নবম – দশম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় পঞ্চম অধ্যায় বাংলাদেশের নদ নদী ও প্রাকৃতিক সম্পদ

পঞ্চম অধ্যায় বাংলাদেশের নদ নদী ও প্রাকৃতিক সম্পদ
অধ্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো সংক্ষেপে জেনে রাখি

 বাংলাদেশের নদনদী ও পানিসম্পদ : বাংলাদেশে নদীর সংখ্যা প্রায় ৭০০। পদ্মা, ব্র‏হ্মপুত্র, যমুনা, মেঘনা ও কর্ণফুলী বাংলাদেশের প্রধান নদনদী।
১. পদ্মা : বাংলাদেশের অন্যতম বৃহত্তম নদী পদ্মা। এটি হিমালয়ের গঙ্গোত্রী হিমবাহ থেকে উৎপন্ন হয়ে রাজশাহী অঞ্চলের দক্ষিণে কুষ্টিয়ার উত্তর-পশ্চিম প্রান্তে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে।
২. ব্র‏হ্মপুত্র : এ নদ হিমালয় পর্বতের কৈলাশ শৃঙ্গের নিকটে মানস সরোবর থেকে উৎপন্ন হয়েছে এবং কুড়িগ্রাম জেলার মধ্যদিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে।
৩. যমুনা : এ নদী ময়মনসিংহ জেলার দেওয়ানগঞ্জের কাছে ব্র‏হ্মপুত্রের শাখানদী নামে দক্ষিণে প্রবাহিত হয়ে দৌলতদিয়ার কাছে পদ্মার সাথে মিলিত হয়েছে।
৪. মেঘনা : আসামের বরাক নদী নাগা-মণিপুর অঞ্চল থেকে উৎপন্ন হয়ে সুরমা ও কুশিয়ারা নামে বিভক্ত হয়ে বাংলাদেশে সিলেট জেলায় প্রবেশ করেছে।
৫. কর্ণফুলী : আসামের লুসাই পাহাড় থেকে উৎপন্ন হয়ে প্রায় ৩২০ কিলোমিটার দীর্ঘ কর্ণফুলী নদী রাঙামাটি ও চট্টগ্রাম অঞ্চলের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বঙ্গোপসাগরে পড়েছে।
এছাড়া আরও রয়েছে তিস্তা, পশুর, সাঙ্গু ফেনী, নাফ ও মাতামুহুরী নদী।

 যাতায়াত ব্যবস্থা : যাতায়াত ব্যবস্থা বলতে বিভিন্ন স্থানে যোগাযোগের মাধ্যম এবং মালপত্র ও লোক চলাচলের মাধ্যমকে বোঝানো হয়। যেমন : সড়কপথ, রেলপথ, নৌপথ, সমুদ্রপথ, আকাশপথ।
 জলবিদ্যুৎ : নদী ও জলপ্রপাতের পানির বেগ ব্যবহার করে টার্বাইন যন্ত্রের সাহায্যে যে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয় তাকে জলবিদ্যুৎ বলে।
 বাণিজ্য : মানুষের অভাব ও চাহিদা মেটানোর উদ্দেশ্যে পণ্যদ্রব্য ক্রয়-বিক্রয় এবং এর আনুষঙ্গিক কার্যাবলি হচ্ছে বাণিজ্য। বাণিজ্য প্রধানত দুই প্রকার। যথা : অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য।
 প্রাকৃতিক সম্পদ : প্রকৃতি থেকে প্রাপ্ত সম্পদকে প্রাকৃতিক সম্পদ বলে। যথা : কৃষিজ সম্পদ, বনজ সম্পদ, মৎস্য সম্পদ, খনিজ সম্পদ ও সৌরশক্তি।
 বাংলাদেশের বনভ‚মির শ্রেণিবিভাগ : বৃক্ষরাজি যে ভ‚মিতে সমারোহ ঘটায় তাকে বনভ‚মি বলা হয়। এসব বনে কাঠ, মধু, মোম ইত্যাদি বনজ সম্পদ পাওয়া যায়। মূলত জলবায়ু ও মাটির ভিন্নতার কারণে এক এক অঞ্চলে এক এক ধরনের বনের সৃষ্টি হয়েছে। বাংলাদেশের বন এলাকাকে মোটামুটি চারটি ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন : চট্টগ্রামের বনাঞ্চল, সিলেটের বন, সুন্দরবন ও ঢাকা-টাঙ্গাইল ময়মনসিংহ অঞ্চলের বনভ‚মি। উদ্ভিদের বৈশিষ্ট্য অনুসারেও বনাঞ্চলের শ্রেণিবিভাগ করা যায়। যেমন : ১. ক্রান্তীয় চিরহরিৎ এবং পত্র পতনশীল বনভ‚মি, ২. ক্রান্তীয় পাতাঝরা ও পত্র পতনশীল বনভ‚মি এবং ৩. স্রোতজ (ম্যানগ্রোভ) বা গরান বনভ‚মি।

 বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর 
১. মাতামুহুরী নদীর উৎপত্তিস্থল কোথায়?
 সাইভার পর্বত খ লুসাই পাহাড়
গ মানস সরোবর ঘ গঙ্গোত্রী হিমবাহ
২. গজারি বৃক্ষের বৈশিষ্ট্য হলো
র. ঋতুভেদে সকল পাতা ঝরে পড়ে রর. এর পাতাগুলো চিরসবুজ থাকে
ররর. এটি লবণাক্ত মাটিতে জন্মায়
নিচের কোনটি সঠিক?
 র খ র ও রর গ র ও ররর ঘ রর ও ররর
নিচের অনুচ্ছেদটি পড় এবং ৩ ও ৪ নম্বর প্রশ্নের উত্তর দাও :
সজীব শিক্ষাসফরে ভারতের পূর্বাঞ্চলের একটি বনভ‚মিতে যেয়ে লক্ষ করে সেখানকার বৃক্ষগুলো বেশ উঁচু এবং ঘন। শিক্ষক তাদের বলেন যে, বাংলাদেশের একটি অঞ্চলে এরূপ বৃক্ষ প্রচুর পরিমাণে জন্মায়।
৩. সজীবের দেখা বনভ‚মিতে কোন বৃক্ষ জন্মায়?
 সেগুন খ বহেরা
গ শিরিষ ঘ ধুন্দল
৪. বাংলাদেশের কোথায় উক্ত বনভ‚মির অনুরূপ বনভ‚মি পরিলক্ষিত হয়?
ক টাঙ্গাইল খ দিনাজপুর
 পার্বত্য চট্টগ্রাম ঘ নোয়াখালী

 জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর 
প্রশ্ন \ ১ \ এদেশে নদীপথের দৈর্ঘ্য কত কিলোমিটার প্রায়?
উত্তর : এদেশের নদী পথের দৈর্ঘ্য প্রায় ৯,৮৩৩ কিলোমিটার।
প্রশ্ন \ ২ \ কত সালে অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন সংস্থা তৈরি করা হয়েছে?
উত্তর : ১৯৫৮ সালে অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন সংস্থা তৈরি করা হয়েছে।
প্রশ্ন \ ৩ \ নদী শুকিয়ে গেলে কিসের অভাব দেখা দেয়?
উত্তর : নদী শুকিয়ে গেলে মাছের অভাব দেখা দেয়।
প্রশ্ন \ ৪ \ সবচেয়ে কম খরচে কোন বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায়?
উত্তর : সবচেয়ে কম খরচে জলবিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায়।
প্রশ্ন \ ৫ \ বাংলাদেশে মোট কত কিলোমিটার গরান বনভ‚মি রয়েছে?
উত্তর : বাংলাদেশে মোট ৪,১৯২ বর্গকিলোমিটার গরান বনভ‚মি রয়েছে।
প্রশ্ন \ ৬ \ কোন জায়গার পাহাড়ে প্রচুর বাঁশ ও বেত জন্মে?
উত্তর : সিলেটের পাহাড়ে প্রচুর বাঁশ ও বেত জন্মে।
প্রশ্ন \ ৭ \ মেঘনার শাখা নদী কোনটি?
উত্তর : মেঘনার শাখা নদী হচ্ছে গোমতী।
প্রশ্ন \ ৮ \ পদ্মা নদীর উৎপত্তিস্থল কোথায়?
উত্তর : পদ্মা নদীর উৎপত্তিস্থল গাঙ্গোত্রী হিমবাহ।
প্রশ্ন \ ৯ \ ব্রহ্মপুত্রের অববাহিকার আয়তন কত?
উত্তর : ব্রহ্মপুত্রের অববাহিকার আয়তন ৫,৮০,১৬০ বর্গকিলোমিটার।
প্রশ্ন \ ১০ \ যমুনার শাখা নদী কোনটি?
উত্তর : যমুনার শাখা নদী ধলেশ্বরী।
প্রশ্ন \ ১১ \ মাতামুহুরী নদীর উৎপত্তি হয়েছে কোথায়?
উত্তর : লামার মাইভার পর্বতে মাতামুহুরী নদীর উৎপত্তি হয়েছে।
প্রশ্ন \ ১২ \ চট্টগ্রাম বন্দর কোন নদীর তীরে অবস্থিত?
উত্তর : চট্টগ্রাম বন্দর কর্ণফুলী নদীর তীরে অবস্থিত।
প্রশ্ন \ ১৩ \ কোন নদীর মোহনা অত্যন্ত প্রশস্ত?
উত্তর : মেঘনা নদীর মোহনা অত্যন্ত প্রশস্ত ।
প্রশ্ন \ ১৪ \ সাঙ্গু নদীর দৈর্ঘ্য কত?
উত্তর : সাঙ্গু নদীর দৈর্ঘ্য ২০৮ কিলোমিটার।
প্রশ্ন \ ১৫ \নদীসমূহে কোথা থেকে প্রচুর পানি আসে?
উত্তর : নদীসমূহের উজান থেকে প্রচুর পানি আসে।
প্রশ্ন \ ১৬ \ দেশের মোট যাত্রীসেবার কত শতাংশ নদীপথে হচ্ছে?
উত্তর : দেশের মোট যাত্রীসেবার ৭৫ শতাংশ নদীপথে হচ্ছে।
প্রশ্ন \ ১৭ \ নদীর তলদেশে কী জমা পড়ে?
উত্তর : নদীর তলদেশে পলি জমা পড়ে।
প্রশ্ন \ ১৮ \ কর্ণফুলী বহুমুখী পরিকল্পনা থেকে কত লক্ষ একর জমিতে কৃষিজ ফলন হচ্ছে?
উত্তর : কর্ণফুলী বহুমুখী পরিকল্পনা থেকে ১০ লক্ষ একর জমিতে কৃষিজ ফলন হচ্ছে।
প্রশ্ন \ ১৯ \ কোন দেশের ভ‚তাত্তি¡ক অবস্থা বৈচিত্র্যময়?
উত্তর : ভারতের ভ‚তাত্তি¡ক অবস্থা বৈচিত্র্যময়।
প্রশ্ন \ ২০ \ ভারতের কোথায় চা উৎপাদন হচ্ছে?
উত্তর : ভারতের উত্তরাঞ্চলে চা উৎপাদন হচ্ছে।
প্রশ্ন \ ২১ \ বঙ্গোপসাগরে কিসের ভাণ্ডার রয়েছে?
উত্তর : বঙ্গোপসাগরে মাছের ভাণ্ডার রয়েছে।
প্রশ্ন \ ২২ \ ফসল উৎপাদন করতে কী দরকার হয়?
উত্তর : ফসল উৎপাদন করতে সুনির্দিষ্ট মাত্রার তাপমাত্রা ও বৃষ্টিপাতের দরকার হয়।
প্রশ্ন \ ২৩ \ কোন দেশকে ট্রানজিট দেওয়ার ক্ষেত্রে বিভিন্ন নদীপথ ব্যবহার করা হচ্ছে?
উত্তর : ভারতকে ট্রানজিট দেওয়ার ক্ষেত্রে বিভিন্ন নদীপথ ব্যবহার করা হচ্ছে।
প্রশ্ন \ ২৪ \ স্বাধীনতার চল্লিশ বছরে খাদ্যোৎপাদন কত গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে?
উত্তর : স্বাধীনতার চল্লিশ বছরে খাদ্যোৎপাদন তিন গুণ বৃদ্ধি।
প্রশ্ন \ ২৫ \ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষকে সংক্ষেপে কী বলা হয়?
উত্তর : অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন সংস্থাকে সংক্ষেপে বলা হয় ‘আইডবিøউটিএ’।
প্রশ্ন \ ২৬ \ কত সালে বাংলাদেশের শিপিং কর্পোরেশন প্রতিষ্ঠিত হয়?
উত্তর : ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের শিপিং কর্পোরেশন প্রতিষ্ঠিত হয় ।

অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর 
প্রশ্ন \ ১ \ পানির অভাবে প্রকৃতির ওপর কী ধরনের বিরূপ প্রতিক্রিয়া পড়তে পারে? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : পানি অত্যন্ত মূল্যবান সম্পদ। প্রকৃতির সজীবতা বজায় রাখতে পানির গুরুত্ব অপরিসীম। কিন্তু পানির অভাবে প্রকৃতির বিরূপ প্রতিক্রিয়ার
সৃষ্টি হয়। নদীর তীরে যেসব গাছপালা, বাগানবাড়ি, সবুজ বৃক্ষের সমারোহ গড়ে ওঠে সেগুলো পানির অভাবে নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এর ফলে মানুষ, মাছ, পশুপাখি ও গাছ-তরুলতার অস্তিত্ব বিপন্ন হতে পারে।
প্রশ্ন \ ২ \ বাংলাদেশ কেন প্রচুর সৌরশক্তি পেয়ে থাকে?
উত্তর : নিরক্ষীয় নিম্ন অক্ষাংশ অঞ্চলে সূর্য বছরের প্রায় সব সময়ই লম্বভাবে কিরণ দেয়। বাংলাদেশ নিরক্ষীয় বা ক্রান্তীয় অঞ্চলে অবস্থিত। এ কারণে বছরের অধিকাংশ সময়ই সূর্য এদেশে লম্বভাবে কিরণ দেয়। যার ফলে বাংলাদেশ সহজেই প্রচুর সৌরশক্তি পেয়ে থাকে।
প্রশ্ন \ ৩ \ ফেনী নদী কীভাবে বঙ্গোপসাগরে মিলিত হয়েছে? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : ফেনী নদী পার্বত্য ত্রিপুরায় উৎপত্তি হয়েছে। এরপর ফেনী জেলায় প্রবেশ করেছে। স›দ্বীপের উত্তরে ফেনী নদী বঙ্গোপসাগরের দিকে ধাবিত হয়েছে এবং বঙ্গোপসাগরে মিলিত হয়েছে।
প্রশ্ন \ ৪ \ কীভাবে নাব্য সংকট দূর করা যায়?
উত্তর : দেশের নদ-নদীগুলো পলি পড়ে ভরাট হয়ে যায়। এর ফলে অনেক নদী শুকিয়ে যায়। এসব নদীতে তখন খনন সম্পাদন করে পানির প্রবাহ বৃদ্ধি করা যায় এবং পানির প্রবাহ সংরক্ষণের মাধ্যমে নাব্য সংকট দূর করা যায়।
প্রশ্ন \ ৫ \ নদী শুকিয়ে গেলে জনবসতি হ্রাস পায় কেন?
উত্তর : নদী শুকিয়ে গেলে মানুষের কৃষি, বাণিজ্য, মৎস্য চাষ, যাতায়াত বন্ধ হয়ে যায়। তখন মানুষের জীবিকা সংস্থান কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। ফলে নদীর তীরে গড়ে ওঠা বসতি ভেঙে যায়। নদীর তীরে বসবাসকারী মানুষ তখন অন্যত্র জীবন ও জীবিকার সন্ধানে তল্পিতল্পা গুটিয়ে চলে যেতে বাধ্য হয়। তাই নদী শুকিয়ে গেলে জনবসতি হ্রাস পায়।
প্রশ্ন \ ৬ \ বাংলাদেশের স্রোতজ (ম্যানগ্রোভ) বা গরান বনভ‚মি সম্পর্কে যা জান লেখ।
উত্তর : বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাংশে নোয়াখালী ও চট্টগ্রাম জেলার উপক‚লে জোয়ার-ভাটার লোনা ও ভেজা মাটিতে যেসব উদ্ভিদ জন্মায় তাদের স্রোতজ বা গরান বনভ‚মি বলা হয়। প্রধানত সুন্দরবনে এটি বেশি জন্ম নেয়। স্যাঁতসেঁতে লোনা পানিতে সুন্দরী, গেওয়া, পশুর, ধুন্দল, কেওড়া, বায়েন, গরান ইত্যাদি বৃক্ষ জন্মে। বাংলাদেশে মোট ৪,১৯২ বর্গকিলোমিটার স্রোতজ (ম্যানগ্রোভ) বা গরান বনভ‚মি রয়েছে।
প্রশ্ন \ ৭ \ ইউরোপ আমেরিকার দেশগুলোকে কেন প্রচুর জ্বালানি সম্পদ ব্যয় করতে হয়?
উত্তর : ইউরোপ আমেরিকার দেশগুলোতে সূর্য বছরে কয়েক মাস বাঁকাভাবে কিরণ দেয়। কখনো কখনো সূর্য প্রায় দেখাই যায় না। ফলে সেই দেশগুলো সূর্যের কিরণ পায় না। এর ফলে সেসব দেশের রাষ্ট্র ও জনগণকে বাড়িঘর বসবাসের উপযোগী রাখতে প্রচুর জ্বালানি সম্পদ ব্যয় করতে হয়।

 

 সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর 
প্রশ্ন- ১  বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সম্পদ

জাহিদ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে। ছুটিতে সে তার বিদেশি সহপাঠীদেরকে সেখানকার বনভ‚মিতে বেড়াতে নিয়ে যায়। সেগুন, গর্জন, জারুল বৃক্ষেশোভিত বনভ‚মিটির সৌন্দর্য তাদের মুগ্ধ করে। ফেরার পথে জাহিদ তাদেরকে অঞ্চলটির প্রধান নদীটির তীরে নিয়ে যায় এবং বলে যে, আমাদের এই নদীটি অফুরন্ত শক্তির উৎস।
ক. নাফ কী?
খ. ব্রহ্মপুত্রের শাখানদী সৃষ্টির কারণ ব্যাখ্যা কর।
গ. অনুচ্ছেদে বর্ণিত বনভ‚মিটির বৃক্ষের বৈশিষ্ট্য ব্যাখ্যা কর।
ঘ. জাহিদের করা মন্তব্যটির যথার্থতা তোমার পঠিত বিষয়বস্তুর আলোকে বিশ্লেষণ কর।

ক নাফ একটি নদীর নাম।
খ তিব্বতের মানস সরোবরে ব্রহ্মপুত্র নদের উৎপত্তি হয়েছে। ১৭৮৭ সালের আগে ব্রহ্মপুত্রের প্রধান ধারাটি ময়মনসিংহের মধ্য দিয়ে উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে দক্ষিণ-পূর্ব দিকে আড়াআড়িভাবে প্রবাহিত হতো। কিন্তু ১৭৮৭ সালে সংঘটিত ভ‚মিকম্পে ব্রহ্মপুত্রের তলদেশ উত্থিত হওয়ায় পানি ধারণ ক্ষমতার বাইরে চলে যায় এবং নতুন স্রোতধারার শাখা নদীর সৃষ্টি হয়। নতুন স্রোতধারাটি যমুনা নামে পরিচিত হয়।
গ অনুচ্ছেদে বর্ণিত বনভ‚মিতে সেগুন, গর্জন, জারুল প্রভৃতি গাছ রয়েছে। এ থেকে বোঝা যায়, বনভ‚মিটি বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব অংশের পাহাড়ি অঞ্চলের ক্রান্তীয় চিরহরিৎ এবং পত্রপতনশীল বনভ‚মি। এ বনভ‚মি উষ্ণ ও আর্দ্র আবহাওয়ার বৈশিষ্ট্য ধারণ করে। এখানকার গাছগুলোর পাতা একত্রে ফোটেও না, আবার একত্রে ঝরেও না। ফলে সারাবছর বনভ‚মিগুলো সবুজ থাকে। সে কারণেই এসব বনকে চিরহরিৎ বা চিরসবুজ বনভ‚মি বলে। চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি, বান্দরবান ও সিলেট এই অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত। এ বনভ‚মির পরিমাণ প্রায় ১৪ হাজার বর্গকিলোমিটার। চাপালিশ, ময়না, তেলসুর, মেহগনি, জারুল, সেগুন, গর্জন ইত্যাদি এ বনভ‚মির উলে­খযোগ্য গাছ। সিলেটের পাহাড়ে প্রচুর বাঁশ ও বেত জন্মে। পার্বত্য চট্টগ্রাম ও সিলেট অঞ্চলে রাবার চাষও হয়।
ঘ জাহিদ চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীকে উদ্দেশ্য করে বলেছে, আমাদের এ নদীটি অফুরন্ত শক্তির উৎস। নিচে জাহিদের করা মন্তব্যটির যথার্থতা পঠিত বিষয়বস্তুর আলোকে বিশ্লেষণ করা হলো :
নদী ও জলপ্রপাতের পানির বেগ ব্যবহার করে টার্বাইন যন্ত্রের সাহায্যে যে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয় তাকে জলবিদ্যুৎ বলা হয়। এটি নবায়নযোগ্য শক্তিসম্পদ। বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামের কাপ্তাই নামক স্থানে কর্ণফুলী নদীর গতিপথে বাঁধ দিয়ে পাকিস্তান আমলে প্রথম জলবিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করা হয়। সবচেয়ে কম খরচে এই বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায়। বর্তমান বিশ্বে তেল, গ্যাস বা পারমাণবিক চুলি­ ব্যবহারের মাধ্যমে যে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয় তার উৎপাদন খরচ অনেক বেশি। সেই তুলনায় জলবিদ্যুতের খরচ অনেক কম। সে কারণে দেশের পানি সম্পদ ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি করা বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য লাভজনক। উপরিউক্ত আলোচনা হতে এটি প্রতীয়মান হয় যে, জাহিদের করা মন্তব্য অর্থাৎ কর্ণফুলী নদীটি অফুরন্ত শক্তির উৎস কথাটি যথার্থ।
প্রশ্ন- ২ ল্ফল্ফ পানির অভাবের কারণ ও সমাধান

আজমল মিয়া দেশের উত্তরাঞ্চলের নদীপাড়ের বাসিন্দা ছিলেন। একটা সময় ছিল যখন তিনি মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। কিন্তু বর্তমানে নদীটির রূপ পরিবর্তিত হওয়ায় তাকে জীবিকা পরিবর্তন করতে হয়েছে এবং ভিটা-মাটি হারিয়ে তিনি নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন। তার অঞ্চলে ঋতুবিশেষে পানির চরম সংকট জনজীবনকে বিপর্যস্ত করে।
ক. বঙ্গোপসাগরের তলদেশে কোন খনিজ সম্পদ আবিষ্কৃত হয়েছে?
খ. দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে প্রচুর সৌরশক্তি পাওয়া যায় কেন?
গ. আজমল মিয়ার বসবাসকৃত অঞ্চলটির নদীর রূপ পরিবর্তিত হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা কর।
ঘ. অনুচ্ছেদে উল্লেখিত সংকটটি নিরসনে কী ধরনের পদক্ষেপ নেয়া যেতে পারে? তোমার মতামত দাও।

ক বঙ্গোপসাগরের তলদেশে খনিজসম্পদ গ্যাস আবিষ্কৃত হয়েছে।
খ নিরক্ষীয় নিম্ন অক্ষাংশ অঞ্চলে সূর্য বছরের প্রায় সব সময়ই লম্বভাবে কিরণ দেয়। ফলে বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার অপরাপর দেশগুলো নিরক্ষীয় বা ক্রান্তীয় অঞ্চলে অবস্থিত হওয়ার কারণে সহজে প্রচুর সৌরশক্তি পেয়ে থাকে। এই অঞ্চলের দেশগুলোতে তাপমাত্রা কখনো নিম্ন পর্যায়ে নামে না, ফলে সূর্যের আলো ছাড়া অন্ধকারে বসবাস করতে হয় না।
গ অনুচ্ছেদে বর্ণিত আজমল মিয়া উত্তরাঞ্চলের নদীপাড়ের বাসিন্দা। বর্তমানে সেখানকার নদীটির রূপ পরিবর্তিত হয়েছে। বাংলাদেশের অনেক নদীর উৎসস্থল ভারতে। ভারতে বেশ কিছু নদীতে বাঁধ দেওয়ার ফলে বাংলাদেশের নদীগুলোতে গ্রীষ্মকালে পানির প্রবাহ কমে গেছে। এর ফলে এদেশের কোনো কোনো নদী যেমন : তিস্তা, গঙ্গা, কপোতাক্ষ ইত্যাদি শুকিয়ে যাচ্ছে। ভারতের ফারাক্কা বাঁধ নির্মাণের ফলে দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল ভয়াবহ সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে। পদ্মাসহ উত্তরাঞ্চলের সব নদীতেই নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। বিশেষ করে শুষ্ক মৌসুমে পানির চরম সঙ্কট দেখা দেয়। এর ফলে পরিবেশের ভারসাম্যের ওপর পানির অপ্রতুলতায় নানা ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।
ঘ অনুচ্ছেদে উল্লিখিত সংকটটির নিরসনে নিম্নলিখিত পদক্ষেপ গ্রহণ করা যেতে পারে
১. ভারতের সাথে সমঝোতা চুক্তি : যৌথ সীমানার নদীগুলোতে প্রত্যেক দেশেরই ন্যায্য অধিকার রয়েছে। কিন্তু ভারত বেশ কিছু নদীতে বাঁধ দেওয়ার ফলে বাংলাদেশের নদীগুলোতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। তাই এ সমস্যা সমাধানে ভারতের সাথে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর করতে হবে।
২. অপ্রয়োজনীয় ব্রিজ, কালভার্ট, বাঁধ নির্মাণ না করা : নিয়মনীতি না মেনে নদীর ওপর দিয়ে যত্রতত্র ব্রিজ, কালভার্ট, বাঁধ ইত্যাদি নির্মাণের ফলে অনেক নদী শুকিয়ে যাচ্ছে। তাই অপ্রয়োজনীয় ব্রিজ, কালভার্ট, বাঁধ নির্মাণ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
৩. নিয়মিত খাল খনন করা : দেশের নদনদীগুলোতে পলি পড়ে ভরাট হয়ে যাচ্ছে। অনেক নদী শুকিয়ে গেছে। এসব নদনদী খনন করলে পানির প্রবাহ এবং সংরক্ষণ সম্ভব হবে।
৪. মাত্রাতিরিক্ত পানি উত্তোলন না করা : সেচসহ নানা কাজে কোনো কোনো নদী থেকে পাম্প দিয়ে প্রচুর পানি উত্তোলনের ফলে মূল নদীতেই পানি আশঙ্কাজনকভাবে কমে যাচ্ছে। ফলে নদী থেকে মাত্রাতিরিক্ত পানি উত্তোলন বন্ধ করতে হবে। তাছাড়া নদী বাঁচাও কর্মসূচির মাধ্যমে ব্যাপক জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে

 গুরুত্বপূর্ণ বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
সাধারণ বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
১. জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের কাজে কোন যন্ত্রটি ব্যবহার করা হয়?
ক সেক্সট্যান্ট  টারবাইন গ ল্যাক্টোমিটার ঘ ট্রান্সমিটার
২. কোন নদীটির উৎপত্তিস্থল বাংলাদেশ?
ক মাতামুহুরী খ সাঙ্গু গ নাফ  পশুর
৩. তিস্তা নদীর বর্তমান দৈর্ঘ্য কত?
 ১৭৭ কিলোমিটার খ ১৪২ কিলোমিটার
গ ৩২০ কিলোমিটার ঘ ২৮৯৭ কিলোমিটার
৪. সুরমা ও কুশিয়ারা কোন জেলায় এসে মেঘনা নাম ধারণ করেছে?
 সিলেট খ সুনামগঞ্জ গ চাঁদপুর ঘ কিশোরগঞ্জ
৫. বাংলাদেশ স্বাধীনতার ৪০ (চল্লিশ) বছরে কতগুণ খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি করতে পেরেছে?
ক দুই গুণ  তিন গুণ গ চার গুণ ঘ পাঁচ গুণ
৬. বাংলাদেশে মোট কতগুলো নদী আছে?
ক ৪০০ খ ৫০০ গ ৬০০  ৭০০
৭. কোন নদীতে বাঁধ দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপন্ন করা হয়?
ক পদ্মা খ মেঘনা গ নাফ  কর্ণফুলী
৮. একটি দেশের মোট আয়তনের কত শতাংশ বনভ‚মি থাকা প্রয়োজন?
ক ১০-১৫ শতাংশ খ ১৫-২০ শতাংশ
 ২০-২৫ শতাংশ ঘ ২৫-৩০ শতাংশ
৯. নাবিল ও তার বন্ধুরা মিলে মধুপুরে পিকনিকে যায়। সেখানে তারা অনেক বৃক্ষ দেখতে পায়। উক্ত বৃক্ষ কোন ধরনের সম্পদ?
ক ব্যক্তিগত  জাতীয় গ আন্তর্জাতিক ঘ সমষ্টিগত
লুসাই পাহাড় আরাকান পাহাড় নাগা-মণিপুর সিকিম
১০. উপরের ছকে বিভিন্ন উৎপত্তিস্থলের মধ্যে কোনটির সাথে মেঘনা নদী সম্পৃক্ত?
ক ১ খ ২  ৩ ঘ ৪
১১. ক্রান্তীয় চিরহরিৎ বনভ‚মির বৃক্ষ কোনটি?
 তেলসুর খ হরীতকী গ কেওড়া ঘ গেওয়া
১২. বাংলাদেশের স্রোতজ বনভ‚মির মোট আয়তন কত?
 ৪,১৯২ বর্গকিমি খ ৪,২৯২ বর্গকিমি
গ ৬,১৯২ বর্গকিমি ঘ ৮,১৯২ বর্গকিমি
১৩. বৃহস্পতির ব্যাস কত?
 ১, ৪২,৮০০ কিমি খ ১,২৪,৮০০ কিমি
গ ১,২৪,৮০৭ কিমি ঘ ১৪২৮০০৮ কিমি
১৪. বাংলাদেশে মোট আয়তনের কত শতাংশ বনভ‚মি আছে?
ক ১০% খ ১১% গ ১২%  ১৩%
১৫. কোন নদী সিকিমের পাহাড়ি এলাকা থেকে উৎপত্তি?
 তিস্তা খ মেঘনা গ পদ্মা ঘ কর্ণফুলী
১৬. অ চিহ্নিত নদীটির নাম কী?

ক পুনর্ভবা খ ধলেশ্বরী গ পদ্মা  তিস্তা
১৭. ব্র‏হ্মপুত্র নদের উৎপত্তি হয়েছে কোথা থেকে?
ক হিমালয়ের গঙ্গোত্রী  তিব্বতের মানস সরোবর
গ লুসাই পাহাড় ঘ সিকিমের পার্বত্য অঞ্চল
১৮. সুরমা ও কুশিয়ারা কোন জেলায় এসে মেঘনা নাম ধারণ করেছে?
ক সিলেট  সুনামগঞ্জ গ চাঁদপুর ঘ কিশোরগঞ্জ
১৯. বাংলাদেশে মোট কত বর্গকিলোমিটার স্রোতজ বা গরান বনভূমি রয়েছে?
ক ৩,১৯২  ৪,১৯২ গ ৫,১৯২ ঘ ৬,১৯২
২০. মিতা ও তার বন্ধুরা মিলে রাঙামাটি বেড়াতে গিয়ে গর্জন, চাপালিশ, জারুল, মেহগনি ইত্যাদি বৃক্ষ দেখতে পায় মিতারা কোন বনভূমিতে বেড়াতে গিয়েছিল?
ক শালবন বিহার খ ক্রান্তীয় পত্রপতনশীল
গ স্রোতজ বনভূমি  ক্রান্তীয় চিরহরিৎ
২১. পদ্মা নদীর উৎপত্তিস্থল কোথায়?
ক সাইবার পর্বত খ লুসাই পাহাড়
গ মানস সরোবর  গঙ্গোত্রী হিমবাহ
২২. বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের প্রধান নদী কোনটি?
ক তিস্তা খ সাঙ্গু  কর্ণফুলী ঘ পশুর
২৩. পদ্মার শাখা নদী কোনটি?
ক ধরলা খ সুরমা  ইছামতী ঘ গোমতী
২৪. গোয়ালন্দের নিকট ব্র‏হ্মপুত্রের প্রধান ধারা কীসের সঙ্গে মিলিত হয়েছে?
 যমুনার খ মেঘনার
গ পদ্মার ঘ কর্ণফুলীর
২৫. যমুনা নদীর শাখা নদী কোনটি?
ক ধরলা খ তিস্তা  ধলেশ্বরী ঘ করতোয়া
২৬. মুন কোন নদীর শাখা নদী?
ক যমুনা খ পশুর  মেঘনা ঘ তিস্তা
২৭. কর্ণফুলি নদীর উপনদী কোনটি?
 কাপ্তাই খ হালদা গ কাসালং ঘ যমুনা
২৮. ‘রাঙখিয়াং’ কী?
ক বৃক্ষ খ ঝরনা
গ পাহাড়িদের অনুষ্ঠান  উপনদী
২৯. ‘ক’ নদীটিতে বাংলাদেশের প্রধান সমুদ্র বন্দর অবস্থিত।
ক পদ্মা খ মেঘনা  কর্ণফুলী ঘ ব্র‏হ্মপুত্র
৩০. কোন নদীর অর্থনৈতিক গুরুত্ব সর্বাধিক?
ক পদ্মা খ মেঘনা
 কর্ণফুলী ঘ তিস্তা
৩১. বাংলাদেশে প্রবাহিত সিকিমের পার্বত্য অঞ্চল থেকে উৎপন্ন তিস্তা নদীর বর্তমান দৈর্ঘ্য কত?
ক ১২০ কিলোমিটার খ ২৭৭ কিলোমিটার
 ১৭৭ কিলোমিটার ঘ ১৪২ কিলোমিটার
৩২. তিস্তা ব্যারেজ প্রকল্পটি কত সালে নির্মিত হয়?
ক ১৯৮৭-৮৮ খ ১৯৯৩-৯৪
গ ১৯৯১-৯৭  ১৯৯৭-৯৮
৩৩. নিচের কোন নদীটি সুন্দরবনের ভেতর দিয়ে বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়েছে?
 পশুর খ ফেনী গ সাঙ্গু ঘ মাতামুহুরী
৩৪. সাঙ্গু নদীর উৎপত্তিস্থল কোথায়?
ক লুসাই পাহাড়  আরাকান পাহাড়
খ গঙ্গোত্রী হিমবাহ ঘ সুরমা কুশিয়ারা
৩৫. নাফ নদীর দৈর্ঘ্য কত?
 ৫৬ কিলোমিটার খ ১২০ কিলোমিটার
গ ২০৮ কিলোমিটার ঘ ৩২০ কিলোমিটার
৩৬. মাতামুহুরী নদীর দৈর্ঘ্য কত?
 ১২০ কিলোমিটার খ ১১০ কিলোমিটার
গ ১০০ কিলোমিটার ঘ ১৩০ কিলোমিটার
৩৭. নদীকে রক্ষা করার জন্য কোন ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন?
 সচেতনমূলক পদক্ষেপ খ প্রণয়ন
গ বর্জ্য নিক্ষেপ ঘ নদীতে যান চলাচল
৩৮. বাংলাদেশের নদীসমূহ কোন সম্পদে পরিণত হয়েছে?
ক খনিজ সম্পদে  পানি সম্পদে
গ কৃষিজ সম্পদে ঘ মৎস্য সম্পদে
৩৯. শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে কোন শহর অবস্থিত?
 নারায়ণগঞ্জ ক সিলেট গ গাজীপুর ঘ নরসিংদী
৪০. বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে ভয়াবহ সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে কোন বাঁধ নির্মাণের ফলে?
ক তিস্তা বাঁধ  ফারাক্কা বাঁধ
গ কাপ্তাই বাঁধ ঘ টিপাইমুখ বাঁধ
৪১. বাংলাদেশে কত কিলোমিটার পথ সারা বছর নৌ চলাচলের উপযোগী থাকে?
ক ৩৬৫৮ কিলোমিটার  ৩৮৬৫ কিলোমিটার
গ ৮৯৩৩ কিলোমিটার ঘ ৯৮৩৩ কিলোমিটার
৪২. অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ (ওডঞঅ) সৃষ্টি হয়েছে কত সালে?
ক ১৯৫১  ১৯৫৮ গ ১৯৬৫ ঘ ১৯৭১
৪৩. কোনটি নবায়নযোগ্য শক্তি সম্পদ?
ক মৎস্য খ বনজ গ খনিজ  জলবিদ্যুৎ
৪৪. কোন ধরনের নদী থেকে জলবিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায়?
ক গভীর নদী খ বড় নদী  পাহাড়ি নদী গ পার্বত্য নদী
৪৫. বাংলাদেশে অভ্যন্তরীণ নৌপথে দেশের মোট বাণিজ্যিক মালামালের কত শতাংশ আনা-নেওয়া করা হয়?
ক ৫৫ খ ৬৫  ৭৫ ঘ ৮৫
৪৬. বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন কবে প্রতিষ্ঠিত হয়?
ক ১৯৭১  ১৯৭২ গ ১৯৭৩ ঘ ১৯৭৪
৪৭. ভ‚প্রকৃতি ও জলবায়ুর সাথে বাংলাদেশের কোন সম্পদের সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে?
ক কৃষিজ  মৎস্য গ বনজ খ সৌর
৪৮. কোন অঞ্চলে কৃষিপণ্য উৎপাদনে মাটির গুণাগুণ গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করে?
 বাংলাদেশের উত্তর পূর্বাঞ্চলে খ বাংলাদেশের পশ্চিমাঞ্চলে
গ ভারতের পূর্বাঞ্চলে ঘ ভারতের উত্তরাঞ্চলে
৪৯. খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা নিচের কোনটির ওপর নির্ভরশীল?
 পানি সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার খ বীজের প্রাপ্তি
গ গুদাম ব্যবস্থাপনা ঘ প্রযুক্তির ব্যবহার
৫০. জনগণের স্বার্থে দেশে কত শতাংশ বনভ‚মি থাকা প্রয়োজন?
ক ১৫Ñ২০ শতাংশ  ২০Ñ২৫ শতাংশ
গ ২৫Ñ৩০ শতাংশ ঘ ৩০Ñ৩৫ শতাংশ
বহুপদী সমাপ্তিসূচক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
৫১. তিস্তা ব্যারেজটি গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা রাখে
র. কৃষি কাজে রর. পানি নিষ্কাশনে
ররর. বন্যা প্রতিরোধে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর  রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৫২. নদী গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে-
র. জীবিকা নির্বাহে
রর. পরিবহনে
ররর. কৃষি উৎপাদনে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর  র, রর ও ররর
৫৩. বাংলাদেশের নদীগুলোর প্রবাহ দুর্বল ও নাব্যতা নষ্ট হয়ে যাওয়ার কারণÑ
র. নদীতে শিল্পের বর্জ্য ফেলায়
রর. জলযান এর পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায়
ররর. নদী দখল করায়
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র খ র ও রর গ র ও ররর ঘ রর ও ররর
৫৪. পানি ব্যবস্থাপনার জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগগুলো হলো
র. পানির সদ্ব্যবহার নিশ্চিত করা
রর. নদীভাঙন রোধ করা
ররর. পরিমিত সার ও কীটনাশক ব্যবহার করা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ রর ও ররর  র, রর ও ররর ঘ র ও ররর
৫৫. খনিজ উৎস হলো
র. গ্যাস
রর. মাছ
ররর. কয়লা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর  র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৫৬. নদী গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেÑ
র. জীবিকা নির্বাহে
রর. পরিবহনে
ররর. কৃষি উৎপাদনে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর  র, রর ও ররর
৫৭. তিস্তা ব্যারেজটি গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা রাখে
র. পানি সংরক্ষণে
রর. পানি নিষ্কাশনে
ররর. বন্যা প্রতিরোধে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর  র, রর ও ররর
৫৮. যাত্রী পরিবহন সেবায় বড় ধরনের ভ‚মিকা পালন করে
র. কপোতাক্ষ নদ
রর. কর্ণফুলী নদী
ররর. আত্রাই নদী
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর  রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৫৯. বাংলাদেশের প্রধান খনিজ সম্পদ হলো
র. সোনা
রর. চীনামাটি
ররর. কয়লা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর  রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৬০. প্রাকৃতিক সম্পদের অন্তর্ভুক্ত হলো
র. সৌরতাপ
রর. বনভ‚মি
ররর. জলবিদ্যুৎ
নিচের কোনটি সঠিক?
 র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৬১. ক্রান্তীয় পাতাঝরা অরণ্যের বৃক্ষ হলো
র. কাঁঠাল
রর. নিম
ররর. কড়ই
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর র, রর ও ররর
৬২. বরেন্দ্রভ‚মির অবস্থান
র. রংপুর জেলায়
রর. বগুড়া জেলায়
ররর. জয়পুরহাট জেলায়
নিচের কোনটি সঠিক?
 র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৬৩. ক্রান্তীয় পাতাঝরা বনভ‚মির মূল বৈশিষ্ট্য হলো
র. একই সঙ্গে সব পাতা ঝরে যাওয়া
রর. শীতকালে পাতা ঝরে যাওয়া
ররর. পাতা না গজানো
নিচের কোনটি সঠিক?
 র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
অভিন্ন তথ্যভিত্তিক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
নিচের মানচিত্রটি পর্যবেক্ষণ করে ৬৪ ও ৬৫ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :

৬৪. ‘ক’ চিহ্নিত নদীটি কোন স্থানে পদ্মানদীর সাথে মিলিত হয়েছে?
ক চাঁদপুর খ দৌলতদিয়া গ দেওয়ানগঞ্জ ঘ ভৈরব বাজার
৬৫. কোন দুইটি স্থানের মধ্যে নৌ-যোগাযোগের জন্য ‘ক’ চিহ্নিত নদীটি ব্যবহৃত হয়?
ক খুলনা-সাতক্ষীরা খ ফরিদপুর-গোপালগঞ্জ
গ সিরাজগঞ্জ-নগরবাড়ি  ঢাকা-পটুয়াখালী
নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ে ৬৬ ও ৬৭ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
নিয়ন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের একজন ছাত্র। শিক্ষা ভ্রমণের অংশ হিসেবে গত বছর সে এবং তার বন্ধুরা বাংলাদেশের দক্ষিণে একটি ঐতিহাসিক জায়গা পরিদর্শনে গিয়েছিল। সে সেখানে কিছু বিরল প্রজাতির গাছ দেখেছিল।
৬৬. নিয়ন যেখানে গিয়েছিল সেই স্থানটির নাম কী?
ক শালবন খ পাহাড়ি বন  সুন্দরবন ঘ পাতাঝরা বন
৬৭. সেখানে যে গাছ জন্মায়-
র. কেওড়া
রর. সুন্দরি
ররর. শাল
নিচের কোনটি সঠিক?
 র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ে ৬৮ ও ৬৯ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
গত বছর এসএসসি পরীক্ষার পর রেহেনা তার বাবা-মায়ের সাথে একটি উপক‚লীয় অঞ্চলে বেড়াতে যায়। সেখানে সে জোয়ার-ভাটার লোনা ও ভেজা মাটিতে জন্মানো বিভিন্ন ধরনের বৃক্ষ দেখতে পায়।
৬৮. রেহেনার দেখা বৃক্ষসমূহ বাংলাদেশের কোন বনভ‚মিকে নির্দেশ করে?
ক ক্রান্তীয় চিরহরিৎ বনভ‚মি খ পত্র পতনশীল বনভ‚মি
গ ক্রান্তীয় পাতাঝরা বনভ‚মি  গরান বনভ‚মি
৬৯. রেহেনার দেখা বনভ‚মিটির বৈশিষ্ট্য হলোÑ
র. টারশিয়ারি যুগের পাহাড়সমূহ
রর. প্লাইস্টোসিনকালের চত্বরভ‚মি
ররর. সা¤প্রতিককালের প্লাবন সমভ‚মি
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র খ রর  ররর ঘ র, রর ও ররর
নিচের মানচিত্রটি দেখে ৭০-৭২ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :

৭০. ‘অ’ চিহ্নিত স্থানে প্রবাহিত বাংলাদেশের নদীর নাম কী?
ক সুরমা খ তিস্তা
 কর্ণফুলী ঘ পদ্মা
৭১. উক্ত নদীর উৎপত্তিস্থল কোথায়?
ক আরাকান পাহাড় খ তিব্বতের মানস সরোবর
গ হিমালয় পর্বত  লুসাই পাহাড়
৭২. উক্ত নদীর প্রধান অর্থনৈতিক গুরুত্ব কী?
ক মাছ ধরা খ নৌ চলাচল
 পানিবিদ্যুৎ কেন্দ্র ঘ কৃষিকাজের জন্য
নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ে ৭৩ ও ৭৪ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
সালমা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখতে ভালবাসে। গত বৎসর সে বাংলাদেশের দক্ষিণাংশে অবস্থিত বিশ্ববিখ্যাত বন দেখতে যায়।
৭৩. সালমা যেখানে গিয়েছিল সেই বনের নাম কী?
ক শালবন খ পার্বত্যবন
 সুন্দরবন ঘ পত্রমোচী বন
৭৪. উৎপাদিত এ বনের গাছগুলো
র. কেওড়া
রর. সুন্দরি
ররর. শাল
নিচের কোনটি সঠিক?
 র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ে ৭৫ ও ৭৬ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
হিমালয়ে উৎপত্তি হওয়া একটি নদী ভারত হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। উক্ত নদী ভারত ও বাংলাদেশে ভিন্ন নামে পরিচিত।
৭৫. অনুচ্ছেদে কোন নদীর কথা বলা হয়েছে?
 পদ্মা খ মেঘনা
গ তিস্তা ঘ কর্ণফুলী
৭৬. উক্ত নদীর সঠিক তথ্য হলো
র. এর উলে­খযোগ্য শাখা নদীগুলো হলো কুমার, ভৈরব
রর. এটি বাংলাদেশের কুড়িগ্রাম হয়ে প্রবেশ করেছে
রররর. এটি দুটি নদীর সাথে মিলিত হয়েছে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর  র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর

 গুরুত্বপূর্ণ সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন- ১  বাংলাদেশের নদ-নদী ও বনজ সম্পদ

ক. ‘ধলেশ্বরী’ কোন নদীর শাখা নদী? ১
খ. পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা বলতে কী বোঝায়? ২
গ. ‘অ’ চিহ্নিত নদীর গতিপথ ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. “‘ই’ ও ‘ক’ চিহ্নিত অঞ্চল দুটি এদেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা রাখে” মন্তব্যটি বিশ্লেষণ কর। ৪

ক ধলেশ্বরী যমুনা নদীর শাখা নদী।
খ পানির পরিকল্পিত প্রাপ্যতা ও ব্যবহারকে পানির সম্পদ ব্যবস্থাপনা বলা হয়। শীত ও শুষ্ক মৌসুমে পানির প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে নদ-নদী, খাল, পুকুর, হাওর ও বিলে পরিকল্পিতভাবে পানি ধরে রাখার ব্যবস্থা করার মাধ্যমে পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা করা যায়। বাংলাদেশে বৃষ্টি থেকে পর্যাপ্ত পানি পাওয়া গেলেও শীত এবং গ্রীষ্মকালে পানির অভাব হলে কৃষি, শিল্প ও জীবনযাপন সংকটাপন্ন হয়ে ওঠে। সে কারণে সারাবছর পানির প্রাপ্তি, প্রবাহ ও বণ্টননিশ্চিত করতে এই সম্পদের ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে হয়।
গ মানচিত্রে ‘অ’ চিহ্নিত নদীটি হচ্ছে মেঘনা। মেঘনা নদী সৃষ্টি হয়েছে সিলেট জেলার সুরমা ও কুশিয়ারার মিলনস্থলে। সুরমা ও কুশিয়ারার উৎপত্তি আসামের বরাক নদী নাগা-মনিপুর অঞ্চলে। কুশিয়ারা ও সুরমা নদী বাংলাদেশের সিলেট জেলায় প্রবেশ করেছে। সুনামগঞ্জ জেলার আজমিরিগঞ্জের কাছে কালনী নামে দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে মেঘনা নাম ধারণ করেছে। এটি ভৈরব বাজার অতিক্রম করে পুরাতন ব্রহ্মপুত্রের সঙ্গে মিলিত হয়েছে। মুন্সীগঞ্জের কাছে বুড়িগঙ্গা, ধলেশ্বরী ও শীতলক্ষ্যার মিলিত জলধারাই মেঘনায় এসে যুক্ত হয়েছে। সেখান থেকে চাঁদপুরের কাছে পদ্মার সঙ্গে মিলিত হয়ে বিস্তৃত মোহনার সৃষ্টি করেছে। এটি পতিত হয়েছে বঙ্গোপসাগরে।
ঘ ‘ই’ ও ‘ক’ চিহ্নিত অঞ্চল যথাক্রমে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বের পাহাড়ি বনভ‚মি এবং সুন্দরবন অঞ্চল। ভ‚প্রাকৃতিক গঠন এবং বনজ সম্পদের আনুক‚ল্যে এ দুটি অঞ্চল দেশের প্রাকৃতিক সম্পদের অফুরন্ত ভাণ্ডার। দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিতে এ দু’অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। মানুষ তার দৈনন্দিন প্রয়োজনে কাঠ, বাঁশ, বেত, মধু, মোম প্রভৃতি এ দুঅঞ্চলের বন থেকে সংগ্রহ করে। বসবাসের জন্য ঘরবাড়ি ও আসবাবপত্র নির্মাণের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় কাঠ, বাঁশ বেত ইত্যাদি উপকরণও আমরা এ দুধরনের বন থেকে পেয়ে থাকি। তাছাড়া শিল্পের উন্নতিকল্পে কাগজ, রেয়ন, দিয়াশলাই, খাইবার বোর্ড খেলনার সরঞ্জাম প্রভৃতির উৎপাদন কাজে এ দুই অঞ্চলের বনজ সম্পদ ব্যবহৃত হয়ে দেশের সার্বিক শিল্পের উন্নয়নকে অধিকতর ত্বরান্বিত করে। পাশাপাশি পর্যটন শিল্পে, পরিবহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থায় এবং কৃষি উন্নয়নে এ দুই ধরনের বনের অনেক গুরুত্ব পরিলক্ষিত হয় এবং দেশের অর্থনীতিকেও সমৃদ্ধ করে। এ অঞ্চলদ্বয়ের বনভ‚মি দেশের আবহাওয়াকে আর্দ্র রাখে, ফলে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়। আর বৃষ্টি কৃষি কাজে অত্যন্ত সহায়ক। ফলে কৃষিপ্রধান বাংলাদেশের অর্থনীতিতে এ দুঅঞ্চলের বনভ‚মির প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভ‚মিকা রয়েছে তা নিঃসন্দেহে বলা যায়। তাই আমি মনে করি প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথার্থ এবং যুক্তিযুক্ত।
প্রশ্ন- ২  তিস্তা নদী

চিত্র : বাংলাদেশের মানচিত্রের অংশবিশেষ
ক. বাংলাদেশের কোথায় মেঘনা নদীর সৃষ্টি হয়েছে? ১
খ. বাংলাদেশ সহজে প্রচুর সৌরশক্তি পেয়ে থাকে কেন? বুঝিয়ে লিখ। ২
গ. চিত্রে অ চিহ্নিত নদীটির নাম উল্লেখপূর্বক এর গতিপথ ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. উক্ত নদীর অর্থনৈতিক গুরুত্ব আলোচনা কর। ৪

ক মেঘনা নদী সৃষ্টি হয়েছে বাংলাদেশের সিলেট জেলার সুরমা ও কুশিয়ারার মিলিত স্থলে।
খ নিরক্ষীয় নিম্ন অক্ষাংশ অঞ্চলে সূর্য বছরের প্রায় সব সময়ই লম্বভাবে কিরণ দেয়। বাংলাদেশ নিরক্ষীয় বা ক্রান্তীয় অঞ্চলে অবস্থিত। এ কারণে বছরের অধিকাংশ সময়ই সূর্য এদেশে লম্বভাবে কিরণ দেয়। যার ফলে বাংলাদেশ সহজেই প্রচুর সৌরশক্তি পেয়ে থাকে।
গ অ চিহ্নিত নদীটি হচ্ছে তিস্তা নদী। তিস্তা ব্রহ্মপুত্র নদের একটি উপনদী। সিকিম হিমালয়ের ৭,২০০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত চিতামু হ্রদ থেকে এই নদীটি সৃষ্টি হয়েছে। এটি দার্জিলিং-এ একটি গিরিসঙ্কটের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। দার্জিলিং পাহাড়ে তিস্তা একটি বন্য নদী। পার্বত্য এলাকা থেকে প্রথমে প্রবাহটি দার্জিলিং সমভ‚মিতে নেমে আসে এবং পরে পশ্চিমবঙ্গের (ভারত) সমভ‚মিতে প্রবেশ করে। নদীটি নিলফামারী জেলার ডিমলা থানার খড়িবাড়ি সীমান্ত এলাকা দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। নদীটি লালমনিরহাট, রংপুর, কুড়িগ্রাম এবং গাইবান্ধা জেলার মধ্যদিয়ে প্রবাহিত হয়ে চিলমারী নদীবন্দরের দক্ষিণে ব্রহ্মপুত্র নদে পতিত হয়।
ঘ প্রশ্নোল্লেখিত উক্ত নদী বলতে তিস্তা নদীকে বুঝানো হয়েছে। তিস্তা নদীর অর্থনৈতিক গুরুত্ব স্থানীয়ভাবে এবং জাতীয় পর্যায়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল খরাপ্রবণ হওয়া সত্তে¡ও তিস্তা নদীর তীরবর্তী অঞ্চল ঘনবসতিপূর্ণ। এখানে নদী থেকে প্রাত্যাহিক ব্যবহার্য পানি পাওয়া নিশ্চিত করে। এছাড়া কৃষি কাজের জন্য পানির যোগানও পাওয়া যায়। জীবনধারণের জন্য এ নদীতে মাছ শিকারও গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করে। তিস্তা নদীর গুরুত্বের সর্বাধিক উল্লেখযোগ্য দিক হলো বর্তমানে তিস্তা বাঁধ থেকে রংপুর বগুড়া ও দিনাজপুর অঞ্চলের মানুষ জীবনধারণ, কৃষি, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা প্রভৃতি ক্ষেত্রে নানা সুবিধা ভোগ করছে। তিস্তা নদীর তীরবর্তী চিলমারী বন্দর দেশের অভ্যন্তরীণ বাণিজ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা রেখে চলেছে। তিস্তা নদীর কল্যাণে সর্বোপরি এখানে জনজীবন গতিশীল, অর্থনীতির চাকা সচল রয়েছে।
প্রশ্ন- ৩  পদ্মা নদী

একদল ছাত্র শিক্ষাসফরে বাংলাদেশের উত্তরে যায়। সেখানে তারা একটি বড় নদী দেখতে পায়। নদীটি হিমালয় হতে উৎপন্ন হয়ে দুটি নামে প্রবাহিত হয়েছে। কিন্তু যখন তারা জানতে পারল যে, নদীটির উত্তরে একটি বাঁধ দেয়ার কারণে দক্ষিণে শুষ্ক মৌসুমে চরম পানির সমস্যা দেখা দেয়ায় তারা সংক্ষুব্ধ হয়।
ক. বাংলাদেশের নৌপথের দৈর্ঘ্য কত? ১
খ. ব্রহ্মপুত্র নদ হতে একটি স্রোতধারা সৃষ্টি হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা কর। ২
গ. ছাত্রদের দেখা নদীটির গতিপথের বিবরণ দাও। ৩
ঘ. ‘বাংলাদেশের কোন কোন অঞ্চলের পানির সমস্যা উদ্দীপকের উল্লিখিত নদীটির সাথে সম্পর্কযুক্ত’- বিশ্লেষণ কর। ৪

ক বাংলাদেশের নৌপথের দৈর্ঘ্য প্রায় ৯,৮৩৩ কিলোমিটার।
খ তিব্বতের মানস সরোবরে ব্রহ্মপুত্র নদের উৎপত্তি হয়েছে। ১৭৮৭ সালের আগে ব্রহ্মপুত্রের প্রধান ধারাটি ময়মনসিংহের মধ্য দিয়ে উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে দক্ষিণ-পূর্ব দিকে আড়াআড়িভাবে প্রবাহিত হতো। কিন্তু ১৭৮৭ সালে সংঘটিত ভ‚মিকম্পে ব্রহ্মপুত্রের তলদেশে উত্থিত হওয়ায় পানি ধারণক্ষমতার বাইরে চলে যায় এবং নতুন স্রোতধারা সৃষ্টি হয়।
গ উদ্দীপকে ছাত্ররা দেশের উত্তরাঞ্চলের একটি বড় নদী অর্থাৎ পদ্মা নদী দেখে যা হিমালয় হতে উৎপত্তি হয়ে দুটি নামে প্রবাহিত হয়েছে। বাংলাদেশের পদ্মা নদী ভারতের উত্তরবঙ্গে গঙ্গা এবং বাংলাদেশে পদ্মা নামে পরিচিত। এর উৎপত্তিস্থল হিমালয়ের গাঙ্গোত্রী হিমবাহে। উত্তর ভারতের কয়েকটি রাজ্য অতিক্রম করে গঙ্গা বাংলাদেশের রাজশাহী জেলার মধ্য দিয়ে প্রবেশ করেছে। গোয়ালন্দের নিকট ব্রহ্মপুত্রের প্রধান ধারা যমুনার সঙ্গে মিলিত হয়েছে। চাঁদপুরে মেঘনার সঙ্গে পদ্মা নাম ধারণ করে মিলিত হয়েছে। বরিশাল ও নোয়াখালী হয়ে এই নদী বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়েছে। বাংলাদেশের অন্যতম বৃহত্তম নদী গঙ্গা-পদ্মা বিধৌত অঞ্চলের আয়তন ৩৪,১৮৮ বর্গ কি.মি.। পশ্চিম থেকে পূর্বে নিম্নগঙ্গায় অসংখ্য শাখা নদীর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, ভাগীরথী, হুগলি, মাথাভাঙ্গা, ইছামতি, ভৈরব, কুমার, কপোতাক্ষ, নবগঙ্গা চিত্রা মধুমতি, আড়িয়াল খাঁ ইত্যাদি।
ঘ বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের পানি সমস্যা উদ্দীপকে উল্লিখিত পদ্মা নদীর সাথে সম্পর্কযুক্ত। দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের জনজীবন অনেকাংশে পদ্মার পানির উপর নির্ভরশীল। এ অঞ্চলটি বর্তমানে পদ্মার অনিশ্চিত প্রবাহের কারণে মারাত্মক সমস্যার সম্মুখীন। বস্তুত বাংলাদেশের অনেক নদীর উৎপত্তিস্থল ভারতে। ভারতে বেশ কিছু নদীতে বাঁধ দেওয়ায় বাংলাদেশের নদীগুলোতে গ্রীষ্মকালে পানির প্রবাহ কমে গেছে। এক্ষেত্রে পদ্মা নদীর পানিপ্রবাহ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হওয়া সত্তে¡ও এর পানিপ্রবাহ চাহিদার তুলনায় নিতান্ত অপ্রতুল। ফারাক্কা বাঁধ এর জন্য প্রধানত দায়ী। অর্থাৎ ভারতের ফারাক্কা বাঁধ নির্মাণের ফলে দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে ভয়াবহ সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে। পদ্মাসহ উত্তরাঞ্চলের সব নদীতেই নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। বিশেষ করে শুষ্ক মৌসুমে পানির চরম সংকট দেখা দেয়। এর ফলে পরিবেশের ভারসাম্যের উপর পানির অপ্রতুলতার নানা ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। সুতরাং বলা যায়, পদ্মা নদীর সাথে দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের পানি সমস্যা সম্পর্কযুক্ত।
প্রশ্ন- ৪  অর্থনীতিতে নদীর গুরুত্ব

দশম শ্রেণির ছাত্রী সামিয়া পরীক্ষার পর তার বাবা মায়ের সাথে ময়মনসিংহে বেড়াতে যায়। সেখানে তারা একটি নদী দেখতে পায়, যার উৎপত্তিস্থল তিব্বতের মানস সরোবরে। নদীটি প্রাকৃতিক কারণে গতিপথ পরিবর্তন করে অন্য নাম ধারণ করে। এ নদীটি পরবর্তীতে চাঁদপুরের কাছে এসে অন্য একটি নদীর সাথে মিলিত হয়ে বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়েছে। এ নদীর মাধ্যমে ঐ এলাকার বহু মানুষ জীবিকা নির্বাহ করছে।
ক. বাংলাদেশের পদ্মা নদী ভারতে কী নামে পরিচিত? ১
খ. জলবিদ্যুৎ কী ব্যাখ্যা কর। ২
গ. উদ্দীপকের সামিয়ার দেখা নদীটির গতিপথ ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. উদ্দীপকের শেষোক্ত নদীটির সাথে ঐ এলাকার মানুষের অর্থনৈতিক জীবনের সম্পর্ক বিশ্লেষণ কর। ৪

ক বাংলাদেশের পদ্মা নদী ভারতে গঙ্গা নামে পরিচিত।
খ নদী ও জলপ্রপাতের পানির বেগ ব্যবহার করে টার্বাইন যন্ত্রের সাহায্যে যে বিদ্যুৎ উৎাদন করা হয় তাকে জলবিদ্যুৎ বলা হয়। এটি নবায়নযোগ্য শক্তি সম্পদ। বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামের কাপ্তাই নামক স্থানে কর্ণফুলী নদীতে নদীর গতিপথে বাঁধ দিয়ে পাকিন্তান আমলে প্রথম জল বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করা হয়। বর্তমান বিশ্বে তেল, গ্যাস বা পারমাণবিক চুল্লি ব্যবহারের মাধ্যমে যে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয় তার উৎপাদন খরচ অনেক বেশি। সেই তুলনায় জল বিদ্যুতের খরচ অনেক কম।
গ উদ্দীপকে সামিয়ার দেখা নদীটি হচ্ছে ব্রহ্মপুত্র। সামিয়া ময়মনসিংহে বেড়াতে গিয়ে একটি নদী দেখতে পায় যার উৎপত্তি তিব্বতের মানস সরোবর। তিব্বতের মানস সরোবরে ব্রহ্মপুত্র নদের উৎপত্তি হয়েছে। আসাম হয়ে বাংলাদেশের কুড়িগ্রাম জেলায় এটি প্রবেশ করেছে। ১৭৮৭ সালের আগে ব্রহ্মপুত্রের প্রধান ধারাটি ময়মনসিংহের মধ্য দিয়ে উত্তর-পশ্চিম দিকে থেকে দক্ষিণ-পূর্ব দিকে আড়াআড়িভাবে প্রবাহিত হতো। কিন্তু ১৭৮৭ সালে সংঘটিত ভূমিকম্পে ব্রহ্মপুত্রের তলদেশ উত্থিত হওয়ায় পানি ধারণ ক্ষমতার বাইরে চলে যায় এবং নতুন স্রোতধারার শাখা নদীর সৃষ্টি হয়। নতুন স্রোত ধারাটি যমুনা নামে পরিচিত হয়। এটি দক্ষিণে গোয়ালন্দ পর্যন্ত যমুনা নদী বলে পরিচিত। উদ্দীপকে এ তথ্যটিরও ইঙ্গিত রয়েছে। গঙ্গার সঙ্গে মিলিত হয়ে এ নদী পদ্মা নাম ধারণ করেছে। যমুনার শাখা নদী ধলেশ্বরী এবং ধলেশ্বরীর শাখা নদী বুড়িগঙ্গা। ধরলা, তিস্তা, করতোয়া, আত্রাই যমুনার উপনদী। গঙ্গার সঙ্গমস্থল পর্যন্ত ব্রহ্মপুত্রের দৈর্ঘ্য ২৮৯৭ কি.মি.।
ঘ উদ্দীপকের শেষোক্ত নদীটি হচ্ছে পদ্মা। ব্রহ্মপুত্র নদের নতুন স্রোতধারা চাঁদপুরে গোয়ালন্দের নিকট পদ্মা নদীর সাথে মিলিত হয়েছে। অর্থাৎ উদ্দীপকের শেষোক্ত নদী পদ্মা যার সাথে পদ্মা পাড়ের এলাকার মানুুষের অর্থনৈতিক জীবনের গভীর সম্পর্ক রয়েছে। পদ্মা নদী থেকে পদ্মা পাড়ের মানুষের প্রাত্যহিক ব্যবহার্য পানি পাওয়া নিশ্চিত হয়। এছাড়া কৃষি কাজের জন্যে পানির যোগানও এ নদী থেকে পাওয়া যায়। জীবনধারণের জন্য কৃষির পাশাপাশি মাছ শিকার ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত। পদ্মা পাড়ের মানুষের খাদ্য ও রোজগারের প্রধান উৎস হিসেবে ভূমিকা পালন করে পদ্মা নদী। পৃথিবীর সকল সভ্যতা ও জনবসতি গড়ে উঠার পিছনে নদ-নদীর ভূমিকা অতীব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। পরবর্তীকালে জীবন-জীবিকার উন্নতিতেও নদ-নদীকে মানুষ ব্যবহার করেছে। পানির কারণেই মানুষ নদীর কাছাকাছি বসতি স্থাপন, জীবিকা নির্বাহের উৎসের সন্ধান করেছে। ফলে মানুষের সঙ্গে নদীর সম্পর্ক অবিচ্ছেদ্য হয়ে উঠেছে। বর্তমানকালে এই সম্পর্ক আরও বহুমাত্রিক এবং নিবিড় হয়েছে। পদ্মার ক্ষেত্রেও তাই ঘটেছে। পদ্মা নদীকে কেন্দ্র করে সেখানকার মানুষ খাদ্যোৎপাদন, মাছ শিকার, পণ্য পরিবহন, ব্যবসা-বাণিজ্য ইত্যাদি গড়ে তোলার মাধ্যমে স্থায়ী বসতি হিসেবে গ্রাম এবং শহর গড়ে তুলেছে। নদী পানি সম্পদে পরিণত হয়েছে। জনসংখ্যার বিস্তার ঘটেছে। গড়ে উঠেছে নৌবন্দর, গঞ্জ ও শহর। যেমন- চাঁদপুর, আরিচা প্রভৃতি। সুতরাং উদ্দীপকের শেষোক্ত পদ্মা নদীটির সাথে ঐ এলাকার মানুষের অর্থনৈতিক জীবন অবিচ্ছেদ্য।

প্রশ্ন- ৫ ল্ফল্ফ পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা

বর্তমান সময়ে একটি সম্পদের বেশ সংকট তৈরি হয়েছে। সম্পদটি নিয়ে বিশেষ করে ব্যবস্থাপনার বিষয়ে ব্যাপক গবেষণা চলছে। সম্পদটি প্রকৃতিতে তরল ও বায়বীয় অবস্থায় আছে। পরিবেশ নিয়ে যারা চিন্তাভাবনা করছেন, তাদের চিন্তাভাবনায় উক্ত সম্পদটির প্রতি খুবই গুরুত্ব পরিলক্ষিত হচ্ছে।
ক. কোন নদীর গতিপথে বাঁধ দিয়ে জলবিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে? ১
খ. বাংলাদেশের ক্রান্তীয় পাতাঝরা বা পত্রপতনশীল অরণ্যের বর্ণনা দাও। ২
গ. উদ্দীপকে কোন সম্পদ ব্যবস্থাপনার কথা বলা হয়েছে? তা ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. “উক্ত সম্পদ রক্ষায় সম্পদটির সদ্ব্যবহারই যথেষ্ট”উক্তিটিতে তোমার মতামত দাও। ৪

ক কর্ণফুলি নদীর গতিপথে বাঁধ দিয়ে জলবিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে।
খ বাংলাদেশের ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, গাজীপুর, দিনাজপুর ও রংপুর জেলা পাতাঝরা অরণ্যের অঞ্চল। এই বনভ‚মিতে বছরের শীতকালে একবার গাছের পাতা সম্পূর্ণ রূপে ঝরে যায়। শাল বা গজারি ছাড়াও কড়ই, বহেরা, হিজল, শিরিষ, হরিতকি, কাঁঠাল, নিম ইত্যাদি গাছ জন্মে। এ বনভ‚মিতে শালগাছ প্রধান বৃক্ষ। তাই এ বনকে শালবন হিসেবেও অভিহিত করা হয়। ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল ও গাজীপুরে এ বনভ‚মি মধুপুর ভাওয়াল বনভ‚মি নামে পরিচিত। দিনাজপুর অঞ্চলে এটিকে বরেন্দ্র অঞ্চলের বনভ‚মি বলা হয়।
গ উদ্দীপকে পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনার কথা বলা হয়েছে। প্রকৃতিতে পানি তরল ও বায়বীয় অবস্থায় আছে। উদ্দীপকে এ তথ্যের ইঙ্গিত রয়েছে। মানুষসহ জীবজগতের অস্তিত্বের জন্যে পানির ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পানি তাই অত্যন্ত মূল্যবান সম্পদ। কৃষি ও শিল্পের বিকাশে পানির ব্যবহার অপরিহার্য। বৃষ্টি থেকে পর্যাপ্ত পানি পাওয়া গেলেও শীত এবং গ্রীষ্মকালে পানির অভাব হলে কৃষি, শিল্প ও জীবনযাপন সংকটাপন্ন হয়ে উঠে। সে কারণে সারা বছর পানির প্রাপ্তি, প্রবাহ ও বণ্টন নিশ্চিত করতে এই সম্পদের ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে হয়। পরিকল্পিত প্রাপ্যতা ও ব্যবহারকে পানির ব্যবস্থাপনা বলা হয়। সাধারণত কঠিন, তরল ও বাষ্পাকারে পানি থাকে। শীত ও শুষ্ক মৌসুমে পানির প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে নদ-নদী, খাল, পুকুর, হাওর ও বিলে পরিকল্পিতভাবে পানি ধরে রাখার ব্যবস্থা করার মাধ্যমে পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা করা যায়। আধুনিককালে পানি সম্পদকে মানুষের কল্যাণে ব্যয় করার জন্যে এর ব্যবস্থাপনার উপর সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়।
ঘ ‘পানি সম্পদ রক্ষায় সম্পদটির সদ্ব্যবহারই যথেষ্ট’ আমি এ উক্তিটি সম্পূর্ণভাবে সমর্থন করি না। মানুষসহ জীব জগতের অস্তিত্বের জন্য পানির ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পানি তাই আমাদের জন্য অত্যন্ত মূল্যবান সম্পদ। আর অন্যান্য সম্পদের মতো এরও সদ্ব্যবহার কাম্য। কিন্তু পানি সম্পদ সংরক্ষণে তা যথেষ্ট নয়। যেমন- আমাদের দেশে পানি সম্পদ সংরক্ষণে নদ-নদী, পুকুর, খাল, বিল, হাওড়, বাওড়, বন ও ভ‚মির পরিবেশ রক্ষা করতে হবে। বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে পরিকল্পিতভাবে কয়েকটি রিজার্ভার খনন করা গেলে পানি সম্পদ সংরক্ষণ করা যাবে। এদশের নদ-নদীগুলো পলি পড়ে ভরাট হয়ে যাচ্ছে। প্রায় প্রতি বছর দেশের বিভিন্ন অঞ্চল বন্যা কবলিত হয়ে পানি দুষিত হয়। এটি থেকে পরিত্রাণের জন্য প্রয়োজনীয় প্রতিরোধ ব্যবস্থা যেমন বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও বাঁধ নির্মাণের দিকে নজর দিতে হবে। অনেক নদী শুকিয়ে গেছে। এ সব নদ-নদীতে খনন সম্পাদন করলে পানির প্রবাহ এবং সংরক্ষণ সম্ভব হবে। বর্ষাকালে কোনো কোনো অঞ্চলে নদী ভাঙ্গনের ফলে নদীতে চর জাগে, নদী ভরাট হওয়ার উপক্রম হয়। দ্রæত ঐ সব ভাঙ্গন রোধ ও নদীতে ড্রেজিং সম্পন্ন করে পানির প্রাপ্যতা নিশ্চিত করার প্রতি সতর্ক দৃষ্টি দিতে হবে। কাজেই বলা যেতে পারে, পানি সম্পদ রক্ষায় পানির সদ্ব্যবহারই যথেষ্ট নয়, বরং প্রাকৃতিক ও সামজিক যেসব কারণে পানি সম্পদ নষ্ট হয় তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি।

প্রশ্ন- ৬ ল্ফল্ফ বাংলাদেশের নদীগুলোর গতিপথ ও প্রভাব

রহিম ঢাকা থেকে নদীপথে নানা বাড়ি কুষ্টিয়া যাচ্ছিল। কুষ্টিয়া যাওয়ার পথে লঞ্চটি ডুবোচরে আটকা পড়লে নদীবক্ষেই রাত কাটাতে বাধ্য হলো। কুষ্টিয়া গিয়ে দেখল এলাকার অনেক বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গিয়েছে।
ক. সিলেট অঞ্চলের বনভ‚মি কোন ধরনের? ১
খ. পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা বলতে কী বোঝায়? ২
গ. রহিমের ব্যবহৃত প্রধান নদীটির গতিপথ ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. “উদ্দীপকে বর্ণিত সমস্যা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের অন্তরায়”Ñ উক্তিটি বিশ্লেষণ কর। ৪

ক সিলেট অঞ্চলের বনভ‚মি ক্রান্তীয় চিরহরিৎ এবং পত্রপতনশীল বনভ‚মি।
খ পানির পরিকল্পিত প্রাপ্যতা ও ব্যবহারকে পানির সম্পদ ব্যবস্থাপনা বলা হয়। শীত ও শুষ্ক মৌসুমে পানির প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে নদনদী, খাল, পুকুর, হাওর ও বিলে পরিকল্পিতভাবে পানি ধরে রাখার ব্যবস্থা করার মাধ্যমে পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা করা যায়। বাংলাদেশে বৃষ্টি থেকে পর্যাপ্ত পানি পাওয়া গেলেও শীত এবং গ্রীষ্মকালে পানির অভাব হলে কৃষি, শিল্প ও জীবনযাপন সংকটাপন্ন হয়ে ওঠে। সে কারণে সারাবছর পানির প্রাপ্তি, প্রবাহ ও বণ্টননিশ্চিত করতে এই সম্পদের ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে হয়।
গ রহিমের ব্যবহৃত প্রধান নদীটি হচ্ছে পদ্মা। রহিম ঢাকা থেকে নদীপথে নানা বাড়ি কুষ্টিয়া যাচ্ছিল। কুষ্টিয়া যাওয়ার পথে লঞ্চটি ডুবোচরে আটকা পড়লে নদীবক্ষেই রাত কাটাতে বাধ্য হয়। কুষ্টিয়া গিয়ে সে দেখল, এলাকার অনেক বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গিয়েছে। এ থেকে বোঝা যায়, রহিমের ব্যবহৃত প্রধান নদীটি হলে পদ্মা। পদ্মা নদী ভারত ও ভারতের উত্তরবঙ্গে গঙ্গা এবং বাংলাদেশে পদ্মা নামে পরিচিত। এর উৎপত্তিস্থল মধ্য হিমালয়ের গাঙ্গোত্রী হিমবাহে। উত্তর ভারতে কয়েকটি রাজ্য অতিক্রম করে গঙ্গা বাংলাদেশের রাজশাহী জেলা দিয়ে প্রবেশ করেছে। গোয়ালন্দের কাছে ব্রহ্মপুত্রের প্রধান ধারা যমুনার সঙ্গে মিলিত হয়েছে। চাঁদপুরে মেঘনার সঙ্গে পদ্মা নাম ধারণ করে মিলিত হয়েছে। বরিশাল ও নোয়াখালি হয়ে এই নদী বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়েছে।
ঘ উদ্দীপকে বর্ণিত সমস্যা অর্থাৎ নদীভাঙন বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের অন্তরায়। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের অন্যতম অন্তরায় হচ্ছে প্রকৃতিসৃষ্ট প্রতিবন্ধকতা। আর এই প্রকৃতিসৃষ্ট প্রতিবন্ধকতার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে নদীভাঙন। উদ্দীপকে বর্ণিত হয়েছে, রহিম নদীপথে ঢাকা থেকে কুষ্টিয়া যায়। সেখানে গিয়ে সে দেখল, এলাকার অনেক বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গিয়েছে, যা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের অন্যতম অন্তরায়, প্রকৃতিসৃষ্ট প্রতিবন্ধকতার অন্তর্ভুক্ত নদীভাঙনকে নির্দেশ করে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ বাংলাদেশে একটি সাধারণ ঘটনা। বলা হয়, বাংলাদেশ একটি দুর্যোগকবলিত দেশ। প্রধান প্রধান প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যে রয়েছে বন্যা, খরা, জলোচ্ছ¡াস, ঘূর্ণিঝড়, টর্নেডো, নদীভাঙন। এই দুর্যোগগুলো প্রধানত দেশের কৃষিখাতকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। এছাড়া বাড়িঘর, পথঘাট ও গাছপালার ব্যাপক ক্ষতিসাধিত হয়। বিশেষত প্রতিবছর বন্যা ও নদীভাঙনে এদেশের সীমিত কৃষিজমির বিপুল পরিমাণ জমি নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। মানুষের প্রাণহানির পাশাপাশি গবাদিপশু, মৎস্য ও পাখি সম্পদেরও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি সাধিত হয়। এই ক্ষতিপূরণ দিয়েই প্রতিবছর আবার উৎপাদন কাজ শুরু করতে হয়। সুতরাং বলা যায় যে, নদীভাঙন বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের অন্তরায়।

প্রশ্ন- ৭ ল্ফল্ফ পদ্মা ও কর্ণফুলী নদী

ক. কোন অঞ্চলে সারাবছর প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়? ১
খ. ‘ক্রান্তীয় পাতাঝরা অরণ্য’ বুঝিয়ে লেখ। ২
গ. মানচিত্রে ‘অ’ চি‎িহ্নত নদীর গতিপথের বর্ণনা দাও। ৩
ঘ. ‘ই’ অঞ্চলে প্রবাহিত নদীটি অফুরন্ত শক্তির উৎস পাঠ্যবইয়ের আলোকে বিশ্লেষণ কর। ৪

ক উষ্ণ ও আর্দ্র জলবায়ু অঞ্চলে সারাবছর প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়।
খ বাংলাদেশের ময়মনসিংহ টাঙ্গাইল, গাজীপুর, দিনাজপুর ও রংপুর জেলা পাতাঝরা অরণ্যের অঞ্চল। এই বনভ‚মিতে শীতকালে একবার গাছের পাতা সম্পূর্ণরূপে ঝরে যায়। এ অরণ্যে শাল বা গজারি ছাড়াও কড়ই, বহেরা, হিজল, শিরিষ, হরীতকী, কাঁঠাল, নিম ইত্যাদি গাছ জন্মে। এ বনভ‚মিতে প্রধানত শালগাছ প্রধান বৃক্ষ। তাই এ বনকে শালবন হিসেবেও অভিহিত করা হয়। ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল ও গাজীপুরে এ বনভ‚মি মধুপুর ভাওয়াল বনভ‚মি নামে পরিচিত। দিনাজপুর অঞ্চলে এটিকে বরেন্দ্র অঞ্চলের বনভ‚মি বলা হয়।
গ মানচিত্রে ‘অ’ চি‎ি‎‎হ্নত নদীটি হলো বাংলাদেশের অন্যতম বৃহত্তম নদী পদ্মা। মানচিত্রে ‘অ’ চি‎ি‎‎হ্নত নদীর গতিপথ দেখে বোঝা যায়, নদীটি পদ্মা নদীর গতিপথকেই নির্দেশ করেছে। পদ্মা নদী ভারত ও ভারতের উত্তরবঙ্গে গঙ্গা এবং বাংলাদেশে পদ্মা নামে পরিচিত। এর উৎপত্তিস্থল মধ্য হিমালয়ের গাঙ্গোত্রী হিমবাহে। উত্তর ভারতের কয়েকটি রাজ্য অতিক্রম করে গঙ্গা বাংলাদেশের রাজশাহী জেলা দিয়ে প্রবেশ করেছে। গোয়ালন্দের নিকট ব্র‏হ্মপুত্রের প্রধান ধারা যমুনার সঙ্গে মিলিত হয়েছে। চাঁদপুরে মেঘনার সঙ্গে পদ্মা নাম ধারণ করে মিলিত হয়েছে। বরিশাল ও নোয়াখালি হয়ে এই নদী বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়েছে। বাংলাদেশের অন্যতম বৃহত্তম নদী গঙ্গা-পদ্মা বিধৌত অঞ্চলের আয়তন ৩৪,১৮৮ বর্গকিলোমিটার। পশ্চিম থেকে পূর্বে নিম্নগঙ্গায় অসংখ্য শাখা নদীর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, ভাগীরথী, হুগলি, মাথাভাঙ্গা, ইছামতী, ভৈরব, কুমার, কপোতাক্ষ, নবগঙ্গা, চিত্রা, মধুমতী, আড়িয়াল খাঁ ইত্যাদি।
ঘ মানচিত্রে উল্লিখিত ‘ই’ অঞ্চলে প্রবাহিত নদীটি অফুরন্ত শক্তির উৎস।
‘ই’ অঞ্চলে প্রবাহিত নদীর গতিপথ বাংলাদেশের দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলের নদীর গতিপথকে নির্দেশ করেছে, যা কর্ণফুলী নদীর গতিপথের সাথে মিলে যায়। নদীটির উৎপত্তিস্থল লুসাই পাহাড়। বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামের কাপ্তাই নামক স্থানে কর্ণফুলী নদী গতিপথে বাঁধ দিয়ে পাকিস্তান আমলে প্রথম জলবিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করা হয়।নদী ও জলপ্রপাতের পানি ব্যবহার করে টার্বাইন যন্ত্রের সাহায্যে যে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয় তাকে জলবিদ্যুৎ বলা হয়। এটি নবায়নযোগ্য শক্তি সম্পদ। সবচেয়ে কম খরচে এই বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায়। বর্তমান বিশ্বে তেল, গ্যাস বা পারমাণবিক চুল্লি ব্যবহারের মাধ্যমে যে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয় তার উৎপাদন খরচ অনেক বেশি। সেই তুলনায় জলবিদ্যুতের খরচ অনেক কম। সে কারণে দেশের নদীর পানি সম্পদ ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি করা বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য লাভজনক। সুতরাং বলা যায়, ‘ই’ অঞ্চলে প্রবাহিত কর্ণফুলী নদীটি অফুরন্ত শক্তির উৎস।
 অতিরিক্ত সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন- ৮  পদ্মা নদী গুরত্ব

রনি গত বর্ষা মৌসুমে গ্রামে তার দাদুর বাড়ি যাওয়ার সময় একটি নদীর উপর দিয়ে লঞ্চে চড়ে ভ্রমণ করে। সে নদীটি সম্পর্কে জানতে চাইলে তার বাবা বলেন নদীটির দুটি নাম। এর উৎপত্তিস্থল হিমালয়ে এবং পতিত হয়েছে বঙ্গোপসাগরে। এটি দেশের অন্যতম বৃহত্তম নদী। নবগঙ্গা, চিত্রা, মধুমতী নামগুলো এ নদীর সাথে জড়িত।
ক. নাফ নদীর দৈর্ঘ্য কত? ১
খ. লবণাক্ততা কীভাবে দূর করা যায়? ব্যাখ্যা কর। ২
গ. রনির বাবার বর্ণনায় পাঠ্যবইয়ের যে নদীর প্রতিচ্ছবি প্রকাশিত হয়েছে তার বর্ণনা দাও। ৩
ঘ. উদ্দীপকের নদীটি আমাদের দেশের অন্যতম প্রধান সম্পদ বুঝিয়ে বল। ৪

ক নাফ নদীর দৈর্ঘ্য ৫৬ কিলোমিটার।
খ দক্ষিণাঞ্চলের বেশ কিছু এলাকায় লাল মাটির কারণে মাটি লবণাক্ত হয়ে পড়েছে। ফলে সেসব এলাকায় চাষাবাদ করা সম্ভব হচ্ছে না। মাটির উপর পাতলা আবরণ পড়ে ফসল উৎপাদন নষ্ট করে দিচ্ছে। তাই লবণাক্ততা দূর করার জন্য পদক্ষেপ নিতে হবে। এসব এলাকায় মিঠাপানির সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার জন্য বিভিন্ন ধরনের বাঁধ দিতে হবে। বাঁধ দেওয়ার মাধ্যমে ফসল উৎপাদন করা যাবে। এর মাধ্যমেই খাদ্য নিরাপত্তা জোরদার করা সম্ভব হবে।
গ রনির বাবার বর্ণনায় বাংলাদেশের গঙ্গা-পদ্মা নদীর প্রতিচ্ছবি প্রকাশিত হয়েছে। উদ্দীপকে রনির বর্ণনা থেকে জানা যায়, নদীটির দুটি নাম। উৎপত্তিস্থল হিমালয়ে এবং পতিত হয়েছে বঙ্গোপসাগরে। এটি দেশের বৃহত্তম নদী এবং নবডাঙ্গা, চিত্রা মধুমতী নামগুলো এ নদীর সাথে জড়িত। এ বৈশিষ্ট্যের সাথে বাংলাদেশের পদ্মা নদীর মিল রয়েছে। ভারত ও ভারতের উত্তরবঙ্গে এর নাম গঙ্গা, বাংলাদেশে পদ্মা নামে পরিচিত। এর উৎপত্তিস্থল মধ্য হিমালয়ের গাঙ্গোত্রী হিমবাহে উত্তর ভারতের কয়েকটি রাজ্য অতিক্রম করে গঙ্গা বাংলাদেশের রাজশাহী জেলা দিয়ে প্রবেশ করেছে। গোয়ালন্দের নিকট ব্র‏‏হ্মপুত্রের প্রধান ধারা যমুনার সঙ্গে মিলিত হয়েছে। বরিশাল ও নোয়াখালী হয়ে এ নদী বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়েছে। বাংলাদেশের অন্যতম বৃহত্তম নদী গঙ্গা-পদ্মা বিধৌত অঞ্চলের গোয়ালন্দের নিকট ব্র‏‏হ্মপুত্রের প্রধান ধারা যমুনার সঙ্গে মিলিত হয়েছে। বরিশাল ও নোয়াখালী হয়ে এ নদী বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়েছে। বাংলাদেশের অন্যতম বৃহত্তম নদী গঙ্গা-পদ্মা বিধৌত আয়তন ৩৪,১৮৮ বর্গকিলোমিটার পশ্চিম থেকে পূর্বে প্রবাহিত নিম্ন গঙ্গায় অসংখ্য শাখা নদীর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- ভাগীরথী, হুগলি, মাথাভাঙা, ইছামতি, ভৈরব, কুমার, কপোতাক্ষ, নবগঙ্গা, চিত্রা, মধুমতি, আড়িয়াল খাঁ ইত্যাদি।
ঘ বাংলাদেশে উদ্দীপকের নদীটি হলো গঙ্গা-পদ্মা যা আমাদের দেশের অন্যতম প্রধান সম্পদ। এই নদীকে কেন্দ্র করে মানুষ খাদ্যোৎপাদন, মাছ শিকার, পণ্য পরিবহন, ব্যবসা ইত্যাদি গড়ে তোলার মাধ্যমে স্থায়ী বসতি গড়ে তুলেছে। এ নদীর পানি সম্পদে পরিণত হওয়ায় এর তীরবর্তী অঞ্চলে জনসংখ্যার বিস্তার ঘটেছে ব্যাপক হারে। শিল্প-কারখানা প্রতিষ্ঠাতেও এ নদীর রয়েছে- নানামুখী ব্যবহার। এখন আধুনিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ করার জন্য আধুনিক সেচ প্রকল্প গড়ে তোলার ক্ষেত্রে এ নদী বিশেষভাবে বিবেচিত হয়ে থাকে। যেমন : গঙ্গা-কপোতাক্ষ পরিকল্পনা থেকে দেশের কুষ্টিয়া, যশোর ও খুলনা জেলার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে কৃষিজমিতে পানি সেচের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এতে ঐ অঞ্চলের মানুষ কৃষি উৎপাদনে লাভবান হওয়ার পাশাপাশি দেশের কৃষি অর্থনীতি দিন দিন উন্নত হচ্ছে। বাংলাদেশের মানুষের অর্থনৈতিক জীবন ব্যবস্থা উন্নত করা, সুস্বাস্থ্য রক্ষা করা, নির্মল বায়ু ও শহরগুলোর পানি ব্যবস্থা করাসহ জনজীবনকে গতিশীল রাখার ক্ষেত্রে এ নদীর ভ‚মিকা দিন দিন বেড়েই চলছে। আবার যেখানে এ নদীর পানি শুকিয়ে যাচ্ছে সেখানে ফসলের ক্ষতি হচ্ছে, জনজীবন পড়ছে হুমকির মুখে।

প্রশ্ন- ৯ ল্ফল্ফ ব্রহ্মপুত্র নদী

কুড়িগ্রামের বৃদ্ধ হাসমত নারায়ণগঞ্জে রিকশা চালান। তিনি তার শৈশবের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেন, তিব্বতের মানস সরোবর থেকে যে নদের উৎপত্তি হয়েছে সে নদে আমরা ছোটবেলায় নৌকা চালাতাম, মাছ ধরতাম, আর ওই নদের তীরেই আমাদের বাড়ি। অনেক দিন হলো বাড়ি যাই না, আমার চিরচেনা নদের মুখ আর দেখতে পাই না। অথচ এই নদকে কেন্দ্র করেই আমাদের গ্রামটি গড়ে উঠেছিল।
ক. ভারতের গঙগা নদী বাংলাদেশে কী নামে পরিচিত? ১
খ. ‘কর্ণফুলী বাংলাদেশের দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলের প্রধান নদী’- ব্যাখ্যা কর। ২
গ. রিকশাচালক হাসমত যে নদের কথা বলেছেন পাঠ্যপুস্তকের আলোকে তার ব্যাখ্যা দাও। ৩
ঘ. তুমি কি মনে কর হাসমতের বাড়ির মতো অন্যান্য জনবসতির সাথে রয়েছে নদনদীর সম্পর্ক? মতামতের পক্ষে যুক্তি দাও। ৪

ক ভারতের গঙগা নদী বাংলাদেশে পদ্মা নামে পরিচিত।
খ বাংলাদেশের দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলের প্রধান নদী কর্ণফুলি। ৩২০ কি.মি. দৈর্ঘ্যরে এই নদীটি চট্টগ্রাম শহরের খুব কাছ দিয়ে বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়েছে। বাংলাদেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর কর্ণফুলী নদীর তীরে অবস্থিত। এই নদীতে রয়েছে কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র।
গ রিকশাচালক হাসমত যে নদের কথা বলেছেন, তাতে বাংলাদেশের অন্যতম নদ ব্র‏হ্মপুত্রের প্রতিচ্ছবি প্রকাশিত হয়েছে। রিকশাচালক হাসমতের শৈশবের স্মৃতিচারণা থেকে জানা যায়, তিব্বতের মানস সরোবর থেকে নদটির উৎপত্তি হয়েছে। ঐ নদেই তিনি নৌকা চালাতেন, মাছ ধরতেন, আর তার গ্রামের বাড়ি কুড়িগ্রাম এ নদকে কেন্দ্র করেই গঠিত হয়েছিল। তার স্মৃতিচরিত নদের সাথে সাদৃশ্য পাওয়া যায় ব্র‏হ্মপুত্র নদের। এ ব্র‏হ্মপুত্র নদের উৎপত্তি হয়েছে তিব্বতের মানস সরোবরে। আসাম হয়ে বাংলাদেশের কুড়িগ্রাম জেলায় এটি প্রবেশ করেছে। ১৯৮৭ সালের আগে ব্রহ্মপুত্রের প্রধান ধারাটি ময়মনসিংহের মধ্য দিয়ে উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে দক্ষিণ-পূর্ব দিকে আড়াআড়িভাবে প্রবাহিত হতো। কিন্তু ১৯৮৭ সালে সংঘটিত ভ‚মিকম্পে ব্র‏হ্মপুত্রের তলদেশ উত্থিত হওয়ায় পানি ধারণক্ষমতার বাইরে চলে যায় এবং নতুন স্রোতধারার শাখা নদীর সৃষ্টি হয়। নতুন স্রোতধারাটি যমুনা নামে পরিচিত হয়। এটি দক্ষিণে গোয়ালন্দ পর্যন্ত যমুনা নদী বলে পরিচিত গঙ্গার সঙ্গে মিলিত হয়ে পদ্মা নাম ধারণ করেছে। যমুনার শাখা নদী ধলেশ্বরী। করতোয়া, আত্রাই, যমুনার উপনদী। গঙ্গার সঙ্গমস্থল পর্যন্ত ব্রহ্মপুত্রের দৈর্ঘ্য ২৮৯৭ কি.মি. এবং অববাহিকার আয়তন ৫,৮০,১৬০ বর্গকিলোমিটার। এর ৪৪,০৩০ বর্গকিলোমিটার বাংলাদেশে অবস্থিত।
ঘ ‘হ্যাঁ’ আমি মনে করি রিকশাচালক হাসমতের বাড়ির মতো অন্যান্য জনবসতির সাথে নদনদীর সম্পর্ক রয়েছে। হাসমতের স্মৃতিচারণা থেকে জানা যায়, তাদের গ্রামটি একটি নদকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছিল, যে নদের জন্ম তিব্বতের মানস সরোবর থেকে। হাসমতের গ্রামের মতো এরকম অনেক গ্রাম গড়ে উঠেছিল নদনদীকে কেন্দ্র করে। বাংলাদেশের নদনদী ও জনবসতির পারস্পরিক সম্পর্ক খুবই ঘনিষ্ঠ। প্রাচীন যুগ থেকেই মানুষ নদনদীর তীরবর্তী সমতল ভ‚মিতে বসবাস শুরু করে। কেননা, নদনদী থেকে মানুষের প্রাত্যহিক ব্যবহার্য পানি পাওয়া নিশ্চিত থাকে। এছাড়া কৃষিকাজের জন্য পানির যোগানও নদী থেকে দেওয়া সম্ভব হয়। জীবনধারণের জন্য কৃষির পাশাপাশি মাছ শিকার ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত। নদনদীই মানুষের খাদ্য ও রোজগারের প্রধান উৎস হিসেবে ভ‚মিকা পালন করে। পৃথিবীর সব সভ্যতা ও জনবসতি গড়ে ওঠার পেছনে নদীনদীর ভ‚মিকা অতীব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। পরে জীবন-জীবিকার উন্নতিতেও নদনদীকে মানুষ ব্যবহার করেছে। পানির কারণেই মানুষ নদীর কাছাকাছি বসতি স্থাপন, জীবিকা নির্বাহের উৎসের সন্ধান করেছে। ফলে মানুষের সঙ্গে নদীর সম্পর্ক অবিচ্ছেদ্য হয়ে উঠেছে। বর্তমানকালে এই সম্পর্ক আরও বহুমাত্রিক এবং নিবিড় হয়েছে। অর্থাৎ বাংলাদেশের নদনদী ও জনবসতির পারস্পরিক সম্পর্ক খুবই ঘনিষ্ঠ।

প্রশ্ন- ১০ ল্ফল্ফ অর্থনীতিতে জলপথের গুরুত্ব

আফরোজা আক্তার তার হাতে বোনা নকশিকাঁথা বিদেশে স্থল ও আকাশ পথে রপ্তানি করেন। মাঝে মধ্যে তিনি ভাবেন, যদি এ পণ্যগুলো খরচ বেড়ে যাওয়ার কারণে বিদেশে রপ্তানি করতে না পারি তবে আমার দেশের ঐতিহ্য বিদেশে কেমন করে পাঠাব। জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধিতে তার মাথায় চিন্তাটি আরো বেশি প্রকট হয়ে ওঠে। তিনি অন্যান্য ব্যবসায়ীদের সাথে জলপথের নানা বিষয়ে কথা বলা শুরু করেন।
ক. বাংলাদেশের নদনদীগুলো কেমন পথে চলেছে? ১
খ. “বাংলাদেশে অনেক প্রাকৃতিক সম্পদ রয়েছে” ব্যাখ্যা কর। ২
গ. আফরোজা আক্তারের ব্যবসাটির সাথে জলপথের সম্পর্ক ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. “আফরোজা আক্তারের ভাবনাটি একদিন তার ও দেশের কাজে আসবে” তোমার মতামত আলোচনা কর। ৪

ক বাংলাদেশের নদ-নদীগুলো আঁকাবাঁকা পথে চলেছে।
খ আমাদের দেশে অনেক প্রাকৃতিক সম্পদ রয়েছে। প্রকৃতি প্রদত্ত সম্পদই হলো প্রাকৃতিক সম্পদ। মৃত্তিকা, জলবায়ু, খনিজ সম্পদ, মৎস্য, বনভ‚মি, পাহাড়, পর্বত, নদ-নদী, সাগর-হ্রদ ও জলাশয় প্রভৃতি প্রাকৃতিক সম্পদের অন্তর্ভুক্ত। এই সম্পদ আহরণ, ব্যবহার ও সংরক্ষণের ওপর বাংলাদেশের জনগণের ইতিহাস ও ঐতিহ্য গড়ে উঠেছে।
গ আফরোজা আক্তারের ব্যবসাটির সাথে জলপথের যে সম্পর্ক তা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আগেকার যুগে তেমন কোনো জাহাজ না থাকলেও এখন বহুমুখী পণ্যবাহী জাহাজের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। পরিবহন ও যাতায়াত খরচ খুবই কম বলে এ পথে এখন প্রচুর মালামাল পরিবহন করা হয়। বর্ষাকালে বিভিন্ন অঞ্চলে বন্যা দেখা দিলে জলপথই সেসব অঞ্চল দিয়ে বাণিজ্য পরিচালনার একমাত্র অবলম্বন হয়ে দাঁড়ায়। সকল প্রকার অস্থিতিশীলতার মধ্যেও নির্বিঘেœ জাহাজ তথা জলপথে পণ্য পরিবহন করা যায়। কৃষি, শিল্প ও মৎস্য সম্পদের বিকাশ ঘটিয়ে রপ্তানি আয় বৃদ্ধি করতে এই পথের কোনো বিকল্প নেই। অন্য যেকোনো পরিবহনের তুলনায় জলপথে ভারী বস্তু একস্থান থেকে অন্যস্থানে অতি সহজে স্থানান্তরিত করা যায়। বন্যা, জলোচ্ছ¡াস, ঘূর্ণিঝড়, অভ্যন্তরীণ গোলযোগ, জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি বা বহিঃশত্রæর আক্রমণে সড়ক ও রেলপথ অতি সহজে বিনষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু জলপথ এদিক থেকে নিরাপদ। উপরিউক্ত আলোচনা থেকে বোঝা যায়, ব্যবসাটির সাথে জলপথের সম্পর্ক অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
ঘ আমার মতামত অনুযায়ী আফরোজা আক্তারের রপ্তানি বাণিজ্যে জলপথ ব্যবহারের সর্বশেষ ভাবনাটি একদিন তার কাজে আসবে। আফরোজা আক্তার নকশি কাঁথা রপ্তানি করে দেশের অর্থনীতিতে ব্যাপক ভ‚মিকা পালন করছেন। কিন্তু বিশ্বব্যাপী জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। সে সাথে বৃদ্ধি পাচ্ছে আনুষঙ্গিক খরচের পরিমাণও। এতে স্থলে ও আকাশপথের পণ্য পরিবহন ব্যয় বৃদ্ধি পাচ্ছে। ব্যবসায়-বাণিজ্য পড়ছে হুমকির মুখে। রেলপথ, স্থলপথ ও আকাশপথে ভারী পণ্য বহন করতে অনেক অসুবিধাও হয়। পক্ষান্তরে জলপথে ভারী পণ্য সহজে ও সুলভে বহন করা যায় এবং এর রক্ষণাবেক্ষণের খরচও অনেক কম। রাস্তা ও রেলপথ যেমন ব্যয়বহুল তেমনি রক্ষণাবেক্ষণের খরচও যথেষ্ট। এ কারণে অন্য কোনো পরিবহন-ব্যবস্থা অপেক্ষা জলপথ আর্থিকভাবে লাভজনক। বর্ষাকালে বন্যা দেখা দিলে বিভিন্ন অঞ্চলের রাস্তাঘাট পানিতে ডুবে যায়। সে সময় জলপথই পণ্য পরিবহন ও চলাচলের একমাত্র অবলম্বন হয়ে দাঁড়ায়। জলোচ্ছ¡াস, ঘূর্ণিঝড়, অভ্যন্তরীণ গোলযোগ কিংবা বহিঃশত্রæর আক্রমণে সড়ক ও রেলপথ অতি সহজে বিনষ্ট হয়ে যোগাযোগ অচল হয়ে যেতে পারে। কিন্তু জলপথ এদিক থেকে নিরাপদ। সকল প্রকার অস্থিতিশীলতার মধ্যেও এ পথে নির্বিঘেœ জাহাজ ও নৌযানযোগে ব্যবসায়-বাণিজ্য পরিচালনা করা যায়। অতএব, এটি নিশ্চিত করে বলা যায় আফরোজা আক্তারের ভাবনাটি একদিন তার ও আমাদের দেশের কাজে আসবে।
প্রশ্ন- ১১ ল্ফল্ফ জলবিদ্যুৎ

নবীন শেরপা একজন নেপালি পর্যটক। তিনি পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ঘুরে বেড়ান। তিনি লক্ষ করেছেন, যেসব দেশে পাহাড়ি নদী রয়েছে সেসব দেশে বিদ্যুৎ সংকট খুবই কম। এছাড়াও নদীমাতৃক দেশগুলোতে স্বল্প খরচে ব্যবসায় পরিচালনা করা সম্ভব। তিনি মনে করেন নদীগুলো প্রত্যেক দেশের জন্যই আশীর্বাদস্বরূপ।
ক. বাংলাদেশে মোট কত বর্গকিলোমিটার স্রোতজ বা গরান বনভ‚মি রয়েছে? ১
খ. নদীর নাব্য ফিরিয়ে এনে পানির সংকট দূর করা যায় Ñ কথাটি বুঝিয়ে বল। ২
গ. নবীন শেরপার বর্ণনা মতে পাহাড়ি নদী কীভাবে বিদ্যুৎ সমস্যা সমাধানে সক্ষমÑ ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. তুমি কি নবীন শেরপার স্বল্প খরচে ব্যবসায়ের যুক্তিটির সাথে এক মত? উত্তরের পক্ষে যুক্তি দাও। ৪

ক বাংলাদেশে মোট ৪,১৯২ বর্গকিলোমিটার স্রোতজ বা গরান বনভ‚মি রয়েছে।
খ বাংলাদেশের নদীগুলোতে চর পড়েছে, নদীর তলদেশে পলি জমে তলদেশ ভরাট হয়ে গেছে। এতে নদীর স্রোত প্রবাহ কমে গেছে। প্রয়োজনে পানি পাওয়া যায় না। এতে নদীর নাব্য ফিরিয়ে এনে আমরা পানির এ সংকট দূর করতে পারি। তার জন্য প্রয়োজন নদীর তলদেশ খনন, অপরিকল্পিতভাবে যেখানে সেখানে ব্রিজ বা কালভার্ট না বানানো ইত্যাদি।
গ নবীন শেরপার বর্ণনা মতে পাহাড়ি নদীর জলপ্রপাতের স্রোতকে কাজে লাগিয়ে উৎপন্ন জলবিদ্যুৎ বিদ্যুৎ সমস্যা সমাধানে সক্ষম। পাহাড়ি নদীর পাহাড়গুলোতে যদি জলপ্রপাত থাকে এবং নদীতেও যদি যথেষ্ট পরিমাণ স্রোত থাকে তবে এসব পাহাড়ি নদী বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহার করা যায়। এভাবে উৎপন্ন জলবিদ্যুৎ মূলত নবায়নযোগ্য শক্তি সম্পদ। বর্তমান বিশ্বে তেল, গ্যাস বা পারমাণবিক চুল্লি ব্যবহারের মাধ্যমে যে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয় তা একবার ব্যবহার করলেই জ্বালানি নিঃশেষ হয়ে যায়। তাই এভাবে যে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয় তার খরচ অনেক বেশি। জ্বালানি খরচ না থাকায় জলবিদ্যুতের খরচ সে তুলনায় অনেক কম। নবায়নযোগ্য হওয়ায় এ বিদ্যুতের উৎপাদনের পরিমাণও হয় অনেক। নদী ও জলপ্রপাতের পানির বেগ ব্যবহার করে নদীর গতিপথে বাঁধ দিয়ে টার্বাইন যন্ত্রের সাহায্যে উৎপাদন করা হয় এই জলবিদ্যুৎ। এভাবে পাহাড়ি নদী থেকে স্বল্প খরচে অধিক পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদন করে সমস্যা সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে বলে নবীন শেরপা বর্ণনা করেন।
ঘ হ্যাঁ, নবীন শেরপার নদীপথ ব্যবহার করে স্বল্প খরচে ব্যবসায়ের যুক্তিটির সাথে আমি একমত। নদীপথে কিছু সংরক্ষণ ব্যয় ছাড়া তেমন কোনো নির্মাণ খরচ না থাকায় এ পথে স্বল্প খরচে ব্যবসায়-বাণিজ্যের পণ্যদ্রব্য পরিবহন করা হয়। বর্ষাকালে যেসব অঞ্চলে বন্যা দেখা দেয় সেসব অঞ্চলে ব্যয়বহুল ও অসুবিধাজনক। এছাড়া নদীপথে সহজে অনেক ভারী ভারী পণ্যসামগ্রী পরিবহন করা যায় বলে ব্যবসায়-বাণিজ্য খুবই লাভজনক। আধুনিক বিশ্বের চালিকাশক্তি হলো বিদ্যুৎ। জলবিদ্যুৎ নবায়নযোগ্য এবং উৎপাদন খরচ খুবই কম। ফলে নদীমাতৃক যেসব দেশে জলবিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায় সেসব দেশে স্বল্প দামে অধিক বিদ্যুৎ সুবিধা পাওয়া যায়। এটি ব্যবসায়-বাণিজ্য প্রসারের অন্যতম সহায়ক। বন্যা, জলোচ্ছ¡াস, ঘূর্ণিঝড়, অভ্যন্তরীণ গোলযোগ কিংবা বহিঃশত্রæর আক্রমণে স্থলপথ সহজে নষ্ট হয়ে যোগাযোগ অচল হয়ে যেতে পারে। কিন্তু নদীপথ এদিক থেকে নিরাপদ। এটি সহজে নষ্ট হওয়ার নয় বলে ব্যবসায়-বাণিজ্য প্রসারে নদীগুলো প্রত্যেক দেশের জন্যই আশীর্বাদস্বরূপ।
 অনুশীলনমূলক কাজের আলোকে সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন- ১২  প্রাকৃতিক সম্পদের গুরুত্ব
বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বিভিন্ন ধরনের সম্পদের গুরুত্ব বিষয়ক চিত্র প্রদর্শনীতে পদ্মায় রুপালি ইলিশ ধরার ছবি প্রথম স্থান পায়। দ্বিতীয় স্থান পায় সবুজ ফসলের মাঠ, আর তৃতীয় স্থানে রয়েছে স¤প্রতি আবিষ্কৃত হওয়া গ্যাস ক্ষেত্র।
ক. বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে কোন সম্পদের গুরুত্ব অপরিসীম? ১
খ. পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা কী? ব্যাখ্যা কর। ২
গ. প্রদর্শনীয় ছবিগুলোতে কোন ধরনের সম্পদের চিত্র ফুটে উঠেছে? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. ‘বাংলাদেশের অর্থনীতিতে উক্ত সম্পদের ভ‚মিকা অনেক’ উক্তিটি বিশ্লেষণ কর। ৪

ক বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে প্রাকৃতিক সম্পদের গুরুত্ব অপরিসীম।
খ পানি অত্যন্ত মূল্যবান সম্পদ। মানুষসহ জীবজগতের অস্তিত্বের জন্য পানির ভ‚মিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কৃষি ও শিল্পের বিকাশেও পানির ব্যবহার অপরিহার্য। বৃষ্টি থেকে পর্যাপ্ত পানি পাওয়া গেলেও শীত ও গ্রীষ্মকালে পানির অভাব হলে কৃষি, শিল্প ও জীবনযাপন সংকটাপন্ন হয়ে ওঠে। সে কারণে সারাবছর পানির প্রাপ্তি, প্রবাহ ও বণ্টন নিশ্চিত করতে এই সম্পদের ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে হয়। পরিকল্পিত প্রাপ্যতা ও ব্যবহারকে পানির ব্যবস্থাপনা বলা হয়।
গ উদ্দীপকে উল্লিখিত পুরস্কারপ্রাপ্ত ছবিগুলোতে প্রাকৃতিক সম্পদের চিত্র ফুটে উঠেছে। উদ্দীপকে উল্লিখিত ছবিগুলো হলো পদ্মায় রুপালি ইলিশ ধরা, সবুজ ফসলের মাঠ এবং গ্যাস ক্ষেত্র, যা আমাদের প্রাকৃতিক সম্পদকেই নির্দেশ করে। প্রকৃতি থেকে প্রাপ্ত সম্পদকে প্রাকৃতিক সম্পদ (ঘধঃঁৎধষ জবংড়ঁৎপব) বলে। যেমন : মাটি, পানি, বনভ‚মি, সৌরতাপ, মৎস্য, খনিজ ইত্যাদি প্রাকৃতিক সম্পদ। ইলিশ, রপ্তানি, গ্যাসের মজুদ ও কৃষি সম্পদ বাংলাদেশের জন্য বিশেষ আশীর্বাদ। মৎস্য সম্পদের সাথে সরাসরি ভ‚প্রকৃতি ও জলবায়ুর সম্পর্ক রয়েছে। বাংলাদেশে বৃষ্টিপাত নদী-নদীতে পানি প্রবাহ, খাল, বিল, হাওর, পুকুর ইত্যাদিতে পানি থাকায় মৎস্য সম্পদে সমৃদ্ধ দেশ বলে পরিচিত। এখানে ছোট বড় নানা ধরনের মাছ পাওয়া যায়। রুপালি ইলিশ দেশের চাহিদা পূরণ করে এবং বিদেশে রপ্তানি করে অর্থনৈতিক উন্নয়ন সাধিত হচ্ছে। কৃষি প্রধান দেশ হিসেবে বাংলাদেশে ধান, আলু ও পাটের ব্যাপক উৎপাদন হয়। বাংলাদেশের নদী বিধৌত উর্বর অঞ্চলে ধান, গমসহ কৃষিজ পণ্য কয়েকবার উৎপাদন করা সম্ভব হয়। বাংলাদেশে সা¤প্রতিক সময়ে গ্যাসের সন্ধান পাওয়া গেছে, আর এ সম্পদ আহরণ করে দেশের চাহিদা মেটানো হচ্ছে। সুতরাং বলা যায়, উদ্দীপককে প্রাকৃতিক সম্পদের চিত্র ফুটে উঠেছে।
ঘ ‘বাংলাদেশের অর্থনীতিতে প্রাকৃতিক সম্পদের ভ‚মিকা অনেক।’ বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে প্রাকৃতিক সম্পদ যেমন কৃষি, বনজ, মৎস্য, খনিজ ও পানি ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা রাখছে। এ সম্পদকে যথাযথভাবে ব্যবহার করে দারিদ্র্য দূরীকরণ, খাদ্য নিরাপত্তা বিধান এবং উন্নত জীবনমান নিশ্চিত করা সম্ভব। উদ্দীপকে উল্লিখিত প্রাকৃতিক সম্পদ মৎস্য, কৃষিজ এবং গ্যাস, যা অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথ ত্বরান্বিত করবে। বাংলাদেশের মাটি আমাদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। এ মাটির সর্বোচ্চ ব্যবহার করে আমাদের কৃষিজ ফসল, ফুল, বনজ সম্পদের প্রসার ঘটাতে পারি। এ দেশে ধান, আলু ও পাটের ব্যাপক উৎপাদন হয়। দেশের নদী বিধৌত উর্বর অঞ্চলে ফসল ফলিয়ে দেশের মানুষের পুষ্টির চাহিদা পূরণ করে, বিদেশে রপ্তানি করা যেতে পারে। বাংলাদেশে বৃষ্টিপাত, নদ-নদীতে পানি প্রবাহ, খালবিল, হাওর, পুকুর ইত্যাদিতে পানি থাকায় মৎস্য সম্পদে সমৃদ্ধ দেশ বলে পরিচিত। রুপালি ইলিশ দেশের জাতীয় সম্পদ। এ সম্পদ দেশের মানুষের আমিষের চাহিদা পূরণ করে, বিদেশে রপ্তানি করে বৈদেশিক মুুদ্রা আয় করা হয়। বাংলাদেশের পানিসম্পদকে কাজে লাগিয়ে কৃষি ও শিল্পের বিকাশ ঘটানো সম্ভব হচ্ছে। এর ফলে মানুষজন কর্মসংস্থানের সুযোগ পাচ্ছে। এছাড়া দেশের গ্যাস সম্পদকে ব্যবহার করে দেশ অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ হওয়ার পথ সুগম করছে। সুতরাং আমরা বলতে পারি যে, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে উদ্দীপকে উল্লিখিত প্রাকৃতিক সম্পদের ভ‚মিকা অতীব গুরুত্বপূর্ণ।
 অনুশীলনের জন্য সৃজনশীল প্রশ্নব্যাংক (উত্তরসংকেতসহ)
প্রশ্ন- ১৩  বাংলাদেশের নদনদী ও জনবসতির পারস্পরিক সম্পর্ক

কাকচর নদীর মাঝি হারান মিয়া এখন উদাস চোখে তাকিয়ে থাকে শুকিয়ে যাওয়া নদীর ধূ ধূ বালির দিকে। বুকের গভীর থেকে একটা সর্বস্ব হারানোর দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসে তার। পানি নেই, স্রোত নেই আর নৌকার তলাতে বিশাল ফুটো। অথচ একদিন লোকজন পারাপার করতে করতে একটু বিশ্রাম নেওয়ারও সময় ছিল না তার। নদী মরে গেছে সেই সাথে মরে গেছে হারান মাঝির সব সুখ।
ক. বর্তমানে বাংলাদেশে ছোটবড় মিলিয়ে কতটি নদনদী রয়েছে? ১
খ. নদীর তলদেশে জমাকৃত পলি খনন করা প্রয়োজন কেন? ২
গ. উদ্দীপকের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের নদনদী ও জনবসতির নির্ভরশীলতা ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. বাংলাদেশের নগর ও গ্রামের জনজীবন, অর্থনৈতিক ব্যবস্থা টিকিয়ে রাখতে “নদী বাঁচাও” কর্মসূচির গুরুত্ব ব্যাখ্যা কর। ৪

ক বর্তমানে বাংলাদেশে ছোট বড় মিলিয়ে ৭০০ টি নদ-নদী রয়েছে।
খ বাংলাদেশের নদীসমূহে উজান থেকে প্রচুর পানি আসে। এই পানিতে প্রচুর পলি থাকে। এসব পলি নদীর তলদেশে জমা হয়। দীর্ঘদিন এভাবে পলি জমা হয়ে বেশ কিছু নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে গেছে। ফলে নদীগুলোতে চর পড়ে যাওয়ায় পানির প্রবাহ কমে গেছে। তাই নদীগুলোর সজীবতা রক্ষা করতে প্রায়শই তলদেশে জমাকৃত পলি খনন করা প্রয়োজন।
ঢ-পষঁংরাব লিংক : প্রয়োগ (গ) ও উচ্চতর দক্ষতার (ঘ) প্রশ্নের উত্তরের জন্য অনুরূপ যে প্রশ্নের উত্তর জানা থাকতে হবে
গ বাংলাদেশের নদ-নদী ও জনবসতির পারস্পরিক সম্পর্ক বর্ণনা কর।
ঘ বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় নদ-নদীর ভ‚মিকা বিশ্লেষণ কর।

প্রশ্ন- ১৪  বাংলাদেশের নদনদী ও জনবসতির পারস্পরিক সম্পর্ক

রাজশাহীতে পদ্মার পাড়ে গড়ে উঠেছে ঘনবসতি। কুবের মাঝি দীর্ঘদিন যাবৎ এখানে মাছ শিকার করেই জীবিকানির্বাহ করে। অনেকেই আবার কৃষিকাজের সুবিধার জন্য এখানে বাস করে। নদীর সাথে গড়ে উঠেছে তাদের আত্মিক সম্পর্ক।
ক. সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর উৎপত্তি হয়েছে কোন নদী থেকে? ১
খ. নদী সংরক্ষণ ধারণা তুমি কীভাবে সংজ্ঞায়িত করবে? ২
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত নদীর গতিপথ বর্ণনা কর। ৩
ঘ. “উদ্দীপকে উল্লিখিত অঞ্চলের মানুষের সাথে নদীর সম্পর্ক অবিচ্ছেদ্য হয়ে উঠেছে।” বিশ্লেষণ কর। ৪

ক সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর উৎপত্তি হয়েছে আসামের বরাক নদী থেকে।
খ নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ এবং নাব্য বজায় রাখাকে নদী সংরক্ষণ বলে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের ওপর নদীর প্রভাব অপরিসীম। কিন্তু নদীর প্রবাহে বাধা, শিল্পের বর্জ্য, পয়ঃনিষ্কাশন প্রবাহ, অবৈধভাবে নদী দখল, জলযানের বর্জ্য প্রভৃতি কারণে আমাদের দেশের অনেক নদীর প্রবাহ দুর্বল হয়ে পড়েছে এবং নদীর নাব্য নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এসব নদী সংরক্ষণে আমাদের সকলকেই অধিক সচেতন হতে হবে।
ঢ-পষঁংরাব লিংক : প্রয়োগ (গ) ও উচ্চতর দক্ষতার (ঘ) প্রশ্নের উত্তরের জন্য অনুরূপ যে প্রশ্নের উত্তর জানা থাকতে হবে
গ পদ্মা নদীর গতিপথ ব্যাখ্যা কর।
ঘ বাংলাদেশের নদ-নদী ও জনবসতির মধ্যকার

 

Leave a Reply