নবম-দশম শ্রেণির বাংলাদেশের ইতিহাস অধ্যায় ৭ মধ্যযুগের বাংলার সামাজিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ইতিহাস

সপ্তম অধ্যায়
 মধ্যযুগের বাংলার সামাজিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ইতিহাস

বাংলার রাজক্ষমতা মুসলমানদের অধিকারে আসলে এখানে মধ্যযুগের সূচনা ঘটে। মুসলমানদের আগমনের পূর্বে বাংলায় বাস করত হিন্দু ও বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী মানুষ। একাদশ শতক থেকে বাংলায় ইসলাম ধর্ম প্রচার করার জন্য সুফী সাধকগণ আসতে থাকেন। বাংলার সাধারণ হিন্দু ও বৌদ্ধদের অনেকে এ সময় ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে। এভাবে ধীরে ধীরে বাংলায় একটি মুসলমান সমাজ কাঠামো গড়ে উঠতে থাকে। শিখনফল
 মধ্যযুগে বাংলার আর্থসামাজিক ও সাংস্কৃতিক পরিবর্তনে সুলতান ও মুঘল শাসকগণের অবদান ব্যাখ্যা করতে পারবে।
 মধ্যযুগে বাংলার ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসারে, স্থাপত্য ও চিত্রকলার বিকাশে সুলতান ও মুঘল শাসকগণের অবদান মূল্যায়ন করতে পারবে।
 মধ্যযুগে সুলতানি ও মুঘল শাসনামলে বাংলার ধর্মীয় অবস্থা বর্ণনা করতে পারবে।
 মধ্যযুগে বাংলাভাষা ও সাহিত্যের উদ্ভব ও বিকাশে সুলতান ও মুঘল শাসকগণের অবদান চিহ্নিত করতে পারবে।
 মধ্যযুগে বাংলায় মুসলমানদের আগমণের ফলে বাঙালি জীবনপ্রণালি ও চিন্তাধারার ইতিবাচক পরিবর্তনসমূহ ব্যাখ্যা করতে পারবে।
 সুলতানি ও মুঘল আমলের অবদান ও স্থাপত্য নিদর্শনের ঐতিহাসিক গুরুত্ব বিশ্লেষণ করতে পারবে।
অধ্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো সংক্ষেপে জেনে রাখি

মধ্যযুগে বাংলার সামাজিক ও সাংস্কৃতিক জীবন : মধ্যযুগে বাংলার সমাজ ব্যবস্থায় হিন্দু ও মুসলমান এ দুটো ধর্মের প্রভাব বিদ্যমান ছিল। বস্তুত এ দুটো ধর্মকে কেন্দ্র করেই মধ্যযুগে বাংলার সামাজিক রীতি-নীতি গড়ে উঠেছিল-
মুসলমান সমাজ : মধ্যযুগে বাংলায় মুসলমান শাসনকালে রাষ্ট্রের সর্বময় কর্তা হিসেবে শাসক ছিলেন সমাজজীবনে সর্বোচ্চ মর্যাদার অধিকারী। হিন্দুরাও শাসকের এ অপ্রতিদ্ব›দ্বী সামাজিক মর্যাদা ও প্রাধান্য মেনে নিয়েছিল। মুসলমান সমাজ ব্যবস্থায় তখন উচ্চ, মধ্যম, ও নিম্ন-এ তিনটি পৃথক শ্রেণির অস্তিত্ব ছিল। সৈয়দ, উলেমা প্রমুখ শ্রেণি সমাজে যথেষ্ট প্রভাবশালী ছিলেন। ধর্মপরায়ণ ও শিক্ষিত ব্যক্তিগণকে জনগণ যথেষ্ট শ্রদ্ধা করত। মুসলমান শাসকগণও তাদেরকে বিশেষ শ্রদ্ধা করতেন। তাদের প্রতি শ্রদ্ধার নিদর্শন হিসেবে ভাতা এবং জমি বরাদ্দ করা হতো।
হিন্দু সমাজ : মধ্যযুগে বাংলার মুসলমানদের প্রভাব, রীতিনীতি ও ভাবধারা হিন্দু সমাজে অনুপ্রবেশ করেছিল। তথাপি হিন্দু সমাজের মূল নীতিগুলো এবং সাধারণের সমাজব্যবস্থায় তেমন কোন পরিবর্তন আসেনি। এ যুগেও হিন্দু সমাজে জাতিভেদ প্রথা প্রচলিত ছিল। বিভিন্ন পেশাকে ভিত্তি করেই এ প্রথার সৃষ্টি। ব্রাহ্মণ, কায়স্থ, বৈশ্য ও শূদ্র-সমাজে এ চারটি উল্লেখযোগ্য বর্ণ ছিল। এ চারটি বর্ণের মধ্যে সামাজিক মেলামেশা ছিল না। বর্ণপ্রথা কঠোরভাবে পালিত হতো। ফলে এক বর্ণের সহিত অন্য বর্ণের বিবাহ বা আদান-প্রদান নিষিদ্ধ ছিল।
মধ্যযুগে বাংলার অর্থনৈতিক অবস্থা ও ব্যবসা-বাণিজ্য : নদীমাতৃক বাংলার ভ‚মি চিরদিনই প্রকৃতির অকৃপণ আশীর্বাদে পরিপুষ্ট। এখানকার কৃষিভ‚মি অস্বাভাবিক উর্বর ছিল। এ কারণে বাংলার অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির মূল উৎস ছিল কৃষি। কৃষি প্রধান দেশ বলে বাংলার অধিবাসীর বৃহত্তর অংশ ছিল কৃষক। বাংলার মাটিতে কৃষিজাত দ্রব্যের প্রাচুর্য ছিল। ফলে উদ্বৃত্ত বিভিন্ন পণ্য বিদেশে রপ্তানি করা হতো। এ ব্যবসায়িক তৎপরতা কালক্রমে শিল্পের ক্ষেত্রেও প্রসারিত হয়। মুসলমান শাসনকালে বঙ্গে বস্ত্র শিল্প, চিনি শিল্প, নৌকা নির্মাণ কারখানা ইত্যাদি গড়ে উঠেছিল।
বাংলার কৃষি ও শিল্প পণ্যের প্রাচুর্য এবং বিদেশে এগুলোর ব্যাপক চাহিদার ফলে বিদেশের সাথে বাংলার বাণিজ্যিক তৎপরতা মুসলমান শাসন আমলে অভ‚তপূর্ব প্রসার লাভ করেছিল।
স্থাপত্য ও চিত্রকলা : মুসলমান শাসকগণ ইসলামের গৌরবকে সুপ্রতিষ্ঠিত করতে এবং নিজেদের রাজ্য জয় ও শাসনকালকে স্মরণীয় করে রাখতে বাংলার বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন সময়ে অনেক প্রাসাদ, মসজিদ, কবর, দরগাহ ইত্যাদি নির্মাণ করেছিলেন। মসজিদ নির্মাণকে মুসলমান শাসকগণ অতিশয় পূণ্যের কাজ বলে বিবেচনা করতেন। সুলতানি আমলের নির্মাণ কার্যের ধ্বংসাবশেষের মধ্যে এখনও অনেক স্মৃতিচিহ্ন রয়েছে।
মধ্যযুগে বাংলার ধর্মীয় অবস্থা : বর্তমানকালের মতো সে যুগেও হিন্দুরা বিভিন্ন ধর্মীয় রীতি-নীতি ও আচার-অনুষ্ঠান পালন করত। আড়ম্বর ও জাঁকজমকের সাথে হিন্দুরা বিভিন্ন দেব-দেবীর পূজা করত। এদের মধ্যে ল²ী, সরস্বতী, গণেশ, শিব, শিবলিঙ্গ, চন্ডী, মনসা, বিষ্ণু, কৃষ্ণ, সূর্য, মদন, নারায়ণ, ব্রহ্ম, অগ্নি, শীতলা, ষষ্ঠী, গঙ্গা ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।
মুসলমানরা বর্তমান সময়ের মতোই মধ্যযুগেও বিভিন্ন ধর্মীয় রীতি-নীতি ও আচার অনুষ্ঠান পালন করত। ঈদ-উল-ফিতর ও ঈদ-উল-আজহা মুসলমান সমাজের প্রধান ধর্মীয় উৎসব হিসেবে পালিত হতো। ধর্মপ্রাণ মুসলমান মাত্রই পবিত্র রমজান মাসে রোজা রাখত। এছাড়াও শব-ই-বরাত ও শব-ই-কদরের রাতে ইবাদত বন্দেগি করত। এ যুগে ধর্মপ্রীতি মুসলমান সমাজের একটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য ছিল। ধর্মপ্রাণ মুসলমানগণ দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তেন। এছাড়া তারা নিয়মিত কুরআন ও হাদিস পাঠ করতেন। সমাজে ধর্মীয় শিক্ষার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হতো।
মধ্যযুগে বাংলা ভাষা ও সাহিত্য : বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের বিকাশ ও উন্নতির জন্য সুলতানি ও মুঘল শাসনকালের অবদান বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এ বিষয়ে প্রথমেই যার নাম উল্লেখ করা প্রয়োজন তিনি হলেন ইলিয়াস শাহী বংশের সুলতান গিয়াসউদ্দিন আযম শাহ (১৩৯৩-১৪১১ খ্রিষ্টাব্দ)।
বাংলা ভাষায় ঐতিহাসিক সাহিত্য রচনার পথ প্রদর্শক হিসেবে মুসলমানদের অবদান অবিস্মরণীয়। ইসলামের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে অনেক মুসলমান কবি এ সময় বিজয় কাব্য রচনা করেছেন।
সুলতানি যুগে হিন্দু কবিরাও সাহিত্য ক্ষেত্রে যথেষ্ট অবদান রেখে গেছেন। এক্ষেত্রে মুসলমান শাসকবর্গের উৎসাহ ও পৃষ্ঠপোষকতা হিন্দুদিগকে বিশেষভাবে অনুপ্রাণিত করেছে। বাংলা সাহিত্যের উন্নতি ও বিকাশ হুসেন শাহের শাসনকালকে ইতিহাসে অমর করে রেখেছে। তার উদার পৃষ্ঠপোষকতা নিঃসন্দেহে বাংলা সাহিত্যের শ্রীবৃদ্ধি সাধন করেছে। এ যুগের বিখ্যাত কবি ও লেখকগণের মধ্যে রূপ গোস্বামী, সনাতন গোস্বামী, মালাধর বসু, বিজয়গুপ্ত, বিপ্রদাস ও যশোরাজ খান উল্লেখযোগ্য ছিলেন।
মধ্যযুগের বাংলায় শিক্ষা ব্যবস্থা : বাংলার মুসলমান শাসন কেবল রাজনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রেই নয়, শিক্ষার ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছিল। মুসলমান শাসনের পূর্বে বাংলার হিন্দু সমাজে জ্ঞান-বিজ্ঞান ও শিক্ষার ক্ষেত্রে ব্রাহ্মণদের একচেটিয়া অধিকার ছিল। মুসলমানদের শাসন-ব্যবস্থায় মুসলমানদের পাশাপাশি হিন্দু সমাজের সকল শ্রেণির জন্য শিক্ষার দ্বার উন্মুক্ত হয়।

 বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর 
১. কোন কাব্য ফার্সী রচনার অনুবাদ?
ক রসুল বিজয় খ রাগমালা
 ইউসুফ জোলেখা ঘ সাতনামা
২. কেন মধ্যযুগে হিন্দু স¤প্রদায় ফার্সী ভাষায় শিক্ষা গ্রহণ করতেন?
ক সাহিত্য রচনা করতে  চাকরি পেতে
গ প্রশাসনিক কাজ করতে ঘ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে
নিচের অনুচ্ছেদটি পড় এবং ৩ ও ৪ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
লিমনের চাচা অনেক বছর ধরে আমেরিকাসহ ইউরোপের কয়েকটি দেশে ব্যবসা করে আসছিলেন। তিনি তার ব্যবসা প্রসারের লক্ষ্যে নিজ দেশে ফিরে নারায়ণগঞ্জে একটি শাখা অফিস খোলেন। তিনি ব্যাংকের মাধ্যমে ব্যবসায়িক লেনদেন পরিচালনা করেন। ব্যবসার সুবিধার জন্য তিনি ব্যক্তিগত বিমান ব্যবহার করেন।
৩. লিমনের চাচার বাণিজ্যিক প্রসার বাংলার কোন আমলের সঙ্গে মিল পাওয়া যায়?
ক পাল খ সেন গ সুলতানি  মুঘল
৪. বাণিজ্যিক প্রসারের ফলেই উক্ত আমলে গড়ে উঠেছিল-
র. সমুদ্রবন্দর
রর. নদীবন্দর
ররর. স্থলবন্দর
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র খ রর  র ও রর ঘ র, রর ও ররর

 সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর 
প্রশ্ন- ১  মধ্যযুগের বাংলার অর্থনৈতিক অবস্থা

রেজা সাহেব চট্টগ্রামের একজন বড় ব্যবসায়ী। তাঁর আমদানি রপ্তানির ব্যবসা। তিনি জাহাজের মাধ্যমেই বিদেশ থেকে সোনা, রুপা, দামি পাথরের গয়না, রেশমি সুতা, বিভিন্ন দামি মসলা আমদানি করেন। পাশাপাশি তিনি চা ও পাটজাত দ্রব্য রপ্তানি করেন। গত সপ্তাহে তিনি তার মেয়ের জন্মদিনে পোলাও, কাবাব, রেজালা ও মিষ্টির আয়োজন করেন। সবাই খাবার খেয়ে খুবই খুশি।
ক. মহাভারত বাংলায় অনুবাদ করেন কে?
খ. কৃষিকে বাংলার অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির মূল উৎস বলা হয় কেন?
গ. রেজা সাহেবের বাড়ির খাওয়া-দাওয়ার সঙ্গে কোন আমলের মিল রয়েছে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. রেজা সাহেবের অর্থনৈতিক অবস্থা উক্ত আমলের চেয়ে কি সমৃদ্ধ ছিল বলে তুমি মনে কর? যুক্তি দাও।

ক কবি পরমেশ্বর মহাভারত বাংলায় অনুবাদ করেন।
খ কৃষি প্রধান দেশ বলে বাংলার অধিবাসীর বৃহত্তম অংশ ছিল কৃষক। বাংলার মাটিতে কৃষিজাত দ্রব্যের প্রাচুর্য ছিল। ফলে উদ্বৃত্ত বিভিন্ন পণ্য বিদেশে রপ্তানি করা হতো। এ ব্যবসায়িক তৎপরতা কালক্রমে শিল্পের ক্ষেত্রেও প্রসারিত হয়। তাই বলা যায়, বাংলার অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির মূল উৎস ছিল কৃষি।
গ রেজা সাহেবের বাড়ির খাওয়া-দাওয়ার সঙ্গে মধ্যযুগের মুসলমান সমাজের মিল রয়েছে। মুঘল আমলে অভিজাত মুসলমানগণ ভোজনবিলাসী ছিলেন। তাদের খাদ্য তালিকায় বিভিন্ন মাছ-মাংসের সঙ্গে আচারের নামও পাওয়া যায়। এসব খাবারের পাশাপাশি কাবাব, রেজালা, কোর্মা আর ঘিয়ে রান্না করা যাবতীয় মুখরোচক খাবার জায়গা করে নেয়। উদ্দীপকের রেজা সাহেব মেয়ের জন্মদিনে পোলাও, কাবাব, রেজালা ও মিষ্টির আয়োজন করেন। এছাড়া মধ্যযুগে খাদ্য হিসেবে রুটির ব্যবহারের কথাও জানা যায়। খিচুড়ি ও মোগলাই পরোটা তখনকার সমাজে একটি প্রিয় খাদ্য ছিল। পরিশেষে বলা যায় যে, রেজা সাহেবের বাড়ির খাওয়া দাওয়ার সাথে মধ্যযুগের মিল রয়েছে।
ঘ আমি মনে করি, রেজা সাহেবের অর্থনৈতিক অবস্থার চেয়ে মধ্য যুগে বাংলার অর্থনৈতিক অবস্থা সমৃদ্ধ ছিল। কারণ, মধ্যযুগে বাংলার রকমারি ক্ষুদ্র শিল্পের কথা জানা যায়। তখন বাংলার অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির মূল উৎস ছিল কৃষি। বাংলার মাটিতে কৃষিজাত দ্রব্যের প্রাচুর্য ছিল। ফলে উদ্বৃত্ত বিভিন্ন পণ্য বিদেশে রপ্তানি করা হতো। এ ব্যবসায়িক তৎপরতা কালক্রমে শিল্পের ক্ষেত্রেও প্রসারিত হয়। এ যুগেই বস্ত্রশিল্প, চিনিশিল্প, নৌকা নির্মাণ কারখানা ইত্যাদি গড়ে উঠেছিল। বস্ত্রশিল্পে বাংলার অগ্রগতি ছিল সবিশেষ উলে­খযোগ্য। পাটের ও রেশমের তৈরি বস্ত্রেও বঙ্গের কৃতিত্ব ছিল উলে­খযোগ্য। বাংলায় চিনি ও গুড় তৈরি এবং জাহাজ নির্মাণশিল্পের ব্যাপক প্রসার ঘটে। এসময় বাংলায় বেশ কিছু সমুদ্রবন্দর ও নদীবন্দর গড়ে উঠেছিল। ব্যবসা-বাণিজ্যের সিংহভাগই ছিল রপ্তানি। সেযুগের সমৃদ্ধ সমাজের সাথে ব্যক্তি রেজা সাহেব যদিও তুলনীয় নয় তথাপি সে সময়ের রপ্তানিমুখী শিল্প ও কৃষিপণ্যের প্রাচুর্য প্রমাণ করে মধ্যযুগে বাংলার অর্থনৈতিক অবস্থা সমৃদ্ধ ছিল। মধ্যযুগে বাংলায় খুব অল্প পরিমাণ দ্রব্য আমদানি করা হতো। ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটার সঙ্গে সঙ্গে দ্রব্য ও টাকা-পয়সার লেনদেন এবং হিসাব-নিকাশ বৃদ্ধি পায়। তাই ক্রমেই ব্যাংকিং প্রথার বিকাশ ঘটে। এ যুগে হুণ্ডির মাধ্যমে বিদেশে লেনদেন করা হতো। উপরিউক্ত আলোচনা থেকে তাই বলা যায় যে, রেজা সাহেবের অর্থনৈতিক অবস্থার চেয়ে উক্ত আমলের অর্থনৈতিক অবস্থা সমৃদ্ধ ছিল।

প্রশ্ন- ২  মধ্যযুগে বাংলার মুসলিম শিক্ষা

গ্রামের স্কুলশিক্ষক সুধীন রায়ের মেয়ে অনন্যা রায় সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে। তার বান্ধবী রাবেয়া সুলতানাকে তার বাবা আর স্কুলে পাঠাবেন না। তিনি বলেন যে মেয়েদের এর থেকে বেশি পড়া লেখার দরকার নেই। শিক্ষক সুধীন রায় মেয়েদের শিক্ষা সম্পর্কে রাবেয়ার বাবার এই মানসিকতা জেনে বললেন যে বর্তমান সময়ে শিক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম এবং শিক্ষা ছাড়া নারী-পুরুষ যেকোনো মানুষই অসম্পূর্ণ। সব যুগেই শিক্ষার গুরুত্ব ছিল এবং আছে।
ক. হোসেনী দালান কে নির্মাণ করেন?
খ. কেন মধ্যযুগকে মুঘলদের ‘স্বর্ণযুগ’ বলা হয়? বর্ণনা দাও।
গ. রাবেয়ার বাবার শিক্ষাবিষয়ক এই মানসিকতার সঙ্গে মধ্যযুগের মুসলিম শিক্ষার কী মিল রয়েছে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. রাবেয়ার বাবার মতো মানসিকতার কারণেই কি মধ্যযুগে মুসলমান ছেলেমেয়েরা শিক্ষায় এগিয়ে ছিল? পাঠ্যপুস্তকের আলোকে তোমার মতামত দাও।

ক শায়েস্তা খান হোসেনী দালান নির্মাণ করেন।
খ মুঘল আমলে বাংলার শাসকগণ শিল্পকলার ক্ষেত্রে এক বিস্ময়কর অবদান রেখে গেছেন। আজও বাংলার বহু স্থানে মুঘল শাসকগণের শিল্পপ্রীতির নিদর্শন বিদ্যমান রয়েছে। তাদের পৃষ্ঠপোষকতায় বহুসংখ্যক মসজিদ, সমাধি ভবন, স্মৃতিসৌধ, মাজার, দুর্গ, স্তম্ভ ও তোরণ নির্মিত হয়েছিল। স্থাপত্যশিল্পের বিকাশের জন্য এ যুগকে বাংলায় মুঘলদের ‘স্বর্ণযুগ’ বলা হয়।
গ রাবেয়ার বাবার শিক্ষাবিষয়ক এই মানসিকতার সঙ্গে মধ্যযুগের মুসলিম শিক্ষার মিল রয়েছে। বাংলার মুসলমান শাসন কেবল রাজনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রেই নয়, শিক্ষার ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছিল। বাংলায় মুসলমান শাসনকালে শিক্ষার দ্বার হিন্দু-মুসলমান সকলের জন্য উন্মুক্ত ছিল। শেখদের খানকাহ ও উলামাদের বিদ্যালয় গৃহশিক্ষার কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠেছিল। মক্তব ও মাদরাসার শিক্ষার্থীরা উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করত। বালক বালিকারা একত্রে মক্তব ও পাঠশালায় লেখাপড়া করত। প্রাথমিক শিক্ষা সকল মুসলমান বালক বালিকাদের জন্য বাধ্যতামূলক ছিল। তবে স্ত্রী শিক্ষার বিশেষ প্রচলন ছিল না। মাধ্যমিক শিক্ষা গ্রহণও মেয়েদের জন্য বাধ্যতামূলক ছিল না। এ

ব্যাপারে তাদের মনোভাব ছিল উদ্দীপকের রাবেয়ার বাবার মতোই, ফলে সাধারণ মুসলমান মেয়েরা উচ্চশিক্ষা গ্রহণ থেকে বঞ্চিত ছিল। তাই বলা যায়, রাবেয়ার বাবার শিক্ষাবিষয়ক মানসিকতার সাথে মধ্যযুগের মুসলিম শিক্ষার মিল রয়েছে।
ঘ রাবেয়ার বাবার মতো মানসিকতার কারণেই মধ্যযুগের মুসলমান ছেলেমেয়েরা শিক্ষায় এগিয়ে ছিল না বরং পিছিয়ে ছিল। পাঠ্যপুস্তকের আলোকে আমার মতামত এটিই। উদ্দীপকে রাবেয়ার বাবা তাকে সপ্তম শ্রেণির পরে আর পড়াতে চান না। মেয়েদের উচ্চশিক্ষার ব্যাপারে তার মানসিকতা, মেয়েদের এত লেখাপড়ার দরকার নেই। এ ধরনের মানসিকতা মধ্যযুগে মুসলমান ছেলেমেয়ের শিক্ষা অর্জনের সুযোগকে টেনে ধরে। যদিও বাংলার মুসলমান শাসন শিক্ষার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। সে সময় রাষ্ট্রীয় ও সমাজের বিত্তবানদের পৃষ্ঠপোষকতায় উচ্চ শিক্ষার দ্বার উন্মুক্ত হয়। মুসলমান ছেলেরা উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে বেশ অগ্রসর হয় এবং বাংলার মুসলমান ছেলেরা বেশ এগিয়েও যায়। মেয়েদের জন্য এ সুযোগ সীমিত হয়ে পড়ে সমাজের মানসিকতার কারণে। অন্যথায় এ যুগে শাসকবর্গের ভাষা ফার্সী রাষ্ট্রীয় মর্যাদা লাভ করে। নবাব ও মুসলমান অভিজাতবর্গ ফার্সী ভাষা ও সাহিত্যের উৎসাহদাতা ছিলেন। মুসলমান শিক্ষকগণ ফার্সী ও আরবি ভাষায় বিশেষ অভিজ্ঞ ছিলেন। এ যুগে বাংলা ভাষা বিশেষ সমৃদ্ধি লাভ করেছিল। আরবি ও ফার্সী ভাষায় অজ্ঞ সাধারণ মুসলমানরা যেন ইসলামের ধ্যান-ধারণা বুঝতে পারে সেজন্য অনেকেই বাংলা ভাষায় পুস্তকাদি রচনা করেন। তাদের রচনাবলি বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের ভাণ্ডারকে সমৃদ্ধ করেছে। শিক্ষাকে এগিয়ে নিয়েছে। কিন্তু এ সুযোগ ছেলেদের জন্য অবারিত ছিল, মেয়েদের জন্য তা নয়। তাই, সার্বিক বিচারে বলা যায়, রাবেয়ার বাবার মানসিকতার কারণেই মধ্যযুগে মুসলমান ছেলেমেয়েরা যথেষ্ট সুযোগ থাকা সত্তে¡ও শিক্ষায় এগিয়ে নয়, বরং পিছিয়ে ছিল।

 বোর্ড ও সেরা স্কুলের বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
সাধারণ বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
১. কত খ্রিষ্টাব্দে একলাখী মসজিদ নির্মিত হয়? [স. বো. ’১৬]
ক ১৪১৮১৪২১ খ ১৪১৮১৪২২
 ১৪১৮১৪২৩ ঘ ১৪১৮১৪২৫
২. মধ্যযুগে বাংলার হিন্দু সমাজে এক বর্ণের সাথে অন্য বর্ণের বিবাহ নিষিদ্ধের অন্যতম প্রধান কারণ কোনটি? [স. বো. ’১৫]
ক ধর্মের নিষেধাজ্ঞা  জাতিভেদ প্রথা
গ শাসকগোষ্ঠীর নিষেধাজ্ঞা ঘ আর্থিক অসামঞ্জস্যতা
৩. ষাট গম্বুজ মসজিদের নির্মাতা কে? [স. বো. ’১৫]
ক খান জাহান আলী  উলুখ খান জাহান
গ নুসরত শাহ ঘ ফতেহ শাহ
৪. মধ্যযুগের বাংলার সমাজব্যবস্থায় কোন দুটি ধর্মের প্রভাব বিদ্যমান ছিল? [রাজবাড়ী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়]
 হিন্দু ও ইসলাম খ হিন্দু ও খ্রিষ্টান
গ হিন্দু ও জৈন ঘ ইসলাম ও খ্রিষ্টান
৫. মধ্যযুগের বাংলায় মুসলিম সমাজব্যবস্থায় কয়টি শ্রেণির অস্তিত্ব ছিল?
[ফেনী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়; রাজবাড়ী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়]
ক ৬ খ ৫ গ ৪  ৩
৬. মুসলমান নবজাতকের নামকরণকে কেন্দ্র করে পালিত অনুষ্ঠান
[মাতৃপীঠ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, চাঁদপুর]
 আকিকা খ খাতনা গ মিলাদ ঘ মহররম
৭. মধ্যযুগের বাংলার অভিজাত মুসলমানরা কী ধরনের ছিলেন?
[বীণাপাণি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, গোপালগঞ্জ]
ক পরিশ্রমী খ দয়ালু
 ভোজনবিলাসী ঘ কষ্টসহিষ্ণু
৮. মধ্যযুগে বাংলার মুসলমানদের অন্যতম প্রিয় খাবার ছিল কোনটি?
[চুয়াডাঙ্গা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
ক শাকসবজি খ মাছ গ ভাত  খিচুড়ি
৯. কিসের ওপর ভিত্তি করে জাতিভেদ প্রথার সৃষ্টি হয়?
[মাতৃপীঠ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, চাঁদপুর]
ক পোশাক  পেশা গ মেধা ঘ শারীরিক গঠন
১০. মধ্যযুগে বাংলার হিন্দু সমাজে কয়টি বর্ণ বিদ্যমান ছিল?
[ফেনী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়; রাজবাড়ী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়]
ক ৫  ৪ গ ৩ ঘ ২
১১. মধ্যযুগে বাংলার হিন্দু সমাজে বৈষম্য ছিল কেন?
[বীণাপাণি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, গোপালগঞ্জ]
 বর্ণপ্রথা কঠোরভাবে মান্য করা হতো বলে
খ সুলতানের অত্যাচারের কারণে
গ টাকা-পয়সা কম ছিল বলে
ঘ বেকার সমস্যা ছিল বলে
১২. মধ্যযুগে বাংলায় হিন্দু সমাজে কারা ধর্ম-কর্মের একক কর্তৃত্ব করত?
[খাগড়াছড়ি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়]
ক কায়স্থরা খ শূদ্ররা গ বৈশ্যরা  ব্রা‏হ্মণরা
১৩. মধ্যযুগে বাংলার অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির মূল উৎস ছিল কোনটি?
[মাতৃপীঠ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, চাঁদপুর]
ক ব্যবসা  কৃষি গ শিল্প ঘ পর্যটন
১৪. মধ্যযুগে কৃষককে সেচের জন্য কিসের ওপর নির্ভর করতে হতো?
[ল²ীপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
ক মেশিনের  বৃষ্টির গ নদীর ঘ ভ‚মি মালিকের
১৫. মধ্যযুগে বাংলার কোন শিল্পের চাহিদা বিদেশে বেশি ছিল?
[মাগুরা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
ক রেশম খ লোহা  বস্ত্র ঘ আকরিক
১৬. মসলিন বস্ত্র তৈরির প্রাণকেন্দ্র ছিল
[ল²ীপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়; মাগুরা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
 ঢাকা খ কুমিল্লা গ নোয়াখালী ঘ রাজশাহী
১৭. মধ্যযুগে বাংলার মসলিন কাপড়ের অন্যতম বাজার ছিল কোথায়?
[উত্তরা হাইস্কুল, ঢাকা]
 ইউরোপে খ আফ্রিকায় গ আমেরিকায় ঘ অস্ট্রেলিয়ায়
১৮. মধ্যযুগে বাংলার বিখ্যাত সমুদ্র বন্দর ছিল কোনটি? [যশোর জিলা স্কুল]
ক ঢাকা খ রাজশাহী গ বাকলা  চট্টগ্রাম
১৯. পান্ডুয়ার জালালউদ্দীনের শাসনকালে নির্মিত মসজিদকে একলাখী মসজিদ বলা হয় কেন? [মেহেরপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
ক নির্মাণে এক লক্ষ শ্রমিক কাজ করে বলে
খ জায়গার দাম এক লক্ষ টাকা বলে
 নির্মাণে এক লক্ষ টাকা ব্যয় হয়েছিল বলে
ঘ এক সাথে এক লক্ষ মানুূষ নামায পড়তে পারে বলে
২০. ‘বড়সোনা মসজিদের’ আরেক নাম কী? [মাগুরা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
 বারদুয়ারী খ গুরদুয়ারী গ তেরোদুয়ারী ঘ দশদুয়ারী
২১. খানজাহান আলীর মাজার নির্মিত হয়েছে কোথায়?
[ফেনী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়; খাগড়াছড়ি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়]
ক খুলনায়  বাগেরহাটে গ যশোরে ঘ কুষ্টিয়ায়
২২. করিম বাগেরহাট জেলায় ঘুরতে যায়। এ জেলার অন্যতম স্থাপত্যকীর্তি কোনটি? [মেহেরপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
 ষাট গম্বুজ মসজিদ খ আদিনা মসজিদ
গ একলাখী মসজিদ ঘ বড়সোনা মসজিদ
২৩. ষাট গম্বুজ মসজিদের গম্বুজ সংখ্যা কতটি?
[মাগুরা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়; রাজবাড়ী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়]
ক ৬০ খ ৭০  ৭৭ ঘ ৮০
২৪. ‘কদম রসুল’ মসজিদ কে নির্মাণ করেন? [পাবনা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
 নসরৎ শাহ খ আলাউদ্দিন হোসেন শাহ
গ সিকান্দার শাহ ঘ তুঘলক শাহ
২৫. কারুকার্য খচিত মর্মর বেদির উপর হযরত মুহাম্মদ (স)-এর পদচি‎‎হ্ন সম্বলিত একখণ্ড প্রস্তর স্থাপিত হয়েছিল কোথায়?
[বীণাপাণি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, গোপালগঞ্জ]
ক বাবা আদমের মসজিদ খ ছোট সোনা মসজিদে
 কদম রসুল মসজিদে ঘ ষাট গম্বুজ মসজিদে
২৬. ‘বড় কাটরা’ কে নির্মাণ করেন?
[মেহেরপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, বীণাপাণি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, গোপালগঞ্জ]
ক ফররুখশিয়ার খ সুজাউদ্দিন  শাহ সুজা ঘ আওরঙ্গজেব
২৭. লালবাগের শাহী মসজিদ কে তৈরি করেন? [কুষ্টিয়া সরকারি বালিকা বিদ্যালয়]
 শাহজাদা আজম খ ইসলাম খান
গ শায়েস্তা খান ঘ কাসিম খান
২৮. মুঘল আমলে বাংলার শ্রেষ্ঠ নিদর্শন কী? [দি বার্ডস রেসিডেন সিয়াল মডেল)
 লালবাগের কেল­া খ বড় কাটরা
গ ছোট কাটরা ঘ পরীবিবির সমাধি
২৯. লালবাগ দুর্গ নির্মাণ করেন কে?
[দি বাডস রেসিডেনসিয়াল স্কুল এন্ড কলেজ, শ্রীমঙ্গল]
 শায়েস্তা খান খ ইসলাম খান গ আযম খান ঘ পরীবিবি
৩০. পরীবিবির মাজার কোথায় অবস্থিত? [ফেনী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
 লালবাগ দুর্গে খ আহসান মঞ্জিলে
গ ছোট কাটরায় ঘ বড় কাটরায়
৩১. পরি বিবির সমাধি সৌধ কী দিয়ে নির্মিত?
[বীণাপাণি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, গোপালগঞ্জ; চুয়াডাঙ্গা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
ক শেল পাথর  মার্বেল পাথর গ চুনাপাথর ঘ কংক্রিট
৩২. ‘হোসেনী দালান’ কত খ্রিষ্টাব্দে নির্মিত হয়?
[চুয়াডাঙ্গা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
 ১৬৭৬ খ ১৬৭৫ গ ১৬৭৪ ঘ ১৬৭৩
৩৩. মুসলমানদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব কয়টি? [রাজবাড়ী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়]
ক ১  ২ গ ৩ ঘ ৪
৩৪. কোন আমলে বাংলা সাহিত্য উন্নতি লাভ করে?
[ল²ীপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
ক নবাবি  সুলতানি গ প্রাচীন ঘ জমিদারি
৩৫. কোন কাব্য ফার্সী রচনার অনুবাদ? [ল²ীপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
ক রসুল বিজয়  ইউসুফ-জোলেখা
গ ফতেনামা ঘ রাগমালা
৩৬. বাংলা সাহিত্যের প্রথম পদাবলী কাব্যের স্রষ্টা কে?
[মেহেরপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
ক রঘুনাথ খ সূর্য কাজী  চাঁদ কাজী ঘ কেদার মিশ্র
৩৭. ‘মহাভারত’ বাংলায় অনুবাদ করেন কে?
[অগ্রগামী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, সিলেট]
ক মালাধর বসু  কবিন্দ্র পরমেশ্বর
গ বিজয়গুপ্ত ঘ বিপ্রদাস
৩৮. আরাকান রাজসভার অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি ছিলেন কে?
[মাগুরা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়; পাবনা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
ক বিজয়গুপ্ত খ বিপ্রদাস গ ফয়জুল্লাহ  দৌলত কাজী
৩৯. নিচের কোনটি কবি আলাওল-এর রচিত কাব্য গ্রন্থ?
[মেহেরপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
 পদ্মাবতী খ সিন্ধু হিন্দোল গ বিষের বাঁশি ঘ গীতাঞ্জলি
৪০. কবি আলাওলের সর্বশ্রেষ্ঠ গ্রন্থ কোনটি?
[মাতৃপীঠ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, চাঁদপুর]
ক কঙ্কাবতী  পদ্মাবতী গ মনসামঙ্গল ঘ শূন্য পূরাণ
৪১. কোন কাব্যটি বাহরাম খান রচনা করেন?
[ফেনী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, ফেনী]
ক ইউসুফ-জোলেখা  লাইলী-মজনু
গ পদ্মাবতী ঘ মায়াকানন
৪২. মধ্যযুগে হিন্দু বালক-বালিকারা কোথায় প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ করত?
[পাবনা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
ক নিজ গৃহে খ মন্দিরে  পাঠশালায় ঘ পাঠাগারে
৪৩. মধ্যযুগে বাংলায় কয় বছর পর্যন্ত পাঠশালায় শিক্ষা গ্রহণ করতে হতো?
[বীণাপাণি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, গোপালগঞ্জ]
 ৬ খ ৫ গ ৪ ঘ ৩
৪৪. আদিনা মসজিদ কত খ্রিষ্টাব্দে নির্মাণ করা হয়?
[মাতৃপীঠ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
ক ১৩৭০  ১৩৬৯ গ ১৩৬৮ ঘ ১৩৬৭
বহুপদী সমাপ্তিসূচক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
৪৫. সুফি ও দরবেশের ক্ষেত্রে মিল রয়েছে [স. বো. ’১৬]
র. যথেষ্ট প্রভাবশালী
রর. ধর্ম শাস্ত্রে সুপণ্ডিত
ররর. আধ্যাত্মিক সাধনায় নিমগ্ন
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৪৬. মধ্যযুগে কৃষি বাংলার অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির মূল উৎস ছিল কারণ- [স. বো. ’১৫]
র. প্রকৃতির আশীর্বাদ রর. ভ‚মির উর্বরতা
ররর. ফলনের প্রাচুর্যতা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র খ রর গ র ও রর ঘ র, রর ও ররর
৪৭. মধ্যযুগে কৃষি বাংলার অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির মূল উৎস ছিল কারণ- [স. বো. ’১৫]
র. প্রকৃতির আশীর্বাদ রর. ভ‚মির উর্বরতা
ররর. ফলনের প্রাচুর্যতা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র খ রর গ র ও রর  র, রর ও ররর
৪৮. মধ্যযুগে বাংলার সামাজিক রীতিনীতি গড়ে ওঠার ক্ষেত্রে প্রভাব ছিল
[পাবনা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
র. ইসলাম ধর্মের
রর. হিন্দুধর্মের
ররর. বৌদ্ধধর্মের
নিচের কোনটি সঠিক?
 র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৪৯. মধ্যযুগের বাংলায় অভিজাত শ্রেণি রাষ্ট্রের মর্যাদাপূর্ণ পদে বসতেন
[রাজবাড়ী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়]
র. যোগ্যতার দ্বারা
রর. প্রতিভার দ্বারা
ররর. অর্থের দ্বারা
নিচের কোনটি সঠিক?
 র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৫০. মধ্যযুগে বাংলার হিন্দুরা বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত হতো
[বীণাপাণি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, গোপালগঞ্জ]
র. জীবনের তাগিদে
রর. জীবিকার তাগিদে
ররর. সম্মানের জন্য
নিচের কোনটি সঠিক?
 র ও রর খ র ও ররর রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৫১. নদীপথে বাণিজ্য প্রসার লাভ করেছিল, কারণ
[রাজবাড়ী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
র. যাতায়াত সহজতর ছিল
রর. খরচ কম হতো
ররর. বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর  র, রর ও ররর
৫২. ছোট সোনা মসজিদ বিখ্যাত
[মেহেরপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, রাজবাড়ী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়]
র. স্থাপত্যশিল্পের জন্য
রর. কারুকার্যের জন্য
ররর. নির্মাণশৈলীর জন্য
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর  র, রর ও ররর
৫৩. মধ্যযুগে বাংলায় জ্ঞানবুদ্ধি বিকাশের অন্যতম পদ্ধতি ছিল
[মেহেরপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়]
র. ধর্মীয় সঙ্গীত
রর. লোক কাহিনী
ররর. পুঁথি সাহিত্য
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর  র, রর ও ররর
অভিন্ন তথ্যভিত্তিক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ে ৫৪ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
আনিকার বিয়েতে আমন্ত্রিত অতিথিদের আপ্যায়নের জন্য কাবাব, রেজালা, কোর্মা ও ঘিয়ে রান্না করা খাবারের আয়োজন করা হয়। [স. বো. ’১৫]
৫৪. আনিকার বিয়ের অনুষ্ঠানে কোন যুগের খাবারের বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায়?
ক আর্যপূর্ব যুগের খ প্রাচীন যুগের
 মধ্য যুগের ঘ আধুনিক যুগের
 বিষয়ক্রম অনুযায়ী বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
 ভ‚মিকা  বোর্ড বই, পৃষ্ঠা- ৮১
সাধারণ বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
৫৫. কোন বংশের পতনের মাধ্যমে বাংলার রাজক্ষমতা মুসলমানদের অধিকারে আসে? (জ্ঞান)
ক পাল  সেন গ তুর্কি ঘ গুপ্ত
৫৬. বাংলার রাজক্ষমতা কার মাধ্যমে মুসলমানদের অধিকারে আসে? (অনুধাবন)
ক আলী মর্দান খলজি
খ গিয়াসউদ্দিন ইওজ খলজি
 ইখতিয়ারউদ্দিন মুহাম্মদ বখতিয়ার খলজি
ঘ মুহম্মদ শিরণ খলজি
৫৭. কত শতক থেকে বাংলায় ইসলাম ধর্ম প্রচারের জন্য সুফি-সাধকগণ আসতে থাকেন? (জ্ঞান)
ক দশম  একাদশ গ দ্বাদশ ঘ ত্রয়োদশ
বহুপদী সমাপ্তিসূচক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
৫৮. মধ্যযুগে বাংলায় ইসলাম গ্রহণ করে (অনুধাবন)
র. রাজারা
রর. হিন্দুরা
ররর. বৌদ্ধরা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর  রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৫৯. মুসলমানদের আগমনের পূর্বে বাংলায় বাস করত (অনুধাবন)
র. হিন্দু ধর্মাবলম্বী মানুষ
রর. খ্রিষ্টধর্মাবলম্বী মানুষ
ররর. বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী মানুষ
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর  র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর

 সামাজিক ও সাংস্কৃতিক জীবন : মুসলমান সমাজ
 বোর্ড বই, পৃষ্ঠা- ৮১
 জুমা এবং ঈদের নামাজে মুসলমান শাসকদের কর্তব্য ছিল খুতবা পাঠ করা।
 ইসলামি শিক্ষায় অভিজ্ঞ ছিলেন উলেমগণ।
 মধ্যযুগের বাংলার মুসলমান সমাজ বিভক্ত ছিল ৩ শ্রেণিতে।
 শ্রদ্ধার নিদর্শন হিসেবে ধর্মপরায়ণ ও শিক্ষিত ব্যক্তিগণের জন্য ভাতা ও জমি বরাদ্ধ করা হতো।
 বাংলায় মুসলিম সমাজের অগ্রগতির জন্য উল্লেখযোগ্য ভ‚মিকা ছিল উলেমাগণের।
 তখনকার মুসলমান সমাজে প্রিয় খাদ্য ছিল খিচুরি।
 মুসলিম সমাজে একটি পরিচিত সামাজিক প্রথা ছিল খৎনা।
 অভিজাত ব্যক্তিগণ খেলতে পছন্দ করতেন চৌগান।
 মুসলিম সমাজে অনুপ্রবেশ করে হিন্দু সমাজের গুরুবাদ।
সাধারণ বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
৬০. মধ্যযুগে বাংলায় মুসলিম শাসনকালে কে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ মর্যাদা ভোগ করত? (জ্ঞান)
ক সুলতানের সহযোগী খ আমির
গ মুসলমান উজির  শাসক
৬১. কার ওপর মধ্যযুগে জুমা এবং ঈদের নামাজের ‘খুতবা’ পাঠের দায়িত্ব ছিল? (অনুধাবন)
 মুসলমান শাসকের খ রাজার
গ উজিরের ঘ ইমামের
৬২. মুসলমান শাসকগণ কেন মাদরাসা ও মসজিদ নির্মাণ করতেন? (অনুধাবন)
ক শাসনের জন্য খ বিচার কাজের জন্য
গ খ্যাতির জন্য  ধর্মীয় ঐক্য ও চেতনা প্রকাশের জন্য
৬৩. মধ্যযুগে রাজদরবারের বিশেষ বৈশিষ্ট্য হিসেবে নিচের কোনটি যথার্থ? (উচ্চতর দক্ষতা)
ক মল্লযুদ্ধ  জ্ঞানী গুণীদের সমাবেশ
গ পুঁথিপড়া ঘ সম্পদশালী হওয়া
৬৪. কীভাবে যেকোনো ব্যক্তি রাষ্ট্রের মর্যাদাপূর্ণ পদ পেত? (অনুধাবন)
 যোগ্যতা ও প্রতিভা দিয়ে খ পেশিশক্তি দিয়ে
গ বংশ মর্যাদার কারণে ঘ বিচার কাজের জন্য
৬৫. কৃষক, তাঁতী এবং বিভিন্ন শ্রমিকদের নিয়ে মর্যাদার দিক দিয়ে কোন শ্রেণি গঠিত হতো? (অনুধাবন)
ক প্রথম খ মধ্যবিত্ত  তৃতীয় ঘ ৪র্থ
৬৬. মধ্যযুগে কৃষকদের অধিকাংশ লোক কোন ধর্মের ছিল? (জ্ঞান)
ক মুসলমান  হিন্দু গ বৌদ্ধ ঘ খ্রিষ্টান
৬৭. বশির খাজা পীর, সত্যপীর ও কাদের পীরের কথা বলেন। বাংলায় এদের উদ্ভব হয় কখন? (প্রয়োগ)
ক প্রাচীন যুগে খ বর্তমান যুগে  মধ্য যুগে ঘ চৈতন্য যুগে
৬৮. মধ্যযুগে বিভিন্ন সমস্যা হতে মুক্তির জন্য সাধারণ মানুষ কী ব্যবহার করত? (জ্ঞান)
 তাবিজ খ কড়ি গ সূতা ঘ ঔষধ
৬৯. মধ্যযুগে ছোট ছেলে-মেয়েরা কোন খেলা খেলতে ভালোবাসত? (জ্ঞান)
ক কাবাডি খ ফুটবল  গেরু ঘ কুস্তি
৭০. সাত্তার নৌকাবাইচ সাঁতার, ও কুস্তি খেলা খেলতে ভালোবাসে। এটি কোন যুগের সাথে মিল রয়েছে? (প্রয়োগ)
 মধ্য খ প্রস্তুর গ প্রাচীন ঘ আধুনিক
৭১. মধ্যযুগে মুসলমান সমাজের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হিসেবে কোনটি যথার্থ? (উচ্চতর দক্ষতা)
ক প্রেমপ্রীতি  ধর্মপ্রীতি গ স্বজনপ্রীতি ঘ সংগীতপ্রীতি
বহুপদী সমাপ্তিসূচক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
৭২. মুসলমান শাসকগণ নিজ নিজ রাজ্যে মাদরাসা, মসজিদ, খানকাহ প্রভৃতি নির্মাণ করত (অনুধাবন)
র. রাজ্যের প্রসারের জন্য
রর. মুসলমান ঐক্য রক্ষার জন্য
ররর. ধর্মীয় চেতনা প্রসারের জন্য
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র খ রর গ ররর  রর ও ররর
৭৩. জয়দেবপুরের ‘ফতে’ নামক সমাজে সাধকদের প্রভাব যথেষ্ট ছিল। মধ্যযুগে মুসলিম সমাজে অনুরূপ প্রভাব ছিল (প্রয়োগ)
র. ফকিরদের
রর. দরবেশদের
ররর. সুফিদের
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর  রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৭৪. মধ্যযুগে বাংলার মুসলমান সমাজে একটি অভিজাত স¤প্রদায় গড়ে উঠেছিল। এর পেছনে যৌক্তিক কারণ তাদের (অনুধাবন)
র. যোগ্যতা
রর. প্রতিভা
ররর. জ্ঞান
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র খ রর গ র ও ররর  র, রর ও ররর
৭৫. মধ্যযুগে মুসলমান অভিজাত স¤প্রদায় নিজেদের একটি আলাদা শ্রেণি হিসেবে গড়ে তুলেছিল (অনুধাবন)
র. যোগ্যতা দিয়ে
রর. জ্ঞান দিয়ে
ররর. প্রতিভা দিয়ে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র খ রর গ ররর  র, রর ও ররর
৭৬. মধ্যযুগে মুসলমানগণ নিজেদের মধ্যে সৌহার্দ ও ভ্রাতৃত্বভাবকে সুদৃঢ় করত (অনুধাবন)
র. কুশল বিনিময় করে
রর. দাওয়াত বিনিময় করে
ররর. দান খয়রাত করে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র  র ও রর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৭৭. মধ্যযুগে পৃথক শ্রেণির মানুষদের মধ্যে বিরোধ না থাকার কারণ তাদের (অনুধাবন)
র. প্রচুর অর্থসম্পদ ছিল
রর. শাসকদের উদারতা
ররর. শাসকদের পৃষ্ঠপোষকতা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র খ রর  রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৭৮. মধ্যযুগে মুসলমানগণ বিশেষ খ্যাতি অর্জন করেছিলেন (অনুধাবন)
র. সততায়
রর. চারিত্রিক গুণাবলিতে
ররর. ব্যবসায়
নিচের কোনটি সঠিক?
 র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৭৯. মুসলমান শাসনকালে রাজদরবারের বিশেষ বৈশিষ্ট্য হিসেবে যৌক্তিক হলোÑ (অনুধাবন)
র. জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠান
রর. জ্ঞানী-গুণীদের সমাবেশ
ররর. পীর-দরবেশের সমাবেশ
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র  র ও রর গ র ও ররর ঘ র, রর ও ররর
অভিন্ন তথ্যভিত্তিক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ে ৮০ ও ৮১ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
ভবনীপুর গ্রামে অভিজাত মুসলমানগণ পায়জামা ও গোল গলবন্ধসহ জামা পরতেন। তাদের মাথায় থাকত পাগড়ী, পায়ে থাকত রেশম ও সোনার সুতার কাজ করা চামড়ার জুতা। অভিজাত মহিলারা কামিজ ও সালোয়ার ব্যবহার করতেন।
৮০. ভবানীপুর গ্রামের মুসলমানদের সাথে বাংলার কোন যুগের মিল বিদ্যমান? (প্রয়োগ)
 মধ্য খ প্রাচীন
গ সেন ঘ আধুনিক
৮১. উক্ত যুগের গ্রামের মুসলমানদের মাঝে দেখা যায় (উচ্চতর দক্ষতা)
র. বিদেশ হতে আগত মুসলমান
রর. ধর্মান্তরিত মুসলমান
ররর. স্থানীয় মুসলমান
নিচের কোনটি সঠিক?
 র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ে ৮২ ও ৮৩ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
জোবায়েরের নানা তাকে মুসলমান সমাজের ইতিহাস সম্পর্কে বলতে গিয়ে মধ্যযুগের ইতিহাসের কথা বলেন। তিনি বলেন তৎকালীন মুসলমানরা ছিল অধিক ধর্মপরায়ণ। তখনকার শাসকগণ ধর্মীয়ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতেন এবং জাঁকজমকপূর্ণ জীবনযাপন করতেন।
৮২. জোবায়েরের নানার বর্ণিত যুগে শাসক ছিলেন (প্রয়োগ)
র. রাষ্ট্রের সর্বময় কর্তা
রর. সমাজে সর্বোচ্চ মর্যাদার অধিকারী
ররর. জুমার নামাযে খুতবা পাঠকারী
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর  র, রর ও ররর
৮৩. জোবায়ের তার নানার কাছে মুসলমান সমাজের অন্যতম বৈশিষ্ট্য কী জানবে? (উচ্চতর দক্ষতা)
ক কুরবানি করা  ধর্মপ্রীতি
গ উচ্চশিক্ষা লাভ করা ঘ বিভিন্ন ভাষা চর্চা করা

 হিন্দু সমাজ  বোর্ড বই, পৃষ্ঠা- ৮৩
 হিন্দু সমাজে জাতিভেদ প্রথা প্রচলিত ছিল পেশাকে ভিত্তি করেই।
 হিন্দু সমাজে উল্লেখযোগ্য বর্ণ ছিল ৪টি।
 শিক্ষা ও চাকরির ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ছিল কায়স্থরা।
 ব্রাক্ষণদের মধ্যে যারা পেশা হিসেবে চিকিৎসাকে গ্রহণ করে তাদের বলা হতো বৈদ্য বা কবিরাজ।
 মধ্য যুগের নারীসমাজ নিজেদের স্বাধীন সত্তা বিকশিত করেছিল যোগ্যতা ও বুদ্ধিমত্তা দ্বারা।
 মধ্যযুগের বাংলার হিন্দু সমাজের প্রধান খাদ্য ছিল ভাত।
 মধ্য যুগে হিন্দু সমাজে প্রচলিত ছিল কৌলিন্য প্রথা।
 তখনকার হিন্দু সমাজে আধিক্য ছিল একান্নবর্তী পরিবারের।
 হিন্দুদের নিকট চরম অধর্ম হিসেবে বিবেচিত ছিলগোমাংস ভক্ষণ।
 নিয়মিত শিল্প ও সংস্কৃতির চর্চা করত বিত্তশালী পরিবারের মেয়েরা।
সাধারণ বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
৮৪. হিন্দুধর্মে এক বর্ণের সাথে অন্য বর্ণের বিবাহ বা আদান-প্রদান নিষিদ্ধ ছিল। এর যথার্থ কারণ কোনটি? (উচ্চতর দক্ষতা)
 বর্ণপ্রথার কঠোরতা খ ধর্মীয় গোঁড়ামি
গ সম্পদের অসমতা ঘ চেহারার পার্থক্য
৮৫. ব্রাহ্মণদের মাঝে যারা চিকিৎসা বিদ্যায় নিয়োজিত হতো তাদেরকে কী বলা হতো? (জ্ঞান)
ক গোয়ালা খ কুমার  বৈদ্য ঘ চিকিৎসক
৮৬. কায়স্থ কোন শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত ছিল? (জ্ঞান)
ক উঁচু  মধ্যম গ নিম্ন ঘ নিম্ন মধ্যম
৮৭. হিন্দু সমাজে কৃষিকাজ কাদের প্রধান পেশা ছিল? (জ্ঞান)
 বৈশ্যদের খ কবিরাজদের
গ কায়স্থদের ঘ শূদ্রদের
৮৮. হিন্দু সমাজে সমাজের নিম্নতম স্থানে ছিল কারা? (জ্ঞান)
ক ব্রাহ্মণ খ কায়স্থ গ বৈশ্য  শূদ্র
৮৯. কবিন্দ্র তার সন্তানের জন্মের পর তাকে গঙগার জল দিয়ে ধৌত করেন। এটি কোন যুগের হিন্দুদের উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য? (প্রয়োগ)
ক উত্তরাধুনিক খ আধুনিক  মধ্য ঘ প্রাচীন
৯০. মধ্যযুগে অধিকাংশ হিন্দুরমণী কোন আচারটি নিয়মিত পালন করতেন? (জ্ঞান)
 একাদশী খ বহুদশী গ ষষ্ঠি ঘ কোষ্ঠি
৯১. হিন্দু সমাজে উলে­খযোগ্য সামাজিক অনুষ্ঠান কী ছিল? (জ্ঞান)
 বিবাহ খ খাতনা গ গঙ্গাস্নান ঘ নবান্ন
৯২. মধ্যযুগে হিন্দু সমাজের নারীদের কী ভাবা হতো? (জ্ঞান)
 সম্পত্তি খ দুর্বল গ শিক্ষানুরাগী ঘ প্রতিবাদী
৯৩. হিন্দু সমাজে বিধবারা কাদের ওপর নির্ভরশীল ছিল? (অনুধাবন)
ক পিতা  সন্তান গ মাতা ঘ ভাই
৯৪. কোন সমাজে সতীদাহ প্রথা বিদ্যমান ছিল? (অনুধাবন)
ক মুসলমান খ ব্রাহ্মণ গ বৈশ্য  হিন্দু
৯৫. কীভাবে মধ্যযুগে হিন্দু নারীরা তাদের স্বাধীনসত্তার বিকাশ ঘটিয়েছিল? (অনুধাবন)
ক শক্তি দিয়ে  যোগ্যতা ও বুদ্ধিমত্তা দিয়ে
গ অর্থ দিয়ে ঘ মমতা ও প্রতিভা দিয়ে
৯৬. মধ্যযুগে বাংলার হিন্দু মেয়েদের নিত্যদিনের পোশাক কী ছিল? (জ্ঞান)
ক বোরকা  শাড়ি গ ধুতি ঘ কামিজ
৯৭. হিন্দু সমাজে পুরুূষদের সাধারণ পোশাক কী ছিল? (জ্ঞান)
ক চাদর খ পাঞ্জাবী গ পাগড়ী  ধুতি
৯৮. মধ্যযুগের বাংলার হিন্দুদের প্রধান খাদ্য কী ছিল? (জ্ঞান)
ক মাছ খ রুটি  ভাত ঘ মাংস
৯৯. মধ্যযুগে হিন্দু সমাজে গরীবদের সকালের নাস্তা কী ছিল? (জ্ঞান)
ক রুটি খ মুড়ি  পান্থা ভাত ঘ মাংস
১০০. হিন্দুদের নিকট কোন খাদ্যটি অধর্ম হিসেবে বিবেচিত? (অনুধাবন)
ক ভাত খ মধু গ দুধ  গো মাংস
১০১. অপু মধ্যযুগের বাংলার ব্রাহ্মণ,কায়স্থ, বৈশ্য, বৈদ্য ইত্যাদি শ্রেণির কথা বলেন। এই শ্রেণিসমূহ কোন ধর্মের? (প্রয়োগ)
 হিন্দু খ মুসলিম গ বৌদ্ধ ঘ খ্রিষ্টান
১০২. কোনটির কারণে বহুবিবাহ প্রথা প্রচলিত হয়? (জ্ঞান)
ক দাস প্রথা খ সতিদাহ প্রথা  কৌলিন্য প্রথা ঘ রামায়ণ প্রথা
বহুপদী সমাপ্তিসূচক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
১০৩. মধ্যযুগে হিন্দু সমাজে নারীরাও বিভিন্ন রকম অধিকার থেকে বঞ্চিত ছিল। কারণÑ (অনুধাবন)
র. নারীদের সম্পত্তির অভাব ছিল
রর. নারীরা পরনির্ভরশীল ছিল
ররর. নারীরা যথেষ্ট শিক্ষিত ছিল না
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র  র ও রর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
১০৪. হিন্দু নারীরা নিজেদের স্বাধীন সত্তাকে বিকশিত করতে সমর্থ হয়েছিল (অনুধাবন)
র. যোগ্যতা দিয়ে
রর. সৌন্দর্য দিয়ে
ররর. বুদ্ধিমত্তা দিয়ে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র খ রর  র ও ররর ঘ রর ও ররর
১০৫. মধ্যযুগে হিন্দু সমাজে মহিলারা পারদর্শী ছিল (প্রয়োগ)
র. তানপুরা বাজানোতে
রর. বীণা বাজানোতে
ররর. একতারা বাজানোতে
নিচের কোনটি সঠিক?
 র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
১০৬. মধ্যযুগে বাংলার হিন্দু রমণীদের অন্যতম অলংকার হচ্ছে (উচ্চতর দক্ষতা)
র. হার
রর. নাকপাশা
ররর. কানবালা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর  র, রর ও ররর
১০৭. মধ্যযুগে অলংকার নির্মিত হতো (অনুধাবন)
র. সোনা দিয়ে
রর. রূপা দিয়ে
ররর. হাতীর দাঁত দিয়ে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর  র, রর ও ররর
১০৮. তৎকালীন সময়ে যেভাবে গহনা তৈরি করা হতো (অনুধাবন)
র. পিতল দিয়ে
রর. সোনা দিয়ে
ররর. হাতির দাঁত দিয়ে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র খ রর  রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
১০৯. মধ্যযুগে হিন্দুরা আড়ম্বর ও জাঁকজমকের সাথে বিভিন্ন পূজা করত। এর পেছনে যথার্থ কারণ- (অনুধাবন)
র. সন্তান লাভ
রর. রোগমুক্তি
ররর. ভাগ্যের উন্নতি
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র খ রর গ রর ও ররর  র, রর ও ররর
১১০. মধ্যযুগে হিন্দুরা বিভিন্ন সামাজিক রীতিনীতি পালন করত। বর্তমানে হিন্দু সমাজের লোকেরাও বিভিন্ন রীতিনীতি পালন করে থাকে। নিচের কোন ক্ষেত্রে আচার পালনে উভয় যুগের মধ্যে সাদৃশ্য রয়েছে? (অনুধাবন)
র. জন্ম
রর. বিবাহ
ররর. মৃত্যু
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র খ রর গ ররর  র, রর ও ররর
১১১. মধ্যযুগে বাংলার হিন্দু সমাজজীবনে কতকগুলো সামাজিক বিশ্বাস জন্ম লাভ করেছিল। এর পেছনে যৌক্তিক কারণ (উচ্চতর দক্ষতা)
র. জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের শাস্ত্রচর্চা
রর. অলৌকিক বিশ্বাস
ররর. জ্ঞানী ব্যক্তিদের অভিজ্ঞতা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র খ রর গ রর ও ররর  র, রর ও ররর
অভিন্ন তথ্যভিত্তিক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ে ১১২ ও ১১৩ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
নরেশ ও পরেশ মধ্যযুগের হিন্দু সমাজ নিয়ে পর্যালোচনা করতে গিয়ে জানতে পারে, সে সময় তারা বিভিন্ন রকম পূজা-অর্চনা করত। তৎকালীন সময়ে কায়স্থদের বেশ প্রভাব লক্ষ করা যায়।
১১২. উক্ত সময়ে হিন্দুদের ল²ীপূজা করার উপর্যুক্ত কারণ কী? (উচ্চতর দক্ষতা)
ক শক্তি লাভ  ভাগ্যের উন্নতি
গ বিদ্যার উন্নতি ঘ সন্তান লাভ
১১৩. অনুচ্ছেদে উল্লিখিত সময়ে হিন্দু কায়স্থরা বেশ প্রতিপত্তি লাভ করেছিল। কেননা তখন (প্রয়োগ)
র. তারা চাকরির ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ছিল
রর. তারা শিক্ষাক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ছিল
ররর. তারা ধর্মীয়ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ছিল
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র  র ও রর গ র ও ররর ঘ র, রর ও ররর

 অর্থনৈতিক অবস্থা ও ব্যবসা-বাণিজ্য
 বোর্ড বই, পৃষ্ঠা- ৮৫
 বাংলার অর্থনীতি সমৃদ্ধির মূল উৎস ছিল কৃষি।
 কৃষি ফলনের প্রাচুর্য থাকলেও এসময়ের চাষাবাদ পদ্ধতি ছিল অনুন্নত।
 বিখ্যাত মসলিন নাম সু² বস্ত্রের প্রাণকেন্দ্র ছিল ঢাকা।
 বাংলার কাপড়ের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়া কাঁচামাল হিসেবে আমদানি করা হতো তুলা।
 বাংলার বিখ্যাত সমুদ্র বন্দর ছিল চট্টগ্রাম বন্দর।
 বিদেশে লেনদেন করা হতো হুণ্ডির মাধ্যমে।
 বাংলায় ব্যবসা-বাণিজ্য ও শিল্পক্ষেত্রে প্রাধান্য ছিল হিন্দু সমাজের।
 এদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করত আরব ও পারসিক বনিকেরা।
 ঢাকার প্রচুর সুখ্যাতি ছিল শঙ্খশিল্পের জন্য।
সাধারণ বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
১১৪. মধ্যযুগে বাংলায় বিভিন্ন রকম ফসল উৎপন্ন হতো। এর যথার্থ কারণ কোনটি? (উচ্চতর দক্ষতা)
ক কৃষিভ‚মির পর্যাপ্ত উর্বরতা খ সেচ ব্যবস্থার প্রসার
 কৃষিভ‚মির অস্বাভাবিক উর্বরতা ঘ জমিদারদের সহযোগিতা
১১৫. রেশম ও পাট চাষের প্রচলন শুরু হয় কখন? (জ্ঞান)
 মুসলমানদের সময় খ পালরাজাদের সময়
গ সেন রাজাদের সময় ঘ ইংরেজদের সময়
১১৬. মধ্যযুগে বাংলার অধিবাসীদের বৃহত্তম অংশ ছিল (জ্ঞান)
ক ব্যবসায়ী খ চাকরিজীবী গ উকিল  কৃষক
১১৭. মসলিন কাপড় দেশি-বিদেশিদের পছন্দের কারণ কী ছিল? (অনুধাবন)
 সূ² তন্তু দ্বারা প্রস্তুত খ অত্যন্ত মূল্যবান
গ অত্যধিক সুন্দর ঘ খুবই পাতলা
১১৮. কলকাতা ও কাশিমবাজারে কী তৈরি হতো? (জ্ঞান)
 কামান খ গালিচা গ কোদাল ঘ মসলিন
১১৯. মধ্যযুগে বাংলার ব্যবসা-বাণিজ্যের সিংহভাগই ছিল (জ্ঞান)
ক আমদানি  রপ্তানি গ অভ্যন্তরীণ ঘ শিল্পজাত
১২০. মধ্যযুগে বাঙালি বণিকরা তুলা আমদানি করত কোথা থেকে? (জ্ঞান)
 গুজরাট খ দিল্লি গ ইসলামাবাদ ঘ বাগদাদ
১২১. বাঙালি বণিকরা রেশম আমদানি করত কোথা থেকে? (জ্ঞান)
ক ভারত খ ইরান  চীন ঘ ইরাক
১২২. মধ্যযুগে কীভাবে বিদেশ থেকে লেনদেন করা হতো? (অনুধাবন)
 হুন্ডির মাধ্যমে খ চেকের মাধ্যমে
গ ব্যাংকের মাধ্যমে ঘ ডাকের মাধ্যমে
১২৩. ইবনে বতুতা কোন শতকে বাংলায় আসেন? (জ্ঞান)
ক একাদশ খ দ্বাদশ গ ত্রয়োদশ  চতুর্দশ
১২৪. ইবনে বতুতা কে ছিলেন? (জ্ঞান)
ক ব্যবসায়ী খ লেখক  ভ্রমণকারী ঘ ঐতিহাসিক
১২৫. মধ্যযুগে এদেশে কারা বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করত? (অনুধাবন)
ক ইউরোপীয়রা খ গ্রীকরা গ রোমীয়রা  আরবীয়রা
বহুপদী সমাপ্তিসূচক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
১২৬. মুসলমান শাসনামলে বঙ্গে জাহাজ নির্মাণ শিল্পের ব্যাপক প্রসারের কারণ ছিল (অনুধাবন)
র. নৌযুদ্ধ
রর. বাণিজ্যিক প্রয়োজন
ররর. কৃষিকাজ
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র খ রর  র ও রর ঘ র, রর ও ররর
১২৭. তৎকালীন সময়ে বিভিন্ন স্থানে বাণিজ্যকেন্দ্র গড়ে ওঠার কারণ হলো (অনুধাবন)
র. পরিবহন খরচ কম ছিল বলে
রর. জাহাজ চলাচলে উপযোগী নদী ছিল বলে
ররর. পণ্য সস্তা ছিল বলে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র খ রর  র ও রর ঘ র, রর ও ররর
১২৮. মধ্যযুগে বাংলার নৌবাণিজ্য পরিচালিত হতো (অনুধাবন)
র. আরবীয় বণিকদের দ্বারা
রর. পারসিক বণিকদের দ্বারা
ররর. রোমান বণিকদের দ্বারা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক রর খ ররর  র ও রর ঘ র, রর ও ররর
১২৯. তৎকালীন সময়ে ব্যবসা-বাণিজ্যের সাথে সাথে ব্যাংকিং প্রথার বিকাশ ঘটে। কারণ (অনুধাবন)
র. লেনদেন বৃদ্ধি
রর. সঞ্চয় বৃদ্ধি
ররর. হিসাব-নিকাশ বৃদ্ধি
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র  র ও ররর গ ররর ঘ র, রর ও ররর
অভিন্ন তথ্যভিত্তিক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ে ১৩০ ও ১৩১ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
জাকিরের বন্ধু বাংলাদেশে ভ্রমণে এলে জাকির তাকে বাংলাদেশের একটি সময়ের অর্থনৈতিক অবস্থা সম্পর্কে অবহিত করে। তখন কৃষি ফলনের প্রাচুর্য থাকলেও চাষাবাদ পদ্ধতি ছিল অনুন্নত। কৃষককে অধিকাংশ সময়েই ফসল উৎপাদনের জন্য বৃষ্টির ওপর নির্ভর করতে হতো।
১৩০. উক্ত যুগে বাংলাদেশ কৃষিক্ষেত্রে অগ্রসর থাকার কারণ কী? (উচ্চতর দক্ষতা)
ক উন্নত চাষপদ্ধতি  ভ‚মির উর্বরতা
গ উন্নত যন্ত্রপাতি ঘ উন্নত সেচব্যবস্থা
১৩১. জাকির তার বন্ধুকে অবহিত করল বাংলাদেশের (প্রয়োগ)
র. মধ্য যুগ সম্পর্কে
রর. মুসলিম শাসনামল সম্পর্কে
ররর. খরা সম্পর্কে
নিচের কোনটি সঠিক?
 র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ে ১৩২ ও ১৩৩ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
মতিউর মিরপুর ফুটপাতে দাড়িয়ে এক যাদুকরের যাদুখেলা দেখছিল। যাদুকর একটি আংটি থেকে ২০ গজ লম্বা একটি সূ² কাপড় বের করে আনল। বিস্মিত হয়ে সকলেই হাততালি দিতে লাগল।
১৩২. যাদুকরের দেখানো কাপড় কোন দেশের ঐতিহ্যবাহী বস্ত্রশিল্পের পরিচয়বাহী? (প্রয়োগ)
 বাংলাদেশের খ ভারতের গ পাকিস্তানের ঘ ইরাকের
১৩৩. উক্ত কাপড় অঞ্চলটিতে বয়ে এনেছিল (উচ্চতর দক্ষতা)
র. খ্যাতি
রর. অর্থ
ররর. নতুন বাণিজ্যের সম্ভাবনা
নিচের কোনটি সঠিক?
 র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর

 স্থাপত্য ও চিত্রকলা  বোর্ড বই, পৃষ্ঠা- ৮৬
 মুসলমান শাসকগণ অতিশয় পুণ্যের বলে বিবেচনা করতেন মসজিদ নির্মাণকে।
 সিকান্দার শাহ আদিনা মসজিদ নির্মাণ করেন ১৯৩৬ সালে।
 একলাখী মসজিদ নির্মাণ করেন সুলতান জালালউদ্দিন।
 ইউনেস্কো কর্তৃক বিশ্ব সভ্যতাকে নিদর্শন হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে ষাটগম্বুজ মসজিদ।
 মহানবি (স)-এর পদচিহ্নের প্রতি সম্মান প্রদর্শনপূর্বক নির্মাণ করা হয় কদম রাসুল।
 ঢাকার ‘বড় কাটরা’ নির্মাণ করেন শাহসুজা।
 লালবাগ কেল্লা স্থাপন করেন শায়েস্তা খান।
 শায়েস্তা খান হোসেনি দালান নির্মাণ করেন ১৬৭৬ খ্রিষ্টাব্দে।
 গিয়াস উদ্দিন আজম শাহের সমাধি হলো ঢাকার অদূরে সোনারগাঁওয়ে।
 শিল্পকলার ক্ষেত্রে এক বিস্ময়কর অবদান রেখেছেন মোঘল শাসকরা।
সাধারণ বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
১৩৪. মধ্যযুগে মুসলিম শাসকেরা অনেক মসজিদ, মাদরাসা, মাজার, খানকাহ ইত্যাদি নির্মাণ করেন। এর মধ্যে নিচের কোনটি প্রকাশ পায়? (প্রয়োগ)
ক রাজ্যের ব্যাপক প্রসার খ স্থাপত্যকলার নির্মাণ
 স্থাপত্যকলার ব্যাপক প্রসার ঘ ধর্মের ব্যাপক বিস্তার
১৩৫. কোন কাজকে মুসলমান সুলতানেরা সবচেয়ে বেশি পুণ্যের কাজ বলে মনে করত? (জ্ঞান)
ক মক্তব নির্মাণ  মসজিদ নির্মাণ গ মাদরাসা নির্মাণ ঘ খানকা নির্মাণ
১৩৬. স্বাধীন বাংলার মুসলমান সুলতানদের প্রথমে রাজধানী কোথায় ছিল? (জ্ঞান)
ক রাঢ়ে খ বঙ্গে  গৌড়ে ঘ পান্ডুয়ায়
১৩৭. গিয়াসউদ্দিন আযম শাহের কবর রয়েছে কোথায়? (জ্ঞান)
 সোনারগাঁওয়ে খ ঢাকায় গ ফরিদপুরে ঘ ময়নামতিতে

 বোর্ড ও সেরা স্কুলের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন- ১  মধ্যযুগের হিন্দু ও মুসলমান সমাজ

তথ্য-১ :
(র) সুলতানদের জুমা ও ঈদের নামাজে খুতবা পাঠ করা।
(রর) সমাজে উচ্চ, মধ্যম ও নিম্ন তিন শ্রেণির লোক ছিল।
(ররর) পীর ফকিরদের যথেষ্ট প্রভাব ছিল।
তথ্য-২ :
(র) জাতিভেদ প্রথা প্রচলিত ছিল।
(রর) কৌলিন্য প্রথা প্রচলিত ছিল। [স. বো. ’১৬]
ক. ষাট গম্বুজ মসজিদ কোথায় অবস্থিত? ১
খ. বাংলার অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির মূল উৎসটি ব্যাখ্যা কর। ২
গ. তথ্য-১ দ্বারা মধ্যযুগের যে সমাজের কথা বলা হয়েছে তা ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. তথ্য-২ দ্বারা বাংলার হিন্দু সমাজের সামাজিক অবস্থার প্রতিফলন ঘটেছে বিশ্লেষণ কর। ৪

ক ষাট গম্বুজ মসজিদ বাগেরহাটে অবস্থিত।
খ বাংলার অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির মূল উৎস ছিল কৃষি। নদীমাতৃক বাংলার ভ‚মি চিরদিনই প্রকৃতির অকৃপণ আশীর্বাদে পরিপুষ্ট। এখানকার কৃষিভ‚মি অস্বাভাবিক উর্বর। তাই কৃষককে অধিকাংশ সময়ই সেচের জন্য বৃষ্টির উপর নির্ভর করতে হলেও মধ্যযুগে এখানকার উৎপন্ন ফসলের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল ধান, গম, তুলা, ইক্ষু, পাট, আদা, জোয়ার, তিল, সিম, সরিষা ও ডাল। কৃষিজাত দ্রব্যের মধ্যে পিঁয়াজ, রসুন, হলুদ, শশা প্রভৃতি ছিল উল্লেখযোগ্য। কৃষিজাত দ্রব্যের প্রাচুর্যের ফলে উদ্বৃত্ত বিভিন্ন পণ্য বিদেশে রপ্তানি করা হতো। আর এভাবেই সে সময় বাংলার অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির মূল উৎস হয়ে ওঠে কৃষি।
গ তথ্য-১ দ্বারা মধ্যযুগের মুসলমান সমাজের কথা বলা হয়েছে। মধ্যযুগে বাংলায় মুসলমান শাসনকালে রাষ্ট্রের সর্বময় কর্তা হিসেবে শাসক ছিলেন সমাজ জীবনে সর্বোচ্চ মর্যাদার অধিকারী। হিন্দুরাও শাসকের এ অপ্রতিদ্ব›দ্বী সামাজিক মর্যাদা ও প্রাধান্য মেনে নিয়েছিল। শাসক, বিশেষত মুসলমান সমাজ জীবনের নেতা হিসেবে সুলতানকে কতকগুলো বিশেষ দায়িত্ব পালন করতে হতো। জুমা এবং ঈদের নামাজে খুতবা পাঠ মুসলমান শাসকের একটি বিশেষ কর্তব্য ছিল। তথ্য-১ এর (র)-এ তা বিবৃত হয়েছে। এছাড়া (রর) এ উল্লিখিত সমাজে উচ্চ, মধ্যম ও নিম্ন তিন শ্রেণির লোক ছিল; এটিও মধ্যযুগের মুসলমান সমাজব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য। উপরন্তু মুসলমান সমাজে ধর্মপরায়ণ ও শিক্ষিত ব্যক্তিগণকে জনগণ যথেষ্ট শ্রদ্ধা করত এবং পীর ফকিরদের যথেষ্ট প্রভাবও ছিল। তথ্য-১ এর (ররর) এ যা বর্ণিত হয়েছে। সুতরাং তথ্য-১ মধ্যযুগের মুসলমান সমাজকেই নির্দেশ করে।
ঘ তথ্য-২-এ বাংলার হিন্দু সমাজের সামাজিক অবস্থার প্রতিফলন ঘটেছে। তথ্য-২ এর (র) ও (রর) -এ জাতিভেদ প্রথা ও কৌলিন্য প্রথার কথা বলা হয়েছে। যা মূলত মধ্যযুগের বাংলার হিন্দু সমাজের সামাজিক অবস্থার প্রতিফলন। বিভিন্ন পেশাকে ভিত্তি করেই মধ্যযুগে জাতিভেদ প্রথার সৃষ্টি। ব্রাহ্মণ, কায়স্থ, বৈশ্য ও শূদ্র-সমাজে এ চারটি উল্লেখযোগ্য বর্ণ ছিল। এ চারটি বর্ণের মধ্যে সামাজিক মেলামেশা ছিল না। বর্ণপ্রথা কঠোরভাবে পালিত হতো। ফলে এক বর্ণের সাথে অন্য বর্ণের বিবাহ বা আদান-প্রদান নিষিদ্ধ ছিল। অর্থাৎ জাতিভেদ প্রথার ফলশ্রæতিতে হিন্দু সমাজে কৌলিন্য প্রথা প্রচলিত ছিল। ফলে সমাজে নানা অনাচার অনুপ্রবেশ করেছিল। ব্রাহ্মণ, বৈদ্য ও কায়স্থদের মধ্যে এ প্রথার ব্যাপক প্রচলন ছিল। কৌলিন্য প্রথার ফলে সমাজে বহু বিবাহ প্রথা প্রচলিত হয়। সুতরাং স্পষ্টতই বলা যায়, উদ্দীপকে তথ্য-২ দ্বারা মধ্যযুগের বাংলার হিন্দু সমাজের সামাজিক অবস্থার প্রতিফলন ঘটেছে।

প্রশ্ন- ২  মুসলমানদের প্রভাব

শাসক হিসেবে বদরুল আলম ছিলেন সমাজ জীবনে সর্বোচ্চ মর্যাদার অধিকারী। অন্য ধর্মের লোকেরাও তার এ অপ্রতিদ্ব›দ্বী সামাজিক মর্যাদা ও প্রাধান্য মেনে নিয়েছিল। তাকে মুসলমান সমাজের নেতা হিসেবে বিভিন্ন ধর্মীয় ও সামাজিক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে হতো। মুসলমানদের ঐক্য ও ধর্মীয় চেতনা প্রসারের জন্য এ শাসক নিজ রাজ্যে মসজিদ, মাদ্রাসা, খানকাহ ইত্যাদি নির্মাণ করেছিলেন।
[আল হেরা একাডেমি স্কুল এন্ড কলেজ, পাবনা]
ক. মধ্যযুগে কোন প্রথার ওপর ভিত্তি করে হিন্দু বিবাহরীতি প্রচলিত হয়? ১
খ. মধ্যযুগে মুসলমান সমাজের সামাজিক উৎসবের ব্যাখ্যা কর। ২
গ. বদরুল আলমের শাসনামলে মধ্যযুগের মুসলমানদের যে চিত্র ফুটে উঠেছে তার ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. এই ধরনের একটি শাসনামলে মুসলমানরা বিভিন্ন শ্রেণিতে বিভক্ত ছিল- বিশ্লেষণ কর। ৪

ক মধ্যযুগে বর্ণ প্রথার ওপর ভিত্তি করে হিন্দু বিবাহরীতি প্রচলিত হয়।
খ মধ্যযুগে মুসলমান সমাজে কতকগুলো সামাজিক উৎসব পালন করা হতো। এগুলো এখনও মুসলমানগণ পালন করে। মুসলমানগণ নবজাত শিশুর নামকরণকে কেন্দ্র করে ‘আকিকা’ নামক বিশেষ অনুষ্ঠান পালন করতেন। ‘খাত্না’ মুসলমান সমাজের একটি অতিপরিচিত সামাজিক প্রথা ছিল। বিবাহ মুসলমান সমাজের একটি বিশেষ উৎসবমুখর অনুষ্ঠান। নবদম্পতির জন্য বাসর-শয্যার ব্যবস্থা করা হতো। মৃতদেহ সৎকার এবং মৃতের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন সময়ে মুসলমানগণ কতকগুলো ধর্র্মীয় ও সামাজিক রীতিনীতি পালন করে। তারা মৃতদেহকে কবর দেয় এবং তার আত্মার শান্তির জন্য কুরআন পাঠ করে এবং মিলাদ পড়ায়।
গ বদরুল আলমের শাসনামলে মধ্যযুগের মুসলমান সমাজের শৌর্যবীর্য এবং প্রভাব প্রতিপত্তির চিত্র ফুটে উঠেছে। মধ্যযুগে বাংলায় মুসলমান শাসনকালে রাষ্ট্রের সর্বময় কর্তা হিসেবে শাসক ছিলেন সমাজজীবনে সর্বোচ্চ মর্যাদার অধিকারী। হিন্দুরাও শাসকের এ অপ্রতিদ্ব›দ্বী সামাজিক মর্যাদা ও প্রাধান্য মেনে নিয়েছিল। শাসক, বিশেষত মুসলমান সমাজজীবনের নেতা হিসেবে সুলতানকে কতকগুলো বিশেষ দায়িত্ব পালন করতে হতো। জুমা এবং ঈদের নামাজে খুতবা পাঠ মুসলমান শাসকের একটি বিশেষ কর্তব্য ছিল। তাকে মুসলমান সমাজের নেতা হিসেবে বিভিন্ন ধর্মীয় ও সামাজিক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে হতো। মুসলমানদের ঐক্য ও ধর্মীয় চেতনার প্রসারের জন্য শাসকগণ নিজ নিজ রাজ্যে মসজিদ, মাদরাসা, খানকাহ ইত্যাদি নির্মাণ করতেন। উদ্দীপকের বদরুল আলমকেও শাসক হিসেবে এই রূপে দেখা যায়, যা মধ্যযুগের মুসলমান সমাজের শৌর্যবীর্য ও প্রতিপত্তিকে নির্দেশ করে।
ঘ এই ধরনের একটি শাসনামল তথা মধ্যযুগের মুসলিম শাসনামলে মুসলমানরা বিভিন্ন শ্রেণিতে বিভক্ত ছিল। মধ্যযুগের বাংলায় মুসলমান সমাজ ব্যবস্থায় উচ্চ, মধ্যম, ও নিম্ন-এ তিনটি পৃথক শ্রেণির অস্তিত্ব ছিল। সৈয়দ, উলেমা প্রমুখ শ্রেণি সমাজে যথেষ্ট প্রভাবশালী ছিলেন। ধর্মপরায়ণ ও শিক্ষিত ব্যক্তিগণকে জনগণ যথেষ্ট শ্রদ্ধা করত। মুসলমান শাসকগণও তাদেরকে বিশেষ শ্রদ্ধা করতেন। তাদের প্রতি শ্রদ্ধার নিদর্শন হিসেবে ভাতা এবং জমি বরাদ্দ করা হতো। উলেমাগণ ইসলামি শিক্ষায় অভিজ্ঞ ছিলেন। তাদের মধ্য হতে কাজী, সদর এবং অন্যান্য ধর্ম বিষয়ক কর্মচারী নিয়োগ করা হতো। শেখগণ ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক বিষয়ে জনগণকে শিক্ষা দিতেন। মধ্যযুগে বাংলার মুসলমান সমাজে একটি অভিজাত স¤প্রদায় গড়ে উঠেছিল। যোগ্যতা, প্রতিভা ও জ্ঞানের দ্বারা তারা নিজেদের সাধারণ মানুষেরা তুলনায় একটি আলাদা শ্রেণি হিসেবে গড়ে তুলেছিলেন। জ্ঞান-বিজ্ঞান ও শিল্পের সাধনার দ্বারা তারা তাদের জীবিকা নির্বাহ করতেন। যে কোনো ব্যক্তি তার যোগ্যতা ও প্রতিভা দ্বারা রাষ্ট্রের মর্যাদাপূর্ণ পদে বসতে পারতেন। এ যুগে সামরিক ও বিচার বিভাগের উচ্চপদস্থ কর্মচারীদের নিয়ে সরকারি অভিজাত শ্রেণি গড়ে উঠেছিল। নিম্ন শ্রেণির সরকারি কর্মচারীদের নিয়ে মধ্যবিত্তশ্রেণির সৃষ্টি হয়। কৃষক, তাঁতী এবং বিভিন্ন শ্রমিকদের নিয়ে তৃতীয় শ্রেণি গঠিত ছিল। কৃষকদের অধিকাংশই ছিল হিন্দু। কতকগুলো পেশা মুসলমানদের জন্য একচেটিয়া ছিল।

প্রশ্ন- ৩  মধ্যযুগের মুসলমানদের সামাজিক জীবন

শাহাবুদ্দিন তার দুই হাতের প্রায় সবগুলো আঙুলে বিভিন্ন ধরনের পাথরের আংটি পরেছে। তার হাতে এতগুলো আংটি দেখে তার বন্ধু তাকে মধ্যযুগের বলে উল্লেখ করেন। [রাজবাড়ী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়]
ক. মধ্যযুগে মুসলমানদের প্রতিদিনের খাদ্য কী ছিল? ১
খ. মধ্যযুগে মুসলমানদের বিনোদন ব্যবস্থা ব্যাখ্যা কর। ২
গ. শাহাবুদ্দিনের বন্ধু শাহাবুদ্দিনকে দেখে মধ্যযুগের মুসলমানদের যেদিকের ইঙ্গিত দিয়েছেন সেদিকের বর্ণনা দাও। ৩
ঘ. ‘শাহাবুদ্দিন ও তার বন্ধুর মতো মধ্যযুগের মুসলমানদের মধ্যে সদ্ভব বজায় ছিল।’ কথাটির যথার্থতা বিশ্লেষণ কর। ৪

ক মধ্যযুগে মুসলমানদের প্রতিদিনের খাদ্য ছিল ভাত, মাছ, শাক-সবজি।
খ মধ্যযুগে মুসলমান অভিজাত স¤প্রদায়ের মধ্যে গান-বাজনা ও বিভিন্ন আমোদ প্রমোদ প্রচলিত ছিল। এ উদ্দেশ্যে তারা বিভিন্ন সমাবেশেরও আয়োজন করতেন। অভিজাত ব্যক্তিগণ চৌগান খেলতে পছন্দ করতেন। ছোট ছেলে-মেয়েরা ‘গেরু’ নামক খেলা খেলতে ভালোবাসত। সাঁতার, নৌকাবাইচ প্রভৃতি জনপ্রিয় খেলা ছিল। কুস্তি খেলা, বাজিধরা, জুয়াখেলা প্রভৃতি সমাজে প্রচলিত ছিল। বাঘের খেলা দেখেও জনগণ বিশেষ আনন্দ লাভ করত। এসবই ছিল মধ্যযুগে মুসলমানদের বিনোদন ব্যবস্থা।
গ শাহাবুদ্দিনের বন্ধু শাহাবুদ্দিনকে দেখে মধ্যযুগের মুসলমানদের সাজসজ্জার দিকে ইঙ্গিত দিয়েছে। মধ্যযুগে অভিজাত মুসলমানগণ পায়জামা ও গোল গলাবন্ধসহ জামা পরতেন। তাদের মাথায় থাকত পাগড়ী, পায়ে থাকত রেশম ও সোনার সুতার কাজ করা চামড়ার জুতা। উদ্দীপকের শাহাবুদ্দিনের মতো তারা তাদের আঙুলে অনেকগুলো মণি-মুক্তা বসানো আংটি ব্যবহার করতেন। মোল্লা ও মৌলভীরাও পায়জামা, জামা এবং টুপি ব্যবহার করতেন। টুপি ছাড়া মুসলমানগণ সমাজে সমাদর লাভ করত না। গরিব বা নিম্ন শ্রেণির মুসলমানগণ লুঙ্গি ও টুপি পরত। অভিজাত মহিলা কামিজ ও সালোয়ার ব্যবহার করতেন। তারা প্রসাধনী ব্যবহারে অভ্যস্ত ছিল না। তারা বাহু ও কব্জিতে সোনার অলঙ্কার এবং আঙুলে সোনার আংটি পরতেন। সুতরাং, শাহাবুদ্দিনের বন্ধু শাহাবুদ্দিনকে দেখে মধ্যযুগের মুসলমানদের সাজসজ্জার দিকে ইঙ্গিত দিয়েছে যা উপরে বর্ণিত হলো।
ঘ শাহাবুদ্দিন ও তার বন্ধুর মতো মধ্যযুগে মুসলমানদের মধ্যে সদ্ভাব বজায় ছিল। এ যুগে মুসলমানের চারিত্রিক গুণাবলি ও সততার জন্য বিশেষ খ্যাতি অর্জন করেছিল। বাংলায় ইসলামের বিস্তৃতির সাথে সাথে মুসলমান সমাজও বিস্তৃত হতে থাকে। বাংলায় মুসলমান সমাজে দুটি পৃথক শ্রেণি বিশেষভাবে লক্ষণীয়। একটি বিদেশ হতে আগত মুসলমান, অন্যটি স্থানীয় ধর্মান্তরিত মুসলমান। বিদেশি ও স্থানীয় মুসলমানদের মধ্যে কৃষ্টি ও রীতিনীতির পার্থক্য থাকা সত্তে¡ও উভয় স¤প্রদায়ের মধ্যে কোনো বিরোধ দেখা দেয়নি। বরং সদ্ভাব বজায় ছিল। মুসলমান শাসকদের উদারতা এবং স্থানীয় কৃষ্টি-সংস্কৃতির প্রতি তাদের পৃষ্ঠপোষকতাই এর কারণ ছিল।

প্রশ্ন- ৪  হিন্দুদের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক জীবন

সীমার বয়স যখন ১১ বছর তখন তার বাবা মহা ধুমধাম করে তাকে বিয়ে দেন সুব্রত নামের এক যুবকের সাথে। পণ বাবদ সুব্রতের বাবাকে দেওয়া হয় পাঁচ কুড়ি টাকা। স্বামীকে দেবতা মনে করে সীমা প্রবেশ করে সুব্রতের গৃহে। কিন্তু অল্প কিছুদিন পরেই সুব্রত আর একটি বিয়ে করে দ্বিতীয় স্ত্রীর বাবার বাড়িতে গিয়ে ওঠে।
[সরকারি হরচন্দ্র বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, ঝালকাঠি]
ক. হিন্দু শিশুর কোষ্ঠি গণনা করতেন কে? ১
খ. মধ্যযুগের হিন্দুরা কী ধরনের সামাজিক রীতিনীতি পালন করত? ২
গ. উদ্দীপকে মধ্যযুগের হিন্দু সমাজের যে বৈশিষ্ট্য ফুটে উঠেছে তা ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. তুমি কি উক্ত বৈশিষ্ট্যসমূহ সমর্থন কর? উত্তরের পক্ষে যুক্তি দাও। ৪

ক হিন্দু শিশুর কোষ্ঠি গণনা করতেন ব্রা‏হ্মণ।
খ মধ্যযুগের বাংলায় জন্ম, বিবাহ ও মৃত্যু উপলক্ষে হিন্দুরা বিভিন্ন সামাজিক রীতিনীতি পালন করত। সন্তান জন্মের পর তাকে গঙ্গাজল দিয়ে ধৌত করা হতো। যষ্ঠ দিনে ষষ্টি পূজার আয়োজন করা হতো। ব্রা‏হ্মণ শিশুর কোষ্ঠি গণনা করতেন। একমাস পর বালক উত্থান পর্ব পালন করা হতো। ছয় মাসের সময় করা হতো অন্নপ্রাশনের ব্যবস্থা। অধিকাংশ হিন্দু রমণী নিয়মিত উপবাস একাদশী পালন করতেন।
গ উদ্দীপকে মধ্যযুগের হিন্দু সমাজের পরিবার ও বিবাহ-রীতির বৈশিষ্ট্য ফুটে উঠেছে। হিন্দু সমাজে বিবাহ একটি উল্লেখযোগ্য সামাজিক অনুষ্ঠান। বর্ণ-প্রথার ওপর ভিত্তি করে হিন্দু সমাজে বিবাহ-রীতি প্রচলিত ছিল। এ যুগে পণ ও বাল্যবিবাহ প্রথাও প্রচলিত ছিল। উদ্দীপকে যেমন দেখা যায়, সীমার ১১ বছরে বাল্যবিবাহ হয়েছে এবং বর সুব্রতকে পণও দেওয়া হয়েছে। সমাজে পুরুষেরা একাধিক স্ত্রী রাখত। উদ্দীপকের সুব্রত ও দ্বিতীয় বিবাহ করে এবং দ্বিতীয় স্ত্রীর বাবার বাড়িতে গিয়ে ওঠে। মধ্যযুগের হিন্দু সমাজেও ঘর-জামাই থাকার রীতি প্রচলিত ছিল। বাংলায় হিন্দু সমাজে একান্নবর্তী পরিবারই ছিল অধিক। পিতার মৃত্যুর পর জ্যেষ্ঠ পুত্রই সংসারের দায়িত্ব গ্রহণ করত। আবার উদ্দীপকে সীমা যেমন স্বামীকে দেবতা মনে করে তেমনি মধ্যযুগে স্বামী-ভক্তি হিন্দু সমাজের একটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য ছিল। সুতরাং উদ্দীপকে মধ্যযুগের হিন্দু সমাজের পরিবার ও বিবাহ রীতির বৈশিষ্ট্যই ফুটে উঠেছে
ঘ আমি উক্ত বৈশিষ্ট্যসমূহ সমর্থন করি না। প্রথমত, উদ্দীপকে উল্লিখিত বাল্যবিবাহ বর্তমানে মোটেই গ্রহণযোগ্য নয়। এতে করে মেয়েরা শিক্ষা ও কর্মের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়। তাদের মেধা ও সৃজনশীলতার বিকাশ ঘটে না। বরং অল্প বয়সেই স্বামী, সন্তান, সংসার নিয়ে তার ব্যস্ততা তাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে। অনেক ক্ষেত্রে মৃত্যুর কারণ হয়। দ্বিতীয়ত, পণপ্রথা বা যৌতুকপ্রথা সমাজজীবনের এক অভিশাপ। নারী নির্যাতন ও মৃত্যুর এক অন্যতম কারণ বর্তমানে যৌতুকপ্রথা। তৃতীয়ত স্বামীকে দেবতা মনে করা তার সম্মানকে বাড়ায় না বরং নিজের দুর্বলতাকেই প্রকাশ করে। চতুর্থত একাধিক বিবাহ নারীর অধিকার ও মর্যাদায় আঘাত হানে। পঞ্চমত ঘর-জামাই থাকা পুরুষের জন্য মর্যাদাহানিকর, বিশেষত সে যখন স্ত্রী ও শ্বশুরের ওপর নির্ভরশীল থাকে। আলোচনার প্রেক্ষিতে স্পষ্ট হয় যে, উদ্দীপকে উল্লিখিত হিন্দু-সমাজের পরিবার ও বিবাহ রীতির বৈশিষ্ট্যগুলো কোনোভাবেই সমাজ ও মানুষের জন্য মর্যাদাকর নয়। তাই আমি উক্ত বৈশিষ্ট্যসমূহ সমর্থন করি না।

প্রশ্ন- ৫  মধ্যযুগের অর্থনৈতিক অবস্থা

মি. চুন একুনো বাংলাদেশ ভ্রমণে আসেন। এদেশে আসার পর তিনি সামরিক ও বিচার বিভাগের অনেক উচ্চপদস্থ কর্মচারীর সাথে সাক্ষাৎ করেন। ডাক্তার, উকিল, কৃষক, তাঁতি, গায়ক, কবি, লেখক, শিক্ষকসহ বিভিন্ন পেশার লোকের সাথে তার পরিচয় ঘটে। এক কৃষকের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে কৃষকের গোলাভরা ধান, গোয়ালভরা গরু, পুকুরভরা মাছ দেখে একুনো অভিভ‚ত হয়।
[সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় চুয়াডাঙ্গা]
ক. ছোট সোনা মসজিদের নির্মাতা কে? ১
খ. মধ্যযুগে বাংলার মুসলমানদের পোশাক পরিচ্ছেদ কীরূপ ছিল? ২
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত বিভিন্ন পেশাজীবীদের সাথে কোন যুগের পেশাজীবীদের মিল বিদ্যমান? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. ‘মধ্যযুগে কৃষি ছিল একটি সম্মানজনক পেশা’ উদ্দীপকের আলোকে বিশ্লেষণ কর। ৪

ক ছোট সোনা মসজিদের নির্মাতা হুসেন শাহী আমলের জনৈক ওয়ালী মুহম্মদ।
খ মধ্যযুগে বাংলার অভিজাত মুসলমানরা পায়জামা ও গোল গলাবন্ধসহ জামা পরত। তাদের মাথায় পাগড়ি থাকত, পায়ে থাকত রেশম ও সোনার সুতার কাজ করা চামড়ার জুতা। তারা তাদের আঙুলে মণিমুক্তা বসানো আংটি ব্যবহার করত। মোল­া ও মৌলভীরাও জামা, টুপি ও পায়জামা ব্যবহার করত। টুপি ছাড়া মুসলমানরা সমাজে সমাদর লাভ করত না। গরিব বা নিম্নশ্রেণির মুসলমানরা লুঙ্গি ও টুপি পরত। অভিজাত মহিলারা কামিজ ও সালোয়ার পরত। তারা প্রসাধনী ব্যবহারে অভ্যস্ত ছিল না। তারা বাহু ও কবজিতে সোনার অলঙ্কার এবং আঙুলে সোনার আংটি পরত।
গ উদ্দীপকে উল্লিখিত পেশাজীবীদের সাথে মধ্যযুগের সমাজের পেশাজীবীদের মিল রয়েছে। মধ্যযুগে যেকোনো ব্যক্তি তার যোগ্যতা ও প্রতিভা দ্বারা রাষ্ট্রের মর্যাদাপূর্ণ পদে বসতে পারতেন। এক্ষেত্রে সুলতান গিয়াসউদ্দিন ইওজ খিলজি ও সুবেদার মুর্শীদ কুলী খানের দৃষ্টান্ত উল্লেখযোগ্য। অবশ্য পরবর্তী সময়ে এ নিয়মের ব্যতিক্রম ঘটে। উত্তরাধিকারসূত্রে মর্যাদাপূর্ণ সরকারি পদ লাভের নীতি প্রচলিত হয়। এ যুগে সামরিক ও বিচার বিভাগের উচ্চপদস্থ কর্মচারীদের নিয়ে সরকারি অভিজাত শ্রেণি গড়ে উঠেছিল। নিম্নশ্রেণির সরকারি কর্মচারীদের নিয়ে মধ্যবিত্ত শ্রেণির সৃষ্টি হয়। উদ্দীপকে মি. একুনো বাংলাদেশের সামরিক ও বিচার বিভাগের উচ্চ পদস্থ অনেক কর্মচারীর সাথে সাক্ষাৎ করেন। আবার তার ডাক্তার, উকিল, কৃষক, তাঁতি, গায়ক, কবি, লেখকসহ বিভিন্ন পেশার লোকের সাথে পরিচয় ঘটে। মধ্যযগেও কৃষক, তাঁতি এবং বিভিন্ন শ্রমিকদের নিয়ে তৃতীয় শ্রেণি গঠিত ছিল। কৃষকদের অধিকাংশই ছিল হিন্দু। কতকগুলো পেশা মুসলমানদের জন্য একচেটিয়া ছিল। সুতরাং উদ্দীপকে উল্লিখিত পেশাজীবীদের সাথে মধ্যযুগের পেশাজীবীদের মিল বিদ্যমান।
ঘ মধ্যযুগে বাংলার অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির মূল উৎস ছিল কৃষি। স্বাভাবিকভাবেই কৃষি ছিল একটি সম্মানজনক পেশা। উদ্দীপকে দেখা যায় মি. চুন একুনো বাংলাদেশে এক কৃষকের বাড়ি বেড়াতে গিয়ে কৃষকের গোলাভরা ধান, গোয়ালভরা গরু, পুকুরভরা মাছ দেখে অভিভ‚ত হন। মধ্যযুগে বাংলার প্রতিটি কৃষকের ঘর ছিল এমনই। চাষাবাদ পদ্ধতি সে সময় অনুন্নত থাকলেও কৃষি ফলনের প্রাচুর্য ছিল। নদীমাতৃক বাংলার ভ‚মি ছিল প্রকৃতির অকৃপণ আশীর্বাদে পরিপুষ্ট। কৃষিভ‚মি ছিল অস্বাভাবিক উর্বর। মধ্যযুগে শিল্পের প্রসারও ঘটেছিল কৃষিকে ভিত্তি করেই সেসময় পাট ও বস্ত্রশিল্পের প্রসার সম্পূর্ণরূপে কৃষির ওপর নির্ভরশীল ছিল। তাই মধ্যযুগে কৃষি ছিল একটি সম্মানজনক পেশা।
প্রশ্ন- ৬  মধ্যযুগের শিক্ষা ব্যবস্থা

লোকমান সাহেব একজন শিক্ষিত ও ধনাঢ্য ব্যক্তি। এলাকার ছেলেমেয়েদের শিক্ষার জন্য তিনি তার গ্রামের বাড়ির বৈঠকখানায় একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। সকাল বেলায় মসজিদের ইমাম সাহেব উক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মুসলমান শিক্ষার্থীদের শিক্ষাদান করেন এবং বিকেলে গুরু হিন্দু শিক্ষার্থীদের শিক্ষাদান করেন। পাঠশালায় হিন্দু বালক-বালিকারা একত্রে শিক্ষা লাভ করে। এসব শিক্ষার্থীদের মধ্যে থেকে অনেকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে ওঠে।
[ইস্পাহানি পাবলিক স্কুল ও কলেজ কুমিল্লা সেনানিবাস]
ক. ‘গেরু’ কী? ১
খ. বাংলার স্থাপত্য শিল্পে মুঘলদের অবদান ব্যাখ্যা কর। ২
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত শিক্ষার সাথে বাংলার কোন যুগের শিক্ষা ব্যবস্থার মিল রয়েছে? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. উক্ত যুগে উচ্চ শিক্ষাব্যবস্থা বিশ্লেষণ কর। ৪

ক ‘গেরু’ মধ্যযুগের মুসলমান সমাজে ছোট ছেলেমেয়েদের মাঝে প্রচলিত একটি খেলা।
খ মুঘল আমলে বাংলার শাসকগণ শিল্পকলার ক্ষেত্রে এক বিস্ময়কর অবদান রেখে গেছেন। আজও বাংলার বহু স্থানে মুঘল শাসকগণের শিল্প প্রীতির নিদর্শন বদ্যমান রয়েছে। তাদের পৃষ্ঠপোষকতায় বহুসংখ্যক মসজিদ, সমাধি ভবন, স্মৃতিসৌধ, মাজার, দুর্গ, স্তম্ভ ও তোরণ নির্মিত হয়েছিল। স্থাপত্য শিল্পের বিকাশের জন্য এ যুগকে বাংলায় মুঘলদের ‘স্বর্ণযুগ’ হিসেবে অভিহিত করা হয়। মুঘল যুগের স্থাপত্য শিল্পের ডিজাইন ও সৌন্দর্য অন্য যুগের চেয়ে আলাদা ছিল।
গ উদ্দীপকে উল্লিখিত শিক্ষার সাথে বাংলার মধ্যযুগের শিক্ষাব্যবস্থার মিল রয়েছে। মধ্যযুগে মুসলমানদের শাসনব্যবস্থায় হিন্দু সমাজের সকল শ্রেণির জন্য শিক্ষার দ্বার উন্মুক্ত হয়। পাঠশালায় হিন্দু বালক-বালিকারা প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ করত। গুরুর আবাসস্থল কিংবা বিত্তবানদের গৃহে পাঠশালা বসত। কখনও কখনও একই ঘরের চালার নিচে মক্তব ও পাঠশালা বসত। সকালে মুন্সী মক্তবের শিক্ষার্থীদের এবং বিকালে গুরু তার ছাত্রদের পাঠশালায় শিক্ষা দান করতেন। উদ্দীপকে এমনই একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কথা বলা হয়েছে। উপরšুÍ উদ্দীপকে ধনাঢ্য লোকমান সাহেব তার বাড়ির বৈঠকখানায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। মধ্যযুগেও বিত্তবান লোকেরা পাঠশালার ব্যয়ভার গ্রহণ করতেন। হিন্দু বালক-বালিকারা একত্রে পাঠশালায় শিক্ষা গ্রহণ করত। সুতরাং উদ্দীপকে উল্লিখিত শিক্ষার সাথে বাংলার মধ্যযুগের শিক্ষাব্যবস্থার মিল রয়েছে।
ঘ মধ্যযুগে বাংলার মুসলমান শাসন কেবল রাজনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রেই নয়, শিক্ষার ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছিল। বাংলায় মুসলমান শাসনকালে শিক্ষার দ্বার হিন্দু-মুসলমান সবার জন্য উন্মুক্ত ছিল। শেখদের খানকাহ ও উলেমাদের গৃহ শিক্ষার কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠেছিল। মুসলমান শাসনের সময় বাংলার সর্বত্র অসংখ্য মসজিদ নির্মিত হয়েছিল। এসব মসজিদের সঙ্গেই মক্তব ও মাদ্রাসা ছিল। মক্তব ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করত। বালক-বালিকারা একত্রে মক্তব ও পাঠশালায় লেখাপড়া করত। প্রাথমিক শিক্ষা সকল মুসলমান বালক-বালিকার জন্য বাধ্যতামূলক ছিল। স্ত্রী শিক্ষার বিশেষ প্রচলন ছিল না। মাধ্যমিক শিক্ষা গ্রহণও মেয়েদের জন্য বাধ্যতামূলক ছিল না। ফলে সাধারণ মুসলমান মেয়েরা উচ্চশিক্ষা গ্রহণ হতে বঞ্চিত ছিল। ৬ বছর পর্যন্ত পাঠশালায় শিক্ষা গ্রহণ করতে হতো। উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের জন্য ‘টোল’ ছিল। সংস্কৃত ভাষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীকে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করতে হতো। সংস্কৃত সাহিত্য চর্চার জন্য নবদ্বীপ, বর্ধমান প্রভৃতি স্থানের নাম উল্লেখযোগ্য ছিল। অনেক মহিলা এ যুগে শিক্ষা ও সংস্কৃতি চর্চার ক্ষেত্রে নিজেদের কৃতিত্ব প্রদর্শন করেছেন। ব্রা‏হ্মণদের মধ্যে একটি বিশেষ শ্রেণি সর্বদা নিজেদের জ্যোতিষশাস্ত্র ও জ্যোতির্বিজ্ঞান চর্চায় নিয়োজিত থাকতেন।
 মাস্টার ট্রেইনার প্রণীত সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন- ৭  মধ্যযুগের বাংলায় মুসলমানদের সমাজব্যবস্থা

রাজীব সাহেব মধ্যযুগের মানুষের অবস্থা ও সামাজিক মর্যাদা নিয়ে চিন্তাভাবনা করছেন। তিনি সমাজের বিভিন্ন মানুষকে অর্থনৈতিক ও সামাজিক মর্যাদার ভিত্তিতে বিশ্লেষণ করলেন। এরপর তিনি অবলোকন করলেন যে, সমাজে তিন শ্রেণির মানুষ দেখা যায়। এগুলো হলো ১. উচ্চ, ২. মধ্য ও ৩. নিম্ন।
ক. মধ্যযুগে ব্রাহ্মণদের মধ্যে যারা চিকিৎসা পেশায় নিয়োজিত ছিল তাদের কী বলে? ১
খ. মধ্যযুগে মুসলমান পুরুষদের পোশাক কেমন ছিল? ২
গ. রাজিব সাহেবের চিন্তাধারা অনুযায়ী মধ্যযুগের বাংলায় মুসলিম সমাজের মানুষের অবস্থান নির্ণয় কর। ৩
ঘ. রাজিব সাহেবের শ্রেণিবিন্যাসে এক নম্বর স্তরের মানুষের সামাজিক মর্যাদা ছিল বেশি। পাঠ্যপুস্তকের আলোকে বিশ্লেষণ কর। ৪

ক মধ্যযুগে ব্রাহ্মণদের মধ্যে যারা চিকিৎসা পেশায় নিয়োজিত ছিল তাদের “ বৈদ্য বা কবিরাজ” বলা হতো।
খ মধ্যযুগে অভিজাত মুসলমানগণ পায়জামা ও গোল গলাবন্ধসহ জামা পরতেন। তাদের মাথায় থাকত পাগড়ি, পায়ে থাকত রেশম ও সোনার সুতার কাজ করা চামড়ার জুতা। তারা তাদের আঙুলে অনেকগুলো মণিমুক্তা বসানো আংটি ব্যবহার করতেন। মোল­া ও মৌলভীরা পায়জামা, জামা এবং টুপি ব্যবহার করতেন। টুপি ছাড়া মুসলমানগণ সমাজে সমাদর পেতেন না। গরিব বা নিম্নশ্রেণির মুসলমানগণ লুঙ্গি ও টুপি পরত।
গ উদ্দীপকের রাজিব সাহেবের চিন্তাধারায় দেখা যায়, মধ্যযুগের বাংলায় মুসলমান সমাজব্যবস্থায় উচ্চ, মধ্যম ও নিম্ন-এ তিনটি পৃথক শ্রেণির অস্তিত্ব ছিল। সৈয়দ, উলামা প্রমুখ ব্যক্তিবর্গ সমাজে যথেষ্ট প্রভাবশালী ছিলেন। ধর্মপরায়ণ ও শিক্ষিত ব্যক্তিগণকে জনগণ যথেষ্ট শ্রদ্ধা করত। মুসলমান শাসকগণও তাদের বিশেষ শ্রদ্ধা করতেন। তাদের প্রতি শ্রদ্ধার নিদর্শন হিসেবে ভাতা এবং জমি বরাদ্দ করা হতো। উলেমাগণ ইসলামি শিক্ষায় অভিজ্ঞ ছিলেন। তাদের মধ্য হতে কাজী, সদর এবং অন্যান্য ধর্মবিষয়ক কর্মচারী নিয়োগ করা হতো। শেখগণ ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক বিষয় জনগণকে শিক্ষা দিতেন। নিম্নশ্রেণির সরকারি কর্মচারীদের নিয়ে মধ্যবিত্ত শ্রেণির সৃষ্টি হয়। এ যুগের নিম্নশ্রেণির মধ্যে ছিল কৃষক, তাঁতি এবং বিভিন্ন শ্রমিক প্রভৃতি। কতকগুলো পেশা মুসলমানদের জন্য একচেটিয়া ছিল।
ঘ রাজিব সাহেব অর্থনৈতিক ও সামাজিক মর্যাদার ভিত্তিতে মধ্যযুগের মানুষের অবস্থান শ্রেণিবিন্যাস করেন। মধ্যযুগে মুসলিম সমাজে এক নম্বর স্তরে ছিল উচ্চ শ্রেণির মানুষ, তাদের সামাজিক মর্যাদা ছিল বেশি। সৈয়দ, উলামা প্রমুখ ব্যক্তিবর্গ সমাজে যথেষ্ট প্রভাবশালী ছিলেন। ধর্মপরায়ণ ও শিক্ষিত ব্যক্তিদিগকে জনগণ যথেষ্ট শ্রদ্ধা করত। জনসাধারণ ছাড়া মুসলমান শাসকগণ তাদের বিশেষ শ্রদ্ধা করতেন। উলামা, শেখ প্রমুখ ধর্মপরায়ণ ব্যক্তিবর্গ ছাড়াও উচ্চ শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত অন্যান্য ব্যক্তিবর্গ বিলাসিতা ও প্রাচুর্যের মধ্যে জীবন কাটাতেন। পোশাক-পরিচ্ছদ, আহার, এবং আমোদ-প্রমোদে তারা ছিলেন অতিশয় বিলাসী। অভিজাত ব্যক্তিরা মণিমুক্তা খচিত আংটি ব্যবহার করতেন। অভিজাত ব্যক্তিদের প্রায় সবাই মদ পান করতেন। বিত্তশালী মুসলমানেরা মাঝে মাঝে সামাজিক উৎসবের আয়োজন করতেন। উপরিউক্ত আলোচনায় প্রতীয়মান হয় যে, মধ্যযুগে মুসলিম সমাজে এক নম্বর স্তরের সামাজিক মর্যাদা ছিল বেশি-কথাটি সঠিক ও যথাযথ।

প্রশ্ন- ৮  মধ্যযুগের মুসলিম শাসনামলের বর্ণনা

তানিয়া ও মুনিয়া দুই বোন। তাদের মামা বিদেশ থেকে গয়না, কাপড় ও শৌখিন জিনিসের আমদানি করে। পাশাপাশি চা, চিংড়ি ও কাপড় বিদেশে রপ্তানি করে। তানিয়ার জন্মদিনে মুনিয়া ও তানিয়া বাংলার ঐতিহ্যবাহী শাড়ি পরিধান করেছে। খাবারের তালিকায় রাখা হয়েছে পোলাও, রোস্ট, কাবাব ও মিষ্টি জাতীয় খাবার।
ক. আদিনা মসজিদ কে নির্মাণ করেন? ১
খ. মুসলিম শাসনামলে বাংলার শিল্পব্যবস্থা কেমন ছিল? ২
গ. উদ্দীপকের তানিয়া ও মুনিয়ার ঐতিহ্যবাহী শাড়ি মুসলিম শাসনামলের কোন শিল্পকে নির্দেশ করে? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. উদ্দীপকের খাবার ও পোশাকে মধ্যযুগের কোন শাসনামলের বৈশিষ্ট্য ফুটে উঠেছে। মতামত দাও। ৪

ক সুলতান সিকান্দার শাহ আদিনা মসজিদ নির্মাণ করেন।
খ বঙ্গের মাটিতে কৃষিজাত দ্রব্যের প্রাচুর্য ছিল। ফলে উদ্বৃত্ত বিভিন্ন পণ্য বিদেশে রপ্তানি করা হতো। এ ব্যবসায়িক তৎপরতা কালক্রমে শিল্পের ক্ষেত্রেও প্রসারিত হয়। মুসলমান শাসনকালে বঙ্গে বস্ত্রশিল্প, চিনিশিল্প, নৌকা নির্মাণ, কারখানা ইত্যাদি গড়ে উঠেছিল।
গ উদ্দীপকের তানিয়া ও মুনিয়ার ঐতিহ্যবাহী শাড়ি বাংলার মধ্যযুগের মুসলিম শাসনামলের বস্ত্র শিল্পকে নির্দেশ করে। মধ্যযুগের মুসলিম শাসনামলে অর্থনীতির গুর্ত্বুপূর্ণ উৎস ছিল শিল্পজাত দ্রব্য। বস্ত্রশিল্পে বাংলার অগ্রগতি ছিল সবিশেষ উল্লেখযোগ্য। এখানকার নির্মিত বস্ত্রগুলো গুণ ও মানের বিচারে যথেষ্ট উন্নত ছিল। তাই বিদেশে এগুলোর প্রচুর চাহিদা ছিল। নিজেদের ব্যবহারের জন্য রঙিন কাপড় এবং বিদেশে রপ্তানি করার জন্য সাদা কাপড় এখানে তৈরি করা হতো। ঢাকা ছিল মসলিন নামক বিশ্বখ্যাত সু² বস্ত্র শিল্পের প্রধান প্রাণকেন্দ্র। ইউরোপে এর প্রচুর চাহিদা ছিল। এ বস্ত্র এত সূ² ছিল যে ২০ গজ মসলিন একটি নস্যির কৌটায় ভরে রাখা যেত। পাটের ও রেশমের তৈরি বস্ত্রেও বঙ্গের কৃতিত্ব ছিল উল্লেখযোগ্য।
ঘ উদ্দীপকে মধ্যযুগের মুসলিম শাসন আমলের খাবার ও পোশাকের বৈশিষ্ট্য ফুটে উঠেছে। মুঘল যুগে জমিদারদের মুক্তা বসানো ঝলমলে পোশাক এবং ধনী ব্যক্তিদের পছন্দের কাপড় হিসেবে মসলিন কাপড় শোভা পেত। এছাড়া জামদানি, হাম্মান, তানজিক ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের কাপড় তৈরি হতো। বিয়েতে খাবার হিসেবে রোস্ট, পোলাও, রেজালা, কাবাব ও মিষ্টিজাতীয় খাবার খাওয়ার কথা উলে­খ আছে। যা মোগলাই বা মুঘল খাবার হিসেবে পরিচিত। মুঘল আমলে বাঙালির মাছ, ভাতের পাশাপাশি কাবাব, রেজালা, কোর্মা ইত্যাদি খাবার জায়গা করে নিয়েছিল। অবশেষে বলা যায়, উদ্দীপকে উলি­খিত খাবার ও পোশাকের বৈশিষ্ট্যে মধ্যযুগের মুঘল আমলের চিত্র ফুটে উঠেছে।
প্রশ্ন- ৯  মধ্যযুগে কৃষকের জীবন ব্যবস্থা

আব্দুল্লাহ গোপালপুর গ্রামের একজন কৃষক। গোপালপুর গ্রামের অধিকাংশ মানুষ কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে। তারা কৃষিপণ্য বিক্রি করে জীবন ধারণ করে। কিন্তু তারা পণ্যের ন্যায্যমূল্য পান না। আবদুল্লাহ বঞ্চিত জীবনযাপন করলেও সে গর্ব অনুভব করে যে, একসময় বাংলার মানুষের উৎপাদিত কৃষিজাত দ্রব্য বিশ্বে প্রসিদ্ধ ছিল।
ক. বাংলার অর্থনীতির সমৃদ্ধির মূল ভিত্তি কী? ১
খ. মধ্যযুগে বাংলার আখের খ্যাতি ইউরোপে ছড়িয়ে পড়ছিল কেন? ২
গ. আবদুল্লাহর মতো কৃষকদের সাথে মধ্যযুগের কৃষকদের ভিন্নতা বর্ণনা কর। ৩
ঘ. আবদুল্লাহর গর্বিত হওয়ার কারণ বিশ্লেষণ কর। ৪

ক বাংলার অর্থনীতির মূল ভিত্তি ছিল কৃষি।
খ মধ্যযুগে বাংলার যতগুলো পণ্য বিশ্ববাজারে ব্যাপক সমাদৃত ছিল তার মধ্যে আখ বিশেষ স্থান অধিকার করে আছে। বাংলার মাটি পূর্ব থেকেই উর্বর। লোকসংখ্যা কম হওয়ার কারণে জমির পরিমাণ অনেক বেশি ছিল। জমিতে আখের উপযোগী বিভিন্ন প্রাকৃতিক সার ব্যবহারের ফলে আখের ব্যাপক ফলন হতো। বাংলার আখ স্বাদ ও সুমিষ্ট ছিল। ফলে সমগ্র ইউরোপে এর সুনাম ছড়িয়ে পরে।
গ মধ্যযুগের কৃষকদের জীবন উদ্দীপকের বঞ্চিত কৃষক আবদুল্লাহ থেকে সম্পূর্ণই ভিন্ন প্রকৃতির ছিল। আমাদের সমাজ কৃষিভিত্তিক। কৃষিকাজে ৮০% লোক নিয়োজিত। কৃষকই আমাদের সমাজকে বাঁচিয়ে রেখেছে। কিন্তু এই কৃষকই তাদের পণ্যের ন্যায্যমূল্য পান না। যেমন : উদ্দীপকের কৃষক আবদুল্লাহ। সুবিধাভোগীদের কারণে আবদুল্লাহর মতো কৃষক মার খেয়ে যাচ্ছে। কিন্তু আমরা যদি মধ্যযুগে বাংলার কৃষক শ্রেণির দিকে তাকাই তাহলে আমরা দেখি সমাজের সকল স্তরে কৃষকরা ছিল স্বাবলম্বী ও সুখী। কেননা তখন মধ্যস্বত্তভোগীদের দৌরাত্ম্য ছিল না। কৃষকরা তাদের পণ্যের ন্যায্যমূল্য পেতেন। তখনকার সময়ে মুসলিম শাসকদের সুযোগ্য শাসনের ফলে সমাজ হয়ে উঠেছিল আনন্দময়। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় কৃষকদের মাঝে কৃষিপণ্য সামগ্রী বিতরণ করা হতো। জমিদাররা নামেমাত্র খাজনা নিয়ে তাদের জমি চাষের অনুমতি দিত। এক কথায় আমরা বলতে পারি তৎকালীন সমাজে কৃষকেরা সুখে শান্তিতে জীবন নির্বাহ করত।
ঘ আবদুল্লাহ গর্ব অনুভব করে সে সময়ের কথা স্মরণ করে যখন বাংলার কৃষিজাত দ্রব্য বিশ্বব্যাপী প্রসিদ্ধ ছিল। মধ্যযুগের মুসলিম শাসনামলে সে সময়টিতে বাংলায় কৃষি পণ্যের প্রাচুর্য ছিল। কৃষিজাত পণ্যের মধ্যে চাল, তামাক, সুপারি, পাট, ফল ইত্যাদি রপ্তানি হতো। কৃষকেরা তখন নিজেদের চাহিদা মিটিয়েও বাইরে রপ্তানির জন্য উৎপাদন করত। যা ছিল বাংলার কৃষকের গর্ব। উদ্দীপকের আবদুল্লাহ বর্তমান কালের হয়েও এদেশে মধ্যযুগের কৃষকদের রপ্তানিমুখী উৎপাদনে গর্বিত।

প্রশ্ন- ১০  মুসলমানদের সাংস্কৃতিক জীবন

বশীর নিজেকে সংস্কৃতবান মনে করেন। বশীর ও তার বন্ধুরা গানবাজনা করেন। মাঝে মাঝে গানের জলসা করেন। বিভিন্ন ধরনের খেলা খেলতে ভালোবাসেন। তারা মাঝেমধ্যে গোল্লাছুট, ফুটবল, হাডুডু খেলার আয়োজন করে। বন্ধু মহলে তাকে নিয়ে অনেক কথা হয় কিন্তু তিনি মনে করেন আধুনিক হতে হলে এসবের দরকার আছে। তার নতুন কিছু বন্ধু রয়েছে যারা ধর্মান্তরিত মুসলমান। তাদের সাথেও বশীরের খুব ভাব।
ক. মধ্যযুগে মুসলিম বাংলার সমাজজীবনে সর্বোচ্চ মর্যাদার অধিকারী কে ছিলেন? ১
খ. মধ্যযুগে মানুষের খাদ্যাভ্যাস কেমন ছিল? ২
গ. বশীর ও তার বন্ধুদের মাঝে কোন যুগের মুসলমানদের বিনোদনব্যবস্থা ধরা পড়ে? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. বশির ও তার নতুন বন্ধুদের মতো মধ্যযুগে মুসলমানদের মধ্যে সদ্ভাব বজায় ছিলÑ কথাটির যথার্থতা বিশ্লেষণ কর। ৪

ক মধ্যযুগে বাংলায় মুসলমান শাসনকালে রাষ্ট্রের সর্বময় কর্তা হিসেবে শাসক ছিলেন সমাজজীবনে সর্বোচ্চ মর্যাদার অধিকারী।
খ মধ্যযুগে বাঙালিরা ভাত, মাছ, শাকসবজি খেত। এছাড়া খাদ্য তালিকায় ছিল মাছ, মাংস, দুধ, দধি, ঘৃত ক্ষীর ইত্যাদি। চাল হতে প্রস্তুত নানাপ্রকার পিঠা ও জনপ্রিয় মুখরোচক খাবার ছিল। বাঙালি ব্রাহ্মণরা আমিষ খেত। মধ্যযুগে হিন্দু-মুসলমানদের খাদ্য তালিকার মধ্যে তেমন কোনো পার্থক্য ছিল না। তবে গো-মাংস ভক্ষণ হিন্দুদের নিকট চরম অধর্ম হিসেবে বিবেচিত হতো।
গ বশীর ও তার বন্ধুদের মাঝে মধ্যযুগের মুসলমানদের বিনোদন ব্যবস্থা ধরা পড়ে। মধ্যযুগে অভিজাত মুসলমানদের মধ্যে গানবাজনা ও বিভিন্ন আমোদ-প্রমোদের ব্যবস্থা প্রচলন ছিল। এ উদ্দেশ্যে তারা বিভিন্ন সমাবেশেরও আয়োজন করতেন। উদ্দীপকে বশীর ও তার বন্ধুরাও গানের জলসা করে। মধ্যযুগে অভিজাত ব্যক্তিগণ চৌগান খেলতে পছন্দ করতেন। ছোট ছেলে-মেয়েরা ‘গেরু’ নামক খেলা খেলতে ভালোবাসত। সাঁতার, নৌকাবাইচ, কুস্তি খেলা, বাজিধরা, জুয়াখেলা প্রভৃতি সমাজে প্রচলিত ছিল। বাঘের খেলা দেখেও জনগণ বিশেষ আনন্দ লাভ করত। গানের প্রতিযোগিতা ও লাঠিখেলা গ্রাম বাংলার বিনোদনের একটি অন্যতম মাধ্যম। গ্রামীণ যাত্রাপালাও ছিল একটি বিনোদনের মাধ্যম। গোল­াছুট, হাডুডু, বল খেলার আয়োজনও করা হতো। বশীর ও তার বন্ধুরাও বিভিন্ন খেলা খেলে এবং আয়োজন করে।
মোটকথা আমরা বলতে পারি মধ্যযুগে মুসলমানদের যেসব আনন্দ বিনোদনের ব্যবস্থা ছিল তা বশীর ও তার বন্ধুদের মাঝে ফুটে উঠেছে।
ঘ উদ্দীপকে বশীর ও তার নতুন বন্ধুদের মতো মধ্যযুগে মুসলমানদের মধ্যে সদ্ভাব বজায় ছিল এ কথাটি যথার্থ। বাংলায় ইসলাম বিস্তৃতির সাথে সাথে মুসলমান সমাজেও দুটি পৃথক শ্রেণি লক্ষ করা যায়। একটি বিদেশ থেকে আগত মুসলমান, অন্যটি স্থানীয় ধর্মান্তরিত মুসলমান। বিদেশ থেকে আগত মুসলমানগণ ছিলেন আরব ও পারস্যের লোক। স্থানীয় হিন্দুরা ইসলামধর্ম গ্রহণ করলেও পূর্ববর্তী ধর্মের কৃষ্টি ও রীতিনীতি হতে তারা খুব একটা পৃথক ছিল না। বিদেশি ও স্থানীয় মুসলমানগণের মধ্যে কৃষ্টি ও রীতিনীতির পার্থক্য থাকা সত্তে¡ও উভয়ের মধ্যে কোনো বিরোধ দেখা দেয়নি। যেমন : উদ্দীপকে বশীরের নতুন বন্ধুরাও ধর্মান্তরিত মুসলমান যাদের সাথে বশীরের খুব ভাব। তবে মধ্যযুগে মুসলমান শাসকগণের উদারতা এবং স্থানীয় কৃষ্টি সংস্কৃতির প্রতি তাদের পৃষ্ঠপোষকতাই সবার মাঝে সম্ভাবের কারণ ছিল। উপরিউক্ত আলোচনায় প্রতীয়মান হয় যে বশীর ও তার নতুন বন্ধুদের মতো মধ্যযুগে মুসলমানদের মধ্যে সদ্ভাব বজায় ছিল, কথাটি সঠিক ও যৌক্তিক।

প্রশ্ন- ১১  অর্থনৈতিক অবস্থা ও ব্যবসা বাণিজ্য

আসলাম সাহেব একজন শিল্পপতি। অনেক ধরনের ব্যবসার মাধ্যমে তিনি পোশাক শিল্পের সাথেও জড়িত। এসব গার্মেন্টসের পোশাক সারা পৃথিবীতে রপ্তানি হয়। ফলে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন হয়। তিনি মনে করেন, পোশাক শিল্পের এই ধারাবাহিকতা পূর্ব থেকেই চলে আসছে।
ক. মধ্যযুগে ব্যবসা-বাণিজ্যের সিংহভাগই কী ছিল? ১
খ. মধ্যযুগে বাংলার চাষাবাদ পদ্ধতি কেমন ছিল? ২
গ. পোশাক শিল্পের ধারাবাহিকতা বিষয়ে আসলাম সাহেবের ধারণাটি বর্ণনা কর। ৩
ঘ. আসলাম সাহেবের গার্মেন্টসের মতো প্রাচীন বাংলার বাণিজ্য ছিল বেশিরভাগ রপ্তানিমুখীÑ তুমি কি একমত? যুক্তি দাও। ৪

ক মধ্যযুগে ব্যবসা-বাণিজ্যের সিংহভাগই ছিল রপ্তানি।
খ মধ্যযুগে কৃষি ফলনের প্রাচুর্য থাকলেও এসময়ের চাষপদ্ধতি ছিল অনুন্নত। আধুনিক সময়ের মতো পানি সেচব্যবস্থা তখন ছিল না। কৃষককে অধিকাংশ সময়ই সেচের জন্য বৃষ্টির ওপর নির্ভর করতে হতো। খরার বিরুদ্ধে তাদের করার কিছুই ছিল না। তবুও বাংলার অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির মূল উৎস ছিল কৃষি।
গ আসলাম সাহেব মনে করেন, রপ্তানিমুখী পোশাক শিল্পের ধারাবাহিকতা মধ্যযুগ থেকে চলে আসছে। বস্ত্রশিল্পে বাংলাদেশের সুনাম সেই মধ্যযুগ থেকেই চলে আসছে। মধ্যযুগে বস্ত্রশিল্পে বাংলার অগ্রগতি ছিল উলে­খযোগ্য। এখানকার নির্মিত বস্ত্রগুলো গুণ ও মানের বিচারে যথেষ্ট উন্নত ছিল। তাই বিদেশে এগুলোর ব্যাপক চাহিদা ছিল। এখানে নিজেদের ব্যবহারের জন্য রঙিন কাপড় এবং বিদেশে রপ্তানি করার জন্য সাদাকাপড় তৈরি করা হতো। আসলাম সাহেবও বিদেশে পোশাক রপ্তানি করেন। ঢাকা ছিল মসলিন নামক বিশ্ব খ্যাত সূ² বস্ত্র শিল্পের প্রধান প্রাণকেন্দ্র। ইউরোপে এর প্রচুর চাহিদা ছিল। এ বস্ত্র এত সূ² ছিল যে ২০ গজ মসলিন একটি নস্যের ডিব্বায় ভরে রাখা যেত। পাটের ও রেশমের তৈরি বস্ত্রেও বঙ্গের কৃতিত্ব ছিল উলে­খযোগ্য। আর বস্ত্রের এ উৎপাদন ছিল রপ্তানিমুখী। তাই আসলাম সাহেবের ধারণাকে যথার্থ বলা যায় যে, রপ্তানিমুখী পোশাক শিল্পের ধারাবাহিকতা মধ্যযুগ থেকেই চলে আসছে।
ঘ আসলাম সাহেবের গার্মেন্টসের মতো প্রাচীন বাংলার বাণিজ্য ছিল বেশিরভাগ রপ্তানিমুখী। এ বিষয়ে আমি একমত। আসলাম সাহেব গার্মেন্টসের তৈরি পোশাক ইউরোপে রপ্তানি করেন। তার গার্মেন্টসের তৈরি পোশাকের সুখ্যাতি রয়েছে সেসব দেশে। তেমনি প্রাচীন বাংলার অর্থনীতি ছিল বেশির ভাগ রপ্তানিমুখী। বাংলার কৃষি ও শিল্পপণ্যের প্রাচুর্য এবং বিদেশে এগুলোর ব্যাপক চাহিদার ফলে বিদেশের সাথে বাংলার বাণিজ্যিক তৎপরতা মুসলমান শাসন আমলে অভ‚তপূর্ব প্রসার লাভ করেছিল। বাংলার রপ্তানি পণ্যের মধ্যে উলে­খযোগ্য ছিল সুতি কাপড়, মসলিন, রেশমি বস্ত্র, চাল, চিনি, গুড়, আদা, মরিচ ইত্যাদি। কৃষিজাত পণ্যের মধ্যে তামাক, সুপারি, পাট, ফল ইত্যাদি রপ্তানি হতো। কৃষিজ ও শিল্পজাত দ্রব্য ছাড়াও বাংলাদেশ হতে লবণ, গালা, আফিম, নানাপ্রকার মশলা, ওষুধ ইত্যাদি ভারতবর্ষের বিভিন্ন স্থানে এবং বিভিন্ন দেশে প্রেরিত হতো। মোটকথা, বাংলার ব্যবসা-বাণিজ্যের সিংহভাগই ছিল রপ্তানিমুখী।

 জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর 
প্রশ্ন \ ১ \ কার আমলে বেগমবাজার মসজিদ নির্মাণ হয়?
উত্তর : মুর্শিদ কুলী খানের আমলে বেগম বাজার মসজিদ নির্মিত হয়।
প্রশ্ন \ ২ \ কত সালে শায়েস্তা খান হোসেনী দালান নির্মাণ করেন?
উত্তর : ১৬৭৬ সালে শায়েস্তা খান হোসেনী দালান নির্মাণ করেন।
প্রশ্ন \ ৩ \ কত সালে শায়েস্তা খান ছোট কাটরা নির্মাণ করেন?
উত্তর : ১৬৬৩ সালে শায়েস্তা খান ছোট কাটরা নির্মাণ করেন।
প্রশ্ন \ ৪ \ লালবাগের শাহী মসজিদ কার আমলে তৈরি হয়?
উত্তর : সুবাদার শাহজাদা আজমের আমলে লালবাগের শাহী মসজিদ নির্মিত হয়।
প্রশ্ন \ ৫ \ বাবা আদমের মসজিদ নির্মিত হয় কত সালে?
উত্তর : ১৪৮৩ সালে বাবা আদমের মসজিদ নির্মিত হয়।
প্রশ্ন \ ৬ \ “বারদুয়ারী মসজিদ”-এর অপর নাম কী?
উত্তর : বারদুয়ারী মসজিদের অপর নাম সোনা মসজিদ।
প্রশ্ন \ ৭ \ পাণ্ডুয়ার একলাখী মসজিদ কার আমলে নির্মিত হয়?
উত্তর : সুলতান জালালউদ্দীনের শাসন আমলে পাণ্ডুয়ার একলাখী মসজিদ নির্মিত হয়।
প্রশ্ন \ ৮ \ পাঁচটি দরগাহ ও পাঁচটি মসজিদ কার কবরের অতি নিকট?
উত্তর : পাঁচটি দরগাহ ও পাঁচটি মসজিদ গিয়াসউদ্দিন আযম শাহের কবরের অতি নিকট।
প্রশ্ন \ ৯ \ “আদিনা মসজিদ” কার আমলে নির্মিত হয়?
উত্তর : সুলতান সিকান্দার শাহের আমলে আদিনা মসজিদ নির্মিত হয়।
প্রশ্ন \ ১০ \ মুসলমান শাসনামলে বাংলায় সর্বত্র অসংখ্য কী নির্মিত হয়েছিল?
উত্তর : মুসলমান শাসনামলে বাংলার সর্বত্র অসংখ্য মসজিদ নির্মিত হয়েছিল।
প্রশ্ন \ ১১ \ মুঘল আমলে শিক্ষার দ্বার কাদের জন্য উন্মুক্ত ছিল?
উত্তর : মুঘল আমলে শিক্ষার দ্বার হিন্দু-মুসলমান সকলের জন্য উন্মুক্ত ছিল।
প্রশ্ন \ ১২ \ মুসলমান যুগে কোন প্রতিবেশীর সাথে বাংলার রাজনৈতিক সম্পর্ক ছিল?
উত্তর : মুসলমান যুগে প্রতিবেশী আরাকানের সাথে বাংলার রাজনৈতিক সম্পর্ক ছিল।
প্রশ্ন \ ১৩ \ মধ্যযুগে বাংলার মুসলমান সমাজে কী গড়ে উঠেছিল?
উত্তর : মধ্যযুগে বাংলার মুসলমান সমাজে অভিজাত স¤প্রদায় গড়ে উঠেছিল।
প্রশ্ন \ ১৪ \ মধ্যযুগে বাংলার মুসলমান সমাজে কয়টি প্রধান ধর্মীয় উৎসব পালিত হতো?
উত্তর : মধ্যযুগে বাংলার মুসলমান সমাজের দুটি প্রধান ধর্মীয় উৎসব (ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা) পালিত হতো।
প্রশ্ন \ ১৫ \ মধ্যযুগে নবদম্পতিদের জন্য কিসের ব্যবস্থা করা হতো?
উত্তর : মধ্যযুগে নবদম্পতিদের জন্য বাসর-শয্যার ব্যবস্থা করা হতো।
প্রশ্ন \ ১৬ \ মধ্যযুগে কৃষক, তাঁতি এবং বিভিন্ন শ্রমিকদের নিয়ে কোন শ্রেণি গঠিত হয়?
উত্তর : মধ্যযুগে কৃষক, তাঁতি এবং বিভিন্ন শ্রমিকদের নিয়ে তৃতীয় শ্রেণি গঠিত হয়।
প্রশ্ন \ ১৭ \ বাংলা সাহিত্যে সংগীত বিদ্যার ওপর রচিত প্রথম গ্রন্থের নাম কী?
উত্তর : বাংলা সাহিত্যে সংগীত বিদ্যার ওপর রচিত প্রথম গ্রন্থের নাম “রাগমালা”।
প্রশ্ন \ ১৮ \ “নীতিশাস্ত্র বার্তা” কে রচনা করেন?
উত্তর : “নীতিশাস্ত্র” কবি মোজাম্মেল হক রচনা করেন।
প্রশ্ন \ ১৯ \ বাংলা রামায়ণের প্রথম রচয়িতা কে?
উত্তর : বাংলা রামায়ণের প্রথম রচয়িতা কৃত্তিবাস।
প্রশ্ন \ ২০ \ মুসলমান শাসনামলে কোথায় সংস্কৃত সাহিত্যচর্চার সর্বপ্রথম কেন্দ্র ছিল?
উত্তর : মুসলমান শাসনামলে নবদ্বীপে সংস্কৃত সাহিত্যচর্চার সর্বপ্রথম কেন্দ্র ছিল।
প্রশ্ন \ ২১ \ মধ্যযুগে বাংলার অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির মূল উৎস কী ছিল?
উত্তর : মধ্যযুগে বাংলার অর্থনীতির সমৃদ্ধির মূল উৎস ছিল কৃষি।
প্রশ্ন \ ২২ \ মধ্যযুগে বাংলার রকমারি কিসের কথা জানা যায়?
উত্তর : মধ্যযুগে বাংলার রকমারি ক্ষুদ্রশিল্পের কথা জানা যায়।
প্রশ্ন \ ২৩ \ বাংলার ব্যবসা-বাণিজ্যের সিংহভাগ কী ছিল?
উত্তর : বাংলার ব্যবসা-বাণিজ্যের সিংহভাগ ছিল রপ্তানি।
প্রশ্ন \ ২৪ \ কোন নামাজে খুতবা পাঠ মুসলমান শাসকের একটি বিশেষ কর্তব্য ছিল?
উত্তর : জুমা ও ঈদের নামাজে খুতবা পাঠ মুসলমান শাসকের একটি বিশেষ কর্তব্য ছিল।
প্রশ্ন \ ২৫ \ মুসলমান শাসকগণ কোথায় বাস করত?
উত্তর : মুসলমান শাসকগণ জমকালো রাজপ্রাসাদে বাস করত।

 অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর 
প্রশ্ন \ ১ \ বড় সোনা মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছে কেন?
উত্তর : বড় সোনা মসজিদের অপর নাম বারদুয়ারী মসজিদ। এতে বৃহৎ বারটি দরজা ছিল। এ মসজিদে সোনালি রঙের গিলটি করা কারুকার্য ছিল। সম্ভবত এ জন্যই এটি সোনা মসজিদ নামে অভিহিত। এ মসজিদটি গৌড়ের বৃহত্তম মসজিদ। আসাম বিজয়কে স্মরণীয় করে রাখার জন্য হুসেন শাহ এ মসজিদটি নির্মাণ করেছিলেন।
প্রশ্ন \ ২ \ ছোট সোনা মসজিদ নির্মাণ সম্পর্কে ধারণা দাও।
উত্তর : গৌড় শহরের সর্ব দক্ষিণে বর্তমান ফিরুজাবাদ গ্রামে ছোট সোনা মসজিদ নির্মিত হয়েছিল। এ মসজিদটি আকারে ছোট ছিল। তবে এ মসজিদেরও সোনালি রঙের গিলটির কারুকার্য ছিল। সম্ভবত এ কারণেই এটি ছোট সোনা মসজিদ নামে পরিচিত। আলাউদ্দিন হুসেন শাহের আমলের জনৈক ওয়ালী মুহম্মদ এর নির্মাতা ছিলেন। এ মসজিদের পাশেই তার কবর রয়েছে।
প্রশ্ন \ ৩ \ একলাখী মসজিদের একলাখী নাম হলো কেন?
উত্তর : সুলতান জালালউদ্দিনের শাসনকালের উলে­খযোগ্য কীর্তি পাণ্ডুয়ার একলাখী মসজিদ। এর নির্মাণকাল ১৪১৮Ñ১৪২৩ সাল। প্রবাদ আছে যে, তখনকার দিনে একলাখ টাকা ব্যয়ে এটি নির্মাণ করা হয়েছিল। তাই এটি ‘একলাখী মসজিদ’ নামে পরিচিত হয়েছে।
প্রশ্ন \ ৪ \ মুসলমান শাসনামলে ফার্সী ভাষা রাষ্ট্রীয় মর্যাদা লাভ করেছিল কেন?
উত্তর : মুসলমান শাসনামলে নবাব ও মুসলমান অভিজাতবর্গ ফার্সী ভাষা ও সাহিত্যের উৎসাহদাতা ছিলেন। সরকারি চাকরি লাভের আশায় অনেক হিন্দু ফার্সী ভাষায় শিক্ষা গ্রহণ করতেন। তাদের অনেকেই এ ভাষায় বিশেষ ব্যুৎপত্তি অর্জন করেছিলেন। শাসকবর্গের ভাষা ফার্সী হওয়ায় এ ভাষা রাষ্ট্রীয় মর্যাদা লাভ করেছিল।
প্রশ্ন \ ৫ \ মুসলমান শাসনামলে মুসলমান মেয়েরা উচ্চশিক্ষা গ্রহণ থেকে বঞ্চিত ছিল কেন?
উত্তর : মুসলমান শাসনের সময় বাংলার সর্বত্র অসংখ্য মসজিদ নির্মিত হয়েছিল। এসব মসজিদের সঙ্গে মক্তব ও মাদরাসা ছিল। এখানে শিক্ষার্থীরা উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করত। বালক-বালিকারা একত্রে মক্তব ও পাঠশালায় লেখাপড়া করত। প্রাথমিক শিক্ষা সকল মুসলমান বালক-বালিকার জন্য আবশ্যক ছিল। স্ত্রীশিক্ষা ও মাধ্যমিক শিক্ষা গ্রহণ মেয়েদের জন্য বাধ্যতামূলক ছিল না। ফলে সাধারণ মুসলমান মেয়েরা উচ্চশিক্ষা গ্রহণ থেকে বঞ্চিত ছিল।
প্রশ্ন \ ৬ \ মুসলমান শাসকগণ সংস্কৃত সাহিত্যের প্রতি আগ্রহী ছিলেন কেন?
উত্তর : সংস্কৃত সাহিত্যে মুসলমান সুলতানগণের যথেষ্ট অবদান ছিল। সংস্কৃত কবি, সাহিত্যিকগণ মুসলমান সুলতানগণের অকৃপণ পৃষ্ঠপোষকতা লাভ করেছেন। মুসলমান শাসনকালে বঙ্গদেশ সংস্কৃত সাহিত্যের এক বিরাট কেন্দ্র ছিল। সংস্কৃত ভাষার সাথে বাংলা ভাষার সম্পর্ক অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। এজন্য অনেক মুসলিম শাসক এর প্রতি আগ্রহী ছিলেন। তাদের অনেকে ব্যক্তিগতভাবে সংস্কৃত ভাষার চর্চাও করতেন।
প্রশ্ন \ ৭ \ মধ্যযুগে বাংলার মুসলমান সমাজের ধর্মীয় শিক্ষা সম্পর্কে ধারণা দাও।
উত্তর : ধর্মপ্রাণ মুসলমানগণ দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া ছাড়াও নিয়মিত কুরআন ও হাদিস পাঠ করতেন। সমাজে ধর্মীয় শিক্ষার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হতো। ছেলেমেয়েদের ধর্মীয় শিক্ষা গ্রহণের জন্য মক্তবে প্রেরণ করা হতো। সমাজে ধর্মীয় জ্ঞানের এবং ধর্মীয় অনুষ্ঠান পরিচালনার জন্য মোল­া স¤প্রদায়কে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হতো।
প্রশ্ন \ ৮ \ মধ্যযুগে বাংলায় হিন্দুদের ধর্মীয় রীতিনীতি ও আচার-অনুষ্ঠান পালন সম্পর্কে ধারণা দাও।
উত্তর : বর্তমানকালের মতো মধ্যযুগে বাংলায় হিন্দুরা বিভিন্ন ধর্মীয় রীতিনীতি ও আচার-অনুষ্ঠান পালন করত। আড়ম্বর ও জাঁকজমকের সাথে হিন্দুরা বিভিন্ন দেব-দেবীর পূজা করত, যেমন : দুর্গাপূজা। সন্তান লাভ ও রোগমুক্তির জন্য হিন্দুরা বিভিন্ন পূজা করত। ভাগ্যের উন্নতির জন্য তারা ল²ী এবং সরস্বতী জ্ঞানের দেবী বলে পূজা করত। হিন্দুরা দশহরা, গঙ্গাস্নান, অষ্টমী স্নান এবং মাঘী সপ্তমীস্নানকে পবিত্র বলে মনে করত।
প্রশ্ন \ ৯ \ মধ্যযুগের বাংলার মুসলমান সমাজব্যবস্থা সম্পর্কে ধারণা দাও।
উত্তর : মধ্যযুগের বাংলায় মুসলমান সমাজব্যবস্থায় উচ্চ, মধ্যম ও নিম্ন

এ তিনটি পৃথক শ্রেণির অস্তিত্ব ছিল। সৈয়দ, ওলামা, প্রমুখ ব্যক্তিবর্গ সমাজে যথেষ্ট প্রভাবশালী ছিলেন। ধর্মপরায়ণ ও শিক্ষিত ব্যক্তিদের জনগণ যথেষ্ট শ্রদ্ধা করত। জনসাধারণ ছাড়াও মুসলমান শাসকগণ তাদের বিশেষ শ্রদ্ধা করতেন।
প্রশ্ন \ ১০ \ মধ্যযুগে বাঙালি কারিগরদের সম্পর্কে ধারণা দাও।
উত্তর : মধ্যযুগে দেশের স্বর্ণকার স¤প্রদায় ছিল। সূ², কারুকার্যের জন্য তাদের প্রচুর সুখ্যাতি ছিল। বাঙালি কারিগররা স্বর্ণ, রৌপ্য, ব্রোঞ্জ, কাঠ, পাথর, গজদন্ত ইত্যাদির কাজ বিশেষ নিপুণতার সাথে করত। শঙ্খশিল্পের জন্য ঢাকার প্রচুর সুখ্যাতি ছিল। ঢাকার শাঁখারিপট্টি আজও সেকথা স্মরণ করিয়ে দেয়।
প্রশ্ন \ ১১ \ মধ্যযুগে বাংলার কৃষকদের অবস্থা কেমন ছিলÑ ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : কৃষিপ্রধান দেশ বলে বাংলার অধিবাসীদের বৃহত্তর অংশ কৃষক ছিল। কৃষিকাজ একটি সম্মানজনক পেশা হিসেবে বিবেচিত হতো। কৃষকদের অনেকে ভ‚মিদাস হলেও ভ‚মিসম্পন্ন কৃষকের সংখ্যাও ছিল বেশ। এসব ভ‚মিসম্পন্ন কৃষকের অধীনে শত শত শ্রমিক কাজ করত। প্রচুর ভ‚সম্পত্তির অধিকারী কৃষক বাংলার সর্বত্রই নজরে পড়ত। তারা সচ্ছল জীবনযাপন করত।

 

Leave a Reply