chemistry

নবম দশম শ্রেণির রসায়ন ১০ম অধ্যায় খনিজ সম্পদ ধাতু অধাতু

নবম দশম শ্রেণির রসায়ন 1০ম অধ্যায় খনিজ সম্পদ ধাতু অধাতু এর পাঠ সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াদি,জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর ও অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর নিচে দেওয়া হলো। এসএসসি রসায়ন 1০ম অধ্যায় খনিজ সম্পদ ধাতু অধাতু পাঠ সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াদি ⇒ ভূত্বকের উপাদান : পৃথিবীর উপরিভাগের মাটির আবরণ হলো ভূত্বক। ভূত্বক নানা প্রকার খনিজ উপাদানে গঠিত। অক্সিজেন 46%, সিলিকন 27%, অ্যালুমিনিয়াম 8%, আয়রন 5%, ক্যালসিয়াম 4%, পটাসিয়াম 3%, সোডিয়াম 3%, ম্যাগনেসিয়াম 2% এ উপাদানগুলো দ্বারা ভূত্বক গঠিত। ⇒ ধাতু : যেসব মৌলিক পদার্থ (1) উজ্জ্বল ও চকচকে, (2) সাধারণ অবস্থায় কঠিন, (3) ওজনে ভারী, (4) আঘাত করলে ধাতব শব্দ উৎপন্ন হয়, (5) তাপ ও বিদ্যুতের পরিবাহী সেসব মৌলিক পদার্থকে ধাতু বলে। যেমন : ক্যালসিয়াম, সোনা, রুপা, তামা ইত্যাদি। প্রায় সব ধাতুই সাধারণ অবস্থায় কঠিন থাকে। তবে পারদ ধাতু হলেও স্বাভাবিক অবস্থায় তরল। ⇒ অধাতু : যেসব মৌলিক পদার্থ (1) সাধারণ অবস্থায় কঠিন, তরল বা গ্যাসীয়, (2) ওজনে হালকা, (3) উজ্জ্বল বা চকচকে নয়, (4) সহজে ভেঙে যায়, (5) আঘাত করলে ধাতব শব্দ উৎপন্ন হয় না, (6) তাপ ও বিদ্যুতের অপরিবাহী সেসব মৌলিক পদার্থকে অধাতু বলে। যেমন : হাইড্রোজেন, অক্সিজেন, সালফার, কার্বন ইত্যাদি। কার্বন এবং সালফার অধাতু হলেও কঠিন। কার্বন আবার তাপ ও বিদ্যুৎ পরিবাহী। আয়োডিন অধাতু হলেও চকচকে। ⇒ শিলা : শিলা মূলত যৌগিক পদার্থ। পৃথিবী যখন উত্তপ্ত অবস্থায় ছিল তখন পৃথিবীর মৌলিক পদার্থগুলো আলাদা ছিল। পৃথিবী ধীরে ধীরে শীতল হওয়ায় এ মৌলিক পদার্থগুলো মিলেমিশে দানা বেঁধে নানা রকম যৌগিক পদার্থ তৈরি করে। এসব দানাকে কেলাস বলে। এসব দানা চাপ বেঁধে শিলা গঠন করেছে। ⇒ আগ্নেয় শিলা : উত্তপ্ত তরল অবস্থা থেকে তাপ বিকিরণের ফলে শীতল ও কঠিন হওয়ার সময়ে পৃথিবীর অভ্যন্তরে যে শিলার সৃষ্টি হয় তাকে আগ্নেয় শিলা বলে। আগ্নেয় শিলা কেলাসিত এবং এ শিলার স্ফটিক দেখা যায়। এ শিলা সহজে ক্ষয়প্রাপ্ত হয় না। ⇒ পাললিক শিলা : সমুদ্র, নদী বা হ্রদের তলদেশে স্তরে স্তরে পলি সঞ্চিত হয়ে জমাট বেঁধে যে শিলার সৃষ্টি হয় তাকে পাললিক শিলা বলে। এ শিলায় স্ফটিক থাকে না। হালকা ও সহজে ক্ষয়প্রাপ্ত হয়। স্তরের মধ্যে উদ্ভিদ ও প্রাণীর জীবাশ্ম পাওয়া যায়। ⇒ খনিজ : বিভিন্ন প্রকার শিলার গঠন উপাদানই খনিজ। খনিজ হচ্ছে একটি যৌগিক পদার্থ যার সৃষ্টি হয়েছে ভূত্বকে প্রাপ্ত দুই বা ততোধিক স্বাভাবিক মৌলিক উপাদানের রাসায়নিক সংযোগে। তবে এমন খনিজও আছে যা একটি মাত্র মৌলিক পদার্থ দিয়ে তৈরি। যেমন : হীরা, সোনা, গন্ধক, তামা ইত্যাদি। প্রকৃতিতে হীরা ও সোনা মৌলিক অবস্থাতেই পাওয়া যায়। সালফার, তামা ইত্যাদি মৌলিক ও যৌগিক উভয় অবস্থাতেই পাওয়া যায়। ⇒ সক্রিয়তাক্রম : সবচেয়ে বেশি তড়িৎ ধনাত্মক ধাতুগুলো উপরে এবং তা অপেক্ষা কম সক্রিয় ধাতুকে নিচে বসিয়ে ধাতুর একটি সংখ্যাক্রম পাওয়া যায়। একে ধাতুসমূহের সক্রিয়তাক্রম বলা হয়। সক্রিয়তাক্রমের উপরের দিকের ধাতু পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম, সোডিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও অ্যালুমিনিয়াম প্রভৃতি তীব্র তড়িৎ ধনাত্মক এবং অধিক সক্রিয়। এ ধাতুগুলো প্রকৃতিতে মুক্ত অবস্থায় পাওয়া যায় না। এদের যৌগ থেকে তড়িৎ বিশ্লেষণ দ্বারা মুক্ত করা হয়। ম্যাঙ্গানিজ, জিংক, ক্রোমিয়াম ও আয়রন ধাতুসমূহ মধ্যম সক্রিয়। প্রকৃতিতে এরা অক্সাইড, কার্বনেট বা সালফাইড হিসেবে থাকে। এসব ধাতুকে কোক কয়লা বা কার্বন মনোক্সাইড দ্বারা বিজারিত করে নিষ্কাশন করা হয়। হাইড্রোজেনের নিচের ধাতুসমূহ যেমন কপার ও সিলভার কম সক্রিয় বলে প্রকৃতিতে তাদের মৌল অবস্থায় পাওয়া যায়। এগুলোর নিষ্কাশন সহজসাধ্য। ⇒ আকরিক : যেসব খনিজ থেকে লাভজনকভাবে ধাতু নিষ্কাশন করা যায় তাকে আকরিক বলে। যেমন : অ্যালুমিনিয়ামের আকরিক বক্সাইট (Al2O3, 2H2O), দস্তার আকরিক জিংক ব্লেন্ড (ZnS)। ⇒ ধাতু নিষ্কাশন : আকরিক থেকে মুক্ত ধাতু উৎপন্ন করার পদ্ধতিকে ধাতু নিষ্কাশন বলা হয়। ধাতু নিষ্কাশন প্রকৃতপক্ষে একটি বিজারণ প্রক্রিয়া। ⇒ তড়িৎ বিশ্লেষণের সাহায্যে ধাতু নিষ্কাশন : যে প্রক্রিয়ায় গলিত অথবা দ্রবীভ‚ত অবস্থায় কোনো তড়িৎ বিশ্লেষ্য পদার্থের মধ্যে তড়িৎ চালনা করলে পদার্থটির রাসায়নিক পরিবর্তন ঘটে এবং নতুন ধর্মবিশিষ্ট পদার্থ উৎপন্ন হয় তাদেরকে তড়িৎ বিশ্লেষণ বলা হয়। সবচেয়ে বেশি তড়িৎ ধনাত্মক ধাতু যেমন : পটাসিয়াম, সোডিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও অ্যালুমিনিয়াম তড়িৎ বিশ্লেষণের সাহায্যে নিষ্কাশন করা হয়। এ পদ্ধতিতে তড়িৎ বিশ্লেষ্য পদার্থের অণুগুলো ভেঙে পজেটিভ এবং নেগেটিভ আয়নে পরিণত হয়। পজেটিভ আয়নকে ক্যাটায়ন এবং নেগেটিভ আয়নকে অ্যানায়ন বলা হয়। ক্যাটায়ন তড়িৎ রাসায়নিক কোষের ক্যাথোডের সংস্পর্শে এসে ইলেকট্রন গ্রহণ করে তড়িৎ নিরপেক্ষ পরমাণু বা মূলকে পরিণত হয়। অ্যানায়ন তড়িৎ রাসায়নিক কোষের অ্যানোডের সংস্পর্শে এসে ইলেকট্রন বর্জন করে তড়িৎ নিরপেক্ষ পরমাণু বা মূলকে পরিণত হয়। ⇒ কার্বন বিজারণের সাহায্যে ধাতু নিষ্কাশন : কার্বন বিজারণের সাহায্যে মধ্যম সক্রিয় ধাতু ম্যাঙ্গানিজ, জিংক, ক্রোমিয়াম ও আয়রন নিষ্কাশন করা হয়। সাধারণত ধাতুসমূহ প্রকৃতিতে অক্সাইড বা লবণ হিসেবে থাকে। এসব অক্সাইড বা লবণ আয়নিক যৌগ, যার মধ্যে ধাতু ক্যাটায়ন হিসেবে থাকে। অক্সাইড বা লবণ হতে ধাতু নিষ্কাশনের সময় ধাতু প্রয়োজনীয় সংখ্যক ইলেকট্রন গ্রহণ করে তড়িৎ নিরপেক্ষ পরমাণুতে রূপান্তরিত হয়। আমরা জানি, ইলেকট্রন গ্রহণ হচ্ছে বিজারণ; কোনো বিজারক ইলেকট্রন প্রদান করে। যেমন : জিংক প্রকৃতিতে জিংক সালফাইড ZnS বা Zn2+S2-, জিংক কার্বনেট ZnCO3 বা Zn2+CO32-এবং জিংক অক্সাইড ZnS বা Zn2+O2- হিসেবে থাকে। নিষ্কাশনের প্রথম দিকের ধাপসমূহে তাদের জিংক অক্সাইডে রূপান্তরিত করা হয়। অতঃপর, কার্বন দ্বারা বিজারণ করে জিংক ধাতু মুক্ত করা হয়। ⇒ ধাতুসমূহের প্রধান আকরিক: ধাতু আকরিকের নাম Na খাবার লবণ (NaCl), সল্টপিটার (NaNO3), সাজিমাটি (Na2CO3) Al বক্সাইট (Al2O3.2H2O), ডায়াস্পোর (Al2O3.H2O), কেওলিন (Al2O3. 2SiO2. 2H2O), ফেলস্পার (K2O2. Al2O3. 6SiO2) Zn জিংক বেøন্ড (ZnS), ক্যালামাইন (ZnCO3), জিংকাইট (ZnS), ফ্রাঙ্কলিনাইট (ZnS. Fe2O3) Ca চুনাপাথর (CaCO3), জিপসাম (CaSO4. 2H2O), ফসফোরাইট Ca3(PO4)2 Mg ডলোমাইট (MgCO3. CaCO3), ম্যাগনেসাইট (MgCO3), কাইসেরাইট (MgSO4.H2O) Pb গ্যালেনা (PbS), আংলেসাইট (PbSO4), লেড ওকার (PbO) Fe ম্যাগনেটাইট (Fe3O4), হেমাটাইট (Fe2O3), লিমোনাইট (Fe2O3.3H2O) Cu চালকোসাইট (Cu2S), কপার পাইরাইটস (CuFeS2), কিউপ্রাইট (Cu2O), চেলকোসাইট (Cu2S) ⇒ সংকর ধাতু : দুই বা ততোধিক ধাতু সমসত্ত¡ বা অসমসত্ত¡ মিশ্রণে যে কঠিন পদার্থ তৈরি হয় তাকে সংকর ধাতু বলে। সংকর ধাতু তার উপাদান মৌলগুলো থেকে বেশি নমনীয়, ঘাতসহ এবং ক্ষয় কম হয়। ধাতু অপেক্ষা ধাতু সংকর অনেক বেশি ব্যবহার উপযোগী।   ⇒ কয়েকটি সংকর ধাতুর নাম, উপাদান এবং ব্যবহার সংকর ধাতু উপাদান ও শতকরা পরিমাণ ব্যবহার পিতল বা ব্রাস Cu – 65%, Zn – 35% বাসনপত্র, মূর্তি, নল ইত্যাদি তৈরিতে কাঁসা বা ব্রোঞ্জ Cu – 90%, Sn – 10% বাসনপত্র, মুদ্রা, মূর্তি প্রভৃতি প্রস্তুত করতে স্টিল Fe – 99%, C – 1% ছুরি, কাঁচি, যানবাহন, জাহাজ, কৃষি যন্ত্রপাতি, ইঞ্জিন ইত্যাদি তৈরিতে ডুরালামিন Al – 95%, Cu – 4% Mg, Mn I Fe – 1% বিমান ও মোটর গাড়ির বিভিন্ন অংশ এবং যন্ত্রাংশ তৈরিতে স্টেইনলেস স্টিল Fe-74%, Cr-18%, Ni-8% রুপার মতো চকচকে এ ধাতু সংকর বাসনপত্র, ছুরি, কাঁচি প্রভৃতি তৈরিতে নাইক্রোম Ni Ni – 60%, Fe – 25%, Cr – 15% বৈদ্যুতিক

নবম দশম শ্রেণির রসায়ন ১০ম অধ্যায় খনিজ সম্পদ ধাতু অধাতু Read More »

জায়মান কী? জায়মান অক্সিজেন কী? কিভাবে উৎপন্ন হয়?

জায়মান কী?  বা জায়মান অর্থ কী? সমাধানঃ জায়মান অর্থ হলো জন্মিয়েছে এমন। রসায়নে জায়মান হলো সদ্য প্রস্তুত পরমানু।  জায়মান অক্সিজেন কী? সমাধানঃ জায়মান অক্সিজেন হলো সদ্য প্রস্তুত অক্সিজেন পরমানু। অর্থাৎ এটি এখনো অন্য অক্সিজেনের সাথে যুক্ত হয়নি। এটি খুবই ক্ষণস্থায়ী। এটির জারক ধর্ম খুবই বেশি। অর্থাৎ এটি খুবই অল্প সময়ে অন্য অক্সিজেনের সাথে যুক্ত হয়ে অক্সিজেন পরমানু গঠন করে। জায়মান অক্সিজেনকে [O] রুপে প্রকাশ করা হয়। জায়মান অক্সিজেন তৈরিঃ সাধারণত পানির উপস্থিতিতে  একটি জারক পদার্থের সাথে এসিড অথবা ক্ষারক পদার্থের বিক্রিয়ায় একটি অস্থায়ী অক্সিজেন তথা জায়মান অক্সিজেন উৎপন্ন হয়। জায়মান অক্সিজেন তৈরির বিক্রিয়াঃ  👉    HOCl →    HCl + [O] 👉    H₂SO₄ +KMnO₄ →    H₂O + SO₂ + [O] 👉    H₂SO₄ +K₂Cr₂O₇ →    H₂O + SO₂ + [O] 👉    O₂ +hu → [O] + [O] 👉    O₃ +hu → O₂ + [O] জায়মান অক্সিজেনের বৈশিষ্ট্যঃ জায়মান অক্সিজেনের বৈশিষ্ট্য হলো এসি রঙিন বস্তুকে বর্ণহীন করে। রঙিন বস্তু +  [O] = বর্ণহীন

জায়মান কী? জায়মান অক্সিজেন কী? কিভাবে উৎপন্ন হয়? Read More »

HNO₃ ও H₃PO₄ এসিড দুটির মধ্যে কোনটি তীব্র এসিড?

প্রশ্নঃ  HNO₃ ও H₃PO₄ এসিড দুটির মধ্যে কোনটি তীব্র এসিড? সমাধানঃ  এখানে HNO₃ এর কেন্দ্রিয় পরমানু N এর জারনমান = +5         H₃PO₄ এর কেন্দ্রিয় পরমানু P এর জারনমান = +5 দেখা যাচ্ছে দুটি এসিডের কেন্দ্রিয় পরমানুর ধনাত্মক জারন মান সমান। কিন্তু আমরা জানি, N পরমানুর আকার P পরমানুর চেয়ে ছোট     সুতারাং HNO₃ এসিড তীব্রতার এসিড হবে।     অর্থাৎ HNO₃ > H₃PO₄ 

HNO₃ ও H₃PO₄ এসিড দুটির মধ্যে কোনটি তীব্র এসিড? Read More »

HI, HBr, HCl, ও HF এর মধ্যে কোনটি শক্তিশালী এসিড ও কোনটি দুর্বল এসিড?

প্রশ্নঃ HI, HBr, HCl, ও HF এর মধ্যে কোনটি শক্তিশালী এসিড ও কোনটি দুর্বল এসিড? সমাধানঃ আমরা দুটি ধাপে এর উত্তর করতে পারি। এস,এস,সি, এইচ,এস,সি অথবা অন্যান্ন পরীক্ষার্থীরা  এর যে  কোনো একটা দিয়ে উত্তর দিতে পারো। নিয়ম-১ঃ  আমরা জানি, F, Cl, Br, ও I  প্রভৃতি হ্যালোজেন গুলোর মধ্যে I  এর আকার সবচেয়ে বড় এবং F আকার সবচেয়ে ছোট।  অর্থাৎ এদের তীব্রতার ক্রম হলো I > Br > Cl > F সুতরাং নিয়ম অনুযায়ী I (আয়োডিন) এর আকার বড় হওয়ায় HI  এসিড সবচেয়ে শক্তিশালী এসিড হবে। অপরপক্ষে F এর আকার সবচেয়ে ছোট হওয়ায় HF  এসিড সবাচেয়ে দুর্বল এসিড হবে। সুতরাং হ্যালোজেন এসিডের তীব্রতার ক্রম হবে নিম্নরুপঃ     HI > HBr > HCl > HF নিয়ম-২ঃ  HI, HBr, HCl, ও HF এর তীব্রতা দেখা যাকঃ   HF HCl HBr HI বন্ধন বিয়োজন এনথালপি +560 +430 +370 +300 বিয়োজন ধ্রুবক Pka 3.25 -7.5 -9.5 -10 বিয়োজন ধ্রুবক ka 5.6×10⁻⁴ 2.5×10⁷  3.2×10⁹  1.0×10¹º  উপরের তথ্যের প্রেক্ষিতে আমরা এসিডগুলির তীব্রতার ক্রম লিখতে পারিঃ HI > HBr > HCl > HF

HI, HBr, HCl, ও HF এর মধ্যে কোনটি শক্তিশালী এসিড ও কোনটি দুর্বল এসিড? Read More »

দুর্বল এসিড ও শক্তিশালী এসিড চেনার সহজ উপায়।

আমরা অনেকেই দুর্বল এসিড ও শক্তিশালী এসিড চিনতে ভূল করি। আজাকের এই পোস্টের মাধ্যমে আমরা দুর্বল এসিড ও শক্তিশালী এসিড চেনার সকল কৌশল জানবো।  আমরা ৫টি নিয়মের মাধ্যমে শক্তিশালী এসিডের ক্রম জানবো। নিয়ম-১ঃ দুর্বল এসিড জলীয় দ্রবনে আংশিক আয়নিত হয় অপরপক্ষে শক্তিশালী এসিড জলীয় দ্রবনে সম্পূর্ণ আয়নিত হয়। যেমনঃ i) HCl একটি শক্তিশালী এসিড। কারণ HCl জলীয় দ্রবনে সম্পূর্ণ আয়নিত হয়।      HCl  (জলীয়) → H⁺ + Cl⁻ (১০০% আয়নিত হয়) ii) H₂CO₃ (কার্বনিক এসিড) একটি দুর্বল এসিড, কারণ এটি জলীয় দ্রবনে আংশিক আয়নিত হয়।     H₂CO₃ (জলীয়) → 2H⁺  + CO₃²⁻ (আংশিক আয়নিত হয়) নিয়ম-২ঃ হ্যালোজেন এসিডের তীব্রতা নির্ভর করে, হ্যালোজেনের আকারের উপর। যে হ্যালোজেন এসিডের ক্ষেত্রে, হ্যালোজেনের (ঋণাত্মক আয়ন) আকার যত বড় হবে,সে হ্যালোজেন এসিড তত শক্তিশালী হবে। বিশ্লেষণঃ HI, HBr, HCl, ও HF এর মধ্যে কোনটি শক্তিশালী এসিড ও কোনটি দুর্বল এসিড? আমরা জানি, F, Cl, Br, ও I  প্রভৃতি হ্যালোজেন গুলোর মধ্যে I  এর আকার সবচেয়ে বড় এবং F আকার সবচেয়ে ছোট।  অর্থাৎ এদের তীব্রতার ক্রম হলো I > Br > Cl > F সুতরাং নিয়ম অনুযায়ী I (আয়োডিন) এর আকার বড় হওয়ায় HI  এসিড সবচেয়ে শক্তিশালী এসিড হবে। অপরপক্ষে F এর আকার সবচেয়ে ছোট হওয়ায় HF  এসিড সবাচেয়ে দুর্বল এসিড হবে। সুতরাং হ্যালোজেন এসিডের তীব্রতার ক্রম হবে নিম্নরুপঃ     HI > HBr > HCl > HF মনে রেখো ঃ F, Cl, Br, I কে হ্যালোজেন মৌল বলে। নিয়ম-৩ঃ অক্সো এসিডের কেন্দ্রিয় পরমানুর ধনাত্মক জারন সংখ্যা যত বৃদ্ধি পাবে এসিডটি তত শক্তিশালী হবে। যে সব এসিড অক্সিজেন পরমাণু (O) দিয়ে গঠিত হয় তাদেরকে অক্সো  এসিড বলে। বিশ্লেষণঃ HClO₄, H₂SO₄, HNO₃,  H₂SO₃, HClO এসিডগুলির মধ্যে কোনটি শক্তিশালী এবং কোনটি দুর্বল এসিড দেখা যাক। HClO₄ এসিডে কেন্দ্রিয় পরমানুটি হলো =  Cl এখানে Cl এর জারন সংখ্যা বের করা যাক মনেকরি Cl এর জারনসংখ্যা = x  ∴ নিয়ম অনুযায়ী –      +1 + x + (-2×4) = 0     বা, x = +8-1     ∴ x = +7 ∴ Cl এর জারন মান = +7 অনুরুপভাবে,      H₂SO₄ এর কেন্দ্রিয় পরমানু S এর জারনসংখ্য = +6     HNO₃ এর কেন্দ্রিয় পরমানু N এর জারনসংখ্য = +5     H₂SO₃ এর কেন্দ্রিয় পরমানু S এর জারনসংখ্য = +4     HClO  এর কেন্দ্রিয় পরমানু Cl এর জারনসংখ্য = +1 আমরা দেখতে পাচ্ছি HClO₄ এর কেন্দ্রিয় পরমানু  Cl এর ধনাত্মক জারনমান সবচেয়ে বেশী অর্থাৎ +7 সুতারাং HClO₄ (পারক্লোরিক এসিড) হবে সবচেয়ে শক্তিশাল  এসিড। অপরপক্ষে HClO এর কেন্দ্রিয় পরমানু Cl এর জারন মান সবচেয়ে কম অর্থাৎ +1 হওয়ায় HClO  (হাইপোক্লোরাস এসিড) হবে সবচেয়ে দুর্বল এসিড। পরিশেষে আমার এসিডগুলির তীব্রতার ক্রম নিম্নরুপে লিখতে পারি। নিয়ম -৪ঃ অক্সো এসিড সমূহের কেন্দ্রিয় পরমানুর ধনাত্মক জারন মান যদি একই হয়, তখন যে অক্সোএসিডে কেন্দ্রিয় পরমানুর আকার ছোট হবে সে অক্সোএসিডটি শক্তিশালী হবে। বিশ্লেষণ ঃ HNO₃ ও H₃PO₄ এসিড দুটির মধ্যে কোনটি তীব্র এসিড লেখা যাক। এখানে HNO₃ এর কেন্দ্রিয় পরমানু N এর জারনমান = +5         H₃PO₄ এর কেন্দ্রিয় পরমানু P এর জারনমান = +5 দেখা যাচ্ছে দুটি এসিডের কেন্দ্রিয় পরমানুর ধনাত্মক জারন মান সমান। কিন্তু আমরা জানি, N পরমানুর আকার P পরমানুর চেয়ে ছোট     সুতারাং HNO₃ এসিড তীব্রতার এসিড হবে।     অর্থাৎ HNO₃ > H₃PO₄  নিয়ম-৫ঃ i)  জলীয় দ্রবনে যে এসিডের বিয়োজন ধ্রুবক (ka) এর মান যত বেশী, সে এসিড তত বেশী শক্তিশালী হবে। ii) আবার যে এসিডের বিয়োজন ধ্রুবক Pka এর মান যত বেশী ঋনাত্মক হবে, সে এসিড তত বেশী শক্তিশালী হবে। iii)  যে এসিডের বন্ধন বিয়োজন এনথালপি যত কম হবে, সে এসিডটি তত বেশী শক্তিশালী হবে। বিশ্লেষণঃ HI, HBr, HCl, ও HF এর তীব্রতা দেখা যাকঃ   HF HCl HBr HI বন্ধন বিয়োজন এনথালপি +560 +430 +370 +300 বিয়োজন ধ্রুবক Pka 3.25 -7.5 -9.5 -10 বিয়োজন ধ্রুবক ka 5.6×10⁻⁴ 2.5×10⁷  3.2×10⁹  1.0×10¹º  উপরের তথ্যের প্রেক্ষিতে আমরা এসিডগুলির তীব্রতার ক্রম লিখতে পারিঃ HI > HBr > HCl > HF আরো পড়ুনঃ তীব্র ক্ষারক এবং দুর্বল ক্ষারক চেনার উপায়। এই পোস্টটি যে সম্পর্কেঃ দুর্বল এসিড ও শক্তিশালী এসিড চেনার সহজ উপায়। সবচেয়ে শক্তিশালী এসিড কোনটি। সবল এসিড চেনার উপায়। একটি তীব্র এসিড এর নাম। তীব্র এসিড কাকে বলে ও উদাহরণ। 

দুর্বল এসিড ও শক্তিশালী এসিড চেনার সহজ উপায়। Read More »

Scroll to Top