উনিশ শ একাত্তর
ইমদাদুল হক মিলন
গল্পটি পড়ে জানতে পারব
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের কথা
পাকিস্তানি মিলিটারিদের নিষ্ঠুরতার পরিচয়
মুক্তিযুদ্ধে সাধারণ মানুষের আত্মত্যাগের তাৎপর্য
লেখক পরিচিতি
নাম ইমদাদুল হক মিলন।
জন্ম পরিচয় জন্ম তারিখ : ৮ই সেপ্টেম্বর, ১৯৫৫ খ্রিষ্টাব্দ।
জন্মস্থান : মুন্সিগঞ্জ জেলার বিক্রমপুরে।
পৈতৃক নিবাস : পাশা, লৌহজং, মুন্সিগঞ্জ।
পিতৃ ও মাতৃ পরিচয় পিতার নাম : গিয়াস উদ্দিন খান।
মাতার নাম : আনোয়ারা বেগম।
শিক্ষাজীবন এসএসসি, গেণ্ডারিয়া হাইস্কুল, ঢাকা।
এইচএসসি, জগন্নাথ কলেজ, ঢাকা।
অনার্সসহ স্নাতক, জগন্নাথ কলেজ, ঢাকা।
সাহিত্য সাধনা তাঁর প্রথম গল্প প্রকাশিত ১৯৭৩ সালে। গল্পের নাম ছিল ‘বন্ধু’। এ পর্যন্ত তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থসংখ্যা ১৪০। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো : নূরজাহান, পরাধীনতা, পরবাস, ভ‚মিপুত্র, কালোঘোড়া, নিরন্নের কাল, দেশভাগের পর ইত্যাদি।
পুরস্কার ও সম্মাননা তিনি ১৯৯২ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কারসহ বিভিন্ন পুরস্কার লাভ করেন।
বহুনির্বাচনি প্রশ্নের উত্তর
১. ‘উনিশ শ একাত্তর’ গল্পের লেখকÑ জ
ক. কাজী নজরুল ইসলাম খ. হুমায়ূন আহমেদ
গ. ইমদাদুল হক মিলন ঘ. সেলিনা হোসেন
২. ‘দীনুরে আমরা কলকাতা যাচ্ছি’ উক্তিটি কার? চ
ক. সুবলের দিদিমার খ. দীনুর দিদিমার
গ. খোকনের মা’র ঘ. সুবলের মা’র
৩. ‘তোর ভয় নেই। তুই খুব ভালো ছেলে। তোকে পাকিস্তানি সেনারা কিছু করবে না। দেশ স্বাধীন হলে আমরা ফিরে আসব।’ দিদিমার এই উক্তিটিতে ফুটে উঠেছেÑ
র. দীনুর প্রতি গভীর মমত্ববোধ
রর. দীনুর প্রতি মিথ্যে সান্ত্বনা
ররর. দীনুকে সাথে না নিতে পারার কষ্ট
নিচের কোনটি সঠিক? ঝ
ক. র খ. রর
গ. র ও রর ঘ. রর ও ররর
নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ে ৪ ও ৫ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
তারপর মন খারাপ করে খালপাড় ধরে একাকী হাঁটতে থাকে। কোথাও কোনো লোকজনের চিহ্ন নেই। দিনের বেলাটাকে মনে হয় রাত দুপুর। সবাই ঘুমুচ্ছে।
৪. অনুচ্ছেদে ব্যক্ত অনুভ‚তিটি কার? চ
ক. লেখকের খ. জমির চাচার
গ. খোকনের মা’র ঘ. দীনুর
৫. দিনের বেলাটাকে মনে হয় রাতদুপুর। এ অবস্থার কারণ হচ্ছেÑ জ
র. পাকসেনার আগমন
রর. সবাইকে হারানো ব্যথা
ররর. বর্ষাকালের ঘোর বৃষ্টি
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. র খ. রর
গ. র ও রর ঘ. রর ও ররর
সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর
ফারজানা ‘উনিশ শ একাত্তর’ গল্পটি ছেলে কামালকে পড়ে শুনাচ্ছিলেন। কামাল মা’র কথার ফাঁকে ফাঁকে একাত্তরের নানা বিষয়ে প্রশ্ন করে। তিনি অভিজ্ঞতার আলোকে এসব প্রশ্নের জবাব দেন। গল্পে আলোচিত দীনুর সহজ সরল জীবন। দিদিমা, খোকনদের কলকাতা ও বকুলতলার উদ্দেশ্যে যাত্রা, পাক-বাহিনীর নৃশংসতা বর্ণনা করেন। একপর্যায়ে কামাল বলে ওঠে ‘মা, আমি আর শুনতে চাই না।’ তিনি বুঝতে পেরেছেন, পাক-বাহিনীর প্রতি ছেলের মনে প্রচণ্ড রাগ ও ঘৃণা সৃষ্টি হয়েছে। অবশেষে এক পাক-সেনার গুলিতে দীনুর প্রাণ বিসর্জনের কথা বলতে গিয়ে কামালকে বুকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘বাবা, তোমরা দীনুর মতো অসহায় শিশুদের ভালোবাসবে।’
ক. ‘উনিশ শ একাত্তর’ গল্পের মূল চরিত্রের নাম কী? ১
খ. দীনুর পরিচয় বর্ণনা করো। ২
গ. পাক-বাহিনীর প্রতি কামালের ঘৃণা ও রাগের কারণ ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. ‘তোমরা দীনুর মতো অসহায় শিশুদের ভালোবাসবে’ গল্পের আলোকে উক্তিটি বিশ্লেষণ করো। ৪
১ এর ক নং প্র. উ.
ক্ষ ‘উনিশ শ একাত্তর’ গল্পের মূল চরিত্রের নাম দীনু।
১ এর খ নং প্র. উ.
ক্ষ ইমদাদুল হক মিলন রচিত ‘উনিশ শ একাত্তর’ গল্পের মূল চরিত্র দীনু।
অসহায় ও অনাথ এক ছেলে দীনু। বয়স দশ বছর। মফস্বল শহরে বাস করে দীনু। কেউ জানে না সে হিন্দু না মুসলমান। সে কেমন করে এখানে এসেছে তাও জানে না। পৃথিবীতে তার আপন কেউ নেই বলে শহরের সবাই তাকে ভালোবাসে এবং আদর করে। শহরের সব বাড়িতে সে অবাধে যাতায়াত করে। যে বাড়িতে ইচ্ছা খায়-দায় ঘুমায়। অত্যন্ত সহজ-সরল প্রকৃতির দীনু স্বপ্ন দেখত- একদিন তার জন্মভ‚মি স্বাধীন হবে।
১ এর গ নং প্র. উ.
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে পাক-বাহিনীর নৃশংসতার কারণে তাদের প্রতি কামালের ঘৃণা ও রাগ।
‘উনিশ শ একাত্তর’ গল্পে ফুটে উঠেছে মুক্তিযুদ্ধের সময় এদেশবাসীর ওপর পাকিস্তানি সেনাদের জুলুম, নির্যাতন ও নির্মম হত্যাকাণ্ডের চিত্র। তাদের আক্রমণ থেকে নিজেদেরকে রক্ষা করতে এদেশের হাজার হাজার লোক পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র ভারতে পালিয়ে গিয়েছিল। যাদের পালিয়ে গিয়ে আশ্রয় নেওয়ার মতো নিরাপদ কোনো জায়গা ছিল না তারা এদেশেই ছিল। পাকিস্তানি বাহিনীর অত্যাচারে তাদের জীবন হয়ে উঠেছিল দুর্বিষহ। দীনুর মতো অনাথ ও অসহায় এক কিশোরকে হত্যা করতেও তাদের বিবেক বাধা দেয়নি।
উদ্দীপকে উল্লিখিত ফারজানা তার ছেলে কামালকে ‘উনিশ শ একাত্তর’ গল্পটি পড়ে শুনাচ্ছিলেন। মায়ের কথার ফাঁকে কামাল একাত্তরের নানা বিষয়ে প্রশ্ন করে জেনে নিচ্ছিল। মা-ছেলের আলোচনায় উঠে এসেছিল দীনুর সহজ-সরল জীবন। দিদিমা, খোকনদের কলকাতা ও বকুলতলার উদ্দেশ্যে যাত্রা, পাক-বাহিনীর নৃশংসতার বর্ণনা। এসব শুনে কামালের মনে পাক-বাহিনীর প্রতি প্রচণ্ড রাগ ও ঘৃণা সৃষ্টি হয়। পরিশেষে বলা যায়, এদেশের মানুষের ওপর পাক-বাহিনীর অত্যাচারের কথা শুনেই কামালের মনে তাদের প্রতি রাগ ও ঘৃণা জন্মেছিল।
১ এর ঘ নং প্র. উ.
দীনুর মতো অসহায় শিশুদের ভালোবাসা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।
‘উনিশ শ একাত্তর’ ইমদাদুল হক মিলনের লেখা মুক্তিযুদ্ধকেন্দ্রিক একটি ছোট গল্প। দশ বছর বয়সী দীনু এর কেন্দ্রীয় চরিত্র। অনাথ দীনু জানে না সে হিন্দু না মুসলমান। মা-বাবা সম্পর্কে তার কিছুই জানা নেই। কেমন করে এই মফস্বল শহরে এসেছে সে কথাও জানে না সে। তবে শহরটির সবাই তাকে খুব ভালোবাসত।
‘উনিশ শ একাত্তর’ গল্পটি পাঠের মাধ্যমেই উদ্দীপকের কামালের মা দীনু সম্পর্কে জানতে পেরেছিলেন। শহরের সব বাড়িতেই দীনুর ছিল অবাধ যাতায়াত। যুদ্ধকালে পাকিস্তানি মিলিটারিদের ভয়ে তার পরিচিত অনেকেই দেশ ছেড়ে কলকাতায় আশ্রয় নিয়েছিল। পরিচিত কেউ কলকাতায় ছিল না বলে দীনুর যাওয়া হয়নি। পূর্বপরিচিত জমির চাচাকে নিয়ে সুবলদের বাড়িতে থাকত। একদিন হাইস্কুলের পাশে জমির চাচাকে খুঁজতে গিয়ে পাকিস্তানি সেনাদের গুলির আঘাতে সে মারা যায়।
দীনু মৃত্যুর পূর্বে যেন দেখতে পাচ্ছিল তার রক্তের খাল দিয়ে সুবল ও খোকনরা ফিরে আসছে আনন্দের সাথে। সাথে আসছে স্বাধীনতা। সুবলরা যদি তাকে সঙ্গে করে নিয়ে যেত, তাহলে হয়তো দীনুকে এমন করুণ পরিণতি বরণ করতে হতো না। আর এদিকটি ভেবেই কামালের মা দীনুর মতো অসহায়দের ভালোবাসার পরামর্শ দিয়েছেন কামালকে। এক্ষেত্রে আরও একটি বিষয় বলতে হয়, দীনুর মৃত্যু হলেও তার মতো অসহায় শত সহস্র শিশু আমাদের চারপাশে আজও আছে। তাদের ভালোবাসা ও সহযোগিতা করা আমাদের পবিত্র দায়িত্ব।
সড়কের উত্তরে রাইফেল রেঞ্জের মধ্যে গামছা পরা এক কিশোর তিন-চারটে গরু খেদিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, তার মাথায় ছালা বোঝাই ঘাস। কাঁধে লাঙল-জোয়াল। সম্ভবত সে মাঠ থেকে বাড়ি ফিরছে। মুক্তি মুক্তি! একজন সৈনিক চিৎকার করে ওঠে। কলিমদ্দি দফাদার সবিনয়ে বলতে চায় মুক্তি নেহি ক্যাপ্টিন সাব, উয়ো রাখাল হ্যায়, মেরা চেনাজানা হ্যায়। চুপ রাও সালে কাফের কা বাচ্চা কাফের। মুক্তি, আলবত মুক্তি-বলেই সকলে এক সঙ্গে গুলি ছোড়ে। কলিমদ্দি দফাদারের বাল্যকালের পাতানো দোস্ত সাইজদ্দি খলিফার ষোলো বছরের ছেলে একবার মাত্র মা বলে। ধরাশায়ী দেহটা থেকে আর কেনো ধ্বনি কানে আসে না।
ক. দীনু কাকে চাচা বলে ডাকে? ১
খ. ‘তাহলে এই কি স্বাধীনতা!’ কেন বলা হয়েছে? ২
গ. কোন বিষয়টির সাথে উদ্দীপক এবং ‘উনিশ শ একাত্তর’ গল্পের মিল রয়েছে? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. উদ্দীপক এবং ‘উনিশ শ একাত্তর’ গল্পের মধ্য দিয়ে আমরা মুক্তিযুদ্ধের স্বরূপ অনুধাবন করতে পারি- বিশ্লেষণ করো। ৪
২ নং প্র. উ.
ক. দীনু জমির পাগলাকে চাচা বলে ডাকে।
খ. স্বাধীনতার স্বরূপ উপলব্ধির চেষ্টা করা হয়েছে উক্তিটির মধ্য দিয়ে।
মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়ে গেলে প্রতিবেশীদের দেশ ছেড়ে চলে যেতে দেখেছে দীনু। সবার চোখে অনিশ্চয়তার কালো ছাপ প্রত্যক্ষ করেছে। কিন্তু স্বাধীনতার প্রকৃত রূপ সে খুঁজে পেতে ব্যর্থ হয়েছে। দীনু স্বাধীনতার মানে বুঝতে পারে অত্যন্ত মর্মান্তিকভাবে নিজের জীবন দিয়ে। পাকিস্তানি আর্মি দীনুকে গুলি করলে সে ধীরে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। মৃত্যুর পূর্বমূহূর্তে তার অবচেতন মন প্রত্যক্ষ করে তার স্বজনেরা গ্রামের খাল বেয়ে ফিরে আসছে হাজার হাজার ছইঅলা নৌকায়। প্রতিটি নৌকা থেকে ভেসে আসছে উলাসের শব্দ। দীনুর বিস্ময় জাগে- এই কি তবে স্বাধীনতা!
গ. উদ্দীপক এবং ‘উনিশ শ একাত্তর’ গল্পের মধ্যে নিরীহ মানুষকে নির্বিচারে হত্যার প্রসঙ্গটিতে সাদৃশ্য প্রতিফলিত হয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে বালক দীনুর কাছে সব কিছুই অস্বাভাবিক বলে বোধ হয়। কাছের মানুষেরা নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে দূরে সরে যাচ্ছে। এমতাবস্থায় দীনু বাজারের ভিক্ষুক জমির পাগলাকে আপন করে নিয়ে চাচা ডাকে। কিন্তু দুমাসের মাথায় জমির চাচাও পালানোর কথা ভাবে। এসব কথা ভাবতে ভাবতে দীনু যখন স্কুলের কাছাকাছি এসে গেছে, তখনই ঘটে মর্মান্তিক ঘটনাটি। পাকিস্তানি একজন সৈন্য নেহাত নিশানা পরীক্ষা করার জন্য দীনুর দিকে অটোমেটিক রাইফেলটি তাক করে। মুহূর্তের মধ্যেই আগুনের মৌমাছির মতো গুলি মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে অজ্ঞ দীনুর প্রাণ-প্রদীপ নিভিয়ে দেয়।
উদ্দীপকে দেখা যায়, পাকিস্তানি আর্মি যাকে মুক্তিযোদ্ধা মনে করে গুলি চালায় সে আসলে মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে কোনো ধারণাই রাখে না। সে কলিমদ্দি দফাদারের বাল্যকালের পাতানো দোস্ত সাইজদ্দি খলিফার ষোলো বছরের ছেলে। দীনুর এবং সাইজুদ্দি খলিফার ছেলের মতো অসংখ্য নিরীহ মানুষ এভাবেই বর্বর পাকিস্তানিদের নৃশংসতার শিকার হয়। উভয় ক্ষেত্রেই নিরীহ মানুষকে নির্বিচারে হত্যা করার প্রসঙ্গটি ওঠে এসেছে।
ঘ. উদ্দীপক এবং ‘উনিশ শ একাত্তর’ গল্পের মধ্য দিয়ে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী কর্তৃক গণহত্যার স্বরূপ ফুটে উঠেছে।
পারিবারিক পরিচয়হীন বালক দীনু মুক্তিযুদ্ধকালে তার পারিপার্শ্বিক অবস্থা পরিবর্তিত হতে দেখেছে। দীনু যাদের কাছে স্নেহ লাভ করেছে তারাও তাকে ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে ছুটেছে। সেও চলে যেত কারও কারও সাথে, কিন্তু এমন বিপদের দিনে কেউ কাউকে নিরাপত্তা দিতে পারে না তাই রেখে গেছে দীনুকে। বালক দীনু নিজের বিপদ সম্পর্কে সচেতন ছিল না। তাই সে শত্র“র লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধে লক্ষ লক্ষ শহিদের মতো দীনুও পাকিস্তানিদের বর্বতার শিকার হয়।
উদ্দীপকে গামছা পরা এক কিশোর তিন-চারটে গরু খেদিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল। তার মাথায় ছালা-বোঝাই ঘাস আর কাঁধে ছিল লাঙল-জোয়াল। এই ছেলেটিকে পাকিস্তানি আর্মিরা মুক্তিযোদ্ধা মনে করে মেরে ফেলতে উদ্যত হলে কলিমদ্দি দফাদার তার আসল পরিচয় তাদের সামনে তুলে ধরে। কিন্তু হিংস্র পাকিস্তানি সৈন্য কলিমদ্দি দফাদারের কথা তোয়াক্কা না করে তাকে হত্যা করে। উদ্দীপক এবং ‘উনিশ শো একাত্তর’ গল্পের এখানেই সাদৃশ্য। এ ঘটনার দ্বারা এটাই মূলত স্পষ্ট হয় যে, পাকিস্তানি গণহত্যায় কেউই নিরাপদ ছিল না।
বাঙালির জাতীয় জীবনে সবচেয়ে বড় ঘটনা হচ্ছে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ। মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানিদের গণহত্যা শুধু জাতীয় ইতিহাসেই নয়, বিশ্বের ইতিহাসেও কলঙ্কজনক অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত। গণহত্যার নেশায় পাকবাহিনী শিশু-কিশোর বিবেচনা করেনি। দীর্ঘ নয় মাস তারা বাঙালি নিধনযজ্ঞে মেতেছিল। উদ্দীপক এবং পঠিত গল্পে এই সত্যটি প্রতিভাত হয়েছে। দীনু অথবা সাইজুদ্দির ছেলে কেউই মুক্তিযুদ্ধ বা রাজনীতি সম্পর্ক ন্যূনতম জ্ঞানও রাখত না। অথচ এদেরকেও নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। ঘটনা দুটি ভিন্ন হলেও মুক্তিযুদ্ধকালীন পাকিস্তানি বর্বরতা সম্পর্কে আমরা সম্যক জ্ঞান লাভ করি।
পরীক্ষায় কমন উপযোগী জ্ঞানমূলক প্রশ্নের উত্তর
১. কার মাথার ওপর কাক কা কা করছে?
উত্তর : দীনুর মাথার ওপর কাক কা কা করছে।
২. দীনুর বয়স কত বছর?
উত্তর : দীনুর বয়স দশ বছর।
৩. মিলিটারিরা কোথায় ক্যাম্প করেছিল?
উত্তর : মিলিটারিরা স্কুলে ক্যাম্প করেছিল।
৪. বর্ষার জলে ভেসে যাচ্ছে কোন ধান?
উত্তর : বর্ষার জলে ভেসে যাচ্ছে আমন ধান।
৫. জমির চাচার সাথে দীনু কত দিন এক সাথে থেকেছে?
উত্তর : জমির চাচার সাথে দীনু দুই মাস এক সাথে থেকেছে।
৬. সুবলরা কোথায় যাচ্ছিল?
উত্তর : সুবলরা কলকাতা যাচ্ছিল।
৭. সুবলরা কখন ফিরে আসতে চেয়েছে?
উত্তর : সুবলরা দেশ স্বাধীন হলে ফিরে আসতে চেয়েছে।
পরীক্ষায় কমন উপযোগী অনুধাবনমূলক প্রশ্নের উত্তর
১. সুবলের দিদিমা দীনুকে নিতে রাজি হয়নি কেন?
উত্তর : নিজেদেরই থাকার ভালো বন্দোবস্ত নেই বলে দীনুকে সঙ্গে নিতে রাজি হননি সুবলের দিদিমা।
সুবলের দিদিমারা কলকাতা চলে যান। দীনু তাদের সাথে যেতে চায়, কিন্তু সুবলের দিদিমা তাকে নিতে রাজি হননি। কারণ দুর্যোগের দিন নিজেদেরই স্থানাভাব। তার ওপর দীনু বোঝা হিসেবে গণ্য হয়। তাই তিনি দীনুকে সঙ্গে নিতে রাজি হননি।
২. দীনু মাটিতে লুটিয়ে পড়ে কেন?
উত্তর : পাকিস্তানি সেনাদের গুলির আঘাতে দীনু মাটিতে লুটিয়ে পড়ে।
মিলিটারিদের একজন নিশানা ঠিক আছে কি না তা দেখার জন্য দীনুকে তাক করে। গুলি লাগে দীনুর বুকে। দুই হাতে বুক চেপে ধরে সে। আঙুলের ফাঁক দিয়ে রক্ত বয়ে যায় তার। আস্তে আস্তে দীনু মাটিতে লুটিয়ে পড়ে।
৩. আগুনের মৌমাছি বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
উত্তর : আগুনের মৌমাছি বলতে বন্দুকের গুলিকে বোঝানো হয়েছে। বাসায় কেউ হানা দিলে মৌমাছি চোখের পলকে আক্রমণকারীকে এসে হুল ফোটায়। ‘উনিশ শ একাত্তর’ গল্পে আগুনের মৌমাছি বলতে বন্দুকের গুলিকে বোঝানো হয়েছে। কারণ বুলেট এত দ্রæত এসে দীনুকে আঘাত করেছে যে দীনু কিছুই বুঝে উঠতে পারেনি।
বহুনির্বাচনি প্রশ্নের উত্তর
সাধারণ
১. ইমদাদুল হক মিলন কত সালে জন্মগ্রহণ করেন? ঝ
ক ১৯৫০ খ ১৯৫৩
গ ১৯৫৪ ঘ ১৯৫৫
২. ইমদাদুল হক মিলন কোন জেলায় জন্মগ্রহণ করেন? চ
ক মুন্সিগঞ্জ খ ফরিদপুর
গ শরিয়তপুর ঘ নওগাঁ
৩. ইমদাদুল হক মিলনের পৈতৃক বাড়ি কোথায়? ছ
ক নারায়ণগঞ্জ খ মুন্সিগঞ্জ
গ শরিয়তপুর ঘ বিক্রমপুর
৪. ইমদাদুল হক মিলন কোন কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন? জ
ক তিতুমীর কলেজ খ কবি নজরুল কলেজ
গ জগন্নাথ কলেজ ঘ ঢাকা কলেজ
৫. কত সালে ইমদাদুল হক মিলনের প্রথম গল্প প্রকাশিত হয়? ছ
ক ১৯৭০ খ ১৯৭৩
গ ১৯৭৪ ঘ ১৯৭৫
৬. ইমদাদুল হক মিলনের প্রথম গল্পের নাম কী? চ
ক বন্ধু খ শত্রæ
গ সুহৃদ ঘ শুভাকাক্সক্ষী
৭. ইমদাদুল হক মিলনের প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা কত? ছ
ক ৪০টি খ ১৪০টি
গ ২৪০টি ঘ ২৫০টি
৮. কত সালে ইমদাদুল হক মিলন বাংলা একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন? জ
ক ১৯৯০ খ ১৯৯১
গ ১৯৯২ ঘ ১৯৯৩
৯. নিচের কোনটি ইমদাদুল হকের রচনা? ঝ
ক হাটে-বাজারে খ বিন্দু বিসর্গ
গ দ্বৈরথ ঘ পরবাস
১০. ‘উনিশ শ একাত্তর’ গল্পের শুরুতে কেনো ঋতুর কথা বলা হয়েছে? ছ
ক গ্রীষ্মকাল খ বর্ষাকাল
গ শরৎকাল ঘ শীতকাল
১১. টানা কত দিন বৃষ্টির পর দীনুদের ছোট মফস্বল শহরে রোদ উঠেছে? ছ
ক পাঁচদিন খ দশদিন
গ পনেরো দিন ঘ ষোলো দিন
১২. ‘উনিশ শ একাত্তর’ গল্পে ‘পোড়া মাটির চুলোর মতো’ বলতে কোনটিকে বোঝানো হয়েছে? চ
ক আকাশ খ নদীর পানি
গ গায়ের রং ঘ দগ্ধ গ্রাম
১৩. ‘উনিশ শ একাত্তর’ গল্পে শুরুতে কোন ধানের উল্লেখ আছে? ছ
ক আউশ খ আমন
গ ইরি ঘ বোরো
১৪. বর্ষার শুরুতে কারা বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছিল? চ
ক সুবলরা খ মতীনরা
গ অরুণরা ঘ অনিলরা
১৫. দীনু কী সইতে পারে না? ছ
ক অন্যের সুখ খ অন্যের চোখের জল
গ অন্যের উন্নতি ঘ অন্যের কষ্ট
১৬. নিচের কোনটি দীনু সম্পর্কে সঠিক? চ
ক দীনু অনাথ
খ দীনু বিত্তশালী পরিবারের সন্তান
গ দীনুর পারিবারিক পরিচয় আছে
ঘ দীনুর বাবা প্রভাবশালী
১৭. দীনুর বয়স কত? ঝ
ক সাত খ আট
গ নয় ঘ দশ
১৮. দীনুর প্রতি সবার মনোভাব কেমন ছিল? ঝ
ক ক্ষোভের খ বিরক্তির
গ রাগের ঘ স্নেহের
১৯. সুবলরা কোথায় চলে গেল? চ
ক কলকাতা খ বিহার
গ দিল্লি ঘ ইসলামাবাদ
২০. পশ্চিম পাকিস্তান থেকে মিলিটারিরা এসে কী করবে? ছ
ক দেশ রক্ষা করবে
খ দেশের মানুষকে মেরে ফেলবে
গ দেশকে পাহারা দেবে
ঘ অহেতুক ঘুরে বেড়াবে
২১. যাওয়ার সময় সুবলের দিদিমা দীনুকে কী দিয়ে গেল? ঝ
ক ঘোড়াটা খ সাইকেলটা
গ দামি ঘড়িটা ঘ বাড়িটা
২২. সুবলদের বাড়িতে থাকা চাল-ডাল দীনুর কত দিন চলবে? ঝ
ক দুমাস খ তিনমাস
গ পাঁচমাস ঘ ছমাস
২৩. দীনু সুবলদের কোন ঘরের তালা খুলেছিল? চ
ক বাংলাঘরের খ রান্না ঘরের
গ শোবার ঘরের ঘ খাবার ঘরের
২৪. সুবলদের বাংলাঘরে নিচের কোন জিনিসটি ছিল? ছ
ক আলমারি খ চৌকি
গ টেবিল ঘ সোফা
২৫. বাজারের কোণে বসে ভিক্ষে করে কে? জ
ক আমির খ সমির
গ জমির ঘ জলিল
২৬. দীনু কাকে নিয়ে সাতার কাঁটার কথা ভেবেছে? চ
ক খোকন খ রোকন
গ মাসুদ ঘ সুবল
২৭. খোকারা বাড়ি ছেড়ে কোথায় যাচ্ছিল? জ
ক শিমুলতলী খ তালতলী
গ বকুলতলী ঘ আমতলী
২৮. মিলিটারিরা কোথায় ক্যাম্প করেছিল? চ
ক হাই স্কুলে খ কলেজে
গ কমিউনিটি সেন্টারে ঘ প্রাইমারি স্কুলে
২৯. দীনু কাকে খুব ভয় পায়? ছ
ক খোকনকে
খ খোকনের মাকে
গ খোকনের বাবাকে
ঘ জমির চাচাকে
৩০. দীনুদের মফস্বল শহরের কাছে কোথাও ধানী মাঠের ভেতর কী নেমেছে? ঝ
ক বক পাখি খ শালিক পাখি
গ চডুই পাখি ঘ কোড়া পাখি
৩১. বুক কাঁপিয়ে দীর্ঘশ্বাস পড়ে কার? জ
ক সুবলের মায়ের খ খোকনের মায়ের
গ দীনুর ঘ জমির চাচার
৩২. দীনু জমির চাচার সঙ্গে কয় মাস একসঙ্গে ছিল? চ
ক দুমাস খ তিন মাস
গ চার মাস ঘ পাঁচমাস
৩৩. দীনুর দিকে ছুটে আসা রাইফেলের গুলিকে কিসের সাথে তুলনা করা হয়েছে? ছ
ক আগুনের জোনাকি
খ আগুনের মৌমাছি
গ আগুনের ঝিঁঝিঁপোকা
ঘ আগুনের প্রজাপতি
৩৪. কার রক্তে খালপাড়ের সাদা মাটি লাল হয়ে গেল? জ
ক জমিরের খ খোকনের
গ দীনুর ঘ সুবলের
৩৫. মৃত্যুমুহূর্তে দীনুর কল্পনায় খাল বেয়ে কী আসছিল? ছ
ক হাজার হাজার যুদ্ধ জাহাজ
খ হাজার হাজার ছইঅলা নৌকা
গ হাজার হাজার গানবোট
ঘ হাজার হাজার জেলে নৌকা
৩৬. দীনুর কল্পনায় আভাসিত হাজার হাজার নৌকা থেকে কী ভেসে আসছিল? ছ
ক কান্নার শব্দ খ উল্লাসের শব্দ
গ হুঙ্কারে ঘ বেদনার ধ্বনি
৩৭. মৃত্যুমুহূর্তে দীনুর ঠোঁটে কী ফুটে উঠেছিল? ঝ
ক আতঙ্ক খ হতাশা
গ গøানি ঘ হাসি
৩৮. ‘বাংলাঘর’ বলতে কী বোঝানো হয়? ছ
ক খাবার ঘর খ বৈঠক ঘর
গ রান্না ঘর ঘ পাঠকক্ষ
বহুপদী সমাপ্তিসূচক
৩৯. ‘উনিশ শ একাত্তর’ গল্প অবলম্বনে মুক্তিযুদ্ধে সাধারণ মানুষের যে পরিচয় পাওয়া যায়
র. স্বাভাবিক অবস্থা
রর. দেশত্যাগ
ররর. অনিশ্চয়তা
নিচের কোনটি সঠিক? জ
ক র ও রর খ র ও ররর
গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৪০. ‘উনিশ শ একাত্তর’ গল্পে দীনুর যে পরিচয় পাওয়া যায়
র. দীনুর ধর্মপরিচয় অজানা
রর. দীনুর নিজস্ব ঠিকানা নেই
ররর. দীনুর বাবা-মার কোনো সন্ধান পাওয়া যায় না
নিচের কোনটি সঠিক? ঝ
ক র ও রর খ র ও ররর
গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৪১. ‘উনিশ শ একাত্তর’ গল্প শেষ হয়েছে
র. দীনুর মৃত্যুর মধ্য দিয়ে
রর. বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের মধ্য দিয়ে
ররর. স্বাধীনতার স্বরূপ উপলব্ধির মধ্য দিয়ে
নিচের কোনটি সঠিক? ছ
ক র ও রর খ র ও ররর
গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
ন্ধ অভিন্ন তথ্যভিত্তিক
নিচের উদ্দীপকটি পড়ো এবং ৪২ ও ৪৩ নম্বর প্রশ্নের উত্তর দাও :
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অসংখ্য নারী ও শিশু মৃত্যুবরণ করেছে। অনেকে উদ্বাস্তু হয়ে দেশের বাইরে চলে গেছে। পাকিস্তানিরা নির্বিচারে নারী ও শিশুদের হত্যা করেছে। এসব অত্যাচার এবং রক্তের পথ বেয়ে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করে।
৪২. উদ্দীপকের যে অনুভব ‘উনিশ শ একাত্তর’ গল্পের মধ্যে আছে
র. মানুষের উদ্বাস্তু হওয়া
রর. স্বাধীনতার তাৎপর্য
ররর. স্বাধীনতার আনন্দ
নিচের কোনটি সঠিক? চ
ক র ও রর খ র ও ররর
গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৪৩. উদ্দীপকের নির্বিচারে শিশুহত্যা গল্পের মধ্যে কীভাবে প্রতিফলিত হয়েছে? চ
ক দীনুকে হত্যা করার মধ্য দিয়ে
খ খোকনকে হত্যা করার মধ্য দিয়ে
গ সুবলকে হত্যা করার মধ্য
ঘ মিলনকে হত্যা করার মধ্য দিয়ে