ষষ্ঠ শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় প্রথম অধ্যায় বাংলাদেশের ইতিহাস
প্রথম অধ্যায় বাংলাদেশের ইতিহাস শিক্ষার্থীরা যা জানবে বাঙালির মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার কারণ মুক্তিযুদ্ধে বাঙালি কীভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল বাংলাদেশে মানব বসতির ধারা রাজনৈতিক ইতিহাসের যুগ বিভাজন প্রাচীন বাংলাদেশের আর্থসামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় জীবন মধ্যযুগে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অবস্থা আধুনিক যুগে বাংলাদেশের রাজনৈতিক জীবন দেশটির জন্মকথা, সংস্কৃতি, সভ্যতা, ঐতিহ্য ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়-সংক্ষেপ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান (মার্চ ১৭, ১৯২০- আগস্ট ১৫, ১৯৭৫) বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক নেতা। যিনি পূর্ব পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব এবং বাংলাদেশের জাতির জনক হিসেবে বিবেচিত। বাংলার জনগণের নিকট তিনি ‘শেখ মুজিব’ এবং শেখ সাহেব হিসেবে বেশি পরিচিত। তাঁর উপাধি হলো বঙ্গবন্ধু। বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর ১. কোন তারিখে বিজয়দিবস পালিত হয়? ক ২১এ ফেব্রæয়ারি খ ২৬এ মার্চ গ ১৭ই এপ্রিল ১৬ই ডিসেম্বর ২. প্রাচীন বাংলায় ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসারের কারণ কী? ক অত্যন্ত কর্মঠ জনগণ খ উন্নত অর্থনৈতিক ব্যবস্থা অধিক উৎপাদনশীল কৃষি ও শিল্প ঘ অত্যাধুনিক যাতায়াত ব্যবস্থা নিচের উদ্দীপকটি পড়ে ৩ ও ৪ নম্বর প্রশ্নের উত্তর দাও : তথ্য-১ : নরসিংদীতে পাথর ও কাঠের তৈরি হাত কুঠার, বাটালি, তীরের ফলা আবিষ্কৃত হয়েছে। তথ্য-২ : ঢাকার একটি বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা সভ্যতার নিদর্শন দেখার জন্য বগুড়া ও নরসিংদীতে শিক্ষা সফরে যায়। ৩. তথ্য-১ কোন যুগকে নির্দেশ করে? ক মধ্যযুগ খ আধুনিক যুগ গ তাম্র প্রস্তর যুগ প্রাগৈতিহাসিক যুগ ৪. তথ্য-১ ও ২ এর স্থানে শিক্ষার্থীরা পর্যবেক্ষণ করবে- র. পুণ্ড্রনগরের লিপি রর. নানারকম প্রাচীন হাতিয়ার ররর. বিদেশে রপ্তানিকৃত শস্যভাণ্ডার নিচের কোনটি সঠিক? র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর প্রশ্ন- ১ প্রাচীন বাংলাদেশের গৌরব : অর্থনীতি প্রধান ফসল ধান। প্রচুর ধান উৎপাদন। রপ্তানিকৃত দ্রব্য চিংড়ি ও ব্যাঙ। আকাশপথে আমেরিকায় তৈরি পোশাক রপ্তানি। পাটজাত দ্রব্য বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত। চিত্র-১ চিত্র-২ ক. কোন সম্রাট ৫০টি বৌদ্ধবিহার নির্মাণ করেন? খ. ‘টোল’ বলতে কী বোঝায়? গ. চিত্র-১ এর মতো প্রাচীন বাংলাদেশের গৌরবময় ক্ষেত্রটি ব্যাখ্যা কর। ঘ. চিত্র-২ এ উল্লেখিত বিষয়গুলো প্রাচীন বাংলাদেশের গৌরবের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ-মতামত দাও। ক সম্রাট ধর্মপাল ৫০টি বৌদ্ধবিহার নির্মাণ করেন। খ প্রাচীন বাংলাদেশে হিন্দুদের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে বলা হতো টোল। হিন্দু ধর্মগ্রন্থ টোলের প্রধান পাঠ্য বিষয় ছিল। প্রাচীন বাংলাদেশে হিন্দুদের প্রাথমিক বিদ্যালয় ছিল তিন ধরনের। যেমন : গুরুগৃহ, চতুষ্পাঠী এবং পাঠশালা। চতুষ্পাঠীতে পড়তে পারত কেবল ব্রাহ্মণ ঘরের ছেলেমেয়েরা। এখানে সংস্কৃত ভাষা শেখানো হতো, যাতে টোলে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করতে সুবিধা হয়। গ চিত্র-১ প্রাচীন বাংলাদেশের গৌরবময় ক্ষেত্রটি হলো অর্থনীতি যা কৃষি, কুটিরশিল্প ও ব্যবসা-বাণিজ্যকে বোঝায়। প্রাচীনযুগে বাংলাদেশের অর্থনীতি ছিল কৃষি নির্ভর। এ সময় কৃষিতে উদ্বৃত্ত ছিল। ধান ছিল প্রধান ফসল। প্রচুর আখও উৎপাদন হতো। আখ থেকে উৎপাদিত গুড় ও চিনির খ্যাতি ছিল। এই গুড় ও চিনি বিদেশে রপ্তানি হতো। তুলা, সরিষা ও পান চাষের জন্যও বাংলাদেশের খ্যাতি ছিল। প্রাচীনযুগ থেকেই বাংলাদেশের তাঁতিরা মিহি সুতি ও রেশমি কাপড় বুনতে পারদর্শী ছিল। আমরা জানি বাংলাদেশের মসলিন কাপড় পৃথিবী বিখ্যাত ছিল। এই মসলিন তখনও রপ্তানি হতো। কৃষি ও শিল্পক্ষেত্রে উৎপাদন বাড়ায় ব্যবসা-বাণিজ্য বিকাশ লাভ করে। প্রাচীন বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য নদীপথেই বেশি হতো। যা প্রাচীন আমলে বাংলাদেশের গৌরবময় ক্ষেত্রটি সুস্পষ্টভাবে ফুটে ওঠে। ঘ আমি মনে করি চিত্র-২ এ উল্লেখিত বিষয়গুলো প্রাচীন বাংলাদেশের গৌরবের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। প্রাচীনকাল থেকেই বাংলার কারিগররা বেশ ভালো কাপড় বুনত। তাই এদেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা রাখত মসলিন কাপড়। সে সময় তাঁতিরা মিহি সুতি ও রেশমি কাপড় বুনতে পারত। দেশের চাহিদা মিটিয়েও কাপড় বিদেশে রপ্তানি করা হতো। বাংলার মসলিন কাপড়ের সুনাম সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়েছিল। অনুরূপভাবে, বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে আমেরিকায় তৈরি পোশাক ও পাটজাত দ্রব্য রপ্তানি করে বিশ্বব্যাপী সুনাম অর্জন করছে। বর্তমান পোশাক রপ্তানি করে সিংহভাগ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছে। এমন কি সারা বিশ্বে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের কদর রয়েছে। বর্তমান তৈরি পোশাক ও পাটজাত দ্রব্য যেমন বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত তেমনি প্রাচীন বাংলার মসলিন ও জামদানি কাপড়ও বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত ছিল। সুতরাং, দৃশ্যকল্প ২-এ উল্লেখিত বিষয়গুলো প্রাচীন বাংলাদেশের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। প্রশ্ন- ২ মুক্তিযুদ্ধের পটভ‚মি আধুনিক ইতালির জনক ছিলেন কাউন্ট ক্যাভুর। ইতালির স্বাধীনতা ও ঐক্য অর্জনে তাঁর দান ছিল সর্বাধিক। অন্যদিকে যোসেফ মাৎসিনি ইতালির যুবশক্তিকে সংঘবদ্ধ করেন। যুব সমাজ অত্যাচার, অবিচার, কারাবাস প্রভৃতির ভয়ভীতি না করে দলে দলে তার সংঘে যোগ দেয়। তাঁর নেতৃত্বে ইতালির জনগণের মধ্যে এক ব্যাপক জাগরণের সৃষ্টি হলো। ক. পূর্ব-পাকিস্তান ও পশ্চিম-পাকিস্তানের মধ্যে দূরত্ব কত মাইল? খ. পাকিস্তান সরকারের বিরুদ্ধে সর্বস্তরের বাঙালি ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল কেন? ব্যাখ্যা কর। গ. কাউন্ট ক্যাভুরের মধ্যে কোন মহান নেতার প্রতিচ্ছবি লক্ষ করা যায়? ব্যাখ্যা কর। ঘ. মাৎসিনির মতো উক্ত নেতার নেতৃত্বের ফলেই বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল-মূল্যায়ন কর। ক পূর্ব-পাকিস্তান ও পশ্চিম-পাকিস্তানের মধ্যে দূরত্ব প্রায় ১২০০ মাইল। খ পাকিস্তান সরকারের বিরুদ্ধে স্বাধীনতার জন্য সর্বস্তরের বাঙালি ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল। ব্রিটিশ শাসন থেকে মুক্ত হয়ে জন্ম হয় পাকিস্তান রাষ্ট্রটির। পাকিস্তান দুটি অংশে বিভক্ত ছিল, পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তান নামে। পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী পূর্ব পাকিস্তানের জনগণকে সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিকভাবে বৈষম্যমূলক আচরণের সম্মুখীন করে। অবশেষে পাকিস্তান সরকারের বিরুদ্ধে সর্বস্তরের বাঙালি ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলনের মাধ্যমে দেশকে স্বাধীন করে। গ উদ্দীপকের কাউন্ট ক্যাভুরের মধ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিচ্ছবি লক্ষ করা যায়। তাঁর নেতৃত্বে বাঙালি ঐক্যবদ্ধ হয় এবং স্বাধীনতার মন্ত্রে উজ্জীবিত হয়ে উঠে। উজ্জীবিত জাতি ১৯৭০-এর সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা দিয়ে বিজয়ী করে। কিন্তু সামরিক সরকার এ পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। তখন এ দেশের রাজনীতিবিদ, ছাত্র-জনতাসহ আপামর জনসাধারণ বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আপসহীন অবস্থান নেয়। ১৯৭১ সালের ২৬এ মার্চ প্রথম প্রহরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে একটি বার্তা সারা দেশে পাঠিয়ে দেন। যা পরবর্তীতে বাংলাদেশ নামক স্বাধীন রাষ্ট্রের অভ্যুদয় ঘটাতে নিয়ামক শক্তি হিসেবে কাজ করে। তাই বঙ্গবন্ধুকে বাঙালি জাতির পিতা এবং বাংলাদেশের স্থপতি বলা হয়। উদ্দীপকে আধ্ুিনক ইতালির জনক কাউন্ট ক্যাভুরের ইতালির স্বাধীনতা ও ঐক্য অর্জনে যেমন তাঁর অবদান ছিল সর্বাধিক অনুরূপভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতাও ঐক্যের ক্ষেত্রে সর্বাধিক অবদান রেখেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ঘ উদ্দীপকের মাৎসিনির মতো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বের ফলেই বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান রাষ্ট্রের জন্ম হয়। দেশটি ছিল দুই অংশে বিভক্ত। যথা : পূর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিম পাকিস্তান। পশ্চিম পাকিস্তানিরা তখন থেকেই পূর্ব পাকিস্তানি তথা বাঙালিদের ওপর বৈষম্য, শোষণ ও বঞ্চনা চালাতে থাকে। এ সময়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মতো এক সাহসী, ত্যাগী ও দূরদর্শী নেতার আবির্ভাব হয়। তাঁর নেতৃত্বে বাঙালি ঐক্যবদ্ধ হয় এবং স্বাধীনতার মন্ত্রে উজ্জীবিত হয়। তিনি ৭ই মার্চের ভাষণের মাধ্যমে স্বাধীনতার জন্য জনগণকে উদ্বুদ্ধ করেন এবং ২৬এ মার্চ প্রথম প্রহরে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। অবশেষে অনেক রক্ত ও আত্মত্যাগের মাধ্যমে ১৬ই ডিসেম্বরে বিজয় অর্জন হয়। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাঙালি জাতি বাংলাদেশ নামক একটি স্বাধীন রাষ্ট্র
ষষ্ঠ শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় প্রথম অধ্যায় বাংলাদেশের ইতিহাস Read More »