অষ্টম শ্রেণির বাংলা বাংলা ভাষার জন্মকথা

বাংলা ভাষার জন্মকথা
হুমায়ুন আজাদ

নাম হুমায়ুন আজাদ।
জন্ম পরিচয় জন্ম সাল : ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দ; জন্মস্থান : মুন্সীগঞ্জ জেলার শ্রীনগর থানার রাড়িখাল গ্রাম।
পিতৃ ও মাতৃ পরিচয় পিতার নাম : আবদুর রাশেদ; মাতার নাম : জোবেদা খাতুন।
শিক্ষাজীবন মাধ্যমিক : রাড়িখাল স্যার জগদীশচন্দ্র বসু ইনস্টিটিউশন; উচ্চ মাধ্যমিক : ঢাকা কলেজ; স্নাতক : বিএ (সম্মান) বাংলা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়; উচ্চতর শিক্ষা : এমএ (বাংলা), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়; পিএইচডি, এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়।
কর্মজীবন/পেশা প্রভাষক : চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়; সহকারী অধ্যাপক : জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়; সহযোগী অধ্যাপক : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়; অধ্যাপক : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
সাহিত্য সাধনা প্রবন্ধগ্রন্থ : রবীন্দ্র প্রবন্ধ : রাষ্ট্র ও সমাজচিন্তা, লাল নীল দীপাবলি, কতো নদী সরোবর বা বাংলা ভাষার জীবনী, বাংলা ভাষার শত্রæমিত্র। গবেষণা : বাক্যতত্ত¡, বাঙলা ভাষা, নারী, তুলনামূলক ও ঐতিহাসিক ভাষাবিজ্ঞান, ভাষা আন্দোলন : সাহিত্যিক পটভ‚মি।’ শামসুর রাহমান : নিঃসঙ্গ শেরপা। কাব্যগ্রন্থ : অলৌকিক ইস্টিমার, জ্বলো চিতাবাঘ, সবকিছু নষ্টদের অধিকারে যাবে, যতোই গভীরে যাই মধু যতোই ওপরে যাই নীল, আমি বেঁচে ছিলাম অন্যদের সময়।
উপন্যাস : ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইল, সবকিছু ভেঙে পড়ে, জাদুকরের মৃত্যু, রাজনীতিবিদগণ ইত্যাদি।
পুরস্কার বাংলা একাডেমি পুরস্কার।
জীবনাবসান মৃত্যু তারিখ : ১২ই আগস্ট, ২০০৪ খ্রিষ্টাব্দ।

উৎস নির্দেশ  ‘বাংলা ভাষার জন্মকথা’ প্রবন্ধটি কতো নদী সরোবর বা বাংলা ভাষার জীবনী গ্রন্থ থেকে চয়ন করা হয়েছে।

১. অনেকেই কোন ভাষাকে বাংলার জননী মনে করত?
ক হিন্দি খ গুজরাটি  সংস্কৃত ঘ মারাঠি
২. কোনটি উঁচু শ্রেণির মানুষের লেখার ভাষা ছিল?
ক বাংলা  সংস্কৃত
গ প্রাকৃত ঘ মৈথিলি
৩. প্রাকৃত ভাষা বলতে বোঝায়Ñ
 গণমানুষ সচরাচর যে ভাষায় কথা বলে
খ শিক্ষিত জনগণ যে ভাষায় কথা বলে
গ অঞ্চল বিশেষের মানুষ যে ভাষায় কথা বলে
ঘ শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীরা যে ভাষায় কথা বলে
৪. উল্লিখিত বিবর্তনের দ্বিতীয় স্তরটির নাম কী?
ক সংস্কৃত খ প্রাকৃত গ বৈদিক ঘ আর্য
৫. উক্ত স্তরটি সম্পর্কে সঠিক তথ্য হলোÑ
র. এটি ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রচলিত
রর. এই স্তরের বিবর্তিত রূপই ভারতবর্ষের নতুন ভাষা
ররর. এই স্তরটি বর্তমানে খুবই জনপ্রিয়
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
[বি. দ্র. ৪ ও ৫ নং নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নটি অভিন্ন তথ্যভিত্তিক প্রশ্নের অন্তর্ভুক্ত। তাই এ দুটি প্রশ্ন অসম্পূর্ণ হওয়ায় উত্তর দেওয়া হলো না।]

৬. প্রাকৃত ভাষাগুলোর শেষ স্তরের নাম কী?
ক বৈদিক খ সংস্কৃত গ মাগ্ধী ˜ অপভ্রংশ
৭. ‘সংস্কৃত ভাষা’ কত সালে বিধিবদ্ধ হয়েছিল?
˜ খ্রিষ্টপূর্ব ৪০০ অব্দের আগেই খ খ্রিষ্টপূর্ব ৮০০ অব্দের আগেই
গ খ্রিষ্টপূর্ব ৪৫০ অব্দে ঘ খ্রিষ্টপূর্ব ৩৫০ অব্দে
৮. ভারতীয় আর্যভাষার প্রথম স্তর কোনটি?
˜ বৈদিক সংস্কৃত খ সংস্কৃত
গ অপভ্রংশ ঘ ইন্দো-ইউরোপীয়
৯. ভারতীয় আর্যভাষার স্তর কয়টি?
ক ২ ˜ ৩ গ ৪ ঘ ৫
১০. হুমায়ুন আজাদ কত খ্রিষ্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন?
ক ১৯৪৬  ১৯৪৭ গ ১৯৪৮ ঘ ১৯৪৯
১১. ‘বাক্যতত্ত¡’ গ্রন্থের লেখক কে?
ক সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় খ মুহম্মদ শহীদুল্লাহ
 হুমায়ুন আজাদ ঘ হুমায়ূন আহমদ
১২. ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর মতে, কোন ভাষা থেকে বাংলা ভাষার জন্ম?
ক সংস্কৃত খ মাগধী প্রাকৃত গ গৌড়ি প্রাকৃত  গৌড়ি অপভ্রংশ
১৩. ‘মাগধী প্রাকৃতের কোনো পূর্বাঞ্চলীয় রূপ থেকে জন্ম নেয় বাংলা ভাষা’ ভাষার উদ্ভব সম্পর্কে এ মত কার?
ক পাণিনির খ সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়ের
গ ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর  আব্রাহাম গ্রিয়ারসনের
১৪. ভাষা বদলে যায় কেন?
ক মাধুর্যের জন্য খ সৌন্দর্যের
 গতিশীলতার জন্য ঘ ছন্দময়তার জন্য
১৫. কোনটিকে মধ্য ভারতীয় আর্যভাষা বলে?
 প্রাকৃত খ অপভ্রংশ গ সংস্কৃত ঘ বৈদিক সংস্কৃত
১৬. যিশুর জন্মের আগেই ভারতীয় আর্য ভাষার কয়টি স্তর পাওয়া যায়?
ক একটি খ দুইটি  তিনটি ঘ চারটি
১৭. ‘পূর্ব মাগধী অপভ্রংশ থেকে উদ্ভূত হয়েছে বাংলা’ এই মত কার?
ক ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ  ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়
গ ড. মুহম্মদ এনামুল হক ঘ ড. হুমায়ুন আজাদ
১৮. ‘বিধিবদ্ধ পরিশীলিত, শুদ্ধ ভাষা’কোনটি?
ক প্রাকৃত  সংস্কৃত গ অপভ্রংশ ঘ বাংলা

সাধারণ বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
 লেখক-পরিচিতি
১৯. হুমায়ুন আজাদ কোথায় জন্মগ্রহণ করেন? (জ্ঞান)
 রাড়িখাল খ তাম্বুলখানা গ বাসÐা ঘ গেন্ডারিয়া
২০. হুমায়ুন আজাদ কোন বিষয়ে খ্যাতি লাভ করেন? (জ্ঞান)
ক ফারসি ভাষা ও সাহিত্যে খ ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্যে
 বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে ঘ হিন্দি ভাষা ও সাহিত্যে
২১. হুমায়ুন আজাদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন? (জ্ঞান)
ক সংস্কৃত খ পালি  বাংলা ঘ ইংরেজি
২২. হুমায়ুন আজাদ মৃত্যুবরণ করেন কত সালে? (জ্ঞান)
ক ২০০২ সালের ১২ই আগস্ট খ ২০০৩ সালের ১২ই আগস্ট
 ২০০৪ সালের ১২ই আগস্ট ঘ ২০০৫ সালের ১২ই আগস্ট
২৩. হুমায়ুন আজাদ কোথায় মৃত্যুবরণ করেন? (জ্ঞান)
ক জাপানের টোকিও শহরে খ ইতালির রোম শহরে
 জার্মানির মিউনিখ শহরে ঘ ভারতের মুম্বাই শহরে
 মূলপাঠ
২৪. বাংলার জননী ভাষা বলা হয় কোন ভাষাকে?
[ভি. জে. সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, চুয়াডাঙ্গা]
ক প্রাকৃত খ পালি  সংস্কৃত ঘ বঙ্গকামরূপী
২৫. প্রাকৃত ভাষার শেষ স্তরের নাম কী? [ধানমন্ডি সরকারি বালিকা বিদ্যালয়]
ক বৈদিক খ পালি  অপভ্রংশ ঘ মাগধী
২৬. ইউরোপ ও এশিয়ার বেশ কিছু ভাষার ধ্বনিতে ও শব্দে গভীর মিল লক্ষ করা যায় কেন? [খুলনা জেলা স্কুল]
 এগুলো একই ভাষা বংশের সদস্য বলে
খ কাকতালীয়ভাবে মিল হয়েছে
গ এই ভাষার লোকেরা একই অঞ্চলে বাস করত
ঘ এগুলো একই অঞ্চলের বলে
২৭. কোন ভাষা থেকে বাংলা ভাষার জন্ম? [ধানমন্ডি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, ঢাকা]
ক সংস্কৃত  প্রাকৃত গ মৈথিলি ঘ বৈদিক
২৮. ‘আজ থেকে একশ বছর আগেও কারও কোনো স্পষ্ট ধারণা ছিল না’ কোনটি সম্পর্কে? (জ্ঞান)
ক বাংলা ভাষার শব্দ সম্পর্কে খ বাংলার ভাষার অক্ষর সম্পর্কে
গ বাংলা ভাষার গ্রন্থ সম্পর্কে  বাংলা ভাষার ইতিহাস সম্পর্কে
২৯. কোন ভাষার শব্দ বাংলা ভাষায় অনেক ব্যবহৃত হয়? (জ্ঞান)
ক পালি ভাষার  সংস্কৃত ভাষার গ উর্দু ভাষার ঘ হিব্রæ ভাষার
৩০. কোন ভাষাকে সংস্কৃতের মেয়ে বলা হয়? (জ্ঞান)
 বাংলা খ আরবি গ ইংরেজি ঘ হিন্দি
৩১. বাংলা ভাষার সঙ্গে কোন ভাষার ঘনিষ্ঠ আত্মীয়তা রয়েছে? (জ্ঞান)
ক হিন্দি খ গুজরাটি  সংস্কৃত ঘ মারাঠি
৩২. কোন শতকের লোক মনে করতেন বাংলার সঙ্গে সংস্কৃতের দূরত্ব অনেক? (জ্ঞান)
ক আঠারো শতকের খ বিশ শতকের
 উনিশ শতকের ঘ সতেরো শতকের
৩৩. পূর্বে সাধারণ মানুষেরা কথা বলত কোন ভাষায়? (জ্ঞান)
ক উপজাতীয় ভাষায় খ আঞ্চলিক ভাষায়
 প্রাকৃত ভাষায় ঘ ধর্মীয় ভাষায়
৩৪. বাংলা ভাষার উদ্ভব ও বিকাশের বিস্তৃত ইতিহাস রচনা করেন কে? (জ্ঞান)
ক জর্জ আব্রাহাম গ্রিয়ারসন  ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়
গ হরলাল রায় ঘ ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ
৩৫. কোন দুটি মহাদেশের ভাষার ধ্বনিতে গভীর মিল লক্ষ করা যায়? (জ্ঞান)
ক ইউরোপ ও আফ্রিকার খ এশিয়া ও অস্ট্রেলিয়ার
 ইউরোপ ও এশিয়ার ঘ আফ্রিকা ও উত্তর আমেরিকার
৩৬. কারা নানা নিয়ম বিধিবদ্ধ করে একটি মানসম্পন্ন ভাষা সৃষ্টি করেন?
 ব্যাকরণবিদরা খ ভাষাবিদরা
গ ঐতিহাসিকরা ঘ শিক্ষিত লোকেরা
৩৭. ব্যাকরণবিদদের সৃষ্ট মানসম্পন্ন ভাষাটি কী? (জ্ঞান)
 সংস্কৃত খ পালি গ বাংলা ঘ হিন্দি
৩৮. বৈদিক ভাষার সময়কাল কত? (জ্ঞান)
ক ১২০০ থেকে খ্রিষ্টপূর্ব ৪০০ অব্দ খ ১২০০ থেকে খ্রিষ্টপূর্ব ৬০০ অব্দ
গ ১২০০ থেকে খ্রিষ্টপূর্ব ৭০০ অব্দ  ১২০০ থেকে খ্রিষ্টপূর্ব ৮০০ অব্দ
৩৯. বৈদিক ও সংস্কৃতকে কী বলা হয়? (জ্ঞান)
ক পূর্ব ভারতীয় আর্যভাষা খ মধ্য ভারতীয় আর্যভাষা
গ প্রাচীন ভারতীয় হিন্দি ভাষা  প্রাচীন ভারতীয় আর্যভাষা
৪০. প্রাকৃত ভাষা কোন সময় থেকে কথ্য ও লিখিত ভাষারূপে ভারতের বিভিন্ন স্থানে প্রচলিত ছিল? (জ্ঞান)
 খ্রিষ্টপূর্ব ৪৫০ অব্দ থেকে ১০০০ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত
খ খ্রিষ্টপূর্ব ৫৫০ অব্দ থেকে ১০০০ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত
গ খ্রিষ্টপূর্ব ৬৫০ অব্দ থেকে ১০০০ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত
ঘ খ্রিষ্টপূর্ব ৭৫০ অব্দ থেকে ১০০০ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত
৪১. ‘গৌড়ী প্রাকৃতেরই পরিণত অবস্থা গৌড়ী অপভ্রংশ থেকে উৎপত্তি ঘটে বাংলা ভাষার’ এ মতটি কার? (জ্ঞান)
 ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর খ ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়ের
গ হুমায়ুন আজাদের ঘ হরলাল রায়ের
৪২. ভাষার রূপ, শব্দ ও অর্থ বদলায় কেন? (অনুধাবন)
ক লেখার সুবিধার জন্য খ নতুন আঙ্গিকে গঠনের জন্য
গ সবার বোঝার সুবিধার জন্য  নতুন ভাষা সৃষ্টির জন্য
৪৩. পূর্বে সংস্কৃত ভাষা উঁচু শ্রেণির মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য ছিল কেন? (অনুধাবন)
ক সংস্কৃত ভাষায় উঁচু শ্রেণির মানুষেরা কথা বলত বলে
 সংস্কৃত উঁচু শ্রেণির মানুষের লেখার ভাষা ছিল বলে
গ সংস্কৃত উঁচু শ্রেণির মানুষের পূজার ভাষা ছিল বলে
ঘ সংস্কৃত উঁচু শ্রেণির মানুষ পছন্দ করত বলে
৪৪. প্রাচীন ভারতীয় আর্যভাষা জানার জন্য ঋগে¦দের মন্ত্রগুলো প্রয়োজনীয় কেন? (অনুধাবন)
ক ঋগে¦দে আর্যভাষার বর্ণমালা পাওয়া যায়
 ঋগে¦দে আর্যভাষার প্রাচীন রূপ পাওয়া যায়
গ ঋগে¦দে আর্যভাষার নীতিমালা পাওয়া যায়
ঘ ঋগে¦দে আর্যভাষার গঠনপ্রণালি পাওয়া যায়
৪৫. বাংলার সঙ্গে আসামি ও ওড়িয়া ভাষার খুব ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক কেন? (অনুধাবন)
ক তিনটি ভাষা কাছাকাছি এলাকার বলে
 পূর্ব মাগধী অপভ্রংশ থেকে উদ্ভূত হয়েছে বলে
গ বেদ থেকে তিনটি ভাষা উদ্ভূত হয়েছে বলে
ঘ তিনটি ভাষার নীতিমালা একই রকম বলে
৪৬. বাংলা ভাষা সংস্কৃত ভাষার কন্যা নয় কেন? (অনুধাবন)
ক সংস্কৃত তাকে ত্যাগ করেছে
 সংস্কৃত থেকে বাংলার সরাসরি উৎপত্তি ঘটেনি
গ সংস্কৃত আসলে বাংলাকে জন্ম দেয়নি
ঘ সংস্কৃতের পালিত কন্যা বাংলা
৪৭. রতি তার ছোট বোন মিতুনকে বলল, আমরা এখন যে ভাষায় কথা বলি তা এক হাজার বছর আগে এ রকম ছিল না। রতির কথা থেকে প্রকাশ পায় ভাষা কী? (অনুধাবন)
ক ভাষা গতিশীল খ ভাষা অপরিবর্তনীয়
 ভাষা পরিবর্তনশীল ঘ ভাষা নিয়ন্ত্রিত
৪৮. ভাষাবংশের সদস্যদের নিয়ে সংঘটিত ভাষাবংশটির নাম কী? (জ্ঞান)
ক ইন্দো-বাংলা ভাষাবংশ
 ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাবংশ
গ ইন্দো-পাক ভাষাবংশ
ঘ ইন্দো-ভারত ভাষাবংশ
৪৯. ‘ভাষার ধর্মই বদলে যাওয়া’- বাক্যটিতে ফুটে উঠেছে ভাষারÑ (উচ্চতর দক্ষতা)
 পরিবর্তনশীলতা খ স্থিরতা গ চঞ্চলতা ঘ স্থবিরতা
৫০. পাণিনি কে? (জ্ঞান)
ক ভাষা গবেষক খ বহু ভাষাবিদ  ব্যাকরণবিদ ঘ ভাষাতাত্তি¡ক
৫১. কোন ভাষা থেকে বাংলা ভাষার জন্ম? (জ্ঞান)
ক বৈদিক খ মৈথিলি  প্রাকৃত ঘ সংস্কৃত
৫২. প্রাচীন ভারতীয় আর্য ভাষার শেষ স্তরটির নাম কী? (জ্ঞান)
ক পাঞ্জাবি  অপভ্রংশ গ মারাঠি ঘ বৈদিক
 শব্দার্থ ও টীকা
৫৩. ‘ভাষাতাত্তি¡ক’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে? (অনুধাবন)
 ভাষার উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশ নিয়ে যারা গবেষণা করেন
খ যারা ভাষাকে সঠিকভাবে গ্রহণ করেন
গ যারা ভাষার সঠিক ব্যবহার করেন
ঘ যারা শুদ্ধ ভাষায় কথা বলেন
৫৪. ‘দুর্বোধ্য’ শব্দটি দ্বারা কী বোঝানো হয়েছে? (অনুধাবন)
 সহজে বোঝা যায় না যা খ নিবিড়
গ উৎপন্ন ঘ অভ্যুদয়
৫৫. ‘উদ্ভূত’ শব্দের অর্থ কী? (জ্ঞান)
ক অভ‚তপূর্ব  উৎপন্ন গ উদ্ভট ঘ অদ্ভুত
৫৬. ‘শ্লোক’ বলতে কী বোঝায়? (অনুধাবন)
ক বাংলা ভাষায় রচিত কবিতা
 সংস্কৃত ভাষায় রচিত কবিতা
গ আরবি ভাষায় রচিত কবিতা
ঘ মৈথিলি ভাষায় রচিত কবিতা
 পাঠ-পরিচিতি
৫৭. ‘বাংলা ভাষার জন্মকথা’ প্রবন্ধটি পাঠের শিক্ষণীয় বিষয় কী? (উচ্চতর দক্ষতা)
ক এর মাধ্যমে বাংলার ইতিহাস সম্পর্কে তথ্য জানা যায়
 এর মাধ্যমে বাংলা ভাষার ইতিহাস সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানা যায়
গ এর মাধ্যমে বাংলা বর্ণমালার প্রাচীন তথ্য জানা যায়
ঘ এর মাধ্যমে বাংলা নীতিমালার প্রাচীন তথ্য জানা যায়
৫৮. ‘বাংলা ভাষার জন্মকথা’ মূলত কী? (উচ্চতর দক্ষতা)
ক উপন্যাস খ গল্প গ নাটক  প্রবন্ধ
৫৯. প্রাকৃত ভাষাগুলোর বিকৃত রূপ কোনটি? (জ্ঞান)
 অপভ্রংশ খ সংস্কৃত গ আর্যভাষা ঘ গৌড়ী অপভ্রংশ
৬০. ভাষার ধর্ম কী? (জ্ঞান)
ক নতুন করে জন্ম নেওয়া  বদলে যাওয়া
গ ভাব বিনিময় করা ঘ প্রসার লাভ করা
৬১. ‘বাংলা ভাষার জন্ম কথা’ প্রবন্ধটি কোন জাতীয় রচনা? (জ্ঞান)
 ভাষার উৎপত্তি বিষয়ক খ ভাষার প্রকৃতি বিষয়ক
গ প্রাকৃত ভাষা বিষয়ক ঘ ভাষার গঠন বিয়ক
৬২. ‘বাংলা ভাষার জন্মকথা’ কোন গ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে? (জ্ঞান)
ক লালনীল দীপাবলি
খ অলৌকিক ইস্টিমার
 কতো নদী সরোবর বা বাঙলা ভাষার জীবনী
ঘ বাক্যতত্ত¡
বহুপদী সমাপ্তিসূচক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
 লেখক-পরিচিতি
৬৩. হুমায়ুন আজাদের গবেষণাগ্রন্থ হচ্ছেÑ (অনুধাবন)
র. বাঙলা ভাষা রর. নারী ররর. অলৌকিক ইস্টিমার
নিচের কোনটি সঠিক?
 র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৬৪. হুমায়ুন আজাদের কিশোর পাঠকদের জন্য লেখক গ্রন্থ হলোÑ (অনুধাবন)
র. লাল নীল দীপাবলি রর. কতো নদী সরোবর
ররর. জ্বলো চিতাবাঘ
নিচের কোনটি সঠিক?
 র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
 মূলপাঠ
৬৫. জর্জ আব্রাহাম গ্রিয়ারসন এবং সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়ের মধ্যে যে বিষয়ে মিল লক্ষ করা যায়Ñ (প্রয়োগ)
র. দুজন একই দেশের অধিবাসী
রর. দুজন একই বাংলা ভাষার গবেষক
ররর. দুজনই ভাষাবিদ
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর  রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৬৬. ‘সংস্কৃত’ ভাষার বৈশিষ্ট্য হলোÑ (অনুধাবন)
র. বিধিবদ্ধতা রর. পরিশীলিত ররর. শুদ্ধতা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর  র, রর ও ররর
৬৭. ‘ঋগে¦দের মন্ত্রের’ ক্ষেত্রে যে কথাটি যুক্তিযুক্তÑ (অনুধাবন)
র. এর শ্লোকগুলোকে পবিত্র বিবেচনা করা হতো
রর. শ্লোকগুলো মুখস্থ করা হতো
ররর. যিশুর জন্মের ১০০০ বছর পূর্বে লেখা হয়েছিল
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর  র, রর ও ররর
৬৮. বাংলা ভাষার সঙ্গে মৈথিলি, মাগধী ও ভোজপুরীয়ারও ঘনিষ্ঠ আত্মীয়তা রয়েছে। কারণ এগুলো জন্মেছিলÑ (অনুধাবন)
র. মাগধী অপভ্রংশের অন্য দুটি শাখা থেকে
রর. মাগধী অপভ্রংশ থেকে
ররর. গৌড়ী প্রাকৃত থেকে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর  র, রর ও ররর
৬৯. প্রাকৃত ভাষা থেকে বাংলা ভাষার জন্মÑ এ প্রাকৃত ভাষার বৈশিষ্ট্য হলোÑ (অনুধাবন)
র. এটি সাধারণ মানুষের ব্যবহার্য ভাষা
রর. এটি উচ্চ শ্রেণির মানুষের ব্যবহার্য ভাষা
ররর. এটি দৈনন্দিন জীবনের ভাষা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর  র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৭০. আজ থেকে একশ বছর আগে বাংলা ভাষার ইতিহাস সবার অজানা ছিলÑ (উচ্চতর দক্ষতা)
র.সঠিক তথ্যের অভাবের কারণে রর. ভ্রান্ত ধারণা থাকার কারণে
ররর. বিভিন্ন মতপার্থক্যের কারণে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর  র, রর ও ররর
৭১. জর্জ আব্রাহাম গ্রিয়ারসন ছিলেন [ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিভার্সিটি স্কুল এন্ড কলেজ, ঢাকা]
র. গবেষক রর. ভাষাতাত্তি¡ক ররর. ভাষাতত্ত¡বিদ
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর  র, রর ও ররর
৭২. অপভ্রংশ থেকে উৎপন্ন হয়েছে [ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড আন্তঃবিদ্যালয়, ঢাকা]
র. বাংলা ভাষার রর. পাঞ্জাবি ভাষার
ররর. ইংরেজি ভাষার
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র খ রর  র ও রর ঘ র, রর ও ররর
 শব্দার্থ ও টীকা
৭৩. উদ্ভব শব্দটির অর্থ হলো (অনুধাবন)
র. সূচনা রর. জন্ম ররর. উৎপত্তি
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর  র, রর ও ররর
৭৪. শতাব্দী হলো (অনুধাবন)
র. একশ বছর রর. দুইশ বছর ররর. শত বছর
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর  র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৭৫. ‘বাংলা ভাষার জন্মকথা’ প্রবন্ধে ‘উৎপত্তি’ শব্দটি দ্বারা যে অর্থ বোঝানো হয়েছেÑ (অনুধাবন)
র. সূচনা রর. শুরু ররর. জন্ম
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর  র, রর ও ররর
 পাঠ-পরিচিতি
৭৬. ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাবংশের শাখা হচ্ছে (অনুধাবন)
র. সংস্কৃত রর. প্রাচীন ভারতীয় আর্য
ররর. গৌড়ী অপভ্রংশ
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র  রর গ ররর ঘ র, রর ও ররর
৭৭. মানুষের মুখে মুখে বদলে যায় (অনুধাবন)
র. ভাষার ধ্বনি রর. শব্দ ররর. শব্দের অর্থ
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর  র, রর ও ররর
অভিন্ন তথ্যভিত্তিক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
নিচের উদ্দীপকটি পড়ে ৭৮ ও ৭৯ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
রামায়ণ আদি কবি বাল্মিকী মুনি রচিত। এটি অন্যতম প্রাচীন ধর্মগ্রন্থ। দাদুও কাব্য থেকে দুটি শ্লোক আবৃত্তি করে অনিককে শোনান। সে তার একটি বর্ণও বুঝতে পারে না। অনিক অবাক হয়, বাংলা ও সংস্কৃত ভাষার এত পার্থক্য! দাদু বলেন, বাংলা ভাষার জন্ম হয়েছে সংস্কৃত ভাষা থেকেই।
৭৮. অনুচ্ছেদে অনিক শ্লোক আবৃত্তি বুঝতে পারে না কেন? (প্রয়োগ)
ক সংস্কৃত ভাষা বিধিবদ্ধ বলে
 সংস্কৃত ভাষা দুর্বোধ্য বলে
গ সংস্কৃত উচ্চশ্রেণির বলে
ঘ সংস্কৃত ভাষা অর্থহীন বলে
৭৯. উক্ত ভাষা হলোÑ (উচ্চতর দক্ষতা)
র. সমাজের উঁচু শ্রেণির মানুষের লেখার ভাষা
রর. বিধিসিদ্ধ ও শুদ্ধ ভাষা
ররর. সাধারণ মানুষের মুখের ভাষা
নিচের কোনটি সঠিক?
 র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
নিচের উদ্দীপকটি পড়ে ৮০ ও ৮১ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
কোন অপভ্রংশ থেকে বাংলা ভাষার উৎপত্তি- তা নিয়ে দেখা দেয় মতভেদ। কেউ বলেন, মাগধী অপভ্রংশ থেকে বাংলার উৎপত্তি। আবার কেউ বলেন, গৌড়ীয় অপভ্রংশ থেকে।
৮০. উদ্দীপকের বিষয়ে নিচের কোন প্রবন্ধ রচনায় সাদৃশ্য রয়েছে? (প্রয়োগ)
ক সুখী মানুষ খ পড়ে পাওয়া
 বাংলা ভাষার জন্মকথা ঘ বাংলা নববর্ষ
৮১. উক্ত প্রবন্ধে প্রতিফলিত হয়েছেÑ (উচ্চতর দক্ষতা)
র. বাংলা ভাষার উৎপত্তি
রর. বাংলা ভাষার জন্ম বিদেশি ভাষা থেকে
ররর. বাংলা ভাষার জন্ম গৌড়ী অপভ্রংশ থেকে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর  র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর

প্রশ্ন -১  নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
পারমিতা অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। একদিন বাংলা ব্যাকরণে ভাষার বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য পড়ার সময় দুটো বৈশিষ্ট্যের দিকে ওর নজর আটকে গেল। বৈশিষ্ট্য দুটি হলো (ক) ভাষা যত কঠিন শব্দ দিয়েই শুরু হোক না কেন, ক্রমান্বয়ে ব্যবহারের ফলে তা সহজ ও সরল হয়ে ওঠে। যেমন চক্র > চক্ক > চাকা, চর্মকার > চম্মআর > চামার, হস্ত > হত্থ > হাত ইত্যাদি। এবং একসময় এরকম সরলীকরণ হতে হতে একটি নতুন ভাষারই উদ্ভব হয়। (খ) কালের পরিক্রমায় একটি ভাষা স্থানিক ও কালিক বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য ধারণ করে বহুরূপী হয়ে ওঠে। যেমন ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাবংশ থেকে পৃথিবীতে বর্তমানে প্রায় সাড়ে তিন হাজারের মতো ভাষা ছড়িয়ে পড়েছে। পারমিতা ভাবতে থাকে।
ক. ‘সংস্কৃত’ শব্দের অর্থ কী?
খ. একদল লোক বাংলাকে ‘সংস্কৃতের মেয়ে’ মনে করত কেন?
গ. অনুচ্ছেদের (ক)নং বৈশিষ্ট্যটির মধ্য দিয়ে ‘বাংলা ভাষার জন্মকথা’ প্রবন্ধের কোন দিকটি প্রকাশ পেয়েছে?
ঘ.পারমিতার পঠিত (খ)নং বৈশিষ্ট্যটি ‘বাংলা ভাষার জন্মকথা’ প্রবন্ধের আলোকে বিশ্লেষণ কর।
 ১নং প্রশ্নের উত্তর 
ক. সংস্কৃত শব্দের অর্থ বিধিবদ্ধ, পরিশীলিত এবং শুদ্ধ।
খ. সংস্কৃত ভাষার প্রচুর শব্দ সরাসরি বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত হওয়ার কারণেই একদল লোক বাংলাকে ‘সংস্কৃতের মেয়ে’ মনে করতেন।
আজ থেকে এক শ বছর আগেও কারো কোনো স্পষ্ট ধারণা ছিল না বাংলা ভাষার ইতিহাস সম্পর্কে। ফলে এ ভাষা জন্মের ইতিহাস নিয়ে ভাষাবিদদের মধ্যে নানারকম ধারণা প্রচলিত ছিল। তবে এক দল লোক মনে করতেন ওই সংস্কৃত ভাষাই বাংলার জননী। বাংলা সংস্কৃতের মেয়ে কারণ সংস্কৃত ভাষার অনেক শব্দ ব্যবহৃত হয় বাংলা ভাষায়। সে কারণে অনেকে ভুলবশত বাংলাকে ‘সংস্কৃতের মেয়ে’ মনে করতেন।
গ. অনুচ্ছেদের ক. নং বৈশিষ্ট্যটির মধ্য দিয়ে ‘বাংলা ভাষার জন্মকথা’ প্রবন্ধের যে দিকটি প্রকাশ পেয়েছে তা হলো ভাষার ধর্মই বদলে যাওয়া এবং মানুষের মুখে মুখে ব্যবহারের ফলে ভাষার ধ্বনি ও শব্দের রূপ বদলে যায়।
‘বাংলা ভাষার জন্মকথা’ প্রবন্ধে বাংলা ভাষার উৎপত্তি সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। ভাষার ধর্মই হচ্ছে বদলে যাওয়া, মানুষের মুখে মুখে বদলে যায় ভাষার ধ্বনি, ভাষায় ব্যবহৃত শব্দের পাশাপাশি শব্দের অর্থও বদলে যায়। একসময় মনে করা হতো
বাংলা এসেছে সংস্কৃত থেকে, সংস্কৃত ছিল উঁচুশ্রেণির মানুষের লেখার ভাষা। সাধারণ মানুষ কথা বলত প্রাকৃত ভাষায়, আর প্রাকৃত অপভ্রংশের মধ্য দিয়ে বাংলা ভাষার জন্ম। অপভ্রংশ হচ্ছে প্রাকৃত ভাষাগুলোর শেষের স্তর, যা খুব বিকৃত হয়ে গেছে।
উদ্দীপকেও দেখা যায়, পারমিতা বাংলা ব্যাকরণের ভাষার বৈশিষ্ট্য পড়ার সময় লক্ষ করে যে, বাংলা ভাষা পরিবর্তনের মধ্য দিয়েই আজকের এ অবস্থায় উপনীত হয়েছে, অর্থাৎ চক্র > চক্ক > চাকা, চর্মকার > চম্মআর > চামার, হস্ত > হন্ত > হাত এ শব্দগুলো পরিবর্তনেরই ফল। এ পরিবর্তন প্রমাণ করে যে, মানুষের মুখে মুখে ব্যবহৃত হতে হতেই বাংলা ভাষার শব্দগুলো বর্তমান এ অবস্থায় এসেছে। অর্থাৎ অনুচ্ছেদের ‘ক’ নং বৈশিষ্ট্যটির মধ্য দিয়ে বাংলা ভাষার উদ্ভবের বিষয়টি প্রকাশ পেয়েছে।
ঘ. পারমিতার পঠিত ‘খ’ নং বৈশিষ্ট্যটিতে ‘বাংলা ভাষার জন্মকথা’ প্রবন্ধে বর্ণিত ভাষার প্রতিনিয়ত পরিবর্তনশীলতার দিকটি ফুটে উঠেছে।
বাংলা ভাষার উৎপত্তি সম্পর্কে ‘বাংলা ভাষার জন্মকথা’ প্রবন্ধে
বক্তব্য অনুযায়ী বাংলা ভাষাসহ পৃথিবীর আরও অনেক ভাষার সৃষ্টি হয়েছে ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষা পরিবার থেকে। এ ভাষা পরিবারের অন্যান্য ভাষার সাথে বাংলা ভাষার একটি যোগসূত্র রয়েছে।
উদ্দীপকের ‘খ’ নম্বর বৈশিষ্ট্যে উল্লিখিত হয়েছে ভাষার উদ্ভব ও বিকাশের মৌলিক বিষয়টি। নির্দিষ্ট একটি ভাষা বংশ থেকে যেমন অনেক ভাষার সৃষ্টি হয়। তেমনি বিভিন্ন অঞ্চলের বৈশিষ্ট্য ধারণ করেও ভাষার মৌলিক পরিবর্তন ঘটে। অর্থাৎ স্থান ও কালের পরিবর্তনে ভাষার পরিবর্তনের কথা বলা হয়েছে। এসব বৈশিষ্ট্যকে ধারণ করে ভাষা ক্রমে ক্রমে বহুরূপী হয়ে ওঠে। নির্দিষ্ট একটি কেন্দ্র তথা ভাষাবংশ থেকে উৎপত্তি লাভ করে হাজার হাজার নতুন ভাষার। আলোচ্য প্রবন্ধেও লেখক সে কথাই উত্থাপন করেছেন।
তাই উল্লিখিত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, পারমিতার পঠিত ‘খ’ নম্বর বৈশিষ্ট্যটি ‘বাংলা ভাষার জন্মকথা’ প্রবন্ধের বক্তব্য অনুযায়ী বাংলা ভাষার উদ্ভব ও বিকাশের হাজার বছরের ইতিহাসের দিকটি প্রকাশ পেয়েছে।

প্রশ্ন -২  নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
অষ্টম শ্রেণির বাংলা ক্লাসে শিক্ষক বলেন, সংস্কৃত ভাষা থেকে বাংলা ভাষার উৎপত্তি ঘটেনি। কিছু সংস্কৃত শব্দ বাংলা ভাষায় ব্যবহার হলেও প্রকৃতপক্ষে এ ভাষা থেকে বাংলা ভাষার জন্ম হয়নি। তার অনেক কারণ আছে। সংস্কৃত হলো মৃতভাষা। সাধারণ মানুষ কথা বলত বিভিন্ন রকম প্রাকৃত ভাষায়। প্রাকৃতের পরবর্তী রূপ অপভ্রংশ। এই অপভ্রংশ থেকে বিভিন্ন ভাষার মতোই বাংলা ভাষার জন্ম হয়েছে। ভাষা পÐিতগণও তাই প্রমাণ করেছেন।
ক. পৃথিবীর আদি ভাষাগোষ্ঠীর নাম কী? ১
খ. কীভাবে একটি নতুন ভাষার জন্ম হয়? ২
গ. সংস্কৃতকে মৃতভাষা বলার কারণ ‘বাংলা ভাষার জন্মকথা’ প্রবন্ধের আলোকে ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. ভাষা পÐিতগণ কীভাবে বাংলা ভাষার জন্ম ইতিহাস প্রমাণ করেছেন? উদ্দীপক ও ‘বাংলা ভাষার জন্মকথা’ প্রবন্ধের আলোকে বিশ্লেষণ কর। ৪
 ২নং প্রশ্নের উত্তর 
ক. পৃথিবীর আদি ভাষাগোষ্ঠীর নাম হলো ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাগোষ্ঠী বা ভারতীয়-ইউরোপীয় ভাষাগোষ্ঠী।
খ. ক্রম পরিবর্তনশীলতার মাধ্যমেই একটি নতুন ভাষার জন্ম হয়। বদলে যাওয়াই ভাষার ধর্ম।
ভাষা প্রতিনিয়ত পরিবর্তনশীল। মানুষের মুখে মুখে বদলে যায় ভাষার ধ্বনি। রূপ বদলে যায় শব্দের, বদল ঘটে অর্থের। এভাবে দীর্ঘদিন ধরে নানা পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে মূল ভাষার সাথে ব্যপক পার্থক্য তৈরি হয় এবং তখন জন্ম হয় নতুন ভাষা।
গ. সমাজে বসবাসকারী বৃহৎ জনগোষ্ঠীর কথ্য ভাষা না হওয়ায় সংস্কৃতকে মৃতভাষা বলা হয়েছে।
সংস্কৃত ছিল উঁচুশ্রেণির মানুষের ভাষা। সর্ব সাধারণের মধ্যে এ ভাষা প্রচলিত ছিল না। তাছাড়া সংস্কৃত ভাষা লেখার ভাষা হিসেবে ব্যবহার করা হতো। এজন্য মানুষ তাদের দৈনন্দিন কাজে প্রাকৃত ভাষা ব্যবহার করত।
উদ্দীপকে অষ্টম শ্রেণির বাংলা ক্লাসে শিক্ষক বলেন, সংস্কৃত ভাষা থেকে বাংলা ভাষার উৎপত্তি ঘটেনি। কিছু সংস্কৃত শব্দ বাংলা ভাষায় ব্যবহার হলেও প্রকৃতপক্ষে এ ভাষা থেকে বাংলা ভাষার জন্ম হয়নি। তার অনেক কারণ আছে। সংস্কৃত হলো মৃতভাষা। এ প্রসঙ্গে ‘বাংলা ভাষার জন্মকথা’ প্রবন্ধে বলা হয়েছে, বৈদিক ব্যাকরণবিদরা নানা নিয়ম বিধিবদ্ধ করে একটি মানসম্পন্ন ভাষার সৃষ্টি করেন যা সংস্কৃত’ ভাষা নামে অভিহিত হয়। সংস্কৃত ছিল সমাজের উঁচুশ্রেণির মানুষের লেখার ভাষা। তা কথ্য ভাষা ছিল না। যেহেতু সংস্কৃত ভাষা বিশেষ লোকসমাজে প্রচলিত ও কথ্য ছিল না; তাই সংস্কৃতকে বদ্ধ ভাষা বা মৃতভাষা বলা সংগত।
ঘ. পৃথিবীর আদিভাষা জনগোষ্ঠীর সূত্রানুসারে ভাষাপÐিতগণ বাংলা ভাষার জন্ম ইতিহাস প্রমাণ করেছেন।
বর্তমানে ভাষাপÐিতগণ পৃথিবীর অধিকাংশ সুসংগঠিত ভাষার আদি উৎস খুঁজে বের করতে সক্ষম হয়েছেন। হাতে গোনা কয়েকটি মূল ভাষাগোষ্ঠী থেকে পৃথিবীর অধিকাংশ ভাষারই জন্ম হয়েছে। ইউরোপ ও এশিয়ার বেশ কিছু ভাষার ধ্বনিতে, শব্দে গভীর মিল লক্ষ করা যায়।
উদ্দীপকে দেখা যায়, অষ্টম শ্রেণির বাংলা ক্লাসে শিক্ষক বলেন, সংস্কৃত ভাষা থেকে বাংলা ভাষার উৎপত্তি ঘটেনি। কিছু সংস্কৃত শব্দ বাংলা ভাষায় ব্যবহার হলেও প্রকৃতপক্ষে এ ভাষা থেকে বাংলা ভাষার জন্ম হয়নি। তার অনেক কারণ আছে। সংস্কৃত হলো মৃতভাষা। সাধারণ মানুষ কথা বলত বিভিন্ন রকম প্রাকৃত ভাষায়। প্রাকৃতের পরবর্তী রূপ অপভ্রংশ। এই অপভ্রংশ থেকে বিভিন্ন ভাষার মতই বাংলা ভাষার জন্ম হয়েছে। ভাষা পÐিতগণও তাই প্রমাণ করেছেন। উদ্দীপকের এ বিষয়টি ‘বাংলা ভাষার জন্মকথা’ প্রবন্ধেও আলোচিত হয়েছে।
বাংলা ভাষার উৎপত্তি সম্পর্কে ‘বাংলা ভাষার জন্মকথা’ প্রবন্ধে বলা হয়েছে, ভারতীয় আর্যভাষার পরিশীলিত রূপ ‘সংস্কৃত’ ভাষা থেকে বাংলা ভাষার জন্মের কথা কোনো কোনো পÐিত বললেও সংস্কৃত ভাষা থেকে সরাসরি বাংলা ভাষার উৎপত্তি ঘটেনি। মধ্য ভারতীয় আর্যভাষাগুলো কথ্য ও লিখিত ভাষারূপে ভারতের বিভিন্ন স্থানে প্রাকৃত ভাষারূপে প্রচলিত থাকে। এ প্রাকৃত ভাষাগুলোর শেষ স্তর অপভ্রংশ থেকেই উৎপন্ন হয়েছে গুজরাটি, পাঞ্জাবি, মারাঠি, হিন্দি ও বাংলার মতো আধুনিক ভাষার। এ প্রসঙ্গে ভাষাতত্ত¡বিদ জর্জ আব্রাহাম গ্রিয়ারসন ও ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় মনে করেন, বহু প্রাকৃতের একটির নাম মাগধী প্রাকৃত। পূর্ব মাগধী অপভ্রংশ থেকে উদ্ভ‚ত হয়েছে বাংলা ভাষার। এভাবে ভাষা পÐিতগণ বাংলা ভাষার জন্ম ইতিহাস প্রমাণ করেছেন।

প্রশ্ন -৩  নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
ভাষা বহতা নদীর মতো গতিশীল। নদী যেমন চলতে চলতে মোড় বদলায়, বাঁক নেয়, ভাষাও তেমনি মানুষের মুখে মুখে বদলাতে বদলাতে নতুন রূপ নেয়। এভাবে সৃষ্টি হয় নতুন ভাষার। মূলত ভাষার ধর্মই হচ্ছে বদলে যাওয়া। বাংলা ভাষার হাজার বছরের ইতিহাস পর্যালোচনায় গবেষকরা দেখিয়েছেন কত রকম বিবর্তনের মধ্য দিয়ে আজকের বাংলা ভাষার উদ্ভব। বিভিন্ন পÐিত নিজস্ব অভিমত ব্যক্ত করেছেন। বাংলা ভাষার যে বর্তমান রূপ তা বহু বছরের পরিবর্তন-পরিবর্ধন, সংযোজন-বিয়োজন, আবর্তন-বিবর্তনের ফল।
ক. ভাষাতাত্তি¡ক কারা? ১
খ. ভারতীয়-ইউরোপীয় ভাষাবংশ সম্পর্কে যা জান লেখ ২
গ. উদ্দীপকের অংশটি কীভাবে ‘বাংলা ভাষার জন্মকথা’ প্রবন্ধের সঙ্গে সম্পর্কিত? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত বাংলা ভাষার বিবর্তনের প্রকৃতি ‘বাংলা ভাষার জন্মকথা’ প্রবন্ধের আলোকে বিশ্লেষণ কর। ৪
 ৩নং প্রশ্নের উত্তর 
ক. ভাষার উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশ সম্পর্কে যারা গবেষণা করেন তাদের ভাষাতাত্তি¡ক বলা হয়।
খ. ভারতীয়-ইউরোপীয় ভাষাবংশের অন্য নাম ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাবংশ।
ইউরোপ ও এশিয়ার বেশ কিছু অঞ্চলে এ ভাষা প্রচলিত। এদের ধ্বনিতে শব্দে অনেক মিল রয়েছে। ভারতীয়-ইউরোপীয় ভাষা যেসব অঞ্চলে বিস্তৃত, তার সর্বপশ্চিমে ইউরোপ ও পূর্বে ভারত এবং বাংলাদেশ অবস্থিত। ভাষাতাত্তি¡করা মনে করেন, এসব অঞ্চলের ভাষাগুলো একই ভাষাবংশের সদস্য।
গ. উদ্দীপকের ভাষার উদ্ভব ও ক্রমবিকাশের ধারাটি ‘বাংলা ভাষার জন্মকথা’ প্রবন্ধের সঙ্গে নিবিড়ভাবে সম্পর্কযুক্ত।
বাংলা ভাষা বিশ্বের উল্লেখযোগ্য ভাষার একটি, নানা পরিবর্তনশীলতার মধ্য দিয়ে বাংলা ভাষা বর্তমান রূপ লাভ করেছে। ‘বাংলা ভাষার জন্মকথা’ প্রবন্ধে বাংলা ভাষার এই উৎপত্তি সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাবংশের নির্যাস নিয়ে হাজার হাজার বছর পাড়ি দিয়ে বাংলা ভাষা নিজস্বতা দিয়ে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে। নিয়ত গতিশীলতা তার ধর্ম। বৈদিক, সংস্কৃত, প্রাকৃত, অপভ্রংশ ইত্যাদি ধাপ পেরিয়ে বাংলা ভাষার সংহত রূপ প্রকাশ পেয়েছে আজ।
উদ্দীপকে ভাষার উদ্ভব ও ক্রমবিকাশ কীভাবে ঘটে তার ওপর আলোকপাত করা হয়েছে। পরিবর্তনশীলতার মাধ্যমে বাংলা ভাষা যে বর্তমান অবস্থায় এসেছে উদ্দীপকে তার উল্লেখ পাওয়া যায়। এ দিক থেকে উদ্দীপকের অংশটি ‘বাংলা ভাষার জন্মকথা’ প্রবন্ধের সঙ্গে গভীরভাবে সম্পর্কযুক্ত।
ঘ. বাংলা ভাষার উদ্ভব ও বিকাশ লক্ষ করলে দেখা যায় পরিবর্তনশীলতার মধ্য দিয়ে বাংলা ভাষা বর্তমান অবস্থায় উপনীত হয়েছে।
‘বাংলা ভাষার জন্মকথা’ প্রবন্ধে বাংলা ভাষার ইতিহাস সম্পর্কে জানা যায়, বদলে যাওয়াই ভাষার ধর্ম। মানুষের মুখে মুখে ভাষার ধ্বনি-বর্ণ-শব্দ-অর্থের পরিবর্তন ঘটে। ইউরোপ ও এশিয়ার বেশ কিছু ভাষার ধ্বনি ও শব্দে গভীর মিলের কারণে ভাষাতাত্তি¡করা এ ভাষাগুলোকে একটি ভাষাবংশের সদস্য বলে মনে করেন। ওই ভাষাবংশটির নাম ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাবংশ বা ভারতীয় ইউরোপীয় ভাষাবংশ। এ ভাষাবংশের অনেক শাখার মধ্যে একটি হচ্ছে ভারতীয় আর্যভাষা।
সংস্কৃত ছিল উঁচুশ্রেণির মানুষের লেখার ভাষা আর সাধারণ মানুষ কথা বলত প্রাকৃত ভাষায়। প্রাকৃত ভাষাগুলোকে বলা হয় মধ্য ভারতীয় আর্যভাষা। আর এ প্রাকৃত থেকে বাংলা ভাষার জন্ম। এ প্রাকৃত ভাষাগুলোর বিকৃত রূপ হচ্ছে অপভ্রংশ। ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় মনে করেন পূর্ব মাগধী অপভ্রংশ থেকে বাংলা ভাষার উৎপত্তি হয়েছে। ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ বাংলা ভাষার উৎপত্তি সম্পর্কে ভিন্নমত পোষণ করেন। তাঁর মতে, গৌড়ী অপভ্রংশ থেকেই জন্ম নিয়েছে বাংলা ভাষা।
উদ্দীপকেও দেখা যায়, ভাষা নদীর বহতার মতো গতিশীল। মানুষের মুখে মুখে বদলাতে বদলাতে নতুন রূপ নেয়। পÐিতরা হাজার বছরের ইতিহাস পর্যালোচনা করে বলেছেন বর্তমান বাংলা ভাষা আবর্তন বিবর্তনের ফল। পরিশেষে বলা যায় যে, বিবর্তনের মাধ্যমেই বাংলা ভাষা বর্তমান এ অবস্থায় আসীন হয়েছে।
প্রশ্ন -৪  নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
বাংলাদেশে আঞ্চলিক ভাষাগুলোর একটি থেকে আর একটির পার্থক্য রয়েছে। যেমন চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষা, বগুড়ার আঞ্চলিক ভাষা, বরিশালের আঞ্চলিক ভাষা। কালক্রমে প্রমিত ভাষা থেকে এগুলো এত দূর আলাদা হয়ে উঠতে পারে যে তখন আর একে বাংলা ভাষা বলা যাবে না। এভাবে নতুন ভাষা তৈরি হয়। প্রাকৃত ভাষা থেকে এ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে বেরিয়ে এসেছে বাংলা ভাষা।
ক. ভাষাবংশ কী? ১
খ. ভাষাকে বহতা নদীর সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে কেন? ২
গ. উদ্দীপকের আলোকে ‘বাংলা ভাষার জন্মকথা’ পর্যালোচনা কর। ৩
ঘ. উদ্দীপকে নতুন ভাষা তৈরির যে প্রক্রিয়ার কথা বলা হয়েছে ‘বাংলা ভাষার জন্মকথা’ প্রবন্ধের আলোকে তার যথার্থতা বিশ্লেষণ কর। ৪
 ৪নং প্রশ্নের উত্তর 
ক. উৎপত্তি অনুসারে পৃথিবীর ভাষাগুলোকে কয়েকটি বংশে ভাগ করা হয়েছে, এরকম একেকটি বংশকে ভাষাবংশ বলা হয়।
খ. পরিবর্তনশীলতার কারণে ভাষাকে বহতা নদীর সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে।
নদী বয়ে চলে, প্রবহমানতাই নদীর ধর্ম। আর প্রবহমান স্রোতধারা মাঝে মাঝে দিক পরিবর্তন করে বয়ে চলে সাগরের দিকে। তেমনই ভাষা কালের বিবর্তনে পরিবর্তিত হয়ে আজকের রূপ ধারণ করছে। ভাষার ধর্মই বদলে যাওয়া। মানুষের মুখে মুখে ভাষার ধ্বনি-শব্দ-অর্থের পরিবর্তন ঘটে। আর এরকম বদলাতে বদলাতেই ভাষা বর্তমান অবস্থানে এসে দাঁড়িয়েছে। নদীর স্রোতের মতো ভাষার এ প্রবহমান গতিধারার কারণে ভাষাকে বহতা নদীর সাথে তুলনা করা হয়েছে।
গ. ‘বাংলা ভাষার জন্মকথা’ প্রবন্ধে বিবর্তনের মধ্য দিয়ে বর্তমান বাংলা ভাষার উদ্ভবের ইতিহাস আলোচিত হয়েছে, যা উদ্ধৃত উদ্দীপকের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ।
আলোচ্য উদ্দীপকটি পাঠের মাধ্যমে আমরা জানতে পারি, বাংলা ভাষা বিভিন্ন আঞ্চলিক ভাষায় পরিণত হওয়ার পর তার নিজস্ব রূপ কীভাবে বদলে গেছে। অর্থাৎ আঞ্চলিক ভাষাগুলো বাংলা ভাষা থেকে এখন অনেকটাই পৃথক।
‘বাংলা ভাষার জন্মকথা’ প্রবন্ধেও দেখা যায়, ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাবংশ থেকে নানা রূপ বিবর্তনের মধ্য দিয়ে বর্তমান বাংলা ভাষার উদ্ভব হয়েছে। ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাবংশের একটি শাখা হচ্ছে প্রাচীন ভারতীয় আর্য ভাষা। এ ভাষা বৈদিক, সংস্কৃত ও প্রাকৃত; এ তিনটি শাখায় বিভক্ত হয়। প্রাকৃত ভাষা আবার বিকৃত হয়ে অপভ্রংশে পরিণত হয় এবং এ অপভ্রংশ থেকেই বর্তমান বাংলা ভাষার উৎপত্তি হয়েছে।
ঘ. উদ্দীপকে নতুন ভাষা তৈরির প্রক্রিয়ার কথা বলা হয়েছে তা ‘বাংলা ভাষার জন্মকথা’ প্রবন্ধের আলোকে যথার্থ।
উদ্দীপকে দেখা যায়, বাংলা ভাষা নানারকম আঞ্চলিক ভাষায় বিভক্ত হয়ে এমন স্বতন্ত্র রূপ ধারণ করেছে যে, এ ভাষাগুলো এখন চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষা, বগুড়ার আঞ্চলিক ভাষা এবং বরিশালের আঞ্চলিক ভাষা হিসেবে পরিচিত।
‘বাংলা ভাষার জন্মকথা’ প্রবন্ধ অনুযায়ী ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাবংশের অন্যতম একটি শাখা হচ্ছে প্রাচীন ভারতীয় আর্যভাষা। এ প্রাচীন ভারতীয় আর্য ভাষার একটি স্তর হলো প্রাকৃত ভাষা। প্রাকৃত ভাষা বিকৃত হয়ে অপভ্রংশে পরিণত হয়েছে। এ অপভ্রংশ থেকেই নানা আধুনিক ভারতীয় আর্য ভাষা, যেমন : বাংলা, গুজরাটি, মারাঠি, আসামি প্রভৃতি ভাষার উৎপত্তি হয়েছে। ভাষাবিজ্ঞানীরা মনে করেন, একই ভাষাবংশ থেকে উৎপন্ন এ ভাষাগুলোর মধ্যে ধ্বনিগত ও শব্দগত কিছু মিল রয়ে গেছে।
উদ্দীপকে বাংলা ভাষা থেকে আঞ্চলিক ভাষাগুলো যেমন বিবর্তিত হচ্ছে, তেমনি প্রাকৃতি ভাষা থেকে বিবর্তনের মাধ্যমে বাংলা ভাষার আবির্ভাব ঘটেছে। উদ্দীপকটিতে নতুন ভাষা তৈরির যে প্রক্রিয়ার কথা বলা হয়েছে ‘বাংলা ভাষার জন্মকথা’ প্রবন্ধের আলোকে তা যৌক্তিক।
প্রশ্ন-৫  নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
তমাল তার নানুর কাছে শুনেছে কালিদাসের ‘মেঘদূত’ কাব্যের কথা। জেনেছে এটি সংস্কৃত ভাষায় লিখিত। নানু এ কাব্য থেকে দুটি শ্লোক আবৃত্তি করে শোনান তমালকে। সে তার একটি বর্ণও বুঝতে পারে না। তমাল অবাক হয়, বাংলা ও সংস্কৃত ভাষায় এতো পার্থক্য। অথচ নানু বলেন, সংস্কৃত থেকেই নাকি জন্ম হয়েছে বাংলা ভাষার।
ক. প্রাচীন আর্যভাষার কয়টি স্তর? ১
খ. বৈদিক ভাষা বলতে কী বোঝায়? ২
গ. উদ্দীপকে সংস্কৃত ভাষার যে দুর্বোধ্যতার কথা বলা হয়েছে তা ‘বাংলা ভাষার জন্মকথা’ প্রবন্ধের সঙ্গে কতটা সংগতিপূর্ণ, বর্ণনা কর। ৩
ঘ. বাংলা ভাষার জন্মের ইতিহাস প্রসঙ্গে উদ্দীপকের নানুর বক্তব্যের যথার্থতা তোমার পঠিত প্রবন্ধের আলোকে মূল্যায়ন কর। ৪
 ৫নং প্রশ্নের উত্তর 
ক. প্রাচীন আর্যভাষার তিনটি স্তর।
খ. যিশু খ্রিষ্টের জন্মের মোটামুটি এক হাজার বছর পূর্বে রচিত বেদের ভাষা হলো বৈদিক ভাষা।
বেদকে প্রাচীনতম ধর্মশাস্ত্র গ্রন্থ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বেদ রচিত হয়েছিল বৈদিক ভাষায়। কিন্তু এ ভাষার মানুষের মুখে মুখে প্রচলিত ছিল না। শ্লোকগুলো পবিত্র বিবেচনা করে অনুসারী ব্যক্তিরা তা মুখস্থ করত। বৈদিক ভাষা দুর্বোধ্য ছিল বলে এ ভাষায় মানুষ কথা বলত না।
গ. হুমায়ুন আজাদ রচিত ‘বাংলা ভাষার জন্মকথা’ প্রবন্ধে বর্ণিত সংস্কৃত ভাষার এ দুর্বোধ্যতার সঙ্গে উদ্দীপকের বক্তব্য সংগতিপূর্ণ।
ভাষা সহজ ও প্রাঞ্জল না হলে তা মনের ভাব প্রকাশ করতে পারে না। উদ্দীপকে নানু সংস্কৃত ভাষায় লিখিত কালিদাসের ‘মেঘদূত’ কাব্যের আবৃত্তি শুনিয়েছে তমালকে, কিন্তু দুর্বোধ্যতার কারণে সে কিছুই বুঝতে পারেনি। নানু সহজ ও প্রাঞ্জল বাংলায় অনুবাদ করে শোনালে তখন বুঝতে পেরেছে। সংস্কৃত ভাষা দুর্বোধ্য ও অস্পৃষ্ট এবং বাংলা ভাষা সহজ-সরল ও প্রাঞ্জল, এ কথা তমাল বুঝতে পেরেছে।
উদ্দীপকে তমাল সংস্কৃত কঠিন ও জটিল ভাষার কারণে মেঘদূতের মর্মার্থ বুঝতে পারেনি। ‘বাংলা ভাষার জন্মকথা’ প্রবন্ধেও সংস্কৃত ভাষার এ দুর্বোধ্যতা ও জটিলতার কথাই তুলে ধরা হয়েছে। অর্থাৎ উদ্দীপকে সংস্কৃত ভাষার যে দুর্বোধ্যতার কথা বলা হয়েছে তা ‘বাংলা ভাষার জন্মকথা’ প্রবন্ধের সাথে পুরোপুরি সংগতিপূর্ণ।
ঘ. বাংলা ভাষার জন্মের ইতিহাস প্রসঙ্গে উদ্দীপকের নানুর বক্তব্য যথার্থ নয়।
সংস্কৃত পরিশীলিত ও শুদ্ধ ভাষা। এ ভাষা সাধারণ মানুষের মুখের ভাষা ছিল না। কাজেই এ ভাষা থেকে বাংলা ভাষার জন্ম হয়নি, হয়েছে বিভিন্ন প্রাকৃত ভাষা থেকে। ‘বাংলা ভাষার জন্মকথা’ প্রবন্ধে সংস্কৃতের অনেক শব্দ বাংলা ভাষায় গৃহীত হয়েছে জেনে এক দল গবেষক মন্তব্য করেছেন, সংস্কৃত বাংলার জননী। উদ্দীপকের নানুও এ মত পোষণ করেন।
সংস্কৃত কথোপকথনের ভাষা ছিল না। ছিল লেখা ও পড়ার ভাষা। কাজেই সে ভাষা থেকে কোনোক্রমেই অন্য একটি ভাষার জন্ম হতে পারে না।
ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর মতে, ‘গৌড়ীয় প্রাকৃত থেকে জন্ম লাভ করেছে বাংলা ভাষা।’ ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়ের মতে, ‘পূর্ব মাগধী অপভ্রংশ থেকে জন্ম লাভ করেছে বাংলা ভাষা।’ জর্জ আব্রাহাম গ্রিয়ারসনের মতে, ‘মাগধী প্রাকৃতের কোনো পূর্বাঞ্চলীয় রূপ থেকে জন্ম নিয়েছে বাংলা ভাষা।
অতএব আলোচনার মাধ্যমে বলা যায়, বাংলা ভাষা জন্মের ইতিহাস প্রসঙ্গে উদ্দীপকের নানুর মন্তব্য সঠিক নয়।
প্রশ্ন-৬  নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
আমাদের বাংলাদেশে বিভিন্ন অঞ্চলভেদে ভাষার প্রয়োগে ভিন্নতা রয়েছে। নোয়াখালী অঞ্চলের মানুষজন যেভাবে কথা বলে, তার সঙ্গে বরিশাল অঞ্চলের মানুষের মুখের ভাষার বেশ পার্থক্য রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়; ‘আমাদের বাড়ি এসো’। এ বাক্যটিকে নোয়াখালী অঞ্চলের লোকেরা বলবে, ‘আংগো বাড়ি আইও’ আর বরিশাল অঞ্চলের লোকেরা বলবে, “মোগো বাড়ি যাইও।” এ পার্থক্যের কারণ হচ্ছে আঞ্চলিকতা। তাই অঞ্চলভেদে বাংলা ভাষার ব্যবহারে রয়েছে নানা বৈচিত্র্য।
ক. আর্যভাষার প্রথম স্তরের নাম কী? ১
খ. “সংস্কৃত নয়, প্রাকৃত ভাষা থেকেই উদ্ভব ঘটেছে বাংলা ভাষার।”Ñ ব্যাখ্যা কর। ২
গ. উদ্দীপকে বর্ণিত অঞ্চলভেদে ভাষার বৈচিত্র্য ‘বাংলা ভাষার জন্মকথা’ প্রবন্ধে বর্ণিত ভাষার কোন বৈশিষ্ট্যকে প্রকাশ করে? বর্ণনা কর। ৩
ঘ. উদ্দীপকের বর্ণনার সঙ্গে ভাষা বিবর্তনের যে চিত্র তা ‘বাংলা ভাষার জন্মকথা’ প্রবন্ধের আলোকে মূল্যায়ন কর। ৪
 ৬নং প্রশ্নের উত্তর 
ক. আর্যভাষার প্রথম স্তরের নাম বৈদিক বা বৈদিক সংস্কৃত।
খ. “সংস্কৃত নয়, প্রাকৃত ভাষা থেকেই উদ্ভব ঘটেছে বাংলা ভাষার।”Ñ এ উক্তিটি যথার্থ।
কারণ সংস্কৃত ছিল তৎকালীন সমাজের উঁচুশ্রেণির লোকের লেখার ভাষা। এ ভাষা আপামর জনসাধারণ ব্যবহার করত না। সাধারণ জনগণ ব্যবহার করত প্রাকৃত ভাষা বা কথ্য ভাষা। তাই সংস্কৃত ভাষার অনেক শব্দ বাংলা ভাষায় থাকলেও ধারণা করা হয় প্রাকৃত ভাষা থেকেই বাংলার উদ্ভব ঘটেছে।
গ. অঞ্চলভেদে ভাষার যে বিচিত্রতা ‘বাংলা ভাষার জন্মকথা’ প্রবন্ধে ভাষার বদলে যাওয়ার বৈশিষ্ট্যকেই প্রকাশ করে।
‘বাংলা ভাষার জন্মকথা’ প্রবন্ধে ড. হুমায়ুন আজাদ দেখিয়েছেন বাংলা ভাষার উৎপত্তি ও বিকাশ। ভাষার কতগুলো ধর্মের বর্ণনাও দিয়েছেন। এর মধ্যে অন্যতম ধর্ম হলো ভাষার বদলে যাওয়া। ভাষা ব্যবহারের কারণে এবং ভাষার ভৌগোলিক অবস্থানের কারণেও বদলে যায়। তাই একই ভাষা একেক অঞ্চলে একেক রকম। বাংলা ভাষাও অবস্থানের তার আপন অবস্থানের পরিপ্রেক্ষিতে বৈচিত্র্যময়।
উদ্দীপকে অঞ্চলভেদে আঞ্চলিক ভাষার ভিন্নতর রূপ দেখা যায়। আঞ্চলিক ভাষার বৈশিষ্ট্য মূলত নির্ভর করে স্থানিক ও কালিক অবস্থানের ওপর। তাই বরিশাল ও নোয়াখালী অঞ্চলের মানুষের মুখের ভাষার পার্থক্য বিদ্যমান। অঞ্চলভেদে ভাষা ব্যবহার রয়েছে নানা বৈচিত্র্য।
ঘ. উদ্দীপকে বর্ণিত হয়েছে ভাষা অঞ্চলভেদে ভিন্ন ভিন্ন হয় এবং ভাষায় ধ্বনির ব্যবহারের বৈচিত্র্যের বিষয়টি যা ‘বাংলা ভাষার জন্মকথা’ প্রবন্ধে প্রকাশ পেয়েছে।
‘বাংলা ভাষার জন্মকথা’ প্রবন্ধে প্রবন্ধকার বাংলা ভাষার উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশ নিয়ে আলোচনা করেছেন। মানুষের মুখে মুখে বদলে যায় ভাষার ধ্বনি, রূপ বদলে যায় শব্দের, বদল ঘটে অর্থের। দীর্ঘদিন কেটে গেলে মনে যে ভাষাটি একটি নতুন ভাষা হয়ে উঠেছে। আর সে ভাষার বদল ঘটেই জন্ম হয়েছে বাংলা ভাষার।
উদ্দীপকের বর্ণনায় ভাষার বিবর্তনের চেয়ে ব্যবহারগত ভিন্নতার পার্থক্য বেশি দেখানো হয়েছে। ভাষার ধর্মই হলো, বদলে যাওয়া। মানুষের মুখে মুখে যেমন ভাষার বদল ঘটে, তেমনি অঞ্চলভেদেও ভাষার, শব্দের ও অর্থের বদল ঘটে। তাই মূলভাষাকে আশ্রয় করে গড়ে ওঠা এ আঞ্চলিক ভাষাগুলো একটি থেকে অন্যটি সম্পূর্ণরূপে আলাদা যা উদ্দীপকের বরিশাল ও নোয়াখালী অঞ্চলের মানুষের মুখের ভাষায় ফুটে উঠেছে। এভাবেই সূচিত হয় ভাষার বিবর্তন।
তাই প্রবন্ধের আলোকে বলা যায়, হঠাৎ করেই সৃষ্টি হয় না। এটা মানুষের মুখে মুখে ও বিভিন্ন অঞ্চলে ব্যবহৃত হতে হতে পরিবর্তিত হয়। ঘটতে থাকে ভাষার বিবর্তন সৃষ্টি হয় নতুন নতুন ভাষা।
প্রশ্ন-৭  নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
জসিমের জন্ম হয়েছিল সিলেটের এক প্রত্যন্ত অঞ্চলে দাদার বাড়িতে। বড় হয়েছে এবং পড়ালেখা করেছে ঢাকা শহরে। নিজের জন্মস্থানে খুব বেশি যাওয়াই হয়নি বড় হওয়ার পর থেকে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধুদের নিয়ে কিছুদিন আগে পিতৃভ‚মিতে বেড়াতে গিয়ে বেশ বিব্রতকর অবস্থার মধ্যে পড়তে হয় তাকে। কেননা, ওই অঞ্চলের লোকেরা সবাই বাংলায় কথা বললে জসিম ও তার বন্ধুদের বুঝতে খুবই অসুবিধা হচ্ছিল।
ক. আর্যভাষার কোন স্তর থেকে বাংলা ভাষার জন্ম? ১
খ. গৌড়ী প্রাকৃত বলতে কী বোঝানো হয়েছে? ২
গ. নিজের জন্মস্থানের লোকদের ভাষা বুঝতে জসিমের অসুবিধা হওয়ার কারণ কী? ‘বাংলা ভাষার জন্মকথা’ প্রবন্ধের আলোকে ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. ‘মানুষের মুখে মুখে বদলে যায় ভাষার ধ্বনি’ ‘বাংলা ভাষার জন্মকথা’ প্রবন্ধের এ উক্তটি উদ্দীপকে কতটুকু প্রতিফলিত হয়েছে তা বিশ্লেষণ কর। ৪
 ৭নং প্রশ্নের উত্তর 
ক. মধ্যভারতীয় আর্যভাষার একটি স্তর প্রাকৃত থেকে বাংলা ভাষার জন্ম।
খ. গৌড়ী প্রাকৃত বলতে একটি প্রাকৃত ভাষাকে বোঝায়।
প্রখ্যাত ভাষাবিদ ও সুপÐিত ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহ বাংলা ভাষার উৎপত্তি সম্পর্কে একটু ভিন্ন মত পোষণ করেছেন। তিনি একটি প্রাকৃতের নাম বলেন গৌড়ী প্রাকৃত। তিনি মনে করেন, গৌড়ী প্রাকৃতের পরিণত অবস্থা গৌড়ী অপভ্রংশ থেকে উৎপত্তি ঘটেছে বাংলা ভাষার। ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, পূর্বমাগধী অপভ্রংশ থেকে উদ্ভব হয়েছে বাংলা ভাষার। তবে উভয়ের মতে প্রাকৃতের কোনো রূপ থেকে বাংলা ভাষার জন্ম বলে মনে করা হয়।
গ. স্থানকালপাত্রভেদে ভাষার যে রূপ বদল হয় সেটিই মূলত জসিমের নিজের জন্মস্থানের লোকদের ভাষা না বোঝার প্রধান কারণ।
‘বাংলা ভাষার জন্মকথা’ প্রবন্ধে লেখক বাংলা ভাষার উৎপত্তি সম্পর্কে আলোচনা করতে গিয়ে ভাষার পরিবর্তন ও বিবর্তন সম্পর্কে আলোকপাত করেছেন। ভাষার ধর্মই হচ্ছে বদলে যাওয়া। মানুষের মুখে মুখে বদলে যায় ভাষার ধ্বনি।
উদ্দীপকের জসিমের ক্ষেত্রে আলোচ্য প্রবন্ধের এ উক্তিটি পুরোপুরিভাবেই প্রযোজ্য। স্থানকালপাত্রভেদে ভাষার যে রূপ বদল হয় সেটিই মূলত জসিমের নিজের জন্মস্থানের লোকদের ভাষা না বোঝার প্রধান কারণ। সময়ের বিবর্তনে ভাষার ব্যাপক রূপ বদলের কারণে নতুন নতুন ভাষা যেভাবে সৃষ্টি হতে পারে ঠিক তেমনিভাবে ভৌগোলিক দূরত্বের কারণও এক এলাকার মানুষের মুখের ভাষা অন্য এলাকার চেয়ে আলাদা রূপ লাভ করে থাকে। আমাদের দেশের বিভিন্ন আঞ্চলিক ভাষার বৈচিত্র্যটিও এভাবেই সংঘটিত হয়েছে। অর্থাৎ আঞ্চলিকতার রূপভেদের কারণেই ঢাকা শহরে বড় হওয়া জসিমের পক্ষে নিজের জন্মস্থানের লোকদের ভাষা বুঝতে অসুবিধা হয়েছিল।
ঘ. ‘মানুষের মুখে মুখে বদলে যায় ভাষার ধ্বনি’- ‘বাংলা ভাষার জন্মকথা’ প্রবন্ধের এ উক্তিটি উদ্দীপকে পুরোপুরি প্রতিফলিত হয়েছে।
লেখক ‘বাংলা ভাষার জন্মকথা’ প্রবন্ধে বাংলা ভাষার উৎপত্তি সম্পর্কে আলোচনা করতে গিয়ে ভাষার পরিবর্তন ও বিবর্তন সম্পর্কে আলোকপাত করেছেন এবং বাংলা ভাষার জন্মবৃত্তান্ত তুলে ধরেছেন। আলোচনা প্রসঙ্গে লেখক এ রচনায় মন্তব্য করেছেন, ‘ভাষার ধর্মই হচ্ছে বদলে যাওয়া। মানুষের মুখে মুখে বদলে যায় ভাষার ধ্বনি।’ বাংলা ভাষা মূলত অন্য সব ভাষার মতোই নানা পরিবর্তনের মধ্যদিয়ে বিবর্তিত হতে হতে তার বর্তমান রূপটি লাভ করেছে। সময়ের বিবর্তন, ভৌগোলিক দূরত্ব ও পরিবেশগত বৈচিত্র্যের কারণে মানুষের আচরণগত ও ভাষার পার্থক্য সৃষ্টি হয়।
স্থান কাল পাত্রভেদে ভাষার যে রূপ বদল হয় সেটিই মূলত উদ্দীপকের জসিমের নিজের জন্মস্থানের লোকদের ভাষা না বোঝার অন্যতম প্রধান কারণ। আমরা লক্ষ করলে খুব সহজেই এ ব্যাপারটি টের পাই যে, আমাদের পরিচিত পরিমÐলেই দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আগমনকারী লোকদের মুখের ভাষা ভিন্ন হয়ে থাকে। এজন্য ভৌগোলিক দূরত্ব ও আঞ্চলিকতার রূপভেদের কারণেই ঢাকা শহরে বড় হওয়া জসিম তার নিজ জন্মস্থানের মানুষের মুখের ভাষা ভালোভাবে বুঝতে পারেনি।
তাই বলা যায়, মানুষের মুখে মুখে বদলে যায় ভাষার ধ্বনিÑ ‘বাংলা ভাষার জন্মকথা’ প্রবন্ধের এ উক্তিটিতে উদ্দীপকের ঘটনা পুরোপুরি প্রতিফলিত হয়েছে।

প্রশ্ন-৮  আরিফ ও জাহান বাংলা ভাষা নিয়ে কথা বলছে। আরিফ বলছে, আগে মানুষ সংস্কৃত ভাষায় কথা বলত এবং সেই ভাষায় তৎসম শব্দের ব্যবহার বেশি ছিল। মানুষ সহজে অনেক কিছু বুঝতে পারত না। আজকাল মানুষ তদ্ভব শব্দবহুল চলিত ভাষারও পরিবর্তন ঘটতে পারে। চলতি ভাষার স্থান অন্য কোনো ভাষা দখল করতে পারে। আর এটাই তো ভাষার ধর্ম।
ক. ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় কে? ১
খ. ‘প্রাকৃত ভাষা’ বলতে কী বোঝ? ২
গ. উদ্দীপকটি ‘বাংলা ভাষার জন্মকথা’ প্রবন্ধের কোন বিষয়টিকে ইঙ্গিত করে? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. উদ্দীপকটি ‘বাংলা ভাষার জন্মকথা’ প্রবন্ধের সমগ্র ভাব ধারণ করে কি? মতের পক্ষে যুক্তি দাও। ৪

প্রশ্ন-৯ 

ক. ভাষার ধর্ম কী? ১
খ. ‘বাংলা ঠিক সংস্কৃতের কন্যা নয়’Ñ বুঝিয়ে বল। ২
গ. উদ্দীপকের ছকটি ‘বাংলা ভাষার জন্মকথা’ প্রবন্ধের কোন দিকটিকে নির্দেশ করে? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. ‘বিভিন্ন অপভ্রংশ থেকেই উৎপন্ন হয়েছে আধুনিক ভারতীয় আর্যভাষা’Ñ ‘বাংলা ভাষার জন্মকথা’ প্রবন্ধ ও উদ্দীপকের আলোকে বিশ্লেষণ কর। ৪

  জ্ঞানমূলক  
প্রশ্ন \ ১ \ ‘বাংলা ভাষার জন্মকথা’ প্রবন্ধে বাংলা ভাষাকে কার মেয়ে বলা হয়েছে?
উত্তর : ‘বাংলা ভাষার জন্মকথা’ প্রবন্ধে বাংলা ভাষাকে সংস্কৃত ভাষার মেয়ে বলা হয়েছে।
প্রশ্ন \ ২ \ উনিশ শতকের একদল লোকের মতে, বাংলা ভাষার সঙ্গে সংস্কৃত ভাষার সম্পর্ক কেমন?
উত্তর : উনিশ শতকের একদল লোকের মতে, বাংলা ভাষার সঙ্গে সংস্কৃত ভাষার সম্পর্ক বেশ দূরের।
প্রশ্ন \ ৩ \ সংস্কৃত কাদের লেখার ভাষা ছিল?
উত্তর : সংস্কৃত ছিল সমাজের উঁচুশ্রেণির মানুষের লেখার ভাষা।
প্রশ্ন \ ৪ \ প্রাকৃত ভাষা কী?
উত্তর : প্রাকৃত ভাষা হচ্ছে সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনের কথ্য ভাষা।
প্রশ্ন \ ৫ \ মাগধী প্রাকৃতের কোন অঞ্চলীয় রূপ থেকে জন্ম নেয় বাংলা ভাষা?
উত্তর : মাগধী প্রাকৃতের পূর্বাঞ্চলীয় রূপ থেকে জন্ম নেয় বাংলা ভাষা।
প্রশ্ন \ ৬ \ বাংলা ভাষার ইতিহাস আলোচনার জন্য আমাদের কত বছর পিছিয়ে যেতে হবে?
উত্তর : বাংলা ভাষার ইতিহাস আলোচনার জন্য আমাদের অন্তত কয়েক হাজার বছর পিছিয়ে যেতে হবে।
প্রশ্ন \ ৭ \ ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাবংশের একটি শাখার নাম লেখ।
উত্তর : ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাবংশের একটি শাখার নাম হলো ভারতীয় আর্যভাষা।
প্রশ্ন \ ৮ \ ভারতীয় আর্যভাষার তিনটি স্তর কখন পাওয়া যায়?
উত্তর : যিশুখ্রিষ্টের জন্মের আগেই ভারতীয় আর্যভাষার তিনটি স্তর পাওয়া যায়।
প্রশ্ন \ ৯ \ ‘প্রাকৃত’ ভাষাগুলোকে কী বলা হয়?
উত্তর : প্রাকৃত ভাষাগুলোকে মধ্যভারতীয় আর্যভাষা বলা হয়।
প্রশ্ন \ ১০ \ ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহর মতে, কোন ভাষা থেকে বাংলা ভাষার উৎপত্তি?
উত্তর : ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহর মতে, গৌড় অপভ্রংশ থেকেই বাংলা ভাষার উৎপত্তি হয়েছে।
প্রশ্ন \ ১১ \ মাগধী প্রাকৃতের কোনো পূর্বাঞ্চলীয় রূপ থেকে জন্ম নেয় বাংলা ভাষা মতটি কার।
উত্তর : উত্তর মাগধী প্রাকৃতের কোনো পূর্বাঞ্চলীয় রূপ থেকে জন্ম নেয় বাংলা ভাষা মতটি জর্জ আব্রাহাম গ্রিয়ারসনের।
প্রশ্ন \ ১২ \ প্রাচীন ভারতীয় আর্যভাষার প্রাচীন রূপগুলো কোথায় পাওয়া যায়?
উত্তর : প্রাচীন ভারতীয় আর্যভাষার প্রাচীন রূপগুলো ঋগে¦দের মন্ত্রগুলোতে পাওয়া যায়।
প্রশ্ন \ ১৩ \ ‘ভাষার’ ধর্ম কী?
উত্তর : ভাষার ধর্ম বদলে যাওয়া।
প্রশ্ন \ ১৪ \ পূর্ব মাগধী অপভ্রংশ থেকে উদ্ভূত হয়েছে বাংলা ভাষার মতটি কার?
উত্তর : পূর্ব মাগধী অপভ্রংশ থেকে উদ্ভূত হয়েছে বাংলা ভাষার এ মতটি ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়ের।
প্রশ্ন \ ১৫ \ ‘বাংলা ভাষার জন্মকথা’প্রবন্ধটি কোন গ্রন্থ থেকে নেয়া হয়েছে?
উত্তর : ‘বাংলা ভাষার জন্মকথা’ প্রবন্ধটি ‘কতো নদী সরোবর বা বাঙলা ভাষার জীবনী’ গ্রন্থ থেকে নেয়া হয়েছে।
  অনুধাবনমূলক  
প্রশ্ন \ ১ \ ‘মানুষের মুখে মুখে বদলে যায় ভাষার ধ্বনি’Ñ ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : উচ্চারণগত পার্থক্যের জন্যই মানুষের মুখে মুখে ভাষার ধ্বনি বদলে যায়।
অঞ্চলভিত্তিক ভাষায় ধ্বনিতে পার্থক্য লক্ষ করা যায়। একেক অঞ্চলে এক একটি শব্দকে একেকভাবে উচ্চারণ করা হয়। এর কারণ মানুষের উচ্চারণগত পার্থক্য। এ পার্থক্যের জন্যই মানুষের মুখে মুখে বদলে যায় ভাষার ধ্বনি।
প্রশ্ন \ ২ \ বাংলা ভাষার জন্ম ইতিহাস ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : বাংলা ভাষার বয়স সম্পর্কে কেউ নির্দিষ্ট কিছু জানে না।
কারণ বাংলা ভাষা নির্দিষ্ট কোন ভাষা থেকে সৃষ্টি হয়েছে, তা পূর্ণাঙ্গ শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। বাংলা ভাষার ইতিহাস খুবই অস্পষ্ট। একশ বছর পূর্বেও বাংলা ভাষার ইতিহাস সম্পর্কে কারও কোনো স্পষ্ট ধারণা ছিল না। তবে একদল লোকের মতে, সংস্কৃত ভাষাই বাংলা ভাষার জননী।
প্রশ্ন \ ৩ \ ‘মাগধী প্রাকৃতের কোনো পূর্বাঞ্চলীয় রূপ থেকে জন্ম নেয় বাংলা ভাষা’Ñ ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : জর্জ আব্রাহাম গ্রিয়ারসন এ মত প্রকাশ করেন। অনেকের মতে, সংস্কৃত সাধারণ লোকের কথ্যভাষা ছিল না। তখন সাধারণ মানুষ কথা বলত নানা রকম প্রাকৃত ভাষায়। প্রাকৃত হচ্ছে সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনের কথ্যভাষা। জর্জ আব্রাহাম গ্রিয়ারসন মনে করেন বহু প্রাকৃতের একটি হলো মাগধী প্রাকৃত। এ মাগধী প্রাকৃতের কোনো পূর্বাঞ্চলীয় রূপ থেকে জন্ম নেয় বাংলা ভাষা।
প্রশ্ন \ ৪ \ ‘বাংলা সংস্কৃতের দুষ্ট মেয়ে।’Ñ কথাটি ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : ‘বাংলা সংস্কৃতের দুষ্ট মেয়ে’ কথাটি দ্বারা বোঝানো হয়েছে যেÑ বাংলা ভাষার জন্ম সংস্কৃত ভাষা থেকে হলেও বাংলা ভাষা সংস্কৃত ভাষা থেকে অনেক দূরে সরে গেছে।
সংস্কৃত ভাষার অনেক শব্দই বাংলা ভাষায় আছে। তবে এর সঙ্গে মিশেছে আরও অনেক ভাষার শব্দ। আরবি, ইংরেজি, হিন্দি, উর্দু, ফারসি, জাপানি, ফরাসি, গুজরাটি, জার্মানি প্রভৃতি ভাষার শব্দও আছে বাংলা ভাষায়। তবে সংস্কৃত ভাষার শব্দ বিদেশি ভাষার শব্দের চেয়ে তুলনামূলক বেশি আছে বাংলা ভাষায়।
প্রশ্ন \ ৫ \ ডক্টর সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়ের মতাবলম্বনে কোন কোন ভাষার সঙ্গে বাংলা ভাষার ঘনিষ্ঠতা রয়েছে?
উত্তর : ডক্টর সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়ের মতে, বাংলা ভাষার সঙ্গে খুব ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে আসামি ও ওড়িয়া ভাষার।
কারণ পূর্ব মাগধী অপভ্রংশ থেকেই উদ্ভূত হয়েছে বাংলা ভাষার। অন্য কয়েকটি ভাষার সঙ্গেও ঘনিষ্ঠতা রয়েছে বাংলা ভাষার, কারণ সেগুলোর উৎপত্তি হয়েছে মাধী অপভ্রংশের অন্য দুটি থেকে। ভাষাগুলো হলো : মৈথিলি, মগহি ও ভোজপুরিয়া।

 

Leave a Reply