মার্চেন্ট অব ভেনিস
উইলিয়াম শেক্সপিয়ার
বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
১. ‘মার্চেন্ট অব ভেনিস’-এর অর্থ
ক ভেনিসের রাজপুত্র ভেনিসের সওদাগর
গ ভেনিসের প্রেমিক ঘ ভেনিসের নাবিক
২. শাইলক ছিলÑ
ক ধর্মবিদ্বেষী খ বর্ণবিদ্বেষী গ মানববিদ্বেষী জাতিবিদ্বেষী
৩. অ্যান্টনিও-এর পক্ষের ছদ্মবেশী তরুণ উকিল ছিলেন প্রকৃতপক্ষেÑ
পোর্শিয়া খ লরেঞ্জো গ ম্যালারিও ঘ নেরিসা
নিচের অংশটুকু পড় এবং ৪ থেকে ৬ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
অ্যান্টনিওর প্রতি প্রতিশোধ নেওয়ার এ সুবর্ণ সুযোগ শাইলক উপেক্ষা করতে চাইল না। একবাক্যে সে বাসানিওকে টাকা ধার দিতে রাজি হয়ে গেল। মধুর কণ্ঠে বলল, অ্যান্টনিও যখন নিজেই জামিন থাকছেন তখন সুদের প্রশ্ন উঠে না। তবে কিনা একান্ত পরিহাসছলে একটা শর্ত লিখে দিতে হবে। নির্দিষ্ট সময়ে ধার পরিশোধে ব্যর্থ হলে জামিনদারের শরীর থেকে এক পাউন্ড মাংস কেটে দিতে হবে।
৪. বাসানিও-এর ঋণের জামিনদার কে?
ক লরেঞ্জো খ পোর্শিয়া গ নেরিসা অ্যান্টনিও
৫. শাইলক-এর চুক্তির শর্তে প্রকাশ পেয়েছে শাইলকের
র. প্রতিহিংসাপরায়ণতা রর. বিদ্বেষপূর্ণ মনোভাব
ররর. কুচক্রী দৃষ্টিভঙ্গি
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ ররর র, রর ও ররর
৬. বাসানিওকে টাকা ধার দেওয়ার পেছনে শাইলকের মূল উদ্দেশ্যÑ
র. অ্যান্টনিওকে হেয় প্রতিপন্ন করা
রর. অ্যান্টনিও এবং বাসানিওর সম্পর্কে ফাটল ধরানো
ররর. তার জিঘাংসা চরিতার্থ করা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র খ রর ও ররর গ রর র ও ররর
৭. শাইলক কোন ধর্মাবলম্বী লোক ছিল?
ক ইসলাম খ হিন্দু গ খ্রিষ্টান ইহুদি
৮. বাসানিওকে টাকার ব্যবস্থা করে দেয়ায় প্রকাশিত হয়Ñ
র. অ্যান্টনিওর পরশ্রীকাতরতা রর. অ্যান্টনিওর উদারতা
ররর. অ্যান্টনিওর বন্ধুবাৎসল্য
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৯. ‘মার্চেন্ট অব ভেনিস’Ñগল্পের শিক্ষণীয় বিষয়Ñ
র. হিংসার পরাজয় রর. মানবিকতার জয়
ররর. রক্ষণশীলতার পরাজয়
নিচের কোনটি সঠিক?
র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
১০. ‘মার্চেন্ট অব ভেনিস’ গল্প থেকে যে বিষয়টি অর্জন করতে পারিÑ
র. হিংসার পরাজয় রর. মানবিকতার জয়
ররর. রক্ষণশীলতার পরাজয়
নিচের কোনটি সঠিক?
র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
১১. ‘মার্চেন্ট অব ভেনিস’ গল্পের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় কোনটি?
ক ব্যবসায়িক প্রতিযোগিতা খ সা¤প্রদায়িক দ্ব›দ্ব
গ প্রেমের পরিণতি মানবিকতার জয়
১২. ‘মার্চেন্ট অব ভেনিস’ গল্পে একটা উচ্চ হাসির রোল পড়ে গেল কেন?
ক তরুণ উকিলের দক্ষতায় অ্যাংটির রহস্য উদ্ঘাটন হওয়ায়
গ অ্যান্টিনিওর মুক্তি পাওয়ায় ঘ শাইলক অপদস্ত হওয়ায়
১৩. ‘মোক্ষম’ শব্দের অর্থ কী?
ক বৃহৎ প্রবল গ আসল ঘ পূর্ণ
১৪. সুদখোর বুড়ো শাইলকের কথায় বাসানিও চমকে উঠল কেন?
ক বিনাসুদে টাকা দিতে রাজি হলো বলে
খ শাইলকের ব্যবহারের কথা ভেবে
অমানবিক শর্তের কথা শুনে
ঘ শাইলকের মধ্যে পরিবর্তন দেখে
১৫. ‘ধর্মাবতার, এখানে ক্ষমার কোনো প্রশ্নই ওঠে না’Ñএর মধ্য দিয়ে শাইলকের কোন মনোভাব প্রকাশিত হয়েছে?
ক আত্মকেন্দ্রিকতা প্রতিশোধপরায়ণতা
গ মমত্বহীনতা ঘ স্বার্থপরতা
১৬. শাইলকের দাঁত দেখতে কেমন?
তামাটে খ লালচে গ চকচকে ঘ কালচে
১৭. দ্বিতীয় পেটিকা কে নির্বাচন করেছিল?
ক মরক্কোর রাজপুত্র খ গ্রাসিয়ানো
গ বাসানিও আরাগনের যুবরাজ
১৮. অ্যান্টনিওর ঘনিষ্ঠ বন্ধুর নাম কী?
বাসানিও খ শাইলক গ টম ঘ পোর্শিয়া
১৯. তরুণ উকিল পারিশ্রমিকস্বরূপ কী চেয়েছিল?
বাসানিওর আংটি খ স্বর্ণালংকার
গ তিন হাজার ড্যাকাট ঘ হিরার অলংকার
২০. ‘আপনে ঠিকই বলেছেন, উকিল সাহেব’Ñ এই ‘উকিল সাহেব’ প্রকৃতপক্ষে কে?
পোর্শিয়া খ নেরিসা গ বাসানিও ঘ লরেঞ্জো
২১. ‘মার্চেন্ট অব ভেনিস’ থেকে যে বিষয়টি অর্জন করতে পারিÑ
র. হিংসার পরাজয় রর. মানবিকতার পরাজয়
ররর. রক্ষণশীলতার পরাজয়
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র খ র ও রর গ র ও ররর র, রর ও ররর
সাধারণ বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
২২. ভেনিস কোন দেশের শহর? (জ্ঞান)
ইতালি খ জার্মানি গ ইরান ঘ ইংল্যান্ড
২৩. ‘মার্চেন্ট অব ভেনিস’ গল্পটির লেখক কে? (জ্ঞান)
ক উইলিয়াম পিটার উইলিয়াম শেক্সপিয়ার
গ উইলিয়াম হান্টার ঘ জন কিটস
২৪. মার্চেন্ট কথাটির অর্থ কী? (জ্ঞান)
বণিক খ খরিদ্দার গ ভ্রমণকারী ঘ অবসর গ্রহণকারী
২৫. সিমন পারভেজ সবসময় অভাবগ্রস্তদের পাশে গিয়ে দাঁড়ান। ‘মার্চেন্ট অব ভেনিস’ গল্পের কোন চরিত্রটির সাথে তার মিল রয়েছে? (প্রয়োগ)
অ্যান্টনিও খ শাইলক গ পোর্শিয়া ঘ ডিউক
২৬. শাইলক জাতিতে কী ছিল? (জ্ঞান)
ক হিন্দু খ খ্রিষ্টান গ বৌদ্ধ ইহুদি
২৭. শাইলককে অ্যান্টনিও ঘৃণার চোখে দেখত কেন? (অনুধাবন)
ক বিধর্মী বলে খ বিত্তবান ছিল বলে
সুদের ব্যবসা করত বলে ঘ অ্যান্টনিওর সমালোচনা করত বলে
২৮. অ্যান্টনিও তরুণ উকিলকে পারিশ্রমিক হিসেবে কী দিলেন? (জ্ঞান)
ক তিন হাজার ড্যাকাট খ প্রচুর পরিমাণ স্বর্ণ
গ স্বর্ণের হার বাসানিওর হাতের আংটি
২৯. বিয়ের জন্য পোর্শিয়া মাত্র তিন জন প্রতিদ্ব›দ্বীকে বেছে নিয়েছিল কেন?(অনুধাবন)
বাবার নির্দেশ ছিল তাই খ তিন জনই তার যোগ্য ছিল তাই
গ অন্যরা গরিব ছিল বলে ঘ অন্যরা দেখতে অসুন্দর ছিল তাই
৩০. প্রথম কে সুসজ্জিত ঘরে প্রবেশ করেছিল? (জ্ঞান)
মরক্কোর রাজপুত্র খ বাসানিও
গ অ্যান্টনিও ঘ আরাগনের যুবরাজ
৩১. পোর্শিয়ার কার সাথে বিয়ে হয়েছিল? (জ্ঞান)
বাসানিও খ অ্যান্টনিও
গ মরক্কোর রাজপুত্র ঘ আরাগনের যুবরাজ
৩২. এত সুখের মধ্যেও একটি মর্মন্তুদ খবর রয়েছে। এ খবরটি কী? (উচ্চতর দক্ষতা)
ক অ্যান্টনিও মারা গেছে
অ্যান্টনিওর জাহাজগুলো ঝড়ের কবলে পড়ে ডুবে গেছে
গ শাইলক অ্যান্টনিওর হাত কেটে ফেলেছে
ঘ শাইলকের ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে
৩৩. মাংস কাটার জন্য শাইলক কোথায় ছুরি শান দিতে লাগল? (জ্ঞান)
ক পাথরে খ হাতের তালুতে
জুতার তলায় ঘ বঁটিতে
৩৪. তরুণ উকিলের সাহায্যে অ্যান্টনিওর বিচারকার্য সমাধা হওয়ার মধ্যে উকিলের কোন গুণটি ফুটে উঠেছে? (উচ্চতর দক্ষতা)
বিচক্ষণতা খ সততা গ দয়াপ্রবণতা ঘ দানশীলতা
৩৫. ‘বীতশ্রদ্ধ’ শব্দের অর্থ কী? (জ্ঞান)
ক ভয়হীনতা আস্থাহীনতা
গ উদাসীনতা ঘ শ্রদ্ধাশীলতা
৩৬. পোর্শিয়া তার স্বামীকে কয় গুণ অর্থ দিয়ে ভেনিসে পাঠাল?
ক তিন গুণ খ ছয় গুণ গ নয় গুণ দশ গুণ
৩৭. শাইলকের মেয়ের নাম কী ছিল? [
জেসিকা খ পোর্শিয়া
গ নেরিসা ঘ গ্রাসিয়ানো
৩৮. লরেঞ্জো কে ছিলেন? [ভি. জে. সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, চুয়াডাঙ্গা]
ক শাইলকের ছেলে খ অ্যান্টনিওর পুত্র
অ্যান্টনিওর বন্ধুপুত্র ঘ বাসানিওর ছেলে
৩৯. ‘ড্যাকাট’ কী? [জালালাবাদ ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড হাইস্কুল, সিলেট]
ইতালীয় মুদ্রা খ জার্মানির মুদ্রা
গ ফ্রান্সের মুদ্রা ঘ সুইডেনের মুদ্রা
৪০. ‘মার্চেন্ট অব ভেনিস’ গল্পের বিখ্যাত সওদাগরটি কে?
ক বাসানিও খ শাইলক অ্যান্টনিও ঘ গ্রাসিয়ানো
বহুপদী সমাপ্তিসূচক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
৪১. অ্যান্টনিও ছিলেন (অনুধাবন)
র. হাসিখুশি রর. বন্ধুবৎসল ররর. অভাবী
নিচের কোনটি সঠিক?
র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৪২. শাইলক বাসানিওকে টাকা ধার দিতে রাজি হয়েছিল (উচ্চতর দক্ষতা)
র. সমস্যার গুরুত্ব উপলব্ধি করে রর. অ্যান্টনিওকে ফাঁদে ফেলার জন্য
ররর. কুৎসা রটানোর জন্য
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৪৩. পোর্শিয়ার বাছাইকৃত যুবকদের যে সুসজ্জিত ঘরে পাঠানো হয়েছিল সেখানে ছিল (অনুধাবন)
র. সোনার পেটিকা রর. রুপার পেটিকা ররর. সিসার পেটিকা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর র, রর ও ররর
৪৪. বাসানিও অনেক চিন্তা করে জৌলুসহীন পেটিকাটি নির্বাচন করলেন। এর মাধ্যমে বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে (উচ্চতর দক্ষতা)
র. লোভহীনতা রর. ঝুঁকি নেয়ার মানসিকতা ররর. সততা
নিচের কোনটি সঠিক?
র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৪৫. ইহুদি শাইলক ছিল Ñ (অনুধাবন)
র. সুচতুর রর. ক‚টবুদ্ধিসম্পন্ন ররর. সুদখোর
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর র, রর ও ররর
৪৬. পোর্শিয়া বিয়ের জন্য প্রাথমিকভাবে বাছাই করেছিলÑ
র. মরক্কোর যুবরাজকে রর. মিসরের ডিউককে
ররর. বাসানিওকে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৪৭. পোর্শিয়া যেভাবে অ্যান্টনিওর জীবন রক্ষা করল এর মাধ্যমে প্রমাণিত হয় পোর্শিয়ার
র. আনুগত্য রর. বিচক্ষণতা ররর. বুদ্ধিমত্তা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
অভিন্ন তথ্যভিত্তিক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
নিচের উদ্দীপকটি পড়ে ৪৮ ও ৪৯নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
বন্ধুর বিপদে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে গিয়ে চরম পরীক্ষার সম্মুখীন হন হেমায়েত মল্লিক। কিন্তু তিনি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে শর্ত অনুযায়ী শত্রæপক্ষের সব শর্ত মেনে নেন।
৪৮. হেমায়েত মল্লিক ‘মার্চেন্ট অব ভেনিস’ গল্পের কোন চরিত্রের প্রতিনিধিত্ব করেন? (প্রয়োগ)
ক শাইলক অ্যান্টনিও গ পোর্শিয়া ঘ বাসানিও
৪৯. উক্ত চরিত্রটির বৈশিষ্ট্য ছিল (উচ্চতর দক্ষতা)
র. বন্ধুবৎসল রর. দয়াপ্রবণতা ররর. উদাসীনতা
নিচের কোনটি সঠিক
র ও রর খ রর ও ররর গ র ও ররর ঘ র, রর ও ররর
সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন -১ নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
জমি আবাদের জন্য সরলপ্রাণ ইসমাইল তার গ্রামের মোড়লের কাছ থেকে একটি জমি বন্ধক রেখে ১০ হাজার টাকা ধার নেয়। ধার নেবার সময় মোড়ল সাদা স্ট্যাম্পে ইসমাইলের স্বাক্ষর রাখে। দুই বছর পর ইসমাইল মোড়লকে ঐ টাকা ফেরত দিতে গেলে সে টাকা গ্রহণ না করে বলে, ‘তুমিতো ঐ জমিটা আমার নিকট ৫০,০০০/- (পঞ্চাশ হাজার) টাকায় বিক্রি করেছ’। নিরুপায় ইসমাইল আইনের আশ্রয় নেয়।
ক. ইসমাইল মোড়লের নিকট হতে কোন শর্তে টাকা ধার নেয়?
খ. ইসমাইলের সরলতাকে মোড়ল কীভাবে ব্যবহার করছেÑ বর্ণনা কর।
গ. তোমার পঠিত ‘মার্চেন্ট অব ভেনিস’ গল্পের শাইলক-চরিত্রের সঙ্গে উদ্ধৃতাংশের মোড়ল-চরিত্রের কী মিল লক্ষ করা যায়Ñ বর্ণনা কর।
ঘ.কুচক্রী এ সকল মোড়ল একের সঙ্গে অন্যের সম্পর্কের যে ক্ষতি সাধন করছে উদ্ধৃতাংশের আলোকে তা বিশ্লেষণ কর।
১নং প্রশ্নের উত্তর
ক. ইসমাইল মোড়লের নিকট থেকে জমি বন্ধক রাখার শর্তে টাকা ধার নেয়।
খ. ইসমাইলের কাছ থেকে সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে মোড়ল তার সরলতার সাথে প্রতারণা করেছিল।
ইসমাইল একজন সরলমনা কৃষক। সে মোড়লের কুটিলতা বুঝতে পারেনি। তাই জমি বন্ধক রেখে সরল মনেই সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করে টাকা ধার করে সে। কিন্তু মোড়ল সেই স্বাক্ষরিত সাদা স্ট্যাম্পে নিজের মনের মতো করে শর্ত লিখে ইসমাইলকে ধোঁকা দেয়। দুই বছর পর টাকা ফেরত দিতে গেলে মোড়ল বলে যে, তার কাছে ইসমাইল জমি বিক্রি করেছে। এভাবেই মোড়ল ইসমাইলের সরলতার সদ্ব্যবহার করে।
গ. ‘মার্চেন্ট অব ভেনিস’ গল্পের শাইলক চরিত্রের সঙ্গে উদ্ধৃতাংশের মোড়ল চরিত্রের ক‚টকৌশলী মনোভাবের সাথে মিল লক্ষ করা যায়।
গল্পের শাইলক সুদের বিনিময়ে মানুষকে টাকা ধার দেয়। তবে ধার দেয়ার সময় নানা হীন কৌশল অবলম্বন করে সকলের সাথেই নিষ্ঠুর আচরণ করে। বাসানিওকেও তিন হাজার ড্যাকাট ধার দিয়ে বাসানিওর বন্ধু অ্যান্টনিওকে ফাঁদে ফেলার আশায় নিষ্ঠুর শর্ত আরোপ করে যে, অ্যান্টনিওর ধার পরিশোধ করতে না পারলে শরীর থেকে শাইলক এক পাউন্ড মাংস কেটে নেবে। এমনই ক‚টবুদ্ধিসম্পন্ন ও বিবেকহীন মানুষ ছিল শাইলক।
উদ্ধৃতাংশের মোড়লও শাইলকের মতো ধূর্ত ও ক‚টবুদ্ধিসম্পন্ন। সে মানুষ ঠকানোর হীন কাজে ব্যস্ত। সরলপ্রাণ ইসমাইলের কাছ থেকে সাদা স্ট্যাম্পে সই নিয়ে নিজের মনের মতো করে শর্ত লিখে দরিদ্র ইসমাইলকে ধোঁকা দেয়। জমি বন্ধক রেখে ১০ হাজার টাকা নিলেও মোড়ল কৌশলে জমি নিজের করে নেয়। তাই বলা যায়, গল্পের শাইলক ও উদ্ধৃতাংশের মোড়ল উভয়েই নিজেদের ক‚টবুদ্ধির মাধ্যমে বিভিন্ন হীন কৌশল অবলম্বন করে মানুষকে বিপদে ফেলে।
ঘ. নিজেদের হীনস্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য এ সকল কুচক্রী মোড়লরা সমাজে একের সঙ্গে অন্যের সম্পর্কের চরম ক্ষতিসাধন করছে ।
‘মার্চেন্ট অব ভেনিস’ গল্পের শাইলকও মানুষদেরকে চড়া সুদে টাকা ধার দেয়। এই টাকা উসুল করার জন্য সে যেকোনো ধরনের নিষ্ঠুর কাজ করতে পারে। তার এই আচরণে সবাই তার ওপর ক্রুদ্ধ।
উদ্ধৃতাংশের মোড়ল সমাজের অসহায় মানুষদের জমি বন্ধকের বিনিময়ে ঋণ দেয়। পরে এই ঋণের বিনিময়ে সে তাদের সম্পত্তি জালিয়াতি করে কেড়ে নেয়। দরিদ্র ও অসহায় মানুষদের সরলতার সুযোগে তাদের ধোঁকা দিয়ে নিজের হীনস্বার্থ চরিতার্থ করে।
উদ্ধৃতাংশের কুচক্রী মোড়লের আচরণেও সমাজে একই ধরনের খারাপ প্রভাব দেখা যায়। তাদের এরূপ নীতিগর্হিত কাজে সমাজের অসহায় মানুষ সব হারিয়ে পথে বসে। ফলে সমাজে বিশৃঙ্খলা ও বৈষম্য সৃষ্টি হয়। মানুষের সাথে মানুষের আন্তঃসম্পর্কে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। যার বাস্তবচিত্র আমরা উদ্দীপকের মোড়ল ইলিয়াস এবং পাঠ্যপুস্তকের শাইলক ও অ্যান্টনিওর মধ্যে দেখতে পাই।
প্রশ্ন-২ নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
সোনাপুর গ্রামের ধনী ব্যবসায়ী ইমরান সাহেবের কাছে দরিদ্র জালাল মিয়া কন্যার বিবাহের জন্য কিছু সাহায্য চাইলে তিনি তাকে ৫০০০ টাকা দিলেন। প্রচÐ খরায় দিশেহারা কয়েকজন কৃষক তার কাছে কিছু লোন চাইলে বিনা শর্তে তাদেরকে ২০০০ টাকা করে লোন দিলেন এবং সুবিধাজনক সময়ে ফেরত দিতে বললেন। ইমরান সাহেবের এক ঘনিষ্ঠ বন্ধু ইমন বেশ কিছু টাকা লোন চাইল। কিন্তু এত টাকা তার কাছে তখন ছিল না। তাই ইমরানের কাছ থেকে লোন নেওয়ার ব্যবস্থা করে দিলেন।
ক. ইহুদি ব্যবসায়ীর নাম কী?
খ. এই ব্যবসায়ীর ব্যবসায়ের ধরন বর্ণনা কর।
গ. ‘মার্চেন্ট অব ভেনিস’ গল্পের অ্যান্টনিও চরিত্রের যে বৈশিষ্ট্য ইমরান সাহেবের মধ্যে লক্ষ করা যায় তা ব্যাখ্যা কর।
ঘ.‘ইমরান সাহেব যেন অ্যান্টনিওর প্রতিচ্ছবি’মন্তব্যটি বিশ্লেষণ কর।
২নং প্রশ্নের উত্তর
ক. ইহুদি ব্যবসায়ীর নাম শাইলক।
খ. শাইলক ইতালির ভেনিস শহরে সুদের ব্যবসা করত।
শাইলক ছিল অত্যন্ত সুচতুর ও ক‚টবুদ্ধিসম্পন্ন লোক। তার ব্যবসায়িক নীতি ছিল ছলচাতুরিপূর্ণ। মানুষের বিপদের সময় বা কেউ বেকায়দায় পড়লে সুদ ব্যবসায়ী শাইলক তাকে চড়া সুদে টাকা ধার দিতেন এবং যথাসময়ে ঋণগ্রহীতা সুদসহ ধারকৃত টাকা ফিরত দিতে ব্যর্থ হলে তার সর্বস্ব কেড়ে নিতেন। কম টাকা দিয়ে বেশি টাকা আদায়, চড়া সুদের হার, চক্রবৃদ্ধি হারে মূল টাকার পরিমাণ বৃদ্ধি করে মানুষকে ঠকানোই ছিল তার ব্যবসায়ের মূল বৈশিষ্ট্য।
গ. ‘মাচেন্ট অব ভেনিস’ গল্পের অ্যান্টনিওর চরিত্রের অনেক বৈশিষ্ট্য উদ্দীপকের ইমরান সাহেবের মধ্যে লক্ষ করা যায়।
‘মার্চেন্ট অব ভেনিস’ গল্পের অ্যান্টনিও সৎ, বন্ধুবৎসল ও পরোপকারী ব্যবসায়ী। অভাবগ্রস্ত মানুষ বিপদে পড়লেই সাহায্যের জন্য তার কাছে ছুটে আসে। অ্যান্টনিও কাউকে কখনো খালি হাতে ফেরায় না। সর্বস্ব দিয়ে তাকে রক্ষা করতে চেষ্টা করে। অ্যান্টনিও তার বন্ধুকে সাহায্য করার জন্য শাইলকের নিষ্ঠুর শর্তেও রাজি হয়েছিল।
উদ্দীপকের ইমরান সাহেবের চরিত্রেও আমরা এসব গুণ দেখতে পাই। অ্যান্টনিওর মতো সেও গ্রামের বিপদগ্রস্ত মানুষকে নিঃস্বার্থভাবে সাহায্য করে। ইমরান সাহেব ও তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু ইমনকে নিজ জিম্মায় লোনের ব্যবস্থা করে দিয়েছিল। সুতরাং বলা যায়, গল্পের অ্যান্টনিওর চরিত্রের পরোপকারিতা এবং বন্ধুবৎসল বৈশিষ্ট্য উদ্দীপকের ইমরান সাহেবের মধ্যে বিদ্যমান রয়েছে।
ঘ. ‘ইমরান সাহেব যেন অ্যান্টনিওর প্রতিচ্ছবি’Ñ মন্তব্যটি যথার্থ।
গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র অ্যান্টনিও সৎ, পরোপকারী ও বন্ধুবৎসল ব্যবসায়ী। উদারনীতির জন্য সে সবার কাছে প্রশংসিত। সে নিঃস্বার্থভাবে মানুষকে সাহায্য করত। ব্যবসায়ী হওয়া সত্তে¡ও সে কখনো কাউকে ঠকিয়ে মুনাফা লাভের চেষ্টা করেনি। তার বন্ধুপ্রীতিও ছিল দেখার মতো। বন্ধু বাসানিওকে তার ইচ্ছা পূরণ করতে সাহায্য করার জন্য সে নিজের শরীর থেকে এক পাউন্ড মাংস কেটে দেওয়ার মতো কঠিন শর্তে সুদখোর শাইলকের কাছ থেকে অর্থ ধার করে দেয়।
উদ্দীপকের ইমরান সাহেব ও নানা ভাবে গ্রামের লোকদের সাহায্য করেছেন। দরিদ্র জালাল মিয়ার কন্যার বিয়েতে সে তাকে টাকা দিয়ে সাহায্য করেছে। গ্রামের কৃষকদের বিনা সুদে ঋণ দিয়েছেন। বন্ধু ইমরানকে নিজ জিম্মায় লোনের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।
বিপদগ্রস্ত মানুষকে আর্থিক সাহায্য দান এবং বন্ধুকে নিজ জিম্মায় লোনের ব্যবস্থা করে দেওয়ার ক্ষেত্রে অ্যান্টনিও ও ইমরান সাহেব যেন একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। তারা দুজনেই উদার, পরোপকারী এবং বন্ধুবৎসল। তাই আমরা একথা নিঃসন্দেহে বলতে পারি, চরিত্র দুটি একটি অপরটির প্রতিচ্ছবি।
প্রশ্ন -৩ নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
রাজন ও সাজন দুই ভাই হলেও দুজনের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য ভিন্ন। রাজন সাধ্যমতো অন্যের উপকার করে, বিপদে পাশে দাঁড়ায়। অন্যদিকে সাজন কী করে ধনী হবে সেদিকেই তার খেয়াল। তাইতো মানুষকে বিপদে ফেলে অর্থ আদায়ে দ্বিধা করে না। শহরের সবাই রাজনকে পছন্দ করে আর সাজনকে করে ঘৃণা।
ক. আরাগনের যুবরাজ কোন পেটিকা পছন্দ করল? ১
খ. ‘আমি মাংস চাই না, আমার আসল টাকাটা চাই।’Ñএ উক্তির কারণ কী? ২
গ. উদ্দীপকের সাজনের সাথে ‘মার্চেন্ট অব ভেনিস’ গল্পের যে চরিত্রের মিল রয়েছে। তা ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ.উদ্দীপকটি ‘মার্চেন্ট অব ভেনিস’ গল্পের খÐচিত্র মাত্র। Ñউক্তিটি মূল্যায়ন কর। ৪
৩নং প্রশ্নের উত্তর
ক. আরাগনের যুবরাজ রৌপ্য পেটিকা পছন্দ করল।
খ. “আমি মাংস চাই না, আমার আসল টাকাটা চাই।”Ñশাইলকের এ উক্তির প্রধান কারণ তরুণ উকিল পোর্শিয়ার কথার মারপ্যাঁচ।
আদালতে তরুণ উকিল পোর্শিয়া যখন এক পাউন্ড মাংস কাটার কথা বলে কোনো রক্তপাত ছাড়া। শাইলক তখন ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে। কারণ রক্তপাতবিহীন মাংস কোনোভাবেই কাটা সম্ভব না। তাই পূর্বে শাইলকের বেশি টাকা গ্রহণের সুযোগ থাকলেও অবস্থা বেগতিক দেখে সে প্রশ্নোক্ত উক্তিটি করে।
গ. উদ্দীপকের সাজল চরিত্রের সাথে মার্চেন্ট অব ভেনিস গল্পের শাইলকের চরিত্রের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ।
লোভীরা যেকোনো মূল্যে অন্যের অর্থ-সম্পদ আত্মসাৎ করতে চায়। ‘মার্চেন্ট অব ভেনিস’ গল্পের শাইলক অর্থলোভী ও ক‚টকৌশলী লোক। সে মানুষের অসহাত্বের সুযোগ নিয়ে উচ্চমূল্যে সুদ দেয়। তার এ হীন আচরণের কারণে নগরের কোনো লোক তাকে পছন্দ করত না সকলে তাকে ঘৃণা করত।
উদ্দীপকে উল্লিখিত সাজন তেমনি একজন লোভী দুজন চরিত্রের প্রতিনিধি। ধন পিপাসায় সে তৃষ্ণার্ত। যেকোনো মূল্যে সাজন ধনী হতে চায়। মানুষকে কৌশলে বিপদে ফেলে সে অন্যায়ভাবে অর্থ আদায় করতে কোনো দ্বিধাবোধ করে না। শহরের সকল লোক সাজনকে ঘৃণা করে। তাই বলা যায়, চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের দিক থেকে উদ্দীপকের সাজন ও ‘মার্চেন্ট অব ভেনিস’ গল্পের শাইলক একে অপরের প্রতিনিধিত্বকারী
ঘ. উদ্দীপকটি ‘মার্চেন্ট অব ভেনিস’ গল্পের খÐচিত্র মাত্রÑ উক্তিটি যথার্থ।
ইতালির ভেনিস শহরের সওদাগর অ্যান্টনিও। সকলে তাকে পছন্দ করে। আর এক ব্যবসায়ী শাইলক নীতিহীন সুদখোর। ক‚টবুদ্ধিসম্পন্ন কেউ তাকে পছন্দ করে না। অ্যান্টনিও তার বন্ধুর বিয়ের জন্য শাইলকের কাছ থেকে অর্থ ধার নেয়। শাইলক তাকে টাকা ধার দিলেও ক‚টকৌশলের আশ্রয় নেয়। অ্যান্টনিও সময়মতো টাকা পরিশোধ করতে ব্যর্থ হলে শাইলক পূর্ব প্রতিশ্রæত মোতাবেক অ্যান্টনিও তার শরীর থেকে এক পাউন্ড মাংস দাবি করে।
উদ্দীপকে উল্লিখিত রাজন ও সাজন ‘মার্চেন্ট অব ভেনিস’ গল্পের অ্যান্টনিও ও শাইলক চরিত্রের প্রতিনিধিত্ব করে। রাজন সৎ পরোপকারী। শহরের সবাই তাকে পছন্দ করে। অন্যদিকে সাজন লোভী ও অসৎ ব্যক্তি। তাকে কেউ পছন্দ করে না। গল্পের শাইলক চরিত্রটি লোভী ও স্বার্থবাদী চরিত্র যা সাজন চরিত্রের প্রতিরূপ। উল্লিখিত আলোচনা শেষে বলা যায়, গল্পে উল্লিখিত চরিত্রদ্বয় ও উদ্দীপকের উল্লিখিত চরিত্রদ্বয় এর মধ্যে সাদৃশ্য বিদ্যমান থাকলেও গল্পের পরিণতির দিক থেকে এক নয়।
অতএব আলোচনা শেষে বলা যায় উদ্দীপকটি ‘মার্চেন্ট অব ভেনিস’ গল্পের খÐচিত্রকে ধারণ করে।
প্রশ্ন-৪ নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
ইউনুস ও ইসমাইল একই অফিসে চাকরি করে। ইসমাইলের দক্ষতার কারণে খুব অল্প সময়েই তার পদোন্নতিও হয়। কিন্তু ইউনুস ইসমাইলের এই সাফল্যে খুশি হতে পারে না। সে তাকে হিংসা করতে থাকে। একদিন অফিসের কিছু জরুরি কাগজ ইসমাইলের টেবিল থেকে সে গোপনে সরিয়ে ফেলে তাকে বিপদে ফেলতে চায়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ইউনুস যে এ কাজ করেছে তা সবাই জেনে যায়। ফলে তাকে চাকরি থেকে অপসারণ করা হয়।
ক. শাইলকের কীসের ব্যবসা ছিল? ১
খ. শাইলকের শর্ত অ্যান্টনিও মেনে নিয়েছিল কেন? ব্যাখ্যা কর। ২
গ. উদ্দীপকের ইউনুস ‘মার্চেন্ট অব ভেনিস’ গল্পের কোন চরিত্রের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ.“উদ্দীপকের মূল বক্তব্য ‘মার্চেন্ট অব ভেনিস’ গল্পের মূল সুরের অনুসারী” Ñমন্তব্যটির যথার্থতা বিচার কর। ৪
৪নং প্রশ্নের উত্তর
ক. শাইলকের সুদের ব্যবসা ছিল।
খ. শাইলকের শর্ত অ্যান্টনিওর মেনে নেয়ার কারণ অ্যান্টনিওর সকল জাহাজ সমুদ্রবক্ষে আছে। এ জাহাজগুলো ফিরে আসলে আর কোনো অর্থকষ্ট থাকবে না।
অ্যান্টনিওর বন্ধু বাসানিওর অর্থ সাহায্যের প্রয়োজনে অ্যান্টনিও শাইলকের দ্বারস্থ হয়। তখন ক‚টকৌশলী শাইলক অ্যান্টনিওকে জামিন রেখে বলে যে, যদি বাসানিও অর্থ পরিশোধ করতে অপারগ হয় তাহলে অ্যান্টনিওর শরীর থেকে এক পাউন্ড মাংস কেটে নেওয়া হবে। অ্যান্টনিও এ ঘোষণা শুনে অবাক হলেও পরক্ষণেই ভেবেছিল অর্থ পরিশোধ করলে তো আর সমস্যা থাকছে না। তাই শাইলক অ্যান্টনিওর শর্ত মেনে নিয়েছিল।
গ. উদ্দীপকের ইউনুস ‘মার্চেন্ট অব ভেনিস’ গল্পের শাইলক চরিত্রের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ।
‘মার্চেন্ট অব ভেনিস’ গল্পের খলচরিত্র ইহুদি সুদখোর শাইলক। মানুষের বিপদের সুযোগ নিয়ে টাকা ধার দেয় উচ্চসুদে। পরে এই সুদ শোধ করতে গিয়ে মানুষ সর্বস্বান্ত হয়ে পড়ে। সমাজে যারা মানুষকে সাহায্য সহযোগিতা করে শাইলক তাদেরকে ব্যক্তিগতভাবে পছন্দ করে না। কারণ উদারপন্থি এসব মানুষের কারণে তার ব্যসায়ের ক্ষতি হয়। শাইলক ক‚টবুদ্ধিসম্পন্ন হওয়ায় অ্যান্টনিওকে বিপদে ফেলে নিজের প্রতিশোধ নিতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিল কিন্তু পোর্শিয়ার বুদ্ধির কাছে সে ধরাশায়ী হয়।
উদ্দীপকের ইউনুস একজন পরশ্রীকাতর ব্যক্তি। সে তার সমসাময়িক সহকর্মী ইসমাইলের পদোন্নতি মেনে নিতে পারে না। ফলে ইসমাইলকে বিপদে ফেলে সে নিজের মানসিক শান্তি খোঁজে। অফিসের কিছু জরুরি কাগজ সে ইসমাইলের টেবিল থেকে গোপনে সরিয়ে ফেলে। এতে করে ইসমাইল বিপদে পড়লেও একসময় সকলে সত্য ঘটনা জানতে পারে যার ফলশ্রæতিতে ইউনুসকে চাকরি থেকে অপসারণ করা হয়। প্রতিশোধ স্পৃহায় অন্ধ হয়ে অপরের ক্ষতি করতে গিয়ে নিজের দুর্দশা ডেকে আনার দিক দিয়ে উদ্দীপকের ইউনুস ও গল্পের শাইলকের সাদৃশ্য রয়েছে।
ঘ. “উদ্দীপকের মূল বক্তব্য ‘মার্চেন্ট অব ভেনিস’ গল্পের মূল সুরের অনুসারী”Ñ মন্তব্যটি সঠিক।
অ্যান্টনিও তার বন্ধু বাসানিওর জন্য ইহুদি সুদব্যবসায়ী শাইলকের কাছ থেকে কিছু অর্থ ধার করে। শাইলক তার দুষ্টবুদ্ধির কারণে চুক্তিপত্রে লেখে নির্দিষ্ট সময়ে টাকা না দিলে সে অ্যান্টনিওর শরীরের এক পাউন্ড মাংস কেটে নেবে। অ্যান্টনিও এই শর্তে রাজি হলে কিছুদিন পর জাহাজডুবিতে তার জীবনে অন্ধকার নেমে আসে। শাইলক আদালতে নালিশ করে। কিন্তু পরবর্তীতে পোর্শিয়ার বুদ্ধির মারপ্যাঁচে হেরে শাইলক ধরাশায়ী হয় এবং দুর্বুদ্ধির জন্য সম্পদও হারায়।
উদ্দীপকের ইউনুস ইসমাইলের পদোন্নতিতে ঈর্ষাকাতর হয়ে পড়ে। ইসমাইলের ক্ষতি করার জন্য ইউনুস অফিসের কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাগজ সরিয়ে ফেলে। তার আশা ছিল এর কারণে ইসমাইলের চাকরির ক্ষেত্রে সমস্যা সৃষ্টি হবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সবাই জানতে পারে এই কাজের পেছনে ইউনুসের হাত আছে। তাই তাকে চাকরি থেকে অপসারণ করা হয়। উদ্দীপকের ইউনুস এবং গল্পের শাইলক উভয়ই অপরের ক্ষতি করতে গিয়ে নিজেই বিপদে পড়ার কারণে উদ্দীপক এবং গল্পের মূল সুর একই বলে প্রতীয়মান হয়।
উপর্যুক্ত আলোচনা থেকে তাই বলা যায় যে, উদ্দীপকের মূল বক্তব্য ‘মার্চেন্ট অব ভেনিস’ গল্পের মূল সুরের অনুসারী।
প্রশ্ন -৫ নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
গফুর মিয়া একজন গরিব কৃষক। চাষাবাদ করার জন্য সে গ্রামের মোড়লের কাছে জমি বন্ধক দিয়া দশ হাজার টাকা ধার নেয়। মোড়ল সাদা কাগজে গফুরের স্বাক্ষর নিয়ে রাখে। দুই বছর পর গফুর টাকা ফেরত দিতে গেলে সে বলে ‘তুমি তো আমার কাছে পঞ্চাশ হাজার টাকা নিয়েছিলে, মোড়লের এহেন আচরণে গফুর বাধ্য হয়ে আইনের আশ্রয় নেয়।
ক. অ্যান্টনিও কোন শহরের বাসিন্দা ছিলেন? ১
খ. বিচারক আর কোনো কথা বললেন নাÑকেন? ২
গ. উদ্দীপকের মোড়ল চরিত্রটি “মার্চেন্ট অব ভেনিস” গল্পের কোন চরিত্রের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ?Ñব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ.“উদ্দীপকটি ‘মার্চেন্ট অব ভেনিস’ গল্পের আংশিক প্রতিফলন মাত্র”Ñযৌক্তিক মতামত দাও। ৪
৫নং প্রশ্নের উত্তর
ক. অ্যান্টনিও ইতালির ভেনিস শহরের বাসিন্দা ছিলেন।
খ. শাইলক ক্রুদ্ধস্বরে চুক্তিনামার বাস্তবায়ন চাইলে বিচারক আর কোনো কথা বললেন না।
বাসানিওর টাকা পরিশোধ করার সময় অতিক্রান্ত হলে শাইলক আদালতের দ্বারস্থ হয়। শাইলককে অধিক টাকা পরিশোধ করার সুযোগ প্রদান করা হলেও শাইলক সে টাকা নিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। তখন বিচারক শাইলককে একটু নরম হতে বলে। বিচারক শাইলককে নরম হতে বললে শাইলক চুক্তিনামার বাস্তবায়ন চান বলে ক্রুদ্ধস্বরে চেঁচিয়ে ওঠেন। এ দেখে বিচারক আর কোনো কথা বলেন না।
গ. উদ্দীপকের মোড়ল চরিত্রটি ‘মার্চেন্ট অব ভেনিস’ গল্পের শাইলক চরিত্রের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ।
‘মার্চেন্ট অব ভেনিস’ গল্পে শাইলক নামধারী চরিত্রটি একজন সুদখোর ব্যবসায়ী। সে মানুষকে উচ্চসুদে ঋণ দেয় এবং পরবর্তীতে ঋণ শোধের জন্য লোকটিকে সর্বস্বান্ত করে। এই একই কারণে সে অ্যান্টনিওকে ঋণ দেয়। যার শর্ত ছিল ঋণ শোধে ব্যর্থ হলে অ্যান্টনিওর শরীর থেকে এক পাউন্ড মাংস কেটে নেবে। উপায়ান্তর না দেখে অ্যান্টনিও রাজি হলে শাইলক ঋণ দেয়। কিন্তু সমুদ্রে জাহাজডুবি হলে অ্যান্টনিও সে ধার শোধ করতে ব্যর্থ হয়। তখন শাইলক আদালতে নালিশ করে অর্থ আদায় করতে চায়, মূলত অ্যান্টনিওর বিপদের সুযোগ নিয়ে শাইলক তার সুযোগ গ্রহণ করে।
অন্যদিকে উদ্দীপকের গরিব চাষি গফুর মিয়া অর্থের অভাবে চাষবাস করতে না পারায় গ্রামের মোড়লের কাছ থেকে জমি বন্ধক দিয়ে দশ হাজার টাকা ধার নেয়। মোড়ল সাদা কাগজে গফুরের স্বাক্ষর নিয়ে রাখে। দুই বছর পর গফুর টাকা ফেরত দিতে গেলে সে অস্বীকৃতি জানায়। মোড়লের ভাষ্যমতে গফুর মিয়া পঞ্চাশ হাজার টাকা ঋণ নিয়েছিল। মোড়লের এই অন্যায় আচরণ মেনে নিতে না পেরে গফুর মিয়া বাধ্য হয়ে আইনের আশ্রয় নেয়। একজন বিপদে পড়া ব্যক্তিকে সাহায্যের নাম করে আরও বেশি বিপদাপন্ন করা উদ্দীপকের মোড়লের মতো গল্পের শাইলকের স্বভাব। তাই বলা যায় যে, মোড়ল চরিত্রটি ‘মার্চেন্ট অব ভেনিস’ গল্পের শাইলক চরিত্রের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ।
ঘ. “উদ্দীপকটি ‘মার্চেন্ট অব ভেনিস’ গল্পের আংশিক প্রতিফলন মাত্র”Ñ উক্তিটি সঠিক।
‘মার্চেন্ট অব ভেনিস’ গল্পের শাইলক অ্যান্টনিকে তার বন্ধুর জামিন হয়ে টাকা ধার দেয়। এর পেছনে শর্ত থাকে ঋণ পরিশোধে অসমর্থ হলে শাইলক অ্যান্টনিওর শরীর থেকে এক পাউন্ড মাংস কেটে নেবে। অ্যান্টনিওর দুর্ভাগ্য সে টাকা শোধ করতে না পারায় শাইলক আদালতে নালিশ করে। আদালতের অনুরোধেও শাইলক নিজের অবস্থান ত্যাগ করে না। পরবর্তীতে বাসানিÍ্যর স্ত্রী পোর্শিয়া তার বুদ্ধির মারপাঁচে শাইলককে ধরাশায়ী করলে আদালত তাকে একজন মানুষকে হত্যার ষড়যন্ত্রের কারণে শাস্তি দেয়।
আলোচ্য উদ্দীপকে গফুর মিয়া চাষ করার জন্য নিজের জমি গ্রামের মোড়লের কাছে বন্ধক রেখে দশ হাজার টাকা ধার নেয়। ধার নেয়ার সময় সাদা কাগজে স্বাক্ষরও করে। দুই বছর পর গফুর টাকা ফেরত দিতে গেলে মোড়ল দশ নয়, পঞ্চাশ হাজার টাকা ধারের কথা বলে। মোড়লকে গফুর নানাভাবে বোঝাতে চেষ্টা করলেও সে তার বক্তব্যে অটল থাকে। ফলে নিরুপায় গফুর মিয়া বাধ্য হয়ে আইনের আশ্রয় নেয়।
উল্লিখিত আলোচনা শেষে মোড়লের দাবির কারণে গফুর মিয়ার জীবনসংশয় না হলেও অ্যান্টনিওর ক্ষেত্রে তা ঘটতে চলেছিল। এসব কারণে উদ্দীপকটি গল্পের সমগ্রভাব ধারণ করে না।
প্রশ্ন -৬ নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
বর্গাচাষি গণি মিয়া আমজাদ চৌধুরীর কাছ থেকে জমি বর্গা নেওয়ার সময় তার একটা লিখিত বন্দোবস্ত থাকা দরকার বলে কাগজে টিপসই নেন। এরপর ফসল উঠলে তার দুই-তৃতীয়ংশ কেটে নেয় এই বলে যে, হালের বলদ কেনার জন্য সে আমজাদ চৌধুরীর কাছ থেকে টাকা ধার নিয়েছে। ফলে নিরুপায় হয়ে গণি মিয়া আদালতের দারস্থ হয়। আদালতের রায়ে পাঁচ বছরের জেল ও অর্থদÐ হয় আমজাদ চৌধুরীর।
ক. অ্যান্টনিও কোন শহরে বাস করত? ১
খ. শাইলক কেন অ্যান্টনিওর গায়ের এক পাউন্ড মাংস চায়? ২
গ. উদ্দীপকের আমজাদ চৌধুরীর সঙ্গে “মার্চেন্ট অব ভেনিস” গল্পের শাইলক চরিত্রের কোন দিকটির মিল রয়েছে, তা ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ.“নীতিহীন, সুদখোর, ক‚টবুদ্ধিসম্পন্ন লোকের পরিণতি ভালো হয় না।” মন্তব্যটি উদ্দীপক ও মার্চেন্ট অব ভেনিস গল্প অবলম্বনে বিচার কর। ৪
৬নং প্রশ্নের উত্তর
ক. অ্যান্টনিও ইতালির ভেনিস শহরে বাস করত।
খ. শাইলক প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে অ্যান্টনিওর শরীর থকে এক পাউন্ড মাংস চায়।
শাইলক ক‚টকৌশলে ফেলে অর্থ ধার দিয়ে অ্যান্টনিওর শরীর থেকে এক পাউন্ড মাংস কেটে নিতে চায়। তার একমাত্র কারণ শাইলক অ্যান্টনিওর জনপ্রিয়তা ও বন্ধুবাৎসল্যকে একেবারেই সহ্য করতে পারে না। তাই শাইলক সব সময় মনে মনে অ্যান্টনিওর মৃত্যু কামনা করত। পরবর্তী সময় যখন অ্যান্টনিওকে ফাঁদে ফেলতে সক্ষম হয় শাইলক তখন সে এক পাউন্ড মাংস কেটে নিতে চায়।
গ. লোভ ও ক‚টকৌশলের দিক থেকে ‘মার্চেন্ট অব ভেনিস’ গল্পের শাইলক চরিত্রের সাথে উদ্দীপকের আমজাদ চৌধুরীর মিল রয়েছে।
‘মার্চেন্ট অব ভেনিস’ গল্পের শাইলক মানুষকে চড়া সুদে ঋণ দেয় এবং শোধ করতে অপারগ হলে আদালতে নালিশ করে। আন্টনিওর বন্ধু বাসানিওর জন্য জামিনদার হয়ে ঋণ নিলে শাইলক শর্ত দেয় ঋণ শোধ করতে না পারলে সে অ্যান্টনিওর শরীর থেকে এক পাউন্ড মাংস কেটে নেবে। ক‚টকৌশল ও লোভের কারণেই সে অ্যান্টনিওর ক্ষতি করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিল।
অপরদিকে উদ্দীপকের গণি মিয়া আমজাদ চৌধুরীর কাছ থেকে জমি বর্গা নেওয়ার সময় লিখিত বন্দোবস্ত হিসেবে কাগজে টিপসই দেন। ফসল উঠলে তার দুই-তৃতীয়াংশ কেটে নেওয়া হয় সে টাকা ধার নিয়েছে বলে। নিরুপায় গণি মিয়া আদালতের দ্বারস্থ হন। আদালত আমজাদ মিয়ার লোভ ও ক‚টকৌশলের কারণে তাকে শাস্তি দেন। আদালতের রায়ে আমজাদ চৌধুরীর পাঁচ বছরের জেল ও অর্থদÐ হয়। উদ্দীপকের আমজাদ চৌধুরী এবং ‘মার্চেন্ট অব ভেনিস’ গল্পের শাইলক উভয়ই মানুষের সরলতার সুযোগ নিয়ে স্বার্থ হাসিলের চেষ্টা করে।
ঘ. নীতিহীন, সুদখোর, ক‚টবুদ্ধিসম্পন্ন লোকের পরিণতি ভালো হয় নাÑ মন্তব্যটি যথার্থ।
‘মার্চেন্ট অব ভেনিস’ গল্পের শাইলক একজন সুদখোর ব্যবসায়ী। সে ব্যবসায়িক এবং ব্যক্তিগত কারণে অ্যান্টনিওকে পছন্দ করে না। ফলে যখন অ্যান্টনিও শাইলকের কাছে ঋণ নিতে চায় তখন সে ক‚টবুদ্ধির প্রয়োগে একটি শর্ত জুড়ে দেয় যে ঋণ পরিশোধে অক্ষম হলে সে অ্যান্টনিওর শরীর থেকে এক পাউন্ড মাংস কেটে নেবে।
যেহেতু শাইলক দুষ্ট ও ক‚টবুদ্ধির লোক তাই সে প্রতিশোধ নেয়ার এ উপায়টি খুঁজে নিয়েছিল যার ফলে আদালত তাকে শাস্তি দেয়।
উদ্দীপকের আমজাদ চৌধুরী গণি মিয়ার কাছ থেকে কাগজে টিপসই নেয়। সে পরবর্তীতে গণি মিয়ার উৎপন্ন ফসলের সিংহভাগ আত্মসাৎ করার জন্য এই টিপসই ব্যবহার করে। আমজাদ চৌধুরীর ভাষ্য অনুযায়ী গণি মিয়া হালের বলদ কেনার জন্য টাকা ধার নিয়েছিল। এই ক‚টবুদ্ধির হাতিয়ার গণি মিয়ার উপর প্রয়োগ করা হয় কারণ জমির ফসল জোর করে দখল করা যায় না। তাই ক‚টবুদ্ধির চালে আমজাদ চৌধুরী ফসল আত্মসাৎ করেন। গণি মিয়া বাধ্য হয়ে আইনের আশ্রয় নিলে আদালত আমজাদ চৌধুরীকে শাস্তি প্রদান করে। এই একই ধরনের কাজ গল্পের শাইলক করেছিল অ্যান্টনিওর প্রতি প্রতিশোধ নেবার জন্য।
নিজের স্বার্থ উদ্ধারের জন্য নীতিহীন, সুদখোর ও ক‚টবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের মতো আচরণ করে যার সমাপ্তি ঘটে শাস্তির মাধ্যমে। তাই বলা যায়, যে নীতিহীন, সুদখোর, ক‚টবুদ্ধিসম্পন্ন লোকের পরিণতি ভালো হয় না।
প্রশ্ন -৭ নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
আমাদের ছোট গাঁয়ে ছোট ছোট ঘর
থাকি সেথা সবে মিলে নাহি কেহ পর
পাড়ার সকল ছেলে মোরা ভাই ভাই
এক সাথে খেলি আর পাঠশালে যাই।
ক. অ্যান্টনিও কোন দেশের সওদাগর ছিলেন? ১
খ. বাসানিওকে ভাগ্যবান বলা হয়েছে কেন? ব্যাখ্যা কর। ২
গ. উদ্দীপকের কবি চেতনার সাথে ‘মার্চেন্ট অব ভেনিস’ গল্পের শাইলকের বৈসাদৃশ্য কোথায়? বুঝিয়ে লেখ। ৩
ঘ.বৈসাদৃশ্য না থাকলে অ্যান্টনিও শাইলকের প্রতিহিংসার শিকার হতো নাÑমন্তব্যটির যথার্থতা বিচার কর। ৪
৭নং প্রশ্নের উত্তর
ক. অ্যান্টনিও ইতালির ভেনিস শহরের সওদাগর ছিলেন।
খ. পোর্শিয়া বিয়ে করার জন্য নির্বাচিত তিনজন প্রতিদ্ব›দ্বীর মধ্যে বাসানিও থাকায়Ñ বাসানিওকে ভাগ্যবান বলা হয়েছে।
পোর্শিয়া প্রয়াত বাবার একমাত্র কন্যা। অসংখ্য ধনসম্পদ আর রূপলাবণ্যের জন্য বহু ডিউক ও রাজপুত্রদের নজরে পড়েছে সে। তার পাণিপ্রার্থী হয়ে তাই হাজার যুবকের ভিড়। কিন্তু বাবার নির্দেশমতো পোর্শিয়া মাত্র তিনজন প্রতিদ্ব›দ্বীকে বেছে নিলেন। তার মধ্যে বাসানিও ছিল। সে কারণে বাসানিওকে ভাগ্যবান বলা হয়েছে।
গ. শাইলকের প্রতি মানুষের মনমানসিকতা বিরূপ থাকার ফলে কেউ তার সাথে সম্পৃক্ত হতে আগ্রহী ছিল না।
উদ্দীপকের কবির পারস্পরিক স¤প্রীতির চেতনার দিক থেকে উদ্দীপকের কবি চেতনার সাথে ‘মাচেন্ট অব ভেনিস’ গল্পের শাইলকের বৈসাদৃশ্য পরিলক্ষিত হয়।
‘মার্চেন্ট অব ভেনিস’ গল্পে শাইলক একজন ইহুদি ধর্মাবলম্বী। সে নিজের সুদের ব্যবসাকে অন্যান্য ব্যবসায়ীদের পরিশ্রমে উপার্জিত ব্যবসার সমতুল্য মনে করত। সে কাউকে বেকায়দায় ফেলে চড়া সুদে ধার দিত যা পরিশোধের সময় ঋণগ্রহিতাকে সর্বস্ব খোয়াতে হয়। এই কারণে তাকে কেউ সহ্য করতে পারত না বা পছন্দ করত না। ফলে তার সাথে সম্পৃক্ততা বা মিলেমিশে থাকার প্রবণতা কারো ছিল না।
অপরদিকে উদ্দীপকে কবি একটি গ্রামের চিত্র অঙ্কন করেছেনÑ যেখানে ছোট ছোট ঘরে সকলে মিলেমিশে থাকে। পাড়ার সকল ছেলেরা একে অপরের সাথে রক্ত দ্বারা সম্পর্কিত না হলেও মন যেন একসুরে বাঁধা। তাই বলা যায় উদ্দীপকের কবির মিলেমিশে থাকার চেতনার সাথে শাইলকের বৈসাদৃশ্য বিদ্যমান।
ঘ. বৈসাদৃশ্য না থাকলে অ্যান্টনিও শাইলকের প্রতিহিংসার শিকার হতো নাÑ মন্তব্যটি যথার্থ।
‘মার্চেন্ট অব ভেনিস’ গল্পে শাইলক সুদের ব্যবসা করার ফলে অ্যান্টনিওসহ কেউ তাকে পছন্দ করত না। শাইলকও কোনো প্রীতির দৃষ্টিতে অ্যান্টনিওকে দেখত না বরং তার সুদের ব্যবসার বিঘœকারী হিসেবে অপছন্দ করত। ফলে যখন সে সুযোগ পেয়েছিল তখন প্রতিহিংসা থেকেই ঋণের বদলে অ্যান্টনিওর শরীর থেকে এক পাউন্ড মাংস কেটে নিতে চেয়েছিল যাতে করে অ্যান্টনিওর প্রাণ সংহার হতে পারত। যদি অ্যান্টনিওর সাথে ভালো সম্পর্ক থাকত তবে শাইলক কখনোই এ ধরনের শর্তারোপ করত না।
অপরদিকে আলোচ্য উদ্দীপকে কবি একটি ছোট গ্রামের ছবি এঁকেছেন যেখানে ছোট ছোট ঘরে সবাই আপনজনের মতো বসবাস করে। মিলেমিশে এমনভাবে থাকে যেন একে অপরের ভাই, স¤প্রীতি আরও বেড়ে যায়।
একসাথে খেলা আর পাঠশালায় যাওয়ার কারণে। কারও যদি অন্যের সাথে ভালো সম্পর্ক থাকে এবং তারা মিলেমিশে থাকে তবে তারা একে অপরের ক্ষতি করার কথা চিন্তাও করে না। এরই বিপরীত ঘটনা ঘটেছিল অ্যান্টনিও ও শাইলকের সাথে। একে অপরের প্রতি শত্রæভাবাপন্ন ব্যবহারই তাদের মধ্যকার প্রতিহিংসার কারণ। পরস্পরের মানসিক দূরতের¡ কারণে যে বৈসাদৃশ্য সৃষ্টি হয় তা না থাকলে অ্যান্টনিও শাইলকের প্রতিহিংসার শিকার হতো না।
প্রশ্ন-৮ নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
আরবের ইয়েমেন প্রদেশে বাস করত হাতেমতাঈ নামে এক অতি সাধারণ যুবক। কিন্তু তার বদান্যতা, পরোপকারিতা ও অকৃত্রিম বন্ধুসুলভ আচরণের কথা সকলের মুখে মুখে ধ্বনিত-প্রতিধ্বনিত হতো। প্রতিহিংসাপরায়ণ রাজা বিষয়টি সহ্য করতে পারলেন না। তিনি হাতেমকে হত্যার জন্য এক গুপ্তঘাতক পাঠালেন। ঘাতক হাতেমকে হত্যা করতে গিয়ে তার গুণে মুগ্ধ হয়ে রাজার কাছে ফিরে আসলে রাজা তার ভুল বুঝতে পারলেন।
ক. অ্যান্টনিওর অন্তরঙ্গ বন্ধু ছিলেন কে? ১
খ. খুশিতে শাইলকের চোখ চকচক করে উঠল কেন? ২
গ. হাতেম তাঈ-এর সাথে ‘মার্চেন্ট অব ভেনিস’ গল্পের যে চরিত্রের সাদৃশ্য পাওয়া যায় তা ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ.‘ইয়েমেনের রাজাকে শাইলকের প্রতিচ্ছবি বলা যায় না।’‘মার্চেন্ট অব ভেনিস’ গল্পের আলোকে বিশ্লেষণ কর। ৪
৮নং প্রশ্নের উত্তর
ক. অ্যান্টনিওর অন্তরঙ্গ বন্ধু ছিল বাসানিও।
খ. পরম শত্রæর বিরুদ্ধে প্রতিশোধ গ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি হওয়ায় শাইলকের চোখ খুশিতে চকচক করে উঠল।
শাইলকের কাছ থেকে বন্ধুর জন্য ধার নেয়া অর্থ পরিশোধের সময় অতিক্রান্ত হয়ে গেলে শাইলকের আরোপিত শর্তে বাধা পড়ে অ্যান্টনিও। আদালতেও এর কোনো সমাধান না হওয়ায় অ্যান্টনিওর শরীর থেকে এক পাউন্ড মাংস কেটে নেয়ার নির্মম বাসনা পূরণের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যায় শাইলক। অ্যান্টনিওর এমন ক্ষতি করতে পারার কথা ভেবে তার চোখে খুশির ঝিলিক দেখা যায়।
গ. হাতেমতাঈ এর সাথে ‘মার্চেন্ট অব ভেনিস’ গল্পের অ্যান্টনিওর মিল লক্ষ করা যায়।
‘মার্চেন্ট অব ভেনিস’ গল্পে আমরা সদা হাসিখুশি ও বন্ধুবৎসল অ্যান্টনিওকে দেখি। যিনি বিপদে আপদে সকলকে সাহায্য করার জন্য সদাপ্রস্তুত। ঠিক তেমনি একটি চরিত্রের প্রতিরূপ আমরা উদ্দীপকের হাতেমতাঈকে দেখতে পাই। হাতেমতাঈ পরোপকারী, বন্ধুবৎসল এবং সকলের বিপদাপদে সাধ্যমতো সাহায্য করেন।
‘মার্চেন্ট অব ভেনিস’ গল্পে আমরা অ্যান্টনিওর প্রভাব প্রতিপত্তি ও সুনামে বিরক্ত শাইলককে দেখি। যে সব সময় অ্যান্টনিওর ক্ষতি করতে তৎপর। তবে গল্পের শেষ দৃশ্যে অ্যান্টনিওর চরিত্র মাধুর্যে মুগ্ধ হয়ে শাইলক ন্যায় ও ভালোর পথে আসেন। উদ্দীপক হাতেমতাঈয়ের গল্পটিও একই ধরনের। হাতেমতাঈয়ের সুনাম রাজা সহ্য করতে পারতেন না। কিন্তু পরবর্তী সময় হাতেম তাঈয়ে সদ্ চরিত্রে মুগ্ধ না হয়ে পারেন নি। তাই এ কথা নিঃসন্দেহে বলা যায় উদ্দীপকের হাতেম তাঈয়ের সাথে ‘মার্চেন্ট অব ভেনিস’ গল্পের অ্যান্টনিওর চরিত্রের বহুক্ষেত্রে সাদৃশ্য পরিলক্ষিত হয়।
ঘ. ইয়েমেনের রাজা ‘মার্চেন্ট অব ভেনিস’ গল্পের শাইলক চরিত্রের আংশিক প্রতিচ্ছবি মাত্র।
ইয়েমেনের রাজা এবং শাইলকের প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার তৎপরতার মাঝে পার্থক্য বিদ্যমান। তাছাড়া রাজা তার ভুল বুূঝতে পারলেও গল্পের শাইলক তার ভুল সম্পূর্ণরূপে স্বীকার করে নি।
গল্পের শাইলক ছিল সুদের ব্যবসায়ী। সে মানুষকে বেকায়দায় ফেলে মনের মতো শর্ত দিয়ে টাকা ধার দিত। বন্ধুবৎসল অ্যান্টনিওর জন্য তার ব্যবসার ক্ষতি হলে এবং চারদিকে অ্যান্টনিওর প্রশংসা দেখে ধূর্ত শাইলক তাকে ফাঁদে ফেলার চেষ্টা করে। ক‚টকৌশলী বুদ্ধির দ্বারা অ্যান্টনিওকে প্রাণ হরণের চেষ্টা করে কিন্তু শেষ পর্যন্ত সফল হয় না।
উদ্দীপকেও পরোপকারী ও অকৃত্রিম বন্ধুসুলভ হাতেম তাঈয়ের আচরণের কথা সকলের মুখে মুখে ধ্বনিত প্রতিধ্বনিত হলে আরবের রাজা প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে তাকে গুপ্তঘাতকের মাধ্যমে হত্যার চেষ্টা করে। কিন্তু ঘাতক তাকে হত্যা না করে হাতেম তাঈর গুণে মুগ্ধ হয়ে ফিরে এলে রাজা তার ভুল বুঝতে পারেন। অর্থাৎ, গল্পের শাইলক এবং উদ্দীপকের ইয়েমেনের রাজা উভয়ের লক্ষ্যই প্রতিহিংসা চরিতার্থ করা হলেও পদ্ধতিগত পার্থক্য বিদ্যমান। তাই উদ্দীপকের ইয়েমেনের রাজা ‘মার্চেন্ট অব ভেনিস’ গল্পের শাইলকের পূর্ণ প্রতিচ্ছবি নয়।
প্রশ্ন-৯ নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
সুমন নামে এক ব্যবসায়ী দিনাজপুরে এসে বসবাস করতে থাকে। তিনি বেশ হাসিখুশি ও বন্ধুভাবাপন্ন। এলাকার লোকজন যেকোনো বিপদে তাকে স্মরণ করে। বিশেষ করে অভাবগ্রস্তরা ছুটে আসত সুমন সাহেবের কাছে। খালি হাতে কেউ ফিরে যেত না। চারদিকে তার প্রশংসা। এসব দেখে সুদখোর ব্যবসায়ী মাসুদ সুমনের প্রতি ঈর্ষান্বিত হয়। সে মানুষকে বেকায়দায় ফেলে চড়া সুদে টাকা ধার দিত। ওই এলাকার মানুষ মাসুদকে পছন্দ করত না। শেষ পর্যন্ত ওই এলাকা থেকে মাসুদ চলে যেতে বাধ্য হয়। আর সুমন সুখে শান্তিতে সেখানে বাস করতে থাকে।
ক. তরুণ উকিল প্রকৃতপক্ষে কে ছিলেন? ১
খ. মরক্কোর রাজকুমার মনে অফুরন্ত হতাশা আর হাহাকার নিয়ে বিদায় হলেন কেন? ২
গ. উদ্দীপকের সুমন ও মাসুদের সাথে ‘মার্চেন্ট অব ভেনিস’ গল্পের কোন চরিত্রের মিল পাওয়া যায়? বর্ণনা কর। ৩
ঘ.‘উদ্দীপকের সুমন ও মাসুদের শেষ পরিণতি ও গল্পের শেষ পরিণতি একই’ মন্তব্যটি বিচার কর। ৪
৯নং প্রশ্নের উত্তর
ক. তরুণ উকিল প্রকৃতপক্ষে ছিলেন বাসানিওর স্ত্রী পোর্শিয়া।
খ. পোর্শিয়ার স্বামী নির্বাচন পরীক্ষায় পোর্শিয়ার ছবিসহ পেটিকা নির্বাচনে ব্যর্থ হওয়ায় মরক্কোর রাজকুমার মনে অফুরন্ত হতাশা আর হাহাকার নিয়ে বিদায় হলেন।
পোর্শিয়া তার বাবার শর্তমতে তিন জন প্রতিদ্ব›দ্বীকে বেছে নেয়। তাদের মধ্যে মরক্কোর রাজকুমারও ছিলেন। কিন্তু চুড়ান্তভাবে নির্বাচিত হওয়ার জন্য তাকে তিনটি পেটিকার মধ্য থেকে পোর্শিয়ার ছবি সংবলিত পেটিকাটি নির্বাচন করতে বলা হয়। কিন্তু মরক্কোর রাজকুমার সঠিক পেটিকাটি নির্বাচনে ব্যর্থ হওয়ায় মনে অফুরন্ত হতাশা আর হাহাকার নিয়ে বিদায় হলেন।
গ. ‘মার্চেন্ট অব ভেনিস’ গল্পের অ্যান্টনিও ও শাইলক চরিত্রের সাথে উদ্দীপকের সুমন ও মাসুদ চরিত্রের মিল পাওয়া যায়।
গল্পের সওদাগর অ্যান্টনিও বন্ধুবৎসল ও পরোপকারী। ফলে চারিদিকে তার প্রশংসা যা প্রতিহিংসার কারণ হয়ে দাঁড়ায় শাইলকের। সে মানুষকে বেকায়দায় ফেলে চড়া সুদে টাকা ধার দিয়ে ব্যবসা করে। ফলে সমাজের চোখে সে ছিল খারাপ প্রকৃতির।
উদ্দীপকের সুমন ছিল ব্যবসায়ী ও বন্ধুভাবাপন্ন জনপ্রিয় ব্যক্তি। অপরদিকে, মাসুদ ছিল সুদখোর। তাই মানুষ তাকে অপছন্দ করত। সুতরাং উদ্দীপকের সুমন ও মাসুদ যথাক্রমে গল্পের অ্যান্টনিও ও শাইলকের সমগোত্রীয়। অ্যান্টনিওর উদারনীতির জন্য শাইলকের সুদের ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হলে শাইলক অ্যান্টনিওর ধ্বংস মনেপ্রাণে কামনা করে। ঠিক তেমনি বন্ধুভাবাপন্ন সুমনের প্রতি ঈর্ষান্বিত হয় সুদখোর মাসুদ। তাই বলা যায়, পাঠ্যপুস্তকের অ্যান্টনিওর সাথে উদ্দীপকের সুমনের মিল পাওয়া যায়।
ঘ. উদ্দীপকের সুমন ও মাসুদের শেষ পরিণতি ও ‘মার্চেন্ট অব ভেনিস’ গল্পের শেষ পরিণতি অনেকটাই এক।
‘মার্চেন্ট অব ভেনিস’ গল্পে সওদাগর অ্যান্টনিও ছিল সৎ ও পরোপকারী কিন্তু শাইলক ছিল সুদ ব্যবসায়ী। অ্যান্টনিওর উদারতার কারণে শাইলকের সুদের ব্যবসার ক্ষতিসাধন হলে সে অ্যান্টনিওর ধ্বংসের পাঁয়তারা করে। তাই সুযোগ বুঝে শাইলক সাংঘাতিক মার প্যাঁচে অ্যান্টনিওকে ফেলে দিয়ে ধ্বংসের চুড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে যায়। কিন্তু ছদ্মবেশী উকিল পোর্শিয়ার বুদ্ধিমত্তায় শাইলক সবকিছু হারিয়ে তার কৃতকর্মের ফল পায়।
তেমনি উদ্দীপকের সুমনও সৎ ও বন্ধুভাবাপন্ন ব্যবসায়ী। কিন্তু মাসুদ সুদখোর ব্যবসায়ী। সে মানুষকে বিপদে ফেলে চড়া সুদে টাকা ধার দেয়। তবে শেষ পর্যন্ত এলাকাবাসী তার এরূপ অনৈতিক কাজের জন্য তাকে এলাকা ছাড়া করে। আর সুমন সুখে বসবাস করে।
‘মার্চেন্ট অব ভেনিস’ গল্পের শাইলক সাধারণ মানুষের ক্ষতি করতেই ছিল সর্বদা ব্যতিব্যস্ত। তাই সে নিজের ফাঁদে নিজেই পড়ে সবকিছু হারিয়েছে। তেমনি মাসুদও এলাকা ছাড়া হয়েছে তার কৃতকর্মের জন্য। কিন্তু সুমন ভালো কাজে লিপ্ত থাকায় সমাজের মানুষ কর্তৃক প্রশংসিত হয়েছে। যেমন অ্যান্টনিও তার কর্মের জন্য আইনের মাধ্যমে পুরস্কৃত হয়েছে। সুতরাং বলা যায় উদ্দীপকের সুমন ও মাসুদের শেষ পরিণতির সাথে গল্পের শেষ পরিণতির মিল রয়েছে।
প্রশ্ন-১০ নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
আলম বন্ধুদের বিপদে অকাতরে সাহায্য করেন। একবার এক বন্ধুর বিপদে অত্যাচারী সুদখোর মহাজনের কাছ থেকে টাকা ধার নিয়ে বন্ধুকে দিল। শর্ত রইল যদি যথাসময়ে টাকা না দিতে পারে তবে বাড়ির ঘোড়াটি নিয়ে যাবে। যথাসময়ে সে টাকা পরিশোধ করতে পারল না। কোর্টে বিচার গেল। আলমের আইনজীবী বলল ঘোড়া নিতে পার তবে তাকে খেতে দিতে হবে এবং তাকে দিয়ে কোনো কাজ করাতে পারবে না।
ক. অ্যান্টনিও কোন দেশের কোন শহরের সওদাগর ছিলেন? ১
খ. ‘মার্চেন্ট অব ভেনিস’ গল্পের শেষাংশে উচ্চ হাসির রোল পড়ল কেন? ২
গ. আলমের সাথে ‘মার্চেন্ট অব ভেনিস’ গল্পের কোন চরিত্রের সাদৃশ্য আছে? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ.আলমের আইনজীবী ‘মার্চেন্ট অব ভেনিস’ গল্পের পোর্শিয়ার প্রতিনিধিত্ব করে কি? মতের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন কর। ৪
১০নং প্রশ্নের উত্তর
ক. অ্যান্টনিও ইতালির ভেনিস শহরের সওদাগর ছিলেন।
খ. আদালতের তরুণ উকিল যে পোর্শিয়া ছিল এ কথা প্রকাশ পেলে ‘মার্চেন্ট অব ভেনিস’ গল্পের শেষাংশে উচ্চ হাসির রোল পড়ল।
বাসানিওর স্ত্রী পোর্শিয়া পুরুষের ছদ্মবেশে তরুণ উকিল সেজে আদালতে অ্যান্টনিওর পক্ষে কথা বলে। পোর্শিয়ার বিচক্ষণ জোরালো যুক্তির কাছে শাইলকের পরাজয় ঘটে। এ জন্য উপহার স্বরূপ ছদ্মবেশী উকিল পোর্শিয়াকে অ্যান্টনিও একটি আংটি প্রদান করে। যা ছিল বাসানিওর আর বাসানিও বাড়ি ফিরলে পোর্শিয়া আংটির বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে সে সব কথা খুলে বলে। পোর্শিয়াই যে তরুণ উকিল ছিল বাসানিও তা বুঝতে পারেনি। তাই পোর্শিয়া আংটিটি এনে বাসানিওর হাতে পরিয়ে দিলে বাসানিও ও অ্যান্টনিও উভয়ই অবাক হয়। কিন্তু পরক্ষণেই তারা বুঝতে পারে যে আদালতে তরুণ উকিলের বেশে পোর্শিয়াই উপস্থিত হয়েছিল। আর তাতেই উচ্চ হাসির রোল পড়ে।
গ. উদ্দীপকের আলমের সঙ্গে গল্পের অ্যান্টনিওর সাদৃশ্য আছে।
গল্পের প্রতিহিংসাপরায়ণ সুদখোর শাইলকের কাছ থেকে কঠিন শর্তে টাকা নিয়ে অ্যান্টনিও বন্ধুর উপকার করে। কিন্তু টাকা ঠিক সময়ে দিতে না পারায় তাকে আদালতের সম্মুখীন হতে হয়।
উদ্দীপকের আলমও পরোপকারী ছিল। বন্ধুর জন্য সে অত্যাচারী সুদখোর মহাজনের কাছ থেকে কঠিন শর্তে টাকা ধার নেয়। কিন্তু ঠিক সময়ে টাকা পরিশোধ করতে না পারায় সে কোর্টে বিচারের সম্মুখীন হয়। সুতরাং উদ্দীপকের আলম ও গল্পের অ্যান্টনিওর জীবনে ঘটে যাওয়া নানা ঘটনার সাথে তাদের সাদৃশ্য রয়েছে।
ঘ. আলমের আইনজীবী ‘মার্চেন্ট অব ভেনিস’ গল্পের পোর্শিয়ার প্রতিনিধিত্ব করে।
‘মার্চেন্ট অব ভেনিস’ গল্পে অ্যান্টনিও যথাসময়ে শাইলকের টাকা ফেরত না দেওয়ায় শাইলক অ্যান্টনিওর শরীরের মাংস কেটে নিতে চায়। তখন ছদ্মবেশী তরুণ উকিল পোর্শিয়া বিচারকের সামনে এসে দাঁড়ায় এবং শাইলককে অ্যান্টনিওর শরীর থেকে রক্তপাতহীন এক পাউন্ড মাংস কেটে নিতে বলে। কিন্তু রক্ত না ঝরিয়ে মাংস কাটা সম্ভব নয়। তাই শাইলক বিচারে হার মানে।
অপরপক্ষে উদ্দীপকের আলম অত্যাচারী সুদখোর মহাজনের টাকা যথাসময়ে ফিরিয়ে দিতে না পারায় আলমের ঘোড়াটি মহাজন নিয়ে যেতে চায়। এ ব্যাপারে কোর্টে বিচার গেলে আলমের আইনজীবী বলল, ঘোড়া নিতে পার তবে ঘোড়াকে খেতে দিতে হবে এবং তাকে দিয়ে কোনো কাজ করানো যাবে না। কারণ শর্ত ছিল ঘোড়া নেওয়া যেতে পারে। কিন্তু তাকে দিয়ে কাজ করানো যাবে কি যাবে না সে বিষয়ে কিছু বলা ছিল না।
আলোচ্য গল্পে পোর্শিয়ার বিচার প্রস্তাবে তার বুদ্ধিমত্তা ও বিচক্ষণতা প্রকাশ পেয়েছে এবং উদ্দীপকে আলমের বিচার প্রস্তাবেও বুদ্ধিমত্তা ও বিচক্ষণতা প্রকাশ পেয়েছে। তাই বলা যায়, আলমের আইনজীবী ‘মার্চেন্ট অব ভেনিস’ গল্পের পোর্শিয়ার প্রতিনিধিত্ব করে।
সৃজনশীল প্রশ্নব্যাংক
প্রশ্ন-১১ ল্ফ হাজী মুহম্মদ মুহসীন জাতিধর্ম নির্বিশেষে সকল স¤প্রদায়ের জন্য দান করেছেন তার অতুল ঐশ্বর্য। দানশীলতার জন্য তিনি দানবীর নামে সুপরিচিত। অন্যদিকে নীলকরগণ কৃষকদের দাদন দেওয়ার সময় চুক্তিনামায় টিপসই নিত। শর্ত অনুযায়ী অর্থ পরিশোধ করতে না পারলে জমি বাজেয়াপ্ত করত। এমনকি স্ত্রী-কন্যাকেও হরণ করত। এমন কোনো হীন কাজ ছিল না যা তারা করতে পারত না।
ক. ইতালির মুদ্রার নাম কী? ১
খ. বজ্রাহত পথিকের মতো শাইলক দাঁড়িয়ে রইল কেন? ২
গ. উদ্দীপকে প্রতিফলিত বিষয়টি ‘মার্চেন্ট অব ভেনিস’ গল্পের আলোকে ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. ‘নীলকরগণ শাইলক চরিত্রের প্রতিনিধি’Ñ বিশ্লেষণ কর। ৪
প্রশ্ন-১২ ল্ফ হৃদয়ের বন্ধু প্রিতম মরণব্যাধি ক্যান্সারে আক্রান্ত। দীর্ঘদিন ধরে হৃদয় বন্ধুর চিকিৎসায় সাহায্য করে আসছে। এক পর্যায়ে এ চিকিৎসার অর্থ জোগাতে সে নিজের জমিজমাটুকু বিক্রি করে দেয়। এতেও বন্ধু প্রিতম সুস্থ না হলে হৃদয় বন্ধুর সুস্থতার জন্য অন্যের কাছে হাত পাতে।
ক. অ্যান্টনিও কোন শহরে বাস করত? ১
খ. অ্যান্টনিও শাইলকের অন্যায় প্রস্তাব সত্তে¡ও ঋণ গ্রহণে রাজি হলো কেন? ২
গ. উদ্দীপকে ‘মার্চেন্ট অব ভেনিস’ গল্পের কোন বিষয়টির প্রতিফলন ঘটেছে? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. “উক্ত বিষয়টিই ‘মার্চেন্ট অব ভেনিস’ গল্পের একমাত্র প্রতিপাদ্য” মন্তব্যটি বিচার কর। ৪
অনুশীলনের জন্য দক্ষতাস্তরের প্রশ্ন ও উত্তর
জ্ঞানমূলক
প্রশ্ন \ ১ \ ‘মার্চেন্ট অব ভেনিস’ গল্পটির রচয়িতা কে?
উত্তর : ‘মার্চেন্ট অব ভেনিস’ গল্পের রচয়িতা উইলিয়াম শেক্সপিয়ার।
প্রশ্ন \ ২ \ ভেনিসের মানুষ কাকে বরদাস্ত করতে পারত না?
উত্তর : ভেনিসের মানুষ সুদ ব্যবসায়ী শাইলককে বরদাস্ত করতে পারত না।
প্রশ্ন \ ৩ \ বাসানিও শাইলকের কাছ থেকে কত টাকা ধার নিয়েছিল?
উত্তর : বাসানিও শাইলকের কাছ থেকে তিন হাজার ড্যাকাট ধার নিয়েছিল।
প্রশ্ন \ ৪ \ মরক্কোর রাজপুত্র যে পেটিকাটি পছন্দ করেছিল তার ভিতর কী ছিল?
উত্তর : মরক্কোর রাজপুত্র স্বর্ণের পেটিকা পছন্দ করেছিল আর তার ভিতর ছিল মড়ার মাথার খুলি এবং উপদেশ বাণী লেখা একটি চিরকুট।
প্রশ্ন \ ৫ \ জেসিকা কাকে বিয়ে করার জন্য পালিয়ে ছিল?
উত্তর : শাইলকের একমাত্র মেয়ে জেসিকা অ্যান্টনিওর বন্ধুপুত্র লরেঞ্জোকে বিয়ে করার জন্য তার সাথে পালিয়েছিল।
প্রশ্ন \ ৬ \ অ্যান্টনিও কোন ধর্মাবলম্বী?
উত্তর : অ্যান্টনিও খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বী।
প্রশ্ন \ ৭ \ বাসানিওকে টাকা ধার দিতে শাইলক কাকে জামিন রাখতে চাইল?
উত্তর : বাসানিওকে টাকা ধার দিতে শাইলক অ্যান্টনিওকে জামিন রাখতে চাইল।
প্রশ্ন \ ৮ \ বাসানিও শাইলকের কাছে কত ড্যাকাট ধার চেয়েছিল?
উত্তর : বাসানিও শাইলকের কাছে তিন হাজার ড্যাকাট ধার চেয়েছিল।
প্রশ্ন \ ৯ \ পোর্শিয়ার পরিচারিকার নাম কী?
উত্তর : পোর্শিয়ার পরিচারিকার নাম নেরিসা।
প্রশ্ন \ ১০ \ পোর্শিয়ার ছবি কোন পেটিকায় ছিল?
উত্তর : সিসার পেটিকায় পোর্শিয়ার ছবি ছিল।
অনুধাবনমূলক
প্রশ্ন \ ১ \ ‘মার্চেন্ট অব ভেনিস’ গল্পে শাইলকের নীতি কেমন ছিল?
উত্তর : শাইলক সুচতুর ও অত্যন্ত ক‚টবুদ্ধিসম্পন্ন। সে ছিল সুদ ব্যবসায়ী।
সে মানুষকে বেকায়দায় ফেলে চড়া সুদে টাকা ধার দেয়। তার মধ্যে মানবিক করুণার সামান্যতম ছিটেফোঁটা নেই। সে অর্থের জন্য ঘৃণ্য সবকিছুই করতে পারে। মূলত তার নীতি ছিল অসৎ ও অমানবিক।
প্রশ্ন \ ২ \ চারদিকে অ্যান্টনিওর নামের প্রশংসা কেন?
উত্তর : অ্যান্টনিও পরোপকারী, বন্ধুবৎসল এবং সৎ চরিত্রের অধিকারী হওয়ায় চারদিকে অ্যান্টনিওর নামের প্রশংসা।
অ্যান্টনিও ইতালির ভেনিস শহরের একজন বিখ্যাত সওদাগর। মানুষ হিসেবেও সে যথেষ্ট ভালো। সে বিপদে আপদে সকলকে সাহায্য করে, অভাবগ্রস্তদের অর্থ দিয়ে সাহায্য করে। বন্ধুদের সকল রকম বিপদে সে এগিয়ে আসে। সে খুবই মুক্তহস্তের লোক। তার কাছে কেউ সাহায্যের জন্য গেলে সে শূন্য হাতে ফেরায় না। এসব কারণেই অ্যান্টনিওর নামের প্রশংসা চারদিকে।
প্রশ্ন \ ৩ \ শাইলক অ্যান্টনিওকে পছন্দ করত না কেন?
উত্তর : সুদের ব্যবসায়ের ক্ষতি হওয়ার জন্য শাইলক অ্যান্টনিওকে পছন্দ করত না।
শাইলক ও অ্যান্টনিও একই শহরে বসবাস করত। শাইলক ইহুদি ধর্মের লোক ছিল। সে তার ব্যবসায়িক প্রতিদ্ব›দ্বী অ্যান্টনিওকে পছন্দ করত না। কারণ, অ্যান্টনিরও উদারতা ও দানশীলতার কারণে তার সুদের ব্যবসা ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে।
প্রশ্ন \ ৪ \ বুড়ো শাইলকের কথায় বাসানিও চমকে উঠল কেন?
উত্তর : টাকা ধার নিতে গিয়ে বুড়ো শাইলকের শর্ত শুনে বাসানিও চমকে উঠল।
বাসানিও বিপদে পড়লে অন্তরঙ্গ বন্ধু অ্যান্টনিওর কাছে সাহায্য নিতে আসে। অ্যান্টনিও উপায়ান্তর না পেয়ে কারও কাছে ধার নেওয়ার কথা বললে বাসানিও শাইলকের কাছে অ্যান্টনিওর জামিনে টাকা ধার নিতে যায়। অ্যান্টনিওর জামিনের কথা শুনে শাইলক মুচকি হাসে এবং শর্ত দেয় যে, নির্দিষ্ট সময়ে ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হলে অ্যান্টনিওর শরীর থেকে শাইলককে এক পাউন্ড মাংস কেটে দিতে হবে। আর তা শুনে বাসানিও চমকে ওঠে।