You are currently viewing তৃতীয় শ্রেণির বিজ্ঞান অধ্যায় ৫ মাটি

তৃতীয় শ্রেণির বিজ্ঞান অধ্যায় ৫ মাটি

তৃতীয় শ্রেণির বিজ্ঞান অধ্যায় ৫ মাটি পোস্টে এই অধ্যায়ের অনুশীলনীর প্রশ্নউত্তর সহ অতিরিক্ত সংক্ষিপ্ত ও কাঠামোবদ্ধ প্রশ্নউত্তর ও ৩য় শ্রেণির বিজ্ঞান বইয়ের শেষে দেওয়া প্রশ্নের উত্তর দেখতে নিচে চোখ রাখুন।

৩য় শ্রেণির বিজ্ঞান অধ্যায় ৫ মাটি

>> অধ্যায়টির মূলভাব জেনে নিই
মানুষ তার জন্মের পর থেকে শুরু করে জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত মাটির উপর নির্ভরশীল। গাছপালা, পশু-পাখি, স্কুল ও বাড়ি সবকিছুই মাটির উপর দাঁড়িয়ে আছে। পৃথিবীর প্রায় এক ভাগ মাটি এবং বাকি তিন ভাগ পানি। মাটিতে জন্মানো উদ্ভিদ থেকে মানুষ ও অন্যান্য প্রাণীর খাদ্য আসে। মাটি হলো কতগুলো জীব ও জড় পদার্থের মিশ্রণ। অজৈব ও জৈব পদার্থ, পানি, বায়ু, খনিজ লবণ এবং ব্যাকটেরিয়া দ্বারা মাটি গঠিত। কণার আকার অনুযায়ী মাটি তিন প্রকার, যেমনÑ বেলে মাটি, দোআঁশ মাটি ও এঁটেল মাটি। বেলে মাটিতে তরমুজ, চিনাবাদাম, ফুটি, খিরা, শশা প্রভৃতি ভালো জন্মে। দোআঁশ মাটিতে ধান, গম, ভুট্টা, যব, পাট, আখ ইত্যাদি ভালো জন্মে। এছাড়া এঁটেল মাটি কাঁঠাল ও গজারি গাছের জন্য উপযোগী। অর্থাৎ মাটির ধরনের উপর ফসল চাষে বৈচিত্র্য ও সফলতা নির্ভর করে।

৩য় শ্রেণির বিজ্ঞান অধ্যায় ৫ অনুশীলনীর প্রশ্ন ও উত্তর

১। শূন্যস্থান পূরণ কর।
(১) মাটি তিন ভাগে ভাগ করা যায়; এঁটেল মাটি, বেলে মাটি এবং —-।
(২) যে মাটির কণা সবচেয়ে বড় তা হলো —-।
(৩) যে মাটিতে বালু, কাদা এবং হিউমাস থাকে তাকে —- বলে।
উত্তর : (১) দোআঁশ মাটি, (২) বেলে মাটি, (৩) দোআঁশ মাটি।
২। সঠিক উত্তরটিতে (চ) টিক চিহ্ন দাও।
(১) শিম এবং কাঁঠাল কোন মাটিতে ভালো জন্মায়?
ক. বেলে মাটি খ. দোআঁশ মাটি
চ গ. এঁটেল মাটি ঘ. লোনা মাটি
(২) তরমুজ ও চিনাবাদাম কোন মাটিতে ভালো জন্মায়?
ক. লোনা মাটি চ খ. বেলে মাটি
গ. এঁটেল মাটি ঘ. দোআঁশ মাটি
৩। নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
(১) দোআঁশ মাটিতে ফসল ভালো জন্মায় কেন?
উত্তর : দোআঁশ মাটিতে বালু, কাদা ও হিউমাস মিশে থাকে। বালু ও কাদা থাকার কারণে এ মাটি পানি এবং মাটির অন্যান্য উপাদান ধরে রাখতে পারে। এ মাটিতে পানি জমে না থাকলেও পর্যাপ্ত পরিমাণে বায়ু থাকে। এসব কারণে দোআঁশ মাটিতে ফসল ভালো জন্মায়।
(২) বেলে মাটির বৈশিষ্ট্যগুলো কী?
উত্তর : বেলে মাটির বৈশিষ্ট্যগুলো হলোÑ
১) বেলে মাটি হালকা বাদামি থেকে হালকা ধূসর রঙের হয়।
২) এর কণাগুলো এঁটেল ও দোআঁশ মাটির কণার চেয়ে বড়।
৩) বালুকণার ফাঁকে প্রচুর বায়ু থাকে।
৪) মাটি শুকনা এবং হাতে ধরলে দানাময় লাগে।
৫) কণার ফাঁক দিয়ে পানির সাথে মাটির প্রয়োজনীয় উপাদন বের হয়ে যায়।
(৩) দোআঁশ মাটি এবং এঁটেল মাটির মধ্যে দুইটি পার্থক্য লেখ।
উত্তর : দোআঁশ মাটি এবং এঁটেল মাটির মধ্যে দুইটি পার্থক্য হলোÑ
দোআঁশ মাটি এঁটেল মাটি
১) পানি ধারণ ক্ষমতা মাঝারি। ১) পানি ধারণ ক্ষমতা সবচেয়ে বেশি।
২) ধান, গম, ভুট্টা, যব, পাট ইত্যাদি ভালো জন্মে। ২) শিম ও কাঁঠাল ভালো জন্মে।
৪। বামপাশের শব্দের সঙ্গে ডানপাশের শব্দের মিল কর।
এঁটেল মাটি হিউমাস
বেলে মাটি তরমুজ
দোআঁশ মাটি কাঁঠাল
উদ্ভিদ ও প্রাণীর মরা-পচা অংশ ধান
উত্তর : এঁটেল মাটি – কাঁঠাল।
বেলে মাটি – তরমুজ।
দোআঁশ মাটি – ধান।
উদ্ভিদ ও প্রাণীর মরা-পচা অংশ – হিউমাস।

৩য় শ্রেণির বিজ্ঞান অধ্যায় ৫ অতিরিক্ত প্রশ্ন ও উত্তর

>> সত্য হলে ‘স’ এবং মিথ্যা হলে ‘মি’ লেখ :
১) হিউমাস হচ্ছে অজৈব পদার্থ।
২) বেলে মাটিতে বালিকণার ফাঁকে প্রচুর বায়ু থাকে।
৩) শুষ্ক মৌসুমে এঁটেল মাটিতে চাষ করা সহজ।
৪) মাটি হচ্ছে পৃথিবীর উপরিভাগের নরম আবরণ।
৫) এঁটেল মাটির রং কালো।
৬) বেলে মাটির কণা সবচেয়ে ছোট।
৭) উদ্ভিদ মাটিতে জন্মায়।
৮) উদ্ভিদ ও প্রাণীর মৃতদেহের পচা অংশ মাটিতে থাকে।
৯) এঁটেল মাটি হাতে ধরলে দানাময় লাগে।
১০) দোআঁশ মাটিতে বালি, কাদা এবং হিউমাস থাকে।
উত্তর : ১) মি, ২) স, ৩) মি, ৪) স, ৫) মি, ৬) মি, ৭) স, ৮) স, ৯) মি, ১০) স।
য় বামপাশের অংশের সাথে ডানপাশের অংশের মিল কর :
১) আখ বেলে মাটি
২) শশা এঁটেল মাটি
৩) ফুলদানি, বাটি, ঘটি ক্ষুদ্র জীব
৪) চর এলাকা দোআঁশ মাটি
৫) ব্যাকটেরিয়া বেলে মাটি
উত্তর : ১) আখ – দোআঁশ মাটি।
২) শশা – বেলেমাটি।
৩) ফুলদানি, বাটি, ঘটি – এঁটেল মাটি।
৪) চর এলাকা – বেলেমাটি।
৫) ব্যাকটেরিয়া – ক্ষুদ্র জীব।
>> শূন্যস্থান পূরণ কর :
১) আমরা —- উপর বসবাস করি।
২) মাটি হচ্ছে —- উপরিভাগের নরম আস্তরণ।
৩) মাটি —- ধরনের।
৪) এঁটেল মাটি সাধারণত —- রঙের হয়।
৫) বেলে মাটির কণাগুলো —- ও —- মাটির কণার চেয়ে বড়।
৬) দোআঁশ মাটি হাতে ধরলে —- এবং —- অনুভব হয়।
৭) উদ্ভিদ এবং প্রাণীর মৃতদেহ পচে —- তৈরি হয়।
৮) দোআঁশ মাটিতে বালু, —- এবং —- মিশে থাকে।
৯) —- কণার ফাঁক দিয়ে পানি তাড়াতাড়ি চলে যায়।
১০) বাংলাদেশের বেশির ভাগ এলাকা —- মাটি দিয়ে তৈরি।
উত্তর : ১) মাটির, ২) পৃথিবীর, ৩) তিন, ৪) লালচে, ৫) এঁটেল, দোআঁশ, ৬) নরম, শুকনো, ৭) হিউমাস, ৮) কাদা, হিউমাস, ৯) বেলে মাটির, ১০) দোআঁশ।

সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

১. মাটি কী?
উত্তর : মাটি হচ্ছে পৃথিবীর উপরিভাগের নরম আস্তরণ।
২. উদ্ভিদ কোথায় জন্মায়?
উত্তর : উদ্ভিদ মাটিতে জন্মায়।
৩. মাটি কয় ধরনের?
উত্তর : মাটি তিন ধরনের। যথাÑ এঁটেল মাটি, দোআঁশ মাটি এবং বেলে মাটি।
৪. বেলে মাটির কণাগুলো কীরূপ?
উত্তর : বেলে মাটির কণাগুলো এঁটেল ও দোআঁশ মাটির কণার চেয়ে বড়।
৫. দোআঁশ মাটিতে কী থাকে?
উত্তর : দোআঁশ মাটিতে বালি, কাদা এবং হিউমাস থাকে।
৬. এঁটেল মাটিতে কোন ফসল ভালো জন্মে?
উত্তর : এঁটেল মাটিতে শিম এবং কাঁঠাল ভালো জন্মে।

কাঠামোবদ্ধ প্রশ্ন ও উত্তর

ন্ধ সাধারণ
১. শুকনো এঁটেল মাটি কীরূপ? এ মাটির পানি ধারণ ক্ষমতা বেশি কেন? শিম ও কাঁঠাল চাষে এ মাটির উপযোগিতা বর্ণনা কর।
উত্তর : শুকনো এঁটেল মাটি মসৃণ।
এঁটেল মাটির কণাগুলো সবচেয়ে ছোট এবং ঘন। এ কারণে এ মাটির পানি ধারণ ক্ষমতা বেশি।
এঁটেল মাটিতে শিম ও কাঁঠালের ভালো ফলন হয়। এ মাটিতে উক্ত উদ্ভিদ দুটির বৃদ্ধির প্রয়োজনীয় উপাদান যথেষ্ট পরিমাণ রয়েছে। তাছাড়া এ মাটিতে নানা উপাদান পানির সাথে মিশে অবস্থান করে। তাই শিম ও কাঁঠাল চাষে এ মাটি উপযোগী।
২. বাংলাদেশের বেশিরভাগ এলাকা কোন মাটি দিয়ে গঠিত? এ মাটির পানি ও অন্যান্য উপাদান ধরে রাখার কারণ বর্ণনা কর। এ মাটিতে জন্মানো পাঁচটি ফসলের নাম লেখ।
উত্তর : বাংলাদেশের বেশির ভাগ এলাকা দোআঁশ মাটি দিয়ে গঠিত।
দোআঁশ মাটিতে বালু, কাদা এবং হিউমাস মিশে থাকে। বালু ও কাদা থাকার কারণে এ মাটি পানি এবং মাটির অন্যান্য উপাদান ধরে রাখতে পারে কিন্তু পানি জমে থাকে না।
দোআঁশ মাটিতে জন্মানো পাঁচটি ফসল হলোÑ ধান, গম, ভুট্টা, যব, পাট।
৩. বিভিন্ন ধরনের মাটির মধ্যে পার্থক্য কী?
উত্তর : মাটি তিন ধরনের, যথাÑ এঁটেল মাটি, দোআঁশ মাটি এবং বেলে মাটি। এদের মধ্যে পার্থক্য হলোÑ
এঁটেল মাটি দোআঁশ মাটি বেলে মাটি
এ মাটি সাধারণত লালচে রঙের হয়। এ মাটির রং কালো। এ মাটি সাধারণত হালকা বাদামি থেকে হালকা ধূসর রঙের হয়।

এ মাটির কণা সবচেয়ে ছোট। এ মাটির কণাগুলো বিভিন্ন আকারের হয়। এ মাটির কণাগুলো এঁটেল ও দোআঁশ মাটির কণার চেয়ে বড়।
এ মাটি হাতে ধরলে আঠালো মনে হয়। কিন্তু শুকনো মাটি মসৃণ। এ মাটি হাতে ধরলে নরম এবং শুকনো অনুভব করা যায়। এ মাটি শুকনা এবং হাতে ধরলে দানাময় লাগে।
এ মাটিতে শিম ও কাঁঠাল ভালো জন্মে। ধান, গম, ভুট্টা, যব, পাট, আখ ইত্যাদি এ মাটিতে ভালো হয়। এ মাটিতে তরমুজ, চিনাবাদাম, ফুটি, খিরা, শশা ভালো হয়।
ন্ধ যোগ্যতাভিত্তিক
৪. তোমাদের জমির মাটির রং কালো। এ মাটি হাতে ধরলে কেমন অনুভব হবে? এ মাটির পানি ধারণক্ষমতা সম্পর্কে আলোচনা কর। এ মাটির পাঁচটি বৈশিষ্ট্য লেখ।
উত্তর : আমাদের জমির মাটি দোআঁশ হওয়ায় এ মাটি হাতে ধরলে নরম ও শুকনো অনুভব হয়।
দোআঁশ মাটিতে বালু, কাদা ও হিউমাস মিশে থাকে। বালু ও কাদা থাকার কারণে এ মাটি পানি ও মাটির অন্যান্য উপাদান ধরে রাখতে পারে কিন্তু পানি জমে থাকে না।
দোআঁশ মাটির পাঁচটি বৈশিষ্ট্য হলোÑ
১) এর কণাগুলো বিভিন্ন আকারের।
২) এ মাটিতে বালু, কাদা ও হিউমাস মিশে থাকে।
৩) এ মাটিতে পানি জমে থাকে না।
৪) গম, ভুট্টা, যব ইত্যাদি ফসল এ মাটিতে ভালো জন্মে।
৫) এ মাটি হাতে ধরলে নরম ও শুকনো অনুভব হয়।
৫. তোমাদের জমিতে শিমের ভালো ফলন হয়েছে। উক্ত জমির মাটি কী প্রকৃতির? এ জমিতে শিমের ভালো ফলন হলো কেন? কোন কোন বৈশিষ্ট্য দেখে তুমি এ জমির মাটির প্রকৃতি চিনতে পারবে?
উত্তর : শিমের ভালো ফলন হওয়া জমির মাটি এঁটেল প্রকৃতির।
শিম চাষের জন্য জমির পানি ধারণ ক্ষমতা বেশি হতে হয়। শিমের ফলন বৃদ্ধির প্রয়োজনীয় উপাদান এঁটেল মাটিতে বেশি থাকে বলে এখানে শিম ভালো হয়।
নিচের বৈশিষ্ট্যসমূহ দেখে আমি এঁটেল মাটি চিনতে পারব-
১. এঁটেল মাটির রঙ লালচে।
২. এ মাটি ভেজা অবস্থায় হাতে ধরলে আঠালো মনে হয়।
৩. এ মাটি শুকনা থাকলে মসৃণ দেখায়।
৬. বাংলাদেশের বেশিরভাগ এলাকা কোন মাটি দ্বারা গঠিত? মাটিটির চারটি বৈশিষ্ট্য লেখ।
উত্তর : বাংলাদেশের বেশিরভাগ এলাকা দোআঁশ মাটি দ্বারা গঠিত।
দোআঁশ মাটির চারটি বৈশিষ্ট্য হলো-
১) দোআঁশ মাটির রং কালো।
২) এ মাটিতে বালু, কাদা এবং হিউমাস মিশে থাকে।
৩) এ মাটির কণাগুলো বিভিন্ন আকারের হয়।
৪) এ মাটি পানি এবং মাটির অন্যান্য উপাদান ধরে রাখতে পারে কিন্তু পানি জমে থাকে না।

 

 

 

Leave a Reply