চাষার দুক্ষু
রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন
লেখক পরিচিতি
নাম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন
জন্ম ও পরিচয় জন্ম তারিখ : ৯ ডিসেম্বর, ১৮৮০ খ্রিষ্টাব্দ।
জন্মস্থান : পায়রাবন্দ, মিঠাপুকুর, রংপুর।
পিতৃ ও মাতৃ পরিচয় পিতার নাম : জহীরুদ্দিন মোহাম্মদ আবু আলী হায়দার সাবের।
মাতার নাম : সাবেরা চৌধুরানী।
শিক্ষাজীবন পারিবারিক রক্ষণশীলতার কারণে তিনি প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা লাভ করতে পারেন নি। তবে নিজের ঐকান্তিক চেষ্টা এবং বড় ভাই ও তাঁর স্বামীর অনুপ্রেরণা ও সহযোগিতায় জ্ঞানচর্চায় সাফল্য অর্জন করেন।
কর্মজীবন বিবাহোত্তর প্রথম জীবনে গৃহিণী। স্বামীর মৃত্যুর পর তিনি সমাজসংস্কার, নারীর শিক্ষা, কর্মসংস্থান ও আইনগত অধিকার প্রতিষ্ঠায় আত্মনিয়োগ করেন। এসব কাজে তিনি বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেন।
সাহিত্য সাধনা গদ্যগ্রন্থ : মতিচুর, অবরোধবাসিনী, ড্যালিসিয়া হত্যা, নূর ইসলাম প্রভৃতি।
উপন্যাস : পদ্মরাগ।
অনুবাদগ্রন্থ : সুলতানার স্বপ্ন।
বিশেষ কৃতিত্ব তিনি ছিলেন নারীজাগরণের অগ্রদূত। তিনি মুসলিম নারীদের সংস্কার ও মুক্তির জন্য তাদেরকে শিক্ষার আলোকে উদ্ভাসিত করার মানসে আজীবন ক্ষুরধার সাহিত্য সৃষ্টি করে গেছেন।
মৃত্যু ৯ ডিসেম্বর, ১৯৩২ খ্রিষ্টাব্দ।
গুরুত্বপূর্ণ সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
সোনাকুড়া গ্রামের শিল্পী ও সবুর কৃষক-দম্পতি। ঋণগ্রস্ত সবুর একে একে সব বন্ধক রেখে আজ নিঃস্ব। বাঁচার তাগিদে শিল্পী গ্রাম ছেড়ে শহরে চলে যান। সেখানে এক ধনী পরিবারে গৃহপরিচারিকার কাজ নেন তিনি। সেখানে তিনি দেখেন গ্রামের নারীদের তৈরি নকশি কাঁথার কদর অনেক বেশি। নিজের পায়ে দাঁড়ানোর তীব্র আকাক্সক্ষা নিয়ে শিল্পী গ্রামে ফিরে আসেন। আরও কয়েকজন নারীকে নিয়ে তিনি একটি কর্মীদল গঠন করেন। তারা সবাই মিলে নকশি কাঁথা প্রস্তুত করে শহরে বিক্রির মাধ্যমে নিজেদের দারিদ্র্য মোচন করেন। শিল্পীও বন্ধক রাখা সব জমি পুনরুদ্ধার করেন।
ক. রংপুর অঞ্চলে রেশমকে স্থানীয় ভাষায় কী বলে?
খ. “শিরে দিয়ে বাঁকা তাজ ঢেকে রাখে টাক” বলতে প্রাবন্ধিক কী বুঝিয়েছেন?
গ. ‘চাষার দুক্ষু’ প্রবন্ধের কোন দিকটি শিল্পীর মধ্যে প্রকাশ পেয়েছে তা ব্যাখ্যা কর।
ঘ. শিল্পীর স্বাবলম্বন ‘চাষার দুক্ষু’ প্রবন্ধে লেখকের বর্ণিত দিক-নির্দেশনার আলোকে ব্যাখ্যা কর। ১
২
৩
৪
১ নং প্রশ্নের উত্তর
স্থানীয় ভাষায় ‘এন্ডি’ বলে।
প্রাবন্ধিক বাংলার কৃষকদের বর্তমান অবস্থাকে বুঝিয়েছেন।
আমাদের দেশের কৃষকরা নিদারুণ কষ্ট ও দারিদ্র্যের মধ্যে দিনযাপন করে। কিন্তু চরম দারিদ্র্যের মধ্যে অবস্থান করেও কোনো কোনো কৃষক বিলাসিতায় আক্রান্ত। আলোচ্য অংশে ‘বাঁকা তাজ’ তাদের সেই বিলাসিতাকে ইঙ্গিত করেছে। আর টাক তাদের চরম দারিদ্র্যের পরিচায়ক।
‘চাষার দুক্ষু’ প্রবন্ধের ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের পুনরুদ্ধারের মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচনের দিকটি শিল্পীর মধ্যে প্রকাশ পেয়েছে।
অতীতে বাংলাদেশের গ্রামে গ্রামে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের ব্যাপক প্রচলন ছিল। এসব শিল্পের মাধ্যমে সংসারের অভাব অনেকাংশে ঘুচে যেত। কিন্তু মানুষের বিলাসিতা ও আধুনিক সভ্যতার ছোঁয়ায় গ্রামীণ কুটির শিল্প আজ ধ্বংসের সম্মুখীন। এর সাথে সাথে গ্রামের কৃষক-শ্রেণির দরিদ্রতাও বৃদ্ধি পাচ্ছে।
প্রবন্ধে প্রাবন্ধিক বলেছেন যে, একসময় কুটির শিল্পের মাধ্যমে এদেশের গ্রামগুলো স্বনির্ভরতা অর্জন করেছিল। ব্রিটিশ শাসকগোষ্ঠীর কারণে এই কুটির শিল্পগুলো একে একে ধ্বংস হয়ে গেছে। গ্রামীণ কুটির শিল্পের বিপর্যয় কৃষকদের জীবনে নিয়ে এসেছে চরম দারিদ্র্য। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য প্রাবন্ধিক গ্রামীণ কুটির শিল্প পুনরুদ্ধারের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। উদ্দীপকের কৃষকবধূ শিল্পী কুটির শিল্পের মাধ্যমেই তার ভাগ্যের চাকাকে ঘুরিয়ে দিয়েছে। কুটির শিল্পের মাধ্যমে তিনি তার সংসারের দারিদ্র্য মোচন করতে সক্ষম হয়েছেন।
‘চাষার দুক্ষু’ প্রবন্ধে প্রাবন্ধিক গ্রামীণ কুটির শিল্পের মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচনের দিক-নির্দেশনা দিয়েছেন।
একসময় বাংলাদেশের ঘরে ঘরে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের প্রচলন ছিল। এ শিল্পের সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত ছিল নারীরা। অবসর সময়ে বসে বসে তারা নকশিকাঁথা, বাঁশ ও বেতের তৈরি নানা জিনিস, পাটের তৈরি দ্রব্যাদি তৈরি করত। কিন্তু সভ্যতার ক্রমবিকাশে মানুষের বিলাসিতা বৃদ্ধি পাওয়ায় গ্রামীন হস্ত-শিল্পও কুটির শিল্প আজ ধ্বংসপ্রায়। অথচ এর সাথে পালা দিয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে মানুষের দারিদ্র্যও। তাই নারী শিল্পসমূহ পুনরুদ্ধারের মাধ্যমে নারীদের দারিদ্র্যবিমোচনের পথে অগ্রসর হতে হবে।
‘চাষার দুক্ষু’ প্রবন্ধে প্রাবন্ধিক খেদোক্তির সাথে বলেছেন যে, ভারতবর্ষের কৃষকদের দুরবস্থার অন্যতম কারণ তাদের বিলাসিতা। এ কারণেই কুটির শিল্পগুলো ক্রমশ ধ্বংস হয়ে গেছে। তাই এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য তিনি শিল্পসমূহ পুনরুদ্ধারের কথা বলেছেন। উদ্দীপকের শিল্পী যেন প্রাবন্ধিকের নির্দেশিত পথেই দারিদ্র্য ঘুচিয়েছেন। সংসারে তীব্র দারিদ্র্য দেখা দিলে তিনি নিজের পায়ে দাঁড়ানোর তীব্র আকাক্সক্ষা নিয়ে নকশিকাঁথা তৈরিতে মনোযোগী হন। এতে সফলও হন তিনি।
‘চাষার দুক্ষু’ প্রবন্ধে প্রাবন্ধিক কৃষকের দারিদ্র্য বিমোচনের উপায় হিসেবে গ্রামীণ হস্তশিল্পে ও কুটির শিল্পে নারীর সম্পৃক্ততা ও তার স্বাবলম্বনের কথা বলেছেন। উদ্দীপকের শিল্পী এ পথেই অগ্রসর হয়েছেন। গ্রামীণ কুটির শিল্পে সম্পৃক্ততার মাধ্যমেই তিনি সংসারের দারিদ্র্য ঘুচিয়েছেন।
অতিরিক্ত অনুশীলন (সৃজনশীল) অংশ
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
সভ্যতা বলতে কেবল বস্তুগত উন্নতিকেই বোঝায় না। বর্তমান যুগের ভারতের বিজ্ঞানবল মহান সাধক গৌতম বুদ্ধের যুগের ভারতের চেয়ে অনেক বেশি। এখন ভারতে রেলগাড়ি ছুটছে, মোটর ছুটছে, বিমান ও স্টিমার চলছে। আগ্নেয়াস্ত্রকামান, কলকারখানা সবই আছে। আর প্রাচীন ভারতে এসবের কোনো অস্তিত্বই ছিল না। এসব সত্তে¡ও মহাবীর, বুদ্ধের প্রাচীন ভারতকে আমরা বর্তমান ভারত অপেক্ষা বেশি সভ্য বলে মনে করি। কেননা, সভ্যতা হলো মানবজীবনের সার্বিক বিকাশ।
ক. কত বছর পূর্বে ভারতবাসী অসভ্য বর্বর ছিল বলে জনশ্র“তি আছে?
খ. “এখন আমাদের সভ্যতা ও ঐশ্বর্য রাখিবার স্থান নাই।” লেখিকা একথা কেন বলেছেন?
গ. উদ্দীপকের বক্তব্যের সাথে ‘চাষার দুক্ষু’ রচনার বৈসাদৃশ্য তুলে ধর।
ঘ. উদ্দীপকে ‘চাষার দুক্ষু’ রচনার লেখিকার এ বিষয়ে ভাবনা ভিন্ন প্রেক্ষাপটে পরিবেশিত হয়েছে। মন্তব্যটির মূল্যায়ন কর। ১
২
৩
৪
২ নং প্রশ্নের উত্তর
দেড়শ বছর পূর্বে ভারতবাসী অসভ্য ও বর্বর ছিল বলে জনশ্র“তি আছে।
নগর সভ্যতার অনুষঙ্গরূপে বিভিন্ন স্থাবরÑঅস্থাবর ও যান্ত্রিক সামগ্রীর প্রাচুর্যের প্রতি লক্ষ করে লেখিকা উপর্যুক্ত কথা বলেছেন।
সভ্যতার একাংশ বস্তুগত সামগ্রী তথা আকাশছোঁয়া পাকা বাড়ি, রেল, স্টিমার, এ্যারোপ্লেন, মোটরলরি, টেলিফোন, টেলিগ্রাফ, পোস্ট অফিস, নানা কলকারখানা, ডাক্তারের প্রাচুর্য, ওষুধ-পথ্যের ছড়াছড়ি, অপারেশন থিয়েটার, ইলেকট্রিক যান ইত্যাদি। এসবের প্রাচুর্যকেই ব্যঙ্গ করে লেখিকা বলেন, “এখন আমাদের সভ্যতা ও ঐশ্বর্য রাখিবার স্থান নাই।”
শুধু বস্তুগত উন্নতিকেই সভ্যতা বলা সম্পর্কে উদ্দীপকের বক্তব্যের সাথে ‘চাষার দুক্ষু’ রচনার বৈসাদৃশ্য রয়েছে।
ইংরেজি ঈরারষরুধঃরড়হ-এর বাংলা প্রতিশব্দ সভ্যতা। সভ্যতা মূলত অগ্রসরমান জটিল সংস্কৃতির একটি পর্যায় বা অবস্থান। এ অর্থে সংস্কৃতি ও সভ্যতার মধ্যে খুব একটা পার্থক্য পরিলক্ষিত হয় না। সভ্যতা বলতে মানব প্রয়াসের ফলে অর্জিত এমন এক সার্বিক সাফল্য যার বস্তুগত রূপ-প্রকৃতি সংস্কৃতির একটি চরম উন্নতির পর্যায়কে বোঝায়।
উদ্দীপকে বলা হয়েছে, সভ্যতা বলতে কেবল বস্তুগত উন্নতিকেই বোঝায় না। বক্তব্যের সপক্ষে উদাহরণ হিসেবে বলা হয়েছেÑ বর্তমানে ভারতে রেলগাড়ি, মোটরগাড়ি, স্টিমার, বিমান, তোপ, কামান, কলকারখানার মতো বস্তুগত উন্নয়নের চরম উৎকর্ষ সাধিত হয়েছে, যা মহাবীর ও গৌতম বুদ্ধের ভারতে ছিল না। তারপরও আমরা প্রাচীন ভারতকে বর্তমান ভারত অপেক্ষা বেশি সভ্য বলে মনে করি। কেননা, সভ্যতা হলো মানবজীবনের সার্বিক বিকাশ। উদ্দীপকের এ বক্তব্য বিষয়ের সম্পূর্ণ বিপরীত বক্তব্য ‘চাষার দুক্ষু’ প্রবন্ধে দৃশ্যমান। প্রবন্ধের শুরুতেই লেখিকা দেড়শ বছর আগেকার ভারতবাসীকে অসভ্য বর্বর অনুমান করছেন আর বর্তমান ভারতকে সভ্য জ্ঞান করছেন। আর সভ্যতার প্রমাণস্বরূপ লেখিকা আকাশছোঁয়া পাঁচতলা পাকা বাড়ি, রেল, স্টিমার, এ্যারোপ্লেন, মোটরগাড়ি, টেলিফোন, টেলিগ্রাফ, পোস্ট অফিস, অপারেশন থিয়েটার, এবং ইলেকট্রিক ফ্যানের মতো নানা বস্তুগত প্রযুক্তি-সামগ্রীর উপস্থিতিকে উপস্থাপন করেছেন, যা প্রদত্ত উদ্দীপকের বিপরীত ধ্যানধারণা ও আদর্শের ফল।
বস্তুগত উন্নতি সভ্যতার অন্যতম নির্ণায়ক হলেও শুধু বস্তুগত উন্নতিই যে সভ্যতা নয় এ বিষয়টি উদ্দীপক ও ‘চাষার দুক্ষু’ রচনায় পরিলক্ষিত হয়।
শুধু মুষ্টিমেয় কিছু লোকের বৈষয়িক অসাধারণ উন্নতিই সভ্যতার মানদণ্ড নয়। বরং মানবজীবনের সার্বিক বিকাশই সভ্যতার ভিত্তি। সভ্যতার সম্বন্ধ বাহ্যিক সম্পদ কিংবা শক্তির দম্ভের সাথে নয়; বরং নৈতিক ও আধ্যাত্মিক উৎকর্ষের সাথে। তাই সভ্যতার জন্য প্রয়োজন সব মানুষের বস্তুগত, নৈতিক ও মনোজাগতিক উৎকর্ষ সাধন।
আপাতদৃষ্টিতে মনে হয়, উদ্দীপক ও ‘চাষার দুক্ষু’ রচনায় সভ্যতা সম্পর্কে বক্তব্য পরস্পরবিরোধী। উদ্দীপকে যেখানে বলা হয়েছে, সভ্যতা বলতে শুধু বস্তুগত উন্নতিকেই বোঝায় না এবং বস্তুগত ও প্রযুক্তি জ্ঞান ও সম্ভারে সমৃদ্ধ বর্তমান ভারত অপেক্ষা প্রাচীন ভারতই বেশি সভ্য, সেক্ষেত্রে ‘চাষার দুক্ষু’ রচনায় লেখিকা মাত্র দেড়শ বছর পূর্বের ভারতকে অসভ্য বর্বর অনুমান করেছেন। সেই সাথে আকাশছোঁয়া অট্টালিকা, রেল, স্টিমার, এ্যারোপ্লেন, মোটরগাড়ি, টেলিফোন, টেলিগ্রাফ, পোস্ট অফিস, ডাক্তার, অপারেশন থিয়েটার এবং ইলেকট্রিক ফ্যান সমৃদ্ধ ভারতকে সভ্য-ভারত প্রমাণে সচেষ্ট হয়েছেন।
‘চাষার দুক্ষু’ রচনার শুরুতে বস্তুগত উন্নতিকে সভ্যতার মাপকাঠি দেখালেও সেটি ছিল লেখিকার ধান ভানতে শিবের গান।
পরিশেষে উপরিউক্ত আলোচনার আলোকে বলা যায়, উদ্দীপকে ‘চাষার দুক্ষু’ রচনার লেখিকার এ বিষয়ে ভাবনা এক ভিন্ন প্রেক্ষাপটে পরিবেশিত হয়েছে। প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি তাই যথার্থ।
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
বৃহত্তর রংপুরের বিস্তীর্ণ অঞ্চলজুড়ে লাখ লাখ মণ আলু ওঠে। আলুচাষিরা সারাদিন রোদে পুড়ে মাঠে আলু তোলে। কিন্তু সন্ধ্যায় খালি হাতে বাড়ি ফেরে। ট্রাকে ট্রাকে আলু সোজা হিমাগারে ঢোকে। ঢাকা থেকে আসা মহাজনেরা সেখানে আলু নিয়ে নানা কাজ-কারবারে লিপ্ত থাকে। এর কারণ অনুসন্ধানে নেমে তরুণ সাংবাদিক সাকিব দেখতে পেলেন, দুর্যোগ ও আকালের সময়ে নামমাত্র মূল্যে এসব মহাজন আলু রোপণের পূর্বেই খেতের সব আলু কিনে নিয়েছে। রাকিব স্বগতোক্তি করলেন, ‘আলু তার বসুন্ধরা যার’।
ক. সমাজের মেরুদণ্ড কে?
খ. লেখিকার ধান ভানতে শিবের গান গাওয়ার কারণ কী?
গ. উদ্দীপকটিতে ‘চাষার দুক্ষু’ প্রবন্ধের যে বিষয়ের প্রতি আলেঅকপাত করা হয়েছে তা ব্যাখ্যা কর।
ঘ. ‘উদ্দীপকের ‘আলু তার বসুন্ধরা যার’ আর ‘চাষার দুক্ষু’ প্রবন্ধের ‘ধান্য তার বসুন্ধরা যার’ মূলত চাষার একান্ত দুঃখগাঁথা।’ Ñমূল্যায়ন কর। ১
২
৩
৪
৩ নং প্রশ্নের উত্তর
সমাজের মেরুদণ্ড চাষা।
বক্তব্য বিষয় উত্থাপনের পূর্বে বক্তব্য-বিষয়ের প্রতি উত্থাপিত বাধা সরাতেই লেখিকা ধান ভানতে শিবের গান গেয়েছেন।
লেখিকা যদি প্রথমেই পলিগাঁয়ের চাষার দারিদ্র্য, তার সভ্যতাবর্জিত জীবন নিয়ে হা-হুতাশ করতেন, তখন কেউ হয়তো শহুরে জীবনের মেকি সভ্যতাকে দেখিয়ে বলতেন যে, ভারতে মোটরকার আছে, গ্রামোফোন, ইলেকট্রিক ফ্যান ইত্যাদি আছে। ভালোর দিক ছেড়ে কেবল মন্দের দিকটা লেখিকা দেখছেন কেন? সেজন্যই লেখিকা ধান ভানতে শিবের গানের মতো প্রথমেই শহুরে সভ্যতার আলোচনা করেছেন।
উদ্দীপকটিতে ‘চাষার দুক্ষু’ প্রবন্ধের ধান-পাট উৎপাদনকারী চাষার অন্নহীন, বস্ত্রহীন থাকা বিষয়ের প্রতি আলোকপাত করা হয়েছে।
বাংলাদেশ কৃষিপ্রধান দেশ। এদেশের শতকরা ৮০ জন লোক কৃষিজীবী, অর্থাৎ কৃষক। বাকি ২০ জনও পরোক্ষভাবে কৃষির ওপর নির্ভরশীল। এজন্য এদেশের অর্থনীতির ভিত্তি কৃষিকেন্দ্রিক। কৃষিব্যবস্থার উন্নতি-অবনতির সাথে দেশবাসীর ভাগ্য জড়িত। এ কৃষিব্যবস্থার কান্ডারি যারা, সেই কৃষক সমাজ আজ অনাদৃত, উপেক্ষিত ও অবহেলিত।
উদ্দীপকে দেখা যায়, আলুচাষিরা সারাদিন রোদে পুড়ে ঘামে ভিজে মাঠে আলু তোলে। কিন্তু সন্ধ্যায় খালি হাতে বাড়ি ফেরে। ট্রাকে ট্রাকে উত্তোলিত আলু ঢাকা থেকে আসা মহাজনদের ঠিক করা হিমাগারে ঢুকে পড়ে। অনুসন্ধানে জানা যায়, আকালের সময়ে এসব মহাজন নামমাত্র মূল্যে রোপণের পূর্বেই খেতের সব আলুর মালিক হয়ে গেছে। তাই তো উৎপাদনকারী চাষি খালি হাতে বাড়ি ফেরে। উদ্দীপকের এ বিষয়টি ‘চাষার দুক্ষু’ প্রবন্ধের প্রাবন্ধিক রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন বিশেষ গুরুত্বের সাথে আলোকপাত করেছেন। লেখিকা বলেন যে, “চাষা কেবল ‘ক্ষেতে ক্ষেতে পুড়িয়া মরিবে’, হাল বহন করিবে, আর পাট উৎপাদন করিবে। যখন টাকায় ২৫ সের চাউল ছিল, তখনো তাহারা পেট ভরিয়া খাইতে পায় নাইÑ এখন টাকায় ৩/৪ সের চাউল হওয়ায়ও তাহারা অর্ধানশনে থাকে।”
“উদ্দীপকের ‘আলু তার বসুন্ধরা যার’ আর ‘চাষার দুক্ষু’ প্রবন্ধের ‘ধান্য তার বসুন্ধরা যার’ মূলত চাষার একান্ত দুঃখগাঁথা।”Ñ প্রশ্নোলিখিত এ মন্তব্যটি যথার্থ ও সঠিক।
দারিদ্র্য আর রোগ-শোক বাংলার কৃষকের নিত্যসঙ্গী। তারা দুবেলা পেট ভরে খেতে পায় না। রোগে ওষুধ নেই, এমনকি মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকুও তাদের নেই। একবেলা খেয়ে, বৃষ্টিতে ভিজে, রোদে পুড়ে তারা আমাদের অর্থনৈতিক কাঠামোকে পোক্ত করে। বাংলার কৃষকের এ দুরবস্থার চিত্র প্রদত্ত উদ্দীপক ও ‘চাষার দুক্ষু’ প্রবন্ধে উঠে এসেছে।
স¤প্রতি উদ্দীপকে রংপুর অঞ্চলের আলুচাষিরা সারাদিন রোদে পুড়ে, ঘামে ভিজে মাঠে আলু তোলে। কিন্তু সন্ধ্যায় খালি হাতে বাড়ি ফেরে। ট্রাকে ট্রাকে আলু ঢাকা থেকে আসা মহাজনদের মালিকানায় হিমাগারে ঢুকে যায়। অনুসন্ধানে জানা যায়, আকালের সময় নিতান্ত স্বল্পমূল্যে এসব মহাজন রোপণের পূর্বেই সব আলু কিনে নিয়েছে। উদ্দীপকের শেষে রাকিব নামের এক সাংবাদিক কর্তৃক পরিহাসছলে উচ্চারিত হয়েছে, ‘আলু তার বসুন্ধরা যার’। এমনই বসুন্ধরার মালিকেরা যে এক মুঠো ধান উৎপাদন না করেও ধানের মালিক হতে পারে তা ‘চাষার দুক্ষু’ প্রবন্ধে লেখিকা তুলে ধরেছেন।
‘চাষার দুক্ষু’ প্রবন্ধে লেখিকা সুজলা-সুফলা, শস্য-শ্যামলা বাংলাদেশে চাষার উদরে অন্ন না থাকার কারণ উলেখ করতে গিয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রণিধানযোগ্য একটি উক্তি উচ্চারণ করেছেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছেন, ‘ধান্য তার বসুন্ধরা যার’। সুতরাং বলা যায়, উদ্দীপকের আলুচাষি আর ‘চাষার দুক্ষু’ রচনা চাষার দুঃখগাঁথা একই সূত্রে গাঁথা।
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
স¤প্রতি টিভিতে প্রচারিত একটি ম্যাংগো জুস কোম্পানির বিজ্ঞাপন চিত্রে দেখা যায়, কোম্পানির গাড়ি এসে কৃষকের গাছের সব আম পেড়ে নিয়ে যাচ্ছে। কৃষকের স্কুল ফেরত কিশোর বালক এ ব্যাপারটি নিয়ে চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করলে কৃষক তাকে এই বলে সান্ত্বনা দিচ্ছেন, “আমাদের আম আমাদেরই থাকব।” এর পরের দৃশ্যে দেখা যায়, সুদৃশ্য প্লাস্টিকের কৌটায় ম্যাংগো জুস নামীয় তরল পদার্থ, যাতে অর্ধেক আমেরও নির্যাস নেই, তাই কৃষক হাসিমুখে চারটি আমের দামে সন্তানকে কিনে খাওয়াচ্ছেন।
ক. আসাম এবং রংপুরে বিশেষ এক প্রকার রেশমকে স্থানীয় ভাষায় কী বলে?
খ. সেকালে চাষা অন্ন-বস্ত্রে কাঙাল ছিল না কেন?
গ. উদ্দীপকটি ‘চাষার দুক্ষু’ রচনার কোন দিকটিকে নির্দেশ করে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. ‘উদ্দীপকের ‘আলু তার বসুন্ধরা যার’ আর ‘চাষার দুক্ষু’ প্রবন্ধের ‘ধান্য তার বসুন্ধরা যার’ মূলত চাষার একান্ত দুঃখগাঁথা।”মূল্যায়ন কর। ১
২
৩
৪
৪ নং প্রশ্নের উত্তর
রেশমকে স্থানীয় ভাষায় ‘এন্ডি’ বলে।
সেকালে চাষার ঘরের পুরুষরা মাঠে অন্ন সমস্যার সমাধানে সচেষ্ট থাকতো, আর রমণীরা গৃহ-অভ্যন্তরে স্বহস্তে বস্ত্র সমস্যার সমাধান করত বলে চাষা অন্ন-বস্ত্রে কাঙাল ছিল না।
সেকালে কৃষক সমাজে পুরুষÑরমণী নির্বিশেষে কারোরই বাবুয়ানা ছিল না। চাষা যেমন স্বহস্তে উৎপাদিত খাদ্যেই উদর পূর্তি করত, চাষার বউও তেমনি নিজ হাতে কাপড় বুনে হেসে-খেলে বস্ত্র সমস্যা পূরণ করত। এসব কারণে সেকালে চাষা অন্ন-বস্ত্রের কাঙাল ছিল না।
উদ্দীপকটি ‘চাষার দুক্ষু’ রচনায় আমাদের বিলাসিতা অর্থাৎ সভ্যতার সঙ্গে সঙ্গে অনুকরণপ্রিয়তার দিকটিকে নির্দেশ করে।
মানুষের মৌলিক মানবিক চাহিদাগুলো হলোÑ খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা, শিক্ষা ও বিনোদন। অবশ্য বিনোদনকে কেউ কেউ প্রথমোক্ত পাঁচটি মৌলিক চাহিদার মতো নিরেট ও নির্ভেজাল মৌলিক চাহিদা মনে করেন না। কেননা, প্রথম পাঁচটি মৌলিক চাহিদা পূরণ হলে পরে বিনোদন নামের ষষ্ঠ মৌলিক চাহিদা পূরণ আবশ্যক হয়ে দাঁড়ায় মাত্র। কিন্তু বিনোদনের মতো মৌলিক চাহিদা মেটানোর পরই বিলাসিতা নামের অহেতুক কিংবা উটকো রোগ মানুষকে চেপে ধরে।
উদ্দীপকে দেখা যায়, প্রাকৃতিক পরিবেশে সনাতন ব্যবস্থায় আম খাওয়ার পরিবর্তে কৃষকের মধ্যে সুদৃশ্য প্লাস্টিক কৌটায় আমের রস খাওয়ার শহুরে বিলাসিতা বা অনুকরণপ্রিয়তা জেগেছে। এর ফল হিসেবে তাকে অর্ধেক আমের নির্যাস আছে কী নেই এমনই এক তরল পদার্থ কিনে খেতে হচ্ছে চারটি আমের দামে। কৃষকের এরূপ শহুরে অনুকরণপ্রিয়তা বা বিলাসিতাকে ‘চাষার দুক্ষু’ রচনায় ‘অনুকরণপ্রিয়তা নামক আর একটা ভূত’ আখ্যায়িত করা হয়েছে। বলা হয়েছে, বিচিত্র বর্ণের জুট ফ্লানেলের কারণে গ্রামীণ চাষারা আজ এন্ডি প্রতিপালন ও এন্ডি কাপড় বুনন ছেড়ে দিয়েছে। পূর্বে পলিবাসী ক্ষার প্রস্তুত করে কাপড় কাচত। এখন তাদের কাপড় ধোয়ার জন্য ধোপা প্রয়োজন হয়, নয়তো সোডা।
সভ্যতার নামে শহুরে বাবুয়ানা জীবনযাপনের বিলাসিতার অনুকরণপ্রিয়তার ঘোড়া-রোগ গ্রামবাংলার চাষাদেরকে দারিদ্র্যের জালে আবদ্ধ করে রাখছে।
মৌলিক মানবিক চাহিদাগুলো পূরণ না হলে সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে মানুষ ‘মানুষ’ হয়ে ওঠে না। সেজন্য স্থান-কাল-পাত্র নির্বিশেষে খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা ও শিক্ষার মতো মৌলিক মানবিক চাহিদা পূরণকে ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রব্যবস্থার সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ কাজ বলে বিবেচনা করা হয়। বর্তমানে অবশ্য চিত্তবিনোদনকেও মৌলিক মানবিক চাহিদারূপে গণ্য করা হয়।
প্রথমোক্ত পাঁচটি মৌলিক চাহিদার পূর্বে চিত্তবিনোদনকে গুরুত্ব দিলে বিলাসিতা নামক দুরারোগ্য ব্যাধিতে সমাজজীবন আক্রান্ত হয়। উদ্দীপকে আমরা দেখি, গ্রামের কৃষককে শহুরে বিলাসিতার নিদর্শন প্লাস্টিকের কৌটায় আমের রস খাওয়ার অনুকরণ করতে গিয়ে অর্ধেক আমের নির্যাস আছে কী নেই এমন এক তরল পদার্থ কিনে খেতে হচ্ছে চারটি আমের দামে। ফলাফল আর্থিক ক্ষতি ও দারিদ্র্যপ্রবণতা বৃদ্ধি। ‘চাষার দুক্ষু’ প্রবন্ধে লেখিকা গরিবের এমনি উৎকট রোগকে ‘অনুকরণপ্রিয়তা নামক ভূত’ বলেছেন।
‘চাষার দুক্ষু’ প্রবন্ধে অনুকরণপ্রিয়তার ভূত আমাদের কাঁধে চেপে বসার ফলাফল দেখাতে গিয়ে লেখিকা বলেছেন, মুটে-মজুর ট্র্রাম না হলে দু’পদ নড়তে পারে না। প্রথম দৃষ্টিতে ট্রামের ভাড়া পাঁচটা পয়সা অতি সামান্য বোধ হয়Ñ কিন্তু যেতে আসতে যে দশ পয়সা লেগে যায়। এভাবে দুপয়সা-চারপয়সা করে ধীরে ধীরে সে সর্বস্বহারা হয়ে পড়ে। এসব বিবেচনায় সংগত কারণেই প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটিকে যথার্থ বলা যায়।
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
শীতে মরি ঠাণ্ডায়, চৈতে মরি খরায়
বৈশাখে ঝড় দিরিম দিরিম, বর্ষা বাদল ঝরায়
আমি থাকি খোলা অঙ্গে তোমার বস্ত্র বুনে
এক কাপড়ে জনম গেল বাপ ব্যাটার সনে
এক বেলা খায় মায়ে-ঝিয়ে আরেক বেলা পুত
বাপে থাকে উপোস করে ক্ষুধার জ্বালায় ভূত।
ক. ‘ত্যানা’ শব্দের অর্থ কী?
খ. নিজ হাতে উৎপাদিত ফসল কৃষকের মুখে হাসি না ফোটাতে পারার কারণ ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকের সঙ্গে ‘চাষার দুক্ষু’ প্রবন্ধের কৃষকদের বাস্তবতার তুলনা কর।
ঘ. ‘এক কাপড়ে জনম গেল’Ñ উক্তিটি ‘চাষার দুক্ষু’ প্রবন্ধ অবলম্বনে মূল্যায়ন কর। ১
২
৩
৪
৫ নং প্রশ্নের উত্তর
ছেঁড়া কাপড়।
সভ্যতার যাঁতাকলে পিষ্ট হয়ে কৃষকের ফসল আর কৃষকের থাকে না বলে কৃষকের ফসল কৃষকের মুখে হাসি ফোটাতে পারে না।
নব্য যান্ত্রিক সভ্যতা জাঁকজমক আর বিলাসিতা এনে দিলেও তা দেশীয় কুটির শিল্পকে ধ্বংস করেছে। ফলে একদিকে যেমন কৃষকদের আয় হ্রাস পেয়েছে, অন্যদিকে নিত্য ব্যবহার্য অনেক জিনিস যা সে আগে নিজ হাতে তৈরি করত, সেগুলোও তাকে কিনে আনতে হচ্ছে। তাছাড়া নতুন সভ্যতার প্রভাবে কৃষকরা বিলাসিতায় অভ্যস্ত হতে শুরু করায় উৎপাদিত পণ্যের সমস্ত চাহিদার জোগান সম্ভব হচ্ছে না। তাই উৎপাদিত ফসল আর কৃষকের মুখে হাসি ফোটাতে পারছে না।
উদ্দীপকের মতো ‘চাষার দুক্ষু’ প্রবন্ধের কৃষকরাও একই দুরবস্থার শিকার।
ষড়ঋতুর দেশ বাংলাদেশ। সুজলা, সুফলা এ দেশের মাটি ও মানুষের মন একই সুতায় গাঁথা। বর্ষায় ভিজে নরম হয়ে আবার চৈত্রে শুকিয়ে শক্ত হয়। রুক্ষ মাঠকে সোনালি ফসলে ভরে দিতে কৃষকদের রাত-দিন খাটতে হয়। অথচ অন্ন-বস্ত্রের অভাবে তারাই সবচেয়ে কষ্ট পায়।
উদ্দীপকে কৃষক-শ্রমিকদের অনাহার-অর্ধাহারে দিনাতিপাত করার কথা বলা হয়েছে। তাদের অবস্থাটা এমনই যে, ঘরে একবেলা আহার থাকে তো অন্যবেলা উনুনে পাতিল ওঠে না। শীতকালে বস্ত্রাভাবে কষ্ট পায়। যারা সভ্যতার বড়াই করে তাদের অন্নাভাব পূরণ করতে গিয়েই কৃষকরা অভুক্ত থাকে। প্রবন্ধে লেখক মাত্র কয়েকটি এলাকার কৃষকদের বর্ণনা দিয়েছেন কিন্তু এদেশের প্রতিটি জেলারই চিত্র কম-বেশি একই রকম। কৃষক রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে অতিকষ্টে ফসল ফলায়, অথচ ভোগের বেলা তাদের পেটে পান্তা ভাতের সাথে তরকারিও জোটে না। কোনো কোনো ক্ষেত্রে তাদের অবস্থাটা এতটাই করুণ যে, অভাবের তাড়নায় কৃষককে স্ত্রী-কন্যা পর্যন্ত বিক্রি করতে হয়। আলোচ্য উদ্দীপক এবং ‘চাষার দুক্ষু’ প্রবন্ধ উভয়ক্ষেত্রেই কৃষকদের একই দুরবস্থার চিত্র চিত্রিত হয়েছে।
উক্তিটি আমাদের দেশের কৃষক-শ্রমিকের বাস্তব জীবনের প্রতিচ্ছবি।
সভ্যতার বিবর্তনে বিত্তবানরা যেমন একদিকে বিত্তের পাহাড় গড়ছে, অন্যদিকে দরিদ্ররা আরো দরিদ্র হচ্ছে। আলোচ্য ‘চাষার দুক্ষু’ প্রবন্ধ এবং উদ্দীপকে কৃষক-শ্রমিকদের দুরবস্থার এ চিত্রই পরিলক্ষিত হয়।
উদ্দীপকের বর্ণনায় পোশাক শ্রমিকরা তাদের শ্রমের বিনিময়ে সভ্য মানুষকে পোশাকে আরো সভ্য করে তুলতে দিন-রাত নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছে। অথচ তারাই নিম্নমানের পোশাক পরে। আবার কখনো কখনো ছেঁড়া কাপড় পরে ফ্যাক্টরির কল চালায়। তেমনি কৃষকরা ফসলের সমারোহ আনলেও তাদের ঘরেই ভাতের অভাব-বস্ত্রের অভাব নিত্য দিনের ঘটনা।
‘চাষার দুক্ষু’ প্রবন্ধে কৃষক অন্যের ক্ষুধা নিবারণ করতে গিয়ে নিজের ক্ষুধাকে বিসর্জন দেয়। সন্তানের মুখে দুবেলাদু’মুঠো ভাত তুলে দিতে তাদের মাথার ঘাম পায়ে ফেলতে হয়।
নব্য সভ্যতার করাল গ্রাসে কৃষক আজ নিষ্পেষিত। সভ্যতার নামে ঐতিহ্য কলুষিত হচ্ছে। পরের ঘরকে আলোকিত করতে গিয়ে তাদের নিজের ঘরই পড়ে থাকে অন্ধকারে। উদ্দীপকে চাষাদের বাস্তব অবস্থার এ দিকটিই লক্ষ করা যায়। এক্ষেত্রে প্রশ্নোক্ত উক্তিটি কৃষক-শ্রমিকদের বাস্তব অবস্থার চিত্র তুলে ধরার মাধ্যমে যথার্থ হয়ে উঠেছে।
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
ধলুয়া গ্রামের কৃষক ফজর আলীর বড় মেয়ে নূরী রূপে-গুণে অনন্যা। এ রূপই তার আপন শত্র“তে পরিণত হলো শেষ পর্যন্ত। অভাবগ্রস্ত পিতা দুবেলা-দুমুঠো অন্ন-বস্ত্রের সংস্থান করতে পারে না। তেল-সাবান তো দুর্লভ বস্তু! তাই সংসারে সচ্ছলতা আনতে ফজর আলী কন্যাকে ষাটোর্ধ্ব অবস্থাসম্পন্ন এক গৃহস্থের সাথে বিয়ে দেয়। এরূপ ঘটনা আমাদের সমাজে কত হয়! অভাবের কাছে জীবনের মূল্য বড় কম।
ক. ‘পখাল ভাত’ শব্দের অর্থ কী?
খ. ‘চাষার দুক্ষু’ প্রবন্ধে চাষার স্ত্রী-কন্যা বিক্রি করে দেয়ার কারণ ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকের বাস্তবতার সঙ্গে ‘চাষার দুক্ষু’ প্রবন্ধে উলিখিত বিহার অঞ্চলের কৃষকদের জীবন বাস্তবতার তুলনা কর।
ঘ. ‘অভাবের কাছে জীবনের মূল্য বড় কম।’Ñ উক্তিটি ‘চাষার দুক্ষু’ প্রবন্ধের আলোকে মূল্যায়ন কর। ১
২
৩
৪
৬ নং প্রশ্নের উত্তর
‘পখাল ভাত’ শব্দের অর্থ পান্তা ভাত।
প্রবন্ধে চাষার স্ত্রী-কন্যা বিক্রি করে দেয়ার কারণ হলো চাষার দারিদ্র্য তথা অর্থাভাব।
‘চাষার দুক্ষু’ প্রবন্ধে চাষা অর্থাৎ কৃষকরা ছিল হতদরিদ্র। তাদের অবস্থাটা ছিল নুন আনতে পান্তা ফুরানোর মতোই। প্রতিনিয়ত দারিদ্র্যের কষাঘাতে পর্যুদস্ত কৃষক ক্ষুৎপিপাসা নিবৃত্তির জন্য এতটাই মুখিয়ে থাকত যে, স্ত্রী-কন্যা বিক্রি করতেও পিছপা হতো না।
উদ্দীপকের ফজর আলীর বাস্তবতা আর ‘চাষার দুক্ষু’ প্রবন্ধে উলিখিত বিহার অঞ্চলের কৃষকদের জীবন বাস্তবতা মোটামুটি একই রকম।
কৃষক-শ্রমিকদের শ্রমে-ঘামে সভ্যতার চাকা ঘুরলেও তারা সবচেয়ে বেশি শোষণ-বঞ্চনার শিকার। একদিকে যেমন তাদের নুন আনতে পান্তা ফুরায়, অন্যদিকে বিত্তবানদের লালসার চাপে তারা পিষ্ট, যা উদ্দীপক ও ‘চাষার দুক্ষু’ প্রবন্ধে উঠে এসেছে।
উদ্দীপকে ধনুয়া গ্রামের বাসিন্দা ফজর আলী সমাজের নিচু তলার একজন অভাবগ্রস্ত মানুষ। প্রায়ই সে দু’বেলা খেতে পায় না। তার এ অতি দারিদ্র্যের সুযোগ কাজে লাগিয়ে অবস্থাপন্ন এক গৃহস্থ তার এগার বছর বয়সী কন্যাকে বিয়ে করে। আলোচ্য ‘চাষার দুক্ষু’ প্রবন্ধে বিহার অঞ্চলের কৃষকরাও একই দুরবস্থার শিকার। তারাও অভাবের তাড়নায় মাত্র দুই সের খেসারির বিনিময়ে স্ত্রী-কন্যা বিক্রি করতে বাধ্য হতো। এভাবে দেখা যায়, পরিপ্রেক্ষিত, কার্যকারণ এবং অবস্থার বিচারে এরা একই নিয়তির শিকার।
‘অভাবের কাছে জীবনের মূল্য বড় কম’Ñ উদ্দীপকের এ উক্তিটি ‘চাষার দুক্ষু’ প্রবন্ধের আলোকে যথাযথ।
ক্ষুৎপিপাসার নিবৃত্তিই যেখানে শেষকথা, সেখানে জীবনের মূল্য অনুধাবন অর্থহীন। তখনকার অনগ্রসর সমাজব্যবস্থায় তাই কৃষক-শ্রমিক তথা সমাজের নিম্নশ্রেণির মানুষ ছিল সবচেয়ে শোষিত ও বঞ্চিত। আলোচ্য উদ্দীপক এবং ‘চাষার দুক্ষু’ প্রবন্ধ তারই সাক্ষ্য।
উদ্দীপকের অবস্থাসম্পন্ন গৃহস্থ ব্যক্তিটি সমাজের একজন প্রভাবশালী লোক। তার অর্থ-বিত্তের অভাব নেই। অর্থের জোরে সে ষাটোর্ধ্ব হয়েও লালসা চরিতার্থ করতে এগার বছরের নূরীকে বিয়ে করে। ‘চাষার দুক্ষু’ প্রবন্ধেও চাষার দুঃখের জন্য দায়ী সভ্যতার বিরূপ চিত্রটি তুলে ধরা হয়েছে।
‘চাষার দুক্ষু’ প্রবন্ধেও বিহার অঞ্চলে কৃষকরা মাত্র দুই সের খেসারির বিনিময়ে তাদের স্ত্রী-কন্যাদের বিক্রি করতে বাধ্য হতো। কণিকা রাজ্যের কৃষকরা পান্তা ভাত জোটালেও তার সাথে তরকারি জোগাড়ের সামর্থ্য তাদের ছিল না, পখাল ভাত বা পান্তা ভাতের সাথে লবণ বা শুঁটকি মাছ ছিল তাদের উপাদেয় খাবার। অনাহারেÑঅর্ধাহারে কৃষক জীবন কাটাত,অনটন ছিল নিত্যদিনের ঘটনা, যার ভয়াবহতা লক্ষ করা যায় উদ্দীপকের নূরীর করুণ পরিণতির মধ্যদিয়ে। এক্ষেত্রে প্রশ্নোক্ত উক্তিটি যথাযথ।
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
সন্ধ্যারানী টাঙ্গাইলের প্রত্যন্ত গ্রামে বসবাস করে। স্বামী গরিব কৃষক। পৈতৃক পেশা জানা থাকায় সংসারে তাঁত বুনে কিছু আয় হয়। গ্রামের অধিকাংশ নারী তার কাছ থেকে তাঁত বোনা শিখে তাদের সংসারের কাপড়ের অভাব মেটায়। কিন্তু এখন কারখানায় কাপড় তৈরি হওয়ায় তাদের কাপড় বন্ধ হওয়ার উপক্রম। ফলে সংসারে অভাব দেখা দিয়েছে। সভ্যতার বিবর্তনে এ হস্তশিল্প আজ জাদুঘরে স্থান পাচ্ছে।
ক. ‘এন্ডি’ শব্দের অর্থ কী?
খ. জমিরনকে তার মা রাজবাড়ীতে নিয়ে আসত কেন?
গ. উদ্দীপকের সন্ধ্যারাণীর সঙ্গে ‘চাষার দুক্ষু’ প্রবন্ধের সাদৃশ্য তুলে ধর।
ঘ. ‘সভ্যতার বিবর্তনে এ হস্তশিল্প জাদুঘরে স্থান পাচ্ছে’Ñ উক্তিটি সম্পর্কে তোমার মতামত দাও। ১
২
৩
৪
৭ নং প্রশ্নের উত্তর
‘এন্ডি’ শব্দের অর্থ মোটা রেশমি কাপড়।
জমিরনের মাথায় তেল দেয়ার জন্য তার মা তাকে রাজবাড়ীতে নিয়ে আসত।
তখনকার দিনে কৃষকদের আর্থিক অবস্থা খুব খারাপ ছিল। তেলের দাম কম হলেও জমিরনের বাবার তেল কেনার সামর্থ্য ছিল না। তাই জমিরনের মাথায় তেল দিতে তার মা তাকে রাজবাড়ীতে নিয়ে আসত।
উদ্দীপকের সন্ধ্যারাণীর সঙ্গে ‘চাষার দুক্ষু’ প্রবন্ধের আসাম ও রংপুর অঞ্চলের বাঙালি রমণীদের সাদৃশ্য লক্ষ করা যায়।
গ্রামবাংলায় একসময় হস্ত ও কুটির শিল্পের ব্যাপক প্রচলন ছিল। কুটিরশিল্পের মাধ্যমে গৃহবধূরা বস্ত্রসহ গৃহস্থালির নানা প্রয়োজন মেটানোর পাশাপাশি অর্থ উপার্জনও করত। কিন্তু যান্ত্রিক সভ্যতার আগ্রাসনে এ শিল্প আজ হারিয়ে যাওয়ার পথে। ফলে আর্থিক সংকটে পড়ে হয় অনেক পরিবার।
উদ্দীপকের সন্ধ্যারাণীর মতো আরো অনেকেই চরকায় সুতা কেটে জীবিকা নির্বাহ করত। ‘চাষার দুক্ষু’ প্রবন্ধেও বাঙালি রমণীদের চরকায় সুতা কেটে জীবিকা নির্বাহ করার পাশাপাশি ঘরের ব্যবহৃত কাপড়ের জোগান দেয়ার কথা বলা হয়েছে। উদ্দীপকে সন্ধ্যারাণীর তাঁত বোনা একসময় বন্ধ হয়ে যায় মেশিনে সুতা উৎপন্ন করে কাপড় তৈরি করার কারণে। অন্যদিকে ‘চাষার দুক্ষু’ প্রবন্ধে আসাম ও রংপুর অঞ্চলের নারীদের তৈরি এন্ডি কাপড়ও একসময় বিলীন হয়ে যায়। সভ্যতার বিবর্তনে বাজারে স্বল্পমূল্যে রঙিন ও মিহি কাপড় পাওয়া যায় বলে। ফলে সন্ধ্যারাণীর মতো এদের সংসারেও অভাব দেখা দেয়, যা উদ্দীপকের সঙ্গে ‘চাষার দুক্ষু’ প্রবন্ধের সাদৃশ্য তৈরি করে।
কালের বিবর্তনে এ হস্তশিল্প জাদুঘরে স্থান পাচ্ছে উক্তিটি যথার্থ ভাবেই সত্যি।
কালের বিবর্তনে নানা শিল্প আজ বিলুপ্তপ্রায়, কোনো কোনো শিল্প জাদুঘরে স্থান পেয়েছে। ‘চাষার দুক্ষু’ প্রবন্ধে লেখিকা আসাম ও রংপুর অঞ্চলের নারীদের তৈরি দেশীয় কুটিরশিল্প ‘এন্ডি’ কাপড় এবং এর বিলীন হওয়ার কথা বলেছেন। উদ্দীপকে পরিণতির মধ্যেও এরই প্রতিফলন লক্ষ করা যায়।
উদ্দীপকের বর্ণনায় গ্রামের অনেক নারীই চরকায় সুতা কেটে পরিবারের সকলের জন্য কাপড় তৈরি করত। এছাড়াও সন্ধ্যারাণী এ কাজ করে উপার্জনের মাধ্যমে সংসারে সচ্ছলতা আনতে সক্ষম হয়েছিলেন। কিন্তু নব্য সভ্যতার আগ্রাসনে তার কাজের চাহিদা শেষ হয়ে যায়।
‘চাষার দুক্ষু’ প্রবন্ধে দেখা যায়, একসময় বাংলার ঘরে ঘরে কুটির শিল্পের ব্যাপক প্রচলন ছিল। বাংলার ঘরে ঘরে রমণীরা কোনো না কোনো হস্তশিল্প অথবা কুটিরশিল্পের সঙ্গে যুক্ত ছিল। এ থেকে তাদের ঘরের নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি কিছু আয়ও হতো।
কালের আবহে সভ্যতার করাল গ্রাসে হস্তশিল্প বন্ধ হওয়ার উপক্রম। ফলে হস্তশিল্প হারিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি এ শিল্পসংশ্লিষ্টদের উপার্জনের পথও বন্ধ হয়ে যায়, সংসারে নেমে আসে অভাবের বোঝা। কার্যকারণ ও ফলাফল বিচারে তাই প্রশ্নোক্ত উক্তিটি যথাযথ।
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
আবিদ সাহেব নতুন বিয়ে করেছেন। স্ত্রী অল্প শিক্ষিতা। একটু নবাবি চাল-চলন বজায় রাখতে চান তিনি। আবিদ সাহেবের সামান্য বেতনে সংসার চালাতে কষ্ট হয়। তবে পূর্বে একান্নবর্তী পরিবারের সাথে থাকাকালে তার অবস্থা ভালোই ছিল। কিন্তু তার স্ত্রী ঘরে উৎপাদিত পণ্যের পরিবর্তে বাজারের তেল, জল, লবণ, সোডা প্রভৃতি ব্যবহারের প্রতি জোর দিয়েছে। এসব নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস কিনে সংসার চালাতে আবিদ সাহেবকে হিমশিম খেতে হয়। তবুও তার স্ত্রীর বিলাসিতা চাই।
ক. সভ্যতার আগমনে রমণীরা ক্ষারের পরিবর্তে কীসের ব্যবহার শুরু করেছিল?
খ. এন্ডি কাপড় বিলুপ্ত হয়ে গেল কেন? Ñব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকের সঙ্গে ‘চাষার দুক্ষু’ প্রবন্ধের সাদৃশ্য তুলে ধর।
ঘ. ‘আধুনিক সভ্যতা ও বিলাসিতা একে অপরের সহোদর’Ñ উদ্দীপক ও ‘চাষার দুক্ষু’ প্রবন্ধ অবলম্বনে মন্তব্যটি মূল্যায়ন কর। ১
২
৩
৪
৮ নং প্রশ্নের উত্তর
সভ্যতার আগমনে রমণীরা ক্ষারের পরিবর্তে সোডা ব্যবহার করতে শুরু করেছিল।
কারখানায় নানা রঙের চিকন সুতার কাপড় উৎপন্ন হওয়ায় এন্ডি কাপড় একসময় বিলুপ্ত হয়ে যায়।
বাংলার ঘরে ঘরে একসময় এন্ডি কাপড় তৈরি হলেও আধুনিক সভ্যতার প্রভাবে কারখানায় চিকন সুতার বর্ণিল কাপড় উৎপাদন শুরু হয়। সেগুলো দেখতে সুন্দর, দামেও সস্তা। ফলে এন্ডি কাপড়ের চাহিদা ব্যাপকভাবে হ্রাস পায়। যার দরুন এন্ডি কাপড় একসময় বিলুপ্ত হয়ে যায়।
বিলাসিতার দিক থেকে উদ্দীপকের সঙ্গে ‘চাষার দুক্ষু’ প্রবন্ধের মিল রয়েছে।
‘চাষার দুক্ষু’ প্রবন্ধে চাষার দুঃখ-কষ্টের প্রধান কারণ হিসেবে উঠে এসেছে দেশি পণ্যের প্রতি তাদের অনীহা ও বিলাসী মনোভাব, যার পরিণতি উদ্দীপকের ঘটনাতেও লক্ষ করা যায়।
উদ্দীপকে আবিদ সাহেবের অল্প শিক্ষিত স্ত্রী আধুনিক সভ্যতায় অভ্যস্ত। পূর্বে কৃষক-রমণীরা যেখানে চরকায় সুতা কেটে জামা-কাপড় তৈরি করত, ক্ষার তৈরি করে কাপড় ধৌত করত, ঘানি টেনে তেল তৈরি করত, হাঁস-মুরগি লালন-পালন করে সংসারে আয় করত, নব্য আধুনিক শিক্ষিতা রমণীরা এসবের ধারে-কাছেও নেই। তাই আবিদ সাহেবের স্ত্রী ঘরে উৎপাদিত নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি পরিহার করে বাজারের প্রক্রিয়াজাত দ্রব্যাদি ব্যবহার করে। ফলে আবিদ সাহেবের সংসারে অতিরিক্ত ব্যয়ের কারণে মাস-শেষে অর্থাভাব দেখা দেয়। তেমনি ‘চাষার দুক্ষু’ প্রবন্ধেও লেখক দেখিয়েছেন, বিলাসী রমণীদের অনুকরণ-প্রবণতা ও বিলাসিতা আধুনিক সভ্যতারই পরোক্ষ ফল। এদিক দিয়ে উদ্দীপক এবং ‘চাষার দুক্ষু’ প্রবন্ধে সাদৃশ্য দেখা যায়।
‘আধুনিক সভ্যতা ও বিলাসিতা একে অপরের সহোদর’Ñউক্তিটি উদ্দীপক ও ‘চাষার দুক্ষু’ প্রবন্ধের আলোকে যুক্তিযুক্ত।
বিলাসিতা আধুনিক সভ্য সমাজের পরোক্ষ ফল। সভ্য সমাজে বিলাসিতার সাথে সাথে অনুকরণ-প্রবণতাও প্রবলভাবে লক্ষ করা যায়। শুধু পোশাকে নয়, আধুনিক জীবনযাপনে বিলাসিতা প্রবলভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশ্বায়নের ফলে গোটা বিশ্ব দিন দিন অনুকরণের বিশ্বে পরিণত হচ্ছে।
উদ্দীপকে আবিদ সাহেবের স্ত্রী আধুনিক সভ্যতায় অভ্যস্ত। ফলে তিনি প্রক্রিয়াজাত বাজারের সামগ্রী ব্যবহার করতে পছন্দ করেন। স্ত্রীর এরূপ বিলাসিতাকে গুরুত্ব দিতে গিয়ে তিনি সংসার চালাতে হিমশিম খান। আলোচ্য ‘চাষার দুক্ষু’ প্রবন্ধে লেখকও সভ্যতার এ বিরূপ দিকটিকে তুলে ধরতে প্রয়াসী হয়েছেন।
‘চাষার দুক্ষু’ প্রবন্ধে দেখানো হয়েছে, কয়েক বছর আগে যেখানে রমণীরা ক্ষার তৈরি করে কাপড় কাচত, সেখানে সোডা সে জায়গা দখল করেছে। বিচিত্র বর্ণের ফ্লানেল কাপড় মানুষের রুচিকে এতোটাই পরিবর্তন করে দিয়েছে যে, সেখানে মোটা এন্ডি কাপড় আর চলে না, কাপড় ধোয়ার জন্য লন্ড্রি, ঘুরে বেড়ানোর জন্য ট্রাম, ট্রেন, গাড়ি থাকা চাই। যেখানে অভ্রভেদী বাড়ি তৈরি হচ্ছে সেখানে কে চায় খড়ের ঘরে থাকতে। সর্বত্র যখন আধুনিকতার ছোঁয়া, বিলাসিতা সেখানে নতুন কিছু নয়। পরিশেষে বলা যায়, পাল্টে যাচ্ছে মানুষের জীবনযাত্রা প্রণালি, বিজ্ঞান মানুষকে বেগ দিলেও আবেগ কেড়ে নিয়েছে। এখনকার সময় বাইরের ঠাট বজায় রাখাই আধুনিক সভ্য সমাজের বৈশিষ্ট্য। সুতরাং সার্বিক বিবেচনায় প্রশ্নোক্ত উক্তিটি সঠিক।
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
“সব সাধকের বড় সাধক আমার দেশের চাষা,
দেশ মাতারই মুক্তিকামী দেশের সে যে আশা।
দধীচি কি ইহার চেয়ে সাধক ছিল বড়?
পুণ্য এত হবে নাকো, সব করিলেও জড়।”
ক. ‘জঠর’ শব্দের অর্থ কী?
খ. প্রবন্ধকার ‘ধান ভানিতে শিবের গীত’ গেয়েছেন কেন?
গ. উদ্দীপকের চাষা ‘চাষার দুক্ষু’ প্রবন্ধের পলিবাসী কৃষক কোন বিষয়টিকে রূপায়িত করে? Ñব্যাখ্যা কর।
ঘ. ‘চাষাই সমাজের মেরুদণ্ড’Ñউক্তিটি উদ্দীপক এবং ‘চাষার দুক্ষু’ প্রবন্ধের আলোকে বিশ্লেষণ কর। ১
২
৩
৪
৯ নং প্রশ্নের উত্তর
‘জঠর’ শব্দের অর্থ হলো উদর।
আধুনিক সভ্যতার অগ্রগতি সম্পর্কে আলোকপাত করার তাগিদেই প্রবন্ধকার ‘ধান ভানিতে শিবের গীত’ গেয়েছেন।
‘চাষার দুক্ষু’ প্রবন্ধের লেখকের মূল আলোচ্য বিষয় চাষার দারিদ্র্যের বর্ণনা। কিন্তু তিনি যদি শুধু এ নিয়েই কথা বলেন তাহলে কেউ বলতে পারে তিনি শুধু সমাজের মন্দ দিকটি নিয়ে আলোচনা করেছেন। সভ্যতার অগ্রগতি বা সমাজের ভালোর দিকটি নিয়ে কথা বলেননি। তাই তিনি প্রথমেই সমাজের ভালো দিকটি সম্পর্কে আলোচনা করেছেন।
উদ্দীপকের চাষা এবং ‘চাষার দুক্ষু’ প্রবন্ধের পলিবাসী কৃষক পরের কল্যাণে জীবন অতিবাহিত করার বিষয়টিকে রূপায়িত করেন।
কৃষকেরা রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে জমিতে সোনার ফসল ফলান। তাদের কষ্টার্জিত ফসলে ভরে ওঠে ফসলের মাঠ। বিনিময়ে তারা পান অন্ন-বস্ত্রহীন কষ্টের জীবন!
উদ্দীপকে চাষাকেই সবচেয়ে বড় সাধক বলা হয়েছে। কেননা, কৃষকের শ্রমে-ঘামে অর্জিত ফসল মূলত তাদের পরম সাধনার ফল। চাষারাই এদেশের আশা। কেননা, দেশের আপামর জনসাধারণ তাদের উৎপাদিত ফসলের দিকে তাকিয়ে থাকে। ‘চাষার দুক্ষু’ প্রবন্ধেও বলা হয়েছে, কৃষকরা রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে ফসল উৎপাদন করে। কিন্তু তাদের পেটে খাবার থাকে না। অর্থাৎ, তারা অন্যের জন্য সারাজীবন কষ্ট করেন। নিজের সাধনার ফসল নিজে ভোগন করে না। তবে এ নিয়ে তাদের কোনো অভিযোগও নেই। তাই আমরা বলতে পারি যে, উদ্দীপকের চাষা এবং ‘চাষার দুক্ষু’ প্রবন্ধের পলিবাসী কৃষক পরের কল্যাণে জীবন বিসর্জন করার বিষয়টিকে রূপায়িত করেন।
চাষারা সমাজের সকলের জন্য অন্নের সংস্থান করেন বলে তারাই সমাজের মেরুদণ্ড।
মেরুদণ্ডের ওপর ভর করে যেমন একটি মানুষ সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে তেমনি একটি সমাজও চাষাদের ওপর নির্ভর করে গড়ে ওঠে। কেননা, সমাজের মানুষ কৃষকদের উৎপাদিত অন্ন খেয়েই জীবনধারণ করে।
উদ্দীপকে চাষাদেরই সবচেয়ে বড় করে দেখা হয়েছে। বলা হয়েছে, তারাই সবচেয়ে বড় সাধক এবং দধীচির মতো সাধকের পুণ্যও তাদের তুলনায় কম। তারাই দেশমাতৃকার মুক্তিকামী এবং দেশের আশা। আবার ‘চাষার দুক্ষু’ প্রবন্ধেও চাষার গুরুত্বের কথা সুন্দরভাবে ফুটে উঠেছে। চাষাকেই সমাজের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বসানো হয়েছে।
উদ্দীপক এবং ‘চাষার দুক্ষু’ প্রবন্ধটি বিশ্লেষণে দেখা যায়, চাষারাই সবচেয়ে বড় সাধক এবং সমাজের প্রধান অংশ। কেননা, তারা নিদারুণ কষ্ট করে অন্যের মুখে হাসি ফোটান। তাই আমরা বলতে পারি যে, ‘চাষাই সমাজের মেরুদণ্ড’ উক্তিটি যথার্থ।
জ্ঞানমূলক প্রশ্নোত্তর
১. ‘চাষার দুক্ষু’ প্রবন্ধের লেখকের মতে, কত বছর পূর্বে ভারতবাসী অসভ্য বর্বর ছিল?
উত্তর : দেড়শ বছর পূর্বে।
২. ‘চাষার দুক্ষু’ প্রবন্ধে কার মাথায় কেশ ঘন ও লম্বা চুল ছিল?
উত্তর : জমিরনের মাথায়।
৩. ‘চাষার দুক্ষু’ প্রবন্ধে লেখকের মতে, আমাদের সামান্য অসুখ হলে কতজন ডাক্তার নাড়ি টেপে?
উত্তার : আট-দশ জন ডাক্তার নাড়ি টেপে।
৪. আমাদের সমাজের মেরুদণ্ড কারা?
উত্তর : চাষারা।
৫. ‘চাষার দুক্ষু’ প্রবন্ধে লেখকের জুট মিলের কর্মচারীগণ মাসিক কত টাকা বেতন পেতেন?
উত্তর : মাসিক ৫০০-৭০০ টাকা বেতন পেতেন।
৬. ‘চাষার দুক্ষু’ প্রবন্ধে লেখকের কারা নবাবি হালে থাকতেন?
উত্তর : জুট মিলের কর্মচারীগণ নবাবি হালে থাকতেন।
৭. কয়টি চাল পরীক্ষা করলে হাঁড়িভরা ভাতের অবস্থা জানা যায়?
উত্তর : একটি চাল।
৮. কোন মহাযুদ্ধ সমস্ত পৃথিবীকে সর্বস্বান্ত করেছে?
উত্তর : ইউরোপের মহাযুদ্ধ।
৯. ‘চাষার দুক্ষু’ প্রবন্ধে লেখকের বাল্যকালে টাকায় কয় সের সরিষার তেল পাওয়া যেত?
উত্তর : টাকায় ৮ সের সরিষার তেল পাওয়া যেত।
১০. জমিরন কার কন্যা?
উত্তর : কৃষকের কন্যা।
১১. জমিরনের মা মেয়ের জন্য কী জোটাতে পারতো না?
উত্তর : এক পয়সার তেল জোটাতে পারত না।
১২. কণিকা রাজ্য কোন রাজ্যের অন্তর্গত ছিল?
উত্তর : উড়িষ্যা রাজ্যের অন্তর্গত ছিল।
১৩. ‘চাষার দুক্ষু’ প্রবন্ধে কারা ভাতের সাথে লবণ ছাড়া অন্য কোনো উপকরণ সংগ্রহ করতে পারত না?
উত্তর : চাষিরা ভাতের সাথে লবণ ছাড়া অন্য কোনো উপকরণ সংগ্রহ করতে পারত না।
১৪. ‘চাষার দুক্ষু’ প্রবন্ধে উলিখিত সমুদ্রতীরবর্তী গ্রাম কোনটি?
উত্তর : সমুদ্রতীরবর্তী গ্রাম সাত ভায়া।
১৫. ‘এন্ডি কাপড় অবাধে কত বছর টেকে?
উত্তর : অবাধে ৪০ বছর টেকে।
১৬. ‘চাষার দুক্ষু’ প্রবন্ধে লেখকের সময় বঙ্গের গভর্নর কে ছিলেন?
উত্তর : বঙ্গের গভর্নর ছিলেন লর্ড কারমাইকেল।
১৭. লর্ড কারমাইকেল কীসের জন্মভূমি আবিষ্কার করেছিলেন?
উত্তর : রেশমি রুমালের।
১৮. রেশমকে স্থানীয় ভাষায় কী বলা হয়?
উত্তর : ‘এন্ডি’।
১৯. ‘অনুকরণপ্রিয়তা’ নামক ভূতটি কাদের কাঁধে চেপেছে?
উত্তর : চাষাদের কাঁধে চেপেছে।
২০. ‘চাষার দুক্ষু’ প্রবন্ধে লেখকের মতে, সুসভ্য হয়ে আমরা কোন কাপড় পরিত্যাগ করেছি?
উত্তর : এন্ডি কাপড় পরিত্যাগ করেছি।
২১. সভ্যতা বিস্তারের সঙ্গে সঙ্গে কোন শিল্পসমূহ ক্রমশ বিলুপ্ত হয়েছে?
উত্তর : দেশীয় শিল্পসমূহ ক্রমশ বিলুপ্ত হয়েছে।
২২. ‘চাষার দুক্ষু’ প্রবন্ধে লেখকের সময়ে কৃষকরমণী সুতা কেটে কাদের জন্য কাপড় প্রস্তুত করত?
উত্তর : বাড়ির সকলের জন্য কাপড় প্রস্তুত করত।
অনুধাবনমূলক প্রশ্নোত্তর
১. ‘ইহার অপর পৃষ্ঠাও আছে’Ñউক্তিটি দ্বারা কী বোঝানো হয়েছে?
উত্তর : ‘ইহার অপর পৃষ্ঠাও আছে’উক্তিটি দ্বারা সভ্যতার আগ্রাসনে সুখবঞ্চিত কৃষকদের জীবনধারাকে বোঝানো হয়েছে।
সভ্যতার অগ্রগতির ফলে আমরা বিলাসবহুল জীবনের নানা উপকরণ পেয়েছি। কিন্তু এসব উপকরণের সুবিধা ভোগ করছে মুষ্টিমেয় ধনাঢ্য মানুষ। আর কৃষকরা অর্ধাহারে, অনাহারে দিন কাটাচ্ছে। তারা শুধু ভাতের সাথে লবণ জোটাতে পারে। কৃষকদের দুর্দশার দিকটিকেই অপর পৃষ্ঠায় বলা হয়েছে।
২. জুটমিলের কর্মচারীদের নবাবি জীবনযাপন ‘চাষার দুক্ষু’ প্রবন্ধে লেখককে ভাবিয়ে তুলত কেন?
উত্তর : পাট উৎপাদনকারীদের পরনের কাপড় থাকত না অথচ পাট মিলের কর্মচারীরা নবাবি জীবনযাপন করত বলে তাদের জীবনযাপন ‘চাষার দুক্ষু’ প্রবন্ধে লেখককে ভাবিয়ে তুলত।
চাষারা রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে পাট উৎপাদন করে। বিনিময়ে তাদের পেটের খাবার, পরনের কাপড় জোটে না। অথচ মিলের কর্মচারীরা ৫০০-৭০০ টাকা বেতন পেয়ে নবাবি হালে জীবনযাপন করে। লেখক এমন বৈষম্য মানতে পারেননি বলে বিষয়টি তাঁকে ভাবিয়ে তুলতো।
৩. শুঁটকি মাছ অতি উপাদেয় তরকারি বলে পরিগণিত হওয়ার কারণ বুঝিয়ে লেখ।
উত্তর : কৃষকরা খুবই গরিব ছিল বলে শুঁটকি মাছ পরম উপাদেয় তরকারি বলে পরিগণিত হতো। উড়িষ্যার অন্তর্গত কণিকা রাজ্যের কৃষকরা বেশ গরিব ছিল।
তারা পান্তা ভাতের সাথে লবণ ছাড়া অন্য কোনো উপকরণ সংগ্রহ করতে পারত না। তাই তাদের কাছে শুঁটকি মাছের তরকারি পরম উপাদেয় মনে হতো।
৪. ‘পাছায় জোটে না ত্যানা, কিন্তু মাথায় ছাতা’Ñউক্তিটি দ্বারা কী বোঝানো হয়েছে?
উত্তর : ‘পাছায় জোটে না ত্যানা, কিন্তু মাথায় ছাতা’উক্তিটির মাধ্যমে চাষিদের বিলাসিতাকে বোঝানো হয়েছে।
এদেশের চাষিদের অর্থনৈতিক অবস্থা খুবই খারাপ। কিন্তু বিলাসিতা তাদের শিরায় শিরায়, ধমনীতে ধমনীতে প্রবেশ করে তাদের বিষে জর্জরিত করেছে। তাই তাদের পরনে কাপড় না থাকলেও মাথায় ছাতা থাকে।
৫. এখন আর ‘আসাম সিল্ক’ পাওয়া যায় না কেন?
উত্তর : এন্ডি পোকা প্রতিপালন হয় না বলে এখন আর ‘আসাম সিল্ক’ পাওয়া যায় না।
একসময়ে এন্ডি রেশমের পোকা প্রতিপালন করে তার গুটি হতে তৈরিকৃত সুতা দিয়ে নানাধরনের কাপড় তৈরি হতো। কিন্তু সভ্যতার অগ্রগতিতে এন্ডি পোকা আর প্রতিপালন করা হয় না। তাই এখন আর ‘আসাম সিল্ক’ পাওয়া যায় না।
৬. চাষার দারিদ্র্য কীভাবে ঘুচবে? Ñব্যাখ্যা কর।
উত্তর : শিক্ষার বিস্তার ও দেশি শিল্পের প্রসারের মাধ্যমে চাষার দারিদ্র্য ঘুচবে।
বেশির ভাগ কৃষক অশিক্ষিত বলে তারা নিজেদের ভালো-মন্দ বুঝতে পারে না। আর সভ্যতার অগ্রগতিতে দেশীয় শিল্প হারিয়ে যাচ্ছে। এমতাবস্থায় গ্রামে গ্রামে পাঠশালা আর ঘরে ঘরে চরকা ও টেকো হলে চাষার দারিদ্র্য ঘুচবে।
৭. চাষার উদরে অন্ন না থাকার কারণ কী?
উত্তর : সভ্যতার অগ্রগতিতে চাষা তার অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বলে তাদের উদরে অন্ন থাকে না।
এক সময়ে চাষাদের মরাই ভরা ধান, গোয়াল ভরা গরু ছিল। কিন্তু বর্তমানে তাদের কিছুই নেই। মূলত সভ্যতার অগ্রগতিতে যন্ত্র শিল্পের কাছে দেশি শিল্প টিকে থাকতে পারছে না। ফলে চাষার অবস্থা দিন দিন খারাপ হচ্ছে।