নবম-দশম শ্রেণির ভূগোল অধ্যায় ৭ জনসংখ্যা

সপ্তম অধ্যায়
 জনসংখ্যা

ছবি সংক্রান্ত তথ্য শিখনফল
 বিশ্বের জনসংখ্যার বর্তমান পরিস্থিতি ও পরিবর্তনের ধারা ব্যাখ্যা করতে পারবে।
 জনসংখ্যার পরিবর্তনকে প্রভাবিত করার নিয়ামকসমূহ ব্যাখ্যা করতে পারবে।
 অভিবাসনের কারণ, সুফল ও কুফল ব্যাখ্যা করতে পারবে।
 জনসংখ্যা সমস্যা সমাধানে করণীয় বিশ্লেষণ করতে পারবে।
 জনসংখ্যা ঘনত্ব ও জনসংখ্যা বণ্টন এবং এর প্রভাবকসমূহ বিশ্লেষণ করতে পারবে।
 প্রাকৃতিক সম্পদের ওপর জনসংখ্যার প্রভাব বিশ্লেষণ করতে পারবে।
 বাংলাদেশের জনসংখ্যা পরিস্থিতি, সমস্যা এবং সমাধানের উপায় ব্যাখ্যা করতে পারবে।
 বাংলাদেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধি রোধের উপায় ব্যাখ্যা করতে পারবে।
অধ্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো সংক্ষেপে জেনে রাখি
 বিশ্বের জনসংখ্যার বর্তমান পরিস্থিতি ও পরিবর্তনের ধারা : সময়ের সঙ্গে জনসংখ্যা পরিবর্তনের তারতম্য হচ্ছে জনসংখ্যা পরিবর্তনের গতিধারা। ১৬৫০ সালে পৃথিবীর মোট জনসংখ্যা ছিল প্রায় ৫০০ মিলিয়ন, ১৮৫০ সালে বৃদ্ধি পেয়ে হয় ১.২ বিলিয়ন। ১৯৫০ সালে পৃথিবীর মোট জনসংখ্যা ছিল প্রায় ২.৫৩ বিলিয়ন। যা ২০১৪ সালে এসে দাঁড়িয়েছে৭.২৩ বিলিয়নে। জনসংখ্যার বৃদ্ধির ধারাকে সাধারণভাবে তিনটি পর্যায়ে বিভক্ত করা যায়। ১. প্রাথমিক পর্যায়, ২. মাধ্যমিক পর্যায় ও ৩. সা¤প্রতিক পর্যায়। সুদূর অতীতকাল থেকে ১৬৫০ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত সময়কে প্রাথমিক পর্যায় বলে। ১৬৫০ থেকে ১৯৫০ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত সময়কে মাধ্যমিক পর্যায় ধরা হয়। ১৯৫০ সাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত সা¤প্রতিক পর্যায়ভুক্ত।
 জনসংখ্যা পরিবর্তনের নিয়ামক : জনসংখ্যা একটি সক্রিয় পরিবর্তনশীল উপাদান। জনসংখ্যার এই পরিবর্তন ঘটছে জন্ম, মৃত্যু ও অভিবাসনের কারণে। এগুলোকে আমরা জনসংখ্যার পরিবর্তন প্রক্রিয়ার নিয়ামক বলতে পারি। এই নিয়ামকগুলোর পারস্পরিক ক্রিয়ার ফলে কোনো সমাজ তথা দেশের জনমিতিক গঠনে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন হয়ে থাকে।
 জন্মহার (ইরৎঃয জধঃব) : স্বাভাবিক জন্মহার নারীদের সন্তান ধারণের সামর্থ্য নির্দেশ করে। তবে কোনো নির্দিষ্ট এক বছরের প্রতি হাজার নারীর সন্তান জন্মদানের মোট সংখ্যাকে সাধারণ জন্মহার বলে।
সাধারণ জন্মহার = নির্দিষ্ট বছরে জন্মিত সন্তাননির্দিষ্ট বছরের প্রজননক্ষম নারীর সংখ্যা  ১০০০
সাধারণ জন্মহারের চেয়ে স্থূল জন্মহার (ঈৎঁফব নরৎঃয ৎধঃব) বহুল প্রচলিত ও গ্রহণযোগ্য পদ্ধতি।
স্থূল জন্মহার = কোনো বছরের জন্মিত সন্তানের মোট সংখ্যাবছরের মধ্যকালীন মোট জনসংখ্যা  ১০০০
 স্থূল মৃত্যুহার (উবধঃয জধঃব) : নির্দিষ্ট কোনো বছরে মৃত্যুবরণকারীদের মোট সংখ্যাকে উক্ত বছরের মধ্যকালীন মোট জনসংখ্যা দিয়ে ভাগ করে স্থূল মৃত্যুহার নির্ণয় করা হয়।
স্থূল মৃত্যুহার = কোনো বছরে মৃত্যুবরণকারী মোট সংখ্যাবছরের মধ্যকালীন মোট জনসংখ্যা  ১০০০
 অভিবাসন (গরমৎধঃরড়হ) : স্থায়ী বসবাসের উদ্দেশে মানুষ গ্রাম থেকে শহরে, শহর থেকে অন্য শহরে, এক দেশ থেকে অন্য দেশে অভিগমন করে। ফলে কোথাও জনসংখ্যা কমে আবার কোথাও জনসংখ্যা বৃদ্ধি পায়। এই অভিবাসন প্রক্রিয়াও জনসংখ্যা হ্রাস বৃদ্ধির অন্যতম নিয়ামক।
১. অবাধ অভিবাসন : নিজের ইচ্ছায় বাসস্থান ত্যাগ করে আপন পছন্দমতো স্থানে বসবাস করাকে অবাধ অভিবাসন বলে।
২. বলপূর্বক অভিবাসন : প্রত্যক্ষ রাজনৈতিক চাপের মুখে কিংবা পরোক্ষভাবে অর্থনৈতিক ও সামাজিক চাপ সৃষ্টির ফলে মানুষ বাধ্য হয়ে যে অভিগমন করে তাকে বলপূর্বক অভিবাসন বলে।
 উদ্বাস্তু ও শরণার্থী : বলপূর্বক অভিবাসনের ফলে যেসব ব্যক্তি কোনো স্থানে আগমন করে ও স্থায়ীভাবে আবাস স্থাপন করে তাদের বলে উদ্বাস্তু। যারা সাময়িকভাবে আশ্রয় গ্রহণ করে এবং সুযোগমতো স্বদেশে প্রত্যাবর্তনের অপেক্ষায় থাকে তাদের বলে শরণার্থী।
 অভিবাসনের কারণ : যেসব কারণে মানুষকে পুরাতন বাসস্থান পরিত্যাগ করে অন্যস্থানে যেতে বাধ্য হয় সেগুলোকে উৎসস্থানের ধাক্কা বা বিকর্ষণমূলক কারণ বলে। যেসব কারণ নতুন কোনো স্থানে বসতি স্থাপনের জন্য মানুষকে উৎসাহিত বা প্ররোচিত করে সেগুলোকে গন্তব্যস্থলে টান বা আকর্ষণমূলক কারণ বলে।
 অভিবাসনের ফলাফল : অভিবাসনের স্বাভাবিক ফলাফল হচ্ছে জনসংখ্যা বণ্টন বা অবস্থানিক পরিবর্তন। অবস্থানগত পরিবর্তন ছাড়াও অভিবাসনের ফলে বিভিন্ন এলাকায় অর্থনৈতিক, সামাজিক ও জনবৈশিষ্ট্যগত পরিবর্তন হতে পারে ।
 প্রাকৃতিক সম্পদের উপর জনসংখ্যার প্রভাব : সম্পদ ও জনসংখ্যা জাতীয় উন্নয়নের দুই মৌলিক উপাদান। এই সম্পদ ও জনসংখ্যার মধ্যে একটি ভারসাম্য থাকা প্রয়োজন। সম্পদের তুলনায় জনসংখ্যা কম বা বেশি হলে উভয় ক্ষেত্রেই জাতীয় উন্নয়ন ব্যাহত হয়। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে কৃষিযোগ্য ভ‚মির পরিমাণ জনসংখ্যার মতোই অসমানভাবে বণ্টিত। কোথাও কৃষিযোগ্য ভ‚মির প্রাচুর্য, কোথাও জনসংখ্যার তুলনায় এর পরিমাণ কম।
 জনসংখ্যার ঘনত্ব : কোনো দেশের মোট জনসংখ্যা এবং মোট ভ‚মির পরিমাণ বা আয়তনের যে অনুপাত তা জনসংখ্যার ঘনত্ব। জনসংখ্যার ঘনত্ব = মোট জনসংখ্যামোট ভ‚মির আয়তন
 মানুষ-ভ‚মি অনুপাত : যেসব ভ‚মি মানুষের কাজে লাগে এবং সম্পদ সৃষ্টি করতে পারে, তাকে কার্যকর ভ‚মি বলে। মানুষ-ভ‚মির অনুপাত বলতে এই কার্যকর ভ‚মির অনুপাতকে ধরা হয়। মানুষ-ভ‚মির অনুপাত = মোট জনসংখ্যামোট কার্যকর ভ‚মির আয়তন
 কাম্য জনসংখ্যা : কোনো দেশের মোট জনসংখ্যা ও কার্যকর ভ‚মির অনুপাতে ভারসাম্য থাকলেই তাকে কাম্য জনসংখ্যা বলে।
 অতি জনাকীর্ণতা : জনসংখ্যার তুলনায় কার্যকর ভ‚মির পরিমাণ অল্প থাকলে তাকে অতি জনাকীর্ণতা বলে।
 জনস্বল্পতা : জনসংখ্যার তুলনায় কার্যকর ভ‚মির পরিমাণ বেশি থাকলেও জনসংখ্যার স্বল্পতার কারণে পর্যাপ্ত সম্পদ এবং ভ‚মি ব্যবহার না করা গেলে উৎপাদন ব্যাহত হয়। এই অবস্থানকে জনস্বল্পতা বলে।
 জনসংখ্যার বণ্টন : স্থানভেদে জনসংখ্যার অবস্থানগত বিস্তৃতি বা বিন্যাস হচ্ছে জনসংখ্যার বণ্টন। ভ‚পৃষ্ঠের ৫০-৬০ শতাংশের মতো এলাকায় মাত্র শতকরা প্রায় ৫ ভাগ লোকের বসতি। স্থলভাগের মাত্র শতকরা ৫ ভাগ এলাকায় পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেকের বসবাস।
 জনসংখ্যার ঘনত্ব ও বণ্টনের প্রভাবক : কতকগুলো প্রাকৃতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক বিষয় রয়েছে যা জনসংখ্যার ঘনত্ব কম বা বেশি হতে সাহায্যে করে। এই বিষয়গুলোকে জনসংখ্যার ঘনত্ব বা বণ্টনের প্রভাবক বলে। প্রথমত একে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। যথাÑ ১. প্রাকৃতিক প্রভাবক ও ২. অপ্রাকৃতিক প্রভাবক।
প্রাকৃতিক প্রভাবক : ১. ভ‚প্রকৃতি, ২. জলবায়ু, ৩. মৃত্তিকা, ৪. পানি ও ৫. খনিজ।
অপ্রাকৃতিক প্রভাবক : ১. সামাজিক, ২. সাংস্কৃতিক ও ৩. অর্থনৈতিক।
 বাংলাদেশের বর্তমান জনসংখ্যার ঘনত্ব : আদমশুমারি রিপোর্ট মার্চ, ২০১১ অনুযায়ী বাংলাদেশের জনসংখা প্রায় ১৪.৯৭ কোটি। প্রতি বর্গকিলোমিটারে জনসংখ্যা ঘনত্ব ১,০১৫ জন।
 জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার : বাংলাদেশের জনসংখ্যা অত্যন্ত দ্রæতগতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ১৯৯১ সালে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ছিল ২.১৭%, ২০০১ সালে ১.৪৮% এবং ২০১১ সালে ১.৩৭%।
 জনসংখ্যা পরিস্থিতির কারণে সৃষ্ট সমস্যা : মাত্রাতিরিক্ত জনসংখ্যার কারণেÑ ১. ভ‚মি খণ্ডবিখণ্ড হয়, ২. বাসস্থান চাহিদা বাড়ে, ৩. মাথাপিছু আয় হ্রাস পায়, ৪. বন নিধন হয় ও পাহাড় কাটা বাড়ে, ৫. কর্মহীন লোকের সংখ্যা বাড়ে, ৬. মূল্যবোধের অবক্ষয় হয়, ৭. শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হয়।
 জনসংখ্যা সমস্যা সমাধানের উপায় : ১. জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির সফল প্রয়োগ, ২. বাল্যবিবাহ ও বহুবিবাহ বন্ধ করা, ৩. ধর্মান্ধতা, বংশ রক্ষা প্রভৃতি কুসংস্কার দূর করা, ৪. নারীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা, ৫. চিত্তবিনোদনের সুযোগ সৃষ্টি করা।

 বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর 
১. জনসংখ্যা বণ্টনের কোনটি অপ্রাকৃতিক প্রভাবক?
 অর্থনৈতিক খ খনিজ গ মৃত্তিকা ঘ পানি
২. কোন সম্পর্কটিকে কাম্য জনসংখ্যা বলা হয়?
ক মানুষ ও বনজ সম্পদের ভারসাম্য  মানুষ ও ভ‚মির ভারসাম্য
গ মানুষ ও খনিজ সম্পদের ভারসাম্য ঘ মানুষ ও শিল্পের ভারসাম্য
নিচের চিত্র থেকে ৩ ও ৪ নম্বর প্রশ্নের উত্তর দাও :

৩. মানচিত্রে ‘ছ’ চিহ্নিত অঞ্চল থেকে ‘জ’ চিহ্নিত অঞ্চলে অভিগমনের কারণ-
র. কর্মসংস্থানের অভাব
রর. নদীভাঙন
ররর. সামাজিক ও সা¤প্রদায়িক বৈষম্য
নিচের কোনটি সঠিক?
 র ও রর খ র ও ররর
গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৪. মানচিত্রে ‘চ’ চিহ্নিত অঞ্চলে জনসংখ্যার ঘনত্ব কম হওয়ার কারণ-
র. ভ‚মির বন্ধুরতা
রর. অনুন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা
ররর. অনুন্নত কৃষিব্যবস্থা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর
গ রর ও ররর  র, রর ও ররর

 সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর 
প্রশ্ন- ১  বলপূর্বক অভিবাসন ও পরিবেশের উপর প্রভাব

স¤প্রতি প্রতিবেশী দেশ মায়ানমারে বৌদ্ধ স¤প্রদায় ও সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলমানদের মধ্যে জাতিগত দাঙ্গা দেখা দেয়। ফলে নিজেদের জীবন রক্ষার্থে রোহিঙ্গা মুসলমানগণ কক্সবাজারের উখিয়াতে আশ্রয় নেয়।
ক. অভিবাসন কী?
খ. শরণার্থী বলতে কী বোঝায়?
গ. কক্সবাজারের উখিয়াতে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় গ্রহণ কোন ধরনের অভিগমন? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. রোহিঙ্গাদের অভিগমন ওই অঞ্চলের সার্বিক পরিবেশের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলবেÑবিশ্লেষণ কর।

ক নিজের বাসস্থান ছেড়ে অন্য স্থানে গিয়ে স্থায়ীভাবে বসবাস করাকে অভিবাসন বলা হয়।
খ গৃহযুদ্ধ, সা¤প্রদায়িক বৈষম্য বা যুদ্ধের কারণে অনেক সময় মানুষের বলপূর্বক অভিগমন হতে হয়। বলপূর্বক অভিগমনের ফলে যারা সাময়িকভাবে অন্যত্র আশ্রয় গ্রহণ করে এবং সুযোগমতো স্বদেশে প্রত্যাবর্তনের অপেক্ষায় থাকে তাদের বলা হয় শরণার্থী। যেমন : বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় এদেশের লাখ লাখ মানুষ ভারতের বিভিন্ন শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় গ্রহণ করে এবং যুদ্ধ শেষে দেশে প্রত্যাবর্তন করে। ভারতে অবস্থানকালে এদের শরণার্থী বলা হতো।
গ কক্সবাজারের উখিয়াতে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় গ্রহণ হলো বলপূর্বক অভিগমন। রোহিঙ্গারা মুসলমান এবং আরাকান রাজ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠ। তা সত্তে¡ও মায়ানমারের সামরিক জান্তা রোহিঙ্গাদের সেদেশের নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি না দিলে তারা চাকরি, শিক্ষা, অর্থনীতি সর্বক্ষেত্রে আরাকান রাজ্যের সংখ্যালঘু বৌদ্ধ স¤প্রদায় থেকে পিছিয়ে পড়ে। মায়ানমার সরকারের পাশাপাশি স্থানীয় বৌদ্ধ অধিবাসীদের নিপীড়ন, নির্যাতন চরমে ওঠায় রোহিঙ্গারা গত নব্বই দশক থেকে এদেশে অভিগমন হতে বাধ্য হয়। ফলে আরাকানে বাস করা রোগিঙ্গারা নির্যাতনের শিকার হয়ে ইচ্ছার বিরুদ্ধে ভিটেমাটির মায়া ত্যাগ করে কক্সবাজারের উখিয়াতে আশ্রয় গ্রহণ করতে বাধ্য হচ্ছে। গৃহযুদ্ধ, সা¤প্রদায়িক বৈষম্য বা যুদ্ধের কারণে অভিগমন বলপূর্বক অভিগমনের অন্তর্ভুক্ত। তাই কক্সবাজারের উখিয়াতে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় গ্রহণ হলো বলপূর্বক অভিগমন।
ঘ রোহিঙ্গাদের অভিগমন ওই অঞ্চলের সার্বিক পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলবে। বাংলাদেশ পৃথিবীর অন্যতম জনবহুল দেশ। জনসংখ্যা বাংলাদেশের প্রধান সমস্যা। ফলে রোহিঙ্গাদের আগমনে ওই অঞ্চলের ভ‚মি ও কৃষিজমির ওপর চাপ পড়বে। এসব রোহিঙ্গারা বেঁচে থাকার তাগিদে বাধ্য হয়ে নানা পেশায় জড়িয়ে পড়ছে। ফলে ওই অঞ্চলে মজুরির হারে পরিবর্তন আসবে। বেকারত্ব বাড়বে। বাণিজ্যিক লেনদেনে ভারসাম্য নষ্ট হবে। অর্থনৈতিক উৎপাদন কমে উন্নয়ন ধারা বিঘিœত হবে। সামাজিক রীতিনীতি, আচার-আচরণের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়বে। এলাকায় বিভিন্ন রোগের বিস্তার ঘটবে। পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে। ওই অঞ্চলের বনভ‚মি ধ্বংস হওয়ার আশঙ্কা দেখা দেবে। চুরি, রাহাজানি, ছিনতাই ইত্যাদি অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি পাবে। এভাবে সেখানে প্রাকৃতিক ও সামাজিক পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে বাড়তি জনসংখ্যার খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা, শিক্ষা ইত্যাদির জোগান দিতে গিয়ে বাংলাদেশে সরকারকে হিমশিম খেতে হবে। সুতরাং রোগিঙ্গাদের অভিগমন ওই অঞ্চলের সার্বিক পরিবেশের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

প্রশ্ন- ২  ========

নিচের মানচিত্রটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
[পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে জনসংখ্যার তারতম্যের কারণ]

ক. স্থূল জন্মহার কী?
খ. অতি-জনাকীর্ণতা ব্যাখ্যা কর।
গ. মানচিত্রে ‘চ’ চি‎িহ্নত অঞ্চলে জনসংখ্যার ঘনত্ব অধিক হওয়ার প্রাকৃতিক কারণ বর্ণনা কর।
ঘ. ‘ছ’ ও ‘জ’ চি‎িহ্নত অঞ্চল দুটির মধ্যে জনসংখ্যার ঘনত্বের তারতম্য বিশ্লেষণ কর।

ক কোনো বছরে জন্মিত সন্তানের মোট সংখ্যাকে উক্ত বছরের মধ্যকালীন মোট জনসংখ্যা দিয়ে ভাগ করে যে ফলাফল পাওয়া যায় তাকে স্থূল জন্মহার বলে।
খ জনসংখ্যার তুলনায় কার্যকর ভ‚মির পরিমাণ কম থাকলে তাকে অতি জনাকীর্ণতা বলে। অতি জনাকীর্ণতার জন্য ভ‚মির অধিক ব্যবহারের কারণে দিন দিন উৎপাদনযোগ্য ভ‚মি কমে যায়। বসতি বিস্তারের ফলে উন্মুক্ত স্থান, জলাশয় প্রভৃতি হারিয়ে যায়। এর ফলে মোট উৎপাদিত সম্পদের পরিমাণ তথা মাথাপিছু উৎপাদিত সম্পদের পরিমাণ অল্প হয়। যা মাথাপিছু উৎপাদন ও ভোগের পরিমাণ হ্রাস করে।
গ মানচিত্রে ‘চ’ চি‎িহ্নত অঞ্চলটি হলো ভারতীয় উপমহাদেশ। এই অঞ্চলটি পৃথিবীর ঘনবসতিগুলোর মধ্যে অন্যতম। নিচে এ অঞ্চলে জনসংখ্যার ঘনত্ব অধিক হওয়ার প্রাকৃতিক কারণ বর্ণনা করা হলো :
১. ভ‚প্রকৃতি : মানচিত্রে প্রদর্শিত দক্ষিণ এশিয়ার অঞ্চলটি হচ্ছে নদীবাহিত সমভ‚মি অঞ্চল। সমভ‚মি অঞ্চলে কৃষি, শিল্প প্রভৃতি গড়ে তোলা সহজ বলে মানুষ সেখানে বসবাস করতে চায়। ফলে উক্ত অঞ্চলে জনসংখ্যার ঘনত্ব বেশি।
২. জলবায়ু : জলবায়ুর প্রভাব জনবসতির বণ্টন নিয়ন্ত্রণ করে। উক্ত অঞ্চলে মৌসুমি বায়ুর প্রভাব বিদ্যমান এবং অঞ্চলটি সমভাবাপন্ন জলবায়ুর অন্তর্গত হওয়ায় এখানে জনসংখ্যার ঘনত্ব অধিক।
৩. মৃত্তিকা : উক্ত অঞ্চলের নদীবাহিত উর্বর মৃত্তিকা কৃষিকাজের উপযুক্ত হওয়ায় এ অঞ্চলে জনসংখ্যার ঘনত্ব বেশি।
৪. পানি : মানচিত্রে উল্লিখিত অঞ্চলটি নদীবহুল। সুপেয় পানির সহজলভ্যতার ফলে উক্ত অঞ্চলে জনসংখ্যার ঘনত্ব বেশি।
৫. খনিজ : খনিজ প্রাপ্তির ওপর জনসংখ্যার ঘনত্ব নির্ভর করে। উক্ত অঞ্চলে যথেষ্ট খনিজ সম্পদ পাওয়া যায় বলে জনসংখ্যার ঘনত্ব অধিক।
সুতরাং দেখা যায়, ‘চ’ চি‎িহ্নত অঞ্চলে জনসংখ্যা অধিক হওয়ার পিছনে অনুক‚ল প্রাকৃতিক কারণসমূহ বিদ্যমান।
ঘ ‘ছ’ ও ‘জ’ চি‎িহ্নত অঞ্চল দুটি যথাক্রমে রাশিয়ার সাইবেরিয়া অঞ্চল ও কানাডার বরফযুক্ত প্রেইরি অঞ্চল। উভয় অঞ্চল উত্তর গোলার্ধের উচ্চ অক্ষাংশে অবস্থিত। কানাডা পৃথিবীর একটি উন্নত দেশ। অন্যদিকে রাশিয়া পৃথিবীর অন্যতম পরাশক্তি হলেও রাশিয়ার অর্থনীতি এখন আর আগের মতো নেই। ‘ছ’ ও ‘জ’ চি‎িহ্নত অঞ্চল দুটি উত্তর মেরুর কাছাকাছি হওয়ায় উভয় স্থানে যাতায়াত ব্যবস্থা ও কৃষিক্ষেত্র গড়ে তোলা কষ্টকর। তীব্র শীতে জীবন নির্বাহ করা কঠিন। তাই জনসংখ্যার ঘনত্ব অনেক কম। বর্তমানে ‘জ’ চি‎িহ্নত অঞ্চলে অর্থাৎ কানাডায় জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার হ্রাস পেলেও জনসংখ্যা স্থিতিশীল রয়েছে। কানাডায় সহজ অভিবাসন আইন ও উন্নত অর্থনীতির কারণে বিশ্বের বহু মানুষ এখন কানাডায় অভিগমন করছে। অন্যদিকে ‘ছ’ অঞ্চলের অর্থনৈতিক অবস্থা মজবুত নয়। উপরন্তু সেখানে তীব্র শীত ও দুর্গম এলাকার কারণে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার নিম্নমুখী। এখানে অভিবাসনের বিকর্ষণমূলক কারণ জড়িত। সুতরাং দেখা যায় অর্থনৈতিক ও প্রাকৃতিক কারণে ‘ছ’ ও ‘জ’ চি‎িহ্নত অঞ্চলে জনসংখ্যার ঘনত্বের তারতম্য হয়েছে।

 বোর্ড ও সেরা স্কুলের বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর

১. জনসংখ্যা বণ্টনের কোনটি অপ্রাকৃতিক প্রভাবক? [স. বো.’১৬]
ক খনিজ খ মাটি গ পানি ঘ অর্থনৈতিক
৫. কানাডায় স্থায়ীভাবে বসবাস করার উদ্দেশ্যে হাবীব পরিবারের সদস্যদের নিয়ে কানাডায় পাড়ি জমায়। এ বিষয়টি নিচের কোনটি সমর্থন করে? [স. বো. ’১৫]
˜ অভিবাসন খ পর্যটন গ প্রভাবক ঘ শরণার্থী
৬. মোট জনসংখ্যার আদর্শ অনুপাতের ভারসাম্য নষ্ট হলে কী দেখা দেয়?
[স. বো. ’১৫]
র. জনাকীর্ণতা রর. জনস্বল্পতা
ররর. জনশূন্যতা
নিচের কোনটি সঠিক?
˜ র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৭. দিন দিন উৎপাদনযোগ্য ভ‚মির পরিমাণ কমে যাচ্ছে কারণ-[স. বো. ’১৫]
র. ভ‚মির অধিক ব্যবহার
রর. ভ‚মির খণ্ডিতকরণ
ররর. বসতি বিস্তার
নিচের কোনটি সঠিক?
˜ র ও রর খ র ও ররর
গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৮. ১৬৫০ সালে পৃথিবীর জনসংখ্যা কত ছিল?
[কদমতলী পূর্ব বাসাবো স্কুল এন্ড কলেজ, ঢাকা]
ক প্রায় ৩৫০ মিলিয়ন খ প্রায় ৪৫৫ মিলিয়ন
 প্রায় ৫০০ মিলিয়ন ঘ প্রায় ৬৪০ মিলিয়ন
৯. ১৬৫০ থেকে ১৯৫০ পর্যন্ত সময়কে কী বলা হয়?
[অগ্রণী স্কুল এন্ড কলেজ, ঢাকা]
ক প্রাথমিক পর্যায়  মাধ্যমিক পর্যায়
গ সা¤প্রতিক পর্যায় ঘ আধুনিক পর্যায়
১০. উন্নত বিশ্বে জনসংখ্যা কোন পর্যায়ে রয়েছে?
[ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজ]
ক বৃদ্ধিরত  স্থিতিশীল
গ হ্রাসরত ঘ অস্থিতিশীল
১১. কর্মক্ষম জনসংখ্যা হিসেবে ধরা হয় কত বছর বয়সের জনসংখ্যাকে?
[বিএএফ শাহীন কলেজ, ঢাকা]
ক ১৪-৬৯ খ ২৫-৫৯
 ১৯-৬৪ ঘ ২৯-৭৯
১২. জনসংখ্যা কোন ধরণের উপাদান?
[আঞ্জুমান আদর্শ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, নেত্রকোনা]
ক অপরিবর্তনশীল খ অদৃশ্য
গ অস্পষ্ট  পরিবর্তনশীল
১৩. জš§হারের বহুল প্রচলিত ও গ্রহণযোগ্য পদ্ধতি কোনটি?
[পুলিশ লাইনন্স স্কুল এন্ড কলেজ, কুষ্টিয়া]
ক সাধারণ খ স্বাভাবিক
 স্থূল ঘ সূ²
১৪. বলপূর্বক অভিবাসন হয়ে থাকে কোনটির প্রভাবে?
[বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফ পাবলিক কলেজ, ঢাকা]
ক উন্নত জীবনযাপন
 গৃহযুদ্ধ ও সা¤প্রদায়িক বৈষম্য
গ অনুন্নত বাসস্থান
ঘ রাজনৈতিক অস্থিরতা
১৫. বলপূর্বক অভিবাসনের পর যারা কোনো স্থানে সাময়িকভাবে আশ্রয় গ্রহণ করে এবং সুযোগমতো স্বদেশে প্রত্যাবর্তনের অপেক্ষায় থাকে তাদের কী বলে? [বিএএফ শাহীন কলেজ, ঢাকা]
ক বহির্গমন খ বহিরাগমন
 শরণার্থী ঘ উদ্বাস্তু
১৬. জনসংখ্যা ঘনত্বের ক্ষেত্রে কোনটি সঠিক? [নাটোর সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়]
ক মোট ভ‚মির আয়তনমোট জনসংখ্যা
 মোট জনসংখ্যামোট ভ‚মির আয়তন
গ মোট জনসংখ্যা  মোট ভ‚মির আয়তন
ঘ মোট জনসংখ্যা  মোট ভ‚মির আয়তন
১৭. কাম্য জনসংখ্যা কী? [খিলগাও গার্লস স্কুল এন্ড কলেজ, ঢাকা]
 মোট জনসংখ্যা ও কার্যকর ভ‚মির অনুপাতে ভারসাম্য থাকা
খ মোট জনসংখ্যা ও আয়ের অনুপাতে ভারসাম্য থাকা
গ মোট জনসংখ্যা ও সম্পদের অনুপাতে ভারসাম্য থাকা
ঘ মোট আয় ও কার্যকর ভ‚মির অনুপাতে ভারসাম্য থাকা
 বিষয়ক্রম অনুযায়ী বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
 ভ‚মিকা  বোর্ড বই, পৃষ্ঠা- ০০
১.

সাধারণ বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
১৮. অর্থনৈতিক বিকাশের ক্ষেত্রে সমস্যা কোনটি? (জ্ঞান)
 জনাধিক্যতা খ পরিমিত শ্রমশক্তি
গ জনসংখ্যা ঘ শিক্ষার অভাব
১৯. বর্তমানে বিশ্বব্যাপী কোন সমস্যাটি দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে? (জ্ঞান)
ক পরিবেশ  জনসংখ্যা গ নির্যাতন ঘ মাদকাসক্তি
বহুপদী সমাপ্তিসূচক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
২০. নবজাতক ও শিশুমৃত্যুর হার হ্রাস পাওয়ার অন্যতম কারণ- (অনুধাবন)
র. চিকিৎসাবিজ্ঞানের উন্নতি
রর. শিক্ষার প্রসার
ররর. নিরাপদ পানীয় জলের ব্যবহার
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর  র, রর ও ররর
২১. মানুষের আয়ুষ্কাল বৃদ্ধির অন্যতম কারণ- (অনুধাবন)
র. সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ
রর. পুষ্টিকর খাবার
ররর. স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর  র, রর ও ররর
 বিশ্বের জনসংখ্যার বর্তমান পরিস্থিতি ও পরিবর্তনের ধারা  বোর্ড বই, পৃষ্ঠা- ৯৩
¡ বর্তমান বিশ্বে জাতীয় ভিত্তিতে লোক গণনা করা হয়- প্রতি দশ কিংবা পাঁচ বছর অন্তর।
¡ বিশ্ব জনসংখ্যা বৃদ্ধির ধারা বিভক্ত করা যায়-৩টি পর্যায়ে।
¡ সাধারণত ০-১৮ বছর বয়সের শিশু এবং ৬৫ ঊর্ধ্ব বয়সের জনসংখ্যাকে বলে- নির্ভরশীল জনসংখ্যা।
¡ জনসংখ্যা পরিবর্তনের গতিধারা হচ্ছে- সময়ের সঙ্গে জনসংখ্যা পরিবর্তনের তারতম্য।
¡ ১৬৫০ সালে পৃথিবীর মোট জনসংখ্যা ছিল-৫০০ মিলিয়ন।
¡ কৃষি ও শিল্প ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক উন্নয়ন সাধিত হয়-১৮৫০ সালের পর।
¡ ১৯৫০ সালে পৃথিবীর মোট জনসংখ্যা ছিল- ২.৫৩ বিলিয়ন।
¡ ২০২৫ সালে অনুমিত জনসংখ্যা দাঁড়াবে- ৮ বিলিয়নের উপরে।
¡ নারী -পুরুষের বয়সভিত্তিক বিন্যাস গ্রাফে প্রকাশ করলে যে নকশা তৈরি হয় তাকে বলে- জনসংখ্যা কাঠামো।
¡ উন্নয়নশীল দেশের জনসংখ্যা কাঠামোকে বলে- জনসংখ্যা পিরামিড।

সাধারণ বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
২২. সপ্তদশ শতাব্দীর পরে কত বছরের মধ্যে পৃথিবীর জনসংখ্যা দ্বিগুণ হয়?
(জ্ঞান)
ক ৫০ খ ১০০
গ ১৫০  ২০০
২৩. ১৮৫০ সালে পৃথিবীর জনসংখ্যা কত ছিল? (জ্ঞান)
ক ০.৮ বিলিয়ন  ১.২ বিলিয়ন
গ ১.৩ বিলিয়ন ঘ ১.৫ বিলিয়ন
২৪. নিচের কোন সময়কালে পৃথিবীর জনসংখ্যার বিস্ফোরণ ঘটেছে বলে তুমি মনে কর? (অনুধাবন)
ক ১৭৫০-১৮৫০  ১৮৫০-১৯৫০
গ ১৯০০-১৯৫০ ঘ ১৯৫০-২০০০
২৫. ২০১৪ সালে পৃথিবীর জনসংখ্যা কত ছিল? (জ্ঞান)
ক ৫.৫ বিলিয়ন খ ৬.২১ বিলিয়ন
গ ৬.৯৫ বিলিয়ন  ৭.২৩ বিলিয়ন
২৬. জনসংখ্যা পিরামিডের উল্লম্ব অক্ষে বয়স; অনুভ‚মিক অক্ষের ডানে কী প্রকাশ পায়? (জ্ঞান)
 নারীর সংখ্যা খ পুরুষের সংখ্যা
গ গড় আয়ুষ্কাল ঘ প্রত্যাশিত আয়
২৭. বিশ্বের জনসংখ্যা বর্তমান হারে বৃদ্ধি পেতে থাকলে ২০২৫ সালে অনুমিত জনসংখ্যা কত দাঁড়াবে? (জ্ঞান)
 ৮ বিলিয়ন খ ৮.৫ বিলিয়ন
গ ৯ বিলিয়ন ঘ ৯.৫ বিলিয়ন
২৮. বিশ্ব জনসংখ্যা বৃদ্ধির ধারাকে কয়টি পর্যায়ে ভাগ করা যায়? (জ্ঞান)
ক ২  ৩ গ ৪ ঘ ৫
২৯. সুদূর অতীত কাল থেকে কোন সময় পর্যন্ত সময়কে প্রাথমিক পর্যায় বলে? (জ্ঞান)
ক ১৫৫০ খ্রিষ্টাব্দ  ১৬৫০ খ্রিষ্টাব্দ গ ১৭৫০ খ্রিষ্টাব্দ ঘ ১৮৫০ খ্রিষ্টাব্দ
৩০. বিশ্ব জনসংখ্যা বৃদ্ধির ধারার কোন পর্যায়ে পৃথিবীর মোট জনসংখ্যা ও বৃদ্ধির হার খুবই কম ছিল? (জ্ঞান)
 প্রাথমিক পর্যায়ে খ মাধ্যমিক পর্যায়ে
গ সা¤প্রতিক পর্যায়ে ঘ প্রাথমিক ও সা¤প্রতিক পর্যায়ে
৩১. বিশ্ব জনসংখ্যা বৃদ্ধির ধারার কোন পর্যায়ে জন্ম এবং মৃত্যুর হার খুব বেশি ছিল? (জ্ঞান)
ক মাধ্যমিক পর্যায়ে খ সা¤প্রতিক পর্যায়ে
গ প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ে  প্রাথমিক পর্যায়ে
৩২. বিশ্ব জনসংখ্যা বৃদ্ধির গতিধারার প্রাথমিক পর্যায়ের বৈশিষ্ট্য কোনটি?
(উচ্চতর দক্ষতা)
ক জš§হার বেশি মৃত্যুহার কম  উচ্চ জš§হার ও মৃত্যুহার
গ জš§হার কম মৃত্যুহার বেশি ঘ নি¤œ জš§হার ও মৃত্যুহার
৩৩. কোন সময় পর্যন্ত সময়কে সা¤প্রতিক পর্যায় বলে? (অনুধাবন)
ক ১৭০০ সাল থেকে ২০১৪ খ ১৮০০ সাল থেকে ২০১২
 ১৯৫০ সাল থেকে ২০১০ ঘ ২০০০ সাল থেকে ২০১১
৩৪. বিশ্ব জনসংখ্যা বৃদ্ধির ধারার কোন পর্যায়ে প্রথমে জনসংখ্যা ধীরে এবং পরে দ্রæতগতিতে বৃদ্ধি পায়? (জ্ঞান)
ক প্রাথমিক পর্যায়ে  মাধ্যমিক পর্যায়ে
গ প্রাথমিক ও সা¤প্রতিক পর্যায়ে ঘ সা¤প্রতিক পর্যায়ে
৩৫. নির্ভরশীল জনসংখ্যা কাকে বলা হয়? (অনুধাবন)
ক ০-১০ বয়সের শিশু এবং ৬৫ ঊর্ধ্ব বয়সের জনসংখ্যাকে
খ ০-১৫ বয়সের শিশু এবং ৭০ ঊর্ধ্ব বয়সের জনসংখ্যাকে
গ ০-১৮ বয়সের শিশু এবং ৬০ ঊর্ধ্ব বয়সের জনসংখ্যাকে
 ০-১৮ বয়সের শিশু এবং ৬৫ ঊর্ধ্ব বয়সের জনসংখ্যাকে
৩৬. একটি দেশের মোট জনসংখ্যার মধ্যে ১৫ বছরের নিচের জনসংখ্যা ২০ লাখ, ১৫-৪০ বছরের জনসংখ্যা ১২ লাখ, ৪০-৬৪ বছরের জনসংখ্যা ৮ লাখ এবং ৬৪ বছরের ঊর্ধ্বে জনসংখ্যা ৫ লাখ। এ দেশটি সম্পর্কে কোন বাক্যটি প্রযোজ্য? (উচ্চতর দক্ষতা)
 দেশটির নির্ভরশীলতার অনুপাত বেশি
খ দেশটির জীবনযাত্রার মান উন্নত
গ দেশটির মাছাপিছু আয় উচ্চ
ঘ দেশটির জন্মহার ও মৃত্যুহার কম
৩৭. কর্মক্ষম জনসংখ্যা কোন বয়সে কাঠামোর অন্তর্ভুক্ত? (জ্ঞান)
ক ১৪-৫৪  ১৯-৬৪ গ ২৫-৬৪ ঘ ১৪-৫৯
৩৮. জনসংখ্যা কাঠামোর শীর্ষে রয়েছে ৮৫+ ঊর্ধ্ব জনসংখ্যা আর সর্বনিম্ন স্তরে রয়েছে- (প্রয়োগ)
ক ৫-৯ বছরের জনসংখ্যা  ০-৪ বছরের জনসংখ্যা
গ ০-৯ বছরের জনসংখ্যা ঘ ৫-১৪ বছরের জনসংখ্যা
৩৯. উন্নয়নশীল দেশের জনসংখ্যা কাঠামোতে সবচেয়ে বেশি জনসংখ্যা কোন বয়স কাঠামোতে থাকে? (জ্ঞান)
 ০-৪ খ ১৫-১৯ গ ৫-৯ ঘ ২০-২৪
৪০. একটি দেশের জনসংখ্যা কাঠামো থেকে দেখা গেল ০-১০ বছর বয়সের জনসংখ্যা বেশি। এর অর্থ কী (প্রয়োগ)
ক মৃত্যুহার বেশি খ নির্ভরশীল জনসংখ্যা কম
গ কর্মক্ষম জনসংখ্যা বেশি  জন্মহার বেশি
৪১. জনসংখ্যা কাঠামো কী? (অনুধাবন)
ক নারীর সংখ্যা
খ পুরুষের সংখ্যা
 নারী-পুরুষের বয়সভিত্তিক বিন্যাস
ঘ কর্মক্ষম লোকের সংখ্যা
৪২. নারী-পুরুষের বয়সভিত্তিক বিন্যাস গ্রাফে প্রকাশ করলে যে নকশা তৈরি হয় তাকে কী বলে? (অনুধাবন)
ক জনসংখ্যা নিয়ামক  জনসংখ্যা কাঠামো
গ জনসংখ্যা স্থানান্তর ঘ জনমিতির অবস্থান্তর
৪৩. জনসংখ্যা কাঠামোর উল্লম্ব অক্ষে কী প্রকাশ করা হয়? (জ্ঞান)
ক নারী-পুরুষ সংখ্যা খ মাথাপিছু গ মৃত্যুহার  বয়স
৪৪. জনসংখ্যা কাঠামোর অনুভ‚মিক অক্ষে কী প্রকাশ করা হয়? (জ্ঞান)
 নারী-পুরুষের শতকরা হার খ মাথাপিছু আয়
গ মৃত্যুহার ঘ বয়স
বহুপদী সমাপ্তিসূচক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
৪৫. বিশ্ব জনসংখ্যা বৃদ্ধির ধারার মাধ্যমিক পর্যায়ে আফ্রিকা ও এশিয়ায় জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কম থাকে (অনুধাবন)
র. জন্মহার বেশি থাকায়
রর. মৃত্যুহার বেশি থাকায়
ররর. অভিবাসন বেড়ে যাওয়ায়
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র খ রর  র ও রর ঘ র, রর ও ররর
৪৬. জনসংখ্যা কাঠামোতে প্রকাশ করা হয় (অনুধাবন)
র. নারী-পুরুষের সংখ্যা
রর. তাদের বয়স কাঠামো
ররর. তাদের অর্থনৈতিক অবস্থা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র  র ও রর গ র ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৪৭. উন্নত দেশের জনসংখ্যা কাঠামোর বৈশিষ্ট্য হলো (অনুধাবন)
র. ভ‚মি অধিক প্রশস্ত
রর. মাঝে প্রশস্ততা বৃদ্ধি পেয়ে ধীরে সরু হয়
ররর. উপরের দিকের প্রশস্ততা একেবারে সরু
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র খ র ও রর  রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৪৮. উন্নয়নশীল দেশসমূহের জনসংখ্যা কাঠামোর বৈশিষ্ট্য হলোÑ (অনুধাবন)
র. ভ‚মি অত্যন্ত প্রশস্ত
রর. মাঝে অত্যধিক সরু
ররর. শীর্ষ ভাগ সংকীর্ণ
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র খ রর গ র ও রর  র ও ররর
৪৯. উন্নয়নশীল দেশসমূহের অর্থনৈতিক দিক থেকে পিছিয়ে পড়ার
কারণ (উচ্চতর দক্ষতা)
র. নির্ভরশীল জনসংখ্যা বেশি
রর. কর্মক্ষম জনসংখ্যা কম
ররর. জন্মহার বৃদ্ধি ও মৃত্যু হার কম
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর  র, রর ও ররর
অভিন্ন তথ্যভিত্তিক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
নিচের সারণিটি দেখে ৪২ ও ৪৩নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
সাল পৃথিবীর জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার (বিলিয়ন)
১৯৫০ ২.৫৩
১৯৬০ ৩.০৩
১৯৭০ ৩.৬৯
১৯৮০ ৪.৪৫
১৯৯০ ৫.৩২
৫০. সারণিতে জনসংখ্যা বৃদ্ধির নিম্নগতি ছিল কোন দশকে? (প্রয়োগ)
 ১৯৬০ খ ১৯৭০ গ ১৯৮০ ঘ ১৯৯০
৫১. ১৯৭০ থেকে ১৯৯০ পর্যন্ত পৃথিবীর জনসংখ্যা বেড়েছে (উচ্চতর দক্ষতা)
র. ১.৬৩ বিলিয়ন
রর. প্রাথমিক পর্যায় থেকে দ্রæত গতিতে
ররর. মাধ্যমিক পর্যায় থেকে দ্রæত গতিতে
 র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
নিচের চিত্রটি দেখে ৪৪ ও ৪৫নং প্রশ্নের উত্তর দাও :

৫২. চিত্রের পিরামিডটি কোন দেশসমূহের বৈশিষ্ট্য বহন করছে? (জ্ঞান)
 উন্নত খ উন্নয়নশীল গ অনুন্নত ঘ দরিদ্র
৫৩. চিত্রের কাঠামোর অন্তর্গত দেশসমূহে (উচ্চতর দক্ষতা)
র. জীবনযাত্রার মান উঁচু
রর. জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার স্থিতিশীল
ররর. কর্মক্ষম জনসংখ্যার পরিমাণ বেশি
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর  র, রর ও ররর
 জনসংখ্যা পরিবর্তনের নিয়ামক  বোর্ড বই, পৃষ্ঠা- ৯৫  জনসংখ্যা পরিবর্তনের নিয়ামক  বোর্ড বই, পৃষ্ঠা- ৯৫
¡ জনসংখ্যা- একটি সক্রিয় পরিবর্তনশীল উপাদান।
¡ নারীদের সন্তান ধারণের সামর্থ্য নির্দেশ করে- স্বাভাবিক জন্মহার।
¡ নারীদের প্রজনন ক্ষমতা থাকে- ১৫-৪৫ অথবা ১৫-৪৯ বছর বয়স পর্যন্ত।
¡ মরণশীলতা পরিমাপের বহুল প্রচলিত গ্রহণযোগ্য পদ্ধতি হলো- স্থূল মৃত্যুহার।
¡ জনসংখ্যা বৃদ্ধি, সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করে- মরণশীলতা।
¡ শিক্ষার মান বৃদ্ধি বা হ্রাস পাওয়ার ফলে- প্রজননশীলতার হ্রাস বা বৃদ্ধি ঘটে।
¡ শিক্ষক, ডাক্তার, আইনজীবী ও চাকরিজীবীদের মধ্যে- জন্মহার কম।
¡ কোনো বছরে জন্মিত সন্তানের মোট সংখ্যাকে উক্ত বছরের মধ্যকালীন মোট জনসংখ্যা দিয়ে ভাগ করে নির্ণয় করা হয়- স্থূল জন্মহার।
¡ মরণশীলতার পার্থক্য রয়েছে- অঞ্চলভেদে।
¡ প্রজননকালীন নারীদের মৃত্যুহার বেশি পরিলক্ষিত হয়- উন্নয়নশীল দেশগুলোতে।
সাধারণ বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
৫৪. সাধারণত কত বছর বয়স পর্যন্ত নারীদের প্রজনন ক্ষমতা থাকে? (জ্ঞান)
ক ১০-৩৫ খ ১৫-৪০  ১৫-৪৫ ঘ ১৫-৫০
৫৫. কোনো দেশের কোনো বছরের জন্মিত সন্তানের সংখ্যাকে উক্ত বছরের গণনাকৃত প্রজননক্ষম নারীর সংখ্যা দিয়ে ভাগ করে কী নির্ণয় করা হয়? (জ্ঞান)
ক জন্মহার খ স্থূল জন্মহার
 সাধারণ জন্মহার ঘ জনসংখ্যার হ্রাস বৃদ্ধি
৫৬. স্থূল জন্মহার কী প্রকাশক? (উচ্চতর দক্ষতা)
ক জন্মহার ও মৃত্যুহারের পার্থক্য খ শিশু মৃত্যুর সংখ্যা
গ শিশুর জন্মলাভ  জীবিত শিশুর জন্মলাভ
৫৭. কোনো বছরে জন্মিত সন্তানের মোট সংখ্যাবছরের মধ্যকালীন মোট জনসংখ্যা  ১০০০; কী নির্দেশ করে? (অনুধাবন)
 স্থূল জন্মহার খ স্থূল মৃত্যুহার
গ সাধারণ জন্মহার ঘ সাধারণ মৃত্যুহার
৫৮. কোনো স্থানে ২০০১ সালের মধ্যবর্তী সময়ে লোকসংখ্যা ১৭,৫০০ এবং ওই বছরে জন্মিত শিশুর সংখ্যা ৫২৫ ছিল। স্থূল জন্মহার কত? (প্রয়োগ)
ক ২৫  ৩০ গ ৩৫ ঘ ৪০
৫৯. রসুলপুর গ্রামে গত বছর ১২ জন শিশু জন্মগ্রহণ করে এবং ওই বছরের মধ্যবর্তী সময়ে মোট জনসংখ্যা ছিল ৫,০০০। গত বছর ওই গ্রামের স্থূল জন্মহার কত ছিল? (প্রয়োগ)
ক ২.০ খ ২.২  ২.৪ ঘ ২.৬
৬০. খুলনা শহরের ২০০৭ সালের মধ্যবর্তী সময়ে স্থূল জন্মহার ২০ এবং ওই বছরে জন্মিত শিশুর সংখ্যা ২০ হাজার। ২০০৭ সাল শেষে ওই শহরের মোট জনসংখ্যা কত ছিল? (প্রয়োগ)
 ১০ লাখ খ ২০ লাখ গ ৪০ লাখ ঘ ৫০ লাখ
৬১. কী কারণে জন্মহারের ভিন্নতা স্থান বা দেশ ভেদে একেক রকম হয়? (অনুধাবন)
ক শিক্ষার মান ও হারের তারতম্য খ বিবাহ বিচ্ছেদের হারের আধিক
গ গ্রাম ও শহরের মধ্যে ব্যবধান  আর্থসামাজিক অবস্থার ভিন্নতা
৬২. বাল্যবিবাহের প্রভাবে কী হয়? (অনুধাবন)
ক পরিবারে অশান্তি দেখা দেয় খ সমাজে বিশৃঙ্খলা ঘটে
 জন্মহার বৃদ্ধি পায় ঘ মৃত্যুহার বৃদ্ধি পায়
৬৩. জন্মহার বৃদ্ধির উপর কোনটি প্রভাব ফেলে? (অনুধাবন)
 শিক্ষা খ পরিবেশ গ অভিবাসন ঘ অভিগমন
৬৪. একটি স্থান বা দেশের শিক্ষার হার কম হলে প্রজননশীলতা কীরূপ হয়? (প্রয়োগ)
ক হ্রাস পায়  বেশি হয় গ স্থির হয় ঘ থেমে যায়
৬৫. কাদের জন্মহার বেশি দেখা যায়? (অনুধাবন)
ক চাকরিজীবী খ পেশাদার শ্রেণি
 শ্রমজীবী ঘ আইনজীবী
৬৬. স্থূল জন্মহার জার্মানির ১০, যুক্তরাষ্ট্রের ১৫, তুরস্কের ২২ ও মায়ানমারের ৩০। এ থেকে কোনটি স্বল্পোন্নত দেশ চি‎িহ্নত কর? (প্রয়োগ)
ক জার্মানি খ যুক্তরাষ্ট্র
গ তুরস্ক  মায়ানমার
৬৭. কোনো দেশের জনসংখ্যা স¤প্রসারণ করা যায় কীভাবে? (অনুধাবন)
 জš§হার বৃদ্ধি করে খ জš§হার হ্রাস করে
গ মৃত্যুহার বৃদ্ধি করে ঘ শিশু মৃত্যুহার হ্রাস করে
৬৮. মরণশীলতা পরিমাপের প্রচলিত পদ্ধতি কোনটি? (অনুধাবন)
 স্থূল মৃত্যুহার খ সাধারণ মৃত্যুহার
গ মৃত্যুহার ঘ জনসংখ্যার হ্রাস-বৃদ্ধি
৬৯. স্থূল মৃত্যুহার নির্ণয়ের সূত্র কোনটি? (অনুধাবন)
ক বছরের মধ্যকালীন মোট জনসংখ্যাকোনো বছরে মৃত্যুবরণকারী মোট সংখ্যা  ১০০০
 কোনো বছরে মৃত্যুবরণকারী মোট সংখ্যাবছরের মধ্যকালীন মোট জনসংখ্যা  ১০০০
গ বছরের মধ্যকালীন মোট জনসংখ্যাকোনো বছরে মৃত্যুবরণকারী মোট সংখ্যা  ১০০
ঘ কোনো বছরে মৃত্যুবরণকারী মোট সংখ্যা বছরের মধ্যকালীন মোট জনসংখ্যা  ১০০
৭০. স্থূল জন্মহার ও স্থূল মৃত্যুহার পদ্ধতিটি কিসে প্রকাশ করা হয়? (জ্ঞান)
ক দশকে খ শতকে  হাজারে ঘ লাখে
৭১. কৃষ্ণপুর নামের একটি গ্রামে ৩,০০০ জনগোষ্ঠীর মধ্যে একবছরে ৪৮ জন মারা যায়। ওই গ্রামের স্থূল মৃত্যুহার কত? (প্রয়োগ)
ক ২২ জন খ ২০ জন গ ২৬ জন  ১৬ জন
৭২. পরিণত বয়সে সামান্য অসুখ-বিসুখ বা আঘাতেই মানুষের মৃত্যু ঘটে। একে কী বলে? (প্রয়োগ)
 স্বাভাবিক মৃত্যু খ অকাল মৃত্যু
গ অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘ অপরিণত মৃত্যু
৭৩. কুয়েত, আফগানিস্তান ও ইরাক যুদ্ধে অনেক লোকের মৃত্যু হয়। তুমি এ ধরনের মৃত্যুকে কী বলবে? (প্রয়োগ)
ক স্বাভাবিক মৃত্যু  অকাল মৃত্যু
গ পরিণত মৃত্যু ঘ সাধারণ মৃত্যু
৭৪. ঝড়, ভ‚মিকম্প, বন্যা, দুর্ভিক্ষ, মহামারী ইত্যাদিতে কী বৃদ্ধি পায়? (অনুধাবন)
ক জš§হার  মৃত্যুহার
গ জনসংখ্যার ভারসাম্য রক্ষা হয় ঘ জনসংখ্যা
৭৫. ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের জনসংখ্যা হ্রাস পাওয়ার পিছনে কী কারণ জড়িত ছিল? (অনুধাবন)
ক দেশ ভাগ  যুদ্ধ
গ মহামারী ঘ প্রাকৃতিক দুর্যোগ
বহুপদী সমাপ্তিসূচক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
৭৬. একটি স্থান বা দেশের স্থূল জন্মহার বের করা যায় (অনুধাবন)
র. ওই স্থান বা দেশের জনসংখ্যা জানা থাকলে
রর. একটি বছরে ওই স্থান বা দেশের জন্মিত সন্তানের সংখ্যা জানা থাকলে
ররর. ওই স্থান বা দেশের সাধারণ শিক্ষার মান বৃদ্ধি পেলে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র  র ও রর গ র ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৭৭. স্থূল মৃত্যুহার হলো (অনুধাবন)
র. কোনো বছরে মৃত্যুবরণকারী মোট সংখ্যাবছরের মধ্যকালীন মোট জনসংখ্যা  ১০০০
রর. কোনো বছরে মৃত্যুবরণকারী মোট সংখ্যাএক বছরের মোট জনসংখ্যা  ১০০০
ররর. জনসংখ্যা পরিবর্তনের নিয়ামক
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর  র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৭৮. পৃথিবীর বিভিন্ন স্থান বা দেশের মধ্যে প্রজননশীলতার তারতম্য তৈরি হয় (উচ্চতর দক্ষতা)
র. বৈবাহিক অবস্থাগত পার্থক্যের কারণে
রর. শিক্ষার মান ও হার হ্রাস-বৃদ্ধির কারণে
ররর. গ্রাম-শহরের পরিবেশের উপর
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর  র, রর ও ররর
৭৯. একটি স্থান বা দেশের মৃত্যুহার নির্ণয় করা যায় (অনুধাবন)
র. ওই স্থান বা দেশের জনসংখ্যা জানা থাকলে
রর. একটি বছরে ওই স্থান বা দেশের মৃত্যুবরণকারী সংখ্যা থেকে
ররর. ওই স্থান বা দেশের আর্থসামাজিক অবস্থান থেকে
নিচের কোনটি সঠিক?
 র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৮০. মৃত্যুহার বৃদ্ধি পায় (অনুধাবন)
র. প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলে
রর. যুদ্ধ ও সা¤প্রদায়িক দাঙ্গায়
ররর. সংক্রামক রোগ ও দুর্ঘটনায়
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর  র, রর ও ররর
৮১. জনসংখ্যার পরিবর্তনের নিয়ামকে ভ‚মিকা রাখে  (অনুধাবন)
র. একটি অঞ্চলের জন্মহার
রর. একটি অঞ্চলের মৃত্যুহার
ররর. অভিবাসন
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর  র, রর ও ররর
অভিন্ন তথ্যভিত্তিক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ে ৭৪ ও ৭৫নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
একটি গ্রামের কোনো এক বছরের মধ্য সময়ে জনসংখ্যা ১৮০০ জন। ওই গ্রামে এক বছরে ৯০ জন শিশু জন্মগ্রহণ করে এবং ৮০ জন মারা যায়।
৮২. গ্রামটির স্থূল জন্মহার কত? (প্রয়োগ)
ক ৪৮ জন  ৫০ জন গ ৫২ জন ঘ ৫৩ জন
৮৩. গ্রামটিতে স্বাভাবিক জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার (উচ্চতর দক্ষতা)
র. ৫.৫৫
রর. ১ শতাংশের চেয়ে কম
ররর. দেশের প্রেক্ষিতে ধীর
ক র ও রর  র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ে ৭৬ ও ৭৭নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বাংলাদেশের প্রজননশীলতার ব্যাপক পার্থক্য লক্ষ করা যায়।
৮৪. যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বাংলাদেশের উদ্দীপক প্রসঙ্গে সম্পর্কিত বিষয় কোনটি? (প্রয়োগ)
 জন্মহার খ মৃত্যুহার
গ জনসংখ্যার ঘনত্ব ঘ মাথাপিছু জমি
৮৫. উভয় দেশের মধ্যে প্রজননশীলতায় পার্থক্য সৃষ্টির পেছনে কারণ (উচ্চতর দক্ষতা)
র. শিক্ষার মান ও হারে ভারসাম্যহীনতা
রর. বৈবাহিক ধারার বৈশিষ্ট্যগত পার্থক্য
ররর. যুদ্ধ ও সা¤প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টি
নিচের কোনটি সঠিক?
 র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
 অভিবাসন  বোর্ড বই, পৃষ্ঠা- ৯৭
¡ মানুষ বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করে- জীবন ধারণের মৌলিক প্রয়োজনে।
¡ অভিবাসনের স্বাভাবিক ফলাফল হচ্ছে- জনসংখ্যার বণ্টন।
¡ প্রকৃতি অনুযায়ী অভিবাসনকে দুই ভাগে বিভক্ত করা যায় যথা- অবাধ অভিবাসন ও বলপূর্বক অভিবাসন।
¡ বলপূর্বক অভিগমনের ফলে যে সমস্ত ব্যক্তি কোনো স্থানে আগমন করে ও স্থায়ীভাবে আবাস স্থাপন করে তাদেরকে বলে- উদ্বাস্তু।
¡ যারা সাময়িকভাবে আশ্রয় গ্রহণ করে এবং সুযোগমতো স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের অপেক্ষায় থাকে তাদেরকে বলে শরণার্থী।
¡ অভিগমনের কারণ হলো -প্রাকৃতিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সামজিক।
¡ স্থানভেদে অভিগমন দুই প্রকার যেমন- রাষ্ট্র অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক।
¡ শিক্ষা, স্বাস্থ্য, গৃহসংস্থান ও সামাজিক নিরাপত্তা সুবিধা- অভিগমনের আকর্ষণমূলক কারণ।
¡ অভিগমনের বিকর্ষণমূলক কারণ- প্রাকৃতিক দুর্যোগ, অর্থনৈতিক মন্দা।
¡ উৎসস্থলে জনসংখ্যা কমে এবং গন্তব্যস্থলের মোট জনসংখ্যার পরিবর্তন হয়- অভিবাসনের ফলে।

সাধারণ বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
৮৬. নিজের বাসস্থান ছেড়ে অন্যস্থানে গিয়ে স্থায়ীভাবে বসবাস করাকে কী বলা হয়? (অনুধাবন)
 অভিবাসন খ বহিরাগম গ দেশান্তর ঘ বহির্গমন
৮৭. নিচের কোনটি জনসংখ্যা পরিবর্তনের একটি সহায়ক প্রক্রিয়া? (অনুধাবন)
ক জনশক্তি  অভিবাসন গ জনাকীর্ণতা ঘ জনস্বল্পতা
৮৮. কোনো সমাজ বা দেশের জনমিতিক গঠন কী কারণে পরিবর্তন হয়ে থাকে? (অনুধাবন)
ক জন্ম ও মৃত্যু  জন্ম, মৃত্যু ও অভিবাসন
গ অভিবাসন ঘ জন্মহার
৮৯. প্রকৃতি অনুযায়ী অভিবাসন কয়ভাগে বিভক্ত? (জ্ঞান)
 ২ খ ৩ গ ৪ ঘ ৫
৯০. অবাধ অভিবাসন কী? (অনুধাবন)
ক অন্যের ইচ্ছায় পছন্দমতো স্থানে বসবাস করা
 নিজের ইচ্ছায় পছন্দমতো স্থানে বসবাস করা
গ বলপূর্বক অন্য স্থানে বসবাস করা
ঘ অন্য দেশের আমন্ত্রণে স্বেচ্ছায় বসবাস করা
৯১. প্রত্যক্ষ রাজনৈতিক বা অর্থনৈতিক ও সামাজিক চাপে মানুষ বাধ্য হয়ে যে অভিগমন করে তাকে কী বলে? (জ্ঞান)
ক অবাধ অভিবাসন খ স্বইচ্ছুক অভিগমন
গ বাধ্য অভিগমন  বলপূর্বক অভিবাসন
৯২. গৃহযুদ্ধ বা সা¤প্রদায়িক বৈষম্যের কারণে কেউ যদি অন্যত্র অভিগমন করে, তা কী ধরনের অভিবাসন? (প্রয়োগ)
 বলপূর্বক খ অবাধ গ স্বইচ্ছুক ঘ বাধ্য
৯৩. বলপূর্বক অভিবাসনের ফলে যে সকল ব্যক্তি কোনো স্থানে আগমন করে ও স্থায়ীভাবে আবাস স্থাপন করে তাদের কী বলে? (প্রয়োগ)
ক শরণার্থী  উদ্বাস্তু
গ বহির্গমন ঘ বহিরাগমন
৯৪. ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর অনেকে বাংলাদেশ থেকে ভারতে গিয়ে স্থায়ীভাবে বসবাস করতে শুরু করে। এটা কোন ধরনের অভিবাসন? (প্রয়োগ)
ক অবাধ খ স্বইচ্ছুক  বলপূর্বক ঘ সুবিধাজনক
৯৫. ১৯৯৬ সালে মায়ানমারে সা¤প্রদায়িক দাঙ্গার পর উংচং, নিথান থার্মা, উখান, লাইডু ও চিয়ান বাংলাদেশের কক্সবাজারে আশ্রয় নেয়। এর মধ্যে উখান, লাইডু ও নিথান থার্মা মায়ানমারে ফিরে যায়। এখানে উদ্বাস্তু কে? (প্রয়োগ)
ক উখান খ লাইডু গ নিথান থার্মা  উংচং
৯৬. ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় রফিক, আবদুল্লাহ, রমেশ, আরিফ, কাজল, হারুন, শহীদুল্লাহ, রাহুল, শফিক ভারতে আশ্রয় নেয়। যুদ্ধ শেষে প্রথম সাতজনই ফেরত আসে। এখানে শরণার্থী কে? (প্রয়োগ)
 রাহুল খ কাজল গ হারুন ঘ রমেশ
৯৭. রংপুর থেকে চট্টগ্রামে গমন কোন ধরনের অভিগমন? (অনুধাবন)
ক আন্তর্জাতিক  রাষ্ট্র অভ্যন্তরীণ
গ আঞ্চলিক ঘ স্বদেশ
৯৮. ঢাকা থেকে কানাডায় গমন কোন ধরনের অভিগমন? (অনুধাবন)
ক বহির্গমন খ বহিরাগমন  আন্তর্জাতিক ঘ রাষ্ট্র অভ্যন্তরীণ
৯৯. নিউজিল্যান্ডে বসতি স্থাপনের জন্য এর নানা বিষয় সম্পর্কে সামাজিক ওয়েবসাইটে একটি বিজ্ঞাপন শিহাবের নজরে আসে। এ ধরনের অভিগমন কী কারণে ঘটে! (প্রয়োগ)
 আকর্ষণমূলক খ উৎসস্থলের ধাক্কা
গ বিকর্ষণমূলক ঘ যুদ্ধ বিজয়
১০০. যেসব কারণে মানুষকে পুরাতন বাসস্থান পরিত্যাগ করে অন্যস্থানে যেতে বাধ্য করা হয়, তা কোন ধরনের কারণ? (জ্ঞান)
ক গন্তব্যস্থলের টান খ আকর্ষণমূলক
 বিকর্ষণমূলক ঘ বলপূর্বক
১০১. বিশ্বের জনসংখ্যা বণ্টনের তারতম্য আনয়নের ক্ষেত্রে কোনটি গুরুত্বপূর্ণ? (অনুধাবন)
ক জন্মনীতি খ শ্রমিক রপ্তানি
 অভিবাসন ঘ কর্মসংস্থান সৃষ্টি
১০২. জনসংখ্যা কম থাকায় অন্যদেশ থেকে দক্ষ জনশক্তি নিয়ে জনসংখ্যার ভারসাম্য আনে, এমন একটি দেশ নিচের কোনটি? (প্রয়োগ)
ক ভারত খ চীন  অস্ট্রেলিয়া ঘ জার্মানি
১০৩. কোনো দেশের জনসংখ্যা সংকোচন প্রধানত কতভাবে কার্যকর করা যেতে পারে? (জ্ঞান)
 দুই খ তিন গ চার ঘ পাঁচ
১০৪. কোনো দেশের সামাজিক-অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটলে ওই দেশের জন্মহার কীরূপ হয়? (অনুধাবন)
ক বৃদ্ধি পায়  হ্রাস পায়
গ স্থিতিশীল থাকে ঘ শূন্য হার অর্জিত হয়
১০৫. একটি দেশের জন্মহার হ্রাসে নিচের কোন নীতি গ্রহণ করা জরুরি? (প্রয়োগ)
ক সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা চালু করা
খ মহিলাদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা
 জন্ম নিয়ন্ত্রণ সামগ্রীসমূহ সহজলভ্য করা
ঘ সন্তান সীমিত রাখতে জনগণের উপর চাপ সৃষ্টি করা
বহুপদী সমাপ্তিসূচক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
১০৬. একটি দেশের জনসংখ্যার হ্রাস-বৃদ্ধি নির্ধারিত হয় (অনুধাবন)
র. ওই দেশের জন্মহার ও মৃত্যুহার দ্বারা
রর. অভিবাসন দ্বারা
ররর. প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও যুদ্ধের দ্বারা
নিচের কোনটি সঠিক?
 র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
১০৭. দেশের জনসংখ্যা বণ্টনে পরিবর্তন দেখা দেয় (অনুধাবন)
র. উদ্বাস্তুদের আগমনে
রর. অভিবাসন দ্বারা
ররর. শরণার্থীদের আশ্রয় গ্রহণে
নিচের কোনটি সঠিক?
 র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
১০৮. ১৯৬৭ সালে আরব-ইসরাইল যুদ্ধে সেখানকার বহু মানুষকে পুরাতন বাসস্থান পরিত্যাগ করে অন্যস্থানে যেতে বাধ্য করা হয়। এ ধরনের অভিগমনের কারণ হলো (প্রয়োগ)
র. উৎসস্থলের ধাক্কা
রর. বিকর্ষণমূলক কারণ
ররর. গন্তব্যস্থলের টান
নিচের কোনটি সঠিক?
 র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
১০৯. অভিবাসনের স্বাভাবিক ফলাফল  (উচ্চতর দক্ষতা)
র. জনসংখ্যার বণ্টন
রর. অবস্থানিক পরিবর্তন
ররর. জনসংখ্যার হ্রাস-বৃদ্ধি
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর  র, রর ও ররর
১১০. অভিবাসনের ফলে একটি এলাকায় জনবৈশিষ্ট্যগত যে পরিবর্তন আসে তাতে (প্রয়োগ)
র. বেকারত্ব দূর হয় ও জীবনযাত্রার মান বাড়ে
রর. বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর মধ্যে ভাব, জ্ঞান ও অভিজ্ঞতার আদান-প্রদান হয়
ররর. দক্ষ জনশক্তির ভারসাম্য আসে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর  র, রর ও ররর
১১১. একটি দেশের জনসংখ্যা সংকোচন করা যায় (অনুধাবন)
র. জন্মহার হ্রাস করে
রর. উদ্বাস্তু আগমন বন্ধ করে
ররর. বর্হিগমন দ্বারা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর  র, রর ও ররর
অভিন্ন তথ্যভিত্তিক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ে ১০৪ ও ১০৫নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
মায়ানমারে সময় সময় সা¤প্রদায়িক বৈষম্য তীব্র হয়ে উঠলে রোহিঙ্গারা দলে দলে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেয়। এখানে এসে তাদের বেশির ভাগই দুর্ভোগের সম্মুখীন হয়।
১১২. রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আগমন কোন ধরনের অভিবাসন? (অনুধাবন)
ক অবাধ খ বাধাপ্রাপ্ত গ আকর্ষণমূলক  বলপূর্বক
১১৩. উক্ত কারণে রোহিঙ্গাদের দুর্ভোগ সৃষ্টি হয় (উচ্চতর দক্ষতা)
র. অর্থনৈতিক মন্দায়
রর. দুর্যোগজনিত ক্ষতিতে
ররর. সা¤প্রদায়িক বৈষম্যে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর  র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ে ১০৬ ও ১০৭নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
নিউজিল্যান্ডের অর্থনৈতিক অবস্থা এবং সেখানকার সুযোগ-সুবিধা দেখে রেজাউল সাহেব সেদেশে যাওয়ার মনস্থির করলেন এবং যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সেখানে গেলেন।
১১৪. রেজাউল সাহেবের অভিগমন কোন ধরনের অভিবাসন? (অনুধাবন)
 অবাধ অভিবাসন খ বলপূর্বক অভিবাসন
গ শরণার্থী ঘ উদ্বাস্তু
১১৫. রেজাউল সাহেব নিউজিল্যান্ড গেলেন অভিবাসনেরÑ (উচ্চতর দক্ষতা)
র. আকর্ষণমূলক কারণে
রর. বিকর্ষণমূলক কারণে
ররর. অর্থনৈতিক কারণে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর  র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
 জনসংখ্যার ঘনত্ব ও বণ্টন  বোর্ড বই, পৃষ্ঠা- ১০১
¡ কোনো দেশের মোট জনসংখ্যা এবং মোট ভ‚মির অনুপাতের যে অনুপাত তাকে বলে- জনসংখ্যার ঘনত্ব।
¡ ভ‚পৃষ্ঠের ৫০-৬০ শতাংশের মতো এলাকায় শতকরা প্রায়- ৫ ভাগ লোকের বসতি।
¡ স্থলভাগের শতকরা মাত্র ৫ ভাগ এলাকায় পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেকের বসবাস।
¡ পৃথিবীর অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ দেশ- বাংলাদেশ।
¡ জাপানের ওসাকা, ভারতের মুম্বাই প্রভৃতি স্থানে- জনসংখ্যার ঘনত্ব বেশি।
¡ বর্তমানে বাংলাদেশের জাতীয় সমস্যা হলো- জনসংখ্যা।
¡ বাংলাদেশের জনসংখ্যার অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো- পরিবর্তনশীল বয়সের প্রাধান্য।
¡ জনবসতির ঘনত্ব হলো- দেশের মোট জনসংখ্যা এবং মোট ভ‚মির আয়তনের অনুপাত।
¡ কার্যকর ভ‚মি হলো- যা মানুষের কাজে লাগে এবং সম্পদ সৃষ্টি করতে পারে।
¡ মোট জনসংখ্যা ও কার্যকর ভ‚মির আদর্শ অনুপাতের ভারসাম্য নষ্ট হলে- অতি জনাকীর্ণতা ও জনসংখ্যা ও জনসংখ্যা স্বল্পতা দেখা দেয়।
¡ স্থানভেদে জনসংখ্যার অবস্থানগত বিস্তৃতি বা বিন্যাসকে বলে- জনসংখ্যার বণ্টন।
সাধারণ বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
১১৬. কোনো দেশে গড়ে প্রতি বর্গকিলোমিটারে যত লোক বাস করে সে সংখ্যাকে কী বলে? (অনুধাবন)
ক জনসংখ্যা খ কাম্য জনসংখ্যা
 জনসংখ্যার ঘনত্ব ঘ গড় জনসংখ্যা
১১৭. বাংলাদেশের জনসংখ্যা ১৪,৯৭,৭২,৩৬৪ এবং এর আয়তন ১,৪৭,৫৭০ বর্গকিলোমিটার। বাংলাদেশের জনসংখ্যার ঘনত্ব কত? (প্রয়োগ)
ক ৯৮০ জন খ ৯৪০ জন গ ১,০৫০ জন  ১,০১৫ জন
১১৮. ভারতের প্রতি বর্গকিলোমিটারে জনসংখ্যার ঘনত্ব ৩৭১ এবং আয়তন ৩২,৮৭,২৫০ বর্গকিলোমিটার। ভারতের জনসংখ্যা কত? (প্রয়োগ)
 ১২১ কোটি খ ১১৭ কোটি গ ১১৮ কোটি ঘ ১১৯ কোটি
১১৯. একটি দেশের জনসংখ্যার তুলনায় আয়তন বড় হলে জনসংখ্যার ঘনত্ব মানে কীরূপ হয়? (অনুধাবন)
ক বাড়ে  কমে
গ স্থিতিশীল হয় ঘ অস্থিতিশীল থাকে
১২০. যে সকল ভ‚মি মানুষের কাজে লাগে এবং সম্পদ সৃষ্টি করতে পারে তাকে কী বলে? (জ্ঞান)
ক ঊর্বর ভ‚মি খ দরকারি ভ‚মি
 কার্যকর ভ‚মি ঘ প্রয়োজনীয় ভ‚মি
১২১. জনাকীর্ণতা কী? (অনুধাবন)
ক জনসংখ্যার তুলনায় কার্যকর ভ‚মির পরিমাণ বেশি থাকা
 জনসংখ্যার তুলনায় কার্যকর ভ‚মির পরিমাণ অল্প থাকা
গ জনসংখ্যার তুলনায় মাথাপিছু আয় বেশি থাকা
ঘ জনসংখ্যার তুলনায় মাথাপিছু আয় কম থাকা
১২২. ভ‚মির তুলনায় জনসংখ্যা কম এমন দেশ কোনগুলো? (অনুধাবন)
ক সিঙ্গাপুর ও হংকং  অস্ট্রেলিয়া ও আর্জেন্টিনা
গ বাহরাইন ও কুয়েত ঘ চীন ও ভারত
১২৩. স্থানভেদে জনসংখ্যার অবস্থানগত বিস্তৃতি বা বিন্যাস কী? (অনুধাবন)
 জনসংখ্যার বণ্টন খ জনসংখ্যা নীতি
গ কাম্য জনসংখ্যা ঘ জনাকীর্ণতা
১২৪. স্থলভাগের ৫% এলাকায় বাস করছে পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার কত ভাগ? (অনুধাবন)
ক ৫% খ ৩০%  ৫০% ঘ ৭০%
১২৫. জনসংখ্যার ঘনত্ব ও বণ্টনের প্রভাবককে কত ভাগে ভাগ করা যায়? (জ্ঞান)
ক দুই খ তিন  চার ঘ পাঁচ
১২৬. পৃথিবীর কোন ধরনের অঞ্চলে জনসংখ্যার ঘনত্ব সবচেয়ে বেশি হয়? (জ্ঞান)
ক মালভ‚মি অঞ্চলে  সমভ‚মি অঞ্চলে
গ তুন্দ্রা অঞ্চলে ঘ মেরু অঞ্চলে
১২৭. আমাদের দেশে পার্বত্য চট্টগ্রাম ও সুন্দরবন অঞ্চলে জনসংখ্যার ঘনত্ব অনেক কম কেন? (অনুধাবন)
ক যোগাযোগ ব্যবস্থা দুর্গম খ খাবার সংস্থান করা কঠিন
গ মিঠা পানির তীব্র অভাব  জীবনধারণ করা অনেক কষ্ট
১২৮. মানুষ কোন ধরনের জলবায়ুতে বসবাস করতে ভালোবাসে? (জ্ঞান)
ক উষ্ণ জলবায়ু খ শীতল জলবায়ু
 সমভাবাপন্ন জলবায়ু ঘ চরমভাবাপন্ন জলবায়ু
১২৯. অস্ট্রেলিয়া ও আমেরিকায় কী জন্য জনগণ অভিবাসিত হচ্ছে? (জ্ঞান)
 সামাজিক সুবিধা পাওয়ার আশায়
খ কাজের সুযোগ লাভের আশায়
গ জীবনযাত্রার মান বাড়ানোর আশায়
ঘ মাথাপিছু আয় বাড়ানোর আশায়
১৩০. আজকের যুগে মানুষকে গভীরভাবে প্রভাবিত করছে কোনটি? (অনুধাবন)
ক ভ‚প্রকৃতি ও জলবায়ু খ কাজের সুযোগ
 শিক্ষা ও সংস্কৃতি ঘ চিত্তবিনোদন

 বোর্ড ও সেরা স্কুলের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন- ১  ========

জারিন রাজশাহীতে বাবা-মায়ের সাথে বসবাস করে এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে। পড়াশোনা শেষ করে ঢাকায় একটি কোম্পানিতে জারিন তার পছন্দমতো চাকরি পায় এবং বাবা-মাকে নিয়ে ঢাকায় বসবাস শুরু করে। [স. বো. ’১৬]
ক. সাধারণ জন্মহার কাকে বলে? ১
খ. জনসংখ্যা পিরামিড বলতে কী বোঝায়? ২
গ. জারিন কোন প্রকৃতির অভিবাসন করেছে? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. জারিনের পরিবারের অভিবাসনের ফলে ঢাকা ও রাজশাহীর জনবৈশিষ্ট্যগত ফলাফলে কী পরিবর্তন ঘটবে? বিশ্লেষণ কর। ৪

ক কোন নির্দিষ্ট এক বছরের প্রতি হাজার নারীর সন্তান জন্মদানের মোট সংখ্যাকে সাধারণ জন্মহার বলে।
খ উন্নয়নশীল দেশসমূহের জনসংখ্যা কাঠামো সাধারণত পিরামিড সদৃশ হয় যাকে জনসংখ্যা পিরামিড বলে। নারী-পুরুষের বয়সভিত্তিক বিন্যাস গ্রাফে প্রকাশ করলে ত্রিভ‚জ বা পিরামিড সদৃশ নকশা তৈরি হয়। তাকে জনসংখ্যা কাঠামো বলে। উলম্ব অক্ষে বয়স এবং অনুভ‚মিক অক্ষে বামে পুরুষ ও ডানে নারীর সংখ্যা বা শতকরা হার স্তম্ভে স্থাপন করা হয়।
গ্রাফের এ বিন্যাস উন্নত, অনুন্নত ও উন্নয়নশীল বিশ্বে বিভিন্ন রূপ ধারণ করে। তবে সবক্ষেত্রেই সাধারণভাবে জনসংখ্যা কাঠামোর এরূপ উপস্থাপনকে জনসংখ্যা পিরামিড বলে।
গ জারিনের অভিবাসন অবাধ প্রকৃতির। নিজের ইচ্ছায় বাসস্থান ত্যাগ করে আপন পছন্দমতো স্থানে বসবাস করাকে অবাধ অভিবাসন বলে। উদ্দীপকের জারিন রাজশাহী থেকে পড়াশোনা শেষ করে ঢাকায় একটি কোম্পানিতে পছন্দমতো চাকরি পেলে বাবা-মাকে নিয়ে ঢাকায় বসবাস শুরু করে। অর্থাৎ সে স্বেচ্ছায় রাজশাহী ছেড়ে ঢাকায় অভিবাসী হয়। সুতরাং তার এই রাষ্ট্রঅভ্যন্তরীণ অভিবাসন নিঃসন্দেহে অবাধ প্রকৃতির অভিবাসন।
ঘ জারিনের পরিবারের অভিবাসনের ফরে ঢাকা ও রাজশাহীর জনবৈশিষ্ট্যগত ফলাফলে বেশ পরিবর্তন ঘটবে। অভিবাসনের ফলে উৎসস্থলে জনসংখ্যা কমে এবং গন্তব্যস্থলের মোট জনসংখ্যার পরিবর্তন হয়। সুতরাং জারিনের পরিবারের অভিবাসনে রাজশাহীর জনসংখ্যা কমবে এবং ঢাকার জনসংখ্যা বাড়বে। এর ফলে ঢাকা ও রাজশাহীর জনসংখ্যায় নারী-পুরুষ অনুপাত ও নির্ভরশীলতার অনুপাত ব্যাপক পরিবর্তন হবে। আবার জারিন নিজে উচ্চশিক্ষিত বিধায় সে ঢাকা চলে গেলে ঢাকার জনকাঠামো তার সেবায় উপকৃত হবে এবং সেখানকার জনবৈশিষ্ট্য পরিশীলিত হবে। অন্যদিকে রাজশাহীর জনকাঠামোগত বৈশিষ্ট্যের উৎকর্ষতা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

প্রশ্ন- ২  অভিবাসন

জনাব মিজান কানাডাতে বসবাস করছেন ত্রিশ বছর। তার আত্মীয় পরিজনের অনেকেই সেখানে বসবাস করে। তারা বিত্তশালী হলেও তাদের সন্তানেরা দেশের কৃষ্টি ও শিষ্টাচার সম্পর্কে উদাসীন। বিষয়টি মিজান সাহেবকে চিন্তিত করে তুলছে। [স. বো. ’১৫]
ক. কাম্য জনসংখ্যা (ঙঢ়ঃরসঁস চড়ঢ়ঁষধঃরড়হ) কী? ১
খ. মাটির উর্বরতা হ্রাসে অতিরিক্ত জনসংখ্যার প্রভাব উল্লেখ কর। ২
গ. জনাব মিজানের পরিবারের মতো এ ধরনের অভিবাসনের সামাজিক ফলাফল ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত অভিবাসনের জনবৈশিষ্ট্যগত ফলাফল বিশ্লেষণ কর। ৪

ক কোনো দেশের মোট জনসংখ্যা ও কার্যকর ভ‚মির অনুপাতে ভারসাম্য থাকলেই তাকে কাম্য জনসংখ্যা বলে।
খ জনসংখ্যা ক্রমাগত বৃদ্ধি পেলে সরাসরি প্রভাব পড়ে ভ‚মির উপর। একটি দেশের ভ‚মি সীমিত হওয়ায় জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সেই দেশে উৎপাদন বৃদ্ধি করার প্রয়োজন দেখা দেয়। বেশি খাদ্য উৎপাদনের জন্য ভ‚মি অধিক ব্যবহার হয়। জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে তথা অতিরিক্ত জনসংখ্যার চাহিদা পূরণে অধিক ফসল চাষের প্রয়োজন হয়। এতে মাটির উর্বরতা হ্রাস পায়। ফলশ্রæতিতে মাটিতে যে সকল অণুজীব, ক্ষুদ্রজীব বাস করে তাদের বৃদ্ধি ও বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়। এভাবে মাটির জৈব উপাদান হ্রাস পেয়ে মাটির উর্বরতা হ্রাস পেতেই থাকে।
গ জনাব মিজানের পরিবারের মতো অবাধ অভিবাসনের সামাজিক ফলাফল ব্যাপক প্রভাব বিস্তারকারী হয়ে থাকে। নিজের ইচ্ছায় বাসস্থান ত্যাগ করে আপন পছন্দমতো স্থানে বসবাস করাকে অবাধ অভিবাসন বলে। জনাব মিজান কানাডাতে বসবাস করছেন ত্রিশ বছর। তার আত্মীয় পরিজনের অনেকে সেখানে বসবাস করেন। সুতরাং তার অভিবাসন হচ্ছে অবাধ অভিবাসন। অভিবাসনের ফলে সামাজিক, আচার আচরণের আদান-প্রদান হয়। সামাজিক অনেক রীতিনীতি একদেশ থেকে অন্যদেশে স্থানান্তরিত হয়। এছাড়া বিভিন্ন রোগের বিস্তারও ঘটে থাকে। বিভিন্ন শ্রেণির জনগণের মধ্যে ভাব, জ্ঞান ও অভিজ্ঞতার আদান-প্রদান হয়। ফলে জনগণের গুণগত পরিবর্তন সম্ভব হবে। গ্রাম ও শহর এলাকার মধ্যে পার্থক্য কমে আসে। তবে অধিকভাবে অন্য কালচার রপ্ত করার কারণে নিজের দেশের সামাজিক বৈশিষ্ট্য ক্ষুণœ হয়। উদ্দীপকে যেমন দেখা যায় মিজান সাহেবের সন্তানরা কানাডায় অভিবাসিত হওয়ার কারণে নিজ দেশের কৃষ্টি ও শিষ্টাচার সম্পর্কে উদাসীন। এভাবে আবাধ অভিবাসনে সামাজিক পরিবর্তন সূচিত হয়।
ঘ উদ্দীপকে উল্লিখিত অবাধ অভিবাসনের জনবৈশিষ্ট্যগত ফলাফল অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। অভিবাসনের ফলে উৎসস্থলে জনসংখ্যা কমে এবং গন্তব্যস্থলের মোট জনসংখ্যার পরিবর্তন হয়। শিক্ষিত, যুবক ও পেশাজীবী অভিবাসন করলে গন্তব্যস্থলে জনসংখ্যার কাঠামোগত পরিবর্তন হয়। এর ফলে উভয় স্থানের জনসংখ্যার নারী-পুরুষ অনুপাত ও নির্ভরশীলতার অনুপাত ব্যাপক পরিবর্তিত হয়। অনেক সময় শিক্ষিত ও মেধাবী শ্রেণির লোক অভিগমন করে আর দেশে ফিরে আসে না এতে দেশ অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অনেক দেশে জনসংখ্যা কম থাকায় তারা অন্যদেশ থেকে দক্ষ জনশক্তি নিয়ে জনসংখ্যার ভারসাম্য আনে, এতে তাদের সম্পদ সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারে। যেমনÑ অস্ট্রেলিয়া, কুয়েত। উন্নয়নশীল দেশসমূহ যেমন : বাংলাদেশ শ্রম বাজারে জনশক্তি রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে।

 মাস্টার ট্রেইনার প্রণীত সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন- ৩  বিশ্ব জনসংখ্যা বৃদ্ধির ধারা

কমল পাবলিক লাইব্রেরিতে বিভিন্ন বছরের ইউএন সেনসাস ব্যুরোর প্রতিবেদন দেখছিল। সেখানে সে নি¤œরূপ একটি চার্ট দেখতে পায়।
পৃথিবীর জনসংখ্যা পরিবর্তন

উৎস : টঘ, উবঢ়ঃ. ড়ভ ঊপড়হড়সরপ ধহফ ঝড়পরধষ অভভধরৎং, চড়ঢ়ঁষধঃরড়হ উরারংরড়হ, ২০১৩
ক. ১৬৫০ সালে পৃথিবীর জনসংখ্যা কত ছিল? ১
খ. মাধ্যমিক পর্যায়ে জনসংখ্যার গতিধারা উল্লেখ কর। ২
গ. কমলের দেখা চার্ট থেকে একটি স্তম্ভচিত্র তৈরি কর। ৩
ঘ. চার্টে উল্লিখিত সময়ে জনসংখ্যা পরিবর্তনের ধারা বিশ্লেষণ কর। ৪

ক ১৬৫০ সালে পৃথিবীর জনসংখ্যা ছিল প্রায় ৫০০ মিলিয়ন।
খ ১৬৫০ থেকে ১৯৫০ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত সময়কে মাধ্যমিক পর্যায় ধরা হয়। এই পর্যায়ে প্রথমে ধীরে এবং পরে দ্রæতগতিতে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পায়। এ সময়ে কিছু অঞ্চলে মৃত্যুহার হ্রাসের ফলে এবং কিছু অঞ্চলে অভিগমনের ফলে জনসংখ্যা দ্রæত বৃদ্ধি পায়। আফ্রিকা ও এশিয়ায় পূর্বের মতো জন্ম ও মৃত্যুহার উভয়ই বেশি থাকার কারণে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার অপেক্ষাকৃত কম থাকে।
গ কমল ১৯৫০-২০১০ পর্যন্ত সা¤প্রতিক পর্যায়ভুক্ত জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার সংক্রান্ত চার্ট দেখে। চার্টের আলোকে বিশ্বে জনসংখ্যা বৃদ্ধির একটি স্তম্ভচিত্র নিম্নরূপ :

পৃথিবীর জনসংখ্যা পরিবর্তন : সা¤প্রতিক পর্যায়
ঘ উদ্দীপকের চার্টে ১৯৫০-২০১০ তথা জনসংখ্যা বৃদ্ধির সা¤প্রতিক পর্যায় উল্লিখিত হয়েছে। সা¤প্রতিক সময়ে পৃথিবীব্যাপী জনসংখ্যা ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। এ ধারা অব্যাহত থাকলে জনসংখ্যা বৃদ্ধিজনিত নানা সমস্যা আরও বৃদ্ধি পাবে। সপ্তদশ শতাব্দীর পরে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কিছুটা কমে এলেও পরবর্তী ২০০ বছরের মধ্যেই পৃথিবীর মোট জনসংখ্যা দ্বিগুণ হয়। ১৬৫০ সালে পৃথিবীর মোট জনসংখ্যা ছিল প্রায় ৫০০ মিলিয়ন, ১৮৫০ সালে বৃদ্ধি পেয়ে হয় ১.২ বিলিয়ন। ১৮৫০ সালের পর কৃষি ও শিল্পক্ষেত্রে বৈপ্লবিক উন্নয়ন সাধিত হয়। এর ফলে জনসংখ্যা বৃদ্ধির গতি আরও দ্রæত হয়। মাত্র ১০০ বছরের মধ্যেই পৃথিবীর মোট জনসংখ্যা দ্বিগুণ হয়। ১৯৫০ সালে পৃথিবীর মোট জনসংখ্যা ছিল প্রায় ২.৫৩ বিলিয়ন যা ২০১৪ সালে এসে দাঁড়িয়েছে ৭.২৩ বিলিয়নে। যদি এই হারে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেতে থাকে তাহলে ২০২৫ সালে অনুমিত জনসংখ্যা দাঁড়াবে ৮ বিলিয়নের উপরে। জনসংখ্যা সমস্যা বিশ্বের উন্নয়নশীল ও দরিদ্র দেশগুলোর জন্য একটি বড় সমস্যা। তাই জনসংখ্যার এ ধারা পরিবর্তনে অর্থাৎ হ্রাসকল্পে কার্যকর ভ‚মিকা গ্রহণ করতে হবে।

প্রশ্ন- ৪  উন্নত অঞ্চল বা উন্নত দেশসমূহের জনসংখ্যা

মি. আকরাম পারভেজ বেশ কয়েক বছর ধরে নরওয়েতে বসবাস করছেন। তিনি স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দেশগুলোতে সফর করেছেন। স্বল্প জনসংখ্যার এসব দেশে কর্মক্ষম লোকের সংখ্যা অনেক বেশি। জনসংখ্যা কম থাকায় এসব দেশে বসবাস করা বেশ আরামদায়ক।
ক. জনসংখ্যা কাঠামো কাকে বলে? ১
খ. উন্নত অঞ্চল বা দেশসমূহের বয়স কাঠামো ব্যাখ্যা কর। ২
গ. উক্ত দেশগুলোর জন্য অঙ্কিত কাঠামো কেমন হবে? ৩
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত দেশসমূহের সাথে উন্নয়নশীল দেশসমূহের জনসংখ্যা কাঠামোর চিত্ররূপ তুলনা কর। ৪

ক নারী-পুরুষের বয়সভিত্তিক বিন্যাস গ্রাফে প্রকাশ করলে ত্রিভুজ বা পিরামিড সদৃশ যে নকশা তৈরি হয় তাকে জনসংখ্যা কাঠামো বলে।
খ উন্নত অঞ্চল বা দেশসমূহে জনসংখ্যার বৃদ্ধির হার হ্রাস পেয়েছে ও জনসংখ্যা স্থিতিশীল। উন্নত দেশসমূহে অর্থাৎ উন্নত অঞ্চলে নারী ও পুরুষের শতকরা বৃদ্ধির হারের খুব বেশি পার্থক্য নেই এবং নির্ভরশীল জনসংখ্যার পরিমাণ কম। কর্মক্ষম জনসংখ্যার পরিমাণ অনেক বেশি, ফলে দেশের অর্থনৈতিক কার্যাবলিতে তারা যথেষ্ট অবদান রাখে।
গ উদ্দীপকের দেশগুলোর জন্য অর্থাৎ উন্নত দেশগুলোর অঙ্কিত কাঠামোটি হবে অনেকটা গম্বুজ আকৃতির।

কাঠামোর ভ‚মি কম প্রশস্ত হবে, উপরের দিকে প্রশস্ততা কিছুটা বৃদ্ধি পাবে এবং স্ফীত হয়ে উপরের দিকে গিয়ে আবার সরু হবে। এসব দেশে নারী ও পুরুষের শতকরা বৃদ্ধির হারের খুব বেশি পার্থক্য থাকবে না এবং নির্ভরশীল জনসংখ্যার পরিমাণ কম। কর্মক্ষম জনসংখ্যার পরিমাণ হবে অনেক বেশি।
ঘ উদ্দীপকে উল্লিখিত উন্নত দেশসমূহের জনসংখ্যা কাঠামো উন্নয়নশীল দেশের মতো নয়। বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশসমূহের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার এখনও যথেষ্ট। এ দেশগুলোর জনসংখ্যা কাঠামোর ভ‚মি অত্যন্ত প্রশস্ত এবং শীর্ষভাগ সংকীর্ণ। দেখতে অনেকটা মিশরের পিরামিডের মতো। মোট জনসংখ্যায় শিশু ও অপ্রাপ্ত বয়স্কদের অনুপাত বেশি। যার ফলে নির্ভরশীল জনসংখ্যা বেশি। কর্মক্ষম জনসংখ্যা কম থাকায় অর্থনৈতিক দিক থেকে এসব দেশ পিছিয়ে আছে। উন্নত দেশসমূহের সাথে উন্নয়নশীল দেশসমূহের জনসংখ্যা কাঠামোর চিত্ররূপের তুলনা নিম্নরূপ :

প্রশ্ন- ৫  জন্মহার

শ্রেণিশিক্ষক বোর্ডে কোনো দেশের নির্দিষ্ট কোনো বছরের জন্মিত সন্তানের সংখ্যা ও প্রজননক্ষম নারীদের মোট সংখ্যা লিখে দিলেন। পরে উক্ত বছরের মধ্যকালীন মোট জনসংখ্যাও উল্লেখ করলেন এবং ছাত্র-ছাত্রীদের বিষয়টি সমাধানের জন্য বললেন।
ক. জনসংখ্যা পরিবর্তন প্রক্রিয়ার নিয়ামক কী? ১
খ. জনসংখ্যা একটি সক্রিয় পরিবর্তনশীল উপাদান ব্যাখ্যা কর। ২
গ. উদ্দীপকের আলোচ্য বিষয়টি ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. কোন কোন বিষয় আলোচ্য বিষয়ের উপর প্রভাব বিস্তার করে বলে তুমি মনে কর। ৪

ক জন্ম, মৃত্যু ও অভিবাসন হলো জনসংখ্যা পরিবর্তন প্রক্রিয়ার নিয়ামক।
খ জনসংখ্যা একটি সক্রিয় পরিবর্তনশীল উপাদান। জনসংখ্যার এই পরিবর্তন ঘটছে জন্ম, মৃত্যু ও অভিবাসনের কারণে। এগুলোকে বৃহৎ আকারে যেমন শতকরা বা হাজারে প্রকাশ করলে দাঁড়ায় জন্মহার, মৃত্যুহার ও অভিবাসন। এই নিয়ামকগুলোর পারস্পরিক ক্রিয়ার ফলে কোনো সমাজ তথা দেশের জনমিতিক গঠনে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন হয়ে থাকে। যার প্রভাব দেখা যায় সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে।
গ শ্রেণিশিক্ষক বোর্ডে কোনো দেশের নির্দিষ্ট কোনো বছরের জন্মিত সন্তানের সংখ্যা ও প্রজননক্ষম নারীদের মোট সংখ্যা লিখে ছাত্রদের মূলত ওই দেশের জন্মহার বের করার কথা প্রকাশ করেছেন। স্বাভাবিক জন্মহার নারীদের সন্তান ধারণের সামর্থ্য নির্দেশ করে। সাধারণত ১৫-৪৫ অথবা ১৫-৪৯ বছর বয়স পর্যন্ত নারীদের প্রজনন ক্ষমতা থাকে। কোনো দেশের বিশেষ কোনো বছরের জন্মিত সন্তানের সংখ্যাকে ওই বছরের গণনাকৃত প্রজননক্ষম নারীর মোট সংখ্যা দিয়ে ভাগ করে সাধারণ জন্মহার নির্ণয় করা হয়।
 সাধারণ জন্মহার = নির্দিষ্ট বছরে জন্মিত সন্তাননির্দিষ্ট বছরের প্রজননক্ষম নারীর সংখ্যা  ১০০০ সাধারণ জন্মহারের চেয়ে স্থূল জন্মহার বহুল প্রচলিত ও গ্রহণযোগ্য পদ্ধতি। তাই শ্রেণিশিক্ষক পরে উক্ত বছরের মধ্যকালীন মোট জনসংখ্যা দ্বারা স্থূল জন্মহার নির্ণয়ের জন্য বলেন। কোনো বছরের জন্মিত মোট সংখ্যাকে উক্ত বছরের মধ্যকালীন মোট জনসংখ্যা দিয়ে ভাগ করে স্থূল জন্মহার নির্ণয় করা হয়।
 স্থূল জন্মহার = কোনো বছরে জন্মিত সন্তানের মোট সংখ্যাবছরের মধ্যকালীন মোট জনসংখ্যা  ১০০০
ঘ উদ্দীপকে জনসংখ্যা পরিবর্তনের নিয়ামক জš§হার আলোচিত হয়েছে। পৃথিবীর বিভিন্ন জনসংখ্যার মধ্যে প্রজননশীলতার ব্যাপক তারতম্য রয়েছে। একেক দেশের জন্মহার একেক রকম। এর কারণ হিসেবে আর্থসামাজিক অবস্থার ভিন্নতা প্রধান। সাধারণত নিম্নোক্ত বিষয়াবলির প্রভাবেই জন্মহারের ভিন্নতা দেখা যায়
১. বৈবাহিক অবস্থাগত বৈশিষ্ট্য : বিবাহের বয়স, বহুবিবাহ, বিবাহ বিচ্ছেদ প্রভৃতি কারণ জন্মহার কম বা বেশির উপর প্রভাব ফেলে।
২. শিক্ষা : সাধারণ শিক্ষার মান বৃদ্ধি পেলে প্রজননশীলতা হ্রাস পায় এবং শিক্ষার মান ও হার কম হলে প্রজননশীলতা বেশি হয়।
৩. পেশা : সাধারণভাবে কৃষিকাজে নিয়োজিত কর্মী এবং শ্রমজীবী স¤প্রদায়ের মধ্যে জন্মহার বেশি হতে দেখা যায়। অন্যদিকে শিক্ষক, ডাক্তার, আইনজীবী প্রভৃতি পেশাদার শ্রেণি এবং প্রশাসক, ব্যবস্থাপক ও চাকরিজীবীদের মধ্যে জন্মহার কম দেখা যায়।
৪. গ্রাম-শহর আবাসিকতা : গ্রাম এলাকায় সাধারণত জন্মহার বেশি এবং শহর এলাকায় জন্মহার কম দেখা যায়। তবে এই উপাদানটি আবার শিক্ষা ও পেশার সাথে সম্পর্কিত।
এছাড়া সমাজ ও ব্যক্তি জীবনের বহুবিধ বিষয় বিশেষ করে সামাজিক অবস্থান, সামাজিক ভ‚মিকা, ভৌগোলিক অবস্থা, অর্থনৈতিক অবস্থা, বৈবাহিক ধারা, ধর্মীয় ও সামাজিক অনুশাসন শিক্ষা ও সংস্কৃতি প্রভৃতি বিষয় মানব প্রজননশীলতা তথা জন্মহারের সঙ্গে সম্পর্কিত।

প্রশ্ন- ৬  মৃত্যুহার

ঢাকা থেকে রংপুরগামী বাসের সাথে একটি ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন মারা যায়। প্রতি বছরই এরকম অসংখ্য কারণে মানুষ মারা যাচ্ছে যার হিসাব একটি নির্দিষ্ট বছরের শতকরা বা হাজারে পাওয়া যায়।
ক. অকাল মৃত্যু কী? ১
খ. মৃত্যুহার জানা প্রয়োজন কেন? ২
গ. উদ্দীপক অনুসারে জনসংখ্যার কী পরিবর্তন ঘটে ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. উদ্দীপকে বর্ণিত ঘটনাটি কী কী বিষয় দ্বারা প্রভাবিত হতে পারে বলে তুমি মনে কর। ৪

ক পরিণত বয়সের পূর্বেই মারা যাওয়াকে অকাল বা অস্বাভাবিক মৃত্যু বলে।
খ মানুষ মরণশীল। মরণশীলতা জনসংখ্যা বৃদ্ধি প্রক্রিয়াকেই শুধু প্রভাবিত করে না, সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রক্রিয়াকেও প্রভাবিত করে থাকে। জনসংখ্যা বৃদ্ধি পরিমাপ করা, সামাজিক এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নমূলক পরিকল্পনা গ্রহণ করার জন্য মৃত্যুহার জানা বিশেষ প্রয়োজন।
গ উদ্দীপকে ঢাকা থেকে রংপুরগামী বাসের সাথে একটি ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন মারা যায়। এ ঘটনার মাধ্যমে জনসংখ্যা পরিবর্তন প্রক্রিয়ার নিয়ামক মৃত্যুহার ব্যাখ্যা করা হয়েছে। স্থূল মৃত্যুহার মরণশীলতা পরিমাপের বহুল প্রচলিত গ্রহণযোগ্য পদ্ধতি। নির্দিষ্ট কোনো বছরে মৃত্যুবরণকারীদের মোট সংখ্যাকে ওই বছরের মধ্যকালীন মোট জনসংখ্যা দিয়ে ভাগ করে স্থূল মৃত্যুহার নির্ণয় করা হয়।
 স্থূল মৃত্যুহার = কোনো বছরে মৃত্যুবরণকারী মোট সংখ্যাবছরের মধ্যকালীন মোট জনসংখ্যা  ১০০০
কোনো স্থান বা দেশের মৃতের সংখ্যা এবং মোট জনসংখ্যার তথ্য পাওয়া গেলে স্থূল মৃত্যুহার নির্ণয় করা যায়। তবে মৃত্যুহার নির্ণয়ের জন্য বয়স নির্দিষ্ট মৃত্যুহার গুরুত্বপূর্ণ। যা বয়স অনুযায়ী বিভিন্ন সংখ্যার মৃত্যুহার নির্দেশ করে। এই হার থেকে বার্ধক্য ও অকালমৃত্যু প্রভৃতি বোঝা যায়।
ঘ উদ্দীপকে বর্ণিত ঘটনা মরণশীলতা বা মৃত্যুহার নির্দেশ করে। মৃত্যুহার নিম্নোক্ত বিষয়গুলো দ্বারা প্রভাবিত হয়
১. প্রাকৃতিক দুর্যোগ : ঝড়, ভ‚মিকম্প, বন্যা, দুর্ভিক্ষ, মহামারী ইত্যাদি প্রাকৃতিক দুর্যোগ অস্বাভাবিক মৃত্যুর অন্যতম কারণ। যেমন : আমাদের দেশে ১৯৭০ সালের ১২ নভেম্বরের ঘূর্ণিঝড়ে প্রায় ৫ লাখ লোক মারা যায়।
২. যুদ্ধ ও সা¤প্রদায়িক যুদ্ধ : যুদ্ধ ও সা¤প্রদায়িক হানাহানিতে মৃত্যুহার বৃদ্ধি পায়। কুয়েত, আফগানিস্তান, ইরাক যুদ্ধে মৃত্যুহার অনেক বেশি। আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধে প্রায় ৩০ লাখ লোক শহিদ হয়।
৩. রোগ ও দুর্ঘটনা : সংক্রামক, শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত রোগ, ক্যান্সার, রক্ত সঞ্চালন সংক্রান্ত রোগ, আঘাত বা দুর্ঘটনা প্রভৃতি কারণে মৃত্যুহার বৃদ্ধি পায়।
মানুষের স্বাভাবিক ও অস্বাভাবিক দুইভাবেই মৃত্যু হতে পারে। আবার অঞ্চলভেদে মরণশীলতার পার্থক্য রয়েছে। অনুন্নত দেশগুলোতে মৃত্যুহার অনেক বেশি। উন্নয়নশীল দেশগুলোতে মৃত্যুহার কিছুটা কমে এসেছে। আবার নারী-পুরুষের মৃত্যুহারেও পার্থক্য দেখা যায়।

প্রশ্ন- ৭  অভিবাসন

ডিভি লটারি পেয়ে ফরহাদ বাংলাদেশ থেকে ২০০৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রে যায়। সেখানে সে স্থায়ীভাবে বাস করছে।
ক. উদ্বাস্তু কী? ১
খ. কোনো দেশের জনসংখ্যা সংকোচন কীভাবে কার্যকর করা যায়? ২
গ. ফরহাদের অভিবাসন কোন ধরনের অভিবাসন ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে ফরহাদের এই অভিবাসন কী ফলাফল বয়ে আনবে? ৪

ক বলপূর্বক অভিগমনের ফলে যে সকল ব্যক্তি কোনো স্থানে আগমন করে ও স্থায়ীভাবে আবাস স্থাপন করে তাদের বলে উদ্বাস্তু।
খ কোনো দেশের জনসংখ্যা সংকোচন প্রধানত দুইভাবে কার্যকর করা যেতে পারে। এগুলো হলো জন্মহার হ্রাস ও উদ্বাস্তু আগমন বন্ধ অথবা বহির্গমন বৃদ্ধি। সামাজিক-অর্থনৈতিক উন্নয়ন হলে কোনো দেশের জন্মহার স্বাভাবিকভাবেই হ্রাস পায়। জন্মনিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির ব্যাপক প্রচার ও জন্মনিয়ন্ত্রণের সামগ্রীসমূহ জনসাধারণের নিকট সহজলভ্য করা ছাড়াও এ বিষয়ে কয়েকটি বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়। যেমন : আইন করে বিবাহের বয়স বৃদ্ধি করা, সন্তান সংখ্যা সীমিত রাখার জন্য জনগণের ওপর চাপ সৃষ্টি করা, গর্ভপাত আইনসঙ্গত করা ইত্যাদি।
গ ফরহাদের অভিবাসন অবাধ অভিবাসনের অন্তর্ভুক্ত। ফরহাদ নিজ ইচ্ছায় নিজের দেশ ত্যাগ করে পছন্দমতো দেশে স্থায়ীভাবে বসবাস করছে। এ ধরনের অভিবাসন হলো অবাধ অভিবাসন। গন্তব্যস্থলের টান বা আকর্ষণমূলক কারণে ফরহাদ যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসিত হয়েছে। যেসব কারণ এ ধরনের অভিবাসনে উৎসাহিত করে সেগুলো হলো :
১. আত্মীয়স্বজন ও নিজ গোষ্ঠীভুক্ত জনগণের নৈকট্য লাভ;
২. কর্মসংস্থান ও অধিকতর আর্থিক সুযোগ-সুবিধা;
৩. শিক্ষা, স্বাস্থ্য, গৃহসংস্থান ও সামাজিক নিরাপত্তাগত সুবিধা;
৪. বিশেষ দক্ষতার চাহিদা ও বাজারের সুবিধা;
৫. বিবাহ ও সম্পত্তি প্রাপ্তিমূলক ব্যক্তিগত সুবিধা।
উদ্দীপকের ফরহাদ ও এমনি কোনো এক বা একাধিক কারণে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসী হয় যা অবাধ অভিবাসনের অন্তর্ভুক্ত।
ঘ অভিবাসনের স্বাভাবিক ফলাফল হচ্ছে জনসংখ্যার বণ্টন বা অবস্থানিক পরিবর্তন। অবস্থানগত পরিবর্তন ছাড়াও অভিবাসন একটি এলাকায় অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিবর্তন বয়ে আনে। উদ্দীপকের ফরহাদের যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসনও তাই অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে নিম্নরূপ ফলাফল বয়ে আনবে।
অর্থনৈতিক ফলাফল : অর্থনৈতিক পরিবর্তনের জন্যই ফরহাদ অভিবাসনে আগ্রহী হয়। এতে উৎস ও গন্তব্যস্থলে ভ‚মি ও সম্পত্তির শরিকানা, মজুরির হার, বেকারত্ব, জীবনযাত্রার মান, বাণিজ্যিক লেনদেনের ভারসাম্য, অথনৈতিক উৎপাদন ও উন্নয়ন ধারা পরিবর্তন হতে পারে। ফরহাদ যেহেতু যথাযথ পদ্ধতি অবলম্বন করে সেখানে গেছে সেজন্য তার ঝামেলা অনেকটা কম হবে।
সামাজিক ফলাফল : অভিবাসনের ফলে সামাজিক আচার-আচরণের আদান-প্রদান হয়। সামাজিক অনেক রীতিনীতি ফরহাদের দ্বারা সেখানে স্থানান্তরিত হবে। সেখানকার জনগণের মধ্যে ভাব, জ্ঞান ও অভিজ্ঞতার আদান-প্রদান হবে। ফলে উৎস ও গন্তব্যস্থলের সংস্কৃতির পরিবর্তন ঘটবে। অন্য দেশের সংস্কৃতির মধ্যে বসবাস করায় তার উৎসস্থলের সামাজিক বৈশিষ্ট্য ক্ষুণœ হবে।

প্রশ্ন- ৮  জনসংখ্যার বৃদ্ধির প্রভাব

চাঁন মিয়ার নিমতলী গ্রামে ২০ বছর আগে লোকসংখ্যা ছিল ১,৭০০ জন। বর্তমানে এ গ্রামের লোকসংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৪,২০০ জন। তার গ্রামে এ বছর ২৮০ জন শিশু জন্মগ্রহণ করে এবং ৭০ জন মারা যায়। ইদানিং তার গ্রামে ফসলি জমিতে বসতবাড়ি তৈরি হচ্ছে। এছাড়া গ্রামে অভাব অনটনও বেড়ে যাচ্ছে।
ক. জনসংখ্যা বৃদ্ধি কী? ১
খ. অঞ্চলভেদে মরণশীলতার পার্থক্য ব্যাখ্যা কর। ২
গ. নিমতলী গ্রামটির জনসংখ্যার স্বাভাবিক বৃদ্ধির হার কত? ৩
ঘ. ৪০ বছর পরে চাঁন মিয়ার গ্রামের অবস্থা কেমন হবে বিশ্লেষণ কর। ৪

ক যখন দেশের প্রাপ্ত সম্পদের তুলনায় জনসংখ্যা বেশি হয়, তাকে জনসংখ্যা বৃদ্ধি বলে।
খ অঞ্চলভেদে মরণশীলতার পার্থক্য রয়েছে। অনুন্নত দেশগুলোতে মৃত্যুহার অনেক বেশি। উন্নয়নশীল দেশগুলোতে মৃত্যুহার কিছুটা কমে এসেছে এবং উন্নত দেশগুলোতে স্বাভাবিক মৃত্যুহার রয়েছে। আবার নারী-পুরুষের মৃত্যুহারের পার্থক্য দেখা যায়। সাধারণত উন্নয়নশীল দেশগুলোতে প্রজননশীল নারীদের মৃত্যুহার বেশি পরিলক্ষিত হয়। আবার অনুন্নত দেশগুলোতে শিশু মৃত্যুহারও বেশি দেখা যায়।
গ আমরা জানি, জন্ম-মৃত্যু সংখ্যা থেকে স্বাভাবিক জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার নির্ণয়ের সূত্র হলো
কোনো বছরে জন্মিত মোট সংখ্যা  কোনো বছরে মৃত্যুবরণকারী মোট সংখ্যাবছরের মধ্যকালীন মোট জনসংখ্যা  ১০০
এখানে, নিমতলী গ্রামের জন্য
জীবন্ত জন্মগ্রহণকারী শিশুসংখ্যা = ২৮০
মৃত্যুবরণকারী জনসংখ্যা = ৭০
বছরের মধ্যে সময়ের মোট জনসংখ্যা = ৪২০০
 নিমতলী গ্রামের স্বাভাবিক জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার =
২৮০  ৭০৪২০০  ১০০
= ২১০৪২০০  ১০০
= ৫%
ঘ ৪০ বছর পরে এ গ্রামের জনসংখ্যা আরও বহুগুণ বৃদ্ধি পাবে। ২০ বছর আগে চাঁন মিয়ার গ্রামের জনসংখ্যা ছিল মাত্র ১৭০০ জন। আর বর্তমানে ৪২০০ জন। বর্তমান জনসংখ্যা আগের তিনগুণ। এ বর্ধিত জনসংখ্যার জন্য নির্মাণ করতে হয়েছে বসতবাড়ি ও রাস্তাঘাট। এ জনসংখ্যাই গ্রামটির জন্য মারাত্মক পরিণতি বয়ে এনেছে। গ্রামের ফসলি জমির পরিমাণ কমে গিয়েছে। বেড়েছে অভাব অনটন। নিমতলী গ্রামে জনসংখ্যা বৃদ্ধির এ হার যদি অব্যাহত থাকে তবে ৪০ বছর পরে এ গ্রামের জনসংখ্যা আরও বহুগুণ বৃদ্ধি পাবে। এ সময় এ গ্রামের অবস্থা কী হবে সেটা চিন্তা করাও অকল্পনীয়। ধারণা করা যায় এক ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে। ফসলি জমি থাকবে না বললেই চলে। ফলে খাদ্যের অভাবে দুর্ভিক্ষের সৃষ্টি হতে পারে। অভাব-অনটনে প্রতিটি পরিবার জর্জরিত হবে। মারাত্মকভাবে বেড়ে যাবে চুরি, ডাকাতি, রাহাজানি ইত্যাদির মতো ঘটনা। গ্রামটি হয়ে পড়বে বৃক্ষশূন্য। ফলে গ্রামের পরিবেশও মারাত্মকভাবে দূষিত হয়ে পড়বে। অবর্ণনীয় বিভীষিকাময় পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে গ্রামটিতে।

প্রশ্ন- ৯  বলপূর্বক অভিবাসন

১৯৬৭ সালে আরব-ইসরাইল যুদ্ধের সময় অনেক আরব ভাষাভাষী জনগোষ্ঠী তাদের উৎসস্থল থেকে বিতাড়িত হয়। তারা অন্য দেশে বাস করতে বাধ্য হয়।
ক. কোনো দেশের জনসংখ্যা হ্রাস-বৃদ্ধি কী কী বিষয় দ্বারা নির্ধারিত হয়? ১
খ. রাষ্ট্র অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক অভিগমন বলতে কী বোঝ? ২
গ. ১৯৬৭ সালে আরব ভাষাভাষীদের অভিবাসন কোন ধরনের অভিবাসন? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. উদ্দীপকে আরব ভাষাভাষীদের অভিবাসনে জনবৈশিষ্ট্যগত যে পরিবর্তন সূচিত হয় তা আলোচনা কর। ৪

ক কোনো দেশের জনসংখ্যা হ্রাস-বৃদ্ধি ওই দেশের জন্মহার, মৃত্যুহার ও অভিবাসন দ্বারা নির্ধারিত হয়।
খ দেশের বা রাষ্ট্রের সীমানার মধ্যে গ্রাম থেকে শহরে অথবা শহর থেকে গ্রামে যে অভিগমন ঘটে, তাকে রাষ্ট্র অভ্যন্তরীণ অভিগমন বলে। আর দেশের বাইরে অন্য কোনো রাষ্ট্রে গমন করাকে আন্তর্জাতিক অভিগমন বলে। ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে অভিগমন হলে তাকে রাষ্ট্র অভ্যন্তরীণ অভিগমন বলে। আর ঢাকা থেকে অস্ট্রেলিয়ায় অভিগমন হলে তাকে আন্তর্জাতিক অভিগমন বলা হবে।
গ ১৯৬৭ সালে আরব ভাষাভাষীদের অভিবাসন বলপূর্বক অভিবাসনের অন্তর্ভুক্ত। আরব ভাষাভাষী জনগোষ্ঠী রাজনৈতিক চাপের মুখে বা পরোক্ষভাবে অর্থনৈতিক ও সামাজিক চাপ সৃষ্টির ফলে বলপূর্বক অন্যত্র যেতে বাধ্য হয়। তাই এ ধরনের অভিবাসন হলো বলপূর্বক অভিগমন। উৎসস্থলের ধাক্কা বা বিকর্ষণের কারণে আরব ভাষাভাষী জনগোষ্ঠী অভিবাসিত হয়েছে। আর যেসব কারণে এ ধরনের অভিবাসন ঘটে তা হলো ১. প্রাকৃতিক দুর্যোগজনিত ক্ষয়ক্ষতি; ২. জনসংখ্যা বৃদ্ধিজনিত সমস্যা; ৩. সামাজিক ও সা¤প্রদায়িক বৈষম্য; ৪. অর্থনৈতিক মন্দা; ৫. ব্যবসা-বাণিজ্যে ক্রমাগত ক্ষয়ক্ষতি। উদ্দীপকের আরব জনগোষ্ঠী গৃহযুদ্ধ, সা¤প্রদায়িক বৈষম্য বা যুদ্ধের কারণে অন্যত্র বলপূর্বক অভিবাসিত হয়।
ঘ উদ্দীপকের আরব ভাষাভাষীদের অভিবাসনে জনবৈশিষ্ট্যগত নানা পরিবর্তন সূচিত হয়। এতে গন্তব্যস্থলের মোট জনসংখ্যার পরিবর্তন হয়। এতে উৎস ও গন্তব্যস্থলের জনসংখ্যার নারী-পুরুষ অনুপাত ও নির্ভরশীলতার অনুপাত ব্যাপক পরিবর্তিত হয়। অনেক শিক্ষিত ও পেশাজীবী লোক অভিবাসিত হওয়ায় গন্তব্যস্থলের জনসংখ্যার কাঠামোগত পরিবর্তন হয়। যেসব দেশে গমন করে সেসব দেশ জীবনযাত্রার মানে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। উৎসস্থলের দেশ এসব জনগোষ্ঠী হারিয়ে অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এসব জনগোষ্ঠীর গন্তব্যস্থলের দেশগুলোতে খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান এবং কর্মসংস্থানে চাপ সৃষ্টি হয়। সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অবক্ষয় বাড়ে। সুতরাং বলপূর্বক অভিবাসনে এসব জনগোষ্ঠীর জন্য গন্তব্যস্থলের দেশে ভ‚মি ও সম্পদের ওপর চাপ পড়ে এবং প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কিছু সমস্যা সৃষ্টি করে।

প্রশ্ন- ১০  জনসংখ্যার ঘনত্ব

আমাদের দেশের মোট আয়তন ১,৪৭,৫৭০ বর্গকিলোমিটার। আদমশুমারি রিপোর্ট মার্চ, ২০১১ অনুযায়ী বাংলাদেশের জনসংখ্যা প্রায় ১৪.৯৭ কোটি। জনসংখ্যার ঘনত্ব সব জায়গায় সমান নয়। যে জায়গায় জীবনযাত্রার সুযোগ-সুবিধা বেশি সেখানে ঘনত্ব বেশি।
ক. কার্যকর ভ‚মি কী? ১
খ. মানুষ-ভ‚মি অনুপাত বলতে কী বোঝ? ২
গ. উদ্দীপকে প্রদত্ত তথ্যাবলির ভিত্তিতে জনসংখ্যার ঘনত্বের দিক থেকে বাংলাদেশকে তুমি কী ধরনের রাষ্ট্র বলবে? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. উক্ত পরিস্থিতিতে ভ‚মির উপর বিশাল জনগোষ্ঠীর প্রভাব বিশ্লেষণ কর। ৪

ক যে সকল ভ‚মি মানুষের কাজে লাগে এবং সম্পদ সৃষ্টি করতে পারে, তাকে কার্যকর ভ‚মি বলে।
খ মানুষ-ভ‚মি অনুপাত বলতে মোট জনসংখ্যা ও মোট কার্যকর ভ‚মির আয়তন অনুপাতকে ধরা হয়। অর্থাৎ
মানুষ-ভ‚মির অনুপাত = মোট জনসংখ্যামোট কার্যকর ভ‚মির আয়তন
কোনো দেশের ভ‚মির উপর জনসংখ্যার চাপ কি রকম তা জানতে হলে সেদেশের জনসংখ্যার ঘনত্বের পরিবর্তে মানুষ-ভ‚মির অনুপাত কত তা জানা প্রয়োজন।
গ উদ্দীপকে প্রদত্ত তথ্যাবলির ভিত্তিতে জনসংখ্যার ঘনত্বের দিক থেকে বাংলাদেশের জনঘনবসতি দেশ বলে ধারণা করব। উদ্দীপকে উল্লেখ করা হয়েছে, আমাদের দেশের মোট আয়তন ১,৪৭,৫৭০ বর্গকিলোমিটার। আদমশুমারি রিপোর্ট মার্চ, ২০১১ অনুযায়ী বাংলাদেশের জনসংখ্যা প্রায় ১৪.৯৭ কোটি। আমরা জানি, জনসংখ্যার ঘনত্ব = মোট জনসংখ্যামোট ভ‚মির আয়তন
বাংলাদেশের জনসংখ্যার ঘনত্ব = ১৪.৯৭ কোটি১৪৭৫৭০
= ১,০১৫ জন (প্রতি বর্গকিলোমিটার)
জনসংখ্যার তুলনায় কার্যকর ভ‚মির পরিমাণ অল্প থাকলে তাকে অতি জনাকীর্ণতা বলে। বাংলাদেশে জনসংখ্যার তুলনায় কার্যকর ভ‚মির পরিমাণ অতি অল্প। তাই বাংলাদেশ অতি জনাকীর্ণতাপূর্ণ দেশ। আমাদের দেশে মোট উৎপাদিত সম্পদের পরিমাণ এবং মাথাপিছু উৎপাদিত সম্পদের পরিমাণ অল্প যা মাথাপিছু উৎপাদন ও ভোগের পরিমাণ হ্রাস করছে।
ঘ উক্ত পরিস্থিতি বাংলাদেশের জনসংখ্যা পরিস্থিতির অতিজনাকীর্ণতা নির্দেশ করছে। দ্রæত বর্ধনশীল জনগোষ্ঠীর এই দেশ ইতোমধ্যেই অতিজনাকীর্ণ। ফলশ্রæতিতে ভ‚মির উপর বাংলাদেশের বিশাল জনগোষ্ঠী ভয়ানক বিরূপ প্রভাব ফেলছে। যথা
১. অধিক ফসল চাষ করতে গিয়ে ভ‚মির উর্বরতা হ্রাস পাচ্ছে। এতে মাটির জৈব উপাদান কমে যাচ্ছে।
২. অধিক ফলনের জন্য অধিক সার, কীটনাশক ব্যবহার করতে গিয়ে মাটি দূষিত হয়ে পড়ছে।
৩. বন ও পাহাড় কেটে আবাদি ভ‚মি বাড়াতে গিয়ে ভ‚মি উন্মুক্ত হয়ে পড়ছে, মাটির ক্ষয় বৃদ্ধি পাচ্ছে।
৪. কৃষিভ‚মি খণ্ডিত হয়ে বসতবাড়ি ও গৃহস্থালি কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে।
৫. ভ‚মি বিভাজিত হয়ে নতুন অবকাঠামো ও বাণিজ্যকেন্দ্র স্থাপিত হচ্ছে।
৬. যোগাযোগের জন্য ভ‚মি ব্যবহার বাড়ছে। স্কুল-কলেজ, প্রশাসন কেন্দ্র স্থাপনের জন্য ভ‚মি ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে।
উপর্যুক্ত পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমাদের এখনই সাবধান হওয়া উচিত।

 জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর 
প্রশ্ন \ ১ \ জনসংখ্যা পরিবর্তনের গতিধারা কী?
উত্তর : সময়ের সঙ্গে জনসংখ্যা পরবর্তনের তারতম্য হলো জনসংখ্যা পরিবর্তনের গতিধারা
প্রশ্ন \ ২ \ ১৬৫০ সালে পৃথিবীর জনসংখ্যা কত ছিল?
উত্তর : ১৬৫০ সালে পৃথিবীর জনসংখ্যা ছিল ৫০০ মিলিয়ন।
প্রশ্ন \ ৩ \ ১৮৫০ সালের পর কোন কোন ক্ষেত্রে বিপ্লব সাধিত হয়?
উত্তর : ১৮৫০ সালের পর কৃষি ও শিল্পক্ষেত্রে বিপ্লব সাধিত হয়।
প্রশ্ন \ ৪ \ ২০১৪ সালে পৃথিবীর জনসংখ্যা কত ছিল?
উত্তর : ২০১৪ সালে পৃথিবীর জনসংখ্যা ছিল ৭.২৩ বিলিয়ন।
প্রশ্ন \ ৫ \ ২০২৫ সালে বিশ্বে অনুমিত জনসংখ্যা কত দাঁড়াবে?
উত্তর : ২০২৫ সালে বিশ্বে অনুমিত জনসংখ্যা দাঁড়াবে ৮ বিলিয়নের উপরে।
প্রশ্ন \ ৬ \ পৃথিবীর জনসংখ্যা বৃদ্ধির ধারাকে কয়টি পর্যায়ে বিভক্ত করা যায়?
উত্তর : পৃথিবীর জনসংখ্যা বৃদ্ধির ধারাকে ৩টি পর্যায়ে বিভক্ত করা যায়।
প্রশ্ন \ ৭ \ কোন সময় পর্যন্ত সময়কে প্রাথমিক পর্যায় বলে?
উত্তর : সুদূর অতীত কাল থেকে ১৬৫০ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত সময়কে প্রাথমিক পর্যায় বলে।
প্রশ্ন \ ৮ \ কোন সময় পর্যন্ত সময়কে মাধ্যমিক পর্যায় বলে?
উত্তর : ১৬৫০ থেকে ১৯৫০ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত সময়কে মাধ্যমিক পর্যায় বলে।
প্রশ্ন \ ৯ \ কোন সময় পর্যন্ত সময়কে সাম্প্রতিক পর্যায় বলে?
উত্তর : ১৯৫০ সাল থেকে ২০১০ সময় পর্যন্ত সাম্প্রতিক পর্যায়।
প্রশ্ন \ ১০ \ নির্ভরশীল জনসংখ্যা কী?
উত্তর : সাধারণত ০-১৮ বছর বয়সের শিশু এবং ৬৫ বছর ঊর্ধ্ব বয়সের জনসংখ্যাকে নির্ভরশীল জনসংখ্যা বলে।
প্রশ্ন \ ১১ \ কত বছর বয়স পর্যন্ত নারীদের প্রজনন ক্ষমতা থাকে?
উত্তর : সাধারণত ১৫-৪৫ অথবা ১৫-৪৯ বছর বয়স পর্যন্ত নারীদের প্রজনন ক্ষমতা থাকে।
প্রশ্ন \ ১২ \ জনসংখ্যা কাঠামো কাকে বলে?
উত্তর : নারী-পুরুষের বয়সভিত্তিক বিন্যাস গ্রাফে প্রকাশ করলে ত্রিভুজ বা পিরামিড সদৃশ যে নকশা তৈরি হয় তাকে জনসংখ্যা কাঠামো বলে।
প্রশ্ন \ ১৩ \ জনসংখ্যা কাঠামোর অনুভ‚মিক অক্ষে কী প্রকাশ করা হয়?
উত্তর : জনসংখ্যা পিরামিডের অনুভ‚মিক অক্ষে বামে পুরুষ ও ডানে নারীর সংখ্যা বা শতকরা হার স্তম্ভে প্রকাশ করা হয়।
প্রশ্ন \ ১৪ \ বলপূর্বক অভিবাসন কাকে বলে?
উত্তর : প্রত্যক্ষ রাজনৈতিক চাপের মুখে বা পরোক্ষভাবে অর্থনৈতিক ও সামাজিক চাপ সৃষ্টির ফলে মানুষ বাধ্য হয়ে যে অভিগমন করে তাকে বলপূর্বক অভিবাসন বলে।
প্রশ্ন \ ১৫ \ কাম্য জনসংখ্যা কাকে বলে?
উত্তর : কোনো দেশের মোট জনসংখ্যা ও কার্যকর ভ‚মির অনুপাতে ভারসাম্য থাকলেই তাকে কাম্য জনসংখ্যা বলে।
প্রশ্ন \ ১৬ \ জনস্বল্পতা কাকে বলে?
উত্তর : জনসংখ্যার তুলনায় কার্যকর ভ‚মির পরিমাণ বেশি থাকলেও জনসংখ্যার স্বল্পতার কারণে পর্যাপ্ত সম্পদ এবং ভ‚মি ব্যবহার না করা গেলে উৎপাদন ব্যাহত হয়। এই অবস্থাকে জনস্বল্পতা বলে।
প্রশ্ন \ ১৭ \ আদমশুমারি রিপোর্ট মার্চ, ২০১১ অনুযায়ী বাংলাদেশের জনসংখ্যা কত?
উত্তর : আদমশুমারি রিপোর্ট মার্চ, ২০১১ অনুযায়ী বাংলাদেশের জনসংখ্যা প্রায় ১৪.৯৭ কোটি।
প্রশ্ন \ ১৮ \ প্রতি বর্গকিলোমিটারে বাংলাদেশের জনসংখ্যার ঘনত্ব কত?
উত্তর : প্রতি বর্গকিলোমিটারে বাংলাদেশের জনসংখ্যার ঘনত্ব ১,০১৫ জন।
প্রশ্ন \ ১৯ \ পৃথিবীর কোন অঞ্চলে জনসংখ্যার ঘনত্ব সবচেয়ে বেশি?
উত্তর : পৃথিবীর সমভ‚মি অঞ্চলে জনসংখ্যার ঘনত্ব সবচেয়ে বেশি।
প্রশ্ন \ ২০ \ কোন দেশ পৃথিবীর অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ দেশ?
উত্তর : বাংলাদেশ পৃথিবীর অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ দেশ।
প্রশ্ন \ ২১ \ বাংলাদেশের জনসংখ্যার অন্যতম বৈশিষ্ট্য কী?
উত্তর : বাংলাদেশের জনসংখ্যার অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো অল্প বয়সের জনগোষ্ঠীর প্রাধান্য।
প্রশ্ন \ ২২ \ বাংলাদেশের জনসংখ্যা সমস্যা সমাধানের উপায় কী?
উত্তর : বাংলাদেশের জনসংখ্যা সমস্যা সমাধানের উপায় হলো দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন।
প্রশ্ন \ ২৩ \ উৎস স্থান কাকে বলে?
উত্তর : যে স্থান মানুষ ত্যাগ করে তাকে উৎস স্থান বলে।
প্রশ্ন \ ২৪ \ কোনটি জনসংখ্যা বৃদ্ধির একটি সহায়ক প্রক্রিয়া?
উত্তর : অভিবাসন জনসংখ্যা বৃদ্ধির একটি সহায়ক প্রক্রিয়া।
প্রশ্ন \ ২৫ \ জনসংখ্যার ঘনত্বের সাথে জনসংখ্যা ব্যতীত আর কী জড়িত?
উত্তর : জনসংখ্যার ঘনত্বের সাথে জনসংখ্যা ব্যতীত স্থান বা মোট ভ‚মি জড়িত।
প্রশ্ন \ ২৬ \ বর্তমানে বিশ্বব্যাপী সমস্যা কোনটি?
উত্তর : জনসংখ্যা বৃদ্ধি বর্তমানে বিশ্বব্যাপী সমস্যা।
প্রশ্ন \ ২৭ \ উন্নয়নের মৌলিক উপাদান দুটি কী কী?
উত্তর : উন্নয়নের মৌলিক উপাদান দুটি হলো সম্পদ ও জনসংখ্যা।
প্রশ্ন \ ২৮ \ গন্তব্যস্থল কাকে বলে?
উত্তর : যে স্থানে মানুষ গমন করে বা যায় সে স্থানকে গন্তব্যস্থল বলে।
প্রশ্ন \ ২৯ \ ধাক্কা বা বিকর্ষণ কাকে বলে?
উত্তর : যেসব কারণ মানুষকে পুরাতন বাসস্থান পরিত্যাগ করে অন্য স্থানে যেতে বাধ্য করে সেগুলোকে উৎসস্থলের ধাক্কা বা বিকর্ষণ বলে।
প্রশ্ন \ ৩০ \ গন্তব্যস্থলের টান কাকে বলে?
উত্তর : যেসব কারণ নতুন কোনো স্থানে বসতি স্থাপনের জন্য মানুষকে উৎসাহিত বা প্ররোচিত করে তাকে গন্তব্যস্থলের টান বলে।
প্রশ্ন \ ৩১ \ অভিবাসনের স্বাভাবিক ফলাফল কী?
উত্তর : অভিবাসনের স্বাভাবিক ফলাফল হচ্ছে জনসংখ্যার বণ্টন বা অবস্থানিক পরিবর্তন।
প্রশ্ন \ ৩২ \ অভিবাসনের ফলে কোথায় জনসংখ্যা কমে?
উত্তর : অভিবাসনের ফলে উৎসস্থলে জনসংখ্যা কমে।
প্রশ্ন \ ৩৩ \ কোন ক্ষেত্রে অভিবাসন গুরুত্বপূর্ণ?
উত্তর : বিশ্বের জনসংখ্যা বণ্টনের তারতম্য আনয়নের ক্ষেত্রে অভিবাসন গুরুত্বপূর্ণ।
প্রশ্ন \ ৩৪ \ বাংলাদেশের কোথায় জনসংখ্যার ঘনত্ব খুবই কম?
উত্তর : বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম ও সুন্দরবন অঞ্চলে জনসংখ্যার ঘনত্ব খুবই কম ।
প্রশ্ন \ ৩৫ \ জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে কী নষ্ট হচ্ছে?
উত্তর : জনসংখ্যার বৃদ্ধির ফলে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে।
প্রশ্ন \ ৩৬ \ জনসংখ্যা ক্রমাগত বৃদ্ধি পেলে সরাসরি প্রভাব পড়ে কিসের ওপর?
উত্তর : জনসংখ্যা ক্রমাগত বৃদ্ধি পেলে সরাসরি প্রভাব পড়ে ভ‚মির ওপর।
প্রশ্ন \ ৩৭ \ অস্বাভাবিক মৃত্যুর অন্যতম কারণ কী?
উত্তর : ঝড়, ভ‚মিকম্প, বন্যা, দুর্ভিক্ষ, মহামারি ইত্যাদি প্রাকৃতিক দুর্যোগ অস্বাভাবিক মৃত্যুর অন্যতম কারণ।
প্রশ্ন \ ৩৮ \ কোন দেশগুলোর জনসংখ্যা কাঠামোর ভ‚মি অত্যন্ত প্রশস্ত ও শীর্ষভাগ সংকীর্ণ?
উত্তর : উন্নয়নশীল দেশগুলোর জনসংখ্যা কাঠামোর ভ‚মি অত্যন্ত প্রশস্ত ও শীর্ষভাগ সংকীর্ণ।

 অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর 
প্রশ্ন \ ১ \ বিশ্বব্যাপী জনসংখ্যা পরিবর্তনের প্রক্রিয়ার পর্যায় ব্যাখা কর।
উত্তর : বিশ্বব্যাপী জনসংখ্যা পরিবর্তনের ঐতিহাসিক ধারা পর্যালোচনা করলে পরিবর্তনের কতগুলো ধারা লক্ষ করা যায়। প্রাথমিক পর্যায়ে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কম থাকে। দ্বিতীয় পর্যায়ে জনসংখ্যার বৃদ্ধির হার দ্রæততর হয় এবং তৃতীয় পর্যায়ে জনসংখ্যা বৃদ্ধির গতি হ্রাস পায় এবং জনসংখ্যা পরিবর্তনে স্থিতিশীলতা আসে।
প্রশ্ন \ ২ \ অভিবাসন কী? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : মানুষ যেসব স্থানে জীবনযাপনের সুযোগ বেশি পায়, সেসব স্থানে বসবাসে আগ্রহী হয়। তাই অনেক সময় এক এলাকা থেকে বসবাসের জন্য অন্য এলাকায় চলে যায়। এভাবে নিজের বাসস্থান ছেড়ে অন্যস্থানে গিয়ে স্থায়ীভাবে বসবাস করাকে অভিবাসন বলে। প্রকৃতি অনুযায়ী অভিবাসনকে দুই ভাগে বিভক্ত করা হয়। যথা : ১. অবাধ অভিবাসন ও ২. বলপূর্বক অভিবাসন
প্রশ্ন \ ৩ \ বলপূর্বক অভিবাসন কী? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : মানুষ স্বেচ্ছায় বাস্তুভিটা ছাড়তে চায় না। প্রত্যক্ষ রাজনৈতিক চাপের মুখে বা পরোক্ষভাবে অর্থনৈতিক ও সামাজিক চাপ সৃষ্টির ফলে মানুষ বাধ্য হয়ে যে অভিগমন করে তাকে বলপূর্বক অভিবাসন বলে। গৃহযুদ্ধ, সা¤প্রদায়িক বৈষম্যের কারণে বা যুদ্ধের কারণে কেউ যদি অভিগমন করে তবে তাকে বলপূর্বক অভিবাসন বলে।
প্রশ্ন \ ৪ \ মানুষ-ভ‚মির অনুপাত বলতে কী বোঝ?
উত্তর : যেসব ভ‚মি মানুষের কাজে লাগে এবং সম্পদ সৃষ্টি করতে পারে তাকে কার্যকর ভ‚মি বলে। মানুষ-ভ‚মি অনুপাত বলতে এই কার্যকর ভ‚মির অনুপাতকে ধরা হয়।
মানুষ-ভ‚মির অনুপাত = মোট জনসংখ্যামোট কার্যকর ভ‚মির আয়তন
প্রকৃতপক্ষে কোনো দেশের ভ‚মির ওপর জনসংখ্যার চাপ কী রকম তা জানতে হলে সেদেশের জনসংখ্যার ঘনত্বের পরিবর্তে মানুষ-ভ‚মির অনুপাত কত তা জানা প্রয়োজন।
প্রশ্ন \ ৫ \ জনসংখ্যা কাঠামো কী?
উত্তর : নারী-পুরুষের বয়সভিত্তিক বিন্যাস গ্রাফে প্রকাশ করলে ত্রিভুজ বা পিরামিড সদৃশ যে নকশা তৈরি হয় তাকে জনসংখ্যা কাঠামো বলে। উল্লম্ব অক্ষে বয়স এবং অনুভ‚মিক অক্ষের বামে পুরুষ ও ডানে নারীর সংখ্যা বা শতকরা হার স্থাপন করা হয়। উন্নয়নশীল দেশসমূহের এরূপ জনসংখ্যা কাঠামোকে জনসংখ্যা পিরামিড বলে।
প্রশ্ন \ ৬ \ জনসংখ্যার পরিবর্তন প্রক্রিয়ার নিয়ামক বলতে কী বোঝ?
উত্তর : জনসংখ্যা একটি সক্রিয় পরিবর্তনশীল উপাদান। জনসংখ্যার এই পরিবর্তন ঘটে জন্ম, মৃত্যু ও অভিবাসনের কারণে। এগুলোকে আমরা জনসংখ্যার পরিবর্তন প্রক্রিয়ার নিয়ামক বলে থাকি। আমরা জনসংখ্যাকে একটু বৃহৎ আকারে যেমন শতকরা বা হাজারে প্রকাশ করি, তাহলে নিয়ামকগুলোকে দেখাতে পারি এভাবে- জন্মহার, মৃত্যুহার ও অভিবাসন। এই নিয়ামকগুলোর পারস্পরিক ক্রিয়ার ফলে কোনো সমাজ তথা দেশের জনমিতিক গঠনে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন হয়ে থাকে। যার প্রভাব দেখা যায় সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রেও।
প্রশ্ন \ ৭ \ সমভ‚মিতে জনবসতির ঘনত্ব বেশি হলেও পাহাড়ি এলাকায় কম কেন?
উত্তর : সমভ‚মি অঞ্চল মানুষের বসবাসের জন্য সবচেয়ে উপযোগী। কারণ এখানে সহজে কৃষি, শিল্প, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলা যায়। তাই পৃথিবীর সমভ‚মি অঞ্চলে জনঘনত্ব সবচেয়ে বেশি। এ জন্য গঙ্গা উপত্যকায় জনবসতির ঘনত্ব অনেক বেশি। আবার পাহাড়ি এলাকায় জীবনধারণ অনেক কষ্ট বলে ওইসব অঞ্চলে লোকবসতি কম হয়। বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম ও সুন্দরবন অঞ্চলে জনসংখ্যা ঘনত্ব খুবই কম।
প্রশ্ন \ ৮ \ বাংলাদেশে জনসংখ্যা বৃদ্ধি রোধের উপায় কী?
উত্তর : জনসংখ্যা বৃদ্ধি রোধে বাংলাদেশে বাল্যবিবাহ ও বহুবিবাহ বন্ধ করতে হবে। জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির সফল প্রয়োগের মাধ্যমে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার রোধ করতে হবে। ধর্মান্ধতা, পুত্রসন্তানের ওপর নির্ভরশীলতা, বংশ রক্ষা প্রভৃতি কুসংস্কার দূর করতে হবে। নারীশিক্ষা ও নারীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে।
প্রশ্ন \ ৯ \ বাংলাদেশের জনসংখ্যা সমস্যা সমাধানের উপায় কী?
উত্তর : বাংলাদেশের জনসংখ্যা সমস্যা সমাধানের উপায় হলো দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন। কৃষিব্যবস্থা আধুনিকায়ন, দ্রæত শিল্পায়ন, পরিবহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির মাধ্যমে অর্থনৈতিক উন্নয়নের গতি ত্বরান্বিত করা যেতে পারে। অধিক ঘনবসতিপূর্ণ স্থান থেকে কম ঘন বসতিপূর্ণ অঞ্চলসমূহে লোক স্থানান্তর করে জনসংখ্যা সমস্যার কিছুটা সমাধান করা যেতে পারে। জননিয়ন্ত্রণ, শিক্ষার প্রসার প্রভৃতির মাধ্যমে জনসংখ্যা হ্রাস করার মাধ্যমে জনসংখ্যা সমস্যা সমাধান করা যেতে পারে।
প্রশ্ন \ ১০ \ জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে কী কী সমস্যা দেখা দেয়?
উত্তর : জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে মাথাপিছু আয় হ্রাস পায়, ফলে জীবনযাত্রার নিম্নমান দেখা দেয়। জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে কৃষিভ‚মি হ্রাস পায়, খাদ্য ঘাটতি দেখা দেয়, পরিবেশ দূষণ বেড়ে যায় এবং বেকারত্ব বৃদ্ধি পায়।
প্রশ্ন \ ১১ \ বাংলাদেশের জনসংখ্যার বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে লেখ।
উত্তর : বাংলাদেশের জনসংখ্যার বৈশিষ্ট্য হলো আয়তন ও সম্পদের তুলনায় জনসংখ্যা বেশি। দেশের অর্ধেক লোক পরনির্ভরশীল। জন্মহার মৃত্যুহার অপেক্ষা বেশি। এদেশের অধিকাংশ লোক গ্রামে বাস করে। উন্নত দেশগুলোর তুলনায় এদেশের মানুষের গড় আয়ুষ্কাল অনেক কম।
প্রশ্ন \ ১২ \ জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে ভ‚মির ওপর কী ধরনের প্রভাব পড়ে?
উত্তর : জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে ভ‚মির উর্বরতা হ্রাস পায়। অধিক সার, কীটনাশক ব্যবহারের ফলে মাটি দূষিত হয়ে পড়ে। বন ও পাহাড় কাটার ফলে জমি উন্মুক্ত হয়ে পড়ে, মাটির ক্ষয় বৃদ্ধি পায়। বসতবাড়ি ও গৃহস্থালি কাজে ব্যবহারের ফলে কৃষিভ‚মি খণ্ডিত হয়ে যায়। জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে নতুন অবকাঠামো স্থাপনের ফলে ভ‚মি বিভাজন দেখা দেয়।
প্রশ্ন \ ১৩ \ জনসংখ্যা হ্রাসের জন্য কী কী ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে?
উত্তর : জনসংখ্যা হ্রাসের জন্য নিচের ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে
১. জš§নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির সফল প্রয়োগের ব্যবস্থা করা।
২. বিলম্ব বিবাহ ব্যবস্থা চালু করা। বাল্যবিবাহ ও বহুবিবাহ বন্ধ করা।
৩. সন্তান সংখ্যা সীমিত রাখার জন্য জনগণের ওপর চাপ সৃষ্টির উদ্দেশ্য বিভিন্ন প্রকার আইন প্রণয়ন করা।
৪. নারী শিক্ষা ও নারীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা।
৫. ধর্মান্ধতা, পুত্র সন্তানের উপর নির্ভরশীলতা, বংশ রক্ষা প্রভৃতি কুসংস্কার দূর করা।
প্রশ্ন \ ১৪ \ বাংলাদেশে কোন কোন ক্ষেত্রে পানির অতিরিক্ত ব্যবহার হচ্ছে?
উত্তর : বাংলাদেশে নি¤œলিখিত ক্ষেত্রে পানির অতিরিক্ত ব্যবহার হচ্ছে-
১. কৃষিজমির সেচ কাজে
২. দৈনন্দিন ব্যবহার্য কাজে
৩. শিল্পক্ষেত্রে ও
৪. গৃহস্থালি কাজে।
প্রশ্ন \ ১৫ \ অবাধ অভিবাসন কেন ঘটে?
উত্তর : নিজের বাসস্থান ছেড়ে অন্য স্থানে গিয়ে স্থায়ীভাবে বসবাস করাকে অভিবাসন বলা হয়। সাধারণত উৎসস্থলের নানাবিধ অভাব, অসুবিধা এবং গন্তব্যস্থলে অধিকতর সুযোগ-সুবিধা থাকার কারণে অবাধ অভিবাসন ঘটে। এ প্রক্রিয়ায় কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রভৃতি দেশে উন্নয়নশীল ও অনুন্নত দেশের জনসাধারণ অভিবাসিত হয়।
প্রশ্ন \ ১৬ \ অভিবাসনের ফলে কী ধরনের অর্থনৈতিক পরিবর্তন হয়?
উত্তর : অর্থনৈতিক পরিবর্তনের জন্যই মানুষ অভিবাসনে আগ্রহী হয়। এক্ষেত্রে উৎস ও গন্তব্যস্থলে জমি এবং সম্পত্তির শরিকানা, মজুরির হার, বেকারত্ব, জীবনযাত্রার মান, বাণিজ্যিক লেনদেনের ভারসাম্য, অর্থনৈতিক উৎপাদন ও উন্নয়ন ধারা প্রভৃতির পরিবর্তন হতে পারে। অল্পশিক্ষিত লোক সঠিক পদ্ধতিতে যদি অভিগমন না করে তারা অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। লোকমুখে শুনে প্ররোচিত হয়ে গমন করলে অন্য দেশের আইন দ্বারা মানুষ বাধাগ্রস্ত হতে পারে। আবার বলপূর্বক অভিবাসনে উদ্বাস্তুদের অর্থনৈতিক সুবিধার চেয়ে দুর্ভোগই বেশি হয়।
প্রশ্ন \ ১৭ \ অভিবাসনের সামাজিক ফলাফল কী?
উত্তর : অভিবাসনের ফলে সামাজিক আচার-আচরণের আদান-প্রদান হয়। সামাজিক অনেক রীতিনীতি এক দেশ থেকে অন্য দেশে স্থানান্তরিত হয়। বিভিন্ন জনগণের মধ্যে ভাব, জ্ঞান ও অভিজ্ঞতার আদান-প্রদান হয়। অনেক সময় এতে অন্য দেশের সংস্কৃতি রপ্ত করার কারণে নিজের দেশের সামাজিক বৈশিষ্ট্য ক্ষুণœ হয়। এছাড়া বিভিন্ন রোগের বিস্তারও ঘটে থাকে।
প্রশ্ন \ ১৮ \ জনসংখ্যা নীতি কেন গ্রহণ করা হয়?
উত্তর : সম্পদ ও জনসংখ্যা জাতীয় উন্নয়নের দুটি মৌলিক উপাদান। এই সম্পদ ও জনসংখ্যার মধ্যে একটা ভারসাম্য থাকা প্রয়োজন। সম্পদের তুলনায় জনসংখ্যা কম বা বেশি হলে উভয় ক্ষেত্রেই জাতীয় উন্নয়ন ব্যাহত হয়। জনসংখ্যা ও সম্পদ জাতীয় উন্নয়নের এই দুই উপাদানের মধ্যে সমন্বয় সাধন করার জন্য জনসংখ্যা নীতি গ্রহণ করা হয়।
প্রশ্ন \ ১৯ \ জনসংখ্যা ও সম্পদের মধ্যে ভারসাম্য থাকা দরকার কেন?
উত্তর : জনসংখ্যা ও সম্পদের মধ্যে ভারসাম্য যেকোনো দেশের সুষ্ঠু উন্নয়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। সম্পদের তুলনায় জনসংখ্যা কম বা বেশি হলে উভয় ক্ষেত্রেই জাতীয় উন্নয়ন ব্যাহত হয়। সম্পদের তুলনায় জনসংখ্যা কম হলে, সম্পদের যথাযথ ব্যবহার সম্ভব হয় না। আবার সম্পদের তুলনায় জনসংখ্যা বেশি হলে, জনসংখ্যার প্রয়োজনীয় দক্ষতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে বহুবিধ সমস্যার সৃষ্টি হয়। জনসংখ্যা ও সম্পদের মধ্যে যথাযথ ভারসাম্য থাকলেই কেবল জীবনযাত্রার মানের সর্বাধিক উন্নয়ন সম্ভব। তাই জনসংখ্যা ও সম্পদের মধ্যে ভারসাম্য থাকা দরকার।

 

 

Share to help others:

Leave a Reply