নবম দশম শ্রেণির রসায়ন ষষ্ঠ অধ্যায় মোলের ধারণা ও রাসায়নিক গণনা সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
নবম দশম/এসএসসি রসায়ন দ্বিতীয় অধ্যায় পদার্থের অবস্থা এর পাঠ সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর নিচে দেওয়া হলো। এসএসসি রসায়ন ষষ্ঠ অধ্যায় মোলের ধারণা ও রাসায়নিক গণনা সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর প্রশ্ন -১ : নিচের চিত্রটি দেখে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও : ক. মোল কাকে বলে? খ. নাইট্রোজেন পরমাণুর যোজনী ও যোজ্যতা ইলেকট্রন ভিন্ন কেন? ব্যাখ্যা কর। গ. উদ্দীপকের দ্রবণদ্বয়কে একত্রে মিশ্রিত করলে যে লবণ পাওয়া যায় তার সংযুতি নির্ণয় করে দেখাও। ঘ. উদ্দীপকের দ্রবণ দুটির ঘনমাত্রা সমান হবে কিনা তার গাণিতিক যুক্তি দাও। ⇔ ১নং প্রশ্নের উত্তর ⇔ ক. কোনো রাসায়নিক পদার্থের যে পরিমাণে অ্যাভোগেড্রো সংখ্যক (৬.০২ × ১০২৩) অণু, পরমাণু বা আয়ন থাকে তাকে পদার্থের মোল বলে। খ. নাইট্রোজেন মৌলের পারমাণবিক সংখ্যা ৭। এর ইলেকট্রন বিন্যাস নিম্নরূপ : N(7) = 2, 5 = 1s22s22p 2p 2p মৌলটির সর্বশেষ শক্তিস্তরে অর্থাৎ ২য় শক্তিস্তরে মোট ৫টি ইলেকট্রন থাকায় এর যোজ্যতা ইলেকট্রন ৫। আবার, মৌলটির সর্বশেষ শক্তিস্তরে তিনটি বেজোড় ইলেকট্রন বিদ্যমান। ফলে নাইট্রোজেন মৌলটি বন্ধন তৈরির সময় অন্য কোনো মৌলের তিনটি পরমাণুর সাথে যুক্ত হওয়ার ক্ষমতা রাখে। তাই নাইট্রোজেনের যোজনী ৩। অতএব, নাইট্রোজেন পরমাণুর যোজনী ও যোজ্যতা ইলেকট্রন ভিন্ন। গ. উদ্দীপকের দ্রবণদ্বয় হলো HCl ও NaOH। HCl ও NaOH হলো এসিড ও ক্ষার। অতএব, এ দ্রবণদ্বয়কে একত্রে মিশ্রিত করলে প্রশমন বিক্রিয়ার মাধ্যমে এসিড ও ক্ষারের বিক্রিয়ায় সোডিয়াম ক্লোরাইড নামক লবণ ও পানি উৎপন্ন হয়। বিক্রিয়ার সমীকরণটি নিম্নরূপ : HCl + NaOH = NaCl + H2O NaCl লবণের সংযুতি নির্ণয় : সোডিয়ামের আপেক্ষিক পারমাণবিক ভর = ২৩ এবং ক্লোরিনের আপেক্ষিক পারমাণবিক ভর = ৩৫.৫। NaCl এর আপেক্ষিক আণবিক ভর = ২৩ + ৩৫.৫ = ৫৮.৫ সুতরাং যৌগটিতে, সোডিয়ামের সংযুতি = ২৩÷৫৮.৫ × ১০০% = ৩৯.৩২% এবং ক্লোরিনের সংযুতি = ৩৫.৫÷৫৮.৫ × ১০০% = ৬০.৬৮% ∴ NaCl-এর শতকরা সংযুতি হচ্ছে Na = ৩৯.৩২% এবং Cl = ৬০.৬৮%। ঘ. উদ্দীপক থেকে দেখা যায় যে, ১০০ mL আয়তনের দুটি পৃথক পাত্রে ৪ম করে HCl ও NaOH রাখা হয়েছে। HCl ও NaOH এর আণবিক ভর যথাক্রমে ৩৬.৫ গ্রাম এবং ৪০ গ্রাম। অর্থাৎ পাত্রে রাখা- HCl এর পরিমাণ = ৪÷৩৬.৫ মোল = ০.১১ মোল NaOH এর পরিমাণ = ৪÷৪০ মোল = ০.১ মোল আমরা জানি, কোনো দ্রবণের ঘনমাত্রা প্রকাশের রীতিকে বলা হয় মোলারিটি। নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় প্রতি লিটার দ্রবণে দ্রবীভূত দ্রবের মোল সংখ্যাকে মোলারিটি বলে। এখন, HCl দ্রবণের আয়তন = ১০০mL = ০.১L ∴HCl দ্রবণের ঘনমাত্রা = ০.১১০.১ মোল = ১.১M আবার, NaOH দ্রবণের আয়তন = ১০০mL = ০.১L ∴NaOH দ্রবণের ঘনমাত্রা = ০.১০.১ মোল = ১.০M সুতরাং দেখা যাচ্ছে যে, উদ্দীপকের দ্রবণ দুটির ঘনমাত্রা সমান হবে না। প্রশ্ন -২ : নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও : ১০ গ্রাম CaCO3 প্রস্তুত করার লক্ষ্যে ৪.৪ গ্রাম কার্বন ডাইঅক্সাইড ও ৫ গ্রাম ক্যালসিয়াম অক্সাইড মিশ্রিত করা হলো। বিক্রিয়ায় প্রত্যাশিত উৎপাদ পাওয়া গেল না। ক. রাসায়নিক সমীকরণ কাকে বলে? খ. কার্বন ডাইঅক্সাইডের মোলার আয়তন ব্যাখ্যা কর। গ. বিক্রিয়ায় কত মোল কার্বন ডাইঅক্সাইড ব্যবহার করা হয়েছিল তা নিরূপণ করে দেখাও। ঘ. উদ্দীপকের বিক্রিয়ায় প্রত্যাশিত উৎপাদের পরিমাণ কম হওয়ার যৌক্তিক ব্যাখ্যা দাও। ⇔ ২নং প্রশ্নের উত্তর ⇔ ক. বিক্রিয়ক এবং উৎপাদ পদার্থের পরমাণুগুলোর মধ্যে সমতা বজায় রেখে প্রতীক ও সংকেতের সাহায্যে কোনো রাসায়নিক বিক্রিয়াকে সংক্ষেপে প্রকাশ করার পদ্ধতিকে রাসায়নিক সমীকরণ বলে। খ. এক মোল পরিমাণ পদার্থের আয়তনকে মোলার আয়তন বলে। কার্বন ডাইঅক্সাইডের মোলার আয়তন বলতে এক মোল পরিমাণ CO2 এর আয়তনকে বুঝায়। কার্বন ডাইঅক্সাইডের আণবিক ভর = (১২ + ১৬ × ২) = ৪৪ ∴ ১ মোল CO2 = ৪৪g সুতরাং দেখা যাচ্ছে যে, CO2 এর মোলার আয়তন বলতে ৪৪ম কার্বন ডাইঅক্সাইড গ্যাসের আয়তনকে বোঝায়। প্রমাণ অবস্থায় ৪৪ম CO2 গ্যাসের মোলার আয়তন ২২.৪L। গ. উদ্দীপকে সংঘটিত বিক্রিয়াটি হলো : CaO + CO2 → CaCO3 CO2 এর আণবিক ভর =১২ + ১৬ × ২ = ৪৪ ∴ CO2 এর ১ মোল = ৪৪ গ্রাম দেওয়া আছে, বিক্রিয়ায় ৪.৪ গ্রাম CO2 মিশ্রিত করা হয়। ৪৪ গ্রাম CO2 = ১ mole ∴ ৪.৪ গ্রাম CO2 = (১ × ৪.৪)/৪৪ mole = ০.১ mole অতএব, বিক্রিয়ায় ০.১ mole CO2 ব্যবহার করা হয়েছিল। ঘ. প্রত্যাশিত উৎপাদ কম হওয়ার কারণ হলো ব্যবহৃত বিক্রিয়ক সঠিক পরিমাণে উপস্থিত না থাকা। CaO + CO2 → CaCO3 ১ মোল ১ মোল ১ মোল আবার, ১ মোল CaCO3 = ৪০ + ১২ + (১৬ × ৩) = ১০০g ১ মোল CaO = ৪০ + ১৬ = ৫৬g এবং ১ মোল CO2 = ১২ + (১৬ × ২) = ৪৪g অর্থাৎ, ১০০ম CaCO3 প্রস্তুত করতে প্রয়োজন ৫৬g CaO ∴ ১g CaCO3 প্রস্তুত করতে প্রয়োজন = ৫৬÷১০০ g CaO ∴ ১০g CaCO3 প্রস্তুত করতে প্রয়োজন = (৫৬ × ১০)÷১০০ g CaO = ৫.৬g CaO একইভাবে, ১০০ম CaCO3 প্রস্তুত করতে প্রয়োজন ৪৪ম CO2 ∴ ১g CaCO3 প্রস্তুতে প্রয়োজন = ৪৪÷১০০g CO2 ∴ ১০g CaCO3 প্রস্তুতে প্রয়োজন = (৪৪ × ১০)÷১০০g CO2 = ৪.৪g CO2 অর্থাৎ ১০g CaCO3 প্রস্তুত করতে ৪.৪g CO2 প্রয়োজন এবং উদ্দীপকের বিক্রিয়ায় তা ব্যবহৃত হলেও প্রয়োজনীয় ৫.৬g CaO-এর স্থলে ৫g CaO ব্যবহৃত হয়েছে। ফলে ৪.৪ম CO2 সম্পূর্ণ বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে পারেনি। অতএব, প্রত্যাশিত উৎপাদ প্রস্তুতির লক্ষ্যে গৃহীত বিক্রিয়ক CaO এর ৫.৬ – ৫ = ০.৬ গ্রাম ঘাটতিই প্রত্যাশিত উৎপাদের পরিমাণ কম হওয়ার জন্য দায়ী। প্রশ্ন -৩ : নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও : ১৮০ ভরবিশিষ্ট যৌগ M এর ৬.৭৫ম বিশ্লেষণ করে ০.৪৫g হাইড্রোজেন, ২.৭g কার্বন এবং ৩.৬g অক্সিজেন পাওয়া গেল। ক. আণবিক সংকেত কাকে বলে? ১ খ. স্থুলসংকেত ও আণবিক সংকেতের মধ্যে দুইটি পার্থক্য লেখ। ২ গ. যৌগটির শতকরা সংযুতি নিণয় কর। ৩ ঘ. উক্ত ভরসমূহ ব্যবহার করে গ যৌগটির আণবিক সংকেত নির্ণয় করা সম্ভবÑগাণিতিক ব্যাখ্যা দাও। ৪ ⇔ ৩নং প্রশ্নের উত্তর ⇔ ক. কোনো যৌগের অণুতে বিদ্যমান পরমাণুসমূহের প্রকৃত সংখ্যা প্রকাশকারী সংকেতকে আণবিক সংকেত বলে। খ. স্থুল সংকেত ও আণবিক সংকেতের মধ্যে দুইটি পার্থক্য নিম্নে দেওয়া হলো- স্থুল সংকেত আণবিক সংকেত (i) যৌগের স্থুল সংকেত নির্ণয়ে এর সংযুতি জানা প্রয়োজন, কিন্তু আণবিক ভর জানার প্রয়োজন হয় না। (i) যৌগের আনবিক সংকেত নির্ণয় করতে সংযুতির সাথে সাথে আণবিক ভর জানতে হয়। (ii) যৌগের স্থুল সংকেত কোনো কোনো ক্ষেত্রে আণবিক সংকেতের সমান হয়। (ii) যৌগের আণবিক সংকেত হয় এর স্থুল সংকেতের সমান অথবা কোনো সরল গুণিতকের সমান হয়। গ. উদ্দীপকের বিশ্লেষণ কার্যে ব্যবহৃত যৌগ গ-এর পরিমাণ = ৬.৭৫g ∴ হাইড্রোজেনের সংযুতি = ০.৪৫÷৬.৭৫ × ১০০ = ৬.৬৭% ∴ কার্বনের সংযুতি = ২.৭÷৬.৭৫ × ১০০ = ৪০% ∴ অক্সিজেনের সংযুতি = ৩.৬÷৬.৭৫ × ১০০ = ৫৩.৩৩% ঘ. উক্ত ভরসমূহ ব্যবহার করে M যৌগটির
নবম দশম শ্রেণির রসায়ন ষষ্ঠ অধ্যায় মোলের ধারণা ও রাসায়নিক গণনা সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর Read More »