বঙ্গভূমির প্রতি
নাম মাইকেল মধুসূদন দত্ত।
জন্ম পরিচয় জন্ম তারিখ : ২৫শে জানুয়ারি, ১৮২৪ খ্রিষ্টাব্দ; জন্মস্থান : যশোর জেলার কেশবপুর থানাধীন সাগরদাঁড়ি গ্রাম।
পিতৃ ও মাতৃপরিচয় পিতার নাম : রাজনারায়ণ দত্ত; মাতার নাম : জাহ্নবী দেবী।
শিক্ষাজীবন প্রথমে তিনি মায়ের তত্ত¡াবধানে সাগরদাঁড়ির পাঠশালায় পড়াশোনা করেন। এরপর সাত বছর বয়সে কলকাতার খিদিরপুর স্কুলে দু বছর পড়ার পর কলকাতার লালবাজার গ্রামার স্কুলে ভর্তি হন। এরপর হিন্দু কলেজ এবং পরবর্তীতে বিশপস কলেজে ভর্তি হন। তিনি ব্যারিস্টারি পড়ার জন্য বিলেতে গিয়েছিলেন।
কর্মজীবন/পেশা প্রথম জীবনে আইন পেশায় জড়িত হলেও লেখালেখি করেই জীবিকা নির্বাহ করেন।
সাহিত্য সাধনা কাব্য : তিলোত্তমাসম্ভব, মেঘনাদবধ, ব্রজাঙ্গনা, চতুর্দশপদী কবিতাবলি। তাছাড়া ‘ঞযব ঈধঢ়ঃরাব খধফরব’ ও ‘ঠরংরড়হং ড়ভ ঃযব চধংঃ’ তার দুটি ইংরেজি কাব্যগ্রন্থ। পত্রকাব্য : বীরাঙ্গনা। নাটক : শর্মিষ্ঠা, পদ্মাবতী, কৃষ্ণকুমারী, মায়াকানন। প্রহসন : একেই কি বলে সভ্যতা, বুড় সালিকের ঘাড়ে রোঁ। ইংরেজি নাটক ও নাট্যানুবাদ : রিজিয়া, রতœাবলি, নীলদর্পণ। গদ্য অনুবাদ : হেক্টর বধ।
জীবনাবসান মৃত্যু তারিখ : ২৯শে জুন, ১৮৭৩ খ্র্ষ্টিাব্দ; সমাধিস্থান : কলকাতার লোয়ার সার্কুলার রোড।
১. ‘মক্ষিকা’র সমার্থক শব্দ কোনটি?
ক মৌমাছি মাছি গ বোলতা ঘ ফড়িং
২. নরকুলে ধন্য কে?
ক ক্ষমতাবান ব্যক্তি খ দীর্ঘজীবী মানুষ
যিনি কীর্তিমান ঘ মন্দিরের সেবক
নিচের কবিতাংশ পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
ক. ওমা তোমার চরণ দুটি বক্ষে আমার ধরি,
আমার এই দেশেতে জন্ম- যেন এই দেশেতে মরি।
খ. রেখো, মা, দাসেরে মনে, এ মিনতি করি পদে।
৩. কবিতাংশ দুটিতে প্রকাশিত হয়েছেÑ
র. দৃঢ় বিশ্বাস রর. সুচিন্তিত সিদ্ধান্ত
ররর. গভীর আকুলতা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৪. কবিতাংশ দুটিতে সম্বোধিত ‘মা’ কে?
ক কবির মা জননী জন্মভ‚মি
গ কোনো এক মা ঘ সকল মা
৫. ‘মানস’ শব্দের অর্থ কী?
ক সরোবর মন গ মস্তিষ্ক ঘ মধু
৬. এই কথাটি মনে রেখ
আমি যে গান গেয়েছিলাম
শুকনো পাতা ঝরার বেলায়।”
উদ্দীপকের ভাবার্থ কোন কবিতার সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ?
ক দুই বিঘা জমি খ আবার আসিব ফিরে
বঙ্গভ‚মির প্রতি ঘ নদীর স্বপ্ন
৭. ‘মধুহীন করো না গো’Ñএই চরণে প্রকাশ পেয়েছেÑ
র. প্রণতি রর. আত্মনিবেদন ররর. একাগ্রতা
নিচের কোনটি সঠিক?
র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৮. “ছিলে দেবী হলে দাসী” কবি এখানে জন্মভ‚মি কী হারানোর কথা বুঝিয়েছেন?
ক স্বাধীনতা খ সৌন্দর্য মমতা ঘ ঐশ্বর্য
৯. সেই ধন্য নরকুলে, পরের চরণটি কোনটি?
ক কিন্তু যদি বাম মনে খ প্রবাসে দৈবের বশে
গ পড়িলে অমৃত হৃদে লোকে যারে নাহি ভুলে
১০. তবে যদি দয়া করÑএখানে কার কাছে ‘দয়া’ চাওয়া হয়েছে?
ক মক্ষিকা খ অমৃত হ্রদ বঙ্গভ‚মি ঘ বিদেশে
১১. ‘কৃষ্ণকুমারী’ মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত কী জাতীয় গ্রন্থ?
ক উপন্যাস নাটক গ কাব্য ঘ গল্প
নিচের উদ্দীপকটি পড়ে ১২ ও ১৩ নম্বর প্রশ্নের উত্তর দাও :
বহু দেশে দেখিয়াছি বহু নদ-দলে,
কিন্তু এ স্নেহের তৃষ্ণা মিটে কার জলে?
১২. উদ্দীপকের ভাবের সাথে তোমার পঠিত কোন কবিতার মিল পাওয়া যায়?
বঙ্গভ‚মির প্রতি খ দুই বিঘা জমি
গ নদীর স্বপ্ন ঘ আবার আসিব ফিরে
১৩. উল্লিখিত দিকটি নিচের কোন চরণে ফুটে উঠেছে?
ক আমি তোর লাগি ফিরেছি বিবাগি
খ পায়ে পড়ি মাঝি সাথে নিয়ে চলো
মধুহীন করো না গো তব মনঃ কোকনদে
ঘ আবার আসিব ফিরে ধানসিঁড়িটির তীরে
১৪. কোনটি মাইকেল মধুসূদন দত্তের পত্রকাব্য?
ক পদ্মাবতী খ শর্মিষ্ঠা বীরাঙ্গনা ঘ কৃষ্ণকুমারী
১৫. ‘এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি’ Ñচরণের কবি ভাবনার পরিচয় রয়েছে কোন কবিতায়?
ক নারী খ মানবধর্ম বঙ্গভ‚মির প্রতি ঘ প্রার্থী
১৬. ‘রেখো, মা দাসেরে মনে’এ পঙ্ক্তিতে প্রকাশ পেয়েছে মাইকেল মধুসূদন দত্তের
ক স্মৃতিকাতরতা খ প্রকৃতিপ্রীতি
স্বদেশপ্রেম ঘ মহত্ত¡
নিচের উদ্দীপকটি পড়ে ১৭ ও ১৮নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
সোহান আদরের ছেলে। মায়ের সাথে ঝগড়া করে অভিমানে বাড়ি ছেড়ে চলে যায়। মাসখানেক পর সোহান নিজের ভুল বুঝতে পেরে আবার বাড়িতে ফিরে এলে তাঁর মা তাকে আপন করে নেয়।
১৭. সোহানের দৃষ্টিভঙ্গির সাথে ‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতার কোন ভাবটি সাদৃশ্যপূর্ণ?
ক ভাষাপ্রেম খ প্রকৃতপ্রেম গ মানবপ্রেম দেশপ্রেম
১৮. উপরের অনুচ্ছেদে ‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতার যে দিকটি ফুটে উঠেছে
র. মায়ের প্রতি ভালোবাসা রর. মায়ের ক্ষমাশীলতা
ররর. মায়ের সাথে ঝগড়া
নিচের কোনটি সঠিক?
র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
সাধারণ বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
কবি-পরিচিতি //
১৯. বাংলা সাহিত্যের প্রথম প্রথাবিরোধী লেখক কে? (জ্ঞান)
ক কাজী নজরুল ইসলাম মাইকেল মধুসূদন দত্ত
গ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ঘ সুকুমার রায়
২০. মাইকেল মধুসূদন দত্ত বিলেত গিয়ে কোন ধর্ম গ্রহণ করেন? (জ্ঞান)
ক জৈন খ ইসলাম খ্রিষ্ট ঘ বৌদ্ধ
২১. বাংলা ভাষার প্রথম মহাকাব্যের নাম কী? (জ্ঞান)
মেঘনাদবধ কাব্য খ মহাশ্মশান
গ বীরাঙ্গনা ঘ একেই কি বলে সভ্যতা
২২. মাইকেল মধুসূদন দত্তের নাটক কোনটি? (জ্ঞান)
ক মৃত্যুক্ষুধা খ অয়োময় কৃষ্ণকুমারী ঘ কবর
২৩. মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত প্রহসন কোনটি? (জ্ঞান)
একেই কি বলে সভ্যতা খ গোপাল ভাঁড়
গ গোবর গণেশ ঘ নীলদর্পণ
২৪. বাংলা সাহিত্যে সনেটের প্রবর্তক কে? (জ্ঞান)
ক জসীমউদ্দীন খ জীবনানন্দ দাস
গ সুকুমার রায় মাইকেল মধুসূদন দত্ত
২৫. মহাকাব্য, গীতিকাব্য, সনেট, পত্রকাব্য, নাটক ও প্রহসন রচনা করে কে চিরস্মরণীয় হয়ে আছেন? (জ্ঞান)
ক সুকান্ত ভট্টাচার্য খ জীবনানন্দ দাস
গ কাজী নজরুল ইসলাম মাইকেল মধুসূদন দত্ত
২৬. মাইকেল মধুসূদন দত্ত কত খ্রিষ্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন? (জ্ঞান)
ক ১৮১০ খ ১৮১৪ ১৮২৪ ঘ ১৮৩০
২৭. মাইকেল মধুসূদন দত্ত কত খ্রিষ্টাব্দে মৃত্যুবরণ করেন? (জ্ঞান)
ক ১৮১৮ খ ১৮৭০ ১৮৭৩ ঘ ১৮৮০
২৮. মাইকেল মধুসূদন দত্ত কোথায় মৃত্যুবরণ করেন? (জ্ঞান)
ক লন্ডনে কলকাতায় গ প্যারিসে ঘ ঢাকায়
২৯. মধুসূদন দত্ত জন্মগ্রহণ করেন কোন জেলায়? (জ্ঞান)
ক বরিশাল খ ফরিদপুর যশোর ঘ নড়াইল
৩০. মধুসূদন দত্ত জন্মগ্রহণ করেন কোন গ্রামে? (জ্ঞান)
ক শ্যামলপুর খ মণিরামপুর সাগরদাঁড়ি ঘ শার্শা
৩১. সুশীল লন্ডনে গিয়ে সুবিধার জন্য হিন্দুধর্ম ত্যাগ করে খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ করেন। এদিক দিয়ে সুশীলের সঙ্গে কোন কবির সাদৃশ্যপূর্ণ? (প্রয়োগ)
ক দ্বিজেন্দ্রলাল রায় খ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
মাইকেল মধুসূদন দত্ত ঘ বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
৩২. ‘বুড় সালিকের ঘাড়ে রোঁ’ প্রহসনটি কে রচনা করেছেন? (জ্ঞান)
ক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর খ কাজী নজরুল ইসলাম
গ দীনবন্ধু মিত্র মাইকেল মধুসূদন দত্ত
৩৩. কবি কীসের বর চেয়েছেন? (জ্ঞান)
অমরতার খ মৃত্যুর গ সম্পদের ঘ পুত্রের
মূলপাঠ //
৩৪. ‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতায় ‘খেদ’ শব্দটি কী অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে? (জ্ঞান)
ক বিক্ষোভ আক্ষেপ গ আনন্দ ঘ প্রার্থনা
৩৫. ‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতায় দেশমাতৃকার কাছে কবি কী প্রার্থনা করেছেন? (জ্ঞান)
দয়া খ ধর্ম গ জীবন ঘ মৃত্যু
৩৬. কবি কোথায় ফুটতে চেয়েছেন? (জ্ঞান)
ক স্মৃতির পাতায় স্মৃতি-জলে গ স্মৃতি-নদে ঘ পুকুরে
৩৭. ‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতানুসারে অমৃত-হ্রদে কে পড়লেও গলে না? (জ্ঞান)
ক মশা খ মৌমাছি মক্ষিকা ঘ পিঁপড়া
৩৮. কবি ‘বঙ্গভ‚মি’ বলতে কোন দেশকে বুঝিয়েছেন? (অনুধাবন)
বাংলাদেশ খ কলকাতা গ পশ্চিমবঙ্গ ঘ ভারত
৩৯. ‘ফুটি যেন স্মৃতিজলে’ এখানে ‘স্মৃতি-জলে’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে? (অনুধাবন)
স্বদেশের স্মৃতিতে অ¤øান থাকা খ স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করা
গ প্রবাসে লালপদ্মের সমারহ ঘ পদ্মফুল সব ভালোবাসে
৪০. রেখো, মা, দাসেরে মনে, এখানে দাস কে? (অনুধাবন)
ক স্বদেশবাসী কবি গ সবাই ঘ প্রবাসী
৪১. কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত জন্মভ‚মি মায়ের কাছে কী মিনতি করেন? (জ্ঞান)
ক তাকে খাদ্য দিতে তাকে মনে রাখতে
গ তাকে শক্তি দিতে ঘ তাকে সাহস দিতে
৪২. ‘চিরস্থির কবে নীর, হায় রে, জীবন-নদে, চরণটিতে জীবনের কোন সত্য প্রকাশিত হয়েছে? (উচ্চতর দক্ষতা)
অস্থায়িত্ব খ গতিশীলতা গ স্থায়িত্ব ঘ উদাসীনতা
৪৩. ‘দৈবের বশে’ শব্দটি কী অর্থে ‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতায় ব্যবহৃত হয়েছে? (অনুধাবন)
ভাগ্যক্রমে খ অলৌকিকভাবে গ হঠাৎ করে ঘ ভাগ্যবিপর্যয়
৪৪. ‘নাহি, মা, ডরি শমনে’; এখানে কবি কাকে ভয় পান না? (অনুধাবন)
ক শত্রæকে মৃত্যুর দেবতাকে
গ ভক্তদের ঘ অন্য কবিদের
৪৫. কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত ‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতায় নিজেকে গুণহীন বলে উল্লেখ করেছেন। এর মাধ্যমে তার কোন দিকটি প্রকাশ পেয়েছে? (উচ্চতর দক্ষতা)
বিনয় খ অপারগতা গ সততা ঘ সদ্ভাব
৪৬. ‘জীব-তারা যদি খসে’- বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন? (অনুধাবন)
জীবনাবসান হওয়া খ কবি হওয়া
গ খ্যাতিমান হওয়া ঘ কবিত্ব হ্রাস পাওয়া
৪৭. ‘জীবন-নদ’ বলে কবি কী নির্দেশ করেছেন? (অনুধাবন)
সমগ্র জীবনকে খ কবিতাকে
গ সাহিত্যকর্মকে ঘ কবিকে
৪৮. ‘যাচিব যে তব কাছে’ এখানে ‘যাচিব’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে? (উচ্চতর দক্ষতা)
ক যাচাই করব খ উপস্থাপন করব প্রার্থনা করব ঘ ভালোবাসব
৪৯. ‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতায় প্রকাশ পেয়েছে কোনটি? (উচ্চতর দক্ষতা)
ক স্বদেশের জন্য অহংকার খ স্বদেশের প্রকৃতি বর্ণনা
স্বদেশের প্রতি প্রগাঢ় শ্রদ্ধা ঘ স্বদেশের ঐতিহ্যপ্রীতি
৫০. ‘সেই ধন্য নরকুলে,
লোকে যারে নাহি ভুলে’ পঙ্ক্তিদ্বয়ের মর্মার্থ কী? (উচ্চতর দক্ষতা)
ক স্বদেশের প্রতি শ্রদ্ধা
চিরদিন মানুষ যাকে স্মরণ করে সে সফল
গ মহৎ গুণ মানুষের হৃদয়ে চিহ্ন এঁকে যায়
ঘ জীবপ্রেম সফলতার সোপান
৫১. ‘সাধিতে মনের সাধ ঘটে যদি পরমাদ’ এখানে ‘পরমাদ’ শব্দের অর্থ কী? (জ্ঞান)
ক পরনিন্দ ভুলভ্রান্তি গ বিষাদ ঘ পরমতত্ত¡
৫২. ‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতায় ঝ দেহকে কীসের সাথে তুলনা করা হয়েছে? (জ্ঞান)
আকাশ খ মাটি গ পানি ঘ নদী
৫৩. কবি ‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতায় স্বদেশকে কী যে নামে ডেকেছেন? (অনুধাবন)
ক স্বদেশ মা গ বাবা ঘ নারী
৫৪. ‘মরিতে চাহি না আমি সুন্দর ভুবনে
মানবের মাঝে আমি বাঁচিবারে চাই’এর মর্মার্থের সাথে ‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতার কোন চরণটি অমিল প্রকাশ করে? (প্রয়োগ)
ক যাচিব যে তব কাছে জন্মিলে মরিতে হবে
গ ঘরে যদি পরমাদ ঘ তবে যদি দয়া কর
৫৫. অমৃত হ্রদে পড়লে কী গলে না? (জ্ঞান)
ক পিঁপড়া মাছি গ তেলাপোকা ঘ কেঁচো
শব্দার্থ ও টীকা //
৫৬. ‘কোকনদ’ বলতে কী বোঝ? (অনুধাবন)
লাল পদ্ম খ নীল পদ্ম গ গোলাপ ঘ রজনীগন্ধা
৫৭. ‘নীর’ শব্দের অর্থ কী? (জ্ঞান)
পানি খ ঘর গ আবাস ঘ জমি
৫৮. ‘মানস’ অর্থ কী? (জ্ঞান)
ক নদী খ পুকুর গ সাগর মন
৫৯. ‘শমন’ শব্ দটির অর্থ কী? (জ্ঞান)
ক মৃত্যুকামনা খ মৃত্যুর খবর গ মৃত্যুভয় ঘ মৃত্যুর দেবতা
৬০. ‘বর’ শব্দের অর্থ কী? (জ্ঞান)
ক অভিশাপ খ ধন্যবাদ গ আত্মীয় আশীর্বাদ
পাঠ-পরিচিতি //
৬১. ‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কী ধরনের কবিতা? (অনুধাবন)
ক পত্রকবিতা গীতিকবিতা
গ দেশাত্মবোধক কবিতা ঘ সনেট
৬২. দেশকে কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত কী হিসেবে কল্পনা করেন? (জ্ঞান)
ক ভগ্নি হিসেবে খ বাবা হিসেবে গ পতœী হিসেবে মা হিসেবে
৬৩. ‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতায় প্রকাশিত মূল বিষয় কী? (উচ্চতর দক্ষতা)
স্বদেশপ্রীতি খ স্বদেশে ফেরা
গ প্রবাসে থাকা ঘ স্বদেশের মুক্তি
৬৪. প্রবাসে থাকা কার কাছে মাইকেল মধুসূদন দত্ত সব দোষ ক্ষমা করার আশা করেছেন? (জ্ঞান)
ক পারিবারিক শিক্ষক খ দেশের জনগণ
দেশমাতৃকা ঘ পিতামহ
৬৫. কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত দেশমাতৃকার স্মৃতিতে কোন ফুলের মতো ফুটে থাকতে চান? (জ্ঞান)
ক শাপলার মতো পদ্মফুলের মতো
গ গোলাপের মতো ঘ সর্ষেফুলের মতো
৬৬. ‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতাটি পাঠের শিক্ষণীয় কী? (উচ্চতর দক্ষতা)
স্বদেশের প্রতি আগ্রহবোধ সৃষ্টি হওয়া
খ স্বদেশের প্রতি আক্ষেপ
গ নিজের প্রতি দায়িত্ববোধ
ঘ নিজের প্রতি আক্ষেপ
৬৭. মানুষের জীবনের মহৎ গুণ ও সৎ কার্যাবলির গুরুত্ব কী? (উচ্চতর দক্ষতা)
এর মাধ্যমে মানুষ স্মরণীয় হয়ে থাকে
খ এর মাধ্যমে মানুষ সম্পদশালী হয়
গ এর মাধ্যমে মানুষ দায়িত্বশীল হয়
ঘ এর মাধ্যমে মানুষ কর্তব্যপরায়ণ হয়
৬৮. মধুসূদন দত্ত ‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতায় নিজেকে কী ভেবেছেন? (জ্ঞান)
ক কবি দেশের সন্তান গ পাপী ঘ পদ্ম
৬৯. ‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতার কবির নাম কী? (জ্ঞান)
ক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর খ কাজী নজরুল ইসলাম
মাইকেল মধুসূদন দত্ত ঘ জসীমউদ্দীন
বহুপদী সমাপ্তিসূচক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
কবি-পরিচিতি //
৭০. মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচনা করেছেন (অনুধাবন)
র. প্রহসন, মহাকাব্য রর. পত্রকাব্য, সনেট
ররর. সাহিত্য সমালোচনা গ্রন্থ
নিচের কোনটি সঠিক?
র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৭১. মাইকেল মধুসূদন দত্ত যে ভাষায় পারদর্শী ছিলেন (অনুধাবন)
র. হিব্রæ, ফরাসি রর. ইটালিয়ান, তামিল
ররর. তেলেগু, ইংরেজি
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর র, রর ও ররর
৭২. মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত নাটক (অনুধাবন)
র. শর্মিষ্ঠা রর. নীলদর্পণ
ররর. পদ্মাবতী
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
মূলপাঠ //
৭৩. কবি ‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতায় নিজেকে যার সঙ্গে তুলনা করেছেনÑ (অনুধাবন)
র. দাস রর. হ্রদ ররর. কোকনদ
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৭৪. ‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতায় যে ঋতুর উল্লেখ আছেÑ (অনুধাবন)
র. বসন্ত রর. শীত
ররর. শরৎ
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৭৫. ‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতায় কবি নিজেকে স্মরণীয় ব্যক্তি হিসেবে অযোগ্য মনে করেছেনÑ (অনুধাবন)
র. মহৎ গুণাবলির অনুপস্থিতির কারণে
রর. মহৎ কার্যাবলি না করার কারণে
ররর. মহৎ ইচ্ছা অপূর্ণ থাকার কারণে
নিচের কোনটি সঠিক?
র খ রর গ র ও রর ঘ রর ও ররর
৭৬. ‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতাটির বৈশিষ্ট্যÑ (অনুধাবন)
র. মাইকেলের জীবনীর প্রয়োগ রর. সাধু ভাষার ব্যবহার
ররর. উপমার চমৎকার প্রয়োগ
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৭৭. মাইকেল মধুসূদন দত্ত ‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতায় বঙ্গমাতার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন। কারণÑ (অনুধাবন)
র. তিনি উচ্চাকাক্সক্ষী হয়ে প্রবাসী হয়েছিলেন
রর. ইংরেজি সাহিত্যে যশ ও খ্যাতি অর্জন করতে চেয়েছিলেন
ররর. স্বদেশ ও ভাষাকে অবজ্ঞা করেছিলেন
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর র, রর ও ররর
৭৮. ‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতায় কবি দেশমাতৃকার কাছে যে আবেদন করেছেন (অনুধাবন)
র. তাকে মনে রাখতে রর. তাকে আশীর্বাদ করতে
ররর. তাকে খ্যাতিমান করতে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর র, রর ও ররর
শব্দার্থ ও টীকা //
৭৯. ‘পরমাদ’ বলতে ‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতায় বোঝানো হয়েছে (অনুধাবন)
র. প্রমাদ রর. মৃত্যু দেবতা ররর. ভুলভ্রান্তি
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৮০. ‘নীর’ বলতে বোঝানো হয়েছে (অনুধাবন)
র. পানি রর. জল ররর. দুধ
নিচের কোনটি সঠিক?
র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
পাঠ-পরিচিতি //
৮১. ‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতায় তাৎপর্যময় হয়ে উঠেছেÑ (উচ্চতর দক্ষতা)
র. স্বদেশের প্রতি কবির শ্রদ্ধা ও একাগ্রতা
রর. বঙ্গভ‚মির গুণকীর্তন
ররর. দেশমাতৃকার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৮২. ‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতা পাঠের মাধ্যমে শিক্ষার্থীর মনে দেশের জন্য (উচ্চতর দক্ষতা)
র. বিনয়ভাব জাগ্রত হবে রর. শ্রদ্ধাবোধ জাগ্রত হবে
ররর. লড়াই করতে উদ্বুদ্ধ হবে
নিচের কোনটি সঠিক?
র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৮৩. মাইকেল মধুসূদন দত্ত ‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতায় (অনুধাবন)
র. দেশের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন
রর. মায়ের প্রতি ভক্তি প্রদর্শন করেছেন
ররর. নিজেকে গুণহীন বলে স্বীকার করেছেন
নিচের কোনটি সঠিক?
র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
অভিন্ন তথ্যভিত্তিক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
নিচের উদ্দীপকটি পড়ে ৮৪-৮৬নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
উচ্চাকাক্সক্ষী ও মেধাবী মনির বড় হয়ে বিদেশে উচ্চশিক্ষা নেওয়ার স্বপ্ন দেখে। প্রবাসে সবকিছু ঝকঝকে তকতকে। কিন্তু সেখানে এমন একজনও নেই যার সাথে সে ভাববিনিময় করতে পারে। সেখানে দুঃখকষ্টে দিন কাটতে লাগল তার। অবশেষে সে বুঝতে পারে স্বদেশে থেকেই সে বড় হতে পারবে। তাই দেশে ফিরে এসে দেশমাতৃকার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে এবং হৃদয়ে স্থান দেয়ার অনুরোধ করে।
৮৪. উদ্দীপকের উচ্চাকাক্সক্ষী মনিরের সাথে কোন কবির মিল রয়েছে? (প্রয়োগ)
ক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মাইকেল মধুসূদন দত্তের
গ শামসুর রাহমানের ঘ আহসান হাবীবের
৮৫. উদ্দীপকে প্রকাশিত ভাব উক্ত কবির কোন কবিতায় প্রতিফলিত হয়েছে? (প্রয়োগ)
ক বঙ্গভাষা বঙ্গভ‚মির প্রতি
গ কপোতাক্ষ নদ ঘ বঙ্গমাতা
৮৬. উদ্দীপকের ভাবটি উক্ত কবিতার যে চরণে ফুটে উঠেছে তা হচ্ছেÑ (উচ্চতর দক্ষতা)
র. রেখো, মা, দাসেরে মনে, এ মিনতি করি পদে
রর. মধুহীন করো না গো তব মনঃকোকনদে
ররর. অমর করিয়া বর দেহ দাসে, সুবরদে!
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর র, রর ও ররর
নিচের উদ্দীপকটি পড়ে ৮৭৮৮ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
‘সার্থক জনম আমার জন্মেছি এই দেশে
সার্থক জনম, মা গো তোমায় ভালোবেসে!
৮৭. উদ্দীপকের মা ও ‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতার ‘মা’এর মাধ্যমে বোঝানো হয়েছে (প্রয়োগ)
ক বাংলার মাটিকে স্বদেশকে
গ কবির মাকে ঘ বাংলার গ্রামকে
৮৮. উদ্দীপকে ‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতায় ফুটে ওঠা বৈশিষ্ট্য হলো (উচ্চতর দক্ষতা)
র. স্বদেশের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা রর. স্বদেশের প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস
ররর. স্বদেশের প্রতি আকুলতা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
প্রশ্ন -১ নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
১. আবার আসিব ফিরে ধানসিঁড়িটির তীরেÑ এই বাংলায়
হয়তো মানুষ নয়Ñ হয়তো বা শঙ্খচিল শালিকের বেশে;
হয়তো ভোরের কাক হয়ে এই কার্তিকের নবান্নের দেশে
কুয়াশার বুকে ভেসে একদিন আসিব এ কাঁঠাল-ছায়ায়;
২. রেখো, মা, দাসেরে মনে, এ মিনতি করি পদে।
সাধিতে মনের সাধ
ঘটে যদি পরমাদ,
মধুহীন করো না গো
তব মনঃকোকনদে।
ক. বাংলা ভাষায় রচিত প্রথম মহাকাব্যের নাম কী?
খ. কবি বর প্রার্থনা করেন কেন?Ñ ব্যাখ্যা কর।
গ. কবিতাংশ দুটিতে কী অমিল লক্ষ করা যায়? আলোচনা কর।
ঘ. কবিতাংশ দুটির মূল সুর একইÑ মন্তব্যটি বিশ্লেষণ কর।
১নং প্রশ্নের উত্তর
ক. বাংলা ভাষায় রচিত প্রথম মহাকাব্যের নাম মেঘনাদবধ কাব্য।
খ. দেশমাতৃকার স্মৃতিতে পদ্মফুলের মতো ফুটে থাকার জন্য কবি বর প্রার্থনা করেন।
প্রতিটি মানুষেরই স্বদেশের প্রতি ভালোবাসা থাকা একটি স্বাভাবিক বিষয়। এই ভালোবাসা থেকেই কবি নিজের দেশে স্থায়ী হওয়ার আকাক্সক্ষা ব্যক্ত করেছেন। তাঁর একান্ত ইচ্ছা স্বদেশমাতা যেন তাকে হৃদয়ে স্থান দেন। পদ্মফুল যেমন সরোবরে ফুটে থাকে, কবিও তেমনি দেশমাতার স্মৃতিতে ফুটে থাকতে চান তাই তিনি বর প্রার্থনা করেন।
গ. কবিতাংশ দুটিতে দেশপ্রেমমূলক আবেগ বহিঃপ্রকাশের দিক দিয়ে অমিল লক্ষ করা যায়।
উদ্দীপকের প্রথম কবিতাংশে কবি তার দেশের প্রতি গভীর ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছেন। তিনি তার দেশকে এত ভালোবাসেন যে, তিনি মৃত্যুর পরও বারবার এই বাংলায় শঙ্খচিল,
শালিক কিংবা ভোরের কাক হয়ে ফিরে আসার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। অন্যদিকে দ্বিতীয় কবিতাংশটিতে কবি শ্রদ্ধা ও বিনয়ের সাথে দেশমাতৃকার কাছে অনুরোধ করেছেন তিনি যেন স্বদেশের স্মৃতিতে স্থান পান।
উদ্দীপকের প্রথম কবিতাংশে কবির আকাক্সক্ষা বারবার এই বাংলায় ফিরে আসা এবং দ্বিতীয় কবিতাংশে কবির আকাক্সক্ষা দেশমাতৃকা যেন তাকে ভুলে না যায়, স্মরণ রাখে। অর্থাৎ দুটি কবিতাংশেই দেশপ্রেমের ভাব ব্যক্ত হলেও মৃত্যুর পর একজনের বাংলায় ফিরে আসার আকুতি এবং অন্যজনের অমর হয়ে থাকার আকুতি অর্থাৎ প্রকাশভঙ্গি ভিন্ন এখানেই কবিতাংশ দুটির অমিল।
ঘ. ‘কবিতাংশ দুটির মূল সুর একই’এ মন্তব্যটি যথাযথ।
প্রথম কবিতাংশে মাতৃভ‚মির প্রতি কবির সুগভীর দেশপ্রেমের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। কেননা তিনি মনে করেন, মৃত্যুর পরও তার জন্মভ‚মির সঙ্গে সম্পর্ক শেষ হবে না। মৃত্যুর পর তাই তিনি বাংলার মাঠ-ঘাট-জল ভালোবেসে শঙ্খচিল, শালিকের বেশে ফিরে আসতে চান। পক্ষান্তরে দ্বিতীয় কবিতাংশে মাতৃভ‚মির ভালোবাসায় ধন্য হয়ে কবিতার স্মৃতিতে ঠাঁই পাওয়ার ব্যাকুলতা প্রকাশ করেছেন।
উদ্ধৃত দুটি কবিতাংশে যদিও চিন্তা-চেতনা ও প্রকাশভঙ্গি ভিন্ন, তবু দেশপ্রেমের মূল আবেগটি একই সুরে মিলে গেছে। উভয় ক্ষেত্রেই স্বদেশের বুকে জায়গা পাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশিত হয়েছে। অন্য জন্মে কিংবা এ জন্মেই স্বদেশের মধ্যে প্রকৃতির কোনো উপাদান হয়ে অবস্থান করার বাসনা প্রকাশ পেয়েছে। নিজ দেশের প্রতি আবেগ-অনুভ‚তির প্রকাশই উদ্দীপকের কবিতাংশ দুটির মূলকথা। কখনো দেশমাতাকেই বিনয়ের সঙ্গে অনুরোধ করা হয়েছে স্মৃতিতে একটু ঠাঁই দেওয়ার জন্য। অর্থাৎ কবিতাংশ দুটিতেই মাতৃভ‚মির প্রতি কবির সুগভীর দেশপ্রেমের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে।
উল্লিখিত আলোচনায় বলা যায়, দেশপ্রেমানুভ‚তির গভীরতার দিক থেকে কবিতাংশ দুটির মূল সুর একই।
প্রশ্ন -২ নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
সার্থক জনম আমার জন্মেছি এই দেশে।
সার্থক জনম, মা গো, তোমায় ভালোবেসে \
জানি নে তোর ধনরতন আছে কি না রানির মতন,
শুধু জানি আমার অঙ্গ জুড়ায় তোমার ছায়ায় এসে \
কোন বনেতে জানি নে ফুল গন্ধে এমন করে আকুল,
কোন গগনে ওঠে রে চাঁদ এমন হাসি হেসে \
আঁখি মেলে তোমার আলো প্রথম আমার চোখ জুড়ালো
ওই আলোতে নয়ন রেখে মুদব নয়ন শেষে \
ক. ‘কোকনদ’ শব্দের অর্থ কী? ১
খ. ‘জন্মিলে মরিতে হবে
অমর কে কোথা কবে’Ñএ কথার মাধ্যমে কবি কী বুঝাতে চেয়েছেন? ২
গ. উদ্দীপক এবং ‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতার মধ্যে যে দিক দিয়ে বৈসাদৃশ্য পরিলক্ষিত হয়, তা ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. “উদ্দীপকের কবিতা এবং ‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতা রচনার পেছনে একই চেতনা কাজ করেছে”Ñউক্তিটি বিশ্লেষণ কর। ৪
২নং প্রশ্নের উত্তর
ক. ‘কোকনদ’ শব্দের অর্থ লাল পদ্ম।
খ. প্রকৃতির বিধান অনুযায়ী প্রত্যেকটি জীবকেই মৃত্যুর স্বাদ নিতে হবে। অর্থাৎ যার জন্ম আছে তার মৃত্যুও আছে।
পৃথিবীতে কোনোকিছুই অমর-অবিনশ্বর নয়। সবকিছুই স্রষ্টার দ্বারা সৃষ্টি হয় এবং ধ্বংসও হয়। এটাই প্রকৃতির নিয়ম বা বিধান। তাই প্রকৃতির নিয়মেই জীবের জন্ম হয় এবং প্রকৃতির নিয়মেই জীবের মৃত্যু হয়। সে কারণেই জন্ম নিলে মরতে হবে।
গ. ‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতায় বঙ্গমাতাকে কবি মৃত্যুর পর মনে রাখতে বলেছেন। অপরদিকে উদ্দীপকের কবি বাংলার রূপ মাধুরীর দিকে তাকিয়ে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করার কথা বলেছেন।
জন্মভ‚মির মতো শান্তির জায়গা কোথাও নেই। জন্মভ‚মির সৌন্দর্যের মতো সৌন্দর্য দেশে দেশে ঘুরলেও দেখা যায় না। এ ভাবটি ‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতায় দারুণভাবে উঠে এসেছে। দেশমাতাকে কবি মিনতি করেছেন, সে যেন কবিকে মনে রাখেন, তার সকল দোষ ক্ষমা করেন।
উদ্দীপকের কবি মাতৃভ‚মির অপরূপ সৌন্দর্যে মুগ্ধ। জন্মভ‚মির আলো-ছায়া-বাতাসে কবির অঙ্গ জুড়ায় এবং এ আলোর পানে তাকিয়েই কবি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করতে চান। মূলত জন্মভ‚মিকে উদ্দীপকের কবির শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ অন্তিম ইচ্ছার সাথে ‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবির শেষ ইচ্ছার পার্থক্য সূচিত হয়। কারণ মাইকেল মধুসূদন দত্তের তীব্র আকুলতা জন্মভ‚মি যেন তার সকল অপরাধ ক্ষমা করে তাকে মনে রাখে।
ঘ. “উদ্দীপকের কবিতা এবং ‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতা রচনা করার পেছনে একই চেতনা কাজ করেছে।” Ñমন্তব্যটি যথাযথ।
মা-মাতৃভাষা-মাতৃভ‚মি প্রত্যেক মানুষের একান্ত প্রিয়। মানুষের অস্তিত্বের সাথে এ অবিনাশী চেতনা ফল্গুধারার ন্যায় মিশে থাকে। পৃথিবীর যে প্রান্তেই মানুষ যাক না কেন, মা-মাতৃভ‚মির অমোঘ আকর্ষণ প্রত্যেকেই সমানভাবে অনুভব করে।
উদ্দীপকের কবির স্বদেশের প্রতি তীব্র অনুরাগ ও ভালোবাসা প্রকাশ পেয়েছে। বাংলার আলো বাতাসে জন্মগ্রহণ করা ও বেড়ে ওঠা কবি এই আলোতেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগের অন্তিম ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। জন্মভ‚মির প্রতি নাড়িছেঁড়া টান না থকলে এরূপ পংক্তির উদ্ভব হয় না।
তাই উপরিউক্ত আলোচনা শেষে একটি কথা স্পষ্ট করে বলা যায়, উদ্দীপকের কবিতা ও ‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতাটি জন্মভ‚মির প্রতি ভালোবাসা প্রকাশের একটি প্রামাণ্য দলিল। তাই উদ্দীপক এবং পাঠ্যপুস্তকের কবিতা রচনা করার পেছনে যে একই চেতনা কাজ করেছে তা নিঃসন্দেহে বলা যায়।
প্রশ্ন -৩ নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
আমি অকৃতি অধম
বলেওতো কিছু কম করে মোরে দাওনি;
যা দিয়েছ, তারি অযোগ্য ভাবিয়া
কেড়েওতো কিছু নাওনি।
ক. মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত পত্রকাব্যের নাম লেখ। ১
খ. “সেই ধন্য নরকুলে
লোকে যারে নাহি ভুলে” Ñকবি এ কথা বলেছেন কেন? ২
গ. ‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতার কোন ভাবানুভ‚তি উদ্দীপকে খুঁজে পাওয়া যায়? Ñব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. “কবিতাংশটি ‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতার সামগ্রিক ভাবকে প্রকাশ করেনি।” Ñমন্তব্যটি যুক্তি দিয়ে বিশ্লেষণ কর। ৪
৩নং প্রশ্নের উত্তর
ক. মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত পত্রকাব্যের নাম বীরাঙ্গনা।
খ. জগতে যারা মহৎ গুণে গুণান্বিত তারাই সকলের মনে স্থান করে নেন এবং মন থেকে সদাসর্বদা শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা পেতে থাকে।
মানুষ তার কর্মগুণ দিয়ে মরণের পরও লোকের মাঝে বেঁচে থাকে। কেননা কর্মগুণই তাকে বাঁচিয়ে রাখে। সর্বজনের মনের মন্দিরে একটি মানুষ তখনই সদা সেবিত হয়, যখন সে তার সৃষ্টি দিয়ে, আচার ব্যবহার দিয়ে, জ্ঞান দিয়ে, গুণ দিয়ে এবং কর্ম দিয়ে সর্বজনের মনের মন্দিরে আসন করে নেয়।
গ. ‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতার জন্মভ‚মির প্রতি কবির কৃতজ্ঞতার ভাবানুভ‚তি উদ্দীপকে প্রকাশিত হয়েছে।
জন্মভ‚মির প্রতি গভীর মমতা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশের ভাব ‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতায় ফুটে উঠেছে। কবি প্রবাসে গিয়ে নিজের ভুল বুঝতে পারেন এবং দেশমাতার কাছে প্রার্থনা করেন যে তিনি যদি কিছু ভুল করেন তবে তা যেন ক্ষমা করা হয়। কারণ মা সন্তানের প্রতি সব সময়ই ক্ষমাশীল। তাই মা রূপী জন্মভ‚মির কাছে কবির প্রার্থনা, স্বদেশ যেন তার সকল অপরাধ ক্ষমা করে তাকে স্বদেশের মানুষের মনে স্থান করে দেয়।
আলোচ্য উদ্দীপকে কবি নিজেকে অধম বলে উল্লেখ করেছেন। তার ভাষ্যমতে তিনি অধম হলেও জন্মভ‚মি তাকে কোনো কিছু কম দেয়নি বা ভেদাভেদ করেনি। মায়ের মতো সমদৃষ্টিতেই দেশ কবিকে নানা উপচারে ভরিয়ে দিয়েছেন। এছাড়াও দেশ যা দিয়েছে কবিকে অযোগ্য ভেবে তা কেড়ে নেয়নি। মূলত দেশের প্রতি অবহেলা করে কবি নিজেকে অযোগ্য ভেবে নিলেও দেশ তাকে বঞ্চিত করেনি। সন্তানের অবহেলা বা অযোগ্যতা তার ধর্তব্য নয়। বরং সন্তানের প্রতি মাতৃভ‚মির আশ্রয় এবং ভালোবাসার দিকটি উদ্দীপকে ফুটে উঠেছে যা “বঙ্গভ‚মির প্রতি” কবিতার প্রকাশিত ভাব। অর্থাৎ ‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতার কবির কৃতজ্ঞতার ভাবানুভ‚তি উদ্দীপকে প্রকাশিত হয়েছে।
ঘ. কবিতাংশটি “ ‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতার সামগ্রিক ভাবকে প্রকাশ করেনি”Ñমন্তব্যটি যথার্থ।
‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতায় কবি স্বদেশ ত্যাগ করে বিদেশে গেলে সময় ক্ষেপণে এক সময় স্বপ্নভঙ্গের বেদনা অনুভব করেন। বাংলার ভাÐার যতেœ পরিপূর্ণ হওয়া সত্তে¡ও তিনি তা বুঝতে পারেননি। কবির সীমাহীন আশাভঙ্গের প্রতিচ্ছবি কবিতায় ফুটে উঠেছে। কবিতায় কবি স্বদেশের জন্য অকৃত্রিম অনুরাগ প্রকাশ করেছেন। স্বদেশকে মা রূপে বন্দনা করে কবি প্রার্থনা করেছেন দেশ যেন তার অধম সন্তানটির দোষত্রæটি ক্ষমা করে তাকে চিরদিনের জন্য মনে রাখে।
উদ্দীপকের কবি স্বদেশকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন তিনি অযোগ্য এবং অধম সন্তান। তা সত্তে¡ও দেশ মা তাকে কোনো অংশে কিছু কম দেয়নি। কবি অযোগ্য হলেও তা ভেবে জন্মভ‚মি তাকে যা কিছু দিয়েছিলেন তা ফিরিয়ে নেননি। দেশের প্রতি অবহেলার কারণে কবি নিজেকে অযোগ্য ভাবলেও স্বদেশ তাকে মাতৃস্নেহে ধারণ করেছে। কিন্তু আলোচ্য উদ্দীপকের কবির মানুষের মনে স্থান পাওয়ার বিষয়টি ফুটে ওঠেনি যা ‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতার অন্যতম অন্তর্গত ভাব। বঙ্গভ‚মির প্রতি কবিতার অন্যতম স্বদেশের মানুষের স্মৃতিতে জাগরূক রাখার বিষয়টি উদ্দীপকে আলোচিত হয়নি।
তাই বলা যায়, কবিতাংশটি ‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতার সামগ্রিক ভাব ধারণ করেনি।
প্রশ্ন -৪ নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
হে স্নেহার্ত বঙ্গভ‚মি-তব গৃহক্রোড়ে
চিরশিশু ক’রে আর রাখিও না ধরে।
দেশ দেশান্তর-মাঝে যার যেথা স্থান
খুঁজিয়া লইতে দাও করিয়া সন্ধান।
পদে পদে ছোট ছোট নিষেধের ডোরে
বেঁধে বেঁধে রাখিও না ভালো ছেলে ক’রে।
ক. কোন নদের নীর চিরস্থির নয়? ১
খ. প্রবাসে কবির জীবনাবসান ঘটলেও খেদ নেই কেন? ২
গ. উদ্দীপক ও বঙ্গভ‚মির প্রতি কবিতার মধ্যে যে দিকটির মিল পাওয়া যায়Ñ তা ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. উদ্দীপকের দেশাত্মবোধ, বঙ্গভ‚মির প্রতি কবিতায় দেশাত্মবোধের যে পরিচয় বহন করে তা মূল্যায়ন কর। ৪
৪নং প্রশ্নের উত্তর
ক. জীবন-নদের নীর চিরস্থায়ী নয়।
খ. জন্ম নিলে মরণ অবশ্যাম্ভাবী বলে প্রবাসে কবির জীবনাবসান ঘটলেও তাঁর কোনো খেদ নেই।
মানুষ মরণশীল। জন্মগ্রহণ করার সঙ্গেই মানুষের মৃত্যু নির্ধারিত হয়ে গেছে। কবিও মানুষ। তাঁকে একদিন এ জগৎ ছেড়ে চলে যেতে হবে। তাই তার মৃত্যু স্বদেশে অথবা প্রবাসেÑ যেখানেই হোক না কেন তাতে তাঁর কোনো খেদ নেই।
গ. উদ্দীপকে ‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতার কবির পরদেশের মোহে দেশ ত্যাগের বিষয়টির সাথে মিল রয়েছে।
উদ্দীপকে বঙ্গ-সন্তানকে বিশ্বের যেকোনো দেশে বা স্থানে তার উপর্যুক্ত বাসস্থান সন্ধান করার কথা বলা হয়েছে। কবি স্বদেশে তার সন্তানকে জোর করে বেঁধে না রাখার জন্য প্রার্থনা করেছেন। ভালো শিশুর মতো কাউকে স্বদেশে ধরে না রেখে দেশ-দেশান্তরে ছেড়ে দেওয়ার তাগিদ দেওয়া হয়েছে উদ্দীপকটিতে।
‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতায় স্বদেশের প্রতি কবি মধুসূদন দত্তের গভীর শ্রদ্ধা ও মমত্ববোধ প্রকাশ পেয়েছে। স্বদেশকে কবি জন্মদাত্রী মা রূপে মনে স্থ্না দিয়েছেন। মা যেন তার সন্তানের কোনো দোষত্রæটি মনে রাখেন না, তেমনি প্রবাসী কবিও ভেবেছেন, দেশমাতা যেন তার সব দোষ ক্ষমা করে দেয়।
ঘ. উদ্দীপকে যে দেশাত্মবোধের পরিচয় পাওয়া যায় ‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতাতে একই দেশাত্মবোধের পরিচয় পাওয়া যায়।
উদ্দীপকটি থেকে জানা যায় যে, কবি জন্মভ‚মির গৃহকোণে আবদ্ধ হয়ে থাকতে চান না। বিশ্বের অপরাপর দেশে বাসস্থান সন্ধান করতে কবি আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। নিজ দেশে তাঁর সন্তানকে বেঁধে না রেখে দেশ-দেশান্তরে আবাসস্থল খুঁজে নেওয়ার উপর জোর দেওয়া হয়েছে আলোচ্য উদ্দীপকে।
মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতায় স্বদেশের প্রতি কবির সুগভীর শ্রদ্ধা ও তীব্র একাগ্রতা প্রকাশ পেয়েছে। জন্মভ‚মি কবির নিকট মায়ের মতো। কোনো মা যেমন তার সন্তানের কোনো দোষ ধরেন না, তেমনি দেশান্তরী কবিও ভেবেছেন, জন্মভ‚মি মাতা যেন তার সন্তানের সব ত্রæটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখে।
উদ্দীপক ও আলোচ্য কবিতার বিশ্লেষণের প্রেক্ষিতে পরিশেষে বলা যায় যে, উদ্দীপকটিতে প্রবাস জীবনের এবং ‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতায় স্বদেশের জয়গান প্রকাশিত হয়েছে বলে যে মন্তব্য করা হয়েছে, সেটি যৌক্তিক। এ ব্যাপারে আমার দ্বিমত নেই।
প্রশ্ন -৫ নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
বাঙালির সনে মিশে প্রাণে প্রাণে
থাকিব সতত জীবনে মরণে
বাঙালি আমার আপনার জন
বাঙালি আমার ভাই।
ক. ‘শমন’ শব্দের অর্থ কী? ১
খ. ‘রেখো, মা, দাসেরে মনে, এ মিনতি করি পদে’। কবির এ মিনতির কারণ কী? ২
গ. উদ্দীপকের কবিতাংশের প্রত্যাশা ও কবির প্রত্যাশার তুলনামূলক বিচার কর। ৩
ঘ. “উদ্দীপকের কবিতাংশ ‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতার সামগ্রিক ভাব প্রকাশ করেনি” মন্তব্যটি যুক্তি দিয়ে বিশ্লেষণ কর। ৪
৫নং প্রশ্নের উত্তর
ক. ‘শমন’ শব্দের অর্থ মৃত্যুর দেবতা।
খ. জন্মভ‚মি ও জন্মভ‚মির মানুষের কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকতে কবি দেশমাতার কাছে মিনতি করেছেন।
প্রতিটি মানুষই তার মাতৃভ‚মিকে ভালোবাসে। সে চায় জন্মভ‚মির প্রত্যেকটি জিনিসের সাথে আজন্ম সম্পর্ক রাখতে। কবিও তাঁর মা-সম মাতৃভ‚মি খুব ভালোবাসেন। প্রবাস জীবনে থেকেও মাতৃভ‚মিকে তাঁর নিরন্তর মনে পড়ে। তিনি চান জন্মভ‚মিতে সবার মধ্যে বেঁচে থাকতে। কবি দেশমাতার কাছে মিনতি করেছেন, দেশমাতা যেন পেেক ভুলে না যান, একটু স্মরণে রাখেন। তাই কবি স্বদেশপ্রেমে উদ্বেলিত হয়ে এ মিনতি করেছেন।
গ. উদ্দীপকের কবিতাংশের কবির প্রত্যাশা এবং ‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতার কবির প্রত্যাশা একই ধারায় প্রবাহিত।
জন্মভ‚মির প্রতি ভালোবাসা মানুষকে আপন সত্তায় উদ্ভাসিত হতে সহায়তা করে। চিরচেনা মাতৃভ‚মির প্রকৃতির অপরূপ রূপ সব মানুষের কাছে অত্যন্ত আপন। স্বদেশের মাটির সাথে নিজেকে সম্পৃক্ত করে মানুষ ধন্য হতে চায়।
উদ্দীপকের কবি বাঙালির সাথে মনেপ্রাণে মিশে থাকতে চান। জীবনে-মরণে শত ঋতুর আবর্তনে তিনি বাংলার মাটি-জলে বিলীন হতে চান। বাঙালিকে তিনি নিজের ভাই বলতে গর্ববোধ করেন। কবির এ প্রত্যাশার সাথে ‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতার কবির প্রত্যাশার সাদৃশ্য রয়েছে। কবিও চান বাংলার প্রত্যেকটি জিনিসকে আপন করে পেতে। দেশকে কবি মা হিসেবে কল্পনা করেছেন এবং নিজেকে তার সন্তান ভেবেছেন। তিনি দেশমাতৃকার স্মৃতিতে পদ্মফুলের মতো ফুটে থাকতে চান। উভয় কবিতার প্রত্যাশার সাদৃশ্য এখানেই।
ঘ. “উদ্দীপকের কবিতাংশ ‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতার সামগ্রিক ভাব প্রকাশ করেনি” মন্তব্যটি যথার্থ।
উদ্দীপকের কবিতাংশে বাঙালির জাতীয় চেতনা প্রকাশিত হয়েছে। কবি বাঙালির সাথে মনেপ্রাণে মিশে থাকতে চান। বাঙালিকে ভাই হিসেবে, আপনজন হিসেবে পরিচয় দিতে ভালোবাসেন। ‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতায়ও বাঙালির জাতীয় চেতনা প্রকাশিত হয়েছে। তবে এটিই কবিতার সামগ্রিক ভাব নয়। এছাড়া অন্যান্য বিষয়ও আলোচিত হয়েছে।
‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতায় স্বদেশের প্রতি কবির শ্রদ্ধা ও একাগ্রতা তীব্রভাবে প্রকাশ পেয়েছে। দেশকে কবি ‘মা’ হিসেবে কল্পনা করে নিজেকে ভেবেছেন তার সন্তান। তিনি দেশমাতার কাছে মিনতি করেছেন তিনি যেন তাঁকে মনে রাখেন। তিনি দেশমাতৃকার স্মৃতিতে পদ্মফুলের মতো ফুটে থাকতে চান। কবিতার এসবকিছু সম্পূর্ণভাবে উদ্দীপকে উঠে আসেনি। উদ্দীপকের কবিতাংশে শুধু বাঙালির সাথে চিরকাল থাকবার বাসনাই প্রকাশিত হয়েছে। এক্ষেত্রে উদ্দীপকটি ‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতার সামগ্রিক ভাবকে প্রকাশ করতে পারেনি।
উপরিউক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, উদ্দীপকের কবিতাংশ ‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতার ভাব প্রকাশ পায়নি।
প্রশ্ন -৬ নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
মায়ের মনে কষ্ট দিয়েই হেলাল বাড়ি ছেড়েছে। পাড়ি জমিয়েছে প্রবাসে। কিন্তু হেলালের মনে সবসময় দুঃখের প্রবাহ চলে। এ দুঃখের উদ্বোধন হয়েছিল হেলালের দ্বারাই। মায়ের মনে কষ্ট দেয়ার সময় সে মায়ের মর্যাদা বুঝতে পারেনি। সময়ের আবর্তনে হয়তো হেলাল মরে যাবে। দেশের মাটিতে হেলালের মাও হারিয়ে যাবে। মৃত্যুতে হেলালের কোনো দুঃখ নেই। জন্ম মানেই মৃত্যুর পথে দ্রæত পদে হাঁটা। কিন্তু আমৃত্যু হেলালের মন মায়ের কাছে অপরাধী হয়ে থাকবে। এ যন্ত্রণা শুধু হেলালই বোঝে।
ক. কবি নিজেকে কী হিসেবে দেশমাতৃকার কাছে উপস্থাপন করেছেন? ১
খ. ‘সাধিতে মনের সাধ; ঘটে যদি পরমাদ’ ব্যাখ্যা কর। ২
গ. উদ্দীপকে ‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতার কোন দিকটি প্রকাশ পেয়েছে? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. “উদ্দীপকে ‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতার সমগ্র ভাবের প্রকাশ ঘটেনি”Ñমন্তব্যটি যাচাই কর। ৪
৬নং প্রশ্নের উত্তর
ক. কবি নিজেকে দাস হিসেবে দেশমাতৃকার কাছে উপস্থাপন করেছেন।
খ. ‘সাধিতে মনের সাধ, ঘটে যদি পরমাদ’Ñচরণটি দ্বারা মনের সাধ মেটাতে গিয়ে কোনো ভুলভ্রান্তি হয়ে যাওয়াকে বোঝায়।
মাইকেল মধুসূদন দত্ত মনে করেছিলেন বিলেতে না গেলে কবি হওয়া যাবে না। তাই তিনি নিজের দেশ ত্যাগ করে বিলেতে যান এবং নিজ ভাষায় সাহিত্য রচনা না করে ইংরেজি ভাষার সাহিত্য রচনায় মনোনিবেশ করেন। কিন্তু তিনি এক্ষেত্রে সফল হতে পারেননি। তাই নিজের ভুল বুঝতে পেরে কবি দেশমাতার কাছে ক্ষমা চেয়েছেন। কবি তার সাধ মেটাতে গিয়ে কোনো ভুল হয়ে গেছে কিনা তা বোঝাতেই আলোচ্য চরণের অবতারণা করেছেন।
গ. উদ্দীপকটি ‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতায় মর্মযন্ত্রণার দিকটি প্রকাশ পেয়েছে।
‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতায় কবি নিজের ইচ্ছা চরিতার্থ করতে গিয়ে দেশের প্রতি অবহেলা প্রদর্শন করেছেন। অবশেষে সত্য অনুধাবন করার পর তিনি বুঝতে পারেন, মাতৃভ‚মির প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শন করে চরম অন্যায় করেছেন। তাই কবি মাতৃভ‚মির কাছে নিজের কৃতকর্মের জন্য অপরাধ স্বীকার করে করুণা ভিক্ষা করেছেন।
উদ্দীপকের হেলাল মায়ের মনে কষ্ট দিয়ে বাড়ি ছেড়েছে। কিন্তু শত ব্যস্ততা আর চিন্তার মাঝেও হেলালের মনে একটা দুঃখ সর্বদাই অনুভব করে। মায়ের মনে কষ্ট দেয়ার অনুশোচনায় হেলাল জর্জরিত। জীবনের তাগিদে এখনো হেলাল প্রবাসে। কিন্তু মায়ের জন্য সর্বদাই তার মন কাঁদে। হেলাল হয়তো এক সময় মরে যাবে। হেলালের মা হারিয়ে যাবে পৃথিবীর বুক থেকে। কিন্তু মায়ের মনে কষ্ট দেয়ায় হেলাল যে যন্ত্রণা পেয়েছে, তা কখনই লাঘব হবে না। অর্থাৎ মাতৃভ‚মির প্রতি অবজ্ঞার কারণে ‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতায় কবির মর্মযন্ত্রণারই প্রতিফলন ঘটেছে উদ্দীপকে।
ঘ. “উদ্দীপকে ‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতার সমগ্র ভাবের প্রকাশ ঘটেনি” মন্তব্যটি যথার্থ।
উদ্দীপকের হেলাল মায়ের মনে কষ্ট দিয়ে বিদেশে পাড়ি জমিয়েছিল। বিভিন্ন ভাবে সে জীবনের প্রয়োজনে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। কিন্তু তার মনের দুঃখ কোনো কিছুর দ্বারাই লাঘব হচ্ছে না। অনুতাপে তার মনে এখন অনেক যন্ত্রণা। হেলাল জানে মৃত্যু যেকোনো সময় আসতে পারে। মৃত্যুকে সে ভয় করে না। মূলত তার হৃদয়ের যন্ত্রণা মৃত্যুযন্ত্রণার চেয়েও ভয়ঙ্কর।
‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতায়ও দেখা যায়, কবি নিজের ইচ্ছা চরিতার্থ করতে গিয়ে মাতৃভ‚মির প্রতি অবহেলা প্রদর্শন করেছেন, সেই অনুতাপে কবি হৃদয় জর্জরিত কবিতার এ মানসিক যন্ত্রণার দিকটিই শুধু উদ্দীপকে প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু এ বিষয় ছাড়াও কবিতার ভাব আরও স¤প্রসারিত। কবি দেশমাতৃকার কাছে নিজেকে দাস হিসেবে উপস্থাপন করে বলেছেন স্বদেশ যেন তাকে ভুলে না যায়। কারণ কবি জানেন, যাকে লোকে মনে রাখে তিনিই নরকুলে ধন্য। কবিতায় উল্লিখিত এ বিষয়গুলো উদ্দীপকে অনুপস্থিত।
সুতরাং বলা যায়, উদ্দীপকে ‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতার সমগ্র ভাবের প্রকাশ ঘটেনি।
প্রশ্ন -৭ নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
নৈতিক গুণ সম্পর্কিত আলোচনা প্রসঙ্গে প্রফেসর ড. আজিজুর রহমান বলেন, পৃথিবীর বুকে রয়েছে অসংখ্য মানুষের পদচিহ্ন। আবার সে পদচিহ্ন মুছেও গেছে। আমরা কেউ তাদের মনে রাখিনি। শুধু কিছু সংখ্যক ছাড়া। যারা নিজেদের উত্তম গুণের বিকাশ ঘটিয়ে পৃথিবীকে ও পৃথিবীর মানুষকে উৎকৃষ্ট কিছু দিয়েছেন, তারাই কালের মঞ্চে ঠাঁই পেয়েছেন। মানুষ তাদেরকে হৃদ-মাঝারে রেখেছে, মনের-মন্দিরে পূজা করেছে। তারাই কালের শ্রেষ্ঠ সন্তান।
ক. কবি মধুসূদনের মনে কখন থেকে কবি হওয়ার বাসনা ছিল? ১
খ. কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত কীভাবে বাংলা সাহিত্য রচনায় ব্রতী হন? ২
গ. উদ্দীপকের সঙ্গে ‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতার সাদৃশ্য দেখাও। ৩
ঘ. উদ্দীপক ও ‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতায় ইঙ্গিতকৃত জন্ম-মৃত্যু সম্পর্কিত ভাবকে তুমি সমর্থন কর কি? মতের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন কর। ৪
৭নং প্রশ্নের উত্তর
ক. কবি মধুসূদনের মনে শৈশব থেকেই কবি হওয়ার বাসনা ছিল।
খ. পাশ্চাত্য সাহিত্য সাধনার মোহ কেটে গেলে কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত বাংলা সাহিত্য রচনায় ব্রতী হন।
মাইকেল মধুসূদন দত্ত ছিলেন বাংলাসাহিত্যের প্রথাবিরোধী লেখক। তিনি তার সাহিত্যচর্চার শুরুতে পাশ্চাত্য সাহিত্য সাধনায় মনোনিবেশ করেছিলেন। মাতৃভাষাকে উপেক্ষা করে তিনি ইংরেজি ভাষায় কাব্য রচনা করার জন্য প্রাণান্ত প্রয়াস চালান। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সে প্রয়াস ব্যর্থ হয়। ফলে তিনি তার ভুল উপলব্ধি করতে পারেন এবং বাংলাসাহিত্য রচনায় ব্রতী হন।
গ. ‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতায় কবি মৃত্যু ও অমরত্ব সম্পর্কিত দুটি গভীর সত্য নিয়ে আলোচনা করেছেন। উদ্দীপকেও এ দুটি ভাবেরই প্রকাশ ঘটেছে, যা ‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতার সঙ্গে সাদৃশ্য সৃষ্টি করেছে।
সৃষ্টির শুরু থেকে আজ পর্যন্ত প্রতিনিয়ত পৃথিবীতে মানুষের আগমন আর বিনাশ ধারাবাহিকভাবে ঘটছে। মানুষের চলমান প্রক্রিয়ার কোনো ভিন্নতা নেই। কিন্তু কিছু কিছু মানুষ মহাকালের মতো নিজেকে অমর করে রাখতে সক্ষম হন। কারণ তারা নিজেদের প্রতিভা বিকাশের মাধ্যমে মানবের কল্যাণ সাধন অথবা কোনো উন্নত নজির পৃথিবীতে রেখে যান। যারা মহাকালের মঞ্চে ঠাঁই পেয়েছেন, মূলত তারাই পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সন্তান।
‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতায়ও মৃত্যু ও অমরত্বের ইঙ্গিত পাওয়া যায়। কবির মতে, যেকোনো সময়েই মানুষের মৃত্যু ঘটতে পারে। তবে কবি মনে করেন তারাই পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সন্তান, যাদের পৃথিবীর মানুষ চিরকাল মনে রাখে। তারা তাদের মহৎ কর্মের মাধ্যমে মানুষের হৃদয়ে স্থায়ী আসন দখল করে নেয়। সুতরাং দেখা যায় যে, মৃত্যু ও মহৎ কর্মের মাধ্যমে অমরত্ব- এ দুটি দিক দিয়ে ‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতার সঙ্গে উদ্দীপকের সাদৃশ্য রয়েছে।
ঘ. উদ্দীপক ‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতায় ইঙ্গিতকৃত জন্মমৃত্যু সম্পর্কিত ভাবটি আমার কাছে সমর্থনযোগ্য।
‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতায় কবি মানুষের জীবনকে স্রোতস্বিনী নদীর মতো কল্পনা করেছেন যে নদীতে অবিরাম জলের ধারা বয়ে চলে। মানুষের জীবনও তেমনি স্থির নয়। নিয়তই তা পরিবর্তনশীল। মানুষের জীবনে যেমন জন্ম আছে তেমনি মৃত্যুও আছে। কোনো মানুষই অমর হয়ে বেঁচে থাকে না। উদ্দীপকেও পৃথিবীর এ চিরন্তন সত্যটিকে স্বীকার করা হয়েছে।
প্রকৃতপক্ষে, মানুষের জীবন সময় ও স্রোতের মতোই গতিশীল। কোথাও এ জীবনের স্থবিরতা নেই। নিরন্তর এ পৃথিবীতে মানুষের আগমন ঘটছে। সময়ের পরিবর্তনে আবার হারিয়েও যাচ্ছে। পৃথিবী সৃষ্টির পর থেকে এ নিয়মের ব্যতিক্রম লক্ষ করা যায় না। কোনো মানুষই তার জীবনকে স্থায়ী করে রাখতে পারবে না।
‘জন্মিলে মরিতে হবে’এ সত্যটিই পৃথিবীতে চিরস্থায়ী। এ চিরন্তন সত্যটিকে স্বীকার করে বলা যায়, উদ্দীপক ও ‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতায় উল্লিখিত জন্মমৃত্যু সম্পর্কিত ভাবটি অবশ্য সমর্থনযোগ্য।
প্রশ্ন -৮ নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
“জন্ম আমার ধন্য হলো, মাগো
এমন করে আকুল হয়ে
আমায় তুমি ডাকো।
তোমার কথায় কথা বলি
পাখির গানের মতো
তোমার দেখায় বিশ্ব দেখি
বর্ণ কত শত
তুমি আমার খেলার পুতুল
আমার পাশে থাকো, মাগো
এমন করে আকুল হয়ে
আমায় তুমি ডাকো।”
ক. কবি কীসে ভয় পান না? ১
খ. ‘সেই ধন্য নরকুলে লোকে যারে নাহি ভুলে কথাটি ব্যাখ্যা কর। ২
গ. ‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতা ও উদ্দীপকের মধ্যে বিদ্যমান সাদৃশ্য নির্ণয় কর। ৩
ঘ. “দেশের প্রতি প্রেমভাব প্রদর্শন সত্তে¡ও উদ্দীপক ও ‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতার মধ্যে ভাবের অমিল রয়েছে” মন্তব্যটির যথার্থতা যাচাই কর। ৪
৮নং প্রশ্নের উত্তর
ক. কবি শমন বা মৃত্যুর দেবতাকে ভয় পান না।
খ. মানুষের হৃদয়ে স্মরণযোগ্য হতে পারলেই ধন্য হওয়া যায়-আলোচ্য অংশে এই ভাবটি প্রকাশিত হয়েছে।
নিজের ব্যবহার দিয়ে, কর্ম দিয়ে, গুণ দিয়ে যে মানুষের অন্তরে প্রবেশ করে, যার কর্মগুণের কারণে লোকে তাকে ভুলতে চাইলেও ভুলতে পারে না, সেই ধন্য নরকুলে। কেননা মানুষ তার কর্মগুণেই মরেও সব মানুষের হৃদয়ে অমর হয়ে থাকে। তার কর্মই তাকে সকলের হৃদয়ে বাঁচিয়ে রাখে। তাই বলা যায় যে, কর্মের ফলে মানুষ যাকে চিরকাল স্মরণ করে সেই ধন্য।
গ. স্বদেশপ্রেমের ফলে মনের মধ্যে জন্ম নেয়া আকুলতার দিক দিয়ে উদ্দীপক ও বঙ্গভ‚মির প্রতি কবিতাটি সাদৃশ্যপূর্ণ।
‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতায়ও দেখা যায়, মাতৃভ‚মির প্রতি কবির গভীর প্রেম। একসময় মাতৃভ‚মির প্রতি কবি অপরাধ করেছেনÑ সেজন্য কবি অনুতপ্ত। কবি মাতৃভ‚মিকে মা সম্বোধন করার মাধ্যমে বলেছেনÑ মা যেন এই তুচ্ছ সন্তানকে মনে রাখেন। সন্তানের প্রতি তিনি যেন কোনো ক্লেশ মনে না রাখেন। কবি যেন দেশমাতৃকার স্মৃতিতে পদ্মফুলের মতো ফুটে থাকেন- সন্তান হিসেবে মাতৃভ‚মির প্রতি তিনি এ আকুল আবেদন জানিয়েছেন।
উদ্দীপকের কবি বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করার কারণে গর্বিত, আনন্দিত। স্বদেশের ভাষায় কবি পাখির মতো সুর করে কথা বলেন। স্বদেশের চোখ দিয়েই কবি বিশ্বের দরবার অবলোকন করেন। সবকিছুতেই তার স্বদেশ মিশে রয়েছে মায়ের মতো পরম স্নেহে। তাই জন্মভ‚মিকে তিনি মা হিসেবে সম্বোধনের মাধ্যমে বলেছেন, তিনি জন্মভ‚মিকে যেভাবে আকুল হয়ে ডাকেন, জন্মভ‚মিও যেন তাকে আকুল হয়ে ডাকে। দেশপ্রেমের কারণে জন্মভ‚মির প্রতি এ আকুলতার দিক দিয়েই উদ্দীপকের সঙ্গে বঙ্গভ‚মির প্রতি কবিতার সাদৃশ্য তৈরি হয়েছে।
ঘ. ‘দেশের প্রতি প্রেমভাব প্রদর্শন সত্তে¡ও উদ্দীপক ও ‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতার মধ্যে ভাবের অমিল রয়েছে’ মন্তব্যটি যথার্থ।
‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতাটি মূলত কবির আত্মদহনের একটি লিখিত রূপ। কবি প্রথমে মাতৃভাষা ও মাতৃভ‚মিকে অবজ্ঞা করে বিদেশের মাটিতে গিয়েছিলেন। কিন্তু সেখানে গিয়ে তিনি মাতৃভ‚মির মর্যাদা ও প্রয়োজনীয়তা বুঝতে পেরেছেন। তাই মাতৃভ‚মির প্রতি অনুতপ্ত হয়ে কবি বলেছেন, তাকে যেন মাতৃভ‚মি মনে রাখে।
উদ্দীপকের কবি স্বদেশের প্রতি অত্যন্ত অনুপ্রাণিত। কবির কাছে স্বদেশ তাঁর মায়ের মতো স্নেহময়ী, স্বদেশের ভাষায় কবি কথা বলেন, সুরেলা কণ্ঠে গান করেন। স্বদেশের চোখ দিয়ে বিশ্ব দেখেন। কবি স্বদেশের কাছে অনুরোধ করেছেন, যেন স্বদেশ তাকে আকুলভাবে ডাকে, যেভাবে তিনি স্বদেশকে আকুলভাবে ডাকেন। এ কথায় উদ্দীপকের কবি তার কবিতায় আত্মসুখের পরিচয় দিয়েছেন।
সুতরাং দেখা যায় যে, দেশপ্রেমগত দিক থেকে উদ্দীপকে ও ‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতায় সাদৃশ্য থাকলে দেশপ্রেমের উৎসগত ভাবের দিক দিয়ে অমিল রয়েছে।
প্রশ্ন-৯ নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
যিনি জন্ম দেন, তিনি মা। যিনি পৃথিবীর আলো-বাতাসের সন্ধান দেন, তিনি মা, যিনি স্নেহের আঁচল বিছিয়ে দেন, তিনি মা, সন্তানের জন্য মায়ের চেয়ে বড় আশ্রয় আর কিছুই হতে পারে না, হওয়া সম্ভবও নয়। জন্মভ‚মির সঙ্গে জন্মদাত্রী মায়ের বিশেষ পার্থক্য নেই। সন্তান যদি কোনো অন্যায় করার পর অনুতপ্ত হয়, তবে মা মাত্রই ক্ষমা করবেন। হোক সে জন্মভ‚মি আর হোক সে জন্মদাত্রী, কারণ অনুতাপকারী সর্বদাই ক্ষমা পাওয়ার যোগ্য।
ক. কবি কীসের জলে ফুটতে চেয়েছেন? ১
খ. ‘কিন্তু কোন গুণ আছে, যাচিব যে তব কাছে’ ব্যাখ্যা কর। ২
গ. উদ্দীপকের সঙ্গে ‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতার বৈসাদৃশ্য দেখাও। ৩
ঘ. ‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতার কবির মানসিক যাতনার সমাধান রয়েছে উদ্দীপকে।Ñ বিশ্লেষণ কর। ৪
৯নং প্রশ্নের উত্তর
ক. কবি দেশমাতৃকার স্মৃতির জলে ফুটতে চেয়েছেন।
খ. ‘কিন্তু কোন গুণ আছে, যাচিব যে তব কাছে’ পঙ্ক্তি দুটি দ্বারা কবি নিজের অক্ষমতাকে বোঝাতে চেয়েছেন।
দেশ ও মানুষের কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকার জন্য মানুষকে মহৎ বা বিশেষ গুণের অধিকারী হতে হয়। কবির মনে বিশেষ আশা, দেশ যেন তাকে স্মরণে রাখে, কিন্তু কবির এমন কোনো মহৎ গুণ নেই যার দ্বারা তিনি স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। আলোচ্য পঙ্ক্তি দুটি দ্বারা কবি এটাই বোঝাতে চেয়েছেন।
গ. ‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতার সঙ্গে উদ্দীকের বিষয়গত বৈসাদৃশ্য বিদ্যমান।
‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতায় কবি ভুলের অনুশোচনা করার মাধ্যমে দেশমাতার কাছে হৃদয়ের আকুতি জানিয়েছেন। আর উদ্দীপকে মাতৃত্বের ক্ষমাশীলতা নিয়ে আলোচনা রয়েছে, যা উদ্দীপকের সঙ্গে বিষয়গত বৈসাদৃশ্য সৃষ্টি করে।
‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতায় কবি দেশমাতার কাছে আকুল আকুতি করেছেন। পাশাপাশি নিজের ভুলের জন্য অনুতপ্তও হয়েছেন। কবি দেশকে মা হিসেবে সম্বোধন করে বলেছেন, দেশমাতা যেন তার মতো তুচ্ছ সন্তানকে মনে রাখে। নিজের ইচ্ছা পূরণ করতে গিয়ে কবি দেশমাতার মনে যে কষ্ট দিয়েছেন, দেশমাতা যেন তা ভুলে কবিকে সর্বান্তকরণে ক্ষমা করেন। উদ্দীপকে দেশ ও মায়ের মধ্যে সম্পর্ক দেখানো হয়েছে। যিনি সন্তান জন্ম দেন, স্নেহের বেড়াজালে সন্তানকে জড়িয়ে রাখেন তিনি মা। আবার যার আশ্রয়ে সন্তান পৃথিবীর আলো চিনতে পারে, তিনিও মা। অর্থাৎ প্রত্যেক সন্তান জন্মসূত্রে যেমন মা পায় আবার পরিবেশ সূত্রেও একজন মা পায়, যাকে দেশমাতা বলা হয়। সুতরাং দেখা যায় যে, উদ্দীপক ও ‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতার মধ্যে বিষয়গত বৈসাদৃশ্য রয়েছে।
ঘ. ‘‘ ‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতার কবির মানসিক যাতনার সমাধান রয়েছে উদ্দীপকে।”মন্তব্যটি যথাযথ।
‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতার কবি লজ্জিত, অনুতপ্ত, তিনি সর্বান্তকরণে দেশমাতার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। কারণ, দেশের প্রতি তিনি অন্যায় করেছেন। অন্যায়ের পরিতাপ করতে গিয়ে কবি দেশমাতার কাছে আকুতি জানিয়েছেন, যেন দেশমাতা তাকে মনে রাখে। দেশমাতার ক্ষমা পেলে কবির মরতেও কোনো আপত্তি নেই। অর্থাৎ নিজের অপরাধের কারণে দেশমাতা তাকে ক্ষমা করবেন কিনা এ বিষয়ে কবির কণ্ঠে প্রবল শঙ্কাবোধ রয়েছে, যার সমাধান পাওয়া যায় উদ্দীপকে।
মা ও মাতৃভ‚মির মাঝে বিশেষ সম্পর্ক সৃষ্টি করা হয়েছে আলোচ্য উদ্দীপকে। যিনি জন্ম দেন, জন্মসূত্রে তিনি মা, আবার যার বুকে মানুষ বড় হয়, তিনি পরিবেশগত মা বা মাতৃভ‚মি। মা এবং মাতৃভ‚মির মধ্যে বিশেষ কোনো পার্থক্য নেই। কারণ, উভয়েই সন্তানের মঙ্গল প্রার্থনা করেন সন্তান অন্যায় করতেই পারে। কিন্তু অন্যায়ের জন্য যখন কোনো সন্তান অনুতপ্ত হয় এবং ক্ষমা প্রার্থনা করে, তখন মা মাত্রই সেটা ক্ষমা করবেন। জন্মদাত্রী মায়ের মমতা প্রকাশ পায় স্নেহের মাধ্যমে।
‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতার কবি দেশমাতৃকার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন। তবে কবি যেহেতু নিজেকে গুণহীন মনে করেন তাই তিনি এই ক্ষমা পাবেন কিনা এ ব্যাপারে তার শঙ্কা প্রকাশিত হয়েছে। আর উদ্দীপকে মা, মাতৃভ‚মি এবং সন্তানের সম্পর্কগত চিরন্তন সত্য প্রকাশের মাধ্যমে কবির শঙ্কাগত মানসিক যাতনার সমাধান করেছে।
প্রশ্ন -১০ নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
রিপন উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ার জন্য কানাডায় গমন করে। কিন্তু কানাডায় গিয়ে বঙ্গভ‚মি বাংলাদেশের কথা তার বারবার মনে পড়ে। এই দেশের স্মৃতিগুলো তাকে শুধুই তাড়া করে বেড়ায়। সে কানাডায় কিছুতেই শান্তি খুঁজে পায় না। তাই রিপন তার বড় ভাইয়ের কাছে চিঠি লিখে কানাডায় থাকার ব্যাপারে অনিচ্ছা প্রকাশ করে। কারণ জন্মভ‚মি বাংলাদেশকে সে কিছুতেই ভুলতে পারে না। নিরুপায় হয়ে রিপনের ভাই প্রত্যুত্তরে তাকে দেশে আসার পরামর্শ দেয়। দেশে এসে রিপন উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করতে সক্ষম হয়।
ক. ‘মানস’ শব্দের অর্থ কী? ১
খ. কবি দেশমাতৃকার স্মৃতিতে অমর হয়ে থাকতে চান কেন? ২
গ. উদ্দীপকের রিপনের সঙ্গে ‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতার কবি মাইকেল মধুসূদনের সাদৃশ্য কোথায়? নির্ণয় কর। ৩
ঘ. ‘কিছু বৈসাদৃশ্য থাকলেও উদ্দীপকের রিপন মধুসূদন দত্তেরই প্রতিচ্ছবি।’ মন্তব্যটি বিশ্লেষণ কর। ৪
১০নং প্রশ্নের উত্তর
ক. ‘মানস’ শব্দের অর্থ মন।
খ. স্বদেশের প্রতি ভালোবাসার কারণে কবি দেশমাতৃকার স্মৃতিতে অমর হয়ে থাকতে চান।
কবি দেশকে মা হিসেবে কল্পনা করে নিজেকে তার সন্তান মনে করেছেন। প্রবাস জীবনেও স্বদেশের মধুময় স্মৃতি কবিকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করে। জন্মভ‚মির প্রতিটি জিনিসের কাছে তিনি ঋণী। স্বদেশ কবিকে গভীর স্নেহে লালন করেছে, তাই তিনি আজীবন যাতে দেশকে ভালোবাসতে পারেন সে জন্য দেশমাতৃকার স্মৃতিতে অমর হয়ে থাকতে চান।
গ. বিদেশ যাওয়ার উদ্দেশ্যের দিক দিয়ে রিপনের সঙ্গে মাইকেল মধুসূদন দত্তের সাদৃশ্য রয়েছে।
‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতার কবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের শৈশব থেকে বড় কবি হওয়ার তীব্র বাসনা ছিল। তিনি মনে করেছিলেন, বিলেত না গেলে বড় কবি হওয়া যাবে না। তাই তিনি বিলেত যান এবং বিদেশি ভাষায় সাহিত্য চর্চা করে ব্যর্থ হয়ে দেশে ফিরলেন।
উদ্দীপকের রিপন শুরুতে দেশের শিক্ষাকে পর্যাপ্ত বা যথাযোগ্য মনে করেনি। বিদেশের শিক্ষা গ্রহণ করে সে বড় হতে চেয়েছে। তাই উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে পাড়ি জমায়। কিন্তু সেখানে গিয়ে তিনি দেশকে ভুলতে পারেননি। এক্ষেত্রে কবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের বড় কবি হওয়ায় বাসনা আর উদ্দীপকের রিপনের উচ্চশিক্ষায় বিদেশ গমন উভয়ের মধ্যে লক্ষ্যগত বৈসাদৃশ্য সৃষ্টি করেছে।
ঘ. ‘কিছু বৈসাদৃশ্য থাকলেও উদ্দীপকের রিপন মধুসূদন দত্তেরই প্রতিচ্ছবি।’ মন্তব্যটি যথার্থ।
কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত বিদেশি ভাষায় সাহিত্য রচনা করতে গিয়ে ব্যর্থ হয়ে দেশমাতৃকার কোলে ফিরে আসেন এবং বঙ্গভ‚মির ভালোবাসা পেয়ে বাংলা ভাষায় সাহিত্য রচনা করে তিনি সফল হন। এর প্রধান কারণ মাইকেল মধুসূদন দত্ত বঙ্গভ‚মিকে অত্যধিক ভালোবেসেছিলেন। প্রথম জীবনে সামান্য ভুল করলেও পরে সে ভুল বুঝতে পেরেছিলেন। এজন্যই তো তিনি বঙ্গভ‚মির প্রতি সবকিছু সঁপে দিয়েছিলেন এবং বিখ্যাত ব্যক্তিত্বে পরিণত হয়েছিলেন।
উদ্দীপকের রিপন উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশ গমন করেছেন ও জন্মভ‚মির সীমাহীন আকর্ষণে টিকে থাকতে না পেরে ব্যর্থ হয়ে দেশে ফিরে এসেছেন। ‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতার কবি মাইকেল মধুসূদন দত্তও বিদেশি সাহিত্য রচনা করতে গিয়ে ব্যর্থ হয়ে দেশমাতৃকার কদর বুঝতে পারেন। পরবর্তী সময় দেশমাতৃকার টানে এবং বঙ্গভ‚মির ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে বাংলা সাহিত্যের কুসুম ফোটানোর মধ্য দিয়ে দেশবরেণ্য ব্যক্তিত্বে পরিণত হয়েছেন।
সুতরাং আমরা বলতে পারি, কিছু বৈসাদৃশ্য থাকলেও উদ্দীপকের রিপন মধুসূদন দত্তেরই প্রতিচ্ছবি।
প্রশ্ন-১১ এই বাংলার আকাশ-বাতাস
এই বাংলার ভাষা
এই বাংলার নদী-গিরি-বনে
বাঁচিয়া মরিতে আশা।
ক. মাইকেল মধুসূদন দত্ত কত খ্রিষ্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন? ১
খ. কবি মায়ের কাছে কী মিনতি করেছেন? বুঝিয়ে বল। ২
গ. উদ্দীপকের কবিতাংশের সাথে ‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতার সাদৃশ্য তুলে ধর। ৩
ঘ. উদ্দীপকের মূলভাবের আলোকে ‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতার অন্তর্নিহিত তাৎপর্য বিশ্লেষণ কর। ৪
প্রশ্ন-১২ দেশী ভাষা বিদ্যা যার মনে ন জুয়ায়
নিজ দেশ তেয়াগী কেন বিদেশ ন যায়
মাতা পিতামহ ক্রমে বঙ্গেত বসতি
দেশি ভাষা উপদেশ মনে হিত অতি
ক. ‘নীর’ শব্দের অর্থ কী? ১
খ. ‘অমর করিয়া বর দেহ দাসে’ কবি এ কথা কেন বলেছেন? ২
গ. উদ্দীপকের ভাবের সঙ্গে ‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতার সাদৃশ্য নির্ণয় কর? ৩
ঘ. উদ্দীপকটি ‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতার সমগ্র ভাব প্রকাশ করে কি? মতের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন কর। ৪
জ্ঞানমূলক
প্রশ্ন \ ১ \ ‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতাটির কবি কে?
উত্তর : ‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতাটির কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত।
প্রশ্ন \ ২ \ ‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতায় কবি কাকে ‘মা’ হিসেবে কল্পনা করেছেন?
উত্তর : ‘বঙ্গভ‚মির প্রতি’ কবিতায় কবি নিজ দেশকে ‘মা’ হিসেবে কল্পনা করেছেন।
প্রশ্ন \ ৩ \ কোথায় না গেলে কবি হওয়া যাবে না বলে মধুসূদন মনে করেছিলেন?
উত্তর : বিলেত না গেলে কবি হওয়া যাবে না বলে মধুসূদন মনে করেছিলেন।
প্রশ্ন \ ৪ \ মধুসূদন নিজ ধর্ম ত্যাগ করে কোন ধর্ম গ্রহণ করেন?
উত্তর : মধুসূদন নিজ ধর্ম ত্যাগ করে খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ করেন।
প্রশ্ন \ ৫ \ খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ করার কারণে মধুসূদনের নামের পূর্বে কোন শব্দটি যুক্ত হয়?
উত্তর : খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ করার কারণে মধুসূদনের নামের পূর্বে ‘মাইকেল’ শব্দটি যুক্ত হয়।
প্রশ্ন \ ৬ \ বাংলা ভাষায় প্রথম মহাকাব্য রচনাকারী কে?
উত্তর : বাংলা ভাষায় প্রথম মহাকাব্য রচনাকারী হলেন মাইকেল মধুসূদন দত্ত।
প্রশ্ন \ ৭ \ মাইকেল মধুসূদন দত্তের পত্রকাব্যটির নাম কী?
উত্তর : মাইকেল মধুসূদন দত্তের পত্রকাব্যটির নাম হচ্ছে ‘বীরাঙ্গনা’।
প্রশ্ন \ ৮ \ বাংলা সাহিত্যের প্রথম প্রথাবিরোধী লেখক কে?
উত্তর : বাংলা সাহিত্যের প্রথম প্রথাবিরোধী লেখক হলেন মাইকেল মধুসূদন দত্ত।
প্রশ্ন \ ৯ \ কবি মধুসূদন দত্ত দেশমাতৃকার স্মৃতিতে কীভাবে থাকতে চান?
উত্তর : কবি মধুসূদন দত্ত দেশমাতৃকার স্মৃতিতে লাল পদ্মফুলের মতো ফুটে থাকতে চান।
প্রশ্ন \ ১০ \ বঙ্গভ‚মি কবিতায় কোন ঋতুর উল্লেখ রয়েছে?
উত্তর : বঙ্গভ‚মি কবিতায় বসন্ত ও শরৎ ঋতুর উল্লেখ রয়েছে।
প্রশ্ন \ ১১ \ নরকুলে কে ধন্য হয়?
উত্তর : যে কর্মের মাধ্যমে মানুষের হৃদয়ে স্মরণীয় হয়ে থাকতে পারে সেই নরকুলে ধন্য হয়।
প্রশ্ন \ ১২ \ কবি শমনে ভয় পান না কেন?
উত্তর : দেশ জননী কবিকে মনে রাখলে তিনি শমনেও ভয় পান না।
প্রশ্ন \ ১৩ \ কবির দেহ আকাশ থেকে জীব তারা খসে পড়লেও তার খেদ না করার কারণ কী?
উত্তর : জন্মিলে মরিতে হবে ভেবে কবির দেহ আকাশ হতে জীব তারা খসে পড়লেও তিনি খেদ করেন না।
অনুধাবনমূলক
প্রশ্ন \ ১ \ কবি স্বদেশকে মা হিসেবে কল্পনা করেছেন কেন?
উত্তর : মায়ের মতো স্বদেশের প্রতি কবির গভীর শ্রদ্ধা ও একাগ্রতার কারণে কবি স্বদেশকে মা হিসেবে কল্পনা করেছেন।
মা যেমন স্নেহ-ভালোবাসা দিয়ে সন্তানকে বুকে জড়িয়ে রাখেন স্বদেশও কবিকে একইভাবে স্নেহ দিয়ে লালন-পালন করেছে। মা সন্তানের কোনো দোষ মনে রাখেন না, কবির প্রত্যাশা দেশমাতৃকাও তার সব দোষ ক্ষমা করে দেবেন। বস্তুত, মায়ের সঙ্গে দেশমাতৃকার গভীর মিল থাকার জন্য কবি স্বদেশকে মা হিসেবে কল্পনা করেছেন।
প্রশ্ন \ ২ \ ‘তবে যদি দয়া কর, ভুল দোষ, গুণ ধর’ বলতে কী বোঝ?
উত্তর : ‘তবে যদি দয়া কর, ভুল দোষ, গুণ ধর’ বলতে বোঝায় দেশমাতা যদি কবিকে ক্ষমা করেন তবে যেন তার সব ভুল দোষ, গুণ ধরে নেন।
কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত মিথ্যে আশার ছলে আপন জন্মভ‚মি ত্যাগ করে বিলেতে গমন করে। এহেন ভাবনা ও এসব করা যে তার কতটা ভুল হয়েছে তা উপলব্ধি করতে পেরে কবি জন্মভ‚মির কাছে খুব আকুলভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন। কবি আশান্বিত হয়ে বলেছেন, মা যেমন তার সন্তানের কোনো দোষ মনে রাখেন না, দেশমাতাও তার কোনো ভুল যেন মনে না রাখেন। যদি জন্মভ‚মি তাকে দয়া করেন বা ক্ষমা করেন তবে যেন তার সব ভুল দোষ, গুণ ধরেন।
প্রশ্ন \ ৩ \ স্বদেশের প্রতি কবির শ্রদ্ধা ও একাগ্রতা প্রকাশের কারণ কী?
উত্তর : কবি স্বদেশের প্রতি গভীরভাবে অনুরক্ত বলেই স্বদেশের প্রতি তার শ্রদ্ধা ও একাগ্রতা প্রকাশিত হয়েছে।
দেশকে কবি কল্পনা করেছেন মা হিসেবে আর নিজেকে ভেবেছেন সে মায়ের সন্তান। দেশমাতৃকার স্মৃতিতে নিজেকে চিরকালের মতো স্থাপনের আকাক্সক্ষা কবির হৃদয়ে। দেশমাতৃকার প্রতি প্রগাঢ় মমত্ববোধ থাকার কারণেই কবি তার প্রতি শ্রদ্ধা ও একাগ্রতা প্রদর্শন করেছেন।