭ আগস্ট স্বদেশী আন্দোলন শুরু হয়। এ সময় বিলেতি দ্রব্য বয়কট করা হয় এবং প্রকাশ্যে বিলেতি দ্রব্যে আগুন লাগানো হয়। ছাত্ররা স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় বর্জন করে। এ সময় জাতীয় স্কুল ও কলেজ স্থাপন করা হয়। এ সময় বাংলাদেশের রংপুর, দিনাজপুর, ময়মনসিংহ ও বরিশালে জাতীয় বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা পায়। উদ্দীপকে এসব ঘটনারই ইঙ্গিত রয়েছে। আন্দোলনকে বেগবান করার জন্য বিভিন্ন জেলায় সমিতি গঠন করা হয়। বরিশালের ‘স্বদেশ বান্ধব’, ফরিদপুরের ‘ব্রতী’, ময়মনসিংহের ‘সাধনা’ এবং ঢাকার ‘অনুশীলন’ বিশেষভাবে উলে­খযোগ্য। স্বদেশী আন্দোলনে উদ্দীপনা সৃষ্টির জন্য কবি ও সাহিত্যিকগণ বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় বহু দেশাত্মবোধক রচনা লিখতে থাকেন। বাংলার জমিদারশ্রেণি নিজ স্বার্থে স্বদেশী আন্দোলনকে সমর্থন করে। স্বদেশী আন্দোলন ক্রমে বিপ্লবের আকার নেয়। এ সময় কলকাতায় ‘যুগান্তর পার্টি’ ও ঢাকার ‘অনুশীলন সমিতি’ ব্রিটিশ শাসন অবসানের জন্য ১৯০৮ খ্রিষ্টাব্দে বাংলার গভর্নর এন্ড্রু ফ্রেজার এবং পূর্ববঙ্গের লেফটেন্যান্ট গভর্নর ব্যামফিল্ড ফুলারকে হত্যার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। ক্ষুদিরাম ও প্রফুল­ চাকী প্রেসিডেন্ট কিংসফোর্ডকে হত্যার চেষ্টা করে। এদের গুলিতে বহুসংখ্যক ইংরেজ, পুলিশ কর্মকর্তা ও তাদের দেশীয় সহযোগী নিহত হয়। উদ্দীপকে এ সশস্ত্র আন্দোলনেরও ইঙ্গিত রয়েছে। এ পরিস্থিতিতে ব্রিটিশ সরকার নিজেদের রক্ষার্থে এবং রাজনৈতিক সুবিধা আদায়ে ১৯১১ খ্রিষ্টাব্দে বঙ্গভঙ্গ রদের ঘোষণা দেয়। তাই বলা যায় যে, উদ্দীপকে নির্দেশিত স্বদেশী আন্দোলন ও সে সময়ের ঘটনাপ্রবাহ বঙ্গভঙ্গ রদকে ত্বরানি¦ত করেছিল।
প্রশ্ন- ৮  খিলাফত ও অসহযোগ আন্দোলন

আধুনিক ইউরোপীয় রাষ্ট্র তুরস্ক। সেদেশের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের সাথে ভারতীয় উপমহাদেশের রাজনৈতিক ব্যবধান যোজন যোজন। সর্বযুগেই এমনটি ছিল। এতদসত্তে¡ও প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ভারতবর্ষের রাজনীতি তুরস্কের পরিণতি দ্বারা গভীরভাবে প্রভাবিত হয় এবং ভারতবর্ষে মুসলমানেরা এক নতুন আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ে।
ক. খিলাফত কমিটি গঠনের জন্য কবে ঢাকা সভা অনুষ্ঠিত হয়? ১
খ. জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ড কেন সংঘটিত হয়েছিল? ২
গ. উদ্দীপকে কোন আন্দোলন বোঝানো হয়েছে? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. উক্ত আন্দোলনে বাংলার ভূমিকা বিশ্লেষণ কর। ৪

ক খিলাফত কমিটি গঠনের জন্য ১৯১৯ খ্রিষ্টাব্দের ১৮ ডিসেম্বর ঢাকায় এক সভা অনুষ্ঠিত হয়।
খ ১৯১৯ খ্রিষ্টাব্দে ব্রিটিশ সরকার রাওলাট আইন পাস করে। এ আইনে যেকোনো ব্যক্তিকে বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার ও সাক্ষ্য-প্রমাণ ছাড়াই আদালতে দণ্ড দেওয়ার ক্ষমতা প্রদান করে। মহাত্মা গান্ধীর ডাকে রাওলাট আইনের বিরুদ্ধে ভারতের সর্বস্তরের জনগণ হরতাল পালন করে বৃহৎ আন্দোলন গড়ে তোলে। একপর্যায়ে পাঞ্জাবের অমৃতসরের জালিয়ানওয়ালাবাগে ১৯১৯ খ্রিষ্টাব্দের ১৩ এপ্রিল জেনারেল ডায়ারের নির্দেশে বহুসংখ্যক নিরস্ত্র মানুষকে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হয়। এ হত্যাকাণ্ডই জালিয়ানওয়ালাবাগের হত্যাকাণ্ড নামে পরিচিত।
গ উদ্দীপকে খিলাফত আন্দোলনকে বোঝানো হয়েছে। ভারতের মুসলমানেরা তুরস্কের সুলতানকে মুসলিম বিশ্বের খলিফা বা ধর্মীয় নেতা বলে শ্রদ্ধা করতেন। কিন্তু তুরস্কের সুলতান ব্রিটিশবিরোধী শক্তি জার্মানির পক্ষ অবলম্বন করলে ভারতের মুসলমান স¤প্রদায় বিব্রত হন। কারণ ধর্মীয় কারণে তারা খলিফার অনুগত, আবার অন্যদিকে রাজনৈতিক কারণে ব্রিটিশ সরকারের অনুগত থাকতে বাধ্য। নিজ দেশের সরকার হিসেবে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ভারতীয় মুসলমানরা ব্রিটিশ সরকারকেই সমর্থন দিয়েছে। তবে শর্ত ছিল যে এই সমর্থনের পরিপ্রেক্ষিতে ব্রিটিশ সরকার তুরস্কের খলিফার কোনো ক্ষতি করবে না। কিন্তু, যুদ্ধে জার্মানি হেরে গেলে তুরস্কের ভাগ্যবিপর্যয় ঘটে। যুদ্ধ শেষে জার্মানির পক্ষে যোগদানের জন্য ১৯২০ খ্রিষ্টাব্দে সেভার্সের চুক্তি অনুযায়ী শাস্তিস্বরূপ তুরস্ককে খণ্ড-বিখণ্ড করার পরিকল্পনা করা হয়। এতে ভারতীয় মুসলমানরা মর্মাহত হয় এবং ভারতীয় মুসলমানরা খলিফার মর্যাদা এবং তুরস্কের অখণ্ডতা রক্ষার জন্য তুমুল আন্দোলন গড়ে তোলে, যা ইতিহাসে খিলাফত আন্দোলন নামে খ্যাত।
ঘ উক্ত আন্দোলন তথা খিলাফত আন্দোলনে বাংলা ব্যাপক ভ‚মিকা রাখে।
খিলাফত কমিটি গঠনের জন্য ১৯১৯ খ্রিষ্টাব্দের ১৮ ডিসেম্বর ঢাকায় এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় কমিটি গঠনসহ খিলাফত আন্দোলনের নেতা মাওলানা মুহম্মদ আলী ও মাওলানা শওকত আলীর মুক্তি দাবি করা হয়। অমৃতসরের খিলাফত কমিটি আহ‚ত নিখিল ভারত খিলাফত কমিটির অধিবেশনে ৬ জন প্রতিনিধি প্রেরণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। ১৯২০ খ্রিষ্টাব্দে খিলাফত ‘ইশতেহার’ প্রকাশ করা হয় এবং সরকারের বিরুদ্ধে অসহযোগ আন্দোলনের আহŸান জানানো হয়। বাংলার হিন্দু-মুসলমান ঐক্যবদ্ধভাবে খিলাফত ও অসহযোগ আন্দোলনে অংশ নেয়। খিলাফত আন্দোলনের নেতা মাওলানা শওকত আলী ও মাওলানা আবুল কালাম আজাদ ১৯২০ খ্রিষ্টাব্দে মার্চ মাসে ঢাকায় আসেন। ঢাকার জনগণ তাদের ‘আল্লাহু আকবার’ ও ‘বন্দে মাতরম’ ধ্বনি দিয়ে স্বাগত জানায়। তাছাড়া ১৯ মার্চ হরতালের দিন মুসলমান স¤প্রদায় রোজা এবং হিন্দু স¤প্রদায়ের লোকজন উপোস থাকে। এদিন ঢাকায় এক জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার সিদ্ধান্তে বলা হয় যে খিলাফত অক্ষুণœ না থাকলে মুসলমানদের ব্রিটিশ সরকারের প্রতি অনুগত থাকা অসম্ভব। ১৯২০ খ্রিষ্টাব্দের ১৩ এপ্রিল জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ড স্মরণে এক সভা হয়। পাশাপাশি খিলাফত ও অসহযোগ আন্দোলনে গৃহীত অন্যান্য কর্মসূচিও পালিত হয়। সভায় রাওলাট আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানো হয়। আন্দোলনের কর্মসূচি অনুযায়ী স্কুল-কলেজ বর্জনসহ ১৯১৯ খ্রিষ্টাব্দের আইনের অধীনের বাংলার ব্যবস্থাপক সভার নির্বাচন বর্জন করার কথাও বলা হয়। বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে, যেমন : ময়মনসিংহ, রংপুর, রাজশাহী, নোয়াখালী প্রভৃতি জেলায় চৌকিদারি ট্যাক্স দিতে অস্বীকৃতি জানানো হয়। সরকারের এবং পুলিশের নানা ধরনের নির্যাতন, দমনমূলক ঘটনার পরও বাংলার জনগণ এক বছরব্যাপী খিলাফত ও অসহযোগ আন্দোলনে বলিষ্ঠ ভ‚মিকা রাখতে সক্ষম হয়।

প্রশ্ন- ৯  অসহযোগ আন্দোলন

সৌমপুর এলাকার অধিবাসীরা বিভিন্ন অনৈতিক ও নির্যাতনমূলক কাজে প্রশাসকের বিরোধিতা করে আসছিল। বিভিন্নভাবে আন্দোলন পরিচালনার একপর্যায়ে এক সভায় পুলিশ অফিসারের নির্দেশে হঠাৎ গুলিবর্ষণ শুরু হয়। বহু লোক প্রাণ হারায়। পরবর্তীতে বিশিষ্ট নেতৃবৃন্দ হত্যাকাণ্ডের তদন্তে একটি কমিটিও গঠন করে। সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিরাও নানাভাবে প্রতিবাদ জানায়।
ক. জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ড স্মরণে ঢাকায় কবে সভা হয়। ১
খ. মহাত্মা গান্ধী কর্তৃক পরিচালিত অসহযোগ আন্দোলন সর্বভারতীয় রূপ নিয়েছিল কেন? ২
গ. উদ্দীপকের অনুরূপ ঘটনা ব্রিটিশবিরোধী কোন আন্দোলনের প্রেক্ষাপট তৈরি করেছিল? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. উক্ত আন্দোলনের তাৎপর্য বিশ্লেষণ কর। ৪

ক জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ড স্মরণে ঢাকায় ১৯২০ খ্রিষ্টাব্দের ১৩ এপ্রিল এক সভা হয়।
খ ১৯২০ খ্রিষ্টাব্দে গান্ধী অসহযোগ আন্দোলনের প্রস্তাব করেন এবং সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এ অসহযোগ আন্দোলন যে সব কারণে সর্বভারতীয় রূপ নিয়েছিল সেগুলো নিম্নরূপ : ১৯১৯ খ্রিষ্টাব্দের রাওলাট আইন ভারতীয়দের সন্তুষ্ট করতে পারেনি। জালিয়ানওয়ালাবাগের হত্যাকাণ্ড ও সংবাদপত্রের ওপর হস্তক্ষেপ। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর অর্থনৈতিক মন্দা। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধিতে কৃষক শ্রমিকসহ সাধারণ জনগণের অসন্তোষ ইত্যাদি। এসব কারণে ১৯২০ খ্রিষ্টাব্দে হিন্দু-মুসলিম ঐক্যের ভিত্তিতে অহিংস অসহযোগ আন্দোলন সর্বভারতীয় রূপ নিয়েছিল।
গ উদ্দীপকের অনুরূপ ঘটনা তথা জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ড ব্রিটিশ বিরোধী অসহযোগ আন্দোলনের প্রেক্ষাপট তৈরি করেছিল। ১৯২০ খ্রিষ্টাব্দে মহাত্মা গান্ধী অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেন। ১৯১৯ খ্রিষ্টাব্দের সংস্কার আইন ভারতবাসীর আশা-আকাক্সক্ষা পূরণে ব্যর্থ হয়। তাছাড়া ব্রিটিশ সরকারের দমননীতির কারণে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের নতুন ধারার জন্ম দেয়। ১৯১৯ খ্রিষ্টাব্দে সরকার রাওলাট আইন পাস করে। এই আইনে যেকোনো ব্যক্তিকে পরোয়ানা ছাড়াই গ্রেফতার এবং সাক্ষ্য প্রমাণ ছাড়াই আদালতে দণ্ড দেয়ার ক্ষমতা পুলিশকে দেওয়া হয়। এই আইন ভারতের সর্বস্তরের মানুষকে বিক্ষুব্ধ করে তোলে। অহিংস আন্দোলনে বিশ্বাস ভারতের রাজনীতিতে নবাগত (১৯১৭ খ্রিষ্টাব্দে যোগদান) মহাত্মা গান্ধীর ডাকে এই নিপীড়নমূলক আইনের বিরুদ্ধে ১৯১৯ খ্রিষ্টাব্দের ৬ এপ্রিল হরতাল পালিত হয়। রাওলাট আইনের বিরুদ্ধে অন্যান্য স্থানের মতো পাঞ্জাবেও আন্দোলন গড়ে ওঠে। ১৩ এপ্রিল পাঞ্জাবের অমৃতসরে এক সভায় জেনারেল ডায়ারের নির্দেশে বহু নিরস্ত্র মানুষকে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হয়। ইতিহাসে এই নারকীয় হত্যাযজ্ঞের ঘটনা ‘জালিয়ানওয়ালাবাগের হত্যাকাণ্ড’ নামে পরিচিত। উদ্দীপকে সৌমপুর এলাকার অধিবাসীরা এরূপ এক হত্যাকাণ্ডেরই শিকার হন। উদ্দীপকের বিশিষ্ট নেতৃবৃন্দের মতো এই হত্যাকাণ্ডের তদন্তের জন্য কংগ্রেস বিশিষ্ট নেতৃবৃন্দকে নিয়ে এক তদন্ত কমিটি গঠন করে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে ‘নাইট’ উপাধি বর্জন করেন। উদ্দীপকেও দেখা যায় সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ জানায়। এ ঘটনার প্রেক্ষাপটে অসহযোগ আন্দোলন দুর্বার হয় এবং তা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পায়।
ঘ অসহযোগ আন্দোলনের তাৎপর্য ছিল সুদূরপ্রসারী। মহাত্মা গান্ধীর অসহযোগ আন্দোলন খিলাফত আন্দোলনের সাথে একাত্ম হয়ে তা আরও তাৎপর্যবহ করে তুলেছিল। মহাযুদ্ধের সৃষ্ট অর্থনৈতিক মহামন্দার কারণে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মূল্য বৃদ্ধি পেলে সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষ দেখা দেয়। এ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে গান্ধীজি হিন্দু-মুসলমান উভয় স¤প্রদায়কে ঐক্যবদ্ধ করে ১৯২৩ খ্রিষ্টাব্দে অহিংস অসহযোগ আন্দোলনের আহŸান জানান। ১৯২০ খ্রিষ্টাব্দে খিলাফত আন্দোলন ও অসহযোগ আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ ঐক্যবদ্ধ কর্মসূচির মাধ্যমে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলেন। ১৯২১-২২ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত এই আন্দোলন সর্বভারতীয় গণআন্দোলনে রূপ নেয়। এই আন্দোলনের মাধ্যমে ভারতীয় মুসলমানরা যেমন প্রথমবারের মতো ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে যোগ দেয়, তেমন হিন্দু-মুসলিম স¤প্রদায় প্রথবারের মতো ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলনে নামে। কিছুদিনের জন্য হলেও ব্রিটিশ বিভেদ ও শাসননীতি ব্যর্থ হয়। ফলে হিন্দু-মুসলমান ঐক্য ও স¤প্রীতির এক রাজনৈতিক আবহাওয়ার সৃষ্টি হয়। অপরদিকে এই ঐক্য ব্রিটিশ সরকারকে শঙ্কিত করে তোলে। এই আন্দোলন শুধু শিক্ষিত মুসলমান যুবকদের নয়, সারা ভারতের জনগণের মধ্যে এক রাজনৈতিক চেতনা ছড়িয়ে দিতে সাহায্য করেছিল। তবে এই আন্দোলন এবং হিন্দু-মুসলিম ঐক্য দুই-ই ছিল ক্ষণস্থায়ী। আন্দোলনের অবসানের সঙ্গে সঙ্গে দুই স¤প্রদায়ের মধ্যে আবার দূরত্ব সৃষ্টি হতে থাকে।

প্রশ্ন- ১০  স্বরাজ দল

মনি সাহা ও উদয় চৌধুরী সমাজ সচেতন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। বাস্তববাদী রাজনৈতিক নেতা হিসেবে তারা এলাকায় বসবাসরত নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে আন্দোলন পরিচালনায় বিশ্বাসী। এ বিষয়ে তাদের সাথে দলের মতবিরোধ দেখা দেওয়ায় তারা নতুন একটি দল গঠন করেন।
ক. কার নেতৃত্বে ১৯২২ খ্রিষ্টাব্দে স্বরাজ পার্টি গঠিত হয়। ১
খ. স্বরাজ দলের কর্মসূচি কী ছিল? ২
গ. ভারতের সমাজ ও রাজনীতিতে উদ্দীপকের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ দল কোনটি? ব্যাখ্যা কর । ৩
ঘ. উক্ত দলের সভাপতির হিন্দু মুসলিম ঐক্য প্রতিষ্ঠার কৃতিত্ব বিশ্লেষণ কর। ৪

ক চিত্তরঞ্জন দাসের নেতৃত্বে ১৯২২ খ্রিষ্টাব্দে স্বরাজ পার্টি গঠিত হয়।
খ স্বরাজ দলের কর্মসূচি বাংলার হিন্দু-মুসলিম ঐক্য প্রচেষ্টাকে সফল করেছিল বেঙ্গল প্যাক্টের মাধ্যমে। এ সফলতার অন্যতম কারণ ছিল দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশের কুশলী নেতৃত্ব। আইনসভায় নির্বাচিত হয়ে সরকারি কর্মকাণ্ডের বিরোধিতা করা এবং এভাবে ১৯১৯ খ্রিষ্টাব্দের সংস্কার অকার্যকর করে তোলা। সরকারি বাজেট প্রত্যাখ্যান এবং মন্ত্রিসভার পতন ঘটানো। জাতীয়তাবাদী চেতনা ও কর্মকাণ্ডকে জোরদার করা। বিদেশি শাসন অসম্ভব করে তোলা।
গ ভারতের রাজনীতিতে উদ্দীপকের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ একটি দল হলো স্বরাজ দল। ১৯২২ খ্রিষ্টাব্দে মহাত্মা গান্ধী অসহযোগ আন্দোলন প্রত্যাহার করে নিলে কংগ্রেসের অনেক নেতা কারাগার থেকে মুক্তি লাভ করেন। এ সময় মুক্তিপ্রাপ্ত নেতা চিত্তরঞ্জন দাস (সিআর দাস) ও মতিলাল নেহেরুর সঙ্গে কংগ্রেসের ভবিষ্যৎ আন্দোলনের কর্মপন্থা নিয়ে মতবিরোধ দেখা দেয়। উদ্দীপকের মনি সাহা ও উদয় চৌধুরীও অনুরূপ মতবিরোধ করেন। সিআর দাস ও তার সমর্থকরা নির্বাচনের মাধ্যমে ব্যবস্থাপক পরিষদগুলোতে যোগদানের পক্ষে ছিলেন। কারণ ঐ সময় অসহযোগ আন্দোলনের ব্যর্থতার কারণে আইন অমান্য আন্দোলনের পরিবেশ না থাকায় তারা এ ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। তাছাড়া তাদের উদ্দেশ্য ছিল আইনসভায় যোগ দিয়ে নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনের মাধ্যমে ১৯১৯ খ্রিষ্টাব্দে সংস্কার আইন অচল করে দেওয়া। কিন্তু কংগ্রেসের গোয়া সম্মেলনে তাদের এই প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। এই অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে ১৯২২ খ্রিষ্টাব্দে কংগ্রেসের একাংশের সমর্থনে সিআর দাসের নেতৃত্বে গঠিত হয় স্বরাজ পার্টি। সিআর দাস হন এ দলের সভাপতি। মতিলাল নেহেরু হন অন্যতম সম্পাদক।
ঘ উক্ত দলের সভাপতি সিআর দাস হিন্দু মুসলিম ঐক্য প্রতিষ্ঠায় অত্যন্ত কৃতিত্বের দাবিদার। উপমহাদেশের রাজনীতিতে হিন্দু মুসলিম সমস্যা গভীরভাবে উপলব্ধি করতে সক্ষম হয়েছিলেন স্বরাজ দলের নেতা চিত্তরঞ্জন দাস। ফলে বাংলায় হিন্দু মুসলিম সমস্যা দূর করার জন্য এই দূরদর্শী, বাস্তববাদী নেতা যে চুক্তি সম্পাদন করেছিলেন, ইতিহাসে তা বেঙ্গল প্যাক্ট বা বাংলা চুক্তি নামে খ্যাত। এই সময়ে বাংলার ইতিহাসে প্রধান ঘটনাই বেঙ্গল প্যাক্ট। ১৯২৩ খ্রিষ্টাব্দের ১৬ ডিসেম্বর স্বাক্ষরিত চুক্তিতে মুসলমানদের বিভিন্ন সুবিধা প্রদান করার শর্তই ছিল মূল বিষয়। স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠিত হলে বাংলার প্রত্যেক স¤প্রদায় নিজ নিজ অধিকার পাবে। লোকসংখ্যার অনুপাতে এ নির্বাচন প্রথায় বাংলাদেশ ব্যবস্থাপক পরিষদে প্রতিনিধিত্বের ব্যবস্থা হবে। স্থানীয় স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রত্যেক জেলার সংখ্যাগরিষ্ঠ স¤প্রদায় শতকরা ৬০টি আসন পাবে সংখ্যালঘু স¤প্রদায় শতকরা ৪০টি আসন পাবে। সরকারি দপ্তরে মুসলমানদের জন্য শতকরা ৫৫ ভাগ চাকরি সংরক্ষিত থাকবে। কোনো স¤প্রদায়ের ধর্মীয় বিষয়ে আইন পাস করতে হলে আইনসভায় নির্বাচিত উক্ত স¤প্রদায়ের তিন-চতুর্থাংশ সদস্যের সমর্থন থাকতে হবে। মসজিদের সামনে গান-বাজনাসহ কোনো মিছিল করা যাবে না এবং গরু জবাই করার ব্যাপারে কোনোরূপ হস্তক্ষেপ করা হবে না। নিঃসন্দেহে তার প্রচেষ্টা হিন্দু মুসলিম ঐক্যের পথ প্রশস্ত করেছিল।

 জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর 
প্রশ্ন \ ১ \ স্বত্ববিলোপ নীতি ঘোষণা করেন কে?
উত্তর : লর্ড ডালহৌসি স্বত্ববিলোপ নীতি ঘোষণা করেন।
প্রশ্ন \ ২ \ দ্বিতীয় বাহাদুর শাহকে কোথায় নির্বাসিত করা হয়?
উত্তর : দ্বিতীয় বাহাদুর শাহকে রেঙ্গুনে নির্বাসিত করা হয়।
প্রশ্ন \ ৩ \ বঙ্গভঙ্গ করেন কে?
উত্তর : লর্ড কার্জন বঙ্গভঙ্গ করেন।
প্রশ্ন \ ৪ \ কত খ্রিষ্টাব্দে বঙ্গভঙ্গ করা হয়?
উত্তর : ১৯০৫ খ্রিষ্টাব্দে বঙ্গভঙ্গ করা হয়।
প্রশ্ন \ ৫ \ ভারতীয় উপমহাদেশ ভাগ হয় কত খ্রিষ্টাব্দে?
উত্তর : ভারতীয় উপমহাদেশ ভাগ হয় ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে।
প্রশ্ন \ ৬ \ বাংলা প্রদেশকে কত খ্রিষ্টাব্দে দুভাগ করা হয়?
উত্তর : বাংলা প্রদেশকে ১৯০৩ খ্রিষ্টাব্দে দুভাগ করা হয়।
প্রশ্ন \ ৭ \ কোনটি গঠিত হলে হিন্দু মুসলমানের রাজনৈতিক পথ আলাদা হয়ে যায়?
উত্তর : মুসলিম লীগ গঠিত হলে হিন্দু মুসলমানের রাজনৈতিক পথ আলাদা হয়ে যায়।
প্রশ্ন \ ৮ \ বঙ্গভঙ্গ রদ করা হয় কত খ্রিষ্টাব্দে?
উত্তর : বঙ্গভঙ্গ রদ করা হয় ১৯১১ খ্রিষ্টাব্দে।
প্রশ্ন \ ৯ \ মুসলিম লীগ কত খ্রিষ্টাব্দে গঠিত হয়?
উত্তর : মুসলিম লীগ ১৯০৬ খ্রিষ্টাব্দে গঠিত হয়।
প্রশ্ন \ ১০ \ বয়কট আন্দোলনের প্রধান উদ্দেশ্য কী ছিল?
উত্তর : বয়কট আন্দোলনের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল বিলেতি পণ্য বর্জন।
প্রশ্ন \ ১১ \ স্বদেশী আন্দোলনের মূল কর্মসূচি কয়টি ছিল?
উত্তর : স্বদেশী আন্দোলনের মূল কর্মসূচি ছিল দুটি।
প্রশ্ন \ ১২ \ কোন আন্দোলনের মধ্যদিয়ে গণসচেতনতার জন্ম হয়?
উত্তর : স্বদেশী আন্দোলনের মধ্যদিয়ে গণসচেতনতার জন্ম হয়।
প্রশ্ন \ ১৩ \ কত খ্রিষ্টাব্দে সর্বভারতীয় খিলাফত কমিটি গঠিত হয়?
উত্তর : ১৯১৯ খ্রিষ্টাব্দে সর্বভারতীয় খিলাফত কমিটি গঠিত হয়।
প্রশ্ন \ ১৪ \ ১৯১৯ খ্রিষ্টাব্দে কোন আইন পাস হয়?
উত্তর : ১৯১৯ খ্রিষ্টাব্দে রাওলাট আইন পাস হয়।
প্রশ্ন \ ১৫ \ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কোন হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে নাইট উপাধি বর্জন করেন?
উত্তর : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জালিয়ানওয়ালাবাগের হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে নাইট উপাধি বর্জন করেন।
প্রশ্ন \ ১৬ \ খিলাফত আন্দোলনের নেতা কারা ছিলেন?
উত্তর : খিলাফত আন্দোলনের নেতা ছিলেন মাওলানা মোহাম্মদ আলী, মাওলানা শওকত আলী ও মাওলানা আবুল কালাম আজাদ।
প্রশ্ন \ ১৭ \ ওহফরধহ ঘধঃরড়হধষ অৎসু (ওঘঅ)-এর নেতৃত্বে ছিলেন কে?
উত্তর : ওহফরধহ ঘধঃরড়হধষ অৎসু (ওঘঅ)-এর নেতৃত্বে ছিলেন নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু।
প্রশ্ন \ ১৮ \ স্বরাজ পার্টির সম্পাদক কে ছিলেন?
উত্তর : স্বরাজ পার্টির সম্পাদক ছিলেন মতিলাল নেহেরু।
প্রশ্ন \ ১৯ \ কোন নারী বিপ্লবী বাংলার সমস্ত বিপ্লবী আন্দোলনের ইতিহাসে কিংবদন্তি হয়ে আছেন?
উত্তর : নারী বিপ্লবী প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার বাংলার সমস্ত বিপ্লবী আন্দোলনের ইতিহাসে কিংবদন্তি হয়ে আছেন।
প্রশ্ন \ ২০ \ স্বরাজ পার্টি গঠিত হয় কার সমর্থনে?
উত্তর : কংগ্রেসের এক অংশের সমর্থনে স্বরাজ পার্টি গঠিত হয়।
প্রশ্ন \ ২১ \ স্বরাজ পার্টির সভাপতি কে ছিলেন?
উত্তর : সি.আর. দাস স্বরাজ পার্টির সভাপতি ছিলেন।
প্রশ্ন \ ২২ \ কত খ্রিষ্টাব্দে সূর্যসেন গ্রেফতার হন?
উত্তর : ১৯৩৩ খ্রিষ্টাব্দে সূর্যসেন গ্রেফতার হন।
প্রশ্ন \ ২৩ \ কোন বিপ্লবীর পরিকল্পনায় লর্ড হার্ডিংকে হত্যার জন্য বোমা হামলা চালানো হয়?
উত্তর : বিপ্লবী রাসবিহারী বসুর পরিকল্পনায় লর্ড হার্ডিংকে হত্যার জন্য বোমা হামলা চালানো হয়।
প্রশ্ন \ ২৪ \ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মানি কাকে সমর্থন করে?
উত্তর : দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মানি জাপানকে সমর্থন করে।

 অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর 
প্রশ্ন \ ১ \ ভারতের প্রথম স্বাধীনতা সংগ্রামের পটভ‚মি কী?
উত্তর : পলাশী যুদ্ধের একশ বছর পর ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলে প্রধানত সিপাহীদের নেতৃত্বে যে ব্যাপক সশস্ত্র বিদ্রোহ সংঘটিত হয়, তাকেই ভারতের প্রথম স্বাধীনতা সংগ্রাম বলা হয়। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির দীর্ঘ সময় ধরে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিকভাবে চরম শোষণ, সামাজিকভাবে হেয় করা, ধর্মীয় অনুভ‚তিতে আঘাত, সর্বোপরি ভারতীয় সৈনিকদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ-এসবই মহাবিদ্রোহ বা প্রথম স্বাধীনতা সংগ্রামের পটভ‚মি রচনা করেছে।
প্রশ্ন \ ২ \ ১৮৫৭ খ্রিষ্টাব্দের ভারত স্বাধীনতা আন্দোলনের অর্থনৈতিক কারণ কী ছিল?
উত্তর : ইস্টইন্ডিয়া কোম্পানির শাসন প্রতিষ্ঠার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় চরম অর্থনৈতিক শোষণ বঞ্চনা। দরিদ্র কৃষকদের ওপর অতিরিক্ত কর ধার্য করার ফলে এবং জমিদার ও রাজস্ব আদায়কারীদের তীব্র শোষণের শিকার কৃষক মহাজনদের কাছে ঋণগ্রস্ত হয়ে সর্বস্বান্ত হয়ে পড়ে। এরপর ছিল কৃষকদের ওপর নানা অত্যাচার।
একদিকে বাজার দখলের নামে স্থানীয় শিল্প ধ্বংস, অপর দিকে অতিরিক্ত অর্থ লাভের আশায় জমি বন্দোবস্তের নামে কৃষি ধ্বংস হয়। ফলে বাংলার অর্থনৈতিক কাঠামো সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে যায়। এ অবস্থার শিকার সাধারণ মানুষ কোম্পানি শাসন-শোষণের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী হয়ে ওঠে। যার ফলাফল ১৮৫৭ খ্রিষ্টাব্দের ভারত স্বাধীনতা আন্দোলন।
প্রশ্ন \ ৩ \ ১৮৫৭ খ্রিষ্টাব্দের ভারত স্বাধীনতা আন্দোলনের সামরিক কারণ ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : সামরিক বাহিনীতে ইংরেজ ও ভারতীয় সৈন্যদের মধ্যকার বৈষম্য ১৮৫৭ খ্রিষ্টাব্দের ভারত স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম কারণ। ইংরেজ সৈন্য ও ভারতীয় সিপাহিদের মধ্যে পদবি, বেতন-ভাতার মধ্যে বিরাট বৈষম্য ছিল। ভারতীয়দের সুযোগ-সুবিধাও কম ছিল। তাছাড়া পদোন্নতির সুযোগ থেকেও তারা বঞ্চিত ছিল। তার ওপর ব্রিটিশ অফিসারদের পক্ষপাতিত্ব, ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ সিপাহিদের মধ্যে বিদ্রোহের আগুন জ্বলে দেয়।
তাছাড়া হিন্দু-মুসলমান উভয় স¤প্রদায়ের সিপাহিদের ব্যবহারের জন্য ‘এনফিল্ড’ রাইফেলের প্রচলন করা হয়। এই রাইফেলের টোটা দাঁত দিয়ে কেটে বন্দুকে প্রবেশ করাতে হতো। সৈন্যদের মধ্যে ব্যাপকভাবে এ গুজব ছড়িয়ে পড়ল যে, এই টোটায় গরু ও শূকরের চর্বি মিশ্রিত আছে। ফলে উভয়ই ধর্মনাশের কথা ভেবে বিদ্রোহী হয়ে উঠল।
প্রশ্ন \ ৪ \ ভারতের প্রথম স্বাধীনতা সংগ্রামের গুরত্ব ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : ভারতের প্রথম স্বাধীনতা সংগ্রামের গুরুত্ব ইতিহাসে অনেক বেশি। এর ফলে কোম্পানি শাসনের অবসান হয়। ব্রিটিশ সরকার ভারতের শাসনভার নিজ হাতে গ্রহণ করেন। ১৮৫৮ খ্রিষ্টাব্দে ১ নভেম্বরে মহারানি ভিক্টোরিয়ার ঘোষণাপত্রে স্বত্ববিলোপ নীতি এবং এর সঙ্গে যুক্ত অন্যান্য নিয়ম বাতিল করা হয়। তাছাড়া এই ঘোষণাপত্রে যোগ্যতা অনুযায়ী ভারতীয়দের চাকরি প্রদান এবং ধর্মীয় স্বাধীনতার নিশ্চয়তাসহ যুদ্ধে অংশগ্রহণকারীদের প্রতি ক্ষমা ঘোষণা করা হয়।
দ্বিতীয় বাহাদুর শাহকে রেঙ্গুনে নির্বাসিত করা হয়। এই বিদ্রোহের সুদূরপ্রসারি গুরুত্ব হচ্ছে এই বিদ্রোহের ক্ষোভ থেমে যায়নি। এই সংগ্রামের পরিপ্রেক্ষিতে জনগণ সচেতন হয়ে ওঠে এবং নানা আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে ইংরেজ শাসনের অবসান ঘটায়।
প্রশ্ন \ ৫ \ বঙ্গভঙ্গের পটভ‚মি ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : ভারতের বড়লাট লর্ড কার্জন ১৯০৫ খ্রিষ্টাব্দের ১৬ অক্টোবর বাংলা ভাগ করেন। এই বিভক্তি ইতিহাসে বঙ্গভঙ্গ নামে পরিচিত। বঙ্গভঙ্গের এই পরিকল্পনা অনেক আগে থেকেই শুরু হয়েছিল। বাংলা প্রেসিডেন্সির আয়তন অনেক বড় হওয়ার কারণে ১৮৫৩ থেকে ১৯০৩ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত এর সীমানা পুনর্বিন্যাসের অনেক প্রস্তাব ব্রিটিশ সরকারি মহলে উপস্থাপন করা হয়। প্রকৃতপক্ষে ১৯০৩ খ্রিষ্টাব্দে বঙ্গভঙ্গের পরিকল্পনা গৃহীত হয়। ১৯০৪ খ্রিষ্টাব্দে ভারত সচিব এটি অনুমোদন করেন এবং ১৯০৫ খ্রিষ্টাব্দের জুলাই মাসে বঙ্গভঙ্গের পরিকল্পনা প্রকাশিত হয়। এই বছর অক্টোবর পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হয়।
প্রশ্ন \ ৬ \ বঙ্গভঙ্গের প্রশাসনিক কারণ কী ছিল?
উত্তর : লর্ড কার্জনের শাসনামলে বঙ্গভঙ্গ ছিল একটি প্রশাসনিক সংস্কার। উপমহাদেশের এক-তৃতীয়াংশ লোকের বসবাস ছিল বাংলা প্রেসিডেন্সিতে। কলকাতা থেকে পূর্বাঞ্চলের আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও শাসনকার্য সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করা ছিল কঠিন কাজ। যে কারণে লর্ড কার্জন এত বড় অঞ্চলে একটি মাত্র প্রশাসনিক ইউনিটে রাখা যুক্তিসংগত মনে করেননি। তাই ১৯০৩ খ্রিষ্টাব্দে বাংলা প্রদেশকে দুভাগ করার পরিকল্পনা করেন এবং ১৯০৫ খ্রিষ্টাব্দে তা কার্যকর হয়।
প্রশ্ন \ ৭ \ বঙ্গভঙ্গের রাজনৈতিক কারণ কী ছিল?
উত্তর : লর্ড কার্জন শুধু শাসন-সুবিধার জন্য বা পূর্ব বাংলার জনগণের কল্যাণের কথা বিবেচনা করে বঙ্গভঙ্গ করেননি। এর পেছনে ব্রিটিশ প্রশাসনের সুদূরপ্রসারী রাজনৈতিক স্বার্থও জড়িত ছিল। লর্ড কার্জন বাংলার রাজনৈতিক সচেতনতা সম্পর্কে সতর্ক ছিলেন। বাঙালি মধ্যবিত্ত বুদ্ধিজীবী শ্রেণি ক্রমশ জাতীয়তাবাদ ও রাজনীতি সচেতন হয়ে উঠেছিল। বিষয়টি তার দৃষ্টি এড়ায়নি। কংগ্রেস নেতারা কলকাতা থেকেই সারা ভারতের আন্দোলনের নেতৃত্ব দিতেন। তাছাড়া হিন্দু ও মুসলমান সম্মিলিত শক্তি, ঐক্যবদ্ধ বাংলা ছিল ব্রিটিশ প্রশাসনের জন্য বিপজ্জনক। ফলে বাংলা ভাগ করে একদিকে বাঙালির শক্তিকে দুর্বল করা হলো, অপরদিকে পূর্ব বাংলার উন্নয়নের নামে মুসলমান স¤প্রদায়কে খুশি করা হলো। এভাবেই কার্জন ‘বিভেদ ও শাসন’ নীতি প্রয়োগ করে যতটা না পূর্ব বাংলার কল্যাণে, তার চেয়ে বেশি ব্রিটিশ ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার স্বার্থে বাংলা ভাগ করেন। এভাবে কৌশলে ভারতীয় জাতীয় ঐক্যকে দুর্বল করার ব্যবস্থা করা হলো।
প্রশ্ন \ ৮ \ খিলাফত ও অসহযোগ আন্দোলন কী?
উত্তর : হিন্দু ও মুসলমানের মিলিত সংগ্রাম হিসেবে উপমহাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে খিলাফত ও অসহযোগ আন্দোলন এক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। আন্দোলন দুটি ছিল ইংরেজ শাসনের বিরুদ্ধে প্রথম ব্যাপক ও জাতীয়ভিত্তিক সর্বভারতীয় আন্দোলন। হিন্দু-মুসলমানের এই ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের ভিত কাঁপিয়ে দেয়। তুরস্কের খলিফার মর্যাদা ও তুরস্কের অখণ্ডতা রক্ষার জন্য ভারতীয় মুসলিম সমাজ এই আন্দোলন গড়ে তোলে। অপরদিকে অসহযোগ আন্দোলনের উদ্দেশ্য ছিল ভারতের জন্য স্বরাজ অর্জন।
প্রশ্ন \ ৯ \ খিলাফত আন্দোলনের কারণ কী ছিল?
উত্তর : ভারতের মুসলমানেরা তুরস্কের সুলতানকে মুসলিম বিশ্বের খলিফা বা ধর্মীয় নেতা বলে শ্রদ্ধা করতেন। কিন্তু তুরস্কের সুলতান ব্রিটিশবিরোধী শক্তি জার্মানির পক্ষ অবলম্বন করলে ভারতের মুসলমান স¤প্রদায় বিব্রত হন। কারণ ধর্মীয় কারণে তারা খলিফার অনুগত, আবার অন্যদিকে রাজনৈতিক কারণে ব্রিটিশ সরকারের অনুগত থাকতে বাধ্য। নিজ দেশের সরকার হিসেবে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ভারতীয় মুসলমানরা ব্রিটিশ সরকারকেই সমর্থন দিয়েছে। তবে শর্ত ছিল যে এই সমর্থনের পরিপ্রেক্ষিতে ব্রিটিশ সরকার তুরস্কের খলিফার কোনো ক্ষতি করবে না। কিন্তু যুদ্ধে জার্মানি হেরে গেলে তুরস্কের ভাগ্যবিপর্যয় ঘটে। যুদ্ধ শেষে জার্মানির পক্ষে যোগদানের জন্য ১৯২০ খ্রিষ্টাব্দের সেভার্সের চুক্তি অনুযায়ী শাস্তিস্বরূপ তুরস্ককে খণ্ড-বিখণ্ডিত করার পরিকল্পনা করা হয়। এতে ভারতীয় মুসলমানরা মর্মাহত হয় এবং ভারতীয় মুসলমানরা খলিফার মর্যাদা এবং তুরস্কের অখণ্ডতা রক্ষার জন্য তুমুল আন্দোলন গড়ে তোলে, যা ইতিহাসে খিলাফত আন্দোলন নামে খ্যাত।
প্রশ্ন \ ১০ \ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নাইট উপাধি বর্জন করেন কেন?
উত্তর : ১৯১৯ খ্রিষ্টাব্দে ১৩ এপ্রিল পাঞ্জাবের অমৃতসরে এক সভায় জেনারেল ডায়ারের নির্দেশে বহু নিরস্ত্র মানুষকে হত্যা করা হয়। ইতিহাসে এই নারকীয় হত্যাযজ্ঞের ঘটনা ‘জালিয়ানওয়ালাবাগের হত্যাকাণ্ড’ নামে পরিচিত। এই হত্যাকাণ্ডের তদন্তের জন্য কংগ্রেস বিশিষ্ট নেতৃবৃন্দকে নিয়ে এক তদন্ত কমিটি গঠন করে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে ‘নাইট উপাধি বর্জন করেন।
প্রশ্ন \ ১১ \ লাহোর প্রস্তাবের পরিণতি ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : লাহোর প্রস্তাবের প্রতি কংগ্রেস নেতাদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। পণ্ডিত জওহরলাল নেহেরু এই প্রস্তাবের তীব্র নিন্দা করেন এবং মুসলমানদের জন্য স্বাধীন স্বতন্ত্র আবাসভ‚মি অসম্ভব বলে উল্লেখ করেন। তবে ঐতিহাসিক সত্য এই যে লাহোর প্রস্তাবের পর থেকে মুসলমান স¤প্রদায় নিজস্ব আলাদা রাষ্ট্রের স্বপ্ন দেখতে থাকে। এই প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের রাজনৈতিক শাসনতান্ত্রিক আন্দোলনে এক নতুন ধারার জন্ম হয়। দ্বিজাতি তত্তে¡র মাধ্যমে মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ মুসলমানদের আলাদা জাতি হিসেবে চিহ্নিত করতে থাকেন। সে অনুযায়ী মুসলমানদের জন্য ভিন্ন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা শুধু সময়ের ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। এরপর থেকে মুসলিম লীগ এবং জিন্নাহর রাজনীতি স্বতন্ত্র রাষ্ট্র গঠন প্রক্রিয়ার দিকে ধাবিত হতে থাকে; যার শেষ পরিণতি ছিল ১৯৪৭ সালের আগস্ট মাসের দেশ বিভাগ। দ্বিজাতি তত্তে¡র বাস্তব পরিণতিতে ১৪ আগস্ট পাকিস্তান এবং ১৫ আগস্ট ভারত নামে দুটি রাষ্ট্রের জন্ম হয়।
প্রশ্ন \ ১২ \ লাহোর প্রস্তাবের প্রধান ধারাসমূহ কী ছিল?
উত্তর : লাহোর প্রস্তাবের প্রধান ধারাসমূহ নিচে দেওয়া হলো –
ক. ভারতের উত্তর-পশ্চিম এবং পূর্ব ভ‚ভাগের মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চলগুলোকে নিয়ে স্বাধীন রাষ্ট্রসমূহ গঠন করতে হবে।
খ. এসব স্বাধীন রাষ্ট্রের সংশ্লিষ্ট অঙ্গ রাষ্ট্রগুলো স্বায়ত্তশাসিত ও সার্বভৌম হবে।
গ. সংখ্যালঘু স¤প্রদায়গুলোর সাথে পরামর্শ করে তাদের সব অধিকার এবং স্বার্থরক্ষার জন্য সংবিধানে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রাখতে হবে।
ঘ. প্রতিরক্ষা, পররাষ্ট্র, যোগাযোগ ইত্যাদি বিষয়ে ক্ষমতা সংশ্লিষ্ট অঙ্গ রাজ্যগুলোর হাতে ন্যস্ত থাকবে।
প্রশ্ন \ ১৩ \ বসু-সোহরাওয়ার্দী স্বাক্ষরিত চুক্তিটি সংক্ষিপ্ত আকারে উল্লেখ কর।
উত্তর : বসু-সোহরাওয়ার্দী স্বাক্ষরিত চুক্তিটি উল্লেখ করা হলো :
১. বাংলা হবে স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র। ভারতের বাকি অংশের সঙ্গে ও রাষ্ট্রের সম্পর্ক কী হবে- তা সে নিজেই ঠিক করবে।
২. হিন্দু ও মুসলমানের সংখ্যা অনুপাতে আসনসংখ্যা বণ্টন করে প্রাপ্তবয়স্কদের ভোটাধিকারের ভিত্তিতে আইন সভায় নির্বাচনের ব্যবস্থা থাকবে।
৩. স্বাধীন বাংলা প্রস্তাব গৃহীত হলে বাংলার বর্তমান মন্ত্রিসভা ভেঙে দেয়া হবে। পরিবর্তে অন্তর্বর্তীকালীন মন্ত্রিসভা গঠন করা হবে। উক্ত মন্ত্রিসভায় প্রধানমন্ত্রীর পদ ছাড়া বাকি সদস্যপদ হিন্দু ও মুসলমান স¤প্রদায়ের মধ্যে সমানভাবে বণ্টন করা হবে।
৪. সামরিক ও পুলিশ বাহিনীসহ সকল চাকরিতে হিন্দু ও মুসলমানের সংখ্যা সমান থাকবে। এসব চাকরিতে শুধু বাঙালিদের নিয়োগ দেয়া হবে।
৫. সংবিধান প্রণয়নের জন্য ৩০ সদস্যবিশিষ্ট গণপরিষদ থাকবে। এর মধ্যে ১৬ জন মুসলমান ও ১৪ জন হিন্দু সদস্য থাকবেন।
প্রশ্ন \ ১৪ \ ক্যাবিনেট মিশনের প্রস্তাবিত পরিকল্পনার তিনটি স্তর কী ছিল?
উত্তর : ক্যাবিনেট মিশনের প্রস্তাবিত পরিকল্পনার যে তিনটি স্তর ছিল তা নিচে দেওয়া হলো :
১. কেন্দ্রে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা।
২. ব্রিটিশ ভারত ও দেশীয় রাজ্যগুলোকে নিয়ে একটি স্বায়ত্তশাসিত ভারত ইউনিয়ন গঠন করা।
৩. হিন্দুপ্রধান গ্রæপ, মুসলমানপ্রধান গ্রæপ এবং বাংলা ও আসাম গ্রæপ- এ তিন ভাগে প্রদেশগুলোকে ভাগ করা এবং প্রত্যেক গ্রæপের জন্য একটি গণপরিষদ গঠন করা। তবে শর্ত দেওয়া হয় যে এ পরিকল্পনা গ্রহণ করলে সার্বিকভাবে করতে হবে। এর অংশবিশেষ গ্রহণ করা যাবে না।

 

Leave a Reply