একাদশ অধ্যায়
ব্যবসায়ে নৈতিকতা ও সামাজিক দায়বদ্ধতা
ব্যবসায়িক মূল্যবোধ ও নৈতিকতার ধারণা : মূল্যবোধ ও নৈতিকতা শব্দ দুটির ধারণা প্রায় অবিচ্ছেদ্য। যে জ্ঞানবোধ এবং আচরণ সমাজ মূল্যবোধ ও অনুকরণীয় মনে করে তাকেই মূল্যবোধ বলে। আর নৈতিকতার অর্থ মানব আচরণের মানদণ্ড। মূল্যবোধ ও নৈতিকতাবোধ মানুষকে ন্যায়-অন্যায়, ঠিক-বেঠিক, ভালো-মন্দের মধ্যে পার্থক্য চিিহ্নত করতে সাহায্য করে। এটি মানুষের জীবনে ইতিবাচক মঙ্গলময় ও কল্যাণময় দিকের নির্দেশনা দেয়।
নৈতিকতা : নৈতিকতা শব্দটি গ্রিক ইথস (ঊঃযড়ং) শব্দ হতে উদ্ভব হয়েছে। যার অর্থ মানব আচরণের মানদণ্ড। নৈতিকতা মানুষের দৈনন্দিন কাজকর্মের সাথে জড়িত। নৈতিকতা মানুষের ভালো-মন্দের বিচার-বিশ্লেষণ করে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে সহায়তা করে। যেমন : শিক্ষক, ছাত্রছাত্রীদের সুষ্ঠু পাঠ দান করার সাথে সাথে দেখতে হবে ছাত্রছাত্রীরা মনোযোগী না অমনোযোগী, বাড়ির কাজ ঠিকমতো করছে কি না এবং ভুল সংশোধন করে দেয়া শিক্ষকের নৈতিক দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। ছাত্রছাত্রীদের নৈতিক দায়িত্বের মধ্যে রয়েছে : যথাসময়ে স্কুলে যাওয়া, বাড়ির কাজ করা এবং শিক্ষকের আদেশ নির্দেশ মেনে চলা ইত্যাদি।
ব্যবসায় নৈতিকতা : একটি ব্যবসায়ের ধারণা চিিহ্নত করা থেকে শুরু করে এটি সফলভাবে পরিচালনার সাথে অনেক কাজ জড়িত। এসব কাজ সুন্দর, সুষ্ঠুভাবে এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে নৈতিকতা দিকনির্দেশনা হিসেবে কাজ করে। সাথে সাথে ব্যবসায় নৈতিকতা বা নৈতিক মূল্যবোধ ব্যবসায় জগতে আমাদের আচরণকে সঠিক পথে পরিচালনা করে।
ব্যবসায় নৈতিকতাগুলো হলো :
১. সততা বজায় রাখা ৫. কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি না করা
২. ক্ষতিকর পণ্য উৎপাদন ও বিপণন না করা ৬. বিভিন্ন ব্যবসায়িক ও শিল্প আইন মেনে চলা
৩. গ্রাহকদের সাথে প্রতারণা না করা ৭. পরিবেশের ক্ষতি সাধন না করা
৪. মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্যদ্রব্য বিক্রি না করা ৮. জনকল্যাণে অবদান রাখা
ব্যবসায়িক মূল্যবোধ ও নৈতিকতার প্রয়োজনীয়তা : অতিরিক্ত মুনাফা অর্জন বা যেকোনো কারণেই হোক ব্যবসায় অনৈতিক কার্যকলাপ দিন দিন বেড়েই চলেছে। মরা মুরগি কেনা-বেচা, খাদ্যদ্রব্যে ভেজাল, নিম্নমানের পণ্য তৈরি বা বিক্রয়, ওজন কম, ফরমালিনযুক্ত মাছ ও ফলমূল, পণ্যদ্রব্যের গুণাগণ সম্পর্কে মিথ্যা ও অতিরিক্ত তথ্য দেয়া, নির্মাণ কাজে নিম্নমানের দ্রব্য ব্যবহার ইত্যাদি ব্যবসায়ে অনৈতিকতা কার্যকলাপের উদাহরণ। যে সকল বিষয়ে মূল্যবোধর প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম তা হলো :
১. সৃষ্টিকর্তার শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি মানুষ হিসেবে অনৈতিক কার্যকলাপ ও আচরণ মানুষের কাছে কাম্য নয়।
২. ব্যবসায়ীর নৈতিক দায়িত্ব হিসেবে রয়েছে পণ্যদ্রব্য বা সেবার সঠিক সরবরাহ নিশ্চিত করা।
৩. ওষুধ প্রস্তুতকারকের নৈতিক দায়িত্ব হলো ওষুধে ভেজাল পরিহার করা।
৪. ব্যবসায়ের উন্নতি ও সমৃদ্ধির জন্য সামাজিক দায়িত্ব পালন অপরিহার্য।
৫. ব্যবসায় সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার ক্ষেত্রে নৈতিকতার ভ‚মিকা অপরিসীম।
ব্যবসায় সামাজিক দায়বদ্ধতা : ব্যবসায় সামাজিক দায়বদ্ধতা বলতে মুনাফা অর্জনের সাথে সমাজের কিছু মঙ্গলময় বা কল্যাণমূলক কাজ করাকে বোঝায়। প্রাচীনকাল থেকে ব্যবসায়ের উদ্দেশ্য বলতে মুনাফা অর্জনকেই বোঝাত। বর্তমানে এ ধারণার পরিবর্তন হয়েছে। ব্যবসায় একটি সামাজিক প্রতিষ্ঠান। সমাজকে ঘিরেই এর কার্যক্রম। সমাজে বসবাসকারী মানুষের বিভিন্ন ধরনের ভোগ্যপণ্য এবং অন্যান্য পণ্য বা সেবার চাহিদা নিরুপণ করে তা প্রস্তুত বা সংগ্রহ করে জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়াই ব্যবসায়ের প্রধান কাজগুলোর মধ্যে অন্যতম। সা¤প্রতিককালে কিছু কিছু ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান জনসেবামূলক কাজ করে থাকে। যেমন হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা, স্কুল স্থাপন, দরিদ্র শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদান কাজে এগিয়ে আসা। ব্যবসায় একটি সামাজিক প্রতিষ্ঠান এবং জনগণের সমর্থনের ওপর এর স্থায়িত্ব ও মুনাফা নির্ভরশীল। প্রত্যেক ব্যবসায়ের সামাজিক দায়িত্ব পালন একটি নৈতিক দায়িত্ব।
বিভিন্ন পক্ষের প্রতি ব্যবসায়ের সামাজিক দায়বদ্ধতা : বর্তমানে প্রতিযোগিতামূলক ব্যবসায় জগতে ব্যবসায়ীকে নিজের মুনাফা বৃদ্ধির উদ্দেশ্য অর্জনের পাশাপাশি অনেক পক্ষের প্রতি দায়িত্ব পালন করতে হয়। এরা হলো রাষ্ট্র, সমাজ, ক্রেতা ও কর্মচারী। এসব পক্ষ কোনো না কোনোভাবে ব্যবসায়ের সাথে সংশ্লিষ্ট।
রাষ্ট্রের প্রতি দায়বদ্ধতা : জনগণের স্বার্থ রক্ষা করে ব্যবসায় পরিচালিত হোক এটাই রাষ্ট্রের লক্ষ্য। ব্যবসায় স্থাপন ও অগ্রগতির মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে জনগণের চাহিদা মেটানো হলে অর্থাৎ পণ্য বা সেবা প্রদানের পাশাপাশি নিয়মিত কর প্রদান করা হলে সরকার খুশি। ব্যবসায়কে রাষ্ট্রের প্রতি নি¤েœাক্ত দায়িত্ব পালন করতে হয় :
ক. সরকারকে নিয়মিত কর ও রাজস্ব প্রদান করা।
খ. সরকারের নিয়মনীতি যথাযথভাবে পালন করা।
গ. কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখা।
সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা : সমাজ থেকে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করেই ব্যবসায়ের উন্নতি ও সমৃদ্ধ ঘটে। তবে ব্যবসায়কে সমাজের প্রতি নিম্নোক্ত দায়িত্ব পালন করতে হয় :
ক. সমাজের প্রয়োজন মাফিক মানসম্মত পণ্য উৎপাদন ও সরবরাহ করা।
খ. কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা।
গ. বিভিন্ন জনহিতকর কাজে সহায়তা করা।
ঘ. জাতীয় দুর্যোগে জনগণের পাশে দাঁড়ানো।
ঙ. পরিবেশ দূষণ থেকে এলাকাকে রক্ষা করা।
চ. পণ্যের মজুদদারি না করা।
ক্রেতা ও ভোক্তাদের প্রতি দায়বদ্ধতা : ক্রেতা ও ভোক্তাদের আস্থা এবং সহযোগিতার ওপর ব্যবসায়ের সফলতা নির্ভর করে। তাই ব্যবসায়ীকে নিম্নোক্ত দায়িত্ব পালন করতে হয় :
ক. পণ্যের বাজার স্থিতিশীল রাখা।
খ. মানসম্মত পণ্য সরবরাহ করা।
গ. পণ্যসামগ্রী প্রাপ্তি সহজতর করা।
ঘ. পণ্য ও বাজার সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য সরবরাহ করা।
শ্রমিক-কর্মচারীদের প্রতি দায়বদ্ধতা : শ্রমিক ও কর্মচারীদের অব্যাহত প্রচেষ্টার ফলেই ব্যবসায়ে মুনাফা অর্জিত হয়। তাই তাদের স্বার্থকে অবহেলা করে ব্যবসায় পরিচালনা করা যায় না। ব্যবসায় উন্নতির সাথে তাদের বেতন ভাতা বৃদ্ধি ও বোনাস প্রদান করা এবং তাদের অবস্থার উন্নতির চেষ্টা করা উচিত। একজন ব্যবসায়ীকে তার প্রতিষ্ঠানে শ্রমিক ও কর্মচারীদের প্রতি নিম্নোক্ত দায়িত্ব পালন করতে হয় :
ক. উপযুক্ত পারিশ্রমিক ও আর্থিক সুবিধা দান।
খ. চাকরির নিরাপত্তা বিধান করা।
গ. কাজের উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করা।
ঘ. প্রশিক্ষণ ও পদোন্নতির ব্যবস্থা করা।
ঙ. বাসস্থান ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করা।
বিভিন্ন ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের সামাজিক দায়বদ্ধতামূলক কার্যক্রম : ব্যবসায় সামাজিক দায়িত্ব বহু যুগ ধরে অবহেলিত হয়ে আসলেও বর্তমানে দেশে-বিদেশে অনেক প্রতিষ্ঠান সামাজিক কার্যক্রমে এগিয়ে এসেছে। যেমন : ডাচ-বাংলা ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক ও বিভিন্ন মোবাইল ফোন কোম্পানি যেমন : টেলিটক, গ্রামীণফোন, রবি, বাংলালিংক, সিটিসেল, এয়ারটেল প্রভৃতি দারিদ্র্য বিমোচন, মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনার খরচ বহন, বৃত্তি প্রদান ও খেলাধুলার উন্নয়নে আর্থিক পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান করে সামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখছে।
পরিবেশ দূষণ ও ব্যবসায় : ব্যবসায় বিশেষ করে শিল্পোন্নয়নের সবচেয়ে বড় সমস্যা পরিবেশ দূষণ। শিল্প বর্জ্য নির্গত তরল পদার্থ নদীনালায় বয়ে পানি দূষিত করছে। বিষাক্ত পানিতে মাছসহ জলজ প্রাণী বাস করার অনুপযোগী হয়ে গেছে। অন্যদিকে যত্রতত্র ময়লা নিক্ষেপ ও যানবাহনের ধোঁয়া বায়ু দূষিত করে। কারখানা ও জেনারেটরের বিকট আওয়াজে ভয়াবহ শব্দ দূষণ হচ্ছে। এছাড়া শিল্প কারখানা প্রতিষ্ঠার নামে অবাধে গাছ নিধন ও পাহাড় কেটে পরিবেশকে দূষণ করছে। আবাসনের নামে চাষের জমি হরণ, খালবিল ভরাট করে আবাসন তৈরি, নদীভাঙন, নির্বিচারে অনুপযুক্ত যানবাহন চালানো, বহুল শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্রের ব্যবহার পরিবেশ দূষণের জন্য দায়ী। এতে মানুষের স্বাস্থ্যহানি তো হচ্ছেই, তদুপরি জীববৈচিত্র্য ভয়াবহভাবে হুমকির মুখে পড়ছে।
অনুশীলনীর সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন-১ নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
সাহিদ স্বচ্ছতার সাথে ব্যবসায় করে সীমিত মুনাফা করেন। অপরদিকে তার বন্ধু নাদিম চাকচিক্যের আড়ালে ভেজাল ও নিম্নমানের পণ্য বিক্রি করে প্রচুর মুনাফা অর্জন করেন। পণ্যের বাহ্যিক চাকচিক্যের কারণে ক্রেতারা নাদিমের দোকানে ভিড় করে। সাহিদ নাদিমের চেয়ে কম অর্থ উপার্জন করলেও মানসিকভাবে অনেক সুখী।
ক. ‘ইথস’ শব্দের অর্থ কী?
খ. ‘পণ্যের মজুতদারি না করা’Ñ কোন ধরনের দায়বদ্ধতা? ব্যাখ্যা কর।
গ. সাহিদের মানসিক প্রশান্তির কারণটি ব্যাখ্যা কর।
ঘ. নাদিম বর্তমানে প্রচুর মুনাফা করলেও ভবিষ্যতে ব্যবসায়ে টিকে থাকবে কি? এ ব্যাপারে তোমার মতামত দাও।
১নং প্রশ্নের উত্তর
ক. ‘ইথস’ শব্দের অর্থ মানব আচরণের মানদণ্ড।
খ. পণ্যের মজুদদারি না করা সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা। প্রকৃতপক্ষে একজন ব্যবসায়ী সমাজের একজন সৃজনশীল এবং সচেতন নাগরিক। সমাজের কাছ থেকে যেমন তার জন্য কিছু পাওয়া রয়েছে তেমনি তারও সমাজকে কিছু দেওয়ার রয়েছে। অর্থাৎ বর্তমানে প্রতিযোগিতামূলক ব্যবসায় জগতে ব্যবসায়ীকে মুনাফা বৃদ্ধির উদ্দেশ্য অর্জনের পাশাপাশি অনেক পক্ষের প্রতি দায়িত্ব পালন করতে হয়। তাই পণ্য মজুদদারি না করে পণ্যের যোগান ঠিক রাখা উচিত।
গ. নৈতিকতাবোধ থেকে সাহিদ নিজের এবং ক্রেতাদের উভয়ের স্বার্থরক্ষা করে ব্যবসায় পরিচালনা করায় তার মনে মানসিক প্রশান্তি বিরাজ করে।
নৈতিকতা বলতে সেই জ্ঞানবোধ ও আচরণকে বোঝায় যাকে সমাজ মূল্যবান ও অনুকরণীয় মনে করে। নৈতিকতা মানুষকে ইতিবাচক মঙ্গলময় ও কল্যাণময় দিকের নির্দেশনা দেয়। উদ্দীপকে ব্যবসায় পরিচালনা করার সময় সাহিদকে অনেক কাজ সম্পাদন করতে হয়। এসব কাজ সুন্দর, সুষ্ঠু ও সঠিকভাবে এগিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে নৈতিকতা সাহিদের নিকট দিক-নির্দেশনা হিসেবে কাজ করে। তিনি জনগণের চাহিদা মোতাবেক তাদের নিকট সীমিত লাভে পণ্যদ্রব্য বিক্রয় করেন। অসৎ ব্যবসায়ীদের মতো অধিক মুনাফা লাভের আশায় তিনি পণ্য মজুদদারি করে পণ্যের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করেন না বা ভেজাল পণ্য বিক্রয় করে ক্রেতাদের ঠকান না। এভাবে ব্যবসায়ের সকল ক্ষেত্রে নৈতিকতা বজায় রাখায় সাহিদ মানসিক প্রশান্তিতে রয়েছেন।
ঘ. নাদিম বর্তমানে প্রচুর মুনাফা করলেও অনৈতিক কার্যকলাপের জন্য ভবিষ্যতে তার ব্যবসায় টিকে থাকার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।
যে সকল কাজ সামাজিক মূল্যবোধ এবং নৈতিকতা দ্বারা সমর্থনযোগ্য নয় সেগুলোকে অনৈতিক কাজ বলে। যেমন : ওষুধে ভেজাল দেয়া, ওজনে কম দেয়া, নি¤œ মানসম্পন্ন পণ্য বিক্রয় করা ইত্যাদি। উদ্দীপকে নাদিম চাকচিক্যের আড়ালে ভেজাল ও নি¤œমানের পণ্য বিক্রয় করেন। তার ব্যবসায়ের চাকচিক্যে বর্তমানে ক্রেতাদের সহজেই আকৃষ্ট করতে পারছে বলে তার দোকানে সবসময় ভিড় লেগে থাকে। আর এজন্য তিনি বেশি বেশি মুনাফা করতে পারছেন। নাদিম বর্তমানে প্রচুর মুনাফা করলেও তার ব্যবসায়ের স্থায়িত্ব কম। কারণ নাদিম যে বাহিরে চাকচিক্য বজায় রেখে ভেজাল ও নি¤œমানের পণ্য বিক্রয় করেন ক্রেতা বা ভোক্তারা এক সময় তা জানতে পারবে এবং তখন তার পণ্য প্রত্যাখ্যান করবে। এছাড়াও নাদিমের অনৈতিক কার্যকলাপের জন্য তাকে সবাই ঘৃণা করবে।
সুতরাং বলা যায়, নাদিম অনৈতিকভাবে ব্যবসায় পরিচালনা করায় বর্তমানে প্রচুর মুনাফা অর্জনে সক্ষম হলেও খুব শীঘ্রই তার অনৈতিকতার কারণে তার ব্যবসায়টি বন্ধ হয়ে যাবে।
প্রশ্ন-২ নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
জনাব আলী গাজীপুরের গজারি বন এলাকায় গাছপালা কেটে ৫০০ একর জমির উপর ‘নাঈম ফার্মা’ নামে ঔষধ শিল্প স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিলেন। পরবর্তীতে পরিবেশবাদী বন্ধুর পরামর্শে পার্শ্ববর্তী খালি জায়গায় প্রতিষ্ঠানটি স্থাপন করেন। তার প্রতিষ্ঠানে উৎপাদিত ঔষধ দেশের চাহিদা পূরণ করে বিদেশেও রপ্তানি হয়। প্রতিষ্ঠানটিতে বিভিন্ন পদে ২০০০ লোক কর্মরত রয়েছে।
ক. কল-কারখানায় নির্গত কালো ধোঁয়া পরিবেশের কী দূষণ করে?
খ. ব্যবসায়ের নৈতিকতা বলতে কী বুঝায়Ñ ব্যাখ্যা কর।
গ. “নাঈম ফার্মা” প্রতিষ্ঠানটি জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে কীভাবে সহায়তা করছে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. কারখানা স্থাপনের জন্য জনাব আলীর প্রথম সিদ্ধান্তটি মূল্যায়ন কর।
২নং প্রশ্নের উত্তর
ক. কল-কারখানায় নির্গত কালো ধোঁয়া পরিবেশের বায়ু দূষণ করে।
খ. যে সকল কাজকর্ম ব্যবসায় জগতে ব্যবসায়ীদের আচরণকে সঠিক পথে পরিচালনা করে তাকেই ব্যবসায়ের নৈতিকতা বলে।
সাধারণ অর্থে নৈতিকতা হলো মানব আচরণের মানদণ্ড। যা আমাদের দৈনন্দিন কাজ কর্মের সাথে জড়িত। ব্যবসায় পরিচালনার ক্ষেত্রেও কিছু নৈতিকতা রয়েছে। যেমন : সততা বজায় রাখা। ক্ষতিকর পণ্য উৎপাদন ও বিপণন না করা, গ্রাহকদের সাথে প্রতারণা না করা ইত্যাদি।
গ. জনাব আলীর প্রতিষ্ঠিত ‘নাঈম ফার্মা’ প্রতিষ্ঠানটি দেশের বেকার সমস্যা দূর করে এবং আর্থসামাজিক উন্নয়ন ঘটিয়ে জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন করেছে।
মুনাফা অর্জনের বাইরেও ব্যবসায় বিভিন্ন সামাজিক দায়িত্ব পালন করে থাকে। অর্থাৎ জনগণের বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের এবং অন্যান্য দ্রব্যের চাহিদা মিটাতে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের জš§ হয়। এছাড়া কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে বেকারত্ব দূর করার পাশাপাশি জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা রাখে। উদ্দীপকে জনাব আলী ‘নাঈম ফার্মা’ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দেশের ওষুধের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করছেন। অর্থাৎ প্রতিষ্ঠানটি দেশের এবং বিদেশের মানুষকে উন্নতমানের ওষুধ ব্যবহারের সুযোগ করে দিচ্ছে। এর ফলে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন হচ্ছে এবং জাতীয় আয় বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাছাড়া জনাব আলীর প্রতিষ্ঠানে ২০০০ লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে কর্মরত শ্রমিকরা আয় উপার্জন করে নিজেদের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন ঘটাচ্ছে। অর্থাৎ ‘নাঈম ফার্মা’ প্রতিষ্ঠানটি উন্নতমানের পণ্য উৎপাদন এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে জনগণের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা রাখছে।
ঘ. কারখানা স্থাপনের জন্য জনাব আলীর প্রথম সিদ্ধান্তটি যথার্থ ছিল না।
ব্যবসায় একটি সামাজিক প্রতিষ্ঠান। সমাজকে ঘিরেই এর কার্যক্রম। তাই সমাজের প্রতি প্রতিটি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের কিছু সামাজিক দায়বদ্ধতা রয়েছে। সামাজিক দায়বদ্ধতা বলতে মুনাফা অর্জনের সাথে সমাজের কিছু মঙ্গলময় কাজ করাকে বোঝায়। উদ্দীপকে কারখানা স্থাপনের জন্য জনাব আলীর প্রথম সিদ্ধান্তটি ছিল গাজীপুরের গজারি বন এলাকায় গাছপালা কেটে ৫০০ একর জমির ওপর ওষুধ কারখানা স্থাপন করা। তার এই সিদ্ধান্তটি ছিল সম্পূর্ণরূপে সামাজিক দায়িত্ববোধ বিরোধী। কেননা গাছপালা পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার অপরিহার্য উপাদান। পরিবেশ থেকে প্রাণীক‚লের জন্য ক্ষতিকর কার্বন ডাইঅক্সাইড গ্রহণ করে এবং অক্সিজেন ত্যাগ করে যা পৃথিবীতে প্রাণির অস্তিত্ব থাকার জন্য অপরিহার্য। তাই কারখানা স্থাপনের জন্য জনাব আলী যদি তার প্রথম সিদ্ধান্তটি গ্রহণ করতেন অর্থাৎ গাছপালা কেটে কারখানা স্থাপন করতেন তাহলে তা সমাজের মানুষের জন্য ক্ষতিকর হতো।
সুতরাং বলা যায়, কারখানা স্থাপনের জন্য জনাব আলী প্রথম যে সিদ্ধান্তটি গ্রহণ করেছিলেন তা যথার্থ ছিল না।
প্রশ্ন-৩ নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
মি. আসাদ তার এলাকায় একটি কসমেটিকস সামগ্রীর দোকান দিলেন। শুরুতেই নিম্নমানের পণ্য অধিক মূল্যে বিক্রির মাধ্যমে তিনি প্রচুর মুনাফা অর্জন করছিলেন। কিন্তু বর্তমানে ভোক্তাগণ তার দোকান হতে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। ভোক্তাদের আস্থা অর্জনের জন্য বর্তমানে তাকে অধিক পরিশ্রম করতে হচ্ছে।
ক. সফল উদ্যোক্তার একটি বড় বৈশিষ্ট্য কী? ১
খ. উদ্যোগ ও ব্যবসায় উদ্যোগের মধ্যে পার্থক্য কী? ব্যাখ্যা কর। ২
গ. উদ্দীপকে মি. আসাদ কোন ধরনের দায়বদ্ধতাকে মেনে চলেননি? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. মি. আসাদ কীভাবে একজন যথার্থ ব্যবসায়ী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে পারেন? তোমার মতামত দাও। ৪
৩নং প্রশ্নের উত্তর
ক. পরিমিত পরিমাণ ঝুঁকি গ্রহণ সফল উদ্যোক্তার একটি বড় বৈশিষ্ট্য।
খ. যেকোনো কাজের কর্ম প্রচেষ্টাকেই উদ্যোগ বলে। উদ্যোগে মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্য বাধ্যতামূলক নয়। অপরদিকে ব্যবসায় উদ্যোগ বলতে কোনো কাজে ঝুঁকি আছে জেনেও মুনাফা লাভের আশায় কাজ করার প্রচেষ্টাকে বোঝায়। এর প্রধান উদ্দেশ্য মুনাফা অর্জন। অর্থাৎ, ব্যবসায় উদ্যোগের প্রদান উদ্দেশ্য মুনাফা অর্জন কিন্তু অন্যান্য উদ্যোগের উদ্দেশ্য জনকল্যাণ।
গ. উদ্দীপকে মি. আসাদ ক্রেতা ও ভোক্তাদের প্রতি ব্যবসায়ের দায়বদ্ধতাকে মেনে চলেননি।
ক্রেতা ও ভোক্তাদের আস্থা ও সহযোগিতার ওপর ব্যবসায়ের সফলতা নির্ভর করে। তাই ব্যবসায়ীরা ক্রেতা ও ভোক্তাদের প্রতি কতকগুলো দায়িত্ব পালন করেন। যেমনÑ পণ্যের বাজার স্থিতিশীল রাখা; মানসম্মত পণ্য ও সেবা সরবরাহ করা, পণ্যসামগ্রী প্রাপ্তি সহজতর করা এবং পণ্য ও বাজার সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য সরবরাহ
করা। উদ্দীপকের মি. আসাদ নিম্নমানের পণ্যদ্রব্য সরবরাহ করেন এবং তা অধিক মূল্যে ভোক্তাদের নিকট বিক্রয় করেন। যা ক্রেতা ও ভোক্তাদের প্রতি ব্যবসায়ের দায়বদ্ধতার বহিভর্‚ত। তিনি এ নৈতিকতা বিবর্জিত কাজ করায় ক্রেতা ও ভোক্তা বিভিন্ন ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে মি. আসাদের প্রতি ক্রেতা ও ভোক্তাদের আস্থা ও বিশ্বাস নষ্ট হয়। তাই বলা যায়, মি. আসাদ ক্রেতা ও ভোক্তাদের প্রতি দায়বদ্ধতা পালন করেননি।
ঘ. মি. আসাদ ব্যবসায়ের সামাজিক দায়িত্ব পালন করে একজন যথার্থ ব্যবসায়ী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে পারেন।
বর্তমান প্রতিযোগিতামূলক ব্যবসায় জগতে ব্যবসায়ীকে মুনাফা অর্জনের সাথে সাথে সমাজ, রাষ্ট্র, ক্রেতা ও কর্মচারীর প্রতি বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করতে হয়। এসব পক্ষ কোনো না কোনোভাবে ব্যবসায়ের সাথে সংশ্লিষ্ট। উদ্দীপকের মি. আসাদ তার ব্যবসায়ের মাধ্যমে ক্রেতা ও ভোক্তাদের প্রতি সঠিক ভাবে দায়িত্ব পালন করেননি। তিনি মানসম্মত পণ্য সরবরাহ করেননি। এছাড়াও অধিক মূল্যে ভোক্তাদের নিকট পণ্য বিক্রয় করেন। তাই তাকে ক্রেতা ও ভোক্তাদের প্রতি দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে যে সব কাজ করতে হবে তা হলো ন্যায্য মূল্যে পণ্য সরবরাহ, মানসম্মত পণ্য সরবরাহ, পণ্য সামগ্রী সহজতর প্রাপ্তি। এছাড়াও ক্রেতা ও ভোক্তাদের চাহিদা, অভ্যাস, রুচি প্রভৃতি বিষয় বিবেচনা করতে হবে। তাছাড়া সমাজ থেকে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করেই তাকে তার ব্যবসায়ের উন্নতি ও সমৃদ্ধি ঘটাতে হবে। সমাজ ছাড়া ব্যবসায়ের অস্তিত্ব অসম্ভব। শ্রমিক ও কর্মচারীদের অব্যাহত প্রচেষ্টার ফলেই ব্যবসায়ে মুনাফা অর্জিত হয়। তাই তাদের স্বার্থকে অবহেলা করে ব্যবসায় পরিচালনা করা যায় না।
পরিশেষে বলা যায়, মি. আসাদ সমাজের বিভিন্ন পক্ষের প্রতি দায়িত্ব পালন করে একজন যথার্থ ব্যবসায়ী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে পারেন।
প্রশ্ন -৪ ল্ফ নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
জনাব সালমান একজন আলু ব্যবসায়ী। তিনি আলু উৎপাদনের মৌসুমে অধিক পরিমাণে আলু ক্রয় করে মজুদ করে রাখেন এবং সারা বছর বাজারে আলু সরবরাহ করেন। এছাড়া তিনি সমাজ, ক্রেতা ও ভোক্তা, শ্রমিক-কর্মচারীদের প্রতি ব্যবসায়ী সামাজিক দায়িত্বগুলো যথাযথভাবে পালন করেন।
ক. স্কুল স্থাপন করা কী ধরনের কাজ? ১
খ. পরিবেশ দূষণের প্রধান কারণসমূহ উল্লেখ কর। ২
গ. জনাব সালমানের মজুদদারি কোন ধরনের দায়বদ্ধতা পালন করে? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. জনাব সালমানের পালিত দায়িত্বসমূহ মূল্যায়ন কর। ৪
৪নং প্রশ্নের উত্তর
ক. স্কুল স্থাপন করা একটি জনহিতকর কাজ।
খ. পরিবেশ দূষণের অন্যতম প্রধান কারণ হলো শিল্পোন্নয়ন। শিল্প বর্জ্য নির্গত তরল পদার্থ নদী নালায় পড়ে পানি দূষিত করছে। পরিবেশ দূষণের অন্য কারণগুলোর মধ্যে জনগণের অসচেতনতা, যেখানে সেখানে ময়লা নিক্ষেপ ও ত্রæটিপূর্ণ পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থাও দায়ী। এছাড়া দূষণের প্রভাবমুক্ত হতে সরকার প্রণীত আইনের প্রয়োগ যথার্থভাবে হচ্ছে না বলে পরিবেশ দূষণ বেড়েই চলছে।
গ. জনাব সালমানের মজুদদারি সামাজিক দায়বদ্ধতা পালন করে। ব্যবসায়ের সামাজিক দায়বদ্ধতা বলতে মুনাফা অর্জনের সাথে সমাজের কিছু মঙ্গলময় বা কল্যাণমূলক কাজ করাকে বোঝায়। ব্যবসায় একটি সামাজিক প্রতিষ্ঠান। সমাজকে ঘিরেই এর কার্যক্রম। সমাজে বসবাসকারী জনগণের বিভিন্ন ধরনের ভোগ্যপণ্য এবং অন্যান্য পণ্যের সেবার চাহিদা নিরূপণ করে তা প্রস্তুত বা সংগ্রহ করে জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়াই ব্যবসার প্রধান কাজগুলোর মধ্যে অন্যতম। উদ্দীপকে জনাব সালমান একজন আলু ব্যবসায়ী। তিনি আলু উৎপাদনের মৌসুমে অধিক পরিমাণ আলু ক্রয় করে মজুদ করেন এবং সারা বছরে আলু সরবরাহ করেন। তার এরূপ পণ্যের মজুদ করা এক ধরনের সামাজিক দায়বদ্ধতা কারণ পণ্যের মজুদ যদি ভালো উদ্দেশ্যে করা হয় তাহলে এটি ব্যবসায়ের সামাজিক দায়বদ্ধতা হিসেবে বিবেচিত। কিন্তু কেউ যদি সিন্ডিকেট সৃষ্টি করার উদ্দেশ্যে পণ্য মজুদ করে, তাহলে সেটা ব্যবসায়ের অনৈতিক কার্যকলাপ হিসেবে বিবেচিত হবে। যেহেতু জনাব সালমান তার উদ্দেশ্য সৎ বা ভালো রেখে তথা সারা বছর আলুর সরবরাহ নিশ্চিত করার লক্ষ্যেই আলু মজুদ করেন সেহেতু জনাব সালমানের মজুদদারিকে আমরা সামাজিক দায়বদ্ধতা পালন বলতে পারি।
ঘ. জনাব সালমানের সমাজ, ক্রেতা ও ভোক্তা, শ্রমিক-কর্মচারীদের প্রতি ব্যবসায়ী সামাজিক দায়িত্ব পালন করে থাকেন।
ব্যবসায় একটি সামাজিক প্রতিষ্ঠান। সমাজের কাছে থেকে যেমন তার কিছু পাওয়ার রয়েছে তেমনি তারও সমাজকে কিছু দেওয়ার রয়েছে। সমাজ, ক্রেতা ও কর্মচারী এসব পক্ষ কোনো না কোনোভাবে ব্যবসায়ের সাথে সংশ্লিষ্ট। বর্তমান প্রতিযোগিতামূলক ব্যবসায় জগতে ব্যবসায়ীকে নিজের মুনাফা বৃদ্ধির উদ্দেশ্য অর্জনের পাশাপাশি এসব পক্ষের প্রতি দায়িত্ব পালন করতে হয়। উদ্দীপকে জনাব সালমানের সামাজিক দায়িত্ব হলো সমাজের প্রয়োজনমাফিক মানসম্মত পণ্য উৎপাদন ও সরবরাহ করা; কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা; বিভিন্ন জনহিতকর কাজে সহায়তা করা; জাতীয় দুর্যোগে জনগণের পাশে দাঁড়ানো এবং পরিবেশ দূষণ থেকে এলাকাকে রক্ষা করা; পণ্যের মজুদদারি সৃষ্টি করে পণ্যের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি না করা। ক্রেতা ও ভোক্তার আস্থা এবং সহযোগিতার ওপর ব্যবসার সফলতা নির্ভর করে। তাই তাকে ক্রেতা ও ভোক্তার প্রতি কিছু দায়িত্ব পালন করতে হয়। যথা: পণ্যের বাজার স্থিতিশীল রাখা; মানসম্মত পণ্য সরবরাহ করা; পণ্যসামগ্রী প্রাপ্তি সহজতর করা এবং পণ্য ও বাজার সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য সরবরাহ করা। এছাড়া শ্রমিক ও কর্মচারীদের উপযুক্ত পারিশ্রমিক ও আর্থিক সুবিধা প্রদান করা; চাকরির নিরাপত্তা বিধান; কাজের উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করাও তার দায়িত্ব। এসব দায়িত্ব পালন করার মাধ্যমে তিনি দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়ন নিশ্চিত করেন।
প্রশ্ন -৫ ল্ফ নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
জনাব বাবলুর একটি চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা আছে। তিনি তার কারখানার বর্জ্য নিষ্কাশনের জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। ফলে তার কারখানার বর্জ্য পার্শ্ববর্তী নদীতে গিয়ে পড়ে। এ নিয়ে এলাকাবাসী জনাব বাবলুর ওপর ক্ষুদ্ধ।
ক. কর্মসংস্থান সৃষ্টি ব্যবসায়ের কার প্রতি দায়বদ্ধতা? ১
খ. রাষ্ট্রের প্রতি ব্যবসায়ের দায়িত্বসমূহ লেখ। ২
গ. জনাব বাবলুর কারখানা কোন ধরনের দূষণ সৃষ্টি করছে? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. উদ্দীপকের দূষণ রোধে করণীয় সম্পর্কে তোমার মতামত দাও। ৪
৫নং প্রশ্নের উত্তর
ক. কর্মসংস্থান সৃষ্টি ব্যবসায়ের রাষ্ট্র এবং সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা।
খ. বর্তমান প্রতিযোগিতামূলক ব্যবসায়ে একজন ব্যবসায়ীকে যেসব পক্ষের প্রতি দায়িত্ব পালন করতে হয় রাষ্ট্র তার মধ্যে অন্যতম। জনগণের স্বার্থরক্ষা করে ব্যবসা পরিচালিত হোক এটাই রাষ্ট্রের লক্ষ্য। ব্যবসায় স্থাপন ও স¤প্রসারণের মাধ্যমে জনগণের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি নিয়মিত কর প্রদান করা হলে সরকার খুশি হয়। রাষ্ট্রের প্রতি ব্যবসায়ের দায়িত্ব হলো সরকারকে নিয়মিত কর ও রাজস্ব প্রদান করা, সরকারের নিয়মনীতি যথাযথভাবে পালন করা এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা।
গ. জনাব বাবলুর কারখানা পানি দূষণ করছে।
পানি দূষণ হলো খাল-বিল, নদী-নালা ও খাবারের পানি নানাভাবে দূষিত হওয়া পানি দূষণের মাত্রা দিন দিন বেড়েই চলেছে। যা মানুষের স্বাস্থ্যহানি এবং জীববৈচিত্র্যের জন্য মারাত্মক হুমকিস্বরূপ। ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানগুলোর বর্জ্য পানিতে নিক্ষেপ করা পানি দূষণের অন্যতম কারণ। উদ্দীপকে জনাব বাবলু একজন চামড়া ব্যবসায়ী। তিনি নিজস্ব কারখানায় কাঁচা চামড়া প্রক্রিয়াজাত করেন। কিন্তু তিনি তার কারখানার বর্জ্য নিষ্কাশনের যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করেন নি। তাই তার কারখানার বর্জ্য পার্শ্ববর্তী নদীতে গিয়ে জমা হয়। এতে নদীর পানি দূষিত হচ্ছে এবং এলাকার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। নদী দূষণের ফলে নদীর পানি জলজ প্রাণী বসবাসে অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। তাই বলা যায়, জনাব বাবলুর কারখানার বর্জ্য পদার্থ নদীর পানিতে মিশে পানি দূষিত করছে।
ঘ. উদ্দীপকে বর্জ্য পদার্থ দ্বারা পানি তথা পরিবেশ দূষণের বর্ণনা রয়েছে।
শিল্পোন্নয়নের সবচেয়ে বড় সমস্যা পরিবেশ দূষণ। দূষণের প্রভাবমুক্ত হতে সরকার আইন প্রণয়ন করেছে। কিন্তু আইনের প্রয়োগ যথার্থভাবে হচ্ছে না বলে পরিবেশ দূষণ বেড়েই চলেছে। তাই এই দুষণ রোধে সরকারের পাশাপাশি আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। উদ্দীপকে জনাব বাবলু তার ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান দ্বারা পানি দূষণ করছেন। এক্ষেত্রে জনাব বাবলুর উচিত যথাযথভাবে বর্জ্য নিষ্কাশনের লাইন স্থাপন করা। পানি দূষণরোধে গণমাধ্যম কার্যকর ভ‚মিকা রাখতে পারে। তারা পানি দূষণের ক্ষতিকর প্রভাব বেশি বেশি করে প্রচার করতে পারে। এতে জনগণ সচেতন হবে বলে আমি মনে করি। আইনের যথার্থ প্রয়োগ ঘটানোও পানি দূষণ রোধে কার্যকরী হতে পারে। কারণ যথাযথ আইন মানলে পরিবেশ রক্ষার ক্ষেত্রে সবাই সচেতন হবে।
সুতরাং বলা যায়, পানি দূষণ রোধে শিল্প কারখানার বর্জ্য ব্যবস্থাপনা উন্নতিকরণের পাশাপাশি গণমাধ্যমের সাহায্যে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং আইনের যথার্থ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।
প্রশ্ন-৬ নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
জনাব ইমরানের বাজারে মুদির দোকান রয়েছে। তিনি দেখেন যে, বড় বড় কোম্পানিগুলো বিভিন্ন দুর্যোগে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে অনেক অর্থ জমা দেয় এবং তা গণমাধ্যমগুলোতে প্রচার হয়। তারা স্কুল কলেজ প্রতিষ্ঠা করে সুনাম অর্জন করে। জনাব ইমরান গ্রাহকদের ঠকান না। অন্যায়ভাবে লাভ করা থেকে বিরত থাকেন। মাপে কম দেন না। এটাকেই তিনি সামাজিক দায়িত্ব পালন মনে করে নিয়েছেন।
ক. রাষ্ট্রের লক্ষ্য কোনটি? ১
খ. মূল্যবোধের স্বরূপ ব্যাখ্যা কর। ২
গ. উদ্দীপকের বড় বড় কোম্পানিগুলো কাদের প্রতি সামাজিক দায়িত্ব পালন করছে? বর্ণনা কর। ৩
ঘ. জনাব ইমরান যেসব বিষয়কে সামাজিক দায়িত্ব পালন করা বলে মনে করছেন তার যথার্থতা মূল্যায়ন কর। ৪
৬নং প্রশ্নের উত্তর
ক. রাষ্ট্রের লক্ষ্য হলো জনগণের স্বার্থ রক্ষা করা।
খ. মূল্যবোধ হলো আচরণ ও জ্ঞানবোধের সমষ্টি। মূল্যবোধ মানুষের জীবনে ইতিবাচক, মঙ্গলময় ও কল্যাণময় দিকের নির্দেশনা দেয়। অন্যায় থেকে ন্যায়, অধর্ম থেকে ধর্মকে আলাদা করতে এটি জ্ঞানবোধ জাগ্রত করে।
গ. উদ্দীপকে বড় বড় কোম্পানিগুলো সমাজের সাধারণ মানুষের প্রতি গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক দায়িত্ব পালন করছে।
সমাজের প্রতি ব্যবসায়ের যে দায়িত্ব থাকে তাই ব্যবসায়ের সামাজিক দায়িত্ব। সমাজ থেকে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করেই ব্যবসায়ের উন্নতি ও সমৃদ্ধি ঘটে। কারণ সমাজ ছাড়া ব্যবসায়ের অস্তিত্ব অসম্ভব। উদ্দীপকে জনাব ইমরান দেখেন বড় বড় কোম্পানিগুলো বন্যা-দুর্যোগে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ায় এবং জনহিতকর কাজ হিসেবে স্কুল কলেজ প্রতিষ্ঠা করে। কারণ তাদের ব্যবসায়ের যাবতীয় কাজ সমাজকে ঘিরেই হয়ে থাকে। অর্থাৎ সমাজ ও সমাজের মানুষকে ঘিরেই মূলত বড় বড় কোম্পানিগুলোর বা ব্যবসায়ীর ব্যবসায় আবর্তীত হয়। এক্ষেত্রে সমাজে বসবাসকারী জনগণের চাহিদা, চিন্তা, চেতনা প্রভৃতি বিবেচনায় রেখে ব্যবসায় পরিচালিত হয়। শুধু ক্রেতা বা ভোক্তা নয়; ব্যবসায় সফল হওয়ার জন্য ব্যবসায়ীদের সমাজের প্রতিটি পক্ষের প্রতি যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করতে হয়।
ঘ. জনাব ইমরান যে বিষয়কে সামাজিক দায়িত্ব পালন মনে করছেন তা হলো ক্রেতা ও ভোক্তাদের প্রতি দায়িত্ব পালন।
বর্তমানে তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ ব্যবসায় জগতে মুনাফা অর্জন করতে হলে ব্যবসায়ীদেরকে অবশ্যই সমাজের বিভিন্ন পক্ষের প্রতি দায়িত্ব পালনের প্রয়োজন পড়ে। ব্যবসায় যখন সমাজের বিভিন্ন পক্ষের প্রতি তাদের কল্যাণের জন্য স্বেচ্ছায় কোনো কাজ করে তখন তাকে জনহিতকর কাজ বলে। এসব কাজ মূলত ব্যবসায়ের সুনাম বৃদ্ধি সর্বোপরি মুনাফা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে করা হয়। উদ্দীপকের জনাব ইমরান তার মুদির দোকানের মাধ্যমে ক্রেতা ও ভোক্তাদের প্রতি দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে যেসব কাজ করছেন তা হলো ন্যায্য মূল্যে পণ্য সরবরাহ, ওজনে কম না দেওয়া এবং মানসম্মত পণ্য সরবরাহ করা। তিনি ক্রেতা ও ভোক্তাদের প্রতি দায়িত্ব পালনে ভোক্তার চাহিদা, অভ্যাস, রুচি প্রভৃতি বিষয় বিবেচনা করেছেন। কারণ ক্রেতা ও ভোক্তা ব্যতীত তার ব্যবসায় অচল। সমাজ থেকে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করেই তার ব্যবসায়ের উন্নতি ও সমৃদ্ধি ঘটে। সমাজ ছাড়া তার ব্যবসায়ের অস্তিত্ব অসম্ভব। তাই তিনি এসব পক্ষের প্রতি দায়িত্ব পালন করে ব্যবসায়ের সামাজিক দায়িত্ব পালন করছেন।
সুতরাং বলা যায়, জনাব ইমরান ক্রেতা ও ভোক্তাদের প্রতি যে সামাজিক দায়িত্ব পালন জরুরি মনে করছে তা অত্যন্ত যুক্তিযুক্ত।
প্রশ্ন-৭ নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
ঢাকা নিউমার্কেটের কাঁচা বাজারকে বাজার কর্তৃপক্ষ ফরমালিনমুক্ত বাজার ঘোষণা করেছে। তা সত্তে¡ও অধিক মুনাফা লাভের আশায় জাবেদ আলী নামক একজন মাছ বিক্রেতা মাছে ফরমালিন মিশিয়েছেন। বাজার কর্তৃপক্ষ এ ঘটনা জানতে পেরে জাবেদ আলীকে ২০,০০০ টাকা জরিমানা করে এবং এক মাসের মধ্যে তাকে দোকান ছেড়ে দেয়ার নির্দেশ দেয়। এ ঘটনা পত্রিকায় প্রকাশ হলে বাজার কর্তৃপক্ষের ওপর জনগণের আস্থা বৃদ্ধি পায় এবং ঢাকা নিউ মার্কেট কাঁচাবাজার তাদের নিকট একটি আদর্শ বিক্রয় কেন্দ্র হিসেবে পরিচিতি পায়।
ক. ক্রয়মূল্য ও বিক্রয় মূল্যের ব্যবধানকে কী বলে? ১
খ. ব্যবসায়ের অনৈতিক কার্যকলাপ বলতে কী বোঝ? ২
গ. জাবেদ আলীর ব্যবসায়ে কোনটি অনুপস্থিত? বর্ণনা কর। ৩
ঘ. ঢাকা নিউ মার্কেটের বাজার কর্তৃপক্ষের গৃহীত সিদ্ধান্ত কীভাবে মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে সহায়তা করবে বলে তুমি মনে কর? ৪
৭নং প্রশ্নের উত্তর
ক. ক্রয়মূল্য ও বিক্রয়মূল্যের ব্যবধানকে মুনাফা বলে।
খ. ব্যবসায়ের অনৈতিক কার্যকলাপ বলতে সে সকল ব্যবসায়িক কার্যকলাপকে বোঝায় যা দ্বারা জনগণ বা ভোক্তার ক্ষতি হয়। কোনো ব্যবসায়ী যদি পণ্যের দোষ-ত্রæটি গোপন করে পণ্যদ্রব্য বিক্রয় করে তাহলে এটি ব্যবসায়ের অনৈতিক কার্যকলাপ হিসেবে বিবেচিত হয়। কারণ এই পণ্যদ্রব্য ক্রয় করে ভোক্তা ক্ষতির সম্মুখীন হয়। আর বিক্রেতার প্রতি সে আস্থা হারিয়ে ফেলে। তাই ব্যবসায়ের অনৈতিক কার্যকলাপ বন্ধ করে ব্যবসায়িক সফলতা নিশ্চিত করতে হবে।
গ. জাবেদ আলীর ব্যবসায়ে নৈতিকতা অনুপস্থিত রয়েছে।
নৈতিকতা হলো মানব আচরণের মানদণ্ড। নৈতিকতাবোধ থেকেই মানুষ ন্যায়কে অন্যায় থেকে, ঠিককে বেঠিক থেকে, ভালোকে মন্দ থেকে পৃথক করতে পারে। কারণ নৈতিকতা বলতে মানুষের ভালো মন্দের বিচার বিশ্লেষণ করে সঠিকটি গ্রহণ করাকে বোঝায়। এটি মনের আচরণের মানদণ্ড হিসেবে কাজ করে। উদ্দীপকে জাবেদ আলীর মধ্যে নৈতিকতাবোধ না থাকায় বাজার কর্তৃপক্ষ ঢাকা নিউমার্কেট কাঁচাবাজারকে ফরমালিনমুক্ত বাজার ঘোষণা করার পরও তিনি অধিক মুনাফা লাভের আশায় মাছে ফরমালিন মিশিয়েছেন। ফরমালিন এক প্রকার বিষ। এরূপ বিষপানে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় না। তবে দীর্ঘদিন এরূপ বিষপানে শরীরে নানারকম জটিল রোগ সৃষ্টি হয়। তাই খাবারে ফরমালিন বা অন্য কোন বিষ জাতীয় দ্রব্য মিশানো একটি অনৈতিক কাজ এবং আইনের দৃষ্টিতে তা দণ্ডনীয় অপরাধ। ক্রেতাদের ভালো-মন্দ বিবেচনায় না এনে নিজ ব্যবসায়ের স্বার্থে জাবেদ আলী মাছে ফরমালিন মিশিয়েছেন। সুতরাং বলা যায়, জাবেদ আলী একজন ভেজাল পণ্যের ব্যবসায়ী বিধায় তার ব্যবসায়ের নৈতিকতা নেই বললেই চলে।
ঘ. ঢাকা নিউমার্কেট কাঁচাবাজার কর্তৃপক্ষ গৃহীত সিদ্ধান্ত মোতাবেক ভেজালমুক্ত ও টাটকা পণ্য সরবরাহের মাধ্যমে মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে সহায়তা করবে।
নৈতিকতা অনুসরণ করে ব্যবসায় করলে তা সমাজ, দেশ ও মানুষের কল্যাণ নিশ্চিত করে। ভেজালমুক্ত ও উন্নত পণ্য সামগ্রী সরবরাহের মাধ্যমে বাজার কর্তৃপক্ষের গৃহীত সিদ্ধান্ত মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে সহায়তা করবে। উদ্দীপকে ঢাকা নিউ মার্কেটের বাজার কর্তৃপক্ষ ঢাকা নিউ মার্কেট কাঁচাবাজারকে ফরমালিনমুক্ত বাজার হিসেবে ঘোষণা করেছে। কেউ যদি পণ্যে ফরমালিন বা এরূপ অন্য কোনো ক্ষতিকারক দ্রব্য পণ্যে মিশায় তাহলে ২০,০০০ টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা এবং তার দোকান বন্ধ করে দেওয়ার ব্যবস্থা রেখেছে। বাজার কর্তৃপক্ষের এরূপ ব্যবস্থা গ্রহণের ফলে ব্যবসায়ী ফরমালিনযুক্ত পণ্য বিক্রয় করতে সাহস পাবে না। এতে ঐ এলাকা এবং পার্শ্ববর্তী এলাকার মানুষ নিউমার্কেট কাঁচাবাজার থেকে নিশ্চিন্তে উন্নত মানের পণ্য ক্রয়ের সুযোগ পাবে। উন্নত ও ফরমালিনমুক্ত খাবার গ্রহণের মাধ্যমে মানুষ তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে পারবে।
সুতরাং বলা যায়, ঢাকা নিউমার্কেটের কাঁচাবাজারের কর্তৃপক্ষের গৃহীত সিদ্ধান্ত মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে সহায়ক হবে।
প্রশ্ন-৮ নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
রিয়া লেখাপড়া শেষ করে চাকরির জন্য অপেক্ষা করেনি। সামান্য পুঁজি ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তিনি একটি বিউটি পার্লারের ব্যবসায় শুরু করেন। রিয়ার বিউটি পার্লারের তিনজন মেয়েকে নিয়োগ করেন। এছাড়া রিয়ার ব্যবসায়ে অনুপ্রবেশ লক্ষ করে এলাকার আরও কয়েকজন বেকার মেয়েরা প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ছোট ছোট ব্যবসায় শুরু করেন। ফলে ঐসব মেয়েদের বেকার সমস্যার সমাধানের পাশাপাশি স্থানীয় আরও কিছু মেয়েদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়।
ক. পণ্যের মজুদদারি না করা কোন পক্ষের প্রতি দায়িত্ব পালন? ১
খ. ব্যবসায়ীর সৃজনশীলতা সম্পর্কে ব্যাখ্যা কর। ২
গ. রিয়ার বিউটি পার্লার স্থাপনের কারণ বর্ণনা কর। ৩
ঘ. বেকার সমস্যার সমাধানে রিয়ার অবদান মূল্যায়ন কর। ৪
৮নং প্রশ্নের উত্তর
ক. পণ্যের মজুদদারি না করা সমাজের প্রতি দায়িত্ব পালন।
খ. একজন ব্যবসায়ী হলো সমাজের একজন সৃজনশীল এবং সচেতন নাগরিক। সে তার ব্যবসায়কে গ্রাহকবান্ধব এবং লাভজনক করার জন্য নতুন নতুন পণ্য বা সেবা আবিষ্কারের চেষ্টায় রত থাকে। এছাড়া সে গ্রাহকের চাহিদা বিবেচনায় নিয়ে তার ব্যবসায়ে নিত্যনতুন পরিবর্তন নিয়ে আসে। এভাবেই ব্যবসায়ী তার সৃজনশীলতার প্রকাশ ঘটায়।
গ. রিয়া স্বাধীনভাবে জীবিকা অর্জনের জন্য বিউটি পার্লার স্থাপন করেন।
স্বাধীনভাবে জীবিকা অর্জনের একমাত্র উপায় ব্যবসায়। মুনাফা অর্জনের লক্ষ্যেই মানুষ ব্যবসায়ে বিভিন্ন অর্থনৈতিক কাজে লিপ্ত হন। এ উদ্দেশ্যেই একজন ব্যবসায়ী ঝুঁকি গ্রহণ করেন। এরূপ উদ্দেশ্য না থাকলে কোনো কাজ ব্যবসায় বলে গণ্য হয় না। উদ্দীপকের রিয়ার আত্মনির্ভরশীলতা বা স্বনির্ভরতা অর্জন কেবলমাত্র ব্যবসায়ের মাধ্যমেই সম্ভব। কারণ এক্ষেত্রে তাকে কারো কাছে তার কাজের জন্য জবাবদিহি করতে হয় না। ব্যবসায়ের লাভ হলে সম্পূর্ণটাই তিনি ভোগ করেন তেমনিভাবে ক্ষতি হলে তাকেই বহন করতে হয়। কিন্তু কারো অধীনে চাকরি করলে ব্যবসায় ক্ষতির জন্য মালিকের নিকট জবাবদিহি করতে হয়। কিন্তু রিয়া কারো কাছে তার কাজের জন্য জবাবদিহি করতে রাজি নন। তাছাড়া তিনি চাকরির জন্য অপেক্ষা করে বেকার জীবন যাপনে আগ্রহী নন। তাই আত্মনির্ভরশীলতা অর্জন ও বেকারত্বের অভিশাপ থেকে মুক্তির জন্যই রিয়া বিউটি পার্লার স্থাপন করেন।
ঘ. রিয়া বিউটি পার্লার স্থাপনের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে যা বেকার সমস্যা সমাধানে অগ্রণী ভ‚মিকা পালন করে।
ব্যবসায়ী সমাজের একজন সৃজনশীল ও সচেতন নাগরিক। আর জনগণের সমর্থনের ওপর ব্যবসায়ের স্থায়িত্ব নির্ভরশীল। তাই ব্যবসায়ীরা ব্যবসায় নতুন নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও বেকারত্ব হ্রাস করে রাষ্ট্রের প্রতি দায়বদ্ধতা পালন করে থাকে। উদ্দীপকের রিয়া সামান্য পুঁজি ও প্রশিক্ষণকে অবলম্বন করে একটি বিউটি পার্লার স্থাপন করার মাধ্যমে নিজের আয়ের পথ সুগম করেছেন। নিজের আয়ের পাশাপাশি রিয়া আরও তিনজন মেয়ের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করেছেন। তাছাড়া রিয়া একজন শিক্ষিত মানুষ। একজন শিক্ষিত মানুষ নিজেকে আত্মকর্মসংস্থানে নিয়োজিত করায় অন্যান্য মেয়েরাও রিয়ার পথ অনুসরণ করল এবং প্রশিক্ষণের মাধ্যমে নিজেদের বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত করল। তাছাড়া রিয়ার বিউটি পার্লার একটি সামাজিক প্রতিষ্ঠান। সমাজের জনগণের সেবার মাধ্যমেই রিয়া তার ব্যবসায়িক কার্যক্রম চালনা করে থাকেন। এছাড়া রিয়ার মাধ্যমে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নিয়োজিত কর্মীরাও এরূপ আত্মকর্মসংস্থানমূলক কাজে নিজেদেরকে নিয়োজিত করতে পেরেছে। এ অনুপ্রেরণা তারা রিয়ার কাছ থেকে পেয়েছে। এভাবে রিয়া কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও বেকারত্ব হ্রাস করে রাষ্ট্রের প্রতি দায়িত্ব পালন করে।
সুতরাং বলা যায়, রিয়ার নিজের ও দেশের বেকার সমস্যা সমাধানে তার বিউটি পার্লারের অবদান অপরিসীম।
প্রশ্ন-৯ নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
মুন্না একজন ব্যবসায়ী। লেখাপড়া শেষ করে তিনি একটি খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা স্থাপন করেন। অনুক‚ল প্রাকৃতিক পরিবেশ ও কাঁচামালের সহজলভ্যতার কারণে মুন্না সফলতার সাথে ব্যবসায় স¤প্রসারণ করেন। এলাকায় কোনো ভালো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান না থাকায় শিক্ষার হার ছিল খুবই কম। তাই তিনি এলাকায় একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন করেন এবং নিয়মিত প্রতিষ্ঠানের খোঁজ নেন।
ক. অন্যায় থেকে ন্যায় নিরূপণের ক্ষমতা কোন বোধ থেকে আসে? ১
খ. শ্রমিক-কর্মীদের জন্য কাজের উপযুক্ত পরিবেশ কেন প্রয়োজন? ব্যাখ্যা কর। ২
গ. মুন্নার ব্যবসায় স¤প্রসারণ করার কারণ বর্ণনা কর। ৩
ঘ. মুন্না কীভাবে সামাজিক দায়িত্ব পালন করে তা বিশ্লেষণ কর। ৪
৯নং প্রশ্নের উত্তর
ক. অন্যায় থেকে ন্যায় নিরূপণের ক্ষমতা নীতিবোধ থেকে আসে।
খ. শ্রমিক কর্মীদের জন্য কাজের উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করা ব্যবসায়ের একটি সামাজিক দায়বদ্ধতা। উপযুক্ত পরিবেশ থাকলে শ্রমিক-কর্মীরা তার কাজে মনোযোগ দিতে পারে। ফলে ব্যবসায়ের উৎপাদন ও দক্ষতা বৃদ্ধি পায়। এতে ব্যবসায়ের উন্নতি ও মুনাফা অর্জনও সহজ হয়। কারণ উপযুক্ত পরিবেশ পেলে শ্রমিকরা প্রতিষ্ঠানকে নিজের মনে করে। এতে ব্যবসায়ের সার্বিক উন্নতি সম্ভব হয়। এজন্যই শ্রমিক-কর্মীদের জন্য কাজের উপযুক্ত পরিবেশ প্রয়োজন।
গ. অনুক‚ল প্রাকৃতিক পরিবেশ ও কাঁচামালের সহজলভ্যতার কারণে মুন্না সফলতার সাথে ব্যবসায় স¤প্রসারণ করেন।
সম্পদের সদ্ব্যবহার করে ব্যবসায়ী ব্যবসায়ের স¤প্রসারণ ঘটায়। জনগণের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কার্যক্রমে অবদান রাখা ব্যবসায়ের একটি নৈতিকতা হিসেবে বিবেচিত হয়। উদ্দীপকে মুন্না খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণের কারখানা স্থাপন করেন। তিনি অত্যন্ত বিচক্ষণতার সাথে প্রাকৃতিক পরিবেশের উপাদান বিবেচনা করে কারখানা স্থাপন করেন। অনুক‚ল প্রাকৃতিক পরিবেশ ও কাঁচামালের সহজলভ্যতার কারণে মুন্না সহজে উৎপাদন কার্য সম্পাদনে সক্ষম হন। উৎপাদন কার্যে সহজলভ্যতার কারণে মুন্নার ব্যবসায়ে মুনাফা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পেতে থাকে। আর বর্ধিত মুনাফা দিয়ে মুন্না সহজেই ব্যবসায় স¤প্রসারণ করতে সক্ষম হন।
ঘ. মুন্না তার ব্যবসায়ের মুনাফা জনহিতকর কাজে ব্যয় করে সামাজিক দায়িত্ব পালন করছেন।
বর্তমান প্রতিযোগিতামূলক ব্যবসায় জগতে ব্যবসায়ীকে নিজের মুনাফা বৃদ্ধির উদ্দেশ্য অর্জনের পাশাপাশি বিভিন্ন পক্ষের প্রতি দায়িত্ব পালন করতে হয়। এরা হলো রাষ্ট্র, সমাজ, ক্রেতা ও কর্মচারী। এসব পক্ষ কোনো না কোনোভাবে ব্যবসায়ের সাথে সংশ্লিষ্ট। উদ্দীপকে মুন্না তার এলাকার খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা স্থাপন করেন। সেখানে সে সফলতার সাথে ব্যবসায় স¤প্রসারণ করেন। মুন্না শিক্ষা বিস্তারে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন করেন। তাছাড়াও তিনি শিক্ষার আধুনিকায়ন ও উন্নয়নের জন্য নিয়মিত বিদ্যালয় পরিদর্শন করেন এবং শিক্ষক ও ছাত্রদের কাছ থেকে শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নে বিভিন্ন পরামর্শ গ্রহণ করেন এবং সে অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। এভাবে শিক্ষার বিস্তারে মুন্না বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। তার এরূপ কাজের মাধ্যমে দেশে শিক্ষার হার বৃদ্ধির সাথে সাথে শিক্ষা ব্যবস্থাও উন্নত হবে।
সুতরাং বলা যায়, মুন্না শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন করে শিক্ষিত মানুষ গড়ার কাজে নিজেকে নিয়োজিত করে সামাজিক দায়িত্ব পালন করছেন।
প্রশ্ন-১০ নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
জনাব বরকত উল্লাহ স্বনামধন্য ব্যবসায়ী। লাভ-ক্ষতির মধ্যদিয়েই একের পর এক ব্যবসায় গড়ে তুলেছেন। এখন তার মনে হয় স্বার্থপরের মতোই তার জীবনটা কেটেছে। তার বন্ধু রেজা সাহেব বললেন, মানুষের প্রয়োজন সামনে রেখেই তুমি ব্যবসায় গড়ে তুলেছ। গ্রাহকদের সাথে সম্পর্ক গড়েছ। তাদের সুবিধা-অসুবিধা দেখেছ। যদিও তুমি সবই ব্যবসায়ের স্বার্থ বিবেচনায় করেছ, তারপরও এর দ্বারা সমাজ অনেক উপকৃত হয়েছে।
ক. শ্রমিকদেরকে কীসের নিরাপত্তা দিতে হবে? ১
খ. পরিবেশ দূষণ প্রতিরোধে গণমাধ্যমের ভ‚মিকা ব্যাখ্যা কর। ২
গ. রেজা সাহেব তার বক্তব্যে ব্যবসায়ের কোন উদ্দেশ্যের প্রতি আলোকপাত করেছেন? বর্ণনা কর। ৩
ঘ. জনাব বরকত উল্লাহ প্রধানত কোন উদ্দেশ্যেকে সামনে রেখে ব্যবসায় করেছেন বলে মনে করছেন? বিশ্লেষণ কর। ৪
১০নং প্রশ্নের উত্তর
ক. শ্রমিকদেরকে চাকরির নিরাপত্তা দিতে হবে।
খ. বর্তমানে আমাদের চারপাশের পরিবেশ নানান কারণে দূষিত হচ্ছে। এসব দূষণ প্রতিরোধে গণমাধ্যম ব্যাপক ভ‚মিকা রাখতে পারে। এক্ষেত্রে গণমাধ্যম যেমন : রেডিও তাদের স¤প্রচারে পরিবেশ দূষণের ক্ষতিকর বিষয়সমূহ প্রচার করতে পারে। টেলিভিশন চ্যানেলগুলো পরিবেশ দূষণের প্রভাবসমূহ সরাসরি স¤প্রচার এবং সংবাদপত্র বিজ্ঞাপন দিয়ে পরিবেশ দূষণ সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করতে পারে। এভাবে গণমাধ্যম পরিবেশ দূষণে ভ‚মিকা রাখতে পারে।
গ. রেজা সাহেব তার বক্তব্যে ব্যবসায়ের সামাজিক দায়িত্ব পালন সম্পর্কিত উদ্দেশ্যের প্রতি আলোকপাত করেছেন।
ব্যবসায়ের অন্যতম উদ্দেশ্য হলো সামাজিক দায়িত্ব পালন। অর্থাৎ সমাজের জনগণের বিভিন্ন চাহিদা মিটানোই হলো সামাজিক দায়বদ্ধতা। আর ব্যবসায়ের সামাজিক দায়বদ্ধতা বলতে মুনাফা অর্জনের সাথে সাথে সমাজের জন্য কিছু মঙ্গলময় বা কল্যাণমূলক কাজ করাকে বোঝায়। উদ্দীপকে ব্যবসায়ী জনাব বরকত উল্লাহ তার ব্যবসায়ের মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যকে সামনে রেখেই সমাজের বিভিন্ন পক্ষের প্রতি বিভিন্ন রকম দায়িত্ব পালন করেছেন। সামাজিক দায়িত্ব পালনের আওতায় তিনি সমাজের মানুষের কাছে ন্যায্য মূল্যে মানসম্মত পণ্য সরবরাহ করেছেন। ফলে দেখা যায় যে, তার ব্যবসায়ের স¤প্রসারণ ও সামাজিক দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে অনেকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এক্ষেত্রে রেজা সাহেবের ভাষায় জনাব বরকত উল্লাহ ব্যবসায়ের মাধ্যমে উপরিউক্ত কাজসমূহ সম্পাদন করায় মুনাফা অর্জনের পাশাপাশি ব্যবসায়ের সামাজিক উদ্দেশ্য পূরণ হয়েছে।
ঘ. জনাব বরকত উল্লাহ প্রধানত মুনাফা অর্জন উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে ব্যবসায় করেছেন বলে মনে করছেন।
ব্যবসায়ের নানান উদ্দেশ্যসমূহ ব্যক্তি, সমাজ ও দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। বিভিন্ন ধরনের উদ্দেশ্যের মধ্যে ব্যবসায়ের প্রধান উদ্দেশ্য হলো মুনাফা অর্জন। উদ্দীপকে জনাব বরকত উল্লাহ একজন স্বনামধন্য ব্যবসায়ী। মুনাফা অর্জনের লক্ষ্যে তিনি ব্যবসায়ে বিভিন্ন অর্থনৈতিক কাজে লিপ্ত হন। এ উদ্দেশ্যেই ঝুঁকি বহন করেন। এরূপ উদ্দেশ্য না থাকলে কোনো কাজ ব্যবসায় বলে গণ্য হয় না। জনাব বরকত উল্লাহ ব্যবসায়ে লাভ হলে খুশি হয়েছেন অন্যদিকে ক্ষতি হলে দুঃখ পেয়েছেন। এতে বোঝা যায় জনাব বরকত উল্লাহর ব্যবসায়ের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল মুনাফা অর্জন। তিনি মূলত এ উদ্দেশ্য অর্জনের জন্যই সমাজে বসবাসকারী জনগণের চাহিদা, রুচি, চেতনা প্রভৃতি বিবেচনায় রেখে একের পর এক ব্যবসায় প্রতিষ্ঠা করে পরিচালনা করছেন। অর্থাৎ তিনি সমাজের জনগণের সেবার মাধ্যমেই মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে তার ব্যবসায় কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন।
সুতরাং বলা যায়, জনাব বরকত উল্লাহ মনে করেন ব্যবসায় মুনাফা অর্জন প্রতিটি ব্যবসায়ীরই প্রধান লক্ষ্য এবং এ লক্ষ্যেই তিনি তার যাবতীয় কাজ সম্পাদন করেন।
প্রশ্ন-১১ নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
মাহমুদ অতিরিক্ত লাভের আশায় রমজান মাসের শুরুতে পণ্য মজুদ করে পণ্যের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে। ফলে মানুষকে অতিরিক্ত মূল্যে পণ্য ক্রয় করতে হয়। এ পরিস্থিতিতে মেহেদী ও তার বন্ধুরা একটি দোকান খুলে ন্যায্য মূল্যে পণ্য বিক্রি শুরু করে। ফলে মাহমুদের পণ্যের উদ্বৃত্ত সৃষ্টি হয় এবং সে ক্ষতির সম্মুখীন হয়। তাই সে সিদ্ধান্ত নেয় পরবর্তীতে পণ্যের মজুদ করে আর কখনও সে পণ্যের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করবে না।
ক. আচরণের মানদণ্ড কোনটি? ১
খ. ব্যবসায়ের জনহিতকর কাজ বলতে কী বোঝ? ব্যাখ্যা কর। ২
গ. মাহমুদ কীভাবে ব্যবসায়ের নৈতিকতাকে লঙ্ঘন করে? বর্ণনা কর। ৩
ঘ. মাহমুদের নৈতিকতা অনুসরণের তাৎপর্য বিশ্লেষণ কর। ৪
১১নং প্রশ্নের উত্তর
ক. আচরণের মানদণ্ড হলো নৈতিকতা।
খ. ব্যবসায় একটি সামাজিক প্রতিষ্ঠান। তাই সমাজের বিভিন্ন পক্ষের প্রতি তার কিছু দায়িত্ব পালন করতে হয়। ব্যবসায় যখন সমাজের বিভিন্ন পক্ষের প্রতি তাদের কল্যাণের জন্য স্বেচ্ছায় কোনো কাজ করে তখন তাকে জনহিতকর কাজ বলে। এসব কাজ মূলত ব্যবসায় সুনাম বৃদ্ধি সর্বোপরি মুনাফা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে করা হয়।
গ. পণ্য মজুদকরণের মাধ্যমে মাহমুদ ব্যবসায়ের নৈতিকতা লঙ্ঘন করেছে।
ব্যবসায় মূল্যবোধ ও নৈতিকতার প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। এক্ষেত্রে মূল্যবোধ হলো আচরণ ও জ্ঞানবোধের সমষ্টি। তার নৈতিকতা বলতে মানুষের ভালো মন্দের বিচার-বিশ্লেষণ করে সঠিকটি গ্রহণ করাকে বোঝায়। উদ্দীপকে মাহমুদ অতিরিক্ত লাভের আশায় পণ্য মজুদ করে পণ্যের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে নৈতিকতা লঙ্ঘন করে। ব্যবসায় পরিচালনায় কিছু নৈতিকতা রয়েছে। এসব নৈতিকতা জনগণ ও ব্যবসায় উভয় পক্ষের স্বার্থ রক্ষা করে। মাহমুদ অতিরিক্ত লাভের আশায় রমজান মাসের শুরুতে পণ্য মজুদ করে পণ্যের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে। ফলে অতিরিক্ত মূল্যে ক্রেতারা পণ্য ক্রয়ে বাধ্য হয় যা তাদের জন্য ভোগান্তির কারণ। আর ব্যবসায়ের কোনো কাজের দ্বারা মানুষ অসুবিধার সম্মুখীন হলে তা ব্যবসায়ের নৈতিকতা পরিপন্থী কাজ।
ঘ. সমাজের কল্যাণ নিশ্চিত করার জন্য মাহমুদের ব্যবসায়ে নৈতিকতা অনুসরণ তাৎপর্যপূর্ণ।
ব্যবসায় মানুষের নানাবিধ অভাব পূরণের মাধ্যমে জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে সহায়তা করে। নৈতিক আচরণবিধি অনুসরণের ফলে একজন ব্যবসায়ী সহজেই ন্যায়-অন্যায়, ধর্ম-অধর্ম, উচিত-অনুচিত ইত্যাদি বিষয়গুলো বুঝতে পারে। ফলে এসব বিষয় বিবেচনা করে সে ব্যবসায়ের বিভিন্ন ক্ষেত্রে যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে তা একটি সুখী ও সুন্দর সমাজ গঠনে সহায়তা করে এবং দেশের জন্য কল্যাণ বয়ে আনে। উদ্দীপকে মাহমুদ অতিরিক্ত লাভের আশায় পণ্য মজুদ করে পণ্যের কৃত্রিম অভাব সৃষ্টি করে। ফলে মানুষকে অতিরিক্ত মূল্যে পণ্য ক্রয় করতে হয়। এ পরিস্থিতিতে মেহেদী ও তার বন্ধুরা একটি দোকান খুলে ন্যায্য মূল্যে পণ্য বিক্রি শুরু করে। মেহেদী ও তার বন্ধুদের গৃহীত ব্যবস্থার ফলে মাহমুদের পণ্যের উদ্বৃত্ত সৃষ্টি হয় এবং সে প্রচুর ক্ষতির সম্মুখীন হয়। মাহমুদ ব্যবসায়ের নৈতিকতা উপলব্ধি করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে কখনো পণ্যের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করবে না। তার মধ্যে এরূপ নৈতিকতাবোধ সৃষ্টি হওয়ায় ক্রেতারা ভবিষ্যতে তার কাছ থেকে ন্যায্য মূল্যে পণ্য পাবে। তখন তার ব্যবসায়ের প্রতি ভোক্তার ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি সৃষ্টি হবে। এসবের প্রেক্ষিতে সে সহজেই তার ব্যবসায়ের সফলতা অর্জন করতে পারবে।
সুতরাং বলা যায়, ব্যবসায়ের দীর্ঘমেয়াদি সাফল্য এবং জনগণ ও সমাজের কল্যাণ নিশ্চিত করার জন্য মাহমুদের ব্যবসায়ের নৈতিকতা অনুসরণ অপরিহার্য।
প্রশ্ন-১২ নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
কবির পরিবারের আর্থিক অবস্থা বিবেচনা করে একটি মুরগির খামার স্থাপন করে। ঐ খামারে সে কঠোর পরিশ্রম করে। সে কখনও ওজনে কম দেয় না এবং রোগে আক্রান্ত মুরগি বিক্রি করে না। ফলে সে গ্রাহকের বিশ্বাস অর্জন করতে পারে। এছাড়া সে তার খামারের বর্জ্য ও মৃত মুরগি মাটির নিচে চাপা দিয়ে রাখে। ফলে পরিবেশ দূষিত হয় না। এছাড়াও সে খামারে ৩ জন লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করেছে।
ক. সমাজের ভালো মন্দ দেখা ব্যবসায়ের জন্য কী? ১
খ. ব্যবসায়ীর অনৈতিক কর্মকাণ্ডের ফলাফল ব্যাখ্যা কর। ২
গ. কীভাবে কবির গ্রাহকের আস্থা অর্জন করেন? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. সামাজিক দায়িত্ব পালনে কবিরের ভ‚মিকা মূল্যায়ন কর। ৪
১২নং প্রশ্নের উত্তর
ক. সমাজের ভালো মন্দ দেখা ব্যবসায়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ দ্বায়িত্ব।
খ. ব্যবসায়ী যদি নৈতিকতা অনুসরণ না করে অনৈতিক কর্মকাণ্ডে নিয়োজিত হন তাহলে ব্যবসায়ে তার নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। অনৈতিক কার্যকলাপ ক্রেতাদের নিকট প্রকাশ পেলে ব্যবসায়ের সুনাম ক্ষুণœ হয় এবং প্রতিষ্ঠানে ক্রেতাদের সমাগম কমে যায়। ব্যবসায়ের প্রয়োজনে ঋণ সংগ্রহ করা কঠিন হয়ে পড়ে। ধীরে ধীরে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানটি ধ্বংস হয়ে যায়।
গ. নৈতিকতার সহিত ব্যবসায় পরিচালনা করে কবির গ্রাহকের আস্থা অর্জন করেন।
পারস্পরিক বিশ্বাস ব্যবসায়ের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ক্রেতা ও ভোক্তাদের আস্থা ও সহযোগিতার ওপর ব্যবসায়ের সফলতা নির্ভর করে। মানসম্মত পণ্য সরবরাহ ও পণ্য সম্পর্কে সঠিক তথ্য সরবরাহ করার মাধ্যমে ক্রেতা ও ভোক্তার আস্থা অর্জন সম্ভব। উদ্দীপকে পারিবারিক আর্থিক স্বচ্ছলতা বৃদ্ধির জন্য কবির একটি মুরগির খামার স্থাপন করে। গ্রাহকদের সাথে কোনো প্রকার প্রতারণা করে না বিধায় সে গ্রাহকের আস্থা অর্জন করে। সে তার খামারের মুরগি ক্রেতাদের কাছে ন্যায্য মূল্যে বিক্রি করে এবং কখনও ওজনে কম দেয় না। তাছাড়া কবির রোগে আক্রান্ত মুরগি বিক্রি না করে মাটির নিচে চাপা দিয়ে রাখে। এসব কারণে গ্রাহকরা কবিরকে বিশ্বাস করে এবং তার কাছ থেকে পণ্য ক্রয় করে।
ঘ. কবির একজন সফল উদ্যোক্তা হিসেবে ব্যবসায়ের বিভিন্ন পক্ষের প্রতি সৃষ্ট দায়বদ্ধতা যথাযথভাবে পালন করে থাকে।
যে সকল কাজ সামাজিক মূল্যবোধ এবং নৈতিকতা দ্বারা সমর্থনযোগ্য সেগুলোকে নৈতিক কাজ বলে। যেমন: গুণগত মানের পণ্য বিক্রয় করা, পণ্যের সঠিক ওজন রক্ষা করা, ফরমালিন বা বিষাক্ত দ্রব্য পণ্যে মিশ্রিত না করা, মৃত পশু-পাখির মাংস বিক্রি না করা ইত্যাদি নৈতিক কাজ হিসেবে বিবেচিত। উদ্দীপকে কবির সমাজের প্রতি বিভিন্ন ধরনের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালনের মাধ্যমে তার ব্যবসায়ের উন্নতি করেছে। তার ব্যবসায়ের কারণে সমাজ যেন কোনোভাবে ক্ষতির সম্মুখীন না হয় সেজন্য সে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করে। কবির সমাজের মানুষকে ন্যায্য মূল্যে মানসম্মত পণ্য সরবরাহ করে। খামারের বর্জ্য ও মৃত মুরগি মাটির নিচে চাপা দিয়ে রাখে। কারণ বর্জ্য ও মৃত মুরগি যেখানে সেখানে ফেললে তা পরিবেশ দূষিত করবে। আর পরিবেশ দূষিত হলে সমাজের মানুষ অসুবিধায় পড়বে। তাছাড়া কবির তার খামারে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করেছে। এই সুযোগ সমাজকে আর্থিকভাবে উপকৃত করবে।
সুতরাং বলা যায়, কবিরের ব্যবসায়িক কার্যক্রমের মাধ্যমে সামাজিক উদ্দেশ্য পূরণ হয়েছে।
প্রশ্ন-১৩ নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
সুমন ও সুভাস ধানমন্ডিতে দুটি ওষুধের দোকান স্থাপন করে। সুমন ভোক্তাদের কাছে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রি না করে তা ওষুধ কোম্পানির নিকট ফেরত দেয়। কিন্তু সুভাস মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রি করে। ফলে এলাকার মানুষ তার দোকান থেকে ওষুধ ক্রয় বন্ধ করে দিয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে সুভাস সুমনের পরামর্শে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছে।
ক. ব্যবসায়িক আচরণ নিয়ন্ত্রণ করে কে? ১
খ. পণ্যের কৃত্রিম সংকট বলতে কী বোঝ? ২
গ. সুমন কীভাবে ব্যবসায়ের সামাজিক দায়িত্ব পালন করছে? বর্ণনা কর। ৩
ঘ. সুভাষ সুমনের পরামর্শ অনুসরণের ফলে ব্যবসায়ে কী প্রভাব ফেলবে বলে তুমি মনে কর? ৪
১৩নং প্রশ্নের উত্তর
ক. ব্যবসায়িক আচরণ নিয়ন্ত্রণ করে ব্যবসায়িক নৈতিকতা।
খ. ব্যবসায়ীরা অনেক সময় অতিরিক্ত লাভের আশায় পণ্য আমদানি বা সংগ্রহ করে গুদামে সংরক্ষণ করে রাখে। ফলে বাজারে পণ্যের সংকট দেখা দেয়। এটিই পণ্যের কৃত্রিম সংকট। সাধারণত দাম বাড়ার উদ্দেশ্যে ইচ্ছাকৃতভাবে ব্যবসায়ীরা এ সংকট সৃষ্টি করে।
গ. সুমন ভোক্তাদের নিকট মেয়াদোত্তীর্ণ ঔষধ বিক্রয় না করে নৈতিকতা অনুসরণ করে সামাজিক দ্বায়িত্ব পালন করেছে।
ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ব্যবসায়ের নৈতিকতা মেনে চলা। নৈতিকতা মেনে চললে ব্যবসায়ের ধারণা চিিহ্নত করা থেকে শুরু করে সফলভাবে পরিচালনার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ মানদণ্ড অনুসরণ করা হয়। ফলে ব্যবসায়টি সুষ্ঠু ও সঠিকভাবে পরিচালনা করা যায়। উদ্দীপকে সুমন ভোক্তাদের কাছে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রি না করে তা ওষুধ কোম্পানির নিকট ফেরত দেয়। কারণ মানসম্মত পণ্য সরবরাহ করা বা মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য বিক্রয় না করা ক্রেতা ও ভোক্তাদের আস্থা অর্জন করা ব্যবসায়ের দায়িত্ব। ফলে ক্রেতা সুমনের ব্যবসায়ের ওপর আস্থা রাখতে পারে। এভাবে সুমন মানসম্মত ওষুধ সরবরাহের মাধ্যমে ক্রেতা ও ভোক্তার প্রতি দায়িত্ব পালন করছে।
ঘ. সুভাস সুমনের পরামর্শ অনুসরণের ফলে ব্যবসায়ে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে আমি মনে করি।
সমাজের বিভিন্ন পক্ষের প্রতি ব্যবসায়ের বিভিন্ন দায় দায়িত্ব রয়েছে। এসব দায়-দায়িত্ব যথাযথভাবে পালনের ওপর ব্যবসায়ের সাফল্য নির্ভর করে। উদ্দীপকে সুভাস মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রি করত। তার ঐ ওষুধ ব্যবহার করে বিভিন্ন শারীরিক সমস্যাসহ মানুষের মৃত্যুও হতে পারত। তাই তার মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রির ঘটনাটি জানতে পেরে মানুষ তার দোকান থেকে ওষুধ ক্রয় বন্ধ করে দেয়। এমতাবস্থায় সুমন সুভাসকে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রয় করতে নিষেধ করে। সুমনের পরামর্শ অনুসরণ করলে সুভাসের ওষুধের দোকানের ওপর মানুষের আস্থা ফিরে আসবে এবং সুভাস ব্যবসায়ে সাফল্য অর্জন করতে পারবে। কারণ সুমন তার ফার্মেসির মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রয় না করে ওষুধ কোম্পানির নিকট ফেরত দেয়। সুমন ফার্মেসি স্থাপন করে সৎভাবে ব্যবসায় পরিচালনা করে। অর্থাৎ সুমন কোনো ক্রেতার সাথে প্রতারণা করেনি ও মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রয় করেনি। তাছাড়া পরিশ্রম, আত্মবিশ্বাস ইত্যাদি কারণে সুমন ব্যবসায় সফলতা অর্জন করে।
সুতরাং বলা যায়, সুমনের এরূপ পরামর্শ সুভাস অনুসরণ করলে তার দোকানের সামগ্রিকভাবে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।
জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন \ ১ \ ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানটিকে কোন দায়বদ্ধতার বিষয়টি মেনে চলতে হয়?
উত্তর : ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানটিকে নৈতিকতা ও সামাজিক দায়বদ্ধতার বিষয়টি মেনে চলতে হয়।
প্রশ্ন \ ২ \ কোনটি মানুষকে ন্যায়-অন্যায়ের মধ্যে পার্থক্য চিহ্নিত করতে সাহায্য করে?
উত্তর : মূল্যবোধ ও নৈতিকতাবোধ মানুষকে ন্যায়-অন্যায়ের মধ্যে পার্থক্য চিহ্নিত করতে সাহায্য করে।
প্রশ্ন \ ৩ \ মুনাফা কী?
উত্তর : মুনাফা হলো ক্রয়মূল্য এবং বিক্রয়মূল্যের ব্যবধান।
প্রশ্ন \ ৪ \ পণ্যের মূল্য কাদের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে থাকতে হবে?
উত্তর : পণ্যের মূল্য জনগণের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে থাকতে হবে।
প্রশ্ন \ ৫ \ অনৈতিক কার্যকলাপের প্রতিক্রিয়া কীরূপ?
উত্তর : অনৈতিক কার্যকলাপের প্রতিক্রিয়া ভয়াবহ।
প্রশ্ন \ ৬ \ ব্যবসায়ের উন্নতি ও সমৃদ্ধির জন্য কোনটি পালন অপরিহার্য?
উত্তর : ব্যবসায়ের উন্নতি ও সমৃদ্ধির জন্য সামাজিক দায়িত্ব পালন অপরিহার্য।
প্রশ্ন \ ৭ \ কোনটি অনুসরণ করলে ব্যবসায় সিদ্ধান্তসমূহ সঠিক হবে?
উত্তর : নৈতিকতার সাধারণ নীতিমালা অনুসরণ করলে ব্যবসায় সিদ্ধান্তসমূহ সঠিক হবে।
প্রশ্ন \ ৮ \ সমাজের সম্মান ও শ্রদ্ধা পেতে কোনটির বিকল্প নেই?
উত্তর : সমাজের সম্মান ও শ্রদ্ধা পেতে ব্যবসায় নৈতিক আচরণ বা সত্য পথ অবলম্বনের বিকল্প নেই।
প্রশ্ন \ ৯ \ অর্জিত মুনাফার কিছু অংশ কোন কাজে ব্যয় করলে সমাজ উপকৃত হবে?
উত্তর : অর্জিত মুনাফার কিছু অংশ জনহিতকর কাজে ব্যয় করলে সমাজ উপকৃত হবে।
প্রশ্ন \ ১০ \ রাষ্ট্রের লক্ষ্য কী?
উত্তর: জনগণের স্বার্থ রক্ষা করে ব্যবসায় পরিচালিত হোক এটাই রাষ্ট্রের লক্ষ্য।
প্রশ্ন \ ১১ \ কাদের আস্থা ও সহযোগিতার ওপর ব্যবসায়ের সফলতা নির্ভর করে?
উত্তর : ক্রেতা ও ভোক্তাদের আস্থা ও সহযোগিতার ওপর ব্যবসায়ের সফলতা নির্ভর করে।
প্রশ্ন \ ১২ \ মূল্যবোধ কী?
উত্তর : যে জ্ঞানবোধ এবং আচরণ সমাজ মূল্যবান ও অনুকরণীয় মনে করে তাকেই মূল্যবোধ বলে।
প্রশ্ন \ ১৩ \ পণ্যের কৃত্রিম অভাব সৃষ্টি কীসের পরিপন্থী?
উত্তর : পণ্যের কৃত্রিম অভাব সৃষ্টি নৈতিকতার পরিপন্থী।
প্রশ্ন \ ১৪ \ ব্যবসায় কোন ধরনের প্রতিষ্ঠান?
উত্তর : ব্যবসায় একটি সামাজিক প্রতিষ্ঠান।
প্রশ্ন \ ১৫ \ নিয়মিত কর প্রদান ব্যবসায়ের কোন ধরনের দায়বদ্ধতা?
উত্তর : নিয়মিত কর প্রদান ব্যবসায়ের সামাজিক দায়বদ্ধতা।
প্রশ্ন \ ১৬ \ মূল্যবোধ কীসের সমষ্টি?
উত্তর : মূল্যবোধ হলো আচরণ ও জ্ঞানবোধের সমষ্টি।
প্রশ্ন \ ১৭ \ অনুকরণীয় আচরণের নাম কী?
উত্তর : অনুকরণীয় আচরণের নাম মূল্যবোধ।
প্রশ্ন \ ১৮ \ কাদের স্বার্থ অবহেলা করে ব্যবসায় পরিচালনা অসম্ভব?
উত্তর : শ্রমিক-কর্মচারীদের স্বার্থ অবহেলা করে ব্যবসায় পরিচালনা অসম্ভব।
প্রশ্ন \ ১৯ \ ভোক্তাদের কোন ধরনের তথ্য সরবরাহ করতে হবে?
উত্তর : ভোক্তাদের পণ্য ও বাজার সংক্রান্ত তথ্য সরবরাহ করতে হবে।
প্রশ্ন \ ২০ \ ব্যবসায়ী সমাজের কোন ধরনের নাগরিক?
উত্তর : ব্যবসায়ী সমাজের একজন সৃজনশীল ও সচেতন নাগরিক।
প্রশ্ন \ ২১ \ কোন ধরনের ব্যবসায়ীকে সবাই ঘৃণা করে?
উত্তর: অনৈতিক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত ব্যবসায়ীকে সবাই ঘৃণা করে।
প্রশ্ন \ ২২ \ ব্যবসায়ের সামাজিক দায়বদ্ধতা কী?
উত্তর : ব্যবসায়ী যখন মুনাফা অর্জনের পাশাপাশি সমাজের কিছু কল্যাণমূলক কাজ করে তখন তাকে ব্যবসায়ের সামাজিক দায়বদ্ধতা বলে।
অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন \ ১ \ মানব আচরণের মানদণ্ড বলতে কী বোঝ?
উত্তর : মানব আচরণের মানদণ্ড হলো নৈতিকতা। নৈতিকতা মানুষের দৈনন্দিন কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। নৈতিকতাবোধ মানুষকে ন্যায়-অন্যায়, ঠিক-বেঠিক, ভালো-মন্দের মধ্যে পার্থক্য চিহ্নিত করতে সাহায্য করে। এটা মানুষের জীবনে ইতিবাচক, মঙ্গলময় ও কল্যাণময় দিকের নির্দেশনা দেয়। অন্যায় থেকে ন্যায়, অধর্ম থেকে ধর্ম, অসত্য থেকে সত্য, অনুচিত থেকে উচিত পৃথকীকরণ বা নিরূপণের ক্ষমতা নৈতিক নীতিবোধ থেকে আসে।
প্রশ্ন \ ২ \ ব্যবসায়কে সামাজিক প্রতিষ্ঠান বলা হয় কেন?
উত্তর : ব্যবসায়কে একটি সামাজিক প্রতিষ্ঠান বলা হয়। কারণ ব্যবসায়ের যাবতীয় কাজ সমাজকে ঘিরেই আবর্তিত হয়ে থাকে। সমাজে বসবাসকারী জনগণের চাহিদা, চিন্তা, চেতনা প্রভৃতি বিবেচনায় রেখে ব্যবসায় কার্যক্রম পরিচালিত হয়। এছাড়া ব্যবসায় অনেক সময় সমাজের মানুষদের জন্য জনহিতকর কাজও করে থাকে। সমাজের জনগণের সেবার মাধ্যমেই এটি তার কার্যক্রম চালনা করে থাকে। তাই ব্যবসায়কে সামাজিক প্রতিষ্ঠান বলা হয়।
প্রশ্ন \ ৩ \ মূল্যবোধ কীভাবে ব্যবসায়ীদের অনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিহার করতে সহায়তা করে? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : মূল্যবোধ হলো জ্ঞানবোধ ও আচরণ যাকে সমাজ মূল্যবান এবং অনুকরণীয় মনে করে। জনগণের কথা চিন্তা করে এবং তাদের জন্য কল্যাণকর এমন পণ্যের চিন্তার ভিত্তিতেই সে তার ব্যবসায়িক কাজ সম্পাদন করে। ফলে তার কাজ অন্যদের জন্যেও অনুকরণীয় হয়ে থাকে। এসব দিক বিবেচনায় মূল্যবোধ ব্যবসায়ীদের অনৈতিক কর্মকান্ড পরিহার করতে সহায়তা করে।
প্রশ্ন \ ৪ \ শ্রমিক কর্মচারীদের প্রতি দায়বদ্ধতার ধারণাটি ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : শ্রমিক-কর্মচারীদের অব্যাহত প্রচেষ্টার ফলেই ব্যবসায় মুনাফা অর্জিত হয়। একজন ব্যবসায়ীকে তার প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক-কর্মচারীদের উপযুক্ত পারিশ্রমিক ও আর্থিক সুবিধা প্রদান করতে হবে। চাকরির নিরাপত্তা ও উপযুক্ত কর্ম-পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ও পদোন্নতির ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
প্রশ্ন \ ৫ \ ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের জš§ হয় কেন?
উত্তর : ব্যবসায় মূলত মুনাফা অর্জনের জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়। মুনাফা অর্জনের বাইরেও ব্যবসায় বিভিন্ন সামাজিক দায়িত্ব পালন করে থাকে। এছাড়া জনগণের বিভিন্ন নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের এবং অন্যান্য দ্রব্যের চাহিদা মিটাতে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের জš§ হয়।
প্রশ্ন \ ৬ \ ব্যবসায়ীদের কীভাবে পণ্যমূল্য নির্ধারণ করা উচিত?
উত্তর : যথাযথভাবে পণ্যমূল্য নির্ধারণ করা ব্যবসায়ীর নৈতিকতার আওতাভুক্ত। ব্যবসায়ীকে পণ্যমূল্য নির্ধারণ এমনভাবে করতে হবে যাতে তার লাভ হয় অপরদিকে জনগণের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে পণ্যটি থাকে। পণ্যমূল্য নির্ধারণে পণ্যটির মানও বিবেচনায় রাখতে হবে। ব্যবসায়িক উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য এসব বিবেচনায় ব্যবসায়ীদের পণ্যমূল্য নির্ধারণ করা উচিত।
প্রশ্ন \ ৭ \ নতুন নতুন শিল্প স্থাপন কেন জীববৈচিত্র্যের জন্য মারাত্মক হুমকি? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : অবাধে গাছ কেটে নতুন নতুন শিল্প স্থাপন করা হয়। এ কাজটি জীব বৈচিত্র্যের জন্য মারাত্মক হুমকি। কারণ গাছ নিধনের ফলে জীবজন্তু তাদের প্রয়োজনীয় আবাসন সংকটে ভোগে। এছাড়া গাছ নিধনের কারণে জীবজন্তুর প্রয়োজনীয় খাদ্যেরও অভাব হয়। ফলে এক সময় পরিবেশ জীববৈচিত্র্যের জন্য হুমকিস্বরূপ হয়ে যায়। এভাবে নতুন নতুন শিল্প স্থাপন জীব বৈচিত্র্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
প্রশ্ন \ ৮ \ পানিদূষণ বলতে কী বোঝ ?
উত্তর : পানিদূষণ বলতে বোঝায় কলকারখানার বর্জ্য পদার্থ পানিতে মিশে একে দূষিত করাকে। তাছাড়া ময়লা-আবর্জনা পানিতে ফেললেও পানি দূষিত হয়। ব্যবসায় বিশেষ করে শিল্পোন্নয়নের সবচেয়ে বড় সমস্যা পরিবেশদূষণ। আর পরিবেশ দূষণের মধ্যে পানিদূষণও রয়েছে। এতে মানুষের স্বাস্থ্যহানি তো হচ্ছেই, তদুপরি জীববৈচিত্র্য মারাত্মকভাবে হুমকির মুখে পড়ছে।
প্রশ্ন \ ৯ \ শ্রমিককে ব্যবসায়ের প্রাণ বলা হয় কেন?
উত্তর : কারখানার চাকা সচল রেখে পণ্য বা সেবার উৎপাদন ঘটায় শ্রমিকরা। শ্রমিক ছাড়া ব্যবসায়ের কোনো কাজ সম্পাদিত হয় না। এজন্যই শ্রমিককে ব্যবসায়ের প্রাণ বলা হয়।
প্রশ্ন \ ১০ \ ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে নৈতিকতা কীভাবে দিক নির্দেশনা হিসেবে কাজ করে?
উত্তর : ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ব্যবসায়ের নৈতিকতা মেনে চলা। নৈতিকতা মেনে চললে ব্যবসায়ের ধারণা চিিহ্নত করা থেকে শুরু করে সফলভাবে পরিচালনার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ মানদণ্ড অনুসরণ করা হয়। ফলে ব্যবসায়টি সুষ্ঠু ও সঠিকভাবে পরিচালনা করা যায়। এসব কাজ করার ক্ষেত্রেই নৈতিকতা ব্যবসায়ের দিক নির্দেশনা হিসেবে কাজ করে।
প্রশ্ন \ ১১ \ নৈতিকতাকে মানব আচরণের মানদণ্ড বলা হয় কেন?
উত্তর : নৈতিকতা মানুষের দৈনন্দিন কাজকর্মের সাথে জড়িত। এটি ন্যায়-অন্যায়ের পার্থক্য নির্ধারণ করে মানুষকে সঠিক পথে চলতে সহায়তা করে। মানুষের আচরণ পরিমাপ করা হয় নৈতিকতা দিয়ে। তাই নৈতিকতাকে মানব আচরণের মানদণ্ড বলা হয়।
প্রশ্ন \ ১২ \ দুর্যোগে জনগণের পাশে দাঁড়ানোর ফলে ব্যবসায়ী কীভাবে লাভবান হবে? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : যেকোনো দুর্যোগ সমাজের মানুষের জন্যে ক্ষতিকর। এ সময় ব্যবসায়ী সামাজিক দায়বদ্ধতার অংশস্বরূপ দুর্যোগ প্রবণ এলাকার মানুষের পাশে দাঁড়ালে ঐ ব্যবসায়ীর প্রতি মানুষের আস্থা বাড়ার পাশাপাশি তার সম্মানও বাড়ে। ফলে পরবর্তীতে তার ব্যবসায়ের প্রতি ভোক্তার ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি সৃষ্টি হয়। এসবের প্রেক্ষিতে সে সহজেই তার ব্যবসায়ের সফলতা অর্জন করতে পারে। এভাবেই দুর্যোগে জনগণের পাশে দাঁড়িয়ে ব্যবসায়ী লাভবান হতে পারে।
প্রশ্ন \ ১৩ \ ব্যবসায়ীর মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্যদ্রব্য বিক্রি করা উচিত নয় কেন?
উত্তর : ব্যবসায়ীর জন্য মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্যদ্রব্য বিক্রি করা উচিত নয়। কারণ মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্যদ্রব্য বিক্রি করলে সমাজে ক্রেতা বা ভোক্তাদের কাছে ব্যবসায়ীর প্রতি বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। নৈতিকতা বিবর্জিত এ কাজ করলে ক্রেতা বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে ব্যবসায়ে ক্রেতার সংখ্যা স্বাভাবিকভাবেই কমে যায় এবং চ‚ড়ান্তভাবে ব্যবসায়টি এক সময় বন্ধও হয়ে যেতে পারে।
প্রশ্ন \ ১৪ \ শিল্প বর্জ্য কীভাবে পানি দূষণ করে?
উত্তর : পানি নানানভাবে দূষিত হয়। এর মধ্যে অন্যতম হলো শিল্প বর্জ্যরে মাধ্যমে পানি দূষণ। শিল্প প্রতিষ্ঠানে বর্জ্য নিষ্কাশনের নালাসমূহ অনেক সময় অপরিকল্পিতভাবে স্থাপন করা হয় এবং এগুলো সরাসরি নদীনালা ও খালবিলের সাথে যুক্ত থাকে। ফলে শিল্প হতে উৎপাদিত বর্জ্য নদীনালা বা খাল বিলে গিয়ে পড়ে সরাসরি পানি দূষিত করে।
প্রশ্ন \ ১৫ \ ভোক্তাদের জন্য মানসম্মত পণ্য সরবরাহ করা উচিত কেন? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : ভোক্তাদের আস্থা ও সহযোগিতার ওপর ব্যবসায়ের সফলতা নির্ভর করে। আর ব্যবসায়ের প্রতি ভোক্তার আস্থা ও সফলতা তখনই অর্জিত হবে যখন ভোক্তা তার কাক্সিক্ষত পণ্যটি ব্যবসায়ীর কাছ থেকে সংগ্রহ করতে পারবে। নিয়মিত মানসম্মত পণ্য সরবরাহ করলে সহজেই ভোক্তারা ব্যবসায়ী এবং সরবরাহকৃত পণ্যটির প্রতি আকৃষ্ট হবে। ফলে ব্যবসায়ে সফলতাও আসবে। এসব কারণেই ভোক্তাদের জন্য মানসম্মত পণ্য সরবরাহ করা উচিত।