নবম দশম রসায়ন ৮ম অধ্যায় রসায়ন ও শক্তি সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর
নবম দশম রসায়ন ৮ম অধ্যায় রসায়ন ও শক্তি সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর নিচে দেওয়া হলো। এসএসসি রসায়ন ৮ম অধ্যায় রসায়ন ও শক্তি সৃজনশীল প্রশ্ন রসায়ন অষ্টম অধ্যায় উত্তর সহ কিছু সৃজনশীল প্রশ্ন প্রশ্ন -1 : নিচের বিক্রিয়াসমূহ দেখে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও : i. পেট্রোলিয়াম + O2 → CO2 + H2O + শক্তি ii. 238U + On1 → 56Ba + 36Kr + 3On1 + শক্তি iii. Zn + CuCl2 → ZnCl2 + Cu + শক্তি ক. ইলেকট্রোপ্লেটিং কী? খ. তড়িৎরাসায়নিক কোষে লবণসেতু ব্যবহার করা হয় কেন? গ. উদ্দীপকের দ্বিতীয় বিক্রিয়াটি রাসায়নিক বিক্রিয়া নয়-ব্যাখ্যা কর। ঘ. শক্তি উৎপাদনে (র) ও (ররর) এর বিক্রিয়া তুলনা কর। ⇔ 1নং প্রশ্নের উত্তর ⇔ ক. তড়িৎবিশ্লেষণের সাহায্যে কোনো সক্রিয় ধাতুর তৈরি জিনিসপত্রের উপর অন্য একটি কম সক্রিয় ধাতুর প্রলেপ সৃষ্টি করাকে ইলেকট্রোপ্লেটিং বলে। খ. তড়িৎ রাসায়নিক কোষে প্রধানত দুটি কারণে লবণ সেতু ব্যবহার করা হয়। i. অর্ধকোষদ্বয়ের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করার জন্য। ii. দুই পাত্রের মধ্যে আয়নের সমতা বজায় রাখার জন্য। গ. উদ্দীপকের দ্বিতীয় বিক্রিয়ায় নতুন মৌল সৃষ্টি হয় বলে এটি নিউক্লিয়ার শিকল বিক্রিয়া, রাসায়নিক বিক্রিয়া নয়। রর নং বিক্রিয়ায় ইউরেনিয়াম-238 কে উচ্চশক্তিসম্পন্ন নিউট্রন দ্বারা আঘাত করলে ফিসন বিক্রিয়ার ফলে 56Ba ও 36Kr তৈরি হয় ও তিনটি উচ্চশক্তিসম্পন্ন নিউট্রন নির্গত হয়। উৎপন্ন নিউট্রন তিনটি নতুন করে ইউরেনিয়াম-238 বা 56Ba ও 36Kr কে আঘাত করে অনুরূপভাবে নতুন পরমাণু ও নিউট্রন তৈরি করে। এভাবে শিকলের ন্যায় নিউক্লিয়ার বিক্রিয়া চলতে থাকে, যতক্ষণ পর্যন্ত বিক্রিয়ার মাধ্যমে ভেঙে ছোট পরমাণু হওয়ার মতো পরমাণু অবশিষ্ট থাকে। একে নিউক্লিয়ার শিকল বিক্রিয়া বলে। রাসায়নিক বিক্রিয়ায় কোনো নতুন পরমাণু গঠিত হয় না। পরমাণুগুলো সর্ববহিঃস্থ শক্তিস্তরের ইলেকট্রনের পরিবর্তনের মাধ্যম সংযুক্ত হয়ে যৌগ গঠন করে। রর নং বিক্রিয়ায় দেখা যায় এতে ইলেকট্রনের বিষয়টি সম্পূর্ণ অনুপস্থিত। এখানে বিক্রিয়ার ফলে নতুন মৌলের সৃষ্টি হয়। সুতরাং, দ্বিতীয় বিক্রিয়াটি নিউক্লিয়ার বিক্রিয়া। এটি রাসায়নিক বিক্রিয়া নয়। ঘ. উদ্দীপকের র নং বিক্রিয়ায় পেট্রোলিয়াম পুড়িয়ে ও ররর নং বিক্রিয়ায় তড়িৎরাসায়নিক কোষের সাহায্যে শক্তি উৎপাদন করা হয়। র নং ও ররর নং উভয় তাপ উৎপাদী বিক্রিয়া। র নং বিক্রিয়ায় পেট্রোলিয়াম পোড়ালে কার্বন ডাইঅক্সাইড গ্যাস, পানি ও তাপ উৎপন্ন হয়। ররর নং বিক্রিয়ায় তড়িৎ রাসায়নিক কোষের মাধ্যমে রাসায়নিক বিক্রিয়া সংঘটিত হয়। এতে জারণ-বিজারণ বিক্রিয়ার মাধ্যমে শক্তি উৎপন্ন হয়। র নং ও ররর নং উভয় বিক্রিয়াতে রাসায়নিক শক্তিকে তাপশক্তিতে পরিণত করা হয়। র নং বিক্রিয়ায় পেট্রোলিয়াম দহনের ফলে উৎপন্ন পদার্থের অভ্যন্তরীণ শক্তি জ্বালানির অণুর মধ্যে স্থিত রাসায়নিক শক্তির তুলনায় কম। ফলে অতিরিক্ত শক্তি তড়িৎ-চুম্বকীয় রশ্মি হিসেবে চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। রর নং বিক্রিয়ায় তড়িৎ রাসায়নিক কোষে ইলেকট্রন আদান প্রদানের দ্বারা তাপশক্তি উৎপাদন করা হয়। র নং বিক্রিয়ায় পেট্রোলিয়াম পোড়ানোর ফলে উদ্ভূত তাপশক্তিকে ব্যবহার করে তাপ ইঞ্জিনের টারবাইন ঘুরিয়ে বিদ্যুৎশক্তিতে রূপান্তর করা হয়। ররর নং বিক্রিয়ায় সরাসরি রাসায়নিক শক্তি বিদ্যুৎ শক্তিতে পরিণত হয়। এক্ষেত্রে তড়িৎ রাসায়নিক কোষে নিম্নোক্ত জারণ-বিজারণ বিক্রিয়া সংঘটিত হয় : অ্যানোড বিক্রিয়া : Zn(ঝ) → Zn2+(aq) + 2e¯ ক্যাথোড বিক্রিয়া : Cu2+(aq) + 2e¯→ Cu(s) Zn(s) + Cu2+(aq) → Zn2+(aq)+Cu(s) র নং বিক্রিয়ায় শক্তি উৎপাদনের সাথে সাথে কার্বন ডাইঅক্সাইড গ্যাস ও জলীয় বাষ্প উৎপন্ন হয়। ররর নং বিক্রিয়ায় শুধু বিদ্যুৎশক্তি উৎপন্ন হয়। সুতরাং, শক্তি উৎপাদনে র নং ও ররর নং উভয় ভ‚মিকা রাখলেও দুটি বিক্রিয়ায় তুলনামূলক কিছু পার্থক্য রয়েছে। প্রশ্ন -2 : নিচের চিত্র দেখে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও : ক. ধাতব পরিবাহী কী? খ. এসিড মিশ্রিত পানিকে তড়িৎ বিশ্লেষ্য পরিবাহী বলা হয় কেন? ব্যাখ্যা কর। গ. উপরের কোষে অ্যানোডে সংঘটিত বিক্রিয়াটি ব্যাখ্যা কর। ঘ. উদ্দীপকে সংঘটিত বিক্রিয়ায় তড়িৎপ্রবাহের প্রয়োজনীয়তার যৌক্তিক ব্যাখ্যা দাও। ⇔ 2নং প্রশ্নের উত্তর ⇔ ক. যে সকল পরিবাহী ইলেকট্রন প্রবাহের মাধ্যমে বিদ্যুৎ প্রবাহিত করে তাদেরকে ধাতব বা ইলেকট্রনীয় পরিবাহী বলে। খ. এসিড মিশ্রিত পানি হাইড্রোজেন আয়ন পরিবহনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ পরিবহন করতে পারে বলে একে তড়িৎবিশ্লেষ্য পরিবাহী বলে। বিদ্যুৎ প্রবাহ যদি পরিবাহীর আয়ন দ্বারা সাধিত হয় তাহলে ওইসব পরিবাহীকে তড়িৎবিশ্লেষ্য পরিবাহী বলে। যেমন : গলিত লবণ, এসিড, ক্ষার ও লবণের দ্রবণে ধাতব প্লাটিনাম (Pt) পাতের অ্যানোড ও ক্যাথোড ব্যবহার করে এসিড মিশ্রিত পানির মধ্যে বিদ্যুৎ প্রবাহিত করলে তা বিশ্লেষিত হয়ে হাইড্রোজেন এবং অক্সিজেন গ্যাস উৎপন্ন হয়। গ. বিগলিত MgCl2 আয়নিত অবস্থায় থাকে এবং তড়িৎ পরিবহনে সক্ষম। বিগলিত MgCl2, Mg2+ ও Cl¯ আয়ন উৎপন্ন করে যা নিম্নরূপে দেখানো যায়- MgCl2(aq) → Mg2+(aq) + 2Cl¯(aq) অ্যানোড ও ক্যাথোডের সাথে ব্যাটারির দুই প্রান্ত সংযুক্ত করা হলে অ্যানোডে জারণ সংঘটিত হয় এবং ক্লোরাইড আয়ন ইলেকট্রন ত্যাগ করে ক্লোরিন পরমাণুতে পরিণত হয়। এরূপ দুটি ক্লোরিন পরমাণু একে অপরের সাথে যুক্ত হয়ে ক্লোরিন গ্যাস উৎপন্ন করে। অ্যানোড বিক্রিয়া : 2Cl-(aq) – 2e- →2Cl (জারণ) 2Cl→Cl2(g) অ্যানোডে দান করা ইলেকট্রনগুলো ক্যাথোডে যায় এবং ম্যাগনেসিয়াম আয়নকে বিজারিত করে ম্যাগনেসিয়াম ধাতু উৎপন্ন করে। ক্যাথোড বিক্রিয়া : Mg2+ + 2e- → Mg (বিজারণ) ঘ. উপরের কোষটি একটি তড়িৎবিশ্লেষ্য কোষ। এই কোষে বিদ্যুৎ প্রবাহের ফলে নিম্নোক্ত রাসায়নিক বিক্রিয়া সংঘটিত হয়। অ্যানোড বিক্রিয়া : 2Cl–2e- → Cl2 ক্যাথোড বিক্রিয়া : Mg2+ + 2e- → Mg বিগলিত MgCl2 থেকে ম্যাগনেসিয়াম (Mg) ধাতু নিষ্কাশন করতে তড়িৎবিশ্লেষ্য কোষের প্রয়োজন হয়। আর তড়িৎবিশ্লেষ্য কোষের অন্যতম শর্ত হলো তড়িৎ প্রবাহ। কারণ তড়িৎ প্রবাহের ফলে ক্যাথোড ঋণাত্মক (-াব) চার্জে ও অ্যানোড ধনাত্মক (+াব) চার্জে চার্জিত হয়। ফলে বিগলিত MgCl2 থেকে আয়ন Mg2+ ক্যাথোডে ইলেকট্রন গ্রহণ করে জমা হয় অপরদিকে অ্যানোডে ক্লোরাইড (Cl-) আয়ন ক্লোরিন গ্যাস উৎপন্ন করে। যদি বিদ্যুৎ প্রবাহ না দেয়া হতো তাহলে কোনো রাসায়নিক বিক্রিয়া সংঘটিত হতো না। অর্থাৎ বিক্রিয়ার মাধ্যমে কাক্সিক্ষত Mg ও Cl2 পাওয়ার জন্যই বিদ্যুৎ প্রবাহের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। প্রশ্ন-3 : ক. COD কী? 1 খ. ক্ষার মিশ্রিত পানিকে তড়িৎ বিশ্লেষ্য পরিবাহী বলা হয় কেন? 2 গ. উক্ত কোষ ব্যবহার করে বৈদ্যুতিক বাল্ব জ্বালানো যায়- ব্যাখ্যা কর। 3 ঘ. চিত্রে NH4+ ও NO3-এর গতির দিক বিপরীত হওয়ার কারণ বিশ্লেষণ কর। 4 ⇔ 3নং প্রশ্নের সমাধান ⇔ ক COD বলতে রাসায়নিক অক্সিজেনের চাহিদাকে বোঝায় যেটি পানিতে মোট কতটুকু রাসায়নিক দ্রব্য আছে তা বুঝানোর জন্য ব্যবহার করা হয়। খ. ক্ষার মিশ্রিত পানিতে তড়িৎ প্রবাহ চালনা করলে তা বিভিন্ন আয়নে বিশ্লিষ্ট হয় বলে একে তড়িৎ বিশ্লেষ্য পরিবাহী বলা হয়। ক্ষারের জলীয় দ্রবণে হাইড্রক্সাইড আয়ন (OH-) উপস্থিত থাকে। কঠিন অবস্থায় ক্ষারের আয়ন মুক্ত অবস্থায় থাকে না। এদের দ্রবীভ‚ত করার সাথে সাথেই সম্পূর্ণরূপে আয়নিত হয়ে মুক্ত হাইড্রক্সাইড আয়ন (OH-) উৎপন্ন করে। অর্থাৎ তড়িৎ চালনা করলে ক্ষার মিশ্রিত পানি নিম্নরূপে বিশ্লেষিত হয়। KOH(s) + H2O → ক+ + OH- NaOH(s) + H2O → Na+ + OH- অতএব, হাইড্রক্সাইড আয়নের জন্যই ক্ষারমিশ্রিত পানি বিদ্যুৎ পরিবহন করে। তাই একে তড়িৎ বিশ্লেষ্য পরিবাহী বলা হয়। গ. উদ্দীপকের চিত্রের শেষে রাসায়নিক শক্তি বিদ্যুৎশক্তিতে পরিণত হয়। এ ধরনের কোষে তড়িৎদ্বার
নবম দশম রসায়ন ৮ম অধ্যায় রসায়ন ও শক্তি সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর Read More »