এইচএসসি ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং ষষ্ঠ অধ্যায় চেক, বিল অব এক্সচেঞ্জ ও প্রমিসরি নোট সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর

অধ্যায়-৬: চেক, বিল অব এক্সচেঞ্জ ও প্রমিসরি নোট

গুরুত্বপূর্ণ সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর

মমমপ্রশ্ন১ মি. সাজ্জাদ তার ব্যাংক হিসাবের একটি চেক জনাব সিফাতকে দিলেন। চেকে প্রাপকের ঘরে কোনো নাম লেখা ছিল না। জনাব সিফাত চেকটি তার ব্যাংক হিসাবে জমা দেয়ার জন্য তার কর্মচারীকে ব্যাংকে পাঠালেন। তবে জমা দেয়ার আগে চেকের বামপাশে দুটি রেখা পাশাপাশি টেনে দেন। প্রাপকের নাম না থাকায় ব্যাংক কর্মকর্তা ম্যানেজার সাহেবকে বিষয়টি জানান। ম্যানেজার সাহেব বললেন, চেকের টাকা মি. সিফাতের হিসাবে জমা করে দিলে কোনো সমস্যা নেই। [ঢা. বো. ১৭]
অ ক. বাসি চেক কী? ১
অ খ. চেকের অনুমোদন-এর ধারণাটি ব্যাখ্যা করো। ২
অ গ. মি. সাজ্জাদ, জনাব সিফাতকে কোন ধরনের চেক প্রদান করেছিলেন? বর্ণনা করো। ৩
অ ঘ. চেকটি জনাব সিফাতের ব্যাংক হিসাবে জমা দেয়ার যৌক্তিকতা বিশ্লেষণ করো। ৪
১ নং প্রশ্নের উত্তর অ
ক প্রস্তুত তারিখের পর থেকে চেক ভাঙানোর আইনানুগ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে চেক ভাঙানো না হলে উক্ত চেককে বাসি চেক বলে।
খ হস্তান্তরের উদ্দেশ্যে চেকের আদেষ্টা বা প্রাপক বা ধারক কর্তৃক চেকের উল্টোপিঠে কিংবা উক্ত কাগজে কোনো কিছু লিখে বা না লিখে স্বাক্ষর করাকে চেকের অনুমোদন বলে।
চেক একটি হস্তান্তরযোগ্য দলিল। চেক হস্তান্তরের জন্য অনুমোদনের প্রয়োজন হতেও পারে আবার নাও হতে পারে। চেক অনুমোদনের মুখ্য উদ্দেশ্য হলো চেকটি হস্তান্তর করা অর্থাৎ অনুমোদনকারী কর্তৃক অন্যকে চেকের স্বত্ব প্রদান করা। হস্তান্তরের জন্য বাহক চেকে অনুমোদন প্রয়োজন হয় না কিন্তু দাগকাটা চেকের ক্ষেত্রে অনুমোদনের প্রয়োজন হয়।
গ উদ্দীপকের মি. সাজ্জাদ, জনাব সিফাতকে বাহক চেক প্রদান করেছিলেন।
এই চেকের টাকা ব্যাংক যেকোনো বাহককে প্রদান করে। চেকে প্রাপকের নাম লেখা থাকলেও ব্যাংক চেকের অর্থ এর বাহককে পরিশোধ করে থাকে। এই চেকটি কেবল হাত বদলের দ্বারাই স্বত্ব হস্তান্তরিত হয়।
উদ্দীপকে মি. সাজ্জাদ তার ব্যাংক হিসাবের একটি চেক জনাব সিফাতকে প্রদান করেন। অর্থাৎ মি. সাজ্জাদ, জনাব সিফাতকে চেকটি প্রদানের মাধ্যমে এর স্বত্ব হস্তান্তর করেছেন। আর শুধু বাহক চেকের ক্ষেত্রেই হাত বদলের দ্বারা স্বত্ব পরিবর্তীত হয়। তবে উক্ত চেকে প্রাপকের নামের স্থানটি ফাঁকা ছিল, যা বাহক চেক হিসেবে ব্যাংক গ্রহণ করে থাকে।
ঘ উদ্দীপকের জনাব সিফাতের ব্যাংক হিসাবে প্রাপকের নাম ছাড়া দাগকাটা চেকটি জমা দেয়ার কোনো প্রকার যৌক্তিকতা নেই।
বাহক বা হুকুম চেকের বামকোণে দুটি আড়াআড়ি দাগ টানা চেকই মূলত দাগকাটা চেক। এ চেকের অর্থ প্রাপ্তিতে চেকে অবশ্যই প্রাপকের নাম উলে­খ করতে হয়।
উদ্দীপকের মি. সাজ্জাদ তার ব্যাংক হিসাবের একটি চেক জনাব সিফাতকে দিলেও তাতে প্রাপকের নামের স্থানটি ফাঁকা ছিল। অর্থাৎ মি. সাজ্জাদ, জনাব সিফাতকে একটি বাহক চেক ইস্যু করেছিল। পরবর্তীতে জনাব সিফাত চেকটিতে দুটি দাগ টেনে দাগকাটা চেকে রূপান্তর করেন। তবে দাগকাটার মাধ্যমে চেকটি দাগকাটা চেকে পরিণত হলেও তাতে প্রাপকের নামের স্থানটি ফাঁকাই ছিল।
জনাব সিফাত পরবর্তীতে চেকটি জমা দিতে তার কর্মচারীকে ব্যাংকে পাঠালেন। ব্যাংক কর্মকর্তা ব্যাংকের ম্যানেজারের পরামর্শে জনাব সিফাতের ব্যাংক হিসাবে চেকটি জমা দেয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন। এক্ষেত্রে দাগকাটা চেক কেবল গ্রাহকের ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে নগদায়ন (ওহ পধংয) হওয়ায় এ চেকে প্রাপকের নাম থাকা অবশ্যক, যা জনাব সিফাতের গৃহীত চেকে ছিল না। তাই বলা যায়, ব্যাংক ম্যানেজারের আদেশে চেকটি জনাব সিফাতের হিসাবে জমা দেয়ার সিদ্ধান্তটি অযৌক্তিক।
মমমপ্রশ্ন২ মি. রহিম একজন ব্যবসায়ী। তিনি তার পাওনাদারের নিকট থেকে একটি চেক পান যার বাম পাশে আড়াআড়িভাবে দুটি দাগের মধ্যে ‘হস্তান্তরযোগ্য নয়’ কথাটি লেখা ছিল। চেকটি ব্যাংকে উপস্থাপন করলে ম্যানেজার সাহেব সরাসরি চেকের টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। তবে টাকা ওঠানোর জন্য তিনি মি. রহিমকে একটি সহজ উপায় বলে দেন।
[দি. বো. ১৭]
অ ক. হুকুম চেক কী? ১
অ খ. অগ্রিম চেক বলতে কী বোঝ? ২
অ গ. মি. রহিম পাওনাদারের নিকট থেকে যে চেকটি পেয়েছিলেন সেটি কী চেক? এ চেকের তাৎপর্য সংক্ষেপে বর্ণনা করো। ৩
অ ঘ. ব্যাংক ম্যানেজার মি. রহিমকে টাকা উঠানোর জন্য কী সহজ উপায় বলে দেন? বিশ্লেষণ করো। ৪
২ নং প্রশ্নের উত্তর অ
ক যে চেকে প্রাপকের নামের শেষে “অথবা আদেশানুসারে” শব্দদ্বয় লেখা থাকে তাকে হুকুম চেক বা আদেশ চেক বলে।
খ যে চেক ভবিষ্যতের কোনো তারিখ দিয়ে প্রস্তুত করা হয় তাকে অগ্রিম চেক বলে।
এ ধরনের চেক প্রস্তুতে চেক ইস্যুর তারিখ উলে­খ না করে কোনো ভবিষ্যৎ বা পরবর্তী তারিখের উলে­খ করা হয়। আর উলি­খিত তারিখের পূর্বে এ চেক ভাঙ্গানো যায় না।
গ উদ্দীপকে মি. রহিম পাওনাদারের নিকট থেকে যে চেকটি পেয়েছিলেন তা একটি সাধারণভাবে দাগকাটা চেক।
যদি কোনো দাগকাটা চেকের দুই দাগের মাঝখানে ব্যাংক শব্দের উলে­খ না থাকে তবে উক্ত চেক সাধারণভাবে দাগকাটা চেক হিসেবে গণ্য হয়। এ ধরনের চেকে দুই দাগের মাঝখানে এন্ড কোং, প্রাপকের হিসাব, হস্তান্তরযোগ্য নয় শব্দদ্বয়ের উলে­খ থাকে।
উদ্দীপকে মি. রহিম একজন ব্যবসায়ী। তিনি তার পাওনাদারের নিকট থেকে একটি চেক গ্রহণ করেন। চেকটির উপরিভাগের বাম প্রান্তে আড়াআড়িভাবে দুটি দাগ টানা ছিল। অর্থাৎ মি. রহিমের প্রাপ্ত চেকটি একটি দাগকাটা চেক। তবে চেকটিতে দুই দাগের মাঝখানে ‘হস্তান্তরযোগ্য নয়’ কথাটির উলে­খ ছিল। এ চেকের দুইদাগের মাঝখানে এ ধরনের শর্তে ‘ব্যাংক’ শব্দের উলে­খ না থাকায় তা সাধারণভাবে দাগকাটা চেকের বৈশিষ্ট্যপূর্ণ। উক্ত চেকের অর্থ মি. রহিম নিজের ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে সংগ্রহ করতে পারবেন।
দাগকাটা চেক : বাহক চেক বা হুকুম চেকের উপরিভাগের বামকোণে কিছু লিখে বা না লিখে আড়াআড়িভাবে দুটি দাগ টানলে সেটি দাগকাটা চেকে রূপান্তরিত হয়।
ঘ উদ্দীপকে ব্যাংক ম্যানেজার মি. রহিমকে দাগকাটা চেকের টাকা উত্তোলনে চেকের প্রস্তুতকারী দ্বারা চেকের দাগ অপসারণের বিষয়টি অবগত করেন।
দাগকাটা চেকের অর্থ নগদায়নে চেকটি প্রাপকের হিসাবের মাধ্যমে ব্যাংকে উপস্থাপনের প্রয়োজন হয়। যার প্রেক্ষিতে ব্যাংক চেকের অর্থ প্রাপকের হিসাবে জমা করে। অর্থাৎ এ চেকের অর্থ ব্যাংক নগদে প্রদান করে না।
উদ্দীপকে মি. রহিম একজন ব্যবসায়ী। তিনি তার পাওনাদার হতে একটি দাগকাটা চেক সংগ্রহ করেন। তবে চেকটি ব্যাংকে উপস্থাপন করলে ব্যাংক ম্যানেজার নগদে চেকের অর্থ দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
এ পর্যায়ে ব্যাংক ম্যানেজার মি. রহিমকে চেকের টাকা নগদায়নের একটি সহজ উপায় বলে দেন। ব্যাংক ম্যানেজার মূলত মি. রহিমকে চেকটির দাগ অপসারণের বিষয়ে পরামর্শ দেন। এক্ষেত্রে মি. রহিম চেকের প্রস্তুতকারী দ্বারা চেকের বাম প্রান্তের আড়াআড়ি দাগ দুটি কেটে নিতে পারেন। তবে উক্ত স্থানে চেক প্রস্তুতকারীর স্বাক্ষরও গ্রহণ করতে হবে। এ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দাগকাটা চেকটি হুকুম চেকে পরিণত হবে। যার অর্থ ব্যাংক এর প্রাপককে নগদে প্রদানে বাধ্য থাকবে।
নগদায়ন : নগদায়ন বলতে নগদ অর্থে রূপান্তরকে বোঝায়।
মমমপ্রশ্ন৩ জনাব সোহেল একজন ব্যবসায়ী। তিনি জনাব রাশেদের নিকট থেকে ২০ লক্ষ টাকার একটি চেক আনার জন্য তার ম্যানেজারকে পাঠাল। তিনি একটু চিন্তায় ছিলেন, কারণ চেকটি বড় অঙ্কের অর্থের। চেক হাতে পাওয়ার পর তিনি নিশ্চিন্ত হলেন। কারণ চেকটির বামপার্শ্বে দুটি আড়াআড়ি দাগ কাটা আছে। [কু. বো. ১৭]
অ ক. হস্তান্তরযোগ্য দলিল কী? ১
অ খ. সরকারি নোট ও ব্যাংক নোটের মধ্যে পার্থক্য কী? ব্যাখ্যা করো। ২
অ গ. উদ্দীপকের ২০ লক্ষ টাকার চেকটি কি ধরনের দাগ কাটা চেক? ব্যাখ্যা করো। ৩
অ ঘ. উদ্দীপকের আলোকে চেকটির তাৎপর্য আলোচনা করো। ৪
৩ নং প্রশ্নের উত্তর অ
ক ঋণের যে দলিলের মালিকানা এক হাত থেকে অন্য হাতে হস্তান্তর করলে গ্রহীতা এর বৈধ মালিকানা পায় তাকে হস্তান্তরযোগ্য ঋণের দলিল বলে।
খ ব্যাংক নোট ও সরকারি নোটের ব্যবহার ও উদ্দেশ্যগত দিক একই হলেও এদের মধ্যে কিছু পার্থক্য রয়েছে। নিæে পার্থক্যসমূহ তুলে ধরা হলো :
পা^ট্টএকঞ্ঝর বিষয় সরকারি নৈাট বঞ্ঝাংক নৈাট
১. সংæা দৈএশর সরকার নিজ কতট্টেক ও নিজ দায়িএতঙ্গ বিহিত মুদত্তা হিএসএব যৈ নৈাএটর পণ্ঠচলন কএর তাএক সরকারি নৈাট বএল। সরকাএরর অনুমতিকত্থএম সরকাএরর বঞ্ঝাংক হিএসএব দায়িতঙ্গ পালনকারী পণ্ঠতি”¤ান কৈক্টদণ্ডীয় বঞ্ঝাংক কতট্টেক ইসুঞ্ঝকতে কাগজী মুদত্তা বা নৈাটএক বঞ্ঝাংক নৈাট বএল।
২. মƒলঞ্ঝমান বাংলাএদএশর কৈ টাকা, দুই টাকা ও পাঁচ টাকার নৈাটপ্পএলা সরকারি নৈাট। কৈ টাকা, দুই টাকা ও পাঁচ টাকার নৈাট বঞ্ঝতীত বাকি সব কাগজী নৈাটপ্পএলা হএলা বঞ্ঝাংক নৈাট।
৩. ইসুঞ্ঝকারী কতট্টেপপ্ট সরকারি নৈাট অ^ট্ট ম¯্যণালএয়র দায়িতঙ্গ ও পণ্ঠতঞ্ঝপ্ট তল্ফঙ্গাবধাএন ইসুঞ্ঝ হএয় ^াএক। বঞ্ঝাংক নৈাট কৈক্টদণ্ডীয় বঞ্ঝাংএকর অধীএন ইসুঞ্ঝ হএয় ^াএক।
৪. রৃপা¯¦রএযাগঞ্ঝতা সরকারি নৈাট অহ’¦া¯¦রএযাগঞ্ঝ বিহিত মুদত্তা হওয়ায় িৈট চিহিদ্ধত মুদত্তায় রৃপা¯¦র করা যায় না। বঞ্ঝাংক নৈাট চিহিদ্ধত মুদত্তায় রৃপা¯¦রএযাগঞ্ঝ।
গ উদ্দীপকের ২০ লক্ষ টাকার চেকটি হলো সাধারণ দাগকাটা চেক।
দাগকাটা চেক দুই ধরনের হতে পারে। প্রথমত সাধারণ দাগকাটা চেক এবং দ্বিতীয়ত বিশেষ দাগকাটা চেক। সাধারণ দাগকাটা বলতে চেকের উপরিভাগে আড়াআড়িভাবে দুটি সমান্তরাল রেখা টানাকেই বোঝায়। অর্থাৎ সাধারণ দাগকাটা চেকের ক্ষেত্রে দুই রেখার মাঝে কোন ব্যাংক বা অন্য কোনো কিছু লেখা থাকে না।
উদ্দীপকে জনাব সোহেল একজন ব্যবসায়ী। তিনি জনাব রাশেদের নিকট হতে ২০ লক্ষ টাকার চেক আনার জন্য তার ম্যানেজারকে পাঠান। চেকটি পাওয়ার পর তিনি দেখলেন যে, চেকটির বাম পার্শ্বে দুটি আড়াআড়ি দাগ টানা আছে। চেকটির দুই দাগের মাঝে কোন ব্যাংক বা অন্য কোনো কিছু লেখা ছিল না। অর্থাৎ চেকটি সাধারণ দাগকাটা চেকের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। কেননা, সাধারণ দাগকাটা চেকের ক্ষেত্রেই শুধু আড়াআড়ি দাগটানা থাকে।
ঘ উদ্দীপকের সাধারণ দাগকাটা চেকটি অন্যান্য চেকের তুলনায় অধিক নিরাপদ।
চেক হলো ব্যাংকের প্রতি হিসাবধারী গ্রাহকের অর্থ প্রদানের শর্তহীন নির্দেশনামা। চেক মূলত তিন প্রকার। বাহক চেক, হুকুম চেক এবং দাগকাটা চেক। এর মধ্যে দাগকাটা চেক সবচেয়ে নিরাপদ। কারণ এ চেকের অর্থ সবাই উত্তোলন করতে পারে না।
উদ্দীপকে জনাব সোহেল তার ম্যানেজারের মাধ্যমে জনাব রাশেদের কাছ থেকে ২০ লক্ষ টাকার একটি চেক গ্রহণ করেন। চেকটি আনার জন্য তিনি তার ম্যানেজারকে পাঠিয়েছিলেন। চেকটি গ্রহণের পর তিনি দেখলেন, চেকটির বাম পার্শ্বে দুটি আড়াআড়ি দাগটানা রয়েছে। অর্থাৎ চেকটি হলো দাগকাটা চেক।
দাগকাটা চেক হওয়ার কারণে চেকটি হারিয়ে বা ছিনতাই হয়ে গেলেও জনাব সোহেল আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতেন না। কেননা, এ চেকের অর্থ শুধু জনাব সোহেলের ব্যাংক হিসাবেই জমা হবে। এমনকি তার ম্যানেজার চাইলেও জালিয়াতি করে অর্থ উত্তোলন করতে পারবে না। এছাড়া, ভবিষ্যতে কোন আইনি ঝামেলা সৃষ্টি হলে এ চেকটি প্রামাণ্য দলিল হিসেবে কাজ করবে। অর্থাৎ সার্বিকভাবেই দাগকাটা চেকটি অন্যান্য চেক হতে অধিক নিরাপদ।

মমমপ্রশ্ন৪ মিসেস সুলতানা তার দেনাদার মিসেস জাকিয়ার নিকট হতে গত ০১-০৬-২০১৬ তারিখে ৫০ হাজার টাকার একটি চেক পান। চেকটির উপরিভাগে বাম কোণে অঙ্কিত আড়াআড়ি দু’টি সমান্তরাল রেখার মাঝখানে ‘এন্ড কোম্পানি’ শব্দদ্বয় লেখা আছে। মিসেস সুলতানা দীর্ঘদিন বিদেশে অবস্থান করার পর দেশে ফিরে গত ০১-০১-২০১৭ তারিখে চেকটি ব্যাংকে উপস্থাপন করলে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষণিক নগদ টাকা প্রদান করতে অপারগতা প্রকাশ করে। [চ. বো. ১৭]
অ ক. হস্তান্তরযোগ্য ঋণেরর দলিল কী? ১
অ খ. চেকের অনুমোদন কেন প্রয়োজন হয়? ব্যাখ্যা করো। ২
অ গ. উদ্দীপকে উলি­খিত মিসেস সুলতানা তার দেনাদারের নিকট হতে কোন ধরনের দাগকাটা চেক পেয়েছিলেন? ব্যাখ্যা করো। ৩
অ ঘ. ‘ব্যাংক কর্তৃপক্ষ কর্তৃক তাৎক্ষণিকভাবে নগদ অর্থ পরিশোধে অস্বীকৃতি জানানোই স্বাভাবিক’Ñ উক্তিটির যথার্থতা মূল্যায়ন করো। ৪
৪ নং প্রশ্নের উত্তর অ
ক ঋণের যে দলিলের মালিকানা এক হাত থেকে অন্য হাতে হস্তান্তর করলে গ্রহীতা এর বৈধ মালিকানা পায় তাকে হস্তান্তরযোগ্য ঋণের দলিল বলে।
হস্তান্তরযোগ্য দলিলসমূহ : বাংলাদেশে বহাল ১৮৮১ সালের হস্তান্তরযোগ্য দলিল আইনের ১৩(১) ধারায় বলা হয়েছে যে, প্রাপকের নির্দেশমতো কোনো ব্যক্তিকে অথবা বাহককে প্রদেয় অঙ্গীকারপত্র, বিনিময় বিল ও চেককে হস্তান্তরযোগ্য দলিল বলা হয়।
খ চেকের অনুমোদন দ্বারা চেকের মালিকানা পরিবর্তন নিশ্চিত হওয়ায় চেক হস্তান্তরে চেকের অনুমোদন গুরুত্বপূর্ণ।
বাহক চেক শুধু প্রদানের মাধ্যমে অনুমোদন হলেও হুকুম চেকের উল্টো পিঠে অবশ্যই বৈধ অধিকারীর দ্বারা অনুমোদিত হতে হয়। চেকের অনুমোদন অবশ্যই একটি সম্পূর্ণ চেকের জন্য হয়ে থাকে।
গ উদ্দীপকে মিসেস সুলতানা তার দেনাদারের নিকট হতে সাধারণভাবে দাগকাটা চেক পেয়েছিলেন।
চেকের প্রকৃতি অনুযায়ী দাগকাটা চেককে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। প্রথমত, সাধারণভাবে দাগকাটা চেক এবং দ্বিতীয়ত বিশেষভাবে দাগকাটা চেক। সাধারণভাবে দাগকাটা চেকের ক্ষেত্রে দাগের মাঝে কোনো ব্যাংকের নাম লিখা থাকে না। তবে “এন্ড কোং” বা এরূপ কোনো শব্দ সংক্ষেপের উলে­খ থাকতে পারে।
উদ্দীপকে মিসেস সুলতানা তার দেনাদার মিসেস জাকিয়ার নিকট হতে ৫০ হাজার টাকার একটি চেক পান। চেকটির উপরিভাগে বাম কোণে দুটি আড়াআড়ি সমান্তরাল রেখা রয়েছে। রেখাদ্বয়ের মাঝখানে “এন্ড কোম্পানি” শব্দ সংক্ষেপে লেখা আছে। অর্থাৎ আড়াআড়ি দুই দাগের মাঝে কোনো ব্যাংকের নাম উলে­খ করে শর্তারোপ করা হয়নি। চেকে আড়াআড়ি দুটি সমান্তরাল রেখা ও “এন্ড কোম্পানি” শব্দদ্বয় থাকার বিষয়টি সাধারণ দাগকাটা চেকের বৈশিষ্ট্যের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। সুতরাং, মিসেস সুলতানা কর্তৃক গৃহীত চেকটি সাধারণভাবে দাগকাটা চেক ছিল।
ঘ উদ্দীপকে চেকটি দাগকাটা চেক হওয়ার কারণে ‘ব্যাংক কর্তৃপক্ষ কর্তৃক তাৎক্ষণিকভাবে নগদ অর্থ পরিশোধে অস্বীকৃতি জানোনোই স্বাভাবিক’ Ñ উক্তিটি যথার্থ।
দাগকাটা চেক বলতে কোনো চেকের বাম প্রান্তের উপরিভাগে আড়াআড়ি দুটি সমান্তরাল রেখা আঁকা চেককে বোঝায়। এ চেকের অর্থ ব্যাংক নগদে না দিয়ে প্রাপকের ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে প্রদান করে।
উদ্দীপকে মিসেস সুলতানা তার দেনাদার মিসেস জাকিয়ার নিকট হতে একটি দাগকাটা চেক পান। তিনি দীর্ঘদিন পর চেকটি ব্যাংকে উপস্থাপন করলে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষণিক নগদ টাকা প্রদানে অপারগতা জানায়।
দাগকাটা চেকের অর্থ ব্যাংক সাধারণত সরাসরি পরিশোধ করে না। মিসেস সুলতানা দাগকাটা চেকটি তার ব্যাংক হিসাবে জমা দিলে পরবর্তীতে তিনি উক্ত হিসাব থেকে অর্থ উত্তোলন করতে পারবেন। অন্য দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা যায়, তিনি চেকটি পেয়েছেন ০১-০৬-২০১৬ তারিখে এবং জমা দিয়েছেন ০১-০১-২০১৭ তারিখে। অর্থাৎ চেকের আইনগত মেয়াদ (৬ মাস) পার হয়ে যাওয়ার কারণেও তিনি এ চেকের অর্থ তার ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে উত্তোলন করতে পারবেন না। তাই বলা যায়, মিসেস সুলতানার চেকের অর্থ পরিশোধে ব্যাংক স্বাভাবিকভাবেই অস্বীকৃতি জানিয়েছে।

মমমপ্রশ্ন৫ জনাব রানা একজন চাকরিজীবী। তিনি পূর্বের ব্যক্তিগত ঋণ পরিশোধের জন্য জনাব রহিমের নামে একটি চেক ইস্যু করে। যার বামপাশের কোণায় দুইটি সমান্তরাল রেখা টানা ছিল। কিন্তু হস্তান্তরের পূর্বেই তিনি মানিব্যাগসহ চেকটি হারিয়ে ফেলেন। বিষয়টি ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে দ্রুত অবহিত করলে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তাকে দুশ্চিন্তামুক্ত থাকার আহŸান জানান এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন। [সি. বো. ১৭]
অ ক. অঙ্গীকারপত্র কী? ১
অ খ. বিনিময় বিল অপেক্ষা চেকের ব্যবহার সার্বজনীন কেন? বুঝিয়ে লেখো। ২
অ গ. জনাব রানা কর্তৃক ইস্যুকৃত চেকটি কোন ধরনের? ব্যাখ্যা করো। ৩
অ ঘ. ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জনাব রানাকে দুশ্চিন্তামুক্ত থাকতে বলার যৌক্তিকতা বিশ্লেষণ করো। ৪
৫ নং প্রশ্নের উত্তর অ
ক অঙ্গীকারপত্র বা প্রমিসরি নোট হলো এমন এক ধরনের পত্র বা দলিল যাতে কোনো ব্যক্তি অপর কোনো ব্যক্তিকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ প্রদানের অঙ্গীকার প্রদান করে।
অঙ্গীকারপত্র : সাধারণত ঋণ গ্রহণের অঙ্গীকার পত্রই হচ্ছে প্রমিসরি নোট। এটি সরাসরি অর্থ প্রদানের একটি অঙ্গীকার মাত্র। এতে দুটি পক্ষ থাকে, যথা- পাওনাদার ও দেনাদার। এটি পাওনাদারের প্রতি দেনাদারের অর্থ প্রদানের শর্তহীন আদেশনামা। এটি সাধারণত এক কপি প্রস্তুত করতে হয়। এ প্রমিসরি নোট বাট্টাকরণের সুযোগ নেই। ফলে প্রত্যাখ্যাত হলে নোটিং ও প্রতিবাদকরণেরও প্রয়োজন নেই। এটা কেবল দেশের ভিতরেই কার্যকর।
খ চেকের অর্থ ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে হস্তান্তরিত হওয়ায় তা বিনিময় বিল অপেক্ষা অধিক নিরাপদ।
বিনিময় বিল ও চেক উভয়ই হস্তান্তরযোগ্য দলিল হিসেবে ব্যবহৃত হয়। দাগকাটা চেকের অর্থ স্থানান্তরের ক্ষেত্রে তা ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে উপস্থাপন করতে হয়। এছাড়াও এই ধরনের চেক চুরি বা হারানো গেলেও ঝুঁকি থাকে না। অন্যদিকে, নির্দিষ্ট মেয়াদান্তে বিনিময় বিল প্রাপক কর্তৃক ব্যাংকে উপস্থাপন করলেই অর্থ প্রদান করা হয়। তাই নিরাপত্তা বিবেচনায় চেকের ব্যবহার অধিক নিরাপদ।
গ উদ্দীপকে জনাব রানা কর্তৃক ইস্যুকৃত চেকটি একটি দাগকাটা চেক।
বাহক বা হুকুম চেকের বামপ্রান্তের উপরিভাগে দুটি সমান্তরাল রেখা টেনে দাগকাটা চেক প্রস্তুত করা হয়। এ চেকের মাধ্যমে লেনদেনের অধিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়। দাগকাটা চেকের অর্থ শুধু চেকে উলি­খিত ব্যক্তির হিসাবের মাধ্যমে সংগ্রহ করা যায়।
উদ্দীপকে জনাব রানা একজন চাকরিজীবী। তিনি পূর্বের ব্যক্তিগত ঋণ পরিশোধের জন্য জনাব রহিমের নামে একটি চেক ইস্যু করেন। তবে তিনি চেকটির বামপ্রান্তের উপরিভাগের কোণায় দুটি সমান্তরাল রেখা টেনে দেন। অর্থাৎ তিনি জনাব রহিমের উদ্দেশ্যে প্রস্তুতকৃত চেকটিকে দাগকাটা চেকে রূপান্তর করেন, যা কেবল জনাব রহিমের হিসাবে জমাদানের মাধ্যমে সংগ্রহ করা যাবে।
ঘ উদ্দীপকে হারিয়ে যাওয়া চেকটি দাগকাটা চেক, যার অর্থ কেবল প্রাপকের হিসাবে প্রদেয় হওয়ায় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জনাব রানাকে দুশ্চিন্তামুক্ত থাকতে বলেছেন।
চেকের নিরাপত্তা বৃদ্ধি এবং ঝুঁকি হ্রাসের লক্ষ্যে আধুনিক ব্যাংকিং জগতে দাগকাটা চেকের প্রচলন ঘটেছে। এরূপ চেকের অর্থ সরাসরি উত্তোলন করা যায় না। প্রাপকের ব্যাংক হিসাবে জমা দিয়ে এর অর্থ সংগ্রহ করতে হয়।
উদ্দীপকে জনাব রানা একটি দাগকাটা চেক প্রস্তুত করেন। উক্ত চেকে প্রাপকের নামের স্থানে জনাব রহিমের নাম উলে­খ করা হয়। অর্থাৎ চেকটি কেবল জনাব রহিমের ব্যাংক হিসাবে জমা দিয়ে অর্থ সংগ্রহ করা যাবে। তবে চেকটি হস্তান্তরের পূর্বেই জনাব রানা তা হারিয়ে ফেলেন। বিষয়টি ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে অবহিত করলে তারা দুশ্চিন্তামুক্ত থাকার পরামর্শ দেন।
চেকটির অর্থ কেবল চেকে উলি­খিত প্রাপকের হিসাবের মাধ্যমেই প্রদান করা হবে, যা জনাব রানার প্রস্তুতকৃত চেকের নিরাপত্তাকে নিশ্চিত করেছে। তাই হারিয়ে গেলেও চেকের অর্থ সম্পূর্ণ নিরাপদ থাকায় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ এরূপ আশ্বাস প্রদান করেছেন।

মমমপ্রশ্ন৬

 

 

 

 

চেকটি ০৮/০৪/২০১৭ তারিখে আল্ফা ব্যাংক লি.-এর প্রাপকের হিসাবে জমা করা হলে চেকটি প্রত্যাখ্যাত হয়। [য. বো. ১৭]
অ ক. চেক কী? ১
অ খ. বাহক চেক, হুকুম চেক অপেক্ষা কম নিরাপদ কেন? ২
অ গ. উদ্দীপকে প্রদর্শিত চেকটি কোন ধরনের চেক? ব্যাখ্যা করো। ৩
অ ঘ. আল্ফা ব্যাংক লি. কর্তৃক প্রাপকের হিসাবে জমাকৃত চেকটি প্রত্যাখ্যানের যৌক্তিকতা বিশ্লেষণ করো। ৪
৬ নং প্রশ্নের উত্তর অ
ক আমানতকারী কর্তৃক ব্যাংক থেকে অর্থ উত্তোলনের লিখিত শর্তহীন নির্দেশনামাকে চেক বলে।
খ বাহক চেক কেবল অর্পনের দ্বারা হস্তান্তরযোগ্য বলে তা হুকুম চেক অপেক্ষা কম নিরাপদ।
হুকুম চেকের প্রাপক অন্য কোনো ব্যক্তিকে চেক হস্তান্তর করলে চেকে যথাযথ অনুমোদন থাকতে হয়। এক্ষেত্রে ব্যাংক প্রাপক বা অনুমোদন বলে প্রাপকের যথার্থতা যাচাই করে অর্থ প্রদান করে। আর বাহক চেকে এ সুযোগ থাকে না বিধায় তা কম নিরাপদ।
গ উদ্দীপকে প্রদর্শিত চেকটি হলো বিশেষভাবে দাগকাটা চেক।
দাগকাটা চেক দুই ধরনের। যথা- সাধারণভাবে দাগকাটা চেক এবং বিশেষভাবে দাগকাটা চেক। সাধারণভাবে দাগকাটা চেকের ক্ষেত্রে চেকের উপরিভাগে দুটি আড়াআড়ি সমান্তরাল রেখা থাকে। বিশেষভাবে দাগকাটা চেকের ক্ষেত্রে এ দুই রেখার মাঝে কোনো ব্যাংকের নাম উলে­খ থাকে।
উদ্দীপকে কিশোর নামক একজন প্রাপককে একটি চেক দেয়া হয়েছে। চেকটির উপরিভাগে বাম কোণায় দুটি আড়াআড়িভাবে সমান্তরাল রেখা টানা রয়েছে। রেখা দুটির মাঝে ডেলটা ব্যাংক লি. এর নাম রয়েছে। তাই চেকের প্রাপক কিশোরকে এ চেকের অর্থ উক্ত ব্যাংকের মাধ্যমে উত্তোলন করতে হবে। চেকটিতে দুটি সমান্তরাল রেখার মাঝে ডেলটা ব্যাংকের নাম উলে­খ থাকার নির্দ্বিধায় বলা যায় চেকটি হলো বিশেষভাবে দাগকাটা চেক।
ঘ উদ্দীপকে বর্ণিত চেকটি বিশেষভাবে দাগকাটা চেক হওয়ার কারণে আলফা ব্যাংক লি. প্রাপকের হিসাবে জমাকৃত চেকটি প্রত্যাখ্যান করে।
বিশেষভাবে দাগকাটা চেকের ক্ষেত্রে আড়াআড়িভাবে দুটি সমান্তরাল রেখার মাঝে নির্দিষ্ট কোনো ব্যাংকের নাম উলে­খ থাকে। প্রাপককে ঐ নির্দিষ্ট ব্যাংক হতেই তার হিসাবের মাধ্যমে চেকের অর্থ উত্তোলন করতে হয়।
উদ্দীপকে বর্ণিত চেকটির উপরিভাগে বাম কোণায় আড়াআড়িভাবে দুটি সমান্তরাল রেখা টানা রয়েছে। রেখাদ্বয়ের মাঝে ডেলটা ব্যাংক লি. এর নাম উলে­খ থাকায় চেকটি বিশেষভাবে দাগকাটা চেকে রূপান্তরিত হয়েছে। চেকটি ৮/০৪/২০১৭ তারিখে আলফা ব্যাংকে প্রাপকের হিসাবে জমা করা হলে তা প্রত্যাখ্যাত হয়।
চেকটি বিশেষভাবে দাগকাটা চেক হওয়ার কারণে প্রাপককে অবশ্যই ডেলটা ব্যাংকের হিসাবের মাধ্যমে এর অর্থ উত্তোলন করতে হবে। অন্য কোনো ব্যাংকের মাধ্যমে চেকটি উপস্থাপিত হলে এর অর্থ পরিশোধিত হবে না। সুতরাং, আলফা ব্যাংক কর্তৃক চেকটি প্রত্যাখ্যাত করার সিদ্ধান্তটি যৌক্তিক। কারণ এটি অন্য ব্যাংকের উপর অঙ্কিত চেক।

মমমপ্রশ্ন৭ জনাব শাকিনুর একজন ব্যবসায়ী। তিনি তার ব্যবসায়িক প্রয়োজনে মাঝে মাঝে বাকিতে লেনদেন করেন। লেনদেনকৃত বাকি টাকা পরবর্তীতে নগদে এবং চেকের মাধ্যমে সংগ্রহ করেন। অতি সম্প্রতি তিনি দু’টি চেকের মাধ্যমে বাকি টাকা জনাব ফরিদের নিকট থেকে পেয়েছেন। জনাব শাকিনুর জনতা ব্যাংকে লেনদেন করেন। কিন্তু তিনি চেক দু’টি জনতা ও অগ্রণী ব্যাংকের নামে পেয়েছেন। তিনি চেক দুটি নিয়ে তার লেনদেনকৃত জনতা ব্যাংকে যান। ব্যাংক তাৎক্ষণিকভাবে একটি চেকের টাকা দিতে চাইলেও অন্যটির জন্য সাত দিন সময় চাইল। [ব. বো. ১৭]
অ ক. নিকাশ ঘর কী? ১
অ খ. সঞ্চয়ী হিসাবে টাকা কি ইচ্ছামত যত খুশি যখন তখন তোলা সম্ভব? ব্যাখ্যা করো। ২
অ গ. জনতা ব্যাংক জনাব শাকিনুরকে কোন চেকের টাকা তাৎক্ষণিকভাবে দিতে চাইল এবং কেন? ব্যাখ্যা করো। ৩
অ ঘ. ব্যাংক কেন অন্য চেকের টাকা দিতে সাত দিন সময় চাইল? দু’টি চেকের বৈশিষ্ট্য উলে­খপূর্বক তা ব্যাখ্যা করো। ৪
৭ নং প্রশ্নের উত্তর অ
ক ব্যাংকিং লেনদেন থেকে উদ্ভ‚ত আন্তঃব্যাংকিং দেনা-পাওনার নিষ্পত্তিস্থলই হলো নিকাশ ঘর।
খ সঞ্চয়ী হিসাবের টাকা ইচ্ছামতো যত খুশী যখন তখন তোলা সম্ভব নয়।
এ হিসাবের গ্রাহকগণ ব্যাংক চলাকালীন যতবার খুশি হিসাবে অর্থ জমাদানের সুযোগ পেলেও সপ্তাহে দুই বারের বেশি অর্থ উত্তোলনের সুবিধা পান না। সাধারণত সঞ্চয়ের উদ্দেশ্য নিয়ে গ্রাহক এ ধরনের হিসাব খুললেও সীমিত ব্যাংকিং লেনদেনেরও সুযোগ পেয়ে থাকেন।
গ উদ্দীপকে জনতা ব্যাংক শাকিনুরকে বাহক চেকের টাকা তাৎক্ষণিকভাবে দিতে চেয়েছে।
বাহক চেকের ক্ষেত্রে সাধারণত প্রাপকের নামের শেষে ‘অথবা বাহককে’ শব্দদ্বয় লিখা থাকে। এ চেক ব্যাংকে উপস্থাপন করা মাত্রই ব্যাংক এর অর্থ প্রদানে বাধ্য থাকে।
উদ্দীপকে জনাব ফরিদের নিকট হতে জনাব শাকিনুর দুটি চেক পেয়েছেন। তিনি চেক দুটি নিয়ে তার লেনদেনকৃত জনতা ব্যাংকে যান। ব্যাংক তাৎক্ষণিকভাবে একটি চেকের অর্থ প্রদানে রাজি হয়। সাধারণত বাহক চেকের অর্থ ব্যাংক তৎক্ষণাৎ প্রদান করে থাকে। এখানেও জনাব শাকিনুর চেকটি জনতা ব্যাংকে উপস্থাপন করা মাত্রই ব্যাংক তার অর্থ প্রদান করেছে। তাই চেকের বৈশিষ্ট্য বিবেচনায় বলা যায়, জনতা ব্যাংক জনাব শাফিনুরকে বাহক চেকের অর্থ পরিশোধ করেছে।
ঘ উদ্দীপকে অন্য চেকটি দাগকাটা হওয়ার কারণে ব্যাংক নিকাশ ঘর প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য সাত দিন সময় চেয়েছে।
নিকাশ ঘর হলো আন্তঃব্যাংকিং দেনা-পাওনা নিষ্পত্তির একটি প্রক্রিয়া। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তত্ত¡াবধানে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো এ প্রক্রিয়ায় গ্রাহকের চেক, বিনিময় বিল, ব্যাংক ড্রাফট ইত্যাদির দেনা-পাওনা নিষ্পত্তি করে থাকে।
উদ্দীপকে জনাব শাকিনুর জনাব ফরিদের কাছ থেকে দুটি চেক গ্রহণ করেন। তিনি একটি চেক জনতা ব্যাংকের নামে এবং অন্যটি অগ্রণী ব্যাংকের নামে পেয়েছেন। একটি চেক বাহক চেক হওয়ার কারণে জনতা ব্যাংক সাথে সাথেই তা পরিশোধ করে দেয়। কিন্তু অন্য চেকটি দাগকাটা চেক হওয়ার কারণে ব্যাংক সাত দিন সময় চায়।
উদ্দীপকের জনাব শাকিনুরের জনতা ব্যাংকে হিসাব রয়েছে। কিন্তু অন্য চেকটি পেয়েছেন অগ্রণী ব্যাংকের। অর্থাৎ তার অন্য চেকটি হলো দাগকাটা চেক। তাই নিকাশঘর প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এ চেকের অর্থ আদায় করতে হবে। ব্যাংক এ নিকাশ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্যই এতদিন সময় চেয়েছে।
মমমপ্রশ্ন৮ জনাব শিহাব একটি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের মালিক। তিনি তার কর্মচারীদের চেকের মাধ্যমে বেতন দেন। হাসিব নামে এক নতুন কর্মচারী তার কাছ থেকে একটি চেক পায়। হাসিব চেকের বাম কোণে দুটি রেখা ও এর মধ্যে অ/ঈ চধুবব লেখাটি দেখতে পায়। হাসিবকে তার বন্ধু নাছির জানায়, চেকটি অধিক নিরাপদ। [ব. বো. ১৭]
অ ক. চেকের প্রাপক কে? ১
অ খ. ব্যাংক হিসাবে পর্যাপ্ত অর্থ না থাকা সত্তে¡ও চেক ইস্যু করা কি চেকের অমর্যাদার মধ্যে পড়ে? ২
অ গ. উদ্দীপকে উলি­খিত চেকটি নিরাপদ কেন? ব্যাখ্যা করো। ৩
অ ঘ. জনাব শিহাবের সাথে কর্মচারীদের আর্থিক লেনদেন কি সঠিক? ব্যাখ্যা করো। ৪
৮ নং প্রশ্নের উত্তর অ
ক চেকের আদেষ্টা অর্থ পরিশোধের নিমিত্তে যার নাম চেকের পাতায় উলে­খ করে তাকে চেকের প্রাপক বা চধুবব বলে।
প্রাপক : আদেষ্টাই চেকের উপর প্রাপকের নাম লিখে থাকেন। অবশ্য আদেষ্টা নিজে অর্থ গ্রহণ করলে তিনিই প্রাপক হবেন।
খ ব্যাংক হিসাবে পর্যাপ্ত অর্থ না থাকা সত্তে¡ও চেক ইস্যু করা হলে উপস্থাপনের পর ব্যাংক তা প্রত্যাখান করলে সেটি চেকের অমর্যাদা হিসেবে গণ্য হয়।
ব্যাংক কর্তৃক চেকের অর্থ প্রদানের অস্বীকৃতিই মূলত চেকের অমর্যাদা। আর চেক ব্যাংকে উপস্থাপন মাত্র কোনো প্রকার অনিয়ম না থাকলে ব্যাংক উক্ত চেকের অর্থ প্রদানে বাধ্য থাকে। তবে একটি বৈধ চেকও কতগুলো অপরিহার্য শর্তের ঘাটতির কারণে স্বভাবতই অমর্যাদাকৃত হতে পারে। আর এর মধ্যে অন্যতম হলো ব্যাংক হিসাবে আমানতকারীর পর্যাপ্ত টাকা না থাকা।
গ উদ্দীপকে উলি­খিত চেকটি হলো দাগকাটা চেক এবং অন্য কেউ এ চেকের অর্থ উত্তোলন করতে পারে না। তাই এ ধরনের চেক অধিক নিরাপদ।
দাগকাটা চেকের ক্ষেত্রে চেকের উপরিভাগে বামকোণায় আড়াআড়িভাবে সমান্তরাল দুটি রেখা টানা থাকে। এই দুই রেখার মাঝে কিছু লেখা থাকতেও পারে, আবার নাও থাকতে পারে।
উদ্দীপকে জনাব শিহাব একটি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের মালিক। তিনি তার নতুন কর্মচারী হাসিবকে একটি চেক প্রদান করেন। হাসিব চেকের বামকোণায় দুইটি রেখা ও এর মধ্যে অ/ঈ চধুপব লেখাটি দেখতে পায়। অর্থাৎ চেকটি হলো দাগকাটা চেক। এ চেকের অর্থ শুধু প্রাপক হাসিবের ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমেই উত্তোলন করতে হবে। তাই চেকটি হারিয়ে গেলে বা ছিনতাই হলেও হাসিব আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। এ কারণেই এ চেকটি অধিক নিরাপদ।
ঘ উদ্দীপকে জনাব শিহাব কর্তৃক কর্মচারীদের সাথে দাগকাটা চেকের মাধ্যমে আর্থিক লেনদেন করা অবশ্যই সঠিক।
দাগকাটা চেকের অর্থ প্রাপক ব্যতীত অন্য কেউ টাকা উত্তোলন করতে পারে না। এক্ষেত্রে চেকের প্রাপককে অবশ্যই তার ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে অর্থ উত্তোলন করতে হয়।
উদ্দীপকে জনাব শিহাব একটি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের মালিক। তিনি তার অন্যান্য কর্মচারীর মতো হাসিবের সাথেও দাগকাটা চেকের মাধ্যমে লেনদেন করেন।
দাগকাটা চেক হওয়ার কারণে হাসিব ব্যতীত অন্য কেউ এ চেকের অর্থ উত্তোলন করতে পারবে না। কেননা, এরূপ চেকের অর্থ শুধু প্রাপকের ব্যাংক হিসাবে প্রদেয়। ফলে এ চেক চুরি বা ছিনতাই হয়ে গেলেও কোনো কর্মচারী আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। উপরিউক্ত বিষয়সমূহ বিবেচনা করে বলা যায়, জনাব শিহাবের কর্মচারীদের সাথে আর্থিক লেনদেন করার পদ্ধতি বা কৌশলটি সঠিক এবং যৌক্তিক।
মমমপ্রশ্ন৯ রহিম, করিমের কাছ থেকে ৫ লক্ষ টাকার একটি চেক পেল। করিম চেকটির বাম কোণে আড়াআড়িভাবে দু’টি রেখা টেনে তার মাঝখানে প্রাইম ব্যাংক লিমিটেড কথাটি লিখে দিল। রহিম চেকটি তার এক্সিম ব্যাংক শাখায় উপস্থাপন করলে ব্যাংকটি তাকে তার চেকটি প্রাইম ব্যাংক শাখায় উপস্থাপনের পরামর্শ দিল। [দি. বো. ১৬]
অ ক. আদেষ্টা কে? ১
অ খ. হস্তান্তরযোগ্য ঋণের দলিল বলতে কী বোঝায়? ২
অ গ. করিম কী প্রক্রিয়ায় চেকে টাকা উত্তোলন করতে পারবে? ব্যাখ্যা করো। ৩
অ ঘ. উদ্দীপকের চেকটি কি ঋণ আমানত সৃষ্টি করতে পারে বলে তুমি মনে করো? ব্যাখ্যা করো। ৪
৯ নং প্রশ্নের উত্তর অ
ক যিনি চেক প্রস্তুত করেন তিনিই আদেষ্টা।
খ যথানিয়মে এক হাত থেকে অন্য হাতে হস্তান্তরের মাধ্যমে যে দলিলের হস্তান্তরগ্রহীতা এর বৈধ মালিকানা লাভ করে তাকে হস্তান্তরযোগ্য ঋণের দলিল বলে।
বাংলাদেশে প্রচলিত হস্তান্তরযোগ্য ঋণের দলিলগুলোর মধ্যে রয়েছে অঙ্গীকারপত্র, বিনিময় বিল ও চেক। এসব দলিলের ক্ষেত্রে দেনাদার এ মর্মে শর্তহীন প্রতিশ্র“তি দেয় যে, প্রাপককে বা তার নির্দেশ অনুসারে কোনো ব্যক্তিকে বা বাহককে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ নির্দিষ্ট সময় পর পরিশোধ করবে।
গ উদ্দীপকে করিম দাগকাটায় উলি­খিত ব্যাংকের হিসাবের মাধ্যমে এ চেকের টাকা উত্তোলন করতে পারবে।
যে দাগকাটা চেকে দুই দাগের মাঝখানে কোনো নির্দিষ্ট ব্যাংকের নাম উলে­খ থাকে তাকে বিশেষ দাগকাটা চেক বলে।
উদ্দীপকে রহিম করিমের নিকট পাওনার নিষ্পত্তিতে ৫ লাখ টাকার একটি চেক গ্রহণ করল। চেকটির বাম কোণে আড়াআড়ি দু’টি রেখা অঙ্কিত এবং এর মধ্যে প্রাইম ব্যাংক লিমিটেডের নাম উলে­খ রয়েছে। অর্থাৎ দুই দাগের মাঝখানে নির্দিষ্ট ব্যাংকের নাম উলে­খ থাকায় চেকটি বিশেষ দাগকাটা চেক। এক্ষেত্রে রহিম চেকের টাকা প্রাপ্তির লক্ষ্যে তার এক্সিম ব্যাংকে চেকটি জমা দিলে ব্যাংক কর্মকর্তা তাকে প্রাইম ব্যাংকে চেকটি উপস্থাপনের পরামর্শ দিল। চেকের অর্থ উত্তোলনে তাকে প্রাইম ব্যাংকে তার হিসাবে চেকটি জমা দিতে হবে। তবে প্রাইম ব্যাংকে তার কোনো হিসাব না থাকলে সে করিম কর্তৃক চেকের দুই দাগের মাঝখানে ব্যাংকের নাম কেটে করিমের স্বাক্ষর সংযুক্ত করে তার এক্সিম ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে চেকের অর্থ উত্তোলন করতে পারবে।
ঘ উদ্দীপকের দাগকাটা চেকটি ঋণ আমানত সৃষ্টি করতে পারে বলে আমি মনে করি।
ব্যাংক যখন সরাসরি ঋণ মঞ্জুর না করে ঋণগ্রহীতার আমানত হিসেবে স্থানান্তরপূর্বক পুনরায় ঐ আমানত থেকে নতুন ঋণ সৃষ্টি করে তাকে ঋণ আমানত সৃষ্টি বলে।
উদ্দীপকে রহিম করিমের নিকট থেকে ৫ লাখ টাকার একটি দাগকাটা চেক পায়। দাগকাটা চেকের অর্থ ব্যাংক নগদে প্রদান করে না। গ্রাহকের ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে চেক জমাপূর্বক ব্যাংক চেকের অর্থ সংগ্রহ করে গ্রাহকের হিসাবে স্থানান্তর করে। ফলে উক্ত চেকের অর্থ পুনরায় ব্যাংকে জমা হয়, যা আমানত ও একই প্রক্রিয়ায় ঋণের সৃষ্টি করে।
রহিমের প্রাপ্ত দাগকাটা চেকটি দিয়ে সে সরাসরি ব্যাংক কাউন্টার থেকে নগদে উত্তোলন করতে পারবে না। এর অর্থ ব্যাংক তাকে তার হিসাবের মাধ্যমে প্রদান করবে। যা ব্যাংকে নতুন আমানতের সৃষ্টি করবে। রহিম যদি এ অর্থ উত্তোলন না করে তবে ব্যাংকের এ আমানত থেকে ব্যাংক নতুন ঋণের সৃষ্টি করবে। সুতরাং রহিমের চেকটি ঋণ আমানত সৃষ্টিতে সক্ষম।

মমমপ্রশ্ন১০ জনাব রহমান একটি দশ তলাবিশিষ্ট ভবনের মালিক। তিনি তার ভাড়াটিয়াদের নিকট থেকে নগদে অথবা চেকের মাধ্যমে মাসিক বাড়িভাড়া গ্রহণ করেন। ২০১৫ সালের অক্টোবর মাসের ভাড়া বাবদ তিনি পাঁচজন ভাড়াটিয়ার নিকট থেকে মোট ৯০,০০০ টাকার সোনালী ব্যাংক লিমিটেড আগ্রাবাদ শাখায় পাঁচটি চেক পান। জনাব রহমানের সোনালী ব্যাংক লি. আগ্রাবাদ শাখায় একটি ব্যাংক হিসাব আছে। প্রাপ্ত চেক ৫ টিতে জনাব রহমানকে অথবা বাহককে’ কথাটি লেখা ছিল। তিনি চেক পাঁচটির বাম কোণায় দুটি করে রেখা টেনে দিয়ে সোনালী ব্যাংকে জমাদানের জন্য তার এক নিকটাÍীয়ের নিকট হস্তান্তর করলেন। উক্ত আÍীয় ব্যাংকে চেক পাঁচটি জমা দিয়ে নগদ অর্থ দাবি করলে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তার দাবি প্রত্যাখ্যান করেন। [কু. বো. ১৬]
অ ক. নমুনা স্বাক্ষর কার্ড কী? ১
অ খ. চেকের আদিষ্ট কে? বুঝিয়ে লেখো। ২
অ গ. জনাব রহমান ভাড়াটিয়াদের নিকট থেকে কী ধরনের চেক পেয়েছিলেন? ব্যাখ্যা করো। ৩
অ ঘ. উদ্দীপকের জনাব রহমান কর্তৃক চেকের কোণায় লাইন টেনে দেয়ার যৌক্তিকতা বিশ্লেষণ করো। ৪
১০ নং প্রশ্নের উত্তর অ
ক চেকের স্বাক্ষর যথার্থ কিনা তা মিলিয়ে দেখার জন্য ব্যাংক যে কার্ডে আমানতকারীর নমুনা স্বাক্ষর সংরক্ষণ করে তাই নমুনা স্বাক্ষর কার্ড।
খ আদেষ্টা চেক প্রস্তুত করে মূলত যার প্রতি অর্থ পরিশোধের নির্দেশ দেয় সেই চেকের আদিষ্ট।
যে ব্যাংকের ওপর চেক কাটা হয় ঐ ব্যাংকই চেকের আদিষ্ট বা টাকা প্রদানকারী। আদিষ্ট চেকের দ্বিতীয় পক্ষ বলে পরিচিত। চেক প্রস্তুতের মাধ্যমে মূলত আদিষ্টকেই চাহিবামাত্র অর্থ পরিশোধের নির্দেশ দেয়া হয়।
গ উদ্দীপকে জনাব রহমান ভাড়াটিয়াদের নিকট থেকে বাহক চেক পেয়েছিলেন।
যেকোনো ব্যক্তি বা বাহক ব্যাংকে উপস্থাপন করে যে চেকের অর্থ সংগ্রহ করতে পারে তাকে বাহক চেক বলে। এ চেকে প্রাপকের নামের শেষে অথবা বাহককে শব্দদ্বয় লেখা থাকে। অনুমোদন ছাড়াই এ চেক হস্তান্তর করা যায়।
উদ্দীপকে জনাব রহমানের একটি দশতলা ভবন রয়েছে। ২০১৫ সালের অক্টোবর মাসের ভাড়া বাবদ তিনি ৫টি চেক পান। চেকগুলোতে জনাব রহমানকে অথবা বাহককে কথাটি লেখা ছিল। ব্যাংকে এ চেকগুলো উপস্থাপন করলে ব্যাংক জনাব রহমানকে অথবা বাহককে অর্থ পরিশোধে বাধ্য থাকবে। অর্থাৎ, জনাব রহমানের প্রাপ্ত চেকগুলো বাহক চেক।
ঘ উদ্দীপকের জনাব রহমান কর্তৃক বাহক চেকের কোণায় লাইন টেনে দাগকাটা চেকে পরিণত করার যথে®¡ যৌক্তিকতা রয়েছে।
বাহক বা হুকুম চেকের উপরে বামকোণে আড়াআড়িভাবে দুটি রেখা অঙ্কন করলে তাকে দাগকাটা চেক বলে। এ চেকের টাকা উত্তোলন সহজসাধ্য নয়। গ্রাহকের ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে এ চেক উপস্থাপন করতে হয়।
উদ্দীপকে জনাব রহমান নগদে বা চেকের মাধ্যমে ভাড়াটিয়াদের নিকট থেকে মাসিক বাড়িভাড়া গ্রহণ করেন। ২০১৫ সালের অক্টোবর মাসে ভাড়া বাবদ তিনি ৫টি বাহক চেক পান। তিনি চেক পাঁচটির বাম কোণায় রেখা টেনে দাগকাটা চেক প্রস্তুত করেন। তার এক আÍীয় ব্যাংকে চেক উপস্থাপন করলে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ দাবি প্রত্যাখ্যাত করে।
দাগকাটা চেকের টাকা কোনো অবস্থাতেই প্রকৃত প্রাপক ছাড়া অন্য কেউ সংগ্রহ করতে পারে না। ফলে আদেষ্টা ও আদিষ্ট সর্বাধিক নিরাপত্তাবোধ করে। দাগকাটা চেকের অর্থ কেবল প্রাপকের হিসাবের মাধ্যমেই সংগ্রহ করতে হয়। এতে তার অর্থের নিরাপত্তা বৃদ্ধি পায়। তাই কেউ ইচ্ছা করলেও এর অর্থ চুরি বা জালিয়াতি করতে পারবে না। সুতরাং বলা যায়, উদ্দীপকের জনাব রহমান কর্তৃক চেকের কোণায় লাইন টেনে দেওয়া যথার্থই যৌক্তিক হয়েছে।

Leave a Reply