সাড়ে তিন হাত জমি
মূল : লেভ তলস্তয়
রূপান্তর : প্রফেসর ড. সরকার আবদুল মান্নান
বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ে ১ থেকে ২ নম্বর প্রশ্নের উত্তর দাও :
ঘোড়ায় চড়ে সে জমিজমা দেখতে গিয়ে আনন্দে অভিভ‚ত হয়। তার জমির ঘাসগুলো, ফুলগুলো সবই যেন আলাদা। মন তার আনন্দে ভরে ওঠে।
১. এখানে কার কথা বলা হয়েছে?
ক ওভারশিয়ারের খ জমিদারের
পাখোমের ঘ একজন চাষির
২. তার মন আনন্দে ভরে ওঠার কারণ কী?
ক তার জমির ঘাস দেখে খ তার জমির ফসল দেখে
গ প্রচুর ফসল ফলায় জমির মালিক হওয়ার আত্মতৃপ্তিতে
৩. একজন মজুর সঙ্গে নিয়ে প্রায় ৩৩২ মাইল পথ পায়ে হেঁটে সাত দিনের দিন পাখোম বাসকিরদের তাঁবুতে গিয়ে হাজির হলো। তার সাথে ছিল ১০০ রুবল। বাসকিরদের দেশে জমি ছিল
র. সস্তা
রর. ভালো
ররর. উর্বর
নিচের কেনটি সঠিক?
ক র খ রর গ ররর র ও ররর
৪. বাসকিরদের দেশে যাওয়ার জন্য পাখোমকে কত মাইল পথ হাঁটতে হয়?
ক ১৪০ খ ২৭৪ ৩৩২ ঘ ৪০০
৫. ‘সাড়ে তিন হাত জমি’ গল্পের মূল রচয়িতা কে?
লেভ তলস্তয় খ উইলিয়াম শেক্সপিয়ার
গ ড্যানিয়েল ডিফো ঘ ওয়াশিংটন আরভিং
৬. পাখোম স্বপ্নে প্রথমে কাকে দেখতে পেল?
স্টার্শিনা খ মহাজন গ শয়তান ঘ গরিব চাষি
৭. কোন বোনের স্বামী ছিল পাখোম?
ক বড় খ মেজ ছোট ঘ সেজ
৮. পাখোমের মৃত্যুর মূল কারণ কোনটি?
ক অতিরিক্ত পরিশ্রম অতিরিক্ত লোভ
গ শয়তানের কারসাজি ঘ ভাগ্য বিড়ম্বনা
নিচের উদ্দীপকটি পড়ে ৯ ও ১০ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
সুজন মাঝি আকাশে ঘন কালো মেঘ দেখেও অনেক মাছ পাওয়ার আশায় গভীর সমুদ্রে যায়। কিন্তু মাছ নিয়ে তার আর তীরে ফেরা হয় না।
৯. উদ্দীপকের সুজন মাঝি ‘সাড়ে তিন হাত জমি’ রচনার কোন চরিত্রের প্রতিরূপ?
পাখোম খ স্টার্শিনা গ ওভারশিয়ার ঘ মহাজন
১০. উক্ত চরিত্রে প্রকাশ পেয়েছেÑ
র. লোভ রর. স্বার্থচিন্তা ররর. দায়বদ্ধতা
নিচের কোনটি সঠিক?
র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
১১. ‘সাড়ে তিন হাত জমি’ গল্পের শয়তানের সর্বশেষ রূপ কোনটি?
ক স্টার্শিনা চাষি
গ মালিক ঘ গ্রাম্য পঞ্চায়েত
নিচের উদ্দীপকটি পড়ে ১২ ও ১৩ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
দ্বিগুণ করার আশায় জিনের বাদশার হাতে নিজের স্বর্ণালংকার তুলে দিয়ে সর্বস্বান্ত হলেন আলতা বানু।
১২. উদ্দীপকের আলতা বানু ‘সাড়ে তিন হাত জমি’ গল্পের কোন চরিত্রের সদৃশ্য?
ক স্টার্শিনা পাখোম গ মহাজন ঘ ওভারশিয়ার
১৩. উক্ত সাদৃশ্যের ভিত্তি হলোÑ
র. লোভ রর. স্বার্থচিন্তা ররর. কৌশল
নিচের কোনটি সঠিক?
র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
১৪. পাখোম টাকা জোগাড়ের জন্য ছেলেকে কোথায় পাঠিয়েছিল?
ক ব্যবসায় খ বিদেশে গ চাষাবাদে চাকরিতে
১৫. কখন পাখোম স্ত্রী-পুত্র নিয়ে নতুন দেশে পাড়ি জমায়?
ক গ্রীষ্মের শুরুতে বসন্তের শুরুতে গ বর্ষার শুরুতে ঘ শীতের শুরুতে
১৬. পাখোমের স্বপ্নে দেখা সাদা কাগজের মতো মুখের লোকটি কে ছিল?
ক শয়তান খ ওভারশিয়ার গ মহাজন পাখোম
১৭. পাখোম শেষ পর্যন্ত মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েÑ
ক অসুস্থ হওয়ায় খ অধিক পরিশ্রমে
গ শয়তানের প্রহারে অতি লোভে
১৮. বাসকিরদের পানীয়ের নাম কী?
ক কুসুম খ কুসেম কুসিম ঘ কুসাম
১৯. কতটুকু জমির মধ্যে পাখোমের সমাধি হলো?
সাড়ে তিন হাত খ সাড়ে চার হাত
গ সাড়ে পাঁচ হাত ঘ সাড়ে ছয় হাত
২০. রুবল কোন দেশের মুদ্রার নাম?
ক ইতালি খ ফ্রান্স গ জার্মানি রাশিয়া
সাধারণ বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
২১. পাখোমের বাড়ির কাছের মহিলা কত একর জমির মালিক ছিলেন? (জ্ঞান)
ক ২০০ খ ২২০ গ ২৩০ ২৪০
২২. পাখোমের বাড়ির কাছের মহিলা কাকে জমিদারির ওভারশিয়ার নিযুক্ত করলেন? (জ্ঞান)
ক পাখোমকে অবসরপ্রাপ্ত একজন সৈনিককে
গ মহাজনকে ঘ সামারার কৃষককে
২৩. গ্রামের কৃষকরা জমি কেনার জন্য একত্রিত হতে পারল না কেন? (অনুধাবন)
ক পাখোমের অত্যাচারে খ ওভারশিয়ার লোকটির অত্যাচারে
শয়তানের ইন্ধনে ঘ স্টার্শিনার কুমন্ত্রণায়
২৪. পাখোমের বাড়িতে অতিথি হিসেবে কে আসে? (জ্ঞান)
ক স্টার্শিনা একজন চাষি
গ ওভারশিয়ার ঘ একজন জমিদার
২৫. ভগলার ওপারে গ্রাম্য পঞ্চায়েতে নাম লেখালে কত একর জমি পাওয়া যায়? (জ্ঞান)
ক ৫০ খ ৬০ গ ৯০ ১০০
২৬. সামারায় প্রতি একর জমির দাম কত? (জ্ঞান)
ক ১ রুবল ১.৫০ রুবল
গ ২ রুবল ঘ ২.৫০ রুবল
২৭. পাখোম জমিজিরাত বিক্রি করল কেন? (অনুধাবন)
নতুন দেশে যাওয়ার জন্য খ ঋণ পরিশোধ করার জন্য
গ ছেলের পড়াশোনার জন্য ঘ স্ত্রীর অসুস্থতার জন্য
২৮. নতুন দেশে সমাজের সদস্য হওয়ার কারণে পাখোম কত একর জমি লাভ করল? (জ্ঞান)
ক ৫০ ১০০ গ ১২০ ঘ ১৫০
২৯. বাসকিরদের দেশে মানুষগুলো কেমন? (অনুধাবন)
সহজ সরল খ অত্যন্ত লোভী
গ পরোপকারী ঘ নির্দয়
৩০. ‘জমি যদি পাই তা হলে কাউকে পরোয়া করব না, স্বয়ং শয়তানকেও না’এ উক্তির মধ্য দিয়ে পাখোমের মনের কোন দিকটি প্রকাশিত হয়েছে? (উচ্চতর দক্ষতা)
অহংকার খ লোভ গ ক্ষোভ ঘ দুঃখ
৩১. স্টার্শিনা কোথায় টুপি রেখেছিল? (জ্ঞান)
ক পাখির পালকের বিছানায়
শিকান নামে গোলপাহাড়ের উপর
গ ভলগা নদীর ওপারে ঘ ভলগা নদীতে চলমান স্টিমারে
৩২. স্টার্শিনা কত রুবলসহ টুপি রেখেছিল? (জ্ঞান)
১০০ খ ১২০ গ ১৫০ ঘ ২০০
৩৩. পাখোম কাকে সঙ্গে নিয়ে বাসকিরদের দেশে যাওয়ার জন্য যাত্রা করল? (জ্ঞান)
ক স্ত্রী খ পুত্র মজুর ঘ বন্ধু
৩৪. পাখোম বাসকিরদের দেশে কীভাবে গেল? (জ্ঞান)
ক নৌকায় চড়ে খ স্টিমারে চড়ে
পায়ে হেঁটে ঘ ঘোড়ায় চড়ে
৩৫. বাসকিরদের প্রিয় খাবার কী? (জ্ঞান)
ক গরুর দুধ ঘোড়ার দুধ গ গমের রুটি ঘ যবের রুটি
৩৬. বাসকিররা কী দিয়ে কুসিম তৈরি করে? (জ্ঞান)
ক গড়–র দুধ ঘোড়ার দুধ
গ ছাগলের মাংস ঘ ভেড়ার মাংস
৩৭. বাসকিরদের নেতার নাম কী? (জ্ঞান)
স্টার্শিনা খ রোশিনা গ এলিনা ঘ রোহিনা
৩৮. বাসকিরদের দেশে জমির দাম দিনপ্রতি কত রুবল? (জ্ঞান)
ক ৫০ খ ৬০ গ ৯০ ১০০
৩৯. বাসকিরদের দেশে পাখোম কীসের বিছানায় শুয়েছিল? (জ্ঞান)
ক কাঠের পাখির পালকের গ চামড়ার ঘ কাপড়ের
৪০. পাখোম স্বপ্নের মধ্যে কার হাসির শব্দ শুনতে পেল? (জ্ঞান)
স্টার্শিনার খ নিজ স্ত্রীর গ নিজ পুত্রের ঘ ওভারশিয়ারের
৪১. ‘সাড়ে তিন হাত জমি’ গল্পে উল্লিখিত পাহাড়টির নাম কী? (জ্ঞান)
শিকান খ রুমোল গ জোহান ঘ সাফা
৪২. জমি দখলের সময় পাখোম ক্লান্তি বোধ করলেও মাটিতে বসল না কেন? (অনুধাবন)
ক স্টার্শিনার ভয়ে খ জমি হারানোর ভয়ে
ঘুমিয়ে পড়ার আশঙ্কায় ঘ শরীরে ধুলো লাগার আশঙ্কায়
৪৩. পাখোম কখন শিকান পাহাড়ে পৌঁছাল? (জ্ঞান)
ক মধ্যােহ্ন খ অপরােহ্ণ
গ সূর্যোদয়ের সময় সূর্যাস্তের সময়
৪৪. ‘সাড়ে তিন হাত জমি’ গল্পের মূলভাব কী? (উচ্চতর দক্ষতা)
লোভে পাপ, পাপে মৃত্যু খ সময়ের একফোঁড়, অসময়ের দশফোঁড়
গ পরিশ্রম সৌভাগ্যের প্রসূতি ঘ চকচক করলেই সোনা হয় না
৪৫. পাখোমের স্বপ্নের মধ্যে কী প্রকাশিত হয়? (উচ্চতর দক্ষতা)
ক স্টার্শিনার অত্যাচার প্রবণতা
পাখোমের পরিণতির পূর্ব সংকেত
গ জমি ক্রয়ের অমঙ্গলজনক সংকেত
ঘ স্ত্রী-পুত্রের মানসিক অবস্থার প্রকৃতি
বহুপদী সমাপ্তিসূচক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
৪৬. জমি কেনার জন্য পাখোম যা বিক্রি করল (অনুধাবন)
র. গাধার বাচ্চা রর. অর্ধেক মৌমাছি
ররর. দুটি গরু
নিচের কেনটি সঠিক?
র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৪৭. মহিলার কাছ থেকে পাখোম ক্রয় করল (অনুধাবন)
র. একটি বাড়ি রর. ত্রিশ একর জমি
ররর. একটি বাগান
নিচের কেনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৪৮. নতুন দেশের সদস্য হওয়াতে পাখোম লাভ করে (অনুধাবন)
র. ১০০ একর জমি
রর. গোচারণ ভ‚মি
ররর. একটি বাগান
নিচের কেনটি সঠিক?
র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৪৯. বাসকিররা তাদের জমি যেভাবে ব্যবহার করে (অনুধাবন)
র. ফসল ফলিয়ে
রর. ঘোড়া চরিয়ে
ররর. গরু চরিয়ে
নিচের কেনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৫০. বাসকিরদের বৈশিষ্ট্যের মধ্যে রয়েছে (অনুধাবন)
র. সহজ-সরল রর. দয়ালু ররর. হাসিখুশি
নিচের কেনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর র, রর ও ররর
৫১. পাখোমকে দেখে বাসকিররা যে ধরনের ব্যবহার করল (অনুধাবন)
র. অভ্যর্থনা জানাল রর. আদর-আপ্যায়ন করল
ররর. এড়িয়ে চলল
নিচের কেনটি সঠিক?
র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
অভিন্ন তথ্যভিত্তিক বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
নিচের উদ্দীপকটি পড়ে ৫২ ও ৫৩নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
মোশাররফ হোসেন ট্রলার নিয়ে সমুদ্রে মাছ ধরে। একদিন সমুদ্রের কিনারায় জাল ফেলে সে যে মাছ পেল তাতে তার ট্রলারটি পরিপূর্ণ হয়ে গেল। সে আরও মাছ পাওয়ার আশায় গভীর সমুদ্রে গিয়ে আবার জাল ফেলল এবং মাছও পেল। কিন্তু অতিরিক্ত মাছ ধারণ করতে না পেরে তার ট্রলারটি গভীর সমুদ্রে ডুবে গেল।
৫২. জেলে মোশাররফ হোসেনের সাথে ‘সাড়ে তিন হাত জমি’ গল্পের কোন চরিত্রের সাদৃশ্য রয়েছে?
ক কৃষক খ মহাজন গ স্টার্শিনা পাখোম
৫৩. উক্ত সাদৃশ্যের কারণ (অনুধাবন)
র. অতিরিক্ত লোভী মানসিকতা রর. লোভের কারণে করুণ পরিণতি
ররর. অতিরিক্ত পরিশ্রমপ্রিয়তা
নিচের কেনটি সঠিক?
র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন -১ নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
গোল পাহাড়ের লোকগুলো তাকে ডাকছে। চিৎকার করে তাকে উৎসাহ দিচ্ছে। সে শেয়ালের চামড়ার টুপিটি মাটিতে পড়ে থাকতে দেখল। তার ভেতরে টাকা। তার পাশে দাঁড়িয়ে স্টার্শিনা। তার স্বপ্নের কথা মনে হলো। তবু সে পৌঁছতে চায়। নিজেকে সে খুন করছে। তবু দৌড় বন্ধ করল না। সূর্য যখন অস্ত গেল তখন সে পাহাড় ছুঁয়েছে। একটি মুমূর্ষু জন্তুর মতো সে পাহাড় ডিঙিয়ে টুপিটি স্পর্শ করল। স্পর্শ করতে করতে সে নিচে পড়ে গেল। স্টার্শিনা চিৎকার করে উঠল, ‘হায় যুবক, অনেক জমি তুমি পেলে বটে।’ পাখোমের মজুর ছুটে গেল তার কাছে। তাকে টেনে তুলতে চেষ্টা করল। তখন তার মুখ দিয়ে রক্তের ধারা বইছে। পাখোম মারা গেল। স্টার্শিনা হাসতে লাগল। শেষে সাড়ে তিন হাত জমির মধ্যে পাখোমের সমাধি হলো।
ক. উদ্ধৃত অংশটি কোন গল্প থেকে নেওয়া হয়েছে?
খ. পাখোমের মনের ইচ্ছা কী ছিলÑ বর্ণনা কর।
গ. পাখোমের শেষ পরিণতির জন্য দায়ী কী?Ñ ব্যাখ্যা কর।
ঘ.‘শেষে সাড়ে তিন হাত জমির মধ্যে পাখোমের সমাধি হলো’Ñ উদ্ধৃত অংশের আলোকে উক্তির মর্মকথা বিশ্লেষণ কর।
১নং প্রশ্নের উত্তর
ক. উদ্ধৃত অংশটি ‘সাড়ে তিন হাত জমি’ গল্প থেকে নেওয়া হয়েছে।
খ. নিজের বেশ কিছু জমি পাওয়ার ইচ্ছা ছিল পাখোমের।
মাটির কোলে বড় হওয়া কৃষক পাখোমের জমির প্রতি বেজায় লোভ ছিল। মনে মনে সে এমন ইচ্ছা পোষণ করত যে যদি জমি পায় তাহলে সে কাউকে পরোয়া করবে না। এমনকি স্বয়ং শয়তানকেও সে পরোয়া করবে না।
গ. জমির প্রতি লোভই পাখোমের মৃত্যুর জন্য দায়ী।
জমির প্রতি কৃষক পাখোমের বেজায় লোভ ছিল। জমিকে সে এতই গুরুত্ব দিত যে সে ভাবত, জমি পেলে সে কাউকেই পরোয়া করবে না। এমনকি স্বয়ং শয়তানকেও না। তার এরূপ ইচ্ছার কথা শুনে শয়তান তাকে নিয়ে একটি মজার খেলা খেলে।
প্রথমে শয়তান তাকে কিছু জমির মালিক করে দেয়, পরে আরও জমির লোভ দেখিয়ে ভলগার ওপারে নিয়ে যায়। অবশেষে শয়তান তাকে জমিদার বনে যাওয়ার স্বপ্ন দেখিয়ে নিয়ে যায় বাসকিরদের দেশে। জমিলোভী পাখোম বহু জমির মালিকও হয় কিন্তু নিজেকে খুন করে ফেলে। এ মৃত্যুর জন্য বাহ্যিক দৃষ্টিতে শয়তান দায়ী হলেও তার লোভই তাকে এ করুণ পরিণতির দিকে নিয়ে যায়। সুতরাং পাখোম নিজেই তার মৃত্যুর জন্য দায়ী।
ঘ. মানুষ তার প্রয়োজনের অতিরিক্ত কোনো সম্পদই ভোগ করতে পারে না। লোভের বশবর্তী হয়েই সে অপ্রয়োজনীয় সম্পদের পেছনে অনর্থক ছোটাছুটি করে জীবনকে কঠিন করে তোলে এটিই উল্লিখিত অংশের মর্মকথা।
রাশিয়ার গ্রামে বসবাসকারী কৃষক পাখোমের বিশেষ কোনো অভাব না থাকলেও জমির প্রতি তার ছিল বেজায় লোভ। শয়তানের প্ররোচনায় পাখোম প্রথমে ভলগা নদীর ওপারে গিয়ে জমির মালিক হয়। কিন্তু এতেও তার সন্তুষ্টি আসেনি; বরং বাসকিরদের দেশে গিয়ে জমিদার হয়ে যাওয়ার লোভ তাকে প্রবলভাবে পেয়ে বসল। মাত্র একশত রুবলের বিনিময়ে সকাল থেকে রওনা দিয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত যতটুকু জমি ঘুরে আসতে পারে ততটুকু জমির মালিক হওয়ার সুবর্ণ সুযোগ তাকে উন্মাদ করে তুলল। অধিক জমির আশায় সে প্রাণপণ হাঁটতে লাগল। বিরতিহীন হাঁটার ক্লান্তিতে তার শরীর এতই খারাপ হলো যে সে আর স্থির থাকতে পারছিল না।
অবশেষে সে তার কাক্সিক্ষত গন্তব্যে পৌঁছতে পারল কিন্তু তাকে করুণভাবে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তে হলো। বহু জমির লোভে সে মৃত্যুবরণ করলেও ‘সাড়ে তিন হাত জমি’র মধ্যেই তার সমাধি হলো। এ অল্প পরিমাণ জমিই হলো তার প্রকৃত ঠিকানা। এটাই মানুষের অনিবার্য নিয়তি। পাখোমকেও এ অনিবার্য নিয়তির কাছে আত্মসমর্পণ করতে হলো। মাঝখান থেকে তার লোভ তার মৃত্যুকে ত্বরান্বিত করল।
প্রশ্ন-২ নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
এক চাষির একটি রাজহাঁস ছিল। হাঁসটি প্রতিদিন একটি করে সোনার ডিম পাড়ত। ফলে অল্প দিনেই চাষির ভাগ্য পরিবর্তন হয়ে গেল। কুঁড়ে ঘরের পরিবর্তে এখন সে বড় বড় টিনের ঘরবাড়ির মালিক হয়ে গেল। চাষির আরও বড়লোক হওয়ার ইচ্ছা হলো।
রাতারাতি বড় লোক হওয়ার জন্য এক দিন সে হাঁসটিকে জবাই করল। কিন্তু হায়! একি! হাঁসের পেটে কোনো ডিম নেই। চাষি মাথায় হাত দিয়ে চিৎকার করে কান্নাকাটি করতে লাগল, আমি এ কী করলাম!
ক. উদ্ধৃত অংশের সাথে তোমার পঠিত কোন গল্পের মিল পাওয়া যায়?
খ. উদ্ধৃত অংশের মূল বক্তব্য কী?
গ. উদ্ধৃত অংশ এবং পাখোমের জীবনের আলোকে অতি লোভের পরিণতি ব্যাখ্যা কর।
ঘ.উদ্ধৃত অংশের চাষি এবং পাখোমের জীবনের পরিণতির জন্য একই বিষয় দায়ীÑ মূল্যায়ন কর।
২নং প্রশ্নের উত্তর
ক. উদ্ধৃতাংশের সাথে আমার পঠিত ‘সাড়ে তিন হাত জমি’- গল্পের মিল পাওয়া যায়।
খ. উদ্ধৃত অংশের মূল বক্তব্য হলো অতি লোভের করুণ পরিণতি।
রাজহাঁস থেকে অপ্রত্যাশিতভাবে সোনার ডিম পেয়ে চাষির ভাগ্য পরিবর্তন হয়ে যায়। কিন্তু প্রতিদিন একটি করে সোনার ডিম পাওয়া তার সহ্য হচ্ছিল না। রাতারাতি বড়লোক হওয়ার লোভে পড়ে অনেক ডিম একত্রে পাওয়ার আশায় সে হাঁসটিকে জবাই করল। এতে সে কোনো সোনার ডিমতো পেলই না বরং হাঁসটি হারাল।
গ. অত্যধিক লোভ মানুষকে করুণ পরিণতির দিকে নিয়ে যায়। উদ্ধৃত অংশ ও গল্পে এমন পরিণতিই আমরা দেখতে পাই।
চাষির হাঁস প্রতিদিন একটি করে সোনার ডিম পাড়ার ফলে চাষির ভাগ্য পরিবর্তন হয়ে যায়। কিন্তু রাতারাতি বড়লোক হওয়ার লোভ চাষিকে পেয়ে বসল। অতি লোভের বশবর্তী হয়ে এক দিনে বহু ডিম পাওয়ার আশায় হাঁসটিকে জবাই করল। ফলে তার ডিমও গেল হাঁসও গেল। অন্যদিকে রাশিয়ার গ্রামের কৃষক পাখোমের তেমন অভাব না থাকলেও জমির প্রতি তার খুবই লোভ ছিল। অতি লোভে পড়ে শয়তানের প্ররোচনায় সে নিজের গ্রাম ছাড়ল। বহু জমির মালিক হতে প্রাণপণ হেঁটে নিজের মৃত্যু ডেকে আনল। উদ্ধৃতাংশের চাষি ও পাখোম উভয়েই ছিল অতি লোভী। আর এ লোভই তাদের নিয়ে যায় করুণ পরিণতির দিকে।
ঘ. উদ্ধৃত অংশের চাষি ও পাখোমের জীবনের পরিণতির জন্য দায়ী তাদের লোভ।
উদ্ধৃতাংশের চাষির রাজহাঁসটি প্রতিদিন একটি করে সোনার ডিম পাড়ত। এতে চাষির ভাগ্য পরিবর্তন হতে লাগল। রাতারাতি বড়লোক হওয়ার লোভে সে হাঁসটি জবাই করল। কিন্তু একটিও সোনার ডিম পেল না।
‘সাড়ে তিন হাত জমি’ গল্পের পাখোমের জমির প্রতি বেজায় লোভ ছিল। জমি পেলে সে কাউকে পরোয়া করবে না এমনকি স্বয়ং শয়তানকেও না এরূপ ইচ্ছা পোষণ করত। শয়তান তাকে বহু জমি পেতে প্ররোচিত করল। বাসকিরদের দেশে গিয়ে অদ্ভুত বিক্রয় নিয়মে জমি কেনার লোভে সে বিরতিহীনভাবে হাঁটল। মুমূর্ষু জন্তুর মতো সে তার কাক্সিক্ষত স্থানে পৌঁছাল এবং নিচে পড়ে গিয়ে করুণভাবে মৃত্যুবরণ করল।
শয়তান তাকে প্ররোচিত করলেও লোভের বশবর্তী হওয়ার কারণেই তার জীবনে করুণ পরিণতি নেমে আসে। সুতরাং উদ্ধৃত অংশের চাষি ও পাখোমের জীবনের পরিণতির জন্য দায়ী একই বিষয়, আর এই বিষয়টি হলো লোভ।
প্রশ্ন -৩ নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
কফিল উদ্দিন একজন দরিদ্র কৃষক। তার একমাত্র দুধেল গাভীটি প্রতিদিন তিন লিটার দুধ দেয়। অতিরিক্ত দুধের আশায় সে গাভীকে ওষুধ খাওয়াতে শুরু করে। হঠাৎ একদিন গাভীটি মারা যায়।
ক. ‘সাড়ে তিন হাত জমি’ গল্পের অনুবাদক কে? ১
খ. জমির দাম দিনপ্রতি ১০০ রুবল বলতে কী বুঝ? ২
গ. উদ্দীপকের সাথে ‘সাড়ে তিন হাত জমি’ গল্পের সংগতিপূর্ণ দিকটি ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ.“উদ্দীপক ও ‘সাড়ে তিন হাত জমি’ গল্পের মধ্যে শুধু সাদৃশ্য নয়, বৈসাদৃশ্যও রয়েছে”Ñউক্তিটি মূল্যায়ন কর। ৪
৩নং প্রশ্নের উত্তর
ক. ‘সাড়ে তিন হাত জমি’ গল্পের অনুবাদক হলেন প্রফেসর ড. সরকার আবদুল মান্নান।
খ. জমির দাম দিনপ্রতি ১০০ রুবলের অর্থ হলো ১০০ রুবল দিয়ে একজন ব্যক্তি ততটুকু জমি কিনতে পারবে যতটুকু সে একদিনে সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত হেঁটে ঘুরে আসতে পারবে।
বাসকিরদের দেশটি বড় আজব দেশ। সেখানকার জমি খুবই সস্তা। জমির দাম দিনপ্রতি মাত্র ১০০ রুবল। বাসকিরদের নেতা স্টার্শিনার কাছ থেকে ১০০ রুবলের বিনিময়ে যে কোনো ব্যক্তি ততটুকু জমি কিনে নিতে পারবে যতটুকু সে একদিনে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে হাঁটা শুরু করে সূর্যাস্তের মধ্যে অতিক্রম করে ফিরে আসতে পারবে। তবে সূর্যাস্তের মধ্যে ফিরতে ব্যর্থ হলে সে কোনো টাকা বা জমি পাবে না।
গ. উদ্দীপকের সাথে ‘সাড়ে তিন হাত জমি’ গল্পের সংগতিপূর্ণ দিক হলো দুটি ক্ষেত্রেই প্রচÐ লোভ ও লোভের পরিণতি মৃত্যু দেখানো হয়েছে।
লোভ-লালসা মনুষ্য জীবনের নেতিবাচক বৈশিষ্ট্য। লোভীরা কখনই সুখী হয় না। বরং লোভের বশবর্তী হয়ে প্রাণপাত করে এক সময় ধরাশায়ী হয়।
উদ্দীপকের দরিদ্র কৃষক কফিলের একমাত্র দুধেল গাভীটি দৈনিক ৩ লিটার দুধ দেয়। এ দিয়ে তার সংসার চলত। কিন্তু কফিলকে অতিরিক্ত দুধ পাওয়ার লোভ পেয়ে বসল। বেশি দুধের আশায় গাভীকে সে ওষুধ খাওয়াতে লাগল। এতে গাভীটি মারা গেল। অতি লোভের খেসারত হিসেবে কফিলকে আর্থিক ক্ষতি মেনে নিতে হয়, যা মৃত্যু যন্ত্রণার চেয়ে কোনো অংশেই কম ছিল না। ‘সাড়ে তিনি হাত জমি’ গল্পের পাখোম জমির প্রচÐ লোভ সামলাতে না পেরে মৃত্যুর কাছে হার মানে। তাই বলা যায়, লোভ ও লোভের পরিণতি উদ্দীপক ও গল্পের মধ্যে সংগতি রচনা করেছে।
ঘ. “উদ্দীপক ও ‘সাড়ে তিনি হাত জমি’ গল্পের মধ্যে শুধু সাদৃশ্য নয় বৈসাদৃশ্য রয়েছে”Ñউক্তিটি যথার্থ।
লোভ মানুষের পরম শত্রæ। লোভের টানে মানুষ পাগলা ঘোড়ার মতো ছোটে। হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। পরম বস্তুকে পাওয়ার জন্য জীবনেরও তোয়াক্কা করে না। এসব কথার নিখাত দৃষ্টান্ত উদ্দীপক ও ‘সাড়ে তিন হাত জমি’ গল্পটি।
উদ্দীপকে দরিদ্র কৃষক কফিল তার একমাত্র দুধেল গাভীকে ওষুধ খাওয়ায় বেশি দুধের লোভে। কিন্তু ওষুধের প্রতিক্রিয়ায় গাভীটি মারা যায়। পথে বসে কফিল। অন্যদিকে ‘সাড়ে তিনি হাত জমি’ গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র পাখোম জমির প্রচÐ লোভে ছুটতে থাকে। ছুটতে ছুটতে এক সময় প্রাণবায়ু বেরিয়ে যায়।
উদ্দীপক ও গল্পের বিশ্লেষণে দেখা যায়, শুধু সাদৃশ্য নয় বৈসাদৃশ্যও রয়েছে। কারণ লোভের ক্ষেত্রে কফিল ও পাখোম সহযাত্রী হলেও কফিল মারা যায়নি, মারা গেছে তার গাভী। আর পাখোম মৃত্যুর মধ্য দিয়ে লোভের পরিণতি ভোগ করেছে। তাই বলা যায়, প্রশ্নোক্ত উক্তিটি যথার্থ।
প্রশ্ন -৪ নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
সাদ ও শাকিল সুন্দরবনে মধু সংগ্রহ করতে যায়। তারা তাদের প্রত্যাশার চেয়ে বেশি মধু সংগ্রহ করে। সাদ বাড়ি ফিরতে চাইলেও শাকিল আরো মধু সংগ্রহের আশায় গভীর বনে যায়। এক সময় বাঘের আক্রমণে শাকিলের মৃত্যু হয়।
ক. পাখোম কত মাইল হেঁটে বাসকিরদের তাঁবুতে পৌঁছাল? ১
খ. পাখির পালকের বিছানায় শুয়ে পাখোমের ঘুম হলো না কেন? ২
গ. উদ্দীপকের শাকিলের সাথে ‘সাড়ে তিন হাত জমি’ গল্পের যে চরিত্রের সাদৃশ্য আছে তা ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ.“উক্ত সাদৃশ্যটির পরিণতি উপস্থাপনাই ‘সাড়ে তিন হাত জমি’ গল্পের শিক্ষা।” Ñউক্তিটি মূল্যায়ন কর। ৪
৪নং প্রশ্নের উত্তর
ক. পাখোম ৩৩২ প্রায় মাইল হেঁটে বাসকিরদের তাঁবুতে পৌঁছাল।
খ. অনেক জমির মালিক হওয়ার দীর্ঘদিনের ইচ্ছে পূরণ হতে যাচ্ছিল ভেবে উত্তেজনায় পাখোমের খুব আরামদায়ক বিছানায় শুলেও সারারাত ঘুম হয়নি।
মাটির কোলে বড় হওয়া কৃষক পাখোম। তার তেমন কোনো অভাব না থাকলেও তার মনে ইচ্ছে ছিল সে একদিন অনেক জমির মালিক হবে। তাই শয়তানের প্ররোচনায় সে জমি কিনতে একসময় বাসকিরদের দেশে উপস্থিত হয়। সেখানে জমি খুবই সস্তা। পাখোম চিন্তা করল এখান থেকে সে অন্তত ২০,০০০ একর জমির মালিক হতে যাচ্ছে। তাই আরামদায়ক পাখির পালকের বিছানায় শুয়েও চিন্তায় উত্তেজনায় পাখোম ঘুমাতে পারেনি।
গ. উদ্দীপকের শাকিলের সাথে ‘সাড়ে তিন হাত জমি’ গল্পের পাখোমের সাদৃশ্য আছে। উভয়েই লোভী এবং তাদের পরিণতিও একই।
লোভে পাপ, পাপে মৃত্যু। এটিই চিরন্তন। অন্তত যারাই লোভ করেছে তারাই চরম পরিণতির শিকার হয়েছে। লোভ কখনই ভালো কিছু বহন করে না। লোভ সুখশান্তি কেড়ে নিতে নিতে এক সময় জীবনও কেড়ে নেয়।
উদ্দীপকের শাকিল মধু সংগ্রহের জন্য সুন্দরবনের যায়। প্রত্যাশার চেয়ে বেশিই মধু পায়। কিন্তু লোভ পেয়ে বসে তাকে। আরও মধুর আশায় সে গভীর বনে ছুটতে থাকে। এক সময় বাঘের শিকারে পরিণত হয় শাকিল ‘সাড়ে তিন হাত জমি’ গল্পের পাখোমও অনুরূপ করুণ পরিণতির শিকার। প্রচÐ জমির লোভে সে কেবলই ছুটতে ছুটতে থাকে। ছুটতে ছুটতে এক সময় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে পাখোম। তাই বলা যায়, উদ্দীপকের শাকিলের সাথে গল্পের পাখোমের সাদৃশ্য আছে।
ঘ. “উক্ত সাদৃশ্যটির পরিণতি উপস্থাপনই ‘সাড়ে তিন হাত জমি’ গল্পের শিক্ষা।”Ñউক্তিটি যথার্থ।
লোভের পরিণতি ভয়াবহ। তা লোভীকে সর্বস্বান্ত করতে করতে এক সময় মৃত্যুর হাতে সোপর্দ করে। এমনই পরিণতি উক্ত চরিত্র দুটির মধ্যে লক্ষণীয়। অর্থাৎ উদ্দীপকের শাকিল একটি লোভী চরিত্র; ‘সাড়ে তিন হাত জমি’ গল্পের পাখোমও অনুরূপ চরিত্র।
উদ্দীপকের শাকিল লোভের বশবর্তী হয়ে সুন্দরবনের প্রত্যাশিত মধু পেয়েও আরও মধুর আশায় গভীর বনে ঢুকতে থাকে। বাঘের খাবারে পরিণত হওয়ার আগ পর্যন্ত তার এ প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকে। অন্যদিকে প্রচÐ জমি লোভী পাখোম জীবনর মায়া ত্যাগ করে ছুটতে থাকে। এক পর্যায়ে মৃত্যু এসে তাকে থামিয়ে দেয়।
উল্লিখিত আলোচনায় বলা যায়, চরিত্র দুটির মূল সাদৃশ্যÑ তারা দুজনই লোভী। তাদের পরিণতিও অবধারিত মৃত্যু। অর্থাৎ লোভে পাপ পাপে মৃত্যুÑ এ বিষয়টি উপস্থাপনই ‘সাড়ে তিন হাত জমি’ গল্পের শিক্ষা।
প্রশ্ন -৫ নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
প্রতীক চাকরি জীবন শেষ করে যতটুকু অর্থ জমা করতে পেরেছিল তা দিয়ে সে শহরের এক কোণে একটা একতলা বাড়ি বানাতে চাইল। তার বন্ধু তাকে পরামর্শ দিল বাড়ি না বানিয়ে প্রতীক যদি সেই অর্থে ব্যবসা-বাণিজ্য করে, তবে শহরে অনেক বাড়ি ও গাড়ির মালিক হতে পারবে। প্রতীক তাতে রাজি না, তার যা আছে তা নিয়ে বাকি জীবন স্ত্রী-সন্তান নিয়ে সুখে কাটাতে চায়।
ক. ‘ছলছুতা’ শব্দের অর্থ কী? ১
খ. পাখির পালকের বিছানায় ঘুমিয়েও পাখোমের ঘুম আসছিল না কেন? ব্যাখ্যা কর। ২
গ. উদ্দীপকের ঘটনার সাথে ‘সাড়ে তিন হাত জমি’ গল্পের কোথায় বৈসাদৃশ্য রয়েছে?Ñ ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ.“ ‘সাড়ে তিন হাত জমি’ গল্পের পাখোম আর উদ্দীপকের প্রতীকের পরিণতি ভিন্ন হওয়ার কারণ তাদের মানসিকতার পার্থক্য।”Ñমন্তব্যটি যুক্তিসহ গ্রহণ অথবা বর্জন কর। ৪
৫নং প্রশ্নের উত্তর
ক. ‘ছলছুতা’ শব্দের অর্থ নানা কৌশল।
খ. ৪ নং প্রশ্নের ‘খ’ নং উত্তর দ্রষ্টব্য।
গ. উদ্দীপকের ঘটনার সাথে ‘সাড়ে তিন হাত জমি’ গল্পের লোভের ক্ষেত্রে বৈসাদৃশ্য রয়েছে।
লোভের পরিণাম কখনই ভালো হয় না। তারপরও অনেকেই লোভ করেন। এমনকি অবধারিত করুণ পরিণতিও বরণ করেন। এ চরম পরিণতিই উপজীব্য ‘সাড়ে তিন হাত জমি’ গল্পের। পক্ষান্তরে উদ্দীপকে লোভের ফাঁদে না পড়ায় বিষয়টি আলোচিত হয়েছে।
উদ্দীপকের প্রতীক চাকরির সমস্ত সঞ্চয় দিয়ে একটি বাড়ি করে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বাকি জীবন সুখে কাটাতে চায়। এ অবস্থায় প্রতীকের বন্ধু পরামর্শ দেয় বাড়ি না বানিয়ে ব্যবসা করার। এতে সে শহরে অনেক বাড়ির পাশাপাশি গাড়িরও মালিক হতে পারবে। কিন্তু নির্লোভ প্রতীক বন্ধুর এই পরামর্শ গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকে। অন্যদিকে ‘সাড়ে তিন হাত জমি’ গল্পের পাখোম সম্পূর্ণ উল্টো। জমির জন্য প্রচÐ লোভের পরিণতিতে সে মৃত্যুবরণ করে। তাই বলা যায়, লোভই ঘটনা দুটোতে বৈসাদৃশ্য সৃষ্টি করেছে। অর্থাৎ পাখোম প্রচÐ লোভী আর প্রতীক নির্লোভ।
ঘ. ‘সাড়ে তিন হাত জমি’ গল্পের পাখোম আর উদ্দীপকের প্রতীকের পরিণতি ভিন্ন হওয়ার কারণ তাদের মানসিকতার পার্থক্যÑ মন্তব্যটি গ্রহণযোগ্য।
লোভে পাপ, পাপে মৃত্যু। অর্থাৎ লোভের পরিণতি কখনই ভালো হয় না। সর্বগ্রাসী লোভ মানুষকে তিলে তিলে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়। এ সত্যবাক্য জেনেও মানুষ লোভ করে। শেষমেষ চরম পরিণতি বরণ করে। কেবল ব্যতিক্রম যারা তারাই পায় প্রকৃত শান্তির অনুভ‚তি।
উদ্দীপকের প্রতীক অনুসরণীয় মানসিকতার অধিকার। তার মধ্যে লোভ নেই। বড় কিছু পাওয়ার তাড়না নেই। সে কারণে বন্ধুর অনেক বাড়ি ও গাড়ির মালিক হওয়ার পরামর্শ গ্রহণ না করে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বাকি জীবন সুখে থাকাকে চরম প্রাপ্তি মনে করে। অর্থাৎ লোভের পরিবর্তে সুখে থাকাকেই প্রতীক প্রাধান্য দেয়। অন্যদিকে ‘সাড়ে তিন হাত জমি’ গল্পের পাখোম জমির প্রতি প্রচÐ লোভী। তার লোভ এত বেশি যে প্রাণাপাত করে সে জমির মালিক হতে চায়। যদিও অবধারিতভাবে সে মৃত্যুকেই আলিঙ্গন করে।
উল্লিখিত আলোচনায় বলা যায়, প্রতীক ও পাখোমের পরিণতি ভিন্ন হওয়ার একটাই কারণ তা হলো মানসিকতা।
প্রশ্ন -৬ নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
জনৈক দরিদ্র কাঠুরিয়া বনে গাছ কাটতে গিয়ে নদীর পানিতে তার লোহার কুড়ালটি হারিয়ে কাঁদতে থাকে, সেই মুহ‚র্তে এক জলপরি নদী থেকে সোনা, রুপা ও লোহার তিনটি কুড়াল উঠিয়ে তাকে দেখাল। সৎ কাঠুরিয়া নিজের মরচে ধরা লোহার কুড়াল নিতে চাইলে জলপরি অন্য দুটো তাকে উপহার দিয়ে অদৃশ্য হলো। এই কাহিনী সর্বত্র প্রচারিত হলে অন্য একজন লোভী কাঠুরিয়া সেই নদীতে তার মরচে ধরা কুড়ালটি স্বেচ্ছায় ফেলে দিয়ে মায়াকান্না শুরু করল। জলপরি তাকে একটি সোনার কুড়াল দেখালে সে ঐটি তার নিজের বলে দাবি করলে মিথ্যা ভেবে জলপরি তার কুড়ালটিও ফিরিয়ে না দিয়ে অদৃশ্য হলো। এভাবেই লোভ মানুষকে বিনাশ করে।
ক. ‘সাড়ে তিন হাত জমি’ গল্পের মূল লেখক কে? ১
খ. বাসকিরদের দেশে কেমন করে জমি বিক্রি হয়? ২
গ. উদ্দীপকে লোভী কাঠুরিয়ার পরিণতির সাথে পাখোমের পরিণতির সাদৃশ্য কতটুকুÑব্যাখা কর। ৩
ঘ.উদ্দীপকের দরিদ্র কাঠুরিয়ার মতো সৎ এবং নির্লোভ হলে পাখোমের জীবনে এমন পরিণতি হতো নাÑকথাটি ‘সাড়ে তিন হাত জমি’ গল্পের আলোকে বিশ্লেষণ কর। ৪
৬নং প্রশ্নের উত্তর
ক. ‘সাড়ে তিন হাত জমি’ গল্পের মূল লেখক লেভ তলস্তয়।
খ. বাসকিরদের দেশে জমি বিক্রির ব্যাপারটা একটু অন্যরকম।
বাসকিরদের দেশে যে যত খুশি তত জমি কিনতে পারে। দিনপ্রতি জমির দাম ১০০ রুবল। অর্থাৎ সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত হেঁটে যতটা জমি একজন ঘুরে আসতে পারবে ঠিক ততটা জমিই তার হবে।
গ. উদ্ধৃত অংশের লোভী কাঠুরিয়া সর্বস্বান্ত হয় অন্যদিকে গল্পের পাখোম লোভের ফলে তার ১০০ রুবলের বিনিময়ে জীবনটাও হারিয়ে ফেলে।
উদ্দীপকে এক সৎ কাঠুরিয়ার সোনার কুঠার পাওয়ার গল্প শুনে আরেক লোভী কাঠুরিয়া সেই নদীতে তার মরচে ধরা কুঠার ফেলে মায়াকান্না শুরু করল। এবারও জলিপরি এল। প্রথমে সে কাঠুরিয়াকে সোনার কুড়ালটি দেখাল। সেটি দেখেই কাঠুরিয়া নিজের বলে দাবি করল। এতে জলপরি তাকে মিথ্যুক বলে মনে করল এবং চলে গেল। সে সোনার কুঠার পেয়েও লোভের কারণে তা হাতছাড়া করল। এভাবেই কাঠুরিয়া সোনার কুঠার হারানোর সাথে সাথে নিজের কুঠার হারাল। লোভের কারণে তাকে সর্বস্বান্ত হতে হলো।
‘সাড়ে তিন হাত জমি’ গল্পের পাখোমও ছিল অনেক লোভী। সে যত জমি পাচ্ছিল তার লোভ তত বাড়ছিল। এই জমি কিনতে গিয়েই একপর্যায়ে সে মারা গেল। লোভের কারণে দুজনকেই ভয়াবহ পরিণতির শিকার হতে হয়। লোভী কাঠুরিয়ার পরিণতির সাথে পাখোমের পরিণতির সাদৃশ্য ব্যাপক।
ঘ. ‘উদ্দীপকের দরিদ্র কাঠুরিয়ার মতো সৎ এবং নির্লোভ হলে পাখোমের জীবনে এমন পরিণতি হতো না।’ Ñউক্তিটি যথাযথ।
‘সাড়ে তিন হাত জমি’ গল্পের পাখোমের খুব একটা অভাব ছিল না। কিন্তু জমির লোভ তাকে অভাবী করে তোলে। সে প্রচুর জমির মালিক হতে চায়। যত জমি পায়, তার থেকে আরও অনেক বেশিই চায়। জমির লোভ তার শেষ হতো না কখনোই। শেষ পর্যন্ত জমি কিনতে গিয়েই সে মারা যায়। লোভ করে সে জীবনটাকেই হারিয়ে ফেলে।
উদ্দীপকের দরিদ্র কাঠুরিয়া জলপরির কাছ থেকে সোনার ও রুপার কুঠার পাওয়ার সুযোগ পেয়েও নিজের মরচে ধরা কুঠার বেছে নেয়। তার এ নির্লোভ মানসিকতা তার জীবনকে শান্তিময় করেছে। অতিরিক্ত পাওয়ার মোহে তার কিছুই হারাতে হয়নি।
তাই উপর্যুক্ত আলোচনা শেষে এ কথাটি নিঃসন্দেহে বলা যায় উদ্দীপকের দরিদ্র কাঠুরিয়ার মতে, সৎ ও নির্লোভ হলে পাখোমের জীবনের এমন করুণ পরিণতি হতো না।
প্রশ্ন -৭ নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
সিরাজ জেলে নদীতে মাছ শিকার করতে গিয়ে জালে একটি ঢাকনা দেয়া মাটির কলস পায়। কলসের ঢাকনা খুলতেই সেখান থেকে বিরাট এক দৈত্য বেরিয়ে এসে সিরাজকে বলে, তুমি আমায় মুক্ত করেছ। সোনা-রুপা টাকা-পয়সা-ধন-দৌলত কী চাও বল? সিরাজ বলে, আমাকে একটা ভালো জাল দাও। আমার ছেঁড়া জালে মাছ পাই না। জাল পেলে আমি মাছ শিকার করেই সংসার চালাব। দৈত্য খুশি হয়ে সিরাজকে একটি জাল দেয়।
ক. ‘সাড়ে তিন হাত’ জমি গল্পের মূল লেখক কে? ১
খ. পাখোম স্ত্রী-পুত্র নিয়ে নতুন দেশে পাড়ি জমালো কেন? ২
গ. উদ্দীপকের সিরাজ জেলে কোন দিক থেকে পাখোম চরিত্রের বিপরীত? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ.উদ্দীপকের সিরাজের মতো হলে পাখোমের করুণ পরিণতি হতো নাÑ মন্তব্যের যৌক্তিকতা বিচার কর। ৪
৭নং প্রশ্নের উত্তর
ক. ‘সাড়ে তিন হাত জমি’ গল্পের মূল লেখক লেভ তলস্তয়।
খ. পাখোম নতুন দেশে পাড়ি জমাল সস্তা দরে জমি ক্রয় করে লাভবান হওয়ার জন্য।
পাখোম অনেক পরিশ্রমী এবং লোভী। সে সব সময় চিন্তা করত কী করে আরও দ্রæত জমি-জমার মালিক হওয়া যায়। নিজের বর্তমান অবস্থা নিয়ে সে মোটেই খুশি ছিল না। তাই নতুন দেশের সন্ধান পেলে সে যেখানে সস্তায় জমি কেনা যায়। তাই স্ত্রী-পুত্র নিয়ে পাখোম নতুন দেশে পাড়ি জমাল।
গ. উদ্দীপকের সিরাজ জেলে লোভী না হলেও পাখোম প্রচÐ লোভীÑ আর এ ক্ষেত্রটিই উভয়ের মধ্যকার বৈপরিত্য।
লোভ মানুষের মায়াবী শত্রæ। লোভের পরিণতি কখনই ভালো হয় না। যারাই লোভ করেছে তাদের ভবিতব্য হয়ে উঠেছে করুণ। কেবল লোভহীন মানুষই প্রকৃত সুখের নাগাল পায়।
উদ্দীপকের সিরাজ লোভী নয়। যে কারণে অনেক ধন-রতেœর প্রস্তাব অবলীলায় প্রত্যাখ্যান করেছে। তবে প্রয়োজনের খাতিরে একটি জাল চেয়েছে। যার সাহায্যে পরিশ্রম করে সে জীবিকা নির্বাহ করতে পারবে। অন্যদিকে ‘সাড়ে তিন হাত জমি’ গল্পের পাখোম প্রচÐ লোভী। লোভের কারণে সে প্রাণ হারায়। এদিক থেকে উদ্দীপকের সিরাজ জেলে পাখোম চরিত্রের বিপরীত।
ঘ. ‘উদ্দীপকের সিরাজের মতো হলে পাখোমের করুণ পরিণতি হতো না।’Ñমন্তব্যটি যেকোনো বিচারেই যৌক্তিক।
লোভের পরিণতি কখনোই ভালো হয় না। লোভীকে অবশ্যই করুণ পরিণতি বরণ করতে হয়। যার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত ‘সাড়ে তিন হাত জমি’ গল্পের প্রচÐ লোভী পাখোম। যার লোভের সমাপ্তি ঘটেছে মৃত্যুর মধ্য দিয়ে।
উদ্দীপকের সিরাজ জেলে লোভের কাছে হার মানেনি। যে কারণে প্রচুর ধনরতেœর প্রস্তাব অবলীলায় ফিরিয়ে দিয়েছে। উপেক্ষা করেছে আরাম-আয়েসের জীবনের অমোঘ হা”তছানি। বেছে নিয়েছে শাশ্বত পরিশ্রমী জীবন। এজন্য একটি ভালো জালের চাহিদাকে সে প্রাধান্য দিয়েছে। অপরদিকে পাখোম প্রচÐ লোভী। তার লোভ-লালসার যেন আকাশ ছুঁয়েছে। তাই জীবনের বিনিময়েও যেন সে জমি পেতে যায়। পেতে চায় আরাম-আয়েস। যা তাকে করুণ পরিণতি অর্থাৎ মৃত্যুর কাছে সঁপে দিয়েছে।
উল্লিখিত আলোচনায় বলা যায়, সম্পদের অতিরিক্ত লোভই পাখোমের মৃত্যুকে ত্বরান্বিত করেছে। অর্থাৎ চরম পরিণতি হিসেবে দিয়েছে মৃত্যুর হীমশীতল স্পর্শ। সিরাজের এসব কিছুই হয়নি। সে পেয়েছে একটি ভালো জাল। যার মাধ্যমে সে পেয়েছে পরিশ্রমী জীবন, প্রকৃত সুখের জীবন। তাই বলা যায়, সিরাজের মতো হলে পাখোমের করুণ পরিণতি হতো না।
প্রশ্ন-৮ নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
স্ত্রী ও দু’সন্তানকে নিয়ে সুখেই কাটছিল রইছের জীবন। কিন্তু পাশের গ্রামের ইব্রাহিমের পরামর্শে রাতারাতি বড়লোক হবার ইচ্ছায় লিবিয়ায় যাবার সিদ্ধান্ত নেয় রইছ। পৈতৃক সম্পত্তি বিক্রি করে বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে চুরি করে লিবিয়া যাওয়ার পথে ঝড়ের কবলে পড়ে ওদের ট্রলারটি ডুবে যায় এবং সমস্ত যাত্রীদের সলিল সমাধি ঘটে।
ক. কত মাইল হেঁটে পাখোম বাসকিরদের দেশে পৌঁছল? ১
খ. ‘ওভারশিয়ার’ লোকটির স্বভাব কেমন? বুঝিয়ে লেখ। ২
গ. উদ্দীপকের রইছের কর্মকাÐ ‘সাড়ে তিন হাত জমি’ গল্পের কোন ঘটনাকে স্মরণ করিয়ে দেয়? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ.উদ্দীপকের রইছের পরিণতি ‘সাড়ে তিন হাত জমি’ গল্পের আলোকে বিশ্লেষণ কর। ৪
৮নং প্রশ্নের উত্তর
ক. প্রায় ৩৩২ মাইল পথ হেঁটে পাখোম বাসকিরদের দেশে পৌঁছল।
খ. ‘ওভারশিয়ার’ লোকটি দুষ্ট স্বভাবের।
পাখোমের বাড়ির কাছের ২৪০ একর জমির কর্ত্রী ভদ্রমহিলা অবসরপ্রাপ্ত একজন সৈনিককে জমিদারির ওভারশিয়ার নিযুক্ত করেন। নানা ছলছুতায় কৃষকদের জরিমানা করত সে। কারও গরু, ঘোড়া, বাছুর জমি-জিরাতে ঢুকলেই সে জরিমানা করত, অত্যাচার করত। মোটের ওপর ‘ওভারশিয়ার’ লোকটি ভালো ছিল না, মন্দ প্রকৃতির ছিল।
গ. উদ্দীপকের রইছের কর্মকাÐ ‘সাড়ে তিন হাত জমি’ গল্পের পাখোমের জমির প্রতি অতিরিক্ত লোভের কারণে শেষ পর্যন্ত করুণ মৃত্যুকে স্মরণ করিয়ে দেয়।
ধনসম্পদ উপার্জনের তৃষ্ণা মানুষকে ক্রমাগত তাড়িত করে। যে যত পায় সে আরও তত চায়। তারপরও সে তৃপ্ত হয় না। উদ্দীপকে দেখা যায়, স্ত্রী ও দু’সন্তানকে নিয়ে সুখেই কাটছিল রইছের জীবন। কিন্তু পাশের গ্রামের ইব্রাহিমের পরামর্শে রাতারাতি বড়লোক হওয়ার ইচ্ছায় লিবিয়ায় যাবার সিদ্ধান্ত নেয় রইছ। পৈতৃক সম্পত্তি বিক্রি করে বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে চুরি করে লিবিয়া যাওয়ার পথে ঝড়ের কবলে পড়ে ওদের ট্রলারটি ডুবে যায় এবং সমস্ত যাত্রীদের সলিল সমাধি ঘটে।
উদ্দীপকের রইছের মতো রাশিয়ার গ্রামে বসবাসকারী কৃষক পাখোমের বিশেষ কোনো অভাব না থাকলেও জমির প্রতি ছিল সীমাহীন লোভ। শয়তানের প্ররোচনায় সে প্রথমে ভলগা নদীর ওপারে গিয়ে অনেক জমির মালিক হয়। কিন্তু এতেও তার সন্তুষ্টি আসেনি; বাসকিরদের দেশের মাত্র ১০০ রুবলের বিনিময়ে সকাল থেকে রওনা দিয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত ঘুরে আসা সব সম্পত্তির মালিক হওয়ার সুবর্ণ সুযোগ তাকে উন্মাদ বানিয়ে দেয়। বিরতিহীন হাঁটার ক্লান্তিতে তার শরীর এতই খারাপ হলো যে, অবশেষে সে তার কাক্সিক্ষত গন্তব্যে পৌঁছে করুণভাবে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ল। উদ্দীপকের রইছের কর্মকাÐ তাই ‘সাড়ে তিন হাত জমি’ গল্পের পাখোমের কর্মকাÐ ও করুণ মৃত্যুকে স্মরণ করিয়ে দেয়।
ঘ. ‘সাড়ে তিন হাত জমি’ গল্পের আলোকে উদ্দীপকের রইছের পরিণতি সম্পর্কে বলা যায়, অতিরিক্ত লোভ মানুষের ধ্বংসের কারণ।
উদ্দীপকে দেখা যায়, স্ত্রী ও দু’সন্তানকে নিয়ে সুখেই কাটছিল রইছের জীবন। কিন্তু পাশের গ্রামের ইব্রাহিমের পরামর্শে রাতারাতি বড়লোক হওয়ার ইচ্ছায় লিবিয়ায় যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় রইছ। পৈতৃক সম্পত্তি বিক্রি করে বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে চুরি করে লিবিয়া যাওয়ার পথে ঝড়ের কবলে পড়ে ওদের ট্রলারটি ডুবে যায় এবং সমস্ত যাত্রীর সলিল সমাধি ঘটে।
উদ্দীপকের রইছের অনুরূপ ‘সাড়ে তিন হাত জমি’ গল্পের পাখোমেরও তেমন কোনো অভাব ছিল না। কিন্তু জমির প্রতি ছিল তার তীব্র লোভ। শয়তান তাকে জমির পর জমি পেতে প্ররোচিত করল। সুদূর বাসকিরদের দেশে গিয়ে অদ্ভুত বিক্রয় নিয়মে জমি কেনার লোভে সে প্রাণপাত করে বিরতিহীনভাবে হাঁটল। অবশেষে সে তার কাক্সিক্ষত গন্তব্যে পৌঁছে মুমূর্ষু জন্তুর মতো করুণভাবে মৃত্যুবরণ করল।
কথায় আছে, ‘লোভে পাপ পাপে মৃত্যু।’ লোভে অন্ধ ব্যক্তি বুূঝতে পারে না, কোথায় তার থামা উচিত। গল্পের পাখোম ভলগার পারে মাত্র ১৫০০ রুবলে ১০০০ একর জমি প্রাপ্তিতে সন্তুষ্ট না হয়ে ৩৩২ মাইল পথ হেঁটে সে বাসকিরদের দেশে আসে। এখানে ১০০ রুবলের বিনিময়ে সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত হেঁটে ঘুরে আসা জমি কিনতে গিয়ে মারা যায়। উদ্দীপকের রইছও তেমনি স্ত্রী ও দু’সন্তানকে নিয়ে সুখের জীবনে সন্তুষ্ট না হয়ে আরও প্রাপ্তির লোভে হাজার হাজার মাইল দূরে ভ‚মধ্যসাগরে করুণ মৃত্যুর শিকার হয়েছে। অর্থাৎ গল্পের পাখোমের মতো উদ্দীপকের রইছের জীবনটাকেও ধ্বংস করেছে লোভ।
প্রশ্ন-৯ নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
রাজা জিম প্রচÐ লোভী। তার ইচ্ছে চারপাশের সবকিছুই স্বর্ণময় হয়ে উঠুক। একসময় তিনি দেবতার বর পেলেন। তিনি হাত দিয়ে যা ছোঁবেন তাই সোনা হবে। তাই হতে লাগল। রাজা জিম প্রচÐ খুশি। খাবার খাওয়ার সময় তার হাতের স্পর্শে তাও সোনা হলো। নিজের মেয়েকে কোলে নিতে সেও সোনা হলো। রাজা তার অতি লোভের পরিণাম বুঝতে পেরে দেবতার কাছে মুক্তি প্রার্থনা করল। দেবতার কৃপায় জিম তার পূর্বের অবস্থায় ফিরে গেল।
ক. বাসকিরদের দেশে দিনপ্রতি জমির দাম কত? ১
খ. পাখোমের মৃত্যুর কারণ কী? ২
গ. রাজা জিম এর সাথে ‘সাড়ে তিন হাত জমি’ গল্পের পাখোমের চরিত্রের তুলনামূলক আলোচনা কর। ৩
ঘ.‘রাজা জিম ও পাখোমের পরিণিতি এক নয়’Ñ উক্তিটি উদ্দীপক ও গল্পের আলোকে বিশ্লেষণ কর। ৪
৯নং প্রশ্নের উত্তর
ক. বাসকিরদের দেশে দিনপ্রতি জমির দাম ১০০ রুবল।
খ. পাখোমের অতি লোভ তার মৃত্যুর কারণ।
জমির প্রতি পাখোমের অতিরিক্ত লোভ ছিল এবং শয়তানের প্ররোচনায় বাসকিরদের দেশে জমি কিনতে গিয়ে সে জানল যে দিনপ্রতি জমির মূল্য ১০০ রুবল। দিনপ্রতি বলতে একদিনে যে যতটুকু জমি হাঁটতে পারবে ততটুকুই তার হয়ে যাবে। একথা শুনে পাখোম কোনো বিশ্রাম না নিয়েই সারাদিন প্রাণপাত করে হাঁটল। ফলে তার শরীর এত খারাপ হলো যে, গন্তব্যে পৌঁছেই সে মারা গেল। জমির প্রতি অতি লাভই তার মৃত্যুর কারণ হলো।
গ. অতিলোভী মানুষ হিসেবে রাজা জিমের সাথে ‘সাড়ে তিন হাত জমি’ গল্পের পাখোমের চরিত্রের তুলনা করা যায়।
‘সাড়ে তিন হাত জমি’ গল্পের পাখোম ছিল খুবই লোভী এবং তার লোভ ছিল জমির প্রতি। শয়তানের প্ররোচনায় পাখোম ৩০ একর জমি ও একটি বাগান কেনার পর জানল যে ভলগা নদীর ওপারে জমি খুবই সস্তা এবং পঞ্চায়েতের সদস্য হলেই ১০০ একর জমি পাওয়া যায়। তখন পাখোম সেখানে গিয়ে বসবাস শুরু করে এবং জানতে পারে যে বাসকিরদের দেশে দিনপ্রতি জমির মূল্য ১০০ রুবল অর্থাৎ একদিনে যতটুকু জমি হাঁটতে পারবে ততটুকু তার হয়ে যাবে। তাই সে অনেক জমি পাওয়ার লোভে সারাদিন বিরামহীন হেঁটে গন্তব্যে পৌঁছেই মারা গেল।
উদ্দীপকের রাজা জিমও প্রচÐ লোভী তিনি চান তার চারপাশের সবকিছুই স্বর্ণময় হয়ে উঠুক। একসময় দেবতার বর পেয়ে তিনি হাত দিয়ে যা স্পর্শ করেন তাই সোনা হয়ে যায়। রাজারতো আনন্দের শেষ নেই। খাওয়ার সময় তার হাতের স্পর্শে সমস্ত খাদ্য সোনা হয়ে গেল। মেয়েও সোনা হয়ে গেল কোলে নিতেই। এই অতিলাভের পরিণামের দিক থেকে রাজা জিমের সাথে ‘সাড়ে তিন হাত জমি’ গল্পের পাখোম চরিত্রের তুলনা করা যায়।
ঘ. ‘রাজা জিম ও পাখোমের পরিণতি এক নয়’Ñ উক্তিটি উদ্দীপক ও গল্পের আলোকে যথার্থ।
‘সাড়ে তিন হাত জমি’ গল্পে অতি লোভের কারণে পাখোমের জীবন করুণ পরিণতির দিকে ধাবিত হয়। জমির প্রতি পাখোমের অফুরন্ত লোভ ছিল এবং শয়তানের প্ররোচনায় একের পর এক জমি লাভের পরও তার লোভের শেষ ছিল না। শেষ পর্যন্ত বাসকিরদের দেশে জমি কিনতে গিয়ে জানল যে একদিনে যে যতটুকু জমি হাঁটতে পারবে, মাত্র ১০০ রুবলের বিনিময়ে ততটুকু জমি তার হয়ে যাবে। সে জমির লোভে সারাদিন কোনো বিরতি ছাড়াই হাঁটল। ফলে তার শরীর এতই খারাপ হলো যে গন্তব্যে পৌঁছেই সে মারা গেল।
উদ্দীপকে বর্ণিত রাজা জিমও প্রচÐ লোভী। তিনি চান তার চারপাশের সবকিছু সোনা হয়ে উঠুক। একসময় তিনি দেবতার বর পেলেন এবং যা কিছুই স্পর্শ করেন তাই সোনা হয়ে যায়। খাবার সময় তিনি খাবার স্পর্শ করলে তা সোনা হয়ে গেল। এমনকি নিজের মেয়েকে কোলে নেওয়ার সাথে সাথে সেও যখন সোনা হয়ে গেল, তখনই তিনি তার লোভের ভয়াবহ পরিণাম বুঝতে পারলেন। এ অবস্থা থেকে মুক্তি প্রার্থনা করে দেবতার কৃপায় রাজা আগের জীবনে ফিরে গেলেন।
উপর্যুক্ত আলোচনা থেকে দেখা যায়, ‘সাড়ে তিন হাত জমি’ গল্পের পাখোম অতি লোভের পরিণাম বুঝতে পারেনি বলে তাকে জীবন দিতে হয়েছে। আর রাজা জিম লোভের পরিণতি বুঝতে পেরে নিজেকে রক্ষা করেছেন। কাজেই বিচার-বিশ্লেষণের পর উদ্দীপক ও গল্পের আলোকে বলা যায়, ‘রাজা জিম ও পাখোমের পরিণতি এক নয়।’
প্রশ্ন-১০ নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
শুধু বিঘে দুই ছিল মোর ভুঁই আর সবই গেছে ঋণে।
বাবু বলিলেন, বুঝেছ উপেন, এ জমি লইব কিনে।
কহিলাম আমি, তুমি ভ‚স্বামী, ভ‚মির অন্ত নাই।
চেয়ে দেখো মোর আছে বড়ো-জোর মরিবার মতো ঠাঁই।
শুনি রাজা কহে, বাপু, জানো তো হে, করেছি বাগানখানা,
পেলে দুই বিঘে প্রস্থ ও দিঘে সমান হইবে টানাÑ
ওটা দিতে হবে
ক. কোথায় জমির দাম দিনপ্রতি ১০০ রুবল? ১
খ. ভলগা নদীর ওপার থেকে বাড়িতে ফিরে পাখোম জমিজিরাত বিক্রি করে দেয় কেন? ২
গ. উদ্দীপকের ‘রাজা’ ও ‘সাড়ে তিন হাত জমি’ গল্পের পাখোমের মধ্যে যে সাদৃশ্য রয়েছে তা ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ.সাদৃশ্যটির পরিণতি উপস্থাপনই ‘সাড়ে তিন হাত জমি’ গল্পের শিক্ষাÑ উক্তিটির যথার্থতা নির্ণয় কর। ৪
১০নং প্রশ্নের উত্তর
ক. বাসকিরদের দেশে জমির দাম দিনপ্রতি ১০০ রুবল।
খ. ভলগা নদীর ওপারের উর্বর জমি সস্তায় কেনার জন্য পাখোম বাড়িতে ফিরে সব জমিজিরাত বিক্রি করে দেয়।
পাখোম ছিল জমি লোভী। তেমন কোনো অভাব না থাকলেও সে মনে মনে অনেক জমির মালিক হওয়ার ইচ্ছা পোষণ করত। তাই ভলগা নদীর ওপার থেকে যখন চাষিরূপী শয়তান এসে জানায় যে ওপারের গ্রাম পঞ্চায়েতে নাম লেখালেই ১০০ একর জমি পাওয়া যায়, পাখোম উত্তেজিত হয়ে ওঠে। কথার সত্যতা যাচাই করার জন্য সে স্টিমারে চড়ে ওপারে গিয়ে দেখে কৃষক তাকে মিথ্যা বলেনি। তাছাড়া সেখানে অতি অল্প দামে উর্বর জমি কেনা যায়। তাই ওপারের সস্তা জমি অধিক পরিমাণে কেনার অর্থ জোগাড় করতে পাখোম বাড়ি ফিরে নদীর এপারের জমিজিরাত সব বিক্রি করে দেয়।
গ. উদ্দীপকের রাজা এবং ‘সাড়ে তিন হাত জমি’ গল্পের পাখোমের মধ্যে জমির প্রতি অধিক লোভের বিষয়টিতে সাদৃশ্য রয়েছে।
গল্পের পাখোম একজন জমি লোভী কৃষক। সে মনে মনে প্রচুর জমির মালিক হওয়ার ইচ্ছা পোষণ করত। তাই তাকে শিক্ষা দেওয়ার জন্য শয়তান তার সাথে এক নিষ্ঠুর খেলা শুরু করল। শয়তান ঠিক করল প্রথমে সে পাখোমকে প্রচুর জমি দেবে এবং তারপর সব কেড়ে নেবে। এই উদ্দেশ্যে সে পাখোমকে জমি কিনতে প্ররোচিত করতে শুরু করল। তার প্ররোচনায় পড়ে পাখোম ২০,০০০ একর জমির মালিক হওয়ার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিল।
উদ্দীপকের রাজা বিপুল পরিমাণ জমির মালিক হওয়া সত্তে¡ও তার চাহিদার শেষ ছিল না। তার লোলুপদৃষ্টি থেকে সর্বস্ব হারা উপেনের শেষ সম্বল দুই বিঘা জমিও রেহায় পায়নি। সেটুকুও সে কেড়ে নিতে চেষ্টা করে। সুতরাং বলা যায় যে, সম্পত্তির প্রতি অধিক লোভের দিক থেকে উদ্দীপকের রাজা এবং গল্পের পাখোমের মধ্যে সাদৃশ্য রয়েছে।
ঘ. সাদৃশ্যটির পরিণতি অর্থাৎ সম্পত্তির প্রতি অধিক লোভের পরিণতি উপস্থাপনই ‘সাড়ে তিন হাত জমি’ গল্পের শিক্ষাÑ উক্তিটি যথার্থ।
উদ্দীপকের রাজা ও ‘সাড়ে তিন হাত জমি’ গল্পের পাখোমের মধ্যে সাদৃশ্য হলো লোভের দিক থেকে। কিন্তু উদ্দীপকে রাজার লোভের পরিণতির কথা উল্লেখ না থাকলেও পাখোমের লোভের পরিণতির কথা গল্প উল্লেখিত হয়েছে।
গল্পের কৃষক পাখোমের জমির প্রতি প্রবল লোভ ছিল। তার লোভ দেখে শয়তান তাকে উপযুক্ত শিক্ষা দেওয়ার পরিকল্পনা করে। শয়তানের প্ররোচনায় পড়ে সে নতুন নতুন জমি কিনতে শুরু করে। তার জমির পরিমাণ যত বাড়তে থাকে, জমির প্রতি তার লোভ ততই বাড়তে থাকে। শয়তান তাকে লোভ দেখিয়ে জমি কেনার জন্য বাসকিরদের দেশে নিয়ে যায়। পাখোম বাসকিরদের নেতা স্টার্শিনার কাছে ১০০ রুবল জমা দিয়ে তার ক্রয়কৃত জমির সীমা নির্ণয় করার জন্য হাঁটতে শুরু করে। সে দশ মাইল হাঁটার পর ফিরতে শুর করে। কিন্তু ফিরতি পথে মাত্র ১ মাইল হাঁটার পর সে দেখে সূর্য পশ্চিমে হেলে পড়ছে সে দ্রæত গোল পাহাড় যেখানে স্টার্শিনাসহ বাসকিররা অপেক্ষা করছে সেখানে ফিরে আসার চেষ্টা করে। কিন্তু এত দূর হাঁটার কারণে তার শরীর আর চলছিল না। আবার পৌঁছতে না পারলে তার সারাদিনের শ্রম বৃথা যাবে। তাই সে আবার ছুটতে শুরু করল এবং কিছুক্ষণ পর সে বুঝতে পারল যে নিজেকে সে খুন করেছে। সূর্যটা যখন অস্ত গেল সে গোল পাহাড়ের উপারে রাখা স্টার্শিনার টুপিটা স্পর্শ করে মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়ল।
অধিক লোভের কারণেই তার এমন করুণ পরিণতি হলো। সুতরাং আমরা বলতে পারি যে উদ্দীপকের সাথে আলোচ্য গল্পের সাদৃশ্যপূর্ণ বিষয়টি অর্থাৎ লোভের শেষ পরিণতি করুণ মৃত্যু যা ‘সাড়ে তিন হাত জমি’ গল্পের মূল শিক্ষা।
প্রশ্ন-১১ নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে মৎস্য চাষের ওপর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে রহমত আলী। অতঃপর কৃষি ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে শুরু করে মাছ চাষ। রাত-দিন প্রচুর খাটুনির পর উৎপাদিত মাছ বিক্রি করে বছর শেষে ব্যাংক ঋণ পরিশোধ করে যা ছিল তা দিয়ে কিছু পরিমাণ জায়গার মালিকও হয়ে গেল সে। এ নিয়ে রহমত আলী সন্তুষ্ট ও সুখী।
ক. জমিদার মহিলা ওভারশিয়ার নিযুক্ত করলেন কাকে? ১
খ. নিজেকে সে খুন করেছে’Ñ কে? কীভাবে নিজেকে খুন করেছে? ২
গ. বৈশিষ্ট্যগত দিক থেকে উদ্দীপকের রহমত আলী এবং ‘সাড়ে তিন হাত জমি’ গল্পের পাখোমের মধ্যে মূল সাদৃশ্য কোথায়? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ.‘সাড়ে তিন হাত জমি’ গল্পের পাখোমের মতো করুণ পরিণতি রোধে প্রয়োজন উদ্দীপকের রহমত আলীর মতো মানসিকতা। মন্তব্যটির যথার্থতা নিরূপণ কর। ৪
১১নং প্রশ্নের উত্তর
ক. জমিদার মহিলা অবসরপ্রাপ্ত একজন সৈনিককে ওভারশিয়ার নিযুক্ত করলেন।
খ. জমির প্রতি অতিরিক্ত লোভের কারণে পাখোম নিজেই নিজেকে খুন করেছে।
বাসকিরদের দেশে দিনপ্রতি ১০০ রুবলে জমি কিনতে গিয়ে পাখোম নিজেকে খুন করে। জমির প্রতি তার ছিল অনেক লোভ। বাসকিরদের দেশে সে শোনে সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত যতখানি জমি সে হাঁটতে পারবে, মাত্র ১০০ রুবল দিয়ে তত জমির মালিক সে হবে। তাই সে সারাদিন বিরতিহীনভাবে হেঁটে গন্ত্যবে পৌঁছে মারা যায়। মূলত তার অতিরিক্ত লোভই তার মৃত্যুর কারণ।
গ. বৈশিষ্ট্যগত দিক থেকে উদ্দীপকের রহমত আলী এবং ‘সাড়ে তিন হাত জমি’ গল্পের পাখোমের মধ্যে মূল সাদৃশ্য হচ্ছে তারা দুজনেই কঠোর পরিশ্রমী।
গল্পের পাখোম অত্যন্ত পরিশ্রমী ছিল। সে গাধা পালন করত এবং মৌমাছির চাষ করত। তার তিরিশ একর জমি ও ছোট একটি বাগান ছিল। জমিতে যতœ সহকারে বীজ বুনত। গভীর যতœ ও মায়া দিয়ে সে ফসল ফলাত। তাতে প্রচুর ফসল হলে সে এক বছরের মধ্যে জমিদার মহিলার সব ধার শোধ দিয়ে জমির পুরো মালিক হলো।
উদ্দীপকের রহমত আলী অনেক পরিশ্রমী। সে যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে মৎস্য চাষের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে ব্যাংক ঋণের সাহায্যে মৎস্য চাষ শুরু করে। দিনরাত পরিশ্রম করে সে প্রচুর উৎপাদিত মাছ বিক্রি করে। অর্জিত অর্থ থেকে ঋণ পরিশোধ করে সে কিছু জমিও ক্রয় করে। তার পরিশ্রমের ফল একই। সুতরাং একথা বলাই যায় যে, রহমত আলী এবং পাখোম দুজনেই পরিশ্রমী।
ঘ. ‘সাড়ে তিন হাত জমি’ গল্পের পাখোমের মতো পরিণতি রোধে প্রয়োজন উদ্দীপকের রহমত আলীর মতো মানসিকতা’ মন্তব্যটি যথার্থ।
‘সাড়ে তিন হাত জমি’ গল্পের পাখোম দিনপ্রতি ১০০ রুবল দামে বাসকিরদের নিকট থেকে জমি কেনার জন্য হাঁটতে শুরু করেছিল। দশ মাইল যাওয়ার পর সূর্য পশ্চিমে ঢলে পড়ছে দেখে সে ফিরতে শুরু করেছিল। কিন্তু তার শরীর আর চলছিল না। নির্দিষ্ট সময়ে গোল পাহাড়ে যেখানে স্টার্শিনাসহ অন্যান্য বাসকিররা দাঁড়িয়ে ছিল সেখানে পৌঁছতে না পারলে সারাদিনের শ্রম বৃথা যাবে। তাই সে প্রাণপণে ছুটতে শুরু করল এবং একটু পড়েই বুঝতে পারল যে সে নিজেকে খুন করছে। তারপরও সে থামল না। সূর্য যখন অস্ত গেল সে গোল পাহাড়ে রাখা স্টার্শিনার টুপিটি স্পর্শ করে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ল।
উদ্দীপকের রহমত আলীর তেমন কোনো জায়গা সম্পত্তি ছিল না। কিন্তু সে পরিশ্রমী। সে যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে ব্যাংক ঋণ নিয়ে মৎস্য চাষ করে বেশ লাভবান হয়। লাভের টাকা থেকে ব্যাংক ঋণ শোধ করে। সে কিছু জমিও কেনে। এ নিয়েই সে সুখী।
রহমত আলী নির্লোভী বলে শ্রমে অর্জিত সম্পত্তি নিয়েই সে সুখী হয়েছে। কিন্তু সম্পত্তির প্রতি অধিক লোভ থাকায় পাখোম পরিশ্রমে অর্জিত সম্পত্তিতে তুষ্ট হতে পারেনি এবং শেষ পর্যন্ত মারা যায়। কিন্তু সে যদি রহমত আলীর মতো অল্প সম্পত্তিতে তুষ্ট হতে পারতো তাহলে তার এরূপ করুণ পরিণতি হতো না। সুতরাং বলা যায়, প্রশ্নোল্লিখিত মন্তব্যটি যথার্থ।
প্রশ্ন-১২ নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
একটি পথনাটকে রজব নামক এক কর্মচারীকে একটি অফিসে চাকরি করতে দেখা যায়। একসময় ৩০০ টাকা মাইনেতে সে চাকরি শুরু করেছিল। তখন থেকেই অফিসের যেকোনো কাজ করতে আসা জনসাধারণের কাছ থেকে অতিরিক্ত বকশিশ নিত। পরবর্তীতে তার বেতন ৩০,০০০ টাকা হয়। মাইনের সাথে তার বকশিশের পরিমাণও বাড়ে। একদিন প্রধান কর্মকর্তা ব্যাপারটি জানতে পারেন। কিন্তু তিনি রজবকে কোনো শাস্তি না দিয়ে জামানতবিহীনভাবে ৫ দিনে ১ কোটি টাকা খরচ করার শর্তে তাকে নগদ ১ কোটি টাকা দিলেন। রজব সেই টাকা নিয়ে তিন তলার বাড়ির উপরে বাড়ি নির্মাণের কাজে হাত দিল। কিন্তু তৃতীয় দিনেই বাড়ি ধ্বসে পড়ায় তিনি মারা গেলেন। রজবের মৃত্যু হলো কিন্তু কেউ অশ্রæ ঝরাল না; এবং করতালিতে মুখরিত হলো পথমঞ্চ।
ক. ‘রুবল’ কোন দেশের মুদ্রার নাম? ১
খ. শয়তান পাখোমকে জমি কিনতে প্ররোচিত করল কেন? ২
গ. উদ্দীপকের রজব ও ‘সাড়ে তিন হাত জমি’ গল্পের পাখোমের পরিণতির কারণ ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ.উদ্দীপকটি ‘সাড়ে তিন হাত জমি’ গল্পের সামগ্রিক ভাব ধারণ করে কি? মতের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন কর। ৪
১২নং প্রশ্নের উত্তর
ক. ‘রুবল’ রাশিয়ার মুদ্রার নাম।
খ. পাখোমের অহংকার ধুলিসাৎ করতে কারণে শয়তান পাখোমকে জমি কিনতে প্ররোচিত করে।
রাশিয়ার গ্রামে বসবাসকারী কৃষক পাখোমের জমির প্রতি খুবই লোভ ছিল। সে জমি পেলে কাউকে পরোয়া করবে না; এমনকি স্বয়ং শয়তানকেও না মনে মনে এমন ইচ্ছা পোষণ করত। শয়তান তার এ ইচ্ছা জানতে পেরে তার সাথে একটি মজার খেলা খেলার অর্থাৎ প্রথমে জমি দিয়ে তারপর কেড়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করল। আর এ উদ্দেশ্যেই শয়তান পাখোমকে জমি কিনতে প্ররোচিত করল।
গ. উদ্দীপকের রজব ও ‘সাড়ে তিন হাত জমি’ গল্পের পাখোমের পরিণতি সম্পত্তির প্রতি অধিক লোভ।
‘সাড়ে তিন হাত জমি’ গল্পের পাখোমের মনে অনেক জমির মালিক হওয়ার ইচ্ছা ছিল। তাই সে শয়তানের প্ররোচনায় একের পর এক জমি কিনে অনেক জমির মালিক হয়েছিল। ফলে জমির প্রতি তার লোভ আরো বেড়ে গিয়েছিল। তাই স্টার্শিনা যখন তাকে বিপুল জমির লোভ দেখিয়ে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিল, নিজ লোভকে সংবরণ করতে না পেরে তখন যে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছিল।
উদ্দীপকের রজবের মধ্যেও লোভী মনোভাবটা আছে। তাই সে ধীরে ধীরে মাইনে বাড়ার সাথে বকশিশের পরিমাণ বাড়িয়েছে। প্রধান কর্মকর্তা তার লোভকে চরম পর্যায়ে পৌঁছে দিতে তার সামনে এক কোটি টাকার সুযোগ তুলে ধরে। সেও সাথে সাথে সুযোগ লুফে নেয় এবং তার মাধ্যমে আরো অধিক লাভবান হতে গিয়ে মৃত্যুবরণ করে। সুতরাং বলা যায় যে, সম্পত্তির প্রতি অধিক লোভের কারণেই পাখোম ও রজবের মৃত্যু হয়েছে।
ঘ. উদ্দীপকটি ‘সাড়ে তিন হাত জমি’ গল্পের সমগ্র ভাবের ধারক’।
‘সাড়ে তিন হাত জমি’ গল্পের পাখোমের খুব একটা অভাব ছিল না। কিন্তু লোভ তাকে অভাবী করে তোলে। সে প্রচুর জমির মালিক হতে চায়। শয়তানের প্ররোচনায় পাখোম যত জমি পায়, তার চেয়ে আরও বেশি জমি পাওয়ার ইচ্ছা তাকে তাড়িত করে। শেষ পর্যন্ত জমির লোভই তাকে মৃত্যুমুখে পতিত করে মূলত লোভ ও লোভের পরিণতি উপস্থাপনই আলোচ্য গল্পের সমগ্র অংশের বিবেচ্য বিষয়।
উদ্দীপকে উল্লিখিত পথনাটকের চরিত্র রজব অল্প টাকা মাইনে নিয়ে চাকরি শুরু করে। কিন্তু অতিরিক্ত লোভের কারণে সে অফিসের যেকোনো কাজ করতে জনসাধারণের কাছ থেকে বকশিশ নিত। মাইনে বৃদ্ধির সাথে সাথে সে তার বকশিশের পরিমাণ ও বৃদ্ধি করে। এই লোভের ব্যাপারটি প্রধান কর্মকর্তার দৃষ্টিগোচর হলে তিনি রজবকে আরও টাকা দেন। রজব সেই টাকা নিজ স্বার্থে ব্যবহারের চেষ্টা করার কারণে করুণ পরিণতি হিসেবে মৃত্যুকেই তার মেনে নিতে হয়। এখানেও লোভের কারণে করুণ পরিণতির বিষয়টিকেই ইঙ্গিত প্রদান করা হয়েছে।
সুতরাং বলা যায়, উদ্দীপকটি ‘সাড়ে তিন হাত জমি’ গল্পের সমগ্র ভাবের ধারক।
প্রশ্ন-১৩ নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
আজকাল বাংলাদেশে অলিতে গলিতে প্রাইভেট হাসপাতাল দেখা যায়। এ রকম একটি হাসপাতালের মালিক মেহেরাব সাহেব। তার হাসপাতালে তেমন কোনো উন্নত যন্ত্রপাতি নেই আর পরিবেশও খুব নোংরা। এছাড়া কর্মচারীরাও ন্যায্য বেতন পায় না। তাই কর্মচারীরা তার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে ওঠে এবং রোগীও তেমন হয় না। ফলে খুব দ্রæত মেহেরাব সাহেব পতনের মুখোমুখি হন।
ক. গোল পাহাড়ের নাম কী? ১
খ. ‘দিনপ্রতি’ জমির দাম বিষয়টি পাখোম বুঝে উঠতে পারেনি কেন? ২
গ. উদ্দীপকের মূলভাবটি ‘সাড়ে তিন হাত জমি’ গল্পের কোন দিকটি নির্দেশ করে তা বর্ণনা কর। ৩
ঘ.উদ্দীপকের সাথে ‘সাড়ে তিন হাত জমি’ গল্পের ভাবে সামান্য মিল থাকলেও উভয়ের মধ্যে বৈসাদৃশ্যই বেশি পরিলক্ষিত হয়’ মন্তব্যটি বিচার কর। ৪
১৩নং প্রশ্নের উত্তর
ক. গোল পাহাড়ের নাম শিকান।
খ. পাখোম দিন প্রতি জমির দাম বিষয়টি বুঝতে পারেনি কেননা জীবনে প্রথম সে এই অদ্ভুত পদ্ধতিতে জমি বিক্রয়ের কথা শুনেছিল।
দিনপ্রতি জমির দাম বলতে বোঝানো হয়েছে, সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পারে হেঁটে যতটা জমি ঘুরে আসতে পারবে তার দাম। সুদূর বাসকিরদের দেশে জমি বিক্রয়ের এই রীতি প্রচলিত ছিল। সেখানে জমি কিনতে গিয়ে পাখোম প্রথম এ রীতির কথা শোনে।
গ. উদ্দীপকের মূলভাবটি ‘সাড়ে তিন হাত জমি’ গল্পের কর্ম অনুযায়ী ফল ভোগের দিকটি নির্দেশ করে।
‘সাড়ে তিন হাত জমি’ গল্পের পাখোম ছিল জমি লোভী। কীভাবে অল্প টাকা দিয়ে অধিক জমি কেনা যাবে সেই চিন্তায় সে বিভোর থাকত। জীবনের অন্য চাহিদাগুলোকে উপেক্ষা করে কেবল অধিক জমির মালিক হওয়ার স্বপ্নে সে এখানে সেখানে ছুটে বেড়াত। জমির পিছনে ছুটতে ছুটতে একসময় সে বাসকিরদের দেশে উপস্থিত হয়। সেখানে মাত্র ১০০ রুবল দিয়ে ১০ মাইল জমি কিনতে গিয়ে সে মারা যায়।
উদ্দীপকের মেহেরাব সাহেব হাসপাতাল নামক একটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের মালিক হলেও মানুষকে উন্নতমানের সেবা প্রদানের কোনো প্রচেষ্টা নেই। সেবার চেয়ে মুনাফা লাভের বিষয়টি তার কাছে মুখ্য বলে অল্প সময়ের মধ্যেই তাকে পতনের মুখোমুখি হতে হয়েছে। অর্থাৎ তিনি তার কর্মের ফল পেয়েছেন। যা গল্পের জমি লোভী পাখোমের কর্মফল ভোগের কথা নির্দেশ করে।
ঘ. ‘উদ্দীপকের সাথে ‘সাড়ে তিন হাত জমি’ গল্পের ভাবে সামান্য মিল থাকলেও উভয়ের মধ্যে বৈসাদৃশ্যই বেশি পরিলক্ষিত হয়’ মন্তব্যটি যথার্থ।
‘সাড়ে তিন হাত জমি’ গল্পের পাখোম নামে এক কৃষক ছিল লোভী মানসিকতার। কীভাবে অল্প টাকা দিয়ে অধিক জমি কেনা যাবে সেই চিন্তায় সে বিভোর থাকত। জীবনের অন্য চাহিদাগুলোকে উপেক্ষা করে অধিক জমির মালিক হওয়ার স্বপ্নে সে এখানে সেখানে ছুটে বেড়াত। অবশেষে এই জমির প্রতি লোভই তার করুণ মৃত্যু ডেকে আনে।
অপরপক্ষে, উদ্দীপকে দেখা যায়, হাসপাতালের মালিক মেহেরাব সাহেব। তিনি হাসপাতালের অনুন্নত যন্ত্রপাতি ব্যবহার করেন এবং তার হাসপাতালের পরিবেশ খুব নোংরা। এছাড়া কর্মচারীরাও ন্যায্য বেতন পায় না। তার এসব কর্মকাÐের দরুন তার করুণ পরিণতি ঘটে। উদ্দীপকের সাথে আলোচ্য গল্পের এই কর্মফলের বিষয়টিই সাদৃশ্যপূর্ণ। কিন্তু প্রেক্ষাপট পরিস্থিতি এবং ঘটনার দিক দিয়ে উদ্দীপকের সাথে গল্পের বৈসাদৃশ্য বিদ্যমান।
সুতরাং বলা যায়, প্রশ্নোল্লিখিত মন্তব্যটি যথার্থ।
প্রশ্ন-১৪ নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
জাহাজে ওঠার পর মিঠু ঘুমিয়ে পড়ে। ঘুম থেকে উঠে দেখে সে নতুন একদেশে। তাদের ভাষা সে বোঝে না। তার ভাষাও কেউ বোঝে না। তারা কেউ ভাত খায় না। তাদের কোনো বাড়ি-ঘর নেই। তারা সবাই রাতে গাছে উঠে ঘুমায়। এটি বড় আজব দেশ।
ক. স্টার্শিনার টুপিটি কী দিয়ে তৈরি? ১
খ. জমি পেলে পাখোম কাউকে পরোয়া করবে না কেন? ২
গ. উদ্দীপকের সাথে ‘সাড়ে তিন হাত জমি’ গল্পের সাদৃশ্য তুলে ধর। ৩
ঘ.“উদ্দীপকের মিঠু যেন ‘সাড়ে তিন হাত জমি’ গল্পের পাখোমের আংশিক প্রতিচ্ছবি”মন্তব্যটি মূল্যায়ন কর। ৪
১৪নং প্রশ্নের উত্তর
ক. স্টার্শিনার টুপিটা শেয়ালের চামড়া দিয়ে তৈরি।
খ. পাখোমের জমি ছাড়া অন্য কোনো বিষয়ে লোভ নেই বলে সে জমি পেলে অন্য কাউকে পরোয়া করবে না।
পাখোমের ছিল জমির প্রতি অতিরিক্ত লোভ। তেমন কোনো অভাব না থাকলেও অনেক জমির মালিক হওয়ার ইচ্ছা পোষণ করত সে। জমিকে এতই মূল্যবান মনে করত যে জমি পেলে সে সবকিছুর ঊর্ধ্বে উঠে যাবে মনে করত। তাই জমি পেলে সে কাউকে পরোয়া করবে না, এমনকি স্বয়ং শয়তানকেও না এমনটাই সে মনে করত।
গ. উদ্দীপকের নতুন দেশের বাসিন্দাদের অদ্ভুত জীবন প্রণালির সাথে ‘সাড়ে তিন হাত জমি’ গল্পের বাসকিরদের দেশের জীবনযাপন প্রণালির মধ্যে বেশ কিছু সাদৃশ্য রয়েছে।
গল্পের বাসকিরদের দেশটি বড় আজব দেশ। বাসকিরদের জীবন প্রণালিও অদ্ভুত। তারা নদীর তীরে খোলা প্রান্তরে বাস করে। তাদের কোনো ঘরবাড়ি নেই। তারা চামড়ার ছাউনি দেয়া গাড়ির মধ্যে বসবাস করে। তারা কেউ জমি চাষ করে না। কোনো ধরনের ফসলও তারা উৎপাদন করে না। তাদের জমিতে ঘোড়া, গরু, মহিষ চড়ে বেড়ায়। তারা এসব গৃহপালিত পশুদের মাংস খায় এবং দুধ দিয়ে কুসিম তৈরি করে পানীয় হিসেবে ব্যবহার করে। তবে বাসকিররা সহজ-সরল, হাসিখুশি এবং অতিথিপরায়ণ।
উদ্দীপকের বাসিন্দারাও বেশ অদ্ভুত জীবনযাপন করে। তারা এক অদ্ভুত ভাষায় কথা বলে যা মিঠু বুঝতে পারে না। তারা ভাত খায় না। কোনো ঘরবাড়ি না থাকায় তারা রাতে গাছে চড়ে ঘুমায়। সুতরাং আমরা বলতে পারি যে উদ্দীপকের নতুন দেশের বাসিন্দারা বাসকিরদের মতো অদ্ভুত জীবন প্রণালি অনুসরণ করে। এই দিক দিয়ে উদ্দীপকের সাথে আলোচ্য গল্পের সাদৃশ্য আছে।
ঘ. “উদ্দীপকের মিঠু যেন ‘সাড়ে তিন হাত জমি’ গল্পের পাখোমের আংশিক প্রতিচ্ছবি”Ñমন্তব্যটি যথার্থ।
‘সাড়ে তিন হাত জমি’ গল্পের পাখোম শয়তানের প্ররোচনায় জমি কেনার নেশায় পড়ে ঘুরতে ঘুরতে একসময় বাসকিরদের দেশে উপস্থিত হয়েছিল। বাসকিরদের জীবনপ্রণালি দেখে পাখোমের অবাক লেগেছিল। তাছাড়া পাখোমের নিজস্ব জীবনপ্রণালির সাথে কোনো মিল না থাকায় বাসকিরদের দেশটিকে তার কাছে আজব মনে হয়েছিল।
উদ্দীপকের মিঠু জাহাজে ওঠার পর ঘুমিয়ে পড়ায় এক নতুন দেশে উপস্থিত হয়। সেখানকার মানুষের ভাষা ভিন্ন থাকায় সে তাদের কোনো কথা বুঝতে পারে না, তারাও তার কোনো কথা বুঝতে পারে না। সেই দেশের বাসিন্দারা কেউ ভাত খায় না। তারা ঘরবাড়িও তৈরি করে না। রাতের বেলায় তারা গাছের উপর উঠে ঘুমায়। তাদের এরূপ জীবনপ্রণালি দেখে মিঠুর বেশ আজব লাগে।
গল্পের পাখোম অবাক হয়েছিল বাসকিরদের দেশে গিয়ে তাদের জীবনপ্রণালি দেখে। আর উদ্দীপকের মিঠু নতুন দেশের বাসিন্দাদের জীবনপ্রণালি দেখে অবাক হয়। তাই ভিন্ন ধরনের জীবনপ্রণালি দেখে অবাক হওয়ার দিক দিয়ে পাখোম ও মিঠুর ঘটনা একই দিকে প্রবাহিত হয়েছে। কিন্তু অন্যান্য বিষয় যেমন নতুন জায়গায় যাওয়ার কারণ, সেখানের বিভিন্ন কর্মকাÐ এবং শেষ পরিণতি প্রভৃতি বিষয়ে তারা স্বতন্ত্র।
সুতরাং আমরা বলতে পারি, উদ্দীপকের মিঠু ‘সাড়ে তিন হাত জমি’ গল্পের পাখোমের আংশিক প্রতিচ্ছবি।
সৃজনশীল প্রশ্নব্যাংক
প্রশ্ন-১৫ ল্ফ তারোয়া গ্রামের জামিল সাহেব সরকারি টাকা আত্মসাৎ করে প্রচুর বিত্ত-বৈভবের মালিক হয়েছেন। বাবা ছিল বাজারের সামান্য দোকানদার। প্রথমে তিনি বাবার সাথে কিছুদিন দোকানে বসেন। পরে সামান্য পুঁজি জোগাড় করে ঢাকায় এসে পোশাকশিল্পে পাইকারি ব্যবসায়ী হিসেবে কাজ করা শুরু করেন এবং অল্প সময়েই বড় ব্যবসায়ী বনে যান। ছোটবেলা থেকেই কোটিপতি হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন তিনি। কিন্তু অতিরিক্ত লোভ মানুষের অধঃপতন ডেকে আনে। জামিল সাহেব এখন সরকারি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে কারাগারে বন্দি জীবনযাপন করছেন।
ক. বাসকিরদের পানীয়ের নাম কী? ১
খ. শয়তান কেন পাখোমকে শিক্ষা দিতে চেয়েছিল? ২
গ. উদ্দীপকের জামিল সাহেবের সাথে পাখোমের চারিত্রিক সাদৃশ্য ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. ‘অতিরিক্ত লোভ মানুষের অধঃপতন ডেকে আনে’Ñসাড়ে তিন হাত জমি অবলম্বনে মন্তব্যটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ কর। ৪
প্রশ্ন-১৬ ল্ফ একটি কুকুর এক মাংসের দোকান থেকে এক টুকরো মাংস চুরি করে পালিয়ে যায়। কুকুরটি মাংসের টুকরো এমন এক জায়গায় গিয়ে খেতে চায়; যেখান থেকে অন্য কেউ তাকে দেখতে পাবে না। অন্য কোনো কুকুরও যেন সেই মাংসের টুকরোর ভাগ নিতে না পারে। কুকুরটি মাংসের টুকরো মুখে নিয়ে ব্রিজের উপর দিয়ে নদীর ওপারে যাচ্ছিল। হঠাৎ সে ব্রিজের উপর থেকে দেখতে পেল নদীর ভিতর আরেকটি কুকুর মুখে এক টুকরো মাংস নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। লোভী কুকুর ভাবল, নদীর মধ্যের কুকুরের মুখে থাবা দিয়ে ওই মাংসের টুকরো কেড়ে নিবে। তাহলে সে দুই টুকরো মাংস খেতে পারবে। কুকুরটি ব্রিজের উপর থেকে নদীর মধ্যে ঝাঁপ দিল। ফলাফল হিসেবে সে ওই মাংসের টুকরো তো পেলই না বরং নিজের মাংসের টুকরোও হারালো।
ক. পাখোমের কত রুবল সঞ্চয় ছিল? ১
খ. গ্রামের চাষিরা সংগঠিত হতে পারছিল না কেন? ২
গ. লোভী কুকুর ও ‘সাড়ে তিন হাত জমি’ গল্পের পাখোমের মধ্যে সাদৃশ্য নিরূপণ কর। ৩
ঘ. উদ্দীপক ও ‘সাড়ে তিন হাত জমি’ গল্পের আলোকে ‘লোভে পাপ, পাপে মৃত্যু’ -কথাটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ কর। ৪
অনুশীলনের জন্য দক্ষতাস্তরের প্রশ্ন ও উত্তর
জ্ঞানমূলক
প্রশ্ন \ ১ \ পাখোম কী পেলে শয়তানকেও পরোয়া না করার কথা বলেছিল?
উত্তর : পাখোম অধিক জমি পেলে শয়তানকেও পরোয়া না করার কথা বলেছিল।
প্রশ্ন \ ২ \ ভগলার ওপারে প্রতি একর জমির মূল্য কত?
উত্তর : ভগলার ওপারে প্রতি একর জমির মূল্য মাত্র ১.৫০ রুবল।
প্রশ্ন \ ৩ \ ‘সাড়ে তিন হাত জমি’ গল্পের বড় বোনের স্বামীর পেশা কী?
উত্তর : ‘সাড়ে তিন হাত জমি’ গল্পের বড় বোনের স্বামীর পেশা হলো ব্যবসা।
প্রশ্ন \ ৪ \ পাখোমের জন্মস্থান কোথায়?
উত্তর : পাখোমের জন্মস্থান হলো রাশিয়া।
প্রশ্ন \ ৫ \ জমিদার মহিলা কত একর জমির মালিক?
উত্তর : জমিদার মহিলা ২৪০ একর জমির মালিক।
প্রশ্ন \ ৬ \ কোন নদী পাড়ি দিয়ে পাখোম সামারা পৌঁছাল?
উত্তর : ভলগা নদী পাড়ি দিয়ে পাখোম সামারা পৌঁছাল।
প্রশ্ন \ ৭ \ বাসকিরদের প্রিয় খাদ্য কী?
উত্তর : বাসকিরদের প্রিয় খাদ্য ঘোড়ার দুধ।
প্রশ্ন \ ৮ \ ভলগার ওপারে গ্রাম পঞ্চায়েতে নাম লেখালে কী পাওয়া যায়?
উত্তর : ভলগার ওপারে গ্রাম পঞ্চায়েতে নাম লেখালে ১০০ একর জমি পাওয়া যায়।
প্রশ্ন \ ৯ \ বাসকিরদের নেতার নাম কী?
উত্তর : বাসকিরদের নেতার নাম স্টার্শিনা।
প্রশ্ন \ ১০ \ স্টার্শিনা কোন পাহাড়ের উপর তার টুপি রাখল?
উত্তর : স্টার্শিনা শিকান পাহাড়ের উপর তার টুপি রাখল।
প্রশ্ন \ ১১ \ শেষপর্যন্ত পাখোম কতটুকু জমিতে নিজের সমাধি গড়ল?
উত্তর : শেষপর্যন্ত পাখোম সাড়ে তিন হাত জমির মধ্যে নিজের সমাধি গড়ল।
অনুধাবনমূলক
প্রশ্ন \ ১ \ জমিদার মহিলার জমি কিনতে গিয়ে কৃষকরা একত্রিত হতে পারল না কেন?
উত্তর : শয়তানের ইন্ধনে জমিদার মহিলার জমি কিনতে গিয়ে গ্রামের কৃষকরা একত্রিত হতে পারল না। পাখোমের লোভ দেখে শয়তান তাকে নিয়ে মজা করার কথা চিন্তা করে। শয়তান প্রথমে পাখোমকে জমি দিয়ে তা কেড়ে নেওয়ার পরিকল্পনা আঁটে। পাখোমের গ্রামের কৃষকরা সবাই মিলে মহিলার জমি কেনার সময় শয়তান তাতে বাধা দেয় যাতে কৃষকরা একত্রিত হতে না পারে। কারণ সবাই একত্রে জমি কিনলে পাখোমকে নিয়ে শয়তানের পরিকল্পনা সফল হবে না।
প্রশ্ন \ ২ \ পাখোম তার বর্তমান সহায়-সম্পত্তি নিয়ে সন্তুষ্ট নয় কেন?
উত্তর : পাখোম আগে থেকেই অনেক জমিজমার স্বপ্ন দেখত। জমির জন্য সে বেপরোয়া হয়ে উঠেছিল। প্রতিবেশী মহিলার কাছ থেকে জমি কিনেও সে সন্তুষ্ট হতে পারেনি। সে ভলগার ওপারে ১.৫০ রবুল দিয়ে প্রতি একর জমি কেনে। তারপার শোনে অনেক দূরে বাসকিরদের দেশে জমির দাম আরও কম। সে ছোটে সেই দেশে, কম দামে আরও অনেক বেশি জমি কিনতে। আসলে জমির প্রতি তার অতিরিক্ত লোভই তাকে কখনো সন্তুষ্ট হতে দেয়নি।