নবম-দশম শ্রেণির বাংলাদেশের ইতিহাস অধ্যায় ৩ প্রাচীন বাংলার জনপদ

তৃতীয় অধ্যায়
 প্রাচীন বাংলার জনপদ
চার শতক হতে গুপ্ত যুগ, গুপ্ত পরবর্তী যুগ, পাল, সেন প্রভৃতি আমলের উৎকীর্ণ শিলালিপি ও সাহিত্য গ্রন্থে প্রাচীন বাংলার জনপদগুলোর নাম পাওয়া যায়। এসব জনপদ ঠিক কোথায় কতখানি জায়গা জুড়ে ছিল তা বলা যায় না। তবে প্রাচীন প্রাপ্ত বিভিন্ন ঐতিহাসিক উপাদান হতে তাদের অবস্থান সম্বন্ধে মোটামুটি আঁচ পাওয়া যায়। শিখনফল
 বাংলাদেশের মানচিত্রে প্রাচীন বাংলার জনপদগুলোর বর্তমান অবস্থান চিহ্নিত করে বর্ণনা করতে পারবে।
 প্রাচীন বাংলার তথ্য অনুসন্ধানে জনপদগুলোর গুরুত্ব ব্যাখ্যা করতে পারবে।
 প্রাচীন বাংলার ইতিহাস সম্পর্কে ধারণা লাভে জনপদগুলোর গুরুত্ব জানতে আগ্রহী হবে।
অধ্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো সংক্ষেপে জেনে রাখি

জনপদ : প্রাচীন যুগে বাংলা (বর্তমানের বাংলাদেশ ও পশ্চিম বঙ্গ) এখনকার বাংলাদেশের মতো কোনো একক ও অখণ্ড রাষ্ট্র বা রাজ্য ছিল না। বাংলার বিভিন্ন অংশ তখন অনেকগুলো ছোট ছোট অঞ্চলে বিভক্ত ছিল। আর প্রতিটি অঞ্চলের শাসক যার যার মতো শাসন করতেন। বাংলার এ অঞ্চলগুলোকে তখন সমষ্টিগতভাবে নাম দেয়া হয় ‘জনপদ’।
প্রাচীন বাংলার জনপদ : চার শতক হতে গুপ্ত যুগ, গুপ্ত পরবর্তী যুগ, পাল, সেন প্রভৃতি আমলের উৎকীর্ণ শিলালিপি ও সাহিত্য গ্রন্থে প্রাচীন বাংলার জনপদগুলোর নাম পাওয়া যায়। এসব জনপদ ঠিক কোথায় কতখানি জায়গা জুড়ে ছিল তা বলা যায় না। তবে প্রাচীন প্রাপ্ত বিভিন্ন ঐতিহাসিক উপাদান হতে তাদের অবস্থান সম্বন্ধে মোটামুটি আঁচ পাওয়া যায়। এসব জনপদের মধ্যে রয়েছে গৌড়, বঙ্গ, পুণ্ড্র, হরিকেল, সমতট, বরেন্দ্র, তাম্রলিপ্ত, চন্দ্রদ্বীপ প্রভৃতি।
গৌড় : গৌড় নামটি সুপরিচিত হলেও প্রাচীনকালে গৌড় বলতে ঠিক কোন অঞ্চলকে বোঝাত এ নিয়ে প্রচুর মতভেদ আছে। আর যে এলাকা গৌড় বলে অভিহিত হতো কেনই বা সে অঞ্চল এ নামে অভিহিত হতো আজ পর্যন্ত সেটাও সঠিকভাবে জানা যায় নি। পাল রাজাদের আমলে গৌড়ের নাম-ডাক ছিল সবচেয়ে বেশি। উত্তর ভারতের বিস্তীর্ণ অঞ্চল তখন গৌড়ের অন্তর্ভুক্ত ছিল। মুসলমান যুগের শুরুতে মালদহ জেলার লক্ষণাবতী গৌড় নামে অভিহিত হতো। পরে গৌড় বলতে সমগ্র বাংলাকে বুঝাত।
বঙ্গ : বঙ্গ একটি অতি প্রাচীন জনপদ। অতি প্রাচীন পুঁথিতে একে মগধ ও কলিঙ্গ জনপদের প্রতিবেশী বলা হয়েছে। মহাভারতের উল্লেখ হতে বোঝা যায় যে, বঙ্গ পুন্ড্র, তাম্রলিপ্ত ও সু‏েহ্মর সংলগ্ন দেশ। সাক্ষ্য প্রমাণ থেকে মনে হয়, গঙ্গা ও ভাগিরথীর মাঝখানের অঞ্চলকেই বঙ্গ বলা হতো।

পুন্ড্র : প্রাচীন বাংলার জনপদগুলোর মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ হলো পুন্ড্র। বলা হয় যে, ‘পুন্ড্র’ বলে এক জাতি এ জনপদ গড়ে তুলেছিল। বৈদিক সাহিত্য ও মহাভারতে এ জাতির উল্লেখ আছে। পুন্ড্রদের রাজ্যের রাজধানীর নাম পুন্ড্রনগর। পরবর্তীকালে এর নাম হয় মহাস্থানগড়। সম্ভবত মৌর্য সম্রাট অশোকের রাজত্বকালে (২৭৩-২৩২ অব্দ) প্রাচীন পুন্ড্র রাজ্য স্বাধীন সত্তা হারায়। সমৃদ্ধি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পঞ্চম-ষষ্ঠ শতকে তা পুন্ড্রবর্ধনে রূপান্তরিত হয়েছে। সে সময়কার পুন্ড্রবর্ধন অন্তত বগুড়া, দিনাজপুর ও রাজশাহী জেলা জুড়ে বিস্তৃত ছিল।
হরিকেল : সাত শতকের লেখকেরা হরিকেল নামে অপর এক জনপদের বর্ণনা করেছেন। চীনা ভ্রমণকারী ইৎসিং বলেছেন, হরিকেল ছিল পূর্ব ভারতের শেষ সীমায়। আবার কারো কারো লিপিতে হরিকেলের যে পরিচয় পাওয়া যায় তাতে বর্তমান চট্টগ্রামেরও অংশ খুঁজে পাওয়া যায়। সমস্ত তথ্য পর্যালোচনা করে ধরে নেওয়া যায় যে, পূর্বে শ্রীহট্ট (সিলেট) থেকে চট্টগ্রামের অংশ বিশেষ পর্যন্ত হরিকেল জনপদ বিস্তৃত ছিল।
সমতট : পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব বাংলায় বঙ্গের প্রতিবেশী জনপদ হিসেবে ছিল সমতটের অবস্থান। এ অঞ্চলটি ছিল আর্দ্র নিম্নভ‚মি। কেহ কেহ মনে করেন সমতট বর্তমান কুমিল্লার প্রাচীন নাম। আবার কেহ কেহ মনে করেন, কুমিল্লা ও নোয়াখালী অঞ্চল নিয়ে সমতট গঠিত হয়েছিল।
বরেন্দ্র : বরেন্দ্রী, বরেন্দ্র বা বরেন্দ্র ভ‚মি নামে প্রাচীন বাংলায় অপর একটি জনপদের কথা জানা যায়। এটিও উত্তর বঙ্গের একটি জনপদ।
তাম্রলিপ্ত : হরিকেলের দক্ষিণে অবস্থিত ছিল তাম্রলিপ্ত জনপদ। বর্তমান মেদিনীপুর জেলার তমলুকই ছিল তাম্রলিপ্তের প্রাণকেন্দ্র। সমুদ্র উপক‚লবর্তী এ এলাকা ছিল খুব নিচু ও আর্দ্র।
চন্দ্রদ্বীপ : বর্তমান বরিশাল জেলা ছিল চন্দ্রদ্বীপের মূল ভ‚খণ্ড ও প্রাণকেন্দ্র। এ প্রাচীন জনপদটি বালেশ্বর ও মেঘনার মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত ছিল।

 বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর 
১. কোন জনপদ থেকে ‘বাঙ্গাল’ জাতির উৎপত্তি ঘটেছিল?
ক বরেন্দ্র খ পুন্ড্র  বঙ্গ ঘ গৌড়
২. তাম্রলিপ্ত জনপদটি ছিলÑ
র. সমুদ্র উপক‚লবর্তী খুব নিচু ও আর্দ্র
রর. স্থল বাণিজ্যের কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত
ররর. নৌচলাচলের জন্য অতি উত্তম
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর  র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
উদ্দীপকটি পড় এবং ৩ ও ৪ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
শিলা শীতকালীন ছুটিতে মা-বাবার সাথে রাজশাহীর বরেন্দ্র জাদুঘর পরিদর্শনে যায়। সেখানে গিয়ে সে প্রাচীন নিদর্শনের সাথে পরিচিতি লাভ করে। এর মধ্যে বিশেষ করে ছিল পাথরের চাকতিতে খোদাই করা লিপি। সে জানতে পারে এটি ছিল বাংলাদেশে পাওয়া প্রাচীন শিলালিপি এবং সম্রাট অশোকের সময় এ লিপি উৎকীর্ণ করা হয়েছিল।
৩. শিলার পরিচিত হওয়া নিদর্শনগুলো প্রাচীন কোন জনপদের ইঙ্গিত বহন করে?
ক গৌড়  পুন্ড্র গ সমতট ঘ বরেন্দ্র
৪. উক্ত জনপদটি প্রাচীন বাংলার গুরুত্বপূর্ণ জনপদ, কারণ এটিÑ
র. সভ্যতার প্রাচীনতম নিদর্শন
রর. সমৃদ্ধ নগরী হিসেবে পরিচিত
ররর. খ্যাতিপূর্ণ নৌ-বাণিজ্যিক কেন্দ্র
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র  র ও রর গ র ও ররর ঘ র, রর ও ররর

 সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর 
প্রশ্ন- ১  শালবন বিহার

শালবন বিহার
ক. জনপদ বলতে কী বোঝায়?
খ. গৌড়রাজ শশাংকের রাজধানী ছিল কোনটি?
গ. উদ্দীপকে উলি­খিত নিদর্শনটি প্রাচীন কোন জনপদে অবস্থিত? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. তুমি কি মনে কর উক্ত জনপদটিই প্রাচীন বাংলার সবচেয়ে উন্নত জনপদ? উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দাও।

ক প্রাচীনকালে স্বাধীনভাবে শাসিত বাংলার ছোট ছোট অঞ্চলগুলোকে সমষ্টিগতভাবে নাম দেওয়া হয় জনপদ।
খ গৌড়রাজ শশাংকের রাজধানী ছিল কর্ণসুবর্ণ। ‘ভবিষ্য পুরাণ’- এ পদ্মা নদীর দক্ষিণে এবং বর্ধমানের উত্তরে অবস্থিত যে অঞ্চল বর্ণিত হয়েছে, সপ্তম শতকের লোকদের বর্ণনায় তা গৌড় হিসেবে সামঞ্জস্যপূর্ণ। আধুনিক মালদহ, মুর্শিদাবাদ, বীরভ‚ম ও বর্ধমানের কিছু অংশ গৌড়ের সীমানা বলে মনে করা হয়। আর সপ্তম শতকে গৌড়ের অর্থাৎ গৌড়রাজ শশাংকের রাজধানী ছিল মুর্শিদাবাদ জেলার কর্ণসুবর্ণ।
গ উদ্দীপকে উলি­খিত নিদর্শনটি হচ্ছে শালবন বিহার যা প্রাচীন জনপদ সমতটে অবস্থিত।
পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব বাংলায় বঙ্গের প্রতিবেশী জনপদ হিসেবে ছিল সমতটের অবস্থান। এ অঞ্চলটি ছিল আর্দ্র নিম্নভূমি। কেউ কেউ মনে করেন সমতট বর্তমান কুমিল­ার প্রাচীন নাম। আবার কেউ মনে করেন কুমিল­া ও নোয়াখালী অঞ্চল নিয়ে সমতট গঠিত হয়েছিল। সাত শতক থেকে বারো শতক পর্যন্ত বর্তমান ত্রিপুরা জেলা ছিল সমতটের অন্যতম অংশ। এক সময় এ জনপদের পশ্চিম সীমা চব্বিশ পরগনার খাড়ি পরগনা পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। গঙ্গা-ভাগীরথীর পূর্ব তীর থেকে শুরু করে মেঘনার মোহনা পর্যন্ত সমুদ্রক‚লবর্তী অঞ্চলকেই সম্ভবত বলা হতো সমতট। কুমিল­া শহরের ১২ মাইল পশ্চিমে বড় কামতা নামক স্থানটি সাত শতকে এর রাজধানী ছিল। কুমিল্লার ময়নামতিতে কয়েকটি প্রাচীন নিদর্শনের সন্ধান পাওয়া গেছে। উদ্দীপকে চিত্রে প্রদর্শিত ‘শালবন বিহার’ যার মধ্যে অন্যতম। এক কথায় বলা যায়, কুমিল্লা যেহেতু প্রাচীনকালে সমতট নামে পরিচিত ছিল, চিত্রে প্রদর্শিত কুমিল্লায় অবস্থিত শালবন বিহারটিও সমতট অঞ্চলে অবস্থিত।
ঘ উদ্দীপকে উল্লিখিত নিদর্শনটি সমতট জনপদে অবস্থিত। আমি মনে করি এ জনপদটি প্রাচীন বাংলার সবচেয়ে উন্নত জনপদ ছিল। কুমিল্লা ও নোয়াখালী অঞ্চল নিয়ে সমতট জনপদ গঠিত হয়েছিল। এ জনপদে দেব রাজবংশের রাজারা বিভিন্ন ধরণের স্থাপত্য, নির্মাণশৈলী, শিল্পকলা ইত্যাদিতে অবদান রেখেছিলেন। এরই নিদর্শনস্বরূপ আমরা দেখতে পাই উদ্দীপকে উল্লিখিত শালবন বিহার। ৮ম শতকের শেষার্ধে তৎকালীন শাসক বা রাজা এই বিহারটি নির্মাণ করেছিলেন। এ স্থানটি বৌদ্ধ সভ্যতার নিদর্শনের জন্য বিখ্যাত। এ জনপদের অন্তর্ভুক্ত ময়নামতি অঞ্চল তৎকালীন সময়ে বৌদ্ধ সংস্কৃতির অন্যতম চর্চাকেন্দ্র হিসেবে পরিণত হয়েছিল। বৌদ্ধ ভিক্ষুরা এ অঞ্চলে এসে তাদের ধর্মীয় শিক্ষার প্রসার ঘটিয়েছিল। অনেকে একে প্রাচীন বাংলার সবেচেয়ে উন্নত জনপদ বলে আখ্যায়িত করেছেন। তাছাড়া গঙ্গা-ভাগীরথীর পূর্ব তীর থেকে মেঘনা নদীর মোহনা পর্যন্ত এ অঞ্চলের বিস্তৃতি বিধায় এটা ছিল নৌ-বাণিজ্যের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ফলে এ অঞ্চলের মানুষ সাংস্কৃতিক দিক থেকেও অগ্রসর ছিল। এ সমস্ত তথ্যের ওপর ভিত্তি করেই আমি মনে করি সমতট জনপদটিই প্রাচীন বাংলার সবচেয়ে উন্নত জনপদ।

 বোর্ড ও সেরা স্কুলের বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
সাধারণ বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
১. নিচের ‘ণ’ চিহ্নিত স্থানে কোন জনপদের নাম বসবে? [স. বো. ’১৬]

ক গৌড়  বঙ্গ গ পুন্ড্র ঘ হরিকেল
২. বাংলার কুমিল্লা ও নোয়াখালী অঞ্চল নিয়ে কোন জনপদ গঠিত হয়েছিল?
[স. বো. ’১৬]
 সমতট খ হরিকেল গ পুন্ড্র ঘ বরেন্দ্র
৩. প্রাচীন যুগের ছোট অঞ্চলগুলোর শাসনব্যবস্থা ছিল [স. বো. ’১৬]
ক স্বাধীন খ কেন্দ্রীয়
গ প্রাদেশিক ঘ স্বায়ত্তশাসিত
৪. কত শতক হতে বাংলার জনপদগুলোর নাম জানা যায়?
[ইস্পাহানী পাবলিক স্কুল ও কলেজ, কুমিল্লা সেনানিবাস]
ক দ্বিতীয় খ তৃতীয়ল  চতুর্থ ঘ পঞ্চম
৫. সর্বপ্রথম গৌড়ের উল্লেখ পাওয়া যায় কার লিখিত গ্রন্থে?
[রাজবাড়ী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়]
 পাণিনির খ কৌটিল্যের
গ ব্যাৎসায়নের ঘ শশাংকের
৬. অর্থশাস্ত্র গ্রন্থের লেখক কে? [পাবনা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
 কৌটিল্য খ পাণিনি
গ ত্রৈলোক্যচন্দ্র ঘ ব্যাৎসায়ন
৭. কৌটিল্যের ‘অর্থশাস্ত্র’ গ্রন্থে কিসের উল্লেখ পাওয়া যায়?
[রাজবাড়ী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
ক সম্রাট অশোকের খ গঙ্গা নদীর
 কৃষিজাত দ্রব্যের ঘ রাজা গোবিন্দের
৮. সপ্তম শতকে গৌড়রাজ কে ছিলেন?
[ইস্পাহানী পাবলিক স্কুল ও কলেজ, কুমিল্লা সেনানিবাস]
 শশাংক খ বিক্রমাদিত্য
গ অশোক ঘ নারায়ণ
৯. বঙ্গকে মগধ ও কলিঙ্গ জনপদের প্রতিবেশী বলা হয়েছে কোনটিতে?
ক আধুনিক পুঁথিতে  প্রাচীন পুঁথিতে
গ তাম্রলিপিতে ঘ শিলালিপিতে
১০. বর্তমান বাংলাদেশের পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্বদিকে কোন জাতি বাস করত?
[রাজবাড়ী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
ক হিব্রæ  রং
গ আর্য ঘ দ্রাবিড়
১১. গঙ্গা ও ভাগীরথীর মাঝের অঞ্চলকে কী বলা হতো?
[রাজবাড়ী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়]
 বঙ্গ খ পুন্ড্র
গ গৌড় ঘ হরিকেল
১২. বর্তমান ফরিদপুর কোন প্রাচীন জনপদের অন্তর্ভুক্ত ছিল?
[লায়ন্স স্কুল এন্ড কলেজ, রংপুর]
ক গৌড় খ পুন্ড্র
 বঙ্গ ঘ বরেন্দ্র
১৩. বগুড়া থেকে মহাস্থানগড়ের দূরত্ব কত মাইল?
[রাজবাড়ী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
ক চার খ পাঁচ
গ ছয়  সাত
১৪. প্রাচীন পুন্ড্রবর্ধন নগরীর ধ্বংসাবশেষ পাওয়া যায় কোথায়?
[মেহেরপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, মেহেরপুর]
ক পাহাড়পুরে খ উয়ারী-বটেশ্বরে
গ নওগাঁতে  মহাস্থানগড়ে
১৫. প্রাচীন সভ্যতার নিদর্শনের দিক দিয়ে কোন জনপদ প্রাচীন বাংলার সবচেয়ে সমৃদ্ধ জনপদ ছিল? [পাবনা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
 পুন্ড্র খ বঙ্গ
গ গৌড় ঘ হরিকেল
১৬. বাংলাদেশে প্রাপ্ত পাথরের চাকতিতে খোদাই করা সম্ভবত প্রাচীনতম শিলালিপি কোথায় পাওয়া যায়? [রাজবাড়ী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়]
ক চন্দ্রদ্বীপে খ তাম্রলিপ্ততে
গ বরেন্দ্রে  পুন্ড্রে
১৭. বঙ্গের প্রতিবেশী জনপদ কোনটি?
[মাতৃপীঠ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, চাঁদপুর]
ক পুন্ড্র খ গৌড়
গ হরিকেল  সমতট
১৮. বর্তমান কুমিল্লার প্রাচীন নাম কী ছিল?
[মাতৃপীঠ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, চাঁদপুর]
ক বঙ্গ খ পুন্ড্র  সমতট ঘ হরিকেল
১৯. বড় কামতা কোন জেলায় অবস্থিত? [পাবনা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
ক রংপুর খ দিনাজপুর
 কুমিল্লা ঘ রাজশাহী
২০. চন্দ্রদ্বীপের বর্তমান নাম কী?
[আল-হেরা একাডেমি, পাবনা; রাজবাড়ী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
ক চাঁদপুর খ চন্দ্রপুর
 বরিশাল ঘ কুমিল্লা
২১. বর্তমান বরিশাল জেলা কোন জনপদের মূল ভুখণ্ডে ছিল?
[রাজবাড়ী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়]
ক তাম্রলিপ্ত  চন্দ্রদ্বীপ গ বরেন্দ্র ঘ সমতট
২২. ‘হরিকেল ছিল পূর্ব ভারতের শেষ সীমায়’, কে বলেছেন?
[কুষ্টিয়া সরকারি বালিকা বিদ্যালয়]
 ইৎসিং খ ভাস্কো-দা-গামা
গ ফা-হিয়েন ঘ হিউয়েন সাং
বহুপদী সমাপ্তিসূচক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
২৩. প্রাচীনকালে তাম্রলিপ্ত নৌবাণিজ্যের কেন্দ্র ছিল, কারণ তাম্রলিপ্ত ছিলÑ [স. বো. ’১৫]
র. নৌচলাচলের জন্য আদর্শ বন্দর
রর. নদীর তীরে অবস্থিত
ররর. রপ্তানিমুখী পণ্যের উৎপাদন কেন্দ্র
নিচের কোনটি সঠিক?
 র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
২৪. বাংলার বিভিন্ন অংশে ছোট ছোট স্বাধীন জনপদ সৃষ্টি হয়Ñ
[লায়ন্স স্কুল এন্ড কলেজ, রংপুর]
র. দেশের অভ্যন্তরে বিরোধ ও অনৈক্যের ফলে
রর. বিদেশি আক্রমণ মোকাবিলা করতে গিয়ে
ররর. একক কোন কেন্দ্রীয় শক্তি না থাকায়
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর  র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
২৫. বাংলার জনপদগুলোর নাম পাওয়া যায় গুপ্ত, সেন, পাল প্রভৃতি আমলের [রাজবাড়ী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
র. শিলালিপিতে
রর. স্মৃতিস্তম্ভে
ররর. সাহিত্যগ্রন্থে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর  র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
২৬. বাংলার জনপদগুলোর নাম পাওয়া যায় [রাজবাড়ী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
র. গুপ্তযুগে উৎকীর্ণ শিলালিপি ও সাহিত্যগ্রন্থে
রর. সেনযুগে উৎকীর্ণ শিলালিপিতে
ররর. পালযুগে উৎকীর্ণ সাহিত্যগ্রন্থে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর  র, রর ও ররর
২৭. গৌড়ের উল্লেখ পাওয়া যায় [মেহেরপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, মেহেরপুর]
র. পাণিনির গ্রন্থে
রর. কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্রে
ররর. হর্ষবর্ধনের শিলালিপিতে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর  র, রর ও ররর
২৮. পুন্ড্র জাতির উল্লেখ পাওয়া যায় [খাগড়াছড়ি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়]
র. বৈদিক সাহিত্যে
রর. মহাভারতে
ররর. রামায়ণে
নিচের কোনটি সঠিক?
 র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
২৯. পুন্ড্রবর্ধনের বিস্তৃতি যে সকল জেলাজুড়ে ছিলÑ
[পাবনা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
র. বগুড়া রর. দিনাজপুর
ররর. রাজশাহী
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর  র, রর ও ররর
৩০. সমতটের অন্তর্ভুক্ত ছিল
[কুষ্টিয়া সরকারি বালিকা বিদ্যালয়; রাজবাড়ী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়]
র. কুমিল্লা রর. বরিশাল
ররর. নোয়াখালী
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর  র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৩১. বরেন্দ্র কোন বঙ্গের জনপদ? [রাজবাড়ী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
 উত্তর খ দক্ষিণ
গ পূর্ব ঘ পশ্চিম
৩২. বরেন্দ্রের অন্তর্ভুক্ত ছিল [মেহেরপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, মেহেরপুর]
র. বগুড়া
রর. পাবনা
ররর. দিনাজপুর
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর  র, রর ও ররর
অভিন্ন তথ্যভিত্তিক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ে ৩৩ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
প্রাচীন এক জাতির নামানুসারে বাংলার এক জনপদের নামকরণ করা হয়। সাবিক তার নানার সাথে ঐ জনপদে বেড়াতে গিয়েছিল।
৩৩. সাবিক প্রাচীন কোন জনপদে বেড়াতে গিয়েছিল? [স. বো.’ ১৫]
 পুন্ড্র খ হরিকেল গ সমতট ঘ চন্দ্রদ্বীপ
নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ে ৩৪ ও ৩৫ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
নীরা মৌলভীবাজার জেলার মাধবকুণ্ড পরিদর্শনে গিয়ে এক বৃদ্ধের কাছ থেকে জানতে পারে যে, সিলেট অঞ্চলে প্রাচীনকালে একটি জনপদ গড়ে ওঠে।
[চুয়াডাঙ্গা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
৩৪. অনুচ্ছেদটিতে বৃদ্ধ কোন জনপদের কথা বলেছেন?
ক সমতট  হরিকেল গ বরেন্দ্র ঘ তাম্রলিপ্ত
৩৫. অনুচ্ছেদে উল্লিখিত জনপদটি ছিল
র. পূর্ব ভারতের শেষ সীমায়
রর. চট্টগ্রাম ও সিলেট অঞ্চলে
ররর. সমতট রাজ্যের দুই পাশে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর  র, রর ও ররর
 বিষয়ক্রম অনুযায়ী বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
 জনপদ :  বোর্ড বই, পৃষ্ঠা- ২৪
 বাংলার অঞ্চলগুলোকে সমষ্টিগতভাবে নাম দেয়া হয় জনপদ।
 প্রাচীন বাংলার জনপদগুলোর নাম পাওয়া যায় উৎকীর্ণ শিলালিপি, সাহিত্য গ্রন্থে।
 খ্রিষ্ট্রীয় তের শতকের পূর্ববর্তী সময় হলো বাংলার প্রাচীন যুগ।
 বাংলা জনপদের নাম পাওয়া যায় চতুর্থ শতকে।
সাধারণ বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
৩৬. খ্রিষ্টীয় ত্রয়োদশ শতকের পূর্ব পর্যন্ত কত বছর সময়কে বাংলার প্রাচীন যুগ বলে ধরা হয়? (জ্ঞান)
 প্রায় দুই হাজার খ প্রায় তিন হাজার
গ প্রায় চার হাজার ঘ প্রায় পাঁচ হাজার
৩৭. প্রাচীনকালে বাংলার ছোট ছোট অঞ্চলগুলোকে সমষ্টিগতভাবে কী নাম দেওয়া হয়? (জ্ঞান)
ক বঙ্গ খ বাঙ্গালা  জনপদ ঘ প্রদেশ
৩৮.

(?) চিহ্নের প্রয়োগ কী হবে? (প্রয়োগ)
ক প্রদেশ খ রাস্তা  জনপদ ঘ রাজ্য
 গৌড়  বোর্ড বই, পৃষ্ঠা- ২৪
 গৌড়ের উল্লেখ সর্বপ্রথম দেখা যায় পানিনির গ্রন্থে।
 শিল্প ও কৃষিজাত দ্রব্যের উল্লেখ পাওয়া যায় কৌটিল্যের ‘অর্থ শাস্ত্রে’।
 গৌড়ের নাগরিকদের বিলাস-বসনের পরিচয় পাওয়া যায় ‘ব্যাৎসায়নের’ গ্রন্থে।
 গৌড়ের নাম-ডাক সবচেয়ে বেশি ছিল পাল রাজাদের আমলে।
 গৌড়রাজ শশাংকের রাজধানী ছিল মুর্শিদাবাদ জেলার কর্ণসুবর্ণ।
 গৌড় বলতে সমগ্র বাংলাকে বুঝাতো।
সাধারণ বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
৩৯.

‘?’ চিহ্নিত স্থানে কোন জনপদের নাম বসবে? (প্রয়োগ)
 গৌড় খ বঙ্গ গ হরিকেল ঘ সমতট
৪০. কৌটিল্যের ‘অর্থশাস্ত্র’ অনুযায়ী গৌড়কে সমৃদ্ধশালী মনে হয় কেন? (অনুধাবন)
ক শিল্প ও কারখানা ছিল  শিল্প ও কৃষিদ্রব্য ছিল
গ নাগরিকদের বিলাসিতা ছিল ঘ শাসকদের বিলাসিতা ছিল
৪১. গৌড়ের নাগরিকরা বিলাস-ব্যসন করত। তথ্যটি কার লেখা থেকে জানা যায়? (প্রয়োগ)
ক কৌটিল্য  ব্যাৎসায়ন গ বরাহ মিহির ঘ পাণিনি
৪২. “সমুদ্র উপক‚ল হতে গৌড়দেশ খুব বেশি দূরে অবস্থিত ছিল না”Ñ এই উক্তি কার শিলালিপি হতে পাওয়া যায়? (জ্ঞান)
ক বাৎসায়ন খ কৌটিল্য  হর্ষবর্ধন ঘ দেবগুপ্ত
৪৩. কোন শতকের বিবরণ হতে জানা যায় যে, গৌড় অন্যান্য জনপদ থেকে আলাদা? (জ্ঞান)
ক ৫ম  ৬ষ্ঠ গ ৭ম ঘ ৮ম
৪৪. গৌড় অন্যান্য জনপদ থেকে আলাদা এটা কার বিবরণ হতে জানা যায়? (জ্ঞান)
 বরাহ মিহিরের খ হর্ষবর্ধনের
গ দেবপালের ঘ কৌটিল্যের
৪৫. গৌড়ের অবস্থান কী প্রকৃতির ছিল? (অনুধাবন)
 অন্য জনপদ থেকে আলাদা খ বঙ্গের সাথে একত্রিত
গ হরিকেলের সাথে সমন্বিত ঘ পুন্ড্রের সাথে একীভ‚ত
৪৬. গৌড়রাজ, কর্ণসুবর্ণ এগুলোর সাথে সম্পৃক্ততা রয়েছে কার? (প্রয়োগ)
ক দেবপালের খ মহীপালের
গ চন্দ্রগুপ্তের  শশাংকের
৪৭. প্রাচীনকালে গৌড় নাম জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল। এর কারণ কী? (উচ্চতর দক্ষতা)
 শশাংক ও পালরাজারা নিজেদের গৌড়েশ্বর পরিচয় দেওয়ার কারণে
খ চন্দ্র বংশের রাজাদের এখানে আবির্ভাবের কারণে
গ পাল রাজারা রাজধানী স্থাপন করার কারণে
ঘ এটি রাজনৈতিকভাবে শক্তিশালী স্থান ছিল বলে
৪৮. কোন রাজাদের আমলে গৌড়ের নাম-ডাক বেশি ছিল? (জ্ঞান)
ক সেন  পাল গ গুপ্ত ঘ বর্ম
৪৯. পাল রাজাদের আমলের গৌড়ের সমৃদ্ধি কীভাবে বোঝা যায়? (অনুধাবন)
 বিস্তীর্ণ অঞ্চলের অন্তর্ভুক্তি থেকে খ শাসকদের পরিচয় থেকে
গ জনগণের সুখ-সমৃদ্ধি থেকে ঘ শাসকদের ভোগবিলাস থেকে
৫০. পাল সাম্রাজ্যের ভাগ্য পরিবর্তনের সাথে সাথে গৌড়ের ভাগ্যও পরিবর্তিত হয়ে যায়। এর কারণ কী? (উচ্চতর দক্ষতা)
ক পাল রাজারা দীর্ঘকাল শাসন করছিল
খ পাল রাজারা গৌড়কে রাজধানী করেছিল
 গৌড় অংশটি পাল রাজাদের সাম্রাজ্যের কেন্দ্রস্থল ছিল
ঘ বিশ্বের বেশির ভাগ মানুষ গৌড় অঞ্চলে বাস করত
৫১. কোন শতকে শশাংক মুর্শিদাবাদে রাজধানী স্থাপন করেন? (জ্ঞান)
ক ৫ম  ৭ম গ ৮ম ঘ ৯ম
৫২. শশাংকের রাজধানী কোথায় ছিল? (জ্ঞান)
ক সমতটে খ পাহাড়পুরে গ পুন্ড্রনগরে  কর্ণসুবর্ণে
৫৩. মুর্শিদাবাদ জেলার কর্ণসুবর্ণ বিখ্যাত কেন? (অনুধাবন)
ক চন্দ্রগুপ্তের রাজধানী ছিল  শশাঙ্কের রাজধানী ছিল
গ কৃষিদ্রব্য উৎপন্ন হতো ঘ বড় নদীবন্দর ছিল
৫৪. বাংলায় মুসলমান যুগের শুরুতে কোনটিকে গৌড় বলা হত? (জ্ঞান)
ক দিনাজপুরকে খ রাজশাহীকে
 লক্ষণাবতীকে ঘ মুর্শিদাবাদকে
৫৫. প্রাচীনকালে গৌড় বলতে কী বোঝানো হতো? (অনুধাবন)
ক বাংলা ও উত্তর ভারত খ বাংলার কিয়দংশ
 সমগ্র বাংলা ঘ দক্ষিণ ও পূর্ব বাংলা
বহুপদী সমাপ্তিসূচক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
৫৬. গৌড় জনপদটি আলাদা ছিল (অনুধাবন)
র. পুন্ড্র জনপদ থেকে
রর. সমতট জনপদ থেকে
ররর. বঙ্গ জনপদ থেকে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর  র, রর ও ররর
৫৭. ‘ভবিষ্যৎ পুরাণের’ বর্ণনা অনুযায়ী গৌড় জনপদটির অবস্থান হলো (অনুধাবন)
র. পদ্মা নদীর দক্ষিণে
রর. মেঘনা নদীর উত্তরে
ররর. বর্ধমানের উত্তরে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর  র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৫৮. শশাংকের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হলো (অনুধাবন)
র. রাজধানী কর্ণসুবর্ণে
রর. গৌড়ের রাজ
ররর. মাৎস্যন্যায় বিরাজমান
নিচের কোনটি সঠিক?
 র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৫৯. গৌড়ের সীমানার অন্তর্ভুক্ত হলো (অনুধাবন)
র. মালদহ
রর. মুর্শিদাবাদ
ররর. বীরভ‚ম
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর  র, রর ও ররর
৬০. গৌড় জনপদের বৈশিষ্ট্য হলো (অনুধাবন)
র. কৃষিজাত দ্রব্য উৎপাদন
রর. একটি আলাদা জনপদ
ররর. নাগরিকদের বিলাস-ব্যসন
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর  র, রর ও ররর
৬১. প্রাচীনকালে গৌড় জনপদ বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। কারণ (উচ্চতর দক্ষতা)
র. উত্তর ভারতে বিস্তীর্ণ ছিল
রর. সাম্রাজ্যের কেন্দ্রবিন্দু ছিল
ররর. শাসকদের অপ্রতিহত প্রতাপ ছিল
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর  র, রর ও ররর
অভিন্ন তথ্যভিত্তিক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
নিচের অনুচ্ছেদটি পড় এবং ৬২ ও ৬৩ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
প্রখ্যাত ইতিহাস গবেষক এ আর সেন পাণিনি ও কৌটিল্যের দুটি গ্রন্থ পাঠ করে একটি প্রাচীন জনপদ সম্পর্কে অবহিত হন।
৬২. ইতিহাস গবেষক এ আর সেন কোন জনপদ সম্পর্কে অবহিত হন? (প্রয়োগ)
 গৌড় খ বঙ্গ গ পুণ্ড্র ঘ হরিকেল
৬৩. উক্ত জনপদ সম্পর্কে আরো জানা যায় (উচ্চতর দক্ষতা)
র. চর্যাপদ থেকে
রর. হর্ষবর্ধনের শিলালিপি থেকে
ররর. ব্যাৎসায়নের গ্রন্থ থেকে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর  রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর

 বঙ্গ  বোর্ড বই, পৃষ্ঠা- ২৪
 অতি প্রাচীন জনপদ হলো বঙ্গ।
 গঙ্গা ও ভাগিরথীর মাঝখানের অঞ্চলকে বলা হয় বঙ্গ।
 বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলে একটি জনপদ গড়ে উঠেছিল যার নাম বঙ্গ।
 বাঙালি জাতির উদ্ভব ঘটেছিল বঙ্গ হতে।
 একাদশ শতকে বঙ্গ জনপদ বিভক্ত হয় ২ ভাগে।
 বঙ্গজনপদের বর্ণণা পাওয়া যায় কালীদাসের পুঁথিতে।
 ঢাকা অন্তর্ভুক্ত ছিল বঙ্গ জনপদের।
সাধারণ বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
৬৪. বর্তমান বাংলাদেশের পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব দিকে কোন জাতি বাস করত? (জ্ঞান)
ক আর্য  বঙ্গ গ দ্রাবিড় ঘ পাঠান
৬৫. কোন শতকে বঙ্গ জনপদ দুইভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে? (জ্ঞান)
ক অষ্টম  একাদশ গ দশম ঘ দ্বাদশ
৬৬. জাহিদ পদ্মা নদীর পাড়ে একটি গ্রামে বাস করে। প্রাচীনকালে জাহিদের গ্রামটি কোন জনপদের অন্তর্ভুক্ত ছিল? (প্রয়োগ)
ক গৌড়  বঙ্গ গ হরিকেল ঘ সমতট
৬৭. একটি জনপদের দুটি অংশ, একটি বিক্রমপুর ও অপরটি নাব্য। এখানে কোন জনপদের কথা বলা হয়েছে? (প্রয়োগ)
ক গৌড় খ পুন্ড্র গ সমতট  বঙ্গ
৬৮. নাব্য কী? (জ্ঞান)
 একটি স্থানের নাম খ একটি জলাভ‚মির নাম
গ একটি গ্রন্থের নাম ঘ একটি রাজধানীর নাম
৬৯. বর্তমানে নিচের কোন জায়গাটির অস্তিত্ব বিলুপ্ত? (জ্ঞান)
ক বিক্রমপুর খ হরিকেল  নাব্য ঘ চন্দ্রদ্বীপ
৭০. কোন জনপদ থেকে ‘বাঙালি’ জাতির উৎপত্তি ঘটেছিল? (জ্ঞান)
 বঙ্গ খ গৌড় গ হরিকেল ঘ সমতট
বহুপদী সমাপ্তিসূচক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
৭১. বাংলার প্রধান জনপদ হলো (প্রয়োগ)
র. গৌড়
রর. বঙ্গ
ররর. মালদহ
নিচের কোনটি সঠিক?
 র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৭২. বঙ্গকে প্রাচীন পুঁথিতে প্রতিবেশী বলা হয়েছেÑ (অনুধাবন)
র. মগধের
রর. রাঢ়ের
ররর. কলিঙ্গের
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর  র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৭৩. বঙ্গ জনপদের বর্ণনার সাথে সম্পর্ক রয়েছে (অনুধাবন)
র. চন্দ্রগুপ্তের
রর. বিক্রমাদিত্যের
ররর. রাষ্ট্রক‚টদের
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর  র, রর ও ররর
৭৪. বঙ্গ গঠিত হয়েছিল (অনুধাবন)
র. পাবনা জেলা নিয়ে
রর. ঢাকা জেলা নিয়ে
ররর. ফরিদপুর জেলা নিয়ে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর  র, রর ও ররর
৭৫. বঙ্গ জনপদ সম্পর্কিত তথ্য হলো (অনুধাবন)
র. উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণবঙ্গ দুটি ভাগ
রর. বিক্রমপুর ও নাব্য নামে দুটি ভাগ
ররর. বাঙালি জাতির উৎপত্তি
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর  র, রর ও ররর

 পুণ্ড্র  বোর্ড বই, পৃষ্ঠা- ২৫
 পুণ্ড্র জনপদ গড়ে তেলে পুণ্ড্র নামক এক জাতি।
 পুণ্ড্রনগরের বর্তমান নাম মহাস্থান গড়।
 প্রাচীন বাংলার সমৃদ্ধ জনপদের নাম পুণ্ড্র।
 বগুড়া হতে মহাস্থানগড়ের দূরত্ব সাত মাইল।
 পাথরের চাকতিতে খোদাই করা প্রাচীনতম শিলালিপি পাওয়া যায় মহাস্থান গড়ে।
 সমস্ত উত্তরবঙ্গই অন্তর্ভুক্ত ছিল পুণ্ড্রনগরে।
 প্রাচীন পুণ্ড্র রাজ্য তার স্বাধীন সত্তা হারায় মৌর্য সম্রাট অশোকের রাজত্বকালে।
 পুণ্ড্র জাতির উল্লেখ রয়েছে বৈদিক সাহিত্য ও মহাভারতে।
 পুণ্ড্র নগরী বিস্তৃত ছিল বগুড়া, দিনাজপুর ও রাজশাহী জেলা জুড়ে।
সাধারণ বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
৭৬. পুন্ড্র নামে জনপদটি কারা গড়ে তুলেছিল? (জ্ঞান)
ক বঙ্গজাতি খ হিব্রæজাতি  পুন্ড্রজাতি ঘ গৌড়জাতি
৭৭. বৈদিক সাহিত্যে কোন জাতির উলে­খ পাওয়া যায়? (জ্ঞান)
ক বাঙালি খ হুন  পুন্ড্র ঘ তুতোষি
৭৮. প্রাচীন বাংলায় জনপদগুলো ভিন্ন ভিন্ন নামে পরিচিত হতো। তম্মধ্যে একটি জনপদের নাম একটি বিশেষ জাতিগোষ্ঠীর নামানুসারে হয়েছিল। সেটি কোনটি? (প্রয়োগ)
 পুন্ড্র খ সমতট গ বরেন্দ্র ঘ গৌড়
৭৯. পুন্ড্র রাজ্যের রাজধানী কী ছিল? (জ্ঞান)
ক বড় কামতা  পুন্ড্রনগর গ রাঢ় ঘ কর্ণসুবর্ণ
৮০. পুন্ড্রনগরের বর্তমান নাম কী? (জ্ঞান)
ক পাহাড়পুর খ ময়নামতি  মহাস্থানগড় ঘ রামসাগর
৮১. কোন মৌর্য সম্রাটের রাজত্বকালে প্রাচীন পুন্ড্র রাজ্য তার স্বাধীন সত্তা হারায়? (জ্ঞান)
 অশোকের খ দেবপালের গ মহীপালের ঘ বিজয়সেনের
৮২. সম্রাট অশোকের রাজত্বকাল কোনটি? (জ্ঞান)
ক ২৭৩Ñ২৩০ খ্রিষ্টাব্দ খ ২৭৩Ñ২৩১ খ্রিষ্টাব্দ
 ২৭৩Ñ২৩২ খ্রিষ্টাব্দ ঘ ২৭৩Ñ২৩৩ খ্রিষ্টাব্দ
৮৩. মৌর্য সম্রাট অশোকের নামের সাথে কোন জনপদ জড়িত? (জ্ঞান)
ক বঙ্গ  পুন্ড্র গ সমতট ঘ চন্দ্রদ্বীপ
৮৪. পাথরের চাকতিতে খোদাইকৃত প্রাচীন নিদর্শন পাওয়া গেছে পুন্ড্রতে। এ নিদর্শনটি কী? (প্রয়োগ)
ক মুদ্রা খ মূর্তি  শিলালিপি ঘ ভাস্কর্য
বহুপদী সমাপ্তিসূচক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
৮৫. পুন্ড্র জনপদের সাথে সম্পর্কিত তথ্য হলো (অনুধাবন)
র. একটি জাতির নাম
রর. রাজধানীর নাম পুন্ড্রনগর
ররর. পরবর্তী নাম হলো গৌড়
নিচের কোনটি সঠিক?
 র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৮৬. প্রাচীন পুন্ড্রনগরের ইতিহাসের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ (প্রয়োগ)
র. সম্রাট অশোকের রাজত্বকাল
রর. সমগ্র বঙ্গের অন্তর্ভুক্তি
ররর. সমগ্র উত্তরবঙ্গের অন্তর্ভুক্তি
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর  র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৮৭. ঐতিহাসিকদের কাছে প্রাচীন পুন্ড্রনগরের মূল্যায়ন হলো (উচ্চতর দক্ষতা)
র. প্রাচীন সভ্যতার নিদর্শন
রর. মহাস্থানগড় পুন্ড্রের ধ্বংসাবশেষ
ররর. চাকতিতে খোদাইকৃত শিলালিপি প্রাপ্তি
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর  র, রর ও ররর
অভিন্ন তথ্যভিত্তিক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
নিচের চিত্রটি লক্ষ করে ৮৮ ও ৮৯ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :

৮৮. চিত্রের নিদর্শনটি কোন জেলায় অবস্থিত? (প্রয়োগ)
ক গাইবান্ধা খ ফেনী গ নওগাঁ  বগুড়া
৮৯. চিত্রে প্রদর্শিত স্থানটি প্রাচীন সভ্যতার নিদর্শনের দিক দিয়ে (উচ্চতর দক্ষতা)
র. সমৃদ্ধ জনপদ
রর. গুরুত্বপূর্ণ
ররর. বিলুপ্ত
নিচের কোনটি সঠিক?
 র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
 হরিকেল  বোর্ড বই, পৃষ্ঠা- ২৫
 হরিকেল নামে এক জনপদের বর্ণনা করেছেন সাত শতকের লেখকেরা।
 হরিকেল ছিল পূর্ব ভারতের শেষ সীমানায় বলেছেন চীনা ভ্রমণ ইৎসিং।
 সপ্তম হতে এগারো শতক পর্যন্ত হরিকেল ছিল একটি স্বতন্ত্র রাষ্ট্র।
 শ্রীহট্ট হতে চট্টগ্রামের অংশ বিশেষ বিস্তৃত ছিল হরিকেল জনপদ।
 সিলেট ছিল হরিকেলের অন্তর্ভুক্ত।
সাধারণ বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
৯০. কোন শতকের লেখকেরা হরিকেল নামে একটি জনপদের কথা বলেন? (জ্ঞান)
 সাত খ আট গ নয় ঘ দশ
৯১. ইৎসিং কোন দেশের নাগরিক? (জ্ঞান)
ক তাইওয়ান খ জাপান গ মায়ানমার  চীন
৯২. ইৎসিং কে ছিলেন? (জ্ঞান)
ক লেখক  ভ্রমণকারী গ বৈজ্ঞানিক ঘ শিক্ষক
৯৩. সিলেটের পূর্বের নাম কী ছিল? (জ্ঞান)
 শ্রীহট্ট খ ময়নামতি গ রাঢ় ঘ শুধারাম
৯৪. মহাস্থানগড়ের সাথে যেমন পুন্ড্রনগরের মিল আছে ঠিক তেমনি সিলেটের সাথে কোনটির মিল রয়েছে? (প্রয়োগ)
 শ্রীহট্ট খ ময়নামতি গ রোহিতগিরি ঘ ভুলুয়া
৯৫. বঙ্গ, সমতট, হরিকেল তিনটি জনপদের নাম। পৃথক জনপদ হলেও এদের ক্ষেত্রে কোন তথ্যটি প্রযোজ্য? (প্রয়োগ)
 প্রতিবেশী জনপদ খ একটির মধ্যে আরেকটি
গ শিল্প ও কৃষিতে উন্নত ঘ নাব্য এলাকায় অবস্থিত
৯৬. হরিকেল জনপদটির বৈশিষ্ট্য হিসেবে কোনটি প্রযোজ্য? (অনুধাবন)
ক মুসলিম অধ্যুষিত খ খণ্ড রাজ্য
 স্বতন্ত্র রাজ্য ঘ অনুর্বর রাজ্য
৯৭. হরিকেল কোন জেলার অন্তর্গত? (জ্ঞান)
ক কুমিল­া খ গাইবান্ধা  সিলেট ঘ ফেনী
৯৮. ত্রৈলোক্যচন্দ্র কোন বংশের রাজা ছিলেন? (জ্ঞান)
ক খড়গ বংশ  চন্দ্র বংশ গ বর্ম বংশ ঘ দেব বংশ
বহুপদী সমাপ্তিসূচক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
৯৯. হরিকেলের অবস্থান সম্পর্কিত প্রাপ্ত ঐতিহাসিক তথ্য হলো (অনুধাবন)
র. পূর্ব ভারতের শেষ সীমায়
রর. বর্তমান চট্টগ্রামের অংশ
ররর. কুষ্টিয়া ও কুমিল্লায় অবস্থিত
নিচের কোনটি সঠিক?
 র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
১০০. প্রাচীন বাংলার নিকট প্রতিবেশী জনপদগুলো হলো (অনুধাবন)
র. সমতট
রর. পুন্ড্র
ররর. হরিকেল
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর  র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর

 সমতট  বোর্ড বই, পৃষ্ঠা- ২৫
 সমতট অঞ্চলটি ছিল আর্দ্র নিম্নভ‚মি।
 বর্তমান কুমিল্লার প্রাচীন নাম সমতট।
 সাত শতক থেকে বারো শতক পর্যন্ত বর্তমান ত্রিপুরা ছিল সমতটের অংশ।
 কামতা নামক রাজধানী ছিল কুমিল্লা শহরের ১২ মাইল পশ্চিমে।
 শালবন বিহার অবস্থিত কুমিল্লার ময়নামতিতে।
 কুমিল্লা ও নোয়াখালি অঞ্চল নিয়ে গঠিত হয় সমতট।
সাধারণ বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
১০১. সমতট অঞ্চলটি কী রকম ছিল? (জ্ঞান)
ক আর্দ্র উচ্চভ‚মি খ অনার্দ্র নিম্নভ‚মি
 আর্দ্র নিম্নভ‚মি ঘ আর্দ্র ও সমতল
১০২. সমতট অঞ্চলের অন্তর্গত কোন জেলা? (জ্ঞান)
ক ফেনী খ বগুড়া  নোয়াখালী ঘ বরিশাল
১০৩. বর্তমান ত্রিপুরা জেলা সমতটের অন্যতম অংশ ছিল কত শতক পর্যন্ত?
(জ্ঞান)
ক চতুর্থ-নবম খ পঞ্চম-দশম
গ ষষ্ঠ-একাদশ  সপ্তম-দ্বাদশ
১০৪. কুমিল­া জেলার কত মাইল পশ্চিমে সমতটের রাজধানী ছিল? (জ্ঞান)
ক ১০  ১২ গ ১৪ ঘ ১৬
১০৫. সমতটের রাজধানী ছিল কোনটি? (জ্ঞান)
ক রাঢ় খ মহাস্থানগড়  বড় কামতা ঘ পাহাড়পুর
১০৬. জনপদটি কুমিল্লা ও নোয়াখালী অঞ্চলে অবস্থিত। রাজধানী ছিল বড় কামতা। এখানে কোন জনপদের কথা বলা হয়েছে? (জ্ঞান)
ক হরিকেল  সমতট গ বরেন্দ্র ঘ চন্দ্রদ্বীপ
বহুপদী সমাপ্তিসূচক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
১০৭. সমতট অঞ্চল বলতে বোঝাত (অনুধাবন)
র. কুমিল্লা, নোয়াখালী অঞ্চল
রর. চব্বিশ পরগনার খড়ি পরগনা
ররর. গঙ্গা ও ভাগীরথীর পূর্ব তীর
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর  র, রর ও ররর
 বরেন্দ্র  বোর্ড বই, পৃষ্ঠা- ২৬
 পুণ্ড্রবর্ধন জনপদের সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ এলাকা ছিল বরেন্দ্র।
 বরেন্দ্র ছিল উত্তরবঙ্গের একটি জনপদ।
 বরেন্দ্র জনপদের অবস্থান ছিল গঙ্গা ও করতোয়া নদীর মধ্যবর্তী অঞ্চলে।
 বরেন্দ্র এলাকার প্রধান শহর পুণ্ড্রনগর।
 বরেন্দ্র ভ‚মি বিস্তৃত ছিল বগুড়া, দিনাজপুর ও রাজশাহী জেলার অনেকটা অঞ্চল।
সাধারণ বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
১০৮. উত্তরবঙ্গের জনপদ কোনটি? (জ্ঞান)
ক হরিকেল খ তাম্রলিপ্ত  বরেন্দ্র ঘ চন্দ্রদ্বীপ
১০৯. বরেন্দ্র কোন জনপদের সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ এলাকা? (জ্ঞান)
ক তাম্রলিপ্ত খ বড় কামতা  পুন্ড্রবর্ধন ঘ চন্দ্রদ্বীপ
১১০. কোন জেলা বরেন্দ্র অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত ছিল? (জ্ঞান)
ক গাইবান্ধা  দিনাজপুর গ ফেনী ঘ কুমিল­া
১১১. রাজিব বগুড়া, দিনাজপুর ও রাজশাহী অঞ্চলের জনপদ ঘুরে আসে। উক্ত জনপদের সদৃশ প্রাচীন জনপদ কোনটি? (উচ্চতর দক্ষতা)
ক সমতট খ হরিকেল গ চন্দ্রদ্বীপ  বরেন্দ্র
বহুপদী সমাপ্তিসূচক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
১১২. বরেন্দ্র জনপদের অবস্থান ছিল (অনুধাবন)
র. গঙ্গা ও করতোয়ার মধ্যবর্তী স্থানে
রর. বগুড়া ও রাজশাহী জেলায়
ররর. সমগ্র পাবনা জেলায়
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর  র, রর ও ররর

 তাম্রলিপ্ত  বোর্ড বই, পৃষ্ঠা- ২৬
 তাম্রলিপ্তি জনপদ অবস্থিত হরিকেলের দক্ষিণে।
 বর্তমান মেদিনীপুর জেলার তমলুকই ছিল তাম্রলিপ্তির প্রাণকেন্দ্র।
 তাম্রলিপ্তি নৌবন্দরটি অবস্থিত ছিল রূপনারায়ণ নদীর তীরে।
 তাম্রলিপ্ত জনপদটি ছিল সমুদ্র উপক‚রবর্তী।
 নৌবাণিজ্য কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত ছিল তাম্রলিপ্ত জনপদ।
 তাম্রলিপ্ত জনপদ দণ্ডভুক্তি নামে পরিচিত হতে থাকে সপ্তম শতক হতে।
 তাম্রলিপ্ত বন্দরের সমৃদ্ধি নষ্ট হতে থাকে আট শতকের পর হতে।
সাধারণ বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
১১৩. হরিকেলের দক্ষিণে কোন জনপদ অবস্থিত ছিল? (জ্ঞান)
ক চন্দ্রদ্বীপ খ ময়নামতি গ বরেন্দ্র  তাম্রলিপ্ত
১১৪. তাম্রলিপ্ত বর্তমান কোন জেলার অন্তর্গত? (জ্ঞান)
ক জলপাইগুড়ি খ কলকাতা
 মেদিনীপুর ঘ শিলিগুড়ি
১১৫. তাম্রলিপ্ত এলাকার অবস্থান কোথায় ছিল? (জ্ঞান)
ক পর্বত পাদদেশে  সমুদ্রের তীরে
গ নদীর ধারে ঘ সমতল অঞ্চলে
১১৬. কোনটি নৌচলাচলের জন্য উত্তম ছিল? (জ্ঞান)
 তাম্রলিপ্ত খ হরিকেল গ পুন্ড্র ঘ বরেন্দ্র
১১৭. নৌবাণিজ্যের এ প্রাণকেন্দ্রের একটি নাম দণ্ডভুক্তি। এখানে কোন জনপদের কথা বলা হয়েছে? (প্রয়োগ)
ক বরেন্দ্র  তাম্রলিপ্ত গ বঙ্গ ঘ চন্দ্রদ্বীপ
১১৮. সাত শতকে দণ্ডভুক্তি নামে পরিচিত হতে থাকে কোনটি? (জ্ঞান)
ক চন্দ্রদ্বীপ খ বরেন্দ্র  তাম্রলিপ্ত ঘ হরিকেল
১১৯. কোন শতকে তাম্রলিপ্ত বন্দরের সমৃদ্ধি নষ্ট হয়েছিল? (জ্ঞান)
ক ৭ম  ৮ম গ ৯ম ঘ ১০ম
অভিন্ন তথ্যভিত্তিক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ে ১২০, ১২১ ও ১২২ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
মানিক হরিকেলের উত্তরে অবস্থিত একটি স্থান দেখে এসে বলল যে, এই জায়গাটি খুবই নিচু ও আর্দ্র এবং এটি নৌচলাচলের জন্য উত্তম।
১২০. উক্ত অনুচ্ছেদে কোন স্থানের ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে? (প্রয়োগ)
ক চন্দ্রদ্বীপ খ বরেন্দ্র  তাম্রলিপ্ত ঘ গৌঢ়
১২১. অনুচ্ছেদে উল্লিখিত স্থান মূলত বিখ্যাত (উচ্চতর দক্ষতা)
র. নৌচলাচলের জন্য রর. নৌবাণিজ্যের কেন্দ্র হিসেবে
ররর. প্রাচীনতম বলে
নিচের কোনটি সঠিক?
 র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
১২২. উক্ত স্থানের প্রাণকেন্দ্র বলা হয় কোন জেলাকে? (প্রয়োগ)
ক গোয়া খ বোসেব  মেদিনীপুর ঘ সিকিম

 চন্দ্রদ্বীপ  বোর্ড বই, পৃষ্ঠা- ২৬
 বর্তমান বরিশাল জেলার পূর্ব নাম ছিল চন্দ্রদ্বীপ।
 বালেশ্বর ও মেঘনার মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত ছিল চন্দ্রদ্বীপ।
 প্রাচীনকালের সবচেয়ে ক্ষুদ্র জনপদ হলো চন্দ্রদ্বীপ।
 কোনো রাজনৈতিক ঐক্য ছিল না প্রাচীন বাংলায়।
 পুণ্ড্রবর্ধন, গৌড় ও বঙ্গ বাংলার এই তিন জনপদ সংঘবদ্ধ হয় সপ্তম শতকে।
সাধারণ বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
১২৩. বাংলার জনপদগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ক্ষুদ্র জনপদ কোনটি? (জ্ঞান)
 চন্দ্রদ্বীপ খ তাম্রলিপ্ত গ বরেন্দ্র ঘ পুন্ড্র
১২৪. কোন জনপদটি বালেশ্বর ও মেঘনার মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত ছিল? (জ্ঞান)
ক তাম্রলিপ্ত খ বরেন্দ্র  চন্দ্রদ্বীপ ঘ মহাস্থানগর
১২৫. পুন্ড্রবর্ধন, গৌড় ও বঙ্গ বাংলার এই তিন জনপদ সংঘবদ্ধ হয় কোন শতকে? (জ্ঞান)
ক ষষ্ঠ খ অষ্টম  সপ্তম ঘ দশম
১২৬. প্রাচীন জনপদগুলো কীভাবে প্রভাব বিস্তার করে? (অনুধাবন)
 রাজনৈতিক ঐক্য গঠনে খ ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাজ্য সৃষ্টিতে
গ সীমারেখা পরিবর্তন করে ঘ বিদেশে পরিচিত হয়ে
বহুপদী সমাপ্তিসূচক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
১২৭. চন্দ্রদ্বীপ জনপদ সম্পর্কে প্রযোজ্য তথ্য হলো (অনুধাবন)
র. একটি বৃহৎ জনপদ রর. বরিশাল ছিল কেন্দ্রবিন্দু
ররর. বালেশ্বর ও মেঘনার মধ্যবর্তী স্থানে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর  রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
১২৮. শশাঙ্ক ও পাল রাজাদের ‘রাজাধিপতি’ বা ‘গৌড়েশ্বর’ উপাধি গ্রহণের তাৎপর্য হলো (উচ্চতর দক্ষতা)
র. বৃহৎ অঞ্চলের অধিকারী ছিলেন
রর. অপ্রতিহত ক্ষমতাধর ছিলেন
ররর. তারা সমগ্র এলাকাকে সংঘবদ্ধ করেন
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর  র, রর ও ররর
১২৯. প্রাচীন বাংলার জনপদ থেকে জানা যায় (অনুধাবন)
র. ভৌগোলিক অবয়ব
রর. সীমারেখা
ররর. রাজনৈতিক বর্ণনা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর  র, রর ও ররর
অভিন্ন তথ্যভিত্তিক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
নিচের চিত্রটি লক্ষ করে ১৩০ ও ১৩১ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :

১৩০. মানচিত্র অনুযায়ী কোন জনপদটি ক্ষুদ্র? (প্রয়োগ)
 চন্দ্রদ্বীপ খ সমতট
গ গৌড় ঘ বরেন্দ্র
১৩১. বর্তমান বরিশাল জেলা ছিল জনপদটির (উচ্চতর দক্ষতা)
র. প্রাণকেন্দ্র
রর. মূল ভ‚খণ্ড
ররর. বাণিজ্যকেন্ত্র
নিচের কোনটি সঠিক?
 র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর

 বোর্ড ও সেরা স্কুলের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন- ১  গৌড় জনপদ

আলো টিভিতে ‘দাদাগিরি’ অনুষ্ঠান দেখছে। সেখানে মালদহ, মুর্শিদাবাদ, বীরভ‚ম ও বর্ধমান জেলা থেকে প্রতিযোগীরা অংশগ্রহণ করেছে। আলোর দাদা বললেন যে এসব অঞ্চল প্রাচীন একটি জনপদের অংশ ছিল। [কুষ্টিয়া সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
ক. কোথায় প্রাচীন জনপদগুলোর নাম পাওয়া যায়? ১
খ. ‘বঙ্গ’ নামকরণ কীভাবে হয়? ২
গ. আলোর দাদা প্রাচীন কোন জনপদের প্রতি ইঙ্গিত করেছেন? নিরূপণ কর। ৩
ঘ. আলোর দাদা প্রাচীন যে জনপদের কথা বলেছেন বঙ্গ জনপদের অবস্থান এর থেকে ভিন্ন অঞ্চলে- কথাটি বিশ্লেষণ কর। ৪

ক চার শতক হতে গুপ্ত যুগ, গুপ্ত পরবর্তী যুগ, পাল, সেন প্রভৃতি আমলের উৎকীর্ণ শিলালিপি ও সাহিত্য গ্রন্থে প্রাচীন বাংলার জনপদগুলোর নাম পাওয়া যায়।
খ চন্দ্রগুপ্ত, বিক্রমাদিত্য, চালুক্য রাজা ও রাষ্ট্রক‚টদের শিলালিপি এবং কালিদাসের গ্রন্থে বঙ্গ জনপদের বর্ণনা পাওয়া যায়। বর্তমান বাংলাদেশের পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব দিকে বঙ্গ নামে একটি জনপদ গড়ে উঠেছিল। অনুমান করা হয়, এখানে ‘রং’ নামে এক জাতি বাস করত। তাই জনপদটি হয় ‘বঙ্গ’ নামে।
গ আলোর দাদা বাংলার প্রাচীন জনপদ গৌড়ের প্রতি ইঙ্গিত করেছেন।
গৌড় নামটি সুপরিচিত হলেও প্রাচীনকালে গৌড় বলতে ঠিক কোন অঞ্চলকে বোঝাত এ নিয়ে প্রচুর মতভেদ আছে। আর যে এলাকা গৌড় বলে অভিহিত হতো কেনই বা সে অঞ্চল এ নামে অভিহিত হতো আজ পর্যন্ত সেটাও সঠিকভাবে জানা যায়নি। পাণিনির গ্রন্থে সর্বপ্রথম গৌড়ের উল্লেখ দেখা যায়। পাল রাজাদের আমলে গৌড়ের নাম-ডাক ছিল সবচেয়ে বেশি। উত্তর ভারতের বিস্তীর্ণ অঞ্চল তখন গৌড়ের অন্তর্ভুক্ত ছিল। সাম্রাজ্যের কেন্দ্রস্থল হওয়ায় তার প্রতাপ ছিল অপ্রতিহত। পরবর্তীকালে পাল সাম্রাজ্যের ভাগ্য পরিবর্তনের সাথে সাথে গৌড়ের ভাগ্যও পরিবর্তিত হয়ে যায়। গৌড়ের সীমা তখন সীমাবদ্ধ হয়ে আসে। আধুনিক মালদহ, মুর্শিদাবাদ, বীরভ‚ম ও বর্ধমানের কিছু অংশ গৌড়ের সীমানা বলে মনে করা হয়। আলোর দাদা টিভিতে এসব এলাকার প্রতিযোগীদের অংশগ্রহণ থেকেই প্রাচীন এক জনপদের নাম উল্লেখ করেন। সুতরাং নিঃসন্দেহে তিনি গৌড় জনপদের প্রতি ইঙ্গিত করেছেন। উপরন্তু সপ্তম শতকে গৌড়রাজ শশাংকের রাজধানী ছিল মুর্শিদাবাদ জেলার কর্ণসুবর্ণ। সুতরাং উদ্দীপকে মুর্শিদাবাদের উল্লেখ থেকেও নিশ্চিত হওয়া যায় যে, আলোর দাদা প্রাচীন গৌড় জনপদের প্রতি ইঙ্গিত করেছেন।
ঘ আলোর দাদা প্রাচীন বাংলার গৌড় জনপদের কথা বলেছেন। বঙ্গ জনপদের অবস্থান এর থেকে ভিন্ন অঞ্চলে ছিল। গৌড় জনপদের অবস্থান আজ পর্যন্ত সঠিকভাবে জানা যায়নি। হর্ষবর্ধনের শিলালিপি থেকে প্রমাণিত হয় যে, সমুদ উপক‚ল থেকে গৌড়দেশ খুব বেশি দূরে অবস্থিত ছিল না। ষষ্ঠ শতকে লেখা বরাহ মিহিরের বিবরণ থেকে দেখা যায় যে, গৌড় অন্যান্য জনপদ, যথা : পুন্ড্র, বঙ্গ, সমতট থেকে আলাদা একটি জনপদ। সপ্তম শতকে গৌড়রাজ শশাংকের রাজধানী ছিল মুর্শিদাবাদের নিকটবর্তী কর্ণসুবর্ণ। পাল রাজাদের আমলে উত্তর ভারতের বিস্তীর্ণ অঞ্চল গৌড়ের অন্তর্ভুক্ত ছিল। উদ্দীপকে উল্লিখিত মালদহ, মুর্শিদাবাদ, বীরভ‚ম ও বর্ধমান জেলাও ছিল গৌড়ের অন্তর্ভুক্ত। অন্যদিকে মহাভারতের উল্লেখ হতে বোঝা যায় যে, বঙ্গ, পুন্ড্র, তাম্রলিপ্ত ও সু‏েহ্মর সংলগ্ন দেশ। সাক্ষ্য প্রমাণ থেকে মনে হয়, গঙ্গা ও ভাগীরথীর মাঝখানের অঞ্চলকেই বঙ্গ বলা হতো। প্রাচীন শিলালিপিতে ‘বিক্রমপুর’ ও ‘নাব্য’ নামে বঙ্গের দুটি অঞ্চলের নাম পাওয়া যায়। বর্তমান বিক্রমপুর পরগনা ও তার সাথে আধুনিক ইদিলপুর পরগনার কিয়দংশ নিয়ে ছিল বিক্রমপুর। নাব্য বলে বর্তমানে কোনো জায়গার অস্তিত্ব নেই। ধারণা করা হয়, ফরিদপুর, বরিশাল, পটুয়াখালীর নিম্ন জলাভ‚মি এ নাব্য অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত ছিল। সুতরাং উপরের আলোচনায় দেখা যায় গৌড় ও বঙ্গ জনপদ পদ্মার উত্তর ও দক্ষিণে দুটি ভিন্ন জনপদ ছিল। তাই নিঃসন্দেহে, আলোর দাদার উল্লিখিত গৌড় ও বঙ্গ জনপদের অবস্থান ছিল ভিন্ন।

প্রশ্ন- ২ 
সমতট জনপদ
ভুটানের একদল পরিব্রাজক বাংলাদেশে এসেছিলেন। তাদের উদ্দেশ্য ছিল প্রাচীন বাংলার কিছু জনপদ পরিদর্শন করা। পরিব্রাজক দল দুইভাগে বিভক্ত হয়। প্রথম দল কুমিল্লা এবং দ্বিতীয় দল বর্তমান দিনাজপুর, রাজশাহী ও বগুড়া জেলায় যায়। দুই দলের মধ্যে একটি দল পাথরের চাকতিতে খোদাই করা শিলালিপি দেখতে পেয়ে বিস্মিত হয়।
[ইস্পাহানি পাবলিক স্কুল ও কলেজ, কুমিল্লা সেনানিবাস]
ক. কোন অঞ্চলকে বঙ্গ বলা হতো? ১
খ. নৌবাণিজ্যে তাম্রলিপ্ত জনপদের গুরুত্ব ব্যাখ্যা কর। ২
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত প্রথম পরিব্রাজক দলের পরিদর্শন করা জনপদের ব্যাখ্যা দাও। ৩
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত দুইটি জনপদের মধ্যে কোন জনপদকে তুমি অধিক সমৃদ্ধ মনে কর? মতামত দাও। ৪

ক গঙ্গা ভাগিরথীর মাঝখানের অঞ্চলকে বঙ্গ বলা হতো।
খ প্রাচীন বাংলার তাম্রলিপ্ত জনপদের প্রাণকেন্দ্র ছিল মেদিনীপুর জেলার তমলুক। সমুদ্র উপক‚লবর্তী এ এলাকা ছিল খুব নিচু ও আর্দ্র। নৌ চলাচলের জন্য জায়গাটি ছিল খুব উত্তম। হুগলি ও রূপনারায়ণ নদের সঙ্গমস্থল হতে ১২ মাইল দূরে রূপনারায়ণের তীরে গড়ে উঠেছিল নৌ বাণিজ্য কেন্দ্র। প্রাচীনকালে তাম্রলিপ্ত তাই নৌবাণিজ্যের কেন্দ্র হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
গ উদ্দীপকে উল্লিখিত প্রথম পরিব্রাজক দলের পরিদর্শন করা জনপদ হচ্ছে সমতট। পরিব্রাজক দল কুমিল্লা পরিদর্শন করে, কারো কারো মতে বর্তমান কুমিল্লার প্রাচীন নাম সমতট। পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব বাংলায় বঙ্গের প্রতিবেশী জনপদ হিসেবে ছিল সমতটের অবস্থান। এ অঞ্চলটি ছিল আর্দ্র নিম্নভ‚মি। কেউ কেউ মনে করেন সমতট বর্তমান কুমিল্লার প্রাচীন নাম। আবার কেউ মনে করেন, কুমিল্লা ও নোয়াখালী অঞ্চল নিয়ে সমতট গঠিত হয়েছিল। সাত শতক থেকে বারো শতক পর্যন্ত বর্তমান ত্রিপুরা জেলা ছিল সমতটের অন্যতম অংশ। এক সময় এ জনপদের পশ্চিম সীমা চব্বিশ পরগনার খাড়ি পরগনা পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। গঙ্গা-ভাগীরথীর পূর্ব তীর থেকে শুরু করে মেঘনার মোহনা পর্যন্ত সমুদ্রক‚লবর্তী অঞ্চলকেই সম্ভবত বলা হতো সমতট। কুমিল্লা শহরের ১২ মাইল পশ্চিমে বড় কামতা নামক রাজধানী ছিল। কুমিল্লার ময়নামতিতে কয়েকটি প্রাচীন নিদর্শনের সন্ধান পাওয়া গেছে। ‘শালবন বিহার’ এদের অন্যতম। উপরিউক্ত আলোচনা থেকে স্পষ্ট হয় যে, পরিব্রাজক দল প্রাচীন বাংলার জনপদ সমতটের অঞ্চলই পরিদর্শন করে।
ঘ উদ্দীপকে ভুটানের পরিব্রাজকদের পরিদর্শন করা জনপদ দুটির একটি হচ্ছে প্রাচীন বাংলার সমতট অন্যটি হচ্ছে দিনাজপুর, রাজশাহী ও বগুড়া জেলায় অবস্থিত পুন্ড্র। এ দুটি জনপদের মধ্যে আমি পুন্ড্রকে অধিক সমৃদ্ধ মনে করি। প্রাচীন বাংলার জনপদগুলোর মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ হলো পুন্ড্র। বলা হয় যে, ‘পুন্ড্র’ বলে এক জাতি এ জনপদ গড়ে তুলেছিল। বৈদিক সাহিত্য ও মতাভারতে এ জাতির উল্লেখ আছে। পুন্ড্রদের রাজ্যের রাজধানীর নাম পুন্ড্রনগর। সম্ভবত মৌর্য সম্রাট অশোকের রাজত্বকালে (২৭৩-২৩২ অব্দ) প্রাচীন পুন্ড্র রাজ্য স্বাধীন সত্তা হারায়। তবে সমৃদ্ধি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পঞ্চম-ষষ্ঠ শতকে তা পুন্ড্রবর্ধনে রূপান্তরিত হয়েছে। সে সময়কার পুন্ড্রবর্ধন অন্তত বগুড়া, দিনাজপুর ও রাজশাহী জেলাজুড়ে বিস্তৃত ছিল। উদ্দীপকে দ্বিতীয় দলটি এ জেলাগুলোতেই পরিদর্শনে যায়। অন্যদিকে সমতটেও প্রাচীন উন্নত সভ্যতার নিদর্শন পাওয়া যায়। কুমিল্লার ‘শালবন বিহার’ এর অন্যতম কিন্তু বৌদ্ধ ধর্ম সংশ্লিষ্ট এ বিহার প্রাপ্ত নিদর্শন ও বিস্তৃতির দিক দিয়ে পুন্ড্রের মতো সমৃদ্ধ নয়। সম্ভবত পুন্ড্রে বাংলাদেশে প্রাপ্ত পাথরের চাকতিতে খোদাই করা প্রাচীনতম শিলালিপি পাওয়া গেছে। পরিব্রাজক দল পরিদর্শনে তাও দেখতে পায়। বস্তুত প্রাচীন সভ্যতার নিদর্শনের দিক দিয়ে পুন্ড্রই ছিল প্রাচীন বাংলার সবচেয়ে সমৃদ্ধ জনপদ।

প্রশ্ন- ৩  হরিকেল ও সমতট জনপদ

কুতুব উদ্দিন নবম শ্রেণির ছাত্র। সে তার স্কুলের শিক্ষা সফরে জাফলং ভ্রমণে যায়। শিক্ষক জনাব আবেদীন সাহেব তাকে জানায়, জাফলং অঞ্চলটি এক সময় নামকরা এক জনপদের অন্তর্ভুক্ত ছিল। তবে অনেক ঐতিহাসিক চট্টগ্রামকেও জনপদের অংশ বলে মনে করে। তবে এ কথা সত্য যে, সপ্তম ও অষ্টম শতক হতে দশম ও একাদশ শতক পর্যন্ত এটি একটি স্বতন্ত্র রাজ্য ছিল। কুতুব উদ্দিন ও তার বন্ধুরা পরবর্তী বছর নোয়াখালী ও কুমিল্লা অঞ্চলে ভ্রমণে আগ্রহী হয়।
[আল হেরা একাডেমি স্কুল এন্ড কলেজ]
ক. বর্তমানে বাংলাদেশের কোন অঞ্চলে বঙ্গ নামে একটি জনপদ গড়ে উঠেছিল? ১
খ. গৌড় জনপদের পরিচয় দাও। ২
গ. শিক্ষক জনাব আবেদীন সাহেব যে জনপদের বর্ণনা দিয়েছেন তা ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. তুমি কি মনে কর, কুতুব উদ্দিন ও তার বন্ধুরা আগামী বছর প্রাচীন সমতট অঞ্চলে ভ্রমণে আগ্রহী? মতামতের পক্ষে যুক্তি দাও। ৪

ক বর্তমান বাংলাদেশের পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব দিকে বঙ্গ নামে একটি জনপদ গড়ে উঠেছিল।
খ পাণিনির গ্র‎েন্থ সর্বপ্রথম গৌড়ের উল্লেখ পাওয়া যায়। কৌটিল্যের ‘অর্থশাস্ত্র’ গ্রন্থে গৌড় দেশের অনেক শিল্প ও কৃষিজাত দ্রব্যের উল্লেখ পাওয়া যায়। ব্যাৎসায়নের গ্রন্থেও তৃতীয় ও চতুর্থ শতকে গৌড়ের নাগরিকদের বিলাসব্যসনের পরিচয় পাওয়া যায়। হর্ষবর্ধনের শিলালিপি থেকে প্রমাণিত হয় যে, সমুদ্র উপক‚ল হতে গৌড়দেশ খুব বেশি দূরে অবস্থিত ছিল না। সপ্তম দশকে গৌড়রাজ শশাংকের রাজধানী ছিল মুর্শিদাবাদের নিকটবর্তী কর্ণসুবর্ণ। আর শুধু শশাংকই বা কেন, পরবর্তীকালে আরও অনেকের রাজধানী ছিল এই গৌড়।
গ শিক্ষক জনাব আবেদীন সাহেব হরিকেল জনপদের বর্ণনা দিয়েছেন।
সাত শতকের লেখকেরা হরিকেল নামে অপর এক জনপদের বর্ণনা করেছেন। চীনা ভ্রমণকারী ইৎসিং বলেছেন, হরিকেল ছিল পূর্ব ভারতের শেষ সীমায়, অর্থাৎ সিলেট অঞ্চলে। এজন্যই উদ্দীপকে আবেদীন সাহেব সিলেটের জাফলংকে এ জনপদের অন্তর্ভুক্ত বলেছেন। আবার কারো কারো লিপিতে হরিকেলের যে পরিচয় পাওয়া যায় তাতে বর্তমান চট্টগ্রামেরও অংশ খুঁজে পাওয়া যায়। উদ্দীপকে শিক্ষক ছাত্রদের এ তথ্যটি প্রদান করেছিলেন। সমস্ত তথ্য পর্যালোচনা করে ধরে নেওয়া যায় যে, পূর্বে শ্রীহট্ট (সিলেট) থেকে চট্টগ্রামের অংশ বিশেষ পর্যন্ত হরিকেল জনপদ বিস্তৃত ছিল। শিক্ষক আবেদীন সাহেব আরও বলেন, এ কথা সত্য যে সপ্তম ও অষ্টম শতক হতে দশ ও এগারো শতক পর্যন্ত হরিকেল একটি স্বতন্ত্র রাজ্য ছিল। কিন্তু পূর্ব-বাংলার চন্দ্র রাজবংশের রাজা ত্রৈলোক্যচন্দ্রের চন্দ্রদ্বীপ অধিকারের পর হতে হরিকেলকে মোটামুটি বঙ্গের অংশ বলে ধরা হয়। অনেকে আবার শুধু সিলেটের সাথে হরিকেলকে অভিন্ন বলে মনে করেন। সুতরাং, শিক্ষক জনাব আবেদীন সাহেব প্রাচীন বাংলার হরিকেল জনপদের বর্ণনা দিয়েছেন।
ঘ আমি মনে করি, কুতুব উদ্দিন ও তার বন্ধুরা আগামী বছর প্রাচীন সমতট অঞ্চলে ভ্রমণে আগ্রহী। প্রাচীন পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব বাংলায় বঙ্গের প্রতিবেশী জনপদ হিসেবে ছিল সমতটের অবস্থান। এ অঞ্চলটি ছিল আর্দ্র নিম্নভ‚মি। কেহ কেহ মনে করেন সমতট বর্তমান কুমিল্লার প্রাচীন নাম। আবার কেহ মনে করেন, কুমিল্লা ও নোয়াখালী অঞ্চল নিয়ে সমতট গঠিত হয়েছিল। আর উদ্দীপকের কুতুবউদ্দিন ও তার বন্ধুর আগামী বছর নোয়াখালী ও কুমিল্লা অঞ্চলে ভ্রমণে আগ্রহী। সাত শতক থেকে বারো শতক পর্যন্ত বর্তমান ত্রিপুরা জেলা ছিল সমতটের অন্যতম অংশ। এক সময় এ জনপদের পশ্চিম সীমা চব্বিশ পরগনার খাড়ি পরগনা পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। গঙ্গা-ভাগীরথীর পূর্ব তীর থেকে শুরু করে মেঘনার মোহনা পর্যন্ত সমুদ্রক‚লবর্তী অঞ্চলকেই সম্ভবত বলা হতো সমতট। কুমিল্লা শহরের ১২ মাইল পশ্চিমে বড় কামতা নামক রাজধানী ছিল। কুমিল্লার ময়নামতিতে কয়েকটি প্রাচীন নিদর্শনের সন্ধান পাওয়া গেছে ‘শালবন বিহার’ এদের অন্যতম। সুতরাং সমতট জনপদের বিস্তৃতি যাই হোক না কেন, কুমিল্লা ও নোয়াখালী প্রাচীন বাংলায় সমতটের অন্তর্ভুক্ত ছিল। তাই নিঃসন্দেহে বলা যায়, কুতুব উদ্দিন ও তার বন্ধুরা আগামী বছর প্রাচীন সমতট অঞ্চলে ভ্রমণে আগ্রহী।

প্রশ্ন- ৪  তাম্রলিপ্ত জনপদ

তানজিম-এর বাড়ি সমুদ্র উপক‚লবর্তী একটি এলাকায়। এলাকাটি খুব নিচু। সারা বছরই এলাকায় পানি থাকে। তানজিমদের এলাকার যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম নৌপথ। কোনো এক সময় তাদের এলাকাটিতে বাণিজ্য কেন্দ্র গড়ে উঠে। এর প্রধান কারণ ছিল নৌ যোগাযোগের সুবিধা। [সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, চুয়াডাঙ্গা]
ক. পুন্ড্রনগরের বর্তমান নাম কী? ১
খ. পুন্ড্র জনপদের পরিচয় দাও। ২
গ. তানজিমদের এলাকার সাথে প্রাচীন যুগের কোন জনপদের মিল লক্ষ করা যায়? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. উক্ত জনপদের কোন দিকটি তোমার কাছে বিশেষভাবে পছন্দ? বিশ্লেষণ কর। ৪

ক পুন্ড্রনগরের বর্তমান নাম মহাস্থানগড়।
খ প্রাচীন বাংলার জনপদগুলোর মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ হলো পুন্ড্র। বলা হয় যে, ‘পুন্ড্র’ বলে এক জাতি এ জনপদ গড়ে তুলেছিল। বৈদিক সাহিত্য ও মহাভারতে এ জাতির উল্লেখ আছে। পুন্ড্রদের রাজ্যের রাজধানীর নাম পুন্ড্রনগর।
পরবর্তীকালে এর নাম হয় মহাস্থানগড়। সম্ভবত মৌর্য সম্রাট অশোকের রাজত্বকালে (২৭৩-২৩২ অব্দ) প্রাচীন পুন্ড্র রাজ্য স্বাধীন সত্তা হারায়। সমৃদ্ধি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পঞ্চম-ষষ্ঠ শতকে তা পুন্ড্রবর্ধনে রূপান্তরিত হয়েছে। সে সময়কার পুন্ড্রবর্ধন অন্তত বগুড়া, দিনাজপুর ও রাজশাহী জেলাজুড়ে বিস্তৃত ছিল। রাজমহল ও গঙ্গা-ভাগীরথী হতে আরম্ভ করে করতোয়া পর্যন্ত মোটামুটি সমস্ত উত্তর বঙ্গই বোধহয় সে সময় পুন্ড্রবর্ধনের অন্তর্ভুক্ত ছিল। সেন আমলে পুন্ড্রবর্ধনের দক্ষিণ সীমা পদ্মা পেরিয়ে একেবারে খাড়ি (বর্তমান চব্বিশ পরগনার খাড়ি পরগনা) ও ঢাকা-বরিশালের সমুদ্র তীর পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল।
গ তানজিমদের এলাকার সাথে প্রাচীন যুগের তাম্রলিপ্ত জনপদের মিল লক্ষ করা যায়। হরিকেলের দক্ষিণে অবস্থিত ছিল তাম্রলিপ্ত জনপদ। বর্তমান মেদিনীপুর জেলার তমলুকই ছিল তাম্রলিপ্তের প্রাণকেন্দ্র। সমুদ্র উপক‚লবর্তী এ এলাকা ছিল খুব নিচু ও আর্দ্র। তানজিমদের বাড়ি ও সমুদ্র উপক‚লবর্তী এলাকায় যা খুব নিচু এবং সেখানে সারাবছরই পানি থাকে। নৌ চলাচলের জন্য তাম্রলিপ্ত জায়গাটি ছিল খুব উত্তম। প্রাচীনকালে তাম্রলিপ্ত গুরুত্বপূর্ণ নৌবাণিজ্যের কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত ছিল। হুগলি ও রূপনারায়ণ নদের সঙ্গমস্থল হতে ১২ মাইল দূরে রূপনারায়ণের তীরে এ বন্দরটি অবস্থিত ছিল। উদ্দীপকে তানজিমদের এলাকায়ও নৌ যোগাযোগের সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে বাণিজ্য কেন্দ্র গড়ে উঠেছিল। পরবর্তীতে তা আর থাকেনি। তদ্রæপ সাত শতক হতে তাম্রলিপ্ত দণ্ডভুক্তি নামে পরিচিত হতে থাকে এবং আট শতকের পর হতেই তাম্রলিপ্ত বন্দরের সমৃদ্ধি নষ্ট হয়ে যায়। সুতরাং তামজিমদের এলাকার সাথে প্রাচীন বাংলার তাম্রলিপ্ত জনপদের মিল লক্ষণীয়।
ঘ উক্ত জনপদ তথা তাম্রলিপ্ত জনপদের বাণিজ্যিক দিকটি আমার বিশেষভাবে পছন্দ। বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। এদেশের নদীগুলো এখনও ব্যবসায় ও বাণিজ্যিক পরিবহনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। নৌপরিবহন সহজ ও সুলভ। সমগ্র বাংলাদেশে নদীগুলো জালের মতো বিস্তৃত। আমরা তার যথাযথ ব্যবহার করতে পারলে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনে দ্রæত অগ্রসর হতে পারি। নানা কারণে আজ তা বহুপ্রতিক‚লতার সম্মুখীন। অথচ প্রাচীন বাংলার তাম্রলিপ্ত জনপদ গুরুত্বপূর্ণ নৌ বাণিজ্য কেন্দ্র হিসেবে খ্যাতি পেয়েছিল। নিঃসন্দেহে জনপদটি এর ভিত্তিতে বেশ সমৃদ্ধও ছিল। প্রকৃতির দানকে কাজে লাগিয়ে সমৃদ্ধির দিকে অগ্রসর হওয়ার এ প্রচেষ্টা আমার কাছে জাতির উন্নয়নে কর্তব্য বলে মনে হয়। তাই তাম্রলিপ্ত জনপদের নৌ বাণিজ্যের দিকটি আমার বিশেষভাবে পছন্দ।
 মাস্টার ট্রেইনার প্রণীত সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন- ৫  প্রাচীন বাংলার জনপদগুলোর প্রকৃতি

মুসলমানদের অভিযানের প্রাক্কালে দক্ষিণ ভারত কতকগুলো ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাজ্যে বিভক্ত ছিল। যেমন : মালব রাজ্য, পান্ডব রাজ্য, দ্বারসমুদ্র প্রভৃতি। রাজ্যগুলো ছিল স্বাধীন এবং এক রাজ্য অন্য রাজ্যকে আক্রমণ করত। প্রাচীন বাংলাও একটি অখণ্ড রাজ্যের অধীনে ছিল না। এ অঞ্চলগুলো অনেকটা স্বাধীন দেশের মতো ছিল। শাসকগণ স্বাধীনভাবে শাসন করতেন। রাজশক্তির পরিবর্তনের সাথে সাথে সীমানা ও বিস্তৃতি বার বার পরিবর্তিত হয়।
ক. প্রাচীন বাংলার চন্দ্রদ্বীপ কোন স্থানের নাম? ১
খ. পাল রাজাদের আমলে গৌড়ের নাম-ডাক বেশি ছিল কেন? ২
গ. উদ্দীপকের দক্ষিণ ভারতের সাথে প্রাচীন বাংলার সাদৃশ্যপূর্ণ অবস্থা ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. বাংলার সীমানা ও বিস্তৃতি পরিবর্তনে উদ্দীপকে বর্ণিত অবস্থা কতটুকু সামঞ্জস্যপূর্ণ? মতামত দাও। ৪

ক প্রাচীন বাংলার চন্দ্রদ্বীপ বরিশাল অঞ্চলের নাম।
খ পাল রাজাদের আমলে গৌড়ের নাম-ডাক বেশি ছিল। কারণ, উত্তর ভারতের বিস্তীর্ণ অঞ্চল তখন গৌড়ের অন্তর্ভুক্ত ছিল। সাম্রাজ্যের কেন্দ্রস্থল হওয়ায় তার প্রতাপ ছিল অপ্রতিহত। তাছাড়া প্রাচীন বাংলায় সবচেয়ে পালরাই বেশি শাসন করেছে। তাই তাদের শাসনকালে গৌড়ের নাম বেশি ছিল।
গ উদ্দীপকে দক্ষিণ ভারতের মতো প্রাচীন বাংলার অবস্থা হচ্ছে সে সময়ে বাংলা অনেকগুলো স্বাধীন জনপদে বিভক্ত ছিল। এসব অঞ্চলের শাসকরা স্বাধীনভাবে শাসন করতেন। এটাই উদ্দীপকের দক্ষিণ ভারতের সাথে প্রাচীন বাংলার সাদৃশ্যপূর্ণ অবস্থা।
প্রাচীন যুগে বাংলা (বর্তমানের বাংলাদেশ ও পশ্চিম বঙ্গ) এখনকার বাংলাদেশের মতো কোনো একক ও অখণ্ড রাষ্ট্র বা রাজ্য ছিল না। বাংলার বিভিন্ন অংশ তখন অনেকগুলো ছোট ছোট অঞ্চলে বিভক্ত ছিল। আর প্রতিটি অঞ্চলের শাসক যার যার মতো শাসন করতেন। বাংলার এ অঞ্চলগুলোকে তখন সমষ্টিগতভাবে নাম দেয়া হয় ‘জনপদ’। উদ্দীপকের দক্ষিণ ভারতের মালব রাজ্য, পান্ডব রাজ্য, দ্বারসমুদ্রের সাথেও জনপদগুলোর বৈশিষ্ট্য সামঞ্জস্যপূর্ণ। এ জনপদগুলোর অবস্থানের ভিত্তিতে বলা যায় যে, প্রাচীন বাংলায় কোনো কেন্দ্রীয় শাসনাধীন না থাকায় জনপদগুলো স্বাধীনভাবে কার্যক্রম চালাত। যেমন, উদ্দীপকে দক্ষিণ ভারতের রাজ্যগুলোও স্বাধীন। সুতরাং উদ্দীপকের দক্ষিণ ভারতের রাজ্যগুলো স্বাধীন সত্তার দিক দিয়ে প্রাচীন বাংলার জনপদগুলোর সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ।
ঘ উদ্দীপকে বর্ণিত দক্ষিণ ভারতের অবস্থা প্রাচীন বাংলার জনপদের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। রাজশক্তির পরিবর্তনের সাথে সাথে প্রাচীন বাংলার সীমানাও অনেক ক্ষেত্রে পরিবর্তিত হয়েছে। প্রাচীন বাংলায় যেসব জনপদের সন্ধান পাওয়া যায় এগুলোর মধ্যে বঙ্গ, গৌড়, পুন্ড্র, সমতট, হরিকেল, রাঢ় তাম্রলিপ্ত, চন্দ্রদ্বীপ প্রভৃতি অন্যতম। এসব জনপদের সীমানা বিভিন্ন শাসকের সময় বিভিন্নরূপ ছিল। দেখা যায় যে, প্রাচীনকালে গৌড় জনপদের রাজধানী ছিল কর্ণসুবর্ণ যার বর্তমান অবস্থান মুর্শিদাবাদে। কিন্তু মুসলিম বিজয়ের কিছু আগে মালদহ জেলার লক্ষণাবতীকেও গৌড় বলা হতো। বর্তমান মুন্সীগঞ্জের বিক্রমপুরে প্রাচীনকালে প্রথম দিকে বঙ্গ জনপদ গড়ে উঠলেও পরবর্তীতে শাসকবর্গের পরিবর্তন ঘটায় এর সাথে ফরিদপুর, বরিশাল ও পটুয়াখালী সংযুক্ত হয়েছিল। এছাড়া বর্তমান বগুড়া, রংপুর, রাজশাহী ও দিনাজপুর অঞ্চল নিয়ে পুন্ড্র জনপদ গড়ে উঠলেও সম্রাট অশোক এ অঞ্চলের কর্তৃত্ব লাভ করলে জনপদের সীমানা হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটেছিল। প্রাচীনকালে কোনো জনপদই একক স্থানে কোনো শাসকের অধীনে ছিল না। একজন শাসকের অধীনে না থাকায় নতুন শাসকগোষ্ঠীর আগমনে বাংলার সীমানা প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত হয়েছে। এর ফলে আমরা দেখি যে, বিভিন্ন যুগে প্রাচীন বাংলার জনপদগুলোর সীমানা কখনো বৃদ্ধি পেয়েছে আবার কখনো হ্রাস পেয়েছে।

প্রশ্ন- ৬  গৌড় জনপদ

আকরামুজ্জামান কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্র পাঠ করে বাংলার একটি প্রাচীন জনপদ সম্পর্কে জানতে পারে। সে আরো জানতে পারে, হর্ষবর্ধনের শিলালিপি হতে প্রমাণিত হয় যে, বঙ্গে উক্ত জনপদের অস্তিত্ব ছিল।
ক. চন্দ্রদ্বীপের বর্তমান নাম কী? ১
খ. বরেন্দ্র ভ‚মি বলতে কী বোঝ? ২
গ. আকরামুজ্জামান কোন প্রাচীন জনপদ সম্পর্কে জানতে পারে? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. উক্ত জনপদ থেকে প্রাচীন বাংলার কোনো তথ্য পাওয়া যায় কি? মতামত দাও। ৪

ক চন্দ্রদ্বীপের বর্তমান নাম বরিশাল।
খ প্রাচীন বাংলার ইতিহাসে বরেন্দ্র ভ‚মিকে একটি জনপদের মর্যাদা দেয়া হয়। এটি উত্তরবঙ্গের জনপদ। পুন্ড্রবর্ধনের কেন্দ্রস্থল ছিল এই বরেন্দ্র। একথা নিঃসন্দেহে বলা যায় যে, গঙ্গা ও করতোয়া অঞ্চলের মধ্যবর্তী স্থানে ছিল এ জনপদের অবস্থান। বর্তমান বগুড়া, দিনাজপুর ও রাজশাহী জেলার অনেকটা অঞ্চল এবং সম্ভবত পাবনা জেলা জুড়ে বরেন্দ্র অঞ্চল বিস্তৃত ছিল।
গ উদ্দীপকে আকরামুজ্জামান প্রাচীন গৌড় জনপদ সম্পর্কে জানতে পারে। গৌড় নামটি সুপরিচিত হলেও প্রাচীনকালে গৌড় বলতে ঠিক কোন অঞ্চলকে বুঝাত এ নিয়ে অনেক মতভেদ আছে। আর যে এলাকা গৌড় বলে অভিহিত হতো তার সঠিক কারণ আজ পর্যন্ত জানা যায়নি। পাণিনির গ্রন্থে সর্বপ্রথম গৌড়ের উল্লেখ দেখা যায়। কৌটিল্যের ‘অর্থশাস্ত্র’ গ্রন্থে গৌড় দেশের অনেক শিল্প ও কৃষিজাত দ্রব্যের উল্লেখ পাওয়া যায়। আর হর্ষবর্ধনের শিলালিপি থেকে প্রমাণিত হয় যে, সমুদ্র উপক‚ল হতে গৌড়দেশ খুব বেশি দূরে অবস্থিত ছিল না।
ঘ উদ্দীপকের জনপদ অর্থাৎ প্রাচীন গৌড় জনপদ থেকে প্রাচীন বাংলা সম্পর্কে অনেকগুলো তথ্য পাওয়া যায়। প্রাচীন গৌড় জনপদে অনেক শিল্প ও কৃষিজাত দ্রব্য উৎপন্ন হতো। এখানকার কৃষিজাত দ্রব্যগুলোর মধ্যে ছিল ধান, পাট, তামাক, আখ, যব, তিল, সরিষা ইত্যাদি। আর ফলের মধ্যে ছিল আম, কাঁঠাল, কলা, লেবু ইত্যাদি। এছাড়াও প্রাচীন এ জনপদে কুটির শিল্পের ব্যাপক বিকাশ সাধিত হয়। এখানকার কুটির শিল্গগুলোর মধ্যে দা, হাতুড়ি, কুড়াল, চিনি, লবণ ইত্যাদি প্রসিদ্ধ ছিল। এখানে প্রচুর সুতিবস্ত্র ও মোটা কাপড় এবং রেশমি কাপড় পাওয়া যেত। প্রাচীন গৌড় জনপদের শিল্প ও কৃষি ব্যবস্থার উন্নতির ফলে জনগণের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জিত হয়েছিল। সপ্তম শতকে গৌড়রাজ শশাংকের রাজধানী ছিল মুর্শিদাবাদের নিকটবর্তী কর্ণসুবর্ণে। পাল রাজাদের সময় গৌড়ের নাম-ডাক ছিল সবচেয়ে বেশি। উত্তর ভারতের বিস্তীর্ণ অঞ্চল তখন গৌড়ের অন্তর্ভুক্ত ছিল। বর্তমান মালদহ, মুর্শিদাবাদ, বীরভ‚ম ও বর্ধমানের কিছু অংশ গৌড়ের সীমা বলে মনে করা হয়। মুসলমান যুগের শুরুতে মালদহ জেলার ল²ণাবতী গৌড় নামে অভিহিত হতো।

প্রশ্ন- ৭  বঙ্গ জনপদ

ঢাকার এ. কে হাইস্কুলের ছাত্র রিসাদ ও সিফাত ইতিহাস ক্লাসে প্রাচীন বঙ্গ জনপদের কথা জানতে পারে। তারা প্রাচীন এই জনপদ বাংলাদেশের যে জেলায় অবস্থিত ছিল সেসব অঞ্চল ঘুরে দেখার সিদ্ধান্ত নেয়। এসব জেলা ভ্রমণ শেষে তারা জানতে পারে যে, প্রাচীনকালে প্রাপ্ত বিভিন্ন ঐতিহাসিক উপাদান হতে এই জনপদ আবিষ্কৃত হয়।
ক. কোন রাজাদের আমলে গৌড়ের নাম-ডাক সবচেয়ে বেশি ছিল? ১
খ. প্রাচীন বাংলার জনপদের রাজনৈতিক ভ‚মিকা ব্যাখ্যা কর। ২
গ. উদ্দীপক অনুযায়ী রিসাদ ও সিফাত বাংলাদেশের কোন কোন জেলায় ঘুরতে যায়? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. উদ্দীপকের জনপদের নাম জানার ক্ষেত্রে ইতিহাসের কোন কোন উপাদানের অবদান আছে? মতামত দাও। ৪

ক পাল রাজাদের আমলে গৌড়ের নাম-ডাক সবচেয়ে বেশি ছিল।
খ প্রাচীন বাংলার জনপদ হতে আমরা তখনকার বাংলার ভৌগোলিক অবয়ব, সীমারেখা, রাজনৈতিক বৈশিষ্ট্য ইত্যাদি সম্পর্কে মোটামুটি ধারণা লাভ করতে পারি। প্রাচীন বাংলায় তখন কোনো রাজনৈতিক ঐক্য ছিল না। শক্তিশালী শাসকগণ তাদের আধিপত্য বিস্তারের মাধ্যমে একাধিক জনপদের শাসন ক্ষমতা লাভ করতেন। এভাবে জনপদগুলো প্রাচীন বাংলায় প্রথম ভ‚খণ্ড ইউনিট বা প্রশাসনিক ইউনিট হিসেবে ভ‚মিকা পালন করে পরবর্তীতে রাজনৈতিক ঐক্য গঠনে সহায়তা করেছিল।
গ উদ্দীপক অনুযায়ী রিসাদ ও সিফাত বাংলাদেশের বৃহত্তর বগুড়া, পাবনা, ঢাকা, ফরিদপুর, বৃহত্তর কুমিল্লা, পাবনা, বরিশাল, ময়মনসিংহ, কুষ্টিয়া ও নোয়াখালীর কিছু অংশ ও পটুয়াখালী জেলায় ঘুরতে যায়। একাদশ শতকে পাল বংশের শেষ পর্যায়ে বঙ্গ জনপদ দুভাগে বিভক্ত হয়ে উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণবঙ্গ নামে পরিচিত হয়। পদ্মা ছিল উত্তরাঞ্চলের উত্তর সীমা, দক্ষিণের বদ্বীপ অঞ্চল ছিল দক্ষিণবঙ্গ। পরবর্তীকালে কেশব সেন ও বিশ্বরূপ সেনের আমলে বঙ্গ বিক্রমপুর, ও নাব্য দুটি ভাগে বিভক্ত ছিল। বর্তমানকালের বিক্রমপুর পরগনা ও ইদিলপুর পরগনার কিছু অংশ নিয়ে ছিল বিক্রমপুর। আর ফরিদপুর, পটুয়াখালী, বরিশাল ইত্যাদি অঞ্চল নিয়ে গঠিত ছিল নাব্য অঞ্চল। তবে বৃহত্তর বগুড়া, পাবনা, বৃহত্তর কুমিল্লা, কুষ্টিয়া, ময়মনসিংহ জেলার পশ্চিমাঞ্চল ও নোয়াখালী জেলার কিছু অংশও বঙ্গের অন্তর্ভুক্ত ছিল।
ঘ উদ্দীপকের জনপদ অর্থাৎ বঙ্গ জনপদের নাম জানার ক্ষেত্রে প্রাচীন পুঁথি, সাহিত্য গ্রন্থ, শিলালিপি, পৌরাণিক সাহিত্য ইত্যাদি ইতিহাসের উপাদানের অবদান আছে।
রামায়ণের অযোদ্ধার সঙ্গে মৈত্রীসূত্রে আবদ্ধ বলে বঙ্গদের উল্লেখ আছে। এছাড়াও কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্রে বঙ্গের শ্বেত-স্নিগ্ধ বস্ত্রের উল্লেখ আছে। আর মহাভারতের ‘দিগি¦জয়’ অংশে ভীমের ‘পুন্ড্র’ থেকে বঙ্গদের আক্রমণের কথা রয়েছে। তাছাড়াও মহাকবি কালিদাসের ‘রঘুবংশ’ কাব্যে বঙ্গের অবস্থান সম্পর্কে কিছু তথ্য পাওয়া যায়। এ গ্রন্থে রঘু সুবাদের পরাজিত করে বঙ্গদের উৎখাত এবং গঙ্গাস্রোতে হন্তরেষু অঞ্চলে জয়স্তম্ভ স্থাপন করেন। একই শ্লোকে বঙ্গদের ‘নৌসাধনোধ্যতান’ বলে আখ্যা দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও সম্রাট ‘চন্দ্রগুপ্ত’ বিক্রমাদিত্য, চালুক্য রাজা ও রাষ্ট্রকুটদের শিলালিপিতে ‘বঙ্গ’ নামের উল্লেখ রয়েছে। আবার সেন রাজা বিশ্বরূপ সেনের সাহিত্য পরিষদ লিপিতে বঙ্গের নাব্যভাগের উল্লেখ পাওয়া যায়।

প্রশ্ন- ৮  জনপদ

আবুল হোসেনের বাড়ি রাজশাহী জেলায়। সে তার এলাকার অতীত ইতিহাস ও ঐতিহ্য সম্পর্কে পড়তে ভালোবাসে। আবুল হোসেনের বন্ধুর বাড়ি সিলেটে। সেও নিজ এলাকার ইতিহাস সম্পর্কে সচেতন।
ক. সমতটের রাজধানী কোথায় ছিল? ১
খ. তাম্রলিপ্ত জনপদ বিখ্যাত ছিল কেন? ২
গ. আবুল হোসেনের বাড়ি প্রাচীন বাংলার কোন জনপদের অন্তর্ভুক্ত? এ সম্পর্কে আলোচনা কর। ৩
ঘ. আবুল হোসেনের বন্ধুর বাড়ির সাথে সম্পর্কিত প্রাচীন বাংলার জনপদটির অবস্থান বিশ্লেষণ কর। ৪

ক সমতটের রাজধানী ছিল বড় কামতা।
খ তাম্রলিপ্ত জনপদটি ইতিহাসে বিখ্যাত ছিল। এটি হরিকেলের উত্তরে অবস্থিত। বর্তমান মেদিনীপুর জেলায় এর অবস্থান ছিল। এ অঞ্চল ছিল সমুদ্রের নিকটবর্তী, নিচু ও আর্দ্র এলাকা। এটি বিখ্যাত নৌবাণিজ্য কেন্দ্র ছিল। নৌ চলাচলের উত্তম স্থান ছিল। এ জনপদে ব্যবসা-বাণিজ্য সম্পাদিত হতো। নৌবাণিজ্য কেন্দ্র ও সমৃদ্ধির জন্য এ অঞ্চল বিখ্যাত ছিল।
গ উদ্দীপকে আবুল হোসেনের বাড়ি রাজশাহী জেলায়। যা বাংলাদেশের উত্তর অঞ্চলের জনপদ। রাজশাহী অঞ্চল পুন্ড্রবর্ধন জনপদের গুরুত্বপূর্ণ এলাকা ছিল। জনপদের প্রধান শহর, মৌর্য ও গুপ্ত আমলে প্রাদেশিক শাসনকর্তার কেন্দ্র পুন্ড্রনগরের অবস্থানও ছিল এই বরেন্দ্র এলাকায়। তাই একে জনপদ বলা যায় না। কিন্তু এ নামে এক সময় সমগ্র এলাকা পরিচিত হতো। তাই প্রাচীন বাংলার ইতিহাসে একে জনপদের মর্যাদা দেয়া হয়। একথা নিঃসন্দেহে বলা যায় যে, গঙ্গা ও করতোয়া নদীর মধ্যবর্তী অঞ্চলে ছিল এ জনপদের অবস্থান। বগুড়া, দিনাজপুর ও রাজশাহী জেলার অনেকটা অঞ্চল এবং সম্ভবত পাবনা জেলাজুড়ে বরেন্দ্র অঞ্চল বিস্তৃত ছিল। সুতরাং আবুল হোসেনের বাড়ি প্রাচীন বাংলার বরেন্দ্র জনপদের অন্তর্ভুক্ত।
ঘ আবুল হোসেনের বন্ধুর বাড়ি সিলেট যা প্রাচীন বাংলায় হরিকেল জনপদের অন্তর্ভুক্ত ছিল। সাত শতকের লেখকেরা হরিকেল নামে অপর এক জনপদের বর্ণনা করেছেন। চীনা ভ্রমণকারী ইৎসিং বলেছেন, হরিকেল ছিল পূর্ব ভারতের শেষ সীমায়। আবার কারো কারো লিপিতে হরিকেলের যে পরিচয় পাওয়া যায় তাতে বর্তমান চট্টগ্রামেরও অংশ খুঁজে পাওয়া যায়। সমস্ত তথ্য পর্যালোচনা করে ধরে নেওয়া যায় যে, আগে শ্রীহট্ট (সিলেট) থেকে চট্টগ্রামের অংশবিশেষ পর্যন্ত হরিকেল জনপদ বিস্তৃত ছিল। যদিও মধ্যখানে সমতট রাজ্যের অবস্থিতি ছিলÑ যা কিছুটা বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে পারে। আসলে তখন জনপদের কোথাও কোথাও বেশ শিথিল অবস্থা বিরাজ করছিল। তাছাড়া বঙ্গ, সমতট ও হরিকেলÑ তিনটি পৃথক জনপদ হলেও এরা খুব নিকট প্রতিবেশী হওয়ায় কখনো কখনো কোনো কোনো এলাকায় অন্য জনপদের প্রভাব বিরাজ করত বলে ধারণা করা হয়। প্রকৃতপক্ষে, সপ্তম ও অষ্টম শতক হতে দশ ও এগারো শতক পর্যন্ত হরিকেল একটি স্বতন্ত্র রাজ্য ছিল। কিন্তু পূর্ব-বাংলার চন্দ্র রাজবংশের রাজা ত্রৈলোক্যচন্দ্রের চন্দ্রদ্বীপ অধিকারের পর হতে হরিকেলকে মোটামুটি বঙ্গের অংশ বলে ধরা হয়। অনেকে আবার শুধু সিলেটের সাথে হরিকেলকে অভিন্ন বলে মনে করেন। উপরের আলোচনা থেকে স্পষ্ট হয় যে, সঠিক অবস্থান নিয়ে বিভ্রান্তি থাকা সত্তে¡ও আবুল হোসেনের বন্ধুর বাড়ি সিলেট তথা শ্রীহট্টে নিশ্চিতভাবেই হরিকেল জনপদের অবস্থান ছিল।

প্রশ্ন- ৯  পুণ্ড্র জনপদ

চীন থেকে আগত একটি পর্যটক দল বাংলাদেশে এসে প্রাচীন বাংলার একটি গুরুত্বপূর্ণ জনপদ দেখার জন্য বগুড়া, দিনাজপুর ও রাজশাহী জেলা ঘুরে দেখে। এ সময় পর্যটক দল উক্ত জনপদ সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করে।
ক. মুসলমান যুগের শুরুতে মালদহ জেলার ল²ণাবতী কী নামে অভিহিত হতো? ১
খ. প্রাচীন বাংলায় কী কী জনপদ ছিল? ২
গ. চীনা পর্যটক দল কোন প্রাচীন জনপদ পরিদর্শনে গিয়েছিল? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. উদ্দীপকের পর্যটক দল কী কী তথ্য সংগ্রহ করেছিল বলে তুমি মনে কর? পাঠ্যবইয়ের আলোকে বিশ্লেষণ কর। ৪

ক মুসলমান যুগের শুরুতে মালদহ জেলার ল²ণাবতী গৌড় নামে অভিহিত হতো।
খ চতুর্থ শতক হতে গুপ্ত যুগ, গুপ্ত পরবর্তী যুগ, পাল, সেন প্রভৃতি আমলের উৎকীর্ণ শিলালিপি ও সাহিত্য গ্রন্থে প্রাচীন জনপদগুলোর নাম পাওয়া যায়। সেগুলো হলো-বঙ্গ, গৌড়, পুন্ড্র, হরিকেল, সমতট, বরেন্দ্র, তাম্রলিপ্ত, চন্দ্রদ্বীপ ইত্যাদি।
গ উদ্দীপকে চীনা পর্যটক দল প্রাচীন পুন্ড্র জনপদ পরিদর্শনে গিয়েছিল।
প্রাচীন বাংলার জনপদগুলোর মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ হলো পুন্ড্র জনপদ। বলা হয়ে থাকে যে, পুন্ড্র নামে একটি জাতি এ জনপদ গড়ে তুলেছিল। বৈদিক ও মহাভারতে এ জাতির নাম উল্লেখ আছে। পুন্ড্রদের রাজ্যের রাজধানীর নাম পুন্ড্রনগর এবং পরবর্তীকালে এর নাম হয় মহাস্থানগড়। সম্ভবত মৌর্য সম্রাট অশোকের রাজত্বকালে প্রাচীন পুন্ড্র রাজ্য স্বাধীনসত্তা হারায় এবং সমৃদ্ধি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা পুন্ড্রবর্ধনে রূপান্তরিত হয়। সে সময়কার পুন্ড্রবর্ধন অন্তত বগুড়া, দিনাজপুর ও রাজশাহী জেলাজুড়ে বিস্তৃত ছিল। রাজমহল-গঙ্গা-ভাগীরথী হতে আরম্ভ করে করতোয়া পর্যন্ত মোটামুটি সমস্ত উত্তর বঙ্গই বোধ হয় সে সময় পুন্ড্রবর্ধনের অন্তর্ভুক্ত ছিল।
ঘ উদ্দীপকের পর্যটক দল প্রাচীন পুন্ড্রনগরের ধ্বংসাবশেষ থেকে এ জনপদ সম্পর্কে বিভিন্ন নিদর্শন সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করেছিল। বগুড়া জেলা থেকে সাত মাইল দূরে মহাস্থানগড় প্রাচীন পুন্ড্রনগরের ধ্বংসাবশেষ বলে পণ্ডিতরা মনে করেন। এখানকার প্রাচীন নিদর্শনগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো বৈরাগীর ভিটা ও গোবিন্দ ভিটা। আরও রয়েছে খোদাই পাথর ভিটা-রাজা পরশুরামের রাজপ্রাসাদের ধ্বংসাবশেষ, শীলাদেবীর ঘাট ও লক্ষীন্দরের মেধ ইত্যাদি। আর পুন্ড্রনগরের প্রতœতাত্তি¡ক ধ্বংসাবশেষের মধ্যে আরেকটি হলো রাজশাহী জেলার পাহাড়পুর। এটি বাংলাদেশের বৌদ্ধ ও হিন্দু সংস্কৃতির এক আকর্ষণীয় নিদর্শন। এখানকার অন্যতম কীর্তি হলো ৮ম শতকে পাল রাজা ধর্মপাল কর্তৃক নির্মিত সোমপুর বিহার। এই বিহারটি উত্তর-দক্ষিণে প্রায় ৯৩৩ ফুট এবং পূর্ব-পশ্চিমে প্রায় ৯১৯ ফুট। এটি উপমহাদেশের সবচেয়ে বড় বৌদ্ধ বিহার। এখানকার অন্য নিদর্শনগুলো হলো সত্যপীরের ভিটা, গন্ধেশ্বরীর মন্দির ইত্যাদি।
 অনুশীলনের জন্য সৃজনশীল প্রশ্নব্যাংক (উত্তরসংকেতসহ)
প্রশ্ন- ১০  প্রাচীন বাংলার জনপদ

হাবিবুর রহমান প্রাচীন বাংলার ইতিহাস পড়তে গিয়ে জানে বাংলার গৌড়, বঙ্গ, পুন্ড্র, হরিকেল, বরেন্দ্র এ রকম প্রায় ষোলোটি জনপদের কথা। সে বিস্মিত হয় এসব জনপদের সীমানা কখনো বেড়েছে, কখনো কমেছে। প্রত্যেকটি জনপদের আলাদা আলাদা রাজধানীও ছিল।
ক. পুন্ড্র অর্থ কী? ১
খ. প্রাচীন জনপদ সমতট সম্পর্কে ধারণা দাও। ২
গ. হাবিবুর রহমানের জানতে পারা রাজধানী সম্পর্কিত মন্তব্যটি ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. হাবিবুর রহমানের বিস্ময়ের কারণ বিশ্লেষণ কর। ৪

ক পুন্ড্র একটি জাতির নাম।
খ পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব বাংলায় বঙ্গের প্রতিবেশী জনপদ হিসেবে সমতটের অবস্থান ছিল। এ অঞ্চলটি ছিল আর্দ্র নিম্নভ‚মি। কেউ কেউ মনে করেন, সমতট বর্তমান কুমিল্লার প্রাচীন নাম। আবার অনেকে মনে করেন কুমিল্লা ও নোয়াখালী অঞ্চল নিয়ে সমতট গঠিত হয়েছিল। সাত শতক থেকে বারো শতক পর্যন্ত বর্তমান ত্রিপুরা জেলা ছিল সমতটের অন্যতম অংশ। একসময় এ জনপদের পশ্চিম সীমা চব্বিশ পরগনার খাড়ি পরগনা পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। কুমিল্লা শহরের ১২ মাইল পশ্চিমে বড় কামতা নামক স্থানটি সাত শতকে এর রাজধানী ছিল।
ঢ-পষঁংরাব লিংক : প্রয়োগ (গ) ও উচ্চতর দক্ষতার (ঘ) প্রশ্নের উত্তরের জন্য অনুরূপ যে প্রশ্নের উত্তর জানা থাকতে হবে
গ বাংলার প্রাচীন জনপদ সম্পর্কে আলোচনা কর।
ঘ বাংলার প্রাচীন জনপদের বৈচিত্র্যগুলো আলোচনা কর।

 জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর 
প্রশ্ন \ ১ \ গৌড় অন্যান্য জনপদ থেকে আলাদা’Ñ উক্তিটি কার?
উত্তর : ‘গৌড় অন্যান্য জনপদ থেকে আলাদা’- উক্তিটি করেছেন বরাহ মিহির।
প্রশ্ন \ ২ \ কর্ণসুবর্ণ কোথায় অবস্থিত?
উত্তর : কর্ণসুবর্ণ মুর্শিদাবাদ জেলায় অবস্থিত।
প্রশ্ন \ ৩ \ কোন রাজাদের আমলে গৌড়ের বেশ পরিচিতি ছিল?
উত্তর : পাল রাজাদের আমলে গৌড়ের বেশ পরিচিতি ছিল।
প্রশ্ন \ ৪ \ কোন যুগের শুরুতে মালদহ জেলার ল²ণাবতী গৌড় নামে অভিহিত হতো?
উত্তর : মুসলমান যুগের শুরুতে মালদহ জেলার ল²ণাবতী গৌড় নামে অভিহিত হতো।
প্রশ্ন \ ৫ \ বঙ্গ হচ্ছে পুন্ড্র, তাম্রলিপ্ত ও সুহ্মের সংলগ্ন দেশ-এটা কোন উৎস হতে জানা যায়?
উত্তর : বঙ্গ হচ্ছে পুন্ড্র, তাম্রলিপ্ত ও সুহ্মের সংলগ্ন দেশ- এটা মহাভারত থেকে জানা যায়।
প্রশ্ন \ ৬ \ কোন নদীর মাঝের অঞ্চলকে বঙ্গ বলা হতো?
উত্তর : গঙ্গা ও ভাগীরথীর মাঝের অঞ্চলকে বঙ্গ বলা হতো।
প্রশ্ন \ ৭ \ কোন বংশের আমলে বঙ্গের আয়তন ছোট হয়ে আসে?
উত্তর : পাল ও সেন বংশের আমলে বঙ্গের আয়তন ছোট হয়ে আসে।
প্রশ্ন \ ৮ \ পাল বংশের শেষ পর্যায়ে বঙ্গ জনপদকে কয়ভাগে ভাগ করা হয়?
উত্তর : পাল বংশের শেষ পর্যায়ে বঙ্গ জনপদকে ২ ভাগে ভাগ করা হয়।
প্রশ্ন \ ৯ \ পুন্ড্র কীসের নাম?
উত্তর : পুন্ড্র একটি জাতির নাম।
প্রশ্ন \ ১০ \ পুন্ড্রদের রাজ্যের রাজধানীর নাম কী?
উত্তর : পুন্ড্রদের রাজ্যের রাজধানীর নাম হচ্ছে পুন্ড্রনগর।
প্রশ্ন \ ১১ \ বর্তমানে কোন স্থানটিকে পুন্ড্রনগর বলা হয়?
উত্তর : বর্তমানে বগুড়া জেলার মহাস্থানগড়কে পুন্ড্রনগর বলা হয়।
প্রশ্ন \ ১২ \ ‘হরিকেল ছিল পূর্ব ভারতের শেষ সীমায়’Ñ উক্তিটি কার?
উত্তর : ‘হরিকেল ছিল পূর্ব ভারতের শেষ সীমায়’- উক্তিটি করেছিলেন চীনা ভ্রমণকারী ইৎসিং।
প্রশ্ন \ ১৩ \ সিলেটের আগের নাম কী ছিল?
উত্তর : সিলেটের আগের নাম ছিল শ্রীহট্ট।
প্রশ্ন \ ১৪ \ শালবন বিহার কোথায় অবস্থিত?
উত্তর : শালবন বিহার কুমিল­া জেলায় অবস্থিত।

 অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর 
প্রশ্ন \ ১ \ ‘প্রাচীনকালে গৌড় ছিল একটি স্বাধীন রাজ্য’Ñ ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : প্রাচীনকালে গৌড় একটি স্বাধীন রাজ্য ছিল বলে জানা যায়। ষষ্ঠ শতকে লেখা বরাহ মিহিরের বিবরণ হতে দেখা যায় যে, গৌড় অন্যান্য জনপদ যেমন : পুন্ড্র, বঙ্গ, সমতট ইত্যাদি থেকে আলাদা একটি জনপদ। সপ্তম শতকে পূর্ব বাংলার উত্তর অংশে গৌড়ের অবস্থান ছিল বলে জানা যায়। সপ্তম শতকে শশাংককে গৌড়রাজ বলা হতো। এসব বিবরণ থেকে প্রমাণিত হয় যে, প্রাচীনকালে গৌড় একটি স্বাধীন রাজ্য ছিল।
প্রশ্ন \ ২ \ তাম্রলিপ্ত জনপদ সম্পর্কে কী জান? বর্ণনা কর।
উত্তর : হরিকেলের উত্তরে অবস্থিত ছিল তাম্রলিপ্ত জনপদ। বর্তমান মেদিনীপুর জেলার তমলুকই ছিল তাম্রলিপ্তের প্রাণকেন্দ্র। সমুদ্র উপক‚লবর্তী এ এলাকা ছিল খুব নিচু ও আর্দ্র। নৌ চলাচলের জন্য জায়গাটি ছিল খুব উত্তম। প্রাচীনকালে তাম্রলিপ্ত গুরুত্বপূর্ণ নৌবাণিজ্যের কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত ছিল। হুগলী ও রূপনারায়ণ নদের সঙ্গমস্থল হতে ১২ মাইল দূরে রূপনারায়ণের তীরে এ বন্দরটি অবস্থিত ছিল। সাত শতক হতে ইহা দণ্ডভুক্তি নামে পরিচিত হতে থাকে। আট শতকের পর হতেই তাম্রলিপ্ত বন্দরের সমৃদ্ধি নষ্ট হয়ে যায়।
প্রশ্ন \ ৩ \ প্রাচীন বাংলার জনপদগুলো থেকে আমরা কী জানতে পারি?
উত্তর : প্রাচীন বাংলার জনপদ হতে আমরা তখনকার বাংলার ভৌগোলিক অবয়ব, সীমারেখা, রাজনৈতিক বৈশিষ্ট্য ইত্যাদি সম্পর্কে মোটামুটি ধারণা লাভ করতে পারি। প্রাচীন বাংলায় তখন কোনো রাজনৈতিক ঐক্য ছিল না। শক্তিশালী শাসকগণ তাদের আধিপত্য বিস্তারের মাধ্যমে একাধিক জনপদের শাসন ক্ষমতা লাভ করতেন। এভাবে জনপদগুলো প্রাচীন বাংলায় প্রথম ভ‚খণ্ডগত ইউনিট বা প্রশাসনিক ইউনিট হিসেবে ভূমিকা পালন করে পরবর্তীতে রাজনৈতিক ঐক্য গঠনে সহায়তা করেছিল।
প্রশ্ন \ ৪ \ প্রাচীন জনপদ হরিকেল সম্পর্কে ধারণা দাও।
উত্তর : চীনা ভ্রমণকারী ইৎসিং-এর মতে, হরিকেল ছিল পূর্ব ভারতের শেষ সীমায়। প্রকৃতপক্ষে, সাত শতক ও আট শতক হতে দশ ও এগারো শতক পর্যন্ত হরিকেল একটি স্বতন্ত্র রাজ্য ছিল। কিন্তু পূর্ব বাংলার চন্দ্র রাজবংশের রাজা ত্রৈলোক্যচন্দ্রের চন্দ্রদ্বীপ অধিকারের পর হতে হরিকেল মোটামুটি বঙ্গের অংশ বলে ধরা হয়। কোনো কোনো পুঁথিতে দেখা যায়, এক সময় হরিকেল ছিল বর্তমান সিলেট পর্যন্ত বিস্তৃত।
প্রশ্ন \ ৫ \ প্রাচীন জনপদ সমতট সম্পর্কে ধারণা দাও।
উত্তর : পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব বাংলায় বঙ্গের প্রতিবেশী জনপদ হিসেবে সমতটের অবস্থান ছিল। এ অঞ্চলটি ছিল আর্দ্র নিম্নভ‚মি। কেউ কেউ মনে করেন, সমতট বর্তমান কুমিল্লার প্রাচীন নাম। আবার অনেকে মনে করেন, কুমিল্লা ও নোয়াখালী অঞ্চল নিয়ে সমতট গঠিত হয়েছিল। সাত শতক থেকে বার শতক পর্যন্ত বর্তমান ত্রিপুরা জেলা ছিল সমতটের অন্যতম অংশ। এক সময় এ জনপদের পশ্চিম সীমা চব্বিশ পরগনার খাড়ি পরগনা পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। কুমিল্লা শহরের ১২ মাইল পশ্চিমে বড় কামতা নামক স্থানটি সাত শতকে এর রাজধানী ছিল।

প্রশ্ন \ ৬ \ বরেন্দ্র ভ‚মিকে জনপদের মর্যাদা দেওয়া হয় কেন?
উত্তর : প্রাচীন বাংলায় বরেন্দ্রী, বরেন্দ্র বা বরেন্দ্র ভ‚মি নামে একটি জনপদের কথা জানা যায়। এটি উত্তরবঙ্গের একটি জনপদ। পুন্ড্রবর্ধনের কেন্দ্রস্থল ছিল এই বরেন্দ্র বা বরেন্দ্রী। তাই একে জনপদ বলা যায় না। কিন্তু এ নামে একসময় সমগ্র এলাকা পরিচিত হতো। তাই প্রাচীন বাংলার ইতিহাসে একে জনপদের মর্যাদা দেওয়া হয়।
প্রশ্ন \ ৭ \ তাম্রলিপ্ত বাণিজ্যকেন্দ্রের অবস্থান ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : বর্তমান মেদিনীপুর জেলার তমলুকই ছিল তাম্রলিপ্তের প্রাণকেন্দ্র। সমুদ্র উপক‚লবর্র্তী এ এলাকা ছিল খুব নিচু ও আর্দ্র। নৌ চলাচলের জন্য জায়গাটি ছিল খুব উত্তম। প্রাচীনকালে তাম্রলিপ্ত গুরুত্বপূর্ণ নৌ বাণিজ্যের কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত ছিল। হুগলী ও রূপনারায়ণ নদের সঙ্গমস্থল হতে ১২ মাইল দূরে রূপনারায়ণের ডান তীরে এ বন্দরটি অবস্থিত ছিল। আট শতকের পর হতেই তাম্রলিপ্ত বন্দরের সমৃদ্ধি নষ্ট হয়ে যায়।
প্রশ্ন \ ৮ \ পুন্ড্রনগর ও পুন্ড্রবর্ধনের সম্পর্ক ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : প্রাচীন বাংলার জনপদগুলোর মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ হলো পুন্ড্র। বলা হয় যে, ‘পুন্ড্র’ বলে এক জাতি এ জনপদ গড়ে তুলেছিল। বৈদিক সাহিত্য ও মহাভারতে এ জাতির উলে­খ আছে। পুন্ড্রদের রাজ্যের রাজধানীর নাম পুন্ড্রনগর। পরবর্তীকালে এর নাম হয় মহাস্থানগড়। সম্ভবত মৌর্য সম্রাট অশোকের রাজত্বকালে (খ্রি. পূ. ২৭৩Ñ২৩২ অব্দ) প্রাচীন পুন্ড্র রাজ্য স্বাধীন সত্তা হারায়। সমৃদ্ধি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পঞ্চম-ষষ্ঠ শতকে তা পুন্ড্রবর্ধনে রূপান্তরিত হয়েছে। সে সময়কার পুন্ড্রবর্ধন অন্তত বগুড়া, দিনাজপুর ও রাজশাহী জেলাজুড়ে বিস্তৃত ছিল। রাজমহল-গঙ্গা-ভাগীরথী হতে আরম্ভ করে করতোয়া পর্যন্ত মোটামুটি সমস্ত উত্তর বঙ্গই বোধহয় সে সময় পুন্ড্রবর্ধনের অন্তর্ভুক্ত ছিল।

 

Leave a Reply