বুলু
অজিত কুমার গুহ
গল্পটি পড়ে জানতে পারব
ভাষা আন্দোলনের কথা
বাঙালির প্রত্যয়দীপ্ত চেতনা সম্পর্কে
মানুষের প্রতি মানুষের মমত্বের স্বরূপ
লেখক পরিচিতি
নাম অজিত কুমার গুহ।
জন্ম পরিচয় জন্ম তারিখ : ১৫ই এপ্রিল, ১৯১৪ খ্রিষ্টাব্দ।
জন্মস্থান : কুমিল্লার সুপারিবাগানে।
কর্মজীবন/পেশা শিক্ষকতা : জগন্নাথ কলেজ; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
সাহিত্য সাধনা মূল্যবান ভ‚মিকাসহ তাঁর সম্পাদিত গ্রন্থের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘মেঘদূত’, ‘কৃষ্ণকান্তের উইল’, ‘গীতাঞ্জলি’ প্রভৃতি।
মৃত্যু ১২ই নভেম্বর, ১৯৬৯ খ্রিষ্টাব্দে।
বহুনির্বাচনি প্রশ্নের উত্তর
১. ‘বুলু’ মূলত কোন ধরনের সাহিত্যকর্ম? চ
ক. আত্মকাহিনী খ. ছোটগল্প
গ. সামাজিক কাহিনী ঘ. ঐতিহাসিক গল্প
২. ‘বুলু’ গল্পে লেখক বাংলাদেশের কোন ঐতিহাসিক ঘটনার প্রতি ইঙ্গিত করেছেন?
র. ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন
রর. ১৯৬৯ সালের গণ-অভ্যুত্থান
ররর. ১৯৭১ সালের স্বাধীনতাযুদ্ধ
নিচের কোনটি সঠিক? ছ
ক. র খ. র ও রর
গ. ররর ঘ. র ও ররর
নিচের অংশটুকু পড় এবং ৩-৫ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
এরপর সতেরো বছর কেটে গেছে। হঠাৎ সেই ডাক্তারের সঙ্গে লেখকের দেখা। লেখককে জড়িয়ে ধরে ডাক্তার কেঁদে উঠলেনÑ ‘আপনার বুলুকে মনে পড়ে স্যার? সে এবার ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করে চাকরি নিয়েছিল। হঠাৎ সে এক মশাল মিছিলে গিয়ে আর ফিরে আসেনি।’
৩. ডাক্তারের সঙ্গে লেখকের প্রথম পরিচয় ঘটেছিলÑ ঝ
ক. ঢাকা জেলখানায়
খ. কোনো এক সভায়
গ. কোনো এক হাসপাতালে
ঘ. দিনাজপুর কারাগারে
৪. প্রথম ঘটনার সতেরো বছর পর বাংলাদেশে কোন ঐতিহাসিক ঘটনা ঘটে? ছ
ক. ১৯৬৬-এর ছয়দফা আন্দোলন
খ. ১৯৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থান
গ. ১৯৭০-এর নির্বাচন
ঘ. ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ
৫. বুলুর মশাল মিছিলে অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে প্রকাশ পেয়েছে বুলুর Ñ
র. সংগ্রামী চেতনা
রর. বিপ্লবী অনুভ‚তি
ররর. আত্মসচেতনতা
নিচের কোনটি সঠিক? ছ
ক. র খ. র ও রর
গ. ররর ঘ. র ও ররর
সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
নিচের অংশটুকু পড়ে এর সংশ্লিষ্ট প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
আমার ৫ বছর বয়সের ছেলে সৈকতকে নিয়ে এক বন্ধুর বাসায় বেড়াতে যাই। বন্ধু পণ্ডিত মানুষÑটেবিলে অনেক বড় বড় বই। প্রথম সাক্ষাতেই সৈকত আলাপ জমিয়ে নিল বন্ধুটির সঙ্গে। একথা-সেকথা। তুমি এত বড় বড় বই পড়ো। লেখাগুলোতো খুবই ছোট- দেখ কী করে? বন্ধুটিও বেশ মজার মানুষ। সে মজা করে বলে আমার চশমা পড়িয়ে দেয়। তুমি বুড়া হলে তোমার চশমাও তোমাকে পড়িয়ে দেবে। বন্ধুটি সৈকতকে চকলেট দেয়। সৈকত তাকে মুহূর্তের মধ্যে ২/৩টি ছড়া শুনিয়ে দেয়। কয়েক মিনিটের প্রথম সাক্ষাতেই দুজনের মধ্যে বেশ ভাব জমে ওঠে। এরপর প্রায়ই সে বায়না ধরে ঐ বন্ধুর বাসায় যেতে।
ক. ‘বুলু’ গল্পটিতে লেখকের কোন স্মৃতি ফুটে উঠেছে? ১
খ. লেখকের সঙ্গে বুলুর পরিচয়ের প্রেক্ষাপট ব্যাখ্যা করো। ২
গ. উদ্দীপকের সৈকতের মধ্যে বুলুর কোন বৈশিষ্ট্যের প্রতিফলন ঘটেছে? যুক্তিসহ উপস্থাপন করো। ৩
ঘ. অল্প বয়সী মানুষের মধ্যে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠার কারণগুলো উদ্দীপকের আলোকে বিশ্লেষণ করো। ৪
১ এর ক নং প্র. উ.
‘বুলু’ গল্পটিতে লেখকের ভাষা আন্দোলনের স্মৃতি ফুটে উঠেছে।
১ এর খ নং প্র. উ.
ভাষা আন্দোলনকালে দিনাজপুর কারাগারে অবস্থানের সময় বুলুর সঙ্গে লেখকের পরিচয় হয়েছিল।
ভাষা আন্দোলনে অংশগ্রহণ করার কারণে ১৯৫২ সালে লেখককে গ্রেপ্তার করে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী রাখা হয়েছিল। এখানে তিন দিন বন্দী থাকার পর তাঁকে বদলি করা হয় দিনাজপুর কারাগারে। সেখানে লেখকসহ অন্য বন্দীদের পরিচর্যার জন্য নিয়োজিত ছিলেন শাহেদ নামের একজন ডাক্তার। একদিন বিকেলে ডাক্তার এলেন ফুটফুটে সুন্দর পাঁচ বছরের ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে। লেখক ছেলেটিকে কোলে নিয়ে নাম জিজ্ঞাসা করতেই সে বলল, আমার নাম বুলু। আর এভাবেই লেখকের সঙ্গে তার পরিচয় হয়।
১ এর গ নং প্র. উ.
উদ্দীপকের সৈকতের মধ্যে বুলুর সরলতা ও মিশুক প্রকৃতির প্রতিফলন ঘটেছে।
অজিত কুমার গুহ রচিত ‘বুলু’ গল্পের বুলু পাঁচ বছরের এক শিশু। এক বিকেলে চিকিৎসক বাবার সঙ্গে সে দিনাজপুর কারাগারে এসেছিল। প্রথম সাক্ষাতেই লেখকের সঙ্গে সে গড়ে তুলেছিল বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। তারপর থেকে প্রতিদিনই সে লেখকের সঙ্গে দেখা করতে আসত এবং ভাব জমাত। সরলতা ও মিশুক প্রকৃতির কারণে লেখকেরও তাকে খুব ভালো লেগেছিল।
উদ্দীপকের সৈকত পাঁচ বছরের এক শিশু। তাকে সঙ্গে নিয়ে তার বাবা এক বন্ধুর বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলেন। সৈকত প্রথম দেখাতেই তার বাবার বন্ধুর সঙ্গে আলাপ জমিয়ে নিয়েছিল। বড় বড় বই দেখে সৈকত জানতে চাইল- এসব তিনি কীভাবে পড়েন। বাবার বন্ধুটি সৈকতকে চকলেট দিলেন। সৈকত তাঁকে মুহূর্তের মধ্যে ২-৩টি ছড়া শুনিয়ে দেয়। অর্থাৎ কয়েক মিনিটের প্রথম সাক্ষাতেই দুজনের মধ্যে বেশ ভাব জমে ওঠে। পরবর্তী সময়ে সৈকত প্রাই বাবার সেই বন্ধুর বাসায় যাওয়ার বায়না ধরে। এক্ষেত্রে সৈকতের সরলতা আর মিশুক স্বভাবের দিকটি সুস্পষ্ট। পরিশেষে তাই বলা যায়, গল্পের বুলু ও উদ্দীপকের সৈকতের আচরণে শিশুর সহজ সরলতার পাশাপাশি খুব সহজে কাউকে আপন করে নেওয়ার দিক প্রকাশ পেয়েছে।
১ এর ঘ নং প্র. উ.
অল্প বয়সী মানুষের মধ্যে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠার অন্যতম প্রধান কারণ হলো সরলতা, সুন্দর আচরণ ও মানসিকতার মিল।
‘বুলু’ গল্পে বুলুর সাথে বন্ধুত্ব হয় বর্ষীয়ান অধ্যাপকের, যিনি ভাষা আন্দোলনের সাথে জড়িত ছিলেন বলে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী তাঁকে কারাগারে নিক্ষেপ করেছিল। তখন তিনি ছিলেন দিনাজপুর কারাগারে। সেখানে কর্মরত চিকিৎসক শাহেদ সাহেবের সঙ্গে এক বিকেলে কারাগারে এসেছিল তার পাঁচ বছরের ছেলে বুলু। অধ্যাপকের মিষ্টি মধুর আচরণে খুব সহজেই মুগ্ধ হয়েছিল বুলু। আবার বুলুও তার সারল্য ভরা আচরণ দিয়ে অধ্যাপক সাহেবের মন জয় করে নিয়েছিল। আর উভয়ের মানসিকতা এক বলেই বিদায়কালে অধ্যাপকের উদ্দেশ্যে বুলু বলেছিল, “রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই, নুরুল আমীনের কল্লা চাই।”
উদ্দীপকের সৈকতের বন্ধুত্ব হয়েছিল তার বাবার বন্ধুর সঙ্গে, যিনি ছিলেন একজন পণ্ডিত ব্যক্তি। কিন্তু প্রথম সাক্ষাতেই সে আলাপ জমিয়ে নিতে পেরেছিল তাঁর সঙ্গে। তিনি চকলেট দিয়েছিলেন, আর সৈকত তাঁকে মুহূর্তের মধ্যে ২-৩টি ছড়া শুনিয়েছিল। এভাবে কয়েক মিনিটেই তাদের মধ্যে ভাব জমে ওঠে। একে অপরকে বন্ধু হিসেবে ভাবতে শুরু করে।
গল্পের বুলুর সাথে লেখকের নিবিড় সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল অল্প সময়েই। উদ্দীপকের সৈকত ও তার বাবার বন্ধুর সাথেও একইভাবে সুন্দর বোঝাপড়া তৈরি হয় এর মূল কারণ মানসিকতার মিল। সরলতা, সুন্দর আচরণ ও মানসিকতার মিল থাকলে যেকোনো বয়সীদের মধ্যে বন্ধুত্ব গড়ে উঠতে পারে। অর্থাৎ বন্ধুত্ব বয়সের কোনো সীমারেখা মেনে চলে না।
সালেহা-মতিন দম্পতির একমাত্র সন্তান দুর্জয় জন্মগ্রহণ করে ১৯৫২ সালের ফেব্র“য়ারি মাসে। দুর্জয়ের বয়স যখন দশ বছর, তখনই দুর্জয়ের বাবা মতিন সাহেব দুর্জয়কে দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য সম্পর্কে ধারণা দেন। দুর্জয়ের মধ্যেও দেশের প্রতি মমত্ববোধ তৈরি হয়। মতিন সাহেব এভাবেই শিশু দুর্জয়ের মধ্যে দেশপ্রেমের বীজ বপন করে দেন। উনিশ বছর পর ১৯৭১ সালে বাবার সম্মতি নিয়েই দুর্জয় দেশমাতৃকাকে শত্র“মুক্ত করতে ঝাঁপিয়ে পড়ে মহান মুক্তিযুদ্ধে।
ক. বুলু কত সালে শহিদ হয়? ১
খ. কেন অধ্যাপকের ধৈর্যের প্রশংসা করতে হয়? ২
গ. দুর্জয় ও বুলু চরিত্রের মধ্যে সাদৃশ্য তুলে ধরো। ৩
ঘ. শৈশবের রোপিত বীজ যৌবনে মহীরুহতে পরিণত হয়েছে- উদ্দীপক ‘বুলু’ গল্পের আলোকে বিশ্লেষণ করো। ৪
২ নং প্র. উ.
ক. বুলু ১৯৬৯ সালের গণ-অভ্যুত্থানের সময় শহিদ হয়।
খ. বুলু শিশুসুলভ উচ্ছলতায় অনর্গল কথা বলতে থাকলে অধ্যাপক তাতে বিরক্ত হন না। এ কারণে বুলুর বাবা তাঁর ধৈর্যের প্রশংসা করেন।
১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী অধ্যাপককে দিনাজপুর জেলে বদলি করা হয়। সেখানে অধ্যাপকের পরিচয় হয় জেলের ডাক্তার এবং ডাক্তারের বছর পাঁচেক বয়সের ছেলে বুলুর সাথে। বুলু প্রাই অধ্যাপকের সাথে দেখা করতে চলে আসত। অধ্যাপককে পড়ে শোনানোর জন্য নিয়ে আসত ছড়ার বই। আরো বলতে শত রকমের কথা। অধ্যাপক সেসব শোনার ক্ষেত্রে ধৈর্যের পরিচয় দিতেন বলে মন্তব্যটি করা হয়েছে।
গ. দুর্জয় ও বুলু উভয়েই দেশপ্রেমের মহান মন্ত্রে উজ্জীবিত হয়ে জীবন উৎসর্গ করেছে।
বুলু ছিল জেল-ডাক্তারের সন্তান। উচ্ছল প্রকৃতির বুলু ভাষা আন্দোলনে বন্দীদের সাথে গল্প করত। তাদেরকে ছড়ার বই থেকে ছড়া পড়ে শোনাত। ভাষা আন্দোলনকারী মহান বন্দীদের সাথে মিশে বুলুর মধ্যেও রাষ্ট্রভাষা বাংলা সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টির পাশাপাশি পাকিস্তানি শাসকদের প্রতি ঘৃণা জন্ম লাভ করে। যে কারণে বুলু অধ্যাপকের কাছে ফিস ফিস করে বলে, ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই, নুরুল আমীনের কলা চাই।’
সালেহা-মতিন দম্পতির একমাত্র সন্তান দুর্জয় ছোটবেলা থেকেই দেশ সম্পর্কে জেনেছে। দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য সম্পর্কে জ্ঞানলাভ করেছে। দুর্জয়ের মধ্যেও দেশের প্রতি এক ধরনের ভালোবাসা ও কর্তব্যবোধ জাগ্রত হয়েছে। দুর্জয়ের মধ্যে দেশপ্রেমের মনোভাব গড়ে তোলার ক্ষেত্রে দুর্জয়ের বাবা মতিন সাহেবের ভূমিকাই মুখ্য। দুর্জয়ের এই দেশপ্রেমিক মনোভাবই পরবর্তীকালে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের প্রেরণা দান করে। দুর্জয় ও বুলু উভয়েই দেশপ্রেমের মহান মন্ত্রে উদ্বুদ্ধ।
ঘ. শৈশবে দেশপ্রেম নামক রোপিত বীজ দেশের জন্য আত্মত্যাগের মহান মহীরুহ রূপে প্রতিভাত হয় ‘বুলু’ গল্পের বুলু এবং উদ্দীপকের দু’জনের ক্ষেত্রে।
বুলুর বাবা শাহেদ ছিলেন জেলের ডাক্তার। উদার দৃষ্টিভঙ্গির অধিকারী ডাক্তার শাহেদ বুলুকে বন্দীদের কাছে নিয়ে যেতেন। বন্দীরা ছিলেন ৫২-র ভাষা আন্দোলনের সৈনিক। বন্দীদেরকে কাছে পেয়ে বুলু অনর্গল কথা বলত। এতে বন্দীদেরও বুলুকে ভালো লেগে যায়। আর এভাবেই বুলুর মানসিক বিকাশ সাধিত হয়। বুলু বাংলা ভাষাকে ভালোবাসতে শেখে, পাকিস্তানি শাসকদের ঘৃণা করতে শুরু করে, যার সুদূরপ্রসারী প্রভাব আমরা ৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থানে দেখতে পাই।
দুর্জয়ের বাবা মতিন সাহেব দুর্জয়কে দেশের গৌরবময় ইতিহাস সম্পর্কে জানান। দুর্জয়কে তিনি একজন দেশপ্রেমিক নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে চেয়েছেন। তাঁর সে প্রচেষ্টা সফল হয়েছিল বলে মনে করা যায়। কেননা ছোটবেলার শিক্ষা দুর্জয়ের মাঝে এমনভাবে প্রোথিত হয় যে, পরবর্তীকালে সে দেশমাতৃকাকে রক্ষার জন্য মহান মুক্তিযুদ্ধেও যোগ দেয়। আসলে দুর্জয় ও বুলু উভয়েরই দেশপ্রেমের সূচনা শৈশব থেকে। তবে দেশপ্রেমের শিক্ষা বুলু অর্জন করেছে পরোক্ষভাবে আর দুর্জয় অর্জন করেছে প্রত্যক্ষভাবে।
পারিপার্শ্বিক অবস্থার মধ্যে দিয়ে বুলুর দেশপ্রেম গড়ে উঠেছে, অন্যদিকে মতিন সাহেবের অনুপ্রেরণায় দুর্জয়ের দেশপ্রেম বিকাশ লাভ করেছে। তবে তারা দুজনই দেশমাতৃকার জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেছে। বুলু ও দুর্জয় শৈশব থেকেই দেশকে ভালোবাসার শিক্ষা পেয়েছে। সাধারণত যেকোনো বৃক্ষই রোপণের পর পরিচর্যা পেলে তা একটি পূর্ণাঙ্গ বৃক্ষে পরিণত হয়। তেমনি তাদের দেশপ্রেম নামক বৃক্ষ মহীরুহতে রূপান্তরিত হয়েছে নিবিড় পরিচর্যা আর যতেœ।
পরীক্ষায় কমন উপযোগী জ্ঞানমূলক প্রশ্নের উত্তর
১. ডাক্তারের ছেলের বয়স ছিল কত বছর?
উত্তর : ডাক্তারের ছেলের বয়স ছিল পাঁচ বছর।
২. লেখকের বদলি হয়েছিল কোন কারাগারে?
উত্তর : লেখকের বদলি হয়েছিল দিনাজপুর কারাগারে।
৩. ‘বুলু’ গল্পে সাধারণ কয়েদিদের জেলখানার নাম কী?
উত্তর : ‘বুলু’ গল্পে সাধারণ কয়েদিদের জেলখানার নাম ফালতু।
৪. কত সালে গণ-অভ্যুত্থান ঘটেছিল?
উত্তর : ১৯৬৯ সালে গণ-অভ্যুত্থান ঘটেছিল।
৫. বুলুর বাবার নাম কী?
উত্তর : বুলুর বাবার নাম শাহেদ।
৬. জেলখানার বাংলোয় কয়জন বন্দী থাকত?
উত্তর : জেলখানার বাংলোয় চারজন বন্দী থাকত।
৭. লেখকের কোথায় গিয়ে ভোর হয়েছিল?
উত্তর : লেখকের ফুলছড়ি ঘাটে গিয়ে ভোর হয়েছিল।
পরীক্ষায় কমন উপযোগী অনুধাবনমূলক প্রশ্নের উত্তর
১. বুলু কীভাবে মারা গিয়েছিল? বুঝিয়ে লেখো।
উত্তর : গণ-অভ্যুত্থানের সময় মিছিলে যোগ দিয়ে শত্রæর হাতে প্রাণ দিয়েছিল বুলু।
ছোটবেলা থেকেই বুলু দেশের প্রতি প্রচণ্ড ভালোবাসা লালন করত। ১৯৫২ সালে সে যখন শিশু, তখনই সেটা প্রকাশ পায়। ১৯৬৯ সালে বুলু বাইশ বছরের যুবকে পরিণত হয় এবং শুরু হয় গণ-অভ্যুত্থান। মিছিলে যোগ দিতে গিয়ে বুলু আর ফিরে আসেনি। শত্রæর হাতে প্রাণ দিয়ে শহিদ হয়েছে।
২. ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই’ বুলু কেন বলল?
উত্তর : ভাষা আন্দোলনের নানা ¯েøাগান শুনে বুলু তার মনে তা গেঁথে নিয়েছিল বলেই এ ¯েøাগান মাঝে মাঝে উচ্চারণ করত।
বুলুর বাড়ির সামনে দিয়ে রাতদিন মিছিল যেত। বাংলা মায়ের দামাল ছেলেদের ঝাঁঝালো মিছিলের ¯েøাগান ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই’ বুলুর শিশুপ্রাণকেও আলোড়িত করেছিল।
৩. দিনাজপুর কারাগারে লেখকের মন হালকা হয়েছিল কেন?
উত্তর : দিনাজপুর কারাগারে ডাক্তারের ব্যবহারে লেখকের মনটা হালকা হয়েছিল।
দিনাজপুর কারাগারে লেখকের মন ছিল খুবই বিষণœ। বিকেলবেলা জেলের ডাক্তার এলেন। দেখে মনে হলো ভদ্রলোক। তাঁর সাথে আলাপ করে লেখক খুশি হন এবং ডাক্তারের একান্ত আপনজনের মতো ব্যবহারে লেখকের মনটা হালকা হয়ে যায়।
বহুনির্বাচনি প্রশ্নের উত্তর
সাধারণ
১. অজিত কুমার গুহ কত সালে জন্মগ্রহণ করেন? ছ
ক ১৯০৪ খ ১৯১৪
গ ১৯৪১ ঘ ১৯৪৪
২. অজিত কুমার গুহ কোথায় জন্মগ্রহণ করেন? চ
ক কুমিল্লা খ বিহার
গ চুরুলিয়া ঘ নোয়াখালী
৩. নিচের কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অজিত কুমার গুহ শিক্ষকতা করেন? চ
ক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
খ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
গ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
ঘ খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়
৪. অজিত কুমার গুহ কোন আন্দোলনে অংশগ্রহণের জন্য কারাভোগ করেন? ঝ
ক ৬৬-এর ছয় দফা আন্দোলন
খ ৫২-এর ভাষা আন্দোলন
গ ৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থান
ঘ ৭১-এর স্বাধীনতা আন্দোলন
৫. নিচের কোন ক্ষেত্রে অজিত কুমার গুহের অবদান ও সাফল্য অপরিসীম? জ
ক সাম্প্রদায়িক ও ধর্মনির্ভর সংস্কৃতি চর্চায়
খ গ্রাম ও মফস্বল জীবননির্ভর সাহিত্য চর্চায়
গ অসাম্প্রদায়িক ও ধর্মনিরপেক্ষ সংস্কৃতি চর্চায়
ঘ নগরকেন্দ্রিক জীবননির্ভর সাহিত্য চর্চায়
৬. অজিত কুমার গুহ কোন সাহিত্যের বিশ্রæতকীর্তি অধ্যাপক ও সুবক্তা ছিলেন? চ
ক রবীন্দ্র সাহিত্যের খ নজরুল সাহিত্যের
গ জীবনানন্দ সাহিত্যের ঘ বঙ্কিম সাহিত্যের
৭. অজিত কুমার গুহ সম্পাদিত গ্রন্থ কোনটি? জ
ক সঞ্চয়িতা খ মানসী
গ গীতাঞ্জলি ঘ পথের দাবী
৮. অজিত কুমার গুহ কত সালে মৃত্যুবরণ করেন? ছ
ক ১৯৬৫ খ ১৯৬৯
গ ১৯৭২ ঘ ১৯৮০
৯. ‘বুলু’ গল্পের লেখককে কোন কারাগারে বদলি করা হয়? জ
ক রাজশাহী খ সিরাজগঞ্জ
গ দিনাজপুর ঘ বগুড়া
১০. দিনাজপুর জেলে নেওয়ার উদ্দেশ্যে কয়টার সময় লেখকদের গাড়ি যাত্রা শুরু করে? জ
ক সাতটার সময় খ আটটার সময়
গ নয়টার সময় ঘ দশটার সময়
১১. দিনাজপুর যাওয়ার পথে স্টিমারে কোন বিশ্ববিদালয়ের ছাত্রদের সাথে লেখকের আলাপ হয়? চ
ক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
খ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
গ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
ঘ খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়
১২. দিনাজপুর পৌঁছেই লেখক কী টের পেলেন? ছ
ক বঙ্গোপসাগরের নৈকট্য
খ হিমালয়ের নৈকট্য
গ কান্তজীর মন্দিরের নৈকট্য
ঘ দুর্গাসাগর দিঘির নৈকট্য
১৩. কয়েদি হিসেবে লেখক যখন দিনাজপুর পৌঁছলেন তখন কী মাস ছিল? চ
ক ফাল্গুন মাস খ চৈত্র মাস
গ বৈশাখ মাস ঘ শ্রাবণ মাস
১৪. দিনাজপুর জেলার কয় নম্বর ওয়ার্ডে লেখকদের নিয়ে যাওয়া হলো? চ
ক এক নম্বর খ দুই নম্বর
গ তিন নম্বর ঘ চার নম্বর
১৫. ‘বুলু’ গল্পে উল্লিখিত জেলের উঠোনে কী গাছ ছিল? চ
ক বাতাবিলেবুর গাছ খ কমলালেবুর গাছ
গ আমগাছ ঘ কাঁঠালগাছ
১৬. দিনাজপুর জেলের বাতাবিলেবুর গাছের নিচে চেয়ার টেবিল নিয়ে কে কবিতা লিখতেন? ছ
ক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর খ কাজী নজরুল ইসলাম
গ জসীমউদ্দীন ঘ জীবনানন্দ দাশ
১৭. দিনাজপুর জেলার জেলখানায় কয়জন অধ্যাপক ছিলেন? ছ
ক দুইজন খ তিনজন
গ চারজন ঘ পাঁচজন
১৮. ‘বুলু’ গল্পে উল্লিখিত সাধারণ কয়েদিদের জেলখানার নাম কী? ঝ
ক ইতর খ অপদার্থ
গ চতুর ঘ ফালতু
১৯. জেলের মধ্যে কাকে দেখে লেখকের ভালো লেগে গেল? চ
ক ডাক্তার খ উকিল
গ ব্যারিস্টার ঘ কয়েদি
২০. জেলের ডাক্তার লেখকদের প্রতি কেমন ব্যবহার করেছিল? ঝ
ক কর্কশ খ অভদ্র
গ রহস্যজনক ঘ আন্তরিক
২১. জেল-ডাক্তারের ছেলের বয়স কত ছিল? চ
ক পাঁচ খ ছয়
গ সাত ঘ নয়
২২. জেলখানায় লেখকদের দেখতে আসা অতিথি কে ছিল? জ
ক জেলার সাহেব খ এম.পি সাহেব
গ জেল-ডাক্তারের ছেলে ঘ জেল-ডাক্তার
২৩. ‘বুলু’ গল্পে বুলুর বাবার নাম কী? চ
ক শাহেদ খ রাকিব
গ মামুন ঘ রাব্বি
২৪. বুলু জেলখানায় কিসের বই নিয়ে এসেছিল? ছ
ক ছবির বই খ ছড়ার বই
গ গল্পের বই ঘ কবিতার বই
২৫. দিনাজপুর জেল থেকে চলে আসার কত বছর পর আবার লেখকের সাথে জেল-ডাক্তার শাহেদের দেখা হলো? ছ
ক ১৫ বছর খ ১৭ বছর
গ ১৯ বছর ঘ ২১ বছর
২৬. বুলু কী পাস করেছিল? জ
ক ডাক্তারি খ এম.এ
গ ইঞ্জিনিয়ারিং ঘ এলএলবি
২৭. বুলু মশাল হাতে বেরিয়ে যাওয়ার পর কী হলো? ঝ
ক গুলিবিদ্ধ হলো খ গ্রেফতার হলো
গ পালিয়ে গেল ঘ আর ফিরে এলো না
২৮. গণ-অভ্যুত্থানের ঘটনা ঘটেছিল কোন সালে? জ
ক ১৯৫৪ খ ১৯৬৬
গ ১৯৬৯ ঘ ১৯৭১
২৯. ডেপুটি জেলকে বাংলায় কী বলে? চ
ক উপ-কারাপ্রধান খ সহকারী কারাপ্রধান
গ অতিরিক্ত কারাপ্রধান ঘ কারাপ্রধান
বহুপদী সমাপ্তিসূচক
৩০. বুলু গল্পটিতে প্রতিফলিত হয়েছে-
র. রাজনৈতিক ঘটনা
রর. গণ-আন্দোলনে মানুষের অংশগ্রহণ
ররর. সন্তানহারা পিতার করুণ আর্তি
নিচের কোনটি সঠিক? ঝ
ক র ও রর খ র ও ররর
গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৩১. শিশু বুলুর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য হলোÑ
র. চটপটে
রর. চঞ্চল
ররর. স্বতঃস্ফূর্ত
নিচের কোনটি সঠিক? ঝ
ক র ও রর খ র ও ররর
গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৩২. বুলুর ৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণ প্রমাণ করেছেÑ
র. বাংলাদেশের আন্দোলন সংগ্রাম ধারাবাহিক প্রক্রিয়ার ফসল
রর. স্বাধিকার আন্দোলনে মানুষের স্বতঃস্ফ‚র্ত অংশগ্রহণ
ররর. বাংলাদেশের আন্দোলনগুলো কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটন না
নিচের কোনটি সঠিক? ঝ
ক র ও রর খ র ও ররর
গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
ন্ধ অভিন্ন তথ্যভিত্তিক
নিচের উদ্দীপকটি পড়ো এবং ৩৩ ও ৩৪ নম্বর প্রশ্নের উত্তর দাও :
রহমান সাহেব ভাষা আন্দোলনে অংশগ্রহন করেছিলেন। তাঁর ছেলেরাও বাবার আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে স্বাধিকার ও স্বাধীনতা আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে। প্রকৃতপক্ষে রহমান সাহেবের বাসায় রাজনৈতিক নেতাকর্মীর পদচারণায় মুখর থাকত বলে তাঁর ছেলেরা স্বাভাবিকভাবেই রাজনীতি সম্পর্কে সচেতন হয়ে উঠেছিল।
৩৩. রহমান সাহেবের ছেলেদের সাথে ‘বুলু’ গল্পে সাদৃশ্য আছে কার? জ
ক লেখকের খ শাহেদের
গ বুলুর ঘ জেলারের
৩৪. গল্পের আলোকে যে দিকগুলো রহমান সাহেবের ছেলেদের রাজনৈতিক আন্দোলনে উদ্বুদ্ধ করেÑ
র. পারিপার্শ্বিক অবস্থা
রর. জনসম্পৃক্ততা
ররর. অভিভাবকের উদার চিন্তা-চেতনা
নিচের কোনটি সঠিক? ঝ
ক র ও রর খ র ও ররর
গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর