সপ্তম শ্রেণি

সপ্তম শ্রেণির আনন্দ পাঠ অলক্ষুণে জুতো

অলক্ষুণে জুতো মোহাম্মদ নাসির আলী  গল্পটি পড়ে যা জানতে পারব  কৃপণতার পরিণাম  আলী আবুর দুর্ভাগ্যের কথা  লেখক পরিচিতি নাম মোহাম্মদ নাসির আলী। জন্ম পরিচয় জন্ম সাল : ১০ই জানুয়ারি ১৯১০ খ্রিষ্টাব্দ। জন্মস্থান : ধাইদা, বিক্রমপুর। পিতৃপরিচয় পিতার নাম : হায়দার আলী। শিক্ষাজীবন এন্ট্রান্স (১৯২৬), তেলিরবাগ কালীমোহন-দুর্গামোহন ইনস্টিটিউট। বিকম (১৯৩১), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। কর্মজীবন/পেশা ১৯৩৩ সালে তিনি কলকাতা হাইকোর্টে অনুবাদক হিসেবে যোগদান করেন। পরবর্তীকালে দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার শিশু বিভাগের পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর ঢাকায় এসে হাইকোর্টের চাকরিতে যোগদান করেন এবং ১৯৬৭ সালে অবসরে যান। অবশ্য এর আগেই ১৯৪৯ সালে তিনি নওরোজ কিতাবিস্তান নামে একটি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান তৈরি করেন এবং পুস্তক ব্যবসা চালিয়ে যান। ১৯৫২ সালে দৈনিক আজাদে শিশু-কিশোর বিভাগে ‘মুকুলের মাহফিল’ পরিচালনা করেন এবং ‘বাগবান’ ছদ্মনামে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত ঐ দায়িত্ব পালন করেন। সাহিত্য সাধনা উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ : মণিকণিকা (১৯৪৯), শাহী দিনের কাহিনী (১৯৪৯), ছোটদের ওমর ফারুক (১৯৫১), আকাশ যারা করলো জয় (১৯৭৫), আলী বাবা (১৯৫৮), ইতালির জনক গ্যারিবল্ডি (১৯৬৩), বীরবলের খোশ গল্প (১৯৬৪), সাত পাঁচ গল্প (১৯৬৫), বোকা বকাই (১৯৬৬), যোগাযোগ (১৯৬৮), লেবু মামার সপ্তকাণ্ড (১৯৬৮) ইত্যাদি। পুরস্কার ও সম্মাননা সাহিত্যে বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৬৭)। মৃত্যু ৩০শে জানুয়ারি, ১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দে। বহুনির্বাচনি প্রশ্নের উত্তর ১. শিশিগুলো গোলাপজলে ভর্তি করে আলী আবু যতœ করে রেখেছিলÑ ছ ক. খাটের নিচে তক্তার ওপর খ. জানালা বরাবর তাকের ওপর গ. উঁচু কাচের আলমারির ভেতর ঘ. সিল্কের কাপড় দিয়ে মুড়িয়ে ২. জেলে আলী আবুর বাড়িতে যখন গেল তখন Ñ চ ক. বাড়িতে কেউ ছিল না খ. আলী আবুর স্ত্রী বাড়িতে ছিল গ. ঘরের দরজাগুলো খোলা ছিল ঘ. আলী আবু বাড়িতে ছিল ৩. আলী আবুর জুতো জেলের কাছে মূল্যবান, কারণÑ চ ক. তা ফেরত দিলে জেলের বকশিশ মিলবে খ. তা বাজারে বিক্রি করে সে অর্থ পাবে গ. আবু তা পেলে জেলেকে ধন্যবাদ দেবে ঘ. কাজির দরবারে জমা দিলে আবুর শাস্তি হবে ৪. শিশিগুলো বিক্রি করে আবু ভেবেছিলÑ চ ক. তার টাকা বেড়ে দ্বিগুণ হবে খ. একজোড়া নতুন জুতো কিনতে পারবে গ. মনটা খুশিতে ভরে উঠবে ঘ. মানুষকে ব্যবসায় সাহায্য করবে সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর অনুচ্ছেদটি পড়ে নিচের প্রশ্নের জবাব লেখ : অগত্যা আবুও ছুটল কুকুরকে তাড়া করে। ছুটতে ছুটতে সামনে পড়ল একটা দেয়াল। কুকুর দেয়াল টপকে যেতেই জুতোটা ফসকে গিয়ে পড়ল দেয়ালের ওপাশে একটা ছোট ছেলের মাথায়। আবুর ভারী জুতোর ঘায়ে ছেলে অজ্ঞান হয়ে পড়ল। বাড়িতে হইচই পড়ে গেল। সবাই এল ছুটে। ক. আবু কুকুরটিকে তাড়া করছিল কেন? ১ খ. সবাই ছুটে এলো কেন? ২ গ. কুকুরটি কীভাবে আবুর ভাগ্য বিপন্ন করল, ব্যাখ্যা করো। ৩ ঘ. উদ্দীপকের আলোকে জুতোকে অলক্ষুণে বলার যৌক্তিকতা বিচার করো। ৪ ১ এর ক নং প্র. উ. কুকুরটির কাছ থেকে নিজের একপাটি জুতো উদ্ধার করার জন্য আবু কুকুরটিকে তাড়া করেছিল। ১ এর ক নং প্র. উ. আলী আবুর জুতোর আঘাতে বাড়ির একটা ছোট ছেলে আহত হওয়ায় সবাই দৌড়ে এসেছিল।  আলী আবুর জুতোজোড়া ছিল অনেক পুরোনো আর ভীষণ ভারী। একটা কুকুর তার একপাটি জুতো কেড়ে নিয়ে দৌড় দিয়েছিল। আবুও কুকুরটাকে সাথে সাথে তাড়া করল। তাড়া খেয়ে পালানোর সময় কুকুরটা একটা দেয়াল টপকে যায়। তখন জুতোটা তার মুখ থকে ফসকে গিয়ে ছোট একটা ছেলের মাথায় পড়ে। ভারী জুতোর আঘাতে ছেলেটি সংজ্ঞা হারায়। এ কারণেই সবাই তাকে সাহায্য করতে ছুটে আসে। ১ এর গ নং প্র. উ. কুকুরটির কেড়ে নেওয়া জুতোটা ঘটনাক্রমে ছোট একটা ছেলেকে আঘাত করায় আবুর ভাগ্য বিপন্ন হলো।  আলী আবুর জুতোজোড়া তার বেশ ক্ষতি করে ফেলেছিল। সেগুলো সে কোনোভাবেই নিজের কাছ থেকে দূরে সরাতে পারছিল না। এমনকি কুকুর একপাটি জুতো ছিনিয়ে নিয়ে চলে গেলেও দুর্ভাগ্য আবুর পিছু ছাড়ে না।  কুকুর আবুর একপাটি জুতো নিয়ে পালাচ্ছিল। এ সময় আবুও কুকুরটিকে ধাওয়া করে। দেয়াল টপকাতে গিয়ে জুতোটা কুকুরের মুখ থেকে খসে গিয়ে পড়ে ছোট একটা ছেলের মাথায়। ভারী সেই জুতোর আঘাতে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে ছেলেটি। সবাই মিলে আবুকে ধরে বিচারের জন্য কাজির দরবারে নিয়ে যায়। কাজি আবুকে ছেলেটির চিকিৎসার খরচ ও সমপরিমাণ অর্থ ক্ষতিপূরণ দিতে বলেন। এভাবেই কুকুরটির কারণে আবুকে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। ১ এর ঘ নং প্র. উ. জুতোর কারণে আলী আবুকে অনেক অপমান ও আর্থিক ক্ষতির শিকার হতে হয়েছিল। তাই এটিকে অলুক্ষণে জুতো বলাই শ্রেয়।  আলী আবু ধনী লোক হলেও চালচলনে ছিল খুবই সাধারণ। সে তার অতি পুরোনো জুতোজোড়া দীর্ঘদিন ধরে জোড়াতালি দিয়ে ব্যবহার করত। এরপর একসময় জুতোজোড়াকে কেন্দ্র করে ঘটতে থাকে নানা দুর্ঘটনা। সবই আলী আবুর জন্য দুর্ভোগ বয়ে আনে।  আবু যতবার জুতোজোড়ার হাত থেকে মুক্তি পেতে চেয়েছে ততবারই জুতোজোড়া তার কাছে নাটকীয়ভাবে ফিরে এসেছে। নদীতে ফেলে, নর্দমায় ফেলেও লাভ হয়নি। বরং জুতার জন্য তার ব্যবসার ক্ষতি হয়েছে, আর্থিক জরিমানা হয়েছে। তাছাড়া অনেক অপমানও সহ্য করতে হয়েছে।  উদ্ধৃতাংশে দেখা যায় জুতোর একপাটি কুকুর নিয়ে পালালে তাতেও নতুন করে বিপত্তি দেখা দেয়। এভাবে জুতোজোড়া আলী আবুকে বারবার কষ্ট দেয়। কিছুতেই দুর্ভাগ্য তার পিছু ছাড়ে না। এ কারণেই জুতোটিকে অলুক্ষণে জুতা বলা খুবই যুক্তিসংগত। সেদিন সন্ধ্যায় পাঁচজন পুলিশ সাদিকদের বাসায় উপস্থিত। অবৈধ মোবাইল ফোন রাখার অভিযোগে সাদিককে পুলিশ গ্রেফতার করতে এসেছে। জানা গেল যে, একদল ছিনতাইকারী বিশিষ্ট ব্যবসায়ী রাকিব চৌধুরীকে খুন করে তার টাকা-পয়সা, মোবাইল সেট ছিনতাই করে নিয়ে যায়। পরে এ চক্রের এক সদস্যের কাছ থেকে সাদিক না জেনেই নামমাত্র মূল্যে মোবাইল সেটটি ক্রয় করে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে মোবাইল ফোনের অবস্থান নিশ্চিত হয়েই সাদিকদের বাসায় এসেছে। এরপর থেকে শুরু হয় সাদিকের চরম ভোগান্তি। ক. আতরের শিশিগুলোর দাম কত? ১ খ. আবু আলীর পিঠে দশ দোররা মারার হুকুম দেওয়া হলো কেন? ২ গ. সাদিক ‘অলক্ষুণে জুতো’ গল্পের আলী আবুরই আরেক রূপ- ব্যাখ্যা করো। ৩ ঘ. সামান্য ভুলেও মানুষের জীবনে নেমে আসে বিপর্যয়- উদ্দীপক ও ‘অলক্ষুণে জুতো’ গল্পের আলোকে বিশ্লেষণ করো। ৪ ২ নং প্র. উ. ক. আতরের শিশিগুলোর দাম ছিল পঞ্চাশ দিনার। খ. জুতো চুরির শাস্তি হিসেবে আলী আবুকে দশ দোররা মারার হুকুম দেওয়া হলো।  আলী আবু শহরের হাম্মামখানায় গোসল করতে ঢুকল। গোসল থেকে বের হয়ে সে দেখল তার জুতার জায়গায় নতুন একজোড়া জুতা। আলী আবু ভাবল তার বন্ধু হয়ত তাকে নতুন জুতা উপহার হিসেবে দিয়ে গেছে। এ কথা মনে করে সে যখন জুতাজোড়া নিয়ে চলে গেল, বিপত্তি ঘটল তখনই। আসলে জুতোজোড়া কেউ তাকে উপহার হিসেবে দেয়নি। সে জুতোজোড়া ছিল শহরের কাজির। জুতোজোড়ার অবস্থান পরিবর্তন হওয়ায় আলী আবু ভুল বুঝেছিল। ফলে আলী আবুর জুতা গ্রহণ চুরি হিসেবে স্বীকৃত হলো এবং আবু আলীকে দশ দোররা মারার হুকুম দেওয়া হলো। গ. দুর্ভাগ্যের শিকার হওয়ার দিক থেকে ‘অলুক্ষণে জুতো’ গল্পের আলী আবুর সাথে উদ্দীপকের সাদিকের সাদৃশ্য রয়েছে।  আলী আবু

সপ্তম শ্রেণির আনন্দ পাঠ অলক্ষুণে জুতো Read More »

সপ্তম শ্রেণির আনন্দ পাঠ আদুভাই

আদুভাই আবুল মনসুর আহমদ  গল্পটি পড়ে জানতে পারব  আত্মসম্মানবোধে বলীয়ান হওয়ার প্রেরণা  অধ্যবসায়ী হওয়ার গুরুত্ব  লেখাপড়ার প্রতি মানুষের আগ্রহের স্বরূপ  লেখক পরিচিতি নাম আবুল মনসুর আহমদ। জন্ম পরিচয় জন্ম তারিখ : ৩রা সেপ্টেম্বর ১৮৯৮ খ্রিষ্টাব্দ (১৯শে ভাদ্র ১৩০৫ বঙ্গাব্দ)। জন্মস্থান : ধানীখোলা, ত্রিশাল, ময়মনসিংহ। পারিবারিক পরিচয় পিতার নাম : আব্দুর রহিম ফরাযী। মাতার নাম : মীর জাহান খাতুন। শিক্ষাজীবন মক্তব : বাগদাদি কায়দা, আম-সিপারা ও কোরআন শরিফ। মাধ্যমিক : ম্যাট্রিক (১৯১৭), মৃত্যুঞ্জয় বিদ্যালয়। উচ্চ মাধ্যমিক : আইএ (১৯১৯), জগন্নাথ কলেজ। উচ্চতর শিক্ষা : বিএ (১৯২১), ঢাকা কলেজ; আইন (১৯২৯), রিপন ল কলেজ, কলকাতা। কর্মজীবন/পেশা সাংবাদিক ও সাহিত্যিক। সাহিত্য সাধনা গ্রন্থসমূহ : হুজুর কেবলা, নয়াপাড়া, আয়না, আসমানী পর্দা, ফুড কনফারেন্স, গালিভারের সফরনামা। জীবনাবসান ১৮ই মার্চ, ১৯৭৯ খ্রিষ্টাব্দ। বহুনির্বাচনি প্রশ্নের উত্তর ১. শিক্ষকগণ তাকে আদুভাই বলে ডাকতেনÑ ঝ ক. সম্মান করে খ. আদর করে গ. বিদ্রæপ করে ঘ. মর্যাদা রক্ষা করে ২. ‘আজ হোক, কাল হোক, প্রমোশন আমাকে দিতেই হবে’Ñ আদুভাই-এর এ উক্তিতে প্রকাশ পেয়েছে আদুভাই-এর র. দম্ভভাব রর. আত্মবিশ্বাস ররর. দৃঢ়প্রত্যয় নিচের কোনটি সঠিক? ঝ ক. র খ. রর গ. র ও ররর ঘ. রর ও ররর নিচের অংশটুকু পড় এবং ৩-৫ নং প্রশ্নের উত্তর দাও : আদুভাই একই শ্রেণিতে বছরের পর বছর পড়াশোনা করলেও কখনোই প্রমোশন পান না। কিন্তু অন্য গুণাবলির জন্য তিনি ছিলেন সবার প্রিয়ভাজন। তাঁর নিয়মানুবর্তিতা ও শৃঙ্খলাবোধের জন্য তিনি প্রতিবছর পুরস্কৃত হতেন। ৩. আদুভাই কোন শ্রেণির ছাত্র ছিলেন? ছ ক. ৬ষ্ঠ খ. ৭ম গ. ৮ম ঘ. ৯ম ৪. অন্য গুণাবলি বলতে এখানে বোঝানো হয়েছেÑ র. শান্ত ও ভদ্র রর. সত্যবাদী ও চরিত্রবান ররর. হাস্যোজ্জ্বল ও পরোপকারী নিচের কোনটি সঠিক? ছ ক. র খ. র ও রর গ. ররর ঘ. র, রর ও ররর ৫. ক্লাসে খারাপ ছাত্র হয়েও কর্তৃপক্ষের সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করা সম্ভবÑ চ ক. নিয়ম-শৃঙ্খলা মেনে চলার মাধ্যমে খ. খেলাধুলায় ভালো পারদর্শী হলে গ. শান্ত-স্বভাবসুলভ আচরণের মাধ্যমে ঘ. সাংস্কৃতিক কার্যক্রমে পারদর্শী হলে সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর আদুভাই অপরাধীর ন্যায় উদ্বেগ-কম্পিত ও সংকোচ-জড়িত প্যাঁচ-মোচড় দিয়ে যা বললেন, তার মর্ম এই যে প্রমোশনের জন্য এত দিন তিনি কারও কাছে কিছু বলেননি, কারণ প্রমোশন জিনিসটাকে যথাসময়ের পূর্বে এগিয়ে আনাটা তিনি পছন্দ করেন না। কিন্তু একটা বিশেষ কারণে এবার তাকে প্রমোশন পেতেই হবে। সে নির্জনতায়ও তিনি আমার কানের কাছে মুখ এনে সেই কারণটি বললেন। ক. এ বছর আদুভাই প্রমোশনের জন্য এত ব্যাকুল কেন? খ. আদুভাই-এর অপরাধী, উদ্বেগ-কম্পিত ও সংকোচময় হওয়ার কারণ বর্ণনা কর। গ. অতি নির্জনতায়ও কানে কানে কথা বলার প্রবণতা কখন লক্ষ করা যায়Ñ উদ্ধৃতাংশের আলোকে বর্ণনা কর। ঘ. উদ্ধৃতাংশে আদুভাই-এর যে দৃষ্টিভঙ্গি লক্ষ করা যায় তার স্বরূপ বিশ্লেষণ কর। ১ এর ক নং প্র. উ. এ বছর আদুভাইয়ের ছেলেও ক্লাস সেভেনে প্রমোশন পেয়েছে বলে আদুভাই প্রমোশনের জন্য এত ব্যাকুল। ১ এর খ নং প্র. উ. প্রমোশনের অন্যায় অবদারের কথা বলতে গিয়ে আদুভাই অপরাধী, উদ্বেগ কম্পিত ও সংকোচময় হলেন।  আদুভাই বছরের পর বছর ধরে ক্লাস সেভেনে পড়ে আছেন। প্রমোশন পাওয়া নিয়ে এতকাল তাঁর বিশেষ মাথাব্যথা ছিল না। কিন্তু নিজের ছেলে ক্লাস সেভেনে প্রমোশন পাওয়ায় তাঁর স্ত্রী তাঁকে ভর্ৎসনা করতে শুরু করেন। আদুভাই তাই প্রমোশন পাওয়ার জন্য অত্যন্ত আকুল হয়ে পড়েছেন। লেখকের কাছে তিনি তাঁর জন্য শিক্ষকের কাছে সুপারিশ করার অনুরোধ করেন। এ কারণেই তাঁর উদ্বিগ্নতা ও সংকোচের সীমা ছিল না। ১ এর গ নং প্র. উ. অনেক বেশি সতর্কতা অবলম্বন করতে গিয়ে বা অন্যায় অনুরোধের কথা বলার সময় মানুষ উল্লিখিত আচরণটি করতে পারে।  ‘আদুভাই’ গল্পের আদুভাইয়ের প্রমোশন না পাওয়া নিয়ে বিশেষ কোনো উদ্বেগ ছিল না। কিন্তু নিজের ছেলে যখন তাঁর শ্রেণিতে উঠে যায় তখন তাঁর স্ত্রী তাঁকে অনেক তিরস্কার করে। এ কারণে তিনি প্রমোশন পাওয়ার জন্য অস্থির হয়ে পড়েন। গোপনে সে কথা তিনি লেখকের কাছে বলেন ও তাঁর সাহায্য কামনা করেন।  অনেকে আদুভাইকে স্যারদের কাছে চেয়েচিন্তে বা অসদুপায় অবলম্বন করে প্রমোশন আদায়ের পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু আত্মসম্মানবোধের কারণে সে রাস্তায় যাননি আদুভাই। কিন্তু আপন ছেলেই যখন তাঁকে শ্রেণির দিক থেকে ছুঁয়ে ফেলে তখন স্ত্রীর গঞ্জনা সইতে না পেরে প্রমোশনের জন্য ছেলের বয়সী লেখকের কাছেও সাহায্যের আবেদন করেন। বিষয়টি তাঁর জন্য খুব লজ্জার। তাই তিনি নির্জনতার মাঝেও লেখকের কানে কানে কথাটি বলেন। ১ এর ঘ নং প্র. উ. উদ্ধৃতাংশে যেকোনো মূল্যে প্রমোশন পাওয়ার জন্য আদুভাইয়ের আত্মসম্মানবোধ বিসর্জন দেওয়ার দিকটি লক্ষ করা যায়।  আদুভাই ছিলেন অত্যন্ত আত্মমর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তি। প্রমোশন পাওয়ার জন্য অনেকে তাঁকে নানা অসদুপায় অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছিল। কিন্তু আদুভাই তাদের স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিলেন যে, তিনি তেমন কিছু কখনোই করবেন না।  উদ্ধৃতাংশে দেখা যাচ্ছে, আদুভাই প্রমোশন পেতে ব্যাকুল। স্ত্রীর তিরস্কারের জ্বালায় তিনি অতিষ্ঠ। তাই লেখকের কাছে তিনি বিশেষভাবে অনুরোধ জানান তাঁর হয়ে শিক্ষকের কাছে সুপারিশ করতে।  পরিস্থিতির কারণে অনেক সময় মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি বদলে যায়। উদ্ধৃতাংশের আলোকে বলা যায়, আদুভাইয়ের ক্ষেত্রেও তা সত্য। বহুদিন ধরে তিনি প্রমোশন না পেলেও কারও কাছে মাথা নত করেননি। কিন্তু পরিস্থিতির কারণে আজ বাধ্য হয়েছেন। [বি: দ্র: প্রশ্নটি সৃজনশীল আঙ্গিকে না হওয়ায় সঠিক পদ্ধতিতে উত্তর দেওয়া গেল না। সঠিক পদ্ধতিটি সম্পর্কে জানার জন্য অধ্যায়ের অংশের প্রশ্নোত্তর দেখো।] টুটুল পাঁচ বছর যাবৎ ১০ম শ্রেণিতে অধ্যয়ন করছে। লেখাপড়ায় খারাপ হলেও খেলাধুলায় তার যথেষ্ট সুনাম রয়েছে। তার কারণেই তাদের স্কুল প্রতিবছর ফুটবলে জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হয়। এ জন্য এ যাবৎ তার প্রমোশন পেতে তেমন কষ্ট পেতে হয়নি। কিন্তু ১০ম শ্রেণির নির্বাচনী পরীক্ষায় প্রধান শিক্ষক তাকে চূড়ান্ত পরীক্ষার জন্য নির্বাচন করতে নারাজ, বরং তাকে টিসি নিয়ে বিকেএসপিতে ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দেন। ক. উদ্ধৃতাংশে বর্ণিত টুটুলের কী প্রতিভা লক্ষ করা যায়? ১ খ. উদ্ধৃতাংশে টুটুলকে চূড়ান্ত পরীক্ষার জন্য নির্বাচন করতে প্রধান শিক্ষক কেন রাজি ননÑ বর্ণনা করো। ২ গ. উদ্ধৃতাংশের টুটুলের সাথে তোমার পঠিত আদুভাই-এর কী সাদৃশ্য বা বৈসাদৃশ্য লক্ষণীয়Ñযুক্তিসহ উপস্থাপন করো। ৩ ঘ. টুটুলকে প্রধান শিক্ষক বিকেএসপিতে ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দেওয়ার তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো। ৪ ২ নং প্র. উ. ক. উদ্ধৃতাংশে বর্ণিত টুটুলের খেলাধুলায় প্রতিভা লক্ষ করা যায়। খ. টুটুল পরীক্ষায় খারাপ করবেÑ এ আশঙ্কায় প্রধান শিক্ষক তাকে চূড়ান্ত পরীক্ষার জন্য নির্বাচন করতে রাজি নন।  টুটুল ছাত্র হিসেবে ভালো নয়। পাঁচ বছর ধরে সে ১০ম শ্রেণিতেই পড়ে আছে। চূড়ান্ত পরীক্ষায় সুযোগ পেলেও তার ফলাফল ভালো না হওয়ার আশঙ্কাই বেশি। এ কারণেই প্রধান শিক্ষক তাকে চূড়ান্ত পরীক্ষার জন্য নির্বাচন করতে রাজি হন না। গ. উদ্ধৃতাংশের টুটুলের সাথে আমার পঠিত ‘আদুভাই’ গল্পের আদুভাইয়ের সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্য উভয়ই বিদ্যমান।  আদুভাই লেখাপড়ায় ভালো নয়। তাই সপ্তম শ্রেণিতে দীর্ঘদিন ধরে পড়ে আছেন। তবে পড়াশোনার প্রতি তাঁর আগ্রহের শেষ নেই। প্রমোশন পাওয়া নিয়ে তাঁর বিশেষ কোনো ভাবনা ছিল না। কিন্তু ভিন্ন পরিস্থিতিতে তিনি প্রমোশনের জন্য

সপ্তম শ্রেণির আনন্দ পাঠ আদুভাই Read More »

সপ্তম শ্রেণির আনন্দ পাঠ মানুষের মন

মানুষের মন বনফুল  গল্পটি পড়ে জানতে পারব  ডাক্তার আর জ্যোতিষীর মতের পার্থক্য সম্পর্কে  বৈজ্ঞানিক আর বৈষ্ণবের আচরণগত পার্থক্য সম্পর্কে  লেখক পরিচিতি নাম প্রকৃত নাম : বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায়। ছদ্মনাম/সাহিত্যিক নাম : বনফুল। জন্ম পরিচয় জন্ম তারিখ : ১৯শে জুলাই, ১৮৯৯ খ্রিষ্টাব্দ। জন্মস্থান : বিহারের পূর্ণিয়া জেলার মনিহারি। শিক্ষাজীবন মাধ্যমিক : ম্যাট্রিক (১৯১৮)। উচ্চ মাধ্যমিক : আইএসসি (১৯২০), সেন্ট কলম্বাস কলেজ। উচ্চতর শিক্ষা : ১৯২৭ খ্রিষ্টাব্দে ডাক্তারি পাস করেন। কর্মজীবন/পেশা প্যাথলজিস্ট। সাহিত্য সাধনা উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ : স্থাবর, জঙ্গম, হাটেবাজারে, শ্রীমধুসূদন ও বিদ্যাসাগর, মন্ত্রমুগ্ধ, কিছুক্ষণ, বিন্দুবিসর্গ, দ্বৈরথ, ভীমপলশ্রী প্রভৃতি। পাখির পৃথিবী নিয়ে তাঁর বিখ্যাত রচনা ‘ডানা’। পুরস্কার ও সম্মাননা সম্মাননা : পদ্মভ‚ষণ, ভাগলপুর ও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডি-লিট উপাধি। পুরস্কার : রবীন্দ্র পুরস্কার, জগত্তারিণী পদক। মৃত্যু ৯ই ফেব্রæয়ারি, ১৯৯৭ খ্রিষ্টাব্দে। বহুনির্বাচনি প্রশ্নের উত্তর ১. ‘মানুষের মন’ গল্পে পল্টু কে? জ ক. নরেশের ভাই খ. পরেশের পুত্র গ. তপেশের পুত্র ঘ. তপেশের ভাই ২. কী কারণে নরেশ ও পরেশের মনের গতিবিধি ঘুরে যায়? র. ডাক্তারের চিকিৎসায় পল্টুর অবস্থা খারাপ হওয়ায় রর. চরণামৃত পান করে পল্টুর অবস্থা খারাপ হওয়ায় ররর. বিপরীতধর্মী চিকিৎসায় পল্টুর অবস্থা খারাপ হওয়ায় নিচের কোনটি সঠিক? ঝ ক. র খ. রর গ. র ও রর ঘ. ররর ৩. নরেশ ও পরেশ এই দুই সহোদরের ব্যাপারে নিচের কোন তথ্যটি ঠিক? জ ক. দুজনই নিরামিষভোজী খ. দুজনই বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গিসম্পন্ন গ. দুজনই পল্টুকে ভীষণ ভালোবাসে ঘ. দুজনেরই আগ্রহ আছে রামায়ণের প্রতি নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ো এবং ৪ ও ৫ নম্বর প্রশ্নের উত্তর দাও : নরেশ ও পরেশ উভয়েই তাহাকে কোনো নির্দিষ্ট বাঁধনে বাঁধিতে চাহিতেন না। যদিও দুইজনেই মনে মনে আশা করিতেন যে বড় হইয়া পল্টু তাহার আদর্শই বরণ করিবে। ৪. ‘তাহার আদর্শই বরণ করিবে’Ñ এ অংশে তাহার বলতে বোঝানো হয়েছে : ঝ ক. পল্টুকে খ. নরেশকে গ. পরেশকে ঘ. নরেশ ও পরেশকে ৫. উদ্ধৃতাংশের লেখকÑ ছ ক. টেকচাঁদ ঠাকুর খ. বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায় গ. অন্নদাশংকর রায় ঘ. শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর নিচের অনুচ্ছেদটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও : মনের দিক দিয়া বিচার করিলে দেখা যায় যে, দুজনেই গোঁড়া। একজন গোঁড়া বৈজ্ঞানিক এবং আর একজন গোঁড়া বৈষ্ণব। অত্যন্ত নিষ্ঠাসহকারে নরেশ জ্ঞানমার্গ এবং পরেশ ভক্তিমার্গ অবলম্বন করিয়াছেন। যখন নরেশের ‘কমবাইন্ড হ্যান্ড’ চাকর নরেশের জন্য ‘ফাউল কাটলেট’ বানাইতে ব্যস্ত এবং নরেশ ‘থিওরি অব রিলেটিভিটি’ লইয়া উন্মত্ত, তখন সেই একই বাড়িতে পরেশ স্বপাক নিরামিষ আহার করিয়া যোগবাশিষ্ট রামায়ণে মগ্ন। ইহা প্রায়ই দেখা যাইত। তবে উভয়েই পল্টুকে সমভাবে আদর-স্নেহ করিত। ক. ‘একজন গোঁড়া বৈজ্ঞানিক’Ñ গোঁড়া বৈজ্ঞানিকের নাম কী? ১ খ. উদ্ধৃত অংশ অবলম্বনে নরেশ ও পরেশের জীবনযাপনের বর্ণনা দাও। ২ গ. নরেশ ও পরেশের জীবনাদর্শের কোনটি তোমার কাছে পছন্দনীয়? যুক্তিসহ উপস্থাপন কর। ৩ ঘ. পল্টুর প্রতি নরেশ ও পরেশের দুর্বলতার কারণ বিশ্লেষণ কর। ৪ ১ এর ক নং প্র. উ. গোঁড়া বৈজ্ঞানিকের নাম নরেশ। ১ এর খ নং প্র. উ. পরেশ ও নরেশের জীবনযাপন পরস্পরের সম্পূর্ণ বিপরীত।  পরেশ ও নরেশের আগ্রহ সম্পূর্ণ ভিন্ন দুটি বিষয়ের প্রতি। পরেশ তীব্রভাবে বিজ্ঞানমনস্ক। তার জীবনযাপনের পদ্ধতিতে তার ছাপ স্পষ্ট। অন্যদিকে নরেশ গোঁড়া বৈষ্ণব। নিজে রান্না করে নিরামিষ খাবার খায় আর যোগবাশিষ্ট রামায়ণ পাঠে মগ্ন থাকে। দুজনের মাঝেই নিজ নিজ ক্ষেত্র নিয়ে গোঁড়ামি দেখা যায়। ১ এর গ নং প্র. উ. নরেশ ও পরেশের জীবনাদর্শের মধ্যে বিজ্ঞান মনস্কতার বিচারে নরেশের জীবনাদর্শটি আমার ভালো লেগেছে।  নরেশ ও পরেশ সহোদর ভাই হলেও তাদের আচার আচরণে রয়েছে ব্যাপক তফাত। নরেশ বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চায় বিশ্বাসী। আর পরেশ ধর্মচর্চায় বেশি আগ্রহী।  নরেশ আধুনিক জীবনযাপনে অভ্যস্ত। সবকিছু যুক্তি দিয়ে বিবেচনা করতে চায় সে। কেননা বিজ্ঞান মানেই যুক্তির মাধ্যমে কোনো কিছুর কারণ অনুসন্ধান করা। তার চেহারা ও চালচলনে বুদ্ধির ছাপ স্পষ্ট। এসব কারণেই পরেশের জীবনাদর্শ আমাকে অধিক আকর্ষণ করে। ১ এর ঘ নং প্র. উ. পল্টু বাবা-মা হারা হওয়ায় তার প্রতি চাচা নরেশ ও পরেশের ছিল অকৃত্রিম টান।  নরেশ ও পরেশের ছোট ভাই তপেশ। তপেশ ও তার স্ত্রী কলেরায় মারা যায়। মৃত্যুর সময় তাদের একমাত্র পুত্র পল্টুকে তুলে দেয় নরেশ ও পরেশের হাতে। সেই থেকেই পল্টু তাদের চোখের মণি।  নরেশ ও পরেশের চিন্তা-ভাবনা ও জীবনযাপন প্রণালীতে কোনো মিল নেই। একজন গোঁড়া বৈজ্ঞানিক, অন্যজন গোঁড়া বৈষ্ণব। তবে ভাতিজা পল্টুকে স্নেহ করার দিক থেকে কারোরই কমতি নেই।  ছোট ভাইয়ের ছেলে পল্টুকে নরেশ ও পরেশ নিজেদের ছেলের মতোই ভালোবাসে। পল্টু অনাথ হওয়ায় সে ভালোবাসার মাত্রা অনেক বেশি। তাছাড়া পল্টু যে তাদের বংশের সর্বশেষ প্রদীপ। এ কারণে পল্টুর প্রতি তার চাচাদের মমতার শেষ নেই। কাজী রকিব পেশায় সাংবাদিক হলেও বৈচিত্র্যপূর্ণ জীবন-যাপনের কারণে সবার কাছে পরিচিত। তিনি কখনো চলেন রাজার হালে আবার কখনো দীন-হীন বেশে। কখনো শোনেন রবীন্দ্রসংগীত আবার কখনো ব্যান্ড সংগীত, কখনো পরেন স্যুট আবার কখনো ঢোলা পাজামা-পাঞ্জাবি, কখনো ওঠা-বসা করেন সমাজের বিত্তশালীদের সঙ্গে, আবার কখনো মিশে যান জীর্ণ কুটিরে বসবাসকারীদের সঙ্গে। এমনই বিচিত্র মন-মানসিকতার অধিকারী কাজী রকিব। ক. পল্টুর বাবার নাম কী? ১ খ. নরেশ ও পরেশের আকৃতি ও প্রকৃতি কেমন? ব্যাখ্যা করো। ২ গ. নরেশ ও পরেশের বিপরীত মানসিকতা কীভাবে কাজী রকিবের মধ্যে প্রতিফলিত হয়েছে- ব্যাখ্যা করো। ৩ ঘ. মানুষের মনের রহস্য ভেদ করা দুরূহ ব্যাপার- ‘মানুষের মন’ এবং উদ্দীপকের আলোকে বিশ্লেষণ করো। ৪ ২ নং প্র. উ. ক. পল্টুর বাবার নাম তপেশ। খ. নরেশ ও পরেশের মানসিক বৈপরীত্য তাদের বাহ্যিক আকৃতি প্রকৃতিতেও ফুটে উঠেছে।  নরেশ ও পরেশ সহোদর হলেও তাদের মধ্যে মিলের চেয়ে অমিলই বেশি। নরেশ দীর্ঘ দেহের অধিকারী। গাত্রবর্ণ শ্যামলা, নরেশ তার খোঁচা খোঁচা চুলে চিরুনি ব্যবহার করত না। তার চোখজোড়া ছিল বুদ্ধিদীপ্ত। সূ²াগ্র শুকপাখির ঠোঁটের মতো নাকের ওপর নেউলের মতো পুষ্ট গোঁফ। অন্যদিকে পরেশ উচ্চতার দিক থেকে ছিল খাটো। মাথার কোঁকড়া চুল বাবড়ির মতো বিন্যস্ত । চোখ দুটির মধ্যে তন্ময় ভাব। গোঁফ দাড়ি ছিল না, গলায় কণ্ঠী, কপালে চন্দন। গ. নরেশ ও পরেশের মধ্যে স্বভাবগত যে বৈপরীত্য তা কাজী রকিবের মধ্যেও প্রতিফলিত হয়েছে।  নরেশ ও পরেশের মধ্যে ছিল বিপরীতধর্মী মানসিকতা। নরেশের প্রবল আগ্রহ ছিল বিজ্ঞানে। অন্যদিকে পরেশ আগ্রহ প্রকাশ করত বৈঞ্চব মতাদর্শে। নরেশ যেখানে থিওরি অব রিলেটিভিটি নিয়ে ব্যস্ত, পরেশ সেখানে যোগবাশিষ্ট রামায়ণে মগ্ন। তাদের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা অর্জনে ছিল বৈপরীত্য। নরেশ কেমিস্ট্রিতে এমএ আর পরেশ সংস্কৃতে ডিগ্রি অর্জন করেছে সংস্কৃতে।  উদ্দীপকের ব্যক্তি কাজী রকিবের মধ্যে বিপরীতধর্মী মানসিকতার পরিচয় ফুটে ওঠে। যখন মন যা চায় তিনি তাই করেন। সে কারণে দেখা যায় যে তিনি কখনো রাজার হালে আবার কখনো দরিদ্র বেশে জীবন-যাপন করেন। বিচিত্র মন-মানসিকতার কারণে কাজী রকিব জীর্ণ কুটিরেও যান আবার বিত্তশালীদের সাথেও মিশে যান অনায়াসে। নরেশ ও পরেশের মধ্যে যে বৈপরিত্য তা কাজী রকিবের মধ্যেও বিদ্যমান। নরেশ ও পরেশ আলাদা ব্যক্তি সত্তা কিন্তু কাজী রকিব একক ব্যক্তি

সপ্তম শ্রেণির আনন্দ পাঠ মানুষের মন Read More »

সপ্তম শ্রেণির আনন্দ পাঠ বুলু

বুলু অজিত কুমার গুহ  গল্পটি পড়ে জানতে পারব  ভাষা আন্দোলনের কথা  বাঙালির প্রত্যয়দীপ্ত চেতনা সম্পর্কে  মানুষের প্রতি মানুষের মমত্বের স্বরূপ  লেখক পরিচিতি নাম অজিত কুমার গুহ। জন্ম পরিচয় জন্ম তারিখ : ১৫ই এপ্রিল, ১৯১৪ খ্রিষ্টাব্দ। জন্মস্থান : কুমিল্লার সুপারিবাগানে। কর্মজীবন/পেশা শিক্ষকতা : জগন্নাথ কলেজ; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। সাহিত্য সাধনা মূল্যবান ভ‚মিকাসহ তাঁর সম্পাদিত গ্রন্থের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘মেঘদূত’, ‘কৃষ্ণকান্তের উইল’, ‘গীতাঞ্জলি’ প্রভৃতি। মৃত্যু ১২ই নভেম্বর, ১৯৬৯ খ্রিষ্টাব্দে। বহুনির্বাচনি প্রশ্নের উত্তর ১. ‘বুলু’ মূলত কোন ধরনের সাহিত্যকর্ম? চ ক. আত্মকাহিনী খ. ছোটগল্প গ. সামাজিক কাহিনী ঘ. ঐতিহাসিক গল্প ২. ‘বুলু’ গল্পে লেখক বাংলাদেশের কোন ঐতিহাসিক ঘটনার প্রতি ইঙ্গিত করেছেন? র. ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন রর. ১৯৬৯ সালের গণ-অভ্যুত্থান ররর. ১৯৭১ সালের স্বাধীনতাযুদ্ধ নিচের কোনটি সঠিক? ছ ক. র খ. র ও রর গ. ররর ঘ. র ও ররর নিচের অংশটুকু পড় এবং ৩-৫ নং প্রশ্নের উত্তর দাও : এরপর সতেরো বছর কেটে গেছে। হঠাৎ সেই ডাক্তারের সঙ্গে লেখকের দেখা। লেখককে জড়িয়ে ধরে ডাক্তার কেঁদে উঠলেনÑ ‘আপনার বুলুকে মনে পড়ে স্যার? সে এবার ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করে চাকরি নিয়েছিল। হঠাৎ সে এক মশাল মিছিলে গিয়ে আর ফিরে আসেনি।’ ৩. ডাক্তারের সঙ্গে লেখকের প্রথম পরিচয় ঘটেছিলÑ ঝ ক. ঢাকা জেলখানায় খ. কোনো এক সভায় গ. কোনো এক হাসপাতালে ঘ. দিনাজপুর কারাগারে ৪. প্রথম ঘটনার সতেরো বছর পর বাংলাদেশে কোন ঐতিহাসিক ঘটনা ঘটে? ছ ক. ১৯৬৬-এর ছয়দফা আন্দোলন খ. ১৯৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থান গ. ১৯৭০-এর নির্বাচন ঘ. ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ ৫. বুলুর মশাল মিছিলে অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে প্রকাশ পেয়েছে বুলুর Ñ র. সংগ্রামী চেতনা রর. বিপ্লবী অনুভ‚তি ররর. আত্মসচেতনতা নিচের কোনটি সঠিক? ছ ক. র খ. র ও রর গ. ররর ঘ. র ও ররর সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর নিচের অংশটুকু পড়ে এর সংশ্লিষ্ট প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও। আমার ৫ বছর বয়সের ছেলে সৈকতকে নিয়ে এক বন্ধুর বাসায় বেড়াতে যাই। বন্ধু পণ্ডিত মানুষÑটেবিলে অনেক বড় বড় বই। প্রথম সাক্ষাতেই সৈকত আলাপ জমিয়ে নিল বন্ধুটির সঙ্গে। একথা-সেকথা। তুমি এত বড় বড় বই পড়ো। লেখাগুলোতো খুবই ছোট- দেখ কী করে? বন্ধুটিও বেশ মজার মানুষ। সে মজা করে বলে আমার চশমা পড়িয়ে দেয়। তুমি বুড়া হলে তোমার চশমাও তোমাকে পড়িয়ে দেবে। বন্ধুটি সৈকতকে চকলেট দেয়। সৈকত তাকে মুহূর্তের মধ্যে ২/৩টি ছড়া শুনিয়ে দেয়। কয়েক মিনিটের প্রথম সাক্ষাতেই দুজনের মধ্যে বেশ ভাব জমে ওঠে। এরপর প্রায়ই সে বায়না ধরে ঐ বন্ধুর বাসায় যেতে। ক. ‘বুলু’ গল্পটিতে লেখকের কোন স্মৃতি ফুটে উঠেছে? ১ খ. লেখকের সঙ্গে বুলুর পরিচয়ের প্রেক্ষাপট ব্যাখ্যা করো। ২ গ. উদ্দীপকের সৈকতের মধ্যে বুলুর কোন বৈশিষ্ট্যের প্রতিফলন ঘটেছে? যুক্তিসহ উপস্থাপন করো। ৩ ঘ. অল্প বয়সী মানুষের মধ্যে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠার কারণগুলো উদ্দীপকের আলোকে বিশ্লেষণ করো। ৪ ১ এর ক নং প্র. উ. ‘বুলু’ গল্পটিতে লেখকের ভাষা আন্দোলনের স্মৃতি ফুটে উঠেছে। ১ এর খ নং প্র. উ. ভাষা আন্দোলনকালে দিনাজপুর কারাগারে অবস্থানের সময় বুলুর সঙ্গে লেখকের পরিচয় হয়েছিল।  ভাষা আন্দোলনে অংশগ্রহণ করার কারণে ১৯৫২ সালে লেখককে গ্রেপ্তার করে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী রাখা হয়েছিল। এখানে তিন দিন বন্দী থাকার পর তাঁকে বদলি করা হয় দিনাজপুর কারাগারে। সেখানে লেখকসহ অন্য বন্দীদের পরিচর্যার জন্য নিয়োজিত ছিলেন শাহেদ নামের একজন ডাক্তার। একদিন বিকেলে ডাক্তার এলেন ফুটফুটে সুন্দর পাঁচ বছরের ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে। লেখক ছেলেটিকে কোলে নিয়ে নাম জিজ্ঞাসা করতেই সে বলল, আমার নাম বুলু। আর এভাবেই লেখকের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। ১ এর গ নং প্র. উ. উদ্দীপকের সৈকতের মধ্যে বুলুর সরলতা ও মিশুক প্রকৃতির প্রতিফলন ঘটেছে।  অজিত কুমার গুহ রচিত ‘বুলু’ গল্পের বুলু পাঁচ বছরের এক শিশু। এক বিকেলে চিকিৎসক বাবার সঙ্গে সে দিনাজপুর কারাগারে এসেছিল। প্রথম সাক্ষাতেই লেখকের সঙ্গে সে গড়ে তুলেছিল বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। তারপর থেকে প্রতিদিনই সে লেখকের সঙ্গে দেখা করতে আসত এবং ভাব জমাত। সরলতা ও মিশুক প্রকৃতির কারণে লেখকেরও তাকে খুব ভালো লেগেছিল।  উদ্দীপকের সৈকত পাঁচ বছরের এক শিশু। তাকে সঙ্গে নিয়ে তার বাবা এক বন্ধুর বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলেন। সৈকত প্রথম দেখাতেই তার বাবার বন্ধুর সঙ্গে আলাপ জমিয়ে নিয়েছিল। বড় বড় বই দেখে সৈকত জানতে চাইল- এসব তিনি কীভাবে পড়েন। বাবার বন্ধুটি সৈকতকে চকলেট দিলেন। সৈকত তাঁকে মুহূর্তের মধ্যে ২-৩টি ছড়া শুনিয়ে দেয়। অর্থাৎ কয়েক মিনিটের প্রথম সাক্ষাতেই দুজনের মধ্যে বেশ ভাব জমে ওঠে। পরবর্তী সময়ে সৈকত প্রাই বাবার সেই বন্ধুর বাসায় যাওয়ার বায়না ধরে। এক্ষেত্রে সৈকতের সরলতা আর মিশুক স্বভাবের দিকটি সুস্পষ্ট। পরিশেষে তাই বলা যায়, গল্পের বুলু ও উদ্দীপকের সৈকতের আচরণে শিশুর সহজ সরলতার পাশাপাশি খুব সহজে কাউকে আপন করে নেওয়ার দিক প্রকাশ পেয়েছে। ১ এর ঘ নং প্র. উ. অল্প বয়সী মানুষের মধ্যে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠার অন্যতম প্রধান কারণ হলো সরলতা, সুন্দর আচরণ ও মানসিকতার মিল।  ‘বুলু’ গল্পে বুলুর সাথে বন্ধুত্ব হয় বর্ষীয়ান অধ্যাপকের, যিনি ভাষা আন্দোলনের সাথে জড়িত ছিলেন বলে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী তাঁকে কারাগারে নিক্ষেপ করেছিল। তখন তিনি ছিলেন দিনাজপুর কারাগারে। সেখানে কর্মরত চিকিৎসক শাহেদ সাহেবের সঙ্গে এক বিকেলে কারাগারে এসেছিল তার পাঁচ বছরের ছেলে বুলু। অধ্যাপকের মিষ্টি মধুর আচরণে খুব সহজেই মুগ্ধ হয়েছিল বুলু। আবার বুলুও তার সারল্য ভরা আচরণ দিয়ে অধ্যাপক সাহেবের মন জয় করে নিয়েছিল। আর উভয়ের মানসিকতা এক বলেই বিদায়কালে অধ্যাপকের উদ্দেশ্যে বুলু বলেছিল, “রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই, নুরুল আমীনের কল্লা চাই।”  উদ্দীপকের সৈকতের বন্ধুত্ব হয়েছিল তার বাবার বন্ধুর সঙ্গে, যিনি ছিলেন একজন পণ্ডিত ব্যক্তি। কিন্তু প্রথম সাক্ষাতেই সে আলাপ জমিয়ে নিতে পেরেছিল তাঁর সঙ্গে। তিনি চকলেট দিয়েছিলেন, আর সৈকত তাঁকে মুহূর্তের মধ্যে ২-৩টি ছড়া শুনিয়েছিল। এভাবে কয়েক মিনিটেই তাদের মধ্যে ভাব জমে ওঠে। একে অপরকে বন্ধু হিসেবে ভাবতে শুরু করে।  গল্পের বুলুর সাথে লেখকের নিবিড় সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল অল্প সময়েই। উদ্দীপকের সৈকত ও তার বাবার বন্ধুর সাথেও একইভাবে সুন্দর বোঝাপড়া তৈরি হয় এর মূল কারণ মানসিকতার মিল। সরলতা, সুন্দর আচরণ ও মানসিকতার মিল থাকলে যেকোনো বয়সীদের মধ্যে বন্ধুত্ব গড়ে উঠতে পারে। অর্থাৎ বন্ধুত্ব বয়সের কোনো সীমারেখা মেনে চলে না। সালেহা-মতিন দম্পতির একমাত্র সন্তান দুর্জয় জন্মগ্রহণ করে ১৯৫২ সালের ফেব্র“য়ারি মাসে। দুর্জয়ের বয়স যখন দশ বছর, তখনই দুর্জয়ের বাবা মতিন সাহেব দুর্জয়কে দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য সম্পর্কে ধারণা দেন। দুর্জয়ের মধ্যেও দেশের প্রতি মমত্ববোধ তৈরি হয়। মতিন সাহেব এভাবেই শিশু দুর্জয়ের মধ্যে দেশপ্রেমের বীজ বপন করে দেন। উনিশ বছর পর ১৯৭১ সালে বাবার সম্মতি নিয়েই দুর্জয় দেশমাতৃকাকে শত্র“মুক্ত করতে ঝাঁপিয়ে পড়ে মহান মুক্তিযুদ্ধে। ক. বুলু কত সালে শহিদ হয়? ১ খ. কেন অধ্যাপকের ধৈর্যের প্রশংসা করতে হয়? ২ গ. দুর্জয় ও বুলু চরিত্রের মধ্যে সাদৃশ্য তুলে ধরো। ৩ ঘ. শৈশবের রোপিত বীজ যৌবনে মহীরুহতে পরিণত হয়েছে- উদ্দীপক ‘বুলু’ গল্পের আলোকে বিশ্লেষণ করো। ৪ ২ নং প্র. উ. ক. বুলু ১৯৬৯ সালের গণ-অভ্যুত্থানের সময় শহিদ হয়।

সপ্তম শ্রেণির আনন্দ পাঠ বুলু Read More »

সপ্তম শ্রেণির আনন্দ পাঠ গুরুচণ্ডালী

গুরুচণ্ডালী শিবরাম চক্রবর্তী  গল্পটি পড়ে জানতে পারব  বাংলা ভাষার গুরুচণ্ডালী দোষ সম্পর্কে ধারণা  কোনো কিছু নিয়ে অতিরিক্ত বাড়াবাড়ির কুফল  স্থানভেদে যথাযথ ভাষা ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা  লেখক পরিচিতি নাম শিবরাম চক্রবর্তী। জন্ম পরিচয় জন্ম তারিখ : ২৭শে অগ্রহায়ণ, ১৩১০ বঙ্গাব্দ। পিতৃ পরিচয় পিতার নাম : শিবপ্রসাদ চক্রবর্তী। শিক্ষাজীবন সিদ্ধেশ্বরী ইনস্টিটিউশন (মালদহ)। কর্মজীবন/পেশা সাংবাদিকতা। সাহিত্য সাধনা গ্রন্থ : বাড়ি থেকে পালিয়ে, ঈশ্বর পৃথিবী ভালোবাসা, ভালোবাসা পৃথিবী ঈশ্বর, কিশোর রচনা সমগ্র (হায়াৎ মামুদ সম্পাদিত)। মৃত্যু ১১ই ভাদ্র ১৩৮৭ বঙ্গাব্দে (২৮শে আগস্ট ১৯৮০ খ্রিষ্টাব্দ)। অনুশীলনী: বহুনির্বাচনি প্রশ্নের উত্তর ১. ‘গুরুচণ্ডালী’ কাকে বলে? জ ক. চলিত ও আঞ্চলিকতার মিশ্রণকে খ. সাধু ও আঞ্চলিকতার মিশ্রণকে গ. সাধু ও কথ্য রীতির মিশ্রণকে ঘ. প্রাচীন ও আধুনিকতার মিশ্রণকে ২. গুরুচণ্ডালী গল্পে কিছু শব্দ ব্যবহার করা হয়েছেÑ র. দুগ্ধফেননিভ, আয়েস, উপবেশন রর. পরিগ্রহ, সমাসীন, মুলতবি ররর. আয়াসসাধ্য, পরিগ্রহ, উপবেশন নিচের কোনটি সঠিক? জ ক. র খ. র ও রর গ. ররর ঘ. রর ও ররর নিচের অনুচ্ছেদটি পড় এবং ৩ ও ৪ নম্বর প্রশ্নের উত্তর দাও : স্যার, তখন আমি কী বলেছিলাম? আমি অত করে বললাম, তা আপনি কানই দিলেন না, আদৌ কর্ণপাতই করেন না! গণেশ অনেকটা এগিয়ে এসেছে ততক্ষণে। দোকানের মুখে পৌঁছে মাস্টারের সম্মুখে পড়েছে। ‘কী বলেছিলে তুমি? তুমি তো আমায় কাল ব্যগ্র হতে বলেছিলে? আর এদিকে আমার আজ সর্বনাশ হয়ে গেল।’ ৩. উদ্দীপকটি তোমার পঠিত কোন গল্প থেকে নেওয়া হয়েছে? চ ক. গুরুচণ্ডালী খ. লালু গ. তোতাকাহিনী ঘ. আদুভাই ৪. উদ্দীপকটিতে গণেশের কী ধরনের পরিচয় ফুটে উঠেছে? জ ক. নিষ্ঠুরতা খ. উদাসীনতা গ. মূর্খতা ঘ. রসিকতা ৫. স্যারের সর্বনাশের কারণÑ র. তাঁর অসচেতনতা রর. ভাষা বুঝতে না পারা ররর. গণেশের মূর্খতা নিচের কোনটি সঠিক? জ ক. র খ. রর গ. র ও রর ঘ. ররর সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর দুগ্ধফেননিভের সঙ্গে আয়েস? সীতানাথবাবুর মুখখানা উচ্ছের পায়েস খেলে যেমন হয় তেমনি ধারা হয়ে ওঠে ‘ওহে বাপু! গুরুচণ্ডালী কাকে বলে তা কি তোমাদের মগজে ঢুকেছে? মনে কর যে, যে চাঁড়ালটা আমাদের এ স্কুলে ঝাঁট দেয় সে যদি হেডমাস্টার মশায়ের সঙ্গে একাসনে বসে, তাহলে সেটা দেখতে কেমন লাগে? সেটা যেমন দৃষ্টিকটু দেখাবে, কতগুলো সাধু-শব্দের মধ্যে একটা অসাধু শব্দ ঢুকলে ঠিক সেই রকম খারাপ দেখায়, তাই না?’ ক. দুগ্ধফেননিভ শব্দের অর্থ কী? ১ খ. সাধু ও কথ্যরীতি মিশিয়ে ফেললে কী ধরনের সমস্যা হয়? ২ গ. একটি রচনাকে সুন্দর ও আকর্ষণীয় করার জন্য কী করা প্রয়োজনÑ উদ্দীপকের আলোকে উপস্থাপন করো। ৩ ঘ. ‘গুরুচণ্ডালী’ গল্পের আলোকে ভাষা প্রয়োগের কৌশল বিশ্লেষণ করো। ৪ ১ এর ক নং প্র. উ. ‘দুগ্ধফেননিভ’ শব্দের অর্থ দুধের ফেনার মতো সাদা ও কোমল। ১ এর খ নং প্র. উ. সাধু ও কথ্যরীতি মিশিয়ে ফেললে গুরুচণ্ডালী দোষ সৃষ্টি হয়।  সাধু ভাষা শুধুই লেখালেখিতে ব্যবহার করা হয়। এর রয়েছে আলাদা কিছু বৈশিষ্ট্য। সাধারণ মানুষের জন্য এ ভাষা উপযোগী নয়। সাধারণ মানুষ যে ভাষা সচরাচর ব্যবহার করে থাকে তা হলো কথ্য ভাষা। তাই এই দুই ভাষার মিশ্রণ অর্থাৎ গুরুচণ্ডালী দোষ ঘটলে ভাষা দুর্বোধ্য হয়ে ওঠে, রচনায় অসংগতি সৃষ্টি হয়, কথা বললে তা শ্রæতিকটু শোনায়। ১ এর গ নং প্র. উ. একটি রচনাকে সুন্দর ও আকর্ষণীয় করে তোলার জন্য গুরুচণ্ডালী দোষ পরিহার করা প্রয়োজন।  ‘গুরুচণ্ডালী’ রচনায় বর্ণিত পণ্ডিতমশাই চান শিক্ষার্থীরা সাবলীল ভাষায় রচনা তৈরি করতে শিখুক। কিন্তু কোনোভাবেই তিনি তাদের মধ্য থেকে গুরুচণ্ডালী দোষজনিত সমস্যা দূর করতে পারেন না। সাধু ও কথ্য রীতি রচনায় না মেশানোর জন্য তিনি ছাত্রদের বারবার উপদেশ দেন।  রচনার সবচেয়ে বড় গুণ হলো প্রাঞ্জলতা। প্রাঞ্জলতা বলতে বোঝায় রচনার সহজবোধ্যতা। একটি রচনা যত সহজ সরল ভাষায় রচিত হবে পাঠককে তা তত বেশি আকৃষ্ট করবে। সাধু ভাষার সাথে কথ্য ভাষার মিশ্রণ ঘটালে রচনার সেই সহজবোধ্যতা নষ্ট হয়। তাই রচনার সময় এ বিষয়গুলো খেয়াল রাখা উচিত। ১ এর ঘ নং প্র. উ. ‘গুরুচণ্ডালী’ গল্পের আলোকে বলা যায়, ভাষা প্রয়োগের ক্ষেত্রে পরিবেশ পরিস্থিতির কথা মাথায় রাখতে হবে।  ‘গুরুচণ্ডালী’ গল্পে বর্ণিত শিক্ষার্থীরা রচনার বিভিন্ন গুণ সম্পর্কে সঠিকভাবে জানে না। পণ্ডিত সীতানাথবাবু তাই প্রাণান্ত চেষ্টা করেন তাদের ত্রæটি দূর করার। কিন্তু তার প্রভাব এতটাই বেশি ছিল যে, একসময় তা হিতে বিপরীত হয়ে যায়।  উদ্দীপকে সীতানাথবাবু ছাত্রদের গুরুচণ্ডালী দোষ সম্পর্কে বোঝাতে গিয়ে গলদঘর্ম হয়েছেন। ছাত্ররাও তাঁর ভাষা সম্পর্কিত অত্যাচারে অতিষ্ঠ। তাই প্রতিক‚ল পরিস্থিতিতেও তারা এর চর্চা করে যায়।  গুরুচণ্ডালী দোষ এড়াতে গিয়ে গল্পের গণেশ গুরু সীতানাথবাবুর সর্বনাশ ঠেকাতে পারে না। পকেটমার তার অর্থ আত্মসাৎ করে নিয়ে যায়। প্রকৃতপক্ষে গুরুমশাই তাদের শিখিয়েছিলেন রচনার ভাষা প্রয়োগ সম্পর্কে। কথ্য ভাষায় সেটি প্রয়োগের চেষ্টা করলে অনর্থ ঘটার আশঙ্কাই বেশি। গল্পের গণেশ সেটি করতে গিয়েছিল বলেই তার স্যারের বিপদ ঠেকাতে পারেনি। সুতরাং বোঝা যাচ্ছে, ভিন্ন ভিন্ন পরিস্থিতিতে মনের ভাব প্রকাশের জন্য রয়েছে ভাষার ভিন্ন ভিন্ন রূপ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. আজগর ফুলপুর বিদ্যালয়ের নবীনবরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হলেন। সংস্কৃতের প্রতি বিশেষভাবে দুর্বল ড. আজগর প্রচুর সংস্কৃত শব্দ ব্যবহার করে বক্তব্য উপস্থাপন করলেন। তাঁর বক্তব্য শুধু ছাত্রদের কাছেই দুর্বোধ্য বলে মনে হয়নি, শিক্ষকরাও তা অনুধাবনে ব্যর্থ হয়েছেন। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাঁকে যে উদ্দেশ্যে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন তা ব্যর্থ হলো এবং ড. আজগরের মূল্যবান উপদেশবাণী থেকে শিক্ষার্থীরাও বঞ্চিত হলো। ক. গণেশ সরকারি রেশনের দোকানে পণ্ডিত সীতানাথকে কী বলেছিল? ১ খ. কোন দৃশ্যটি অবাক হয়ে দেখার মতো ছিল? ২ গ. পণ্ডিত সীতানাথবাবুর ব্যর্থতা এবং ড. আজগরের ব্যর্থতার স্বরূপ ব্যাখ্যা করো। ৩ ঘ. ‘একটি বিষয়ে সতর্ক থাকলে ড. আজগর ও সীতানাথ সফল হতে পারতেন’ উদ্দীপক এবং ‘গুরুচণ্ডালী’ গল্পের আলোকে বিশ্লেষণ করো। ৪ ২ নং প্র. উ. ক. গণেশ সরকারি রেশনের দোকানে পণ্ডিত সীতানাথকে বলেছিল, ‘ব্যগ্র হোন কল্য’। খ. সরকারি রেশনের দোকানে সবার সাথে একই লাইনে দাঁড়িয়ে সীতানাথবাবুর রেশন সংগ্রহের দৃশ্যটি অবাক হয়ে দেখার মতো ছিল।  গণেশ সরকারি রেশন আনতে গিয়ে সীতানাথবাবুকেও সবার সাথে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখল। সেই লাইনে ঝাড়–দার-চামার থেকে শুরু করে পাড়ার গুণ্ডারাও ছিল। চণ্ডালদের মধ্যে গুরুদেবের এমন অভাবিত মিলন দৃশ্যে গণেশ হতবাক হয়ে পড়ল। গণেশের কাছে সে দৃশ্য অবাক হয়ে দেখার মতো মনে হয়েছিল। গ. গুরুচণ্ডালী দোষের প্রতি পণ্ডিত সীতানাথবাবুর অতিরিক্ত সতর্কতা এবং সংস্কৃত ভাষার প্রতি ড. আজগরের অতিরিক্ত অনুরাগ উভয়কে ব্যর্থতায় নিপতিত করেছিল।  পণ্ডিত সীতানাথ তার ছাত্রদেরকে সংস্কৃত শব্দ ও দেশজ শব্দের মিশ্রণের ব্যাপারে যথেষ্ট সতর্ক করে তোলার চেষ্টা করেন। সাধু-চলিতের মিশ্রণকে তিনি গুরুতর অপরাধ বলেই বিবেচনা করতেন। কিন্তু সরকারি রেশনের লাইনে দাঁড়িয়ে রেশন সংগ্রহ করার সময় পকেটমার যখন তাঁর পকেট মেরে দিচ্ছিল তখন তাঁর ছাত্র গণেশের অশুদ্ধ সাধু ভাষার সতর্কবাণী কোনো কাজে আসেনি। ‘ব্যগ্র হোন কল্য’ বক্তব্য অনুধাবন করতে করতেই পণ্ডিতের যা ক্ষতি হওয়ার তা হয়ে গেল।  উদ্দীপকে বর্ণিত অধ্যাপক ড. আজগর ফুলপুর বিদ্যালয়ে নবীনবরণ

সপ্তম শ্রেণির আনন্দ পাঠ গুরুচণ্ডালী Read More »

সপ্তম শ্রেণির আনন্দ পাঠ লালু

লালু শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়  লেখক পরিচিতি নাম শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। জন্ম পরিচয় জন্ম তারিখ : ১৫ই সেপ্টেম্বর, ১৮৭৬ খ্রিষ্টাব্দ। জন্মস্থান : দেবানন্দপুর, হুগলি, পশ্চিমবঙ্গ। শিক্ষাজীবন আর্থিক সংকটের কারণে এফএ শ্রেণিতে পড়ার সময় ছাত্রজীবনের পরিসমাপ্তি ঘটে। কর্মজীবন কেরানির চাকরি। পরবর্তীতে সাহিত্য রচনাকেই পেশা হিসেবে গ্রহণ করেন। সাহিত্য সাধনা বাংলা কথাসাহিত্যে দুর্লভ জনপ্রিয়তার অধিকারী। তাঁর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ : ‘বড়দিদি’ ‘বিরাজবৌ’ ‘রামের সুমতি’ ‘দেবদাস’, ‘বিন্দুর ছেলে’, ‘পণ্ডিত মশাই’, ‘হরিল²ী’, ‘চরিত্রহীন’, ‘পথের দাবী’, ‘শ্রীকান্ত’, ‘গৃহদাহ’, ‘দেনা পাওনা’ ইত্যাদি। পুরস্কার ও সম্মাননা ১৯২৩ খ্রিষ্টাব্দে জগত্তারিণী পদক (কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়), ১৯৩৬ খ্রিষ্টাব্দে ডি. লিট উপাধি (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়)। মৃত্যু ১৬ই জানুয়ারি, ১৯৩৮ খ্রিষ্টাব্দে। অনুশীলনী: বহুনির্বাচনি প্রশ্নের উত্তর ১. লালু কত টাকা পুঁজি নিয়ে ঠিকাদারি শুরু করল? চ ক. দশ খ. বিশ গ. ত্রিশ ঘ. পঞ্চাশ ২. ‘স্থির হয়ে চেয়ে দেখÑ আমি পাঁঠা নই, মানুষ’Ñ মনোহর চাটুজ্জে এ উক্তি করেনÑ র. মৃত্যুর ভয়ে রর. উৎসর্গিত হওয়ার ভয়ে ররর. পরিচয় দেওয়ার জন্য নিচের কোনটি সঠিক? ছ ক. র খ র ও রর গ. রর ঘ. ররর নিচের অনুচ্ছেদটি পড় এবং ৩-৪ নং প্রশ্নের উত্তর দাও। চাটুজ্জে কাঁদতে কাঁদতে বললেন, কোনো দিন নয় বাবা, আর কোনো দিন নয়, মায়ের সুমুখে তিন সত্যি করছি, আজ থেকে আমার বাড়িতে বলি বন্ধ। ৩. চাটুজ্জে কাঁদতে কাঁদতে কাকে কথাগুলো বলেছিলেন? ছ ক. পুরোহিতকে খ. লালুকে গ. জ্যাঠামশাইকে ঘ. লালুর বাবাকে ৪. উল্লিখিত ‘মায়ের সুমুখে তিন সত্যি করছি’Ñ এর অর্থ কী? ছ ক. প্রতিজ্ঞা করা খ. দৃঢ়ভাবে প্রতিজ্ঞা করা গ. তিনবার সত্যি বলা ঘ. মাকে সত্য বলা সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর অনুচ্ছেদটি পড় এবং নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও : সে জানিনে। আমার খুন চেপেছেÑ চলো তোমাকে বলি দেব! মায়ের আদেশ! চাটুজ্জে ডুকরে কেঁদে উঠলেনÑ না বাবা, মায়ের আদেশ নয়, কখনো নয়, মা যে জগজ্জননী। লালু বললেÑ জগজ্জননী! সে জ্ঞান আছে তোমার? আর দেবে পাঁঠা বলি? ডেকে পাঠাবে আমাকে পাঁঠা কাটতে? বলো। চাটুজ্জে কাঁদতে কাঁদতে বললেন, কোনো দিন নয় বাবা, আর কোনো দিন নয়, মায়ের সুমুখে তিন সত্যি করছি, আজ থেকে আমার বাড়িতে বলি বন্ধ। ক. চাটুজ্জে ডুকরে কেঁদে উঠলেন কেন? ১ খ. ‘সে জ্ঞান আছে তোমার?’ এখানে কী জ্ঞানের কথা হয়েছে? ২ গ. উদ্ধৃত অংশটুকু সাধুভাষায় রূপান্তর করো। ৩ ঘ. মাকে ‘জগজ্জননী’ বলে আখ্যায়িত করার তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো। ৪ ১ এর ক নং প্র. উ. চাটুজ্জে প্রাণের ভয়ে ডুকরে কেঁদে উঠলেন। ১ এর খ নং প্র. উ. চাটুজ্জে মশাই মায়ের দোহাই দিয়ে প্রাণ বাঁচাতে চাওয়ায় লালু উক্ত মন্তব্যটি করেছে।  মনোহর চাটুজ্জের বাড়িতে পাঁঠা বলি দিতে গিয়ে ‘লালু’ গল্পে বর্ণিত লালু বিষম কাণ্ড বাধিয়ে দিয়েছিল। পাঁঠা বলির পর চাটুজ্জেকেই বলি দিতে নিয়ে যাচ্ছিল। চাটুজ্জে ছাড়া পেতে চাইলে সে বলল, মায়ের অর্থাৎ দেবীর আদেশ। চাটুজ্জে তখন বলে তা হতে পারে না। কেননা মা তাঁর সন্তানের প্রতি এত নিষ্ঠুর হতে পারেন না। অথচ এই চাটুজ্জে মশাই নিজ বাড়িতে মায়ের নামে পাঁঠা বলির আয়োজন করেছিল। চাটুজ্জেকে এই সত্য বোঝাতেই লালু আলোচ্য উক্তিটি করেছিল। ১ এর গ নং প্র. উ. উদ্ধৃত অংশটুকু নিচে সাধু ভাষায় রূপান্তর করা হলো :  তাহা জানি না। আমার খুন চাপিয়াছে – চল তোমাকে বলি দিব! মাতার আদেশ! চাটুজ্জে ডুকরিয়া কাঁদিয়া উঠিলেন – না বাবা, মাতার আদেশ নহে, কখনো নহে, মা যে জগজ্জননী। লালু বলিল – জগজ্জননী! সেই জ্ঞান তোমার আছে? আর দিবে পাঁঠা বলি? ডাকিয়া পাঠাইবে আমাকে পাঁঠা কাটিতে? কহ।  চাটুজ্জে কাঁদিতে কাঁদিতে কহিলেন, কোনও দিন নহে বাবা, আর কোনও দিন নহে, মাতার সম্মুখে তিন সত্য করিতেছি, আজ হইতে আমার গৃহে বলি বন্ধ। ১ এর ঘ নং প্র. উ. ‘জগজ্জননী’ বলার মাধ্যমে মা কালীর মাহাত্ম্য নির্দেশিত হয়েছে।  ‘লালু’ গল্পে শক্তির দেবী মা কালীকে জগজ্জননী বলা হয়েছে। কেননা সনাতন হিন্দুদের বিশ্বাস অনুযায়ী মা কালী হলেন ঈশ্বরের মাতৃরূপ। জগতের সব মানুষকে তিনি মমতাময়ী মায়ের মতোই আগলে রাখেন।  ‘লালু’ গল্পে চাটুজ্জে মশাই বিপদে পড়ে মা কালীকে জগজ্জননী বলে উল্লেখ করেছেন। লালু তাঁকে শিক্ষা দেওয়ার জন্য বলি দেওয়ার ভান করে পূজা মণ্ডপের দিকে নিয়ে যাচ্ছিল। সে চাটুজ্জেকে বলে যে এটি মায়ের আদেশ। চাটুজ্জে মশাই তখন লালুকে বোঝাতে চান যে মা কালী তো জগজ্জননী। তিনি এমন হুকুম দিতেই পারেন না।  নিজের প্রাণ বিপন্ন হওয়ার সময় চাটুজ্জে মশাইয়ের মনে এই বিষয়টি বিশেষভাবে ধরা পড়েছিল। অথচ অবলা পাঁঠাগুলো বলি দেওয়ার সময় তাঁর মনে কোনো দয়ামায়া জাগ্রত হয় নি। মা কালী জগজ্জননী বলে তিনি সকল প্রাণীর প্রতি সমান মমতাময়ী। তাই কোনো প্রাণীকেই হৃদয়হীনভাবে কষ্ট দেওয়া উচিত নয়। দরিদ্র কৃষক নিয়ামত অন্যের জমিতে বর্গাচাষি হিসেবে কাজ করে সংসার চালাত। অভাব-অনটন ছিল নিত্যসঙ্গী। জায়গা-জমি কিছুই ছিল না তার। ছিল শুধু হালের দুটি বলদ। এ বছর তীব্র খাদ্য সংকট দেখা দিলে প্রতিবেশী হামিদ বলদগুলো বিক্রি করে দেওয়ার পরামর্শ দেয়। কিন্তু নিয়ামত জানে গরুগুলো হাটে বিক্রি করে দিলেই সেগুলো মানুষের খাদ্যে পরিণত হবে। তীব্র অভাব সত্তে¡ও গরু দুটির প্রাণ রক্ষার্থে নিয়ামত বিকল্প কিছু ভাবা শুরু করল। ক. লালু কয়দিনের জন্য পালিয়ে গেল? ১ খ. লালু হাঃ হাঃ করে হেসে উঠল কেন? ২ গ. উদ্দীপকটি ‘লালু’ গল্পের যে বিশেষ দিকটি মনে করিয়ে দেয় তা ব্যাখ্যা করো। ৩ ঘ. প্রচেষ্টাগত পার্থক্য থাকলেও লালু ও নিয়ামত উভয়ের উদ্দেশ্য একই উদ্দীপক এবং লালু গল্পের আলোকে বিশ্লেষণ করো। ৪ ২ নং প্র. উ. ক. লালু সাত-আট দিনের জন্য পালিয়ে গেল। খ. মানুষের জীবন বাঁচানোর হাস্যকর প্রচেষ্টা লালুর হাসির উদ্রেক করল।  পাঁঠা বলি দেওয়ার পর লালু যখন মানুষ বলি দিতে উদ্যত হলো তখন প্রাণ বাঁচাতে সকলেই ছুটোছুটি শুরু করে দিল। মনোহর চাটুজ্জেকে প্রচণ্ড ভয় দেখানোর পর লালু খোঁজ করল গুরুদেব ও পুরুতকে। দুজনেই প্রতিমার পেছনে লুকিয়ে ছিল। সেখান থেকে তাদের ভয়ার্ত গলার ক্রন্দন ভেসে আসল। সে ক্রন্দন এতই অদ্ভুত শোনাল যে, লালু হাসি সামলাতে পারল না। গ. অবলা জীবের প্রতি মমতা প্রদর্শনের দিক থেকে উদ্দীপকটি ‘লালু’ গল্পের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।  ‘লালু’ গল্পে লালু পাঁঠা বলি বন্ধ করতে তথা জীবের প্রাণ রক্ষায় অভিনব পন্থা অবলম্বন করেছিল। সে মনোহর চাটুজ্জেকে জিম্মি করে পাঁঠা বলি বন্ধের শপথ করিয়ে নেয়। ফলে প্রতিমার সামনে শপথকারী মনোহর চাটুজ্জে আর কখনো পাঁঠা বলি দিতে পারে না।  উদ্দীপকের নিয়ামত তীব্র খাদ্য সংকটে নিজের এবং পরিবারে সকলের জীবনকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে বলদ দুটিকে রক্ষা করেছে। নিয়ামত ভালো করেই জানে যে, গরুগুলো বিক্রি করে দিলে সেগুলো খাদ্য হিসেবে বাজারে বিক্রি হবে। গরুগুলোর এমন পরিণতি নিয়ামতের কাম্য ছিল না। তাই সে প্রতিবেশী হামিদের পরামর্শ গ্রহণ না করে অন্য উপায় খুঁজতে থাকল। এর মাধ্যমে নিয়ামতের জীবপ্রেম প্রকাশিত হয়েছে। ঘ. লালু ও নিয়ামতের প্রচেষ্টার স্বরূপ ভিন্ন হলেও অবলা জীবের প্রাণ রক্ষাই ছিল উভয়ের উদ্দেশ্য।  চাটুজ্জে বাড়িতে পাঁঠা বলি স্থায়ীভাবে বন্ধ করার জন্য লালু এক অভিনব পন্থা অবলম্বন করল। বাবার

সপ্তম শ্রেণির আনন্দ পাঠ লালু Read More »

সপ্তম শ্রেণির আনন্দ পাঠ তোতাকাহিনী

তোতাকাহিনী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর  লেখক পরিচিতি নাম রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। জন্ম পরিচয় জন্ম তারিখ : ৭ই মে, ১৮৬১ খ্রিষ্টাব্দ (২৫শে বৈশাখ, ১২৬৮ বঙ্গাব্দ)। জন্মস্থান : জোড়াসাঁকো, কলকাতা, ভারত। পারিবারিক পরিচয় পিতার নাম : মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর। পিতামহের নাম : প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর। সাহিত্য সাধনা উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ : মানসী, সোনার তরী, ক্ষণিকা, চোখের বালি, ঘরে-বাইরে, গোরা, যোগাযোগ, রক্ত করবী, শেষের কবিতা, গল্পগুচ্ছ ইত্যাদি। মাত্র ১৫ বছর বয়সেই তাঁর প্রথম কাব্য ‘বনফুল’ প্রকাশিত হয়। পুরস্কার ও সম্মাননা নোবেল পুরস্কার (১৯১৩)। মৃত্যু ৭ই আগস্ট, ১৯৪১ খ্রিষ্টাব্দ (২২শে শ্রাবণ, ১৩৪৮ বঙ্গাব্দ) অনুশীলনী : বহুনির্বাচনি প্রশ্নের উত্তর ১. কোন কাব্যগ্রন্থের জন্য রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন? ঝ ক. মানসী খ. সোনার তরী গ. চিত্রা ঘ. গীতাঞ্জলি ২. পাখিটাকে রাখা হয়েছিলÑ চ ক. সোনার খাঁচায় খ. রুপার খাঁচায় গ. লোহার খাঁচায় ঘ. বাঁশের খাঁচায় ৩. গল্পটিতে ‘নির্বোধ’ চরিত্র কোনটি? ছ ক. পাখি খ. রাজা গ. ভাগিনা ঘ. নিন্দুকেরা ৪. ‘ভাগিনা’ চরিত্রে কোন ধরনের বৈশিষ্ট্য প্রকাশ পেয়েছে? র. নির্বুদ্ধিতা রর. চাটুকারিতা ররর. স্বার্থপরতা নিচের কোনটি সঠিক? জ ক. র ও রর খ. র ও ররর গ. রর ও ররর ঘ. র, রর ও ররর উদ্ধৃতাংশটি পড়ো এবং ৫, ৬ ও ৭ নম্বর প্রশ্নের উত্তর দাও : পাখি আসিল। সঙ্গে কোতোয়াল আসিল, পাইক আসিল, ঘোড়সওয়ার আসিল, রাজা পাখিটাকে টিপিলেন, সে হঁ করিল না, হুঁ করিল না। কেবল তার পেটের মধ্যে পুঁথির শুকনো পাতা খস্খস্ গজ্গজ্ করিতে লাগিল। ৫. পাখির সঙ্গে উল্লিখিত সকলে কেন এসেছিল? ঝ ক. পাখির নিরাপত্তার জন্য খ. রাজার আদেশ রক্ষার জন্য গ. পাখিকে বিদ্যাদানের উদ্দেশ্যে ঘ. ছোট কাজে বড় আয়োজনের উদ্দেশ্যে ৬. ‘পাখি হঁ করিল না, হুঁ করিল না’Ñ কেন? চ ক. পাখির মৃত্যু হয়েছে খ. পাখির বিদ্যালাভ হয়েছে গ. পাখি পুঁথি খেয়ে ফেলেছে ঘ. পাখি কথা বলতে পারে না ৭. উদ্ধৃতাংশটিতে অন্তর্নিহিত শিক্ষা কী? র. পাখি পুঁথিগত বিদ্যা লাভ করতে পারে না রর. পাখি তার স্বভাবগত আচরণ করে ররর. নিন্দুকেরা কেবলই নিন্দা করে নিচের কোনটি সঠিক? জ ক. র খ. রর গ. র ও রর ঘ. র ও ররর সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর রাজার এক পাখি। প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়মে সে গান গায়, বনের ফল খায়, উড়ে বেড়ায়। একশ্রেণির আত্মস্বার্থসচেতন মানুষ রাজাকে পরামর্শ দেয় পাখিকে শিক্ষা দিতে হবে। কিন্তু প্রকৃতির বিরুদ্ধে সব আয়োজন ব্যর্থ হয়। পাখি পুঁথিপাঠের ভার বহন করতে না পেরে শেষ হয়ে যায়। আর বসন্তের বাতাসে মুকুলিত কিশলয়গুলি দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেলে। ক. রাজার পাখিটির নাম কী? ১ খ. পাখিকে শিক্ষা দেওয়ার সব আয়োজন ব্যর্থ হয় কেন? ব্যাখ্যা করো। ২ গ. মানুষের ভাষা অন্য প্রাণীকে শেখানোর প্রচেষ্টা সম্পর্কে তোমার অভিমত ব্যক্ত করো। ৩ ঘ. উদ্ধৃতাংশ থেকে রাজা, পরামর্শদাতাবৃন্দ ও পাখির স্বভাবের বৈশিষ্ট্যসমূহ বিশ্লেষণ করো। ৪ ১ এর ক নং প্র. উ. রাজার পাখিটির নাম তোতা। ১ এর খ নং প্র. উ. মানুষের জন্য যে শিক্ষা তা পাখির জন্য উপযুক্ত নয় বলে তাকে শিক্ষা দেওয়ার সব আয়োজন ব্যর্থ হয়।  মানুষ আর পাখি এক নয়। পাখির মস্তিষ্ক মানুষের মস্তিষ্কের মতো উন্নত নয়। তাই মানুষের মতো করে পাখিকে বিদ্যা শিক্ষা দেওয়ার চেষ্টায় লাভ হয় না। তাছাড়া ‘তোতাকাহিনী’ গল্পে যে শিক্ষা ব্যবস্থার কথা বলা হয়েছে তাতে কোনো মানুষও স্বাচ্ছন্দ্যে শিক্ষা লাভ করতে পারবে না। আর মুক্ত একটি পাখির জন্য তা একেবারেই অসম্ভব। ১ এর গ নং প্র. উ. মানুষের ভাষা অন্য কোনো প্রাণীকে শেখানোর প্রচেষ্টা বোকামি ছাড়া কিছুই নয়।  রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘তোতাকাহিনী’ গল্পে একটি মুক্ত বিহঙ্গকে মানুষের মতো শৃঙ্খলিত অবস্থায় শিক্ষা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। তাকে পুঁথিগত বিদ্যায় পারদর্শী করে তোলার জন্য নানা ফন্দি ফিকির করা হয়। কিন্তু সব প্রচেষ্টাই বাস্তবে ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়।  প্রকৃতপক্ষে মানুষ আর অন্য প্রাণীর মধ্যে রয়েছে অনেক ব্যবধান। মানুষ সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব। নিজেদের মধ্যে যোগাযোগের জন্য তাদের রয়েছে উন্নত ভাষা। কিন্তু সেটি কোনো প্রাণীর ওপর প্রয়োগ করতে গেলে হিতে বিপরীত হবে। যার বাস্তব প্রমাণ গল্পের হতভাগ্য তোতা পাখিটি। ১ এর ঘ নং প্র. উ. উদ্ধৃতাংশের আলোকে বলা যায়, রাজা ও পরামর্শদাতাদের অবিবেচক আচরণ পাখিটির ধ্বংস ডেকে আনে।  ‘তোতাকাহিনী’ গল্পের রাজা তোতা পাখিটিকে শিক্ষা দেওয়ার জন্য তাঁর মন্ত্রীদের নির্দেশ দিয়েছিলেন। তিনি মানুষের জন্য প্রচলিত শিক্ষা পদ্ধতিতে একটি পাখিকে শিক্ষা দেওয়া যায় কিনা সেটি ভেবে দেখার প্রয়োজন বোধ করেননি। পাশাপাশি সমালোচকদের কথায় কান না দিয়ে তোষামোদকারীদের মূল্যায়ন করেছেন। বলা যায় তোতা পাখিটির করুণ পরিণতির জন্য তিনিই মূলত দায়ী।  গল্পে বর্ণিত রাজার পরামর্শদাতাগণ হৃদয়হীন ও তোষামুদে। অবলা একটি পাখিকে তারা তিলে তিলে নিঃশেষ করে। আর নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য সেটিকে যুক্তিযুক্ত হিসেবে রাজার সামনে উপস্থাপন করে। শিক্ষা ব্যবস্থার প্রকৃত রূপ কেমন হওয়া উচিত সে সম্পর্কে তাদের কোনো ধারণা নেই।  গল্পের তোতা পাখিটি স্বাধীনচেতা সত্তার প্রতীক। মনের সুখে সে উড়ে বেড়াত, লাফাত। কিন্তু তার এ আনন্দ অবিবেচক রাজার সহ্য হলো না। প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থায় শেকল দিয়ে তার পা বাঁধা হলো। ফলে থমকে গেল পাখিটির স্বাভাবিক জীবন। শাস্ত্র পড়া তো আর পাখির কাজ নয়। মুক্ত আকাশে উড়ে বেড়ানোতেই তার যত আনন্দ। সে সুযোগ হারিয়ে তার জীবন বিবর্ণ হয়ে পড়ে। একসময় করুণ মৃত্যু হয় তার। প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থার জাঁতাকলে পিষ্ট হয়ে মানব সমাজের শিক্ষার্থীদের যন্ত্রণারই চিত্র রূপকায়িত হয়েছে তোতা পাখিটির মধ্য দিয়ে। [বি: দ্র: প্রশ্নটি সৃজনশীল আঙ্গিকে না হওয়ায় সঠিক পদ্ধতিতে উত্তর দেওয়া গেল না। সঠিক পদ্ধতিটি সম্পর্কে জানার জন্য অধ্যায়ের অংশের প্রশ্নোত্তরগুলো দেখো।] উদ্ধৃতাংশটি পড়ো এবং প্রশ্নসমূহের উত্তর দাও : সংসারে অন্য অভাব অনেক আছে, কেবল নিন্দুক আছে যথেষ্ট। তারা বলিল, খাঁচাটার উন্নতি হইতেছে, কিন্তু পাখিটার খবর কেহ রাখে না। কথাটা রাজার কানে গেল। তিনি ভাগিনাকে ডাকিয়া বলিলেন, ‘ভাগিনা, এ কী কথা শুনি।’ ভাগিনা বলিল, ‘নিন্দুকগুলি খাইতে পায় না বলিয়াই মন্দ কথা বলে।’ জবাব শুনিয়া রাজা অবস্থাটা পরিষ্কার বুঝিলেন, আর তখনি ভাগিনাদের গলায় সোনার হার চড়িল। ক. পাখিটাকে কেন খাঁচায় রাখা হয়েছিল? ১ খ. নিন্দুক কারা? তাদের মন্তব্যের প্রকৃত অর্থ ব্যাখ্যা করো। ২ গ. উদ্দীপকের আলোকে ভাগিনার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের বর্ণনা দাও। ৩ ঘ. “নিন্দুকেরা খাইতে পারে না বলিয়াই মন্দকথা বলে’Ñ ভাগিনার এ কথার তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো। ৪ ২ নং প্র. উ. ক. পাখিটাকে শিক্ষা দেওয়ার জন্য খাঁচায় রাখা হয়েছিল। খ. যারা অন্যের দোষ-ত্রæটি অনুসন্ধান করে ও সে সম্পর্কে নানা মন্তব্য করে তারাই নিন্দুক।  ‘তোতাকাহিনী’ গল্পের নিন্দুকেরা পাখির শিক্ষার জন্য গৃহীত ব্যবস্থার সমালোচনা করে। রাজার ভাগিনারা যে পাখির শিক্ষার চেয়ে লোক দেখানো কর্মকাণ্ডেই বেশি ব্যস্ত, এ বিষয়টিই রাজার চোখে আঙুল দিয়ে দেখাতে চেয়েছিল তারা। বস্তুত তাদের মন্তব্যে প্রকৃত সত্যটিই প্রকাশিত হয়েছে। গ. উদ্দীপকের আলোকে বলা যায়, রাজার ভাগিনা অত্যন্ত তোষামুদে ও স্বার্থপর প্রকৃতির।  রাজার ভাগিনা লোভী ও প্রতারক। রাজার অনুগ্রহ লাভের জন্য সে নানা ছল-চাতুরির আশ্রয় নেয়। অবলা তোতা পাখিটাকে সে নানাভাবে কষ্ট

সপ্তম শ্রেণির আনন্দ পাঠ তোতাকাহিনী Read More »

Scroll to Top