পঞ্চম অধ্যায়
প্রাচীন বাংলার সামাজিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ইতিহাস
আর্যদের আগমনের পূর্বে বাংলার প্রাচীন মানুষেরা একটি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক জীবন গড়ে তুলেছিল। বাংলার সমাজ-সংস্কৃতির এটাই সবচেয়ে প্রাচীন রূপ। পণ্ডিতদের মতে, এদের ভাষার নাম ছিল ‘অস্টিক’। জাতি হিসেবে এদের বলা হতো নিষাদ। এরপর বাংলার ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সাথে মিশে যায় ‘আলপাইন’ নামে এক জাতি। আর্যরা এদেশে আসার পূর্বে এরা মিলেমিশে বাংলার সংস্কৃতি গড়ে তোলে। শিখনফল
প্রাচীন বাংলার আর্থসামাজিক অবস্থার বর্ণনা করতে পারবে।
প্রাচীন বাংলার শিল্পকলা, স্থাপত্য, ভাস্কর্য ও চিত্রকলার বর্ণনা করতে পারবে।
প্রাচীন বাংলার ভাষা ও সাহিত্যের উদ্ভব ও বিকাশ ব্যাখ্যা করতে পারবে।
প্রাচীন বাংলার ধর্ম, আচার-অনুষ্ঠান, উৎসব ও রীতিনীতিতে জনগণের প্রদর্শিত মূল্যবোধ ও বিশ্বাস ব্যাখ্যা করতে পারবে।
প্রাচীন বাংলার আর্থসামাজিক ও সাংস্কৃতিক চর্চায় তৎকালীন গুরুত্বপূর্ণ রাজবংশসমূহের অবদান সম্পর্কে ইতিবাচক ধারণা পোষণ করতে সক্ষম হবে।
ইতিহাস চর্চার মাধ্যমে প্রাচীন বাংলার আর্থ-সামাজিক, সাংস্কৃতিক জীবনের উদ্ভব ও বিকাশ সম্পর্কে জানতে আগ্রহী হবে।
অধ্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো সংক্ষেপে জেনে রাখি
প্রাচীন বাংলার সামাজিক জীবন : মৌর্য শাসনের পূর্বে ব্যাপক অর্থে বাংলার অধিবাসীদের মধ্যে রাজনৈতিক পরিচয় গড়ে ওঠেনি। এ সময়ে সমাজ বিভিন্ন গোত্রে বিভক্ত ছিল। একে বলা হতো কৌম সমাজ। আর্যদের পূর্বে কিছু কিছু ধর্মচিন্তা পরবর্তী সময়ে এদেশের হিন্দুধর্মে ছড়িয়ে পড়ে। এগুলোর মধ্যে উল্লেখ করা যায় কর্মফল, জন্মান্তরবাদ, যোগ সাধনা ইত্যাদি।
প্রাচীন বাংলার অর্থনৈতিক অবস্থা : বাংলা চিরকালই কৃষি প্রধান দেশ। প্রাচীনকালে বাংলার অধিবাসীদের বেশির ভাগ লোকই গ্রামে বাস করত। তারা সবাই মিলে একসাথে গ্রাম গড়ে তুলত। আর গ্রামের আশপাশের ভ‚মি চাষ করে সংসার চালাত। যারা চাষ করত বা অন্য কোনো প্রকারে জমি ভোগ করত, বিনিময়ে তাদের কতকগুলো নির্দিষ্ট কর দিতে হতো। অনেক সময় ব্রাহ্মণ ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে ভ‚মি দান করা হতো। এ জমির জন্য কোনো কর দিতে হতো না।
প্রাচীন স্থাপত্য-ভাস্কর্য ও শিল্পকলা : বাংলাদেশের নানা স্থানে প্রাচীন বাংলার স্থাপত্য, ভাস্কর্য ও চিত্রশিল্পের বহু নিদর্শন পাওয়া গেছে। নানাবিধ কারণে প্রাচীন বাংলার শিল্পকলা ধ্বংস হয়ে গেছে। তবুও নিঃসন্দেহে বলা যায়, প্রাচীন যুগে বাংলার শিল্পকলা খুবই উন্নত ছিল।
স্থাপত্য : প্রাচীন বাংলার স্থাপত্য শিল্পের নিদর্শন অতি সামান্যই আবিষ্কৃত হয়েছে। চীন দেশের ভ্রমণকারী ফা-হিয়েন ও হিউয়েন-সাং-এর বিবরণী ও প্রাচীন শিলালিপি থেকে প্রাচীন যুগে বাংলার কারুকার্যময় বহু হর্ম্য, (চ‚ড়া, শিখা) মন্দির, স্তূপ ও বিহারের কিছু পরিচয় পাওয়া যায়।
ভাস্কর্য : খ্রিষ্টাব্দের শুরুতে অথবা এর পূর্ব বর্ষ হতে বাংলায় স্থাপত্য শিল্পের পাশাপাশি ভাস্কর্য শিল্পের চর্চাও হতো। প্রাচীন বাংলায় বহু মন্দির ছিল। তাই, ভাস্কর্য শিল্পকলাও যে উন্নত ছিল তাতে সন্দেহ নেই। অনেক স্থানে মন্দির ধ্বংস হলেও তার মধ্যে দেবমূর্তি রক্ষিত হয়েছে। কেবলমাত্র পুরস্করণ, তমলুক, মহাস্থান প্রভৃতি অঞ্চলে গ্প্তু-পূর্ব যুগের কয়েকটি পোড়ামাটির মূর্তি আবিষ্কৃত হয়েছে।
প্রাচীন বাংলার শিল্পকলার ক্ষেত্রে পাল যুগ স্মরণীয়। নবম থেকে দ্বাদশ শতক-এ চার শতক পর্যন্ত এ যুগের শিল্পকে সাধারণত পাল যুগের শিল্পকলা বলে আখ্যায়িত করা হয়। কারণ এ যুগের শিল্পনীতিই পরবর্তী সেন যুগেও অব্যাহত ছিল। প্রস্তর ও ধাতু নির্মিত দেব-দেবীর মূর্তি এ যুগের শিল্পকলার শ্রেষ্ঠ নিদর্শন বলে বিবেচিত হয়। এতে ধর্মভাবের প্রভাবই ছিল বেশি।
চিত্রশিল্প : পাল যুগের পূর্বেকার কোনো চিত্র আজ পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। কিন্তু প্রাচীনকালেই বাংলায় যে চিত্র অঙ্কনের চর্চা ছিল তাতে কোনো সন্দেহ নেই। সাধারণত বৌদ্ধ বিহার ও মন্দিরের দেয়াল সৌন্দর্যময় করার জন্য চিত্রাঙ্কন করার রীতি প্রচলিত ছিল।
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য – উদ্ভব ও বিকাশ : আর্যদের প্রাচীন বাংলায় আগমনের পূর্বে এখানে নানা জাতি ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর লোক বসবাস করত। তারা আর্যভাষী হিন্দু ছিল না। কিন্তু তারা যে কোন ভাষায় কথা বলত তা সঠিকভাবে আজও নির্ণয় করা যায় নি। গোষ্ঠী বিভাগের সাথে মানব জাতির ভাষা বিভাগের সংমিশ্রণ না ঘটিয়ে একথা বলা যায় যে, বাংলার প্রাচীন অধিবাসীরা নানা ভাষা-ভাষী লোক ছিল না।
বাংলার প্রাচীনতম অধিবাসীরা সম্ভবত ছিল অস্ট্রিক গোষ্ঠীর অস্ট্রো-এশিয়াটিক জাতির মানুষ। তারা ব্রহ্মদেশে (মায়ানমার) ও শ্যামদেশের (থাইল্যান্ড) মোন এবং কম্বোজের ক্ষের শাখার মানুষের আত্মীয়। এ জাতীয় মানুষকেই বোধ হয় বলা হতো ‘নিষাদ’ কিংবা ‘নাগ’; আর পরবর্তীকালে ‘কোল্ল’, ‘ভিল্ল’ ইত্যাদি। অনুমান করা যেতে পারে, তাদের ভাষাও ছিল অস্ট্রিক গোষ্ঠীর মোন, ক্ষের শাখার ভাষার মতোই। তবে নয় ও দশ শতকের আগে বাংলা ভাষার রূপ সম্পর্কে জানবার উপায় নেই। চর্যাপদ এক্ষেত্রে বাংলা ভাষার প্রাচীনতম সাহিত্যিক নিদর্শন। তাই বলা যায়, আট শতক হতে বারো শতক পর্যন্ত এ পাঁচশত বছরই হলো বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের প্রাচীন যুগ।
প্রাচীন বাংলার ধর্মীয় অবস্থা : প্রাচীন বাংলায় আর্যধর্ম প্রতিষ্ঠার পূর্বে কোন ধর্ম প্রচলিত ছিল, সে সম্পর্কে সঠিক কোনো কিছু জানা যায় না। কারণ সে সকল আদিম অধিবাসীদের ধর্ম-কর্মের ইতিহাস হলো জনপদবদ্ধ প্রাচীন বাংলার ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর লোকদের পূজা-অর্চনা, ভয়-ভক্তি, বিশ্বাস ও সংস্কারের ইতিহাস। তখন দেশব্যাপী ধর্মের প্রকৃতি একই রকম ছিল না। বরং বর্ণ, শ্রেণি, কৌম, জনপদ ইত্যাদির বিভিন্নতার সঙ্গে সঙ্গে ধর্ম-কর্মেও বিভিন্নতা দেখা দিয়েছিল। তদুপরি, তাদের প্রাচীন ধর্মমত, সংস্কার, পূজা-পদ্ধতি প্রভৃতি রূপান্তরিত হয়ে আর্যধর্মের সাথে মিলে গিয়েছে।
প্রাচীন বাংলার আচার-অনুষ্ঠান, উৎসব ও রীতি-নীতি : প্রাচীন বাংলায় পূজা-পার্বন ও আমোদ প্রমোদের প্রচুর ব্যবস্থা ছিল। উমা অর্থাৎ দুর্গার অর্চনা উপলক্ষে বরেন্দ্রে বিপুল উৎসব হতো। বিজয়া দশমীর দিন ‘শাবোরৎসব’ নামে একপ্রকার নৃত্যগীতের অনুষ্ঠান হতো।
এসব পূজা-পার্বণে অনুষ্ঠিত নানাবিধ আমোদ-উৎসব ব্যতীত হিন্দুধর্মের অনেক লৌকিক অনুষ্ঠানও প্রাচীনকালের সামাজিক জীবনে বিশিষ্ট স্থান অধিকার করেছিল।
বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
১. প্রাচীনকাল থেকে বিশ্বখ্যাত কোন কাপড় বাংলায় তৈরি হতো?
ক রেয়ন খ রেশমি মসলিন ঘ পশমি
২. প্রাচীন বাংলার অর্থনীতিকে কৃষি নির্ভর বলা হয়, কেননা এ সময়েÑ
র. বাংলার প্রধান ফসল ছিল ধান
রর. ইক্ষু, তুলা ও পান চাষের জন্য বাংলার খ্যাতি ছিল
ররর. প্রধান অর্থকরী ফসল ছিল পাট
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র খ রর গ রর ও ররর র ও রর
উদ্দীপকটি পড় এবং ৩ ও ৪ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
কবিতা গ্রীষ্মের ছুটিতে মা-বাবার সাথে কুমিল্লার ময়নামতিতে শালবন বিহার পরিদর্শনে যায়। সেখানে গিয়ে লক্ষ করে যে বিহারের মধ্যখানে উঁচু ঢিবির ওপর কেন্দ্রীয় মন্দির, চারপাশে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের জন্য অসংখ্য কক্ষ, দেওয়ালে টেরাকাটা অঙ্কন। সবকিছু মিলিয়ে অপূর্ব প্রাচীন নিদর্শন।
৩. কবিতার দেখা প্রাচীন নিদর্শনের বৈশিষ্ট্যের সাথে প্রাচীন বাংলার কোন নিদর্শনের মিল খুঁজে পাওয়া যায়?
ক ঢাকার আশরাফপুরের খ চট্টগ্রামের ঝেওয়ারির
নওগাঁর পাহাড়পুরের ঘ বাঁকুড়ার বহুলাড়ার
৪. উক্ত প্রাচীন নিদর্শনে যে বৈশিষ্ট্য পরিলক্ষিত হয়, তা হলোÑ
র. বৌদ্ধদের নির্মিত
রর. জ্ঞান সাধনার স্থান
ররর. দেশে বিদেশে যথেষ্ট খ্যাতি রয়েছে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর র, রর ও ররর
সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন- ১ প্রাচীন আমল
টিনা তার বান্ধবীর বড় বোন নীলার বিয়েতে গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে এসেছে। নীলার পিতা গ্রামের সম্পদশালী ব্যবসায়ী। তিনি বিদেশে সুতিবস্ত্র, সিল্ক, ঔষধ, মিহি চাউল রপ্তানি করেন। গ্রামে অনেক কুটির শিল্প গড়ে উঠেছে। দরকারি অনেক জিনিস গ্রামেই তৈরি হয়। গ্রামের লোকেরা এখনও মাটির তৈরি কলস, হাঁড়ি-পাতিল ব্যবহার করে। গ্রামে এখনও যথেষ্ট কৃষি জমি, চারণভ‚মি, হাট বাজার, বন্দর, যানবাহন চলাচলের পথ রয়েছে। এমন একটি গ্রামে বিবাহ অনুষ্ঠানে এসে টিনা মুগ্ধ। বিয়ের দিন টিনা খুব সুন্দর করে সুতির শাড়ি, পায়ে আলতা, কপালে কুমকুম ও মাথায় ওড়না পরে সুন্দর করে চুলের খোপা বেঁধেছে। বিয়ে বাড়িতে ভাত, মাছ, মাংস, সবজি, দধি ও ক্ষীর পরিবেশন করা হয়েছে। খাওয়া-দাওয়া শেষে মসলাযুক্ত পান দেয়া হয়। বিবাহ ও খাবারের শেষে একটি ছোট গানের জলসার আয়োজন ছিল।
ক. আর্যদের ভাষার নাম কী?
খ. কীভাবে বাংলা ভাষার উৎপত্তি হয়েছে?
গ. উদ্দীপকে বর্ণিত খাদ্য ও পোশাক-পরিচ্ছদের সাথে বাংলার কোন আমলের মিল খুঁজে পাওয়া যায়- ব্যাখ্যা কর।
ঘ. ‘নীলাদের গ্রামের আর্থিক কাঠামো তৎকালীন বাংলার প্রতিচ্ছবি’ তুমি কি উক্তিটির সঙ্গে একমত? যুক্তি দাও।
ক আর্যদের ভাষার নাম প্রাচীন বৈদিক ভাষা।
খ অতি প্রাচীন যুগে আর্যরা যে ভাষা ব্যবহার করত এবং যে ভাষায় বৈদিক গ্রন্থ রচিত হয়েছিল সময় ও স্থানভেদে এর অনেক পরিবর্তন ঘটে। এ সংস্কারের ধারায় উদ্ভব ঘটে সংস্কৃত ভাষার। সংস্কৃত হতে প্রাকৃত এবং প্রাকৃত হতে অপভ্রংশ ভাষার উৎপত্তি হয়। অপভ্রংশ ভাষা হতে অষ্টম বা নবম শতকে বাংলা ভাষার সৃষ্টি হয়। অর্থাৎ অপভ্রংশ হতে বাংলা ভাষার উৎপত্তি হয়।
গ উদ্দীপকে বর্ণিত খাদ্য ও পোশাক-পরিচ্ছদের সাথে প্রাচীন বাংলার মিল খুঁজে পাওয়া যায়। প্রাচীন বাংলায় বাঙালির প্রধান খাদ্য বর্তমান সময়ের মতোই ভাত, মাছ, মাংস, সবজি, দধি, ক্ষীর ইত্যাদি ছিল। চাল হতে তৈরি বিভিন্ন প্রকার পিঠাও জনপ্রিয় খাবার ছিল। ইলিশ ও শুঁটকি মাছ খুব জনপ্রিয় খাবার ছিল। দুধ, নারকেলের পানি, ইক্ষুরস, তালরস জনপ্রিয় পানীয় ছিল। পোশাক-পরিচ্ছদের মধ্যে মেয়েরা সুতি শাড়ি, পায়ে আলতা, সিঁদুর, কুমকুম ও নানারকম খোপা বাঁধা ও অনেকে চুড়ি পরতে ভালোবাসত। উদ্দীপকের টিনাও এসব পোশাক-পরিচ্ছদ পরে। পুরুষরা ধুতি চাদর পরতে ভালোবাসত। সুতরাং উদ্দীপকে বর্ণিত খাদ্য ও পোশাক-পরিচ্ছদের সাথে বাংলার প্রাচীন আমলের মিল খুঁজে পাওয়া যায়।
ঘ নীলাদের গ্রামের আর্থিক কাঠামো তৎকালীন বাংলার তথা প্রাচীন বাংলার প্রতিচ্ছবিÑ আমি উক্তিটির সাথে একমত। প্রাচীন বাংলার বেশিরভাগ লোক গ্রামে বাস করত। তখন গ্রামে ছিল কৃষি জমি, চারণভ‚মি, হাটবাজার, বন্দর, যানবাহন চলাচলের পথ। কুটিরশিল্পে প্রাচীন বাংলা অত্যন্ত সমৃদ্ধ ছিল। গ্রামের লোকদের দরকারি সব জিনিসপত্রই গ্রামে তৈরি করা হতো। উদ্দীপকের নীলাদের গ্রামের বর্ণনাও এরূপ। প্রাচীন বাংলায় কৃষি ও শিল্পজাত দ্রব্যের প্রাচুর্য ছিল। বাংলার রপ্তানি পণ্যের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল, সুতি ও রেশম কাপড়, চিনি, গুড়, লবণ, তেজপাতা ও অন্যান্য মসলা, চাল, নারকেল, ওষুধ তৈরির গাছপালা প্রভৃতি। বস্ত্রশিল্পের জন্য বাংলা প্রাচীনকাল থেকেই বিখ্যাত। এছাড়াও অন্নপ্রাশন, বিয়ে, শ্রাদ্ধ, আচার-অনুষ্ঠান সে যুগেও প্রচলিত ছিল। প্রাচীন বাংলার মানুষের যাতায়াতের প্রধান বাহন ছিল গাড়ি ও নৌকা। ধনী লোকেরা হাতি, ঘোড়া, ঘোড়ার গাড়ি প্রভৃতি যাতায়াতের জন্য ব্যবহার করত। তাদের স্ত্রী পরিজনরা নৌকা ও পালকিতে এক স্থান হতে অন্য স্থানে আসা যাওয়া করত। বিবাহের পর নববধূকে গরুর গাড়িতে বা পালকিতে করে শ্বশুরবাড়ি আনা হতো। মোটের ওপর বলা যায় যে, আধুনিককালের গ্রামীণ জীবনযাত্রা এবং সেকালের জীবনযাত্রার মধ্যে খুব বেশি পার্থক্য ছিল না।
প্রশ্ন- ২ জাতিভেদ প্রথা
সৌরভ ব্যানার্জী ও প্রদীপ বণিক দুই বন্ধু এবং একই শহরে বসবাস করে। সৌরভের বাবা কাপড়ের ব্যবসা করেন। তার দোকানে টাঙ্গাইলের তাঁত, রাজশাহীর সিল্ক ও জামদানি শাড়ি বিক্রি হয়। বর্তমানে তিনি সুতি কাপড় ও সিল্ক শাড়ি বিদেশে রপ্তানি করছেন। প্রদীপের বাবা চাউল, চিনি, লবণ, মসলা ইত্যাদির ব্যবসা করেন। তিনি চিনি ও মসলা আমদানি করেন। একদিন প্রদীপ সৌরভদের বাড়িতে যায় এবং তার বোনকে দেখে নিজ বড় ভাইয়ের সাথে বিবাহের প্রস্তাব দেয়। প্রদীপরা সৌরভদের সম্মক নয় বিধায় উক্ত প্রস্তাব বাতিল করে দেন সৌরভের মা-বাবা।
ক. কখন থেকে বাংলায় মুদ্রার প্রচলন আরম্ভ হয়?
খ. প্রাচীন বাংলার মানুষের অবস্থা কেমন ছিল?
গ. সৌরভের বোনের বিয়ের ব্যাপারে তার মা-বাবার মনোভাবে তৎকালীন বাংলার কোন দিকটি ফুটে উঠেছে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. তুমি কি মনে কর, প্রদীপের বড় ভাইয়ের বিয়ের ব্যাপারে যে বাধার সৃষ্টি হয়েছে তা তৎকালীন বাংলার সমাজের অগ্রগতির অন্তরায়? যুক্তি দাও।
ক প্রায় খ্রিষ্টপূর্ব চার শতকের পূর্বে বাংলায় মুদ্রার প্রচলন আরম্ভ হয়।
খ কৃষিপ্রধান দেশ হিসেবে বাংলার অধিকাংশ মানুষ গ্রামে বাস করত। মানুষের জীবন মোটের ওপর সুখের ছিল। তবে প্রাচীন বাংলার গরিব-দুঃখী মানুষের কথাও জানা যায়। তখনকার দিনে বাঙালি পুরুষদের কোনো সুনাম ছিল না। তবে বাঙালি মেয়েদের সুখ্যাতি ছিল। সমাজের উঁচু শ্রেণির অর্থাৎ ব্রাহ্মণদের হাতে ছিল মূল ক্ষমতা। এ সময় শুধু ব্রাহ্মণরাই শাস্ত্রজ্ঞান চর্চা করতে পারত।
গ সৌরভের বোনের বিয়ের ব্যাপারে তার বাবা-মা’র মনোভাবে তৎকালীন বাংলার জাতিভেদ প্রথার দিকটি ফুটে উঠেছে। তৎকালীন সময়ে সাধারণত নিজ জাতির মধ্যেই বিবাহ হতো। ব্রাহ্মণ ছাড়া বাকি সব বর্ণের মানুষ মেলামেশা করতে পারত। সমাজের উঁচুশ্রেণি অর্থাৎ ব্রাহ্মণদের হাতে ছিল মূল ক্ষমতা। উঁচুশ্রেণির মেয়ের সাথে নিম্নশ্রেণির ছেলের বিয়ে প্রচলিত ছিল না। উদ্দীপকেও প্রদীপরা সৌরভদের সম্মক নয় বিধায় বিয়ের প্রস্তাব বাতিল করে দেন সৌরভের মা-বাবা। সমাজে ব্রাহ্মণরাই ছিল উঁচুশ্রেণির লোক। তারা ছিল সর্বোচ্চ মর্যাদার অধিকারী। তাই নিম্নপর্যায়ের কোনো জাতির সাথে ছেলেমেয়েদের বিয়ে দিত না।
উদ্দীপকে সৌরভের মা-বাবার মনোভাবে প্রাচীন বাংলার এই জাতিভেদ প্রথাই ফুটে উঠেছে।
ঘ আমি মনে করি প্রদীপের বড় ভাইয়ের বিয়ের ব্যাপারে যে বাধার সৃষ্টি হয়েছে তা তৎকালীন বাংলার সমাজের অগ্রগতির অন্তরায়।
তৎকালীন সমাজে বিশেষ দিক ছিল জাতিভেদ প্রথা। সমাজে প্রত্যেক জাতির নির্দিষ্ট কাজ ছিল। ব্রাহ্মণরা ছিল সমাজের উঁচু শ্রেণির লোক। তারা ছিল সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী। তাদের মর্যাদা ছিল সবার ওপরে। ব্রাহ্মণদের অত্যাচার সাধারণ মানুষের জীবনকে অতিষ্ঠ করে তোলে। তাদের জাতিভেদ মনোভাব সমাজে অগ্রগতির পথে নানাভাবে বাধার সৃষ্টি করত। সে সময় ব্রাহ্মণরাই শুধু শাস্ত্রজ্ঞান চর্চা করতে পারত। সমাজে অন্যরা জ্ঞান অর্জনের সুযোগ না পাওয়ায় সমাজের অন্য জাতি ছিল অবহেলিত। সুতরাং বলা যায়, ব্রাহ্মণদের মনোভাব তৎকালীন বাংলার সমাজের অগ্রগতির অন্তরায়।
বোর্ড ও সেরা স্কুলের বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
সাধারণ বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
১. পূর্ববঙ্গে মানুষের খুব প্রিয় খাবার ছিল [স. বো. ’১৬]
ক ভাত ও মাছ খ মাংস ও সবজি গ মাংস ও দুধ ইলিশ ও শুঁটকি
২. ওয়ারী-বটেশ্বরে কত বৎসর পূর্বের ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গেছে? [স. বো. ’১৬]
ক ২৩০০ খ ২৪০০ ২৫০০ ঘ ২৬০০
৩. বাংলা ভাষার উদ্ভব সম্পর্কে কোনটি সঠিক? [স. বো. ’১৬]
ক সংস্কৃত অপভ্রংশ প্রাকৃত বাংলা
খ প্রাকৃত সংস্কৃত অপভ্রংশ বাংলা
সংস্কৃত প্রাকৃত অপভ্রংশ বাংলা
ঘ অপভ্রংশ প্রাকৃত সংস্কৃত বাংলা
৪. এখন পর্যন্ত মোট কতটি চর্যাপদ পাওয়া গেছে? [স. বো. ’১৫]
ক ৪৫ খ ৪৬ ৪৭ ঘ ৪৮
৫. বাংলার ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সাথে মিশে যায় কোন জাতি?
[বরগুনা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
ক গৌড় খ আর্য আলপাইন ঘ বাঙালি
৬. বাংলায় মৌর্য শাসন প্রতিষ্ঠার পূর্বে কোন সমাজব্যবস্থা ছিল সর্বেসর্বা?
[ইস্পাহানী পাবলিক স্কুল ও কলেজ, কুমিল্লা সেনানিবাস]
কৌম সমাজ খ কৌলিন্য সমাজ
গ ব্রাহ্মণ সমাজ ঘ কায়স্থ সমাজ
৭. প্রাচীন সমাজে সর্বশ্রেষ্ঠ মর্যাদা লাভ করতেন কারা?
[চুয়াডাঙ্গা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
ব্রাহ্মণরা খ ক্ষত্রিয়রা গ বৈশ্যরা ঘ শূদ্ররা
৮. প্রাচীন বাংলায় ক্ষত্রিয়দের পেশা কী ছিল?
[ইস্পাহানী পাবলিক স্কুল ও কলেজ, কুমিল্লা সেনানিবাস]
ক অধ্যয়ন করা যুদ্ধ করা
গ অধ্যাপনা করা ঘ পূজা-পার্বণ করা
৯. প্রাচীন বাংলায় শূদ্রদের পেশা ছিল নিচের কোনটি?
[ভোলা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
ক ব্যবসা-বাণিজ্য কৃষিকাজ
গ যুদ্ধ ঘ পূজা-পার্বণ পরিচালনা
১০. প্রাচীন বাংলায় ধনসম্পত্তিতে কাদের কোনো আইনগত অধিকার ছিল না? [পাবনা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
ক ছেলে খ পুরুষ গ মা-বাবা নারী
১১. প্রাচীন বাংলায় যাতায়াতের প্রধান মাধ্যম কী ছিল?
[রাজবাড়ী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
গরুর গাড়ি খ শকট গ জাহাজ ঘ বাস
১২. বাংলায় মধ্যযুগের সূচনা শুরু হয় কোন সমাজ প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে?
[ইস্পাহানী পাবলিক স্কুল ও কলেজ, কুমিল্লা সেনানিবাস]
ক হিন্দু মুসলিম গ বৌদ্ধ ঘ খ্রিষ্টান
১৩. প্রাচীন বাংলায় জমির প্রকৃত মালিক ছিল কে?
[চুয়াডাঙ্গা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
ক কৃষক খ মজুর রাজা ঘ বর্গাচাষি
১৪. বিশ্বখ্যাত মসলিন কাপড় বাংলায় তৈরি হয় কোন সময় থেকে?
[ইস্পাহানী পাবলিক স্কুল ও কলেজ, কুমিল্লা সেনানিবাস]
ক মধ্য যুগ খ আধুনিক যুগ গ প্রস্তর যুগ প্রাচীন যুগ
১৫. প্রাচীন বাংলার কত গজ মসলিন একটি নস্যের কৌটায় ভরা যেত?
[চুয়াডাঙ্গা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
ক ১৮ খ ১৯ ২০ ঘ ২১
১৬. প্রাচীনকালের ব্যবসায়-বাণিজ্যের মাধ্যম হিসেবে নিচের কোনটি প্রচলিত ছিল? [বরগুনা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
ক দাসপ্রথা খ করপ্রথা বিনিময় প্রথা ঘ কুপ্রথা
১৭. বর্তমান সময়ে ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্রয়-বিক্রয়ের প্রধান মাধ্যম যেমন টাকা-পয়সা ঠিক তেমনি প্রাচীন বাংলায় কোনটি প্রচলিত ছিল?
[বীণাপাণি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, গোপালগঞ্জ]
ক রুপি বিনিময় প্রথা গ টাকা ঘ বর্ণ প্রথা
১৮. বাংলায় মুদ্রার প্রচলন শুরু হয় কত খ্রিষ্টপূর্ব শতকে?
[বরগুনা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
ক প্রথম খ দ্বিতীয় গ তৃতীয় চতুর্থ
১৯. সোমপুর বিহারটি নির্মিত হয় কত শতকে?
[বীণাপাণি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, গোপালগঞ্জ]
ক সপ্তম অষ্টম গ নবম ঘ দশম
২০. বাংলার সবচেয়ে প্রাচীন মন্দিরটির অবস্থান ছিল কোথায়?
[মেহেরপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, মেহেরপুর]
ক সমতটে খ রাঢ়ে
বর্ধমানে ঘ পুণ্ড্রবর্ধনে
২১. দিনাজপুর জেলার বানগড়ে নির্মিত মন্দিরটি কীসের তৈরি?
[ইস্পাহানী পাবলিক স্কুল ও কলেজ, কুমিল্লা সেনানিবাস]
ক লোহার খ কাঠের গ ব্রোঞ্জের প্রস্তরের
২২. উয়ারী বটেশ্বর কোথায় অবস্থিত? [চুয়াডাঙ্গা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
ক সাভারে খ গাজীপুরে নরসিংদীতে ঘ মানিকগঞ্জে
২৩. বিষ্ণুর রেখাচিত্রটি পাওয়া যায় কোন তাম্রশাসনে?
[মেহেরপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
ডোম্মনপালের খ ধর্মপালের গ দেবপালের ঘ মহীপালের
২৪. শ্যামদেশ এর বর্তমান নাম কী? [কালেক্টরেট স্কুল, ঠাকুরগাঁও]
ক ইরান খ বাহরাইন থাইল্যান্ড ঘ মায়ানমার
২৫. বাংলার প্রাচীনতম অধিবাসীরা কোন গোষ্ঠীর মানুষ?
[রাজবাড়ী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
ক নিষাদ খ কোল অস্ট্রিক ঘ ভিল
২৬. আর্যদের ভাষার নাম কী?
[আল হেরা একাডেমি, পাবনা; বাজবাড়ী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
ক তামিল খ তেলেগু বৈদিক ঘ অস্ট্রিক
২৭. বর্তমান পর্যন্ত মোট কতটি চর্যাপদ পাওয়া গেছে?
[বরগুনা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
ক ৪৫ খ ৪৬ ৪৭ ঘ ৪৮
২৮. আর্যাবতে সবচেয়ে প্রাচীন শৈব স¤প্রদায় কোনটি?
[বীণাপাণি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, গোপালগঞ্জ]
ক বৈষ্ণব খ ব্রাহ্মণ গ জৈন পশুপতি
২৯. জৈনধর্মের প্রভাব কমে এসেছিল কোন যুগের শুরুতে?
[ইস্পাহানী পাবলিক স্কুল ও কলেজ, কুমিল্লা সেনানিবাস]
ক মৌর্য পাল গ গুপ্ত ঘ সেন
৩০. ষষ্ঠ শতকে বাংলার কোথায় অসংখ্য বৌদ্ধ বিহার ছিল?
[ইস্পাহানী পাবলিক স্কুল ও কলেজ, কুমিল্লা সেনানিবাস]
ক বগুড়ায় খ রংপুরে গ নওগাঁয় কুমিল্লায়
৩১. ময়নামতি কোথায় অবস্থিত? [রাজবাড়ী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
ক রাজশাহী কুমিল্লা গ নটোর ঘ বগুড়া
৩২. শালবন বিহার নির্মাণ করেন কে? [বরগুনা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
ক অতীশ দীপঙ্কর খ অশোক শ্রীভবদেব ঘ শশাঙ্ক
৩৩. দ্বাদশ শতকের শেষদিকে প্রথমে মগধ ও পরে উত্তর বাংলার বৌদ্ধ বিহার ও মন্দিরগুলো ধ্বংস হয় কীভাবে?
[বীণাপাণি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, গোপালগঞ্জ]
ক গ্রিক আক্রমণের ফলে খ পারসিক আক্রমণের ফলে
তুর্কি আক্রমণের ফলে ঘ আফগান আক্রমণের ফলে
৩৪. বৌদ্ধধর্মের প্রধান কেন্দ্র ছিল কোনটি? [কুষ্টিয়া সরকারি বালিকা বিদ্যালয়]
ক হরি সংঘ খ বুদ্ধ সংঘ বৌদ্ধ সংঘ ঘ বৌদ্ধ বিহার
৩৫. প্রাচীন বাংলার উৎসবসমূহ মূলত গড়ে ওঠে কোন বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে? [কুষ্টিয়া সরকারি বালিকা বিদ্যালয়]
ক দিন খ মাস গ তিথি ধর্ম
বহুপদী সমাপ্তিসূচক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
৩৬. চীন দেশের ভ্রমণকারী হলেন [রাজবাড়ী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
র. লামা তারানাথ
রর. ফা-হিয়েন
ররর. হিউয়েন-সাং
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর
রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৩৭. বহু ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ইটের তৈরি স্তূপ পাওয়া গেছে
[বীণাপাণি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, গোপালগঞ্জ]
র. শাহাজানপুরের বড়বিলে
রর. রাজশাহীর পাহাড়পুরে
ররর. বাঁকড়ার বহুলাড়ায়
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর
রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৩৮. নিগ্রহন্ত নামটি সমর্থনযোগ্য [পাবনা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
র. জৈনধর্মের লোকদের ক্ষেত্রে
রর. তেরো শতকে বাংলায় এ সংঘের অস্তিত্ব ছিল
ররর. সপ্তম শতকে উত্তর, দক্ষিণ ও পূর্ববঙ্গে নিগ্রহন্ত জৈনদের প্রভাব সবচেয়ে বেশি ছিল
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর র, রর ও ররর
বিষয়ক্রম অনুযায়ী বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
ভ‚মিকা বোর্ড বই, পৃষ্ঠা- ৪৪
সাধারণ বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
৩৯. মানুষকে সামাজিক জীব বলা হয় কেন? (অনুধাবন)
সমাজবদ্ধভাবে বাস করে বলে
খ বিভিন্ন স্থানে বাস করে বলে
গ সকলের উদ্দেশ্য একই বলে
ঘ উদার ধার্মিক মনোভাবের কারণে
৪০. বাংলার আদি জনপদের মানুষরা কখন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক জীবন গড়ে তুলেছিল? (জ্ঞান)
ক আর্য যুগে আর্যদের আগমনের পূর্বে
গ মুসলিম যুগে ঘ গুপ্ত যুগে
৪১. ‘সংকর-জন’ হিসেবে পরিচিত কারা? (অনুধাবন)
ক আর্যরা খ ক্ষত্রিয়রা
বাঙালিরা ঘ অস্ট্রিকরা
৪২. অধিকাংশ বাঙালির মাথা কীরূপ? (অনুধাবন)
গোল খ লম্বা
গ চ্যাপ্টা ঘ চৌকোণা
প্রাচীন বাংলার সামাজিক জীবন বোর্ড বই, পৃষ্ঠা- ৪৪
আর্য সমাজে অত্যন্ত জনপ্রিয় অঙ্গ ছিল জাতিভেদ প্রথা।
প্রাচীন বাংলার সমাজে প্রচলিত ছিল ‘সতীদাহ প্রথা’।
প্রাচীন বাংলার মানুষের যাতায়াতের প্রধান বাহন ছিল গরুর গাড়ি ও নৌকা।
কৃষি প্রধান দেশ হিসেবে বাংলার অধিকাংশ মানুষ গ্রামে বাস করত।
প্রাচীন সমাজে মূল ক্ষমতা ছিল সমাজের উঁচু শ্রেণি অর্থাৎ ব্রাহ্মণদের হাতে।
প্রাচীন সমাজে মানুষ অত্যন্ত অসন্তুষ্ট হয়ে ওঠে ব্রাহ্মণদের প্রভাবে।
সেন আমলে হিন্দু সমাজ দুর্বল হয়ে পড়ে ব্রাহ্মণদের প্রভাবে।
প্রাচীন সমাজব্যবস্থায় সবচেয়ে নিচু শ্রেণি ছিল শূদ্ররা।
প্রাচীনকালে শুধুমাত্র জ্ঞানচর্চা করত ব্রাহ্মণরা।
প্রাচীন বাংলার সমাজকে বলা হয় কৌম সমাজ।
সাধারণ বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
৪৩. মৌর্য শাসনের পূর্বে বাঙালির রাজনৈতিক পরিচয় ফুটে ওঠেনি। এর কারণ কী? (উচ্চতর দক্ষতা)
ক রাজনৈতিক ধারণার অভাব ছিল
খ শিক্ষা অপ্রচলিত ছিল
সমাজ বিভিন্ন গোত্রে বিভক্ত ছিল
ঘ সামাজিক ধারণা অপ্রচলিত ছিল
৪৪. রহিম একটি পত্রিকায় দেখল ‘অ’ সমাজের প্রধান বৈশিষ্ট্যই জাতিভেদ প্রথা। এখানে ‘অ’ কোন সমাজকে নির্দেশ করে? (প্রয়োগ)
আর্য খ ব্রাহ্মণ গ পৌরাণিক ঘ বৌদ্ধ
৪৫. কারা শুধু শাস্ত্রজ্ঞান চর্চা করতে পারতেন? (জ্ঞান)
ক অস্ট্রিক ব্রাহ্মণ গ ক্ষত্রিয় ঘ শূদ্র
৪৬. অজন্তা বাবার কাছ থেকে জানতে পারল প্রাচীনকালে শুধু একটি স¤প্রদায় শাস্ত্রজ্ঞান চর্চা করতে পারত। স¤প্রদায়টি কী? (প্রয়োগ)
ব্রাহ্মণ খ ক্ষত্রিয় গ শূদ্র ঘ আর্য
৪৭. প্রাচীনকালে সমাজের উঁচু শ্রেণি বলতে কাদের বোঝানো হতো? (অনুধাবন)
ব্রাহ্মণদের খ বৌদ্ধদের গ আর্যদের ঘ শূদ্রদের
৪৮. সমাজে ব্রাহ্মণদের মর্যাদা অধিক ছিল কেন? (অনুধাবন)
ক ব্যবসা-বাণিজ্য তাদের নিয়ন্ত্রণে ছিল বলে
পূজা-পার্বণ, অধ্যাপনা তাদের দায়িত্ব ছিল বলে
গ তাদের শক্তি বেশি ছিল বলে
ঘ তাদের টাকা-পয়সা ছিল বলে
৪৯. মি. মজুমদার ক্লাসে বললেন ‘ই’ বর্ণ ছাড়া প্রাচীন বাংলায় প্রায় সকল বর্ণের মানুষ পরস্পরের সাথে মেলামেশা করত। ‘ই’ দ্বারা কী নির্দেশ করা হয়েছে? (প্রয়োগ)
ক ক্ষত্রিয় ব্রাহ্মণ গ বৈশ্য ঘ শূদ্র
৫০. ব্রাহ্মণ ছাড়া মানুষ সব বর্ণের মানুষের সাথে মেলামেশা করত। এটি কী প্রমাণ করে? (উচ্চতর দক্ষতা)
ব্রাহ্মণই ছিল সমাজের নেতা খ ব্রাহ্মণরা আলাদা স্থানে বাস করত
গ ব্রাহ্মণরা অন্যদের ভালোবাসত না ঘ ব্রাহ্মণরা নিচু শ্রেণির ছিল
৫১. বাকের তার স্ত্রীকে ঘর থেকে বের হতে না দিলে জুম্মন মাস্টার বাকেরকে বলেন তুমি প্রাচীন যুগের ন্যায় কাজ করেছ। জুম্মন মাস্টার এখানে প্রাচীন যুগের কোন বিষয়টিকে ইঙ্গিত করেছেন? (উচ্চতর দক্ষতা)
ক নারীর ওপর অত্যাচার মেয়েদের স্বাধীনতা খর্ব
গ মেয়েদের কাজ করার ইঙ্গিত ঘ স্বামীর স্বাধীনতা খর্ব
৫২. বিধবাকে নিরামিষ আহার করে সব ধরনের বিলাসিতা ত্যাগ করতে হতো কেন? (অনুধাবন)
ক সহমরণ প্রথার জন্য স্বামীর মৃত্যুর জন্য
গ সম্পত্তিতে অধিকারের জন্য ঘ পূজা পালন করার জন্য
৫৩. নববধূ শিখা রাণীকে গ্রামের লোকেরা স্বামীর মৃত্যুর পর স্বামীর চিতায় সহমরণে যেতে বাধ্য করে। এটি প্রাচীনকালের কোন প্রথাকে নির্দেশ করে? (প্রয়োগ)
ক বিধবা বিবাহ খ দশহরা সতীদাহ প্রথা ঘ অবরোধ
৫৪. প্রাচীন পূর্ববঙ্গে মানুষের খুব প্রিয় খাবার কী ছিল? (অনুধাবন)
ইলিশ ও শুঁটকি খ নিরামিষ ও ভাত
গ পিঠা ও মুখরোচক খাবার ঘ ভাত ও মাংস
৫৫. পূর্ববঙ্গে খাওয়া-দাওয়া শেষে মসলাযুক্ত পান খাওয়ার রীতি ছিল কোন যুগে? (জ্ঞান)
ক আর্য যুগে প্রাচীন যুগে গ মধ্য যুগে ঘ পাল যুগে
৫৬. প্রাচীন যুগে বাংলার নর-নারীরা কী পরিধান করত? (অনুধাবন)
ক লুঙ্গি ও ফুঙ্গি খ পায়জামা ও ওড়না
ধূতি ও শাড়ি ঘ ধূতি ও মেক্সি
৫৭. প্রাচীন বাংলার পুরুষদের সাধারণ পোশাক কী ছিল? (জ্ঞান)
ক লুঙ্গি ধূতি গ পায়জামা ঘ প্যান্ট
৫৮. বিথি একটি যাত্রাপালা অনুষ্ঠানে গিয়ে দেখল নায়ক-নায়িকারা কানে কুণ্ডল, গলায় হার, আঙুলে আংটি, হাতে বালা ও পায়ে মল পরিধান করেছে। যাত্রাপালায় কোন যুগ প্রতিবিম্বিত হয়েছে? (প্রয়োগ)
ক তাম্র খ মধ্য গ পাল প্রাচীন
৫৯. জয়া বাবার পায়ে কাঠের খড়ম দেখে অবাক হলে বাবা তাকে বলেন এরকম জুতা পূর্বযুগেও ছিল। এখানে পূর্বের যুগ বলতে জয়ার বাবা কোনটিকে বুঝিয়েছেন? (উচ্চতর দক্ষতা)
প্রাচীন যুগ খ বৈদিক যুগ
গ তাম্র যুগ ঘ মধ্যযুগ
৬০. প্রাচীন বাংলার প্রচলিত খেলা কোনটি? (জ্ঞান)
দাবা খ হা-ডু-ডু গ ক্রিকেট ঘ ফুটবল
৬১. প্রাচীনকালে জনগণের জীবনে কিসের প্রবল প্রভাব ছিল? (জ্ঞান)
ক উৎসবের খ সংস্কৃতির
গ গান-বাজনার ধর্মশাস্ত্রের
৬২. মানুষ ছোট ছোট খাল পার হতো কী দিয়ে? (জ্ঞান)
ক সেতু খ নৌকা সাঁকো ঘ ব্রিজ
৬৩. প্রাচীন বাংলায় নববধূকে কীসে করে শ্বশুর বাড়িতে আনা হতো? (জ্ঞান)
পালকিতে খ বাসে
গ মাইক্রোতে ঘ নৌকায়
৬৪. প্রাচীন বাংলার অধিকাংশ মানুষ গ্রামে বাস করত কেন? (অনুধাবন)
কৃষি প্রধান দেশ বলে খ অধিকাংশ মানুষ শিক্ষিত বলে
গ গ্রামে বসবাসের সুবিধা বলে ঘ গ্রামের আবহাওয়া ভালো বলে
৬৫. প্রাচীনকালে অধিকাংশ লোক কোথায় বাস করত? (জ্ঞান)
ক শহরে গ্রামে গ বন্দরে ঘ নগরে
৬৬. সেন রাজাদের শাসনামলে সাধারণ মানুষের জীবন অতিষ্ঠ হওয়ার মূল কারণ কোনটি? (উচ্চতর দক্ষতা)
ক জমিদারদের অত্যাচার খ আর্যদের অত্যাচার
গ বৌদ্ধদের অত্যাচার ব্রাহ্মণদের অত্যাচার
৬৭. সেন যুগে বৌদ্ধ সংস্কৃতিতে দুর্দশা নেমে আসে। এর কারণ কী হতে পারে বলে তুমি মনে কর? (উচ্চতর দক্ষতা)
সেনরা বৌদ্ধবিদ্বেষী ছিল
খ বৌদ্ধ সমাজ নিম্নবর্ণের ছিল
গ বৌদ্ধ সমাজের সাথে বিরোধ ছিল
ঘ বৌদ্ধরা কম শক্তিশালী ছিল
৬৮. ব্রাহ্মণদের অত্যাচার কোন ধর্মাবলম্বীদের প্রতি বেশি হতো? (জ্ঞান)
বৌদ্ধ খ পৌরাণিক গ বৈদিক ঘ জৈন
৬৯. প্রাচীন বাংলায় সাধারণ মানুষ অত্যন্ত অসন্তুষ্ট হয়ে ওঠে কেন? (অনুধাবন)
সেন রাজাদের অত্যাচারে খ পাল রাজাদের অত্যাচারে
গ ব্রাহ্মণ রাজাদের অত্যাচারে ঘ বৌদ্ধদের অত্যাচারে
৭০. কোন আমলে বৌদ্ধ সংস্কৃতিতে দুর্দশা নেমে আসে? (জ্ঞান)
ক পাল সেন গ আর্য ঘ গুপ্ত
৭১. কাদের প্রভাবে হিন্দুসমাজ দুর্বল হয়ে পড়ে? (জ্ঞান)
ব্রাহ্মণ খ অস্ট্রিক গ শূদ্র ঘ ক্ষত্রিয়
৭২. প্রাচীন বাংলায় ব্রাহ্মণদের প্রভাবে কোনটি ঘটে? (উচ্চতর দক্ষতা)
ক বৌদ্ধদের প্রভাব বেড়ে যায়
খ অভিজাতদের ক্ষমতা কমে যায়
সাধারণ হিন্দু সমাজ বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে
ঘ মুসলমানদের পতন হয়
৭৩. সেন যুগের শেষ দিকে বাংলায় মুসলমানদের উত্থান ঘটে। এর যথার্থ কারণ কী? (উচ্চতর দক্ষতা)
ক মুসলমানরা শক্তিশালী ছিল খ সেনরা দুর্বল ছিল
গ সেনরা অসুস্থ হয়ে পড়ছিল সমাজে বিশৃঙ্খলা ছিল
৭৪. বিপ্লব তার বন্ধুকে বলল ‘ঢ’ সমাজ প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে বাংলায় মধ্যযুগের সূচনা হয়। ‘ঢ’ কোনটিকে নির্দেশ করে? (প্রয়োগ)
মুসলিম সমাজ খ হিন্দু সমাজ
গ বৌদ্ধ সমাজ ঘ ব্রাহ্মণ সমাজ
বহুপদী সমাপ্তিসূচক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
৭৫. ব্রাহ্মণরা সকলের সাথে মেলামেশা করত না। কারণ (অনুধাবন)
র. অহংকারের জন্য
রর. নিজেদের মর্যাদা রক্ষার জন্য
ররর. জাত নষ্ট হওয়ার জন্য
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৭৬. প্রাচীন বাংলায় পুরুষেরা- (অনুধাবন)
র. মালকোচা দিয়ে ধূতি পরত
রর. ধূতি হাঁটুর নিচে নামত না
ররর. মাঝে মাঝে শাড়ি পরত
নিচের কোনটি সঠিক?
র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৭৭. প্রাচীন যুগে মেয়েদের সাজসজ্জায় ব্যবহৃত হতো- (অনুধাবন)
র. আলতা
রর. সিঁদুর
ররর. কুমকুম
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর র, রর ও ররর
৭৮. বাদ্যযন্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হতোÑ (অনুধাবন)
র. মৃদঙ্গ
রর. মাটির পাত্র
ররর. করতাল
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর র, রর ও ররর
৭৯. প্রাচীন বাংলায় বেশি প্রচলন ছিল (অনুধাবন)
র. গান
রর. নাচ
ররর. অভিনয়
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর র, রর ও ররর
৮০. নারীদের মধ্যে প্রচলন ছিলÑ (অনুধাবন)
র. উদ্যান রচনা
রর. জলক্রীড়া
ররর. হা-ডু-ডু
নিচের কোনটি সঠিক?
র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৮১. প্রাচীনকালে মেয়েদের সাজসজ্জায় ব্যবহার হতো (অনুধাবন)
র. কাঠের খড়ম
রর. আলতা
ররর. কুমকুম
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৮২. প্রাচীন বাংলায় যাতায়াতের প্রধান বাহন ছিল- (অনুধাবন)
র. গরুর গাড়ি
রর. বাস
ররর. নৌকা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৮৩. গরুর গাড়ির অনেক কদর থাকার কারণ (অনুধাবন)
র. নববধূকে শ্বশুরবাড়িতে আনার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হতো
রর. যাতায়াতের প্রধান মাধ্যম ছিল
ররর. দ্রæত যাতায়াত করা যেত
নিচের কোনটি সঠিক?
র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৮৪. খালবিলে চলাচলের জন্য ব্যবহার করা হতোÑ (অনুধাবন)
র. ভেলা
রর. ডোঙ্গা
ররর. নৌকা
নিচের কোনটি সঠিক?
র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৮৫. বিবাহের পর নববধূকে শ্বশুরবাড়িতে আনা হতোÑ (অনুধাবন)
র. গরুর গাড়িতে
রর. পালকিতে
ররর. নৌকায়
নিচের কোনটি সঠিক?
র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৮৬. প্রাচীনকালে ধনী লোকেরা যাতায়াতের জন্য ব্যবহার করতÑ (অনুধাবন)
র. হাতি
রর. ঘোড়া
ররর. ঘোড়ার গাড়ি
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর র, রর ও ররর
৮৭. প্রাচীনকালে শিশুর জন্মের পূর্বে যেসব উপাচার পালন করা হতো (অনুধাবন)
র. গর্ভাধান
রর. অন্নপ্রাশন
ররর. সীমন্তোন্নয়ন
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
অভিন্ন তথ্যভিত্তিক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ে ৮৮ ও ৮৯ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
তমালের ইলিশ ও শুঁটকি খুব প্রিয়। কিন্তু সে ডাল খায় না।
৮৮. তমালের না খাওয়া খাদ্যদ্রব্যটি পাওয়া যেত না কোন যুগে? (প্রয়োগ)
ক মধ্যযুগ প্রাচীন যুগ গ আর্য যুগ ঘ মৌর্য যুগ
৮৯. তমালের প্রিয় খাবার, প্রিয় ছিল (উচ্চতর দক্ষতা)
র. পাল যুগের মানুষের
রর. মৌর্য যুগের
ররর. গুপ্তযুগের মানুষের
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর র, রর ও ররর
নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ে ৯০ ও ৯১ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
শ্রী বাহরামের বয়স সত্তর বছর। তিনি বারো মাসে তেরো পার্বণ পালন করেন। এ বছর তার এক নাতি জন্ম নিলে জাতকর্ম, নামকরণ ও অন্নপ্রাশন করার নির্দেশ দেন।
৯০. শ্রী বাহরামের বারো মাসে তেরো পার্বণ পালন বাংলার কোন যুগের সামাজিক আচার? (প্রয়োগ)
প্রাচীন খ মধ্য গ আধুনিক ঘ গুপ্ত
৯১. শ্রী বাহরামের নাতির জন্মের আনুষ্ঠানিকতা মূলত- (উচ্চতর দক্ষতা)
র. লোকাচার
রর. আনুষ্ঠানিকতা
ররর. দশবিধ সংস্কার
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
প্রাচীন বাংলার অর্থনৈতিক অবস্থা
বোর্ড বই, পৃষ্ঠা- ৪৬
প্রাচীন বাংলার বেশির ভাগ অধিবাসীরা গ্রামে বাস করত।
প্রাচীনকালে জমি মাপা হতো নল দিয়ে।
প্রাচীনকালের অর্থনীতি ছিল কৃষি নির্ভর।
প্রাচীন বাংলায় অত্যন্ত সমৃদ্ধ ছিল কুটিরশিল্প।
প্রাচীনকাল হতেই বাংলায় তৈরি হতো মসলিন কাপড়।
বাংলার বিভিন্ন স্থানে গড়ে ওঠে নগর ও বাণিজ্য বন্দর।
বাংলায় ক্রয়-বিক্রয় ও ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য প্রচলিত ছিল বিনিময় প্রথা।
প্রাচীন বাংলায় মুদ্রার প্রচলন হয় খ্রিষ্টপূর্ব চারশতকের পূর্বে।
প্রাচীন বাংলায় তিন ধরনের ভ‚মি ব্যবস্থা ছিল।
প্রাচীন বাংলায় প্রাচুর্য ছিল শিল্প ও কৃষি দ্রব্যের।
বঙ্গদেশের প্রধান উৎপাদিত ফসল ছিল ধান।
প্রাচীন বাংলায় ব্যবহৃত সবচেয়ে কম মানের মুদ্রা ছিল কড়ি।
সাধারণ বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
৯২. প্রাচীন বাংলায় কত ধরনের ভ‚মি ছিল? (জ্ঞান)
ক ২ খ ৫ ৩ ঘ ৪
৯৩. ঘর-বাড়ি তৈরি করে থাকার জন্য উপযুক্ত জমিকে কী বলা হতো? (জ্ঞান)
ক নল খ খিল গ ক্ষেত্র বাস্তু
৯৪. উর্বর অথচ পতিত জমিকে কী বলা হতো? (জ্ঞান)
খিল খ নল গ ক্ষেত্র ঘ বাস্তু
৯৫. প্রাচীন বাংলায় কী দিয়ে জমি মাপা হতো? (জ্ঞান)
নল খ ফিতা গ রশি ঘ যন্ত্র
৯৬. প্রাচীন বাংলায় অর্থনীতির প্রধান উৎস কী? (জ্ঞান)
কৃষি খ শিল্প
গ বাণিজ্য ঘ চিনা মাটির শিল্প
৯৭. প্রাচীন বাংলায় প্রধান ফসল কী ছিল? (জ্ঞান)
ধান খ গম গ পাট ঘ তুলা
৯৮. কুটির শিল্পে প্রাচীন বাংলা সমৃদ্ধ থাকার কারণ কী? (অনুধাবন)
কৃষির পরে কুটিরশিল্পই ছিল প্রধান অর্থনৈতিক ব্যবস্থা
খ গ্রামের লোকদের প্রয়োজনীয় সবকিছুই গ্রামে তৈরি হতো
গ কুটির শিল্পের পণ্যের অনেক কদর ছিল
ঘ শহুরে লোকদের প্রয়োজনে কুটির শিল্প ভ‚মিকা রেখেছিল
৯৯. কুটিরশিল্পে বাংলা অত্যন্ত সমৃদ্ধ ছিল। এর কারণ তোমার কী মনে হয়? (উচ্চতর দক্ষতা)
ক কুটিরশিল্পের ওপর সকল মানুষ নির্ভরশীল
প্রয়োজনীয় সবকিছুই গ্রামে তৈরি হতো
গ সর্বত্র কলকারখানা গড়ে উঠেছিল
ঘ উৎপাদিত পণ্য ছিল রপ্তানিমুখী
১০০. প্রাচীনকালে বাংলা কোন শিল্পের জন্য বিখ্যাত ছিল? (জ্ঞান)
ক কাগজ খ পাট গ চিনি বস্ত্র
১০১. মসলিন শাড়ি কেমন ছিল? (জ্ঞান)
খুবই সূ² ও মসৃণ খ কারুকার্যময়
গ আভিজাত্যময় ঘ খুবই বড়
১০২. কোনটির উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে প্রাচীন বাংলায় বাণিজ্য যথেষ্ট প্রসার লাভ করে? (জ্ঞান)
শিল্প খ কৃষি গ ব্যবসা ঘ যোগাযোগ
১০৩. শিল্পের উন্নতির সাথে সাথে বাংলার বাণিজ্যও প্রসার লাভ করেছিল। এর প্রমাণ কোনটি? (অনুধাবন)
ক বাংলায় কৃষিক্ষেত্রের অভাব ছিল
খ বহির্বাণিজ্যে শাসকদের পৃষ্ঠপোষকতা ছিল
গ বঙ্গে কৃষির অনেক প্রাচুর্য ছিল
স্থল ও জলপথে বাণিজ্য প্রচলিত ছিল
বহুপদী সমাপ্তিসূচক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
১০৪. প্রাচীনকাল থেকেই বাংলা কৃষির জন্য প্রসিদ্ধ ছিল। কারণÑ(উচ্চতর দক্ষতা)
র. শিল্প-বাণিজ্যে বাঙালিরা অজ্ঞ ছিল
রর. ধান, পাট, সরিষা ইত্যাদির জন্য বাংলার খ্যাতি ছিল
ররর. বাংলার অর্থনীতি কৃষির ওপর নির্ভর করে গড়ে উঠেছে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
১০৫. ফলবান বৃক্ষ হচ্ছেÑ (অনুধাবন)
র. আম
রর. কাঁঠাল
ররর. সুপারি
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর র, রর ও ররর
১০৬. গৃহপালিত পশুর মধ্যে রয়েছেÑ (অনুধাবন)
র. গরু
রর. ছাগল
ররর. কুকুর
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর র, রর ও ররর
১০৭. বস্ত্রশিল্পের জন্য বাংলা বিখ্যাত থাকার কারণ (অনুধাবন)
র. কার্পাস, তুলা ও রেশমের তৈরি কাপড়ের জন্য
রর. জামদানি কাপড়ের জন্য
ররর. বিখ্যাত মসলিন বাংলাতেই তৈরি হতো
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
১০৮. প্রাচীনকালে কাঠের শিল্পও উন্নত ছিল। সে সময় কাঠের দ্বারা তৈরি হতো (প্রয়োগ)
র. রথ
রর. মন্দির
ররর. বাসনপত্র
নিচের কোনটি সঠিক?
র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
১০৯. বঙ্গের রপ্তানি পণ্যের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলÑ (অনুধাবন)
র. সুতি ও রেশমি কাপড়
রর. তেজপাতা ও অন্যান্য মসলা
ররর. চিনি ও লবণ
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর র, রর ও ররর
১১০. বাণিজ্যের আদান-প্রদান চলতÑ (অনুধাবন)
র. স্থলপথে
রর. জলপথে
ররর. আকাশ পথে
নিচের কোনটি সঠিক?
র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
১১১. সমুদ্র পথে বাংলার পণ্য বিনিময় চলতÑ (অনুধাবন)
র. সিংহলের সাথে
রর. চম্পার সাথে
ররর. চীনের সাথে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর র, রর ও ররর
১১২. স্থলপথে বাংলার পণ্য বিনিময় চলতÑ (অনুধাবন)
র. চীন
রর. নেপাল
ররর. তিব্বত
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর র, রর ও ররর
১১৩. স্থল ও জলপথে ভারতের অন্যান্য অঞ্চলের সঙ্গে বাংলার পণ্য বিনিময় চলার কারণে গড়ে উঠেছিল (অনুধাবন)
র. বড় বড় নগর
রর. বাণিজ্য বন্দর
ররর. বড় বড় গ্রাম
নিচের কোনটি সঠিক?
র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
অভিন্ন তথ্যভিত্তিক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ে ১১৪ ও ১১৫ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
শাহিন তার বাবার কাছে এক ধরনের শিল্পের কথা জানতে পারে যার জন্য তার গ্রাম প্রসিদ্ধ হয়েছিল।
১১৪. অনুচ্ছেদে কোন শিল্পের কথা বলা হয়েছে? (প্রয়োগ)
কুটিরশিল্প খ বস্ত্র শিল্প গ পাট শিল্প ঘ চিনি শিল্প
১১৫. উক্ত শিল্পের প্রসিদ্ধি লাভের কারণ- (উচ্চতর দক্ষতা)
র. উৎপাদিত পণ্য বিদেশে সমাদৃত ছিল
রর. স্থানীয় উপাদান সহজপ্রাপ্য ছিল
ররর. রাজাদের সহযোগিতা ছিল
নিচের কোনটি সঠিক?
র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ে ১১৬ ও ১১৭ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
আবির জাতীয় জাদুঘর পরিদর্শন করে জানতে পারল প্রাচীনকালে অ নামের কাপড়ের খুবই সমাদর ছিল।
১১৬. অনুচ্ছেদে অ দ্বারা কোন কাপড়কে নির্দেশ করা হয়েছে? (প্রয়োগ)
মসলিন খ জামদানি গ রেশমি ঘ পত্রৌর্ন
১১৭. উক্ত কাপড়Ñ (উচ্চতর দক্ষতা)
র. খুব সূ² ছিল
রর. সাদা বর্ণের ছিল
ররর. ২০ গজ একটি নস্যের কৌটায় ভরা যেত
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
শিল্পকলা ও স্থাপত্য-ভাস্কর্য বোর্ড বই, পৃষ্ঠা- ৪৮
ভারত উপমহাদেশের প্রাচীন স্থাপত্যের নিদর্শন হলো স্তূপ।
বিহারের রূপের পরিবর্তন হয় পাল যুগে।
প্রাচীন বাংলা স্থাপত্যের শ্রেষ্ঠ নিদর্শন পাহাড়পুর বিহার।
পাহাড়পুর বিহার নির্মাণ করেন রাজা ধর্মপাল।
অতি স¤প্রতি প্রায় আড়াই হাজার বছরের প্রাচীন এক নগর সভ্যতার ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গেছে যার নাম উয়ারী-বটেশ্বর।
ব্রিটিশ শাসনামলে নির্মিত অসংখ্য দৃষ্টিনন্দন মন্দির ও মসজিদ হলো বিক্রমপুরের ঐতিহ্য।
বাংলার নিজস্ব ভাস্কর্য শিল্পের পরিচয় মেলে পাহাড়পুর মন্দিরের গায়ে খোদিত পাথর ও পোড়ামাটির ফলক হতে।
রাম-নারায়ণ ও কৃষ্ণলীলার অনেক কথা খোদিত আছে পাহাড়পুর বিহারে।
পোড়ামাটির ফলক ও মূর্তি আবিষ্কৃত হয়েছে লালমাই পাহাড়ে।
প্রাচীন বাংলার শিল্পকলার ক্ষেত্রে স্মরণীয় পাল যুগ।
বিশ্ববিখ্যাত বাঙালি বৌদ্ধধর্ম প্রচারক হলেন অতীশ দীপংকর।
বাংলার চিত্রশিল্পের শ্রেষ্ঠ নিদর্শন ‘অষ্টসাহস্রিকা প্রজ্ঞাপারমিতা’ পুঁথি।
সাধারণ বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
১১৮. ফাহিয়েন ও হিউয়েন সাং কোন দেশের ভ্রমণকারী ছিলেন? (জ্ঞান)
ক জাপানের চীনের গ জার্মানির ঘ ইতালির
১১৯. ভারতীয় উপমহাদেশের সবচেয়ে প্রাচীন নিদর্শন কী ছিল? (জ্ঞান)
স্ত‚প খ মন্দির গ বিহার ঘ চর্যাপদ
১২০. বাংলার স্থাপত্যের প্রাচীন নিদর্শন বৌদ্ধ স্তূপ। এই স্তূপ কীসের ওপর তৈরি করা হতো? (উচ্চতর দক্ষতা)
বৌদ্ধদের দেহাবশেষের ওপর
খ বৌদ্ধদের বাসস্থানের ওপর
গ বৌদ্ধদের ব্যবহৃত জিনিসপত্রের ওপর
ঘ বৌদ্ধদের পুরাতন মন্দিরের ওপর
১২১. কোন ধর্ম যেখানেই প্রসার লাভ করেছে সেখানেই ছোট বড় স্ত‚প নির্মিত হয়েছে? (জ্ঞান)
বৌদ্ধ খ হিন্দু গ জৈন ঘ শিখ
১২২. মৃদুল চক্রবর্তী বিহারের রূপের পরিবর্তন নিয়ে আলোচনা করছেন। তিনি কোন যুগ সম্পর্কে আলোচনা করছেন? (প্রয়োগ)
ক মৌর্য পাল গ ক্ষত্রিয় ঘ সেন
১২৩. কত শতকে ধর্মপাল পাহাড়পুরে প্রকাণ্ড বিহার নির্মাণ করেন? (জ্ঞান)
ক পঞ্চম খ ষষ্ঠ গ সপ্তম অষ্টম
১২৪. সোমপুর বিহার কোথায় অবস্থিত? (জ্ঞান)
পাহাড়পুরে খ ময়নামতিতে
গ দিনাজপুরে ঘ বগুড়ায়
১২৫. রাজা ধর্মপাল কয়টি বিহার নির্মাণ করেছিলেন? (জ্ঞান)
ক ২ ৩ গ ৪ ঘ ৫
১২৬. শালবন বিহার কোথায় অবস্থিত? (জ্ঞান)
ক দিনাজপুর কুমিল্লা গ বগুড়া ঘ রাজশাহী
১২৭. বাংলাদেশের স্থাপত্য শিল্পের ইতিহাসে কোন মন্দির এক অমর সৃষ্টি? (জ্ঞান)
পাহাড়পুরের মন্দির খ ময়নামতির মন্দির
গ চট্টগ্রামের মন্দির ঘ বারাকরের মন্দির
১২৮. কোন জেলায় প্রস্তর নির্মিত মন্দির পাওয়া গেছে? (জ্ঞান)
দিনাজপুর খ বগুড়া
গ কুমিল্লা ঘ চট্টগ্রাম
১২৯. কোথায় ব্রোঞ্জের তৈরি মন্দির পাওয়া গেছে? (জ্ঞান)
ক দিনাজপুর চট্টগ্রাম গ রাজশাহী ঘ খুলনা
১৩০. অতি স¤প্রতি উয়ারী-বটেশ্বর গ্রামে কত বছরের পুরাতন ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গেছে? (জ্ঞান)
ক প্রায় ২২০০ খ প্রায় ২৩০০ গ প্রায় ২৪০০ প্রায় ২৫০০
১৩১. বাংলাদেশের প্রাচীনতম নগরী ছিল কোনটি? (জ্ঞান)
ক বানগড় খ কেওয়ারি
গ পাহাড়পুর উয়ারী-বটেশ্বর
১৩২. আড়াই হাজার বছরের আগের পুঁথি তৈরির কারখানা কোথায় আবিস্কৃত হয়? (অনুধাবন)
ক পাহাড়পুরে খ সোনারগাঁওয়ে
উয়ারী-বটেশ্বরে ঘ ময়নামতিতে
১৩৩. পাহাড়পুরের ভাস্কর্য শিল্পকে কয় শ্রেণিতে ভাগ করা যায়? (জ্ঞান)
ক ২ ৩ গ ৪ ঘ ৫
১৩৪. গৌড়ের রাজধানী কোনটি? (জ্ঞান)
কর্ণসুবর্ণ খ দিল্লি
গ কলকাতা ঘ নয়াদিল্লি
১৩৫. কোন যুগের পূর্বেকার কোনো চিত্র আজ পর্যন্ত পাওয়া যায়নি? (জ্ঞান)
ক মোগল আমল খ সেন যুগ পাল যুগ ঘ মৌর্য যুগ
১৩৬. ‘অষ্টসাহস্রিকা প্রজ্ঞাপারমিতা’ পুঁথি কোন রাজার রাজত্বকালের শ্রেষ্ঠ নিদর্শন? (জ্ঞান)
ক নরপাল খ ধর্মপাল গ গৌতম পাল রামপাল
১৩৭. প্রাচীন বাংলার শিল্পকলার ক্ষেত্রে কোন যুগ স্মরণীয়? (জ্ঞান)
পাল খ সেন গ মৌর্য ঘ মোগল
১৩৮. কোন সময়ের শিল্পকলাকে পাল যুগের শিল্পকলা বলা হয়? (জ্ঞান)
নবম থেকে দ্বাদশ শতক খ অষ্টম থেকে নবম শতক
গ অষ্টম থেকে দ্বাদশ শতক ঘ নবম থেকে একাদশ শতক
১৩৯. কীভাবে পালযুগে দেব-দেবীর মূর্তিগুলো নির্মিত হয়েছিল? (অনুধাবন)
ক সামাজিক অনুশাসন অনুসারে খ অর্থনৈতিক অনুশাসন অনুসারে
শাস্ত্রীয় অনুশাসন অনুসারে ঘ ধর্মীয় অনুশাসন অনুসারে
বহুপদী সমাপ্তিসূচক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
১৪০. প্রাচীন বাংলাদেশের নানা স্থানে পাওয়া নিদর্শনগুলো হচ্ছে- (অনুধাবন)
র. স্থাপত্য
রর. ভাস্কর্য
ররর. চিত্রশিল্প
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর র, রর ও ররর
১৪১. ব্রোঞ্জের তৈরি স্তূপ পাওয়া গেছেÑ (অনুধাবন)
র. পাহাড়পুরে
রর. ঝাওয়ারিতে
ররর. ময়নামতিতে
নিচের কোনটি সঠিক?
র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
১৪২. স্তূপ যে ধরনের উপাদানে তৈরি হয় তা হলো (অনুধাবন)
র. বোঞ্জ
রর. অষ্টধাতু
ররর. ইট
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর র, রর ও ররর
১৪৩. উপমহাদেশের ইতিহাসে পাহাড়পুরের মন্দিরের গুরুত্ব অপরিসীম যে কারণেÑ (উচ্চতর দক্ষতা)
র. কারুকার্যের আধিক্য
রর. স্থাপত্য শিল্পের গভীর প্রভাব
ররর. বার্মা ও জাভার বহু প্রাচীন মন্দিরের অনুকরণে তৈরি
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর র, রর ও ররর
১৪৪. পাহাড়পুরে বাংলার নিজস্ব ভাস্কর্য শিল্পের যে বৈশিষ্ট্য পরিলক্ষিত হয় তা হলোÑ (উচ্চতর দক্ষতা)
র. পোড়া মাটির ফলক
রর. মন্দির গাত্রে খোদিত পাথর
ররর. শিল্প কৌশল
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর র, রর ও ররর
১৪৫. পাল যুগের চিত্রে যে বিষয়টি পাওয়া যায়Ñ (প্রয়োগ)
র. রেখা বিন্যাস
রর. শিল্প কৌশল
ররর. বর্ণ সমাবেশ
নিচের কোনটি সঠিক?
র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
১৪৬. চিত্রাঙ্কন করার রীতি প্রচলিত ছিলÑ (উচ্চতর দক্ষতা)
র. বৌদ্ধবিহার সৌন্দর্যময় করার জন্য
রর. মন্দিরের দেয়াল সৌন্দর্যময় করার জন্য
ররর. বিহারের সৌন্দর্যের জন্য
নিচের কোনটি সঠিক?
র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
অভিন্ন তথ্যভিত্তিক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ে ১৪৭ ও ১৪৮ নং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারী অমিত একজন ভাস্কর শিল্পী। সে তার কাজে প্রাচীন যুগের ভাবধারা অনুসরণ করে।
১৪৭. অমিতের ধর্মের সাথে প্রাচীন যুগের কোন স্থাপত্য জড়িত? (প্রয়োগ)
স্তূপ খ মূর্তি গ দালান ঘ মন্দির
১৪৮. প্রাচীন বাংলায় অমিতের শিল্পচর্চা ছিল (উচ্চতর দক্ষতা)
র. ধর্মের প্রভাব
রর. বিদ্যাচর্চার প্রভাব
ররর. খেলার প্রভাব
নিচের কোনটি সঠিক?
র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ে ১৪৯ ও ১৫০ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
জামি তার বাবা মায়ের সাথে নরসিংদীর উয়ারী-বটেশ্বর গ্রামে বেড়াতে যায়। সেখানে সে প্রাচীনতম ছাপাঙ্কিত রৌপ্যমুদ্রা, হরেক রকমের পুঁতি, সুদর্শন লকেট ও মন্ত্রপূত কবচ, বাটখারা, পোড়ামাটির ও ধাতব শিল্পবস্তু দেখতে পেয়ে অভিভ‚ত হয়।
১৪৯. জামির দেখা আবিষ্কৃত বস্তুগুলো কত বছর পূর্বের? (প্রয়োগ)
ক প্রায় দেড় হাজার খ প্রায় দুই হাজার
প্রায় আড়াই হাজার ঘ প্রায় তিন হাজার
১৫০. জামির দেখা বস্তুগুলো পরিচয় বহন করে- (উচ্চতর দক্ষতা)
র. শিল্পীর দক্ষতা
রর. উন্নত শিল্পবোধ
ররর. দর্শনের পরিচয়
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর র, রর ও ররর
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য : উদ্ভব ও বিকাশ
বোর্ড বই, পৃষ্ঠা- ৫০
প্রাচীন ভারতের অধিবাসীদের ভাষা ছিল বিভিন্ন।
বাংলার প্রাচীনতম অধিবাসীরা ছিল অষ্ট্রিক।
নতুন যে ভাষাগোষ্ঠির মানুষ বাংলায় প্রবেশ করে তারা হলো আর্য।
অষ্ট্রিক গোষ্ঠি ছাড়াও বাংলায় বসবাস শুরু করে দ্রাবিড় গোষ্ঠির বিভিন্ন শাখার লোক।
আর্য ভাষার নাম প্রাচীন বৈদিক ভাষা।
অপভ্রংশ হতে বাংলা ভাষার সৃষ্টি হয় অষ্টম ও নবম শতকে।
বাংলা ভাষার প্রাচীনতম নিদর্শন হলো চর্যাপদ।
বাংলা ভাষার প্রাচীন নিদর্শনের আবিষ্কারক ড. হরপ্রসাদ শাস্ত্রী।
বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের ইতিহাসের দিক হতে চর্যাপদের মূল্য অপরিসীম।
বাংলা সাহিত্যের প্রাচীন যুগ হলো অষ্টম শতক হতে বারো শতক পর্যন্ত।
সংস্কারকৃত বৈদিক ভাষাকে পরবর্তীতে বলা হয় সংস্কৃত ভাষা হিসেবে।
সাধারণ বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
১৫১. বাংলার প্রাচীনতম অধিবাসীরা সম্ভবত কোন জাতির মানুষ ছিলেন? (জ্ঞান)
অস্ট্রো এশিয়াটিক খ দ্রাবিড়
গ কিরাত ঘ ভোট চীনা
১৫২. ‘নিষাদ বা নাগ’ বলা হতো কোন জাতির মানুষকে? (জ্ঞান)
ক কিরাত খ দ্রাবিড় অস্ট্রিক ঘ ভোট চীনা
১৫৩. কোন জাতির প্রধান বাসভ‚মি এখন দাক্ষিণাত্যে? (প্রয়োগ)
ক কিরাত খ অস্ট্রিক দ্রাবিড় ঘ সাঁওতাল
১৫৪. দ্রাবিড় গোষ্ঠীর বাসভ‚মি বর্তমানে কোন অঞ্চলে? (জ্ঞান)
ক পশ্চিমবঙ্গে খ আসামে দাক্ষিণাত্যে ঘ কর্ণাটকে
বোর্ড ও সেরা স্কুলের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন- ১ শিল্পকলা ও স্থাপত্য-ভাষ্কর্য
শিশু কাকন স্কুলের শিক্ষার্থীরা স¤প্রতি আবিষ্কৃত প্রাচীন পুরাকীর্তি দেখার জন্য নদীর তীরে অবস্থিত কুসুমপুরে শিক্ষা সফরে যায়। ওখানে শিক্ষার্থীরা দুর্গ প্রাচীর, পাকা রাস্তাসহ ইট নির্মিত স্থাপত্য কীর্তি দেখতে পায়। এছাড়া পুঁতির কারখানা, রৌপ্য মুদ্রা, সুদর্শন লকেট, মন্ত্রপুত কবচ, বাটখারাও দেখে। প্রাচীনকালে কুসুমপুর ছিল গুরুত্বপূর্ণ নদী বন্দর ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য কেন্দ্র। [স. বো. ’১৬]
ক. সোমপুর বিহার কে নির্মাণ করেন? ১
খ. চর্যাপদের বিবরণ দাও। ২
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত নিদর্শন সমৃদ্ধ স্থানটি কোন প্রতœতাত্তি¡ক নিদর্শন সমৃদ্ধ স্থানকে নির্দেশ করে? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. “উদ্দীপকের নিদর্শনগুলো সংরক্ষণ করা অতীব জরুরি”উক্তিটি মূল্যায়ন কর। ৪
ক ধর্মপাল সোমপুর বিহার নির্মাণ করেন।
খ বাংলা ভাষার প্রাচীনতম নিদর্শন পাওয়া যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রী কর্তৃক নেপাল হতে সংগৃহীত চারটি প্রাচীন বৌদ্ধ পুঁথিতে। এগুলো ‘চর্যাপদ’ নামে পরিচিত। এখন পর্যন্ত মোট ৪৭টি চর্যাপদ পাওয়া গেছে। এ চর্যাপদগুলোর মধ্যেই বাংলা সাহিত্যের জন্ম হয়। পরবর্তী যুগে বাংলায় সহজিয়া গান, বাউল গান ও বৈষ্ণব পদাবলীর উৎপত্তি হয়। সুতরাং, বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের ইতিহাসের দিক থেকে এ চর্যাপদগুলোর মূল্য অপরিসীম।
গ উদ্দীপকে উল্লিখিত নিদর্শনসমৃদ্ধ স্থানটি প্রতœতাত্তি¡ক নিদর্শন সমৃদ্ধ স্থান উয়ারী-বটেশ্বরকে নির্দেশ করে। অতি স¤প্রতি উয়ারী-বটেশ্বর গ্রামে প্রায় আড়াই হাজার বছরের প্রাচীন এক নগরসভ্যতার ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গেছে। নরসিংদী জেলার বেলাব, শিবপুর ও রায়পুরা উপজেলায় অবস্থিত প্রতœ-অঞ্চলটির ৫০টি প্রতœস্থান থেকে আবিষ্কৃত হচ্ছে প্রাগৈতিহাসিক যুগের পাথর ও প্রস্তরীভূত জীবাশ্ম-কাঠের হাতিয়ার, তাম্র-প্রস্তর, সংস্কৃতির গর্ত-বসতি প্রভৃতি প্রতœবস্তু। ইতোমধ্যে এখান থেকে আবিষ্কৃত হয়েছে মাটির দুর্গ-প্রাচীর, পরিখা, পাকা রাস্তা, পার্শ্ব-রাস্তাসহ ইটনির্মিত স্থাপত্যকীর্তি। উদ্দীপকে তা উল্লিখিত হয়েছে। উয়ারী-বটেশ্বরে বিকশিত হয়েছিল স্বল্প-মূল্যবান পাথরের নয়নাভিরাম পুঁতি তৈরির কারখানা। এখানে আবিষ্কৃত উপমহাদেশের প্রাচীনতম ছাপাঙ্কিত রৌপ্যমুদ্রা ও মুদ্রা ভাণ্ডার, অনন্য স্থাপত্যকীর্তি, হরেকরকমের পুঁতি, সুদর্শন লকেট ও মন্ত্রপুত কবচ, বাটখারা, পোড়ামাটির ও ধাতব শিল্পবস্তু, মৃৎপাত্র, চিত্রশিল্প ইত্যাদি শিল্পীর দক্ষতা, উন্নত শিল্পবোধ ও দর্শনের পরিচয় বহন করে। উদ্দীপকে এসব প্রতœ নিদর্শনই উল্লিখিত হয়েছে।
ঘ উদ্দীপকের নিদর্শন তথা প্রতœতাত্তি¡ক নিদর্শনগুলো সংরক্ষণ করা অতীব জরুরি। প্রতœতাত্তি¡ক নিদর্শনসমূহ মূলত অলিখিত উপাদানভুক্ত। যেমন : মুদ্রা, শিলালিপি, স্তম্ভলিপি, তাম্রলিপি, ইমারত ইত্যাদি। এ সমস্ত প্রতœতাত্তি¡ক নিদর্শন বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং বিশ্লেষণের ফলে সে সময়ের অধিবাসীদের রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক অবস্থা সম্পর্কে কিছুটা ধারণা পাওয়া যায়। ধারণা করা সম্ভব প্রাচীন অধিবাসীদের সভ্যতা, ধর্ম, জীবনযাত্রা, নগরায়ণ, নিত্যব্যবহার্য জিনিসপত্র, ব্যবসা-বাণিজ্যের অবস্থা, কৃষি উপকরণ ইত্যাদি সম্পর্কে। উদাহরণ হিসেবে বর্ণনা করা যায় সিন্ধু সভ্যতা, বাংলাদেশের মহাস্থানগড়, পাহাড়পুর, ময়নামতি ইত্যাদি স্থানের প্রতœতাত্তি¡ক নিদর্শনসমূহের কথা। নতুন নতুন প্রতœতাত্তি¡ক আবিষ্কার বদলে দিতে পারে একটি জাতির ইতিহাস। যেমন, উদ্দীপকে উল্লিখিত স¤প্রতি নরসিংদীর উয়ারী-বটেশ্বরের প্রতœতাত্তি¡ক আবিষ্কার। ঐ অঞ্চলের প্রতœতাত্তি¡ক নিদর্শনে প্রমাণিত হয়েছে যে, বাংলাদেশে আড়াই হাজার বছর পূর্বেও নগর সভ্যতার অস্তিত্ব ছিল। এই আবিষ্কারের ফলে বাংলার প্রাচীন সভ্যতার নবদিগন্ত উন্মোচিত হতে যাচ্ছে। সুতরাং আলোচনার প্রেক্ষিতে সুস্পষ্ট প্রতœতাত্তি¡ক নিদর্শনগুলো সংরক্ষণ করা অতীব জরুরি।
প্রশ্ন- ২ প্রাচীন যুগের পোশাক ও সাজসজ্জা এবং খাদ্যদ্রব্য
নীপা তার বান্ধবীর বিয়েতে গ্রামে গেল। সে বিয়েতে গিয়ে দেখতে পেল সেখানকার নারী ও পুরুষ উভয়েই সুন্দর গহনা পরেছে। মহিলারা পায়ে আলতা, কপালে কুমকুম, গলায় হার ও আঙুলে আংটি দিয়ে সেজেছে। বিয়েতে খাবার হিসেবে পরিবেশিত হয় ভাত, মাছ, মাংস, সবজি, দই, ক্ষীর ও মিষ্টি। খাবার পর মসলাযুক্ত পানও দেওয়া হয়। [স. বো. ’১৫]
ক. বৌদ্ধধর্মের প্রবর্তক কে ছিলেন? ১
খ. হিন্দুদের জাতিভেদ প্রথা ব্যাখ্যা কর। ২
গ. উদ্দীপকে বর্ণিত পোশাক ও সাজসজ্জার সাথে বাংলার কোন যুগের মিল খুঁজে পাওয়া যায়?Ñ ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. “নীপার বান্ধবীর বিয়েতে পরিবেশিত খাবার আবহমান বাংলার খাদ্য তালিকার অন্তর্ভুক্ত”Ñ উক্তিটি বিশ্লেষণ কর। ৪
ক বৌদ্ধধর্মের প্রবর্তক ছিলেন বুদ্ধদেব।
খ আর্য সমাজের প্রভাবে প্রাচীন আমলেই বাংলার হিন্দু সমাজে জাতিভেদ প্রথা চালু হয়। প্রাচীনকালে বাংলায় ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য ও শূদ্র- এ চার প্রকার বর্ণ ছিল। পরবর্তী সময়ে আরও নানা প্রকার সঙ্কর অর্থাৎ মিশ্র জাতির সৃষ্টি হয়। সমাজে প্রত্যেক জাতিরই নির্দিষ্ট পেশা ছিল। অধ্যয়ন, অধ্যাপনা ও পূজা-পার্বণ করা-এগুলো ছিল ব্রাহ্মণদের নির্দিষ্ট কর্ম। তারা সমাজে, সর্বশ্রেষ্ঠ মর্যাদা লাভ করতেন। ক্ষত্রিয়দের পেশা ছিল যুদ্ধ করা। ব্যবসা-বাণিজ্য করা ছিল বৈশ্যদের কাজ। সবচেয়ে নিচু শ্রেণির শূদ্ররা সাধারণত কৃষিকাজ, মাছ শিকার ও অন্যান্য ছোটখাটো কাজ করত।
গ উদ্দীপকে বর্ণিত পোশাক ও সাজসজ্জার সাথে বাংলার প্রাচীন যুগের মিল রয়েছে। প্রাচীন বাংলার নর-নারীরা যথাক্রমে ধূতি ও শাড়ি পরিধান করত। পুরুষেরা মালকোচা দিয়ে ধূতি পরত এবং তা হাঁটুর নিচে নামত না। মেয়েদের শাড়ি গোড়ালি পর্যন্ত পৌঁছাত। মাঝে মাঝে পুরুষেরা গায়ে চাদর, আর মেয়েরা পড়ত ওড়না। উৎসব-অনুষ্ঠানে বিশেষ পোশাকের ব্যবস্থা ছিল। পুরুষ-নারী উভয়ের মধ্যেই অলংকার ব্যবহারের রীতি প্রচলিত ছিল। তারা কানে কুণ্ডল, গলায় হার, আঙ্গুলে আংটি, হাতে বালা ও পায়ে মল পরিধান করত। উদ্দীপকে নীপার বান্ধবীর বিয়েতেও নারী ও পুরুষ উভয়ে সুন্দর গহনা পরেছে। আবার প্রাচীন বাংলায় মেয়েরাই কেবল হাতে শঙ্খের বালা পরত এবং অনেকগুলো চুড়ি পড়তে ভালোবাসত। মণি-মুক্তা ও দামী সোনা-রূপার অলংকার ধনীরা ব্যবহার করত। মেয়েরা নানাপ্রকার খোপা বাঁধত। পুরুষদের বাবড়ি চুল কাঁধের উপর ঝুলে থাকত। কর্পুর, চন্দন প্রভৃতি প্রসাধন সামগ্রীর সাথে বিভিন্ন সুগন্ধির ব্যবহার তখন খুব প্রচলিত ছিল। মেয়েদের সাজসজ্জায় আলতা, সিঁদুর ও কুমকুমের ব্যবহারও তখন প্রচলিত ছিল, যা উদ্দীপকে নীপার বান্ধবীর বিয়েতে মহিলাদের সাজসজ্জায় দেখা যায়। সুতরাং, উদ্দীপকে বর্ণিত পোশাক ও সাজসজ্জার সাথে বাংলার প্রাচীন যুগের মিল খুঁজে পাওয়া যায়।
ঘ নীপার বান্ধবীর বিয়েতে পরিবেশিত খাবার আবহমান বাংলার খাদ্য তালিকার অন্তর্ভুক্ত। বাঙালির প্রধান খাদ্য বর্তমান সময়ের মতো সেই প্রাচীনকালেও ছিল ভাত, মাছ, মাংস, শাক-সবজি, দুধ, দধি, ঘৃত, ক্ষীর ইত্যাদি। চাউল হতে প্রস্তুত নানা প্রকার পিঠাও জনপ্রিয় মুখরোচক খাবার ছিল। বাঙালি ব্রাহ্মণেরা আমিষ খেতেন। তখন সকল প্রকার মাছ পাওয়া যেত। পূর্ববঙ্গে ইলিশ ও শুঁটকি মাছ খুব প্রিয় খাবার ছিল। তরকারির মধ্যে বেগুন, লাউ, কুমড়া, ঝিংগে, কাকরুল, কচু উৎপন্ন হতো। ফলের মধ্যে আম, কাঁঠাল, কলা, তাল, পেঁপে, নারকেল, ইক্ষু পাওয়া যেত। তবে ডালের কথা কোথাও বলা নেই। দুধ, নারকেলের পানি, ইক্ষুরস, তালরস ছাড়া মদ জাতীয় নানা প্রকার পানীয় সুপ্রচলিত ছিল। ভাত, গম, ইক্ষু, গুড়, মধু ও তালরস গাঁজাইয়া নানা প্রকার মদ তৈরি হতো। মদ জাতীয় নানা প্রকারের পানীয় পান করা হতো। খাওয়া-দাওয়া শেষে মসলাযুক্ত পান খাওয়ার রীতি ছিল। সুতরাং দেখা যাচ্ছে, নীপার বান্ধবীর বিয়েতে পরিবেশিত খাবার নতুন বা বিশেষ কিছু নয় বরং আবহমান বাংলার খাদ্য তালিকার অন্তর্ভুক্ত।
প্রশ্ন- ৩ প্রাচীন বাংলার সামাজিক জীবন (খাদ্য)
শিহাব তার বন্ধুর বাড়ি রাজশাহীতে বেড়াতে যায়। দুপুর বেলায় বাসযোগে সে তার বন্ধুর বাড়ি পৌঁছলে বন্ধু রুম্মান তাকে বার্গার, কোমল পানীয়, হটডগ, ভেজিটেবল রোল ইত্যাদি দিয়ে আপ্যায়ন করে। রাতের খাবারে শিহাবের জন্য সবজি, মাছ, শুঁটকি ও দধির ব্যবস্থা করা হয়। রুম্মানের মা ও বোন রাত জেগে শিহাবের জন্য নানা রকমের পিঠাপুলি তৈরি করেন। প্রতিবেলা খাবারের পর শিহাবকে মসলাযুক্ত পান প্রদান করা হয়। [ইস্পাহানি পাবলিক স্কুল ও কলেজ কুমিল্লা সেনানিবাস]
ক. সোমপুর বিহার কে প্রতিষ্ঠা করেন? ১
খ. প্রাচীন বাংলার যোগাযোগ ব্যবস্থা কেমন ছিল? ব্যাখ্যা কর। ২
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত দ্বিতীয়াংশের খাবারগুলো বাংলার কোন যুগের ইঙ্গিত বহন করে? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. ‘উদ্দীপকে উল্লিখিত খাবারগুলো উক্ত যুগের খাবার-দাবারের আংশিক প্রতিফলন’ বিশ্লেষণ কর। ৪
ক ধর্মপাল সোমপুর বিহার প্রতিষ্ঠা করেন।
খ প্রাচীন বাংলার মানুষের যাতায়াতের প্রধান বাহন ছিল গরুর গাড়ি ও নৌকা। খাল-বিলে চলাচলের জন্য ভেলা ও ডোঙ্গা ব্যবহার করত। মানুষ ছোট ছোট খাল পার হতো সাঁকো দিয়ে। ধনী লোকেরা হাতি, ঘোড়া, ঘোড়ার গাড়ি প্রভৃতি যাতায়াতের জন্য ব্যবহার করত। তাদের স্ত্রী-পরিজনেরা নৌকা ও পালকিতে একস্থান হতে অন্যস্থানে আসা-যাওয়া করত। বিবাহের পর নববধূকে গরুর গাড়িতে বা পালকিতে করে শ্বশুর বাড়ি আনা হতো।
গ উদ্দীপকে উল্লিখিত দ্বিতীয়াংশের খাবারগুলো বাংলার প্রাচীন যুগের ইঙ্গিত বহন করে। প্রাচীন বাংলায় বাঙালির প্রধান খাদ্য বর্তমান সময়ের মতো তখনো ছিল ভাত, মাছ, মাংস, শাকসবজি, দুধ, দধি, ঘৃত, ক্ষীর ইত্যাদি। উদ্দীপকের দ্বিতীয়াংশে শিহাবের রাতের খাবারেও ছিল সবজি, মাছ, শুঁটকি ও দধি। এছাড়া তার জন্য পিঠাপুলির ব্যবস্থা করা হয়। প্রাচীন বাংলাতে চাল হতে প্রস্তুত নানা প্রকার পিঠাও জনপ্রিয় মুখরোচক খাবার ছিল। তখন সকল প্রকার মাছ পাওয়া যেত। পূর্ববঙ্গে ইলিশ ও শুঁটকি মাছ খুব প্রিয় খাবার ছিল। খাওয়া-দাওয়া শেষে মসলাযুক্ত পান খাওয়ার রীতি ছিল। উদ্দীপকের শিহাবকেও প্রতিবেলা খাবারের পর মসলাযুক্ত পান প্রদান করা হয়। সুতরাং উদ্দীপকে উল্লিখিত দ্বিতীয়াংশের খাবারগুলো বাংলার প্রাচীন যুগের ইঙ্গিত বহন করে।
ঘ উদ্দীপকে উল্লিখিত খাবারগুলো উক্ত যুগের বা প্রাচীন যুগের খাবার-দাবারের আংশিক প্রতিফলন। উদ্দীপকে শিহাব তার বন্ধুর বাড়ি রাজশাহীতে দুপুর বেলায় পৌঁছে বার্গার, কোমল পানীয়, হটডগ, ভেজিটেবল রোল ইত্যাদি খাবার খায়। উদ্দীপকের প্রথমাংশে উল্লিখিত এ খাবারগুলো প্রাচীনযুগে মোটেও পাওয়া যেত না। বরং এগুলো হচ্ছে আমাদের আধুনিক নগর জীবনের ‘ফাস্ট ফুড’। আবার উদ্দীপকের দ্বিতীয়াংশে শিহাব তার বন্ধু রুম্মানের বাড়িতে সবজি, মাছ, শুঁটকি, দধি, পিঠা এবং মসলাযুক্ত পান দ্বারা আপ্যায়িত হয়। এ খাবারগুলোর সাথে প্রাচীন যুগের খাবার-দাবারের মিল রয়েছে। কিন্তু প্রাচীন যুগের মানুষ আরও নানা ধরনের খাবার খেত। যেমন: ভাতের সাথে মাংস, দুধ, ক্ষীর ইত্যাদি। তরকারির মধ্যে বেগুন, লাউ, কুমড়া, ঝিঙা, কাঁকরোল, কচু ইত্যাদি খাওয়া হতো। ফলের মধ্যে আম, কাঁঠাল, কলা, তাল, পেঁপে, নারকেল, ইক্ষু পাওয়া যেত। দুধ, নারকেলের পানি, ইক্ষুরস, তালরস ছাড়া মদ জাতীয় নানা প্রকার পানীয় সুপ্রচলিত ছিল। ভাত, গম, ইক্ষু, গুড়, মধু ও তালরস গাঁজাইয়া নানা প্রকার মদ তৈরি হতো। মদ জাতীয় নানা প্রকারের পানীয় পান করা হতো। সুতরাং উপরের আলোচনা থেকে স্পষ্ট হয় যে, উদ্দীপকে উল্লিখিত খাবারগুলো প্রাচীন যুগের খাবার-দাবারের আংশিক প্রতিফলন।
প্রশ্ন- ৪ আর্য হিন্দু সমাজব্যবস্থা
মি. মাহবুব তার বন্ধু অধ্যাপক সৌমেন ভট্টাচার্যের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে লক্ষ করল তাদের সমাজের এক শ্রেণির লোক পূজা করে, অন্য শ্রেণির লোকেরা যোদ্ধা, আর এক শ্রেণির লোকেরা ব্যবসা-বাণিজ্য করে। একজন মৎস্যজীবীর সাথে আলাপকালে মি. মাহবুব তাকে শিক্ষার গুরুত্ব সম্পর্কে বোঝাতে চেষ্টা করলে মৎস্যজীবী বললেন, তাদের লেখাপড়া করা নিষেধ। [সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, চুয়াডাঙ্গা]
ক. পাহাড়পুর বিহারের পরিচিত নাম কী? ১
খ. দ্রাবিড়দের পরিচয় দাও। ২
গ. অধ্যাপক সৌমেনের সমাজব্যবস্থার সাথে কোন আমলের সমাজব্যবস্থার মিল লক্ষ করা যায়? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. উক্ত আমলে অধ্যাপক সৌমেন ভট্টাচার্যের মতো ব্যক্তিদের সামাজিক মর্যাদা অধিক ছিল বলে কি তুমি মনে কর? যুক্তি দাও। ৪
ক পাহাড়পুর বিহারের পরিচিত নাম ‘সোমপুর বিহার’।
খ আর্যপূর্ব যুগে প্রাচীন বাংলায় অস্ট্রিক গোষ্ঠী ছাড়াও দ্রাবিড় গোষ্ঠীর বিভিন্ন শাখার লোক বাস করত। তারা ছিল সুসভ্য জাতির মানুষ। তাদের প্রধান বাসভ‚মি এখন দাক্ষিণাত্যে। কিন্তু, এক সময় তারা সম্ভবত পশ্চিম-বাংলা ও মধ্য-বাংলায় ছড়িয়ে পড়েছিল।
গ অধ্যাপক সৌমেনের সমাজব্যবস্থার সাথে প্রাচীন বাংলার আর্য হিন্দু সমাজব্যবস্থার মিল লক্ষ করা যায়। আর্য সমাজের অত্যন্ত প্রয়োজনীয় অঙ্গ ছিল জাতিভেদ প্রথা। তারা দীর্ঘদিন ধরে এদেশে বসবাস করার ফলে বাংলায়ও এ ব্যবস্থা চালু হয়। প্রাচীনকালে বাংলায় ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য ও শূদ্র-এ চার প্রকার বর্ণ ছিল। পরবর্তী সময়ে আরও নানা প্রকার সঙ্কর অর্থাৎ মিশ্র জাতির সৃষ্টি হয়। সমাজে প্রত্যেক জাতিরই নির্র্দিষ্ট পেশা ছিল। অধ্যয়ন, অধ্যাপনা ও পূজা পার্বণ করা-এগুলো ছিল ব্রাহ্মণদের নির্দিষ্ট কর্ম। ক্ষত্রিয়দের পেশা ছিল যুদ্ধ করা। ব্যবসা-বাণিজ্য করা ছিল বৈশ্যদের কাজ। সবচেয়ে নিচুশ্রেণির শূদ্ররা সাধারণত কৃষিকাজ, মাছ শিকার ও অন্যান্য ছোটখাটো কাজ করত। উদ্দীপকে মি. মাহবুব অধ্যাপক সৌমেনের বাড়ি বেড়াতে গিয়ে অনুরূপ লক্ষ করেন যে, একশ্রেণির লোক পূজা করে, অন্য শ্রেণির লোকেরা যোদ্ধা। আর একশ্রেণির লোক ব্যবসা-বাণিজ্য করে। প্রকৃতপক্ষে প্রাচীন বাংলায় আর্য যুগে ব্রাহ্মণ ছাড়া বাকি সব বর্ণের মানুষ একে অন্যের সাথে মেলামেশা করত। সুতরাং অধ্যাপক সৌমেনের সমাজব্যবস্থার সাথে প্রাচীন বাংলার আর্য হিন্দু সমাজব্যবস্থার মিল লক্ষ করা যায়।
ঘ উক্ত আমলে তথা প্রাচীন বাংলায় অধ্যাপক সৌমেন ভট্টাচার্যের মতো ব্যক্তিদের সামাজিক মর্যাদা অধিক ছিল বলে আমি মনে করি। আর্যদের আগমনে প্রভাবিত হয় প্রাচীন বাংলায় জাতিভেদ প্রথার প্রচলন। নির্র্দিষ্ট পেশার ভিত্তিতে গড়ে ওঠা এ বর্ণ প্রথায় সর্বোচ্চ স্তরে ছিল ব্রাহ্মণরা। অধ্যয়ন, অধ্যাপনা ও পূজা-পার্বণ করা তাদের নির্দিষ্ট কর্ম ছিল। পরবর্তীতে সেন যুগে জাতিভেদ প্রথার কঠোরতা ও ব্রাহ্মণদের মধ্যেও অনেক ভাগ হয়। কিন্তু তারাই ছিল সর্বোচ্চ বর্ণের এবং সামাজিক মর্যাদায় অধিষ্ঠিত। তাদের অধ্যাপনার কাজটিও প্রাচীন বাংলায় কেবল তাদের জন্যই নির্দিষ্ট ছিল। উদ্দীপকের অধ্যাপক সৌমেন ভট্টাচার্যও অধ্যাপনা করেন। আবার তখন অন্য কারও জন্য লেখাপড়া করাই নিষিদ্ধ ছিল। যেমন : উদ্দীপকে দেখা যায় একজন মৎস্যজীবী বলছেন, তাদের লেখাপড়া করা নিষেধ। সুতরাং তৎকালীন বাংলায় অন্য কোনো বর্ণের লোকেরা শিক্ষিত ছিল না বিধায় সমাজে ব্রাহ্মণরা ছিল অত্যন্ত উঁচু মর্যাদার অধিকারী। সার্বিক আলোচনার প্রেক্ষিতে প্রতীয়মান হয় যে, প্রাচীন বাংলায় হিন্দু সমাজে সৌমেন ভট্টাচার্যের মতো ব্যক্তিদের সামাজিক মর্যাদা অধিক ছিল।
প্রশ্ন- ৫ প্রাচীন বাংলার শিল্পকর্ম
রায়ান তার চাচার সাথে পাহাড়পুরের সোমপুর বিহার দেখতে যায়। বিহারের দেয়াল পোড়ামাটির ফলক দিয়ে সাজানো। চাচার কাছ থেকে সে জানতে পারে দিনাজপুরের কান্তজীর মন্দিরও ঐ রকম টেরাকোটা দিয়ে সাজানো। বিহার সংলগ্ন জাদুঘরে সে বেশকিছু ধাতব ও প্রস্তর নির্মিত মূর্তি দেখতে পায়। তার চাচা বলেন, প্রাচীন বাংলার ভাস্কর্য প্রধানত ধর্মকে ভিত্তি করেই গড়ে উঠেছে।
[বরগুনা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
ক. আর্যদের ভাষার নাম কী? ১
খ. প্রাচীন বাংলার বিধবাদের অবস্থা কেমন ছিল? ২
গ. রায়ানের দেখা বিহার, মন্দির ও ভাস্কর্যের মাধ্যমে প্রাচীন বাংলার মানুষের কীসের পরিচয় পাওয়া যায়? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. রায়ানের চাচার উক্তিটির যথার্থতা নিরূপণ কর। ৪
ক আর্যদের ভাষার নাম প্রাচীন বৈদিক ভাষা।
খ প্রাচীন বাংলার বিধবাদের অবস্থা শোচনীয় ছিল। বিধবা নারী জীবনের চরম অভিশাপ বলে বিবেচিত হতো। মুছে যেত কপালের সিঁদুর এবং সেই সঙ্গে তার সমস্ত প্রসাধন ও অলঙ্কার। বিধবাকে নিরামিষ আহার করে সব ধরনের বিলাস বর্জন ও কৃচ্ছ্র সাধন করতে হতো। স্বামীর মৃত্যু হলে স্ত্রীকেও মৃত স্বামীর চিতায় সহমরণে যেতে হতো। প্রাচীন বাংলায় ধন-সম্পত্তিতে নারীদের কোনো বিধিবিধানগত অধিকার ছিল না। তবে, স্বামীর অবর্তমানে অপুত্রক বিধবা স্ত্রী স্বামীর সমস্ত সম্পত্তির অধিকার দাবি করতে পারত।
গ রায়ানের দেখা বিহার, মন্দির ও ভাস্কর্যের মাধ্যমে প্রাচীন বাংলার মানুষের শিল্পীমনের পরিচয় পাওয়া যায়। রায়ান প্রথম পাহাড়পুরের সোমপুর বিহারের দেয়ালে পোড়ামাটির ফলক দেখে। দিনাজপুরের কান্তজীর মন্দিরও ঐ রকম টেরাকোটা দিয়ে সাজানো। পালযুগে বিহারের রূপে পরিবর্তন এসেছিল এবং তা কারুকর্যময় হতে শুরু করেছিল। প্রকৃতপক্ষে বিহারের দেয়ালের এই সজ্জা প্রাচীন বাংলার মানুষের শিল্পী মনের পরিচয় বহন করে। প্রাক মধ্যযুগে নির্মিত ভাস্কর্যেও এরূপ পরিচয় পাওয়া যায়। রায়ান জাদুঘরে প্রাচীন আমলের ধাতব ও প্রস্তর নির্মিত ভাস্কর্য দেখতে পায়। ভাস্কর্য শিল্প তখন বেশ উন্নত ছিল। অনেক স্থানে মন্দির ধ্বংস হলেও তার মধ্যকার দেবমূর্তি রক্ষিত হয়েছে। রায়ানের দেখা পাহাড়পুরের মন্দির গাত্রে খোদিত পাথর ও পোড়ামাটির ফলক থেকে বাংলার নিজস্ব ভাস্কর্য শিল্পের বৈশিষ্ট্যের পরিচয় পাওয়া যায়। উপরের আলোচনা থেকে বলা যেতে পারে, পাহাড়পুরের বিহার, মন্দির ও ভাস্কর্য প্রাচীন বাংলার মানুষের শিল্পী মনের পরিচয় বহন করে।
ঘ রায়ানের চাচার উক্তিটি যথার্থ। প্রাচীন বাংলার ভাস্কর্য প্রধানত ধর্মকে ভিত্তি করেই গড়ে উঠেছে। খ্রিষ্টাব্দের শুরুতে অথবা এর পূর্ব বর্ষ হতে বাংলায় স্থাপত্য শিল্পের পাশাপাশি ভাস্কর্য শিল্পের চর্চাও হতো। প্রাচীন বাংলায় বহু মন্দির ছিল। তাই, ভাস্কর্য শিল্পকলাও যে উন্নত ছিল তাতে সন্দেহ নেই। প্রাচীন বৈদিক বা পরবর্তী হিন্দু ধর্মের এসব ভাস্কর্য নিদর্শনের প্রসার বৌদ্ধধর্মের প্রচারের সাথে সাথে স্তিমিত হয়। পাল যুগে বৌদ্ধ ধর্মের প্রসার ঘটে। এ যুগে পাহাড়পুরের মন্দির গাত্রে খোদিত পাথর ও পোড়ামাটির ফলক থেকে বাংলার নিজস্ব ভাস্কর্য শিল্পের বৈশিষ্ট্যের পরিচয় পাওয়া যায়। বিষয়বস্তু ও শিল্প কৌশলের দিক থেকে বিচার করলে পাহাড়পুরের ভাস্কর্য শিল্পকে লোকশিল্প, অভিজাত শিল্প ও দুয়ের মাঝামাঝি শিল্পের কৌশল-এ তিন শ্রেণিতে ভাগ করা যায়। কিন্তু সবই ছিল ধর্মীয় ভাবধারা অনুযায়ী নির্মিত। কেননা মানুষের জীবনে ধর্মের ছিল ব্যাপক প্রভাব। কুমিল্লার ময়নামতি ও লালমাই পাহাড়ে বেশ কিছু পোড়ামাটির ফলক আবিষ্কৃত হয়েছে। গৌড়ের রাজধানী কর্ণসুবর্ণের ধ্বংসাবশেষেও কিছু পোড়ামাটির মূর্তি পাওয়া গেছে। এসব মূর্তি কেবল সৌন্দর্যের জন্য নয় বরং তৎকালীন সমাজ জীবন প্রমাণ করে ধর্মীয় প্রয়োজনে এগুলো নির্মিত হতো। তাই রায়ানের চাচার উক্তিটি যথার্থ যে, প্রাচীন বাংলার ভাস্কর্য প্রধানত ধর্মকে ভিত্তি করেই গড়ে উঠেছে।
মাস্টার ট্রেইনার প্রণীত সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন- ৬ প্রাচীন বাংলার জাতিভেদ প্রথা ও নারীর সামাজিক মর্যাদা
শিবানী দত্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃতি বিভাগের একজন ছাত্রী। সে ব্রাহ্মণ পরিবারের। সে নিয়মিত পূজা পার্বণ করে। তাদের পাশের বাড়ির লোকজন শূদ্র বর্ণের। তাদের এলাকায় বিভিন্ন বর্ণের লোকজন বাস করে। শিবানী বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে তার বিধবা ঠাকুরমার কাছে বিভিন্ন গল্প শোনে। শিবানীর ঠাকুরমা নিরামিষ খায় এবং সাধারণ জীবনযাপন করে। তিনি তার স্বামী কিংবা বাবার সম্পত্তি থেকে কিছু পাননি।
ক. প্রাচীনকালে বাংলায় কয় প্রকার বর্ণ ছিল? ১
খ. কৌম সমাজ বলতে কী বোঝ? ২
গ. শিবানীর ঠাকুরমার মাধ্যমে প্রাচীন বাংলার সামাজিক জীবনের কোন দিকটি ফুটে উঠেছে? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. শিবানীর এলাকার ব্রাহ্মণ, শূদ্রসহ বিভিন্ন বর্ণের লোকেরা কি জাতিভেদ ব্যবস্থার প্রতিনিধিত্ব করে? মতামত দাও। ৪
ক প্রাচীনকালে বাংলায় চার প্রকার বর্ণ ছিল।
খ কৌম সমাজ হলো এক ধরনের গোত্রভিত্তিক সমাজব্যবস্থা। মৌর্য শাসনের পূর্বে বাংলায় এ ধরনের সমাজব্যবস্থা চালু ছিল। তখন বাংলার অধিবাসীদের মধ্যে রাজনৈতিক পরিচয় গড়ে ওঠেনি। এ সময়ে সমাজ বিভিন্ন গোত্রে বিভক্ত ছিল। এ সময়ে মানুষের ধর্মচিন্তা পরবর্তী সময়ে সমাজে ছড়িয়ে পড়ে। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো কর্মফল, জন্মান্তরবাদ, যোগ সাধনা ইত্যাদি। কৌম ব্যবস্থা পরবর্তী সময়েও বিভিন্ন সমাজে প্রচলিত ছিল।
গ শিবানীর ঠাকুরমার মাধ্যমে প্রাচীন বাংলার বিধবা নারীর সামাজিক জীবনের দিকটি ফুটে উঠেছে। হিন্দু বিধবাদের নিরামিষ আহার করে সব ধরনের বিলাসিতা পরিহার করতে হতো। স্বামীর মৃত্যু হলে অনেক সময় স্ত্রীকেও মৃত স্বামীর চিতায় জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হতো। ধনসম্পত্তিতে নারীদের কোনো আইনগত অধিকার ছিল না। শিবানীর ঠাকুরমা নিরামিষ খায়, সাধারণ জীবনযাপন করে যা প্রাচীন বাংলার মেয়েদের সাধারণ জীবনব্যবস্থার ছবি। শিবানীর ঠাকুরমার গল্পে এ কথা নিশ্চয়ই জানা যায় যে, তখনকার মেয়েরা লেখাপড়া শিখত। সে যুগে অবরোধ বা পর্দাপ্রথা ছিল না। তবে মেয়েদের কোনো প্রকার স্বাধীনতা ছিল না। আর বিধবা হওয়া ছিল নারী জীবনের চরম অভিশাপ। যা উদ্দীপকের শিবানীর ঠাকুরমাকেও কিছুটা স্পর্শ করেছে। অতএব, দেখা যায় যে, শিবানীর ঠাকুরমার মাধ্যমে প্রাচীন বাংলার বিধবা নারীদের সাধারণ জীবনযাপন প্রণালির দিকটি ফুটে উঠেছে।
ঘ শিবানীর এলাকায় বসবাসরত ব্রাহ্মণ, শূদ্রসহ বিভিন্ন বর্ণের মানুষ জাতিভেদ প্রথার প্রতিনিধিত্ব করে। শিবানীদের পরিবার ব্রাহ্মণ পরিবার। তারা নিয়মিত পূজা-পার্বণ করে। তারা শিক্ষিত। তাদের প্রতিবেশী শূদ্র নিচু বর্ণের লোক বলে বলা হয়েছে। আর্য সমাজে বসবাসরত ব্রাহ্মণরা অধ্যয়ন, অধ্যাপনা ও পূজা-পার্বণ করত। এগুলো ছিল ব্রাহ্মণদের নির্দিষ্ট কাজ। তারা সমাজে শ্রেষ্ঠ মর্যাদা লাভ করতেন। শিবানীদের পরিবারও এমন ব্রাহ্মণ পরিবার। ক্ষত্রিয়দের পেশা ছিল যুদ্ধ করা। ব্যবসা-বাণিজ্য করা ছিল বৈশ্যদের কাজ। সবচেয়ে নিচুশ্রেণির শূদ্ররা সাধারণত কৃষিকাজ, মাছ শিকার ও ছোটখাটো কাজ করত। ব্রাহ্মণ ছাড়া বাকি সব বর্ণের মানুষ একে অন্যের সাথে মেলামেশা করত। সাধারণত এক জাতির মধ্যেই বিবাহ হতো। উচ্চশ্রেণির বর ও নিম্নশ্রেণির কন্যার মধ্যে বিবাহ চালু ছিল। জাতিভেদ প্রথার এ চিত্রের প্রতিফলন শিবানীর সমাজে ফুটে উঠেছে। আর্য সমাজের অত্যন্ত প্রয়োজনীয় অঙ্গ ছিল জাতিভেদ প্রথা। তারা দীর্ঘদিন বাস করার ফলে বাংলায়ও এ ব্যবস্থা চালু হয়।
প্রশ্ন- ৭ প্রাচীন আর্থ-সমাজ
বিজয় চৌধুরীদের হিন্দু সমাজে বিভিন্ন শ্রেণি বিদ্যমান। ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য, শূদ্র ইত্যাদি শ্রেণি রয়েছে। বিজয় তার দাদার কাছে গল্প শুনেছে প্রাচীন বাংলায় সমাজে এসব শ্রেণির অনেক বিধিনিষেধ ছিল।
ক. আর্যদের ভাষার নাম কী ছিল? ১
খ. আর্যদের আগমনের পূর্বে কারা বাংলার সংস্কৃতি গড়ে তোলে? ব্যাখ্যা কর। ২
গ. বিজয় চৌধুরীর সমাজের সাথে প্রাচীন সমাজের সামঞ্জস্য ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. বিজয়ের দাদার বক্তব্যটি কি সঠিক? উদ্দীপকের আলোকে বিশ্লেষণ কর। ৪
ক আর্যদের ভাষার নাম ছিল প্রাচীন বৈদিক ভাষা।
খ আর্যদের আগমনের পূর্বে বাংলার প্রাচীন মানুষেরা একটি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক জীবন গড়ে তুলেছিল। এরপর বাংলার আদি অধিবাসীদের সাথে মিশে যায় আলপাইন নামে এক জাতি। আর্যরা এদেশে আসার আগে এরা মিলেমিশে বাংলার সংস্কৃতি গড়ে তোলে।
গ বিজয় চৌধুরীর সমাজের সাথে প্রাচীন যে সমাজের সামঞ্জস্য রয়েছে- সেটি হলো আর্য সমাজ। উদ্দীপকে বিজয় চৌধুরীদের হিন্দু সমাজে বিভিন্ন শ্রেণি বিদ্যমান। যেমন : ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য, শূদ্র ইত্যাদি। তেমনি প্রাচীন বাংলার আর্য সমাজের অত্যন্ত প্রয়োজনীয় অঙ্গ ছিল জাতিভেদ প্রথা। প্রাচীনকালে বাংলায় ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য ও শূদ্র-এ চার প্রকার বর্ণ ছিল। পরবর্তী সময়ে আরও নানা প্রকার অর্থাৎ মিশ্র জাতির সৃষ্টি হয়। সমাজে সকল জাতির একটি নির্দিষ্ট পেশা ছিল।
ঘ উদ্দীপকে ইংগিতকৃত বিজয়ের দাদার বক্তব্যটি সঠিক। বিজয় তার দাদার কাছে গল্প শুনেছে, প্রাচীন বাংলায় বিভিন্ন শ্রেণির মধ্যে বিরাজমান বিধিনিষেধ সম্পর্কে। দাদার এ বক্তব্য মূলত আর্য সমাজ সম্পর্কে। প্রাচীন বাংলার আর্য সমাজের অধ্যয়ন, অধ্যাপনা ও পূজা-পার্বণ করা এগুলো ছিল ব্রাহ্মণদের নির্দিষ্ট কর্ম। তারা সমাজে সর্বশ্রেষ্ঠ মর্যাদা লাভ করতেন। ক্ষত্রিয়দের পেশা ছিল যুদ্ধ করা। ব্যবসা-বাণিজ্য করা ছিল বৈশ্যদের কাজ। সবচেয়ে নিচুশ্রেণির শূদ্ররা সাধারণত কৃষিকাজ, মাছ শিকার ও অন্যান্য ছোটখাটো কাজ করত। এরাই ছিল সংখ্যার দিক থেকে সবচেয়ে বেশি। কিন্তু তাদের তেমন কোনো অধিকার ছিল না। ব্রাহ্মণ ছাড়া বাকি সব বর্ণের মানুষ একে অন্যের সাথে মেলামেশা করত। সাধারণত এক জাতির মধ্যেই বিবাহ হতো। তবে উচ্চশ্রেণির বর ও নিম্নশ্রেণির কন্যার মধ্যে বিবাহও চালু ছিল। কিন্তু পরবর্তী সময়ে এসব ব্যাপারে কঠোর নিয়ম চালু হয়। এক জাতির সাথে অন্য জাতির পানি পান, আহার গ্রহণ নির্দিষ্ট হয়ে পড়ে। আলোচনা থেকে স্পষ্ট হয় যে, বিজয়ের দাদার বক্তব্যটি সঠিক।
প্রশ্ন- ৮ প্রাচীন বাংলার সংস্কৃতি
সুধীর সাহেবের মেয়ের আজ গায়েহলুদ। এ অনুষ্ঠান উপলক্ষে মেয়েরা শাড়ি, গয়না ও সিঁদুর পরে সেজেছে। পুরুষেরা ধূতি ও পাঞ্জাবি পরেছে। বিভিন্ন ধরনের গান গাওয়া ও মিষ্টান্ন খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
ক. কোন ভাষা থেকে বাংলাভাষার উৎপত্তি হয়? ১
খ. প্রাচীন বাংলার জনগণের খাদ্যাভ্যাস কেমন ছিল? ২
গ. সুধীর সাহেবের পালিত অনুষ্ঠানের সাথে প্রাচীন বাংলার কোন সংস্কৃতির সাদৃশ্য রয়েছে? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. উক্ত সংস্কৃতিতে উদ্দীপকে উল্লিখিত পোশাক-পরিচ্ছদ ব্যবহৃত হতো বিশ্লেষণ কর। ৪
ক অপভ্রংশ ভাষা থেকে বাংলা ভাষার উৎপত্তি হয়। প্রাচীন বাংলার মানুষের খাওয়া-দাওয়া, সামাজিক আচার-আচরণ বর্তমান সময়ের মতোই ছিল। এ সময় তাদের প্রধান খাবার ছিল ভাত, মাছ, মাংস, শাকসবজি, ফলমূল, দুধ, দই, ঘি, ক্ষীর ইত্যাদি। তখনো ইলিশ মাছ খুব প্রিয় খাবার ছিল। পূর্ব বাংলার মানুষ শুঁটকি মাছ পছন্দ করত। উৎসব অনুষ্ঠানে নানারকম খাবারের আয়োজন করা হতো। খাওয়া-দাওয়া শেষে মসলাযুক্ত পান খাওয়ার রীতি ছিল।
গ সুধীর সাহেবের পালিত গায়েহলুদ অনুষ্ঠানের সাথে প্রাচীন বাংলার আর্যপূর্ব সংস্কৃতির সাদৃশ্য রয়েছে। আর্যদের বাংলায় আগমনের পূর্বে এখানকার প্রাচীন জনপদের মানুষেরা একটি সাংস্কৃতিক জীবন গড়ে তোলে। পণ্ডিতদের মতে, বাংলার প্রাচীন জনগোষ্ঠীর ভাষার নাম ছিল ‘অস্ট্রিক’। জাতি হিসেবে এদের বলা হতো ‘নিষাদ’। এরপর বাংলার আদি অধিবাসীদের সাথে মিশে যায় ‘আলপাইন’ নামের এক জাতি। আর্যরা আসার পূর্বে এরা মিলেমিশে বাংলার সংস্কৃতি গড়ে তোলে। এভাবে প্রাচীন বাংলায় যে সমাজ সংস্কৃতি গড়ে ওঠে পরবর্তীকালে এর বহু প্রভাব রয়ে যায়। যেমন : কর্মফল, জন্মান্তরবাদ, যোগ সাধনা ইত্যাদি। প্রাচীন সংস্কৃতির বহু রীতিনীতি ও প্রথা আজও বাঙালি জনজীবনে বিদ্যমান। অনেক সামাজিক প্রথা যেমন : অতিথিদের পান-সুপারি খেতে দেওয়া, শিবের গীত গাওয়া, বিয়েতে গায়ে হলুদ দেওয়া, ধূতি পরা এবং মেয়েদের কপালে সিঁদুর দেওয়ার রীতি আজও আধুনিক সমাজে বিদ্যমান। উদ্দীপকে সুধীর সাহেব এমনই একটি অনুষ্ঠান তথা গায়েহলুদের আয়োজন করেন।
ঘ মানুষ সামাজিক জীব। প্রাচীন বাংলার সামাজিক জীবনধারা এখনো মোটামুটি অব্যাহত রয়েছে। তাই প্রাচীন বাংলার সমাজজীবনে উদ্দীপকে উল্লিখিত পোশাক-পরিচ্ছদের সাদৃশ্য পাওয়া যায়। প্রাচীন বাংলার পুরুষদের সাধারণ পোশাক ছিল ধূতি। সচরাচর নাভির নিচ থেকে হাঁটুর নিচ পর্যন্ত ধূতি পরার রীতি প্রচলিত ছিল। তবে বিত্তশালী পুরুষরা উপরের শরীর ঢাকার জন্য সেলাইবিহীন উত্তরীয় ব্যবহার করত। উদ্দীপকে গায়েহলুদ অনুষ্ঠানে পুরুষেরা ধূতি ও পাঞ্জাবি পরে। আবার প্রাচীন বাংলার মেয়েরা সাধারণভাবে শাড়ি পরত। মেয়েদের শাড়ি গোড়ালি পর্যন্ত পেঁৗঁছাত। তারা বিভিন্ন অলংকারও ব্যবহার করত। তেমনি উদ্দীপকে গায়েহলুদ অনুষ্ঠানে মেয়েরা শাড়ি, গয়না ব্যবহার করে। উপরিউক্ত আলোচনা থেকে বলা যেতেই পারে, প্রাচীন বাংলার সংস্কৃতিতে উদ্দীপকের পোশাক-পরিচ্ছদ ব্যবহৃত হতো।
প্রশ্ন- ৯ প্রাচীন বাংলার সামাজিক জীবন
‘ী’ অঞ্চলের সংস্কৃতি বিকাশের ধারায় প্রথম পরিবর্তন নিয়ে আসে বৌদ্ধ সংস্কৃতি। তাদের ধ্যান-ধারণা ঐ অঞ্চলের মানুষ সহজেই গ্রহণ করে। এই সময় ধর্ম ও সমাজজীবন ছিল ওতপ্রোতভাবে জড়িত। সমাজজীবনের বিভিন্ন দিকে ধর্মের প্রভাব ছিল সুস্পষ্ট। ঐ সময়ের সমাজজীবন ছিল আধুনিক সময়ের মতোই বৈচিত্র্যময়। খাওয়া-দাওয়া, পোশাক-পরিচ্ছদ, অনুষ্ঠান-প্রতিষ্ঠান সবকিছুতেই একটা প্রচ্ছন্ন মিল খুঁজে পাওয়া যায় দুই সময়ের মধ্যে।
ক. বাংলার সমাজ-সংস্কৃতির প্রাচীন রূপ কোনটি? ১
খ. প্রাচীন বাংলার মানুষ সহজেই বৌদ্ধ সংস্কৃতি গ্রহণ করে কেন? ২
গ. ‘ঢ’ অঞ্চলের মতো প্রাচীন বাংলার সমাজজীবন কীসের দ্বারা প্রভাবিত ছিল? বর্ণনা কর। ৩
ঘ. ‘ঢ’ অঞ্চল যে সময়কে নির্দেশ করে তার সাথে আধুনিক বাংলার সামাজিক জীবনের কোনো মিল আছে কি? মতের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন কর। ৪
ক আর্যদের আগমনের পূর্বে বাংলার আদি জনপদের মানুষেরা একটি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক জীবন গড়ে তুলেছিল। বাংলার সমাজ ও সংস্কৃতির এটাই সবচেয়ে প্রাচীন রূপ।
খ আর্য সংস্কৃতির পর সংস্কৃতির ক্ষেত্রে এক অভাবনীয় পরিবর্তন নিয়ে আসে বৌদ্ধ সংস্কৃতি। বৌদ্ধদের উদার দৃষ্টিভঙ্গির কারণে বাংলার মানুষ সহজেই বৌদ্ধ সংস্কৃতি গ্রহণ করে। সুপ্রাচীনকাল থেকেই বাংলায় যখন যে শাসকগোষ্ঠী শাসন করেছে বাংলার সমাজ সংস্কৃতির ওপর তাদের সুগভীর প্রভাব পড়েছে। পাল রাজারা চারশ বছর বাংলা শাসন করেন এবং এ সুদীর্ঘ সময়ে তারা বাংলায় বৌদ্ধ সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা চালায়। এ কারণে বাংলার মানুষ সহজে বৌদ্ধ সংস্কৃতি গ্রহণ করে।
গ ‘ঢ’ অঞ্চলের সংস্কৃতি বিকাশের ধারার প্রথম পরিবর্তন নিয়ে আসে বৌদ্ধ সংস্কৃতি, অর্থাৎ ‘ঢ’ অঞ্চলের সমাজজীবন ধর্ম দ্বারা প্রভাবিত। উদ্দীপকে উল্লিখিত হয়েছে ‘ঢ’ অঞ্চলে ধর্ম ও সমাজজীবন ছিল ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তদ্রƒপ প্রাচীন বাংলায় ধর্ম সমাজ ও সংস্কৃতির সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিল। সেই সময় বাংলার সমাজ ছিল মূলত ধর্মকেন্দ্রিক। প্রাচীন বাংলায় আর্যদের ধর্মবিশ্বাস খুব একটা প্রভাব বিস্তার করতে না পারলেও বৌদ্ধ ও হিন্দু শাসনামলে সমাজ ছিল ধর্ম প্রভাবিত। এ সময় ধর্মীয় বিভিন্ন অনুষ্ঠান ছিল মূলত সামাজিক অনুষ্ঠান। এদেশে যখন যে শাসকগোষ্ঠী শাসন করেছে এদেশের মানুষের ধর্মীয় ও সামাজিক জীবনে তাদের চিন্তাচেতনা যথেষ্ট প্রভাব বিস্তার করেছে। প্রাচীন বাংলায় বিভিন্ন সামাজিক প্রথা ও আচার-আচরণের ওপর ধর্মের প্রভাব ছিল স্পষ্ট। যেমন : শিবের গীত গাওয়া, বিয়েতে গায়েহলুদ দেওয়া, কপালে সিঁদুর দেওয়া, ধূতি-শাড়ি পরা, বিভিন্ন পূজা, অনুষ্ঠান ইত্যাদি ধর্মীয় অনুষ্ঠান হলেও তা ধীরে ধীরে সামাজিক অনুষ্ঠানে রূপ লাভ করে। এ সময় ধর্ম ও সমাজ ছিল একই সূত্রে গাঁথা।
ঘ ‘ঢ’ অঞ্চল প্রাচীন বাংলার সময়ের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। প্রাচীন বাংলার সামাজিক জীবনের সাথে বর্তমান সময়ের বাংলার সামাজিক জীবনের অনেক মিল রয়েছে। প্রাচীন বাংলার মানুষের প্রধান খাবার ছিল ভাত, মাছ, গোশত, শাকসবজি, ফলমূল, দুধ, দই, ঘি, ক্ষীর ইত্যাদি। বর্তমানকালেও বাংলার মানুষের কাছে এসব খাবার অত্যন্ত জনপ্রিয়। ইলিশ মাছ, শুঁটকি মাছ প্রভৃতি বর্তমানকালের ন্যায় প্রাচীন বাংলায়ও পছন্দনীয় ছিল। পোশাক-পরিচ্ছদেও খুব একটা অমিল ছিল না বর্তমান সময়ের সাথে। পুরুষের ধূতি, মেয়েদের শাড়ি, ওড়না, বিভিন্ন রকম অলংকার পরিধান, সিঁদুরের ব্যবহার প্রভৃতি প্রাচীনকালের ন্যায় বর্তমানেও ব্যবহৃত হচ্ছে। আধুনিক বাংলায় যানবাহনে নতুনত্ব এলেও প্রাচীন বাংলার ন্যায় এখনও গ্রামে-গঞ্জে নৌকা, ভেলা, গরুর গাড়ি ইত্যাদির প্রচলন রয়েছে। বাংলা আজীবনই কৃষিপ্রধান। প্রাচীনকালের ন্যায় বর্তমানেও বাংলার অধিকাংশ মানুষ কৃষিজীবী। প্রাচীন আমলে বাংলার অধিকাংশ মানুষ গ্রামে বাস করত। এখন বাংলার অধিকাংশ মানুষ গ্রামে বাস করে। প্রাচীন বাংলার বিভিন্ন খেলাধুলা, যেমন : পাশা, দাবা, নৌকাবাইচ কুস্তি ইত্যাদি এখনও বাংলায় জনপ্রিয়। বিভিন্ন ধর্মীয় ও সামাজিক অনুষ্ঠান এখনও মানুষ সমানভাবে পালন করে যাচ্ছে। উপরিউক্ত আলোচনা থেকে স্পষ্ট হয় যে, প্রাচীন বাংলার সাথে আধুনিক বাংলার সামাজিক জীবনের বেশ মিল রয়েছে।
প্রশ্ন- ১০ প্রাচীন বাংলার মানুষের সামাজিক জীবন ও নানা দক্ষতা
মিল্টন স্যার নবম শ্রেণির ক্লাসে প্রাচীন বাংলার ইতিহাস পড়াচ্ছিলেন। তখন অধিকাংশ মানুষের পেশা ছিল কৃষি। বিভিন্ন ধরনের কৃষিজপণ্য উৎপাদনের মাধ্যমে তারা অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হয়েছিল। সামাজিকভাবেও বিভিন্ন রীতি প্রচলিত ছিল। নারী ও পুরুষের আলাদা পোশাক-পরিচ্ছদ, অলঙ্কার, সাজসজ্জা প্রচলিত ছিল। স্যার আরও জানালেন, প্রাচীনকালে বাংলার মানুষ স্থাপত্যশিল্প, ভাস্কর্য এবং চিত্রকলায় দক্ষতা দেখিয়েছিল।
ক. প্রাচীন বাংলার মানুষ কোন ভাষায় কথা বলত? ১
খ. সংক্ষেপে প্রাচীন বাংলার অর্থনৈতিক অবস্থার বিবরণ দাও। ২
গ. শিক্ষকের উদ্ধৃত সামাজিক জীবনের সঙ্গে বর্তমানের সামাজিক জীবনের তুলনা কর। ৩
ঘ. প্রাচীন বাংলার মানুষের দক্ষতা সম্পর্কে শিক্ষকের মন্তব্যটি উদাহরণসহ বিশ্লেষণ কর। ৪
ক প্রাচীন বাংলার মানুষ ‘অস্ট্রিক’ ভাষায় কথা বলত।
খ বাংলাদেশ প্রাচীনকাল থেকেই কৃষিপ্রধান দেশ। এখানের অর্থনীতি গড়ে উঠেছিল কৃষির ওপর নির্ভর করে। ধান ছিল বাংলার প্রধান ফসল। বাংলায় প্রচুর পরিমাণে ধান উৎপন্ন হতো। ইক্ষুর রসে তৈরি গুড় ও চিনি বিদেশে রপ্তানি করে অর্থোপার্জন হতো। প্রাচীনকাল থেকেই বাংলা বস্ত্রশিল্পে প্রসিদ্ধ ছিল। বাংলায় বহু নদনদী থাকায় এদেশে নদীর তীরে অনেক বন্দর ও গঞ্জ গড়ে উঠেছিল। বিদেশের সাথেও এদেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিল। প্রাচীন যুগে বাংলার অর্থনৈতিক অবস্থা সমৃদ্ধশালী ছিল।
গ শিক্ষক ক্লাসে প্রাচীন বাংলার সামাজিক জীবনের কথা তুলে ধরেছেন। তখনকার প্রচলিত পোশাক-পরিচ্ছদ, সাজসজ্জা, খাবার-দাবারের সাথে বর্তমানের অনেক মিল রয়েছে। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে ব্যতিক্রমও দেখা যায়। প্রাচীন বাংলার মানুষের প্রধান খাবার ছিল ভাত, মাছ, মাংস, শাকসবজি, ফলমূল ইত্যাদি। বর্তমান যুগে এগুলো আমাদের প্রধান খাদ্য। প্রাচীনকালে ইলিশ মাছ পাওয়া যেত প্রচুর। আর বর্তমানে বাংলাদেশের জাতীয় মাছ হচ্ছে ইলিশ। উদ্দীপকে শিক্ষক পোশাক-পরিচ্ছদ, অলঙ্কার, সাজসজ্জার কথা বলেছেন। সেকালে পুরুষদের সাধারণ পোশাক ছিল ধূতি। মেয়েরা সাধারণত পরত শাড়ি। তবে ওড়নার ব্যবহারও ছিল। বর্তমানে পুরুষরা ধূতি তেমন ব্যবহার করে না। এখন প্যান্ট, শার্ট ও লুঙ্গি পুরুষদের প্রধান পোশাক। আর মেয়েরা ওড়না ব্যবহারের পাশাপাশি শাড়ি, সালোয়ার ইত্যাদি পরিধান করে। প্রাচীন বাংলার মানুষের চলাচলের প্রধান বাহন ছিল নৌকা ও গরুর গাড়ি। বর্তমানেও নৌকা দেখা যায় তবে আধুনিকতার ছোঁয়ায় এখন বাস, ট্রেন ও বিমান হচ্ছে মানুষের প্রধান যানবাহন। প্রাচীনকালে নারী-পুরুষ উভয়েই অলঙ্কার পরত। কিন্তু বর্তমানে মেয়েরা অলঙ্কার ব্যবহার করলেও ছেলেরা বিরত থাকছে। সুতরাং শিক্ষকের উদ্ধৃত প্রাচীন বাংলার সাথে বর্তমান মানুষের জীবনযাত্রার অনেক মিল থাকা সত্তে¡ও বেশ কিছু পরিবর্তন লক্ষ করা যায়।
ঘ উদ্দীপকে শিক্ষক মন্তব্য করেছেন যে, প্রাচীন বাংলার মানুষ স্থাপত্যশিল্প, ভাস্কর্য ও চিত্রকলার ক্ষেত্রে বিশেষ দক্ষ ছিল। এ সময় প্রচুর প্রাসাদ, স্তূপ, মন্দির, বিহার নির্মিত হয়েছিল। বর্তমানে এর অধিকাংশই ধ্বংস হয়ে গেছে। সবচেয়ে প্রাচীন স্থাপত্য নিদর্শন হচ্ছে বৌদ্ধস্তূপ। বৈদিক যুগে দেহাবশেষ পুঁতে রাখার জন্য শ্মশানের ওপর মাটির স্তূপ রক্ষা করার জন্য এ স্থাপত্য পদ্ধতিকে গ্রহণ করা হয়। পরে জৈনরাও স্তূপ নির্মাণ করেন। বৌদ্ধরা স্তূপকে মন্দিরের মতোই পবিত্র মনে করত। বৌদ্ধ ভিক্ষুদের বসবাস ও বিদ্যাচর্চা করার জন্য বিহার নির্মাণ করা হতো। চীন দেশের পর্যটকদের বিবরণ থেকে জানা যায়, বিহারগুলো বেশ বড় আকৃতির ও কারুকার্যখচিত ছিল। নওগাঁ জেলার পাহাড়পুরে অবস্থিত সোমপুর মহাবিহার পাল যুগে নির্মিত হয়েছিল। এছাড়া কুমিলা জেলার ময়নামতিতে বেশ কয়েকটি বিহারের ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গেছে। বাংলার মানুষই এসব স্থাপত্য নির্মাণের কারিগর ছিল। প্রাচীন বাংলার মন্দিরের ভেতরে দেব-দেবীর মূর্তি রাখার প্রয়োজনে প্রাচীন বাংলার ভাস্কর্য শিল্পের বিকাশ ঘটে। পাল আমল থেকেই বাংলায় চিত্রশিল্পের বিকাশ ঘটেছিল বলে অনুমান করা হয়। ধর্মীয় কারণেই প্রথমে চিত্রশিল্পের চর্চা শুরু হয়। তাই দেখা যায় যে, শুরুর দিকে মন্দির ও বৌদ্ধ বিহারের দেয়ালের গায়ে ছবি আঁকা হতো। বাংলার মানুষ এ বিষয়ে খুব দক্ষ ছিল। তথাপি কিছু কিছু নিদর্শন বাংলার বিভিন্ন স্থানে আজও দেখা যায়। সার্বিক আলোচনায় উদ্দীপকে শিক্ষকের মন্তব্যটি যথার্থ প্রমাণিত হয়।
প্রশ্ন- ১১ প্রাচীন বাংলার শিল্প ঐতিহ্য ও কৃষি
ঈদের ছুটি কাটিয়ে চারুলতা বরিশাল থেকে লঞ্চে ঢাকা ফিরছে। নদীর দু’তীরে নয়নাভিরাম শস্যক্ষেত তাকে মুগ্ধ করেছে। সারি সারি নারিকেল ও সুপারি গাছ এ দৃশ্যকে আরও স্নিগ্ধ করছে। নদীতে বসে কৃষিপ্রধান বাংলাদেশের এ সৌন্দর্য আরও বেশি অনুভব করা যায়। নদীর কিনারে সাঁতার কাটছে হাঁস। রাখাল গরু-ছাগল চরাচ্ছে। ঈদের জন্য চারুলতার মা তাকে একটি সুন্দর জামদানি শাড়ি ও এক সেট গয়না কিনে দিয়েছেন।
ক. খিল কী? ১
খ. বাংলা চিরকালই কৃষিপ্রধান দেশÑ ব্যাখ্যা কর। ২
গ. চারুলতার মায়ের কেনা শাড়ি ও গয়না প্রাচীন বাংলার কোন শিল্প ঐতিহ্যের ইঙ্গিত করে? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. উদ্দীপকের আলোকে প্রাচীন বাংলার কৃষি সম্পর্কিত ব্যাখ্যা উপস্থাপন কর। ৪
ক প্রাচীনকালে উর্বর অথচ পতিত জমিকে ‘খিল’ বলা হতো।
খ বাংলাকে চিরকালই কৃষিপ্রধান দেশ বলা হয়। প্রাচীনকালে বাংলার অধিবাসীদের বেশিরভাগ লোকই গ্রামে বাস করত। তারা সবাই মিলে একসাথে গ্রাম গড়ে তুলত। তারা গ্রামের আশপাশের ভ‚মি চাষ করে সংসার চালাত। ধান, পাট, আখ, তুলা প্রভৃতি ফসল বিভিন্ন ফলমূল সবই বাংলার মানুষ চাষ করত। বর্তমানের মতোই কৃষির ওপর ভিত্তি করে অর্থনীতি গড়ে উঠেছিল বলে এদেশকে চিরকালই কৃষিপ্রধান দেশ বলা হয়।
গ চারুলতার মায়ের কেনা শাড়ি ও গয়না প্রাচীন বাংলার শিল্প ঐতিহ্যকে ইঙ্গিত করে। বস্ত্রশিল্পের জন্য বাংলা প্রাচীনকালেই বিখ্যাত হয়ে উঠেছিল। বিশ্বখ্যাত মসলিন কাপড় প্রাচীনকাল থেকেই বাংলায় তৈরি হতো। এ বস্ত্র এতো সূ² ছিল যে, ২০ গজ মসলিন একটি নস্যের কৌটায় ভরা যেত। কার্পাস তুলা ও রেশমের তৈরি উন্নতমানের সূ² বস্ত্রের জন্যও বাংলা প্রসিদ্ধ ছিল। চারুলতার মা এমন একটি জামদানি শাড়ি তার জন্য কিনেছিল যার মাধ্যমে বাংলার এ শিল্পের পরিচয় পাওয়া যায়। চারুলতার মা এক সেট সোনার গয়নাও কিনেছিল যার মাধ্যমে বিলাসিতা প্রকাশ পায়। প্রাচীন বাংলায় বিলাসিতার নানা রকম জিনিসের জন্য স্বর্ণশিল্পী ও মনিমাণিক্য শিল্প অনেক উন্নতি লাভ করেছিল। অতএব, বলা যায় যে, চারুলতার মায়ের কেনা শাড়ি ও গয়না প্রাচীন বাংলার বস্ত্র ও স্বর্ণশিল্পের ইঙ্গিত বহন করে।
ঘ উদ্দীপকে প্রাকৃতিক দৃশ্যের বর্ণনার মধ্যে প্রাচীন বাংলার কৃষির বিভিন্ন দিক ফুটে উঠেছে। উদ্দীপকে চারুলতা নদীর দুধারে নয়নাভিরাম শস্যক্ষেত, সারি সারি নারিকেল ও সুপারি গাছ দেখতে পেল। প্রাচীনকালেও বাংলার অধিকাংশ মানুষ গ্রামের আশপাশের ভ‚মি চাষ করে সংসার চালাত, তারাই গ্রাম গড়ে তুলেছিল। তারা বিভিন্ন শস্যের আবাদ করত। বাংলায় প্রাচীনকাল থেকেই ধান, পাট, ইক্ষু, তুলা, নীল, সর্ষে, পান প্রভৃতি ফসলের চাষ হতো। উদ্দীপকে উল্লিখিত নারকেল, সুপারি গাছ ছাড়াও রয়েছে আম, কাঁঠাল, ডালিম, কলা, লেবু, ডুমুর, খেজুর প্রভৃতি গাছ, যা প্রাচীনকালে প্রচুর জন্মাত। উদ্দীপকে রাখাল গরু-ছাগল চরাচ্ছিল। নদীর কিনারে সাঁতার কাটছিল হাঁস। এর মাধ্যমেও প্রাচীন বাংলার চিত্র ফুটে উঠেছে। তখন গৃহপালিত পশুর মধ্যে গরু-ছাগল, মেষ, হাঁস-মুরগি, কুকুর ইত্যাদি ছিল প্রধান। এভাবে প্রাচীন বাংলায় কৃষির প্রভাব ছিল সুস্পষ্ট।
জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন \ ১ \ বৈশ্যদের প্রধান কাজ কী ছিল?
উত্তর : ব্যবসা-বাণিজ্য করা ছিল বৈশ্যদের প্রধান কাজ।
প্রশ্ন \ ২ \ আলপাইন কী?
উত্তর : আলপাইন একটি জাতির নাম।
প্রশ্ন \ ৩ \ প্রাচীনকালে বাংলায় কয় প্রকার বর্ণ ছিল?
উত্তর : প্রাচীনকালে বাংলায় চার প্রকার বর্ণ ছিল।
প্রশ্ন \ ৪ \ ক্ষত্রিয়দের প্রধান পেশা কী ছিল?
উত্তর : ক্ষত্রিয়দের প্রধান পেশা ছিল যুদ্ধ করা।
প্রশ্ন \ ৫ \ মানুষ কী ধরনের জীব?
উত্তর : মানুষ সামাজিক জীব।
প্রশ্ন \ ৬ \ প্রাচীনকালে বাংলার অধিবাসীদের বেশির ভাগ কোথায় বাস করত?
উত্তর : প্রাচীনকালে বাংলার অধিবাসীদের বেশির ভাগ গ্রামে বাস করত।
প্রশ্ন \ ৭ \ বাংলা ভাষায় মোট কতটি চর্যাপদ পাওয়া গিয়েছে?
উত্তর : বাংলা ভাষায় মোট ৪৭টি চর্যাপদ পাওয়া গিয়েছে।
প্রশ্ন \ ৮ \ প্রাচীন বাংলার স্থাপত্য শিল্পের শ্রেষ্ঠ নিদর্শন কী?
উত্তর : প্রাচীন বাংলার স্থাপত্য শিল্পের শ্রেষ্ঠ নিদর্শন পাহাড়পুরের বৌদ্ধবিহার।
প্রশ্ন \ ৯ \ কুটিরশিল্পে প্রাচীন বাংলা কেমন ছিল?
উত্তর : কুটিরশিল্পে প্রাচীন বাংলা অত্যন্ত সমৃদ্ধ ছিল।
প্রশ্ন \ ১০ \ ভারত উপমহাদেশের সবচেয়ে প্রাচীন স্থাপত্যের নিদর্শন কী?
উত্তর : ভারত উপমহাদেশের সবচেয়ে প্রাচীন স্থাপত্যের নিদর্শন স্তূপ।
প্রশ্ন \ ১১ \ পাহাড়পুরের ভাস্কর্য শিল্পকে কয়ভাগে ভাগ করা যায়?
উত্তর : পাহাড়পুরের ভাস্কর্য শিল্পকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়।
প্রশ্ন \ ১২ \ সম্রাট অশোকের রাজত্বকালে কোথায় জৈন স¤প্রদায় বিদ্যমান ছিল?
উত্তর : সম্রাট অশোকের রাজত্বকালে উত্তরবঙ্গে জৈন স¤প্রদায় বিদ্যমান ছিল।
প্রশ্ন \ ১৩ \ প্রাচীন বাংলায় বিজয়া দশমীর দিন কী নামের নৃত্যগীতের অনুষ্ঠান হতো?
উত্তর : প্রাচীন বাংলায় শাবোরৎসব নামে নৃত্যগীতের অনুষ্ঠান হতো।
প্রশ্ন \ ১৪ \ বাংলার হিন্দুদের দৈনন্দিন জীবনে কীসের প্রবল প্রভাব ছিল?
উত্তর : বাংলার হিন্দুদের দৈনন্দিন জীবনে ধর্মশাস্ত্রের প্রবল প্রভাব ছিল।
প্রশ্ন \ ১৫ \ কীসে বাংলার নৈতিক জীবনের খুব উচ্চ আদর্শের পরিচয় পাওয়া যায়?
উত্তর : প্রাচীন ধর্মশাস্ত্রে বাংলার নৈতিক জীবনের খুব উচ্চ আদর্শের পরিচয় পাওয়া যায়।
প্রশ্ন \ ১৬ \ প্রাচীন বাংলায় ধনসম্পত্তিতে কাদের কোনো অধিকার ছিল না?
উত্তর : প্রাচীন বাংলায় ধনসম্পত্তিতে নারীদের কোনো অধিকার ছিল না।
প্রশ্ন \ ১৭ \ আর্যদের ভাষার নাম কী?
উত্তর : আর্যদের ভাষার নাম প্রাচীন বৈদিক ভাষা।
প্রশ্ন \ ১৮ \ বৈদিক ভাষা সংস্কার হয়ে কোন ভাষায় রূপ নেয়?
উত্তর : বৈদিক ভাষা সংস্কার হয়ে সংস্কৃত ভাষায় রূপ নেয়।
প্রশ্ন \ ১৯ \ প্রাচীন বাংলার শিল্পকলার ক্ষেত্রে কোন যুগ স্মরণীয়?
উত্তর : প্রাচীন বাংলার শিল্পকলার ক্ষেত্রে পাল যুগ স্মরণীয়।
প্রশ্ন \ ২০ \ সমাজে কারা উঁচুশ্রেণির মানুষ ছিল?
উত্তর : সমাজে ব্রাহ্মণরা উঁচুশ্রেণির মানুষ ছিল।
অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন \ ১ \ সংস্কৃতি বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : জীবন বাঁচাতে তিনটি জিনিসের প্রয়োজন- খাদ্য, বস্ত্র এবং বাসস্থান। এরপরই মানুষ জীবনকে সুন্দরভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে মনোযোগ দেয়- শিক্ষা, বিজ্ঞান, শিল্পকলা, আইন প্রভৃতির উন্নয়নে। সমাজজীবন বিকাশে মানুষের এসব কাজকর্মের একত্রিত রূপই হচ্ছে তার সংস্কৃতি।
প্রশ্ন \ ২ \ চর্যাপদ বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : প্রাচীন বাংলা ভাষার নিদর্শনরূপে বাংলা ভাষায় রচিত কিছু গ্রন্থ পাওয়া যায়। এর মধ্যে হরপ্রসাদ শাস্ত্রী কর্তৃক নেপাল থেকে সংগৃহীত চারটি প্রাচীন বৌদ্ধ পুঁথি চর্যাপদ নামে পরিচিত। এ পর্যন্ত ৪৭টি চর্যাপদ পাওয়া গেছে।
প্রশ্ন \ ৩ \ শালবন বিহার কী?
উত্তর : বাংলায় প্রাচীনকালের বহু নিদর্শনের মধ্যে অন্যতম হলো বিহার। কয়েক বছর পূর্বে কুমিল্লার ময়নামতিতে কয়েকটি বিহার পাওয়া যায়। এটি শালবন বিহার নামে পরিচিত।
প্রশ্ন \ ৪ \ অস্ট্রো এশিয়াটিক জাতি কারা?
উত্তর : বাংলার প্রাচীনতম অধিবাসীরা সম্ভবত ছিল অস্ট্রিক। তারা ব্রহ্মদেশে (মায়ানমার) ও শ্যামদেশের (থাইল্যান্ড) মোন এবং কম্বোজের ক্ষের শাখার মানুষের আত্মীয়। এ জাতীয় মানুষকেই বোধ হয় বলা হতো ‘নিষাদ’ কিংবা নাগ, আর পরবর্তীকালে ‘কোল্ল’, ‘ভিল্ল’ ইত্যাদি।
প্রশ্ন \ ৫ \ সংস্কৃত ভাষার নামকরণ হয় কীভাবে?
উত্তর : আর্যদের ভাষার নাম প্রাচীন বৈদিক ভাষা। পরবর্তীকালে এ ভাষাকে সংস্কার করা হয়। পুরনো ভাষাকে সংস্কার করা হয় বলে এই ভাষার নাম হয় সংস্কৃত ভাষা। এভাবে সংস্কৃত ভাষার নামকরণ করা হয়।
প্রশ্ন \ ৬ \ জৈন ধর্ম সম্পর্কে লেখ।
উত্তর : খ্রিষ্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকে জৈন ধর্মের প্রবর্তক বর্ধমান মহাবীর রাঢ় এ দেশে আগমন করেছিলেন। কিন্তু সেখানকার লোকেরা তার ধর্ম গ্রহণ করেনি। বরং তার সাথে দুর্ব্যবহার করেছিল। তাই বলে জৈন ধর্মের অগ্রগতি রোধ করা যায়নি। প্রাচীনকাল হতে এ স¤প্রদায়ের লোকেরা নিগ্রহন্ত নামে পরিচিত হতো। গুপ্ত যুগ পর্যন্ত এ নাম প্রচলিত ছিল। সম্রাট অশোকের রাজত্বকালে উত্তরবঙ্গে জৈন স¤প্রদায় বিদ্যমান ছিল।
প্রশ্ন \ ৭ \ প্রাচীন বাংলায় নারী-পুরুষের সামাজিক অবস্থা কেমন ছিল? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : প্রাচীনকালে বাঙালি পুরুষদের কোনো সুনাম ছিল না। বরং তারা বিবাদপ্রিয় ও উদ্ধত বলে পরিচিত ছিল। কিন্তু বাঙালি মেয়েদের সুখ্যাতি ছিল। মেয়েরা লেখাপড়াও শিখত। শিক্ষিত সমাজে মাতা ও পতœীর সম্মান ও মর্যাদা বেশ উচ্চ ছিল। সে যুগে অবরোধ বা পর্দা প্রথা ছিল না। তবে বাংলার মেয়েদের কোনো স্বাতন্ত্র্য বা স্বাধীনতা ছিল না। তবে পুরুষের মধ্যে বহু বিবাহপ্রথা প্রচলিত ছিল। অনেক স্ত্রীকেই সপতœীর সঙ্গে একত্রে জীবনযাপন করতে হতো। বৈধব্য নারী জীবনের চরম অভিশাপ বলে বিবেচিত হতো। মুছে যেত কপালের সিঁদুর এবং সেই সঙ্গে তার সমস্ত প্রসাধন ও অলঙ্কার। বিধবাকে নিরামিষ আহার করে সব ধরনের বিলাস বর্জন ও কৃচ্ছ্রসাধন করতে হতো। অর্থাৎ স্বামীর মৃত্যু হলে একই চিতায় স্ত্রীকেও জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হতো। প্রাচীন বাংলায় ধন-সম্পত্তিতে নারীদের কোনো আইনগত অধিকার ছিল না। তবে, স্বামীর অবর্তমানে অপুত্রক বিধবা স্ত্রী স্বামীর সমস্ত সম্পত্তির অধিকার দাবি করতে পারত।
প্রশ্ন \ ৮ \ প্রাচীন বাংলার আচার-অনুষ্ঠান সম্পর্কে লেখ।
উত্তর : প্রাচীন বাংলায় পূজা-পার্বণ ও আমোদ প্রমোদের প্রচুর ব্যবস্থা ছিল। দুর্গার অর্চনা উপলক্ষে বরেন্দ্রে বিপুল উৎসব হতো। বিজয়া দশমীর দিন ‘শাবোরৎসব’ নামে একপ্রকার নৃত্যগীতের অনুষ্ঠান হতো। চৈত্র মাসে বাদ্য সহকারে এক ধরনের অশ্লীল গানের রীতি তখন প্রচলিত ছিল। হোলাকা বা বর্তমান কালের ‘হোলি’ একটি প্রধান উৎসব ছিল। স্ত্রী-পুরুষ সকলে এতে যোগদান করত। কোজাগরী পূর্ণিমা রাত্রিতে অক্ষ-ক্রীড়া হতো। আত্মীয়স্বজন মিলে চিড়া ও নারকেলের প্রস্তুত নানাবিধ খাদ্য গ্রহণ সে রাত্রির প্রধান অঙ্গ ছিল। দ্যুত-পতিপদ নামে একটি বিশেষ উৎসব কার্তিক মাসের শুক্লা প্রতিপদে অনুষ্ঠিত হতো। এ মাসেই সুখরাত্রিব্রত পালিত হতো। ভ্রাতৃদ্বিতীয়া, আকাশপ্রদীপ, জন্মাষ্টমী, অক্ষয় তৃতীয়া, দশহরা, গঙ্গাস্নান, মহাঅষ্টমীতে ব্রহ্মপুত্র স্নান ইত্যাদি বর্তমানের সুপরিচিত অনুষ্ঠানগুলো সেকালেও প্রচলিত ছিল।